bn_ulb/41-MAT.usfm

2104 lines
293 KiB
Plaintext
Raw Blame History

This file contains ambiguous Unicode characters

This file contains Unicode characters that might be confused with other characters. If you think that this is intentional, you can safely ignore this warning. Use the Escape button to reveal them.

\id MAT
\mt মথির লেখা সুসমাচার।
\s5
\c 1
\s প্রভু যীশু খ্রীষ্টের বংশ তালিকা।
\p
\v 1 যীশু খ্রীষ্টের বংশ তালিকা, তিনি দায়ূদের সন্তান, অব্রাহামের সন্তান।
\v 2 অব্রাহামের ছেলে ইসহাক; ইসহাকের ছেলে যাকোব; যাকোবের ছেলে যিহূদা ও তাঁর ভাইয়েরা;
\v 3 যিহূদার ছেলে পেরস ও সেরহ, তামরের গর্ভের সন্তান; পেরসের ছেলে হিস্রণ; হিস্রোনের ছেলে রাম;
\s5
\v 4 রামের ছেলে অম্মীনাদব; অম্মীনাদবের ছেলে, নহশোন, নহশোনের ছেলে সলমোন;
\v 5 শলমোনের ছেলে বোয়স; রাহবের গর্ভের সন্তান; বোয়সের ছেলে ওবেদ, রুতের গর্ভের ছেলে; ওবেদের ছেলে যিশয়;
\v 6 যিশয়ের ছেলে দায়ূদ রাজা। দায়ূদের ছেলে শলোমন; ঊরিয়ের বিধবার গর্ভের সন্তান;
\s5
\v 7 শলোমনের ছেলে রহবিয়াম; রহবিয়ামের ছেলে অবিয়; অবিয়ের ছেলে আসা;
\v 8 আসার ছেলে যিহোশাফট; যিহোশাফটের ছেলে যোরাম; যোরামের ছেলে উষিয়;
\s5
\v 9 উষিয়ের ছেলে যোথাম; যোথামের ছেলে আহস; আহসের ছেলে হিস্কিয়;
\v 10 হিস্কিয়ের ছেলে মনংশি; মনংশি ছেলে আমোন; আমোনের ছেলে যোশিয়;
\v 11 যোশিয়ের সন্তান যিকনিয় ও তাঁর ভাইয়েরা, বাবিলের নির্ব্বাসনের সময়ে এদের জন্ম হয়।
\s5
\v 12 যিকনিয়ের ছেলে শলটীয়েল, বাবিলের নির্ব্বাসনের পরে জাত; শলটীয়েলের ছেলে সরুব্বাবিল;
\v 13 সরুব্বাবিলের ছেলে অবীহূদ; অবীহূদের ছেলে ইলীয়াকীম; ইলীয়াকীমের ছেলে আসোর;
\v 14 আসোরের ছেলে সাদোক; সাদোকের ছেলে আখীম; আখীমের ছেলে ইলীহূদ;
\s5
\v 15 ইলীহূদের ছেলে ইলিয়াসর; ইলিয়াসরের ছেলে মত্তন; মত্তনের ছেলে যাকোব;
\v 16 যাকোবের ছেলে যোষেফ; ইনি মরিয়মের স্বামী; এই মরিয়মের গর্ব্ভে যীশুর জন্ম হয়, যাঁকে খ্রীষ্ট [অভিষিক্ত] বলে।
\v 17 এইভাবে অব্রাহাম থেকে দায়ূদ পর্য্যন্ত সবমিলিয়ে চোদ্দ পুরুষ; এবং দাউদ থেকে বাবিলে নির্ব্বাসন পর্য্যন্ত চোদ্দ পুরুষ।
\s প্রভু যীশুর জন্ম-বিবরণ।
\s5
\p
\v 18 যীশু খ্রীষ্টের জন্ম এইভাবে হয়েছিল। যখন তাঁর মা মরিয়ম যোষেফের প্রতি বাগদত্তা হলে, তাঁদের সহবাসের আগে জানা গেল, তিনি গর্ভবতী হয়েছেন, পবিত্র আত্মার মাধ্যমে।
\v 19 আর তাঁর স্বামী যোষেফ ধার্মিক হওয়াতে তিনি চাননি যে জন সাধারণের কাছে তাঁর স্ত্রীর নিন্দা হয়, তাই তাঁকে গোপনে ছেড়ে দেবেন বলে ঠিক করলেন।
\s5
\v 20 তিনি এইসব ভাবছেন, এমন সময় দেখ, প্রভুর এক দূত স্বপ্নে তাঁকে দর্শন দিয়ে বললেন, যোষেফ, দায়ূদ-সন্তান তোমার স্ত্রী মরিয়মকে গ্রহণ করতে ভয় করো না, কারণ তাঁর গর্ভে যা জন্মেছে, তা পবিত্র আত্মা থেকে হয়েছে; আর তিনি ছেলের জন্ম দেবেন l
\v 21 এবং তুমি তাঁর নাম যীশু [উদ্ধারকর্ত্তা] রাখবে; কারণ তিনিই নিজের প্রজাদেরকে তাদের পাপ থেকে উদ্ধার করবেন।
\s5
\v 22 এই সব ঘটল, যেন ভাববাদীর মাধ্যমে বলা প্রভুর এই কথা পূর্ণ হয়,
\v 23 “দেখ, সেই মেয়ে গর্ভবতী হবে এবং ছেলে জন্ম দেবে, আর তাঁর নাম রাখা যাবে ইম্মানুয়েল অনুবাদ করলে এর অর্থ, আমাদের সাথে ঈশ্বর।”
\s5
\v 24 পরে যোষেফ ঘুম থেকে উঠে প্রভুর দূত তাঁকে যেরকম আদেশ করেছিলেন, সেরকম করলেন,
\v 25 নিজের স্ত্রীকে গ্রহণ করলেন; আর যে পর্য্যন্ত ইনি ছেলে জন্ম না দিলেন, সেই পর্য্যন্ত যোষেফ তাঁর পরিচয় নিলেন না, আর তিনি ছেলের নাম যীশু রাখলেন।
\s5
\c 2
\s প্রভু যীশুর শৈশবকালের বিবরণ।
\p
\v 1 হেরোদ রাজার সময়ে যিহূদিয়ার বৈৎলেহমে যীশুর জন্ম হলে পর, দেখ, পূর্ব্বদেশ থেকে কয়েক জন পন্ডিত
\v 2 যিরুশালেমে এসে বললেন, “যিহূদীদের যে রাজা জন্মেছেন, তিনি কোথায় ?” কারণ আমরা পূর্ব্বদেশে তাঁর তারা দেখেছি ও তাঁকে প্রণাম করতে এসেছি।
\v 3 এই কথা শুনে হেরোদ রাজা অস্থির হলেন ও তাঁর সাথে সমস্ত যিরুশালেমও অস্থির হল।
\s5
\v 4 আর তিনি সমস্ত প্রধান যাজক ও লোক সাধারণের শিক্ষাগুরুদেরকে একসাথে করে তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “খ্রীষ্ট কোথায় জন্মাবেন ?”
\v 5 তারা তাঁকে বললেন, “যিহূদিয়ার বৈৎলেহমে,” কারণ ভাববাদীর মাধ্যমে এইভাবে লেখা হয়েছে,
\v 6 “আর তুমি, হে যিহূদা দেশের বৈৎলেহম, তুমি যিহূদার শাসনকর্তাদের মধ্যে কোন মতে একেবারে ছোট নও, কারণ তোমার থেকে সেই অধ্যক্ষ উৎপন্ন হবেন, যিনি আমার প্রজা ইস্রায়েলকে পালন করবেন।”
\s5
\v 7 তখন হেরোদ সেই পন্ডিতদেরকে গোপনে ডেকে, ঐ তারা কোন সময়ে দেখা গিয়েছিল, তা তাঁদের কাছে বিশেষভাবে জেনে নিলেন।
\v 8 পরে তিনি তাদের বৈৎলেহমে পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, “তোমরা গিয়ে বিশেষভাবে সেই শিশুর খোঁজ কর; দেখা পেলে আমাকে খবর দিও, যেন আমিও গিয়ে তাঁকে প্রণাম করতে পারি।”
\s5
\v 9 রাজার কথা শুনে তাঁরা চলে গেলেন, আর দেখ, পূর্ব্বদেশে তাঁরা যে তারা দেখেছিলেন, তা তাদের আগে আগে চলল, শেষে যেখানে শিশুটি ছিলেন , তাঁর উপরে এসে থেমে গেল।
\v 10 তারাটি দেখতে পেয়ে তারা মহানন্দে খুব উল্লাসিত হলেন।
\s5
\v 11 পরে তাঁরা ঘরের মধ্যে গিয়ে শিশুটিকে তাঁর মা মরিয়মের সাথে দেখতে পেলেন ও উবুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন এবং নিজেদের বাক্স খুলে তাঁকে সোনা, ধুনো ও গন্ধরস উপহার দিলেন।
\v 12 পরে তাঁরা যেন হেরোদের কাছে ফিরে না যান, স্বপ্নে এই আদেশ পেয়ে, অন্য পথ দিয়ে নিজেদের দেশে চলে গেলেন।
\s5
\v 13 তাঁরা চলে গেলে পর, দেখ, প্রভুর এক দূত স্বপ্নে যোষেফকে দর্শন দিয়ে বললেন, ওঠ, শিশুটিকে ও তাঁর মাকে নিয়ে মিশরে পালিয়ে যাও; আর আমি যত দিন তোমাকে না বলি, তত দিন সেখানে থাক; কারণ হেরোদ শিশুটিকে হত্যা করার জন্য তাঁর খোঁজ করবে।
\v 14 তখন যোষেফ উঠে রাত্রিবেলায় শিশুটিকে ও তাঁর মাকে নিয়ে মিশরে চলে গেলেন,
\v 15 এবং হেরোদের মৃত্যু পর্য্যন্ত সেখানে থাকলেন, যেন ভাববাদীর মাধ্যমে বলা প্রভুর এই কথা পূর্ণ হয়, “আমি মিশর থেকে নিজের ছেলেকে ডেকে আনলাম।”
\s5
\v 16 পরে হেরোদ যখন দেখলেন যে, তিনি পন্ডিতদের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন, তখন খুব রেগে গেলেন এবং সেই পন্ডিতদের কাছে বিশেষ ভাবে যে সময় জেনে নিয়েছিলেন, সেই অনুসারে দু-বছর ও তার অল্প বয়সের যত বালক বৈৎলেহম ও তার সমস্ত পরিসীমার মধ্যে ছিল, লোক পাঠিয়ে সে সবাইকে হত্যা করালেন।
\s5
\v 17 তখন যিরমিয় ভাববাদী মাধ্যমে বলা এই কথা পূর্ণ হল,
\v 18 “রামায় শব্দ শোনা যাচ্ছে, হাহাকার ও খুব কান্নাকাটি; রাহেল নিজের সন্তানদের জন্য কান্নাকাটি করছেন, সান্ত্বনা পেতে চান না, কারণ তারা নেই।”
\s5
\v 19 হেরোদের মৃত্যু হলে পর, দেখ, প্রভুর এক দূত মিশরে যোষেফকে স্বপ্নে দর্শন দিয়ে বললেন,
\v 20 ওঠ, শিশুটিকে ও তাঁর মাকে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে যাও; কারণ যারা শিশুটিকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিল, তারা মারা গিয়েছে।
\v 21 তাতে তিনি উঠে শিশুটিকে ও তাঁর মাকে নিয়ে ইস্রায়েল দেশে এলো েন।
\s5
\v 22 কিন্তু যখন তিনি শুনতে পেলেন যে, আর্খিলায় নিজের বাবা হেরোদের পদে যিহূদিয়াতে রাজত্ব করছেন, তখন সেখান যেতে ভয় পেলেন; পরে স্বপ্নে আদেশ পেয়ে গালীল প্রদেশে চলে গেলেন,
\v 23 এবং নাসরৎ নামে শহরে গিয়ে বসবাস করলেন; যেন ভাববাদীর মাধ্যমে বলা এই কথা পূর্ণ হয় যে, তিনি নাসরতীয় বলে পরিচিত হবেন।
\s5
\c 3
\s যোহন বাপ্তাইজকের প্রচার কাজ।
\p
\v 1 সেই সময়ে যোহন বাপ্তাইজক হাজির হয়ে যিহূদিয়ার প্রান্তরে প্রচার করতে লাগলেন;
\v 2 তিনি বললেন, ‘মন ফেরাও, কারণ স্বর্গ-রাজ্য নিকটে।’
\v 3 ইনিই সেই ব্যক্তি, যাঁর বিষয়ে যিশাইয় ভাববাদীর মাধ্যমে এই কথা বলা হয়েছিল, “প্রান্তরে এক জনের রব; সে ঘোষণা করছে, তোমরা প্রভুর পথ তৈরী কর, তাঁর রাজপথ সব সরল কর।”
\s5
\v 4 যোহন উটের লোমের কাপড় পরতেন, তাঁর কোমরে চামড়ার বেল্ট ও তাঁর খাবার পঙ্গপাল ও বনমধু ছিল।
\v 5 তখন যিরুশালেমে, সমস্ত যিহূদিয়া এবং যর্দ্দনের কাছাকাছি সমস্ত অঞ্চলের লোক বের হয়ে তাঁর কাছে যেতে লাগল;
\v 6 আর নিজের নিজের পাপ স্বীকার করে যর্দ্দন নদীতে তাঁর মাধ্যমে বাপ্তাইজিত হতে লাগল।
\s5
\v 7 কিন্তু অনেক ফরীশী ও সদ্দূকী বাপ্তিস্মের জন্য আসছে দেখে তিনি তাদের বললেন, হে সাপের বংশেরা, আগামী কোপ থেকে পালাতে তোমাদের কে চেতনা দিল ?
\v 8 অতএব মনপরিবর্ত্তনের যোগ্য ফলে ফলবান হও।
\v 9 আর ভেবো না যে, তোমরা মনে মনে বলতে পার, অব্রাহাম আমাদের পিতা; কারণ আমি তোমাদের বলছি, ঈশ্বর এই সব পাথর থেকে অব্রাহামের জন্য সন্তান তৈরী করতে পারেন।
\s5
\v 10 আর এখনই গাছ গুলির শিকড়ে কুড়াল লাগান আছে; অতএব যে কোন গাছে ভালো ফল ধরে না, তা কেটে আগুনে ফেলে দাও য়া যায়।
\v 11 আমি তোমাদের মনপরিবর্ত্তনের জন্য জলে বাপ্তাইজ করছি ঠিকই, কিন্তু আমার পরে যিনি আসছেন, তিনি আমার থেকে শক্তিমান; আমি তাঁর জুতো বহন করারও যোগ্য নই; তিনি তোমাদের পবিত্র আত্মা ও আগুনে বাপ্তাইজ করবেন।
\v 12 তাঁর কুলা তাঁর হাতে আছে, আর তিনি নিজের খামার সুপরিষ্কার করবেন এবং নিজের গম গোলায় সংগ্রহ করবেন, কিন্তু যে আগুন কখন নেভেনা সেই আগুনে তুষকে পুড়িয়ে দেবেন।
\s প্রভু যীশুর বাপ্তিস্ম ও পরীক্ষা।
\s5
\p
\v 13 সেইসময়ে যীশু যোহনের মাধ্যমে বাপ্তাইজিত হবার জন্য গালীল থেকে যর্দ্দনে তাঁর কাছে এলেন।
\v 14 কিন্তু যোহন তাঁকে বারণ করতে লাগলেন, বললেন, আপনার মাধ্যমে আমারই বাপ্তাইজ হওয়া দরকার, আর আপনি আমার কাছে আসছেন?
\v 15 কিন্তু যীশু উত্তর করে তাঁকে বললেন, এখন রাজি হও, কারণ এইভাবে সমস্ত ধার্মিক তা পরিপূর্ণ করা আমাদের উচিত। তখন তিনি তাঁর কথায় রাজি হলেন।
\s5
\v 16 পরে যীশু বাপ্তাইজিত হয়ে অমনি জল থেকে উঠলেন; আর দেখ, তাঁর জন্য স্বর্গ খুলে গেল এবং তিনি ঈশ্বরের আত্মাকে পায়রার মত নেমে নিজের উপরে আসতে দেখলেন।
\v 17 আর দেখ, স্বর্গ থেকে এই বাণী হল, “ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, এতেই আমি সন্তুষ্ঠ।”
\s5
\c 4
\s এতেই আমি সন্তুষ্ট ।’
\p
\v 1 তখন যীশু শয়তানের মাধ্যমে পরীক্ষিত হবার জন্য, আত্মার মাধ্যমে মরুভূমিতে এলেন।
\v 2 আর তিনি চল্লিশ দিনরাত অনাহারে থেকে শেষে ক্ষুধিত হলেন।
\v 3 তখন পরীক্ষক কাছে এসে তাঁকে বলল, “তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে বল, যেন এই পাথরগুলো রুটি হয়ে যায়।”
\v 4 কিন্তু তিনি উত্তর করে বললেন, “লেখা আছে, মানুষ শুধুমাত্র রুটি তে বাঁচবে না, কিন্তু ঈশ্বরের মুখ থেকে যে প্রত্যেক কথা বের হয়, তাতেই বাঁচবে।”
\s5
\v 5 তখন শয়তান তাঁকে পবিত্র শহরে নিয়ে গেল এবং ঈশ্বরের মন্দিরের চূড়ার উপরে দাঁড় করাল,
\v 6 আর তাকে বলল “তুমি যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, তবে নীচে ঝাঁপ দিয়ে পড়, কারণ লেখা আছে, তিনি নিজের দূতদেরকে তোমার বিষয়ে আদেশ দেবেন, আর তাঁরা তোমাকে হাতে করে তুলে নেবেন, যদি তোমার পায়ে পাথরের আঘাত লাগে।”
\s5
\v 7 যীশু তাকে বললেন, “আবার এও লেখা আছে, তুমি নিজের ঈশ্বর প্রভুর পরীক্ষা করো না।”
\v 8 আবার শয়তান তাঁকে অনেক উঁচু এক পর্বতে নিয়ে গেল এবং পৃথিবীর সব রাজ্য ও সেই সবের ঐশ্বর্য দেখাল,
\v 9 আর তাঁকে বলল, “তুমি যদি উবুড় হয়ে আমাকে প্রণাম কর, এই সবই আমি তোমাকে দেব।”
\s5
\v 10 তখন যীশু তাকে বললেন, “দূর হও, শয়তান কারণ লেখা আছে, তোমার ঈশ্বর প্রভুকেই প্রণাম করবে, কেবল তাঁরই আরাধনা করবে।”
\v 11 তখন শয়তান তাঁকে ছেড়ে চলে গেল, আর দেখ, দূতরা কাছে এসে তাঁর সেবা করতে লাগলেন।
\s যীশুর কাজের আরম্ভ।
\m
\s5
\v 12 পরে যোহন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন শুনে, তিনি গালীলে চলে গেলেন;
\v 13 আর নাসরৎ ছেড়ে সমুদ্রতীরে, সবূলূন ও নপ্তালির অঞ্চলে অবস্থিত কফরনাহূমে গিয়ে বাস করলেন;
\s5
\v 14 যেন যিশাইয় ভাববাদীর মাধ্যমে বলা এই কথা পূর্ণ হয়,
\v 15 “সবূলূন দেশ ও নপ্তালি দেশ, সমুদ্রের পথে, যর্দ্দনের অন্যপারে পরজাতিদের গালীল,
\v 16 যে জাতি অন্ধকারে বসেছিল, তারা মহা আলো দেখতে পেল, যারা মৃত্যুর দেশে ও ছায়াতে বসেছিল, তাদের উপরে আলোর উদয় হল।”
\s5
\v 17 সেই থেকে যীশু প্রচার করতে শুরু করলেন; বলতে লাগলেন, ‘মন-পরিবর্তন কর, কারণ স্বর্গ-রাজ্য কাছাকাছি হল।’
\s5
\v 18 একসময় তিনি গালীল সমুদ্রের তীর দিয়ে বেড়াতে বেড়াতে দেখলেন, দুই ভাই, শিমোন, যাকে পিতর বলে ও তার ভাই আন্দ্রিয়- সমুদ্রে জাল ফেলছেন; কারণ তাঁরা জেলে ছিলেন।
\v 19 তিনি তাঁদের বললেন, “আমার পিছনে এস। আমি তোমাদের মানুষ ধরা শেখাব।”
\v 20 আর তখনই তারা জাল ফেলে দিয়ে তাঁকে অনুসরণ করলেন।
\s5
\v 21 পরে তিনি সেখান থেকে আগে গিয়ে দেখলেন, আর দুই ভাই- সিবদিয়ের পুত্র যাকোব ও তাঁর ভাই যোহন- নিজেদের বাবা সিবদিয়ের সাথে নৌকায় বসে জাল ঠিক করছিলেন; তিনি তাঁদের ডাকলেন।
\v 22 আর তখনই তাঁরা নৌকা ও নিজেদের বাবাকে পরিত্যাগ করে তাঁর অনুসরণ করলেন।
\s5
\v 23 পরে যীশু সমস্ত গালীলে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন; তিনি লোকদের সমাজ-ঘরে , সমাজ-ঘরে শিক্ষা দিলেন ও রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করলেন এবং লোকদের সবরকম রোগ ও সবরকম অসুখ ভালো করলেন।
\v 24 আর তাঁর কথা সমস্ত সুরিয়া দেশে ছড়িয়ে পড়ল এবং নানা প্রকার রোগ ও ব্যাধিতে হয়েছে এমন সমস্ত অসুস্থ লোক, ভুত্গ্রস্ত, মৃগীরোগী ও পক্ষাঘাতী লোক সবাই, তাঁর কাছে এলো , আর তিনি তাদের সুস্থ করলেন।
\v 25 আর গালীল, দিকাপলি, যিরুশালেম, যিহূদিয়া ও যর্দ্দনের অন্য পাড় থেকে প্রচুর লোক তাঁকে অনুসরণ করল।
\s5
\c 5
\s প্রভু যীশুর পর্বতে উপদেশ দাও য়া।
\p
\v 1 তিনি প্রচুর লোক দেখে পর্বতে উঠলেন; আর তিনি বসার পর তাঁর শিষ্যেরা তাঁর কাছে এলেন।
\s স্বর্গ রাজ্যের লোক নির্ণয়।
\v 2 তখন তিনি মুখ খুলে তাদের এই শিক্ষা দিতে লাগলেন-
\v 3 ধন্য যারা আত্মাতে গরিব, কারণ স্বর্গ-রাজ্য তাদেরই।
\v 4 ধন্য যারা দুঃখ করে, কারণ তারা সান্ত্বনা পাবে।
\s5
\v 5 ধন্য যারা বিনয়ী, কারণ তারা দেশের অধিকারী হবে।
\v 6 ধন্য যারা ধার্মিকতার জন্য ক্ষুধার্ত ও তৃষ্ণার্ত, কারণ তারা পরিতৃপ্ত হবে।
\v 7 ধন্য যারা দয়াশীল, কারণ তারা দয়া পাবে।
\v 8 ধন্য তারা যাদের মন পরিশুদ্ধ, কারণ তারা ঈশ্বরের দর্শন পাবে।
\s5
\v 9 ধন্য যারা মিলন করে দেয়, কারণ তারা ঈশ্বরের পুত্র বলে পরিচিত হবে।
\v 10 ধন্য যারা ধার্মিকতার জন্য নির্যাতিত হয়েছে, কারণ স্বর্গ-রাজ্য তাদেরই।
\s5
\v 11 ধন্য তোমরা, যখন লোকে আমার জন্য তোমাদের নিন্দা ও নির্যাতন করে এবং মিথ্যা করে তোমাদের বিরুদ্ধে সর্বরকম খারাপ কথা বলে।
\v 12 আনন্দ করো, খুশি হও, কারণ স্বর্গে তোমাদের পুরস্কার প্রচুর; কারণ তোমাদের আগে যে ভাববাদিরা ছিলেন, তাদের তারা সেইভাবে নির্যাতন করত।
\s5
\v 13 তোমরা পৃথিবীর লবণ, কিন্তু লবণের স্বাদ যদি যায়, তবে তা কিভাবে লবণের গুনবিশিষ্ট করা যাবে ? তা আর কোনো কাজে লাগে না, কেবল বাইরে ফেলে দেবার ও লোকের পায়ের তলায় দলিত হবার যোগ্য হয়।
\v 14 তোমরা জগতের আলো; পর্ব্বতের উপরে অবস্থিত শহর গোপন থাকতে পারে না।
\s5
\v 15 আর লোকে প্রদীপ জ্বালিয়ে ঝুড়ির নীচে রাখে না, কিন্তু দীপাধারের উপরেই রাখে, তাতে তা ঘরের সব লোককে আলো দেয়।
\v 16 সেইভাবে তোমাদের আলো মানুষদের সামনে উজ্জ্বল হোক, যেন তারা তোমাদের ভালকাজ দেখে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার গৌরব করে।
\s পুরাতন নিয়ম সম্মন্ধে যীশুর বক্তব্য।
\s5
\v 17 মনে কর না যে, আমি আইন কি ভাববাদিগ্রন্থ ধ্বংস করতে এসেছি; আমি ধ্বংস করতে আসিনি, কিন্তু সম্পূর্ণ করতে এসেছি।
\v 18 কারণ আমি তোমাদের সত্য বলছি, যে পর্য্যন্ত আকাশ ও পৃথিবী লুপ্ত না হবে, সে পর্য্যন্ত আইনের এক মাত্রা কি এক বিন্দুও লুপ্ত হবে না, সবই সফল হবে।
\s5
\v 19 অতএব যে কেউ এই সব ছোট আদেশের মধ্যে কোন একটি আদেশ অমান্য করে ও লোকদেরকে সেইভাবে শিক্ষা দেয়, তাকে স্বর্গরাজ্যে অতি ছোট বলা যাবে; কিন্তু যে কেউ সে সব পালন করে ও শিক্ষা দেয়, তাকে স্বর্গ-রাজ্যে মহান বলা যাবে।
\v 20 কারণ আমি তোমাদের বলছি, ব্যবস্থার শিক্ষক ও ফরীশীদের থেকে তোমাদের ধার্মিক তা যদি বেশী না হয়, তবে তোমরা কোনো মতে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না।
\s5
\v 21 তোমরা শুনেছ, আগের কালের লোকদের কাছে বলা হয়েছিল, “তুমি নরহত্যা কর না,” আর ‘যে নরহত্যা করে, সে বিচারের দায়ে পড়বে’।
\v 22 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ নিজের ভাইয়ের প্রতি রাগ করে, সে বিচারের দায়ে পড়বে; আর যে কেউ নিজের ভাইকে বলে, ‘রে বোকা, সে মহাসভার দায়ে পড়বে। আর যে কেউ বলে “রে মূর্খ” সে নরকের আগুনের দায়ে পড়বে।”
\s5
\v 23 অতএব তুমি যখন যজ্ঞবেদির কাছে নিজের নৈবেদ্য উৎসর্গ করছ, তখন সেই জায়গায় যদি মনে পড়ে যে, তোমার বিরুদ্ধে তোমার ভাইয়ের কোন কথা আছে,
\v 24 তবে সেই জায়গায় বেদির সামনে তোমার নৈবেদ্য রাখ, আর চলে যাও, প্রথমে তোমার ভাইয়ের সাথে আবার মিলিত হও, পরে এসে তোমার নৈবেদ্য উৎসর্গ কর।
\s5
\v 25 তুমি যখন বিপক্ষের সঙ্গে পথে থাক, তখন তার সাথে তাড়াতাড়ি মিল কর, যদি বিপক্ষ তোমাকে বিচারকের হাতে তুলে দেয় ও বিচারক তোমাকে রক্ষীর হাতে তুলে দেয়, আর তুমি কারাগারে বন্দী হও।
\v 26 আমি তোমাকে সত্য বলছি, যতক্ষণ না পর্য্যন্ত শেষ কড়িটা পরিশোধ না করবে, ততক্ষণ তুমি কোন মতে সেখান থেকে বাইরে আসতে পারবে না।
\s5
\v 27 তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল,
\v 28 “তুমি ব্যভিচার করও না।” কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ কোনো স্ত্রীলোকের দিকে লালসাপূর্ণ ভাবে দেখে, সে তখনই মনে মনে তার সাথে ব্যভিচার করল।
\s5
\v 29 আর তোমার ডান চোখ যদি তোমায় পাপ করায়, তবে তা উপড়ে দূরে ফেলে দাও; কারণ তোমার সমস্ত শরীর নরকে যাওয়া চেয়ে বরং এক অঙ্গ নষ্ট হওয়া তোমার পক্ষে ভাল।
\v 30 আর তোমার ডান হাত যদি তোমাকে পাপ করায়, তবে তা কেটে দূরে ফেলে দাও; কারণ তোমার সমস্ত শরীর নরকে যাওয়ার চেয়ে বরং এক অঙ্গ নষ্ট হওয়া তোমার পক্ষে ভাল।
\s5
\v 31 আর বলা হয়েছিল, “যে কেউ নিজের স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে, সে তাকে ত্যাগপত্র দিক।”
\v 32 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ ব্যভিচার ছাড়া অন্য কারণে নিজের স্ত্রীকে পরিত্যাগ করে, সে তাকে ব্যাভিচারিনী করে; এবং যে ব্যক্তি সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিবাহ করে, সে ব্যভিচার করে।
\s5
\v 33 আবার তোমরা শুনেছ, আগের কালের লোকদের কাছে বলা হয়েছিল, ‘তুমি মিথ্যা দিব্যি কর না, কিন্তু প্রভুর উদ্দেশ্যে তোমার সমস্ত প্রতিজ্ঞা পালন কর।’
\v 34 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, কোন দিব্যিই কর না; স্বর্গের দিব্যি কর না, কারণ তা ঈশ্বরের সিংহাসন এবং পৃথিবীর দিব্যি কর না, কারণ তা তাঁর পা রাখার জায়গা;
\v 35 আর যিরুশালেমের দিব্যি কর না, কারণ তা মহান রাজার শহর।
\s5
\v 36 আর তোমার মাথার দিব্যি কর না, কারণ একগাছা চুল সাদা কি কালো করবার সাধ্য তোমার নেই।
\v 37 কিন্তু তোমাদের কথা হাঁ, হাঁ, না, না, হোক; এর বেশী যা, তা খারাপ থেকে জন্মায়।
\s5
\v 38 তোমরা শুনেছ বলা হয়েছিল, “চোখের বদলে চোখ ও দাঁতের বদলে দাঁত।”
\v 39 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা দুষ্টু লোককে বাধা দিয়ো না; বরং যে কেউ তোমার ডান গালে চড় মারে, অন্য গাল তার দিকে ফিরিয়ে দাও ।
\s5
\v 40 আর যে তোমার সাথে বিচারের জায়গায় ঝগড়া করে তোমার পোষাক নিতে চায়, তাকে তোমার অন্তর্বাসও দিয়ে দাও।
\v 41 আর যে কেউ এক মাইল যেতে তোমাকে জোর করে, তার সঙ্গে দুই মাইল যাও।
\v 42 যে তোমার কাছে কিছু চায়, তাকে দাও এবং যে তোমার কাছে ধার চায়, তা থেকে বিমুখ হয়ো না।
\s5
\v 43 তোমরা শুনেছ, বলা হয়েছিল, “তোমার প্রতিবেশীকে প্রেম করবে, এবং তোমার শত্রুকে ঘৃণা করবে।”
\v 44 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমরা নিজের নিজের শত্রুদেরকে ভালোবেসো এবং যারা তোমাদের ঘৃণা করে, তাদের জন্য প্রার্থনা কর;
\v 45 যেন তোমরা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার সন্তান হও, কারণ তিনি ভাল মন্দ লোকদের উপরে নিজের সূর্য উদয় করেন এবং ধার্মিক অধার্মিক দের উপরে বৃষ্টি দেন।
\s5
\v 46 কারণ যারা তোমাদের ভালবাসে, তাদের ই প্রেম করলে তোমাদের কি পুরস্কার হবে ? কর আদায়কারিরাও কি সেই মত করে না ?
\v 47 আর তোমরা যদি কেবল নিজের নিজের ভাইদেরকে শুভেচ্ছা জানাও, তবে বেশী কি কাজ কর ? পরজাতীয়েরাও কি সেইভাবে করে না ?
\v 48 অতএব তোমাদের স্বর্গীয় পিতা যেমন সিদ্ধ, তোমরাও তেমনি সিদ্ধ হও।
\s5
\c 6
\s দান ও প্রার্থনার বিষয়ে শিক্ষা।
\p
\v 1 সাবধান, লোককে দেখাবার জন্য তাদের সামনে তোমাদের ধর্ম-কর্ম্ কর না, করলে তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার কাছে তোমাদের পুরস্কার নেই
\v 2 অতএব তুমি যখন দান কর, তখন তোমার সামনে তুরী বাজিও না, যেমন ভন্ডরা লোকের কাছে গৌরব পাবার জন্য সমাজ-ঘরে ও পথে করে থাকে; আমি তোমাদের সত্য বলছি, তারা নিজেদের পুরস্কার পেয়েছে।
\s5
\v 3 কিন্তু তুমি যখন দান কর, তখন তোমরা ডান হাত কি করছে, তা তোমার বাঁ হাতকে জানতে দিও না।
\v 4 এইভাবে তোমার দান যেন গোপন হয়; তাতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে দেখেন, তিনি তোমাকে ফল দেবেন।
\s5
\v 5 আর তোমরা যখন প্রার্থনা কর, তখন ভন্ডদের মত হয়ো না; কারণ তারা সমাজ-ঘরে ও পথের কোণে দাঁড়িয়ে লোক দেখানো প্রার্থনা করতে ভালবাসে; আমি তোমাদের সত্য বলছি, তারা নিজেদের পুরস্কার পেয়েছে।
\v 6 কিন্তু তুমি যখন প্রার্থনা কর, তখন তোমার ঘরের ভেতরে প্রবেশ করো, আর দরজা বন্ধ করে তোমার পিতা, যিনি গোপনে বর্তমান, তাঁর কাছে প্রার্থনা করো; তাতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে দেখেন, তিনি তোমাকে ফল দেবেন।
\v 7 আর প্রার্থনার সময় তোমরা অর্থহীন কথা বার বার বলো না, যেমন জাতিগণ করে থাকে; কারণ তারা মনে করে, বেশী কথা বললেই তাদের প্রার্থনার উত্তর পাবে।
\s5
\v 8 অতএব তোমরা তাদের মত হয়ো না, কারণ তোমাদের কি কি প্রয়োজন, তা চাওয়ার আগে তোমাদের পিতা জানেন।
\v 9 অতএব তোমরা এইভাবে প্রার্থনা করো; হে আমাদের স্বর্গস্থ পিতঃ, তোমার নাম পবিত্র বলে মান্য হোক,
\v 10 তোমার রাজ্য আসুক, তোমার ইচ্ছা সিদ্ধ হোক যেমন স্বর্গে তেমনি পৃথিবীতেও হোক;
\s5
\v 11 আমাদের প্রয়োজনীয় খাদ্য আজ আমাদেরকে দাও;
\v 12 আর আমাদের অপরাধ সব ক্ষমা কর, যেমন আমরাও নিজের নিজের অপরাধীদেরকে ক্ষমা করেছি;
\v 13 আর আমাদেরকে পরীক্ষাতে এনো না, কিন্তু খারাপ থেকে রক্ষা কর।
\s5
\v 14 কারণ তোমরা যদি লোকের অপরাধ ক্ষমা কর, তবে তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তোমাদের ও ক্ষমা করবেন।
\v 15 কিন্তু তোমরা যদি লোকদেরকে ক্ষমা না কর, তবে তোমাদের পিতা তোমাদেরও অপরাধ ক্ষমা করবেন না।
\s5
\v 16 আর তোমরা যখন উপবাস কর, তখন ভন্ডদের মত বিষন্ন মুখ করে থেকো না; কারণ তারা লোককে উপবাস দেখাবার জন্য নিজেদের মুখ শুকনো করে; আমি তোমাদের সত্য বলছি, তারা নিজেদের পুরস্কার পেয়েছে।
\v 17 কিন্তু তুমি যখন উপবাস কর, তখন মাথায় তেল মেখ এবং মুখ ধুয়ো;
\v 18 যেন লোকে তোমার উপবাস দেখতে না পায়, কিন্তু তোমার পিতা, যিনি গোপনে বর্তমান, তিনিই দেখতে পান; তাতে তোমার পিতা, যিনি গোপনে দেখেন, তিনি তোমাকে ফল দেবেন।
\s স্বর্গে অর্থ সঞ্চয় করবার কথা।
\s5
\v 19 তোমরা পৃথিবীতে নিজেদের জন্য অর্থ সঞ্চয় কর না; এখানে তো পোকায় ও মর্চ্চ্যায় ক্ষয় করে এবং এখানে চোরে সিঁধ কেটে চুরি করে।
\v 20 কিন্তু স্বর্গে নিজেদের জন্য অর্থ সঞ্চয় কর; সেখানে পোকায় ও মর্চ্চ্যায় ক্ষয় করে না, সেখানে চোরেও সিঁধ কেটে চুরি করে না।
\v 21 কারণ যেখানে তোমার অর্থ, সেখানে তোমার মনও থাকবে।
\s5
\v 22 চোখই শরীরের প্রদীপ; অতএব তোমার চোখ যদি নির্মল হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর আলোময় হবে।
\v 23 কিন্তু তোমার চোখ যদি অশুচি হয়, তবে তোমার সমস্ত শরীর অন্ধকারময় হবে। অতএব তোমার হৃদয়ের আলো যদি অন্ধকার হয়, সেই অন্ধকার কত বড়।
\v 24 কেউই দুই কর্তার দাসত্ব করতে পারে না; কারণ সে হয় তো এক জনকে ঘৃণা করবে, আর এক জনকে ভালবাসবে, নয় তো এক জনের প্রতি অনুগত হবে, আর এক জনকে তুচ্ছ করবে; তোমরা ঈশ্বর এবং ধন দুইয়েরই দাসত্ব করতে পার না।
\s ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখবার কথা।
\s5
\v 25 এই জন্য আমি তোমাদের বলছি, ‘কি খাবার খাব, কি পান করব’ বলে প্রাণের বিষয়ে, কিম্বা ‘কি পরব’ বলে শরীরের বিষয়ে ভেবো না; খাদ্য থেকে প্রাণ ও কাপড় থেকে শরীর কি বড় বিষয় নয় ?
\v 26 আকাশের পাখিদের দিকে তাকাও, তারা বোনেও না, কাটেও না, গোলাঘরে জমাও করে না, তা সত্ত্বেও তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তাদের খাবার দিয়ে থাকেন; তোমরা কি তাদের থেকে অনেক বেশী শ্রেষ্ঠ নও ?
\s5
\v 27 আর তোমাদর মধ্যে কে ভেবে নিজের বয়স এক হাতমাত্র বাড়াতে পারে ?
\v 28 আর পোশাকের বিষয়ে কেন চিন্তা কর ? মাঠের কানুড় ফুলের বিষয়ে চিন্তা কর, সেগুলি কেমন বাড়ে; সে সকল পরিশ্রম করে না, সুতোও কাটে না;
\v 29 তা সত্ত্বেও আমি তোমাদের বলছি, শলোমনও নিজের সমস্ত জাঁকজমকে এর একটির মত সুসজ্জিত ছিলেন না।
\s5
\v 30 ভাল, মাঠের যে ঘাস আজ আছে ও কাল উনুনে ফেলে দাও য়া যাবে, তা যদি ঈশ্বর এরূপ সাজান, তবে হে অল্প বিশ্বাসীরা, তোমাদের কি আরও বেশী সুন্দর করে সাজাবেন না?
\v 31 অতএব এই বলে ভেবো না যে,
\s5
\v 32 ‘কি খাবার খাব ? বা ‘কি পান করব ? বা কি পরব ? কারণ পরজাতীয়েরাই এই সব বিষয় চেষ্টা করে থাকে; তোমাদের স্বর্গীয় পিতা তো জানেন যে, এই সব জিনিসে তোমাদের প্রয়োজন আছে।
\v 33 কিন্তু তোমরা প্রথমে তাঁর রাজ্য ও তাঁর ধার্মিকতার বিষয়ে চেষ্টা কর, তা হলে ঐ সব জিনিসও তোমাদের দাও য়া হবে।
\v 34 অতএব কালকের জন্য ভেবো না, কারণ কাল নিজের বিষয় নিজেই ভাববে; দিনের কষ্ট দিনের জন্যই যথেষ্ট।
\s5
\c 7
\s পরের বিচার ।
\p
\v 1 তোমরা বিচার করো না, যেন বিচারিত না হও।
\v 2 কারণ যেরকম বিচারে তোমরা বিচার কর, সেইরকম বিচারে তোমরাও বিচারিত হবে; এবং যে পরিমাণে পরিমাপ কর, সেই পরিমাণে তোমাদের জন্য পরিমাপ করা যাবে।
\s5
\v 3 আর তোমার ভাইয়ের চোখে যে কুটো আছে, তাই কেন দেখছ, কিন্তু তোমার নিজের চোখে যে কড়িকাঠ আছে, তা কেন ভেবে দেখছ না ?
\v 4 অথবা তুমি কেমন করে নিজের ভাইকে বলবে, এস, আমি তোমার চোখ থেকে কুটোটা বের করে দিই ? আর দেখ, তোমার নিজের চোখে কড়িকাট রয়েছে।
\v 5 হে ভন্ড, আগে নিজের চোখ থেকে কড়িকাট বের করে ফেল, আর তখন তোমার ভাইয়ের চোখ থেকে কুটোটা বের করবার জন্য স্পষ্ট দেখতে পাবে।
\s5
\v 6 পবিত্র জিনিস কুকুরদেরকে দিও নাএবং তোমাদের মুক্তা শূকরদের সামনে ফেলো না; যদি তারা পা দিয়ে তা দলায় এবং ফিরে তোমাদের টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলে ।
\s প্রার্থনার কথা।
\s5
\v 7 চাইতে থাক, তোমাদের দাও য়া যাবে; খোঁজ কর, পাবে; দরজায় আঘাত কর, তোমাদের জন্য খুলে দাও য়া যাবে।
\v 8 কারণ যে চায়, সে গ্রহণ করে এবং যে খোঁজ করে, সে পায়; আর যে আঘাত করে, তার জন্য খুলে দাও য়া যাবে।
\v 9 তোমাদের মধ্যে এমন লোক কে যে, নিজের পুত্র রুটি চাইলে তাকে পাথর দেবে,
\v 10 কিংবা মাছ চাইলে তাকে সাপ দেবে ?
\s5
\v 11 অতএব তোমরা খারাপ হয়েও যদি তোমাদের সন্তানদেরকে ভালো ভালো জিনিস দিতে জান, তবে কত না বেশী , তোমাদের স্বর্গস্থ পিতা, যারা তাঁর কাছে চায়, তাদের ভালো ভালো জিনিস দেবেন।
\v 12 অতএব সববিষয়ে তোমরা যা যা ইচ্ছা কর যে, লোকে তোমাদের প্রতি করে, তোমরাও তাদের প্রতি সেইরকম কর; কারণ এটাই আইনের ও ভাববাদী গ্রন্থের মূল বিষয় ।
\s স্বর্গ-পথে চলবার কথা
\s5
\v 13 সরু দরজা দিয়ে প্রবেশ কর; কারণ সর্বনাশে যাবার দরজা চওড়া ও পথ চওড়াএবং অনেকেই তা দিয়ে প্রবেশ করে;
\v 14 কারণ জীবনে যাবার দরজা সরু ও পথ কঠিনএবং অল্প লোকেই তা পায়।
\s5
\v 15 নকল ভাববাদীদের থেকে সাবধান; তারা মেষের বেশে তোমাদের কাছে আসে, কিন্তু ভিতরে গ্রাসকারী নেকড়ে বাঘ।
\v 16 তোমরা তাদের ফলের মাধ্যমে তাদের চিনতে পারবে। লোকে কি কাঁটাগাছ থেকে দ্রাক্ষাফল, কিংবা শিয়ালকাঁটা থেকে ডুমুরফল জোগাড় করে?
\v 17 সেই প্রকারে প্রত্যেক ভাল গাছে ভাল ফল ধরে, খারাপ গাছে খারাপ ফল ধরে।
\s5
\v 18 ভাল গাছে খারাপ ফল ধরতে পারে না এবং খারাপ গাছে ভাল ফল ধরতে পারে না।
\v 19 যে কোন গাছে ভাল ফল ধরে না, তা কেটে আগুনে ফেলে দাও য়া যায়।
\v 20 অতএব তোমরা ওদের ফলের মাধ্যমে ওদেরকে চিনতে পারবে।
\s5
\v 21 যারা আমাকে হে প্রভু, হে প্রভু বলে, তারা সবাই যে স্বর্গরাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে , এমন নয়, কিন্তু যে ব্যক্তি আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই পারবে।
\v 22 সেই দিন অনেকে আমাকে বলবে, হে প্রভু, হে প্রভু, আপনার নামেই আমরা কি ভাববাণী বলি নি ? আপনার নামেই কি ভূত ছাড়াই নি ? আপনার নামেই কি অনেক আশ্চর্য্য কাজ করি নি ?
\v 23 তখন আমি তাদের স্পষ্টই বলব, আমি কখনও তোমাদের জানি না; হে অধর্ম্মাচারীরা, আমার কাছ থেকে দূর হও।
\s5
\v 24 অতএব যে কেউ আমার এই সব কথা শুনে পালন করে, তাকে এমন এক জন বুদ্ধিমান লোক বলা যাবে, যে পাথরের উপরে নিজের ঘর তৈরী করল।
\v 25 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এলো, বাতাস বয়ে গেল এবং সেই ঘরে লাগল, তা সত্ত্বেও তা পড়ল না, কারণ পাথরের উপরে তার ভিত্তিমূল স্থাপিত হয়েছিল।
\s5
\v 26 আর যে কেউ আমার এই সব কথা শুনে পালন না করে, সে এমন একজন বোকা লোকের মত, যে বালির উপরে নিজের ঘর তৈরী করল।
\v 27 পরে বৃষ্টি নামল, বন্যা এলো, বাতাস বয়ে গেল এবং সেই ঘরে আঘাত করল, তাতে তা পড়ে গেল ও তার পতন ঘোরতর হল।
\s5
\v 28 যীশু যখন এই সব কথা শেষ করলেন, লোকরা তাঁর শিক্ষায় চমৎকৃত হল;
\v 29 কারণ তিনি ক্ষমতাপন্ন ব্যক্তির মত তাদের শিক্ষা দিতেন, তাদের ব্যবস্তার শিক্ষকদের মত নয়।
\s5
\c 8
\s যীশুর নানাধরনের অলৌকিক কাজ।
\p
\v 1 তিনি পাহাড় থেকে নামলে প্রচুর লোক তাঁকে অনুসরণ করল।
\s যীশু এক জন কুষ্ঠ রোগীকে সুস্থ করেন।
\v 2 আর দেখ, এক জন কুষ্ঠ রোগী কাছে এসে তাঁকে প্রণাম করে বলল, হে প্রভু, যদি আপনার ইচ্ছা হয়, আমাকে ভালো করতে পারেন।
\v 3 তখন তিনি হাত বাড়িয়ে তাকে স্পর্শ করলেন, বললেন, “আমার ইচ্ছা, তুমি ভালো হয়ে যাও,” আর তখনই সে কুষ্ঠ রোগ থেকে ভালো হয়ে গেল।
\s5
\v 4 পরে যীশু তাকে বললেন, “দেখ, এই কথা কাউকেও বলো না; কিন্তু যাজকের কাছে গিয়ে নিজেকে দেখাও এবং মোশির আদেশমত উপহার দাও, তাদের কাছে সাক্ষ্য দেবার জন্য।”
\s যীশু একজন শতপতির দাসকে সুস্থ করেন।
\s5
\v 5 আর তিনি কফরনাহূমে প্রবেশ করলে এক জন শতপতি তাঁর কাছে এসে বিনতি করে বললেন,
\v 6 হে প্রভু, আমার দাস ঘরে পক্ষাঘাতে পড়ে আছে, ভীষণ যন্ত্রণা পাচ্ছে।
\v 7 যীশু তাকে বললেন, আমি গিয়ে তাকে সুস্থ করব।
\s5
\v 8 শতপতি উত্তর করলেন, হে প্রভু, আমি এমন যোগ্য নই যে, আপনি আমার বাড়িতে আসেন; কেবল কথায় বলুন, তাতেই আমার দাস সুস্থ হবে।
\v 9 কারণ আমাকেও অপরের কথা মত চলতে হয়, আবার সেনারা আমার কথা মত চলে ; আমি তাদের এক জনকে ‘যাও’ বললে সে যায় এবং অন্যকে ‘এস’ বললে সে আসে, আর আমার দাসকে ‘এই কাজ কর’ বললে সে তা করে।
\v 10 এই কথা শুনে যীশু অবাক হলেন এবং যারা পিছন পিছন আসছিল, তাদের বললেন, আমি তোমাদের সত্য বলছি, ইস্রায়েলের মধ্যে কারো এত বড় বিশ্বাস দেখতে পাইনি।
\s5
\v 11 আর আমি তোমাদের বলছি, অনেকে পূর্ব ও পশ্চিম দিক থেকে আসবে এবং অব্রাহাম, ইসহাক, যাকোবের সাথে স্বর্গ রাজ্যে একসঙ্গে বসবে;
\v 12 কিন্তু রাজ্যের সন্তানদেরকে বাইরের অন্ধকারে ফেলে দাও য়া যাবে; সেই জায়গায় কান্নাকাটি ও দাঁতে দাঁতে ঘসবে ।
\v 13 পরে যীশু সেই শতপতিকে বললেন, চলে যাও, যেমন বিশ্বাস করলে, তেমনি তোমার প্রতি হোক। আর সেই সময়েই তার দাস সুস্থ হল।
\s যীশু পিতরের শাশুড়ীর জ্বর ভাল করেন।
\s5
\v 14 আর যীশু পিতরের ঘরে এসে দেখলেন, তাঁর শাশুড়ী বিছানায় শুয়ে আছে কারণ তাঁর জ্বর হয়েছে।
\v 15 পরে তিনি তাঁর হাত স্পর্শ করলেন, আর জ্বর ছেড়ে গেল; তখন তিনি উঠে যীশুর সেবা করতে লাগলেন।
\s5
\v 16 সন্ধ্যা হলে লোকেরা অনেক ভূতগ্রস্তকে তাঁর কাছে আনল, তাতে তিনি বাক্যের মাধ্যমে সেই আত্মাদেরকে ছাড়ালেন এবং সব অসুস্থ লোককে সুস্থ করলেন;
\v 17 যেন যিশাইয় ভাববাদীর দ্বারা বলা কথা পূর্ণ হয়, “তিনি নিজে আমাদের দুর্বলতা সব গ্রহন করলেন ও রোগ সব বহন করলেন।”
\s5
\v 18 আর যীশু নিজের চারদিকে প্রচুর লোক দেখে গালীল সাগরের অন্য পারে যেতে আদেশ দিলেন ।
\v 19 তখন এক জন ধর্ম-শিক্ষক এসে তাঁকে বললেন, হে গুরু, আপনি যে কোনো জায়গায় যাবেন, আমি আপনার পিছন পিছন যাব।
\v 20 যীশু তাঁকে বললেন, শিয়ালদের গর্ত আছে এবং আকাশের পাখিদের বাসা আছে; কিন্তু মানবপুত্রের মাথা রাখবার জায়গা নেই।
\s5
\v 21 শিষ্যদের মধ্যে আর এক জন তাঁকে বললেন, হে প্রভু, আগে আমার পিতাকে কবর দিয়ে আসতে অনুমতি দিন ।
\v 22 কিন্তু যীশু তাঁকে বললেন, আমার পিছনে এস; মৃতেরাই নিজের নিজের মৃতদের কবর দিক।
\s যীশু ঝড় থামান।
\s5
\p
\v 23 আর তিনি নৌকায় উঠলে তাঁর শিষ্যরা তাঁর পিছনে গেলেন।
\v 24 আর দেখ, সমুদ্রে ভীষণ ঝড় উঠল, এমন কি, নৌকার উপর ঢেউ; কিন্তু যীশু তখন ঘুমোছিলেন।
\v 25 তখন শিষ্যরা তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে জাগিয়ে বললেন, হে প্রভু, আমাদের বাঁচান , আমরা মারা গেলাম।
\s5
\v 26 তিনি তাদের বললেন, হে অল্প বিশ্বাসীরা, কেন তোমরা এত ভয় পাচ্ছ ? তখন তিনি উঠে বাতাস ও সমুদ্রকে ধমক দিলেন; তাতে থেমে গেল।
\v 27 আর সেই লোকেরা অবাক হয়ে বললেন, আঃ! ইনি কেমন লোক, বাতাস ও সমুদ্রও যে এর আদেশ মানে !
\s যীশু দুজন লোকের থেকে ভূত ছাড়ান।
\s5
\v 28 পরে তিনি অন্যপারে গাদারীয়দের দেশে গেলে দুই জন ভূতগ্রস্থ লোক কবরস্থান থেকে বের হয়ে তাঁর সামনে উপস্থিত হল; তারা এত ভয়ংকর ছিল যে, ঐ পথ দিয়ে কেউই যেতে পারত না।
\v 29 আর দেখ, তারা চেঁচিয়ে উঠল, বলল, হে ঈশ্বরের পুত্র, আপনার সাথে আমাদের সম্পর্ক কি? আপনি কি নিদ্দিষ্ট সময়ের আগে আমাদের যন্ত্রণা দিতে এখানে এলেন ?
\s5
\v 30 তখন তাদের থেকে কিছু দূরে বড় এক শূকর পাল চরছিল।
\v 31 তাতে ভূতেরা বিনতি করে তাঁকে বলল, যদি আমাদেরকে ছাড়ান, তবে ঐ শূকর-পালে পাঠিয়ে দিন।
\v 32 তিনি তাদের বললেন, চলে যাও। তখন তারা বের হয়ে সেই শূকর-পালের মধ্যে প্রবেশ করল; আর দেখ, সমস্ত শূকর খুব জোরে ঢালু পাড় দিয়ে দৌড়িয়ে গিয়ে সমুদ্রে পড়ল, ও জলে ডুবে মারা গেল ।
\s5
\v 33 তখন পালকেরা পালিয়ে গেলএবং শহরে গিয়ে সব বিষয়, বিশেষভাবে সেই ভূতগ্রস্থের বিষয় বর্ণনা করল।
\v 34 আর দেখ, শহরের সব লোক যীশুর সাথে দেখা করবার জন্য বের হয়ে এলো এবং তাঁকে দেখে নিজেদের জায়গা থেকে চলে যেতে বিনতি করল।
\s5
\c 9
\s যীশু একজন পক্ষাঘাতীকে আরোগ্য করেন, ও তাহার পাপ ক্ষমা করেন।
\p
\v 1 পরে তিনি নৌকায় উঠে পার হলেন এবং নিজের শহরে এলেন। আর দেখ, কয়েকটি লোক তাঁর কাছে এক জন পক্ষাঘাতীকে আনল, সে খাটের উপরে শোয়ানো ছিল।
\v 2 যীশু তাদের বিশ্বাস দেখে সেই পক্ষাঘাতীকে বললেন, বৎস, সাহস কর, তোমার পাপের ক্ষমা হল।
\s5
\v 3 আর দেখ, কয়েকজন ধর্ম-শিক্ষকরা মনে মনে বলল, “এ ব্যক্তি ঈশ্বর নিন্দা করছে।”
\v 4 তখন যীশু তাদের চিন্তা বুঝতে পেরে বললেন, “তোমরা মনে মনে কেন কুচিন্তা করছ ?
\v 5 কারণ কোনটা সহজ, ‘তোমার পাপ ক্ষমা হল’ বলা, না ‘তুমি উঠে বেড়াও’ বলা ?
\v 6 কিন্তু পৃথিবীতে পাপ ক্ষমা করতে মানবপুত্রের ক্ষমতা আছে, এটা যেন তোমরা জানতে পার,” এই জন্য তিনি সেই পক্ষাঘাতীকে বললেন “ওঠ, তোমার বিছানা তুলে নাও এবং তোমার ঘরে চলে যাও।”
\s5
\v 7 তখন সে উঠে নিজের ঘরে চলে গেল।
\v 8 তা দেখে সব লোক ভয় পেয়ে গেল, আর ঈশ্বর মানুষকে এমন ক্ষমতা দিয়েছেন বলে তার গৌরব করল।
\s মথির আহ্বান। সেই বিষয়ে যীশুর শিক্ষা।
\p
\v 9 সেই জায়গা থেকে যেতে যেতে যীশু দেখলেন, মথি নামে এক ব্যক্তি কর আদায়ের জায়গায় বসে আছে; তিনি তাকে বললেন, “আমার পিছনে এস।” তাতে সে উঠে তাঁকে অনুসরণ করল।
\s5
\v 10 পরে তিনি ঘরের মধ্যে খাবার খেতে বসেছেন, আর দেখ, অনেক কর আদায়কারী ও পাপী লোকেরা এসে যীশুর এবং তাঁর শিষ্যদের সাথে বসল।
\v 11 তা দেখে ফরীশীরা তাঁর শিষ্যদের বলল, তোমাদের গুরু কেন কর আদায়কারী ও পাপীদের সাথে খাবার খান ?
\s5
\v 12 তা শুনে তিনি বললেন, সুস্থ লোকদের চিকিৎসকের প্রয়োজন নেই, বরং অসুস্থদেরই প্রয়োজন আছে।
\v 13 কিন্তু তোমরা গিয়ে শেখো, এই কথার মানে কি, “আমি দয়াই চাই, বলিদান নয়”; কারণ আমি ধার্মিকদের নয়, কিন্তু পাপীদেরকে ডাকতে এসেছি।
\s5
\v 14 তখন যোহনের শিষ্যরা তাঁর কাছে এসে বলল, "ফরীশীরা ও আমরা অনেক বার উপবাস করি, কিন্তু আপনার শিষ্যরা উপবাস করে না, এর কারণ কি ?"
\v 15 যীশু তাদের বললেন, "বর সঙ্গে থাকতে কি বাসরঘরের লোকে দুঃখ করতে পারে ?" কিন্তু এমন সময় আসবে, যখন তাদের কাছ থেকে বর চলে যাবেন; তখন তারা উপবাস করবে।
\s5
\v 16 পুরাতন কাপড়ে কেউ নতুন কাপড়ের তালী দেয় না, কারণ তার তালীতে কাপড় ছিঁড়ে যায়এবং আরও খারাপ ছিদ্র হয়।
\s5
\v 17 আর লোকে পুরাতন চামড়ার থলিতে নতুন আঙুরেররস রাখে না; রাখলে চামড়ার থলিগুলি ফেটে যায়, তাতে দ্রাক্ষারস পড়ে যায়, চামড়ার থলিগুলিও নষ্ট হয়; কিন্তু লোকে নূতন চামড়ার থলিতে টাটকা দ্রাক্ষারস রাখে, তাতে উভয়েরই রক্ষা হয়।
\s যীশু এক অসুস্থ স্ত্রীলোককে সুস্থ করেন, ও একটি মৃত মেয়েকে জীবন দেন।
\s5
\p
\v 18 তিনি তাদের এই সব কথা বলছেন, আর দেখ, এক জন তত্ত্বাবধায়ক এসে তাঁকে প্রণাম করে বললেন, আমার মেয়েটি এতক্ষনে মারা গিয়েছে; কিন্তু আপনি এসে তার উপরে হাত রাখুন, তাতে সে বাঁচবে।
\v 19 তখন যীশু উঠে তাঁর পিছনে গেলেন, তাঁর শিষ্যরাও চললেন।
\s5
\v 20 আর দেখ, বারো বছর ধরে রক্তস্রাব রোগগ্রস্ত একটি স্ত্রীলোক তাঁর পিছন দিকে এসে তাঁর পোশাকের ঝালর স্পর্শ করল;
\v 21 কারণ সে মনে মনে বলছিল, ওনার পোশাক মাত্র স্পর্শ করতে পারলেই আমি সুস্থ হব।
\v 22 তখন যীশু মুখ ফিরিয়ে তাকে দেখে বললেন, বৎসে, সাহস কর, তোমার বিশ্বাস তোমাকে সুস্থ করল। সেই সময়ে স্ত্রীলোকটী সুস্থ হল।
\s5
\v 23 পরে যীশু সেই তত্ত্বাবধায়কের বাড়িতে এসে যখন দেখলেন, বংশীবাদকরা রয়েছে, ও লোকেরা হৈ-চৈ করছে,
\v 24 তখন যীশু বললেন, সরে যাও, মেয়েটী তো মরে যায় নি, ঘুমিয়ে রয়েছে। তখন তারা তাঁকে ঠাট্টা করল।
\s5
\v 25 কিন্তু লোকদেরকে বের করে দাও য়া হলে তিনি ভিতরে গিয়ে মেয়েটীর হাত ধরলেন, তাতে সে উঠে বসল ।
\v 26 আর এই কথা সেই দেশে ছড়িয়ে পড়ল।
\s যীশু দুই জন অন্ধকে ও এক জন বোবাকে সুস্থ করেন।
\s5
\v 27 পরে যীশু সেখান থেকে প্রস্থান করলে, দুই জন অন্ধ তাঁকে অনুসরণ করছিল; তারা চেঁচিয়ে বলতে লাগল, "হে দায়ূদ-সন্তান, আমাদের প্রতি দয়া করুন।"
\v 28 তিনি ঘরের মধ্যে প্রবেশ করলে পর সেই অন্ধেরা তাঁর কাছে এলো; তখন যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কি বিশ্বাস কর যে, আমি এটা করতে পারি ?” তারা তাঁকে বলল, “হ্যাঁ হয় প্রভু।”
\s5
\v 29 তখন তিনি তাদের চোখ স্পর্শ করলেন, আর বললেন, “তোমাদের বিশ্বাস অনুসারে তোমাদের প্রতি হোক।” তখন তাদের চোখ খুলে গেল।
\v 30 আর যীশু তাদের দৃঢ়ভাবে নিষেধ করে দিলেন, বললেন, “দেখ, যেন কেউ এটা জানতে না পায়।”
\v 31 কিন্তু তারা বাইরে গিয়ে সেই দেশের সমস্ত জায়গায় তাঁর বিষয়ে বলতে লাগল।
\s5
\v 32 তারা বাইরে যাচ্ছে, আর দেখ, লোকেরা এক ভূতগ্রস্থ বোবাকে তাঁর কাছে আনল।
\v 33 ভূত ছাড়ানো হলে সেই বোবা কথা বলতে লাগল; তখন সব লোক অবাক হয়ে বলল, “ইস্রায়েলের মধ্যে এমন কখনও দেখা যায়নি।”
\v 34 কিন্তু ফরীশীরা বলতে লাগল, “ভূতদের অধিপতির মাধ্যমে সে ভূত ছাড়ায়।” যীশু বারো জন শিষ্যকে প্রেরিতপদে নিযুক্ত করেন।
\s5
\v 35 আর যীশু সব নগর ও গ্রামে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন; তিনি লোকদের সমাজ ঘরে উপদেশ দিলেন ও রাজ্যের সুসমাচার প্রচার করলেনএবং সবরকম রোগ ও সবরকম অসুখ থেকে সুস্থ করলেন।
\v 36 কিন্তু প্রচুর লোক দেখে তাদের প্রতি যীশুর করুনা হল, কারণ তারা ব্যাকুল হয়ে ছড়িয়েছিটিয়ে ছিল, যেন পালকবিহীন মেষপাল।
\s5
\v 37 তখন তিনি নিজের শিষ্যদেরকে বললেন, ফসল প্রচুর বটে, কিন্তু কাটার লোক অল্প;
\v 38 এইজন্য ফসলের মালিকের কাছে অনুরোধ কর, যেন তিনি নিজের ফসল কাটার জন্য লোক পাঠিয়ে দেন।
\s5
\c 10
\p
\v 1 পরে তিনি নিজের বারো জন শিষ্যকে কাছে ডেকে তাঁদের অশুচী আত্মাদের উপরে ক্ষমতা দিলেন, যেন তাঁরা তাদের ছাড়াতেএবং সবরকম রোগ-ব্যাধি থেকে সুস্থ করতে পারেন।
\s5
\v 2 সেই বারো জন প্রেরিতের নাম এই- প্রথম, শিমোন, যাঁকে পিতর বলেএবং তাঁর ভাই আন্দ্রিয়, সিবদিয়ের পুত্র যাকোব এবং তাঁর ভাই যোহন,
\v 3 ফিলিপ ও বর্থলময়, থোমা ও কর আদায়কারী মথি, আলফেয়ের পুত্র যাকোব ও থদ্দেয়,
\v 4 কনানী শিমোন ও ঈস্করিয়োতীয় যিহূদা, যে তাঁকে শত্রুদের হাতে তুলে দিল।
\s5
\v 5 এই বারো জনকে যীশু পাঠালেন, আর তাঁদের এই আদেশ দিলেন
\v 6 তোমরা পরজাতিদের পথে যেও না এবং শমরীয়দের কোন শহরে প্রবেশ কর না; বরং ইস্রায়েল-কুলের হারান মেষদের কাছে যাও।
\v 7 আর তোমরা যেতে যেতে এই কথা প্রচার কর, ‘স্বর্গ রাজ্য কাছাকাছি এসে পড়েছে ’।
\s5
\v 8 অসুস্থদেরকে সুস্থ কর, মৃতদেরকে বাঁচিয়ে তোল, কুষ্ঠ রোগীদেরকে শুচী কর, ভূতদেরকে বের করে দাও; কারণ তোমরা বিনামূল্যে পেয়েছ, বিনামূল্যে দান কর।
\v 9 তোমাদের কোমরের কাপড়ে
\v 10 সোনা কি রুপো কি পিতল এবং যাওয়ার জন্য থলি কি দুটো জামা-কাপড় কি জুতো কি লাঠি, এ সব নিও না; কারণ যে কাজ করে সে তার বেতনের যোগ্য।
\s5
\v 11 আর তোমরা যে শহরে কি গ্রামে প্রবেশ করবে, সেখানকার কোন ব্যক্তি যোগ্য, তা খোঁজ করো, আর যে পর্য্যন্ত অন্য জায়গায় না যাও, সেখানে থেকো।
\v 12 আর তার ঘরে প্রবেশ করবার সময়ে সেই ঘরের লোকদেরকে শুভেচ্ছা জানাও ।
\v 13 তাতে সেই ঘরের লোক যদি যোগ্য হয়, তবে তোমাদের শান্তি তাদের প্রতি আসুক; কিন্তু যদি যোগ্য না হয়, তবে তোমাদের শান্তি তোমাদের কাছে ফিরে আসুক।
\s5
\v 14 আর যে কেউ তোমাদের গ্রহন না করেএবং তোমাদের কথা না শোনে, সেই ঘর কিংবা সেই শহর থেকে বের হবার সময়ে নিজের নিজের পায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলো।
\v 15 আমি তোমাদের সত্য কথা বলছি, বিচার-দিনে সেই শহরের দশা অপেক্ষা বরং সদোম ও ঘমোরা দেশের দশা সহনীয় হবে।
\s5
\v 16 দেখ, নেকড়েদের মধ্যে যেমন মেষ, তেমনি আমি তোমাদের পাঠাচ্ছি; অতএব তোমরা সাপের মতো সতর্ক ও পায়রার মতো অমায়িক হও।
\v 17 কিন্তু লোকদের থেকে সাবধান থেকো; কারণ তারা তোমাদের বিচারসভায় সমর্পণ করবে এবং নিজেদের সমাজ-ঘরে নিয়ে বেত মারবে।
\v 18 এমন কি, আমার জন্য তোমরা রাজ্যপাল ও রাজাদের সামনে, তাদের ও পরজাতিদের কাছে সাক্ষ্য দেবার জন্য হাজির হবে।
\s5
\v 19 কিন্তু লোকে যখন তোমাদের সমর্পণ করবে, তখন তোমরা কিভাবে কি বলবে, সে বিষয়ে ভেবো না; কারণ তোমাদের যা বলবার. তা সেই সময়েই তোমাদের দান করা যাবে।
\v 20 কারণ তোমরা কথা বলবে, এমন নয়, কিন্তু তোমাদের পিতার যে আত্মা তোমাদের অন্তরে কথা বলেন, তিনিই বলবেন।
\s5
\v 21 আর ভাই ভাইকে ও বাবা সন্তানকে মৃত্যুতে সমর্পণ করবে; এবং সন্তানেরা মা-বাবার বিপক্ষে উঠে তাদের হত্যা করাবে।
\v 22 আর আমার নামের জন্য তোমদের সবাই ঘৃণা করবে ; কিন্তু যে কেউ শেষ পর্য্যন্ত স্থির থাকবে, সেই পরিত্রান পাবে।
\v 23 আর তারা যখন তোমাদের এক শহর থেকে তাড়না করবে, তখন অন্য শহরে পালিয়ে যেও; কারণ আমি তোমাদের সত্য বলছি, ইস্রায়েলের সব শহরে তোমাদের কাজ শেষ হবে না, যে পর্য্যন্ত মানবপুত্র না আসেন।
\s5
\v 24 শিষ্য গুরুর থেকে বড় নয় এবং দাস মনিবের থেকে বড় নয়।
\v 25 শিষ্য নিজের গুরুর তুল্য ও দাস নিজের কর্তার সমান হলেই তার পক্ষে যথেষ্ট। তারা যখন ঘরের মালিককে ভূতেদের অধিপতি বলেছে, তখন তাঁর আত্মীয়দেরকে আরও কি না বলবে ?
\s5
\v 26 অতএব তোমরা তাদের ভয় কর না, কারণ এমন ঢাকা কিছুই নেই, যা প্রকাশ পাবে না এবং এমন গোপন কিছুই নেই, যা জানা যাবে না।
\v 27 আমি যা তোমাদের অন্ধকারে বলি, তা তোমরা আলোতে বল; এবং যা কানে কানে শোন, তা ছাদের উপরে প্রচার কর।
\s5
\v 28 আর যারা দেহ হত্যা করে, কিন্তু আত্মা বধ করতে পারে না, তাদের ভয় কর না; কিন্তু যিনি আত্মা ও দেহ দুটোকেই নরকে বিনষ্ট করতে পারেন, বরং তাঁকেই ভয় কর।
\v 29 দুটি চড়াই পাখী কি এক পয়সায় বিক্রি হয় না ? আর তোমাদের পিতার অনুমতি ছাড়া তাদের একটিও মাটিতে পড়ে না।
\v 30 কিন্তু তোমাদের মাথার চুলগুলিও সব গোনা আছে।
\v 31 অতএব ভয় কর না, তোমরা অনেক চড়াই পাখীর থেকে শ্রেষ্ঠ।
\s5
\v 32 অতএব যে কেউ লোকদের সামনে আমাকে স্বীকার করে, আমিও নিজের স্বর্গস্থ পিতার সামনে তাকে স্বীকার করব।
\v 33 কিন্তু যে মানুষদের সামনে আমাকে অস্বীকার করে, আমিও নিজের স্বর্গস্থ পিতার সামনে তাকে অস্বীকার করব।
\s5
\v 34 মনে কর না যে, আমি পৃথিবীতে শান্তি দিতে এসেছি; শান্তি দিতে আসিনি, কিন্তু খড়গ দিতে এসেছি।
\v 35 কারণ আমি বাবার সাথে ছেলের, মায়ের সাথে মেয়েরএবং শাশুড়ীর সাথে বৌমার বিচ্ছেদ সৃষ্টি করতে এসেছি;
\v 36 আর নিজের নিজের আত্মীয়ই মানুষের শত্রু হবে।
\s5
\v 37 যে কেউ বাবা কি মাকে আমার থেকে বেশী ভালবাসে, সে আমার যোগ্য নয় এবং যে কেউ ছেলে কি মেয়েকে আমার থেকে বেশী ভালবাসে, সে আমার যোগ্য নয়।
\v 38 আর যে কেউ নিজের ক্রুশ তুলে নিয়ে আমার পিছনে না আসে, সে আমার যোগ্য নয়।
\v 39 যে কেউ নিজের প্রাণ রক্ষা করে, সে তা হারাবে; এবং যে কেউ আমার জন্য প্রাণ হারায়, সে তা রক্ষা করবে।
\s5
\v 40 যে তোমাদের গ্রহন করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে; আর যে আমাকে গ্রহণ করে, সে তো আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন, সেই ঈশ্বরকেই গ্রহণ করে।
\v 41 যে ভাববাদীকে ভাববাদী বলে গ্রহণ করে, সে ভাববাদীর পুরস্কার পাবে; এবং যে ধার্মিককে ধার্মিক বলে গ্রহণ করে, সে ধার্মিকের পুরস্কার পাবে।
\s5
\v 42 আর যে কেউ এই সামান্য লোকদের মধ্যে কোন একজনকে আমার শিষ্য বলে কেবল এক বাটী ঠান্ডা জল পান করতে দেয়, আমি তোমাদের সত্য বলছি, সে কোনো মতে আপন পুরস্কারের থেকে বঞ্চিত হবে না।
\s5
\c 11
\p
\v 1 এইভাবে যীশু নিজের বারো জন শিষ্যের প্রতি আদেশ দেবার পর লোকদের শহরে শহরে উপদেশ দেবার ও প্রচার করবার জন্য সে জায়গা থেকে চলে গেলেন।
\ms যোহনের প্রশ্ন ও যীশু খ্রীষ্টের উত্তর।
\m
\v 2 পরে যোহন কারাগার থেকে খ্রীষ্টের কাজের বিষয় শুনে নিজের শিষ্যদের দ্বারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে পাঠালেন,
\v 3 ‘যাঁর আগমন হবে, সেই ব্যক্তি কি আপনি? না আমরা অন্যের অপেক্ষায় থাকব?
\s5
\v 4 যীশু উত্তর করে তাদের বললেন, তোমরা যাও, যা যা শুনছ ও দেখছ, সেই খবর যোহনকে দাও;
\v 5 অন্ধেরা দেখতে পাচ্ছে ও খোঁড়ারা হাঁটছে, কুষ্ঠ রোগীরা শুচীকৃত হচ্ছে ও বধিরেরা শুনছেএবং মৃত মানুষরা বেঁচে উঠছে ও গরিবদের কাছে সুসমাচার প্রচারিত হচ্ছে;
\v 6 আর ধন্য সেই ব্যক্তি যে আমাকে গ্রহণ করতে বাধা পায় না ।
\s5
\v 7 তারা চলে যাচ্ছে, এমন সময়ে যীশু সবলোককে যোহনের বিষয়ে বলতে লাগলেন, তোমরা মরুভূমিতে কি দেখতে গিয়েছিলে ? কি বাতাসে দোলায়মান নল ?
\v 8 তবে কি দেখতে গিয়েছিলে ? কি কোমল জামা-কাপড় পরা কোন ব্যক্তিকে ? দেখ, যারা কোমল জামা-কাপড় পরে, তারা রাজবাড়িতে থাকে।
\s5
\v 9 তবে কি জন্য গিয়েছিলে ? কি একজন ভাববাদীকে দেখবার জন্য ? হ্যাঁ, আমি তোমাদের বলছি, ভাববাদী থেকেও শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিকে।
\v 10 ইনি সেই ব্যক্তি, যাঁর বিষয়ে লেখা আছে, “দেখ, আমি নিজের দূতকে তোমার আগে পাঠাব; সে তোমার আগে তোমার রাস্তা তৈরী করবে।”
\s5
\v 11 আমি তোমাদের সত্য বলছি, স্ত্রীলোকের গর্ভে যারা জন্ম গ্রহণ করেছে তাদের মধ্যে যোহন বাপ্তাইজক থেকে মহান কেউই সৃষ্টি হয় নি, তা সত্ত্বেও স্বর্গ রাজ্যে অতি সামান্য যে ব্যক্তি, সে তাঁর থেকে মহান।
\v 12 আর যোহন বাপ্তাইজকের সময় থেকে এখন পর্য্যন্ত স্বর্গ-রাজ্য আক্রান্ত হচ্ছে এবং আক্রমণকারীরা সবলে তা অধিকার করছে।
\s5
\v 13 কারণ সমস্ত ভাববাদী ও নিয়ম যোহন পর্য্যন্ত ভাববাণী বলেছে।
\v 14 আর তোমরা যদি গ্রহণ করতে সম্মত হও, তবে জানবে, যে এলিয়ের আগমন হবে, তিনি এই ব্যক্তি।
\v 15 যার শোনার মত কান থাকে সে শুনুক।
\s5
\v 16 কিন্তু আমি কার সাথে এই মত লোকদের তুলনা দেব ? তারা এমন বালকদের সমান, যারা বাজারে বসে নিজেদের সঙ্গীদেরকে ডেকে বলে,
\v 17 ‘আমরা তোমাদের কাছে বাঁশী বাজালাম, তোমরা নাচলে না; আমরা দুঃখ করলাম, তোমরা বুক চাপড়ালে না।’
\s5
\v 18 কারণ যোহন এসে ভোজন পান করেন নি; তাতে লোকে বলে, সে ভূতগ্রস্থ।
\v 19 মানব পুত্র এসে ভোজন পান করেন; তাতে লোকে বলে, ঐ দেখ, এক জন পেটুক ও মাতাল, কর আদায়কারীদের ও পাপীদের বন্ধু। কিন্তু প্রজ্ঞা নিজের কাজের দ্বারা নির্দোষ বলে প্রমাণিত হবে ।
\s অবিশ্বাসীদের উদ্দশ্যে যীশুর সতর্কবাণী; ভারাক্রান্ত লোকদের প্রতি আহ্বান-বাক্য।
\s5
\p
\v 20 তখন যে যে শহরে তাঁরা সবচেয়ে বেশী অলৌকিক কাজ করেছিলেন, তিনি সেই সব শহরকে ভর্ত্সনা করতে লাগলেন, কারণ তারা মন ফেরায় নি
\v 21 ‘কোরাসীন, ধিক তোমাকে! বৈত্সদা, ধিক তোমাকে! কারণ তোমাদের মধ্যে যে সব অলৌকিক কাজ করা হয়েছে, সে সব যদি সোর ও সীদোনে করা যেত, তবে অনেক দিন আগে তারা চট পরে ছাইয়ে বসে মন ফেরাত।
\v 22 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমাদের দশা থেকে বরং সোর ও সীদোনের দশা বিচার-দিনে সহ্যনীয় হবে।
\s5
\v 23 আর হে কফরনাহূম, তুমি না কি স্বর্গ পর্য্যন্ত উঁচু হবে? তুমি পাতাল পর্য্যন্ত নেমে যাবে; কারণ যে সব অলৌকিক কাজ তোমার মধ্যে করা হয়েছে, সে সব যদি সদোমে করা যেত, তবে তা আজ পর্য্যন্ত থাকত।
\v 24 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, তোমার দশা থেকে বরং সদোম দেশের দশা বিচার দিনে সহনীয় হবে।’
\s5
\v 25 সেই সময়ে যীশু এই কথা বললেন, “হে পিতঃ, হে স্বর্গের ও পৃথিবীর প্রভু, আমি তোমার ধন্যবাদ করছি, কারণ তুমি জ্ঞানী ও বুদ্ধিমানদের থেকে এই সব বিষয় গোপন রেখে শিশুদের কাছে প্রকাশ করেছ;
\v 26 হা, পিতঃ, কারণ এ তোমার দৃষ্টিতে প্রীতিজনক হল।”
\v 27 সবই আমার পিতার মাধ্যমে আমাকে সমর্পিত হয়েছে; আর পুত্রকে কেউ জানে না, কেবল পিতা জানেন; এবং পিতাকে কেউ জানে না, কেবল পুত্র জানেনএবং পুত্র যার কাছে তাঁকে প্রকাশ করতে ইচ্ছা করেন, সে জানে।
\s5
\v 28 হে পরিশ্রান্ত ও ভারাক্রান্ত লোক সব, আমার কাছে এস, আমি তোমাদের বিশ্রাম দেব।
\v 29 আমার যোঁয়ালী নিজেদের উপরে তুলে নাও এবং আমার কাছে শেখো, কারণ আমি বিনয়ী ও নম্র; তাতে তোমরা নিজের নিজের প্রাণের জন্য বিশ্রাম পাবে।
\v 30 কারণ আমার যোঁয়ালী সহজ ও আমার ভার হাল্কা।
\s5
\c 12
\s বিশ্রামবার বিষয়ে যীশুর উপদেশ।
\p
\v 1 সেই সময়ে যীশু বিশ্রামবারে শস্যক্ষেতের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন; আর তাঁর শিষ্যেরা ক্ষুধিত হওয়াতে শীষ ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতে লাগলেন।
\v 2 কিন্তু ফরীশীরা তা দেখে তাঁকে বলল, “দেখ, বিশ্রামবারে যা উচিত নয়, তাই তোমার শিষ্যরা করছে।”
\s5
\v 3 তিনি তাদের বললেন, “দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীরা ক্ষুধিত হলে তিনি যা করেছিলেন, তা কি তোমরা পড়নি ?”
\v 4 তিনি তো ঈশ্বরের ঘরে প্রবেশ করলেন এবং তাঁরা দর্শন-রুটি খেলেন, যা তাঁর ও তাঁর সঙ্গীদের খাওয়া উচিত ছিল না, কেবল যাজকদেরই উচিত ছিল।
\s5
\v 5 আর তোমরা কি নিয়মে পড়নি যে, বিশ্রামবারে যাজকেরা ধর্মগৃহে বিশ্রামবার লঙ্ঘন করলেও নির্দোষ থাকে?
\v 6 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এই জায়গায় ধর্মগৃহ থেকেও মহান এক ব্যক্তি আছেন।
\s5
\v 7 কিন্তু “আমি দয়াই চাই, বলিদান নয়,” এই কথার মানে কি, তা যদি তোমরা জানতে, তবে নির্দোষদেরকে দোষী করতে না।
\v 8 কারণ মানবপুত্র বিশ্রামবারের কর্তা।
\s5
\v 9 পরে তিনি সেখান থেকে চলে গিয়ে তাদের সমাজ-ঘরে প্রবেশ করলেন।
\v 10 আর দেখ, একটি লোক, তার একখানি হাত শুকিয়ে গিয়েছিল। তখন তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, বিশ্রামবারে সুস্থ করা কি উচিত? তার উপরে দোষ দাও য়ার জন্য এই বলল।
\s5
\v 11 তিনি তাদের বললেন, তোমাদের মধ্যে এমন ব্যক্তি কে, যার একটি মেষ আছে, আর সেটি যদি বিশ্রামবারে গর্তে পড়ে যায়, সে কি তা তুলবে না?
\v 12 তবে মেষ থেকে মানুষ্ আরও কত শ্রেষ্ঠ! অতএব বিশ্রামবারে ভালো কাজ করা উচিত।
\s5
\v 13 তখন তিনি সেই লোকটিকে বললেন, তোমার হাত বাড়িয়ে দাও; তাতে সে বাড়িয়ে দিল, আর তা অন্যটীর মতো আবার সুস্থ হল।
\v 14 পরে ফরীশীরা বাইরে গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মন্ত্রণা করতে লাগল, কিভাবে তাঁকে শেষ করতে পারে।
\s5
\v 15 যীশু তা জানতে পেরে সেখান থেকে চলে গেলেন; অনেক লোক তাঁকে অনুসরণ করল, আর তিনি সবাইকে সুস্থ করলেন,
\v 16 এবং এই দৃঢ় আদেশ দিলেন, তোমরা আমার পরিচয় দিও না।-
\v 17 যেন যিশাইয় ভাববাদীর মাধ্যমে বলা এই কথা পূর্ণ হয়,
\s5
\v 18 “দেখ, আমার দাস, তিনি আমার মনোনীত, আমার প্রিয়, আমার প্রাণ তাঁতে সন্তুষ্ট, আমি তাঁর উপরে নিজের আত্মাকে রাখব, আর তিনি জাতিদের কাছে ন্যায়বিচার করবেন।
\s5
\v 19 তিনি ঝগড়া করবেন না, চিত্কার ও আওয়াজ করবেন না, পথে কেউ তাঁর স্বর শুনতে পাবে না।
\v 20 তিনি থেঁতলা নল ভাঙ্গবেন না, জ্বলতে থাকা পলতেকে নিভিয়ে দেবেন না, যে পর্য্যন্ত না ন্যায়বিচার জয়ীরূপে প্রচলিত করেন।
\v 21 আর তাঁর নামে পরজাতিরা আশা রাখবে।” যীশু এক জন ভূতগ্রস্থকে সুস্থ করেনএবং লোকদেরকে উপদেশ দেন।
\s5
\v 22 তখন এক জন ভূতগ্রস্থকে তাঁর কাছে নিয়ে এলো, সে অন্ধ ও বোবা; আর তিনি তাকে সুস্থ করলেন, তাতে সেই বোবা কথা বলতে ও দেখতে লাগল।
\v 23 এতে সব লোক চমৎকৃত হল ও বলতে লাগল, ইনিই কি সেই দায়ূদ সন্তান?
\s5
\v 24 কিন্তু ফরীশীরা তা শুনে বলল, এ ব্যক্তি আর কিছুতে নয়, কেবল ভূতদের অধিপতি বেলসবূলের মাধমেই ভূত ছাড়ায়।
\v 25 তাদের চিন্তা বুঝতে পেরে তিনি তাদের বললেন, যে কোনো রাজ্য নিজের বিপক্ষে আলাদা হয়, তা ধ্বংস হবে এবং যে কোনো শহর কিংবা পরিবার আপনার বিপক্ষে ভিন্ন হয়, তা স্থির থাকবে না।
\s5
\v 26 আর শয়তান যদি শয়তানকে ছাড়ায়, সে তো নিজেরই বিপক্ষে ভিন্ন হল; তবে তার রাজ্য কিভাবে স্থির থাকবে ?
\v 27 আর আমি যদি বেলসবূলের মাধ্যমে ভূত ছাড়াই, তবে তোমাদের সন্তানেরা কার মাধ্যমে ছাড়ায়? এই জন্য তারাই তোমাদের বিচারকর্তা হবে।
\s5
\v 28 কিন্তু আমি যদি ঈশ্বরের আত্মার মাধ্যমে ভূত ছাড়াই, তবে ঈশ্বরের রাজ্য তোমাদের কাছে এসে পড়েছে।
\v 29 আর আগে সেই শক্তিমান ব্যক্তিকে না বেঁধে কে কেমন করে তার ঘরের জিনিস লুঠ করতে পারবে ? বাঁধলে পরে সে তার ঘর লুঠ করবে।
\v 30 যে আমার পক্ষে নয়, সে আমার বিপক্ষ এবং যে আমার সাথে কুড়ায় না, সে ছড়িয়ে ফেলে।
\s5
\v 31 এই কারণে আমি তোমাদের বলছি, মানুষদের সব পাপ ও নিন্দার ক্ষমা হবে, কিন্তু পবিত্র আত্মার নিন্দার ক্ষমা হবে না।
\v 32 আর যে কেউ মানবপুত্রের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলে, সে ক্ষমা পাবে; কিন্তু যে কেউ পবিত্র আত্মার বিরুদ্ধে কথা বলে, সে ক্ষমা পাবে না, এইকালেও নয়, পরকালেও নয়।
\s5
\v 33 হয় গাছকে ভাল বলএবং তার ফলকেও ভাল বল; নয় গাছকে খারাপ বলএবং তার ফলকেও খারাপ বল; কারণ ফলের মাধমেই গাছকে চেনা যায়।
\v 34 হে সাপের বংশেরা, তোমরা খারাপ হয়ে কেমন করে ভাল কথা বলতে পার ? কারণ অন্তরে যা আছে, মুখ তাই বলে।
\v 35 ভাল মানুষ ভাল ভান্ডার থেকে ভাল জিনিস বের করেএবং খারাপ মানুষ খারাপ ভাণ্ডার থেকে খারাপ জিনিস বের করে।
\s5
\v 36 আর আমি তোমাদের বলছি, মানুষেরা যত বাজে কথা বলে, বিচার দিনে সেই সবের হিসাব দিতে হবে।
\v 37 কারণ তোমার কথার মাধ্যমে তুমি নির্দোষ বলে গণ্য হবে, আর তোমার কথার মাধমেই তুমি দোষী বলে গণ্য হবে।
\s5
\v 38 তখন কয়েক জন ধর্ম-শিক্ষক ও ফরীশী তাঁকে বলল, "হে গুরু, আমরা আপনার কাছে একটি চিহ্ন দেখতে ইচ্ছা করি।"
\v 39 তিনি উত্তর করে তাদের বললেন, "এই সময়ের খারাপ ও ব্যভিচারী লোকে চিহ্নের খোঁজ করে, কিন্তু যোনা ভাববাদীর চিহ্ন ছাড়া আর কোনো চিহ্ন এদেরকে দাও য়া যাবে না।
\v 40 কারণ যোনা যেমন তিন দিন তিন রাত বড় মাছের পেটে ছিলেন, সেইরকম মানবপুত্রও তিন দিন তিন রাত পৃথিবীর অন্তরে থাকবেন।
\s5
\v 41 নীনবীয় লোকেরা বিচারে এই সময়ের লোকদের সাথে দাঁড়িয়ে এদেরকে দোষী করবে, কারণ তারা যোনার প্রচারে মন ফিরিয়েছিল, আর দেখ, যোনা থেকে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন।
\s5
\v 42 দক্ষিণ দেশের রানীর বিচারে এই সময়ের লোকদের সাথে উঠে এদেরকে দোষী করবেন; কারণ শলোমনের জ্ঞানের কথা শুনবার জন্য তিনি পৃথিবীর শেষ থেকে এসেছিলেন, আর দেখ, শলোমন থেকে মহান এক ব্যক্তি এখানে আছেন।"
\s5
\v 43 আর খারাপ আত্মা যখন মানুষ থেকে বের হয়ে যায়, তখন জলশূন্য নানা জায়গা দিয়ে ভ্রমণ করতে করতে বিশ্রামের খোঁজ করে, কিন্তু তা পায় না।
\v 44 তখন সে বলে, আমি যেখান থেকে বের হয়ে এসেছি, আমার সেই ঘরে ফিরে যাই; পরে সে এসে তা খালি, পরিষ্কার ও সাজানো দেখে।
\v 45 তখন সে গিয়ে নিজে থেকে খারাপ অন্য সাত আত্মাকে সঙ্গে নিয়ে আসে, আর তারা সেই জায়গায় প্রবেশ করে বাস করে; তাতে সেই মানুষের প্রথম দশা থেকে শেষ দশা আরও খারাপ হয়। এই সময়ের লোকদের প্রতি তাই ঘটবে।
\s5
\v 46 তিনি সবলোককে এই সব কথা বলছেন, এমন সময়ে দেখ, তাঁর মা ও ভাইয়েরা তাঁর সাথে কথা বলবার চেষ্টায় বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
\v 47 তখন এক ব্যক্তি তাঁকে বলল, দেখুন, আপনার মা ও ভাইয়েরা আপনার সাথে কথা বলবার জন্য বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন।
\s5
\v 48 কিন্তু এই যে কথা বলল, তাকে তিনি উত্তর করলেন, আমার মা কে? আমার ভাই বা কারা?
\v 49 পরে তিনি নিজের শিষ্যদের দিকে হাত বাড়িয়ে বললেন, এই দেখ, আমার মা ও আমার ভাইয়েরা;
\v 50 কারণ যে কেউ আমার স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা পালন করে, সেই আমার ভাই ও বোন ও মা।
\s5
\c 13
\ms স্বর্গ রাজ্যের বিষয়ে সাতটী গল্প কথা।
\p
\v 1 সেই দিন যীশু ঘর থেকে বের হয়ে গিয়ে সমুদ্রের পাড়ে বসলেন।
\v 2 আর প্রচুর লোক তাঁর কাছে এলো, তাতে তিনি একখানি নৌকায় উঠে বসলেন এবং সব লোক তীরে দাঁড়িয়ে রইল।
\s5
\v 3 তখন তিনি গল্পের মাধ্যমে তাদের অনেক কথা বলতে লাগলেন।
\s বীজ-বোনার গল্প ।
\v 4 তিনি বললেন, দেখ, একজন চাষী বীজ বপন করতে গেল। বপনের সময় কিছু বীজ পথের পাশে পড়ল, তাতে পাখিরা এসে তা খেয়ে ফেলল।
\v 5 আর কিছু বীজ পাথুরে জমিতে পড়ল, যেখানে বেশী মাটি ছিল না, তাতে বেশী মাটি না পাওয়াতে তা শীঘ্র অঙ্কুরিত হয়ে উঠল, কিন্তু সূর্য উঠলে পর পুড়ে গেল,
\v 6 এবং তার শিকড় না থাকায় শুকিয়ে গেল।
\s5
\v 7 আর কিছু বীজ কাঁটাবনে পড়ল, তাতে কাঁটাগাছ বেড়ে তা চেপে রাখল।
\v 8 আর কিছু বীজ ভালো জমিতে পড়ল ও ফল দিতে লাগল; কিছু একশোগুন, কিছু ষাট গুন, কিছু ত্রিশ গুন।
\v 9 যার কান আছে সে শুনুক।
\s5
\v 10 পরে শিষ্যেরা কাছে এসে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি কি জন্য গল্পের মাধ্যমে ওদের কাছে কথা বলছেন?
\v 11 তিনি উত্তর করে বললেন, স্বর্গ-রাজ্যের নিগূঢ় তত্ত্ব সব তোমাদের জানতে দাও য়া হয়েছে, কিন্তু তাদের দাও য়া হয়নি।
\v 12 কারণ যার আছে, তাকে দেওয়া যাবে, ও তার বেশী হবে; কিন্তু যার নেই, তার যা আছে, তাও তার কাছ থেকে নিয়ে নেওয়া হবে।
\s5
\v 13 এই জন্য আমি তোমাদের গল্পের মাধ্যমে কথা বলছি, কারণ তারা দেখেও দেখে না, শু নাও শোনে না এবং বুঝেও বোঝে না।
\v 14 আর তাদের বিষয়ে যিশাইয়ের এই ভাববাণী পূর্ণ হচ্ছে, “তোমরা কানে শুনবে, কিন্তু কোনোভাবে বুঝবে না; আর চোখে দেখবে, কিন্তু কোনোভাবে জানবে না,
\s5
\v 15 কারণ এই লোকদের হৃদয় অসাড় হয়ে পড়েছে, তারা কানেও শোনে না ও তারা চোখ বন্ধ করেছে, পাছে তারা চোখে দেখে, আর কানে শোনে, হৃদয়ে বোঝে এবং ফিরে আসে, আর আমি তাদের সুস্থ করি।”
\s5
\v 16 কিন্তু ধন্য তোমাদের চোখ, কারণ তা দেখেএবং তোমাদের কান, কারণ তা শোনে;
\v 17 কারণ আমি তোমাদের সত্য বলছি, তোমরা যা যা দেখছ, তা অনেক ভাববাদী ও ধার্মিক লোক দেখতে ইচ্ছা করলেও দেখতে পায়নি এবং তোমরা যা যা শুনছ, তা তাঁরা শুনতে ইচ্ছা করলেও শুনতে পায়নি।
\s5
\v 18 অতএব তোমরা বীজ বোনার গল্প শোন।
\v 19 যখন কেউ সেই রাজ্যের বাক্য শুনে না বোঝে, তখন সেই খারাপ আত্মা এসে, তার অন্তরে যা বোনা হয়েছিল, তা নিয়ে চলে যায়; এ সেই, যে পথের পাশে পড়ে থাকা বীজের কথা।
\s5
\v 20 আর যে পাথুরে জমির বীজ, এ সেই, যে সেই বাক্য শুনে অমনি আনন্দ সহকারে গ্রহণ করে, কিন্তু তার অন্তরে শিকড় নেই, সে অল্প সময় মাত্র স্থির থাকে;
\v 21 পরে সেই বাক্যের জন্য কষ্ট কিংবা তাড়না ঘটলে সে অমনি বাধা পায়।
\s5
\v 22 আর যে কাঁটাবনের মধ্যে বীজ, এ সেই, যে সেই বাক্য শোনে, আর সংসারের চিন্তা ও টাকা-পয়সার আসক্তি সেই বাক্য চেপে রাখে, তাতে সে ফলহীন হয়।
\v 23 আর যে ভালো জমির বীজ, এ সেই, যে সেই বাক্য শোনে তা বোঝে, সে বাস্তবিক ফলবান্ হয়এবং কিছু একশো গুন, কিছু ষাট গুন, ও কিছু ত্রিশ গুন ফল দেয়।
\s শ্যামাঘাসের গল্প।
\s5
\v 24 পরে তিনি তাদের কাছে আর এক গল্প উপস্থিত করে বললেন, স্বর্গ-রাজ্যকে এমন এক ব্যক্তির সাথে তুলনা করা যায়, যিনি নিজের ক্ষেতে ভাল বীজ বপন করলেন।
\v 25 কিন্তু লোকে ঘুমিয়ে পড়লে পর তাঁর শত্রুরা এসে ঐ গমের মধ্যে শ্যামাঘাসের বীজ বপন করে চলে গেল।
\v 26 পরে বীজ অঙ্কুরিত হয়ে ফল দিল, তখন শ্যামাঘাসও বেড়ে উঠল।
\s5
\v 27 তাতে সেই মালিকের দাসেরা এসে তাঁকে বলল, মহাশয়, আপনি কি নিজের ক্ষেতে ভাল বীজ বপন করেননি? তবে শ্যামাঘাস কোথা থেকে হল?
\v 28 তিনি তাদের বললেন, কোন শত্রু এটা করেছে। দাসেরা তাঁকে বলল, তবে আপনি কি এমন ইচ্ছা করেন যে, আমরা গিয়ে তা সংগ্রহ করি?
\s5
\v 29 তিনি বললেন, না, কি জানি, শ্যামাঘাস সংগ্রহ করবার সময়ে তোমরা তার সাথে গমও উপড়িয়ে ফেলবে।
\v 30 ফসল কাটার সময় পর্য্যন্ত দুটোকেই একসঙ্গে বাড়তে দাও। পরে কাটার সময়ে আমি মজুরদেরকে বলব, তোমরা প্রথমে শ্যামাঘাস সংগ্রহ করে পোড়াবার জন্য বোঝা বেঁধে রাখ, কিন্তু গম আমার গোলায় সংগ্রহ কর।
\s সরিষা-দানার ও তাড়ীর দৃষ্টান্ত।
\s5
\v 31 তিনি আর এক গল্প তাদের কাছে উপস্থিত করে বললেন, স্বর্গ-রাজ্য এমন একটি সরিষা-দানার সমান, যা কোন ব্যক্তি নিয়ে নিজের ক্ষেতে বপন করল।
\v 32 সব বীজের মধ্যে ঐ বীজ অতি ক্ষুদ্র; কিন্তু বেড়ে উঠলে, পর তা শাকের থেকে বড় হয়এবং এমন গাছ হয়ে ওঠে যে, আকাশের পাখিরা এসে তার ডালে বাস করে।
\s5
\v 33 তিনি তাদের আর এক গল্প বললেন, স্বর্গ-রাজ্য এমন খামির সমান, যা কোন স্ত্রীলোক নিয়ে তিন মণ ময়দার মধ্যে ঢেকে রাখল, শেষে সবই খামিময় হয়ে উঠল।
\s5
\v 34 এই সব কথা যীশু গল্পের মাধ্যমে লোকদেরকে বললেন, গল্প ছাড়া তাদের কিছুই বললেন না;
\v 35 যেন ভাববাদীর মাধ্যমে বলা এই কথা পূর্ণ হয়, “আমি গল্প কথায় নিজের মুখ খুলব, জগতের শুরু থেকে যা যা গোপন আছে, সে সব প্রকাশ করব।।”
\s শ্যামাঘাসের গল্পের ব্যাখ্যা।
\s5
\p
\v 36 তখন তিনি সবাইকে বিদায় করে বাড়ি এলেন। আর তাঁর শিষ্যরা কাছে এসে তাঁকে বললেন, ক্ষেতের শ্যামাঘাসের গল্পটি আমাদেরকে স্পষ্ট করে বলুন।
\v 37 তিনি উত্তর করে বললেন, যিনি ভাল বীজ বপন করেন, তিনি মানবপুত্র।
\v 38 ক্ষেত হল জগৎ; ভাল বীজ হল ঈশ্বরের রাজ্যের সন্তানরা; শ্যামাঘাস হল সেই মন্দ-আত্মার সন্তানরা;
\v 39 যে শত্রু তা বুনেছিল, সে দিয়াবল; কাটার সময় যুগের শেষ; মজুরেরা হল স্বর্গদূত।
\s5
\v 40 অতএব যেমন শ্যামাঘাস সংগ্রহ করে আগুনে পুড়িয়া দাও য়া হয় , তেমনি যুগের শেষে হবে।
\v 41 মানবপুত্র নিজের দূতদেরকে পাঠাবেন; তাঁরা তাঁর রাজ্য থেকে সব বাঁধাজনক বিষয় ও অধর্ম্মাচারীদেরকে সংগ্রহ করবেন,
\v 42 এবং তাদের আগুনে ফেলে দেবেন; সেই জায়গায় কান্নাকাটি ও দাঁতে দাঁত ঘর্ষণ হবে।
\v 43 তখন ধার্মিকেরা নিজেদের পিতার রাজ্যে সুর্য্যের মত উজ্জ্বল হবে। যার কাণ আছে , সে শুনুক।
\s গুপ্তধন ও ভালো মুক্তার গল্প।
\s5
\v 44 স্বর্গ-রাজ্য ক্ষেতের মধ্যে গোপন এমন সম্পত্তির সমান, যা দেখতে পেয়ে এক ব্যক্তি লুকিয়ে রাখল, পরে আনন্দের আবেগে গিয়ে সব বিক্রি করে সেই জমি কিনল।
\v 45 আবার স্বর্গ-রাজ্য এমন এক বণিকের সমান, যে ভালো ভালো মুক্তার খোঁজ করছিল,
\v 46 সে একটি মহামূল্য মুক্তা দেখতে পেয়ে সব বিক্রি করে তা কিনল।
\s টানা জালের গল্প।
\s5
\v 47 আবার স্বর্গ-রাজ্য এমন এক টানা জালের সমান, যা সমুদ্রে ফেলে দাও য়া হলে সব রকম মাছ সংগ্রহ করল।
\v 48 জালটা পরিপূর্ণ হলে লোকে পাড়ে টেনে তুলল, আর বসে বসে ভালগুলো সংগ্রহ করে পাত্রে রাখলএবং খারাপগুলো ফেলে দিল।
\s5
\v 49 এইভাবে যুগের শেষে হবে; দূতেরা এসে ধার্মিক দের মধ্য থেকে খারাপদের আলাদা করবেন,
\v 50 এবং তাদের আগুনে ফেলে দেবেন; সেই জায়গায় কান্নাকাটি ও দাঁতে দাঁত ঘর্ষণ হবে।
\s5
\v 51 তোমরা কি এই সব বুঝতে পেরেছ? তাঁরা বললেন হ্যাঁ ।
\v 52 তখন তিনি তাঁদের বললেন, এই জন্য স্বর্গ-রাজ্যের বিষয়ে শিক্ষিত প্রত্যেক ধর্ম-শিক্ষক এমন ঘরের মালিকের সমান, যে নিজের ভান্ডার থেকে নতুন ও পুরানো জিনিস বের করে।
\ms যীশু নিজের শহরে অগ্রাহ্য হন।
\v 53 এই সকল গল্প শেষ করবার পর যীশু সেখান থেকে চলে গেলেন।
\s5
\v 54 আর তিনি নিজের দেশে এসে লোকদের সমাজ-ঘরে তাদের উপদেশ দিতে লাগলেন, তাতে তারা চমৎকৃত হয়ে বলল, এর এমন জ্ঞান ও এমন অলৌকিক কাজ সব কোথা থেকে হল?
\v 55 এ কি ছুতোরের ছেলে না? এর মায়ের নাম কি মরিয়ম না? এবং যাকোব, যোষেফ, শিমোন ও যিহূদা কি এর ভাই না?
\v 56 আর এর বোনেরা কি সবাই আমাদের এখানে নেই? তবে এ কোথার থেকে এই সব পেল? এইভাবে তারা তাকে বাধা দিতে লাগল।
\s5
\v 57 কিন্তু যীশু তাদের বললেন, নিজের দেশ ও জাতি ছাড়া আর কোথাও ভাববাদী অসম্মানিত হন না।
\v 58 আর তাদের অবিশ্বাসের জন্য তিনি সেখানে প্রচুর অলৌকিক কাজ করলেন না।
\s5
\c 14
\ms যোহন বাপ্তিস্মদাতার হত্যা l
\p
\v 1 সেই সময় হেরোদ রাজা যীশুর বার্তা শুনতে পেলেন,
\v 2 আর নিজের দাসদেরকে বললেন, ইনি সেই যোহন বাপ্তিস্মদাতা; তিনি মৃতদের মধ্যে থেকে উঠেছেন, আর সেই জন্য অলৌকিক কাজ সব করতে পারছেন ।
\s5
\v 3 কারণ হেরোদ নিজের ভাই ফিলিপের স্ত্রী হেরোদিয়ার জন্য যোহনকে ধরে বেঁধে কারাগারে রেখেছিলেন;
\v 4 কারণ যোহন তাঁকে বলেছিলেন, ওকে রাখা আপনার উচিত নয়।
\v 5 আর তিনি তাঁকে হত্যা করতে ইচ্ছা করলেও লোকদেরকে ভয় করতেন, কারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মানত।
\s5
\v 6 কিন্তু হেরোদের জন্মদিন এলো, হেরোদিয়ার মেয়ে সভার মধ্যে নেচে হেরোদকে সন্তুষ্ট করল।
\v 7 এই জন্য তিনি শপথ করে বললেন, “তুমি যা চাইবে, তাই তোমাকে দেব।”
\s5
\v 8 তখন সে নিজের মায়ের পরামর্শ অনুসারে বলল, “যোহন বাপ্তিস্মদাতার মাথা থালায় করে আমাকে দিন।”
\v 9 এতে রাজা দুঃখিত হলেন, কিন্তু নিজের শপথের কারণেএবং যারা তাঁর সঙ্গে বসেছিল, তাদের কারণে, তা দিতে আজ্ঞা করলেন,
\s5
\v 10 তিনি লোক পাঠিয়ে কারাগারে যোহনের মাথা কাটালেন।
\v 11 আর তাঁর মাথাটি একখানা থালায় করে এনে সেই মেয়েকে দাও য়া হল; আর সে তা মায়ের কাছে নিয়ে গেল।
\v 12 পরে তাঁর শিষ্যরা এসে দেহটি নিয়ে গিয়ে তাঁর কবর দিল এবং যীশুর কাছে এসে তাঁকে খবর দিল।
\s যীশু পাঁচ হাজার লোককে খাবার দেনএবং জলের উপর দিয়ে হেঁটে যান।
\s5
\v 13 যীশু তা শুনে সেখান থেকে নৌকায় করে একা এক নির্জন জায়গায় গেলেন; আর লোকসবাই তা শুনে নানা শহর থেকে এসে হাঁটা পথ তাঁর অনুসরণ করল।
\v 14 তখন তিনি বের হয়ে প্রচুর লোক দেখে তাদের প্রতি তাঁর করুনা হলএবং তাদের অসুস্থ লোকদেরকে সুস্থ করলেন।
\s5
\v 15 পরে সন্ধ্যা হলে শিষ্যরা কাছে এসে তাঁকে বললেন, এ জায়গা নির্জন, বেলাও হয়ে গিয়েছে; লোকদেরকে বিদায় করুন, যেন ওরা গ্রামে গ্রামে গিয়ে নিজেদের নিজেদের জন্য খাবার কিনে নেয়।
\s5
\v 16 যীশু তাঁদের বললেন, ওদের যাবার প্রয়োজন নেই, তোমরাই ওদেরকে খাবার দাও।
\v 17 তাঁরা তাঁকে বললেন, আমাদের এখানে শুধু পাঁচটা রুটি ও দুটো মাছ ছাড়া আর কিছুই নেই।
\v 18 তিনি বললেন, সেগুলি এখানে আমার কাছে আন।
\s5
\v 19 পরে তিনি লোকসবাইকে ঘাসের উপরে বসতে আদেশ করলেন; আর সেই পাঁচটা রুটি ও দুটো মাছ নিয়ে স্বর্গের দিকে তাকিয়ে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দিলেনএবং রুটি ভেঙ্গে শিষ্যদেরকে দিলেন, শিষ্যেরা লোকদেরকে দিলেন।
\v 20 তাতে সবাই খাবার খেয়ে সন্তুষ্ট হল; এবং তাঁরা অবশিষ্ট গুঁড়াগাঁড়া পূর্ণ বারো ডালা তুলে নিলেন।
\v 21 যারা খাবার খেয়েছিল, তারা স্ত্রী ও শিশু ছাড়া অনুমান পাঁচ হাজার পুরুষ ছিল।
\s5
\v 22 আর যীশু তখনই শিষ্যদেরকে বলে দিলেন, যেন তাঁরা নৌকায় উঠে তাঁর আগে অন্য পারে যান, আর এর মধ্যে তিনি লোকদেরকে বিদায় করে দিলেন ।
\v 23 পরে তিনি লোকদেরকে বিদায় করে নির্জনে প্রার্থনা করবার জন্য পর্বতে উঠলেন। সন্ধ্যা হলে তিনি সেই জায়গায় একা থাকলেন।
\v 24 কিন্তু নৌকাটা ডাঙ্গা থেকে অনেকটা দূরে গিয়ে পড়েছিল, ঢেউয়ে টলমল করছিল, কারণ হাওয়া বইছিল।
\s5
\v 25 পরে চতুর্থ প্রহর রাত্রিতে তিনি সমুদ্রের উপর দিয়ে হেঁটে তাঁদের কাছে এলেন।
\v 26 তখন শিষ্যেরা তাঁকে সমুদ্রের উপর দিয়ে হাঁটতে দেখে ভয় পেয়ে বললেন, "এ যে ভুত !" আর ভয়ে চেঁচাতে লাগলেন।
\v 27 কিন্তু যীশু তখনই তাঁদের সাথে কথা বললেন, সাহস কর, এ আমি, ভয় কর না।
\s5
\v 28 তখন পিতর উত্তর করে তাঁকে বললেন, হে প্রভু, যদি আপনি হন, তবে আমাকে জলের উপর দিয়ে আপনার কাছে যেতে আজ্ঞা করুন।
\v 29 তিনি বললেন, এস; তাতে পিতর নৌকা থেকে নেমে জলের উপর দিয়ে হেঁটে যীশুর কাছে চললেন।
\v 30 কিন্তু বাতাস দেখে তিনি ভয় পেলেনএবং ডুবে যেতে যেতে চিৎকার করে ডেকে বললেন, হে প্রভু, আমায় রক্ষা করুন।
\s5
\v 31 তখনই যীশু হাত বাড়িয়ে তাঁকে ধরলেন, আর তাঁকে বললেন, হে অল্পবিশ্বাসী, কেন সন্দেহ করলে?
\v 32 পরে তাঁরা নৌকায় উঠলে বাতাস থেমে গেল।
\v 33 আর যাঁরা নৌকায় ছিলেন, তাঁরা এসে তাঁকে প্রণাম করে বললেন, সত্যই আপনি ঈশ্বরের পুত্র।
\s5
\v 34 পার হয়ে তাঁরা গিনেষরৎ প্রদেশে এলো।
\v 35 সেখানকার লোকেরা তাঁকে চিনতে পেরে চারদিকে সেই দেশের সব জায়গায় খবর পাঠালএবং যত অসুস্থ লোক ছিল, সবাইকে তাঁর কাছে আনল;
\v 36 আর তাঁকে বিনতি করল, যেন ওরা তাঁর পোশাকের ঝালর মাত্র স্পর্শ করতে পায়; আর যত লোক স্পর্শ করল, সবাই সুস্থ হল।
\s5
\c 15
\s অপবিত্রতার বিষয়ে উপদেশ।
\p
\v 1 তখন যিরুশালেম থেকে ফরীশীরা ও আইনের শিক্ষকেরা যীশুর কাছে এসে বললেন,
\v 2 আপনার শিষ্যরা কি জন্য প্রাচীন পূর্বপুরুষদের নিয়ম কানুন পালন করে না ? কারণ খাওয়ার সময়ে তারা হাত ধোয় না।
\v 3 তিনি এর উত্তরে তাদের বললেন, "তোমরাও তোমাদের পরম্পরাগত নিয়ম কানুনের জন্য ঈশ্বরের আদেশ পালন কর না কেন ?"
\s5
\v 4 কারণ ঈশ্বর বলেছেন, "তুমি তোমার বাবাকে ও মাকে সম্মান করবে, আর যে কেউ বাবার কি মায়ের নিন্দা করে, তার মৃত্যুদণ্ড অবশ্যই হবে।"
\v 5 কিন্তু তোমরা বলে থাক, যে ব্যক্তি বাবাকে কি মাকে বলে, 'আমি যা কিছু দিয়ে তোমার উপকার করতে পারতাম, তা ঈশ্বরকে উত্সর্গ করা হয়েছে,' সেই ব্যক্তির বাবাকে বা তার মাকে আর সম্মান করার দরকার নেই,
\v 6 এইভাবে তোমরা নিজেদের পরম্পরাগত নিয়ম কানুনের জন্য ঈশ্বরের আদেশকে অগ্রাহ্য করছ।
\s5
\v 7 ভণ্ডেরা, যিশাইয় ভাববাদী তোমাদের বিষয়ে একদম ঠিক ভাববাণী বলেছেন,
\v 8 "এই লোকেরা খালি মুখেই আমার সম্মান করে, কিন্তু এদের হৃদয় আমার থেকে দূরে থাকে.
\v 9 আর এরা বৃথাই আমার আরাধনা করে এবং মানুষের বানানো আদেশকে প্রকৃত আদেশ বলে শিক্ষা দেয়।"
\s5
\v 10 পরে তিনি লোকদেরকে কাছে ডেকে বললেন, "তোমরা শোনো ও বোঝ।
\v 11 মুখের ভেতরে যা কিছু যায়, তা যে মানুষকে অপবিত্র করে, এমন নয়, কিন্তু মুখ থেকে যা বের হয়, সেসব মানুষকে অপবিত্র করে।"
\s5
\v 12 তখন শিষ্যরা কাছে এসে তাঁকে বললেন, "আপনি কি জানেন, এই কথা শুনে ফরীশীরা আঘাত পেয়েছে ?"
\v 13 তিনি এর উত্তরে বললেন, "আমার স্বর্গীয় পিতা যে সমস্ত চারা রোপণ করেন নি, সে সমস্তই উপড়িয়ে ফেলা হবে।"
\v 14 ওদের কথা বাদ দাও, ওরা নিজেরা অন্ধ হয়ে অন্য অন্ধদেরকে পথ দেখায়, অন্ধ যদি অন্ধকে পথ দেখায় তবে দুজনেই গর্ত্তে পড়বে।
\s5
\v 15 পিতর তাঁকে বললেন, "এই কথার অর্থ আমাদেরকে বুঝিয়ে দিন।"
\v 16 তিনি বললেন, "তোমরাও কি এখনও বুঝতে পার না ?
\v 17 এটা কি বোঝ না যে, যা কিছু মুখের ভিতরে যায়, তা পেটের মধ্যে যায়, পরে শরীর থেকে বেরিয়ে যায় ?
\s5
\v 18 কিন্তু যা যা মুখ থেকে বের হয়, তা হৃদয় থেকে আসে, আর সেগুলোই মানুষকে অপবিত্র করে।"
\v 19 কেননা হৃদয় থেকে কুচিন্তা, নরহত্যা, ব্যভিচার, বেশ্যাগমন, চুরি, মিথ্যাসাক্ষ্য, নিন্দা বের হয়ে আসে।
\v 20 এই সমস্তই মানুষকে অপবিত্র করে, কিন্তু হাত না ধুয়ে খাবার খেলে মানুষ তাতে অপবিত্র হয় না।
\s যীশু একটি ভূতগ্রস্থ মেয়েকে সুস্থ করেন ও চার হাজার লোককে খাবার দেন।
\s5
\p
\v 21 পরে যীশু সেই জায়গা ছেড়ে সোর ও সীদোন অঞ্চলে গেলেন।
\v 22 আর দেখ, ঐ অঞ্চলের একটি কনানীয় মহিলা এসে চিত্কার করে বলতে লাগল, হে প্রভু, দায়ূদ-সন্তান, আমাকে দয়া করুন, আমার মেয়েটি ভূতগ্রস্থ হয়ে অত্যন্ত কষ্ট পাচ্ছে।
\v 23 কিন্তু তিনি তাকে কিছুই উত্তর দিলেন না। তখন তাঁর শিষ্যেরা কাছে এসে তাঁকে অনুরোধ করলেন, একে বিদায় করুন, কেননা এ আমাদের পিছন পিছন চিত্কার করছে।
\s5
\v 24 তিনি এর উত্তরে বললেন, "ইস্রায়েলের হারান মেষ ছাড়া আর কারও কাছে আমাকে পাঠানো হয় নি।"
\v 25 কিন্তু মহিলাটি এসে তাঁকে প্রণাম করে বলল, "প্রভু, আমার উপকার করুন।"
\v 26 তিনি বললেন, "সন্তানদের খাবার নিয়ে কুকুরদের কাছে ফেলে দাও য়া ভাল না।"
\s5
\v 27 তাতে সে বলল, "হ্যাঁ, প্রভু, কারণ কুকুরেরাও তাদের মালিকের টেবিল থেকে সেই সব খাবারের টুকরো পড়ে, তারা খায়।"
\v 28 তখন যীশু এর উত্তরে তাকে বললেন, "হে নারী, তোমার বড়ই বিশ্বাস, তোমার যেমন ইচ্ছা, তেমনি তোমার প্রতি হোক।" আর সেই মুহুর্তেই তার মেয়ে সুস্থ হল।
\s5
\v 29 পরে যীশু সেখান থেকে গালীল সমুদ্রের ধারে উপস্থিত হলেন এবং পাহাড়ে উঠে সেই জায়গায় বসলেন।
\v 30 আর অনেক লোক তাঁর কাছে আসতে লাগল, তারা তাদের সঙ্গে খোঁড়া, অন্ধ, বোবা, নুলা এবং আরও অনেক লোককে নিয়ে তাঁর পায়ের কাছে ফেলে রাখল, আর তিনি তাদের সুস্থ করলেন।
\v 31 আর এইভাবে বোবারা কথা বলছিল, নুলারা সুস্থ হচ্ছিল, খোঁড়ারা হাঁটতে পারছিল এবং অন্ধেরা দেখতে পাচ্ছিল, তখন তারা এইসব দেখে খুবই আশ্চর্য্য হল এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বরের গৌরব করল।
\s5
\v 32 তখন যীশু তাঁর শিষ্যদেরকে কাছে ডেকে বললেন, "এই লোকদের জন্য আমার করুনা হচ্ছে, কারণ এরা আজ তিন দিন আমার সঙ্গে আছে এবং এদের কাছে খাবার কিছুই নেই, আর আমি এদেরকে না খাইয়ে বিদায় করতে চাই না, কারণ এরা রাস্তায় দুর্বল হয়ে পড়বে ।"
\v 33 শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, "এই ফাঁকা জায়গায় আমরা কোথায় এত রুটি পাব এবং এত লোককে কি ভাবে তৃপ্ত করব ?"
\v 34 যীশু তাঁদের বললেন, "তোমাদের কাছে কতগুলি রুটি আছে ?" তাঁরা বললেন, "সাতখানা, আর কয়েকটি ছোট মাছ আছে।"
\v 35 তখন তিনি লোকদেরকে মাটিতে বসতে আদেশ দিলেন।
\s5
\v 36 পরে তিনি সেই সাতখানা রুটি ও সেই কয়েকটি মাছ নিলেন, ধন্যবাদ দিয়ে ভাঙ্গলেন এবং শিষ্যদেরকে দিলেন, শিষ্যেরা লোকদেরকে দিলেন।
\v 37 তখন সবাই খাবার খেয়ে তৃপ্ত হল এবং যে সমস্ত খাবারের টুকরো অবশিষ্ট ছিল তা তাঁরা একজায়গায় জমা করলেন এবং সাতটা ঝুঁড়ি ভর্তি করে তুলে নিলেন ।
\v 38 যারা খাবার খেয়েছিল, তাদের মধ্যে মহিলা ও শিশু বাদে, শুধু পুরুষের সংখ্যাই ছিল চার হাজার।
\v 39 পরে তিনি লোকদেরকে বিদায় করে, নৌকা করে মগদনের সীমাতে উপস্থিত হলেন।
\s5
\c 16
\s প্রভু যীশুর বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা।
\p
\v 1 পরে ফরীশীরা ও সদ্দুকীরা তাঁর কাছে এসে পরীক্ষা করার জন্য, তাঁকে অনুরোধ করল, যেন তিনি তাদের আকাশ থেকে কোন চিহ্ন দেখান।
\v 2 কিন্তু তিনি এর উত্তরে তাদের বললেন, "সন্ধ্যা হলে তোমরা বলে থাক, আজ আবহাওয়া ভাল থাকবে, কারণ আকাশ লাল হয়েছে।
\s5
\v 3 আর সকালে বলে থাক, আজ ঝড় হবে, কারণ আকাশ লাল ও মেঘাচ্ছন্ন হয়ে আছে। তোমরা আকাশের লক্ষণ বুঝতে পার, কিন্তু কালের চিহ্নের বিষয়ে বুঝতে পার না।
\v 4 এই কালের মন্দ ও ব্যভিচারী লোকেরা চিহ্নের খোঁজ করে, কিন্তু যোনার চিহ্ন ছাড়া আর কোন চিহ্ন তাদের দাও য়া হবে না।" তখন তিনি তাদের ছেড়ে চলে গেলেন।
\s5
\v 5 শিষ্যেরা অন্য পাড়ে যাবার সময় রুটি নিতে ভুলে গিয়েছিলেন।
\v 6 যীশু তাঁদের বললেন, তোমরা সতর্ক হও, ফরীশী ও সদ্দুকীদের তাড়ী (খামির) থেকে সাবধান থাক।
\v 7 তখন তাঁরা নিজেদের মধ্য তর্ক করে বলতে লাগলেন, আমরা রুটি আনিনি বলে তিনি এমন বলছেন।
\v 8 তা বুঝতে পেরে যীশু বললেন, "হে অল্পবিশ্বাসীরা, তোমরা রুটি আননি বলে কেন নিজেদের মধ্য তর্ক করছ ?
\s5
\v 9 এখনও কি বোঝ না, মনেও কি পড়ে না, সেই পাঁচ হাজারের খাবার পাঁচটি রুটি , আর কত ঝুড়ি তুলে নিয়েছিলে ?
\v 10 এবং সেই চার হাজারের খাবার সাতটি রুটি , আর কত ঝুড়ি তুলে নিয়েছিলে ?
\s5
\v 11 তোমরা কেন বোঝ না যে, আমি তোমাদের রুটি র বিষয়ে বলি নি ? কিন্তু তোমরা ফরীশী ও সদ্দুকীদের খামির থেকে সাবধান থাক।"
\v 12 তখন তাঁরা বুঝলেন, তিনি রুটি র খামির থেকে নয়, কিন্তু ফরীশী ও সদ্দুকীদের শিক্ষা থেকে সাবধান থাকার কথা বলছেন।
\s যীশুই সেই খ্রীষ্ট, জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।
\s5
\p
\v 13 পরে যীশু কৈসরিয়ার ফিলিপীর অঞ্চলে গিয়ে তাঁর শিষ্যদের জিজ্ঞাসা করলেন, "মনুষ্যপুত্র কে, এ বিষয়ে লোকে কি বলে ?"
\v 14 তাঁরা বললেন, "কেউ কেউ বলে, আপনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন, কেউ কেউ বলে, আপনি এলিয়, আর কেউ কেউ বলে, আপনি যিরমিয় কিংবা ভাববাদীদের কোন এক জন।"
\v 15 তিনি তাঁদের বললেন, "কিন্তু তোমরা কি বল, আমি কে ?"
\v 16 শিমোন পিতর এর উত্তরে বললেন, "আপনি সেই খ্রীষ্ট, জীবন্ত ঈশ্বরের পুত্র।"
\s5
\v 17 তখন যীশু তাঁকে বললেন, "যোনার পুত্র শিমোন, ধন্য তুমি ! কেননা রক্তমাংস তোমার কাছে এ বিষয় প্রকাশ করে নি, কিন্তু আমার স্বর্গস্থ পিতা প্রকাশ করেছেন।"
\v 18 আর আমিও তোমাকে বলছি, তুমি পিতর, আর এই পাথরের উপরে আমি আমার মণ্ডলী গাঁথব, আর নরকের (মৃত্যুর) কোন শক্তিই তার বিরুদ্ধে জয়লাভ করতে পারবে না।
\s5
\v 19 আমি তোমাকে স্বর্গ রাজ্যের চাবিগুলি দেব, আর তুমি পৃথিবীতে যা কিছু বাঁধবে, তা স্বর্গে বাঁধা হবে এবং পৃথিবীতে যা কিছু মুক্ত করবে, তা স্বর্গে মুক্ত হবে।
\v 20 তখন তিনি শিষ্যদেরকে এই আদেশ দিলেন, আমি যে সেই খ্রীষ্ট, এ কথা কাউকে বল না।
\s যীশু তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে ভাববাণী বলেন।
\s5
\p
\v 21 সেই সময় থেকে যীশু তাঁর শিষ্যদেরকে স্পষ্টই বললেন যে, "তাঁকে যিরুশালেমে যেতে হবেএবং প্রাচীনদের, প্রধান যাজকদের ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের কাছ থেকে অনেক দুঃখ সহ্য করতে হবে ও মৃত্যু বরণ করতে হবে, আর তৃতীয় দিনে মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠতে হবে।"
\v 22 তখন পিতর তাঁকে একপাশে নিয়ে গিয়ে বকতে লাগলেন, বললেন, "প্রভু, এইসব আপনার থেকে দূরে থাকুক, এইসব আপনার প্রতি কখনও ঘটবে না।"
\v 23 কিন্তু তিনি মুখ ফিরিয়ে পিতরকে বললেন, "আমার কাছ থেকে দূর হও, শয়তান, তুমি আমার বাধা স্বরূপ, কারণ যা ঈশ্বরের, তা নয়, কিন্তু যা মানুষের, তাই তুমি ভাবছ।"
\s5
\v 24 তখন যীশু তাঁর শিষ্যদেরকে বললেন, "কেউ যদি আমাকে অনুসরণ করতে চায়, তবে সে নিজেকে অস্বীকার করুক, নিজের ক্রুশ তুলে নিক এবং আমাকে অনুসরণ করুক।
\v 25 যে কেউ তার প্রাণ রক্ষা করতে ইচ্ছা করে, সে তা হারাবে, আর যে কেউ আমার জন্য প্রাণ হারায়, সে তা পাবে।
\v 26 মানুষ যদি সমস্ত জগৎ লাভ করে নিজের প্রাণ হারায়, তবে তার কি লাভ হবে ? কিম্বা মানুষ তার প্রাণের পরিবর্তে কি দিতে পারে ?"
\s5
\v 27 কারণ মনুষ্যপুত্র তাঁর দূতেদের সঙ্গে, তাঁর পিতার প্রতাপে আসবেন, আর তখন প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার কাজ অনুযায়ী ফল দেবেন।
\v 28 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যারা এখানে দাঁড়িয়ে আছে, তাদের মধ্যে এমন কয়েক জন আছে, যারা কোন মতে মৃত্যু দেখবে না, যে পর্য্যন্ত মনুষ্যপুত্রকে তাঁর রাজ্যে আসতে না দেখে ।
\s5
\c 17
\s যীশু উজ্জ্বল রূপ গ্রহণ করেন।
\p
\v 1 ছয় দিন পরে যীশু পিতর, যাকোব ও তাঁর ভাই যোহনকে সঙ্গে করে এক উচুঁ পাহাড়ের নির্জন জায়গায় নিয়ে গেলেন।
\v 2 পরে তিনি তাঁদের সামনেই রূপান্তরিত হলেন, তাঁর মুখ সূর্যের মতো উজ্জ্বল এবং তাঁর পোশাক আলোর মতো সাদা হল।
\s5
\v 3 আর দেখ, মোশি ও এলিয় তাঁদের দেখা দিলেন, মোশি ও এলিয় তাঁর সঙ্গে কথা বলতে লাগলেন।
\v 4 তখন পিতর যীশুকে বললেন, "প্রভু, এখানে আমাদের থাকা ভাল, যদি আপনার ইচ্ছা হয়, তবে আমি এখানে তিনটি ঘর তৈরী করি, একটি আপনার জন্য, একটি মোশির জন্য এবং একটি এলিয়ের জন্য।"
\s5
\v 5 তিনি কথা বলছিলেন, এমন সময় দেখা গেল, একটি উজ্জ্বল মেঘ তাঁদের ছায়া করল, আর, সেই মেঘ থেকে এই বাণী হল, ‘ইনিই আমার প্রিয় পুত্র, এঁর ওপর আমি সন্তুষ্ট, এঁর কথা শোন।’
\v 6 এই কথা শুনে শিষ্যেরা উপুড় হয়ে পড়লেন এবং অত্যন্ত ভয় পেলেন।
\v 7 পরে যীশু কাছে এসে তাঁদের স্পর্শ করে বললেন, ওঠো, ভয় কর না।
\v 8 তখন তাঁরা চোখ তুলে আর কাউকে দেখতে পেলেন না, সেখানে শুধু যীশু একা ছিলেন।
\s5
\v 9 পাহাড় থেকে নামার সময়ে যীশু তাঁদের এই আদেশ দিলেন, যে পর্য্যন্ত মনুষ্যপুত্র মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে না ওঠেন, সে পর্য্যন্ত তোমরা এই দর্শনের কথা কাউকে বোলো না।
\v 10 তখন শিষ্যেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, তবে ব্যবস্থার শিক্ষকেরা কেন বলেন যে, প্রথমে এলিয় আসবেন ?
\s5
\v 11 তিনি এর উত্তরে বললেন, "হ্যাঁ সত্যি, এলিয় আসবেন এবং সবকিছু পুনরায় স্থাপন করবেন।"
\v 12 কিন্তু আমি তোমাদের বলছি, এলিয় এসেছিলেন এবং লোকেরা তাঁকে চিনতে পারেনি, বরং তাঁর প্রতি যা ইচ্ছা, তাই করেছে, একইভাবে মনুষ্যপুত্রকেও তাদের থেকে দুঃখ সহ্য করতে হবে।
\v 13 তখন শিষ্যেরা বুঝলেন যে, তিনি তাঁদের বাপ্তিস্মদাতা যোহনের বিষয় বলছেন। যীশুর বিভিন্ন আশ্চর্য্য কাজ ও শিক্ষা।
\s যীশু একটি মৃগী রোগে আক্রান্ত ছেলেকে সুস্থ করেন।
\s5
\p
\v 14 পরে, তাঁরা লোকদের কাছে এলে এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এসে হাঁটু গেঁড়ে বলল,
\v 15 "প্রভু, আমার ছেলেকে দয়া করুন, কারণ সে মৃগী রোগে আক্রান্ত এবং খুবই কষ্ট পাচ্ছে, আর সে বার বার জলে ও আগুনে পড়ে যায়।
\v 16 আর আমি আপনার শিষ্যদের কাছে তাকে এনেছিলাম, কিন্তু তাঁরা তাকে সুস্থ করতে পারলেন না।"
\s5
\v 17 যীশু বললেন, "হে অবিশ্বাসী ও বিপথগামী বংশ, আমি কত দিন তোমাদের সঙ্গে থাকব ? কত দিন তোমাদের ভার বহন করব ?" তোমরা ওকে এখানে আমার কাছে আন।
\v 18 পরে যীশু তাকে ধমক দিলেন, তাতে সেই ভূত তাকে ছেড়ে দিল, আর সেই ছেলেটি সেই মুহুর্তেই সুস্থ হল।
\s5
\v 19 তখন শিষ্যেরা গোপনে যীশুর কাছে এসে বললেন, "কি জন্য আমরা ওর মধ্যে থেকে ভূত ছাড়াতে পারলাম না ?'
\v 20-21 তিনি তাঁদের বললেন, "তোমাদের বিশ্বাস অল্প বলে, কারণ আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি তোমাদের একটি সরষে দানার মতো বিশ্বাস থাকে, তবে তোমরা এই পাহাড়কে বলবে, ‘এখান থেকে ঐখানে যাও, আর সেটা সরে যাবে এবং তোমাদের অসাধ্য কিছুই থাকবে না।"
\s যীশু দ্বিতীয় বার তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে ভাববাণী বলেন।
\s5
\p
\v 22 যখন তাঁরা গালীলে একসঙ্গে ছিলেন তখন যীশু তাঁদের বললেন, মনুষ্যপুত্র লোকেদের হাতে সমর্পিত হবেন
\v 23 এবং তারা তাঁকে বধ করবে, আর তৃতীয় দিনে তিনি জীবিত হয়ে উঠবেন। এইকথা শুনে তাঁরা খুবই দুঃখিত হলেন।
\s মাছের মুখে টাকা
\s5
\p
\v 24 পরে তাঁরা কফরনাহূমে এলে, যারা আধুলি, অর্থাৎ ঈশ্বরের মন্দিরের কর আদায় করত, তারা পিতরের কাছে এসে বলল, "তোমাদের গুরু কি আধুলি (মন্দিরের কর) দেন না ?" তিনি বললেন, "হ্যাঁ দেন।"
\v 25 পরে তিনি বাড়িতে এলে যীশুই আগে তাঁকে বললেন, "শিমোন, তোমার কি মনে হয় ? পৃথিবীর রাজারা কাদের থেকে কর বা রাজস্ব আদায় করে থাকেন ? কি নিজের সন্তানদের কাছ থেকে, না অন্য লোকেদের কাছ থেকে ?"
\s5
\v 26 পিতর বললেন, "অন্য লোকদের কাছ থেকে।" তখন যীশু তাঁকে বললেন, "তবে সন্তানেরা স্বাধীন।"
\v 27 তবুও আমরা যেন ঐ কর আদায় কারীদের অপমান বোধের কারণ না হই, এইজন্য তুমি সমুদ্রে গিয়ে বড়শী ফেল, তাতে প্রথমে যে মাছটি উঠবে, সেটা ধরে তার মুখ খুললে একটি টাকা পাবে, সেটা নিয়ে আমার এবং তোমার জন্য ওদেরকে কর দাও।
\s5
\c 18
\s স্বর্গরাজ্যে মহান কে, এ বিষয়ে শিক্ষা।
\p
\v 1 সেই সময় শিষ্যেরা যীশুর কাছে এসে বললেন, "তবে স্বর্গ-রাজ্যের মধ্যে শ্রেষ্ঠ কে ?"
\v 2 তিনি একটি শিশুকে তাঁর কাছে ডাকলেন ও তাঁদের মধ্য দাঁড় করালেন,
\v 3 এবং বললেন, "আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যদি মন না ফেরাও ও শিশুদের মতো না হয়ে ওঠ, তবে কোন ভাবেই স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না।"
\s5
\v 4 অতএব যে কেউ নিজেকে এই শিশুর মতো নত করে, সে স্বর্গ-রাজ্যে শ্রেষ্ঠ।
\v 5 আর যে কেউ এর মতো একটি শিশুকে আমার নামে গ্রহণ করে, সে আমাকেই গ্রহণ করে,
\v 6 কিন্তু যেসব শিশুরা আমাকে বিশ্বাস করে এবং তাদের কারো বিশ্বাসে যদি কেউ বাধা সৃষ্টি করে, তার গলায় ভারী ভারি পাথর বেঁধে তাকে সমুদ্রের গভীর জলে ডুবিয়ে দাও য়া বরং তার পক্ষে ভাল।
\s5
\v 7 বাধা দাও য়ার জন্য জগৎকে ধিক্ ! কারণ বাধা অবশ্যই আসবে, কিন্তু ধিক্ সেই ব্যক্তিকে, যার মাধ্যমে বাধা আসে।
\v 8 আর তোমার হাত কি পা যদি তোমায় পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে তা কেটে ফেলে দাও, দুই হাত কিম্বা দুই পা নিয়ে নরকের অনন্ত আগুনে প্রবেশ করার থেকে বরং খোঁড়া কিম্বা নুলা হয়ে জীবনে প্রবেশ করা তোমার ভাল।
\s5
\v 9 আর তোমার চোখ যদি তোমায় পাপের পথে নিয়ে যায়, তবে তা উপড়িয়ে ফেলে দাও, দুই চোখ নিয়ে অগ্নিময় নরকে যাওয়ার থেকে বরং একচোখ নিয়ে জীবনে প্রবেশ করা তোমার ভাল।
\s5
\v 10-11 এই ছোট শিশুদের একজনকেও তুচ্ছ কোর না, কারণ আমি তোমাদের বলছি, তাদের দূতগণ স্বর্গে সবসময় আমার স্বর্গস্থ পিতার মুখ দর্শন করেন।
\s5
\v 12 তোমাদের কি মনে হয় ? কোন ব্যক্তির যদি একশটি ভেড়া থাকে, আর তাদের মধ্যে একটি হারিয়ে যায়, তবে সে কি অন্য নিরানব্বইটাকে ছেড়ে, পাহাড়ে গিয়ে ঐ হারানো ভেড়াটির খোঁজ করে না ?
\v 13 আর যদি সে কোন ভাবে সেটি পায়, তবে আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যে নিরানব্বইটা হারিয়ে যায় নি, তাদের থেকে সে বেশী আনন্দ করে যেটা সে হারিয়ে ফেলেছিল তাকে পেয়ে ।
\v 14 তেমনি এই ছোট শিশুদের মধ্য একজনও যে ধ্বংস হয়, তা তোমাদের স্বর্গস্থ পিতার ইচ্ছা নয়।
\s5
\v 15 আর যদি তোমার ভাই তোমার বিরুদ্ধে কোন অপরাধ করে, তবে তাঁর কাছে যাও এবং গোপনে তাঁর সেই দোষ তাঁকে বুঝিয়ে দাও। সে যদি তোমার কথা শোনে, তবে তুমি আবার তোমার ভাইকে ফিরে পেলে ।
\v 16 কিন্তু যদি সে না শোনে, তবে আরও দুই একজন ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে যাও, যেন “দুই কিম্বা তিন জন সাক্ষীর মুখে সমস্ত কথা সঠিক প্রমাণিত করা হয়।”
\s5
\v 17 আর যদি সে তাদের কথা অমান্য করে, তখন মন্ডলীকে বল, আর যদি মন্ডলীর কথাও অমান্য করে তবে সে তোমার কাছে অযিহূদী লোকের ও কর আদায়কারীদের মতো হোক।
\s5
\v 18 আমি তোমাদের কে সত্য বলছি, তোমরা পৃথিবীতে যা কিছু বাঁধবে, তা স্বর্গে বাঁধা হবে এবং পৃথিবীতে যা কিছু খুলবে তা স্বর্গে খোলা হবে।
\v 19 আমি তোমাদের কে সত্য বলছি, পৃথিবীতে তোমাদের মধ্যে দুইজন যদি একমত হয়ে কোন বিষয় নিয়ে প্রার্থনা কর , তবে আমার স্বগের পিতা তোমাদের জন্য তা পূরণ করবেন ।
\v 20 কেননা যেখানে দুই কি তিন জন আমার নামে একত্র হয়, সেইখানে আমি তাদের মধ্যে আছি।
\s ক্ষমা করার সম্বন্ধে শিক্ষা।
\s5
\p
\v 21 তখন পিতর তাঁর কাছে এসে বললেন, "প্রভু, আমার ভাই আমার কাছে কত বার অপরাধ করলে আমি তাকে ক্ষমা করব? সাতবার পর্য্যন্ত কি ?"
\v 22 যীশু তাঁকে বললেন, "তোমাকে বলছি, সাত বার পর্য্যন্ত না, কিন্তু সত্তর গুণ সাত বার পর্য্যন্ত ।"
\s5
\v 23 এজন্য স্বর্গ-রাজ্য এমন একজন রাজার সমান, যিনি তাঁর দাসদের কাছে হিসাব নিতে চাইলেন।
\v 24 তিনি হিসাব আরম্ভ করলে তখন একজনকে তাঁর কাছে নিয়ে আসা হল, যে তাঁর কাছে দশ হাজার তালন্ত (এক তালন্ত সমান ৩০০০ টাকা) ঋণ নিয়েছিল।
\v 25 কিন্তু তার শোধ করার সামর্থ না থাকায় তার প্রভু তাকে ও তার স্ত্রী, সন্তানদের এবং সবকিছু বিক্রি করে আদায় করতে আদেশ দিলেন।
\s5
\v 26 তাতে সেই দাস তাঁর পায়ে পড়ে প্রণাম করে বলল, হে প্রভু, আমার প্রতি ধৈর্য্য ধরুন, আমি আপনার সবকিছু শোধ করব।
\v 27 তখন সেই দাসকে দেখে তার প্রভুর দয়া হল ও তাকে মুক্ত করলেন এবং তার ঋণ ক্ষমা করলেন।
\s5
\v 28 কিন্তু সেই দাস বাইরে গিয়ে তার সহদাসদের মধ্য একজনকে দেখতে পেল, যে তার একশ সিকি ধার নিয়েছিল, সে তার গলাটিপে ধরে বলল, "তুই যা ধার নিয়েছিস, তা শোধ কর।"
\v 29 তখন তার সহদাস তার পায়ে পড়ে অনুরোধের সঙ্গে বলল, আমার প্রতি ধৈর্য্য ধর, আমি তোমার ঋণ শোধ করব।
\s5
\v 30 তবুও সে রাজি হল না, কিন্তু গিয়ে তাকে জেলখানায় বন্দী করে রাখল, যতক্ষণ না সে ঋণ শোধ করে।
\v 31 এই ব্যাপার দেখে তার অন্য সহদাসেরা খুবই দুঃখিত হল, আর তাদের প্রভুর কাছে গিয়ে সমস্ত বিষয়ে জানিয়ে দিল।
\s5
\v 32 তখন তার প্রভু তাকে কাছে ডেকে বললেন, "দুষ্ট দাস ! তুমি আমার কাছে অনুরোধ করেছিলে বলে আমি তোমার ঐ সমস্ত ঋণ ক্ষমা করেছিলাম,
\v 33 আমি যেমন তোমার প্রতি দয়া করেছিলাম, তেমনি তোমার সহদাসদের প্রতি দয়া করা কি তোমারও উচিত ছিল না ?"
\s5
\v 34 আর তার প্রভু রেগে গিয়ে তাকে শাস্তি দাও য়ার জন্য জেলখানার রক্ষীদের কাছে তাকে সমর্পণ করলেন, যতক্ষণ না সে সমস্ত ঋণ শোধ করে।
\v 35 আমার স্বর্গীয় পিতাও তোমাদের প্রতি এমন করবেন, যদি তোমরা সবাই মন থেকে নিজের নিজের ভাইকে ক্ষমা না কর।
\s5
\c 19
\p
\v 1 এইসব কথা সমাপ্ত করার পর যীশু গালীল থেকে চলে গেলেন, পরে যর্দ্দনের অন্যপারে যিহূদিয়ার অঞ্চলে উপস্থিত হলেন,
\v 2 আর অনেক লোক তাঁকে অনুসরণ করতে লাগলো এবং তিনি সেখানে লোকদেরকে সুস্থ করলেন।
\s স্ত্রী-ত্যাগ করার বিষয়ে শিক্ষা।
\s5
\p
\v 3 আর ফরীশীরা তাঁর কাছে এসে পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করল যে, "কোনো কারণে নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করা কি উচিত ?"
\v 4 তিনি বললেন, "তোমরা কি পড়নি যে, সৃষ্টিকর্তা প্রথমে পুরুষ ও স্ত্রী করে তাদের সৃষ্টি করেছিলেন,"
\s5
\v 5 আর বলেছিলেন, "এইজন্য মানুষ তার বাবা ও মাকে ত্যাগ করে নিজের স্ত্রীতে আসক্ত হবে এবং সে দুইজন এক দেহ হবে ?"
\v 6 সুতরাং তারা আর দুই নয়, কিন্তু এক দেহ। অতএব ঈশ্বর যাকে যোগ করেছেন, মানুষ তা আলাদা না করুক।
\s5
\v 7 তারা তাঁকে বলল, "তবে মোশি কেন ত্যাগপত্র দিয়ে ত্যাগ করার আদেশ দিয়েছেন ?"
\v 8 তিনি তাদের বললেন, "তোমাদের হৃদয় কঠিন বলে মোশি তোমাদের নিজের নিজের স্ত্রীকে ত্যাগ করার অনুমতি দিয়েছিলেন, কিন্তু একদম প্রথম থেকে এমন ছিল না।"
\v 9 আর আমি তোমাদের বলছি, ব্যভিচার দোষ ছাড়া যে কেউ তার স্ত্রীকে ত্যাগ করে এবং অন্য কাউকে বিয়ে করে, সে ব্যভিচার করে এবং যে ব্যক্তি সেই পরিত্যক্তা স্ত্রীকে বিয়ে করে, সেও ব্যভিচার করে।
\s5
\v 10 শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, স্বামী স্ত্রীর সম্বন্ধ যদি এইরকম হয়, তবে তো বিয়ে না করাই ভাল।
\v 11 তিনি তাঁদের বললেন, সবাই এই কথা মানতে পারে না, কিন্তু যাদেরকে এই ক্ষমতা দাও য়া হয়েছে, তারাই এমন পারে।
\v 12 আর এমন নপুংসক আছে, যারা মায়ের গর্ভেই তেমন হয়েই জন্ম নিয়েছে, আর এমন নপুংসক আছে, যাদেরকে মানুষে নপুংসক করেছে, আর এমন নপুংসক আছে, যারা স্বর্গ-রাজ্যের জন্য নিজেদেরকে নপুংসক করেছে। যে এই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে গ্রহণ করুক।
\s শিশুদের বিষয়ে শিক্ষা।
\s5
\p
\v 13 তখন কতগুলি শিশুকে তাঁর কাছে আনা হল, যেন তিনি তাদের উপরে তাঁর হাত রাখেন ও প্রার্থনা করেন, তাতে শিষ্যেরা তাদের বকাবকি করতে লাগলেন।
\v 14 কিন্তু যীশু বললেন, "শিশুদের আমার কাছে আসতে দাও, বারণ কোরো না, কারণ স্বর্গ-রাজ্য এই রকম লোকেদেরই।"
\v 15 পরে তিনি তাদের উপরে হাত রাখলেন এবং সেখান থেকে চলে গেলেন।
\s ধন সমন্ধে শিক্ষা। মজুরদের বিষয়ে দৃষ্টান্ত (উদাহরণ)।
\s5
\p
\v 16 এক ব্যক্তি এসে তাঁকে বলল, "হে গুরু, অনন্ত জীবন পাওয়ার জন্য আমি কি ধরনের ভাল কাজ করব ?"
\v 17 তিনি তাকে বললেন, "আমাকে কি ভালো তার বিষয়ে কেন জিজ্ঞাসা করছ ? সৎ মাত্র একজনই আছেন।" কিন্তু তুমি যদি জীবনে প্রবেশ করতে চাও, তবে সমস্ত আজ্ঞা পালন কর।
\s5
\v 18 সে বলল, "কোন কোন আজ্ঞা ?" যীশু বললেন, "এগুলি, “মানুষ হত্যা করো না, ব্যভিচার করো না, চুরি করো না, মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না,
\v 19 বাবা ও মাকে সম্মান কর এবং তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালোবাসো।"
\s5
\v 20 সেই যুবক তাঁকে বলল, "আমি এইসব পালন করেছি, এখন আমার আর কি ত্রুটি আছে ?"
\v 21 যীশু তাকে বললেন, "যদি তুমি সিদ্ধ হতে চাও, তবে চলে যাও, আর তোমার যা যা আছে, বিক্রি কর এবং গরীবদের দান কর, তাতে স্বর্গে ধন পাবে, আর এসে, আমাকে অনুসরণ কর।'
\v 22 কিন্তু এই কথা শুনে সেই যুবক দুঃখিত হয়ে চলে গেল, কারণ তার অনেক সম্পত্তি ছিল।
\s5
\v 23 তখন যীশু তাঁর শিষ্যদেরকে বললেন, "আমি তোমাদের সত্যি বলছি, ধনীদের পক্ষে স্বর্গ-রাজ্যে প্রবেশ করা খুবই কঠিন।"
\v 24 আবার তোমাদের বলছি, ঈশ্বরের রাজ্যে একজন ধনীর প্রবেশ করার থেকে বরং ছুঁচের ছিদ্র দিয়ে উটের যাওয়া সহজ।
\s5
\v 25 এইকথা শুনে শিষ্যেরা খুবই আশ্চর্য হলেন, বললেন, "তবে কে পাপের ক্ষমা পেতে পারে ?"
\v 26 যীশু তাঁদের দিকে তাকিয়ে বললেন, "যা মানুষের কাছে অসম্ভব, কিন্তু ঈশ্বরের কাছে সমস্ত কিছুই সম্ভব।"
\v 27 তখন পিতর এর উত্তরে তাঁকে বললেন, "দেখুন, আমরা সবকিছুই ত্যাগ করে আপনার অনুসরণকারী হয়েছি, আমরা তবে কি পাব ?"
\s5
\v 28 যীশু তাদের বললেন, "আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যতজন আমার অনুসরণকারী হয়েছ, আবার যখন সবকিছু নতুন করে সৃষ্টি হবে, যখন মনুষ্যপুত্র তাঁর প্রতাপের সিংহাসনে বসবেন, তখন তোমরাও বারোটা সিংহাসনে বসে ইস্রায়েলের বারো বংশের বিচার করবে।"
\s5
\v 29 আর যে কোন ব্যক্তি আমার নামের জন্য বাড়ি, কি ভাই, কি বোন, কি বাবা, কি মা, কি সন্তান, কি জমি ত্যাগ করেছে, সে তার একশো গুন পাবে এবং অনন্ত জীবনের অধিকারী হবে।
\v 30 কিন্তু যারা প্রথম, তাদের মধ্য এমন অনেক লোক আছে যারা শেষে পড়বে এবং যারা শেষের, এমন অনেক লোক আছে তারা প্রথম হবে।
\s5
\c 20
\p
\v 1 কারণ স্বর্গ-রাজ্য এমন একজন জমির মালিকের মতো, যিনি সকালে তাঁর আঙুরের ক্ষেতে মজুর নিযুক্ত করার জন্য বাইরে গেলেন।
\v 2 তিনি মজুরদের দিনে এক সিকি বেতন দেবেন বলে স্থির করে তাদের তাঁর আঙ্গুর ক্ষেতে কাজ করার জন্য পাঠালেন।
\s5
\v 3 পরে তিনি সকাল ন'টার সময়ে বাইরে গিয়ে দেখলেন, অন্য কয়েক জন বাজারে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে,
\v 4 তিনি তাদের বললেন, "তোমরাও আঙ্গুর ক্ষেতে যাও, যা ন্যায্য, তা তোমাদের দেব," তাতে তারা গেল।
\s5
\v 5 আবার তিনি বারোটা ও তিনটের সময়েও বাইরে গিয়ে তেমন করলেন।
\v 6 পরে বিকেল পাঁচটার সময়ে বাইরে গিয়ে আর কয়েক জনকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন, আর তাদের বললেন, "কিজন্য সমস্ত দিন এখানে কোন জায়গায় কাজ না করে এখানে দাঁড়িয়ে আছ ?"
\v 7 তারা তাঁকে বলল, "কেউই আমাদেরকে কাজে লাগায় নি।" তিনি তাদের বললেন, "তোমরাও আঙ্গুর ক্ষেতে যাও।"
\s5
\v 8 পরে সন্ধ্যা হলে সেই আঙ্গুর ক্ষেতের মালিক তাঁর কর্মচারীকে বললেন, "মজুরদের ডেকে মজুরী দাও , শেষজন থেকে আরম্ভ করে প্রথমজন পর্য্যন্ত দাও ।"
\v 9 তাতে যারা বিকেল পাঁচটার সময়ে কাজে লেগেছিল, তারা এসে এক একজন এক সিকি করে পেল।
\v 10 যারা প্রথমে কাজে লেগেছিল, তারা এসে মনে করল, আমরা বেশী পাব, কিন্তু তারাও এক সিকি পেল।
\s5
\v 11 এবং তারা সেই জমির মালিকের বিরুদ্ধে বচসা করে বলতে লাগল,
\v 12 "শেষের এরা তো এক ঘন্টা মাত্র খেটেছে, আমরা সমস্ত দিন খেটেছি ও রোদে পুড়েছি, আপনি এদেরকে আমাদের সমান মজুরি দিলেন ।"
\s5
\v 13 তিনি এর উত্তরে তাদের একজনকে বললেন, "বন্ধু ! আমি তোমার প্রতি কিছু অন্যায় করি নি, তুমি কি আমার কাছে এক সিকিতে কাজ করতে রাজি হও নি ?"
\v 14 তোমার যা পাওনা, তা নিয়ে চলে যাও, আমার ইচ্ছা, তোমাকে যা, ঐ শেষের জনকেও তাই দেব।
\s5
\v 15 আমার নিজের যা, তা নিজের ইচ্ছামত ব্যবহার করার অধিকার কি আমার নেই ? না আমি দয়ালু বলে তোমার হিংসা হচ্ছে ?
\v 16 এইভাবেই যারা শেষের, তারা প্রথম হবে এবং যারা প্রথম, তারা শেষে পড়বে।
\s যীশু তৃতীয় বার নিজের মৃত্যুর বিষয়ে ভাববাণী বলেন।
\s5
\p
\v 17 পরে যখন যীশু যিরূশালেম যাওয়ার জন্য তৈরী হলেন, তখন তিনি সেই বারো জন শিষ্যকে একপাশে ডেকে নিয়ে গেলেন এবং রাস্তায় তাঁদের বললেন,
\v 18 "দেখ, আমরা যিরুশালেমে যাচ্ছি, আর মনুষ্যপুত্র প্রধান পুরোহিতদের ও ব্যবস্তার শিক্ষকদের হাতে সমর্পিত হবেন,
\v 19 তারা তাঁকে মৃত্যুদন্ড দেবে এবং ঠাট্টা করার জন্য, চাবুক মারার ও ক্রুশে দাও য়ার জন্য অযিহূদীদের হাতে তাঁকে হাতে তুলে দেবেন, পরে তিনি তৃতীয় দিনে মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে উঠবেন।"
\s প্রকৃত ভাবে মহান কে ? এই বিষয়ে শিক্ষা।
\s5
\p
\v 20 তখন সিবদিয়ের স্ত্রী, তাঁর দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর কাছে এসে নমস্কার করে তাঁর কাছে কিছু চাইলেন।
\v 21 তিনি তাঁকে বললেন, "তুমি কি চাও ?" তিনি বললেন, "আদেশ করুন, যেন আপনার রাজ্যে আমার এই দুই ছেলের একজন আপনার ডান দিকে, আর একজন বাঁদিকে বসতে পারে।"
\s5
\v 22 কিন্তু যীশু এর উত্তরে বললেন, "তোমরা কি চাইছ, তা বোঝ না, আমি যে পাত্রে পান করতে যাচ্ছি, তাতে কি তোমরা পান করতে পার ?" তাঁরা বললেন, "পারি।"
\v 23 তিনি তাঁদের বললেন, "যদিও তোমরা আমার পাত্রে পান করবে, কিন্তু যাদের জন্য আমার পিতা স্থান প্রস্তুত করে রেখেছেন, তারা ছাড়া আর কাউকেই আমার ডান পাশে ও বাঁ পাশে বসানোর অধিকার আমার নেই।"
\v 24 এই কথা শুনে অন্য দশজন ঐ দুই ভাইয়ের প্রতি অসন্তুষ্ট হলেন। কিন্তু যীশু তাঁদের কাছে ডেকে বললেন,
\s5
\v 25 "তোমরা জান, অযিহূদী জাতির রাজারা তাদের উপরে রাজত্ব করে এবং যারা মহান, তারা তাদের উপরে কর্ত্তৃত্ব করে।"
\v 26 তোমাদের মধ্যে তেমন হবে না, কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে কেউ মহান হতে চায়, সে তোমাদের মধ্য পরিচারক হবে,
\v 27 এবং তোমাদের মধ্যে যে কেউ প্রধান হতে চায়, সে তোমাদের দাস হবে,
\v 28 যেমন মনুষ্যপুত্র সেবা পেতে আসেন নি, কিন্তু সেবা করতে এবং অনেকের পরিবর্তে নিজের প্রাণ মুক্তির মূল্যরূপে দিতে এসেছেন।
\s অন্ধকে দৃষ্টি দান। যীশু যিরুশালেমে যান।
\s5
\p
\v 29 পরে যিরীহো থেকে তাঁদের বের হওয়ার সময়ে অনেক লোক তাঁকে অনুসরণ করল।
\v 30 আর দেখ, দুই জন অন্ধ পথের পাশে বসেছিল, সেই পথ দিয়ে যীশু যাচ্ছেন শুনে তারা চিত্কার করে বলল, "প্রভু, দায়ূদ-সন্তান, আমাদের প্রতি দয়া করুন।"
\v 31 তাতে লোকেরা চুপ চুপ বলে তাদের ধমক দিল, কিন্তু তারা আরও জোরে চিত্কার করে বলল, "প্রভু, দায়ূদ-সন্তান, আমাদের প্রতি দয়া করুন।"
\s5
\v 32 তখন যীশু থেমে, তাদের ডাকলেন, "আর বললেন, তোমরা কি চাও? আমি তোমাদের জন্য কি করব ?"
\v 33 তারা তাঁকে বলল, "প্রভু, আমাদের চোখ যেন ঠিক হয়ে যায়।"
\v 34 তখন যীশুর করুনা হল এবং তিনি তাদের চোখ স্পর্শ করলেন, আর তখনই তারা দেখতে পেল ও তাঁর পেছন পেছন চলল।
\s5
\c 21
\p
\v 1 পরে যখন তাঁরা যিরূশালেমের কাছে জৈতুন পাহাড়ে, বৈৎফগী গ্রামে এলেন, তখন যীশু দুইজন শিষ্যকে পাঠিয়ে দিলেন,
\v 2 তাঁদের বললেন, "তোমারা সামনের ঐ গ্রামে যাও, আর সেখানে গিয়ে দেখতে পাবে, একটি গর্দ্দভী বাঁধা আছে, আর তার সঙ্গে একটি বাচ্চা তাদের খুলে আমার কাছে আন।
\v 3 আর যদি কেউ, তোমাদের কিছু বলে, তবে বলবে, এদেরকে প্রভুর প্রয়োজন আছে, তাতে সে তখনই তাদের পাঠিয়ে দেবে।"
\s5
\v 4 এমনটি হল যেন এর দ্বারা ভাববাদীর ভাববাণী পূর্ণ হয়,
\v 5 "তোমরা সিয়োন-কন্যাকে বল, দেখ, তোমার রাজা তোমার কাছে আসছেন, তিনি নম্র, ও গর্দ্দভ-শাবকের উপরে বসে আসছেন ।"
\s5
\v 6 পরে ঐ শিষ্যেরা গিয়ে যীশুর আদেশ অনুযায়ী কাজ করলেন,
\v 7 গর্দ্দভীকে ও শাবকটিকে আনলেন এবং তাদের উপরে নিজেদের বস্ত্র পেতে দিলেন, আর তিনি তাদের উপরে বসলেন।
\v 8 আর ভিড়ের মধ্য অধিকাংশ লোক নিজের নিজের বস্ত্র রাস্তায় পেতে দিল এবং অন্য অন্য লোকেরা গাছের ডাল কেটে রাস্তায় ছড়িয়ে দিল।
\s5
\v 9 আর যে সমস্ত লোক তাঁর আগে ও পিছনে যাচ্ছিল, তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, হোশান্না দায়ূদ-সন্তান, ধন্য, যিনি প্রভুর নামে আসছেন, স্বর্গেও হোশান্না।
\v 10 আর তিনি যিরূশালেমে প্রবেশ করলে সারা শহরে কোলাহল সৃষ্টি হয়ে গেল সবাই বলল, "উনি কে ?"
\v 11 তাতে লোকেরা বলল, "উনি সেই ভাববাদী, গালীলের নাসরতীয় যীশু।"
\s5
\v 12 পরে যীশু ঈশ্বরের উপাসনা গৃহে প্রবেশ করলেন এবং যত লোক মন্দিরে কেনাবেচা করছিল, সেই সবাইকে বের করে দিলেন এবং যারা টাকা বদল করার জন্য টেবিল সাজিয়ে বসেছিল ও যারা পায়রা বিক্রি করছিল, তাদের সবকিছু উল্টিয়ে ফেললেন,
\v 13 আর তাদের বললেন, "লেখা আছে, আমার ঘর প্রার্থনার ঘর বলে পরিচিত হবে," কিন্তু তোমরা তা 'দস্যুদের আড্ডাখানা' করে তুলেছ।
\v 14 পরে অন্ধেরা ও খোঁড়ারা মন্দিরে তাঁর কাছে এলো , আর তিনি তাদের সুস্থ করলেন।
\s5
\v 15 কিন্তু প্রধান যাজকগণ ও ব্যবস্তার শিক্ষকেরা তাঁর সমস্ত আশ্চর্য্য কাজ দেখে এবং যে ছেলেমেয়েরা ‘হোশান্না দায়ূদ-সন্তান, বলে মন্দিরে চিত্কার করছিল তাদের দেখে রেগে গেল,
\v 16 এবং তাঁকে বলল, "শুনছ, এরা কি বলছে ?" যীশু তাদের বললেন, "হ্যাঁ, তোমরা কি কখনও পড় নি যে, তুমি ছোট শিশু ও দুধ খাওয়া বাচ্চার মুখ থেকে প্রসংশার ব্যবস্থা করেছ ?"
\v 17 পরে তিনি তাদের ছেড়ে শহরের বাইরে বৈথনিয়ায় গেলেন, আর সেই জায়গায় রাতে থাকলেন।
\s5
\v 18 সকালে শহরে ফিরে আসার সময় তাঁর খিদে পেল।
\v 19 রাস্তার পাশে একটি ডুমুরগাছ দেখে তিনি তার কাছে গেলেন এবং পাতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না। তখন তিনি গাছটিকে বললেন, "আর কখনও তোমাতে ফল না ধরুক", আর হঠাৎ সেই ডুমুরগাছটা শুকিয়ে গেল।
\s5
\v 20 তা দেখে শিষ্যেরা আশ্চর্য্য হয়ে বললেন, "ডুমুরগাছটা হঠাৎ শুকিয়ে গেল কিভাবে ?"
\v 21 যীশু এর উত্তরে তাঁদের বললেন, "আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে, আর সন্দেহ না কর, তবে তোমরা খালি ডুমুরগাছের প্রতি এমন করতে পারবে, তা নয়, কিন্তু এই পাহাড়কেও যদি বল, উপড়িয়ে যাও, আর সমুদ্রে গিয়া পড়, তাই হবে।"
\v 22 আর তোমরা প্রার্থনায় বিশ্বাসের সঙ্গে যা কিছু চাইবে, সেসব কিছু পাবে।
\ms যীশু যিরূশালেমে শিক্ষা দেন।
\s যীশুর ক্ষমতার বিষয়ে শিক্ষা।
\s5
\p
\v 23 পরে তিনি মন্দিরে এলেন, পরে তাঁর উপদেশ দেওয়ার সময়ে প্রধান যাজকেরা ও লোকদের প্রাচীনেরা কাছে এসে বলল, "তুমি কোন ক্ষমতায় এইসব করছ ? আর কেই বা তোমাকে এই ক্ষমতা দিয়েছে ?"
\v 24 যীশু তাদের বললেন, "আমিও তোমাদের একটি কথা জিজ্ঞাসা করব, তা যদি আমাকে বল, তবে কি ক্ষমতায় এসব করছি, তা আমিও তোমাদের বলব।"
\s5
\v 25 যোহনের বাপ্তিস্ম কোথা থেকে হয়েছিল ? স্বর্গ থেকে না মানুষের মাধ্যমে ? তখন তারা নিজেদের মধ্যে তর্ক করে বলল, "যদি বলি স্বর্গ থেকে, তা হলে এ আমাদেরকে বলবে, তবে তোমরা তাঁকে বিশ্বাস কর নি কেন ?"
\v 26 আর যদি বলি, "মানুষের মাধ্যমে," লোকদের থেকে আমার ভয় আছে কারণ সবাই যোহনকে ভাববাদী বলে মানে।
\v 27 তখন তারা যীশুকে বলল, "আমরা জানি না।" তিনিও তাদের বললেন, "তবে আমিও কি ক্ষমতায় এসব করছি, তা তোমাদের বলব না।"
\s5
\v 28 কিন্তু তোমরা কি মনে কর ? এক ব্যক্তির দুটো ছেলে ছিল, তিনি প্রথম জনের কাছে গিয়ে বললেন, "পুত্র, যাও, আজ আঙ্গুর ক্ষেতে কাজ কর।"
\v 29 সে বলল, "আমি যাব না," কিন্তু পরে মন পরিবর্তন করে গেল।
\v 30 পরে তিনি দ্বিতীয় জনের কাছে গিয়ে তেমনি বললেন। সে বলল, "বাবা আমি যাচ্ছি," কিন্তু গেল না।
\s5
\v 31 সেই দুইজনের মধ্যে কে বাবার ইচ্ছা পালন করল ? তারা বলল, "প্রথম জন।" যীশু তাদের বললেন, "আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কর আদায়কারীরা ও বেশ্যারা তোমাদের আগে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করছে।"
\v 32 কারণ যোহন ধার্মিকতার পথ দিয়ে তোমাদের কাছে এলো েন, আর তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করলে না, কিন্তু কর আদায়কারীরা ও বেশ্যারা তাঁকে বিশ্বাস করল, আর তোমরা তা দেখে শেষেও এইরকম অনুশোচনা করলে না যে, তাঁকে বিশ্বাস করবে।
\s আঙ্গুর ক্ষেতের মালিক ও কৃষকদের দৃষ্টান্ত (উদাহরণ)।
\s5
\p
\v 33 আর একটি উদাহরণ শোন, এক জন আঙুর ক্ষেতের মালিক ছিলেন, তিনি আঙুর ক্ষেত করে তার চারিদিকে বেড়া দিলেন, ও তার মধ্যে আঙুর রস বার করার জন্য একটা আঙুর মাড়াবার জন্য গর্ত খুঁড়লেন এবং দেখাশোনা করার জন্য উচু ঘর তৈরী করলেন, পরে কৃষকদের হাতে তা জমা দিয়ে অন্য দেশে চলে গেলেন।
\v 34 আর ফল পাবার সময় কাছে এলে তিনি তাঁর ফল সংগ্রহ করার জন্য কৃষকদের কাছে তাঁর দাসদেরকে পাঠালেন।
\s5
\v 35 তখন কৃষকেরা তাঁর দাসদেরকে ধরে কাউকে মারলো, কাউকে হত্যা করল, কাউকে পাথর মারল।
\v 36 আবার তিনি আগের থেকে আরও অনেক দাসকে পাঠালেন, তাদের সঙ্গেও তারা সেই রকম ব্যবহার করল।
\v 37 অবশেষে তিনি তাঁর ছেলেকে তাদের কাছে পাঠালেন, বললেন, "তারা আমার ছেলেকে সম্মান করবে।"
\s5
\v 38 কিন্তু কৃষকেরা মালিকের ছেলেকে দেখে বলল, "এই ব্যক্তিই উত্তরাধিকারী, এসো, আমরা একে বধ করে এর অধিকার কেড়ে নিই।"
\v 39 পরে তারা তাঁকে ধরে আঙ্গুর ক্ষেতের বাইরে ফেলে বধ করল।
\s5
\v 40 অতএব আঙুর ক্ষেতের মালিক যখন আসবেন, তখন সেই চাষীদের কে কি করবেন ?
\v 41 তারা তাঁকে বলল, "সেই মন্দ লোকেদেরও একেবারে ধ্বংস করবেন এবং সেই ক্ষেত এমন অন্য কৃষকদেরকে জমা দেবেন, যারা ফলের সময়ে তাঁকে ফল দেবে।'
\s5
\v 42 যীশু তাদের বললেন, "তোমরা কি কখনও শাস্ত্রে পড় নি, যে পাথর গাঁথকেরা অগ্রাহ্য করেছিল, সেই পাথরই কোণের প্রধান পাথর হয়ে উঠল, এটা প্রভুর থেকেই হয়েছে, এটা আমাদের দৃষ্টিতে অদ্ভুত ?"
\s5
\v 43 এইজন্য আমি তোমাদের বলছি, "তোমাদের কাছ থেকে ঈশ্বরের রাজ্য কেড়ে নাও য়া যাবে এবং এমন এক জাতিকে দাও য়া হবে, যে জাতি তার ফল দেবে।"
\v 44 আর এই পাথরের উপরে যে পড়বে, সে ভগ্ন হবে, কিন্তু এই পাথর যার উপরে পড়বে, তাকে চূরমার করে ফেলবে।
\s5
\v 45 তাঁর এইসব উদাহরণ শুনে প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা বুঝল যে, তিনি তাদেরই বিষয় বলছেন।
\v 46 আর তারা তাঁকে ধরতে চেষ্টা করল, কিন্তু তারা লোকদেরকে ভয় করল, কারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মানত।
\s5
\c 22
\s বিয়ের ভোজের গল্প।
\p
\v 1 যীশু আবার গল্পের মাধ্যমে কথা বললেন, তিনি তাদের বললেন,
\v 2 স্বর্গ-রাজ্য এমন একজন রাজার মতো, যিনি তাঁর ছেলের বিয়ের ভোজ আয়োজন করলেন।
\v 3 সেই ভোজে নিমন্ত্রিত লোকদের ডাকার জন্য তিনি তাঁর দাসদের পাঠালেন, কিন্তু লোকেরা আসতে চাইল না।
\s5
\v 4 তাতে তিনি আবার অন্য দাসদের পাঠালেন, বললেন, "নিমন্ত্রিত লোকদেরকে বল, দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত করেছি, আমার অনেক বলদ ও হৃষ্টপুষ্ট পশু সব মারা হয়েছে, সবকিছুই প্রস্তুত, তোমরা বিয়ের ভোজে এসো।"
\s5
\v 5 কিন্তু তারা অবহেলা করে কেউ তার ক্ষেতে, কেউ বা তার নিজের কাজে চলে গেল।
\v 6 অবশিষ্ট সবাই তাঁর দাসদের ধরে অপমান করল ও বধ করল।
\v 7 তাতে রাজা প্রচন্ড রেগে গেলেন এবং সৈন্যসামন্ত পাঠিয়ে সেই হত্যাকারীদের ধ্বংস করলেন ও তাদের শহর পুড়িয়ে দিলেন।
\s5
\v 8 পরে তিনি তাঁর দাসদের বললেন, "বিয়ের ভোজ তো প্রস্তুত, কিন্তু ঐ নিমন্ত্রিত লোকেরা এর যোগ্য ছিল না,
\v 9 অতএব তোমরা রাজপথের মাথায় মাথায় গিয়ে যত লোকের দেখা পাও, সবাইকে বিয়ের ভোজে ডেকে আন।"
\v 10 তাতে ঐ দাসেরা রাজপথে গিয়া ভাল মন্দ যত লোকের দেখা পেল, সবাইকেই সংগ্রহ করে আনল, তাতে বিয়ে বাড়ি অতিথিতে পরিপূর্ণ হল।
\s5
\v 11 পরে রাজা অতিথিদের দেখার জন্যে ভিতরে এসে এমন এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন, যার গায়ে বিয়ে বাড়ির পোশাক ছিল না,
\v 12 তিনি তাকে বললেন, "হে বন্ধু, তুমি কেমন করে বিয়ে বাড়ির পোশাক ছাড়া এখানে প্রবেশ করলে ?" সে উত্তর দিতে পারল না।
\s5
\v 13 তখন রাজা তাঁর দাসদের বললেন, "ওর হাত পা বেঁধে ওকে বাইরে অন্ধকারে ফেলে দাও , সেখানে লোকেরা কাঁদবে ও দাঁতে দাঁত ঘষবে।
\v 14 যদিও অনেককেই ডাকা হয়েছে, কিন্তু অল্পই মনোনীত।"
\s যীশুর শত্রুদের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর।
\s5
\p
\v 15 তখন ফরীশীরা গিয়ে পরিকল্পনা করল, কিভাবে তাঁকে কথার ফাঁদে ফেলা যায়।
\v 16 আর তারা হেরোদীয়দের সঙ্গে তাদের শিষ্যদেরকে দিয়ে তাঁকে বলে পাঠাল, "গুরু, আমরা জানি, আপনি সত্যবাদী এবং সঠিক ভাবে ঈশ্বরের পথের বিষয় শিক্ষা দিচ্ছেন এবং আপনি কাউকে ভয় পাননা, কারণ আপনি লোকরা কে কি বলল সে কথায় কান দেবেন না ।
\v 17 ভাল, আমাদের বলুন, আপনার মত কি ? কৈসরকে কর দাও য়া উচিত কিনা ?"
\s5
\v 18 কিন্তু যীশু তাদের ফাঁদ বুঝতে পেরে বললেন, "ভন্ডরা, আমার পরীক্ষা কেন করছ ?
\v 19 সেই করের পয়সা আমাকে দেখাও।" তখন তারা তাঁর কাছে একটি দিনার আনল।
\s5
\v 20 তিনি তাদের বললেন, "এই মূর্ত্তি ও এই নাম কার ?" তারা বলল, "কৈসরের।"
\v 21 তখন তিনি তাদের বললেন, "তবে কৈসরের যা কিছু, তা কৈসরকে দাও , আর ঈশ্বরের যা কিছু, তা ঈশ্বরকে দাও ।"
\v 22 এই কথা শুনে তারা আশ্চর্য্য হল এবং তাঁর কাছ থেকে চলে গেল।
\s5
\v 23 সেই দিন সদ্দুকীরা, যারা বলে মৃতরা জীবিত হয় না, তারা তাঁর কাছে এলো ।
\v 24 এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, "গুরু, মোশি বলেছেন, কেউ যদি সন্তান ছাড়া মারা যায়, তবে তার ভাই তার স্ত্রীকে বিয়ে করে তার ভাইয়ের জন্য বংশ রক্ষা করবে।
\s5
\v 25 ভাল, আমাদের মধ্যে সাতটি ভাই ছিল, আর বড়ভাই বিয়ের পর মারা গেল এবং সন্তান না হওয়ায় তার ভাইয়ের জন্য নিজের স্ত্রীকে রেখে গেল।
\v 26 এইভাবেই দ্বিতীয় জন তৃতীয় জন করে সাত জনই তাকে বিয়ে করল।
\v 27 সবার শেষে সে স্ত্রীও মরে গেল।
\v 28 অতএব মৃত্যু থেকে জীবিত হওয়ার সময় ঐ সাত জনের মধ্যে সে কার স্ত্রী হবে ? সবাই তো তাকে বিয়ে করেছিল।"
\s5
\v 29 যীশু এর উত্তরে তাদের বললেন, "তোমরা ভুল বুঝছ, কারণ তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের ক্ষমতা,
\v 30 কেননা মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে লোকে বিয়ে করে না এবং তাদের বিয়ের জন্য দাও য়া ও হয় না , বরং স্বর্গে ঈশ্বরের দূতদের মতো থাকে।
\s5
\v 31 কিন্তু মৃতদের মৃত্যু থেকে জীবিত হওয়ার বিষয়ে ঈশ্বর তোমাদের যা বলেছেন, তা কি তোমরা শাস্ত্রে পড় নি ?"
\v 32 তিনি বলেন, "আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর, ও যাকোবের ঈশ্বর," ঈশ্বর মৃতদের নন, কিন্তু জীবিতদের।
\v 33 এই কথা শুনে লোকেরা তাঁর শিক্ষাতে অবাক হয়ে গেল ।
\s5
\v 34 ফরীশীরা যখন শুনতে পেল, তিনি সদ্দুকীদের নিরুত্তর করেছেন, তখন তারা একসঙ্গে এসে জুটল।
\v 35 আর তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি, একজন শাস্ত্রীয় বিধানের গুরু, পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করল,
\v 36 "গুরু, শাস্ত্রের বিধানের মধ্যে কোন আদেশটি মহান ?"
\s5
\v 37 তিনি তাকে বললেন, "তোমার সমস্ত হৃদয়, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে,"
\v 38 এটা মহান ও প্রথম আদেশ।
\s5
\v 39 আর দ্বিতীয়টি এর সমান, "তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে।"
\v 40 এই দুটো আদেশেই সমস্ত ব্যবস্থা এবং ভাববাদীদের বই নির্ভর করে।
\s যীশুর শত্রুরা নিরুত্তর।
\s5
\p
\v 41 আর ফরীশীরা একত্র হলে যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন,
\v 42 "খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমাদের কি মনে হয়, তিনি কার সন্তান ?" তারা বলল, "দায়ূদের।"
\s5
\v 43 তিনি তাদের বললেন, "তবে দায়ূদ কি ভাবে আত্মার আবেশে তাঁকে প্রভু বলেন ?" তিনি বলেন,-
\v 44 "প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, তুমি আমার ডান পাশে বস, যতক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদেরকে তোমার পা রাখার জায়গায় পরিণত করি।"
\s5
\v 45 অতএব দায়ূদ যখন তাঁকে প্রভু বলেন, তখন তিনি কি ভাবে তাঁর সন্তান ?
\v 46 তখন কেউ তাঁকে কোন উত্তর দিতে পারল না, আর সেই দিন থেকে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করতে কারও সাহস হল না।
\s5
\c 23
\s ফরীশীদের ও ব্যবস্তার শিক্ষকদের প্রতি যীশুর অনুযোগ।
\p
\v 1 তখন যীশু লোকদের ও তাঁর শিষ্যদের বললেন,
\v 2 "ব্যবস্তার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা মোশির আসনে বসেন।
\v 3 অতএব তারা তোমাদের যা কিছু বলে, তা পালন করবে এবং তা মেনে চলবে , কিন্তু তাদের কাজের মতো কাজ করবে না, কারণ তারা যা বলে, তারা নিজেরা সেগুলো করে না।
\s5
\v 4 তারা ভারী ও কঠিন বোঝা বেঁধে লোকদের কাঁধে চাপিয়ে দেয়, কিন্তু নিজেরা আঙ্গুল দিয়েও তা সরাতে চায় না।
\v 5 তারা লোককে দেখানোর জন্যই তাদের সমস্ত কাজ করে, কারণ তারা নিজেদের জন্য শাস্ত্রের বাক্য লেখা বড় কবচ তৈরী করে এবং বস্ত্রের থোপ বড় করে,
\s5
\v 6 আর ভোজে প্রধান স্থান, সমাজ-ঘরে প্রধান প্রধান আসন,
\v 7 হাটে বাজারে শুভেচ্ছা এবং লোকের কাছে রব্বি (গুরু) বলে সম্মান সূচক অভিবাদন পেতে খুব ভাল বাসে।"
\s5
\v 8 কিন্তু তোমরা ‘শিক্ষক’ বলে সম্ভাষিত হয়ো না, কারণ তোমাদের গুরু এক জন এবং তোমরা সবাই তার ভাই।
\v 9 আর পৃথিবীতে কাউকেও ‘পিতা’ বলে ডেকো না, কারণ তোমাদের পিতা এক জন, যিনি স্বর্গে থাকেন।
\v 10 তোমরা ‘শিক্ষক’ বলে সম্ভাষিত হয়ো না, কারণ তোমাদের গুরু এক জন, তিনি খ্রীষ্ট ।
\s5
\v 11 কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ, সে তোমাদের সেবাকারী হবে।
\v 12 আর যে কেউ, নিজেকে উঁচু করে, তাকে নত করা হবে, আর যে কেউ নিজেকে নত করে, তাকে উঁচু করা হবে।
\s5
\v 13 কিন্তু ব্যবস্তার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভন্ডরা, ধিক তোমাদের ! কারণ তোমরা লোকেদের জন্য স্বর্গরাজ্যর দরজা বন্ধ করে থাক,
\v 14 নিজেরাও তাতে প্রবেশ কর না এবং যারা প্রবেশ করতে আসে, তাদের ও প্রবেশ করতে দাও না।
\v 15 ব্যবস্তার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভন্ডরা, ধিক্ তোমাদের ! কারণ এক জনকে যিহূদী ধর্মে নিয়ে আসার জন্য তোমরা সমুদ্রে ও বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে থাক, আর যখন কেউ হয়, তখন তাকে তোমাদের থেকেও দ্বিগুণ নরকের যোগ্য করে তোলো ।
\s5
\v 16 অন্ধ পথ পরিচালনাকারীরা, ধিক্ তোমাদের ! তোমরা বলে থাক, কেউ মন্দিরের দিব্যি করে তা পালন না করলে তা কিছুই নয়, কিন্তু কেউ মন্দিরের সোনার দিব্যি করলে তাতে সে আবদ্ধ হল।
\v 17 তোমরা মুর্খেরা ও অন্ধেরা, বল দেখি, কোনটি শ্রেষ্ঠ ? সোনা, না সেই মন্দির, যা সেই সোনাকে পবিত্র করেছে ?
\s5
\v 18 আরও বলে থাক, কেউ যজ্ঞবেদীর দিব্যি করলে তা কিছুই নয়, কিন্তু কেউ যদি তার উপরের উপহারের দিব্যি করে, তবে সে তার দিব্যিতে আবদ্ধ হল।
\v 19 তোমরা অন্ধেরা, বল দেখি, কোনটি শ্রেষ্ঠ ? উপহার না সেই যজ্ঞবেদী, যা উপহারকে পবিত্র করে ?
\s5
\v 20 যে ব্যক্তি যজ্ঞবেদীর দিব্যি করে, সে তো বেদীর ও তার উপরের সবকিছুরই দিব্যি করে।
\v 21 আর যে মন্দিরের দিব্যি করে, সে মন্দিরের, যিনি সেখানে বাস করেন, তাঁরও দিব্যি করে।
\v 22 আর যে স্বর্গের দিব্যি করে, সে ঈশ্বরের সিংহাসনের এবং যিনি তাতে বসে আছেন, তাঁরও দিব্যি করে।
\s5
\v 23 ব্যবস্তার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, ভন্ডরা, ধিক্ তোমাদের ! কারণ তোমরা পুদিনা, মৌরি ও জিরার দশমাংশ দিয়ে থাক, আর ব্যবস্থার মধ্যে প্রধান বিষয়, ন্যায়বিচার, দয়া ও বিশ্বাস ত্যাগ করেছ, কিন্তু এ সব পালন করা এবং ঐ গুলিও ত্যাগ না করা, তোমাদের উচিত ছিল।
\v 24 অন্ধ পথ-পরিচালনাকারীরা, তোমরা মশা ছেঁকে ফেল, কিন্তু উট গিলে খাও।
\s5
\v 25 ব্যবস্তার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভন্ডরা, ধিক্ তোমাদের ! কারণ তোমরা পান করার পাত্র ও খাওয়ার পাত্রের বাইরে পরিস্কার করে থাক, কিন্তু সেগুলির ভেতরে দৌরাত্ম্য ও অন্যায়ে ভরা।
\v 26 অন্ধ ফরীশী, আগে পান পাত্রের ও খাওয়ার পাত্রের ভেতরেও পরিস্কার কর, যেন তা বাইরেও পরিস্কার হয়।
\s5
\v 27 ব্যবস্তার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভন্ডরা, ধিক্ তোমাদের ! কারণ তোমরা চুনকাম করা কবরের মতো, যা বাইরে দেখতে খুবই সুন্দর, কিন্তু ভেতরে মরা মানুষের হাড় ও সব রকমের মন্দতায় ভরা।
\v 28 একইভাবে তোমরাও বাইরে লোকদের কাছে নিজেদের ধার্মিক বলে দেখিয়ে থাক, কিন্তু ভিতরে তোমরা ভন্ডামি ও পাপে পরিপূর্ণ।
\s5
\v 29 ব্যবস্তার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভন্ডরা, ধিক্ তোমাদের ! কারণ তোমরা ভাববাদিদের কবর গেঁথে থাক এবং ধার্মিকদের সমাধি-স্তম্ভ সাজিয়ে থাক, আর তোমরা বল,
\v 30 আমরা যদি আমাদের পূর্বপুরুষদের সময়ে থাকতাম, তবে আমরা ভাববাদিদের রক্তপাতে তাঁদের সহভাগী হতাম না।
\v 31 অতএব, তোমরা নিজেদের বিষয়ে এই সাক্ষ্য দিচ্ছ যে, যারা ভাববাদিদের বধ করেছিল, তোমরা তাদেরই সন্তান।
\s5
\v 32 তোমরাও তোমাদের পূর্বপুরুষদের পাপের পরিমাণ পূর্ণ করছ।
\v 33 হে সাপের দল, কালসাপের বংশেরা, তোমরা কেমন করে বিচারে নরকদন্ড এড়াবে ?
\s5
\v 34 অতএব, দেখ, আমি তোমাদের কাছে ভাববাদী, জ্ঞানবান ও ব্যবস্তার শিক্ষকদের পাঠাব, তাঁদের মধ্যে কয়েক জনকে তোমরা বধ করবে ও ক্রুশে দেবে, কয়েক জনকে তোমাদের সমাজ-ঘরে চাবুক মারবে এবং এক শহর থেকে আর এক শহরে তাড়া করবে,
\v 35 যেন পৃথিবীতে যত ধার্মিক লোকের রক্তপাত হয়ে আসছে, সে সমস্তর দন্ড তোমাদের উপরে আসে, সেই ধার্মিক হেবলের রক্তপাত থেকে, বরখিয়ের ছেলে যে সখরিয়কে তোমরা ঈশ্বরের মন্দিরের ও যজ্ঞবেদির মাঝখানে বধ করেছিলে, তাঁর রক্তপাত পর্য্যন্ত ।
\v 36 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই যুগের লোকদের উপরে এসমস্ত দন্ড আসবে ।
\s5
\v 37 যিরূশালেম, যিরূশালেম, তুমি ভাববাদিদেরকে বধ করেছ ও তোমার কাছে যাদের পাঠানো হয়, তাদের তোমরা পাথর মেরে থাক ! মুরগি যেমন তার বাচ্চাদের ডানার নীচে একত্র করে, তেমন আমিও কত বার তোমার সন্তানদেরকে একত্র করতে ইচ্ছা করেছি, কিন্তু তোমরা রাজি হলে না।
\v 38 দেখ, তোমাদের বাড়ি, তোমাদের জন্য খালি হয়ে পড়ে থাকবে।
\v 39 কারণ আমি তোমাদের বলছি, তোমরা এখন থেকে আমাকে আর দেখতে পাবে না, যে পর্য্যন্ত না বলবে, “ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন।”
\s5
\c 24
\s যিরূশালেমের ধ্বংস ও যীশু আবার ফিরে আসবেন সে বিষয়ে ভাববাণী ।
\p
\v 1 পরে যীশু মন্দির থেকে বের হয়ে নিজের রাস্তায় চলেছেন, এমন সময়ে তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে মন্দিরের গাঁথনিগুলি দেখানোর জন্য কাছে গেলেন ।
\v 2 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, "তোমরা কি এইসব দেখছ না ? আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই মন্দিরের একটা পাথর অন্য পাথরের উপরে থাকবে না, সবকিছুই ধ্বংস হবে।"
\s5
\v 3 পরে তিনি জৈতুন পর্ব্বতের উপরে বসলে শিষ্যেরা গোপনে তাঁর কাছে এসে বললেন, "আমাদেরকে বলুন দেখি, এই সব ঘটনা কখন ঘটবে ? আর আপনার আবার ফিরে আসার এবং যুগ শেষ হওয়ার চিহ্ন কি ?"
\v 4 যীশু এর উত্তরে তাঁদের বললেন, "সাবধান হও, কেউ যেন তোমাদের না ভোলায়।
\v 5 কারণ অনেকেই আমার নাম ধরে আসবে, বলবে, আমিই সেই খ্রীষ্ট, আর অনেক লোককে ভোলাবে।
\s5
\v 6 আর তোমরা যুদ্ধের কথা ও যুদ্ধের জনরব শুনবে, দেখো, অস্থির হয়োনা, কারণ এসব অবশ্যই ঘটবে, কিন্তু তখনও এর শেষ নয়।
\v 7 কারণ জাতির বিরুদ্ধে জাতি ও রাজ্যের বিরুদ্ধে রাজ্য উঠবে এবং জায়গায় জায়গায় দুর্ভিক্ষ ও ভূমিকম্প হবে।
\v 8 কিন্তু এই সবই যন্ত্রনা আরম্ভ মাত্র।
\s5
\v 9 সেই সময়ে লোকেরা কষ্ট দেবার জন্য তোমাদের সমর্পণ করবে, ও তোমাদের বধ করবে, আর আমার নামের জন্য সমস্ত জাতি তোমাদের ঘৃণা করবে।
\v 10 আর সেইসময় অনেকে বাধা পাবে, এক জন অন্যজনকে সমর্পণ করবে, একে অন্যকে ঘৃণা করবে।
\v 11 আর অনেক ভন্ড ভাববাদী আসবে এবং অনেককে ভোলাবে।
\s5
\v 12 আর পাপের বৃদ্ধি হওয়াতে অধিকাংশ লোকের প্রেম শীতল হয়ে যাবে।
\v 13 কিন্তু যে কেউ শেষ পর্য্যন্ত স্থির থাকবে, সে উদ্ধার পাবে।
\v 14 আবার সব জাতির কাছে সাক্ষ্য দাও য়ার জন্য রাজ্যের এই সুসমাচার সমস্ত জগতে প্রচার করা হবে, আর তখন শেষ সময় উপস্থিত হবে।
\s5
\v 15 অতএব যখন দেখবে, ধ্বংসের যে ঘৃণার্হ বস্তুর বিষয়ে দানিয়েল ভাববাদী বলেছেন, যা পবিত্র স্থানে দাঁড়িয়ে আছে, যে ব্যক্তি এই বিষয়ে পড়ে সে বুঝুক,
\v 16 তখন যারা যিহূদিয়াতে থাকে, তারা পাহাড়ি অঞ্চলে পালিয়ে যাক,
\v 17 যে কেউ ছাদের উপরে থাকে, সে ঘর থেকে জিনিসপত্র নাও য়ার জন্য নীচে না নামুক,
\v 18 আর যে কেউ ক্ষেতে থাকে, সে তার পোশাক নাও য়ার জন্য পেছনে ফিরে না যাক।
\s5
\v 19 হায়, সেই সময়ে গর্ভবতী এবং যাদের কোলে দুধের বাচ্চা তাদের খুবই কষ্ট হবে !
\v 20 আর প্রার্থনা কর, যেন তোমাদের শীতকালে কিম্বা বিশ্রামবারে পালাতে না হয় ।
\v 21 কারণ সেসময় এমন “মহাসংকট উপস্থিত হবে, যা জগতের আরম্ভ থেকে এ পর্য্যন্ত কখনও হয় নি, আর কখনও হবেও না।
\v 22 আর সেই দিনের সংখ্যা যদি কমিয়ে দাও য়া না হত, তবে কোন প্রাণীই রক্ষা পেত না, কিন্তু যারা মনোনীত তাদের জন্য সেই দিনের সংখ্যা কমিয়ে দাও য়া হবে।
\s5
\v 23 তখন যদি কেউ তোমাদের বলে, দেখ, সেই খ্রীষ্ট এখানে, কিম্বা ওখানে, তোমরা বিশ্বাস কর না।
\v 24 কেননা ভন্ড খ্রীষ্টেরা ও ভন্ড ভাববাদীরা উঠবে এবং এমন মহান মহান চিহ্ন ও আশ্চর্য্য আশ্চর্য্য কাজ দেখাবে যে, যদি হতে পারে, তবে মনোনীতদেরও ভোলাবে।
\v 25 দেখ, আমি আগেই তোমাদের বললাম।
\s5
\v 26 অতএব লোকে যদি তোমাদের বলে, ‘দেখ, তিনি মরুভূমিতে, তোমরা বাইরে যেও না, ‘দেখ, তিনি গোপন ঘরে, তোমরা বিশ্বাস করো না।
\v 27 কারণ বিদ্যুৎ যেমন পূর্বদিক থেকে বের হয়ে পশ্চিম দিক পর্য্যন্ত প্রকাশ পায়, তেমন ভাবেই মনুষ্যপুত্রের আগমনও হবে।
\v 28 যেখান মড়া থাকে সেইখানে শকুন জুটবে।
\s5
\v 29 আর সেই সময়ের সংকটের পরেই “সূর্য্য অন্ধকার হবে, চাঁদও জ্যোৎস্না দেবে না, আকাশ থেকে তারা খসে পড়বে ও আকাশমন্ডলের সমস্ত ক্ষমতা ।
\s5
\v 30 আর তখন মনুষ্যপুত্রের চিহ্ন আকাশে দেখা যাবে, আর তখন পৃথিবীর সমস্ত জাতি বিলাপ করবে এবং মনুষ্যপুত্রকে আকাশে মেঘরথে পরাক্রম ও মহা প্রতাপে আসতে দেখবে।
\v 31 আর তিনি মহা তূরীধ্বনির সঙ্গে তাঁর দূতকে পাঠাবেন, তাঁরা আকাশের এক সীমা থেকে আর এক সীমা পর্য্যন্ত, চার দিক থেকে তাঁর মনোনীতদের একত্রীত করবেন।
\s5
\v 32 ডুমুরগাছ থেকে শিক্ষা নাও, যখন তার ডালে কচি পাতা বের হয়, তখন তোমরা জানতে পার, গ্রীষ্মকাল এসে গেছে,
\v 33 তেমনি তোমরা ঐসব ঘটনা দেখলেই জানবে, তিনিও আসছেন, এমন কি, দরজার কাছে উপস্থিত।
\s5
\v 34 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই যুগের লোকদের লোপ হবে না, যে পর্য্যন্ত না এ সমস্ত কিছু পূর্ণ হয়।
\v 35 আকাশের ও পৃথিবীর লোপ হবে কিন্তু আমার বাক্যের লোপ কখনও হবে না।
\s5
\v 36 কিন্তু সেই দিনের ও সেই মুহূর্তের বিষয় কেউই জানে না, স্বর্গের দূতেরাও জানেন না, পুত্রও জানেন না, শুধু পিতা জানেন।
\s5
\v 37 যেমন নোহের সময়ে হয়েছিল, মনুষ্যপুত্রের আগমনও তেমন হবে।
\v 38 কারণ বন্যা আসার আগে থেকে, জাহাজে নোহের প্রবেশের দিন পর্য্যন্ত , লোকে যেমন খাওয়া-দাওয়া করত, বিয়ে করত, ও বিয়ে দিয়েছে ।
\v 39 এবং ততক্ষণ বুঝতে পারল না, যতক্ষণ না বন্যা এসে সবাইকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল, তেমন মনুষ্যপুত্রের আগমনের সময়েও হবে।
\s5
\v 40 তখন দুই জন ক্ষেতে থাকবে, এক জনকে নিয়ে নাও য়া হবে এবং অন্য জনকে ছেড়ে দাও য়া হবে।
\v 41 দুটো মহিলা যাঁতা পিষবে, এক জনকে নিয়ে যাওয়া হবে এবং অন্য জনকে ছেড়ে দাও য়া হবে।
\v 42 অতএব জেগে থাক, কারণ তোমাদের প্রভু কোন্ দিন আসবেন, তা তোমরা জান না।
\s5
\v 43 কিন্তু এটা জেনে রাখো, চোর কোন্ সময় আসবে, তা যদি বাড়ির মালিক জানত, তবে জেগে থাকত, নিজের বাড়িতে সিঁধ কাটতে দিত না।
\v 44 এইজন্য তোমরাও প্রস্তুত থাক, কারণ যে সময় তোমরা মনে করবে তিনি আসবেন না, সেই সময়ই মনুষ্যপুত্র আসবেন।"
\s5
\v 45 এখন, সেই বিশ্বস্ত ও বুদ্ধিমান দাস কে, যাকে তার প্রভু তাঁর পরিজনের উপরে নিযুক্ত করেছেন, যেন সে তাদের উপযুক্ত সময়ে খাবার দেয় ?
\v 46 ধন্য সেই দাস, যাকে তার প্রভু এসে তেমন করতে দেখবেন।
\v 47 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তিনি তাকে তাঁর সবকিছুর উপরে নিযুক্ত করবেন।
\s5
\v 48 কিন্তু সেই দুষ্টু দাস যদি মনে মনে বলে, ‘আমার প্রভুর আসা দেরি আছে,
\v 49 আর যদি তার সহদাসদের মারতে এবং মাতাল লোকদের সঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করতে, আরম্ভ করে,
\v 50 তবে যে দিন সে অপেক্ষা করবে না এবং যে মুহূর্তের আশা সে করবে না, সেই দিন ও সেই মুহূর্তে সেই দাসের প্রভু আসবেন,
\v 51 আর তাকে দুই খন্ড করে ভন্ডদের মধ্যে তার স্থান ঠিক করবেন, সে সেই জায়গায় কাঁদবে ও দাঁতে দাঁত ঘষবে।
\s5
\c 25
\s বিচার দিনের বিষয়ে উদাহরণ ও শিক্ষা।
\p
\v 1 তখন স্বর্গ-রাজ্য এমন দশটি কুমারীর মতো হবে, যারা নিজের নিজের প্রদীপ নিয়ে বরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বের হল।
\v 2 তাদের মধ্যে পাঁচ জন বোকা, আর পাঁচ জন বুদ্ধিমতী ছিল।
\v 3 কারণ যারা বোকা ছিল, তারা নিজের নিজের প্রদীপ নিল, কিন্তু সঙ্গে তেল নিল না,
\v 4 কিন্তু যারা বুদ্ধিমতী তারা তাদের প্রদীপের সঙ্গে পাত্রে তেলও নিল।
\s5
\v 5 আর বড় আসতে দেরি হওয়ায় সবাই ঢুলতে ঢুলতে ঘুমিয়ে পড়ল।
\v 6 পরে মাঝ রাতে এই আওয়াজ হল, দেখ, বর ! তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বের হও।
\s5
\v 7 তাতে সেই কুমারীরা সবাই উঠল এবং নিজের নিজের প্রদীপ সাজালো ।
\v 8 আর বোকা কুমারীরা বুদ্ধিমতিদের বলল, তোমাদের তেল থেকে আমাদেরকে কিছু দাও , কারণ আমাদের প্রদীপ নিভে যাচ্ছে।
\v 9 কিন্তু বুদ্ধিমতীরা বলল, হয় তো তোমাদের ও আমাদের জন্য এই তেলে কুলাবে না, তোমরা বরং বিক্রেতাদের কাছে গিয়ে তোমাদের জন্য তেল কিনে নাও।
\s5
\v 10 তারা তেল কিনতে যাচ্ছে, সেই সময় বর এলো েন এবং যারা তৈরী ছিল, তারা তাঁর সঙ্গে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করল,
\v 11 শেষে অন্য সমস্ত কুমারীরাও এলো ো এবং বলতে লাগল, প্রভু, প্রভু, আমাদেরকে দরজা খুলে দিন।
\v 12 কিন্তু তিনি বললেন, তোমাদের সত্যি বলছি, আমি তোমাদের চিনি না।
\v 13 অতএব জেগে থাক, কারণ তোমরা সেই দিন বা সেই মুহূর্ত জান না।
\s5
\v 14 এটা সেইরকম, মনে কর, যে কোন ব্যক্তি বিদেশে যাচ্ছেন, তিনি তাঁর দাসদেরকে ডেকে তাঁর সম্পত্তি তাদের হাতে সমর্পণ করলেন।
\v 15 তিনি এক জনকে পাঁচ তালন্ত, অন্য জনকে দুই তালন্ত এবং আর এক জনকে এক তালন্ত, যার যেমন শক্তি’ তাকে সেইভাবে দিলেন, পরে বিদেশে চলে গেলেন।
\v 16 যে পাঁচ তালন্ত পেয়েছিল, সে তখনই গেল, তা দিয়ে ব্যবসা করল এবং আরও পাঁচ তালন্ত লাভ করল।
\s5
\v 17 যে দুই তালন্ত পেয়েছিল, সেও তেমন করে আরও দুই তালন্ত লাভ করল।
\v 18 কিন্তু যে এক তালন্ত পেয়েছিল, সে গিয়ে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে তার প্রভুর টাকা লুকিয়ে রাখল।
\s5
\v 19 অনেকদিন পরে সেই দাসদের প্রভু এলো েন এবং তাদের কাছে হিসেব নিলেন।
\v 20 তখন যে পাঁচ তালন্ত পেয়েছিল, সে এসে আরও পাঁচ তালন্ত এনে বলল, "প্রভু, আপনি আমার কাছে পাঁচ তালন্ত দিয়েছিলেন, দেখুন, তা দিয়ে আমি আরও পাঁচ তালন্ত লাভ করেছি।"
\v 21 তার প্রভু তাকে বললেন, "বেশ, উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস, তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত হয়েছ, আমি তোমাকে অনেক বিষয়ের উপরে নিযুক্ত করব, তুমি তোমার প্রভুর আনন্দের সহভাগী হও।"
\s5
\v 22 পরে যে দুই তালন্ত পেয়েছিল, সেও এসে বলল, "প্রভু, আপনি আমার কাছে দুই তালন্ত দিয়েছিলেন, দেখুন, তা দিয়ে আমি আরও দুই তালন্ত লাভ করেছি।"
\v 23 তার প্রভু তাকে বললেন, "বেশ ! উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস, তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত হয়েছ, আমি তোমাকে অনেক বিষয়ের উপরে নিযুক্ত করব, তুমি তোমার প্রভুর আনন্দের সহভাগী হও।"
\s5
\v 24 পরে যে এক তালন্ত পেয়েছিল, সেও এসে বলল, "প্রভু, আমি জানতাম, আপনি খুবই কঠিন লোক, যেখানে বীজ রোপণ করেননি, সেখানে ফসল কেটে থাকেন ও যেখানে বীজ ছড়ান নি, সেখানে ফসল কুড়িয়ে থাকেন।"
\v 25 তাই আমি ভয়ে আপনার তালন্ত মাটির নিচে লুকিয়ে রেখেছিলাম, দেখুন, আপনার যা ছিল তাই আপনি পেলেন।"
\s5
\v 26 কিন্তু তার প্রভু উত্তর করে তাকে বললেন, "দুষ্টু অলস দাস, তুমি নাকি জানতে, আমি যেখানে বুনি না, সেখানে কাটি এবং যেখানে ছড়াই না, সেখানে কুড়াই ?
\v 27 তবে মহাজনদের হাতে আমার টাকা রেখে দাও য়া তোমার উচিত ছিল, তা করলে আমি এসে আমার যা তা সুদের সঙ্গে পেতাম।
\s5
\v 28 অতএব তোমরা এর কাছ থেকে ঐ তালন্ত নিয়ে নাও এবং যার দশ তালন্ত আছে, তাকে দাও ,
\v 29 কারণ যে ব্যক্তির কাছে আছে, তাকে দাও য়া হবে, তাতে তার আরো বেশী হবে, কিন্তু যার নেই, তার যা আছে, তাও তার কাছ থেকে নিয়ে নাও য়া হবে।
\v 30 আর তোমরা ঐ অনুপযোগী দাসকে বাইরের অন্ধকারে ফেলে দাও , সেই জায়গায় সে কাঁদবে ও দাঁতে দাঁত ঘষবে।"
\s5
\v 31 আর যখন মনুষ্যপুত্র সমস্ত দূতদের সঙ্গে নিয়ে নিজের গৌরবে আসবেন, তখন তিনি তাঁর প্রতাপের সিংহাসনে বসবেন।
\v 32 আর সমস্ত জাতি তাঁর সামনে জমায়েত হবে, পরে তিনি তাদের এক জন থেকে অন্য জনকে আলাদা করবেন, যেমন পালরক্ষক ছাগলের পাল থেকে ভেড়া আলাদা করে,
\v 33 আর তিনি ভেড়াদেরকে তাঁর ডানদিকে ও ছাগলদেরকে বাঁদিকে রাখবেন।
\s5
\v 34 তখন রাজা তাঁর ডানদিকের লোকদেরকে বলবেন, "এস, আমার পিতার আশীর্বাদের পাত্রেরা, জগত সৃষ্টির প্রথম থেকে যে রাজ্য তোমাদের জন্য তৈরী করা হয়েছে, তার অধিকারী হও।
\v 35 কারণ যখন আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তখন তোমরা আমাকে খাবার দিয়েছিলে, আর যখন আমি পিপাসিত ছিলাম, তখন আমাকে পান করিয়েছিলে, অতিথি হয়েছিলাম, আর আমাকে থাকার আশ্রয় দিয়েছিলে,
\v 36 বস্ত্রহীন হয়েছিলাম, আর আমাকে বস্ত্র পরিয়েছিলে, অসুস্থ হয়েছিলাম, আর আমার যত্ন নিয়েছিলে, জেলখানায় বন্দী ছিলাম, আর আমার কাছে এসেছিলে,"
\s5
\v 37 তখন ধার্মিকেরা তাঁকে বলবে, "প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, কিম্বা পিপাসিত দেখে পান করিয়েছিলাম ?
\v 38 কবেই বা আপনাকে অতিথিরূপে আশ্রয় দিয়েছিলাম, কিম্বা বস্ত্রহীন দেখে বস্ত্র পরিয়েছিলাম ?
\v 39 কবেই বা আপনাকে অসুস্থ, কিম্বা জেলখানায় আপনাকে দেখে আপনার কাছে গিয়ে ছিলাম ?"
\v 40 তখন রাজা এর উত্তরে তাদের বলবেন, "আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার এই ভাইদের, এই ক্ষুদ্রতমদের মধ্যে এক জনের প্রতি যখন এইসব করেছিলে, তখন আমারই প্রতি করেছিলে।"
\s5
\v 41 পরে তিনি বাঁদিকের লোকদেরকেও বলবেন, "তোমরা শাপগ্রস্থ সবাই, আমার কাছ থেকে দূর হও, দিয়াবলের ও তার দূতদের জন্য যে অনন্ত আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে যাও।
\v 42 কেননা আমি ক্ষুধার্ত হয়েছিলাম, আর তোমরা আমাকে খাবার দাও নি, পিপাসিত হয়েছিলাম, আর আমাকে পান করাও নি,
\v 43 অতিথি হয়েছিলাম, আর আমাকে আশ্রয় দাও নি, বস্ত্রহীন ছিলাম, আর আমাকে বস্ত্র পরাও নি, অসুস্থ ও জেলখানায় ছিলাম, আর আমার যত্ন কর নি।'
\s5
\v 44 তখন তারাও এর উত্তরে বলবে, "প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত, কি পিপাসিত, কি অতিথি, কি বস্ত্রহীন, কি অসুস্থ, কি জেলখানায় দেখে আপনার সেবা করি নি ?"
\v 45 তখন তিনি তাদের বলবেন, "আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা এই ক্ষুদ্রতমদের কোন এক জনের প্রতি যখন এইসব কর নি, তখন আমারই প্রতি কর নি।"
\v 46 পরে তারা সারাজীবনের জন্য শাস্তি পেতে, কিন্তু ধার্মিকেরা অনন্ত জীবনে প্রবেশ করবে।
\s5
\c 26
\s যীশুর শেষ দুঃখভোগ ও মৃত্যু।
\p
\v 1 তখন যীশু এই সমস্ত কথা শেষ করলেন এবং তিনি তাঁর শিষ্যদেরকে বললেন,
\v 2 "তোমরা জান, দুই দিন পরে নিস্তারপর্ব্ব আসছে, আর মনুষ্যপুত্র ক্রুশে বিদ্ধ হবার জন্য সমর্পিত হবেন।"
\s5
\v 3 তখন প্রধান যাজকেরা ও লোকদের প্রাচীনেরা কায়াফা মহাযাজকের বাড়ির প্রাঙ্গনে একত্র হল,
\v 4 আর এই ষড়যন্ত্র করল, যেন ছলে যীশুকে ধরে বধ করতে পারে।
\v 5 কিন্তু তারা বলল, "পর্ব্বের সময় নয়, যদি লোকদের মধ্যে গন্ডগোল বাধে।"
\s যীশুর অভিষেক।
\s5
\p
\v 6 যীশু তখন বৈথনিয়ায় কুষ্ঠরোগী শিমোনের বাড়িতে ছিলেন,
\v 7 তখন একটি মহিলা শ্বেত পাথরের পাত্রে খুব মূল্যবান সুগন্ধি তেল নিয়ে তাঁর কাছে এলো এবং তিনি খেতে বসলে তাঁর মাথায় সেই তেল ঢেলে দিল।
\v 8 কিন্তু এইসব দেখে শিষ্যেরা বিরক্ত হয়ে বললেন, "এ অপচয়ের কারণ কি ?
\v 9 এই তেল অনেক টাকায় বিক্রি করে তা দরিদ্রদেরকে দাও য়া যেত।"
\s5
\v 10 কিন্তু যীশু, এইসব বুঝতে পেরে তাঁদের বললেন, "এই মহিলাটিকে কেন দুঃখ দিচ্ছ ? এ তো আমার জন্য ভালো কাজ করল।
\v 11 কারণ দরিদ্ররা তোমাদের কাছে সবসময়ই আছে, কিন্তু তোমরা আমাকে সবসময় পাবে না।
\s5
\v 12 তাই আমার দেহের উপরে এই সুগন্ধি তেল ঢেলে দেওয়াতে এ আমার সমাধির উপযোগী কাজ করল।
\v 13 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, সমস্ত জগতে যে কোন জায়গায় এই সুসমাচার প্রচারিত হবে, সেই জায়গায় এর এই কাজের কথাও একে মনে রাখার জন্য বলা হবে।"
\s5
\v 14 তখন বারো জনের মধ্যে এক জন, যাকে ঈস্করিয়োতীয় যিহূদা বলা হয়, সে প্রধান যাজকদের কাছে গিয়ে বলল,
\v 15 "আমাকে কি দিতে চান, বলুন, আমি তাঁকে আপনাদের হাতে সমর্পণ করব।" তারা তাকে ত্রিশটা রুপোর খন্ড গুনে দিল।
\v 16 আর সেই সময় থেকে সে তাঁকে ধরিয়ে দাও য়ার জন্য সুযোগ খুঁজতে লাগল।
\s নিস্তারপর্ব্ব পালন ও প্রভুর ভোজ স্থাপন।
\s5
\p
\v 17 পরে তাড়ীশুন্য (খামির বিহীন) রুটি র পর্ব্বের প্রথম দিন শিষ্যেরা যীশুর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, "আপনার জন্য আমরা কোথায় নিস্তারপর্ব্বের ভোজ প্রস্তুত করব ? আপনার ইচ্ছা কি ?"
\v 18 তিনি বললেন, "তোমরা শহরের অমুক ব্যক্তির কাছে যাও, আর তাকে বল, গুরু বলছেন, আমার সময় সন্নিকট, আমি তোমারই বাড়িতে আমার শিষ্যদের সঙ্গে নিস্তারপর্ব্ব পালন করব।"
\v 19 তাতে শিষ্যেরা যীশুর আদেশ মতো কাজ করলেন, ও নিস্তারপর্ব্বের ভোজ প্রস্তুত করলেন।
\s5
\v 20 পরে সন্ধ্যা হলে তিনি সেই বারো জন শিষ্যের সঙ্গে খেতে বসলেন।
\v 21 আর তাঁদের খাওয়ার সময়ে বললেন, "আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমাদের মধ্যে এক জন আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে।"
\v 22 তখন তাঁরা অত্যন্ত দুঃখিত হলো এবং প্রত্যেক জন তাঁকে বলতে লাগলেন, "প্রভু, সে কি আমি ?"
\s5
\v 23 তিনি বললেন, "যে আমার সঙ্গে খাবারপাত্রে হাত ডুবাল, সেই আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে।"
\v 24 মনুষ্যপুত্রের বিষয়ে যেমন লেখা আছে, তেমনি তিনি যাবেন, কিন্তু ধিক্ সেই ব্যক্তিকে, যার মাধ্যমে মনুষ্যপুত্রকে ধরিয়ে দাও য়া হবে, সেই মানুষের জন্ম না হলেই তার পক্ষে ভাল ছিল।
\v 25 তখন যে তাঁকে ধরিয়ে দেবে, সেই যিহূদা বলল, "গুরু, সে কি আমি ?" তিনি বললেন, "তুমিই বললে।"
\s5
\v 26 পরে তাঁরা খাবার খাচ্ছেন, এমন সময়ে যীশু রুটি নিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে ভাঙ্গলেন এবং শিষ্যদেরকে দিলেন, আর বললেন, "নাও, খাও, এটা আমার শরীর।"
\s5
\v 27 পরে তিনি পানপত্র নিয়ে ধন্যবাদ দিয়ে তাঁদের দিয়ে বললেন, "তোমরা সবাই এর থেকে পান কর,
\v 28 কারণ এটা আমার রক্ত, নতুন নিয়মের রক্ত, যা অনেকের জন্য, পাপ ক্ষমার জন্য ঝরবে।"
\v 29 আর আমি তোমাদের বলছি, "এখন থেকে সেই দিন পর্য্যন্ত আমি এই আঙুরের রস পান করব না, যত দিন না আমি আমার পিতার রাজ্যে প্রবেশ করি ও তোমাদের সাথে নতুন আঙুরের রস পান করি ।"
\s5
\v 30 পরে তাঁরা একটা গান করে, জৈতুন পর্ব্বতে গেলেন।
\v 31 তখন যীশু তাঁদের বললেন, "এই রাতে তোমরা সবাই আমাতে বাধা পাবে ( অর্থাৎ তোমরা আমাকে ত্যাগ করবে)", কেননা লেখা আছে, "আমি পালরক্ষককে আঘাত করব, তাতে পালের মেষেরা ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে।"
\v 32 কিন্তু আমি মৃত্যু থেকে জীবিত হবার পরে আমি তোমাদের আগে গালীলে যাব।
\s5
\v 33 পিতর তাঁকে বললেন, "যদি সবাই আপনাকে ছেড়েও চলে যায়, আমি কখনও ছাড়বনা।"
\v 34 যীশু তাঁকে বললেন, "আমি তোমাকে সত্যি বলছি, এই রাতে মোরগ ডাকার আগে তুমি তিন বার আমাকে অস্বীকার করবে।"
\v 35 পিতর তাঁকে বললেন, "যদি আপনার সঙ্গে মরতেও হয়, তবু কোন মতেই আপনাকে অস্বীকার করব না।" সেইরকম সব শিষ্যই বললেন।
\s গেৎশিমানী বাগানে যীশুর মর্ম্মান্তিক দুঃখ।
\s5
\p
\v 36 তখন যীশু তাঁদের সঙ্গে গেৎশিমানী নামে এক জায়গায় গেলেন, আর তাঁর শিষ্যদেরকে বললেন, "আমি যতক্ষণ ওখানে গিয়ে প্রার্থনা করি, ততক্ষণ তোমরা এখানে বসে থাক।"
\v 37 পরে তিনি পিতরকে ও সিবদিয়ের দুই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন, আর দুঃখার্ত্ত ও ব্যাকুল হতে লাগলেন।
\v 38 তখন তিনি তাঁদের বললেন, "আমার প্রাণ মরণ পর্য্যন্ত দুঃখার্ত্ত হয়েছে, তোমরা এখানে থাক, আমার সঙ্গে জেগে থাক।"
\s5
\v 39 পরে তিনি একটু আগে গিয়ে উবুর হয়ে পড়ে প্রার্থনা করে বললেন, "হে আমার পিতা, যদি এটা সম্ভব হয়, তবে এই পানপাত্র আমার কাছে থেকে দূরে যাক, আমার ইচ্ছামত না হোক, কিন্তু তোমার ইচ্ছামত হোক।"
\v 40 পরে তিনি সেই শিষ্যদের কাছে গিয়ে দেখলেন, তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন, আর তিনি পিতরকে বললেন, "এ কি ? এক ঘন্টাও কি আমার সঙ্গে জেগে থাকতে তোমাদের শক্তি হল না ?"
\v 41 জেগে থাক ও প্রার্থনা কর, যেন পরীক্ষায় না পড়, আত্মা ইচ্ছুক, কিন্তু মাংস দুর্ব্বল।
\s5
\v 42 আবার তিনি দ্বিতীয়বার গিয়ে এই প্রার্থনা করলেন, "হে আমার পিতা, আমি পান না করলে যদি এই পানপাত্র দূরে যেতে না পারে, তবে তোমার ইচ্ছা পূর্ণ হোক।"
\v 43 পরে তিনি আবার এসে দেখলেন, তাঁরা ঘুমিয়ে পড়েছেন, কারণ তাঁদের চোখ ঘুমে ভারী হয়ে পড়েছিল।
\v 44 আর তিনি আবার তাঁদের ছেড়ে তৃতীয়বার আগের মতো কথা বলে প্রার্থনা করলেন।
\s5
\v 45 তখন তিনি শিষ্যদের কাছে এসে বললেন, "এখন তোমারা ঘুমিয়ে পর, বিশ্রাম কর, দেখ, সময় উপস্থিত, মনুষ্যপুত্র পাপীদের হাতে সমর্পিত হবেন।"
\v 46 উঠ, আমরা যাই, এই দেখ, যে ব্যক্তি আমাকে সমর্পণ করবে, সে কাছে এসেছে।
\s যীশু শত্রুদের হাতে সমর্পিত হন।
\s5
\p
\v 47 তিনি যখন কথা বলছিলেন, দেখ, যিহূদা, সেই বারো জনের এক জন, এলো এবং তার সঙ্গে অনেক লোক, তরোয়াল ও লাঠি নিয়ে প্রধান যাজকদের ও প্রাচীনদের কাছ থেকে এলো ।
\v 48 যে তাঁকে সমর্পণ করছিল, সে তাদের এই সঙ্কেত বলেছিল, "আমি যাকে চুমু দেব, তিনিই সেই ব্যক্তি, তোমরা তাকে ধরবে।"
\s5
\v 49 সে তখনই যীশুর কাছে গিয়ে বলল, "গুরু, নমস্কার, আর তাঁকে আগ্রহের সঙ্গে চুমু দিল।"
\v 50 যীশু তাকে বললেন, "বন্ধু, যা করতে এসেছ, তা কর।" তখন তারা কাছে এসে যীশুর উপরে হস্তক্ষেপ করল ও তাঁকে ধরল।
\s5
\v 51 আর দেখ, যীশুর সঙ্গীদের মধ্যে এক ব্যক্তি হাত বাড়িয়ে তরোয়াল বার করলেন এবং মহাযাজকের দাসকে আঘাত করে তার একটা কাণ কেটে ফেললেন।
\v 52 তখন যীশু তাঁকে বললেন, "তোমার তরোয়াল যেখানে ছিল সেখানে রাখ, কারণ যারা তরোয়াল ব্যবহার করে, তারা তরোয়াল দিয়েই ধ্বংস হবে।"
\v 53 আর তুমি কি মনে কর যে, যদি আমি আমার পিতার কাছে অনুরোধ করি তবে তিনি কি এখনই আমার জন্য বারোটা বাহিনীর থেকেও বেশী দূত পাঠিয়ে দেবেন না ?
\v 54 কিন্তু তা করলে কেমন করে শাস্ত্রের এই বাণীগুলি পূর্ণ হবে যে, এমন অবশ্যই হবে ?
\s5
\v 55 সেই সময়ে যীশু লোকদেরকে বললেন, "লোকে যেমন দস্যু ধরতে যায়, তেমনি কি তোমরা তরোয়াল ও লাঠি নিয়ে আমাকে ধরতে এসেছো ? আমি প্রতিদিন ঈশ্বরের মন্দিরে বসে উপদেশ দিয়েছি, তখন তো আমাকে ধরলে না।"
\v 56 কিন্তু এ সমস্ত ঘটল, যেন ভাববাদিদের লেখা ভাববাণীগুলি পূর্ণ হয়। তখন শিষ্যেরা সবাই তাঁকে ছেড়ে পালিয়ে গেলেন।
\s মহাযাজকের সামনে যীশুর বিচার।
\s5
\p
\v 57 আর যারা যীশুকে ধরেছিল, তারা তাঁকে মহাযাজক কায়াফার কাছে নিয়ে গেল, সেই জায়গায় ব্যবস্তার শিক্ষকেরা ও প্রাচীনেরা সমবেত হয়েছিল।
\v 58 আর পিতর দূরে থেকে তাঁর পিছনে পিছনে মহাযাজকের প্রাঙ্গণ পর্য্যন্ত গেলেন এবং শেষে কি হয়, তা দেখার জন্য ভিতরে গিয়ে পাহারাদারদের সঙ্গে বসলেন।
\s5
\v 59 তখন প্রধান যাজকরা এবং সমস্ত মহাসভা যীশুকে বধ করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রমাণ খুঁজতে লাগল,
\v 60 কিন্তু অনেক মিথ্যাসাক্ষী এসে যুটলেও, তারা কিছুই পেল না।
\v 61 অবশেষে দুইজন এসে বলল, "এই ব্যক্তি বলেছিল, আমি ঈশ্বরের মন্দির ভেঙ্গে, তা আবার তিন দিনের মধ্যে গেঁথে তুলতে পারি।"
\s5
\v 62 তখন মহাযাজক উঠে দাঁড়িয়ে তাঁকে বললেন, "তুমি কি কিছুই উত্তর দেবে না ? তোমার বিরুদ্ধে এরা কিসব বলছে ?"
\v 63 কিন্তু যীশু চুপ করে থাকলেন। মহাযাজক তাঁকে বললেন, "আমি তোমাকে জীবন্ত ঈশ্বরের নামে দিব্যি করছি, আমাদেরকে বল দেখি, তুমি কি সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র ?'
\v 64 যীশু এর উত্তরে বললেন, "তুমিই বললে, আরও আমি তোমাদের বলছি, এখন থেকে তোমরা মনুষ্যপুত্রকে পরাক্রমের (সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের) ডান পাশে বসে থাকতে এবং আকাশের মেঘরথে আসতে দেখবে।"
\s5
\v 65 তখন মহাযাজক তাঁর বস্ত্র ছিঁড়ে বললেন, "এ ঈশ্বর নিন্দা করল, আর প্রমাণে আমাদের কি প্রয়োজন ? দেখ, এখন তোমরা ঈশ্বর-নিন্দা শুনলে,
\v 66 তোমারা কি মনে কর ?" তারা বলল, "এ মৃত্যুর যোগ্য।"
\s5
\v 67 তখন তারা তাঁর মুখে থুথু দিল ও তাঁকে ঘুসি মারল,
\v 68 আর কেউ কেউ তাঁকে আঘাত করে বলল, "রে খ্রীষ্ট, আমাদের কাছে ভাববাণী বল্, কে তোকে মারল ?"
\s পিতর যীশুকে তিন বার অস্বীকার করেন।
\s5
\p
\v 69 এদিকে পিতর যখন বাইরে উঠোনে বসেছিলেন, তখন আর এক জন দাসী তাঁর কাছে এসে বলল, "তুমিও সেই গালীলীয় যীশুর সঙ্গে ছিলে।"
\v 70 কিন্তু তিনি সবার সামনে অস্বীকার করে বললেন, "তুমি কি বলছ আমি বুঝতে পারছি না।"
\s5
\v 71 তিনি দরজার কাছে গেলে আর এক দাসী তাঁকে দেখতে পেয়ে লোকদেরকে বলল, "এ ব্যক্তি সেই নাসরতীয় যীশুর সঙ্গে ছিল।"
\v 72 তিনি আবার অস্বীকার করলেন, দিব্যি করে বললেন, "আমি সে ব্যক্তিকে চিনি না।"
\s5
\v 73 আরও কিছুক্ষণ পরে, যারা কাছে দাঁড়িয়েছিল, তারা এসে পিতরকে বলল, "সত্যিই তুমিও তাদের এক জন, কারণ তোমার ভাষাই তোমার পরিচয় দিচ্ছে।"
\v 74 তখন তিনি অভিশাপের সঙ্গে শপথ করে বলতে লাগলেন, "আমি সে ব্যক্তিকে চিনি না।" তখনই মোরগ ডেকে উঠল।
\v 75 তাতে যীশু এই যে কথা বলেছিলেন, ‘মোরগ ডাকার আগে তুমি তিন বার আমাকে অস্বীকার করবে, তা পিতরের মনে পড়ল এবং তিনি বাইরে গিয়ে অত্যন্ত করুন ভাবে কাঁদলেন।
\s5
\c 27
\p
\v 1 সকাল হলে প্রধান যাজকেরা ও প্রাচীনেরা সবাই যীশুকে বধ করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল,
\v 2 আর তাঁকে বেঁধে নিয়ে গিয়ে দেশাধ্যক্ষ পীলাতের কাছে সমর্পণ করল।
\s ঈস্করিয়োতীয় যিহূদার আত্মহত্যা।
\s5
\p
\v 3 তখন যিহূদা, যে তাঁকে সমর্পণ করেছিল, সে যখন বুঝতে পারল যে, যীশুকে শাস্তি দাও য়া হয়েছে , তখন অনুশোচনা করে সেই ত্রিশটা রুপোর টাকা প্রধান যাজক ও প্রাচীনদের কাছে ফিরিয়ে দিল, আর বলল, "নির্দ্দোষ ব্যক্তির রক্তপাতের জন্য, তাঁকে তোমাদের হাতে তুলে দিয়ে আমি মহাপাপ করেছি।"
\v 4 তারা বলল, "আমাদের কি ? তা তুমি বুঝবে।"
\v 5 তখন সে ঐ সমস্ত টাকা মন্দিরের মধ্যে ফেলে দিয়ে চলে গেল এবং গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করল ।
\s5
\v 6 পরে প্রধান যাজকেরা সেই টাকাগুলো নিয়ে বলল, "এই টাকা ভান্ডারে রাখা উচিত না, কারণ এটা রক্তের মূল্য।"
\v 7 পরে তারা পরামর্শ করে বিদেশীদের কবর দাও য়ার জন্য ঐ টাকায় কুমরের জমি কিনল।
\v 8 এই জন্য আজও সেই জমিকে 'রক্তের জমি' বলা হয় ।
\s5
\v 9 তখন যিরমিয় ভাববাদী যে ভাববাণী বলেছিলেন তা পূর্ণ হল, "আর তারা সেই ত্রিশটা রুপোর টাকা নিল, এটা তাঁর মূল্য, যাঁর মূল্য ঠিক করা হয়েছিল, ইস্রায়েল- সন্তানদের মধ্য কিছু লোক যাঁর মূল্য ঠিক করেছিল,
\v 10 তারা সেগুলি নিয়ে কুমরের জমির জন্য দিল, যেমন প্রভু আমার প্রতি আদেশ করেছিলেন।"
\s শাসনকর্তার কাছে যীশুর বিচার।
\s5
\p
\v 11 ইতিমধ্যে যীশুকে শাসনকর্তার কাছে দাঁড় করান হল। শাসনকর্তা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, "তুমি কি যিহূদীদের রাজা ?" যীশু তাঁকে বললেন, "তুমিই বললে।"
\v 12 কিন্তু প্রধান যাজকেরা ও প্রাচীনেরা তাঁর উপরে মিথ্যা দোষ দিতে লাগল, তিনি সে বিষয়ে কোনো প্রতিবাদ করলেন না।
\v 13 তখন পীলাত তাঁকে বললেন, "তুমি কি শুনছ না, ওরা তোমার বিরুদ্ধে কত বিষয়ে সাক্ষ দিচ্ছে ?"
\v 14 তিনি তাঁকে একটি কথারও উত্তর দিলেন না, তাই দেখে শাসনকর্তা খুবই আশ্চর্য্য হলেন।
\s5
\v 15 আর শাসনকর্তার এই রীতি ছিল, পর্ব্বের সময়ে তিনি লোকদের জন্য এমন এক জন বন্দিকে মুক্ত করতেন, যাকে লোকেরা নির্বাচন করত।
\v 16 সেই সময়ে তাদের এক জন কুখ্যাত বন্দী ছিল, তার নাম বারাব্বা।
\s5
\v 17 তাই তারা একত্র হলে পীলাত তাদের বললেন, "তোমাদের ইচ্ছা কি, আমি তোমাদের জন্য কাকে মুক্ত করব ? বারাব্বাকে, না যীশুকে, যাকে খ্রীষ্ট বলে ?"
\v 18 কারণ তিনি জানতেন, তারা হিংসার জন্যই তাঁকে সমর্পণ করেছিল।
\v 19 তিনি বিচারাসনে বসে আছেন, এমন সময়ে তাঁর স্ত্রী তাঁকে বলে পাঠালেন, "সেই ধার্মিকের প্রতি তুমি কিছুই কোর না, কারণ আমি আজ স্বপ্নে তাঁর জন্য অনেক দুঃখ পেয়েছি।"
\s5
\v 20 আর প্রধান যাজকেরা ও প্রাচীনেরা লোকদেরকে বোঝাতে লাগল, যেন তারা বারাব্বাকে নির্বাচন করে ও যীশুকে মৃত্যুদন্ড দাও য়া হয়।
\v 21 তখন শাসনকর্তা তাদের বললেন, "তোমাদের ইচ্ছা কি ? সেই দুই জনের মধ্যে কাকে মুক্ত করব ?" তারা বলল, "বারাব্বাকে।"
\v 22 পীলাত তাদের বললেন, "তবে যীশু, যাকে খ্রীষ্ট বলে, তাকে কি করব ?" তারা সবাই বলল, "ওকে ক্রুশে দাও ।"
\s5
\v 23 তিনি বললেন, "কেন ? সে কি অপরাধ করেছে ?" কিন্তু তারা আরও চেঁচিয়ে বলল, "ওকে ক্রুশে দাও ।"
\v 24 পীলাত যখন দেখলেন যে, তাঁর চেষ্টা বিফল, বরং আরও গন্ডগোল বাড়ছে, তখন জল নিয়ে লোকদের সামনে হাত ধুয়ে বললেন, "এই ধার্মিক ব্যক্তির রক্তপাতের সম্বন্ধে আমি নির্দোষ, তোমারাই তা বুঝবে।"
\s5
\v 25 তাতে সমস্ত লোক এর উত্তরে বলল, "ওর রক্তের জন্য আমারা ও আমাদের সন্তানেরা দায়ী থাকব।"
\v 26 তখন তিনি তাদের জন্য বারাব্বাকে ছেড়ে দিলেন এবং যীশুকে কোড়া (চাবুক) মেরে ক্রুশে দাও য়ার জন্য সমর্পণ করলেন।
\s5
\v 27 তখন শাসনকর্তার সেনারা যীশুকে রাজবাড়িতে নিয়ে গিয়ে তাঁর কাছে সমস্ত সেনাদের একত্র করল।
\v 28 আর তারা তাঁর বস্ত্র খুলে নিয়ে তাঁকে একটি লাল পোশাক পরিয়ে দিল ।
\v 29 আর কাঁটার মুকুট গেঁথে তাঁর মাথায় সেটা পরিয়ে দিল ও তাঁর হাতে একটি লাঠি দিল, পরে তাঁর সামনে হাঁটু পেতে বসে, তাঁকে ঠাট্টা করে বলল, "যিহূদি-রাজ, নমস্কার !"
\s5
\v 30 আর তারা তাঁর গায়ে থুথু দিল ও সেই লাঠি নিয়ে, তাঁর মাথায় আঘাত করতে থাকলো।
\v 31 আর তাঁকে ঠাট্টা করার পর পোশাকটি খুলে নিল ও তারা আবার তাঁকে তাঁর নিজের পোশাক পরিয়ে দিল এবং তাঁকে ক্রুশে দাও য়ার জন্য নিয়ে গেল।
\s যীশুর ক্রুশারোপণ ও মৃত্যু।
\s5
\p
\v 32 আর যখন তারা বাইরে এলো, তারা শিমোন নামে একজন কুরীনীয় লোকের দেখা পেল, তারা তাকেই, তাঁর ক্রুশ বহন করার জন্য বাধ্য করল ।
\v 33 পরে গলগথা নামে একজায়গায়, অর্থাৎ যাকে 'মাথার খুলি' বলা হয়,
\v 34 সেখানে উপস্থিত হয়ে তারা তাঁকে পিত্তমিশ্রিত তেতো আঙ্গুরের রস পান করতে দিল, তিনি তা একটু পান করেই আর পান করতে চাইলেন না।
\s5
\v 35 পরে তারা তাঁকে ক্রুশে দিয়ে তাঁর পোশাক নিয়ে, গুটি চেলে ভাগ করে নিল,
\v 36 আর সেখানে বসে তাঁকে পাহারা দিতে লাগল।
\v 37 আর তারা তাঁর মাথার উপরে তাঁর বিরুদ্ধে এই দোষের কথা লিখে লাগিয়ে দিল, ‘এ ব্যক্তি যীশু, যিহূদীদের রাজা।’
\s5
\v 38 তখন দুইজন দস্যুকেও তাঁর সঙ্গে ক্রুশে বিদ্ধ করা হল, এক জন ডান পাশে আর একজন বাঁপাশে।
\v 39 তখন যারা সেই রাস্তা দিয়া যাতায়াত করছিল, তারা মাথা নেড়ে নেড়ে তাঁর নিন্দা করে বলল,
\v 40 "এইযে, তুমি না মন্দির ভেঙ্গে ফেল, আর তিন দিনের মধ্যে তা গাঁথবে ! নিজেকে বাঁচাও, যদি ঈশ্বরের পুত্র হও, ক্রুশ থেকে নেমে এস।"
\s5
\v 41 আর একইভাবে প্রধান যাজকেরা, ব্যবস্তার শিক্ষকেরা ও প্রচীনেরা একসঙ্গে ঠাট্টা করে বলল,
\v 42 "ঐ ব্যক্তি অন্য অন্য লোককে রক্ষা করত, আর নিজেকে রক্ষা করতে পারে না ও তো ইস্রায়েলের রাজা ! এখন ক্রুশ থেকে নেমে আসুক, তা হলে আমরা ওর উপরে বিশ্বাস করব,
\s5
\v 43 ও ঈশ্বরে ভরসা রাখে, এখন তিনি ওকে বাঁচান, যদি ওকে বাঁচাতে চান, কারণ ও তো বলেছে, আমি ঈশ্বরের পুত্র।"
\v 44 আর যে দুইজন দস্যু তাঁর সঙ্গে ক্রুশে বিদ্ধ হয়েছিল, তারাও তেমনভাবে তাঁকে ঠাট্টা করল।
\s5
\v 45 পরে বেলা বারোটা থেকে দুপুর তিনটে পর্য্যন্ত সমস্ত দেশ অন্ধকার হয়ে থাকল।
\v 46 আর দুপুর তিনটের সময় যীশু উঁচুস্বরে চীৎকার করে বললেন, "এলী এলী লামা শবক্তানী, অর্থাৎ ঈশ্বর আমার, ঈশ্বর আমার, তুমি কেন আমায় পরিত্যাগ করেছ ?"
\v 47 তাতে যারা সেখানে দাঁড়িয়েছিল, তাদের মধ্যে কেউ কেউ সেই কথা শুনে বলল, "এ ব্যক্তি এলিয়কে ডাকছে।"
\s5
\v 48 আর তাদের এক জন অমনি দৌড়ে গেল, একটি স্পঞ্জ নিয়ে সিরকায় ডুবিয়ে নিয়ে এলো ো এবং একটা লাঠিতে লাগিয়ে তাঁকে পান করতে দিল।
\v 49 কিন্তু অন্য সবাই বলল, "থাক্, দেখি, এলিয় ওকে রক্ষা করতে আসেন কি না।"
\v 50 পরে যীশু আবার উঁচুস্বরে চীৎকার করে নিজের আত্মাকে সমর্পণ করলেন।
\s5
\v 51 আর তখনি, মন্দিরের তিরস্করিনী (পর্দা) উপর থেকে নীচ পর্য্যন্ত চিরে দুভাগ হল, ভূমিকম্প হল ও পাথরের চাঁই ফেটে গেল,
\v 52 আর অনেক কবর খুলে গেল ও অনেক পবিত্র লোকের মৃত দেহ জীবিত হল,
\v 53 আর তাঁর পুনরুত্থানের পর তাঁরা কবর থেকে বের হয়ে পবিত্র শহরে প্রবেশ করলেন, আর অনেক লোককে তাঁরা দেখা দিলেন।
\s5
\v 54 শতপতি এবং যারা তাঁর সঙ্গে যীশুকে পাহারা দিচ্ছিল, তারা ভূমিকম্প ও আর যা যা ঘটছিল, তা দেখে খুবই ভয় পেয়ে বলল, "সত্যই, ইনি ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন।"
\v 55 আর সেখানে অনেক মহিলারা ছিলেন, তাঁরা দূর থেকে দেখছিলেন, তাঁরা যীশুর সেবা করতে করতে গালীল থেকে তাঁকে অনুসরণ করে এখানে এসেছিলেন।
\v 56 তাঁদের মধ্যে মগ্দলীনী মরিয়ম, যাকোবের ও যোষির মা মরিয়ম এবং সিবদিয়ের ছেলে যোহন ও যাকোবের মা ছিলেন।
\s যীশুর সমাধি।
\s5
\p
\v 57 পরে সন্ধ্যা হলে অরিমথিয়ার এক জন ধনী ব্যক্তি এলো েন, তাঁর নাম যোষেফ, তিনি নিজেও যীশুর শিষ্য হয়েছিলেন।
\v 58 তিনি পীলাতের কাছে গিয়ে যীশুর দেহ চাইলেন। তখন পীলাত তাঁকে তা নিয়ে যেতে আদেশ দিলেন।
\s5
\v 59 তাতে যোষেফ দেহটি নিয়ে পরিস্কার চাদরে জড়ালেন,
\v 60 এবং তাঁর নতুন কবরে রাখলেন, যেই কবর তিনি পাহাড় কেটে বানিয়ে ছিলেন, আর সেই কবরের মুখে একটি বড় পাথর গড়িয়ে দিয়ে চলে গেলেন।
\v 61 মগ্দলীনী মরিয়ম ও অন্য মরিয়ম সেখানে ছিলেন, তাঁরা কবরের সামনে বসে থাকলেন।
\s5
\v 62 পরেরদিন, অর্থাৎ আয়োজন-দিনের পরেরদিন, প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা পীলাতের কাছে একত্র হয়ে বলল,
\v 63 "আমাদের মনে আছে, সেই প্রতারক জীবিত থাকতে বলেছিল, তিন দিনের পরে আমি জীবিত হয়ে উঠব।
\v 64 অতএব তিনদিন পর্য্যন্ত তার কবর পাহারা দিতে আদেশ করুন, না হলে তার শিষ্যেরা এসে তাকে চুরি করে নিয়ে যাবে, আর লোকদেরকে বলবে, তিনি মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়েছেন, তা হলে প্রথম ছলনার থেকে শেষ ছলনায় আরও ক্ষতি হবে।"
\s5
\v 65 পীলাত তাদের বললেন, "তোমাদের কাছে পাহারাদারেরা আছে, তোমরা গিয়ে তা তোমাদের সাধ্যমত রক্ষা কর।"
\v 66 তাতে তারা গিয়ে পাহারাদারদের সঙ্গে সেই পাথরে মুদ্রাঙ্ক দিয়ে কবর রক্ষা করতে লাগল।
\s5
\c 28
\s কবর থেকে যীশু জীবিত হন ও শিষ্যদের প্রতি তাঁর শেষ আদেশ।
\p
\v 1 বিশ্রামবার শেষ হয়ে এলো ে, সপ্তাহের প্রথম দিনের সূর্য্য উদয়ের সময়, মগ্দলীনী মরিয়ম ও অন্য মরিয়ম কবর দেখতে এলো েন।
\v 2 আর দেখ, সেখানে মহা ভূমিকম্প হল, কারণ প্রভুর এক দূত স্বর্গ থেকে নেমে এসে সেই পাথরটা সরিয়ে দিলেন এবং তার উপরে বসলেন।
\s5
\v 3 তাঁকে দেখতে বিদ্যুতের মতো এবং তাঁর পোশাক তুষারের মতো সাদা।
\v 4 তাঁর ভয়ে পাহারাদাররা কাঁপতে লাগল ও আধমরা হয়ে পড়ল।
\s5
\v 5 সেই দূত সেই মহিলাদের বললেন, "তোমরা ভয় পেয়ো না, কারণ আমি জানি যে, তোমরা ক্রুশে হত যীশুর খোঁজ করছ।
\v 6 তিনি এখানে নেই, কারণ তিনি মৃত্যু থেকে জীবিত হয়েছেন, যেমন তিনি বলেছিলেন, এস, প্রভু যেখানে শুয়েছিলেন, সেই জায়গা দেখ।
\v 7 আর তাড়াতাড়ি গিয়ে তাঁর শিষ্যদেরকে বল যে, তিনি মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত হয়ে উঠেছেন এবং দেখ, তোমাদের আগে গালীলে যাচ্ছেন, সেখানে তাঁকে দেখতে পাবে, দেখ, আমি তোমাদের বললাম।"
\s5
\v 8 তখন তাঁরা সভয়ে ও মহা আনন্দে কবর থেকে ফিরে গিয়ে তাঁর শিষ্যদেরকে তাড়াতাড়ি সংবাদ দাও য়ার জন্য দৌড়ে গেলেন।
\v 9 আর দেখ, যীশু তাঁদের সামনে এলো েন, বললেন, "তোমাদের মঙ্গল হোক," তখন তাঁরা কাছে এসে তাঁর পা ধরলেন ও তাঁকে প্রণাম করলেন।
\v 10 তখন যীশু তাঁদের বললেন, "ভয় কোর না, তোমরা যাও, আমার ভাইদের সংবাদ দাও , যেন তারা গালীলে যায়, সেখানে তারা আমাকে দেখতে পাবে।"
\s5
\v 11 সেই মহিলারা যখন যাচ্ছিলেন, সেসময় পাহারাদারদের কেউ কেউ শহরে গিয়ে যা যা ঘটেছিল, সে সমস্ত ঘটনা প্রধান যাজকদেরকে জানাল।
\v 12 তখন তারা প্রাচীনদের সঙ্গে একজোট হয়ে পরামর্শ করল এবং ঐ সেনাদেরকে অনেক টাকা দিল,
\v 13 আর বলল, "তোমরা বলবে যে, তাঁর শিষ্যরা রাতে এসে, যখন আমরা ঘুমিয়েছিলাম, তখন তাঁকে চুরি করে নিয়েগেছে।"
\s5
\v 14 আর যদি এইকথা শাসনকর্তার কানে যায়, তখন আমরাই তাঁকে বুঝিয়ে তোমাদের ভাবনা দূর করব।
\v 15 তখন তারা সেই টাকা নিল এবং তাদের যেমন নির্দেশ দাও য়া হয়েছিল, তারা সেইরকম কাজ করল। আর যিহূদীদের মধ্যে সেই খবর ছড়িয়ে পড়ল, যা আজও তাদের মধ্যে প্রচলিত আছে ।
\s5
\v 16 পরে এগারো জন শিষ্য গালীলে যীশুর আদেশ অনুযায়ী সেই পর্ব্বতে গেলেন,
\v 17 আর তাঁরা তাঁকে দেখতে পেয়ে প্রণাম করলেন, কিন্তু কেউ কেউ সন্দেহ করলেন।
\s5
\v 18 তখন যীশু কাছে এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন, "স্বর্গে ও পৃথিবীতে সমস্ত ক্ষমতা আমাকে দাও য়া হয়েছে।
\v 19 অতএব তোমরা গিয়ে সমস্ত জাতিকে শিষ্য কর, পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাদের বাপ্তিস্ম দাও ,
\s5
\v 20 আমি তোমাদের যা যা আদেশ দিয়েছি, সে সমস্ত পালন করতে তাদের শিক্ষা দাও । আর দেখ, আমিই যুগের শেষ পর্য্যন্ত প্রতিদিন তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে আছি।"