\v 1 vশুরুতে বাক্য ছিলেন, এবং বাক্য ঈশ্বরের সঙ্গে ছিলেন, এবং বাক্যই ঈশ্বর ছিলেন।
\v 2 এই এক বাক্য শুরুতে ঈশ্বরের সাথে ছিলেন।
\v 3 সব কিছুই তাঁর মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে, যা হয়েছে, তার কোনো কিছুই তাঁকে ছাড়া সৃষ্টি হয়নি।
\s5
\v 4 তাঁর মধ্যে জীবন ছিল এবং সেই জীবন মানব জাতির আলো ছিল।
\v 5 সেই আলো অন্ধকারের মধ্যে দীপ্তি দিচ্ছে, আর অন্ধকার আলোকে জয় করতে পারল না।
\s5
\v 6 ঈশ্বর এক জন মানুষকে পাঠালেন তাঁর নাম ছিল যোহন।
\v 7 তিনি স্বাক্ষী হিসাবে এসেছিলেন সেই আলোর জন্য সাক্ষ্য দিতে, যেন সবাই তাঁর সাক্ষ্য শুনে বিশ্বাস করে।
\v 8 যোহন সেই আলো ছিলেন না, কিন্তু তিনি এসেছিলেন যেন সেই আলোর বিষয়ে তিনি সাক্ষ্য দিতে পারেন।
\s5
\v 9 তিনিই প্রকৃত আলো যিনি পৃথিবীতে আসছিলেন এবং যিনি সব মানুষকে আলোকিত করবেন।
\s5
\v 10 তিনি পৃথিবীর মধ্যে ছিলেন এবং পৃথিবী তাঁর দ্বারা সৃষ্টি হয়েছিল আর পৃথিবী তাঁকে চিনত না।
\v 11 তিনি তাঁর নিজের জায়গায় এসেছিলেন আর তাঁর নিজের লোকেরাই তাঁকে গ্রহণ করল না।
\s5
\v 12 কিন্তু যতজন মানুষ তাঁকে গ্রহণ করল, যারা তাঁর নামে বিশ্বাস করল, সেই সব মানুষকে তিনি ঈশ্বরের সন্তান হওয়ার অধিকার দিলেন,
\v 13 যাদের জন্ম রক্ত থেকে নয়, মাংসের ইচ্ছা থেকেও নয়, মানুষের ইচ্ছা থেকেও নয়, কিন্তু ঈশ্বরের ইচ্ছা থেকেই হয়েছে।
\s5
\v 14 এখন সেই বাক্য মাংসে পরিণত হলেন এবং আমাদের সাথে বসবাস করলেন। আমরা তাঁর মহিমা দেখেছি, যা পিতার কাছ থেকে আসা এক অনন্য মানুষের যে মহিমা, সেই, অনুগ্রহে ও সত্যে পূর্ণ মহিমা আমরা দেখেছি।
\v 15 যোহন তাঁর বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়ে চিত্কার করে বললেন, "ইনি সে জন যাঁর সম্বন্ধে আমি আগে বলেছিলাম, যিনি আমার পরে আসছেন, তিনি আমার থেকে অনেক মহান, কারণ তিনি আমার আগে ছিলেন।"
\s5
\v 16 কারণ তাঁর পূর্ণতা থেকে আমরা সবাই অনুগ্রহের উপর অনুগ্রহ পেয়েছি।
\v 17 কারণ ব্যবস্থা মোশির মাধ্যমে দেওয়া হয়েছিল আর অনুগ্রহ ও সত্য যীশু খ্রীষ্টর মাধ্যমে এসেছে।
\v 18 ঈশ্বরকে কেউ কখনও দেখে নি। সেই এক ও একমাত্র ব্যক্তি, যিনি নিজে ঈশ্বর, যিনি পিতার কোলে আছেন, তিনিই তাঁকে প্রকাশ করেছেন।
\v 19 এখন যোহনের সাক্ষ্য হল, - যখন যিহূদিরা কয়েক জন যাজক ও লেবীয়কে যিরূশালেম থেকে যোহনের কাছে এই কথা জিজ্ঞাসা করতে পাঠাল, ‘আপনি কে?’
\v 20 তিনি অস্বীকার না করে স্পষ্ট কথায় উত্তর দিলেন, "আমি সেই খ্রীষ্ট নই"।
\v 21 আর তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, "তবে আপনি কে? আপনি কি এলিয়?" তিনি বললেন, "আমি না।" তারা বলল, "আপনি কি ভবিষ্যৎ বক্তা?" তিনি উত্তরে বললেন, "না"
\s5
\v 22 তখন তারা তাঁকে বলল, "আপনি কে বলুন, যাতে, যাঁরা আমাদের পাঠিয়েছেন, তাঁদেরকে আমরা উত্তর দিতে পারি। আপনি আপনার নিজের বিষয়ে কি বলেন?"
\v 23 তিনি বললেন, "মরু অঞ্চলে এক জন চিত্কার করে ঘোষণা করছে, আমি হলাম তাঁর রব; যেমন যিশাইয় ভবিষ্যৎ বক্তা বলেছেন তোমরা প্রভুর পথ সোজা কর,” ।
\s5
\v 24 আর যাদেরকে যোহনের কাছে পাঠানো হয়েছিল তারা ছিল ফরীশী। তারা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো এবং বলল
\v 25 আপনি যদি সেই খ্রীষ্ট না হন, এলিয় না হন, সেই ভবিষ্যৎ বক্তাও না হন, তবে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছেন কেন?
\s5
\v 26 যোহন উত্তর দিয়ে তাদের বললেন, আমি জলে বপ্তিস্ম দিচ্ছি। কিন্তু তোমাদের মধ্যে এমন এক জন আছেন, যাঁকে তোমরা চেনো না।
\v 27 ইনি হলেন সেই যিনি আমার পরে আসছেন; আমি তাঁর জুতোর দড়ির বাঁধন খোলবার যোগ্যও নই।
\v 28 যর্দ্দন নদীর অপর পারে বৈথনিয়া গ্রামে যেখানে যোহন বাপ্তিস্ম দিচ্ছিলেন সেই জায়গায় এই সব ঘটনা ঘটেছিল।
\s5
\v 29 পরের দিন যোহন যীশুকে নিজের কাছে আসছে দেখে বললেন, ঐ দেখ ঈশ্বরের মেষ শাবক , যিনি পৃথিবীর সব পাপ নিয়ে যান।
\v 30 ইনিই সেই মানুষ, যাঁর সম্বন্ধে যে আমি আগে বলেছিলাম, আমার পরে এমন একজন মানুষ আসছেন, যিনি আমার থেকে মহান কেননা তিনি আমার আগে থেকেই ছিলেন।
\v 31 আর আমি তাঁকে চিনতাম না, কিন্তু তিনি যাতে ইস্রায়েলীয়দের কাছে প্রকাশিত হন, সেই জন্য আমি এসে জলে বাপ্তিষ্ম দিচ্ছি।
\s5
\v 32 আর যোহন সাক্ষ্য দিয়ে বললেন, আমি পবিত্র আত্মাকে পায়রার মতো স্বর্গ থেকে নেমে আসতে দেখেছি এবং তাঁর উপরে থাকতে দেখেছি ।
\v 33 আমি তাঁকে চিনতাম না, কিন্তু যিনি আমাকে জলে বাপ্তিস্ম দিতে পাঠিয়েছেন তিনিই আমাকে বললেন, তুমি যাঁর উপরে পবিত্র আত্মাকে নেমে এসে থাকতে দেখবে, তিনিই সেই মানুষ যিনি পবিত্র আত্মায় বাপ্তিস্ম দেন।
\v 34 আর আমি দেখেছি ও সাক্ষ্য দিয়েছি যে, ইনিই হলেন ঈশ্বরের পুত্র।
\v 35 পরের দিন আবার যেমন যোহন তাঁর দুই জন শিষ্যের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন;
\v 36 তখন যীশু হেঁটে যাচ্ছেন এমন সময় দেখতে পেয়ে যোহন বললেন ঐ দেখো ঈশ্বরের মেষশাবক।
\s5
\v 37 সেই দুই শিষ্য যোহনের কাছে এই কথা শুনে যীশুর পিছন পিছন চলতে লাগলেন।
\v 38 তখন যীশু পিছনের দিকে তাকিয়ে তাদেরকে তাঁর পিছন পিছন আসতে দেখে বললেন, তোমরা কি চাও? তাঁরা উত্তর দিয়ে বললেন, "রব্বি- (অনুবাদ করলে এর মানে হল গুরু)- আপনি কোথায় থাকেন?"
\v 39 যীশু তাঁদেরকে বললেন, "এসো এবং দেখো"। তিনি যে জায়গায় থাকতেন তখন তারা সেই জায়গায় গিয়ে দেখলেন এবং সেই দিন তাঁর সঙ্গে থাকলেন; তখন বেলা অনুমানে বিকাল চারটা।
\s5
\v 40 যোহনের কথা শুনে যে দুই জন যীশুর সঙ্গে চলে গিয়েছিল তাঁদের মধ্যে একজন ছিল শিমোন পিতরের ভাই আন্দ্রিয়।
\v 41 তিনি প্রথমে নিজের ভাই শিমোনকে খুঁজে পান এবং তাঁকে বলেন, "আমরা মশীহের দেখা পেয়েছি" - (অনুবাদ করলে যার মানে হয় খ্রীষ্ট)
\v 42 তিনি তাঁকে যীশুর কাছে আনলেন। যীশু তাঁর দিকে দেখলেন এবং বললেন, "তুমি যোহনের ছেলে শিমোন। তোমাকে কৈফা নামে ডাকা হবে" - (যার মানে হলো পিতর)
\s5
\v 43 পরের দিন যখন যীশু গালীলে যাওয়ার জন্য ঠিক করলেন, তিনি ফিলিপের খোঁজ পেলেন এবং তাঁকে বললেন, আমার সঙ্গে এসো।
\v 44 ফিলিপ ছিলেন বৈৎসৈদার লোক; আন্দ্রিয় ও পিতরও সেই একই শহরের লোক।
\v 45 ফিলিপ নথনলকে খুঁজে পেলেন এবং তাঁকে বললেন, মোশির আইন কানুনে ও ভবিষ্যৎ বক্তারা যাঁর কথা লিখেছিলেন, আমরা তাঁকে পেয়েছি; তিনি যোষেফের ছেলে নাসরতীয় যীশু।
\s5
\v 46 নথনেল তাঁকে বললেন, নাসরৎ থেকে কি ভালো কিছু আসতে পারে? ফিলিপ তাঁকে বললেন, এসো এবং দেখ।
\v 47 যীশু নথনেলকে নিজের কাছে আসতে দেখে তাঁর সমন্ধে বললেন, ঐ দেখ এক জন প্রকৃত ইস্রায়েলীয়, যার মনে কোনো ছলনা নেই।
\v 48 নথনেল তাঁকে বললেন, কেমন করে আপনি আমাকে চিনলেন? যীশু উত্তর দিয়ে তাঁকে বললেন, ফিলিপ তোমাকে ডাকবার আগে যখন তুমি সেই ডুমুর গাছের নিচে ছিলে তখন তোমাকে আমি দেখেছিলাম।
\s5
\v 49 নথনেল তাঁকে উত্তর করে বললেন, রব্বি, আপনিই হলেন ঈশ্বরের পুত্র, আপনিই হলেন ইস্রায়েলের রাজা।
\v 50 যীশু উত্তর দিয়ে তাঁকে বললেন, কারণ আমি তোমাকে বললাম, সেই ডুমুরগাছের নিচে আমি তোমাকে দেখেছিলাম এই কথা বলার জন্যই তুমি কি বিশ্বাস করলে? এর সব কিছুর থেকেও মহৎ কিছু দেখতে পাবে।
\v 51 যীশু বললেন, সত্য সত্য আমি তোমাদেরকে বলছি, তোমরা দেখবে স্বর্গ খুলে গেছে এবং ঈশ্বরের দূতেরা মনুষ্যপুত্রের উপর দিয়ে উঠছেন এবং নামছেন।
\v 1 তৃতীয় দিনে গালীলের কান্না শহরে এক বিয়ে ছিল এবং যীশুর মা সেখানে ছিলেন;
\v 2 আর সেই বিয়েতে যীশুর ও তাঁর শিষ্যদেরও নিমন্ত্রণ হয়েছিল।
\s5
\v 3 যখন আঙ্গুররস শেষ হয়ে গেল যীশুর মা তাঁকে বললেন, ওদের আঙ্গুররস নেই।
\v 4 যীশু তাঁর মাকে বললেন, হে নারি এই বিষয়ে তোমার সঙ্গে আমার কি কাজ আছে? আমার সময় এখনও আসেনি।
\v 5 তাঁর মা চাকরদের বললেন, ইনি তোমাদের যা কিছু করতে বলেন তাই কর।
\s5
\v 6 সেখানে যিহূদী ধর্মের নিয়ম অনুযায়ী শুচী করার জন্য পাথরের ছয়টি জালা বসান ছিল, তার এক একটিতে প্রায় তিন মণ করে জল ধরত।
\v 7 যীশু তাদেরকে বললেন "ঐ সব জালাগুলি জল দিয়ে ভর্তি কর"। সুতরাং তারা সেই পাত্রগুলি কাণায় কাণায় জলে ভর্তি করল।
\v 8 পরে তিনি সেই চাকরদের বললেন, এখন কিছুটা এখান থেকে তুলে নিয়ে ভোজন কর্তার কাছে নিয়ে যাও। তখন তারা তাই করলো।
\s5
\v 9 সেই আঙ্গুর রস যা জল থেকে করা হয়েছে, ভোজন কর্তা পান করে দেখলেন এবং তা কোথা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে তা জানতেন না (কিন্তু যে চাকরেরা জল তুলেছিল তারা জানতো) - তখন ভোজন কর্তা বরকে ডাকলেন
\v 10 এবং তাকে বললেন, সবাই প্রথমে ভালো আঙ্গুর রস পান করতে দেয় এবং পরে যখন সবার পান করা হয়ে যায় তখন প্রথমের থেকে একটু খারাপ আঙ্গুর রস পান করতে দেয়; কিন্তু তুমি ভালো আঙ্গুর রস এখন পর্যন্ত রেখেছ।
\s5
\v 11 এইভাবে যীশু গালীল দেশের কান্নাতে এই প্রথম চিহ্ন হিসাবে আশ্চর্য কাজ করে নিজের মহিমা প্রকাশ করলেন; তখন তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে বিশ্বাস করলেন।
\s5
\v 12 এইসব কিছুর পরে তিনি, তাঁর মা ও ভাইয়েরা এবং তাঁর শিষ্যরা কফরনাহূমে নেমে গেলেন এবং সেখানে কিছু দিন থাকলেন।
\v 13 যিহূদীদের নিস্তার পর্ব খুব কাছে তখন যীশু যিরূশালেমে গেলেন।
\v 14 পরে তিনি উপাসনা ঘরের মধ্যে দেখলেন যে লোকে গরু, মেষ ও পায়রা বিক্রি করছে, এবং টাকা বদল করার লোকও বসে আছে;
\s5
\v 15 তখন তিনি ঘাসের দড়ি দিয়ে একটা চাবুক তৈরী করলেন এবং সেইটি দিয়ে সব গরু, মেষ ও মানুষদেরকে উপাসনা ঘর থেকে বের করে দিলেন এবং টাকা বদল করার লোকদের টাকা তিনি ছড়িয়ে দিয়ে টেবিলগুলিও উল্টে দিলেন;
\v 16 তিনি পায়রা বিক্রেতাদের উদ্দেশ্যে বললেন, "এই জায়গা থেকে এই সব নিয়ে যাও; আমার পিতার বাড়িকে ব্যবসার ঘর করা বন্ধ করো।"
\s5
\v 17 তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল যে, পবিত্র শাস্ত্রে লেখা আছে, “তোমার ঘরের জন্য আমার একান্ত আশা আমাকে গ্রাস করবে।”
\v 18 তখন যিহূদীরা উত্তর দিয়ে যীশুকে বললেন , তুমি আমাদেরকে কি চিহ্ন দেখাবে যে এই সব কাজ তুমি করছ?
\v 19 যীশু উত্তর দিয়ে তাদেরকে বললেন, তোমরা এই মন্দির ভেঙ্গে ফেল, আমি তিন দিনের মধ্যে আবার সেটা উঠাব।
\s5
\v 20 তখন যিহূদীরা বলল, এই মন্দির তৈরী করতে ছেচল্লিশ বছর লেগেছে আর তুমি কি তিন দিনের মধ্যে সেটা ওঠাবে?
\v 21 যদিও ঈশ্বরের ঘর বলতে তিনি নিজের শরীরের কথা বলছিলেন।
\v 22 সুতরাং যখন তিনি মৃতদের মধ্য থেকে উঠলেন তখন তাঁর শিষ্যদের মনে পড়ল যে, তিনি এই কথা আগে বলেছিলেন এবং তাঁরা শাস্ত্রের কথায় এবং যীশুর বলা কথার উপর বিশ্বাস করলেন।
\s5
\v 23 তিনি যখন উদ্ধার পর্বের সময় যিরূশালেমে ছিলেন, তখন যে সব আশ্চর্য কাজ করেছিলেন, তা দেখে অনেকে তাঁর নামে বিশ্বাস করল।
\v 24 কিন্তু যীশু নিজে তাদের ওপরে নিজের সম্বন্ধে বিশ্বাস করলেন না, কারণ তিনি সবাইকে জানতেন,
\v 25 এবং কেউ যে মনুষ্য জাতির সমন্ধে সাক্ষ্য দেয়, এতে তার প্রয়োজন ছিল না; কেননা মনুষ্য জাতির অন্তরে কি আছে তা তিনি নিজে জানতেন।
\v 1 ফরীশীদের মধ্যে নীকদীম নামে একজন মানুষ ছিলেন; তিনি যিহূদীদের একজন নেতা।
\v 2 এই মানুষটি রাত্রিতে যীশুর কাছে এসে তাঁকে বললেন , রব্বি, আমরা জানি যে আপনি একজন গুরু এবং ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন; কারণ আপনি এই যে সব আশ্চর্য কাজ করছেন তা ঈশ্বর সঙ্গে না থাকলে কেউ করতে পারে না ।
\s5
\v 3 যীশু উত্তর দিয়ে তাকে বললেন, সত্য সত্যই আমি তোমাকে বলছি কারুর নতুন জন্ম না হলে সে ঈশ্বরের রাজ্য দেখতে পারে না।
\v 4 নীকদীম তাঁকে বললেন, মানুষ যখন বুড়ো হয় তখন কেমন করে তার আবার জন্ম হতে পারে? সে তো আবার মায়ের গর্ভে ফিরে গিয়ে দ্বিতীয় বার জন্ম নিতে পারে না, সে কি তা পারে?
\s5
\v 5 যীশু উত্তর দিলেন, সত্যিই বলছি যদি কেউ জল এবং আত্মা থেকে না জন্ম নেয় তবে সে ঈশ্বরের রাজ্যে ঢুকতে পারে না।
\v 6 যা মাংস থেকে জন্ম নেয় তা মাংসই এবং যা আত্মা থেকে জন্ম নেয় তা আত্মাই।
\s5
\v 7 তোমাদের অবশ্যই নতুন জন্ম হতে হবে এই কথা আমি বললাম বলে তোমরা বিষ্মিত হয়ো না।
\v 8 বাতাস যে দিকে ইচ্ছা করে সেই দিকে বয়ে চলে। তুমি শুধু তার শব্দ শুনতে পাও কিন্তু কোন দিক থেকে আসে অথবা কোন দিকে চলে যায় তা জান না; আত্মা থেকে যারা জন্ম নেয় প্রত্যেক জন সেইরকম।
\s5
\v 9 নীকদীম উত্তর করে তাঁকে বললেন, এ সব কেমন ভাবে হতে পারে?
\v 10 যীশু তাঁকে উত্তর দিয়ে বললেন, তুমি একজন ইস্রায়েলের গুরু, আর তুমি এখনো এ সব বুঝতে পারছ না?
\v 11 সত্য, সত্যই, আমরা যা জানি তাই বলছি এবং যা দেখেছি তারই সাক্ষ্য দিই। আর তোমরা আমাদের সাক্ষ্য গ্রাহ্য কর না।
\s5
\v 12 আমি যদি জাগতিক বিষয়ে তোমাদের বলি এবং তোমরা বিশ্বাস না কর, তবে যদি স্বর্গের বিষয়ে বলি তোমরা কেমন করে বিশ্বাস করবে?
\v 13 আর স্বর্গে কেউ ওঠে নি শুধু মাত্র যিনি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছিলেন তিনি ছাড়া, আর তিনি হলেন মনুষ্যপুত্র।
\s5
\v 14 আর মোশি যেমন মরু অঞ্চলে সেই সাপকে উঁচুতে তুলেছিলেন, ঠিক তেমনি মনুষ্যপুত্রকেও উঁচুতে অবশ্যই তুলতে হবে,
\v 15 সুতরাং যারা সবাই তাঁতে বিশ্বাস করবে তারা অনন্ত জীবন পাবে।
\s5
\v 16 কারণ ঈশ্বর জগৎকে এত ভালোবাসলেন যে, নিজের একমাত্র পুত্রকে দান করলেন, যেন যে কেউ তাঁতে বিশ্বাস করে সে বিনষ্ট না হয় কিন্তু অনন্ত জীবন পায়।
\v 17 কারণ ঈশ্বর জগতকে দোষী প্রমাণ করতে পুত্রকে জগতে পাঠান নি কিন্তু জগৎ যেন তাঁর মাধ্যমে পরিত্রান পায়।
\v 18 যে তাঁতে বিশ্বাস করে তাকে দোষী করা হয় না। যে বিশ্বাস না করে তাকে দোষী বলে আগেই ঠিক করা হয়েছে কারণ সে ঈশ্বরের একমাত্র পুত্রের নামে বিশ্বাস করে নি।
\s5
\v 19 বিচারের কারণ হলো এই যে, পৃথিবীতে আলো এসেছে এবং মানুষেরা আলো থেকে অন্ধকার বেশী ভাল বেসেছে, কারণ তাদের কর্মগুলি ছিল খারাপ।
\v 20 কারণ যারা খারাপ কাজ করে তারা আলোকে ঘৃণা করে, এবং তাদের সব কর্ম্মের দোষ যাতে প্রকাশ না হয় তার জন্য তারা আলোর কাছে আসে না।
\v 21 যদিও, যে সত্য কাজ করে সে আলোর কাছে আসে, যেন তার সব কাজ ঈশ্বরের ইচ্ছা মত করা হয়েছে বলে প্রকাশ পায়।
\v 22 তারপরে যীশু এবং তাঁর শিষ্যরা যিহূদিয়া দেশে গেলেন, আর তিনি সেখানে তাঁদের সঙ্গে থাকলেন এবং বাপ্তিষ্ম দিতে লাগলেন ।
\v 23 আর যোহনও শালীম দেশের কাছে ঐনোন নামে একটি জায়গায় বাপ্তিষ্ম দিচ্ছিলেন, কারণ সেই জায়গায় অনেক জল ছিল। আর মানুষেরা তাঁর কাছে আসতো এবং বাপ্তিষ্ম নিত।
\v 24 কারণ তখনও যোহনকে জেল খানায় পাঠানো হয় নি।
\s5
\v 25 তখন একজন যিহূদীর সঙ্গে শুচী হওয়ার বিষয় নিয়ে যোহনের শিষ্যদের তর্কবিতর্ক হল।
\v 26 তারা যোহনের কাছে গিয়ে তাঁকে বলল রব্বি, যিনি যর্দ্দনের অপর পারে আপনার সঙ্গে ছিলেন এবং যাঁর সমন্ধে আপনি সাক্ষ্য দিয়েছিলেন, দেখুন তিনি বাপ্তিষ্ম দিচ্ছেন এবং সবাই তাঁর কাছে যাচ্ছে।
\s5
\v 27 যোহন উত্তর দিয়ে বললেন, স্বর্গ থেকে যতক্ষণ না মানুষকে কিছু দেওয়া হয়েছে ততক্ষণ তা ছাড়া সে আর কিছুই পেতে পারে না।
\v 28 তোমরা নিজেরাই আমার সাক্ষী যে, আমি বলেছি আমি সেই খ্রীষ্ট নই, কিন্তু আমি বলেছি তাঁর আগে আমাকে পাঠানো হয়েছে।
\s5
\v 29 যে কেউ কন্যাকে পায় সেই বর; কিন্তু বরের বন্ধু যে দাঁড়িয়ে বরের কথা শুনে, সে তাঁর গলার আওয়াজ শুনে খুব আনন্দিত হয়; ঠিক সেই ভাবে আমার এই আনন্দ পূর্ণ হল।
\v 30 তিনি অবশ্যই বেড়ে উঠবেন, কিন্তু আমাকে সরে যেতে হবে।
\s5
\v 31 যিনি উপর থেকে আসেন, তিনি সব কিছুর প্রধান; যে পৃথিবী থেকে আসেন সে পৃথিবীর এবং সে পৃথিবীর কথাই বলে; যিনি স্বর্গ থেকে আসেন, তিনি সব কিছুর প্রধান।
\v 32 তিনি যা কিছু দেখেছেন ও শুনেছেন, তারই সাক্ষ্য দিচ্ছেন, আর তাঁর সাক্ষ্য কেউ গ্রহণ করে না।
\v 33 যে তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণ করেছে, সে নিশ্চিত করেছে যে ঈশ্বর সত্য।
\s5
\v 34 কারণ ঈশ্বর যাঁকে পাঠিয়েছেন তিনি ঈশ্বরের বাক্য বলেন; কারণ ঈশ্বর আত্মা মেপে দেন না।
\v 35 পিতা পুত্রকে ভালো বাসেন এবং সব কিছুই তাঁর হাতে দিয়েছেন।
\v 36 যে কেউ পুত্রের ওপর বিশ্বাস করেছে, সে অনন্ত জীবন পেয়েছে; কিন্তু যে কেউ পুত্রকে না মেনে চলে সে জীবন দেখতে পাবে না কিন্তু ঈশ্বরের ক্রোধ তার উপরে থাকবে।
\v 1 প্রভু যখন জানতে পারলেন যে, ফরীশীরা শুনেছে, যীশু যোহন অপেক্ষা অনেক বেশী শিষ্য করেন এবং বাপ্তিষ্ম দেন
\v 2 যীশু নিজে বাপ্তিষ্ম দিতেন না কিন্তু তাঁর শিষ্যরাই দিতেন,
\v 3 তখন তিনি যিহূদিয়া ছাড়লেন এবং আবার গালীলে চলে গেলেন।
\s5
\v 4 আর গালীলে যাবার সময় শমরিয়ার মধ্য দিয়া তাঁকে যেতে হল।
\v 5 তখন তিনি শুখর নামক শমরিয়ার এক শহরের কাছে আসলেন; যাকোব তাঁর পুত্র যোষেফকে যে জমি দান করেছিলেন এই শহর তার কাছে।
\s5
\v 6 আর সেই জায়গায় যাকোবের কূপ ছিল। তখন যীশু হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়লে সেই কূপের পাশে বসলেন। তখন অনুমানে দুপুর বেলা ছিল।
\v 7 শমরিয়ার একজন স্ত্রীলোক জল তুলতে এসে ছিলেন, এবং যীশু তাকে বললেন, "আমাকে পান করবার জন্য একটু জল দাও"।
\v 8 কারণ তাঁর শিষ্যেরা খাবার কেনার জন্য শহরে গিয়েছিলেন।
\s5
\v 9 তখন শমরীয় স্ত্রীলোকটী তাঁকে বললেন, আপনি যিহূদী হয়ে কেমন করে আমার কাছে পান করবার জন্য জল চাইছেন? আমি ত একজন শমরীয় স্ত্রীলোক।- কারণ শমরীয়দের সঙ্গে যিহূদীদের কোনো আদান প্রদান নেই।
\v 10 -যীশু উত্তরে তাকে বললেন, তুমি যদি জানতে, ঈশ্বরের দান কি, আর কে তোমাকে বলছেন, ‘আমাকে পান করবার জল দাও,’ তবে তাঁরই কাছে তুমি চাইতে এবং তিনি হয়তো তোমাকে জীবনদায়ী জল দিতেন।
\s5
\v 11 স্ত্রীলোকটী তাঁকে বলল, মহাশয়, জল তোলার জন্য আপনার কাছে বালতি নেই এবং কূপটীও গভীর; তবে সেই জীবন জল আপনি কোথা থেকে পেলেন?
\v 12 আমাদের পিতৃপুরুষ যাকোব থেকে কি আপনি মহান? যিনি আমাদেরকে এই কূপ দিয়েছেন, আর এই কুপের জল তিনি নিজে ও তাঁর পুত্রেরা পান করতেন ও তার পশুর পালও পান করত।
\s5
\v 13 যীশু উত্তর দিয়ে তাকে বললেন, যে কেউ এই জল পান করে, তার আবার পিপাসা পাবে;
\v 14 কিন্তু আমি যে জল দেব তা যে কেউ পান করবে তার আর কখনও পিপাসা পাবে না; বরং আমি তাকে যে জল দেব তা তার অন্তরে এমন জলের ফোয়ারার মত হবে যা অনন্ত জীবন পর্যন্ত উথলিয়ে উঠবে।
\s5
\v 15 স্ত্রীলোকটী তাঁকে বলল, মহাশয়, সেই জল আমাকে দিন যেন আমার পিপাসা না পায় এবং জল তোলার জন্য এখানে না আসতে হয়।
\v 16 যীশু তাকে বললেন, যাও আর তোমার স্বামীকে এখানে ডেকে নিয়ে এসো।
\s5
\v 17 স্ত্রীলোকটী উত্তরে তাঁকে বললেন, আমার স্বামী নেই। যীশু তাকে উত্তরে বললেন, তুমি ভালই বলেছ যে, আমার স্বামী নেই;
\v 18 কারণ তোমার পাঁচটী স্বামী ছিল এবং এখন তোমার সঙ্গে যে আছে সে তোমার স্বামী নয়; এটা ঠিক কথা বলেছ।
\s5
\v 19 স্ত্রীলোকটী তাঁকে বলল, মহাশয়, আমি দেখছি যে আপনি একজন ভবিষ্যত বক্তা।
\v 20 আমাদের পূর্ব পুরুষেরা এই পর্বতের উপর উপাসনা করতেন কিন্তু আপনারা বলে থাকেন যে, যিরূশালেমই হলো সেই জায়গা যে জায়গায় মানুষের উপাসনা করা উচিত।
\s5
\v 21 যীশু তাকে উত্তর দিয়ে বললেন, হে নারী, আমাকে বিশ্বাস কর; একটা সময় আসছে যখন তোমরা না এই পর্ব্বতে না যিরূশালেমে পিতার উপাসনা করবে।
\v 22 তোমরা যাকে জান না তাকে উপাসনা করছ; আমরা যাকে জানি তারই উপাসনা করি, কারণ যিহূদীদের মধ্য থেকেই পরিত্রাণ আসবে।
\s5
\v 23 যদিও এমন সময় আসছে বরং এখনই সেই সময়, যখন প্রকৃত উপাসনাকারীরা আত্মায় ও সত্যে পিতার উপাসনা করবে; কারণ বাস্তবিক পিতা এইরকম উপাসনাকারী কে খোঁজ করেন।
\v 24 ঈশ্বর আত্মা; এবং যারা তাঁকে উপাসনা করে, তাদেরকে আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করতে হবে।
\s5
\v 25 স্ত্রীলোকটী তাঁকে বলল, আমি জানি যে মশীহ আসছেন, যাঁকে খ্রীষ্ট বলে, - তিনি যখন আসবেন তখন আমাদেরকে সব কিছু জানাবেন।
\v 26 যীশু তাকে বললেন, আমি, যে তোমার সঙ্গে কথা বলছি, আমিই সেই।
\s5
\v 27 ঠিক সেই সময়ে তাঁর শিষ্যরা ফিরে আসলেন। আর তারা আশ্চর্য্য হলেন যে তিনি কেন একটি স্ত্রীলোকের সঙ্গে কথা বলছেন, তখনও কেউ বলেন নি, আপনি কি চান? অথবা কি জন্য তার সঙ্গে কথা বলছেন?
\s5
\v 28 তখন সেই স্ত্রীলোকটী নিজের কলসী ফেলে রেখে শহরে ফিরে গেল এবং লোকদের বলল,
\v 29 এস, দেখো একজন মানুষ আমি যা কিছু আজ পর্য্যন্ত করেছি তিনি সব কিছুই আমাকে বলে দিলেন; তিনি কি সেই খ্রীষ্ট নন?
\v 30 তারা শহর থেকে বের হয়ে তাঁর কাছে আসলেন।
\s5
\v 31 এরমধ্যে শিষ্যরা তাঁকে আবেদন করে বললেন, রব্বি, কিছু খেয়ে নিন।
\v 32 কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, আমার কাছে খাবার জন্য খাদ্য আছে যার সম্পর্কে তোমরা জান না।
\v 33 সেই জন্য শিষ্যেরা একে অপরকে বলতে লাগলেন, কেউ কি ওনার খাবার জন্য কিছু খাদ্য এনে দিয়েছে?
\s5
\v 34 যীশু তাঁদের বললেন, আমার খাদ্য এই যে যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন যেন তাঁর ইচ্ছা পালন করি এবং তাঁর কাজ শেষ করি।
\v 35 তোমরা কি বল না, "আর চার মাস বাকি তার পরে শস্য কাটবার সময় হবে? আমি তোমাদেরকে বলছি, চোখ তুলে শস্য ক্ষেতের দিকে তাকাও, শস্য পেকে গেছে, কাটার সময় হয়েছে।"
\v 36 যে ফসল কাটে সে বেতন পায় এবং অনন্ত জীবনের জন্য শস্য জড়ো করে রাখে; সুতরাং যে বীজ বোনে ও যে ফসল কাটে সবাই এক সঙ্গে আনন্দ করে।
\s5
\v 37 কারণ এই কথা সত্য যে, এক জন বোনে অন্য এক জন কাটে।
\v 38 আমি তোমাদের ফসল কাটতে পাঠালাম, যার জন্য তোমরা কোনো কাজ কর নি; অন্য লোক পরিশ্রম করেছে এবং তোমরা তাদের পরিশ্রম করা ক্ষেতে ঢুকেছ ।
\s5
\v 39 সেই শহরের শমরীয়েরা অনেকে তাঁতে বিশ্বাস করল কারণ সেই স্ত্রীলোকটী সাক্ষ্য দিয়েছিল যে, আমি যা কিছু আজ পর্য্যন্ত করেছি তিনি আমাকে সব কিছুই বলে দিয়েছেন।
\v 40 সুতরাং সেই শমরীয়েরা যখন তাঁর কাছে আসল, তারা তখন তাঁকে অনুরোধ করল যেন তিনি তাদের সঙ্গে থাকেন এবং তাতে তিনি দুই দিন সেখানে ছিলেন।
\s5
\v 41 এবং আরও অনেক লোক তাঁর কথা শুনে বিশ্বাস করল;
\v 42 তারা সেই স্ত্রীলোককে বলতে লাগল, আমরা যে বিশ্বাস করছি সে শুধুমাত্র তোমার কথা শুনে নয়, কারণ আমরা নিজেরা শুনেছি ও এখন জানতে পেরেছি যে, ইনি হলেন প্রকৃতপক্ষে পৃথিবীর মানুষের ত্রাণকর্তা ।
\s5
\v 43 সেই দুই দিনের পর তিনি সেখান থেকে বেরিয়ে গালীলে যাবার জন্য রওনা দিলেন।
\v 44 কারণ যীশু নিজে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন যে, ভবিষৎ বক্তা তাঁর নিজের দেশে সন্মান পান না।
\v 45 যখন তিনি গালীলে আসলেন তখন গালীলীয়েরা তাঁকে সাদরে গ্রহণ করেছিল, যিরূশালেমে পর্বের সময়ে তিনি যা কিছু করেছিলেন, সে সব তারা দেখেছিল; কারণ তারাও সেই পর্ব্বে গিয়েছিল।
\v 46 পরে তিনি আবার গালীলের সেই কান্না শহরে আসলেন, যেখানে তিনি জলকে আঙ্গুর রস বানিয়েছিলেন। সেখানে এক জন রাজকর্মী ছিলেন যাঁর ছেলে কফরনাহূমে অসুস্থ ছিল।
\v 47 যখন তিনি শুনলেন যীশু যিহূদিয়া থেকে গালীলে এসেছেন তিনি তাঁর কাছে গেলেন, এবং অনুরোধ করলেন যেন তিনি আসেন এবং তাঁর ছেলেকে সুস্থ করেন যে প্রায় মরে যাবার মত হয়েছিল।
\s5
\v 48 তখন যীশু তাঁকে বললেন, চিহ্ন এবং বিষ্ময়জনক কাজ যতক্ষণ না দেখ, তোমরা বিশ্বাস করবে না।
\v 49 সেই রাজকর্মী তাঁকে বললেন, হে প্রভু আমার ছেলেটা মরার আগে আসুন।
\v 50 যীশু তাঁকে বললেন যাও, তোমার ছেলে বেঁচে গেছে। সেই লোকটিকে যীশু যে কথা বললেন তিনি তা বিশ্বাস করলেন এবং তাঁর নিজের রাস্তায় চলে গেলেন।
\s5
\v 51 যখন তিনি যাচ্ছিলেন, সেই সময়ে তাঁর চাকরেরা তাঁর কাছে এসে বলল আপনার ছেলেটি বেঁচে গেছে।
\v 52 তখন তিনি তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করলেন কোন্ সময় তার সুস্থ হওয়া শুরু হয়েছিল? তারা তাঁকে বলল, কাল সপ্তম ঘন্টার সময়ে তার জ্বর ছেড়ে গিয়েছে।
\s5
\v 53 তখন পিতা বুঝতে পারলেন, যীশু সেই ঘন্টাতেই তাঁকে বলেছিলেন, তোমার ছেলে বেঁচে গেছে; সুতরাং তিনি নিজে ও তাঁর পরিবারের সবাই বিশ্বাস করলেন।
\v 54 যিহূদিয়া থেকে গালীলে আসবার পর যীশু আবার এই দ্বিতীয় বার আশ্চর্য কাজ করলেন।
\v 1 এর পরে যিহূদীদের একটি উত্সব ছিল এবং যীশু যিরূশালেমে গিয়েছিলেন।
\v 2 যিরূশালেমে মেষ-ফটকের কাছে একটী পুকুর আছে, ইব্রীয় ভাষায় সেই পুকুরের নাম বৈথেসদা , তার পাঁচটা ছাদ দেওয়া ঘাট আছে ।
\v 3 সেই সব ঘাটে অনেকে যারা অসুস্থ মানুষ, অন্ধ, খঞ্জ ও যাদের শরীর শুকিয়ে গেছে তারা পড়ে থাকত।
\v 4 [তারা জলকম্পনের অপেক্ষায় থাকত। কারণ বিশেষ বিশেষ সময়ে ঐ পুকুরে প্রভুর এক দূত নেমে আসতেন ও জল কম্পন করতেন; সেই জলকম্পের পরে যে কেউ প্রথমে জলে নামত তার যে কোন রোগ হোক সে ভালো হয়ে যেতো।]
\s5
\v 5 সেখানে একজন অসুস্থ মানুষ ছিল, সে আটত্রিশ বছর ধরে অচল অবস্থায় আছে।
\v 6 যখন যীশু তাকে পড়ে থাকতে দেখলেন এবং অনেকদিন ধরে সেই অবস্থায় আছে জানতে পেরে তিনি তাকে বললেন, "তুমি কি সুস্থ হতে চাও"?
\s5
\v 7 অসুস্থ মানুষটি উত্তর দিলেন, মহাশয়, আমার কেউ নেই যে, যখন জল কম্পিত হয় তখন আমাকে পুকুরে নামিয়ে দেয়; আমি যখন চেষ্টা করি, অন্য একজন আমার আগে নেমে পড়ে।
\v 8 যীশু তাকে বললেন, "উঠ, তোমার বিছানা তুলে নাও এবং হেঁটে বেড়াও"।
\s5
\v 9 সেই মুহূর্তেই ওই মানুষটি সুস্থ হয়ে গেল, এবং নিজের বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে বেড়াতে লাগল। সেই দিন ছিল বিশ্রামবার।
\s5
\v 10 সুতরাং যাকে সুস্থ করা হয়েছিল তাকে যিহূদী নেতারা বললেন , আজ বিশ্রামবার, বিছানা বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তোমার অনুমতি নেই।
\v 11 কিন্তু সে তাদেরকে উত্তর দিল, যিনি আমাকে সুস্থ করেছেন তিনি আমাকে বললেন, "তোমার বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে চলে যাও"।
\s5
\v 12 তারা তাকে জিজ্ঞাসা করল, সেই মানুষটি কে যে তোমাকে বলেছে, "বিছানা তুলে নিয়ে হেঁটে বেড়াও"।
\v 13 যদিও যে মানুষটি সুস্থ হয়েছিল সে জানত না তিনি কে ছিলেন, কারণ সেই জায়গায় অনেক লোক থাকার জন্য যীশু সেখান থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন (চলে গিয়েছিলেন)।
\s5
\v 14 পরে যীশু উপাসনা গৃহে তাকে দেখতে পেলেন এবং তাকে বললেন, দেখ, তুমি সুস্থ হয়েছ; আর কখনো পাপ করো না, পাছে তোমার প্রতি আর খারাপ কিছু ঘটে ।
\v 15 সেই মানুষটি চলে গেল এবং যিহূদী নেতাদের বলল যে, উনি যীশুই ছিলেন যিনি তাকে সুস্থ করেছেন।
\s5
\v 16 আর এই সব কারণে যিহূদী নেতারা যীশুকে তাড়না করতে লাগল, কারণ তিনি বিশ্রামবারে এই সব কাজ করছিলেন।
\v 17 যীশু তাদেরকে উত্তর দিলেন, আমার পিতা এখনও পর্য্যন্ত কাজ করেন এবং আমিও করি।
\v 18 এই কারণে যিহূদিরা তাঁকে মেরে ফেলার খুব চেষ্টা করছিল কারণ তিনি শুধু বিশ্রামবারের নিয়ম ভাঙছিলেন তা নয় কিন্তু তিনি ঈশ্বরকেও নিজের পিতা বলে নিজেকে ঈশ্বরের সমান করতেন।
\s5
\v 19 যীশু তাদেরকে উত্তর দিয়ে বললেন, সত্য, সত্য, পুত্র নিজে থেকে কিছুই করতে পারেন না, কেবল পিতাকে যা কিছু করতে দেখেন, তাই করেন; কারণ তিনি যা কিছু করেন পুত্রও সেই সব একইভাবে করেন।
\v 20 কারণ পিতা পুত্রকে ভালবাসেন, এবং তিনি নিজে যা কিছু করেন সবই তাঁকে দেখান এবং এর থেকেও মহৎ মহৎ কাজ তাঁকে দেখাবেন যেন তোমরা সবাই আশ্চর্য্য হও।
\s5
\v 21 কারণ পিতা যেমন মৃতদের উঠান এবং জীবন দান করেন, সেই রকম পুত্রও যাদেরকে ইচ্ছা করেন তাকে জীবন দান করেন।
\v 22 কারণ পিতা কারও বিচার করেন না কিন্তু সব বিচারের ভার পুত্রকে দিয়েছেন,
\v 23 সুতরাং সবাই যেমন পিতাকে সন্মান করে, তেমনি পুত্রকে সবাই সন্মান করে। যে পুত্রকে সন্মান করে না, সে পিতাকে সন্মান করে না যিনি তাঁকে পাঠিয়েছেন।
\s5
\v 24 সত্য, সত্যই বলছি যে কেউ আমার বাক্য শুনে এবং যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকে বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবন পেয়েছে এবং তাকে দোষী করা হবে না কিন্তু সে মৃত্যু থেকে জীবনে পার হয়ে গেছে।
\s5
\v 25 সত্য, সত্যই বলছি এমন সময় আসছে, বরং এখন সেই সময়, যখন মৃতেরা ঈশ্বরের পুত্রের গলার শব্দ শুনবে এবং যারা শুনবে তারা জীবিত হবে।
\s5
\v 26 কারণ পিতার যেমন নিজেতে জীবন আছে, তেমনি তিনি পুত্রকেও নিজেতে জীবন রাখতে দিয়েছেন।
\v 27 এবং তিনি তাঁকে বিচার করার অধিকার দিয়েছেন কারণ তিনি মনুষ্যপুত্র।
\s5
\v 28 এই জন্য বিষ্মিত হয়ো না, কারণ এমন সময় আসছে, যখন কবরের মধ্যে যারা আছে তারা সবাই তাঁর গলার শব্দ শুনতে পাবে,
\v 29 এবং যারা জীবনের পুনরুত্থানের জন্য ভালো কাজ করেছে ও যারা খারাপ কাজ করেছে তারা বিচারের পুনরুত্থানের জন্য বের হয়ে আসবে।
\s5
\v 30 আমি নিজের থেকে কিছুই করতে পারি না। আমি যেমন শুনি তেমন বিচার করি এবং আমার বিচার ন্যায়পরায়ন কারণ আমি নিজের ইচ্ছা পূর্ণ করতে চেষ্টা করি না কিন্তু আমাকে যিনি পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা পূর্ণ করতে চেষ্ঠা করি।
\v 31 আমি যদি নিজের সমন্ধে নিজে সাক্ষ্য দিই, তবে আমার সাক্ষ্য সত্য হবে না।
\v 32 আমার সমন্ধে অন্য আর এক জন সাক্ষ্য দিচ্ছেন এবং আমি জানি যে আমার সমন্ধে তিনি যে সাক্ষ্য দিচ্ছেন সেই সাক্ষ্য সত্য।
\s5
\v 33 তোমরা যোহনের কাছে লোক পাঠিয়েছ এবং তিনি সত্যের হয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
\v 34 আমি যে সাক্ষ্য গ্রহণ করি তা মানুষ থেকে নয় তবুও আমি এই সব বলছি যেন তোমরা পরিত্রাণ পাও।
\v 35 যোহন এক জন জলন্ত ও আলোময় প্রদীপ ছিলেন এবং তোমরা তাঁর আলোতে কিছু সময় আনন্দ করতে রাজী হয়েছিলে।
\s5
\v 36 কিন্তু যোহনের দেওয়া সাক্ষ্য থেকে আমার আরও বড় সাক্ষ্য আছে; কারণ পিতা আমাকে যে সব কাজ সম্পন্ন করতে দিয়েছেন, যে সব কাজ আমি করছি, সেই সব আমার উদ্দেশ্যে এই সাক্ষ্য দেয় যে পিতা আমাকে পাঠিয়েছেন।
\v 37 আর পিতা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনিই আমার সম্পর্কে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তাঁর গলার শব্দ তোমরা কখনও শোন নি, তাঁর আকারও কখনো দেখ নি।
\v 38 তাঁর বাক্য তোমাদের অন্তরে থাকে না; কারণ তিনি যাঁকে পাঠিয়েছেন তোমরা তাঁকে বিশ্বাস কর না।
\s5
\v 39 তোমরা পবিত্র বাক্য খোঁজ করো কারণ তোমরা মনে করো যে তাতেই তোমাদের অনন্ত জীবন আছে এবং এই একই বাক্য আমার সম্পর্কে সাক্ষ্য দেয়;
\v 40 এবং তোমরা জীবন পাবার জন্য আমার কাছে আসতে রাজী হও না।
\s5
\v 41 আমি মানুষদের থেকে প্রশংসা নিই না!
\v 42 কিন্তু আমি জানি যে তোমাদের হৃদয়ে ঈশ্বরের ভালবাসা নেই।
\s5
\v 43 আমি আমার পিতার নামে এসেছি এবং তোমরা আমাকে গ্রহণ কর না। যদি অন্য কেউ তার নিজের নামে আসে, তাকে তোমরা গ্রহণ করবে।
\v 44 তোমরা কিভাবে বিশ্বাস করবে? তোমরা ত একে অপরের কাছ থেকে প্রশংসা গ্রহণ করছ কিন্তু শুধুমাত্র ঈশ্বরের কাছ থেকে যে প্রশংসা আসে তার চেষ্ঠা কর না।
\s5
\v 45 মনে করো না যে আমি পিতার কাছে তোমাদের দোষী করব। সেখানে আর এক জন আছেন যিনি তোমাদের দোষী করেন তিনি হলেন মোশি যাঁর উপরে তোমরা আশা রেখেছ।
\v 46 যদি তোমরা মোশিকে বিশ্বাস করতে তবে আমাকেও বিশ্বাস করতে, কারণ আমার সম্পর্কেই তিনি লিখেছেন।
\v 47 যদি তাঁর লেখায় বিশ্বাস না কর, তবে আমার কথায় কিভাবে বিশ্বাস করবে?
\v 1 এই সব কিছুর পরে যীশু গালীল সাগরের যাকে তিবিরিয়া- সাগরও বলে, তার অপর পারে চলে গেলেন।
\v 2 আর বহু মানুষ তাঁর পিছনে পিছনে যেতে লাগল, কারন তিনি অসুস্থদের উপরে যে সব চিহ্ন- কাজ করতেন সে সব তারা দেখত।
\v 3 যীশু পর্ব্বতের উপর উঠলেন এবং সেখানে নিজের শিষ্যদের সঙ্গে বসলেন।
\s5
\v 4 তখন নিস্তারপর্ব্ব, যিহূদীদের এই পর্ব্ব খুব কাছেই এসে ছিল।
\v 5 যখন যীশু তাকালেন এবং দেখলেন যে বহু মানুষ তাঁর কাছে আসছে তখন তিনি ফিলিপকে বললেন, এদের খাবারের জন্য আমরা কোথায় রুটি কিনতে যাব?
\v 6 আর এই সব তিনি ফিলিপকে পরীক্ষা করার জন্য বললেন, কারণ তা তিনি নিজে জানতেন কি করবেন।
\s5
\v 7 ফিলিপ তাঁকে উত্তর দিলেন, ওদের জন্য দুই শত দিনারের রুটীও যথেষ্ট নয় যে, প্রত্যেকে এমন কি অল্প করে পাবে।
\v 8 তাঁর শিষ্যদের মধ্যে এক জন শিমোন পিতরের ভাই আন্দ্রিয় যীশুকে বললেন,
\v 9 এখানে একটী বালক আছে যার কাছে যবের পাঁচটি রুটী এবং দুটী মাছ আছে কিন্তু এত মানুষের মধ্যে এইগুলি দিয়ে কি হবে?
\s5
\v 10 যীশু বলিলেন, "লোকদের বসিয়ে দাও"। সেই জায়গায় অনেক ঘাস ছিল। সুতরাং পুরুষেরা বসে গেল, সংখ্যায় প্রায় পাঁচ হাজার লোক হবে।
\v 11 তখন যীশু সেই রুটী কয়টি নিলেন এবং ধন্যবাদ দিয়ে যারা বসে ছিল তাদেরকে ভাগ করে দিলেন; সেইভাবে মাছ কয়টীও তারা যতটা চেয়েছিল ততটা দিলেন।
\v 12 আর তারা তৃপ্ত করে খাবার পর তিনি নিজের শিষ্যদের বললেন, অবশিষ্ট গুঁড়াগাঁড়া সব জড়ো কর, যেন কিছুই নষ্ট না হয়।
\s5
\v 13 সুতরাং তাঁরা জড়ো করলেন এবং ঐ পাঁচটি যবের রুটীর গুঁড়াগাঁড়ায় সেই মানুষদের খাবার পর যা বেঁচেছিল তাতে বারো ঝুড়ি ভরলেন।
\v 14 তখন সেই মানুষেরা তাঁর আশ্চর্য কাজ দেখে বলতে লাগল, ইনি সত্যই সেই ভবিষৎ বক্তা যাঁর পৃথিবীতে আসার কথা আছে।
\v 15 যখন যীশু বুঝতে পারলেন যে, তারা এসে রাজা করবার জন্য জোর করে তাঁকে ধরতে আসছে, তাই তিনি আবার নিজে একাই পর্ব্বতে চলে গেলেন।
\s5
\v 16 যখন সন্ধ্যা হলো তাঁর শিষ্যেরা সমুদ্রতীরে চলে গেলেন।
\v 17 তারা একটি নৌকায় উঠলেন এবং সমুদ্রের অপর পারে কফরনাহূমের দিকে চলতে লাগলেন। সে সময় অন্ধকার হয়ে এসেছিল এবং যীশু তখনও তাঁদের কাছে আসেন নি।
\v 18 সেই সময় ঝড় হচ্ছিলো এবং সাগরে বড় বড় ঢেউ উঠছিল।
\s5
\v 19 এইভাবে যখন শিষ্যেরা দেড় বা দুই ক্রোশ বয়ে গেলেন তাঁরা যীশুকে দেখতে পেলেন যে তিনি সমুদ্রের উপর দিয়ে হেঁটে নৌকার কাছে আসছেন এতে তাঁরা ভয় পেলেন।
\v 20 তখন তিনি তাঁদেরকে বললেন, "এ আমি, ভয় কর না"।
\v 21 তখন তাঁরা তাঁকে নৌকোয় নিতে রাজী হলেন এবং তাঁরা যেখানে যাচ্ছিলেন নৌকা তক্ষনি সেই জায়গায় পৌঁছে গেল।
\s5
\v 22 পরের দিন, সাগরের অপর পারে যেখানে মানুষের দল দাঁড়িয়েছিল তারা দেখেছিল যে সেখানে একটি ছাড়া আর কোনো নৌকা নেই এবং যীশু শিষ্যদের সঙ্গে সেই নৌকায় ওঠেন নি কেবল তাঁর শিষ্যেরা চলে গিয়েছিলেন।
\v 23 যদিও সেখানে কিছু নৌকা ছিল যা তিবিরিয়া থেকে এসেছিল যেখানে প্রভু ধন্যবাদ দেবার পর মানুষেরা রুটী খেয়েছিল।
\s5
\v 24 যখন মানুষের দল দেখল যে, না যীশু না শিষ্যেরা কেউই সেখানে নেই, তখন তারা সেই সব নৌকায় চড়ে যীশুর খোঁজ করতে কফরনাহূমে গেল।
\v 25 সাগরের অপর পারে তাঁকে পাওয়ার পর তারা বলল, রব্বি, আপনি এখানে কখন এসেছেন?
\s5
\v 26 যীশু তাদেরকে উত্তর দিলেন, বললেন, সত্য সত্যই, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা আশ্চর্য কাজ দেখেছ বলে আমার খোঁজ করছ তা নয় কিন্তু সেই রুটী খেয়েছিলে ও তৃপ্ত হয়েছিলে বলে।
\v 27 যে খাবার নষ্ট হয়ে যায় তার জন্য কাজ করো না, কিন্তু সেই খাবারের জন্য কাজ কর যেটা অনন্ত জীবন পর্য্যন্ত থাকে যা মনুষ্যপুত্র তোমাদের দেবেন, কারণ পিতা ঈশ্বর কেবল তাঁকেই মুদ্রাঙ্কিত করেছেন।
\s5
\v 28 তখন তারা তাঁকে বললো, আমরা যেন ঈশ্বরের কাজ করতে পারি, এ জন্য আমাদের কি করতে হবে?
\v 29 যীশু উত্তর দিয়ে বললেন, ঈশ্বরের কাজ এই যে, যেন তাঁতে তোমরা বিশ্বাস কর যাঁকে তিনি পাঠিয়েছেন।
\s5
\v 30 সুতরাং তারা তাঁকে বলল, আপনি এমন কি আশ্চর্য কাজ করবেন যা দেখে আমরা আপনাকে বিশ্বাস করব? আপনি কি করবেন?
\v 31 আমাদের পূর্বপুরুষেরা মরু প্রান্তরে গিয়ে মান্না খেয়েছিলেন, যেমন লেখা আছে, “তিনি খাবার জন্য তাদেরকে স্বর্গ থেকে খাদ্য দিলেন।”
\s5
\v 32 যীশু তাদেরকে বললেন, সত্য, সত্যই আমি তোমাদেরকে বলছি, মোশি তোমাদেরকে স্বর্গ থেকে তো সেই খাদ্য দেন নি, কিন্তু আমার পিতাই তোমাদের কে স্বর্গ থেকে প্রকৃত খাদ্য দিচ্ছেন।
\v 33 কারণ ঈশ্বরীয় খাবার হলো যা স্বর্গ থেকে নেমে আসে এবং পৃথিবীর মানুষকে জীবন দেয়।
\v 34 সুতরাং তারা তাঁকে বলল, প্রভু, সেই খাবার সব সময় আমাদের দিন।
\s5
\v 35 যীশু তাদের বললেন, আমিই হলাম সেই জীবনের রুটি। যে আমার কাছে আসে তার আর খিদে হবে না এবং যে আমার উপর বিশ্বাস করে তার আর কখনো পিপাসা পাবে না।
\v 36 যদিও আমি তোমাদের বলেছি যে, তোমরা আমাকে দেখেছ এবং এখনো বিশ্বাস কর না।
\v 37 পিতা যে সব আমাকে দেন সে সব আমার কাছেই আসবে এবং যে আমার কাছে আসবে তাকে আমি কোন ভাবেই বাইরে ফেলে দেবো না।
\s5
\v 38 কারণ আমি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছি আমার ইচ্ছা পূরণ করার জন্য নয় কিন্তু তাঁরই ইচ্ছা পূরণ করার জন্য, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন ।
\v 39 এবং যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা হলো যে তিনি আমাকে যে যাদের দিয়েছেন, তার কিছুই যেন না হারাই, কিন্তু শেষ দিনে যেন তাদের জীবিত করে তুলি।
\v 40 কারণ আমার পিতার ইচ্ছা হলো, যে কেউ পুত্রকে দেখে এবং তাঁতে বিশ্বাস করে সে যেন অনন্ত জীবন পায় এবং আমিই তাকে শেষ দিনে জীবিত করবো।
\s5
\v 41 তখন যিহূদী নেতারা তাঁর সম্পর্কে বকবক করতে লাগল, কারণ তিনি বলেছিলেন, "আমিই সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে"।
\v 42 তারা বলল, এ যোষেফের পুত্র সেই যীশু নয় কি, যার পিতা মাতাকে আমরা জানি? এখন সে কেমন করে বলে, আমি স্বর্গ থেকে নেমে এসেছি?
\s5
\v 43 যীশু উত্তর দিয়ে তাদেরকে বললেন, তোমরা নিজেদের মধ্যে বকবক করা বন্ধ কর।
\v 44 কেউ আমার কাছে আসতে পারবে না যতক্ষণ না পিতা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন ও তিনি আকর্ষণ করছেন, আর আমি তাকে শেষ দিনে জীবিত করে তুলবো।
\v 45 ভবিষ্যৎ বক্তাদের বইতে লেখা আছে, “তারা সবাই ঈশ্বরের কাছে শিক্ষা পাবে।” যে কেহ পিতার কাছে শুনে শিক্ষা পেয়েছে, সেই আমার কাছে আসে।
\s5
\v 46 কেউ যে পিতাকে দেখেছে তা নয়, শুধুমাত্র যিনি ঈশ্বর থেকে এসেছেন কেবল তিনিই পিতাকে দেখেছেন।
\v 47 সত্য, সত্যই বলছি যে বিশ্বাস করে সে অনন্ত জীবন পায়।
\s5
\v 48 আমিই জীবনের রুটি।
\v 49 তোমাদের পূর্বপুরুষেরা মরু অঞ্চলে মান্না খেয়েছিল এবং তারা মরে গিয়েছে।
\s5
\v 50 এই হলো সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে যেন মানুষেরা এর কিছুটা খায় এবং না মরে।
\v 51 আমিই সেই জীবন্ত রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে। কেউ যদি এই রুটির কিছুটা খায় তবে সে চিরকাল জীবিত থাকবে। আমি যে রুটি দেব সেটা আমার মাংস, পৃথিবীর মানুষের জীবনের জন্য।
\s5
\v 52 যিহূদীরা খুব রেগে গেল ও একে অপরের সঙ্গে তর্ক করে বলতে লাগলো, কেমন করে ইনি আমাদেরকে খাবার জন্য নিজের মাংস দেবে?
\v 53 যীশু তাদেরকে বললেন, সত্য, সত্যই আমি তোমাদের বলছি, যতক্ষণ না তোমরা মনুষ্যপুত্রের মাংস খাবে ও তাঁর রক্ত পান করবে তোমাদের নিজেদের জীবন পাবে না।
\s5
\v 54 যে আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে অনন্ত জীবন পেয়েছে এবং আমি তাকে শেষ দিনে জীবিত করব।
\v 55 কারণ আমার মাংস আসল খাবার এবং আমার রক্তই আসল পানীয়।
\v 56 যে কেউ আমার মাংস খায় ও আমার রক্ত পান করে সে আমার মধ্যে থাকে এবং আমি তার মধ্যে থাকি।
\s5
\v 57 যেমন জীবন্ত পিতা আমাকে পাঠিয়েছেন এবং পিতার জন্যই আমি বেঁচে আছি, ঠিক সেইভাবে যে কেউ আমাকে খায়, সেও আমার জন্য জীবিত থাকবে।
\v 58 এই হলো সেই রুটি যা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছে, পূর্বপুরুষেরা যেমন খেয়েছিল এবং মরেছিল সেই রকম নয়। এই রুটি যে খাবে সে সে চিরকাল বেঁচে থাকবে।
\v 59 যীশু এই সব কথা কফরনাহূমে সমাজ-ঘরে উপদেশ দেবার সময় বললেন।
\s5
\v 60 তাঁর শিষ্যদের মধ্যে অনেকে এই কথা শুনে বলল, এইগুলি কঠিন উপদেশ, কে এইগুলি গ্রহণ করবে?
\v 61 তাঁর শিষ্যেরা এই নিয়ে তর্ক করছে যীশু তা নিজে অন্তরে জানতে পেরে তাদের বললেন, "এই কথায় কি তোমরা বিরক্ত হচ্ছো"?
\s5
\v 62 তখন কি বলবে যখন মনুষ্যপুত্র আগে যেখানে ছিলেন সেখানে তোমরা তাঁকে উঠে যেতে দেখবে?
\v 63 পবিত্র আত্মা জীবন দেন, দেহ কিছু উপকার দেয় না। আমি তোমাদের যে সব কথা বলেছি তা হলো আত্মা এবং জীবন।
\s5
\v 64 এখনও তোমাদের মধ্যে অনেকে আছে যারা বিশ্বাস করে না। কারণ যীশু প্রথম থেকে জানতেন কারা বিশ্বাস করে না এবং কেই বা তাঁকে শত্রুর হাতে ধরিয়ে দেবে।
\v 65 তিনি বললেন, এই জন্য আমি তোমাদেরকে বলেছি, যতক্ষণ না পিতার কাছ থেকে ক্ষমতা দেওয়া হয়, কেউ আমার কাছে আসতে পারে না।
\s5
\v 66 এই সবের পরে তাঁর অনেক শিষ্য ফিরে গেল এবং তাঁর সঙ্গে আর তারা চলাফেরা করল না।
\v 67 তখন যীশু সেই বারো জনকে বললেন, তোমরাও কি দূরে চলে যেতে চাও?
\v 68 শিমোন পিতর তাঁকে উত্তর দিলেন, প্রভু, কার কাছে আমরা যাব? আপনার কাছে অনন্ত জীবনের বাক্য আছে;
\v 69 এবং আমরা বিশ্বাস করেছি ও জেনেছি যে আপনি হলেন ঈশ্বরের সেই পবিত্র জন।
\s5
\v 70 যীশু তাঁদেরকে বললেন, তোমাদের এই যে বারো জনকে কি আমি বেছে নিই নি? এবং তোমাদের মধ্যে একজন শয়তান আছে।
\v 71 এই কথা তিনি ঈষ্করিয়োতীয় শিমোনের পুত্র যিহূদার সমন্ধে বললেন, কারণ সে সেই বারো জনের মধ্যে একজন ছিলো যে তাঁকে বেইমানি করে ধরিয়ে দেবে।
\v 1 এই সবের পরে যীশু গালীলের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে লাগলেন, কারণ যিহূদীরা তাঁকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করেছিল বলে তিনি যিহূদিয়াতে যেতে চাইলেন না।
\v 2 তখন যিহূদীদের কুটীরবাস (আশ্রয়) পর্ব্বের সময় প্রায় এসে গিয়েছিল।
\s5
\v 3 অতএব তাঁর ভাইয়েরা তাঁকে বলল, এই জায়গা ছেড়ে যিহূদিয়াতে চলে যাও; যেন তুমি যে সব কাজ করছ তা তোমার শিষ্যেরাও দেখতে পায়।
\v 4 কেউ গোপনে কাজ করে না যদি সে নিজেকে অপরের কাছে খোলাখুলি জানাতে চায় । যদি তুমি এই সব কাজ কর তবে নিজেকে পৃথিবীর মানুষের কাছে দেখাও।
\s5
\v 5 কারণ এমনকি তাঁর ভাইয়েরাও তাঁকে বিশ্বাস করত না।
\v 6 তখন যীশু তাদের বললেন, আমার সময় এখনও আসে নি, কিন্তু তোমাদের সময় সব সময় প্রস্তুত।
\v 7 পৃথিবীর মানুষ তোমাদেরকে ঘৃণা করতে পারে না কিন্তু আমাকে ঘৃণা করে কারণ আমি তার সম্বন্ধে এই সাক্ষ্য দিই যে তার সব কাজ অসৎ।
\s5
\v 8 তোমরাই তো উত্সবে যাও; আমি এখন এই উত্সবে যাব না, কারণ আমার সময় এখনও সম্পূর্ণ হয় নি।
\v 9 তাদেরকে এই কথা বলার পর তিনি গালীলে থাকলেন।
\s5
\v 10 যদিও তাঁর ভাইয়েরা উত্সবে যাবার পর তিনিও গেলেন, খোলাখুলি ভাবে নয় কিন্তু গোপনে গেলেন।
\v 11 যিহূদিরা উত্সবের মধ্যে তাঁর খোঁজ করল এবং বলল, তিনি কোথায়?
\s5
\v 12 ভিড়ের মধ্যে মানুষেরা তাঁর সম্পর্কে অনেক আলোচনা করতে লাগলো। অনেকে বলল, তিনি একজন ভাল লোক; আবার কেউ বলল, না, তিনি মানুষদেরকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে।
\v 13 কিন্তু যিহূদিদের ভয়ে কেহ তাঁর সম্পর্কে খোলাখুলি কিছু বলল না।
\s5
\v 14 যখন উত্সবের অর্ধেক সময় পার হয়ে গেল তখন যীশু উপাসনা ঘরে গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন।
\v 15 যিহূদীরা আশ্চর্য্য হয়ে গেল এবং বলতে লাগলো, এই মানুষটি শিক্ষা না নিয়ে কিভাবে এই রকম শাস্ত্র জ্ঞানী হয়ে উঠলো?
\v 16 যীশু তাদেরকে উত্তর দিয়ে বললেন, আমার শিক্ষা আমার নয় কিন্তু তাঁর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।
\s5
\v 17 যদি কেউ তাঁর ইচ্ছা পালন করবে মনে করে, সে এই শিক্ষার কথা জানতে পারবে, এটা ঈশ্বর থেকে এসেছে কিনা, না আমি নিজের থেকে বলি।
\v 18 যারা নিজের থেকে বলেতারা নিজেরই গৌরব খোঁজ করে কিন্তু যারা তাঁর গৌরব খোঁজ করে যিনি তাদের পাঠিয়েছেন তিনিই সত্য এবং তাঁতে কোন অধর্ম্ম নেই।
\s5
\v 19 মোশি কি তোমাদেরকে কোনো নিয়ম কানুন দেন নি? যদিও তোমাদের মধ্যে কেউই এখনো সেই নিয়ম পালন করে না। কেন তোমরা আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছ?
\v 20 সেই মানুষের দল উত্তর দিল, তোমাকে ভূতে ধরেছে, কে তোমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে?
\s5
\v 21 যীশু উত্তর দিয়ে তাদেরকে বললেন, আমি একটা কাজ করেছি, আর সে জন্য তোমরা সকলে আশ্চর্য্য হচ্ছ।
\v 22 মোশি তোমাদেরকে ত্বকছেদ করার নিয়ম দিয়েছেন- তা যে মোশি থেকে নয় কিন্তু পূর্বপুরুষদের থেকে হয়েছে - এবং তোমরা বিশ্রামবারে মানুষের ত্বকছেদ করে থাক।
\s5
\v 23 মোশির নিয়ম যেন না ভাঙে সেই জন্য যদি বিশ্রামবারে মানুষের ত্বকছেদ করা হয়, তবে আমি বিশ্রামবারে একজন মানুষকে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ করেছি বলে আমার উপরে কেন রাগ করছ?
\v 24 বাইরের চেহারা দেখে বিচার করো না কিন্তু ন্যায় ভাবে বিচার কর।
\s5
\v 25 যিরূশালেম- বসবাসকারীদের মধ্যে থেকে কয়েক জন বলল, এই কি সে নয় যাকে তারা মেরে ফেলার চেষ্টা করছিলো ?
\v 26 আর দেখ, সে তো খোলাখুলিভাবে কথা বলছে আর তারা ওনাকে কিছুই বলছে না। অধ্যক্ষগণ কি সত্যিই জানে না যে, এই সেই খ্রীষ্ট?
\v 27 কিন্তু আমরা জানি এই মানুষটি কোথা থেকে আসলো; কিন্তু খ্রীষ্ট যখন আসেন তখন তিনি কোথা থেকে আসেন তা কেউ জানে না।
\s5
\v 28 যীশু উপাসনা ঘরে খুব চিত্কার করে উপদেশ দিলেন এবং বললেন, তোমরা আমাকে চেন এবং আমি কোথা থেকে এসেছি তাও জান। আমি নিজে থেকে আসিনি কিন্তু আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি সত্য যাকে তোমরা চেন না।
\v 29 আমি তাঁকে জানি কারণ আমি তাঁর কাছ থেকে এসেছি এবং তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন।
\s5
\v 30 তারা তাঁকে ধরার জন্য চেষ্টা করছিল কিন্তু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিল না কারণ তখনও তাঁর সেই সময় আসে নি।
\v 31 যদিও মানুষের দলের মধ্যে থেকে অনেকে তাঁতে বিশ্বাস করল এবং বলল, খ্রীষ্ট যখন আসবেন তখন এই মানুষটির করা কাজ থেকে কি তিনি বেশি আশ্চর্য কাজ করবেন?
\v 32 ফরীশীরা তাঁর সম্পর্কে জনগনের মধ্যে এই সব কথা ফিস্-ফিস্ করে বলতে শুনল এবং প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা তাঁকে ধরে আনবার জন্য কয়েক জন আধিকারিককে পাঠিয়ে দিল।
\s5
\v 33 তখন যীশু বললেন, আমি এখন অল্প সময়ের জন্য তোমাদের সঙ্গে আছি এবং তার পর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর কাছে চলে যাব।
\v 34 তোমরা আমাকে খোঁজ করবে কিন্তু আমাকে পাবে না; আমি যেখানে যাব সেখানে তোমরা আসতে পারবে না।
\s5
\v 35 তখন যিহূদীরা একে অপরকে বলতে লাগল, এই মানুষটি কোথায় যাবে যে আমরা তাকে খুঁজে পাব না? তিনি কি গ্রীকদের মধ্যে ছিন্নভিন্ন মানুষের কাছে যাবে এবং গ্রীক মানুষদের শিক্ষা দেবে?
\v 36 তিনি যে কথা বললেন, "আমার খোঁজ করবে কিন্তু আমাকে পাবেনা এবং আমি যেখানে যাই সেখানে তোমরা আসতে পারবে না" এটা কি কথা?
\s5
\v 37 এখন শেষ দিন, উত্সবের মহান দিন, যীশু দাঁড়িয়ে চিত্কার করে বললেন, কারুর যদি পিপাসা পায় তবে আমার কাছে এসে পান করুক।
\v 38 যে কেউ আমাতে বিশ্বাস করে, যেমন শাস্ত্রে বলা আছে, তার অন্তরের মধ্য থেকে জীবন জলের নদী বইবে।
\s5
\v 39 কিন্তু তিনি পবিত্র আত্মার সমন্ধে এই কথা বললেন, যারা তাঁতে বিশ্বাস করত তারা সেই আত্মাকে পাবে, তখনও সেই আত্মা দেওয়া হয় নি কারণ সেই সময় পর্যন্ত যীশুকে মহিমান্বিত করা হয়নি।
\s5
\v 40 যখন জনগনের মধ্য থেকে অনেকে এই কথা শুনল তখন তারা বলল ইনি সত্যিই সেই ভবিষৎ বক্তা।
\v 41 অনেকে বলল, ইনি হলেন সেই খ্রীষ্ট। কিন্তু কেউ কেউ বলল, কেন? খ্রীষ্ট কি গালীল থেকে আসবেন?
\v 42 শাস্ত্রের বাক্যে কি বলে নি, খ্রীষ্ট দায়ূদের বংশ থেকে এবং দায়ূদ যেখানে ছিলেন সেই বৈৎলেহম গ্রাম থেকে আসবেন?
\s5
\v 43 এই ভাবে জনগনের মধ্যে তাঁকে নিয়ে মনের অমিল হলো।
\v 44 তাদের মধ্যে কিছু লোক তাঁকে ধরবে বলে ঠিক করলো কিন্তু তার গায়ে হাত দিল না।
\s5
\v 45 তখন আধিকারিকরা প্রধান যাজকদের ও ফরীশীদের কাছে ফিরে আসলে তাঁরা তাদের বললেন তাকে নিয়ে আসনি কেন?
\v 46 আধিকারিকরা উত্তর দিয়ে বলল, এই মানুষটি যেভাবে কথা বলেন অন্য কোন মানুষ কখনও এই রকম কথা বলেন নি।
\s5
\v 47 ফরীশীরা তাদেরকে উত্তর দিল, তোমরাও কি বিপথে চালিত হলে?
\v 48 কোনো অধ্যক্ষ অথবা কোনো ফরীশী কি তাঁতে বিশ্বাস করেছেন?
\v 49 কিন্তু এই যে মানুষের দল কোনো নিয়ম জানে না এরা অভিশাপ গ্রস্থ।
\s5
\v 50 নীকদীম- ফরীশীদের মধ্যে এক জন, যিনি আগে যীশুর কাছে এসেছিলেন, তিনি তাদেরকে বললেন,
\v 51 আগে কোনো মানুষের তার নিজের কথা না শুনে এবং সে কি করে তা না জেনে, আমাদের নিয়ম কানুন কি কাহারও বিচার করে?
\v 52 তারা উত্তর দিয়ে তাঁকে বলল, তুমিও কি গালীল থেকে এসেছ? খোঁজ নিয়ে দেখ গালীল থেকে কোন ভাববাদী আসে না।
\s5
\v 53 তখন প্রত্যেকে তাদের নিজের বাড়ীতে চলে গেলেন। Bengali Bible has only 52 verses in Jh.7
\v 2 খুব সকালে তিনি আবার উপাসনা ঘরে আসলেন এবং সব মানুষেরা তাঁর কাছে আসল, তখন তিনি বসে তাদেরকে শিক্ষা দিলেন।
\v 3 শিক্ষাগুরুরা এবং ফারিশীরা ব্যভিচার করেছে এমন একজন স্ত্রীলোককে ধরে তাঁর কাছে আনলো ও তাদের মাঝখানে দাঁড় করালো।
\s5
\v 4 তখন তারা যীশুকে বলল, হে গুরু, এই স্ত্রীলোকটা ব্যভিচারে ও সেই কাজে ধরা পড়েছে।
\v 5 আইন কানুনে মোশি এই রকম লোককে পাথর মারবার আদেশ আমাদের দিয়েছেন; আপনি তার সম্পর্কে কি বলেন?
\v 6 তারা তাঁর পরীক্ষা নেবার জন্য ও জালে ফেলার জন্য এই কথা বলল যেন তাঁর নামে দোষ দেবার সূত্র খুঁজে পায়। কিন্তু যীশু মাথা নিচু করে আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন।
\s5
\v 7 যখন তারা বারবার তাঁকে জিজ্ঞাসা করতে লাগল, তিনি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে তাদেরকে বললেন " তোমাদের মধ্যে যার কোনো পাপ নেই তাকেই প্রথমে তার উপরে পাথর মারতে দাও।
\v 8 তিনি আবার মাথা নিচু করে তাঁর আঙ্গুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন।
\s5
\v 9 যখন তারা এই কথা শুনলো, তারা এক এক করে সবাই বাইরে চলে গেল, বৃদ্ধরাই প্রথমে চলে গিয়েছিল, শেষ পর্যন্ত যীশু একাই অবশিষ্ট ছিলেন এবং সেই স্ত্রীলোকটী যে মাঝখানে দাঁড়িয়েছিল।
\v 10 তখন যীশু মাথা তুলে দাঁড়ালেন এবং তাকে বললেন, হে নারি, তোমার উপর অভিযোগকারীরা কোথায়? কেউ তোমাকে দোষী করে নি?
\v 11 সে বলল, না প্রভু, কেউ করে নি। তখন যীশু বললেন, আমিও তোমাকে দোষী করছি না। যাও, এখন থেকে আর পাপ করো না।
\s5
\v 12 যীশু আবার মানুষের কাছে কথা বললেন, তিনি বললেন, "আমি পৃথিবীর মানুষের আলো; যে কেউ আমার পিছন পিছন আসে সে কোন ভাবে অন্ধকারে চলবে না" কিন্তু জীবনের আলো পাবে।
\v 13 তাতে ফরীশীরা তাঁকে বলল, তুমি নিজের সম্পর্কে নিজে সাক্ষ্য দিচ্ছ; তোমার সাক্ষ্য সত্য নয়।
\s5
\v 14 যীশু উত্তর দিয়ে তাদের বললেন, "যদিও আমি নিজের সম্পর্কে নিজে সাক্ষ্য দিই, তবুও আমার সাক্ষ্য সত্য। কারণ আমি কোথা থেকে এসেছি, কোথায় বা যাচ্ছি তা জানি; কিন্তু তোমরা জানো না আমি কোথা থেকে আসি বা কোথায় যাই"।
\v 15 তোমরা মানুষের চিন্তাধারায় বিচার করছ; আমি কারও বিচার করি না।
\v 16 অবশ্য আমি যদি বিচার করি, আমার বিচার সত্য কারণ আমি একা নয় কিন্তু আমি পিতার সঙ্গে আছি যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।
\s5
\v 17 এবং তোমাদের আইনেও লেখা আছে যে, দুই জন মানুষের সাক্ষ্য সত্য।
\v 18 আমি নিজে আমার সম্বন্ধে সাক্ষ্য দেই এবং পিতা যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনিও আমার সমন্ধে সাক্ষ্য দেন।
\s5
\v 19 তারা তাঁকে বলল, তোমার পিতা কোথায়? যীশু উত্তর দিলেন, "তোমরা না আমাকে জান না আমার পিতাকে জান; যদি তোমরা আমাকে জানতে তবে আমার পিতাকেও জানতে।
\v 20 এই সব কথা তিনি উপাসনা ঘরে শিক্ষা দেবার সময় ভান্ডার-ঘরে বললেন এবং কেউ তাঁকে ধরল না, কারণ তখনও তাঁর সময় আসে নি।
\s5
\v 21 তিনি আবার তাদেরকে বললেন, "আমি দূরে যাচ্ছি, তোমরা আমাকে খোঁজ করবে এবং তোমাদের পাপে মরবে। আমি যেখানে যাচ্ছি তোমরা সেখানে আসতে পারবে না"।
\v 22 যিহূদীরা বলল, সে কি আত্মহত্যা করবে তাই তিনি বলছেন, আমি যেখানে যাচ্ছি সেখানে তোমরা আসতে পারবে না?
\s5
\v 23 যীশু তাদেরকে বললেন, তোমরা নিচ থেকে এসেছ আর আমি উপর থেকে এসেছি; তোমারা এই পৃথিবীর কিন্তু আমি এই পৃথিবীর থেকে নয়।
\v 24 অতএব আমি তোমাদের বলেছিলাম যে তোমরা তোমাদের পাপে মরবে। কারণ যতক্ষণ না বিশ্বাস কর যে, আমিই যে সেই, তবে তোমরা তোমাদের পাপেই মরবে।
\s5
\v 25 তখন তারা তাঁকে বলল, তুমি কে? যীশু তাদেরকে বললেন, "সেটাই তো শুরু থেকে তোমাদের বলে আসছি।
\v 26 তোমাদের সম্পর্কে বলবার ও বিচার করবার জন্য আমার কাছে অনেক কথা আছে। যাহোক, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি সত্য এবং আমি তাঁর কাছ থেকে যে সব শুনেছি সেই সব আমি পৃথিবীর মানুষকে বলছি।
\v 27 তিনি যে তাদেরকে পিতার সমন্ধে বলছিলেন তা তারা বুঝতে পারে নি।-
\s5
\v 28 যীশু বললেন, যখন তোমরা মনুষ্যপুত্রকে উঁচুতে তুলবে তখন তোমরা জানতে পারবে যে আমিই তিনি এবং আমি নিজের থেকে কিছুই করি না, কিন্তু পিতা আমাকে যেমন শিক্ষা দিয়েছেন তেমন সব কথা বলি।
\v 29 যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি আমার সঙ্গে আছেন এবং তিনি আমাকে একা ছেড়ে দেন নি, কারণ আমি সব সময় তিনি যে কাজে সন্তুষ্ট হন সেই কাজ করি।
\v 30 যীশু যখন এই সব কথা বলছিলেন অনেকে তাঁতে বিশ্বাস করল।
\s5
\v 31 যে যিহূদীরা তাঁকে বিশ্বাস করল তাদেরকে যীশু বললেন, "যদি তোমরা আমার কথায় বিশ্বাস রাখো তা হলে তোমরা সত্যই আমার শিষ্য;
\v 32 এবং তোমরা সেই সত্য জানবে ও সেই সত্য তোমাদের মুক্ত করবে।
\v 33 তারা তাঁকে উত্তর দিল, আমরা অব্রাহামের বংশ এবং কখনও কারও দাস হইনি; আপনি কেমন করে বলছেন তোমাদের মুক্ত করা হবে?
\s5
\v 34 যীশু তাদেরকে উত্তর দিলেন, সত্য, সত্যই আমি তোমাদেরকে বলছি, যে কেউ পাপ কাজ করে সে হলো পাপের দাস।
\v 35 দাস চিরকাল বাড়িতে থাকে না কিন্তু ঈশ্বর পুত্র চিরকাল থাকেন।
\v 36 অতএব ঈশ্বর পুত্র যদি তোমাদের মুক্ত করেন তবে তোমরা সত্যই মুক্ত হবে।
\s5
\v 37 আমি জানি যে তোমরা অব্রাহামের বংশধর; তোমরা আমাকে মেরে ফেলার জন্য চেষ্টা করছ, কারণ আমার বাক্য তোমাদের অন্তরে জায়গা পায় নি।
\v 38 আমি আমার পিতার কাছে যা কিছু দেখেছি তাই বলছি; আর তোমাদের পিতার কাছে তোমরা যা কিছু শুনেছ, সেই সব করছ।
\s5
\v 39 তারা উত্তর দিয়ে তাঁকে বলল, আমাদের পিতা হলো অব্রাহাম। যীশু তাদেরকে বললেন, "তোমরা যদি অব্রাহামের সন্তান হতে, তবে তোমরা অব্রাহামের কাজগুলি করতে।
\v 40 একজন মানুষ সেই আমি ইশ্বরের কাছে যে সত্য শুনেছি তাই তোমাদেরকে বলেছি তবুও, তোমরা আমাকে মেরে ফেলার জন্য চেষ্টা করছ"। অব্রাহাম এইগুলি করেন নি।
\v 41 তোমরা তোমাদের পিতার কাজ কর। তারা তাঁকে বলল, আমাদের জন্ম অবৈধ ভাবে হয় নি; আমাদের একমাত্র পিতা আছেন, তিনি ঈশ্বর।
\s5
\v 42 যীশু তাদেরকে বললেন, ঈশ্বর যদি তোমাদের পিতা হতেন, তবে তোমরা আমাকে ভালবাসতে, কারণ আমি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছি; আমি ত নিজের থেকে আসি নি কিন্তু তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন।
\v 43 তোমরা কেন আমার কথা বুঝতে পারছ না? তার কারণ হলো, আমার কথা তোমরা শুনে সহ্য করতে পার না।
\v 44 শয়তান হলো তোমাদের পিতা আর তোমরা তার সন্তান, এবং তোমাদের পিতার ইচ্ছা তোমরা পালন করতে চাও। সে শুরু থেকেই খুনি ছিল এবং সে সত্যতে থাকে না কারণ তার মধ্যে কোনো সত্য নেই। সে যখন মিথ্যা কথা বলে, তখন সে নিজের স্বভাব থেকেই বলে কারণ সে মিথ্যাবাদী এবং সে মিথ্যার জন্মদাতা।
\s5
\v 45 কিন্তু আমি সত্য বলি বলে তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর না।
\v 46 তোমাদের মধ্যে কে আমাকে পাপী বলে দোষী করতে পারে? যদি আমি সত্য বলি, তবে কেন তোমরা আমাকে বিশ্বাস কর না?
\v 47 "যে কেউ ঈশ্বরের সে ঈশ্বরের সব কথা শোনে নে; তোমরা ঈশ্বরের কথা শোন না কারণ তোমরা ঈশ্বরের নও"।
\s5
\v 48 যিহূদীরা উত্তর দিয়ে তাঁকে বলল, আমরা কি সত্য বলি নি যে তুমি একজন শমরীয় এবং তোমাকে ভুতে ধরেছে?
\v 49 যীশু উত্তর দিলেন, "আমাকে ভুতে ধরেনি কিন্তু আমি নিজের পিতাকে সন্মান করি আর তোমরা আমাকে অসন্মান কর"।
\s5
\v 50 আমি নিজের গৌরব খোঁজ করি না; এক জন আছেন যিনি খোঁজ করেন এবং বিচার করেন।
\v 51 সত্য, সত্যই আমি তোমাদের বলছি, কেউ যদি আমার বাক্য মেনে চলে সে কখনও মৃত্যু দেখবে না।
\s5
\v 52 যিহূদীরা তাঁকে বলল, এখন আমরা জানতে পারলাম যে তোমাকে ভুতে ধরেছে। অব্রাহাম ও ভবিষৎ বক্তারা মরে গিয়েছেন কিন্তু তুমি বলছ কেউ যদি আমার বাক্য মেনে চলে সে কখনও মৃত্যুর স্বাদ পাবে না।
\v 53 তুমি কি আমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম থেকেও মহান যিনি মরে গেছেন? ভবিষৎ বক্তাও মরে গেছেন। তুমি নিজের সম্পর্কে কি মনে কর?
\s5
\v 54 যীশু উত্তর দিলেন, আমি যদি নিজেকে প্রশংসা করি, তবে আমার প্রশংসা কিছুই নয়; আমার পিতাই আমাকে প্রশংসা করছেন, যাঁর সম্পর্কে তোমরা বলে থাক যে, তিনি তোমাদের ঈশ্বর।
\v 55 তোমরা তাঁকে জান না; কিন্তু আমি তাঁকে জানি; আমি যদি বলি যে তাঁকে জানি না তবে তোমাদের মত আমিও একজন মিথ্যাবাদী হব। যদিও আমি তাঁকে জানি এবং তাঁহার বাক্য মেনে চলি।
\v 56 তোমাদের পিতা অব্রাহাম আমার দিন দেখবার আশায় আনন্দ করেছিলেন এবং তিনি তা দেখেছিলেন ও খুশী হয়েছিলেন।
\s5
\v 57 তখন যিহূদীরা যীশুকে বলল, তোমার বয়স এখনও পঞ্চাশ বছর হয় নি, তুমি অব্রাহামকে কি দেখেছ?
\v 58 যীশু তাদের বললেন, সত্য, সত্যই আমি তোমাদেরকে বলছি অব্রাহামের জন্মের আগে থেকেই আমি আছি।
\v 59 তখন তারা তাঁর উপর ছুঁড়ে মারবার জন্য পাথর তুলে নিল কিন্তু যীশু নিজেকে গোপন করলেন এবং উপাসনা ঘর থেকে বাইরে চলে গেলেন।
\v 1 এখন যীশু যেতে যেতে একজন লোককে দেখতে পেলেন সে জন্ম থেকে অন্ধ।
\v 2 তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, রব্বি, কে পাপ করেছিল এই লোকটি না এই লোকটির বাবা মা, যাতে এ অন্ধ হয়ে হয়ে জন্মেছে?
\s5
\v 3 যীশু উত্তর দিলেন, না এই লোকটি পাপ করেছে, না এই লোকটির বাবা মা পাপ করেছে, কিন্তু এই লোকটির জীবনে যেন ঈশ্বরের কাজ প্রকাশিত হয় তাই এমন হয়েছে।
\v 4 যতক্ষণ দিন আছে ততক্ষণ যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর কাজ আমাদের করতে হবে। রাত্রি আসছে যখন কেউ কাজ করতে পারবে না।
\v 5 আমি যখন এই পৃথিবীতে আছি, তখন আমিই হলাম পৃথিবীর আলো।
\s5
\v 6 এই কথা বলার পর তিনি মাটিতে থুথু ফেলে সেই থুথু দিয়ে কাদা করলেন; পরে ঐ অন্ধ লোকটির চোখেতে সেই কাদা লাগিয়ে দিলেন।
\v 7 তিনি তাঁকে বললেন, যাও শীলোহ সরোবরে গিয়ে ধুয়ে ফেল; অনুবাদ করলে এই নামের মানে হয় ‘প্রেরিত’। সুতরাং সে গিয়ে ধুয়ে ফেললো এবং দেখতে দেখতে ফিরে আসল।
\s5
\v 8 তখন লোকটির প্রতিবেসীরা এবং যারা আগে তাকে দেখেছিল যে, সে ভিক্ষা করত, তারা বলতে লাগল এ কি সেই লোকটি নয় যে বসে ভিক্ষা করত?
\v 9 কেউ কেউ বলল, এ সেই লোক; অন্যরা বলল না কিন্তু তারই মত; সে কিন্তু বলছিল 'আমি সেই লোক'।
\s5
\v 10 তারা তখন তাকে বলল, তবে কি করে তোমার চক্ষু খুলে গেল?
\v 11 সে উত্তর দিল, একজন মানুষ যাকে যীশু নামে ডাকে তিনি কাদা করে আমার চক্ষুতে লেপে দিলেন এবং আমাকে বললেন, শীলোহে যাও এবং ধুয়ে ফেল; সুতরাং আমি গিয়ে ধুয়ে ফেললাম এবং দৃষ্টি ফিরে পেলাম।
\v 12 তারা তাকে বলল, সে কোথায়? সে বলল আমি জানি না।
\s5
\v 13 আগে যে অন্ধ ছিল তাকে তারা ফরীশীদের কাছে নিয়ে গেল।
\v 14 যে দিন যীশু কাদা করে তার চক্ষু খুলে দেন সেই দিন বিশ্রামবার ছিল।
\v 15 তখন আবার ফরীশীরাও তাকে জিজ্ঞাসা করতে লাগল, কিভাবে সে দৃষ্টি পেল? সে তাদেরকে বলল, তিনি আমার চোখের উপরে কাদা লাগিয়ে দিলেন, পরে আমি ধুইয়া ফেললাম এবং আমি এখন দেখতে পাচ্ছি।
\s5
\v 16 তখন কয়েক জন ফরীশী বলল, এই মানুষটি ঈশ্বর থেকে আসে নি, কারণ সে বিশ্রামবার মেনে চলে না। অন্যেরা বলল, কেমন করে এক জন মানুষ এই সব আশ্চর্য কাজ করতে পারে? সুতরাং তাদের মধ্যে বিভেদ তৈরী হল।
\v 17 সুতরাং তারা আবার সেই অন্ধকে জিজ্ঞাসা করলো, তুমি তার সম্পর্কে কি বল? কারণ সে তোমার চক্ষু খুলে দিয়েছে। সেই অন্ধ মানুষটি বলল তিনি একজন ভবিষৎ বক্তা।
\v 18 যিহূদীরা তখনও তার সম্পর্কে বিশ্বাস করল না যে, সে অন্ধ ছিল আর দৃষ্টি পেয়েছে যতক্ষণ না তারা ঐ দৃষ্টিপ্রাপ্ত মানুষটির বাবা মাকে ডেকে তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করল।
\s5
\v 19 তারা তার বাবামাকে জিজ্ঞাসা করলো, এ কি তোমাদের পুত্র যার সম্পর্কে তোমরা বলে থাক এ অন্ধই জন্মেছিল? তবে এখন কি ভাবে সে দেখতে পাচ্ছে?
\v 20 তার বাবা মা উত্তর দিয়ে তাদের বলল, আমরা জানি এই হলো আমাদের ছেলে এবং সে অন্ধই জন্মেছিল,
\v 21 এখন কি ভাবে দেখতে পাচ্ছে তা আমরা জানি না এবং কে বা এর চক্ষু খুলে দিয়েছে তাও আমরা জানি না; তাকেই জিজ্ঞাসা করুন, এখন তো ওর বয়স হয়েছে। নিজের কথা নিজে বলতে পারে।
\s5
\v 22 তার বাবা মা যিহূদীদের এই কথা বলল কারণ তারা তাদের ভয় করত। কেননা যিহূদীরা আগেই ঠিক করেছিল কেহ যদি তাঁকে খ্রীষ্ট বলে স্বীকার করে তবে তাদেরকে সমাজ থেকে বের করে দেওয়া হবে।
\v 23 এই সব কারণে তার বাবা মা বলল, সে পূর্ণ বয়স্ক তাকেই জিজ্ঞাসা করুন।
\s5
\v 24 সুতরাং তারা দ্বিতীয় বার সেই অন্ধ মানুষকে ডেকে তাকে বলল ঈশ্বরকে প্রশংসা কর। আমরা জানি যে সে একজন পাপী।
\v 25 তখন সেই মানুষটি উত্তর দিল, তিনি পাপী কি না আমি তা জানি না। একটা জিনিস জানি যে আমি অন্ধ ছিলাম এবং এখন আমি দেখতে পাচ্ছি।
\s5
\v 26 তারা তাকে বলল, সে তোমার সঙ্গে কি করেছিল? কিভাবে সে তোমার চক্ষু খুলে দিল?
\v 27 সে উত্তর দিল, আমি এক বার আপনাদেরকে বলেছি এবং আপনারা শোনেন নি; তবে কেন আবার সেই কথা শুনতে চাইছেন? আপনারা তো তাঁর শিষ্য হতে চান না, আপনারা কি হতে চাইছেন?
\v 28 তখন তারা তাকে গালিগালাজ করে বলল , তুই হলি তার শিষ্য কিন্তু আমরা হলাম মোশির শিষ্য।
\v 29 আমরা জানি যে ঈশ্বর মোশির সঙ্গে কথা বলেছিলেন কিন্তু এ কোথা থেকে এসেছে তা আমরা জানি না।
\s5
\v 30 সেই মানুষটি উত্তর দিল এবং তাদেরকে বলল, এটাই হলো একটা আশ্চর্য্য জিনিস যে, তিনি কোথা থেকে আসলেন আপনারা তা জানেন না তবুও তিনি আমার চক্ষু খুলে দিয়েছেন।
\v 31 আমরা জানি যে ঈশ্বর পাপীদের কথা শোনেন না, কিন্তু যদি কোন মানুষ ঈশ্বরের ভক্ত হয় এবং তাঁর ইচ্ছা মেনে চলে, ঈশ্বর তার কথা শোনেন।
\s5
\v 32 পৃথিবীর শুরু থেকে কখনও শোনা যায় নি যে, কোনো মানুষ জন্ম থেকে অন্ধ তাকে চক্ষু খুলে দিয়েছে।
\v 33 যদি এই মানুষটি ঈশ্বর থেকে না আসতেন, তবে তিনি কিছুই করতে পারতেন না।
\v 34 তারা উত্তর দিয়ে তাকে বলল, তুই একেবারে পাপেই জন্ম নিয়েছিস, আর তুই আমাদের শিক্ষা দিচ্ছিস? তখন তারা তাকে সমাজ থেকে বের করে দিল।
\s5
\v 35 যীশু শুনলেন যে, তারা তাকে সমাজ থেকে বের করে দিয়েছে। আর তিনি তার দেখা পেয়ে বললেন, তুমি কি ঈশ্বরের পুত্রকে বিশ্বাস কর?
\v 36 সে উত্তর দিয়ে বলল, তিনি কে প্রভু? আমি যেন তাঁতে বিশ্বাস করি?
\v 37 যীশু তাকে বললেন, "তুমি তাঁকে দেখেছ এবং তিনি হলেন যিনি তোমার সঙ্গে কথা বলছেন"।
\v 38 সেই মানুষটি বলল, আমি বিশ্বাস করি প্রভু; তখন সে তাঁকে প্রণাম করল।
\s5
\v 39 তখন যীশু বললেন, বিচারের জন্য আমি এই পৃথিবীতে এসেছি, যেন যারা দেখতে পায় না তারা দেখতে পায় এবং যারা দেখে তারা যেন অন্ধ হয়।
\v 40 ফরীশীদের মধ্যে থেকে যারা তাঁর সঙ্গে ছিল তারা এই সব কথা শুনে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলো, আমরাও কি অন্ধ?
\v 41 যীশু তাদেরকে বললেন, যদি তোমরা অন্ধ হতে তবে তোমাদের হয়ত পাপ থাকত না। যদিও এখন তোমরা বলছ যে, আমরা দেখতে পাই সুতরাং তোমাদের পাপ আছে।
\v 1 সত্য, সত্য, আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ দরজা দিয়ে মেষের খোঁয়াড়ে না ঢুকে আর কোন রাস্তা দিয়ে ঢোকে, সে হলো চোর এবং ডাকাত।
\v 2 কিন্তু যে দরজা দিয়ে ঢোকে সে হলো মেষদের পালক।
\s5
\v 3 তাকেই পাহারাদার দরজা খুলে দেয়, এবং মেষেরা তার আওয়াজ শোনে এবং সে নাম ধরে তার নিজের মেষদেরকে ডাকে ও সে বাইরে নিয়ে যায়।
\v 4 যখন সে নিজের সব মেষগুলিকে বের করে, তখন সে তাদের আগে আগে চলে এবং মেষেরা তার পিছন পিছন চলে কারণ তারা তার গলার আওয়াজ চেনে ।
\s5
\v 5 তারা কোন মতে বাইরের লোকের পিছনে যাবে না, বরং তার কাছ থেকে পালিয়ে আসবে কারণ বাইরের লোকের গলার আওয়াজ তারা চেনে না।
\v 6 এই গল্পটি যীশু তাদেরকে বললেন, কিন্তু তিনি তাদেরকে যে কি বললেন তা তারা বুঝতে পারল না।
\s5
\v 7 তখন যীশু আবার তাদেরকে বললেন, সত্য, সত্যই আমি তোমদেরকে বলছি, আমিই সেই মেষের দরজা।
\v 8 যারা সবাই আমার আগে এসেছিল তারা সবাই চোর ও ডাকাত কিন্তু মেষেরা তাদের আওয়াজ শোনে নি।
\s5
\v 9 আমিই সেই দরজা। যদি কেহ আমার মধ্য দিয়ে ঢোকে সে পরিত্রাণ পাবে এবং সে ভিতরে আসবে ও বাইরে যাবে এবং চরে খাবার জায়গা পাবে।
\v 10 চোর আসে চুরি, বধ, ও ধংস করবার জন্য। আমি এসেছি যেন তারা জীবন পায় এবং সেই জীবন অধিক পরিমানে পায়।
\s5
\v 11 আমিই হলাম উত্তম মেষপালক; উত্তম মেষপালক মেষদের জন্য নিজের জীবন দেয়।
\v 12 যে ভাড়া করা চাকর এবং মেষপালক নয়, মেষগুলি যার নিজের নয়, সে নেকড়ে আসতে দেখলে মেষগুলি ফেলে পালায়। এবং নেকড়ে তাদেরকে ধরে নিয়ে যায় ও তাদের ছিন্নভিন্ন করে দেয়।
\v 13 সে পালায় কারণ সে একজন ভাড়া করা কাজের লোক এবং সে মেষদের জন্য চিন্তা করে না।
\s5
\v 14 আমিই হলাম উত্তম মেষপালক এবং আমার নিজের সবাইকে আমি চিনি আর আমার নিজের সবাই আমাকে চেনে,
\v 15 পিতা আমাকে জানেন এবং আমি পিতাকে জানি; এবং মেষদের জন্য আমি নিজের জীবন উত্সর্গ করি।
\v 16 আমার আরও অন্য মেষ আছে সে সব এই খোঁয়াড়ের নয়। তাদেরকেও আমি অবশ্যই নিয়ে আসব এবং তারা আমার গলার আওয়াজ শুনবে তাতে একটা মেষের পাল হবে এবং একজন মেষপালক হবে।
\s5
\v 17 পিতা আমাকে এই জন্য ভালবাসেন, কারণ আমি নিজের জীবন উত্সর্গ করি আবার তা গ্রহণ করি।
\v 18 কেউ আমার থেকে তা নিয়ে যায় না কিন্তু আমি নিজের থেকেই তা উত্সর্গ করি। আমার অধিকার আছে তা উত্সর্গ করার এবং আবার তা গ্রহণ করবার ক্ষমতা আমার আছে। এই আদেশ আমি নিজের পিতা থেকে পেয়েছি।
\s5
\v 19 এই সব কথার জন্য যিহূদীদের মধ্যে আবার মতপার্থক্য হল।
\v 20 তাদের মধ্যে অনেকে বলল, একে ভূতে ধরেছে এবং সে পাগল, কেন তোমরা তার কথা শুনছ?
\v 21 অন্য লোকেরা বলল, এই সব ত ভুতে ধরা লোকের মত কথা নয়। ভূত কি একজন অন্ধের চক্ষু খুলে দিতে পারে?
\v 24 তখন যিহূদীরা তাঁকে ঘিরে ধরলো এবং তাঁকে বললো, আর কত কাল আমাদের অনিশ্চিয়তায় রাখবে। আপনি যদি খ্রীষ্ট হন তবে স্পষ্ট করে আমাদেরকে বলুন।
\s5
\v 25 যীশু তাদেরকে উত্তর দিলেন, আমি তোমাদেরকে বলেছি কিন্তু তোমরা বিশ্বাস কর না। আমি যে সব কাজ আমার পিতার নামে করছি, সেই সব আমার সম্পর্কে সাক্ষ্য দিচ্ছে।
\v 26 কিন্তু তোমরা বিশ্বাস কর না কারণ তোমরা আমার মেষদের মধ্যে নও।
\s5
\v 27 আমার মেষেরা আমার আওয়াজ শোনে, আমি তাদের জানি এবং তারা আমার পিছন পিছন চলে।
\v 28 আমি তাদেরকে অনন্ত জীবন দিই, তারা কখনই বিনষ্ট হবে না এবং কেউ আমার হাত থেকে তাদেরকে কেড়ে নিতে পারবে না।
\s5
\v 29 আমার পিতা যিনি তাদেরকে আমাকে দিয়েছেন তিনি সবার থেকে মহান এবং কেউ পিতার হাত থেকে কিছুই কেড়ে নিতে পারে না।
\v 30 আমি ও পিতা এক।
\v 31 তখন যিহূদীরা আবার পাথর তুলল তাঁকে মারবার জন্য।
\s5
\v 32 যীশু তাদের উত্তর দিলেন, "আমি পিতার থেকে তোমাদেরকে অনেক ভালো কাজ দেখিয়েছি, তার কোন কাজগুলির জন্য আমাকে পাথর মারছ?
\v 33 যিহূদীরা তাঁকে উত্তর দিল, কোনো আশ্চর্য কাজের জন্য তোমাকে পাথর মারছি না, কিন্তু ঈশ্বর-নিন্দার জন্য, কারণ তুমি একজন মানুষ হয়ে নিজেকে ঈশ্বর করে তুলছ।
\s5
\v 34 যীশু তাদেরকে উত্তর দিয়ে বললেন, তোমাদের নিয়ম কানুনে কি লেখা নেই, “আমি বললাম, তোমরা যেন ঈশ্বর”?
\v 35 যাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য এসেছিল, তিনি তাদের তো ঈশ্বরের মত বলেছিলেন - আর পবিত্র শাস্ত্রের কথা বাদ দেওয়া যেতে পারে না-
\v 36 যাঁকে পিতা পবিত্র করলেন ও পৃথিবীতে পাঠালেন, তোমরা কি তাঁকে বলবে যে, তুমি ঈশ্বরের নিন্দা করছ, কারণ আমি বললাম যে, আমি ঈশ্বরের পুত্র?
\s5
\v 37 যদি আমি আমার পিতার কাজ না করি তবে আমাকে বিশ্বাস কর না।
\v 38 যদিও আমি এইগুলি করছি, তবু যদি তোমরা আমাকে বিশ্বাস না কর তবে সেই কাজের উপর বিশ্বাস কর; যেন তোমরা জানতে পার ও বুঝতে পার যে পিতা আমার মধ্যে আছেন এবং আমি পিতার মধ্যে আছি।
\v 39 তারা আবার তাঁকে ধরতে চেষ্টা করল, কিন্তু তিনি তাদের এড়িয়ে হাতের বাইরে দূরে চলে গেলেন।
\s5
\v 40 যীশু আবার যর্দ্দনের অপর পারে যেখানে যোহন প্রথমে বাপ্তিস্ম দিতেন সেই জায়গায় চলে গেলেন এবং সেখানে থাকলেন।
\v 41 অনেক মানুষ যীশুর কাছে এসেছিল। তারা বলতে লাগলো, যোহন হয়ত কোন আশ্চর্য কাজ করেন নি কিন্তু এই মানুষটির সম্পর্কে যোহন যে সব কথা বলেছিলেন সে সবই সত্য।
\v 1 এক জন যাঁর নাম লাসার তিনি অসুস্থ ছিলেন, তিনি মরিয়ম ও তাঁর বোন মার্থা বৈথনিয়া গ্রামের লোক ছিলেন।
\v 2 ইনি হলেন সেই মরিয়ম, যিনি প্রভুকে সুগন্ধি তেল মাখিয়ে দেন, এবং নিজের মাথার চুল দিয়ে তাঁর পা মুছে দেন; তাঁরই ভাই লাসার অসুস্থ ছিলেন।
\s5
\v 3 বোনেরা তাঁকে বলে পাঠালেন, প্রভু, দেখুন আপনি যাকে ভাল বাসেন সে অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
\v 4 যখন যীশু এই কথা শুনলেন, তিনি বললেন, এই অসুস্থতা মৃত্যুর জন্য হয় নি কিন্তু ঈশ্বরের মহিমার জন্য হয়েছে, সুতরাং যেন ঈশ্বরের পুত্র এর দ্বারা মহিমান্বিত হন।
\s5
\v 5 যীশু মার্থাকে ও তাঁর বোনকে এবং লাসারকে ভালবাসতেন।
\v 6 যখন তিনি শুনলেন যে লাসার অসুস্থ হয়েছে, তখন যে জায়গায় ছিলেন যীশু সেই জায়গায় আরও দুই দিন থাকলেন।
\v 7 এই সবের পরে তিনি শিষ্যদের বললেন, "চল আমরা আবার যিহূদিয়াতে যাই"।
\s5
\v 8 শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, রব্বি, এই এক্ষণে যিহূদীরা আপনাকে পাথর মারবার চেষ্ঠা করছিল, আর আপনি আবার সেখানে ফিরে যাচ্ছেন?
\v 9 যীশু উত্তর দিলেন, একদিনে কি বারো ঘন্টা আলো নেই? যদি কেউ দিনের আলোতে চলে সে হোঁচট খাবে না কারণ সে এই পৃথিবীর আলো দেখে।
\s5
\v 10 কিন্তু যদি সে রাতে চলে, সে হোচট খায় কারণ আলো তার মধ্যে নেই।
\v 11 যীশু এই সব কথা বললেন, এবং এই সব কিছুর পরে তিনি তাঁদেরকে বললেন, আমাদের বন্ধু লাসার ঘুমিয়ে পড়েছে, কিন্তু আমি যাচ্ছি যেন তাকে ঘুম থেকে জাগাতে পারি।
\s5
\v 12 তখন শিষ্যেরা তাঁকে বললেন, প্রভু, সে যদি ঘুমিয়ে থাকে তবে সে সুস্থ হবে।
\v 13 যীশু তাঁর মৃত্যুর সম্বন্ধে বলেছিলেন কিন্তু তাঁরা মনে করলেন যে, তিনি ঘুমিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন সেই কথা বলছেন।
\v 14 তখন যীশু স্পষ্টভাবে তাঁদেরকে বললেন লাসার মরে গেছে।
\s5
\v 15 আর আমি তোমাদের জন্য আনন্দ করছি যে, আমি সেখানে ছিলাম না যেন তোমরা বিশ্বাস কর। এখন চল আমরা তার কাছে যাই।
\v 16 থোমা, যাঁকে দিদুমঃ [যমজ] বলে, তিনি সহ-শিষ্যদের বললেন চল, আমরাও যাই যেন যীশুর সঙ্গে মরতে পারি।
\s5
\v 17 যীশু যখন আসলেন তিনি শুনতে পেলেন যে, লাসার তখন চার দিন হয়ে গেছে কবরে আছেন।
\v 18 বৈথনিয়া যিরূশালেমের কাছে প্রায় এক ক্রোশ দূর;
\v 19 যিহূদীদের মধ্য থেকে অনেকে মার্থা ও মরিয়মের কাছে এসেছিল তাঁদের ভাইয়ের জন্য সান্তনা দিতে ।
\v 20 যখন মার্থা শুনলো যে, যীশু এসেছেন তিনি গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন, কিন্তু মরিয়ম তখনও ঘরে বসে ছিলেন।
\s5
\v 21 মার্থা তখন যীশুকে বললেন, প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন আমার ভাই হয়ত মরত না।
\v 22 তবে এখনও আমি জানি যে, যা কিছু আপনি ঈশ্বরের কাছে চাইবেন, ঈশ্বর তা আপনাকে দেবেন।
\v 23 যীশু তাঁকে বললেন, তোমার ভাই আবার উঠবে।
\s5
\v 24 মার্থা তাঁকে বললেন, আমি জানি যে শেষের দিনে পুনরুত্থানে সে আবার উঠবে।
\v 25 যীশু তাঁকে বললেন, আমিই পুনরুত্থান ও জীবন; যে কেউ আমাকে বিশ্বাস করে, সে মরলেও জীবিত থাকবে।
\v 26 এবং যে কেউ বেঁচে আছে এবং আমাতে বিশ্বাস করে সে কখনও মরবে না। এটা কি বিশ্বাস কর?
\s5
\v 27 তিনি তাঁকে বললেন, হাঁ প্রভু, আমি বিশ্বাস করি যে আপনিই সেই খ্রীষ্ট, ঈশ্বরের পুত্র যিনি এই পৃথিবীতে আসছেন।
\v 28 এই সব কথা বলে তিনি চলে গেলেন এবং তার নিজের বোন মরিয়মকে গোপনে ডাকলেন। তিনি বললেন গুরু এখানে আছেন এবং তোমাকে ডাকছেন ।
\v 29 যখন মেরি এই কথা শুনলেন তিনি শীঘ্র উঠে যীশুর কাছে গেলেন।
\s5
\v 30 যীশু তখনও গ্রামের মধ্যে আসেন নি কিন্তু যেখানে মার্থা তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন সেই জায়গাতেই ছিলেন।
\v 31 তখন যে যিহূদীরা মরিয়মের সঙ্গে ঘরের মধ্যে ছিল ও তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছিল, তারা যখন তাঁকে তাড়াতাড়ি উঠে বাইরে যেতে দেখল তখন তারাও তাঁর পিছন পিছন গেল এবং মনে করল, তিনি কবরের কাছে কাঁদতে যাচ্ছেন।
\v 32 তখন মরিয়ম যেখানে যীশু ছিলেন সেখানে যখন আসলেন, তখন তাঁকে দেখে তাঁর পায়ে পড়ে বললেন, প্রভু, আপনি যদি এখানে থাকতেন, আমার ভাই মরত না।
\s5
\v 33 যীশু যখন দেখলেন তিনি কাঁদছেন, ও তাঁর সঙ্গে যে যিহূদীরা এসেছিল তারাও কাঁদছে তখন মনে মনে খুব অস্থির হয়ে উঠলেন ও উদ্বিগ্ন হলেন,
\v 34 তিনি বললেন "তোমরা তাকে কোথায় রেখেছ?" তাঁরা তাঁকে বললেন, প্রভু এসে দেখুন।
\v 35 যীশু কাঁদলেন।
\s5
\v 36 তখন যিহূদীরা বলল, দেখ, তিনি লাসারকে কতটা ভাল বাসতেন।
\v 37 কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে কেউ বলল, এই মানুষটি অন্ধের চক্ষু খুলে দিয়েছেন, ইনি কি লাসারের মৃত্যুও রক্ষা করতে পারতেন না?
\s5
\v 38 তাতে যীশু আবার মনে মনে অস্থির হয়ে কবরের কাছে গেলেন। সেই কবর একটা গুহা ছিল এবং তার উপরে একটা পাথর দেওয়া ছিল।
\v 39 যীশু বললেন, "তোমরা পাথরটা সরিয়ে ফেল"। যে মারা গেছে লাসার তার বোন মার্থা যীশুকে বললেন, প্রভু, এতক্ষণ ওই দেহ পচে দুর্গন্ধ হয়ে গেছে কারণ সে মারা গেছে আজ চার দিন।
\v 40 যীশু তাঁকে বললেন, "আমি কি তোমাকে বলি নি যে, যদি তুমি বিশ্বাস কর তবে ঈশ্বরের মহিমা দেখতে পাবে?" সুতরাং তারা পাথরটা সরিয়ে ফেলল।
\s5
\v 41 পরে যীশু আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, পিতঃ, তোমার ধন্যবাদ দিই যে, তুমি আমার কথা শুনেছ।
\v 42 আমি জানতাম তুমি সব সময় আমার কথা শোন কিন্তু এই যে সব মানুষের দল আমার চার পাশে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে এদের জন্য এই কথা বললাম, যেন তারা বিশ্বাস করে যে তুমিই আমাকে পাঠিয়েছ।
\s5
\v 43 এই সব বলার পরে তিনি চিত্কার করে ডেকে বললেন লাসার, বাইরে এস।
\v 44 তাতে সেই মৃত মানুষটি বেরিয়ে আসলেন; তাঁর পা ও হাত কবর-কাপড়ে জড়ানো ছিল এবং মুখ গামছা দিয়ে বাঁধা ছিল। যীশু তাদেরকে বললেন, "তাকে খুলে দাও এবং যেতে দাও।"
\s5
\v 45 তখন যিহূদীদের অনেকে যারা মরিয়মের কাছে এসেছিল এবং দেখেছিল যীশু যা করেছিলেন, তারা তাঁতে বিশ্বাস করিল।
\v 46 কিন্তু তাদের কয়েকজন ফরীশীদের কাছে গেল এবং যীশু যা কিছু করেছিলেন তাদেরকে বলল।
\s5
\v 47 তখন প্রধান যাজকগণ ও ফরীশীরা মহাসভা করে বলতে লাগল আমরা এখন কি করব? এ মানুষটি ত অনেক আশ্চর্য কাজ করছে।
\v 48 আমরা যদি তাঁকে এইভাবে চলতে দিই, তবে সবাই তাঁকেই বিশ্বাস করবে; আর রোমীয়েরা এসে আমাদের জায়গা এবং আমাদের দেশ উভয়ই কেড়ে নেবে।
\s5
\v 49 কিন্তু তাদের মধ্যে এক জন যার নাম কায়াফা, সেই বছরের মহাযাজক ছিলেন তাদেরকে বললেন, তোমরা কিছুই জানো না।
\v 50 আর চিন্তা করেও দেখ না যে, তোমাদের জন্য এটী ভাল, সব মানুষের জন্য একজন মরা ভালো আর সব জাতি নষ্ট হওয়ার থেকে।
\s5
\v 51 এই সব কথা যে তিনি নিজের থেকে বললেন, তা নয়, কিন্তু সেই বৎসরের মহাযাজক হওয়াতে তিনি এই ভবিষৎ বাণী বললেন যে, সব জাতির জন্য যীশু মরবেন।
\v 52 আর শুধুমাত্র সেই জাতির জন্য নয় কিন্তু ঈশ্বরের যে সব সন্তানরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল, সেই সবাইকে যেন জড়ো করে এক করেন।
\v 53 সুতরাং সেই দিন থেকে তারা তাঁকে মেরে ফেলার জন্য ষড়যন্ত্র করতে লাগলো।
\s5
\v 54 তখন যীশু আর খোলাখুলি ভাবে যিহূদীদের মধ্যে চলাফেরা করলেন না, কিন্তু সেখান থেকে দুরে মরু অঞ্চলের কাছে এক নিরাপদ জায়গা ইফ্রয়িম নামক শহরে গেলেন, আর সেখানে শিষ্যদের সঙ্গে থাকলেন।
\s যীশু উদ্ধার পর্ব্বে যিরূশালেমে যান ও উপদেশ দেন।
\v 9 যিহূদীদের একদল লোকে জানতে পারল যে, যীশু এখানে ছিলেন, তারা কেবল যীশুর জন্য আসেনি, কিন্তু তারা অবশ্যই লাসারকে দেখতে এসেছিল, যাকে যীশু মৃতদের মধ্য থেকে উঠিয়েছিলেন।
\v 10 প্রধান পুরোহিতেরা একসঙ্গে ষড়যন্ত্র করল যে লাসারকেও মেরে ফেলতে হবে;
\v 11 তার এই সব কারণের জন্য যিহূদীদের মধ্যে অনেকে চলে গিয়ে যীশুকে বিশ্বাস করেছিল।
\v 12 পরেরদিন অনেক লোক উত্সবে এসেছিল। তখন তারা শুনতে পেল যীশু যিরূশালেমে আসছেন,
\v 13 তারা খেঁজুর পাতা নিয়েছিল এবং তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেল এবং চিত্কার করতে লাগল, "হোশান্না! তিনি মহিমান্বিত হন যিনি প্রভুর নামে আসছেন, যিনি ইস্রায়েলের রাজা।"
\s5
\v 14 যীশু একটা গাধাশাবক দেখতে পেলেন এবং তার ওপর বসলেন; যেরকম লেখা ছিল,
\v 15 “ভয় কোরো না, সিয়োন কন্যা; দেখ, তোমার রাজা আসছেন, একটা গাধাশাবকের উপরে বসে আসছেন ।”
\v 16 তাঁর শিষ্যরা প্রথমে এই সব বিষয় বুঝতে পারেনি; কিন্তু যীশু যখন মহিমান্বিত হলেন, তখন তাঁদের মনে পড়ল যে, তাঁর বিষয়ে এই সব লেখা ছিল এবং তারা তাঁর প্রতি এই সব করেছে।
\v 17 যীশু যখন লাসারকে কবর থেকে বেরিয়ে আসতে বলেছিলেন তখন যে সব লোক তাঁর সঙ্গে ছিল এবং তিনি লাসারকে মৃতদের মধ্য থেকে উঠিয়েছেন, সেই বিষয়ে তারা সাক্ষ্য দিচ্ছিল ।
\v 18 ইহার আরও কারণ ছিল যে লোকেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল কারণ তারা এই সব চিহ্ন কাজের কথা শুনেছিল।
\v 19 ফরীশীরা ঐ কারণে তাদের মধ্যে বলতে লাগলো, "দেখ, তোমরা কিছু করতে পারবে না; দেখ, সারা বিশ্ব তাঁকে অনুসরণ করছে ।
\v 25 যে কেউ তার নিজের জীবনকে ভাল বাসে, সে তা হারাবে; কিন্তু যে কেউ এই জগতে তার জীবনকে ঘৃণা করে সে অনন্তকালের জন্য রক্ষা পাবে ।
\v 26 কেউ যদি আমার সেবা করে, তবে সে আমাকে অনুসরণ করুক; এবং আমি যেখানে থাকব আমার সেবকও সেখানে থাকবে । কেউ যদি আমার সেবা করে, তবে পিতা তাকে সম্মান করবেন।
\v 34 লোকেরা তাঁকে উত্তর দিল, "আমরা ব্যবস্থা থেকে শুনেছি যে খ্রীষ্ট চিরকাল থাকবেন । আপনি কি ভাবে বলছেন যে, "মনুষ্যপুত্রকে অবশ্যই উঁচুতে তোলা হবে? তাহলে এই মনুষ্যপুত্র কে?"
\v 35 যীশু তখন তাদের বললেন, "আর অল্প সময়ের জন্য আলো তোমাদের সাথে আছে। যতক্ষণ তোমাদের কাছে আলো আছে তোমরা চলতে থাক, যাতে অন্ধকার তোমাদেরকে গ্রাস না করে। যে কেউ অন্ধকারে চলে, সে জানে না সে কোথায় যাচ্ছে।
\v 36 যতক্ষণ তোমাদের কাছে আলো আছো, সেই আলোতে বিশ্বাস কর যেন তোমরা আলোর সন্তান হতে পার।" যীশু এই সব কথা বললেন এবং তারপর চলে গেলেন এবং তাদের কাছ থেকে নিজেকে গোপন রাখলেন।
\v 37 যদিও যীশু তাদের সামনে অনেক চিহ্ন-কার্য্য করেছিলেন, তা সত্বেও তারা তাঁতে বিশ্বাস করে নি
\v 38 যাতে যিশাইয় ভাববাদীর বাক্য সমপূর্ণ হয়, যা তিনি বলেছিলেন: “হে প্রভু, কে আমাদের প্রচার বিশ্বাস করেছে? আর কার কাছে প্রভুর বাহু প্রকাশিত হয়েছে?
\s5
\v 39 এই জন্য তারা বিশ্বাস করে নি, কারণ যিশাইয় আবার বলেছেন,
\v 40 “তিনি তাদের চোখ অন্ধ করেছেন এবং তিনি তাদের হৃদয় কঠিন করেছেন; না হলে তারা চোখ দিয়ে দেখত, হৃদয়ে উপলব্ধি করতো ও আমার কাছে ফিরে আসতো এবং আমি তাদের সুস্থ করতাম।”
\s5
\v 41 যিশাইয় এই সব বিষয় বলেছিলেন কারণ তিনি যীশুর মহিমা দেখেছিলেন এবং তাঁরই বিষয় বলেছিলেন।
\v 42 তবুও অনেক শাসকেরা যীশুকে বিশ্বাস করেছিল; তারা ফরীশীদের ভয়ে স্বীকার করল না কারণ যদি তাদের সমাজ থেকে বের করে দেয়।
\v 43 তারা ঈশ্বরের কাছ থেকে প্রশংসা পাওয়ার চেয়ে মানুষের কাছ থেকে প্রশংসা পেতে বেশি ভাল বাসত।
\v 48 যে কেউ আমাকে ত্যাগ করে এবং আমার কথা অগ্রাহ্য করে, একজন আছেন যিনি তাদের বিচার করবেন : এটা হলো সেই বাক্য যা আমি বলেছি যে শেষ দিনে তার বিচার করা হবে।
\v 49 আমি আমার নিজের থেকে কিছু বলি নি। কিন্তু, এটা পিতা বলেছেন যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, তিনি আমাকে আদেশ করেছেন আমি কি বলবো এবং কি বলা উচিত।
\v 50 আমি জানি যে তাঁর আদেশই অনন্ত জীবন; সুতরাং যে বিষয় আমি বলি - ঠিক পিতা আমাকে যেমন বলেছেন, আমি তেমনই তাদেরকে বলি।"
\v 1 নিস্তারপর্ব্বের আগে, কারণ যীশু জানতেন যে এই পৃথিবী থেকে পিতার কাছে যাবার সময় তাঁর হয়েছে, তাই এই জগতে যারা তাঁর নিজের প্রীতিপাত্র ছিল, তিনি তাদেরকে শেষ পর্য্যন্তই প্রেম করলেন ।
\v 2 শয়তান আগে থেকেই শিমোনের ছেলে ঈষ্করিয়োতীয় যিহূদার মনে যীশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করার ইচ্ছা জাগিয়ে দিয়েছিল ।
\v 8 পিতর তাঁকে বললেন, "আপনি কখনও আমার পা ধুইয়ে দেবেন না।" যীশু উত্তরে তাঁকে বললেন, যদি আমি তোমার পা ধুয়ে না দিই, তবে আমার সঙ্গে তোমার কোন সম্পর্ক নেই।
\v 9 শিমোন পিতর তাঁকে বললেন, "প্রভু, কেবল আমার পা ধোবেন না, কিন্তু আমার হাত ও মাথাও ধুইয়ে দিন।"
\v 16 সত্য, সত্য, আমি তোমাদের বলছি, একজন দাস তার প্রভুর থেকে মহৎ নয়; যিনি পাঠিয়েছেন তাঁর থেকে মহৎ নয় যাকে পাঠানো হয়েছে।
\v 17 যদি তোমরা এই বিষয়গুলো জান, তোমরা যদি তাদের জন্য এগুলো কর তোমরা আশীর্বাদযুক্ত হবে।
\v 18 আমি তোমাদের সকলের কথা বলছি না, আমি যাদের মনোনীত করেছি আমি তাদের জানি - কিন্তু আমি এই কথা বলছি যে শাস্ত্র বাক্য পূর্ণ হবেই: 'যে আমার রুটী খেয়েছে, সে আমার বিরুদ্ধাচরণ করেছে।'
\v 21 যখন যীশু এই কথা বললেন, তখন তিনি আত্মাতে কষ্ট পেলেন, তিনি সাক্ষ্য দিলেন এবং বললেন, "সত্য, সত্য, আমি তোমাদের বলছি যে তোমাদের মধ্যে এক জন আমার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে।"
\v 22 শিষ্যরা এক জন অন্যের দিকে তাকালো, তারা অবাক হল তিনি কার বিষয় বলছেন।
\s5
\v 23 যীশুর শিষ্যদের মধ্যে একজন ঘনিষ্ট শিষ্য ছিল, যাকে যীশু প্রেম করতেন, ভোজের টেবিলে যে যীশুর কোলে হেলান দিয়ে বসে ছিল।
\v 26 যীশু তার উত্তরে বললেন, "সেই, যার জন্য আমি এই রুটির টুকরোটা ডোবাব এবং তাকে দেব। "সুতরাং তখন তিনি রুটিটা ডুবিয়ে, ঈষ্করিয়োতীয় শিমোনের ছেলে যিহূদাকে দিলেন।
\v 27 এবং রুটীটি দেবার পরেই, শয়তান তার মধ্যে প্রবেশ করল। তারপর যীশু তাকে বললেন, "তুমি যেটা করছ সেটা তাড়াতাড়ি কর।"
\v 28 ভোজের টেবিলের কেউ কারণটি জানতে পারেনি যে যীশু তাকেই বলেছিল
\v 29 কিছু লোক চিন্তা করেছিল যে, যিহূদার কাছে টাকার থলি ছিল বলে যীশু তাকে বললেন, "উত্সবের জন্য যে জিনিসগুলো দরকার কিনে আন," অথবা সে যেন অবশ্যই গরিবদের কিছু জিনিস দেয়।
\v 30 যিহুদা রুটি গ্রহণ করার পর তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেল; এবং তখন রাত ছিল।
\v 31 যখন যিহুদা চলে গেল, যীশু বললেন, "এখন মনুষ্যপুত্র মহিমান্বিত হলেন এবং ঈশ্বরও তাঁতে মহিমান্বিত হলেন।
\v 32 ঈশ্বর তাঁকে তাঁর মাধ্যমে মহিমান্বিত করবেন এবং তিনি খুব তাড়াতাড়ি তাঁকে মহিমান্বিত হবেন।
\v 33 ছোট শিশুরা, আমি অল্পকালের জন্য তোমাদের সঙ্গে আছি। তোমরা আমাকে খুঁজবে এবং আমি যিহূদীদের যেমন বলেছিলাম, ‘আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা আসতে পার না।’ এখন আমি তোমাদেরও তাই বলছি।
\v 36 শিমোন পিতর তাঁকে বললেন, "প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন?" যীশু উত্তর দিলেন, "আমি যেখানে যাচ্ছি, সেখানে তোমরা আমাকে অনুসরণ কোর না, কিন্তু পরে তোমরা আসতে পারবে।"
\v 8 ফিলিপ যীশুকে বললেন, "প্রভু, আমাদের পিতাকে দেখান এবং এটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট হবে।"
\v 9 যীশু তাঁকে বললেন, "ফিলিপ, আমি এত দিন ধরে তোমাদের সঙ্গে আছি তবুও তুমি কি এখনো আমাকে চিনতে পারনি?" যে আমাকে দেখেছে সে পিতাকেও দেখেছে; তোমরা কিভাবে বলতে পারো, 'পিতাকে আমাদের দেখান'?
\v 10 তোমরা কি বিশ্বাস কর না যে আমি পিতাতে আছি এবং পিতা আমার মধ্যে আছেন? যে সব কথা আমি তোমাদের বলছি সে সব আমার নিজের কথা নয়; কিন্তু পিতা আমার মধ্যে থেকে নিজের কাজ করছেন।
\v 11 আমাকে বিশ্বাস কর যে, আমি পিতাতে আছি এবং পিতা আমার মধ্যে আছেন; নতুবা আমার কাজের জন্যই আমাকে বিশ্বাস কর।
\v 12 সত্য, সত্য, আমি তোমাদের বলছি, যে কেউ আমাতে বিশ্বাস করে, আমি যে সব কাজ করি, সেও এই সব কাজ করবে; এবং সে এর থেকেও মহান মহান কাজ করবে কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি।
\v 13 তোমরা আমার নামে যা কিছু চাইবে, আমি তা করব, যেন পিতা তাঁর পুত্রের মাধ্যমে মহিমান্বিত হন।
\v 15 যদি তোমরা আমাকে ভালোবাসো, তবে তোমরা আমার সব আদেশ পালন করবে।
\v 16 এবং আমি পিতার কাছে প্রার্থনা করব এবং তিনি তোমাদের অন্য এক জন সাহায্যকারী দেবেন সুতরাং তিনি চিরকাল তোমাদের সঙ্গে থাকবেন,
\v 17 তিনি সত্যের আত্মা। জগৎ তাঁকে গ্রহণ করে না কারণ সে তাঁকে দেখে নি অথবা তাঁকে জানে না। তোমরা তাঁকে জান, তিনি তোমাদের সঙ্গে থাকেন এবং তোমাদের মনে থাকবেন।
\v 21 যে আমার সব আদেশ জানে এবং পালন করে, সেই একজন যে আমাকে ভালোবাসে; এবং যে আমাকে ভালোবাসে আমার পিতাও তাকে ভালবাসবে এবং আমি তাকে ভালোবাসব এবং আমি নিজেকে তার কাছে প্রকাশ করব।
\v 22 যিহূদা (ঈষ্করিয়োতীয় নয়) যীশুকে বললেন, "প্রভু, কি ঘটেছে, যে আপনি আমাদের কাছেই নিজেকে দেখাবেন জগতের কাছে নয়?"
\v 23 যীশু উত্তর করলেন এবং তাঁকে বললেন, "কেউ যদি আমাকে ভালোবাসে, সে আমার কথা পালন করবে। আমার পিতা তাকে ভালোবাসবেন এবং আমরা তাঁর কাছে আসব এবং তাঁর সঙ্গে আমাদের বাস করার জায়গা তৈরী করবেন।
\v 24 যে কেউ আমাকে ভালোবাসে না আমার কথা পালন করে না। যে কথা তোমরা শুনছ সেটা আমার নয় কিন্তু পিতার যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।
\v 25 আমি তোমাদের এই সব বিষয় বলেছি, যখন আমি তোমাদের মধ্যে ছিলাম।
\v 26 যখন সাহায্যকারী, পবিত্র আত্মা, যাঁদের পিতা আমার নামে পাঠাবেন, তাঁরা তোমাদের সব বিষয়ে শিক্ষা দেবেন এবং আমি তোমাদের যা বলেছি সেসব মনে করিয়ে দেবেন।
\v 27 আমি তোমাদের জন্য শান্তি রেখে যাচ্ছি ;আমার শান্তি তোমাদের দান করছি। জগৎ যেভাবে দেয় আমি সেভাবে দিই না। তোমাদের মন যেন অস্থির না হয় এবং মনে ভয় না থাকে।
\v 28 তোমরা শুনেছ আমি তোমাদের কি বলেছি, 'আমি চলে যাচ্ছি এবং আবার তোমাদের কাছে ফিরে আসব।' 'যদি তোমরা আমাকে ভালোবাসতে, তবে তোমরা আনন্দ করতে কারণ আমি বাবার কাছে যাচ্ছি, কারণ বাবা আমার চেয়ে মহান্।'
\v 29 এখন ঐ সব ঘটবার আগে আমি তোমাদের বলছি, যখন ইহা ঘটবে তোমরা বিশ্বাস করবে।
\v 3 আমি যে বার্তার কথা তোমাদের আগে বলেছি তার জন্য তোমরা আগে থেকেই পরিষ্কৃত হয়েছ।
\v 4 আমাতে থাক এবং আমি তোমাদের মধ্যে। যেমন আঙুর গাছের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কোনো ডাল নিজের থেকে ফল দিতে পারে না, তেমনই তোমরা যদি আমার মধ্যে না থাক তবে তোমরাও পার না।
\s5
\v 5 আমি আঙুর গাছ; তোমরা শাখাপ্রশাখা। যে কেউ আমার মধ্যে থাকে এবং আমি তার মধ্যে, সেই লোক অনেক ফলে ফলবান হবে, যে আমার থেকে দূরে থাকে সে কিছুই করতে পারে না।
\v 6 যদি কেউ আমাতে না থাকে, তাকে ডালের মত ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয় এবং সে শুকিয়ে যায়; লোকেরা ডালগুলো জড়ো করে সেগুলোকে আগুনের মধ্যে ফেলে দেয় ও সেগুলো পুড়ে যায়।
\v 7 যদি তোমরা আমার মধ্যে থাক এবং আমার কথাগুলো যদি তোমাদের মধ্যে থাকে, তবে তোমাদের যা ইচ্ছা চাও এবং আমি তোমাদের জন্য তাই করব।
\v 14 তোমরা আমার বন্ধু যদি তোমরা এই সব জিনিস কর যা আমি তোমাদের আদেশ করি।
\v 15 বেশিদিন আর আমি তোমাদের দাস বলব না, কারণ , দাসেরা জানে না তাদের প্রভু কি করছে। আমি তোমাদের বন্ধু বলেছি, কারণ আমার পিতার কাছে যা শুনেছি, সবই তোমাদের জানিয়েছি।
\v 16 তোমরা আমাকে নির্বাচন কর নি, কিন্তু আমিই তোমাদের নির্বাচন করেছি এবং তোমাদের যাওয়ার জন্য তোমাদের নিয়োগ করেছি এবং ফল বহন কর এবং তোমাদের ফল যেন থাকে। তোমরা আমার নামে পিতার কাছে যা কিছু চাইবে, তিনি তোমাদের তাই দেবেন।
\v 17 এই আদেশ আমি তোমাদের দিচ্ছি, যে তোমরা একে অন্যকে ভালোবাসো।
\s5
\v 18 জগৎ যদি তোমাদের ঘৃণা করে, জেন যে এটা তোমাদের ঘৃণা করার আগে আমাকে ঘৃণা করেছে।
\v 19 তোমরা যদি এই জগতের হতে, তবে জগৎ তোমাদের নিজের মত ভালোবাসত; কিন্তু কারণ তোমরা জগতের নও এবং কারণ আমি তোমাদের জগতের বাইরে থেকে নির্বাচন করেছি, এই জন্য জগৎ তোমাদের ঘৃণা করে।
\v 20 মনে রেখো আমি তোমাদের যা বলেছি, ‘ একজন দাস নিজের প্রভুর থেকে মহৎ হয় না।’ যদিও তারা আমাকে কষ্ট দিয়েছে, তারা তোমাদেরও কষ্ট দেবে; তারা যদি আমার কথা রাখত, তারা তোমাদের কথাও রাখত।
\v 21 তারা আমার নামের জন্য তোমাদের উপর এই সব করবে, কারণ তারা জানে না কে আমাকে পাঠিয়েছেন।
\v 22 আমি যদি না আসতাম এবং তাদের কাছে কথা না বলতাম, তবে তাদের পাপ হত না; কিন্তু এখন তাদের পাপ কেউ ক্ষমা করবে না।
\v 24 যদি আমি তাদের মধ্যে কাজ না করতাম যা অন্য কেউ করেনি, তবে তারা পাপ করত না। কিন্তু এখন তারা আমাকে এবং আমার পিতাকে উভয়কে দেখেছে এবং ঘৃণা করেছে।
\v 25 এটা ঘটেছে যে তাদের আইনে লেখা এই কথা পূর্ণ হয়েছে: “তারা কোনো কারণ ছাড়া আমাকে ঘৃণা করেছে।”
\s5
\v 26 যখন সাহায্যকারী এসেছে, যাঁকে আমি পিতার কাছ থেকে তোমাদের কাছে পাঠিয়েছি, তিনি হন, সত্যের আত্মা, যিনি পিতার কাছ থেকে এসেছেন, তিনি আমার বিষয়ে সাক্ষ্য দেবেন।
\v 27 তোমরাও সাক্ষ্য বহন করবে কারণ তোমরা প্রথম থেকে আমার সঙ্গে আছ।
\v 3 তারা এই সব করবে কারণ তারা পিতাকে অথবা আমাকে জানে না ।
\v 4 আমি তোমাদের এই সব কথা বলেছি যে তাদের জন্য এই সব ঘটনা ঘটার সময় আসছে তোমরা তাদের মনে করাবে, তোমরা তাদের মনে করাবে এবং আমি তোমাদের তাদের বিষয় বলেছি। আমি প্রথম থেকে তোমাদের এই সব বিষয় বলি নি, কারণ আমি তোমাদের সঙ্গে ছিলাম।
\v 6 কারণ আমি তোমাদের এই সব কথা বলেছি বলে তোমাদের হৃদয় দুঃখে পূর্ণ হয়েছে।
\v 7 তথাপি, আমি তোমাদের সত্যি বলছি: আমার চলে যাওয়া তোমাদের জন্য ভাল; যদি আমি না যাই, সাহায্যকারী তোমাদের কাছে আসবেন না; কিন্তু আমি যদি যাই, তবে তোমাদের কাছে তাঁকে পাঠিয়ে দেব।
\v 12 তোমাদের বলবার আমার অনেক কিছু আছে, কিন্তু তোমরা এখন তাদের বুঝতে পারবে না।
\v 13 তথাপি, যখন তিনি, সত্যের আত্মা, আসবেন, তিনি তোমাদের সব সত্যের পথ দেখাবেন; তিনি নিজের থেকে কথা বলবেন না, কিন্তু তিনি যা কিছু শোনেন, তিনি সেগুলোই বলবেন; এবং যে সব ঘটনা আসছে তিনি সে সব বিষয়ে তোমাদের কাছে ঘোষণা করবেন।
\v 14 তিনি আমাকে মহিমান্বিত করবেন, কারণ আমার কিছু তিনি নেবেন এবং তোমাদের কাছে তাদের ঘোষণা করবেন।
\v 17 তারপর তাঁর কিছু শিষ্য নিজেদের মধ্যে বলাবলি করতে লাগলেন, "তিনি আমাদের এ কি বলছেন, ‘কিছু কাল পরে তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না,' এবং আবার, 'কিছু কাল পরে আবার, তোমরা আমাকে দেখতে পাবে,’ এবং, ‘কারণ আমি পিতার কাছে যাচ্ছি'?"
\v 19 যীশু দেখলেন যে তাঁরা তাঁকে আগ্রহের সঙ্গে জিজ্ঞাসা করতে চাইছেন এবং তিনি তাঁদের বললেন, আমি যা বলেছি, "তোমরা কি এটা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছ, যে আমি কি বলেছি, 'কিছু কালের মধ্যে, তোমরা আমাকে আর দেখতে পাবে না; আবার কিছু কাল পরে, আমাকে দেখতে পাবে'?
\v 20 সত্যি, সত্যি, আমি তোমাদের বলছি, তোমরা কাঁদবে এবং বিলাপ করবে, কিন্তু জগৎ আনন্দ করবে; তোমরা দুঃখার্ত হবে, কিন্তু তোমাদের দুঃখ আনন্দে পরিণত হবে।
\v 21 একজন স্ত্রীলোক দুঃখ পায় যখন তার প্রসব বেদনা হয় কারণ তার প্রসব কাল এসে গেছে; কিন্তু যখন সে সন্তান প্রসব করে, সে আর তার ব্যাথার কথা কখনো মনে করে না কারণ জগতে একটী শিশু জন্মালো এটাই তার আনন্দ ।
\v 22 তোমরাও, তোমরা এখনও দুঃখ পাচ্ছ, কিন্তু আমি তোমাদের আবার দেখব; এবং তোমাদের হৃদয় আনন্দিত হবে এবং কেউ তোমাদের কাছ থেকে সেই আনন্দ নিতে পারবে না।
\v 23 ওই দিনে তোমরা আমাকে কোন প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবে না। সত্যি, সত্যি , আমি তোমাদের বলছি, যদি তোমরা পিতার কাছে কিছু চাও, তিনি আমার নামে তোমাদের তা দেবেন।
\v 24 এখন পর্য্যন্ত তোমরা আমার নামে কিছু চাও নি; চাও, এবং তোমরা গ্রহণ করবে সুতরাং তোমরা আনন্দে পূর্ণ হবে।
\v 25 আমি অস্পষ্ট ভাষায় এই সব বিষয় তোমাদের বললাম, কিন্তু সময় আসছে, যখন আমি তোমাদের আর অস্পষ্ট ভাষায় কথা বলব না, কিন্তু পরিবর্তে পিতার বিষয় তোমাদের সোজা ভাবে বলব ।
\v 29 তাঁর শিষ্যরা বললেন, "দেখুন, এখন আপনি সোজা ভাবে কথা বলছেন, আপনি অস্পষ্ট ভাষায় কথা বলছেন না।
\v 30 এখন আমরা জানি যে আপনি সব কিছুই জানেন এবং আপনি দরকার মনে করেন না যে কেউ আপনাকে কোনো প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে।কারণ এই, আমরা বিশ্বাস করি যে, আপনি ঈশ্বরের কাছ থেকে এসেছেন।
\v 31 যীশু তাঁদের উত্তর দিলেন, "তোমরাএখন বিশ্বাস করছ?"
\v 32 দেখ, সময় এসেছে, হ্যাঁ, সম্ভবত এসেছে, যখন তোমরা ছড়িয়ে পড়বে, প্রত্যেকে নিজের জায়গায় যাবে এবং আমাকে একা রেখে যাবে। তথাপি আমি একা নই, কারণ পিতা আমার সঙ্গে আছেন।
\v 33 তোমাদের এই সব বললাম, যেন তোমরা আমার শান্তিতে থাক। জগতে তোমরা কষ্ট ভোগ করছ, কিন্তু সাহস কর, আমি জগৎকে জয় করেছি।"
\v 1 যীশু এই সব কথা বললেন; তারপর তিনি তাঁর চোখ স্বর্গের দিকে তুললেন এবং বললেন, "পিতা, সময় এসেছে; তোমার পুত্রকে মহিমান্বিত কর, যেন ছেলে তোমাকে মহিমান্বিত করে -
\v 2 যেমন তুমি তাঁকে সব মানুষের উপরে অধিকার দিয়েছ যাদের তুমি তাঁকে দিয়েছ তিনি যেন তাঁদের অনন্ত জীবন দেন।
\v 3 আর এটাই অনন্ত জীবন: যেন তারা তোমাকে জানতে পারে, একমাত্র সত্য ঈশ্বরকে এবং তুমি যাঁকে পাঠিয়েছ, যীশু খ্রীষ্টকে।
\v 4 তুমি আমাকে যে কাজ করতে দিয়েছ তা শেষ করে, আমি পৃথিবীতে তোমাকে মহিমান্বিত করেছি।
\v 5 এখন, পিতা, জগৎ সৃষ্টি হবার আগে তোমার কাছে একা আমার যে মহিমা ছিল, তুমি সেই মহিমায় তোমার নিজের কাছে আমাকে মহিমান্বিত কর।
\s5
\v 6 জগতের বাইরে থেকে তুমি যে লোকদের আমাকে দিয়েছ আমি তাদের কাছে তোমার নাম প্রকাশ করেছি। তারা তোমারই ছিল; এবং তাদের তুমি আমাকে দিয়েছ এবং তারা তোমার কথা রেখেছে।
\v 7 এখন তারা জানে যে, তুমি আমাকে যা কিছু দিয়েছ সে সবই তোমার কাছ থেকে এসেছে,
\v 8 তুমি আমাকে যে সব বাক্য দিয়েছ - আমি এই বাক্যগুলি তাদের দিয়েছি। তারা তাদের গ্রহণ করেছে এবং সত্যি জেনেছে যে আমি তোমার কাছ থেকে এসেছি এবং তারা বিশ্বাস করেছে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো।
\v 9 আমি তাদের জন্য প্রার্থনা করি। আমি জগতের জন্য প্রার্থনা করি না কিন্তু যাদের তুমি আমাকে দিয়েছ, তাদের জন্য তারা তোমারই।
\v 10 সব জিনিষ যা আমার সবই তোমার এবং তোমার জিনিষই আমার; আমি তাদের মধ্যে মহিমান্বিত হয়েছি।
\v 11 আমি আর বেশিক্ষণ জগতে নেই, কিন্তু এই লোকেরা জগতে আছে এবং আমি তোমাদের কাছে আসছি। পবিত্র পিতা, তোমার নামে তাদের রক্ষা কর যা তুমি আমাকে দিয়েছ যেন তারা এক হয়, যেমন আমরা এক।
\v 12 যখন আমি তাদের সঙ্গে ছিলাম আমি তোমার নামে তাদের রক্ষা করেছি যা তুমি আমাকে দিয়েছ; আমি তাদের পাহারা দিয়েছি এবং যার বিনষ্ট হওয়ার কথা ছিল সে বিনষ্ট হয়েছে, যেন শাস্ত্রের কথা পূর্ণ হয়।
\v 13 এখন আমি তোমার কাছে আসছি; কিন্তু আমি জগতে থাকতেই এই সব কথা বলেছি যেন তারা আমার আনন্দে নিজেদের পূর্ণ করে।
\v 14 আমি তাদের তোমার বাক্য দিযেছি; জগৎ তাদের ঘৃণা করেছে, কারণ তারা জগতের নয়, যেমন আমি জগতের নই।
\v 20 আমি কেবলমাত্র এদের জন্য প্রার্থনা করি না, কিন্তু আরও তাদের জন্য যারা তাদের বাক্যের মধ্য দিয়ে আমাকে বিশ্বাস করবে
\v 21 সুতরাং তারা সবাই এক হবে, যেমন তুমি, পিতা, আমার মধ্যে এবং আমি তোমার মধ্যে। আমি প্রার্থনা করি যে তারাও যেন আমাদের মধ্যে থাকে সুতরাং জগৎ বিশ্বাস করবে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো।
\v 22 যে মহিমা তুমি আমাকে দিয়েছ - তা আমি তাদের দিয়েছি, সুতরাং তারা এক হবে, যেমন আমরা এক-
\v 23 আমি তাদের মধ্যে এবং তুমি আমার মধ্যে, যেন তারা সম্পূর্নভাবে এক হয়; যেন জগৎ জানতে পারে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো এবং তাদের ভালোবেসছ, যেমন তুমি আমাকে ভালোবেসেছ।
\v 24 পিতা, যাদের তুমি আমায় দিয়েছ -আমি আশা করি যে তারাও আমার সঙ্গে থাকে যেখানে আমি থাকি, তুমি আমায় যাদের দিয়েছো, তাহারাও যেন সেখানে আমার সঙ্গে থাকে সুতরাং তারা যেন আমার মহিমা দেখে, যা তুমি আমাকে দিয়েছ: কারণ জগৎ সৃষ্টির আগে তুমি আমাকে ভালোবেসেছিলে।
\v 1 পরে যীশু এই সব কথা বলেছিলেন, তিনি তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে বেরিয়ে কিদ্রোণ উপত্যকা পার হয়েছিলেন, সেখানে একটি বাগান ছিল তার মধ্যে তিনি ঢুকেছিলেন, তিনি এবং তাঁর শিষ্যরা।
\v 2 এখন যিহূদা, যে তাঁর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল, সেও জায়গাটা চিনত, কারণ যীশু প্রায়ই তাঁর শিষ্যদের নিয়ে সেখানে যেতেন।
\v 15 শিমোন পিতর যীশুকে অনুসরণ করেছিলেন এবং অন্য এক জন শিষ্যও করেছিলেন। ওই শিষ্যকে মহাপুরোহিত চিনতেন এবং তিনি যীশুর সঙ্গে মহাপুরোহিতের উঠোনে ঢুকলেন।
\v 16 কিন্তু পিতর দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সুতরাং অন্য শিষ্য, যাকে মহাপুরোহিত চিনতেন, বাইরে গেলেন এবং মহিলা দাসীর সঙ্গে কথা বললেন যিনি দরজা পাহারা দিচ্ছিলেন এবং পিতরকে ভেতরে নিয়ে গেলেন।
\v 17 তারপর মহিলা দাসী যিনি দরজা পাহারা দিচ্ছিলেন পিতরকে বলল, "তুমিও কি এই মানুষটির শিষ্যদের মধ্যে এক জন নও?" তিনি বললেন, "আমি নই।"
\v 18 এখন দাসেরা এবং কর্মচারীরা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন; তারা কয়লার আগুন তৈরী করেছিল, কারণ এটা ছিল শীতকাল এবং তারা তাদের গরম করছিল। পিতরও তাদের সঙ্গে ছিল, দাঁড়িয়েছিল এবং নিজেকে গরম করছিল।
\v 19 তারপর মহাপুরোহিত যীশুকে তাঁর শিষ্যদের এবং তাঁর শিক্ষার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলেন।
\v 20 যীশু তাঁকে উত্তর দিলেন, "আমি জগতের কাছে খোলাখুলিভাবে কথা বলেছি; আমি সবসময় সমাজগৃহের মধ্যে এবং উপাসনালয়ের মধ্যে শিক্ষা দিয়েছি যেখানে সব যিহূদীরা একসঙ্গে আসত। আমি গোপনে কিছু বলি নি।
\v 21 কেন আপনি আমাকে জিজ্ঞাসা করছেন ? আমি কি বলেছি সে বিষয়ে যারা শুনেছে তাদের জিজ্ঞাসা করুন। আমি কি বলেছি সে বিষয়ে এই লোকেরা জানে।"
\v 25 এখন শিমোন পিতর দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং নিজেকে গরম করছিলেন। তখন লোকেরা তাঁকে বলল, "তুমিও কি তাঁর শিষ্যদের মধ্যে এক জন নও?" তিনি ইহা অস্বীকার করলেন এবং বললেন, "আমি হই না।"
\v 28 পর দিন ভোরবেলা তারা যীশুকে নিয়ে কায়াফার কাছ থেকে রাজবাড়িতে গেল কিন্তু তারা নিজেরাই রাজবাড়িতে ঢুকলো না যাতে তারা অশুচী না হয় এবং নিস্তারপর্বের ভোজে অংশ গ্রহণ করতে পরে।
\v 29 সুতরাং পীলাত বাইরে তাদের কাছে গেলেন ও বললেন, "তোমরা এই মানুষটির বিরুদ্ধে কি অভিযোগ করছ?"
\v 30 তারা উত্তর করেছিল এবং তাঁকে বলল, যদি এই লোকটি একজন অপরাধী না হত, আমরা আপনার কাছে তাকে সমর্পন করতাম না।"
\v 31 সুতরাং পীলাত তাদের বললেন, "তোমারই তাকে নিয়ে যাও এবং তোমাদের আইনমতে তার বিচার কর। যিহূদীরা তাঁকে বলল, "কোন মানুষকে মেরে ফেলার অধিকার আমাদের আইনে নেই।
\v 32 তারা এই কথা বললেন যেন যীশুর সেই বাক্য পূর্ণ হয়, যে বাক্য তিনি বলেছিলেন যে, তিনি কিভাবে মারা যাবেন তা ঈশারায় বলেছিলেন।
\v 36 যীশু উত্তর করেছিলেন, "আমার রাজ্য এই জগতের অংশ নয়। যদি আমার রাজ্য এই জগতের অংশ হত, তবে আমার দাসেরা যুদ্ধ করত, যেন আমি যিহূদীদের হাতে সমর্পিত না হই; বস্তুত আমার রাজ্য এখান থেকে আসে নি।"
\v 37 তারপর পীলাত তাঁকে বললেন, "তুমি কি একজন রাজা?" যীশু উত্তর করেছিলেন, "আপনি বলছেন যে আমি একজন রাজা। আমি এই উদ্দেশ্যেই জন্মগ্রহণ করেছি এবং এই উদ্দেশ্যেই জগতে এসেছি যে আমি সত্যের সাক্ষ্য বহন করব। প্রত্যেকে যারা সত্যে বাস করতে চায় তারা আমার কথা শোনে।"
\v 38 পীলাত তাঁকে বললেন, "সত্য কি?" যখন তিনি এই কথা বলেছিলেন, তিনি আবার বাইরে যিহূদীদের কাছে গেলেন এবং তাদের বললেন, "আমি এই মানুষটার কোন দোষ দেখতে পাচ্ছি না।
\v 39 তোমাদের একটা নিয়ম আছে যে, আমি নিস্তারপর্ব্বের সময়ে তোমাদের জন্য একজন মানুষকে ছেড়ে দিই। সুতরাং তোমরা কি চাও আমি তোমাদের জন্য যিহূদীদের রাজাকে ছেড়ে দিই?
\v 40 তারপর তারা আবার চেঁচিয়ে উঠল এবং বলল, "এই মানুষটিকে নয়, কিন্তু বারাব্বাকে।" বারাব্বা ডাকাত ছিল।
\v 4 তারপর পীলাত আবার বাইরে বেরিয়ে গেলেন এবং লোকদের বললেন, "দেখ, আমি যে মানুষটিকে তোমাদের কাছে বাইরে এনেছি তোমরা জান যে আমি তাঁর কোন দোষ দেখতে পাই নি।"
\v 5 সুতরাং যীশু বাইরে এলেন; তিনি কাঁটার মুকুট এবং বেগুনী কাপড় পরে ছিলেন। তারপর পীলাত তাদের বললেন, "দেখ, এখানে মানুষটিকে!"
\v 6 যখন প্রধান পুরোহিতেরা এবং কর্মচারীরা যীশুকে দেখল, তারা চিত্কার করে উঠে বলল, "তাকে ক্রুশে দাও, তাকে ক্রুশে দাও!" পীলাত তাদের বললেন, "তোমরা নিজেরাই তাঁকে নিয়ে যাও এবং তাঁকে ক্রুশে দাও, কারণ আমি তাঁর কোন দোষ দেখতে পাচ্ছি না।"
\v 10 তারপরে পীলাত তাঁকে বললেন,"তুমি আমার সঙ্গে কথা বলছ না কেন? তুমি কি জান না যে তোমাকে ছেড়ে দেবার ক্ষমতাও আমার আছে এবং তোমাকে ক্রুশে দেবারও ক্ষমতাও আমার আছে?"
\v 11 যীশু তাঁকে উত্তর দিলেন, "যদি উপর থেকে তোমাকে দেওয়া না হত, তবে আমার বিরুদ্ধে তোমার কোন ক্ষমতা থাকত না। সুতরাং যে লোক তোমার হাতে আমাকে সমর্পণ করেছে তারই পাপ হত বেশী।"
\s5
\v 12 এই উত্তরে, পীলাত তাঁকে ছেড়ে দিতে চেষ্টা করলেন, কিন্তু যিহূদীরা চিত্কার করে বলল, "আপনি যদি এই মানুষটিকে ছেড়ে দেন, তবে আপনি কৈসরের বন্ধু নন: প্রত্যেকে যারা নিজেকে রাজা মনে করে, সে কৈসরের বিপক্ষে কথা বলে ।
\v 13 যখন পীলাত এই কথাগুলো শুনেছিলেন, তিনি যীশুকে বাইরে এনেছিলেন এবং পাথর দিয়ে বাঁধানো একটা জায়গায় বিচারের আসনে বসেছিলেন, ইব্রীয়তে, গব্বথা।
\v 14 এই দিনটি ছিল নিস্তার-পর্ব্বের আয়োজনের দিন, বেলা প্রায় ছয়টা। পীলাত যিহূদীদের বললেন, "দেখ, এখানে তোমাদের রাজা!"
\v 15 তারা চিত্কার করে উঠল, "তাকে দূর কর, তাকে দূর কর; তাকে ক্রুশে দাও!" পীলাত তাদের বললেন, "তোমাদের রাজাকে কি ক্রুশে দেব?" প্রধান পুরোহিত উত্তর দিলেন, "কৈসর ছাড়া আমাদের অন্য কোনো রাজা নেই।"
\v 16 তারপর পীলাত যীশুকে তাদের হাতে সমর্পণ করলেন যেন তাঁকে ক্রুশে দেওয়া হয়।
\v 21 তারপর যিহূদীদের প্রধান পুরোহিতরা পীলাতকে বললেন, "লিখবেন না, ‘যিহূদীদের রাজা’ কিন্তু লিখুন যে, বরং তিনি বললেন, "আমি যিহূদীদের রাজা।"
\v 22 পীলাত উত্তর দিলেন, "আমি যা লিখেছি, তা লিখেছি।"
\s5
\v 23 পরে সৈন্যরা যীশুকে ক্রুশে দিল, তারা তাঁর কাপড় নিল এবং সেগুলোকে চার টুকরো করলো, প্রত্যেক সৈন্য এক একটা অংশ নিল এবং জামাটিও নিল। ঐ জামাটায় সেলাই ছিল না, উপর থেকে সবটাই বোনা।
\v 24 তারপর তারা একে অন্যকে বলল, "ইহা আমরা পৃথকভাবে ছিঁড়ব না, পরিবর্তে এস আমরা দূরে ছুঁড়ে দেখি, এটা কার হবে।" এই ঘটেছিল যেন শাস্ত্রের বাক্য পূর্ণ হয় বলে,“তারা নিজেদের মধ্যে আমার কাপড় ভাগ করেছিল এবং আমার কাপড়ের জন্য তারা কিছুটা ছুঁড়ল।”
\v 31 এটাই ছিল আয়োজনের দিন এবং আদেশ ছিল যে বিশ্রামবারে সেই দেহগুলো ক্রুশের ওপরে থাকবে না (কারণ বিশ্রামবার ছিল একটা বিশেষ দিন), যিহূদীরা পীলাতকে জিজ্ঞাসা করলেন যে লোকদের পা ভেঙে ফেলে এবং তাদের দেহগুলো নিচে নামানো হবে।
\v 32 তারপর সৈন্যরা এসেছিল এবং প্রথম লোকটির পা ভাঙলো এবং দ্বিতীয় লোকটিরও যাদের যীশুর সঙ্গে ক্রুশে বিদ্ধ করা হয়েছিল।
\v 33 তখন যারা যীশুর কাছে এসেছিল, তারা দেখল যে তিনি মারা গেছেন, সুতরাং তারা তাঁর পা ভাঙলো না।
\v 38 এর পরে অরিমাথিয়ার যোষেফ, যিনি যীশুর একজন শিষ্য ছিলেন, কিন্তু যিহূদীদের ভয়ে লুকিয়ে ছিলেন, তিনি পীলাতকে জিজ্ঞাসা করলেন যে তিনি যীশুর দেহ নিয়ে যেতে পারেন। পীলাত তাঁকে অনুমতি দিলেন। সুতরাং যোসেফ এলেন এবং তাঁর দেহ নিয়ে গেলেন।
\v 39 যিনি প্রথমে রাতেরবেলা যীশুর কাছে এসেছিলেন, সেই নীকদীমও এলেন। তিনি গন্ধরস এবং অগুরু মেশানো প্রায় একশো লিটার নিয়ে এলেন।
\v 1 সপ্তাহের প্রথম দিন সকালে, তখনও পর্যন্ত অন্ধকার ছিল, মগ্দলীনী মরিয়ম কবরের কাছে এসেছিলেন; তিনি দেখেছিলেন কবর থেকে পাথরখান গড়িয়ে সরানো হয়েছে ।
\v 2 সুতরাং তিনি দৌড়লেন এবং শিমোন পিতরের কাছে গেলেন এবং অন্য শিষ্য যীশু যাঁকে ভাল বাসতেন এবং তাঁদের বললেন, "তারা প্রভুকে কবর থেকে বের করে নিয়ে গেছে এবং আমরা জানি না তারা প্রভুকে কোথায় রেখেছে।"
\v 14 যখন তিনি ইহা বললেন, তিনি চারিদিকে ঘুরলেন এবং দেখলেন যীশু সেখানে দাঁড়িয়ে আছেন, কিন্তু তিনি চিনতে পারেন নি যে তিনিই যীশু।
\v 15 যীশু তাঁকে বললেন, "নারী, কাঁদছ কেন? তুমি কার খোঁজ করছ?" তিনি ভেবেছিলেন যে তিনি ছিলেন বাগানের মালি, সুতরাং তিনি তাকে বললেন, "মহাশয়, যদি আপনি তাঁকে নিয়ে গিয়ে থাকেন, আমাকে বলুন আপনি কোথায় তাঁকে রেখেছেন এবং আমি তাঁকে নিয়ে আসব।"
\v 16 যীশু তাঁকে বললেন, "মরিয়ম।" তিনি নিজে ঘুরলেন এবং ইব্রীয় ভাষায় তাঁকে বললেন, "রব্বূণি," যাকে বলে "গুরু।"
\v 17 যীশু তাঁকে বললেন, "আমাকে ছুঁয়না, কারণ এখনও আমি উর্দ্ধে পিতার কাছে যাই নি; কিন্তু আমার ভাইদের কাছে যাও এবং তাদের বল যে আমি উর্দ্ধে আমার পিতার কাছে যাব এবং তোমাদের পিতা, এবং আমার ঈশ্বর ও তোমাদের ঈশ্বর।"
\v 19 ইহা সন্ধ্যেবেলা ছিল, ওই দিন, সপ্তাহের প্রথম দিন, এবং যখন দরজাগুলো বন্ধ ছিল যেখানে শিষ্যরা যিহুদিদের ভয় ছিল, যীশু এলেন এবং তাদের মাঝখানে দাঁড়ালেন এবং তাঁদের বললেন, "তোমাদের শান্তি হোক।"
\v 20 যখন তিনি এই বলেছিলেন, তিনি তাঁদের তাঁর দুই হাত এবং তাঁর পাঁজর দেখালেন। তারপর যখন শিষ্যরা প্রভুকে দেখতে পেয়েছিল, তারা আনন্দিত হয়েছিল।
\v 24 যীশু যখন এসেছিলেন, তখন থোমা, সেই বারো জনের এক জন, যাঁকে দিদুমঃ বলে, তিনি তাঁদের সঙ্গে ছিলেন না।
\v 25 পরে অন্য শিষ্যরা তাঁকে বললেন, "আমরা প্রভুকে দেখেছি।" তিনি তাঁদের বললেন, "আমি যদি তাঁর দুই হাতে পেরেকের চিহ্ন না দেখি এবং সেই পেরেকের জায়গায় আমার আঙুল না দিই এবং তাঁর পাঁজরের মধ্যে আমার হাত না দিই, তবে আমি বিশ্বাস করব না।
\v 26 আট দিন পরে তাঁর শিষ্যরা আবার ভেতরে ছিলেন এবং থোমা তাঁদের সঙ্গে ছিলেন। যখন দরজাগুলো বন্ধ ছিল তখন যীশু এসেছিলেন, তাদের মাঝখানে দাঁড়ালেন এবং বললেন, "তোমাদের শান্তি হোক।"
\v 27 তারপরে তিনি থোমাকে বললেন, তোমার আঙুল বাড়িয়ে দাও এবং আমার হাত দুখানা দেখ; আর তোমার হাত বাড়িয়ে দাও আমার পাঁজরের মধ্যে দাও; অবিশ্বাসী হও না, বিশ্বাসী হও।
\v 1 এরপরে যীশু তিবিরিয়া সমুদ্রের তীরে শিষ্যদের কাছে আবার নিজেকে দেখালেন; তিনি এইভাবে নিজেকে দেখালেন।
\v 2 শিমোন পিতর থোমার সঙ্গে ছিলেন যাঁকে দিদুমঃ বলে, গালীলের কান্নাবাসী নথনেল, সিবদিয়ের ছেলেরা এবং যীশুর দুই জন অন্য শিষ্যও ছিলেন।
\v 3 শিমোন পিতর তাদের বলল, "আমি মাছ ধরতে যাচ্ছি।" তারা তাঁকে বলল, "আমরাও তোমার সঙ্গে আসছি।" তারা চলে গেল এবং একটা নৌকায় উঠল, কিন্তু সারা রাতে তারা কিছু ধরতে পারল না।
\v 4 সকাল হয়ে আসার সময়, যীশু তীরে দাঁড়িয়েছিলেন, কিন্তু শিষ্যরা তাঁকে চিনতে পারল না যে তিনিই যীশু।
\v 5 তারপর যীশু তাদের বললেন, "যুবকরা, তোমাদের কাছে কিছু খাবার আছে? তারা তাঁকে উত্তর করল, "না।"
\v 6 তিনি তাদের বললেন, "নৌকার ডান পাশে তোমাদের জাল ফেল এবং তোমরা কিছু দেখতে পাবে।" সুতরাং তারা তাদের জাল ফেলল, এত মাছ পড়ল যে তারা আর তা টেনে তুলতে পারল না।
\v 7 তারপর, যীশু যাকে প্রেম করতেন সেই শিষ্য পিতরকে বলল, "ইনিই প্রভু।" যখন শিমোন পিতর শুনেছিল যে ইনিই প্রভু, তখন তিনি তার কাপড় পরলেন,( কারণ তাঁর গায়ে খুব সামান্য কাপড় ছিল ) এবং সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে পড়লেন।
\v 8 অন্য শিষ্যরা নৌকাতে আসল (তারা তীর থেকে বেশী দুরে ছিল না,মাত্র দুশো কিউবিট ), এবং তারা মাছ ভর্তি জাল টেনে এনে ছিল।
\v 9 যখন তারা তীরে উঠেছিল তারা কাঠ কয়লার আগুন দেখেছিল যার ওপরে মাছ আর রুটী ছিল।
\v 15 তাঁরা সকালের খাবার খাওয়ার পর, যীশু শিমোন পিতরকে বললেন, যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমাকে বেশী ভালোবাসো? পিতর তাঁকে বললেন, হ্যাঁ , প্রভু; আপনি জানেন যে আমি আপনাকে ভাল বাসি। যীশু তাঁকে বললেন, আমার মেষশাবককে খাওয়াও ।
\v 16 আবার তিনি দ্বিতীয় বার তাঁকে বললেন, যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমাকে ভালোবাসো? পিতর তাঁকে বললেন, "হ্যাঁ , প্রভু; আপনি জানেন যে আমি আপনাকে ভাল বাসি।" যীশু তাঁকে বললেন, আমার মেষদের পালন কর।
\s5
\v 17 তিনি তৃতীয় বার তাঁকে বললেন, যোহনের ছেলে শিমোন, তুমি কি আমাকে ভাল বাস? পিতর দুঃখিত হলেন কারণ , যীশু তাঁকে বলেছিলেন তৃতীয় বার, "তুমি কি আমাকে ভাল বাস?" তিনি তাঁকে বললেন, "প্রভু, আপনি সব কিছু জানেন; আপনি জানেন যে, আমি আপনাকে ভাল বাসি।" যীশু তাঁকে বললেন, "আমার মেষদের খাওয়াও।
\v 18 সত্য, সত্য, আমি তোমাকে বলছি, যখন তুমি যুবক ছিলে, তখন নিজের জন্য কাপড় ব্যবহার করতে এবং যেখানে ইচ্ছা বেড়াতে; কিন্তু যখন বুড়ো হবে, তখন তোমার হাত বাড়াবে এবং অন্য জন তোমায় কাপড় দেবে এবং যেখানে যেতে তোমার ইচ্ছা নেই সেখানে তোমাকে নিয়ে যাবে।
\v 20 পিতর মুখ ফেরালেন এবং দেখলেন, যে শিষ্যকে যীশু ভালবাসতেন তিনি তাদের অনুসরণ করছেন- যিনি রাতের খাবারের সময় তাঁর পাঁজরের দিকে হেলে বসেছিলেন এবং বললেন "প্রভু, কে আপনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করবে?
\v 21 পিতর তাঁকে দেখে তারপর যীশুকে বললেন, "প্রভু, এর কি হবে?"
\v 22 যীশু তাঁকে বললেন, "আমি যদি ইচ্ছা করি এ আমার আসা পর্য্যন্ত অপেক্ষা করে, তাতে তোমার কি? তুমি আমাকে অনুসরণ কর।"
\v 23 সুতরাং ভাইদের মধ্যে এই কথা রটে গেল, সেই শিষ্য মরবে না। যীশু পিতরকে বলেন নি যে, অন্য শিষ্য মরবে না, কিন্তু, "আমি যদি ইচ্ছা করি যে সে আমার আসার সময় পর্য্যন্ত অপেক্ষা করে, তাতে তোমার কি?"