\v 1 প্রিয় থিয়ফিল, প্রথম বইটা আমি সেসমস্ত বিষয় নিয়ে লিখেছি, যা যীশু পালন করতে এবং শিক্ষা দিতে শুরু করেছিলেন, সেদিন ,
\v 2 যেদিন তিনি নিজের মনোনীত প্রেরিতদের পবিত্র আত্মার মাধ্যমে আদেশ দিয়ে স্বর্গে গেলেন।
\v 3 নিজের দুঃখসহ্য করে তিনি অনেক প্রমাণ দিয়ে তাঁদের কাছে নিজেকে জীবিত দেখালেন, ফলে চল্লিশ দিন ধরে তাঁদের কাছে দেখা দিলেন, এবং ঈশ্বরের রাজ্যের ব্যাপারে বিভিন্ন কথা বললেন।
\s5
\v 4 আর তিনি তাঁদের সঙ্গে মিলে এই আদেশ দিলেন, তোমরা যিরুশালেম থেকে বাইরে যেওনা, কিন্তু পিতার প্রতিজ্ঞা করা যে দানের কথা আমার কাছে শুনেছ, তাঁর অপেক্ষা কর।
\v 5 কেননা যোহন জলে বাপ্তিস্ম দিতেন, কিন্তু তোমরা পবিত্র আত্মায় বাপ্তিস্ম হবে, যা বেশিদিন পরে নয়।
\s5
\v 6 সুতরাং তাঁরা সকলে একসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, প্রভু আপনি কি এখন ইস্রায়েলের হাত থেকে রাজ্য ফিরিয়ে আনবেন?
\v 7 তিনি তাঁদের বললেন, "যেসব সময় বা কাল পিতা নিজের অধিকারে রেখেছেন তা তোমাদের জানার বিষয় নয়।
\v 8 কিন্তু পবিত্র আত্মা তোমাদের উপরে এলে তোমরা শক্তিশালী হবে; এবং তোমরা যিরূশালেম, সমস্ত যিহুদিয়া, শমরিয়া দেশে এবং পৃথিবীর শেষ পর্য্ন্ত আমার সাক্ষী হবে।"
\s5
\v 9 এসব কথা বলার পরে তিনি তাঁদের চোখের সামনে থেকে স্বর্গে চলে গেলেন। একটি মেঘ তাঁদের দৃষ্টিপথ থেকে তাঁকে গ্রহণ করল
\v 10 তিনি যাচ্ছেন আর তাঁরা আকাশের দিকে এক নজরে চেয়ে আছেন, এমন সময়, সাদা পোশাক পরা দুজন পুরুষ তাদের কাছে দাঁড়ালেন;
\v 11 আর তাঁরা বললেন, "প্রিয় গালিলের লোকেরা, তোমরা আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছ কেন? এই যে যীশু তোমাদের কাছ থেকে স্বর্গে গেলেন, তাঁকে যেমন স্বর্গে যেতে দেখলে, ঠিক তেমনি তাঁকে ফিরে আসতে দেখবে।"
\s5
\v 12 তখন তাঁরা জৈতুন পর্বত থেকে যিরূশালেমে ফিরে গেলেন। সেই পর্বত যিরুশালেমের কাছে, বিশ্রামবারের পথ (খুবই কাছে)
\v 13 শহরে গিয়ে যেখানে তাঁরা ছিলেন, সেই উপরের ঘরে গেলেন - পিতর, যোহন, যাকোব ও আন্দ্রিয়, ফিলিপ ও থোমা, বর্থলময় ও মথি, আলফেয়ের ছেলে যাকোব ও ঈশ্বরভক্ত শিমোন এবং যাকোবের (ভাই ) যিহুদা,
\v 14 তাঁরা সকলেই মহিলাদের এবং যীশুর মা মরিয়ম ও যীশুর ভাইদের সঙ্গে এক হৃদয়ে প্রার্থনা করতে থাকলেন।
\v 15 সেসময় একদিন প্রায় একশো কুড়ি জন এক জায়গায় একত্রে ছিলেন, সেখানে পিতর ভাইদের মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেন-
\v 16 "প্রিয় ভাইয়েরা, যারা যীশুকে ধরেছিল, তাদের পথ দেখিয়েছিলেন যে যিহূদা, তার ব্যাপারে পবিত্র আত্মা দায়ূদের মুখ থেকে আগেই যা বলেছিলেন, সেই শাস্ত্রীয় বাক্য সফল হওয়া দরকার ছিল।
\s5
\v 17 কেননা সেই ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে ছিল এবং এই পরিচর্যা কাজের অধিকারী ছিল।
\v 18 সে অধর্মের টাকা দিয়ে একটি জমি লাভ করল এবং বাঁকানো অবস্থায় মাটিতে পরে তার পেট ফেটে যাওয়াতে নাড়ি ভুঁড়ী সব বের হয়ে পড়ল;
\v 19 আর যিরুশালেমের সকল লোকে সেটা জানতে পেরেছিল, এজন্য তাদের ভাষায় ঐ জমি হকলদামা অর্থাৎ "রক্তাক্ত ভূমি" নামে পরিচিত"।
\s5
\v 20 কারণ গীতসংহিতায় লেখা আছে, "তার বসবাস খালি হোক, তাতে বাস করে এমন কেউ না থাক এবং তার কাজের ভার অন্য কাউকে দেওয়া হোক ।"
\s5
\v 21 সুতরাং যোহনের বাপ্তিস্ম থেকে শুরু করে যেদিন প্রভু যীশুকে আমাদের কাছ থেকে স্বর্গে যান, সেদিন পর্য্ন্ত, যতদিন তিনি আমাদের সঙ্গে চলাফেরা করতেন, ততদিন সবসময় যাঁরা আমাদের সঙ্গে ছিল,
\v 22 তাঁদের এক জন আমাদের সঙ্গে তাঁর পুনরুত্থানের সাক্ষী হন, এটা খুবই দরকার।"
\v 23 তখন তাঁরা এই দু'জনকে দাঁড় করালেন, যোষেফ-যাঁকে বার্শবা বলে, যাঁর উপাধি যুষ্ঠ,-
\s5
\v 24 এবং মত্তথিয়; আর তাঁরা প্রার্থনা করলেন, হে প্রভু, তুমি সবার হৃদয় জান, যিহূদা নিজের জায়গাতে যাওয়ার জন্য এই যে সেবার ও প্রেরিতের পদ ছেড়ে গিয়েছে,
\v 25 তার পদ নেওয়ার জন্য তুমি এই দু'জনের মধ্যে যাকে মনোনয়ন করেছ তাকে দেখিয়ে দাও।
\v 26 পরে তারা দুজনের জন্য গুলিবাঁট (লটারির আদিকাল) করলেন, আর মত্তথিয়ের নামে গুলি উঠল, তাতে তিনি এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে যোগ দিলেন।
\s5
\c 2
\s পঞ্চশত্তমীর দিনে পবিত্র আত্মার আগমন
\p
\v 1 এরপরে যখন পঞ্চশত্তমীর দিন (পঞ্চাশতম দিন- যিহূদীদের পর্ব) এলো, তাঁরা সবাই একমনে, এক জায়গায় মিলিত হলেন।
\v 2 তখন হঠাৎ আকাশ থেকে প্রচন্ড গতির বায়ুর শব্দের মত শব্দ এলো, যে ঘরে তাঁরা বসে ছিলেন, সেই ঘরের সব জায়গায় তা ছড়িয়ে পড়ল।
\v 3 এবং জিভের মত দেখতে এমন অনেক আগুনের শিখা তাঁরা দেখতে পেলেন এবং সেগুলো তাঁদের প্রত্যেকের উপর অবস্থিতি করল।
\v 4 তার ফলে তাঁরা সবাই পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হলেন, আত্মা যাকে যেমন কথা বলার শক্তি দিলেন, সেভাবে তাঁরা অন্য অন্য ভাষায় কথা বলতে আরম্ভ করলেন।
\s5
\v 5 সেসময় যিহূদিরা, এবং পৃথিবীর সমস্ত জাতি থেকে আসা ভক্তরা, যিরূশালেমে বসবাস করছিলেন।
\v 6 সেই শব্দ শুনে সেখানে অনেকে জড়ো হল, এবং তারা সবাই খুবই অবাক হয়ে গেল, কারণ সবাই তাদের নিজের নিজের ভাষায় তাঁদের কথা বলতে শুনলেন।
\v 7 তখন সবাই খুবই আশ্চর্য ও অবাক হয়ে বলতে লাগলো, এই যে লোকেরা কথা বলছেন এরা সবাই কি গালীলীয় না?
\s5
\v 8 তবে আমরা কেমন করে সবাই আমাদের মাতৃভাষায় ওদের কথা শুনতে পাচ্ছি ?
\v 9 পার্থীয়, মাদীয় ও এলমীয় এবং মেসোপটেমিয়া যিহূদিয়া ও কাপ্পাদকিয়া, পন্ত ও এশিয়া,
\v 10 ফুরুগিয়া ও পাম্ফুলিয়া, মিশর এবং লুবিয়া দেশের কুরিনীয়ের কাছে বসবাসকারী এবং রোম দেশের বাসিন্দারা l
\v 11 যিহূদি ও যিহূদি ধর্মে দীক্ষিত অনেকে, এবং ক্রীতীয় ও আরবের বাসিন্দা যে আমরা, সবাই নিজের নিজের মাতৃভাষায় ঈশ্বরের আশ্চর্য ও উত্তম কাজের কথা ওদের মুখ থেকে শুনছি।
\s5
\v 12 এসব দেখে তারা সবাই আশ্চর্য ও নির্বাক্ হয়ে এক জন অন্য জনকে বলতে লাগলো, এসবের মানে কি ?
\v 13 আবার অনেকে ব্যঙ্গ করে বলতে লাগলো এরা আঙ্গুরের রস পান করে মাতাল হয়েছে।
\v 14 তখন পিতর এগারো জন প্রেরিতের সঙ্গে দাঁড়িয়ে জোর গলায় তাঁদের উদ্দেশে বললেন, হে যিহূদি ও যিরূশালেমের বাসিন্দারা, আপনাদের এর অর্থ জানা দরকার, তাই আপনারা আমার কথা মন দিয়ে শুনুন l
\v 15 কারণ আপনারা যা মনে করছেন তা নয়, এই লোকেরা কেউই মাতাল নয়, কারণ এখন মাত্র সকাল ন'টা l
\s5
\v 16 কিন্তু এটা সেই ঘটনা, যার বিষয়ে যোয়েল ভাববাদী বলেছেন,
\v 17 "শেষ সময়ে এমন হবে, ঈশ্বর বলেন, আমি সমস্ত মানুষের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব, তারফলে তোমাদের ছেলে ও মেয়েরা ভাববাণী বলবে, তোমাদের যুবকেরা দর্শন পাবে ও তোমাদের বৃদ্ধরাও স্বপ্ন দেখবে l
\s5
\v 18 আবার সেই সময় আমি আমার দাস ও দাসীদের উপরে আমার আত্মা ঢেলে দেব, আর তারা ভাববাণী বলবে l
\v 19 আমি আকাশে বিভিন্ন অদ্ভুত লক্ষণ এবং নীচে পৃথিবীতে নানারকম চিহ্ন, রক্ত, আগুন ও ধোঁয়ার বাস্পকুণ্ডলী দেখাব l
\s5
\v 20 প্রভুর সেই মহান ও বিশেষ দিনের আগমনের আগে সূর্য কালো হয়ে যাবে এবং চাঁদ রক্তের মত লাল হয়ে যাবে,
\v 21 আর এমন হবে, যেকেউ প্রভুর নামে ডাকবে, সে মুক্তি পাবে।"
\s5
\v 22 হে ইস্রায়েলের লোকেরা এই কথা শুনুন। নাসরতের যীশু অলৌকিক ও আশ্চর্য লক্ষণ ও চিহ্নের মাধ্যমে আপনাদের কাছে ঈশ্বর থেকে প্রমাণিত মানুষ, তাঁর মাধ্যমে ঈশ্বর আপনাদের মধ্য এই সমস্ত কাজ করেছেন, যেমন আপনারা সবাই জানেন;
\v 23 তাঁকে ঈশ্বরের পূর্ব পরিকল্পনা ও জ্ঞান অনুসারে সমর্পণ করা হয়েছিল আর আপনারা তাঁকে মন্দ লোকেদের দিয়ে ক্রুশে হত্যা করেছিলে l
\v 24 ঈশ্বর মৃত্যুর যন্ত্রণা মুক্ত করে তাঁকে মৃত্যু থেকে জীবিত করেছেন; কারণ তাঁকে ধরে রাখা মৃত্যুর সাধ্য ছিল না l
\s5
\v 25 কারণ দায়ূদ তাঁর বিষয় বলেছেন, "আমি প্রভু কে সবসময় আমার সামনে দেখতাম; কারণ তিনি আমার ডানদিকে আছেন, যেন আমি অস্থির না হই l
\v 26 এই জন্য আমার মন আনন্দিত ও আমার জিভ উল্লাস করে; আর আমার দেহও আশায় (নির্ভয়ে) বসবাস করবে;
\s5
\v 27 কারণ তুমি আমার প্রাণ মৃত্যুলোকে ত্যাগ করবে না, আর নিজের ভক্তকে ক্ষয় দেখতে দেবে না l
\v 28 তুমি আমাকে জীবনের পথ দেখিয়েছ, তোমার শ্রীমুখ দিয়ে আমাকে আনন্দে পূর্ণ করবে l"
\s5
\v 29 ভাইয়েরা সেই পূর্বপুরুষ দায়ূদের বিষয় আমি জোর দিয়ে বলতে পারি যে, তিনি মারা গেছেন এবং তাঁকে কবর দেওয়া হয়েছে, আর তাঁর কবর আজ পর্য্যন্ত আমাদের মধ্যে আছে l
\v 30 সুতরাং, তিনি ভাববাদী ছিলেন এবং জানতেন, ঈশ্বর শপথ করে এই প্রতিশ্রুতি করেছিলেন যে, তাঁর বংশের একজনকে তাঁর সিংহাসনে বসাবেন;
\v 31 এবং তিনি খ্রীষ্টের মৃত্যু থেকে জীবিত হবার বিষয় এই কথা বলেছিলেন যে, তাঁকে মৃত্যুলোকে ত্যাগ করা হয়নি, তাঁর দেহ ক্ষয় হবে না l
\s5
\v 32 এই যীশুকেই ঈশ্বর মৃত্যু থেকে জীবিত করেছেন, আমরা সবাই এই ঘটনার সাক্ষী l
\v 33 অর্থাৎ ঈশ্বর তাঁকে সসন্মানে ঈশ্বরের ডানদিকে বসিয়েছেন, পিতা যীশুকে প্রতিজ্ঞাত পবিত্র আত্মা দিয়েছেন, এই যেমন আপনারা দেখেছেন ও শুনেছেন, সেই আত্মাকে ঢেলে দিয়েছেন l
\s5
\v 34 কেননা দায়ূদ স্বর্গে যাননি, কিন্তু নিজে এই কথা বলেছেন, "প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, তুমি আমার ডানদিকে বসো,
\v 35 যতক্ষণ না আমি তোমার শক্রদের তোমার পা রাখার জায়গায় পরিণত করি l"
\v 36 "সুতরাং ইস্রায়েলের সমস্ত বংশ নিশ্চিত ভাবে জানুন যে, যাঁকে আপনারা ক্রুশে দিয়েছিলেন, সেই যীশুকেই ঈশ্বর প্রভু ও খ্রীষ্ট উভয়ই করেছেন l"
\v 37 এই কথা শুনে তাদের হৃদয়ে খুব আঘাত লাগল এবং তারা পিতর ও অন্য প্রেরিতদের বললেন, "ভাইয়েরা আমরা কি করব ?"
\v 38 তখন পিতর তাদের বললেন, "আপনারা প্রত্যেকে আপনাদের পাপ ক্ষমার জন্য মন ফিরান এবং যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তিস্ম নিন, তাহলে পবিত্র আত্মার দান (উপহার) পাবেন l
\v 39 কারণ এই প্রতিজ্ঞা আপনাদের ও আপনাদের সন্তানদের জন্য এবং যারা দূরে ও যত লোককে প্রভু ডেকে আনবেন l"
\s5
\v 40 আরোও অনেক বিষয় তিনি সাক্ষ্য দিলেন ও তাদের উপদেশ দিয়ে বললেন, এই কালের মন্দ লোকেদের হাত থেকে তারা যেন নিজেদের রক্ষা করে l
\v 41 তখন যারা পিতরের কথা শুনল, তারা বাপ্তিস্ম নিল, তারফলে সেই দিন প্রায় তিন হাজার লোক তাঁদের সঙ্গে যুক্ত হলো l
\v 42 আর তারা প্রেরিতদের শিক্ষায় ও সহভাগিতায় (নিজেদের মধ্যে সব কিছু ভাগ করে নিতেন), রুটি ভাঙায় ও প্রার্থনায় সময় কাটাতেন l
\s5
\v 43 তখন সবার মধ্যে ভয় উপস্থিত হলো এবং প্রেরিতরা অনেক আশ্চর্য কাজ ও চিহ্ন কার্য সাধন করতেন l
\v 44 আর যারা বিশ্বাস করলো, তারা সবকিছু একসঙ্গে রাখতেন;
\v 45 আর তারা তাদের সমস্ত সম্পত্তি ও জায়গাজমি বিক্রি করে, যার যেমন প্রয়োজন হত তাকে তেমন অর্থ দেওয়া হত l
\s5
\v 46 আর তারা প্রতিদিন একমনে মন্দিরে যেতেন এবং বাড়িতে আনন্দে ভাঙা রুটি খেতেন ও আনন্দের সঙ্গে এবং সরল মনে খাবার খেতেন,
\v 47 তারা ঈশ্বরের প্রশংসা করতেন এবং একে সকল মানুষের কাছে তাঁরা ভালবাসার পত্র পরিচিত হলেন l আর যারা পরিত্রান পাচ্ছিল, প্রভু তাদের প্রতিদিন বিশ্বাসীদের সঙ্গে যুক্ত করতেন l
\s5
\c 3
\s জন্ম থেকে খোঁড়া ব্যক্তিকে সুস্থ করলেন। পিতর ও যোহনের সাক্ষ ও কারাবাস।
\p
\v 1 এক দিন বিকাল তিনটেয় প্রার্থনার সময় পিতর ও যোহন উপাসনা ঘরে যাচ্ছিলেন।
\p
\v 2 সেসময় মানুষেরা এক ব্যক্তিকে বহন করে নিয়ে আসছিল। সেই ব্যক্তি মায়ের গর্ভ হতে খোঁড়া। তাকে প্রতিদিন মন্দিরের সুন্দর নামে এক দরজার কাছে রেখে দিত, যাতে, মন্দিরে যারা প্রবেশ করে, তাদের কাছে ভিক্ষা চাইতে পারে।
\p
\v 3 সে যখন পিতর ও যোহনকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেখলো, তখন তাদের কাছে ভিক্ষা চাইল।
\v 9 সমস্ত লোক যখন তাকে হাঁটতে ও ঈশ্বরের প্রশংসা করতে দেখলো,
\p
\v 10 তখন তারা তাকে দেখে চিনতে পারলো যে এ সেই ব্যক্তি যে মন্দিরের সুন্দর নামক দরজায় বসে ভিক্ষা করতো, আর তার প্রতি এই ঘটনা ঘটায় তারা খুবই চমৎকৃত এবং অবাক হলো।
\v 11 আর যখন লোকেরা ভিখারীকে পিতর ও যোহনের সঙ্গে দেখল তখন সকলে চমৎকৃত হলো এবং শলোমনের নামে চিহ্নিত বারান্দায় তাদের কাছে দৌড়ে আসলো।
\p
\v 12 এই সকল দেখে পিতর সকলকে বললেন হে ইস্রায়েলীয় লোকেরা এই মানুষটির বিষয়ে কেন অবাক হচ্ছে। আর আমরাই আমাদের শক্তি বা ভক্তি গুনে একে চলবার ক্ষমতা দিয়েছি, এসব মনে করে কেনই বা আমাদের প্রতি একনজরে তাকিয়ে আছ ?
\v 13 অব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের ঈশ্বর, আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, আপনার দাস সেই যীশুকে গৌরবান্বিত করেছেন, যাঁকে তোমরা শত্রুর হাতে সমর্পণ করেছিলে, এবং পীলাত যখন তাঁকে ছেড়ে দিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তখন তাঁর সামনে তোমরা অস্বীকার করেছিলে l
\p
\v 14 তোমরা সেই পবিত্র ও ধর্মময় ব্যক্তিকে অস্বীকার করেছিলে, এবং চেয়েছিলে যেন তোমাদের জন্য এক জন খুনিকে ছেড়ে দেওয়া হয়,
\v 21 আর তিনি সেই, যাঁকে স্বর্গ নিশ্চয়ই গ্রহণ করে রাখবে, যেপর্যন্ত না সকল বিষয়ের পুনরায় স্থাপনের সময় উপস্থিত হয়, যে সময়ের সম্বন্ধে ঈশ্বর তাঁর পবিত্র ভাববাদিগনের মুখ দিয়ে বলেছেন, যাঁরা পূর্বকাল হতে হয়ে আসছেন।
\p
\v 22 মোশি তো বলেছিলেন, " ঈশ্বর তোমাদের জন্য তোমাদের ভাইদের মধ্য থেকে আমার মতো এক ভাববাদীকে উৎপন্ন করবেন, তিনি তোমাদের যা যা বলবেন, সেসব বিষয়ে তোমরা সবই শুনবে;
\p
\v 23 আর এখন হবে যে, যাঁরা এই ভাববাদীর কথা না শুনবে, সে মানুষদের মধ্য থেকে ধ্বংস হবে"l
\v 24 আর শমূয়েল ও তাঁর পরে যত জন ভাববাদী কথা বলেছেন, তাঁরাও সবাই এই সময়ের কথা বলেছেন l
\p
\v 25 তোমরা সেই ভাববাদিগণ এবং সেই নিয়মেরও সন্তান, যা ঈশ্বর তোমাদের পিতৃপুরুষদের সহিত স্থাপন করেছিলেন, তিনি যেমন অব্রাহামকে বলেছিলেন, "তোমার বংশে পৃথিবীর সকল পরিবার আশীর্বাদ পাবে"l
\p
\v 26 ঈশ্বর নিজের দাসকে উৎপন্ন করলেন এবং প্রথমেই তাঁকে তোমাদের কাছে পাঠালেন, যেন তিনি তোমাদের প্রত্যেককে সব অধর্ম হতে ফিরিয়ে তার দ্বারা তোমাদের আশীর্ব্বাদ করেন l
\s5
\c 4
\p
\v 1 য্খন পিতর এবং যোহন লোকেদের কাছে কথা বলছিলেন ঠিক সেসময়ে যাজকেরা ও ধর্মধামের সেনাপতি এবং সুদ্দুকীরা তাড়াতাড়ি তাদের কাছে এসে হাজির হলেন।
\v 2 তারা খুব বিরক্ত হয়েছিলেন কারণ তারা লোকেদের উপদেশ দিতেন এবং যিশু যে মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থান হয়েছেন তা প্রচার করতেন ।
\v 3 আর তারা তাদেরকে ধরে পরের দিন পর্যন্ত্ আটকে রেখে ছিলেন,
\v 4 কেননা তখন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল ,তবুও যারা কথা শুনছিল তাদের মধ্যে অনেকে বিশ্বাস করেছিল, তাদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা কমবেশি পাঁচ হাজার মতো ছিল ।
\s5
\v 5 পরের দিন লোকেদের অধ্যক্ষেরা ,প্রাচীন বর্গ ও শিক্ষাগুরুরা যিরুশালেমে সমেবেত হয়েছিলেন,
\v 6 এবং হানন মহাযাজক, কায়াফা ,যোহন ,আলেকসান্ডার ,আর মহাযাজকের নিজের লোকেরা উপস্থিত ছিলেন।
\v 7 তারা তাদেরকে মধ্যিখানে দাঁড় করিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন কি ক্ষমতায় বা কার নামে তোমরা এই কাজ করেছ ?
\s5
\v 8 তখন পিতর পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে তাদেরকে বলেছিলেন হে লোকেদের অধ্যক্ষগণ ও প্রাচীনবর্গ,
\v 9 একটি দুর্বল মানুষের উপকার করার জন্য যদি আজ আমাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হয় কি ভাবে এই লোকটি সুস্থহয়েছে,
\v 10 তবে আপনারা সকলে ও সমস্ত ইস্রায়েলবাসী এই জানুক যে ,নাসরতীয় যিশুখ্রীষ্টের নামে যাকে আপনারা ক্রুশে দিয়েছিলেন ,যাকে ঈশ্বর মৃতদের মধ্য থেকে উঠিয়েছিলেন, তাঁরই গুনে এইব্যক্তি আপনাদের কাছে সুস্থ শরীরে দাঁড়িয়ে আছে।
\s5
\v 11 তিনি সেই পাথর যেটি গাথকেরা যে আপনারা আপনাদের দ্বারাই অবহেলিত হয়েছিল, যা কোন প্রধান প্রস্তর হয়ে উঠেছে।
\v 12 আর অন্য কারোও কাছে পরিত্রান নেই, কেননা আকাশের নীচে ও মনুষ্যদের মধ্যে দত্ত এমন আর কোনোও নাম নেই যে নামে আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি।
\s5
\v 13 সেসময় পিতর ও যোহনের সাহস দেখে এবং এরা যে অশিক্ষিত সাধারণ লোক ইহা দেখে তারা অবাক হয়ে ছিলেন এবং চিনতে পারলেন যে এঁরা যীশুর সঙ্গে ছিলেন।
\v 14 আর ঐ সুস্থ ব্যক্তিটি তাঁদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে দেখে তারা তাঁদের বিরুদ্ধে কিছু বলতে পারলো না।
\s5
\v 15 কিন্তু তারা প্রেরিতদের সভা কক্ষ থেকে বাইরে যেতে বললো, এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে থাকলো
\v 16 যে এই লোকেদের নিয়ে কী করা যায় ? কারণ তারা যে অলৌকিক কাজ করেছিল তা যিরূশালেমের লোকেরা জেনে গিয়েছিল; আমরা তা অস্বীকার করতে পারি না।
\v 17 কিন্তু এই কথা যেন লোকেদের মধ্যে না ছড়ায়, তাই তারা এদের ভয় দেখিয়ে বলল তারা যেন এবিষয়ে কাউকে কিছু না বলে।
\v 18 তাই তারা পিতর এবং যোহনকে ভিতরে ডাকলো এবং তাঁদের আদেশ করলো কাউকে যেন কিছু না বলে এবং যীশুর বিষয়ে শিক্ষা না দেয়।
\s5
\v 19 পিতর ও যোহন উত্তর দিয়ে তাদের বললেন," ঈশ্বরের কথা ছেড়ে আপনাদের কথা শুনা ঈশ্বরের দৃষ্টিতে উচিত কিনা আপনারা বিচার করুন।
\v 20 কিন্তু আমরা যা দেখেছি ও শুনেছি তা না বলে থাকতে পারিনা"
\s5
\v 21 পরে তারা পিতর ও যোহনকে আরোও ভয় দেখিয়ে ছেড়ে দিলেন। কারণ লোকের ভয়ে তাঁদের শাস্তি দেবার পেল না কারণ যা করা হয়েছিল তার জন্য সমস্ত লোক ঈশ্বরের গৌরব করছিল
\v 22 যেব্যক্তি এই অলৌকিক কাজের দ্বারা সুস্থ হয়েছিল তিনি কমবেশ চল্লিশ বছরের উপরে ছিলেন।
\s5
\v 23 তাদের ছেড়ে দেওয়ার পর তারা নিজেদের সঙ্গীদের কাছে গেলেন এবং মহাযাজক ও প্রাচীনরা তাদের যেকথা বলেছিল তা তাদের জানালেন।
\v 24 যখন তারা একথা শুনেছিল তারা একসঙ্গে উচ্চস্বরে ঈশ্বরের জন্য বলেছিল, প্রভু তুমি যিনি আকাশমণ্ডল, পৃথিবী , সমুদ্র এবং তার মধ্যে যাকিছু আছে সব কিছুর সৃষ্টি কর্তা ।
\v 25 তুমি তোমার দাস আমাদের পিতা দাউদের মুখ থেকে পবিত্র আত্মার দ্বারা কথা বলেছ 'যেমন জাতিগণ কেন কলহ করল? লোকেরা কেন অনর্থক বিষয়ে ধ্যান করল ?
\s5
\v 26 পৃথিবীর রাজারা একসঙ্গে দাঁড়ালো, শাসকেরা এক সঙ্গে জমায়েত হলো প্রভুর বিরুদ্ধে এবং তাঁর অভিসিক্তের বিরুদ্ধে;
\s5
\v 27 কেননা সত্যি যীশু যিনি তোমার পবিত্র দাস যাঁকে তুমি অভিষিক্ত করেছ ,তাঁর বিরুদ্ধে হেরোদ ও পন্তীয় পীলাত পর জাতিদেরও এবং ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে মিলিত হয়েছিল,
\v 28 যেন তোমার হাতের ও তোমার জ্ঞানের দ্বারা আগে যেসমস্ত বিষয় ঠিক করা হয়েছিল তা সম্পন্ন করে।
\s5
\v 29 আর এখন হে প্রভু তাদের ভয় প্রদর্শনের প্রতি দেখো; এবং তোমার এই দাসেদের দৃঢ় সাহসের সঙ্গে তোমার কথা বলার শক্তি দাও, রোগ ভালো হয় তাই আশীর্বাদ করো;
\v 30 আর তোমার পবিত্র দাস যীশুর নামে যেন চিহ্ন ও আর্শ্চয্য কাজ সম্পূর্ণ হয়।
\v 31 তারা যে স্থানে একত্র হয়ে প্রার্থনা করেছিলেন সেই মুহূর্তে সেই জায়গায় কেঁপে উঠেছিল এবং পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হলেন ও সাহসের সঙ্গে বাক্য প্রচার করতে থাকলেন।
\v 32 আর যে বহুলোক যারা বিশ্বাস করেছিল, তারা এক চিত্ত ও এক মনের ছিলো; তাদের একজনও নিজের সম্পত্তির মধ্যে কিছুই নিজের বলত না, কিন্তু তাদের সবকিছু সর্ব সাধারণের থাকত।
\v 33 আর প্রেরিতেরা খুব সাহসের সঙ্গে প্রভু যীশুর পুনরুত্থান বিষয়ে সাক্ষ্য দিতেন, এবং তাদের সকলের ওপরে মহা অনুগ্রহ ছিল।
\s5
\v 34 এমনকি তাদের মধ্যে কেউই গরীব ছিল না; কারণ যারা জমির অথবা ঘর বাড়ির অধিকারী ছিল, তারা তা বিক্রি করে সম্পত্তির টাকা এনে প্রেরিতদের পায়ের কাছে রাখত,
\v 35 পরে যার যেমন দরকার তাকে তেমন দেওয়া হত।
\s5
\v 36 আর যোষেফ যাঁকে প্রেরিতরা বার্ণবা নাম দিয়েছিলেন অনুবাদ করলে এই নামের মানে উৎসাহদাতা যিনি লেবীয় ও জাতিতে কুপ্রীয়,
\v 37 তার এক টুকরো জমি ছিল, তিনি তা বিক্রি করে তার টাকা এনে প্রেরিতদের চরণে রাখলেন।
\s5
\c 5
\p
\v 1 এখন অননিয় নামে এক জন লোক ছিল, এবং তার স্ত্রী সাফিরা একটি জমি বিক্রি করল,
\v 2 আর সে সেই বিক্রয়ের টাকার কিছু অংশ নিজের কাছে রাখল আর বাকি অংশ প্রেরিতদের কাছে দিয়ে দিল, এই বিষয়ে তার স্ত্রীও জানতো।
\s5
\v 3 তখন পিতর তাকে বলল, অননিয় তোমার মনে কেন শয়তানকে কাজ করতে দিলে যে পবিত্র আত্মার কাছে মিথ্যে বললে আর জমির টাকা থেকে কিছুটা নিজের কাছে রেখে দিলে?
\v 4 জমিটা বিক্রির আগে এটা কি তোমার ছিল না? এবং বিক্রির পরও কি তোমার অধিকারে ছিল না? তবে তুমি কেমন করে এই জিনিসগুলি তোমার হৃদয়ে ভাবলে? তুমি মানুষের কাছে মিথ্যে বললে তা নয়, কিন্তু ঈশ্বরকেই বললে।
\v 5 অননিয় এইসব শুনে পড়ে গিয়ে মারা গেল। এবং যারা শুনলো তারা খুব ভয় পেয়ে গেল।
\v 6 যুবকেরা এগিয়ে আসলো এবং তাকে কাপড়ে জড়ালো এবং বাইরে নিয়ে গিয়ে কবর দিল
\s5
\v 7 প্রায় তিন ঘন্টা পরে, তার স্ত্রী এসেছিল কিন্তু সে জানতো না কী হয়েছে
\v 8 পিতর তাকে বলল," আমাকে বলতো, তোমরা সেই জমি কি এত টাকাতে বিক্রি করেছিলে?" সে বলল, "হ্যাঁ, এত টাকাতেই।"
\s5
\v 9 তারপর পিতর তাকে বললেন,"তোমরা প্রভুর আত্মাকে পরীক্ষা করার জন্য কেমন করে একচিত্ত হলে? দেখ, যারা তোমার স্বামীর কবর দিয়েছে, তারা দরজায় এসেছে এবং তোমাকে নিয়ে যাবে"।
\v 10 তখনই সাফিরা তার পায়ে পড়ে মারা যায়। এবং যুবকেরা ভিতরে এসে দেখল, সে মৃত; তারা তাকে বাইরে নিয়ে গেল এবং তার স্বামীর পাশে কবর দিল।
\v 11 সমস্ত মন্ডলী এবং যারা একথা শুনলো সবাই খুব ভয়পেয়ে গেল
\s5
\v 12 প্রেরিতদের মাধ্যমে অনেক চিহ্নকার্য ও অলৌকিক কাজ সম্পন্ন হতে লাগল। তারা সকলে একমনে শলোমনের বারান্দাতে একত্রিত হত।
\v 13 কিন্তু অন্য লোকেরা তাঁদের সঙ্গে যোগ দিতে সাহস করত না, তা সত্ত্বেও লোকেরা তাঁদের উচ্চমূল্য দিল।
\s5
\v 14 আর দলে দলে অনেক পুরুষ ও স্ত্রীলোক প্রভু যীশুতে বিশ্বাসী হয়ে তাঁদের সাথে সংযুক্ত হতে লাগল।
\v 15 এমনকী লোকেরা অসুস্থ রোগীদের নিয়ে রাস্তার মাঝে বিছানায় এবং খাটে শুইয়ে রাখতো, যাতে পিতর যখন আসবে তখন তাঁর ছায়া তাদের ওপর পড়ে।
\v 16 যিরুশালেমের চারপাশের বিভিন্ন শহর থেকে অনেক লোক অসুস্থ রোগী ও অশুচি আত্মায় পাওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে একত্রিত হত, এবং তারা সুস্থ হয়ে যেত।
\s5
\v 17 পরে মহাযাজক ও তার সঙ্গীরা অর্থাৎ সদ্দূকী-সম্প্রদায়ের লোকেরা প্রেরিতদের প্রতি ঈর্ষায় পরিপূর্ণ হলেন।
\v 18 এবং প্রেরিতদের গ্রেপ্তার করে সাধারণ কারাগারে বন্ধ করে দিলেন।
\s5
\v 19 কিন্তু রাত্রিবেলায় প্রভুর এক দূত এসে জেলখানার দরজা খুলে দিলেন এবং প্রেরিতদের বাইরে নিয়ে আসলেন, এবং বললেন,
\v 20 "যাও, উপাসনা ঘরের মধ্যে দাঁড়িয়ে এই নতুন জীবনের সমস্ত কথা লোকদের বল।"
\v 21 এইসব শোনার পর প্রেরিতেরা ভোরবেলায় উপাসনা ঘরে গিয়ে উপদেশ দিতে লাগলেন। ইতিমধ্যে, মহাযাজক ও তার সঙ্গীরা যিহূদী সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়ে এক মহাসভা ডাকল, এবং প্রেরিতদের আনার জন্য কারাগারে লোক পাঠালো।
\s5
\v 22 কিন্তু যখন সেই লোকেরা কারাগারে পৌঁছলো, তারা দেখল প্রেরিতেরা সেখানে নেই, সুতরাং তারা ফিরে গেল এবং এই সংবাদ দিল,
\v 23 "আমরা দেখলাম জেলখানার দরজা সুদৃঢ়ভাবে বন্ধ আছে এবং দরজায় দরজায় পাহারাদাররা দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু যখন আমরা দরজা খুলে ভিতরে গেলাম কাউকে দেখতে পেলাম না।"
\s5
\v 24 তখন উপাসনা ঘরের রক্ষী বাহিনীর প্রধান এবং প্রধান যাজকেরা এই কথা শুনে আশ্চর্য হয়ে ভাবতে লাগল, এর পরিণতি কী হবে।
\v 25 তারপর কোনও সক জন এলো এবং তাদের বলল, "শুনুন, যে লোকেদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন তারা মন্দিরে দাঁড়িয়ে লোকদের উপদেশ দিচ্ছেন"
\s5
\v 26 তখন উপাসনা ঘরের রক্ষীবাহিনীর প্রধান সেনাপতি তার সেনাদের নিয়ে সেখানে গেল ও প্রেরিতদের নিয়ে এল কিন্তু তারা কোনোরকম জোর করল না, কারণ তারা লোকদের ভয় করত যে লোকেরা হয়ত তাদের পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলবে।
\v 27 পরে তারা প্রেরিতদের মহাসভায় এনে দাঁড় করালেন, মহাযাজক প্রেরিতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলেন,
\v 28 বললেন, "আমরা যীশুর বিষয়ে শিক্ষা দিতে দৃঢ়ভাবে নিষেধ করেছিলাম, তা সত্ত্বেও দেখ, তোমরা তোমাদের শিক্ষায় যিরূশালেম পূর্ণ করেছ এবং সেই ব্যক্তির রক্তের দায়ে আমাদের দোষী করতে চাইছ।"
\s5
\v 29 কিন্তু পিতর এবং অন্য প্রেরিতরা বলল, "আমাদের মানুষের থেকে বরং ঈশ্বরের আজ্ঞাকে মেনে চলতে হবে!
\v 30 আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর সেই যীশুকে উত্থাপিত করেছেন, যাঁকে আপনারা গাছে টাঙিয়ে হত্যা করেছেন।
\v 31 ঈশ্বর যীশুকেই রাজপুত্র ও ত্রাণকর্তারূপে উন্নত করে তাঁর ডান হাত দিয়ে স্থাপন করেছেন, যেন ইস্রায়েলকে মন পরিবর্তন ও পাপমোচন দান করেন।
\v 32 এসব বিষয়ের আমরাও সাক্ষী, এবং পবিত্র আত্মাও সাক্ষী, যে আত্মা ঈশ্বর আপন আজ্ঞাবহকদের দিয়েছেন
\s5
\v 33 এই কথা শুনে তারা ক্রোধে উন্মত্ব হলেন ও প্রেরিতদের মেরে ফেলার জন্য মনস্থ করলেন।
\v 34 কিন্তু মহাসভায় গমলীয়েল নামে এক ফরীশী ছিলেন, ইনি ব্যবস্থার শিক্ষক, যাকে লোকেরা মান্য করত, তিনি উঠলেন এবং প্রেরিতদেরকে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়ার আজ্ঞা দিলেন।
\s5
\v 35 পরে প্রহরীরা প্রেরিতদেরকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার পর, তিনি বললেন, "হে, ইস্রায়েলের লোকেরা, তোমরা সেই লোকেদের নিয়ে কি করতে উদ্যত হয়েছ, সে বিষয়ে মনোযোগী হও।
\v 36 ইতিপূর্বে থুদা নামে এক জন নিজেকে মহান বলে দাবী করেছিল, এবং কমবেশী চারশো জন লোক তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল; সে নিহত হলে পর তার অনুগামীরা সব চড়িয়ে পড়ল, কেউই থাকলো না।
\v 37 সেই ব্যক্তির পর আদমসুমারীর সময় গালীলীয় যিহুদা উদয় হয় ও কতকগুলি লোককে নিজের দলে টানে, পরে সেও নিহত হয়, আর তার অনুগামীরাও ছড়িয়ে পড়ে
\s5
\v 38 এখন আমি তোমাদের বলছি, তোমরা ওই লোকদের থেকে দূরে থাক এবং তাদের ছেড়ে দাও, যদি এই মন্ত্রণা বা কাজ মানুষের থেকে হয়ে থাকে, তবে তা ব্যর্থ হবে।
\v 39 কিন্তু যদি ঈশ্বর থেকে হয়ে থাকে, তবে তাদের বন্ধ করা তোমাদের পক্ষে সম্ভব নয়, হয়তো দেখা যাবে যে, তোমরা ঈশ্বরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছ।
\s5
\v 40 তখন তারা গমলীয়েলের কথায় একমত হলেন, আর প্রেরিতদের ডেকে এনে প্রহার করলেন এবং যীশুর নামে কোনোও কথা বলতে নিষেধ করলেন এবং তাদেরকে ছেড়ে দিলেন।
\v 41 তখন প্রেরিতেরা মহাসভা থেকে আনন্দ করতে করতে চলে গেলেন, কারণ তারা যীশুর নামের জন্য অপমানিত হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছিল।
\v 42 তারপর প্রত্যেক দিন, প্রেরিতেরা উপাসনা ঘরে ও বাড়িতে বাড়িতে অনব্রত যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন।
\s5
\c 6
\s সাতজন সেবাকারীর নিয়োগ।
\p
\v 1 আর এসময়ে, যখন শিষ্যদের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছিল, তখন গ্রিক ভাষার যিহূদীরা ইব্রীয়দের বিরুদ্ধে ঝগড়া করতে লাগল, কেননা প্রতিদিনের খাবারের পরিসেবা থেকে তাদের বিধবা মহিলারা বাদ যাচ্ছিল।
\s5
\v 2 তখন সেই বারো জন (প্রেরিত) শিষ্যদের কাছে ডেকে বলল, আমরা যে ঈশ্বরের্ বাক্য ছেড়ে খাবার পরিবেশন করি, তা ঠিক নয়।
\v 3 কিন্তু প্রিয় ভাইয়েরা, তোমরা নিজেদের মধ্যে থেকে সুনামধন্য এবং আত্মায় ও জ্ঞানে পরিপূর্ণ সাত জন কে বেছে নাও; তাঁদের আমরা এই কাজের দায়িত্ব দেব।
\v 4 কিন্তু আমরা প্রার্থনায় ও তাঁর বাক্যের সেবায় যুক্ত থাকব।
\s5
\v 5 এই কথায় সমস্ত লোক খুশি হল, আর তারা এই ক'জনকে বেছে নেওয়া হলো, স্তিফান- এ ব্যক্তি বিশ্বাসে ও পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ ছিলেন- এবং ফিলিপ, প্রখর, নীকানর, তীমোন, পার্মিনা, ও নিকালয়, ইনি আন্তীয়খিয়াস্থ যিহূদী-ধর্মে বিশ্বাসী;
\v 6 তাঁরা এদেরকে প্রেরিতদের সামনে উপস্থিত করল, এবং তাঁরা তাদের মাথায় হাত রেখে প্রার্থনা করলেন।
\s5
\v 7 আর ঈশ্বরের বাক্য ছড়িয়ে গেল, এবং যিরুশালেমে শিষ্যদের সংখ্যা বাড়তে লাগল; আর যাজকদের মধ্যে অনেক লোক বিশ্বাস করল।
\s5
\v 8 আর স্তিফান অনুগ্রহে ও শক্তিতে পূর্ণ হয়ে লোকদের মধ্যে অনেক আশ্চর্য লক্ষণ ও চিহ্ন কাজ করতে লাগলেন।
\v 9 কিন্তু যাকে লিবর্ত্তীনয়দের সমাজ-গৃহ [ধর্ম-গৃহ] বলে, তার কয়েক জন, এবং কুরিনীয় ও আলেক্সান্দ্রিয় লোক, এবং কিলিকিয়া ও এশিয়ার কতগুলো লোক উঠে স্তিফানের সাথে তর্ক বিতর্ক করতে লাগল।
\s5
\v 10 কিন্তু তিনি যে জ্ঞান ও যে আত্মার শক্তিতে কথা বলছিলেন, তার বিরোধ করার ক্ষমতা তাদের ছিল না।।
\v 11 তখন তারা কয়েকজন লোককে প্ররোচনা দিল, আর তারা বলল, আমরা একে মোশীর ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অপমান-জনক কথা বলতে শুনেছি।
\s5
\v 12 তারা জনগণকে এবং প্রাচীনদের ও অধ্যাপকদের রাগিয়ে তুললো, এবং স্তিফানকে মারার জন্য ধরল ও মহাসভায় নিয়ে গেল;
\v 13 এবং মিথ্যাসাক্ষী দাঁড় করাল, যারা বলল, এ ব্যক্তি পবিত্র স্থানের ও ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পায় না;
\v 14 কেননা আমরা একে বলতে শুনেছি যে, সেই নাসরতীয় যীশু এই স্থান ভেঙ্গে ফেলবে, এবং মোশি আমাদের কাছে যেসমস্ত নিয়ম-কানুন দিয়েছেন, সেগুলো পাল্টে দেবে ।
\v 15 তখন যারা সভাতে বসেছিল, তারা সকলে তাঁর প্রতি এক নজরে দেখল, তাঁর মুখ স্বর্গদূতের মতো দেখাচ্ছিল।
\s5
\c 7
\p
\v 1 পরে মহাযাজক বললেন, এসব কথা কি সত্য? তিনি বললেন,
\v 2 প্রিয় ভাইয়েরা ও পিতারা, শুনুন। আমাদের পিতা অব্রাহাম হারণে বাস করার আগে যেসময়ে মিসপটেমিয়ায় ছিলেন, সেসময় প্রতাপের ঈশ্বর তাঁকে দর্শন দিয়েছিলেন, আর বলেছিলেন,
\v 3 "তুমি নিজের দেশ থেকে ও সমস্ত আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে বাইরে বের হও, এবং আমি যেদেশ তোমাকে দেখাই, সেদেশে চল।"
\s5
\v 4 তখন তিনি কলদীয়দের দেশ থেকে বের হয়ে এসে হারনে বসবাস করলেন; আর তাঁর পিতার মৃত্যুর পর (ঈশ্বর) তাঁকে সেখান থেকে এদেশে আনলেন, যেদেশে আপনারা এখন বাস করছেন।
\v 5 কিন্তু এদেশে তাঁকে অধিকার দিলেন না, এক টুকরো জমিও না; আব্রাহাম প্রতিজ্ঞা করলেন যে , তিনি তাঁকে ও তাঁর পরে তাঁর বংশকে অধিকার দেবেন, যদিও তখন তাঁর কোনও সন্তান হয়নি।
\s5
\v 6 আর ঈশ্বর এমন বললেন যে, "তাঁর বংশ বিদেশে বাস করবে, এবং লোকে তাদের দাস বানাবে ও তাদের প্রতি চারশো বছর পর্যন্ত অত্যাচার করবে;"
\v 7 আর তারা যেজাতির দাস হবে, আমিই তাদের বিচার করব," এটা ঈশ্বর আরও বললেন, "তারপরে তারা বাইরে বেরিয়ে আসবে, এবং এই স্থানে আমার আরাধনা করবে।"
\v 8 আর তিনি তাঁকে ত্বকছেদের নিয়ম দিলেন, আর এভাবে অব্রাহাম ইসাহাক কে জন্ম দিলেন, এবং আটদিনের দিন তাঁর ত্বকছেদ করল: পরে ইসাহাক যাকোবের, এবং যাকোব সেই বারো জন পিতৃকুলপতির জন্ম দিলেন।
\s5
\v 9 আর পিতৃকুলপতিরা যোষেফের উপর হিংসা করে তাঁকে বিক্রি করলে তিনি মিশরে যান।
\v 10 কিন্তু ঈশ্বর তাঁর সাথে সাথে ছিলেন, এবং তাঁর সমস্ত দু:খকষ্ট থেকে তাঁকে উদ্ধার করলেন, আর মিশরের রাজা ফরৌনের সামনে অনুগ্রহ ও জ্ঞানীর পরিচয় দিলেন; এজন্য ফরৌণ তাঁকে মিশরের ও নিজের সমস্ত ঘরের অধ্যক্ষ পদে নিযুক্ত করলেন।
\s5
\v 11 পরে সমস্ত মিশরে ও কনানে দুর্ভিক্ষ হল, লোকেরা খুব কষ্ট পেতে থাকল, আর আমাদের পূর্বপুরুষদের খাবারের অভাব হল।
\v 12 কিন্তু মিশরে খাবার আছে শুনে যাকোব আমাদের পূর্বপুরুষদের প্রথমবার পাঠালেন।
\v 13 পরে দ্বিতীয়বারে যোষেফ নিজের ভাইদের সাথে পরিচিত হলেন, এবং যোষেফের বংশ সম্পর্কে ফরৌণ জানতে পারলেন।
\s5
\v 14 পরে যোষেফ নিজের পিতা যাকোবকে এবং নিজের সমস্ত বংশকে, পঁচাত্তর জনকে, নিজের কাছে ডেকে পাঠালেন।
\v 15 তাতে যাকোব মিশরে গেলেন, পরে তাঁর ও আমাদের পূর্বপুরুষদের মৃত্যু হল।
\v 16 আর তাঁদের শিখিমে এনে কবর দেওয়া হয়েছে, এবং যে কবর অব্রাহাম রূপো দিয়ে শিখিমে হামোর সন্তানদের কাছ থেকে কিনেছিলেন, সেখানে কবরপ্রাপ্ত হয়েছে।
\v 17 পরে, ঈশ্বর অব্রাহামের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেই প্রতিজ্ঞা পূর্ণ হওয়ার সময় এগিয়ে আসলে, লোকেরা মিশরে বেড়ে সংখ্যায় অনেক হয়ে উঠল,
\v 18 শেষে মিশরের উপরে এমন আর এক জন রাজা হলেন, যে যোষেফকে জানতেন না।
\v 19 তিনি আমাদের জাতির সাথে চালাকি করলেন, আমাদের পূর্বপুরুষদের সাথে খারাপ ব্যবহার করলেন, উদ্দেশ্য এই যে, তাঁদের শিশুদের যেন বাইরে ফেলে দেওয়া হয়, যেন তারা বেঁচে না থাকে।
\s5
\v 20 সেই সময় মোশির জন্ম হয়। তিনি ঈশ্বরের চোখে সুন্দর ছিলেন, এবং তিনমাস পর্যন্ত পিতার বাড়িতে পালিত হন।
\v 21 পরে তাঁকে বাইরে ফেলে দিলে ফরৌনের মেয়ে তুলে নেয়, ও নিজের ছেলে করার জন্য লালন-পালন করলেন।
\s5
\v 22 আর মোশি মিশ্রীয়দের সমস্ত শিক্ষায় শিক্ষিত হলেন, এবং তিনি বাক্যে ও কাজে বলবান ছিলেন।
\v 23 পরে তাঁর প্রায় সম্পূর্ণ চল্লিশ বছর বয়স হওয়ার পর নিজের ভাইদের, ইস্রায়েল সন্তানদের, পরিচয় করার ইচ্ছা তার হৃদয়ে জাগলো।
\v 24 তখন এক জনের উপর অন্যায় করা হচ্ছে দেখে, তিনি তার পক্ষ নিলেন, ঐ মিশ্রীয় লোককে মেরে অত্যাচার সহ্য করা লোকটিকে সুবিচার দিলেন।
\v 25 তিনি মনে করলেন তার ভাইয়েরা বুঝেছে যে, তাঁর হাতের দ্বারা ঈশ্বর তাদের মুক্তি দিচ্ছেন; কিন্তু তারা বুঝল না।
\s5
\v 26 আর পরের দিন তারা যখন মারামারি করছিল, তখন তিনি তাদের কাছে গিয়ে মিটমাট করার চেষ্টা করলেন, বললেন, হে প্রিয়, তোমরা তো ভাই, এক জন অন্য জনের সাথে অন্যায় করছ কেন?
\v 27 কিন্তু প্রতিবেশীর প্রতি অন্যায় করেছিল যেব্যক্তি, সে তাকে ঠেলে ফেলে দিয়ে বলল, তোমাকে অধ্যক্ষ ও বিচারকর্তা করে আমাদের উপরে কে নিযুক্ত করেছে?
\v 28 কালকে যেমন সেই মিশ্রীয়কে মেরে ফেলেছিলে, তেমনি কি আমাকেও মেরে ফেলতে চাও?
\s5
\v 29 এই কথায় মোশি পালিয়ে গেল, আর মিদিয়ণ দেশে বিদেশী হয়ে বসবাস করতে লাগল; সেখানে তার দুই ছেলের জন্ম হয়।
\v 30 পরে চল্লিশ বছর পূর্ণ হলে সীনয় পর্বতের মরুভূমিতে এক দূত একটা ঝোপে অগ্নিশিখায় তাকে দেখা দিল।
\s5
\v 31 মোশী সে দৃশ্য দেখে আশ্চর্য হয়ে উঠল, আরও ভালো করে দেখার জন্য কাছে যাচ্ছিল, এমন সময়ে প্রভুর এক আওয়াজ শোনা গেল, বললেন,
\v 32 " আমি তোমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের ঈশ্বর।" তখন মোশী ভয় পেয়ে ভাল করে আর দেখার সাহস করলেন না।
\s5
\v 33 পরে প্রভু তাঁকে বললেন, "তোমার পা থেকে জুতো খুলে ফেল; কেননা যে জায়গাতে তুমি দাঁড়িয়ে আছ, ওটা পবিত্র জায়গা।
\v 34 আমি মিশরের মধ্যে আমার প্রজাদের দুঃখ ভাল করে দেখেছি, তাদের কান্না শুনেছি, আর তাদের উদ্ধার করতে নেমে এসেছি, এখন এসো, আমি তোমাকে মিশরে পাঠাই।"
\s5
\v 35 এই যে মোশীকে তারা অস্বীকার করেছিল, বলেছিল, তোমাকে অধ্যক্ষ ও বিচারকর্তা করে কে নিযুক্ত করেছে? তাঁকেই ঈশ্বর, যেদূত ঝোপে তাঁকে দেখা দিয়েছিল, সেই দূতের হাতের দ্বারা অধ্যক্ষ ও মুক্তিদাতা করে পাঠালেন।
\v 36 তিনি মিশরে, লোহিত সমুদ্রে ও মরুভূমিতে চল্লিশ বছর পর্যন্ত্য নানারকম অদ্ভুত লক্ষণ ও চিহ্ন কাজ করে তাদের বের করে আনলেন।
\v 37 ইনি সেই মোশি, যে ইস্রায়েল সন্তানদের এ কথা বলেছিলেন, "ঈশ্বর তোমাদের জন্য তোমাদের ভাইদের মধ্যে থেকে আমার মতো একজন ভাববাদীকে উৎপন্ন করবে।"
\s5
\v 38 তিনিই মরুভূমিতে যিহূদীদের সাথে ছিলেন; যেদূত সীনয় পর্বতে তাঁর সাথে কথা বলেছিলেন,। তিনিই তাঁর এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের সাথে ছিলেন। তিনি আমাদের দেওয়ার জন্য জীবনদায়ী বাক্য-সকল পেয়েছিলেন।
\v 39 আমাদের পূর্বপুরুষেরা তাঁর কথা মানতে চাইল না, বরং তাঁকে ঠেলে ফেলে দিলেন, আর মনে মনে আবার মিশরের দিকে ফিরলেন,
\v 40 হারোণকে বললেন, "আমাদের জন্য দেবতা তৈরি কর, তাঁরাই আমাদের আগে আগে যাবেন, কেননা এই যে মোশি মিশর দেশ থেকে আমাদের বের করে আনলেন, তাঁর কী হল, আমরা জানি না।"
\s5
\v 41 আর সেই সময় তারা একটা বাছুর তৈরি করলেন, এবং সেই মূর্তির উদ্দেশে বলি উৎসর্গ করলেন, ও নিজেদের হাতের তৈরি জিনিসে আনন্দ করতে লাগলেন।
\v 42 কিন্তু ঈশ্বর খুশি হলেন না, তাঁদের আকাশের বাহিনী পূজো করার জন্য সমর্পণ করলেন; যেমন ভাববাদী গ্রন্থে লেখা আছে ,"প্রিয় ইস্রায়েল লোকেরা, মরুভূমিতে চল্লিশ বছর পর্যন্ত তোমরা কি আমার উদ্দেশে পশুবলি ও উপহার উৎসর্গ করেছিলে?
\v 43 তোমরা বরং মোলকের তাঁবু ও রিফন দেবতার তারা তুলে নিয়ে বহন করেছ, সেই মূর্তিগুলো, যা তোমরা পূজো করার জন্য গড়েছিলে;
\p আর আমি তোমাদের বাবিলের ওদিকে নির্বাসিত করব।"
\s5
\v 44 যেমন তিনি আদেশ করেছিলেন, সাক্ষ্য তাঁবু মরুভুমিতে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে ছিল, যিনি মোশিকে বলেছিলেন, তুমি যেমন নমুনা দেখলে, সেরকম ওটা তৈরি কর।
\v 45 আর আমাদের পূর্বপুরুষেরা তাদের সময়ে ওটা পেয়ে যিহোশুয়ের কাছে আনলেন, যখন সেই জাতিগনের অধিকারে প্রবেশ করল, যাদের ঈশ্বর আমাদের পূর্বপুরুষের সামনে থেকে তাড়িয়ে দিলেন। সেই তাঁবু দায়ূদের সময় পর্যন্ত ছিল।
\v 46 ইনি ঈশ্বরের চোখে অনুগ্রহ পেলেন, এবং যাকোবের ঈশ্বরের জন্য একটি গৃহ নির্ম্মাল করার জন্য অনুমতি চাইলেন;
\s5
\v 47 কিন্তু শলোমন তাঁর জন্য একটি গৃহ নির্ম্মাণ করলেন।
\v 48 অথচ ঈশ্বর হাতের তৈরি গৃহে বাস করেন না; যেমন ভাববাদী বলেন
\p
\v 49 "স্বর্গ আমার সিংহাসন, পৃথিবী আমার পা রাখার স্থান; প্রভু বলেন, তোমরা আমার জন্য কেমন বাসস্থান বানাবে?
\p
\v 50 অথবা আমার বিশ্রামের স্থান কোথায়? আমার হাতই কি এ সমস্ত তৈরী করেনি?"
\s5
\v 51 হে ঘাড়শক্ত লোকেরা এবং হৃদয়ে ও কানে অচ্ছিন্নত্বকেরা, তোমরা সবসময় পবিত্র আত্মার প্রতিরোধ করে থাক; তোমাদের পূর্বপুরুষেরা যেমন, তোমরাও ঠিক তেমন।
\v 52 তোমাদের পূর্বপুরুষেরা কোন ভাববাদীকে তাড়না না করেছে? তারা তাঁদের মেরে ফেলেছিল, যাঁরা আগেই সেই ধার্মিকের আসার কথা জানত, যাকে কিছু দিন আগে তোমরা শত্রুর হাতে তুলে দিলে ও মেরে ফেলেছিলে;
\v 53 তোমরা সকলে দূতগনের দ্বারা মোশির ব্যবস্থা পেয়েছিলে, কিন্তু পালন করনি।
\v 54 এই কথা শুনে মহাসভার সদস্যরা আঘাতগ্রস্ত হলো, স্তিফানের দিকে চেয়ে দাঁতে দাঁত ঘষতে লাগল।
\v 55 কিন্তু তিনি পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হয়ে স্বর্গের দিকে একনজরে চেয়ে দেখলেন যে, ঈশ্বরের মহিমা রয়েছে, এবং যীশু ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন,
\v 56 আর তিনি বললেন, দেখ, আমি দেখছি, স্বর্গ খোলা রয়েছে, মানবপুত্র ঈশ্বরের ডানদিকে দাঁড়িয়ে আছেন।
\s5
\v 57 কিন্তু তারা খুব জোরে চিৎকার করে উঠল, নিজে নিজের কান চেপে ধরল, এবং একসাথে তাঁর উপরে গিয়ে পড়ল;
\v 58 আর তাঁকে শহর থেকে বের করে পাথর মারতে লাগল; এবং সাক্ষীরা নিজে নিজের কাপড় খুলে শৌল নামের একজন যুবকের পায়ের কাছে রাখল।
\s5
\v 59 এদিকে তারা স্তিফানকে পাথর মারছিল, আর তিনি তাঁর নাম ডেকে প্রার্থনা করলেন, হে প্রভু যীশু আমার আত্মাকে গ্রহণ করো l
\v 60 পরে তিনি হাঁটু পেতে জোরে জোরে বললেন, প্রভু, এদের বিরুদ্ধে এই পাপ ধর না। এই বলে তিনি মারা গেলেন। আর শৌল তার হত্যার আদেশ দিচ্ছিলেন।
\s5
\c 8
\s ফিলিপের প্রচার
\p
\v 1 সেই দিন যিরূশালেম মন্ডলীর উপর ভীষণ অত্যাচার শুরু হল, তারফলে প্রেরিতরা ছাড়া অন্য সবাই যিহূদিয়া ও শমরিয়ায় ছড়িয়ে পড়ল l
\v 2 কয়েকজন ভক্ত লোক স্তিফানকে কবর দিলেন ও তাঁর জন্য গভীর শোক প্রকাশ করলেন l
\v 3 কিন্তু শৌল মন্ডলীকে ধ্বংস করার জন্য, ঘরে ঘরে ঢুকে পুরুষ ও মহিলাদের ধরে টানতে টানতে এনে জেলে বন্দি করতে লাগলেন l
\s5
\v 4 তখন যারা চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছিল, তারা সেসব জায়গায় সুসমাচার প্রচার করতে লাগলো l
\v 5 আর ফিলিপ শমরিয়ার শহরে গিয়ে লোকেদের কাছে খ্রীষ্টকে প্রচার করতে লাগলেন l
\s5
\v 6 লোকেরা ফিলিপের কথা শুনলো ও তাঁর সমস্ত আশ্চর্য কাজ দেখে একমনে তাঁর কথা শুনতে লাগলো
\v 7 কারণ মন্দ আত্মায় পাওয়া অনেক লোকেদের মধ্যে থেকে সেই আত্মারা চিৎকার করে বের হয়ে এলো, এবং অনেক পক্ষাঘাতী (অসাড়) ও খোঁড়া লোকেরা সুস্থ হোল ;
\v 8 ফলে সেই শহরে মহাআনন্দ হল l
\s5
\v 9 কিন্তু শিমোন নামে এক ব্যক্তি ছিলেন, যিনি আগে থেকেই সেই নগরে যাদু দেখাতেন ও শামরীয়ার লোকেদের অবাক করে দিতেন, আর নিজেকে এক জন মহান ব্যক্তি হিসাবে প্রকাশ করতেন;
\v 10 তার কথা ছোট বড় সবাই শুনত, আর বলত, এই ব্যক্তি ঈশ্বরের সেই শক্তি, যা মহান নামে পরিচিত l
\v 11 লোকেরা তার কথা শুনত, কারণ তিনি বহু দিন ধরে তাদের যাদু দেখিয়ে অবাক করে রেখেছিলেন l
\s5
\v 12 কিন্তু ফিলিপ ঈশ্বরের রাজ্য যীশু খ্রীষ্টের সুসমাচার প্রচার করলে তারা তাঁর কথায় বিশ্বাস করল, আর পুরুষ ও মহিলারা বাপ্তিস্ম নিল l
\v 13 আর শিমন নিজেও বিশ্বাস করলেন, ও বাপ্তিস্ম নিয়ে ফিলিপের সঙ্গে সঙ্গে থাকলেন; এবং আশ্চর্য্য ও শক্তিশালী কাজ দেখে অবাক হয়ে গেলেন l
\s5
\v 14 যিরূশালেমের প্রেরিতরা যখন শুনতে পেলেন যে শমরিয়রা ঈশ্বরের বাক্য গ্রহণ করেছে, তখন তাঁরা পিতর ও যোহন কে তাদের কাছে পাঠালেন l
\v 15 এবং তাঁরা গিয়ে তাদের জন্য প্রার্থনা করলেন, যেন তারা পবিত্র আত্মা পায়;
\v 16 কারণ তখন পর্যন্ত তারা পবিত্র আত্মা পায়নি; তারা শুধু প্রভু যীশুর নামে বাপ্তিস্ম নিয়েছিলেন l
\v 17 তখন তাঁরা তাদের মাথায় হাত রাখলেন (হস্তার্পণ), আর তারা পবিত্র আত্মা পেল l
\s5
\v 18 এবং শিমন যখন দেখল, প্রেরিতদের হাত রাখার (হস্তার্পণ) মাধ্যমে পবিত্র আত্মা পাওয়া যাচ্ছে, তখন সে তাঁদের কাছে টাকা এনে বললেন,
\v 19 আমাকেও এই ক্ষমতা দিন, যেন আমি যার উপরে হাত রাখব (হস্তার্পণ) সেও পবিত্র আত্মা পায় l
\s5
\v 20 কিন্তু পিতর তাকে বললেন, তোমার রুপো তোমার সঙ্গে ধ্বংস হোক, কেননা ঈশ্বরের দান তুমি টাকা দিয়ে কিনতে চাইছ l
\v 21 এই বিষয়ে তোমার কোনোও অংশ বা কোনোও অধিকার নেই; কারণ তোমার হৃদয় ঈশ্বরের দৃষ্টিতে সরল নয় l
\v 22 সুতরাং তোমার এই মন্দ চিন্তা থেকে মন ফেরাও; এবং প্রভুর কাছে প্রার্থনা কর, তা হলে হয়ত, তোমার হৃদয়ের পাপ ক্ষমা হলেও হতে পারে;
\v 23 কেননা আমরা দেখছি তোমার মধ্যে হিংসা আছে আর তুমি পাপের কাছে বন্দি l
\s5
\v 24 তখন শিমন বললেন, আপনারাই আমার জন্য প্রার্থনা করুন, যেন আপনারা যা কিছু বললেন তা যেন আমার সঙ্গে না ঘটে l
\s5
\v 25 পরে তাঁরা সাক্ষ্য দিলেন ও প্রভুর সম্বন্ধে আরোও অনেক কথা বললেন, এবং যিরূশালেমে যাবার সময় তাঁরা শমরীয়দের গ্রামে গ্রামে সুসমাচার প্রচার করলেন l
\s5
\v 26 পরে প্রভুর এক জন দূত ফিলিপকে বললেন, দক্ষিন দিকে, যে রাস্তাটা যিরূশালেম থেকে ঘসার দিকে নেমে গেছে, সেই দিকে যাও; সেই জায়গাটা মরুভূমিতে অবস্থিত l
\v 27 তাই তিনি যাত্রা শুরু করলেন আর, ইথিয়পীয় দেশের এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর দেখা হলো, যিনি ইথিয়পীয়ের কান্দাকি রানীর অধীনে নিযুক্ত উচু পদের একজন নপুংসক, যিনি রানীর প্রধান কোষাধ্যক্ষ ছিলেন, তিনি আরাধনা করার জন্য যিরূশালেমে এসেছিলেন;
\v 28 ফিরে যাবার সময়, রথে বসে যিশাইয় ভাববাদীর বই পড়ছিলেন l
\s5
\v 29 তখন আত্মা ফিলিপকে বললেন তুমি সেই ব্যক্তির রথের সঙ্গে সঙ্গে যাও l
\v 30 তখন ফিলিপ রথের সঙ্গ নিলেন এবং শুনতে পেলেন, সেই ব্যক্তি যিশাইয় ভাববাদীর বই পড়ছিলেন; ফিলিপ বললেন, আপনি যা পড়ছেন, সে বিষয়গুলো কি বুঝতে পারছেন?
\v 31 তিনি বললেন, কেউ বুঝিয়ে না দিলে, আমি কিভাবে বুঝব? তখন তিনি ফিলিপ কে তাঁর রথে আসতে অনুরোধ করলেন l
\s5
\v 32 তিনি বইয়ের যে অংশটা পড়ছিলেন, তা হলো, যেমন মেষ বলিদান করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়, তেমন তিনিও বলি হলেন, এবং লোম ছাঁটাইকারীদের কাছে মেষ যেমন চুপ থাকে, তেমন তিনিও চুপ করে থাকলেন l
\v 33 তাঁর হীনাবস্তায় (অসহায়) তাঁকে বিচার করা হল, তাঁর সমকালীন লোকেদের বর্ণনা কে করতে পারে? কারণ তাঁর প্রাণ পৃথিবী থেকে নিয়ে নেওয়া হলো l"
\s5
\v 34 নপুংসক তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, এবং অনুরোধের সঙ্গে জানতে চাইলেন, ভাববাদী কার বিষয়ে এই কথা বলছেন? নিজের বিষয়ে না অন্য কারো বিষয় l
\v 35 তখন ফিলিপ বইয়ের অংশ থেকে শুরু করে, প্রভু যীশুর সুসমাচার তাকে জানালেন l
\s5
\v 36 তাঁরা রাস্তা দিয়ে যেতে যেতে একটি জলাশয়ের কাছে উপস্তিত হলেন; তখন নপুংসক বললেন, এই দেখুন, জল আছে, বাপ্তিস্ম নিতে আমার বাধা কোথায়?
\v 37 আর ফিলিপ বললেন, " যদি আপনি সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করেন, তাহলেই"| এবং তিনি উত্তরে বললেন, "আমি বিশ্বাস করি যে যীশু খ্রিষ্ট হলেন ঈশ্বরের পুত্র |"
\v 38 পরে তিনি রথ থামানোর আদেশ দিলেন, ফিলিপ ও নপুংসক দুজনেই জলে নামলেন এবং ফিলিপ তাঁকে বাপ্তিস্ম দিলেন l
\s5
\v 39 তাঁরা যখন জল থেকে উঠলেন, প্রভুর আত্মা ফিলিপকে নিয়ে চলে গেলেন, এবং নপুংসক তাঁকে আর দেখতে পেলেন না, কিন্তু আনন্দ করতে করতে তাঁর বাড়ি চলে গেলেন l
\v 40 এদিকে ফিলিপ কে অসদোদে দেখতে পাওয়া গেল; আর তিনি শহরে শহরে সুসমাচার প্রচার করতে করতে কৈসরিয়াতে উপস্তিত হলেন l
\v 17 সুতরাং অননিয় চলে গেলেন এবং সেই বাড়িতে গিয়ে তাঁর উপর হাত রেখে বললেন, শৌল, প্রভু যীশু, যিনি তোমার আসবার পথে তোমাকে দেখা দিয়েছিলেন, তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন, যেন তুমি আবার দৃষ্টি ফিরে পাও এবং পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হও l
\p
\v 18 আর সেই মূহুর্তে তাঁর চক্ষু থেকে যেন একটা মাছের আঁশ পড়ে গেল, এবং তিনি দৃষ্টি ফিরে পেলেন, এবং উঠে বাপ্তিস্ম নিলেন;
\p
\v 19 পরে তিনি খেলেন এবং শক্তি পেলেন l আর তিনি দম্মেশকের শিষ্যদের সাথে কিছুদিন থাকলেন;
\v 20 সঙ্গে সঙ্গেই তিনি সমাজগৃহে গিয়ে যীশুর বাণী প্রচার করতে লাগলেন, যে তিনিই ঈশ্বরের পুত্র l
\p
\v 21 আর যারা তাঁর কথা শুনলো, তারা সবাই আশ্চর্য হলো, বলতে লাগল, এ কি সেই লোকটি নয়, যে, যারা যিরুশালেমে যীশুর নামে ডাকত তাদের উচ্ছেদ করে দিতো ? এবং সে এখানে এসেছেন যেন তাদের বেঁধে প্রধান পুরোহিতদের কাছে নিয়ে যায় l
\p
\v 22 কিন্তু শৌল দিন দিন শক্তি পেলেন এবং দম্মেশকে বসবাসকারী যিহুদিদের উত্তর দেবার পথ দিলেন না এবং প্রমাণ দিতে লাগলেন যে ইনিই সেই খ্রীষ্ট l
\v 26 পরে তিনি যখন যিরুশালেমে পৌঁছে শিষ্যদের সঙ্গে যোগ দিতে চেষ্টা করলেন, সকলে তাঁকে ভয় করলো, তিনি যে শিষ্য তা বিশ্বাস করল না l
\p
\v 27 তখন বার্ণবা তার হাত ধরে প্রেরিতদের কাছে নিয়ে গেলেন, এবং পথের মধ্যে কীভাবে প্রভুকে দেখতে পেয়েছিলেন, ও প্রভু যে তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন, এবং কিভাবে তিনি দম্মেশকে যীশুর নাম সাহসের সঙ্গে প্রচার করেছিলেন, এসব তাঁদের কাছে বললেন l
\v 31 সুতরাং তখন যিহুদিয়া, গালীল ও শমরিয়ার সব জায়গায় মন্ডলী শান্তি ভোগ ও বৃদ্ধি পেতে লাগল, এবং প্রভুর ভয়ে ও পবিত্র আত্মার সান্ত্বনায় চলতে চলতে মন্ডলী সংখ্যায় অনেক হয়ে উঠলো l
\p
\v 32 আর পিতর সব স্থানে ঘুরতে ঘুরতে লুদ্দায় বসবাসকারী ঈশ্বরের মানুষদের কাছে গেলেন l
\v 38 আর লুদ্দা যাফোর কাছাকাছি হওয়াতে এবং পিতর লুদ্দায় আছেন শুনে, শিষ্যরা তাঁর কাছে দুইজন লোক পাঠিয়ে এই বলে অনুরোধ করলেন, "কোনোও দেরি না করে আমাদের এখানে আসুন"l
\p
\v 39 আর পিতর উঠে তাদের সঙ্গে চললেন l যখন তিনি পৌঁছোলেন, তারা তাঁকে উপরের ঘরে নিয়ে গেল l আর সব বিধবারা তাঁর চারিদিকে দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকলো এবং দর্কা তাদের সঙ্গে থাকার সময় যে সমস্ত আঙরাখা ও বস্ত্র তৈরি করেছিলেন, সেই সমস্ত দেখাতে লাগলো l
\v 40 তখন পিতর সবাইকে ঘরের বাইরে বের করে দিয়ে, হাঁটু পেতে প্রার্থনা করলেন, তারপর সেই দেহের দিকে ফিরে বললেন, "টাবিথা ওঠ" l তাতে তিনি চোখ খুললেন এবং পিতরকে দেখে উঠে বসলেন l
\p
\v 41 তখন পিতর হাত দিয়ে তাকে ওঠালেন এবং বিশ্বাসীদের ও বিধবাদের ডেকে তাকে জীবিত দেখালেন l
\p
\v 42 এই ঘটনা যাফোর সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল, এবং অনেক লোক প্রভুকে বিশ্বাস করলো l
\p
\v 43 আর পিতর অনেকদিন যাবৎ যাফোতে শিমন নামে এক জন চর্ম শিল্পীর বাড়িতে ছিলেন l
\s5
\c 10
\s কৈসরিয়ার কর্নিলীয়ের বিবরণ
\p
\v 1 কৈসরিয়া নগরে কর্নীলিয় নামে একজন লোক ছিলেন, তিনি ইতালির সৈন্যদলের শতপতি ছিলেন l
\p
\v 2 তিনি ঈশ্বর ভক্ত এবং পরিবারের সকলের সঙ্গে ঈশ্বরকে ভয় করিতেন, অনেক লোককে প্রচুর পরিমানে দান করতেন এবং সব সময়ই ইশ্বরের কাছে প্রাথর্না করতেন l
\s5
\v 3 একদিন প্রায় দুপুর তিনটের সময় কর্নীলিয় একটি দর্শন দেখতে পেয়েছিলেন যে ঈশ্বরের এক দূত তার কাছে ভিতরে এসে বললেন কর্নিলীয়,
\p
\v 4 তখন কর্নীলিয় তাঁর প্রতি একভাবে তাকিয়ে ভয়ের সঙ্গে বললেন প্রভু কী চান? দূত তাঁকে বললেন তোমার প্রার্থনা ও তোমার দান সকল স্মারক নৈবেদ্য হিসাবে স্বর্গে ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হয়েছে,
\p
\v 5 এখন তুমি যাফোতে লোক পাঠাও এবং শিমোন যাকে পিতর বলে, তাকে ডেকে আন l
\v 6 তিনি শিমোন নামে একজন মুচির বাড়িতে আছেন, তাঁর বাড়িটি সমুদ্রের ধারে,
\s5
\v 7 কর্নীলিয়র সঙ্গে যে দূত কথা বলেছিলেন তিনি চলে যাবার পর কর্নীলিয় বাড়ির চাকর দের মধ্যে দু জনকে এবং যারা সব সময়ই তাঁর সেবা করত, তাদের একজন ভক্ত সেনাকে ডাকলেন,
\v 8 আর তাদের সব কথা বলে যাফোতে পাঠালেন l
\s5
\v 9 পরের দিন তারা পথ ধরে যেতে যেতে যখন নগরের কাছে হাজির হলেন, তখন পিতর ছাদের উপরে প্রার্থনা করার জন্য উঠলেন অনুমান ছটার সময় l
\v 10 তিনি ক্ষুধার্ত হলেন এবং কিছু খেতে চাইলেন l কিন্তু যখন লোকেরা খাবার তৈরি করছিল, এমন সময়ে তিনি অভিভূত হয়ে পড়লেন,
\v 11 আর দেখলেন, আকাশ খুলে গেছে এবং একটি বড় চাদর নেমে আসছে তার চারটি কোন ধরে পৃথিবীতে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে;
\v 12 আর তার মধ্যে পৃথিবীর সব রকমের পশু, সরীসৃপ এবংআকাশের পাখীরা আছে l
\s5
\v 13 পরে তাঁর প্রতি আকাশ থেকে এই বাণী হলো ওঠ পিতর, "মার এবং খাও" l
\p
\v 14 কিন্তু পিতর বললেন, প্রভু এমন না হোক; আমি কোনওদিন কোনোও অপবিত্র ও অশুচি বস্তু খাইনি l
\p
\v 15 তখন দ্বিতীয়বার আবার এই বাণী হল, ঈশ্বর যা শুচি করেছেন, তুমি তা অপবিত্র বলও না,
\v 16 এই ভাবে তিন বার হলো, পরে আবার ঐ চাদরটি আকাশে উঠে গেল l
\s5
\v 17 পিতর যে দর্শন পেয়েছিলেন, তার অর্থ কী হতে পারে, এই বিষয়ে মনে মনে ভাবছিলেন ঠিক সেই সময়ে দেখো, কর্নীলিয়ের প্রেরিত লোকেরা শিমোনের বাড়ির খোঁজ করে দরজার কাছে এসে দাঁড়ালো,
\v 18 আর ডেকে জিজ্ঞাসা করলো, শিমোন যাকে পিতর বলে, তিনি কি এখানে থাকেন ?
\s5
\v 19 পিতর সেই দর্শনের বিষয়ে ভাবছিলেন, এমন সময়ে আত্মা বললো, দেখো তিনজন লোক তোমার খোঁজ করছে l
\v 20 কিন্তু তুমি উঠে নীচে যাও, তাদের সঙ্গে যাও, কোনও সন্দেহ করো না কারণ আমিই তাদের পাঠিয়েছি l
\v 21 তখন পিতর সেই লোকেদের কাছে নেমে গিয়ে বললেন, দেখো তোমরা যার খোঁজ করছো, আমি সেই ব্যক্তি, তোমরা কী জন্য এসেছ?
\s5
\v 22 তারা বললো, একজন শতপতি কর্নীলিয় নামে পরিচিত, এক জন ধার্মিক লোক, যিনি ঈশ্বর কে ভয় করেন, এবংসমস্ত যিহুদী জাতির মধ্যে বিখ্যাত, তিনি পবিত্র দুতের দ্বারা এমন আদেশ পেয়েছেন,যেন আপনাকে ডেকে নিজ বাড়িতে এনে আপনার মুখের কথা শোনেন l
\v 23 তখন পিতর তাদের ভিতরে ডেকে এনে তাদের সেবা করলেন l পরদিন উঠে তিনি তাদের সঙ্গে গেলেন, আর যাফোত -নিবাসী ভাইদের মধ্যে কিছু জন তাদের সঙ্গে গেল l
\s5
\v 24 পরের দিন তারা কৈসরিয়াতে প্রবেশ করলেন; তখন কর্নীলিয় নিজের লোকদের ও বন্ধুদের এক জায়গায় ডেকে তাদের অপেক্ষা করছিলেন l
\s5
\v 25 পরে পিতর যখন প্রবেশ করলেন, সেই সময় কর্নীলিয় তার সঙ্গে দেখা করে তাঁর পায়ে পড়ে প্রণাম করলেন l
\v 26 কিন্তু পিতর তাঁকে তুললেন, বললেন উঠুন;আমি নিজেও এক জন মানুষ্ l
\s5
\v 27 তার পর পিতর কর্নীলিয়ের সঙ্গে আলাপ করতে করতে প্রবেশ করে দেখলেন, অনেক লোক জমা হয়েছে l
\v 28 তখন তিনি তাদের বললেন, আপনারা জানেন, অন্য জাতির সঙ্গে যোগ দেওয়া অথবা তার কাছে আসা যিহুদি লোকের পক্ষে কেমন নিয়মের বাইরে; কিন্তু আমাকে ঈশ্বর দেখিয়েছেন যে, কোনোও মানুষকে অপবিত্র অথবা অশুচি বলা উচিৎ নয় l
\v 29 এই জন্য আমাকে ডেকে পাঠানো হলে আমি কোনোও আপত্তি না করেই এসেছি; এখন জিজ্ঞাসা করি, আপনারা কী কারণে আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন?
\s5
\v 30 তখন কর্নীলিয় বললেন, আজ চার দিন হলো, আমি এই সময় পর্যন্ত নিজের ঘরের মধ্যে বেলা অনুমান তিনটের সময় প্রার্থনা করছিলাম, সেই সময় একজন পুরুষ তেজোময় পোশাক পরে আমার সামনে দাঁড়ালেন;
\v 31 তিনি বললেন, কর্নীলিয়, তোমার প্রার্থনা গ্রহণ করা হয়েছে, এবং তোমার দান সকল ঈশ্বরের কাছে স্মরণ করা হয়েছে।
\v 32 অতএব যাফতে লোক পাঠিয়ে শিমোন যাকে পিতর বলে, তাঁকে ডেকে আনো; সে সমুদ্রের ধারে শিমোন মুচির বাড়িতে আছেন l
\v 33 এই জন্যে আমি সঙ্গে সঙ্গে আপনার কাছে লোক পাঠিয়ে দিলাম; আপনি এসেছেন ভালোই করেছেন, অতএব এখন আমরা সকলে ঈশ্বরের সাক্ষাতে উপস্থিত আছি; প্রভু আপনাকে যেসকল আদেশ করেছেন, তা শুনবো l
\s5
\v 34 তাঁর পর পিতর তার মুখ খুলে তাদের বলতে লাগলেন সত্যি আমি বুঝতে পারলাম যে ঈশ্বর কারোও মুখচেয়ে কিছু করেন না l
\v 35 কিন্তু সব জাতির মধ্যে যেকেউ তাঁকে ভয় করে ও ধর্মাচরণ করে, ইশ্বর তাকে গ্রহণ করেন।
\s5
\v 36 তোমরা জন যে তিনি ইস্রায়েলের লোকেদেরে কাছে একটি বাক্য ঘোষণা করেছেন; যখন তিনি যীশু খ্রীষ্টের মাধ্যমে শান্তির সুসমাচার প্রচার করেছেন; যিনি সকলের প্রভু।
\v 37 আপনারা সকলে এই ঘটনা জানেন, যা যোহনের দ্বারা প্রচারিত বাপ্তিস্মের পর গালীল থেকে শুরু হয়ে সমগ্র যিহুদিয়াতে ছড়িয়ে পড়ল;
\v 38 ফলত: নাসরতীয় যীশুর কথা, কীভাবে ঈশ্বর তাঁকে পবিত্র আত্মাতে ও শক্তিতে অভিষেক করেছিলেন ; ভালো কাজ করে বেড়াতেন, এবং শয়তান দ্বারা পীড়িত সমস্ত লোককে সুস্থ করতেন; কারণ ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে ছিলেন l
\s5
\v 39 আর তিনি যিহুদিদের জনপদে ও যিরুশালেমে যা যা করেছেন, সেই সকলের সাক্ষী; আবার লোকে তাঁকে গাছে টাঙিয়ে হত্যা করল l
\v 40 তাঁকে ঈশ্বর তৃতীয় দিনে ওঠালেন, প্রমান করে দেখালেন সমস্ত লোকের কাছে এমন নয়,
\v 41 কিন্তু পূর্বে ঈশ্বরের দ্বারা মনোনীত সাক্ষীদের, অর্থাৎ আমাদের দেখা দিলেন, আর আমরা মৃতদের মধ্য থেকে তাঁর পুনরুত্থান হলে পর তাঁর সঙ্গে ভোজন ও পান করেছি l
\s5
\v 42 আর তিনি আদেশ করলেন, যেন আমরা লোকদের কাছে প্রচার করি ও সাক্ষ্য দিই যে, তাঁকে ঈশ্বর জীবিত ও মৃতদের মধ্যে বিচারকর্তা নিযুক্ত করেছেন l
\v 43 তাঁর পক্ষে ভবিষ্যৎ বক্তারা সকলে এই সাক্ষ্য দেন, যেকেহ তাঁকে বিশ্বাস করে, সে তাঁর নামের গুণে পাপের ক্ষমা পাবে l
\s5
\v 44 পিতর এই কথা বলছেন ঠিক সেই সময়ে যত লোক বাক্য শুনছিল, প্রত্যেকের উপরে পবিত্র আত্মা নেমে এলেন l
\v 45 তখন পিতরের সঙ্গে আসা বিশ্বাসী ছিন্নত্বক লোক সব আর্শ্চয হলেন, কারণ পরজাতিদের উপরেও পবিত্র আত্মারূপ দান দেওয়া হলো;
\s5
\v 46 কেননা তারা তাদের নানা ভাষায় কথা বলতে ও ঈশ্বরের মহিমা কীর্তন করতে শুনলেন l
\v 47 তখন পিতর উত্তর করে বললেন, এই যে লোকেরা আমাদের মতই পবিত্র আত্মা পেয়েছ, কেউ কি এদের জলে বাপ্তিস্ম দিতে বাধা দিতে পারে?
\v 48 পরে তিনি তাদের যীশু খ্রীষ্টের নামে বাপ্তিস্ম দেবার আজ্ঞা দিলেন l তখন তারা কিছু দিন তাকে থাকতে অনুরোধ করলেন l
\s5
\c 11
\p
\v 1 পরে প্রেরিতেরা এবং যিহুদিয়ার ভাইয়েরা শুনতে পেলেন যে, অন্যজাতির লোকেরাও ঈশ্বরের কথা গ্রহণ করেছে।
\v 2 আর যখন পিতর যিরুশালেমে এলেন, তখন ছিন্নত্বক (যিহুদি) লোকেরা তাঁর সাথে বিরোধ করে বললেন,
\v 3 তুমি অছিন্নত্বক (অ-যিহুদি) লোকদের ঘরে গিয়েছ, ও তাদের সঙ্গে খাবার খেয়েছ।
\s5
\v 4 কিন্তু পিতর তখন তাঁদের আগের ঘটনা ভালভাবে বুঝিয়ে দিলেন,
\v 5 বললেন, 'আমি যাফো নগরে প্রার্থনা করছিলাম, এমন সময় অভিভূত অবস্থায় এক দর্শন পেলাম, দেখলাম, একটি বড় চাদরের মত কোনও পাত্র নেমে আসছে, যার চারকোণ ধরে আকাশ থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এবং সেটা আমার কাছে এলো।
\v 6 আমি সেটার দিকে একনজরে চেয়ে চিন্তা করতে লাগলাম, আর দেখলাম, তার মধ্যে পৃথিবীর গৃহপালিত পশু ও বনের পশু, সরীসৃপ ও আকাশের পাখীরা আছে;
\s5
\v 7 আর আমি একটি আওয়াজও শুনলাম, যা আমাকে বলল, ওঠ, পিতর, মারো, আর খাও।
\v 8 কিন্তু আমি বললাম, প্রভু, এমন না হোক; কেননা অপবিত্র কিংবা অশুচি কোনও জিনিসই আমার মুখের ভেতরে যায়নি।
\v 9 কিন্তু দ্বিতীয়বার আকাশ থেকে এই বাণী হলো, ঈশ্বর যা শুচি করেছেন, তুমি তাদের অশুচি বলও না।
\v 10 এমন তিনবার হলে; পরে সে সমস্ত আবার আকাশে টেনে নিয়ে গেল।
\s5
\v 11 আর দেখলাম, খুব তাড়াতাড়ি তিনজন পুরুষ, যে বাড়িতে আমরা ছিলাম, সেখানে এসে দাঁড়ালো; কৈসরিয়া থেকে আমার কাছে পাঠানো হয়েছিল।
\v 12 আর আত্মা আমাকে সন্দেহ না করে তাদের সঙ্গে যেতে বললেন। আর এই ছয়জন ভাইও আমার সঙ্গে গেলেন। পরে আমরা সেই লোকটির বাড়িতে গেলাম ।
\v 13 তিনি আমাদের বললেন যে, তিনি এক দূতের দর্শন পেয়ে ছিলেন সেই দূত তাঁর বাড়ির মধ্যে দাঁড়িয়ে বললেন, যাফোতে লোক পাঠিয়ে শিমোন, যাকে পিতর বলে, তাকে ডেকে আনো;
\v 14 সে তোমাকে এমন কথা বলবে, যার দ্বারা তুমি ও তোমার সমস্ত পরিবার মুক্তি পাবে।
\s5
\v 15 পরে আমি কথা বলতে শুরু করলে, তাদের উপরেও পবিত্র আত্মা এসেছিলেন, যেমন আমাদের উপরেও হয়েছিল।
\v 16 তাতে প্রভুর কথা আমাদের মনে পড়ল, যেমন তিনি বলেছিলেন, 'যোহন জলে বাপ্তিস্ম দিত, কিন্তু তোমরা পবিত্র আত্মার বাপ্তিস্ম পাবে।'
\s5
\v 17 সুতরাং, তারা প্রভু যীশু খ্রীস্টে বিশ্বাসী হওয়ার পর, যেমন আমাদের তেমন যখন তাঁদেরও ঈশ্বর সমান আশীর্বাদ দিলেন, তখন আমি কে যে ঈশ্বরকে বাধা দিতে পারি?
\v 18 এইসব কথা শুনে তাঁরা চুপ করে থাকলেন, এবং ঈশ্বরের গৌরব করলেন, বললেন, তা হলে তো ঈশ্বর অন্যজাতির লোকদেরও জীবনে প্রবেশের ও মন পরিবর্তনের সুযোগ করে দিয়েছেন।
\s5
\v 19 ইতি মধ্যে স্তিফানের উপলক্ষে যে তাড়না হয়েছিল, তার জন্য যারা চারিদিকে ছড়িয়ে গেল, তারা ফৈনীকিয়া, কুপ্র, ও আন্তিয়খিয়া পর্যন্ত চারিদিকে ঘুরে কেবল যিহুদিদের কাছে বাক্য [সুসমাচার] প্রচার করতে লাগল।
\v 20 কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন কুপ্রীয় ও কুরিনিয় লোক ছিল; তারা আন্তিয়খিয়াতে এসে গ্রীকদের কাছে বলল ও প্রভু যীশুর বিষয়ে সুসমাচার প্রচার করল।
\v 21 আর প্রভুর হাত তাদের ওপরে ছিল, এবং অনেক লোক বিশ্বাস করে প্রভুর কাছে ফিরল।
\s5
\v 22 পরে তাদের ব্যাপারে যিরুশালেমের মন্ডলীর লোকেরা জানতে পারল; এজন্য এরা আন্তিয়খিয়া পর্যন্ত বার্ণবাকে পাঠালেন।
\v 23 তিনি নিজে এসে ঈশ্বরের অনুগ্রহ দেখে আনন্দ করলেন; এবং সকলকে উৎসাহ দিতে লাগলেন যেন তারা সম্পূর্ণ হৃদয় দিয়ে প্রভুতে যুক্ত থাকে;
\v 24 কারণ তিনি সৎলোক এবং পবিত্র আত্মায় ও বিশ্বাসে পূর্ণ ছিলেন। আর অনেকে প্রভুতে যুক্ত হল।
\s5
\v 25 পরে তিনি শৌলের খোঁজে তার্ষে গেলেন, এবং তাঁকে পেয়ে আন্তিয়খিয়াতে আনলেন।
\v 26 আর তারা সম্পূর্ণ এক বছর পর্যন্ত মন্ডলীতে মিলিত হতেন, এবং অনেক লোককে শিক্ষা দিতেন; আর প্রথমে আন্তিয়খিয়াতেই শিষ্যেরা 'খ্রিস্টান' নামে পরিচিত হল।
\s5
\v 27 সে সময় কয়েকজন ভবিষ্যৎ বক্তা যিরুশালেম থেকে আন্তীয়খিয়াতে আসলেন।
\v 28 তাদের মধ্যে আগাব নামে একজন উঠে আত্মার দ্বারা জানালেন যে, সমস্থ পৃথিবীতে মহাদুর্ভিক্ষ হবে; সেটা ক্লৌদিয়ের শাসনকালে ঘটল।
\s5
\v 29 তাতে শিষ্যেরা, প্রতেকে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুসারে, যিহুদিয়ার ভাইদের সেবার জন্য সাহায্য পাঠাতে স্থির করলেন;
\v 30 এবং সেই মত কাজও করলেন, বার্ণবা ও শৌলের হাত দিয়ে প্রাচীনদের কাছে টাকা পাঠিয়ে দিলেন।
\s5
\c 12
\s যাকোবের হত্যা ও পিতরের মুক্তি
\p
\v 1 সেসময়ে হেরোদ রাজা মন্ডলীর কয়েক জনের ওপরে অত্যাচার করার জন্য হাত ওঠালেন।
\v 2 তিনি যোহনের ভাই যাকোবকে তলোয়ার দিয়ে হত্যা করলেন।
\s5
\v 3 তাতে যিহুদিরা খুশি হলো দেখে সে আবার পিতরকেও ধরলেন। তখন তাড়ীশুন্য (নিস্তারপর্ব) পর্বের সময় ছিল। সে তাঁকে ধরে জেলের মধ্যে রাখলেন,
\v 4 এবং তাঁকে পাহারা দেওয়ার জন্য চারজনের একটি দল, এমন চারটি সেনা দলের কাছে ছেড়ে দিলেন; মনে করলেন, নিস্তার পর্বের পরে তাঁকে লোকদের কাছে হাজির করবেন।
\s5
\v 5 এভাবে পিতর জেলের মধ্যে বন্দি থাকলেন, কিন্তু মন্ডলী তাঁর জন্য ঈশ্বরের কাছে অনবরত ভাবে প্রার্থনা করছিল।
\v 6 পরে হেরোদ যেদিন তাঁকে বাইরে আনবেন, তার আগের রাতে পিতর দুই জন সেনার মধ্যে দুটি শেকলের দ্বারা বাঁধা অবস্থায় ঘুমিয়ে ছিলেন, এবং দরজার সামনে রক্ষীরা জেলখানাটি পাহারা দিচ্ছিল।
\s5
\v 7 আর, সেই সময়, প্রভুর এক দূত তাঁর কাছে এসে দাঁড়ালেন, এবং জেলের ঘর আলোময় হয়ে গেল। তিনি পিতরকে কুক্ষিদেশে আঘাত করে জাগিয়ে বললেন, তাড়াতাড়ি ওঠো। তখন তাঁর দুহাত থেকে শেকল খুলে গেল।
\v 8 পরে তাঁকে দূত বললেন, কোমড় বাঁধ ও তোমার জুতো পর, সে তখন তাই করলো। পরে দূত তাঁকে বললেন, গায়ে কাপড় দিয়ে আমার পিছন পিছন এসো l
\s5
\v 9 তাতে তিনি বের হয়ে তার পিছন পিছন যেতে লাগলেন; কিন্তু দূতের দ্বারা যা করা হল, তা যে সত্যিই, তা তিনি বুঝতে পারলেন না, বরং মনে করলেন, তিনি স্বপ্ন দেখছেন।
\v 10 পরে তাঁরা প্রথম ও দ্বিতীয় পাহারাদারদের দল পিছনে ফেলে, লোহার দরজার কাছে আসলেন, যেখান দিয়ে শহরে যাওয়া যায়; সেই দরজার খিল খুলে গেল; তাতে তাঁরা বের হয়ে একটা রাস্তার শেষ পর্যন্ত্য গেলেন, আর তখন দূত তাঁর কাছ থেকে চলে গেলেন।
\s5
\v 11 তখন পিতর বুঝতে পেরে বললেন, এখন আমি বুঝলাম, প্রভু নিজে দূতকে পাঠালেন, ও হেরোদের হাত থেকে এবং যিহুদি লোকদের সমস্ত মনের আশা থেকে আমাকে মুক্ত করলেন।
\v 12 এই ব্যাপারে আলোচনা করে তিনি মরিয়মের বাড়ির দিকে চলে গেলেন, ইনি সেই যোহনের মা, যাকে মার্ক বলে; সেখানে অনেকে জড়ো হয়েছিল ও প্রার্থণা করছিল।
\s5
\v 13 পরে তিনি বাইরের দরজায় ধাক্কা মারলে রোদা নামের এক জন দাসী শুনতে এলো;
\v 14 এবং পিতরের গলার আওয়াজ শুনতে পেয়ে আনন্দে দরজা খুললো না, কিন্তু ভেতরে গিয়ে সংবাদ দিল, পিতর দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছেন। আর তারা তাকে বললো, তুমি পাগল, কিন্তু সে মনের জোরে বলতে লাগলো, না, এটাই ঠিক ।
\v 15 তখন তারা বলল, উনি তাঁর দূত।
\s5
\v 16 কিন্তু পিতর আঘাত করতে থাকলেন; তখন তারা দরজা খুলে তাকে দেখতে পেল ও আশ্চর্য হলো।
\v 17 তাতে তিনি হাত দিয়ে সবাইকে চুপ থাকার ইশারা করে, প্রভু কীভাবে তাঁকে জেল থেকে মুক্ত করে এনেছেন, তা তাদের কাছে খুলে বললেন, আর এও বললেন, তোমরা যাকোবকে ও ভাইদের এই সংবাদ দাও; পরে তিনি বের হয়ে অন্য জায়গায় চলে গেলেন।
\s5
\v 18 দিন হলে পরে, পিতর কোথায় বলে সেনাদের মধ্যে হইচই পড়ে গেল।
\v 19 পরে হেরোদ তাঁর খোঁঁজ না পাওয়াতে রক্ষীদের জিজ্ঞাসা করে তাদের মৃত্যুদন্ড দেওয়ার আদেশ দিলেন এবং যিহুদিয়া থেকে চলে গিয়ে কৈসরিয়াতে বসবাস করলেন।
\s5
\v 20 আর তিনি সোরীয় ও সীদোনীয়দের উপরে খুবই রেগে ছিলেন, কিন্তু তারা একমত হয়ে তার কাছে আসল, এবং রাজার ঘুমানোর ঘরের প্রধান ভারপ্রাপ্ত ব্লাস্তকে নিজের পক্ষে টেনে মিলন করার অনুরোধ করলেন, কারণ রাজার দেশ থেকে তাদের দেশে খাবার সামগ্রী আসত।
\v 21 তখন এক নির্দিষ্ট দিনে হেরোদ রাজার পোশাক পরে সিংহাসনে বসে তাদের কাছে ভাষণ দেন।
\s5
\v 22 তখন জনগণ জোরে চিৎকার করে বলল, এটা দেবতার আওয়াজ, মানুষের না।
\v 23 আর প্রভুর এক দূত সেই মুহুর্তে তাকে আঘাত করলেন, কেননা তিনি ঈশ্বরকে গৌরব দিলেন না; আর তার দেহ পোকা-মাকড় খেয়ে ফেলাতে মৃত্যু হল।
\s5
\v 24 কিন্তু ঈশ্বরের বাক্য চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ল ও অনেক লোক বিশ্বাস করতে থাকল।
\v 25 আর বার্ণবা ও শৌল আপনাদের সেবার কাজ শেষ করার পরে যিরুশালেম থেকে চলে গেলেন; যোহন, যাঁকে মার্কও বলে, তাঁকে সঙ্গে নিলেন।
\s5
\c 13
\s সুসমাচার প্রচারের জন্য পৌলের প্রথম যাত্রা
\p
\v 1 আন্তিয়খিয়ার মন্ডলীতে বার্ণবা, শিমোন, যাঁকে নীগের বলা হত কুরীনীয় লুকিয়, মনহেম, যিনি হেরোদ রাজার সঙ্গে বড় হয়েছিলেন, এবং শৌল, নামে কয়েক জন ভাববাদী ও শিক্ষক ছিলেন l
\v 2 তাঁরা প্রভুর আরাধনা ও উপবাস করছিলেন, এমন সময় পবিত্র আত্মা বললেন, আমি বার্ণবা ও শৌলকে যে কাজের জন্য ডেকেছি, সেই কাজ ও আমার জন্য এদের পৃথক কর l
\v 3 তখন তাঁরা উপবাস ও প্রার্থনা সহকারে তাঁদের উপরে হাত রাখলেন (হস্তার্পণ)ও তাঁদের বিদায় জানালেন l
\s5
\v 4 এই ভাবে পবিত্র আত্মা তাঁদের সিলূকিয়াতে পাঠালেন এবং সেখান থেকে জাহাজে করে কুপ্রে গেলেন l
\v 5 তাঁরা সালোমীতে উপস্থিত হলেন এবং সেখানে যিহূদিদের সমাজ ঘরে ঈশ্বরের কথা প্রচার করতে লাগলেন; এবং যোহন (মার্ক) তাঁদের সহকারী রূপে যোগ দেন।
\s5
\v 6 তাঁরা সমস্ত দ্বীপ ঘুরে পাফঃ শহরে উপস্থিত হলেন l সেখানে তাঁরা একজন যিহূদি যাদুকর ও ভন্ড ভাববাদী কে দেখতে পেলেন,তাঁর নাম বর্-যীশু;
\v 7 সে রাজ্যপাল সের্গিয় পৌলের সঙ্গে ছিল; তিনি একজন বুদ্ধিমান লোক l তিনি বার্ণবা ও শৌলকে কাছে ডাকলেন ও ঈশ্বরের কথা শুনতে চাইলেন l
\v 8 কিন্তু ইলুমা, সেই যাদুকর (মায়াবী), অনুবাদ করলে এই তার নামের অর্থ হয় l এবং সে রাজ্যপালকে বাধা দিচ্ছিল যেন তিনি ঈশ্বরের উপর বিশ্বাস না করেন l
\s5
\v 9 কিন্তু শৌল, যাকে পৌল বলা হয়, তিনি পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে তাঁর দিকে একভাবে তাকিয়ে বললেন,
\v 10 সমস্ত ছলচাতুরিতে ও মন্দ অভ্যাসে পূর্ণ, দিয়াবলের (শয়তান) সন্তান, ধার্মিকতার শত্রু, তুমি প্রভুর সোজা পথকে বাঁকা করতে কি থামবে না ?
\s5
\v 11 এখন দেখ, প্রভুর হাত তোমার উপরে আছে, তুমি অন্ধ হয়ে যাবে, কিছুদিন সূর্য্য দেখতে পাবে না। আর সঙ্গে সঙ্গে তাঁর উপর এক গভীর অন্ধকার নেমে এলো, তার ফলে সে হাত ধরে চালানোর লোকের খোঁজ করতে এদিক ওদিক চলতে লাগল l
\v 12 তখন রাজ্যপাল সেই ঘটনা ও প্রভুর উপদেশ শুনে আশ্চর্য হলেন এবং বিশ্বাস করলেন l
\v 13 পৌল ও তাঁর সঙ্গীরা পাফঃ থেকে জাহাজে করে পাম্ফুলিয়ার পর্গা শহরে উপস্তিত হলেন l তখন যোহন (মার্ক) তাদের পরিত্যাগ করলেন ও যিরূশালেমে ফিরে গেলেন l
\v 14 কিন্তু তাঁরা পর্গা থেকে এগিয়ে পিষিদিয়ার আন্তিয়খিয়ায় উপস্থিত হলেন; এবং বিশ্রামবারে (সপ্তাহের শেষ দিন) তাঁরা সমাজঘরে গিয়ে বসলেন।
\v 15 ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের বই পাঠ সমাপ্ত হলে পর সমাজ ঘরের নেতারা তাঁদের ডাকলেন, এবং বললেন ভাইয়েরা, লোকেদের কাছে শিক্ষা দেওয়ার যদি কিছু থাকে আপনারা বলুন l
\s5
\v 16 তখন পৌল দাঁড়িয়ে হাত নেড়ে বলতে লাগলেন, হে ইস্রায়েলের লোকেরা, হে ঈশ্বরের ভয়কারীরা, শুনুন l
\v 17 এই ইস্রায়েল জাতির ঈশ্বর আমাদের পূর্বপুরুষদের মনোনীত করেছেন, এবং এই জাতি যখন মিশর দেশে প্রবাস করছিল, তখন তাদের কে উন্নত (বংশ বৃদ্ধি) করলেন, এবং তাঁর শক্তি দিয়ে তাদেরকে বার করে আনলেন l
\v 18 আর তিনি মরুভূমিতে প্রায় চল্লিশ বছর তাঁদের আচার ব্যবহার সহ্য করলেন l
\s5
\v 19 পরে তিনি কনানের সাত জাতিকে উচ্ছেদ করলেন ও ইস্রায়েল জাতিকে সেই সমস্ত জাতির দেশ দিলেন l এইভাবে চারশো পঞ্চাশ বছর কেটে যায় l
\v 20 এর পরে শমুয়েল ভাববাদীর সময় পর্যন্ত তাদের কয়েকজন বিচারক দিলেন l
\s5
\v 21 তার পরে তারা একজন রাজা চাইল, তারফলে ঈশ্বর তাদের চল্লিশ বছরের জন্য বিন্যামীন বংশের কীশের ছেলে শৌলকে দিলেন l
\v 22 পরে তিনি তাঁকে সরিয়ে তাদের রাজা হবার জন্য দায়ূদকে উৎপন্ন করলেন, যাঁর বিষয়ে তিনি সাক্ষ্য দিয়ে বললেন, 'আমি যিশয়ের পুত্র দায়ূদকে পেয়েছি, সে আমার মনের মত লোক, সে আমার সমস্ত ইচ্ছা পালন করবে l
\s5
\v 23 তাঁর বংশ থেকেই ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা অনুযায়ী ইস্রায়েলের জন্য এক উদ্ধার কর্তাকে, যীশুকে উপস্থিত করলেন;
\v 24 তাঁর আসার আগে যোহন সমস্ত ইস্রায়েল জাতির কাছে মন পরিবর্তনের বাপ্তিস্মের কথা প্রচার করেছিলেন l
\v 25 এবং যোহনের কাজ যখন শেষ হয়ে এসেছিল, তিনি বলতেন, আমি কে, তোমরা কী মনে কর? আমি সেই খ্রীস্ট নই l কিন্তু দেখ, আমার পরে এমন এক ব্যক্তি আসছেন, তাঁর জুতোর ফিতে খোলার যোগ্যতাও আমার নেই l
\s5
\v 26 হে ভাইয়েরা, অব্রাহামের বংশধরেরা, ও তোমরা যত লোক ঈশ্বরকে ভয় কর, আমাদের কাছেই এই পরিত্রানের বাক্য পাঠানো হয়েছে l
\v 27 কেননা যিরুশালেমের অধিবাসীরা এবং তাদের নেতারা তাঁকে চিনতে পারেনি এবং ভাববাদীদের যে সমস্ত বাক্য বিশ্রামবারে পড়া হয়, সেই কথা তাঁরা বুঝতে পারেনি, কিন্তু তাঁকে শাস্তি দিয়ে সেসব বাক্য সফল করেছে l
\s5
\v 28 এবং প্রাণদন্ডের কোন দোষ না পেলেও তারা পিলাতের কাছে দাবি জানালো, যেন তাঁকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয় l
\v 29 তাঁর বিষয়ে যা কিছু লেখা হয়েছিল, সেগুলো সিদ্ধ হলে তাঁকে ক্রুশ থেকে নামিয়ে কবর দেওয়া হয় l
\s5
\v 30 কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করলেন l
\v 31 আর যারা তাঁর সঙ্গে গালীল থেকে যিরূশালেমে এসেছিলেন, তাঁদের তিনি অনেকদিন পর্যন্ত্ দেখা দিলেন; তাঁরাই এখন সমস্ত মানুষের কাছে তাঁর সাক্ষী।
\s5
\v 32 তাই আমরা আপনাদের কাছে এই শুভ সংবাদ জানাচ্ছি যা, ঈশ্বর আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে করেছিলেন যে,
\v 33 ঈশ্বর যীশুকে জীবিত করে আমাদের সন্তানদের পক্ষে তাঁর প্রতিজ্ঞা সম্পূর্ণ করেছেন, যেমন দ্বিতীয় গীতেও লেখা আছে,"তুমি আমার পুত্র, আজ আমি তোমাকে জন্ম দিয়েছি l"
\v 34 আর তিনি যে তাঁকে মৃতদের মধ্য থেকে জীবিত করেছেন এবং তাঁর দেহ যে আর কখনোও ক্ষয় হবে না, এই বিষয়ে ঈশ্বর বলেছেন,"আমি তোমাদের দায়ূদের পবিত্র ও নিশ্চিত আশীর্বাদ গুলো দেব" l
\s5
\v 35 এই জন্য তিনি অন্য গীতেও বলেছেন, "তুমি তোমার সাধু কে ক্ষয় দেখতে দেবে না" l
\v 36 দায়ূদ, তাঁর লোকেদের মধ্যে ঈশ্বরের ইচ্ছা পালন করলেন ও মারা গেলেন, এবং তাঁকে পিতৃপুরুষদের কাছে কবর দেওয়া হলো ও তাঁর দেহ ক্ষয় পেল l
\v 37 কিন্তু ঈশ্বর যাঁকে জীবিত করেছেন, তিনি ক্ষয় দেখেননি l
\s5
\v 38 সুতরাং হে আমার ভাইয়েরা, আপনাদের জানা দরকার যে, এই ব্যক্তির মাধ্যমেই পাপ ক্ষমার বিষয়ে জানানো হচ্ছে;
\v 39 আর মোশির ব্যবস্থা দিয়ে আপনারা পাপের ক্ষমা পাননি, কিন্তু যে কেউ সেই ব্যক্তিকে বিশ্বাস করবে সে পাপের ক্ষমা লাভ করবে l
\s5
\v 40 তাই সাবধান হোন, ভাববাদীরা যা বলে গেছেন তা যেন আপনাদের জীবনে না ঘটে,
\v 41 "হে অবাধ্যরা, দেখ আর অবাক হও; কারণ তোমাদের সময়ে আমি এমন কাজ করব যে, সেই সব কাজের কথা যদি কেউ তোমাদের বলে, তবুও তোমরা বিশ্বাস করবে না l"
\s5
\v 42 পৌল ও বার্ণবা সমাজ-ঘর ছেড়ে যাওয়ার সময়, লোকেরা তাঁদের অনুরোধ করলেন, যেন তাঁরা পরের বিশ্রামবারে এই বিষয়ে আরোও কিছু বলেন l
\v 43 সমাজ-ঘরের সভা শেষ হবার পর অনেক যিহূদী ও যিহূদী ধর্মাবলম্বী ভক্ত লোকেরা পৌল ও বার্ণবার সঙ্গে সঙ্গে গেল; তাঁরা তাদের সঙ্গে কথা বললেন, ও ঈশ্বরের অনুগ্রহে স্থির থাকতে বললেন l
\s5
\v 44 পরের বিশ্রামবারে শহরের প্রায় সমস্ত লোক প্রভুর কথা শুনতে সমবেত হলো l
\v 45 কিন্তু যিহূদীরা লোকের সমাবেশ দেখে হিংসায় পূর্ণ হল, এবং নিন্দা করতে করতে পৌলের কথায় প্রতিবাদ করতে লাগল l
\s5
\v 46 কিন্তু পৌল ও বার্ণবা সাহসের সঙ্গে উত্তর দিলেন ও বললেন, প্রথমে তোমাদের কাছে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করা উচিৎ; কিন্তু তোমরা এই বিষয়টিকে অগ্রাহ্য করছ, আর নিজেদের অনন্ত জীবনের অযোগ্য মনে করছ, তাই আমরা অযিহূদীদের কাছে যাব l
\v 47 কারণ প্রভু আমাদের এমনই আদেশ দিয়েছেন, "আমি তোমাকে সমস্ত জাতির কাছে আলোর মত করেছি, যেন তুমি পৃথিবীর সমস্ত মানুষের কাছে পরিত্রান স্বরূপ হও l"
\s5
\v 48 এই কথা শুনে অন্য জাতির লোকেরা খুশি হল, এবং ইশ্বরের বাক্যের প্রসংশা করতে লাগলো; ও যারা অনন্ত জীবনের জন্য মনোনীত হয়েছিল, তারা বিশ্বাস করল l
\v 49 এবং প্রভুর সেই বাক্য ঐ অঞ্চলের সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল l
\s5
\v 50 কিন্তু যিহূদীরা ভক্ত ভদ্র মহিলা ও শহরের প্রধান নেতাদের উত্তেজিত করে, পৌল ও বার্ণবার উপর অত্যাচার শুরু করল, আর নিজেদের অঞ্চল থেকে তাঁদের তাড়িয়ে দিল l
\v 51 তখন তাঁরা সেই লোকেদের বিরুদ্ধে পায়ের ধুলো ঝেড়ে ফেলে ইকনিয়ে গেলেন l
\v 52 এবং শিষ্যরা আনন্দে ও পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হতে থাকলেন l
\s5
\c 14
\s বিভিন্ন স্থানে সুসমাচার প্রচার l
\p
\v 1 এরপরে পৌল ও বার্ণবা ইকনিয়ে যিহূদীদের সমাজ -ঘরে প্রবেশ করলেন, এবং এমন স্পষ্ট ভাবে কথা বললেন যে, যিহূদী ও গ্রীকদের মধ্যে অনেকে বিশ্বাস করল l
\v 2 কিন্তু যে যিহূদীরা অবাধ্য হলো, তারা ভাইদের বিরুদ্ধে অন্য জাতির লোকেদের উত্তেজিত ও ক্ষেপিয়ে তুলল l
\s5
\v 3 এই ভাবে তাঁরা আরোও অনেকদিন সেখানে ছিলেন, এবং সাহসের সঙ্গে প্রভুর কথা বলতেন; আর তিনি প্রভুর অনুগ্রহের কথা বলতেন, এবং প্রভুও তাঁদের মাধ্যমে বিভিন্ন আশ্চর্য কাজ করতেন l
\v 4 এর ফলে শহরের লোকেরা দু-ভাগে ভাগ হলো, একদল যিহূদীদের আর একদল প্রেরিতদের পক্ষ নিল l
\s5
\v 5 তখন অন্য জাতির ও যিহূদীদের কিছু লোকেরা তাদের নেতাদের সঙ্গে এক হয়ে, তাঁদের অপমান ও পাথর মারার পরিকল্পনা করল l
\v 6 তাঁরা তাদের পরিকল্পনা বুঝতে পেরে লুকায়নিয়ার লুস্ত্রা ও দর্বী শহরে এবং তার চারপাশের অঞ্চলে পালিয়ে গেলেন;
\v 7 আর সেখানে তাঁরা সুসমাচার প্রচার করতে লাগলেন l
\s5
\v 8 লুস্ত্রায় একজন ব্যক্তি বসে থাকতেন, তার দাঁড়ানোর কোনোও শক্তি ছিল না, সে জন্ম থেকেই খোঁড়া, কখনোও হাঁটা চলা করেনি l
\v 9 সেই ব্যক্তি পৌলের কথা শুনছিলেন; তিনি তার দিকে একভাবে তাকালেন, ও দেখতে পেলেন সুস্থ হবার জন্য তার বিশ্বাস আছে, তিনি উঁচু স্বরে তাকে বললেন,
\v 10 তোমার পায়ে ভর দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াও; তবে সে লাফ দিয়ে দাঁড়াল ও হাঁটতে লাগলো l
\s5
\v 11 পৌল যা করলেন, তা দেখে লোকেরা লুকানীয় ভাষায় উঁচু স্বরে বলতে লাগল, দেবতারা মানুষ রূপ নিয়ে আমাদের মধ্যে এসেছে l
\v 12 তারা বার্ণবাকে দ্যুপিতর (জিউস), এবং পৌলকে মর্কুরিয় (হারমেশ) বলল, কারণ পৌল প্রধান বক্তা ছিলেন l
\v 13 এবং শহরের সামনে দ্যুপিতরের যে মন্দির ছিল, তার যাজক (পুরোহিত) কয়েকটা ষাঁড় ও মালা নিয়ে শহরের মূল দরজার সামনে লোকেদের সঙ্গে বলিদান করতে চাইল l
\s5
\v 14 কিন্তু প্রেরিতেরা, বার্ণবা ও পৌল, এ-কথা শুনে তাঁরা নিজের বস্ত্র ছিড়লেন, এবং দৌড়ে বাইরে গিয়ে লোকেদের উদ্দ্যেশে বললেন,
\v 15 মহাশয়েরা, এমন কেন করছেন? আমরাও আপনাদের মত সুখদুঃখভোগী মানুষ; আমরা আপনাদের এই সুখবর জানাতে এসেছি যে, এই সব অসার বস্তু থেকে জীবন্ত ঈশ্বরের কাছে আসুন, যিনি আকাশ, পৃথিবী, সমুদ্র, ও সমুদ্রের মধ্যে যা কিছু আছে সে সমস্তই সৃষ্টি করেছেন l
\v 16 তিনি অতীতে পুরুষ পরম্পরা অনুযায়ী সমস্ত জাতিকে তাদের ইচ্ছা মত চলতে দিয়েছেন;
\s5
\v 17 কিন্তু তবুও তিনি নিজেকে প্রকাশিত রাখলেন, তিনি মঙ্গল করেছেন, আকাশ থেকে আপনাদের বৃষ্টি এবং ফল উৎপন্নকারী ঋতু দিয়ে ফসল দিয়েছেন ও আনন্দে আপনাদের হৃদয় পরিপূর্ণ করেছেন l
\v 18 এই সব কথা বলে তাঁরা অনেক কষ্টে সৃষ্টে তাঁদের উদ্দেশ বলি উৎসর্গ করা থেকে লোকেদের থামালেন l
\s5
\v 19 কিন্তু আন্তিয়খিয়া ও ইকনিয় থেকে কয়েকজন যিহূদী এলো; তারা লোকেদের ইন্ধন দিল, এবং লোকেরা পৌলকে পাথর মারলো, এবং তাঁকে শহরের বাইরে টেনে নিয়ে গেল, কারণ তারা মনে করল, তিনি মারা গাছেন l
\v 20 কিন্তু শিষ্যরা তাঁর চারিদিকে দাঁড়াতে তিনি উঠে শহরের মধ্যে প্রবেশ করলেন l পরে তিনি বার্ণবার সঙ্গে দর্বীতে চলে গেলেন l
\s5
\v 21 তাঁরা সেই শহরে সুসমাচার প্রচার করলেন এবং অনেক লোক প্রভুর শিষ্য হলো l তাঁরা লুস্ত্রা থেকে ইকনিয়ে, ও আন্তিয়খিয়ায় ফিরে গেলেন;
\v 22 তাঁরা সেই অঞ্চলের শিষ্যদের মনে শক্তি যোগালেন, এবং তাদের ভরসা দিলেন, যেন তারা বিশ্বাসে স্থির থাকে l এবং তাঁরা তাদের বললেন আমাদের অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে হবে l
\s5
\v 23 আর তাঁরা তাদের জন্য প্রত্যেক মন্ডলীতে প্রাচীনদের নিয়োগ করলেন, এবং উপোস ও প্রার্থণা করলেন, এবং যারা প্রভুকে বিশ্বাস করেছিলেন তাদের প্রভুর হাতে সমর্পণ করলেন l
\v 24 পরে তাঁরা পিষিদিয়ার মধ্যে দিয়ে পাম্ফুলিয়ায় পৌঁছালেন l
\v 25 এর পরে তাঁরা পর্গাতে ঈশ্বরের বাক্য প্রচার করে আত্তালিয়াতে চলে গেলেন;
\v 26 এবং সেখান থেকে জাহাজে করে আন্তিয়খিয়ায় চলে গেলেন, যে কাজ তাঁরা শেষ করলেন, সেই কাজের জন্য বিশ্বাসীরা তাঁদের এই স্থানেই প্রভুর অনুগ্রহের কাছে নিজেদের সমর্পণ করেছিলেন l
\s5
\v 27 তাঁরা যখন ফিরে আসলেন, ও মন্ডলীকে এক করলেন, এবং ঈশ্বর তাঁদের দিয়ে যে সমস্ত কাজ করেছিলেন ও কিভাবে অন্য জাতির লোকেদের জন্য বিশ্বাসের দরজা খুলে দিয়েছেন, সেসব কথা তাদের বিস্তারিত জানালেন l
\v 28 পরে তাঁরা শিষ্যদের সঙ্গে অনেকদিন সেখানে থাকলেন l
\s5
\c 15
\s খ্রীষ্টীয় মন্ডলীতে যিহুদী ও ভিন্নজাতীয়দের সমতার মীমাংসা l
\p
\v 1 পরে যিহুদিয়া থেকে কয়েক জন লোক এসে ভাইদের শিক্ষা দিতে লাগল যে, তোমরা যদি মোশির নিয়ম অনুযায়ী ত্বকছেদ না হও তবে মুক্তি (পরিত্রান) পাবে না l
\p
\v 2 আর তাদের সঙ্গে পৌলের ও বার্নবার এর অনেক তর্কাতর্কি ও বাদানুবাদ হলে ভাইয়েরা স্থির করলেন, সেই তর্কের মীমাংসার জন্য পৌল ও বার্ণবা, এবং তাদের আরোও কয়েক জন যিরুশালেমে প্রেরিতদের ও প্রাচীনদের কাছে যাবেন l
\v 3 অতএব মন্ডলী তাদের পাঠিয়ে দিলেন এবং তারা ফৈনিকিয়া ও শমরিয়া দেশ দিয়ে যেতে যেতে ভিন্নজাতীয়দের পরিবর্তনের বিষয় বললেন, এবং সব ভাইয়েরা পরম আনন্দিত হলো l
\p
\v 4 যখন তারা য়িরুশালেমে পৌঁছলেন মন্ডলী, প্রেরিতগন ও প্রাচিনরা তাদের গ্রহণ করলেন এবং ঈশ্বর তাঁদের সঙ্গে থেকে যে কাজ করেছেন সে-সকলই বললেন l
\v 7 অনেক তর্কযুদ্ধ হওয়ার পর পিতর উঠে দাঁড়িয়ে তাদের বললেন - ' হে ভাইগন, তোমরা জানো যে, অনেক দিন আগে ঈশ্বর তোমাদের মধ্যে আমাকে মনোনীত করেছেন, যেন আমার মুখ থেকে ভিন্নজাতীয়রা সুসমাচারের বাক্য শুনে এবং বিশ্বাস করে l
\p
\v 8 ঈশ্বর, যিনি হৃদয়ের অন্তঃকরণ জানেন, তিনি তাদের পক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন, আমাদের যেমন, তাদেরকেও তেমনি পবিত্র আত্মা দান করেছেন;
\p
\v 9 এবং আমাদের ও তাদের মধ্যে কোনোও বিশেষ বিভেদ রাখেননি, বিশ্বাস দ্বারা তাদের হৃদয় পবিত্র করেছেন l
\v 12 তখন সকলে চুপ করে থাকলো, আর বার্নাবার ও পৌলের মাধ্যমে ভিন্নজাতিদের মধ্যে ঈশ্বর কী কী চিহ্ন কার্য ও অদ্ভুত লক্ষণ সাধন করেছেন, তাঁর বিবরণ তাদের কাছ থেকে শুনছিল l
\v 22 তখন প্রেরিতরা এবং প্রাচীনরা আগের সমস্ত মন্ডলীর সাহায্যে, নিজেদের মধ্য হইতে মনোনীত কোনো কোনো লোককে, অর্থাৎ বার্শব্বা নামে পরিচিত যিহুদা এবং সীল, ভাইদেরর মধ্যে পরিচিত এই দুইজনকে পৌল ও বার্নবার সঙ্গে আন্তিয়খিয়ায় পাঠাতে উপযুক্ত বুঝলেন;
\p
\v 23 এবং তাঁদের হাতে এইরকম লিখে পাঠালেন - ' আন্তিয়খিয়া, সুরিয়া ও কিলিকিয়াবাসী ভিন্নজাতীয় ভাই সকলের কাছে প্রেরিতদের ও প্রাচীনদের, ভাইদের মঙ্গলবাদ l
\v 24 আমরা শুনতে পেয়েছি যে, আমরা যাদের কোনোও আজ্ঞা দেইনি, এমন কিছু ব্যক্তি আমাদের ভেতর থেকে গিয়ে কথার মাধ্যমে তোমাদের প্রাণ চঞ্চল করে তোমাদের চিন্তিত করে তুলেছে l
\p
\v 25 এই জন্য আমরা একমত হয়ে কিছু লোককে মনোনীত করেছি,
\p
\v 26 এবং আমাদের প্রিয় যে বার্ণবা ও পৌল আমাদের প্রভু যীশু খ্রীষ্টের নামের জন্য মনে প্রাণে চেষ্টা করেছেন, তাদের সঙ্গে ওদের তোমাদের কাছে পাঠাতে উপযুক্ত মনে করলাম l
\v 27 অতএব যিহুদা ও সীলকেও পাঠিয়ে দিলাম এরাও তোমাদের সেই সকল বিষয় বলবেন l
\p
\v 28 কারণ পবিত্র আত্মার এবং আমাদের এটাই ভালো বলে মনে হলো, যেন এই কয়েকটা প্রয়োজনীয় বিষয় ছাড়া তোমাদের ওপর কোনো ভার না দিই,
\p
\v 29 ফলে প্রতিমার প্রসাদ এবং রক্ত ও গলা টিপে মারা প্রাণীর মাংস ও বাভিচার হতে দুরে থাকা তোমাদের উচিত; এই সব থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখলে তোমাদের মঙ্গল হবে l তোমাদের মঙ্গল হোক l'
\v 36 কিছুদিন পর পৌল বার্নবাকে বললেন, চল আমরা যে সব শহরে প্রভুর বাক্য প্রচার করেছিলাম, সেই সব শহরে ফিরে গিয়ে ভাইদেরকে পরিচর্যা করি, এবং দেখি তারা কেমন আছে l
\p
\v 37 আর বার্ণবা চাইলেন, যোহন, যাঁহাকে মার্ক বলে তাঁকেও সঙ্গে নিয়ে যাবেন l
\p
\v 38 কিন্তু পৌল ভাবলেন যে ব্যক্তি পাম্ফুলিয়াতে তাদের ছেড়ে চলে গিয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে পুনরায় কাজে যায়নি সেই মার্ককে সঙ্গে নেওয়া ঠিক হবে নাl
\v 39 তখন তাদের মধ্যে মনের অমিল হলো, সুতরাং তারা পরস্পর ভাগ হয়ে গেল; এবং বার্ণবাস মার্ককে সঙ্গে নিয়ে জাহাজে করে কুপ্রে গেলেন;
\p
\v 40 কিন্তু পৌল সিলকে মনোনীত করে এবং ভাইদেরর দ্বারা প্রভুর অনুগ্রহে সমর্পিত হয়ে বিদায় নিলেন l
\p
\v 41 এবং তিনি সুরিয়া ও কিলিকিয়া দিয়ে যেতে যেতে মন্ডলীকে সুস্থির ও শক্তিশালী করলেন l
\s5
\c 16
\p
\v 1 পরে তিনি দর্বীতও লুস্ত্রায় পৌঁছোলেন, এবং দেখ সেখানে তিমথিয় নামক এক শিষ্য ছিলেন; তিনি এক বিশ্বাসিনী যিহুদী মহিলার ছেলে কিন্তু তাঁর বাবা ছিলেন গ্রীক l
\p
\v 2 লুস্ত্রা ও ইকনিয বসবাসকারী ভাইবোন তাঁর সম্পর্কে ভালো সাক্ষ্য দিতl
\p
\v 3 পৌল চাইল যেন এই ব্যক্তি তাঁর সঙ্গে যান; সুতরাং তিনি তাঁকে নিয়ে যিহুদিদের মতই ত্বকছেদ করলেন, কারণ সবাই জানত যে তার পিতা গ্রীক l
\v 9 রাত্রিতে পৌল এক দর্শন পেলেন; এক মাকিদনীয় পুরুষ অনুরোধের সঙ্গে টানে বলছেন, মাকিদনিয়াতে এসে আমাদের সাহায্য করুন l
\p
\v 10 তিনি সেই দর্শন পাওয়ার সাথে সাথে আমরা মাকিদনিয়া দেশে যেতে প্রস্তুুত হলাম, কারণ আমরা বুঝলাম তাদের মধ্যে সুসমাচর প্রচারের জন্য ঈশ্বর আমাদের ডেকেছেন l
\v 11 আমরা ত্রোয়া থেকে জলপথ ধরে সোজা পথে সাম্থ্রাকিতে, এবং পরের দিন নিয়াপলিতে পৌঁছোলাম l
\p
\v 12 সেখান থেকে ফিলিপীতে গেলাম; এটি মাকিদনিয়ার ঐ ভাগের প্রথম শহর এবং রোমীয়দের বসবাস(উঅপনিবেশ) l আমরা এই শহরে কিছুদিন ছিলাম l
\p
\v 13 আর বিশ্রামবারে শহরের প্রধান দরজার বাইরে নদীতীরে গেলাম, মনে করলাম সেখানে প্রার্থনার জায়গা আছে; আমরা সেখানে বসে একদল স্ত্রীলোক যারা এসেছিল তাদের সঙ্গে কথা বললাম l
\v 14 আর থুয়াতিরা শহরে লুদিয়া নামে এক ঈশ্বর ভক্ত স্ত্রীলোক, যিনি বেগুনে কাপড় বিক্রি করতেন তিনি আমাদের কথা শুনছিলেন l প্রভু তাঁর হৃদয় খুলে দিলেন যেন তিনি পৌলের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন l
\p
\v 15 তিনি ও তাঁর পরিবার বাপ্তাইজিত হওয়ার পর তিনি অনুরোধ করে বললেন, আপনারা যদি আমাকে প্রভুতে বিস্বাসীনী বলে বিবেচনা করেন তবে আমার বাড়িতে এসে থাকুন এবং তিনি আমাদের যত্নের সহিত নিয়ে গেলেন l
\v 16 এক দিন আমরা সেই প্রার্থনার জায়গায় যাচ্ছিলাম, সেই সময় মন্দ আত্মায় পূর্ণ এক দাসী (যুবতী নারী) আমাদের সামনে পড়ল, সে ভবিষৎ বাক্যের মাধ্যমে তার কর্তাদের অনেক লাভ করিয়ে দিত l
\p
\v 17 সে পৌলের এবং আমাদের পিছন চলতে চলতে চেঁচাইয়া বলতে লাগল এই ব্যক্তিরা হলো ঈশ্বরের দাস, এরা তোমাদের পরিত্রাণের পথ বলছেন l
\p
\v 18 সে অনেক দিন পর্যন্ত এইরকম করতে থাকলো l কিন্তু পৌল বিরক্ত হয়ে মুখ ফিরিয়ে সেই আত্মাকে বললেন, আমি যীশু খ্রীষ্টের নামে তোমাকে আজ্ঞা দিচ্ছি, এর মধ্য থেকে বের হও l তাতে সেই সময়ই সে বের হয়ে গেল l
\v 27 তাতে জেল রক্ষকের ঘুম ভেঙ্গে গেল এবং জেলের দরজাগুলি খুলে গেছে দেখে নিজের খড়্গ বের করে নিজেকেই মারার জন্য প্রস্তুত হলো, সে ভেবেছিল বন্দিরা সকলে পালিয়েছে l
\p
\v 28 কিন্তু পৌল চিৎকার করে ডেকে বললেন, নিজের প্রাণ নষ্ট করো না, কারণ আমরা সকলেই এখানে আছি l
\v 37 কিন্তু পৌল তাদেরকে বললেন, তারা আমাদের বিচারে দোষী না করে সবার সামনে মেরে জেলের ভিতর জেলখানায় ঢুকিয়ে দিয়েছিলো, আমরা তো রোমীয় লোক, এখন কি গোপনে আমাদেরকে বের করে দিচ্ছেন ? তা হবে না; তারা নিজেরাই এসে আমাদেরকে বাইরে নিয়ে যাক l
\p
\v 38 যখন রক্ষীরা বিচারককে এই সংবাদ দিল l তাতে তারা যে রোমীয়, একথা শুনে বিচারকরা ভিতু হলেন l
\p
\v 39 বিচারকরা তাদেরকে বিনত করলেন, এবং বাইরে নিয়ে গিয়ে শহর থেকে চলে যেতে অনুরোধ করলেন l
\v 40 তখন পৌল ও সীল জেল থেকে বের হয়ে লুদিয়ার বাড়িতে গেলেন l এবং যখন ভাইদের সঙ্গে পৌল ও সিলাস এর দেখা হলো, তাদের অশান্ত করলেন এবং চলে গেলেন l
\s5
\c 17
\s থিষলনীকীতে সুসমাচার-প্রচার l
\p
\v 1 পরে তারা আম্ফিপলি ও আপল্লোনিয়া দিয়ে গিয়ে থিষলনীকীতে আসলেন l
\v 2 সেই জায়গায় যিহূদীদের এক সমাজ গৃহ ছিল; আর পৌল তাঁর নিয়ম অনুসারে তাদের কাছে গেলেন, এবং তিনটি বিশ্রামবারে তাদের সঙ্গে শাস্ত্রের কথা নিয়ে আলোচনা করলেন, দেখালেন যে,
\s5
\v 3 খ্রীষ্টের মৃত্যুভোগ ও মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থান হওয়া জরুরি ছিল এবং এই যে যীশুর বিষয়ে আমি তোমাদের কাছে প্রচার করছি, তিনিই সেই খ্রীষ্ট l
\v 4 তাতে তাদের মধ্যে কয়েকজন সম্মতি জানালো, এবং পৌলের ও সীলের সাথে যোগ দিল; আর ভক্ত গ্রীকদের মধ্যে অনেক লোক ও অনেক প্রধান মহিলা তাদের সঙ্গে যোগ দিলেন l
\s5
\v 5 কিন্তু যিহূদীরা হিংসা করে বাজারের কয়েকজন দুষ্ট লোকদের নিয়ে একটি দল তৈরী করে শহরে গোলমাল বাঁধিয়ে দিল, এবং যাসোনের বাড়িতে হানা দিয়ে লোকদের সামনে আনার জন্য প্রেরিতদের খুঁজতে লাগল l
\v 6 কিন্তু তাদের না পাওয়ায় তারা যাসোন এবং কয়েকজন ভাইকে ধরে শহরের প্রধান এর সামনে টেনে নিয়ে গেল, চিৎকার করে বলতে লাগল, "এই যে লোকেরা সারা জগতে গোলমাল করে বেড়াচ্ছে, এরা এখানেও উপস্থিত হলো;
\v 7 যাসোন এদের আতিথ্য করেছে; আর এরা সকলে কৈসরের আইনের বিরুদ্ধাচরণ করে বলে, যীশু নামে আরও একজন রাজা আছেন l
\s5
\v 8 এই সব কথা শুনে তারা সাধারণ মানুষদের ও নগরের প্রধানকে উত্তেজিত করে তুলল l
\v 9 তখন তারা যাসোনের ও আর সকলের জরিমানা নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দিলেন l
\s5
\v 10 পরে ভাইয়েরা পৌল ও সীলকে ওই রাত্রিতেই বিরয়াতে পাঠিয়ে দিলেন l সেখানে উপস্থিত হয়ে তাড়াতাড়ি যিহূদীদের সমাজ গৃহে গেলেন l
\v 11 থিষলনীকীর যিহূদীদের থেকে এরা ভদ্র ছিল; কেননা এরা সম্পূর্ণ ইচ্ছার সঙ্গে বাক্য শুনছিল এবং সত্য কি-না তা জানার জন্য প্রতিদিন শাস্ত্র পরীক্ষা করতে লাগল l
\v 12 এর ফলে তাদের মধ্যে অনেক ভদ্র এবং গ্রীকদের মধ্যেও অনেকে সম্ভ্রান্ত মহিলা ও পুরুষ বিশ্বাস করলেন
\s5
\v 13 কিন্তু থিষীলনীর যিহূদীরা যখন জানতে পারল যে, বিরয়াতেও পৌলের মাধ্যমে ঈশ্বরের কথা প্রচার হয়েছে, তখন তারা সেখানেও এসে লোকেদের অস্থির ও উত্তেজিত করে তুলতে লাগল l
\v 14 তখন ভাইয়েরা তাড়াতাড়ি পৌলকে সুমদ্র পর্যন্ত যাওয়ার জন্য পাঠালেন; আর সীল ও তীমথিয় সেখানে থাকলেন l
\v 15 আর যারা পৌলকে সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিল, তারা আথানী পর্যন্ত্ নিয়ে গেল; পরে তোমরা সীলকে ও তীমথিয়কে অতি শীঘ্রই আমার কাছে আসতে বলবে, এই সংবাদ নিয়ে তারা চলে গেল l
\v 16 পৌল যখন তাঁদের অপেক্ষায় আথানীতে ছিলেন, তখন শহরের নানা জায়গায় প্রতিমা মূর্তি দেখে তাঁর আত্মা উতপ্ত হয়ে উঠল l
\v 17 এরফলে তিনি সমাজ ঘরে যিহূদী ও ভক্ত লোকদের কাছে এবং বাজারে প্রতিদিন যাদের সঙ্গে দেখা হত, তাদের কাছে যীশুর বিষয়ে কথা বলতেন
\s5
\v 18 আবার ইপিকুরের ও স্তোয়িকীরের কয়েকজন দার্শনিক পৌলের সাথে তর্ক-বিতর্ক করতে লাগল l আবার কেউ কেউ বলল, " এ বাচালটা কি বলতে চায়?" আবার কেউ কেউ বলল, "ওকে অন্য দেবতাদের প্রচারক বলে মনে হয়; " কারণ তিনি যীশু ও পুনরুত্থান বিষয়ে সুসমাচার প্রচার করতেন l
\s5
\v 19 পরে তারা তাঁর হাত ধরে আরেয়পাগে নিয়ে গিয়ে বলল, আমরা কি জানতে পারি, এই যে নতুন শিক্ষা আপনি প্রচার করছেন, এটা কি ধরনের?
\v 20 কারণ আপনি কিছু অদ্ভুত কথা আমাদের বলেছেন; এর ফলে আমরা জানতে চাই, এ সব কথার মানে কি l
\v 21 কারণ আথানীর সকল লোক ও সেখানকার বসবাসকারী বিদেশীরা শুধু নতুন কোনো কথা বলা বা শোনা ছাড়া অন্য কিছুতে সময় নষ্ট করত না l
\s5
\v 22 তখন পৌল আরেয়পাগের মাঝখানে দাঁড়িয়ে বললেন, "হে আথানীয় লোকেরা দেখছি, তোমরা সব বিষয়ে বড়ই দেবতাভক্ত l"
\v 23 কেননা বেড়ানোর সময় তোমাদের উপাসনার জিনিস দেখতে দেখতে একটি বেদি দেখলাম, যার উপর লেখা আছে, "অজানা দেবতার উদ্দেশ্যে " অতএব তোমরা যে অজানা দেবতার আরাধনা করছ,
\s5
\v 24 তাঁকে আমি তোমাদের কাছে প্রচার করছি l ঈশ্বর যিনি জগৎ ও তাঁর মধ্যেকার সব বস্তুু তৈরী করেছেন l তিনিই স্বর্গের ও পৃথিবীর প্রভু, সুতরাং মানুষের হাত দিয়ে তৈরী মন্দিরে বাস করেন না;
\v 25 কোনো কিছু অভাবের কারণে মানুষের সাহায্যও নেন না, তিনিই সবাইকে জীবন ও শ্বাস সবকিছুই দিয়েছেন l
\s5
\v 26 আর তিনি এক জন মানুষ থেকে মানুষের সকল জারটি উত্পন্ন, তিনি বসবাসের জন্য এই পৃথিবী দিয়েছেন; তিনি বসবাসের জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন;
\v 27 যেন তারা ঈশ্বররের খোঁজ করে, যদি কোনোও খুঁজে খুঁজে তাঁর দেখা পায়; অথচ তিনি আমাদের কারও নন থেকে দূরে নয় l
\s5
\v 28 কেননা ঈশ্বরেতেই আমাদের জীবন, গতি ও সত্তা; যেমন তোমাদের কয়েকজন কবিও বলেছেন, "কারণ আমরাও তাঁর বংশধর l"
\v 29 এর ফলে আমরা যখন ঈশ্বরের সন্তান, তখন ঈশ্বররের স্বরূপকে মানুষের শিল্প ও কল্পনা অনুসারে তৈরী সোনার কি রুপার কি পাথরের সঙ্গে তুলনা করা আমাদের উচিত নয় l
\s5
\v 30 ঈশ্বর সেই অজ্ঞানতার সময়কে উপেক্ষা করেছেন, কিন্তু এখন সব জায়গার সব মানুষ কে মন পরিবর্তন করতে আদেশ দিলেন l
\v 31 কেননা তিনি একটি দিন ঠিক করেছেন, যে দিনে নিজের মনোনীত ব্যক্তির দ্বারা পৃথিবীর লোককে বিচার করবেন; আর এইসবের বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ দিয়েছেন; ফলে মৃতদের মধ্যে থেকে তাঁকে উঠিয়েছেন l
\s5
\v 32 তখন মৃতদের পুনরুত্থানের কথা শুনে কেউ কেউ উপহাস করতে লাগল; কিন্তু কেউ কেউ বলল, আপনার কাছে এই বিষয়ে আরও একবার শুনব l
\v 33 এইভাবে পৌল তাদের কাছ থেকে চলে গেলেন l
\v 34 কিন্তু কিছু ব্যক্তি তাঁর সঙ্গ নিয়ে যীশুকে বিশ্বাস করল; তাদের মধ্যে আরেয়পাগীর দিয়নুষিয় এবং দামারি নামে আরোও কয়েকজন ছিলেন l
\s5
\c 18
\s করিন্থে সুসমাচার প্রচার
\p
\v 1 তারপর পৌল আথীনী থেকে চলে গিয়ে করিন্থে আসিলেন ।
\v 2 আর তিনি আকিল্লা নামে এক জন যিহূদীর দেখা পেলেন; তিনি জাতিতে পন্তীয়, কিছুদিন আগে নিজের স্ত্রী প্রিস্কিল্লার সাথে ইতালীয়া থেকে আসলেন, কেননা ক্লৌদিয় সমস্ত যিহূদীদের রোম থেকে চলে যাওয়ার আদেশ করেছিলেন। পৌল তাঁদের কাছে গেলেন।
\v 3 আর তিনি সম ব্যবসায়ী হওয়াতে তাঁদের সাথে বসবাস করলেন, ও তাঁরা কাজ করতে লাগলেন, কেননা তাঁরা তাঁবু তৈরীর ব্যবসায়ী ছিলেন।
\s5
\v 4 প্রত্যেক বিশ্রামবারে তিনি সমাজ-গৃহে [ধর্ম-গৃহে] বাক্য বলতেন, এবং যিহুদী ও গ্রীকদের বিশ্বাস করতে উৎসাহ দিতেন।
\v 5 যখন সীল ও তীমথিয় মাকিদনিয়া থেকে আসলেন, তখন পৌল বাক্য প্রচার করছিলেন, যীশুই যে খ্রীষ্ট, তার প্রমান যিহূদীদের দিচ্ছিলেন।
\v 6 কিন্তু তারা বিরোধ ও অপমান করাতে তিনি কাপড় ঝেড়ে তাদের বললেন, তোমাদের রক্ত তোমাদের মাথায় পড়ুক, আমি নিষ্পাপ; এখন থেকে অন্য-জাতিদের কাছে চললাম।
\s5
\v 7 পরে তিনি সেখান থেকে চলে গিয়ে তিতিয় যুষ্ঠ নামে একজন ঈশ্বর-ভক্তের বাড়িতে গেলেন, যার বাড়ি সমাজ-গৃহের [ধর্ম-গৃহের] পাশেই ছিল।
\v 8 আর ধর্মাধক্ষ্য ক্রিস্প সমস্ত পরিবারের সাথে প্রভুকে বিশ্বাস করলেন; এবং করিন্থীয়দের মধ্যে অনেক লোক শুনে বিশ্বাস করল, ও বাপ্তিস্ম নিল।
\s5
\v 9 আর প্রভু রাতে স্বপ্নের দ্বারা পৌলকে বললেন, ভয় কর না, বরং কথা বল, চুপ থেকো না;
\v 10 কারণ আমি তোমার সাথে সাথে আছি, তোমাকে হিংসা করে কেউই তোমাকে আক্রমণ করবে না; কেননা এই শহরে আমার অনেক বিশ্বাসী আছে।
\v 11 তাতে তিনি দেড় বছর বসবাস করে তাদের মধ্যে ঈশ্বরের বাক্য শিক্ষা দিলেন।
\v 12 আর গাল্লীয়ো যখন আখায়া দেশের প্রধান, তখন যিহূদীরা একসাথে পৌলের বিরুদ্ধে উঠল, ও তাঁকে বিচার সভায় নিয়ে গিয়ে বলল,
\v 13 এই ব্যক্তি ব্যবস্থার বিপরীতে ঈশ্বরের আরাধনা করতে লোকদের খারাপ বুদ্ধি দেয়।
\s5
\v 14 কিন্তু যখন পৌল মুখ খুলতে যাচ্ছিলেন, তখন গাল্লিয়ো যিহূদীদের বললেন, কোনো ব্যাপারে দোষ বা খারাপ কাজ যদি হত, তবে, হে যিহুদীরা, তোমাদের জন্য ন্যায় বিচার করা আমার কাছে যুক্তি সম্মত হত;
\v 15 কিন্তু বাক্য বা নাম বা তোমাদের ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রশ্ন যদি হয়; তা হলে তোমরা নিজেরাই বুঝে নাও, আমি ওসবের জন্য বিচারক হতে চাই না।
\s5
\v 16 পরে তিনি তাদের বিচার সভা থেকে তাড়িয়ে দিলেন।
\v 17 এরফলে সকলে ধর্ম প্রধান সোস্থিনিকে ধরে বিচার সভার সামনে মারতে লাগল; আর গাল্লীয় সে সকল বিষয়ে কিছু মনোযোগ করলেন না।
\s5
\v 18 পৌল আরো অনেকদিন বসবাস করার পর ভাইদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সমুদ্র পথে সুরিয়া দেশে গেলেন, এবং তাঁর সাথে প্রিস্কিল্লা ও আকিলাও গেলেন; তিনি কংক্রিয়াতে মাথা ন্যাড়া করেছিলেন, কেননা তাঁর এক শপথ ছিল।
\v 19 পরে তাঁরা ইফিষে পৌছালেন, আর তিনি ঐ দুজনকে সেই জায়গাতে রাখলেন; কিন্তু নিজে সমাজ গৃহে [ধর্ম-গৃহে] গিয়ে যিহূদীদের কাছে বাক্য প্রচার করলেন।
\s5
\v 20 আর তাঁরা নিজেদের কাছে আর কিছুদিন থাকতে তাঁকে অনুরোধ করলেও তিনি রাজি হলেন না;
\v 21 কিন্তু তাদের কাছে বিদায় নিলেন, বললেন, ঈশ্বরের ইচ্ছা হলে আমি আবার তোমাদের কাছে ফিরে আসব। পরে তিনি জল-পথে ইফিষ থেকে চলে গেলেন।
\s5
\v 22 আর কৈসরিয়ায় এসে (যিরুশালেম) গেলেন, এবং মন্ডলীকে শুভেছা জানিয়ে সেখান থেকে আন্তীয়খিয়ায় চলে গেলেন।
\s সুসমাচার প্রচারের জন্য পৌলের তৃতীয় যাত্রা
\p
\v 23 সেখানে কিছুদিন কাটানোর পর তিনি আবার চলে গেলেন, এবং পরপর গালাতিয়া দেশ ও ফরুগিয়া ঘুরে ঘুরে শিষ্যদের আশ্বস্ত করলেন।
\v 24 আপল্লো নামে একজন যিহূদী, জাতিতে, আলেকসান্দ্রিয়, একজন ভাল বক্তা, ইফিষে আসলেন; তিনি শাস্ত্রে জ্ঞানী ছিলেন।
\v 25 তিনি প্রভুর পথের বিষয়ে শিক্ষা পেয়েছিলেন, এবং আত্মার শক্তিতে যীশুর বিষয়ে সূক্ষরূপে কথা বলতেন ও শিক্ষা দিতেন, কিন্তু তিনি শুধু যোহনের বাপ্তিস্ম জানতেন।
\v 26 তিনি সমাজ-গৃহে [ধর্ম-গৃহে] সাহসের সাথে কথা বলতে শুরু করলেন। আর প্রিস্কিল্লা ও আকিল্লা তার উপদেশ শুনে তাঁকে নিজেদের কাছে আনলেন, এবং ঈশ্বরের পথ আরো ভালোভাবে বুঝিয়ে দিলেন।
\s5
\v 27 পরে তিনি আখায়াতে যেতে চাইলে ভাইয়েরা উৎসাহ দিলেন, আর তাঁকে সাথে নিতে শিষ্যদের চিঠি লিখলেন; তাতে তিনি সেখানে পৌঁছে, যারা অনুগ্রহ দ্বারা বিশ্বাস করেছিল, তাদের অনেক উপকার করলেন।
\v 28 কারন যীশুই যে খ্রীষ্ট, এটা শাস্ত্রীয় বাক্য দ্বারা প্রমাণ করে তিনি ক্ষমতার সঙ্গে জনগনের মধ্যে যিহূদীদের একদম চুপ করালেন।
\s5
\c 19
\p
\v 1 আপল্লো যে সময়ে করিন্থে ছিলেন, সেই সময় পৌল উত্তর অঞ্চল দিয়ে গিয়ে ইফিষে আসলেন।
\v 2 সেখানে কয়েকজন শিষ্যের দেখা পেলেন; আর তাদের বললেন, বিশ্বাসী হওয়ার পর তোমরা কি পবিত্র আত্মা পেয়েছিলে? তারা তাঁকে বলল, পবিত্র আত্মা যে আছেন, সেই কথা আমরা শুনিনি।
\s5
\v 3 তিনি বললেন, তবে কিসে বাপ্তাইজিত হয়েছিলে? তারা বলল, যোহনের বাপ্তিস্মে।
\v 4 পৌল বলেলন, যোহন মন পরিবর্তনের বাপ্তিস্মে বাপ্তাইজিত করতেন, লোকদের বলতেন, যিনি তাঁর পরে আসবেন, তাকে অর্থাৎ যীশুকে তাদের বিশ্বাস করতে হবে।
\s5
\v 5 এই কথা শুনে তারা প্রভু যীশুর নামে বাপ্তিস্ম নিল।
\v 6 আর পৌল তাদের উপরে হাত রেখে প্রার্থনা করলে পবিত্র আত্মা তাদের উপরে আসলেন, তাতে তারা বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে ও ভবিষদ্বাণী করতে লাগল।
\v 8 পরে তিনি সমাজ-গৃহে [ধর্ম-গৃহে] গিয়ে তিনমাস সাহসের সাথে কথা বললেন, ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয় যুক্তিসহ বুঝিয়ে দিলেন।
\v 9 কিন্তু কয়েকজন দয়াহীন ও অবাধ্য হয়ে জনগনের সামনেই সেই পথের নিন্দা করতে লাগল, আর তিনি তাদের কাছ থেকে চলে গিয়ে শিষ্যদের আলাদা করলেন, প্রতিদিনই তূরান্নের বিদ্যালয়ে বাক্য আলোচনা করতে লাগলেন।
\v 10 এভাবে দু বছর চলল; তাতে এশিয়াতে বসবাসকারী যিহূদী ও গ্রিক সকলেই প্রভুর বাক্য শুনতে পেল।
\s5
\v 11 আর ঈশ্বর পৌলের হাতের মাধ্যমে অনেক আশ্চর্য্য কাজ করতে লাগলেন;
\v 12 এমন কি পৌলের শরীর থেকে তাঁর রুমাল কিংবা গামছা অসুস্থ লোকদের কাছে আনলে তাদের অসুখ সেরে যেত, এবং মন্দ আত্মা বের হয়ে যেত।
\v 13 আর কয়েকজন ভ্রমণকারী যিহূদী ওঝারাও প্রভু যীশুর নাম ব্যবহার করে মন্দ আত্মায় পাওয়া লোকদের সুস্থ করার চেষ্টা করল, আর বলল, পৌল যাঁকে প্রচার করেন, সেই যীশুর নামে আমি তোমাদের বের হয়ে যাওয়ার আদেশ দিচ্ছি।।
\v 14 আর স্কিবা নামে একজন যিহূদী প্রধান পুরোহিতের সাতটি ছেলে ছিল, তারা এরকম করত।
\s5
\v 15 তাতে মন্দ আত্মা উত্তর দিয়ে তাদের বলল, যীশুকে আমি জানি, পৌলকেও চিনি, কিন্তু তোমরা কে?
\v 16 তখন যে লোকটিকে মন্দ আত্মায় ধরেছিল, সে তাদের উপরে লাফ দিয়ে পড়ে, দুজনকে এমন শক্তি দিয়ে চেপে ধরল যে, তারা বিবস্ত্র ও ক্ষতবিক্ষত হয়ে ঘর থেকে পালিয়ে গেল।
\v 17 আর তা ইফিষের সমস্ত যিহূদী ও গ্রীক লোকেরা জানতে পারল, তাতে সকলে ভয় পেয়ে গেল, এবং প্রভু যীশুর নামের গৌরব করতে লাগল।
\s5
\v 18 আর অনেক বিশ্বাসীরা এসেছিল এবং অনুতপ্ত হয়ে তাদের নিজের নিজের খারাপ কাজ স্বীকার ও দেখাতে লাগল।
\v 19 আর যারা জাদু কাজ করত, তাদের মধ্যে অনেকে নিজের নিজের বই এনে একত্র করে সকলের সামনে পুড়িয়ে ফেলল; সে সব কিছুর দাম গুনে দেখা গেল, পঞ্চাশ হাজার রুপার মুদ্রা।
\v 20 আর এভাবে প্রভুর বাক্য প্রতাপের সঙ্গে বৃদ্ধি পেতে ও ছড়াতে লাগল।
\v 21 এই সব কাজ শেষ করার পর পৌল আত্মায় স্থির করলেন যে, তিনি মাকিদনিয়া ও আখায়া যাবার পর যিরুশালেম যাবেন, তিনি বললেন, সেখানে যাওয়ার পরে আমাকে রোম শহরও দেখতে হবে।
\v 22 আর যাঁরা তাঁর পরিসেবা করতেন, তাঁদের দুজনকে, তীমথিয় ও ইরাস্তকে, মাকিদনিয়াতে পাঠিয়ে তিনি নিজে কিছুদিন এশিয়ায় থাকলেন।
\v 23 আর সেসময়ে এই পথের বিষয়ে নিয়ে খুব হট্টগোল শুরু হয়ে গেল।
\v 24 কারণ দিমীত্রিয় নামে একজন স্বর্ণকার দীয়ানার রুপার মন্দির নির্মান করত, এবং শিল্পীদের যথেষ্ঠ কাজ জুগিয়ে দিত।
\v 25 সেই লোকটি তাদের এবং সেই ব্যবসার শিল্পীদের ডেকে বলল, মহাশয়েরা, আপনারা জানেন, এই কাজের দ্বারা আমরা উপার্জন করি।
\s5
\v 26 আর আপনারা দেখছেন ও শুনছেন, কেবল এই ইফিষে নয়, প্রায় সমস্ত এশিয়ায় এই পৌল অনেক লোককে প্রভাবিত করেছে, এই বলেছে যে, যারা হাতের তৈরী, তারা ঈশ্বর না।
\v 27 এতে এই ভয় হচ্ছে, কেবল আমাদের ব্যবসার দুর্নাম হবে, তা নয়; কিন্তু মহাদেবী দিয়ানার মন্দির নগন্য হয়ে পড়বে, আবার তিনি তুচ্ছও হবে, যাকে সমস্ত এশিয়া, এমনকী, সমস্ত পৃথিবী পুজো করে।
\s5
\v 28 এই কথা শুনে তারা খুব রেগে চিৎকার করে বলতে লাগল, ইফিশীয়দের দিয়ানাই মহাদেবী।
\v 29 তাতে শহরে গন্ডগোল বেধে গেল; পরে লোকেরা একসাথে রঙ্গভূমির দিকে ছুটল, মাকিদনীয়ার গায় ও আরিষ্টার্খ, পৌলের এইদুজন সহযাত্রীকে ধরে নিয়ে গেল।
\s5
\v 30 তখন পৌল লোকদের কাছে যাবার জন্য মন করলে শিষ্যেরা তাঁকে যেতে দিল না।
\v 31 আর এশিয়ার প্রধানদের মধ্যে কয়েকজন তাঁর বন্ধু ছিল বলে তাঁর কাছে লোক পাঠিয়ে এই অনুরোধ করলেন, যেন তিনি রঙ্গভূমিতে নিজের বিপদ ঘটাতে না যান।
\v 32 তখন নানা লোকে নানা কথা বলে চিৎকার করছিল, কেননা সভাতে গন্ডগোল বেধেছিল, এবং কী জন্য একত্র হয়েছিল, তা বেশিরভাগই লোক জানত না।
\s5
\v 33 তখন যিহুদীরা আলেক্সান্দারকে সামনে উপস্থিত করাতে লোকেরা জনগনের মধ্যে থেকে তাকে বের করল; তাতে আলেক্সান্দার হাতের দ্বারা ইশারা করে লোকেদেরর কাছে পক্ষ সমর্থন করতে চেষ্টা করলেন।
\v 34 কিন্তু যখন তারা জানতে পারল যে, সে, যিহূদী, তখন সকলে একসুরে অনুমান দুঘন্টা এই বলে চিৎকার করতে থাকল, 'ইফিষিয়দের দীয়ানাই মহাদেবী।'
\s5
\v 35 শেষে শহরের সম্পাদক জনগনকে শান্ত করে বললেন, প্রিয় ইফিষীয় লোকেরা, বল দেখি, ইফিষীয়দের শহরে যে মহাদেবী দীয়ানার, এবং আকাশ থেকে পতিতা প্রতিমার গৃহমার্জ্জিকা, মানুষের মধ্যে কে না জানে?
\v 36 সুতরাং এই কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই জেনে তোমাদের শান্ত থাকা, এবং অবিবেচনার কোনও কাজ না করা উচিত।
\v 37 কারণ এই যে লোকদের এখানে এনেছ, তারা মন্দির লুঠেরাও নয়, আমাদের দেবীর অপমানকারীও নয়।
\s5
\v 38 অতএব যদি কারও বিরুদ্ধে দীমীত্রিয়ের ও তার সহ শিল্পীদের কোনো অভিযোগ থাকে, তবে আদালত খোলা আছে, দেশের প্রধানেরাও আছেন, তারা পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করুক।
\v 39 কিন্তু তোমাদের অন্য কোনো দাবী দাওয়া যদি থাকে, তবে প্রতিদিনের সভায় তার সমাধান করা হয়।
\v 40 সাধারনত: আজকের ঘটনার জন্য আমাকে অত্যাচারী বলে আমাদের নামে অভিযোগ হওয়ার ভয় আছে, যেহেতু এর কোন কারণ নেই, এই জনসমাগমের বিষয়ে উত্তর দেওয়ার রাস্তা আমাদের নেই।
\v 41 এই বলে তিনি সভার লোকদের ফিরিয়ে দিলেন।
\s5
\c 20
\p
\v 1 সেই গন্ডগোল শেষ হওয়ার পরে পৌল শিষ্যদের ডেকে পাঠালেন এবং উৎসাহ দিলেন ও শুভেচ্ছা সহ বিদায় নিয়ে মাকিদনিয়াতে যাবার জন্য বেরিয়ে পড়লেন l
\p
\v 2 পরে যখন সেই অঞ্চল দিয়ে যাচ্ছিলেন তখন যেতে যেতে নানা কথার মধ্যে দিয়ে শিষ্যদের উৎসাহ দিতে দিতে গ্রীস দেশে এসে পৌঁছোলেন l
\p
\v 3 সেই জায়গায় তিন মাস কাটানোর পর যখন তিনি জলপথে সুরিয়া দেশে যাবার জন্য প্রস্তুত হলেন তখন যিহুদিরা তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করাতে তিনি ঠিক করলেন যে তিনি মাকিদনিয়া দিয়ে ফিরে যাবেন l
\m
\s5
\v 4 বিরয়া শহরের পুর্হের পুত্র সোপাত্র, থিষোলনীয় আরিস্টার্খ ও সিকুন্দ, দার্ব্বী শহরের গায় তীমথিয়, এবং এশিয়ার তুখিক ও ত্রফিম এঁরা সকলে তাঁর সঙ্গে গেলেন l
\p
\v 5 কিন্তু এঁরা এগিয়ে গিয়েও আমাদের জন্য এোয়াতে অপেক্ষা করছিলেন l
\p
\v 6 পরে তাড়ীশূন্য রুটির অনুষ্ঠান শেষ হলে আমরা ফিলিপী থেকে জলপথে গিয়ে পাঁচ দিনে এোয়াতে তাঁদের কাছে উপস্থিত হলাম সেখানে সাত দিন ছিলাম l
\v 7 সপ্তাহের প্রথম দিনে আমরা রুটী ভাঙার জন্য একত্রিত হলে পৌল পরদিন সেখান থেকে চলে যাবার জন্য পরিকল্পনা করায় তিনি শিষ্যদের কাছে মধ্যেরাএি পর্যন্ত বক্তৃতা দিয়েছিলেন l
\p
\v 8 আমরা যে ওপরের ঘরেতে সবাই একত্রিত হয়েছিলাম সেখানে অনেক প্রদীপ ছিল l
\v 9 আর উতুখ নামে এক জন যুবক জানালার ধারে বসেছিল, সে গভীর ঘুমে মগ্ন হয়ে পড়েছিল; এবং পৌল আরও অনেকক্ষণ ধরে বক্তৃতা দিলে সে গভীর ভাবে ঘুমিয়ে পড়ায় তিনতলা থেকে নীচে পড়ে গেলে, তাতে লোকেরা তাকে মৃত অবস্থায় তুলে নিয়ে গেল l
\p
\v 10 তখন পৌল নেমে গিয়ে তার গায়ের ওপরে পড়লেন, ও তাকে জড়িয়ে ধরলেন, এবং বললেন তোমরা চিৎকার করোও না; কারণ এর মধ্যে এখনও প্রাণ আছে l
\v 13 আর আমরা আগে গিয়ে জাহাজে উঠে, আসের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম, এবং সেখান থেকে পৌলকে তুলে নেওয়ার জন্য মন স্থির করলাম; কারণ তিনি স্থলপথে যাবেন বলে স্থির করেছিলেন l
\p
\v 14 পরে তিনি আসে আমাদের সঙ্গে এলে আমরা তাঁকে তুলে নিয়ে মিতুলীনীতে এলাম l
\v 15 সেখান থেকে জাহাজ খুলে পরদিন খীয়ের সামনে উপস্থিত হলাম; দ্বিতীয় দিনে সামস দ্বীপে গেলাম, পরদিন মিলীতে এলাম l
\p
\v 16 কারণ পৌল ইফিষ ফেলে যেতে স্থির করেছিলেন, যাতে এশিয়াতে তাঁর বেশি সময় কাটাতে না হয়; তিনি তাড়াতাড়ি করছিলেন যেন সাধ্য হলে পঞ্চসপ্তমীর দিন যিরুশালেমে উপস্থিত থাকতে পারেন l
\v 22 আর এখন দেখ, আমি আত্মাতে বদ্ধ হয়ে যিরূশালেমে যাচ্ছি; সেখানে আমার প্রতি কী কী ঘটবে, তা জানি না l
\p
\v 23 এইটুকু জানি, পবিত্র আত্মা প্রত্যেক শহরে আমার কাছে এই বলে সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, বন্ধন ও ক্লেশ আমার অপেক্ষা করছে l
\p
\v 24 কিন্তু আমি নিজ প্রাণকেও কিছুর মধ্যে গন্য করিনা, আমার নিজের প্রাণকে মূল্যবান বলে মনে করিনা, যেন আমি ঈশ্বরের দেওয়া পথে শেষ পর্যন্ত্য দৌড়োতে পারি এবং ঈশ্বরের অনুগ্রহের সুসমাচারের জন্য সাক্ষ্য দেওয়ার যে সেবা কাজের দায়িত্ব প্রভু যীশুর থেকে পেয়েছি, তা শেষ করতে পারি l
\v 28 তোমরা নিজেদের বিষয়ে সাবধান, এবং পবিত্র আত্মা তোমাদের পরিচয় করার জন্য যাদের মধ্যে নিযুক্ত করেছেন, সেই সমস্ত পালের বিষয়ে সাবধান হও, ঈশ্বরের সেই মন্ডলীকে দেখাশুনা কর, যাকে তিনি নিজের রক্ত দিয়ে কিনেছেন l
\p
\v 29 আমি জানি আমি চলে যাওয়ার পর দুরন্ত নেকড়ে তোমাদের মধ্যে আসবে, এবং পালের প্রতি মমতা করবে না,
\p
\v 30 এবং তোমাদের মধ্যে থেকে কোনো কোনো লোক উঠে শিষ্যদেরকে নিজেদের কাছে টেনে নেওয়ার জন্য বিপরীত কথা বলবে l
\v 31 সুতরাং জেগে থাকো, মনে রাখবে আমি তিন বৎসর ধরে রাত দিন চোখের জলের সাথে প্রত্যেককে চেতনা দিতে বন্ধ করেনি l
\p
\v 32 এবং এখন প্রভুর কাছে, ও তাঁর অনুগ্রহের বাক্যের কাছে তোমাদের সমর্পণ করলাম, তিনি তোমাদের গেঁথে তুলতে ও পবিত্রীকৃত সকলের মধ্যে দায়াধিকার দিতে সক্ষম l
\v 33 আমি কারও রুপো বা সোনা বা কাপড়ের উপরে লোভ করিনি l
\p
\v 34 তোমরা নিজেরাও জানো, আমার নিজের এবং আমার সাথীদের অভাব দূর করার জন্য এই দুই হাত দিয়ে কাজ করেছি l
\p
\v 35 সমস্ত বিষয়ে আমি তোমাদেরকে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছি যে, এই ভাবে পরিশ্রম করে দুর্ব্বলদের সাহার্য করতে হবে, এবং প্রভু যীশুর বাক্য স্মরণ করা উচিত, এবং তিনি নিজে বলেছেন "গ্রহণ করা অপেক্ষা বরং দান করা ধন্য হওয়ার বিষয় l
\v 36 এই কথা বলে তিনি হাঁটু পেতে সকলের সঙ্গে প্রার্থনা করলেন l
\p
\v 37 তাতে সকলে খুবই কাঁদলেন, এবং পৌলের গলা ধরে তাঁকে চুম্বন করতে লাগলেন;
\p
\v 38 সর্ব্বাপেক্ষা তাঁর উক্ত এই কথার জন্য অধিক দুঃখ করলেন যে, তারা তাঁর মুখ আর দেখতে পাবে না l পরে জাহাজ পর্যন্ত তাঁকে ছেড়ে আসতে গেলেন l
\s5
\c 21
\p
\v 1 তাদের কাছ থেকে কষ্টে বিদায় নিলাম, এবং জাহাজ করে সোজা পথে কো দ্বীপে আসলাম,পরের দিন রোদঃ দ্বীপে, এবং সেখান থেকে পাতারায় পৌছোলাম l
\v 2 এবং সেখানে এমন একটি জাহাজ পেলাম যেটা ফৈনীকিয়ায় যাবে, আমরা সেই জাহাজে করে রওনা হলাম l
\s5
\v 3 পরে কুপ্র দ্বীপ দেখতে পেলাম ও সেই দ্বীপকে আমাদের বাঁদিকে ফেলে, সুরিয়া দেশে গিয়ে, সোরে নামলাম; কারণ সেখানে জাহাজের মালপত্র নামানোর কথা ছিল l
\v 4 এবং সেখানের শিষ্যদের খোঁজ করে আমরা সেখানে সাত দিন থাকলাম; তারা আত্মার দ্বারা পৌলকে যিরূশালেমে যেতে বারণ করলেন l
\s5
\v 5 সেই সাত দিন থাকার পর আমরা রওনা দিলাম, তখন তারা সবাই স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে আমাদের শহরের বাইরে ছাড়তে এলো, সেখানে আমরা হাঁটু গেড়ে প্রার্থনা করে একে অপরকে বিদায় জানালাম l
\v 6 আমরা জাহাজে উঠলাম, তাঁরা নিজেদের বাড়ি ফিরে গেলেন l
\s5
\v 7 পরে সোরে জলপথের যাত্রা শেষ করে তালিমায়িতে পৌছোলাম; ও ভাইদের শুভেচ্ছা জানালাম এবং তাদের সঙ্গে এক দিন থাকলাম l
\v 8 পরের দিন আমরা সেখান থেকে রওনা হয়ে কৈসরিয়ায় পৌছালাম, এবং সুসমাচার প্রচারক ফিলিপ, যিনি সেই সাত জনের একজন, তাঁর বাড়িতে আমরা থাকলাম l
\v 9 তাঁর চার অবিবাহিতা মেয়ে ছিল, তাঁরা ভাববাণী বলত l
\s5
\v 10 সেখানে আমরা অনেক দিন ছিলাম এবং যিহূদিয়া থেকে আগাব নাম একজন ভাববাদী উপস্থিত হলেন l
\v 11 এবং তিনি আমাদের কাছে এসে পৌলের কোমর বন্ধন (বেল্ট) টা নিয়ে, নিজের হাত পা বেঁধে বললেন, পবিত্র আত্মা এই কথা বলছেন, এই কোমর বন্ধনীটি যাঁর, তাঁকে যিহূদীরা যিরূশালেমে এইভাবে বাঁধবে এবং অন্য জাতির লোকেদের হাতে সমর্পণ করবে l
\s5
\v 12 এই কথা শুনে আমরা ও সেখানকার ভাইয়েরা পৌলকে অনুরোধ করলাম, তিনি যেন যিরূশালেমে না যান l
\v 13 তখন পৌল বললেন,তোমরা এ কি করছ? কেঁদে আমার হৃদয়কে কেন চুরমার করছ? কারণ আমি প্রভু যীশুর নামের জন্য যিরূশালেমে কেবল বন্দী হতেই নয়, মরতেও প্রস্তুত আছি l
\v 14 এইভাবে তিনি আমাদের কথা শুনতে অসম্মত হলেন, তখন আমরা চুপ করলাম এবং বললাম প্রভুরই ইচ্ছা পূর্ণ হোক l
\v 15 এরপরে আমরা জিনিসপত্র গুছিয়ে যিরূশালেমে রওনা দিলাম l
\v 16 এবং কৈসরিয়া থেকে কয়েকজন শিষ্য আমাদের সঙ্গে এলেন; তাঁরা কুপ্র দ্বীপের ম্নাসোন নাম একজন কে সঙ্গে আনলেন; ইনি প্রথম শিষ্যদের একজন, তাঁর বাড়িতেই আমাদের অতিথি হওয়ার কথা l
\s5
\v 17 যিরূশালেমে উপস্থিত হলে ভাইয়েরা আমাদের আনন্দের সঙ্গে গ্রহণ করলেন,
\v 18 পরের দিন পৌল আমাদের সঙ্গে যাকোবের বাড়ি গেলেন; সেখানে প্রাচীনেরা সবাই উপস্থিত হলেন l
\v 19 পরে তিনি তাদের শুভেচ্ছা জানালেন, এবং ঈশ্বর তাঁর পরিচর্যার মধ্যে দিয়ে অযিহূদীদের মধ্য যে সব কাজ করেছেন, তার বিস্তারিত বিবরণ দিলেন l
\s5
\v 20 এই কথা শুনে তাঁরা ঈশ্বরের প্রশংসা করলেন, তাঁকে বললেন, ভাই, তুমি জান, যিহূদীদের মধ্য হাজার হাজর লোক বিশ্বাসী হয়েছে,কিন্তু তারা সবাই ব্যবস্থা পালন করতে বড়ই আগ্রহী l
\v 21 তারা তোমার বিষয়ে এই কথা শুনেছে যে, তুমি অন্য জাতির মধ্য প্রবাসী যিহূদীদের মোশির বিধি ব্যবস্থা ত্যাগ করতে শিক্ষা দিচ্ছ, যেন তারা শিশুদের ত্বকছেদ না করে ও সেই মত না চলে l
\s5
\v 22 অতএব এখন কি করা যায়? তারা শুনতে পাবেই যে, তুমি এসেছ l
\v 23 তাই আমরা তোমায় যা বলি,তাই কর l আমাদের এমন চার জন পুরুষ আছে, যারা শপথ করেছে;
\v 24 তুমি তাদের সঙ্গে গিয়ে নিজেকে পবিত্র কর, এবং তাদের মাথা ন্যাড়া করার জন্য খরচ কর l তা হলে সবাই জানবে, তোমার বিষয়ে যে সমস্ত কথা তারা শুনেছে, সেগুলো সত্যি নয়, বরং তুমি নিজেও ব্যবস্থা মেনে সঠিক নিয়মে চলছ l
\s5
\v 25 কিন্তু যে পরজাতীয়রা বিশ্বাসী হয়েছে, তাদের বিষয় আমরা বিচার করে লিখেছি যে, প্রতিমার প্রসাদ, রক্ত, গলা টিপে মারা প্রাণীর মাংস, এবং ব্যভিচার, এই সমস্ত বিষয় থেকে যেন নিজেদের কে রক্ষা করে l
\v 26 পরের দিন পৌল সেই কয়েকজনের সঙ্গে, পবিত্র হয়ে মন্দিরে প্রবেশ করলেন, এবং তাদের বলি উৎসর্গ করা থেকে পবিত্র হতে কত দিন সময় লাগবে, তা জানালেন l
\s5
\v 27 আর সেই সাত দিন শেষ হলে এশিয়া দেশের যিহূদীরা মন্দিরে তাঁর দেখা পেয়ে সমস্ত জনতাকে উত্তেজিত করে তুলল, এবং তাঁকে ধরে চিৎকার করে বলতে লাগলো,
\v 28 'ইস্রায়েলের লোকেরা সাহায্য কর; এই সেই ব্যক্তি, যে সব জায়গায় সবাইকে আমাদের জাতির ও ব্যবস্থার এই জায়গার বিরুদ্ধে শিক্ষা দেয়; আবার এই গ্রীকদেরও মন্দিরের মধ্যে এনেছে, ও এই পবিত্র স্থান অপবিত্র করেছে l'
\v 29 কারণ তারা আগেই শহরের মধ্যে ইফিষীয় এফিমকে পৌলের সঙ্গে দেখেছিল, মনে করল, পৌল তাকে মন্দিরের মধ্যে নিয়ে এসেছেন l
\s5
\v 30 তখন শহরের লোকেরা উত্তেজিত হয়ে উঠল, লোকেরা দৌড়ে এলো, এবং পৌলকে ধরে উপাসনা ঘরের বাইরে টেনে নিয়ে গেল, আর সঙ্গে সঙ্গে উপাসনা ঘরের দরজাগুলো বন্ধ করে দিল l
\v 31 এইভাবে তারা তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করল, তখন সৈন্যদলের প্রধান-অধিনায়কের কাছে এই খবর এলো যে, সমস্ত যিরূশালেমে গন্ডগোল আরম্ভ হয়েছে l
\s5
\v 32 অমনি তিনি সেনাদের ও শতপতিদের সঙ্গে নিয়ে তাদের কাছে দৌড়ে গেলেন; তারফলে লোকেরা প্রধান-অধিনায়ককে ও সেনাদেরকে দেখতে পেয়ে পৌলকে মারা বন্ধ করল l
\v 33 তখন প্রধান সেনাপতি এসে তাঁকে ধরল, ও দুটো শিকল দিয়ে তাঁকে বাধার আদেশ দিলেন, এবং জিজ্ঞাসা করলেন, এ কে, আর এ কি করেছে?
\s5
\v 34 ফলে জনতার মধ্য থেকে বিভিন্ন লোক চিৎকার করে বিভিন্ন প্রকার কথা বলতে লাগল; আর তিনি কিছুই বুঝতে পারলেন না, তাই তিনি তাঁকে দুর্গে নিয়ে যেতে আদেশ দিলেন l
\v 35 তখন সিঁড়িতে ওপরে উপস্থিত হলে জনতার ক্ষিপ্ততার জন্য সেনারা পৌলকে বয়ে নিয়ে যেতে লাগল;
\v 36 কেননা লোকের ভিড় পেছন পেছন যাচ্ছিল, আর চিৎকার করে বলতে লাগল ওকে দূর কর l
\s5
\v 37 তারা পৌলকে নিয়ে দুর্গের ভিতরে ঢুকতে যাবে পৌল প্রধান সেনাপতি বললেন, আপনার কাছে কি কিছু বলতে পারি? তিনি বললেন তুমি কি গ্রীক জান?
\v 38 তবে তুমি কি সেই মিশরীয় নও, যে এর আগে বিদ্রোহ করেছিল, ও গুপ্ত হত্যাকারীদের চার হাজার জনকে সঙ্গে করে মরুভূমিতে গিয়েছিল ?
\s5
\v 39 তখন পৌল বললেন, আমি ইহুদী কিলিকিয়ার তার্ষের লোক, আমি একজন প্রসিদ্ধ শহরের নাগরিক; আপনাকে অনুরোধ করছি, লোকেদের সঙ্গে কথা বলার অনুমতি আমাকে দিন l
\v 40 আর তিনি অনুমতি দিলে পৌল সিঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে সবাইকে হাত দিয়ে ইশারা করলেন; তখন সবাই শান্ত হল, তিনি তাদের ইব্রীয় ভাষায় বললেন l
\s5
\c 22
\s লোকেদের কাছে পৌলের বক্তৃতা
\p
\v 1 ভাইয়েরা ও পিতারা, আমি এখন আপনাদের কাছে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি, শুনুন l
\v 2 তখন তিনি ইব্রীয় ভাষায় তাদের কাছে কথা বলছেন শুনে তারা সবাই শান্ত হলো l
\s5
\v 3 আমি যিহূদী, কিলিকিয়ার তার্ষ শহরে আমার জন্ম; কিন্তু এই শহরে গমলীয়ের কাছে মানুষ হয়েছি, পূর্বপুরুষদের আইন কানুনে নিপুণভাবে শিক্ষিত হয়েছি; আর আজ আপনারা সবাই যেমন আছেন, তেমনি আমিও ঈশ্বরের জন্য উদ্যোগী ছিলাম l
\v 4 আমি এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত্য এই পথের লোকেদের অত্যাচার করতাম, পুরুষ ও মহিলাদের বেঁধে জেলে দিতাম l
\v 5 এই বিষয়ে প্রধান পুরোহিত ও সমস্ত প্রাচীনেরা আমার সাক্ষী; তাঁদের কাছ থেকে আমি ভাইয়েদের জন্য চিঠি নিয়ে, দম্মেশকে গিয়েছিলাম; ও যারা সেখানে ছিল, তাদেরকেও বেঁধে যিরূশালেমে নিয়ে আসার জন্য গিয়েছিলাম, যেন তারা শাস্তি পায় l
\s5
\v 6 আর যেতে যেতে দম্মেশকের কাছাকাছি এলে, দুপুর বেলায় হঠাৎ আকাশ থেকে তীব্র আলো আমার চারিদিকে চমকিয়ে উঠল l
\v 7 তাতে আমি মাটিতে পড়ে গেলাম, ও শুনতে পেলাম, কেউ যেন আমাকে বলছে, শৌল, শৌল, কেন আমাকে অত্যাচার করছ?
\v 8 আমি জিজ্ঞাসা করলাম, প্রভু, আপনি কে? তিনি আমাকে বললেন, আমি নাসরতের যীশু, যাঁকে তুমি অত্যাচার করছ l
\s5
\v 9 আর যারা আমার সঙ্গে ছিল, তারাও সেই আলো দেখতে পেল, কিন্তু যিনি আমার সঙ্গে কথা বলছিলেন, তাঁর কথা শুনতে পেল না l
\v 10 পরে আমি বললাম, প্রভু, আমি কি করব? প্রভু আমাকে বললেন, উঠে দম্মেশকে যাও, তোমাকে যা যা করতে হবে বলে ঠিক করা আছে, তা সেখানেই তোমাকে বলা হবে l
\v 11 আর আমি সেই আলোর তেজে অন্ধ হয়ে গিয়েছিলাম, এবং আমার সঙ্গীরা আমার হাত ধরে দম্মেশকে নিয়ে গেল l
\s5
\v 12 পরে অননিয় নামে এক ব্যক্তি, যিনি ব্যবস্থা অনুযায়ী ধার্মিক ছিলেন, এবং সেখানকার সমস্ত যিহূদীদের মধ্যে তাঁর সুনাম ছিল,
\v 13 তিনি আমার কাছে এসে পাশে দাঁড়িয়ে বললেন, ভাই শৌল, তুমি দৃষ্টি শক্তি লাভ কর; আর তখনি আমি তাঁকে দেখতে পেলাম l
\s5
\v 14 এবং তিনি আমাকে বললেন, আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর তোমাকে বেছে নিয়েছেন, যেন তুমি তাঁর ইচ্ছা জানতে পার, এবং সেই ধার্মিককে দেখতে ও তাঁর মুখের কথা শুনতে পাও;
\v 15 কারণ তুমি যা কিছু দেখেছ ও শুনেছ, সেই বিষয়ে সমস্ত মানুষের কাছে তাঁর সাক্ষী হবে l
\v 16 তাই এখন কেন দেরী করছ? উঠে, তাঁর নামে বিশ্বাস করে বাপ্তাইজিত হও, ও তোমার পাপ ধুয়ে ফেল l
\s5
\v 17 তারপরে আমি যিরূশালেমে ফিরে এসে একদিন মন্দিরে প্রার্থনা করছিলাম, এমন সময় অভিভূত (অবচেতন মন)হয়ে তাঁকে দেখলাম,
\v 18 তিনি আমাকে বললেন, তাড়াতাড়ি কর, এখুনি যিরূশালেম থেকে বের হও, কারণ এই লোকেরা আমার বিষয়ে তোমার সাক্ষ্য গ্রহণ করবে না l
\s5
\v 19 আমি বললাম, প্রভু, তারা জানে যে, যারা তোমাকে বিশ্বাস করে, আমি প্রত্যেক সমাজ-ঘরে তাদের বন্দী করতাম ও মারতাম;
\v 20 আর যখন তোমার সাক্ষী স্তিফানকে মারা হচ্ছিল, তখন আমি নিজে সামনে দাঁড়িয়ে সায় দিচ্ছিলাম, ও যারা তাঁকে মারছিল তাদের পোশাক পাহারা দিচ্ছিলাম l
\v 21 তিনি আমাকে বললেন, তুমি যাও, আমি তোমাকে দূরে পরজাতীয়দের কাছে পাঠাব l
\s যিহূদীরা যিরূশালেমে পৌলকে হত্যা করতে চেষ্টা করে l
\v 22 লোকেরা এই পর্যন্ত তাঁর কথা শুনল, পরে চিৎকার করে বলল, একে পৃথিবী থেকে দূর করে দাও, ওকে বাঁচিয়ে রাখা উচিত হয়নি l
\v 23 তখন তারা চিৎকার করে তাদের পোশাক খুলে, ধুলো ওড়াতে লাগল;
\v 24 তখন সেনা প্রধান পৌলকে দুর্গের ভিতরে নিয়ে যেতে আদেশ দিলেন, এবং বললেন চাবুক মেরে এর পরীক্ষা করতে হবে, যেন তিনি জানতে পারেন যে, কেন লোকেরা তাঁকে দোষ দিয়ে চিৎকার করছে l
\s5
\v 25 পরে যখন তারা দড়ি দিয়ে তাঁকে বাঁধলো, তখন যে শতপতি কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন, পৌল তাঁকে বললেন, যে ব্যক্তি রোমীয়, এবং বিচারে কোনো দোষ পাওয়া যায়নি, তাকে চাবুক মারা কি আপনাদের উচিত?
\v 26 এই কথা শুনে শতপতি সেনা প্রধানের কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, আপনি কি করতে যাচ্ছেন? এই লোকটি তো রোমীয় l
\s5
\v 27 তখন সেনা প্রধান কাছে গিয়ে তাঁকে বললেন, বল দেখি, তুমি কি রোমীয়ের নাগরিক? তিনি বললেন, হ্যাঁ l
\v 28 প্রধান সেনাপতি বললেন, এই নাগরিকত্ব আমি অনেক টাকা দিয়ে কিনেছি l পৌল বললেন, কিন্তু আমি জন্ম থেকেই রোমীয় l
\v 29 তখন যারা তাঁকে প্রশ্ন করার জন্য তৈরী হচ্ছিলেন, তারা তখনি তাঁর কাছ থেকে চলে গেল; আর তিনি যে রোমীয় এই কথা জানতে পেরে, ও তাঁকে বেঁধে ছিল বলে, প্রধান সেনাপতিও ভয় পেলেন l
\s5
\v 30 কিন্তু পরের দিন, যিহূদীরা তাঁর উপর কেন দোষ দিচ্ছে, তা জানার জন্য প্রধান সেনাপতি তাঁকে ছেড়ে দিলেন, ও প্রধান পুরোহিতদের ও মহাসভার লোকেদের একসঙ্গে আসতে আদেশ দিলেন, এবং পৌলকে নামিয়ে তাঁদের কাছে উপস্থিত করলেন l
\s5
\c 23
\p
\v 1 আর পৌল মহাসভার দিকে একনজরে তাকিয়ে বললেন, হে ভাইয়েরা, আজ পর্যন্ত আমি সববিষয়ে সৎভাবে ঈশ্বরের প্রজার মতো আচরণ করে আসছি l
\v 2 তখন মহাযাজক অননিয়, যারা কাছে দাঁড়িয়েছিল, তাদেরকে আদেশ দিলেন, যেন তাঁর মুখে আঘাত করে l
\v 3 তখন পৌল তাঁকে বললেন, " হে চুনকাম করা দেওয়াল, ঈশ্বর তোমাকে আঘাত করবেন; তুমি ব্যবস্থা দিয়ে আমার বিচার করতে বসেছ, আর ব্যবস্থায় বিপরীতে আমাকে আঘাত করতে আদেশ দিচ্ছ?"
\s5
\v 4 তাতে যারা কাছে দাঁড়িয়েছিল তারা বলল, " তুমি কি ঈশ্বরের মহাযাজককে খারাপ কথা বলছ?"
\v 5 পৌল বললেন, " হে ভাইয়েরা, আমি জানতাম না যে, উনি মহাযাজক; কেননা লেখা আছে, তুমি নিজ জাতির লোকদের অধ্যাপককে খারাপ কথা বল না l"
\s5
\v 6 কিন্তু পৌল যখন বুঝতে পারলেন যে, তাদের একভাগ সদ্দূকী ও একভাগ ফরীশী, তখন মহাসভার মধ্যে খুব জোরে চিৎকার করে বললেন, "হে ভাইয়েরা, আমি ফরীশী এবং ফরীশীদের সন্তান; মৃতদের প্রত্যাশা ও পুনরুত্থান সম্বন্ধে আমার বিচার হচ্ছে l
\v 7 তিনি এই কথা বলতে না বলতে ফরীশী ও সদ্দুকীদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হলো; সভার মধ্যে দুটি দল হয়ে গেল l
\v 8 কারণ সদ্দুকীরা বলে, পুনরুত্থান নেই, স্বর্গদূত বা আত্মা নেই;
\s5
\v 9 কিন্তু ফরীশীরা উভয়ই স্বীকার করে l তখন খুব চেঁচামেচি হলো, এবং ফরীশী পক্ষের মধ্যে কয়েকজন ধর্ম গুরু উঠে দাঁড়িয়ে ঝগড়া করে বলতে লাগল, আমরা এই লোকটির মধ্যে কোনো ভুল দেখতে পাচ্ছি না; কোনো আত্মা কিংবা কোনো দূত যদি এনার সাথে কথা বলে থাকেন, তাতে কি?
\v 10 এইভাবে খুব গন্ডগোল হলে, যদি তারা পৌলকে মেরে ফেলে, এই ভয়ে সেনাপতি আদেশ দিলেন, সৈন্যদল গিয়ে তাদের মধ্যে থেকে পৌলকে দুর্গে নিয়ে যাক l
\s5
\v 11 পরে রাত্রিতে প্রভু পৌলের কাছে দাঁড়িয়ে বললেন, সাহস কর, কেননা আমার বিষয়ে যেমন যিরুশালেমে সাক্ষ্য দিয়েছ, তেমনি রোমেও দিতে হবে l
\s5
\v 12 দিন হলে পর যিহূদীরা ষড়যন্ত্র করলো এবং নিজেদেরকে অভিশপ্ত করলো, তারা বলল আমরা যে পর্যন্ত্য পৌলকে হত্যা না করি, সে পর্যন্ত্য খাবার ও জলপান করব না l
\v 13 চল্লিশ জনের বেশি লোক একসঙ্গে শপথ করে এই পরিকল্পনা করল l
\s5
\v 14 তারা প্রধান যাজকদের ও প্রাচীনবর্গের কাছে গিয়ে বলল, আমরা এক কঠিন শপথ করেছি, যে পর্যন্ত্য পৌলকে হত্যা না করব, সে পর্যন্ত্য কিছুই গ্রহণ করব না l
\v 15 অতএব আপনারা এখন মহাসভার সাথে সহস্রপতির কাছে আবেদন করুন, যেন তিনি আপনাদের কাছে তাকে নামিয়ে আনেন, বলুন যে, আপনারা আরও সূক্ষরূপে তার বিষয়ে বিচার করতে প্রস্তুত হয়েছেন; আর সে কাছে আসার আগেই আমরা তাকে হত্যা করতে প্রস্তুত থাকলাম l
\s5
\v 16 কিন্তু পৌলের ভাগ্নে তাদের এই ঘাঁটি বসানোর কথা শুনতে পেয়ে দুর্গের মধ্যে চলে গিয়ে পৌলকে জানালো l
\v 17 তাতে পৌল একজন শতপতিকে কাছে ডেকে বললেন, সহস্রপতির কাছে এই যুবককে নিয়ে যান; কারণ তাঁর কাছে এর কিছু বলার আছে l
\s5
\v 18 তাতে তিনি সঙ্গে নিয়ে সহস্রপতির কাছে গিয়ে বললেন, বন্দি পৌল আমাকে কাছে ডেকে আপনার কাছে এই যুবককে আনতে বলল, কেননা আপনার কাছে এর কিছু বলার আছে l
\v 19 তখন সহস্রপতি তার হাত ধরে এক পাশে নিয়ে গিয়ে গোপনে জিজ্ঞাসা করলেন, আমার কাছে তোমার কি বলার আছে?
\s5
\v 20 সে বলল, যিহূদীরা আপনার কাছে এই অনুরোধ করার পরামর্শ করেছে, যেন আপনি কাল আরও সূক্ষরূপে পৌলের বিষয়ে জানার জন্য তাঁকে মহাসভায় নিয়ে যান l
\v 21 অতএব আপনি তাদের কথা গ্রাহ্য করবেন না, কেননা তাদের মধ্যে চল্লিশ জনের বেশি লোক তাঁর জন্য ঘাঁটি বসিয়েছে; তারা এক কঠিন শপথ করেছে; যে পর্যন্ত তাঁকে হত্যা না করবে, সে পর্যন্ত্য ভোজন কি পান করবে না, আর এখনই প্রস্তুত আছে, আপনার অনুমতির অপেক্ষা করছে l
\s5
\v 22 তখন সহস্রপতি ঐ যুবককে আজ্ঞা দিয়ে বিদায় করলেন, তুমি যে এইসব আমাকে জানিয়েছ, তা কাউকেও বল না l
\v 23 পরে তিনি দুইজন শতপতিকে কাছে ডেকে বলে দিলেন, কৈসরিয়া পর্যন্ত্য যাবার জন্য রাত্রি ন-টার সময়ে দুশো সেনা ও সত্তর জন অশ্বারোহী এবং দুশো বর্শাধারী লোক প্রস্তুত রাখো l
\v 24 তিনি ঘোড়া প্রস্তূুত রাখতে আদেশ দিলেন, যেন তারা পৌলকে তার উপরে বসিয়ে নিরাপদে রাজ্যপাল ফেলিক্সের কাছে পৌছিয়ে দেয় l
\s5
\v 25 পরে তিনি এরূপ একটি চিঠি লিখলেন,
\v 26 মহামহিম রাজ্যপাল ফীলিক্স সমীপেষু, ক্লোদিয় লুষিয়ের অভিবাদন l
\v 27 যিহূদীরা এই লোকটিকে ধরে হত্যা করতে উদ্যত হলে আমি সৈন্যসহ উপস্থিত হয়ে তাঁকে রক্ষা করলাম, কারণ জানতে পেলাম যে, এই লোকটি রোমীয় l
\s5
\v 28 পরে তারা কি কারণে এই লোকটির ওপরে দোষ দিচ্ছে তা জানবার জন্যে তাদের মহাসভায় এই লোকটিকে নিয়ে গেলাম l
\v 29 তাতে আমি বুঝলাম, তাদের ব্যবস্থা সম্বন্ধে এর উপরে দোষ দেওয়া হয়েছে, কিন্তু মৃত্যুদন্ড বা জেলখানায় দেওয়ার মত অভিযোগ এর নামে হয়নি l
\v 30 আর এই লোকটির বিরুদ্ধে চক্রান্ত হবে, এই সংবাদ পেয়ে আমি তাড়াতাড়িই আপনার কাছে পাঠিয়ে দিলাম l এর উপর যারা দোষ দিয়েছে, তাদেরও আদেশ করলাম, তারা আপনার কাছে এর বিরুদ্ধে যা বলবার থাকে, বলুক l
\s5
\v 31 পরে সেনারা আদেশ অনুসারে পৌলকে নিয়ে রাত্রিবেলায় আন্তিপাত্রিতে গেল l
\v 32 পরদিন অশ্বারোহীদের তাঁদের সঙ্গে যাবার জন্য রেখে তারা দুর্গে ফিরে আসলো l
\v 33 ওরা কৈসরিয়াতে পৌঁছিয়ে রাজ্যপালের হাতে চিঠিটি দিয়ে পৌলকেও তাঁর কাছে উপস্থিত করল l
\s5
\v 34 তিনি চিঠিটি পড়ে জিজ্ঞাসা করলেন, এ কোন প্রদেশের লোক? তখন তিনি জানতে পারলেন সে কিলিকিয়া প্রদেশের লোক l
\v 35 এই জানতে পেয়ে রাজ্যপাল বললেন, যারা তোমার উপরে দোষ দিয়েছে, তারা যখন আসবে তখন তোমার কথা শুনব l পরে তিনি হেরোদের রাজবাটিতে তাঁকে রাখতে আজ্ঞা দিলেন l
\s5
\c 24
\s রাজ্যপালের সামনে পৌলের বিচার
\m
\v 1 পাঁচদিন পরে অননিয় প্রধান পুরোহিত, কয়েকজন প্রাচীন এবং তর্তুল্ল নামে একজন উকিলকে সঙ্গে করে সেখানে গেলেন, এবং তারা পৌলের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের কাছে আবেদন করলেন;
\v 2 পৌলকে ডাকার পর তর্তুল্ল তাঁর নামে এই বলে দোষারোপ করতে লাগল, হে মাননীয় ফীলিক্স, আপনার দ্বারা আমরা মহাশান্তি অনুভব করছি, এবং আপনার জ্ঞানের দ্বারা এই জাতির জন্য অনেক উন্নতি এনেছেl
\v 3 এ আমরা সবাই সব জায়গায় সবকিছু কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্বীকার করছি l
\s5
\v 4 কিন্তু বেশি কথা বলে যেন আপনাকে কষ্ট না দিই, এইজন্য অনুরোধ করি, আপনি দয়া করে আমাদের কথা শুনুন l
\v 5 কারণ আমরা দেখতে পেলাম, এই লোকটি বিদ্রোহীস্বরূপ, জগতের সকল যিহূদীর মধ্যে ঝগড়াকারী, এবং নাসরতীয় দলের নেতা,
\v 6 আর এ ধর্মধামেও অশুচি করবার চেষ্টা করেছিল, আমরা একে ধরেছি l
\s5
\v 7 এই যে সব বিষয়ে এর উপর দোষ দিচ্ছি,
\v 8 আপনি নিজে একে প্রশ্ন করলে সে সমস্ত জানতে পারবেন l
\v 9 যিহুদীরাও সায় দিয়ে বলল, এই সব কথা ঠিক l
\s5
\v 10 পরে রাজ্যপাল পৌলকে কথা বলবার জন্য ইশারা করলে তিনি এই উত্তর করলেন, আপনি অনেক বছর ধরে এই জাতির বিচার করে আসছেন, জানতে পেরে আমি স্বচ্ছন্দে আত্মপক্ষ সমর্থন করছি l
\v 11 আপনি জানতে পারবেন, আজ বারো দিনের বেশি হয় নি, আমি উপাসনার জন্য যিরুশালেমে গিয়েছিলাম l
\v 12 আর এরা ধর্মধামে আমাকে কারোর সাথে ঝগড়া করতে, কিংবা জনতাকে উত্তেজিত করতে দেখেনি, সমাজ্ ঘরেও না, শহরেও না l
\v 13 আর এখন এরা আমাকে যে সব দোষ দিচ্ছে, আপনার কাছে সে সমস্ত প্রমাণ করতে পারে না l
\s5
\v 14 কিন্তু আপনার কাছে আমি এই স্বীকার করি, এরা যাকে দল বলে, সেই পথ অনুসারে আমি পিতৃপুরুষদের ঈশ্বরের আরাধনা করে থাকি; যা যা মোশির বিধি-ব্যবস্থা এবং ভাববাদী গ্রন্থে লেখা আছে, সেসব বিশ্বাস করি l
\v 15 আর এরাও যেমন অপেক্ষা করে থাকে, সেইরূপ আমিও ঈশ্বরে এই আশা করছি যে, ধার্মিক ও অধার্মিক দু-ধরনের লোকের পুনরুত্থান হবে l
\v 16 আর এ বিষয়ে আমিও ঈশ্বরের ও মানুষদের প্রতি বিবেক সবসময় পরিষ্কার রাখতে চেষ্টা করছি l
\s5
\v 17 অনেক বছর পরে আমি নিজের জাতির` কাছে দান দেওয়ার এবং নৈবেদ্য উৎসর্গ করবার জন্য এসেছিলাম;
\v 18 এই সময়ে লোকেরা আমাকে ধর্মধামে শুদ্ধ অবস্থায় দেখেছিল, ভিড়ও হয়নি, গন্ডগোলও হয়নি; কিন্তু এশিয়া দেশের কয়েকজন যিহূদী উপস্থিত ছিল, তাদেরই উচিত ছিল
\v 19 যেন আপনার কাছে আমার বিরুদ্ধে যদি তাদের কোনো কথা থাকে, তবে এখানে আসে, এবং আমাকে দোষারোপ করেl
\s5
\v 20 অথবা এখানে উপস্থিত লোকেরাই বলুক, আমি মহাসভার সামনে দাঁড়ালে এরা আমার কি অপরাধ পেয়েছে?
\v 21 না, শুধু এই এক কথা, যা তাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে জোরে বলেছিলাম, "মৃতদের পুনরুত্থান বিষয়ে আজ আপনাদের সামনে আমার বিচার হচ্ছে" l
\s5
\v 22 তখন ফীলিক্স, সেই পথের বিষয়ে ভালোভাবেই জানতেন বলে, বিচার অসমাপ্ত রাখলেন, বললেন, লুসিয় সহস্রপতি যখন আসবেন, তখন আমি তোমাদের বিচার সমাপ্ত করব l
\v 23 পরে তিনি শতপতিকে এই আজ্ঞা দিলেন, তুমি একে বন্দী রাখ, কিন্তু স্বচ্ছন্দে রেখো, এর কোনো আত্মীয়কে এর সেবার জন্য আসতে বারন কর না l
\s5
\v 24 কয়েকদিন পরে ফীলিক্স দ্রুষিল্লা নামে নিজের যিহূদিয়া স্ত্রীর সাথে এসে পৌলকে ডেকে পাঠালেন ও তার মুখে খ্রিষ্ট যীশুর প্রতি বিশ্বাসের বিষয়ে শুনলেন l
\v 25 পৌল ন্যায়পরায়নতার, আত্ম-সংযমের এবং আগামী দিনের বিচারের বিষয়ে বর্ণনা করলে ফীলিক্স ভয় পেয়ে উত্তর করলেন, এখন যাও, ঠিক সময় পেলে আমি তোমাকে ডাকব l
\s5
\v 26 তিনিও আশা করেছিলেন যে, পৌল তাকে টাকা দেবেন, এই জন্য বার বার তাঁকে ডেকে তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন l
\v 27 কিন্তু দুই বছর পরে পর্কীয় ফীস্ট ফীলিক্স-এর পদে নিযুক্ত হলেন, আর ফীলিক্স যিহূদীদের খুশি করার জন্য পৌলকে বন্দি রেখে গেলেন l
\s5
\c 25
\p
\v 1 ফীষ্ট সেই প্রদেশে আসার তিনদিন পরে কৈসরিয়া হতে যিরুশালেমে গেলেন।
\v 2 তাতে প্রধান যাজকরা এবং যিহুদীদের প্রধান প্রধান লোক তাঁর কাছে পৌলের বিরুদ্ধে আবেদন করলেন
\v 3 আর অনুরোধ করে তাঁর বিরুদ্ধে এই অনুগ্রহ পাওয়ার আশা করতে লাগলেন, যেন পৌলকে যিরুশালেমে ডেকে পাঠান l তাঁরা পথের মধ্যে পৌলকে হত্যা করবার জন্য ফাঁদ বসাতে চাইছিলেন l
\s5
\v 4 কিন্তু ফীষ্ট উত্তরে করে বললেন, পৌল কৈসরিয়াতে বন্দী আছে; আমিও সেখানে অবশ্যই যাব
\v 5 অতএব তোমাদের মধ্যে যারা ক্ষমতাপন্ন, তারা আমার সঙ্গে সেখানে গিয়ে, সেই ব্যক্তির যদি কোনো দোষ থাকে, তবে তাঁর উপরে দোষারোপ করুক l
\s5
\v 6 আর তাদের কাছে আটদশ দিনের বেশি থাকার পরে তিনি কৈসরিয়াতে চলে গেলেন; এবং পরের দিন বিচারাসনে বসে পৌলকে আনতে আদেশ দিলেন l
\v 7 তিনি হাজির হলে যিরুশালেম থেকে আসা যিহুদিরা তাঁর চারিদিকে দাঁড়িয়ে তাঁর সম্পর্কে অনেক বড় বড় দোষের কথা বলতে লাগলো, কিন্তু তাঁর প্রমাণ দেখাতে পারল না l
\v 8 এদিকে পৌল নিজের আত্মপক্ষ সমর্থন করে বললেন, যিহুদিদের ব্যবস্থার বিরুদ্ধে, ধর্মধামের বিরুদ্ধে, কিংবা কৈসরের বিরুদ্ধে আমি কোনো অপরাধ করি নি l
\s5
\v 9 কিন্তু ফীষ্ট যিহুদিদের প্রীতির পাত্র হবার ইচ্ছা করাতে পৌল কে উত্তর করে বললেন,তুমি কি যিরুশালেমে গিয়ে সেখানে আমার নজরে এই সকল বিষয়ে বিচারিত হতে সম্মত?
\v 10 পৌল বললেন, কৈসরের বিচার আসনে সামনে দাঁড়িয়ে আছি, এখানে আমার বিচার হওয়া উচিৎ l আমি যিহুদিদের প্রতি কোনো অন্যায় করিনি, এটি আপনারা ভালো করে জানেন l
\s5
\v 11 তবে যদি আমি অপরাধী হই, এবং মৃত্যর যোগ্য কিছু করে থাকি, তবে আমি মরতে অস্বীকার করিনা; কিন্তু এরা আমার ওপর যে যে দোষ লাগিয়েছে এই সকল যদি কিছুই না হয় এদের হাতে আমাকে সমর্পণ করার কারো অধিকার নেই; আমি কৈসরের কাছে আপীল করি l
\v 12 তখন ফীষ্ট মন্ত্রী সভার সঙ্গে পরামর্শ করে উত্তর দিলেন, তুমি কৈসরের কাছে আপীল করেছো; কৈসরের কাছেই যাবে l
\s আগ্রিপ্প রাজার কাছে পৌলের আত্মপক্ষ সমর্থন।
\m
\s5
\v 13 পরে কয়েক দিন গত হলে আগ্রিপ্প রাজা এবং বর্নিকী কৈসরিয়ায় হাজির হলেন, এবং ফীষ্ট কে শুভেচ্ছা জানালেন l
\v 14 তারা দীর্ঘ দিন সেইখানে বসবাস করলেন ও ফীষ্ট রাজার কাছে পৌলের কথা উপস্থিত করে বললেন, ফিলিক্স একটি লোককে বন্দী করে রেখে গেছেন;
\v 15 যখন আমি যিরুশালেমে ছিলাম ,তখন যিহুদিদের প্রধান যাজকগন ও প্রাচীনবর্গ সেই ব্যক্তির বিষয়ে আবেদন করে তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তির অনুরোধ করেছিলেন l
\v 16 আমি তাদেরকে এই উত্তর দিয়েছিলাম, যাঁর নামে দোষ দেওয়া হয়, যাবৎ দোষারোপ কারীদের সঙ্গে সামনা সামনি না হয়, এবং আরোপিত দোষ সম্বন্ধে আত্মপক্ষ সমর্থনের অবসর না পায়, তাবৎ কোনো বাক্তিকে সমর্পণ করা রোমীয়দের প্রথা নয় l
\s5
\v 17 পরে তারা একসঙ্গে এ স্থানে এলে আমি দেরী না করে পরদিন বিচারাসনে বসে সেই ব্যক্তিকে আনিতে আদেশ করলাম l
\v 18 পরে দোষারোপকারীরা দাঁড়িয়ে, আমি যে প্রকার দোষ অনুমান করেছিলাম, সেই প্রকার কোনো দোষ তাঁর বিষয়ে উঠল না;
\v 19 কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে আপনাদের নিজের ধর্ম বিষয়ে, এবং যীশু নামে কোনো মৃত ব্যক্তি, যাঁকে পৌল জীবিত বলিত, তাঁর বিষয়ে কয়েকটি তর্ক উপস্থিত করিল l
\v 20 তখন এই সব বিষয় কি ভাবে খোঁজ করতে হবে, আমি স্থির করতে পারলাম না বলে বললাম, তুমি কি যিরুশালেমে গিয়ে এই বিষয়ে বিচারিত হতে সম্মত?
\s5
\v 21 তখন পৌল আপীল করে সম্রাটের বিচারের জন্য রক্ষিত থাকতে প্রার্থনা করায়, আমি যে পর্য্যন্ত তাঁকে কৈসরের কাছে পাঠিয়ে দিতে না পারি, সেই পর্য্যন্ত বন্দী করে রাখার আজ্ঞা দিলাম l
\v 22 তখন আগ্রিপ্প ফীষ্টকে বললেন আমিও সেই ব্যক্তির কাছে কথা শুনতে চেয়েছিলাম l ফীষ্ট বললেন, কালকে শুনতে পাবেন:
\s5
\v 23 অতএব পরের দিন আগ্রিপ্প ও বর্ণীকী মহা জাঁকজমকের সঙ্গে আসলেন, এবং সহস্রপতিদের ও নগরের প্রধান লোকদের সঙ্গে সভাস্থানে হাজির হলেন, আর ফীষ্টের এর আজ্ঞায় পৌল কে আনা হলো l
\v 24 তখন ফীষ্ট বললেন, হে রাজা আগ্রিপ্প, এবং আমাদের সঙ্গে সভায় উপস্থিত মহাশয়েরা, আপনারা সকলে একে দেখছেন, এর বিষয়ে যিহুদিদের দল সমেত সমস্ত লোক যিরুশালেমে এবং এই স্থানে আমার কাছে আবেদন করে উচ্চস্বরে বলেছিল, ওঁর আর বেঁচে থাকা উচিত নয় l
\s5
\v 25 কিন্তু আমি দেখতে পেলাম যে ঐ ব্যক্তি প্রাণ দন্ডের মতো কোনোও কর্ম করেনি l তবে সে নিজেই যখন সম্রাটের কাছে আপীল করেছে তখন আমি তাঁকে সম্রাটের কাছে পাঠানোই ঠিক করলাম l
\v 26 কিন্তু মহান সম্রাটের কাছে লিখবার মত এমন সঠিক কিছুই পেলাম না l সেই জন্যই আমি আপনাদের সকলের সামনে, বিশেষ করে রাজা আগ্রিপ্প আপনার সামনে তাঁকে এনেছি যাতে তাঁকে জেরা করে অন্তত আমি লিখতে পারি;
\v 27 কারণ আমার মতে, কোনো বন্দীকে চালান দেবার সময় তার দোষগুলোও জানানো উচিত।"
\s5
\c 26
\p
\v 1 তখন আগ্রিপ্প পৌল কে বললেন, "তোমার নিজের পক্ষে কথা বলবার জন্য তোমাকে অনুমতি দেওয়া হলো "l তখন পৌল হাত বাড়িয়ে নিজের পক্ষে এই কথা বললেন ,
\v 2 হে রাজা আগ্রিপ্প, যিহুদিরা আমাকে যে সব দোষ দিয়েছে তার বিরুদ্ধে আপনার সামনে আজ আমার নিজের পক্ষে কথা বলবার সুযোগ পেয়েছি বলে আমি নিজেকে ধন্য মনে করছি,
\v 3 বিশেষ করে যিহুদিদের রীতিনীতি এবং তর্কের বিষয়গুলো সম্বন্ধে আপনার ভাল করেই জানা আছে l এই জন্য ধৈর্য ধরে আমার কথা শুনতে আমি আপনাকে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করছি l
\s5
\v 4 "ছেলেবেলা থেকে,অর্থাৎ আমার জীবনের আরম্ভ থেকে আমার নিজের দেশের এবং পরে যিরুশালেমের লোকদের মধ্যে আমি কিভাবে জীবন কাটিয়েছি যিহুদিরা সবাই তা জানে l
\v 5 তারা অনেক দিন ধরেই আমাকে চেনে এবং ইচ্ছা করলে এই সাক্ষ্য দিতে পারে যে, আমাদের ধর্মের ফরীশী নামে যে গোঁড়া দল আছে আমি সেই ফরীশীর জীবনই কাটিয়েছি l
\s5
\v 6 ঈশ্বর আমার পূর্বপুরুষদের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তাতে আমি আশা রাখি বলে এখন আমার বিচার করা হচ্ছে।
\v 7 আমাদের বারো গোষ্ঠির লোকেরা দিন রাত মন-প্রাণ দিয়ে ঈশ্বরের সেবা করে সেই প্রতিজ্ঞার পূর্ণতা দেখবার আশায় আছে। মহারাজা, সেই আশার জন্যই যিহুদিরা আমাকে দোষ দিচ্ছে।
\v 8 ঈশ্বর যদি মৃতদের জীবিত করেন এই কথা বিশ্বাস যোগ্য নয় বলে আপনারা কেন মনে করছেন ?
\s5
\v 9 আমি নিজেই বিশ্বাস করতাম, নাসরতের যীশুর বিরুদ্ধে যা করা যায় তার সবই আমার করা উচিত,
\v 10 আর ঠিক তা-ই আমি যিরুশালেমে করছিলাম। প্রধান পুরোহিতদের কাছে থেকে ক্ষমতা পেয়ে আমি পবিত্রগনদের মধ্যে অনেককে জেলে দিতাম এবং তাদের মেরে ফেলবার সময় তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতাম।
\v 11 তাদের শাস্তি দেবার জন্য আমি প্রায়ই এক সমাজ-ঘর থেকে অন্য সমাজ-ঘরে যেতাম এবং যীশুর বিরুদ্ধে কথা বলবার জন্য আমি তাদের উপর জোর খাটাতামও। তাদের উপর আমার এত রাগ ছিল যে, তাদের উপর অত্যাচার করবার জন্য আমি বিদেশের শহর গুলোতে পর্যন্ত যেতাম।
\s5
\v 12 " এই ভাবে এক বার প্রধান পুরোহিতদের কাছে থেকে ক্ষমতা ও আদেশ নিয়ে আমি দমেশকে যাচ্ছিলাম।
\v 13 মহারাজ, তখন বেলা প্রায় দুপুর l পথের মধ্যে সূর্যের থেকেও উজ্জ্বল এক আলো স্বর্গ থেকে আমার ও আমার সঙ্গীদের চারদিকে জ্বলতে লাগলো।
\v 14 আমরা সবাই মাটিতে পড়ে গেলাম এবং আমি শুনলাম ইব্রীয় ভাষায় কে যেন আমাকে বলছেন,' শৌল, শৌল, কেন তুমি আমার উপর অত্যাচার করছ? কাঁটায় বসানো লাঠির মুখে লাথি মেরে কি তুমি নিজের ক্ষতি করছ না?'
\s5
\v 15 " তখন আমি বললাম,'প্রভু,আপনি কে ?'
\v 16 "প্রভু বললেন ,'আমি যীশু, যাঁর উপর তুমি অত্যাচার করছ। এখন ওঠো, তোমার পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াও l সেবাকারী ও সাক্ষী হিসাবে তোমাকে নিযুক্ত করবার জন্য আমি তোমাকে দেখা দিলাম l তুমি আমাকে যেভাবে দেখলে এবং আমি তোমাকে যা দেখাব তা তুমি অন্যদের কাছে বলবে l
\v 17 তোমার নিজের লোকেদের ও অ-যিহুদিদের হাত থেকে আমি তোমাকে রক্ষা করব l
\v 18 তাদের চোখ খুলে দেখবার জন্য ও অন্ধকার থেকে আলোতে এবং শয়তানের কতৃত্ব থেকে ঈশ্বরের কাছে ফিরিয়ে আনবার জন্য আমি তোমাকে তাদের কাছে পাঠাচ্ছি, যেন আমার উপর বিশ্বসের ফলে তারা পাপের ক্ষমা পায় এবং ঈশ্বরের উদ্দেশে যাদের আলাদা করে রাখা হয়েছে সেই পবিত্র লোকদের মধ্যে তারা অধিকার পায় পায় l'
\s5
\v 19 " রাজা আগ্রিপ্প, এই জন্য স্বর্গ থেকে এই দর্শনের মধ্য দিয়ে আমাকে যা বলা হয়েছে তার অবাধ্য আমি হইনি।
\v 20 যারা দম্মেশকে আছে প্রথমে তাদের কাছে, পরে যারা যিরুশালেমে এবং সমস্ত যিহুদি যার প্রদেশে আছে তাদের কাছে এবং পরজাতিদের কাছে ও আমি প্রচার করেছি যে, পাপ থেকে মন ফিরিয়ে ঈশ্বরের দিকে তাদের ফেরা উচিত ,আর এমন কাজ করা উচিত যার দ্বারা প্রমাণ পাওয়া যায় যে, তারা মন ফিরিয়েছে।
\v 21 এই জন্যই যিহুদিরা আমাকে উপাসনা ঘরে ধরে মেরে ফেলবার চেষ্টা করেছিল
\s5
\v 22 কিন্তু ঈশ্বর আজ পর্যন্ত্য আমাকে সাহায্য করে আসছেন এবং সেই জন্য আমি এখানে দাঁড়িয়ে ছোট বড় সবার কাছে সাক্ষ্য দিচ্ছি l ভাববাদিগণ এবং মোশি যা ঘটবার কথা বলে গেছেন তার বাইরে আমি কিছুই বলছি না।
\v 23 সেই কথা হলো এই যে, খ্রীষ্টকে দুঃখ ভোগ করতে হবে এবং তিনিই প্রথম পুনরুত্থিত হবেন ও তাঁর নিজের জাতির লোকদের ও পরজাতিদের কাছে আলোর রাজ্যের বিষয়ে ঘোষণা করতে হবে।"
\s5
\v 24 পৌল এই ভাবে যখন আত্মপক্ষ সমর্থন করছিলেন তখন ফীষ্ট তাঁকে বাধা দিয়ে চিৎকার করে বললেন, "পৌল, তুমি পাগল হয়ে গেছ।তুমি অনেক পড়াশুনা করেছ আর সেই পড়াশুনাই তোমাকে পাগল করে তুলছে।"
\v 25 তখন পৌল বললেন, মাননীয় ফিষ্ট, আমি পাগল নই।আমি যা বলছি তা সত্যি এবং যুক্তি পূর্ণ,
\v 26 রাজা তো এই সব বিষয় জানেন এবং আমি তাঁর সঙ্গে সাহস পূর্বক কথা বলছি আর এই কথা আমি নিশ্চয় জানি যে, এর কিছুই তাঁর চোখ এড়ায়নি, কারণ এই সব ঘটনা তো গোপনে ঘটেনি।
\s5
\v 27 হে রাজা আগ্রিপ্প, আপনি কি ভাববাদীদের কথা বিশ্বাস করেন? আমি জানি আপনি করেন।"
\v 28 তখন আগ্রিপ্প পৌলকে বললেন, "তুমি কি এত অল্প সময়ের মধ্যেই আমাকে খ্রীষ্টিয়ান করবার চেষ্টা করছ?"
\v 29 পৌল বললেন, "সময় অল্প হোক বা বেশি হোক, আমি ঈশ্বরের কাছে এই প্রার্থনা করি যে, কেবল আপনি নন, কিন্তু যাঁরা আজ আমার কথা শুনছেন তাঁরা সবাই যেন এই শিকল ছাড়া আমার মত হন।"
\s5
\v 30 তখন প্রধান শাসন কর্তা ফিষ্ট ও বর্নিকী এবং যাঁরা তাঁদের সঙ্গে বসে ছিল সবাই উঠে দাঁড়ালেন।
\v 31 তার পর তাঁরা সেই ঘর ছেড়ে চলে গেলেন এবং একে অন্যকে বলতে লাগলেন, "এই লোকটি মৃত্যুর শাস্তি পাবার বা জেল খাটবার মত কিছুই করেনি।"
\v 32 আগ্রিপ্প ফিষ্টকে বললেন, "এই লোকটি যদি কৈসরের কাছে আপীল না করত তবে তাকে ছেড়ে দেওয়া যেত।"
\s5
\c 27
\s পৌলের রোমে যাত্রা ও সুসমাচার প্রচার l
\p
\v 1 যখন সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো আমরা জাহাজে করে ইতালিয়াতে যাত্রা করবো, তখন পৌল ও অন্য কয়েক জন বন্দী আগস্তীয় সৈন্যদলের যুলীয় নামে এক জন শতপতির হাতে সমর্পিত হলেন l
\p
\v 2 পরে আমরা আদ্রামুত্তীয় গামী জাহাজে উঠে যাত্রা করলাম, যে জাহাজটি এশিয়ার উপকুলের সমস্ত জায়গায় যাবে l ম্যকিদনিয়ার থিষলনীকীর অধিবাসী আরিষ্টার্খ আমাদের সঙ্গে ছিলেন l
\v 7 পরে অনেকদিন ধীরে ধীরে জাহাজটি চলে অতিকষ্টে ক্লীদের নিকটে পৌঁছোলো, বাতাসের সহযোগিতায় না এগোতে পেরে আমরা সলমোনির সম্মুখ দিয়ে ক্রীতী দ্বীপের আড়াল দিয়ে চললাম l
\p
\v 8 আমরা খুবই কষ্টের মধ্যে উপকুলের ধার ধরে যেতে যেতে সুন্দর পোতাশ্রয় নামে এক জায়গায় পৌঁছালাম যেটা লাসেয়া শহরের খুবই নিকটবর্তী জায়গা l
\v 12 আর ঐ পোতাশ্রয়ে শীতকাল কাটাবার জন্য সুবিধা না হওয়ায় অধিকাংশ লোক সেখান থেকে অন্যত্র যাওয়ার জন্য পরামর্শ দিল যেন কোনোও প্রকারে ফৈনীকায় পৌঁছে সেখানে শীতকাল অতিবাহিত করতে পারে l এই জায়গা ক্রীতীর এক পোতাশ্রয়, ইহা উত্তরপূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব অভিমুখী l
\p
\v 13 পরে যখন দক্ষিণ বায়ু হালকা ভাবে বইতে লাগল তখন তারা ভাবলো যে, তারা যা চায় তা পেয়েছে সুতরাং তারা ক্রীতীর কূলের নিকট দিয়ে চলতে লাগল l
\v 21 যখন সকলে অনেকদিন অনাহারে থাকলো, পৌল তাদের মধ্যে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, মহাশয়েরা, আমার কথা মেনে যদি ক্রীতী হতে জাহাজ না ছেড়ে আসতেন তবে এই ক্ষতি এবং অনিষ্ট হতো না l
\p
\v 22 এখন আপনাদের উৎসাহিত করি যে আপনারা সাহস করুন, কারণ আপনাদের কারও প্রাণহানি হবে না কিন্তু শুধুমাত্র জাহাজের ক্ষতি হবে l
\v 27 এইভাবে আমরা আদ্রিয়া সমুদ্রে ধীরে ধীরে চলতে চলতে যখন চতুর্দ্দশ রাত্রি উপস্থিত হলো, তখন নাবিকরা অনুমান করতে লাগলো যে এখন প্রায় মধ্য রাত্রি এবং কোনও দেশের নিকট পৌঁছেছে l
\p
\v 28 আর তারা জল মেপে বিশ বাঁউ জল পেলো; একটু পরে পুনরায় জল মেপে পনের বাঁউ পেলো l
\p
\v 29 তখন আমরা যেন কোন পাথরময় স্থানে গিয়ে না পড়ি সেই ভয়ে তারা জাহাজের পিছন দিকে চারটি নোঙ্গর ফেলে দিনের অপেক্ষায় থাকলো l
\v 33 পরে দিন হয়ে আসছে এমন সময় পৌল সকল লোককে কিছু খাবার জন্য অনুরোধ করে বললেন, আজ চৌদ্দ দিন হলো, আপনারা অপেক্ষা করে আছেন এবং না খেয়ে আছেন, কিছুই না খেয়ে সময় কাটাচ্ছেন l
\p
\v 34 অতএব অনুরোধ করি, বেঁচে থাকার জন্য কিছু খান, আর আপনাদের কারও মাথার একটিও কেশ নষ্ট হবে না l
\p
\v 35 এই বলে পৌল রুটি নিয়ে সকলের সামনে ঈশ্বরের ধন্যবাদ দিলেন, পরে সেটি ভেঙে ভোজন করতে শুরু করলেন l
\v 39 দিন হলে তারা সেই ডাঙা জায়গা চিনতে পারল না l কিন্তু এমন এক খাড়ি দেখতে পেল, যার বালিময় চর ছিলো; তারা তখন আলোচনা করলো যদি পারে, তবে সেই চরের উপরে যেন জাহাজ তুলে দেয় l
\p
\v 40 তারা নোঙ্গর সকল কেটে সমুদ্রে ত্যাগ করলো এবং সঙ্গে সঙ্গে হালের বাঁধন খুলে দিল; পরে বাতাসের সামনে সামনের দিকের পাল তুলে সেই বালিময় তীরের দিকে চলতে লাগলো l
\p
\v 41 কিন্তু দুই দিকে উত্তাল জল আছে এমন জায়গায় গিয়ে পড়াতে চড়ার উপর জাহাজ আটকে গেল, তাতে জাহাজের সামনের দিকটা বেঁধে গিয়ে অচল হয়ে গেল, কিন্তু পিছন দিকটা প্রবল ঢেউয়ের আঘাতে ভেঙ্গে যেতে লাগলো l
\v 42 তখন সেনারা বন্দিদের মেরে ফেলার পরিকল্পনা করলো, যাতে কেউ সাঁতার দিয়ে পালিয়ে না যায় l
\p
\v 43 কিন্তু শতপতি পৌলকে রক্ষা করবার জন্য তাদের সেই পরিকল্পনা বন্ধ করলেন, এবং আদেশ দিলেন, যারা সাঁতার জানে, তারা আগে লাফ দিয়ে ডাঙায় উঠুক;
\p
\v 44 আর বাকি সকলে তক্তা বা জাহাজের যা পায়, তা ধরে ডাঙায় উঠুক l এইভাবে সবাই ডাঙায় উঠে রক্ষা পেলো l
\s5
\c 28
\p
\v 1 আমরা রক্ষা পাওয়ার পর জানতে পারলাম যে, সেই দ্বীপের নাম মিলিতা।
\v 2 আর সেখানকার বর্বর লোকেরা আমাদের প্রতি খুব ভালো অতিথি সেবা করল, বিশেষ করে বৃষ্টির মধ্যে ও শীতের জন্য আগুন জ্বালিয়ে সকলকে স্বাগত জানালো।
\s5
\v 3 কিন্তু পৌল এক বোঝা কাঠ কুড়িয়ে ঐ আগুনে ফেলে দিলে আগুনের তাপে একটা বিষধর সাপ বের হয়ে তাঁর হাতে লেগে থাকল।
\v 4 তখন ঐ লোকেরা তাঁর হাতে সেই সাপটি ঝুলছে দেখে পরস্পর বলাবলি করতে লাগল, এ লোকটি নিশ্চয় খুনি, সমুদ্র থেকে বেঁচে গেলেও ধর্ম একে বাঁচতে দিলেন না।
\s5
\v 5 কিন্তু তিনি হাত ঝেড়ে সাপটিকে আগুনের মধ্যে ফেলে দিলেন, ও তাঁর কিছুই ক্ষতি হল না।
\v 6 তখন তারা অপেক্ষা করতে লাগল যে, তিনি ফুলে উঠবেন, কিংবা হঠাৎ করে মরে মাটিতে পড়ে যাবেন; কিন্তু অনেকক্ষণ পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর, তাঁর কোনো রকম খারাপ কিছু হচ্ছে না দেখে, তারা অন্যভাবে বুঝতে পেরে বলতে লাগল, উনি দেবতা।
\v 7 ঐ স্থানের কাছে সেই দ্বীপের পুব্লীয় নামে প্রধানের জমিজমা ছিল; তিনি আমাদের খুশির সাথে গ্রহণ করে অতিথিস্বরূপ তিনদিন পর্যন্ত আমাদের সেবাযত্ন করলেন।
\v 8 সেই সময় পুব্লিয়ের বাবা জ্বর ও আমাশা রোগের জন্য বিছানাতে শুয়ে থাকতেন, আর পৌল ভিতরে তার কাছে গিয়ে প্রার্থনার সাথে তার উপরে হাত রেখে তাকে সুস্থ করলেন।
\v 9 এই ঘটনার পর অন্য যত রোগী ঐ দ্বীপে ছিল, তারা এসে সুস্থ হল।
\v 10 আর তারা আমাদের অনেক সম্মান ও আদর যত্ন করল, এবং আমাদের ফিরে আসার সময়ে বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জাহাজে এনে দিল।
\v 11 তিনমাস চলে যাওয়ার পর আমরা আলেকসান্দ্রিয় এক জাহাজে উঠে যাত্রা করলাম; সেই জাহাজ ঐ দ্বীপে শীতকাল কাটাচ্ছিল, তার মাথায় জমজ দেবতার চিহ্ন ছিল ।
\v 12 পরে সুরাকুষে লাগিয়ে আমরা সেখানে তিন দিন থাকলাম।
\s5
\v 13 আর সেখান থেকে ঘুরে ঘুরে রাগীতে চলে এলাম; একদিন পর দক্ষিণ বাতাস উঠল, আর দ্বিতীয় দিন পুতিয়লীতে উপস্থিত হলাম।
\v 14 সেই জায়গাতে কয়েকজন ভাইয়ের দেখা পেলাম, আর তাঁরা অনুরোধ করলে সাতদিন তাঁদের সঙ্গে থাকলাম; এইভাবে আমরা রোমে পৌঁছাই।
\v 15 আর সেখান থেকে ভাইয়েরা আমাদের খবর পেয়ে অপ্পিয়ের হাট ও তিন সরাই পর্যন্ত আমাদের সাথে দেখা করতে এসেছিলেন; তাদের দেখে পৌল ঈশ্বরের ধন্যবাদ করে সাহস পেলেন।
\v 16 রোমে আমাদের পৌছানোর পর পৌল নিজের পাহারাদার সেনাদের সাথে স্বাধীন ভাবে বাস করার অনুমতি পেলেন।
\p
\v 17 আর তিনদিনের পর তিনি যিহুদীদের প্রধান প্রধান লোককে ডেকে একত্র করলেন; এবং তাঁরা একসাথে হলে পর তিনি তাঁদের বললেন, প্রিয় ভাইয়েরা, আমি যদিও নিজের জাতিদের কিংবা পিতার রীতিনীতির বিপক্ষে কিছুই করিনি, তবুও যিরুশালেম থেকে পাঠিয়ে বন্দীরূপে রোমীয়দের হাতে সমর্পিত হয়েছিলাম;
\v 18 আর তারা, আমার বিচার করে প্রাণদন্ডের মত কোনো দোষ না পাওয়াতে, আমাকে মুক্তি দিতে চেয়েছিল;
\s5
\v 19 কিন্তু যিহূদীরা বিরোধ করায় আমি কৈসরের কাছে আপীল করতে বাধ্য হলাম; নিজের জাতির উপরে দোষারোপ করার কোনোও কথা যে আমার ছিল, তা নয়।
\v 20 সেই কারণে আমি আপনাদের সাথে দেখা ও কথা বলার জন্য আপনাদের আমন্ত্রণ করলাম; কারণ ইস্রায়েলর সেই প্রত্যাশার জন্যই, আমি শেকলে বন্দি।
\s5
\v 21 তারা তাঁকে বলল, আমরা আপনার বিষয়ে যিহূদীয়া থেকে কোনো চিঠি পাইনি; অথবা ভাইদের মধ্যেও কেউ এখানে এসে আপনার বিষয়ে খারাপ সংবাদ দেননি, বা খারাপ কথাও বলেনি।
\v 22 কিন্তু আপনার মত কি, সেটা আমরা আপনার মুখ থেকে শুনতে চাই; কারণ এই দলের বিষয়ে আমরা জানি যে, সব জায়গাতে লোকে এর বিরুদ্ধে কথা বলে থাকে।
\v 23 পরে তাঁরা একটি দিন ঠিক করে সেই দিন অনেকে তাঁর বাড়িতে তাঁর কাছে আসলেন; তাঁদের কাছে তিনি সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যাখ্যা করে ঈশ্বরের রাজ্যের বিষয়ে সাক্ষ্য দিলেন, এবং মোশীর ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের বই নিয়ে যীশুর বিষয়ে তাঁদের বোঝাতে চেষ্টা করলেন।
\v 24 তাতে কেউ কেউ তাঁর কথায় বিশ্বাস করলেন, আর কেউ কেউ অবিশ্বাস করলেন।
\s5
\v 25 এভাবে তাঁদের মধ্যে একমত না হওয়ায় তাঁরা চলে যেতে লাগলেন; যাওয়ার আগে পৌল এই একটি কথা বলে দিলেন, পবিত্র আত্মা যিশাইয় ভাববাদীর দ্বারা আপনাদের পূর্বপুরুষদের এই কথা ভালোই বলেছিলেন,
\p
\v 26 যেমন " এই লোকদের কাছে গিয়ে বল, তোমরা কানে শুনবে, কিন্তু কোনো মতে বুঝবে না; এবং চোখে দেখবে, কিন্তু কোনো মতে জানবে না,
\s5
\v 27 কেননা এই লোকদের হৃদয় শক্ত হয়েছে, শুনতে তাদের কান ভারী হয়েছে, ও তারা চোখ বন্ধ করেছে, যেন তারা চোখে দেখে, এবং কানে শুনে, হৃদয়ে বুঝে, এবং ফিরে আসে, আর আমি তাদের সুস্থ করি।"
\v 28 অতএব আপনারা জানুন, অন্যজাতিদের কাছে ঈশ্বরের এই পরিত্রান পাঠানো হল; আর তারা শুনবে।
\v 29-30 আর পৌল সম্পূর্ণ দুবছর পর্যন্ত নিজের ভাড়া করা ঘরে থাকলেন, এবং যত লোক তাঁর কাছে আসত, সকলকেই গ্রহণ করে সম্পূর্ণ সাহসের সাথে ঈশ্বরের রাজ্যের কথা প্রচার করতেন,