Added several OT books

This commit is contained in:
Jesse Griffin 2017-08-17 11:15:34 -04:00
parent 1faa838bcc
commit 0f16f508e8
19 changed files with 17934 additions and 23 deletions

2385
01-GEN.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,2385 @@
\id GEN
\ide UTF-8
\sts <Bengali>
\h আদিপুস্তক।
\toc1 আদিপুস্তক।
\toc2 আদিপুস্তক।
\toc3 gen
\mt1 আদিপুস্তক।
\s5
\c 1
\s জগৎ-সৃষ্টির বিবরণ।
\p
\v 1 আদিতে ঈশ্বর আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর সৃষ্টি করলেন।
\v 2 পৃথিবী নিরাকার ও শূন্য ছিল এবং অন্ধকার জলরাশির উপরে ছিল, আর ঈশ্বরের আত্মা জলের উপরে চলাচল করছিলেন।
\s5
\v 3 পরে ঈশ্বর বললেন, আলো হোক; তাতে আলো হল।
\v 4 তখন ঈশ্বর আলো উত্তম দেখলেন এবং ঈশ্বর আলো ও অন্ধকার আলাদা করলেন।
\v 5 আর ঈশ্বর আলোর নাম "দিন" ও অন্ধকারের নাম "রাত" রাখলেন। সন্ধ্যা ও সকাল হলে প্রথম দিন হল।
\s5
\v 6 পরে ঈশ্বর বললেন, "জলের মধ্যে আকাশ (বায়ুমণ্ডল) হোক ও জলকে দুই ভাগে আলাদা করুক।"
\v 7 ঈশ্বর এইভাবে আকাশ (বায়ুমণ্ডল) করে আকাশের উপরের জল থেকে নীচের জল পৃথক করলেন; তাতে সেরকম হল।
\v 8 পরে ঈশ্বর আকাশ (বায়ুমণ্ডল) নাম আকাশমণ্ডল রাখলেন। আর সন্ধ্যা ও সকাল হলে দ্বিতীয় দিন হল।
\s5
\v 9 পরে ঈশ্বর বললেন, "আকাশমণ্ডলের নীচে অবস্থিত সমস্ত জল এক জায়গায় জমা হোক ও স্থল প্রকাশিত হোক," তাতে সেরকম হল।
\v 10 তখন ঈশ্বর শুকনো জায়গার নাম ভূমি ও জলরাশির নাম সমুদ্র রাখলেন; আর ঈশ্বর দেখলেন যে, তা উত্তম।
\s5
\v 11 পরে ঈশ্বর বললেন, "ভূমি ঘাস, বীজ উত্পন্নকারী ওষধি ও সবীজ গাছপালা তাদের জাতি অনুযায়ী ফলের উৎপাদক ফলের গাছ, ভূমির উপরে উৎপন্ন করুক," তাতে সেরকম হল।
\v 12 ফলে ভূমি ঘাস, তাদের জাতি অনুযায়ী বীজ উত্পন্নকারী ওষধি, ও তাদের জাতি অনুযায়ী সবীজ ফলের উৎপাদক গাছ, উৎপন্ন করল; আর ঈশ্বর দেখলেন যে, সে সকল ভালো।
\v 13 আর সন্ধ্যা ও সকাল হলে তৃতীয় দিন হল।
\s5
\v 14 পরে ঈশ্বর বললেন, "রাত থেকে দিনকে আলাদা করার জন্য আকাশমণ্ডলের বিতানে নক্ষত্র হোক; রাত এবং দিনের ও বছরের জন্য হোক;
\v 15 এবং পৃথিবীতে আলো দেবার জন্য দীপ বলে আকাশ (বায়ুমণ্ডল) থাকুক," তাতে সেরকম হল।
\s5
\v 16 ঈশ্বর দিনের উপরে কর্তৃত্ব করতে এক মহাজ্যোতি ও রাতের উপরে কর্তৃত্ব করতে তার থেকেও ছোট এক জ্যোতি, এই দুটি বড় জ্যোতি এবং সমস্ত নক্ষত্র সৃষ্টি করলেন।
\v 17 আর পৃথিবীতে আলো দেবার জন্য তাদেরকে আকাশে স্থাপন করলেন এবং
\v 18 দিন ও রাতের উপরে কর্তৃত্ব করার জন্য এবং আলো থেকে অন্ধকার আলাদা করার জন্য ঈশ্বর ঐ জ্যোতিগুলিকে আকাশে স্থাপন করলেন এবং ঈশ্বর দেখলেন যে, সে সব উত্তম।
\v 19 আর সন্ধ্যা ও সকাল হলে চতুর্থ দিন হল।
\s5
\v 20 পরে ঈশ্বর বললেন, "জল নানাজাতীয় জলজ প্রাণীতে প্রাণীময় হোক এবং ভূমির উপরে আকাশে পাখিরা উড়ুক।
\v 21 তখন ঈশ্বর বৃহৎ জলজ প্রাণীদের ও যে নানাজাতীয় জলজ প্রাণীতে জল প্রাণীময় আছে, সে সবের এবং নানাজাতীয় পাখি সৃষ্টি করলেন। পরে ঈশ্বর দেখলেন যে সে সব উত্তম।
\s5
\v 22 আর ঈশ্বর সে সকলকে আশীর্বাদ করে বললেন, "তোমরা ফলবান ও বহুবংশ হও, সমুদ্রের জল পরিপূর্ণ কর এবং পৃথিবীতে পাখিদের বৃদ্ধি হোক।"
\v 23 আর সন্ধ্যা ও সকাল হলে পঞ্চম দিন হল।
\s5
\v 24 পরে ঈশ্বর বললেন, "ভূমি নানাজাতীয় প্রাণীতে, অর্থাৎ তাদের জাতি অনুযায়ী পশুপাল, সরীসৃপ ও বন্য পশু সৃষ্টি করুক; তাতে সেরকম হল।
\v 25 ফলে ঈশ্বর নিজের নিজের জাতি অনুযায়ী বন্য পশু ও নিজের নিজের জাতি অনুযায়ী পশুপাল ও নিজের নিজের জাতি অনুযায়ী যাবতীয় ভূচর সরীসৃপ সৃষ্টি করলেন; আর ঈশ্বর দেখলেন যে, সে সব উত্তম।
\s5
\v 26 পরে ঈশ্বর বললেন, "আমরা আমাদের প্রতিমূর্তিতে, আমাদের সঙ্গে মিল রেখে মানুষ সৃষ্টি করি; আর তারা সমুদ্রের মাছদের ওপরে, আকাশের পাখিদের ওপরে, পশুদের ওপরে, সমস্ত পৃথিবীর ওপরে ও ভূমিতে চলাচলকারী যাবতীয় সরীসৃপের ওপরে কর্তৃত্ব করুক।"
\v 27 পরে ঈশ্বর নিজের প্রতিমূর্তিতে মানুষকে সৃষ্টি করলেন; ঈশ্বরের প্রতিমূর্তিতেই তাকে সৃষ্টি করলেন, পুরুষ ও স্ত্রী করে তাদেরকে সৃষ্টি করলেন।
\s5
\v 28 পরে ঈশ্বর তাদেরকে আশীর্বাদ করলেন; ঈশ্বর বললেন, "তোমরা ফলবান ও বহুবংশ হও এবং পৃথিবী পরিপূর্ণ ও কর্তৃত্ব কর, আর সমুদ্রের মাছদের ওপরে, আকাশের পাখিদের ওপরে এবং ভূমিতে গমনশীল যাবতীয় জীবজন্তুর ওপরে কর্তৃত্ব কর।"
\v 29 ঈশ্বর আরও বললেন, "দেখ, আমি সমস্ত পৃথিবীতে অবস্থিত যাবতীয় বীজৎপাদক ওষধি ও যাবতীয় সবীজ ফলদায়ী বৃক্ষ তোমাদেরকে দিলাম, তা তোমাদের খাদ্য হবে।"
\s5
\v 30 আর ভূমিতে চরাচর যাবতীয় পশু ও আকাশের যাবতীয় পাখি ও ভূমিতে বুকে হেঁটে চলা যাবতীয় কীট, এই সব প্রাণীর আহারের জন্য সবুজ গাছপালা সকল দিলাম। তাতে সেরকম হল।
\v 31 পরে ঈশ্বর নিজের তৈরী সব জিনিসের প্রতি দেখলেন, আর দেখলেন, সে সবই খুবই ভালো। আর সন্ধ্যা ও সকাল হলে ষষ্ঠ দিন হল।
\s5
\c 2
\p
\v 1 এইভাবে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী এবং তাদের মধ্যে অবস্থিত সব জিনিস তৈরী করা শেষ হল।
\v 2 পরে সপ্তম দিনে ঈশ্বর তাঁর কাজকে শেষ করলেন, সেই সপ্তম দিনে নিজের করা সমস্ত কাজ থেকে বিশ্রাম নিলেন।
\v 3 আর ঈশ্বর সেই সপ্তম দিনকে আশীর্বাদ করে পবিত্র করলেন, কারণ সেই দিনে ঈশ্বর নিজের সৃষ্টি ও তৈরী করা সমস্ত কাজ থেকে বিশ্রাম নিলেন।
\s প্রথম মানব-মানবীর বিবরণ।
\p
\s5
\v 4 সৃষ্টিকালে যে দিন সদাপ্রভু ঈশ্বর পৃথিবী ও আকাশমণ্ডল সৃষ্টি করলেন, তখনকার আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীর বৃত্তান্ত এই।
\v 5 সেই সময়ে পৃথিবীর ভূমিতে কোন ফসল উত্পন্ন হত না, আর ভূমিতে কোন ওষধি উৎপন্ন হত না, কারণ সদাপ্রভু ঈশ্বর পৃথিবীতে বৃষ্টি বর্ষণ করেননি, আর ভূমিতে কৃষিকাজ করতে মানুষ ছিল না।
\v 6 আর পৃথিবী থেকে কুয়াশা উঠে গিয়ে সমস্ত পৃথিবীকে জলসিক্ত করল।
\s5
\v 7 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর মৃত্তিকার ধূলোতে আদমকে [অর্থাৎ মানুষকে] তৈরী করলেন এবং তার নাকে ফুঁ দিয়ে প্রাণবায়ু প্রবেশ করালেন; তাতে মানুষ সজীব প্রাণী হল।
\v 8 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর পূর্বদিকে, এদনে, এক বাগান তৈরী করলেন এবং সেই জায়গায় নিজের জন্য ঐ মানুষকে রাখলেন।
\s5
\v 9 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর ভূমি থেকে সর্বজাতীয় সুদৃশ্য ও সুখাদ্য-দায়ক গাছ এবং সেই বাগানের মাঝখানে জীবনগাছ ও সদসদ-জ্ঞানদায়ক গাছ সৃষ্টি করলেন।
\v 10 আর বাগানে জল সেচনের জন্য এদন থেকে এক নদী বের হল, ওটা সেখান থেকে চারটি মুখে ভাগ হল।
\s5
\v 11 প্রথম নদীর নাম পিশোন; এটা সমস্ত হবীলা দেশের চারপাশ থেকে বয়ে যায়,
\v 12 সেখানে সোনা পাওয়া যায়, আর সেই দেশের সোনা উত্তম এবং সেই জায়গায়
\s5
\v 13 গুগগুলু ও গোমেদকমনি জন্মে। দ্বিতীয় নদীর নাম গীহোন; এটা সমস্ত কুশ দেশ বেষ্টন করে।
\v 14 তৃতীয় নদীর নাম হিদ্দেকল, এটা অশুরিয়া দেশের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে। চতুর্থ নদী ফরাৎ।
\s5
\v 15 পরে সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে নিয়ে এদনের বাগানে কৃষিকাজ ও দেখাশোনার জন্য সেখানে রাখলেন।
\v 16 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে এই আদেশ দিলেন, "তুমি এই বাগানের সব গাছের ফল নিজের ইচ্ছায় খাও;
\v 17 কিন্তু সদসদ-জ্ঞানদায়ক যে গাছ, তার ফল খেও না, কারণ যে দিন তার ফল খাবে, সেই দিন মরবেই মরবে।"
\s5
\v 18 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর বললেন, "মানুষের একা থাকা ভাল নয়, আমি তার জন্য তার মতো সহকারিণী তৈরী করি।"
\v 19 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর মাটি থেকে সকল বন্য পশু ও আকাশের সব পাখি তৈরী করলেন; পরে আদম তাদের কি কি নাম রাখবেন, তা জানতে সেই সবাইকে তাঁর কাছে আনলেন, তাতে আদম যে সজীব প্রাণীর যে নাম রাখলেন, তার সেই নাম হল।
\v 20 আদম যাবতীয় পশুপাল, পাখির ও যাবতীয় বন্য পশুর নাম রাখলেন, কিন্তু মানুষের জন্য তাঁর মতো সহকারিণী পাওয়া গেল না।
\s5
\v 21 পরে সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে গভীর ঘুমে মগ্ন করলে তিনি ঘুমিয়ে পড়লেন; আর তিনি তাঁর একখানা পাঁজর নিয়ে মাংস দিয়ে সেই স্থান পূরণ করলেন।
\v 22 সদাপ্রভু ঈশ্বর আদম থেকে পাওয়া সেই পাঁজরে এক স্ত্রী সৃষ্টি করলেন ও তাঁকে আদমের কাছে আনলেন।
\v 23 তখন আদম বললেন, "এবার [হয়েছে]; ইনি আমার অস্থির অস্থি ও মাংসের মাংস; এর নাম নারী হবে, কারণ ইনি মানুষ থেকে গৃহীত হয়েছেন।"
\s5
\v 24 এই কারণ মানুষ নিজের বাবা মাকে ত্যাগ করে নিজের স্ত্রীতে আসক্ত হবে এবং তারা একাঙ্গ হবে।
\v 25 ঐ সময়ে আদম ও তাঁর স্ত্রী উভয়ে উলঙ্গ থাকতেন, আর তাঁদের লজ্জা বোধ ছিল না।
\s5
\c 3
\s মানবজাতির পাপে পতন
\p
\v 1 সদাপ্রভু ঈশ্বরের সৃষ্টি ভূচর প্রাণীদের মধ্যে সাপ সবচেয়ে ধূর্ত ছিল। সে ঐ নারীকে বলল, "ঈশ্বর কি বাস্তবিক বলেছেন, তোমরা এই বাগানের কোনো গাছের ফল খেও না?"
\v 2 নারী সাপকে বললেন, "আমরা এই বাগানের সব গাছের ফল খেতে পারি;
\v 3 কেবল বাগানের মাঝখানে যে গাছ আছে, সেই ফলের বিষয় ঈশ্বর বলেছেন, তোমরা তা খেও না, ছুঁয়েও দেখ না, তা করলে মরবে।"
\s5
\v 4 তখন সাপ নারীকে বলল, "কোনোভাবেই মরবে না;
\v 5 কারণ ঈশ্বর জানেন, যে দিন তোমরা তা খাবে, সেই দিন তোমাদের চোখ খুলে যাবে। তাতে তোমরা ঈশ্বরের মতো হয়ে সদসদ-জ্ঞান লাভ করবে।"
\v 6 নারী যখন দেখলেন, ঐ গাছ সুখাদ্যদায়ক ও চোখের লোভজনক, আর ঐ গাছ জ্ঞানদায়ক বলে বাঞ্ছনীয়, তখন তিনি তার ফল পেড়ে খেলেন; পরে নিজের স্বামীকেও দিলেন, আর তিনিও খেলেন।
\s5
\v 7 তাতে তাঁদের উভয়ের চোখ খুলে গেল এবং তাঁরা বুঝতে পারলেন যে তাঁরা উলঙ্গ; আর ডুমুর গাছের পাতা সেলাই করে ঘাগরা তৈরী করে নিলেন।
\v 8 পরে তাঁরা সদাপ্রভু ঈশ্বরের রব শুনতে পেলেন, তিনি দিনের বেলায় বাগানে চলাফেরা করছিলেন; তাতে আদম ও তাঁর স্ত্রী সদাপ্রভু ঈশ্বরের সামনে থেকে বাগানের গাছ সকলের মধ্যে লুকালেন।
\s5
\v 9 তখন সদাপ্রভু ঈশ্বর আদমকে ডেকে বললেন, "তুমি কোথায়?"
\v 10 তিনি বললেন, "আমি বাগানে তোমার কথা শুনে ভয় পেলাম, কারণ আমি উলঙ্গ, তাই নিজেকে লুকিয়েছি।"
\v 11 তিনি বললেন, "তুমি যে উলঙ্গ, এটা তোমাকে কে বলল?" যে গাছের ফল খেতে তোমাকে বারণ করেছিলাম, তুমি কি তার ফল খেয়েছ?
\s5
\v 12 তাতে আদম বললেন, "তুমি আমার সঙ্গিনী করে যে স্ত্রীকে দিয়েছ, সে আমাকে ঐ গাছের ফল দিয়েছিল, তাই খেয়েছি।
\v 13 তখন সদাপ্রভু ঈশ্বর নারীকে বললেন, "তুমি এ কি করলে?" নারী বললেন, "সাপ আমাকে ভুলিয়েছিল, তাই খেয়েছি।"
\s5
\v 14 পরে সদাপ্রভু ঈশ্বর সাপকে বললেন, "তুমি এই কাজ করেছ, এই জন্য পশুপাল ও বন্য পশুদের মধ্যে তুমি সবচেয়ে বেশি শাপগ্রস্ত; তুমি বুকে হাঁটবে এবং যাবজ্জীবন ধুলো খাবে।
\v 15 আর আমি তোমাতে ও নারীতে এবং তোমার বংশে ও তার বংশে পরস্পর শত্রুতা জন্মাব; সে তোমার মাথা ভেঙ্গে দেবে এবং তুমি তার পাদমূল দংশন করবে।"
\s5
\v 16 পরে তিনি নারীকে বললেন, "আমি তোমার গর্ভ বেদনা খুবই বাড়িয়ে দেব, তুমি কষ্টে সন্তান প্রসব করবে এবং স্বামীর প্রতি তোমার বাসনা থাকবে ও সে তোমার উপরে কর্তৃত্ব করবে।"
\s5
\v 17 আর তিনি আদমকে বললেন, "যে বৃক্ষের ফলের বিষয়ে আমি তোমাকে বলেছিলাম, তুমি তা খেওনা, তুমি তোমার স্ত্রীর কথা শুনে তার ফল খেয়েছ, এই জন্য তোমার জন্য ভূমি অভিশপ্ত হল; তুমি সারাজীবন কষ্টে তা ভোগ করবে;
\v 18 আর মাটিতে তোমার জন্য কাঁটা ও শেয়াল কাঁটা জন্মাবে এবং তুমি জমির ওষধি খাবে।
\v 19 তুমি ঘাম ঝরা মুখে খাবার খাবে, যে পর্যন্ত তুমি মাটিতে ফিরে না যাবে; তুমি তো তা থেকেই এসেছ; কারণ তোমাকে ধূলো থেকে নেওয়া হয়েছে এবং ধূলোতে মিশে যাবে।"
\s5
\v 20 পরে আদম নিজের স্ত্রীর নাম হবা [জীবিত] রাখলেন, কারণ তিনি জীবিত সকলের মা হলেন।
\v 21 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর আদম ও তাঁর স্ত্রীর জন্য চামড়ার বস্ত্র তৈরী করে তাঁদেরকে পরালেন।
\s5
\v 22 আর সদাপ্রভু ঈশ্বর বললেন, "দেখ, মানুষ সদ-সদজ্ঞান প্রাপ্ত হবার বিষয়ে আমাদের একজনের মত হল, এখন যদি সে হাত বাড়িয়ে জীবনবৃক্ষের ফলও পেড়ে খায় ও অনন্তজীবী হয়।"
\v 23 এই জন্য সদাপ্রভু ঈশ্বর তাঁকে এদনের বাগান থেকে বের করে দিলেন, যেন, তিনি যা থেকে সৃষ্টি, সেই মাটিতে কৃষিকাজ করেন।
\v 24 এইভাবে ঈশ্বর মানুষকে তাড়িয়ে দিলেন এবং জীবনবৃক্ষের পথ রক্ষা করবার জন্য এদন বাগানের পূর্বদিকে করূবদেরকে ও ঘূর্ণায়মান তেজোময় তলোয়ার রাখলেন।
\s5
\c 4
\ms কয়িন ও হেবলের বিবরণ।
\p
\v 1 পরে আদম নিজের স্ত্রী হবার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করলে তিনি গর্ভবতী হয়ে কয়িনকে প্রসব করে বললেন, "সদাপ্রভুর সাহায্যতে আমি একটা মানুষকে জন্ম দিতে পেরেছি।"
\v 2 পরে তিনি হেবল নামে তার ভাইকে প্রসব করলেন। হেবল মেষপালক ছিল, ও কয়িন চাষী ছিল।
\s5
\v 3 পরে নির্ধারিত সময়ে কয়িন উপহাররূপে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে ভূমির ফল উৎসর্গ করল।
\v 4 আর হেবলও নিজের পালের প্রথমজাত কয়েকটি পশু ও তাদের মেদ উৎসর্গ করল। তখন সদাপ্রভু হেবলকে ও তার উপহার গ্রহণ করলেন;
\v 5 কিন্তু কয়িনকে ও তার উপহার গ্রহণ করলেন না; এই জন্য কয়িন খুবই রেগে গেল, তার মুখ বিষণ্ণ হল।
\s5
\v 6 তাতে সদাপ্রভু কয়িনকে বললেন, "তুমি কেন রাগ করেছ? তোমার মুখ কেন বিষণ্ণ হয়েছে?
\v 7 যদি ভালো আচরণ কর, তবে কি গ্রহণ করা হবে না? আর যদি ভালো আচরণ না কর, তবে পাপ দরজায় গুঁড়ি মেরে বসে আছে। তোমার প্রতি তার বাসনা থাকবে কিন্তু তোমার তার উপরে কর্তৃত্ব করা উচিত।"
\s5
\v 8 আর কয়িন নিজের ভাই হেবলের সঙ্গে কথোপকথন করল; পরে তারা ক্ষেতে গেলে কয়িন নিজের ভাই হেবলের বিরুদ্ধে উঠে তাকে মেরে ফেলল।
\v 9 পরে সদাপ্রভু কয়িনকে বললেন, "তোমার ভাই হেবল কোথায়? সে উত্তর করল, "আমি জানি না, আমি কি আমার ভাইয়ের রক্ষক?"
\s5
\v 10 তিনি বললেন, "তুমি কি করেছ? তোমার ভাইয়ের রক্ত ভূমি থেকে আমার কাছে কাঁদছে।
\v 11 আর এখন, যে ভূমি তোমার হাত থেকে তোমার ভাইয়ের রক্ত গ্রহণ করার জন্য নিজের মুখ খুলেছে, সেই ভূমিতে তুমি শাপগ্রস্ত হলে।
\v 12 যখন তুমি ভূমিতে কৃষিকাজ করবে তা নিজের শক্তি দিয়ে তোমার সেবা আর করবে না; তুমি পৃথিবীতে পলাতক ও ভ্রমণকারী হবে।
\s5
\v 13 তাতে কয়িন সদাপ্রভুকে বলল, "আমার অপরাধের ভার অসহ্য।
\v 14 দেখ, আজ তুমি পৃথিবী থেকে আমাকে তাড়িয়ে দিলে, আর তোমার সামনে থেকে আমি লুকিয়ে থাকব। আমি পৃথিবীতে পলাতক ও ভ্রমণকারী হব, আর আমাকে যে পাবে, সে হত্যা করবে।"
\v 15 তাতে সদাপ্রভু তাকে বললেন, "এই জন্য কয়িনকে যে মারবে, সে সাত গুন প্রতিফল পাবে।" আর সদাপ্রভু কয়িনের জন্য এক চিহ্ন রাখলেন, যদি কেউ তাকে পেলে আক্রমণ করে।
\s5
\v 16 পরে কয়িন সদাপ্রভুর সামনে থেকে চলে গিয়ে এদনের পূর্ব দিকে নোদ দেশে বাস করল।
\v 17 আর কয়িন নিজের স্ত্রীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করলে সে গর্ভবতী হয়ে হনোককে প্রসব করল। আর কয়িন এক নগর তৈরী করে নিজের ছেলের নামানুসারে তার নাম হনোক রাখল।
\s5
\v 18 হনোকের ছেলে ঈরদ, ঈরদের ছেলে মহুয়ায়েল, মহুয়ায়েলের ছেলে মথূশায়েল ও
\v 19 মথূশায়েলের ছেলে লেমক। লেমক দুই স্ত্রী গ্রহণ করল, একজন স্ত্রীর নাম আদা, অন্যের নাম সিল্লা।
\s5
\v 20 আদার গর্ভে যাবল জন্মাল, সে তাঁবুনিবাসী পশুপালকদের আদিপুরুষ ছিল। তার ভাইয়ের নাম যুবল;
\v 21 সে বীণা ও বংশীধারী সকলের আদিপুরুষ ছিল।
\v 22 আর সিল্লার গর্ভে তুবল-কয়িন জন্মাল, সে পিত্তলের ও লোহার নানা প্রকার অস্ত্র তৈরী করত। তুবল-কয়িনের বোনের নাম নয়মা।
\s5
\v 23 আর লেমক নিজের দুই স্ত্রীকে বলল, "আদে, সিল্লে, তোমরা আমার কথা শোন, লেমকের স্ত্রীরা আমার কথা শোন; কারন আমি আঘাতের পরিশোধে পুরুষকে, প্রহারের পরিশোধে যুবাকে মেরে ফেলেছি।
\v 24 যদি কয়িনের হত্যার প্রতিফল সাত গুন হয়, তবে লেমকের হত্যার প্রতিফল সাতাত্তর গুন হবে।"
\s5
\v 25 আর আদম আবার নিজের স্ত্রীর পরিচয় নিলে তিনি ছেলে প্রসব করলেন ও তার নাম শেথ রাখলেন। কারণ [তিনি বললেন] কয়িনের মাধ্যমে হত হেবলের পরিবর্তে ঈশ্বর আমাকে আর এক ছেলে দিলেন। পরে
\v 26 শেথেরও ছেলে হল, আর তিনি তার নাম ইনোশ রাখলেন। তখন লোকেরা সদাপ্রভুর নামে ডাকতে আরম্ভ করল।
\s5
\c 5
\s আদম-বংশের বিবরণ।
\p
\v 1 আদমের বংশাবলী-পত্র এই। যে দিন ঈশ্বর মানুষের সৃষ্টি করলেন, সেই দিনে ঈশ্বরের সাদৃশ্যেই তাঁকে তৈরী করলেন,
\v 2 পুরুষ ও স্ত্রী করে তাঁদের সৃষ্টি করলেন; এবং সেই সৃষ্টিদিনে তাঁদেরকে আশীর্বাদ করে আদম, এই নাম দিলেন।
\s5
\v 3 পরে আদম একশো ত্রিশ বছর বয়সে নিজের মতো ও প্রতিমূর্তিতে ছেলের জন্ম দিয়ে তার নাম শেথ রাখলেন।
\v 4 শেথের জন্ম দিলে পর আদম আটশো বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\v 5 সব মিলিয়ে আদমের নয়শো ত্রিশ বছর বয়স হলে তাঁর মৃত্যু হল।
\s5
\v 6 শেথ একশো পাঁচ বছর বয়সে ইনোশের জন্ম দিলেন।
\v 7 ইনোশের জন্ম দিলে পর শেথ আটশো সাত বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\v 8 সব মিলিয়ে শেথের নয়শো বারো বছর বয়স হলে তাঁর মৃত্যু হল।
\s5
\v 9 ইনোশ নব্বই বছর বয়সে কৈননের জন্ম দিলেন।
\v 10 কৈননের জন্ম দিলে পর ইনোশ আটশো পনের বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\v 11 সব মিলিয়ে ইনোশের নয়শো পাঁচ বছর বয়স হলে তাঁর মৃত্যু হল।
\s5
\v 12 কৈনন সত্তর বছর বয়সে মহললেলের জন্ম দিলেন।
\v 13 মহললেলের জন্ম দিলে পর কৈনন আটশো চল্লিশ বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\v 14 সব মিলিয়ে কৈননের নয়শো দশ বছর বয়স হলে তাঁর মৃত্যু হল।
\s5
\v 15 মহললেল পঁয়ষট্টি বছর বয়সে যেরদের জন্ম দিলেন।
\v 16 যেরদের জন্ম দিলে পর মহললেল আটশো ত্রিশ বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\v 17 সব মিলিয়ে মহললেলের আটশো পঁচানব্বই বছর বয়স হলে তাঁর মৃত্যু হল।
\s5
\v 18 যেরদ একশো বাষট্টি বছর বয়সে হনোকের জন্ম দিলেন।
\v 19 হনোকের জন্ম দিলে পর যেরদ আটশো বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\v 20 সব মিলিয়ে যেরদের নয়শো বাষটি বছর বয়স হলে তাঁর মৃত্যু হল।
\s5
\v 21 হনোক পয়ষট্টি বছর বয়সে মথূশেলহের জন্ম দিলেন।
\v 22 মথূশেলহের জন্ম দিলে পর হনোক তিনশো বছর ঈশ্বরের সঙ্গে যাতায়াত করলেন এবং আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\v 23 সব মিলিয়ে হনোক তিনশো পয়ষটি বছর থাকলেন।
\v 24 হনোক ঈশ্বরের সঙ্গে যাতায়াত করতেন। পরে তিনি আর থাকলেন না, কারণ ঈশ্বর তাঁকে গ্রহণ করলেন।
\s5
\v 25 মথূশেলহ একশো সাতাশী বছর বয়সে লেমকের জন্ম দিলেন।
\v 26 লেমকের জন্ম দিলে পর মথূশেলহ সাতশো বিরাশী বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\v 27 সব মিলিয়ে মথূশেলহের নয়শো ঊনসত্তর বছর বয়স হলে তাঁর মৃত্যু হল।
\s5
\v 28 লেমক একশো বিরাশী বৎসর বয়সে ছেলের জন্ম দিয়ে তাঁর নাম নোহ [বিশ্রাম] রাখলেন;
\v 29 কারণ তিনি বললেন, "সদাপ্রভুর মাধ্যমে অভিশপ্ত ভূমি থেকে আমাদের যে শ্রম ও হাতের কষ্ট হয়, তার বিষয়ে এ আমাদেরকে সান্ত্বনা করবে।"
\s5
\v 30 নোহের জন্ম দিলে পর লেমক পাঁচশো পঁচানব্বই বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\v 31 সব মিলিয়ে লেমকের সাতশো সাতাত্তর বছর বয়স হলে তাঁর মৃত্যু হল।
\s5
\v 32 পরে নোহ পাঁচশো বছর বয়সে শেম, হাম ও যেফতের জন্ম দিলেন।
\s5
\c 6
\s নোহ ও বন্যার বিবরণ।
\p
\v 1 এভাবে যখন পৃথিবীতে মানুষদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে লাগল ও অনেক মেয়ে জন্ম গ্রহণ করল,
\v 2 তখন ঈশ্বরের ছেলেরা মানুষদের মেয়েদেরকে সুন্দরী দেখে, যার যাকে ইচ্ছা, সে তাকে বিয়ে করতে লাগল।
\v 3 তাতে সদাপ্রভু বললেন, "আমার আত্মা মানুষদের মধ্যে সবসময় থাকবে না, কারণ তারা মাংসমাত্র; কিন্তু তাদের সময় একশো কুড়ি বছর হবে।
\s5
\v 4 সেই সময়ে পৃথিবীতে মহাবীররা ছিল এবং তার পরেও ঈশ্বরের ছেলেরা মানুষদের মেয়েদের কাছে গেলে তাদের গর্ভে ছেলেমেয়ে জন্মাল, তারাই সেকালের প্রসিদ্ধ বীর।
\s5
\v 5 আর সদাপ্রভু দেখলেন, পৃথিবীতে মানুষের দুষ্টতা বড় এবং তার হৃদয়ের চিন্তার সমস্ত কল্পনা সবসময় কেবল খারাপ।
\v 6 তাই সদাপ্রভু পৃথিবীতে মানুষের সৃষ্টির জন্য দুঃখিত হলেন ও মনে আঘাত পেলেন।
\s5
\v 7 আর সদাপ্রভু বললেন, "আমি যে মানুষকে সৃষ্টি করেছি, তাকে পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন করব; মানুষের সঙ্গে পশু, সরীসৃপ জীব ও আকাশের পাখিদেরকেও উচ্ছিন্ন করব; কারণ তাদের সৃষ্টির জন্য আমার দুঃখ হচ্ছে।"
\v 8 কিন্তু নোহ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হলেন। নোহের বংশ বৃত্তান্ত এই।
\s5
\v 9 নোহ সেই সময়ের লোকদের মধ্যে ধার্মিক ও সিদ্ধ লোক ছিলেন, নোহ ঈশ্বরের সঙ্গে যাতায়াত করতেন।
\v 10 নোহ শেম, হাম ও যেফৎ নামে তিন ছেলের জন্ম দেন।
\s5
\v 11 সেই সময়ে পৃথিবী ঈশ্বরের সামনে ভ্রষ্ট ও মন্দতায় পরিপূর্ণ ছিল।
\v 12 আর ঈশ্বর পৃথিবীতে দেখলেন, আর দেখ, সে ভ্রষ্ট হয়েছে, কারণ পৃথিবীতে অবস্থিত সমস্ত প্রাণী ভ্রষ্টাচারী হয়েছিল।
\s5
\v 13 তখন ঈশ্বর নোহকে বললেন, "আমার চোখের সামনে সমস্ত প্রাণীর অন্তিমকাল উপস্থিত, কারণ তাদের দিয়ে পৃথিবী অত্যাচারে পরিপূর্ণ হয়েছে; আর দেখ, আমি পৃথিবীর সঙ্গে তাদেরকে বিনষ্ট করব।
\v 14 তুমি গোফর কাঠ দিয়ে এক জাহাজ তৈরী কর; সেই জাহাজের মধ্যে কামরা তৈরী করবে ও তার ভিতরে ও বাইরে ধূনা দিয়ে লেপে দেবে।
\v 15 এইভাবে তা তৈরী করবে। জাহাজ দৈর্ঘ্যে তিনশো হাত, প্রস্থে পঞ্চাশ হাত ও উচ্চতায় ত্রিশ হাত হবে।
\s5
\v 16 আর তার ছাদের এক হাত নিচে জানালা তৈরী করে রাখবে ও জাহাজের পাশে দরজা রাখবে; তার প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা তৈরী করবে।
\v 17 আর দেখ, আকাশের নীচে প্রাণবায়ুবিশিষ্ট যত জীবজন্তু আছে, সবাইকে বিনষ্ট করার জন্য আমি পৃথিবীর উপরে বন্যা আনব, পৃথিবীতে সবাই মারা যাবে।
\s5
\v 18 কিন্তু তোমার সঙ্গে আমি নিজের নিয়ম স্থির করব; তুমি নিজের ছেলেদের, স্ত্রী ও ছেলের বউদেরকে সঙ্গে নিয়ে সেই জাহাজে প্রবেশ করবে।
\v 19 আর মাংসবিশিষ্ট সমস্ত জীবজন্তুর স্ত্রীপুরুষ জোড়া জোড়া নিয়ে তাদের প্রাণরক্ষার জন্য নিজের সঙ্গে
\s5
\v 20 সেই জাহাজে প্রবেশ করাবে; সর্বজাতীয় পাখি ও সর্বজাতীয় পশু ও সর্বজাতীয় মাটিতে চলা সরীসৃপ জোড়া জোড়া প্রাণরক্ষার জন্য তোমার কাছে প্রবেশ করবে।
\v 21 আর তোমার ও তাদের আহারের জন্য তুমি সব ধরনের খাদ্য সামগ্রী এনে নিজের কাছে সঞ্চয় করবে।"
\v 22 তাতে নোহ সেরকম করলেন, ঈশ্বরের আদেশ অনুসারেই সব কাজ করলেন।
\s5
\c 7
\p
\v 1 আর সদাপ্রভু নোহকে বললেন, "তুমি সপরিবারে জাহাজে প্রবেশ কর, কারণ এই কালের লোকদের মধ্যে আমার সামনে তোমাকেই ধার্মিক দেখেছি।
\v 2 তুমি শুচি পশুর স্ত্রীপুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতির সাত সাত জোড়া এবং অশুচি পশুর স্ত্রী ও পুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতির
\v 3 এক এক জোড়া এবং আকাশের পাখিদেরও স্ত্রীপুরুষ নিয়ে প্রত্যেক জাতির সাত সাত জোড়া, সমস্ত ভূমণ্ডলে তাদের বংশ রক্ষার জন্য নিজের সঙ্গে রাখ।
\s5
\v 4 কারণ সাত দিনের পর আমি পৃথিবীতে চল্লিশ দিনরাত বৃষ্টি বর্ষণ করে আমার সৃষ্টি যাবতীয় প্রাণীকে পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন করব।
\v 5 তখন নোহ সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে সব কাজ করলেন।
\s5
\v 6 নোহের ছয়শো বছর বয়সে পৃথিবীতে জলপ্লাবন হল।
\v 7 জলপ্লাবনের জন্য নোহ ও তাঁর ছেলেরা এবং তাঁর স্ত্রী ও ছেলের বউরা জাহাজে প্রবেশ করলেন।
\s5
\v 8 নোহের প্রতি ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে শুচি অশুচি পশুর
\v 9 এবং পাখির ও ভূমিতে চলাচল যাবতীয় জীবের স্ত্রী পুরুষ জোড়া জোড়া জাহাজে নোহের কাছে প্রবেশ করল।
\v 10 আর সেই সাত দিন পরে পৃথিবীতে জলপ্লাবন হল।
\s5
\v 11 নোহের বয়সের ছয়শো বছরের দ্বিতীয় মাসের সতেরো দিনে মহাজলধির সমস্ত উনুই ভেঙ্গে গেল এবং আকাশের বাতায়ন সব মুক্ত হল;
\v 12 তাতে পৃথিবীতে চল্লিশ দিনরাত মহাবৃষ্টি হল।
\s5
\v 13 সেই দিন নোহ এবং শেম, হাম ও যেফৎ নামে নোহের ছেলেরা এবং তাঁদের সঙ্গে নোহের স্ত্রী ও তিন ছেলের বউরা জাহাজে প্রবেশ করলেন।
\v 14 আর তাঁদের সঙ্গে সর্বজাতীয় বন্য পশু, সবজাতীয় গ্রাম্য পশু, সবজাতীয় মাটিতে চলাচল করা সরীসৃপ জীব ও সবজাতীয় পাখি,
\s5
\v 15 প্রাণবায়ুবিশিষ্ট সবপ্রকার জীবজন্তু জোড়া জোড়া জাহাজে নোহের কাছে প্রবেশ করল।
\v 16 ফলতঃ তাঁর প্রতি ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে সমস্ত প্রাণীর স্ত্রী ও পুরুষ প্রবেশ করল। পরে সদাপ্রভু তাঁর জন্য পিছনের দরজা বন্ধ করলেন।
\s5
\v 17 আর চল্লিশ দিন পর্যন্ত পৃথিবীতে বন্যা হল, তাতে জল বৃদ্ধি পেয়ে জাহাজ ভাসালে তা মাটি ছেড়ে উঠল।
\v 18 পরে জল প্রবল হয়ে পৃথিবীতে অনেক বেড়ে গেল এবং জাহাজ জলের উপরে ভেসে উঠল।
\s5
\v 19 আর পৃথিবীতে জল অত্যন্ত প্রবল হল, আকাশমণ্ডলের নীচের সব মহাপর্বত ডুবে গেল।
\v 20 তার উপরে পনেরো হাত জল উঠে প্রবল হল, পর্বত সকল ডুবে গেল।
\s5
\v 21 তাতে মাটিতে চলাচল যাবতীয় প্রাণী, পাখি, পশুপাল ও বন্য পশু সব এবং সমস্ত মানুষ মারা গেল।
\v 22 মাটিতে চলনশীল যত প্রাণীর নাকে প্রাণবায়ুর সঞ্চার ছিল, সকলে মারা গেল।
\s5
\v 23 এইভাবে পৃথিবী নিবাসী সমস্ত প্রাণী মানুষ, পশু, সরীসৃপ, জীব ও আকাশের পাখি সকল উচ্ছিন্ন হল, পৃথিবী থেকে উচ্ছিন্ন হল, কেবল নোহ ও তাঁর সঙ্গী জাহাজে প্রাণীরা বেঁচে গেলেন।
\v 24 আর জল পৃথিবীর উপরে একশো পঞ্চাশ দিন পর্যন্ত প্রবল থাকল।
\s5
\c 8
\p
\v 1 আর ঈশ্বর নোহকে ও জাহাজে অবস্থিত তাঁর সঙ্গী পশু যাবতীয় প্রাণীকে স্মরণ করলেন, ঈশ্বর পৃথিবীতে বাতাস বহালেন, তাতে জল থামল।
\v 2 আর গভীর জলের উনুই ও আকাশের বাতায়ন সকল বন্ধ এবং আকাশের মহাবৃষ্টি থামল।
\v 3 আর জল ক্রমশঃ মাটির ওপর থেকে সরে গিয়ে একশো পঞ্চাশ দিনের শেষে কমে গেল।
\s5
\v 4 তাতে সপ্তম মাসে, সতেরো দিনে অরারটের পর্বতের ওপরে জাহাজ লেগে থাকল।
\v 5 পরে দশ মাস পর্যন্ত জল কমতে থাকল, ঐ দশ মাসের প্রথম দিনে পর্বতের শৃঙ্গ দেখা গেল।
\s5
\v 6 আর চল্লিশ দিন পরে নোহ নিজের বানানো জাহাজের জানালা খুলে, একটা দাঁড়কাক ছেড়ে দিলেন;
\v 7 তাতে সে উড়ে ভূমির উপরের জল শুকনো না হওয়া পর্যন্ত এখানে ওখানে ঘোরাফেরা করতে লাগলো।
\s5
\v 8 আর মাটির ওপরে জল কমেছে কি না, তা জানবার জন্য তিনি নিজের কাছ থেকে এক ঘুঘু ছেড়ে দিলেন।
\v 9 তাতে সমস্ত পৃথিবী জলে ভরে থাকাতে ঘুঘু নামার জায়গা পেল না, তাই জাহাজে তাঁর কাছে ফিরে আসল। তখন তিনি হাত বাড়িয়ে তাকে ধরলেন ও জাহাজের ভিতরে নিজের কাছে রাখলেন।
\s5
\v 10 পরে তিনি আর সাত দিন অপেক্ষা করে জাহাজ থেকে সেই ঘুঘু আবার ছেড়ে দিলেন
\v 11 এবং ঘুঘুটি সন্ধাবেলায় তাঁর কাছে ফিরে এল; আর দেখ, তার ঠোঁটে জিতগাছের একটা নতুন পাতা ছিল; এতে নোহ বুঝলেন, মাটির ওপরে জল কমেছে।
\v 12 পরে তিনি আর সাত দিন অপেক্ষা করে সেই ঘুঘু ছেড়ে দিলেন, তখন সে তাঁর কাছে আর ফিরে এল না।
\s5
\v 13 [নোহের বয়সের] ছয়শো এক বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে পৃথিবীর ওপরে জল শুকনো হল; তাতে নোহ জাহাজের ছাদ খুলে দেখলেন, আর দেখ, মাটিতে জল নেই।
\v 14 পরে দ্বিতীয় মাসের সাতাশ দিনে ভূমি শুকনো হল।
\s নোহের সঙ্গে করা ঈশ্বরের নিয়ম।
\m
\s5
\v 15 পরে ঈশ্বর নোহকে বললেন,
\v 16 তুমি নিজের বউ, ছেলেদের ও ছেলের বউদেরকে সঙ্গে নিয়ে জাহাজ থেকে বাইরে যাও।
\v 17 আর তোমার সঙ্গী পশু, পাখি ও মাটিতে চলা সরীসৃপ প্রভৃতি মাংসময় যত জীবজন্তু আছে, সেই সমস্ত কিছুকে তোমার সঙ্গে বাইরে আন, তারা পৃথিবীতে প্রাণীময় করুক এবং পৃথিবীতে ফলবান ও বহুবংশ হোক।
\s5
\v 18 তখন নোহ নিজের ছেলেদের এবং নিজের স্ত্রী ও ছেলের স্ত্রীদেরকে সঙ্গে নিয়ে বের হলেন।
\v 19 আর নিজের নিজের জাতি অনুসারে প্রত্যেক পশু, সরীসৃপ জীব ও পাখি, সমস্ত মাটিতে চলনশীল প্রাণী জাহাজ থেকে বের হল।
\s5
\v 20 পরে নোহ সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন এবং সমস্ত রকমের শুচি পশুর ও সমস্ত রকমের শুচি পাখির মধ্যে কতকগুলি নিয়ে বেদির ওপরে হোম করলেন।
\v 21 তাতে সদাপ্রভু তার সুগন্ধ গ্রহণ করলেন, আর সদাপ্রভু মনে মনে বললেন, "আমি মানুষের জন্য মাটিকে আর অভিশাপ দেব না, কারন বাল্যকাল পর্যন্ত মানুষের মনের কল্পনা দুষ্ট; যেমন করলাম, তেমন আর কখনও সকল প্রাণীকে ধ্বংস করব না।
\v 22 যতদিন পৃথিবী থাকবে, ততদিন শস্য বোনার ও শস্য কাটার সময় এবং শীত ও উত্তাপ এবং গ্রীষ্মকাল ও হেমন্তকাল এবং দিন ও রাত, এই সমস্ত থেমে যাবে না।"
\s5
\c 9
\p
\v 1 পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁর ছেলেদেরকে এই আশীর্বাদ করলেন ও বললেন, "তোমরা ফলবান ও বহুবংশ হও, পৃথিবী ভরিয়ে তোলো।
\v 2 পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণী ও আকাশের যাবতীয় পাখি তোমাদের থেকে ভয় ও ত্রাসযুক্ত হবে; সমস্ত মাটিতে চলা জীব ও সমুদ্রের সমস্ত মাছ সে সব তোমাদেরই হাতে দেওয়া আছে।
\s5
\v 3 প্রত্যেক গমনশীল প্রাণী তোমাদের খাদ্য হবে; আমি সবুজ গাছপালার মতো সে সকল তোমাদেরকে দিলাম।
\v 4 কিন্তু প্রাণসহ অর্থাৎ রক্তসহ মাংস খেও না।
\s5
\v 5 আর তোমাদের রক্তপাত হলে আমি তোমাদের প্রাণের পক্ষে তার প্রতিশোধ অবশ্যই নেব; সকল পশুর কাছে তার প্রতিশোধ নেব। এবং মানুষের ভাই মানুষের কাছে আমি মানুষের প্রানের প্রতিশোধ নেব।
\v 6 যে কেউ মানুষের রক্তপাত করবে, মানুষের মাধ্যমে তার রক্তপাত করা যাবে; কারণ ঈশ্বর নিজের প্রতিমূর্তিতে মানুষকে নির্মাণ করেছেন।
\v 7 তোমরা ফলবান ও বহুবংশ হও, পৃথিবীকে প্রাণীময় কর, ও তার মধ্যে বেড়ে ওঠ।
\s5
\v 8 পরে ঈশ্বর নোহকে ও তাঁর সঙ্গী ছেলেদেরকে বললেন,
\v 9 "দেখ, তোমাদের সঙ্গে, তোমাদের আগামী বংশের সঙ্গে ও তোমাদের সঙ্গী যাবতীয় প্রাণীর সঙ্গে,
\v 10 পাখি এবং পশুপাল ও বন্য পশু, পৃথিবীতে অবস্থিত যত প্রাণী জাহাজ থেকে বের হয়েছে, তাদের সঙ্গে আমি আমার নিয়ম স্থির করি।
\s5
\v 11 আমি তোমাদের সঙ্গে আমার নিয়ম স্থির করি; বন্যার মাধ্যমে সমস্ত প্রাণী আর ধ্বংস হবে না এবং পৃথিবীর বিনাশের জন্য জলপ্লাবন আর হবে না।"
\v 12 ঈশ্বর আরও বললেন, "আমি তোমাদের সঙ্গে ও তোমাদের সঙ্গী যাবতীয় প্রাণীর সঙ্গে চিরস্থায়ী পুরুষ পরম্পরার জন্য যে নিয়ম স্থির করলাম, তাঁর চিহ্ন এই।"
\v 13 আমি মেঘে নিজের মেঘধনু স্থাপন করি, সেটাই পৃথিবীর সঙ্গে আমার নিয়মের চিহ্ন হবে।
\s5
\v 14 যখন আমি পৃথিবীর উপরে মেঘ আনব, তখন সেই মেঘধনু মেঘে দেখা যাবে;
\v 15 তাতে তোমাদের সঙ্গে ও মাংসময় সমস্ত প্রাণীর সঙ্গে আমার যে নিয়ম আছে, তা আমার স্মরণ হবে এবং সকল প্রাণীর বিনাশের জন্য জলপ্লাবন আর হবে না।
\s5
\v 16 আর মেঘধনু হলে আমি তার প্রতি দৃষ্টিপাত করব; তাতে মাংসময় যত প্রাণী পৃথিবীতে আছে, তাদের সঙ্গে ঈশ্বরের যে চিরস্থায়ী নিয়ম, তা আমি স্মরণ করব।
\v 17 ঈশ্বর নোহকে বললেন, "এটি একটি নিয়মের চিহ্ন যা আমার এবং পৃথিবীর সব প্রাণীর সঙ্গে স্থাপিত হবে।
\s নোহের তিন ছেলের বিবরণ।
\m
\s5
\v 18 নোহের যে ছেলেরা জাহাজ থেকে বের হলেন, তাঁদের নাম শেম, হাম ও যেফৎ; সেই হাম কনানের বাবা।
\v 19 এই তিনজন নোহের ছেলে; এদেরই বংশ সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল।
\s5
\v 20 পরে নোহ কৃষিকাজে যুক্ত হয়ে আঙ্গুরের ক্ষেত করলেন।
\v 21 আর তিনি আঙ্গুর রস পান করে মাতাল হলেন এবং তাঁবুর মধ্যে বিবস্ত্র হয়ে পড়লেন।
\s5
\v 22 তখন কনানের বাবা হাম নিজের বাবার উলঙ্গতা দেখে বাইরে নিজের দুই ভাইকে বলল।
\v 23 তাতে শেম ও যেফৎ কাপড় নিয়ে নিজেদের কাঁধে রেখে পিছনে হেঁটে বাবার উলঙ্গতা ঢেকে দিলেন; পিছন দিকে মুখ থাকাতে তাঁরা পিতার উলঙ্গতা দেখলেন না।
\s5
\v 24 পরে নোহ আঙ্গুর রসের ঘুম থেকে জেগে উঠে তাঁর প্রতি ছোট ছেলের আচরণ জানতে পারলেন।
\v 25 আর তিনি বললেন, "কনান অভিশপ্ত হোক, সে নিজের ভাইদের দাসানুদাস হবে।"
\s5
\v 26 তিনি আরও বললেন, "শেমের ঈশ্বর সদাপ্রভু ধন্য; কনান তার দাস হোক।
\v 27 ঈশ্বর যেফৎকে বিস্তীর্ণ করুন; সে শেমের তাঁবুতে বাস করুক, আর কনান তার দাস হোক।"
\s5
\v 28 জলপ্লাবনের পরে নোহ তিনশো পঞ্চাশ বছর জীবিত থাকলেন।
\v 29 সব মিলিয়ে নোহের নয়শো পঞ্চাশ বছর বয়স হলে তাঁর মৃত্যু হল।
\s5
\c 10
\s নোহের বংশের বিবরণ।
\p
\v 1 নোহের ছেলে শেম, হাম ও যেফতের বংশ বৃত্তান্ত এই। বন্যার পরে তাঁদের ছেলেমেয়ে জন্মাল।
\s5
\v 2 যেফতের ছেলে গোমর, মাগোগ, মাদয়, যবন, তূবল, মেশক ও তীরস।
\v 3 গোমরের ছেলে অস্কিনস, রীফৎ ও
\v 4 তোগর্ম। যবনের ছেলে ইলীশা, তর্শীশ,
\v 5 কিত্তীম ও দোদানীম। এই সমস্ত থেকে জাতিদের দ্বীপনিবাসীরা নিজের নিজের দেশে নিজের নিজের ভাষানুসারে নিজের নিজের জাতির নানা গোষ্ঠীতে বিভক্ত হল।
\s5
\v 6 আর হামের ছেলে কূশ, মিসর, পুট ও কনান।
\v 7 কূশের ছেলে সবা, হবীলা, সপ্তা, রয়মা ও সপ্তকা। রয়মার ছেলে শিবা ও দদান।
\s5
\v 8 নিম্রদ কূশের ছেলে; তিনি পৃথিবীতে শক্তিশালী হতে লাগলেন।
\v 9 তিনি সদাপ্রভুর সামনে শক্তিশালী শিকারী হলেন; তার জন্য লোকে বলে, সদাপ্রভুর সামনে শক্তিশালী শিকারী নিম্রোদের তুল্য।
\v 10 শিনিয়র দেশে বাবিল, এরক, অক্কদ ও কলনী, এই সব জায়গা তাঁর রাজ্যের প্রথম অংশ ছিল।
\s5
\v 11 সেই দেশ থেকে তিনি অশূরে গিয়ে নীনবী,
\v 12 রহবোৎপুরী, কেলহ এবং নীনবী ও কেলহের মাঝখানে রেষন পত্তন করলেন; ওটা মহানগর।
\v 13 আর লূদীয়, অনামীয়,
\v 14 লহাবীয়, নপ্তুহীয়, পথ্রোষীয়, পলেস্তীয়দের পূর্বপুরুষ কসলূহীয় এবং কপ্তরীয়, এই সব মিসরের সন্তান।
\s5
\v 15 এবং কনানের বড় ছেলে সীদন,
\v 16 তারপর হেৎ, যিবূষীয়, ইমরীয়, গির্গাশীয়, হিব্বীয়, অর্কীয়, সীনীয়, অর্বদীয়, সমারীয় ও হমাতীয়।
\v 17 পরে কনানীয়দের গোষ্ঠী সকল বিস্তারিত হল।
\v 18 সীদোন থেকে গরারের দিকে ঘসা পর্যন্ত
\s5
\v 19 এবং সদোম, ঘমোরা, অদমা ও সবোয়ীমের দিকে লাশা পর্যন্ত কনানীয়দের সীমা ছিল।
\v 20 নিজের নিজের গোষ্ঠী, ভাষা, দেশ ও জাতি অনুসারে এই সব হামের ছেলে।
\s5
\v 21 যে শেম এবরের সব লোকদের পূর্বপুরুষ, আর যেফতের বড় ভাই, তাঁরও ছেলেমেয়ে ছিল।
\v 22 শেমের এই সকল ছেলে এলম, অশূর, অফকষদ, লূদ ও অরাম।
\v 23 অরামের সন্তান ঊষ, হূল, গেথর ও মশ।
\s5
\v 24 আর অর্ফকষদ শেলহের জন্ম দিলেন ও শেলহ এবরের জন্ম দিলেন।
\v 25 এবরের দুই ছেলে; একের নাম পেলগ [বিভাগ], কারণ সেই সময়ে পৃথিবী ভাগ হল;
\s5
\v 26 তাঁর ভাইয়ের নাম যক্তন।
\v 27 আর যক্তন অলমোদদ, শেলফ, হৎসর্মাবৎ, যেরহ,
\v 28 হদোরাম ঊষল, দিক্ল, ওবল, অবীমায়েল, শিবা, ওফীর, হবীলা ও যোববের জন্ম দিলেন;
\v 29 এরা সবাই যক্তনের ছেলে।
\s5
\v 30 মেষা থেকে পূর্বদিকের সফার পর্বত পর্যন্ত তাদের বসতি ছিল।
\v 31 নিজের নিজের গোষ্ঠী, ভাষা, দেশ ও জাতি অনুসারে এই সকল শেমের ছেলে।
\s5
\v 32 নিজের নিজের বংশ ও জাতি অনুসারে এরা নোহের ছেলেদের গোষ্ঠী এবং বন্যার পরে এদের থেকে তৈরী নানা জাতি পৃথিবীতে ভাগ হল।
\s5
\c 11
\s বাবিলে ভাষা-ভেদ।
\p
\v 1 সমস্ত পৃথিবীতে এক ভাষা ও একই কথা ছিল।
\v 2 পরে লোকেরা পূর্বদিকে ঘুরতে ঘুরতে শিনিয়র দেশে এক সমভূমি পেয়ে সে জায়গায় বাস করল;
\s5
\v 3 আর একে-অপরকে বলল, "এস, আমরা ইট তৈরী করে আগুনে পোড়াই," তাতে তাদের পাথরের পরিবর্তে ইট ও চূনের পরিবর্তে আলকাতরা ছিল।
\v 4 পরে তারা বলল, "এস, আমরা নিজেদের জন্য এক শহর ও আকাশকে নাগাল পেতে পারে এমন এক উঁচু বাড়ি (মিনার) তৈরী করে নিজেদের নাম বিখ্যাত করি, যদি সমস্ত পৃথিবীতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ি।"
\s5
\v 5 পরে মানুষেরা যে শহর ও উচু বাড়ি (মিনার) তৈরী করছিল, তা দেখতে সদাপ্রভু নেমে এলেন।
\v 6 আর সদাপ্রভু বললেন, "দেখ, তারা সবাই এক জাতি ও এক ভাষাবাদী; এখন এই কাজে যুক্ত হল; এর পরে যা কিছু করতে ইচ্ছা করবে, তা থেকে তারা থেমে যাবে না।
\v 7 এস, আমরা নিচে গিয়ে, সেই জায়গায় তাদের ভাষার ভেদ জন্মাই, যেন তারা এক জন অন্যের ভাষা বুঝতে না পারে।"
\s5
\v 8 আর সদাপ্রভু সেখান থেকে সমস্ত পৃথিবীতে তাদেরকে ছিন্নভিন্ন করলেন এবং তারা শহর তৈরী করা থেকে থেমে গেল।
\v 9 এই জন্য সেই শহরের নাম বাবিল [ভেদ] হল; কারণ সেই জায়গায় সদাপ্রভু সমস্ত পৃথিবীর ভাষার ভেদ জন্মিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে সদাপ্রভু তাদেরকে সমস্ত পৃথিবীতে ছিন্নভিন্ন করেছিলেন।
\s শেম-বংশের বিবরণ।
\m
\s5
\v 10 শেমের বংশ-বৃত্তান্ত এই। শেম একশো বছর বয়সে, বন্যার দুই বছর পরে, অর্ফকষদের জন্ম দিলেন।
\v 11 অর্ফকষদের জন্ম দিলে পর শেম পাঁচশো বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 12 অর্ফকষদ পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে শেলহের জন্ম দিলেন।
\v 13 শেলহের জন্ম দিলে পর অর্ফকষদ চারশো তিন বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 14 শেলহ ত্রিশ বছর বয়সে এবরের জন্ম দিলেন।
\v 15 এবরের জন্ম দিলে পর শেলহ চারশো তিন বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 16 এবর চৌত্রিশ বছর বয়সে পেলগের জন্ম দিলেন।
\v 17 পেলগের জন্ম দিলে পর এবর চারশো ত্রিশ বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 18 পেলগ ত্রিশ বছর বয়সে রিয়ূর জন্ম দিলেন।
\v 19 রিয়ূর জন্ম দিলে পর পেলগ দুইশো নয় বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 20 রিয়ূ বত্রিশ বছর বয়সে সরূগের জন্ম দিলেন।
\v 21 সরূগের জন্ম দিলে পর রিয়ূ দুশো সাত বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 22 সরূগ ত্রিশ বছর বয়সে নাহোরের জন্ম দিলেন।
\v 23 নাহোরের জন্ম দিলে পর সরূগ দুশো বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 24 নাহোর উনত্রিশ বছর বয়সে তেরহের জন্ম দিলেন।
\v 25 তেরহের জন্ম দিলে পর নাহোর একশো উনিশ বছর জীবিত থেকে আরও ছেলেমেয়ের জন্ম দিলেন।
\v 26 তেরহ সত্তর বছর বয়সে অব্রাম, নাহোর ও হারণের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 27 তেরহের বংশ বৃত্তান্ত এই। তেরহ অব্রাম, নাহোর ও হারণের জন্ম দিলেন।
\v 28 আর হারণ লোটের জন্ম দিলেন। কিন্তু হারণ নিজের বাবা তেরহের সামনে নিজের জন্মস্থান কলদীয় দেশের উরে প্রাণত্যাগ করলেন।
\s5
\v 29 অব্রাম ও নাহর উভয়েই বিয়ে করলেন; অব্রাহামের স্ত্রীর নাম সারী ও নাহোরের স্ত্রীর নাম মিলকা। এই স্ত্রী হারণের মেয়ে; হারণ মিলকার ও যিস্কার বাবা।
\v 30 সারী বন্ধ্যা ছিলেন, তাঁর সন্তান হল না।
\s5
\v 31 আর তেরহ নিজের ছেলে অব্রামকে ও হারণের ছেলে নিজের নাতি লোটকে এবং অব্রাহামের স্ত্রী সারী নাম্নী ছেলের স্ত্রীকে সঙ্গে নিলেন; তাঁরা একসঙ্গে কনান দেশে যাবার জন্য কলদীয় দেশের ঊর থেকে যাত্রা করলেন; আর হারণ নগর পর্যন্ত গিয়ে সেখানে বাস করলেন।
\v 32 পরে তেরহের দুশো পাঁচ বছর বয়স হলে হারণে তাঁর মৃত্যু হল।
\s5
\c 12
\s অব্রামের বিবরণ।
\p
\v 1 সদাপ্রভু অব্রামকে বললেন, "তুমি নিজের দেশ, আত্মীয় ও বাবার বাড়ি ছেড়ে দিয়ে, আমি যে দেশ তোমাকে দেখাই, সেই দেশে চল।
\v 2 আমি তোমার থেকে এক মহাজাতি সৃষ্টি করব এবং তোমাকে আশীর্বাদ করে তোমার নাম মহৎ করব, তাতে তুমি আশীর্বাদের আকর হবে।
\v 3 যারা তোমাকে আশীর্বাদ করবে, তাদেরকে আমি আশীর্বাদ করব, যে কেউ তোমাকে অভিশাপ দেবে, তাকে আমি অভিশাপ দেব এবং তোমাতে পৃথিবীর যাবতীয় গোষ্ঠী আশীর্বাদ পাবে।"
\s5
\v 4 পরে অব্রাম সদাপ্রভুর সেই বাক্যানুসারে যাত্রা করলেন এবং লোটও তাঁর সঙ্গে গেলেন। হারন থেকে চলে যাবার সময় অব্রামের পঁচাত্তর বছর বয়স ছিল।
\v 5 অব্রাম নিজের স্ত্রী সারীকে ও ভাইয়ের ছেলে লোটকে এবং হারনে তাঁরা যে ধন উপার্জন করেছিলেন ও যে প্রাণীদেরকে লাভ করেছিলেন, সে সমস্ত নিয়ে কনান দেশে যাওয়ার জন্য যাত্রা করলেন এবং কনান দেশে আসলেন।
\s5
\v 6 আর অব্রাম দেশ দিয়ে যেতে যেতে শিখিমে, মোরির এলোন গাছের কাছে উপস্থিত হলেন। সেই সময়ে কনানীয়েরা সেই দেশে বাস করত।
\v 7 পরে সদাপ্রভু অব্রামকে দেখা দিয়ে বললেন, "আমি তোমার বংশকে এই দেশ দেব," তখন সেই জায়গায় অব্রাম সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক যজ্ঞবেদি নির্ম্মাণ করলেন, যিনি তাঁকে দর্শন দিয়েছিলেন।
\s5
\v 8 পরে তিনি ঐ জায়গা ত্যাগ করে পর্বতে গিয়ে বৈথেলের পূর্ব দিকে নিজের তাঁবু স্থাপন করলেন; তার পশ্চিমে বৈথেল ও পূর্ব দিকে অয় ছিল; তিনি সে জায়গায় সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন ও সদাপ্রভুর নামে ডাকলেন।
\v 9 পরে অব্রাম ক্রমে ক্রমে দক্ষিণ দিকে গেলেন।
\s5
\v 10 আর দেশে দুর্ভিক্ষ হল, তখন অব্রাম মিসরে বাস করতে যাত্রা করলেন; কারণ [কনান] দেশে ভারী দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।
\v 11 আর অব্রাম যখন মিসরে প্রবেশ করতে উদ্যত হন, তখন নিজের স্ত্রী সারীকে বললেন, "দেখ, আমি জানি, তুমি দেখতে সুন্দরী;
\v 12 এ কারণ মিসরীয়েরা যখন তোমাকে দেখে বলবে, 'এ তাঁর স্ত্রী,' এবং আমাকে হত্যা করবে, আর তারা তোমাকে জীবিত রাখবে।
\v 13 অনুরোধ করে, এই কথা বলো যে, তুমি আমার বোন; যেন তোমার অনুরোধে আমার ভালো হয়, তোমার জন্য আমার প্রাণ বাঁচে।"
\s5
\v 14 পরে অব্রাম মিসরে প্রবেশ করলে মিসরীয়েরা ঐ স্ত্রীকে খুব সুন্দরী দেখল।
\v 15 আর ফরৌণের সামনে তাঁর প্রশংসা করলেন; তাঁতে সেই স্ত্রীকে ফরৌণের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হল।
\v 16 আর তাঁর অনুরোধে তিনি অব্রামকে আদর করলেন; তাতে অব্রাম মেষ, গোরু, গাধা এবং দাস দাসী গাধী ও উট পেলেন।
\s5
\v 17 কিন্তু অব্রামের স্ত্রী সারীর জন্য সদাপ্রভু ফরৌণ ও তাঁর পরিবারের ওপরে ভারী ভারী উৎপাত ঘটালেন।
\v 18 তাতে ফরৌণ অব্রামকে ডেকে বললেন, "আপনি আমার সঙ্গে এ কি ব্যবহার করলেন? উনি আপনার স্ত্রী, এ কথা আমাকে কেন বলেননি?
\v 19 ওনাকে আপনার বোন কেন বললেন? আমি তো ওনাকে বিয়ে করার জন্য নিয়েছিলাম। এখন আপনার স্ত্রীকে নিয়ে চলে যান।"
\v 20 তখন ফরৌণ লোকদেরকে তাঁর বিষয়ে আদেশ দিলেন, আর তারা সব কিছুর সঙ্গে তাঁকে ও তাঁর স্ত্রীকে বিদায় করল।
\s5
\c 13
\ms অব্রাম ও লোটের বিবরণ
\p
\v 1 পরে অব্রাম ও তাঁর স্ত্রী সমস্ত সম্পত্তি নিয়ে লোটের সঙ্গে মিসর থেকে [কনান দেশের] দক্ষিণাঞ্চলে যাত্রা করলেন।
\v 2 অব্রাম পশুধনে ও সোনা রুপোতে খুব ধনবান ছিলেন।
\s5
\v 3 পরে তিনি দক্ষিণ থেকে বৈথেলের দিকে যেতে যেতে বৈথেলের ও অয়ের মাঝখানে যে জায়গায় আগে তাঁর তাঁবু ছিল,
\v 4 সেই জায়গায় নিজের আগে নির্মাণ করা যজ্ঞবেদির কাছে উপস্থিত হলেন; সেখানে অব্রাম সদাপ্রভুর নামে ডাকলেন।
\s5
\v 5 আর অব্রামের সহযাত্রী লোটেরও অনেক ভেড়া ও গোরু এবং তাঁবু ছিল।
\v 6 আর সেই দেশে একসঙ্গে তাদের বসবাস করা হল না, কারণ তাঁদের প্রচুর সম্পত্তি থাকাতে তাঁরা একসঙ্গে বাস করতে পারলেন না।
\v 7 আর অব্রামের পশুপালকদের ও লোটের পশুপালকদের পরস্পর ঝগড়া হল। সেইসময়ে সেই দেশে কনানীয়েরা ও পরিষীয়েরা বাস করত।
\s5
\v 8 তাতে অব্রাম লোটকে বললেন, "অনুরোধ করি, তোমার ও আমার মধ্যে এবং তোমার পশুপালকদের ও আমার পশুপালকদের মধ্যে ঝগড়া না হোক; কারণ আমরা পরস্পর জ্ঞাতি।
\v 9 তোমার সামনে কি সমস্ত দেশ নেই? অনুরোধ করি, আমার থেকে আলাদা হও; হয়, তুমি বামে যাও, আমি দক্ষিণে যাই; নয়, তুমি দক্ষিণে যাও, আমি বামে যাই।"
\s5
\v 10 তখন লোট চোখ তুলে দেখলেন, যর্দনের সমস্ত অঞ্চল সোয়র পর্যন্ত সব জায়গা সজল, সদাপ্রভুর বাগানের মতো, মিসর দেশের মতো, কারণ সেইসময়ে সদাপ্রভু সদোম ও ঘমোরা বিনষ্ট করেননি।
\v 11 অতএব লোট নিজের জন্য যর্দনের সব অঞ্চল বেছে নিয়ে পূর্বদিকে চলে গেলেন; এইভাবে তাঁরা পরস্পর আলাদা হলেন।
\s5
\v 12 অব্রাম কনান দেশে থাকলেন এবং লোট সেই অঞ্চলের নগরগুলির মধ্যে থেকে সদোম পর্যন্ত তাঁবু স্থাপন করতে লাগলেন।
\v 13 সদোমের লোকেরা অনেক দুষ্ট ও সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে অনেক পাপ করেছিল।
\s5
\v 14 অব্রাম থেকে লোট আলাদা হলে পর সদাপ্রভু অব্রামকে বললেন, "চোখ তুলে এই যে জায়গায় তুমি আছ, এই জায়গা থেকে উত্তর দক্ষিণে ও পূর্ব পশ্চিমে দেখো;
\v 15 কারণ এই যে সমস্ত দেশ তুমি দেখতে পাচ্ছ, এটা আমি তোমাকে ও যুগে যুগে তোমার বংশকে দেব।
\s5
\v 16 আর পৃথিবীর ধূলোর মতো তোমার বংশ বৃদ্ধি করব; কেউ যদি পৃথিবীর ধূলো গুণতে পারে, তবে তোমার বংশও গোনা যাবে।
\v 17 ওঠ, এই দেশের দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ অনুসারে ঘুরে দেখ, কারণ আমি তোমাকেই এটা দেব।
\v 18 তখন অব্রাম তাঁবু তুলে হিব্রোণে অবস্থিত মম্রির এলোন বনের কাছে গিয়ে বাস করলেন এবং সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করলেন।
\s5
\c 14
\ms লোটের বন্দিত্ব ও পুনরুদ্ধার
\p
\v 1 শিনিয়রের অম্রাফল রাজা, ইল্লাসরের অরিয়োক রাজা, এলমের কদর্লায়োমর রাজা
\v 2 এবং গোয়ীমের তিদিয়ল রাজার সময়ে ঐ রাজারা সদোমের রাজা বিরা, ঘমোরার রাজা বির্সা, অদমার রাজা শিনাব, সবোয়িমের রাজা শিমেবর ও বিলার অর্থাৎ সোয়রের রাজার সঙ্গে যুদ্ধ করলেন।
\s5
\v 3 এরা সবাই সিদ্দিম উপত্যকাতে অর্থাৎ লবণসমুদ্রে জড়ো হয়েছিলেন।
\v 4 এরা বারো বছর পর্যন্ত কদরলায়মের দাসত্বে থেকে তেরো বছরে বিদ্রোহী হন।
\v 5 পরে চোদ্দো বছরে কদরলায়মের ও তাঁর সঙ্গী রাজারা এসে অস্তরোৎ কর্ণয়িমে রফায়ীয়দেরকে, হমে সুষীয়দেরকে, শাবি
\v 6 কিরিয়াথয়িমে এমীয়দেরকে ও প্রান্তরের পাশে এল-পারন পর্যন্ত সেয়ীর পর্বতে সেখানকার হোরীয়দেরকে আঘাত করলেন।
\s5
\v 7 পরে সেখান থেকে ফিরে ঐনমিষ্পটে অর্থাৎ কাদেশ গিয়ে অমালেকীয়দের সমস্ত দেশকে এবং হৎসসোন-তামর নিবাসী ইমোরীয়দেরকে আঘাত করলেন।
\v 8 আর সদোমের রাজা, ঘমোরের রাজা, অদমার রাজা, সবোয়িমের রাজা ও বিলার অর্থাৎ সোয়রের রাজা বের হয়ে
\v 9 এলমের কদর্লায়োমর রাজার, গোয়ীমের তিদিয়ল রাজার, শিনিয়রের অম্রাফল রাজার ও ইল্লাসরের অরিয়োক রাজার সঙ্গে, পাঁচ জন রাজা চারজন রাজার সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য সিদ্দীম উপত্যকাতে সেনা স্থাপন করলেন।
\s5
\v 10 ঐ সিদ্দীম উপত্যকাতে আলকাতরার অনেক খাত ছিল; আর সদোম ও ঘমোরার রাজারা পালিয়ে গেলেন ও তাঁর মধ্যে পড়ে গেলেন এবং অবশিষ্টেরা পর্বতে পালিয়ে গেলেন।
\v 11 আর শত্রুরা সদোম ঘমোরার সমস্ত সম্পতি ও খাদ্য দ্রব্য নিয়ে চলে গেলেন।
\v 12 বিশেষতঃ তাঁরা অব্রামের ভাইয়ের ছেলে লোটকে ও তাঁর সম্পতি নিয়ে গেলেন, কারণ তিনি সদোমে বাস করছিলেন।
\s5
\v 13 তখন এক জন পলাতক ইব্রীয় অব্রামকে খবর দিল; ঐ সময়ে তিনি ইস্কোলের ভাই ও আনেরের ভাই ইমোরর মম্রির এলোন বনে বাস করছিলেন এবং তাঁরা অব্রামের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
\v 14 অব্রাম যখন শুনলেন, তার আত্মীয় ধরা পড়েছেন, তখন তিনি বাড়িতে জন্মানো তিনশো আঠারো জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দাসকে নিয়ে দান পর্যন্ত তাড়া করে গেলেন।
\s5
\v 15 পরে রাতে নিজের দাসদেরকে দুই দলে ভাগ করে তিনি শত্রুদেরকে আঘাত করলেন এবং দম্মেশকের উত্তরে অবস্থিত হোবা পর্যন্ত তাড়িয়ে দিলেন
\v 16 এবং সকল সম্পতি, আর নিজের আত্মীয় লোট ও তাঁর সম্পত্তি এবং স্ত্রীলোকদেরকে ও লোক সকলকে ফিরিয়ে আনলেন।
\s5
\v 17 অব্রাম কদলায়েমরকে ও তাঁর সঙ্গী রাজাদেরকে জয় করে ফিরে আসলে পর, সদোমের রাজা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে শাবী তলভূমিতে অর্থাৎ রাজার তলভূমিতে গেলেন
\v 18 এবং শালেমের রাজা মল্কীষেদক রুটি ও আঙ্গুর রস বের করে আনলেন, তিনি সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের যাজক।
\s5
\v 19 তিনি অব্রামকে আশীর্বাদ করলেন, বললেন, "অব্রাম স্বর্গমর্তের সৃষ্টিকর্তা সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের আশীর্বাদযুক্ত হোন,
\v 20 আর সর্বশক্তিমান ঈশ্বর ধন্য হোন, যিনি তোমার বিপক্ষদেরকে তোমার হাতে দিয়েছেন।" তখন অব্রাম সমস্ত দ্রব্যের দশমাংশ তাকে দিলেন।
\s5
\v 21 আর সদোমের রাজা অব্রামকে বললেন, "সব লোকজনকে আমাকে দিন, সম্পত্তি নিজের জন্য নিন।"
\v 22 তখন অব্রাম সদোমের রাজাকে উত্তর করলেন, "আমি স্বর্গমর্তের অধিকারী সর্বশক্তিমান ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হাত উঠিয়ে বলছি,
\v 23 আমি আপনার কিছুই নেব না, এক গাছি সুতো কি জুতোর ফিতেও নেব না; যদি আপনি বলেন, আমি অব্রামকে ধনবান্‌ করেছি।
\v 24 কেবল [আমার] যুবকরা যা খেয়েছে তা নেব এবং যে ব্যক্তিরা আমার সঙ্গে গিয়েছিলেন, আনের, ইষ্কোল ও মম্রি, তাঁরা নিজের নিজের প্রাপ্ত অংশ গ্রহণ করুন।"
\s5
\c 15
\ms অব্রাহামের সঙ্গে ঈশ্বরের নিয়ম স্থাপন
\p
\v 1 ঐ ঘটনার পরে দর্শনে সদাপ্রভুর বাক্য অব্রামের কাছে উপস্থিত হল, তিনি বললেন, "অব্রাম, ভয় কর না, আমিই তোমার ঢাল ও তোমার মহাপুরস্কার।"
\v 2 অব্রাম বললেন, "হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমি আমাকে কি দেবে? আমি তো নিঃসন্তান হয়ে মারা যাচ্ছি এবং এই দস্মেশকীয় ইলীয়েষর আমার বাড়ির উত্তরাধিকারী।"
\v 3 আর অব্রাম বললেন, "দেখ, তুমি আমাকে সন্তান দিলে না এবং আমার গৃহের এক জন আমার উত্তরাধিকারী হবে।
\s5
\v 4 তখন দেখ, তাঁর কাছে সদাপ্রভুর বাক্য উপস্থিত হল, যেমন ঐ ব্যক্তি তোমার উত্তরাধিকারী হবে না, কিন্তু যে তোমার ঔরসে জন্মাবে, সেই তোমার উত্তরাধিকারী হবে।"
\v 5 পরে তিনি তাঁকে বাইরে এনে বললেন, "তুমি আকাশের দিকে দেখে যদি তারা গুণতে পার, তবে গুনে বল; তিনি তাঁকে আরও বললেন এইরকম তোমার বংশ হবে।"
\s5
\v 6 তখন তিনি সদাপ্রভুতে বিশ্বাস করলেন, আর সদাপ্রভু তাঁর পক্ষে তা ধার্মিকতা বলে গণনা করলেন।
\v 7 আর তাঁকে বললেন, "যিনি তোমার অধিকারের জন্য এই দেশ দেবেন বলে কলদীয় দেশের ঊর থেকে তোমাকে বের করে এনেছেন, সেই সদাপ্রভু আমি।"
\v 8 তখন তিনি বললেন, "হে প্রভু সদাপ্রভু, আমি যে এর অধিকারী হব, তা কিভাবে জানব?
\s5
\v 9 তিনি তাঁকে বললেন, "তুমি তিন বছরের এক গরু, তিন বছরের এক ছাগল, তিন বছরের একটি ভেড়া এবং এক ঘুঘু ও এক পায়রার বাচ্চা আমার কাছে আন।"
\v 10 পরে তিনি ঐ সব তাঁর কাছে এনে দুটো করে টুকরো করলেন এবং এক এক টুকরোর আগে অন্য অন্য টুকরো রাখলেন, কিন্তু পাখিদেরকে দুই টুকরো করলেন না।
\v 11 পরে হিংস্র পাখিরা সেই মৃত পশুদের ওপরে পড়লে অব্রাম তাদেরকে তাড়িয়ে দিলেন।
\s5
\v 12 পরে সূর্য অস্ত যাবার সময়ে অব্রাম গভীরভাবে ঘুমিয়ে পড়লেন; আর দেখ, তিনি ভয়ে ও ভয়ঙ্কার অন্ধকারে মগ্ন হলেন।
\v 13 তখন তিনি অব্রামকে বললেন, নিশ্চয় জেনো, তোমার বংশধরেরা পরদেশে প্রবাসী থাকবে এবং বিদেশী লোকদের দাসত্ব করবে ও লোকে তাদেরকে চারশো বছর পর্যন্ত দুঃখ দেবে;
\s5
\v 14 আবার তারা যে জাতির দাস হবে, আমিই তাঁর বিচার করব; তারপরে তাঁরা যথেষ্ট সম্পত্তি নিয়ে বের হবে।
\v 15 আর তুমি শান্তিতে নিজের পূর্বপুরুষদের কাছে যাবে ও ভালোভাবে বৃদ্ধ অবস্থায় কবর প্রাপ্ত হবে।
\v 16 আর [তোমার বংশের] চতুর্থ পুরুষ এই দেশে ফিরে আসবে; কারণ ইমরীয়দের অপরাধ এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।
\s5
\v 17 পরে সূর্য অস্ত হলে ও অন্ধকার হলে দেখ, ধোঁয়াযুক্ত উনুন ও জলন্ত বাতি ঐ দুটি টুকরোর মধ্য দিয়ে চলে গেল।
\v 18 সেই দিন সদাপ্রভু অব্রামের সঙ্গে নিয়ম স্থির করে বললেন, "আমি মিসরের নদী থেকে মহানদী, ফরাৎ নদী পর্যন্ত এই দেশ তোমার বংশকে দিলাম;
\v 19 কেনিয়, কনিষীয়, কদমোনীয়,
\v 20 হিত্তীয়, পরিষীয়, রফারীয়,
\v 21 ইমোরীয়, কনানীয়, গির্গাশীয় ও যিবুষীয় লোকদের দেশ দিলাম।"
\s5
\c 16
\ms ইশ্মায়েলের জন্ম।
\p
\v 1 অব্রামের স্ত্রী সারী নিঃসন্তানা ছিলেন এবং হাগার নামে তাঁর এক মিসরীয় দাসী ছিল।
\v 2 তাতে সারী অব্রামকে বললেন, "দেখ, সদাপ্রভু আমাকে বন্ধ্যা করেছেন; অনুরোধ করি, তুমি আমার দাসীর কাছে যাও; কি জানি, এর দ্বারা আমি সন্তান লাভ করতে পারব।" তখন অব্রাম সারীর বাক্যে রাজি হলেন।
\v 3 এইভাবে কনান দেশে অব্রাম দশ বছর বাস করলে পর অব্রামের স্ত্রী সারী নিজের দাসী মিসরীয় হাগারকে নিয়ে নিজের স্বামী অব্রামের সঙ্গে বিবাহ দিলেন।
\v 4 পরে অব্রাম হাগারের কাছে গেলে সে গর্ভবতী হল এবং নিজের গর্ভ হয়েছে দেখে নিজ কর্ত্রীকে তুচ্ছ জ্ঞান করতে লাগল।
\s5
\v 5 তাতে সারী অব্রামকে বললেন, "আমার উপরে করা এই অন্যায় তোমার উপরেই ফলুক; আমিই নিজের দাসীকে তোমার হাতে দিয়েছিলাম, সে নিজেকে গর্ভবতী দেখে আমাকে তুচ্ছজ্ঞান করছে; সদাপ্রভুই তোমার ও আমার বিচার করুন!"
\v 6 তখন অব্রাম সারীকে বললেন, "দেখ, তোমার দাসী তোমারই হাতে; তোমার যা ভাল মনে হয়, তার প্রতি তাই কর।" তাতে সারী হাগারকে দুঃখ দিলেন, আর সে তাঁর কাছ থেকে পালিয়ে গেল।
\s5
\v 7 পরে সদাপ্রভুর দূত মরুভূমির মধ্যে এক জলের উনুইয়ের কাছে, শুরের পথে যে উনুই আছে,
\v 8 তার কাছে তাকে পেয়ে বললেন, "হে সারীর দাসী হাগার, তুমি কোথা থেকে আসলে? এবং কোথায় যাবে?" তাতে সে বলল, "আমি নিজের কর্ত্রী"
\s5
\v 9 সারীর কাছ থেকে পালাচ্ছি। তখন সদাপ্রভুর দূত তাকে বললেন, "তুমি নিজের কর্ত্রীর কাছে ফিরে যাও এবং নিজেকে সমর্পন করে তার অধীনে থাক।"
\v 10 সদাপ্রভুর দূত তাকে আরও বললেন, "আমি তোমার বংশের এমন বৃদ্ধি করব যে, গণনা করা যাবে না।"
\s5
\v 11 সদাপ্রভুর দূত তাকে আরও বললেন, "দেখ, তোমার গর্ভ হয়েছে, তুমি ছেলে জন্ম দেবে ও তার নাম ইশ্মায়েল [ঈশ্বর শুনেন] রাখবে, কারণ সদাপ্রভু তোমার দুঃখ শুনলেন।"
\v 12 আর সে বন্য গাধার মতো মানুষ হবে; তার হাত সবার বিরুদ্ধ ও সবার হাত তার বিরুদ্ধ হবে; সে তার সব ভাইদের সামনে বাস করবে।
\s5
\v 13 পরে হাগার, যিনি তার সঙ্গে কথা বললেন, "সেই সদাপ্রভুর এই নাম রাখল, তুমি দর্শনকারী ঈশ্বর;" কারণ সে বলল, "যিনি আমাকে দেখেন, আমি কি এই জায়গাতেই তাঁর দর্শন করেছি?"
\v 14 এই কারণে সেই কূপের নাম বের-লহয়-রয়ী [জীবৎ মদদর্শকের কূপ] হল; দেখ, তা কাদেশ ও বেরদের মধ্যে রয়েছে।
\s5
\v 15 পরে হাগার অব্রামের জন্য ছেলের জন্ম দিল; আর অব্রাম হাগারের গর্ভে জন্মানো নিজের সেই ছেলের নাম ইশ্মায়েল রাখলেন।
\v 16 অব্রামের ছিয়াশি বছর বয়সে হাগার অব্রামের জন্য ইশ্মায়েলকে জন্ম দিল।
\s5
\c 17
\ms ত্বকছেদের নিয়ম স্থাপন।
\p
\v 1 অব্রামের নিরানব্বই বছর বয়সে সদাপ্রভু তাঁকে দর্শন দিলেন ও বললেন, "আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তুমি আমার সামনে যাতায়াত করে সিদ্ধ হও।
\v 2 আর আমি তোমার সঙ্গে নিজের নিয়ম স্থির করব ও তোমার প্রচুর পরিমাণে বংশবৃদ্ধি করব।"
\s5
\v 3 তখন অব্রাম উপুড় হয়ে পড়লেন এবং ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে আলাপ করে বললেন,
\v 4 "দেখ, আমিই তোমার সঙ্গে নিজের নিয়ম স্থির করছি, তুমি বহুজাতির আদিপিতা হবে।
\v 5 তোমার নাম অব্রাম [মহাপিতা] আর থাকবে না, কিন্তু তোমার নাম অব্রাহাম [বহুলোকের পিতা] হবে; কারণ আমি তোমাকে বহুজাতির আদিপিতা করলাম।
\v 6 আমি তোমাকে অত্যাধিক পরিমাণে ফলবান করব এবং তোমার থেকে বহুজাতি সৃষ্টি করব; আর রাজারা তোমার থেকে সৃষ্টি হবে।
\s5
\v 7 আমি তোমার সঙ্গে ও পুরুষানুক্রমে তোমার ভাবী বংশের সঙ্গে যে নিয়ম স্থাপন করব, তা চিরকালের নিয়ম হবে; কারণ আমি তোমার ঈশ্বর ও তোমার ভাবী বংশের ঈশ্বর হব।
\v 8 আর তুমি এই যে কনান দেশে বাস করছ, এর সম্পূর্ণ আমি তোমাকে ও তোমার ভাবী বংশকে চিরস্থায়ী অধিকারের জন্য দেব, আর আমি তাদের ঈশ্বর হব।"
\s5
\v 9 ঈশ্বর অব্রাহামকে আরও বললেন, "তুমিও আমার নিয়ম পালন করবে; তুমি ও তোমার ভাবী বংশ পুরুষানুক্রমে তা পালন করবে।
\v 10 তোমাদের সঙ্গে ও তোমার ভাবী বংশের সঙ্গে করা আমার যে নিয়ম তোমরা পালন করবে, তা এই, তোমাদের প্রত্যেক পুরুষের ত্বকছেদ হবে।
\v 11 তোমরা নিজের নিজের লিঙ্গের মুখের চামড়া কাঁটবে; সেটাই তোমাদের সঙ্গে আমার নিয়মের চিহ্ন হবে।
\s5
\v 12 পুরুষানুক্রমে তোমার প্রত্যেক ছেলে সন্তানের আট দিন বয়সে ত্বকছেদ হবে এবং যারা তোমার বংশ নয়, এমন পরজাতীয়দের মধ্যে তোমাদের বাড়িতে জন্মানো কিম্বা মূল্য দিয়ে কেনা লোকেদেরও ত্বকছেদ হবে।
\v 13 তোমার গৃহ জন্মানো কিম্বা মূল্য দিয়ে কেনা লোকের ত্বকছেদ অবশ্য কর্তব্য; আর তোমাদের মাংসে অবস্থিত আমার নিয়ম চিরকালের নিয়ম হবে।
\v 14 কিন্তু যার লিঙ্গের ত্বকছেদ না হবে, এমন ত্বকছেদ বিহীন পুরুষ নিজের লোকেদের মধ্য থেকে বিতাড়িত হবে; সে আমার নিয়ম ভঙ্গ করেছে।
\s5
\v 15 আর ঈশ্বর অব্রাহামকে বললেন, "তুমি তোমার স্ত্রী সারীকে আর সারী বলে ডেকো না; তার নাম সারা [রাণী] হল।
\v 16 আর আমি তাকে আশীর্ববাদ করব এবং তা থেকে এক ছেলেও তোমাকে দেব; আমি তাকে আশীর্ববাদ করব, তাকে সে জাতির [আদি-মা] করা হবে, তা থেকে লোকদের রাজারা সৃষ্টি হবে।"
\s5
\v 17 তখন অব্রাহাম উপুড় হয়ে পড়ে হাসলেন, মনে মনে বললেন, "একশো বছর বয়স্ক পুরুষের কি সন্তান হবে? আর নব্বই বছর বয়স্কা সারা কি প্রসব করবে?"
\v 18 পরে অব্রাহাম ঈশ্বরকে বললেন, "ইশ্মায়েলই তোমার সামনে বেঁচে থাকুক।"
\s5
\v 19 তখন ঈশ্বর বললেন, "তোমার স্ত্রী সারা অবশ্য তোমার জন্য ছেলে প্রসব করবে এবং তুমি তার নাম ইসহাক [হাস্য] রাখবে, আর আমি তার সঙ্গে আমার নিয়ম স্থাপন করব, তা তার আগামী বংশধরদের পক্ষে চিরস্থায়ী নিয়ম হবে।
\v 20 আর ইস্মায়েলের বিষয়েও তোমার প্রার্থনা শুনলাম; দেখ, আমি তাকে আশীর্ববাদ করলাম এবং তাকে ফলবান করে তার প্রচুর পরিমাণে বংশবৃদ্ধি করব; তা থেকে বারোটি রাজা সৃষ্টি হবে ও আমি তাকে বড় জাতি করব।
\v 21 কিন্তু আগামী বছরের এই ঋতুতে সারা তোমার জন্য যাকে প্রসব করবে, সেই ইসহাকের সঙ্গে আমি আমার নিয়ম স্থাপন করব।"
\s5
\v 22 পরে কথোপকথন শেষ করে ঈশ্বর অব্রাহামের কাছ থেকে উপরে চলে গেলেন।
\v 23 পরে অব্রাহাম আপন ছেলে। ইশ্মায়েলকে ও নিজের গৃহে জন্মানো ও মূল্য দিয়ে কেনা সমস্ত লোককে, অব্রাহামের গৃহে যত পুরুষ ছিল, সেই সকলকে নিয়ে ঈশ্বরের আজ্ঞানুসারে সেই দিনে তাদের লিঙ্গের মুখের চামড়া কাটলেন।
\s5
\v 24 অব্রাহামের লিঙ্গের মুখের চামড়া কাটার সময়ে তাঁর বয়স নিরানব্বই বছর।
\v 25 আর তাঁর ছেলে ইস্মায়েলের লিঙ্গের মুখের চামড়া কাটার সময়ে তাঁর বয়স তের বছর।
\v 26 সেই দিনেই অব্রাহাম ও তাঁর ছেলে ইস্মায়েল, উভয়ের ত্বকছেদ হল।
\v 27 আর তাঁর গৃহে জন্মানো এবং পরজাতীয়দের কাছে মূল্য দিয়ে কেনা তাঁর গৃহের সব পুরুষেরও ত্বকছেদ সেই সময়ে হল।
\s5
\c 18
\ms অব্রাহামের কাছে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা।
\s সদোমের জন্য অব্রাহামের প্রার্থনা।
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু মম্রির এলোন বনের কাছে তাঁকে দর্শন দিলেন। তিনি দিনের গরমের সময়ে তাঁবুর দুয়ারের মুখে বসেছিলেন; চোখ তুলে দেখলেন।
\v 2 আর দেখ, তিনটে পুরুষ সামনে দাঁড়িয়ে ছিল। দেখতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি তাঁবুর দুয়ারের মুখে থেকে তাঁদের কাছে দৌড়ে গিয়ে মাটিতে প্রণাম করলেন।
\s5
\v 3 তিনি বললেন, "হে প্রভু, অনুরোধ করি, যদি আমি আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহের পাত্র হয়ে থাকি, তবে আপনার এই দাসের কাছ থেকে যাবেন না।
\v 4 অনুরোধ করি, অল্প জল এনে দিই, আপনারা পা ধুয়ে এই গাছের তলায় বিশ্রাম করুন।
\v 5 কিছু খাবার এনে দিই, তা দিয়ে প্রাণ তৃপ্ত করুন, পরে নিজের পথে এগিয়ে যাবেন; কারণ এরই জন্য নিজের দাসের কাছে এসেছেন।" তখন তাঁরা বললেন, "যা বললে, তাই কর।"
\s5
\v 6 তাতে অব্রাহাম তাড়াতাড়ি করে তাঁবুতে সারার কাছে গিয়ে বললেন, "শীঘ্র তিন মণ উত্তম ময়দা নিয়ে মেখে গোলা বানিয়ে রুটি তৈরী কর।"
\v 7 পরে অব্রাহাম দৌড়িয়ে গিয়ে পশুপাল থেকে উৎকৃষ্ট কোমল এক বাছুর নিয়ে দাসকে দিলে সে তা তাড়াতাড়ি রান্না করল।
\v 8 তখন তিনি দই, দুধ ও রান্না মাংস নিয়ে তাঁদের সামনে দিলেন এবং তাঁদের কাছে বৃক্ষ তলায় দাঁড়ালেন ও তাঁরা ভোজন করলেন।
\s5
\v 9 আর তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, "তোমার স্ত্রী সারা কোথায়?" তিনি বললেন, "দেখুন, তিনি তাঁবুতে আছেন।"
\v 10 তিনি বললেন, "বসন্তকালে আমি অবশ্যই তোমার কাছে ফিরে আসব; আর দেখ, তোমার স্ত্রী সারার এক ছেলে হবে।" এই কথা সারা দরজার পিছনে থেকে শুনলেন।
\s5
\v 11 সেই সময়ে অব্রাহাম ও সারা অনেক বয়ষ্ক ছিলেন; সারার সন্তান প্রসব করার বয়স পার হয়ে গিয়েছিল।
\v 12 অতএব সারা নিজে মনে মনে হেসে বললেন, "আমার এই শীর্ণ দশার পরে কি এমন আনন্দ হবে? আমার প্রভুও তো বৃদ্ধ।"
\s5
\v 13 তখন সদাপ্রভু অব্রাহামকে বললেন, "সারা কেন এই বলে হাসল যে, 'আমি কি সত্যই প্রসব করব, আমি যে বুড়ী?' কোন কাজ কি সদাপ্রভুর অসাধ্য?
\v 14 সঠিক সময়ে এই ঋতু আবার উপস্থিত হলে আমি তোমার কাছে ফিরে আসব, আর সারার ছেলে হবে।"
\v 15 তাতে সারা অস্বীকার করে বললেন, "আমি হাসিনি; কারণ তিনি ভয় পেয়েছিলেন।" তিনি বললেন, "না, অবশ্যই হেসেছিলে।"
\s5
\v 16 পরে সেই ব্যক্তিরা সেখান থেকে উঠে সদোমের দিকে দেখলেন, আর অব্রাহাম তাঁদেরকে বিদায় দিতে তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে চললেন।
\v 17 কিন্তু সদাপ্রভু বললেন, "আমি যা করব, তা কি অব্রাহাম থেকে লুকাব?
\v 18 অব্রাহাম থেকে মহান ও বলবান এক জাতি সৃষ্টি হবে এবং পৃথিবীর যাবতীয় জাতি তাতেই আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে।
\v 19 কারণ আমি তাকে জানিয়েছি, যেন সে নিজের ভাবী সন্তানদেরকে ও পরিবারদেরকে আদেশ করে, যেন তারা ধার্মিকতায় ও ন্যায্য আচরণ করতে করতে সদাপ্রভুর পথে চলে; এইভাবে সদাপ্রভু যেন অব্রাহামের বিষয়ে কথিত নিজের বাক্য সফল করেন।"
\s5
\v 20 পরে সদাপ্রভু বললেন, "কারণ সদোমের ও ঘমোরার কান্না অত্যন্ত বেশি এবং তাদের পাপ অতিশয় ভারী;
\v 21 আমি নীচে গিয়ে দেখব, আমার কাছে আসা কান্না অনুসারে তারা সম্পূর্ণরূপে করেছে কি না; যদি না করে থাকে, তা জানব।"
\s5
\v 22 পরে সেই ব্যাক্তিরা সেখান থেকে ফিরে সদোমের দিকে গেলেন; কিন্তু অব্রাহাম তখনও সদাপ্রভুর সামনে দাড়িয়ে থাকলেন।
\v 23 পরে অব্রাহাম কাছে গিয়ে বললেন, "আপনি কি দুষ্টের সঙ্গে ধার্মিককেও ধ্বংস করবেন?
\s5
\v 24 সেই নগরের মধ্যে যদি পঞ্চাশ জন ধার্মিক পাওয়া যায়, তবে আপনি কি সেখানকার পঞ্চাশ জন ধার্মিকের অনুরোধে সেই জায়গার প্রতি দয়া না করে তা বিনষ্ট করবেন?
\v 25 দুষ্টের সঙ্গে ধার্মিককে ধ্বংস করা, এই রকম কাজ আপনার থেকে দূরে থাকুক; ধার্মিককে দুষ্টের সমান করা আপনার কাছ থেকে দূর থাকুক। সমস্ত পৃথিবীর বিচারকর্তা কি ন্যায়বিচার করবেন না?"
\v 26 সদাপ্রভু বললেন, 'আমি যদি সদোমের মধ্যে পঞ্চাশ জন ধার্মিক দেখি, তবে তাদের অনুরোধে সেই সমস্ত জায়গার প্রতি দয়া করব।'
\s5
\v 27 অব্রাহাম উত্তর করে বললেন, "দেখুন, ধুলো ও ছাইমাত্র যে আমি, আমি প্রভুর সঙ্গে কথা বলতে সাহসী হয়েছি!
\v 28 কি জানি, পঞ্চাশ জন ধার্মিকের পাঁচ জন কম হবে; সেই পাঁচ জনের অভাবের জন্য আপনি কি সমস্ত নগর ধ্বংস করবেন? তিনি বললেন, "সেই জায়গায় পঁয়তাল্লিশ জন পেলে আমি তা বিনষ্ট করব না।"
\s5
\v 29 তিনি তাঁকে আবার বললেন, "সেই জায়গায় যদি চল্লিশ জন পাওয়া যায়?" তিনি বললেন, "সেই চল্লিশ জনের জন্য তা করব না।"
\v 30 আবার তিনি বললেন, "প্রভু বিরক্ত হবেন না, আমি আরও বলি; যদি সেখানে ত্রিশ জন পাওয়া যায়?" তিনি বললেন, "সেখানে ত্রিশ জন পেলে তা করব না।"
\v 31 তিনি বললেন, "দেখুন, প্রভুর কাছে আমি সাহসী হয়ে আবার বলি, যদি সেখানে কুড়ি জন পাওয়া যায়?" তিনি বললেন, "সেই কুড়ি জনের অনুরোধে তা বিনষ্ট করব না।"
\s5
\v 32 তিনি বললেন, "প্রভু রাগ করবেন না। আমি শুধু মাত্র আর একবার বলব; যদি সেখানে দশ জন পাওয়া যায়?" তিনি বললেন, "সেই দশ জনের অনুরোধে তা ধ্বংস করব না।"
\v 33 তখন সদাপ্রভু অব্রাহামের সঙ্গে কথাবার্তা শেষ করে চলে গেলেন এবং অব্রাহাম নিজের জায়গায় ফিরে এলেন।
\s5
\c 19
\ms সদোম ও ঘমোরার বিনাশ। লোটের শেষগতি।
\p
\v 1 পরে সন্ধ্যাবেলায় ঐ দুই দূত সদোমে এলেন। তখন লোট সদোমের দরজার কাছে বসেছিলেন, আর তাঁদেরকে দেখে তাঁদের কাছে যাবার জন্য উঠলেন এবং মাটিতে মুখ দিয়ে প্রণাম করলেন
\v 2 তিনি বললেন, "হে আমার প্রভুরা, দেখুন, অনুরোধ করি, আপনাদের এই দাসের বাড়িতে প্রবেশ করুন, রাতে থাকুন ও আপনার পা ধুয়ে নিন; পরে সকালে উঠে নিজের যাত্রায় এগিয়ে যাবেন।" এবং তাঁরা বললেন, "না, আমরা চকেই রাত কাটাব।"
\v 3 কিন্তু লোট অতিরিক্ত আগ্রহ দেখাবার পর, তাঁরা তাঁর সঙ্গে গেলেন ও তাঁর বাড়িতে প্রবেশ করলেন; তাতে তিনি তাঁদের জন্য খাবার তৈরী করলেন ও তাড়ীশূন্য রুটি তৈরী করলেন, আর তাঁরা ভোজন করলেন।
\s5
\v 4 পরে তাঁদের শোয়ার আগে ঐ নগরের পুরুষেরা, সদোমের যুবক ও বৃদ্ধ সমস্ত লোক চারদিক থেকে এসে তাঁর বাড়ি ঘিরে ফেলল
\v 5 তারা লোটকে ডেকে বলল, "আজ রাত্রে যে দুজন লোক তোমার বাড়ীতে আসল, তারা কোথায়? তাদেরকে বার করে আমাদের কাছে আন, আমরা তাদের পরিচয় নেব।"
\s5
\v 6 তখন লোট ঘরের দরজার বাইরে তাদের কাছে এসে নিজে পেছনের দরজা বন্ধ করলেন
\v 7 তিনি বললেন, "ভাই সব, অনুরোধ করি, এমন খারাপ ব্যবহার কর না।
\v 8 দেখ, পুরুষের পরিচয় পায়নি এমন যুবতী আমার দুটি মেয়ে আছে, তাদেরকে তোমাদের কাছে আনি, তোমাদের দৃষ্টিতে যা ভাল, তা কর, কিন্তু সেই ব্যক্তিদের প্রতি কিছুই কর না, কারণ এই সময়ে তাঁরা আমার বাড়ির ছায়ায় আশ্রয় নিলেন।"
\s5
\v 9 তখন তারা বলল, "সরে যা!" তারা আরও বলল, "একজন বিদেশী হিসাবে এখানে বাস করতে এসে এখন এ আমাদের বিচারকর্তা হল; এখন তাদের থেকে তোর প্রতি আরও খারাপ ব্যবহার করব।" তারা লোটের ওপরে চাপ দিতে লাগল এবং তারা দরজা ভাঙ্গতে কাছে এল।
\s5
\v 10 তখন সেই দুই ব্যক্তি হাত বাড়িয়ে লোটকে ঘরের মধ্যে নিজেদের কাছে টেনে নিয়ে দরজা বন্ধ করলেন;
\v 11 এবং বাড়ির দরজার কাছে ছোট কী বড় সব লোককে অন্ধতায় আহত করলেন; তাতে তারা দরজা খুঁজতে খুঁজতে পরিশ্রান্ত হল।
\s5
\v 12 পরে সেই ব্যক্তিরা লোটকে বললেন, "এই জায়গায় তোমার আর কে কে আছে? তোমার জামাই ও ছেলে মেয়ে যত জন এই নগরে আছে, সে সকলকে এই জায়গা থেকে নিয়ে যাও।
\v 13 কারণ আমরা এই জায়গা ধ্বংস করব; কারণ সদাপ্রভুর সামনে এই লোকদের বিপরীতে ভীষণ কান্নার আওয়াজ উঠেছে, তাই সদাপ্রভু এটা ধ্বংস করতে আমাদেরকে পাঠিয়েছেন।"
\s5
\v 14 তখন লোট বাইরে গিয়ে, যারা তাঁর মেয়েদেরকে বিয়ে করেছিল, নিজের সেই জামাইদেরকে বললেন, "তাড়াতাড়ি ওঠ, এ জায়গা থেকে বেরিয়ে যাও, কারণ সদাপ্রভু এই নগর ধ্বংস করবেন।" কিন্তু তাঁর জামাইরা তাঁকে উপহাসকারী বলে মনে করল।
\v 15 যখন প্রভাত হল সেই দূতেরা লোটকে তাড়াতাড়ি বললেন, "ওঠ, তোমার স্ত্রীকে ও এই যে মেয়ে দুটি এখানে আছে, এদেরকে নিয়ে যাও, যদি তোমরা নগরের অপরাধে বিনষ্ট হও।"
\s5
\v 16 কিন্তু তিনি এদিক-ওদিক করতে লাগলেন; তাতে তাঁর প্রতি সদাপ্রভুর স্নেহের জন্য সেই ব্যক্তিরা তাঁর ও তাঁর স্ত্রীর ও মেয়ে দুটির হাত ধরে শহরের বাইরে নিয়ে রাখলেন।
\v 17 যখন তাদেরকে বের করে তিনি লোটকে বললেন, "প্রাণরক্ষার জন্য পালিয়ে যাও! পিছন দিকে দেখ না; অথবা সমতলে যেকোনো জায়গায় থেকো না; পর্বতে পালিয়ে যাও, যাতে বিনষ্ট না হও।
\s5
\v 18 লোট তাঁদেরকে বললেন, "হে আমার প্রভু, এমন না হোক।
\v 19 দেখুন, আপনার দাস আপনার কাছে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হয়েছে; আমার প্রাণরক্ষা করাতে আপনি আমার প্রতি আপনার মহাদয়া প্রকাশ করেছেন; কিন্তু আমি পর্বতে পালাতে পারি না; কি জানি, সেই বিপদ এসে পড়লে আমিও মরব।
\v 20 দেখুন, পালানোর জন্য ঐ শহর কাছাকাছি, ওটা ছোট; ওখানে পালাবার অনুমতি দিন, তা হলে আমার প্রাণ বাঁচবে; ওটা কী ছোট না?"
\s5
\v 21 তিনি বললেন, "ভাল, আমি এ বিষয়েও তোমার প্রতি অনুগ্রহ করছি, ঐ যে নগরের কথা বললে, উহা ধ্বংস করব না।
\v 22 তাড়াতাড়ি! ঐ জায়গায় পালিয়ে যাও, কারণ তুমি ঐ জায়গায় না পৌঁছালে আমি কিছু করতে পারি না।" এই জন্য সেই জায়গার নাম সোয়র অর্থাৎ ক্ষুদ্র হল।
\s5
\v 23 দেশের উপর সূর্য উদিত হলে লোট সোয়রে প্রবেশ করলেন,
\v 24 এমন সময়ে সদাপ্রভু নিজের কাছ থেকে, আকাশ থেকে, সদোমের ও ঘমোরার ওপরে গন্ধক ও আগুন বর্ষণ করলেন।
\v 25 সেই সব নগর, সমস্ত অঞ্চল নগরবাসী সব লোক ও সেই ভূমিতে উত্পন্ন সমস্ত বস্তু ধ্বংস করলেন।
\s5
\v 26 কিন্তু লোটের স্ত্রী, যে তাঁর পিছনে ছিল, সে পিছনের দিকে তাকাল এবং লবণস্তম্ভ হয়ে গেল।
\v 27 আর অব্রাহাম খুব সকালে ঘুম থেকে উঠলেন এবং সেই জায়গায় গেলেন, আগে যে জায়গায় সদাপ্রভু দাড়িয়ে ছিলেন
\v 28 সদোম ও ঘমোরার দিকে ও সেই অঞ্চলের সব ভূমির দিকে চেয়ে দেখলেন, আর দেখ, ভাটির ধোঁয়ার মতো সেই দেশের থেকে ধোঁয়া উঠছে।
\s5
\v 29 এইভাবে সেই অঞ্চলে অবস্থিত সমস্ত নগরের ধ্বংসের সময়ে ঈশ্বর অব্রাহামকে স্মরণ করলেন। যে যে নগরে লোট বাস করতেন, সেই সেই নগরের ধ্বংসের সময়ে ধ্বংসের মধ্য থেকে লোটকে পাঠালেন।
\s5
\v 30 পরে লোট ও তাঁর দুটি মেয়েকে নিয়ে সোয়র থেকে পর্বতে উঠে গিয়ে সেখানে থাকলেন; কারণ তিনি সোয়রে বাস করতে ভয় পেলেন আর তিনি ও তাঁর সেই দুই মেয়ে গুহার মধ্যে বাস করলেন।
\s5
\v 31 পরে তাঁর বড় মেয়ে ছোট মেয়েকে বলল, "আমাদের বাবা বৃদ্ধ, এবং জগৎ সংসারের ব্যবহার অনুসারে আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করতে এ দেশে কোন পুরুষ নেই;
\v 32 এস, আমরা বাবাকে আঙ্গুর রস পান করিয়ে তাঁর সঙ্গে শয়ন করি, এইভাবে আমরা বাবার বংশ বৃদ্ধি করি।"
\v 33 তাতে তারা সেই রাতে নিজেদের বাবাকে আঙ্গুর রস পান করাল, পরে তাঁর বড় মেয়ে বাবার সঙ্গে শয়ন করতে গেল; তাঁর শয়ন করা ও উঠে যাওয়া লোট টের পেলেন না।
\s5
\v 34 আর পরদিন বড় মেয়েটি ছোট মেয়েটিকে বলল, "দেখ, গত রাতে আমি বাবার সঙ্গে শয়ন করেছিলাম; এস, আমরা আজ রাতেও বাবাকে আঙ্গুর রস পান করাই; পরে তুমি গিয়ে তাঁর সঙ্গে শয়ন কর, এইভাবে বাবার বংশ রক্ষা করব।"
\v 35 এইভাবে তারা সেই রাতেও বাবাকে আঙ্গুর রস পান করাল; পরে ছোট মেয়ে উঠে গিয়ে তাঁর সঙ্গে শয়ন করল; তার শয়ন করা ও উঠে যাওয়া লোট টের পেলেন না।
\s5
\v 36 এইভাবে লোটের দুটি মেয়েই নিজেদের বাবা থেকে গর্ভবতী হল।
\v 37 পরে বড় মেয়ে ছেলের জন্ম দিয়ে তার নাম মোয়াব রাখল; সে এখনকার মোয়াবীয়দের আদিপিতা।
\v 38 আর ছোট মেয়েটিও ছেলের জন্ম দিয়ে তার নাম বিন–অম্মি রাখল, সে এখনকার অম্মোন-লোকদের আদিবাবা।
\s5
\c 20
\ms অব্রাহাম আবার স্ত্রীকে অস্বীকার করেন।
\p
\v 1 আর অব্রাহাম সেখান থেকে দক্ষিণ দেশে যাত্রা করে কাদেশ ও শূরের মাঝখানে থাকলেন ও গবারে বাস করলেন।
\v 2 আর অব্রাহাম নিজের স্ত্রী সারার বিষয়ে বললেন, "এ আমার বোন" তাতে গবারের রাজা অবীমেলক লোক পাঠিয়ে সারাকে গ্রহণ করলেন।
\v 3 কিন্তু রাতে ঈশ্বর স্বপ্নে অবীমেলকের কাছে এসে বললেন, "দেখ, ঐ যে নারীকে গ্রহণ করেছ, তার জন্য তোমার মৃত্যু হবে, কারণ সে একজন লোকের স্ত্রী।"
\s5
\v 4 তখন অবীমেলক তাঁর কাছে যাননি; তাই তিনি বললেন, "প্রভু, যে জাতি নির্দোষ, তাকেও কি আপনি হত্যা করবেন?
\v 5 সেই ব্যক্তি কি আমাকে বলেনি, এ আমার বোন? এবং সেই স্ত্রীও কি বলেনি, এ আমার ভাই? আমি যা করেছি, তা হৃদয়ের সরলতায় ও হাতের নির্দোষতায় করেছি।
\s5
\v 6 তখন ঈশ্বর স্বপ্নে তাঁকে বললেন, "তুমি হৃদয়ের সরলতায় এ কাজ করেছ, তা আমিও জানি, এবং আমার বিরুদ্ধে পাপ করতে আমি তোমাকে বারণ করলাম; এই জন্য তাকে স্পর্শ করতে দিলাম না।
\v 7 অতএব, সেই ব্যক্তির স্ত্রীকে ফিরিয়ে দাও, কারণ সে ভাববাদী; আর সে তোমার জন্য প্রার্থনা করবে, তাতে তুমি বাঁচবে; কিন্তু যদি তাকে ফিরিয়ে না দাও, তবে এটা জেনে রাখ, তুমি ও তোমরা সকলেই নিশ্চয় মরবে।"
\s5
\v 8 অবীমেলক খুব সকালে উঠে নিজের সব দাসকে ডেকে ঐ সমস্ত বিবরণ তাদেরকে বললেন; তাতে তারা খুব ভয় পেল।
\v 9 পরে অবীমেলক অব্রাহামকে ডেকে বললেন, "আপনি আমাদের সঙ্গে এ কি ব্যবহার করলেন? আমি আপনার কাছে কি দোষ করেছি যে আপনি আমাকে ও আমার রাজ্যকে এমন মহাপাপগ্রস্ত করলেন? আপনি আমার প্রতি অনুচিত কাজ করলেন।"
\s5
\v 10 অবীমেলক অব্রাহামকে বললেন, "আপনি কি দেখেছিলেন যে, এমন কাজ করলেন?"
\v 11 তখন অব্রাহাম বললেন, "আমি ভেবেছিলাম, এই জায়গায় নিশ্চয় ঈশ্বর ভয় নেই, তাই এরা হয়তো আমার স্ত্রীর লোভে আমাকে হত্যা করবে।
\v 12 আর সে অবশ্যই আমার বোন, সে আমার বাবার মেয়ে কিন্তু মায়ের নয়, পরে আমার স্ত্রী হল।
\s5
\v 13 যখন ঈশ্বর আমাকে বাবার বাড়ি ছেড়ে যেতে বলেছিলেন তখন আমি তাকে বলেছিলাম, তুমি আমার প্রতি তোমার এই দয়া করতে হবে, আমরা যে সমস্ত জায়গায় যাব আমার সম্মন্ধে বলবে, এ আমার ভাই।"
\v 14 তখন অবীমেলক ভেড়া, গোরু ও দাস দাসী এনে অব্রাহামকে দান করলেন এবং তাঁর স্ত্রী সারাকেও ফিরিয়ে দিলেন;
\s5
\v 15 অবীমেলক বললেন, "দেখুন, আমার দেশ আপনার সামনে আছে আপনার যেখানে ইচ্ছা সেখানে বাস করুন।"
\v 16 আর তিনি সারাকে বললেন, "দেখুন, আমি আপনার ভাইকে হাজার টুকরো রুপো দিলাম; দেখুন, আপনার সঙ্গী সকলের কাছে তা আপনার চোখের আবরণ স্বরূপ; সব বিষয়ে আপনার বিচার নিষ্পত্তি হল।"
\s5
\v 17 পরে অব্রাহাম ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন, আর ঈশ্বর অবীমেলককে ও তাঁর স্ত্রীকে ও তাঁর দাসীদেরকে সুস্থ করলেন; তাতে তারা প্রসব করল।
\v 18 কারণ অব্রাহামের স্ত্রী সারার জন্য সদাপ্রভু অবীমেলকের পরিবারে সমস্ত গর্ভ রোধ করেছিলেন।
\s5
\c 21
\ms ইসহাকের জন্ম। ইশ্মায়েলের দূরীকৃত।
\p
\v 1 সদাপ্রভু নিজের কথা অনুযায়ী সারার যত্ন নিলেন; সদাপ্রভু যা বলেছেন, সারার প্রতি তাই করলেন।
\v 2 সারা গর্ভবতী হয়ে ঈশ্বরের বলা নিদিষ্ট সময়ে অব্রাহামের বৃদ্ধ বয়সে তাঁর জন্য একটি ছেলের জন্ম দিলেন।
\v 3 অব্রাহাম সারার গর্ভজাত নিজের ছেলের নাম ইস্‌হাক অর্থাৎ হাস্য, রাখলেন।
\v 4 পরে ঐ ছেলে ইস্‌হাকের আট দিন বয়সে অব্রাহাম ঈশ্বরের আজ্ঞানুসারে তাঁর ত্বকছেদ করলেন।
\s5
\v 5 যখন ইসহাকের জন্ম হয়, তখন অব্রাহামের একশো বছর বয়স ছিল।
\v 6 আর সারা বললেন, "ঈশ্বর আমাকে হাসালেন; যে কেউ এটা শুনবে, সে আমার সঙ্গে হাসবে।"
\v 7 তিনি আরও বললেন, "সারা শিশুদেরকে স্তন পান করাবে, এমন কথা অব্রাহামকে কে বলতে পারত? কারণ আমি তাঁর বৃদ্ধ বয়সে তাঁর জন্য ছেলের জন্ম দিলাম!"
\s5
\v 8 পরে বালকটি বড় হয়ে স্তন পান ত্যাগ করল এবং যে দিন ইস্‌হাক স্তন পান ত্যাগ করল, সেই দিন অব্রাহাম মহাভোজ প্রস্তুত করলেন।
\v 9 আর মিস্রীয়া হাগার অব্রাহামের জন্য যে ছেলের জন্ম দিয়েছিল, সারা তাকে ঠাট্টা করতে দেখলেন।
\s5
\v 10 তাতে তিনি অব্রাহামকে বললেন, "তুমি ঐ দাসীকে ও ওর ছেলেকে তাড়িয়ে দাও; কারণ আমার ছেলে ইস্‌হাকের সঙ্গে ঐ দাসীর ছেলে উত্তরাধিকারী হবে না।"
\v 11 এই কথায় অব্রাহাম নিজের ছেলের কারণে অতি দুঃখিত হলেন।
\s5
\v 12 কিন্তু ঈশ্বর অব্রাহামকে বললেন, "ঐ বালকের কারণে ও তোমার ঐ দাসীর কারণে দুঃখিত হয়ো না; সারা তোমাকে যা বলছে, তার সেই কথা শোন; কারণ ইস্‌হাকের মাধ্যমে তোমার বংশ আখ্যাত হবে।
\v 13 আর ঐ দাসীর ছেলে থেকেও আমি এক জাতি তৈরী করব, কারণ সে তোমার বংশীয়।"
\s5
\v 14 পরে অব্রাহাম ভোরবেলায় উঠে রুটি ও জলের থলি নিয়ে হাগারের কাঁধে দিয়ে ছেলেটিকে সমর্পন করে তাকে বিদায় করলেন। তাতে সে চলে গিয়ে বের-শেবা মরুভূমিতে ঘুরে বেড়াল।
\v 15 যখন থলির জল শেষ হল, তাতে সে এক ঝোপের নীচে ছেলেটিকে ফেলে রাখল;
\v 16 তারপর সে তার কাছ থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে বসল, কারণ সে বলল, "ছেলেটির মৃত্যু আমি দেখব না।" আর সে তার কাছ থেকে দূরে বসে উচ্চৈঃস্বরে কাঁদতে লাগল।
\s5
\v 17 ঈশ্বর ছেলেটির বর শুনলেন; এবং ঈশ্বরের দূত আকাশ থেকে ডেকে হাগারকে বললেন, "হাগার, তোমার কি হল? ভয় কর না, ছেলেটি যেখানে আছে, ঈশ্বর সেখান থেকে তার রব শুনলেন;
\v 18 তুমি ওঠ, ছেলেটিকে তোলো এবং তাকে উত্সাহ দাও; কারণ আমি তার মধ্যে দিয়ে এক মহাজাতি তৈরী করব।
\s5
\v 19 তখন ঈশ্বর তার চোখ খুলে দিলেন এবং সে এক জলের কুয়ো দেখতে পেল। সে সেখানে গিয়ে জলের থলিতে জল ভরে ছেলেটিকে পান করাল।
\v 20 পরে ঈশ্বর ছেলেটির সঙ্গে ছিলেন এবং সে বড় হয়ে উঠল। সে মরুভূমি থেকে ধনুকধারী হয়ে উঠল।
\v 21 সে পারন প্রান্তরে বাস করল এবং তার মা তার বিয়ের জন্য মিসর দেশ থেকে একটি মেয়ে আনল।
\s5
\v 22 ঐ সময়ে অবীমেলক এবং তাঁর সেনাপতি ফীখোল অব্রাহামকে বললেন, "আপনি যা কিছু করেন, সে সব কিছুতেই ঈশ্বর আপনার সঙ্গী"।
\v 23 অতএব আপনি এখন এই জায়গায় ঈশ্বরের দিব্যি করে আমাকে বলুন যে, আমার প্রতি ও আমার ছেলে ও বংশধরদের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করবেন না; আমি আপনার যেমন চুক্তির প্রতি বিশ্বস্ততা করেছি, আপনিও আমার প্রতি ও আপনার বাসস্থান এই দেশের প্রতি সেরকম চুক্তির প্রতি বিশ্বস্ততা করবেন"।
\v 24 তখন অব্রাহাম বললেন, "শপথ করব।"
\s5
\v 25 কিন্তু অবীমেলকের দাসেরা একটি জলপূর্ণ কূপ সবলে অধিকার করেছিল, এই জন্য অব্রাহাম অবীমেলককে অভিযোগ করলেন।
\v 26 অবীমেলক বললেন, "এই কাজ কে করেছে, তা আমি জানি না; আপনিও আমাকে জানাননি এবং আমিও কেবল আজ এ কথা শুনলাম।"
\v 27 পরে অব্রাহাম ভেড়া ও গরু নিয়ে অবীমেলককে দিলেন এবং উভয়ে একটি নিয়ম তৈরী করলেন।
\s5
\v 28 আর অব্রাহাম পাল থেকে সাতটা বাচ্চা ভেড়া আলাদা করে রাখলেন।
\v 29 অবীমেলক তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, "আপনি কি অর্থে এই সাত বাচ্চা ভেড়া আলাদা করে রাখলেন?"
\v 30 তিনি বললেন, "আমি যে এই কুয়ো খুঁড়েছি, তাঁর প্রমাণের জন্য আমার থেকে এই সাত বাচ্চা ভেড়া আপনাকে গ্রহণ করতে হবে।"
\s5
\v 31 এজন্য তিনি সে জায়গার নাম বের-শেবা [শপথের কুয়ো] রাখলেন, কারণ সেই জায়গায় তাঁরা উভয়ে শপথ করলেন।
\v 32 এইভাবে তাঁরা বের-শেবাতে নিয়ম তৈরী করলেন এবং পরে অবীমেলক ও তাঁর সেনাপতি ফীখোল উঠে পলেষ্টিয়দের দেশে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 33 পরে অব্রাহাম বের-শেবায় ঝাউগাছ রোপণ করে সেই জায়গায় অনন্তকালস্থায়ী ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে উপাসনা করলেন।
\v 34 অব্রাহাম পলেষ্টিয়দের দেশে অনেক দিন বাস করলেন।
\s5
\c 22
\ms অব্রাহামের মহাপরীক্ষা
\p
\v 1 এই সব ঘটনার পরে ঈশ্বর অব্রাহামের পরীক্ষা করলেন। তিনি তাঁকে বললেন, "অব্রাহাম;" তিনি উত্তর করলেন, "এখানে আমি।"
\v 2 তখন তিনি বললেন, "তুমি নিজের ছেলেকে, তোমার একমাত্র ছেলেকে, যাকে তুমি ভালবাস, সেই ইসহাককে নিয়ে মোরিয়া দেশে যাও এবং সেখানকার যে এক পর্বতের কথা আমি তোমাকে বলব, তার উপরে তাকে হোম বলির জন্য বলিদান কর।"
\v 3 পরে অব্রাহাম ভোরবেলায় উঠে গাধা সাজিয়ে দুই জন দাস ও তাঁর ছেলে ইসহাককে সঙ্গে নিলেন, হোমের জন্য কাঠ কাটলেন, আর উঠে ঈশ্বরের নিদিষ্ট জায়গায় দিকে গেলেন।
\s5
\v 4 তৃতীয় দিনে অব্রাহাম চোখ তুলে দূর থেকে সেই জায়গা দেখলেন।
\v 5 তখন অব্রাহাম নিজের দাসদেরকে বললেন, "তোমরা এই জায়গায় গাধার সঙ্গে থাক; আমি ও ছেলেটি, আমরা ঐ জায়গায় গিয়ে প্রার্থনা করি, পরে তোমাদের কাছে ফিরে আসব"
\v 6 তখন অব্রাহাম হোমের কাঠ নিয়ে নিজের ছেলে ইসহাকের কাঁধে দিলেন এবং নিজের হাতে আগুন ও ছুরি; দুজনেই একসঙ্গে চলে গেলেন।
\s5
\v 7 ইসহাক নিজের বাবা অব্রাহামকে বললেন, "হে আমার বাবা।" তিনি বললেন, "হে আমার ছেলে, দেখ, এই আমি।" তখন তিনি বললেন, "এই দেখুন, আগুন ও কাঠ, কিন্তু হোমের জন্য বাচ্চা ভেড়া কোথায়?"
\v 8 অব্রাহাম বললেন, "বৎস, ঈশ্বর নিজের হোমের জন্য বাচ্চা ভেড়া যোগাবেন।" পরে উভয়ে একসঙ্গে গেলেন।
\s5
\v 9 ঈশ্বরের নিদিষ্ট জায়গায় উপস্থিত হলে অব্রাহাম সেখানে যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে কাঠ সাজালেন, পরে নিজের ছেলে ইসহাককে বেঁধে বেদিতে কাঠের ওপরে রাখলেন।
\v 10 পরে অব্রাহাম হাত বাড়িয়ে নিজের ছেলেকে হত্যা করার জন্য ছুরি গ্রহণ করলেন।
\s5
\v 11 এমন সময়ে আকাশ থেকে সদাপ্রভুর দূত তাঁকে ডাকলেন, 'বললেন, অব্রাহাম, অব্রাহাম।" তিনি বললেন, "দেখুন এই আমি।"
\v 12 তখন তিনি বললেন, "ছেলেটির প্রতি তোমার হাত বাড়িয়ো না ওর প্রতি কিছুই কর না, কারণ এখন আমি বুঝলাম, তুমি ঈশ্বরকে ভয় কর, আমাকে নিজের একমাত্র ছেলে দিতেও হয় নি।"
\s5
\v 13 তখন অব্রাহাম চোখ তুলে চাইলেন, আর দেখ, তাঁর পিছন দিকে একটি ভেড়া, তার শিং ঝোপে বাঁধা; পরে অব্রাহাম গিয়ে সেই মেষটি নিয়ে নিজের পুত্রের পরিবর্তে হোমের জন্য বলিদান করলেন।
\v 14 আর অব্রাহাম সেই জায়গার নাম যিহোবা-যিরি [সদাপ্রভু যোগাবেন] রাখলেন। এই জন্য আজও লোকে বলে, "সদাপ্রভুর পর্বতে যোগান হবে।"
\s5
\v 15 পরে সদাপ্রভুর দূত দ্বিতীয় বার আকাশ থেকে অব্রাহামকে ডেকে বললেন,
\v 16 সদাপ্রভু বলছেন, "তুমি এই কাজ করলে, আমাকে নিজের একমাত্র পুত্র দিতে অসম্মত হলে না,
\v 17 এই জন্য আমি আমারই দিব্য করে বলছি, আমি অবশ্য তোমাকে আশীর্বাদ করব, এবং আকাশের তারাদের ও সুমদ্রতীরের বালির মতো তোমার অতিশয় বংশ বৃদ্ধি করব; তোমার বংশ শত্রুদের পুরদ্বার অধিকার করবে;
\s5
\v 18 আর তোমার বংশে পৃথিবীর সব জাতি আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে; কারণ তুমি আমার বাক্যে পালন করেছ।"
\v 19 পরে অব্রাহাম নিজের দাসদের কাছে গেলেন, আর সবাই উঠে একসঙ্গে বের-শেবাতে গেলেন; এবং অব্রাহাম বের-শেবাতে বাস করতে লাগলেন।
\s5
\v 20 ঐ ঘটনার পরে অব্রাহামের কাছে এই সংবাদ আসল, "দেখুন, আপনার ভাই নাহোরের জন্য মিল্কাও ছেলেদেরকে জন্ম দিয়েছেন;
\v 21 তাঁর বড় ছেলে ঊষ ও তার ভাই বূষ ও অরামের পিতা কমূয়েল, এবং
\v 22 কেষদ, হসো, পিল্‌দশ, যিদ্‌লফ ও বথূয়েল। বথূয়েলের মেয়ে রিবিকা।
\s5
\v 23 অব্রাহামের ভাই নাহোরের জন্য মিল্কা এই আট জনকে জন্ম দিলেন।
\v 24 আর রুমা নামে তাঁর উপপত্নী টেবহ, গহম, তহশ এবং মাখা, এই সবাইকে জন্ম দিলেন।
\s5
\c 23
\ms সারার মৃত্যু ও সমাধি
\p
\v 1 সারার বয়স একশো সাতাশ বছর হয়েছিল; সারার জীবনকাল এত বছর।
\v 2 পরে সারা কনান দেশে কিরিয়থর্ব্বে অর্থাৎ হিব্রোণে মারা গেলেন। আর অব্রাহাম সারার জন্য শোক ও কাঁদতে আসলেন।
\s5
\v 3 পরে অব্রাহাম নিজের মৃত স্ত্রীর সামনে থেকে উঠে গিয়ে হেতের সন্তানদেরকে বললেন,
\v 4 "আমি আপনাদের মধ্যে বিদেশী ও প্রবাসী; আপনাদের মধ্যে আমাকে কবরস্থানের অধিকার দিন; যেন আমি আমার সামনে আমার মৃত স্ত্রীকে কবর দিই।"
\s5
\v 5 তখন হেতের ছেলেরা অব্রাহামকে উত্তর দিলেন,
\v 6 "হে প্রভু, আমাদের কথা শুনুন; আপনি আমাদের মধ্যে ঈশ্বর নিযুক্ত রাজাস্বরূপ; আপনার মৃত স্ত্রীকে আমাদের কবরস্থানের মধ্যে আপনার পছন্দের কবরে রাখুন, আপনার মৃত স্ত্রীকে কবর দেবার জন্য আমাদের কেউ নিজ কবর অস্বীকার করবে না"
\s5
\v 7 তখন অব্রাহাম উঠে সেই দেশের লোকদের, অর্থাৎ হেতের ছেলেদের কাছে নত হলেন,
\v 8 তিনি সম্ভাষণ করে বললেন, "আমার সামনে থেকে আমার মৃত স্ত্রীকে কবরে রাখতে যদি আপনাদের সম্মতি হয়, তবে আমার কথা শুনুন। আপনারা আমার জন্য সোহরের ছেলে ইফ্রোণের কাছে অনুরোধ করুন;
\v 9 তাঁর ক্ষেত্রের শেষপ্রান্তে মক্‌পেলা গুহা আছে, আপনাদের মধ্যে আমার কবরস্থানের অধিকারের জন্য তিনি আমাকে তাই দিন; সম্পূর্ণ মূল্য নিয়ে দিন।"
\s5
\v 10 তখন ইফ্রোণ হেতের সন্তানদের মধ্যে বসে ছিলেন; আর হেতের যত সন্তান তাঁর নগরের দরজা দিয়ে প্রবেশ করলেন, তাঁদের কর্ণগোচরে সেই হিত্তীয় ইফ্রোণ অব্রাহামকে উত্তর করলেন,
\v 11 "হে আমার প্রভু, তা হবে না, আমার কথা শুনুন, আমি সেই ক্ষেত্র ও সেখানকার গুহা আপনাকে দান করলাম; আমি নিজ জাতির সন্তানদের সামনেই আপনাকে তা দিলাম, আপনার মৃত স্ত্রীকে কবর দিন।"
\s5
\v 12 তখন অব্রাহাম সেই দেশের লোকদের সামনে নত হলেন,
\v 13 আর সেই দেশের সকলের সামনে ইফ্রোণকে বললেন, "যদি আপনার ইচ্ছা হয়, নিবেদন করি, আমার কথা শুনুন, আমি সেই ক্ষেত্রের মূল্য দিই, আপনি আমার কাছে তা গ্রহণ করুন, পরে আমি সে জায়গায় আমার মৃত স্ত্রীকে কবর দেব।
\s5
\v 14 তখন ইফ্রন উত্তর দিয়ে অব্রাহামকে বললেন,
\v 15 "হে আমার প্রভু, আমার কথা শুনুন, সেই ভূমির মূল্য মাত্র চারশো শেকল রুপো; এতে আপনার ও আমার কি এসে যায়? আপনি নিজ মৃত স্ত্রীকে কবর দিন।"
\v 16 তখন অব্রাহাম ইফ্রনের কথা শুনলেন; ইফ্রন হেতের সন্তানদের সামনে যে রুপোর কথা বলেছিলেন, অব্রাহাম তা, অর্থাৎ বনিকদের মধ্যে প্রচলিত চারশো শেকল রুপো তুলে ইফ্রনকে দিলেন।
\s5
\v 17 এইভাবে মম্রির সামনে মকপেলায় ইফ্রনের যে ক্ষেত ছিল, সেই ক্ষেত, সেখানকার গুহা ও সেই ক্ষেতের গাছগুলি, তার চারদিকের অন্তর্গত গাছগুলি,
\v 18 এই সব কিছু হেতের সন্তানদের সামনে, তাঁর নগরের দরজায় প্রবেশকারী সকলের সামনে, অব্রাহামের নিজের অধিকার স্থির করা হল।
\s5
\v 19 তারপরে অব্রাহাম কনান দেশের মম্রির, অর্থাৎ হিব্রোণের সামনে মকপেলা ক্ষেত্রে অবস্থিত গুহাতে নিজের স্ত্রী সারার কবর দিলেন।
\v 20 এইভাবে কবরস্থানের অধিকারের জন্য সেই ক্ষেত্রে ও সেখানকার গুহাতে অব্রাহামের অধিকার হেতের সন্তানদের মাধ্যমে স্থির করা হল।
\s5
\c 24
\ms ইসহাকের বিয়ে
\p
\v 1 সেইসময়ে অব্রাহাম বৃদ্ধ ও তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল এবং সদাপ্রভু অব্রাহামকে সব বিষয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন।
\v 2 তখন অব্রাহাম নিজের দাসকে, তাঁর সমস্ত বিষয়ের অধ্যক্ষ, গৃহের প্রাচীনকে বললেন, "অনুরোধ করি, তুমি আমার উরুর নীচে হাত দাও;
\v 3 আমি তোমাকে স্বর্গ মর্ত্ত্যের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে এই শপথ করাই, যে কনানীয় লোকদের মধ্যে আমি বাস করছি, তুমি আমার ছেলের বিয়ের জন্য তাঁদের কোনো মেয়ে গ্রহণ করব না,
\v 4 কিন্তু আমার দেশে আমার আত্মীয়দের কাছে গিয়ে আমার পুত্র ইস্‌হাকের জন্য মেয়ে আনবে।"
\s5
\v 5 তখন সেই দাস তাঁকে বললেন, "কি জানি, আমার সঙ্গে এই দেশে আসতে কোনো মেয়ে রাজি হবে না; আপনি যে দেশ ছেড়ে এসেছেন, আপনার ছেলেকে কি আবার সেই দেশে নিয়ে যাব?
\v 6 তখন অব্রাহাম তাঁকে বললেন, "সাবধান, কোনোভাবে আমার ছেলেকে আবার সেখানে নিয়ে যেও না।
\v 7 সদাপ্রভু, স্বর্গের ঈশ্বর, যিনি আমাকে বাবার বাড়ি ও জন্মদেশের মধ্য থেকে এনেছেন, আমার সঙ্গে আলাপ করেছেন এবং এমন শপথ করেছেন যে, 'আমি তোমার বংশকে এই দেশ দেব, তিনিই তোমার আগে নিজের দূত পাঠাবেন; তাতে তুমি আমার ছেলের জন্য সেখান থেকে একটি মেয়ে নিয়ে আসতে পারবে।
\s5
\v 8 যদি কোনো মেয়ে তোমার সঙ্গে আসতে রাজি না হয়, তবে তুমি আমার এই শপথ থেকে মুক্ত হবে; কিন্তু কোনো ভাবে আমার ছেলেকে আবার সে দেশে নিয়ে যেও না।"
\v 9 তাতে সেই দাস নিজের প্রভু অব্রাহামের উরুর নীচে হাত দিয়ে সেই বিষয়ে শপথ করলেন।
\s5
\v 10 পরে সেই দাস নিজের প্রভুর উটেদের মধ্য থেকে দশটা উট ও নিজের প্রভুর সব রকমের ভালো জিনিসপত্র হাতে নিয়ে চলে গেলেন, অরাম-নহরয়িম দেশে, নাহোরের নগরে যাত্রা করলেন।
\v 11 আর সন্ধ্যাবেলায় যে সময়ে স্ত্রীলোকের জল তুলতে বের হয়, সেই সময়ে তিনি নগরের বাইরে কুয়ার কাছে উটদেরকে বসিয়ে রাখলেন
\s5
\v 12 তিনি বললেন, "হে সদাপ্রভু, আমার কর্ত্তা অব্রাহামের ঈশ্বর, অনুরোধ করি, আজ আমার সামনে শুভফল উপস্থিত কর, আমার প্রভু অব্রাহামের প্রতি দয়া কর।
\v 13 দেখ, আমি এই সজল কুয়ার কাছে দাঁড়িয়ে আছি এবং এই নগরবাসীদের মেয়েরা জল তুলতে বাইরে আসছে;
\v 14 অতএব যে মেয়েকে আমি বলব, আপনার কলসি নামিয়ে আমাকে জল পান করান, সে যদি বলে, পান কর, তোমার উটদেরকেও পান করাব, তবে তোমার দাস ইস্‌হাকের জন্য তোমার নিরূপিত মেয়ে সেই হোক; এতে আমি জানব যে, তুমি আমার প্রভুর প্রতি দয়া করলে।"
\s5
\v 15 এই কথা বলতে না বলতে, দেখ, রিবিকা কলসি কাঁধে করে বাইরে আসলেন; তিনি অব্রাহামের নাহর নামক ভাইয়ের স্ত্রী মিল্কার ছেলে বথূয়েলের মেয়ে।
\v 16 সেই মেয়ে দেখতে বড়ই সুন্দরী এবং অবিবাহিতা ও পুরুষের পরিচয় অপ্রাপ্তা ছিলেন। তিনি কূপে নেমে কলসিতে জল ভরে উঠে আসছেন,
\s5
\v 17 এমন সময়ে সেই দাস দৌড়িয়ে এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করে বললেন, "অনুরোধ করি, আপনার কলসি থেকে আমাকে কিছু জল পান করতে দিন।"
\v 18 তিনি বললেন, "মহাশয়, পান করুন;" এই বলে তিনি শীঘ্র কলশি হাতের ওপরে নামিয়ে তাঁকে পান করতে দিলেন।
\s5
\v 19 আর তাঁকে পান করাবার পর বললেন, "যতক্ষণ আপনার উটেদের জলপান শেষ না হয়, ততক্ষণ আমি ওদের জন্যও জল তুলব।"
\v 20 পরে তিনি শীঘ্র পাত্রে কলশির জল ঢেলে আবার জল তুলতে কুয়ার কাছে দৌড়ে গিয়ে তাঁর উটদের জন্য জল তুললেন।
\s5
\v 21 তাতে সেই পুরুষ তাঁর প্রতি এক নজরে চেয়ে, সদাপ্রভু তাঁর যাত্রা সফল করেন কি না, তা জানার জন্য নীরব থাকলেন।
\v 22 উটেরা জল পান করার পর সেই পুরুষ অর্ধেক শেকল পরিমিত দুই হাতের সোনার নথ এবং দশ তোলা পরিমিত দুই হাতের সোনার বালা নিয়ে বললেন,
\v 23 "আপনি কার মেয়ে? অনুরোধ করি, আমাকে বলুন, আপনার বাবার বাড়িতে কি আমাদের রাত কাটানোর জায়গা আছে?"
\s5
\v 24 তিনি উত্তর করলেন, "আমি সেই বথূয়েলের মেয়ে, যিনি মিল্কার ছেলে, যাঁকে তিনি নাহোরের জন্য জন্ম দিয়েছিলেন।"
\v 25 তিনি আরও বললেন, "খড় ও কলাই আমাদের কাছে যথেষ্ট আছে এবং রাত কাটাবার জায়গাও আছে।"
\s5
\v 26 তখন সে ব্যক্তি মাথা নিচু করে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করলেন,
\v 27 তিনি বললেন, "আমার কর্তা অব্রাহামের ঈশ্বর সদাপ্রভু ধন্য হোন, তিনি আমার কর্তার সঙ্গে নিজের দয়া ও সত্য ব্যবহার অস্বীকার করেননি; সদাপ্রভু আমাকেও পথঘটনাতে আমার কর্তার আত্মীয়দের বাড়িতে আনলেন।"
\s5
\v 28 পরে সেই মেয়ে দৌড়ে গিয়ে নিজের মায়ের ঘরের লোকদেরকে এই সব কথা জানালেন।
\v 29 আর রিবিকার এক ভাই ছিলেন, তাঁর নাম লাবন; সেই লাবন বাইরে ঐ ব্যক্তির উদ্দেশ্যে কূপের কাছে দৌড়ে গেলেন।
\v 30 নথ ও বোনের হাতে বালা দেখে এবং সেই ব্যক্তি আমাকে এই কথা বললেন, নিজের বোন রিবিকার মুখে এই শুনে, তিনি সেই পুরুষের কাছে গেলেন, আর দেখ, তিনি কুয়ার কাছে উটদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন;
\s5
\v 31 আর লাবন বললেন, "হে সদাপ্রভুর আশীর্বাদপাত্র, আসুন, কেন বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন? আমি তো ঘর এবং উটদের জন্যও জায়গা তৈরী করেছি।"
\v 32 তখন ঐ লোক বাড়িতে ঢুকে উটদের সজ্জা খুললে তিনি উটদের জন্য খড় ও কলাই দিলেন এবং তাঁর ও তার সঙ্গী লোকদের পা ধোবার জল দিলেন।
\s5
\v 33 পরে তাঁর সামনে আহারের জিনিস রাখা হল, কিন্তু তিনি বললেন, "যা বলার না বলে আমি আহার করব না।" লাবন বললেন, "বলুন।"
\v 34 তখন তিনি বলতে লাগলেন, "আমি অব্রাহামের দাস;"
\v 35 সদাপ্রভু আমার কর্তাকে প্রচুর আশীর্ব্বাদ করেছেন, আর তিনি বড় মানুষ হয়েছেন এবং [সদাপ্রভু] তাঁকে ভেড়া ও পশুপাল এবং রুপো ও সোনা এবং দাস ও দাসী এবং উট ও গাধা দিয়েছেন।
\s5
\v 36 আর আমার কর্তার স্ত্রী সারা বৃদ্ধ বয়সে তাঁর জন্য এক ছেলের জন্ম দিয়েছেন, তাঁকেই তিনি আপনার সব কিছু দিয়েছেন।
\v 37 আর আমার কর্তা আমাকে শপথ করিয়ে বললেন, "আমি যাদের দেশে বাস করছি, তুমি আমার ছেলের জন্য সেই কনানীয়দের কোনো মেয়ে এন না;
\v 38 কিন্তু আমার বাবার বংশের ও আমার আত্মীয়ের কাছে গিয়ে আমার ছেলের জন্য মেয়ে এন।
\s5
\v 39 তখন আমি কর্তাকে বললাম, "কি জানি, কোনো মেয়ে আমার সঙ্গে আসবে না।
\v 40 তিনি বললেন, "আমি যাঁর সামনে চলাফেরা করি সেই সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে নিজের দূত পাঠিয়ে তোমার যাত্রা সফল করবেন; এবং তুমি আমার আত্মীয় ও আমার বাবার বংশ থেকে আমার ছেলের জন্য মেয়ে আনবে।
\v 41 তা করলে এই শপথ থেকে মুক্ত হবে; আমার আত্মীয়ের কাছে গেলে যদি তারা [মেয়ে] না দেয়, তবে তুমি এই শপথ থেকে মুক্ত হবে।
\s5
\v 42 আর আজ আমি ঐ কূপের কাছে পৌছালাম, আর বললাম, "হে সদাপ্রভু, আমার কর্তা অব্রাহামের ঈশ্বর, তুমি যদি আমার এই যাত্রা সফল কর,
\v 43 তবে দেখ, আমি এই কুয়োর কাছে দাঁড়িয়ে আছি; অতএব জল তুলতে আসার জন্য যে মেয়েকে আমি বলব, নিজের কলসি থেকে আমাকে কিছু জল পান করতে দিন,
\v 44 তিনি যদি বলেন, "তুমিও পান কর এবং তোমার উটেদের জন্যও আমি জল তুলে দেব; তবে তিনি সেই মেয়ে হোন, যাঁকে সদাপ্রভু আমার কর্তার ছেলের জন্য মনোনীত করেছেন।
\s5
\v 45 এই কথা আমি মনে মনে বলতে না বলতে, দেখ, রিবিকা কলসি কাঁধে করে বাইরে আসলেন; পরে তিনি কূপে নেমে জল তুললে আমি বললাম, "অনুরোধ করি, আমাকে জল পান করান।"
\v 46 তখন তিনি তাড়াতাড়ি কাঁধ থেকে কলসি নামিয়ে বললেন "পান করুন, আমি আপনার উটদেরকেও পান করাব। তখন আমি পান করলাম; আর তিনি উটদেরকেও পান করালেন।
\s5
\v 47 পরে আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম, "আপনি কার মেয়ে?" তিনি উত্তর করলেন, "আমি বথূয়েলের মেয়ে, তিনি নাহোরের ছেলে, যাঁকে মিল্কা তাঁর জন্য জন্ম দিয়েছিলেন।" তখন আমি তাঁর নাকে নথ ও হাতে বালা পরিয়ে দিলাম।
\v 48 আর মাথা নিচু করে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করলাম এবং যিনি আমার কর্তার ছেলের জন্য তাঁর ভাইয়ের মেয়ে গ্রহণের জন্য আমাকে প্রকৃত পথে আনলেন, আমার কর্তা অব্রাহামের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুকে ধন্যবাদ করলাম।
\s5
\v 49 অতএব আপনারা যদি এখন আমার কর্তার সঙ্গে দয়া ও সত্য ব্যবহার করতে রাজি হন, তা বলুন; আর যদি না হন, তাও বলুন; তাতে আমি ডান দিকে কিম্বা বাম দিকে ফিরতে পারব।
\s5
\v 50 তখন লাবন ও বথুয়েল উত্তর করলেন, বললেন, "সদাপ্রভু থেকে এই ঘটনা হল, আমরা ভাল মন্দ কিছুই বলতে পারি না।
\v 51 ঐ দেখুন, রিবিকা আপনার সামনে আছে; ওকে নিয়ে চলে যান; এ আপনার কর্তার ছেলের স্ত্রী হোক, যেমন সদাপ্রভু বলেছেন।"
\s5
\v 52 তাঁদের কথা শোনামাত্র অব্রামের দাস সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে মাটিতে নত হলেন।
\v 53 পরে সেই দাস রুপোর সোনার গহনা ও বস্ত্র বের করে রিবিকাকে দিলেন এবং তাঁর ভাইকে ও মাকে বহুমূল্য দ্রব্য দিলেন।
\s5
\v 54 আর তিনি ও তাঁর সাথীরা ভোজন পান করে সেখানে রাত কাটালেন; পরে তাঁরা সকালে উঠলে তিনি বললেন, "আমার কর্তার কাছে আমাকে যেতে দিন।
\v 55 তাতে রিবিকার ভাই ও মা বললেন, "মেয়েটী আমাদের কাছে কিছু দিন থাকুক, কমপক্ষে দশ দিন থাকুক, পরে যাবে।"
\s5
\v 56 কিন্তু তিনি তাঁদেরকে বললেন, "আমাকে দেরী করাবেন না কারণ সদাপ্রভু আমার যাত্রা সফল করলেন; আমাকে বিদায় করুন; আমি নিজ কর্তার কাছে যাই।"
\v 57 তাকে তাঁরা বললেন, "আমার মেয়েকে ডেকে তাকে সামনে জিজ্ঞাসা করি।"
\v 58 পরে তাঁরা রিবিকাকে ডেকে বললেন, "তুমি কি এই ব্যক্তির সঙ্গে যাবে?" তিনি বললেন, "যাব"।
\s5
\v 59 তখন তাঁরা নিজেদের বোন রিবিকার কাছে ও তাঁর ধাত্রীকে এবং অব্রাহামের দাসকে ও তাঁর লোকদেরকে বিদায় করলেন।
\v 60 আর রিবিকাকে আশীর্বাদ করে বললেন, "তুমি আমাদের বোন, হাজার হাজার অযুতের মা হও; তোমার বংশ নিজের শত্রুর পুরদ্বার অধিকার করুক।"
\s5
\v 61 পরে রিবিকা ও তাঁর দাসীরা উঠলেন এবং উটে চড়ে সেই মানুষের পিছনে গেলেন। এইভাবে সেই দাস রিবিকাকে নিয়ে চলে গেলেন।
\v 62 আর ইসহাক বের-লহয়-রোয়ী নামক জায়গায় গিয়ে ফিরে এসেছিলেন, কারণ তিনি দক্ষিণ দেশে বাস করছিলেন।
\s5
\v 63 ইসহাক সন্ধ্যাবেলায় ধ্যান করতে ক্ষেত্রে গিয়েছিলেন, পরে চোখ তুলে দেখলেন, আর দেখ, উট আসছে।
\v 64 আর রিবিকা চোখ তুলে যখন ইসহাককে দেখলেন, তখন উট থেকে নামলেন।
\v 65 সেই দাসকে জিজ্ঞাসা করলেন, "আমাদের সঙ্গে দেখা করতে ক্ষেত্রের মধ্য দিয়ে আসছেন, ঐ লোকটি কে?" দাস বললেন, "উনি আমার কর্তা" তখন রিবিকা ঘোমটা দিয়ে নিজেকে ঢাকলেন।
\s5
\v 66 পরে সেই দাস ইসহাককে আপনার করা সমস্ত কাজের বিবরণ বললেন।
\v 67 তখন ইসহাক রিবিকাকে গ্রহণ করে সারা মায়ের তাঁবুতে নিয়ে গিয়ে তাকে বিয়ে করলেন এবং তাকে প্রেম করলেন। তাতে ইসহাক মায়ের মৃত্যুর শোক থেকে সান্তনা পেলেন।
\s5
\c 25
\ms অব্রাহামের আরও বিবাহ ও মৃত্যু
\p
\v 1 অব্রাহাম কটুরা নামে আর এক স্ত্রীকে বিয়ে করেন।
\v 2 তিনি তাঁর জন্য সিম্রন, যক্‌ষন, মদান, মিদিয়ন, যিশ্‌বক ও শূহ, এদের সকলকে প্রসব করলেন।
\v 3 যক্‌ষন শিবা ও দদানের বাবা হলেন। অশুরীয়, লটুশীয় ও লিয়ূম্মীয় লোকেরা দদানের বংশধর।
\v 4 মিদিয়নের ছেলে ঐফা, এফর, হনোক, অবীদ ও ইল্‌দায়া; এরা সকলে কটুরার বংশধর।
\s5
\v 5 অব্রাহাম ইসহাককে নিজের সব কিছু দিলেন।
\v 6 কিন্তু নিজের উপপত্নীদের ছেলেদের কে অব্রাহাম ভিন্ন ভিন্ন দান দিয়ে নিজের জীবদ্দশাতেই নিজের ছেলে ইসহাকের কাছ থেকে তাঁদেরকে পুর্বদিকে, পুর্বদেশে পাঠালেন।
\s5
\v 7 অব্রাহামের জীবনকাল একশো পঁচাত্তর বছর; তিনি এত বছর জীবিত ছিলেন।
\v 8 পরে অব্রাহাম বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ু হয়ে শুভ বৃদ্ধ অবস্থায় প্রাণত্যাগ করে নিজের লোকদের কাছে সংগৃহীত হলেন।
\s5
\v 9 তাঁর ছেলে ইস্‌হাক ও ইশ্মায়েল মম্রির সামনে হেতীয় সোহরের ছেলে ইফ্রোনের ক্ষেত্রে অবস্থিত মক্‌পেলা গুহাতে তাঁর কবর দিলেন।
\v 10 অব্রাহাম হেতের ছেলেদের কাছে সেই ক্ষেত্র কিনেছিলেন। সেই জায়গায় অব্রাহামের ও তাঁর স্ত্রী সারার কবর দেওয়া হয়।
\v 11 অব্রাহামের মৃত্যু হলে পর ঈশ্বর তাঁর ছেলে ইসহাককে আশীর্বাদ করলেন এবং ইসহাক বের-লহয়-রয়ীর কাছে বাস করলেন।
\s5
\v 12 অব্রাহামের ছেলে ইশ্মায়েলের বংশ বৃত্তান্ত এই। সারার দাসী মিসরীয় হাগার অব্রাহামের জন্য তাঁকে জন্ম দিয়েছিল।
\s5
\v 13 নিজের নিজের নাম ও গোষ্ঠী অনুসারে ইশ্মায়েলের ছেলেদের নাম এই। ইশ্মায়েলের বড় ছেলে নবায়োৎ,
\v 14 পরে কেদর, অদবেল, মিবসম,
\v 15 মিশম, দূমা, মসা, হদদ, তেমা, জিতুর নাফীশ ও কেদমা।
\v 16 এই সকল ইস্মায়েলের ছেলে এবং তাঁদের গ্রাম ও তাঁবুপল্লি অনুসারে তাঁদের এই এই নাম; তাঁরা নিজের নিজের জাতি অনুসারে বারো জন নেতা ছিলেন।
\s5
\v 17 ইশ্মায়েলের জীবনকাল একশো সাঁইত্রিশ বছর ছিল; পরে তিনি প্রাণত্যাগ করে নিজের লোকদের কাছে সংগৃহীত হলেন।
\v 18 আর তাঁর ছেলেরা হবীলা থেকে অশূরিয়ার দিকে মিসরের সামনে অবস্থিত শূর পর্যন্ত বাস করল; তিনি তাঁর সব ভাইয়ের সামনে বাস করার জায়গা পেলেন।
\s ইসহাকের বিবরণ
\m
\s5
\v 19 অব্রাহামের ছেলে ইসহাকের বংশ বিবরণ এই। অব্রাহাম ইসহাকের জন্ম দিয়েছিলেন।
\v 20 চল্লিশ বছর বয়সে ইসহাক অরামীয় বথূয়েলের মেয়ে অরামীয় লাবনের বোন রিবিকাকে পদ্দন- অরাম থেকে এনে বিয়ে করেন।
\s5
\v 21 ইসহাকের স্ত্রী বন্ধ্যা হওয়াতে তিনি তাঁর জন্য সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন। তাতে সদাপ্রভু তাঁর প্রার্থনা শুনলেন, তাঁর স্ত্রী রিবিকা গর্ভবতী হলেন।
\v 22 তাঁর গর্ভমধ্যে শিশুরা জড়াজড়ি করল, তাতে তিনি বললেন, "যদি এমন হয়, তবে আমি কেন বেঁচে আছি?" আর তিনি সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করতে গেলেন।
\s5
\v 23 তখন সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, "তোমার গর্ভে দুই জাতি আছে ও তোমার উদর থেকে দুই বংশ আলাদা হবে; এক বংশ অন্য বংশের থেকে শক্তিশালী হবে ও বড় ছোটর দাস হবে।"
\s5
\v 24 পরে প্রসবকাল সম্পূর্ণ হল, আর দেখ, তাঁর গর্ভে যমজ ছেলে।
\v 25 যে প্রথমে ভূমিষ্ঠ হল, সে রক্তবর্ণ এবং তার সর্বাঙ্গ লোমশ বস্ত্রের মতো ছিল। তার নাম এষৌ [লোমশ] রাখা গেল।
\v 26 পরে তার ভাই ভূমিষ্ঠ হল। তার হাত এষৌর পা ধরেছিল, আর তার নাম যাকোব [পাদ্গ্রাহী] হল; ইসহাকের ষাট বছর বয়সে এই যমজ ছেলে হল।
\s5
\v 27 পরে সেই বালকেরা বড় হলে এষৌই নিপুণ শিকারি ও মরুভূমিতে মানুষ হলেন; কিন্তু যাকোব শান্ত ছিলেন, তিনি তাঁবুতে বাস করতেন।
\v 28 ইসহাক এষৌকে ভালবাসতেন, কারণ তাঁর মুখে শিকার করা মাংস ভাল লাগত; কিন্তু রিবিকা যাকোবকে ভালবাসতেন।
\s5
\v 29 একবার যাকোব ঝোল রান্না করেছেন, এমন সময় এষৌ ক্লান্ত হয়ে মরুভূমি থেকে এসে
\v 30 যাকোবকে বললেন, "আমি ক্লান্ত হয়েছি, অনুরোধ করি, ঐ লাল, ঐ লাল ঝোল দিয়ে আমার পেট ভর্তি কর। এই জন্য তাঁর নাম ইদোম [লাল] খ্যাত হল।
\s5
\v 31 তখন যাকোব বললেন, "আজ তোমার বড় হওয়ার অধিকার আমার কাছে বিক্রি কর।
\v 32 এষৌ বললেন, "দেখ, আমি মৃতপ্রায়, বড় হওয়ার অধিকারে আমার কি লাভ?"
\v 33 যাকোব বললেন, "তুমি আজ আমার কাছে শপথ কর।" তাতে তিনি তাঁর কাছে শপথ করলেন। এইভাবে তিনি নিজের বড় হওয়ার অধিকার যাকোবের কাছে বিক্রি করলেন।
\v 34 আর যাকোব এষৌকে রুটি ও মসুরের রান্না ডাল দিলেন। তিনি ভোজন পান করলেন, পরে উঠে চলে গেলেন। এইভাবে এষৌ নিজের বড় হওয়ার অধিকার তুচ্ছ করলেন।
\s5
\c 26
\p
\v 1 আগে অব্রামের সময়ে যে দূর্ভিক্ষ হয়, তাছাড়া দেশে আর এক দূর্ভিক্ষ দেখা দিল। তখন ইসহাক গরারে পলেষ্টীয়দের রাজা অবীমেলকের কাছে গেলেন।
\s5
\v 2 সদাপ্রভু তাঁকে দর্শন দিয়ে বললেন, "তুমি মিসর দেশে নেমে যেও না, আমি তোমাকে যে দেশের কথা বলব, সেখানে থাক;
\v 3 এই দেশে বসবাস কর; আমি তোমার সঙ্গে থেকে তোমাকে আশীর্বাদ করব, কারণ আমিই তোমাকে ও তোমার বংশকে এই সব দেশ দেব এবং তোমার বাবা অব্রাহামের কাছে যে শপথ করেছিলাম, তা সফল করব।
\s5
\v 4 আমি আকাশের তারাদের মতো তোমার বংশ বৃদ্ধি করব, তোমার বংশকে এই সব দেশ দেব ও তোমার বংশে পৃথিবীর যাবতীয় জাতি আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে।
\v 5 কারণ অব্রাহাম আমার বাক্য মেনে আমার আদেশ, আমার আজ্ঞা, আমার বিধি ও আমার ব্যবস্থা সব পালন করেছে।"
\s5
\v 6 তাই ইসহাক গরারে বাস করলেন।
\v 7 আর সে জায়গার লোকেরা তাঁর স্ত্রীর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, "উনি আমার বোন; কারণ, এ আমার স্ত্রী, এই কথা বলতে তিনি ভয় পেলেন, ভাবলেন, কি জানি এই জায়গার লোকেরা রিবিকার জন্য আমাকে হত্যা করবে; কারণ তিনি দেখতে সুন্দরী ছিলেন।
\v 8 কিন্তু সে জায়গায় বহুকাল বাস করলে পর কোনো সময়ে পলেষ্টীয়দের রাজা অবীমেলক জানালা দিয়ে দেখলেন, আর দেখ, ইসহাক নিজের স্ত্রী রিবিকার সঙ্গে সোহাগপূর্ণ ব্যবহার করছে।
\s5
\v 9 তখন অবীমেলক ইসহাককে ডেকে বললেন, "দেখুন, তিনি অবশ্য আপনার স্ত্রী; তবে আপনি বোন বলে তাঁর পরিচয় কেন দিয়েছিলেন?" ইসহাক উত্তর করলেন, "আমি ভাবছিলাম, কি জানি, তাঁর জন্য আমার মৃত্যু হবে।"
\v 10 তখন অবীমেলক বললেন, "আপনি আমাদের সঙ্গে এ কি ব্যবহার করলেন? কোনো লোক আপনার ভার্য্যার সঙ্গে অনায়াসে শয়ন করতে পারত; তা হলে আপনি আমাদেরকে দোষী করতেন।"
\v 11 তাই অবীমেলক সব লোককে এই আজ্ঞা দিলেন, "যে কেউ এই ব্যক্তিকে কিম্বা এর স্ত্রীকে স্পর্শ করবে, তাঁর প্রাণদণ্ড অবশ্য হবে।"
\s5
\v 12 আর ইসহাক সেই দেশে চাষবাস করে সেই বছর একশো গুণ শস্য পেলেন এবং সদাপ্রভু তাঁকে আশীর্বাদ করলেন।
\v 13 আর তিনি ধনী হলেন এবং আরো বৃদ্ধি পেয়ে অনেক বড় লোক হলেন;
\v 14 আর তাঁর ভেড়া ও গরু সম্পত্তি এবং অনেক দাস দাসী হল; আর পলেষ্টীয়রা তাঁর প্রতি হিংসা করতে লাগল।
\s5
\v 15 তাঁর বাবা অব্রাহামের সময়ে তাঁর দাসরা যে যে কুয়ো খুঁড়েছিল, পলেষ্টীয়রা সেসব বুজিয়ে ফেলেছিল ও ধুলোতে ভর্তি করেছিল।
\v 16 পরে অবীমেলক ইসহাককে বললেন, "আমাদের কাছ থেকে চলে যান, কারণ আপনি আমাদের থেকে অনেক শক্তিশালী হয়েছেন।
\v 17 পরে ইস্‌হাক সেখান থেকে চলে গেলেন ও গরারের উপত্যকাতে তাঁবু স্থাপন করে সেখানে বাস করলেন।
\s5
\v 18 ইস্‌হাক নিজের বাবা অব্রাহামের সময়ে খোঁড়া কুয়ো সব আবার খুঁড়লেন; কারণ অব্রাহামের মৃত্যুর পরে পলেষ্টীয়রা সেসব বুজিয়ে ফেলেছিল; তাঁর বাবা সেই সকলের যে যে নাম রেখেছিলেন, তিনিও সেই সেই নাম রাখলেন!
\s5
\v 19 সেই উপত্যকায় ইসহাকের দাসরা খুঁড়ে জলের উনুই বিশিষ্ট এক কুয়ো পেল।
\v 20 তাতে গরারীয় পশুপালকেরা ইসহাকের পশুপালকদের সঙ্গে বিবাদ করে বলল, "এ জল আমাদের; অতএব তিনি সেই কুয়োর নাম এষক [বিবাদ] রাখলেন, যেহেতু তারা তাঁর সঙ্গে বিবাদ করেছিল।
\s5
\v 21 পরে তাঁর দাসরা আর এক কুয়ো খনন করলে তারা সেটির জন্যও বিবাদ করল; তাতে তিনি সেটির নাম সিটনা [বিপক্ষতা] রাখলেন।
\v 22 তিনি সেখান থেকে চলে গিয়ে অন্য এক কুয়ো খনন করলেন; সেটার জন্য তারা বিবাদ করল না; তাই তিনি সেটার নাম রহোবোৎ [প্রশস্ত স্থান] রেখে বললেন, "এখন সদাপ্রভু আমাদেরকে প্রশস্ত স্থান দিলেন, আমরা দেশে ফলবন্ত হব।
\s5
\v 23 পরে তিনি সেখান থেকে বের-শেবাতে উঠে গেলেন।
\v 24 সেই রাতে সদাপ্রভু তাঁকে দর্শন দিয়ে বললেন, "আমি তোমার পিতা অব্রাহামের ঈশ্বর, ভয় কর না, কারণ আমি নিজের দাস অব্রাহামের অনুরোধে তোমার সহবর্তী, আমি আশীর্বাদ করব ও তোমার বংশবৃদ্ধি করব।"
\v 25 ইসহাক সেই জায়গায় যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে সদাপ্রভুর নামে ডাকলেন, আর সেই জায়গায় তিনি তাঁবু স্থাপন করলেন ও তাঁর দাসরা সেখানে একটা কুয়ো খুঁড়ল।
\s5
\v 26 আর অবীমেলক নিজের বন্ধু অহূষৎকে ও সেনাপতি ফীকোলকে সঙ্গে নিয়ে গরার থেকে ইসহাকের কাছে গেলেন।
\v 27 ইসহাক তাঁদেরকে বললেন, "আপনারা আমার কাছে কি জন্য আসলেন? আপনারা তো আমাকে হিংসা করে আপনাদের থেকে দূর করে দিয়েছেন।"
\s5
\v 28 তাঁরা বললেন, "আমরা স্পষ্টই দেখলাম, সদাপ্রভু আপনার সহবর্তী, এই জন্য বললাম, আমাদের মধ্য অর্থাৎ আমাদের ও আপনার মধ্যে একটা শপথ হোক, আর আমরা একটা নিয়ম স্থির করি।
\v 29 আমরা যেমন আপনাকে স্পর্শ করিনি ও আপনার মঙ্গল ছাড়া আর কিছুই করিনি, বরং আপনাকে শান্তিতে বিদায় করেছি, সেইরকম আপনিও আমাদের উপর হিংসা করবেন না; আপনিই এমন সদাপ্রভুর আশীর্বাদের পাত্র।"
\s5
\v 30 তখন ইস্‌হাক তাঁদের জন্যে ভোজ প্রস্তুত করলে তাঁরা ভোজন পান করলেন।
\v 31 পরে তাঁরা ভোরবেলায় উঠে পরস্পর শপথ করলেন; তখন ইস্‌হাক তাঁদেরকে বিদায় করলে তাঁরা শান্তিতে তাঁর কাছ থেকে চলে গেলেন।
\s5
\v 32 সেই দিন ইস্‌হাকের দাসরা এসে নিজেদের খোঁড়া কূপের বিষয়ে সংবাদ দিয়ে তাঁকে বলল, "জল পেয়েছি।"
\v 33 তিনি তার নাম শিবিয়া [দিব্যি] রাখলেন, এই জন্য আজ পর্যন্ত সেই নগরের নাম বের-শেবা রয়েছে।
\s5
\v 34 আর এষৌ চল্লিশ বছর বয়সে হিত্তীয় বেরির যিহূদীৎকে এবং হিত্তীয় বাসমৎকে বিয়ে করলেন।
\v 35 এরা ইসহাকের ও রিবিকার জীবনে দুঃখ দিল।
\s5
\c 27
\ms যাকোব ছলনা করে বাবার আশীর্বাদ নেয়
\p
\v 1 পরে ইস্‌হাক বৃদ্ধ হলে তাঁর চোখ নিস্তেজ হওয়ায় আর দেখতে পেতেন না; তখন তিনি আপনার বড় ছেলে এষৌকে ডেকে বললেন, "বৎস।"
\v 2 তিনি উত্তর করলেন, "দেখুন, এই আমি।" তখন ইস্‌হাক বললেন, "দেখ, আমি বৃদ্ধ হয়েছি; কোন দিন আমার মৃত্যু হবে, জানি না।
\s5
\v 3 এখন অনুরোধ করি, তোমার শস্ত্র, তোমার তীর ও ধনুক নিয়ে প্রান্তরে যাও, আমার জন্য পশু শিকার করে আন।
\v 4 আমি যেমন ভালবাসি, সেরকম সুস্বাদু খাদ্য তৈরী করে আমার কাছে আন, আমি ভোজন করব; যেন মৃত্যুর আগে আমার প্রাণ তোমাকে আশীর্বাদ করে।"
\s5
\v 5 যখন ইস্‌হাক নিজের ছেলে এষৌকে এই কথা বলেন, তখন রিবিকা তা শুনতে পেলেন। অতএব এষৌ পশু শিকার করে আনবার জন্য প্রান্তরে গেলে পর
\v 6 রিবিকা নিজের ছেলে যাকোবকে বললেন, "দেখ, তোমার ভাই এষৌকে তোমার বাবা যা বলেছেন, আমি শুনেছি;
\v 7 তিনি বলেছেন, "তুমি আমার জন্য পশু শিকার করে এনে সুস্বাদু খাদ্য তৈরী কর, তাতে আমি ভোজন করে মৃত্যুর আগে সদাপ্রভুর সামনে তোমাকে আশীর্বাদ করব।
\s5
\v 8 হে আমার ছেলে, এখন আমি তোমাকে যা আদেশ করি, আমার সেই কথা শুন।
\v 9 তুমি পালে গিয়ে সেখান থেকে উত্তম দুটি বাচ্চা ছাগল আন, তোমার বাবা যেমন ভাল বাসেন, সেরকম সুস্বাদু খাবার আমি প্রস্তুত করে দিই;
\v 10 পরে তুমি নিজের বাবার কাছে তা নিয়ে যাও, তিনি তা ভোজন করুন; যেন তিনি মৃত্যুর আগে তোমাকে আশীর্বাদ করেন।"
\s5
\v 11 তখন যাকোব নিজের মা রিবিকাকে বললেন, "দেখ, আমার ভাই এষৌ লোমশ, কিন্তু আমি নির্লোম।
\v 12 কি জানি, বাবা আমাকে স্পর্শ করবেন, আর আমি তাঁর দৃষ্টিতে প্রতারক বলে গণিত হব; তা হলে আমি আমার প্রতি আশীর্বাদ না পেয়ে অভিশাপ পাব।"
\s5
\v 13 তাঁর মা বললেন, "বৎস, সেই অভিশাপ আমাতেই আসুক, কেবল আমার কথা শোনো, একটি বাচ্চা ছাগল নিয়ে এস।"
\v 14 পরে যাকোব গিয়ে তা নিয়ে মায়ের কাছে নিয়ে গেলেন, আর তাঁর বাবা যেমন ভালবাসতেন, মা সেরকম সুস্বাদু খাবার তৈরী করলেন।
\s5
\v 15 আর ঘরে নিজের কাছে বড় ছেলে এষৌর যে যে সুন্দর বস্ত্র ছিল, রিবিকা তা নিয়ে ছোট ছেলে যাকোবকে পরিয়ে দিলেন।
\v 16 ঐ দুই বাচ্চা ছাগলের চামড়া নিয়ে তাঁর হাতে ও গলার নির্লোম জায়গায় জড়িয়ে দিলেন।
\v 17 আর তিনি যে সুস্বাদু খাবার ও রুটি রান্না করেছিলেন, তা তাঁর ছেলে যাকোবের হাতে দিলেন।
\s5
\v 18 পরে তিনি নিজের বাবার কাছে গিয়ে বললেন, "বাবা।" তিনি উত্তর করলেন, "দেখ, এই আমি; বৎস, তুমি কে?"
\v 19 যাকোব নিজের বাবাকে বললেন, "আমি আপনার বড় ছেলে এষৌ; আপনি আমাকে যা আদেশ করেছিলেন, তা করেছি। অনুরোধ করি, আপনি উঠে বসে আমার আনা পশুর মাংস ভোজন করুন, যেন আপনার প্রাণ আমাকে আশীর্বাদ করে।
\s5
\v 20 তখন ইসহাক নিজের ছেলেকে বললেন, "বৎস, কেমন করে এত তাড়াতাড়ি ওটা পেলে?" তিনি বললেন, "আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আমার সামনে শুভফল উপস্থিত করলেন।"
\v 21 ইস্‌হাক যাকোবকে বললেন, "বৎস, কাছে এস; আমি তোমাকে স্পর্শ করে বুঝি, তুমি নিশ্চয় আমার ছেলে এষৌ কি না।"
\s5
\v 22 তখন যাকোব নিজের বাবা ইস্‌হাকের কাছে গেলে তিনি তাঁকে স্পর্শ করে বললেন, "গলার আওয়াজ তো যাকোবের আওয়াজ, কিন্তু হাত এষৌর হাত।"
\v 23 বাস্তবিক তিনি তাঁকে চিনতে পারলেন না, কারন ভাই এষৌর হাতের মতো তাঁর হাত লোমযুক্ত ছিল; অতএব তিনি তাঁকে আশীর্বাদ করলেন।
\s5
\v 24 তিনি বললেন, "তুমি নিশ্চয়ই আমার ছেলে এষৌ?" তিনি বললেন, "হ্যাঁ।"
\v 25 তখন ইস্‌হাক বললেন, "আমার কাছে আন; আমি ছেলের আনা পশুর মাংস ভোজন করি, যেন আমার প্রাণ তোমাকে আশীর্বাদ করে।" তিনি মাংস আনলে ইস্‌হাক ভোজন করলেন এবং দ্রাক্ষারস এনে দিলে তা পান করলেন।
\s5
\v 26 পরে তাঁর বাবা ইস্‌হাক বললেন, "বৎস, অনুরোধ করি, কাছে এসে আমাকে চুম্বন কর।"
\v 27 তখন তিনি কাছে গিয়ে চুম্বন করলেন, আর ইস্‌হাক তাঁর বস্ত্রের গন্ধ নিয়ে তাঁকে আশীর্বাদ করে বললেন, "দেখ, আমার ছেলের সুগন্ধ সদাপ্রভুর আশীর্বাদযুক্ত ক্ষেত্রের সুগন্ধের মতো।
\s5
\v 28 ঈশ্বর আকাশের শিশির থেকে ও ভূমির উর্বরতা থেকে তোমাকে দিন; প্রচুর শস্য ও আঙ্গুরের রস তোমাকে দিন।
\s5
\v 29 লোকবৃন্দ তোমার দাস হোক, জাতিরা তোমার কাছে নত হোক; তুমি নিজের আত্মীয়দের কর্তা হও, তোমার মায়ের ছেলেরা তোমার কাছে নত হোক। যে কেউ তোমাকে অভিশাপ দেয়, সে অভিশপ্ত হোক; যে কেউ তোমাকে আশীর্বাদ করে, সে আশীর্বাদযুক্ত হোক।"
\s5
\v 30 ইস্‌হাক যখন যাকোবের প্রতি আশীর্বাদ শেষ করলেন, তখন যাকোব নিজের পিতা ইস্‌হাকের সামনে থেকে যেতে না যেতেই তাঁর ভাই এষৌ শিকার করে ঘরে আসলেন।
\v 31 তিনিও সুস্বাদু খাবার তৈরী করে বাবার কাছে এনে বললেন, "বাবা আপনি উঠে ছেলের আনা পশুর মাংস ভোজন করুন, যেন আপনার প্রাণ আমাকে আশীর্বাদ করে।"
\s5
\v 32 তাঁর বাবা ইস্‌হাক বললেন, "তুমি কে?" তিনি বললেন, "আমি আপনার বড় ছেলে এষৌ।"
\v 33 ইস্‌হাক ভীষণভাবে কেঁপে উঠে বললেন, "তবে সে কে, যে শিকার করে আমার কাছে পশুর মাংস এনেছিল? আমি তোমার আসবার আগেই তা ভোজন করে তাকে আশীর্বাদ করেছি, আর সেই আশীর্বাদযুক্ত থাকবে।"
\s5
\v 34 বাবার এই কথা শোনামাত্র এষৌ ভীষণ ব্যকুলভাবে কাঁদলেন এবং নিজের বাবাকে বললেন, "হে বাবা, আমাকে, আমাকেও আশীর্বাদ করুন।"
\v 35 ইস্‌হাক বললেন, "তোমার ভাই ছলনা করে এসে তোমার আশীর্বাদ নিয়ে নিয়েছে।"
\s5
\v 36 এষৌ বললেন, "তার নাম কি যাকোব [বঞ্চক] না? বাস্তবিক সে দু-বার আমাকে [প্রতারণা] করেছে; সে আমার বড় হওয়ার অধিকার নিয়ে নিয়েছিল এবং দেখুন, এখন আমার আশীর্বাদও নিয়ে নিয়েছে।" তিনি আবার বললেন, "আপনি কি আমার জন্য কিছুই আশীর্বাদ রাখেননি?"
\v 37 তখন ইস্‌হাক উত্তর করে এষৌকে বললেন, "দেখ, আমি তাঁকে তোমার কর্তা করেছি এবং তার আত্মীয় সবাইকে তারই দাস করেছি এবং তাঁকে শস্য ও দ্রাক্ষারস দিয়ে সবল করেছি; বৎস, এখন তোমার জন্য আর কি করিতে পারি?"
\s5
\v 38 এষৌ আবার নিজের বাবাকে বললেন, "হে বাবা, আপনার কি কেবল ঐ একটা আশীর্বাদ ছিল? হে বাবা, আমাকেও আশীর্বাদ করুন।" এই বলে এষৌ উচ্চৈঃস্বরে কাঁদতে লাগলেন।
\s5
\v 39 তখন তাঁর বাবা ইস্‌হাক উত্তর করে বললেন, "দেখ, তোমার বাসভূমি উর্বরতা বিহীন হবে।
\v 40 তুমি তরোয়ালের জোরে বাঁচবে এবং নিজের ভাইয়ের দাস হবে; কিন্তু যখন তুমি বিদ্রোহ করবে, নিজের ঘাড় থেকে তার যোঁয়ালি ভাঙ্গবে।"
\s যাকোব হারনে যান।
\p
\s5
\v 41 যাকোব নিজের বাবার কাছ থেকে আশীর্বাদ পেয়েছিলেন বলে এষৌ যাকোবকে হিংসা করতে লাগলেন। এষৌ মনে মনে বললেন, "আমার বাবার জন্য দুঃখ প্রকাশ করার সময় প্রায় উপস্থিত, তারপরে আমার ভাই যাকোবকে হত্যা করব।"
\v 42 বড় ছেলে এষৌর এরকম কথা রিবিকার কানে গেল, তাতে তিনি লোক পাঠিয়ে ছোট ছেলে যাকোবকে ডাকালেন, বললেন, "দেখ, তোমার ভাই এষৌ তোমাকে হত্যা করবার আশাতেই মনকে সান্ত্বনা দিচ্ছে।
\s5
\v 43 এখন, হে বৎস, আমার কথা শোনো; ওঠ, হারনে আমার ভাই লাবনের কাছে পালিয়ে যাও
\v 44 সেখানে কিছু সময় থাক, যে পর্যন্ত তোমার ভাইয়ের রাগ না কমে।
\v 45 তোমার প্রতি ভাইয়ের রাগ কমে গেলে এবং তুমি তার প্রতি যা করেছ, তা সে ভুলে গেলে আমি লোক পাঠিয়ে সেখান থেকে তোমাকে আনাব; এক দিনে তোমাদের দুই জনকেই কেন হারাব?"
\s5
\v 46 রিবিকা ইসহাককে বললেন, "এই হিত্তীয়দের মেয়েদের বিষয় আমার প্রাণে ঘৃণা হচ্ছে; যদি যাকোবও এদের মতো কোনো হিত্তীয় মেয়েকে, এদেশীয় মেয়েদের মধ্যে কোনো মেয়েকে বিয়ে করে, তবে বেঁচে থেকে আমার কি লাভ?
\s5
\c 28
\p
\v 1 তখন ইসহাক যাকোবকে ডেকে আশীর্বাদ করলেন এবং এই আজ্ঞা দিয়ে তাঁকে বললেন, "তুমি কনান দেশীয় কোনো মেয়েকে বিয়ে কর না।
\v 2 ওঠ, পদ্দন অরামে নিজের দাদুর বথুয়েলের বাড়িতে গিয়ে সে জায়গায় নিজের মামা লাবনের কোনো মেয়েকে বিয়ে কর।
\s5
\v 3 আর সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তোমাকে আশীর্বাদ করে ফলবান ও বংশ বৃদ্ধি করুন, যেন তুমি বড় জাতি হয়ে ওঠ।
\v 4 তিনি অব্রাহামের আশীর্বাদ তোমাকে ও তোমার বংশকে দিন; যেন তোমার বাসস্থান এই যে দেশ ঈশ্বর অব্রাহামকে দিয়েছেন, এতে তোমার অধিকার হয়।
\s5
\v 5 পরে ইসহাক যাকোবকে বিদায় করলে তিনি পদ্দন অরামে অরামীয় বথুয়েলের ছেলে লাবনের কাছে গেলেন; সেই ব্যক্তি যাকোবের ও এষৌর মা রিবিকার ভাই।
\s5
\v 6 এষৌ যখন দেখলেন, ইসহাক যাকোবকে আশীর্বাদ করে বিবাহের মেয়ে গ্রহণের জন্য পদ্দন অরামে বিদায় করেছেন এবং আশীর্বাদের সময় কনানীয় কোনো মেয়েকে বিয়ে করতে নিষেধ করেছেন
\v 7 তাই যাকোব মা-বাবার আদেশ মেনে পদ্দন অরামে গিয়েছেন,
\s5
\v 8 তখন এষৌ দেখলেন যে, কনানীয় মেয়েরা তাঁর বাবা ইসহাকের অসন্তোষের পাত্রী;
\v 9 অতএব দুই স্ত্রী থাকলেও এষৌ ইশ্মায়েলের কাছে গিয়ে অব্রাহামের ছেলে ইশ্মায়েলের মেয়ে, নবায়তের বোন, মহলৎকে বিয়ে করলেন।
\s5
\v 10 আর যাকোব বের-শেবা থেকে বের হয়ে হারনের দিকে গেলেন
\v 11 কোনো এক জায়গায় পৌঁছালে সূর্য অস্ত যাওয়ায় সেখানে রাত কাটালেন। আর তিনি সেখানকার পাথর নিয়ে বালিশ করে সেই জায়গায় ঘুমানোর জন্য শুয়ে পড়লেন।
\s5
\v 12 পরে তিনি স্বপ্ন দেখলেন, পৃথিবীর উপরে এক সিঁড়ি স্থাপিত, তার মাথা আকাশছোঁয়া, আর দেখ তা দিয়ে ঈশ্বরের দূতেরা উঠছেন ও নামছেন।
\v 13 আর দেখ, সদাপ্রভু তার উপরে দাঁড়িয়ে আছেন; তিনি বললেন, "আমি সদাপ্রভু, তোমার বাবা অব্রাহামের ঈশ্বর ও ইসহাকের ঈশ্বর; এই যে ভূমিতে তুমি শুয়ে আছ, এটা আমি তোমাকে ও তোমার বংশকে দেব।
\s5
\v 14 তোমার বংশ পৃথিবীর ধূলোর মতো [অসংখ্য] হবে এবং তুমি পশ্চিম ও পূর্ব, উত্তর ও দক্ষিণ চারদিকে বিস্তীর্ণ হবে এবং তোমাতে ও তোমার বংশে পৃথিবীর যাবতীয় গোষ্ঠী আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে।
\v 15 আর দেখ, আমি তোমার সহবর্তী, যে যে জায়গায় তুমি যাবে, সেই সেই জায়গায় তোমাকে রক্ষা করব ও আবার এই দেশে নিয়ে আসব; কারণ আমি তোমাকে যা যা বললাম, তা যতক্ষণ সফল না করি, ততক্ষণ তোমাকে ত্যাগ করব না।
\s5
\v 16 পরে ঘুম ভেঙ্গে গেলে যাকোব বললেন, "অবশ্য এই জায়গায় সদাপ্রভু আছেন, আর আমি তা জানতাম না।"
\v 17 আর তিনি ভয় পেয়ে বললেন, "এ কেমন ভয়াবহ জায়গা! এ নিতান্তই ঈশ্বরের গৃহ, এ স্বর্গের দরজা।"
\s5
\v 18 পরে যাকোব ভোরবেলায় উঠে বালিশের জন্য যে পাথর রেখেছিলেন, তা নিয়ে স্তম্ভরূপে স্থাপন করে তার উপর তেল ঢেলে দিলেন।
\v 19 আর সেই জায়গার নাম বৈথেল [ঈশ্বরের গৃহ] রাখলেন, কিন্তু আগে ঐ নগরের নাম লূস ছিল।
\s5
\v 20 যাকোব মানত করে এই প্রতিজ্ঞা করলেন, "যদি ঈশ্বর আমার সহবর্তী হন, আমার এই গন্তব্য পথে আমাকে রক্ষা করেন এবং আহারের জন্য খাবার ও পরিধানের জন্য বস্ত্র দেন,
\v 21 আর আমি যদি ভালোভাবে বাবার বাড়ি ফিরে যেতে পারি, তবে সদাপ্রভু আমার ঈশ্বর হবেন
\v 22 এবং এই যে পাথর আমি স্তম্ভরূপে স্থাপন করেছি, এটা ঈশ্বরের গৃহ হবে; আর তুমি আমাকে যা কিছু দেবে, তার দশমাংশ আমি তোমাকে অবশ্য দেব।
\s5
\c 29
\ms যাকোবের বিয়ে ও পরিবারের বিবরণ
\p
\v 1 পরে যাকোব পূর্বদিকের লোকদের দেশে গেলেন। সেখানে দেখলেন, মাঠের মধ্যে এক কূপ আছে,
\v 2 আর দেখ, তার কাছে ভেড়ার তিনটি পাল শুয়ে আছে; কারন লোকে ভেড়ার পাল সকলকে সেই কুয়োর জল পান করাত; আর সেই কূপের মুখে একটা বড় পাথর ছিল।
\v 3 সেই জায়গায় পাল সকল জড়ো করা হলে লোকে কুয়োর মুখ থেকে পাথরখানা সরিয়ে ভেড়াদেরকে জল পান করাত, পরে আবার কুয়োর মুখে সঠিক জায়গায় সেই পাথর রাখত।
\s5
\v 4 যাকোব তাদেরকে বললেন, "ভাই সব, তোমরা কোন জায়গার লোক? তারা বলল, "আমরা হারনের লোক।"
\v 5 তিনি বললেন, "নাহরের নাতি লাবণকে চেনো কি না?" তারা বলল, "চিনি।"
\v 6 তিনি বললেন, "সে ভালো আছে তো?" তারা বলল, "ভালো;" দেখ, তাঁর মেয়ে রাহেল ভেড়ার পাল নিয়ে আসছেন।
\s5
\v 7 তখন তিনি বললেন, "দেখ, এখনও অনেক বেলা আছে; পশুপাল জড়ো করার সময় হয়নি; তোমরা মেষদেরকে জল পান করিয়ে আবার চরাতে নিয়ে যাও।"
\v 8 তারা বলল, "যতক্ষণ পাল সব জড়ো না হয়, ততক্ষণ আমরা তা করতে পারি না; পরে কুয়োর মুখ থেকে পাথর খানা সরান যায়; তখন আমরা ভেড়াদেরকে জল পান করাই।"
\s5
\v 9 যাকোব তাদের সঙ্গে এরকম কথাবার্তা বলছেন, এমন সময়ে রাহেল নিজের বাবার মেষপাল নিয়ে উপস্থিত হলেন, কারণ তিনি ভেড়াপালিকা ছিলেন।
\v 10 তখন যাকোব নিজের মামা লাবনের মেয়ে রাহেলকে ও মামার ভেড়ার পালকে দেখামাত্র কাছে গিয়ে কুয়োর মুখ থেকে পাথরখানা সরিয়ে তাঁর মামা লাবনের ভেড়ার পালকে জল পান করালেন।
\s5
\v 11 পরে যাকোব রাহেলকে চুম্বন করে উচ্চৈঃস্বরে কাঁদতে লাগলেন।
\v 12 আপনি যে তাঁর বাবার কুটুম্ব ও রিবিকার ছেলে, যাকোব রাহেলকে এই পরিচয় দিলে রাহেল দৌড়ে গিয়ে নিজের বাবাকে সংবাদ দিলেন।
\s5
\v 13 তাতে লাবন তাঁর ভাগ্নে যাকোবের সংবাদ পেয়ে দৌড়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, তাঁকে আলিঙ্গন ও চুম্বন করলেন ও নিজের বাড়িতে নিয়ে গেলেন; পরে তিনি লাবণকে বলা সমস্ত বৃত্তান্ত জানালেন।
\v 14 তাতে লাবন বললেন, "তুমি সত্যিই আমার হাড় ও আমার মাংস।" পরে যাকোব তাঁর বাড়িতে এক মাস বাস করলেন।
\s5
\v 15 পরে লাবন যাকোবকে বললেন, "তুমি আত্মীয় বলে কি বিনা বেতনে আমার দাসের কাজ করবে? বল দেখি, কি বেতন নেবে?"
\v 16 লাবনের দুই মেয়ে ছিলেন; বড়টার নাম লেয়া ও ছোটটার নাম রাহেল।
\v 17 লেয়া মৃদুলোচনা, কিন্তু রাহেল রূপবতী ও সুন্দরী ছিলেন।
\v 18 আর যাকোব রাহেলকে ভালবাসতেন, এজন্য তিনি উত্তর করলেন, "আপনার ছোট মেয়ে রাহেলের জন্য আমি সাত বছর আপনার দাসের কাজ করব।"
\s5
\v 19 লাবন বললেন, "অন্য পাত্রকে দান করার থেকে তোমাকে দান করা ভালো বটে; আমার কাছে থাক।
\v 20 এইভাবে যাকোব রাহেলের জন্য সাত বছর দাসের কাজ করলেন; রাহেলের প্রতি তাঁর ভালোবাসার জন্য এক এক বছর তাঁর কাছে এক এক দিন মনে হল।
\s5
\v 21 পরে যাকোব লাবণকে বললেন, "আমার নিয়মিত কাল সম্পূর্ণ হল, এখন আমার স্ত্রী আমাকে দিন, আমি তার কাছে যাব।"
\v 22 তখন লাবন ঐ জায়গার সব লোককে জড়ো করে ভোজ প্রস্তুত করলেন।
\s5
\v 23 আর সন্ধ্যাবেলায় তিনি নিজের মেয়ে লেয়াকে নিয়ে তাঁর কাছে এনে দিলেন, আর যাকোব তাঁর কাছে গেলেন।
\v 24 আর লাবন সিল্পা নামে নিজের দাসীকে নিজের মেয়ে লেয়ার দাসী বলে তাঁকে দিলেন।
\v 25 আর সকাল হলে, দেখ, তিনি লেয়া। তাতে যাকোব লাবনকে বললেন, "আপনি আমার সঙ্গে এ কি ব্যবহার করলেন? আমি কি রাহেলের জন্য আপনার দাসের কাজ করিনি? তবে কেন আমাকে প্রতারণা করলেন?"
\s5
\v 26 তখন লাবন বললেন, "বড়র আগে ছোটকে দান করা আমাদের এই জায়গায় কর্তব্য নয়।
\v 27 তুমি এর সপ্তাহ পূর্ণ কর; পরে আর সাত বছর আমার দাসের কাজ স্বীকার করবে, সেজন্য আমারা ওকেও তোমাকে দান করব।"
\s5
\v 28 তাতে যাকোব সেইরকম করলেন, তাঁর সপ্তাহ পূর্ণ করলেন; পরে লাবন তাঁর সঙ্গে নিজের মেয়ে রাহেলের বিয়ে দিলেন।
\v 29 আর লাবন বিলহা নামে নিজের দাসীকে রাহেলের দাসী বলে তাঁকে দিলেন।
\v 30 তাই তিনি রাহেলের কাছেও গেলেন এবং লেয়ার থেকে রাহেলকে বেশি ভালবাসলেন এবং আরও সাত বছর লাবনের কাছে দাসের কাজ করলেন।
\s5
\v 31 পরে সদাপ্রভু লেয়াকে অবজ্ঞা করা দেখে তাঁর গর্ভ মুক্ত করলেন, কিন্তু রাহেল বন্ধ্যা হলেন।
\v 32 আর লেয়া গর্ভবতী হয়ে ছেলের জন্ম দিলেন ও তার নাম রুবেন [ছেলেকে দেখ] রাখলেন; কারণ তিনি বললেন, "সদাপ্রভু আমার দুঃখ দেখেছেন; এখন আমার স্বামী আমাকে ভালবাসবেন।"
\s5
\v 33 পরে তিনি আবার গর্ভবতী হয়ে ছেলের জন্ম দিয়ে বললেন, "সদাপ্রভু শুনেছেন যে, আমি ঘৃণার পাত্রী, তাই আমাকে এই ছেলেও দিলেন;" আর তার নাম শিমিয়ন [শ্রবন] রাখলেন।
\v 34 আবার তিনি গর্ভবতী হয়ে ছেলের জন্ম দিয়ে বললেন, "এ বার আমার স্বামী আমাতে আসক্ত হবেন, কারণ আমি তাঁর জন্য তিন ছেলের জন্ম দিয়েছি;" অতএব তার নাম, লেবি [আসক্ত] রাখা গেল।
\s5
\v 35 পরে আবার তাঁর গর্ভ হলে তিনি ছেলের জন্ম দিয়ে বললেন, "এ বার আমি সদাপ্রভুর স্তব গান করি;" অতএব তিনি তার নাম যিহুদা [স্তব] রাখলেন। তারপরে তাঁর গর্ভ বন্ধ হল।
\s5
\c 30
\p
\v 1 রাহেল যখন দেখলেন, তিনি যাকোবের কোনো ছেলেমেয়ের জন্ম দেননি, তখন তিনি তাঁর বোনের প্রতি ঈর্ষা করলেন ও যাকোবকে বললেন, "আমাকে সন্তান দাও, না হয় আমি মরব।"
\v 2 তাতে রাহেলের প্রতি যাকোবের রাগ হল; তিনি বললেন, "আমি কি ঈশ্বরের প্রতিনিধি?" তিনিই তোমাকে গর্ভফল দিতে অস্বীকার করেছেন।"
\s5
\v 3 তখন রাহেল বললেন, "দেখ, আমার দাসী বিলহা আছে, ওর কাছে যাও; যেন ও ছেলের জন্ম দিয়ে আমার কোলে দেয় এবং ওর মাধ্যমে আমিও ছেলেমেয়ের মা হব।
\v 4 এই বলে তিনি তাঁর সঙ্গে নিজের দাসী বিলহার বিয়ে দিলেন।
\s5
\v 5 তখন যাকোব তার কাছে গেলেন, আর বিলহা গর্ভবতী হয়ে যাকোবের জন্য ছেলের জন্ম দিল।
\v 6 তখন রাহেল বললেন, "ঈশ্বর আমার বিচার করলেন এবং আমার রবও শুনে আমাকে ছেলে দিলেন;" তাই তিনি তার নাম দান [বিচার] রাখলেন।
\s5
\v 7 পরে রাহেলের বিলহা দাসী আবার গর্ভবতী হয়ে যাকোবের জন্য দ্বিতীয় ছেলের জন্ম দিল।
\v 8 তখন রাহেল বললেন, "আমি বোনের সঙ্গে ঈশ্বর সম্বন্ধীয় কুস্তি করে জয়লাভ করলাম;" আর তিনি তার নাম নপ্তালি [কুস্তি] রাখলেন।
\s5
\v 9 পরে লেয়া নিজের গর্ভ বন্ধ হলে বুঝে নিজের দাসী সিল্পাকে নিয়ে যাকোবের সঙ্গে বিয়ে দিলেন।
\v 10 তাতে লেয়ার দাসী সিল্পা যাকোবের জন্য এক ছেলের জন্ম দিলেন।
\v 11 তখন লেয়া বললেন, "সৌভাগ্য হল;" আর তার নাম গাদ [সৌভাগ্য] রাখলেন।
\s5
\v 12 পরে লেয়ার দাসী সিল্পা যাকোবের জন্য দ্বিতীয় ছেলের জন্ম দিলেন।
\v 13 তখন লেয়া বললেন, "আমি ধন্যা, যুবতীরা আমাকে ধন্যা বলবে;" আর তিনি তার নাম আশের [ধন্য] রাখলেন।
\s5
\v 14 আর গম কাটার সময়ে রুবেন বাইরে গিয়ে ক্ষেতে দুদাফল পেয়ে নিজের মা লেয়াকে এনে দিল; তাতে রাহেল লেয়াকে বললেন, "তোমার ছেলের কতগুলি দুদাফল আমাকে দাও না।"
\v 15 তাতে তিনি বললেন, "তুমি আমার স্বামীকে হরণ করেছ, এ কি ছোট ব্যাপার? আমার ছেলের দুদাফলও কি হরণ করবে?" তখন রাহেল বললেন, "তবে তোমার ছেলের দুদাফলের পরিবর্তে তিনি আজ রাতে তোমার সঙ্গে শোবেন।"
\s5
\v 16 পরে সন্ধ্যাবেলা ক্ষেত্র থেকে যাকোবের আসার সময়ে লেয়া বাইরে তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, "আমার কাছে আসতে হবে, কারণ আমি নিজের ছেলের দুদাফল দিয়ে তোমাকে ভাড়া করেছি;" তাই সেই রাত্রিতে তিনি তাঁর সঙ্গে শয়ন করলেন।
\v 17 আর ঈশ্বর লেয়ার প্রার্থনা শোনাতে তিনি গর্ভবতী হয়ে যাকোবের জন্য পঞ্চম ছেলের জন্ম দিলেন।
\v 18 তখন লেয়া বললেন, "আমি স্বামীকে নিজের দাসী দিয়েছিলাম, তার বেতন ঈশ্বর আমাকে দিলেন; আর তিনি তার নাম ইষাখর [বেতন] রাখলেন।"
\s5
\v 19 পরে লেয়া আবার গর্ভধারন করে যাকোবের জন্য ষষ্ঠ ছেলের জন্ম দিলেন।
\v 20 তখন লেয়া বললেন, "ঈশ্বর আমাকে উত্তম উপহার দিলেন, এখন আমার স্বামী আমার সঙ্গে বাস করবেন, কারণ আমি তাঁর জন্য ছয় ছেলের জন্ম দিয়েছি;" আর তিনি তার নাম সবূলুন [বাস] রাখলেন।
\v 21 তারপরে তাঁর এক মেয়ে জন্মাল, আর তিনি তার নাম দীনা রাখলেন।
\s5
\v 22 আর ঈশ্বর রাহেলকে স্মরণ করলেন, ঈশ্বর তাঁর প্রার্থনা শুনলেন, তাঁর গর্ভ মুক্ত করলেন।
\v 23 তখন তাঁর গর্ভ হলে তিনি ছেলের জন্ম দিয়ে বললেন, "ঈশ্বর আমার অপযশ হরণ করেছেন।"
\v 24 আর তিনি তার নাম যোষেফ [বৃদ্ধি] রাখলেন, বললেন, "সদাপ্রভু আমাকে আরো এক ছেলে দিন।"
\s5
\v 25 আর রাহেলের গর্ভে যোষেফ জন্মালে পর যাকোব লাবণকে বললেন, "আমাকে বিদায় করুন, আমি নিজের জায়গায়, নিজ দেশে, চলে যাই;
\v 26 আমি যাদের জন্য আপনার দাসত্ব করেছি, আমার সেই স্ত্রীদেরকে ও ছেলেমেয়েদেরকে আমার হাতে সমর্পণ করে আমাকে যেতে দিন; কারণ আমি যেমন পরিশ্রমে আপনার দাসত্ব করেছি, তা আপনি জানেন।"
\s5
\v 27 তখন লাবন তাঁকে বললেন, "আমি যদি তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি [তবে থাক]; কারণ আমি অনুভবে জানলাম, তোমার অনুরোধে সদাপ্রভু আমাকে আশীর্বাদ করলেন।"
\v 28 তিনি আরও বললেন, "তোমার বেতন ঠিক করে আমাকে বল, আমি দেব।"
\s5
\v 29 তখন যাকোব তাঁকে বললেন, "আমি যেমন আপনার দাসত্ব করেছি এবং আমার কাছে আপনার যেমন পশুধন হয়েছে, তা আপনি জানেন।
\v 30 কারণ আমার আসবার আগে আপনার অল্প সম্পত্তি ছিল, এখন বৃদ্ধি পেয়ে প্রচুর হয়েছে; আমার যত্নে সদাপ্রভু আপনাকে আশীর্বাদ করেছেন; কিন্তু আমি নিজ পরিবারের জন্য কবে সঞ্চয় করব?"
\s5
\v 31 তাতে লাবন বললেন, "আমি তোমাকে কি দেব? যাকোব বললেন, "আপনি আমাকে আর কিছুই না দিয়ে যদি আমার জন্য একটা কাজ করেন, তবে আমি আপনার পশুদেরকে আবার চড়াব ও পালন করব।
\v 32 আজ আমি আপনার সব পশুপালের মধ্য দিয়ে যাব; আমি ভেড়াদের মধ্যে বিন্দুচিহ্নিত ও দাগযুক্ত ও কৃষ্ণবর্ণ সকল এবং ছাগলদের মধ্যে দাগযুক্ত ও বিন্দু চিহ্নিত সকলকে পৃথক করি; সেগুলি আমার বেতন হবে।
\s5
\v 33 এর পরে যখন আপনার সামনে উপস্থিত বেতনের জন্য আপনি আসবেন, তখন আমার ধার্মিকতা আমার পক্ষে উত্তর দেবে; ফলে ছাগলদের বিন্দুচিহ্নিত কি দাগযুক্ত ছাড়া ও মেষেদের মধ্যে কৃষ্ণবর্ণ ছাড়া যা থাকবে, তা আমার চুরি রূপে গণ্য হবে।"
\v 34 তখন লাবন বললেন, "দেখ, তোমার বাক্যানুসারেই হোক।"
\s5
\v 35 পরে তিনি সেই দিন রেখাঙ্কিত ও দাগযুক্ত ছাগল সকল এবং বিন্দুচিহ্নিত ও দাগযুক্তদের মধ্য কিছু সাদাবর্ণ ছিল, এমন ছাগী সকল এবং কালো রঙের ভেড়া সকল আলাদা করে নিজের ছেলেদের হাতে দিলেন
\v 36 এবং আপনার ও যাকোবের মধ্যে তিন দিনের পথ ব্যবধান রাখলেন। আর যাকোব লাবনের অবশিষ্ট পশুপাল চরাতে লাগলেন।
\s5
\v 37 আর যাকোব লিবনী, লুস ও আমোণ গাছের সরস শাখা কেটে তার ছাল খুলে কাঠের সাদা রেখা বের করলেন।
\v 38 পরে যে জায়গায় পশুপাল জল পানের জন্য আসে, সেই জায়গায় পালের সামনে জল পান করার জায়গার মধ্যে ঐ ত্বকশূন্য রেখাবিশিষ্ট শাখা সকল রাখতে লাগলেন; তাতে জলপান করবার সময়ে তারা গর্ভ ধারন করত।
\s5
\v 39 আর সেই শাখার কাছে তাদের গর্ভধারণের জন্য রেখাঙ্কিত ও বিন্দুচিহ্নিত ও দাগযুক্ত বৎস জন্মাত।
\v 40 পরে যাকোব সেই সব বৎস আলাদা করতেন এবং লাবনের রেখাঙ্কিত ও কালো রঙের ভেড়ার প্রতি স্ত্রী ভেড়াদের দৃষ্টি রাখতেন; এইভাবে তিনি লাবনের পালের সঙ্গে না রেখে নিজের পালকে আলাদা করতেন।
\s5
\v 41 আর বলবান পশুরা যেন শাখার কাছে গর্ভধারন করে, এই জন্য জল পান করার জায়গার মধ্যে পশুদের সামনে ঐ শাখা রাখতেন;
\v 42 কিন্তু দুর্বল পশুদের সামনে রাখতেন না। তাতে দুর্বল পশুরা লাবনের ও বলবান পশুরা যাকোবের হত।
\s5
\v 43 আর যাকোব খুব সমৃদ্ধিশালী হলেন এবং তাঁর পশু ও দাস দাসী এবং উট ও গাধা যথেষ্ট হল।
\s5
\c 31
\ms হারণের কাছ থেকে যাকোবের পালিয়ে যাওয়া।
\p
\v 1 পরে তিনি লাবনের ছেলেদের এই কথা শুনতে পেলেন, যাকোব আমাদের বাবার সব কিছু কেড়ে নিয়েছে, আমাদের বাবার সম্পত্তি থেকে তার এই সব ঐশ্বর্য হয়েছে।
\v 2 আর যাকোব লাবনের মুখ দেখলেন, আর দেখ, তা আর তাঁর প্রতি আগের মত নয়।
\v 3 আর সদাপ্রভু যাকোবকে বললেন, "তুমি নিজের বাবার দেশে আত্মীয়দের কাছে ফিরে যাও, আমি তোমার সঙ্গী হব।
\s5
\v 4 তাই যাকোব লোক পাঠিয়ে মাঠে পশুদের কাছে রাহেল ও লেয়াকে ডেকে বললেন,
\v 5 আমি তোমাদের বাবার মুখ দেখে বুঝতে পারছি, তা আর আমার কাছে আগের মত নয়, কিন্তু আমার বাবার ঈশ্বর আমার সহবর্তী রয়েছেন।
\v 6 আর তোমরা নিজেরা জান, আমি যথাশক্তি তোমাদের বাবার দাসত্ব করেছি।
\s5
\v 7 তোমার বাবা আমাকে প্রবঞ্চনা করে দশ বার আমার বেতন অন্যথা করেছেন; কিন্তু ঈশ্বর তাঁকে আমার ক্ষতি করতে দেননি।
\v 8 কারন যখন তিনি বলতেন, বিন্দুচিহ্নিত পশুরা তোমার বেতন স্বরূপ হবে, তখন সব পাল বিন্দু চিহ্নিত শাবক প্রসব করত এবং যখন বলতেন, দাগযুক্ত পশু সব তোমার বেতন স্বরূপ হবে, তখন মেষরা সব দাগযুক্ত শাবক প্রসব করত।
\v 9 এভাবে ঈশ্বর তোমাদের বাবার পশুধন নিয়ে আমাকে দিয়েছেন।"
\s5
\v 10 পশুদের গর্ভধারনের সময়ে আমি স্বপ্নে চোখ তুলে দেখলাম, আর দেখ, পালের মধ্যে স্ত্রী পশুদের উপরে যত পুরুষ পশু উঠছে, সকলেই বিন্দুচিহ্নিত ও চিত্রবিচিত্র।
\v 11 তখন ঈশ্বরের দূত স্বপ্নে আমাকে বললেন, "হে যাকোব;" আর আমি বললাম, "দেখুন, এই আমি।"
\s5
\v 12 তিনি বললেন, "তোমার চোখ তুলে দেখ, স্ত্রীপশুদের ওপরে যত পুরুষ পশু উঠছে, সকলেই রেখাঙ্কিত, দাগযুক্ত ও চিত্রবিচিত্র; কারন, লাবন তোমার প্রতি যা যা করে, তা সবই আমি দেখলাম।
\v 13 যে জায়গায় তুমি স্তম্ভের অভিষেক ও আমার কাছে মানত করেছ, সেই বৈথেলের ঈশ্বর আমি; এখন উঠ, এই দেশ ত্যাগ করে নিজের জন্মভূমিতে ফিরে যাও।"
\s5
\v 14 তখন রাহেল ও লেয়া উত্তর করে তাঁকে বললেন, "বাবার বাড়িতে আমাদের কি আর কিছু অংশ ও অধিকার আছে?
\v 15 আমরা কি তাঁহার কাছে বিদেশীদের মতো না? তিনি তো আমাদেরকে বিক্রি করেছেন এবং আমাদের রুপো নিজে ভোগ করেছেন।
\v 16 ঈশ্বর আমাদের বাবা থেকে যে সব সম্পত্তি কেড়ে নিয়েছেন, সে সবই আমাদের ও আমাদের ছেলেমেয়েদের। তাই ঈশ্বর তোমাকে যা কিছু বলেছেন, তুমি তাই কর।
\s5
\v 17 তখন যাকোব উঠে আপন ছেলেদের ও স্ত্রীদেরকে উটে চড়িয়ে আপনার উপার্জিত সমস্ত পশুধন,
\v 18 অর্থাৎ পদ্দন অরামে যে পশু ও যে সম্পত্তি উপার্জন করেছিলেন, তা নিয়ে কনান দেশে নিজের বাবা ইসহাকের কাছে যাত্রা করলেন।
\s5
\v 19 সে সময় লাবন ভেড়ার লোম কাটতে গিয়েছিলেন; তখন রাহেল নিজের বাবার ঠাকুরগুলাকে চুরি করলেন।
\v 20 আর যাকোব নিজের পালানোর কোনো খবর না দিয়ে অরামিয় লাবণকে ঠকালেন।
\v 21 তিনি নিজের সর্বস্ব নিয়ে পালিয়ে গেলেন এবং উঠে [ফরাৎ] নদী পার হয়ে গিলিয়দ পর্বত সামনে রেখে চলতে লাগলেন।
\s5
\v 22 পরে তৃতীয় দিনে লাবন যাকোবের পালানোর খবর পেলেন
\v 23 এবং নিজের আত্মীয়দেরকে সঙ্গে নিয়ে সাত দিনের পথ তাঁর পেছনে গেলেন ও গিলিয়দ পর্বতে তাঁর দেখা পেলেন।
\s5
\v 24 কিন্তু ঈশ্বর রাতে স্বপ্নযোগে অরামীয় লাবনের কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁকে বললেন, "সাবধান, যাকোবকে ভাল মন্দ কিছুই বোলো না।"
\v 25 লাবন যখন যাকোবের দেখা পেলেন, তখন যাকোবের তাঁবু পর্বতের ওপরে স্থাপিত ছিল; তাতে লাবণও কুটুম্বদের সঙ্গে গিলিয়দ পর্বতের ওপরে তাঁবু স্থাপন করলেন।
\s5
\v 26 পরে লাবন যাকোবকে বললেন, "তুমি কেন এমন কাজ করলে? আমাকে ঠকিয়ে আমার যেমন তরোয়াল দিয়ে বন্দী বানানো হয় সেই বন্দিদের মত কেন আমার মেয়েদেরকে নিয়ে আসলে?
\v 27 তুমি আমাকে বঞ্চনা করে কেন গোপনে পালালে? কেন আমাকে খবর দিলে না? দিলে আমি তোমাকে উদযাপন ও গান এবং খঞ্জনির ও বীনার বাজনা দিয়ে বিদায় করতাম।
\v 28 তুমি আমার নাতি ও মেয়েদেরকে চুম দিতে আমাকে দিলে না; এ মুর্খের কাজ করেছ।
\s5
\v 29 তোমাদের ক্ষতি করতে আমার হাতে শক্তি আছে; কিন্তু গত রাতে তোমাদের বাবার ঈশ্বর আমাকে বললেন, "সাবধান, যাকোবকে ভাল খারাপ কিছুই বল না।
\v 30 আর এখন, তুমি দূরে চলে গেছ কারণ তুমি তোমার বাবার বাড়ির জন্য অনেক প্রত্যাশিত; কিন্তু আমার দেবতা দেরকে কেন চুরি করলে?"
\s5
\v 31 যাকোব লাবনকে উত্তরে বললেন, "আমি ভয় পেয়েছিলাম; কারন ভেবেছিলাম, যদি আপনি আমার কাছ থেকে আপনার মেয়েদেরকে জোর করে কেড়ে নেন।
\v 32 আপনি যার কাছে আপনার দেবতাদেরকে পাবেন, সে বাঁচবে না। আমাদের আত্মীদের কাছে খোঁজ নিয়ে আমার কাছে আপনার যা আছে, তা নিন।" আসলে যাকোব জানতেন না যে, রাহেল সেগুলো চুরি করেছেন৷
\s5
\v 33 তখন লাবন যাকোবের তাঁবুতে ও লেয়ার তাঁবুতে ও দুই দাসীর তাঁবুতে প্রবেশ করলেন, কিন্তু পেলেন না। পরে তিনি লেয়ার তাঁবু থেকে রাহেলের তাঁবুতে প্রবেশ করলেন।
\s5
\v 34 কিন্তু রাহেল সেই ঠাকুরগুলাকে নিয়ে উটের গদীর ভেতরে রেখে তাদের ওপরে বসে ছিলেন; সে জন্য লাবন তাঁর তাঁবুর সব জায়গায় হাতড়ালেও তাদেরকে পেলেন না।
\v 35 তখন রাহেল বাবাকে বললেন, "প্রভু, আপনার সামনে আমি উঠতে পারলাম না, এতে বিরক্ত হবেন না, কারণ আমার ঋতুচক্র চলছে।" এভাবে তিনি খোঁজ করলেও সেই ঠাকুরগুলাকে পেলেন না।
\s5
\v 36 তখন যাকোব রেগে গিয়ে লাবনের সঙ্গে ঝগড়া করতে লাগলেন। যাকোব লাবনকে বললেন, "আমার অপরাধ কি, ও আমার পাপ কি যে, তুমি রেগে গিয়ে আমার পেছনে পেছনে দৌড়ে এসেছো?
\v 37 তুমি আমার সব জিনিসপত্র হাতড়িয়ে তোমার বাড়ির কোন জিনিস পেলে? আমার ও তোমার এই আত্মীয়দের সামনে তা রাখ, এরা উভয় পক্ষের বিচার করুন।
\s5
\v 38 এই কুড়ি বছর আমি তোমার কাছে আছি; তোমার ভেড়ীদের কি ছাগীদের গর্ভপাত হয়নি এবং আমি তোমার পালের ভেড়াদেরকে খাইনি;
\v 39 পশুতে ছিন্নভিন্ন করা ভেড়া তোমার কাছে আনতাম না; সে ক্ষতি নিজে স্বীকার করতাম; দিনে কিম্বা রাতে যা চুরি হোত, তার পরিবর্তে তুমি আমার কাছ থেকে নিতে
\v 40 আমার এরকম দশা হত, আমি দিনের তাপ ও রাতে শীত ভোগ করতাম, ঘুম আমার চোখ থেকে দুরে পালিয়ে যেত।
\s5
\v 41 এই কুড়ি বছর আমি তোমার বাড়িতে আছি; তোমার দুই মেয়ের জন্য চোদ্দ বছর, আর তোমার পশুদের জন্য ছয় বছর দাসবৃত্তি করেছি; এর মধ্যে তুমি দশ বার আমার বেতন অন্যথা করেছ।
\v 42 আমার বাবার ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর ও ইস্‌হাকের ভয়স্থান যদি আমার পক্ষ না হতেন, তবে অবশ্য এখন তুমি আমাকে খালি হাতে বিদায় করতে। ঈশ্বর আমার দুঃখ ও হাতের পরিশ্রম দেখেছেন, এ জন্য গত রাত্রে তোমাকে ধমকালেন।"
\s5
\v 43 তখন লাবন উত্তর করে যাকোবকে বললেন, "এই মেয়েরা আমারই মেয়ে, এই ছেলেরা আমারই ছেলে এবং এই পশুরা আমারই পশু; যা যা দেখছ, এ সবই আমার। এখন আমার এই মেয়েদেরকে ও এদের প্রস্তুত এই ছেলেদের কে আমি কি করব?
\v 44 এস তোমাতে ও আমাতে নিয়ম স্থির করি, তা তোমার ও আমার সাক্ষী থাকবে।"
\s5
\v 45 তখন যাকোব এক পাথর নিয়ে স্তম্ভরূপে স্থাপন করলেন।
\v 46 আর যাকোব নিজের আত্মীয়দেরকে বললেন, আপনারাও পাথর সংগ্রহ করুন। তাতে তাঁরা পাথর এনে এক রাশি করলেন এবং সেই জায়গায় ঐ রাশির কাছে ভোজন করলেন।
\v 47 আর লাবন তার নাম যিগর-সাহদূখা [সাক্ষি-রাশি] রাখলেন, কিন্তু যাকোব তার নাম গল-এদ [সাক্ষি-রাশি] রাখলেন।
\s5
\v 48 তখন লাবন বললেন, "এই রাশি আজ তোমার ও আমার সাক্ষী থাকল।
\v 49 এই জন্য তার নাম গিলিয়দ এবং মিস্পা [প্রহরী স্থান] রাখা গেল; কারণ তিনি বললেন, "আমরা পরস্পর অদৃশ্য হলে সদাপ্রভু আমার ও তোমার প্রহরী থাকবেন।
\v 50 তুমি যদি আমার মেয়েদেরকে দুঃখ দাও আর যদি আমার মেয়ে ছাড়া অন্য স্ত্রীকে বিয়ে কর, তবে কোন মানুষ আমার কাছে থাকবে না বটে, কিন্তু দেখ, ঈশ্বর আমার ও তোমার সাক্ষী হবেন।"
\s5
\v 51 লাবন যাকোবকে আর ও বললেন, "এই রাশি দেখ ও এই স্তম্ভ দেখ, আমার ও তোমার মধ্যে আমি এটা স্থাপন করলাম।
\v 52 হিংসাভাবে আমিও এই রাশি পার হয়ে তোমার কাছে যাব না এবং তুমিও এই রাশি ও এই স্তম্ভ পার হয়ে আমার কাছে আসবে না, এর সাক্ষী এই রাশি ও এর সাক্ষী এই স্তম্ভ;
\v 53 অব্রাহামের ঈশ্বর, নাহোরের ঈশ্বর ও তাঁদের বাবার ঈশ্বর আমাদের মধ্যে বিচার করবেন।" তখন যাকোব নিজের বাবা ইসহাকের ভয়স্থানের শপথ করলেন।
\s5
\v 54 পরে যাকোব সেই পর্বতে বলিদান করে আহার করতে নিজের আত্মীদের নিমন্ত্রণ করলেন, তাতে তারা ভোজন করে পর্বতে রাত্ কাটালেন।
\v 55 পরে লাবন সকালে উঠে নিজের নাতি মেয়েদেরকে চুম্বনপূর্বক আশীর্বাদ করলেন। আর লাবন নিজের জায়গায় ফিরে গেলেন।
\s5
\c 32
\ms যাকোবের প্রার্থনা ও এষৌর সঙ্গে পুনর্মিলন।
\p
\v 1 আর যাকোব নিজের পথে এগিয়ে গেলে ঈশ্বরের দূতেরা তাঁর সঙ্গে দেখা করলেন।
\v 2 তখন যাকোব তাঁদেরকে দেখে বললেন, "এ ঈশ্বরের সেনাদল, তাই সেই জায়গার নাম মহনয়িম [দুই সেনাদল] রাখলেন।
\s5
\v 3 তার পর যাকোব নিজের আগে সেয়ীর দেশের ইদোম অঞ্চলে তাঁর ভাই এষৌর কাছে দূতদেরকে পাঠালেন।
\v 4 তিনি তাদেরকে এই আজ্ঞা করলেন, "তোমরা আমার প্রভু এষৌকে বলবে, "আপনার দাস যাকোব আপনাকে জানালেন, আমি লাবনের কাছে বাস করছিলাম, এ পর্যন্ত থেকেছি।"
\v 5 আমার গোরু, গাধা, ভেড়ার পাল ও দাস দাসী আছে, আর আমি প্রভুর অনুগ্রহ দৃষ্টি পাবার জন্য আপনাকে খবর পাঠালাম।"
\s5
\v 6 পরে দূতেরা যাকোবের কাছে ফিরে এসে এসে বলল, "আমরা আপনার ভাই এষৌর কাছে গিয়েছিলাম; আর তিনি চারশো লোক সঙ্গে নিয়ে আপনার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন।"
\v 7 তখন যাকোব খুব ভয় পেলেন ও চিন্তিত হলেন, আর যে সব লোক তাঁর সঙ্গে ছিল, তাদেরকে ও গোরু ও ভেড়ার দল সমস্ত পাল ও উটদেরকে বিভক্ত করে দুটি দল করলেন,
\v 8 বললেন, "এষৌ এসে যদিও এক দলকে আক্রমন করেন, তবুও অন্য দল অবশিষ্ট থেকে রক্ষা পাবে।"
\s5
\v 9 তখন যাকোব বললেন, "হে আমার বাবা অব্রাহামের ঈশ্বর ও আমার বাবা ইসহাকের ঈশ্বর, তুমি সদাপ্রভু নিজে আমাকে বলেছিলে, তোমার দেশে আত্মীয়দের কাছে ফিরে যাও, তাতে আমি তোমার মঙ্গল করব।
\v 10 তুমি এই দাসের প্রতি যে সমস্ত দয়া ও যে সমস্ত সত্যাচরণ করেছ, আমি তার কিছুরই যোগ্য নই; কারণ আমি আমার এই লাঠিটি নিয়ে এই যর্দন পার হয়েছিলাম, এখন দুই দল হয়েছি।
\s5
\v 11 অনুরোধ করি, আমার ভাইয়ের হাত থেকে, এষৌর হাত থেকে আমাকে রক্ষা কর, কারণ আমি তাকে ভয় করি, যদি সে এসে আমাকে, ছেলেদের সঙ্গে মাকে হত্যা করে।
\v 12 তুমিই তো বলেছ, আমি অবশ্য তোমার মঙ্গল করব এবং সমুদ্রতীরে অবস্থিত যে বালি তার মতো তোমার বংশ বৃদ্ধি করব, যা গোনা যায় না।"
\s5
\v 13 পরে যাকোব সেই জায়গায় রাত কাটালেন ও তার কাছে যা ছিল, তার কিছু নিয়ে তাঁর ভাই এষৌর জন্য এই উপহার প্রস্তুত করলেন;
\v 14 দুশো ছাগী ও কুড়িটা ছাগল, দুশো ভেড়ী ও কুড়িটা ভেড়া,
\v 15 বাচ্চা সহ দুগ্ধবতী ত্রিশটি উট, চল্লিশটি গরু ও দশটি ষাঁড় এবং কুড়িটি গাধী ও দশটি গাধার বাচ্চা।
\v 16 পরে তিনি নিজের এক এক দাসের হাতে এক এক পাল সমর্পণ করে দাসদেরকে এই আদেশ দিলেন, "তোমরা আমার আগে পার হয়ে যাও এবং মাঝে মাঝে জায়গা রেখে প্রত্যেক পাল আলাদা কর।"
\s5
\v 17 পরে তিনি প্রথম দাসকে এই আদেশ দিলেন, "আমার ভাই এষৌর সঙ্গে তোমার দেখা হলে তিনি যখন জিজ্ঞাসা করবেন, তুমি কার দাস? কোথায় যাচ্ছ? আর তোমার আগে অবস্থিত এই সব কার?"
\v 18 তখন তুমি উত্তর করবে, "এই সব আপনার দাস যাকোবের; তিনি উপহার হিসাবে এই সব আমার প্রভু এষৌর জন্য পাঠালেন;" আর দেখুন, তিনিও আমাদের পিছনে আসছেন।
\s5
\v 19 পরে তিনি দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রভৃতি পালের পিছনে চলা দাস সবাইকেও আদেশ দিয়ে বললেন, "এষৌর সঙ্গে দেখা হলে তোমরা এই এই ধরনের কথা বল।
\v 20 আরো বল, দেখুন, আপনার দাস যাকোবও আমাদের পিছনে আসছেন।" কারণ তিনি বললেন, "আমি আগে উপহার পাঠিয়ে তাঁকে শান্ত করব, পরে তাঁর সঙ্গে দেখা করব, তাতে তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করলেও করতে পারেন।"
\v 21 তাই তাঁর আগে উপহারের জিনিস পার হয়ে গেল, কিন্তু নিজে সেই রাতে দলের মধ্যে থাকলেন।
\s5
\v 22 পরে তিনি রাতে উঠে নিজের দুই স্ত্রী, দুই দাসী ও এগারো জন ছেলেকে নিয়ে যব্বোক নদীর অগভীর অংশ দিয়ে পার হলেন
\v 23 তিনি তাঁদেরকে নদী পার করিয়ে নিজের সব জিনিস পাড়ে পাঠিয়ে দিলেন।
\s5
\v 24 আর যাকোব সেখানে একা থাকলেন এবং এক পুরুষ ভোর পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে মল্লযুদ্ধ করলেন;
\v 25 কিন্তু তাঁকে জয় করতে পারলেন না দেখে, তিনি যাকোবের ঊরুসন্ধিতে আঘাত করলেন। তাঁর সঙ্গে এরকম মল্লযুদ্ধ করাতে যাকোবের ঊরুসন্ধির হাড় সরে গেল।
\v 26 পরে সেই পুরুষ বললেন, "আমাকে ছাড়, কারণ ভোর হল।" যাকোব বললেন, "আপনি আমাকে আশীর্বাদ না করলে আপনাকে ছাড়ব না।"
\s5
\v 27 আবার তিনি বললেন, "তোমার নাম কি?" তিনি উত্তর করলেন, "যাকোব।"
\v 28 তিনি বললেন, "তুমি যাকোব নামে আর আখ্যাত হবে না, কিন্তু ইস্রায়েল [ঈশ্বরের সঙ্গে যুদ্ধকারী] নামে আখ্যাত হবে; কারণ তুমি ঈশ্বরের ও মানুষদের সঙ্গে যুদ্ধ করে জয়ী হয়েছ।"
\s5
\v 29 তখন যাকোব জিজ্ঞাসা করে বললেন, "অনুরোধ করি, আপনার নাম কি? বলুন।" তিনি বললেন, "কি জন্য আমার নাম জিজ্ঞাসা কর?" পরে সেখানে যাকোবকে আশীর্বাদ করলেন।
\v 30 তখন যাকোব সেই জায়গার নাম পনূয়েল [ঈশ্বরের মুখ] রাখলেন; কারণ তিনি বললেন, "আমি ঈশ্বরকে সামনাসামনি হয়ে দেখলাম, তবুও আমার প্রাণ বাঁচল।"
\s5
\v 31 পরে তিনি পনূয়েল পার হলে সূর্যোদয় হল। আর তিনি ঊরুতে খোঁড়াতে লাগলেন।
\v 32 এই কারণ ইস্রায়েল-সন্তানেরা আজও ঊরুসন্ধির হাড়ের উপরের ঊরুসন্ধির শিরা খায় না, কারণ তিনি যাকোবের ঊরুসন্ধির হাড় অর্থাৎ ঊরুসন্ধির শিরা স্পর্শ করেছিলেন।
\s5
\c 33
\p
\v 1 পরে যাকোব চোখ তুলে চাইলেন, আর দেখ, এষৌ আসছেন ও তাঁর সঙ্গে চারশো লোক। তখন তিনি ছেলেদেরকে বিভাগ করে লেয়াকে, রাহেলকে ও দুই দাসীকে সমর্পন করলেন;
\v 2 সবার আগে দুই দাসী ও তাদের ছেলেমেয়েদেরকে, তার পিছনে লেয়া ও তাঁর ছেলেমেয়েদেরকে, সবার পিছনে রাহেল ও যোষেফকে রাখলেন।
\v 3 পরে নিজে সবার আগে গিয়ে সাত বার ভূমিতে নত হতে হতে নিজের ভাইয়ের কাছে উপস্থিত হলেন।
\s5
\v 4 তখন এষৌ তাঁর সঙ্গে দেখা করতে দৌড়ে এসে তাঁর গলা ধরে আলিঙ্গন ও চুম্বন করলেন এবং উভয়েই কাঁদলেন।
\v 5 পরে এষৌ চোখ তুলে নারীদেরকে ও বালকদেরকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, "এরা তোমার কে?" তিনি বললেন, "ঈশ্বর অনুগ্রহ করে আপনার দাসকে এই সব সন্তান দিয়েছেন।"
\s5
\v 6 তখন দাসীরা ও তাদের ছেলেমেয়েরা কাছে এসে প্রণাম করল;
\v 7 পরে লেয়া ও তাঁর ছেলেমেয়েরা কাছে এসে প্রণাম করলেন; শেষে যোষেফ ও রাহেল কাছে এসে প্রণাম করলেন।
\v 8 পরে এষৌ জিজ্ঞাসা করলেন, "আমি যে সব দলের সঙ্গে মিলিত হলাম, সে সমস্ত কিসের জন্য?" তিনি বললেন, "প্রভুর দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পাবার জন্য।"
\s5
\v 9 তখন এষৌ বললেন, "আমার যথেষ্ট আছে, ভাই, তোমার যা আছে তা তোমার থাকুক।"
\v 10 যাকোব বললেন, "তা না, অনুরোধ করি, আমি যদি আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে আমার হাত থেকে উপহার গ্রহণ করুন; কারণ আমি ঈশ্বরের মুখ দর্শনের মতো আপনার মুখ দর্শন করলাম, আপনিও আমার প্রতি প্রসন্ন হলেন।
\v 11 অনুরোধ করি, আপনার কাছে যে উপহার আনা হয়েছে, তা গ্রহণ করুন; কারণ ঈশ্বর আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন এবং আমার সবই আছে।" এইভাবে অনুরোধ করলে এষৌ তা গ্রহণ করলেন।
\s5
\v 12 পরে এষৌ বললেন, "এস আমরা যাই; আমি তোমার আগে আগে যাব।"
\v 13 তিনি তাঁকে বললেন, "আমার প্রভু জানেন, এই ছেলেরা কোমল এবং দুগ্ধবতী ভেড়ী ও গরু সব আমার সঙ্গে আছে; একদিন খুব জোরে গেলেই সব পালই মারা যাবে।
\v 14 "নিবেদন করি, হে আমার প্রভু আপনি নিজের দাসের আগে যান; আর আমি যতক্ষণ সেয়ীরে আমার প্রভুর কাছে উপস্থিত না হই, ততক্ষণ আমার সামনে চলা পশুদের চলবার শক্তি অনুসারে এবং এই ছেলেমেয়েদের, চলবার শক্তি অনুসারে ধীরে ধীরে চালাই।"
\s5
\v 15 এষৌ বললেন, "তবে আমার সঙ্গী কিছু লোক তোমার কাছে রেখে যাই।" তিনি বললেন, "তাতেই বা প্রয়োজন কি? আমার প্রভুর দৃষ্টিতে আমি অনুগ্রহ পেলেই হল।"
\v 16 আর এষৌ সেই দিন সেয়ীরের পথে ফিরে গেলেন।
\v 17 কিন্তু যাকোব সুক্কোতে গিয়ে নিজের জন্য গৃহ ও পশুদের জন্য কয়েকটি ঘর তৈরী করলেন, এই জন্য সেই জায়গা সুক্কোৎ [কুটীর সকল] নামে আখ্যাত আছে।
\s যাকোবের শিখিমে বাস।
\m
\s5
\v 18 পরে যাকোব পদ্দন্‌-অরাম থেকে এসে, নিরাপদে কনান দেশের শিখিম নগরে উপস্থিত হয়ে, নগরের বাইরে তাঁবু স্থাপন করলেন।
\v 19 পরে শিখিমের বাবা যে হমোর, তাঁর ছেলেদেরকে রুপোর একশো কসীতা [মুদ্রা] দিয়ে তিনি নিজের তাঁবু স্থাপনের ভূমিখণ্ড কিনলেন
\v 20 এবং সেখানে এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে তার নাম এল-ইলহে-ইস্রায়েল [ঈশ্বর, ইস্রায়েলের ঈশ্বর] রাখলেন।
\s5
\c 34
\p
\v 1 আর লেয়ার মেয়ে দীণা, যাকে তিনি যাকোবের জন্য প্রসব করেছিলেন, সেই দেশের মেয়েদের সঙ্গে দেখা করতে বাইরে গেল।
\v 2 আর হিব্বীয় হমোর যিনি সেই দেশের রাজা ছিলেন তার ছেলে শিখিম তাকে দেখতে পেল এবং তাকে ধরে নিয়ে তার সঙ্গে শয়ন করল, তাঁকে ভ্রষ্ট করল।
\v 3 আর যাকোবের মেয়ে দীণার প্রতি তাঁর প্রাণ অনুরক্ত হওয়াতে সে সেই যুবতীকে প্রেম করল ও তাকে স্নেহপূর্বক কথা বলল।
\s5
\v 4 পরে শিখিম নিজের বাবা হমোরকে বলল, "তুমি আমার সঙ্গে বিয়ে দেবার জন্য এই মেয়েকে গ্রহণ কর।"
\v 5 আর যাকোব শুনলেন, "সে তার মেয়ে দীণাকে ভ্রষ্ট করেছে; ঐ সময়ে তার ছেলেরা মাঠে পশুপালের সঙ্গে ছিল; আর যাকোব তাদের আসা পর্যন্ত চুপ থাকলেন।
\s5
\v 6 পরে শিখিমের বাবা হমোর যাকোবের সঙ্গে কথাবার্তা বলতে গেল।
\v 7 যাকোবের ছেলেরাও ঐ খবর পেয়ে মাঠ থেকে এসেছিল; তারা ক্ষুব্ধ ও খুব রেগে গিয়েছিল, কারণ যাকোবের মেয়ের সঙ্গে শয়ন করাতে শিখিম ইস্রায়েলের মধ্যে মূর্খামি ও অকর্তব্য কাজ করেছিল।
\s5
\v 8 তখন হমোর তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে বলল, "তোমাদের সেই মেয়ের প্রতি আমার ছেলে শিখিমের প্রাণ আসক্ত হয়েছে; অনুরোধ করি, আমার ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে দাও।
\v 9 এবং আমাদের সঙ্গে আত্মীয়তা কর; তোমাদের মেয়েদেরকে আমাদেরকে দান কর এবং আমাদের মেয়েদেরকে তোমরা গ্রহণ কর। আর আমাদের সঙ্গে বাস কর;
\v 10 এই দেশ তোমাদের সামনে থাকল, তোমরা এখানে বসবাস ও ব্যবসা-বাণিজ্য কর, এখানে অধিকার গ্রহণ কর।
\s5
\v 11 আর শিখিম দীণার বাবাকে ও ভাইদেরকে বলল, "আমার প্রতি তোমাদের অনুগ্রহ দৃষ্টি হোক; তা হলে যা বলবে, তাই দেব।
\v 12 পণ ও দান যত বেশি চাইবে, তোমাদের কথানুসারে তাই দেব; কোনো মতে আমার সঙ্গে ঐ মেয়ের বিয়ে দাও।"
\v 13 কিন্তু সে তাদের বোন দীণাকে ভ্রষ্ট করেছিল বলে যাকোবের ছেলেরা ছলনার সাথে আলাপ করে শিখিমকে ও তাঁর বাবা হমোরকে উত্তর দিল;
\s5
\v 14 তারা তাদেরকে বলল, "অচ্ছিন্নত্বক লোককে যে আমাদের বোনকে দিই, এমন কাজ আমরা করতে পারিনা; করলে আমাদের বদনাম হবে।
\v 15 শুধু এই কাজটি করলে আমরা তোমাদের কথায় রাজি হব; আমাদের মতো তোমরা প্রত্যেক পুরুষ যদি ছিন্নত্বক হও,
\v 16 তবে আমরা তোমাদেরকে নিজেদের মেয়েদের দেব, এবং তোমাদের মেয়েদেরকে গ্রহণ করব ও তোমাদের সঙ্গে বাস করে এক জাতি হব।
\v 17 কিন্তু যদি ত্বকছেদের বিষয়ে আমাদের কথা না শোন, তবে আমরা নিজেদের ঐ মেয়েকে নিয়ে চলে যাব।"
\s5
\v 18 তখন তাদের এই কথায় হমোর ও তার ছেলে শিখিম সন্তুষ্ট হল।
\v 19 আর সেই যুবক তাড়াতাড়ি সেই কাজ করল, কারণ সে যাকোবের মেয়েতে প্রীত হয়েছিল; আর সে নিজের বাবার বংশে সবচেয়ে সম্মানীত ছিল।
\s5
\v 20 পরে হমোর ও তার ছেলে শিখিম নিজের নগরের দরজায় এসে নগর নিবাসীদের সঙ্গে আলোচনা বলে বলল,
\v 21 "সেই লোকেরা আমাদের সঙ্গে শান্তিতে আছে; তাই তারা এই দেশে বসবাস ও ব্যবসা-বাণিজ্য করুক; কারণ দেখ, তাদের সামনে দেশটি সুপ্রশস্ত; এস, আমরা তাদের মেয়েদেরকে গ্রহণ করি ও আমাদের মেয়েদেরকে তাদেরকে দিই।
\s5
\v 22 কিন্তু তাদের এই এক পণ আছে, আমাদের মধ্যে প্রত্যেক পুরুষ যদি তাদের মত ছিন্নত্বক হয়, তবে তারা আমাদের সঙ্গে বাস করে এক জাতি হতে রাজি আছে।
\v 23 আর তাদের ধন, সম্পত্তি ও পশু সব কি আমাদের হবে না? আমরা তাদের কথায় রাজি হলেই তারা আমাদের সঙ্গে বাস করবে।"
\s5
\v 24 তখন হমোরের ও তার ছেলে শিখিমের কথায় তার নগরের দরজা দিয়ে যে সব লোক বাইরে যেত, তারা রাজি হল, আর তার নগর দরজা দিয়ে যে সব পুরুষ বাইরে যেত, তাদের ত্বকছেদ করা হল।
\v 25 পরে তৃতীয় দিনে যন্ত্রণায় পরিপূর্ণ হলে দীণার ভাই শিমিয়ন ও লেবি, যাকোবের এই দুই ছেলে নিজের নিজের খড়্গ গ্রহণ করে নির্ভয়ে নগর আক্রমণ করতঃ সকল পুরুষকে হত্যা করল।
\v 26 এবং হমোর ও তার ছেলে শিখিমকে তরবারির আঘাতে হত্যা করে শিখিমের বাড়ি থেকে দীণাকে নিয়ে চলে আসল।
\s5
\v 27 ওরা তাদের বোনকে ভ্রষ্ট করেছিল, এই জন্য যাকোবের ছেলেরা নিহত লোকদের কাছে গিয়ে নগর লুঠ করল।
\v 28 তারা ওদের ভেড়া, গরু ও গাধা সব এবং নগরের ও ক্ষেত্রের যাবতীয় দ্রব্য বাজেয়াপ্ত করল;
\v 29 আর ওদের শিশু ও স্ত্রীদেরকে বন্দি করে ওদের সমস্ত ধন ও গৃহের সর্বস্ব লুঠ করল।"
\s5
\v 30 তখন যাকোব শিমিয়ন ও লেবিকে বললেন, "তোমরা এই দেশনিবাসী কনানীয় ও পরিষীয়দের কাছে আমাকে দূর্গন্ধস্বরূপ করে ব্যাকুল করলে; আমার লোক অল্প, তারা আমার বিরুদ্ধে জড়ো হয়ে আমাকে আঘাত করবে; আর আমি সপরিবারে বিনষ্ট হব।"
\v 31 তারা উত্তর করল, "যেমন বেশ্যার সঙ্গে, তেমনি আমার বোনের সঙ্গে ব্যবহার করা কি তার উচিত ছিল?
\s5
\c 35
\ms যাকোবের বৈথেলে যাওয়া। রাহেলের মৃত্যু।
\p
\v 1 পরে ঈশ্বর যাকোবকে বললেন, "তুমি উঠ, বৈথেলে গিয়ে সে জায়গায় বাস কর এবং তোমার ভাই এষৌর সামনে থেকে তোমার পালানোর সময়ে যে ঈশ্বর তোমাকে দেখা দিয়েছিলেন, তার উদ্দেশ্যে সেই জায়গায় যজ্ঞবেদি তৈরী কর।"
\v 2 তখন যাকোব নিজের আত্মীয় ও সঙ্গী লোক সবাইকে বললেন, "তোমাদের কাছে যে সব ইতর দেবতা আছে, তাদেরকে দূর কর এবং শুদ্ধ হও ও অন্য বস্ত্র পর।
\v 3 আর এস, আমরা উঠে বৈথেলে যাই; যে ঈশ্বর আমার সঙ্কটের দিনে আমাকে প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন এবং আমার যাত্রাপথে সঙ্গে ছিলেন, তাঁর উদ্দেশ্যে আমি সেই জায়গায় এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করব।"
\s5
\v 4 তাতে তারা নিজেদের দেবমূর্তি ও কানের দুল সব যাকোবকে দিল এবং তিনি ঐ সব শিখিমের কাছাকাছি এলা গাছের তলায় পুঁতে রাখলেন।
\v 5 পরে তাঁরা সেখান থেকে যাত্রা করলেন। তখন চারদিকের নগরসমূহে ঈশ্বর থেকে ভয় উপস্থিত হল, তাই সেখানকার লোকেরা যাকোবের ছেলেদের পিছনে গেল না।
\s5
\v 6 পরে যাকোব ও তাঁর সঙ্গীরা সবাই কনান দেশের লূসে অর্থাৎ বৈথেলে উপস্থিত হলেন।
\v 7 সেখানে তিনি এক যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে সেই জায়গার নাম এল-বৈথেল [বৈথেলের ঈশ্বর] রাখলেন; কারণ ভাইয়ের সামনে থেকে তার পালাবার সময় ঈশ্বর সেই জায়গায় তাকে দর্শন দিয়েছিলেন
\v 8 আর রিবিকার দবোরা নামের ধাত্রীর মৃত্যু হল এবং বৈথেলের নীচে অবস্থিত অলোন গাছের তলায় তার কবর হল এবং সেই জায়গার নাম অলোন-বাখুৎ [ক্রন্দন গাছ] হল।
\s5
\v 9 পদ্দন-অরাম থেকে যাকোব ফিরে আসলে ঈশ্বর তাঁকে আবার দর্শন দিয়ে আশীর্বাদ করলেন।
\v 10 ফলে ঈশ্বর তাঁকে বললেন, "তোমার নাম যাকোব; লোকে তোমাকে আর যাকোব বলবে না, তোমার নাম ইস্রায়েল হবে;" আর তিনি তাঁর নাম ইস্রায়েল রাখলেন।
\s5
\v 11 ঈশ্বর তাঁকে আরো বললেন, "আমিই সর্বশক্তিমান ঈশ্বর, তুমি প্রজাবান ও বহুবংশ হও; তোমার থেকে এক জাতি, এমন কি, জাতিসমাজ সৃষ্টি হবে, আর তোমার থেকে রাজারা সৃষ্টি হবে।
\v 12 আর আমি অব্রাহামকে ও ইসহাককে যে দেশ দান করেছি, সেই দেশ তোমাকে ও তোমার ভাবী বংশকে দেব।"
\v 13 সেই জায়গায় তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা বলে ঈশ্বর তাঁর কাছ থেকে চলে গেলেন।
\s5
\v 14 আর যাকোব সেই কথাবার্তার জায়গায় এক স্তম্ভ, পাথরের স্তম্ভ, স্থাপন করে তার উপরে পানীয় নৈবেদ্য উৎসর্গ করলেন ও তেল ঢেলে দিলেন।
\v 15 এবং যে জায়গায় ঈশ্বর তাঁর সঙ্গে কথা বললেন, যাকোব সেই জায়গার নাম বৈথেল রাখলেন।
\s5
\v 16 পরে তাঁরা বৈথেল থেকে চলে গেলেন, আর ইফ্রাথে উপস্থিত হবার অল্প পথ বাকি থাকতে রাহেলের প্রসব বেদনা হল এবং তাঁর প্রসব করতে বড় কষ্ট হল।
\v 17 আর প্রসব ব্যথা কঠিন হলে ধাত্রী তাকে বলল, "ভয় কর না, কারণ এবারও তোমার ছেলে হবে।"
\v 18 পরে তার মৃত্যু হল, আর প্রাণ চলে যাবার সময়ে তিনি ছেলের নাম বিনোনী [আমার কষ্টের ছেলে] রাখলেন, কিন্তু তার বাবা তার নাম বিন্যামীন [ডান হাতের ছেলে] রাখলেন
\v 19 এইভাবে রাহেলের মৃত্যু হল এবং ইফ্রাথ অর্থাৎ বৈৎলেহমের পথের পাশে তার কবর হল।
\v 20 পরে যাকোব তার কবরের ওপরে এক স্তম্ভ স্থাপন করলেন, রাহেলের সেই কবর স্তম্ভ আজও আছে।
\s5
\v 21 পরে ইস্রায়েল সেখান থেকে যাত্রা করলেন এবং মিগদল-এদরের ওপাশে তাঁবু স্থাপন করলেন।
\v 22 সেই দেশে ইস্রায়েলের বসবাসের সময়ে রুবেন গিয়ে নিজের বাবার বিলহা নামে উপপত্নীর সঙ্গে শয়ন করল এবং ইস্রায়েল তা শুনতে পেলেন।
\s যাকোবের বারো ছেলে।
\p
\s5
\v 23 লেয়ার ছেলে; যাকোবের বড় ছেলে রুবেন এবং শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর ও সবূ্লূন।
\v 24 রাহেলের ছেলে; যোষেফ ও বিন্যামীন।
\v 25 রাহেলের দাসী বিলহার ছেলে; দান ও নপ্তালি।
\s5
\v 26 লেয়ার দাসী সিল্পার ছেলে; গাদ ও আশের। এরা যাকোবের ছেলে, পদ্দন-অরামে জন্মায়।
\s ইসহাকের মৃত্যু। এষৌর বংশাবলি।
\m
\v 27 পরে কিরিয়থর্ব্বের অর্থাৎ হিব্রোণের কাছাকাছি মম্রি নামক যে জায়গায় অব্রাহাম ও ইসহাক বাস করেছিলেন, সেই জায়গায় যাকোব নিজের বাবা ইসহাকের কাছে উপস্থিত হলেন।
\s5
\v 28 ইসহাকের বয়স একশো আশী বছর হয়েছিল।
\v 29 পরে ইসহাক বৃদ্ধ ও পুর্নায়ু হয়ে প্রাণত্যাগ করে নিজের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে একত্রিত হলেন এবং তাঁর ছেলে এষৌ ও যাকোব তাঁর কবর দিলেন।
\s5
\c 36
\p
\v 1 এষৌর অর্থাৎ ইদোমের বংশ-বৃত্তান্ত এই।
\v 2 এষৌ কনানীয়দের দুটি মেয়েকে, অর্থাৎ হিত্তীয় এলোনের মেয়ে আদাকে ও হিব্বীয় সিবিয়োনের নাতনি অনার মেয়ে অহলীবামাকে,
\v 3 তাছাড়াও নবায়োতের বোনকে, অর্থাৎ ইশ্মায়েলের বাসমৎ নামে মেয়েকে বিয়ে করলেন।
\s5
\v 4 আর এষৌর জন্য আদা ইলীফসকে ও বাসমৎ রুয়েলকে প্রসব করে।
\v 5 এবং অহলীবামা যিয়ূশ, যালম ও কোরহকে প্রসব করে; এরা এষৌর ছেলে, কনান দেশে জন্মে।
\s5
\v 6 পরে এষৌ নিজের স্ত্রী ছেলে মেয়েরা ও ঘরের অন্য সব প্রানীকে এবং নিজের সমস্ত পশুধন ও কনান দেশে উপার্জিত সমস্ত সম্পত্তি নিয়ে যাকোব ভাইয়ের সামনে থেকে আর এক দেশে চলে গেলেন।
\v 7 কারণ তাঁদের প্রচুর সম্পত্তি থাকাতে একসঙ্গে বসবাস করা সম্ভব হল না, এবং পশুধনের জন্য তাঁদের সেই প্রবাস-দেশে জায়গা কুলাল না।
\v 8 এইভাবে এষৌ সেয়ীর পর্বতে বাস করলেন; তিনিই ইদোম।
\s5
\v 9 সেয়ীর পর্বতে অবস্থিত ইদোমীয়দের পূর্বপুরুষ এষৌর বংশ-বৃত্তান্ত এই।
\v 10 এষৌর ছেলেদের নাম এই। এষৌর স্ত্রী আদার ছেলে ইলীফস ও এষৌর স্ত্রী বাসমতের ছেলে রুয়েল।
\v 11 আর ইলীফসের ছেলে তৈমন ও মার, সফো, গয়িতম ও কনস।
\v 12 আর এষৌর ছেলে ইলীফসের তিম্না নামের এক উপপত্নী ছিল, সে ইলীফসের জন্য অমালেককে প্রসব করল। এরা এষৌর স্ত্রী আদার বংশধর।
\s5
\v 13 আর রুয়েলের ছেলে নহৎ, সেরহ, শশ্ম ও মিসা; এরা এষৌর স্ত্রী বাসমতের ছেলে।
\v 14 আর সিবিয়োনের নাতনি অনার মেয়ে যে অহলীবামা এষৌর স্ত্রী ছিল, তার ছেলে যিয়ূশ, যালম ও কোরহ।
\s5
\v 15 এষৌর বংশধরদের দলপতিরা এই। এষৌর বড় ছেলে যে ইলীফস, তার ছেলে দলপতি তৈমন, দলপতি ওমার,
\v 16 দলপতি সফো, দলপতি কনস, দলপতি কোরহ, দলপতি গয়িতম ও দলপতি অমালেক; ইদোম দেশের ইলীফস বংশীয় এই দলপতিরা আদার বংশধর।
\s5
\v 17 এষৌর ছেলে রুয়েলের ছেলে দলপতি নয়, দলপতি সেরহ, দলপতি শম্ম ও দলপতি মিসা; ইদোম দেশের রুয়েল বংশীয় এই দলপতিরা এষৌর স্ত্রী বাসমতের ছেলে।
\v 18 আর এষৌর স্ত্রী অহলীবামার ছেলে দলপতি যিয়ুশ, দলপতি যালম ও দলপতি কোরহ; অনার মেয়ে যে অহলীবামা এষৌর স্ত্রী ছিল, এই দলপতিরা তার বংশধর।
\v 19 এরা এষৌর অর্থাৎ ইদোমের সন্তান ও এরা তাদের দলপতি।
\s5
\v 20 সেই দেশনিবাসী হোরীয় সেয়ীরের ছেলে লোটন, শোবল, শিবিয়োন, অনা, দিশোন, এৎসর ও দীশন;
\v 21 সেয়ীরের এই ছেলেরা ইদোম দেশের হোরীয় বংশোদ্ভব দলপতি ছিলেন।
\v 22 লোটনের ছেলে হোরি ও হেমম এবং তিম্না লোটনের বোন ছিল।
\s5
\v 23 আর শোবলের অলবন, মানহৎ, এবল, শফো ও ওনম।
\v 24 আর সিবিয়োনের ছেলে অয়া ও অনা; এই অনা তার বাবা সিবিয়োনের গাধা চরাবার সময়ে মরুভূমিতে গরম জলের উনুই খুঁজে পেয়েছিল।
\s5
\v 25 অনার ছেলে দিশোন ও অনার মেয়ে অহলীবামা।
\v 26 আর দিশোনের ছেলে হিমদন, ইশবন, যিত্রন ও করান।
\v 27 আর এৎসরের ছেলে বীলহন, সাবন ও আকন।
\v 28 আর দিশোনের ছেলে উষ ও অরান।
\s5
\v 29 হোরীয় বংশোদ্ভব দলপতিরা এই; দলপতি লোটন, দলপতি শোবল, দলপতি সিবিয়োন, দলপতি অনা,
\v 30 দলপতি দিশোন, দলপতি এৎসর ও দলপতি দীশন। এরা সেয়ীর দেশের হোরীয় বংশোদ্ভব দলপতি।
\s5
\v 31 ইস্রায়েল–সন্তানদের ওপরে কোনো রাজা রাজত্ব করার আগে এরা ইদোম দেশের রাজা ছিলেন।
\v 32 বিয়োরের ছেলে বেলা ইদোম দেশে রাজত্ব করেন, তাঁর রাজধানীর নাম দিনহাবা।
\v 33 আর বেলা মারা গেলে পর তাঁর পদে বস্রা-নিবাসী সেরহের ছেলে যোবব রাজত্ব করেন।
\s5
\v 34 আর যোবব মারা গেলে পর তৈমন দেশীয় হূশম তাঁর পদে রাজত্ব করেন।
\v 35 আর হূশম মারা যাবার পর বদদের ছেলে যে হদদ মোয়াব-ক্ষেত্রে মিদিয়নকে আঘাত করেছিলেন, তিনি তার পদে রাজত্ব করেন; তাঁর রাজধানীর নাম অবীৎ।
\v 36 আর হদদ মারা যাবার পর মস্রেকা-নিবাসী সম্ল তাঁর পদে রাজত্ব করেন।
\s5
\v 37 আর সম্ল মারা গেলে পর [ফরাৎ] নদীর নিকটবর্তী রহোবোৎ-নিবাসী শৌল তাঁর পদে রাজত্ব করেন।
\v 38 আর শৌল মারা গেলে পর অকবোরের ছেলে বাল্‌হানন তাঁর পদে রাজত্ব করেন।
\v 39 আর অকবোরের পুত্র বাল্‌হানন মারা গেলে পর হদর তাঁর পদে রাজত্ব করেন; তাঁর রাজধানীর নাম পায়ু ও স্ত্রীর নাম মহেটবেল, সে মট্রেদের মেয়ে ও মেষাহবের নাতনী।
\s5
\v 40 গোষ্ঠী, স্থান ও নাম ভেদে এষৌ থেকে সৃষ্টি যে সব দলপতি ছিলেন, তাঁদের নাম হল; দলপতি তিম্ন, দলপতি অলবা দলপতি যিথেৎ,
\v 41 দলপতি অহলীবামা, দলপতি এলা, দলপতি পীনোন,
\v 42 দলপতি কনস্‌, দলপতি তৈমন, দলপতি মিবসর,
\v 43 দলপতি মগদীয়েল ও দলপতি ঈরম। এরা নিজের নিজের অধিকার দেশে, নিজের নিজের বসবাস জায়গা ভেদে ইদোমের দলপতি ছিলেন। ইদোমীয়দের আদিপুরুষ এষৌর বৃত্তান্ত সমাপ্ত।
\s5
\c 37
\ms যোষেফের বিবরণ।
\p
\v 1 সেই সময়ে যাকোব তার বাবার দেশে, কনান দেশে বাস করছিলেন।
\v 2 যাকোবের বংশ-বৃত্তান্ত এই। যোষেফ সতেরো বছর বয়সে তার ভাইদের সঙ্গে পশুপাল চরাত; সে ছোটবেলায় তার বাবার স্ত্রী বিল্‌হার ও সিল্পার ছেলেদের সঙ্গী ছিল এবং যোষেফ তাদের খারাপ ব্যবহারের খবর বাবার কাছে আনত।
\s5
\v 3 যোষেফ ইস্রায়েলের বৃদ্ধ বয়সের ছেলে, এই জন্য ইস্রায়েল সব ছেলের থেকে তাকে বেশি ভালবাসতেন এবং তাকে একটা সুন্দর পোশাক তৈরী করে দিয়েছিলেন।
\v 4 কিন্তু বাবা তার সব ভাইদের থেকে তাকে বেশি ভালবাসেন, এটা দেখে তার ভাইয়েরা তাকে ঘৃণা করত, তার সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বলতে পারত না।
\s5
\v 5 আর যোষেফ স্বপ্ন দেখে নিজের ভাইদেরকে তা বলল; এতে তারা তাকে আরও বেশি ঘৃণা করল।
\v 6 সে তাদেরকে বলল, "আমি এক স্বপ্ন দেখেছি, অনুরোধ করি, তা শোন।
\s5
\v 7 দেখ, আমরা আটি বাঁধছিলাম, আর দেখ, আমার আটি উঠে দাঁড়িয়ে থাকল এবং দেখ, তোমাদের আটি সব আমার আটিকে চারদিকে ঘিরে তার কাছে নত হল।"
\v 8 এতে তার ভাইয়েরা তাকে বলল, "তুই কি বাস্তবে আমাদের রাজা হবি? আমাদের উপরে বাস্তবে কর্ত্তৃত্ব করবি? ফলে তারা স্বপ্ন ও তার কথার জন্য তাকে আরো ঘৃণা করল।
\s5
\v 9 পরে সে আরো এক স্বপ্ন দেখে ভাইদেরকে তার বৃত্তান্ত বলল। সে বলল, "দেখ, আমি আর এক স্বপ্ন দেখলাম; দেখ, সূর্য্য, চন্দ্র ও এগারো নক্ষত্র আমার সামনে নত হল।"
\v 10 সে তার বাবা ও ভাইদেরকে এর বৃত্তান্ত বলল, তাতে তার বাবা তাকে ধমকিয়ে বললেন, "তুমি এ কেমন স্বপ্ন দেখলে? আমি, তোমার মা ও তোমার ভায়েরা, আমরা কি সত্যিই তোমার কাছে ভূমিতে নত হতে আসব?"
\v 11 আর তার ভায়েরা, তার প্রতি হিংসা করল, কিন্তু তার বাবা সেই কথা মনে রাখলেন।
\s5
\v 12 একবার তার ভায়েরা বাবার পশুপাল চরাতে শিখিমে গিয়েছিল।
\v 13 তখন ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, "তোমার ভায়েরা কি শিখিমে পশুপাল চরাচ্ছে না? এস, আমি তাদের কাছে তোমাকে পাঠাই।"
\v 14 সে বলল, "দেখুন, এই আমি।" তখন তিনি তাকে বললেন, "তুমি গিয়ে তোমার ভাইদের বিষয় ও পশুপালের বিষয় জেনে আমাকে সংবাদ এনে দাও।" এইভাবে তিনি হিব্রোনের উপত্যকা থেকে যোষেফকে পাঠালে সে শিখিমে উপস্থিত হল।
\s5
\v 15 তখন এক জন লোক তাকে দেখতে পেল, আর দেখ, সে মরুভূমিতে ভ্রমণ করছে; সেই লোকটি তাকে জিঞ্জাসা করল, "কিসের খোঁজ করছ?"
\v 16 সে বলল, "আমার ভাইদের খোঁজ করছি; অনুগ্রহ করে আমাকে বল, তাঁরা কোথায় পাল চরাচ্ছেন।"
\v 17 সে ব্যক্তি বলল, "তারা এ জায়গা থেকে চলে গিয়েছে, কারণ 'চল, দোথনে যাই,' তাদের এই কথা বলতে শুনেছিলাম।" পরে যোষেফ নিজের ভাইদের পিছন পিছনে গিয়ে দোথনে তাদের খুঁজে পেল।
\s5
\v 18 তারা দূর থেকে তাকে দেখতে পেল এবং সে কাছে উপস্থিত হবার আগে তাকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র করল।
\v 19 তারা পরস্পর বলল, "ঐ দেখ, স্বপ্নদর্শক মহাশয় আসছেন,
\v 20 এখন এস, আমরা ওকে হত্যা করে একটা গর্তে ফেলে দিই; পরে বলব, কোনো হিংস্র জন্তু তাকে খেয়ে ফেলেছে; তাতে দেখব, ওর স্বপ্নের কি হয়।"
\s5
\v 21 রুবেন এটা শুনে তাদের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করল, বলল, "না, আমরা ওকে প্রাণে মারব না।"
\v 22 আর রুবেন তাদেরকে বলল, "তোমরা রক্তপাত কর না, ওকে মরুভূমির এই গর্তের মধ্যে ফেলে দাও, কিন্তু ওর ওপরে হাত তুল না।" এইভাবে রুবেন তাদের হাত থেকে তাকে উদ্ধার করে বাবার কাছে ফেরত পাঠাবার চেষ্টা করল।
\s5
\v 23 পরে যোষেফ নিজের ভাইদের কাছে আসলে তারা তার গা থেকে, সেই বস্ত্র, সেই চোগাখানি খুলে নিল,
\v 24 আর তাকে ধরে গর্তের মধ্যে ফেলে দিল, সেই গর্ত শূন্য ছিল, তাতে জল ছিল না।
\s5
\v 25 পরে তারা খাবার খেতে বসল এবং চোখ তুলে চাইল, আর দেখ, গিলিয়দ থেকে এক দল ইশ্মায়েলীয় ব্যবসায়ী লোক আসছে; তারা উটে সুগন্ধি দ্রব্য, গুগ্‌গুলু ও গন্ধরস নিয়ে মিসর দেশে যাচ্ছিল।
\v 26 তখন যিহূদা নিজের ভাইদেরকে বলল, "আমাদের ভাইকে হত্যা করে তার রক্ত গোপন করলে আমাদের কি লাভ?
\s5
\v 27 এস, আমরা ঐ ইশ্মায়েলীয়দের কাছে তাকে বিক্রি করি, আমরা তার ওপরে হাত তুলব না; কারণ সে আমাদের ভাই, আমাদের মাংস।" এতে তার ভায়েরা রাজি হল।
\v 28 পরে মিদিয়নীয় বনিকেরা কাছে আসলে ওরা যোষেফকে গর্ত থেকে টেনে তুলল এবং কুড়িটি রুপার মুদ্রায় সেই ইশ্মায়েলীয়দের কাছে যোষেফকে বিক্রি করল; আর তারা যোষেফকে মিসর দেশে নিয়ে গেল।
\s5
\v 29 পরে রুবেন গর্তের কাছে ফিরে গেল, আর দেখ, যোষেফ সেখানে নাই; তখন সে নিজের পোশাক ছিঁড়ল, আর ভাইদের কাছে ফিরে এসে বলল,
\v 30 "যুবকটি নেই, আর আমি! আমি কোথায় যাই?"
\s5
\v 31 পরে তারা যোষেফের পোশাক নিয়ে একটা ছাগল মেরে তার রক্তে তা ডুবাল;
\v 32 আর লোক পাঠিয়ে সেই চোগাখানি বাবার কাছে এনে বলল, "আমরা এই মাত্র পেলাম, পরীক্ষা করে দেখ, এটা তোমার ছেলের পোশাক কি না?
\v 33 তিনি চিনতে পেরে বললেন, "এত আমার ছেলেরই পোশাক; কোনো হিংস্র জন্তু তাকে খেয়ে ফেলেছে, যোষেফ অবশ্য খণ্ড খণ্ড হয়েছে।
\s5
\v 34 তখন যাকোব নিজের পোশাক ছিঁড়ে কোমরে চট পরিধান করে ছেলের জন্য অনেক দিন পর্যন্ত শোক করলেন।
\v 35 আর তাঁর সব ছেলেমেয়ে উঠে তাঁকে সান্ত্বনা করতে যত্ন করলেও তিনি প্রবোধ না মেনে বললেন, "আমি শোক করতে ছেলের কাছে পাতালে নামব।" এইভাবে তার বাবা তার জন্য কাঁদলেন।
\v 36 আর ঐ মিদিয়নীয়েরা যোষেফকে মিসরে নিয়ে গিয়ে ফরৌণের কর্মচারী রক্ষক-সেনাপতি পোটীফরের কাছে বিক্রি করল।
\s5
\c 38
\ms যিহূদার বিবরণ
\p
\v 1 ঐ সময়ে যিহূদা নিজের ভাইদের কাছ থেকে চলে গিয়ে অদুল্লমীয় হীরা নামে একটি লোকের কাছে গেল।
\v 2 সে জায়গায় শূয় নামে এক কনানীয় পুরুষের মেয়েকে দেখে যিহূদা তাকে গ্রহণ করে তার কাছে গেল।
\s5
\v 3 পরে সে গর্ভবতী হয়ে ছেলে প্রসব করল ও যিহূদা তার নাম এর রাখল।
\v 4 পরে আবার তার গর্ভ হলে সে ছেলে প্রসব করে তার নাম ওনন রাখল।
\v 5 আবার তার গর্ভ হলে সে ছেলে প্রসব করে তার নাম শেলা রাখল; এর জন্মের সময়ে যিহূদা কষীবে ছিল।
\s5
\v 6 পরে যিহূদা তামর নামে একটি মেয়েকে এনে নিজের বড় ছেলে এরের সঙ্গে বিয়ে দিল।
\v 7 কিন্তু যিহূদার বড় ছেলে এর সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে দুষ্ট হওয়াতে সদাপ্রভু তাকে মেরে ফেললেন।
\s5
\v 8 তাতে যিহূদা ওননকে বলল, "তুমি নিজের ভাইয়ের স্ত্রীর কাছে যাও ও তার প্রতি দেবরের কর্ত্তব্য সাধন করে নিজের ভাইয়ের জন্য বংশ উৎপন্ন কর।
\v 9 কিন্তু ঐ বংশ নিজের হবে না, এই বুঝে ওনন ভাইয়ের স্ত্রীর কাছে গেলেও ভাইয়ের বংশ উৎপন্ন করবার অনিচ্ছাতে মাটিতে বীর্যপাত করল।
\v 10 তার সেই কাজ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে মন্দ হওয়াতে তিনি তাকেও হত্যা করলেন।
\s5
\v 11 তখন যিহূদা ছেলের স্ত্রী তামরকে বলল, "যে পর্যন্ত আমার ছেলে শেলা বড় না হয়, ততক্ষণ তুমি নিজের বাবার বাড়ি গিয়ে বিধবাই থাক।" কারণ সে বলল যদি ভাইদের মতো সেও মারা যায়। অতএব তামর বাবার বাড়ি গিয়ে বাস করল।
\s5
\v 12 পরে অনেক দিন গেলে শূয়ের মেয়ে যিহূদার স্ত্রী মারা গেল, পরে যিহূদা সান্ত্বনাযুক্ত হয়ে নিজের বন্ধু অদুল্লমীয় হীরার সঙ্গে তিম্নায়, যারা তাঁর মেষদের লোম কাটছিল, তাদের কাছে গেল।
\v 13 তখন কেউ তামরকে বলল, "দেখ, তোমার শ্বশুর নিজের মেষদের লোম কাটতে তিম্নায় যাচ্ছেন।"
\v 14 তখন সে বিধবার বস্ত্র ত্যাগ করে ঘোমটা দিয়ে নিজেকে ঢাকলেন ও গায়ে কাপড় দিয়ে তিম্নার পথের পাশে অবস্থিত ঐনয়িমের প্রবেশস্থানে বসে থাকল; কারন সে দেখল, শেলা বড় হলেও তার সঙ্গে তার বিয়ে হল না।
\s5
\v 15 পরে যিহূদা তাকে দেখে বেশ্যা মনে করল, কারণ সে মুখ আচ্ছাদন করেছিল।
\v 16 তাই সে ছেলের স্ত্রীকে চিনতে না পারাতে পথের পাশে তার কাছে গিয়ে বলল, "এস, আমি তোমার কাছে যাই।" তামর বলল, "আমার কাছে আসার জন্য আমাকে কি দেবে?"
\s5
\v 17 সে বলল, "পাল থেকে একটি ছাগল ছানা পাঠিয়ে দেব। তামর বলল, যতক্ষণ তা না পাঠাও, ততক্ষণ আমার কাছে কি কিছু বন্ধক রাখবে?"
\v 18 সে বলল, "কি বন্ধক রাখব?" তামর বলল, "তোমার এই মোহর ও সুতো ও হাতের লাঠি।" তখন সে তাকে সেইগুলি দিয়ে তার কাছে গেল; তাতে সে তা থেকে গর্ভবতী হল।
\s5
\v 19 পরে সে উঠে চলে গেল এবং সেই আবরণ ত্যাগ করে নিজের বৈধব্য বস্ত্র পরিধান করল।
\v 20 পরে যিহূদা সেই স্ত্রীলোকের কাছ থেকে বন্ধক দ্রব্য নেবার জন্য নিজের অদুল্লমীয় বন্ধুর হাতে ছাগল ছানাটি পাঠিয়ে দিল, কিন্তু সে তাকে পেল না।
\s5
\v 21 তখন সে সেখানকার লোকদেরকে জিজ্ঞাসা করল, "ঐনিয়মের পথের পাশে যে বেশ্যা ছিল, সে কোথায়?" তারা বলল, "এ জায়গায় কোনো বেশ্যা আসেনি।
\v 22 পরে সে যিহূদার কাছে ফিরে গিয়ে বলল, "আমি তাকে পেলাম না এবং সেখানকার লোকেরাও বলল, এ জায়গায় কোনো বেশ্যা আসেনি।
\v 23 তখন যিহূদা বলল, "তার কাছে যা আছে, সে তা রাখুক, না হলে আমরা লজ্জায় পড়ব। দেখ, আমি এই ছাগল ছানাটি পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু তুমি তাকে পেলে না।"
\s5
\v 24 প্রায় তিন মাস পরে কেউ যিহূদাকে বলল, "তোমার ছেলের স্ত্রী তামর ব্যভিচারিণী হয়েছে, আরো দেখ, ব্যভিচারের জন্য তার গর্ভ হয়েছে।" তখন যিহূদা বলল, "তাকে বাইরে এনে পুড়িয়ে দাও।"
\v 25 পরে বাইরে আনার সময়ে সে শ্বশুরকে বলে পাঠাল, যার এই সব বস্তু, সেই পুরুষ থেকে আমার গর্ভ হয়েছে। সে আরো বলল, "এই মোহর, সুতো ও লাঠি কার? চিনে দেখ।"
\v 26 তখন যিহূদা সেগুলি চিনে বলল, "সে আমার থেকেও অনেক ধার্মিক, কারণ আমি তাকে নিজের ছেলে শেলাকে দিইনি। পরে যিহূদা তাঁর সঙ্গে আর কোনো শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলেন না।
\s5
\v 27 পরে তামরের প্রসবকাল উপস্থিত হল, আর দেখ। তার গর্ভে যমজ সন্তান।
\v 28 তার প্রসবকালে একটি বালক হাত বের করল; তাতে ধাত্রী তার সেই হাত ধরে রক্তবর্ণ সুতো বেঁধে বলল, "এই প্রথমে ভূমিষ্ট হল।"
\s5
\v 29 কিন্তু সে নিজের হাত টেনে নিলে দেখ, তার ভাই ভূমিষ্ট হল; তখন ধাত্রী বলল, "তুমি কিভাবে নিজের জন্য ভেদ করে আসলে?" অতএব তার নাম পেরস [ভেদ] হল।
\v 30 পরে হাতে রক্তবর্ণ সুতো বাঁধা তার ভাই ভূমিষ্ট হলে তার নাম সেরহ হল।
\s5
\c 39
\ms যোষেফের দাসত্ব ও কারাবাস
\p
\v 1 যোষেফকে মিসর দেশে নিয়ে যাওয়ার পর, যে ইশ্মায়েলীয়েরা তাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল, তাদের কাছে ফরৌণের কর্মচারী পোটীফর তাকে কিনলেন, ইনি রক্ষক-সেনাপতি, একজন মিসরীয় লোক।
\v 2 আর সদাপ্রভু যোষেফের সঙ্গে ছিলেন এবং তিনি সমৃদ্ধিশালী হলেন ও নিজের মিসরীয় প্রভুর ঘরে থাকলেন।
\s5
\v 3 আর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে আছেন এবং তিনি যা কিছু করেন, সদাপ্রভু তাঁর হাতে তা সফল করছেন, এটা তাঁর প্রভু দেখলেন।
\v 4 অতএব যোষেফ তার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ প্রাপ্ত হলেন ও তার পরিচারক হলেন এবং তিনি যোষেফকে নিজের বাড়ির পরিচালক করে তার হাতে নিজের সব কিছুর দায়িত্ব দিলেন।
\s5
\v 5 যখন থেকে তিনি যোষেফকে নিজের বাড়ির ও সব কিছুর পরিচালক করলেন, তখন থেকে সদাপ্রভু যোষেফের অনুরোধে সেই মিসরীয় ব্যক্তির বাড়ির প্রতি আশীর্বাদ করলেন; বাড়িতে ও ক্ষেতে অবস্থিত তাঁর সমস্ত সম্পদের প্রতি সদাপ্রভু আশীর্বাদ করলেন।
\v 6 অতএব তিনি যোষেফের হাতে নিজের সব কিছুর ভার দিলেন, তিনি নিজের খাবারের জিনিস ছাড়া আর কিছুরই বিষয়ে চিন্তা করতেন না। যোষেফ রূপবান ও সুন্দর ছিলেন।
\s5
\v 7 এই সব ঘটনার পর তাঁর প্রভুর স্ত্রী যোষেফের প্রতি দৃষ্টিপাত করল; আর তাঁকে বলল, "আমার সঙ্গে শয়ন কর।"
\v 8 কিন্তু তিনি অস্বীকার করায় নিজের প্রভুর স্ত্রীকে বললেন, "দেখুন, এই বাড়িতে আমার হাতে কি কি আছে, আমার প্রভু তা জানেন না; আমারই হাতে সব কিছু রেখেছেন;
\v 9 এই বাড়িতে আমার থেকে বড় কেউই নেই; তিনি সকলের মধ্যে শুধু আপনাকেই আমার অধীনা করেননি; কারন আপনি তাঁর স্ত্রী। অতএব আমি কিভাবে এই এত বড় খারাপ কাজ করতে ও ঈশ্বরের বিরুদ্ধে পাপ করতে পারি?"
\s5
\v 10 সে দিন দিন যোষেফকে সেই কথা বললেও তিনি তার সঙ্গে শয়ন করতে কিম্বা সঙ্গে থাকতে তার কথায় রাজি হতেন না।
\v 11 পরে এক দিন যোষেফ কাজ করার জন্য ঘরের মধ্যে গেলেন, বাড়ির লোকদের মধ্যে অন্য কেউ সেখানে ছিল না,
\v 12 তখন সে যোষেফের পোশাক ধরে বলল, "আমার সঙ্গে শয়ন কর৷" কিন্তু যোষেফ তার হাতে নিজের পোশাক ফেলে বাইরে পালিয়ে গেলেন।
\s5
\v 13 তখন যোষেফ তার হাতে পোশাক ফেলে বাইরে পালালেন দেখে, সে নিজের ঘরের লোকদেরকে ডেকে বলল,
\v 14 "দেখ, তিনি আমাদের সঙ্গে ঠাট্টা করতে একজন ইব্রীয় পুরুষকে এনেছেন; সে আমার সঙ্গে শয়ন করবার জন্য আমার কাছে এসেছিল, তাতে আমি চিৎকার করে উঠলাম;
\v 15 আমার চিৎকার শুনে সে আমার কাছে নিজের পোশাকটি ফেলে বাইরে পালিয়ে গেল।
\s5
\v 16 আর যতক্ষণ তার কর্তা ঘরে না আসলেন, সে পর্যন্ত সেই স্ত্রীলোক তাঁর পোশাক নিজের কাছে রেখে দিল।
\v 17 পরে সে সেই কথা অনুযায়ী তাঁকে বলল, "তুমি যে ইব্রীয় দাসকে আমাদের কাছে এনেছ, সে আমার সঙ্গে ঠাট্টা করতে আমার কাছে এসেছিল;
\v 18 পরে আমি চিৎকার করে উঠলে সে আমার কাছে তার বস্ত্রখানি ফেলে বাইরে পালিয়ে গেল।"
\s5
\v 19 তাঁর প্রভু যখন নিজের স্ত্রীর এই কথা শুনলেন যে, 'তোমার দাস আমার প্রতি এইরকম ব্যবহার করেছে', তখন খুব রেগে গেলেন।
\v 20 অতএব যোষেফের প্রভু তাঁকে নিয়ে কারাগারে রাখলেন, যে জায়গায় রাজার বন্দিরা বন্ধ থাকত; তাতে তিনি সেখানে, সেই কারাগারে থাকলেন।
\s5
\v 21 কিন্তু সদাপ্রভু যোষেফের সঙ্গে ছিলেন এবং তাঁর প্রতি দয়া করলেন ও তাঁকে কারারক্ষকের দৃষ্টিতে অনুগ্রহ-পাত্র করলেন।
\v 22 তাতে কারারক্ষক কারাগারে অবস্থিত সমস্ত বন্দির ভার যোষেফের হাতে সমর্পন করলেন এবং সেখানকার লোকেদের সমস্ত কাজ যোষেফের আদেশ অনুযায়ী চলতে লাগল।
\v 23 কারারক্ষক তাঁর অধিকারের কোনো বিষয়ে দেখতেন না, কারণ সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গী ছিলেন এবং তিনি যা কিছু করতেন সদাপ্রভু তা সফল করতেন।
\s5
\c 40
\p
\v 1 ঐ সব ঘটনার পরে মিসর-রাজের পান পাত্রবাহক ও রুটিওয়ালা নিজেদের প্রভু মিসর রাজের বিরুদ্ধে দোষ করল।
\v 2 তাতে ফরৌণ নিজের সেই দুই কর্মচারীর প্রতি, ঐ প্রধান পাত্রবাহকের ও প্রধান রুটিওয়ালা প্রতি প্রচণ্ড রেগে গেলেন
\v 3 এবং তাদেরকে বন্দি করে রক্ষক-সেনাপতির বাড়িতে, কারাগারে, যোষেফ যে জায়গায় বন্দী ছিলেন, সেই জায়গায় রাখলেন।
\s5
\v 4 তাতে রক্ষক-সেনাপতি তাদের কাছে যোষফকে নিযুক্ত করলেন, আর তিনি তাদের পরিচর্যা করতে লাগলেন। এইভাবে তারা কিছু দিন কারাগারে থাকল।
\v 5 পরে মিসর-রাজের পানপাত্র বাহক ও রুটিওয়ালা, যারা জেলে বন্দী হয়েছিল, সেই দুইজনে এক রাতে দুই ধরনের অর্থবিশিষ্ট দুই স্বপ্ন দেখল।
\s5
\v 6 আর যোষেফ সকালে তাদের কাছে এসে তাদেরকে দেখলেন, আর দেখ তারা দুঃখিত।
\v 7 তখন তাঁর সঙ্গে ফরৌণের ঐ যে দুই কর্ম্মচারী তাঁর প্রভুর বাড়িতে কারাবদ্ধ ছিল, তাদেরকে তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, "আজ আপনাদের মুখ বিষণ্ণ কেন?"
\v 8 তারা উত্তর করল, "আমরা স্বপ্ন দেখেছি, কিন্তু অর্থকারক কেউ নেই। যোষেফ তাদেরকে বললেন, "অর্থ করবার শক্তি কি ঈশ্বর থেকে হয় না? অনুরোধ করি, স্বপ্নের বৃত্তান্ত আমাকে বলুন।"
\s5
\v 9 তখন প্রধান পানপাত্র বাহক যোষেফকে নিজের স্বপ্নের বৃত্তান্ত জানাল, তাঁকে বলল, "আমার স্বপ্নে, দেখ, আমার সামনে একটি আঙ্গুর গাছ।
\v 10 সেই আঙ্গুর গাছের তিনটি শাখা; তা যেন পল্লবিত হল ও তাতে ফুল হল এবং স্তবকে তার ফল হল ও পেকে গেল।
\v 11 তখন আমার হাতে ফরৌণের পানপাত্র ছিল, আর আমি সেই দ্রাক্ষাফল নিয়ে ফরৌণের পাত্রে নিংড়িয়ে ফরৌণের হাতে সেই পাত্র দিলাম।
\s5
\v 12 যোষেফ তাকে বললেন, "এর অর্থ এই; ঐ তিনটি শাখা যা তিন দিন বোঝায়।
\v 13 তিন দিনের মধ্যে ফরৌণ আপনার মাথা উঁচু করে আপনাকে আবার আগের পদে নিযুক্ত করবেন; আর আপনি আগের মতই পানপাত্র বাহক হয়ে আবার ফরৌণের হাতে পানপাত্র দেবেন।
\s5
\v 14 কিন্তু অনুরোধ করি, যখন আপনার মঙ্গল হবে, তখন আমাকে মনে রাখবেন এবং আমার প্রতি দয়া করে ফরৌণের কাছে আমার কথা বলে আমাকে এই কারাগার থেকে উদ্ধার করবেন।
\v 15 কারণ ইব্রীয়দের দেশ থেকে আমাকে প্রকৃতপক্ষে অপহরণ করে আনা হয়েছে; আর এ জায়গাতেও আমি কিছুই করিনি, যার জন্য এই কারা কুয়োতে বন্দী হই।
\s5
\v 16 প্রধান রুটিওয়ালা যখন দেখল, অনুবাদটা ভাল, তখন সে যোষেফকে বলল, "আমিও স্বপ্ন দেখেছি; দেখ আমার মাথার ওপরে সাদা পিঠের তিনটি ঝুড়ি।
\v 17 তার ওপরের ঝুড়িতে ফরৌণের জন্য সব ধরনের তৈরী খাবার ছিল; আর পাখিরা আমার মাথার উপরের ঝুড়ি থেকে তা নিয়ে খেয়ে ফেলল।"
\s5
\v 18 যোষেফ উত্তর করলেন, "এর অর্থ এই, সেই তিন ঝুড়ি তিন দিন বোঝায়।
\v 19 তিন দিনের মধ্যে ফরৌণ তোমার দেহ থেকে মাথা তুলে নিয়ে তোমাকে গাছে ফাঁসি দেবেন এবং পাখিরা তোমার দেহ থেকে মাংস খাবে।"
\s5
\v 20 পরে তৃতীয় দিনে ফরৌণের জন্মদিন হল, আর তিনি নিজের সব দাসের জন্য খাবার তৈরী করলেন এবং নিজের দাসদের মধ্যে প্রধান পাত্রবাহকের ও প্রধান রুটিওয়ালার মাথা উঠাইলেন।
\v 21 তিনি প্রধান পানপাত্রবাহককে তার নিজের পদে আবার নিযুক্ত করলেন, তাতে সে ফরৌণের হাতে পানপাত্র দিতে লাগল;
\v 22 কিন্তু তিনি প্রধান রুটিওয়ালাকে ফাঁসি দিলেন; যেমন যোষেফ তাদেরকে স্বপ্নের অর্থ করে বলেছিলেন।
\v 23 অথচ প্রধান পানপাত্রবাহক যোষেফকে মনে করল না, ভুলে গেল।
\s5
\c 41
\ms যোষেফের উন্নতি ও বিয়ে
\p
\v 1 দুই বছর পরে ফরৌণ স্বপ্ন দেখলেন।
\v 2 দেখ, তিনি নদীর তীরে দাঁড়িয়ে আছেন, আর দেখ, নদী থেকে সাতটি মোটাসোটা সুন্দর গরু উঠল ও খাগড়া বনে চরতে লাগল।
\v 3 সেগুলির পরে, দেখ, আর সাতটি রোগা ও বিশ্রী গরু নদী থেকে উঠল ও নদীর তীরে ঐ গরুদের কাছে দাঁড়াল।
\s5
\v 4 পরে সেই রোগা বিশ্রী গাভীরা ঐ সাতটি মোটাসোটা সুন্দর গরুকে খেয়ে ফেলল। তখন ফরৌণের ঘুম ভেঙ্গে গেল।
\v 5 তার পরে তিনি আবার ঘুমিয়ে পড়লে দ্বিতীয় বার স্বপ্ন দেখলেন; দেখ, এক বোঁটাতে সাতটি মোটা ও ভালো শীষ উঠল।
\v 6 সেগুলির পরে, দেখ, পূর্বীয় বায়ুতে শোষিত অন্য সাতটি ক্ষীণ শীষ উঠল।
\s5
\v 7 আর এই ক্ষীণ শীষগুলি ঐ সাতটি মোটা পরিপক্ক শীষকে খেয়ে ফেলল। পরে ফরৌণের ঘুম ভেঙ্গে গেল, আর দেখ, ওটা স্বপ্নমাত্র।
\v 8 পরে সকালে তাঁর মন অস্থির হল; আর তিনি লোক পাঠিয়ে মিসরের সব জাদুকর ও সেখানকার সব জ্ঞানীকে ডাকলেন; আর ফরৌণ তাঁদের কাছে সেই স্বপ্নবৃত্তান্ত বললেন, কিন্তু তাঁদের মধ্যে কেউই ফরৌণকে তার অর্থ বলতে পারলেন না।
\s5
\v 9 তখন প্রধান পানপাত্রবাহক ফরৌণকে অনুরোধ করল, "আজ আমার দোষ মনে পড়ছে।"
\v 10 ফরৌণ নিজের দুই দাসের প্রতি, আমার ও প্রধান রুটিওয়ালার প্রতি, রেগে গিয়ে আমাদেরকে রক্ষক-সেনাপতির বাড়িতে কারাবদ্ধ করেছিলেন।
\v 11 আর সে ও আমি এক রাতে স্বপ্ন দেখেছিলাম এবং দুই জনের স্বপ্নের দুই প্রকার অর্থ হল।
\s5
\v 12 তখন সে জায়গায় রক্ষক-সেনাপতির দাস এক জন ইব্রীয় যুবক আমাদের সঙ্গে ছিল; তাকে স্বপ্নবৃত্তান্ত বললে সে আমাদেরকে তার অর্থ বলল; উভয়ের স্বপ্নের অর্থ বলল।
\v 13 আর সে আমাদেরকে যেমন অর্থ বলেছিল, সেরকমই ঘটল; মহারাজ আমাকে আগের পদে নিযুক্ত করলেন ও তাকে ফাঁসি দিলেন।
\s5
\v 14 তখন ফরৌণ যোষেফকে ডেকে পাঠালে লোকেরা কারাকূপ থেকে তাঁকে তাড়াতাড়ি আনল। পরে তিনি চুল-দাড়ি কেটে অন্য পোশাক পরে ফরৌণের কাছে উপস্থিত হলেন।
\v 15 তখন ফরৌণ যোষেফকে বললেন, "আমি এক স্বপ্ন দেখেছি, তার অর্থ করতে পারে, এমন কেউ নেই। কিন্তু তোমার বিষয়ে আমি শুনেছি যে, তুমি স্বপ্ন শুনলে অর্থ করতে পার।"
\v 16 যোষেফ ফরৌণকে উত্তর করলেন, "তা আমার পক্ষে অসম্ভব, ঈশ্বরই ফরৌণকে সঠিক উত্তর দেবেন।
\s5
\v 17 তখন ফরৌণ যোষেফকে বললেন, "দেখ, আমি স্বপ্নে নদীর তীরে দাঁড়িয়েছিলাম।
\v 18 আর দেখ, নদী থেকে সাতটি মোটাসোটা গরু উঠে খাগড়া বনে চরতে লাগল।
\s5
\v 19 সেগুলির পরে, দেখ, রোগা ও বিশ্রী গাভী উঠল; আমি সমস্ত মিসর দেশে সেই ধরনের বিশ্রী গাভী কখনও দেখিনি।
\v 20 আর এই রোগা ও বিশ্রী গরুরা সেই আগের মোটাসোটা সাতটি গরুকে খেয়ে ফেলল।
\v 21 কিন্তু তারা এদের খেয়ে ফেললে পর, খেয়ে ফেলেছে, এমন মনে হল না, কারণ এরা আগের মতো বিশ্রীই থাকল।
\s5
\v 22 তখন আমার ঘুম ভেঙ্গে গেল। পরে আমি আর এক স্বপ্ন দেখলাম; আর দেখ, একটি বোঁটায় সম্পূর্ণ ভালো সাতটি শীষ উঠল।
\v 23 আর দেখ, সেগুলির পরে শুকনো, ক্ষীণ ও পুর্বীয় বায়ুতে শুকনো সাতটি শীষ উঠল।
\v 24 আর এই ক্ষীণ শীষগুলি সেই ভালো সাতটি শীষকে গ্রাস করল। এই স্বপ্ন আমি জাদুকরদেরকে বললাম, কিন্তু কেউই এর অর্থ আমাকে বলতে পারল না।
\s5
\v 25 তখন যোষেফ ফরৌণকে বললেন, "ফরৌণের স্বপ্ন এক; ঈশ্বর যা করতে প্রস্তুত হয়েছেন, তাই ফরৌণকে জানিয়েছেন।
\v 26 ঐ সাতটি ভালো গরু সাত বছর এবং ঐ সাতটি ভালো শীষও সাত বছর; স্বপ্ন এক।
\s5
\v 27 আর তার পরে যে সাতটি রোগা ও বিশ্রী গরু উঠল, তারাও সাত বছর এবং পুর্বীয় বায়ুতে শুকনো যে সাতটি অপুষ্ট শীষ উঠল, তা দুর্ভিক্ষের সাত বছর হবে।
\v 28 আমি ফরৌণকে এটাই বললাম; "ঈশ্বর যা করতে প্রস্তুত হয়েছেন, তা ফরৌণকে দেখিয়েছেন।
\v 29 দেখুন, সমস্ত মিসর দেশে সাত বছর প্রচুর শস্য হবে।
\s5
\v 30 তার পরে সাত বছর এমন দুর্ভিক্ষ হবে যে, মিসর দেশে সমস্ত শস্য নষ্ট হবে এবং সেই দুর্ভিক্ষে দেশ ধ্বংস হবে।
\v 31 আর সেই পরে আসা দুর্ভিক্ষের জন্য দেশে আগের শস্যপ্রাচুর্য্যতার কথা মনে পড়বে না; কারন তা খুব কষ্টকর হবে।
\v 32 আর ফরৌণের কাছে দুবার স্বপ্ন দেখাবার ভাব এই; ঈশ্বর এটা স্থির করেছেন এবং ঈশ্বর এটা তাড়াতাড়ি ঘটাবেন।
\s5
\v 33 অতএব এখন ফরৌণ একজন সুবুদ্ধি ও জ্ঞানবান্‌ পুরুষের চেষ্টা করে তাঁকে মিসর দেশের উপরে নিযুক্ত করুন।
\v 34 আর ফরৌণ এই কাজ করুন; দেশে অধ্যক্ষদের নিযুক্ত করে যে সাত বছর শস্যপ্রাচুর্য্য হবে, সেই সময়ে মিসর দেশ থেকে শস্যের পঞ্চমাংশ গ্রহণ করুন।
\s5
\v 35 তাঁরা সেই আগামী ভালো বছরগুলিতে খাবার সংগ্রহ করুন ও ফরৌণের অধীনে নগরে নগরে খাবারের জন্য শস্য সঞ্চয় করুন ও রক্ষা করুন।
\v 36 এইভাবে মিসর দেশে যে দুর্ভিক্ষ হবে, সেই দুর্ভিক্ষের সাত বছরের জন্য সেই খাবার দেশের জন্য সঞ্চিত থাকবে, তাতে দুর্ভিক্ষে দেশ ধ্বংস হবে না।
\s5
\v 37 তখন ফরৌণের ও তাঁর সব দাসের দৃষ্টিতে এই কথা ভালো মনে হল।
\v 38 আর ফরৌণ নিজের দাসদেরকে বললেন, "এর তুল্য পুরুষ, যাঁর অন্তরে ঈশ্বরের আত্মা আছেন, এমন আর কাকে পাব?"
\s5
\v 39 তখন ফরৌণ যোষেফকে বললেন, "ঈশ্বর তোমাকে এই সব জানিয়েছেন, অতএব তোমার মতো সুবুদ্ধি ও জ্ঞানবান কেউই নেই।
\v 40 তুমিই আমার বাড়ির পরিচালক হও; আমার সমস্ত প্রজা তোমার কথায় চলবে, কেবল সিংহাসনে আমি তোমার থেকে বড় থাকব।"
\v 41 ফরৌণ যোষেফকে আরও বললেন, "দেখ, আমি তোমাকে সমস্ত মিসর দেশের ওপরে নিযুক্ত করলাম।"
\s5
\v 42 পরে ফরৌণ হাত থেকে নিজের আংটি খুলে যোষেফের হাতে দিলেন, তাঁকে কার্পাসের ভালো কাপড় পরালেন এবং তাঁর গলায় সোনার হার দিলেন।
\v 43 আর তাঁকে নিজের দ্বিতীয় রথে আরোহণ করালেন এবং লোকেরা তাঁর আগে আগে 'হাঁটু পাত', 'হাঁটু পাত' বলে ঘোষণা করল। এইভাবে তিনি সমস্ত মিসর দেশের পরিচালকের পদে নিযুক্ত হলেন।
\s5
\v 44 আর ফরৌণ যোষেফকে বললেন, "আমি ফরৌণ, তোমার আদেশ ছাড়া সমস্ত মিসর দেশের কোনো লোক হাত কিংবা পা তুলতে পারবে না।"
\v 45 আর ফরৌণ যোষেফের নাম "সাফনৎ-পানেহ" রাখলেন এবং তার সঙ্গে ওন নগর-নিবাসী পোটীফেরঃ নামে যাজকের আসনৎ নামের মেয়ের বিয়ে দিলেন। পরে যোষেফ মিসর দেশের মধ্যে যাতায়াত করতে লাগলেন
\s5
\v 46 যোষেফ ত্রিশ বছর বয়সে মিসর-রাজ ফরৌণের সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। পরে যোষেফ ফরৌণের কাছ থেকে চলে গিয়ে মিসর দেশের সব জায়গায় ভ্রমণ করলেন।
\v 47 আর প্রচুর শস্যর ফলনের সেই সাত বছর ভূমিতে প্রচুর পরিমাণ শস্য জন্মাল।
\s5
\v 48 মিসর দেশে উপস্থিত সেই সাত বছরে সব শস্য সংগ্রহ করে তিনি প্রতি নগরে সঞ্চয় করলেন; যে নগরের চার সীমায় যে শস্য হল, সেই নগরে তা সঞ্চয় করলেন।
\v 49 এইভাবে যোষেফ সমুদ্রের বালির মতো এমন প্রচুর শস্য সংগ্রহ করলেন যে, তা মাপা বন্ধ করলেন, কারণ তা পরিমাপের বাইরে ছিল।
\s5
\v 50 দুর্ভিক্ষ বছরের আগে যোষেফের দুই ছেলে জন্মাল; ওন-নিবাসী পোটীফেরঃ যাজকের মেয়ে আসনৎ তাঁর জন্য তাদেরকে প্রসব করলেন।
\v 51 আর যোষেফ তাদের বড় ছেলের নাম মনঃশি [ভুলে যাওয়া] রাখলেন, কারণ তিনি বললেন, "ঈশ্বর আমার সমস্ত দুঃখের ও আমার বাবার বংশের স্মৃতি ভুলিয়ে দিয়েছেন।
\v 52 পরে দ্বিতীয় ছেলের নাম ইফ্রয়িম [ফলবান্‌] রাখলেন, কারণ তিনি বললেন, "আমার দুঃখভোগের দেশে ঈশ্বর আমাকে ফলবান করেছেন।
\s5
\v 53 পরে মিসর দেশে উপস্থিত শস্যপ্রাচুর্য্যের সাত বছর শেষ হল
\v 54 এবং যোষেফ যেমন বলেছিলেন, সেই অনুসারে দুর্ভিক্ষের সাত বছর আরম্ভ হল। সব দেশে দুর্ভিক্ষ হল, কিন্তু সমস্ত মিসর দেশে খাবার ছিল।
\s5
\v 55 পরে সমস্ত মিসর দেশে দুর্ভিক্ষ হলে প্রজারা ফরৌণের কাছে খাবারের জন্য কাঁদল, তাতে ফরৌণ মিসরীয়দের সবাইকে বললেন, "তোমরা যোষেফের কাছে যাও; তিনি তোমাদেরকে যা বলেন, তাই কর।"
\v 56 তখন সমস্ত দেশেই দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। আর যোষেফ সব জায়গার গোলা খুলে মিসরীয়দের কাছে শস্য বিক্রি করতে লাগলেন; আর মিসর দেশে দুর্ভিক্ষ প্রবল হয়ে উঠল
\v 57 এবং সবদেশের লোক মিসর দেশে যোষেফের কাছে শস্য কিনতে এল, কারণ সবদেশেই দুর্ভিক্ষ প্রবল হয়েছিল।
\s5
\c 42
\ms যোষেফের ভাইদের মিসর যাত্রা
\p
\v 1 আর যাকোব দেখলেন যে, মিসর দেশে শস্য আছে, তাই যাকোব নিজের ছেলেদেরকে বললেন, "তোমরা একজন অন্যজনের মুখ দেখাদেখি কেন করছ?
\v 2 তিনি আরও বললেন, "দেখ, আমি শুনলাম, মিসরে শস্য আছে, তোমরা সেখানে যাও, আমাদের জন্য শস্য কিনে আন; তা হলে আমরা বাঁচব, মরব না।"
\v 3 পরে যোষেফের দশজন ভাই শস্য কিনতে মিসরে নেমে গেলেন।
\v 4 কিন্তু যাকোব যোষেফের ভাই বিন্যামীনকে ভাইদের সঙ্গে পাঠালেন না; কারণ তিনি বললেন, যদি এর বিপদ ঘটে।
\s5
\v 5 যারা সেখানে গিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে ইস্রায়েলের ছেলেরাও শস্য কেনার জন্য গেলেন, কারণ কনান দেশেও দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।
\v 6 সেই সময়ে যোষেফই ঐ দেশের শাসক ছিলেন, তিনিই দেশীয় সব লোকদের কাছে শস্য বিক্রি করছিলেন; অতএব যোষেফের ভাইয়েরা তাঁর কাছে গিয়ে ভূমিতে নত হয়ে প্রণাম করলেন।
\s5
\v 7 তখন যোষেফ নিজের ভাইদেরকে দেখে চিনতে পারলেন, কিন্তু তাঁদের কাছে অপরিচিতের মতো ব্যবহার করলেন ও কঠোরভাবে তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন; তিনি তাঁদেরকে বললেন, "তোমরা কোন জায়গা থেকে এসেছ?" তাঁরা বললেন, "কনান দেশ থেকে খাবার কিনতে এসেছি।"
\v 8 বাস্তবে যোষেফ নিজের ভাইদেরকে চিনতে পারলেন, কিন্তু তাঁরা তাঁকে চিনতে পারলেন না।
\s5
\v 9 আর যোষেফ তাঁদের বিষয়ে যে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন তা তাঁর মনে পড়ল এবং তিনি তাঁদেরকে বললেন, "তোমরা গুপ্তচর, দেশের অসুরক্ষিত জায়গা দেখতে এসেছ।"
\v 10 তাঁরা বললেন, "না প্রভু, আপনার এই দাসেরা খাবার কিনতে এসেছে;
\v 11 আমরা সবাই এক বাবার ছেলে; আমরা সৎলোক, আপনার এই দাসেরা চর নয়।
\s5
\v 12 কিন্তু তিনি তাঁদেরকে বললেন, "না না, তোমরা দেশের অসুরক্ষিত জায়গা দেখতে এসেছ।"
\v 13 তাঁরা বললেন, "আপনার এই দাসেরা বারো ভাই, কনান দেশে বসবাসকারী এক জনের ছেলে; দেখুন, আমাদের ছোট ভাই আজ বাবার কাছে আছে এবং এক জন নেই।"
\s5
\v 14 তখন যোষেফ তাদেরকে বললেন, "আমি যে তোমাদেরকে বললাম, "তোমরা চর, তাই বটে।
\v 15 এই দিয়ে তোমাদের পরীক্ষা করা যাবে; আমি ফরৌণের প্রাণের শপথ করে বলছি, তোমাদের ছোট ভাই এখানে না এলে তোমরা এখান থেকে বের হতে পারবে না।
\v 16 তোমাদের এক জনকে পাঠিয়ে তোমাদের সেই ভাইকে আন, তোমরা বন্দী থাক; এইভাবে তোমাদের কথার পরীক্ষা হবে, তোমরা সত্যবাদী কি না, তা জানা যাবে; অথবা আমি ফরৌনের প্রাণের শপথ করে বলছি, "তোমরা অবশ্যই চর।"
\v 17 পরে তিনি তাঁদেরকে তিন দিন কারাগারে বন্দী রাখলেন।
\s5
\v 18 পরে তৃতীয় দিনে যোষেফ তাঁদেরকে বললেন, "এই কাজ কর, তাতে বাঁচবে; আমি ঈশ্বরকে ভয় করি।
\v 19 তোমরা যদি সৎলোক হও, তবে তোমাদের এক ভাই তোমাদের এই কারাগারে বন্দী থাকুক; তোমরা নিজের নিজের গৃহের দুর্ভিক্ষের জন্য শস্য নিয়ে যাও;
\v 20 পরে তোমাদের ছোট ভাইকে আমার কাছে এন; এইভাবে তোমাদের কথা প্রমাণ হলে তোমার মারা যাবে না।" তাঁরা তাই করলেন।
\s5
\v 21 আর তাঁরা পরস্পর বললেন, "নিশ্চয়ই আমরা নিজেদের ভাইয়ের বিষয়ে অপরাধী, কারণ সে আমাদের কাছে অনুরোধ করলে আমরা তার প্রাণের কষ্ট দেখেও তাঁ শুনিনি; এই জন্য আমাদের উপরে এই সঙ্কট উপস্থিত হয়েছে।"
\v 22 তখন রুবেন উত্তর করে তাঁদেরকে বললেন, "আমি না তোমাদেরকে বলেছিলাম, ছেলেটির বিরুদ্ধে পাপ কর না? কিন্তু তোমার তা শোননি; দেখ, এখন তার রক্তেরও হিসাব দিতে হচ্ছে।"
\s5
\v 23 কিন্তু যোষেফ যে তাঁদের এই কথা বুঝলেন, এটা তাঁরা জানতে পারলেন না, কারণ দুটো ভাষার মাধ্যমে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হচ্ছিল।
\v 24 তখন তিনি তাঁদের কাছ থেকে সরে গিয়ে কাঁদলেন; পরে ফিরে এসে তাঁদের সঙ্গে কথা বললেন ও তাঁদের মধ্যে শিমিয়োনকে ধরে তাঁদের সামনেই বাঁধলেন।
\v 25 পরে যোষেফ তাঁদের সব থলেতে শস্য ভরতে প্রত্যেক জনের থলে টাকা ফিরিয়ে দিতে ও তাঁদেরকে যাত্রা পথের খাবার দিতে আজ্ঞা দিলেন; আর তাঁদের জন্য সেরকম করা হল।
\s5
\v 26 পরে তাঁরা নিজের নিজের গাধার ওপরে শস্য চাপিয়ে সেখান থেকে চলে গেলেন।
\v 27 কিন্তু সরাইখানায় যখন এক জন নিজের গাধাকে খাবার দিতে থলে খুললেন, তখন নিজের টাকা দেখলেন, আর দেখ, থলের মুখেই টাকা।
\v 28 তাতে তিনি ভাইদের বললেন, "আমার টাকা ফিরেছে; দেখ, আমার থলেতেই আছে। তখন তাঁদের প্রাণ উড়ে গেল ও সবাই ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে বললেন, "ঈশ্বর আমাদের প্রতি এ কি করলেন?"
\s5
\v 29 পরে তাঁরা কনান দেশে নিজেদের বাবা যাকোবের কাছে উপস্থিত হলেন। ও তাঁদের প্রতি যা যা ঘটেছিল, সে সব তাঁকে জানালেন।
\v 30 বললেন, "যে ব্যক্তি সেই দেশের শাসক," তিনি আমাদেরকে কঠোর কথা বললেন, আর দেশ অনুসন্ধানকারী চর মনে করলেন।
\v 31 আমরা তাঁকে বললাম, "আমরা সৎ লোক, চর নই;
\v 32 আমরা বারো ভাই, সবাই এক বাবার ছেলে; কিন্তু একজন নেই এবং ছোটটি আজ কনান দেশে বাবার কাছে আছে।
\s5
\v 33 তখন সেই ব্যক্তি, সেই দেশের শাসক আমাদেরকে বললেন, "এতেই জানতে পারব যে, তোমরা সৎলোক; তোমাদের এক ভাইকে আমার কাছে রেখে তোমাদের গৃহের দুর্ভিক্ষের জন্য শস্য নিয়ে যাও।
\v 34 পরে তোমাদের ছোট ভাইকে আমার কাছে এন, তাতে বুঝতে পারব যে, তোমরা চর না, তোমরা সৎলোক; আর আমি তোমাদের ভাইকে তোমাদের কাছে দেব এবং তোমরা দেশে বাণিজ্য করতে পারবে।
\s5
\v 35 পরে তাঁরা থলে থেকে শস্য ঢাললে দেখ, প্রত্যেক জন নিজের নিজের থলেতে নিজের নিজের টাকার গোছ পেলেন। তখন সেই সব টাকার গোছ দেখে তাঁরা ও তাঁদের বাবা ভয় পেলেন।
\v 36 আর তাঁদের বাবা যাকোব বললেন, "তোমরা আমাকে পুত্রহীন করেছ; যোষেফ নেই, শিমিয়ন নেই, আবার বিন্যামীনকেও নিয়ে যেতে চাইছ; এই সবই আমার বিরুদ্ধে।
\s5
\v 37 তখন রুবেন তাঁর বাবাকে বললেন, "আমি যদি তোমার কাছে তাঁকে না আনি, তবে আমার দুই ছেলেকে হত্যা কর; আমার হাতে তাঁকে সমর্পণ কর; আমি তোমার কাছে তাঁকে আবার এনে দেব।"
\v 38 তখন তিনি বললেন, "আমার ছেলে তোমাদের সঙ্গে যাবে না, কারণ তার ভাই মারা গিয়েছে, সে একা আছে; তোমরা যে পথে যাবে, সেই পথে যদি এর কোনো বিপদ ঘটে, তবে শোকে এই পাকা চুলে আমাকে পাতালে নামিয়ে দেবে।"
\s5
\c 43
\ms যোষেফের ভায়েরা দ্বিতীয় বার মিসরে যান। যোষেফ নিজের পরিচয় দেন।
\p
\v 1 তখন দেশে খুব দুর্ভিক্ষ ছিল।
\v 2 আর তাঁরা মিসর থেকে যে শস্য এনেছিলেন, সে সমস্ত খাওয়া হয়ে গেলে তাঁদের বাবা তাঁদেরকে বললেন, "তোমরা আবার যাও, আমাদের জন্য কিছু খাবার কিনে আন।"
\s5
\v 3 তখন যিহূদা তাঁকে বললেন, "সেই ব্যক্তি দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করে আমাদেরকে বলেছেন, তোমাদের ভাই তোমাদের সঙ্গে না এলে তোমরা আমার মুখ দেখতে পাবে না।
\v 4 যদি তুমি আমাদের সঙ্গে আমাদের ভাইকে পাঠাও, তবে আমরা গিয়ে তোমার জন্য খাবার কিনে আনব।
\v 5 কিন্তু যদি না পাঠাও, তবে যাব না;" কারণ সে ব্যক্তি আমাদেরকে বলেছেন, "তোমাদের ভাই তোমাদের সঙ্গে না আসলে তোমরা আমার মুখ দেখতে পাবে না।"
\s5
\v 6 তখন ইস্রায়েল বললেন, "আমার সঙ্গে এমন খারাপ ব্যবহার কেন করেছ? ঐ ব্যক্তিকে কেন বলেছ যে, তোমাদের আর এক ভাই আছে?"
\v 7 তাঁরা বললেন, "তিনি আমাদের বিষয়ে ও আমাদের বংশের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে জিজ্ঞাসা করলেন, বললেন, "তোমাদের বাবা কি এখনও জীবিত আছেন? তোমাদের কি আরো ভাই আছে?" তাতে আমরা সেই কথা অনুসারে উত্তর করেছিলাম। আমরা কিভাবে জানব যে, তিনি বলবেন, "তোমাদের ভাইকে এখানে আন?"
\s5
\v 8 যিহূদা নিজের বাবা ইস্রায়েলকে আরও বললেন, "বালকটিকে আমার সঙ্গে পাঠিয়ে দাও; আমরা উঠে চলে যাই, তাতে তুমি ও আমাদের বালকেরা ও আমরা বাঁচব; কেউ মরব না।
\v 9 আমিই তার জামিন হলাম, আমারই হাত থেকে তাকে নিও, আমি যদি তোমার কাছে তাকে না আনি, তোমার সামনে তাকে উপস্থিত না করি, তবে আমি যাবজ্জীবন তোমার কাছে অপরাধী থাকব।
\v 10 এত দেরী না করলে আমরা এর মধ্যে দ্বিতীয় বার ফিরে আসতে পারতাম।"
\s5
\v 11 তখন তাঁদের বাবা ইস্রায়েল তাঁদেরকে বললেন, "যদি তাই হয়, তবে এক কাজ কর; তোমরা নিজের নিজের পাত্রে এই দেশের সেরা জিনিস, গুগগুলু, মধু, সুগন্ধি জিনিস, গন্ধরস, পেস্তা ও বাদাম কিছু কিছু নিয়ে গিয়ে সেই ব্যক্তিকে উপহার দাও।
\v 12 আর নিজের নিজের হাতে দ্বিগুণ টাকা নাও এবং তোমাদের থলির মুখে যে টাকা ফিরে এসেছে তাও হাতে করে আবার নিয়ে যাও কি জানি বা ভুল হয়েছিল
\s5
\v 13 আর তোমাদের ভাইকে নাও, ওঠ, আবার সেই ব্যক্তির কাছে যাও।
\v 14 সর্বশক্তিমান ঈশ্বর তোমাদেরকে সেই ব্যক্তির কাছে করুণার পাত্র করুন, যেন তিনি তোমাদের অন্য ভাইকে ও বিন্যামীনকে ছেড়ে দেন। আর যদি আমাকে পুত্রহীন হতে হয়, তবে পুত্রহীন হলাম।"
\v 15 তখন তারা সেই উপহারের জিনিস নিলেন, আর হাতে দ্বিগুণ টাকা ও বিন্যামীনকে নিয়ে যাত্রা করলেন এবং মিসরে গিয়ে যোষেফের সামনে দাঁড়ালেন।
\s5
\v 16 যোষেফ তাদের সঙ্গে বিন্যামীনকে দেখে নিজের বাড়ির পরিচারককে বললেন, "এই কজন লোককে বাড়ির ভিতরে নিয়ে যাও, আর পশু মেরে খাবার তৈরী কর; কারণ এরা দুপুরে আমার সঙ্গে খাবে।
\v 17 সেই ব্যক্তিকে, যোষেফ যেমন বললেন, সেরকম করল, তাদেরকে যোষেফের বাড়িতে নিয়ে গেল।
\s5
\v 18 কিন্তু যোষেফের বাড়িতে উপস্থিত হওয়াতে তাঁরা ভয় পেলেন ও পরস্পর বললেন, "আগে আমাদের থলিতে যে টাকা ফিরে গিয়েছিল, তারই জন্য ইনি আমাদেরকে এখানে নিয়ে এসেছেন; এখন আমাদের ওপরে পড়ে আক্রমণ করবেন ও আমাদের গাধা নিয়ে আমাদেরকে দাস করে রাখবেন।"
\v 19 অতএব তাঁরা যোষেফের বাড়ির পরিচালকের কাছে গিয়ে বাড়ির দরজায় তার সঙ্গে কথা বললেন,
\v 20 "মহাশয়, আমারা আগে খাবার কিনতে এসেছিলাম;
\s5
\v 21 পরে ভাড়া নেওয়া জায়গায় গিয়ে নিজের নিজের থলে খুললাম, আর দেখুন, প্রত্যেক জনের থলের মুখে তার টাকা, যেমন আমাদের আনা টাকা আছে; তা আমরা আবার হাতে করে এনেছি;
\v 22 এবং খাবার কেনার জন্য আরো টাকা এনেছি; আমাদের সেই টাকা আমাদের থলেতে কে রেখেছিল, তা আমরা জানি না।"
\v 23 সেই ব্যক্তি বলল, "তোমাদের মঙ্গল হোক, ভয় কর না; তোমাদের ঈশ্বর, তোমাদের পৈতৃক ঈশ্বর তোমাদের থলেতে তোমাদেরকে গুপ্ত ধন দিয়েছেন; আমি তোমাদের টাকা পেয়েছি।" পরে সে শিমিয়োনকে তাঁদের কাছে আনল।
\s5
\v 24 আর সে তাঁদেরকে যোষেফের বাড়ির ভিতরে নিয়ে গিয়ে জল দিল, তাতে তাঁরা পা ধুলেন এবং সে তাঁদের গাধাগুলিকে খাবার দিল।
\v 25 আর দুপুরে যোষেফ আসবেন বলে তাঁরা উপহার সাজালেন, কারণ তাঁরা শুনেছিলেন যে, সেখানে তাঁদেরকে খাবার খেতে হবে।
\s5
\v 26 পরে যোষেফ বাড়ি ফিরে এলে তাঁরা হাতের ওপরে রাখা উপহার ঘরের মধ্যে তাঁর কাছে আনলেন, ও তাঁর সামনে মাটিতে নত হলেন।
\v 27 তখন তিনি ভালো-মন্দ জিজ্ঞাসা করে তাঁদেরকে বললেন, "তোমাদের যে বৃদ্ধ বাবার কথা বলেছিলে, তিনি ভালো তো? তিনি কি এখনও জীবিত আছেন?"
\s5
\v 28 তাঁরা বললেন, "আপনার দাস আমাদের বাবা ভালো আছেন, তিনি এখনও জীবিত আছেন। পরে তাঁরা উপুড় হয়ে প্রণাম করলেন।
\v 29 তখন যোষেফ চোখ তুলে নিজের ভাই বিন্যামীনকে, নিজের ভাইকে দেখে বললেন, "তোমাদের যে ছোট ভাইয়ের কথা আমাকে বলেছিলে, সে কি এই?" আর তিনি বললেন, "বৎস, ঈশ্বর তোমার প্রতি অনুগ্রহ করুন।"
\s5
\v 30 তখন যোষেফ তাড়াতাড়ি করলেন, কারণ তাঁর ভাইয়ের জন্য তাঁর প্রাণ কাঁদছিল, তাই তিনি কাঁদবার জায়গা খুঁজলেন, আর নিজের ঘরে প্রবেশ করে সেখানে কাঁদলেন।
\v 31 পরে তিনি মুখ ধুয়ে বাইরে আসলেন ও নিজেকে সামলে খাবার পরিবেশন করতে আদেশ দিলেন।
\s5
\v 32 তখন তাঁর জন্য আলাদা ও তাঁর ভাইদের জন্য আলাদা এবং তাঁর সঙ্গে ভোজনকারী মিসরীয়দের জন্য আলাদা পরিবেশন করা হল, কারণ ইব্রীয়দের সঙ্গে মিসরীয়েরা খাবার খায় না; কারণ তা মিসরীয়দের ঘৃণার কাজ।
\v 33 আর তাঁরা যোষেফের সামনে বড় বড়র জায়গায় ও ছোট ছোটর জায়গায় বসলেন; তখন তাঁরা পরস্পর আশ্চর্য্য বলে মনে করলেন।
\v 34 আর তিনি নিজের সামনে থেকে খাবারের অংশ তুলে তাঁদেরকে পরিবেশন করালেন; কিন্তু সবার অংশ থেকে বিন্যামীনের অংশ পাঁচ গুণ বেশি ছিল। পরে তাঁরা পান করলেন ও তাঁর সঙ্গে আনন্দিত হলেন।
\s5
\c 44
\p
\v 1 আর যোষেফ বাড়ির পরিচালককে আজ্ঞা করলেন, এই লোকদের থলেতে যত শস্য ধরে, ভরে দাও এবং প্রতিজনের টাকা তার থলের মুখে রাখ।
\v 2 আর কনিষ্ঠের থলের মুখে তার শস্য কেনার টাকার সঙ্গে আমার বাটি অর্থাৎ রুপোর বাটি রাখ। তখন সে যোষেফের বলা কথানুসারে কাজ করল।
\s5
\v 3 আর সকাল হওয়ামাত্র তাঁরা গাধাদের সঙ্গে বিদায় পেলেন।
\v 4 তাঁরা নগর থেকে বের হয়ে অনেক দূরে যেতে না যেতে যোষেফ নিজের বাড়ির পরিচালককে বললেন, "ওঠ, ঐ লোকদের পিছনে দৌড়িয়ে গিয়ে তাদের সঙ্গ ধরে বল তোমরা উপকারের পরিবর্তে কেন অপকার করলে?
\v 5 আমার প্রভু যাতে পান করেন ও যার মাধ্যমে গণনা করেন, এ কি সেই বাটি না? এই কাজ করায় তোমরা দোষ করেছ।"
\s5
\v 6 পরে সে তাদেরকে নাগালে পেয়ে সেইকথা বলল।
\v 7 তাঁরা বললেন, "মহাশয়, কেন এমন কথা বললেন? আপনার দাসেরা যে এমন কাজ করবে, তা দূরে থাকুক।
\s5
\v 8 দেখুন, আমরা নিজের নিজের থলের মুখে যে টাকা পেয়েছিলাম, তা কনান দেশ থেকে আবার আপনার কাছে এনেছি; তবে আমরা কি কোনো মতে আপনার প্রভুর গৃহ থেকে রুপো বা সোনা চুরি করব?
\v 9 আপনার দাসদের মধ্যে যার কাছে তা পাওয়া যায়, সে মরুক, এবং আমরাও প্রভুর দাস হব।
\v 10 সে বলল, "ভাল, এক্ষণে তোমাদের কথানুসারেই হোক; যার কাছে তা পাওয়া যাবে, সে আমার দাস হবে, কিন্ত আর সবাই নির্দোষ হবে।
\s5
\v 11 তখন তাঁরা তাড়াতাড়ি করে নিজেদের থলিগুলি মাটিতে নামিয়ে প্রত্যেকে নিজের নিজের থলে খুললেন।
\v 12 আর সে বড় থেকে আরম্ভ করে ছোট পর্যন্ত খুঁজল; আর বিন্যামীনের থলেতে সেই বাটি পাওয়া গেল।
\v 13 তখন তাঁরা নিজের নিজের পোশাক ছিঁড়লেন ও নিজের নিজের গাধায় থলে চাপিয়ে নগরে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 14 পরে যিহূদা ও তাঁর ভাইরা যোষেফের বাড়িতে আসলেন; তিনি তখনও সেখানে ছিলেন; আর তাঁরা তাঁর আগে মাটিতে পড়লেন।
\v 15 তখন যোষেফ তাঁদেরকে বললেন, "তোমরা এ কেমন কাজ করলে? আমার মত পুরুষ অবশ্য গণনা করতে পারে, এটা কি তোমরা জান না?
\s5
\v 16 যিহূদা বললেন, "আমরা প্রভুর কাছে কি উত্তর দেব? কি কথা বলব? কিসেই বা নিজেদেরকে নির্দোষ দেখাব? ঈশ্বর আপনার দাসদের অপরাধ প্রকাশ করেছেন, দেখুন, আমরা ও যার কাছে বাটি পাওয়া গিয়েছে, সবাই প্রভুর দাস হলাম।"
\v 17 যোষেফ বললেন, "এমন কাজ আমার থেকে দূরে থাকুক; যার কাছে বাটি পাওয়া গিয়েছে, সেই আমার দাস হবে, কিন্তু তোমরা ভালোভাবে বাবার কাছে ফিরে যাও।
\s5
\v 18 তখন যিহূদা কাছে গিয়ে বললেন, "হে প্রভু, অনুরোধ করি, আপনার দাসকে প্রভুর কানে একটি কথা বলতে অনুমতি দিন; এই দাসের প্রতি আপনার রাগ প্রজ্বলিত না হোক, কারন আপনি ফরৌণের সমান।
\v 19 প্রভু এই দাসদেরকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, "তোমাদের বাবা কি ভাই আছে?"
\s5
\v 20 আমরা প্রভুকে উত্তর করেছিলাম, "আমাদের বৃদ্ধ বাবা আছেন এবং তাঁর বৃদ্ধ অবস্থায় এক ছোট ছেলে আছে; তার ভাই মারা গিয়েছে; সেই একমাত্র তার মায়ের অবশিষ্ট ছেলে এবং তার বাবা তাকে ভালবাসেন।
\v 21 পরে আপনি এই দাসদেরকে বলেছিলেন, "তোমরা আমার কাছে তাকে আন, আমি তাকে স্বচক্ষে দেখব।"
\v 22 তখন আমরা প্রভুকে বলেছিলাম, "সেই যুবক বাবাকে ছেড়ে আসতে পারবে না, সে বাবাকে ছেড়ে আসলে বাবা মারা যাবেন।
\s5
\v 23 তাতে আপনি এই দাসদেরকে বলেছিলেন, সেই ছোট ভাইটি তোমাদের সঙ্গে না আসলে তোমরা আমার মুখ আর দেখতে পাবে না।
\v 24 আমরা আপনার দাস যে আমার বাবা, তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে প্রভুর সেই সব কথা বললাম।
\v 25 পরে আমাদের বাবা বললেন, "তোমরা আবার যাও, আমাদের জন্য কিছু খাবার কিনে আন।"
\v 26 আমরা বললাম, "যেতে পারব না; যদি ছোট ভাই আমাদের সঙ্গে থাকে, তবে যাই; কারণ ছোট ভাইটি সঙ্গে না থাকলে আমরা সেই ব্যক্তির মুখ দেখতে পাব না।
\s5
\v 27 তাতে আপনার দাস আমার বাবা বললেন, "তোমরা জান, আমার সেই স্ত্রী থেকে দুটি মাত্র সন্তান জন্মায়।
\v 28 তাদের মধ্যে এক জন আমার কাছ থেকে চলে গেল, আর আমি বললাম, "সে নিশ্চয় খণ্ড খণ্ড হয়েছে এবং সেই থেকে আমি তাঁকে আর দেখতে পাইনি।
\v 29 এখন আমার কাছ থেকে একেও নিয়ে গেলে যদি এর কোনো বিপদ ঘটে, তবে তোমরা শোকে এই পাকা চুলে আমাকে পাতালে নামিয়ে দেবে।
\s5
\v 30 অতএব আপনার দাস যে আমার বাবা, আমি তাঁর কাছে উপস্থিত হলে আমাদের সঙ্গে যদি এই যুবক না থাকে,
\v 31 তবে এই যুবকের প্রাণে তাঁর প্রাণ বাঁধা আছে বলে, যুবকটি নেই দেখলে তিনি মারা পড়বেন; এইভাবে আপনার এই দাসেরা শোকে পাকা চুলে আপনার দাস আমাদের বাবাকে পাতালে নামিয়ে দেবে।
\v 32 আবার আপনার দাস আমি বাবার কাছে এই যুবকটির জামিন হয়ে বলেছিলাম, আমি যদি তাকে তোমার কাছে না আনি, যাবজ্জীবন বাবার কাছে অপরাধী থাকব।
\s5
\v 33 অতএব অনুরোধ করি, প্রভুর কাছে এই যুবকটির পরিবর্তে আপনার দাস আমি প্রভুর দাস হয়ে থাকি, কিন্তু এই যুবককে আপনি তাঁর ভাইদের সঙ্গে যেতে দিন।
\v 34 কারণ এই যুবকটি আমার সঙ্গে না থাকলে আমি কিভাবে বাবার কাছে যেতে পারি? যদি বাবার যে বিপদ ঘটে, তাই আমাকে দেখতে হয়।
\s5
\c 45
\p
\v 1 তখন যোষেফ নিজের কাছে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের সামনে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেন না; তিনি উচ্চৈঃস্বরে বললেন, "আমার সামনে থেকে সব লোককে বের কর।" তাতে কেউ তাঁর কাছে দাঁড়াল না, আর তখনই যোষেফ ভাইদের কাছে নিজের পরিচয় দিতে লাগলেন।
\v 2 তিনি উচ্চৈঃস্বরে কাঁদলেন; মিসরীয়েরা তা শুনতে পেল ও ফরৌণের গৃহে অবস্থিত লোকেরাও শুনতে পেল।
\v 3 পরে যোষেফ তাঁর ভাইদের বললেন, "আমি যোষেফ; আমার বাবা কি এখনও জীবিত আছেন?" এতে তাঁর ভাইরা তাঁর সামনে বিস্মিত হয়ে পড়লেন, উত্তর করতে পারলেন না।
\s5
\v 4 পরে যোষেফ নিজের ভাইদের বললেন, "অনুরোধ করি, আমার কাছে এস।" তাঁরা কাছে গেলেন। তিনি বললেন, "আমি যোষেফ, তোমাদের ভাই, যাকে তোমরা মিসরগামীদের কাছে বিক্রি করেছিলে।
\v 5 কিন্তু তোমরা আমাকে এই জায়গায় বিক্রি করেছ বলে এখন দুঃখিত কি বিরক্ত হয়ও না; কারণ প্রাণ রক্ষা করবার জন্যই ঈশ্বর তোমাদের আগে আমাকে পাঠিয়েছেন।
\v 6 কারণ দুই বছর ধরে দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছে; আরও পাঁচ বছর পর্যন্ত চাষ কি ফসল হবে না।
\s5
\v 7 আর ঈশ্বর পৃথিবীতে তোমাদের বংশ রক্ষা ও মহৎ উদ্ধারের দ্বারা তোমাদেরকে বাঁচাতে তোমাদের আগে আমাকে পাঠিয়েছেন।
\v 8 অতএব তোমরাই আমাকে এই জায়গায় পাঠিয়েছ, তা নয়, ঈশ্বর পাঠিয়েছেন এবং আমাকে ফরৌণের পিতৃস্থানীয়, তাঁর সমস্ত বাড়ির প্রভু ও সমস্ত মিসর দেশের ওপরে শাসনকর্তা করেছেন।
\s5
\v 9 তোমরা তাড়াতাড়ি করে আমার বাবার কাছে যাও, তাঁকে বল, তোমার ছেলে যোষেফ এরকম বলল, ঈশ্বর আমাকে সমস্ত মিসর দেশের কর্তা করেছেন; তুমি আমার কাছে চলে এস, দেরী কোরো না।
\v 10 তুমি ছেলে ও নাতিদের ও গরু ও ভেড়া সব কিছুর সঙ্গে গোশন প্রদেশে বাস করবে; তুমি আমার কাছেই থাকবে।
\v 11 সেই জায়গায় আমি তোমাকে প্রতিপালন করব, কারণ আরও পাঁচ বছর দুর্ভিক্ষ থাকবে; যদি তোমার ও তোমার পরিজনের ও তোমার সকল লোকদের অভাব হয়।
\s5
\v 12 আর দেখ, তোমরা ও আমার ভাই বিন্যামীন সরাসরি দেখছ যে, আমি নিজ মুখে তোমাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলছি।
\v 13 অতএব এই মিসর দেশে আমার প্রতাপ ও তোমরা যা যা দেখেছ, সে সব আমার বাবাকে জানাবে এবং তাঁকে তাড়াতাড়ি এই জায়গায় আনবে।
\s5
\v 14 পরে যোষেফ নিজের ভাই বিন্যামীনের গলা ধরে কাঁদলেন এবং বিন্যামীনও তাঁর গলা ধরে কাঁদলেন।
\v 15 আর যোষেফ অন্য সব ভাইকেও চুম্বন করলেন ও তাদের গলা ধরে কাঁদলেন; তার পরে তাঁর ভাইরা তাঁর সঙ্গে আলাপ করতে লাগলেন।
\s5
\v 16 আর যোষেফের ভাইরা এসেছে, ফরৌণের বাড়িতে এই কথা উপস্থিত হলে ফরৌণ ও তাঁর দাসরা সবাই সন্তুষ্ট হলেন।
\v 17 আর ফরৌণ যোষেফকে বললেন, "তুমি তোমার ভাইদের বল, তোমরা এই কাজ কর; তোমাদের পশুদের পিঠে শস্য চাপিয়ে কনান দেশে যাও এবং
\v 18 তোমাদের বাবাকে ও নিজের নিজের পরিবারকে আমার কাছে নিয়ে এস; আমি তোমাদেরকে মিসর দেশের ভালো জিনিস দেব, আর তোমরা দেশের বেশি অংশ ভোগ করবে।
\s5
\v 19 এখন তোমার প্রতি আমার আদেশ এই, তোমরা এই কাজ কর, তোমরা নিজের নিজের ছেলেমেয়েদের ও স্ত্রীদের জন্য মিসর দেশ থেকে মালবাহী গাড়ি নিয়ে গিয়ে তাদেরকে ও নিজেদের বাবাকে নিয়ে এস;
\v 20 আর নিজের নিজের দ্রব্য সামগ্রীর মমতা কোরো না, কারণ সমস্ত মিসর দেশের ভালো জিনিস তোমাদেরই।"
\s5
\v 21 তখন ইস্রায়েলের ছেলেরা তাই করলেন এবং যোষেফ ফরৌণের আজ্ঞানুসারে তাদেরকে মালবাহী গাড়ি দিলেন এবং যাত্রা পথের জিনিসও দিলেন;
\v 22 তিনি প্রত্যেক জনকে এক এক জোড়া বস্ত্র দিলেন, কিন্তু বিন্যামীনকে তিনশো রুপোর মুদ্রা ও পাঁচ জোড়া বস্ত্র দিলেন।
\v 23 আর বাবার জন্য এই সব জিনিস পাঠালেন, দশ গাধাতে চাপিয়ে মিসরের ভালো জিনিস এবং বাবার যাত্রাপথের জন্য দশ গাধাতে চাপিয়ে শস্য ও রুটি প্রভৃতি খাবার।
\s5
\v 24 এইভাবে তিনি নিজের ভাইদেরকে বিদায় করলে তাঁরা চলে গেলেন; তিনি তাঁদেরকে বলে দিলেন, "পথে ঝগড়া কর না।"
\v 25 পরে তাঁরা মিসর থেকে যাত্রা করে কনান দেশে তাদের বাবা যাকোবের কাছে উপস্থিত হলেন
\v 26 ও তাকে বললেন যোষেফ এখনও জীবিত আছে, আবার সমস্ত মিসর দেশের ওপরে সেই শাসনকর্তা হয়েছে, তবুও তাঁর হৃদয় বিস্মিত থাকল, কারন তাঁদের কথায় তাঁর বিশ্বাস হল না।
\s5
\v 27 কিন্তু যোষেফ তাঁদেরকে যে সব কথা বলেছিলেন, সে সকল যখন তাঁরা তাঁকে বললেন এবং তাঁকে নিয়ে যাবার জন্যে যোষেফ যে সব মালগাড়ি পাঠিয়েছিলেন, তা যখন তিনি দেখলেন, তখন তাঁদের বাবা যাকোবের আত্মা পুনর্জীবিত হয়ে উঠল।
\v 28 আর ইস্রায়েল বললেন, "এই যথেষ্ট; আমার ছেলে যোষেফ এখনও জীবিত আছে; আমি যাব ও মৃত্যুর আগে তাকে দেখব।
\s5
\c 46
\ms যাকোব সবংশে মিসরে যান।
\p
\v 1 পরে ইস্রায়েল নিজের সর্বস্বের সঙ্গে যাত্রা করে বের-শেবাতে আসলেন এবং নিজের বাবা ইসহাকের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদান করলেন।
\v 2 পরে ঈশ্বর রাতে ইস্রায়েলকে দর্শন দিয়ে বললেন, "হে যাকোব, হে যাকোব।" তিনি উত্তর করলেন, "দেখ, এই আমি।"
\v 3 তখন তিনি বললেন, "আমি ঈশ্বর, তোমার বাবার ঈশ্বর; তুমি মিসরে যেতে ভয় কোরো না, কারণ আমি সেই জায়গায় তোমাকে বড় জাতি করব।
\v 4 আমিই তোমার সঙ্গে মিসরে যাব এবং আমিই সেখান থেকে তোমাকে ফিরিয়েও আনব, আর যোষেফ তোমার চোখে হাত দেবে।
\s5
\v 5 পরে যাকোব বের-শেবা থেকে যাত্রা করলেন। ইস্রায়েলের ছেলেরা নিজেদের বাবা যাকোবকে এবং নিজের নিজের ছেলেমেয়ে ও স্ত্রীদেরকে সেইসব মালবাহী গাড়িতে করে নিয়ে গেলেন, যা ফরৌণ তাদের বহনের জন্য পাঠিয়েছিলেন।
\v 6 পরে তাঁরা, যাকোব ও তাঁর সমস্ত বংশ, নিজেদের পশুরা ও কনান দেশে উপার্জিত সব সম্পত্তি নিয়ে মিসর দেশে পৌঁছালেন।
\v 7 এইভাবে যাকোব নিজের ছেলে নাতি, মেয়ে নাতনি প্রভৃতি সমস্ত বংশকে সঙ্গে করে মিসরে নিয়ে গেলেন।
\s5
\v 8 ইস্রায়েলীয়রা, যাকোব ও তাঁর ছেলেমেয়েরা, যাঁরা মিসরে গেলেন, তাঁদের নাম। যাকোবের বড় ছেলে রুবেণ।
\v 9 রুবেণের ছেলে হনোক, পললু, হিষ্রোণ ও কর্মি।
\v 10 শিমিয়োনের ছেলে যিমূয়েল, যামীন, ওহদ, যাখীন, সোহর ও তার কনানীয়া স্ত্রীজাত ছেলে শৌল।
\v 11 লেবির ছেলে গের্শোন, কহাৎ ও মরারি।
\s5
\v 12 যিহূদার ছেলে এর, ওনন, শেলা, পেরস ও সেরহ। কিন্তু এর ও ওনন কনান দেশে মারা গিয়েছিল এবং পেরসের ছেলে হিষ্রোণ ও হামূল।
\v 13 ইষাখরের ছেলে তোলয়, পূয়, যোব ও শিম্রোণ।
\v 14 আর সবূলূনের ছেলে সেরদ, এলোন ও যহলেল।
\v 15 তারা লেয়ার সন্তান; তিনি পদ্দন-অরামে যাকোবের জন্য এদেরকে ও তার মেয়ে দীণাকে প্রসব করেন। যাকোবের এই ছেলে মেয়েরা সবশুদ্ধ তেত্রিশ জন।
\s5
\v 16 আর গাদের ছেলে সিফিয়োন, হগি, শুনী, ইষবোন, এরি, অরোদী ও অরেলী।
\v 17 আশেরের ছেলে যিম্না, যিশবা, যিশবি, বরিয় ও তাদের বোন সেরহ।
\v 18 বরিয়ের ছেলে হেবর ও মল্কীয়েল। এরা সেই সিল্পার সন্তান, যাকে লাবন নিজের মেয়ে লেয়াকে দিয়েছিলেন; সে যাকোবের জন্য এদেরকে প্রসব করেছিলেন। এরা ষোল জন
\s5
\v 19 আর যাকোবের স্ত্রী রাহেলের ছেলে যোষেফ ও বিন্যামীন।
\v 20 যোষেফের ছেলে মনঃশি ও ইফ্রয়িম মিসর দেশে জন্মেছিল; ওন নগরের পোটীফেরঃ যাজকের মেয়ে আসনৎ তাঁর জন্য তাদেরকে প্রসব করেছিলেন।
\v 21 বিন্যামীনের ছেলে বেলা, বেখর, অসবেল, গেরা, নামন, এহী, রোশ, মুপপীম, হুপপীম ও অর্দ।
\v 22 এই চৌদ্দ জন যাকোবের থেকে জন্মানো রাহেলের ছেলে।
\s5
\v 23 আর দানের ছেলে হুশীম।
\v 24 নপ্তালির ছেলে যহসিয়েল, গূনি, যেৎসর ও শিল্লেম।
\v 25 এরা সেই বিলহার ছেলে, যাকে লাবন নিজের মেয়ে রাহেলকে দিয়েছিলেন। সে যাকোবের জন্য এদেরকে প্রসব করেছিল; এরা সবশুদ্ধ সাত জন।
\s5
\v 26 যাকোবের দেহ থেকে সৃষ্টি যে লোকেরা তাঁর সঙ্গে মিসরে উপস্থিত হল, যাকোবের ছেলের স্ত্রীরা ছাড়া তারা সবশুদ্ধ ছেষট্টি জন।
\v 27 মিসরে যোষেফের যে ছেলেরা জন্মেছিল, তারা দুই জন। যাকোবের আত্মীয়েরা, যারা মিসরে গেল, তারা সবশুদ্ধ সত্তর জন।
\s5
\v 28 পরে আগে আগে গোশনের পথ দেখবার জন্যে যাকোব নিজের আগে যিহূদাকে যোষেফের কাছে পাঠালেন; আর তাঁরা গোশন প্রদেশে পৌঁছালেন।
\v 29 তখন যোষেফ নিজের রথ সাজিয়ে গোশনে তাঁর বাবা ইস্রায়েলের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন; আর তাকে দেখা দিয়ে তাঁর গলা ধরে অনেকক্ষণ কাঁদলেন।
\v 30 তখন ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, "এখন স্বচ্ছন্দে মরব, কারণ তোমার মুখ দেখতে পেলাম, তুমি এখনও জীবিত আছ।
\s5
\v 31 পরে যোষেফ নিজের ভাইদেরকে ও বাবার আত্মীয়দেরকে বললেন, "আমি গিয়ে ফরৌণকে সংবাদ দেব, তাঁকে বলব, আমার ভাইরা ও বাবার সমস্ত আত্মীয় কনান দেশ থেকে আমার কাছে এসেছেন;
\v 32 তাঁরা ভেড়াপালক, তাঁরা পশুপাল রাখেন; আর তাঁদের গরু ও ভেড়ার পাল এবং সব কিছু এনেছেন।"
\s5
\v 33 তাতে ফরৌণ তোমাদেরকে ডেকে যখন জিজ্ঞাসা করবেন, "তোমাদের ব্যবসা কি?"
\v 34 তখন তোমরা বলবে, "আপনার এই দাসরা পূর্বপুরুষদের ছেলেবেলা থেকে আজ পর্যন্ত পশুপাল রেখে আসছে;" তাতে তোমরা গোশন প্রদেশে বাস করতে পারবে; কারণ পশুপালক মাত্রেই মিসরীয়দের ঘৃণার জিনিস।
\s5
\c 47
\p
\v 1 পরে যোষেফ গিয়ে ফরৌণকে সংবাদ দিলেন, বললেন, আমার বাবা ও ভাইয়েরা নিজের নিজের গরু ও ভেড়ার পাল এবং সব কিছু কনান দেশ থেকে নিয়ে এসেছেন; আর দেখুন, তাঁরা গোশন প্রদেশে আছেন।
\v 2 আর তিনি নিজের ভাইদের মধ্যে পাঁচ জনকে নিয়ে ফরৌণের সামনে উপস্থিত করলেন।
\s5
\v 3 তাতে ফরৌণ যোষেফের ভাইদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, "তোমাদের ব্যবসায় কি?" তাঁরা ফরৌণকে বললেন, "আপনার এই দাসরা পূর্বপুরুষদের সময় থেকেই পশুপালক।
\v 4 তাঁরা ফরৌণকে আরো বললেন, "আমরা এই দেশে বাস করতে এসেছি, কারণ আপনার এই দাসদের পশুপালের চরাণী হয় না, কারণ কনান দেশে অতি ভারী দুর্ভিক্ষ হয়েছে; অতএব অনুরোধ করি, আপনার এই দাসদেরকে গোশন প্রদেশে বাস করতে দিন।"
\s5
\v 5 ফরৌণ যোষেফকে বললেন, "তোমার বাবা ও ভাইরা তোমার কাছে এসেছে;
\v 6 মিসর দেশ তোমার সামনে আছে; দেশের ভালো জায়গায় নিজের বাবা ও ভাইদেরকে বাস করাও; তারা গোশন প্রদেশে বাস করুক; আর যদি তাদের মধ্যে কাউকে কাউকেও কাজে দক্ষ লোক বলে জান, তবে তাদেরকে আমার পশুপালের পরিচারক পদে নিযুক্ত কর।
\s5
\v 7 পরে যোষেফ নিজের বাবা যাকোবকে এনে ফরৌণের সামনে উপস্থিত করলেন, আর যাকোব ফরৌণকে আশীর্ব্বাদ করলেন।
\v 8 তখন ফরৌণ যাকোবকে জিজ্ঞাসা করলেন, "আপনার কত বছর বয়স হয়েছে?"
\v 9 যাকোব ফরৌণকে বললেন, "আমার প্রবাসকালের একশো ত্রিশ বছর হয়েছে; আমার জীবনের সময় অল্প ও কষ্টকর হয়েছে এবং আমার পূর্বপুরুষদের প্রবাসকালের আয়ুর সমান হয় নি।
\v 10 পরে যাকোব ফরৌণকে আশীর্বাদ করে তাঁর সামনে থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেলেন।
\s5
\v 11 তখন যোষেফ ফরৌণের আদেশ অনুযায়ী মিসর দেশের উত্তম অঞ্চলে, রামিষেষ প্রদেশে, অধিকার দিয়ে নিজের বাবা, ও ভাইদেরকে বসিয়ে দিলেন।
\v 12 আর যোষেফ নিজের বাবা ও ভাইদেরকে এবং বাবার সমস্ত আত্মীয়দেরকে তাদের পরিবার অনুসারে খাবার দিয়ে প্রতিপালন করলেন।
\s যোষেফের মিসর দেশ শাসন।
\m
\s5
\v 13 সেই সময়ে সমস্ত দেশে খাবার ছিল না, কারণ অতি ভারী দুর্ভিক্ষ হয়েছিল, তাতে মিসর দেশ ও কনান দেশ দুর্ভিক্ষের জন্য অবসন্ন হয়ে পড়ল।
\v 14 আর মিসর দেশে ও কনান দেশে যত রুপো ছিল, লোকে তা দিয়ে শস্য কেনাতে যোষেফ সেই সমস্ত রুপো সংগ্রহ করে ফরৌণের ভাণ্ডারে আনলেন।
\s5
\v 15 মিসর দেশে ও কনান দেশে রুপো ব্যয় হয়ে গেলে মিসরীয়েরা সবাই যোষেফের কাছে এসে বলল, "আমাদেরকে খাবার দিন, আমাদের রুপো শেষ হয়ে গিয়েছে বলে আমরা কি আপনার সামনে মারা যাব?"
\v 16 যোষেফ বললেন, "তোমাদের পশু দাও; যদি রুপো শেষ হয়ে থাকে, তবে তোমাদের পশুর পরিবর্তে তোমাদেরকে খাবার দেব।
\v 17 তখন তারা যোষেফের কাছে নিজের নিজের পশু আনলে যোষেফ অশ্ব, মেষপাল, গোরুর পাল ও গাধাদের পরিবর্তে তাদেরকে খাবার দিতে লাগলেন; এইভাবে যোষেফ তাদের সমস্ত পশু নিয়ে সেই বছর খাবার দিয়ে তাদের চালিয়ে দিলেন।
\s5
\v 18 আর সেই বছর চলে গেলে দ্বিতীয় বছরে তারা তাঁর কাছে এসে বলল, "আমরা প্রভু থেকে কিছু গোপন করব না; আমাদের সমস্ত রুপো শেষ হয়ে গিয়েছে এবং পশুধনও প্রভুরই হয়েছে; এখন প্রভুর সামনে আর কিছুই বাকি নেই, শুধু আমাদের শরীর ও জমি আছে।
\v 19 আমরা নিজের নিজের ভূমির সঙ্গে নিজেদের চোখের সামনে কেন মারা যাব? আপনি খাবার দিয়ে আমাদেরকে ও আমাদের ভূমি কিনে নিন; আমরা নিজের নিজের ভূমির সঙ্গে ফরৌণের দাস হব; আর আমাদেরকে বীজ দিন, তা হলে আমরা বাঁচব, মারা যাব না, ভূমিও নষ্ট হবে না।
\s5
\v 20 তখন যোষেফ মিসরের সমস্ত ভূমি ফরৌণের জন্যে কিনলেন, কারণ দুর্ভিক্ষ তাদের অসহ্য হওয়াতে মিস্রীয়েরা প্রত্যেকে নিজের নিজের ক্ষেত্র বিক্রয় করল।
\v 21 অতএব মাটি ফরৌণের হল। আর তিনি মিসরের এক সীমা থেকে অন্য সীমা পর্যন্ত প্রজাদেরকে নগরে নগরে প্রবাস করালেন।
\v 22 তিনি কেবল যাজকদের ভূমি কিনলেন না, কারণ ফরৌণ যাজকদেরকে বৃত্তি দিতেন এবং তারা ফরৌণের দেওয়া বৃত্তি ভোগ করত; এই জন্য নিজের নিজের ভূমি বিক্রয় করল না।
\s5
\v 23 পরে যোষেফ প্রজাদেরকে বললেন, "দেখ, আমি আজ তোমাদেরকে ও তোমাদের ভূমি ফরৌণের জন্যে কিনলাম। দেখ, এই বীজ নিয়ে মাটিতে বপন কর;
\v 24 তাতে যা যা উৎপন্ন হবে, তাঁর পঞ্চমাংশ ফরৌণকে দাও, অন্য চার অংশ ক্ষেত্রের বীজের জন্যে এবং নিজেদের ও আত্মীয়দের ও শিশুদের খাদ্যের জন্যে তোমাদেরই থাকবে।
\s5
\v 25 তাতে তারা বলল, "আপনি আমাদের প্রাণ রক্ষা করলেন; আমাদের প্রতি আপনার অনুগ্রহদৃষ্টি হোক, আমরা ফরৌণের দাস হব।
\v 26 মিসরের ভূমির সম্বন্ধে যোষেফ এই ব্যবস্থা তৈরী করেন, আর এটা আজও পর্যন্ত চলছে যে, পঞ্চমাংশ ফরৌণ পাবেন; কেবল যাজকদের ভূমি ফরৌণের হয়নি।
\s5
\v 27 আর ইস্রায়েল মিসর দেশে, গোশন অঞ্চলে বাস করল, তারা সেখানে অধিকার পেয়ে ফলবন্ত ও অতি বহুবংশ হয়ে উঠল।
\s যাকোব যোষেফের দুই ছেলেকে আশীর্বাদ করেন।
\m
\v 28 মিসর দেশে যাকোব সতেরো বছর জীবিত থাকলেন; যাকোবের আয়ুর পরিমাণ একশো সাতচল্লিশ বছর হল।
\s5
\v 29 পরে ইস্রায়েলের মরণ দিন সন্নিকট হল। তখন তিনি নিজের ছেলে যোষেফকে ডেকে বললেন, "আমি যদি তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে অনুরোধ করি, তুমি আমার উরুর নীচে হাত দাও এবং আমার প্রতি সদয় ও সত্য ব্যবহার কর; মিসরে আমাকে কবর দিও না।
\v 30 আমি যখন নিজের পূর্বপুরুষদের কাছে শয়ন করব, তখন তুমি আমাকে মিসর থেকে নিয়ে গিয়ে তাঁদের কবরস্থানে কবর দিয়ো। যোষেফ বললেন, "আপনি যা বললেন, তাই করব।"
\v 31 আর যাকোব তাঁকে শপথ করতে বললে তিনি তাঁর কাছে শপথ করলেন। তখন ইস্রায়েল তাঁর বিছানার দিকে প্রণাম করলেন।
\s5
\c 48
\p
\v 1 এ সব ঘটনা হলে পর কেউ যোষেফকে বলল, "দেখুন, আপনার বাবা অসুস্থ;" তাতে তিনি নিজের দুই ছেলে মনঃশি ও ইফ্রয়িমকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন।
\v 2 তখন কেউ যাকোবকে সংবাদ দিয়ে বলল, "দেখুন, আপনার ছেলে যোষেফ এসেছেন; তাতে ইস্রায়েল নিজেকে সবল করে শয্যায় উঠে বসলেন।
\s5
\v 3 আর যাকোব যোষেফকে বললেন, "কনান দেশে, লুস নামক জায়গায়, সর্ব্বশক্তিমান ঈশ্বর আমাকে দর্শন দিয়ে আশীর্বাদ করেছিলেন
\v 4 ও বলেছিলেন, "দেখ, আমি তোমাকে ফলবান ও বহুবংশ করব, আর তোমার থেকে জাতিসমাজ সৃষ্টি করব এবং তোমার ভাবী বংশকে চিরস্থায়ী অধিকারের জন্য এই দেশ দেব।
\s5
\v 5 আর মিসরে তোমার কাছে আমার আসবার আগে তোমার যে দুই ছেলে মিসর দেশে জন্মেছে, তারা আমারই; রুবেন ও শিমিয়োনের মতো ইফ্রয়িম ও মনঃশিও আমারই হবে।
\v 6 কিন্তু তুমি এদের পরে যাদের জন্ম দিয়েছ, তোমার সেই বংশধরেরা তোমারই হবে এবং এই দুই ভাইয়ের নামে এদেরই অধিকারে আখ্যাত হবে।
\v 7 আর পদ্দন থেকে আমার আসবার সময়ে কনান দেশে রাহেল ইফ্রাথে পৌঁছাবার অল্প পথ থাকতে পথের মধ্যে আমার কাছে মারা গেলেন; তাতে আমি সেখানে, ইফ্রাথের, অর্থাৎ বৈৎলেহমের, পথের পাশে তাঁর কবর দিলাম।
\s5
\v 8 পরে ইস্রায়েল যোষেফের দুই ছেলেকে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, "এরা কে?"
\v 9 যোষেফ বাবাকে বললেন, "এরা আমার ছেলে, যাদেরকে ঈশ্বর এই দেশে আমাকে দিয়েছেন।" তখন তিনি বললেন, "অনুরোধ করি, এদেরকে আমার কাছে আন, আমি এদেরকে আশীর্বাদ করব।"
\v 10 তখন ইস্রায়েল বার্ধক্যের জন্য ক্ষীণ দৃষ্টি হওয়াতে দেখতে পেলেন না; আর তারা কাছে আসলে তিনি তাদেরকে চুম্বন ও আলিঙ্গন করলেন।
\s5
\v 11 পরে ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, "আমি ভেবেছিলাম, তোমার মুখ আর দেখতে পাব না; কিন্তু দেখ, ঈশ্বর আমাকে তোমার বংশও দেখালেন।"
\v 12 তখন যোষেফ দুই জানুর মধ্য থেকে তাদেরকে বের করলেন ও ভূমিতে মুখ দিয়ে প্রণাম করলেন।
\v 13 পরে যোষেফ দুই জনকে নিয়ে নিজের ডান হাত দিয়ে ইফ্রয়িমকে ধরে ইস্রায়েলের বামদিকে ও বাম হাত দিয়ে মনঃশিকে ধরে ইস্রায়েলের ডানদিকে তাঁর কাছে উপস্থিত করলেন।
\s5
\v 14 তখন ইস্রায়েল ডান হাত বাড়িয়ে ছোট ছেলে ইফ্রয়িমের মাথায় দিলেন এবং বাম হাত মনঃশির মাথায় রাখলেন। এ তার বিবেচনা সম্পন্ন বাহুচালন, কারণ মনঃশি প্রথমজাত।
\v 15 পরে তিনি যোষেফকে আশীর্বাদ করে বললেন, "সেই ঈশ্বর, যাঁর সামনে আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম ও ইসহাক যাতায়াত করতেন সেই ঈশ্বর, যিনি প্রথম থেকে আজ পর্যন্ত আমার পালক হয়ে আসছেন
\v 16 সেই দূত, যিনি আমাকে সমস্ত বিপদ থেকে মুক্ত করেছেন তিনিই এই ছেলে দুটিকে আশীর্বাদ করুন। এদের মাধ্যমে আমার নাম ও আমার পূর্বপুরুষ অব্রাহামের ও ইসহাকের নাম আখ্যাত হোক এবং এরা দেশের মধ্যে বহুগোষ্ঠী হোক।
\s5
\v 17 তখন ইফ্রয়িমের মাথায় বাবা ডান হাত দিয়েছেন দেখে যোষেফ অসন্তষ্ট হলেন, আর তিনি ইফ্রয়িমের মাথা থেকে মনঃশির মাথায় রাখার জন্য বাবার হাত তুলে ধরলেন।
\v 18 যোষেফ বাবাকে বললেন, "বাবা, এমন না, এই প্রথমজাত, এরই মাথায় ডান হাত দিন।"
\s5
\v 19 কিন্তু তাঁর বাবা অসম্মত হয়ে বললেন, "বৎস তা আমি জানি, আমি জানি, এও এক জাতি হবে, এবং মহানও হবে, তবুও এর ছোট ভাই এর থেকেও মহান হবে ও তার বংশ বহুগোষ্ঠী হবে।"
\v 20 সেই দিন তিনি তাঁদেরকে আশীর্বাদ করে বললেন, "ইস্রায়েল তোমার নাম করে আশীর্বাদ করবে, বলবে, ঈশ্বর তোমাকে ইফ্রয়িমের ও মনঃশির সমান করুন।" এইভাবে তিনি মনঃশি থেকে ইফ্রয়িমকে অগ্রগন্য করলেন।
\s5
\v 21 পরে ইস্রায়েল যোষেফকে বললেন, "দেখ, আমি মারা যাচ্ছি; কিন্তু ঈশ্বর তোমাদের সঙ্গে থাকবেন ও তোমাদেরকে আবার তোমাদের পূর্বপুরুষদের দেশে নিয়ে যাবেন।
\v 22 আর তোমার ভাইদের থেকে এক অংশ তোমাকে বেশী দিলাম; তা আমি নিজের তরোয়াল ও ধনুকের মাধ্যমে ইমোরীয়দের হাত থেকে নিয়েছি।
\s5
\c 49
\ms যাকোব ছেলেদেরকে আশীর্বাদ করেন।
\p
\v 1 পরে যাকোব নিজের ছেলেদেরকে ডেকে বললেন, "তোমরা একজায়গায় জড়ো হও, পরবর্তীকালে তোমাদের প্রতি যা ঘটবে, তা তোমাদেরকে বলছি।
\v 2 যাকোবের ছেলেরা, সমবেত হও, শোন, তোমাদের বাবা ইস্রায়েলের বাক্য শোন।
\s5
\v 3 রুবেন, তুমি আমার প্রথমজাত, আমার বল আমার শক্তির প্রথম ফল মহিমার প্রাধান্য ও পরাক্রমের প্রাধান্য।
\v 4 তুমি [তপ্ত] জলের মতো চঞ্চল, তোমার প্রাধান্য থাকবে না; কারণ তুমি নিজের বাবার বিছানায় গিয়েছিলে; তখন অপবিত্র কাজ করেছিলে; সে আমার বিছানায় গিয়েছিল।
\s5
\v 5 শিমিয়োন ও লেবি দুই ভাই; তাদের খড়গ দৌরাত্ম্যের অস্ত্র।
\v 6 হে আমার প্রাণ! তাঁদের সভায় যেও না; হে আমার গৌরব! তাদের সমাজে যোগ দিও না; করণ তারা রাগে নরহত্যা করল, স্বেচ্ছাচারীতায় ষাঁড়ের শিরা ছেদন করল।
\s5
\v 7 অভিশপ্ত তাদের রাগ, কারণ তা প্রচণ্ড; তাদের কোপ, কারণ তা নিষ্ঠুর; আমি তাঁদেরকে যাকোবের মধ্যে বিভাগ করব, ইস্রায়েলের মধ্যে ছিন্নভিন্ন করব।
\s5
\v 8 যিহূদা, তোমার ভায়েরা তোমারই স্তব করবে; তোমার হাত তোমার শত্রুদের ঘাড় ধরবে; তোমার বাবার ছেলেরা তোমার সামনে নত হবে।
\s5
\v 9 যিহূদা সিংহশাবক; বৎস, তুমি শিকার থেকে উঠে আসলে; সে শুয়ে পড়ল, গুঁড়ি মারল, সিংহের মতো ও সিংহীর মতো; কে তাঁকে উঠাবে?
\s5
\v 10 যিহূদা থেকে রাজদণ্ড যাবে না, তার পায়ের মধ্যে থেকে বিচারদন্ড যাবে না, যে পর্যন্ত শীলো না আসেন; জাতিরা তাঁরই আজ্ঞাবহতা স্বীকার করবে।
\s5
\v 11 সে আঙ্গুর গাছে নিজের গাধা বাঁধবে, ভালো আঙ্গুর গাছে নিজের বাচ্চা ঘোড়া বাঁধবে; সে আঙ্গুর রসে নিজের পরিচ্ছদ কেচেছে, আঙ্গুরের রক্তে নিজের কাপড় কেচেছে।
\v 12 তার চোখ আঙ্গুর রসে রক্তবর্ণ, তার দাঁত দুধে সাদা রঙের।
\s5
\v 13 সবূলূন সমুদ্র-তীরে বাস করবে, তা বন্দরের তীর হবে, সীদোন পর্যন্ত তার সীমা হবে।
\s5
\v 14 ইষাখর বলবান গাধা, সে খোঁয়াড়ের মধ্যে শয়ন করে।
\v 15 সে দেখল, বিশ্রামের জায়গা ভালো, দেখল, এই দেশ আনন্দময়, তাই ভার বহন করতে কাঁধ পেতে দিল, আর করাধীন দাস হল।
\s5
\v 16 দান নিজের প্রজাদের বিচার করবে, ইস্রায়েলের এক বংশের মতো।
\v 17 দান পথে অবস্থিত সাপ, সে মার্গে অবস্থিত বিষাক্ত সাপ, যে ঘোড়ার পায়ে দংশন করে, আর আরোহী পিছনে পড়ে যায়।
\v 18 সদাপ্রভু আমি তোমার পরিত্রাণের অপেক্ষায় আছি।
\s5
\v 19 গাদকে সৈন্যদল আঘাত করবে; কিন্তু সে তাদের পিছন দিকে আঘাত করবে।
\v 20 আশের থেকে অতি ভালো খাবার জন্মাবে; সে রাজার সুস্বাদু খাদ্য জুগিয়ে দেবে।
\v 21 নপ্তালি মুক্ত হরিণী, সে মনোহর বাক্য বলে।
\s5
\v 22 যোষেফ ফলবান গাছের শাখা, জলপ্রবাহের পাশে অবস্থিত ফলবান গাছের শাখা; তার শাখা সকল পাঁচিল অতিক্রম করে।
\v 23 ধনুকধারীরা তাকে কঠিন কষ্ট দিয়েছিল, বাণের আঘাতে তাকে উৎপীড়ন করেছিল;
\s5
\v 24 কিন্তু তার ধনুক দৃঢ় থাকল, তার হাতের বাহুযুগল বলবান থাকল, যাকোবের একবীরের হাতের মাধ্যমে, যিনি ইস্রায়েলের পালক ও শৈল, তাঁর মাধ্যমে,
\s5
\v 25 তোমার পিতার সেই ঈশ্বরের মাধ্যমে, যিনি তোমাকে সাহায্য করবেন, সেই সর্ব্বশক্তিমানের মাধ্যমে, যিনি তোমাকে আশীর্বাদ করবেন, উপরে অবস্থিত আকাশ থেকে নিঃসৃত আশীর্বাদে, অধোবিস্তীর্ণ জলধি থেকে নিঃসৃত আশীর্বাদে, স্তন ও গর্ভ থেকে নিঃসৃত আশীর্বাদে।
\s5
\v 26 আমার পূর্বপুরুষদের আশীর্বাদ অপেক্ষা তোমার বাবার আশীর্বাদ উৎকৃষ্ট। তা চিরন্তন গিরিমালার সীমা পর্যন্ত ব্যাপ্ত; তা আসবে যোষেফের মাথায়, ভাইদের থেকে পৃথককৃতের মাথার তালুতে।
\s5
\v 27 বিন্যামীন ক্ষুধার্ত নেকড়ের সমান; সকালে সে শিকার খাবে, সন্ধ্যাকালে সে লুঠের জিনিস ভাগ করবে।
\s5
\v 28 এরা সবাই ইস্রায়েলের বারো বংশ; এদের বাবা আশীর্বাদ করবার সময়ে এই কথা বললেন; এদের প্রত্যেক জনকে বিশেষ বিশেষ আশীর্বাদ করলেন।
\s যাকোবের ও যোষেফের মৃত্যু।
\m
\v 29 পরে যাকোব তাঁদেরকে আদেশ দিয়ে বললেন, আমি নিজের লোকদের কাছে সংগৃহীত হতে প্রস্তুত।
\v 30 হেতীয় ইফ্রোণের ক্ষেতে অবস্থিত গুহাতে আমার পূর্বপুরুষদের কাছে আমার কবর দিও; সেই গুহা কনান দেশে মম্রির কাছে মকপেলা ক্ষেত্রে অবস্থিত; আব্রাহাম হেতীয় ইফ্রোণের কাছে তা কবরস্থানের অধিকারের জন্য কিনেছিলেন।
\s5
\v 31 সেই জায়গায় অব্রাহামের ও তাঁর স্ত্রী সারার কবর হয়েছে, সেই জায়গায় ইসহাকের ও তাঁর স্ত্রী রিবিকার কবর হয়েছে এবং সেই স্থানে আমিও লেয়ার কবর দিয়েছি;
\v 32 সেই ক্ষেত্রে ও তাঁর মধ্যবর্ত্তী গুহা হেতের লোকদের কাছে কেনা হয়েছিল।
\v 33 যাকোব নিজের ছেলেদের প্রতি আদেশ শেষ করলে পর শয্যাতে দুই পা জড়ো করলেন ও প্রাণত্যাগ করে নিজের লোকদের কাছে ফিরে গেলেন।
\s5
\c 50
\p
\v 1 তখন যোষেফ নিজের বাবার মুখে মুখ দিয়ে কাঁদলেন ও তাকে চুম্বন করলেন।
\v 2 আর যোষেফ নিজের বাবার দেহে ক্ষয়-নিবারক দ্রব্য দিতে নিজের দাস চিকিৎসকদেরকে আদেশ করলেন, তাতে চিকিৎসকেরা ইস্রায়েলের দেহে ক্ষয়-নিবারক দ্রব্য দিল।
\v 3 তারা সেই কাজে চল্লিশ দিন কাটাল, কারণ সেই ক্ষয়-নিবারক দ্রব্য দিতে চল্লিশ দিন লাগে; আর মিসরীয়েরা তাঁর জন্যে সত্তর দিন ধরে শোক করল।
\s5
\v 4 সেই শোকের দিন চলে গেলে যোষেফ ফরৌণের আত্মীয়দেরকে বললেন, "যদি আমি আপনাদের দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে ফরৌণের কানে এই কথা বলুন,
\v 5 আমার বাবা আমাকে শপথ করিয়ে বলেছেন, দেখ, আমি যাচ্ছি, কনান দেশে আমার জন্য যে কবর খনন করেছি, তুমি আমাকে সেই কবরে রেখো। অতএব অনুরোধ করি, আমাকে যেতে দিন; আমি পিতাকে কবর দিয়ে আবার আসব।"
\v 6 ফরৌণ বললেন, "যাও, তোমার বাবা তোমাকে যে শপথ করিয়েছেন, তুমি সেই অনুসারে তাঁর কবর দাও।
\s5
\v 7 পরে যোষেফ নিজের বাবার কবর দিতে যাত্রা করলেন; আর ফরৌণের দাসরা সবাই তাঁর বাড়ির প্রাচীনরা ও মিসর দেশের প্রাচীনেরা সবাই এবং যোষেফের সব পরিবার,
\v 8 তাঁর ভাইরা ও তাঁর বাবার বংশধর তাঁর সঙ্গে গেলেন; তারা গোশন প্রদেশে শুধু তাঁদের ছেলে মেয়েরা, ভেড়ার পাল ও গোরুর পাল রেখে গেলেন।
\v 9 তাঁর সঙ্গে রথ ও অশ্বারোহীরা গেল; অতি ভারী সমারোহ হল।
\s5
\v 10 পরে তাঁরা যর্দনের পারে অবস্থিত আটদের খামারে উপস্থিত হয়ে সেখানে ভীষণ শোক করে কাঁদলেন; যোষেফ সেই জায়গায় বাবার উদ্দেশ্যে সাত দিন শোক করলেন।
\v 11 আটদের খামারে তাঁদের সেরকম শোক দেখে সেই দেশনিবাসী কনানীয়েরা বলল, "মিসরীয়দের এ অতি দারুন শোক;" এই জন্যে যর্দনপারে অবস্থিত সেই জায়গা আবেল-মিস্রয়ীম [মিসরীয়দের শোক] নামে আখ্যাত হল।
\s5
\v 12 যাকোব নিজের ছেলেদেরকে যেমন আদেশ দিয়েছিলেন, তাঁরা সেই অনুসারে তাঁর সৎকার করলেন।
\v 13 ফলে তাঁর ছেলেরা তাকে কনান দেশে নিয়ে গেলেন এবং মম্রির সামনে অবস্থিত মকপেলা ক্ষেতের মাঝখানের গুহাতে তাঁর কবর দিলেন, যা অব্রাহাম ক্ষেতসহ কবরস্থানের অধিকারের জন্য হেতীয় ইফ্রোণের কাছ থেকে কিনেছিলেন।
\v 14 বাবার কবর হলে পর যোষেফ, তাঁর ভাইরা এবং যত লোক তাঁর বাবার কবর দিতে তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন, সবাই মিসরে ফিরে আসলেন।
\s5
\v 15 আর বাবার মৃত্যু হল দেখে যোষেফের ভাইয়েরা বললেন, "হয় তো যোষেফ আমাদেরকে ঘৃণা করবে, আর আমরা তাঁর যে সব অপকার করেছি, তাঁর সম্পূর্ণ প্রতিফল আমাদেরকে দেবে।
\v 16 আর তারা যোষেফের কাছে এই কথা বলে পাঠালেন, "তোমার বাবা মৃত্যুর আগে এই আদেশ দিয়েছিলেন",
\v 17 তোমরা যোষেফকে এই কথা বল, "তোমার ভাইরা তোমার অপকার করেছে, কিন্তু অনুরোধ করি, তুমি তাদের সেই অধর্ম ও পাপ ক্ষমা কর। অতএব এখন আমরা অনুরোধ করি, তোমার বাবার ঈশ্বরের এই দাসদের অধর্ম ক্ষমা কর। তাদের এই কথায় যোষেফ কাঁদতে লাগলেন।
\s5
\v 18 পরে তার ভায়েরা নিজেরা গিয়ে তাঁর সামনে নত হয়ে বললেন, "দেখ, আমরা তোমার দাস।"
\v 19 তখন যোষেফ তাঁদেরকে বললেন, "ভয় কর না, আমি কি ঈশ্বরের প্রতিনিধি?
\v 20 তোমরা আমার বিরুদ্ধে অনিষ্ট কল্পনা করেছিলে বটে, কিন্তু ঈশ্বর তা মঙ্গলের কল্পনা করলেন; আজ যেমন দেখছ, এইভাবে অনেক লোকের প্রাণ রক্ষা করাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল।
\v 21 তোমরা এখন ভীত হয়ো না, আমিই তোমাদেরকে ও তোমাদের ছেলে মেয়েদেরকে প্রতিপালন করব।" এইভাবে তিনি তাঁদেরকে সান্তনা করলেন ও ভালো কথা বললেন।
\s5
\v 22 পরে যোষেফ ও তাঁর বাবার বংশ মিসরে বাস করতে থাকলেন এবং যোষেফ একশ দশ বছর জীবিত থাকলেন।
\v 23 যোষেফ ইফ্রয়িমের নাতি পর্যন্ত দেখলেন; মনঃশির মাখীর নামক ছেলের ছেলেমেয়েরাও যোষেফের কোলে জন্ম নিল।
\s5
\v 24 পরে যোষেফ নিজের ভাইদেরকে বললেন, "আমি মরছি কিন্তু ঈশ্বর অবশ্য তোমাদের পরিচালনা করবেন এবং আব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের কাছে যে দেশ দিতে শপথ করেছেন তোমাদেরকে এ দেশ থেকে ঐ দেশে নিয়ে যাবেন।
\v 25 আর যোষেফ ইস্রায়েলীয়দেরকে এই শপথ করালেন, বললেন, "ঈশ্বর অবশ্য তোমাদের পরিচালনা করবেন, আর তোমরা এ জায়গা থেকে আমার অস্থি নিয়ে যাবে।
\v 26 যোষেফ একশো দশ বছর বয়সে মারা গেলেন; আর লোকেরা তাঁর দেহে ক্ষয়-নিরারক দ্রব্য দিয়ে তা মিসর দেশে এক মৃতদেহ রাখার বাক্সর মধ্যে রাখল।

1938
02-EXO.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,1938 @@
\id EXO
\ide UTF-8
\h যাত্রাপুস্তক
\toc1 যাত্রাপুস্তক
\toc2 যাত্রাপুস্তক
\toc3 exo
\mt1 যাত্রাপুস্তক
\s5
\c 1
\s ইস্রায়েলীয়দের বৃদ্ধি ‍ও নির্যাতন ভোগ।
\p
\v 1 ইস্রায়েলের ছেলেরা, যাঁরা মিশর দেশে গিয়েছিলেন, পরিবারের সবাই যাকোবের সঙ্গে গিয়েছিলেন, তাঁদের নাম হল;
\v 2 রূবেন, শিমিয়োন, লেবি ও যিহূদা,
\v 3 ইষাখর, সবূলূন ও বিন্যামীন,
\v 4 দান, নপ্তালি, গাদ ও আশের।
\v 5 যাকোবের বংশ থেকে মোট সত্তর জন মানুষ ছিল; আর যোষেফ মিশরেই ছিলেন।
\s5
\v 6 পরে যোষেফ, তাঁর ভায়েরা ও সেই সময়ের সমস্ত লোক মারা গেলেন।
\p
\v 7 আর ইস্রায়েলের সন্তানেরা ফলবান হল, সংখ্যায় অনেক বৃদ্ধি পেল, খুব শক্তিশালী হয়ে উঠল এবং তাদের মাধ্যমে দেশ ভরে গেল।
\s5
\v 8 পরে মিশরে এক নতুন রাজা উঠলেন, যিনি যোষেফকে চিনতেন না।
\v 9 তিনি তাঁর প্রজাদেরকে বললেন, “দেখ, আমাদের থেকে ইস্রায়েলের সন্তানরা সংখ্যায় বেশি ও শক্তিশালী;
\v 10 এস, আমরা তাদের সঙ্গে বুদ্ধির সঙ্গে ব্যবহার করি, নাহলে তারা বৃদ্ধি পাবে এবং যুদ্ধের সময় তারাও শত্রুদের দলে যোগ দিয়ে আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করে এবং এই দেশ থেকে চলে যায়।”
\s5
\v 11 অতএব তারা কঠিন পরিশ্রম করিয়ে তাদের কষ্ট দেবার জন্য তাদের উপরে শাসকদেরকে নিযুক্ত করল। আর তারা ফরৌণের জন্য ভাণ্ডারের নগর, পিথোম ও রামিষেষ তৈরী করল।
\v 12 কিন্তু তারা তাদের মাধ্যমে যত দুঃখ পেল, ততই বৃদ্ধি পেতে ও ছড়িয়ে পড়তে লাগল; তাই ইস্রায়েল সন্তানদের জন্য তারা খুব চিন্তিত হয়ে পড়ল।
\s5
\v 13 আর মিশরীয়েরা নিষ্ঠুর ভাবে ইস্রায়েল সন্তানদেরকে দাসের মত কাজ করালো;
\v 14 তারা কাদা তৈরির কাজে, ইট ও ক্ষেতের সমস্ত কাজে দাসের মত খাটিয়ে তাদের জীবন কষ্টকর করে তুলল। তারা তাদের দিয়ে যে সব দাসের কাজ করাতো, সে সমস্ত নিষ্ঠুর ভাবে করাতো।
\p
\s5
\v 15 পরে মিশরের রাজা শিফ্রা ও পূয়া নামে দুই ইব্রীয় ধাত্রীকে এই কথা বললেন,
\v 16 “যে সময়ে তোমরা ইব্রীয় স্ত্রীদের ধাত্রীর কাজ করবে ও তাদেরকে প্রসবের সময় দেখবে, যদি ছেলে হয়, তাকে হত্যা করবে; আর যদি মেয়ে হয়, তাকে জীবিত রাখবে।”
\v 17 কিন্তু ঐ ধাত্রীরা ঈশ্বরকে ভয় করত, সুতরাং মিশরের রাজার আদেশ না মেনে ছেলে সন্তানদেরকে জীবিত রাখত।
\s5
\v 18 তাই মিশরের রাজা সেই ধাত্রীদের ডেকে বললেন, “এ রকম কাজ কেন করেছ? ছেলে সন্তানদেরকে কেন জীবিত রেখেছ?”
\v 19 ধাত্রীরা ফরৌণকে উত্তরে বলল, “ইব্রীয় স্ত্রীলোকেরা মিশরীয় স্ত্রীলোকদের মত নয়; তারা বলবতী, তাদের কাছে ধাত্রী যাবার আগেই তাদের প্রসব হয়।”
\s5
\v 20 তাই ঈশ্বর ঐ ধাত্রীদের মঙ্গল করলেন এবং লোকেরা বৃদ্ধি পেয়ে খুব শক্তিশালী হল।
\v 21 সেই ধাত্রীরা ঈশ্বরকে ভয় করত বলে তিনি তাদের বংশের বৃদ্ধি করলেন।
\v 22 পরে ফরৌণ তাঁর সব প্রজাকে এই আদেশ দিলেন, “তোমরা [ইব্রীয়দের] জন্ম নেওয়া প্রত্যেক ছেলেকে নদীতে ফেলে দেবে, কিন্তু প্রত্যেক মেয়েকে জীবিত রাখবে।”
\s5
\c 2
\s মোশির বর্ণনা ।
\p
\v 1 আর লেবির বংশের এক পুরুষ গিয়ে এক লেবীয় মেয়েকে বিয়ে করলেন।
\v 2 আর সেই স্ত্রী গর্ভবতী হয়ে একটি ছেলের জন্ম দিলেন ও শিশুটিকে সুন্দর দেখে তিন মাস লুকিয়ে রাখলেন।
\s5
\v 3 পরে আর লুকাতে না পেরে তিনি এক নলের ঝুড়ি নিয়ে পিচ তেল ও আলকাতরা মাখিয়ে তার মধ্যে ছেলেটিকে রাখলেন ও নদীর তীরে নলবনে সেটি রাখলেন।
\p
\v 4 আর তার কি দশা হয়, তা দেখবার জন্য তার দিদি দূরে দাঁড়িয়ে থাকলো।
\s5
\v 5 পরে ফরৌণের মেয়ে স্নানের জন্য নদীতে আসলেন এবং তাঁর সঙ্গীরা নদীর তীরে বেড়াচ্ছিল; আর তিনি নল বনের মধ্যে ঐ ঝুড়ি দেখে তাঁর দাসীকে সেটা আনতে পাঠালেন।
\v 6 তারপর ঝুড়ি খুলে শিশুটিকে দেখলেন যে, ছেলেটি কাঁদছে; তার প্রতি তিনি দয়া দেখিয়ে বললেন, “এটা ইব্রীয়দের ছেলে।”
\s5
\v 7 তখন তার দিদি ফরৌণের মেয়েকে বলল, “আমি গিয়ে কি আপনার জন্য এই ছেলেকে দুধ দেবার জন্য একটি ইব্রীয় স্ত্রীলোককে আপনার কাছে ডেকে আনব?” ফরৌণের মেয়ে বললেন, “যাও।”
\v 8 তখন সেই মেয়েটি গিয়ে ছেলেটির মাকে ডেকে আনল।
\s5
\v 9 ফরৌণের মেয়ে তাঁকে বললেন, “তুমি এই ছেলেটিকে নিয়ে আমার হয়ে দুধ পান করাও; আমি তোমাকে বেতন দেব।” তাতে সেই স্ত্রী ছেলেটিকে নিয়ে দুধ পান করাতে লাগলেন।
\v 10 পরে ছেলেটি বড় হলে তিনি তাকে নিয়ে ফরৌণের মেয়েকে দিলেন; তাতে সে তাঁরই ছেলে হল; আর তিনি তার নাম মোশি [টানিয়া তোলা] রাখলেন, কারণ তিনি বললেন, “আমি তাকে জল থেকে টেনে তুলেছি।”
\p
\s5
\v 11 যখন মোশি বড় হলেন, তিনি এক দিন তাঁর ভাইদের কাছে গিয়ে তাদের কঠিন পরিশ্রম দেখতে লাগলেন; আর তিনি দেখলেন, একজন মিশরীয় একজন ইব্রীয়কে, তাঁর ভাইদের মধ্যে এক জনকে মারছে।
\v 12 তখন তিনি এদিক ওদিক চেয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে ঐ মিশরীয়কে হত্যা করে বালির মধ্যে পুঁতে রাখলেন।
\p
\s5
\v 13 পরের দিন তিনি বাইরে গিয়ে দেখলেন, দুইজন ইব্রীয় একে অপরের সঙ্গে মারপিট করছে; তিনি দোষী ব্যক্তিকে বললেন, “তোমার ভাইকে কেন মারছ?”
\v 14 সে বলল, “তোমাকে শাসনকর্তা ও বিচারকর্তা করে আমাদের উপরে কে নিযুক্ত করেছে? তুমি যেমন সেই মিশরীয়কে হত্যা করেছে, সেইভাবে কি আমাকেও হত্যা করতে চাও?” তখন মোশি ভয় পেয়ে বললেন, “কথাটা তাহলে জানাজানি হয়ে গেছে?”
\p
\s5
\v 15 তারপর ফরৌণ এই কথা শুনে মোশিকে হত্যা করতে চেষ্টা করলেন। কিন্তু মোশি ফরৌণের সামনে থেকে পালিয়ে গেলেন এবং মিদিয়ন দেশে বাস করতে গেলেন, সেখানে একটি কুয়ার কাছে এসে বসলেন।
\v 16 মিদিয়নীয় যাজকের সাতটি মেয়ে ছিল; তারা সেখানে এসে বাবার ভেড়ার পাল কে জল পান করাবার জন্য জল তুলে পাত্রগুলি ভর্তি করল।
\v 17 তখন ভেড়ার পালকেরা এসে তাদেরকে তাড়িয়ে দিল, কিন্তু মোশি উঠে তাদের সাহায্য করলেন ও তাদের ভেড়ার পাল কে জল পান করালেন।
\s5
\v 18 পরে তারা তাদের বাবা রূয়েলের কাছে গেলে তিনি তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আজ তোমরা কি করে এত তাড়াতাড়ি আসলে?”
\v 19 তারা বলল, “একজন মিশরীয় আমাদেরকে ভেড়ার পালকদের হাত থেকে উদ্ধার করলেন, আর তিনি আমাদের জন্য যথেষ্ট জল তুলে ভেড়ার পাল কে জল পান করালেন।”
\v 20 তখন তিনি তাঁর মেয়েদেরকে বললেন, “সে লোকটি কোথায়? তোমরা তাঁকে ছেড়ে কেন আসলে? তাঁকে ডাক; তিনি আহার করুন।”
\s5
\v 21 পরে মোশি ঐ ব্যক্তির সঙ্গে থাকতে রাজি হলেন, আর তিনি মোশির সঙ্গে নিজের মেয়ে সিপ্পোরার বিয়ে দিলেন।
\v 22 পরে ঐ স্ত্রী ছেলের জন্ম দিলেন, আর মোশি তার নাম গের্শোম [তত্রপ্রবাসী] রাখলেন, কারণ তিনি বললেন, “আমি বিদেশে প্রবাসী হয়েছি।”
\s মোশির কাছে ঈশ্বরের প্রকাশ।
\p
\s5
\v 23 অনেক কাল পরে মিশরের রাজার মৃত্যু হল। ইস্রায়েলীয়রা তাদের দাসত্বের যন্ত্রণায় আর্তনাদ করে উঠলো, বন্দীদশায় তারা সাহায্যের জন্য কাঁদলো, আর তাদের প্রার্থনা ঈশ্বরের কাছে পৌঁছালো।
\v 24 আর ঈশ্বর তাদের আর্তনাদ শুনলেন এবং অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের সঙ্গে করা তাঁর নিয়ম স্মরণ করলেন;
\v 25 তার ফলে ঈশ্বর ইস্রায়েলীয়দের দিকে তাকালেন; আর তিনি তাদের অবস্থা বুঝলেন।
\s5
\c 3
\p
\v 1 মোশি তাঁর শ্বশুর যিথ্রোর ভেড়ার পাল চরাতেন যিনি মিদিয়নীয় যাজক ছিলেন। এক সময় তিনি মরুভূমির পিছনের দিকে ভেড়ার পাল নিয়ে গিয়ে হোরেবে, ঈশ্বরের পর্বতে উপস্থিত হলেন।
\v 2 আর ঝোপের মধ্যে থেকে আগুনের শিখাতে সদাপ্রভুর দূত তাঁকে দেখা দিলেন; তখন তিনি তাকালেন, আর দেখো, ঝোপ আগুনে জ্বলছে, তবুও ঝোপ পুড়ে যাচ্ছে না।
\v 3 তাই মোশি বললেন, “আমি এক পাশে গিয়ে এই মহা আশ্চর্য্য দৃশ্য দেখি, ঝোপ পুড়ছে না, এর কারণ কি?”
\s5
\v 4 কিন্তু সদাপ্রভু যখন দেখলেন যে, তিনি দেখবার জন্য এক পাশে যাচ্ছেন, তখন ঝোপের মধ্য থেকে ঈশ্বর তাঁকে ডেকে বললেন, “মোশি, মোশি।” তিনি বললেন, “দেখুন, এই আমি।”
\v 5 তখন তিনি বললেন, “এই জায়গার কাছে এস না, তোমার পা থেকে জুতো খুলে ফেলো; কারণ যেখানে তুমি দাঁড়িয়ে আছ, ওটা পবিত্র জায়গা।”
\v 6 তিনি আরও বললেন, “আমি তোমার বাবার ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর।” তখন মোশি তাঁর মুখ ঢেকে দিলেন, কারণ তিনি ঈশ্বরের দিকে চেয়ে থাকতে ভয় পাচ্ছিলেন।
\s5
\v 7 পরে সদাপ্রভু বললেন, “সত্যিই আমি মিশরের আমার প্রজাদের কষ্ট দেখেছি এবং শাসকদের জন্য তাদের কান্না শুনেছি; তার ফলে আমি তাদের দুঃখ জানি।
\v 8 আর মিশরীয়দের হাত থেকে তাদেরকে উদ্ধার করবার জন্য এবং সেই দেশ থেকে উঠিয়ে নিয়ে ভালো ও বড় এক দেশে, অর্থাৎ কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয় লোকেরা যেখানে থাকে, সেই দুধ ও মধু প্রবাহিত দেশে তাদেরকে আনবার জন্য নেমে এসেছি।
\s5
\v 9 এখন দেখ, ইস্রায়েলের লোকদের কান্না আমার কাছে উপস্থিত হয়েছে এবং মিশরীয়েরা তাদের ওপর যে নির্যাতন করে, তা আমি দেখেছি।
\v 10 অতএব এখন এস, আমি তোমাকে ফরৌণের কাছে পাঠাব, তুমি মিশর থেকে আমার লোক ইস্রায়েলীয়দেরকে বের কোরো।”
\s5
\v 11 কিন্তু মোশি ঈশ্বরকে বললেন, “আমি কে, যে ফরৌণের কাছে যাই ও মিশর থেকে ইস্রায়েলীয়দেরকে বের করি?”
\v 12 তিনি বললেন, “নিশ্চয় আমি তোমার সঙ্গে সঙ্গে থাকব এবং আমি যে তোমাকে পাঠালাম, তোমার জন্য তার এই চিহ্ন হবে; তুমি মিশর থেকে লোকেদেরকে বের করে এনে তোমরা এই পর্বতে ঈশ্বরের সেবা করবে।”
\p
\s5
\v 13 পরে মোশি ঈশ্বরকে বললেন, “দেখ, আমি যখন ইস্রায়েলীয়দের কাছে গিয়ে বলব, ‘তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর তোমাদের কাছে আমাকে পাঠিয়েছেন’, তখন যদি তারা জিজ্ঞাসা করে, ‘তাঁর নাম কি’? তবে তাদেরকে কি বলব?”
\v 14 ঈশ্বর মোশিকে বললেন, “আমি যা আছি তাই আছি,” আরও বললেন, “ইস্রায়েল সন্তানদেরকে এইভাবে বোলো, “আমি সেই যিনি তোমাদের কাছে আমাকে পাঠিয়েছেন।”
\v 15 ঈশ্বর মোশিকে আরও বললেন, “তুমি ইস্রায়েল সন্তানদেরকে এই কথা বোলো, “যিহোবাঃ [সদাপ্রভু], তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর ও যাকোবের ঈশ্বর তোমাদের কাছে আমাকে পাঠিয়েছেন; আমার এই নাম অনন্তকালস্থায়ী এবং এর দ্বারা আমি সমস্ত বংশে স্মরণীয়।
\s5
\v 16 তুমি যাও, ইস্রায়েলের প্রাচীনদেরকে জড়ো কর, তাদেরকে এই কথা বল, সদাপ্রভু, তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের, ইস্‌হাকের ও যাকোবের ঈশ্বর আমাকে দেখা দিয়ে বললেন, ‘সত্যিই আমি তোমাদের পর্যবেক্ষণ করেছি, মিশরে তোমাদের প্রতি যা হয়েছে, তা দেখেছি’।
\v 17 আর আমি বলেছি, ‘আমি মিশরের কষ্ট থেকে তোমাদেরকে উদ্ধার করে কনানীয়দের, হিত্তীয়দের, ইমোরীয়দের, পরিষীয়দের, হিব্বীয়দের ও যিবূষীয়দের দেশে, দুধ ও মধু প্রবাহিত দেশে, নিয়ে যাব’।
\v 18 তারা তোমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে; তখন তুমি ও ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা মিশরের রাজার কাছে যাবে, তাকে বলবে, ‘সদাপ্রভু, ইব্রীয়দের ঈশ্বর আমাদেরকে দেখা দিয়েছেন; অতএব অনুরোধ করি, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করার জন্য আমাদেরকে তিন দিনের পথ মরুভূমিতে যাবার অনুমতি দিন’।
\s5
\v 19 কিন্তু আমি জানি, মিশরের রাজা তোমাদেরকে যেতে দেবে না, এমনকি শক্তিশালী হাত দিয়েও নয় (যতক্ষণ না তাকে বাধ্য করা হচ্ছে)।
\v 20 আমি হাত তুলব এবং দেশের মধ্যে যে সব আশ্চর্য্য কাজ করে, তা দিয়ে মিশরকে আঘাত করব, তারপরে সে তোমাদেরকে যেতে দেবে।
\v 21 পরে আমি মিশরীয়দের চোখে এই লোকদেরকে দয়ার পাত্র করব; তাতে তোমরা যাবার সময় খালি হাতে যাবে না;
\v 22 কিন্তু প্রত্যেক স্ত্রী নিজেদের প্রতিবেশীনী কিংবা প্রতিবেশীর বাড়িতে বসবাসকারী স্ত্রীর কাছে রুপো ও সোনার গয়না এবং পোশাক চাইবে। তোমরা তা তোমাদের ছেলেমেয়েদের গায়ে পরাবে; এইভাবে তোমরা মিশরীয়দের জিনিসপত্র লুট করবে।”
\s5
\c 4
\p
\v 1 মোশি উত্তরে বললেন, “কিন্তু দেখুন, তারা আমাকে বিশ্বাস করবে না ও আমার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে না, কারণ তারা বলবে, ‘সদাপ্রভু তোমাকে দেখা দেন নি’।”
\v 2 তখন সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “তোমার হাতে ওটা কি?” তিনি বললেন, “লাঠি।” তখন তিনি বললেন, “ওটা মাটিতে ফেল।”
\v 3 পরে তিনি মাটিতে ফেললে সেটা সাপ হয়ে গেল; আর মোশি তার সামনে থেকে পালিয়ে গেলেন।
\s5
\v 4 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “হাত বাড়িয়ে ওটার লেজ ধর’, তাতে তিনি হাত বাড়ালেন এবং সেই সাপটি ধরলেন।” তখন এটি তাঁর হাতে লাঠি হয়ে গেল,
\v 5 “যেন তারা বিশ্বাস করে যে, সদাপ্রভু, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর, অব্রাহামের ঈশ্বর, ইস্‌হাকের ঈশ্বর যাকোবের ঈশ্বর তোমাকে দেখা দিয়েছেন।”
\p
\s5
\v 6 পরে সদাপ্রভু তাঁকে আরও বললেন, “তুমি তোমার হাত বুকে দাও;” তাতে তিনি বুকে হাত দিলেন; পরে তা বের করে দেখলেন, তাঁর হাতে তুষারের মত সাদা কুষ্ঠ হয়েছে।
\v 7 পরে সদাপ্রভু বললেন, ‘তোমার হাত আবার বুকে দাও।’ তিনি আবার বুকে হাত দিলেন, পরে বুক থেকে হাত বের করে দেখলেন, তা পুনরায় তাঁর মাংসের মত হয়ে গেল।
\s5
\v 8 “যদি তারা তোমাকে বিশ্বাস না করে এবং যদি আমার শক্তির প্রথম চিহ্নেও মনোযোগ না করে অথবা বিশ্বাস না করে, তবে তারা দ্বিতীয় চিহ্নে বিশ্বাস করিবে।
\v 9 এবং তারা যদি আমার বিশ্বাসের এই দুই চিহ্নেও বিশ্বাস না করে অথবা তোমার কথায় যদি মনোযোগ না করে, তবে তুমি নদী থেকে কিছু জল নিয়ে শুকনো মাটিতে ঢেলে দিও; তাতে তুমি নদী থেকে যে জল তুলবে, তা শুকনো মাটিতে রক্ত হয়ে যাবে।”
\p
\s5
\v 10 পরে মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, হায় প্রভু! আমি ভালো করে কথা বলতে পারি না, এর আগেও বলতে পারতাম না, বা তোমার সঙ্গে এই দাসের আলাপ করার পরেও নই; কারণ আমি আসতে আসতে কথা বলি ও তোতলা।
\v 11 সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “মানুষের মুখ কে তৈরী করেছে? আর বোবা, কালা, চোখে দেখতে পায় বা অন্ধকে কে তৈরী করে?
\v 12 আমি সদাপ্রভুই কি করি নি? এখন তুমি যাও; আমি তোমার মুখের সহায় হব ও কি বলতে হবে, তোমাকে শেখাব।”
\v 13 তিনি বললেন, “হে আমার প্রভু, অনুরোধ করি, অন্য কারো হাতে এই বার্তা পাঠাও, যাকে তুমি পাঠাতে চাও।”
\s5
\v 14 তখন মোশির উপর সদাপ্রভু রেগে গেলেন; তিনি বললেন, “তোমার ভাই লেবীয় হারোণ কি নেই? আমি জানি সে ভালো কথা বলে; আরও দেখ, সে তোমার সঙ্গে দেখা করতে আসছে; তোমাকে দেখে খুব আনন্দিত হবে।
\v 15 তুমি তাকে বলবে ও তাঁর মুখে বাক্য দেবে এবং আমি তোমার মুখের ও তার মুখের সহায় হব ও কি করতে হবে, তোমাদেরকে জানাব।
\v 16 তোমার পরিবর্তে সে লোকদের কাছে বক্তা হবে; তার ফলে সে তোমার মুখের মত হবে এবং তুমি তার ঈশ্বরের মত হবে।
\v 17 আর তুমি এই লাঠি হাতে ধরবে, এর মাধ্যমেই তোমাকে সে সমস্ত চিহ্ন কাজ করতে হবে।”
\s মোশি মিশর দেশে ফিরে গিয়ে ফরৌণকে ঈশ্বরের কথা জানান।
\p
\s5
\v 18 পরে মোশি তাঁর শ্বশুর যিথ্রোর কাছে ফিরে এসে বললেন, “অনুরোধ করি, আমাকে যেতে দিন যেন আমি মিশরে থাকা আমার ভাইদের কাছে ফিরে যেতে পারি এবং তারা এখনও জীবিত আছে কি না, তা দেখতে পাই।” যিথ্রো মোশিকে বললেন, “শান্তিতে যাও।”
\v 19 আর সদাপ্রভু মিদিয়নে মোশিকে বললেন, “তুমি মিশরে ফিরে যাও; কারণ যে লোকেরা তোমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছিল, তারা সবাই মারা গেছে।”
\v 20 তখন মোশি তাঁর স্ত্রী ও ছেলেদেরকে গাধায় চাপিয়ে মিশর দেশে ফিরে গেলেন এবং মোশি তাঁর হাতে ঈশ্বরের সেই লাঠি নিলেন।
\s5
\v 21 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি যখন মিশরে ফিরে যাবে, দেখো, আমি তোমার হাতে যে সব অদ্ভুত কাজের ভার দিয়েছি, ফরৌণের সামনে সে সব কোরো; কিন্তু আমি তার হৃদয় কঠিন করব, সে লোকদেরকে ছাড়বে না।
\v 22 আর তুমি ফরৌণকে বলবে, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘ইস্রায়েল আমার ছেলে, আমার প্রথমজাত।
\v 23 আর আমি তোমাকে বলেছি, আমার সেবা করার জন্য আমার ছেলেকে ছেড়ে দাও; কিন্তু তুমি তাঁকে ছেড়ে দিতে রাজি না হলে; দেখ, আমি তোমার সন্তানকে, তোমার প্রথমজাতকে, হত্যা করব।”
\p
\s5
\v 24 পরে পথে সরাইখানায় সদাপ্রভু তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে হত্যা করতে চেষ্টা করলেন।
\v 25 তখন সিপ্পোরা একটি পাথরের ছুরি নিয়ে তাঁর ছেলের ত্বক্‌ ছেদ করলেন ও তা মোশির পায়ে স্পর্শ করে বললেন, “তুমি আমার রক্তের বর।”
\v 26 আর ঈশ্বর তাঁকে ছেড়ে দিলেন; তখন সিপ্পোরা বললেন, “ত্বক্‌ছেদের কারণে তুমি রক্তের বর।”
\s5
\v 27 আর সদাপ্রভু হারোণকে বললেন, “তুমি মোশির সঙ্গে দেখা করতে মরুভূমিতে যাও।” তাতে তিনি গিয়ে ঈশ্বরের পর্বতে তাঁর দেখা পেলেন ও তাঁকে চুম্বন করলেন।
\v 28 তখন মোশি তাঁকে যিনি পাঠিয়েছেন সদাপ্রভুর সমস্ত বাক্য ও তাঁর আদেশ মত সমস্ত চিহ্নের বিষয় হারোণকে জানালেন।
\p
\s5
\v 29 পরে মোশি ও হারোণ গিয়ে ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত প্রাচীনকে জড়ো করলেন।
\v 30 আর হারোণ মোশির প্রতি সদাপ্রভুর বলা সমস্ত বাক্য তাদেরকে জানালেন এবং তিনি লোকদের চোখের সামনে সেই সব চিহ্ন কাজ করলেন।
\v 31 তাতে লোকেরা বিশ্বাস করল এবং ঈশ্বর সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের যত্ন নিয়েছেন ও তাদের দুঃখ দেখেছেন শুনে তারা মাথা নিচু করলেন এবং তাঁর আরাধনা করলেন।
\s5
\c 5
\p
\v 1 পরে মোশি ও হারোণ গিয়ে ফরৌণকে বললেন, “সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথা বলেন, ‘মরুভূমিতে আমার উদ্দেশ্যে উৎসব করার জন্য আমার প্রজাদেরকে ছেড়ে দাও’।”
\v 2 ফরৌণ বললেন, “সদাপ্রভু কে, যে আমি তার কথা শুনে ইস্রায়েলকে ছেড়ে দেব? আমি সদাপ্রভু কে জানি না, ইস্রায়েলকেও ছাড়বো না।”
\s5
\v 3 তাঁরা বললেন, “ইব্রীয়দের ঈশ্বর আমাদেরকে দেখা দিয়েছেন; আমরা অনুরোধ করি, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করার জন্য আমাদেরকে তিন দিনের পথ মরুভূমিতে যেতে দিন, যেন তিনি মহামারী কি তরোয়াল দিয়ে আমাদেরকে আক্রমণ না করেন।”
\v 4 মিশরের রাজা তাঁদেরকে বললেন, “ওহে মোশি ও হারোণ, তোমরা কেন লোকদের কাজ থেকে নিস্তার দাও? তোমাদের কাজে ফিরে যাও।”
\v 5 ফরৌণ আরও বললেন, “দেখ, দেশে লোক এখন অনেক, আর তোমরা তাদের কাজ থামিয়ে দিয়েছ।”
\p
\s5
\v 6 আর ফরৌণ সেই দিন লোকদের শাসক ও শাসনকর্তাকে এই আদেশ দিলেন,
\v 7 “তোমরা ইট তৈরী করার জন্য আগের মত এই লোকদেরকে আর খড় দিও না; তাঁরা গিয়ে নিজেরাই নিজেদের খড় সংগ্রহ করুক।
\v 8 কিন্তু আগে তাদের যত ইট তৈরীর ভার ছিল, এখনও সেই ভার দাও; তার কিছুই কম কর না; কারণ তারা কুঁড়ে, তাই কেঁদে বলছে, “আমরা আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বলিদান করতে যাই।
\v 9 সেই লোকদের উপরে আরও কঠিন কাজ চাপান হোক, তারা তাতেই ব্যস্ত থাকুক এবং মিথ্যা কথায় মনোযোগ না দিক।”
\p
\s5
\v 10 আর লোকদের শাসকেরা ও শাসনকর্তারা বাইরে গিয়ে তাদেরকে বলল, “ফরৌণ এই কথা বলেন, ‘আমি তোমাদেরকে খড় দেব না।
\v 11 নিজেরা যেখানে পাও, সেখানে গিয়ে খড় সংগ্রহ কর; কিন্তু তোমাদের কাজ কিছুই কম হবে না।”
\s5
\v 12 তাতে লোকেরা খড়ের চেষ্টায় নাড়া জড়ো করতে সমস্ত মিশর দেশে ছড়িয়ে পড়ল।
\v 13 আর শাসকেরা তাড়া দিয়ে বলল, “খড় পেলে যেমন করতে, সেইরকম এখনও তোমাদের প্রতিদিনের নির্ধারিত কাজ শেষ কর।”
\v 14 আর ফরৌণের শাসকেরা ইস্রায়েল সন্তানদের যে শাসনকর্তাদেরকে তাদের উপরে রেখেছিল, তারাও অত্যাচারিত হল, আর বলে দেওয়া হল, “তোমরা আগের মত ইট তৈরীর বিষয়ে নির্ধারিত কাজ আজকাল শেষ কর না কেন?”
\s5
\v 15 তাতে ইস্রায়েলীয়দের শাসনকর্তারা এসে ফরৌণের কাছে কেঁদে বলল, “আপনার দাসদের সঙ্গে আপনি এমন ব্যবহার কেন করছেন?
\v 16 লোকেরা আপনার দাসদেরকে খড় দেয় না, তবুও আমাদেরকে বলে ইট তৈরী কর; আর দেখুন আপনার এই দাসেরা অত্যাচারিত হয়, কিন্তু আপনারই লোকদেরই দোষ।”
\v 17 ফরৌণ বললেন, “তোমরা অলস, তাই বলছ, ‘আমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করতে যাই।’
\v 18 এখন যাও, কাজ কর, তোমাদেরকে খড় দেওয়া যাবে না, তবুও সমস্ত ইট তৈরী করে দিতে হবে।”
\s5
\v 19 তখন ইস্রায়েল সন্তানদের শাসনকর্তারা দেখল, তারা বিপদে পড়েছে, কারণ বলা হয়েছিল, “তোমরা প্রত্যেক দিনের কাজের, নির্ধারিত ইটের, কিছু কম করতে পাবে না।”
\p
\v 20 পরে ফরৌণের কাছ থেকে বের হয়ে আসার সময়ে তারা মোশির ও হারোণের দেখা পেল, তাঁরা পথে দাঁড়িয়েছিলেন।
\v 21 তারা তাঁদেরকে বলল, “সদাপ্রভু তোমাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করুন এবং তোমাদের বিচার করুন, কারণ তোমরা ফরৌণের চোখে ও তাঁর দাসেদের চোখে আমাদেরকে জঘন্য খারাপ করে তুলে আমাদের হত্যা করার জন্য তাদের হাতে তরোয়াল দিয়েছ।”
\s5
\v 22 পরে মোশি সদাপ্রভুর কাছে ফিরে গিয়ে তাঁকে বললেন, “হে প্রভু, তুমি এই লোকদের অমঙ্গল কেন করলে? আমাকে কেন পাঠালে?
\v 23 যখন তোমার নামে কথা বলতে ফরৌণের কাছে গিয়েছি, তখন থেকে তিনি এই লোকেদের অমঙ্গল করছেন, আর তুমি তোমার প্রজাদের কিছুই উদ্ধার করনি।”
\s5
\c 6
\p
\v 1 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আমি ফরৌণের ওপর যা করব, তা তুমি এখন দেখবে; কারণ শক্তিশালী হাত দেখলে, সে লোকদেরকে ছেড়ে দেবে এবং শক্তিশালী হাত দেখান হলে তার দেশ থেকে তাদেরকে দূর করে দেবে।”
\s5
\v 2 ঈশ্বর মোশিকে আরও বললেন, “আমি যিহোবা [সদাপ্রভু];
\v 3 আমি অব্রাহামকে, ইস্‌হাককে ও যাকোবকে ‘সর্ব্বশক্তিমান ঈশ্বর’ বলে দেখা দিতাম, কিন্তু আমার যিহোবা [সদাপ্রভু] নাম নিয়ে তাদেরকে আমার পরিচয় দিতাম না।
\v 4 আর আমি তাদের সঙ্গে এই নিয়ম স্থির করেছি, আমি তাদেরকে কনান দেশ দেব, যে দেশে তারা অনাগরিক হিসাবে বাস করত, তাদের সেই বসবাসকারী দেশ দেব।
\v 5 এমনকি মিশরীয়দের দিয়ে দাসত্বে নিযুক্ত ইস্রায়েলীয়দের আর্তনাদ শুনে আমার সেই নিয়ম স্মরণ করলাম।
\s5
\v 6 অতএব ইস্রায়েল সন্তানদেরকে বল, ‘আমি যিহোবা, আমি তোমাদেরকে মিশরের দাসত্ব থেকে মুক্ত করব এবং তাদের শক্তি থেকে স্বাধীন করব। আমি তোমাদের আমার শক্তি দিয়ে উদ্ধার করব।
\v 7 আর আমি তোমাদেরকে আমার প্রজা হিসাবে স্বীকার করব ও তোমাদের ঈশ্বর হব; তাতে তোমরা জানতে পারবে যে, আমি যিহোবা, তোমাদের ঈশ্বর, যিনি তোমাদেরকে মিশরীয়দের দাসত্ব থেকে বের করে এনেছেন।
\s5
\v 8 আর আমি অব্রাহামকে, ইস্‌হাককে ও যাকোবকে দেবার জন্যে প্রতিজ্ঞা করেছি, সেই দেশে তোমাদেরকে নিয়ে যাব ও তোমাদের অধিকারে তা দেব; আমিই সদাপ্রভু’।”
\v 9 পরে মোশি ইস্রায়েলীয়দেরকে সেই অনুসারে বললেন, কিন্তু তারা মনের অধৈর্য্য ও কঠিন দাসত্ব কাজের জন্য মোশির কথায় মনোযোগ করল না।
\s5
\v 10 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
\v 11 “তুমি যাও, মিশরের রাজা ফরৌণকে বল, যেন সে তার দেশ থেকে ইস্রায়েলীয়দের ছেড়ে দেয়।”
\v 12 তখন মোশি সদাপ্রভুর সামনে বললেন, “দেখ, ইস্রায়েল সন্তানেরা আমার কথায় মনোযোগ করল না; তবে ফরৌণ কি ভাবে শুনবে? আমি তো ভালো করে কথা বলতে পারি না।”
\v 13 আর সদাপ্রভু মোশির ও হারোণের সঙ্গে আলাপ করলেন এবং ইস্রায়েলীয়দেরকে মিশর দেশ থেকে বের করে আনার জন্য ইস্রায়েল সন্তানদের কাছে এবং মিশরের রাজা ফরৌণের কাছে যা বক্তব্য, তাঁদেরকে আদেশ দিলেন।
\s মোশির পিতৃকুল।
\p
\s5
\v 14 এই সব লোক নিজের পূর্বপুরুষদের প্রধান ছিলেন। ইস্রায়েলের বড় ছেলে রূবেণের ছেলে হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্ম্মি; এরা রূবেণের গোষ্ঠী।
\v 15 শিমিয়োনের ছেলে যিমূয়েল, যামীন, ওহদ, যাখীন, সোহর ও কনানীয় স্ত্রীর ছেলে শৌল; এরা শিমিয়োনের গোষ্ঠী।
\s5
\v 16 বংশ তালিকা অনুসারে লেবির ছেলেদের নাম গের্শোন, কহাৎ ও মরারি; লেবির বয়স একশো সাঁইত্রিশ বছর হয়েছিল।
\v 17 আর তার গোষ্ঠী অনুসারে গের্শোনের ছেলে লিবনি ও শিমিয়ি।
\v 18 কহাতের সন্তান অম্রম, যিষহর, হিব্রোণ ও উষীয়েল; কহাতের বয়স একশো তেত্রিশ বছর হয়েছিল।
\v 19 মরারির সন্তান মহলি ও মুশি; এরা বংশ তালিকা অনুসারে লেবির গোষ্ঠী।
\s5
\v 20 আর অম্রম তার পিসী যোকেবদকে বিয়ে করলেন, আর ইনি তাঁর জন্য হারোণকে ও মোশিকে জন্ম দিলেন। অম্রমের বয়স একশো সাঁইত্রিশ বছর হয়েছিল।
\v 21 যিষ্হরের সন্তান কোরহ, নেফগ ও সিখ্রি।
\v 22 আর উষীয়েলের সন্তান মীশায়েল, ইলসাফন ও সিখ্রি।
\s5
\v 23 আর হারোণ অম্মীনাদবের মেয়ে নহোশনের বোন ইলীশেবাকে বিয়ে করলেন, আর ইনি তাঁর জন্য নাদব, অবীহূ, ইলিয়াসর ও ঈথামরের জন্ম দিলেন।
\v 24 আর কোরহের সন্তান অসীর, ইল্কানা ও অবীয়াসফ; এরা কোরহীয়দের গোষ্ঠী।
\v 25 আর হারোণের ছেলে ইলিয়াসর পূটীয়েলের এক মেয়েকে বিয়ে করলে তিনি তাঁর জন্য পীনহসের জন্ম দিলেন; এরা লেবীয়দের গোষ্ঠী অনুসারে তাদের পূর্বপুরুষদের প্রধান ছিলেন।
\s5
\v 26 এই যে হারোণ ও মোশি, এদেরকেই সদাপ্রভু বললেন, “তোমরা ইস্রায়েল সন্তানদেরকে সৈন্যদের সারি অনুসারে মিশর দেশ থেকে বের কর।
\v 27 এরাই ইস্রায়েল সন্তানদেরকে মিশর থেকে বের করে আনার জন্য মিশরের রাজা ফরৌণের সঙ্গে কথা বললেন। এরা সেই মোশি ও হারোণ।
\s মিশরের উপরে প্রথম আঘাত।
\p
\s5
\v 28 আর মিশর দেশে যে দিন সদাপ্রভু মোশির সঙ্গে কথা বললেন,
\v 29 সেই দিন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আমিই সদাপ্রভু, আমি তোমাকে যা যা বলি, সে সবই তুমি মিশরের রাজা ফরৌণকে বোলো।”
\v 30 আর মোশি সদাপ্রভুর সামনে বললেন, “দেখ, আমি তো কথা বলতে পারি না, ফরৌণ কি করে আমার কথা শুনবেন?”
\s5
\c 7
\p
\v 1 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “দেখ, আমি ফরৌণের কাছে তোমাকে ঈশ্বরের মত করে নিযুক্ত করলাম, আর তোমার ভাই হারোণ তোমার ভাববাদী হবে।
\v 2 আমি তোমাকে যা যা আদেশ করি, সে সবই তুমি বলবে এবং তোমার ভাই হারোণ ফরৌণকে তা বলবে, যেন সে ইস্রায়েল সন্তানদেরকে তার দেশ থেকে ছেড়ে দেয়।
\s5
\v 3 কিন্তু আমি ফরৌণের হৃদয় কঠিন করব এবং মিশর দেশে আমি অসংখ্য চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণ দেখাব।
\v 4 তবুও ফরৌণ তোমাদের কথায় মনোযোগ করবে না; আর আমি মিশরের উপর হাত তুলে ভয়ঙ্কর শাস্তির মধ্যে দিয়ে মিশর দেশ থেকে আমার সৈন্যসামন্তকে, আমার প্রজা ইস্রায়েল সন্তানদেরকে, বের করব।
\v 5 আমি মিশরের উপরে আমার হাত তুলে মিশরীয়দের মধ্যে থেকে ইস্রায়েল সন্তানদেরকে বের করে আনলে, তারা জানবে, আমিই সদাপ্রভু।”
\s5
\v 6 পরে মোশি ও হারোণ সেইরকম করলেন; সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে কাজ করলেন।
\v 7 ফরৌণের সঙ্গে আলাপ করবার সময়ে মোশির আশী ও হারোণের তিরাশী বছর বয়স হয়েছিল।
\p
\s5
\v 8 পরে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “ফরৌণ যখন তোমাদেরকে বলে,
\v 9 ‘তোমরা তোমাদের পক্ষে কোনো অদ্ভুত লক্ষণ দেখাও’, তখন তুমি হারোণকে বোলো, ‘তোমার লাঠি নিয়ে ফরৌণের সামনে ছুঁড়ে ফেল; তাতে তা সাপ হয়ে যাবে’।”
\v 10 তখন মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গিয়ে সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে কাজ করলেন; হারোণ ফরৌণের ও তাঁর দাসেদের সামনে তাঁর লাঠি ছুঁড়ে ফেললেন, তাতে তা সাপ হয়ে গেল।
\s5
\v 11 তখন ফরৌণও জ্ঞানীদের ও জাদুকরদের ডাকলেন; তাতে তারা অর্থাৎ মিশরীয় জাদুকরেরাও তাদের মায়াবলে সেইরকম করল।
\v 12 তার ফলে তারা প্রত্যেকে নিজেদের লাঠি ছুঁড়ে ফেললে সেগুলি সব সাপ হয়ে গেল, কিন্তু হারোণের লাঠি তাদের সকল লাঠিকে গিলে ফেলল।
\v 13 আর ফরৌণের হৃদয় কঠিন হল, তিনি তাঁদের কথায় মনোযোগ করলেন না; যেমন সদাপ্রভু বলেছিলেন।
\s5
\v 14 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “ফরৌণের হৃদয় কঠিন হয়েছে; সে লোকদেরকে ছেড়ে দিতে অস্বীকার করেছে।
\v 15 তুমি সকালে ফরৌণের কাছে যাও; দেখ, সে জলের দিকে যাবে; তুমি তার সঙ্গে দেখা করতে নদীর তীরে দাঁড়াবে এবং যে লাঠি সাপ হয়ে গিয়েছিল, সেটিও হাতে নিও।
\s5
\v 16 আর তাকে বোলো, ‘সদাপ্রভু, ইব্রীয়দের ঈশ্বর আমাকে দিয়ে, তোমাকে বলে পাঠিয়েছেন, তুমি আমার প্রজাদেরকে মরুভূমিতে আমার সেবা করার জন্য ছেড়ে দাও; কিন্তু দেখ, তুমি এ পর্যন্ত শোনোনি।
\v 17 সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি যে সদাপ্রভু, তা তুমি এর মাধ্যমে জানতে পারবে; দেখ, আমি আমার হাতে থাকা লাঠি দিয়ে নদীর জলে আঘাত করব, তাতে তা রক্ত হয়ে যাবে;
\v 18 আর নদীতে যে সব মাছ আছে, তারা মারা যাবে এবং নদীতে দুর্গন্ধ হবে; আর নদীর জল পান করতে মিশরীয়দের ঘৃণা করবে’।”
\p
\s5
\v 19 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণকে এই কথা বল, ‘তুমি তোমার লাঠি নিয়ে মিশরের জলের উপরে, দেশের নদী, খাল, বিল ও সমস্ত জলাশয়ের উপরে তোমার হাত তোলো; তাতে সেই সব জল রক্ত হবে এবং মিশর দেশের সব জায়গায় কাঠের ও পাথরের পাত্রেও রক্ত হবে’।”
\s5
\v 20 তখন মোশি ও হারোণ সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে সেইরকম করলেন, তিনি লাঠি তুলে ফরৌণের ও তাঁর দাসেদের সামনে নদীর জলে আঘাত করলেন; তাতে নদীর সমস্ত জল রক্ত হয়ে গেল।
\v 21 আর নদীর সব মাছ মারা গেল ও নদীতে দুর্গন্ধ হল; তাতে মিশরীয়েরা নদীর জল পান করতে পারল না এবং মিশর দেশের সব জায়গায় রক্ত হয়ে গেল।
\v 22 আর মিশরীয় জাদুকরেরাও তাদের মায়াবলে সেইরকম করল; তাতে ফরৌণের হৃদয় কঠিন হল এবং তিনি তাঁদের কথায় মনোযোগ করলেন না; যেমন সদাপ্রভু বলেছিলেন।
\s5
\v 23 পরে ফরৌণ তাঁর বাড়ি ফিরে গেলেন, এতেও মনোযোগ করলেন না।
\v 24 আর মিশরীয়েরা সবাই নদীর জল পান করতে না পারাতে জলের চেষ্টায় নদীর আশে পাশে চারিদিকে খুড়ল।
\v 25 সদাপ্রভু নদীটি আঘাত করার পর সাতদিন কেটে গেল।
\s5
\c 8
\s দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ আঘাত।
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ফরৌণের কাছে যাও, তাকে বল, ‘সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার সেবা করার জন্য আমার প্রজাদেরকে ছেড়ে দাও।
\v 2 যদি ছেড়ে দিতে রাজি না হও, তবে দেখ, আমি ব্যাঙের মাধ্যমে তোমার সমস্ত প্রদেশকে যন্ত্রণা দেব।
\v 3 নদী ব্যাঙে ভর্তি হবে; সেই সব ব্যাঙ উঠে তোমার বাড়িতে, শোবার ঘরে ও বিছানায় এবং তোমার দাসদের বাড়িতে, তোমার প্রজাদের মধ্যে, তোমার উনুনে ও তোমার আটা মাখার পাত্রে ঢুকে পড়বে;
\v 4 আর তোমরা, তোমার প্রজারা ও দাসেরা ব্যাঙের মাধ্যমে আক্রান্ত হবে’।”
\s5
\v 5 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণকে বলো, ‘তুমি নদী, খাল ও বিল সব কিছুর উপরে লাঠি তুলে ব্যাঙ আনাও’।”
\v 6 তাতে হারোণ মিশরের সব জলের উপরে নিজের হাত তুললে ব্যাঙেরা উঠে সমস্ত মিশর দেশ ব্যাঙে পরিপূর্ণ করল।
\v 7 আর জাদুকরেরাও মায়াবলে সেইরকম করে মিশর দেশের উপরে ব্যাঙ আনল।
\s5
\v 8 পরে ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে বললেন, “সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা কর, যেন তিনি আমার থেকে ও আমার প্রজাদের থেকে এই সব ব্যাঙ দূর করে দেন, তাতে আমি লোকদেরকে ছেড়ে দেব, যেন তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করতে পারে।”
\v 9 তখন মোশি ফরৌণকে বললেন, “আপনি আমাকে বলুন, আপনার ও আপনার দাসদের জন্য এবং লোকদের জন্য কোন সময় আমরা প্রার্থনা করব, যাতে ব্যাঙগুলি যেন আপনার ও আপনার বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হয় এবং শুধুমাত্র নদীতে থাকে, ?”
\s5
\v 10 তিনি বললেন, “কালকের জন্য।” তখন মোশি বললেন, “আপনার কথা মতই হোক, যেন আপনি জানতে পারেন যে, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মত কেউ নেই।
\v 11 ব্যাঙেরা আপনার কাছ থেকে ও আপনার বাড়ি, দাস ও প্রজাদের থেকে চলে যাবে এবং শুধুমাত্র নদীতেই থাকবে।”
\v 12 পরে মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছ থেকে বেরিয়ে গেলেন এবং মোশি ফরৌণের বিরুদ্ধে যে সব ব্যাঙ এনেছিলেন, সেই সকলের বিষয়ে সদাপ্রভুর কাছে কাঁদলেন।
\s5
\v 13 আর সদাপ্রভু মোশির কথা অনুযায়ী করলেন, তাতে বাড়িতে, উঠানে ও ক্ষেতের সব ব্যাঙ মারা গেল।
\v 14 তখন লোকেরা সেই সব জড়ো করে ঢিবি করলে দেশে দুর্গন্ধ হল।
\v 15 কিন্তু ফরৌণ যখন দেখলেন, মুক্ত হওয়া গেল, তখন তাঁর হৃদয় কঠিন করলেন, তাঁদের বাক্যে মনোযোগ দিলেন না; যেমন সদাপ্রভু বলেছিলেন।
\p
\s5
\v 16 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “হারোণকে বল, তুমি তোমার লাঠি তুলে মাটির ধূলোতে আঘাত কর, তাতে সারা মিশর দেশে মশা হবে।”
\v 17 তখন তাঁরা সেইরকম করলেন; হারোণ তাঁর লাঠি সুদ্ধ হাত তুলে মাটির ধূলোতে আঘাত করলেন, তাতে মানুষে ও পশুতে মশা হল, মিশর দেশের সব জায়গায় ভূমির সকল ধূলো মশা হয়ে গেল।
\s5
\v 18 তখন জাদুকরেরা তাদের মায়াবলে মশা উৎপন্ন করার জন্য সেইরকম করল ঠিকই, কিন্তু পারল না, আর মানুষে ও পশুতে মশা হল।
\v 19 তখন জাদুকরেরা ফরৌণকে বলল, “এ ঈশ্বরের আঙ্গুল।” তবুও ফরৌণের হৃদয় কঠিন হল, তিনি তাঁদের কথায় মনোযোগ দিলেন না; যেমন সদাপ্রভু বলেছিলেন।
\s5
\v 20 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ভোরবেলায় উঠে গিয়ে ফরৌণের সামনে দাঁড়াও; যেমন সে জলের কাছে যায়; তুমি তাকে এই কথা বল, ‘সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার সেবা করার জন্য আমার প্রজাদেরকে ছেড়ে দাও।
\v 21 যদি আমার প্রজাদেরকে ছেড়ে না দাও, তবে দেখ, আমি তোমার কাছে, তোমার দাসেদের কাছে, প্রজাদের কাছে ও বাড়িতে মৌমাছির ঝাঁক পাঠাব; মিশরীয়দের বাড়িতে, এমন কি, তাঁদের বসবাসের জায়গাও মৌমাছিতে ভর্তি হবে।
\s5
\v 22 কিন্তু আমি সেই দিন আমার প্রজাদের বাসস্থান গোশন প্রদেশ আলাদা করব; সেখানে আক্রমন হবে না; যেন তুমি জানতে পার যে, পৃথিবীর মধ্যে আমিই সদাপ্রভু।
\v 23 আমি আমার প্রজাদের আলাদা করব; কাল এই চিহ্ন হবে।”
\v 24 পরে সদাপ্রভু সেইরকম করলেন, ফরৌণের ও তাঁর দাসেদের বাড়ি মৌমাছির বিশাল ঝাঁক উপস্থিত হল; তাতে সমস্ত মিশর দেশে মৌমাছির ঝাঁকে দেশ ছারখার হল।
\p
\s5
\v 25 তখন ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে বললেন, “তোমরা যাও, দেশের মধ্যে তোমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে যজ্ঞ কর।”
\v 26 মোশি বললেন, “তা করা উপযুক্ত নয়, কারণ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে মিশরীয়দের ঘৃণাজনক বলিদান করতে হবে; দেখুন, মিশরীয়দের সাক্ষাতে তাঁদের ঘৃণাজনক বলিদান করলে তারা কি আমাদেরকে পাথর দিয়ে হত্যা করবে না?
\v 27 আমরা তিন দিনের পথ মরুভূমিতে গিয়ে, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে আদেশ দেবেন, সেই অনুসারে তাঁর উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করব।”
\s5
\v 28 ফরৌণ বললেন, “আমি তোমাদেরকে ছেড়ে দিচ্ছি, তোমরা মরুভূমিতে গিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যজ্ঞ কর; কিন্তু বহুদূর যেও না; তোমরা আমার জন্য প্রার্থনা কর।”
\v 29 তখন মোশি বললেন, “দেখুন, আমি আপনার কাছ থেকে গিয়ে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করব, তাতে ফরৌণের, তাঁর দাসেদের ও তাঁর প্রজাদের কাছ থেকে কাল মৌমাছির ঝাঁক দূরে যাবে; কিন্তু সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করার জন্য লোকদেরকে ছেড়ে দেবার বিষয়ে ফরৌণ আবার বিশ্বাসঘাতকতা না করুন।”
\s5
\v 30 পরে মোশি ফরৌণের কাছ থেকে বেরিয়ে গিয়ে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন।
\v 31 আর সদাপ্রভু মোশির বাক্য অনুসারে করলেন; ফরৌণ, তাঁর দাসেদের ও প্রজাদের থেকে মৌমাছির সমস্ত ঝাঁক দূর করলেন; একটিও বাকি রইল না।
\v 32 আর এবারও ফরৌণ তাঁর হৃদয় কঠিন করলেন, লোকদেরকে ছেড়ে দিলেন না।
\s5
\c 9
\s পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম আঘাত।
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ফরৌণের কাছে গিয়ে তাকে বল, ‘সদাপ্রভু, ইব্রীয়দের ঈশ্বর, এই কথা বলেন, আমার সেবা করার জন্য আমার প্রজাদেরকে ছেড়ে দাও।
\v 2 যদি তাদেরকে ছেড়ে দিতে রাজী না হও, এখনও বাধা দাও,
\v 3 তবে দেখ, ক্ষেতের তোমার পশু সম্পত্তির উপর, ঘোড়াদের, গাধাদের, উটদের, গরুর পালের ও ভেড়ার পালের উপর সদাপ্রভুর হাত রয়েছে; ভারী মহামারী হবে।
\v 4 কিন্তু সদাপ্রভু ইস্রায়েলের পশুদের থেকে মিশরের পশুদের আলাদা করবেন; তাতে ইস্রায়েল সন্তানদের কোনো পশু মরবে না’।”
\s5
\v 5 আর সদাপ্রভু সময় নির্ধারণ করে বললেন, “কাল সদাপ্রভু দেশে এই কাজ করবেন।”
\v 6 পরদিন সদাপ্রভু তাই করলেন, তাতে মিশরের সকল পশু মরল, কিন্তু ইস্রায়েল সন্তানদের পশুদের মধ্যে একটিও মরল না।
\v 7 তখন ফরৌণ লোক পাঠালেন, আর দেখ, ইস্রায়েলের একটি পশুও মরেনি; তবুও ফরৌণের হৃদয় কঠিন হল এবং তিনি লোকদেরকে ছেড়ে দিলেন না।
\p
\s5
\v 8 পরে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “তোমরা হাত ভর্তি করে ভাটীর ছাই নাও, পরে মোশি ফরৌণের সাক্ষাতে তা আকাশের দিকে ছড়িয়ে দিক।
\v 9 তা সমস্ত মিশর দেশ জুড়ে সূক্ষ্ম ধূলো হয়ে মিশর দেশের সব জায়গায় মানুষ ও পশুদের গায়ে ক্ষতযুক্ত ফোসকা জন্মাবে।”
\v 10 তখন তাঁরা ভাটীর ছাই নিয়ে ফরৌণের সামনে দাঁড়ালেন এবং মোশি আকাশের দিকে তা ছড়িয়ে দিলেন, তাতে বা সমস্ত মানুষ ও পশুর গায়ে ক্ষতযুক্ত ফোসকা হল।
\s5
\v 11 সেই ফোসকার জন্য জাদুকরেরা মোশির সামনে দাঁড়াতে পারল না, কারণ জাদুকরদের ও সমস্ত মিশরীয়ের গায়ে ফোসকা জন্মাল।
\v 12 আর সদাপ্রভু ফরৌণের হৃদয় কঠিন করলেন; তিনি তাঁদের কথায় মনোযোগ দিলেন না, যেমন সদাপ্রভু মোশিকে বলেছিলেন।
\p
\s5
\v 13 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ভোরে উঠে ফরৌণের সামনে দাঁড়িয়ে তাকে এই কথা বোলো, ‘সদাপ্রভু, ইব্রীয়দের ঈশ্বর, এই কথা বলেন, আমার সেবা করার জন্য আমার প্রজাদেরকে ছেড়ে দাও;
\v 14 নাহলে এবার আমি তোমার হৃদয়ের বিরুদ্ধে এবং তোমার দাসেদের ও প্রজাদের মধ্যে আমার সবরকম মহামারী পাঠাব; যেন তুমি জানতে পার, সমস্ত পৃথিবীতে আমার মত কেউ নেই।
\s5
\v 15 কারণ এতদিনে আমি আমার হাত বাড়িয়ে মহামারীর মাধ্যমে তোমাকে ও তোমার প্রজাদেরকে আঘাত করতে পারতাম; তা করলে তুমি পৃথিবী থেকে উচ্ছেদ হতে।
\v 16 কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আমি এই জন্যই তোমাকে স্থাপন করেছি, যেন আমার ক্ষমতা তোমাকে দেখাই ও সমস্ত পৃথিবীতে আমার নাম প্রচারিত হয়।
\v 17 এখনও তুমি আমার প্রজাদের বিরুদ্ধে অহংকার করে তাদেরকে ছেড়ে দিতে চাইছ না।
\s5
\v 18 দেখ, মিশরের পত্তন হওয়ার সময় থেকে আজ পর্যন্ত যা কখনও দেখা যায় নি, এমন প্রচণ্ড ভারী শিলাবৃষ্টি আমি কাল এই সময়ে বর্ষাব।
\v 19 অতএব তুমি এখন ক্ষেতে লোক পাঠিয়ে তোমার পশু ও যা কিছু আছে সেসব নিরাপদ জায়গায় জড়ো কর; যে মানুষ ও পশুদেরকে ক্ষেত থেকে বাড়িতে আনা হবে না, তাঁদের উপরে শিলাবৃষ্টি হবে, আর তারা মারা যাবে’।”
\s5
\v 20 তখন ফরৌণের দাসেদের মধ্যে যে কেউ সদাপ্রভুর কথায় ভয় পেল, সে তাড়াতড়ি তার দাস ও পশুকে বাড়ির মধ্যে আনল;
\v 21 আর যে কেউ সদাপ্রভুর কথায় মনোযোগ দিল না, সে তার দাস ও পশুদেরকে ক্ষেতে রেখে দিল।
\p
\s5
\v 22 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি আকাশের দিকে তোমার হাত তোলো, তাতে মিশর দেশের সব জায়গায় শিলাবৃষ্টি হবে, মিশর দেশের মানুষ, পশু ও ক্ষেতের সমস্ত গাছের উপরে তা হবে।”
\v 23 পরে মোশি তাঁর লাঠি আকাশের দিকে তুললে সদাপ্রভু মেঘগর্জন করালেন ও শিলাবৃষ্টি বর্ষালেন এবং আগুন মাটির উপরে বেগে এসে পড়ল; এইভাবে সদাপ্রভু মিশর দেশে শিলাবৃষ্টি বর্ষালেন।
\v 24 তাতে শিলা এবং শিলার সঙ্গে আগুন মেশানো বৃষ্টি হওয়াতে তা খুব শোচনীয় হল; রাজ্য হিসাবে প্রতিষ্টিত হওয়া পর্যন্ত মিশরে এরকম শিলাবৃষ্টি কখনও হয়নি।
\s5
\v 25 তাতে সমস্ত মিশর দেশের ক্ষেতের মানুষ ও পশু সবই শিলার মাধ্যমে আহত হল ও ক্ষেতের সমস্ত ঔষধি গাছগুলি শিলাবৃষ্টির মাধ্যমে ধ্বংস হল, আর ক্ষেতের সমস্ত গাছ ভেঙ্গে গেল।
\v 26 শুধুমাত্র ইস্রায়েল সন্তানদের বাসস্থান গোশন প্রদেশে শিলাবৃষ্টি হল না।
\p
\s5
\v 27 পরে ফরৌণ লোক পাঠিয়ে মোশি ও হারোণকে ডেকে বললেন, “এইবার আমি পাপ করেছি; সদাপ্রভু ধার্মিক, কিন্তু আমি ও আমার প্রজারা দোষী।
\v 28 তোমরা সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা কর; মেঘগর্জন ও শিলাবৃষ্টি যথেষ্ট হয়েছে? আমি তোমাদেরকে ছেড়ে দেব, তোমাদের আর দেরী হবে না।”
\s5
\v 29 তখন মোশি তাঁকে বললেন, “আমি নগর থেকে বাইরে গিয়েই সদাপ্রভুর দিকে হাত বাড়িয়ে দেব, তাতে মেঘগর্জন থেমে যাবে ও শিলাবৃষ্টি আর হবে না, যেন আপনি জানতে পারেন যে, পৃথিবী সদাপ্রভুরই।
\v 30 কিন্তু আমি জানি, আপনি ও আপনার দাসেরা, আপনারা এখনও সদাপ্রভু ঈশ্বরকে ভয় পাবেন না।”
\s5
\v 31 তখন মসিনা ও যব সবই ক্ষতি হল, কারণ যব শীষযুক্ত ও মসিনা ফুটেছিল।
\v 32 কিন্তু গম ও জনার (শীতের শস্য দানা) বড় না হওয়াতে আহত হল না।
\v 33 পরে মোশি ফরৌণের কাছ থেকে নগরের বাইরে গিয়ে সদাপ্রভুর দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন, তাতে মেঘগর্জন ও শিলা পড়া বন্ধ হল এবং মাটিতে আর বৃষ্টি বর্ষাল না।
\s5
\v 34 তখন বৃষ্টি, শিলা বর্ষণ ও মেঘগর্জন থেমে গেছে দেখে ফরৌণ আরও পাপ করলেন, তিনি ও তাঁর দাসেরা তাদের হৃদয় কঠিন করলেন।
\v 35 আর ফরৌণের হৃদয় কঠিন হওয়াতে তিনি ইস্রায়েলের লোকদেরকে যেতে দিলেন না; যেমন সদাপ্রভু মোশিকে বলেছিলেন।
\s5
\c 10
\s অষ্টম ও নবম আঘাত
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ফরৌণের কাছে যাও; কারণ আমি তার ও তার দাসেদের হৃদয় কঠিন করলাম, যেন আমি তাদের মধ্যে আমার এই সব চিহ্ন দেখাই
\v 2 এবং আমি মিশরীয়দের প্রতি যা যা করেছি ও তাঁদের মধ্যে আমার যা কিছু চিহ্ন কাজ করেছি, তার বর্ণনা যেন তুমি তোমার ছেলে ও নাতিদেরকে বল এবং আমি সদাপ্রভু, এটা তোমরা জানো।”
\s5
\v 3 তখন মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে গিয়ে বললেন, “সদাপ্রভু, ইব্রীয়দের ঈশ্বর, এই কথা বলেন, ‘তুমি আমার সামনে নম্র হতে কতদিন অসম্মত হবে? আমার সেবা করার জন্য আমার প্রজাদেরকে ছেড়ে দাও।
\v 4 কিন্তু যদি আমার প্রজাদেরকে ছেড়ে দিতে রাজি না হও, তবে দেখ, আমি কাল তোমার সীমানাতে পঙ্গপাল আনব।
\s5
\v 5 তারা পৃথিবী এমন ভাবে আচ্ছন্ন করবে যে, কেউ ভূমি দেখতে পাবে না এবং শিলাবৃষ্টি থেকে বেঁচে বাকি তোমাদের যা কিছু আছে, তা তারা খেয়ে ফেলবে এবং ক্ষেতে উৎপন্ন তোমাদের গাছগুলিও খাবে।
\v 6 আর তোমার বাড়ি ও তোমার দাসের বাড়ি ও সমস্ত মিশরীয় লোকের বাড়ির সব জায়গা ভরে যাবে; পৃথিবীতে তোমার পূর্বপুরুষদের ও তাঁদের পূর্বপুরুষদের জন্ম থেকে আজ পর্যন্ত সেই রকম দেখা যায়নি।” তখন তিনি মুখ ফিরিয়ে ফরৌণের কাছ থেকে বাইরে গেলেন।
\p
\s5
\v 7 আর ফরৌণের দাসেরা তাঁকে বলল, “এ ব্যক্তি কত দিন আমাদের ফাঁদ হয়ে থাকবে? এই লোকদের ঈশ্বর সেবা করার জন্য এদেরকে ছেড়ে দিন; আপনি কি এখনও বুঝছেন না যে, মিশর দেশ ছারখার হয়ে গেল?”
\v 8 তখন মোশি ও হারোণ ফরৌণের কাছে আবার আনা হল; আর তিনি তাদেরকে বললেন, “যাও গিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা কর; কিন্তু কে কে যাবে?”
\s5
\v 9 মোশি বললেন, “আমরা আমাদের শিশু ও বৃদ্ধদেরকে, আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে এবং গরু ভেড়ার পালও সঙ্গে নিয়ে যাব, কারণ সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আমাদের উৎসব করতে হবে।”
\v 10 তখন ফরৌণ তাদেরকে বললেন, “সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে থাকুন, যদি আমি তোমাদেরকে ও তোমাদের শিশুদেরকে ছেড়ে দিই; দেখ, অনিষ্ট তোমাদের সামনে।
\v 11 তা হবে না; তোমাদের পুরুষেরা গিয়ে সদাপ্রভুর সেবা করুক; কারণ তোমরা তো এটাই চাইছ।” পরে তাঁরা ফরৌণের সামনে থেকে চলে গেলেন।
\p
\s5
\v 12 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি মিশর দেশের উপরে পঙ্গপালের জন্য হাত তোলো, তাতে তারা মিশর দেশে এসে ক্ষেতের সমস্ত ঔষধি গাছ খাবে, শিলাবৃষ্টি যা কিছু রেখে গেছে, সবই খাবে।”
\v 13 তখন মোশি মিশর দেশের উপরে তাঁর লাঠি তুললেন, তাতে সদাপ্রভু সমস্ত দিন ও সমস্ত রাত দেশে পূর্ব দিকের বায়ু বহালেন; আর সকাল হলে পূর্ব দিকের বায়ু পঙ্গপাল উঠিয়ে আনল।
\s5
\v 14 তাতে সারা মিশর দেশের উপরে পঙ্গপালে ভরে গেল ও মিশরের সমস্ত সীমানাতে পঙ্গপাল পড়ল। তা খুব ভয়ানক হল; সেই রকম পঙ্গপাল আগে কখনও হয়নি এবং পরেও কখনও হবে না।
\v 15 তারা সমস্ত এলাকা ঢেকে ফেলল, তাতে দেশ অন্ধকার হল এবং ভূমির যে ঔষধি গাছ ও বৃক্ষের যে ফল শিলাবৃষ্টি থেকে রক্ষা পেয়েছিল, সে সমস্ত তারা খেয়ে ফেলল; সমস্ত মিশর দেশে বড় গাছ বা ক্ষেতের গাছ, সবুজ গাছ বলে কিছুই রইল না।
\s5
\v 16 তখন ফরৌণ তাড়াতাড়ি মোশি ও হারোণকে ডেকে বললেন, “আমি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে ও তোমাদের বিরুদ্ধে পাপ করেছি।
\v 17 অনুরোধ করি, শুধুমাত্র এবার আমার পাপ ক্ষমা কর এবং আমাদের থেকে এই মৃত্যুকে দূর করার জন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা কর।”
\v 18 তখন তিনি ফরৌণের কাছ থেকে বাইরে গিয়ে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন;
\s5
\v 19 আর সদাপ্রভু বাতাসকে প্রবল পশ্চিম বাতাসে পরিবর্তন করলেন; তা পঙ্গপালদেরকে উঠিয়ে নিয়ে সূফসাগরে তাড়িয়ে দিল, তাতে মিশরের সমস্ত সীমানাতে একটিও পঙ্গপাল থাকল না।
\v 20 কিন্তু সদাপ্রভু ফরৌণের হৃদয় কঠিন করলেন, আর তিনি ইস্রায়েল সন্তানদেরকে ছাড়লেন না।
\s5
\v 21 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি আকাশের দিকে হাত তোলো; তাতে মিশর দেশে অন্ধকার হবে ও সেই অন্ধকার গাঢ় হবে।”
\v 22 পরে মোশি আকাশের দিকে হাত তুললে তিন দিন পর্যন্ত সমস্ত মিশর দেশে গাঢ় অন্ধকার হল।
\v 23 তিনদিন পর্যন্ত কেউ কাকেও দেখতে পেল না এবং কেউ নিজের জায়গা থেকে উঠল না; কিন্তু ইস্রায়েল সন্তানদের জন্য তাদের বাসস্থানে আলো ছিল।
\s5
\v 24 তখন ফরৌণ মোশিকে ডেকে বললেন, “যাও, গিয়ে সদাপ্রভুর সেবা কর; শুধুমাত্র তোমাদের ভেড়ার পাল ও গরুর পাল থাকুক; তোমাদের শিশুরাও তোমাদের সঙ্গে যাক।”
\v 25 কিন্তু মোশি বললেন, “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার জন্য আমাদের হাতে বলি ও হোমদ্রব্য সমর্পণ করা আপনার কর্তব্য।
\v 26 আমাদের সঙ্গে আমাদের পশুরাও যাবে, একটি খুরও বাকি থাকবে না; কারণ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবার জন্য তাঁদের মধ্যে থেকে বলি করতে হবে এবং কি কি দিয়ে সদাপ্রভুর সেবা করব, তা সেখানে উপস্থিত না হলে আমরা জানতে পারব না।”
\s5
\v 27 কিন্তু সদাপ্রভু ফরৌণের হৃদয় কঠিন করলেন, আর তিনি তাদেরকে ছেড়ে দিতে রাজি হলেন না।
\v 28 তখন ফরৌণ তাঁকে বললেন, “আমার সামনে থেকে দূর হও; সাবধান, আমাকে আর কখনও মুখ দেখিও না; কারণ যে দিন আমার মুখ দেখবে, সেই দিন মরবে।”
\v 29 মোশি বললেন, “ভালই বলেছেন, আমি আপনার মুখ আর কখনও দেখব না।”
\s5
\c 11
\p
\v 1 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আমি ফরৌণের ও মিশরের উপরে আর এক মহামারী আনব, তারপরে সে তোমাদেরকে এই স্থান থেকে ছেড়ে দেবে এবং ছেড়ে দেবার সময়ে তোমাদেরকে নিশ্চয়ই এখান থেকে একেবারে তাড়িয়ে দেবে।
\v 2 তুমি লোকেদেরকে নির্দেশ দাও, আর প্রত্যেক পুরুষ তার প্রতিবাসীর থেকে ও প্রত্যেক স্ত্রী তার প্রতিবাসিনী থেকে রুপোর ও সোনার গয়না চেয়ে নিক।”
\v 3 আর সদাপ্রভু মিশরীয়দের চোখে লোকদেরকে অনুগ্রহের পাত্র করলেন। আবার মিশর দেশে মোশি ফরৌণের দাসেদের ও প্রজাদের চোখে খুব মহান ব্যক্তি হয়ে উঠলেন।
\p
\s5
\v 4 মোশি আরও বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি মাঝরাতে মিশরের মধ্যে দিয়ে যাব।
\v 5 তাতে সিংহাসনে বসা ফরৌণের প্রথমজাত থেকে যাঁতা পেষণকারিণী দাসীর প্রথমজাত পর্যন্ত মিশর দেশের সকল প্রথমজাত মরবে।
\s5
\v 6 আর যেরকম কখনও হয় নি ও হবে না, সমস্ত মিশর দেশে এমন মহাকোলাহল হবে।
\v 7 কিন্তু সমস্ত ইস্রায়েল সন্তানের মধ্যে মানুষের কি পশুর বিরুদ্ধে একটা কুকুরও চিত্কার করবে না, যেন আপনারা জানতে পারেন যে, সদাপ্রভু মিশরীয় ও ইস্রায়েলীয়ের মধ্যে প্রভেদ করেন।’
\v 8 আর তোমার এই দাসেরা সবাই আমার কাছে নেমে আসবে ও প্রণাম করে আমাকে বলবে, ‘তুমি ও তোমার অনুগামী সব লোকেরা যাও, তারপর আমি বেরিয়ে আসব।” তখন তিনি খুব রেগে গিয়ে ফরৌণের কাছ থেকে বেরিয়ে গেলেন।
\s5
\v 9 আর সদাপ্রভু মোশিকে বলেছিলেন, “ফরৌণ তোমাদের কথায় মনোযোগ দেবে না, আমি অনেক অদ্ভুত জিনিস মিশর দেশে করব।
\v 10 মোশি ও হারোণ ফরৌণের সামনে এই সব অদ্ভুত কাজ করেছিলেন; আর সদাপ্রভু ফরৌণের অন্তর কঠিন করলেন, আর তিনি তাঁর দেশ থেকে ইস্রায়েলের লোকদের ছাড়লেন না।
\s5
\c 12
\s নিস্তারপর্ব স্থাপন। ঈশ্বরের দশম আঘাত।
\p
\v 1 মিশর দেশে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন,
\v 2 “তোমাদের জন্য এই মাস হবে মাসগুলির শুরু; আর মাসটি বছরের সব মাসের মধ্যে প্রথম হবে।
\s5
\v 3 সমস্ত ইস্রায়েল মণ্ডলীকে এই কথা বল, ‘তোমরা এই মাসের দশম দিনে তোমাদের বাবার বংশ অনুসারে প্রত্যেক পরিবার এক এক বাড়ির জন্য এক একটি ভেড়ার বাচ্চা নেবে।
\v 4 আর ভেড়ার বাচ্চা খাওয়ার জন্য যদি কারও পরিজন কম হয়, তবে সে ও তার পাশের বাড়ির প্রতিবেশীর লোকসংখ্যা অনুসারে একটি ভেড়ার বাচ্চা নেবে। তোমরা এক এক জনের খাওয়ার ক্ষমতা অনুসারে ভেড়ার বাচ্চা নেবে।
\s5
\v 5 তোমাদের সেই ভেড়ার বাচ্চাটি নির্দোষ ও এক বছরের পুরুষ বাচ্চা শাবক হবে; তোমরা ভেড়ার পালের কিংবা ছাগপালের মধ্যে থেকে তা নেবে;
\v 6 আর এই মাসের চৌদ্দ দিন পর্যন্ত রাখবে; পরে ইস্রায়েলের সমস্ত সমাজ সন্ধ্যা বেলায় সেই ভেড়ার বাচ্চাটি হত্যা করবে।
\v 7 আর তারা তার কিছুটা রক্ত নেবে এবং যে যে বাড়ির মধ্যে ভেড়ার বাচ্চা খাবে, সেই বাড়ির দরজার চৌকাঠে ও মাথার ওপর তা লাগিয়ে দেবে।
\v 8 পরে সেই রাতে তার মাংস খাবে; আগুনে পুড়িয়ে খামির বিহীন রুটি ও তেতো শাকের সঙ্গে তা খাবে।
\s5
\v 9 তোমরা তার মাংস কাঁচা কিংবা জলে সেদ্ধ করে খেও না, কিন্তু তার মাথা, পা ও ভিতরের অংশ আগুনে পুড়িও।
\v 10 আর সকাল পর্যন্ত তার কিছুই রেখো না; কিন্তু সকাল পর্যন্ত যা বাকি থাকে, তা আগুনে পুড়িয়ে ফেলো।
\p
\v 11 আর তোমরা এইভাবে তা খাবে; কোমর বাঁধবে, পায়ে জুতো পড়বে, হাতে লাঠি নেবে ও তাড়াতাড়ি খেয়ে নেবে; এটা সদাপ্রভুর নিস্তারপর্ব।
\s5
\v 12 কারণ সেই রাতে আমি মিশর দেশের মধ্য দিয়ে যাব এবং মিশর দেশের মানুষের ও পশুর যাবতীয় প্রথমজাতকে আঘাত করব এবং মিশরের সমস্ত দেবতাদের উপরে শাস্তি নিয়ে আসব; আমিই সদাপ্রভু।
\v 13 সুতরাং তোমরা যে যে বাড়িতে থাক, তোমাদের পক্ষে ঐ রক্ত চিহ্ন হিসাবে সেই সেই বাড়ির উপরে থাকবে; তাতে আমি যখন মিশর দেশকে আঘাত করব, তখন সেই রক্ত দেখলে তোমাদেরকে ছেড়ে এগিয়ে যাব, মহামারীর আঘাত তোমাদের উপরে পড়বে না।
\v 14 আর এই দিন তোমাদের স্মরণীয় হবে এবং তোমরা এই দিনকে সদাপ্রভুর উৎসব বলে পালন করবে; বংশপরম্পরার চিরকালীন নিয়ম অনুসারে এই উৎসব পালন করবে।
\s5
\v 15 তোমরা সাত দিন খামির বিহীন রুটি খাবে; প্রথম দিনেই নিজের নিজের বাড়ি থেকে খামির দূর করবে, কারণ যে কেউ প্রথম দিন থেকে সপ্তম দিন পর্যন্ত খামিরযুক্ত খাবার খাবে, সেই প্রাণী ইস্রায়েল থেকে বিচ্ছিন্ন হবে।
\v 16 আর প্রথম দিনে তোমাদের পবিত্র সভা হবে এবং সপ্তম দিনেও তোমাদের পবিত্র সভা হবে; সেই দুই দিন প্রত্যেক প্রাণীর খাদ্য তৈরী ছাড়া অন্য কোন কাজ করবে না, শুধুমাত্র সেই কাজ করতে পারবে।
\s5
\v 17 এইভাবে তোমরা খামির বিহীন রুটির পর্ব পালন করবে, কারণ এই দিনে আমি তোমাদের বাহিনীদেরকে মিশর দেশ থেকে বের করে আনলাম; তাই তোমরা বংশপরম্পরার চিরস্থায়ী বিধি অনুসারে এই দিন পালন করবে।
\v 18 তোমরা প্রথম মাসের চৌদ্দতম দিনের সন্ধ্যাবেলা থেকে একুশতম দিনের সন্ধ্যাবেলা পর্যন্ত খামির বিহীন রুটি খেও।
\s5
\v 19 সাতদিন তোমাদের বাড়িতে যেন খামির না থাকে; কারণ কি প্রবাসী কি দেশের, যে কোন প্রাণী খামির মেশানো দ্রব্য খাবে, সে ইস্রায়েল মণ্ডলী থেকে বিচ্ছিন্ন হবে।
\v 20 তোমরা খামিরযুক্ত কোনো জিনিস খেও না; তোমরা তোমাদের সমস্ত বাসস্থানে খামির বিহীন রুটি খেও’।”
\p
\s5
\v 21 তখন মোশি ইস্রায়েলের সমস্ত প্রাচীনদেরকে ডেকে বললেন, “তোমরা নিজেদের গোষ্ঠী অনুসারে এক একটি ভেড়ার বাচ্চা বের করে নাও, নিস্তারপর্বের বলি হত্যা কর।
\v 22 আর এক গুচ্ছ এসোব নিয়ে গামলায় থাকা রক্তে ডুবিয়ে দরজার মাথায় ও দুই চৌকাঠে গামলায় থাকা রক্তের কিছুটা লাগিয়ে দেবে এবং সকাল পর্যন্ত তোমরা কেউই বাড়ির দরজার বাইরে যাবে না।
\s5
\v 23 কারণ সদাপ্রভু মিশরীয়দেরকে আঘাত করার জন্য তোমাদের কাছ দিয়ে যাবেন, তাতে দরজার মাথায় ও দুই চৌকাঠে সেই রক্ত দেখলে সদাপ্রভু সেই দরজা ছেড়ে আগে যাবেন, তোমাদের বাড়িতে বিনাশকারীকে প্রবেশ করে আঘাত করতে দেবেন না।
\s5
\v 24 আর তোমরা ও যুগ যুগ ধরে তোমাদের সন্তানেরা নিয়ম হিসাবে এই রীতি পালন করবে।
\v 25 আর সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তোমাদেরকে যে দেশ দেবেন, সেই দেশে যখন প্রবেশ করবে, তখনও এই আরাধনার আয়োজন করবে।
\s5
\v 26 আর তোমাদের সন্তানরা যখন তোমাদেরকে বলবে, ‘তোমাদের এই আরাধনার অর্থ কি?
\v 27 তোমরা বলবে, ‘এটা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্বের যজ্ঞ, কারণ মিশরীয়দেরকে আঘাত করার সময়ে তিনি মিশরে ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত বাড়ি ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন, আমাদের বাড়ি রক্ষা করেছিলেন’।” তখন লোকেরা মাথা নিচু করে আরাধনা করল।
\v 28 পরে ইস্রায়েল সন্তানেরা গিয়ে, সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে যেরকম আদেশ দিয়েছিলেন, সেইরকম করল।
\p
\s5
\v 29 পরে মাঝরাতে এই ঘটনা ঘটল, সদাপ্রভু সিংহাসনে বসা ফরৌণের প্রথমজাত সন্তান থেকে কারাগারে থাকা বন্দির প্রথমজাত সন্তান পর্যন্ত মিশর দেশের সমস্ত প্রথমজাত সন্তানকে ও পশুদের প্রথমজাত শাবকদেরকে আঘাত করলেন।
\v 30 তাতে ফরৌণ ও তাঁর দাসেরা এবং সমস্ত মিশরীয় লোক রাতে উঠল এবং মিশরে মহাকোলাহল হল; কারণ যে ঘরে কেউ মরে নি, এমন ঘরই ছিল না।
\p
\s5
\v 31 তখন রাতের বেলায় ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে বললেন, “তোমরা ওঠ, ইস্রায়েল সন্তানদেরকে নিয়ে আমার প্রজাদের মধ্যে থেকে বের হও, তোমরা যাও, তোমাদের কথা অনুসারে গিয়ে সদাপ্রভুর সেবা কর।
\v 32 তোমাদের কথা অনুসারে ভেড়ার পাল ও গরুর পাল সব সঙ্গে নিয়ে চলে যাও এবং আমাকেও আশীর্বাদ কর।”
\v 33 তখন লোকদেরকে তাড়াতাড়ি দেশ থেকে বিদায় করার জন্য মিশরীয়েরা ব্যাকুল হয়ে পড়ল; কারণ তারা বলল, “আমরা সকলে মারা পড়লাম।”
\s5
\v 34 তাতে ময়দার তালে খামির মেশাবার আগে লোকেরা তা নিয়ে পেষাই করার পাত্র নিজেদের বস্ত্রে বেঁধে কাঁধে নিল।
\v 35 আর ইস্রায়েল সন্তানেরা মোশির বাক্য অনুসারে কাজ করল; ফলে তারা মিশরীয়দের কাছে রুপো, সোনার গয়না ও পোশাক চাইল;
\v 36 আর সদাপ্রভু মিশরীয়দের চোখে তাদেরকে অনুগ্রহপাত্র করলেন, তাই তারা যা চাইল, মিশরীয়েরা তাদেরকে তাই দিল। এইভাবে তারা মিশরীয়দের ধনসম্পদ লুঠ করল।
\s মিশর থেকে ইস্রায়েলীয়দের যাত্রা।
\p
\s5
\v 37 তখন ইস্রায়েল সন্তানেরা বালক ছাড়া কমবেশী পায়ে হাঁটা ছয় লক্ষ পুরুষ রামিষেষ থেকে সুক্কোতে যাত্রা করল।
\v 38 আর তাঁদের সঙ্গে মিশে থাকা সমস্ত লোকেরা এবং ভেড়া ও গরু, প্রচুর সংখ্যক পশু চলে গেল।
\v 39 পরে তারা মিশর থেকে আনা ময়দার তাল দিয়ে খামির বিহীন রুটি তৈরী করল, তাতে খামির মেশান হয় নি, কারণ তারা মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিল, সুতরাং দেরী করতে না চাওয়াতে নিজেদের জন্য খাদ্য দ্রব্য তৈরী করে নি।
\p
\v 40 ইস্রায়েল সন্তানেরা চারশো ত্রিশ বছর মিশরে বসবাস করেছিল।
\s5
\v 41 সেই চারশো ত্রিশ বছরের শেষে, ঐ দিনে, সদাপ্রভুর সমস্ত বাহিনী মিশর দেশ থেকে বের হল।
\v 42 মিশর দেশ থেকে তাদেরকে বের করে আনার জন্য এটি ছিল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে জেগে থাকার রাত, সেজন্য সমস্ত ইস্রায়েল সন্তানদের বংশ ধরে এই রাত ছিল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পালন করা অত্যন্ত পালনীয়।
\p
\s5
\v 43 আর সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন, “নিস্তারপর্বের বলির নিয়ম এই; অন্য জাতীয় কোনো লোক তা খাবে না।
\v 44 কিন্তু কোন ব্যক্তির যে দাসকে রুপো দিয়ে কেনা হয়েছে, সে যদি ছিন্নত্বক হয়, তবে খেতে পাবে।
\s5
\v 45 বিদেশী কিংবা বেতনজীবী তা খেতে পাবে না।
\v 46 তোমরা এক বাড়ির মধ্যে তা খাবে; সেই মাংসের কিছুই বাড়ির বাইরে নিয়ে যেও না এবং তার একটি হাড়ও ভেঙ্গ না।
\s5
\v 47 সমস্ত ইস্রায়েল মণ্ডলী এটা পালন করবে।
\v 48 আর তোমার সঙ্গে বসবাসকারী কোনো বিদেশী লোক যদি সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব পালন করতে চায়, তবে সে নিজে পুরুষ পরিবারের সঙ্গে ছিন্নত্বক হয়ে এটা পালন করতে আসুক, সে দেশের মধ্যে জন্মানো লোকের মত হবে; কিন্তু অচ্ছিন্নত্বক কোন লোক তা খাবে না।
\s5
\v 49 দেশে জন্মানো লোকের জন্য ও তোমাদের মধ্যে বসবাসকারী বিদেশী লোকের জন্য একই নিয়ম হবে।”
\p
\v 50 সমস্ত ইস্রায়েল সন্তান সেইরকম করল, সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে যে আদেশ দিয়েছিলেন, সেই অনুসারেই করল।
\v 51 এইভাবে সদাপ্রভু সেই দিন ইস্রায়েল সন্তানদেরকে দলে দলে মিশর দেশ থেকে বের করে আনলেন।
\s5
\c 13
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
\v 2 “ইস্রায়েল সন্তানদের মধ্যে উভয়ই মানুষ হোক কিংবা পশু হোক, গর্ভে জন্মানো গর্ভজাত সব প্রথম ফল আমার উদ্দেশ্যে পবিত্র কর; তা সব আমারই।”
\s5
\v 3 আর মোশি তাদেরকে বললেন, “এই দিন মনে রেখো, যে দিনে তোমরা মিশরের দাসত্বের ঘর থেকে বের হয়ে আসলে, কারণ সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত দিয়ে সেখান থেকে তোমাদের বের করে আনলেন; কোনো খামিরযুক্ত খাবার খাওয়া হবে না।
\v 4 আবীব মাসের এই দিনে তোমরা বের হলে।
\v 5 আর কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়ের যে দেশ তোমাকে দিতে সদাপ্রভু তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন, সেই দুধ ও মধু প্রবাহিত দেশে যখন তিনি তোমাকে নিয়ে যাবেন, তখন তুমি এই মাসে এই সেবার অনুষ্ঠান করবে।
\s5
\v 6 সাত দিন খামির বিহীন রুটি খেও ও সপ্তম দিনে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসব কোরো।
\v 7 সেই সাত দিন খামির বিহীন রুটি খেতে হবে, তোমার কাছে খামিরযুক্ত খাবার দেখা না যাক, তোমার সমস্ত সীমানার মধ্যে খামির দেখা না যাক।
\s5
\v 8 সেই দিনে তুমি তোমার ছেলেকে এটা জানিও, ‘মিশর থেকে আমার বেরিয়ে আসার সময়ে সদাপ্রভু আমার প্রতি যা করলেন, এটা সেই জন্য।’
\v 9 আর এটা চিহ্নের জন্য তোমার হাতে ও স্মরণের জন্য তোমার কপালে থাকবে; যেন সদাপ্রভুর ব্যবস্থা তোমার মুখে থাকে, কারণ সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত দিয়ে মিশর থেকে তোমাকে বের করেছেন।
\v 10 সুতরাং তুমি প্রত্যেক বছর এইসময়ে এই নিয়ম পালন করবে।
\p
\s5
\v 11 সদাপ্রভু তোমার কাছে ও তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে যে প্রতিজ্ঞা করেছেন, সেই অনুসারে যখন কনানীয়দের দেশে প্রবেশ করিয়ে তোমাকে সেই দেশ দেবেন,
\v 12 তখন তুমি গর্ভজাত সমস্ত প্রথম ফল সদাপ্রভুর কাছে উপস্থিত করবে এবং তোমার পশুদেরও সকল প্রথমজাতদের মধ্যে পুরুষ সন্তান সদাপ্রভুর হবে।
\v 13 আর গাধার প্রত্যেক প্রথমজাতের মুক্তির জন্য তার পরিবর্তে ভেড়ার বাচ্চা দেবে; যদি মুক্ত না কর, তবে তার গলা ভাঙ্গবে; তোমার ছেলেদের মধ্যে মানুষের প্রথমজাত সবাইকে মুক্ত করতে হবে।
\s5
\v 14 আর তোমার ছেলে আগামীকালে যখন তোমাকে জিজ্ঞাসা করবে, ‘এ কি? তুমি বলবে, ‘সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত দিয়ে আমাদেরকে মিশর থেকে, দাসত্বের ঘর থেকে, বের করেছেন।
\v 15 তখন ফরৌণ আমাদেরকে ছেড়ে দেবার বিষয়ে নিষ্ঠুর হলে সদাপ্রভু মিশর দেশের সমস্ত প্রথমজাত ফলকে, মানুষের প্রথমজাত ও পশুর প্রথমজাত ফল সব কিছুকে হত্যা করলেন, এই জন্য আমি গর্ভে জন্মানো পুরুষসন্তান গুলিকে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করি, কিন্তু আমার প্রথমজাত সব সন্তানকে মুক্ত করি।’
\v 16 এটি চিহ্ন হিসাবে তোমার হাতে ও স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে তোমার কপালে থাকবে, কারণ সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত দিয়ে আমাদেরকে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছেন।”
\p
\s5
\v 17 আর ফরৌণ লোকদের ছেড়ে দিলে, পলেষ্টীয়দের দেশ দিয়ে সোজা পথ থাকলেও ঈশ্বর সেই পথে তাদেরকে যেতে দিলেন না, কারণ ঈশ্বর বললেন, “যুদ্ধ দেখলে হয়তো লোকেরা অনুতাপ করে মিশরে ফিরে যাবে।”
\v 18 সুতরাং ঈশ্বর লোকেদেরকে সূফসাগরের মরুভূমির পথ দিয়ে নিয়ে গেলেন; আর ইস্রায়েল সন্তানরা যুদ্ধ সজ্জায় সজ্জিত হয়ে মিশর দেশ থেকে চলে গেল।
\s5
\v 19 আর মোশি যোষেফের হাড় নিজের সঙ্গে নিলেন, কারণ তিনি ইস্রায়েল সন্তানদেরকে কঠিন শপথ করিয়ে বলেছিলেন, “ঈশ্বর অবশ্যই তোমাদের দেখাশোনা করবেন, আর তোমরা তোমাদের সঙ্গে আমার হাড় এই জায়গা থেকে নিয়ে যাবে।”
\p
\v 20 পরে তারা সুক্কোৎ থেকে চলে গিয়ে মরুভূমির প্রান্তে থাকা এথমে শিবির স্থাপন করল।
\v 21 আর সদাপ্রভু দিনের বেলা পথ দেখার জন্য মেঘস্তম্ভ থেকে এবং রাতে আলো দেবার জন্য অগ্নিস্তম্ভ থেকে তাঁদের আগে আগে যেতেন, যেন তারা দিনরাত চলতে পারে।
\v 22 লোকেদের সামনে থেকে দিনের বেলায় মেঘস্তম্ভ ও রাতে অগ্নিস্তম্ভ দূরে সরত না।
\s5
\c 14
\p
\v 1 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
\v 2 “তুমি ইস্রায়েল সন্তানদেরকে বল, তারা যেন ফেরে এবং পী-হহীরোতের আগে মিগ্‌দোলের ও সমুদ্রের মাঝখানে বাল্‌সফোনের আগে শিবির স্থাপন করে।
\v 3 তাতে ফরৌণ ইস্রায়েল সন্তানদের সম্বন্ধে বলবে, তারা দেশের মধ্যে ঘুরে বেড়াল, মরুভূমি তাঁদের পথ বন্ধ করল।
\s5
\v 4 আর আমি ফরৌণের মন কঠিন করব এবং সে তোমাদের পিছনে দৌড়াবে। আমি ফরৌণ ও তার সমস্ত সৈন্যদের মাধ্যমে গৌরবান্বিত হব; আর মিশরীয়েরা জানতে পারবে যে, আমিই সদাপ্রভু। তখন তারা সেইরকম করল।
\s ফরৌণের সৈন্যসামন্তের ধ্বংস।
\p
\v 5 যখন মিশরের রাজাকে এই খবর দেওয়া হল যে, ইস্রায়েলের লোকেরা পালিয়েছে, ফরৌণ ও তার দাসেদের অন্তর লোকেদের বিরুদ্ধে হল; তাঁরা বললেন, “আমরা এ কি করলাম? আমাদের দাসত্ব থেকে ইস্রায়েলকে কেন ছেড়ে দিলাম?”
\s5
\v 6 তখন তিনি তাঁর রথ প্রস্তুত করালেন ও তাঁর লোকেদের সঙ্গে নিলেন।
\v 7 আর মনোনীত ছয়শো রথ এবং মিশরের সমস্ত রথ ও সেই সমস্ত কিছুর উপরে নিযুক্ত সেনাপতিকে নিলেন।
\v 8 আর সদাপ্রভু মিশরের রাজা ফরৌণের অন্তর কঠিন করলেন, তাতে তিনি ইস্রায়েল সন্তানদের পিছু পিছু তাড়া করলেন; তখন ইস্রায়েল সন্তানেরা জয়জয়কার করতে করতে চলে যাচ্ছিল।
\v 9 আর মিশরীয়রা, ফরৌণের সকল ঘোড়া ও রথ এবং তার ঘোড়াচালক ও সৈন্যরা তাদের পিছু পিছু তাড়া করল; আর তারা বাল্ সফোনের সামনে পী-হহীরোতের কাছে সমুদ্রের তীরে শিবির স্থাপন করলে তাদের কাছে উপস্থিত হল।
\s5
\v 10 ফরৌণ যখন কাছাকাছি চলে এলেন, তখন ইস্রায়েলের সন্তানেরা চোখ তুলে দেখল, তাদের পিছু পিছু মিশরীয়েরা আসছে; তাই তাঁরা খুব ভয় পেল, আর ইস্রায়েল সন্তানেরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে চিত্কার করে কাঁদতে লাগলো।
\v 11 আর তাঁরা মোশিকে বলল, “মিশরে কবর নেই বলে তুমি কি আমাদেরকে নিয়ে আসলে, যেন আমরা মরুভূমিতে মারা যাই? তুমি আমাদের সঙ্গে এ কেমন ব্যবহার করলে? কেন আমাদেরকে মিশর থেকে বের করলে?
\v 12 আমরা কি মিশর দেশে তোমাকে এই কথা বলি নি, আমাদেরকে থাকতে দাও, আমরা মিশরীয়দের দাসত্ব করি? কারণ মরুভূমিতে মারা যাবার থেকে মিশরীয়দের দাসত্ব করা আমাদের ভালো ।”
\s5
\v 13 তখন মোশি তাদেরকে বললেন, “ভয় কোরো না, সবাই স্থির হয়ে দাঁড়াও। সদাপ্রভু আজ তোমাদের যে উদ্ধার করেন, তা দেখ; কারণ এই যে মিশরীয়দেরকে আজ দেখছ, এদেরকে আর কখনই দেখবে না।
\v 14 সদাপ্রভু তোমাদের পক্ষ নিয়ে যুদ্ধ করবেন, তোমরা শান্ত থাকবে।”
\s5
\v 15 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি কেন আমার কাছে চিত্কার করে কাঁদছ? ইস্রায়েল সন্তানদেরকে এগিয়ে যেতে বল।
\v 16 আর তুমি তোমার লাঠি তুলে সমুদ্রের উপরে হাত বাড়াও, সমুদ্রকে দুই ভাগ কর; তাতে ইস্রায়েল সন্তানেরা শুকনো পথ দিয়ে সমুদ্রের মধ্যে প্রবেশ করবে।
\v 17 আর দেখ, আমিই মিশরীয়দের অন্তর কঠিন করব, তাতে তারা তাদের পিছু পিছু প্রবেশ করবে এবং আমি ফরৌণের, তার সব সৈন্যের, তার রথগুলির ও তার ঘোড়াচালকদের মাধ্যমে গৌরবান্বিত হব।
\v 18 আর ফরৌণ ও তার রথগুলি ও তার ঘোড়াচালকদের মাধ্যমে আমার গৌরবলাভ হলে মিশরীয়েরা জানতে পারবে যে, আমিই সদাপ্রভু।”
\s5
\v 19 তখন ইস্রায়েলীয় সৈন্যের আগে আগে যাওয়া ঈশ্বরের দূত সরে গিয়ে তাদের পিছু পিছু গেলেন এবং মেঘস্তম্ভ তাদের সামনে থেকে সরে গিয়ে তাদের পিছনে গিয়ে দাঁড়াল;
\v 20 তা মিশরের শিবির ও ইস্রায়েলের শিবির, এই দুইয়ের মধ্যে আসল; আর সেই মেঘ ও অন্ধকার থাকল, কিন্তু সেটা রাতে আলো দিল এবং সমস্ত রাত একদল অন্য দলের কাছে আসল না।
\s5
\v 21 মোশি সমুদ্রের উপরে তাঁর হাত বাড়ালেন, তাতে সদাপ্রভু সেই সমস্ত রাতে শক্তিশালী পূর্ব দিকের বায়ু দিয়ে সমুদ্রকে সরিয়ে দিলেন ও তা শুকনো জমিতে পরিনত করলেন, তাতে জল দুই ভাগ হল।
\v 22 আর ইস্রায়েল সন্তানেরা শুকনো পথে সমুদ্রের মধ্যে প্রবেশ করল এবং তাদের ডান ও বাম দিকের জল দেওয়ালের মত হল।
\s5
\v 23 পরে মিশরীয়েরা, ফরৌণের সব ঘোড়া ও রথ এবং ঘোড়াচালকরা তাড়া করে তাদের পিছু পিছু সমুদ্রের মধ্যে প্রবেশ করল।
\v 24 কিন্তু রাতের শেষ সময়ে সদাপ্রভু অগ্নি ও মেঘস্তম্ভ থেকে মিশরীয় সৈন্যদের উপরে নজর রাখলেন ও মিশরীয়দের সৈন্যকে ব্যাকুল করে তুললেন।
\v 25 আর তিনি তাদের রথের চাকার গতিরোধ করলেন, তাতে তারা খুব কষ্ট করে রথ চালাল; তখন মিশরীয়েরা বলল, “চল, আমরা ইস্রায়েলের সামনে থেকে পালিয়ে যাই, কারণ সদাপ্রভু তাদের হয়ে মিশরীয়দের বিপক্ষে যুদ্ধ করছেন।”
\s5
\v 26 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি সমুদ্রের উপরে হাত বাড়াও; তাতে জল ফিরে মিশরীয়দের উপরে, তাদের রথের উপরে ও ঘোড়াচালকদের উপরে আসবে।”
\v 27 তখন মোশি সমুদ্রের উপরে হাত বাড়ালেন, আর সকাল হতে না হতেই সমুদ্র আগের মত সমান হয়ে গেল; তাতে মিশরীয়েরা সমুদ্রের দিকেই পালিয়ে গেল; আর সদাপ্রভু সমুদ্রের মধ্যে মিশরীয়দেরকে ঠেলে দিলেন।
\v 28 জল ফিরে এল ও তাদের রথ ও ঘোড়াচালকদেরকে ঢেকে দিল, তাতে ফরৌণের যে সব সৈন্য তাদের পিছনে সমুদ্রে প্রবেশ করেছিল, তাদের একজনও বেঁচে থাকল না।
\s5
\v 29 যদিও ইস্রায়েল সন্তানেরা শুকনো পথে সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিল এবং তাদের ডানে ও বামে জল একটি দেওয়ালের মত হয়েছিল।
\v 30 এইভাবে সেদিন সদাপ্রভু মিশরীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলকে উদ্ধার করলেন ও ইস্রায়েল মিশরীয়দেরকে সমুদ্রের ধারে মৃত দেখল।
\v 31 আর ইস্রায়েল মিশরীয়দের প্রতি করা সদাপ্রভুর আশ্চর্য কাজ দেখল; তাতে লোকেরা সদাপ্রভুকে ভয় করল এবং সদাপ্রভুতে ও তাঁর দাস মোশিতে বিশ্বাস করল।
\s5
\c 15
\s ইস্রায়েলের জয়গান।
\p
\v 1 তখন মোশি ও ইস্রায়েল সন্তানেরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এই গীত গান করলেন; তাঁরা বললেন, “আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গান করব; কারণ তিনি বিজয়ের সঙ্গে মহিমান্বিত হলেন, তিনি ঘোড়া ও ঘোড়াচালকদের সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেললেন।
\s5
\v 2 সদাপ্রভু আমার শক্তি ও গান, তিনি আমার পরিত্রাণ হলেন; এই আমার ঈশ্বর, আমি তাঁর প্রশংসা করব; আমার পিতার ঈশ্বর, আমি তাঁকে মহিমান্বিত করব ।
\v 3 সদাপ্রভু যোদ্ধা; সদাপ্রভু তাঁর নাম।
\s5
\v 4 তিনি ফরৌণের রথগুলি ও সৈন্যদলকে সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেললেন; তাঁর মনোনীত সেনাপতিরা সুফসাগরে ডুবে গেল।
\v 5 জলরাশি তাদেরকে ঢেকে দিল; তারা অগাধ জলে পাথরের মত তলিয়ে গেল।
\s5
\v 6 হে সদাপ্রভু, তোমার ডান হাত শক্তিতে গৌরবান্বিত; হে সদাপ্রভু, তোমার ডান হাত শত্রু ধ্বংসকারী।
\v 7 তুমি নিজের মহিমার প্রতাপে, যাঁরা তোমার বিরুদ্ধে উঠে, তাদেরকে ধ্বংস করে থাক; তোমার পাঠানো ক্রোধ খরকুটোর মত তাদেরকে গ্রাস করে।
\v 8 তোমার নাকের নিশ্বাসে জল এক সাথে জড়ো হল; স্রোতগুলি স্তূপের মত দাঁড়িয়ে গেল; সমুদ্রগর্ভে জলরাশি জমাট বাঁধলো।
\s5
\v 9 শত্রু বলেছিল, ‘আমি পিছনে তাড়া করব, তাদের নাগালে পাব, লুট করা জিনিস ভাগ করে নেব; তাদের উপর আমার অভিলাষ পূর্ণ হবে; আমি তরোয়াল টেনে খুলবো, আমার হাত তাদেরকে ধ্বংস করবে।’
\v 10 কিন্তু তুমি তোমার বাতাস দিয়ে ফুঁ দিলে, সমুদ্র তাদেরকে ঢেকে দিল; তারা প্রবল জলে সীসার মত তলিয়ে গেল।
\v 11 হে সদাপ্রভু, দেবতাদের মধ্যে কে তোমার মত? কে তোমার মত পবিত্রতায় মহিমান্বিত, প্রশংসাতে সম্মানিত, অলৌকিক কার্যকারী?
\s5
\v 12 তুমি তোমার ডান হাত বাড়ালে, পৃথিবী তাদেরকে গ্রাস করল।
\v 13 তুমি যে লোকদেরকে মুক্ত করেছ, তাদেরকে নিজের দয়াতে চালাচ্ছ, তুমি নিজের শক্তিতে তাদেরকে পবিত্র স্থানে চালনা করছ, যেখানে তুমি বাস কর।
\s5
\v 14 লোকেরা এটা শুনল এবং তারা ভয় পেল, পলেষ্টীয়বাসীরা ব্যথাগ্রস্ত হয়ে পড়ল।
\v 15 তখন ইদোমের প্রধানেরা ভয় পেল; মোয়াবের সৈন্যরা কাঁপতে লাগল; কনানের অধিবাসীরা গলে গেল।
\s5
\v 16 আতঙ্ক ও ভয় তাঁদের উপরে পড়ছে; তোমার বাহুবলে তারা এখনো পাথরের মত হয়ে আছে; যতক্ষণ, হে সদাপ্রভু, তোমার প্রজারা উত্তীর্ন না হয়।
\s5
\v 17 তুমি তাদেরকে নিয়ে যাবে, তোমার অধিকার পর্বতে তাদের রোপণ করবে; হে সদাপ্রভু, সেখানে তুমি তোমার বাসস্থান প্রস্তুত করেছ; হে প্রভু, সেখানে তোমার হাত পবিত্রস্থান স্থাপন করেছ।
\v 18 সদাপ্রভু যুগে যুগে অনন্তকাল রাজত্ব করবেন।”
\s5
\v 19 কারণ ফরৌণের ঘোড়ারা তাঁর রথগুলি ও ঘোড়াচালকরা সমেত সমুদ্রের মধ্যে প্রবেশ করল, আর সদাপ্রভু সমুদ্রের জল তাঁদের উপরে ফিরিয়ে আনলেন; কিন্তু ইস্রায়েল সন্তানেরা শুকনো পথে সমুদ্রের মধ্যে দিয়ে চলে গেল।
\v 20 পরে হারোণের বোন মরিয়ম ভাববাদিনী হাতে খঞ্জনি নিলেন এবং তাঁর পিছু পিছু অন্য স্ত্রীলোকেরা সবাই খঞ্জনি নিয়ে নাচতে নাচতে বেরোলো।
\v 21 তখন মরিয়ম লোকেদের কাছে এই গান গাইলেন, “তোমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গান কর; কারণ তিনি বিজয়ের সঙ্গে মহিমান্বিত হলেন, তিনি ঘোড়া ও ঘোড়াচালকদের সমুদ্রে ছুঁড়ে ফেললেন।”
\s ঈশ্বর মরুভূমিতে খাদ্য ও পানীয় জোগান।
\p
\s5
\v 22 আর মোশি ইস্রায়েলকে সূফসাগর থেকে এগিয়ে শূর মরুভূমিতে নিয়ে গেল; আর তারা তিনদিন মরুভূমিতে যেতে যেতে জল পেল না।
\v 23 পরে তারা মারাতে উপস্থিত হল, কিন্তু মারার জল পান করতে পারল না, কারণ সেই জল তেতো; এই জন্য তাঁর নাম মারা [তিক্ততা] রাখা হল।
\s5
\v 24 তখন লোকেরা মোশির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলল, “আমরা কি পান করব?”
\v 25 তাতে তিনি সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে কাঁদতে লাগলেন, আর সদাপ্রভু তাঁকে একটা গাছ দেখালেন; তিনি তা নিয়ে জলে ছুঁড়ে ফেললে জল মিষ্টি হল। সেখানে সদাপ্রভু ইস্রায়েলের জন্য নিয়ম ও শাসন নির্ধারণ করলেন এবং তার পরীক্ষা নিলেন,
\v 26 আর বললেন, “তুমি যদি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে মনোযোগ কর, তাঁর চোখে যা ঠিক তাই কর, তাঁর আদেশ শোনো ও তাঁর নিয়মগুলি পালন কর, তবে আমি মিশরীয়দেরকে যে সব রোগে আক্রান্ত করলাম, সেই সবেতে তোমাকে আক্রমণ করতে দেব না; কারণ আমি সদাপ্রভু, তোমার আরোগ্যকারী।”
\s5
\v 27 পরে তারা এলীমে উপস্থিত হল। সেখানে জলের বারোটি উনুই ও সত্তরটি খেজুরগাছ ছিল; তারা সেখানে জলের কাছে শিবির স্থাপন করল।
\s5
\c 16
\p
\v 1 পরে তারা এলীম থেকে যাত্রা করল। আর মিশর দেশ থেকে চলে যাবার পর দ্বিতীয় মাসের পনেরোতম দিনে ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলী সীন মরুভূমিতে উপস্থিত হল, তা এলীমের ও সীনয়ের মাঝখানে।
\v 2 তখন ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলী মোশির ও হারোণের বিরুদ্ধে মরুভূমিতে অভিযোগ করল;
\v 3 আর ইস্রায়েল সন্তানেরা তাঁদেরকে বলল, “হায়, হায়, আমরা মিশর দেশে সদাপ্রভুর হাতে কেন মারা যাই নি? তখন মাংসের হাঁড়ীর কাছে বসতাম, রুটি খেয়ে সন্তুষ্ট হতাম, তোমরা তো আমাদের সমস্ত গোষ্ঠীকে না খাইয়ে মারার জন্য বের করে এই মরুভূমিতে এনেছ।”
\s5
\v 4 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “দেখ, আমি তোমাদের জন্য স্বর্গ থেকে খাদ্য দ্রব্য বর্ষণ করব; লোকেরা বাইরে গিয়ে প্রতিদিন সেইদিনের জন্য খাদ্য কুড়োবে; যেন আমি তাদের এই পরীক্ষা নিই যে, তারা আমার ব্যবস্থাতে চলবে কি না।
\v 5 ষষ্ঠ দিনে তারা যা আনবে, সেটা রান্না করলে প্রতিদিন যা কুড়ায়, তার দ্বিগুণ হবে।”
\s5
\v 6 পরে মোশি ও হারোণ সমস্ত ইস্রায়েল সন্তানকে বললেন, “সন্ধ্যাবেলায় তোমরা জানবে যে, সদাপ্রভু তোমাদেরকে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছেন।
\v 7 আর সকালে তোমরা সদাপ্রভুর প্রতাপ দেখতে পাবে, কারণ সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তা তিনি শুনেছেন। আমরা কে যে, তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ কর?”
\v 8 পরে মোশি বললেন, “সদাপ্রভু সন্ধ্যাবেলা খাওয়ার জন্য তোমাদেরকে মাংস দেবেন ও সকালে তৃপ্তি সহকারে রুটি দেবেন; সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে তোমরা যে অভিযোগ করছ, তা তিনি শুনেছেন; আমরা কে? তোমরা যে অভিযোগ করছ, সেটা আমাদের বিরুদ্ধে নয়, সদাপ্রভুরই বিরুদ্ধে করছ।”
\p
\s5
\v 9 পরে মোশি হারোণকে বললেন, “তুমি ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলীকে বলো, ‘তোমরা সদাপ্রভুর সামনে এস; কারণ তিনি তোমাদের অভিযোগ শুনেছেন’।”
\v 10 পরে হারোণ যখন ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলীকে এটা বলছিলেন, তখন তারা মরুভূমির দিকে মুখ ফেরাল; আর দেখ, মেঘস্তম্ভের মধ্যে সদাপ্রভুর প্রতাপ দেখা গেল।
\v 11 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
\v 12 “আমি ইস্রায়েল সন্তানদের অভিযোগ শুনেছি; তুমি তাদেরকে বলো, সন্ধ্যাবেলায় তোমরা মাংস খাবে ও সকালে রুটি খেয়ে তৃপ্ত হবে; তখন জানতে পারবে যে, আমি সদাপ্রভু, তোমাদের ঈশ্বর।”
\s5
\v 13 পরে সন্ধ্যাকালে তিতির পাখি উড়ে এসে শিবির ঢেকে দিল এবং সকালে শিবিরের চারিদিকে শিশির পড়ল।
\v 14 যখন শিশির শুকিয়ে গেল, দেখ, মাটিতে তুষারের মত সরু বীজের মত বস্তু মরুভূমির উপরে পড়ে আছে।
\v 15 আর সেটা দেখে ইস্রায়েল সন্তানরা একে অপরকে বলল, “এটা কি?” কারণ সেটা কি, তারা জানত না। তখন মোশি বললেন, “এটা সেই রুটি, যা সদাপ্রভু তোমাদেরকে খাবার জন্য দিয়েছেন।
\s5
\v 16 এর বিষয়ে সদাপ্রভু এই আদেশ দিয়েছেন, তোমরা প্রত্যেক জন নিজেদের প্রয়োজন মত তা কুড়াও; তোমরা প্রত্যেকে নিজেদের তাঁবুতে থাকা লোকেদের সংখ্যা অনুসারে এক এক জনের জন্য এক এক ওমর পরিমাপে তা কুড়াও।”
\v 17 তাতে ইস্রায়েল সন্তানেরা সেইরকম করল; কেউ বেশি, কেউ কম কুড়ালো।
\v 18 পরে ওমরে তা মেপে দেখলে, যে বেশি সংগ্রহ করেছিল, তার অভাব হল না; তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী কুড়িয়েছিল।
\s5
\v 19 আর মোশি বললেন, “তোমরা কেউ সকালের জন্য এর কিছু রেখো না।”
\v 20 তবুও কেউ কেউ মোশির কথা না মেনে সকালের জন্য কিছু কিছু রাখল, তখন তাতে পোকা জন্মালো ও দুর্গন্ধ হল; আর মোশি তাঁদের উপরে খুব রাগ করলেন।
\v 21 আর প্রত্যেকদিন সকালে তারা নিজের নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী কুড়াত, কিন্তু খুব রোদ হলে তা গলে যেত।
\s5
\v 22 পরে ছয় দিনের দিন তারা দ্বিগুণ খাদ্য সংগ্রহ করত, প্রত্যেক জন দুই ওমর করে কুড়াল, আর মণ্ডলীর অধ্যক্ষেরা সবাই এসে মোশিকে জানালেন।
\v 23 তখন তিনি তাঁদেরকে বললেন, সদাপ্রভু তাই বলেছেন; কাল বিশ্রামপর্ব, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র বিশ্রামবার; তোমাদের যা ভাজবার আছে তা ভাজ ও যা রান্না করবার আছে পাক কর এবং যা অতিরিক্তও, তা সকালের জন্য তুলে রাখ।
\s5
\v 24 তাতে তারা মোশির আজ্ঞানুযায়ী সকাল পর্যন্ত তা রাখল, তখন তাতে দুর্গন্ধ হল না, পোকাও জন্মালো না।
\v 25 পরে মোশি বললেন, আজ তোমরা এটা ভোজন কর, কারণ আজ সদাপ্রভুর বিশ্রামবার; আজ মাঠে এটা পাবে না।
\s5
\v 26 তোমরা ছয় দিন তা কুড়াবে; কিন্তু সাত দিনের দিন বিশ্রামবার, সে দিন তা পাবে না।
\v 27 তা সত্বেও সাত দিনের দিনে লোকদের মধ্যে কেউ কেউ তা কুড়াবার জন্য বের হল; কিন্তু কিছুই পেল না।
\s5
\v 28 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, তোমরা আমার আদেশ ও ব্যবস্থা পালন করতে কতকাল অস্বীকার করতে থাকবে?
\v 29 দেখ, সদাপ্রভুই তোমাদেরকে বিশ্রামবার দিয়েছেন, তাই তিনি ছয় দিনের দিন দুই দিনের খাদ্য তোমাদেরকে দিয়ে থাকেন; তোমরা প্রত্যেকে নিজ নিজ জায়গায় থাক; সাত দিনের দিন কেউ নিজের জায়গা থেকে বাইরে যাবে না।
\v 30 তাতে লোকেরা সাত দিনের দিন বিশ্রাম করল।
\s5
\v 31 আর ইস্রায়েলের বংশ ঐ খাদ্যের নাম মান্না রাখল; তা ধনে বীজের মত সাদা এবং তাঁর স্বাদ মধুমেশানো বিস্কুটের মত ছিল।
\p
\v 32 পরে মোশি বললেন, “সদাপ্রভু এই আদেশ করেছেন, ‘তোমরা বংশপরম্পরা অনুসারে ওর এক ওমর পরিমাণ তুলে রেখো, যেন আমি তোমাদেরকে মিশর দেশ থেকে আনার সময়ে দূরের নির্জন জায়গায় যে খাবার খেতে দিতাম, তারা তা দেখতে পায়‘।”
\s5
\v 33 তখন মোশি হারোণকে বললেন, “তুমি একটা পাত্র নিয়ে পূর্ণ এক ওমর পরিমাপের সমান মান্না সদাপ্রভুর সামনে রাখ; তা তোমাদের পূর্বপুরুষদের নিয়মের জন্য রাখা যাবে।”
\v 34 তখন, সদাপ্রভু মোশিকে যেমন আদেশ করেছিলেন, সেইভাবে হারোণ সাক্ষ্য সিন্দুকের কাছে থাকবার জন্য তা তুলে রাখলেন।
\v 35 ইস্রায়েল সন্তানেরা চল্লিশ বছর, যতক্ষণ না বসবাসকারী দেশে উপস্থিত হল, ততক্ষণ সেই মান্না খেল; কনান দেশের সীমাতে উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত তারা মান্না খেত।
\v 36 এখন এক ওমর সমান হলো ঐফার দশমাংশ।
\s5
\c 17
\p
\v 1 পরে ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলী সীন মরুভূমি থেকে যাত্রা শুরু করে সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে নির্ধারিত সমস্ত স্থান দিয়ে যাত্রা করে রফীদীমে গিয়ে শিবির স্থাপন করল; আর সেখানে লোকেদের পান করার জন্য জল ছিল না।
\v 2 এই জন্য লোকেরা মোশিকে দোষ দিয়ে বলল, “আমাদেরকে জল দাও, আমরা পান করব।” মোশি তাদেরকে বললেন, “কেন আমার সঙ্গে ঝগড়া করছ? কেন সদাপ্রভুর পরীক্ষা করছ?”
\v 3 তখন লোকেরা সেখানে জল পিপাসায় ব্যাকুল হল, আর মোশির বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলল, “তুমি আমাদেরকে এবং আমাদের সন্তানদেরকে ও পশুদেরকে পিপাসিত করে হত্যা করতে মিশর থেকে কেন আনলে?”
\s5
\v 4 আর মোশি সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে বললেন, “আমি এই লোকদের জন্য কি করব? কিছুক্ষণের মধ্যে এরা আমাকে পাথরের আঘাতে হত্যা করবে।”
\v 5 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি লোকদের আগে যাও, ইস্রায়েলের কয়েক জন প্রাচীনকে সঙ্গে নিয়ে, আর যেটা দিয়ে নদীতে আঘাত করেছিলে, সেই লাঠি হাতে নিয়ে যাও।
\v 6 দেখ, আমি হোরেবে সেই শিলার উপরে তোমার সামনে দাঁড়াবো; তুমি শিলাতে আঘাত করবে, তাতে সেটা থেকে জল বের হবে, আর লোকেরা পান করবে।” তখন মোশি ইস্রায়েলের প্রাচীনদের চোখের সামনে সেইরকম করলেন।
\v 7 তিনি সেই স্থানের নাম মঃসা ও মরীবা [পরীক্ষা ও বিবাদ] রাখলেন, কারণ ইস্রায়েল সন্তানরা অভিযোগ করেছিল এবং সদাপ্রভুর পরীক্ষা করে বলেছিল, ‘সদাপ্রভু আমাদের মধ্যে আছেন কি না?
\s অমালেকের সঙ্গে যুদ্ধ।
\p
\s5
\v 8 ঐ সময়ে অমালেক এসে রফীদীমে ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে লাগল।
\v 9 তাতে মোশি যিহোশূয়কে বললেন, “তুমি আমাদের জন্য লোক বেছে নাও, যাও, অমালেকের সঙ্গে যুদ্ধ করো; কাল আমি ঈশ্বরের লাঠি হাতে নিয়ে পর্বতে চূড়ায় দাঁড়াব।”
\v 10 পরে যিহোশূয় মোশির আদেশ অনুসারে কাজ করলেন; অমালেকের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন এবং মোশি, হারোণ ও হূর পর্বতের শৃঙ্গে উঠলেন।
\s5
\v 11 আর এইরকম হল, মোশি যখন তাঁর হাত তুলে ধরেন, তখন ইস্রায়েল জয়ী হয়, কিন্তু মোশি তাঁর হাত নামালে অমালেক জয়ী হয়।
\v 12 আর মোশির হাত ভারী হতে লাগল, তখন তাঁরা একটি পাথর এনে তাঁর নিচে রাখলেন, আর তিনি তাঁর উপরে বসলেন এবং হারোণ ও হূর একজন একদিকে ও অন্যজন অন্যদিকে তাঁর হাত ধরে রাখলেন, তাতে সূর্য্য না ডোবা পর্যন্ত তাঁর হাত স্থির থাকল।
\v 13 আর যিহোশূয় অমালেককে ও তাঁর লোকেদেরকে তরোয়াল দিয়ে পরাজয় করলেন।
\s5
\v 14 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “এই কথা স্মরণে রাখার জন্য বইয়ে লেখ এবং যিহোশূয়ের কানের কাছে পড়ে শুনাও; কারণ আমি আকাশের নীচে থেকে অমালেকের স্মৃতি পুরোপুরি লোপ করব।”
\v 15 পরে মোশি এক বেদি তৈরী করে তাঁর নাম যিহোবা-নিঃষি [সদাপ্রভু আমার পতাকা] রাখলেন।
\v 16 আর তিনি বললেন, “সদাপ্রভুর সিংহাসনের উপরে হাত উত্তোলিত হয়েছে; বংশপরম্পরা অনুসারে অমালেকের সঙ্গে সদাপ্রভুর যুদ্ধ হবে।”
\s5
\c 18
\s মোশির শ্বশুর যিথ্রোর পরামর্শ।
\p
\v 1 আর ঈশ্বর মোশির পক্ষে ও তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের পক্ষে যে সমস্ত কাজ করেছেন, সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে মিশর থেকে বের করে এনেছেন, এই সব কথা মোশির শ্বশুর মিদিয়নীয় যাজক যিথ্রো শুনতে পেলেন।
\v 2 তখন মোশির শ্বশুর যিথ্রো মোশির স্ত্রীকে, তার বাড়িতে পাঠানো সিপ্‌পোরাকে ও তাঁর দুই ছেলেকে সঙ্গে নিলেন।
\v 3 ঐ দুই ছেলের মধ্যে একজনের নাম গের্শোম [তত্রপ্রবাসী], কারণ তিনি বলেছিলেন, আমি বিদেশের নিবাসী হয়েছি।
\v 4 আর এক জনের নাম ইলীয়েষর [ঈশ্বর-সহকারী], কারণ তিনি বলেছিলেন, আমার পিতার ঈশ্বর আমার সহকারী হয়ে ফরৌণের তরোয়াল থেকে আমাকে উদ্ধার করেছেন।
\s5
\v 5 মোশির শ্বশুর যিথ্রো তাঁর দুই ছেলে ও তার স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে দুরে নির্জন জায়গায় মোশির কাছে, ঈশ্বরের পর্বতে যে জায়গায় তিনি শিবির স্থাপন করেছিলেন, সেই জায়গায় আসলেন।
\v 6 আর তিনি মোশিকে বললেন, তোমার শ্বশুর যিথ্রো আমি এবং তোমার স্ত্রী ও তাঁর সঙ্গে তাঁর দুই ছেলে, আমরা তোমার কাছে এসেছি।
\s5
\v 7 তখন মোশি নিজের শ্বশুরের সঙ্গে দেখা করতে বাইরে গেলেন ও প্রণাম করলেন ও তাঁকে চুম্বন করলেন এবং একে অপরের মঙ্গল জিজ্ঞাসা করলেন, পরে তারা তাঁবুর মধ্যে গেলেন।
\v 8 আর সদাপ্রভু ইস্রায়েলের জন্য ফরৌণের উপর ও মিশরীয়দের উপর যা যা করেছিলেন এবং পথে তাঁদের যে যে কষ্টের ঘটনা ঘটেছিল ও সদাপ্রভু যে ভাবে তাঁদেরকে উদ্ধার করেছিলেন, সেই সব ঘটনা মোশি নিজের শ্বশুরকে বললেন।
\s5
\v 9 তাতে সদাপ্রভু মিশরীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলকে উদ্ধার করে তাঁদের যে সব মঙ্গল করেছিলেন, তার জন্য যিথ্রো আনন্দিত হলেন।
\v 10 আর যিথ্রো বললেন, “ধন্য সদাপ্রভু, যিনি মিশরীয়দের হাত থেকে ও ফরৌণের হাত থেকে তোমাদেরকে উদ্ধার করেছেন, যিনি মিশরিয়দের হাতের নিয়ন্ত্রণ থেকে এই লোকদেরকে উদ্ধার করেছেন।
\v 11 এখন আমি জানি, সব দেবতা থেকে সদাপ্রভু মহান্‌; সেই বিষয়ে মহান্‌, যে বিষয়ে ওরা এদের বিরুদ্ধে গর্ব করত।”
\s5
\v 12 পরে মোশির শ্বশুর যিথ্রো ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে হোম উত্সর্গ ও বলি উপস্থিত করলেন এবং হারোণ ও ইস্রায়েলের সমস্ত প্রাচীনরা এসে ঈশ্বরের সামনে মোশির শ্বশুরের সঙ্গে খাবার খেলেন।
\p
\s5
\v 13 পরদিন মোশি লোকদের বিচার করতে বসলেন, আর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত লোকেরা মোশির চারিদিকে দাঁড়িয়ে থাকলো।
\v 14 তখন লোকদেরকে মোশি যা যা করছেন, তাঁর শ্বশুর তা দেখে বললেন, “তুমি লোকদের উপর এ কেমন ব্যবহার করছ? কেন তুমি একা বসে থাক, আর সমস্ত লোক সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তোমার কাছে দাঁড়িয়ে থাকে?”
\s5
\v 15 মোশি নিজের শ্বশুরকে বললেন, “লোকেরা ঈশ্বরের নির্দেশ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে আমার কাছে আসে;
\v 16 যখন তাঁদের মধ্যে কোন তর্ক বিতর্ক হয় তখন তারা আমার কাছে আসে; আমি একজন এবং অন্যজনের মধ্যে বিচার করি এবং ঈশ্বরের নিয়ম ও ব্যবস্থা সম্পর্কে তাঁদেরকে শিক্ষা দিই।”
\s5
\v 17 তখন মোশির শ্বশুর তাঁকে বললেন, “তুমি যে কাজ করছ তা ভাল নয়।
\v 18 এতে তুমি এবং তোমার সঙ্গী এই লোকেরাও দুর্বল হবে, কারণ এ কাজ তোমার জন্য খুবই ভারী এবং গুরুতর; তুমি একা নিজে এই কাজ সম্পন্ন করতে পারবে না।
\v 19 এখন আমার কথা শোন ; আমি তোমাকে পরামর্শ দিই, আর ঈশ্বর তোমার সহবর্ত্তী হোক; তুমি ঈশ্বরের সামনে লোকদের প্রতিনিধি হও এবং তাঁদের বিচার ঈশ্বরের কাছে নিয়ে আস,
\v 20 আর তুমি অবশ্যই তাঁদেরকে নিয়ম ও ব্যবস্থার শিক্ষা দেবে এবং তাঁদের যাওয়ার পথ ও কি কাজ করতে হবে তা অবশ্যই দেখাবে।
\s5
\v 21 এছাড়া তুমি এই লোকদের মধ্য থেকে কাজে দক্ষ লোকদের, যারা ঈশ্বরকে ভয় পায়, সত্যবাদী লোক যারা অন্যায় উপায়ে লাভকে ঘৃণা করে এমন লোকদের মনোনীত করে লোকদের ওপরে সহস্রপতি, শতপতি, পঞ্চাশৎপতি ও দশপতি করে অবশ্যই নিযুক্ত করবে।
\v 22 তারা সব সময় লোকদের বিচার করবেন; বড় বড় বিচারগুলি তোমার কাছে নিয়ে আসবেন, কিন্তু ছোট বিচারগুলি তাঁরাই করবেন; তাতে তোমার কাজ সহজ হবে, আর তাঁরা তোমরা সঙ্গে ভার বইবেন।
\v 23 যদি তুমি এরকম কর এবং ঈশ্বর যদি তোমাকে এইরকম আজ্ঞা দেন, তবে তুমি সহ্য করতে পারবে এবং এই সব লোকেরাও শান্তিতে নিজেদের জায়গায় যেতে পারবে।
\s5
\v 24 তাতে মোশি নিজের শ্বশুরের কথা শুনলেন এবং তিনি যা কিছু বললেন, সেই অনুসারে সব কাজ করলেন।
\v 25 কাজেই মোশি সমস্ত ইস্রায়েল থেকে কাজে দক্ষ এমন পুরুষদের মনোনীত করে লোকদের ওপরে প্রধান, অর্থাৎ সহস্রপতি, শতপতি, পঞ্চাশৎপতি ও দশপতি করে নিযুক্ত করলেন।
\v 26 তারা সব সময় লোকদের সাধারণ বিচারগুলি করতেন; আর কঠিন বিচারগুলি মোশির কাছে নিয়ে আসতেন, কিন্তু ক্ষুদ্র বিচারগুলি নিজেরাই করতেন।
\v 27 পরে মোশি নিজের শ্বশুরকে বিদায় করলে তিনি নিজের দেশে ফিরে গেলেন।
\s5
\c 19
\s সীনয় পর্বতের নিচে ইস্রায়েলের আগমন।
\p
\v 1 তৃতীয় মাসে মিশর দেশ থেকে ইস্রায়েল সন্তানরা বের হয়ে যাবার পর, সেই প্রথম দিনেই তারা সীনয়ের মরুভূমিতে উপস্থিত হল।
\v 2 তাঁরা রফীদীম থেকে যাত্রা করে সীনয়ের নির্জন মরুঅঞ্চলে উপস্থিত হলে সেই জায়গায় তারা শিবির তৈরী করল।
\s5
\v 3 পরে মোশি ঈশ্বরের কাছে গেলেন, আর সদাপ্রভু পর্বত থেকে তাঁকে ডেকে বললেন, “তুমি যাকোবের বংশকে এবং ইস্রায়েল সন্তানদেরকে এই কথা জানাও,
\v 4 ‘আমি মিশরীয়দের প্রতি যা করেছি এবং যেমন ভাবে ঈগল পাখীর ডানা দিয়ে বহন করেছি এবং আমার কাছে নিয়ে এসেছি, তা তোমরা দেখেছ।
\v 5 এখন যদি তোমরা আমার রব শোন এবং আমার নিয়মগুলি মেনে চলো, তবে তোমরা সব জাতির থেকে আমার নিজস্ব অধিকার হবে, কারণ পৃথিবীর সবকিছুই আমার;
\v 6 আর আমার জন্য তোমরা যাজকদের এক রাজ্য এবং এক পবিত্র জাতি হবে।’ এই সব কথাগুলি তুমি অবশ্যই ইস্রায়েল সন্তানদের বলবে।”
\s5
\v 7 তখন মোশি আসলেন এবং লোকদের প্রাচীনদেরকে ডাকলেন ও সদাপ্রভু তাঁকে যা যা আদেশ করলেন, সেই সব কথা তাঁদের সামনে উপস্থিত করলেন।
\v 8 তাতে লোকেরা সবাই একত্রে উত্তর দিয়ে বলল, সদাপ্রভু যা কিছু বলেছেন, আমরা সবই করব। তখন মোশি সদাপ্রভুর কাছে লোকদের বিষয়ে আবেদন করলেন।
\p
\v 9 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “দেখ, আমি ঘন মেঘে তোমার কাছে আসব, যখন তোমার সঙ্গে আমি কথা বলব লোকেরা যেন শুনতে পায় এবং তোমাতেও সর্বদা বিশ্বাস করে।” তখন মোশি লোকদের কথা সদাপ্রভুকে বললেন।
\s5
\v 10 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, তুমি লোকদের কাছে গিয়ে আজ ও কাল তাঁদেরকে পবিত্র কর, (আমার আসার জন্য তাদের তৈরী কর) এবং তাঁরা নিজের নিজের কাপড় পরিষ্কার করুক,
\v 11 আর তৃতীয় দিনের জন্য সবাই তৈরী থাকুক; কারণ তিন দিনের দিনে আমি সদাপ্রভু, সব লোকের সামনে সীনয় পর্বতের উপরে নেমে আসবেন।
\s5
\v 12 আর তুমি লোকদের জন্য চারদিকে সীমানা তৈরী করে তাদের এই কথা বলো, “তোমরা সাবধান থাক যে, তোমরা পর্বতে যাবে না এবং তাঁর সীমানা স্পর্শ করো না; যে কেউ পর্বত স্পর্শ করবে তাঁর মৃত্যুদণ্ড অবশ্যই হবে।
\v 13 কারও হাত তাকে স্পর্শ করবে না, কিন্তু সে অবশ্য পাথরের আঘাতে মারা যাবে, কিংবা তীর দিয়ে বিদ্ধ হবে; পশু হোক বা মানুষ হোক, সে বাঁচবে না। যখন বেশীক্ষণ তূরীবাদ্য হবে তাঁরা হয়তো পায়ে হেঁটে পর্বতে উঠবে।”
\s5
\v 14 পরে মোশি পর্বত থেকে নেমে লোকদের কাছে এসে লোকদেরকে পবিত্র করলেন এবং তাঁরা নিজের নিজের কাপড় পরিষ্কার করল।
\v 15 পরে তিনি লোকদেরকে বললেন, “তোমরা তৃতীয় দিনের জন্য তৈরী হও; তোমার স্ত্রীর কাছে যেও না।”
\s5
\v 16 পরে তৃতীয় দিনে সকাল হলে মেঘগর্জন ও বিদ্যুৎ এবং পর্বতের উপরে ঘন মেঘ জমলো, আর খুব জোরে তূরীধ্বনি হতে লাগল; তাতে শিবিরের সমস্ত লোক কাঁপতে লাগল।
\v 17 পরে মোশি ঈশ্বরের সঙ্গে দেখা করার জন্য লোকদেরকে শিবির থেকে বের করে দিলেন, আর তারা পর্বতের নিচে দাঁড়িয়ে থাকলো।
\v 18 সীনয় পর্বত সম্পূর্ণ ভাবে ধোঁয়ায় ঢেকে গেল, কারণ সদাপ্রভু আগুন এবং ধোঁয়ার সঙ্গে তার উপরে নেমে আসলেন, আর ভাঁটার ধোঁয়ার মত তা থেকে ধোঁয়া উঠতে লাগল এবং সমস্ত পর্বত খুব কাঁপতে লাগল।
\s5
\v 19 আর তূরীর শব্দ ক্রমাগত খুব বাড়তে লাগল; তখন মোশি কথা বললেন এবং ঈশ্বর বাণীর মাধ্যমে তাঁকে উত্তর দিলেন।
\v 20 আর সদাপ্রভু সীনয় পর্বতে, পর্বতের চূড়ায়, নেমে আসলেন এবং সদাপ্রভু মোশিকে সেই পর্বতের চূড়ায় ডাকলেন; তাতে মোশি উঠে গেলেন।
\v 21 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি নেমে গিয়ে লোকেদেরকে সতর্ক কর, পাছে তারা দেখার জন্য সীমানা লঙ্ঘন করে সদাপ্রভুর দিকে যায় ও তাদের অনেকে বিনষ্ট হয়।
\v 22 আর যাজকরা, যারা সদাপ্রভুর কাছাকাছি থাকে, তারাও নিজেদেরকে পবিত্র করুক, না হলে সদাপ্রভু তাদেরকে আঘাত করেন।”
\s5
\v 23 তখন মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “লোকেরা সীনয় পর্বতে উঠে আসতে পারে না, কারণ তুমি দৃঢ় ভাবে আদেশ দিয়ে তাদেরকে বলেছ, “পর্বতের সীমানা নির্ধারণ কর ও তা পবিত্র কর।”
\v 24 আর সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “যাও, পর্বত থেকে নেমে যাও; পরে হারোণকে সঙ্গে নিয়ে তুমি উঠে এসো, কিন্তু যাজকরা ও লোকেরা সদাপ্রভুর কাছে উঠে আসার জন্য সীমানা লঙ্ঘন না করুক, না হলে তিনি তাদেরকে আঘাত করেন।”
\v 25 তখন মোশি লোকেদের কাছে নেমে গিয়ে তাদেরকে এই সব কথা বললেন।
\s5
\c 20
\s দশটি আদেশ দান।
\p
\v 1 ঈশ্বর এই সব কথা বললেন, “আমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু,
\v 2 যিনি মিশর দেশ থেকে, দাসত্বের ঘর থেকে তোমাকে বের করে আনলেন।
\v 3 আমার সাক্ষাতে তোমার অন্য দেবতা না থাকুক।
\s5
\v 4 তুমি আমার জন্য ক্ষোদিত প্রতিমা তৈরী কোরো না; উপরের স্বর্গে, নীচের পৃথিবীতে ও পৃথিবীর নীচে জলের মধ্যে যা যা আছে, তাদের কোনো মূর্তি তৈরী কোরো না,
\v 5 তুমি তাদের কাছে প্রণাম কোরো না এবং তাদের সেবা কোরো না; কারণ আমি সদাপ্রভু তোমার ঈশ্বর, আমি ঈর্ষাপরায়ণ ঈশ্বর; আমি পূর্বপুরুষদের অপরাধের শাস্তি সন্তানদের উপরে দিই, যারা আমাকে ঘৃণা করে, তাদের তৃতীয় চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত দিই;
\v 6 কিন্তু যারা আমাকে ভালবাসে ও আমার সমস্ত আদেশ পালন করে, আমি তাদের হাজার পুরুষ পর্যন্ত দয়া করি।
\s5
\v 7 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম বিনা কারণে নিও না, কারণ যে তাঁর নাম বিনা কারণে নেবে, সদাপ্রভু তাঁকে নির্দোষ হিসাবে ধরবেন না।
\p
\s5
\v 8 তুমি আমার জন্য বিশ্রামবার পবিত্র রাখতে তা স্মরণ কোরো।
\v 9 ছদিন কাজ কোরো, নিজের সমস্ত কাজ কোরো;
\v 10 কিন্তু সপ্তম দিন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বিশ্রামদিন; সে দিন তুমি কি তোমার ছেলে কি মেয়ে, কি তোমার দাস কি দাসী, কি তোমার পশু, কি তোমার ফটকের কাছে থাকা বিদেশী, কেউ কোনো কাজ কোরো না;
\v 11 কারণ আমি, সদাপ্রভু, আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী, সমুদ্র ও সেই সবের মধ্যে সব জিনিস ছয় দিনে তৈরী করে সপ্তম দিনে বিশ্রাম করেছি; সেইজন্য আমি, সদাপ্রভু, বিশ্রামদিনকে আশীর্বাদ করলাম এবং পবিত্র করে নিজের জন্য সংরক্ষণ করলাম।
\s5
\v 12 তোমার বাবাকে ও তোমার মাকে সম্মান কোরো, যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দেবেন , সেই দেশে তুমি দীর্ঘদিন বাস করতে পারো।
\v 13 তোমরা নরহত্যা করো না।
\v 14 তোমরা কারও সঙ্গে ব্যভিচার কোরো না।
\s5
\v 15 তোমরা কারও থেকে কিছু চুরি কোরো না।
\v 16 তোমরা তোমার প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না।
\v 17 তোমার প্রতিবেশীর বাড়িতে তোমরা লোভ কোরো না; প্রতিবেশীর স্ত্রীতে, কিম্বা তার দাসে কি দাসীতে, অথবা তাঁর গোরুতে কি গাধাতে, প্রতিবেশীর কোনো জিনিসেই লোভ কোরো না।
\s5
\v 18 তখন সব লোক মেঘগর্জ্জন, বিদ্যুৎ, তূরীধ্বনি ও ধোঁয়ায় পরিপূর্ণ পর্বত দেখল; যখন লোকেরা সেটি দেখল, তারা ভীত হল এবং দূরে দাঁড়িয়ে থাকলো।
\v 19 আর তারা মোশিকে বলল, “তুমিই আমাদের সঙ্গে কথা বল, আমরা শুনব; কিন্তু ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে যেন কথা না বলেন, না হলে আমরা মারা যাবো।”
\v 20 মোশি লোকদেরকে বললেন, “ভয় কোরো না; কারণ তোমাদের পরীক্ষার জন্য এবং তোমরা যেন পাপ না কর, এই জন্য নিজের ভয়ানকতা তোমাদের চক্ষুগোচর করার জন্য ঈশ্বর এসেছেন।”
\v 21 তখন লোকেরা দূরে দাঁড়িয়ে থাকলো; আর মোশি ঘন অন্ধকারের কাছে চলে গেলেন, যেখানে ঈশ্বর ছিলেন।
\s নানারকম আজ্ঞা।
\p
\s5
\v 22 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ইস্রায়েল সন্তানদেরকে এই কথাগুলি অবশ্যই বলবে, তোমরা নিজেরাই দেখলে যে, আমি স্বর্গ থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বললাম।
\v 23 তোমরা আমার পাশাপাশি অন্য দেবতা তৈরী কর না; নিজেদের জন্য রুপোর দেবতা কি সোনা দিয়ে দেবতা তৈরী কোরো না।
\s5
\v 24 তুমি আমার জন্যে মাটি দিয়ে এক বেদি তৈরী করবে এবং তার উপরে তোমার হোমবলি ও মঙ্গলের জন্য বলি, তোমার ভেড়া ও তোমার গোরু উৎসর্গ করবে। আমি যে যে জায়গায় আমার নাম মনে করাব, সে সে জায়গায় তোমার কাছে এসে তোমাকে আশীর্বাদ করব।
\v 25 তুমি যদি আমার জন্য পাথর দিয়ে বেদি তৈরী কর, তবে খোদাই করা পাথরে তা তৈরী কোরো না, কারণ তার উপরে অস্ত্র তুললে তুমি তা অপবিত্র করবে।
\v 26 আর আমার বেদির উপরে সিঁড়ি দিয়ে উঠ না, না হলে তার উপরে তোমার উলঙ্গতা অনাবৃত হয়।
\s5
\c 21
\p
\v 1 “এখন তুমি এই সব শাসন তাদের সামনে অবশ্যই রাখবে।
\s5
\v 2 তুমি ইব্রীয় দাস কেন, সে ছয় বছর দাসত্ব করবে এবং পরে সপ্তম বছরে মূল্য ছাড়াই মুক্ত হয়ে চলে যাবে।
\v 3 যদি সে নিজে নিজেই আসে, তবে সে অবশ্যই নিজে মুক্ত হয়ে যাবে; যদি সে স্ত্রীর সঙ্গে আসে, তবে তার স্ত্রীও তার সঙ্গে মুক্ত হয়ে যাবে।
\v 4 যদি তার প্রভু তাহার বিয়ে দেয় এবং সেই স্ত্রী তার জন্য ছেলে কি কন্যা জন্ম দেয়, তবে সেই স্ত্রীতে ও তার সন্তানদের মধ্যে তার প্রভুর স্বত্ব থাকবে এবং সে নিজে নিজেই চলে যাবে।
\s5
\v 5 কিন্তু ঐ দাস যদি স্পষ্টরূপে বলে, “আমি আমার প্রভুকে এবং নিজের স্ত্রী ও সন্তানদেরকে ভালবাসি, মুক্ত হয়ে চলে যাব না,”
\v 6 তাহলে তার প্রভু অবশ্যই তাকে ঈশ্বরের কাছে নিয়ে যাবে এবং সে তাকে দরজার কিম্বা দরজার চৌকাঠের কাছে উপস্থিত করবে, সেখানে তার প্রভু পেরেক মাধ্যমে তার কান বিদ্ধ করবে; তখন সে জীবনের বাকি দিনগুলিতে সেই প্রভুর দাস থাকবে।
\s5
\v 7 আর যদি কেউ নিজের মেয়েকে দাসীরূপে বিক্রি করে, তবে দাসেরা যেমন যায়, সে সেরকম যাবে না।
\v 8 তার প্রভু তাকে নিজের জন্য নিরূপণ করলেও যদি তার প্রতি অসন্তুষ্ট হয়, তবে সে তাকে মুক্ত হতে দেবে; তার সঙ্গে প্রবঞ্চনা করাতে অন্য বিদেশী লোকের কাছে তাকে বিক্রি করবার অধিকার তার হবে না।
\s5
\v 9 আর যদি সে নিজের ছেলের জন্য তাকে নিরূপণ করে, তবে সে তার প্রতি মেয়েদের সম্পর্কে নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করবে।
\v 10 যদি সে অন্য স্ত্রীর সঙ্গে তার বিয়ে দেয়, তবে তার খাবারের ও পোশাকের এবং তার বিয়ের অধিকারের বিষয়ে ক্রুটি করতে পারবে না।
\v 11 আর যদি সে তার প্রতি এই তিনটি কর্তব্য না করে, তবে সেই স্ত্রী অমনি মুক্ত হয়ে চলে যাবে; রুপো লাগবে না।
\s5
\v 12 কেউ যদি কোনো মানুষকে এমন আঘাত করে যে, তার মৃত্যু হয়, তবে অবশ্যই তার মৃত্যুদণ্ড হবে।
\v 13 কিন্তু যদি কেউ আগে থেকে সিদ্ধান্ত না নিয়ে হত্যা করে থাকে, অথচ দুর্ঘটনা বসতঃ তাই ঘটে, তাহলে আমি তার জন্য একটি স্থান নির্ধারণ করব, যেখানে সে পালিয়ে যেতে পারবে।
\v 14 কিন্তু যদি কেউ ইচ্ছাকৃত ভাবে ছলনা করে তার প্রতিবেশীকে হত্যা করার জন্য তাকে আক্রমণ করে, তবে সে ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড দেবার জন্য তাকে আমার বেদির কাছ থেকেও নিয়ে যাবে।
\s5
\v 15 আর যে কেউ তার বাবাকে কি তার মাকে আঘাত করে, তার মৃত্যুদণ্ড অবশ্যই হবে।
\v 16 আর কেউ যদি মানুষকে চুরি করে বিক্রি করে দেয়, কিংবা তার হাতে যদি তাকে পাওয়া যায়, তবে তার মৃত্যুদণ্ড অবশ্যই হবে।
\v 17 আর কেউ যদি তার বাবাকে কি তার মাকে শাপ দেয়, তার মৃত্যুদণ্ড অবশ্যই হবে।
\s5
\v 18 আর মানুষেরা বিবাদ করে একজন অন্যকে পাথরের আঘাত কিংবা হাত দিয়ে আঘাত করলে সে যদি মারা না গিয়ে শয্যাশায়ী হয়,
\v 19 তখন যদি সে পরে উঠে হাঁটতে পারে এবং লাঠি নিয়ে ব্যবহার করতে পারে, তবে সেই ব্যক্তি যে তাকে মেরেছে সে তার ক্ষতি শোধ করবে। সেই ব্যক্তি অবশ্যই তার চিকিৎসার সব ব্যয় পরিশোধ করবে। কিন্তু সেই ব্যক্তি হত্যার জন্য অপরাধী হবে না।
\s5
\v 20 আর যদি কেউ নিজের দাসকে অথবা দাসীকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে এবং দাসেরা যদি তার আঘাতে মরে, তবে সে অবশ্যই শাস্তি পাবে।
\v 21 কিন্তু সেই দাস যদি দুই এক দিন বাঁচে, তবে তার মালিক শাস্তি পাবে না, তার দাসকে হারানোর জন্য কষ্ট পেতে হবে। কারণ সে তার রুপোর সমান।
\s5
\v 22 আর পুরুষেরা লড়াই করে কোনো গর্ভবতী স্ত্রীকে আঘাত করলে যদি তার গর্ভপাত হয়, কিন্তু পরে তার আর কোন বিপদ না ঘটে, তবে ঐ স্ত্রীর স্বামীর দাবী অনুযায়ী তার অর্থদণ্ড অবশ্যই হবে ও সে বিচারকর্ত্তাদের বিচার অনুযায়ী টাকা দেবে।
\v 23 কিন্তু যদি কোন গুরুতর বিপদ ঘটে, তবে তোমাকে সেই জীবনের জন্য জীবন প্রতিশোধ দিতে হবে;
\v 24 চোখের বদলে চোখ, দাঁতের বদলে দাঁত, হাতের বদলে হাত, পায়ের বদলে পা,
\v 25 পোড়ার বদলে পোড়ানো, আঘাতের বদলে আঘাত, কালশিরার বদলে কালশিরা।
\s5
\v 26 আর কেউ নিজের দাস কি দাসীর চোখে আঘাত করলে যদি তা নষ্ট হয়ে যায়, তবে তার চোখ নষ্ট হবার জন্য সে তাকে স্বাধীন করে দেবে।
\v 27 আর যদি আঘাত দিয়ে নিজের দাস অথবা দাসীর দাঁত ভেঙ্গে ফেলে, তবে ঐ দাঁতের জন্য সে তাকে স্বাধীন করে দেবে।
\s5
\v 28 আর গোরু কোনো পুরুষ কি স্ত্রীকে শিং দিয়ে আঘাত করলে সে যদি মরে, তবে ঐ গোরু অবশ্যই পাথরের আঘাতে হত্যা হবে এবং তার মাংস খাওয়া হবে না; কিন্তু গোরুর মালিক শাস্তি পাবে না।
\v 29 কিন্তু ঐ গোরু যদি আগে শিং দিয়ে আঘাত করত, তার প্রমাণ পেলেও তার মালিক তাকে সাবধানে না রাখে এবং যদি সে কোনো পুরুষকে অথবা কোনো স্ত্রীকে হত্যা করে, তবে সে গোরু পাথরের আঘাতে হত্যা হবে এবং তার মালিকেরও মৃত্যুদণ্ড হবে।
\v 30 যদি তার জন্যে তাকে মূল্য দেওয়ার ধার্য্য হয়, তবে সে মুক্তির জন্য অবশ্যই সমস্ত মূল্য দেবে।
\s5
\v 31 তার গোরু যদি কোনো ব্যক্তির ছেলেকে বা মেয়েকে শিং দিয়ে আঘাত করে, তবে ঐ একই বিচারনুযায়ী তার প্রতি করা যাবে।
\v 32 আর তার গোরু যদি কোনো ব্যক্তির দাস বা দাসীকে শিং দিয়ে আঘাত করে, তবে গোরুর মালিক তাদের মালিককে ত্রিশ শেকল রুপো দেবে এবং গোরুটিকে পাথরের আঘাতে হত্যা করা হবে।
\p
\s5
\v 33 আর কেউ যদি কোনো গর্ত খুলে রাখে, অথবা একজন ব্যক্তি কূপ খুঁড়ে তা না ঢেকে রাখে,
\v 34 তবে তার মধ্যে কোন গোরু অথবা গাধা পড়লে সেই কূপের মালিক ক্ষতিপূরণ দেবে, সে পশুর মালিককে মূল্য হিসাবে রুপো দেবে, কিন্তু ঐ মৃত পশু তারই হবে।
\s5
\v 35 যদি এক জন লোকের গোরু অন্য জন লোকের গোরুকে শিং দিয়ে আঘাত করে এবং সেটা যদি মরে, তবে তারা জীবিত গোরু বিক্রি করে তার মূল্য দুই ভাগ করবে এবং ঐ মৃত গোরুটিও দুই ভাগ করে নেবে।
\v 36 কিন্তু এটা যদি জানা যায় যে, সেই গোরুটি আগে থেকে শিং দিয়ে আঘাত করত এবং তার মালিক তাকে সাবধানে রাখেনি, তবে সে গোরুর পরিবর্ত্তে অন্য গোরু দেবে, কিন্ত মৃত গোরুটি তারই হবে।
\s5
\c 22
\p
\v 1 যে কেউ গোরু অথবা ভেড়া চুরি করে এবং হত্যা করে অথবা বিক্রি করে, সে একটি গোরুর পরিবর্তে পাঁচটি গোরু, ও একটি ভেড়ার পরিবর্তে চারটি ভেড়া দেবে।
\v 2 আর একটি চোর যদি সিঁধ কাটবার সময় ধরা পড়ে এবং যদি আহত হয় ও মরে যায়, তবে তার হত্যার জন্য কোনো দোষ হবে না।
\v 3 কিন্তু যদি তার উপরে সূর্য্য উদয় হয়, তবে হত্যার দোষ তার হবে; ক্ষতিপূরণ করা চোরের কর্ত্তব্য; যদি তার কিছু না থাকে, তবে চুরি করার কারণে সে বিক্রীত হবে।
\v 4 গোরু, গাধা বা ভেড়া, চুরির কোনো পশু যদি চোরের হাতে জীবিত অবস্থায় পাওয়া যায়, তবে তাকে তার দ্বিগুণ দিতে হবে।
\p
\s5
\v 5 কেউ যদি শস্যক্ষেত্রে অথবা আঙ্গুরক্ষেত্রে পশু চরায়, আর নিজের পশু ছেড়ে দিলে যদি তা অন্য লোকের ক্ষেত্রে চরে, তবে সেই ব্যক্তি নিজের ক্ষেত্রের ভালো শস্য অথবা নিজের আঙ্গুরক্ষেত্রের ভালো ফল দিয়ে ক্ষতিপূরণ দেবে।
\p
\s5
\v 6 আগুন কাঁটাবনে লাগলে যদি কারও শস্যরাশি অথবা শস্যের ঝাড় অথবা বাগান পুড়ে যায়, তবে সেই যে আগুন লাগায় অবশ্য ক্ষতিপূরণ দেবে।
\s5
\v 7 কোনো ব্যক্তি টাকা অথবা জিনিসপত্র নিজের প্রতিবেশীর কাছে গচ্ছিত রাখলে যদি তার ঘর থেকে কেউ সেটা চুরি করে এবং সেই চোরটি ধরা পড়ে, তবে সেই চোরকে তার দ্বিগুণ দিতে হবে ।
\v 8 কিন্তু যদি চোরটি না ধরা পড়ে, তবে সেই বাড়ির মালিক প্রতিবেশীর সম্পত্তিতে হাত দিয়েছে কিনা, তা জানবার জন্য তাকে বিচারকের সামনে বিচারের জন্য আসতে হবে।
\v 9 সব প্রকার অপরাধের জন্য, অর্থাৎ গোরু বা গাধা, ভেড়া, কাপড়, বা কোনো হারিয়ে যাওয়া জিনিসের বিষয়ে যদি কেউ বলে, এটি আমার জিনিস, তবে উভয় পক্ষের কথা বিচারকের কাছে নিয়ে আসতে হবে; বিচারক যাকে দোষী করবেন, তাকে নিজের প্রতিবেসীকে তার দ্বিগুণ দিতে হবে।
\p
\s5
\v 10 যদি একজন ব্যক্তি নিজের গাধা, গোরু, ভেড়া অথবা কোন পশু প্রতিবেশীর কাছে পালন করার জন্য রাখে এবং লোকের অজানায় সেই পশু মরে যায়, বা কোনো অঙ্গ ভেঙ্গে যায় অথবা দুরে কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়,
\v 11 তবে ‘আমি প্রতিবেশীর জিনিসে হাত দেয়নি’, এই কথা বলে একজন অন্যজনের কাছে সদাপ্রভুর নামে শপথ করবে; আর পশুর মালিক সেই জিনিস গ্রহণ করবে এবং ঐ ব্যক্তিকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না।
\v 12 কিন্তু যদি তার কাছ থেকে সেটি চুরি হয়ে যায়, তবে সে তার মালিককে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দেবে।
\v 13 যদি একটি পশুকে টুকরো করা হয়, তবে সে প্রমাণের জন্য তা উপস্থিত করুক; সেই টুকরো করা পশুর জন্য সে ক্ষতিপূরণ দেবে না।
\s5
\v 14 আর কেউ যদি নিজের প্রতিবেশীর পশু চেয়ে নেয়, ও তার মালিক তার সঙ্গে না থাকার সময়ে পশুটির কোনো অঙ্গ ভেঙ্গে যায় অথবা মরে যায়, তবে সেই অন্য ব্যক্তিকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
\v 15 যদি তার মালিক তার সঙ্গে থাকে , তবে তাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না; যদি তা ভাড়া করা পশু হয়, তবে তার ভাড়াতেই শোধ হবে।
\s5
\v 16 আর যদি কেউ বাগদত্তা নয় এমন কুমারীকে ভুলিয়ে তার সঙ্গে শয়ন করে, তবে সে অবশ্যই মেয়েকে পণ দিয়ে তাকে বিয়ে করবে।
\v 17 যদি সেই ব্যক্তির সঙ্গে নিজের মেয়ের বিয়ে দিতে বাবা নিতান্তই রাজি না হয়, তবে কন্যার পণের ব্যবস্থানুযায়ী তাকে টাকা দিতে হবে।
\s5
\v 18 তুমি জাদুকারীকে জীবিত রেখো না।
\v 19 পশুর সঙ্গে যে যৌনকর্মে লিপ্ত সেই ব্যক্তিকে অবশ্যই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হবে।
\p
\s5
\v 20 যে ব্যক্তি সদাপ্রভুর ছাড়া অন্য কোনো দেবতার কাছে বলিদান করে, সে সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হবে।
\v 21 তুমি বিদেশীদের উপর কোনো অন্যায় কোরো না অথবা তার উপর নির্যাতন কোরো না, কারণ তোমরাও মিশর দেশে বিদেশী হয়ে ছিলে।
\s5
\v 22 তোমরা কোন বিধবাকে অথবা বাবা নেই এমন শিশুকে দুঃখ দিও না।
\v 23 তাদেরকে কোনভাবে দুঃখ দিলে যদি তারা আমার কাছে কাঁদে, তবে আমি সদাপ্রভু অবশ্যই তাদের কান্না শুনব;
\v 24 আর আমার ক্রোধ জ্বলে উঠবে এবং আমি তোমাদেরকে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করব, তাতে তোমাদের স্ত্রীরা বিধবা হবে এবং তোমাদের সন্তানেরা পিতাহীন হবে।
\s5
\v 25 যদি তুমি আমার লোকদের মধ্যে তোমাদের নিজের জাতির মধ্যে এমন কাউকে টাকা ধার দাও, তবে তার কাছে তোমরা সুদ গ্রহীতার মতো হয়ো না অথবা তোমরা তার উপরে সুদ চাপিয়ে দিয়ো না।
\v 26 যদি তুমি নিজের প্রতিবেশীর পোষাক বন্ধক রাখ, তবে সুর্য্য অস্ত যাওয়ার আগে তা ফিরিয়ে দিও; কারণ তা তার একমাত্র আচ্ছাদন,
\v 27 এটা তার গায়ের একমাত্র পোষাক; সে আর কিসের উপর শোবে? আর যখন সে আমার কাছে কাঁদবে, আমি তার কান্না শুনব, কারণ আমি দয়ালু।
\s5
\v 28 তুমি আমাকে অর্থাৎ ঈশ্বরকে ধিক্কার দেবে না এবং তোমার লোকদের অধ্যক্ষকে অভিশাপ দিও না।
\s5
\v 29 তোমার পাকা ফসল ও দ্রাক্ষারস অর্পণ করতে দেরী কোরো না। তোমার প্রথমজাত পুত্রদের অবশ্যই আমাকে দেবে।
\v 30 তোমার গোরু ও ভেড়া সমন্ধেও সেইরূপ কোরো; কারণ তা সাত দিন নিজের মায়ের সঙ্গে থাকবে, কিন্তু আট দিনের দিন তুমি তা আমাকে দেবে।
\v 31 আর তোমরা আমার জন্য পবিত্র লোক হবে; সুতরাং ক্ষেত্রে পড়ে থাকা কোনো বিদীর্ণ মাংস খাবে না; পরিবর্তে তা কুকুরের কাছে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।
\s5
\c 23
\p
\v 1 তুমি কারও বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী দিও না; অসৎ সাক্ষী হয়ে দুষ্টু লোকের সাহায্য কোরো না।
\v 2 তুমি খারাপ কাজ করতে জনতার অনুসরণকারী হয়ো না এবং বিচারে অন্যায় করার জন্য জনতার পক্ষ হয়ে প্রতিবাদ কোরো না।
\v 3 তুমি গরিবদের বিচারের সময়ে তার পক্ষপাত করিও না।
\p
\s5
\v 4 যদি তোমার শত্রুর গোরু অথবা গাধাকে অন্যপথে যেতে দেখ তবে তুমি অবশ্যই তার কাছে তাকে নিয়ে যাবে।
\v 5 যদি তুমি যে তোমাকে ঘৃণা করে তার গাধাকে ভারের নীচে পড়ে যেতে দেখ, তাকে ভার মুক্ত করতে ইচ্ছা না হয়, তা সত্বেও তুমি অবশ্যই তার গাধার সঙ্গে তাকে সাহায্য করবে।
\s5
\v 6 গরীব প্রতিবেশীর বিচারে তার প্রতি অন্যায় কোরো না।
\v 7 মিথ্যা বিষয়ে দোষারোপ করতে অন্যদের সঙ্গে যোগ দিও না এবং নির্দোষ অথবা ধার্মিককে হত্যা কোরো না, কারণ আমি দুষ্ট লোককে নির্দোষ করব না।
\v 8 আর তুমি ঘুষ নিও না, কারণ ঘুষ যারা দেখতে পায় তাদের অন্ধ করে দেয় এবং ধার্মিক লোকদের কথাগুলি বিপথে নিয়ে যায়।
\v 9 আর তুমি বিদেশীদের উপর নির্যাতন কোরো না; যেহেতু তোমরা বিদেশীদের হৃদয় জান, কারণ তোমরাও মিশর দেশে বিদেশী হয়ে ছিলে।
\p
\s5
\v 10 তুমি নিজের মাটিতে ছয় বছর ধরে বীজ বপন কোরো এবং উৎপন্ন শস্য সংগ্রহ কোরো।
\v 11 কিন্তু সপ্তম বছরে তাকে বিশ্রাম দিও, ফেলে রেখো; তাতে তোমাদের মধ্যে দরিদ্ররা খেতে পাবে, আর তারা যা অবশিষ্ট রাখে, তা বনের পশুরা খাবে এবং তোমার আঙ্গুর ক্ষেতের ও জিতগাছের বিষয়েও সেইরূপ কোরো।
\s5
\v 12 তুমি ছয় দিন ধরে নিজের কাজ কোরো, কিন্তু সপ্তম দিনে তুমি অবশ্যই বিশ্রাম কোরো; যেন তোমার গোরু ও গাধা বিশ্রাম পায় এবং তোমার দাসীর ছেলে ও বিদেশীরা বিশ্রাম নিতে পারে ও প্রাণ জুড়াতে পারে।
\v 13 আমি তোমাদেরকে যা যা বললাম তার সকল বিষয়ে সাবধান থেকো; অন্য দেবতাদের নাম উল্লেখ কোরো না, তোমাদের মুখ থেকে যেন তাদের নাম শোনা না যায়।
\s5
\v 14 তুমি বছরে তিন বার আমার জন্য উৎসব করার উদ্দেশ্যে যাত্রা কোরো।
\v 15 তুমি খামির বিহীন রুটির উৎসব পালন কোরো; যেমন আমি তোমাকে আজ্ঞা দিয়েছি, সাত দিন খামির বিহীন রুটি ভোজন কোরো, সেই নির্ধারিত সময়ে, আবীব মাসে তুমি আমার সামনে উপস্থিত হবে, কারণ এই মাসে তুমি মিশর দেশ থেকে বের হয়ে এসেছিলে। কিন্তু তুমি খালি হাতে আমার কাছে আসবে না।
\s5
\v 16 আর তুমি শস্য ছেদনের উৎসব, অর্থাৎ তোমার পরিশ্রমে ক্ষেত্রে যা যা বুনেছ, তার প্রথম ফলের উৎসব পালন কোরো। আর বৎসরের শেষে ক্ষেত্র থেকে ফল সংগ্রহ করার সময়ে ফল সঞ্চয়ের উৎসব পালন কোরো।
\v 17 বছরে তিন বার তোমার সব পুরুষেরা প্রভু সদাপ্রভুর সামনে অবশ্যই উপস্থিত হবে।
\s5
\v 18 তুমি বলির রক্ত খামিরযুক্ত জিনিসের সঙ্গে আমাকে উত্সর্গ কোরো না; আর আমার উৎসব সম্পর্কীয় মেদ সমস্ত রাত্রি থেকে সকাল পর্যন্ত না থাকুক।
\v 19 তোমার জমির প্রথম ফলের অগ্রিমাংশ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘরে এনো। আর তোমরা ছাগল ছানাকে তার মায়ের দুধের সঙ্গে রান্না কোরো না।
\s ঈশ্বরীয় প্রতিজ্ঞা ও নিয়ম স্থাপন।
\p
\s5
\v 20 দেখ, পথের মধ্যে তোমাকে রক্ষা করতে এবং আমি যে জায়গা প্রস্তুত করেছি, সেই জায়গায় তোমাকে নিয়ে যেতে তোমার আগে আগে এক দূত আমি পাঠিয়ে দিয়েছি।
\v 21 তাঁর প্রতি সাবধান থেকো এবং তাঁর রবে মান্য কোরো, তাঁর অসন্তোষ জন্মাইও না; কারণ তিনি তোমাদের অধর্ম সকল ক্ষমা করবেন না; কারণ তাঁর হৃদয়ে আমার নাম রয়েছে।
\v 22 কিন্তু যদি তুমি নিশ্চই তাঁর রবে মান্য কর এবং আমি যা যা বলি সে সমস্ত কর, তবে আমি তোমার শত্রুদের শত্রু হব এবং তোমার প্রতিদ্বন্দীদের প্রতিদ্বন্দী হব।
\s5
\v 23 কারণ আমার দূত তোমার আগে আগে যাবেন এবং ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, কনানীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়ের দেশে তোমাকে নিয়ে যাবেন; আর আমি তাদেরকে ধংস করব।
\v 24 তুমি তাদের দেবতাদের কাছে মাথা নিচু করে প্রণাম কোরো না ও তারা যা করে তা কোরো না; কিন্তু তাদেরকে পুরোপুরিভাবে ছুঁড়ে ফেলে দিও এবং তাদের পাথরের স্তম্ভগুলি ভেঙ্গে ফেলো।
\v 25 তোমরা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অর্থাৎ আমাকে সেবা কোরো; যদি তোমরা তা কর, তাতে আমি তোমার রুটি ও জলে আশীর্বাদ করব এবং আমি তোমার মধ্য থেকে রোগ দূর করব।
\s5
\v 26 তোমার দেশে কারও গর্ভপাত হবে না এবং কেউ বন্ধ্যা হবে না; আমি তোমার আয়ূর পরিমাণ বেশী করব।
\v 27 আমি তোমার আগে আগে আমার বিষয়ে ভয় দেব এবং তুমি যে সব জাতির কাছে যাবে তাদেরকে আঘাত করব ও তোমার শত্রুদেরকে তোমার থেকে ফিরিয়ে দেব।
\v 28 আর আমি তোমার আগে আগে ভীমরুল পাঠাব; যারা হিব্বীয়, কনানীয় ও হিত্তীয়কে তোমার সামনে থেকে বের করে দেবে।
\v 29 কিন্তু দেশ যেন ধ্বংসের জায়গা না হয় ও তোমার বিরুদ্ধে বন্য পশুর সংখ্যা যেন বেশী না হয়, এই জন্য আমি এক বৎসরে তোমার সামনে থেকে তাদেরকে তাড়িয়ে দেব না।
\s5
\v 30 পরিবর্তে, তুমি যে পর্যন্ত এগিয়ে গিয়ে দেশ অধিকার না কর, ততক্ষণ তোমার সামনে থেকে তাদেরকে আস্তে আস্তে তাড়িয়ে দেব।
\v 31 আর সূফসাগর থেকে ফরাৎ নদী পর্যন্ত এবং মরুভূমি থেকে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত তোমার সীমানা নির্ধারণ করব; কারণ আমি সেই দেশের বসবাসকারীদের তোমার হাতে সমর্পণ করব এবং তুমি তোমার সামনে থেকে তাদেরকে তাড়িয়ে দেবে।
\v 32 তাদের সঙ্গে অথবা তাদের দেবতাদের সঙ্গে কোনো নিয়ম ঠিক করবে না।
\v 33 তারা তোমার দেশে বাস করবে না, না হলে তারা আমার বিরুদ্ধে তোমাকে পাপ করাবে; কারণ যদি তুমি তাদের দেবতাদের সেবা কর, তবে তা অবশ্য তোমার জন্য ফাঁদের মত হবে।
\s5
\c 24
\p
\v 1 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, তুমি, হারোণ, নাদব, অবীহূ এবং ইস্রায়েলের প্রাচীনবর্গের সত্তর জন, “তোমরা আমার কাছে এসো এবং দূর থেকে আমাকে প্রনাম কর।
\v 2 কেবল মোশি সদাপ্রভুর কাছে আসতে পারে, কিন্তু অন্যরা কাছে আসবে না; আর লোকেরা তার সঙ্গে উপরে উঠবে না।”
\p
\s5
\v 3 তখন মোশি এসে লোকদেরকে সদাপ্রভুর সব বাক্য ও সব শাসনের কথা বললেন, তাতে সব লোক একসঙ্গে উত্তর দিয়ে বলল, “সদাপ্রভু যে যে কথা বললেন, আমরা সবই পালন করব।”
\v 4 পরে মোশি সদাপ্রভুর সব বাক্য লিখলেন এবং সকালে উঠে পর্বতের তলে এক যজ্ঞবেদি ও ইস্রায়েলের বারোটি বংশানুসারে বারোটি স্তম্ভ তৈরী করলেন।
\s5
\v 5 আর তিনি ইস্রায়েল সন্তানদের যুবকদেরকে পাঠালেন তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোমের জন্য ও মঙ্গলের জন্য বলিরূপে ষাঁড়দেরকে বলিদান করল।
\v 6 তখন মোশি তার অর্ধেক রক্ত নিয়ে থালায় রাখলেন এবং অর্ধেক রক্ত বেদির উপরে ছিটিয়ে দিলেন।
\s5
\v 7 আর তিনি নিয়ম পুস্তকটি নিয়ে লোকদের কাছে উচ্চস্বরে পড়লেন; তাতে তারা বলল, “সদাপ্রভু যা যা বললেন, আমরা সবই পালন করব ও বাধ্য হব।”
\p
\v 8 পরে মোশি সেই রক্ত নিয়ে লোকদের উপরে ছিটিয়ে দিয়ে বললেন, “দেখ, এই হলো নিয়মের রক্ত, যা সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে এই সব বাক্য সম্বন্ধে স্থির করেছেন।
\s5
\v 9 তখন মোশি ও হারোণ, নাদব, ও অবীহূ এবং ইস্রায়েলের প্রাচীনদের মধ্য থেকে সত্তর জন পর্বতে চলে গেলেন;”
\v 10 আর তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে দেখলেন; তাঁর চরণতলের জায়গা নীলকান্তমণি দিয়ে তৈরী শিলাস্তরের কার্য্য এবং আকাশের মতই নির্মল ছিল।
\v 11 আর ঈশ্বর রাগে ইস্রায়েলের অধ্যক্ষদের উপরে হাত রাখলেন না, বরং তারা ঈশ্বরকে দর্শন করলেন এবং তারা খেলেন ও পান করলেন।
\p
\s5
\v 12 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি পর্বতে আমার কাছে উঠে এসো এবং এই জায়গায় থাক, তাতে আমি দুটি পাথরের ফলক এবং আমার লেখা ব্যবস্থা ও আদেশ তোমাকে দেব, যেন তুমি লোকদের শিক্ষা দিতে পার।”
\v 13 পরে মোশি ও তাঁর পরিচারক যিহোশূয় উঠলেন এবং মোশি ঈশ্বরের পর্বতে উঠলেন।
\s5
\v 14 আর তিনি প্রাচীনদের বললেন, “আমরা যতক্ষণ না তোমাদের কাছে ফিরে না আসি, ততক্ষণ তোমরা আমাদের অপেক্ষায় এই জায়গায় থাক; আর দেখ, হারোণ ও হূর তোমাদের কাছে থাকলেন; যদি কারও কোন বিবাদ থাকে তবে সে তাদের কাছে যাক।”
\v 15 সুতরাং মোশি যখন পর্বতে উঠলেন তখন পর্বত মেঘে ঢাকা ছিল।
\s5
\v 16 আর সীনয় পর্বতের উপরে সদাপ্রভুর প্রতাপ অবস্থিতি করছিল এবং ওটা ছয় দিন মেঘে ঢাকা ছিলো; পরে সপ্তম দিনে তিনি মেঘের মধ্য থেকে মোশিকে ডাকলেন।
\v 17 আর ইস্রায়েলীয়দের চোখে সদাপ্রভুর প্রতাপ পর্বতশৃঙ্গে গ্রাসকারী আগুনের মত প্রকাশিত হল।
\v 18 আর মোশি মেঘের মধ্যে প্রবেশ করে পর্বতে উঠলেন। মোশি চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সেই পর্বতে ছিলেন।
\s5
\c 25
\s ঈশ্বরীয় তাঁবু এবং পাত্র সকল তৈরির বিষয়ে আদেশ।
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
\v 2 “তুমি ইস্রায়েলদেরকে আমার জন্য উপহার সংগ্রহ করতে বল; হৃদয়ের ইচ্ছা থেকে যে নিবেদন করে, তার থেকে তোমরা আমার জন্য সেই উপহার গ্রহণ কোরো।
\s5
\v 3 এই সব উপহার তাদের থেকে গ্রহণ করবে; স্বর্ণ, রৌপ্য, ব্রোঞ্জ; নীল,
\v 4 বেগুনে ও লাল এবং সাদা মসীনা সূত্র ও ছাগলের লোম
\v 5 ও রক্তের রঙের ভেড়ার চামড়া, সিন্ধুঘোটকের চামড়া ও শিটীম কাঠ;
\v 6 দীপের জন্য তেল এবং অভিষেকের জন্য তেলের ও সুগন্ধ ধূপের জন্য গন্ধদ্রব্য;
\v 7 এবং এফোদের ও বুকপাটার জন্য গোমেদ মণি এবং প্রভৃতি মূল্যবান পাথর লাগানো হবে।
\s5
\v 8 আর তারা আমার জন্য এক ধর্ম্মধাম তৈরী করুক, তাতে আমি তাদের মধ্যে বাস করব।
\v 9 আবাসের ও তার সব জিনিসের যে আদর্শ আমি তোমাকে দেখাই, সেই অনুসারে তোমরা সবই করবে।
\s সাক্ষ্য সিন্দুক ও পাপ আবরণ।
\p
\s5
\v 10 তারা শিটীম কাঠের এক সিন্দুক তৈরী করবে; তা আড়াই হাত দৈর্ঘ্য, দেড় হাত প্রস্থ ও দেড় হাত উঁচু হবে।
\v 11 পরে তুমি খাঁটি সোনা দিয়ে তা মুড়ে দেবে; তার ভিতর ও বাইরে সোনা দিয়ে মুড়বে এবং তার উপরে চারদিকে সোনার পাত দিয়ে কিনারা গড়ে দেবে।
\s5
\v 12 আর তার জন্য সোনার চারটি কড়া ছাঁচে ঢেলে তার চার পায়াতে লাগাবে; তার এক পাশে দুটি কড়া ও অন্য পাশে দুই কড়া থাকবে।
\v 13 আর তুমি শিটীম কাঠের দুটি বহন দণ্ড করে সোনা দিয়ে মুড়বে।
\v 14 আর সিন্দুক বয়ে নিয়ে যাবার জন্য ঐ বহন দণ্ড সিন্দুকের দুই পাশে কড়াতে লাগবে।
\s5
\v 15 সেই বহন দণ্ড সিন্দুকের কড়াতে থাকবে, তা থেকে বের করা হবে না।
\v 16 আর আমি তোমাকে যে সাক্ষ্যপত্র দেব, তা ঐ সিন্দুকে রাখবে।
\v 17 পরে তুমি খাঁটি সোনা দিয়ে আড়াই হাত দৈর্ঘ্য ও দেড় হাত প্রস্থ পাপাবরণ তৈরী করবে।
\v 18 আর তুমি সোনার দুটি করূব তৈরী করবে; পাপাবরণের দুটি মুড়াতে পিটান কাজ দিয়ে তাদের তৈরী করবে।
\s5
\v 19 এক মুড়াতে একটি করূব ও অন্য মুড়াতে অন্য করূব, পাপাবরণের দুটি মুড়াতে তার সঙ্গে অখণ্ড দুই করূব করবে।
\v 20 আর সেই দুটি করূব উর্দ্ধে পাখনা বিস্তার করে ঐ পাখনা দিয়ে পাপাবরণকে আচ্ছাদন করবে এবং তাদের মুখ একে অপরের দিকে থাকবে, করূবদের দৃষ্টি পাপাবরণের দিকে থাকবে।
\v 21 তুমি অবশ্যই এই পাপাবরণ সেই সিন্দুকের উপরে রাখবে এবং আমি যে সাক্ষ্যপত্র তোমাকে দেব তা তুমি অবশ্যই ঐ সিন্দুকের মধ্যে রাখবে।
\s5
\v 22 আর আমি সেই জায়গায় তোমার সঙ্গে দেখা করব এবং পাপাবরণের উপরের অংশ থেকে, সাক্ষ্য সিন্দুকের উপরে স্থিত দুই করূবের মধ্য থেকে তোমার সঙ্গে কথা বলে ইস্রায়েল সন্তানদের প্রতি আমার সব আজ্ঞা তোমাকে জানাব।
\s টেবিল।
\p
\s5
\v 23 আর তুমি শিটীম কাঠের এক মেজ তৈরী করবে; তা দুই হাত লম্বা, এক হাত প্রস্থ ও দেড় হাত উঁচু হবে।
\v 24 আর খাঁটি সোনায় তা মুড়ে দেবে এবং তার চারদিকে সোনার পাত দিয়ে তৈরী করে দেবে।
\s5
\v 25 আর তার চারদিকে চার আঙ্গুল পরিমানে একটি কাঠের কাঠামো করবে এবং পাশের কাঠামোর চারদিকে সোনার পাত দিয়ে তৈরী করে দেবে।
\v 26 আর সোনার চারটি কড়া করে চারটি পায়ার চার কোণে রাখবে।
\v 27 টেবিল বয়ে নিয়ে যাবার জন্য বহন দণ্ডের ঘর হবার জন্য ঐ কড়া পাশের কাঠামোর কাছে থাকবে।
\s5
\v 28 আর ঐ টেবিল বহন করার জন্য শিটীম কাঠের দুটি বহন দণ্ড করে তা সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে।
\v 29 আর টেবিলের থালা, চামচ, কলসী ও ঢালার জন্য বাটি তৈরী করবে; এই সব খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরী করবে।
\v 30 আর তুমি সেই টেবিলের উপরে আমার সামনে নিয়মিতভাবে দর্শন রুটি রাখবে।
\s বাতিস্তম্ভ।
\p
\s5
\v 31 আর তুমি খাঁটি সোনার একটি বাতিস্তম্ভ তৈরী করবে; পেটান কাজের সেই বাতিস্তম্ভ তৈরী করা হবে; তার গুড়ি, শাখা, গোলাধার, কলকা ও ফুল তার সঙ্গে অখণ্ড হবে।
\v 32 বাতিস্তম্ভের এক পাশ থেকে তিনটি শাখা ও বাতিস্তম্ভের অন্য পাশ থেকে তিনটি শাখা, এই ছয়টি শাখা তার পাশ থেকে নির্গত হবে।
\s5
\v 33 একটি শাখায় বাদামফুলের মতো তিনটি গোলাধার, এক কলকা ও একটি ফুল থাকবে এবং অন্য শাখায় বাদামফুলের মতো তিন গোলাধার, এক কলকা ও একটি ফুল থাকবে; বাতিস্তম্ভ থেকে নির্গত ছয়টি শাখায় এইরকম হবে।
\v 34 বাতিস্তম্ভে বাদামফুলের মতো চার গোলাধার, ও তাদের কলকা ও ফুল থাকবে।
\s5
\v 35 আর বাতিস্তম্ভের যে ছয়টি শাখা নির্গত হবে, তাদের একটি শাখা দুটির নীচে তার সঙ্গে অখণ্ড এক কলকা ও অপর শাখা দুটির নীচে তার সঙ্গে অখণ্ড এক কলকা থাকবে।
\v 36 কলকা ও শাখা সবই তার সঙ্গে অখণ্ড হবে; সবই পেটানো খাঁটি সোনার একই জিনিস হবে।
\s5
\v 37 আর তুমি বাতিস্তম্ভ এবং সাতটি প্রদীপ তৈরী করবে এবং লোকেরা সেই সব প্রদীপ জ্বালালে তার সামনে আলো হবে।
\v 38 আর তার চিমটি ও ট্রে গুলি খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরী করতে হবে।
\v 39 এই বাতিস্তম্ভ এবং ঐ সব জিনিসপত্র এক তালন্ত পরিমানে খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরী করা হবে।
\v 40 দেখো, পর্বতে তোমাকে এই সবের যেরকম আদর্শ দেখান হয়েছিল, সেইরকম সবই কোরো।
\s5
\c 26
\s পর্দাগুলি।
\p
\v 1 আর তুমি দশটি পর্দা দিয়ে একটি পবিত্র সমাগম তাঁবু তৈরী করবে; সেগুলি পাকান সাদা মসীনা এবং নীল, বেগুনে ও লাল সুতো দিয়ে তৈরী করবে; সেই পর্দাগুলি সুনিপুণ করূবদের আকৃতি থাকবে।
\v 2 প্রতিটি পর্দার দৈর্ঘ্য আটাশ হাত ও প্রতিটি পর্দা প্রস্থে চার হাত হবে; সব পর্দার পরিমান সমান হবে।
\v 3 আর পাঁচটি পর্দার পরস্পর যুক্ত থাকবে এবং অন্য পাঁচটি পর্দা পরস্পর যুক্ত থাকবে।
\s5
\v 4 আর জোড়ার জায়গায় প্রথমটির শেষে পর্দার মুড়াতে নীলসূতোর হূকের ঘর তৈরী করে দেবে এবং জোড়ার জায়গার দ্বিতীয়টির শেষে পর্দার মুড়াতেও সেরকম করবে।
\v 5 প্রথম পর্দাতে পঞ্চাশ হূকের ঘর তৈরী করে দেবে এবং জোড়ার জায়গায় দ্বিতীয় পর্দার মুড়াতেও পঞ্চাশ হূকের ঘর তৈরী করে দেবে; সেই দুটি হূকের ঘর একে অন্যের সম্মুখীন হবে।
\v 6 আর পঞ্চাশ সোনার হূক তৈরী করে হূকের ঘরে পর্দাগুলি পরস্পর যুক্ত করবে; তাতে তা একই সমাগম তাঁবু হবে।
\s5
\v 7 আর তুমি সমাগম তাঁবুর উপরে ঢাকার জন্য ছাগলের লোম দিয়ে পর্দাগুলি তৈরী করবে, এগারটি পর্দা তৈরী করবে।
\v 8 প্রত্যেকটি পর্দার দৈর্ঘ্য ত্রিশ হাত ও প্রত্যেকটি পর্দা প্রস্থে চার হাত হবে; এই এগারতম পর্দাও একই পরিমানের হবে।
\v 9 পরে পাঁচটি পর্দা একে অপরের সঙ্গে জোড়া দিয়ে আলাদা করে রাখবে, অন্য ছয়টি পর্দাও আলাদা করে রাখবে এবং এদের ছয়তম পর্দা দ্বিগুন করে সমাগম তাঁবুর সামনে রাখবে।
\s5
\v 10 আর জোড় জায়গায় প্রথম পর্দার শেষ মুড়াতে পঞ্চাশ হূকের ঘর তৈরী করে দেবে এবং সংযুক্তব্য দ্বিতীয় পর্দার মুড়াতেও পঞ্চাশ হূকের ঘর তৈরী করে দেবে।
\v 11 পরে পিতলের পঞ্চাশটি হূক তৈরী করে হূকের ঘরে তা ঢুকিয়ে তাঁবু সংযুক্ত করবে; তাতে তা একই তাঁবু হবে;
\s5
\v 12 সমাগম তাঁবুর পর্দার বেশী অংশ, অর্থাৎ যে অর্ধেক পর্দার বেশী অংশ থাকবে, তা সমাগম তাঁবুর পিছন দিকে ঝুলে থাকবে।
\v 13 আর সমাগম তাঁবুর পর্দার দৈর্ঘ্য যে অংশ তার একপাশে এক হাত, ও অন্য পাশে এক হাত বেশী থাকবে, তা ঢেকে রাখার জন্য সমাগম তাঁবুর উপরে উভয় পাশে ঝুলে থাকবে।
\v 14 পরে তুমি তাঁবুর জন্য রক্ত বর্ণের ভেড়ার চামড়ার এবং অন্য একটি সুন্দর চামড়ার ছাদ তৈরী করবে।
\s তক্তা ও খিলগুলি।
\p
\s5
\v 15 পরে তুমি সমাগম তাঁবুর জন্য শিটীম কাঠের দাঁড় করানো তক্তা তৈরী করবে।
\v 16 প্রত্যেক তক্তার দৈর্ঘ্য দশ হাত ও প্রস্থে দেড় হাত হবে।
\v 17 প্রত্যেক তক্তার একে অপরের সংযুক্ত দুটি করে পায়া থাকবে; এইভাবে সমাগম তাঁবুর সব তক্তাগুলি তৈরী করবে।
\v 18 সমাগম তাঁবুর জন্য তক্তা তৈরী করবে, দক্ষিণদিকের দক্ষিণ পাশের জন্য কুড়িটি তক্তা তৈরী করবে।
\s5
\v 19 আর সেই কুড়িতম তক্তার নীচে চল্লিশটি রুপোর চুঙ্গি তৈরী করে দেবে; এক তক্তার নীচে তার দুই পায়ার জন্য দুটি চুঙ্গি এবং অন্য অন্য তক্তার নীচেও তাদের দুটি করে পায়ার জন্য দুটি করে চুঙ্গি হবে।
\v 20 আবার সমাগম তাঁবুর দ্বিতীয় পাশের জন্য উত্তরদিকে কুড়িটি তক্তা তৈরী করবে;
\v 21 আর সেইগুলির জন্য রুপোর চল্লিশটি চুঙ্গি; এক তক্তার নীচে দুটি চুঙ্গি ও অন্য তক্তাগুলির নীচেও দুটি করে চুঙ্গি;
\s5
\v 22 আর সমাগম তাঁবুর পিছনের অংশের পশ্চিম দিকের জন্য ছয়টি তক্তা করবে।
\v 23 আর তাঁবুর সেই পিছনের অংশের দুটি কোণের জন্য দুটি তক্তা করবে।
\v 24 সেই দুটি তক্তার নীচে জোড়া হবে এবং সেইভাবে উপরের অংশেও প্রথম কড়ার কাছে জোড় হবে; এইভাবে পিছনের উভয় কোণেই হবে; তা দুটি কোণের জন্য হবে।
\v 25 সেখানে অবশ্যই আটটি তক্তা থাকবে এবং সেগুলি রুপোর চুঙ্গি ষোলটী হবে; এক তক্তার নীচে দুটি চুঙ্গি, ও অন্য তক্তার নীচে দুটি চুঙ্গি থাকবে।
\s5
\v 26 আর তুমি শিটীম কাঠের খিল তৈরী করবে,
\v 27 সমাগম তাঁবুর এক পাশের তক্তাতে পাঁচটি খিল ও সমাগম তাঁবুর অন্য পাশের তক্তাতে পাঁচটি খিল এবং সমাগম তাঁবুর পশ্চিম দিকের পিছনের দিকের তক্তাতে পাঁচটি খিল দেবে।
\v 28 এবং মাঝখানের খিল তক্তাগুলির মাঝখান দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যাবে।
\s5
\v 29 আর ঐ তক্তাগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে এবং খিলের ঘর হবার জন্য সোনার কড়া গড়বে এবং খিলগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে।
\v 30 সমাগম তাঁবুর জন্য যে পরিকল্পনা পর্বতে তোমাকে দেখান হয়েছিল, সেই অনুসারে তা স্থাপন করবে।
\s তিরস্করিণী ও পর্দা।
\p
\s5
\v 31 আর তুমি নীল, বেগুনে ও লাল এবং পাকান সাদা মসীনা সূতো দিয়ে এক পর্দা তৈরী করবে; তা শিল্পের কাজ হবে, তাতে করুবদের আকৃতি থাকবে।
\v 32 তুমি তা সোনায় মুড়ান শিটীম কাঠের চার স্তম্ভের উপরে খাটাবে; সেগুলির আঁকড়া সোনা দিয়ে হবে এবং সেগুলি রুপোর চারটি চুঙ্গির উপরে বসবে।
\v 33 আর হূকগুলির নীচে পর্দা খাটিয়ে দেবে এবং সেখানে পর্দার ভিতরে সাক্ষ্য সিন্দুক আনবে এবং সেই পর্দা ও অতি পবিত্র স্থান থেকে পবিত্র স্থানকে আলাদা করে রাখবে।
\s5
\v 34 আর অতি পবিত্র জায়গায় সাক্ষ্য-সিন্দুকের উপরে পাপাবরণ রাখবে।
\v 35 আর পর্দার বাইরে মেজ রাখবে ও টেবিলের সামনে সমাগম তাঁবুর পাশে, দক্ষিণদিকে বাতিদানি রাখবে এবং উত্তরদিকে টেবিল রাখবে।
\s5
\v 36 আর সমাগম তাঁবুর ফটকের জন্য নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সুতো তৈরী শিল্পীদের করা একটি পর্দা তৈরী করবে।
\v 37 আর সেই পর্দার জন্য শিটীম কাঠের পাঁচটি স্তম্ভ তৈরী করে সোনায় মুড়ে দেবে, ও সোনা দিয়ে তার আঁকড়া তৈরী করবে এবং তার জন্য পিতলের পাঁচ চুঙ্গি ঢালবে।
\s5
\c 27
\s হোমের জন্য বেদি।
\p
\v 1 আর তুমি শিটীম কাঠ দিয়ে দৈর্ঘ্যে পাঁচ হাত ও প্রস্থে পাঁচ হাত বেদি তৈরী করবে। সেই বেদি চারকোণা এবং তিন হাত উঁচু হবে।
\v 2 আর তার চার কোণের উপরে শিং তৈরী করবে, সেই বেদির শিংগুলি একসঙ্গেই থাকবে এবং তুমি সেটা ব্রোঞ্জ দিয়ে মুড়ে দেবে।
\s5
\v 3 আর তার ছাই নেবার জন্য হাঁড়ী তৈরী করবে এবং তার হাতা, বাটি, ত্রিশূল ও আগুন রাখার পাত্র তৈরী করবে; তার সব পাত্র ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরী করবে।
\v 4 আর বেদির জন্য জালের মত ব্রোঞ্জের এক ঝাঁঝরী তৈরী করবে এবং সেই ঝাঁঝরীর উপরে চার কোণে ব্রোঞ্জের চারটি বালা তৈরী করবে।
\s5
\v 5 এই ঝাঁঝরীটি বেদির বেড়ের নীচের দিকে রাখবে এবং ঝাঁঝরী বেদির মাঝখান পর্যন্ত থাকবে।
\v 6 আর বেদির জন্য শিটীম কাঠের বহন দণ্ড তৈরী করবে ও তা ব্রোঞ্জ দিয়ে মুড়ে দেবে।
\s5
\v 7 আর বালার মধ্যে ঐ বহন-দণ্ড দেবে এবং বেদিটি বহনের সময় তার দুই পাশে সেই বহন-দণ্ড অবশ্যই থাকবে।
\v 8 তুমি অবশ্যই বেদিটি ফাঁপা করবে ও তক্তা দিয়ে তৈরী করবে; পর্বতে তোমাকে যেরকম দেখান হয়েছিল, তুমি সেইরকম ভাবে তা তৈরী করবে।
\s সমাগম তাঁবুর উঠান।
\p
\s5
\v 9 আর তুমি সমাগম তাঁবুর জন্য উঠান তৈরী করবে; দক্ষিণ পাশের দক্ষিণদিকে পাকান সাদা মসীনা সুতোর তৈরী পর্দা থাকবে; তার এক পাশের দৈর্ঘ্য এক শত হাত হবে।
\v 10 তার কুড়িটি স্তম্ভ ও কুড়িটি চুঙ্গি ব্রোঞ্জের হবে এবং স্তম্ভের আঁকড়া ও শলাকা গুলি রুপোর হবে।
\s5
\v 11 সেইরূপ উত্তর পাশে একশ হাত লম্বা পর্দা হবে, আর তার কুড়িটি স্তম্ভ ও কুড়িটি ব্রোঞ্জের চুঙ্গি হবে এবং স্তম্ভের আঁকড়া ও শলাকা গুলি রুপোর হবে।
\v 12 আর উঠানের প্রস্থের জন্যে পশ্চিমদিকে পঞ্চাশ হাত পর্দা ও তার দশটি স্তম্ভ ও দশটি চুঙ্গি হবে।
\v 13 আর উঠানটি অবশ্যই লম্বায় পূর্ব্ব পাশের পূর্ব্বদিকে পঞ্চাশ হাত হবে।
\s5
\v 14 ফটকের এক পাশের জন্য লম্বায় পনের হাত পর্দা, তিনটি স্তম্ভ ও তিনটি চুঙ্গি হবে।
\v 15 আর অন্য পাশের জন্যও পনের হাত লম্বা পর্দা হবে। আর তাদের অবশ্যই তিনটি স্তম্ভ ও তিনটি চুঙ্গি থাকবে।
\v 16 আর উঠানের ফটকের জন্য নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সূতো দিয়ে শিল্পীর হাতে করা কুড়ি হাত একটি পর্দা হবে। তাতে অবশ্যই চারটি স্তম্ভ ও চারটি চুঙ্গি থাকবে।
\s5
\v 17 উঠানের চারিদিকের স্তম্ভ গুলি রুপোর শলাকাতে বদ্ধ হবে ও সেগুলির আঁকড়া রুপোর ও ব্রোঞ্জের চুঙ্গি হবে।
\v 18 উঠানের দৈর্ঘ্য একশো হাত, প্রস্থ সব জায়গায় পঞ্চাশ হাত এবং উচ্চতায় পাঁচ হাত হবে, সবগুলি পাকান সাদা মসীনা সুতো দিয়ে করা হবে ও তাতে ব্রোঞ্জের চুঙ্গি হবে।
\v 19 সমাগম তাঁবুর ভিতরে ব্যবহৃত সব জিনিসগুলি ও তাঁবুর সমস্ত গোঁজ এবং উঠানের সমস্ত গোঁজ ব্রোঞ্জের হবে।
\s5
\v 20 আর তুমি অবশ্যই ইস্রায়েলের সন্তানদেরকে এই আদেশ করবে, যেন তারা আলোর জন্য পেশাই করা জিততেল তোমার কাছে আনে, যাতে সবসময় প্রদীপ জ্বালান থাকে।
\v 21 আর সমাগম তাঁবুতে সাক্ষ্য সিন্দুকের সামনের পর্দার বাইরে হারোণ ও তার ছেলে সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত সদাপ্রভুর সামনে তা তৈরী রাখবে; এটা ইস্রায়েলের সন্তানদের বংশপরম্পরায় পালনের চিরকালীন ব্যবস্থা।
\s5
\c 28
\s যাজকদের পোশাক।
\p
\v 1 আর তুমি আমার যাজক হিসাবে ইস্রায়েলের সন্তানদের মধ্যে থেকে তোমার ভাই হারোণকে ও তার সঙ্গে তার ছেলেদের নিজের কাছে উপস্থিত করবে; হারোণ এবং হারোণের ছেলে নাদব, অবীহূ, ইলীয়াসর ও ঈথামরকে উপস্থিত করবে।
\v 2 আর তোমার ভাই হারোণের জন্য, আমার উদ্দেশ্যে গৌরব ও শোভার জন্য তুমি পবিত্র পোশাক তৈরী করবে।
\v 3 আর আমি যাদেরকে জ্ঞানের আত্মায় পূর্ণ করেছি, সেই সমস্ত জ্ঞানী লোকেদেরকে বল, যেন আমার সেবা করার জন্য যাজক হিসাবে হারোণকে পবিত্র করতে তারা তার পোশাক তৈরী করে।
\s5
\v 4 এই সব পোশাক তারা তৈরী করবে; বুকপাটা, এফোদ, পরিচ্ছদ, বোনা পোশাক, পাগড়ি ও কোমর বন্ধনী; আমার যাজক হিসাবে সেবা করার উদ্দেশ্যে তারা তোমার ভাই হারোণের ও তার ছেলেদের জন্য পবিত্র পোশাক তৈরী করবে।
\v 5 তারা সোনা এবং নীল, বেগুনে ও লাল এবং সাদা মসীনা সুতো নেবে।
\s5
\v 6 আর তারা সোনা এবং নীল, বেগুনে ও লাল এবং পাকান সাদা মসীনা সুতোয় দক্ষ কারিগর দিয়ে এফোদ তৈরী করবে।
\v 7 তার দুই কাঁধে একে অপরের সাথে যুক্ত দুটি ফিতা থাকবে।
\v 8 তা বাঁধবার জন্য সুক্ষ্মভাবে বোনা কোমর বন্ধনী এফোদের মত হতে হবে, তা তার সঙ্গে অখণ্ড এবং সেই পোশাকের সমান হবে; অর্থাৎ স্বর্ণ, নীল, বেগুনে ও লাল এবং পাকান সাদা মসীনা সূতো দিয়ে তৈরী হবে।
\v 9 পরে তুমি দুই গোমেদক মণি নিয়ে তার উপরে ইস্রায়েলীয়দের নাম খোদাই করবে।
\s5
\v 10 তাদের জন্ম অনুযায়ী নাম অনুসারে ছয়টি নাম একটি পাথরের উপরে অবশ্যই থাকবে, ও অবশিষ্ট ছয়টি নাম অন্য পাথরের উপরে হবে।
\v 11 শিল্পকাজ ও মুদ্রা খোদাইয়ের মত সেই দুটি পাথরের উপরে ইস্রায়েলের বারোটির ছেলের নাম খোদাই করা হবে। তোমরা অবশ্যই পাথরগুলি সোনার বিনুনি করা শিকল দিয়ে আঁটকিয়ে দেবে।
\v 12 আর ইস্রায়েলীয়দের সদাপ্রভুকে স্মরণ করার জন্য মণিরূপে তুমি সেই দুটি পাথর এফোদের দুই কাঁধের ফিতাতে দেবে; তাতে হারোণ স্মরণ করবার জন্য সদাপ্রভুর সামনে নিজের দুটি কাঁধে তাদের নাম বহন করবে।
\s5
\v 13 আর তুমি অবশ্যই সোনার কাজ করবে,
\v 14 এবং খাঁটি সোনা দিয়ে পাকান দুটি পাতা-কাটা মালার মত শিকল করবে এবং সেই পাকান শিকল দুটি অবশ্যই যুক্ত করবে।
\s5
\v 15 আর শিল্পীর দ্বারা কার্য্যে বিচার করার জন্য বুকপাটা তৈরী করবে; এফোদের মত কায়দায় করবে; সোনা, নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সুতো দিয়ে তা তৈরী করবে।
\v 16 এটা চারকোণ ও দুইভাগ বিশিষ্ট হবে; এটার দৈর্ঘ্য এক বিঘত ও প্রস্থ এক বিঘত হবে।
\s5
\v 17 আর এটির ওপরে চার সারি মূল্যবান মণি লাগিয়ে তৈরী করবে; তার প্রথম সারিতে অবশ্যই চুণী, পীতমণি ও মরকত;
\v 18 দ্বিতীয় সারিতে অবশ্যই পদ্মরাগ, নীলকান্ত ও হীরক;
\v 19 তৃতীয় সারিতে অবশ্যই পেরোজ, যিস্ম ও কটাহেলা;
\v 20 এবং চতুর্থ সারিতে বৈদূর্ষ্য, গোমেদক ও সূর্য্যকান্ত; এই গুলি নিজের নিজের সারিতে সোনা দিয়ে লাগানো হবে।
\s5
\v 21 এই পাথরগুলি ইস্রায়েলীয়দের বারোটি নামানুযায়ী সাজানো হবে; এই গুলি একটি আংটির উপর খোদাই করা প্রত্যেক পাথরে ঐ বারো বংশের জন্য এক এক ছেলের নাম থাকবে।
\v 22 আর তুমি খাঁটি সোনা দিয়ে বুকপাটার উপরে পাতার আকৃতি মালার মত পাকান দুটি শিকল তৈরী করে দেবে।
\v 23 আর বুকপাটার ওপরে সোনার দুটি বালা তৈরী করে দেবে এবং অবশ্যই বুকপাটার দুই মাথায় ঐ দুটি বালা বেঁধে বাঁধে দেবে।
\v 24 আর বুকপাটার দুই প্রান্তে অবস্থিত দুটি বালার মধ্যে পাকান সোনার ঐ দুটি শিকল রাখবে।
\s5
\v 25 আর পাকান শিকলের দুটি শেষ প্রান্ত সেই দুটি পাতা কাটা শিকলে বেঁধে দেবে। তারপর এফোদের সামনে দুটি কাঁধের ফিতার উপরে ঐগুলি লাগিয়ে দেবে।
\v 26 তুমি অবশ্যই সোনার দুটি বালা তৈরী করে বুকপাটার দুই মাথায় এফোদের সামনের দিকে ভিতরের অংশে রাখবে।
\s5
\v 27 তুমি আরও দুটি সোনার বলা তৈরী করবে এবং এফোদের দুই কাঁধের ফিতের নীচে এফোদের সামনের অংশে সুক্ষ্মভাবে বোনা কোমর বন্ধনীর উপরে তা লাগিয়ে দেবে।
\v 28 তাতে বুকপাটা যেন এফোদের সুক্ষ্মভাবে বোনা কোমর বন্ধনীর উপরে থাকে, এফোদ থেকে যেন খসে না পড়ে, এই জন্য তারা সেই বালাতে নীলসুতো দিয়ে এফোদের বালার সঙ্গে বুকপাটা বেঁধে রাখবে।
\s5
\v 29 যখন হারোণ পবিত্র জায়গায় যাবে, তখন তিনি সদাপ্রভুর সামনে সব সময় মনে করে দেবার জন্য সে বিচারের জন্য বুকপাটাতে ইস্রায়েলের বারোটি ছেলের নাম নিজের হৃদয়ের উপরে বহন করবে।
\v 30 আর বিচারের জন্য সেই বুকপাটায় তুমি ঊরীম ও তুম্মীম [দীপ্তি ও সিদ্ধতা] দেবে; তাতে হারোণ যখন সদাপ্রভুর সামনে যাবে, তখন হারোণের হৃদয়ের উপরে সেই বিচারের জন্য বুকপাটা থাকবে এবং হারোণ সদাপ্রভুর সামনে ইস্রায়েলীয়দের বিচারের বুকপাটাটি সবসময় নিজের হৃদয়ের উপরে বহন করবে।
\s5
\v 31 আর তুমি এফোদের সব পরিচ্ছদ নীল রঙের করবে।
\v 32 তার মাঝখানে মাথায় পরার জন্য একটি জায়গা থাকবে; গলার সেই জায়গার চারদিকে তন্তু দিয়ে শিল্পীর কাজ করা পাড় থাকবে, যাতে এটি না ছেঁড়ে।
\s5
\v 33 আর তুমি তার আঁচলের চারধারে নীল, বেগুনে ও লাল ডালিম করবে এবং তার চারদিকে মধ্যে মধ্যে সোনার ঘন্টা থাকবে।
\v 34 ঐ পোশাকের আঁচলের চারধারে এক সোনার ঘন্টা ও একটি ডালিম এবং এক সোনার ঘন্টা ও একটি ডালিম থাকবে।
\v 35 আর হারোণ পরিচর্য্যা করার জন্য সেই পোশাক পরবে; তাতে সে যখন সদাপ্রভুর সামনে পবিত্র জায়গায় প্রবেশ করবে, ও সেখান থেকে যখন বের হবে, তখন সেই ঘন্টার শব্দ শোনা যাবে; এটি হলো যাতে সে না মরে।
\s5
\v 36 আর তুমি অবশ্যই খাঁটি সোনা দিয়ে একটি পাত তৈরী করবে এবং মুদ্রার মত তার ওপরে “সদাপ্রভুর উদেশ্যে পবিত্র” এই কথা খোদাই করে লিখবে।
\v 37 তুমি ওই পাতটি নীলসুতো দিয়ে বেঁধে রাখবে; তা উষ্ণীষের উপরের দিকে এবং সামনের দিকে থাকবে।
\v 38 আর এটি অবশ্যই হারোণের কপালের উপরে থাকবে, তাতে ইস্রায়েলীয়রা নিজেদের সব পবিত্র দানে যে সকল জিনিসগুলি পবিত্র করবে, হারোণ সেই সব পবিত্র জিনিসের অপরাধ সব সময় বহন করবে। আর তাদের উপহার যাতে সদাপ্রভু গ্রহণ করে, সেই জন্য এটি সব সময় তার কপালের উপরে থাকবে।
\s5
\v 39 আর তুমি চিত্রিত সাদা মসীনা সুতো দিয়ে অঙ্গরক্ষিণী বুনবে এবং তুমি সাদা মসীনা সুতো দিয়ে উষ্ণীষ তৈরী করবে; তুমি কোমর বন্ধনীর মত একই জিনিস দিয়ে শিল্প কাজ করবে।
\s5
\v 40 আর হারোণের ছেলেদের জন্য অঙ্গ রক্ষার পোশাক ও কোমর বন্ধনী তৈরী করবে এবং চমত্কার ও সম্মানের জন্য শিরোভূষণ করে দেবে।
\v 41 আর তুমি তোমার ভাই হারোণ ও তার সঙ্গে তার ছেলেদের গায়ে সেই সব পোশাক পরাবে। তুমি তাদের অভিষেক করবে এবং তাদেরকে পবিত্র করে আমার জন্য সংরক্ষণ করবে, যাতে তারা যাজকের কাজ করে আমাকে সেবা করে।
\s5
\v 42 তুমি তাদের উলঙ্গতা আচ্ছাদন করার জন্য কোমর থেকে উরু পর্যন্ত মসীনা সুতোর জাঙ্গিয়া তৈরী করবে।
\v 43 আর যখন হারোণ ও তার ছেলেরা সমাগম তাঁবুতে ঢুকবে অথবা পবিত্র স্থানে সেবাকাজ করার জন্য বেদির কাছে যাবে তখন তারা এই পোশাক অবশ্যই পরবে, যাতে তারা কোনো অপরাধ বয়ে না মরে যায়। এটা একটা হারোণ ও তার পরবর্তী বংশের জন্য চিরকালের ব্যবস্থা হবে।
\s5
\c 29
\s যাজকদের নিয়োগ বিষয়ের আদেশ।
\p
\v 1 আর তুমি এই সব কাজগুলি তাদেরকে পবিত্র করার জন্য তাদের প্রতি করবে; যাতে তারা যাজক হয়ে আমাকে সেবা করে। নির্দ্দোষ একটি পুরুষ গরু এবং দুটি ভেড়া নাও;
\v 2 আর খামির বিহীন রুটি, তেল মেশানো খামির বিহীন পিঠে ও তেল মাখানো খামির বিহীন সরুচাকলী। এই সবগুলি গমের ময়দা দিয়ে তৈরী করবে;
\s5
\v 3 তুমি সেগুলি একটি ডালিতে রাখবে, আর সেইগুলি ডালিতে করে আনবে এবং সেই গরু ও দুটি ভেড়ার সঙ্গে উপহার দেবে।
\v 4 আর তুমি হারোণ ও তার ছেলেদেরকে সমাগম তাঁবুর ফটকের কাছে আনবে এবং জল দিয়ে হারোণ ও তার ছেলেদেরকে স্নান করাবে।
\s5
\v 5 আর সেই সব পোশাক নিয়ে হারোণকে পরাবে, এফোদের রাজবেশ, এফোদ ও বুকপাটা পরাবে এবং তার চারদিকে এফোদের বুননি করা কোমর বন্ধনী দিয়ে বাঁধবে।
\v 6 আর তার মাথায় পাগড়ি দেবে, ও পাগড়ির উপরে পবিত্র মুকুট দেবে।
\v 7 পরে অভিষেকের জন্য যে তেল সেই তেল নিয়ে তার মাথার উপরে ঢেলে দেবে এবং এইভাবে তাকে অভিষিক্ত করবে।
\s5
\v 8 আর তুমি তার ছেলেদেরকে অবশ্যই আনবে এবং তাদেরকে অঙ্গরক্ষক পোশাক পরাবে।
\v 9 আর তুমি হারোণকে ও তার ছেলেদেরকে কোমর বন্ধন পরাবে এবং তাদের মাথায় শিরোভূষণ বেঁধে দেবে; তাতে যাজকের কাজ তাদের জন্য চিরকাল ব্যবস্থা হয়ে থাকবে। আর এইভাবে তুমি আমাকে সেবা করার জন্য হারোণ ও তার ছেলেদের পবিত্র করবে।
\s5
\v 10 পরে তোমরা সকলে অবশ্যই সমাগম তাঁবুর সামনে সেই গরুটি আনবে এবং হারোণ ও তার ছেলেরা সেই গরুটির মাথায় হস্তার্পণ করবে।
\v 11 তখন তুমি সমাগম তাঁবুর ফটকের সামনে ও সদাপ্রভুর সামনে ঐ গরুটি হত্যা করবে।
\s5
\v 12 পরে গরুটির রক্ত কিছুটা নিয়ে আঙুল দিয়ে বেদির শিঙের উপরে দেবে এবং বেদির নিচের অংশে বাকী সব রক্ত ঢেলে দেবে।
\v 13 আর তার অন্ত্রের উপরে থাকা সব মেদ ও যকৃতের উপরের অন্ত্রাপ্লাবক ও দুটি মেটে ও তার অপরের সব মেদ নিয়ে বেদিতে পোড়াবে।
\v 14 কিন্তু গরুর মাংস ও তার চামড়া ও গোবর তুমি শিবিরের বাইরে আগুনে পুড়িয়ে দেবে; এটাই হবে পাপের জন্য বলি।
\s5
\v 15 পরে তুমি একটি ভেড়া আনবে এবং হারোণ ও তার ছেলেরা সেই ভেড়ার মাথায় হস্তার্পণ করবে।
\v 16 তুমি সেই ভেড়া হত্যা করবে। পরে তার রক্ত নিয়ে বেদির উপরে এবং তার চারদিকে ছিটিয়ে দেবে।
\v 17 পরে তুমি ভেড়াটি খণ্ড খণ্ড করে কাটবে এবং তার অন্ত্র ও পা ধোবে এবং ঐ অন্ত্রগুলি খণ্ড মাংস ও মাথার সঙ্গে রাখবে।
\v 18 পরে সমস্ত ভেড়াটি বেদির ওপরে পোড়াবে; এটাই হবে আমার অর্থাৎ সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলি, এটাই হবে আমার উদ্দেশ্যে সৌরভের জন্য এবং আমার জন্য আগুন দিয়ে উপহার।
\s5
\v 19 পরে তুমি অন্য ভেড়াটি নেবে এবং হারোণ ও তার ছেলেরা অবশ্যই ঐ ভেড়ার মাথায় হস্তার্পণ করবে।
\v 20 পরে তুমি সেই ভেড়া হত্যা করবে এবং তার থেকে কিছু রক্ত নেবে। এই রক্ত দিয়ে হারোণের ডান কানে ও তার ছেলেদের ডান কানে ও তাদের ডান হাতের বুড়ো অঙ্গুলের উপরে দেবে এবং তাদের মহান ডান পায়ের পাতার উপরে দেবে। তার পরে বেদির উপরে চারিদিকে রক্ত ছিটিয়ে দেবে।
\s5
\v 21 পরে বেদির উপরে থাকা রক্ত ও অভিষেকের জন্য যে তেল তার থেকে কিছুটা নিয়ে হারোণের ওপরে ও তার পোশাকের ওপরে এবং তার সঙ্গে তার ছেলেদের ওপরে ও তাদের পোশাকের ওপরে ছিটিয়ে দেবে। তখন হারোণ ও তার পোশাক এবং ঠিক তার মতোই তার ছেলেরা ও তাদের পোশাক পবিত্র হবে এবং আমার জন্য সংরক্ষিত হবে।
\s5
\v 22 পরে তুমি সেই ভেড়ার মেদ, মোটা লেজ ও অন্ত্রের উপরের মেদ যেটি অন্তরকে ঢেকে রাখে এবং দুটি মেটিয়া ও তার উপরের মেদ, দুটি বৃক্ক ও তার উপরের মেদ এবং ডান উরু নেবে, কারণ সেই ভেড়াটি হলো আমার উদ্দেশ্যে যাজককে পবিত্র করার জন্য।
\v 23 পরে তুমি সদাপ্রভুর সামনে থাকা খামির বিহীন রুটির ডালি থেকে একটি রুটি ও তেল দিয়ে তৈরী একটি পিঠে ও একটি বিস্কুট নেবে;
\s5
\v 24 তুমি হারোণের হাতে ও তার ছেলেদের হাতে সেই গুলি দেবে। তারা সেগুলি আমার সামনে অর্থাৎ সদাপ্রভুর সামনে দোলাবে এবং অবশ্যই আমাকে উপহার দেবে।
\v 25 পরে তুমি তাদের হাত থেকে সেই খাবার নিয়ে সদাপ্রভুর সামনে হোম বলির জন্য বেদির উপরে দগ্ধ করবে; এটি একটি মিষ্টি সৌরভ আমার জন্য উত্পন্ন করবে। এগুলি হবে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আগুন দ্বারা উপহার।
\s5
\v 26 পরে তুমি হারোণের হাতে পবিত্র করা ভেড়ার বুকের অংশ নেবে এবং সদাপ্রভুর সামনে দোলাবে এবং আমাকে উপহার দেবে; তখন এটি তোমার খাবার জন্য অংশ হবে।
\v 27 তুমি অবশ্যই উপহারের সেই উচ্চিকৃত বুকের অংশ এবং উপহারের সেই ভেড়ার উরু আমার জন্য পবিত্র করবে - হারোণ ও তার ছেলেদের হাতে পবিত্র করা ভেড়ার যে দোলায়িত বুকের অংশ ও যে উরু উপহার দেওয়া হয়েছে, তা তুমি পবিত্র করবে।
\v 28 মাংসের এই অংশ ইস্রায়েলীয়দের থেকে দেওয়া হয়েছে, তা হারোণ ও তার বংশের জন্য চিরকাল অধিকারী হয়ে থাকবে। কারণ এটাই হলো ব্যবস্থার দ্বারা সহভাগীতার উপহার; এটাই সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যাজকদের জন্য ইস্রায়েলীয়দের থেকে উপহার।
\s5
\v 29 আর হারোণের পরে তার পবিত্র পোশাক গুলি তার ছেলেরা গ্রহণ করবে; আমার জন্য অভিষেক ও পবিত্র করার সময় তারা সেগুলি পরিধান করবে।
\v 30 তার ছেলেদের মধ্যে যে তার পদে যাজক হবে, যে পবিত্র জায়গায় সেবা করতে সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করবে, সে সেই বস্ত্র সাত দিন পরবে।
\s5
\v 31 পরে তুমি সেই যাজক দিয়ে আমার জন্য পবিত্র করা ভেড়ার মাংস নিয়ে কোন পবিত্র স্থানে সিদ্ধ করবে।
\v 32 হারোণ ও তার ছেলেরা সমাগম তাঁবুর দরজার কাছে সেই ভেড়ার মাংস এবং ডালিতে থাকা সেই রুটি খাবে।
\v 33 আর আমার জন্য তাদেরকে পবিত্র করার জন্য যে সব মাংস এবং রুটি দিয়া প্রায়শ্চিত্ত করা হল, তা তারা খাবে; কিন্তু অন্য কোন লোক তা খাবে না, কারণ তার অবশ্যই সেগুলি পবিত্র বস্তু মান্য করবে ও আমার জন্য সংরক্ষিত করবে।
\v 34 আর আমার জন্য ঐ পবিত্র করা সেই মাংস ও সেই রুটি থেকে যদি সকাল পর্যন্ত কিছু অবশিষ্ট থাকে, তবে সেইগুলি অবশ্যই আগুনে পুড়িয়ে দেবে; কেউ সেগুলি খাবে না, কারণ তা পবিত্র বস্তু ও আমার জন্য সংরক্ষিত।
\s5
\v 35 এইভাবে আমি যে তোমাকে এই সব আজ্ঞা করলাম, সেই অনুসারে হারোণ ও তার ছেলেদের প্রতি তুমি করবে; তুমি সাত দিনে তাদেরকে আমার জন্য পবিত্র করবে।
\v 36 আর তুমি প্রতিদিন প্রায়শ্চিত্তের জন্য পাপের বলিরূপে একটি করে পুরুষ গরু উৎসর্গ করবে এবং তুমি প্রায়শ্চিত্ত করে বেদিকে পাপ মুক্ত করবে এবং পবিত্র করার জন্য তা অভিষেক করবে।
\s প্রতিদিনের উপহার।
\p
\v 37 তুমি সাত দিনে বেদিটিকে প্রায়শ্চিত্ত করবে এবং তা পবিত্র করবে। তখন বেদিটি অতি পবিত্র হবে, আমার জন্য সংরক্ষিত হবে। যা কিছু বেদি স্পর্শ করবে সেটি একইরকম পবিত্র হতে হবে।
\s5
\v 38 তুমি সেই বেদির উপরে প্রতিদিন একবছর বয়সী ভেড়ার বাচ্চা দুটি করে বলি উৎসর্গ করবে;
\v 39 একটি ভেড়াের বাচ্চা সকালে উৎসর্গ করবে এবং অন্য বাচ্চাটি সন্ধ্যার সময় উৎসর্গ করবে।
\s5
\v 40 আর প্রথম ভেড়া বাচ্চাটির সঙ্গে উখলিতে তৈরী হিন পাত্রের চতুর্থাংশ তেলে মেশানো [ঐফা] পাত্রের দশ ভাগের এক ভাগ ময়দা এবং পানীয় নৈবেদ্যের কারণ হিনের চতুর্থাংশ দ্রাক্ষারস দেবে।
\s5
\v 41 পরে দ্বিতীয় ভেড়া বাচ্চাটি সন্ধ্যার সময় উৎসর্গ করবে এবং সকালের মত শষ্য এবং পানীয় নৈবেদ্যের সঙ্গে উত্সর্গ করবে। এগুলি সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক মিষ্টি সুবাস উত্পন্ন করবে এবং এটি আমার জন্য আগুনের নৈবেদ্য বলে উৎসর্গ হবে।
\v 42 এইগুলি তোমাদের বংশানুক্রমে নিয়মিত হোমবলি। তুমি এগুলি সমাগম তাঁবুর দরজার কাছে আমার অর্থাৎ সদাপ্রভুর সামনে যে জায়গায় আমি তোমার সঙ্গে কথা বলতে তোমাদের কাছে দেখা দেব, সেই জায়গায় করবে।
\s5
\v 43 সেখানেই আমি ইস্রায়েলীয়দের কাছে দেখা দেব এবং আমার প্রতাপে তাঁবু পবিত্র হবে।
\v 44 আর আমি সমাগম তাঁবু এবং বেদি পবিত্র করব কারণ এগুলি শুধু আমারই। আমি যাজকের কাজ করার জন্য ও আমাকে সেবা করার জন্য হারোণ ও তার ছেলেদের পবিত্র করব।
\s5
\v 45 আমি ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে বাস করব, ও তাদের ঈশ্বর হব।
\v 46 তারা জানতে পারবে যে আমিই সদাপ্রভু, তাদের ঈশ্বর, যে মিশর দেশ থেকে তাদেরকে বের করে এনেছে, সেই আমি, যেন তাদের মধ্যে বাস করতে পারি; আমিই সদাপ্রভু, তাদের ঈশ্বর।
\s5
\c 30
\s1 তাঁবুর পাত্রগুলি।
\s2 ধূপবেদি।
\p
\v 1 আর তুমি ধূপ দেবার জন্য একটি বেদি তৈরী করবে; শিটীম কাঠ দিয়ে তা তৈরী করবে।
\v 2 এটির দৈর্ঘ্য এক হাত ও প্রস্থ এক হাত হবে। এটির চারকোন হবে এবং উচ্চতা দুই হাত হবে। এর শিং গুলি তার সঙ্গে এক খণ্ডে তৈরী করা হবে।
\s5
\v 3 আর তুমি অবশ্যই সেই ধূপবেদিটির উপরে, চার পাশে এবং এর শিংগুলি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে। তুমি তার চারদিকে সোনার পাত তৈরী করে দেবে।
\v 4 আর সেই সোনার পাতের নীচে দুই বিপরীত ধারে কোণের কাছে দুটি করে সোনার বালা তৈরী করবে; বালাগুলি বেদি বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বহন দণ্ডের ঘর হবে।
\s5
\v 5 আর ঐ বহন-দণ্ড শিটীম কাঠ দিয়ে তৈরী করে সোনা দিয়ে মুড়ে দেবে।
\v 6 আর সাক্ষ্য সিন্দুকের পাশের পর্দার সামনের দিকে ধূপ বেদিটি রাখবে। এটি সাক্ষ্য সিন্দুকের উপরের পাপাবরণের সামনে থাকবে, যেখানে আমি তোমার সঙ্গে দেখা করব।
\s5
\v 7 হারোণ অবশ্যই প্রতিদিন সকালে সুগন্ধি ধূপ জ্বালাবে; তিনি প্রদীপ পরিস্কার করবার সময় ঐ ধূপ জ্বালাবে।
\v 8 যখন হারোণ সন্ধ্যার সময় আবার প্রদীপ জ্বালাবে, তিনি সেই ধূপবেদিতে ধূপ জ্বালাবে। এটি তোমার লোকদের বংশানুক্রমে আমার অর্থাৎ সদাপ্রভুর সামনে প্রতি নিয়ত ধূপদাহ হবে।
\v 9 কিন্তু তোমরা এর উপরে সুগন্ধি ধূপ অথবা হোমবলি অথবা শস্য নৈবেদ্য উৎসর্গ করো না। তোমরা এর উপরে পানীয় নৈবেদ্য ঢেলো না।
\s5
\v 10 আর বছরে একবার হারোণ তার ধুপবেদির শিঙের ওপরে প্রায়শ্চিত্ত করবে; তিনি অবশ্যই প্রায়শ্চিত্তের জন্য পাপবলির রক্ত ব্যবহার করে এটি করবে। মহা যাজক তোমার লোকদের বংশানুক্রমে এটি করবে। এই উপহার হবে মহা পবিত্র, আমার অর্থাৎ সদাপ্রভুর জন্য সংরক্ষিত।
\s প্রাণের প্রায়শ্চিত্ত।
\p
\s5
\v 11 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
\v 12 “তুমি যখন ইস্রায়েলীয়দের সংখ্যা গণনা করবে, তখন তারা প্রতেকে গণনার সময় সদাপ্রভুর কাছে নিজের নিজের প্রাণের জন্য খেসারৎ দেবে। তাদের গণনা করার পর তুমি এটি অবশ্যই করবে, সুতরাং তোমার গণনা করার সময় যেন তাদের মধ্যে আঘাত না হয়।
\v 13 গণনায় যাদের গণনা করা হয়েছে তাদের প্রত্যেককে রুপোর অর্ধেক শেকল করে দিতে হবে; বিংশতিতে এক শেকলে ওজন হলো কুড়িটি গেরার সমান; এই অর্দ্ধশেকল আমার অর্থাৎ সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উপহার হবে।
\v 14 গণনার মধ্যে যারা কুড়ি বছর বয়স্ক অথবা তার বেশি বয়স্ক তারা সবাই সদাপ্রভুকে এই উপহার দেবে।
\s5
\v 15 যখন লোকেরা প্রাণের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করতে সদাপ্রভুকে সেই উপহার দেবে সেই সময় ধনীরা অর্দ্ধ শেকলের বেশি দেবে না এবং গরিবরা তার কম দেবে না।
\v 16 তুমি ইস্রায়েলীয়দের থেকে সেই প্রায়শ্চিত্তের রুপো নিয়ে সমাগম তাঁবুর কাজের জন্য দেবে। এটি তোমাদের প্রাণের প্রায়শ্চিত্তের জন্য ইস্রায়েলীয়দের স্মরণ করার জন্য আমার অর্থাৎ সদাপ্রভুর সামনে থাকবে।”
\s পরিষ্কার করার পাত্র।
\p
\s5
\v 17 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
\v 18 “তুমি ধোয়ার কাজের জন্য ব্রোঞ্জের একটি গামলার মত ধোয়ার পাত্র ও তার জন্য ব্রোঞ্জের একটি দানি তৈরী করবে; তুমি এটি সমাগম তাঁবুর ও বেদির মাঝখানে রাখবে এবং তার মধ্যে জল দেবে।
\s5
\v 19 হারোণ ও তার ছেলেরা অবশ্যই তাদের হাত এবং পা এই জল দিয়ে ধোবে।
\v 20 যখন তারা সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করবে, অথবা আমার সেবা করার জন্য যখন তারা বেদির নিকটে আসবে এবং হোম উপহার দেবে তখন তারা নিজেদেরকে জলে পরিষ্কার করবে, যেন তারা না মরে।
\v 21 তারা অবশ্যই তাদের হাত ও পা পরিষ্কার করবে, যেন তারা না মরে। এটি হারোণ ও তার বংশধরদের জন্য বংশ পরম্পরায় চিরকালের ব্যবস্থা হবে।”
\s পবিত্র তেল ও ধূপ।
\p
\s5
\v 22 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
\v 23 “তুমি এই ভালো ভালো সুগন্ধ মশলাগুলি নাও: পবিত্র জায়গার শেকল অনুযায়ী পাঁচ শত শেকল খাঁটি গন্ধরস, দুশো পঞ্চাশ শেকল সুগন্ধি দারুচিনি,
\v 24 দুই শত পঞ্চাশ শেকল সুগন্ধি বচ, পাঁচ শত শেকল সূক্ষ্ম দারুচিনি এবং এক হিন জিত তেল।
\v 25 এই সবগুলি দিয়ে তুমি অভিষেক করার জন্য পবিত্র তৈল তৈরী করবে, গন্ধবণিকের প্রক্রিয়া মতই এই তৈল তৈরী করবে, আর এটি অভিষেকের জন্য এবং আমার জন্য সংরক্ষিত পবিত্র তেল হবে।
\s5
\v 26 আর তুমি এই তেল দিয়ে সমাগম তাঁবু, সাক্ষ্য সিন্দুক,
\v 27 টেবিল এবং তার সব পাত্র, দীপদানি ও তার সব জিনিসপাত্র,
\v 28 ধূপবেদি, হোমবেদি ও তার সব পাত্রগুলি এবং হাত ধোয়ার জন্য গামলার মত পাত্র ও সেটি রাখবার জন্য দানি অভিষেক করবে।
\s5
\v 29 আর এই সব জিনিসপত্র গুলি পবিত্র করবে, যাতে সেগুলি অতি পবিত্র হবে এবং আমার জন্য সংরক্ষিত হবে। যে কেউ সেগুলি স্পর্শ করবে, তাকে অবশ্যই পবিত্র হতে হবে।
\v 30 আর তুমি হারোণকে ও তার ছেলেদেরকে আমার যাজকের কাজ ও সেবা কাজ করার জন্য অভিষেক করে পবিত্র করবে।
\v 31 আর তুমি ইস্রায়েলীয়দেরকে বলবে, “তোমাদের লোকদের বংশানুক্রমে আমার থেকে এটি পবিত্র অভিষেকের জন্য তেল হবে।
\s5
\v 32 এটি মানুষের গায়ে লাগানো যাবে না; আর না তোমরা সেই জিনিসের পরিমাণ অনুসারে সেরকম অন্য কোন তেল তৈরী করবে; কারণ এটি পবিত্র এবং আমার অর্থাৎ সদাপ্রভুর জন্য সংরক্ষিত।
\v 33 যে কেউ এই তেলের মত সুগন্ধি তেল তৈরী করে ও যে কেউ অন্য কারুর গায়ে কিছুটা লাগিয়ে দেয়, সে নিজের লোকজনের মধ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হবে।”
\s5
\v 34 সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি নিজের কাছে সুগন্ধি মশালা নেবে,- গুগ্গুলু, নখী, কুন্দুরু; এই সব সুগন্ধি মশালার ও খাঁটি লবানের প্রত্যেকটী সমান ভাগে ভাগ করে নেবে।
\v 35 এইগুলি দিয়ে গন্ধবণিকের প্রক্রিয়া মতো তৈরী এবং লবন মিশিয়ে এক খাঁটি ও পবিত্র এবং আমার জন্য সংরক্ষিত সুগন্ধ ধূপ তৈরী করবে।
\v 36 তুমি এইগুলি একটি সুন্দর চূর্ণ যন্ত্রে চূর্ণ করবে। এর কিছুটা নিয়ে যে সমাগম তাঁবুতে আমি তোমার সঙ্গে দেখা করব তার মধ্যে সাক্ষ্য সিন্দুকের সামনে সেগুলি রাখবে; আর তোমরা এটিকে অতি পবিত্র বলে গন্য করবে।
\s5
\v 37 আর যেমন তোমরা সুগন্ধি ধূপ তৈরী করবে, তোমরা সেই জিনিসের পরিমাণ অনুসারে নিজেদের জন্য তা কোরো না। এটি তোমার কাছে মহা পবিত্র হবে।
\v 38 যে কেউ সুগন্ধির জন্য তার মত ধূপ তৈরী করবে, সে নিজের লোকদের থেকে বিচ্ছিন্ন হবে।”
\s5
\c 31
\s দুই জন প্রধান শিল্পকার।
\p
\v 1 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
\v 2 “দেখ, আমি যিহূদা বংশের হূরের নাতি ঊরির ছেলে বৎসলেলের নাম ধরে ডাকলাম।
\s5
\v 3 আর আমি তাকে ঈশ্বরের আত্মায়—জ্ঞানে, বুদ্ধিতে, বিদ্যায় ও সব রকম শিল্প কৌশলে পরিপূর্ণ করলাম;
\v 4 যাতে সে শিল্পের নকশা করতে পারে, সোনা, রুপো ও পিতলের কাজ করতে পারে,
\v 5 পাথর কেটে আকার দিতে, কাঠ খোদাই করতে ও সব রকম কারিগরী শিল্প করতে পারে।
\s5
\v 6 আর দেখ, আমি দান বংশের অহীষামকের ছেলে অহলীয়াবকে তার সহকারী করে দিলাম এবং সমস্ত জ্ঞানী লোকের অন্তরে জ্ঞান দিলাম; সুতরাং আমি তোমাকে যা যা আদেশ করেছি, সে সমস্ত তারা তৈরী করবে;
\v 7 সমাগম তাঁবু, সাক্ষ্য সিন্দুক ও সাক্ষ্য সিন্দুকের উপরের প্রতিবিধান এবং তাঁবুর সমস্ত পাত্র;
\v 8 আর টেবিল ও তার সব পাত্র, পরিস্কার বাতিদান ও তার সব পাত্র এবং ধূপবেদি;
\v 9 আর হোমবেদি ও তার সব পাত্র এবং তলদেশ সহ বড় গামলা।
\s5
\v 10 এবং সূক্ষ্মশিল্পিত বস্ত্র, যাজকের কাজ করার জন্য হারোণ যাজকের পবিত্র পোশাক, তার ছেলেদের পোশাক
\v 11 এবং অভিষেকের তেল ও পবিত্র স্থানের জন্য সুগন্ধি ধূপ; আমি তোমাকে যেমন আদেশ দিয়েছি, সেই অনুসারে তারা সমস্তই করবে।”
\s বিশ্রামদিন।
\p
\s5
\v 12 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি ইস্রায়েল সন্তানদেরকে আরও এই কথা বলো,
\v 13 ‘তোমরা অবশ্যই আমার বিশ্রামদিন পালন করবে; কারণ তোমাদের বংশপরম্পরা অনুসারে আমার ও তোমাদের মধ্যে এটা এক চিহ্ন হয়ে থাকলো, যেন তোমরা জানতে পারো যে, আমিই তোমাদের পবিত্র করার সদাপ্রভু।
\v 14 সুতরাং তোমরা বিশ্রামদিন পালন করবে, কারণ তোমাদের জন্য সেই দিন পবিত্র; যে কেউ সেই দিন অপবিত্র করবে, তার অবশ্যই প্রাণদণ্ড হবে; কারণ যে কেউ ঐ দিনে কাজ করবে, সে তার লোকদের মধ্যে থেকে উচ্ছিন্ন হবে।
\v 15 ছদিন কাজ করবে, কিন্তু সপ্তম দিন সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বিশ্রামের জন্য পবিত্র বিশ্রামদিন, সেই বিশ্রামদিনে যে কেউ কাজ করবে, তার অবশ্যই প্রাণদণ্ড হবে।
\s5
\v 16 অতএব ইস্রায়েল সন্তানরা চিরদিনের ব্যবস্থা হিসাবে বংশের পরম্পরা অনুসারে বিশ্রামদিন রক্ষা করার জন্য বিশ্রামদিন পালন করবে।
\v 17 আমার ও ইস্রায়েল সন্তানদের মধ্যে এটা চিরকালীন চিহ্ন; কারণ সদাপ্রভু ছদিনে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছিলেন, আর সপ্তম দিনে বিশ্রাম করেছিলেন এবং ঝালিয়ে নিয়েছিলেন’।”
\s5
\v 18 পরে তিনি সীনয় পর্বতে মোশির সঙ্গে কথা শেষ করে সাক্ষ্যের দুটি ফলক, ঈশ্বরের আঙ্গুল দিয়ে লেখা দুটি পাথরের ফলক, তাঁকে দিলেন।
\s5
\c 32
\s ইস্রায়েলের প্রতিমাপূজা ও মোশির ক্রোধ।
\p
\v 1 পর্বত থেকে নামতে মোশির দেরী হচ্ছে দেখে লোকেরা হারোণের কাছে জড়ো হয়ে তাঁকে বলল, “উঠুন, আমাদের এগিয়ে যাবার জন্য আমাদের দেবতা তৈরী করুন, কারণ যে মোশি মিশর দেশ থেকে আমাদেরকে বের করে এনেছেন, তাঁর কি হল, তা আমরা জানি না।”
\v 2 তখন হারোণ তাদেরকে বললেন, “তোমরা তোমাদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের কানের সোনা খুলে আমার কাছে আনো”।
\s5
\v 3 তাতে সমস্ত লোক তাদের কান থেকে সোনা খুলে হারোণের কাছে আনল।
\v 4 তখন তিনি তাদের হাত থেকে সোনা গ্রহণ করে কারুকার্য করলেন এবং একটি ছাঁচে ঢালা বাছুর তৈরী করলেন; তখন লোকেরা বলতে লাগল, “হে ইস্রায়েল, এই তোমার দেবতা, যিনি মিশর দেশ থেকে তোমাকে বের করে এনেছেন”।
\s5
\v 5 আর হারোণ তা দেখে তার সামনে একটি বেদি তৈরী করলেন এবং হারোণ ঘোষণা করে বললেন, “কাল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসব হবে।”
\v 6 আর লোকেরা পরদিন ভোরে উঠে হোমবলি উৎসর্গ করল এবং মঙ্গলার্থক নৈবেদ্য আনল; আর লোকেরা ভোজন পান করতে বসল, পরে উল্লাস করতে উঠল।
\s5
\v 7 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি নেমে যাও, কারণ তোমার যে লোকদেরকে তুমি মিশর থেকে বের করে এনেছ, তারা নষ্ট হয়েছে।
\v 8 আমি তাদেরকে যে পথে চলার আদেশ দিয়েছি তারা শীঘ্রই সেই পথ থেকে ফিরেছে; তারা তাদের জন্য এক ছাঁচে ঢালা বাছুর তৈরী করে তার কাছে প্রণাম করেছে এবং তার উদ্দেশ্যে বলিদান করেছে ও বলেছে, ‘হে ইস্রায়েল, এই তোমার দেবতা, যিনি মিশর দেশ থেকে তোমাকে বের করে এনেছেন’।”
\s5
\v 9 সদাপ্রভু মোশিকে আরও বললেন, “আমি সেই লোকেদেরকে দেখলাম; দেখ, তারা একগুঁয়ে জাতি।
\v 10 এখন তুমি আমাকে থামাতে চেষ্টা কর না, তাদের বিরুদ্ধে আমার ক্রোধ প্রকট হোক, আমি তাদেরকে হত্যা করব, তখন আমি তোমার থেকে এক বড় জাতি তৈরী করব।”
\v 11 কিন্তু মোশি তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অনুরোধ করে বললেন, “হে সদাপ্রভু, তোমার যে প্রজাদেরকে তুমি ক্ষমতাবান ও শক্তিশালী হাত দিয়ে মিশর দেশ থেকে বের করে এনেছ, তাদের বিরুদ্ধে তোমার ক্রোধ কেন প্রকট হবে?
\s5
\v 12 মিশরীয়েরা কেন বলবে, ক্ষতি করার জন্য, পার্বত্য অঞ্চলে তাদেরকে নষ্ট করতে ও পৃথিবী থেকে লোপ করতে, তিনি তাদেরকে বের করে এনেছেন? তুমি নিজের প্রচণ্ড ক্রোধ থামাও ও তোমার প্রজাদের শাস্তির বিষয়ে ক্ষান্ত হও।
\v 13 তুমি নিজের দাস অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবকে স্মরণ কর, যাদের কাছে তুমি নিজের নামের শপথ করে বলেছিলে, ‘আমি আকাশের তারাদের মত তোমাদের বংশবৃদ্ধি করব এবং এই যে সমস্ত দেশের কথা বললাম এগুলি তোমাদের বংশকে দেব, তারা চিরকালের জন্য এটা অধিকার করবে’।”
\v 14 তখন সদাপ্রভু তাঁর প্রজাদের যে অনিষ্ট করার কথা বলেছিলেন, তা আর করলেন না।
\s5
\v 15 পরে মোশি মুখ ফিরালেন, সাক্ষ্যের সেই দুই পাথরের ফলক হাতে নিয়ে পর্বত থেকে নামলেন; সেই পাথরের ফলকের এপিঠ ওপিঠ দুপিঠেই লেখা ছিল।
\v 16 সেই পাথরের ফলক ঈশ্বরের তৈরী এবং সেই লেখা ঈশ্বরের লেখা, ফলকে খোদাই করা।
\s5
\v 17 পরে যিহোশূয় কোলাহলকারী লোকেদের রব শুনে মোশিকে বললেন, “শিবিরে যুদ্ধের শব্দ হচ্ছে”।
\v 18 তিনি বললেন, “ওটা তো জয়ধ্বনির শব্দ নয়, পরাজয়ধ্বনিরও শব্দ নয়; আমি গানের শব্দ শুনতে পাচ্ছি।”
\s5
\v 19 পরে তিনি শিবিরের কাছাকাছি এলে ঐ বাছুর এবং নাচ দেখতে পেলেন; তাতে মোশি ক্রোধে জ্বলে উঠে পর্বতের নিচে তাঁর হাত থেকে সেই দুটি পাথরের ফলক ছুঁড়ে ভেঙ্গে ফেললেন।
\v 20 আর তাদের তৈরী বাছুর নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দিলেন এবং তা ধূলোর মত পিষে জলের উপরে ছড়িয়ে ইস্রায়েল সন্তানদেরকে পান করালেন।
\s5
\v 21 পরে মোশি হারোণকে বললেন, “ঐ লোকেরা তোমার কি করেছিল যে, তুমি তাদের দিয়ে এত বড় পাপ করালে?”
\v 22 হারোণ বললেন, “আমার প্রভুর ক্রোধ প্রকট না হোক। আপনি লোকেদেরকে জানেন যে, তারা দুষ্টতায় পূর্ণ।
\v 23 তারা আমাকে বলল, ‘আমাদের এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য আমাদের দেবতা তৈরী করুন, কারণ যে মোশি মিশর দেশ থেকে আমাদেরকে বের করে এনেছেন, তাঁর কি হল, তা আমরা জানি না।”
\v 24 তখন আমি বললাম, তোমাদের মধ্যে যার যে সোনা আছে, সে তা খুলে দিক; তারা আমাকে দিল; পরে আমি তা আগুনে ছুঁড়ে ফেললে ঐ বাছুরটি বেরিয়ে এল।”
\s5
\v 25 পরে মোশি দেখলেন, লোকেরা স্বেচ্ছাচারী হয়েছে, কারণ হারোণ শত্রুদের মধ্যে বিদ্রূপের জন্য তাদেরকে স্বেচ্ছাচারী হতে দিয়েছিলেন।
\v 26 তখন মোশি শিবিরের দরজায় দাঁড়িয়ে বললেন, “সদাপ্রভুর পক্ষে কে? সে আমার কাছে আসুক।” তাতে লেবির সন্তানেরা সবাই তাঁর কাছে জড়ো হল।
\v 27 তিনি তাদের বললেন, “সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, এই কথা বলেন, ‘তোমরা প্রত্যেক জন নিজেদের ঊরুতে তরোয়াল বাঁধ, শিবিরের মধ্যে দিয়ে এক দরজা থেকে অন্য দরজা পর্যন্ত যাতায়াত করো এবং প্রতিজন নিজের নিজের ভাই, বন্ধু ও প্রতিবাসীকে হত্যা কর।”
\s5
\v 28 তাতে লেবির সন্তানেরা মোশির বাক্য অনুসারে সেইরকম করল, আর সেই দিন লোকদের মধ্যে কমপক্ষে তিন হাজার লোক মারা পড়ল।
\v 29 কারণ মোশি বলেছিলেন, “আজ তোমরা প্রত্যেক জন নিজেদের ছেলে ও ভাইয়ের বিপক্ষ হয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেদের হস্তপূরণ কর, তাতে তিনি এই দিনে তোমাদেরকে আশীর্বাদ করবেন।”
\s ইস্রায়েলের জন্য মোশির সাধ্যসাধনা।
\p
\s5
\v 30 পরদিন মোশি লোকদেরকে বললেন, “তোমরা খুব বড় পাপ করলে, এখন আমি সদাপ্রভুর কাছে উঠে যাচ্ছি; যদি সম্ভব হয়, তোমাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করব।”
\v 31 পরে মোশি সদাপ্রভুর কাছে ফিরে গিয়ে বললেন, “হায় হায়, এই লোকেরা খুব পাপ করেছে, নিজেদের জন্য সোনার দেবতা তৈরী করেছে।
\v 32 আহা। এখন এদের পাপ ক্ষমা কর; আর যদি না কর, তবে আমি অনুরোধ করছি, তোমার লেখা বই থেকে আমার নাম কেটে ফেল।”
\s5
\v 33 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “যে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে, তারই নাম আমি নিজের বই থেকে কেটে ফেলব।
\v 34 এখন যাও, আমি যে দেশের বিষয়ে তোমাকে বলেছি, সেই দেশে লোকেদের নিয়ে যাও; দেখ, আমার দূত তোমার আগে আগে যাবেন, কিন্তু যেদিন আমি তাদের শাস্তি দেব, আমি তাদের পাপের জন্য শাস্তি দেব।”
\v 35 সদাপ্রভু লোকেদেরকে আঘাত করলেন, কারণ লোকেরা হারোণকে দিয়ে সেই বাছুর তৈরী করিয়েছিল।
\s5
\c 33
\p
\v 1 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “আমি অব্রাহামের, ইসহাকের ও যাকোবের কাছে দিব্যি করে যে দেশ তাদের বংশকে দিতে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, সেই দেশে যাও, তুমি মিশর থেকে যে লোকেদেরকে বের করে এনেছ, তাদের সঙ্গে এখান থেকে চলে যাও।
\v 2 আমি তোমার আগে আগে এক দূত পাঠিয়ে দেবো এবং কনানীয়, ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়কে দূর করে দেব।
\v 3 যে দেশে দুধ ও মধু প্রবাহিত হয়, সেই দেশে যাও; কিন্তু আমি তোমার সাথে যাব না, কারণ তুমি একগুঁয়ে জাতি; হয়তো পথের মধ্যেই তোমাকে হত্যা করি।”
\s5
\v 4 এই অশুভ বাক্য শুনে লোকেরা শোক করল, কেউ গায়ে কোনো গয়না পরল না।
\v 5 সদাপ্রভু মোশিকে বলেছিলেন, “তুমি ইস্রায়েল সন্তানদেরকে এই কথা বল, ‘তোমরা একগুঁয়ে জাতি, এক নিমেষের জন্য তোমাদের মধ্যে গেলে আমি তোমাদেরকে হত্যা করতে পারি; তোমরা এখন নিজেদের গা থেকে গয়না দূর কর, তাতে জানতে পারব, তোমাদের জন্য আমার কি করা কর্তব্য।”
\v 6 তখন ইস্রায়েল সন্তানরা হোরেব পর্বত থেকে যাত্রাপথে নিজেদের সমস্ত গয়না দূর করল।
\s5
\v 7 আর মোশি তাঁবু নিয়ে শিবিরের বাইরে ও শিবির থেকে দূরে স্থাপন করলেন এবং সেই তাঁবুর নাম সমাগম তাঁবু রাখলেন; আর সদাপ্রভুর খোঁজকারী প্রত্যেক জন শিবিরের বাইরে থাকা সেই সমাগম তাঁবুর কাছে যেত।
\v 8 আর মোশি যখন বের হয়ে সেই তাঁবুর কাছে যেতেন, তখন সমস্ত লোক উঠে প্রতেকে নিজেদের তাঁবুর দরজায় দাঁড়াত এবং যতক্ষণ মোশি ঐ তাঁবুতে প্রবেশ না করতেন, ততক্ষণ তাঁর পিছনের দিকে তাকিয়ে থাকত।
\v 9 আর মোশি তাঁবুতে প্রবেশ করার পর মেঘস্তম্ভ নেমে তাঁবুর দরজায় অবস্থান করত এবং সদাপ্রভু মোশির সঙ্গে আলাপ করতেন।
\s5
\v 10 সমস্ত লোক তাঁবুর দরজায় অবস্থিত মেঘস্তম্ভ দেখত ও সমস্ত লোক উঠে প্রত্যেকে নিজেদের তাঁবুর দরজায় থেকে প্রণাম করত।
\v 11 আর মানুষ যেমন বন্ধুর সঙ্গে আলাপ করে, সেইভাবে সদাপ্রভু মোশির সঙ্গে সামনা সামনি হয়ে আলাপ করতেন। পরে মোশি শিবিরে ফিরে আসতেন, কিন্তু নূনের ছেলে যিহোশূয় নামে তাঁর যুবক পরিচারক তাঁবুর মধ্যে থেকে বাইরে যেতেন না।
\s5
\v 12 আর মোশি সদাপ্রভুকে বললেন, “দেখ, তুমি আমাকে বলছ, ‘এই লোকেদেরকে নিয়ে যাও’, কিন্তু আমার সঙ্গী করে যাকে পাঠাবে, তাঁর পরিচয় আমাকে দাও নি; তুমি বলেছ, ‘আমি তোমাকে নামে জানি এবং তুমি আমার কাছে অনুগ্রহ পেয়েছ’।”
\v 13 ভাল, আমি যদি তোমার কাছে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে অনুরোধ করি, আমি যেন তোমাকে জেনে তোমার কাছে অনুগ্রহ পাই, এইজন্য আমাকে তোমার সমস্ত পথ জানাও এবং এই জাতি যে তোমার প্রজা, এটা বিবেচনা কর।”
\s5
\v 14 তখন তিনি তাঁকে বললেন, “আমার উপস্থিতি তোমার সঙ্গে থাকবে এবং আমি তোমাকে বিশ্রাম দেবো।”
\v 15 তাতে তিনি তাঁকে বললেন, “তোমার উপস্থিতি যদি সঙ্গে না থাকে, তবে এখান থেকে আমাদেরকে নিয়ে যেও না।
\v 16 কারণ আমি ও তোমার এই প্রজারা যে তোমার কাছে অনুগ্রহ পেয়েছি, এটা কিভাবে জানা যাবে? আমাদের সঙ্গে তোমার যাওয়ার মাধ্যমে কি নয়? তার মাধ্যমেই আমি ও তোমার প্রজারা পৃথিবীর অন্য সমস্ত জাতি থেকে আলাদা।”
\s5
\v 17 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “এই যে কথা তুমি বললে, সেটাও আমি করব, কারণ তুমি আমার চোখে অনুগ্রহ পেয়েছ এবং আমি তোমার নামে তোমাকে জানি।”
\v 18 তখন তিনি বললেন, “অনুরোধ করি, তুমি আমাকে তোমার মহিমা দেখতে দাও।”
\s5
\v 19 ঈশ্বর বললেন, “আমি তোমার সামনে দিয়ে আমার সমস্ত ভালো বিষয় গমন করাবো ও তোমার সামনে সদাপ্রভুর নাম ঘোষণা করব; আর আমি যাকে দয়া করি, তাকে দয়া করব ও যার প্রতি করুণা করি, তার প্রতি করুণা করব।”
\v 20 আরও বললেন, “তুমি আমার মুখ দেখতে পাবে না, কারণ মানুষ আমাকে দেখলে বাঁচতে পারে না।”
\s5
\v 21 সদাপ্রভু বললেন, “দেখ, আমার কাছে একটি জায়গা আছে; তুমি ঐ পাথরের উপরে দাঁড়াবে।
\v 22 তাতে তোমার কাছ দিয়ে আমার মহিমা যাওয়ার সময়ে আমি তোমাকে শিলার এক ফাটলের মধ্যে রাখব ও আমার যাওয়ার শেষ পর্যন্ত হাত দিয়ে তোমাকে ঢেকে রাখব;
\v 23 পরে আমি হাত তুললে তুমি আমার পিছন দিক দেখতে পাবে, কিন্তু আমার মুখ দেখতে পাওয়া যাবে না।
\s5
\c 34
\s ঈশ্বরীয় নিয়মের পুনঃস্থাপন।
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি প্রথম ফলকের মত দুটি পাথরের ফলক কাটো; প্রথম যে দুটি ফলক তুমি ভেঙ্গে ফেলেছ, তাতে যা যা লেখা ছিল, সেই সব কথা আমি এই দুটি ফলকে লিখব।
\v 2 আর তুমি সকালে প্রস্তুত হও, সকালে সীনয় পর্বতে উঠে আসবে ও সেখানে পর্বতের চূড়ায় আমার কাছে উপস্থিত হও।
\s5
\v 3 কিন্তু তোমার সঙ্গে কোনো মানুষ উপরে না আসুক এবং এই পর্বতে কোথাও কোন মানুষ দেখা না যাক, আর পশুপালও এই পর্বতের সামনে না চরুক।”
\v 4 পরে মোশি প্রথম পাথরের মত দুটি পাথরের ফলক কাটলেন এবং সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে সকালে উঠে সীনয় পর্বতের উপরে গেলেন ও সেই দুটি পাথরের ফলক হাতে করে নিলেন।
\s5
\v 5 তখন সদাপ্রভু মেঘে নেমে এসে সেখানে তাঁর সঙ্গে দাঁড়িয়ে সদাপ্রভুর নাম ঘোষণা করলেন।
\v 6 সদাপ্রভু তাঁর সামনে দিয়ে গেলেন ও এই ঘোষণা করলেন,
\q1 “সদাপ্রভু, সদাপ্রভু,
\q1 করুনাময় ও কৃপাবান ঈশ্বর,
\q1 ক্রোধে ধীর এবং দয়াতে ও সত্যে মহান;
\q1
\v 7 হাজার হাজার পুরুষ পর্যন্ত অনুগ্রহদানকারী,
\q1 অপরাধের, খারাপ কাজের ও পাপের ক্ষমাকারী;
\q1 তবুও তিনি অবশ্যই পাপের শাস্তি দেন;
\q1 ছেলে নাতিদের উপরে, তৃতীয় ও চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত,
\q1 তিনি বাবাদের অপরাধের শাস্তি দেন।”
\m
\s5
\v 8 তখন মোশি তাড়াতাড়ি মাটিতে মাথা নত করলেন এবং আরাধনা করলেন।
\v 9 তখন তিনি বললেন, “হে প্রভু, যদি এখন আমি আপনার কাছে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে আমাদের মধ্যে দিয়ে যান, কারণ এই জাতি একগুঁয়ে। আমাদের অপরাধ ও পাপ সকল ক্ষমা করুন এবং আমাদের আপনার উত্তরাধিকারী হিসাবে গ্রহণ করুন।”
\s5
\v 10 তখন তিনি বললেন, “দেখ, আমি এক চুক্তি করি; সমস্ত পৃথিবীতে ও যাবতীয় জাতির মধ্যে যা কখনও করা হয় নি, এমন আশ্চর্য্য কাজ আমি তোমার সমস্ত লোকের সামনে করব; তাতে যে সব লোকের মধ্যে তুমি আছ, তারা সদাপ্রভুর কাজ দেখবে, কারণ তোমার কাছে যা করব, তা ভয়ঙ্কর।
\v 11 আজ আমি তোমাকে যা আদেশ করি, তা মান্য কর; দেখ, আমি ইমোরীয়, কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়কে তোমার সামনে থেকে দূর করে দেব।
\s5
\v 12 সাবধান, যে দেশে তুমি যাচ্ছ, সেই দেশবাসীদের সঙ্গে নিয়ম স্থির কোরো না, পাছে তা তোমার কাছে ফাঁদের মত হয়।
\v 13 কিন্তু তোমরা তাদের বেদিগুলি ভেঙ্গে ফেলবে, তাদের থামগুলি ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ করবে ও সেখানকার আশেরা মূর্তিগুলি কেটে ফেলবে।
\v 14 তুমি অন্য দেবতার আরাধনা কোরো না, কারণ সদাপ্রভু নিজের গৌরব রক্ষণে উদ্যোগী নাম ধারন করেন; তিনি নিজের গৌরব রক্ষণে উদ্যোগী ঈশ্বর।
\s5
\v 15 তুমি সেখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে নিয়ম করবে না; তারা ব্যভিচার করে এবং তারা নিজেদের দেবতাদের অনুগামী হয়ে নিজের দেবতাদের কাছে বলিদান করে এবং তারা তোমাকে বলির দ্রব্য খাওয়াবার জন্য তোমাকে আমন্ত্রণ জানাবে;
\v 16 কিংবা তুমি তোমার ছেলেদের জন্য তাদের মেয়েদের গ্রহণ করবে এবং তাদের মেয়েরা ব্যভিচার করবে ও তোমার ছেলেদের নিজের দেবতাদের অনুগামী করে ব্যভিচার করাবে।
\v 17 তুমি তোমার জন্য ছাঁচে ঢালা কোন দেবতা তৈরী কোরো না।
\s5
\v 18 তুমি খামির বিহীন রুটির উৎসব পালন করবে। আবীব মাসের যে নির্ধারিত সময়ে যেরকম করতে আদেশ করেছি, সেইরকম তুমি সেই সাত দিন খামির বিহীন রুটি খাবে, কারণ সেই আবীব মাসে তুমি মিশর দেশ থেকে বের হয়ে এসেছিলে।
\s5
\v 19 প্রথমজাত সবাই এবং গরু, ভেড়ার পালের মধ্যে প্রথমজাত পুরুষ পশু সমস্তই আমার।
\v 20 প্রথমজাত গাধার পরিবর্তে তুমি ভেড়ার বাচ্চা দিয়ে তাকে মুক্ত করবে; যদি মুক্ত না কর, তবে তার ঘাড় ভাঙ্গবে। তোমার প্রথমজাত সব ছেলেগুলিকে তুমি মুক্ত করবে। আর কেউ খালি হাতে আমার সামনে আসবে না।
\s5
\v 21 তুমি ছয়দিন পরিশ্রম করবে, কিন্তু সপ্তম দিনে বিশ্রাম করবে; চাষের ও ফসল কাটার সময়েও বিশ্রাম করবে।
\v 22 তুমি সাত সপ্তাহের উৎসব, অর্থাৎ কাটা গমের প্রথম ফলের উৎসব এবং বছরের শেষভাগে ফল সংগ্রহের উৎসব পালন করবে।
\s5
\v 23 বছরের মধ্যে তিনবার তোমাদের সমস্ত পুরুষ ইস্রায়েলের ঈশ্বর প্রভু সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হবে।
\v 24 কারণ আমি তোমার সামনে থেকে জাতিদেরকে দূর করে দেব ও তোমার সীমানা বিস্তার করব এবং তুমি বছরের মধ্যে তিন বার তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হবার জন্য গেলে তোমার জমিতে কেউ লোভ করবে না।
\s5
\v 25 তুমি আমার বলির রক্ত খামিরযুক্ত খাদ্যের সঙ্গে উৎসর্গ করবে না ও নিস্তারপর্বের উৎসবের বলিদ্রব্য সকাল পর্যন্ত রাখা যাবে না।
\v 26 তুমি নিজের জমির প্রথম ফলের অগ্রিমাংশ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৃহে আনবে। তুমি ছাগলছানাকে তার মায়ের দুধে সিদ্ধ করবে না।”
\s5
\v 27 আর সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি এই সব বাক্য লিপিবদ্ধ কর, কারণ আমি এই সব বাক্য অনুসারে তোমার ও ইস্রায়েলের সঙ্গে চুক্তি স্থির করলাম।”
\v 28 সেই সময়ে মোশি চল্লিশ দিনরাত সেখানে সদাপ্রভুর সঙ্গে থাকলেন, খাবার খেলেন না ও জল পান করলেন না। আর তিনি সেই দুটি পাথরে নিয়মের বাক্যগুলি অর্থাৎ দশ আজ্ঞা লিখলেন।
\s5
\v 29 পরে মোশি দুটি সাক্ষ্যপাথর হাতে নিয়ে সীনয় পর্বত থেকে নামলেন; যখন পর্বত থেকে নামলেন, তখন, সদাপ্রভুর সঙ্গে আলাপের সময় তার মুখের চামড়া যে উজ্জ্বল হয়েছিল, তা মোশি জানতে পারলেন না।
\v 30 পরে যখন হারোণ ও সমস্ত ইস্রায়েল সন্তান মোশিকে দেখতে পেল, তখন দেখ, তার মুখের চামড়া উজ্জ্বল, আর তারা তাঁর কাছে আসতে ভয় পেল।
\v 31 কিন্তু মোশি তাদেরকে ডাকলে হারোণ ও মণ্ডলীর শাসনকর্তা সবাই তাঁর কাছে ফিরে আসলেন, আর মোশি তাদের সঙ্গে আলাপ করলেন।
\s5
\v 32 তারপরে ইস্রায়েল সন্তানরা সবাই তাঁর কাছে আসল; তাতে তিনি সীনয় পর্বতে বলা সদাপ্রভুর আজ্ঞাগুলি সব তাদেরকে জানালেন।
\v 33 পরে তাদের সঙ্গে কথাবার্তা শেষ হলে মোশি তাঁর মুখে ঢাকা দিলেন।
\s5
\v 34 কিন্তু মোশি যখন সদাপ্রভুর সঙ্গে কথা বলতে ভিতরে তাঁর সামনে যেতেন ও যখন বাইরে আসতেন, তখন সেই আবরণ খুলে রাখতেন; পরে যে সব আজ্ঞা পেতেন, বের হয়ে ইস্রায়েল সন্তানদেরকে তা বলতেন।
\v 35 মোশির মুখের চামড়া উজ্জ্বল, এটা ইস্রায়েল সন্তানরা তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে দেখত; কিন্তু পরে মোশি সদাপ্রভুর সঙ্গে কথা বলতে যে পর্যন্ত আবার না যেতেন, ততক্ষণ তাঁর মুখে আবার ঢাকা দিয়ে রাখতেন।
\s5
\c 35
\s তাঁবুর জন্য ইস্রায়েলীয়দের স্বেচ্ছায় দেওয়া উপহার।
\p
\v 1 মোশি ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলীকে জড়ো করে তাদেরকে বললেন, “সদাপ্রভু তোমাদেরকে এই সব বাক্য পালন করতে আদেশ দিয়েছেন,
\v 2 ছয় দিন কাজ করা যাবে, কিন্তু সপ্তম দিন তোমাদের জন্য পবিত্র দিন হবে; সেটা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে সম্পূর্ণ বিশ্রামের জন্য বিশ্রামদিন হবে; যে কেউ সেই দিনে কাজ করবে, তার প্রাণদণ্ড হবে।
\v 3 তোমরা বিশ্রামদিনে তোমাদের কোন বাড়িতে আগুন জ্বালাবে না।”
\s5
\v 4 মোশি ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলীকে বললেন,
\v 5 “সদাপ্রভু এই আদেশ দিয়েছেন;--তোমরা সদাপ্রভুর জন্য তোমাদের কাছ থেকে উপহার নাও; যার মনে ইচ্ছা হবে, সে সদাপ্রভুর উপহার হিসাবে এই সব দ্রব্য আনবে;
\v 6 সোনা, রুপো ও পিতল এবং নীল, বেগুনে, লাল ও সাদা মসীনা সুতো ও ছাগলের লোম
\v 7 এবং লাল রঙের ভেড়ার চামড়া ও শীলের চামড়া, শিটীম কাঠ
\v 8 এবং প্রদীপের জন্য তেল, আর অভিষেকের তেল ও সুগন্ধি ধূপের জন্য সুগন্ধি
\v 9 এবং এফোদের ও বুকপাটার জন্য গোমেদক মণি এবং আরও দামী পাথর।
\s5
\v 10 আর তোমাদের প্রত্যেক জ্ঞানী লোকেরা এসে সদাপ্রভুর আদেশ মত সমস্ত বস্তু তৈরী করুক;--
\v 11 সমাগম তাঁবু, তাঁবু, তার ঢাকনা, হুক, তক্তা, খিল, স্তম্ভ ও চুঙ্গি,
\v 12 আর সিন্দুক ও তার বহন দণ্ড, পাপাবরণ ও আড়াল রাখার পর্দা।
\s5
\v 13 টেবিল ও তার বহন দণ্ড ও সমস্ত পাত্র, দর্শন রুটি
\v 14 এবং আলোর জন্য বাতিদানী ও তার পাত্রগুলি, প্রদীপ ও প্রদীপের জন্য তেল
\v 15 এবং ধূপবেদি ও তার বহন দণ্ড এবং অভিষেকের তেল ও সুগন্ধি ধূপ, সমাগম তাঁবুর মধ্যে প্রবেশ দরজার পর্দা,
\v 16 হোমবেদি, তার পিতলের জাল, বহন দণ্ড ও সমস্ত পাত্র এবং ধোয়ার পাত্র ও তার খুরা।
\s5
\v 17 তারা উঠানের পর্দার সঙ্গে আনল তার স্তম্ভ ও চুঙ্গি এবং উঠানের ফটকের পর্দা
\v 18 এবং সমাগম তাঁবুর খুঁটি, উঠানের খুঁটি ও তাদের দড়ি।
\v 19 তারা পবিত্র স্থানে পরিচর্য্যা করার জন্য সূক্ষ্ম বোনা পোশাক আনল, অর্থাৎ হারোণ যাজকের জন্য পবিত্র পোশাক ও যাজকের কাজ করার জন্য তার ছেলেদের পোশাক।
\s5
\v 20 পরে ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলী মোশির সামনে থেকে চলে গেল।
\v 21 আর যাদের হৃদয়ে প্রবৃত্তি ও মনে ইচ্ছা হল, তারা সবাই সমাগম তাঁবু তৈরীর জন্য এবং সেই বিষয়ে সমস্ত কাজের ও পবিত্র পোশাকের জন্য সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উপহার আনল।
\v 22 পুরুষ ও স্ত্রী যত লোক মনে ইচ্ছা করল, তারা সবাই এসে বলয়, কানবালা, অঙ্গুরীয় ও হার, সোনার সব রকম গয়না আনল। যে কেউ সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে সোনার উপহার আনতে চাইল, সে আনল।
\s5
\v 23 আর যাদের কাছে নীল, বেগুনে, লাল ও সাদা মসীনা সুতো, ছাগলের লোম, লাল রঙের ভেড়ার চামড়া ও দামী চামড়া ছিল, তারা সবাই তা আনল।
\v 24 যে কেউ রুপো ও পিতলের উপহার উপস্থিত করল, সে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে সেই উপহার আনল এবং যার কাছে কোন কাজে লাগানোর জন্য শিটীম কাঠ ছিল, সে তাই আনল।
\s5
\v 25 আর দক্ষ স্ত্রীলোকেরা তাদের হাতে সুতো কেটে, তাদের কাটা নীল, বেগুনে, লাল ও সাদা মসীনা সুতো আনল।
\v 26 সমস্ত স্ত্রীলোক যাদের হৃদয় তাদেরকে আলোড়িত করল এবং যারা দক্ষতায় পরিপূর্ণ তারা ছাগলের লোমের সুতো কাটল।
\s5
\v 27 আর অধ্যক্ষরা এফোদের ও বুকপাটার জন্য গোমেদক মণি
\v 28 এবং দীপের, অভিষেকের তেলের ও সুগন্ধি ধূপের জন্য গন্ধদ্রব্য ও তেল আনলেন।
\v 29 ইস্রায়েল সন্তানরা ইচ্ছাকৃত সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উপহার আনল, সদাপ্রভু মোশিকে দিয়ে যা যা করতে আদেশ করেছিলেন, তার কোন রকম কাজ করার জন্য যে পুরুষ ও স্ত্রীলোকদের হৃদয়ের ইচ্ছা হল, তারা সবাই উপহার আনল।
\s5
\v 30 পরে মোশি ইস্রায়েল সন্তানদেরকে বললেন, “দেখ, সদাপ্রভু যিহূদা বংশীয় হূরের নাতি ঊরির ছেলে বৎসলেলের নাম ধরে ডাকলেন;
\v 31 আর তিনি তাকে ঈশ্বরের আত্মায়, জ্ঞানে, বুদ্ধিতে, বিদ্যায় ও সর্ব্বপ্রকার শিল্প কৌশলে পরিপূর্ণ করলেন,
\v 32 যাতে তিনি কৌশলের কাজ কল্পনা করতে, সোনা, রুপো ও পিতলের কাজ করতে,
\v 33 খোচিত মণি কাটতে, কাঠ খোদাই করতে ও সব রকম কৌশলযুক্ত শিল্প কাজ করতে পারেন।
\s5
\v 34 এই সকলের শিক্ষা দিতে তার ও দান-বংশীয় অহীষামকের ছেলে অহলীয়াবের হৃদয়ে বাসনা দিলেন।
\v 35 তিনি খোদাই করতে ও শিল্প কাজ করতে এবং নীল, বেগুনে, লাল ও সাদা মসীনা সুতোয় খোদাই কাজ করতে এবং তাঁতির কাজ করতে, অর্থাৎ যাবতীয় শিল্প কাজ ও চিত্রের কাজ করতে তাঁদের হৃদয় অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ করলেন।
\s5
\c 36
\p
\v 1 “সুতরাং সদাপ্রভুর সমস্ত আদেশ অনুসারে পবিত্র স্থানের সমস্ত কাজ কিভাবে করতে হবে, তা জানতে সদাপ্রভু বৎসলেল ও অহলীয়াব এবং আর যাদেরকে জ্ঞান ও বুদ্ধি দিয়েছেন, সেই সব জ্ঞানী লোকেরা কাজ করবেন।”
\s তাঁবু ও তার জন্য পাত্র তৈরী।
\p
\s5
\v 2 মোশি বৎসলেল ও অহলীয়াবকে এবং সদাপ্রভু যাঁদের হৃদয়ে জ্ঞান দিয়েছিলেন, সেই অন্য সমস্ত জ্ঞানী লোককে ডাকলেন, অর্থাৎ সেইসব কাজ করার জন্য উপস্থিত হতে যাদের মনে বাসনা হল, তাঁদেরকে ডাকলেন।
\v 3 তাতে তাঁরা পবিত্র স্থানের সমস্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য ইস্রায়েল সন্তানদের আনা সমস্ত উপহার মোশির কাছ থেকে গ্রহণ করলেন। আর লোকেরা তখনও প্রতি সকালে তাঁর কাছে ইচ্ছাদত্ত উপহার আনছিল।
\v 4 তখন পবিত্র স্থানের সমস্ত কাজে নিযুক্ত থাকা সমস্ত বিজ্ঞ লোকেরা নিজেদের কাজ থেকে এসে মোশিকে বললেন,
\s5
\v 5 “সদাপ্রভু কাজের জন্য যা যা করতে নির্দেশ করেছিলেন লোকেরা অনেক বেশি জিনিস আনছে।”
\v 6 তাতে মোশি আদেশ দিয়ে শিবিরের সব জায়গায় এই ঘোষণা করলেন যে, “কেউ পবিত্র স্থানের জন্য আর উপহার প্রস্তুত না করুক।” তাতে লোকেরা উপহার আনা বন্ধ করে দিল।
\v 7 কারণ সমস্ত কাজ করার জন্য তাদের যথেষ্ট, এমন কি, প্রয়োজনের থেকে বেশি জিনিস ছিল।
\s5
\v 8 পরে সমস্ত দক্ষ কারিগর পাকানো সাদা মসীনা সুতো, নীল, বেগুনে ও লাল সুতো দিয়ে তৈরী দশটি পর্দার সমাগম তাঁবু তৈরী করলেন এবং সেই পর্দাগুলিতে দক্ষ শিল্পীর দিয়ে তৈরী করূবের আকৃতি ছিল।
\v 9 সব পর্দা দৈর্ঘ্যে আটাশ হস্ত ও সব পর্দা প্রস্থে চার হাত, সমস্ত পর্দা একই মাপের ছিল।
\v 10 তিনি তার পাঁচটি পর্দা একসাথে যোগ করলেন এবং অন্য পাঁচটি পর্দাও একসাথে যোগ করলেন।
\s5
\v 11 তিনি জোড়ার জায়গায় প্রথম প্রান্তে পর্দার বালাতে নীল রঙের হূক করলেন এবং জোড়ার জায়গায় দ্বিতীয় প্রান্তে পর্দার বালাতেও সেই রকম করলেন।
\v 12 তিনি প্রথম পর্দাতে পঞ্চাশটি হূক লাগালেন এবং দ্বিতীয় পর্দার জোড়ার জায়গায় বালাতে পঞ্চাশটি হূক লাগালেন; সেই দুটি হূক একে অপরের মুখোমুখি হল।
\v 13 পরে তিনি সোনার পঞ্চাশটি হূক তৈরী করে সেই হূকে সমস্ত পর্দা একে অপরের সঙ্গে জোড়া দিলেন; তাতে সমাগম তাঁবুটি এক হল।
\s5
\v 14 পরে তিনি সমাগম তাঁবুর উপরের ঢাকনা হিসাবে তাঁবুর জন্য ছাগলের লোম দিয়ে পর্দাগুলি তৈরী করলেন; তিনি এগারোটি পর্দা তৈরী করলেন।
\v 15 তার প্রত্যেকটি পর্দা দৈঘ্যে ত্রিশ হাত ও প্রত্যেকটি পর্দা প্রস্থে চার হাত; এগারোটি পর্দা একই মাপের ছিল।
\v 16 পরে তিনি পাঁচটি পর্দা আলাদা জুড়লেন ও ছয়টি পর্দা আলাদা জুড়লেন।
\v 17 আর জোড়ার জায়গায় মাথায় পর্দার বালাতে পঞ্চাশটি হূক লাগালেন এবং দ্বিতীয় জোড়ার জায়গায় মাথায় পর্দার বালাতেও পঞ্চাশটি হূক লাগালেন।
\s5
\v 18 একসাথে জুড়ে একটিই তাঁবু করার জন্য পিতলের পঞ্চাশটি হূক তৈরী করলেন।
\v 19 তিনি লাল রঙের ভেড়ার চামড়া দিয়ে তাঁবুর একটি ঢাকনা, আবার তার উপরে দামী চামড়ার অন্য একটি ঢাকনা তৈরী করলেন।
\s5
\v 20 তিনি সমাগম তাঁবুর জন্য শিটীম কাঠের লম্বা তক্তা তৈরী করলেন।
\v 21 এক একটি তক্তা দৈর্ঘ্যে দশ হাত ও প্রত্যেকটি তক্তা প্রস্থে দেড় হাত।
\v 22 প্রত্যেকটি তক্তা একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত থাকার জন্য দুটি করে পায়া ছিল; এইভাবে তিনি সমাগম তাঁবুর সমস্ত তক্তা তৈরী করলেন।
\v 23 তিনি সমাগম তাঁবুর জন্য তক্তা তৈরী করলেন। তিনি দক্ষিণদিকের জন্য কুড়িটি তক্তা তৈরী করলেন।
\s5
\v 24 তিনি সেই কুড়িটি তক্তার নীচের জন্য রুপোর চল্লিশটি চুঙ্গি তৈরী করলেন, একটি তক্তার নীচে তার দুই পায়ার জন্য দুটি চুঙ্গি এবং অন্য অন্য তক্তার নীচেও তাদের দুটি করে পায়ার জন্য দুটি করে চুঙ্গি তৈরী করলেন।
\v 25 তিনি সমাগম তাঁবুর দ্বিতীয় পাশের জন্য উত্তরদিকে কুড়িটি তক্তা করলেন
\v 26 ও সেইগুলির জন্য চল্লিশটি রুপোর চুঙ্গি তৈরী করলেন; এক তক্তার নীচে দুটি করে চুঙ্গি ও অন্য অন্য তক্তার নীচেও দুটি করে চুঙ্গি হল।
\s5
\v 27 আর পশ্চিমদিকে সমাগম তাঁবুর পিছনের কোনের জন্য ছটি তক্তা তৈরী করলেন।
\v 28 তিনি সমাগম তাঁবুর সেই পিছনের কোনে দুটি তক্তা রাখলেন।
\s5
\v 29 সেই দুটি তক্তার নীচে যুক্ত ছিল, কিন্তু সেইভাবে ওপরের একই বালার সঙ্গে যুক্ত ছিল; এই একই ভাবে পিছনের উভয় কোনগুলি যুক্ত করলেন।
\v 30 তাতে আটটি তক্তা এবং রুপোর চুঙ্গি ছিল। সেখানে মোট ষোলটি চুঙ্গি ছিল, প্রথম তক্তার নিচে দুটি চুঙ্গি, পরের তক্তার নিচে দুটি চুঙ্গি, সবগুলি এইভাবেই ছিল।
\s5
\v 31 তিনি শিটীম কাঠের খিল তৈরী করলেন-সমাগম তাঁবুর এক পাশের তক্তার জন্য পাঁচটি খিল,
\v 32 সমাগম তাঁবুর অন্য পাশের তক্তার জন্য পাঁচটি খিল এবং পশ্চিমদিকে সমাগম তাঁবুর পিছন পাশের তক্তার জন্য পাঁচটি খিল।
\v 33 আর মাঝখানের খিলটিকে তক্তাগুলির মধ্যে দিয়ে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত প্রসারিত করলেন।
\v 34 তিনি তক্তাগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। তিনি তাদের বালাগুলি সোনা দিয়ে তৈরী করলেন এবং সোনার বালাগুলি খিলের ঘর হবার জন্য খিলগুলিও সোনা দিয়ে মুড়লেন।
\s5
\v 35 তিনি নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সুতো দিয়ে পর্দা তৈরী করলেন, তাতে দক্ষ কারিগর দিয়ে করূব আঁকলেন।
\v 36 তিনি পর্দার জন্য শিটীম কাঠের চারটি স্তম্ভ তৈরী করলেন এবং সেগুলি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন। তিনি স্তম্ভের জন্য সোনার হূক তৈরী করলেন এবং তার জন্য রুপোর চারটি চুঙ্গি ছাঁচে গড়লেন।
\s5
\v 37 তিনি তাঁবুর ফটকের জন্য নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সুতোর মাধ্যমে সূচির কাজ করা একটি পর্দা তৈরী করলেন।
\v 38 তিনি তার পাঁচটি স্তম্ভ ও সেগুলির হূক তৈরী করলেন। তিনি তাদের মাথা ও দন্ডগুলি সোনায় মুড়ে দিলেন। সেগুলির মধ্যে পাঁচটি চুঙ্গি ব্রোঞ্জের তৈরী।
\s5
\c 37
\p
\v 1 বৎসলেল শিটীম কাঠ দিয়ে সিন্দুক তৈরী করলেন। সেটা দৈর্ঘ্যে আড়াই হাত, প্রস্থে দেড় হাত ও উচ্চতায় দেড় হাত করা হল।
\v 2 তিনি ভিতর দিক ও বাইরের দিক বিশুদ্ধ সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন এবং তার চারিদিকে সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দিলেন।
\v 3 তার চারটি পায়ার জন্য সোনার চারটি বালা ছাঁচে গড়লেন; তার এক পাশে দুটি বালা ও অন্য পাশে দুটি বালা লাগালেন।
\s5
\v 4 তিনি শিটীম কাঠের দুটি বহন-দণ্ড তৈরী করে সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন।
\v 5 তিনি সিন্দুক বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ঐ বহন-দণ্ডগুলি সিন্দুকের দুই পাশের বালাতে প্রবেশ করালেন।
\v 6 তিনি খাঁটি সোনা দিয়ে পাপাবরণ তৈরী করলেন; যেটা দৈর্ঘ্যে আড়াই হাত ও প্রস্থে দেড় হাত হল।
\s5
\v 7 তিনি পেটাই করা সোনা দিয়ে দুটি করূব তৈরী করে পাপাবরণের শেষ দুই প্রান্তে রাখলেন।
\v 8 তার এক প্রান্তে একটি করূব ও অন্য প্রান্তে অন্য করূব, তাদেরকে পাপাবরণের দুই প্রান্তে অবিচ্ছিন্ন করে রাখলেন।
\v 9 সেই দুই করূব উপরের দিকে ডানা মেলে থাকল এবং তাদের দিয়ে পাপাবরণ ঢেকে রাখল। তাদের মুখ একে অপরের দিকে থাকল; করূবগুলি পাপাবরণের দিকে চেয়ে থাকলো।
\s5
\v 10 তিনি শিটীম কাঠ দিয়ে টেবিল তৈরী করলেন; যেটা দৈর্ঘ্যে দুই হাত, প্রস্থে এক হাত ও উচ্চতায় দেড় হাত করা হল।
\v 11 তিনি বিশুদ্ধ সোনা দিয়ে এটা মুড়ে দিলেন ও তার চারদিকে বিশুদ্ধ সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দিলেন।
\v 12 তিনি তার জন্য চারদিকে চার আঙ্গুলের মাপের একটি কাঠামো তৈরী করলেন ও কাঠামোর চারিদিকে বিশুদ্ধ সোনার পাত দিয়ে মুড়ে দিলেন।
\v 13 তার জন্য সোনার চারটি বালা ছাঁচে তৈরী করে তার চারটি পায়ার চারটি কোণে রাখলেন।
\s5
\v 14 সেই বালা কাঠামোর কাছে ছিল এবং টেবিল বয়ে নিয়ে যাওয়ার বহন-দণ্ডের ঘর হল।
\v 15 তিনি টেবিল বয়ে নিয়ে যাবার জন্য শিটীম কাঠ দিয়ে দুটি বহন-দণ্ড তৈরী করে সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন।
\v 16 টেবিলের উপরে থাকা সমস্ত পাত্র তৈরী করলেন-থালা, চামচ, বাটি ও কলসি উপহার ঢেলে রাখার জন্য। এইসব বিশুদ্ধ সোনা দিয়ে তৈরী করলেন।
\s5
\v 17 তিনি খাঁটি পেটাই করা সোনা দিয়ে বাতিদানী তৈরী করলেন; তিনি যে বাতিদানিটি তৈরী করেছিলেন যার কাণ্ড, শাখা, পেয়ালা, কুঁড়ি ও ফুল তার সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ভাবে ছিল।
\v 18 ছয়টি শাখা তার পাশ থেকে বেরিয়ে ছিল-এক পাশ থেকে তিনটি শাখা ও অন্য পাশ থেকে তিনটি শাখা।
\v 19 প্রথম শাখায় বাদাম ফুলের একটি কুঁড়ি ও একটি ফুলের মত তিনটি পেয়ালা এবং অন্য শাখায় বাদাম ফুলের একটি কুঁড়ি ও একটি ফুলের মত তিনটি পেয়ালা। বাতিদানী থেকে এইভাবে ছয়টি শাখা বেরিয়ে এল।
\s5
\v 20 বাতিদানীতে বাদাম ফুলের কুঁড়ি ও ফুলের মত চারটি পেয়ালা ছিল।
\v 21 বাতিদানীর যে ছয়টি শাখা বেরিয়ে এল, সেগুলির প্রথম শাখা দুটির নীচে একটি অবিচ্ছিন্ন কুঁড়ি, অন্য শাখা দুটির নীচে একটি অবিচ্ছিন্ন কুঁড়ি ও অপর শাখা দুটির নীচে একটি কুঁড়ি ছিল।
\v 22 এই কুঁড়ি ও শাখা তার সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল এবং সমস্তই পেটাই করা বিশুদ্ধ সোনার তৈরী ছিল।
\s5
\v 23 তিনি বাতিদানী তৈরী করলেন এবং তার সাতটি প্রদীপ এবং তার চিমটা ও ট্রে খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরী করলেন।
\v 24 তিনি ঐ বাতিদানী এবং ঐ সমস্ত জিনিসপত্র এক তালন্ত পরিমানের খাঁটি সোনা দিয়ে তৈরী করলেন।
\s5
\v 25 তিনি শিটীম কাঠ দিয়ে ধূপবেদি তৈরী করলেন; সেটা দৈর্ঘ্যে এক হাত, প্রস্থে এক হাত ও চারকোনের উচ্চতা দুই হাত; তার শিংগুলি তার সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল।
\v 26 সেই ধূপবেদি, তার ওপরের ভাগ, তার চারপাশ ও তার শিংগুলি খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন এবং তার চারদিকে সোনার পাত লাগালেন।
\s5
\v 27 তিনি পাতের নিচের দুই বিপরীত পাশে তার সঙ্গে যুক্ত দুটি সোনার বালা তৈরী করলেন। বালাগুলি ছিল বেদিটি বয়ে নিয়ে যাবার জন্য বহন দণ্ডের ধারক।
\v 28 তিনি শিটীম কাঠ দিয়ে বহন দণ্ড তৈরী করলেন ও তাদের সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন।
\v 29 তিনি সুগন্ধ জিনিসের ব্যবসায়ীর প্রক্রিয়া অনুযায়ী অভিষেকের পবিত্র তেল ও সুগন্ধি জিনিসের খাঁটি ধূপ তৈরী করলেন।
\s5
\c 38
\p
\v 1 বত্সলেল শিটীম কাঠ দিয়ে হোমবেদি তৈরী করলেন; সেটা দৈর্ঘ্যে পাঁচ হাত, প্রস্থে পাঁচ হাত ও চারকোনের উচ্চতা তিন হাত করা হল।
\v 2 তিনি তার চার কোণের উপরে কতকগুলি শিং তৈরী করলেন; সেই শিংগুলি বেদির সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন অবস্থায় ছিল এবং তিনি সেগুলি ব্রোঞ্জ দিয়ে মুড়ে দিলেন।
\v 3 তিনি বেদির সমস্ত পাত্র, অর্থাৎ হাঁড়ী, হাতা, বাটি, তিনটি কাঁটাযুক্ত দন্ড ও আগুন রাখা পাত্র, এই সমস্ত পাত্র ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরী করলেন।
\s5
\v 4 বেদির জন্য বেড়ের নীচের অর্ধেক অংশ থেকে জালের কাজ করা ব্রোঞ্জের ঝাঁঝরী তৈরী করলেন।
\v 5 তিনি সেই ব্রোঞ্জের ঝাঁঝরীর চার কোণের জন্য বহন-দণ্ডের ধারক হিসাবে চারটি বালা ছাঁচে গড়লেন।
\s5
\v 6 তিনি শিটীম কাঠ দিয়ে বহন দণ্ড তৈরী করে ব্রোঞ্জ দিয়ে মুড়ে দিলেন।
\v 7 তিনি বেদি বয়ে নিয়ে যাবার জন্য তার পাশের বালাগুলিতে ঐ বহন-দণ্ড পরালেন। তিনি তক্তা ছাড়াই বেদিটি ফাঁপা ভাবে তৈরী করলেন।
\s5
\v 8 তিনি একটি ব্রোঞ্জের গামলার মত বড় পাত্র তার সঙ্গে ব্রোঞ্জের দানি তৈরী করলেন। তিনি সমাগম তাঁবুতে যে স্ত্রীলোকরা সেবার কাজে নিযুক্ত ছিল তাদের জন্য আয়না সেই পাত্রের বাইরের দিকে লাগালেন।
\s5
\v 9 তিনি উঠান প্রস্তুত করলেন। উঠানের দক্ষিণদিকে পাকান সাদা মসীনা সুতোর একশো হাত পরিমাপের পর্দা ছিল।
\v 10 তার কুড়িটি স্তম্ভ ও কুড়িটি তলদেশের অংশ ব্রোঞ্জের ছিল। সেই স্তম্ভের হূক ও দন্ডগুলি ছিল রুপোর।
\s5
\v 11 উত্তর দিকের পর্দা একশো হাত ও তার কুড়িটি স্তম্ভ ও কুড়িটি তলদেশ ব্রোঞ্জের এবং স্তম্ভের হূক ও দন্ডগুলি রুপোর ছিল।
\v 12 পশ্চিম দিকের পর্দা পঞ্চাশ হাত ও তার দশটি স্তম্ভ ও দশটি চুঙ্গি এবং স্তম্ভের হূক ও দন্ডগুলি রুপোর ছিল।
\s5
\v 13 উঠানটির পূর্বদিকের দৈর্ঘ্য ছিল পঞ্চাশ হাত।
\v 14 প্রবেশপথের একদিকের জন্য পনেরো হাত পর্দা ছিল, তার তিনটি স্তম্ভ ও তিনটি চুঙ্গি ছিল।
\v 15 উঠানের অন্য পাশের প্রবেশপথের জন্যও পনেরো হাত পর্দা ও তার তিনটি স্তম্ভ ও তিনটি চুঙ্গি ছিল।
\v 16 উঠানের চারদিকের সমস্ত পর্দা পাকান সাদা মসীনা সুতোয় তৈরী।
\s5
\v 17 স্তম্ভের চুঙ্গিগুলি ব্রোঞ্জ দিয়ে তৈরী। স্তম্ভের হূক ও দন্ডগুলি রুপোর ও তার ওপরের অংশও রুপো দিয়ে মোড়া এবং উঠানের সমস্ত স্তম্ভগুলি ছিল রুপোর তৈরী।
\v 18 উঠানের ফটকের পর্দা ছিল কুড়ি হাত। পর্দাটি নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সুতোয় সূচির কাজে তৈরী এবং তার দৈর্ঘ্য কুড়ি হাত, আর উঠানের পর্দার মত উচ্চতা ছিল পাঁচ হাত।
\v 19 তার চারটি ব্রোঞ্জের চুঙ্গি ও রুপোর হূক ছিল। তাদের ওপরের অংশ ও দন্ড রুপো দিয়ে মোড়ানো ছিল।
\v 20 সমাগম তাঁবুর উঠানের চারিদিকের খুঁটিগুলি ছিল ব্রোঞ্জের।
\s5
\v 21 সমাগম তাঁবুর, সাক্ষ্যের সমাগম তাঁবুর, দ্রব্য-সংখার বিবরণ এই। মোশির আদেশ অনুসারে সেই সমস্ত করা হল। এটা লেবীয়দের কাজ হিসাবে হারোণ যাজকের ছেলে ঈথামরের নির্দেশ অনুযায়ী করা হল।
\v 22 সদাপ্রভু মোশিকে যে আদেশ দিয়েছিলেন, সেই অনুসারে যিহূদা বংশের হূরের নাতি ঊরির ছেলে বৎসলেল সমস্তই তৈরী করেছিলেন।
\v 23 দান বংশের অহীষামকের ছেলে অহলীয়াব তাঁর সহকারী ছিলেন; তিনি দক্ষ ও শিল্পকুশলী এবং নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সুতোর শিল্পকার ছিলেন।
\s5
\v 24 পবিত্র সমাগম তাঁবু তৈরীর সমস্ত কাজে এইসব সোনা লাগল, উপহারের সমস্ত সোনা পবিত্র স্থানের শেকল অনুসারে ঊনত্রিশ তালন্ত সাতশো ত্রিশ শেকল ছিল।
\v 25 মণ্ডলীর লোকদের রুপো পবিত্র জায়গার শেকল পরিমাপের অনুযায়ী একশো তালন্ত এবং এক হাজার সাতশো পঁচাত্তর শেকল ছিল।
\v 26 প্রত্যেক লোকের জন্য, অর্থাৎ যারা কুড়ি বছর বয়সী কিংবা তার থেকে বেশি বয়সী ছিল, সেই ছয় লক্ষ তিন হাজার সাড়ে পাঁচশো লোকের মধ্যে প্রত্যেক জনের জন্য এক এক বেকা, অর্থাৎ পবিত্র স্থানের শেকল অনুসারে অর্দ্ধেক শেকল দিতে হয়েছিল।
\s5
\v 27 সেই একশো তালন্ত রুপোর পবিত্র স্থানের চুঙ্গি ও পর্দার চুঙ্গি ছাঁচে করা হয়েছিল; একশোটি চুঙ্গি, প্রত্যেক চুঙ্গির জন্য এক তালন্ত করে ব্যয় হয়েছিল।
\v 28 ঐ এক হাজার সাতশো পঁচাত্তর শেকলে তিনি সমস্ত স্তম্ভের জন্য হূক তৈরী করেছেন ও তাদের ওপরের অংশ মুড়েছেন ও তাদের জন্য দন্ড তৈরী করেছেন।
\v 29 উপহারের ব্রোঞ্জ সত্তর তালন্ত দুই হাজার চারশো শেকল ছিল।
\s5
\v 30 সেটা দিয়ে তিনি সমাগম তাঁবুর প্রবেশপথের চুঙ্গি, ব্রোঞ্জের বেদি ও ব্রোঞ্জের ঝাঁঝরী ও বেদির সমস্ত পাত্র
\v 31 এবং উঠানের চারদিকের তলদেশ ও উঠানের প্রবেশপথের তলদেশ ও সমাগম তাঁবুর সমস্ত খুঁটি ও উঠানের চারদিকের খুঁটি তৈরী করেছিলেন।
\s5
\c 39
\p
\v 1 তারা শেষ পর্যন্ত নীল, বেগুনে ও লাল সুতো দিয়ে পবিত্র জায়গায় পরিচর্য্যা করার জন্য সূক্ষ্ম শিল্পের কাজে পোশাক তৈরী করলেন। আর যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, তারা হারোণের জন্য পবিত্র পোশাক তৈরী করলেন।
\s5
\v 2 বত্সলেল সোনা দিয়ে এবং নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সূতো দিয়ে এফোদ তৈরী করলেন।
\v 3 সাধারণত তাঁরা সোনা পিটিয়ে পাত তৈরী করে শিল্প কাজের মধ্য দিয়ে নীল, বেগুনে, লাল ও সাদা মসীনা সূতোর মধ্যে বুনবার জন্য তা কেটে তার তৈরী করলেন।
\s5
\v 4 আর তাঁরা এফোদের জন্য দুটি পটি তৈরী করলেন এবং ঘাড়ের উপরে দুই কোনায় এটি জুড়ে দিলেন;
\v 5 আর তা বন্ধ করবার জন্য শিল্প কার্যে বোনা কোমর বন্ধনী তার উপরে ছিল, এটি এফোদের সঙ্গে একত্রে তৈরী করা হয়েছে এবং সেই পোশাকের সমান ছিল, সেটি সোনা, নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সূতো দিয়ে তৈরী করা হয়েছিল; ঠিক যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন।
\s5
\v 6 পরে তাঁরা খোদাই করা মুদ্রার মত ইস্রায়েলের বারোজন ছেলের নামে নকশা করা সোনা দিয়ে বাঁধিয়ে দুটি গোমেদক মণি আঁটকিয়ে ভিতরে রাখলেন।
\v 7 আর এফোদের দুটি ঘাড়ের ফিতের উপরে ইস্রায়েলের বারোজন ছেলেদের স্মরণ করার জন্য মণিহিসাবে সেগুলি লাগালেন, যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন।
\s5
\v 8 তিনি এফোদের কায়দায় সোনা দিয়ে এবং নীল, বেগুনে, লাল ও পাকান সাদা মসীনা সূতো দিয়ে দক্ষ্ শিল্পকারের মাধ্যমে একটি বুকপাটা তৈরী করলেন।
\v 9 এটি চার কোণা ছিল; তাঁরা সেই বুকপাটাটি দুই ভাঁজ করে গুটিয়ে রাখলেন। এটি এক বিঘত লম্বা এবং এক বিঘত প্রস্থ করে ভাঁজ করেছিলেন।
\s5
\v 10 তা চার সারি মণি লাগিয়ে তৈরী করলেন। তার প্রথম সারিতে চুণী, পীতমণি ও মরকত ছিল,
\v 11 দ্বিতীয় সারিতে পদ্মরাগ, নীলকান্ত ও হীরক ছিল।
\v 12 তৃতীয় সারিতে পেরোজ, যিস্ম এবং কাটাহেলা ছিল।
\v 13 চতুর্থ সারিতে বৈদূর্য্য, গোমেদক ও সূর্য্যকান্ত ছিল; এই মনিগুলি সোনা দিয়ে বাঁধানো হলো।
\s5
\v 14 এই সকল মণি ইস্রায়েলের বারোজন ছেলের নাম অনুযায়ী হলো, প্রতিটি তাদের নামানুসারেই হল; মুদ্রার মত খোদাই করা প্রত্যেক মণিতে বারোটি বংশের জন্য এক একটি ছেলের নাম হল।
\v 15 পরে তাঁরা বুকপাটার উপর খাঁটি সোনা দিয়ে মালার মত পাকান দুটি শিকল তৈরী করলেন।
\v 16 তারা সোনার দুটি বিনুনি করা শিকল ও সোনার দুটি বালা তৈরী করলেন এবং বুকপাটার দুই ধারে সেই দুটি বালা লাগিয়ে দিলেন।
\s5
\v 17 তারা বুকপাটার দুটি কোনে দুটি বালার মধ্যে বিনুনি করা সোনার দুটি শিকল লাগালেন।
\v 18 পাকান শিকলের অন্য দুই মাথা দুই বিনুনির মত দুই শিকলের সঙ্গে বেঁধে এফোদের সামনের দিকে দুটি কাঁধের ফিতের উপরে লাগালেন।
\s5
\v 19 আর সোনার দুটি বালা তৈরী করে বুকপাটার দুই মাথায় ভিতরের অংশে এফোদের সামনের দিকে শেষ অংশে লাগালেন।
\v 20 পরে তারা সোনার দুটি বালা তৈরী করে এফোদের দুটি ঘাড়ের ফিতের নীচে তার সামনের অংশে তার জোড়ের জায়গায় এফোদের বিনুনি করা কোমর বন্ধনীর উপরে রাখলেন।
\s5
\v 21 তারা বুকপাটা যেন এফোদের কোমর বন্ধনীর উপরে থাকে এবং এফোদ থেকে যেন খুলে না যায় সেই জন্য তাঁরা বালাতে নীল সূতো দিয়ে এফোদের বলার সঙ্গে বুকপাটা বেঁধে রাখলেন; ঠিক যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন তেমন এইগুলি করা হয়েছিল।
\s5
\v 22 বত্সলেল এফোদের পোশাক সম্পূর্ণভাবে বুনে তৈরী করলেন, এটি তন্তু দিয়ে তৈরী ও সম্পূর্ণ নীল রঙের।
\v 23 এটির মাঝখানে মাথার জন্য খোলা গলা ছিল। সেই খোলা জায়গাটি যাতে ছিঁড়ে না যায় সেই জন্য গলার চারদিকে বিনুনি করা ছিল।
\v 24 আর তাঁরা সেই পোশাকের আঁচলে নীল, বেগুনে, ও লাল পাকান সূতোর ডালিম তৈরী করলেন।
\s5
\v 25 পরে তাঁরা খাঁটি সোনার ঘন্টা তৈরী করলেন এবং সেই ঘন্টাগুলি ডালিমের মাঝখনে ও পোশাকের আঁচলের চারদিকে ডালিমের মাঝখানে দিলেন।
\v 26 সেবা করার পোশাকের আঁচলে চারদিকে একটি ঘন্টা ও একটি ডালিম, একটি ঘন্টা ও একটি ডালিম, এইরূপ করলেন; ঠিক যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন।
\s5
\v 27 পরে তাঁরা হারোণ ও তাঁর ছেলেদের জন্য সাদা মসীনা সুতো দিয়ে গায়ের পোশাক তৈরী করলেন।
\v 28 তারা সাদা মসীনা সুতো দিয়ে তৈরী উষ্ণীয় ও সাদা মসীনা সুতো দিয়ে তৈরী শিরোভূষন ও পাকান সাদা মসীনা সুতো দিয়ে তৈরী শুল্ক জাঙ্গিয়া তৈরী করলেন।
\v 29 এবং পাকান সাদা মসীনা সুতো দিয়ে এবং নীল, বেগুনে, ও লাল সূতো দিয়ে সূচের কাজ দ্বারা এক কোমর বন্ধন তৈরী করলেন। এইগুলি ঠিক যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন তেমন করলেন।
\s5
\v 30 পরে তাঁরা খাঁটি সোনা দিয়ে পবিত্র মুকুটের জন্য পাত তৈরী করলেন এবং খোদাই করা মুদ্রার মত তার উপরে লিখলেন, “সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র।”
\v 31 পরে তারা পাগড়ির উপরে নীল সূতো দিয়ে সেটি বাঁধলেন; এটি করেছিলেন যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন।
\s5
\v 32 সুতরাং এইভাবে সমাগম তাঁবুর কাজ অর্থাৎ পবিত্র জায়গার কাজ গুলি শেষ হয়েছিল; ইস্রায়েলের লোকেরা সবই করেছিল। তারা মোশির প্রতি দেওয়া সদাপ্রভুর সব আদেশ মেনে কাজ করেছিল।
\v 33 পরে তারা মোশির কাছে তাঁবুটি এনেছিল এবং তারা তাঁবু এবং তাঁবু সংক্রান্ত সব জিনিস, এর ঘন্টা, তক্তা, খিল, স্তম্ভ ও চুঙ্গি এনেছিল
\v 34 রক্তের মত লাল রঙের ভেড়ার চামড়ার তৈরী ছাদ, শীলের চামড়ার তৈরী ছাদ এবং গোপন করার জন্য পর্দা,
\v 35 এবং সাক্ষ্য সিন্দুক ও তা বহন করার জন্য দণ্ড এবং পাপাবরণ।
\s5
\v 36 তারা টেবিল ও তার সব পাত্রগুলি এবং দর্শন রুটি আনলো,
\v 37 খাঁটি সোনার তৈরী দীপদানি এবং সারিতে তার প্রদীপগুলি, এর সঙ্গে তার সব পাত্রগুলি এবং দীপের জন্য তেল;
\v 38 সোনার বেদি, অভিষেকের তেল এবং সুগন্ধি ধূপ ও তাঁবুর দরজার জন্য পর্দা;
\v 39 ব্রোঞ্জের বেদি ও তার সঙ্গে ব্রোঞ্জের ঝাঁঝরী এবং তা বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দণ্ড ও সব পাত্রগুলি; বড় গামলার মত পাত্র ও তার জন্য দানি।
\s5
\v 40 তারা উঠানের জন্য পর্দা ও তার সঙ্গে স্তম্ভ ও চুঙ্গি আনলো এবং উঠানের দরজার জন্য পর্দা ও তার দড়ি, গোঁজ ও সমাগম তাঁবুর সেবা কাজের জন্য সব পাত্র আনলো।
\v 41 তারা পবিত্র জায়গায় পরিচর্য্যা করার জন্য সূক্ষ্ম ভাবে কাজ করা পোশাক আনলো, হারোণ যাজক ও তাঁর ছেলেদের জন্য পবিত্র পোশাক, তাদের যাজক কাজের জন্য এই পোশাক।
\s5
\v 42 যদিও সদাপ্রভু মোশিকে যেমন আদেশ করেছিলেন সেই অনুযায়ী ইস্রায়েলের লোকেরা সব কাজই করেছিল।
\v 43 মোশি ঐ সব কাজের প্রতি পরীক্ষামূলক ভাবে লক্ষ্য করলেন, আর দেখ, তারা সেগুলি করেছে। যেমন ভাবে সদাপ্রভুর আদেশ করেছিলেন সেই ভাবেই তারা করেছে। তখন মোশি তাদেরকে আশীর্বাদ করলেন।
\s5
\c 40
\s তাঁবুর স্থাপন ও প্রতিষ্ঠা।
\p
\v 1 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন,
\v 2 তুমি নতুন বছরের প্রথম মাসের প্রথম দিনে পবিত্র জায়গা অর্থাৎ সমাগম তাঁবু স্থাপন করবে।
\s5
\v 3 আর তুমি তার মধ্যে সাক্ষ্য সিন্দুক রাখবে এবং তুমি অবশ্যই পর্দা টাঙ্গিয়ে সেই সিন্দুকটি সুরক্ষা করবে।
\v 4 পরে তুমি টেবিল ভিতরে আনবে এবং তার উপরে সাজাবার জিনিসগুলি সাজিয়ে রাখবে। তখন তুমি দীপদানি ভিতরে এনে তার উপর প্রদীপ গুলি জ্বেলে দেবে।
\s5
\v 5 তুমি সোনার ধূপবেদিটি সাক্ষ্য সিন্দুকের সামনে রাখবে এবং তাঁবুর দরজায় পর্দা টাঙ্গিয়ে দেবে।
\v 6 তুমি হোমবেদিটি অবশ্যই সমাগম তাঁবুর দরজার সামনে রাখবে।
\v 7 আর তুমি সমাগম তাঁবু ও বেদির মাঝখানে বড় গামলা পাত্রটি রাখবে এবং তার মধ্যে জল দেবে।
\s5
\v 8 আর তার চারদিকে উঠান তৈরী করবে এবং উঠানের প্রবেশ দরজায় পর্দা টাঙ্গিয়ে দেবে।
\v 9 তুমি পরে অভিষেকের তেল নিয়ে তাঁবু এবং তার মধ্যে সব জিনিসগুলি অভিষেক করবে। তুমি অবশ্যই এটি পবিত্র করবে এবং সাজাবে; তখন এটি পবিত্র হবে এবং আমার জন্য সংরক্ষিত হবে।
\v 10 তুমি হোমবেদি ও সেই বিষয়ে সব পাত্রগুলি অভিষেক করবে। তুমি হোমবেদি পবিত্র করবে; আমার সেবার জন্য তা প্রস্তুত করবে এবং সেই বেদি অতি পবিত্র হবে ও আমার জন্য সংরক্ষিত হবে।
\v 11 তুমি আমার সেবা কাজের জন্য গামলার মত পাত্রটি ও তার দানি অভিষেক করবে ও পবিত্র করবে।
\s5
\v 12 তুমি হারোণ ও তার ছেলেদেরকে সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দরজার কাছে আনবে এবং জলে স্নান করাবে।
\v 13 আর তুমি হারোণকে পবিত্র পোশাক গুলি পরাবে, অভিষেক করবে এবং একমাত্র আমার জন্য পবিত্র করবে, তাতে সে আমার যাজক হয়ে কাজ করবে।
\s5
\v 14 আর তার ছেলেদেরকেও আনবে এবং তাদের গায়ে পোশাক পরাবে।
\v 15 আর তুমি তাদেরকেও অভিষেক করবে যেমন ভাবে তাদের পিতাকে অভিষেক করেছ; যাতে তারা যাজক হয়ে আমার সেবা কাজ করে। তাদের সেই অভিষেক বংশ পরম্পরায় তাদের চিরস্থায়ী যাজকত্ব তৈরী করবে।
\v 16 আর মোশি এইরূপ করলেন; সদাপ্রভু তাঁকে যা আদেশ করেছিলেন তিনি সব কিছুই অনুসরণ করে কাজ করলেন।
\s5
\v 17 সুতরাং দ্বিতীয় বছরে প্রথম মাসের প্রথম দিনে তাঁবু স্থাপিত হয়েছিল।
\v 18 মোশি তাঁবুটি স্থাপন করলেন, তার তলদেশ জায়গায় রাখলেন, তক্তা বসালেন, খিল ভিতরে দিলেন ও তার থাম গুলি বসালেন।
\v 19 তিনি সেই সমাগম তাঁবুর উপরে ঢাকা দিলেন এবং তার উপরে তাঁবুর মত ঢাকা লাগিয়ে দিলেন; যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন।
\v 20 তিনি সাক্ষ্যলিপি নিলেন এবং সিন্দুকের মধ্যে রাখলেন। তিনি সিন্দুকের উপর বহন দণ্ড রাখলেন এবং তার উপরে পাপাবরণ রাখলেন,
\s5
\v 21 তিনি তাঁবুর মধ্যে সিন্দুক আনলেন। যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, তিনি সাক্ষ্য সিন্দুকটির সুরক্ষার জন্য সেখানে পর্দা টাঙ্গিয়ে দিলেন।
\v 22 তিনি তাঁবুর উত্তর পাশে পর্দার বাইরে সমাগম তাঁবুর ভিতরে টেবিল রাখলেন।
\v 23 যেমন সদাপ্রভু তাঁকে আদেশ দিয়েছিলেন, তিনি টেবিলের উপর সদাপ্রভুর সামনে রুটি সাজিয়ে রাখলেন।
\s5
\v 24 আর তিনি তাঁবুর দক্ষিণ দিকে সমাগম তাঁবুর ভিতরে টেবিলের সামনে দীপদানি রাখলেন।
\v 25 সদাপ্রভু যেমন মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, তিনি সদাপ্রভুর সামনে প্রদীপ জ্বালালেন।
\s5
\v 26 তিনি সমাগম তাঁবুর ভিতরে পর্দার সামনে সোনার বেদী রাখলেন।
\v 27 সদাপ্রভু যেমন মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, তিনি তার উপরে সুগন্ধি ধূপ জ্বালালেন।
\s5
\v 28 তিনি তাঁবুর প্রবেশ দরজায় পর্দা টাঙ্গিয়ে দিলেন।
\v 29 তিনি সমাগম তাঁবুর প্রবেশ দরজার সামনে হোমবেদি রাখলেন। সদাপ্রভু যেমন মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, তিনি তার উপরে হোমবলি ও শস্য নৈবেদ্য উৎসর্গ করলেন।
\v 30 তিনি সমাগম তাঁবু এবং বেদির মাঝখানে ধোয়ার জন্য গামলা রাখলেন এবং তার মধ্যে ধোয়ার জন্য জল দিলেন।
\s5
\v 31 মোশি, হারোণ ও তার ছেলেরা নিজের নিজের হাত ও পা সেই গামলা থেকে ধুতেন।
\v 32 যখন তাঁরা সমাগম তাঁবুর ভিতরে যেতেন এবং বেদির কাছে যেতেন। সদাপ্রভু যেমন মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, তাঁরা তাঁদের নিজেদের ধুতেন।
\v 33 মোশি তাঁবুর এবং বেদির চারদিকে উঠান তৈরী করলেন। তিনি উঠানের প্রবেশ দরজায় পর্দা লাগালেন। এইভাবে মোশি কাজ শেষ করলেন।
\s5
\v 34 তখন সমাগম তাঁবুটি মেঘে ঢেকে গেল এবং সদাপ্রভুর মহিমায় তাঁবু পরিপূর্ণ হলো।
\v 35 তাতে মোশি সমাগম তাঁবুর মধ্যে ঢুকতে পারলেন না, কারণ মেঘ তার উপরে ছিল এবং সদাপ্রভুর মহিমা তাঁবুটি পরিপূর্ণ করেছিল।
\s5
\v 36 আর যখন তাঁবুর উপর থেকে মেঘ সরিয়ে নেওয়া হত, তখন ইস্রায়েলের লোকেরা তাদের নিজেদের যাত্রায় এগিয়ে যেত।
\v 37 কিন্তু যদি মেঘ তাঁবুর উপর থেকে উপরের দিকে না উঠত, তবে সে দিন লোকেরা বাইরে যাত্রা করত না। মেঘ উপরে উঠার দিন পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করত।
\v 38 কারণ সব ইস্রায়েলের লোকদের সাধারণ দৃষ্টিতে তাদের সব যাত্রার সময়ে দিনে সদাপ্রভুর মেঘ এবং রাতে আগুন তাঁবুর উপরে ছিল।

1585
05-DEU.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,1585 @@
\id DEU
\ide UTF-8
\sts - Free Bible Bengali
\h দ্বিতীয় বিবরণ
\toc1 দ্বিতীয় বিবরণ
\toc2 দ্বিতীয় বিবরণ
\toc3 deu
\mt1 দ্বিতীয় বিবরণ
\mt2 মোশির প্রথম বক্তৃতা।
\s5
\c 1
\s মরুভূমিতে ইস্রায়েলীয়দের ইতিহাস।
\p
\v 1 যর্দনের পূর্ব পারে অবস্থিত মরুভূমিতে, সূফের বিপরীতে অরাবা উপত্যকায়, পারণ, তোফল, লাবন, হৎসেরোৎ ও দীষাহবের মাঝখানে মোশি সমস্ত ইস্রায়েলকে এই সব কথাগুলি বললেন।
\v 2 সেয়ীর পর্বত দিয়ে হোরেব থেকে কাদেশ বর্ণেয় পর্যন্ত যেতে এগারো দিন লাগে।
\s5
\v 3 সদাপ্রভু যে সব কথা ইস্রায়েলের লোকদেরকে বলতে মোশিকে আদেশ দিয়েছিলেন, সেই অনুযায়ী মোশি চল্লিশ বছরের এগারো মাসের প্রথম দিনে তাদেরকে বললেন।
\v 4 পরে তিনি ইমোরীয়দের রাজা সীহোনকে, যিনি হিষ্‌বোনে বাস করতেন এবং বাশনের রাজা ওগকে, যিনি ইদ্রিয়ীর অষ্টারোতে বাস করতেন তাদেরকে আঘাত করলেন।
\s5
\v 5 যর্দনের পূর্ব পারে মোয়াব দেশে মোশি এই ব্যবস্থা ব্যাখ্যা করতে লাগলেন; তিনি বললেন,
\v 6 “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু হোরেবে আমাদেরকে বলেছিলেন, ‘তোমরা এই পর্বতে অনেক দিন বাস করেছ;
\s5
\v 7 তোমাদের যাত্রা শুরু কর, ইমোরীয়দের পার্বত্য অঞ্চলে এবং তার কাছাকাছি সব জায়গায়, অরাবা উপত্যকায়, পাহাড় অঞ্চলে, নীচু জায়গায়, দক্ষিণ প্রদেশে ও সমুদ্রতীরে, মহানদী ফরাৎ পর্যন্ত কনানীয়দের দেশে ও লিবানোনে প্রবেশ কর।
\v 8 দেখ, আমি সেই দেশ তোমাদের সামনে দিয়েছি; তোমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবকে এবং তাদের পরবর্তী বংশকে যে দেশ দিতে সদাপ্রভু দিব্যি করেছিলেন, তোমরা সেই দেশে গিয়ে তা অধিকার কর।’”
\s5
\v 9 সেই সময়ে আমি তোমাদেরকে এই কথা বলেছিলাম, “তোমাদের ভার বহন করা আমার একার পক্ষে সম্ভব নয়।
\v 10 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের বৃদ্ধি করেছেন, আর দেখ, তোমরা আজ আকাশের তারার মত বহুসংখ্যক হয়েছ;
\v 11 তোমরা যেমন আছ, তোমাদের পূর্বপুরুষ ঈশ্বর সদাপ্রভু তা থেকে তোমাদের আরও হাজার গুণ বৃদ্ধি করুন, আর তোমাদেরকে যেমন বলেছেন, সেরকম আশীর্বাদ করুন।
\s5
\v 12 কেমন করে আমি একা তোমাদের বোঝা, তোমাদের ভার ও তোমাদের বিবাদ সহ্য করতে পারি?
\v 13 তোমরা নিজেদের বংশের মধ্যে জ্ঞানবান, বুদ্ধিমান্‌ ও পরিচিত লোকদেরকে মনোনীত কর, আমি তাদেরকে তোমাদের প্রধান হিসাবে নিযুক্ত করব।”
\v 14 তোমরা আমাকে উত্তর দিয়ে বললে, “তুমি যা বলছ, তাই করা ভাল।”
\s5
\v 15 তাই আমি তোমাদের বংশগুলির প্রধান, জ্ঞানবান ও পরিচিত লোকদেরকে গ্রহণ করে এবং তোমাদের উপরে প্রধান, তোমাদের বংশ অনুযায়ী সহস্রপতি, শতপতি, পঞ্চাশৎপতি, দশপতি ও কর্ম্মচারী করে নিযুক্ত করলাম।
\v 16 আর সেইসময়ে তোমাদের বিচারকর্তাদেরকে আমি এই আদেশ করলাম, “তোমরা তোমাদের ভাইদের বিবাদের কথা শোন এবং একজন লোক ও তার ভাই এবং তার সঙ্গী বিদেশীর মধ্যে ন্যায় বিচার করো।
\s5
\v 17 তোমরা বিচারে কারও পক্ষপাত করবে না; সমানভাবে ছোট ও মহান উভয়ের কথা শুনবে; মানুষের মুখ দেখে ভয় করবে না, কারণ বিচার ঈশ্বরের এবং যে ঘটনা তোমাদের পক্ষে কঠিন, তা আমার কাছে আনবে, আমি তা শুনব।”
\v 18 সেই সময়ে আমি তোমাদেরকে যে সব কাজ করতে হবে সেই বিষয়ে আদেশ দিয়েছিলাম।
\s5
\v 19 পরে আমরা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে হোরেব থেকে চলে গেলাম এবং ইমোরীয়দের পাহাড়ি দেশে যাবার পথে তোমরা সেই যে বিশাল ও ভয়ঙ্কর মরুভূমি দেখেছ, তার মধ্যে দিয়ে যাত্রা করে কাদেশ বর্ণেয়ে পৌঁছালাম।
\s5
\v 20 পরে আমি তোমাদেরকে বললাম, “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদেরকে যে দেশ দিচ্ছেন, ইমোরীয়দের সেই পাহাড়ি দেশে তোমরা পৌঁছালে।
\v 21 দেখ, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সেই দেশ তোমার সামনে দিয়েছেন; তুমি নিজের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কথা অনুসারে উঠে ওটা অধিকার কর; ভয় পেয় না ও নিরাশ হয়ো না।”
\s5
\v 22 তখন তোমরা সবাই আমার কাছে এসে বললে, “আগে আমরা সে জায়গায় লোক পাঠাই; তারা আমাদের জন্য দেশ খুঁজে বের করুক এবং আমাদেরকে কোন্‌ পথ দিয়ে উঠে যেতে হবে ও কোন্‌ কোন্‌ শহরে আসতে হবে, তার খবর নিয়ে আসুক।”
\v 23 তখন আমি সে কথায় সন্তুষ্ট হয়ে তোমাদের প্রত্যেক বংশ থেকে এক জন করে বার জনকে নিলাম।
\v 24 পরে তারা পার্বত্য অঞ্চলে গিয়ে উঠল এবং ইষ্কোল উপত্যকায় এসে সেই দেশের খোঁজ করল।
\s5
\v 25 আর সেই দেশের কতগুলো ফল হাতে নিয়ে আমাদের কাছে এসে খবর দিল, বলল, “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদেরকে যে দেশ দিচ্ছেন, সেটা ভালো।”
\s5
\v 26 তবুও তোমরা সেই জায়গায় যেতে রাজী হলে না; কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশের বিরোধিতা করলে;
\v 27 নিজেদের তাঁবুতে অভিযোগ করে বললে, “সদাপ্রভু আমাদেরকে ঘৃণা করলেন বলেই তিনি আমাদেরকে মিসর দেশ থেকে বের করে আনলেন যেন আমরা ইমোরীয়দের হাতে পরাজিত হই।
\v 28 আমরা কোথায় যেতে পারি? আমাদের ভাইয়েরা আমাদের মন গলিয়ে দিল, বলল, ‘আমাদের থেকে সে জাতি মহৎ ও উচ্চ এবং শহরগুলো অনেক বড় ও আকাশ পর্যন্ত দেওয়ালে ঘেরা; আরও সে জায়গায় আমরা অনাকীয়দের ছেলেদেরকেও দেখেছি।’”
\s5
\v 29 তখন আমি তোমাদেরকে বললাম, “ভয় কর না, তাদের থেকে ভীত হয়ো না।
\v 30 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যিনি তোমাদের আগে আগে যান, তিনি মিসর দেশে তোমাদের চোখের সামনে তোমাদের জন্য যে সব কাজ করেছিলেন, সেই অনুযায়ী তোমাদের জন্য যুদ্ধ করবেন।
\v 31 এই মরুভূমিতেও তুমি সেরকম দেখেছ; যেমন বাবা নিজের ছেলেকে বহন করে, তেমনি এই জায়গায় তোমাদের আসা পর্যন্ত যে রাস্তায় তোমরা এসেছ, সেই সব রাস্তায় তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে বহন করেছেন।”
\s5
\v 32 কিন্তু এই কথায় তোমরা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুতে বিশ্বাস করলে না,
\v 33 যিনি তোমাদের তাঁবু রাখার জায়গা খোঁজ করতে যাওয়ার সময় তোমাদের আগে আগে গিয়ে রাতে আগুনের মাধ্যমে ও দিনে মেঘের মাধ্যমে তোমরা কোন পথে যাবে সেই রাস্তা দেখাতেন।
\s5
\v 34 সদাপ্রভু তোমাদের কথার আওয়াজ শুনে রেগে গেলেন ও এই দিব্যি করলেন,
\v 35 “আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে দেশ দিতে শপথ করেছি, এই দুষ্ট বংশীয় মানুষদের মধ্যে কেউই সেই ভালো দেশ দেখতে পাবে না,
\v 36 কেবল যিফূন্নির ছেলে কালেব তা দেখবে এবং সে যে জায়গায় পা দিয়েছে; সেই ভূমি আমি তাকে ও তার ছেলেমেয়েকে দেব; কারণ সে পুরোপুরিভাবে সদাপ্রভুর অনুসরণ করেছে।”
\s5
\v 37 সদাপ্রভু তোমাদের জন্যে আমার প্রতিও রেগে গেলেন, তিনি আমাকে এই কথা বললেন, “তুমিও সে জায়গায় যেও না।
\v 38 তোমার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নূনের ছেলে যিহোশূয় সেই দেশে যাবে; তুমি তাকেই আশ্বাস দাও, কারণ সে ইস্রায়েলকে তা অধিকারের জন্য নেতৃত্ব দেবে।
\s5
\v 39 আর এরা শিকার হবে, এই কথা তোমরা নিজেদের যে ছেলেদের বিষয়ে বললে এবং তোমাদের যে ছেলেমেয়েদের ভাল মন্দ জ্ঞান আজ পর্যন্ত হয়নি, তারাই সেই জায়গায় যাবে; তাদেরকেই আমি সেই দেশ দেব এবং তারাই তা অধিকার করবে।
\v 40 কিন্তু তোমরা ফের, সূফসাগরের পথ দিয়ে মরুভূমিতে যাও।”
\s5
\v 41 তখন তোমরা উত্তর করে আমাকে বললে, “আমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি; আমরা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সমস্ত আদেশ অনুসারে উঠে গিয়ে যুদ্ধ করব।” পরে তোমরা প্রত্যেক জন যুদ্ধের অস্ত্রে সজ্জিত হলে এবং পার্বত্য অঞ্চলে আক্রমণ করার জন্য প্রস্তুত হলে।
\v 42 তখন সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তুমি তাদেরকে বল, তোমরা যুদ্ধ করতে যেও না, কারণ আমি তোমাদের মাঝখানে নেই; যদি শত্রুদের সামনে আহত হও।”
\s5
\v 43 আমি তোমাদেরকে সেই কথা বললাম, কিন্তু তোমরা সে কথায় কান দিলে না; বরং সদাপ্রভুর আদেশের বিরুদ্ধাচারণ করে ও দুঃসাহসী হয়ে পর্বতে উঠছিলে।
\v 44 আর সেই পাহাড় নিবাসী ইমোরীয়েরা তোমাদের বিরুদ্ধে বের হয়ে, মৌমাছি যেমন করে, তেমনি তোমাদেরকে তাড়া করল এবং সেয়ীরে হর্মা পর্যন্ত আঘাত করল।
\s5
\v 45 তখন তোমরা ফিরে আসলে ও সদাপ্রভুর কাছে কাঁদলে; কিন্তু সদাপ্রভু তোমাদের আওয়াজে কান দিলেন না, তোমাদের কথায় মনোযোগ দিলেন না।
\v 46 সুতরাং তোমাদের বসবাসের সময় অনুসারে কাদেশে অনেক দিন থাকলে।
\s5
\c 2
\p
\v 1 তখন সদাপ্রভু আমাকে যেমন বলেছিলেন, সেই অনুযায়ী আমরা ফিরে সূফসাগরের পথে মরুভূমির মধ্যে দিয়ে গেলাম এবং অনেক দিন ধরে সেয়ীর পর্বতের চারিদিকে ঘুরলাম।
\v 2 পরে সদাপ্রভু আমাকে বললেন,
\v 3 “তোমরা অনেক দিন এই পর্বতের চারিদিকে ঘুরছ; এখন উত্তরদিকে যাও।
\s5
\v 4 আর তুমি লোকদেরকে এই আদেশ দাও, ‘সেয়ীরে বসবাসকারী তোমাদের ভাইদের অর্থাৎ এষৌ বংশধরদের সীমার কাছ দিয়ে তোমাদেরকে যেতে হবে, আর তারা তোমাদের থেকে ভয় পাবে; অতএব তোমরা খুব সাবধান হও।
\v 5 তাদের সঙ্গে লড়াই কোরো না, কারণ আমি তোমাদেরকে তাদের দেশের অংশ দেব না, একটা পা রাখার জমিও দেব না; কারণ সেয়ীর পর্বত অধিকারের জন্য আমি এষৌকে দিয়েছি।
\s5
\v 6 তোমরা তাদের কাছে টাকা দিয়ে খাবার কিনে খাবে ও টাকা দিয়ে জলও কিনে পান করবে।
\v 7 কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার হাতের সব কাজে তোমাকে আশীর্বাদ করেছেন; এই বিশাল মরুভূমিতে তোমার যাত্রাপথ তিনি জানেন; এই চল্লিশ বছর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে আছেন; তোমার কিছুরই অভাব হয়নি।’”
\s5
\v 8 তাই আমরা অরাবা রাস্তা থেকে, এলৎ ও ইৎসিয়োন গেবর থেকে, সেয়ীরে বসবাসীকারী আমাদের ভাই, এষৌ বংশধরদের সামনে দিয়ে গেলাম। আর আমরা মোয়াবের মরুভূমির রাস্তা দিয়ে গেলাম।
\s5
\v 9 আর সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তুমি মোয়াবীয়দেরকে কষ্ট দিও না এবং যুদ্ধের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে লড়াই কর না; আমি অধিকারের জন্য তাদের দেশের কোনো অংশ তোমাকে দেব না; কারণ আমি লোটের বংশধরদেরকে আর্‌ শহর অধিকার করতে দিয়েছি।”
\s5
\v 10 (আগে ঐ জায়গায় এমীয়েরা বাস করত, তারা অনাকীয়দের মত মহৎ, অসংখ্য ও দীর্ঘকায় জাতি।
\v 11 অনাকীয়দের মত তারাও রফায়ীয়দের মধ্যে গণ্য, কিন্তু মোয়াবীয়েরা তাদেরকে এমীয় বলে।
\s5
\v 12 আর আগে হোরীয়েরাও সেয়ীরে বাস করত, কিন্তু এষৌর বংশধরেরা তাদেরকে তাড়িয়ে দিল। তাদের সামনে থেকে ধ্বংস করে তাদের জায়গায় বাস করল; যেমন ইস্রায়েল সদাপ্রভুর দেওয়া নিজের অধিকারের জায়গায় করল।)
\s5
\v 13 “এখন তোমরা ওঠ, সেরদ নদী পার হও।” তখন আমরা সেরদ নদী পার হলাম।
\v 14 কাদেশ বর্ণেয় থেকে সেরদ নদী পার হওয়া পর্যন্ত আমাদের যাওয়ার সময় আটত্রিশ বছর লেগেছিল; সেই সময়ের মধ্যে বংশের মধ্য থেকে তখনকার যোদ্ধারা সবাই ধ্বংস হল, যেমন সদাপ্রভু তাদের বিষয়ে শপথ করেছিলেন।
\v 15 আবার বংশের মধ্যে থেকে তাদেরকে ধ্বংস করার জন্য সদাপ্রভুর হাত তাদের বিরুদ্ধে ছিল।
\s5
\v 16 সেই সমস্ত যোদ্ধা মৃত লোকদের মধ্য থেকে ধ্বংস হলে পর
\v 17 সদাপ্রভু আমাকে বললেন,
\v 18 “আজ তুমি মোয়াবের সীমা অর্থাৎ আর পার হবে;
\v 19 যখন তুমি অম্মোনের লোকদের সামনে আসো, তখন তাদেরকে কষ্ট দিও না, ‘তাদের সঙ্গে লড়াই কর না; কারণ আমি তোমাকে অধিকার করার জন্য অম্মোনের লোকদের দেশের অংশ দেব না, কারণ আমি লোটের বংশধরদেরকে তা অধিকার করতে দিয়েছি।”
\s5
\v 20 সেই দেশও রফায়ীয়দের দেশ বলে গণ্য; রফায়ীয়েরা আগে সে জায়গায় বাস করত; কিন্তু অম্মোনীয়েরা তাদেরকে সম্‌সুস্মীয় বলে।
\v 21 তারা অনাকীয়দের মত মহৎ, অসংখ্য ও লম্বা এক জাতি ছিল, কিন্তু সদাপ্রভু ওদের সামনে থেকে তাদেরকে ধ্বংস করলেন; আর ওরা তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের জায়গায় বাস করল।
\v 22 তিনি সেয়ীর নিবাসী এষৌর লোকদের জন্যও সেরকম কাজ করলেন, ফলে তাদের সামনে থেকে হোরীয়দেরকে ধ্বংস করলেন, তাতে ওরা তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়ে এমন কি আজ পর্যন্ত তাদের জায়গায় বাস করছে।
\s5
\v 23 আর অব্বীয়রা, যারা ঘসা পর্যন্ত গ্রামগুলোতে বাস করত, তাদেরকে কপ্তোর থেকে আসা কপ্তোরীয়েরা ধ্বংস করে তাদের জায়গায় বাস করল।
\s5
\v 24 “তোমরা ওঠ, যাও, অর্ণোন উপত্যকা পার হও; দেখ, আমি হিষবোনের রাজা ইমোরীয় সীহোনকে ও তার দেশ তোমার হাতে দিলাম; তুমি ওটা অধিকার করতে শুরু কর ও যুদ্ধে তার সঙ্গে লড়াই কর।
\v 25 আজ থেকে আমি সমস্ত আকাশমণ্ডলের নীচে অবস্থিত মানুষের উপরে তোমার প্রতি আশঙ্কা ও ভয় স্থাপন করতে শুরু করব; তারা তোমার বিষয়ে শুনে ও তোমার ভয়ে কাঁপবে ও ব্যথা পাবে।”
\s5
\v 26 পরে আমি কদেমোৎ মরুভূমি থেকে হিষবোনের রাজা সীহোনের কাছে দূতের মাধ্যমে এই শান্তির বাক্য বলে পাঠালাম,
\v 27 “তুমি নিজের দেশের মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে দাও, আমি রাজপথ ধরেই যাব, ডান দিকে কি বাম দিকে ফিরব না।
\s5
\v 28 তুমি টাকার বিনিময়ে আমার কাছে খাবার বিক্রি করবে, যাতে আমি খেতে পারি; টাকার বিনিময়ে আমাকে জল দেবে, যেন আমি পান করতে পারি; শুধুমাত্র আমাকে পায়ে হেঁটে পার হতে দাও;
\v 29 সেয়ীর নিবাসী এষৌ বংশধরেরা ও আর্‌ নিবাসী মোয়াবীয়েরাও আমার প্রতি সেরকম করেছে।”
\s5
\v 30 কিন্তু হিষ্‌বোনের রাজা সীহোন তাঁর কাছ দিয়ে আমাদের যেতে দেননি, কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর মন কঠিন করলেন ও তাঁর হৃদয় শক্ত করলেন, যেন তোমার হাতে তাঁকে পরাজিত করেন, যেটি তিনি আজ করেছেন।
\v 31 আর সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “দেখ, আমি সীহোনকে ও তাঁর দেশকে তোমার সামনে দিতে শুরু করলাম; তুমিও তার দেশ অধিকার করতে শুরু কর।”
\s5
\v 32 তখন সীহোন ও তাঁর সমস্ত লোক আমাদের বিরুদ্ধে বের হয়ে যহসে যুদ্ধ করতে আসলেন।
\v 33 আর আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদের সামনে তাঁকে দিলেন এবং আমরা তাকে পরাজিত করলাম, আমরা তাঁকে, তাঁর ছেলেদেরকে ও তাঁর লোকদেরকে আঘাত করে মেরে ফেললাম।
\s5
\v 34 আর সেই সময়ে তাঁর সব শহর নিয়ে নিলাম এবং স্ত্রীলোক ও বালকবালিকা সমেত সব বসতি শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস করলাম; কাউকেও বাকি রাখলাম না;
\v 35 শুধু পশুদেরকে ও যে যে শহর নিয়ে নিয়েছিলাম, তার লুঠপাট করা জিনিস সব আমরা নিজেদের জন্য নিলাম।
\s5
\v 36 অর্ণোন উপত্যকার সীমাতে অবস্থিত অরোয়ের থেকে ও উপত্যকার মাঝখানের শহর থেকে গিলিয়দ পর্যন্ত সব শহর আমরা জয় করলাম; আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সমস্ত শত্রুকে জয় করে আমাদের সামনে দিলেন।
\v 37 শুধু অম্মোন বংশধরদের দেশ, যব্বোক নদীর পাশে অবস্থিত সব অঞ্চল ও পর্বতময় দেশের শহর সব এবং যে সব জায়গায় যেতে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিষেধ করেছিলেন, সেই সবের কাছে তুমি গেলে না।
\s5
\c 3
\p
\v 1 পরে আমরা ফিরে বাশনের রাস্তার দিকে গেলাম; তাতে বাশনের রাজা ওগ আসলেন তিনি ও তাঁর সমস্ত লোক আক্রমণ করলেন, আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ইদ্রিয়ীতে আসলেন।
\v 2 তখন সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তুমি ওকে ভয় কর না, কারণ আমি ওকে, ওর সমস্ত লোককে ও ওর দেশ তোমার হাতে সমর্পণ করলাম; তুমি যেমন হিষবোন নিবাসী ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের প্রতি করেছ, তেমনি ওর প্রতিও করবে।”
\s5
\v 3 এভাবে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বাশনের রাজা ওগকে ও তাঁর সব লোককে আমাদের হাতে সমর্পণ করলেন এবং আমরা তাঁকে আঘাত করে মেরে ফেললাম, তাঁর কেউ অবশিষ্ট থাকলো না।
\v 4 সেই সময়ে আমরা তাঁর সব শহর নিয়ে নিলাম; এমন এক শহরও থাকল না, যা তাদের থেকে নেয়নি; ষাটটি শহর, অর্গোবের সব অঞ্চল, বাশনে অবস্থিত ওগের রাজ্য নিলাম।
\s5
\v 5 সেই সব শহর উঁচু দেওয়াল, দরজা ও খিলের মাধ্যমে সুরক্ষিত ছিল; আর দেওয়াল ছাড়া অনেক শহরও ছিল।
\v 6 আমরা হিষবোনের রাজা সীহোনের প্রতি যেমন করেছিলাম, সেরকম তাদেরকে পুরোপুরি ধ্বংস করলাম, স্ত্রীলোক ও বালকবালিকা সমেত তাদের সব বসবাসের শহর সম্পূর্ণ বিনাশ করলাম।
\v 7 কিন্তু তাদের সমস্ত পশু ও শহরের জিনিসপত্র লুট করে নিজেদের জন্য নিলাম।
\s5
\v 8 সেই সময়ে আমরা যর্দনের পারে অবস্থিত ইমোরীয়দের দুই রাজার কাছ থেকে অর্ণোন উপত্যকা থেকে হর্মোণ পর্বত পর্যন্ত সব দেশ নিয়ে নিলাম।
\v 9 (সীদোনীয়েরা ঐ হর্মোণকে সিরিয়োণ বলে এবং ইমোরীয়েরা তাঁকে সনীর বলে।)
\v 10 আমরা সমভূমির সব শহর, সল্‌খা ও ইদ্রিয়ী পর্যন্ত সব গিলিয়দ এবং পুরো বাশন, বাশনে অবস্থিত ওগ রাজ্যের শহরগুলি নিয়ে নিলাম।
\s5
\v 11 (ফলে বাকি রফায়ীয়দের মধ্যে শুধু বাশনের রাজা ওগ বাকি ছিলেন; দেখ, তাঁর বিছানা লোহার; তা কি অম্মোন বংশধরদের রব্বা শহরে নেই? মানুষের হাতের পরিমাণ অনুসারে তা লম্বায় নয় হাত ও চওড়ায় চার হাত ছিল।)
\s5
\v 12 সেই সময়ে আমরা এই দেশ অধিকার করলাম; অর্ণোন উপত্যকায় অবস্থিত অরোয়ের থেকে এবং পর্বতময় গিলিয়দ দেশের অর্ধেক ও সেখানকার শহর সব রূবেণীয় ও গাদীয়দেরকে দিলাম।
\v 13 আর গিলিয়দের বাকি অংশ ও পুরো বাশন অর্থাৎ ওগের রাজ্য, পুরো বাশনের সঙ্গে অর্গোবের সমস্ত অঞ্চল আমি মনঃশির অর্ধেক বংশকে দিলাম। (সেটাই রফায়ীয় দেশ বলে বিখ্যাত।
\s5
\v 14 মনঃশির একজন বংশধর যায়ীর গশূরীয়দের ও মাখাথীয়দের সীমা পর্যন্ত অর্গোবের সব অঞ্চল নিয়ে নিজের নাম অনুসারে বাশন দেশের সেই সব জায়গার নাম হব্বোৎ যায়ীর রাখল; আজও সেই নাম প্রচলিত আছে।)
\s5
\v 15 আমি মাখীরকে গিলিয়দ দিলাম।
\v 16 আর গিলিয়দ থেকে অর্ণোন উপত্যকা পর্যন্ত, উপত্যকার মাঝখান ও তার সীমানা এবং অম্মোন বংশধরদের সীমা যব্বোক নদী পর্যন্ত;
\s5
\v 17 আর অরাবা উপত্যকা, যর্দন ও তার সীমানা, কিন্নেরৎ থেকে অরাবার সমুদ্র, অর্থাৎ পূর্বদিকে পিস্‌গা ঢালু জায়গার দিকে লবণসমুদ্র পর্যন্ত রূবেণীয় ও গাদীয়দেরকে দিলাম।
\s5
\v 18 আর আমি সেই সময়ে তোমাদেরকে এই আদেশ করলাম, “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারের জন্য এই দেশ তোমাদেরকে দিয়েছেন। তোমাদের সব যোদ্ধা সজ্জিত হয়ে তোমাদের ভাইদের অর্থাৎ ইস্রায়েলের লোকদের সামনে পার হয়ে যাবে।
\s5
\v 19 আমি তোমাদেরকে যে সব শহর দিলাম, তোমাদের সেই সব শহরে তোমাদের স্ত্রীলোক, বালক বালিকা ও পশুরা বাস করবে; আমি জানি যে, তোমাদের অনেক পশু আছে।
\v 20 পরে সদাপ্রভু তোমাদের ভাইদেরকে তোমাদের মতো বিশ্রাম দিলে, যর্দনের ওপারে যে দেশ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদেরকে দিচ্ছেন, তারাও সেই দেশ অধিকার করবে, তখন তোমরা প্রত্যেকে আমার দেওয়া নিজেদের অধিকারে ফিরে আসবে।”
\s5
\v 21 আর সেই সময়ে আমি যিহোশূয়কে আদেশ করলাম, “তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সেই দুই রাজার প্রতি যা করেছেন, তা তুমি নিজের চোখে দেখেছ; তুমি পার হয়ে যে যে রাজ্যের বিরুদ্ধে যাবে, সে সব রাজ্যের প্রতি সদাপ্রভু সেরকম করবেন।
\v 22 তোমরা তাদেরকে ভয় কর না; কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজে তোমাদের জন্য যুদ্ধ করবেন।”
\s5
\v 23 সেই সময়ে আমি সদাপ্রভুকে অনুরোধ করে বললাম,
\v 24 “হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমি নিজের দাসের কাছে নিজের মহিমা ও শক্তিশালী হাত দেখাতে শুরু করলে; তোমার কাজের মত কাজ ও তোমার পরাক্রমী কাজের মত কাজ করতে পারে, স্বর্গে কি পৃথিবীতে এমন ঈশ্বর কে আছে?
\v 25 অনুরোধ করি, আমাকে ওপারে গিয়ে যর্দনপারে অবস্থিত সেই ভালো দেশ, সেই ভালো পাহাড়ি দেশ ও লিবানোন দেখতে দাও।”
\s5
\v 26 কিন্তু সদাপ্রভু তোমাদের জন্য আমার বিরুদ্ধে রেগে যাওয়াতে আমার কথা শুনলেন না; সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “এটাই তোমার জন্য যথেষ্ট হোক, এ বিষয়ে আমাকে আর বল না।
\v 27 পিস্‌গার শৃঙ্গে ওঠ এবং পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব দিকে দেখ; তোমার চোখ দিয়ে দেখো, কারণ তুমি এই যর্দন পার হতে পারবে না।
\s5
\v 28 তার পরিবর্তে তুমি যিহোশূয়কে আদেশ দাও, তাকে উত্সাহ দাও এবং তাকে শক্তিশালী কর, কারণ সে এই লোকদের আগে গিয়ে পার হবে, আর যে দেশ তুমি দেখবে, সেই দেশ সে তাদেরকে অধিকার করাবে।”
\v 29 সুতরাং এইভাবে আমরা বৈৎ পিয়োরের বিপরীতে অবস্থিত উপত্যকায় বাস করলাম।
\s5
\c 4
\p
\v 1 এখন, হে ইস্রায়েল, আমি যে যে নিয়ম ও আদেশ পালন করতে তোমাদেরকে শিক্ষা দিই, তা শোন; যেন তোমরা বেঁচে থাকতে পার এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে যে দেশ দিচ্ছেন, তার মধ্যে গিয়ে তা অধিকার করতে পার।
\v 2 আমি তোমাদেরকে যা আদেশ করি, সেই কথায় তোমরা আর কিছু যোগ করবে না এবং তার কিছু কমাবে না। আমি তোমাদেরকে যা যা আদেশ করছি, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেই সব আদেশ পালন করবে।
\s5
\v 3 বাল পিয়োরের বিষয়ে সদাপ্রভু যা করেছিলেন, তা তোমরা নিজের চোখে দেখেছ; ফলে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু বাল পিয়োরের অনুসারী প্রত্যেক জনকে তোমার মধ্যে থেকে ধ্বংস করেছিলেন;
\v 4 কিন্তু তোমরা যত লোক তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুতে যুক্ত ছিলে, সবাই আজ জীবিত আছ।
\s5
\v 5 দেখ, আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাকে যেমন আদেশ করেছিলেন, আমি তোমাদেরকে সেরকম নিয়ম ও আদেশ শিক্ষা দিয়েছি; যেন, তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেই দেশের মধ্যে সেই অনুযায়ী ব্যবহার কর।
\v 6 অতএব তোমরা সে সব মেনে চল ও পালন কোরো; কারণ জাতি সকলের সামনে সেটাই তোমাদের প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় হবে; এই সব বিধি শুনে তারা বলবে, “সত্যই, এই মহাজাতি জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমান লোক।”
\s5
\v 7 কারণ কোন্‌ বড় জাতির কাছে এমন ঈশ্বর আছেন, যেমন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু? যখনই আমরা তাঁকে ডাকি, তিনি আমাদের সঙ্গে থাকেন।
\v 8 আর আমি আজ তোমাদের সামনে যে সব ব্যবস্থা দিচ্ছি, তার মত সঠিক নিয়ম ও আদেশ কোন্‌ বড় জাতির আছে?
\s5
\v 9 কিন্তু তুমি নিজের বিষয়ে মনোযোগ দাও, তোমার প্রাণের বিষয়ে খুব সাবধান থাক; অতএব তুমি যে সব বিষয় নিজের চোখে দেখেছ, তা ভুলে যাও; অতএব জীবন থাকতে তোমার হৃদয় থেকে তা মুছে যাক; তুমি নিজের ছেলে নাতিদেরকে তা জানাও।
\v 10 সেই দিন, তুমি হোরেবে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়েছিলে, যখন সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তুমি আমার কাছে লোকদেরকে জড়ো কর, আমি আমার কথা সব তাদেরকে শোনাব; তারা পৃথিবীতে যতদিন বেঁচে থাকে, ততদিন যেন আমাকে ভয় করে, এই বিষয় তারা শিখবে এবং নিজের ছেলেমেয়েদেরকেও শেখাবে।”
\s5
\v 11 তাতে তোমরা কাছে এসে পর্বতের পাদদেশে দাঁড়িয়েছিলে এবং আকাশের ভিতর পর্যন্ত সেই পর্বত আগুনে জ্বলছিল, অন্ধকার, মেঘ ও ঘন অন্ধকার ছড়িয়ে ছিল।
\v 12 তখন আগুনের মধ্যে থেকে সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে কথা বললেন; তোমরা কথার স্বর শুনছিলে, কিন্তু কোনো মূর্তি দেখতে পেলে না, তোমরা শুধু রব শুনতে পেলে।
\s5
\v 13 আর তিনি নিজের যে নিয়ম পালন করতে তোমাদেরকে আজ্ঞা করলেন, সেই নিয়ম অর্থাৎ দশ আজ্ঞা তোমাদেরকে আদেশ করলেন এবং দুটি পাথরের ফলকে লিখলেন।
\v 14 তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেই দেশে তোমাদের পালন করা নিয়ম ও আদেশ সব তোমাদেরকে শিক্ষা দিতে সদাপ্রভু সেই সময়ে আমাকে আদেশ করলেন।
\s5
\v 15 যে দিন সদাপ্রভু হোরেবে আগুনের মধ্যে থেকে তোমাদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, সেই দিন তোমরা কোনো মূর্তি দেখনি; অতএব নিজের নিজের প্রাণের বিষয়ে খুব সাবধান হও;
\v 16 যদি তোমরা নষ্ট হয়ে নিজেদের জন্য কোনো আকারের মূর্তিতে খোদাই প্রতিমা তৈরী কর;
\v 17 যদি পুরুষের বা স্ত্রীর প্রতিমূর্তি, পৃথিবীতে অবস্থিত কোনো পশুর প্রতিমূর্তি, আকাশে উড়া কোনো পাখির প্রতিমূর্তি,
\v 18 মাটিতে বুঁকে হেঁটে চলা কোনো প্রাণীর প্রতিমূর্তি, অথবা মাটির নীচে জলের মধ্যে কোনো মাছের প্রতিমূর্তি তৈরী কর;
\s5
\v 19 আর আকাশের প্রতি চোখ তুলে সূর্য, চাঁদ ও তারা, আকাশের সমস্ত বাহিনী দেখলে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যাদেরকে সমস্ত আকাশমণ্ডলের নীচে অবস্থিত সমস্ত জাতির জন্য ভাগ করেছেন, যদি আকৃষ্ট হয়ে তাদের কাছে আরাধনা কর ও তাদের সেবা কর।
\v 20 কিন্তু সদাপ্রভু তোমাদেরকে গ্রহণ করেছেন, লোহার হাফর থেকে, মিসর থেকে তোমাদেরকে বের করে এনেছেন, যেন তোমরা তাঁর উত্তরাধিকারী লোক হও, যেমন আজ আছ।
\s5
\v 21 আর তোমাদের জন্য সদাপ্রভু আমার প্রতিও রেগে গিয়ে এই শপথ করেছেন যে, তিনি আমাকে যর্দন পার হতে দেবেন না এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ অধিকারের জন্য দিচ্ছেন, সেই উত্তম দেশে আমাকে যেতে দেবেন না।
\v 22 প্রকৃতপক্ষে এই দেশেই আমাকে মারা যেতে হবে; আমি যর্দন পার হয়ে যাব না; কিন্তু তোমরা পার হয়ে সেই উত্তম দেশ অধিকার করবে।
\s5
\v 23 তোমরা নিজেদের বিষয়ে সাবধান থেকো, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করেছেন, তা ভুলে যেও না, কোনো বস্তুর মূর্তিবিশিষ্ট খোদাই করা প্রতিমা তৈরী কোরো না; ওটা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিষিদ্ধ।
\v 24 কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু গ্রাসকারী আগুনের মতো; তিনি স্বগৌরব রক্ষণে উদ্যোগী ঈশ্বর।
\s5
\v 25 সেই দেশে ছেলে নাতিদের জন্ম দিয়ে বহু দিন বাস করার পর যদি তোমরা ভ্রষ্ট হও ও কোনো বস্তুর মূর্তিবিশিষ্ট ক্ষোদিত প্রতিমা তৈরী কর এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা খারাপ, তা করে তাঁকে অসন্তুষ্ট কর;
\v 26 তবে আমি আজ তোমাদের বিরুদ্ধে স্বর্গ পৃথিবীকে সাক্ষী মেনে বলছি, তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যর্দন পার হয়ে যাচ্ছ, সেই দেশ থেকে তাড়াতাড়ি বিনষ্ট হবে, সেখানে বহু দিন থাকবে না, কিন্তু সম্পূর্ণ ধ্বংস হবে।
\s5
\v 27 আর সদাপ্রভু জাতিদের মধ্যে তোমাদেরকে ছিন্ন ভিন্ন করবেন; যেখানে সদাপ্রভু তোমাদেরকে নিয়ে যাবেন, সেই জাতিদের মধ্যে তোমরা অল্পসংখ্যক হয়ে অবশিষ্ট থাকবে।
\v 28 আর তোমরা সেখানে মানুষের হাতে তৈরী দেবতাদের দেখা, শোনা, খাওয়ায় ও ঘ্রাণে অসমর্থ কাঠ ও পাথরের সেবা করবে।
\s5
\v 29 কিন্তু সেখানে থেকে যদি তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর খোঁজ কর, তবে তাঁর খোঁজ পাবে; সমস্ত হৃদয়ের সঙ্গে ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তাঁর খোঁজ করলেই পাবে।
\s5
\v 30 যখন তুমি সঙ্কটে পড় এবং এই সব তোমার প্রতি ঘটে, তখন ভবিষ্যতে তুমি তোমার ঈশ্বর সদপ্রভুর দিকে ফিরবে ও তাঁর স্বর শুনবে।
\v 31 কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু কৃপাময় ঈশ্বর; তিনি তোমাকে ত্যাগ করবেন না, তোমাকে ধ্বংস করবেন না এবং শপথের মাধ্যমে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে যে নিয়ম করেছেন, তা ভুলে যাবেন না।
\s5
\v 32 কারণ পৃথিবীতে ঈশ্বরের মাধ্যমে মানুষের সৃষ্টির দিন থেকে তোমার আগে যে সময় গিয়েছে, সেই পুরোনো সময়কে এবং আকাশমণ্ডলের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তকে জিজ্ঞাসা কর, এই মহৎ কাজের মত কাজ কি আর কখনও হয়েছে? অথবা এমন কি শোনা গিয়েছে?
\v 33 তোমার মত কি আর কোনো জাতি আগুনের মধ্যে থেকে ঈশ্বরের স্বর শুনে বেঁচেছে?
\s5
\v 34 অথবা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু মিসরে তোমাদের সামনে যে সব কাজ করেছেন, ঈশ্বর কি সেই অনুযায়ী গিয়ে পরীক্ষা, চিহ্ন, বিস্ময়, যুদ্ধ, শক্তিশালী হাত, বিশাল ক্ষমতা প্রদর্শন এবং মহা ভয়ঙ্কর কাজের মাধ্যমে অন্য জাতির মধ্যে থেকে নিজের জন্য এক জাতি গ্রহণ করতে চেষ্টা করেছেন?
\s5
\v 35 সদাপ্রভুই ঈশ্বর, তিনি ছাড়া আর কেউ নেই, এটা যেন তুমি জানো, তার জন্য ঐ সব তোমাকেই দেখানো হল।
\v 36 নির্দেশ দেবার জন্য তিনি স্বর্গ থেকে তোমাকে নিজের স্বর শোনালেন ও পৃথিবীতে তোমাকে নিজের বিশাল আগুন দেখালেন এবং তুমি আগুনের মধ্যে থেকে তাঁর কথা শুনতে পেলে।
\s5
\v 37 তিনি তোমরা পূর্বপুরুষদেরকে ভালোবাসতেন, তাই তাঁদের পরে তাঁদের বংশকেও বেছে নিলেন এবং নিজের অস্তিত্ব ও বিশাল ক্ষমতার মাধ্যমে তোমাকে মিসর দেশ থেকে বের করে আনলেন;
\v 38 যেন তোমার থেকে মহান ও শক্তিশালী জাতিদেরকে তোমার সামনে থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের দেশে তোমাকে প্রবেশ করান ও অধিকারের জন্য তোমাকে সে দেশ দেন, যেমন আজ দেখছ।
\s5
\v 39 অতএব আজ জানো, মনে রাখ যে, উপরে অবস্থিত স্বর্গে ও নীচে অবস্থিত পৃথিবীতে সদাপ্রভুই ঈশ্বর, অন্য কেউ নেই।
\v 40 আর তোমার মঙ্গল ও তোমার পরে যে সন্তানরা আসতে চলেছে তাদের যেন মঙ্গল হয় এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে ভূমি চিরকালের জন্য দিচ্ছেন, তার উপরে যেন তুমি দীর্ঘদিন বেঁচে থাক, এই জন্য আমি তাঁর যে সব বিধি ও আজ্ঞা আজ তোমাকে আদেশ করলাম, তা পালন কোরো।
\s5
\v 41 তারপর মোশি যর্দন নদীর পূর্ব দিকে তিনটি শহর আলাদা করলেন;
\v 42 যেন হত্যাকারী সেখানে পালাতে পারে; যে কেউ নিজের প্রতিবাসীকে আগে শত্রুতা না করে অনিচ্ছাকৃতভাবে হত্যা করে, সে যেন এই সকলের মধ্যে কোনো এক শহরে পালিয়ে গিয়ে বাঁচতে পারে;
\v 43 তিনটি শহর হল, রূবেণীয়দের জন্য সমভূমি, মরুভূমির বেৎসর, গাদীয়দের জন্য গিলিয়দে অবস্থিত রামোৎ এবং মনঃশীয়দের জন্য বাশনে অবস্থিত গোলন।
\s1 মোশির দ্বিতীয় বক্তৃতা।
\s2 দশ আজ্ঞার পুনরুক্তি।
\p
\s5
\v 44 মোশি ইস্রায়েলের লোকদের সামনে এই ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন;
\v 45 মিসর থেকে বার হয়ে আসলে মোশি যর্দনের পূর্বপারে, বৈৎ পিয়োরের সামনে অবস্থিত উপত্যকাতে, হিষবোন নিবাসী ইমোরীয় রাজা সীহোনের দেশে ইস্রায়েলের লোকদের কাছে এই সব সাক্ষ্য, বিধি ও শাসনের কথা বলেছিলেন।
\v 46 মিসর থেকে বের হয়ে আসলে মোশি ও ইস্রায়েলের লোকেরা সেই রাজাকে আঘাত করেছিলেন
\s5
\v 47 এবং তাঁর ও বাশনের রাজা ওগের দেশ, যর্দনের পূর্ব পারে ইমোরীয়দের এই দুই রাজার দেশ,
\v 48 অর্ণোন উপত্যকার সীমাতে অবস্থিত অরোয়ের থেকে সীওন পর্বত অর্থাৎ হর্মোণ পর্যন্ত সমস্ত দেশ
\v 49 এবং পিস্‌গা পর্বতের নীচে অবস্থিত অরাবা উপত্যকার সমুদ্র পর্যন্ত যর্দনের পূর্বদিকে অবস্থিত সমস্ত অরাবা উপত্যকা অধিকার করেছিলেন।
\s5
\c 5
\p
\v 1 তখন মোশি সমস্ত ইস্রায়েলকে ডাকলেন ও তাদেরকে বললেন, “শোনো, হে ইস্রায়েল, আমি তোমাদের কানে আজ যে সব বিধি ও শাসন বলি, সে সব শোনো, তোমরা তা শেখ ও যত্নসহকারে পালন কর।
\v 2 আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু হোরেবে আমাদের সঙ্গে এক নিয়ম করেছেন।
\v 3 সদাপ্রভু আমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে সেই নিয়ম করেননি, কিন্তু আজ এই জায়গায় যারা বেঁচে আছি যে আমরা, আমাদেরই সঙ্গে করেছেন।
\s5
\v 4 সদাপ্রভু পর্বতে আগুনের মধ্যে থেকে তোমাদের সঙ্গে মুখোমুখি হয়ে কথা বললেন।
\v 5 সেই সময়ে আমিই তোমাদেরকে সদাপ্রভুর কথা জানানোর জন্য সদাপ্রভু ও তোমাদের মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলাম; কারণ তোমরা আগুনকে ভয় পেয়েছিলে এবং তোমরা পর্বতে ওঠনি। তিনি বললেন,
\v 6 ‘আমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি মিসর দেশ থেকে, দাসত্বের ঘর থেকে, তোমাদের বের করে এনেছেন।
\s5
\v 7 আমার সামনে তোমার অন্য দেবতা না থাকুক।
\v 8 তুমি তোমার জন্য খোদাই করা প্রতিমা তৈরী কর না; উপরে অবস্থিত স্বর্গে, নীচে অবস্থিত পৃথিবীতে ও পৃথিবীর নীচে অবস্থিত জলে যা যা আছে, তাদের কোনো মূর্তি তৈরী কর না;
\s5
\v 9 তুমি তাদের কাছে নত হয়ো না এবং তাদের সেবা কর না; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আমি ঈর্ষাপরায়ণ ঈশ্বর; আমি পূর্বপুরুষদের অপরাধের শাস্তি ছেলেমেয়েদের ওপরে দিই, যারা আমাকে ঘৃণা করে, তাদের তৃতীয় চতুর্থ প্রজন্ম পর্যন্ত দিই;
\v 10 কিন্তু যারা আমাকে ভালবাসে ও আমার আজ্ঞা সব পালন করে, আমি তাদের হাজার পুরুষ পর্যন্ত দয়া করি।
\s5
\v 11 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম অনর্থক নিয় না, কারণ যে কেউ তাঁর নাম অনর্থক নেয়, সদাপ্রভু তাকে নির্দোষ করবেন না।
\s5
\v 12 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আদেশ করেছেন তেমন বিশ্রামদিন পালন করে পবিত্র কোরো।
\v 13 কারণ ছয় দিন পরিশ্রম কোরো এবং নিজের সব কাজ কোরো;
\v 14 কিন্তু সপ্তম দিন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য বিশ্রামদিন; এই দিনে তুমি কোনো কাজ কর না, না তুমি, না তোমার ছেলে, না তোমার মেয়ে, না তোমার দাস দাসী, না তোমার গোরু, না গাধা, না অন্য কোনো পশু, না তোমার ফটকের মাঝখানের বিদেশী, কেউ কোনো কাজ কর না; তোমার দাস ও তোমার দাসী যেন তোমার মতো বিশ্রাম পায়।
\s5
\v 15 মনে রেখো, মিসর দেশে তুমি দাস ছিলে এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত ও ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে সেখান থেকে তোমাকে বের করে এনেছেন; এই জন্য তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু বিশ্রামদিন পালন করতে তোমাকে আদেশ দিয়েছেন।
\s5
\v 16 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যেমন আদেশ করেছেন তোমার বাবাকে ও তোমার মাকে সম্মান কোরো; যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দেন, সেই দেশে তুমি দীর্ঘদিন বেঁচে থাক ও তোমার সঙ্গে যেন ভালো হয়।
\s5
\v 17 তোমরা নরহত্যা কোরো না।
\v 18 তোমরা ব্যভিচার কোরো না।
\v 19 তোমরা চুরি কোরো না।
\v 20 তোমরা প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না।
\s5
\v 21 তোমরা প্রতিবেশীর স্ত্রীতে লোভ কোরো না; প্রতিবাসীর বাড়িতে কি ক্ষেতে, কিংবা তার দাসে কি দাসীতে, কিংবা তার গোরুতে কি গাধাতে, প্রতিবেশীর কোনো জিনিসেই লোভ কোরো না।
\s5
\v 22 সদাপ্রভু পর্বতে আগুনের, মেঘের ও ঘন অন্ধকারের মধ্যে থেকে তোমাদের সমস্ত সমাজের কাছে এই সমস্ত কথা উচ্চ স্বরে বলেছিলেন, তিনি আর কোনো কথা যোগ করেননি। পরে তিনি এই সমস্ত কথা দুটি পাথরের ফলকে লিখে আমাকে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 23 যখন তোমরা অন্ধকারের মধ্যে থেকে সেই রব শুনতে পেলে এবং আগুনে পর্বত জ্বলছিল, তখন তোমরা, তোমাদের বংশের প্রধানরা ও প্রাচীনরা সবাই আমার কাছে এসে বললে।
\v 24 তুমি বললে, ‘দেখ, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদের কাছে নিজের প্রতাপ ও মহিমা দেখালেন এবং আমরা আগুনের মধ্যে থেকে তাঁর রব শুনতে পেলাম; আজ আমরা দেখেছি যে যখন ঈশ্বর মানুষের সঙ্গে কথা বলেন, তারা বাঁচতে পারে।
\s5
\v 25 কিন্তু আমরা এখন কেন মারা যাব? ঐ বিশাল আগুন তো আমাদেরকে গ্রাস করবে; আমরা যদি আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রব আবার শুনি, তবে মারা যাব।
\v 26 কারণ মানুষের মধ্যে এমন কে আছে যে, আমরা যেমন করেছি আমাদের মতো আগুনের মধ্যে থেকে জীবন্ত ঈশ্বরের রব শুনে বেঁচেছে?
\v 27 তোমার জন্য, তুমি যাও এবং আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যে সব কথা বলেন, তা শোনো; আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যা যা বলবেন, সেই সব কথা তুমি আমাদেরকে বল; আমরা তা শুনে পালন করব।
\s5
\v 28 তোমরা যখন আমাকে এই কথা বললে, তখন সদাপ্রভু তোমাদের সেই কথার রব শুনলেন; তিনি আমাকে বললেন, ‘আমি এই সব লোকদের কথা শুনেছি, তারা যা তোমাকে বলেছে; তারা যা বলেছে তা ভালই বলেছে।
\v 29 আহা, সবসময় আমাকে ভয় করতে ও আমার আদেশ সব পালন করতে যদি ওদের এরকম মন থাকে, তবে ওদের ও তাদের ছেলেমেয়েদের চিরকাল ভালো হবে।
\v 30 যাও তাদেরকে বল, “তোমাদের তাঁবুতে ফিরে যাও।”
\s5
\v 31 কিন্তু তুমি আমার কাছে এই জায়গায় দাঁড়াও, তুমি ওদেরকে যা যা শেখাবে, আমি তোমাকে সেই সমস্ত আজ্ঞা, বিধি ও শাসন শেখাবো; যেন আমি যে দেশ অধিকারের জন্য ওদেরকে দিচ্ছি, সেই দেশে ওরা তা পালন করে।’
\s5
\v 32 অতএব তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে যেমন আদেশ দিলেন, তা পালন করবে, তুমি ডান দিকে কি বাম দিকে ঘুরবে না।
\v 33 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে যে আদেশ দিলেন, সেই সব পথে চলবে; যেন তোমরা বাঁচতে পার ও তোমাদের ভালো হয় এবং যে দেশ তোমরা অধিকার করবে, সেখানে তোমাদের দীর্ঘায়ু হয়।
\s5
\c 6
\ms আদেশ পালন করতে অনুরোধ।
\p
\v 1 তোমাদেরকে শিক্ষা দেবার জন্যে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাকে এই আজ্ঞা, বিধি ও শাসন আদেশ করেছেন; যেন তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যর্দন পার হয়ে যাচ্ছ, সেই দেশে সে সব পালন কর;
\v 2 যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে তুমি ভয় কর, তোমার ছেলে ও তোমার নাতিরা সারাজীবন আমার দেওয়া আদেশ সব পালন কর, এইভাবে যেন তোমাদের দীর্ঘায়ু হয়।
\s5
\v 3 অতএব হে ইস্রায়েল, শোনো, এ সব পালন কর, তাতে তোমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যেমন বলেছেন, সেই অনুসারে দুধ ও মধু প্রবাহী দেশে তোমার ভালো হবে ও তোমরা বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে।
\s5
\v 4 হে ইস্রায়েল, শোনো; আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এক;
\v 5 আর তুমি তোমার সমস্ত হৃদয়, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত শক্তি দিয়ে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবাসবে।
\s5
\v 6 আর এই যে সব কথা আমি আজ তোমাকে আদেশ করছি, তা তোমার হৃদয়ে থাকবে
\v 7 এবং তোমরা তোমাদের ছেলেময়েদেরকে যত্ন সহকারে শিক্ষা দেবে এবং বাড়িতে বসার কিংবা রাস্তায় চলার সময়ে এবং শোয়ার সময় কিংবা ঘুম থেকে ওঠার সময়ে ঐসব বিষয়ে কথাবার্তা বলবে।
\s5
\v 8 আর তোমার হাতে চিহ্নের মতো সে সব বেঁধে রাখবে ও সে সব তোমার দুই চোখের মাঝে বেঁধে রাখবে।
\v 9 আর তোমার ঘরের দরজার কবাটে ও তোমার ফটকে তা লিখে রাখবে।
\s5
\v 10 তোমার পূর্বপুরুষ অব্রাহামের, ইস্‌হাকের ও যাকোবের কাছে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিতে শপথ করেছেন, সে দেশে তিনি তোমাকে নিয়ে গেলে পর তুমি যা নির্মাণ করনি, এমন বিশাল ও সুন্দর শহর
\v 11 এবং যাতে কিছুই সঞ্চয় করনি, ভালো ভালো জিনিসে পরিপূর্ণ এমন সব বাড়ি যা তৈরী করনি, এমন সব কুয়ো যা খনন করনি, এমন সব আঙ্গুরক্ষেত ও জিত গাছ যা রোপণ করনি, তুমি খাবে এবং সন্তুষ্ট হবে,
\v 12 তারপর সাবধান থেকো যেন তুমি সদাপ্রভুকে ভুলে না যাও, যিনি মিসর দেশ থেকে, দাসত্বের বাড়ি থেকে, তোমাকে বের করে এনেছেন।
\s5
\v 13 তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকেই সম্মান করবে, তাঁরই উপাসনা করবে ও তাঁরই নামে শপথ করবে।
\v 14 তোমরা অন্য দেবতাদের, চারদিকের জাতিদের দেবতাদের অনুসারী হয়ো না;
\v 15 কারণ তোমার মাঝে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু স্ব গৌরব রক্ষণশীল ঈশ্বর পাছে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রাগ তোমার বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠে, আর তিনি পৃথিবী থেকে তোমাকে ধ্বংস করেন।
\s5
\v 16 তোমরা মঃসাতে যেমন করেছিলে, তেমনি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর পরীক্ষা কর না।
\v 17 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞা, সাক্ষ্য ও বিধি সকল যত্ন সহকারে পালন করবে।
\s5
\v 18 আর সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা সঠিক ও ভালো, তাই করবে, যেন তোমার ভালো হয়; এবং সদাপ্রভু যে দেশের বিষয়ে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে এই শপথ করেছেন যে, তিনি তোমার সামনে থেকে তোমার সমস্ত শত্রুকে তাড়িয়ে দেবেন,
\v 19 যেন তুমি সদাপ্রভুর কথা অনুসারে সেই উত্তম দেশে প্রবেশ করে তা অধিকার করতে পার।
\s5
\v 20 আগামী দিনে যখন তোমার ছেলে জিজ্ঞাসা করবে, “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে যে সব সাক্ষ্য, বিধি ও শাসন আদেশ করেছেন, সে সবের অর্থ কি?”
\v 21 তখন তুমি তোমার ছেলেকে বলবে, “আমরা মিসর দেশে ফরৌণের দাস ছিলাম, আর সদাপ্রভু শক্তিশালী হাতে মিসর থেকে আমাদের বের করে এনেছেন
\v 22 এবং আমাদের সামনে সদাপ্রভু মিসরে, ফরৌণে ও তাঁর সমস্ত বংশে মহৎ ও কষ্টকর নানা চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণ দেখালেন
\v 23 এবং তিনি আমাদেরকে সেখান থেকে বের করে এনেছেন, যেন তিনি আমাদেরকে নিয়ে আসেন, যেন আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে দেশ দেবার জন্য শপথ করেছিলেন।
\s5
\v 24 আর সদাপ্রভু আমাদেরকে এই সমস্ত বিধি পালন করতে, আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করতে আজ্ঞা করলেন, যেন সারাজীবন আমাদের ভালো হয়, আর তিনি আজকের মত যেন আমাদেরকে জীবন্ত রাখেন।
\v 25 যদি আমরা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে তাঁর সামনে এই সমস্ত বিধি পালন করলে আমাদের ধার্মিকতা হবে।
\s5
\c 7
\ms কনানীয়দের থেকে আলাদা থাকতে নির্দেশ।
\p
\v 1 তুমি যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেই দেশে যখন তোমরা ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে নিয়ে যাবেন ও তোমার সামনে থেকে অনেক জাতিকে, হিত্তীয়, গির্গাশীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়, তোমার থেকে বড় ও শক্তিশালী এই সাত জাতিকে, তাড়িয়ে দেবেন;
\s5
\v 2 এবং সদাপ্রভু তোমার ঈশ্বর যখন তোমাকে তাদের থেকে জয়ী করবেন যখন তুমি যুদ্ধে তাদের সম্মুখীন হবে এবং তুমি তাদেরকে আঘাত করবে, তখন তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করবে; তাদের সঙ্গে কোনো চুক্তি করবে না বা তাদের প্রতি দয়া করবে না।
\v 3 আর তাদের সঙ্গে বিয়ের সম্বন্ধ করবে না; তুমি তাদের ছেলেকে তোমার মেয়ে দেবে না ও আপন ছেলের জন্য তাদের মেয়েকে গ্রহণ করবে না।
\s5
\v 4 কারণ সে তোমার ছেলেকে আমার অনুসরণ থেকে ফেরাবে, আর তারা অন্য দেবতাদের সেবা করবে; তাই তোমাদের প্রতি সদাপ্রভুর রাগ জ্বলে উঠবে এবং তিনি তোমাকে তাড়াতাড়ি ধ্বংস করবেন।
\v 5 তোমরা তাদের প্রতি এরকম ব্যবহার করবে; তাদের যজ্ঞবেদি সব ভেঙ্গে ফেলবে, তাদের থাম সব ভেঙ্গে ফেলবে, তাদের আশেরা মূর্তি সব কেটে ফেলবে এবং তাদের খোদাই করা প্রতিমা সব আগুনে পুড়িয়ে দেবে।
\s5
\v 6 কারণ তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর পবিত্র লোক; পৃথিবীতে যত লোক আছে, সে সবের মধ্যে তার নিজস্ব লোক করার জন্য তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকেই বেছেছেন।
\s5
\v 7 অন্য সব লোকের থেকে তোমরা সংখ্যায় বেশি, এই জন্য যে সদাপ্রভু তোমাদেরকে ভালোবেসেছেন ও বেছে নিয়েছেন, তা না; কারণ সব লোকের মধ্যে তোমরা কয়েকজন ছিলে।
\v 8 কিন্তু সদাপ্রভু তোমাদেরকে ভালবাসেন এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে শপথ করেছেন, তা রক্ষা করেন, তার জন্যে সদাপ্রভু শক্তিশালী হাতের মাধ্যমে তোমাদেরকে বের করে এনেছেন এবং দাসের বাড়ি থেকে, মিসরের রাজা ফরৌণের হাত থেকে, তোমাদেরকে উদ্ধার করেছেন।
\s5
\v 9 অতএব তুমি জানো যে, সদাপ্রভুই তোমার ঈশ্বর, তিনিই ঈশ্বর, তিনি বিশ্বস্ত ঈশ্বর, যারা তাঁকে ভালবাসে ও তাঁর আদেশ পালন করে, তাদের জন্য হাজার প্রজন্ম পর্যন্ত দয়া ও নিয়ম রক্ষা করেন।
\v 10 কিন্তু যারা তাঁকে ঘৃণা করে, তাদেরকে ধ্বংস করে তাদের সামনে প্রতিশোধ দেন; তিনি তাঁর বিদ্বেষীর ওপরে ক্ষমাশীল হন না, তাঁর সামনেই তাকে প্রতিশোধ দেন।
\v 11 অতএব আমি আজ তোমাকে যে আদেশ ও যে সব বিধি ও ব্যবস্থা বলি, সে সব পালন করবে।
\s5
\v 12 তোমরা যদি এই সব আদেশ শোনো এবং সব রক্ষা ও পালন কর, তবে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে যে নিয়ম ও দয়ার বিষয়ে শপথ করেছেন, তোমার পক্ষে তা রক্ষা করবেন
\v 13 তিনি তোমাকে ভালবাসবেন, আশীর্বাদ করবেন ও বহুগুণ করবেন; আর তিনি যে দেশ তোমাকে দিতে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছেন, সেই দেশে তোমার গর্ভের ফল, তোমার মাটির ফল, তোমার শস্য, তোমার আঙ্গুর রস, তোমার তেল, তোমার গোরুদের শাবক ও তোমার মেষদের পাল, এই সব কিছুতে আশীর্বাদ করবেন।
\s5
\v 14 সব লোকেদের থেকে তুমি আশীর্বাদ যুক্ত হবে, তোমার মধ্যে কি তোমার পশুদের মধ্যে কোনো পুরুষ কিম্বা কোনো স্ত্রী নিঃসন্তান হবে না।
\v 15 আর সদাপ্রভু তোমার থেকে সব রোগ দূর করবেন; এবং মিশরীয়দের যে সকল খারাপ রোগ তুমি জানো, তা তোমাকে দেবেন না, কিন্তু তোমার সব ঘৃণাকারীকে দেবেন।
\s5
\v 16 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার হাতে যে সব লোকদেরকে সমর্পণ করবেন, তুমি তাদেরকে গ্রাস করবে; তোমার চোখ তাদের প্রতি দয়া না করুক এবং তুমি তাদের দেবতাদের সেবা কর না, কারণ তা তোমার জন্য একটি ফাঁদ হবে।
\s5
\v 17 যদি তুমি মনে মনে বল, “এই জাতিরা আমার থেকেও বহুসংখ্যক, আমি কেমন করে এদেরকে অধিকারহীন করব?”
\v 18 তুমি তাদেরকে ভয় পেও না; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু ফরৌণের ও সমস্ত মিসরের প্রতি যা করেছেন,
\v 19 আর মহা কষ্টভোগ যে সব তুমি নিজের চোখে দেখেছ এবং যে সব চিহ্ন, অদ্ভুত লক্ষণ এবং যে শক্তিশালী হাত ও ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে বের করে এনেছেন, সেই সব নিশ্চয়ই মনে রাখবে; তুমি যাদেরকে ভয় করছ, সেই সব লোকের প্রতি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সেরকম করবেন।
\s5
\v 20 তাছাড়া যারা অবশিষ্ট থেকে তোমার অস্তিত্ব থেকে নিজেদেরকে লুকাবে, যতক্ষণ তাদের বিনাশ না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদের মধ্যে ভীমরুল পাঠাবেন।
\v 21 তুমি তাদের থেকে ভীত হয়ো না, কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে, তিনি মহান ও ভয়ঙ্কর ঈশ্বর।
\v 22 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সামনে থেকে ঐ জাতিদেরকে কিছু কিছু করে তাড়িয়ে দেবেন; তুমি তাদেরকে একসঙ্গে ধ্বংস করতে পারবে না পাছে তোমার চারপাশে বন্যপশুরা বেড়ে ওঠে।
\s5
\v 23 কিন্তু তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সামনে তাদেরকে সমর্পণ করবেন এবং যে পর্যন্ত তারা ধ্বংস না হয়, ততক্ষণ মহাভ্রান্তিতে তাদেরকে ভ্রান্ত করবেন।
\v 24 আর তিনি তাদের রাজাদেরকে তোমার অধিকারে দেবেন এবং তুমি আকাশমণ্ডলের নীচে থেকে তাদের নাম ধ্বংস করবে; যে পর্যন্ত তাদেরকে ধ্বংস না করবে, ততক্ষণ তোমার সামনে কেউ দাঁড়াতে পারবে না।
\s5
\v 25 তোমরা তাদের খোদাই করা প্রতিমা সব আগুনে পুড়িয়ে দেবে; তুমি যেন ফাঁদে না পড়, এই জন্য তাদের গায়ের রুপো কি সোনা লোভ করবে না ও নিজের জন্য তা গ্রহণ করবে না, কারণ তা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘৃণ্য বস্তু;
\v 26 আর তুমি ঘৃণ্য বস্তু নিজের গৃহে আনবে না এবং পূজা করবে না, ফলে তার মত বর্জিত হও; কিন্তু তা একদম ঘৃণা করবে ও অবজ্ঞা করবে, যেহেতু তা বাদ দেওয়া জিনিস।
\s5
\c 8
\s ইস্রায়েলের প্রতি ঈশ্বরের দয়া।
\p
\v 1 আজ আমি তোমাদেরকে যে সব আদেশ দিচ্ছি, তোমরা সে সব পালন করবে, যেন বাঁচতে পার ও বহুগুণ হও এবং সদাপ্রভু যে দেশের বিষয়ে তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছেন, সেই দেশে প্রবেশ কর এবং অধিকার কর।
\v 2 আর তুমি সে সব পথ মনে রাখবে, যে পথে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে এই চল্লিশ বছর মরুভূমিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন, যেন তোমার পরীক্ষা করার জন্যে, অর্থাৎ তুমি তাঁর আদেশ পালন করবে কি না, এই বিষয়ে তোমার মনে কি আছে তা জানবার জন্যে তোমাকে নম্র করেন।
\s5
\v 3 তিনি তোমাকে নম্র করলেন ও তোমাকে ক্ষুধিত করে তোমার অজানা ও তোমার পূর্বপুরুষদের অজানা মান্না দিয়ে প্রতিপালন করলেন; যেন তিনি তোমাকে জানাতে পারেন যে, মানুষ শুধু রুটিতে বাঁচে না, কিন্তু সদাপ্রভুর মুখ থেকে যা যা বের হয়, তাতেই মানুষ বাঁচে।
\s5
\v 4 এই চল্লিশ বছর তোমার গায়ে তোমার পোশাক পুরোনো হয়নি ও সেই চল্লিশ বছরে তোমার পা ফুলে যায়নি।
\v 5 তোমার হৃদয়ে চিন্তা করে দেখো, মানুষ যেমন নিজের ছেলেকে শাসন করে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে সেরকম শাসন করেন।
\v 6 আর তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ সব পালন করবে যাতে তাঁর পথে চলতে পারো ও তাঁকে ভয় করো।
\s5
\v 7 কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে এক উত্তম দেশে নিয়ে যাচ্ছেন; সে দেশে উপত্যকা ও পর্বত থেকে বের হয়ে আসা জলস্রোত, ঝরনা ও গভীর জলাশয় আছে;
\v 8 সেই দেশে গম, যব, আঙ্গুর গাছ, ডুমুর গাছ ও ডালিম এবং জিতগাছ ও মধু হয়;
\s5
\v 9 সেই দেশে খাওয়ার বিষয়ে খরচ করতে হবে না, তোমার কোনো জিনিসের অভাব হবে না; সেই দেশের লোহার পাথর ও সেখানকার পর্বত থেকে তুমি তামা খুঁড়বে।
\v 10 আর তুমি খেয়ে তৃপ্তি পাবে এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া সেই ভালো দেশের জন্য তাঁর ধন্যবাদ করবে।
\s5
\v 11 সাবধান, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে যেও না; আমি আজ তাঁর যে সব আদেশ, শাসন ও বিধি তোমাকে দিচ্ছি, সে সব পালন করতে ভুল কর না।
\v 12 তুমি খেয়ে তৃপ্তি পেলে, ভালো বাড়ি তৈরী করে বাস করলে,
\s5
\v 13 তোমার গোরু মোষের পাল বহুগুণ হলে, তোমার সোনা ও রুপো বাড়লে এবং তোমার সব সম্পত্তি বহুগুণ হলে
\v 14 তোমার হৃদয়কে গর্বিত হতে দিও না এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে যেও না, যিনি মিসর দেশ থেকে, দাসের বাড়ি থেকে, তোমাকে বের করে এনেছেন;
\s5
\v 15 যিনি সেই ভয়ানক বিশাল মরুভূমি দিয়ে, জ্বালাদায়ী বিষধর ও কাঁকড়া বিছায় ভর্তি জলশূন্য মরুভূমি দিয়ে, তোমাকে নেতৃত্ব দিলেন এবং চক্‌মকি পাথর থেকে তোমার জন্যে জল বের করলেন;
\v 16 যিনি তোমার পূর্বপুরুষদের অজানা মান্নার মাধ্যমে মরুভূমিতে তোমাকে প্রতিপালন করলেন; যেন তিনি তোমার ভবিষ্যতের মঙ্গলের জন্যে তোমাকে নম্র করতে ও তোমার পরীক্ষা করতে পারেন।
\v 17 আর মনে মনে বল না যে, “আমারই শক্তিতে ও হাতের জোরে আমি এই সব ঐশ্বর্য্য পেয়েছে।”
\s5
\v 18 কিন্তু তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে মনে রাখবে, কারণ তিনি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে নিজের যে নিয়মের বিষয়ে শপথ করেছেন, তা আজকের মত স্থির করার জন্যে তিনিই তোমাকে ঐশ্বর্য্য লাভের ক্ষমতা দিলেন।
\v 19 আর যদি তুমি কোনো ভাবে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে যাও, অন্য দেবতাদের অনুগামী হও, তাদের সেবা কর ও তাদেরকে সম্মান জানাও, তবে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে আজ এই সাক্ষ্য দিচ্ছি, তোমরা অবশ্যই ধ্বংস হবে।
\v 20 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কন্ঠস্বরে কান না দিলে, তোমাদের সামনে সদাপ্রভু যে জাতিদেরকে ধ্বংস করছেন, তাদেরই মতো তোমরা ধ্বংস হবে।
\s5
\c 9
\s ইস্রায়েলীয়দের আবার বচসা ও অবাধ্যতার বিবরণ।
\p
\v 1 হে ইস্রায়েল, শোনো, তুমি নিজের থেকে মহান ও শক্তিশালী জাতিদেরকে, আকাশ পর্যন্ত দেওয়ালে ঘেরা বিশাল শহরগুলিকে, অধিকারচ্যুত করতে আজ যর্দন পার হয়ে যাচ্ছ;
\v 2 সেই জাতি বিশাল ও লম্বা, তারা অনাকীয়দের সন্তান; তুমি তাদেরকে জান, আর তাদের বিষয়ে তুমি তো এ কথা শুনেছ যে, “অনাক সন্তানদের সামনে কে দাঁড়াতে পারে?”
\s5
\v 3 কিন্তু আজ তুমি এটা জানো যে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজে গ্রাসকারী আগুনের মতো তোমার আগে আগে যাচ্ছেন; তিনি তাদেরকে ধ্বংস করবেন, তাদেরকে তোমার সামনে নীচু করবেন; তাতে সদাপ্রভু তোমাকে যেমন বলেছেন, তেমনি তুমি তাদেরকে তাড়িয়ে দেবে ও তাড়াতাড়ি ধ্বংস করবে।
\s5
\v 4 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যখন তোমার সামনে থেকে তাদেরকে তাড়িয়ে দেবেন, তখন মনে মনে এমন ভেবো না যে, “আমার ধার্মিকতার জন্য সদাপ্রভু আমাকে এই দেশ অধিকার করাতে এনেছেন।” কারণ জাতিদের দুষ্টতার জন্যই সদাপ্রভু তাদেরকে তোমার সামনে থেকে তাড়িয়ে দেবেন।
\s5
\v 5 তোমার ধার্মিকতা কিংবা হৃদয়ের সরলতার জন্য তুমি যে তাদের দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, তা না; কিন্তু সেই জাতিদের দুষ্টতার জন্য এবং তোমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের কাছে শপথের মাধ্যমে দেওয়া আপনার বাক্য সফল করার জন্যে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সামনে তাদেরকে তাড়িয়ে দেবেন।
\s5
\v 6 অতএব জেনো যে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে তোমার ধার্মিকতার জন্য অধিকার করার জন্য তোমাকে এই উত্তম দেশ দেবেন, তা না; কারণ তুমি একগুঁয়ে জাতি।
\s5
\v 7 তুমি মরুভূমির মধ্যে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে যেমন অসন্তুষ্ট করেছিলে, তা মনে রেখো, ভুলে যেও না; মিসর দেশ থেকে বের হয়ে আসার দিন থেকে এই জায়গায় আসা পর্যন্ত তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধাচারী হয়ে আসছ।
\v 8 তোমরা হোরেবেও সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করেছিলে এবং সদাপ্রভু যথেষ্ট রেগে গিয়ে তোমাদেরকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন।
\s5
\v 9 যখন আমি সেই দুটি পাথরের ফলক নেবার জন্যে পর্বতে উঠেছিলাম, তখন চল্লিশ দিনরাত পর্বতে থেকেছিলাম, খাবার খাওয়া কি জল পান করিনি।
\v 10 আর সদাপ্রভু আমাকে ঈশ্বরের নিজের আঙ্গুল দিয়ে লেখা সেই দুটি পাথরের ফলক দিয়েছিলেন; পর্বতে সমাজের দিনে আগুনের মধ্যে থেকে সদাপ্রভু তোমাদেরকে যা যা বলেছিলেন, সেই সব কথা ঐ দুটি পাথরে লেখা ছিল।
\s5
\v 11 সেই চল্লিশ দিন রাতের শেষে সদাপ্রভু ওই দুটি পাথরের ফলক অর্থাৎ নিয়মের পাথরের ফলক আমাকে দিলেন।
\v 12 আর সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “ওঠ, এ জায়গা থেকে তাড়াতাড়ি যাও; কারণ তোমার যে লোকদেরকে তুমি মিশর থেকে বের করে এনেছ, তারা নিজেদেরকে ভ্রষ্ট করেছে; আমি যে আদেশ তাদেরকে করেছিলাম তা থেকে তারা তাড়াতাড়ি বিপথে চলে গেছে, তারা নিজেদের জন্য ছাঁচে ঢালা প্রতিমা তৈরী করেছে।”
\s5
\v 13 সদাপ্রভু আমাকে আরও বললেন, “আমি এই লোকদেরকে দেখেছি, আর দেখ, তারা খুবই একগুঁয়ে লোক;
\v 14 তুমি আমার কাছ থেকে সরে যাও, আমি এদেরকে ধ্বংস করে আকাশমণ্ডলের নীচে থেকে এদের নাম মুছে ফেলি; আর আমি তোমাকে এদের থেকে শক্তিশালী ও মহান জাতি করব।”
\s5
\v 15 তখন আমি ফিরে পর্বত থেকে নেমে আসলাম, পর্বত আগুনে জ্বলছিল। তখন আমার দুই হাতে নিয়মের দুটি পাথরের ফলক ছিল।
\v 16 আমি দেখলাম, আর দেখ, তোমরা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছিলে, নিজেদের জন্য ছাঁচে ঢালা এক বাছুর তৈরী করেছিলে; সদাপ্রভুর আদেশ দেওয়া রাস্তা থেকে তাড়াতাড়ি বিপথে চলে গিয়েছিলে।
\s5
\v 17 তাতে আমি সেই দুটি পাথরের ফলক ধরে নিজের দুই হাত থেকে ফেলে তোমাদের সামনে ভাঙলাম।
\v 18 আর তোমরা সদাপ্রভুর চোখে যা খারাপ, তা করে যে পাপ করেছিলে, তাঁর অসন্তোষজনক তোমাদের সেই সব পাপের জন্য আমি আগের মতো চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত সদাপ্রভুর সামনে উপুড় হয়ে থাকলাম, আমি খাবার খায়নি বা জলও পান করেনি।
\s5
\v 19 কারণ সদাপ্রভু তোমাদেরকে ধ্বংস করতে রেগে যাওয়াতে আমি তাঁর রাগ ও অসন্তুষ্টতার জন্য ভয় পেয়েছিলাম; কিন্তু সেই বারেও সদাপ্রভু আমার নিবেদন শুনলেন।
\v 20 আর সদাপ্রভু হারোণকে ধ্বংস করার জন্যে তাঁর ওপরে খুব রেগে গিয়েছিলেন, আমি ঠিক সেই সময়ে হারোণের জন্যও প্রার্থনা করলাম।
\s5
\v 21 আর আমি তোমাদের পাপ, সেই যে বাছুর তোমরা তৈরী করেছিলে, তা নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দিলাম ও যে পর্যন্ত তা ধুলোর মতো গুঁড়ো না হল, ততক্ষণ পিষে ভালোভাবে গুঁড়ো করলাম; পরে পর্বত থেকে বয়ে যাওয়া জলস্রোতে তাঁর ধূলো ফেলে দিলাম।
\s5
\v 22 আর তোমরা তবিয়েরাতে, মঃসাতে ও কিব্রোৎহত্তাবাতে সদাপ্রভুকে উত্তেজিত করলে।
\v 23 তার পর সদাপ্রভু যে সময়ে কাদেশ বর্ণেয় থেকে তোমাদেরকে পাঠিয়ে বললেন, “তোমরা উঠে যাও, আমি তোমাদেরকে যে দেশ দিয়েছি, তা অধিকার কর;” সেই সময়ে তোমরা নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশের বিরুদ্ধাচারী হলে, তাঁতে বিশ্বাস করলে না ও তাঁর রবে কান দিলে না।
\v 24 তোমাদের সঙ্গে আমার পরিচয়ের দিন থেকে তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধাচারী হয়ে আসছ।
\s5
\v 25 যা হোক, আমি উপুড় হয়ে থাকলাম; ঐ চল্লিশ দিন রাত আমি সদাপ্রভুর সামনে উপুড় হয়ে থাকলাম; কারণ সদাপ্রভু তোমাদেরকে ধ্বংস করার কথা বলেছিলেন।
\v 26 আর আমি সদাপ্রভুর কাছে এই প্রার্থনা করলাম, “প্রভু সদাপ্রভু, তুমি নিজের অধিকারস্বরূপ যে লোকদেরকে নিজের মহিমায় মুক্ত করেছ ও শক্তিশালী হাতের মাধ্যমে মিসর থেকে বের করে এনেছ, তাদেরকে ধ্বংস কর না।
\s5
\v 27 তোমার দাসদেরকে, অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবকে মনে কর; এই লোকদের একগুঁয়েমিতার, দুষ্টতার ও পাপের প্রতি দেখ না;
\v 28 সুতরাং তুমি আমাদেরকে যে দেশ থেকে বের করে এনেছ, সেই দেশীয় লোকেরা এই কথা বলে, সদাপ্রভু ওদেরকে যে দেশ দিতে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সে দেশে নিয়ে যেতে পারেননি এবং তাদেরকে ঘৃণা করেছেন বলেই তিনি মরুভূমিতে হত্যা করার জন্যে তাদেরকে বের করে এনেছেন।
\v 29 তবুও তারাই তোমার লোক ও তোমার অধিকার; এদেরকে তুমি নিজের মহাশক্তি ও ক্ষমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে বের করে এনেছ।
\s5
\c 10
\p
\v 1 সেই সময়ে সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “তুমি পাথরের দুটি ফলক খোদাই কর এবং আমার কাছে পর্বতে উঠে এস এবং কাঠের এক সিন্দুক তৈরী কর।
\v 2 তোমার মাধ্যমে ভাঙ্গা প্রথম দুটি পাথর ফলকে যে যে বাক্য ছিল, তা আমি এই দুই পাথর ফলকে লিখব, পরে তুমি তা সেই সিন্দুকে রাখবে।
\s5
\v 3 তাতে আমি শিটিম কাঠের এক সিন্দুক তৈরী করলাম এবং প্রথমটির মতো পাথর ফলক দুটি খোদাই করে সেই পাথর ফলক হাতে নিয়ে পর্বতে উঠলাম।
\v 4 আর সদাপ্রভু সমাজের দিনে পর্বতে আগুনের মধ্যে থেকে যে দশ আদেশ তোমাদেরকে বলেছিলেন, তা প্রথম লেখার মতো ঐ দুটি পাথর ফলকে লিখে আমাকে দিলেন।
\s5
\v 5 পরে আমি মুখ ফিরিয়ে পর্বত থেকে নেমে আমার প্রতি সদাপ্রভুর দেওয়া আদেশ অনুসারে সেই দুটি পাথর ফলক আমার তৈরী সেই সিন্দুকে রাখলাম, সেই জায়গায় সেগুলি রয়েছে।
\s5
\v 6 (ইস্রায়েলের লোকেরা বেরোৎ বেনেয়াকন থেকে মোষেরোতে যাত্রা করলে হারোণ সেই জায়গায় মারা গেলেন এবং সেই জায়গায় তাঁর কবর দেওয়া হল এবং তার ছেলে ইলিয়াসর তাঁর বদলে যাজক হলেন।
\v 7 সেই জায়গা থেকে তারা গুধগোদায় গেল এবং গুধগোদা থেকে যট্‌বাথায় চলে গেল; এই জায়গা জলস্রোতের দেশ।
\s5
\v 8 সেই সময়ে সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুক বহন করতে, সদাপ্রভুর পরিচর্য্যা করবার জন্য তাঁর সামনে দাঁড়াতে এবং তাঁর নামে আশীর্বাদ করতে সদাপ্রভু লেবির বংশকে আলাদা করলেন, আজ ও সেই রকম চলে আসছে।
\v 9 এই জন্য নিজের ভাইদের মধ্যে লেবীয়দের কোনো অংশ কিংবা অধিকার হয়নি; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদেরকে যা বলেছেন, সেই অনুসারে সদাপ্রভুই তাদের অধিকার।)
\s5
\v 10 আর আমি প্রথম বারের মত চল্লিশ দিনরাত পর্বতে থাকলাম; এবং সেই বারেও সদাপ্রভু আমার নিবেদন শুনলেন; সদাপ্রভু তোমাকে ধ্বংস করতে চাইলেন না।
\v 11 পরে সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “ওঠ, তুমি যাবার জন্য লোকদের নেতৃত্ব দাও, আমি তাদেরকে যে দেশ দিতে তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছি, তারা সেই দেশে প্রবেশ করে তা অধিকার করুক।”
\s আজ্ঞাবহ হবার উপদেশ।
\p
\s5
\v 12 এখন হে ইস্রায়েল, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার কাছে কি চান? শুধু এই, যেন তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় কর, তাঁর সব পথে চল ও তাঁকে প্রেম কর এবং তোমার সমস্ত হৃদয় ও তোমার সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা কর,
\v 13 আজ আমি তোমার মঙ্গলের জন্য সদাপ্রভুর যে যে আদেশ ও বিধি তোমাকে দিচ্ছি, সেই সকল যেন পালন কর।
\s5
\v 14 দেখ, স্বর্গ ও স্বর্গের স্বর্গ এবং পৃথিবী ও তার মধ্যে সব জিনিস তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর।
\v 15 শুধু তোমার পূর্বপুরুষদেরকে প্রেম করতে সদাপ্রভুর সন্তোষ ছিল, আর তিনি তাদের পরে তাদের বংশকে অর্থাৎ আজকের মত সর্বজাতির মধ্যে তোমাদেরকে বেছে নিলেন।
\s5
\v 16 অতএব তোমরা নিজেদের হৃদয়ের ত্বক ছেদন কর এবং আর একগুঁয়ে হয়োনা।
\v 17 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই ঈশ্বরদের ঈশ্বর ও প্রভুদের প্রভু, তিনিই মহান, বীর্য্যবান ও ভয়ঙ্কর ঈশ্বর; তিনি কারও নির্ভর করেন না ও ঘুষ গ্রহণ করেন না।
\s5
\v 18 তিনি পিতৃহীনের ও বিধবার বিচার সমাপ্ত করেন এবং বিদেশীকে প্রেম করে অন্ন বস্ত্র দেন।
\v 19 অতএব তোমরা বিদেশীকে প্রেম করিও, কারণ মিসর দেশে তোমরাও বিদেশী হয়েছিলে।
\s5
\v 20 তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করবে, তারই সেবা করবে, তাতেই আসক্ত থাকবে ও তাঁরই নামে শপথ করবে।
\v 21 তিনি তোমার প্রশংসা এবং তিনি তোমার ঈশ্বর; তুমি নিজের চোখে যা যা দেখেছ, সেই মহৎ ও ভয়ঙ্কর কাজ সব তিনিই তোমার জন্য করেছেন।
\s5
\v 22 তোমার পূর্বপুরুষেরা শুধু সত্তর জন লোক মিসরে গিয়েছিল, কিন্তু এখন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে আকাশের তারার মত বহুসংখ্যক করেছেন।
\s5
\c 11
\p
\v 1 অতএব তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করবে এবং তাঁর নির্দেশ, তাঁর বিধি, তাঁর শাসন ও তাঁর আজ্ঞা সব সবসময় পালন করবে।
\s5
\v 2 কারণ আমি তোমাদের বালকদেরকে বলছি না; তারা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর শাস্তি জানেনা ও দেখেনি; তাঁর মহিমা, তাঁর শক্তিশালী হাত ও ক্ষমতা প্রদর্শন
\v 3 এবং তাঁর চিহ্ন সব ও মিসরের মধ্যে মিসরের রাজা ফরৌণের প্রতি ও তাঁর সব দেশের প্রতি তিনি যা যা করলেন, তাঁর সেই সব কাজ
\s5
\v 4 এবং মিশরীয় সৈন্যের, ঘোড়ার ও রথের প্রতি তিনি যা করলেন, তারা যখন তোমাদের পিছনে তাড়া করল, তিনি যেমনভাবে সূফসাগরের জল তাদের উপরে বহালেন এবং সদাপ্রভু তাদেরকে ধ্বংস করলেন, আজ তারা নেই
\v 5 এবং এ জায়গায় তোমাদের আসা পর্যন্ত তোমাদের প্রতি তিনি মরুভূমিতে যা যা করেছেন;
\s5
\v 6 আর তিনি রূবেণের ছেলে ইলীয়াবের ছেলে দাথন ও অবীরামের প্রতি যা যা করেছেন, পৃথিবী যেভাবে নিজের মুখ খুলে সমস্ত ইস্রায়েলের মধ্যে তাদেরকে, তাদের আত্মীয়দেরকে, তাদের তাঁবু ও তাদের অস্তিত্বশীল জিনিস সব গ্রাস করল, এ সব তারা দেখেনি;
\v 7 কিন্তু সদাপ্রভুর করা সমস্ত মহান কাজ তোমরা নিজের চোখে দেখেছ।
\s5
\v 8 অতএব আজ আমি তোমাদেরকে যে সব আজ্ঞা দিচ্ছি, সেই সব আজ্ঞা পালন কর, যেন তোমরা শক্তিশালী হও এবং যে দেশ অধিকার করার জন্য পার হয়ে যাচ্ছ, সেই দেশে প্রবেশ করে তা অধিকার কর;
\v 9 আর যেন সদাপ্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে ও তাঁদের বংশকে যে দেশ দিতে শপথ করেছিলেন, সেই দুধ ও মধুপ্রবাহী দেশে তোমরা দীর্ঘকাল থাকতে পার।
\s5
\v 10 কারণ তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, এটা মিশর দেশের মতো না, যেখান থেকে তোমরা এসেছ, সেই দেশে তুমি বীজ বুনে শাকের বাগানের মতো পায়ের মাধ্যমে জল সেচন করতে;
\v 11 তোমরা যে দেশ অধিকার করতে পার হয়ে যাচ্ছ, সে পর্বত ও উপত্যকা বিশিষ্ট দেশ এবং আকাশের বৃষ্টির জল পান করে;
\v 12 সেই দেশের প্রতি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোযোগ আছে; বছরের শুরু থেকে বছরের শেষ পর্যন্ত তাঁর প্রতি সবসময় তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দৃষ্টি থাকে।
\s5
\v 13 আর আমি আজ তোমাদেরকে যে সব আজ্ঞা দিচ্ছি, তোমরা যদি যত্নসহকারে তা শুনে তোমাদের সমস্ত হৃদয় ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবাস ও তাঁর সেবা কর,
\v 14 তবে আমি সঠিক সময়ে অর্থাৎ প্রথম ও শেষ বর্ষায় তোমাদের দেশে বৃষ্টি দেব, তাতে তুমি নিজের শস্য, আঙ্গুর রস ও তেল সংগ্রহ করতে পারবে।
\v 15 আর আমি তোমার পশুদের জন্য তোমার ক্ষেতে ঘাস দেব এবং তুমি খেয়ে তৃপ্তি পাবে।
\s5
\v 16 নিজেদের বিষয়ে সাবধান হও, এইজন্য যে তোমাদের হৃদয় ভ্রান্ত হয় এবং তোমরা পথ ছেড়ে অন্য দেবতাদের সেবা কর ও তাদের কাছে নত হও;
\v 17 করলে তোমাদের প্রতি সদাপ্রভুর রাগ প্রজ্বলিত হবে ও তিনি আকাশ বন্ধ করবেন, তাতে বৃষ্টি হবে না ও ভূমি নিজের ফল দেবে না এবং সদাপ্রভু তোমাদেরকে যে দেশ দিচ্ছেন, সেই ভালো দেশ থেকে তোমরা তাড়াতাড়ি ধ্বংস হবে।
\s5
\v 18 অতএব তোমরা আমার এই সব বাক্য নিজেদের হৃদয়ে ও প্রাণে রেখো এবং চিহ্নরূপে নিজের হাতে বেঁধে রেখো এবং সে সব ভূষণরূপে তোমাদের দুই চোখের মধ্যে থাকবে।
\v 19 আর তোমরা বাড়ি বসে থাকার সময়ে ও রাস্তায় চলার সময়ে এবং শোয়ার ও ঘুম থেকে ওঠার সময়ে ঐ সব কথার প্রসঙ্গ করে নিজেদের ছেলেমেয়েদেরকে শিক্ষা দিও।
\s5
\v 20 আর তুমি নিজের বাড়ির দরজার পাশের কাঠে ও নিজের দরজায় তা লিখে রেখো।
\v 21 তাতে সদাপ্রভু তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে জমি দিতে শপথ করেছেন, সেই জমিতে তোমাদের দিন ও তোমাদের সন্তানদের দিন পৃথিবীর উপরে আকাশমণ্ডলের দিনের মতো বৃদ্ধি পাবে।
\s5
\v 22 এই যে সব আদেশ আমি তোমাদেরকে দিচ্ছি, তোমরা যদি যত্নসহকারে তা পালন করে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবাস, তাঁর সমস্ত রাস্তায় চল ও তাঁতে আসক্ত থাক;
\v 23 তবে সদাপ্রভু তোমাদের সামনে থেকে এই সমস্ত জাতিকে তাড়িয়ে দেবেন এবং তোমরা নিজেদের থেকে বিশাল ও শক্তিশালী জাতিদের উত্তরাধিকারী হবে।
\s5
\v 24 তোমাদের পা যে যে জায়গায় পড়বে, সেই সেই জায়গা তোমাদের হবে; মরুভূমি ও লিবানোন থেকে, নদী অর্থাৎ ফরাৎ নদী থেকে পশ্চিম সমুদ্র পর্যন্ত তোমাদের সীমা হবে।
\v 25 তোমাদের সামনে কেউই দাঁড়াতে পারবে না; তোমরা যে দেশে পা দেবে, সেই দেশের সব জায়গায় তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের কথা অনুসারে তোমাদের থেকে লোকদের ভয় ও ত্রাস উপস্থিত করবেন।
\s5
\v 26 দেখ, আজ আমি তোমাদের সামনে আশীর্বাদ ও অভিশাপ রাখলাম।
\v 27 আজ আমি তোমাদেরকে যে সব আজ্ঞা জানালাম, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেই সব আজ্ঞাতে যদি কান দাও, তবে আশীর্বাদ পাবে।
\v 28 আর যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞাতে কান না দাও এবং আমি আজ তোমাদেরকে যে রাস্তার বিষয়ে আজ্ঞা করলাম, যদি সেই রাস্তা ছেড়ে তোমাদের অজানা অন্য দেবতাদের পিছনে যাও, তবে অভিশাপগ্রস্ত হবে।
\s5
\v 29 আর তুমি যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেই দেশে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যখন তোমাকে প্রবেশ করাবেন, তখন তুমি গরিষীম পর্ব্বতে ঐ আশীর্বাদ এবং এবল পর্বতে ঐ অভিশাপ রাখবে।
\v 30 সেই দুই পর্বত যর্দনের ওপারে, পশ্চিম দিকের রাস্তার ওদিকে, অরাবা তলভূমিনিবাসী কনানীয়দের দেশে, গিল্‌গলের সামনে, মোরির এলোন বনের কাছে কি না?
\s5
\v 31 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে যে দেশ দিচ্ছেন, সে দেশ অধিকার করার জন্যে তোমরা সেখানে প্রবেশ করার জন্য যর্দন পার হয়ে যাবে, দেশ অধিকার করবে ও সেখানে বাস করবে।
\v 32 আর আমি আজ তোমাদের সামনে যে সব বিধি ও শাসন রাখলাম সে সব যত্নসহকারে পালন করবে।
\s5
\c 12
\s1 ঈশ্বরীয় ব্যবস্থা আবার বলা।
\s2 ঈশ্বরের বিশেষ আরাধনার জায়গা নির্ধারণ।
\p
\v 1 তোমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ অধিকারের জন্যে দিয়েছেন, সেই দেশে এই সব বিধি ও শাসন, যত দিন পৃথিবীতে জীবিত থাকবে, যত্নসহকারে পালন করতে হবে।
\v 2 তোমরা যে যে জাতিকে তাড়িয়ে দেবে, তারা উঁচু পর্বতের উপরে, পাহাড়ের উপরে ও সবুজ প্রত্যেক গাছের তলায় যে যে জায়গায় নিজেদের দেবতাদের সেবা করেছে, সেই সব জায়গা তোমরা একেবারে ধ্বংস করবে।
\s5
\v 3 তোমরা তাদের যজ্ঞবেদি সব ভেঙ্গে ফেলবে, তাদের থাম সব ভাঙ্গবে, তাদের আশেরা মূর্তি সব আগুনে পুড়িয়ে দেবে, তাদের খোদাই করা দেবপ্রতিমা সব কেটে ফেলবে এবং সেই জায়গা থেকে তাদের নাম ধ্বংস করবে।
\v 4 তোমরা নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি সেরকম আরাধনা করবে না।
\s5
\v 5 কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নাম স্থাপন করার জন্যে তোমাদের সমস্ত বংশের মধ্যে যে জায়গা বেছে নেবেন, তাঁর সেই বসবাসের জায়গা তোমরা খোঁজ করবে ও সেই জায়গায় উপস্থিত হবে।
\v 6 আর নিজেদের হোম, বলি, দশমাংশ, হাতে তোলা উপহার, মানতের জিনিস, নিজের ইচ্ছায় দেওয়া নৈবেদ্য ও গোরু মেষ পালের প্রথমজাতদেরকে সেই জায়গায় আনবে;
\s5
\v 7 আর সেই জায়গায় তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে খাবে এবং তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু থেকে পাওয়া আশীর্বাদ অনুসারে যে কিছুতে হাত দেবে, তাতেই সপরিবারে আনন্দ করবে।
\s5
\v 8 এই জায়গায় আমরা এখন প্রত্যেকে নিজেদের চোখে যা সঠিক, তা করছি, তোমরা সেরকম করবে না;
\v 9 কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে বিশ্রামের জায়গা ও অধিকার দিচ্ছেন, সেখানে তোমরা এখনও উপস্থিত হওনি।
\s5
\v 10 কিন্তু যখন তোমরা যর্দন পার হয়ে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া অধিকার দেশে বাস করবে এবং চারিদিকের সমস্ত শত্রু থেকে তিনি বিশ্রাম দিলে যখন তোমরা নির্ভয়ে বাস করবে;
\v 11 সেইসময়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নামে বাস করার জন্য যে জায়গা বেছে নেবেন, সেই জায়গায় তোমরা আমার আদেশ করা সমস্ত জিনিস, নিজেদের হোম, বলি, দশমাংশ, হাতে তোলা উপহার ও সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে শপথ করা মানতের ভালো জিনিস সব আনবে।
\s5
\v 12 আর তোমরা, তোমাদের ছেলেমেয়েরা ও তোমাদের দাসদাসীরা, আর তোমাদের শহরের দরজার মাঝে লেবীয়, কারণ যেমন তার অংশ ও অধিকার তোমাদের মধ্যে নেই, তোমরা সবাই নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে আনন্দ করবে।
\s5
\v 13 তোমরা সাবধান হও, যে কোনো জায়গা দেখ, সেই জায়গাতেই তোমার হোমবলি উৎসর্গ কর না;
\v 14 কিন্তু তোমার কোনো এক বংশের মধ্যে যে জায়গা সদাপ্রভু বেছে নেবেন, সেই জায়গাতেই তোমার হোমবলি উৎসর্গ করবে ও সেই জায়গায় আমার আদেশ করা সব কাজ করবে।
\s5
\v 15 তাছাড়া যখন তোমার প্রাণের ইচ্ছা হবে, তখন তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া আশীর্বাদ অনুসারে নিজের সব শহরের দরজার ভিতরে পশু হত্যা করে মাংস খেতে পারবে; অশুচী কি শুচী লোক সবাই কৃষ্ণসারের ও হরিণের মাংসের মত তা খেতে পারবে।
\v 16 শুধু তোমরা রক্ত খাবে না; তুমি তা জলের মতো মাটিতে ঢেলে দেবে।
\s5
\v 17 তোমরা শস্যের, আঙ্গুর রসের ও তেলের দশমাংশ, গোরু মেষের প্রথমজাত এবং যা মানত করবে, সেই মানতের জিনিস, নিজের ইচ্ছায় দেওয়া নৈবেদ্য ও হাতে তোলা উপহার, এই সব তুমি নিজের শহরের দরজার মধ্যে খেতে পারবে না।
\s5
\v 18 কিন্তু তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে জায়গা বেছে নেবেন, সেই জায়গায় তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তুমি, তোমার ছেলেমেয়ে, তোমার দাসদাসী ও তোমার শহরের দরজার মাঝে লেবীয়, সবাই তা খাবে এবং তুমি যে কিছুতে হাত দেবে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তাতেই আনন্দ করবে।
\v 19 সাবধান, তোমার দেশে যত কাল বেঁচে থাক, লেবীয়কে ত্যাগ কর না।
\s5
\v 20 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যেমন শপথ করেছেন, সেই অনুসারে যখন তোমার সীমা বিস্তার করবেন এবং মাংস খাওয়ায় তোমার প্রাণের ইচ্ছা হলে তুমি বলবে, মাংস খাব, তখন তুমি প্রাণের ইচ্ছা অনুসারে মাংস খাবে।
\s5
\v 21 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নাম স্থাপনের জন্যে যে জায়গা বেছে নেবেন, তা যদি তোমার থেকে অনেক দূর হয়, তবে আমি যেমন বলেছি, সেই অনুসারে তুমি সদাপ্রভুর দেওয়া গোরু মেষের পাল থেকে পশু নিয়ে হত্যা করবে ও নিজের প্রাণের ইচ্ছা অনুসারে শহরের দরজার ভিতরে খেতে পারবে।
\v 22 যেমন কৃষ্ণসার হরিণ ও হরিণ খাওয়া যায়, তেমনি তা খাবে, অশুচী কি শুচী লোক, সবাই তা খাবে।
\s5
\v 23 শুধু রক্ত খাওয়া থেকে খুব সাবধান থেকো, কারণ রক্তই প্রাণ; তুমি মাংসের সঙ্গে প্রাণ খাবে না।
\v 24 তুমি তা খাবে না, তুমি জলের মতো মাটিতে ঢেলে দেবে।
\v 25 তুমি তা খাবে না; যাতে সদাপ্রভুর চোখে যা সঠিক, তা করলে তোমার ভালো ও তোমার পরবর্তী ছেলেমেয়েদের ভালো হয়।
\s5
\v 26 শুধু তোমার যত পবিত্র জিনিস থাকে এবং তোমার যত মানতের জিনিস থাকে, সেই সব নিয়ে সদাপ্রভুর বেছে দেওয়া জায়গায় যাবে;
\v 27 আর তোমরা ঈশ্বর সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির উপরে তোমার হোমবলি, মাংস ও রক্ত উৎসর্গ করবে, আর তোমার বলিসমূহের রক্ত তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির উপরে ঢেলে দেবে, পরে তার মাংস খেতে পারবে।
\s5
\v 28 সাবধান হয়ে আমার আদেশ দেওয়া এই সমস্ত বাক্য মেনে চল, যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা ভালো ও সঠিক, তা করলে তোমার ও চিরকাল তোমার পরবর্তী ছেলেমেয়েদের ভালো হয়।
\s5
\v 29 তুমি যে জাতিদেরকে তাড়িয়ে দিতে যাচ্ছ, তাদেরকে যখন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সামনে থেকে উচ্ছেদ করবেন ও তুমি তাদেরকে তাড়িয়ে দেবে তাদের দেশে বাস করবে;
\v 30 তখন নিজেরা সাবধান থেকো যে, তোমার সামনে থেকে তাদের ধ্বংস হলে পর তুমি তাদের অনুগামী হয়ে ফাঁদে পড় এবং পাছে তাদের দেবতাদের খোঁজ করে বল, “এই জাতিরা নিজেদের দেবতাদের সেবা কিভাবে করে? আমিও সেই ভাবে করব।”
\s5
\v 31 তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি সেরকম করবে না; কারণ তারা নিজেদের দেবতাদের উদ্দেশ্যে সদাপ্রভুর ঘৃণিত যাবতীয় খারাপ কাজ করেছে; এমন কি, তারা সেই দেবতাদের উদ্দেশ্যে নিজেদের ছেলেমেয়েদেরকেও আগুনে পোড়ায়।
\v 32 আমি যে কোনো বিষয় তোমাদেরকে আজ্ঞা করলাম তোমরা সেটাই যত্নসহকারে পালন করবে; তোমরা তাতে কোনো কিছু যোগ করবে না এবং তা থেকে কিছু বাদ দেবে না।
\s5
\c 13
\s দেবতা পূজা এবং খারাপ খাবার খাওয়া নিষেধ।
\p
\v 1 তোমার মধ্য কোনো ভাববাদী কিংবা স্বপ্নদর্শক উঠে যদি তোমার জন্য কোনো চিহ্ন কিংবা অদ্ভুত লক্ষণ ঠিক করে দেয়
\v 2 এবং সেই চিহ্ন কিংবা অদ্ভুত লক্ষণ সফল হয়, যার বিষয়ে সে তোমার অজানা অন্য দেবতাদের বিষয়ে তোমাদেরকে বলেছিল, “এস, আমরা তাদের অনুগামী হই ও তাদের সেবা করি,”
\v 3 তবে তুমি সেই ভাববাদীর কিংবা সেই স্বপ্নদর্শনকারীর কথায় কান দিও না; কারণ তোমরা তোমাদের সমস্ত হৃদয় ও তোমাদের সমস্ত প্রাণের সঙ্গে নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম কর কি না, তা জানবার জন্য তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের পরীক্ষা করেন।
\s5
\v 4 তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুরই অনুগামী হও, তাঁকেই ভয় কর, তাঁরই আদেশ পালন কর, তাঁরই রবে মনোযোগ দাও, তাঁরই সেবা কর ও তাতেই যুক্ত থাক।
\v 5 আর সেই ভাববাদীর কিংবা সেই স্বপ্নদর্শনকারীর প্রাণদণ্ড করতে হবে; কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি মিসর দেশ থেকে তোমাদেরকে বের করে এনেছেন, দাসত্বের বাড়ী থেকে তোমাকে মুক্ত করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে সে বিপথে যাওয়ার কথা বলেছে এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে পথে গমন করতে তোমাকে আদেশ করেছেন, তা থেকে তোমাকে বের করে দিতে চায়। তাই তুমি নিজের মধ্য থেকে খারাপ বিষয় বাদ দাও।
\s5
\v 6 তোমার ভাই, তোমার মায়ের ছেলে কিংবা তোমার ছেলে কি মেয়ে কিংবা তোমার প্রিয় স্ত্রী কিংবা তোমার প্রাণের বন্ধু যদি গোপনে তোমাকে লোভ দিয়ে বলে, “এস, আমরা গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা করি,
\v 7 তোমার অজানা ও তোমার পূর্বপুরুষদের অজানা কোনো দেবতা, তোমার চারদিকের কাছাকাছি কিংবা তোমার থেকে দূরে, পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত যে কোনো জাতির যে কোনো দেবতা হোক, তার বিষয়ে যদি এই কথা বলে, তবে তুমি সেই ব্যক্তির কথায় রাজী হবে না,”
\s5
\v 8 তার কথায় মন দিও না অথবা কান দিও না; তোমার চোখ তার প্রতি দয়া করবে না, তাঁকে কৃপা করবে না, তাঁকে লুকিয়ে রাখবে না।
\v 9 কিন্তু অবশ্য তুমি তাকে হত্যা করবে; তাকে হত্যা করার জন্য প্রথমে তুমিই তার ওপরে হাত দেবে, পরে সমস্ত লোক হাত দেবে।
\s5
\v 10 তুমি তাকে পাথরের আঘাত করবে, যেন সে মারা যায়; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি মিসর দেশ থেকে, দাসত্বের বাড়ি থেকে, তোমাকে বের করে এনেছেন, তার কাছ থেকে সে তোমাকে নষ্ট করতে চেষ্টা করেছে।
\v 11 তাতে সমস্ত ইস্রায়েল তা শুনবে, ভয় পাবে এবং তোমার মধ্যে সেরকম খারাপ কাজ আর করবে না।
\s5
\v 12 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে যে শহর বাস করতে দেবেন, তার কোনো শহরের বিষয়ে যদি শুনতে পাও যে,
\v 13 কিছু খারাপ লোক তোমার মধ্যে থেকে বের হয়ে এই কথা বলে নিজের শহর নিবাসীদেরকে নষ্ট করেছে, “এস, আমরা গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা করি, যাদেরকে তোমরা জানো না,”
\v 14 তবে তুমি জিজ্ঞাসা করবে, খোঁজ করবে ও যত্নসহকারে প্রশ্ন করবে; আর দেখ, তোমার মধ্যে এরকম ঘৃণার্হ খারাপ কাজ হয়েছে,
\s5
\v 15 এটা যদি সত্য ও নিশ্চিত হয়, তবে তুমি তলোয়ালের ধারে সেই শহরের নিবাসীদেরকে আঘাত করবে এবং শহর ও তার মধ্যে অবস্থিত পশু সহ সবই তলোয়ারের ধারে সম্পূর্ণ ধ্বংস করবে;
\v 16 আর তার লুঠ করা জিনিস সব তার চকের মধ্যে জড়ো করে সেই শহর ও সেই সব জিনিস সবদিক দিয়ে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আগুনে পুড়িয়ে দেবে; তাতে সেই শহর চিরকাল ঢিবি হয়ে থাকবে, তা আর কখনো তৈরী হবে না।
\s5
\v 17 আর সেই বাদ দেওয়া জিনিসের কিছুই তোমার হাতে লেগে না থাকুক; যেন সদাপ্রভু নিজের প্রচণ্ড রাগ থেকে ফেরেন এবং তিনি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে যে শপথ করেছেন, সেই অনুসারে তোমার প্রতি দয়া ও করুণা করেন ও তোমার বৃদ্ধি করেন;
\v 18 যখন তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কান দিয়ে, আমি আজ তোমাকে যে যে আজ্ঞা দিচ্ছি, তাঁর সেই সব আজ্ঞা পালন করবে ও তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে সঠিক আচরণ করবে।
\s5
\c 14
\p
\v 1 তোমরা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর লোক; তোমরা মৃত লোকদের জন্য নিজেদের শরীর কাটবে না এবং মুখের কোনো অংশে কামাবে না।
\v 2 কারণ তুমি ঈশ্বর সদাপ্রভুর পবিত্র লোক; পৃথিবীতে অবস্থিত সমস্ত জাতির মধ্যে থেকে সদাপ্রভু নিজের অধিকারের লোক করার জন্যেই তোমাকেই বেছেছেন।
\s5
\v 3 তুমি কোনো অশুচি জিনিস খাবে না।
\v 4 এই সব পশু যা তুমি খেতে পার; গোরু, মেষ এবং ছাগল,
\v 5 হরিণ, কৃষ্ণসার হরিণ এবং ছোট হরিণ, বনছাগল, বন্যগরু ও সাদালেজ বিশিষ্ট হরিণ এবং পাহাড়ি মেষ।
\s5
\v 6 আর পশুদের মধ্যে যত পশু সম্পূর্ণ দুই খণ্ড খুরবিশিষ্ট ও জাবর কাটে, সেই সকল তোমরা খেতে পার।
\v 7 কিন্তু যারা জাবর কাটে, কিংবা দুই খণ্ড খুরবিশিষ্ট, তাদের মধ্যে এইগুলি খাবে না; উট, খরগোশ ও শাফন; কারণ তারা জাবর কাটে বটে, কিন্তু দুই খণ্ড খুরবিশিষ্ট না, তারা তোমাদের পক্ষে অশুচী;
\s5
\v 8 আর শূকর দুই খণ্ড খুরবিশিষ্ট বটে, কিন্তু জাবর কাটে না, সে তোমাদের পক্ষে অশুচী; তোমরা তাদের মাংস খাবে না, তাদের মৃতদেহ ছোঁবেও না।
\s5
\v 9 জলচর সকলের মধ্যে এই সব তোমাদের খাবার; যাদের পাখনা ও আঁশ আছে, তাদেরকে খেতে পার।
\v 10 কিন্তু যাদের পাখনা ও আঁশ নেই, তাদেরকে খাবে না, তারা তোমাদের পক্ষে অশুচী।
\p
\s5
\v 11 তোমরা সব ধরনের শুচী পাখি খেতে পার
\v 12 কিন্তু এগুলি খাবে না; ঈগল, শকুন, বক,
\v 13 লাল চিল, কালো চিল ও নিজেদের জাতি অনুসারে সারস,
\s5
\v 14 আর নিজেদের জাতি অনুসারে সব ধরনের কাক,
\v 15 আর উটপাখি, রাতের বাজপাখি, শঙ্খচিল ও নিজেদের জাতি অনুসারে বাজপাখি
\v 16 এবং পেঁচা, বড় পেঁচা ও সাদা পেঁচা;
\v 17 বড় জলচর পাখি, শকুনী ও মাছরাঙ্গা,
\s5
\v 18 এবং সারস ও নিজেদের জাতি অনুসারে বক, ঝুঁটিওয়ালা পাখি বিশেষ ও বাদুড়।
\v 19 আর ডানাবিশিষ্ট পোকা তোমাদের পক্ষে অশুচী; এ সব খাওয়ার উপযুক্ত না।
\v 20 তোমরা সমস্ত উড়ন্ত জিনিস খেতে পার।
\p
\s5
\v 21 তোমরা নিজে থেকে মারা যাওয়া কোনো প্রাণীর মাংস খাবে না; তোমার শহরের দরজার মাঝখানে কোনো বিদেশীকে খাওয়ার জন্যে তা দিতে পার, কিংবা বিজাতীয় লোকের কাছে বিক্রি করতে পার; কারণ তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর পবিত্র লোক। তুমি বাচ্চা ছাগলকে তার মায়ের দুধে রান্না করবে না।
\s দশমাংশ, প্রথমাংশ ও মোচনবছরের নিয়ম।
\p
\s5
\v 22 তুমি তোমার বীজ থেকে উৎপন্ন সব শস্যের, বছর বছর যা ক্ষেতে উৎপন্ন হয়, তার দশমাংশ আলাদা করে দেবে।
\v 23 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নামের বসবাসের জন্যে যে জায়গা বাছবেন, সে জায়গায় তুমি নিজের শস্যের, আঙ্গুররসের ও তেলের দশমাংশ এবং গোরু মেষপালের প্রথমজাতদেরকে তাঁর সামনে খাবে; এইভাবে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে সবসময় ভয় করতে শিখবে।
\s5
\v 24 সেই যাত্রা যদি তোমার জন্যে অনেক দীর্ঘ হয়, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নাম স্থাপনের জন্যে যে জায়গা মনোনীত করবেন, তার দূরত্বের জন্য যদি তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আশীর্বাদে পাওয়া জিনিস সেখান থেকে নিয়ে যেতে না পার,
\v 25 তবে সেই জিনিস টাকায় রুপান্তরিত করে সে টাকা বেঁধে হাতে নিয়ে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় যাবে।
\s5
\v 26 পরে সেই টাকা দিয়ে তোমার মনের ইচ্ছায় গোরু কি মেষ কি আঙ্গুর রস কি মদ, বা যে কোনো জিনিসে তোমার মনের ইচ্ছা হয়, তা কিনে নিয়ে সেই জায়গায় তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে খেয়ে সপরিবারে আনন্দ করবে।
\v 27 আর তোমার শহরের দরজার মাঝখানে লেবীয়কে ত্যাগ করবে না, কারণ তোমার সঙ্গে তার কোনো অংশ কি অধিকার নেই।
\s5
\v 28 তৃতীয় বছরের শেষে তুমি সেই বছরে উৎপন্ন নিজের শস্যাদির যাবতীয় দশমাংশ বের করে এনে নিজের শহরের দরজার ভিতরে সঞ্চয় করে রাখবে;
\v 29 তাতে তোমার সঙ্গে যার কোনো অংশ কি অধিকার নেই, সেই লেবীয় এবং বিদেশী, পিতৃহীন ও বিধবা, তোমার শহরের দরজার মধ্যে এই সব লোক এসে খেয়ে তৃপ্তি পাবে; এইভাবে যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার হাতের সব কাজে তোমাকে আশীর্বাদ করেন।
\s5
\c 15
\p
\v 1 তুমি প্রত্যেক সাত বছরের শেষে ঋণ বাদ দেবে। সেই ঋণক্ষমার এই ব্যবস্থা;
\v 2 যে কোনো মহাজন নিজের প্রতিবাসীকে ঋণ দিয়েছে, সে নিজের দেওয়া সেই ঋণ বাদ দেবে, নিজের প্রতিবেশী কিংবা ভাইয়ের কাছ থেকে ঋণ আদায় করবে না, কারণ সদাপ্রভুর আদেশ ঋণ বাদ দেওয়ার ঘোষণা হয়েছে!
\v 3 তুমি বিদেশীর কাছে আদায় করতে পার; কিন্তু তোমার ভাইয়ের কাছে তোমার যা আছে, তা তুমি ছেড়ে দেবে।
\s5
\v 4 প্রকৃতপক্ষে তোমাদের মধ্যে কেউ যেন গরিব না থাকে; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার অধিকারের জন্যে যে দেশ দিচ্ছেন, সেই দেশে সদাপ্রভু তোমাকে নিশ্চয়ই আশীর্বাদ করবেন;
\v 5 শুধু আমি আজ তোমাকে এই যে সব আদেশ দিচ্ছি, এটা যত্নসহকারে পালনের জন্যে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কান দিতে হবে।
\v 6 কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যেমন তোমার কাছে প্রতিজ্ঞা করেছেন, তেমনি তোমাকে আশীর্বাদ করবেন; আর তুমি অনেক জাতিকে ঋণ দেবে, কিন্তু নিজে ঋণ নেবে না এবং অনেক জাতির ওপরে শাসন করবে, কিন্তু তারা তোমার ওপরে শাসন করবে না।
\s5
\v 7 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিচ্ছেন, সেখানকার কোনো শহরের দরজার ভিতরে যদি তোমার কাছে অবস্থিত কোনো ভাই গরিব হয়, তবে তুমি নিজের হৃদয় কঠিন কর না বা গরিব ভাইয়ের প্রতি নিজের হাত বন্ধ কর না;
\v 8 কিন্তু তার প্রতি মুক্ত হাতে তার অভাবের জন্য প্রয়োজন অনুসারে তাকে অবশ্য ঋণ দিও।
\s5
\v 9 সাবধান, সপ্তম বছর অর্থাৎ ক্ষমার বছর কাছাকাছি, এটা বলে তোমার হৃদয়ে যেন খারাপ চিন্তা মনে না আসে; তুমি যদি নিজে গরিব ভাইয়ের প্রতি খারাপভাবে তাকিয়ে তাকে কিছু না দাও, তবে সে তোমার বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলে তোমার পাপ হবে।
\v 10 তুমি তাকে অবশ্যই দেবে, দেবার সময়ে হৃদয়ে দুঃখিত হবে না; কারন এই কাজের জন্য তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সব কাজে এবং তুমি যাতে যাতে হাত দেবে, সেই সব কিছুতে তোমাকে আশীর্বাদ করবেন।
\s5
\v 11 কারণ তোমার দেশের মধ্যে গরিবের অভাব হবে না; অতএব আমি তোমাকে এই আদেশ দিচ্ছি, তুমি নিজের দেশে তোমার ভাইয়ের প্রতি, তোমার দুঃখী ও দীনহীনের প্রতি, তোমার হাত অবশ্য খুলে রাখবে।
\s5
\v 12 তোমার ভাই অর্থাৎ কোনো ইব্রীয় পুরুষ কিংবা ইব্রীয় মহিলা যদি তোমার কাছে বিক্রীত হয় এবং ছয় বছর পর্যন্ত তোমার দাসের] কাজ করে; তবে সপ্তম বছরে তুমি তাকে ছেড়ে দিয়ে নিজের কাছ থেকে বিদায় দেবে।
\v 13 আর ছেড়ে দিয়ে তোমার কাছ থেকে বিদায় দেবার সময়ে তুমি তাকে খালি হাতে বিদায় করবে না;
\v 14 তুমি নিজের পাল, শস্য ও আঙ্গুররস থেকে তাকে প্রচুর পুরস্কার দেবে; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যেমন আশীর্বাদ করেছেন, সেই অনুসারে তাকে দেবে।
\s5
\v 15 আর মনে রাখবে, তুমি মিসর দেশে দাস ছিলে এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে মুক্ত করেছেন; এই জন্য আমি আজ তোমাকে এই আদেশ দিচ্ছি।
\v 16 কিন্তু তোমার কাছে সুখে থাকাতে সে তোমাকে ও তোমার আত্মীয়দেরকে ভালবাসে বলে যদি বলে, “আমি তোমাকে ছেড়ে যাব না;”
\v 17 তবে তুমি এক সুঁচ দিয়ে দরজার সঙ্গে তার কান বেঁধে দেবে, তাতে সে চিরকাল তোমার দাস থাকবে; আর দাসীর প্রতিও সেরকম করবে।
\s5
\v 18 ছয় বছর পর্যন্ত সে তোমার কাছে বেতনজীবীর বেতন থেকে দ্বিগুণ দাসের কাজ করেছ, এই কারণ তাকে মুক্ত করে বিদায় দেওয়া কঠিন মনে করবে না; তাতে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সব কাজে তোমাকে আশীর্বাদ করবেন।
\s5
\v 19 তুমি নিজের গোরু মেষের পশুপাল থেকে উৎপন্ন সমস্ত প্রথমজাত পুরুষপশুকে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র করবে; তুমি গোরুর প্রথমজন্মানো বাচ্চার মাধ্যমে কোনো কাজ করবে না এবং তোমার প্রথমজন্মানো বাচ্চা মেষের লোম কাটবে না।
\v 20 সদাপ্রভু যে জায়গা মনোনীত করবেন, সেই জায়গায় তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তুমি সপরিবারে প্রতি বছর তা খাবে।
\v 21 যদি তাতে কোনো দোষ থাকে, অর্থাৎ সে যদি খোঁড়া কিংবা অন্ধ হয়, কোনোভাবে দোষী হয়, তবে তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তা বলিদান করবে না।
\s5
\v 22 নিজের শহরের দরজার ভিতরে তা খেয়ো অশুচী কি শুচী, উভয় লোকই কৃষ্ণসারের কিংবা হরিণের মতো তা খেতে পারে।
\v 23 তুমি শুধু তার রক্ত খাবে না, তা জলের মতো মাটিতে ঢেলে দেবে।
\s5
\c 16
\s বছরের প্রধান তিনটি পর্বের নিয়ম।
\p
\v 1 তুমি আবীব মাস পালন করবে এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব পালন করবে; কারণ আবীব মাসে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে রাতে মিসর থেকে বের করে এনেছিলেন।
\v 2 আর সদাপ্রভু নিজের নামের বসবাসের জন্যে যে জায়গা মনোনীত করবেন, সেই জায়গায় তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে মেষ পাল ও গোরুর পাল থেকে কিছু পশু নিয়ে নিস্তারপর্বের বলিদান করবে।
\s5
\v 3 তুমি তার সঙ্গে তাড়ীযুক্ত রুটি খাবে না; কারণ তুমি তাড়াতাড়িই মিসর দেশ থেকে বের হয়েছিলে; এই জন্য সাত দিন সেই বলির সঙ্গে তাড়ীশূন্য রুটি, দুঃখাবস্থার রুটি খাবে; যেন মিসর দেশ থেকে তোমার বের হয়ে আসার দিন যাবজ্জীবন তোমার মনে থাকে।
\v 4 সাত দিন তোমার সীমার মধ্যে তাড়ী দেখা না যাক এবং প্রথম দিনের সন্ধ্যাবেলায় তুমি যে বলিদান কর, তার মাংস কিছুই যেন সকাল পর্যন্ত বাকি না থাকুক।
\s5
\v 5 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে সব শহর দেবেন, তার কোনো শহরের দরজার ভিতরে নিস্তারপর্বের বলিদান করতে পারবে না;
\v 6 কিন্তু তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নামের বসবাসের জন্যে যে জায়গা মনোনীত করবেন, সেই জায়গায় মিসর দেশ থেকে তোমার বের হয়ে আসার বছরে, সন্ধ্যাবেলায়, সূর্য্যাস্তের সময়ে নিস্তারপর্বের বলিদান করবে।
\s5
\v 7 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় তা রান্না করে খাবে; পরে সকালে নিজের তাঁবুতে ফিরে যাবে।
\v 8 তুমি ছয় দিন তাড়ীশূন্য রুটি খাবে এবং সপ্তম দিনে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পর্বসভা হবে; তুমি কোনো কাজ করবে না।
\s5
\v 9 তুমি সাত সপ্তাহ নিজের জন্য গণনা করবে; ক্ষেতে অবস্থিত শস্যে প্রথম কাস্তে দেওয়া থেকে সাত সপ্তাহ গণনা করতে শুরু করবে।
\v 10 পরে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আশীর্বাদ অনুযায়ী সঙ্গতি থেকে নিজের ইচ্ছায় দেওয়া উপহারের মাধ্যমে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে সাত সপ্তাহের উৎসব পালন করবে।
\s5
\v 11 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নামের বসবাসের জন্যে যে জায়গা মনোনীত করবেন, সেই জায়গায় তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তুমি, তোমার ছেলেমেয়ে, তোমার দাসদাসী, তোমার শহরের দরজার মাঝখানের লেবীয় ও তোমার সাথে বাসকারী বিদেশী, পিতৃহীন ও বিধবা সবাই আনন্দ করবে।
\v 12 আর তুমি মনে রাখবে যে, তুমি মিসর দেশে দাস ছিলে এবং এই সব বিধি যত্নসহকারে পালন করবে।
\s5
\v 13 তোমার খামার ও আঙ্গুর পেষণ যন্ত্র থেকে যা সংগ্রহ করার, তা সংগ্রহ করার পর তুমি সাত দিন কুটিরের উৎসব পালন করবে।
\v 14 আর সেই উৎসবে তুমি, তোমার ছেলেময়ে, তোমার দাসদাসী ও তোমার শহরের দরজার মাঝখানের লেবীয় ও বিদেশী এবং পিতৃহীন ও বিধবা সবাই আনন্দ করবে।
\s5
\v 15 সদাপ্রভু মনোনীত জায়গায় তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে সাত দিন উৎসব পালন করবে; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার উৎপন্ন জিনিসে ও হাতের সব কাজে তোমাকে আশীর্বাদ করবেন, আর তুমি সম্পূর্ণ আনন্দিত হবে।
\s5
\v 16 তোমার প্রত্যেক পুরুষ বছরের মধ্যে তিন বার তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তাঁর মনোনীত জায়গায় দেখা দেবে; তাড়ীশূন্য রুটির উৎসবে, সাত সপ্তাহের উৎসবে ও কুটিরের উৎসবে; আর তারা সদাপ্রভুর সামনে খালি হাতে দেখা দেবে না;
\v 17 প্রত্যেক জন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া আশীর্বাদ অনুসারে নিজেদের সঙ্গতি অনুযায়ী উপহার দেবে।
\s বিচারক ও রাজাদের কর্ত্তব্য।
\p
\s5
\v 18 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সকল বংশানুসারে তোমাকে যে সব শহর দেবেন, সেই সব শহরের দরজায় তুমি আপনার জন্য বিচারকর্তাদেরকে ও শাসন কর্তাদেরকে নিযুক্ত করবে; আর তারা সঠিক বিচারে লোকদের বিচার করবে।
\v 19 তুমি জোর করে বিচার করতে পারো না, কারোর পক্ষপাত করবে না ও ঘুষ নেবে না; কারণ ঘুষ জ্ঞানীদের চোখ অন্ধ করে ও ধার্মিকদের কথা বিপরীত করে।
\v 20 সবভাবে যা সঠিক, তারই অনুগামী হবে, তাতে তুমি বেঁচে থেকে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া দেশ অধিকার করবে।
\s5
\v 21 তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যে যজ্ঞবেদি তৈরী করবে, তার কাছে কোনো ধরনের কাঠের আশেরা মূর্তি স্থাপন করবে না।
\v 22 কখনো তুমি তোমার জন্য পবিত্র পাথর বসাবে না, যা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘৃণাস্পদ।
\s5
\c 17
\p
\v 1 তুমি ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে দোষী, কোনো ধরনের কলঙ্কযুক্ত গোরু কিংবা মেষ বলিদান করবে না; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তা ঘৃণা করেন।
\s5
\v 2 তোমার মধ্যে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে সব শহর দেবেন, তার কোনো শহরের দরজার ভিতরে যদি এমন কোনো পুরুষ কিংবা স্ত্রীলোক পাওয়া যায়, যে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিয়ম লঙ্ঘনের মাধ্যমে তাঁর দৃষ্টিতে যা খারাপ, তাই করেছে;
\v 3 গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা করেছে ও আমার আজ্ঞার বিরুদ্ধে তাদের কাছে অথবা সূর্য্যের বা চাঁদের কিংবা আকাশবাহিনীর কারো কাছে নত হয়েছে;
\v 4 আর তোমাকে তা বলা হয়েছে ও তুমি শুনেছ, তবে যত্নসহকারে খোঁজ করবে, আর দেখ, যদি এটা সত্য ও নিশ্চিত হয় যে, ইস্রায়েলের মধ্যে এরকম ঘৃণার্হ কাজ হয়েছে,
\s5
\v 5 তবে তুমি সেই খারাপ কাজ করা পুরুষ কিংবা স্ত্রীলোককে বের করে নিজের শহরের দরজার কাছে আনবে যারা খারাপ কাজ করে; পুরুষ হোক বা স্ত্রীলোক হোক, তুমি পাথরের আঘাতে তার প্রাণদণ্ড করবে।
\v 6 প্রাণদণ্ডের যোগ্য ব্যক্তির প্রাণদণ্ড দুই সাক্ষীর কিংবা তিন সাক্ষীর প্রমাণে হবে; একমাত্র সাক্ষীর প্রমাণে তার প্রাণদণ্ড হবে না।
\v 7 তাকে হত্যা করতে প্রথমে সাক্ষীরা এবং পরে সব লোক তার ওপরে হাত উঠাবে। এইভাবে তুমি নিজেদের মধ্যে থেকে খারাপ ব্যবহার নষ্ট করবে।
\s5
\v 8 ক্ষতি কিংবা বিরোধের কিংবা আঘাতের বিষয়ে দুই জনের বিবাদ তোমার কোনো শহরের দরজায় উপস্থিত হলে যদি তার বিচার তোমার পক্ষে খুব কঠিন হয়, তবে তুমি উঠে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় যাবে;
\v 9 আর লেবীয় যাজকদের ও সেইসময়ের বিচারকর্তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করবে, তাতে তারা তোমাকে বিচারের আদেশ জানাবে।
\s5
\v 10 পরে সদাপ্রভুর মনোনীত সেই জায়গায় তারা যে বিচারের আদেশ তোমাকে জানাবে, তুমি সেই আদেশের সিদ্ধান্ত অনুসারে কাজ করবে; তারা তোমাকে যা শেখাবে, সবই যত্নসহকারে করবে।
\v 11 তারা তোমাকে যে নিয়ম শেখাবে, তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তুমি করবে; যা তারা বলেছে তার ডান দিকে কি বাম দিকে ফিরবে না;
\s5
\v 12 কিন্তু যে লোক অহংকারী আচরণ করে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবার জন্যে সেই জায়গায় দাড়িয়ে থাকা যাজকের কিংবা বিচারকর্তার কথায় কান না দেয়, সেই মানুষ মারা যাবে; ফলে তুমি ইস্রায়েলের মধ্যে থেকে খারাপ আচরণ বাদ দেবে।
\v 13 তাতে সব লোক তা শুনে ভয় পাবে এবং অহংকারের কাজ আর করবে না।
\s5
\v 14 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিচ্ছেন, তুমি যখন সেখানে গিয়ে দেশ অধিকার করে বাস করবে; আর বলবে, “আমার চারদিকের সব জাতির মতো আমিও নিজের উপরে এক জন রাজা নিযুক্ত করব,”
\v 15 তখন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যাকে মনোনীত করবেন, তাঁকেই নিজের ওপরে রাজা নিযুক্ত করবে; তোমার ভাইদের মধ্যে থেকে নিজের ওপরে রাজা নিযুক্ত করবে; যে তোমার ভাই না, এমন বিজাতীয় লোককে নিজের ওপরে রাজা করতে পারবে না।
\s5
\v 16 আর সেই রাজা নিজের জন্য অনেক ঘোড়া রাখবে না এবং অনেক ঘোড়ার চেষ্টায় লোকদেরকে আবার মিসর দেশে নিয়ে যাবে না; কারণ সদাপ্রভু তোমাদেরকে বলেছেন, এর পরে তোমরা সেই রাস্তায় আর ফিরে যাবে না।
\v 17 আর সে অনেক স্ত্রী গ্রহণ করবে না, পাছে তার হৃদয় সদাপ্রভুর থেকে ফিরে যায় এবং সে নিজের জন্য রুপো কিংবা সোনা বহুগুণ করবে না।
\s5
\v 18 আর নিজের রাজ্যের সিংহাসনে বসার সময়ে সে নিজের জন্যে একটি বইয়ে লেবীয় যাজকদের সামনে অবস্থিত এই নিয়মের অনুলিপি লিখবে।
\v 19 তা তার কাছে থাকবে এবং সে সারা জীবন তা পড়বে; যেন সে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করতে ও এই নিয়মের সব কথা ও এই সব বিধি পালন করতে শেখে;
\s5
\v 20 তিনি এইগুলি করবেন যেন নিজের ভাইদের ওপরে তার হৃদয় উদ্ধত না হয় এবং সে আদেশের ডান দিকে কি বাম দিকে না ফেরে; এইভাবে যেন ইস্রায়েলের মধ্যে তার ও তার সন্তানদের রাজত্ব দীর্ঘ দিন থাকে।
\s5
\c 18
\s নানা ধরনের আদেশ।
\p
\v 1 যাজকরা, যারা লেবীয় এবং, লেবির সমস্ত বংশ, ইস্রায়েলের সঙ্গে কোনো অংশ কি অধিকার পাবে না, তারা সদাপ্রভুর আগুন দিয়ে তৈরী উপহার ও তাঁর উত্তরাধিকারের জিনিস ভোগ করবে।
\v 2 তারা নিজের ভাইদের মধ্যে কোনো অধিকার পাবে না; সদাপ্রভুই তাদের অধিকার, যেমন তিনি তাদেরকে বলেছেন।
\s5
\v 3 আর লোকদের থেকে যাজকদের পাওনা বিষয়ের এই বিধি; যারা গোরু কিংবা মেষ বলিদান করে, তারা বলির কাঁধ, দুই গাল ও ভিতরের অংশ যাজককে দেবে।
\v 4 তুমি নিজের শস্যের, আঙ্গুর রসের ও তেলের প্রথম অংশ এবং মেষলোমের প্রথম অংশ তাকে দেবে।
\v 5 কারণ সদাপ্রভুর নামে সেবা করতে সব সময় দাঁড়ানোর জন্য তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সব বংশের মধ্যে থেকে তাকে ও তাঁর সন্তানদেরকে মনোনীত করেছেন।
\s5
\v 6 আর সব ইস্রায়েলের মধ্যে তোমার কোনো শহরের দরজায় যে লেবীয় থাকে, সে যদি নিজের প্রাণের সম্পূর্ণ ইচ্ছায় সেখান থেকে সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় আসে,
\v 7 তবে সে সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা নিজের লেবীয় ভাইদের মতো নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে সেবা করবে।
\v 8 তারা খাবারের জন্যে সমান অংশ পাবে; তাছাড়া সে নিজের উত্তরাধিকার বিক্রির মূল্যও ভোগ করবে।
\s5
\v 9 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিচ্ছেন, যখন সেই দেশে আসবে তখন তুমি সেখানকার জাতিদের ঘৃণার্হ কাজের মতো কাজ করতে শিখো না।
\v 10 তোমার মধ্যে যেন এমন কোনো লোক পাওয়া না যায়, যে ছেলে বা মেয়েকে আগুনের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যায়,
\v 11 কোনো যাদুকর, কোনো লোক যে মৃতদের সঙ্গে কথা বলে অথবা যে আত্মাদের সাথে কথা বলে।
\s5
\v 12 কারণ যারা এই সব করে সদাপ্রভু তাদের ঘৃণা করেন; আর সেই ঘৃণিত কাজের জন্য তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সামনে থেকে তাদেরকে তাড়িয়ে দেবেন।
\v 13 তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে সিদ্ধ পবিত্র হও।
\v 14 কারণ তুমি যে জাতিদেরকে তাড়িয়ে দেবে, তারা জাদু ও মন্ত্রব্যবহারীদের কথায় কান দেয়, কিন্তু তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকেই তা করতে দেননি।
\s5
\v 15 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার মধ্যে থেকে, তোমার ভাইদের মধ্যে থেকে, তোমার জন্য আমার মতো এক ভাববাদী উৎপন্ন করবেন, তাঁরই কথায় তোমরা কান দেবে।
\v 16 কারণ হোরেবে সমাজের দিনে তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে এই প্রার্থনাই তো করেছিলে, যেমন, আমি যেন নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রব আবার শুনতে ও এই বিশাল আগুন আর দেখতে না পাই, পাছে আমি মারা পড়ি।
\s5
\v 17 তখন সদাপ্রভু আমাকে বললেন, “ওরা ভালই বলেছে।
\v 18 আমি ওদের জন্য ওদের ভাইদের মধ্যে থেকে তোমার মতো এক ভাববাদী উৎপন্ন করব ও তাঁর মুখে আমার বাক্য দেব; আর আমি তাঁকে যা যা আদেশ করব, তা তিনি ওদেরকে বলবেন।
\v 19 আর আমার নামে তিনি আমার কথা বলবে এবং যদি কেউ না শোনে, তার কাছে আমি পরিশোধ নেব।
\s5
\v 20 কিন্তু আমি যে কথা বলতে আদেশ করিনি, আমার নামে যে কোনো ভাববাদী দুঃসাহসের সঙ্গে তা বলে, কিংবা অন্য দেবতাদের নামে যে কেউ কথা বলে, সেই ভাববাদী অবশ্যই মারা যাবে।
\v 21 আর তুমি যদি মনে মনে বল, ‘সদাপ্রভু যে কথা বলেননি, তা আমরা কিভাবে জানব?
\s5
\v 22 যখন একজন ভাববাদী সদাপ্রভুর নামে কথা বললে যদি সেই কথা পরে সম্পন্ন না হয় ও তার ফল উপস্থিত না হয়, তবে সেই কথা সদাপ্রভু বলেননি; ঐ ভাববাদী দুঃসাহসের সঙ্গে তা বলেছে এবং তুমি তাকে কখনো ভয় করবে না।
\s5
\c 19
\p
\v 1 যখন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে জাতিদের দেশ তোমাকে দিচ্ছেন, তাদেরকে তিনি উচ্ছেদ করলে পর যখন তুমি তাদেরকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের শহরে ও বাড়িতে বাস করবে,
\v 2 যে দেশ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারের জন্যে তোমাকে দিচ্ছেন, তোমার সেই দেশের মাঝখানে তুমি নিজের জন্য তিনটি শহর নির্বাচন করবে।
\v 3 তুমি রাস্তা তৈরী করবে এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশের অধিকার তোমাকে দেন, তোমার সেই দেশের ভূমি তিন ভাগ করবে; তাতে প্রত্যেক হত্যাকারীরা সেই শহরে পালিয়ে যেতে পারবে।
\s5
\v 4 এই নিয়ম এক জনের জন্য যে হত্যাকারী সেই জায়গায় পালিয়ে বাঁচতে পারে; কেউ যদি আগে প্রতিবাসীকে ঘৃণা না করে ভুলবশত তাকে হত্যা করে;
\v 5 যেমন কেউ যখন নিজের প্রতিবাসীর সঙ্গে কাঠ কাটতে বনে গিয়ে গাছ কাটবার জন্য কুড়াল তুললে যদি ফলক বাঁট থেকে খসে প্রতিবাসীর গায়ে এমন লাগে যে, তাতেই সে মারা পড়ে, তবে সে ঐ তিনটির মধ্যে কোনো এক শহরে পালিয়ে বাঁচতে পারবে;
\s5
\v 6 পাছে রক্তের প্রতিশোধদাতা রেগে গিয়ে হত্যাকারীর পিছনে তাড়া করে পথের দূরত্বের জন্য তাকে ধরে মেরে ফেলে। সে লোক তো প্রাণদণ্ডের যোগ্য না কারণ সে আগে ওকে ঘৃণা করেনি।
\v 7 অতএব আমি তোমাকে আদেশ করছি, তুমি তোমার জন্য তিনটি শহর নির্বাচন করবে।
\s5
\v 8 আর আমি আজ তোমাকে যে সব আদেশ দিচ্ছি, তুমি তা পালন করে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবাসলে ও সারা জীবন
\v 9 তাঁর পথে চললে যদি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে করা নিজের শপথ অনুসারে তোমার সীমা বাড়ান ও তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে প্রতিজ্ঞা করা সমস্ত দেশ তোমাকে দেন; তবে তুমি সেই তিন শহর ছাড়া আরও তিনটি শহর নির্ধারণ করবে;
\v 10 যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারের জন্যে তোমাকে যে দেশ দিচ্ছেন, তোমার সেই দেশের মধ্যে নির্দোষের রক্তপাত না হয়, আর তোমার উপরে রক্তপাতের অপরাধ না আসে।
\s5
\v 11 কিন্তু যদি কেউ নিজের প্রতিবাসীকে ঘৃণা করে তার জন্য ঘাঁটি বসায় ও তার বিরুদ্ধে উঠে তাকে সাংঘাতিক আঘাত করে, আর সে মরে যায়, পরে ওই লোক যদি ঐ সব শহরের মধ্যে কোনো একটি শহরে পালিয়ে যায়;
\v 12 তবে তার শহরের প্রাচীনরা লোক পাঠিয়ে সেখান থেকে তাকে আনাবে ও তাকে হত্যা করার জন্য রক্তের প্রতিশোধদাতার হাতে দেবে।
\v 13 তোমার চোখ তার প্রতি দয়া না করুক, কিন্তু তুমি ইস্রায়েলের মধ্যে থেকে যারা অপরাধী না তাদের রক্তপাতের দোষ দূর করবে; তাতে তোমার ভালো হবে।
\s5
\v 14 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারের জন্যে যে দেশ তোমাকে দিচ্ছেন সেই দেশে তোমার পাওনা ভূমিতে আগের লোকেরা যে সীমার চিহ্ন নির্ধারণ করেছে, তোমার প্রতিবাসীর সেই চিহ্ন সরিয়ে দেবে না।
\s5
\v 15 কেউ কোনো ধরনের অপরাধ কি পাপ, যে কোনো পাপ করলে, তার বিরুদ্ধে একমাত্র সাক্ষী উঠবে না; দুই কিংবা তিন সাক্ষীর প্রমাণের মাধ্যমে বিচার শেষ হবে।
\v 16 কোনো অন্যায়ী সাক্ষী যদি কারো বিরুদ্ধে উঠে তার বিষয়ে অন্যায় কাজের সাক্ষ্য দেয়,
\s5
\v 17 তবে সেই বাদী প্রতিবাদী উভয়ে সদাপ্রভুর সামনে, সেই সময়ের যাজকদের ও বিচারকর্তাদের সামনে, দাঁড়াবে।
\v 18 পরে বিচারকর্তারা সযত্নে খোঁজ করবে, আর দেখ, সে সাক্ষী যদি মিথ্যাসাক্ষী হয় ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাসাক্ষ্য দিয়ে থাকে;
\v 19 তবে সে তার ভাইয়ের প্রতি যেমন করতে চেয়েছিল, তার প্রতি তোমরা সেরকম করবে; এইভাবে তুমি নিজের মধ্যে থেকে খারাপ কার্যকলাপ বাদ দেবে।
\s5
\v 20 তা শুনে বাকি লোকেরা ভয় পেয়ে তোমার মধ্যে সেরকম খারাপ কাজ আর করবে না।
\v 21 তোমার চোখ দয়া না করুক; প্রাণের বেতনের জন্যে প্রাণ, চোখের জন্যে চোখ, দাঁতের জন্যে দাঁত, হাতের জন্যে হাত, পায়ের জন্যে পা।
\s5
\c 20
\s যুদ্ধের বিষয়ে নিয়ম।
\p
\v 1 যখন তুমি তোমার শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাবে এবং যদি দেখো নিজের থেকে বেশি ঘোড়া, রথ ও লোক দেখ, তবে সেই সব থেকে ভয় পেয় না, সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে আছেন, যিনি মিসর দেশ থেকে তোমাকে নিয়ে এসেছেন।
\s5
\v 2 আর তোমরা যখন যুদ্ধের জন্যে কাছাকাছি আসবে, তখন যাজক আসবে এবং লোকদের কাছে বলবে,
\v 3 তাদেরকে বলবে, “হে ইস্রায়েল, শোনো, তোমরা আজ তোমাদের শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে কাছে যাচ্ছ; তোমাদের হৃদয় দুর্বল না হোক; ভয় কর না, কেঁপে যেও না বা ওদের থেকে ভয় পেও না।
\v 4 কারণ সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর যিনি সঙ্গে যাচ্ছেন তোমাদের জন্য শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এবং তোমাদের উদ্ধার করতে তোমাদের সঙ্গে সঙ্গে যাচ্ছেন।”
\s5
\v 5 পরে অধ্যক্ষরা লোকদেরকে এই কথা বলবে, “তোমাদের মধ্যে কে নতুন বাড়ি তৈরী করে তার প্রতিষ্ঠা করেনি? সে যুদ্ধে মারা গেলে পাছে অন্য লোক তার প্রতিষ্ঠা করে, এই জন্য সে নিজের বাড়ি ফিরে যাক।
\s5
\v 6 আর কে আঙ্গুর ক্ষেত তৈরী করে তার ফল ভোগ করেনি? সে যুদ্ধে মারা গেলে পাছে অন্য লোক তার ফল ভোগ করে, এই জন্য সে নিজের বাড়ি ফিরে যাক।
\v 7 আর বাগ্‌দান হলেও কে বিয়ে করেনি? সে যুদ্ধে মারা গেলে পাছে অন্য লোক সেই মেয়েকে বিয়ে করে, এই জন্য সে নিজের বাড়ি ফিরে যাক।”
\s5
\v 8 অধ্যক্ষরা লোকদের কাছে আরও কথা বলবে, তারা বলবে, “ভীত ও দুর্বলহৃদয় লোক কে আছে? সে নিজের বাড়ি ফিরে যাক, পাছে তার হৃদয়ের মতো তার ভাইদের হৃদয় গলে যায়।”
\v 9 পরে অধ্যক্ষরা লোকদের কাছে কথা শেষ করলে তারা লোকদের ওপরে সেনাপতিদেরকে নিযুক্ত করবে।
\s5
\v 10 যখন তুমি কোনো শহরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে তার কাছে আসবে, তখন তার কাছে সন্ধির কথা ঘোষণা করবে।
\v 11 তাতে যদি সে সন্ধি করতে রাজি হয়ে তোমার জন্য দরজা খুলে দেয়, তবে সেই শহরে যে সব লোক পাওয়া যায়, তারা তোমার তোমার দাস হবে এবং সেবা করবে।
\s5
\v 12 কিন্তু যদি সে সন্ধি না করে তোমার সঙ্গে যুদ্ধ করে, তবে তুমি সেই শহর অবরোধ করবে।
\v 13 পরে তোমার সদাপ্রভু তা তোমার হাতে দিলে তুমি তার সব লোককে মেরে ফেলবে,
\s5
\v 14 কিন্তু স্ত্রীলোক, বালকবালিকা ও পশুরা প্রভৃতি শহরের সর্ব্বস্ব, সব লুঠের জিনিস নিজের জন্য লুঠ হিসাবে গ্রহণ করবে, আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া শত্রুদের লুঠ ভোগ করবে।
\v 15 এই কাছাকাছি জাতিদের শহর ছাড়া যে সব শহর তোমার থেকে অনেক দূরে আছে, তাদেরই প্রতি এরকম করবে।
\s5
\v 16 কিন্তু এই জাতিদের যে সব শহর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারের জন্যে তোমাকে দেবেন, সেই সবের মধ্যে নিশ্বাস নেওয়ার মতো কাউকে বাঁচিয়ে রাখবে না;
\v 17 তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে তাদেরকে—হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দেরকে—সম্পূর্ণ ধ্বংস করবে;
\v 18 সুতরাং তারা নিজেদের দেবতাদের উদ্দেশ্যে যে সব ঘৃণার্হ কাজ করে, সেরকম করতে তোমাদেরকেও শেখায়, আর যদি তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ কর।
\s5
\v 19 যখন তুমি কোনো শহর অধিকার করার জন্যে যুদ্ধ করে অনেক সময় পর্যন্ত তা অবরোধ কর, তখন কুড়াল দিয়ে সেখানকার গাছ কাটবে না; কারণ তুমি তার ফল খেতে পার, সুতরাং সেগুলি কাটবে না; কারণ ক্ষেত্রের গাছ কি মানুষ যে, তাও তোমার অবরোধের যোগ্য হবে?
\v 20 তুমি যে সব গাছগুলির বিষয়ে জানো সেগুলি থেকে খাদ্য জন্মায় না, সে সব তুমি নষ্ট করতে ও কাটতে পারবে এবং তোমার সঙ্গে যুদ্ধকারী শহর যতক্ষণ না পড়ে যায়, ততক্ষণ সেই শহরের বিরুদ্ধে দাঙ্গা বাঁধতে পারবে।
\s5
\c 21
\s নানা বিষয়ে আদেশ।
\p
\v 1 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারের জন্যে যে দেশ তোমাকে দিচ্ছেন, তার মধ্যে যদি ক্ষেতে পড়ে থাকা কোনো মরে যাওয়া লোককে পাওয়া যায় এবং তাকে কে হত্যা করল, তা জানা না যায়;
\v 2 তবে তোমার প্রাচীনরা ও বিচারকর্তারা বাইরে গিয়ে সেই মৃতদেহের চারদিকে কোন্‌ শহর কত দূর, তা মাপবে।
\s5
\v 3 তাতে যে শহর ঐ মারা যাওয়া লোকের কাছাকাছি হবে, সেখানকার প্রাচীনরা পাল থেকে এমন একটি গোরুর বাচ্চা নেবে, যার মাধ্যমে কোনো কাজ হয়নি, যে যোঁয়ালি বহন করেনি।
\v 4 পরে সেই শহরের প্রাচীনরা সেই গোরুর বাচ্চাকে এমন কোনো একটি উপত্যকায় আনবে, যেখানে জলস্রোত সবসময় বয়ে চলে এবং চাষ বা বীজবপন হয় না ও সেই উপত্যকায় তার ঘাড় ভেঙ্গে ফেলবে।
\s5
\v 5 পরে লেবির সন্তান যাজকেরা কাছে আসবে, কারণ তাদেরকেই তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের সেবার জন্যে ও সদাপ্রভুর নামে আশীর্বাদ করার জন্যে মনোনীত করেছেন এবং তাদের কথা অনুসারে প্রত্যেক বিবাদের ও আঘাতের বিচার হবে।
\s5
\v 6 পরে মৃতের কাছাকাছি ঐ শহরের সব প্রাচীন উপত্যকাতে ভাঙ্গা ঘাড়বিশিষ্ট গোরুর বাচ্চার ওপরে নিজেদের হাত ধুয়ে দেবে
\v 7 এবং তারা উত্তর করে বলবে, “আমাদের হাত এই রক্তপাত করেনি, আমাদের চোখ এটা দেখেনি;
\s5
\v 8 হে সদাপ্রভু, তুমি তোমার লোক যে ইস্রায়েলকে মুক্ত করেছ, তাকে ক্ষমা কর; তোমার লোক ইস্রায়েলের মধ্যে যারা অপরাধ করেনি তাদের রক্তপাতের জন্য দোষ থাকতে দিও না। তাতে তাদের পক্ষে সেই রক্তপাতের দোষ ক্ষমা হবে।
\v 9 এভাবে তুমি নিজের মধ্যে থেকে যারা অপরাধ করেনি তাদের রক্তপাতের দোষ দূর করবে; কারণ সদাপ্রভুর সামনে যা সঠিক, তাই তুমি করবে।
\s5
\v 10 তুমি নিজের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রা করলে যদি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদেরকে তোমার হাতে দেন ও তুমি তাদেরকে বন্দি করে নিয়ে যাও
\v 11 এবং সেই বন্দিদের মধ্যে কোনো সুন্দরী স্ত্রী দেখে ভালবাসায় আসক্ত হয়ে যদি তুমি তাকে বিয়ে করতে চাও;
\v 12 তবে তাকে নিজের ঘরের মধ্যে আনবে এবং সে নিজের মাথা নেড়া করবে ও নখ কাটবে;
\s5
\v 13 আর নিজের বন্দিত্বের পোশাক ত্যাগ করবে; পরে তোমার বাড়ি থেকে নিজের বাবামায়ের জন্য সম্পূর্ণ এক মাস শোক করবে; তার পরে তুমি তার কাছে যেতে পারবে, তুমি তার স্বামী হবে ও সে তোমার স্ত্রী হবে।
\v 14 আর যদি তাতে তোমার ইচ্ছা না হয়, তবে যে জায়গায় তার ইচ্ছা, সেই জায়গায় তাকে যেতে দেবে; কিন্তু কোনো ভাবে টাকা নিয়ে তাকে বিক্রি করবে না; তার প্রতি দাসের মতো ব্যবহার করবে না, কারণ তুমি তাকে অপমান করেছ।
\s5
\v 15 যদি কোনো লোকের প্রিয় অপ্রিয় দুই স্ত্রী থাকে এবং প্রিয় ও অপ্রিয় উভয়ে তার জন্য ছেলের জন্ম দেয়
\v 16 আর বড় ছেলে অপ্রিয়ার সন্তান হয়; তবে নিজের ছেলেদেরকে সব কিছুর অধিকার দেবার সময়ে অপ্রিয়াজাত বড় ছেলে থাকতে সে প্রিয়াজাত ছেলেকে জ্যেষ্ঠাধিকার দিতে পারবে না।
\v 17 কিন্তু সে অপ্রিয়ার ছেলেকে বড় হিসাবে স্বীকার করে নিজের সব কিছুর দুই অংশ তাকে দেবে; কারণ সে তার শক্তির প্রথম ফল, জ্যেষ্ঠাধিকার তারই।
\s5
\v 18 যদি কারো ছেলে অবাধ্য ও বিরোধী হয়, বাবা মায়ের কথা না শোনে এবং শাসন করলেও তাদেরকে অমান্য করে;
\v 19 তবে তার বাবা মা তাকে ধরে শহরের প্রাচীনদের কাছে ও তার নিবাসের জায়গার শহরের দরজায় নিয়ে যাবে;
\s5
\v 20 আর তারা শহরের প্রাচীনদেরকে বলবে, “আমাদের এই ছেলে অবাধ্য ও বিরোধী, আমাদের কথা মানে না, সে অপব্যয়ী ও মদ্যপায়ী।
\v 21 তাতে সেই শহরের সব লোক তাকে পাথরের আঘাতে হত্যা করবে; এভাবে তুমি নিজের মধ্যে থেকে খারাপ কাজ বাদ দেবে, আর সমস্ত ইস্রায়েল শুনে ভয় পাবে।
\s5
\v 22 যদি কোনো মানুষ প্রাণদণ্ডের যোগ্য পাপ করে, আর তার প্রাণদণ্ড হয় এবং তুমি তাকে গাছে টাঙিয়ে দিও,
\v 23 তবে তার মৃতদেহ রাতে গাছের ওপরে থাকতে দেবে না, কিন্তু নিশ্চয় সেই দিনই তাকে কবর দেবে; কারণ যে ব্যক্তিকে টাঙ্গান যায়, সে ঈশ্বরের শাপগ্রস্ত; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারের জন্যে যে ভূমি তোমাকে দিচ্ছেন, তুমি তোমার সেই ভূমি অশুচী করবে না।
\s5
\c 22
\p
\v 1 তোমার কোনো ভাইয়ের বলদ কিংবা মেষকে বিপথগামী হতে দেখলে তুমি তাদের থেকে গা ঢাকা দিও না; অবশ্য নিজের ভাইয়ের কাছে তাদেরকে ফিরিয়ে আনবে।
\v 2 যদি তোমার সেই ভাই তোমার কাছে অবস্থিত কিংবা পরিচিত না হয়, তবে তুমি সেই পশুকে নিজের বাড়িতে এনে যতক্ষণ সেই ভাই তার খোঁজ না করে, ততক্ষণ নিজের কাছে রাখবে, পরে তা ফিরিয়ে দেবে।
\s5
\v 3 তুমি তার গাধার বিষয়েও সেরকম করবে এবং তার কাপড়ের বিষয়েও সেরকম করবে; তোমার ভাইয়ের হারিয়ে যাওয়া যে কোনো জিনিস তুমি পাও, সেই সবের বিষয়ে সেরকম করবে; তোমার গা ঢাকা দেওয়া উচিত না।
\v 4 তোমার ভাই গাধা কিংবা বলদকে পথে পড়ে থাকতে দেখলে তাদের থেকে গা ঢাকা দিও না; অবশ্য তুমি তাদেরকে তুলতে তার সাহায্য করবে।
\s5
\v 5 স্ত্রীলোক পুরুষের পরা কিংবা পুরুষ স্ত্রীলোকের পোশাক পরবে না; কারণ যে কেউ তা করে, সে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘৃণার পাত্র।
\s5
\v 6 যদি রাস্তার পাশে অবস্থিত কোনো গাছে কিংবা মাটির ওপরে তোমার সামনে কোনো পাখির বাসাতে বাচ্চা কিংবা ডিম থাকে এবং সেই বাচ্চার কিংবা ডিমের ওপরে মা পাখি বসে থাকে, তবে তুমি বাচ্চাদের সঙ্গে মা পাখিকে ধর না।
\v 7 তুমি নিজের জন্য বাচ্চাগুলিকে নিতে পার, কিন্তু নিশ্চয় মা পাখিকে ছেড়ে দেবে; যেন তোমার ভালো হয় ও দীর্ঘ দিন আয়ু হয়।
\s5
\v 8 নতুন বাড়ি তৈরী করলে তার ছাদে পাঁচিল তৈরী করবে, পাছে তার ওপর থেকে কোনো মানুষ পড়ে গেলে তুমি নিজের বাড়িতে রক্তপাতের অপরাধ আনো।
\s5
\v 9 তোমার আঙ্গুর ক্ষেতে মিশ্রিত বীজ বপন করবে না; পাছে সব ফল—তোমার বোনা বীজে ও আঙ্গুর ক্ষেতের ফলে—তুমি স্বত্বহীন হও।
\v 10 বলদে ও গাধায় এক সঙ্গে জুড়ে চাষ করবে না।
\v 11 লোম ও মসীনা মেশানো সুতোর তৈরী পোশাক পর না।
\s5
\v 12 নিজের আবরণের জন্যে গায়ের পোশাকের চার কোণায় আঁচল দিও।
\s5
\v 13 কোনো পুরুষ যদি বিয়ে করে স্ত্রীর কাছে যায়, পরে তাকে ঘৃণা করে
\v 14 এবং তার নামে অপবাদ করে ও তার অপমান করে বলে, “আমি এই স্ত্রীকে বিয়ে করেছি বটে, কিন্তু যখন আমি তার কাছে গেলাম, আমি তার মধ্যে কুমারীত্বের চিহ্ন পেলাম না;”
\s5
\v 15 তবে সেই মেয়ের বাবা মা তার কুমারীত্বের চিহ্ন নিয়ে শহরের প্রাচীনদের কাছে শহরের দরজায় উপস্থিত করবে।
\s5
\v 16 আর মেয়ের বাবা প্রাচীনদেরকে বলবে, “আমি এই লোকের সঙ্গে নিজের মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম, কিন্তু এ তাকে ঘৃণা করে;
\v 17 আর দেখ, এ অপবাদ দিয়ে বলে, আমি তোমার মেয়ের কুমারীত্বের চিহ্ন পাইনি; কিন্তু আমার মেয়ের কুমারীত্বের চিহ্ন এই দেখুন। আর তারা শহরের প্রাচীনদের সামনে সেই পোশাক বাড়িয়ে দেবে।
\s5
\v 18 পরে শহরের প্রাচীনরা সেই পুরুষকে ধরে শাস্তি দেবে।
\v 19 আর তার একশো [শেকল] রুপো শাস্তি দিয়ে মেয়ের বাবাকে দেবে, কারণ সেই লোক ইস্রায়েলীয় এক কুমারীর উপরে বদনাম এনেছে; আর সে তার স্ত্রী হইবে, ঐ লোক সারাজীবন তাকে ত্যাগ করতে পারবে না।
\s5
\v 20 কিন্তু সেই কথা যদি সত্য হয়, মেয়ের কুমারীত্বের চিহ্ন যদি না পাওয়া যায়;
\v 21 তবে তারা সেই মেয়েকে বের করে তার বাবার বাড়ির দরজার কাছে আনবে এবং সেই মেয়ের শহরের লোকেরা পাথরের আঘাতে তাকে হত্যা করবে; কারণ বাবার বাড়িতে ব্যভিচার করাতে সে ইস্রায়েলের মধ্যে অসম্মানীয় কাজ করেছে; এভাবে তুমি নিজের মধ্যে থেকে খারাপ ব্যবহার বাদ দেবে।
\s5
\v 22 কোনো লোক যদি একজন পরস্ত্রীর সঙ্গে শোয়ার সময়ে ধরা পড়ে, তবে পরস্ত্রীর সঙ্গে শুয়ে থাকা সেই পুরুষ ও সেই স্ত্রী উভয়ে মারা যাবে; এভাবে তুমি ইস্রায়েলের মধ্যে থেকে খারাপ ব্যবহার বাদ দেবে।
\s5
\v 23 যদি কেউ পুরুষের প্রতি বাগদত্তা কোনো কুমারীকে শহরের মধ্যে পেয়ে তার সঙ্গে শোয়;
\v 24 তবে তোমরা সেই দুই জনকে বের করে শহরের দরজার কাছে এনে পাথরের আঘাতে হত্যা করবে; সেই মেয়েকে হত্যা করবে, কারণ শহরের মধ্যে থাকলেও সে চিৎকার করেনি এবং সেই লোককে হত্যা করবে, কারণ সে নিজের প্রতিবাসীর স্ত্রীকে অসম্মান করেছে; এভাবে তুমি নিজের মধ্যে থেকে খারাপ ব্যবহার বাদ দেবে।
\s5
\v 25 কিন্তু যদি কোনো লোক বাগদত্তা মেয়েকে মাঠে পেয়ে জোর করে তার সঙ্গে শোয়, তবে তার সঙ্গে যে শোয় সেই লোক মারা যাবে;
\v 26 কিন্তু মেয়ের প্রতি তুমি কিছুই করবে না; সে মেয়েতে প্রাণদণ্ডের যোগ্য পাপ নেই; কারণ যেমন কোনো মানুষ নিজের প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে উঠে তাকে প্রাণে হত্যা করে, এটাও সেরকম।
\v 27 কারণ সেই লোক মাঠে তাকে পেয়েছিল; ওই বাগদত্তা মেয়ে চিৎকার করলেও তার উদ্ধারকর্তা কেউ ছিল না।
\s5
\v 28 যদি কেউ অবাগদত্তা কুমারী মেয়েকে পেয়ে তাকে ধরে তার সঙ্গে শোয় ও তারা ধরা পড়ে,
\v 29 তবে তার সঙ্গে শুয়ে থাকা সেই লোক মেয়ের বাবাকে পঞ্চাশ [শেকল] রুপো দেবে এবং তাকে অসম্মানিত করেছে বলে সে তার স্ত্রী হবে; সেই লোক তাকে সারা জীবন ত্যাগ করতে পারবে না।
\s5
\v 30 কোনো লোক নিজের বাবার স্ত্রীকে গ্রহণ করবে না ও নিজের বাবার বিয়ের অধিকার কেড়ে নিতে পারবে না।
\s5
\c 23
\p
\v 1 হীনবীর্য কিংবা লিঙ্গকাটা লোক সদাপ্রভুর সমাজে প্রবেশ করবে না।
\v 2 অবৈধ লোক সদাপ্রভুর সমাজে প্রবেশ করবে না। তার দশম প্রজন্ম পর্যন্তও সদাপ্রভুর সমাজে প্রবেশ করতে পাবে না।
\s5
\v 3 অম্মোনীয় কিংবা মোয়াবীয় কেউ সদাপ্রভুর সমাজে প্রবেশ করতে পাবে না; দশম প্রজন্ম পর্যন্ত তাদের কেউ সদাপ্রভুর সমাজে কখনও প্রবেশ করতে পাবে না।
\v 4 কারণ মিশর থেকে তোমাদের আসার সময়ে তারা রাস্তায় খাবার ও জল নিয়ে তোমাদের সঙ্গে দেখা করেনি; আবার তোমাকে শাপ দেবার জন্য তোমার বিরুদ্ধে অরাম নহরয়িমে অবস্থিত পথোরনিবাসী বিয়োরের ছেলে বিলিয়মকে ঘুষ দিয়েছিল।
\s5
\v 5 কিন্তু তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু বিলিয়মের কথায় কান দিতে রাজি হননি; বরং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার পক্ষে সেই অভিশাপ আশীর্বাদে পরিণত করলেন; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে ভালবাসেন।
\v 6 তুমি সারা জীবন কখনও তাদের শান্তি কি ভালো খোঁজ করবে না।
\s5
\v 7 তুমি ইদোমীয়কে ঘৃণা করবে না, কারণ সে তোমার ভাই; মিশরীয়কে ঘৃণা করবে না, কারণ তুমি তার দেশে বিদেশী ছিলে।
\v 8 তাদের থেকে যে সন্তানরা জন্ম নেবে, তারা তৃতীয় পুরুষে সদাপ্রভুর সমাজে প্রবেশ করতে পাবে।
\s5
\v 9 তোমার শত্রুগণের বিরুদ্ধে শিবিরে যাবার সময়ে সব খারাপ বিষয়ে সাবধান থাকবে।
\v 10 তোমার মধ্যে যদি কোনো লোক রাতে ঘটা কোনো অশুচীতায় অশুচী হয়, তবে সে শিবির থেকে বের হয়ে যাবে, শিবিরের মধ্যে প্রবেশ করবে না।
\v 11 পরে বেলা শেষ হলে সে জলে স্নান করবে ও সূর্য্যের অস্ত যাবার সময়ে শিবিরের মধ্যে প্রবেশ করবে।
\s5
\v 12 তুমি শিবিরের বাইরে এক জায়গা নির্ধারণ করে বাইরের দেশ বলে সে জায়গায় যাবে;
\v 13 আর তোমার অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে একটি খোঁড়ার জিনিস থাকবে; বাইরের দেশে যাবার সময়ে তুমি তা দিয়ে গর্ত করে ফিরে নিজের নির্গত মল ঢেকে ফেলবে।
\v 14 কারণ তোমাকে রক্ষা করতে ও তোমার শত্রুদেরকে তোমার সামনে দিতে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার শিবিরের মধ্যে যাতায়াত করেন; অতএব তোমার শিবির পবিত্র হোক; পাছে তোমাতে কোনো অশুচী বিষয় দেখে তিনি তোমার থেকে ফিরে যান।
\s5
\v 15 যে দাস নিজের স্বামীর কাছ থেকে তোমার কাছে আসে, তুমি তাকে সে স্বামীর হাতে দেবে না।
\v 16 সে তোমার কোনো এক শহরের দরজার ভিতরে, যেখানে তার ভাল লাগে, সেই মনোনীত জায়গায় তোমার সঙ্গে তোমার মধ্যে বাস করবে; তুমি তার উপরে অত্যাচার করবে না।
\s5
\v 17 ইস্রায়েল বংশের কোনো মেয়ে যেন বেশ্যাগমন না করে আর ইস্রায়েলের কোনো ছেলে যেন পায়ুকামী না হয়।
\v 18 কোনো প্রতিজ্ঞার জন্য মহিলা বেশ্যার বেতন কিংবা পুরুষ বেশ্যার বেতন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৃহে আনবে না, কারণ সে উভয়ই তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ঘৃণার্হ।
\s5
\v 19 তুমি সুদের জন্য, রুপোর সুদ, খাবারের সুদ, কোনো জিনিসের সুদ পাবার জন্য, নিজের ভাইকে ঋণ দেবে না।
\v 20 সুদের জন্য বিদেশীকে ঋণ দিতে পার, কিন্তু সুদের জন্য নিজের ভাইকে ঋণ দেবে না; যেন তুমি যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সে দেশে তোমার হাতে করা সব কাজে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে আশীর্বাদ করেন।
\s5
\v 21 তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে কিছু প্রতিজ্ঞা করলে তা দিতে দেরী কর না; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অবশ্য তা তোমার থেকে আদায় করবেন; না দিলে তোমার পাপ হবে।
\v 22 কিন্তু যদি প্রতিজ্ঞা না কর, তবে তাতে তোমার পাপ হবে না।
\v 23 তোমার মুখ থেকে বলা কথা সযত্নে পালন করবে; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তোমার মুখ থেকে যেমন নিজের ইচ্ছায় দেওয়া প্রতিজ্ঞার কথা বের হয়, সেই অনুসারে করবে।
\s5
\v 24 প্রতিবাসীর আঙ্গুরক্ষেতে গেলে তুমি নিজের ইচ্ছা অনুসারে তৃপ্তি পর্যন্ত আঙ্গুর ফল খেতে পারবে, কিন্তু পাত্রে করে কিছু নেবে না।
\v 25 প্রতিবাসীর শস্যক্ষেতে গেলে তুমি নিজের হাতে শীষ ছিঁড়তে পারবে, কিন্তু নিজের প্রতিবাসীর শস্যক্ষেতে কাস্তে দেবে না।
\s5
\c 24
\p
\v 1 কোনো লোক কোনো স্ত্রীকে গ্রহণ করে বিয়ে করার পর যদি তাতে কোনো ধরনের অনুপযুক্ত ব্যবহার দেখতে পায়, আর সেই জন্য সে স্ত্রী তার দৃষ্টিতে প্রীতিপাত্র না হয়, তবে সেই লোক তার জন্য এক ত্যাগপত্র লিখে তার হাতে দিয়ে নিজের বাড়ি থেকে তাকে বিদায় করতে পারবে।
\v 2 আর সে স্ত্রী তার বাড়ি থেকে বের হবার পর গিয়ে অন্য লোকের স্ত্রী হতে পারে।
\s5
\v 3 আর ঐ দ্বিতীয় স্বামীও যদি তাকে ঘৃণা করে এবং তার জন্য ত্যাগপত্র লিখে তার হাতে দিয়ে নিজের বাড়ি থেকে তাকে বিদায় করে, কিংবা বিবাহকারী ঐ দ্বিতীয় স্বামী যদি মারা যায়;
\v 4 তবে যে প্রথম স্বামী তাকে বিদায় করেছিল, সে তার অশুচী হবার পরে তাকে আবার বিয়ে করতে পারবে না; কারণ ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে ঘৃণার্হ কাজ; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারের জন্যে যে দেশ তোমাকে দিচ্ছেন, তুমি তা পাপলিপ্ত করবে না।
\s5
\v 5 কোনো লোক নতুন বিয়ে করলে সৈন্যদলে যাবে না এবং তাকে কোনো কাজের দায়িত্ব দেওয়া যাবে না; সে এক বছর পর্যন্ত নিজের বাড়িতে খালি থেকে, যে স্ত্রীকে সে গ্রহণ করেছে, তাকে আনন্দিত করবে।
\s5
\v 6 কেউ কারো যাঁতা কিংবা তার ওপরের অংশ বন্ধক রাখবে না; তা করলে প্রাণ বন্ধক রাখা হয়।
\s5
\v 7 কোনো মানুষ যদি নিজের ভাই ইস্রায়েল সন্তানদের মধ্যে কোনো প্রাণীকে চুরি করে এবং তার প্রতি দাসের মতো ব্যবহার করে বা বিক্রি করে এবং ধরা পড়ে, তবে সেই চোর মারা যাবে; এভাবে তুমি নিজের মধ্যে থেকে খারাপ ব্যবহার বাদ দেবে।
\s5
\v 8 তুমি কুষ্ঠরোগের ঘায়ের বিষয়ে সাবধান হয়ে, লেবীয় যাজকেরা যে সব উপদেশ দেবে, অতিশয় যত্নসহকারে সেই অনুসারে কাজ কর; আমি তাদেরকে যে যে আদেশ দিয়েছি, তা পালন করতে যত্ন করবে।
\v 9 মিসর থেকে তোমাদের বের হয়ে আসার সময়ে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু পথে মরিয়মের প্রতি যা করেছিলেন, তা মনে রাখবে।
\s5
\v 10 তোমার প্রতিবাসীকে কোনো ধরনের কিছু ঋণ দিলে তুমি বন্ধকী জিনিস নেবার জন্য তার বাড়িতে প্রবেশ করবে না।
\v 11 তুমি বাইরে দাঁড়িয়ে থাকবে এবং ঋণী ব্যক্তি বন্ধকী জিনিস বের করে তোমার কাছে আনবে।
\s5
\v 12 আর সে যদি গরিব হয়, তবে তুমি তার বন্ধকী জিনিস রেখে ঘুমিয়ে পড়বে না।
\v 13 সূর্য্যাস্তের সময়ে তার বন্ধকী জিনিস তাকে অবশ্য ফিরিয়ে দেবে; তাতে সে নিজের পোশাকে শুয়ে তাকে আশীর্বাদ করবে; আর তা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তোমার ধার্মিকতার কাজ হবে।
\s5
\v 14 তোমার ভাই হোক কিংবা তোমার দেশের শহরের দরজার মাঝখানের বিদেশী হোক, দীন দুঃখী দাসের প্রতি অত্যাচার করবে না।
\v 15 কাজের দিনে তার বেতন তাকে দেবে; সূর্যের অস্ত যাওয়া পর্যন্ত তা রাখবে না; কারণ সে গরিব এবং সেই বেতনের ওপরে তার মন পড়ে থাকে; পাছে সে তোমার বিরুদ্ধে সদাপ্রভুকে ডাকে, আর এই বিষয়ে তোমার পাপ হয়।
\s5
\v 16 সন্তানের জন্য বাবার, কিংবা বাবার জন্য সন্তানের প্রাণদণ্ড করা যাবে না; প্রত্যেকে নিজেদের পাপের জন্যেই প্রাণদণ্ড ভোগ করবে।
\s5
\v 17 বিদেশীর কিংবা পিতৃহীনের বিচারে অন্যায় করবে না এবং বিধবার পোশাক বন্ধক নেবে না।
\v 18 মনে রাখবে, তুমি মিসর দেশে দাস ছিলে, কিন্তু তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সেখান থেকে তোমাকে মুক্ত করেছেন, এই জন্য আমি তোমাকে এক কাজ করার আদেশ দিচ্ছি।
\s5
\v 19 তুমি ক্ষেতে নিজের শস্য কাটার সময়ে যদি এক আটি ক্ষেতে ফেলে রেখে এসে থাক, তবে তা নিয়ে আসতে ফিরে যেও না; তা বিদেশীর, পিতৃহীনের ও বিধবার জন্য থাকবে; যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার হাতের সব কাজে তোমাকে আশীর্বাদ করেন।
\v 20 যখন তোমার জিতগাছের ফল পাড়, তখন শাখাতে আবার বাকি খোঁজ করবে না; তা বিদেশীর, পিতৃহীনের ও বিধবার জন্য থাকবে।
\s5
\v 21 যখন তোমার আঙ্গুর ক্ষেতের আঙ্গুর ফল জড়ো কর, তখন জড়ো করার পরে আবার কুড়িয় না; তা বিদেশীর, পিতৃহীনের ও বিধবার জন্য থাকবে।
\v 22 মনে রাখবে, তুমি মিসর দেশে দাস ছিলে, এই জন্য আমি তোমাকে এই কাজ করার আদেশ দিচ্ছি।
\s5
\c 25
\p
\v 1 মানুষদের মধ্যে বিতর্ক হলে ওরা যদি বিচারকর্তাদের কাছে যায়, আর তারা বিচার করে, তবে নির্দোষকে নির্দোষ ও দোষীকে দোষী করবে।
\v 2 আর যদি খারাপ লোক প্রহারের যোগ্য হয়, তবে বিচারকর্ত্তা তাকে শুয়ে তার অপরাধ অনুসারে আঘাতের সংখ্যা নিশ্চয় করে নিজের সামনে তাকে প্রহার করাবে।
\s5
\v 3 সে চল্লিশ আঘাত করতে পারে, তার বেশি না; পাছে সে বেশি আঘাতের মাধ্যমে অনেক প্রহার করালে তোমার ভাই তোমার সামনে তুচ্ছনীয় হয়।
\s5
\v 4 শস্য মাড়াইয়ের সময়ে বলদের মুখে বাঁধবে না।
\s5
\v 5 যদি ভাইরা জড়ো হয়ে বাস করে এবং তাদের মধ্যে এক জন অপুত্রক হয়ে মারা যায়, তবে সেই মৃত ব্যক্তির স্ত্রী বাইরের অন্য গোষ্ঠীভুক্ত পুরুষকে বিয়ে করবে না; তার দেবর তার কাছে যাবে, তাকে বিয়ে করবে এবং তার প্রতি দেবরের দায়িত্ব সম্পন্ন করবে।
\v 6 পরে সেই স্ত্রী যে প্রথম ছেলের জন্ম দেবে, সেই ঐ মৃত ভাইয়ের নামে উত্তরাধিকারী হবে; তাতে ইস্রায়েল থেকে তার নাম বিনষ্ট হবে না।
\s5
\v 7 কিন্তু সেই পুরুষ যদি নিজের ভাইয়ের স্ত্রীকে গ্রহণ করতে রাজি না হয়, তবে সেই ভাইয়ের স্ত্রী শহরের দরজায় প্রাচীনদের কাছে গিয়ে বলবে, “আমার দেওর ইস্রায়েলের মধ্যে নিজের ভাইয়ের নাম রক্ষা করতে রাজি না, সে আমার প্রতি দেওরের দায়িত্ব পালন করতে চায় না।”
\v 8 তখন তার শহরের প্রাচীনরা তাকে ডেকে তার সঙ্গে কথা বলবে; কিন্তু যদি সে দাঁড়িয়ে বলে, “ওকে গ্রহণ করতে আমার ইচ্ছা নেই;”
\s5
\v 9 তবে তার ভাইয়ের স্ত্রী প্রাচীনদের সামনে তার কাছে এসে তার পা থেকে জুতো খুলবে এবং তার মুখে থুথু দেবে, আর উত্তর হিসাবে এই কথা বলবে, “যে কেউ নিজের ভাইয়ের বংশ রক্ষা না করে, তার প্রতি এরকম করা যাবে।”
\v 10 আর ইস্রায়েলের মধ্যে তার নাম হবে, ‘খোলা জুতোর বংশ’।
\s5
\v 11 পুরুষেরা একে অপর বিরোধ করলে তাদের এক জনের স্ত্রী যদি প্রহারকের হাত থেকে নিজের স্বামীকে উদ্ধার করতে এসে হাত বাড়িয়ে দিয়ে প্রহারকের পুরুষাঙ্গ ধরে,
\v 12 তবে তুমি তার হাত কেটে ফেলবে, চোখের দয়া করবে না।
\s5
\v 13 তোমার থলেতে ছোট বড় দুই ধরনের বাট্‌খারা না থাকুক।
\v 14 তোমার বাড়িতে ছোট বড় দুই ধরনের পরিমাণপাত্র না থাকুক।
\s5
\v 15 তুমি যথার্থ ও সঠিক বাট্‌খারা রাখবে, যথার্থ ও সঠিক পরিমাণপাত্র রাখবে; যেন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিচ্ছেন, সেই দেশে তুমি দীর্ঘ আয়ু হয়।
\v 16 কারণ যে কেউ ঐ ধরনের কাজ করে, যে কেউ অন্যায় করে, সে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘৃণিত।
\s5
\v 17 মনে রেখো, মিসর থেকে তোমরা যখন বের হয়ে এসেছিলে, তখন পথে তোমার প্রতি অমালেক কি করল;
\v 18 তোমার দুর্বলতার ও ক্লান্তির সময়ে সে কিভাবে তোমার সঙ্গে রাস্তায় মিলে তোমার পিছনের দুর্বল লোক সবাইকে আক্রমণ করল; আর সে ঈশ্বরকে ভয় করল না।
\v 19 অতএব তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ উত্তরাধিকারের জন্য তোমাকে দিচ্ছেন, সেই দেশে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু চারদিকের সব শত্রু থেকে তোমাকে বিশ্রাম দিলে পর তুমি আকাশমণ্ডলের নীচে থেকে অমালেকের স্মৃতি মুছে ফেলবে; এটা ভুলে যেও না।
\s5
\c 26
\s প্রথমাংশ ও দশমাংশ বিষয়ে নিয়ম।
\p
\v 1 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকারের জন্যে যে দেশ তোমাকে দিচ্ছেন, তুমি যখন তা অধিকার করবে ও সেখানে বাস করবে;
\v 2 সেই সময়ে তুমি ভূমির যাবতীয় ফলের, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে দেশ তোমাকে দিচ্ছেন, সেই দেশে উৎপন্ন ফলের প্রথমাংশ থেকে কিছু কিছু নিয়ে ঝুড়িতে করে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের নামের থাকার জন্যে যে জায়গা মনোনীত করবেন, সেই জায়গায় যাবে।
\s5
\v 3 আর সেই সময়ে যাজকের কাছে গিয়ে তাকে বলবে, “সদাপ্রভু আমাদেরকে যে দেশ দিতে আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলেন, সেই দেশে আমি এসেছি; এটা আজ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে নিবেদন করছি।”
\v 4 আর যাজক তোমার হাত থেকে সেই ঝুড়ি নিয়ে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির সামনে রাখবে।
\s5
\v 5 আর তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে এই কথা বলবে, “এক জন ভবঘুরে অরামীয় আমার পূর্বপুরুষ ছিলেন; তিনি অল্প সংখ্যায় মিসরে নেমে গিয়ে বাস করলেন এবং সে জায়গায় মহান, বলশালী ও জনপূর্ণ জাতি হয়ে উঠলেন।
\s5
\v 6 পরে মিশরীয়েরা আমাদের প্রতি খারাপ আচরণ করল, আমাদেরকে নিপীড়িত করল। তারা আমাদেরকে দাসত্ব করালো;
\v 7 তাতে আমরা নিজের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে কাঁদলাম; আর সদাপ্রভু আমাদের রব শুনে আমাদের কষ্ট, পরিশ্রম ও অত্যাচারের প্রতি দেখলেন।
\s5
\v 8 সদাপ্রভু শক্তিশালী হাত, ক্ষমতা প্রদর্শন ও মহাভয়ঙ্করতা এবং নানা চিহ্ন ও অলৌকিক কাজের মাধ্যমে মিশর থেকে আমাদেরকে বের করে আনলেন।
\v 9 এবং তিনি আমাদেরকে এই জায়গায় এনেছেন এবং এই দেশ, দুধ ও মধু প্রবাহী দেশ দিয়েছেন।
\s5
\v 10 এখন দেখ, তুমি আমাকে যে ভূমি দিয়েছ, তার ফলের প্রথমাংশ আমি এনেছি।” এই বলে তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তা রেখে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে আরাধনা করবে।
\v 11 এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে ও তোমার পরিবারকে যেসব মঙ্গল দান করেছেন, সেই সব কিছুতে তুমি ও লেবীয় ও তোমার মাঝখানে অবস্থিত বিদেশী, তোমরা সবাই আনন্দ করবে।
\s5
\v 12 তৃতীয় বছরে, অর্থাৎ দশমাংশের বছরে, তোমার উৎপন্ন জিনিসের সব দশমাংশ আলাদা করা শেষ করলে পর তুমি লেবীয়কে, বিদেশীকে, পিতৃহীনকে ও বিধবাকে তা দেবে, তাতে তারা তোমার শহরের দরজার মধ্যে খেয়ে তৃপ্তি পাবে।
\v 13 তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে এই কথা বলবে, “তোমার আদেশ দেওয়া সমস্ত কথা অনুসারে আমি নিজের বাড়ি থেকে আলাদা করে রাখা জিনিস বের করে লেবীয়কে, বিদেশীকে, পিতৃহীনকে ও বিধবাকে দিয়েছি; তোমার কোনো আদেশ লঙ্ঘন করিনি ও ভুলে যাইনি;
\s5
\v 14 আমার শোকের সময় আমি তার কিছুই খাইনি, অশুচী অবস্থায় তার কিছুই বের করিনি এবং মৃত লোকের উদ্দেশ্যে তার কিছুই দিইনি, আমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কান দিয়েছি; তোমার আদেশ অনুসারেই সব কাজ করেছি।
\v 15 তুমি নিজের পবিত্র নিবাস থেকে, স্বর্গ থেকে, দেখ, তোমার প্রজা ইস্রায়েলকে আশীর্বাদ কর এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে করা তোমার শপথ অনুসারে যে ভূমি আমাদেরকে দিয়েছ, সেই দুধ ও মধু প্রবাহী দেশকেও আশীর্বাদ কর।
\s5
\v 16 এই সব বিধি ও শাসন পালন করতে আজ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে আদেশ দিচ্ছেন তুমি যত্নসহকারে তোমার পুরো হৃদয় ও তোমার সমস্ত প্রাণের সঙ্গে এ সমস্ত রক্ষা ও পালন করবে।
\v 17 আজ তুমি এই স্বীকার করেছ যে, সদাপ্রভুই তোমার ঈশ্বর হবেন এবং তুমি তার পথে চলবে, তাঁর বিধি, তাঁর আদেশ ও তাঁর শাসন সব পালন করবে এবং তাঁর রবে কান দেবে।
\s5
\v 18 আর আজ সদাপ্রভুও এই স্বীকার করেছেন যে, তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তুমি তাঁর অধিকারের লোক হবে ও তাঁর সব আদেশ পালন করবে;
\v 19 আর তিনি নিজের তৈরী সমস্ত জাতির থেকে তোমাকে শ্রেষ্ঠ করে প্রশংসা, কীর্তি ও সম্মানস্বরূপ করবেন এবং তিনি যেমন বলেছেন, সেই অনুসারে তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র লোক হবে।
\s5
\c 27
\s মোশির তৃতীয় প্রচার।
\s কনান দেশে ব্যবস্থা ঘোষণা করার আদেশ।
\p
\v 1 মোশি ও ইস্রায়েলের প্রাচীনরা লোকদেরকে এই আদেশ দিলেন, বললেন, “আজ আমি তোমাদেরকে যে সব আদেশ দিচ্ছি, তোমরা সে সব পালন কোরো।
\v 2 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিচ্ছেন, তুমি যখন যর্দন পার হয়ে সেই দেশে উপস্থিত হবে, তখন নিজের জন্য কিছু বড় পাথর স্থাপন করবে ও তার চূণ দিয়ে লেপে দেবে।
\v 3 আর পার হলে পর তুমি সেই পাথরগুলির ওপরে এই ব্যবস্থার সব কথা লিখবে; যেন তোমার পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার কাছে যে প্রতিজ্ঞা করিয়াছেন, সেই অনুসারে যে দেশ, যে দুধ ও মধু প্রবাহী দেশ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে দিচ্ছেন, সেখানে প্রবেশ করতে পার।
\s5
\v 4 আর আমি আজ যে পাথরগুলির বিষয়ে তোমাদেরকে আদেশ করলাম, তোমরা যর্দন পার হলে পর এবল পর্বতে সেই সব পাথর স্থাপন করবে ও তার চূণ দিয়ে লেপে দেবে।
\v 5 আর সে জায়গায় তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক যজ্ঞবেদি, পাথরের এক বেদি গাঁথবে, তার উপরে লোহার অস্ত্র তুলবে না।
\s5
\v 6 তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেই বেদি যে পাথরের ওপরে কোনো কাজ করা হয়নি এমন পাথর দিয়ে গাঁথবে এবং তার উপরে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলি উৎসর্গ করবে
\v 7 এবং মঙ্গলার্থক বলিদান করবে আর সেই জায়গায় খাবে এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে আনন্দ করবে।
\v 8 সেই পাথরের ওপরে এই নিয়মের সব কথা অতি স্পষ্টভাবে লিখবে।”
\s5
\v 9 মোশি ও লেবীয় যাজকরা সমস্ত ইস্রায়েলকে বললেন, “হে ইস্রায়েল, নীরব হও, শোনো, আজ তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রজা হলে।
\v 10 অতএব তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রব মান্য করবে এবং আজ তোমাদেরকে তার যে সব আদেশ ও বিধি আদেশ করলাম, সে সব পালন করবে।”
\s5
\v 11 সেই দিনে মোশি লোকদেরকে এই আদেশ দিলেন, বললেন,
\v 12 “তোমরা যর্দন পার হলে পর শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর, যোষেফ ও বিন্যামীন, এরা লোকদেরকে আশীর্বাদ করার জন্য গরিষীম পর্বতে দাঁড়াবে।
\s5
\v 13 আর রূবেণ, গাদ, আশের, সবূলূন, দান ও নপ্তালি, এরা শাপ দেবার জন্য এবল পর্বতে দাঁড়াবে।
\v 14 পরে লেবীয়রা কথা শুরু করে ইস্রায়েলের সব লোককে উচ্চ স্বরে বলবে,
\s5
\v 15 যে ব্যক্তি কোনো খোদাই করা কিংবা ছাঁচে ঢালা প্রতিমা, সদাপ্রভুর ঘৃণিত জিনিস, শিল্পকরের হাতে তৈরী করা জিনিস নির্মাণ করে করে গোপনে স্থাপন করে, সে শাপগ্রস্ত হবে। তখন সব লোক উত্তর করে বলবে, ‘আমেন।’
\s5
\v 16 ‘যে কেউ নিজের বাবাকে কি মাকে অমান্য করে, সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সব লোক বলবে, ‘আমেন।’
\v 17 ‘যে কেউ নিজের প্রতিবাসীর ভূমিচিহ্ন সরিয়ে দেবে, সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সব লোক বলবে, ‘আমেন।’
\s5
\v 18 ‘যে কেউ অন্ধকে ভুল পথে নিয়ে যায়, সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সব লোক বলবে, ‘আমেন।’
\v 19 ‘যে কেউ বিদেশীর, পিতৃহীনের, কি বিধবার বিচারে অন্যায় করে, সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সব লোক বলবে, ‘আমেন।’
\s5
\v 20 ‘যে কেউ বাবার স্ত্রীর সঙ্গে শোয়, নিজের বাবার অধিকার সরিয়ে দেয় সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সব লোক বলবে, ‘আমেন।’
\v 21 ‘যে কেউ কোনো পশুর সঙ্গে শোয়, সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সব লোক বলবে, ‘আমেন।’
\s5
\v 22 ‘যে কেউ নিজের বোনের সঙ্গে, অর্থাৎ বাবার মেয়ের কিংবা মায়ের মেয়ের সঙ্গে শোয়, সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সব লোক বলবে, ‘আমেন।’
\v 23 ‘যে কেউ নিজের শাশুড়ীর সঙ্গে শোয়, সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সব লোক বলবে, ‘আমেন।’
\s5
\v 24 ‘যে কেউ নিজের প্রতিবাসীকে গোপনে হত্যা করে, সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সব লোক বলবে, ‘আমেন।’
\v 25 ‘যে কেউ নিরপরাধের প্রাণ হত্যা করার জন্য ঘুষ গ্রহণ করে, সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সব লোক বলবে, ‘আমেন।’
\s5
\v 26 ‘যে কেউ এই নিয়মের কথা সব পালন করার জন্য সেই সব অটল না রাখে, সে শাপগ্রস্ত হবে।’ তখন সমস্ত লোক বলবে, ‘আমেন।’
\s5
\c 28
\s ঈশ্বরের আশীর্বাদ ও অভিশাপ।
\p
\v 1 আমি তোমাকে আজ যে সব আজ্ঞা আদেশ করছি, যত্নসহকারে সেই সব পালন করার জন্য যদি তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে মনোযোগ সহকারে কান দাও, তবে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু পৃথিবীতে অবস্থিত সমস্ত জাতির উপরে তোমাকে ওঠাবেন;
\v 2 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কান দিলে এই সব আশীর্বাদ তোমার ওপরে আসবে ও তোমাকে আশ্রয় করবে।
\s5
\v 3 তুমি শহরে আশীর্বাদযুক্ত হবে ও ক্ষেতে আশীর্বাদযুক্ত হবে।
\v 4 তোমার শরীরের ফল, তোমার ভূমির ফল, তোমার পশুর ফল, তোমার গোরুদের বাচ্চা ও তোমার মেষীদের শাবক আশীর্বাদযুক্ত হবে।
\s5
\v 5 তোমার ঝুড়ি ও তোমার কাঠের থালা আশীর্বাদযুক্ত হবে।
\v 6 ভিতরে আসার সময়ে তুমি আশীর্বাদযুক্ত হবে এবং বাইরে যাবার সময়ে তুমি আশীর্বাদযুক্ত হবে।
\s5
\v 7 তোমার যে শত্রুরা তোমার বিরুদ্ধে ওঠে, তাদেরকে সদাপ্রভু তোমার সামনে আঘাত করাবেন; তারা একটি রাস্তা দিয়ে তোমার বিরুদ্ধে আসবে, কিন্তু সপ্তম রাস্তা দিয়ে তোমার সামনে থেকে পালাবে।
\v 8 সদাপ্রভু আদেশ দিয়ে তোমার গোলাঘরের বিষয়ে ও তুমি যে কোনো কাজে হাত দাও, তার বিষয়ে তোমাকে আশীর্বাদ করবেন এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিচ্ছেন, সেখানে তোমাকে আশীর্বাদ করবেন।
\s5
\v 9 সদাপ্রভু নিজের শপথ অনুসারে তোমাকে নিজের পবিত্র লোক বলে স্থাপন করবেন; যদি তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন কর ও তাঁর পথে চল।
\v 10 আর পৃথিবীর সব জাতি দেখতে পাবে যে, তোমার উপরে সদাপ্রভুর নাম কীর্তিত হয়েছে এবং তারা তোমার থেকে ভয় পাবে।
\s5
\v 11 আর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিতে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছেন, সেই দেশে তিনি ভালোর জন্যেই তোমার শরীরের ফলে, তোমার পশুর ফলে ও তোমার ভূমির ফলে তোমাকে উন্নত করবেন।
\v 12 সঠিক সময়ে তোমার ভূমির জন্য বৃষ্টি দিতে ও তোমার হাতের সব কাজে আশীর্বাদ করতে সদাপ্রভু নিজের আকাশের ধনভাণ্ডার খুলে দেবেন এবং তুমি অনেক জাতিকে ঋণ দেবে, কিন্তু নিজে ঋণ নেবে না।
\s5
\v 13 আর সদাপ্রভু তোমাকে প্রধান করবেন, লেজের মতো করবেন না; তুমি নত না হয়ে শুধু উন্নত হবে; যদি তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর এই যে সব আজ্ঞা যত্নসহকারে পালন করতে আমি তোমাকে আজ আদেশ করছি, এই সব কিছুতে কান দিতে হবে;
\v 14 এবং আজ আমি তোমাদেরকে যে সব কথা আজ্ঞা করছি, অন্য দেবতাদের সেবা করার জন্যে তাদের অনুগামী হবার জন্য তোমাকে সেই সব কথার ডান দিকে কি বাম দিকে ফিরতে হবে না।
\s5
\v 15 কিন্তু যদি তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কান না দাও, আমি আজ তোমাকে তাঁর যে সব আজ্ঞা ও বিধি আদেশ করছি, যত্ন সহকারে সেই সব পালন না কর, তবে এই সমস্ত অভিশাপ তোমার প্রতি আসবে ও তোমার থেকে এগিয়ে যাবে।
\s5
\v 16 তুমি শহরে শাপগ্রস্ত হবে ও ক্ষেতে শাপগ্রস্ত হবে।
\v 17 তোমার ঝুড়ি ও তোমার ময়দার কাঠের থালা শাপগ্রস্ত হবে।
\s5
\v 18 তোমার শরীরের ফল, তোমার ভূমির ফল এবং তোমার গোরুর বাচ্চা ও তোমার মেষীদের শাবক শাপগ্রস্ত হবে।
\v 19 ভিতরে আসার সময়ে তুমি শাপগ্রস্ত হবে ও বাইরে যাবার সময়ে তুমি শাপগ্রস্ত হবে।
\s5
\v 20 যে পর্যন্ত তোমার ধ্বংস ও হঠাৎ বিনাশ না হয়, সেই পর্যন্ত যে কোনো কাজে তুমি হাত দাও, সেই কাজে সদাপ্রভু তোমার উপরে অভিশাপ, উদ্বেগ ও তিরস্কার পাঠাবেন; এর কারণ তোমার খারাপ কাজ সব, যার মাধ্যমে তুমি আমাকে পরিত্যাগ করেছ।
\v 21 তুমি যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেই দেশ থেকে যতক্ষণ উচ্ছেদ না হয়, ততক্ষণ সদাপ্রভু তোমাকে মহামারী দেবেন।
\s5
\v 22 সদাপ্রভু ছোঁয়াচে রোগ, জ্বর, জ্বালা, প্রচণ্ড উত্তাপ ও খড়্গ এবং শস্যের শোষ ও ম্লানির মাধ্যমে তোমাকে আঘাত করবেন; তোমার বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত সে সব তোমার অনুসরণ করবে।
\s5
\v 23 আর তোমার মাথার উপরে অবস্থিত আকাশ ব্রোঞ্জ ও নীচে অবস্থিত ভূমি লোহার মতো হবে।
\v 24 সদাপ্রভু তোমার দেশে জলের পরিবর্তে ধূলো ও বালি বর্ষণ করবেন; যে পর্যন্ত তোমার বিনাশ না হয়, ততক্ষণ তা আকাশ থেকে নেমে তোমার উপরে পড়বে।
\s5
\v 25 সদাপ্রভু তোমার শত্রুদের সামনে তোমাকে আঘাত করাবেন; তুমি এক রাস্তা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে যাবে, কিন্তু সপ্তম রাস্তা দিয়ে তাদের সামনে থেকে পালাবে এবং পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের মধ্যে বিরক্তিজনক হবে।
\v 26 আর তোমার মৃতদেহ আকাশের পাখিদের ও মাটিতে চরা পশুদের খাদ্য হবে; কেউ তাদেরকে আতঙ্কিত করবে না।
\s5
\v 27 সদাপ্রভু তোমাকে মিশরীয় ফোঁড়া এবং মহামারীর ঘাত, জঘন্য ও খোঁস পাঁচড়া, এই সব রোগের মাধ্যমে এমন আঘাত করবেন যে, তুমি আরোগ্য পেতে পারবে না।
\v 28 সদাপ্রভু উন্মাদ, অন্ধতা ও মানসিক বিভ্রান্তের মাধ্যমে তোমাকে আঘাত করবেন।
\v 29 অন্ধ যেমন অন্ধকারে হাঁতড়ে বেড়ায়, সেরকম তুমি দুপুরবেলায় হাঁতড়ে বেড়াবে ও নিজের পথে উন্নতিলাভ হবে না এবং সবসময় শুধু অত্যাচারিত ও লুন্ঠিত হবে, কেউ তোমাকে রক্ষা করবে না।
\s5
\v 30 তোমার প্রতি মেয়ের বাগ্‌দান হবে, কিন্তু অন্য পুরুষ তারসঙ্গে শোবে; তুমি বাড়ি তৈরী করবে, কিন্তু তাতে বাস করতে পাবে না; আঙ্গুর ক্ষেত রোপণ করবে, কিন্তু তার ফল ভোগ করবে না।
\v 31 তোমার গোরু তোমার সামনে মারা যাবে, আর তুমি তার মাংস খেতে পারবে না; তোমার গাধা তোমার সামনে থেকে জোর করে নিয়ে যাবে, তা তোমাকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না; তোমার মেষপাল তোমার শত্রুদেরকে দেওয়া হবে, তোমার জন্যে সাহায্যকারী কেউ থাকবে না।
\s5
\v 32 তোমার ছেলেমেয়েদেরকে অন্য এক জাতিকে দেওয়া হবে ও সমস্ত দিন তাদের অপেক্ষায় চাইতে চাইতে তোমার চোখ ব্যর্থ হবে এবং তোমার হাতে কোনো শক্তি থাকবে না।
\s5
\v 33 তোমার অজানা এক জাতি তোমার ভূমির ফল ও তোমার পরিশ্রমের সমস্ত ফল ভোগ করবে এবং তুমি সবসময় শুধু অত্যাচারিত ও চূর্ণ হবে
\v 34 আর তোমার চোখ যা দেখবে, তার জন্য তুমি উন্মাদ হবে।
\v 35 সদাপ্রভু তোমার হাঁটু, পা ও পায়ের তলা থেকে মাথার তালু পর্যন্ত কঠিন স্ফোটকের মাধ্যমে আঘাত করবেন যা আরোগ্য হবে না।
\s5
\v 36 সদাপ্রভু তোমাকে এবং যে রাজাকে তুমি নিজের ওপরে নিযুক্ত করবে, তাকে তোমার অজানা এবং তোমার পূর্বপুরুষদের অজানা এক জাতির কাছে নিয়ে যাবেন; সেই জায়গায় তুমি অন্য দেবতাদের, কাঠ ও পাথরের সেবা করবে।
\v 37 আর সদাপ্রভু তোমাকে যে সব জাতির মধ্যে নিয়ে যাবেন, তাদের কাছে তুমি বিস্ময়ের, প্রবাদের ও উপহাসের পাত্র হবে।
\s5
\v 38 তুমি বহু বীজ ক্ষেতে বয়ে নিয়ে যাবে, কিন্তু অল্প সংগ্রহ করবে; কারণ পঙ্গপাল তা বিনষ্ট করবে।
\v 39 তুমি আঙ্গুর ক্ষেত রোপণ করে তার চাষ করবে, কিন্তু আঙ্গুর রস পান করতে কি আঙ্গুর ফল জড়ো করতে পারবে না; কারণ পোকায় তা খেয়ে ফেলবে।
\s5
\v 40 তোমার সকল অঞ্চলে জিতগাছ হবে, কিন্তু তুমি তেল ঘষতে পারবে না; কারণ তোমার জিতগাছের ফল ঝরে পড়বে।
\v 41 তুমি ছেলেমেয়েদের জন্ম দেবে, কিন্তু তারা তোমার হবে না; কারণ তারা বন্দি হয়ে যাবে।
\s5
\v 42 পঙ্গপাল তোমার সব গাছ ও ভূমির ফল অধিকার করবে।
\v 43 তোমার মধ্যবর্ত্তী বিদেশী তোমার থেকে আরো উন্নত হবে ও তুমি আরো অবনত হবে।
\v 44 সে তোমাকে ঋণ দেবে, কিন্তু তুমি তাকে ঋণ দেবে না; সে মাথার মতো হবে ও তুমি লেজের মতো হবে।
\s5
\v 45 এই সমস্ত অভিশাপ তোমার ওপরে আসবে, তোমার অনুসরণ করে তোমার ধ্বংস পর্যন্ত তোমার থেকে এগিয়ে যাবে; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে সব আজ্ঞা ও বিধি দিয়েছেন, তুমি সে সব পালনের জন্যে তাঁর রবে কান দিলে না।
\v 46 এ সব তোমার ও চিরকাল তোমার বংশের উপরে চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণের মতো থাকবে।
\s5
\v 47 কারণ সমৃদ্ধির জন্য তুমি আনন্দে এবং উল্লাসে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দাসত্ব করতে না;
\v 48 এই জন্য সদাপ্রভু তোমার বিরুদ্ধে যে শত্রুদেরকে পাঠাবেন, তুমি খিদেতে, তৃষ্ণায়, উলঙ্গতায় ও সব বিষয়ের অভাব ভোগ করতে করতে তাদের দাসত্ব করবে এবং যে পর্যন্ত তিনি তোমার ধ্বংস না করেন, সে পর্যন্ত তিনি তোমার ঘাড়ে লোহার যোঁয়ালি দিয়ে রাখবেন।
\s5
\v 49 সদাপ্রভুর তোমার বিরুদ্ধে বহু দূর থেকে, পৃথিবীর শেষ থেকে এক জাতিকে আনবেন; যেমন ঈগল পাখি উড়ে আসে, সে সেইভাবে আসবে; সেই জাতির ভাষা তুমি বুঝতে পারবে না।
\v 50 সেই জাতি ভয়ঙ্কর মুখ, সে বয়স্ককে শ্রদ্ধা করবে না ও বালকের প্রতি দয়া করবে না।
\v 51 আর যে পর্যন্ত তোমার ধ্বংস না হবে, ততক্ষণ সে তোমার পশুর ফল ও তোমার ভূমির ফল খাবে; যতক্ষণ সে তোমার ধ্বংস সম্পন্ন না করবে, ততক্ষণ তোমার জন্য শস্য, আঙ্গুর রস কিংবা তেল, তোমার গোরুর বাচ্চা কিংবা তোমার মেষীর শাবক বাকি রাখবে না।
\s5
\v 52 আর তোমার সব দেশে যে সব উঁচু ও সুরক্ষিত দেওয়ালে তুমি বিশ্বাস করতে, সে সব যতক্ষণ ভূমিসাৎ না হবে, ততক্ষণ সে তোমার সব শহরের দরজায় তোমাকে অবরোধ করবে; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া তোমার সমস্ত দেশে সব শহরের দরজায় সে তোমাকে অবরোধ করবে।
\v 53 আর যখন তোমার শত্রুদের মাধ্যমে তুমি অবরুদ্ধ ও কষ্ট পাবে, তখন তুমি নিজের শরীরের ফল, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া নিজের ছেলেমেয়েদের মাংস খাবে।
\s5
\v 54 যখন সব শহরের দরজায় শত্রুদের মাধ্যমে তুমি অবরুদ্ধ ও কষ্ট পাবে, তখন তোমার মধ্যে যে পুরুষ কোমল ও খুব বিলাসী, নিজের ভাইয়ের, তার প্রিয় স্ত্রী ও বাকি ছেলেমেয়েদের প্রতি সে ঈর্ষাপূর্ণ যে,
\v 55 সে তাদের কাউকেও নিজের ছেলেমেয়েদের মাংসের কিছুই দেবে না; তার কিছুমাত্র বাকি না থাকার জন্য সে তাদেরকে খাবে।
\s5
\v 56 যখন সব শহরের দরজায় শত্রুদের মাধ্যমে তুমি অবরুদ্ধ ও কষ্ট পাবে তখন যে স্ত্রী কোমলতা ও বিলাসিতার জন্য নিজের পা মাটিতে রাখতে সাহস করত না, তোমার মাঝে এমন কোমল ও বিলাসী মহিলার চোখ নিজের স্বামীর, নিজের ছেলে ও মেয়ের ওপরে,
\v 57 এমন কি, নিজের দুই পায়ের মধ্য থেকে বের হওয়া সদ্যোজাত ও নিজের প্রসবিত শিশুদের ওপরে অত্যাচার করবে; কারণ সব কিছুর অভাবের জন্য সে এদেরকে গোপনে খাবে।
\s5
\v 58 তুমি যদি এই বইতে লেখা নিয়মের সমস্ত কথা যত্ন সহকারে পালন না কর; এভাবে যদি “তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু” এই গৌরবান্বিত ও ভয়াবহ নামকে ভয় না কর;
\v 59 তবে সদাপ্রভু তোমাকে ও তোমার বংশকে ভয়ঙ্কর মহামারী দেবেন; ফলে অনেক সময়স্থায়ী মহাঘাত ও অনেক সময়স্থায়ী কঠিন রোগ দেবেন।
\s5
\v 60 আর তুমি যা থেকে ভয় পেতে, সেই মিশরীয় সব রোগ আবার তোমার উপরে আনবেন; সে সব তোমার সঙ্গী হবে।
\v 61 আর যা এই নিয়মের বইয়ে লেখা নেই, এমন প্রত্যেক রোগ ও আঘাত সদাপ্রভু তোমার ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত তোমার উপরে আনবেন।
\v 62 তাতে আকাশের তারার মতো বহুসংখ্যক ছিলে যে তোমরা, তোমরা কিছু সংখ্যক বাকি থাকবে; কারণ তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কান দিতে না।
\s5
\v 63 আর তোমাদের ভালো ও বহুগুণ করতে যেমন সদাপ্রভু তোমাদের বিষয়ে আনন্দ করতেন, সেরকম তোমাদের ধ্বংস ও বিনষ্ট করতে সদাপ্রভু তোমাদের বিষয়ে আনন্দ করবেন এবং তুমি যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেখান থেকে তোমরা অপহৃত হবে।
\v 64 আর সদাপ্রভু তোমাকে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সব জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন; সেই জায়গায় তুমি নিজের ও নিজের পূর্বপুরুষদের অজানা অন্য দেবতাদের, কাঠ ও পাথরের সেবা করবে।
\s5
\v 65 আর তুমি সেই জাতিদের মধ্যে কিছু সুখ পাবে না ও তোমার পায়ের জন্য বিশ্রামের জায়গা থাকবে না, কিন্তু সদাপ্রভু সেই জায়গায় তোমাকে হৃদয়ের কম্পতা, চোখের ক্ষীণতা ও প্রাণের শোক দেবেন।
\v 66 আর তোমার জীবন তোমার দৃষ্টিতে সংশয়ে ঝুলে থাকবে এবং তুমি দিন রাত ভয় করবে ও নিজের জীবনের বিষয়ে তোমার বিশ্বাস থাকবে না।
\s5
\v 67 তুমি হৃদয়ে যে ভয় করবে ও চোখে যে ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখবে, তার জন্য সকালে বলবে, “হায় হায়, কখন সন্ধ্যা হবে?” এবং সন্ধ্যাবেলায় বলবে, “হায় হায়, কখন সকাল হবে?”
\v 68 আর যে পথের বিষয়ে আমি তোমাকে বলেছি, তুমি তা আর দেখবে না, সদাপ্রভু সেই মিসর দেশের পথে জাহাজে করে তোমাকে আবার নিয়ে যাবেন এবং সেই জায়গায় তোমরা দাসদাসীরূপে নিজের শত্রুদের কাছে বিক্রীত হতে চাইবে; কিন্তু কেউ তোমাদেরকে কিনবে না।”
\s5
\c 29
\p
\v 1 সদাপ্রভু হোরেবে ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করেছিলেন, তাছাড়া মোয়াব দেশে তাদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করতে মোশিকে আজ্ঞা করলেন, এই সব সেই নিয়মের বাক্য।
\s মোশির চতুর্থ প্রচার।
\s ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বরের নিয়ম গ্রহণ।
\p
\s5
\v 2 মোশি সমস্ত ইস্রায়েলকে ডাকলেন এবং তাদেরকে বললেন, “সদাপ্রভু মিসর দেশে ফরৌণের, তাঁর সব দাসের ও সব দেশের প্রতি যে সব কাজ তোমাদের সামনে করেছিলেন, তা তোমরা দেখেছ;
\v 3 পরীক্ষাসিদ্ধ সেই সব মহৎ প্রমাণ, সেই সব চিহ্ন ও সেই সব মহৎ অদ্ভুত লক্ষণ তোমরা নিজের চোখে দেখেছ;
\v 4 কিন্তু সদাপ্রভু আজ পর্যন্ত তোমাদেরকে জানার হৃদয়, দেখার চোখ ও শোনার কান দেননি।
\s5
\v 5 আমি চল্লিশ বছর মরুভূমিতে তোমাদেরকে চালিয়েছি; তোমাদের গায়ে তোমাদের পোষাক পুরানো হয়নি ও তোমার পায়ে তোমার জুতা পুরাতন হয়নি;
\v 6 তোমরা রুটি খাওনি এবং আঙ্গুর রস কি সুরা পান করনি; যেন তোমরা জানতে পার যে, আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।
\s5
\v 7 আর তোমরা যখন এই জায়গায় উপস্থিত হলে, তখন হিষ্‌বোনের রাজা সীহোন ও বাশনের রাজা ওগ আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বের হলে আমরা তাদেরকে আঘাত করলাম;
\v 8 আর তাদের দেশ নিয়ে অধিকারের জন্যে রূবেণীয় ও গাদীয়দেরকে এবং মনঃশীয়দের অর্ধেক বংশকে দিলাম।
\v 9 অতএব তোমরা যা যা করবে, সমস্ত বিষয়ে যেন উন্নতিলাভ করতে পার, এই জন্য এই নিয়মের কথা সব পালন কোরো এবং সেই অনুসারে কাজ কোরো।
\s5
\v 10 তোমরা সবাই আজ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে আছ—তোমাদের অধ্যক্ষরা, তোমাদের বংশ সব, তোমাদের প্রাচীনরা, তোমাদের শাসকরা, এমন কি, ইস্রায়েলের সব পুরুষ,
\v 11 তোমাদের বালক বালিকারা, তোমাদের স্ত্রীরা এবং তোমার শিবিরের মধ্যে তোমার কাঠ কাটার লোক থেকে জলবাহক পর্যন্ত এবং বিদেশী, সবাই আছ;
\s5
\v 12 যেন তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেই নিয়মে ও সেই শপথে আবদ্ধ হও, যা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আজ তোমার সঙ্গে করছেন;
\v 13 এই জন্য করছেন, যেন তিনি আজ তোমাকে নিজের লোক হিসাবে স্থাপন করেন ও তোমার ঈশ্বর হন, যেমন তিনি তোমাকে বলেছেন, আর যেমন তিনি তোমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের কাছে শপথ করেছেন।
\s5
\v 14 এবং আমি এই নিয়ম ও এই শপথ শুধু তোমাদেরই সঙ্গে করছি, তা না;
\v 15 বরং আমাদের সঙ্গে আজ এই জায়গায় আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে যে কেউ দাঁড়িয়ে আছে ও আমাদের সঙ্গে আজ যে নেই, সেই সবের সঙ্গে করছি।
\v 16 কারণ আমরা মিসর দেশে যেভাবে বাস করেছি এবং জাতিদের মধ্যে দিয়ে যেভাবে এসেছি, তা তোমরা জানো
\s5
\v 17 এবং তাদের ঘৃণার্হ জিনিস সব, তাদের মধ্যে কাঠের, পাথরের, রুপোর ও সোনার মূর্তি সব দেখেছ।
\v 18 এই জাতিদের দেবতাদের সেবা করতে যাবার জন্য আজ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু থেকে যার হৃদয় অন্য পথে ফিরে যায়, এমন কোনো পুরুষ কিংবা স্ত্রী কিংবা গোষ্ঠী কিংবা বংশ তোমাদের মধ্যে যেন না থাকে, বিষগাছের কি নাগদানার মূল তোমাদের মধ্যে যেন না থাকে
\v 19 এবং এই শাপের কথা শোনার সময়ে কেউ যেন মনে মনে নিজের ধন্যবাদ করত না বলে, ‘আমি ভিজের সঙ্গে শুকনোর ধ্বংস করার জন্য নিজের হৃদয়ের একগুঁয়েমিতায় চললেও আমার শান্তি হবে।’
\s5
\v 20 সদাপ্রভু তাকে ক্ষমা করতে রাজি হবেন না, কিন্তু সেই মানুষের ওপরে তখন সদাপ্রভুর রাগ ও তাঁর ঈর্ষা ধূমায়িত হবে এবং এই বইয়ে লেখা সমস্ত শাপ তার ওপরে শুয়ে থাকবে এবং সদাপ্রভু আকাশমণ্ডলের নীচে থেকে তার নাম মুছে দেবেন।
\v 21 আর এই নিয়মের বইয়ে লেখা নিয়মের সব শাপ অনুসারে সদাপ্রভু তাকে ইস্রায়েলের সব বংশ থেকে বিপর্যয়ের জন্য আলাদা করবেন।
\s5
\v 22 আর সদাপ্রভু সেই দেশের উপরে যে সব আঘাত ও রোগ আনবেন, তা যখন আগামী বংশ, তোমাদের পরে উৎপন্ন তোমাদের সন্তানরা এবং বিদেশ থেকে আসা বিদেশী দেখবে
\v 23 এবং সদাপ্রভু নিজের রাগে ও ক্রোধে যে সদোম, ঘমোরা, অদ্‌মা ও সবোয়িম শহর উৎপন্ন করেছিলেন, তার মত এই দেশের সব ভূমি গন্ধক, জলন্ত লবণে পরিপূর্ণ হয়েছে, তাতে কিছুই বোনা যায় না ও তা ফল উৎপন্ন করে না ও তাতে কোনো তৃণ হয় না, এ সব যখন দেখবে; তখন তারা বলবে,
\v 24 এমন কি, সব জাতি বলবে, ‘সদাপ্রভু এ দেশের প্রতি কেন এমন করলেন? এমন মহাক্রোধ প্রজ্বলিত হবার কারণ কি?
\s5
\v 25 তখন লোকে বলবে, ‘কারণ এই, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু মিসর দেশ থেকে সেই পূর্বপুরুষদেরকে বের করে আনার সময়ে তাদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করেন, সেই নিয়ম তারা ত্যাগ করেছিল
\v 26 আর গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা করেছিল, যে দেবতাদেরকে তারা জানত না, যাদেরকে তিনি তাদের জন্য নির্ধারণ করেননি, সেই দেবতাদের কাছে নত করেছিল;
\s5
\v 27 তাই এই বইয়ে লেখা সমস্ত শাপ দেশের উপর আনতে এই দেশের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর রাগ প্রজ্বলিত হল
\v 28 এবং সদাপ্রভু রাগে, ক্রোধে ও মহাকোপে তাদেরকে তাদের দেশ থেকে অন্য দেশে নিক্ষেপ করেছেন, যেমন আজ দেখা যাচ্ছে।
\s5
\v 29 গোপন বিষয় সব আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অধিকার; কিন্তু প্রকাশিত বিষয় সব আমাদের ও চিরকাল আমাদের বংশধরদের অধিকার, যেন এই নিয়মের সব কথা আমরা পালন করতে পারি।
\s5
\c 30
\p
\v 1 আমি তোমার সামনে এই যে আশীর্বাদ ও অভিশাপ স্থাপন করলাম, তখন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে সব জাতির মধ্যে তোমাকে তাড়িয়ে দেবেন, সেখানে যদি তুমি মনে চেতনা পাও
\v 2 এবং তুমি ও তোমার সন্তানরা যদি সম্পূর্ণ হৃদয়ের ও সম্পূর্ণ প্রাণের সঙ্গে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ফিরে এস এবং আজ আমি তোমাকে যে সব আদেশ দিচ্ছি, সেই অনুসারে যদি তাঁর রবে অবধান কর;
\v 3 তবে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার বন্দিত্ব ফেরাবেন, তোমার প্রতি দয়া করবেন ও যে সব জাতির মধ্যে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেখান থেকে আবার তোমাকে সংগ্রহ করবেন।
\s5
\v 4 যদি তোমরা কেউ নির্বাসিত হয়ে আকাশমণ্ডলের প্রান্তে থাক, তা সত্ত্বেও তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সেখান থেকে তোমাকে সংগ্রহ করবেন ও সেখান থেকে নিয়ে আসবেন।
\v 5 আর তোমার পূর্বপুরুষেরা যে দেশ অধিকার করেছিল, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সেই দেশে তোমাকে আনবেন ও তুমি তা অধিকার করবে এবং তিনি তোমার ভালো করবেন ও তোমার পূর্বপুরুষদের থেকেও তোমার বহুগুণ করবেন।
\s5
\v 6 আর তুমি যেন সমস্ত হৃদয় ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবেসে জীবন লাভ কর, এই জন্য তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার হৃদয় ও তোমার বংশের হৃদয় ছিন্নত্বক্‌ করবেন।
\v 7 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার শত্রুদের ওপরে ও যারা তোমাকে ঘৃণা করে তাড়না করেছে, তাদের ওপরে এই সমস্ত শাপ দেবেন।
\v 8 আর তুমি ফিরে সদাপ্রভুর রবে অনুসরণ করবে এবং আমি আজই তোমাকে তাঁর যে সব আদেশ জানাচ্ছি, তা পালন করবে।
\s5
\v 9 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সমৃদ্ধির জন্যেই তোমার হাতের সব কাজে, তোমার শরীরের ফলে, তোমার পশুর ফলে ও তোমার ভূমির ফলে তোমাকে ঐশ্বর্য্যশালী করবেন; যেহেতু সদাপ্রভু তোমার পূর্বপুরুষদের মধ্যেও যেমন আনন্দ করতেন, সমৃদ্ধির জন্যে আবার তোমার মধ্যেও সেরকম আনন্দ করবেন;
\v 10 শুধু যদি তুমি এই নিয়মের বইয়ে লেখা তাঁর আদেশ সব ও তাঁর বিধি সব পালনের জন্যে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে মেনে চল, যদি সমস্ত হৃদয় ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি ফের।
\s5
\v 11 কারণ আমি আজ তোমাকে এই যে আজ্ঞা দিচ্ছি, তা তোমার বোঝার জন্য কঠিন না এবং দূরেও না।
\v 12 তা স্বর্গে না যে, তুমি বলবে, আমরা যেন তা পালন করি, এই জন্য কে আমাদের জন্যে স্বর্গে গিয়ে তা এনে আমাদেরকে শুনাবে?
\s5
\v 13 আর তা সমুদ্রের পারেও না যে, তুমি বলবে, ‘আমরা যেন তা পালন করি, এই জন্য কে আমাদের জন্যে সমুদ্র পার হয়ে তা এনে আমাদেরকে শোনাবে?
\v 14 কিন্তু সেই কথা তোমার খুব কাছে, তা তোমার মুখে ও তোমার হৃদয়ে, যেন তুমি তা পালন করতে পার।
\s5
\v 15 দেখ, আমি আজই তোমার সামনে জীবন ও ভালো এবং মৃত্যু ও অমঙ্গল রাখলাম;
\v 16 যদি আমি আজ তোমাকে এই আজ্ঞা দিচ্ছি যে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালোবাসতে, তাঁর পথে চলতে এবং তাঁর আজ্ঞা, তাঁর বিধি ও তাঁর শাসন পালন করতে হবে; তা করলে তুমি বাঁচবে ও বহুগুণ হবে এবং যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছে, সেই দেশে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে আশীর্বাদ করবেন।
\s5
\v 17 কিন্তু যদি তোমার হৃদয় অন্য পথে যায় ও তুমি কথা না শুনে প্রতিসারিত হয়ে অন্য দেবতাদের কাছে নত হও ও তাদের সেবা কর;
\v 18 তবে আজ আমি তোমাদেরকে জানাচ্ছি, তোমরা অবশ্যই বিনষ্ট হবে, তোমরা অধিকারের জন্যে যে দেশে প্রবেশ করতে যর্দন পার হয়ে যাচ্ছ, সেই দেশে তোমাদের জীবনকাল দীর্ঘদিন হবে না।
\s5
\v 19 আমি আজ তোমাদের বিরুদ্ধে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীকে সাক্ষী করে বলছি যে, আমি তোমার সামনে জীবন ও মৃত্যু, আশীর্বাদ ও শাপ রাখলাম। অতএব জীবন বেছে নাও, যেন তুমি ও তোমার বংশধর বাঁচতে পার;
\v 20 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবাস, তাঁর রবে মেনে চল ও তাতে আসক্ত হও; কারণ তিনিই তোমার জীবন ও তোমার দীর্ঘআয়ুর মতো; তা হলে সদাপ্রভু তোমার পূর্বপুরুষদেরকে, অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবকে, যে দেশ দিতে শপথ করেছিলেন, সেই দেশে তুমি বাস করতে পারবে।
\s5
\c 31
\s যিহোশূয়ের প্রতি ঈশ্বরের আশ্বাস বাক্য।
\p
\v 1 পরে মোশি গিয়ে সব ইস্রায়েলকে এই সব কথা বললেন।
\v 2 আর তিনি তাদেরকে বললেন, “আজ আমার বয়স একশো কুড়ি বছর, আমি আর বাইরে যেতে ও ভিতরে আসতে পারি না এবং সদাপ্রভু আমাকে বলেছেন, তুমি এই যর্দন পার হবে না।
\v 3 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজে তোমার আগে গিয়ে পার হয়ে যাবেন; তিনিই তোমার সামনে থেকে সেই জাতিদেরকে ধ্বংস করবেন, তাতে তুমি তাদেরকে তাড়িয়ে দেবে; সদাপ্রভু যেমন বলেছেন, তেমনি যিহোশূয়ই তোমার আগে গিয়ে পার হয়ে যাবে।
\s5
\v 4 আর সদাপ্রভু ইমোরীয়দের সীহোন ও ওগ নামে দুই রাজাকে ধ্বংস করে তাদের প্রতি ও তাদের দেশের প্রতি যেমন করেছেন, ওদের প্রতিও সেরকম করবেন।
\v 5 যখন তোমরা যুদ্ধে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে সদাপ্রভু তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয় দেবেন, তখন তোমরা আমার আদেশ দেওয়া সব আদেশ অনুসারে তাদের প্রতি ব্যবহার করবে।
\v 6 তোমরা শক্তিশালী হও ও সাহস কর, ভয় কোরো না, তাদের থেকে ভীত হয়ো না; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজে তোমার সঙ্গে যাচ্ছেন, তিনি তোমাকে ছাড়বেন না, তোমাকে ত্যাগ করবেন না।”
\s5
\v 7 আর মোশি যিহোশূয়কে ডেকে পুরো ইস্রায়েলের সামনে বললেন, “তুমি শক্তিশালী হও ও সাহস কর, কারণ সদাপ্রভু এদেরকে যে দেশ দিতে এদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছেন, সেই দেশে এই লোকদের সঙ্গে তুমি প্রবেশ করবে এবং তুমি এদেরকে সেই দেশ অধিকার করাবে।
\v 8 আর সদাপ্রভু নিজে তোমার আগে আগে যাচ্ছেন; তিনিই তোমার সঙ্গে থাকবেন; তিনি তোমাকে ছাড়বেন না, তোমাকে ত্যাগ করবেন না; ভয় কোরো না, নিরাশ হয়ো না।”
\s5
\v 9 পরে মোশি এই নিয়ম লিখলেন এবং লেবির ছেলেরা যাজকরা, যারা সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুক বহন করত, তাদেরকে ও ইস্রায়েলের সব প্রাচীনদেরকে সমর্পণ করলেন।
\v 10 আর মোশি তাদেরকে এই আদেশ দিলেন, “প্রত্যেক সাত বছরের শেষে, ঋণ বাতিলের সময়ে কুটিরের পর্বে,
\v 11 যখন সমস্ত ইস্রায়েল তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় তাঁর সামনে উপস্থিত হবে, সেই সময়ে তুমি সমস্ত ইস্রায়েলের সামনে তাদের কাছে এই নিয়ম পড়বে।
\s5
\v 12 তুমি লোকদেরকে, পুরুষ, স্ত্রী, বালক বালিকা ও তোমার শহরের দরজার মধ্যবর্ত্তী বিদেশী সবাইকে জড়ো করবে, যেন তারা শুনে শেখে ও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করে এবং এই নিয়মের সব কথা যত্নসহকারে পালন করে
\v 13 আর তাদের যে সন্তানরা এই সব জানে না, তারা যেন শুনে এবং যে দেশ অধিকার করতে তোমরা যর্দন পার হয়ে যাচ্ছ, সেই দেশে যতদিন বেঁচে থাকে, তারা ততদিন যেন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করতে শেখে।
\s5
\v 14 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “দেখ, তোমার মৃত্যুদিন কাছাকাছি, তুমি যিহোশূয়কে ডাক এবং তোমরা উভয়ে সমাগম তাঁবুতে উপস্থিত হও, আমি তাকে আদেশ দেব।” তাতে মোশি ও যিহোশূয় গিয়ে সমাগম তাঁবুতে উপস্থিত হলেন।
\v 15 আর সদাপ্রভু সেই তাঁবুতে মেঘের স্তম্ভে দেখা দিলেন; সেই মেঘের স্তম্ভ তাঁবু দরজার ওপরে স্থির থাকল।
\s5
\v 16 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “দেখ, তুমি নিজের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে শুবে, আর এই লোকেরা উঠবে এবং যে দেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, সেই দেশের বিদেশী দেবতাদের অনুসরণে ব্যভিচার করবে এবং আমাকে ত্যাগ করবে ও তাদের সঙ্গে করে আমার নিয়ম ভাঙ্গবে।
\s5
\v 17 সেই সময়ে তাদের বিরুদ্ধে আমার রাগ প্রজ্বলিত হবে, আমি তাদেরকে ত্যাগ করব ও তাদের থেকে নিজের মুখ লুকাব আর তারা কবলিত হবে এবং তাদের ওপরে নানা ধরনের অমঙ্গল ও সঙ্কট ঘটবে; সেই সময়ে তারা বলবে, ‘আমাদের উপর এই সমস্ত অমঙ্গল ঘটেছে, এর কারণ কি এটাই না, যে আমাদের ঈশ্বর আমাদের মধ্যবর্ত্তী নন?
\v 18 বাস্তবিক তারা অন্য দেবতাদের কাছে ফিরে যে সব খারাপ কাজ করবে, তার জন্য সেই সময়ে আমি অবশ্য তাদের থেকে নিজের মুখ ঢাকব।
\s5
\v 19 এখন তোমরা নিজেদের জন্য এই গান লেখো এবং তুমি ইস্রায়েলের লোকদেরকে এই গান শেখাও ও তাদেরকে মুখস্থ করাও; যেন এই গান ইস্রায়েলের লোকদের বিরুদ্ধে আমার সাক্ষী হয়।
\v 20 কারণ আমি যে দেশ দিতে তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছি, সেই দুধ ও মধুপ্রবাহী দেশ তাদেরকে নিয়ে গেলে পর যখন তারা খেয়ে তৃপ্তি ও মোটা হবে, তখন অন্য দেবতাদের কাছে ফিরবে এবং তাদের সেবা করবে, আমাকে অবজ্ঞা করবে ও আমার নিয়ম ভাঙ্গবে।
\s5
\v 21 আর যখন তাদের ওপরে নানা ধরনের অমঙ্গল ও সঙ্কট ঘটবে, সেই সময়ে এই গান সাক্ষী হিসাবে তাদের সামনে সাক্ষ্য দেবে; কারণ তাদের বংশের মুখে এই গান ভুলে যাবে না; প্রকৃতপক্ষে আমি যে দেশের বিষয়ে শপথ করেছি, সেই দেশে তাদেরকে আনার আগেও এখন তারা যে পরিকল্পনা করছে, তা আমি জানি।
\s5
\v 22 পরে মোশি সেই দিনে ঐ গান লিখে ইস্রায়েলের লোকদেরকে শেখালেন।
\v 23 আর তিনি নূনের ছেলে যিহোশূয়কে আদেশ দিয়ে বললেন, “তুমি শক্তিশালী হও ও সাহস কর; কারণ আমি ইস্রায়েলের লোকদেরকে যে দেশ দিতে শপথ করেছি, সেই দেশে তুমি তাদেরকে নিয়ে যাবে এবং আমি তোমার সঙ্গী হব।
\s5
\v 24 আর মোশি শেষ পর্যন্ত এই নিয়মের কথা সব বইয়ে লেখার পর
\v 25 সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুক বহনকারী লেবীয়দেরকে এই আদেশ দিলেন,
\v 26 “তোমরা এই নিয়মের বই নিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকের পাশে রাখ; এটা তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীর জন্য সেই জায়গায় থাকবে।
\s5
\v 27 কারণ তোমার বিরুদ্ধাচারিতা ও তোমার একগুঁয়েমিতা আমি জানি; দেখ, তোমাদের সঙ্গে আমি জীবিত থাকতেই আজ তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধাচারী হলে, তবে আমার মৃত্যুর পরে কি না করবে?
\v 28 তোমরা নিজেদের বংশের সমস্ত প্রাচীনদেরকে ও কর্ম্মচারীকে আমার কাছে জড়ো কর; আমি তাদের কানে এই সব কথা বলি এবং তাদের বিরুদ্ধে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীকে সাক্ষী করি।
\v 29 কারণ আমি জানি, আমার মৃত্যুর পরে তোমরা সম্পূর্ণ ভ্রষ্ট হয়ে পড়বে এবং আমার আদেশ দেওয়া পথ হইতে বিপথগামী হবে। আর পরবর্তীকালে তোমাদের অমঙ্গল ঘটবে, কারণ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা খারাপ, তা করে তোমরা নিজেদের হাতের কাজের মাধ্যমে তাঁকে অসন্তুষ্ট করবে।
\s5
\v 30 পরে মোশি শেষ পর্যন্ত ইস্রায়েলের সমস্ত সমাজের কাছে এই গানের কথাগুলি বলতে লাগলেন।
\s5
\c 32
\s মোশির গান।
\p
\v 1 আকাশমণ্ডল! কান দাও, আমি বলি; পৃথিবীও আমার মুখের কথা শুনুক।
\v 2 আমার শিক্ষা বৃষ্টির মতো বর্ষণ হবে, আমার কথা শিশিরের মতো নেমে আসবে, ঘাসের ওপরে পড়া বিন্দু বিন্দু বৃষ্টির মতো, শাকের ওপরে পড়া জলধারার মতো।
\s5
\v 3 কারণ আমি সদাপ্রভুর নাম প্রচার করব; তোমরা আমাদের ঈশ্বরের মহিমা প্রশংসা কর।
\v 4 তিনি শিলা, তাঁর কাজ নির্ভুল, কারণ তাঁর সব পথ সঠিক; তিনি বিশ্বাস্য ঈশ্বর, তাঁতে অন্যায় নেই; তিনিই ধর্ম্মময় ও সরল।
\s5
\v 5 এরা তাঁর বিষয়ে ভ্রষ্টাচারী, তাঁর সন্তান নয়, এই এদের কলঙ্ক; এরা বিপথগামী ও কুটিল বংশ।
\v 6 তোমরা কি সদাপ্রভুকে এই প্রতিশোধ দিচ্ছ? হে বোকা ও বুদ্ধিহীন জাতি। তিনি কি তোমার বাবা না, যিনি তোমাকে লাভ করলেন? তিনিই তোমার সৃষ্টিকর্তা ও স্থাপনকর্তা।
\s5
\v 7 পুরানো সময়ের দিন সব মনে কর, বহুপুরুষের বছর সব আলোচনা কর; তোমার বাবাকে জিজ্ঞাসা কর, সে জানাবে; তোমার প্রাচীনদেরকে জিজ্ঞাসা কর, তারা বলবে।
\v 8 পরাৎপর যখন জাতিদেরকে অধিকার প্রদান করলেন, যখন মানব জাতিকে আলাদা করলেন, তখন ইস্রায়েলীয়দের সংখ্যানুসারেই সেই লোকদের সীমা নির্ধারণ করলেন।
\s5
\v 9 কারণ সদাপ্রভুর প্রজাই তাঁর অংশ; যাকোবই তাঁর ভাগের অধিকার।
\v 10 তিনি তাকে পেলেন মরুভূমির দেশে, পশুগর্জনময় ঘোর মরুভূমিতে; তিনি তাকে ঘিরে নিলেন, তার যত্ন করলেন, চোখের তারার মতো তাকে রক্ষা করলেন।
\s5
\v 11 ঈগল যেমন নিজের বাসা পাহারা দেয়, নিজের শাবকদের ওপরে পাখা দোলায়, ডানা বাড়িয়ে দিয়ে তাদেরকে তুলে, পালকের ওপরে তাদেরকে বহন করে;
\v 12 সেভাবে সদাপ্রভু একাকী তাকে নিয়ে গেলেন; তাঁর সঙ্গে কোনো বিদেশী দেবতা ছিল না।
\s5
\v 13 তিনি পৃথিবীর উঁচু সব জায়গাগুলির ওপর দিয়ে তাকে চালালেন, সে ক্ষেতের ফল খেল; তিনি তাকে পাথর থেকে মধু পান করালেন, চক্‌মকি পাথরের শিলা থেকে তেল দিলেন;
\s5
\v 14 তিনি গোরুর মাখন, মেষীর দুগ্ধ্‌, মেষশাবকের মেদ সহ, বাশন দেশজাত মেষ ও ছাগ এবং উত্তম গমের সার তাকে দিলেন; তুমি দ্রাক্ষা ফলের দ্রাক্ষারস পান করলে।
\s5
\v 15 কিন্তু যিশুরূণ হৃষ্টপুষ্ট হয়ে পদাঘাত করল। তুমি হৃষ্টপুষ্ট, মোটা ও তৃপ্ত হলে; অমনি সে নিজের সৃষ্টি কর্তা ঈশ্বরকে ছাড়ল, নিজের পরিত্রাণের শিলাকে ছোট মনে করল।
\v 16 তারা বিজাতীয় দেবতার মাধ্যমে তার ঈর্ষা জন্মাল, ঘৃণার বস্তু দিয়ে তাঁকে অসন্তুষ্ট করল।
\s5
\v 17 তারা বলিদান করল ভূতদের উদ্দেশ্যে, যারা ঈশ্বর নয়, দেবতাদের উদ্দেশ্যে, যাদেরকে তারা জানত না, বর্তমান দেবতাদের উদ্দেশ্যে, যাদেরকে তোমাদের পূর্ব পুরুষরা ভয় করত না।
\v 18 তুমি নিজের জন্মদাতা শিলার প্রতি উদাসীন, নিজের জন্মদাতা ঈশ্বরকে ভুলে গেলে।
\s5
\v 19 সদাপ্রভু দেখলেন, ঘৃণা করলেন, নিজের ছেলে মেয়েদের করা অসন্তোষজনক কাজের জন্য।
\v 20 তিনি বললেন, “আমি ওদের থেকে নিজের মুখ ঢেকে রাখব;” তিনি বললেন, “ওদের শেষদশা কি হবে, দেখব; কারণ ওরা বিপরীতধর্মী বংশ, ওরা অবিশ্বস্ত সন্তান।
\s5
\v 21 যারা দেবতা নয় তাদের মাধ্যমে আমার অন্তরজ্বালা সৃষ্টি করল, নিজদের অযোগ্যও প্রতিমার মাধ্যমে আমাকে অসন্তুষ্ট করল; যারা জাতি নয় তাদের মাধ্যমে আমিও ওদের ঈর্ষান্বিত করব, আমি ওদেরকে একজাতির মাধ্যমে অসন্তুষ্ট করব যারা কিছুই বোঝে না।
\s5
\v 22 কারণ আমার রাগে আগুন জ্বলে উঠল, তা নীচের পাতাল পর্যন্ত দগ্ধ করে, পৃথিবী ও ফসল গ্রাস করে, পর্বত সব কিছুর ভিত্তিতে আগুন লাগায়।
\s5
\v 23 আমি তাদের ওপরে অমঙ্গলের স্তূপ করব, তাদের প্রতি আমার বাণ সব ছুঁড়ব।
\v 24 তারা খিদেতে দুর্বল হবে, জ্বলন্ত তাপে ও ভীষণভাবে ধ্বংসে কবলিত হবে; আমি তাদের কাছে জন্তুদের দাঁত পাঠাব, ধূলোতে অবস্থিত উরোগামীদের বিষ সহকারে।
\s5
\v 25 বাইরে খড়গ এবং ঘরের মধ্যে ত্রাস বিনাশ করবে; যুবক ও কুমারীকে, দুধ খাওয়া শিশু ও সাদা চুল বিশিষ্ট বৃদ্ধকে মারবে।
\v 26 আমি বললাম, তাদেরকে উড়িয়ে দেব, মানুষদের মধ্যে থেকে তাদের স্মৃতি মুছে দেব।
\s5
\v 27 কিন্তু ভয় করি, পাছে শত্রু বিরক্ত করে পাছে তাদের শত্রুরা বিপরীত বিচার করে, পাছে তারা বলে, আমাদেরই হাত উন্নত এ সব কাজ সদাপ্রভু করেননি।
\s5
\v 28 কারণ ওরা জ্ঞানবিহীন জাতি, ওদের মধ্যে বিবেচনা নাই।
\v 29 আহা, কেন তারা জ্ঞানবান্‌ হয়ে এই কথা বোঝে না? কেন নিজেদের শেষদশা বিবেচনা করে না?
\s5
\v 30 এক জন কিভাবে হাজার লোককে তাড়িয়ে দেয়, দুই জন্য দশ হাজারকে পালাতে সাহায্য করে? না, তাদের শিলা তাদেরকে বিক্রি করলেন, সদাপ্রভু তাদেরকে সমর্পণ করলেন।
\v 31 কারণ ওদের শিলা আমাদের শিলার মতো না, আমাদের শত্রুরাও এরকম বিচার করে।
\s5
\v 32 কারণ তাদের আঙ্গুর লতা সদোমের আঙ্গুর লতা থেকে উৎপন্ন; ঘমোরার ক্ষেতে অবস্থিত আঙ্গুর লতা থেকে উৎপন্ন; তাদের আঙ্গুর ফল বিষময়, তাদের গুচ্ছ তেতো;
\s5
\v 33 তাদের আঙ্গুর রস সাপদের বিষ, তা কালসাপের উৎকট হলাহল।
\v 34 এটা কি আমার কাছে সঞ্চয় করে রাখা না? আমার অর্থভান্ডার সীলমোহরের মাধ্যমে রক্ষিত না?
\s5
\v 35 প্রতিশোধ ও প্রতিফলদান আমারই কাজ, যে সময়ে তাদের পা পিছলে যাবে; কারণ তাদের বিপদের দিন কাছাকাছি, তাদের জন্য যা যা নির্ধারিত, তাড়াতাড়ি আসবে।”
\s5
\v 36 কারণ সদাপ্রভু নিজের প্রজাদের বিচার করবেন, নিজের দাসদের ওপরে দয়া করবেন; যেহেতু তিনি দেখবেন, তাদের শক্তি গিয়েছে, বন্ধ কি খোলা কেউই নেই।
\s5
\v 37 তিনি বলবেন, “কোথায় তাদের দেবতা, কোথায় সেই শিলা, যার শরণ নিয়েছিল,
\v 38 যা তাদের বলির মেদ খেত, তাদের পানীয় নৈবেদ্যের আঙ্গুর রস পান করত? তারাই উঠে তোমাদের সাহায্য করুক, তারাই তোমাদের আশ্রয় হোক।
\s5
\v 39 এখন দেখ, আমি, আমিই তিনি; আমি ছাড়া কোনো ঈশ্বর নেই; আমি হত্যা করি, আমিই, জীবন্ত করি; আমি আঘাত করেছি, আমিই সুস্থ করি; আমার হাত থেকে উদ্ধারকারী কেউই নেই।
\v 40 কারণ আমি আকাশের দিকে হাত তুলি, আর বলি, আমি অনন্তজীবী,
\s5
\v 41 আমি যদি নিজের চকচকে তলোয়ারে শাণ দিই, যদি বিচারসাধনে হাত দিই, তবে আমার বিপক্ষদের প্রতিশোধ নেব, আমার বিদ্বেষীদেরকে প্রতিফল দিব।
\s5
\v 42 আমি নিজের বাণ সব মত্ত করব রক্তপানে, মারা যাওয়া ও বন্দি লোকদের রক্তপানে; আমার তলোয়ারে মাংস খাবে, শত্রুদের প্রধানদের মাথা [খাবে]।
\s5
\v 43 জাতিরা, তাঁর প্রজাদের সঙ্গে আনন্দ কর; কারণ তিনি নিজের দাসদের রক্তের প্রতিফল দেবেন, নিজের বিপক্ষদের প্রতিশোধ নেবেন, নিজের দেশের জন্য, নিজের প্রজাদের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবেন।
\s5
\v 44 আর মোশি ও নূনের ছেলে হোশেয় এসে লোকদের কানে এই গানের সমস্ত কথা বললেন।
\v 45 মোশি সমস্ত ইস্রায়েলের কাছে এই সব কথা শেষ করলেন;
\s5
\v 46 আর তিনি তাদেরকে বললেন, “আমি আজ তোমাদের কাছে সাক্ষ্য হিসাবে যা যা বললাম, তোমরা সেই সমস্ত কথায় মনোযোগ কর, আর তোমাদের সন্তানরা যেন এই ব্যবস্থার সব কথা পালন করতে যত্নবান্‌ হয়, এই জন্য তাদেরকে তা আদেশ করতে হবে।
\v 47 কারণ এটা তোমাদের পক্ষে অর্থহীন বাক্য না, কারণ এটা তোমাদের জীবন এবং তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যর্দন পার হয়ে যাচ্ছ, সেই দেশে এই বাক্যের মাধ্যমে দীর্ঘায়ু হবে।”
\s5
\v 48 সেই দিনে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “তুমি এই অবারীম পর্বতে,
\v 49 অর্থাৎ যিরীহোর সামনে অবস্থিত মোয়াব দেশে অবস্থিত নবো পর্বতে উঠ এবং আমি অধিকারের জন্যে ইস্রায়েল সন্তানদেরকে যে দেশ দিচ্ছি, সেই কনান দেশ দেখ।
\s5
\v 50 আর আমার ভাই হারোণ যেমন হোর পর্বতে মারা গিয়ে নিজের লোকদের কাছে সংগৃহীত হল, সেরকম তুমি যে পর্বতে উঠবে, তোমাকে সেখানে মারা গিয়ে নিজের লোকদের কাছে সংগৃহীত হতে হবে;
\v 51 কারণ সিন মরুভূমিতে কাদেশে অবস্থিত মরীবা জলের কাছে তোমরা ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে আমার বিরুদ্ধে সত্যলঙ্ঘন করেছিলে, ফলে ইস্রায়েলের লোকদের মধ্যে আমাকে পবিত্র বলে মান্য করনি।
\v 52 তুমি নিজের সামনে দেশ দেখবে, কিন্তু আমি ইস্রায়েলের লোকদেরকে যে দেশ দিচ্ছি, সেখানে প্রবেশ করতে পারবে না।
\s5
\c 33
\s ইস্রায়েলের প্রতি মোশির আশীর্বাদ।
\p
\v 1 আর ঈশ্বরের লোক মোশি মৃত্যুর আগে ইস্রায়েলের লোকদেরকে যে আশীর্বাদে আশীর্বাদ করলেন, তা এই।
\v 2 তিনি বললেন, “সদাপ্রভু সীনয় থেকে আসলেন, সেয়ীর থেকে তাদের জন্য উঠলেন; পারণ পর্বত থেকে নিজের তেজ প্রকাশ করলেন, হাজার হাজার পবিত্রের কাছ থেকে আসলেন; তাদের জন্য তাঁর ডান হাতে অগ্নিময় ব্যবস্থা ছিল।
\s5
\v 3 অবশ্যই, তিনি গোষ্ঠীদেরকে ভালবাসেন, তাঁর পবিত্ররা সবাই তোমার হাতে; তারা তোমার পায়ের কাছে বসল, প্রত্যেকে তোমার বাক্য গ্রহণ করল।
\v 4 মোশি আমাদেরকে ব্যবস্থা আদেশ করলেন, তা যাকোবের সমাজের অধিকার।
\s5
\v 5 যখন লোকদের প্রধানরা একত্রিত হল, ইস্রায়েলের সমস্ত বংশ একত্র হল, তখন যিশুরূণে এক রাজা ছিলেন।
\v 6 রূবেণ বেঁচে থাকুক, তাঁর মৃত্যু না হোক, তাছাড়া তার লোক অল্পসংখ্যক হোক।”
\s5
\v 7 আর যিহূদার বিষয়ে তিনি বললেন, “হে সদাপ্রভু, যিহূদার রব শোনো, তার লোকদের কাছে তাকে আন; সে নিজের হাতে নিজের পক্ষে যুদ্ধ করল, তুমি শত্রুদের বিরুদ্ধে তার সাহায্যকারী হবে।”
\s5
\v 8 আর লেবির বিষয়ে তিনি বললেন, “তোমার সেই আনন্দের সঙ্গে তোমার তুম্মীম ও ঊরীম রয়েছে; যার পরীক্ষা তুমি মঃসাতে করলে, যার সঙ্গে মরীবার জলের কাছে বিবাদ করলে।
\s5
\v 9 সে নিজের বাবার ও নিজের মায়ের বিষয়ে বলল, ‘আমি তাকে দেখিনি; সে নিজের ভাইদেরকে স্বীকার করল না, নিজের সন্তানদেরকেও গ্রহণ করল না; কারণ তারা তোমার বাক্য রক্ষা করেছে এবং তোমার নিয়ম পালন করে।
\s5
\v 10 তারা যাকোবকে তোমার শাসন, ইস্রায়েলকে তোমার ব্যবস্থা শিক্ষা দেবে; তারা তোমার সামনে ধূপ রাখবে, তোমার বেদির ওপরে সম্পূর্ণ হোমবলি রাখবে।
\s5
\v 11 সদাপ্রভু, তার সম্পত্তিতে আশীর্বাদ কর, তার হাতের কাজ গ্রাহ্য কর; তাদের কোমরে আঘাত কর, যারা তার বিরুদ্ধে ওঠে, যারা তাকে ঘৃণা করে, যেন তারা আর উঠতে না পারে।
\s5
\v 12 বিন্যামীনের বিষয়ে তিনি বললেন, “সদাপ্রভুর প্রিয় জন তাঁর কাছে নির্ভয়ে বাস করবে; তিনি সারা দিন তাকে ঢেকে রাখেন, সে সদাপ্রভুর বাহুদ্বয়ে বাস করে।
\s5
\v 13 আর যোষেফের বিষয়ে তিনি বললেন, “তার দেশ সদপ্রভুর আশীর্বাদযুক্ত হোক, আকাশের মূল্যবান জিনিস ও শিশিরের মাধ্যমে, নীচে বিস্তীর্ণ জলের মাধ্যমে,
\s5
\v 14 সূর্যের আলোয় পাকা ফলের মূল্যবান জিনিসের মাধ্যমে, অতিক্রান্ত মাসের মূল্যবান জিনিসের মাধ্যমে,
\v 15 পুরাতন পর্বতদের প্রধান প্রধান জিনিসের মাধ্যমে, অনন্ত পাহাড়ের মূল্যবান জিনিসের মাধ্যমে,
\s5
\v 16 পৃথিবীর মূল্যবান জিনিস ও প্রাচুর্য্যতার মাধ্যমে; আর যিনি ঝোপবাসী, তার ভালো হোক; সেই আশীর্বাদ আসুক যোষেফের মাথায় এবং তার মাথার ওপরে যে তার ভাইদের ওপরে রাজত্ব করে।
\s5
\v 17 তার প্রথমজাত ষাঁড় শোভাযুক্ত, তার শিং দুটি বন্য ষাঁড়ের শিং; তার মাধ্যমে সে পৃথিবীর শেষ পর্যন্ত সমস্ত জাতিকে গুতাবে; সেই শিং দুটি ইফ্রয়িমের হাজার হাজার লোক, মনঃশির হাজার হাজার লোক।”
\s5
\v 18 আর সবূলূনের বিষয়ে তিনি বললেন, “সবূলূন, তুমি নিজের যাওয়াতে আনন্দ কর এবং ইষাখর, তুমি নিজের তাঁবুতে আনন্দ কর।
\v 19 এরা গোষ্ঠীদেরকে পর্বতের আহ্বান করবে; সে জায়গায় ধার্মিকতার বলি উৎসর্গ করবে, কারণ এরা সমুদ্রের প্রচুর জিনিস এবং বালুকার লুকানো ধন সব শোষণ করবে।
\s5
\v 20 আর গাদের বিষয়ে তিন বললেন, “ধন্য তিনি, যিনি গাদকে বাড়িয়ে দেন; সে সিংহীর মতো বাস করে, সে বাহু এবং মাথাও বিচ্ছিন্ন করে।
\s5
\v 21 সে নিজের জন্য প্রথমাংশ প্রদান করল; কারণ সেখানে অধিপতির অধিকার রক্ষিত হল; আর সে লোকদের প্রধানদের সঙ্গে আসল; সদাপ্রভুর ধার্মিকতা সম্পন্ন করল।
\s5
\v 22 আর দানের বিষয়ে তিনি বললেন, “দান সিংহশাবক, যে বাশন থেকে লাফ দেয়।”
\s5
\v 23 আর নপ্তালির বিষয়ে তিনি বললেন, “নপ্তালি, তুমি অনুগ্রহে সন্তুষ্ট, আর সদাপ্রভুর আশীর্বাদে পরিপূর্ণ; তুমি পশ্চিম ও দক্ষিণ অধিকার কর।”
\s5
\v 24 আর আশের বিষয়ে তিনি বললেন, “ছেলেতে আশের আশীর্বাদযুক্ত হোক, সে নিজের ভাইদের কাছে অনুগৃহীত হোক, সে নিজের পা তেলে ডুবিয়ে দিক।
\v 25 তোমার শহরের দরজার খিল লোহার ও ব্রোঞ্জের হবে, তোমার যেমন দিন, তেমনি শক্তি হবে।”
\s5
\v 26 হে যিশুরূণ, ঈশ্বরের মতো কেউ নেই; তিনি তোমার সাহায্যের জন্যে আকাশরথে, নিজ গৌরবে মেঘে যাতায়াত করেন।
\s5
\v 27 অনাদি ঈশ্বর তোমার বাসস্থান, নীচে চিরস্থায়ী হাত দুটি; তিনি তোমার সামনে থেকে শত্রুকে দূর করলেন, আর বললেন, “ধ্বংস কর!”
\s5
\v 28 তাই ইস্রায়েল নির্ভয়ে বাস করে, যাকোবের উৎস একাকী থাকে, শস্যের ও দ্রাক্ষারসের দেশে বাস করে; আর তার আকাশ থেকেও শিশির পড়ে।
\s5
\v 29 হে ইস্রায়েল। ধন্য তুমি, তোমার তুল্য কে? তুমি সদাপ্রভুর দ্বারা নিস্তারপ্রাপ্ত জাতি, তিনি তোমার সাহায্যের ঢাল, তোমার মহিমার খড়্গ। তোমার শত্রুরা তোমার কর্ত্তৃত্ব স্বীকার করবে, আর তুমিই তাদের উঁচু জায়গা দলন করবে।
\s5
\c 34
\s মোশির মৃত্যু।
\p
\v 1 মোশি মোয়াবের সমভূমি থেকে নবো পর্বতে, যিরীহোর সামনে অবস্থিত পিস্‌গা শৃঙ্গে উঠলেন। আর সদাপ্রভু তাকে সমস্ত দেশ, দান পর্যন্ত গিলিয়দ
\v 2 এবং সমস্ত নপ্তালি, আর ইফ্রয়িম ও মনঃশির দেশ এবং পশ্চিম সমুদ্র পর্যন্ত যিহূদার সমস্ত দেশ
\v 3 এবং দক্ষিণ দেশ ও সোয়র পর্যন্ত তাল গাছের শহর যিরীহোর উপত্যকার অঞ্চল দেখালেন।
\s5
\v 4 আর সদাপ্রভু তাকে বললেন, “আমি যে দেশের বিষয়ে শপথ করে অব্রাহামকে, ইস্‌হাককে ও যাকোবকে বলেছিলাম, আমি তোমার বংশকে সেই দেশ দেব, এ সেই দেশ; আমি ওটা তোমাকে চোখে দেখালাম, কিন্তু তুমি পার হয়ে ঐ জায়গা যাবে না।”
\v 5 তখন সদাপ্রভুর দাস মোশি সদাপ্রভুর কথা অনুসারে সেই জায়গায় মোয়াব দেশে মারা গেলেন।
\v 6 আর তিনি মোয়াব দেশে বৈৎপিয়োরের সামনে অবস্থিত উপত্যকাতে তাঁকে কবর দিলেন; কিন্তু তাঁর কবরস্থান আজও কেউ জানে না।
\s5
\v 7 মৃত্যুর সময় মোশির বয়স একশো কুড়ি বছর হয়েছিল; তাঁর চক্ষু ক্ষীণ হয়নি ও তাঁর তেজের হ্রাস হয় নাই।
\v 8 পরে ইস্রায়েলের লোকদের মোশির জন্য মোয়াবের সমভূমিতে ত্রিশ দিন শোক করল; এভাবে মোশির শোকের দিন শেষ হল।
\s5
\v 9 আর নূনের ছেলে যিহোশূয় বিজ্ঞতার আত্মায় পরিপূর্ণ ছিলেন, কারণ মোশি তাঁর উপরে হাত রেখেছিলেন; আর ইস্রায়েলের লোকরা তাঁর কথায় মনোযোগ দিয়ে মোশির প্রতি সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে কাজ করতে লাগল।
\s5
\v 10 মোশির মতো কোনো ভাববাদী ইস্রায়েলের মধ্যে আর সৃষ্টি হয়নি; সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে সামনাসামনি আলাপ করতেন;
\v 11 প্রকৃতপক্ষে সদাপ্রভু তাঁকে পাঠালে তিনি মিসর দেশে, ফরৌণের, তাঁর সব দাসের ও তাঁর সব দেশের প্রতি সবধরনের চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণ দেখালেন
\v 12 এবং সমস্ত ইস্রায়েলের দৃষ্টিতে মোশি শক্তিশালী হাতের ও ভয়ঙ্করতার কত না কাজ করেছিলেন।

1068
06-JOS.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,1068 @@
\id JOS
\ide UTF-8
\h যিহোশূয়ের বই
\toc1 যিহোশূয়ের বই
\toc2 যিহোশূয়ের বই
\toc3 jos
\mt1 যিহোশূয়ের বই
\s5
\c 1
\s যিহোশূয়ের নিয়োগ।
\p
\v 1 সদাপ্রভুর দাস মোশির মৃত্যু হবার পর সদাপ্রভু নূনের পুত্র যিহোশূয় নামে মোশির প্রধান পরিচারককে বললেন,
\v 2 "আমার দাস মোশির মৃত্যু হয়েছে; এখন ওঠ, তুমি এই সমস্ত লোকদের নিয়ে এই যর্দন নদী পার হও এবং তাদেরকে, অর্থাৎ ইস্রায়েল-সন্তানদের আমি যে দেশ দেব, সেই দেশে যাও।
\v 3 সে সমস্ত স্থানে তোমরা যাতায়াত করবে, আমি মোশিকে যেমন বলেছিলাম, সেই অনুযায়ী সেই সমস্ত স্থান তোমাদেরকে দিয়েছি।
\s5
\v 4 মরুভূমি ও এই লিবানোন থেকে মহানদী, ফরাৎ নদী পর্যন্ত হিত্তীয়দের সমস্ত দেশ এবং সূর্যের অস্ত যাওয়ার দিকে মহাসমুদ্র পর্যন্ত তোমাদের সীমা হবে।
\v 5 তোমার সমস্ত জীবনকালে কেউ তোমার সামনে দাঁড়াতে পারবে না; আমি যেমন মোশির সঙ্গে সঙ্গে ছিলাম, তেমনই তোমারও সঙ্গে সঙ্গে থাকব; আমি তোমাকে একা ছাড়ব না বা তোমাকে ত্যাগ করব না।
\s5
\v 6 বলবান হও ও সাহস কর; কারণ যে দেশ দিতে এদের পিতৃপুরুষদের কাছে আমি শপথ করেছি, তা তুমি এই লোকদেরকে অধিকার করাবে।
\v 7 তুমি বলবান ও সাহসী হও; আমার দাস মোশি তোমাকে যে ব্যবস্থা আদেশ করেছে, তুমি সেই সমস্ত যত্নের সঙ্গে পালন কর, সেই সমস্ত থেকে ডান দিকে কিম্বা বাঁ দিকে যেও না, যেন তুমি যে কোন স্থানে যাও, সেখানে সফল হও।
\s5
\v 8 তোমার মুখ থেকে এই ব্যবস্থার-বই প্রস্থান না করুক; এর মধ্যে যা কিছু লেখা আছে, যত্নের সঙ্গে, সেই সমস্ত অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যমে তুমি দিন-রাত তা গভীরভাবে ধ্যান কর, কারণ তা করলে তুমি বৃদ্ধি পাবে ও সফল হবে।
\v 9 আমি কি তোমাকে আজ্ঞা দিই নি? তুমি বলবান হও ও সাহস কর, ভয় পেয়ো না, নিরাশ হয়ো না, কারণ তুমি যে কোনো জায়গায় যাবে, সেই সমস্ত জায়গায় তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে থাকবেন।"
\s5
\v 10 তখন যিহোশূয় লোকদের প্রধান নেতাদের আদেশ দিলেন,
\v 11 "তোমরা শিবিরের মধ্য দিয়ে যাও, লোকদের এই কথা বল, তোমরা তোমাদের খাদ্য সামগ্রী প্রস্তুত কর, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু অধিকার করার জন্য তোমাদেরকে যে দেশ দেবেন, সেই দেশে প্রবেশ করে তা অধিকার করার জন্য তিন দিনের মধ্যে তোমাদেরকে এই যর্দন পার হয়ে যেতে হবে।"
\s5
\v 12 পরে যিহোশূয় রূবেণীয়, গাদীয় ও মনঃশির অর্ধেক বংশকে বললেন,
\v 13 "সদাপ্রভুর দাস মোশি তোমাদের যে আদেশ দিয়েছিলেন, তা স্মরণ কর; তিনি বলেছিলেন, 'তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের বিশ্রাম দিয়েছেন, আর এই দেশ তোমাদেরকে দেবেন।'
\s5
\v 14 মোশি যর্দনের অন্য পারে তোমাদেরকে যে দেশ দিয়েছেন, সেই দেশে তোমাদের স্ত্রীরা, সন্তানরা ও পশুর পাল থাকবে; কিন্তু তোমরা, সমস্ত বলবান বীর, স্বসজ্জ হয়ে তোমাদের ভাইদের আগে পার হয়ে যাবে ও তাদের সাহায্য করবে।
\v 15 পরে যখন সদাপ্রভু তোমাদের মত তোমাদের ভাইদের বিশ্রাম দেবেন, অর্থাৎ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদেরকে যে দেশ দিচ্ছেন, তারাও যখন সেই দেশ অধিকার করবে, তখন তোমরা যর্দনের পূর্বদিকে সূর্য্যদয়ের দিকে যা সদাপ্রভুর দাস মোশি দিয়েছিলেন, সেখানে ফিরে গিয়ে তা অধিকার করবে।"
\s5
\v 16 তারা যিহোশূয়কে বলল, "আপনি আমাদেরকে যা কিছু আজ্ঞা করেছেন, সে সমস্তই আমরা করব; আপনি আমাদের যে কোন জায়গায় পাঠাবেন, সেই জায়গায় আমরা যাব।
\v 17 আমরা সমস্ত বিষয়ে যেমন মোশির কথা শুনতাম, তেমনি আপনার কথাও শুনব; শুধুমাত্র আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু যেমন মোশির সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন, তেমনি আপনারও সঙ্গে সঙ্গে থাকুন।
\v 18 যে কেউ আপনার আজ্ঞার বিরুদ্ধে যাবে এবং আপনার আজ্ঞার অবাধ্য হবে, তাঁর প্রাণদণ্ড হবে, আপনি শুধু বলবান হন ও সাহস করুন।"
\s5
\c 2
\s দেশ দেখার জন্য দুইজন গুপ্তচরদের পাঠান হয়।
\p
\v 1 তখন নূনের পুত্র যিহোশূয় শিটীম থেকে দুই জন গুপ্তচরদেরকে গোপনে এই কথা বলে পাঠালেন, "তোমরা যাও, ঐ দেশ, বিশেষ করে যিরীহো নগরকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ কর।" তখন তারা রাহব নামের এক বেশ্যার বাড়িতে গেলেন ও সেই জায়গায় বিশ্রাম করলেন।
\v 2 আর লোকেরা যিরীহোর রাজাকে বলল, "দেখুন, দেশ অনুসন্ধান করতে ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে থেকে কয়েকটা লোক আজ রাতে এই জায়গায় এসেছে।"
\v 3 তখন যিরীহোর রাজা রাহবের কাছে এই কথা বলে পাঠালেন, "যে লোকেরা তোমার কাছে এসেছে ও তোমার বাড়িতে প্রবেশ করেছে, তাদেরকে বাইরে নিয়ে এস, কারণ তারা সমস্ত দেশটাকে অনুসন্ধান করতে এসেছে।"
\s5
\v 4 তখন সেই মহিলাটি ঐ দুই জনকে লুকিয়ে রাখলেন এবং বললেন, "সত্যই, সেই লোকেরা আমার কাছে এসেছিল; কিন্তু তারা কোথাকার লোক, তা আমি জানতাম না।
\v 5 অন্ধকার হলে, নগরের দরজা বন্ধ করার একটু আগেই সেই লোকেরা চলে গেছে, তারা কোথায় গেছে, আমি জানি না; এখনই যদি তাদের অনুসরণ কর, তবে হয়ত তাদের ধরতে পারবে।"
\s5
\v 6 কিন্তু মহিলাটি তাদেরকে ছাদের উপরে নিয়ে গেলেন ও ছাদের উপরে সে তাঁর সাজানো শন এর ডাল পালার মধ্যে লুকিয়ে রেখেছিলেন।
\v 7 ঐ লোকেরা তাদের অনুসরণ করে যর্দনের পথে, যেখান দিয়ে হেঁটে পার হওয়া যায় সেই পর্যন্ত তাড়া করল এবং যারা তাদের তাড়া করার জন্য অনুসরণ করতে গেল, সেই লোকেরা বাইরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই নগরের দরজা বন্ধ হল।
\s5
\v 8 সেই দুইজন গুপ্তচর ঘুমাতে যাওয়ার আগে ঐ মহিলাটি ছাদের উপরে তাদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন,
\v 9 আর তাদেরকে বললেন, "আমি জানি, সদাপ্রভু তোমাদেরকে এই দেশ দিয়েছেন, আর তোমাদের কাছ থেকে আমাদের উপরে মহাভয় উপস্থিত হয়েছে ও তোমাদের সামনে এই দেশের বসবাসকারী সমস্ত লোক গলে গিয়েছে (খুব ভয় পেয়েছে)।
\s5
\v 10 কারণ মিসর থেকে যখন তোমরা বার হয়ে এসেছিলে তখন সদাপ্রভু তোমাদের সামনে কেমনভাবে সূফসাগরের (লোহিত সাগরের) জল শুকিয়ে দিয়েছিলেন এবং তোমরা যর্দনের অন্য পারে সীহোন ও ওগ নামে ইমোরীয়দের দুই রাজার প্রতি যা করেছিলে, যাদের তোমরা সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছিলে, তা আমরা শুনেছি;
\v 11 আর শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের হৃদয় গলে গেল; তোমাদের জন্য আর কারো মনে সাহস থাকল না, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যিনি উপরে স্বর্গে ও নিচে পৃথিবীতে ঈশ্বর।
\s5
\v 12 তাই এখন, অনুরোধ করি, তোমরা আমার কাছে সদাপ্রভুর নামে শপথ কর, আমি তোমাদের উপরে দয়া করেছি, তার জন্য তোমরাও আমার বংশের উপরে দয়া করবে এবং একটা নিশ্চিত চিহ্ন আমাকে দাও৷
\v 13 অর্থাৎ তোমরা আমার মা, বাবা, ভাই, বোন ও তাদের সমস্ত পরিজনকে বাঁচাবে ও মৃত্যু থেকে আমাদের প্রাণ উদ্ধার করবে।"
\s5
\v 14 সেই দুই জন তাঁকে বলল, "তুমি যদি আমাদের এই কাজ প্রকাশ না কর, তবে তোমাদের পরিবর্ত্তে আমাদের প্রাণ যাক; যে সময়ে সদাপ্রভু আমাদের এই দেশ দেবেন, সেই সময়ে আমরা তোমার প্রতি দয়া ও সহ্য ব্যবহার করব।"
\s5
\v 15 পরে সে জানালা দিয়ে দড়ির মাধ্যমে তাদেরকে নামিয়ে দিলেন, কারণ তার বাড়ি নগরের দেওয়ালের গায়ে ছিল, সে দেওয়ালের উপরে বাস করত।
\v 16 আর সে তাদেরকে বলল, "যারা তাড়া করার জন্য গিয়েছে, তারা যেন তোমাদের ধরতে না পারে, এই জন্য তোমরা পর্বতে যাও, তিন দিন সেই জায়গায় লুকিয়ে থাক, তারপর যারা তাড়া করতে গিয়েছে, তারা ফিরে এলে তোমরা নিজেদের পথে চলে যেও।"
\v 17 সেই লোকেরা তাঁকে বলল, "তুমি আমাদের যে দিব্য করেছ, সে বিষয়ে আমরা নির্দ্দোষ হব।
\s5
\v 18 দেখ, তুমি যে জানালা দিয়ে আমাদের নামিয়ে দিলে, আমাদের এই দেশে আসার সময়ে সেই জানালায় এই লাল রঙের দড়িটা বেঁধে রাখবে এবং তোমার মা-বাবা, ভাইয়েদের এবং তোমার সমস্ত বংশকে তোমার বাড়িতে একত্র করবে।
\v 19 তখন এইরূপ হবে, যে কেউ তোমার বাড়ি থেকে বের হয়ে রাস্তায় যাবে, তার রক্তপাতের দায়ী সে নিজেই হবে এবং আমরা নির্দোষ হব; কিন্তু যে কেউ তোমার সঙ্গে বাড়ির মধ্যে থাকবে, আর তাকে যদি কেউ হত্যা করে, তবে তার রক্তপাতের দায়ী আমরা হব।
\s5
\v 20 কিন্তু তুমি যদি আমাদের এই কাজ প্রকাশ করে দাও, তবে তুমি আমাদের যে শপথ করিয়েছ, তা থেকে আমরা মুক্ত হব।"
\v 21 তখন সে বলল, "তোমরা যেমন বললে, তেমনই হোক।" পরে সে তাদেরকে বিদায় করলে তারা চলে গেল এবং সে ঐ লাল রঙের দড়ি জানালায় বেঁধে রাখল।
\s5
\v 22 আর তারা পর্বতে উপস্থিত হল, যারা তাড়া করার জন্য গিয়েছিল, তাদের ফিরে আসা পর্যন্ত তিন দিন সেখানে থাকল; তার ফলে যারা তাড়া করার জন্য গিয়েছিল, তারা সমস্ত রাস্তায় তাদের খোঁজ করেও কোন সন্ধান পেল না।
\s5
\v 23 পরে ঐ দুই ব্যক্তি পর্বত থেকে নেমে এল ও পার হয়ে নূনের ছেলে যিহোশূয়ের কাছে গেল এবং তাদের প্রতি যা কিছু ঘটেছিল, তার সমস্ত বৃত্তান্ত তাঁকে বলল।
\v 24 তারা যিহোশূয়কে বলল, "সত্যই সদাপ্রভু এই সমস্ত দেশ আমাদের হাতে সমর্পণ করেছেন এবং দেশের সমস্ত লোক আমাদের সামনে গলে গিয়েছে।"
\s5
\c 3
\s ইস্রায়েলীয়েরা যর্দন নদী পার হয়।
\p
\v 1 যিহোশূয় অনেক ভোরে ঘুম থেকে উঠে সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তানদের সঙ্গে শিটীম থেকে যাত্রা শুরু করে যর্দনের কাছে উপস্থিত হলেন, কিন্তু তখন পার না হয়ে সেই স্থানেই রাত কাটালেন।
\s5
\v 2 তিন দিনের পর আধিকারিকরা শিবিরের মধ্য দিয়ে গেলেন;
\v 3 তাঁরা লোকদের এই আজ্ঞা দিলেন; তোমরা যখন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুক ও লেবীয় যাজকদের তা বহন করতে দেখবে, তখন নিজের নিজের স্থান থেকে যাত্রা শুরু করবে ও তার পেছনে পেছনে যাবে।
\v 4 সেখানে তার ও তোমাদের মধ্যে প্রায় দুই হাজার হাতের দূরত্ব থাকবে; তার কাছে যাবে না; যেন তোমরা তোমাদের গন্তব্য পথ জানতে পার, কারণ এর আগে তোমরা এই পথ দিয়ে যাও নি।
\s5
\v 5 পরে যিহোশূয় লোকদের বললেন, "তোমরা নিজেদের পবিত্র কর, কারণ কালকে সদাপ্রভু তোমাদের মধ্যে আশ্চর্য্য কাজ করবেন।"
\v 6 এরপরে যিহোশূয় যাজকদের বললেন, "তোমরা নিয়ম-সিন্দুক তুলে নিয়ে লোকদের আগে আগে যাও৷" তাতে তারা নিয়ম-সিন্দুক তুলে নিয়ে লোকদের আগে আগে গেল।
\s5
\v 7 তখন সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, "আজ থেকে আমি সমস্ত ইস্রায়েলের সামনে তোমাকে মহিমান্বিত করব, যেন তারা জানতে পারে যে আমি যেমন মোশির সঙ্গে সঙ্গে ছিলাম, তেমনি তোমারও সঙ্গে সঙ্গে থাকব।
\v 8 তুমি নিয়ম-সিন্দুকবাহক যাজকদের এই আদেশ দাও, যর্দনের জলের কাছে উপস্থিত হলে, তোমরা যর্দন নদীর সামনে দাঁড়িয়ে থাকবে।"
\s5
\v 9 তখন যিহোশূয় ইস্রায়েল-সন্তানদের বললেন, "তোমরা এখানে এস, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাক্য শোন।"
\v 10 এবং যিহোশূয় বললেন, "জীবন্ত ঈশ্বর যে তোমাদের মধ্যে উপস্থিত এবং কনানীয়, হিত্তীয়, হিব্বীয়, পরিষীয়, গির্গাশীয়, ইমোরীয় ও যিবূষীয়দের তোমাদের সামনে থেকে নিশ্চয়ই তাড়িয়ে দেবেন, তা তোমরা এর মাধ্যমে জানতে পারবে।
\v 11 দেখ, সমস্ত পৃথিবীর প্রভুর নিয়ম-সিন্দুক তোমাদের আগে যর্দনে যাচ্ছে।
\s5
\v 12 এখন তোমরা ইস্রায়েলের প্রত্যেক বংশ থেকে একজন করে অর্থাৎ বার বংশ থেকে বার জনকে, গ্রহণ কর।
\v 13 পরে এইরকম হবে, সমস্ত ভূমণ্ডলের প্রভু সদাপ্রভুর নিয়মসিন্দুক বহনকারী যাজকদের পা যর্দনের জলে ডোবার সঙ্গে সঙ্গে যর্দনের জল, অর্থাৎ উপর থেকে যে জল বয়ে আসছে, তা স্থির হবে এবং এক রাশি হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে।
\s5
\v 14 তখন লোকেরা যর্দন পার হবার জন্য নিজেদের তাঁবু থেকে যাত্রা শুরু করল, আর যাজকরা নিয়ম-সিন্দুক বহন করার জন্য লোকদের সামনে গেল।
\v 15 আর সিন্দুক-বাহকেরা যখন যর্দনের সামনে উপস্থিত হল এবং জলের কাছে সিন্দুক বহনকারী যাজকদের পা জলে ডুবে গেল, প্রকৃতপক্ষে ফসল কাটার সময়ে যর্দনের সমস্ত জল তীরের উপরে থাকে৷
\v 16 তখন উপর থেকে আসা সমস্ত জল দাঁড়াল, অনেক দূরে সর্ত্তনের কাছে আদম নগরের কাছে এক রাশি হয়ে স্থির হয়ে থাকল এবং অরাবা তলভূমির সমুদ্রে অর্থাৎ লবণ সমুদ্রে যে জল নেমে যাচ্ছিল, তা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হল; তাতে লোকেরা যিরীহোর সামনে দিয়েই পার হল।
\s5
\v 17 আর যে পর্যন্ত না সমস্ত লোক যর্দন পার হল, সেই পর্যন্ত সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক বহনকারী যাজকরা যর্দনের মধ্যে শুকনো জমিতে দাঁড়িয়ে রইল এবং সমস্ত ইস্রায়েল শুকনো জমি দিয়ে পার হয়ে গেল।
\s5
\c 4
\p
\v 1 এইভাবে সমস্ত লোক বিনা বাধায় যর্দন পেরনোর পর সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন,
\v 2 “তোমরা প্রত্যেক বংশের মধ্য থেকে একজন করে নিয়ে,
\v 3 মোট বারো জনকে গ্রহণ কর, আর তাদেরকে এই আদেশ দাও, তোমরা যর্দনের মাঝখানের ঐ জায়গায়, যেখানে যাজকরা দাঁড়িয়েছিল, সেখান থেকে বারোটি পাথর নিয়ে নিজেদের সঙ্গে করে নিয়ে যাও, আজ যেখানে রাত কাটাবে, সেখানে সেগুলি রাখবে”।
\s5
\v 4 তাই যিহোশূয় ইস্রায়েল-সন্তানদের প্রত্যেক বংশ থেকে একজন করে যে বারো জনকে নির্বাচন করেছিলেন, তাদেরকে ডাকলেন;
\v 5 আর যিহোশূয় তাদেরকে বললেন, “তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সিন্দুকের সামনে যর্দনের মাঝখানে গিয়ে ইস্রায়েল-সন্তানদের বংশের সংখ্যানুসারে প্রত্যেক জন একটি করে পাথর কাঁধে তুলে নাও;
\s5
\v 6 যেন সেটা চিহ্নরূপে তোমাদের মধ্যে থাকতে পারে; ভবিষ্যতে যখন তোমাদের সন্তানরা জিজ্ঞাসা করবে, এই পাথরগুলির অর্থ কি?
\v 7 তোমরা তাদেরকে বলবে, সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকের সামনে যর্দনের জল বিছিন্ন হয়েছিল, সিন্দুক যখন যর্দন পার হয়, সেই সময়ে যর্দনের জল বিছিন্ন হয়েছিল; তাই এই পাথরগুলি চিরকাল ইস্রায়েল-সন্তানদের স্মৃতিচিহ্ন হিসাবে থাকবে৷”
\s5
\v 8 আর ইস্রায়েল-সন্তানরা যিহোশূয়ের আজ্ঞানুসারে কাজ করল, সদাপ্রভু যিহোশূয়কে যেমন বলেছিলেন, তেমনি ইস্রায়েল-সন্তানদের বংশের সংখ্যানুসারে যর্দনের মধ্য থেকে বারটি পাথর তুলে নিল এবং নিজেদের সঙ্গে পারে রাত কাটানোর জায়গায় নিয়ে গিয়ে সেখানে রাখল।
\v 9 আর যেখানে নিয়ম-সিন্দুকবহণকারী যাজকরা দাঁড়িয়েছিল, সেখানে যর্দনের মাঝখানে যিহোশূয় বারটি পাথর স্থাপন করলেন; সে সকল আজও সেখানে আছে।
\s5
\v 10 যিহোশূয়ের প্রতি মোশির আদেশানুযায়ী যে সমস্ত কথা লোকদেরকে বলবার আজ্ঞা সদাপ্রভু যিহোশূয়কে দিয়েছিলেন, তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত সিন্দুক-বাহক যাজকরা যর্দনের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকল এবং লোকেরা তাড়াতাড়ি পার হয়ে গেল।
\v 11 এইভাবে সমস্ত লোক বিনা বাধায় পেরনোর পর সদাপ্রভুর সিন্দুক ও যাজকরা লোকদের সামনে পার হল।
\s5
\v 12 আর রূবেণ-সন্তানরা, গাদ-সন্তানরা ও মনঃশির অর্ধেক লোক তাদের প্রতি মোশির কথানুসারে প্রস্তুত হয়ে ইস্রায়েল-সন্তানদের সামনে পার হল;
\v 13 যুদ্ধ করতে প্রস্তুত প্রায় চল্লিশ হাজার লোক যারা যুদ্ধ করার জন্য সদাপ্রভুর সামনে পার হয়ে যিরীহোর তলভূমিতে গেল।
\v 14 সেই দিনে সদাপ্রভু সমস্ত ইস্রায়েলের সামনে যিহোশূয়কে মহিমান্বিত করলেন; তাতে লোকেরা যেমন মোশিকে ভয় করত, তেমনি যিহোশূয়ের জীবনকালে তাঁকেও ভয় করতে লাগল।
\s5
\v 15 সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বলেছিলেন,
\v 16 “তুমি সাক্ষ্য-সিন্দুকবহণকারী যাজকদেরকে যর্দন থেকে উঠে আসতে আজ্ঞা দাও৷”
\s5
\v 17 তাই যিহোশূয় যাজকদেরকে এই আজ্ঞা করলেন, “তোমরা যর্দন থেকে উঠে আসো”।
\v 18 পরে যর্দনের মধ্যে থেকে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুকবহণকারী যাজকদের উঠে আসবার সময়ে যখন যাজকদের পা শুকনো জমি স্পর্শ করল, তখনই যর্দনের জল নিজের জায়গায় ফিরে এসে আগের মতো সমস্ত তীরের উপরে উঠে গেল।
\s5
\v 19 এইভাবে লোকেরা প্রথম মাসের দশম দিনে যর্দন থেকে উঠে এসে যিরীহোর পূর্ব্ব-সীমানায় গিল্‌গলে শিবির স্থাপন করলেন।
\v 20 আর তারা যে বারটি পাথর যর্দন থেকে এনেছিল, সে সকল যিহোশূয় গিল্‌গলে স্থাপন করলেন।
\v 21 আর তিনি ইস্রায়েল-সন্তানদেরকে বললেন, “ভবিষ্যতকালে যখন তোমাদের সন্তানরা নিজেদের পিতাদেরকে জিজ্ঞাসা করবে, এই পাথরগুলির অর্থ কি?
\s5
\v 22 তখন তোমরা নিজেদের সন্তানদেরকে উত্তর দেবে, বলবে, ইস্রায়েল শুকনো জমি দিয়ে এই যর্দন পার হয়েছিল।
\v 23 কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু সূফসাগরের প্রতি যেমন করেছিলেন, আমাদের পার না হওয়া পর্যন্ত যেমন তা শুকনো করেছিলেন, তেমনি তোমাদের পার না হওয়া পর্যন্ত তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর তোমাদের সামনে যর্দনের জল শুকনো করলেন;
\v 24 যেন পৃথিবীর সমস্ত জাতি জানতে পারে যে, সদাপ্রভুর হাত বলবান এবং তারা যেন সবসময় তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করে।”
\s5
\c 5
\s ইস্রায়েলীয়দের ত্বকছেদ ও নিস্তারপর্ব পালন।
\p
\v 1 আর যখন যর্দনের পশ্চিম দিকের ইমোরীয়দের সমস্ত রাজা ও সমুদ্রের কাছাকাছি কনানীয়দের সমস্ত রাজা শুনতে পেলেন যে, আমরা যতক্ষণ পার না হলাম, ততক্ষণ সদাপ্রভু ইস্রায়েল-সন্তানদের সামনে যর্দনের জল শুকনো করলেন, তখন তাঁদের হৃদয় নরম হল ও ইস্রায়েল-সন্তানদের প্রতি তাঁদের আর সাহস রইল না।
\s5
\v 2 সেই সময়ে সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “তুমি চকমকি পাথরের কতগুলি ছুরি তৈরী করে দ্বিতীয় বার ইস্রায়েল-সন্তানদের ত্বকছেদ করাও৷”
\v 3 তাতে যিহোশূয় চকমকি পাথরের ছুরি তৈরী করে ত্বক্‌পর্ব্বতের সামনে ইস্রায়েল-সন্তানদের ত্বক্‌ছেদ করলেন।
\s5
\v 4 যিহোশূয় যে ত্বক্‌ছেদ করলেন, তার কারণ এই; মিসর থেকে যে সমস্ত পুরুষ যোদ্ধা বেরিয়ে এসেছিল, তারা মিসর থেকে আসার সময়ে পথের মধ্যে মরুভূমিতে মারা গিয়েছিল।
\v 5 যারা বেরিয়ে এসেছিল, তারা সবাই ছিন্নত্বক ছিল ঠিকই, কিন্তু মিসর থেকে বেরিয়ে আসার পর যে সকল লোক প্রান্তরে পথের মধ্যে জন্মেছিল, তাদের ত্বক্‌ছেদ হয়নি।
\s5
\v 6 তার ফলে যে সমস্ত যোদ্ধারা মিসর থেকে বেরিয়ে এসেছিল, তারা সদাপ্রভুর কথা মেনে চলত না, তাই তাদের বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত ইস্রায়েল-সন্তানরা চল্লিশ বছর প্রান্তরে ঘুরেছিল; কারণ যে দেশ দিয়ে দুধ ও মধু প্রবাহিত হয় তাদের সেই দেশ দেবার কথা সদাপ্রভু তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলেন, সদাপ্রভু তাদেরকে সেই দেশ দেখতে দেবেন না, এমন শপথ তাদের কাছে করেছিলেন।
\v 7 তাদের জায়গায় তাদের যে সন্তানদেরকে তিনি উৎপন্ন করলেন, যিহোশূয় তাদেরই ত্বক্‌ছেদ করলেন; কেননা তারা অচ্ছিন্নত্বক ছিল; কারণ পথের মধ্যে তাদের ত্বকছেদ করা যায়নি।
\s5
\v 8 সেই সমস্ত লোকের ত্বকছেদ শেষ হওয়ার পর যতদিন তারা সুস্থ না হল, ততদিন শিবিরের মধ্যে নিজের জায়গায় থাকল।
\v 9 পরে সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “আজ আমি তোমাদের থেকে মিসরের বদনাম দূর করলাম”। আর আজ পর্যন্ত সেই জায়গার নাম গিল্‌গল [গড়ান] হিসাবে পরিচিত হলো।
\s5
\v 10 ইস্রায়েল-সন্তানরা গিল্‌গলে শিবির স্থাপন করল; আর সেই মাসের চৌদ্দদিনের দিন সন্ধ্যাবেলা যিরীহোর তলভূমিতে নিস্তারপর্ব পালন করল।
\v 11 সেই নিস্তারপর্বের পরের দিন তারা দেশে উৎপন্ন শস্য ভোজন করতে লাগল, সেদিনে তাড়ীশূন্য রুটি ও ভাজা শস্য ভোজন করল।
\s5
\v 12 আর পরেরদিন তাদের দেশোৎপন্ন শস্য ভোজনের পরে মান্না পরা বন্ধ হল; তখন থেকে ইস্রায়েল-সন্তানরা আর মান্না পেল না, কিন্তু সেই বছরে তারা কনান দেশের ফল ভোজন করল।
\s যিরীহোর পতন ও বিনাশ।
\p
\s5
\v 13 যিরীহোর কাছে বসবাসের সময় যিহোশূয় চোখ তুলে চাইলেন, আর দেখলেন, এক পুরুষ তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর হাতে একটি খোলা তলোয়ার; যিহোশূয় তাঁর কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, আপনি আমাদের পক্ষে, না কি আমাদের শত্রুদের পক্ষে?
\s5
\v 14 তিনি বললেন “না; কিন্তু আমি সদাপ্রভুর সৈন্যের প্রধান, এখনই উপস্থিত হলাম৷” তখন যিহোশূয় ভূমিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করলেন ও তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, আপনার এ দাসকে কি আদেশ দেন?”
\v 15 সদাপ্রভুর সৈন্যে দলের প্রধান যিহোশূয়কে বললেন, “তোমার পা থেকে জুতো খুলে ফেল, কেননা যেখানে তুমি দাঁড়িয়ে আছ, ঐ জায়গা পবিত্র।”
\s5
\c 6
\p
\v 1 তখন যিহোশূয় সেইরকম করলেন। সেই সময়ে ইস্রায়েল-সন্তানদের জন্য যিরীহো নগর সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ছিল, কেউ ভিতরে আসত না, কেউ বাইরে যেত না।
\v 2 আর সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, "দেখ, আমি যিরীহোকে, এর রাজাকে ও সমস্ত বলবান বীরদের তোমার হাতে সমর্পণ করলাম।
\s5
\v 3 তোমরা সমস্ত যোদ্ধারা এই নগরের চারিদিকে এক বার করে ঘুরবে; এইভাবে ছয় দিন ঘুরবে।
\v 4 আর সাতজন যাজক সিন্দুকের আগে আগে মহাশব্দকারী সাতটি তূরী বহন করবে; পরে সাতদিনের দিন তোমরা সাত বার নগর প্রদক্ষিণ করবে ও যাজকরা তূরী বাজাবে।
\s5
\v 5 আর তারা খুব জোরে মহাশব্দকারী শিঙ্গা বাজালে যখন তোমরা সেই তূরীধ্বনি শুনবে, তখন সমস্ত লোক খুব জোরে চিত্কার করে উঠবে; তাতে নগরের দেওয়াল সেই জায়গাতেই পড়ে যাবে এবং লোকেরা প্রত্যেকে সামনের দিকে উঠে যাবে।"
\s5
\v 6 পরে নূনের পুত্র যিহোশূয় যাজকদের ডেকে বললেন, "তোমরা নিয়ম-সিন্দুক তোল এবং সাতজন যাজক সদাপ্রভুর সিন্দুকের আগে আগে মহাশব্দকারী সাত তূরী বহন করুক।"
\v 7 আর তিনি লোকদের বললেন, "তোমরা এগিয়ে গিয়ে নগরকে ঘিরে ফেল এবং স্বসজ্জ সৈন্য সদাপ্রভুর সিন্দুকের আগে যাক।"
\s5
\v 8 তখন লোকদের কাছে যিহোশূয়ের কথা শেষ হলে সেই সাতজন যাজক সদাপ্রভুর আগে আগে মহাশব্দকারী সাত তূরী বহন করে তূরী বাজাতে বাজাতে যেতে লাগল ও সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক তাদের পেছনে পেছনে চলল।
\v 9 আর স্বসজ্জ সৈন্য তূরীবাদক যাজকদের আগে আগে যেতে লাগল এবং পিছনের সৈন্যরা সিন্দুকের পিছনে পিছনে যেতে লাগল, [যাজকরা] তূরীধ্বনি করতে করতে চলল।
\s5
\v 10 আর যিহোশূয় লোকদের বললেন, "তোমরা চিত্কার করো না, তোমাদের রব যেন শোনা না যায়, তোমাদের মুখ থেকে কোন কথা বার না হোক; পরে আমি যে দিন তোমাদের চিত্কার করতে বলব সেই দিন তোমরা চিত্কার করবে।
\v 11 এইভাবে তিনি নগরের চারিদিকে এক বার সদাপ্রভুর সিন্দুক প্রদক্ষিণ করালেন; আর তারা শিবিরে এসে শিবিরে রাত কাটালেন।
\s5
\v 12 আর যিহোশূয় অনেক সকালে উঠলেন এবং যাজকেরা সদাপ্রভুর সিন্দুক তুলে নিল।
\v 13 আর সেই সাতজন যাজক সদাপ্রভুর সিন্দুকের আগে আগে মহাশব্দকারী সাত তূরী বহন করে অনবরত যেতে লাগল ও তূরী বাজাতে লাগল এবং স্বসজ্জ সৈন্য তাদের আগে আগে চলল এবং পিছন দিকের সৈন্যরা সদাপ্রভুর সিন্দুকের পেছনে পেছনে যেতে লাগল, [যাজকরা] তূরীধ্বনি করতে করতে চলল।
\v 14 আর তারা দ্বিতীয় দিনে এক বার নগর প্রদক্ষিণ করে শিবিরে ফিরে এল; তারা ছয়দিন এইরকম করল।
\s5
\v 15 পরে সাতদিনের দিন তারা সকালে সূর্য্য উদয়ের সময়ে উঠে সাত বার সেইভাবে নগর প্রদক্ষিণ করল, শুধু সেই দিনে সাতবার নগর প্রদক্ষিণ করল।
\v 16 পরে যাজকেরা সাতবার তূরী বাজালে যিহোশূয় লোকদের বললেন, "তোমরা চিত্কার কর, কারণ সদাপ্রভু তোমাদের এই নগর দিয়েছেন।
\s5
\v 17 আর নগর ও সেখানের সমস্ত বস্তু সদাপ্রভুর উদ্দেশ্য বর্জ্জিত হবে; শুধু রাহব বেশ্যা ও তার সঙ্গে যারা বাড়িতে আছে, সেই সমস্ত লোক বাঁচবে, কারণ সে আমাদের পাঠানো দূতদেরকে লুকিয়ে রেখেছিল।
\v 18 আর তোমরা সেই বর্জ্জিত দ্রব্য থেকে নিজেদেরকে সাবধানে রক্ষা করো, নাহলে বর্জ্জিত করার পর বর্জ্জিত দ্রব্যের কিছু নিলে তোমরা ইস্রায়েলের শিবির বর্জ্জিত করে ব্যাকুল করবে।
\v 19 কিন্তু সমস্ত রুপো, সোনা এবং পিতলের ও লোহার সমস্ত পাত্র সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র; সে সমস্ত সদাপ্রভুর ভাণ্ডারে যাবে।
\s5
\v 20 পরে লোকেরা চিত্কার করল ও [যাজকেরা] তূরী বাজাল; আর লোকেরা তূরীধ্বনি শুনে খুব জোরে চিত্কার করে উঠল, তাতে দেওয়াল সেই জায়গায় পড়ে গেল; পরে লোকেরা প্রত্যেকে সামনের রাস্তায় উঠে নগরে গিয়ে নগর অধিকার করল।
\v 21 আর তারা তরোয়াল দিয়ে নগরের মহিলা, পুরুষ, শিশু, বৃদ্ধ এবং গরু, ভেড়া ও গাধা সবই সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করল।
\s5
\v 22 কিন্তু যে দুই ব্যক্তি দেশ পর্যবেক্ষণ করেছিল, যিহোশূয় তাদেরকে বললেন, "তোমরা সেই বেশ্যার বাড়িতে যাও এবং তার কাছে যে শপথ করেছ, সেই অনুসারে সেই মহিলাকে ও তার সমস্ত লোককে বের করে আন।"
\s5
\v 23 তাতে সেই দুইজন যুবক গুপ্তচর প্রবেশ করে রাহবকে এবং তার মা-বাবা ও ভাইদের ও তার সমস্ত লোককে বের করে নিয়ে এল; তার সমস্ত গোষ্ঠীকেও বের করে নিয়ে এল; তারা ইস্রায়েলের শিবিরের বাইরে তাদেরকে রাখল।
\v 24 আর লোকেরা নগর ও সেই জায়গার সমস্ত বস্তু আগুনে পুড়িয়ে দিল, শুধু রুপো, সোনা এবং পিতলের ও লোহার সমস্ত পাত্র সদাপ্রভুর বাড়ির ভাণ্ডারে রাখল।
\s5
\v 25 কিন্তু যিহোশূয় রাহব বেশ্যাকে, তার বাবার বংশ ও তার পরিবারের সবাইকে জীবিত রাখলেন; সে আজও ইস্রায়েলের মধ্যে বসবাস করছে; কারণ যিরীহো পর্যবেক্ষণ করার জন্য যিহোশূয়ের পাঠানো সেই দুইজন দূতকে সে লুকিয়ে রেখেছিল।
\s5
\v 26 সেই সময়ে যিহোশূয় শপথ করে লোকদেরকে বললেন, "যে কেউ উঠে এই যিরীহো নগর স্থাপন করবে, সে সদাপ্রভুর কাছে শাপগ্রস্ত হোক; নগরের ভিত্তিমূল স্থাপনের শাস্তি স্বরূপ সে তার বড় ছেলেকে ও নগরের সমস্ত দরজা স্থাপনের শাস্তি স্বরূপ তার ছোট ছেলেকে দেবে।"
\v 27 এইভাবে সদাপ্রভু যিহোশূয়ের সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন, আর তাঁর যশ সমস্ত দেশে ছড়িয়ে পড়ল।
\s5
\c 7
\s আখনের লোভ ও তার শাস্তি।
\p
\v 1 কিন্তু ইস্রায়েল-সন্তানেরা বাতিল বস্তুর বিষয়ে আদেশ অমান্য করল; তার ফলে যিহূদাবংশীয় সেরহের সন্তান সব্দির সন্তান কর্ম্মির পুত্র আখন বাতিল জিনিসের কিছু অংশ চুরি করল; তাতে ইস্রায়েল-সন্তানদের প্রতি সদাপ্রভুর ক্রোধ খুব বেড়ে গেল।
\s5
\v 2 আর যিহোশূয় যিরীহো থেকে বৈথেলের পূর্বদিকে অবস্থিত বৈৎ আবনের পাশে অয়ে লোক পাঠালেন, তাদেরকে বললেন, “তোমরা উঠে গিয়ে দেশ পর্যবেক্ষণ কর।” তাতে তারা গিয়ে অয় পর্যবেক্ষণ করল।
\v 3 পরে তারা যিহোশূয়ের কাছে ফিরে এসে বলল, “সে জায়গায় সব লোক না গিয়ে, দুই কিম্বা তিন হাজার লোক উঠে গিয়ে অয় পরাজয় করুক; সেই জায়গায় সব লোকের কষ্ট করার দরকার নেই, কেননা সেখানকার লোক অল্প।”
\s5
\v 4 অতএব লোকদের মধ্য থেকে প্রায় তিন হাজার জন সেই জায়গায় গেল, কিন্তু তারা অয়ের লোকদের সামনে থেকে পালাল।
\v 5 আর অয়ের লোকেরা তাদের মধ্যে প্রায় ছত্রিশ জনকে আঘাত করল; নগরের দরজা থেকে শবারীম পর্যন্ত তাদেরকে তাড়না করে নিচে নামার পথে আঘাত করল, তাতে লোকদের হৃদয় গলে গিয়ে জলের মত হল।
\s5
\v 6 তখন যিহোশূয় ও ইস্রায়েলের প্রাচীনবর্গ নিজের নিজের বস্ত্র চিরে সদাপ্রভুর সিন্দুকের সামনে মুখ নিচু করে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভূমিতে পরে থাকলেন এবং নিজের নিজের মাথায় ধূলো ছড়ালেন।
\v 7 আর যিহোশূয় বললেন, “হায় হায়, হে প্রভু সদাপ্রভু, বিনাশের জন্য ইমোরীয়দের হাতে আমাদের সমর্পণ করবার জন্য তুমি কেন এই লোকদেরকে যর্দন পার করে আনলে? হায় হায়, আমরা কেন সন্তুষ্ট হয়ে যর্দনের ওপাড়ে থাকিনি।
\s5
\v 8 হে প্রভু, ইস্রায়েল নিজের শত্রুদের সামনে থেকে চলে গেলে আমি কি বলব?
\v 9 কনানীয়েরা এবং দেশবাসী সমস্ত লোক এই কথা শুনবে, আর আমাদের ঘিরে ধরে পৃথিবী থেকে আমাদের নাম উচ্ছেদ করবে, তাহলে তুমি আপন মহানামের জন্য কি করবে?”
\s5
\v 10 তখন সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, “তুমি ওঠ, কেন তুমি মুখ নিচু করে পরে আছ?
\v 11 ইস্রায়েল পাপ করেছে, এমন কি, তারা আমার আদেশ দেওয়া নিয়ম অমান্য করেছে; এমন কি, তারা সেই বাতিল জিনিসের কিছু নিয়েছে; আবার চুরি করেছে, আবার প্রতারণা করেছে, আবার নিজেদের জিনিসপত্রের মধ্যে তা রেখেছে।
\v 12 এই জন্য ইস্রায়েল-সন্তানরা নিজেদের শত্রুদের সামনে দাঁড়াতে পারে না, শত্রুদের সামনে থেকে চলে যায়, কেননা তারা বাতিল হয়েছে; তোমাদের মধ্য থেকে সেই বাতিল জিনিসকে দূর না করলে আমি আর তোমাদের সঙ্গে থাকব না।
\s5
\v 13 ওঠ, লোকেদের পবিত্র কর, বল, তোমরা কালকের জন্য পবিত্র হও, কেননা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘হে ইস্রায়েল, তোমার মধ্যে থেকে বাতিল জিনিস দূর না করলে তুমি নিজের শত্রুদের সামনে দাঁড়াতে পারবে না।
\s5
\v 14 অতএব সকালে নিজেদের বংশ অনুসারে তোমাদের কাছে নিয়ে আসা হবে; তাতে সদাপ্রভুর মাধ্যমে যে বংশকে মনোনীত করা হবে, সেই বংশের এক এক গোষ্ঠী কাছে আসবে ও সদাপ্রভুর মাধ্যমে যে বংশকে মনোনীত করা হবে, তার এক এক কুল কাছে আসবে ও সদাপ্রভুর মাধ্যমে যে কুলকে মনোনীত করা হবে, তার এক এক পুরুষ কাছে আসবে।
\v 15 আর যে ব্যক্তি বাতিল জিনিস রেখেছে বলে ধরা পড়বে, তাকে ও তার সম্পর্কীয় সকলকেই আগুনে পুড়িয়ে দিতে হবে, কেননা সে সদাপ্রভুর নিয়ম অমান্য করেছে ও ইস্রায়েলের মধ্যে মুর্খতার কাজ করেছে’।”
\s5
\v 16 পরে যিহোশূয় খুব ভোরে উঠে ইস্রায়েলকে নিজের নিজের বংশ অনুসারে কাছে আনলেন; তাতে যিহূদা-বংশ ধরা পড়ল;
\v 17 পরে তিনি যিহূদার গোষ্ঠীর সবাইকে কাছে আনলে সেরহীয় গোষ্ঠী ধরা পড়ল; পরে তিনি সেরহীয় গোষ্ঠীকে পুরুষ অনুসারে নিয়ে এলে সব্দি ধরা পড়ল।
\v 18 পরে তিনি তার কুলকে পুরুষানুসারে আনলে যিহূদা-বংশীয় সেরহের সন্তান সব্দির সন্তান কর্ম্মির পুত্র আখন ধরা পড়ল।
\s5
\v 19 তখন যিহোশূয় আখনকে বললেন, “হে আমার বৎস, অনুরোধ করি, তুমি ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মহিমা স্বীকার কর, তাঁর স্তব কর; এবং তুমি কি করেছ, আমাকে বল; আমার কাছে গোপন করো না।”
\v 20 আখন উত্তর করে যিহোশূয়কে বলল, “সত্য আমি ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি, আমি এই এই কাজ করেছি;
\v 21 আমি লুঠ করা দ্রব্যের মধ্যে ভালো একটি বাবিলীয় শাল, দুশো শেকল রুপো ও পঞ্চাশ শেকল পরিমাপের সোনা দেখে লোভে পড়ে চুরি করেছি; আর দেখুন, সে সকল আমার তাঁবুর মধ্যে মাটিতে লুকান আছে, আর নীচে রুপো আছে।”
\s5
\v 22 তখন যিহোশূয় দূত পাঠালে তারা তার তাঁবুতে দৌড়ে গেল, আর দেখ, তার তাঁবুর মধ্যে তা লুকান আছে, আর নীচে রুপো ছিল।
\v 23 আর তারা তাঁবুর মধ্য থেকে সে সমস্ত কিছু নিয়ে যিহোশূয়ের ও সমস্ত ইস্রায়েল সন্তানদের কাছে আনল এবং সদাপ্রভুর সামনে তা রাখল।
\s5
\v 24 পরে যিহোশূয় ও সমস্ত ইস্রায়েল সেরহের সন্তান আখনকে ও সেই রুপো, শাল, সোনা ও তার ছেলে ও মেয়েদের এবং তার গোরু, গাধা, ভেড়া ও তাঁবু এবং তার যা কিছু ছিল, সমস্তই নিলেন; আর আখোর উপত্যকায় আনলেন।
\s5
\v 25 পরে যিহোশূয় বললেন, “তুমি আমাদের কেন ব্যাকুল করলে? আজ সদাপ্রভু তোমাকে ব্যাকুল করবেন।” পরে সমস্ত ইস্রায়েল তাকে পাথর দিয়ে আঘাত করল; তারা তাদেরকে আগুনে পোড়াল ও পাথর দিয়ে আঘাত করল।
\v 26 পরে তারা তার উপরে পাথর জমা করল, তা আজ পর্যন্ত আছে। এইভাবে সদাপ্রভু নিজের প্রচণ্ড ক্রোধ থেকে শান্ত হলেন। অতএব সেই স্থান আজ পর্যন্ত আখোর [ব্যাকুলতা] উপত্যকা নামে পরিচিত।
\s5
\c 8
\s অয় নগরের বিনাশ।
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, "তুমি ভয় পেয়ো না, নিরাশ হয়ো না; সমস্ত সৈন্যকে সঙ্গে করে নাও, ওঠ, অয়ে যাও; দেখ, আমি অয়ের রাজাকে ও তার প্রজাদের এবং তার নগর ও তার দেশ তোমার হাতে সমর্পণ করেছি।
\v 2 তুমি যিরীহোর ও সেখানের রাজার প্রতি যেমন করেছিলে, অয়ের ও সেখানের রাজার প্রতিও তেমনই করবে, কিন্তু তার লুঠদ্রব্য ও পশু তোমরা তোমাদের জন্য নেবে। তুমি নগরের বিরুদ্ধে পিছনের দিকে তোমার এক দল সৈন্য গোপনে রাখ।"
\s5
\v 3 তখন যিহোশূয় ও সমস্ত যোদ্ধা উঠে অয়ের বিরুদ্ধে যাত্রা করলেন; যিহোশূয় ত্রিশ হাজার বলবান বীর মনোনীত করলেন এবং তাদেরকে রাতে পাঠিয়ে দিলেন।
\v 4 তিনি এই আদেশ দিলেন, "দেখ, তোমরা নগরের পিছনে নগরের বিরুদ্ধে লুকিয়ে থাকবে; নগর থেকে বেশী দূরে যাবে না, কিন্তু সবাই প্রস্তুত থাকবে।
\s5
\v 5 পরে আমি ও আমার সমস্ত সঙ্গীরা নগরের কাছে উপস্থিত হব; আর তারা যখন আগের মত আমাদের বিরুদ্ধে বের হয়ে আসবে, তখন আমরা তাদের সামনে থেকে পালিয়ে যাব।
\v 6 আর তারা বের হয়ে আমাদের পিছন পিছন আসবে, শেষে আমরা তাদেরকে নগর থেকে দূরে আকর্ষণ করব; কেননা তারা বলবে, এরা আগের মত আমাদের সামনে দিয়ে পালিয়ে যাচ্ছে; এইভাবে আমরা তাদের সামনে থেকে পালিয়ে যাব;
\v 7 আর তোমরা সেই গোপন জায়গা থেকে উঠে নগর অধিকার করবে; কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তা তোমাদের হাতে সমর্পণ করবেন।
\s5
\v 8 নগর আক্রমণ করার সঙ্গে সঙ্গে তোমরা নগরে আগুন লাগিয়ে দেবে; তোমরা সদাপ্রভুর বাক্য অনুসারে কাজ করবে; দেখ, আমি তোমাদেরকে আদেশ করলাম।"
\v 9 এইভাবে যিহোশূয় তাদেরকে পাঠালেন; আর তারা গিয়ে অয়ের পশ্চিমে বৈথেলের ও অয়ের মাঝে লুকিয়ে থাকল; কিন্তু যিহোশূয় লোকদের মধ্যে সেই রাত কাটালেন।
\s5
\v 10 পরে যিহোশূয় খুব ভোরে উঠে লোক সংগ্রহ করলেন, আর তিনি ও ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা লোকদের আগে আগে অয়ে গেলেন।
\v 11 আর তার সঙ্গী, সমস্ত যোদ্ধারা গেল এবং কাছে গিয়ে নগরের সামনে উপস্থিত হল, আর অয়ের উত্তরদিকে শিবির স্থাপন করল; তাঁর ও অয়ের মধ্যে এক উপত্যকা ছিল।
\v 12 আর তিনি প্রায় পাঁচ হাজার লোক নিয়ে নগরের পশ্চিম দিকে বৈথেলের ও অয়ের মধ্যে লুকিয়ে রাখলেন।
\s5
\v 13 এইভাবে লোকেরা নগরের উত্তর দিকের গুপ্ত দলকে স্থাপন করল এবং যিহোশূয় ঐ রাতে উপত্যকার মধ্যে গেলেন।
\v 14 পরে যখন অয়ের রাজা তা দেখলেন, তখন নগরের লোকেরা, রাজা ও তাঁর সকল লোক, তাড়াতাড়ি খুব ভোরে উঠে ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বের হয়ে নির্ধারিত স্থানে অরাবা উপত্যকার সামনে গেলেন; কিন্তু তাঁর বিরুদ্ধে এক দল সৈন্য নগরের পিছনে লুকিয়ে আছে, তা তিনি জানতেন না।
\s5
\v 15 যিহোশূয় ও সমস্ত ইস্রায়েল তাদের সামনে নিজেদেরকে পরাজিতদের মত দেখিয়ে মরুভূমির রাস্তা দিয়ে পালিয়ে গেল।
\v 16 তাতে নগরে অবস্থিত সব লোককে ডাকা হল, যেন তারা তাদের পেছনে দৌড়িয়ে যায়। আর তারা যিহোশূয়ের পিছন পিছন যেতে যেতে নগর থেকে দূরে আকর্ষিত হল;
\v 17 বের হয়ে ইস্রায়েলের পিছনে গেল না, এমন এক জনও অয়ে বা বৈথেলে অবশিষ্ট থাকল না; সবাই নগরের দরজা খোলা রেখে ইস্রায়েলের পিছন পিছন দৌড়াল।
\s5
\v 18 তখন সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, "তুমি তোমার হাতের বর্শা অয়ের দিকে বিস্তার কর; কেননা আমি সেই নগর তোমার হাতে দেব।" তখন যিহোশূয় তার হাতের বর্শা নগরের দিকে বিস্তার করল।
\v 19 তিনি হাত বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে গোপনে অবস্থিত সৈন্যদল অমনি তাদের জায়গা থেকে উঠে দ্রুত গেল ও নগরে প্রবেশ করে তা অধিকার করল এবং তাড়াতাড়ি নগরে আগুন লাগিয়ে দিল।
\s5
\v 20 পরে অয়ের লোকেরা পিছন ফিরে দেখল, আর দেখ, নগরের ধোঁয়া আকাশে উঠছে, কিন্তু তারা এদিকে কি ওদিকে কোন দিকেই পালানোর উপায় পেল না; আর মরুভূমিতে যে লোকেরা পালিয়ে যাচ্ছিল তারা সেই লোকদের দিকে ফিরে আক্রমণ করতে লাগল যারা তাদেরকে তাড়া করছিল।
\v 21 যখন গোপনে অবস্থিত সৈন্যদল নগর অধিকার করেছে ও নগরের ধোঁয়া উঠছে, তা দেখে যিহোশূয় ও সমস্ত ইস্রায়েল ফিরে অয়ের লোকদেরকে হত্যা করতে লাগলেন;
\s5
\v 22 আর অন্য দলও নগর থেকে তাদের বিরুদ্ধে আসছিল; সুতরাং তারা ইস্রায়েলের মধ্যে পড়ল, কয়েকজন এপাশে কয়েকজন ওপাশে; আর তারা তাদেরকে এমন আঘাত করল যে, তাদের কেউই অবশিষ্ট বা রক্ষা পেল না।
\v 23 আর তারা অয়ের রাজাকে জীবিত ধরে যিহোশূয়ের কাছে নিয়ে গেল।
\s5
\v 24 এইভাবে ইস্রায়েল তাদের সবাইকে মাঠে, অর্থাৎ যে মরুভূমিতে অয়ে বসবাসকারী যে লোকেরা তাদের তারা করেছিল, সেখানে তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে হত্যা করল; তাদের সবাই তরোয়ালের আঘাতে মারা গেল, পরে সমস্ত ইস্রায়েল ফিরে অয়ে গিয়ে তরোয়াল দিয়ে সেখানকার লোকদেরকেও হত্যা করল।
\v 25 সেই দিনে অয়ে বসবাসকারী সমস্ত লোক অর্থাৎ মহিলা পুরুষ সবাইকে মিলিয়ে মোট বার হাজার লোক মারা গেল।
\v 26 কারণ অয়ে বসবাসকারী সবাই যতক্ষণ না সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হল, ততক্ষণ যিহোশূয় তাঁর বাড়ানো বর্শা ধরা হাত নামাতে পারলেন না।
\s5
\v 27 যিহোশূয়ের প্রতি সদাপ্রভুর দেওয়া কথা অনুযায়ী ইস্রায়েল শুধু ঐ নগরের পশু ও সমস্ত লুঠদ্রব্য নিজেদের জন্য গ্রহণ করল।
\v 28 আর যিহোশূয় অয় নগর পুড়িয়ে দিয়ে চিরস্থায়ী ঢিবি এবং ধ্বংসের স্থান করলেন, তা আজও সেইরকম আছে।
\s5
\v 29 আর তিনি অয়ের রাজাকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাছে টাঙ্গিয়ে রাখলেন, পরে সূর্যাস্তের সময়ে লোকেরা যিহোশূয়ের আদেশে তাঁর মৃত দেহ গাছ থেকে নামিয়ে নগরের দরজার-প্রবেশের স্থানে ফেলে তার উপরে পাথরের এক বড় ঢিবি করল; তা আজও আছে।
\s5
\v 30 তখন যিহোশূয় এবল পর্বতে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্য এক যজ্ঞবেদি তৈরী করলেন।
\v 31 সদাপ্রভুর দাস মোশি ইস্রায়েল-সন্তানদেরকে যেমন আদেশ করেছিলেন, তেমনি তারা মোশির ব্যবস্থার বইতে লেখা আদেশ অনুসারে গোটা পাথরে, যার উপরে কেউ লোহা উঠায় নি, এমন পাথরে ঐ যজ্ঞবেদি তৈরী করল এবং তার উপরে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্য হোম করল ও মঙ্গলার্থে বলি উৎসর্গ করল।
\v 32 আর সেখানে পাথরগুলির উপরে ইস্রায়েল-সন্তানদের সামনে তিনি মোশির লেখা ব্যবস্থার এক অনুরূপ লিপি লিখলেন।
\s5
\v 33 আর ইস্রায়েলের লোকদের সবার প্রথমে আশীর্বাদ করার জন্য, সদাপ্রভুর দাস মোশি যেমন আদেশ করেছিলেন, তেমন সমস্ত ইস্রায়েল, তাদের প্রাচীনেরা, কর্মচারীরা ও বিচারকর্তারা, স্বজাতীয় কি প্রবাসী সমস্ত লোক সিন্দুকের এদিকে ওদিকে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক-বহনকারী লেবীয় যাজকদের সামনে দাঁড়াল; তাদের অর্ধেক গরীষীম পর্বতের সামনে, অর্ধেক এবল পর্বতের সামনে থাকল।
\s5
\v 34 পরে ব্যবস্থার বইতে যা যা লেখা আছে, সেই অনুযায়ী তিনি ব্যবস্থার সমস্ত কথা, আশীর্বাদের ও অভিশাপের কথা, পাঠ করলেন।
\v 35 মোশি যা যা আদেশ করেছিলেন, যিহোশূয় ইস্রায়েলের সমস্ত সমাজের এবং মহিলাদের, ছোট ছেলে-মেয়েদের ও তাদের মধ্য প্রবাসীদের সামনে সেই সমস্ত পাঠ করলেন, একটি বাক্যেরও ক্রুটি করলেন না।
\s5
\c 9
\s ইস্রায়েলের সঙ্গে গিবিয়োনীয়দের সন্ধি স্থাপন।
\p
\v 1 আর যর্দনের অন্য পারের সমস্ত রাজা, পাহাড়ি অঞ্চলে ও উপত্যকায় বসবাসকারী এবং লিবানোনের সামনে মহাসমুদ্রের তীরে বসবাসকারী সমস্ত হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়ের রাজারা এই কথা শুনতে পেয়ে,
\v 2 একসঙ্গে যিহোশূয়ের ও ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য একত্র হলেন।
\s5
\v 3 কিন্তু যিরীহোর প্রতি ও অয়ের প্রতি যিহোশূয় যা করেছিলেন, তা যখন গিবিয়োনে বসবাসকারীরা শুনল,
\v 4 তখন তারাও বুদ্ধির সঙ্গে কাজ করল; তারা গিয়ে রাজদূতের বেশ ধারণ করে নিজেদের গাধার উপরে পুরনো বস্তা এবং আঙ্গুরের রসের পুরনো, জীর্ণ ও তালি দেওয়া থলি চাপাল।
\v 5 আর পায়ে পুরনো ও তালি দেওয়া জুতো ও গায়ে পুরনো পোশাক দিল এবং সমস্ত শুকনো ও ছাতাপড়া রুটি সঙ্গে নিল।
\s5
\v 6 পরে তারা গিল্‌গলে অবস্থিত শিবিরে যিহোশূয়ের কাছে গিয়ে তাকে ও ইস্রায়েলের লোকদেরকে বলল, "আমরা দূরদেশ থেকে এসেছি; অতএব এখন আপনারা আমাদের সঙ্গে নিয়ম স্থাপন করুন।"
\v 7 তখন ইস্রায়েলের লোকেরা সেই হিব্বীয়দের বলল, "কি জানি, তোমরা আমাদেরই মধ্যে বাস করছ; তা হলে আমরা তোমাদের সঙ্গে কিভাবে নিয়ম স্থাপন করতে পারি?"
\v 8 যিহোশূয়কে বলল, "আমরা আপনার দাস।" তখন যিহোশূয় জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কারা? কোথা থেকে এসেছ?
\s5
\v 9 তারা বলল, "আপনার দাস আমরা আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম শুনে অনেক দূরের দেশ থেকে এসেছি, কারণ তার কীর্ত্তি এবং তিনি মিসর দেশে যে কাজ করেছেন,
\v 10 আর যর্দনের ওপারের দুই ইমোরীয় রাজার প্রতি, হিষ্‌বোনের রাজা সীহোনের ও বাশনের রাজা অষ্টারোৎ-নিবাসী ওগের প্রতি যে কাজ করেছেন, সমস্তই আমরা শুনেছি।
\s5
\v 11 আর আমাদের প্রাচীনেরা ও দেশে বসবাসকারী সমস্ত লোক আমাদের বলল, 'তোমরা যাওয়ার জন্য হাতে প্রয়োজনীয় দ্রব্য নিয়ে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাও এবং তাদেরকে বল, আমরা আপনাদের দাস,' অতএব এখন আপনারা আমাদের সঙ্গে নিয়ম স্থাপন করুন।
\v 12 আপনাদের কাছে আসার জন্য যে দিন যাত্রা করি, সেই দিন আমরা বাড়ি থেকে যে গরম রুটি খাবার জন্য এনেছিলাম, এই দেখুন, আমাদের সেই রুটি এখন শুকনো ও ছাতাপড়া।
\v 13 আর যে সব থলি আঙ্গুরের রসে পূর্ণ করেছিলাম, সেগুলিও নূতন ছিল, এই দেখুন, সে সব ছিঁড়ে গিয়েছে। আর আমাদের এই সব পোশাক ও জুতো পুরনো হয়ে গেছে, কারণ রাস্তার দূরত্ব অনেক।
\s5
\v 14 তাতে লোকেরা তাদের খাদ্য দ্রব্য গ্রহণ করল, কিন্তু সদাপ্রভুর ইচ্ছা কি তা জিজ্ঞাসা করল না।
\v 15 আর যিহোশূয় তাদের সঙ্গে সন্ধি করে যাতে তারা বাঁচে, এমন নিয়ম করলেন, এবং মণ্ডলীর অধ্যক্ষগণ তাদের কাছে শপথ করলেন।
\s5
\v 16 এইভাবে তাদের সঙ্গে নিয়ম স্থাপন করার পরে তিন দিন পরে তারা শুনতে পেল, তারা আমাদের কাছের এবং আমাদের মধ্যে বাস করছে।
\v 17 পরে ইস্রায়েল-সন্তানেরা যাত্রা করে তৃতীয় দিনে তাদের নগরগুলির কাছে উপস্থিত হল। সেই সব নগরের নাম গিবিয়োন, কফারা, বেরোৎ ও কিরিয়ৎ-যিয়ারীম।
\s5
\v 18 মণ্ডলীর নেতারা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে তাদের কাছে শপথ করেছিলেন বলে ইস্রায়েল-সন্তানেরা তাদেরকে আঘাত করল না, কিন্তু সমস্ত মণ্ডলী নেতাদের বিরুদ্ধে বচসা করতে লাগল।
\v 19 তাতে সব নেতারা সমস্ত মণ্ডলীকে বললেন, "আমরা ওদের কাছে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে শপথ করেছি, অতএব এখন ওদেরকে স্পর্শ করতে পারি না।
\s5
\v 20 আমরা ওদের প্রতি এটাই করব, এদেরকে জীবিত রাখব, নাহলে এদের কাছে যে শপথ করেছি, তারজন্য আমাদের প্রতি ক্রোধ উপস্থিত হবে।"
\v 21 অতএব নেতারা তাদেরকে বললেন, "ওরা জীবিত থাকুক; কিন্তু নেতাদের কথা অনুযায়ী তারা সমস্ত মণ্ডলীর জন্য কাঠুরিয়া ও জল বহনকারী হল।"
\s5
\v 22 আর যিহোশূয় তাদেরকে ডেকে বললেন, "তোমরা তো আমাদেরই মধ্যে বাস করছ; তবে আমরা তোমাদের থেকে অনেক দূরে থাকি, এই কথা বলে কেন আমাদের ঠকালে?
\v 23 এই জন্য তোমরা শাপগ্রস্ত হলে; আমার ঈশ্বরের বাড়ির জন্য কাঠ কাটা ও জলবহন, এই দাসত্বের থেকে তোমরা কখনও মুক্তি পাবে না।"
\s5
\v 24 তারা যিহোশূয়কে এর উত্তরে বলল, "আপনাদেরকে এই সমস্ত দেশ দেওয়ার জন্য ও আপনাদের সামনে থেকে এই দেশে বসবাসকারী সমস্ত লোককে ধ্বংস করার জন্য আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর দাস মোশিকে যে আদেশ করেছিলেন, তার নিশ্চিত সংবাদ আপনার দাস আমরা পেয়েছিলাম, এইজন্য আমরা আপনাদের কাছ থেকে প্রাণ হারানোর ভয়ে, খুবই ভয় পেয়ে এই কাজ করেছি।
\v 25 এখন দেখুন, আমরা আপনারি অধীনে, আমাদের প্রতি যা করা আপনার ভাল ও ন্যায্য মনে হয়, তাই করুন।"
\s5
\v 26 পরে তিনি তাদের প্রতি তাই করলেন ও ইস্রায়েল-সন্তানদের হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করলেন, তাতে তারা তাদেরকে বধ করল না।
\v 27 আর সদাপ্রভুর মনোনীত স্থানে মণ্ডলীর ও সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির জন্য কাঠ কাটার ও জলবহনের কাজে যিহোশূয় সেই দিনে তাদেরকে নিযুক্ত করলেন; তারা আজও তাই করছে।
\s5
\c 10
\s পাঁচ রাজার পরাজয় ও বিনাশ।
\p
\v 1 যিরুশালেমের রাজা অদোনী-ষেদক যখন শুনলেন, যিহোশূয় অয় অধিকার করে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেছেন, যিরীহো ও সেখানকার রাজার প্রতি যেমন করেছিলেন, অয়ের ও সেখানের রাজার প্রতিও একই করেছেন এবং গিবিয়োন-নিবাসীরা ইস্রায়েলের সঙ্গে সন্ধি করে তাদের মধ্য বসবাস করছে;
\v 2 তখন লোকেরা খুবই ভয় পেল, কারণ গিবিয়োন নগর রাজধানীর মত বড় এবং অয়ের থেকেও বড়, আর সেই জায়গার সমস্ত লোক বলবান ছিল।
\s5
\v 3 আর যিরুশালেমের রাজা অদোনী-ষেদক হিব্রোণের রাজা হোহমের, যর্মূতের রাজা পিরামের, লাখীশের রাজা যাফিয়ের ও ইগ্লোনের রাজা দবীরের কাছে দূত পাঠিয়ে এই কথা বললেন;
\v 4 "আমার কাছে উঠে আসুন, আমাকে সাহায্য করুন, চলুন আমরা গিবিয়োনীয়দেরকে আঘাত করি; কারণ তারা যিহোশূয়ের ও ইস্রায়েল-সন্তানদের সঙ্গে সন্ধি করেছে।"
\s5
\v 5 অতএব ইমোরীয়দের ঐ পাঁচ রাজা, অর্থাৎ যিরুশালেমের রাজা, হিব্রোণের রাজা, যর্মূতের রাজা, লাখীশের রাজা ও ইগ্লোনের রাজা তারা তাদের সমস্ত সৈন্যের সঙ্গে একত্র হলেন এবং উঠে গিয়ে গিবিয়োনের সামনে শিবির স্থাপন করে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন।
\s5
\v 6 তাতে গিবিয়োনীয়েরা গিল্‌গলে অবস্থিত শিবিরে যিহোশূয়ের কাছে লোক পাঠিয়ে বলল, "আপনার এই দাসদের থেকে আপনার হাত সরিয়ে নেবেন না, তাড়াতাড়ি এসে আমাদের রক্ষা ও সাহায্য করুন, কারণ পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসকারী ইমোরীয়দের সমস্ত রাজা আমাদের বিরুদ্ধে একত্র হয়েছেন।"
\v 7 তখন যিহোশূয় সমস্ত যোদ্ধা ও সমস্ত বলবান বীর সঙ্গে নিয়ে গিল্‌গল থেকে যাত্রা করলেন।
\s5
\v 8 তখন সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, "তুমি তাদেরকে ভয় কর না; কারণ আমি তোমার হাতে তাদেরকে সমর্পণ করেছি, তাদের কেউই তোমার সামনে দাঁড়াতে পারবে না।"
\s5
\v 9 পরে যিহোশূয় হঠাৎ তাদের কাছে উপস্থিত হলেন; তিনি সমস্ত রাত গিল্‌গল থেকে উপরের দিকে উঠছিলেন।
\v 10 তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সাক্ষাতে তাদেরকে হতভম্ভ করলেন, তাতে তিনি গিবিয়োনে মহাসংহারে তাদেরকে আঘাত করে বৈৎ-হোরোণের আরোহণ-পথ দিয়ে তাদেরকে তাড়া করলেন এবং অসেকা ও মক্কেদা পর্যন্ত তাদেরকে আঘাত করলেন।
\s5
\v 11 আর ইস্রায়েলের সামনে থেকে পালানোর সময়ে যখন তারা বৈৎ-হোরোণের উপরে ওঠার-পথে ছিল, তখন সদাপ্রভু অসেকা পর্যন্ত আকাশ থেকে তাদের উপরে বড় বড় পাথর ফেলতে লাগলেন, তাতে তারা মারা পড়ল; ইস্রায়েল-সন্তানেরা যাদেরকে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করল, তার থেকে বেশি লোক শিলাবৃষ্টির জন্য মারা গেল।
\s5
\v 12 সেই সময়ে যে দিন সদাপ্রভু ইস্রায়েল-সন্তানদের সামনে ইমোরীয়দিগকে সমর্পণ করেন, সেই দিন যিহোশূয় সদাপ্রভুর কাছে অনুরোধ করলেন; আর তিনি ইস্রায়েলের সামনে বললেন, "সূর্য্য, তুমি স্থির হও গিবিয়োনে, আর চন্দ্র, তুমি অয়ালোন উপত্যকায়।"
\s5
\v 13 তখন সূর্য্য স্থির হল ও চন্দ্র স্থির থাকল, যতক্ষণ না সেই জাতি শত্রুদের উপর প্রতিশোধ নিল। এই কথা কি যাশের বইতে লেখা নেই? আর মধ্য আকাশে সূর্য্য স্থির থাকল, অস্ত যেতে প্রায় সম্পূর্ণ এক দিন দেরি করল।
\v 14 তার আগে কি পরে সদাপ্রভু যে মানুষের কথা এমনভাবে শুনেছেন, এমন আর আগে কোন দিনও হয় নি; কারণ সদাপ্রভু ইস্রায়েলের পক্ষে যুদ্ধ করছিলেন।
\s5
\v 15 পরে যিহোশূয় সমস্ত ইস্রায়েলকে সঙ্গে নিয়ে গিল্‌গলের শিবিরে ফিরে এলেন।
\v 16 আর ঐ পাঁচ রাজা পালিয়ে মক্কেদার গুহাতে লুকিয়েছিলেন।
\v 17 পরে সেই পাঁচ রাজাকে মক্কেদার গুহাতে লুকানো অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে, এই সংবাদ যিহোশূয়কে দেওয়া হল।
\s5
\v 18 যিহোশূয় বললেন, "তোমরা সেই গুহার মুখে কয়েকটি বড় বড় পাথর গড়িয়ে দিয়ে সেগুলি রক্ষা করার জন্য সেখানে লোক নিযুক্ত কর,
\v 19 কিন্তু তোমরা দেরি কর না, শত্রুদের তাড়া কর ও তাদের সৈন্যদের পিছনের দিক থেকে আঘাত কর, তাদেরকে তাদের নগরে প্রবেশ করতে দিও না; কেননা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদেরকে তোমাদের হাতে সমর্পণ করেছেন।
\s5
\v 20 পরে যিহোশূয় ও ইস্রায়েল-সন্তানেরা তাদের সর্বনাশ পর্যন্ত মহাসংহারে তাদেরকে আঘাত করলেন, তাদের মধ্য থেকে কিছু অবশিষ্ট লোক পালিয়ে দেওয়ালে ঘেরা কিছু নগরে প্রবেশ করল।
\v 21 পরে সমস্ত লোক মক্কেদায় যিহোশূয়ের কাছে শিবিরে ভালোভাবে ফিরে এল; ইস্রায়েল-সন্তানদের মধ্যে কারো বিরুদ্ধে কেউ জিভ নাড়ালো না (কোনো কথা বলতে সাহস পেল না)।
\s5
\v 22 পরে যিহোশূয় বললেন, "তোমরা ঐ গুহার মুখ খোল এবং সেখান থেকে সেই পাঁচ জন রাজাকে বের করে আমার কাছে আন।"
\v 23 তখন তারা সেইরকম করল, যিরুশালেমের রাজা, হিব্রোণের রাজা, যর্মূতের রাজা, লাখীশের রাজা ও ইগ্লোনের রাজা, এই পাঁচ জন রাজাকে সেই গুহা থেকে বের করে তার কাছে আনল।
\s5
\v 24 এইভাবে তারা ঐ রাজাদেরকে যিহোশূয়ের কাছে নিয়ে আসলে পর, যিহোশূয় ইস্রায়েলের সমস্ত পুরুষকে ডাকলেন এবং যারা তার সঙ্গে যুদ্ধে গিয়েছিল, তাদের নেতাদেরকে বললেন, "তোমরা কাছে এস, এই রাজাদের ঘাড়ে পা দাও," তাতে তারা কাছে এসে তাদের ঘাড়ে পা দিল।
\v 25 আর যিহোশূয় তাদেরকে বললেন, "ভয় পেয়ো না ও নিরাশ হয়ো না, বলবান হও, ও সাহস কর; কারণ তোমরা যে শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে, তাদের সবার প্রতি সদাপ্রভু এমনই করবেন।"
\s5
\v 26 তারপরে যিহোশূয় আঘাত করে সেই পাঁচ জন রাজাকে বধ করলেন ও পাঁচটি গাছে ঝুলিয়ে দিলেন; তাতে তারা সন্ধ্যা পর্যন্ত গাছে টাঙ্গান অবস্থায় থাকলেন।
\v 27 পরে সূর্যাস্তের সময়ে লোকেরা যিহোশূয়ের আদেশে তাদেরকে গাছ থেকে নামিয়ে, যে গুহাতে তারা লুকিয়েছিলেন, সেই গুহার মধ্যে ফেলে দিল ও গুহার মুখে কয়েকটি বড় বড় পাথর দিয়ে রাখল; তা আজও আছে।
\s5
\v 28 আর সেই দিন যিহোশূয় মক্কেদা অধিকার করলেন এবং মক্কেদা ও সেখানের রাজাকে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করলেন; সেই জায়গার সমস্ত প্রাণীকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করলেন, কাউকেই অবশিষ্ট রাখলেন না; যেমন যিরীহোর রাজার প্রতি করেছিলেন, মক্কেদার রাজার প্রতিও তেমনই করলেন।
\s5
\v 29 পরে যিহোশূয় সমস্ত ইস্রায়েলকে সঙ্গে করে মক্কেদা থেকে লিব্‌নাতে গিয়া লিব্‌নার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন।
\v 30 তাতে সদাপ্রভু লিব্‌না ও সেই জায়গার রাজাকে ইস্রায়েলের হাতে সমর্পণ করলেন; তারা লিব্‌না ও সেই জায়গার সমস্ত প্রাণীকে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করল, তার মধ্যে কাউকেই অবশিষ্ট রাখল না; যেমন যিরীহোর রাজার প্রতি করেছিল, সেই জায়গার রাজার প্রতিও একই রকম করলেন।
\s5
\v 31 পরে যিহোশূয় সমস্ত ইস্রায়েলকে সঙ্গে নিয়ে লিব্‌না থেকে লাখীশে গিয়ে তার বিরুদ্ধে শিবির স্থাপন করে যুদ্ধ করলেন।
\v 32 আর সদাপ্রভু লাখীশকে ইস্রায়েলের হাতে সমর্পণ করলেন ও তারা দ্বিতীয় দিনে তা অধিকার করে যেমন লিব্‌নার প্রতি করেছিল, তেমন লাখীশ ও সেই জায়গার সমস্ত প্রাণীকে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করল।
\s5
\v 33 সেই সময় গেষরের রাজা হোরম লাখীশের সাহায্য করতে এসেছিলেন; আর যিহোশূয় তাকে ও তার লোকদেরকে আঘাত করলেন; তার কাউকেই অবশিষ্ট রাখলেন না।
\s5
\v 34 পরে যিহোশূয় সমস্ত ইস্রায়েলকে সঙ্গে নিয়ে লাখীশ থেকে ইগ্লোনে যাত্রা করলেন, আর তারা সেই জায়গার সামনে শিবির স্থাপন করে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল।
\v 35 আর সেই দিন তা অধিকার করে, যেমন লাখীশের প্রতি করেছিল, তেমনি তরোয়াল দিয়ে তা আঘাত করে সেই দিন সেই জায়গার সমস্ত প্রাণীকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করল।
\s5
\v 36 পরে যিহোশূয় সমস্ত ইস্রায়েলকে সঙ্গে নিয়ে ইগ্লোন থেকে হিব্রোণে যাত্রা করলেন, আর তারা তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল।
\v 37 আর তা অধিকার করে সেই নগর ও সেই জায়গার রাজাকে ও সমস্ত অধীন নগর ও সমস্ত প্রাণীকে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করল; যেমন তিনি ইগ্লোনের প্রতি করেছিলেন, সেইরকম কাউকেই অবশিষ্ট রাখলেন না; হিব্রোণ ও সেইজায়গার সমস্ত প্রাণীকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করলেন।
\s5
\v 38 পরে যিহোশূয় ফিরে সমস্ত ইস্রায়েলকে সঙ্গে নিয়ে দবীরে গিয়ে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন।
\v 39 আর সেই নগর ও সেখানের রাজা ও তার অধীনে সমস্ত নগরগুলি অধিকার করলেন এবং তারা তরোয়াল দিয়ে আঘাত করে সেখানের সমস্ত প্রাণীকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করল; তিনি কাউকেই অবশিষ্ট রাখলেন না; যেমন তিনি হিব্রোণের প্রতি এবং লিব্‌নার ও সেই জায়গার রাজার প্রতি করেছিলেন, দবীরের ও সেই জায়গার রাজার প্রতিও একই রকম করলেন।
\s5
\v 40 এইভাবে যিহোশূয় সমস্ত দেশ, পাহাড়ি অঞ্চল, দক্ষিণ অঞ্চল, নিম্নভূমি, পাহাড়ের পাদদেশ এবং সেই সকল অঞ্চলের সমস্ত রাজাকে আঘাত করলেন, কাউকেই অবশিষ্ট রাখলেন না; তিনি ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞা অনুসারে শ্বাসবিশিষ্ট সবাইকেই সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করলেন।
\v 41 এইভাবে যিহোশূয় কাদেশ-বর্ণেয় থেকে ঘসা পর্যন্ত তাদেরকে এবং গিবিয়োন পর্যন্ত গোশনের সমস্ত দেশকে আঘাত করলেন।
\s5
\v 42 যিহোশূয় এই সমস্ত দেশ ও রাজাদেরকে এক দিনেই পরাজিত করলেন, কারণ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু ইস্রায়েলের পক্ষে যুদ্ধ করছিলেন।
\v 43 পরে যিহোশূয় সমস্ত ইস্রায়েলকে সঙ্গে নিয়ে গিল্‌গলে অবস্থিত শিবিরে ফিরে এলেন।
\s5
\c 11
\s উত্তর অঞ্চলে বসবাসকারী কনানীয়দের পরাজয়।
\p
\v 1 পরে যখন হাৎসোরের রাজা যাবীন সেই সংবাদ পেলেন, তখন তিনি মাদোনের রাজা যোববের, শিম্রোণের রাজার ও অক্‌ষফের রাজার কাছে,
\v 2 এবং উত্তরে, পাহাড়ি অঞ্চলে, কিন্নেরতের দক্ষিণ দিকের অরাবা উপত্যকা, নিম্নভূমিতে ও পশ্চিমে দোর নামের পর্বত শিখরে অবস্থিত রাজাদের কাছে;
\v 3 পূর্ব ও পশ্চিম দেশীয় কনানীয়দের এবং পাহাড়ি অঞ্চলের ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয় ও যিবূষীয়দের এবং হর্মোণের অধীনে মিস্পাদেশীয় হিব্বীয়দের কাছে দূত পাঠালেন।
\s5
\v 4 তাতে তারা তাদের সমস্ত সৈন্য, সমুদ্রতীরে বালির মতো অসংখ্য লোক এবং অনেক ঘোড়া ও রথ সঙ্গে নিয়ে বের হলেন।
\v 5 আর এই রাজারা সবাই পরিকল্পনা অনুসারে একত্র হলেন; তারা ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য মেরোম জলাশয়ের কাছে এসে একসঙ্গে শিবির স্থাপন করলেন।
\s5
\v 6 তখন সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন, "তুমি তাদেরকে ভয় পেয়ো না; কারণ কালকে এমন সময়ে আমি ইস্রায়েলের সামনে তাদের সবাইকেই নিহত করে সমর্পণ করব; তুমি তাদের ঘোড়ার পায়ের শিরা কাটবে ও সব রথগুলি আগুনে পুড়িয়ে দেবে।
\v 7 তখন যিহোশূয় সমস্ত সৈন্য সঙ্গে নিয়ে মেরোম জলাশয়ের কাছে তাদের বিরুদ্ধে হঠাৎ উপস্থিত হয়ে তাদেরকে আক্রমণ করলেন।
\s5
\v 8 তাতে সদাপ্রভু তাদেরকে ইস্রায়েলের হাতে সমর্পণ করলেন এবং তারা তাদেরকে আঘাত করল, আর মহাসীদোন ও মিষ্রফোৎময়িম পর্যন্ত ও পূর্বদিকে মিস্পীর উপত্যকা পর্যন্ত তাদেরকে তাড়িয়ে নিয়ে গেল এবং তাদেরকে আঘাত করে কাউকেই অবশিষ্ট রাখল না।
\v 9 আর যিহোশূয় তাদের প্রতি সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে কাজ করলেন; তিনি তাদের ঘোড়ার পায়ের শিরা কেটে দিলেন ও তাদের সব রথ আগুনে পুড়িয়ে দিলেন।
\s5
\v 10 ঐ সময়ে যিহোশূয় ফিরে এসে হাৎসোর অধিকার করলেন ও তরোয়াল দিয়ে সেই জায়গার রাজাকে আঘাত করলেন, কারণ আগে থেকেই হাৎসোর সেই সব রাজ্যের প্রধান ছিল।
\v 11 আর লোকেরা সেখানের সমস্ত প্রাণীকে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করল; তার মধ্যে শ্বাসবিশিষ্ট কাউকেই অবশিষ্ট রাখল না এবং তিনি হাৎসোর আগুনে পুড়িয়ে দিলেন।
\s5
\v 12 আর যিহোশূয় ঐ রাজাদের সমস্ত নগর ও সেই সব নগরের সমস্ত রাজাকে পরাজিত করলেন এবং সদাপ্রভুর দাস মোশির আদেশ অনুসারে তরোয়াল দিয়ে তাদেরকে আঘাত করে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করলেন।
\v 13 কিন্তু যে সমস্ত নগরগুলি ঢিবির উপরে স্থাপিত ছিল, ইস্রায়েল সেগুলির একটিও পোড়াল না; যিহোশূয় শুধু হাৎসোর পুড়িয়ে দিলেন।
\s5
\v 14 আর ইস্রায়েল-সন্তানেরা সেই সব নগরের সমস্ত দ্রব্য ও পশুপাল তাদের জন্য লুঠ করে নিল, কিন্তু প্রত্যেক মানুষকে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করে হত্যা করল; তাদের মধ্যে শ্বাসবিশিষ্ট কাউকেই অবশিষ্ট রাখল না।
\v 15 সদাপ্রভু তাঁর দাস মোশিকে যেমন আদেশ করেছিলেন, মোশিও যিহোশূয়কে সেইরকম আদেশ করেছিলেন, আর যিহোশূয় সেইরকম কাজ করলেন; তিনি মোশির প্রতি সদাপ্রভুর দেওয়া সমস্ত আদেশের একটি কথারও অবাধ্য হলেন না।
\s5
\v 16 এইভাবে যিহোশূয় সেই সমস্ত প্রদেশ, পাহাড়ি অঞ্চল, সমস্ত দক্ষিণ অঞ্চল, সমস্ত গোশন দেশ, নিম্নভূমি, অরাবা তলভূমি, ইস্রায়েলের পাহাড়ি অঞ্চল ও তার নিম্নভূমি,
\v 17 সেয়ারগামী হালক পর্বত থেকে হর্মোণ পর্বতের নিচে লিবানোনের উপত্যকায় অবস্থিত বাল্‌গাদ পর্যন্ত অধিকার করলেন এবং তাদের সমস্ত রাজাকে ধরে আঘাত করে বধ করলেন।
\s5
\v 18 যিহোশূয় অনেকদিন পর্যন্ত সেই রাজাদের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন।
\v 19 গিবিয়োন-নিবাসী হিব্বীয়েরা ছাড়া আর কোন নগরের লোকেরা ইস্রায়েল-সন্তানদের সঙ্গে সন্ধি করল না; তারা সবাইকেই যুদ্ধে পরাজিত করল।
\v 20 কারণ তাদের হৃদয় সদাপ্রভুর থেকেই কঠিন হয়েছিল, যেন তারা ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করে, আর তিনি তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করেন, তাদের প্রতি দয়া না করেন, কিন্তু তাদেরকে হত্যা করেন; যেমন সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ করেছিলেন।
\s5
\v 21 আর সেই সময়ে যিহোশূয় এসে পাহাড়ি অঞ্চল থেকে হিব্রোণ, দবীর ও অনাব থেকে, যিহূদার সমস্ত পাহাড়ি অঞ্চল থেকে, আর ইস্রায়েলের সমস্ত পাহাড়ি অঞ্চল থেকে অনাকীয়দের উচ্ছেদ করলেন; যিহোশূয় তাদের নগরগুলির সঙ্গে তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করলেন।
\v 22 ইস্রায়েল-সন্তানদের দেশে অনাকীয়দের কেউ অবশিষ্ট থাকল না; শুধু ঘসাতে, গাতে ও অস্‌দোদে কয়েকজন অবশিষ্ট থাকল।
\s5
\v 23 এইভাবে মোশির প্রতি সদাপ্রভুর সমস্ত বাক্য অনুসারে যিহোশূয় সমস্ত দেশ অধিকার করলেন; আর যিহোশূয় প্রত্যেক বংশকে বিভাগ অনুসারে তা অধিকারের জন্য ইস্রায়েলকে দিলেন। পরে দেশে যুদ্ধ শেষ হল।
\s5
\c 12
\s পরাজিত রাজাদের তালিকা।
\p
\v 1 যর্দনের পারে সূর্য্য উদয়ের দিকে ইস্রায়েল-সন্তানেরা দেশের যে দুই রাজাকে আঘাত করে তাদের দেশ, অর্থাৎ অর্ণোন উপত্যকা থেকে হর্মোণ পর্বত পর্যন্ত এবং পূর্বদিকের সমস্ত অরাবা উপত্যকা, এই দেশ অধিকার করেছিল, সেই দুই রাজা এই।
\v 2 হিষ্‌বোন-নিবাসী ইমোরীয়দের সীহোন রাজা; তিনি অর্ণোন উপত্যকার সীমানায় অরোয়ের উপত্যকার মধ্যে অবস্থিত নগর অবধি এবং অর্দ্ধেক গিলিয়দ,
\s5
\v 3 অম্মোন-সন্তানদের সীমা যব্বোক নদী পর্যন্ত এবং কিন্নেরৎ হ্রদ পর্যন্ত অরাবা উপত্যকাতে, পূর্ব্বদিকে ও বৈত-যিশীমোতের পথে অরাবা উপত্যকার লবণ সমুদ্র পর্যন্ত, পূর্বদিকে এবং পিস্‌গার পাদদেশের ঢালুস্থানের দক্ষিণ দেশে কর্ত্তৃত্ব করেছিলেন।
\v 4 আর বাশনের রাজা ওগের অঞ্চল; তিনি অবশিষ্ট রফায়ীয় বংশের একজন ছিলেন এবং অষ্টারোতে ও ইদ্রিয়ীতে বাস করতেন;
\v 5 আর হর্মোণ পর্ব্বতে, সল্‌খাতে এবং গশূরীয়দের ও মাখাখীয়দের সীমা পর্যন্ত সমস্ত বাশন দেশে এবং হিষ্‌বোনের সীহোন রাজার সীমা পর্যন্ত অর্দ্ধেক গিলিয়দ দেশে কর্ত্তৃত্ব করছিলেন।
\s5
\v 6 সদাপ্রভুর দাস মোশি ও ইস্রায়েল-সন্তানরা এদেরকে আঘাত করেছিলেন এবং সদাপ্রভুর দাস মোশি সেই দেশ অধিকারের জন্য রূবেণীয় ও গাদীয়দেরকে এবং মনঃশির অর্দ্ধেক বংশকে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 7 যর্দনের এপারে পশ্চিমদিকে লিবানোনের উপত্যকা অবস্থিত বাল্‌গাদ থেকে সেয়ীরগামী হালক পর্বত পর্যন্ত যিহোশূয় ও ইস্রায়েল-সন্তানরা দেশের যে যে রাজাকে আঘাত করলেন ও যিহোশূয় যাদের দেশ অধিকারের জন্য নিজেদের বিভাগ অনুসারে ইস্রায়েলের বংশ সমূহকে দিলেন,
\v 8 সেই সব রাজা, অর্থাৎ পর্বতময় দেশ, নিম্নভূমি, অরাবা উপত্যকা, পর্বতের ঢাল, প্রান্তর ও দক্ষিণ অঞ্চল-নিবাসী হিত্তীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরীষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয় [সব রাজা] এই এই।
\s5
\v 9 যিরীহোর এক রাজা, বৈথেলের কাছের অয়ের এক রাজা,
\v 10 যিরুশালেমের এক রাজা, হিব্রোণের এক রাজা,
\v 11 যর্মূতের এক রাজা, লাখীশের এক রাজা, ইগ্লোনের এক রাজা,
\v 12 গেষরের এক রাজা, দবীরের এক রাজা,
\s5
\v 13 গেদরের এক রাজা, হর্মার এক রাজা,
\v 14 অরাদের এক রাজা, লিব্‌নার এক রাজা,
\v 15 অদুল্লমের এক রাজা, মক্কেদার এক রাজা,
\v 16 বৈথেলের এক রাজা, তপূহের এক রাজা,
\s5
\v 17 হেফরের এক রাজা, অফেকের এক রাজা,
\v 18 লশারোণের এক রাজা, মাদোনের এক রাজা, হাৎসোরের এক রাজা,
\v 19 শিম্রোণ-মরোণের এক রাজা,
\v 20 অক্‌ষফের এক রাজা, তানকের এক রাজা, মগিদ্দোর এক রাজা,
\s5
\v 21 কেদশের এক রাজা, কর্মিল উপস্থিত যক্লিয়ামের এক রাজা,
\v 22 দোর উপগিরিতে উপস্থিত দোরের এক রাজা,
\v 23 গিল্‌গলে অবস্থিত গোয়ীমের এক রাজা, তির্সার এক রাজা;
\v 24 মোট একত্রিশ রাজা।
\s5
\c 13
\s যর্দনের পূর্বদিকের গোষ্ঠীদের সীমানা নির্দিষ্ট করা।
\p
\v 1 যিহোশূয় বৃদ্ধ ও তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল; আর সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, "তোমার অনেক বয়স হয়েছে ও বৃদ্ধ হয়েছ; কিন্তু এখনও অধিকার করার জন্য অনেক দেশ বাকি আছে।
\s5
\v 2 এই দেশ এখনও বাকি আছে পলেষ্টীয়দের সমস্ত অঞ্চল এবং গশূরীয়দের সমস্ত অঞ্চল;
\v 3 মিসরের সামনে সীহোর নদী থেকে ইক্রোণের উত্তরসীমা পর্যন্ত, যা কনানীয়দের অধিকারের মধ্য; ঘসাতীয়, অস্‌দোদীয়, অস্কিলোনীয়, গাতীয় ও ইক্রোণীয়, পলেষ্টীয়দের এই পাঁচজন শাসকের দেশ,
\s5
\v 4 আর দক্ষিণ দিকে অব্বীয়দের দেশ, কনানীয়দের সমস্ত দেশ ও ইমোরীয়দের সীমায় অবস্থিত অফেক পর্যন্ত সীদোনীয়দের অধীনে মিয়ারা;
\v 5 গিব্‌লীয়দের দেশ ও হর্মোণ পর্বতের নিচে বাল্‌গাদ থেকে হমাতের প্রবেশস্থান পর্যন্ত, সূর্য্য উদয়ের দিকে সমস্ত লিবানোন;
\s5
\v 6 লিবানোন থেকে মিষ্রফোৎ-ময়িম পর্যন্ত পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসকারী সীদোনীয়দের সমস্ত দেশ। আমি ইস্রায়েল-সন্তানদের সামনে থেকে তাদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করব; তুমি শুধু তা অধিকার হিসাবে ইস্রায়েলের জন্য নির্দিষ্ট কর, যেমন আমি তোমাকে আদেশ করলাম।
\v 7 এখন অধিকারের জন্য নয়টি বংশকে ও মনঃশির অর্ধেক বংশকে এই দেশ ভাগ করে দাও।"
\s5
\v 8 মনঃশির সঙ্গে রূবেণীয় ও গাদীয়েরা যর্দনের পূর্বপারে মোশির দেওয়া তাদের অধিকার পেয়েছিল, যেমন সদাপ্রভুর দাস মোশি তাদেরকে দান করেছিলেন;
\v 9 অর্থাৎ অর্ণোন উপত্যকার সীমানায় অবস্থিত আরোয়ের ও উপত্যকার মধ্য নগর পর্যন্ত এবং দীবোন পর্যন্ত মেদবার সমস্ত সমতল ভূমি;
\s5
\v 10 এবং অম্মোন-সন্তানদের সীমা পর্যন্ত হিষ্‌বোনে রাজত্বকারী ইমোরীয়দের সীহোন রাজার সমস্ত নগর;
\v 11 এবং গিলিয়দ ও গশূরীয়দের ও মাখাথীয়দের অঞ্চল ও সমস্ত হর্মোণ পর্বত এবং সলখা পর্যন্ত সমস্ত বাশন,
\v 12 অর্থাৎ রফায়ীয়দের মধ্যে অবশিষ্ট যে ওগ অষ্টারোতে ও ইদ্রিয়ীতে রাজত্ব করতেন, তার সমস্ত বাশন রাজ্য দিয়েছিলেন; কারণ মোশি এদেরকে আঘাত করে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 13 তবুও ইস্রায়েল-সন্তানরা গশূরীয়দেরকে ও মাখাথীয়দেরকে তাড়িয়ে দেয় নি; গশূর ও মাখাথ্‌ আজও ইস্রায়েলের মধ্যে বাস করছে।
\s5
\v 14 শুধুমাত্র লেবি বংশকেই মোশি কিছু অধিকার দেন নি; ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আগুনে উত্সর্গ করা উপহার তার অধিকার, যেমন তিনি মোশিকে বলেছিলেন।
\s5
\v 15 মোশি রূবেণ সন্তানদের বংশকে তাদের গোষ্ঠী অনুসারে অধিকার দিয়েছিলেন।
\v 16 অর্ণোন উপত্যকার সীমানায় অবস্থিত অরোয়ের পর্যন্ত তাদের সীমা ছিল এবং উপত্যকার মধ্য অবস্থিত নগর ও মেদবার কাছে সমস্ত সমভূমি;
\s5
\v 17 হিষ্‌বোন ও সমভূমিতে অবস্থিত তার সমস্ত নগর, দীবোন, বামোৎ-বাল ও বৈৎ-বাল-মিয়োন,
\v 18 যহস, কদেমোৎ ও মেফাৎ,
\v 19 কিরিয়াথয়িম, সিব্‌মা ও উপত্যকার পর্বতে অবস্থিত সেরৎ-শহর,
\s5
\v 20 বৈৎ-পিয়োর, পিসগা-প্রান্ত ও বৈৎ-যিশীমোৎ;
\v 21 এবং সমভূমিতে অবস্থিত সমস্ত নগর ও হিষ্‌বোনে রাজত্বকারী ইমোরীয়দের সীহোন রাজার সমস্ত রাজ্য; মোশি তাকে এবং মিদিয়নের নেতাদেরকে, অর্থাৎ সেই দেশে বসবাসকারী ইবি, রেকম, সুর, হূর ও রেবা নামে সীহোনের রাজাদেরকে আঘাত করেছিলেন।
\s5
\v 22 ইস্রায়েল-সন্তানেরা তরোয়াল দিয়ে যাদেরকে বধ করেছিল, তাদের মধ্যে বিয়োরের পুত্র ভাববাদী বিলিয়মকেও বধ করেছিল।
\v 23 আর যর্দন ও তার সীমা রূবেণ-সন্তানদের সীমা ছিল; রূবেণ-সন্তানদের গোষ্ঠী অনুসারে তাদের গ্রামের সঙ্গে এই সব নগরগুলিও তাদের অধিকার হল।
\s5
\v 24 আর মোশি গাদ-সন্তানদের গোষ্ঠী অনুসারে গাদ বংশকে অধিকার দিয়েছিলেন।
\v 25 যাসের ও গিলিয়দের সমস্ত নগর এবং রব্বার সামনে অরোয়ের পর্যন্ত অম্মোন-সন্তানদের অর্ধেক দেশ তাদের অঞ্চল হল।
\v 26 আর হিষ্‌বোন থেকে রামৎ-মিস্‌পী ও বটোনীম পর্যন্ত,
\s5
\v 27 এবং মহনয়িম থেকে দবীরের সীমা পর্যন্ত; আর নিম্নভূমিতে বৈৎ-হারম, বৈৎ-নিম্রা, সুক্কোৎ, সাফোন, হিষ্‌বোনের সীহোন রাজার অবশিষ্ট রাজ্য এবং যর্দনের পূর্ব তীর অর্থাৎ কিন্নেরৎ হ্রদের প্রান্ত পর্যন্ত যর্দন ও তার অঞ্চল।
\v 28 গাদ-সন্তানদের গোষ্ঠী অনুসারে তাদের গ্রামের সঙ্গে এই সব নগর তাদের অধিকার হল।
\s5
\v 29 আর মোশি মনঃশির অর্ধেক বংশকে অধিকার দিয়েছিলেন; তা মনঃশির-সন্তানদের অর্ধেক বংশের জন্য তাদের গোষ্ঠী অনুসারে দেওয়া হয়েছিল।
\v 30 তাদের সীমা মহনয়িম পর্যন্ত সমস্ত বাশন, বাশনের রাজা ওগের সমস্ত রাজ্য ও বাশনের যায়ীরের সমস্ত নগর অর্থাৎ ষাটটি নগর;
\v 31 এবং অর্ধেক গিলিয়দ, অষ্টারোৎ ও ইদ্রিয়ী, ওগের বাশনের রাজ্যের এই সব নগরগুলি মনঃশির পুত্র মাখীরের সন্তানদের, অর্থাৎ গোষ্ঠী অনুসারে মাখীরের সন্তানদের অর্ধেক- সংখ্যার অধিকার হল।
\s5
\v 32 যিরীহোতে যর্দনের পূর্বপারে মোয়াবের সমভূমিতে মোশি এই সব অধিকার অংশ করে দিয়েছিলেন।
\v 33 কিন্তু লেবির বংশকে মোশি কোন অধিকার দেন নি; ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাদের অধিকার, যেমন তিনি তাদেরকে বলেছিলেন।
\s5
\c 14
\s যিহূদা সন্তানদের দেশ নির্বাচন।
\p
\v 1 কনান দেশে ইস্রায়েল-সন্তানরা এই এই অধিকার গ্রহণ করল; ইলীয়াসর যাজক ও নূনের পুত্র যিহোশূয় এবং ইস্রায়েল-সন্তানদের বংশগুলির পিতৃকুলপতিরা এই সব তাদেরকে অংশ করে দিলেন;
\s5
\v 2 সদাপ্রভু মোশির মাধ্যমে যেরকম আদেশ করেছিলেন, সেই অনুসারে তারা গুলিবাটের মাধ্যমে সাড়ে নয় বংশের অংশ নির্ধারণ করলেন।
\v 3 কারণ যর্দনের ওপারে মোশি আড়াই বংশকে অধিকার দিয়েছিলেন, কিন্তু লেবীয়দের লোকদের মধ্যে কোন অধিকার দেন নি।
\v 4 কারণ যোষেফ-সন্তানরা দুই বংশ হল, মনঃশি ও ইফ্রয়িম; আর লেবীয়দেরকে দেশে কোন অংশ দেওয়া গেল না, কেবল বাস করবার জন্য কতগুলি নগর এবং তাদের পশুপালের ও তাদের সম্পত্তির জন্য সেই সকল নগরের পশুপালনের মাঠগুলিও দেওয়া হল।
\v 5 সদাপ্রভু মোশিকে যে আদেশ দিয়েছিলেন, ইস্রায়েল-সন্তানরা সেই অনুসারে কাজ করল এবং দেশ বিভাগ করে নিল।
\s5
\v 6 আর যিহূদা-সন্তানরা গিল্‌গলে যিহোশূয়ের কাছে আসল; আর কনিসীয় যিফুন্নির পুত্র কালেব তাকে বললেন, "সদাপ্রভু আমার ও তোমার বিষয়ে কাদেশ-বর্ণেয়ে ঈশ্বরের লোক মোশিকে যে কথা বলেছিলেন, তা তুমি জানো।
\v 7 আমার চল্লিশ বছর বয়সের সময়ে সদাপ্রভুর দাস মোশি দেশ অনুসন্ধান করতে কাদেশ-বর্ণেয় থেকে আমাকে পাঠিয়েছিলেন, আর আমি সরল মনে তার কাছে সংবাদ এনে দিয়েছিলাম।
\s5
\v 8 আমার যে ভাইয়েরা আমার সঙ্গে গিয়েছিল, তারা লোকদের হৃদয় [ভয়ে] গলিয়ে দিয়েছিল; কিন্তু আমি পুরোপুরিভাবে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অনুগামী ছিলাম।
\v 9 আর মোশি ওই দিনে শপথ করে বলেছিলেন, যে জমির উপরে তোমার পা পড়েছে, সেই জমি তোমার ও চিরকাল তোমার সন্তানদের অধিকার হবে; কারণ তুমি পুরোপুরি আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর অনুসরণ করেছ।
\s5
\v 10 আর এখন দেখ, প্রান্তরে ইস্রায়েলের ভ্রমনের সময়ে যখন সদাপ্রভু মোশিকে সেই কথা বলেছিলেন, তখন থেকে সদাপ্রভু নিজের বাক্য অনুসারে এই পঁয়তাল্লিশ বছর আমাকে জীবিত রেখেছেন; আর এখন, দেখ, আজ আমার বয়স পঁচাশী বছর।
\v 11 মোশি যে দিন আমাকে পাঠিয়েছিলেন, সেই দিন আমি যেমন বলবান ছিলাম, এখন পর্যন্ত তেমনি আছি; যুদ্ধের জন্য এবং বাইরে যাবার ও ভিতরে আসার জন্য আমার তখন যেমন শক্তি ছিল, এখনও সেরকম শক্তি আছে।
\s5
\v 12 অতএব সেই দিন সদাপ্রভু এই যে পর্বতের বিষয় বলেছিলেন, এখন তা আমাকে দাও; কেননা তুমি সেই দিন শুনেছিলে যে, অনাকীয়েরা সেখানে থাকে এবং নগরগুলি বড় ও প্রাচীর দিয়ে ঘেরা; হয় তো, সদাপ্রভু আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকবেন, আর আমি সদাপ্রভুর বাক্য অনুসারে তাদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করব।"
\s5
\v 13 তখন যিহোশূয় তাকে আশীবার্দ করলেন এবং যিফুন্নির ছেলে কালেবকে রাজত্বের জন্য হিব্রোণ দিলেন।
\v 14 এই জন্য আজ পর্যন্ত হিব্রোণ কনিসীয় যিফুন্নির পুত্র কালেবের অধিকার রয়েছে; কারণ তিনি পুরোপুরিভাবে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অনুগামী ছিলেন।
\v 15 পূর্বকালে হিব্রোনের নাম কিরিয়ৎ অর্ব [অর্বপুর] ছিল; ঐ অর্ব অনাকীয়দের মধ্যে মহান ছিলেন। পরে দেশে যুদ্ধ শেষ হল।
\s5
\c 15
\p
\v 1 পরে গুলিবাট অনুযায়ী নিজেদের গোষ্ঠী অনুসারে যিহূদা-সন্তানদের বংশের অংশ ঠিক করা হল; ইদোমের সীমা পর্যন্ত, অর্থাৎ দক্ষিণ দিকে, দক্ষিনের একেবারে শেষ প্রান্তে, শিন প্রান্তর পর্যন্ত।
\v 2 আর তাদের দক্ষিণ সীমা লবণসমুদ্রের প্রান্ত থেকে অর্থাৎ দক্ষিণ দিকে বঙ্ক থেকে আরম্ভ হল;
\s5
\v 3 আর তা দক্ষিণ দিকে অক্রব্বীম উপরে উঠে যাওয়ার রাস্তা দিয়ে সিন পর্যন্ত গেল এবং কাদেশ-বর্ণেয়ের দক্ষিণ দিক্‌ হয়ে ঊর্দ্ধগামী হল; পরে হিষ্রোণে গিয়ে অদ্দরের দিকে ঊর্দ্ধগামী হয়ে কর্ক্কা পর্যন্ত ঘুরে গেল।
\v 4 পরে অস্‌মোন হয়ে মিসরের স্রোত পর্যন্ত বের হয়ে গেল; আর ঐ সীমার শেষ প্রান্ত সমুদ্রে ছিল; এই তোমাদের দক্ষিণ সীমা হবে।
\s5
\v 5 আর পূর্ব সীমা যর্দনের মোহনা পর্যন্ত লবণসমুদ্র। আর উত্তর দিকের সীমা যর্দনের মোহনায় মিশেছে
\v 6 আর সমুদ্রের সেই সীমা থেকে বৈৎ-হগ্লায় উপর দিয়ে গিয়ে বৈৎ-অরাবার উত্তর দিক হয়ে গেল, পরে সে সীমা রূবেণ-সন্তান বোহনের পাথর পর্যন্ত উঠে গেল।
\s5
\v 7 আর সে সীমা আখোর তলভূমি থেকে দবীরের দিকে গেল; পরে স্রোতের দক্ষিণ পারে অদুম্মীমের উপরের দিকে যাওয়ার রাস্তার সামনে গিল্‌গলের দিকে মুখ করে উত্তর দিকে গেল ও ঐন্‌ শেমশ নামে জলাশয়ের দিকে চলে গেল, আর তার অন্তভাগ ঐন্‌ রোগেলে ছিল।
\v 8 সে সীমা হিন্নোম্‌-সন্তানের উপত্যকা দিয়ে উঠে যিবূষের অর্থাৎ যিরুশালেমের দক্ষিণ দিকে গেল; পরে ঐ সীমা পশ্চিমে হিন্নোম উপত্যকার সামনে যা রফায়ীম উপত্যকার উত্তর প্রান্তে অবস্থিত পর্বত-চূড়া পর্যন্ত গেল।
\s5
\v 9 পরে ঐ সীমা সেই পর্বত-চূড়া পর্যন্ত নিপ্তোহের জলের উনুই পর্যন্ত বিস্তৃত হল এবং ইফ্রোণ পর্বতে অবস্থিত নগরগুলি পর্যন্ত বের হয়ে গেল। আর সে সীমা বালা অর্থাৎ কিরিয়ৎ যিয়ারীম পর্যন্ত গেল;
\v 10 পরে সে সীমা বালা থেকে সেয়ীর পর্বত পর্যন্ত পশ্চিম দিকে ঘুরে যিয়ারীম পর্বতের উত্তর প্রান্ত অর্থাৎ কসালোন পর্যন্ত গেল; পরে বৈৎ-শেমশ থেকে নিচের দিকে নেমে এসে তিম্নার কাছ দিয়ে গেল।
\s5
\v 11 আর সে সীমা ইক্রোণের উত্তর প্রান্ত পর্যন্ত গেল, পরে সে সীমা শিক্করোণ পর্যন্ত বিস্তৃত হল এবং বালা পর্বত হয়ে যব্‌নিয়েলে গেল; ঐ সীমার অন্তভাগ সমুদ্রে ছিল।
\v 12 আর পশ্চিম সীমা মহাসমুদ্র ও তার অঞ্চল পর্যন্ত। নিজেদের গোষ্ঠী অনুসারে যিহূদা-সন্তানদের চারিদিকের সীমা এই।
\s5
\v 13 আর যিহোশূয়ের প্রতি সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে তিনি যিহূদা-সন্তানদের মধ্যে যিফুন্নির ছেলে কালেবের অংশ কিরিয়ৎ-অর্ব [অর্বপুর] অর্থাৎ হিব্রোণ দিলেন, ঐ অর্ব অনাকের বাবা।
\v 14 আর কালেব সেই জায়গা থেকে অনাকের সন্তানদেরকে, শেশয়, অহীমান ও তল্‌ময় নামে অনাকের তিন ছেলেকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করলেন।
\v 15 সেখান থেকে তিনি দবীর নিবাসীদের বিরুদ্ধে গেলেন; আগে দবীরের নাম কিরিয়ৎ-সেফর ছিল।
\s5
\v 16 আর কালেব বললেন, "যে কেউ কিরিয়ৎ-সেফরকে আক্রমন করে অধিকার করবে, তার সঙ্গে আমি আমার মেয়ে অক্‌ষার বিয়ে দেব।"
\v 17 আর কালেবের ভাই কনষের ছেলে অৎনীয়েল তা অধিকার করলে তিনি তার সঙ্গে তার মেয়ে অক্‌ষার বিয়ে দিলেন।
\s5
\v 18 আর ঐ কন্যা এসে তার বাবার কাছে একটি জমি চাইতে স্বামীকে বুদ্ধি দিল এবং সে তার গাধার পিঠ থেকে নামল; কালেব তাকে বললেন, "তুমি কি চাও?"
\s5
\v 19 সে বলল, "আপনি আমাকে একটি উপহার দিন, দক্ষিণ অঞ্চলে অবস্থিত জমি আমাকে দিয়েছেন, জলের উনুইগুলিও আমাকে দিন। তাতে তিনি তাকে উপরের উনুইগুলি ও নিচের উনুইগুলিও দিলেন।
\s5
\v 20 নিজেদের গোষ্ঠী অনুসারে যিহূদা-সন্তানদের বংশের এই অধিকার।
\s5
\v 21 দক্ষিণ অঞ্চলে ইদোমের সীমার কাছে যিহূদা-সন্তানদের বংশের প্রান্তে অবস্থিত নগর কব্‌সেল, এদর, যাগুর,
\v 22 কীনা, দীমোনা, অদাদা,
\v 23 কেদশ, হাৎসোর, যিৎনন,
\v 24 সীফ, টেলম, বালোৎ,
\s5
\v 25 হাৎসোর-হদত্তা, করিয়োৎ-হিষ্রোণ অর্থাৎ হাৎসোর,
\v 26 অমাম, শমা, মোলদা,
\v 27 হৎসর-গদ্দা, হিষ্‌মোন, বৈৎ-পেলট,
\v 28 হৎসর-শূয়াল, বের-শেবা, বিষিয়োথিয়া,
\s5
\v 29 বালা, ইয়ীম, এৎসম,
\v 30 ইল্‌তোলদ, কসীল, হর্মা,
\v 31 সিক্লগ, মদ্‌মন্না ও সন্‌সন্না,
\v 32 লবায়োৎ, শিল্‌হীম, ঐন ও রিম্মোণ; নিজেদের গ্রামের সঙ্গে মোট উনত্রিশটি নগর।
\s5
\v 33 নিম্নভূমিতে ইষ্টায়োল, সরা, অশ্‌না,
\v 34 সানোহ, ঐন্‌গন্নীম, তপূহ, ঐনম,
\v 35 যর্মূৎ, অদুল্লম, সোখো, অসেকা,
\v 36 শারয়িম, অদীথয়িম, গদেরা ও গদেরোথয়িম; তাদের গ্রামের সঙ্গে চৌদ্দটি নগর।
\s5
\v 37 সনান, হদাশা, মিগদল্‌-গাদ,
\v 38 দিলিয়ন, মিস্‌পী, যক্তেল,
\v 39 লাখীশ, বস্কৎ, ইগ্লোন,
\s5
\v 40 কব্বোন, লহমম, কিৎলীশ,
\v 41 গদেরোৎ, বৈৎ-দাগোন, নয়মা ও মক্কেদা; তাদের গ্রামের সঙ্গে ষোলটি নগর।
\s5
\v 42 লিবনা, এথর, আশন,
\v 43 যিপ্তহ, অশ্‌না, নৎসীব,
\v 44 কিয়িলা, অক্‌ষীব ও মারেশা; তাদের গ্রামের সঙ্গে নয়টি নগর।
\s5
\v 45 ইক্রোণ এবং সেখানের উপনগর ও সমস্ত গ্রামগুলি;
\v 46 ইক্রোণ থেকে মহাসমুদ্র পর্যন্ত অস্‌দোদের কাছে সমস্ত স্থান ও গ্রাম।
\v 47 অস্‌দোদ, তার উপনগর ও সমস্ত গ্রামগুলি; ঘসা, তার উপনগর ও সমস্ত গ্রামগুলি; মিসরের স্রোত ও মহাসমুদ্র ও তার সীমা পর্যন্ত।
\s5
\v 48 আর পাহাড়ি দেশে শামীর, যত্তীর, সোখো,
\v 49 দন্না, কিরিয়ৎ-সন্না অর্থাৎ দবীর,
\v 50 অনাব, ইষ্টিমোয়, আনীম,
\v 51 গোশন, হোলোন ও গীলো; তাদের গ্রামের সঙ্গে এগারটি নগর।
\s5
\v 52 অরাব, দূমা, ইশিয়ন,
\v 53 যানীম, বৈৎ-তপূহ, অফেকা,
\v 54 হুমটা, কিরিয়ৎ-অর্ব অর্থাৎ হিব্রোণ ও সীয়োর; তাদের গ্রামের সঙ্গে নয়টি নগর।
\s5
\v 55 মায়োন, কর্মিল, সীফ, যুটা,
\v 56 যিষ্রিয়েল, যক্‌দিয়াম, সানোহ,
\v 57 কয়িন, গিবিয়া ও তিম্না; তাদের গ্রামের সঙ্গে দশটি নগর।
\s5
\v 58 হল্‌হূল, বৈৎ-সূর, গদোর,
\v 59 মারৎ, বৈৎ-অনোৎ ও ইল্‌তকোন; তাদের গ্রামের সঙ্গে ছয়টি নগর।
\s5
\v 60 কিরিয়ৎ-বাল অর্থাৎ কিরিয়ৎ-যিয়ারীম ও রব্বা; তাদের গ্রামের সঙ্গে দুইটি নগর।
\v 61 প্রান্তরে বৈৎ-অরাবা, মিদ্দীন, সকাখা,
\v 62 নিব্‌শন, লবন-নগর ও ঐন্‌-গদী; তাদের গ্রামের সঙ্গে ছয়টি নগর।
\s5
\v 63 কিন্তু যিহূদা-সন্তানেরা যিরুশালেমে বসবাসকারী যিবূষীয়দেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারল না; যিবূষিয়েরা আজও যিহূদা-সন্তানদের সঙ্গে যিরূশালেমে বাস করছে।
\s5
\c 16
\s যোষেফের সন্তানদের মধ্যে দেশ বণ্টন।
\p
\v 1 আর গুলিবাঁটের মাধ্যমে যোষেফের সন্তানদের অংশ যিরীহোর কাছে যর্দন, অর্থাৎ পূর্ব দিকের যিরীহোর জল পর্যন্ত, যিরীহো থেকে পার্বত্য দেশ দিয়ে ঊর্দ্ধগামী মরুভূমি দিয়ে বৈথেলে গেল;
\v 2 আর বৈথেল থেকে লূসে গেল এবং সেই জায়গা থেকে অর্কীয়দের সীমা পর্যন্ত অটারোতে গেল।
\s5
\v 3 আর পশ্চিম দিকে যফ্‌লেটীয়দের সীমার দিকে নিচে বৈৎ-হোরোণের সীমা পর্যন্ত, গেষর পর্যন্ত গেল এবং তার শেষ সীমানা সমুদ্রে ছিল।
\v 4 এইভাবে যোষেফের সন্তানেরা মনঃশি ও ইফ্রয়িম তাঁদের নিজের নিজের অধিকার গ্রহণ করল।
\s5
\v 5 নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে ইফ্রয়িম-সন্তানদের সীমা এই; পূর্ব দিকে উপরের বৈৎ-হোরোণ পর্যন্ত অটারোৎ-অদ্দর তাঁদের অধিকারের সীমা হল;
\v 6 পরে ঐ সীমা পশ্চিম দিকে মিক্‌মথতের উত্তরে বিস্তৃত হল; পরে সে সীমা পূর্ব্ব দিকে ঘুরে তানৎ-শীলো পর্যন্ত গিয়ে তার কাছ দিয়ে যানোহের পূর্ব দিকে গেল।
\v 7 পরে যানোহ থেকে অটারোৎ ও নারঃ হয়ে যিরীহো পর্যন্ত গিয়ে যর্দনে মিশেছে।
\s5
\v 8 পরে সে সীমা তপূহ থেকে পশ্চিম দিক হয়ে কান্না স্রোতে গেল ও তার সীমান্তভাগ সমুদ্রে ছিল। নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে ইফ্রয়িম-সন্তানেরা তাঁদের বংশের এই অধিকার পেল।
\v 9 এছাড়া মনঃশি-সন্তানদের অধিকারের মধ্যে ইফ্রয়িম-সন্তানদের জন্য আলাদা করে রাখা অনেক শহর ও তাদের গ্রামগুলিও ছিল।
\s5
\v 10 কিন্ত তারা গেষরবাসী কনানীয়দের তাড়িয়ে দিল না, কিন্তু কনানীয়েরা আজ পর্যন্ত ইফ্রয়িমের মধ্যে বাস করতে থাকল এবং তাদের অধীনে দাস হয়ে থাকল।
\s5
\c 17
\p
\v 1 আর গুলিবাঁটের মাধ্যমে মনঃশি বংশের অংশ ঠিক করা হল, সে যোষেফের বড় ছেলে। কিন্তু গিলিয়দের পিতা, অর্থাৎ মনঃশির বড় ছেলে মাখীর যোদ্ধা বলে গিলিয়দ ও বাশন পেয়েছিল।
\v 2 আর [ঐ অংশ] নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে মনঃশির অন্য অন্য সন্তানদের হল; তারা এই এই, অবীয়েষরের সন্তানেরা, হেলকের সন্তানেরা, অস্রীয়েলের সন্তানেরা, শেখমের সন্তানেরা, হেফরের সন্তানেরা ও শমীদার সন্তানেরা; এরা নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে যোষেফের সন্তান, মনঃশির পুত্রসন্তান।
\s5
\v 3 কিন্তু মনঃশির সন্তান মাখীরের সন্তান গিলিয়দের সন্তান হেফরের ছেলে সল্‌ফাদের কোন ছেলে ছিল না; শুধু কতগুলি মেয়ে ছিল; তার মেয়েদের নাম মহলা, নোয়া, হগ্‌লা, মিল্কা ও তির্সা।
\v 4 তারা ইলিয়াসর যাজকের, নূনের ছেলে যিহোশূয়ের সামনে ও নেতাদের সামনে এসে বলল, "আমাদের ভাইদের অধিকারের মধ্যে আমাদের এক অংশ দিতে সদাপ্রভু মোশিকে আদেশ করেছিলেন।" অতএব সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে তিনি তাদের বাবার ভাইদের মধ্যে তাদেরকে এক অধিকার দিলেন।
\s5
\v 5 তাতে যর্দনের অন্য পাড়ে গিলিয়দ ও বাশন দেশ ছাড়াও মনঃশির দিকে দশ ভাগ পড়ল;
\v 6 কারণ মনঃশির ছেলেদের মধ্যে তার মেয়েদেরও অধিকার ছিল এবং মনঃশির অবশিষ্ট ছেলেরা গিলিয়দ দেশ পেল।
\s5
\v 7 মনঃশির সীমা আশের থেকে শিখিমের সামনে মিক্‌মথৎ পর্যন্ত ছিল; পরে ঐ সীমা দক্ষিণ দিকে ঐন্‌-তপূহে বসবাসকারীদের সীমানা পর্যন্ত গেল।
\v 8 মনঃশি তপূহ দেশ পেল, কিন্তু মনঃশির সীমানায় তপূহ [নগর] ইফ্রয়িম-সন্তানদের অধিকার হল;
\s5
\v 9 ঐ সীমা কান্না স্রোত পর্যন্ত, স্রোতের দক্ষিণ তীরে নেমে গেল; মনঃশির নগরগুলির মধ্যে অবস্থিত এই নগরগুলি ইফ্রয়িমের ছিল; মনঃশির সীমা স্রোতের উত্তরদিকে ছিল এবং তার শেষ সীমানা সমুদ্রে ছিল।
\v 10 দক্ষিণ দিকে ইফ্রয়ীমের ও উত্তরদিকে মনঃশির অধিকার ছিল এবং সমুদ্র তার সীমা ছিল; তারা উত্তর দিকে আশেরের ও ইষাখরের পূর্ব দিকে ছিল।
\s5
\v 11 আর ইষাখরের ও আশেরের মধ্যে অবস্থিত উপনগরগুলির সঙ্গে বৈৎ-শান ও এর উপনগরগুলির সঙ্গে যিব্‌লিয়ম ও এর উপনগরগুলির সঙ্গে দোর-নিবাসীরা এবং এর উপনগরগুলির সঙ্গে ঐন্‌-দোর-নিবাসীরা ও এর উপনগরগুলির সঙ্গে তানক-নিবাসীরা ও এর উপনগরগুলির সঙ্গে মগিদ্দোনিবাসীরা, এই তিনটি পাহাড়ে মনঃশির অধিকার ছিল।
\v 12 তবুও মনঃশি-সন্তানেরা সেই সমস্ত নগরের অধিবাসীদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারল না; কারণ কনানীয়েরা সেই দেশে বাস করার জন্য দৃঢ় সঙ্কল্প ছিল।
\s5
\v 13 পরে ইস্রায়েল-সন্তানেরা যখন শক্তিশালী হয়ে উঠল, তখন কনানীয়দের তাদের দাস করল, কিন্তু সম্পূর্ণভাবে অধিকার থেকে বঞ্চিত করল না।
\s5
\v 14 পরে যোষেফের সন্তানেরা যিহোশূয়কে বলল, "আপনি অধিকার করার জন্য আমাদেরকে এক অংশ ও এক ভাগ কেন দিলেন? এখনও পর্যন্ত সদাপ্রভু আমাকে আশীর্বাদ করাতে আমি বড় জাতি হয়েছি।"
\v 15 যিহোশূয় তাদেরকে বললেন, "যদি তুমি বড় জাতি হয়ে থাক, তবে ঐ জঙ্গলের দিকে উঠে যাও; ঐ জায়গায় পরিষীয়দের ও রফায়ীয়দের দেশে নিজেদের জন্য বন কেটে ফেল, কেননা পার্বত্য ইফ্রয়িম প্রদেশ তোমার পক্ষে সঙ্কীর্ণ।
\s5
\v 16 যোষেফের সন্তানরা বলল, "এই পার্বত্য দেশ আমাদের জন্য যথেষ্ট নয় এবং যে সমস্ত কনানীয় উপত্যকায় বাস করে, বিশেষভাবে বৈৎ-শানে ও সেই জায়গার নগরগুলিতে এবং যিষ্রিয়েল উপত্যকায় বাস করে, তাদের লোহার রথ আছে।"
\v 17 তখন যিহোশূয় যোষেফের গোষ্ঠীকে অর্থাৎ ইফ্রয়িম ও মনঃশিকে বললেন, "তুমি বড় জাতি, তোমার ক্ষমতাও অনেক বেশি; তুমি শুধুমাত্র একটি অংশই পাবে না;
\v 18 কিন্তু পার্বত্য অঞ্চলও তোমার হবে; যদিও সেটা গাছে পরিপূর্ণ, কিন্তু সেই বন কেটে ফেললে তার নীচের ভাগ তোমার হবে; কারণ কনানীয়দের লোহার রথ থাকলেও এবং তারা শক্তিশালী হলেও তুমি তাদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করবে।
\s5
\c 18
\s শীলোতে সমাগম-তাঁবু স্থাপন ও গোষ্ঠীদের মধ্যে দেশ বিভাগ।
\p
\v 1 পরে ইস্রায়েল-সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলী শীলোতে সমবেত হয়ে সেই জায়গায় সমাগম-তাঁবু স্থাপন করল; দেশ তাদের কাছে পরাজিত হয়েছিল।
\v 2 ঐ সময়ে ইস্রায়েল-সন্তানদের মধ্যে সাত বংশ অবশিষ্ট ছিল, যারা নিজেদের অধিকার ভাগ করে নেয় নি।
\s5
\v 3 যিহোশূয় ইস্রায়েল-সন্তানদের বললেন, "তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের যে দেশ দিয়েছেন, সেই দেশে গিয়ে তা অধিকার করতে তোমরা আর কত দিন দেরি করবে?
\v 4 তোমরা নিজেদের এক একটি বংশের মধ্যে থেকে তিনজন করে দাও; আমি তাদেরকে পাঠাব, তারা উঠে দেশের সমস্ত জায়গা ঘুরে দেখবে এবং প্রত্যেকের অধিকার অনুসারে তার বর্ণনা লিখে নিয়ে আমার কাছে ফিরে আসবে।
\s5
\v 5 তারা তা সাত ভাগে ভাগ করবে; দক্ষিণ দিকে যিহূদা তাদের সীমাতে থাকবে এবং উত্তর দিকে যোষেফের গোষ্ঠী তাদের সীমাতে থাকবে।
\v 6 তোমরা দেশটিকে সাত অংশে ভাগ করে তার বর্ণনা লিখে আমার কাছে আনবে; আমি এই জায়গায় আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে তোমাদের জন্য গুলিবাঁট করব।
\s5
\v 7 কারণ তোমাদের মধ্যে লেবীয়দের কোন অংশ নেই, কারণ সদাপ্রভুর যাজকত্বপদ তাদের অধিকার; আর গাদ ও রূবেণ এবং মনঃশির অর্ধেক বংশ যর্দনের পূর্ব পারে যা সদাপ্রভুর দাস মোশির দেওয়া অধিকার তারা পেয়েছে।"
\s5
\v 8 পরে সেই লোকেরা উঠে চলে গেল; আর যারা সেই দেশের বর্ণনা লিখতে গেল, যিহোশূয় তাদেরকে এই আদেশ দিলেন, "তোমরা গিয়ে দেশের সমস্ত জায়গা ঘুরে দেশের বর্ণনা লিখে নিয়ে আমার কাছে ফিরে এস; তাতে আমি এই শীলোতে সদাপ্রভুর সামনে তোমাদের জন্য গুলিবাঁট করব।"
\v 9 পরে ঐ লোকেরা গিয়ে দেশের সমস্ত জায়গা ঘুরে দেখল এবং নগর অনুযায়ী সাত অংশ করে বইতে তার বর্ণনা লিখল; পরে শীলোতে অবস্থিত শিবিরে যিহোশূয়ের কাছে ফিরে গেল।
\s5
\v 10 আর যিহোশূয় শীলোতে সদাপ্রভুর সামনে তাদের জন্য গুলিবাঁট করলেন; যিহোশূয় সেই জায়গায় ইস্রায়েল-সন্তানদের বিভাগ অনুসারে দেশ তাদেরকে ভাগ করে দিলেন।
\s5
\v 11 আর গুলিবাঁট অনুযায়ী এক অংশ নিজেদের গোষ্ঠী অনুসারে বিন্যামীন-সন্তানদের বংশের নামে উঠল। গুলিবাঁটে নির্দিষ্ট তাদের সীমা যিহূদা-সন্তানদের ও যোষেফের-সন্তানদের মধ্যে হল।
\v 12 তাদের উত্তর দিকের সীমা যর্দন থেকে যিরীহোর উত্তর দিক দিয়ে গেল, পরে পার্বত্য প্রদেশের মধ্য দিয়ে পশ্চিম দিকে বৈৎ-আবনের মরুভূমি পর্যন্ত গেল।
\s5
\v 13 সেখান থেকে ঐ সীমা লূসে, লূসের দক্ষিণ দিকে অর্থাৎ বৈথেলের প্রান্ত পর্যন্ত গেল এবং নিচের বৈৎ-হোরোণের দক্ষিণে অবস্থিত পর্বত দিয়ে অটারোৎ-অদ্দরের দিকে নেমে গেল।
\v 14 সেখান থেকে ঐ সীমা ফিরে পশ্চিম দিকে, বৈৎ-হোরোণের দক্ষিণে অবস্থিত পর্বত থেকে দক্ষিণ দিকে গেল; আর যিহূদা-সন্তানদের কিরিয়ৎ বাল অর্থাৎ যার নাম কিরিয়ৎ-যিয়ারীম সেই নগর পর্যন্ত গেল; এটি পশ্চিম দিকে।
\s5
\v 15 আর দক্ষিণ দিকে কিরিয়ৎ-যিরারীমের প্রান্ত থেকে আরম্ভ হল এবং সে সীমা পশ্চিম দিকে বার হয়ে নিপ্তোহের জলের উনুই পর্যন্ত গেল।
\v 16 আর ঐ সীমা হিম্নোম সন্তানের উপত্যকার সামনে অবস্থিত ও রফায়ীম তলভূমির উত্তর দিকের পর্বতের প্রান্ত পর্যন্ত নেমে গেল এবং হিম্নোমের উপত্যকায়, যিবূষের দক্ষিণ প্রান্তে নেমে এসে ঐন্‌-রোগেলে গেল।
\s5
\v 17 আর উত্তরদিকে ফিরে ঐন্‌-শেমশে গেল এবং অদুম্মীম উপরে উঠে যাওয়ার পথের সামনে অবস্থিত গলীলোতের থেকে বার হয়ে রূবেণ-সন্তান বোহনের পাথর পর্যন্ত নেমে গেল।
\v 18 আর উত্তর দিকে অরাবা তলভূমির পাশ দিয়ে গিয়ে অরাবা তলভূমিতে নেমে গেল।
\s5
\v 19 আর ঐ সীমা উত্তর দিকে বৈৎ-হগ্লার প্রান্ত পর্যন্ত গেল; যর্দনের দক্ষিণ প্রান্তের লবণ-সমুদ্রের উত্তর খাড়ী সেই সীমার প্রান্ত ছিল; তা দক্ষিণ সীমা।
\v 20 আর পূর্ব দিকে যর্দন তার সীমা ছিল। চারিদিকে তার সীমা অনুসারে, নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে, বিন্যামীন-সন্তানদের এই অধিকার ছিল।
\s5
\v 21 নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে বিন্যামীন-সন্তানদের বংশের নগর যিরীহো, বৈৎ-হগ্লা, এমক-কশিশ,
\v 22 বৈৎ-অরাবা, সমারয়িম, বৈথেল,
\v 23 অব্বীম, পারা অফ্রা,
\v 24 কফর-অম্নোনী, অফ্‌নি ও গেবা; তাদের গ্রামের সঙ্গে বারটি নগর ছিল।
\s5
\v 25 গিবিয়োন, রামা, বেরোৎ,
\v 26 মিস্‌পী, কফীরা, মোৎসা,
\v 27 রেকম, যির্পেল, তরলা,
\v 28 সেলা, এলফ, যিবূষ অর্থাৎ যিরূশালেম, গিবিয়াৎ ও কিরিয়ৎ, তাদের গ্রামের সঙ্গে চৌদ্দটি নগর। নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে বিন্যামীন-সন্তানদের এই অধিকার।
\s5
\c 19
\p
\v 1 আর গুলিবাঁট অনুযায়ী দ্বিতীয় অংশ শিমিয়োনের নামে, নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে শিমিয়োন-সন্তানদের বংশের নামে উঠল; তাদের অধিকার যিহূদা-সন্তানদের অধিকারের মধ্যে হল।
\s5
\v 2 তাদের অধিকার হল বের্‌-শেবা, (বা শেবা)। মোলাদা,
\v 3 হৎসর-শূয়াল, বালা, এৎসম,
\v 4 ইল্‌তোলদ, বথুল, হর্মা,
\s5
\v 5 সিক্লগ, বৈৎ-মর্কাবোৎ, হৎসর-সুষা,
\v 6 বৈৎ লবায়োৎ ও শারূহণ; তাদের গ্রামের সঙ্গে তেরটি নগর।
\v 7 ঐন, রিম্মোণ, এথর ও আশন; তাদের গ্রামের সঙ্গে চারটি নগর।
\s5
\v 8 আর বালৎ-বের, [অর্থাৎ] দক্ষিণ দেশের রামা পর্যন্ত সেই সমস্ত নগরের চারিদিকের সমস্ত গ্রাম। নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে শিমিয়োন-সন্তানদের বংশের এই অধিকার।
\v 9 শিমিয়োন-সন্তানদের অধিকার যিহূদা-সন্তানদের অধিকারের এক ভাগ ছিল, কারণ যিহূদা-সন্তানদের অংশ তাদের প্রয়োজনের অপেক্ষা বেশি ছিল; অতএব শিমিয়োন-সন্তানদের তাদের অধিকারের মধ্যে অধিকার পেল।
\s5
\v 10 পরে গুলিবাঁট অনুযায়ী তৃতীয় অংশ নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে সবূলূন- সন্তানদের নামে উঠল; সারীদ পর্যন্ত তাদের অধিকারের সীমা হল।
\v 11 তাদের সীমা পশ্চিম দিকে অর্থাৎ মারালায় উঠে গেল এবং দব্বেশৎ পর্যন্ত গেল, যক্নিয়ামের সামনে স্রোত পর্যন্ত গেল।
\s5
\v 12 আর সারীদ হতে পূর্ব দিকে, সূর্য্য উদয়ের দিকে, ফিরে কিশ্‌লোৎ-তাবোরের সীমা পর্যন্ত গেল; পরে দাবরৎ পর্যন্ত বের হয়ে যাফিয়ে উঠে গেল।
\v 13 আর সেই জায়গা থেকে পূর্ব দিকে, সূর্য্য উদয়ের দিকে, হয়ে গাৎ-হেফর দিয়ে এৎ-কাৎসীন পর্যন্ত গেল এবং নেয়ের দিকে বিস্তৃত রিম্মোণে গেল।
\s5
\v 14 আর ঐ সীমা হন্নাথোনের উত্তর দিকে তা বেষ্টন করল, আর যিপ্তহেল উপত্যকা পর্যন্ত গেল।
\v 15 আর কটৎ, নহলাল, শিম্রোণ, যিদালা ও বৈৎ-লেহম; তাদের গ্রামের সঙ্গে বারটি নগর।
\v 16 নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে সবূলূন-সন্তানদের এই অধিকার; তাদের গ্রামের সঙ্গে এই সব নগরগুলি।
\s5
\v 17 পরে গুলিবাঁট অনুযায়ী চতুর্থ অংশ ইষাখরের নামে, নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে ইষাখর-সন্তানদের নামে উঠল।
\v 18 যিষ্রিয়েল, কসুল্লোৎ, শূনেম,
\v 19 হফারয়িম, শীয়োন, অনহরৎ,
\s5
\v 20 রব্বীৎ, কিশিয়োন, এবস,
\v 21 রেমৎ, ঐন্‌-গন্নীম, ঐন্‌-হদ্দা ও বৈৎ-পৎসেস তাদের অধিকার হল।
\v 22 আর সেই সীমা তাবোর, শহৎসূমা ও বৈৎ-শেমশ পর্যন্ত গেল, আর যর্দন তাদের সীমার প্রান্ত হল; তাদের গ্রামের সঙ্গে ষোলটি নগর।
\s5
\v 23 নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে ইষাখর-সন্তানদের বংশের এই অধিকার; তাদের গ্রামের সঙ্গে এই সব নগরগুলি।
\s5
\v 24 পরে গুলিবাঁট অনুযায়ী পঞ্চম অংশ নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে আশের-সন্তানদের নামে উঠল।
\v 25 তাদের সীমা হিল্‌কৎ, হলী, বেটন, অক্‌ষফ, অলম্মেলক,
\v 26 অমাদ, মিশাল এবং পশ্চিমদিকে কর্মিল ও শীহোর-লিব্‌নৎ পর্যন্ত গেল।
\s5
\v 27 আর সূর্য্যোদয় দিকে বৈৎ-দাগোনের অভিমুখে ঘুরে সবূলূন ও উত্তরদিকে ষিপ্তহেল উপত্যকা, বৈৎ-এমক ও ন্যীয়েল পর্যন্ত গেল, পরে বাঁ দিকে কাবূলে
\v 28 এবং এব্রোণে, রহোবে, হম্মোনে ও কান্নাতে এবং মহাসীদোন পর্যন্ত গেল। পরে সে সীমা ঘুরে রামায় ও প্রাচীর-বেষ্টিত সোর নগরে গেল, পরে সে সীমা ঘুরে হোষাতে গেল
\s5
\v 29 এবং অকষীয় প্রদেশের সমুদ্রতীরে,
\v 30 আর উম্মা, অফেক ও রহোব তার প্রান্ত হল; তাদের গ্রামগুলির সঙ্গে বাইশটি নগর।
\s5
\v 31 নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে আশের-সন্তানদের বংশের এই অধিকার; তাদের গ্রামের সঙ্গে এই সব নগরগুলি।
\s5
\v 32 পরে গুলিবাঁট অনুযায়ী ষষ্ঠ অংশ নপ্তালি-সন্তানদের নামে, নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে নপ্তালি-সন্তানদের নামে উঠল।
\v 33 তাদের সীমা হেলফ অবধি, সানন্নীমের অলোন বৃক্ষ পর্যন্ত, অদামী-নেকব ও যব্‌নিয়েল দিয়ে লক্কুম পর্যন্ত গেল ও তার শেষভাগ যর্দনে ছিল।
\v 34 আর ঐ সীমা পশ্চিম দিকে ফিরে অস্‌নোৎ-তাবোর পর্যন্ত গেল এবং সেখান দিয়ে হুক্কোক পর্যন্ত গেল; আর দক্ষিণে সবূলূন পর্যন্ত ও পশ্চিমে আশের পর্যন্ত ও সূর্য্য উদয়ের দিকে যর্দনের কাছে যিহূদা পর্যন্ত গেল।
\s5
\v 35 আর দেওয়ালে ঘেরা নগর সিদ্দীম, সের, হম্মৎ, রক্কৎ, কিন্নেরৎ,
\v 36 অদামা, রামা, হাৎসোর,
\v 37 কেদশ, ইদ্রিয়ী, ঐন্‌-হাৎসোর,
\s5
\v 38 যিরোণ, মিগদল-এল, হোরেম, বৈৎ-অনাৎ ও বৈৎ শেমশ; তাদের গ্রামের সঙ্গে ঊনিশটি নগর।
\v 39 নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে নপ্তালি-সন্তানদের বংশের এই অধিকার; তাদের গ্রামের সঙ্গে এই সব নগরগুলি।
\s5
\v 40 পরে গুলিবাঁট অনুযায়ী সপ্তম অংশ নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে দান-সন্তানদের নামে উঠল।
\v 41 তাদের অধিকারের সীমা সরা, ইষ্টায়োল, ঈর-শেমশ,
\v 42 শালবীন, অয়ালোন, যিৎলা,
\s5
\v 43 এলোন, তিম্না, ইক্রোণ,
\v 44 ইল্‌তকী, গিব্বথোন, বালৎ,
\v 45 যিহূদ, বনে-বরক, গাৎ-রিম্মোণ,
\v 46 মেয়র্কোন, রক্কোন ও যাফোর সামনের অঞ্চল।
\s5
\v 47 আর দান-সন্তানদের সীমা সেই সমস্ত স্থান অতিক্রম করল; কারণ দান-সন্তানেরা লেশম নগরের বিরুদ্ধে গিয়ে যুদ্ধ করল এবং তা অধিকার করে তরোয়াল দিয়ে আক্রমন করল এবং অধিকারের সঙ্গে তার মধ্যে বাস করল এবং নিজেদের পূর্বপুরুষ দানের নাম অনুসারে লেশমের নাম দান রাখল।
\v 48 নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে দান-সন্তানদের বংশের এই অধিকার; তাদের গ্রামের সঙ্গে এই সব নগরগুলি।
\s5
\v 49 এইভাবে নিজের নিজের সীমা অনুসারে অধিকারের জন্য তারা দেশ বিভাগের কাজ শেষ করল; আর ইস্রায়েল-সন্তানরা তাদের মধ্যে নূনের পুত্র যিহোশূয়কে এক অধিকার দিল।
\v 50 তারা সদাপ্রভুর বাক্য অনুসারে তিনি যে নগর চেয়েছিলেন অর্থাৎ পাহাড়ি অঞ্চল ইফ্রয়িম প্রদেশে তিম্নৎ-সেরহ তাঁকে দিল; তাতে তিনি ঐ নগর নির্মান করে সেখানে বাস করলেন।
\s5
\v 51 এই সমস্ত অধিকার ইলিয়াসর যাজক, নূনের পুত্র যিহোশূয় ও ইস্রায়েল-সন্তানদের বংশের সমস্ত পিতৃকুলপতিদের শীলোতে সদাপ্রভুর সামনে সমাগম-তাঁবুর দরজার কাছে গুলিবাঁটের মাধ্যমে দিলেন। এইভাবে তাঁরা দেশ ভাগের কাজ শেষ করলেন।
\s5
\c 20
\s ছয়টি আশ্রয় নগর নির্ণয়।
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু যিহোশূয়কে বললেন,
\v 2 "তুমি ইস্রায়েল-সন্তানদেরকে বল; আমি মোশির মাধ্যমে তোমাদের কাছে যে সমস্ত নগরের কথা বলেছি, তোমরা তোমাদের জন্য সেই সমস্ত আশ্রয়-নগর নির্দিষ্ট কর।
\v 3 তাতে যে ব্যক্তি অনিচ্ছাকৃতভাবে ও অজান্তে কাউকে হত্যা করে, সেই হত্যাকারী সেখানে পালাতে পারবে এবং সেই নগরগুলি রক্তের প্রতিশোধদাতা থেকে তোমাদের রক্ষার স্থান হবে।
\s5
\v 4 আর সে তার মধ্যে কোন এক নগরে পালিয়ে যাবে এবং নগরের দরজার প্রবেশ স্থানে দাঁড়িয়ে নগরের প্রাচীনদের কাছে তার কথা বলবে; পরে তারা নগরের মধ্যে তাদের কাছে তাকে নিয়ে এসে তাদের মধ্যে বাস করতে স্থান দেবে।
\s5
\v 5 আর রক্তের প্রতিশোধদাতা দৌড়ে তার পিছনে এলে তারা তার হাতে সেই হত্যাকারীকে সমর্পণ করবে না; কারণ সে অজান্তে তার প্রতিবেশীকে আঘাত করেছিল, সে আগে তাকে ঘৃণা করে নি।
\v 6 অতএব যতক্ষণ না সে বিচারের জন্য মণ্ডলীর সামনে দাঁড়ায় এবং সেই সময়ের মহাযাজকের মৃত্যু না হয়, ততদিন সে ঐ নগরে বাস করবে; পরে সেই হত্যাকারী তার নগরে ও তার বাড়িতে, যে নগর থেকে সে পালিয়ে এসেছিল, সেই স্থানে ফিরে যাবে।"
\s5
\v 7 তাতে তারা নপ্তালির পাহাড়ি অঞ্চলের গালীলের কেদশ, ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলের শিখিম ও যিহূদার পাহাড়ি অঞ্চলের কিরিয়ৎ-অর্ব অর্থাৎ হিব্রোণ আলাদা করল।
\v 8 আর যিরীহোর কাছে যর্দনের পূর্বপারে তারা রূবেণ বংশের অধিকার থেকে সমভূমির মরুভূমিতে অবস্থিত বেৎসর ও গাদ বংশের অধিকার থেকে গিলিয়দে অবস্থিত রামোৎ ও মনঃশি বংশের অধিকার থেকে বাশনে অবস্থিত গোলন নির্ণয় করল।
\s5
\v 9 কেউ অনিচ্ছাকৃতভাবে মানুষ হত্যা করলে, যতক্ষণ না মণ্ডলীর সামনে দাঁড়ায়, ততদিন যেন সেই স্থানে পালিয়ে যেতে পারে ও রক্তের প্রতিশোধদাতার হাতে না মরে, এই জন্য সমস্ত ইস্রায়েল-সন্তানদের জন্য ও তাদের মধ্যে বসবাসকারী বিদেশীদের জন্য এই সমস্ত নগর নির্দিষ্ট করা হল।
\s5
\c 21
\s লেবীয়দের প্রাপ্য নগরগুলি।
\p
\v 1 পরে লেবীয়দের পিতৃকুলপতিরা ইলিয়াসর যাজকের, নূনের পুত্র যিহোশূয়ের ও ইস্রায়েল-সন্তানদের বংশ সকলের পিতৃকুলপতিদের কাছে গেলেন,
\v 2 ও কনান দেশের শীলোতে তাঁদেরকে বললেন, "আমাদের বসবাস করার জন্য নগর ও পশুপালের জন্য মাঠ দেওয়ার আদেশ সদাপ্রভু মোশির মাধ্যমে দিয়েছিলেন।"
\s5
\v 3 তাতে সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে ইস্রায়েল-সন্তানরা নিজেদের অধিকার থেকে লেবীয়দের এই এই নগর ও সেগুলির মাঠও দিল;
\s5
\v 4 কহাতীয় গোষ্ঠীদের নামে গুলি উঠল; তাতে লেবীয়দের মধ্যে হারোণ যাজকের সন্তানরা গুলিবাঁটের মাধ্যমে যিহূদা বংশ, শিমিয়োনীয়দের বংশ ও বিন্যামীন বংশ থেকে তেরটি নগর পেল।
\v 5 আর কহাতের অবশিষ্ট সন্তানেরা গুলিবাঁটের মাধ্যমে ইফ্রয়িম বংশের গোষ্ঠীর কাছ থেকে এবং দান বংশ ও মনঃশির অর্ধেক বংশ থেকে দশটি নগর পেল।
\s5
\v 6 আর গের্শোন-সন্তানেরা গুলিবাঁটের মাধ্যমে ইষাখর বংশের গোষ্ঠীর কাছ থেকে এবং আশের বংশ, নপ্তালি বংশ ও বাশনে অবস্থিত মনঃশির অর্ধেক বংশ থেকে তেরটি নগর পেল।
\v 7 আর মরারি-সন্তানেরা নিজেদের গোষ্ঠী অনুসারে রূবেণ বংশ, গাদ বংশ ও সবূলূন বংশ থেকে বারটি নগর পেল।
\s5
\v 8 এইভাবে ইস্রায়েল-সন্তানেরা গুলিবাঁট করে লেবীয়দের এই সব নগর ও সেগুলির মাঠও দিল, যেমন সদাপ্রভু মোশির মাধ্যমে আদেশ দিয়েছিলেন।
\v 9 তারা যিহূদা-সন্তানদের বংশের ও শিমিয়োন-সন্তানদের বংশের অধিকার থেকে এই এই নামের নগর দিল।
\v 10 লেবীর সন্তান কহাতীয় গোষ্ঠীদের মধ্যবর্ত্তী হারোণ-সন্তানদের সে সমস্ত হল; কারণ তাদের নামে প্রথম গুলি উঠল।
\s5
\v 11 তার ফলে তারা অনাকের পিতা অর্বের কিরিয়ৎ-অর্ব, অর্থাৎ পাহাড়ি অঞ্চল যিহূদা প্রদেশের হিব্রোণ ও তার চারিদিকের মাঠ তাদেরকে দিল।
\v 12 কিন্তু ঐ নগরের ক্ষেত ও সমস্ত গ্রাম তারা অধিকার করার জন্য যিফুন্নির পুত্র কালেবকে দিল।
\s5
\v 13 তারা হারোণ যাজকের সন্তানদেরকে মাঠগুলির সঙ্গে হত্যাকারীদের আশ্রয়-নগর হিব্রোণ দিল এবং পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে লিব্‌না,
\v 14 পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে যত্তীর,
\v 15 পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে ইষ্টমোয়, পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে হোলোন,
\v 16 পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে দবীর, পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে ঐন, পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে যুটা ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে বৈৎ-শেমশ, ঐ দুই বংশের অধিকার থেকে এই নয়টি নগর দিল।
\s5
\v 17 আর বিন্যামীন বংশের অধিকার থেকে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে গিবিয়োন,
\v 18 পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে গেবা, পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে অনার্থোৎ ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে অল্‌মোন, এই চারটি নগর দিল।
\v 19 মোট পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে তেরটি নগর হারোণ-সন্তান যাজকদের অধিকার হল।
\s5
\v 20 আর কহাতের অবশিষ্ট সন্তানদের অর্থাৎ কহাৎ-সন্তান লেবীয়দের সমস্ত গোষ্ঠী ইফ্রয়িম বংশের অধিকার থেকে নিজেদের অধিকারের জন্য নগর পেল।
\v 21 এবং হত্যাকারীর আশ্রয়-নগর পাহাড়ি অঞ্চলের ইফ্রয়িম প্রদেশের শিখিম ও তার পশুপালনের মাঠগুলি এবং পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে গেষর;
\v 22 ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে কিব্‌সয়িম ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে বৈৎ-হোরোণ; এই চারটি নগর তারা তাদেরকে দিল।
\s5
\v 23 আর দান বংশের অধিকার থেকে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে ইল্‌তকী, পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে গিব্বথোন,
\v 24 পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে অয়ালোন ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে গাৎ-রিম্মোণ, এই চারটি নগর দিল।
\s5
\v 25 আর মনঃশির অর্ধেক বংশের অধিকার থেকে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে তানক ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে গাৎ-রিম্মোণ, এই দুইটি নগর দিল।
\v 26 কহাতের অবশিষ্ট সন্তানদের গোষ্ঠীগুলির জন্য মোট পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে এই দশটি নগর দিল।
\s5
\v 27 পরে তারা লেবীয়দের গোষ্ঠীগুলির মধ্যে গের্শোন-সন্তানদের মনঃশির অর্ধেক বংশের অধিকার থেকে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে হত্যাকারীর আশ্রয়-নগর বাশনের গোলন এবং পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে বীষ্টরা, এই দুইটি নগর দিল।
\s5
\v 28 আর ইসাখর বংশের অধিকার থেকে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে কিশিয়োন, পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে দাবরৎ,
\v 29 পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে যর্মূৎ ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে ঐন্‌-গন্নীম; এই চারিটি নগর দিল।
\v 30 আর আশের বংশের অধিকার থেকে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে মিশাল, পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে আব্দোন,
\v 31 পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে হিল্‌কৎ ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে রহোব; এই চারিটি নগর দিল।
\s5
\v 32 আর নপ্তালি বংশের অধিকার থেকে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে নরহন্তার আশ্রয়-নগর গালীলস্থ কেদশ, এবং পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে হম্মোৎ-দোর, ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে কর্ত্তন, এই তিনটী নগর দিল।
\v 33 আপন আপন গোষ্ঠী অনুসারে গের্শোনীয়েরা সমস্ত পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে এই তেরটী নগর পেল।
\s5
\v 34 পরে তারা মরারি-সন্তানগণের গোষ্ঠীদিগকে অর্থাৎ অবশিষ্ট লেবীয়দিগকে সবূলূন বংশের অধিকার থেকে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে যক্লিয়াম, পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে কার্ত্তা,
\v 35 পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে দিম্না, ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে নহলোল এই চারিটী নগর দিল।
\s5
\v 36 আর রূবেণ বংশের অধিকার থেকে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে বেৎসর, পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে যহস,
\v 37 পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে কদেমোৎ ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে মেফাৎ, এই চারিটী নগর দিল।
\v 38 আর গাদ বংশের অধিকার থেকে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে হত্যাকারীর আশ্রয়-নগর গিলিয়দস্থ রামোৎ, এবং পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে মহনয়িম,
\s5
\v 39 পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে হিষ্‌বোণ ও পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে যাসের, সব মিলিয়ে এই চারটি নগর দিল।
\v 40 এইভাবে লেবীয়দের অবশিষ্ট সমস্ত গোষ্ঠী, অর্থাৎ মরারি-সন্তানের নিজেরদের গোষ্ঠী অনুসারে গুলিবাঁটের মাধ্যমে মোট বারটি নগর পেল।
\s5
\v 41 ইস্রায়েল-সন্তানদের অধিকারের মধ্যে পশুপালনের মাঠগুলির সঙ্গে মোট আট-চল্লিশটি নগর লেবীয়দের হল।
\v 42 সেই সমস্ত নগরের মধ্যে প্রত্যেক নগরের চারিদিকে পশুপালনের মাঠ ছিল; এইভাবেই সেই সমস্ত নগরে তা ছিল।
\s5
\v 43 সদাপ্রভু লোকদের পূর্বপুরুষদের কাছে যে দেশের বিষয় শপথ করেছিলেন, সেই সম্পূর্ণ দেশ তিনি ইস্রায়েলকে দিলেন এবং তারা তা অধিকার করে সেখানে বসবাস করল।
\v 44 সদাপ্রভু তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে করা তাঁর সমস্ত প্রতিজ্ঞা অনুসারে চারিদিকে তাদেরকে বিশ্রাম দিলেন; তাদের সমস্ত শত্রুর মধ্যে কেউই তাদের সামনে দাঁড়াতে পারল না; সদাপ্রভু তাদের সমস্ত শত্রুকে তাদের হাতে সমর্পণ করলেন।
\v 45 সদাপ্রভু ইস্রায়েল-কুলের কাছে যে সমস্ত মঙ্গলের কথা বলেছিলেন, তার মধ্যে একটি কথাও নিষ্ফল হল না; সমস্তই সফল হল।
\s5
\c 22
\s যর্দনের পূর্ব পারের গোষ্ঠীদের নিজেদের দেশে যাত্রা।
\p
\v 1 সেই সময়ে যিহোশূয় রূবেণীয় ও গাদীয়দেরকে এবং মনঃশির অর্ধেক বংশকে ডেকে বললেন,
\v 2 "সদাপ্রভুর দাস মোশি তোমাদেরকে যে সমস্ত আদেশ দিয়েছিলেন, সে সমস্তই তোমরা পালন করেছ এবং আমি তোমাদেরকে যে সমস্ত আদেশ দিয়েছি, সেই সমস্ত বিষয়ে আমার কথাও শুনেছ।
\v 3 সেদিন থেকে আজ পর্যন্ত তোমরা তোমাদের ভাইদেরকে ছেড়ে চলে যাও নি, কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ পালন করে চলেছ।
\s5
\v 4 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তোমাদের ভাইদেরকে বিশ্রাম দিয়েছেন; অতএব এখন তোমরা তোমাদের তাঁবুতে, অর্থাৎ সদাপ্রভুর দাস মোশি যর্দনের অন্য পারে যে দেশ তোমাদেরকে দিয়েছেন, তোমাদের সেই অধিকার-দেশে ফিরে যাও।
\v 5 শুধুমাত্র এই সমস্ত বিষয়ে খুব যত্নের সঙ্গে পালন করো, সদাপ্রভুর দাস মোশি তোমাদেরকে যে আদেশ ও ব্যবস্থা দিয়েছেন, তা পালন করো, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করো, তাঁর সমস্ত পথকে অনুসরণ করো, তাঁর সমস্ত আদেশ পালন করো, তাঁতে আসক্ত থেকো এবং সমস্ত হৃদয় ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তাঁর সেবা করো।"
\v 6 পরে যিহোশূয় তাদেরকে আশীর্বাদ করে বিদায় করলেন; তারা তাদের তাঁবুতে চলে গেল।
\s5
\v 7 মোশি মনঃশির অর্ধেক বংশকে বাশনে অধিকার দিয়েছিলেন এবং যিহোশূয় তার অন্য অর্ধেক বংশকে যর্দনের পশ্চিম পারে তাদের ভাইদের মধ্যে অধিকার দিয়েছিলেন। আর তাদের তাঁবুতে বিদায় করার সময়ে যিহোশূয় তাদেরকে আশীর্বাদ করলেন,
\v 8 আর বললেন, "তোমরা প্রচুর সম্পত্তি, প্রচুর পশুপাল এবং রুপো, সোনা, পিতল, লোহা ও অনেক পোশাক সঙ্গে নিয়ে তোমাদের তাঁবুতে ফিরে যাও, তোমাদের শত্রুদের কাছ থেকে লুঠ করা জিনিসপত্র তোমাদের ভাইদের সঙ্গে ভাগ করে নাও।
\s5
\v 9 পরে রূবেণ-সন্তানেরা, গাদ-সন্তানেরা ও মনঃশির অর্ধেক বংশ কনান দেশের শীলোতে ইস্রায়েল-সন্তানদের কাছ থেকে ফিরে গেল, মোশির মাধ্যমে সদাপ্রভুর যে বাক্য বলা হয়েছিল সেই বাক্য অনুসারে পাওয়া গিলিয়দ দেশের, তাদের অধিকার-দেশের দিকে যাওয়ার জন্য যাত্রা করল।
\s5
\v 10 আর কনান দেশের যর্দন অঞ্চলে উপস্থিত হলে রূবেণ-সন্তানেরা, গাদ-সন্তানেরা ও মনঃশির অর্ধেক বংশ সেই স্থানে যর্দনের পাশে এক যজ্ঞবেদি তৈরী করল, সেই বেদি দেখতে বড়।
\v 11 তখন ইস্রায়েল-সন্তানেরা শুনতে পেল, দেখ, রূবেণ-সন্তানেরা, গাদ-সন্তানেরা ও মনঃশির অর্ধেক বংশ কনান দেশের সামনে যর্দন অঞ্চলে, ইস্রায়েল-সন্তানদের পারে, এক যজ্ঞবেদি তৈরী করেছে।
\s5
\v 12 ইস্রায়েল-সন্তানেরা যখন এই কথা শুনল, তখন ইস্রায়েল-সন্তানদের সমস্ত মণ্ডলী তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য শীলোতে সমবেত হল।
\s5
\v 13 পরে ইস্রায়েল-সন্তানেরা রূবেণ-সন্তানদের, গাদ-সন্তানদের ও মনঃশির অর্ধেক বংশের কাছে গিলিয়দ দেশে ইলিয়াসর যাজকের পুত্র পীনহসকে
\v 14 এবং তাঁর সঙ্গে দশ জন নেতাকে, ইস্রায়েলের প্রত্যেক বংশ থেকে এক এক জন পিতৃকুলের প্রধানকে পাঠাল; তাঁরা এক এক জন ইস্রায়েলের হাজার জনের মধ্যে তাদের পিতৃকুলের প্রধান ছিলেন।
\s5
\v 15 তাঁরা গিলিয়দ দেশে রূবেণ-সন্তানদের গাদ-সন্তানদের ও মনঃশির অর্ধেক বংশের কাছে গিয়ে তাদেরকে এই কথা বললেন,
\v 16 "সদাপ্রভুর সমস্ত মণ্ডলীকে এই কথা বলছেন, আজ সদাপ্রভুর বিপরীতে বিদ্রোহী হওয়ার জন্য তোমাদের জন্য এক যজ্ঞবেদি তৈরী করাতে তোমরা আজ সদাপ্রভুকে অনুসরণ করার থেকে ফিরে যাওয়ার জন্য ইস্রায়েলের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে এই যে সত্যলঙ্ঘন করলে, এটা কি?
\s5
\v 17 যে অপরাধের জন্য সদাপ্রভুর মণ্ডলীর মধ্যে মহামারী হয়েছিল এবং যা থেকে আমরা এখনও পবিত্র হয়নি, পিয়োর-বিষয়ে সেই অপরাধ কি আমাদের কাছে খুবই ছোট?
\v 18 এই জন্যই কি আজ সদাপ্রভুকে অনুসরণ করার থেকে ফিরে যেতে চাও? তোমরা আজ সদাপ্রভুর বিদ্রোহী হলে তিনি কাল ইস্রায়েলের সমস্ত মণ্ডলীর প্রতি ক্রুদ্ধ হবেন।
\s5
\v 19 যাই হোক, তোমাদের অধিকার-দেশ যদি অশুচী হয়, তবে পার হয়ে সদাপ্রভুর অধিকার দেশে, যেখানে সদাপ্রভুর সমাগম তাঁবু আছে, সেখানে গিয়ে আমাদেরই মধ্যে অধিকার গ্রহণ কর; কিন্তু আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদি ছাড়া তোমাদের জন্য আর অন্য কোন যজ্ঞবেদি তৈরী করার মাধ্যমে সদাপ্রভুর বিদ্রোহী ও আমাদের বিদ্রোহী হয়ো না।
\v 20 সেরহের ছেলে আখন বর্জ্জিত বস্তু সম্বন্ধে আজ্ঞার অবাধ্য হলে ঈশ্বরের ক্রোধ কি ইস্রায়েলের সমস্ত মণ্ডলীর প্রতি উপস্থিত হয়নি? সে ব্যক্তি তো তার অপরাধে একা বিনষ্ট হয় নি।"
\s5
\v 21 তখন রূবেন-সন্তানেরা, গাদ-সন্তানেরা ও মনঃশির অর্ধেক বংশ ইস্রায়েলের সেই সহস্রপতিদেরকে এই উত্তর দিল;
\v 22 "ঈশ্বরদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, ঈশ্বরদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তিনিই জানেন এবং ইস্রায়েল, সেও জানবে; যদি আমরা সদাপ্রভুর বিপরীতে বিদ্রোহ-ভাবে কিম্বা আজ্ঞার অবাধ্য হয়ে এটি করে থাকি, তবে আজ আমাদের রক্ষা করো না।
\v 23 আমরা আমাদের জন্য যে যজ্ঞবেদি তৈরী করেছি, তা যদি সদাপ্রভুকে অনুসরণ করার থেকে ফিরে যাওয়ার জন্য, কিম্বা তার উপরে হোম বা ভক্ষ্য-নৈবেদ্য উৎসর্গ করার জন্য অথবা মঙ্গলার্থক বলিদান উৎসর্গ করার জন্য তৈরী করে থাকি, তবে সদাপ্রভু নিজেই তার প্রতিফল দিন।
\s5
\v 24 আমরা বরং ভয় করে, একটি বিশেষ উদ্দেশ্যর জন্য এটি করেছি, হয়তো কি জানি, ভবিষ্যতে তোমাদের সন্তানেরা আমাদের সন্তানদেরকে এই কথা বলবে, 'ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সঙ্গে তোমাদের সম্পর্ক কি?
\s5
\v 25 হে রূবেন-সন্তানেরা, গাদ-সন্তানেরা, তোমাদের ও আমাদের উভয়ের মধ্যে সদাপ্রভু যর্দনকে সীমা করে রেখেছেন; সদাপ্রভুতে তোমাদের কোন অধিকার নেই।' এইভাবে যদি তোমাদের সন্তানেরা আমাদের সন্তানদেরকে সদাপ্রভুর ভয় ত্যাগ করায়।
\s5
\v 26 এই জন্য আমরা বললাম, 'এস, আমরা এক বেদি তৈরীর উদ্যোগ নিই, হোমের বা বলিদানের জন্য নয়;
\v 27 কিন্তু আমাদের হোম, আমাদের বলি ও আমাদের মঙ্গলার্থক উপহারের মাধ্যমে সদাপ্রভুর সামনে তাঁকে সেবা করার অধিকার আমাদের আছে, এর প্রমাণের জন্য তা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে এবং আমাদের পরে আমাদের ভাবী বংশের মধ্যে সাক্ষী হবে; তাতে ভবিষ্যতে তোমাদের সন্তানেরা আমাদের সন্তানদেরকে বলতে পারবে না যে, সদাপ্রভুতে তোমাদের কোন অংশ নেই।
\s5
\v 28 আমরা বলেছিলাম, 'তারা যদি ভবিষ্যতে আমাদের কিম্বা আমাদের বংশকে এই কথা বলে, তখন আমরা বলব, তোমরা সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির ঐ প্রতিরূপ দেখ, আমাদের পূর্বপুরুষরা এটি তৈরী করেছিলেন; হোমের বা বলিদানের জন্য নয়, কিন্তু তা আমাদের ও তোমাদের মধ্যে সাক্ষীস্বরূপ।
\v 29 আমরা যে হোমের, ভক্ষ্য নৈবেদ্যের কিম্বা বলিদানের জন্য আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সমাগম তাঁবুর সামনে অবস্থিত তাঁর যজ্ঞবেদি ছাড়া অন্য যজ্ঞবেদি তৈরী করার মাধ্যমে সদাপ্রভুর বিদ্রোহী হব, বা আমরা যে সদাপ্রভুকে অনুসরণ করার থেকে আজ ফিরে যাব, তা দূরে থাকুক।"
\s5
\v 30 তখন পীনহস যাজক, তাঁর সঙ্গে মণ্ডলীর নেতারা ও ইস্রায়েলের সহস্রপতিরা রূবেণ-সন্তানদের, গাদ-সন্তানদের ও মনঃশি-সন্তানদের এই কথা শুনে সন্তুষ্ট হলেন।
\v 31 আর ইলিয়াসর যাজকের পুত্র পীনহস রূবেণ-সন্তানদের, গাদ-সন্তানদের ও মনঃশি-সন্তানদের বললেন, "আজ আমরা জানতে পারলাম যে, সদাপ্রভু আমাদের মধ্যে আছেন, কারণ তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে এই আদেশের অবাধ্য হও নি; এখন তোমরা ইস্রায়েল-সন্তানদেরকে সদাপ্রভুর হাত থেকে উদ্ধার করলে।"
\s5
\v 32 পরে ইলিয়াসর যাজকের পুত্র পীনহস ও অধ্যক্ষগণ রূবেণ-সন্তানদের, গাদ-সন্তানদের কাছ থেকে, গিলিয়দ দেশ থেকে, কনান দেশে ইস্রায়েল-সন্তানদের কাছে ফিরে এসে তাদেরকে সংবাদ দিলেন।
\v 33 তখন ইস্রায়েল-সন্তানেরা ঐ বিষয়ে সন্তুষ্ট হল; আর ইস্রায়েল-সন্তানেরা ঈশ্বরের ধন্যবাদ করল এবং রূবেণ-সন্তানদের, গাদ-সন্তানদের বসবাসের স্থান ধ্বংস করার জন্য যুদ্ধে যাওয়ার বিষয়ে আর কিছু বলল না।
\s5
\v 34 পরে রূবেণ-সন্তানেরা ও গাদ-সন্তানেরা সেই বেদির নাম [এদ] রাখল, কারণ [তারা বলল], "সদাপ্রভুই যে ঈশ্বর, তা আমাদের মধ্যে তাঁর সাক্ষী [এদ] হবে।
\s5
\c 23
\s ইস্রায়েলীয়দের প্রতি যিহোশূয়ের উপদেশ।
\p
\v 1 অনেক দিন পরে, যখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে-তাদের চারদিকের সমস্ত শত্রু থেকে বিশ্রাম দিলেন এবং যিহোশূয় বৃদ্ধ ও গতবয়স্ক হলেন;
\v 2 তখন যিহোশূয় সমস্ত ইস্রায়েলকে, তাদের প্রাচীনবর্গ, নেতাদের, বিচারকর্তাদের ও শাসকদেরকে ডেকে বললেন, "আমি বৃদ্ধ ও গতবয়স্ক হয়েছি।
\v 3 তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের জন্য এই সব জাতির প্রতি যে যে কাজ করেছেন, তা তোমরা দেখেছ; কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজেই তোমাদের পক্ষে যুদ্ধ করেছেন।
\s5
\v 4 দেখ, যে যে জাতি অবশিষ্ট আছে এবং যর্দন পর্যন্ত সূর্য্য অস্ত যাওয়ার দিকে মহাসমুদ্র পর্যন্ত যে সমস্ত জাতিকে আমি ধ্বংস করেছি, তাদের দেশ আমি তোমাদের সমস্ত বংশের অধিকারের জন্য গুলিবাঁটের মাধ্যমে ভাগ করেছি।
\v 5 আর তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তিনিই তোমাদের সামনে থেকে তাদেরকে ঠেলে ফেলে দেবেন, তোমাদের দৃষ্টি থেকে তাড়িয়ে দেবেন, তাতে তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কথা অনুসারে তাদের দেশ অধিকার করবে।
\s5
\v 6 অতএব তোমরা মোশির ব্যবস্থাগ্রন্থে লেখা সমস্ত কথা পালন ও রক্ষা করার জন্য সাহস কর; তাঁর ডান দিকে কিম্বা বাঁ দিকে যেও না।
\v 7 আর এই জাতিগুলির যে অবশিষ্ট লোক তোমাদের মধ্যে আছে, তাদের মধ্যে প্রবেশ করো না, তাদের দেবতাদের নাম নিয়ো না, তাদের নামে শপথ করো না এবং তাদের সেবা ও তাদের প্রণাম করো না;
\v 8 কিন্তু আজ পর্যন্ত যেমন করে আসছ, তেমনই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুতে আসক্ত থাক।
\s5
\v 9 কেননা সদাপ্রভু তোমাদের সামনে থেকে বড় ও শক্তিশালী জাতিদের তাড়িয়ে দিয়েছেন; কিন্তু তোমাদের সামনে আজ পর্যন্ত কেউ দাঁড়াতে পারে নি।
\v 10 তোমাদের একজন হাজার জনকে তাড়িয়ে দেয়; কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে যেমন বলেছিলেন, সেই অনুসারে তিনি নিজেই তোমাদের পক্ষে যুদ্ধ করছেন।
\v 11 অতএব তোমরা তোমাদের প্রাণের বিষয়ে খুব সাবধান হয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে প্রেম করো।
\s5
\v 12 নাহলে কোনভাবে যদি পিছনে ফিরে যাও এবং এই জাতিগুলির শেষ যে লোকেরা তোমাদের মধ্যে অবশিষ্ট আছে, তাদের প্রতি আসক্ত হও, তাদের সঙ্গে বিয়ের সম্বন্ধ স্থাপন কর এবং তাদের সঙ্গে তোমরা ও তোমাদের সঙ্গে তারা মেলামেশা করে;
\v 13 তবে নিশ্চয় জানবে, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের দৃষ্টি থেকে এই জাতিগুলিকে আর তাড়িয়ে দেবেন না, কিন্তু তারা তোমাদের ফাঁদ ও জাল স্বরূপ হবে এবং তোমাদের পিঠের চাবুক ও তোমাদের চোখের কাঁটা হয়ে থাকবে, যে পর্যন্ত তোমরা এই উত্তম ভূমি থেকে ধ্বংস না হও, যে ভূমি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে দিয়েছেন।
\s5
\v 14 আর দেখ, সমস্ত জগতের যে পথ, আজও আমি সেই পথে চলেছি; আর তোমরা সমস্ত হৃদয়ে ও সমস্ত প্রাণে এটা জেনে রাখো যে, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের বিষয়ে যত মঙ্গলবাক্য বলেছিলেন, তার মধ্যে একটিও বিফল হয় নি; তোমাদের জন্য সমস্তই সফল হয়েছে, তার একটিও বিফল হয় নি।
\v 15 কিন্তু তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের কাছে যে সমস্ত মঙ্গলবাক্য বলেছিলেন, তা যেমন তোমাদের পক্ষে সফল হয়েছিল, সেইরকম সদাপ্রভু তোমাদের প্রতি সমস্ত অমঙ্গলবাক্যও সফল করবেন, যে পর্যন্ত না তিনি তোমাদেরকে এই উত্তম ভূমি থেকে ধ্বংস করেন, যে ভূমি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদেরকে দিয়েছেন।
\s5
\v 16 তোমরা যদি তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া নিয়ম লঙ্ঘন কর, গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা কর ও তাদের কাছে প্রণাম কর, তবে তোমাদের প্রতি সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হবে এবং তাঁর দেওয়া এই উত্তম দেশ থেকে তোমরা খুব তাড়াতাড়িই ধ্বংস হবে।"
\s5
\c 24
\p
\v 1 যিহোশূয় ইস্রায়েলের সমস্ত বংশকে শিখিমে একত্র করলেন ও ইস্রায়েলের প্রাচীনবর্গ, নেতাদের, বিচারকর্তাদের ও শাসকদের ডাকলেন, তাতে তাঁরা ঈশ্বরের সামনে উপস্থিত হলেন।
\v 2 তখন যিহোশূয় সমস্ত লোককে বললেন, "ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন, অতীতে তোমাদের পূর্বপুরুষেরা, অব্রাহামের পিতা ও নাহোরের পিতা তেরহ [ফরাৎ] নদীর ওপারে বাস করতেন; আর তারা অন্য দেবতাদের সেবা করতেন।
\s5
\v 3 পরে আমি তোমাদের পিতা অব্রাহামকে সেই নদীর ওপার থেকে এনে কনান দেশের সব জায়গায় ভ্রমণ করালাম, এবং তার বংশ বৃদ্ধি করলাম, আর তাকে ইসহাককে দিলাম।
\v 4 আর আমি এষৌকে অধিকার করার জন্য সেয়ীর পর্বত দিলাম; কিন্তু যাকোব ও তার সন্তানেরা মিসরে নেমে গেল।
\s5
\v 5 পরে আমি মোশি ও হারোণকে পাঠালাম এবং মিসরের মধ্যে যে কাজ করেছিলাম, তার মাধ্যমে সেই দেশকে শাস্তি দিলাম; তারপরে তোমাদেরকে বার করে আনলাম।
\v 6 আমি মিসর থেকে তোমাদের পূর্বপুরুষদের বার করার পর তোমরা সমুদ্রের কাছে উপস্থিত হলে; তখন মিস্রীয়রা অনেক রথ ও অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে সূফসাগর (লোহিত সাগর) পর্যন্ত তোমাদের পূর্বপুরুষদের পেছনে অনুসরণ করার জন্য এল।
\s5
\v 7 তাতে তারা সদাপ্রভুর কাছে কাঁদল ও তিনি মিস্রীয়দের ও তোমাদের মধ্যে অন্ধকার স্থাপন করলেন এবং তাদের উপরে সমুদ্রকে এনে তাদের আচ্ছন্ন করলেন; আমি মিসরে কি করেছি, তা তোমরা নিজেদের চোখে দেখেছ; পরে অনেকদিন মরুভূমিতে বাস করলে।
\s5
\v 8 তারপর আমি তোমাদের যর্দনের অন্য পারে বসবাসকারী ইমোরীয়দের দেশে নিয়ে গেলাম; তারা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করল; আর আমি তোমাদের হাতে তাদেরকে সমর্পণ করলাম, তাতে তোমরা তাদের দেশ অধিকার করলে; এইভাবে আমি তোমাদের সামনে থেকে তাদেরকে ধ্বংস করলাম।
\s5
\v 9 পরে সিপ্পোরের ছেলে মোয়াবরাজ বালাক উঠে ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করল এবং লোক পাঠিয়ে তোমাদেরকে শাপ দেওয়ার জন্য বিয়োরের পুত্র বিলিয়মকে ডেকে আনল।
\v 10 কিন্তু আমি বিলিয়মের কথা শুনতে অসম্মত হলাম, তাতে সে তোমাদেরকে শুধু আশীর্বাদই করল; এইভাবে আমি তার হাত থেকে তোমাদেরকে উদ্ধার করলাম।
\s5
\v 11 পরে তোমরা যর্দন পার হয়ে যিরীহোতে উপস্থিত হলে; আর যিরীহোর লোকেরা, ইমোরীয়, পরিষীয়, কনানীয়, হিত্তীয়, গির্গাশীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়েরা তোমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করল, আর আমি তোমাদের হাতে তাদেরকে সমর্পণ করলাম।
\v 12 আর তোমাদের আগে আগে ভিমরুল পাঠালাম; তারা তোমাদের সামনে থেকে সেই জনগণকে, ইমোরীয়দের সেই দুই রাজাকে দূর করে দিল; তোমার তরোয়াল বা ধনুকে তা হয় নি।
\s5
\v 13 আর তোমরা যে জায়গায় পরিশ্রম কর নি, এমন এক দেশ ও যার স্থাপন কর নি, এমন অনেক নগর আমি তোমাদেরকে দিলাম; তোমরা সেখানে বাস করছ; তোমরা যে আঙ্গুর গাছ ও জিতবৃক্ষ (অলিভ গাছ) রোপণ কর নি, তার ফল ভোগ করছ।
\s5
\v 14 অতএব এখন তোমরা সদাপ্রভুকে ভয় কর, সরলতায় ও সত্যে তাঁর সেবা কর, আর তোমাদের পূর্বপুরুষেরা [ফরাৎ] নদীর ওপারে ও মিসরে যে দেবতাদের সেবা করত, তাদেরকে দূর করে দাও এবং সদাপ্রভুর সেবা কর।
\v 15 যদি সদাপ্রভুর সেবা করা তোমাদের মন্দ বোধ হয়, তবে যার সেবা করবে, তাকে আজ মনোনীত কর; নদীর ওপারে তোমাদের পূর্বপুরুষদের সেবিত দেবতারা হয় হোক, কিম্বা যাদের দেশে তোমরা বাস করছ, সেই ইমোরীয়দের দেবতারা হয় হোক; কিন্তু আমি ও আমার পরিবার আমরা সদাপ্রভুর সেবা করব।
\s5
\v 16 লোকেরা এর উত্তরে বলল, "আমরা যে সদাপ্রভুকে ত্যাগ করে অন্য দেবতাদের সেবা করব, তা দূরে থাকুক।
\v 17 কারণ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তিনিই আমাদের ও আমাদের পূর্বপুরুষদের মিসর দেশ থেকে, দাসত্বের-বাড়ি থেকে, বার করে নিয়ে এসেছেন ও আমাদের চোখের সামনে সেই সমস্ত আশ্চর্য্য চিহ্ন-কাজ করেছেন এবং আমরা যে পথে এসেছি, সেই সমস্ত পথে ও যে সমস্ত জাতির মধ্য দিয়ে এসেছি, তাদের মধ্যে আমাদের রক্ষা করেছেন;
\v 18 আর সদাপ্রভু এই দেশে বসবাসকারী ইমোরীয় প্রভৃতি সমস্ত জাতিকে আমাদের সামনে থেকে দূর করে দিয়েছেন; অতএব আমরাও সদাপ্রভুর সেবা করব; কারণ তিনিই আমাদের ঈশ্বর।"
\s5
\v 19 যিহোশূয় লোকদেরকে বললেন, "তোমরা সদাপ্রভুর সেবা করতে পার না; কেননা তিনি পবিত্র ঈশ্বর, নিজের গৌরব রক্ষা করতে উদ্যোগী ঈশ্বর; তিনি তোমাদের অধর্ম ও পাপ ক্ষমা করবেন না।
\v 20 তোমরা যদি সদাপ্রভুকে ত্যাগ করে অন্য জাতীর দেবতাদের সেবা কর, তবে আগে তোমাদের মঙ্গল করলেও তিনি পিছন ফিরে দাঁড়াবেন, তোমাদের অমঙ্গল করবেন ও তোমাদেরকে ধ্বংস করবেন।"
\s5
\v 21 তখন লোকেরা যিহোশূয়কে বলল, "না, আমরা সদাপ্রভুরই সেবা করব।"
\v 22 যিহোশূয় লোকদেরকে বললেন, "তোমরা তোমাদের বিষয়ে নিজেরাই সাক্ষী হলে যে, তোমরা সদাপ্রভুর সেবা করার জন্য তাঁকেই মনোনীত করেছ।" তারা বলল, "সাক্ষী হলাম।"
\v 23 [তিনি বললেন,] "তবে এখন তোমাদের মধ্য অবস্থিত অন্য জাতীর দেবতাদের দূর করে দাও ও তোমাদের হৃদয় ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে রাখ।"
\s5
\v 24 তখন লোকেরা যিহোশূয়কে বলল, "আমরা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুরই সেবা করব ও তাঁর কথা শুনব।"
\v 25 তাতে যিহোশূয় সেই দিন লোকদের সঙ্গে নিয়ম স্থাপন করলেন, তিনি শিখিমে তাদের জন্য বিধি-ব্যবস্থা ও শাসন স্থাপন করলেন।
\v 26 পরে যিহোশূয় ঐ সমস্ত কথা ঈশ্বরের ব্যবস্থা-গ্রন্থে লিখলেন এবং একটি বড় পাথর নিয়ে সদাপ্রভুর পবিত্র-স্থানের কাছে এলা গাছের তলায় স্থাপন করলেন।
\s5
\v 27 পরে যিহোশূয় সমস্ত লোককে বললেন, "দেখ, এই পাথরটি আমাদের বিষয়ে সাক্ষী হবে; কারণ সদাপ্রভু আমাদের যে যে কথা বলেছিলেন, তাঁর সেই সমস্ত কথা এ শুনল; অতএব এ তোমাদের বিষয়ে সাক্ষী হবে, ফলে তোমরা তোমাদের ঈশ্বরকে অস্বীকার কর।"
\v 28 পরে যিহোশূয় লোকদেরকে নিজের নিজের অধিকারে বিদায় করলেন।
\s যিহোশূয়ের ও ইলিয়াসরের মৃত্যু।
\p
\s5
\v 29 এই সমস্ত ঘটনার পরে নূনের পুত্র, সদাপ্রভুর দাস যিহোশূয় একশ দশ বছর বয়সে মারা গেলেন।
\v 30 পরে লোকেরা গাশ পর্বতের উত্তরে ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলে তিন্নৎ-সেরহে তাঁর অধিকারের অঞ্চলে তাঁর কবর দিল।
\s5
\v 31 যিহোশূয়ের সমস্ত জীবনকালে এবং যে প্রাচীনেরা যিহোশূয়ের মৃত্যুর পরে জীবিত ছিলেন ও ইস্রায়েলের জন্য সদাপ্রভুর করা সমস্ত কাজ দেখেছিলেন, তাঁদেরও সমস্ত জীবনকালে ইস্রায়েল সদাপ্রভুর সেবা করল।
\s5
\v 32 আর ইস্রায়েল-সন্তানেরা যোষেফের হাড়, যা মিসর থেকে এনেছিল, তা শিখিমে সেই মাটিতে পুঁতে দিল, যা যাকোব একশ রৌপ্য-মুদ্রায় শিখিমের পিতা হমোরের সন্তানদের কাছ থেকে কিনে নিয়েছিলেন; আর তা যোষেফ-সন্তানদের অধিকার হল।
\v 33 পরে হারোণের ছেলে ইলিয়াসর মারা গেলেন; আর লোকেরা তাঁকে তাঁর পুত্র পীনহসের পাহাড়ে কবর দিল, ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলের সেই পাহাড় তাঁকে যা দেওয়া হয়েছিল।

1007
07-JDG.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,1007 @@
\id JDG
\ide UTF-8
\sts - Free Bible Bengali
\h বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ
\toc1 বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ
\toc2 বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ
\toc3 jdg
\mt1 বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ
\s5
\c 1
\s যিহূদা প্রভৃতি গোষ্টীর বিষয়।
\p
\v 1 যিহোশূয়ের মৃত্যুর পরে ইস্রায়েলের লোকেরা সদাপ্রভুর কাছে এই কথা জিজ্ঞাসা করল, “কনানীয়দের বিরুদ্ধে, তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য, প্রথমে আমাদের কে যাবে?”
\v 2 সদাপ্রভু বললেন, “যিহূদা যাবে; দেখ, আমি তার হাতে দেশ সমর্পণ করেছি।”
\v 3 পরে যিহূদা তার ভাই শিমিয়োনকে বলল, “তুমি আমার জায়গায় আমার সঙ্গে এস, আমরা কনানীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করি; পরে আমিও তোমার জায়গায় তোমার সঙ্গে যাব।” তাতে শিমিয়োন তার সঙ্গে গেল।
\s5
\v 4 যিহূদা গেলেন, আর সদাপ্রভু তাদের হাতে কনানীয় ও পরিষীয়দেরকে সমর্পণ করলেন; আর তারা বেষকে তাদের দশহাজার লোককে হত্যা করল।
\v 5 তারা বেষকে অদোনীবেষককে পেয়ে তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করল এবং কনানীয় ও পরিষীয়দেরকে আঘাত করল।
\s5
\v 6 তখন অদোনী-বেষক পালিয়ে গেল; আর তারা তার পিছন পিছন দৌড়িয়ে গিয়ে তাঁকে ধরল এবং তাঁর হাত ও পায়ের বুড়ো আঙ্গুল কেটে দিল।
\v 7 তখন অদোনী-বেষক বললেন, “যাদের হাত ও পায়ের বুড়ো আঙ্গুল বাদ দেওয়া হয়েছিল, এমন সত্তর জন রাজা আমার মেজের (টেবিলের) নীচে খাবার কুড়াতেন; আমি যেমন কাজ করেছি, ঈশ্বর আমাকেও সেরকম প্রতিফল দিয়েছেন।” পরে লোকেরা তাকে যিরুশালেমে আনলে তিনি সেই জায়গায় মারা গেলেন।
\s5
\v 8 আর যিহূদার লোকেরা যিরুশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা নিজেদের অধিকারে নিল ও তরোয়াল দিয়ে আঘাত করল এবং আগুন দিয়ে নগর পুড়িয়ে দিল।
\v 9 পরে যিহূদা সন্তানরা কনানীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে নেমে গেল যারা পাহাড়ের দক্ষিণ দিকে এবং পশ্চিমীয় পাদদেশে বাস করত।
\v 10 আর যিহূদা হিব্রোণবাসী কনানীয়দের বিরুদ্ধে যাত্রা করে শেশয়, অহীমান ও তলময়কে আঘাত করল; আগে ঐ হিব্রোণের নাম কিরিয়ৎ সেফর ছিল।
\s5
\v 11 সেখান থেকে সে দবীরবাসীদের বিরুদ্ধে যাত্রা করল; আগে দবীরের নাম কিরিয়ৎ-সেফর ছিল।
\v 12 আর কালেব বললেন, “যে কেউ কিরিয়ৎ-সেফরকে আঘাত করে নিজের অধিকারে আনবে, তার সঙ্গে আমি নিজের মেয়ে অক্‌ষার বিয়ে দেব।”
\v 13 এবং কালেবের ছোট ছেলে কনসের ছেলে অৎনীয়েল তা নিজের অধিকারে আনলে তিনি তার সঙ্গে নিজের মেয়ে অক্‌ষার বিয়ে দিলেন।
\s5
\v 14 আর ঐ মেয়ে এসে তার বাবার কাছে একখানি জমি চাইতে স্বামীকে পরামর্শ দিল এবং সে গাধার পিঠ থেকে নামল; কালেব তাকে বললেন, “তুমি কি চাও?”
\v 15 সে তাকে বলল, “আপনি আমাকে এক উপহার দিন; দক্ষিণাঞ্চল ভূমি আমাকে দিয়েছেন, জলের উনুইগুলিও আমাকে দিন।” তাতে কালেব তাকে উচ্চতর উনুইগুলি ও নিম্নতর উনুইগুলি দিলেন।
\s5
\v 16 পরে মোশির সম্বন্ধীয় কেনীয়ের লোকেরা যিহূদার লোকদের সঙ্গে খর্জ্জূরপুর থেকে অরাদের দক্ষিণদিকে অবস্থিত যিহূদা মরুভূমিতে উঠে গেল; তারা গিয়ে লোকদের মধ্যে বাস করল।
\v 17 আর যিহূদা নিজের ভাই শিমিয়োনের সঙ্গে গেল এবং তারা সফাৎবাসী কনানীয়দেরকে আঘাত করে ওই নগর নিঃশেষে বিনষ্ট করল। আর সেই নগরের নাম হর্মা [বিনষ্ট] হল।
\s5
\v 18 আর যিহূদা ঘসা ও তার অঞ্চল, অস্কিলোন ও তার অঞ্চল এবং ইক্রোণ ও তার অঞ্চল অধিকার করল।
\v 19 সদাপ্রভু যিহূদার সহবর্ত্তী ছিলেন, সে পাহাড়ী অঞ্চলগুলি অধিকার করল; কিন্তু সে তলভূমি-নিবাসীদেরকে অধিকার থেকে বঞ্চিত করতে পারল না, কারণ তাদের লোহার রথ ছিল।
\s5
\v 20 আর মোশি যেমন বলেছিলেন, সেই অনুসারে তারা কালেবকে হিব্রোণ দিল এবং তিনি সেখান থেকে অনাকের তিন ছেলেকে তাড়িয়ে দিলেন।
\v 21 কিন্তু বিন্যামীনের লোকেরা যিরুশালেম-নিবাসী যিবূষীয়দেরকে তাড়ালো না; যিবূষীয়েরা আজ পর্যন্ত যিরুশালেমে বিন্যামীন লোকদের সঙ্গে বাস করছে।
\s5
\v 22 আর যোষেফের বংশও বৈথেলের বিরুদ্ধে যাত্রা করল এবং সদাপ্রভু তাদের সহবর্ত্তী ছিলেন।
\v 23 যোষেফের লোকেরা বৈথেলের খোঁজ-খবর নিতে লোক পাঠালেন। আগে ঐ নগরের নাম লূস ছিল।
\v 24 আর সেই গুপ্তচরেরা ঐ নগর থেকে এক জনকে বাইরে আসতে দেখে তাকে বলল, “অনুরোধ করি, নগর প্রবেশের পথ আমাদেরকে দেখিয়ে দাও; দিলে আমরা তোমার প্রতি দয়া করব।”
\s5
\v 25 তাতে সে তাদেরকে নগরে প্রবেশ করার রাস্তা দেখিয়ে দিল, আর তারা খড়গের আঘাতে সেই নগরবাসীদেরকে আঘাত করল, কিন্তু ঐ ব্যক্তিকে ও তার সমস্ত পরিবারকে ছেড়ে দিল।
\v 26 পরে ঐ ব্যক্তি হিত্তীয়দের দেশে গিয়ে এক নগর সৃষ্টি করে তার নাম লূস রাখল; তা আজ পর্যন্ত সেই নামে পরিচিত আছে।
\s5
\v 27 আর মনঃশি গ্রামগুলোর সঙ্গে বৈৎশান, গ্রামগুলোর সঙ্গে তানক, গ্রামগুলোর সঙ্গে দোর, গ্রামগুলোর সঙ্গে যিব্লিয়ম, ও গ্রামগুলোর সঙ্গে মগিদ্দো, এই সব জায়গার বসবাসকারীদের তাড়াল না; কনানীয়েরা সে দেশে বাস করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল।
\v 28 পরে ইস্রায়েল যখন শক্তিশালী হল, তখন সেই কনানীয়দেরকে তাদের দাস করল, কিন্তু সম্পূর্ণভাবে তাড়াল না।
\s5
\v 29 আর ইফ্রয়িম গেষর-নিবাসী কনানীয়দেরকে বঞ্চিত করল না; কনানীয়েরা গেষরে তাদের মধ্যে বাস করতে লাগল।
\s5
\v 30 সবূলূন কিটরোণ ও নহলোল নিবাসীদেরকে তাড়াল না; কনানীয়েরা তাদের মধ্যে বাস করতে লাগল, আর তাদের দাস হল।
\s5
\v 31 আশের অক্কো, সীদোন, অহলব, অক্‌ষীব, হেল্‌বা, অফীক ও রহোব নিবাসীদের বঞ্চিত করল না।
\v 32 আশেরীয়েরা কনানীয়দের মধ্যে বাস করল, কারণ তারা তাদেরকে তাড়াল না।
\s5
\v 33 নপ্তালি বৈৎ-শেমশের ও বৈৎ-অনাত-নিবাসীদেরকে তাড়িয়ে দিল না; তারা কনানীয়দের মধ্যে বাস করল, আর বৈৎ-শেমশের ও বৈৎ-অনাতনিবাসীরা তাদের দাস হল।
\s5
\v 34 আর ইমোরীয়েরা দানের বংশদেরকে পাহাড়ী অঞ্চলে থাকতে বাধ্য করল, উপত্যকা নেমে আসতে দিল না;
\v 35 ইমোরীয়েরা হেরস পর্বত, অয়ালোনে ও শালবীমে বসবাস করতে থাকল; কিন্তু যোষেফ-কুল তাদের পরাজিত করল, তাতে তারা তাদের দাস হল।
\v 36 অক্রব্বীম পাহাড়ী অঞ্চল থেকে সেলা পর্যন্ত উপরের দিকে ইমোরীয়দের অধিকারে ছিল।
\s5
\c 2
\s ইস্রায়েলীয়দের অবাধ্যতা ও ঈশ্বরীয় শাসন।
\p
\v 1 আর সদাপ্রভুর দূত গিলগল থেকে বোখীমে উঠে আসলেন। তিনি বললেন, “আমি তোমাদেরকে মিসর থেকে বের করে এনেছি; যে দেশ দিতে তোমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছিলাম, সে দেশে তোমাদেরকে এনেছি, আর এই কথা বলেছি, আমি তোমাদের সঙ্গে নিজের নিয়ম কখনও ভাঙব না;
\v 2 তোমরাও এই দেশে বসবাসকারীদের সঙ্গে চুক্তি স্থাপন করবে না, তাদের যজ্ঞবেদি সব ভেঙ্গে ফেলবে। কিন্তু তোমরা আমার কথা শোননি; কেন এমন কাজ করেছ?
\s5
\v 3 এই জন্য আমিও বললাম, ‘তোমাদের সামনে থেকে আমি এই লোকদেরকে দূরে সরাবো না; তারা তোমাদের পাশে কাঁটার মত, ও তাদের দেবতারা তোমাদের ফাঁদস্বরূপ হবে’।”
\v 4 তখন সদাপ্রভুর দূত ইস্রায়েল লোকদের এই কথা বললে লোকেরা জোরে চিত্কার করে কাঁদতে লাগল।
\v 5 আর তারা সেই জায়গার নাম বোখীম [রোদনকারী-গণ] রাখল; পরে তারা সেই জায়গায় সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করল।
\s5
\v 6 যিহোশূয় লোকদের বিদায় করলে পর ইস্রায়েল-সন্তানরা দেশ অধিকার করার জন্য প্রত্যেকে সেই জায়গায় গেল।
\v 7 আর যিহোশূয়ের সমস্ত জীবনে এবং যে প্রাচীনরা যিহোশূয়ের মৃত্যুর পর জীবিত ছিলেন ও ইস্রায়েলের জন্য সদাপ্রভুর করা সমস্ত মহান কাজ দেখেছিলেন, তাঁদেরও সমস্ত জীবনে লোকেরা সদাপ্রভুর সেবা করল।
\v 8 পরে নূনের ছেলে সদাপ্রভুর দাস যিহোশূয় একশো দশ বছর বয়সে মারা গেলেন।
\s5
\v 9 তাতে লোকেরা গাশ পর্বতের উত্তর পাহাড়ী অঞ্চল ইফ্রয়িম প্রদেশের তিম্নৎহেরসে তাঁর অধিকারের জায়গায় তাঁকে কবর দিল।
\v 10 আর সেই সময়ের অন্য সব লোকও পূর্বপুরুষদের কাছে সংগৃহীত হল এবং তাদের পরে নতুন বংশ বৃদ্ধি হল, এরা সদাপ্রভুকে জানত না এবং ইস্রায়েলের জন্য তাঁর করা কাজ জানা ছিল না।
\s5
\v 11 ইস্রায়েল-সন্তানেরা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা খারাপ, তাই করতে লাগল এবং বালদেবতাদের সেবা করতে লাগল।
\v 12 আর যিনি তাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর, যিনি তাদেরকে মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন, সেই সদাপ্রভুকে ত্যাগ করে অন্য দেবতাদের, অর্থাৎ নিজেদের চারিদিকে অবস্থিত লোকেদের দেবতাদের অনুগামী হয়ে তাদের কাছে প্রার্থনা করতে লাগল, এইভাবে সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করল।
\v 13 তারা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করে বালদেবতার ও অষ্টারোৎ দেবীদের সেবা করত।
\s5
\v 14 তাতে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সদাপ্রভু রেগে গেলেন, আর তিনি তাদেরকে লুন্ঠনকারীদের হাতে সমর্পণ করলেন, তারা তাদের সম্পদ লুঠ করল; আর তিনি তাদের চারিদিকের শত্রুদের হাতে তাদের বিক্রি করলেন, তাতে তারা নিজের শত্রুদের সামনে আর দাঁড়াতে পারল না।
\v 15 সদাপ্রভু যেমন তাদের কাছে শপথ করেছিলেন, সেই অনুসারে তারা যে কোন জায়গায় যেত, সেই জায়গায় অমঙ্গলের জন্য সদাপ্রভু তাদের বিরোধীতা করত; এইভাবে তারা ভীষণ দুঃখ পেত।
\s5
\v 16 তখন সদাপ্রভু বিচারকর্তাদেরকে উঠাতেন, আর তারা লুঠকারীদের হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করতেন;
\v 17 তবুও তারা নিজেদের বিচারকর্ত্তাদের কথায় কান দিত না, কিন্তু অন্য দেবতাদের কাছে গিয়ে ব্যভিচার করত ও তাদের কাছে উপাসনা করত; এইভাবে তাদের পিতৃপুরুষেরা সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন করে যে পথে চলতেন, তারা সেই অনুযায়ী না করে সেই পথ থেকে সরে আসল।
\s5
\v 18 আর সদাপ্রভু যখন তাদের জন্য বিচারকর্ত্তা উত্পন্ন করতেন, তখন সদাপ্রভু বিচারকর্ত্তাদের সঙ্গে সঙ্গে থেকে বিচারকর্ত্তাদের সমস্ত জীবনে শত্রুদের হাত থেকে তাদেরকে উদ্ধার করতেন, কারণ উপদ্রব ও তাড়নাকারীদের সামনে তাদের অনুনয়-বিনয়ের জন্য সদাপ্রভু করুণাবিষ্ট হতেন।
\v 19 কিন্তু সেই বিচারকর্ত্তা মারা গেলেই তারা ফিরত, পিতৃপুরুষ থেকে আরও দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে পড়ত, অন্য দেবতাদের অনুগামী হয়া তাদের সেবা করত ও তাদের কাছে উপাসনা করত; নিজের নিজের কাজ ও স্বেচ্ছাচারীতার কিছুই ছাড়ত না।
\s5
\v 20 তাতে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর ক্রোধ আরো বেড়ে গেল, তিনি বললেন, “আমি এদের পিতৃপুরুষদেরকে যে নিয়ম পালনের আজ্ঞা দিয়েছিলাম, এই জাতি তা অমান্য করেছে, আমার কথায় কান দেয়নি;
\v 21 অতএব যিহোশূয় মৃত্যুর সময় যে যে জাতিকে অবশিষ্ট রেখেছে, আমিও এদের সামনে থেকে তাদের কাউকেও তাড়াব না।
\v 22 তাদের পিতৃপুরুষেরা যেমন সদাপ্রভুর পথে গমন করে তাঁর আজ্ঞা পালন করত, তারাও সেরূপ করবে কি না, এই বিষয়ে ঐ জাতিদের মাধ্যমে ইস্রায়েলের পরীক্ষা নেব।”
\v 23 এই জন্য সদাপ্রভু সেই জাতিদের তাড়াতাড়ি অধিকার থেকে তাড়িয়ে না দিয়ে অবশিষ্ট রাখলেন; যিহোশূয়ের হাতেও সমর্পণ করেননি।
\s5
\c 3
\p
\v 1 এখন ইস্রায়েলের মধ্যে যাদের কনানের সমস্ত যুদ্ধের বিষয়ে জানা ছিল না, সেই লোকদের পরীক্ষা নেওয়ার জন্য
\v 2 এবং ইস্রায়েল সন্তানদের পুরুষপরম্পরাকে শিক্ষা দেবার জন্যে, অর্থাৎ যারা আগে যুদ্ধ জানত না; তাদেরকে তা শেখাবার জন্য সদাপ্রভু এই সব জাতিকে অবশিষ্ট রেখেছিলেন তারা হল
\v 3 পলেষ্টীয়দের পাঁচ রাজা, বাল হর্ম্মোণ পর্বত থেকে লিব হমাত ঢোকার রাস্তা পর্যন্ত লিবানোন পর্বতে বসবাসকারী সস্মস্ত কনানীয়, সীদোনীয় ও হিব্বীয়রা।
\s5
\v 4 এরা ইস্রায়েলের পরীক্ষার জন্য, অর্থাৎ সদাপ্রভু তাদের পিতৃপুরুষদেরকে মোশি মাধ্যমে যে সব আজ্ঞা দিয়েছিলেন, সেসব তারা পালন করে কি না, তা যেন জানা যায়।
\v 5 ফলে ইস্রায়েলীয়রা কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের মধ্যে বাস করল;
\v 6 আর তারা তাদের মেয়েদের বিয়ে করত, তাদের ছেলেদের সঙ্গে নিজেদের মেয়েদের বিয়ে দিত ও তাদের দেবতাদের সেবা করত।
\s অরামীয় ও মোয়াবীয়দের অত্যাচার থেকে ইস্রায়েলের উদ্ধার।
\p
\s5
\v 7 আর ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যেটা মন্দ, তাই করল ও নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে গেল। তারা বাল দেবতাদের ও আশেরা দেবীদের সেবা করল।
\v 8 অতএব ইস্রায়েলের প্রতি সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হল, আর তিনি অরাম-নহরয়িমের রাজা কূশন রিশিয়াথয়িমের হাতে তাদেরকে বিক্রি করলেন, আর ইস্রায়েলীয়রা আট বছর পর্যন্ত কূশন রিশিয়াথয়িমের দাসত্ব করল।
\s5
\v 9 পরে ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর কাছে কাঁদল এবং সদাপ্রভু একজনকে উঠালেন যে ইস্রায়েলীয়দের সাহায্য ও উদ্ধার করতে পারেন। সে অৎনীয়েল (কনসের ছেলে), কালেবের ছোট ভাই।
\v 10 সদাপ্রভুর আত্মা তাঁর উপরে আসলেন, আর তিনি ইস্রায়েলের বিচার করতে লাগলেন এবং তিনি যুদ্ধের জন্য গেলেন, আর সদাপ্রভু অরাম-রাজ কূশন রিশিয়াথয়িমকে তাঁর হাতে সমর্পণ করলেন; এটা ছিল অৎনীয়েলের ক্ষমতা যা কূশন রিশিয়াথয়িমকে পরাজিত করেছিল।
\v 11 এইভাবে চল্লিশ বছর পর্যন্ত দেশ শান্তিতে থাকল; পরে কনসের ছেলে অৎনীয়েলের মৃত্যু হল।
\p
\s5
\v 12 পরে ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যেটা মন্দ, আবার তাই করল; অতএব সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যেটা মন্দ, তা করায় সদাপ্রভু ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে মোয়াব-রাজ ইগ্লোনকে শক্তিশালী করলেন।
\v 13 রাজা ইগ্লোন অম্মোনলেকীয়দেরকে ও অমালেককে একত্র করলেন এবং তারা গিয়ে ইস্রায়েলকে পরাজিত করলেন ও খর্জ্জূরপুর অধিকার করলেন।
\v 14 ইস্রায়েলীয়রা আঠার বছর পর্যন্ত মোয়াব-রাজ ইগ্লোনের দাসত্ব করল।
\s5
\v 15 কিন্তু যখন ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর কাছে কাঁদল; তখন সদাপ্রভু তাদের জন্য একজন উদ্ধারকর্ত্তাকে, বিন্যামীন বংশীয় গেরার ছেলে এহূদকে উঠালেন; তিনি বাঁ হাতে সব কাজ করতেন। ইস্রায়েলীয়রা তাঁর দ্বারা মোয়াব-রাজ ইগ্লোনের কাছে উপহার পাঠালেন।
\s5
\v 16 এহূদ নিজের জন্য একহাত লম্বা একটা দুইদিকে ধারযুক্ত তরোয়াল তৈরী করে নিজের ডান উরুর কাপড়ের ভিতরে বেঁধে রাখলেন।
\v 17 তিনি মোয়াব-রাজ ইগ্লোনের কাছে উপহার নিয়ে গেলেন; (এই ইগ্লোন অত্যন্ত মোটা লোক ছিলেন।)
\v 18 এহূদের উপহার দেওয়া হয়ে গেলে তিনি ঐ উপহার বহনকারীদের বিদায় দিলেন।
\s5
\v 19 তিনি নিজে গিল্‌গলে পাথরের তৈরী মূর্তির কাছ থেকে ফিরে এলেন এবং বললেন, “হে রাজা, আপনার জন্য আমার কাছে একটি গোপন কথা আছে।” ইগ্লোন বললেন, “চুপ চুপ!” এবং তাঁর সব সেবকেরা ঘর থেকে বেরিয়ে গেল।
\v 20 আর এহূদ তাঁর কাছে এলেন; রাজা একাকী নিজের উপর তলার ঠান্ডা ঘরে বসেছিলেন; এহূদ বললেন, আমার কাছে আপনার জন্য ঈশ্বরের একটি বাক্য বলার আছে; রাজা তাঁর নিজের আসন থেকে উঠলেন।
\s5
\v 21 তখন এহূদ নিজের বাঁ হাত বাড়িয়ে ডান ঊরু থেকে সেই খড়গ নিয়ে তাঁর শরীরে বিদ্ধ করলেন,
\v 22 আর খড়গের সঙ্গে বাঁটও শরীরে ঢুকে গেল ও খড়গ মেদে আটকে গেল, সেইজন্য তিনি শরীর থেকে খড়গ বের করলেন না; আর তা পিছন দিক দিয়ে বেরিয়ে গেল।
\v 23 পরে এহূদ বারান্দায় বেরিয়ে এলেন এবং উপরের ঘরের দরজা বন্ধ করে খিল দিয়ে দিলেন।
\s5
\v 24 পরে এহূদ চলে গেলে রাজার দাসেরা এল; তারা দেখল উপরের ঘরের দরজা বন্ধ। তারা ভাবল, তিনি নিজে অবশ্যই উপরের উপরের ঘরে আরাম করছেন।
\v 25 পরে তারা লজ্জিত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করল কিন্তু রাজা উপরের ঘরের দরজা খুলল না। তাই তারা চাবি নিয়ে এসে দরজা খুলল, দেখল তাদের প্রভু মারা গিয়ে মাটিতে পড়ে আছেন।
\s5
\v 26 তারা যখন অপেক্ষা করছিল, তখন এহূদ পালিয়ে গেল এবং সেই পাথরের তৈরী মূর্তি ছিল সেখান থেকে সিয়ীরাতে পালিয়ে গেল।
\v 27 তিনি উপস্থিত হয়ে পাহাড়ী অঞ্চল ইফ্রয়িম প্রদেশে তূরী বাজালেন। ইস্রায়েলীয়রা তাঁর সঙ্গে পাহাড়ী অঞ্চল থেকে নেমে গেল, তিনি তাদের নেতৃত্ব দিলেন।
\s5
\v 28 তিনি তাদেরকে বললেন, “আমার পিছন পিছন এস, কারণ সদাপ্রভু তোমাদের শত্রু মোয়াবীয়দেরকে পরাজিত করেছেন।” তখন তারা তাঁর পিছন পিছন নেমে এল এবং মোয়াবের বিরুদ্ধে যর্দ্দনের পারঘাটা সব দখল করে নিল এবং কাউকেও নদী পার হতে দিল না।
\v 29 ঐ সময়ে তারা মোয়াবের অনুমান দশহাজার লোককে হত্যা করল; তারা সব শক্তিশালী এবং সক্ষম পুরুষ ছিল। কেউই রক্ষা পেল না।
\v 30 সেই দিন থেকে মোয়াব ইস্রায়েলের শক্তির কাছে পরাজিত হল এবং আশী বছর দেশ শান্তিতে থাকল।
\s5
\v 31 এহূদের পরে শম্‌গর (অনাতের ছেলে) পরবর্তী শাসক ছিল, তিনি পশুপালন করার লাঠি দিয়ে পলেষ্টীয়দের ছয়শো লোককে হত্যা করলেন; ইনিও ইস্রায়েলকে বিপদ থেকে মুক্ত করলেন।
\s5
\c 4
\s যাবীন রাজার অত্যাচার থেকে ইস্রায়েলের উদ্ধার।
\p
\v 1 এহূদের মৃত্যুর পর, ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যেটা মন্দ, আবার তাই করল।
\v 2 তাতে সদাপ্রভু হাৎসোরে রাজত্বকারী কনানরাজ যাবীনের হাতে তাদেরকে সমর্পণ করলেন। জাতিগণের হরোশৎ-নিবাসী সীষরা তাঁর সেনাপতি ছিলেন।
\v 3 আর ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর কাছে কাঁদল, কারণ সীষরার কাছে নয়শো লোহার রথ ছিল এবং তিনি কুড়ি বছর পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়দের উপর ভীষণ নির্যাতন করেছিলেন।
\s5
\v 4 লপ্পীদোতের স্ত্রী দবোরা এক জন ভাববাদিনী ছিলেন, সেইসময়ে তিনি ইস্রায়েলের বিচার করতেন।
\v 5 দবোরা পর্ব্বতময় ইফ্রয়িম প্রদেশে রামার ও বৈথেলের মধ্যে অবস্থিত খেজুর গাছের নীচে বসতেন এবং ইস্রায়েলীয়রা বিচারের জন্য তাঁর কাছে আসত।
\s5
\v 6 তিনি লোক পাঠিয়ে কেদশ নপ্তালি থেকে অবীনোয়মের পুত্র বারককে ডেকে আনলেন। তিনি তাকে বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে কি এই আজ্ঞা করেননি, নপ্তালি ও সবূলূন দেশ থেকে দশ হাজার লোককে তাবোর পর্বতে নিয়ে যাও;
\v 7 তাতে আমি যাবীনের সেনাপতি সীষরাকে এবং তার রথ সকল ও লোকদেরকে নিয়ে কীশোন নদীর কাছে তোমার সঙ্গে দেখা করব এবং তাকে তোমার হাতে সমর্পণ করব।”
\s5
\v 8 তখন বারক তাকে বললেন, “তুমি যদি আমার সঙ্গে যাও, তবে আমি যাব; কিন্তু তুমি যদি আমার সঙ্গে না যাও, আমি যাব না।”
\v 9 দবোরা বললেন, “আমি অবশ্য তোমার সঙ্গে যাব, যদিও তোমার এই যাত্রায় সুনাম হবে না, কারণ সদাপ্রভু সীষরাকে একটি স্ত্রীলোকের শক্তির কাছে পরাজিত করবেন।” পরে দবোরা উঠলেন এবং বারকের সঙ্গে কেদশে গেলেন।
\s5
\v 10 পরে বারক কেদশে সবূলূন ও নপ্তালির লোকদেরকে ডাকলেন; আর দশহাজার লোক তাঁর পিছন পিছন গেল এবং দবোরাও তাঁর সঙ্গে গেলেন।
\s5
\v 11 ঐ সময়ে কেনীয় হেবর কেনীয়দের থেকে, মোশির সম্বন্ধে হোববের সন্তানদের থেকে আলাদা হয়ে কেদশের কাছাকাছি সানন্নীমস্থ এলোন গাছ পর্যন্ত তাঁবু খাঁটালেন।
\s5
\v 12 যখন তারা সীষরাকে বলল যে, “অবীনোয়মের ছেলে বারক তাবোর পর্বতে উঠেছে।”
\v 13 তখন সীষরা নিজের সব রথ অর্থাৎ নয়শো লোহার রথ এবং নিজের সৈন্যদেরকে একত্র ডেকে হরোশৎ থেকে কীশোন নদীর কাছে গেলেন।
\s5
\v 14 দবোরা বারককে বললেন, “যাও, কারণ আজই সদাপ্রভু তোমার হাতে সীষরাকে সমর্পণ করেছেন; সদাপ্রভু কি তোমার আগে আগে যাননি?” তখন বারক তাঁর অনুগামী দশহাজার লোককে সঙ্গে নিয়ে তাবোর পর্বত থেকে নামলেন।
\s5
\v 15 সদাপ্রভু সীষরার সব রথ ও তার সৈন্যদের বিভ্রান্ত করলেন এবং বারকের লোকেরা তাদেরকে আক্রমণ করল এবং সীষরা রথ থেকে নেমে দৌড়াতে লাগল।
\v 16 কিন্তু বারকের লোকেরা হরোৎ পর্যন্ত তাঁর রথসমূহের ও সৈন্যদের পিছনে ধাওয়া করল আর সীষরার সব সৈন্যদের খড়গ দিয়ে হত্যা করল, এক জনও বেঁচে থাকল না।
\s5
\v 17 কিন্তু সীষরা দৌড়ে কেনীয় হেবরের স্ত্রী যায়েলের তাম্বুর দিকে গেলেন; কারণ হাৎসোরের যাবীন রাজাতে ও কেনীয় হেবরের বংশে তখন শান্তি ছিল।
\v 18 আর যায়েল সীষরার সঙ্গে দেখা করতে বাইরে গেলেন এবং তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, ফিরে আসুন, আমার এখানে আসুন, ভয় পাবেন না।” তাই তিনি তাঁর দিকে ফিরে এলেন এবং তাঁবুর মধ্যে গেলেন আর সেই স্ত্রী এক কম্বল দিয়া তাঁকে ঢেকে দিলেন।
\s5
\v 19 সে তাঁকে বললেন, “দয়া করে আমাকে এক গ্লাস পানীয় জল দিন, কারণ আমি পিপাসিত।” তিনি একটি দুধের থলি খুলে পান করতে দিলেন তারপর তাকে আবার ঢেকে দিলেন।
\v 20 তিনি তাঁকে বললেন, “তুমি তাঁবুর দুয়ারে দাঁড়িয়ে থাক; যদি কেউ এসে জিজ্ঞাসা করে, এখানে কি কেউ আছে? তবে বোলো, কেউ নেই।”
\s5
\v 21 পরে হেবরের স্ত্রী যায়েল তাঁবুর এক খোঁটা নিলেন ও মুগুর হাতে করে ধীরে ধীরে তাঁর কাছে গেলেন, কারণ সে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিল তাঁর কানে ওই খোঁটা ঢুকিয়ে দিলেন এবং তাকে মাটিতে ফেলে দিলেন আর সে মারা গেল।
\v 22 বারক সীষরাকে তাড়া করে যাচ্ছিলেন; তখন যায়েল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বাইরে এসে বললেন, “এস, তুমি যার খোঁজ করছ, সেই মানুষকে আমি তোমাকে দেখাই,” তাই তিনি তাঁর সঙ্গে তাঁবুর ভিতরে গেল, আর, সীষরা মরে পড়ে আছেন ও তাঁর কানে খোঁটা বিদ্ধ রয়েছে।
\s5
\v 23 এইভাবে ঈশ্বর সেদিন কনান-রাজ যাবীনকে ইস্রায়েলীয়দের সামনে পরাজিত করলেন।
\v 24 আর ইস্রায়েললীয়রা যে পর্যন্ত কনান-রাজ যাবীনকে ধ্বংস না করল, সে পর্যন্ত কনান-রাজ যাবীনের বিরূদ্ধে তারা আরো বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠল।
\s5
\c 5
\s দবোরার বিজয়-সঙ্গীত।
\p
\v 1 সেদিন দবোরা ও অবীনোয়মের পুত্র বারক এই গান করলেন।
\v 2 ইস্রায়েলে নেতারা নেতৃত্ব দিলেন, প্রজারা নিজের ইচ্ছায় নিজেদেরকে উত্সর্গ করল, এজন্য তোমরা সদাপ্রভুর ধন্যবাদ কর।
\s5
\v 3 রাজারা শোনো; শাসকরা মনোযোগ দাও; আমি, আমিই সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গান করব, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গান করব।
\v 4 হে সদাপ্রভু, তুমি যখন সেয়ীর থেকে চলে গেলে, ইদোম-ক্ষেত্র থেকে এগিয়ে গেলে, ভূমি কেঁপে উঠল, আকাশও বর্ষণ করল, মেঘমালা জল বর্ষণ করল।
\s5
\v 5 সদাপ্রভুর সামনে পর্বতেরা কম্পমান হল, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে ঐ সীনয় কম্পমান হল।
\v 6 অনাতের পুত্র শম্‌গরের সময়ে, যায়েলের সময়ে, রাজপথ শূন্য হল, পথিকেরা অন্য পথ দিয়ে যেত।
\s5
\v 7 নায়করা ইস্রায়েলের মধ্যে থেমে ছিল, শেষে আমি দবোরা উঠলাম, ইস্রায়েলের মধ্যে মাতৃস্থানীয় হয়ে উঠলাম।
\v 8 তারা নূতন দেবতা মনোনীত করেছিল; সেই সময়ে নগরের দরজার কাছে যুদ্ধ হল; ইস্রায়েলের চল্লিশ হাজার লোকের মধ্যে কি একটা ঢাল বা বর্শা দেখা গেল না?
\s5
\v 9 আমার হৃদয় ইস্রায়েলের অধ্যক্ষগণের দিকে গেল, যাঁরা প্রজাদের মধ্যে নিজের ইচ্ছায় নিজেদেরকে উৎসর্গ করলেন; তোমরা সদাপ্রভুর ধন্যবাদ কর।
\v 10 তোমরা যারা সাদা গাধীর পিঠে চড়ে থাক, যারা আসনের ওপরে বসে থাক, যারা পথে ভ্রমণ কর, তোমরাই ওর সংবাদ দাও।
\s5
\v 11 ধনুর্দ্ধরদের আওয়াজ থেকে দূরে, জল তুলবার স্থান সকলে সেখানে কীর্ত্তিত হচ্ছে সদাপ্রভুর ধর্মকাজ, ইস্রায়েলে তাঁর শাসন সংক্রান্ত ধর্ম-কাজ সমূহ, তখন সদাপ্রভুর প্রজারা নগরের দরজায় নেমে যেত।
\s5
\v 12 দবোরে, জাগ্রত হও; জাগ্রত হও, জাগ্রত হও, জাগ্রত হও, গান গাও; বারক, উঠ, অবীনোয়মের ছেলে, তোমার বন্দিদেরকে বন্দি কর।
\v 13 তখন বেঁচে থাকা মহান লোকদের অবশিষ্টেরা ও সদাপ্রভুর লোকেরা আমার পক্ষে সেই বিক্রমীদের বিরুদ্ধে নামলেন।
\s5
\v 14 অমালেকেরা ইফ্রয়িম থেকে আসলো; বিন্যামীনের লোকেরা তাদের অনুসরণ করে আসলো; মাখীর থেকে অধ্যক্ষরা নেমে এলেন, সবূলূন থেকে শাসকদের লাঠিধারীরা নেমে এলেন।
\s5
\v 15 ইষাখরেতে আমার অধ্যক্ষরা দবোরার সঙ্গী ছিলেন, ইষাখর যেমন বারকও তেমন, তার পিছনে তাঁরা দ্রুত উপত্যকায় এলেন। রূবেণের গোষ্ঠীর কাছে গুরুতর পরীক্ষা ছিল।
\s5
\v 16 তুমি কেন মেষদের মাঝখানে বসলে? কি মেষপালকদের বাঁশির সুর শুনবার জন্য? রূবেণের গোষ্ঠীর কাছে গুরুতর হৃদয়ের পরীক্ষা হল।
\s5
\v 17 গিলিয়দ যর্দ্দনের ওপারে বাস করল, আর দান কেন জাহাজে থাকল? আশের সমুদ্রে বন্দরে বসে থাকল, নিজের বন্দরের ধারে বাস করল।
\v 18 সবূলূনগোষ্ঠীর জীবন তুচ্ছ করল মৃত্যু পর্য্যন্ত, নপ্তালিও যুদ্ধ ক্ষেত্রে তাই করল।
\s5
\v 19 রাজগণ এসে যুদ্ধ করলেন, তখন কনানের রাজারা যুদ্ধ করলেন; মগিদ্দোর জলাশয়ের তীরে যুদ্ধ করলেন; কিন্তু তাঁরা একখণ্ড রুপোও লুঠ করল না।
\v 20 আকাশমণ্ডল থেকে যুদ্ধ হল, নিজের নিজের পথে তারারা সীষরার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল।
\s5
\v 21 কীশোন নদী তাদেরকে ভাসিয়ে নিয়ে গেল; সেই প্রাচীন নদী, কীশোন নদী। হে আমার প্রাণ, সবলে এগিয়ে যাও।
\v 22 তখন শক্তিশালীদের নিয়ে যাওয়ার জন্য ঘোড়াদের খুর মাটি পিষে দিল।
\s5
\v 23 সদাপ্রভুর দূত বলেন, মেরোসকে অভিশাপ দাও, সেখানকার অধিবাসীদেরকে দারুন অভিশাপ দাও; কারণ তাঁরা বিক্রমীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য সদাপ্রভুকে সাহায্য করতে এল না।
\s5
\v 24 মহিলাদের মধ্যে যায়েল ধন্যা, কেনীয় হেবরের পত্নী ধন্যা, তাম্বুবাসিনী স্ত্রীলোকদের মধ্যে তিনি ধন্যা।
\v 25 সে জল চাইল, তিনি তাকে দুধ দিলেন। রাজোপযোগী পাত্রে ক্ষীর এনে দিলেন।
\s5
\v 26 তিনি তাঁবুর খোঁটায় হাত রাখলেন, কামারের হাতুড়িতে ডান হাত রাখলেন; তিনি সীষরাকে হাতুড়ি দিয়ে মারলেন, তার মাথা ভেঙ্গে দিলেন, তার মাথার খুলি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করলেন ও কানপাটি ভাঙ্গলেন।
\v 27 সে তাঁর পায়ে হেঁট হয়ে পড়ল, লম্বা হয়ে শুয়ে পড়ল আর যেখানে হেঁট হল, সেখানে মারা গেল।
\s5
\v 28 সীষরার মা ছোট জানালা দিয়ে দেখল, সে বাতায়ন থেকে ডেকে বলল, “তার রথ আসতে কেন দেরী করছে? তার রথের চাকা কেন ধীরে ধীরে চলছে?”
\s5
\v 29 তার জ্ঞানবতী সহচরীরা উত্তর করল, সে নিজেও তার কথার উত্তর দিল,
\v 30 তারা কি পায়নি? লুঠের ভাগ করে নেয়নি? প্রত্যেক পুরুষের জন্য একটি স্ত্রী, দুইটি স্ত্রী আর সীষরার চিত্রিত বস্ত্র পেয়েছে, চিত্রিত দুধার বাঁধা বস্ত্র লুঠকারীর গলায়।
\s5
\v 31 হে সদাপ্রভু, তোমার সব শত্রু এইভাবে বিনষ্ট হোক, কিন্তু যারা তোমাকে প্রেম করে তারা প্রভাবশালী সূর্য্যের মতো হোক। পরে চল্লিশ বছর দেশে শান্তি থাকল।
\s5
\c 6
\s মিদিয়নীয়দের অত্যাচার। গিদিয়োনের বিবরণ।
\p
\v 1 পরে ইস্রায়েলের লোকেরা সদাপ্রভুর সামনে যা মন্দ, তাই করল, আর সদাপ্রভু তাদেরকে সাত বছর পর্যন্ত মিদিয়নের অধীনে রাখলেন।
\v 2 আর ইস্রায়েলের উপরে মিদিয়নীয়রা অত্যাচার করল, তাই ইস্রায়েলীয়রা মিদিয়নের ভয়ে পর্বতের গুহায় গর্ত করল ও দুর্গ তৈরী করল।
\s5
\v 3 আর ইস্রায়েলীয়রা যখন বীজ বপন করত তখন মিদিয়নীয়রা, অমালেকীয়েরা ও পূর্বদেশের লোকেরা এসে আক্রমণ করত
\v 4 তারা তাদের বিরুদ্ধে সৈন্যশিবির স্থাপন করত ও ঘসা পর্যন্ত জমির ফসল নষ্ট করে দিত। তারা ইস্রায়েলের জন্য খাদ্য দ্রব্য, কিম্বা মেষ, গোরু বা গাধা কিছুই রাখত না।
\s5
\v 5 কারণ তারা নিজেদের পশুপাল ও তাঁবু সঙ্গে করে নিয়ে পঙ্গপালের মতো আসত; তারা ও তাদের উট আর লোকজন অসংখ্য ছিল; আর তারা এদের দেশ থেকে উচ্ছেদ করার জন্য আসত।
\v 6 তাতে ইস্রায়েল মিদিয়নের সামনে খুব দুর্বল হয়ে পড়ল, আর ইস্রায়েললীয়রা সদাপ্রভুর কাছে কাঁদল।
\s5
\v 7 যখন ইস্রায়েলীয়রা মিদিয়নের ভয়ে সদাপ্রভুর কাছে ক্রন্দন করল,
\v 8 তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের কাছে একজন ভাববাদীকে পাঠালেন। তিনি তাদেরকে বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমি তোমাদের মিশর থেকে নিয়ে এসেছি এবং দাসত্ব থেকে মুক্ত করেছি
\s5
\v 9 মিশরীয়দের হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করেছি ও যারা তোমাদের উপরে অত্যাচার করত, তাদের সকলের হাত থেকে তোমাদেরকে উদ্ধার করেছি, আর তোমাদের সামনে থেকে তাদের তাড়িয়ে দিয়ে সেই দেশ তোমাদেরকে দিয়েছি।
\v 10 আর আমি তোমাদেরকে বলেছি, ‘আমি সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বর; তোমরা যে ইমোরীয়দের দেশে বাস করছ তাদের দেবতাদের তোমরা ভয় কর না।’ কিন্তু তোমরা আমার বাক্য শোননি।”
\s5
\v 11 পরে সদাপ্রভুর দূত এসে অবীয়েষ্রীয় যোয়াশের অধিকারভুক্ত অফ্রাতে অবস্থিত এলা গাছের তলায় বসলেন; আর তাঁর পুত্র গিদিয়োন আঙ্গুর মাড়ানোর গর্তে গম মাড়াই করছিলেন, যেন মিদিয়নীয়দের থেকে তা লুকাতে পারেন।
\v 12 তখন সদাপ্রভুর দূত তাঁকে দর্শন দিয়ে বললেন, “হে বলবান্‌ বীর, সদাপ্রভু তোমার সহবর্ত্তী।”
\s5
\v 13 গিদিয়োন তাঁকে বললেন, “নিবেদন করি, হে আমার প্রভু, যদি সদাপ্রভু আমাদের সহবর্ত্তী হন, তবে আমাদের প্রতি এ সমস্ত কেন ঘটল? এবং আমাদের পিতৃপুরুষেরা তাঁর যে সমস্ত আশ্চর্য্য কাজের বৃত্তান্ত আমাদেরকে বলেছিলেন, সে সব কোথায়? তাঁরা বলতেন, ‘সদাপ্রভু কি আমাদেরকে মিসর থেকে আনেননি? কিন্তু এখন সদাপ্রভু আমাদেরকে ত্যাগ করেছেন, মিদিয়নের হাতে সমর্পণ করেছেন।”
\s5
\v 14 তখন সদাপ্রভু তার দিকে ফিরে বললেন, “তুমি তোমার এই শক্তিতেই চল, মিদিয়নের হাত থেকে ইস্রায়েলকে উদ্ধার কর; আমি কি তোমায় পাঠায়নি?”
\v 15 তিনি তাঁকে বললেন, “অনুরোধ করি, হে প্রভু, ইস্রায়েলকে কিভাবে উদ্ধার করব?” দেখুন, মনঃশির মধ্যে আমার গোষ্ঠী সবচেয়ে দুর্বল, এবং আমার পিতৃকুলে আমি ছোট।
\s5
\v 16 তখন সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “নিশ্চয়ই আমি তোমার সহবর্ত্তী হব; আর তুমি মিদিয়নীয়দেরকে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করবে।”
\v 17 তিনি বললেন, “আমি যদি আপনার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি, তবে আপনিই যে আমার সঙ্গে কথা বলছেন, তাঁর কোন চিহ্ন আমাকে দেখান।
\v 18 অনুরোধ করি, আমি যখন আমার নৈবেদ্য এনে আপনার সামনে না রাখি, ততক্ষণ আপনি এখান থেকে যাবেন না।” তাতে তিনি বললেন, “তুমি যতক্ষণ না ফিরে আস, ততক্ষণ আমি অপেক্ষা করব।”
\s5
\v 19 তখন গিদিয়োন ভিতরে গিয়ে একটা ছাগল ও এক ঐফা পরিমিত সূজির খামিহীন রুটি তৈরী করলেন এবং মাংস ডালাতে রেখে ঝোল পাত্রে করে নিয়ে বাইরে এসে সেই এলা গাছের তলায় তাঁর কাছে এনে রাখলেন।
\v 20 ঈশ্বরের দূত তাঁকে বললেন, “মাংস ও খামিহীন রুটিগুলি নিয়ে এই পাথরের উপরে রাখ, এবং ঝোল ঢেলে দাও।” তিনি তাই করলেন।
\s5
\v 21 তখন সদাপ্রভুর দূত নিজের হাতের লাঠি সামনে বাড়িয়ে দিয়ে সেই মাংস ও খামিবিহীন রুটিগুলি স্পর্শ করলেন; তখন পাথর থেকে আগুন বের হয়ে সেই মাংস ও খামিবিহীন রুটিগুলি গ্রাস করল; আর সদাপ্রভুর দূত তাঁর সামনে থেকে চলে গেলেন।
\s5
\v 22 তখন গিদিয়োন দেখলেন যে তিনি সদাপ্রভুর দূত; আর গিদিয়োন বললেন, “হায় হায়, হে প্রভু সদাপ্রভু, কারণ আমি সামনাসামনি হয়ে সদাপ্রভুর দূতকে দেখলাম।”
\v 23 সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “তোমার শান্তি হোক, ভয় কর না; তুমি মরবে না।”
\v 24 পরে গিদিয়োন সেই জায়গায় সদাপ্রভুর উদ্দেশ্য এক যজ্ঞবেদি তৈরী করলেন ও তাঁর নাম যিহোবাশালোম [সদাপ্রভু শান্তি] রাখলেন; তা অবীয়েষ্রীয়দের অফ্রাতে এখনও আছে।
\s5
\v 25 পরে সেই রাত্রিতে সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “তুমি তোমার পিতার ষাঁড়, অর্থাৎ সাত বছর বয়স্ক দ্বিতীয় ষাঁড়টি নাও এবং বালদেবের যে যজ্ঞবেদি তোমার পিতার আছে, তা ভেঙ্গে ফেল ও তাঁর পাশের আশেরা কেটে ফেল;
\v 26 আর এই দুর্গের চূড়াতে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পরিপাটী করে এক যজ্ঞবেদি তৈরী কর, আর সে দ্বিতীয় ষাঁড়টি নিয়ে, যে আশেরা কাটবে, তারই কাঠ দিয়ে হোম কর।”
\s5
\v 27 পরে গিদিয়োন নিজের দাসদের মধ্যে দশ জনকে সঙ্গে নিয়ে, সদাপ্রভু তাঁকে যেমন বলেছিলেন, সেরকম করলেন; কিন্তু নিজের পিতৃকুল ও নগরের লোকদেরকে ভয় করাতে তিনি দিনেরবেলায় তা না করে রাত্রিতে করলেন।
\s5
\v 28 পরে ভোরে যখন নগরের লোকেরা উঠল, তখন, দেখ, বালদেবতার যজ্ঞবেদি ভাঙ্গা ও তার পাশে আশেরা কাটা হয়েছে এবং নূতন যজ্ঞবেদির ওপরে দ্বিতীয় ষাঁড়টী উৎসর্গ করা হয়েছে।
\v 29 তখন তারা পরস্পর বলল, “এ কাজ কে করল?” পরে খোঁজখবর নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে লোকেরা বলল, “যোয়াশের ছেলে গিদিয়োন এটা করেছে।”
\s5
\v 30 তাতে নগরের লোকেরা যোয়াশকে বলল, “তোমার ছেলেকে বের করে আন, সে মারা যাক; কারণ সে বালদেবতার যজ্ঞবেদি ভেঙ্গে ফেলেছে, ও তার পাশের আশেরা কেটে দিয়েছে।”
\s5
\v 31 তখন যোয়াশ তাঁর বিরুদ্ধে দাঁড়ানো লোকদেরকে বললেন, “তোমরাই কি বালদেবতার পক্ষে বিবাদ করবে? তোমরাই কি তাকে রক্ষা করবে? যে কেউ তার পক্ষে বিবাদ করে, তার প্রাণদণ্ড হবে, ভোরবেলা পর্যন্ত [থাক]; বালদেব যদি দেবতা হয়, তবে সে নিজের পক্ষে নিজে বিবাদ করুক; যেহেতু তারই যজ্ঞবেদি ভাঙ্গা হয়েছে।”
\v 32 তাই তিনি সেদিন তাঁর নাম যিরুব্বাল [বালদেব বিবাদ করুক] রাখলেন, বললেন, “বালদেবতা তার সঙ্গে বিবাদ করুক, কারণ সে তার বেদি ভেঙ্গে ফেলেছে।”
\s5
\v 33 সেই সময়ে মিদিয়নীয়, অমালেকীয় ও পূর্ব্বদেশের লোকেরা জড়ো হল এবং পার হয়ে যিষ্রিয়েলের উপত্যকায় শিবির তৈরী করল।
\s5
\v 34 কিন্তু সদাপ্রভুর আত্মা গিদিয়োনকে ঘিরে রাখলেন ও তিনি তূরী বাজালেন, আর অবীয়েষ্রীয়েরা তাকে অনুসরণ করল।
\v 35 আর তিনি মনঃশি প্রদেশের সব জায়গায় লোক পাঠালেন, আর তারাও তাকে অনুসরণ করল; পরে তিনি আশের, সবূলূন ও নপ্তালির কাছে দূত পাঠালেন, আর তারা ওদের কাছে আসল।
\s5
\v 36 পরে গিদিয়োন ঈশ্বরকে বললেন, আপনার বাক্য অনুসারে আপনি যদি আমার মাধ্যমে ইস্রায়েলকে রক্ষা করেন, তবে দেখুন,
\v 37 আমি খামারে ছাঁটা মেষলোম রাখব, যদি কেবল সেই লোমের ওপরে শিশির পড়ে এবং সমস্ত ভূমি শুকনো থাকে, তবে আমি জানব যে, আপনার বাক্যানুসারে আপনি আমার মাধ্যমে ইস্রায়েলকে রক্ষা করবেন।
\s5
\v 38 পরে সেরকমই হল, পরদিন তিনি ভোরবেলায় উঠে সেই লোম চেপে তা থেকে শিশির, পূর্ণ এক বাটি জল নিংড়িয়ে ফেললেন।
\s5
\v 39 আর গিদিয়োন ঈশ্বরকে বললেন, “আমার বিরুদ্ধে আপনার রাগ প্রজ্বলিত না হোক, আমি শুধু আর একবার কথা বলব; অনুরোধ করি, লোমের মাধ্যমে আমাকে আর একবার পরীক্ষা নিতে দিন; এখন শুধু লোম শুকনো হোক, আর সব ভূমির উপরে শিশির পড়ুক।”
\v 40 পরে ঈশ্বর সেই রাত্রিতে সেরকম করলেন; তাতে শুধু লোম শুকনো হল, আর সব ভূমিতে শিশির পড়ল।
\s5
\c 7
\s মিদিয়নীয়দের ওপরে গিদিয়োনের জয়লাভ।
\p
\v 1 পরে যিরুব্বাল অর্থাৎ গিদিয়োন ও তাঁর সঙ্গী সব লোক ভোরবেলায় উঠে হারোদ নামক উনুইর কাছে শিবির তৈরী করলেন; তখন মিদিয়নের শিবির তাঁদের উত্তরদিকে মোরি পর্ব্বতের কাছে উপত্যকায় ছিল।
\s5
\v 2 পরে সদাপ্রভু গিদিয়োনকে বললেন, তোমার সঙ্গী লোকদের সংখ্যা এত বেশি যে, আমি মিনিয়নীয়দেরকে তাঁদের হাতে সমর্পণ করব না; যদি ইস্রায়েল আমার বিরুদ্ধে গর্ব করে বলে, আমি নিজের ক্ষমতায় উদ্ধার পেলাম।
\v 3 অতএব তুমি এখন লোকদের সামনে এই কথা ঘোষণা কর, যে কেউ ভীত ও ত্রাসযুক্ত, সে ফিরে গিলিয়দ পর্ব্বত থেকে চলে যাক। তাতে লোকদের মধ্য থেকে বাইশহাজার লোক ফিরে গেল, দশহাজার থেকে গেল।
\s5
\v 4 পরে সদাপ্রভু গিদিয়োনকে বললেন, লোক এখনও অনেক আছে; তুমি তাদেরকে নিয়ে ঐ জলের কাছে নেমে যাও; সেখানে আমি তোমার জন্য তাঁদের পরীক্ষা নেব; তাতে যার বিষয়ে তোমাকে বলি, এ তোমার সঙ্গে যাবে, সেই তোমার সাথে যাবে; এবং যার বিষয়ে তোমাকে বলি সে তোমার সঙ্গে যাবে না, সে যাবে না।
\s5
\v 5 পরে তিনি লোকদেরকে জলের কাছে নিয়ে গেলে সদাপ্রভু গিদিয়োনকে বললেন, যে কেউ কুকুরের মতো জিভ দিয়ে জল চেটে খায়, তাকে ও যে কেউ পান করবার জন্য হাঁটুর উপরে উপুড় হয়, তাকে পৃথক করে রাখ।
\v 6 তাতে সংখ্যায় তিনশো লোক মুখে অঞ্জলি তুলে জল চেটে খেল, কিন্তু অন্য সব লোক পান করবার জন্য হাঁটুর উপরে উপুড় হল।
\s5
\v 7 তখন সদাপ্রভু গিদিয়োনকে বললেন, এই যে তিনশো লোক জল চেটে খেল, এদের মাধ্যমে আমি তোমাদেরকে উদ্ধার করব, ও মিদিয়নীয়দেরকে তোমার হাতে সমর্পণ করব; অন্য সব লোক নিজের নিজের জায়গায় চলে যাক।
\v 8 পরে লোকেরা নিজের নিজের হাতে খাদ্য দ্রব্য ও তূরী নিল, আর তিনি ইস্রায়েলের লোকদেরকে নিজের নিজের তাঁবুতে বিদায় করে ঐ তিনশো লোককে রাখলেন; সেইসময়ে মিদিয়নের শিবির তাঁর নীচের উপত্যকাতে ছিল।
\s5
\v 9 আর সেই রাত্রিতে সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, উঠ, তুমি নেমে শিবিরের মধ্যে যাও; কারণ আমি তোমার হাতে তা সমর্পণ করেছি।
\v 10 আর যদি তুমি যেতে ভয় পাও, তবে তোমার চাকর ফুরাকে সঙ্গে নিয়ে নেমে শিবিরে যাও,
\v 11 এবং ওরা যা বলে, তা শোন তার পরে তোমার হাত শক্তিশালী হবে, তাতে তুমি ঐ শিবিরের বিরুদ্ধে নেমে যাবে। তখন তিনি নিজের চাকর ফুরাকে সঙ্গে করে শিবিরে অবস্থিত সসজ্জ লোকদেরকে নিয়ে শেষ পর্যন্ত নেমে গেলেন।
\s5
\v 12 তখন মিদিয়নীয়, অমালেকীয় ও পূর্ব্বদেশের সব লোক পঙ্গপালের মতো উপত্যকাতে নেমে পড়েছিল, এবং তাঁদের উটও সমুদ্রতীরের বালুকার মতো অসংখ্য ছিল যা গণনা করা যায়না।
\s5
\v 13 পরে গিদিয়োন আসলেন, আর দেখ, তাদের মধ্যে এক জন নিজের বন্ধুকে এই স্বপ্নের কথা বলল, দেখ, আমি একটা স্বপ্ন দেখেছি, আর দেখ, যেন যবের একটা রুটি মিদিয়নের শিবিরের মধ্য দিয়ে গড়িয়ে গেল, এবং তাঁবুর কাছে গিয়ে আঘাত করল; তাতে তাঁবুটা উল্টে লম্বা হয়ে পড়ল।
\v 14 তখন তার বন্ধু বলল, ওটা আর কিছু না, ইস্রায়েলীয় যোয়াশের পুত্র গিদিয়োনের খড়গ; ঈশ্বর মিদিয়নকে ও সমস্ত শিবিরকে তার হাতে সমর্পণ করেছেন।
\s5
\v 15 তখন গিদিয়োন ঐ স্বপ্নের কথা ও তার অর্থ শুনে প্রার্থনা করলেন; পরে ইস্রায়েলের শিবিরে ফিরে এসে বললেন, “ওঠ, কারণ সদাপ্রভু তোমাদের হাতে মিদিয়নের শিবির সমর্পণ করেছেন।”
\v 16 পরে তিনি ঐ তিনশো লোককে তিনটি দলে ভাগ করে প্রত্যেকের হাতে একটা করে তূরী এবং একটা করে শূন্য ঘট, ও ঘটের মধ্যে মশাল দিলেন।
\s5
\v 17 তিনি তাদেরকে বললেন, তোমরা আমার দিকে দেখে আমার মত কাজ কর; দেখ, আমি শিবিরের শেষভাগে পৌঁছে যেরকম করব, তোমরাও সেরকম করবে।
\v 18 আমি ও আমার সঙ্গীরা সবাই তূরী বাজালে তোমরাও সমস্ত শিবিরের চারদিকে থেকে তূরী বাজাবে, আর বলবে, “সদাপ্রভুর জন্য ও গিদিয়োনের জন্য।”
\s5
\v 19 পরে মধ্যরাত্রির শুরুতে নতুন প্রহরী আসামাত্র গিদিয়োন ও তার সঙ্গী একশো লোক শিবিরের শেষে পৌছে তূরী বাজালেন এবং নিজের নিজের হাতে থাকা ঘট ভেঙ্গে ফেললেন।
\s5
\v 20 এইভাবে তিন দলেই তূরী বাজাল ও ঘট ভেঙ্গে ফেলল এবং বাঁ হাতে মশাল ও ডান হাতে বাজাবার তূরী ধরে খুব জোরে বলতে লাগল, “সদাপ্রভুর ও গিদিয়োনের খড়গ।”
\v 21 আর শিবিরের চারদিকে প্রত্যেকে নিজের নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকল; তাতে শিবিরের সব লোক দৌড়াদৌড়ি করে চিৎকার করতে করতে পালিয়ে যেতে লাগল।
\s5
\v 22 তখন ওরা ঐ তিনশো তূরী বাজাল, আর সদাপ্রভু শিবিরের প্রত্যেক জনের খড়গ তার বন্ধুর ও সব সৈন্যের বিরুদ্ধে চালনা করলেন; তাতে সৈন্যরা সরোরার দিকে বৈৎ-শিট্টা পর্যন্ত, টব্বতের নিকটবর্ত্তী আবেল-মহোলার সীমা পর্যন্ত পালিয়ে গেল।
\v 23 পরে নপ্তালি, আশের ও সমস্ত মনঃশির থেকে ইস্রায়েলীয়রা জড়ো হয়ে মিদিয়নের পিছন পিছন তাড়া করে গেল।
\s5
\v 24 আর গিদিয়োন পাহাড়ী অঞ্চলে ইফ্রয়িম প্রদেশের সব জায়গায় দূত পাঠিয়ে এই কথা বললেন, তোমরা মিদিয়নের বিরুদ্ধে নেমে এস, এবং তাদের আগে বৈৎ-বারা ও যর্দন পর্যন্ত জলাশয় সব দখল কর। তাতে ইফ্রয়িমের সব লোক জড়ো হয়ে বৈৎ-বারা ও যর্দন পর্যন্ত জলাশয় সব দখল করল।
\v 25 আর তারা ওরেব ও সেবনামে মিদিয়নের দুই অধ্যক্ষকে ধরল; আর ওরেব নামক পাথরের ওপর ওরেবকে হত্যা করল, এবং সেব নামক দ্রাক্ষাকুণ্ডের কাছে সেবকে হত্যা করল, এবং মিদিয়নের পিছন পিছন তাড়া করল; আর ওরেবের ও সেবের মাথা যর্দ্দনের পারে গিদিয়নের কাছে নিয়ে গেল।
\s5
\c 8
\p
\v 1 পরে ইফ্রয়িমের লোকেরা তাঁকে বলল, তুমি মিদিয়নের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যাবার সময়ে আমাদেরকে ডাক নি, আমাদের প্রতি এ কেমন ব্যবহার করলে? এইভাবে তারা তাঁর সঙ্গে খুব বিবাদ করল।
\s5
\v 2 তখন তিনি তাদেরকে বললেন, এখন তোমাদের কাজের সমান কোন কাজ আমি করেছি? অবীয়েষরের দ্রাক্ষা তোলার থেকে ইফ্রয়িমের পড়ে থাকা দ্রাক্ষাফল কুড়ান কি ভাল না?
\v 3 তোমাদেরই হাতে তো ঈশ্বর মিদিয়নের দুই রাজাকে, ওরেব ও সেবকে, সমর্পণ করেছেন; আমি তোমাদের এই কাজের সমান কোন্‌ কাজ করতে পেরেছি? তখন তাঁর এই কথায় তাঁর প্রতি তাদের ক্রোধ কমে গেল।
\s5
\v 4 গিদিয়োন ও তাঁর সঙ্গী তিনশো লোক যর্দ্দনে এসে পার হলেন; তারা ক্লান্ত হলেও তাড়া করে যাচ্ছিলেন।
\v 5 আর তিনি সুক্কোতের লোকদেরকে বললেন, অনুরোধ করি, তোমরা আমার অনুগামী লোকদেরকে রুটি দাও, কারণ তারা ক্লান্ত হয়েছে; আর আমি সেবহ ও সল্‌মুন্নের মিদিয়নের দুই রাজার পিছন পিছন তাড়া করে যাচ্ছি।
\s5
\v 6 তাতে সুক্কোতের নেতারা বলল, সেবহের ও সল্‌মুন্নের ক্ষমতা কি এখন তোমার হাতে এসেছে যে, আমরা তোমার সৈন্যদেরকে রুটি দেব?
\v 7 গিদিয়োন বললেন, ভাল, যখন সদাপ্রভু সেবহকে ও সল্‌মুন্নকে আমার হাতে সমর্পণ করবেন, তখন আমি মরুভূমির কাঁটা ও কাঁটাগাছ দিয়ে তোমাদের মাংস ছিঁড়ে নেব।
\s5
\v 8 পরে তিনি সেখান থেকে পনূয়েলে উঠে গিয়ে সেখানকার লোকদের কাছেও সেইভাবে বললেন, তাতে সুক্কোতের লোকেরা যেরকম উত্তর দিয়েছিল, পনূয়েলের লোকেরাও তাঁকে সেইরকম উত্তর দিল।
\v 9 তখন তিনি পনূয়েলের লোকদেরকেও বললেন, আমি যখন ভালোভাবে ফিরে আসব, তখন এই দুর্গ ভেঙ্গে ফেলব।
\s5
\v 10 সেবহ ও সল্‌মুন্ন কর্কোরে ছিলেন, এবং তাঁদের সঙ্গী সৈন্য প্রায় পনেরো হাজার লোক ছিল; পুর্ব্বদেশের লোকদের সব সৈন্যের মধ্যে এরাই মাত্র অবশিষ্ট ছিল; আর খড়গধারী একলক্ষ কুড়ি হাজার লোক মারা গিয়েছিল।
\s5
\v 11 পরে গিদিয়োন নোবহের ও যগ্‌বিহের পূর্বদিকে তাঁবুতে বসবাসকারীদের পথ দিয়ে উঠে গিয়ে সেই সৈন্যদেরকে আঘাত করলেন, যেহেতু সৈন্যরা নিশ্চিন্তে ছিল।
\v 12 তখন সেবহ ও সল্‌মুন্ন পালিয়ে গেলেন কিন্তু তিনি তাঁদের পিছন পিছন তাড়া করলেন; এবং সেবহ ও সল্‌মুন্নকে, মিদিয়নের সেই দুই রাজাকে, ধরলেন; আর সব সৈন্যকে ভয়যুক্ত করলেন।
\s5
\v 13 পরে যোয়াশের পুত্র গিদিয়োন হেরসের উপরে ওঠার পথ দিয়ে যুদ্ধ থেকে ফিরে আসছিলেন,
\v 14 এমন সময়ে সুক্কোৎ-নিবাসীদের একজন যুবককে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন; তাতে সে সুক্কোতের অধ্যক্ষদের ও সেখানকার প্রাচীনদের সাতাত্তর জনের নাম লিখে দিল।
\s5
\v 15 পরে তিনি সুক্কোতের লোকদের কাছে গিয়ে বললেন, সেবহ ও সল্‌মুন্নকে দেখ, যাদের বিষয়ে তোমরা আমাকে ঠাট্টা করে বলেছিলে, সেবহের ও সল্‌মুন্নের ক্ষমতা কি এখন তোমার হাতে এসেছে যে, আমরা তোমার ক্লান্ত লোকদেরকে রুটি দেব?
\v 16 আর তিনি ঐ নগরের প্রাচীনদেরকে ধরলেন, এবং মরুভূমির কাঁটা ও কাঁটাগাছ নিয়ে তার মাধ্যমে সুক্কোতের লোকদেরকে শিক্ষা দিলেন।
\v 17 পরে তিনি পনূয়েলের দুর্গ ভেঙ্গে ফেললেন ও নগরের লোকদেরকে হত্যা করলেন।
\s5
\v 18 আর তিনি সেবহ ও সল্‌মুন্নকে বললেন, তোমরা তাবোরে যে পুরুষদেরকে হত্যা করেছিলে, তারা কি ধরনের লোক? তাঁরা উত্তর দিলেন, আপনি যেমন, তারাও তেমন, প্রত্যেকে রাজপুত্রর মতো ছিল।
\v 19 তিনি বললেন, তাঁরা আমার ভাই, আমারই নিজের ভাই; জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, তোমরা যদি তাদেরকে জীবিত রাখতে, আমি তোমাদেরকে হত্যা করতাম না।
\s5
\v 20 পরে তিনি নিজের বড় ছেলে যেথরকে বললেন, ওঠ, এদেরকে হত্যা কর। কিন্তু সেই বালক নিজের খড়গ বের করল না, কারণ সে ভয় পেয়ে গেল, কারণ তখনও সে বালক।
\v 21 তখন সেবহ ও সল্‌মুন্ন বললেন, আপনি উঠে আমাদেরকে আঘাত করুন, কারণ যে যেমন পুরুষ, তাঁর তেমন বীরত্ব। তাতে গিদিয়োন উঠে সেবহ ও সল্‌মুন্নকে হত্যা করলেন, এবং তাঁদের উটগুলির গলার সমস্ত চন্দ্রহার নিলেন।
\s5
\v 22 পরে ইস্রায়েলের লোকেরা গিদিয়োনকে বলল, আপনি বংশপরম্পরায় আমাদের উপরে কর্ত্তৃত্ব করুন, কারণ আপনি আমাদেরকে মিদিয়নের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন।
\v 23 তখন গিদিয়োন বললেন, আমি তোমাদের ওপরে কর্ত্তৃত্ব করব না, এবং আমার ছেলেও তোমাদের ওপরে কর্ত্তৃত্ব করবে না; সদাপ্রভুই তোমাদের ওপরে কর্ত্তৃত্ব করবেন।
\s5
\v 24 আর গিদিয়োন তাদেরকে বললেন, আমি তোমাদের কাছে একটা অনুরোধ করি, তোমরা প্রত্যেক জন নিজের নিজের লুঠ করা কানের দুল আমাকে দাও; কারণ শত্রুরা ইশ্মায়েলীয়, এই জন্য তাঁদের সোনার কানের দুল ছিল।
\v 25 তারা উত্তর করল, অবশ্য দেব; পরে তারা একখানা বস্ত্র পেতে প্রত্যেকে তাতে নিজের নিজের লুঠ করা কানের দুল ফেলল;
\s5
\v 26 তাতে তাঁর চাওয়া কানের দুলের পরিমাণ একহাজার সাতশো শেকল সোনা হল। এছাড়া চন্দ্রহার, ঝুমকা ও মিদিয়নীয় রাজাদের পরা বেগুনী রঙ্গের বস্ত্র ও তাঁদের উটের গলার হার ছিল।
\s5
\v 27 পরে গিদিয়োন তা দিয়ে এক এফোদ তৈরী করে নিজের বসতি-নগর অফ্রাতে রাখলেন; তাতে সব ইস্রায়েল সে জায়গায় সেই এফোদের অনুসরণে ব্যভিচারী হল; আর তা গিদিয়োনের ও তাঁর কুলের ফাঁদস্বরূপ হল।
\v 28 এইভাবে মিদিয়ন ইস্রায়েলীয়দের সামনে নত হল, আর মাথা তুলতে পারল না। আর গিদিয়োনের সময়ে চল্লিশ বৎসর দেশ শান্তিতে থাকল।
\s5
\v 29 পরে যোয়াশের পুত্র যিরুব্বাল নিজের বাড়িতে বসবাস করলেন।
\v 30 গিদিয়োনের ঔরসজাত সত্তরটী ছেলে ছিল, কারণ তাঁর অনেক স্ত্রী ছিল।
\v 31 আর শিথিমে তাঁর যে এক উপপত্নী ছিল, সেও তাঁর জন্য এক পুত্র প্রসব করল, আর তিনি তাঁর নাম অবীমেলক রাখলেন।
\s5
\v 32 পরে যোয়াশের পুত্র গিদিয়োন ভালোভাবে বৃদ্ধাবস্থায় প্রাণত্যাগ করলেন, আর অবীয়েষ্রীয়দের অফ্রাতে তাঁর পিতা যোয়াশের কবরে তাকে কবর দেওয়া হল।
\v 33 গিদিয়োনের মৃত্যুর পরেই ইস্রায়েলীয়রা আবার বালদেবতাদের কাছে ফিরে গিয়ে ব্যভিচারী হল, আর বাল্‌বরীৎকে নিজেদের ইষ্ট দেবতা করল।
\s5
\v 34 আর যিনি চারদিকের সব শত্রুর হাত থেকে তাদেরকে উদ্ধার করেছিলেন, ইস্রায়েলীয়রা নিজেদের ঈশ্বর সেই সদাপ্রভুকে ভুলে গেল।
\v 35 আর যিরুব্বাল গিদিয়োন ইস্রায়েলের যেরকম মঙ্গল করেছিলেন, তারা সেই অনুসারে তাঁর বংশের প্রতি ভালো ব্যবহার করল না।
\s5
\c 9
\s অবীমেলকের বিবরণ।
\p
\v 1 পরে যিরুব্বালের ছেলে অবীমেলক শিখিমে নিজের মায়ের আত্মীয়দের কাছে গিয়ে তাদেরকে এবং নিজের মায়ের পিতৃকুলের সব গোষ্ঠীকে এই কথা বলল; নিবেদন করি,
\v 2 তোমরা শিখিমে সব বাড়ির লোকেদের এই কথা বল, তোমাদের পক্ষে ভাল কি? তোমাদের ওপরে যিরুব্বালের সব ছেলের অর্থাৎ সত্তর জনের কর্ত্তৃত্ব ভাল, না এক জনের কর্ত্তৃত্ব ভাল? আর এটাও মনে কর, আমি তোমাদের অস্থি ও তোমাদের মাংস।
\s5
\v 3 আর তাঁর মাতার আত্মীয়েরা তাঁর পক্ষে শিখিমের সব বাড়ির লোকেদের ঐ সব কথা বললে অবীমেলকের অনুগামী হতে তাদের মনে ইচ্ছা হল; কারণ তারা বলল, উনি আমাদের আত্মীয়।
\v 4 আর তারা বাল্‌-বরীতের মন্দির থেকে তাঁকে সত্তর [থান] রুপো দিল; তাতে অবীমেলক অসার ও উৎশৃঙ্খল লোকদেরকে ঐ রুপোর বেতন দিলে তারা তাঁর অনুগামী হল।
\s5
\v 5 পরে সে অফ্রায় বাবার বাড়িতে গিয়ে নিজের ভাইদেরকে অর্থাৎ যিরুব্বালের সত্তর জন ছেলেকে এক পাথরের ওপরে হত্যা করল; কেবল যিরুব্বালের ছোট ছেলে যোথম লুকিয়ে থাকাতে বেঁচে গেল।
\v 6 পরে শিখিমের সব বাড়ির লোক এবং মিল্লোর সব লোক জড়ো হয়ে শিখিমস্থ স্তম্ভের এলোন গাছের কাছে গিয়ে অবীমেলককে রাজা করল।
\s5
\v 7 আর লোকেরা যোথমকে এই সংবাদ দিলে সে গিয়ে গরিষীম পর্ব্বতের চূড়াতে দাঁড়িয়ে জোরে চিত্কার করে ডেকে তাদেরকে বলল, হে শিখিমের বাড়ির লোক সকল, আমার কথা শোনো, শুনলে ঈশ্বর তোমাদের কথা শুনবেন।
\v 8 একবার বৃক্ষেরা নিজেদের উপরে অভিষেক করার জন্য রাজার খোঁজে গেল। তারা জিতবৃক্ষকে বলল, তুমি আমাদের উপরে রাজত্ব কর।
\s5
\v 9 জিতবৃক্ষ তাদেরকে বলল, আমার যে তেলের জন্য ঈশ্বর ও মানুষেরা আমার গৌরব করেন, তা ত্যাগ করে আমি কি বৃক্ষদের ওপরে দুলতে থাকব?
\v 10 পরে বৃক্ষরা ডুমুরবৃক্ষকে বলল, তুমি এসে আমাদের উপরে রাজত্ব কর।
\v 11 ডুমুরবৃক্ষ তাদেরকে বলল, আমি কি নিজের মিষ্টতা ও উত্তম ফল ত্যাগ করে বৃক্ষদের উপরে দুলতে থাকবে?
\s5
\v 12 পরে বৃক্ষরা আঙ্গুর গাছকে বলল, তুমি এসে আমাদের ওপরে রাজত্ব কর।
\v 13 দ্রাক্ষালতা তাদেরকে বলল, আমার যে রস ঈশ্বরকে ও মানুষদেরকে খুশি করে, তা ত্যাগ করে আমি কি বৃক্ষদের ওপরে দুলতে থাকবে?
\v 14 পরে সমস্ত বৃক্ষ কাঁটাযুক্ত বৃক্ষকে বলল, তুমি এসে আমাদের উপরে রাজত্ব কর।
\s5
\v 15 কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ সেই বৃক্ষদেরকে বলল, তোমরা যদি নিজেদের ওপরে সত্যিই আমাকে রাজা বলে অভিষেক কর, তবে এসে আমার ছায়ার শরণ নাও, তবে এই কাঁটাযুক্ত বৃক্ষ থেকে আগুন বের হয়ে লিবানোনের এরস বৃক্ষদেরকে পুড়িয়ে দিক।
\v 16 এখন অবীমেলককে রাজা করাতে তোমরা যদি সত্য ও যথার্থ আচরণ করে থাক, এবং যদি যিরুব্বালের ও তাঁর কুলের প্রতি ভালো আচরণ করে থাক, ও তাঁর হাতের উপকারানুসারে তাঁর প্রতি ব্যবহার করে থাক;-
\s5
\v 17 কারণ আমার বাবা তোমাদের জন্য যুদ্ধ করেছিলেন, ও প্রাণপণ চেষ্টা করে মিদিয়নের হাত থেকে তোমাদেরকে উদ্ধার করেছিলেন;
\v 18 কিন্তু তোমরা আজ আমার পিতৃকুলের বিরুদ্ধে উঠে এক পাথরের ওপরে তার সত্তর জন ছেলেকে হত্যা করলে, ও তাঁর দাসীর ছেলে অবীমেলককে নিজেদের ভাই বলে শিকিমের নেতাদের ওপরে রাজা করলে;--
\s5
\v 19 আজ যদি তোমরা যিরুব্বালের ও তাঁর কুলের প্রতি সত্য ও যথার্থ আচরণ করে থাক, তবে অবীমেলকের বিষয়ে আনন্দ কর, এবং সেও তোমাদের বিষয় আনন্দ করুন।
\v 20 কিন্তু তা যদি না হয়, তবে অবীমেলক থেকে আগুন বেরিয়ে শিখিমের লোকদেরকে ও মিল্লোর লোকদেরকে পুড়িয়ে দিক; আবার শিখিমের লোকদের থেকে মিল্লোর লোকদের থেকে আগুন বের হয়ে অবীমেলককে পুড়িয়ে দিক।
\v 21 পরে যোথম দৌড়িয়ে পালিয়ে গেল, সে বেরে গেল, এবং তার ভাই অবীমেলকের ভয়ে সেই জায়গায় বাস করল।
\s5
\v 22 অবীমেলক ইস্রায়েলের উপরে তিন বছর কর্ত্তৃত্ব করল।
\v 23 পরে ঈশ্বর অবীমেলকের ও শিখিমের লোকদের মধ্যে এক মন্দ আত্মা পাঠালেন, তাতে শিখিমের লোকেরা অবীমেলকের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করল;
\v 24 যেন যিরুব্বালের সত্তরটি ছেলের প্রতি করা অত্যাচারের প্রতিফল ঘটে, এবং তাদেরকে হত্যা করেছিল যে তাদের ভাই অবীমেলক, তার ওপরে, এবং ভাই হত্যায় যারা তাকে সাহায্য করেছিল, সেই শিখিমস্থ লোকদের ওপরে ঐ রক্তপাতের অপরাধে অপরাধী হয়।
\s5
\v 25 আর শিখিমের লোকেরা তার জন্য কোন কোন পর্ব্বত-শৃঙ্গে গোপনে লোক বসিয়ে গেল, সবারই দ্রব্যাদি তারা লুঠ করল; আর অবীমেলক তার সংবাদ পেল।
\s5
\v 26 পরে এবদের ছেলে গাল নিজের ভাইদেরকে সঙ্গে নিয়ে শিখিমে আসল; আর শিখিমের লোকেরা তাকে বিশ্বাস করল।
\v 27 আর তারা বের হয়ে নিজের নিজের দ্রাক্ষাক্ষেত্রে ফল তুলল ও তা মাড়াই করল এবং উৎসব করল, আর নিজেদের দেবতার মন্দিরে গিয়ে ভোজন পান করে অবীমেলককে অভিশাপ দিল।
\s5
\v 28 আর এবদের ছেলে গাল বলল, অবীমেলক কে, সে শিখিমীয় কে, যে আমরা তার দাসত্ব করব? সে কি যিরুব্বালের ছেলে না? সবূল কি তার সেনাপতি না? তোমরা বরং শিখিমের বাবা হমোরের লোকদের দাসত্ব কর;
\v 29 আমরা ওর দাসত্ব কেন স্বীকার করব? আহা, এই সব লোক আমার অধিকারে এলে আমি অবীমেলককে দূর করে দিই। পরে সে অবীমেলকের উদ্দেশ্যে বলল, তুমি দলবল বৃদ্ধি করে বের হয়ে এস দেখি।
\s5
\v 30 এবদের ছেলে গালের সেই কথা নগরের কর্তা সবূল শুনে সে ক্রোধে প্রজ্বলিত হয়ে উঠল;
\v 31 আর সে কৌশল করে অবীমেলকের কাছে দূত পাঠিয়ে বলল, দেখুন, এবদের ছেলে গাল ও তার ভাইরা শিখিমে এসেছে; আর দেখুন, তারা আপনার বিরুদ্ধে নগরে কুকথা বলছে।
\s5
\v 32 অতএব আপনি ও আপনার সঙ্গে যে সব লোক আছে, আপনারা রাতে উঠে গিয়ে মাঠে লুকিয়ে থাকুন।
\v 33 পরে ভোরবেলায় সূর্য্যোদয় হওয়ামাত্র আপনি উঠে নগর আক্রমণ করবেন; আর দেখুন, সে ও তার সঙ্গী লোকেরা আপনার বিরুদ্ধে বের হবে, তখন আপনার হাত যা করতে পারবে, তা করবেন।
\s5
\v 34 পরে অবীমেলক ও তার সঙ্গী সমস্ত লোক রাত্রিতে উঠে চারটে দল ভাগ হয়ে শিখিমের বিরুদ্ধে লুকিয়ে থাকল।
\v 35 আর এবদের ছেলে গাল বাইরে গিয়ে নগরের দরজার প্রবেশের মুখে দাঁড়াল; পরে অবীমেলক ও তার সঙ্গী লোকেরা গোপন জায়গা থেকে উঠল।
\s5
\v 36 আর গাল সেই লোকদেরকে দেখে সবূলকে বলল, দেখ, পর্ব্বতশৃঙ্গ থেকে লোকসকল নেমে আসছে। সবূল তাকে বলল, তুমি মানুষের ভুল পথের পর্ব্বতের ছায়া দেখছ।
\v 37 পরে গাল আবার বলল, দেখ, উচ্চ দেশ থেকে লোকসকল নেমে আসছে, এবং গণকদের এলোন বৃক্ষের পথ দিয়ে এক দল আসছে।
\s5
\v 38 সবূল তাকে বলল, কোথায় এখন তোমার সেই মুখ, যে মুখে বলেছিলে, অবীমেলক কে যে আমরা তার দাসত্ব স্বীকার করি? তুমি যে লোকদেরকে তুচ্ছ করেছিলে, ওরা কি সেই লোক না? এখন যাও, বের হয়ে ওর সঙ্গে যুদ্ধ কর।
\v 39 পরে গাল শিখিমের লোকদের আগে আগে বেরিয়ে গিয়ে অবীমেলকের সঙ্গে যুদ্ধ করল।
\v 40 তাতে অবীমেলক তাকে তাড়া করল ও সে তার সামনে থেকে পালিয়ে গেল এবং প্রবেশ দ্বারের জায়গা পর্যন্ত অনেক লোক আহত হয়ে পড়ল।
\s5
\v 41 পরে অবীমেলক অরূমায় থাকল, এবং সবূল গালকে ও তার ভাইদেরকে তাড়িয়ে দিল, তারা আর শিখিমে বাস করতে পারল না।
\v 42 পর দিন লোকেরা বের হয়ে মাঠে যাচ্ছিল, আর অবীমেলক তার সংবাদ পেল।
\v 43 সে লোকদেরকে নিয়ে তিনটে দল করে মাঠের মধ্যে লুকিয়ে থাকল; পরে সে চেয়ে দেখল, আর দেখ, লোকেরা নগর থেকে বের হয়ে আসছিল; তখন সে তাদের বিরুদ্ধে উঠে তাদেরকে আঘাত করল।
\s5
\v 44 পরে অবীমেলক ও তার সঙ্গীদল সকল তাড়াতাড়ি এগিয়ে গিয়ে নগর-দ্বার-প্রবেশের জায়গায় দাড়িয়ে থাকল এবং দুটি দল মাঠের সব লোককে আক্রমন করে আঘাত করল।
\v 45 আর অবীমেলক সেই সব দিন ঐ নগরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল; আর নগর অধিকার করে সেখানকার লোকদেরকে হত্যা করল এবং নগর সমভূমি করে তার ওপরে লবণ ছড়িয়ে দিল।
\s5
\v 46 পরে শিখিমের দূর্গে অবস্থিত লোকেরা সব এই কথা শুনে এল্‌-বরীৎ-এর দূর্গে এক গৃহে প্রবেশ করল।
\v 47 পরে শিখিমের দূর্গে অবস্থিত সব গৃহস্থ জড়ো হয়েছে, এই কথা অবীমেলক শুনল।
\s5
\v 48 তখন অবীমেলক ও তার সঙ্গীরা সকলে সল্‌মোন পর্ব্বতে উঠল। আর অবীমেলক কুঠার হাতে নিয়েছিল; সে বৃক্ষ থেকে একটা ডাল কেটে নিয়ে নিজের কাঁধে রাখল, এবং নিজের সঙ্গী লোকদেরকে বলল, তোমরা আমাকে যা করতে দেখলে, তাড়াতাড়ি সেরকম কর।
\v 49 তাতে সব লোক প্রত্যেকে এক একটা ডাল কেটে নিয়ে অবীমেলকের পিছন পিছন চলল; পরে সেই সমস্ত ডাল ঐ উঁচু বাড়ীর গায়ে রেখে সেই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিল; এইভাবে শিখিমের দুর্গে অবস্থিত সমস্ত লোকও মারা গেল; তারা স্ত্রী ও পুরুষ অনুমান হাজার লোক ছিল।
\s5
\v 50 পরে অবীমেলক তেবেসে চলে গেল, ও তেবেসের বিরুদ্ধে শিবির তৈরী করে তা দখল করল।
\v 51 কিন্তু ঐ নগরের মধ্যে এক শক্তিশালী দূর্গ ছিল, অতএব সমস্ত পুরুষ ও স্ত্রী, এবং নগরের সমস্ত লোকেরা পালিয়ে তার মধ্যে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দূর্গের ছাদের ওপরে উঠল।
\s5
\v 52 পরে অবীমেলক সেই দূর্গের কাছে গিয়ে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল, এবং তা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবার জন্য দূর্গের দরজা পর্যন্ত গেল।
\v 53 তখন একটি স্ত্রীলোক যাঁতার উপরের পাথরটি নিয়ে অবীমেলকের মাথার ওপরে ছুঁড়ে তার মাথার খুলি ভেঙ্গে দিল।
\v 54 তাতে সে তাড়াতাড়ি নিজের অস্ত্রবাহক যুবককে ডেকে বলল, তুমি তরোয়াল বের করে আমাকে হত্যা কর; যদি লোকে আমার বিষয়ে বলে, একটা স্ত্রীলোক ওকে হত্যা করেছে। তখন সেই যুবক তাকে বিদ্ধ করলে সে মরে গেল।
\s5
\v 55 পরে অবীমেলক মারা গিয়েছে দেখে ইস্রায়েলীয়রা প্রত্যেকে নিজের নিজের জায়গায় চলে গেল।
\v 56 এইভাবে অবীমেলক নিজের সত্তর জন ভাইকে হত্যা করে নিজের বাবার বিরুদ্ধে যে দুষ্কর্ম্ম করেছিল, ঈশ্বর তার সঠিক শাস্তি তাকে দিলেন;
\v 57 আবার শিখিমের লোকদের মাথায় ঈশ্বর তাদের সমস্ত দুষ্কর্ম্মের প্রতিফল দিলেন; তাতে যিরুব্বালের ছেলে যোথমের অভিশাপ তাদের ওপরে পড়ল।
\s5
\c 10
\s তোলয়, যায়ীর ও যিপ্তহের বিবরণ।
\p
\v 1 অবীমেলকের পরে তোলয় ইস্রায়েলীয়দের উদ্ধারের জন্য উৎপন্ন হলেন; তিনি ইষাখর বংশীয় দোদয়ের নাতি পূয়ার ছেলে; তিনি পর্বতময় ইফ্রয়িম প্রদেশে অবস্থিত শামীরে বাস করতেন।
\v 2 তিনি তেইশ বছর ইস্রায়েলের বিচার করলেন; পরে তিনি মারা গেলেন এবং শামীরে তার কবর দেওয়া হল।
\s5
\v 3 তাঁর পরে গিলিয়দীয় যায়ীর উৎপন্ন হয়ে বাইশ বছর পর্য্যন্ত ইস্রায়েলের বিচার করলেন।
\v 4 তাঁর ত্রিশটী ছেলে ছিল, তারা ত্রিশটি গাধায় চড়ে বেড়াত; এবং তাদের ত্রিশটি নগর ছিল; গিলিয়দ দেশস্থ সেই সকল নগরকে এখন হবোৎ-যায়ীর বলা যায়।
\v 5 পরে যায়ীর মারা গেলেন এবং কামোনে তাঁর কবর দেওয়া হল।
\s5
\v 6 পরে ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই পুনরায় করল, এবং বালদেবতাদের, অষ্টারোৎ দেবীদের, অরামের দেবতাদের, সীদোনের দেবতাদের, মোয়াবের দেবতাদের, অম্মোন-সন্তানদের দেবতাদের ও পলেষ্টীয়দের দেবতাদের সেবা করতে লাগল; তারা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করল, তাঁর সেবা করল না।
\v 7 তখন ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর রাগ প্রজ্বলিত হল, আর তিনি পলেষ্টীয়দের হাতে ও অম্মোন-সন্তানদের হাতে তাদেরকে বিক্রয় করলেন।
\s5
\v 8 আর এরা ঐ বছর ইস্রায়েল সন্তানদেরকে অত্যাচার ও চূর্ণ করল; আঠার বছর পর্য্যন্ত যর্দন-পারস্থ গিলিয়দের অন্তঃপাতী ইমোরীয় দেশনিবাসী সমস্ত ইস্রায়েলীয়দেরকে চূর্ণ করল।
\v 9 আর অম্মোন-সন্তানরা যিহূদার ও বিন্যামীনের এবং ইফ্রয়িম কুলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যর্দন পার হয়ে আসত; এইভাবে ইস্রায়েল খুব কষ্ট পেতে লাগল।
\s5
\v 10 পরে ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে বলল, আমরা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছি, কারণ আমরা নিজেদের ঈশ্বরকে ত্যাগ করেছি এবং বালদেবতাদের সেবা করেছি।
\v 11 তাতে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দেরকে বললেন, মিস্রীয়দের থেকে, ইমোরীয়দের থেকে, অম্মোন-সন্তানদের থেকে ও পলেষ্টীয়দের থেকে আমি কি তোমাদেরকে [নিস্তার করি] নি?
\v 12 আর সীদোনীয়, অমালেকীয় ও মায়োনীয়রা তোমাদের উপরে অত্যাচার করেছিল এবং তোমরা আমার কাছে কাঁদলে আমি তাদের হাত থেকে তোমাদেরকে নিস্তার করলাম।
\s5
\v 13 তবুও তোমরা আমাকে ত্যাগ করে অন্য দেবতাদের সেবা করলে, অতএব আমি আর তোমাদের উদ্ধার করব না; যাও,
\v 14 নিজেদের মনোনীত ঐ দেবতাদের কাছে কাঁদ; সঙ্কটের সময়ে তারাই তোমাদেরকে উদ্ধার করুক।
\s5
\v 15 তখন ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুকে বলল, আমরা পাপ করেছি; এখন তোমার দৃষ্টিতে যা ভাল মনে হয়, তাই আমাদের প্রতি কর; অনুরোধ করি, কেবল আজ আমাদেরকে উদ্ধার কর।
\v 16 পরে তারা নিজেদের মধ্য থেকে বিজাতীয় দেবতাদেরকে দূর করে সদাপ্রভুর সেবা করল; তাতে ইস্রায়েলের কষ্টে তাঁর প্রাণ দুঃখিত হল।
\s5
\v 17 ঐ সময়ে অম্মোন-সন্তানরা জড়ো হয়ে গিলিয়দে শিবির তৈরী করল। আর ইস্রায়েলীয়রা জড়ো হয়ে মিস্‌পাতে শিবির তৈরী করল।
\v 18 তাতে লোকেরা, গিলিয়দের অধ্যক্ষরা, পরস্পর বলল, অম্মোন-সন্তানদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে কোন্‌ ব্যক্তি আরম্ভ করবে? সে গিলিয়দ-নিবাসী সমস্ত লোকের প্রধান হবে।
\s5
\c 11
\p
\v 1 ঐ সময়ে গিলিয়দীয় যিপ্তহ বলবান্‌ বীর ছিলেন; তিনি এক বেশ্যার ছেলে; গিলিয়দ তাঁর জন্ম দিয়েছিলেন।
\v 2 আর গিলিয়দের স্ত্রী তাঁর জন্য কয়েকটি ছেলে প্রসব করল; পরে সেই স্ত্রীজাত ছেলেরা যখন বড় হয়ে উঠল, তখন যিপ্তহকে তাড়িয়ে দিল, বলল, আমাদের পিতৃকুলের মধ্যে তুমি অধিকার পাবে না, কারণ তুমি অন্য এক স্ত্রীর ছেলে।
\v 3 তাতে যিপ্তহ নিজের ভাইদের সামনে থেকে পালিয়ে গিয়ে টোব দেশে বাস করতে লাগল; এবং কতগুলো মন্দ অধার্মিক লোক যিপ্তহের কাছে এক সঙ্গে হল, তারা তাঁর সঙ্গে বাইরে যেত।
\s5
\v 4 কিছু দিন পরে অম্মোনীয়রা ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে লাগল।
\v 5 তখন ইস্রায়েলের সঙ্গে অম্মোনীয়রা যুদ্ধ করতে গিলিয়দের প্রাচীনবর্গ যিপ্তহকে টোব দেশ থেকে আনতে গেল।
\v 6 তারা যিপ্তহকে বলল, এস, তুমি আমাদের নেতা হও, আমরা অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করব।
\s5
\v 7 যিপ্তহ গিলিয়দের প্রাচীনবর্গকে বললেন, তোমরাই কি আমাকে ঘৃণা করে আমার পিতৃকুল থেকে আমাকে তাড়িয়ে দাওনি? এখন বিপদ্‌গ্রস্ত হয়েছ বলে আমার কাছে কেন এলে?
\v 8 তখন গিলিয়দের প্রাচীনবর্গ যিপ্তহকে বলল, এখন আমরা তোমার কাছে ফিরে এসেছি, যেন তুমি আমাদের সঙ্গে গিয়ে অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পার এবং আমাদের অর্থাৎ গিলিয়দ-নিবাসী সমস্ত লোকের প্রধান হও।
\s5
\v 9 তখন যিপ্তহ গিলিয়দের প্রাচীনবর্গকে বললেন, তোমরা যদি অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য আমাকে পুনরায় স্বদেশে নিয়ে যাও, আর সদাপ্রভু যদি আমার হাতে তাদেরকে সমর্পণ করেন, তবে আমিই কি তোমাদের প্রধান হব?
\v 10 তখন গিলিয়দের প্রাচীনবর্গ যিপ্তহকে বলল, সদাপ্রভু আমাদের মধ্যে সাক্ষী; আমরা অবশ্য তোমার কথা অনুসারে কাজ করব।
\v 11 পরে যিপ্তহ গিলিয়দের প্রাচীনবর্গের সঙ্গে গেলেন; তাতে লোকেরা তাকে নিজেদের প্রধান ও শাসনকর্ত্তা করল; পরে যিপ্তহ মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর সামনে নিজের সমস্ত কথা বললেন।
\s5
\v 12 পরে যিপ্তহ অম্মোনীয়দের রাজার কাছে দূত পাঠিয়ে বললেন, আমার সঙ্গে তোমার বিষয় কি যে, তুমি আমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে আমার দেশে আসলে?
\v 13 তাতে অম্মোনীয়দের রাজা যিপ্তহের দূতদেরকে বললেন, কারণ এই, ইস্রায়েল যখন মিসর থেকে আসে, তখন অর্ণোন পর্যন্ত যব্বোক ও যর্দ্দন পর্য্যন্ত আমার ভূমি কেড়ে নিয়েছিল; অতএব এবং এখন শান্তিতে তা ফিরিয়ে দাও।
\s5
\v 14 তাতে যিপ্তহ অম্মোনীয়দের রাজার কাছে পুনরায় দূত পাঠালেন;
\v 15 তিনি তাকে বললেন, যিপ্তহ এই কথা বলেন, মোয়াবের ভূমি কিম্বা অম্মোনীয়দের ভূমি ইস্রায়েল কেড়ে নেয়নি।
\v 16 কিন্তু মিসর থেকে আসবার সময়ে ইস্রায়েল সূফসাগর পর্যন্ত প্রান্তরের মধ্যে ভ্রমণ করে যখন কাদেশে পৌছায়,
\s5
\v 17 তখন ইদোমের রাজার কাছে দূত পাঠিয়ে বলেছিল, অনুরোধ করি, আপনি নিজ দেশের মধ্য দিয়ে আমাকে যেতে দিন, কিন্তু ইদোমের রাজা সে কথায় কান দিলেন না; আর সেইরকম মোয়াবের রাজার কাছে বলে পাঠালে তিনিও রাজি হলেন না; অতএব ইস্রায়েল কাদেশে থাকল।
\v 18 পরে তারা প্রান্তরের মধ্য দিয়ে গিয়ে ইদোম দেশ ও মোয়াব দেশ ঘুরে মোয়াব দেশের পূর্বদিক দিয়ে এসে অর্ণোনের ওপারে শিবির তৈরী করল, মোয়াবের সীমার মধ্যে প্রবেশ করল না, কারণ অর্ণোন মোয়াবের সীমা।
\s5
\v 19 পরে ইস্রায়েল হিষ্‌বোনের রাজা, ইমোরীয়দের রাজা, সীহোনের কাছে দূত পাঠাল; ইস্রায়েল তাকে বলল, অনুরোধ করি, আপনি নিজের দেশের মধ্য দিয়ে আমাদেরকে নিজ জায়গায় যেতে দিন।
\v 20 কিন্তু সীহোন ইস্রায়েলকে বিশ্বাস করে আপন সীমার মধ্য দিয়ে যেতে দিলেন না; সীহোন আপনার সব লোক জড়ো করে যহসে শিবির তৈরী করলেন; ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন।
\s5
\v 21 আর ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু সীহোনকে ও তাঁর সব লোককে ইস্রায়েলের হাতে সমর্পণ করলেন, ও তারা তাদেরকে আঘাত করল; এইভাবে ইস্রায়েল সেই দেশনিবাসী ইমোরীয়দের সমস্ত দেশ অধিকার করল।
\v 22 তারা অর্ণোন থেকে যব্বোক পর্যন্ত ও প্রান্তর থেকে যর্দ্দন পর্যন্ত ইমোরীয়দের সব অঞ্চল অধিকার করল।
\s5
\v 23 সুতরাং ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজের প্রজা ইস্রায়েলের সামনে ইমোরীয়দেরকে অধিকারচ্যুত করলেন; এখন আপনি কি তাদের দেশ অধিকার করবেন?
\v 24 আপনার কমোশ দেব আপনাকে অধিকার করার জন্য যা দেন, আপনি কি তারই অধিকারী নন? আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাদের সামনে যাদেরকে তাড়িয়েছেন, সে সমস্তের অধিকারী আমরাই আছি।
\v 25 বলুন দেখি, মোয়াবের রাজা সিপ্পোরের ছেলে বালাক থেকে আপনি কি শ্রেষ্ঠ? তিনি কি ইস্রায়েলের সঙ্গে বিবাদ করেছিলেন, না তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন?
\s5
\v 26 হিষ্‌বোনে ও তাঁর উপনগরগুলি, অরোয়েরে ও তাঁর উপনগরসমূহে এবং অর্ণোন তীরে সমস্ত নগরে তিনশো বছর পর্যন্ত ইস্রায়েল বাস করছে; এত দিনের মধ্যে আপনারা কেন সে সমস্ত ফিরিয়ে নেননি?
\v 27 আমি তো আপনাদের বিরুদ্ধে কোন দোষ করিনি; কিন্তু আমার সঙ্গে যুদ্ধ করাতে আপনি আমার প্রতি অন্যায় করছেন; বিচারকর্ত্তা সদাপ্রভু আজ ইস্রায়েলীয়দের ও অম্মোনীয়দের মধ্যে বিচার করুন।
\v 28 কিন্তু যিপ্তহের পাঠানো এই সব কথায় অম্মোনীয়দের রাজা কান দিলেন না।
\s5
\v 29 পরে সদাপ্রভুর আত্মা যিপ্তহের ওপরে আসলেন, আর তিনি গিলিয়দ ও মনঃশি প্রদেশ দিয়ে গিলিয়দের মিস্‌পীতে গেলেন; এবং গিলিয়দের মিস্‌পী থেকে অম্মোনীয়দের কাছে গেলেন।
\v 30 আর যিপ্তহ সদাপ্রভুর উদ্দেশে মানত করে বললেন, তুমি যদি অম্মোনীয়দেরকে নিশ্চয় আমার হাতে সমর্পণ কর,
\v 31 তবে অম্মোনীয়দের কাছ থেকে যখন আমি ভালোভাবে ফিরে আসব, তখন যাকিছু আমার বাড়ির দরজা থেকে বের হয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসবে, তা অবশ্যই সদাপ্রভুরই হবে, আর আমি তা হোমবলিরূপে উৎসর্গ করব।
\s5
\v 32 পরে যিপ্তহ অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য তাদের কাছে পার হয়ে গেলে সদাপ্রভু তাদেরকে তাঁর হাতে সমর্পণ করলেন।
\v 33 তাতে তিনি অরোয়ের থেকে মিন্নীতের কাছ পর্য্যন্ত কুড়িটি নগরে এবং আবেল-করামীম পর্য্যন্ত অতি মহাসংহারে তাদেরকে সংহার করলেন। এইভাবে অম্মোনীয়রা ইস্রায়েলীয়দের সামনে নত হল।
\s5
\v 34 পরে যিপ্তহ মিস্‌পায় নিজের বাড়িতে আসলেন, আর দেখ, তাঁর সঙ্গে দেখা করবার জন্য তাঁর মেয়ে তবল হাতে করে নাচ করতে করতে বাইরে আসছিল। সে তাঁর একমাত্র মেয়ে, সে ছাড়া তাঁর কোন ছেলে বা মেয়ে ছিল না।
\v 35 তখন তাকে দেখামাত্র তিনি বস্ত্র ছিঁড়ে বললেন, হায় হায়, আমার বৎসে, তুমি আমাকে বড় ব্যাকুল করলে; আমার কষ্টদায়কদের মধ্যে তুমি এক জন হলে; কিন্তু আমি সদাপ্রভুর কাছে মুখ খুলেছি, আর অন্য কিছু করতে পারব না।
\s5
\v 36 সে তাকে বলল, হে আমার পিতঃ, তুমি সদাপ্রভুর কাছে মুখ খুলেছ, তোমার মুখ দিয়ে যে কথা বেরিয়েছে, সেই অনুসারে আমার প্রতি কর, কারণ সদাপ্রভু তোমার জন্য তোমার শত্রুদের, অম্মোনীয়দের, কাছে প্রতিশোধ নিয়েছেন।
\v 37 পরে সে নিজের পিতাকে বলল, আমার জন্য একটা কাজ করা হোক; দুই মাসের জন্য আমাকে বিদায় দাও; আমি পর্বতে যাই এবং আমার কুমারীত্বের বিষয়ে সখীদেরকে নিয়ে দুঃখ করি।
\s5
\v 38 তিনি বললেন, যাও; আর তাকে দুই মাসের জন্য পাঠিয়ে দিলেন; তখন সে নিজের সখীদের সঙ্গে গিয়ে পর্ব্বতের উপরে নিজের কুমারীত্ব বিষয়ে দুঃখ করল।
\v 39 পরে দুই মাস হয়ে গেলে সে পিতার কাছে ফিরে আসল; পিতা যে মানত করেছিলেন, সেই অনুসারে তার প্রতি করলেন; সে পুরুষের পরিচয় পায়নি। আর ইস্রায়েলের মধ্যে এই রীতি প্রচলিত হল যে,
\v 40 বছর বছর গিলিয়দীয় যিপ্তহের মেয়ের সুনাম করতে ইস্রায়েলীয় মেয়েরা বছরের মধ্যে চারদিন যায়।
\s5
\c 12
\p
\v 1 পরে ইফ্রয়িমের লোকেরা জড়ো হয়ে সাফোনে গেল; তারা যিপ্তহকে বলল, “তোমার সঙ্গে যেতে আমাদেরকে না ডেকে তুমি অম্মোনীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে কেন পার হয়ে গিয়েছিলে? আমরা তোমাকে শুদ্ধ তোমার বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেব।”
\v 2 যিপ্তহ তাদেরকে বললেন, “অম্মোনীয়দের সঙ্গে আমার ও আমার লোকদের বড় বিরোধ ছিল, তাই আমি তোমাদেরকে ডেকেছিলাম, কিন্তু তোমরা তাদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করনি।
\s5
\v 3 তোমরা আমাকে উদ্ধার করলে না দেখে আমি প্রাণ হাতে করে অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে পার হয়ে গিয়েছিলাম, আর সদাপ্রভু আমার হাতে তাদেরকে সমর্পণ করলেন, অতএব তোমরা আমার সঙ্গে যুদ্ধ করতে আজ কেন আমার কাছে আসলে?”
\v 4 পরে যিপ্তহ গিলিয়দের সব লোককে জড়ো করে ইফ্রয়িমের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন, তাতে গিলিয়দের লোকেরা ইফ্রয়িমের লোকদেরকে আঘাত করল; কারণ তারা বলেছিল, “তোমরা গিলিয়দীয়েরা, তোমরা ইফ্রয়িমের মধ্যে ও মনঃশির মধ্যে ইফ্রয়িমের পলাতক।”
\s5
\v 5 পরে গিলিয়দীয়েরা ইফ্রয়িমীয়দের বিরুদ্ধে যর্দনের পার ঘাট সব দখল করল; তাতে ইফ্রয়িমের কোন পলাতক যখন বলত, “আমাকে পার হতে দাও,” তখন গিলিয়দের লোকেরা তাকে জিজ্ঞাসা করত, “তুমি কি ইফ্রয়িমীয়?”
\v 6 সে যদি বলত, না, তবে তারা বলিত, “শিব্বোলেৎ” বল দেখি; সে বলত, “সিব্বোলেৎ,” কারণ সে ভালোভাবে তা উচ্চারণ করতে পারত না; তখন তারা তাকে ধরে নিয়ে যর্দনের পার ঘাটে হত্যা করত। সেই সময়ে ইফ্রয়িমের বিয়াল্লিশ হাজার লোক মারা গেল।
\s5
\v 7 যিপ্তহ ছয় বছর পর্য্যন্ত ইস্রায়েলের বিচার করলেন। পরে গিলিয়দীয় যিপ্তহ মারা গেলেন এবং গিলিয়দের এক নগরে তাঁর কবর দেওয়া হল।
\s5
\v 8 তাঁর পরে বৈৎলেহমীয় ইব্‌সন ইস্রায়েলের বিচারকর্ত্তা হলেন।
\v 9 তাঁর ত্রিশটি ছেলে ছিল এবং তিনি ত্রিশটি মেয়ের বিয়ে দিলেন ও নিজের ছেলের জন্য বাইরে থেকে ত্রিশটি মেয়ে আনলেন; তিনি সাত বছর ইস্রায়েলের বিচার করলেন।
\s5
\v 10 পরে ইব্‌সন মারা গেলেন এবং বৈৎলেহমে তাঁর কবর দেওয়া হল।
\v 11 তাঁর পরে সবূলূনীয় এলোন ইস্রায়েলের বিচারকর্ত্তা হলেন; তিনি দশ বছর ইস্রায়েলের বিচার করলেন।
\v 12 পরে সবূলূনীয় এলোন মারা গেলেন এবং সবূলূন দেশস্থ অয়ালোনে তাঁর কবর দেওয়া হল।
\s5
\v 13 তাঁর পরে পিরিয়াথোনীয় হিল্লোলের পুত্র অব্দোন ইস্রায়েলের বিচারকর্ত্তা হলেন।
\v 14 তাঁর চল্লিশ ছেলে ও ত্রিশটি নাতি সত্তরটি গাধায় চড়ে ঘুরে বেড়াত; তিনি আট বছর ইস্রায়েলের বিচার করলেন।
\v 15 পরে পিরিয়াথোনীয় হিল্লেলের পুত্র অব্দোন মারা গেলেন এবং ইফ্রয়িম দেশে অমালেকীয়দের পাহাড়ী অঞ্চল প্রদেশে পিরিয়াথোনে তাঁর কবর হল।
\s5
\c 13
\s শিম্‌শোনের জন্মের বিবরণ।
\p
\v 1 পরে ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই করল; তাতে সদাপ্রভু চল্লিশ বছর তাদেরকে পলেষ্টীয়দের হাতে সমর্পণ করলেন।
\v 2 সেই সময়ে দানীয় গোষ্ঠীর মধ্যে সরা-নিবাসী মানোহ নামে এক ব্যক্তি ছিলেন, তাঁর স্ত্রী বন্ধ্যা হওয়াতে সন্তান হয়নি।
\s5
\v 3 পরে সদাপ্রভুর দূত সে স্ত্রীকে দর্শন দিয়ে বললেন, “দেখ, তুমি বন্ধ্যা, তোমার সন্তান হয় না, কিন্তু তুমি গর্ভধারণ করে ছেলের জন্ম দেবে।
\v 4 অতএব সাবধান, আঙ্গুরের রস কি সুরা পান কর না এবং কোন অশুচি বস্তু ভোজন কর না।
\v 5 কারণ দেখ, তুমি গর্ভধারণ করে পুত্র প্রসব করবে; আর তার মাথায় ক্ষুর উঠবে না, কারণ সেই বালক গর্ভ থেকেই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নাসরীয় হবে এবং সে পলেষ্টীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলকে উদ্ধার করতে আরম্ভ করবে।”
\s5
\v 6 তখন সেই স্ত্রী এসে নিজের স্বামীকে বললেন, “ঈশ্বরের এক জন লোক আমার কাছে এসেছিলেন, তাঁর চেহারা ঈশ্বরীয় দূতের রূপের মতো, অতি ভয়ঙ্কর; তিনি কোথা থেকে আসলেন, তা আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করিনি, আর তিনিও আমাকে তাঁর নাম বলেননি।
\v 7 কিন্তু তিনি আমাকে বললেন, দেখ, তুমি গর্ভধারণ করে পুত্র প্রসব করবে; এখন দ্রাক্ষারস কিম্বা সুরা পান কর না এবং কোন অশুচি বস্তু ভোজন কর না কারণ সেই বালক জন্ম থেকে মৃত্যুদিন পর্য্যন্ত ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নাসরীয় হবে।”
\s5
\v 8 তখন মানোহ সদাপ্রভুর কাছে অনুরোধ করে বললেন, “হে প্রভু, ঈশ্বরের যে লোককে আপনি আমাদের কাছে পাঠিয়েছিলেন, তাঁকে আবার আমাদের কাছে আসতে দিন এবং যে বালকটি জন্মাবে, তার প্রতি আমাদের কি কর্ত্তব্য, তা আমাদেরকে বুঝিয়ে দিন।”
\v 9 তখন ঈশ্বর মানোহের রবে কর্ণপাত করলেন; ঈশ্বরের সেই দূত আবার সেই স্ত্রীর কাছে আসলেন; সেই সময়ে তিনি মাঠে বসেছিলেন; তখন তাঁর স্বামী মানোহ তাঁর সঙ্গে ছিলেন না।
\s5
\v 10 সেই স্ত্রী শীঘ্র দৌড়িয়ে গিয়ে নিজের স্বামীকে সংবাদ দিলেন, তাঁকে বললেন, “দেখ, সে দিন যে লোকটী আমার কাছে এসেছিলেন, তিনি আমাকে দর্শন দিয়েছেন।”
\v 11 মানোহ উঠে নিজের স্ত্রীর পিছন পিছন গেলেন এবং সেই ব্যক্তির কাছে গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই স্ত্রীর সঙ্গে যিনি কথা বলেছিলেন, আপনি কি সেই ব্যক্তি?” তিনি বললেন, “আমিই সেই।”
\s5
\v 12 মানোহ বললেন, “এখন আপনার বাক্য সত্য হোক; সেই বালকের প্রতি কি বিধি ও কি কর্ত্তব্য?”
\v 13 সদাপ্রভুর দূত মানোহকে বললেন, “আমি ঐ স্ত্রীকে যে সব কথা বলেছি, সে সব বিষয়ে সে সাবধান থাকুক।
\v 14 সে দ্রাক্ষালতা জাতীয় কোন বস্তু ভোজন করবে না, দ্রাক্ষারস কি সুরা পান করবে না এবং কোন অশুচি দ্রব্য ভোজন করবে না; আমি তাকে যা কিছু আজ্ঞা করেছি, সে তা পালন করুক।”
\s5
\v 15 পরে মানোহ সদাপ্রভুর দূতকে বললেন, “অনুরোধ করি, একটু অপেক্ষা করুন, আমরা আপনার জন্য একটি ছাগলের বাচ্চা মেরে রান্না করে দিই।”
\v 16 সদাপ্রভুর দূত মানোহকে বললেন, “তুমি আমাকে অপেক্ষা করালেও আমি তোমার খাদ্য দ্রব্য ভোজন করব না; আর তুমি যদি হোমবলি উৎসর্গ কর, তবে সদাপ্রভুরই উদ্দেশ্যে তা কর।” বস্তুতঃ তিনি যে সদাপ্রভুর দূত, তা মানোহ জানতে পারেননি।
\s5
\v 17 পরে মানোহ সদাপ্রভুর দূতকে বললেন, “আপনার নাম কি? আপনার বাক্য সফল হলে আমরা আপনার গৌরব করব।”
\v 18 সদাপ্রভুর দূত বললেন, “কেন আমার নাম জিজ্ঞাসা করছ? তা তো আশ্চর্য্য।”
\s5
\v 19 পরে মানোহ ঐ ছাগলের বাচ্চা ও ভক্ষ্য নৈবেদ্য নিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পাথরের ওপরে উৎসর্গ করলেন; তাতে ঐ দূত, আশ্চর্য্য ব্যাপার সাধন করলেন, মানোহ ও তাঁর স্ত্রী তা দেখছিলেন।
\v 20 যখন অগ্নিশিখা বেদি থেকে আকাশের দিকে উঠল, তখন সদাপ্রভুর দূত ঐ বেদির শিখাতে উঠলেন; আর মানোহ ও তাঁর স্ত্রী দেখলেন এবং তাঁরা ভূমিতে উপুড় হয়ে পড়লেন।
\s5
\v 21 তারপরে সদাপ্রভুর দূত মানোহকে ও তাঁর স্ত্রীকে আর দর্শন দিলেন না; তখন তিনি যে সদাপ্রভুর দূত, এটা মানোহ জানতে পারলেন।
\v 22 পরে মানোহ নিজের স্ত্রীকে বললেন, “আমরা অবশ্য মারা যাব, কারণ ঈশ্বরকে দেখেছি।”
\s5
\v 23 কিন্তু তাঁর স্ত্রী বললেন, “আমাদেরকে হত্যা করতে যদি সদাপ্রভুর ইচ্ছা হত, তবে তিনি আমাদের হাত থেকে হোম ও ভক্ষ্য-নৈবেদ্য গ্রহণ করতেন না এবং এই সব আমাদেরকে দেখাতেন না, আর এই সময় আমাদেরকে এমন সব কথাও শোনাতেন না।”
\s5
\v 24 পরে ঐ মহিলা ছেলে প্রসব করে তাঁর নাম শিম্‌শোন রাখলেন। আর বালকটি বেড়ে উঠল ও সদাপ্রভু তাঁকে আশীর্বাদ করলেন।
\v 25 আর সদাপ্রভুর আত্মা প্রথমে সরার ও ইষ্টায়োলের মধ্যস্থানে, মহনে-দানে, তাঁকে চালাতে লাগলেন।
\s5
\c 14
\s শিম্‌শোনের জীবন চরিত্র।
\p
\v 1 আর শিম্‌শোন তিম্নায় নেমে গেলেন, ও তিম্নায় পলেষ্টীয়দের মেয়েদের মধ্যে একটি মেয়েটি দেখতে পেলেন।
\v 2 পরে ফিরে এসে নিজের মা-বাবাকে সংবাদ দিয়ে বললেন, “আমি তিম্নায় পলেষ্টীয়দের মেয়েদের মধ্যে একটি মেয়েটি দেখেছি; তোমরা তাকে এনে আমার সঙ্গে বিয়ে দাও।”
\s5
\v 3 তখন তাঁর বাবা-মা তাঁকে বললেন, “তোমার আত্মীয়দের মধ্যে ও আমার সব নিজের জাতির মধ্যে কি কোনো মেয়ে নেই যে, তুমি অচ্ছিন্নত্বক পলেষ্টীয়দের মেয়ে বিয়ে করতে যাচ্ছ?” শিম্‌শোন বাবাকে বললেন, “তুমি আমার জন্য তাকেই নিয়ে এস, কারণ আমার দৃষ্টিতে সে খুবই সুন্দরী।”
\v 4 কিন্তু তাঁর মা-বাবা জানতেন না যে, ওটা সদাপ্রভু থেকে হয়েছে, কারণ তিনি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে সুযোগ খুঁজছিলেন। সেই সময়ে পলেষ্টীয়েরা ইস্রায়েলের উপরে কর্ত্তৃত্ব করত।
\s5
\v 5 পরে শিম্‌শোন ও তাঁর মা-বাবা তিম্নায় নেমে গেলেন, তিম্নায় আঙ্গুর ক্ষেতে পৌছালে দেখ, এক যুব সিংহ শিম্‌শোনের সামনে হয়ে গর্জন করে উঠল।
\v 6 তখন সদাপ্রভুর আত্মা তাঁর ওপরে আসলেন, তাতে তাঁর হাতে কিছু না থাকলেও তিনি ছাগলের বাচ্চা ছিঁড়বার মত ঐ সিংহকে ছিঁড়ে ফেললেন, কিন্তু কি করেছেন, তা বাবা মাকে বললেন না।
\s5
\v 7 পরে তিনি গিয়ে সেই কন্যার সঙ্গে আলাপ করলেন; আর সে শিম্‌শোনের দৃষ্টিতে খুবই সুন্দরী ছিল।
\v 8 কিছু সময় পরে তিনি তাকে বিয়ে করতে সেই জায়গায় ফিরে গেলেন এবং সেই সিংহের শব দেখবার জন্য পথ ছেড়ে গেলেন; আর দেখ, সিংহের দেহে এক ঝাঁক মৌমাছি ও মৌচাক রয়েছে।
\v 9 তখন তিনি তা হাতে নিয়ে চললেন, ভোজন করতে করতে চললেন এবং মা-বাবার কাছে গিয়ে তাঁদেরকেও কিছু দিলে তাঁরাও ভোজন করলেন; কিন্তু সেই মধু যে সিংহের দেহ থেকে এনেছেন, তা তিনি তাঁদেরকে বললেন না।
\s5
\v 10 পরে তাঁর পিতা সেই মেয়ের কাছে গেলে শিম্‌শোন সেই জায়গায় ভোজ প্রস্তুত করলেন্‌, কারণ যুবকদের সেইরকম রীতি ছিল।
\v 11 আর তাঁকে দেখে পলেষ্টীয়েরা তাঁর কাছে থাকতে ত্রিশ জন বন্ধুদেরকে আনল।
\s5
\v 12 শিম্‌শোন তাদেরকে বললেন, “আমি তোমাদের কাছে একটি ধাঁধা বলি, তোমরা যদি এই উৎসবের সাত দিনের মধ্যে তার অর্থ বুঝে আমাকে বলে দিতে পার, তবে আমি তোমাদেরকে ত্রিশটা জামা ও ত্রিশ জোড়া বস্ত্র দেব।
\v 13 কিন্তু যদি আমাকে তার অর্থ বলতে না পার, তবে তোমরা আমাকে ত্রিশটি জামা ও ত্রিশ জোড়া বস্ত্র দেবে।” তাঁরা বলল, “তোমার ধাঁধাটী বল, আমরা শুনি।”
\s5
\v 14 তিনি তাদেরকে বললেন, “খাদক থেকে বের হল খাদ্য, বলবান থেকে বের হল মিষ্ট দ্রব্য।” তারা তিন দিনে সেই হেঁয়ালির অর্থ করতে পারল না।
\s5
\v 15 পরে সপ্তম দিনে তারা শিম্‌শোনের স্ত্রীকে বলল, “তুমি নিজের স্বামীকে খোসামোদ, যাতে তিনি ধাঁধার অর্থ আমাদেরকে বলেন; না হলে আমরা তোমাকে ও তোমার পিতৃকুলকে আগুনে পুড়িয়ে মারব। তোমরা কি আমাদেরকে দরিদ্র করার জন্য এই জায়গায় নিমন্ত্রণ করেছ? তাই নয় কি?”
\s5
\v 16 তখন শিম্‌শোনের স্ত্রী স্বামীর কাছে কেঁদে বলল, “তুমি আমাকে শুধুই ঘৃণা কর, ভালবাস না; আমার স্বজাতীয়দেরকে একটা ধাঁধা বললে, কিন্তু আমাকে তা বুঝিয়ে দিলে না।” তিনি তাঁকে বললেন, “দেখ, আমার বাবা-মাকেও তা বুঝিয়ে দেয়নি, তবে তোমাকে কি বোঝাব?”
\v 17 তার স্ত্রী উৎসব-সপ্তাহের শেষ পর্যন্ত তাঁর কাছে কাঁদল; পরে তিনি সপ্তম দিনে তাকে বলে দিলেন; কারণ সে তাঁকে ক্রমাগত খোসামোদ করেছিল। পরে ঐ স্ত্রী স্বজাতীয়দেরকে ধাঁধার অর্থ বলে দিল।
\s5
\v 18 পরে সপ্তম দিনে সূর্য্য অস্ত যাবার আগে ঐ নগরের লোকেরা তাঁকে বলল, “মধু থেকে মিষ্ট আর কি? আর সিংহের থেকে বলবান্‌ কি?” তিনি তাদেরকে বললেন, “তোমরা যদি আমার গাভী দিয়ে চাষ না করতে, তবে আমার ধাঁধার অর্থ খুঁজে পেতে না।”
\s5
\v 19 পরে সদাপ্রভুর আত্মা তাঁর ওপরে সবলে আসলেন, আর তিনি অস্কিলোনে নেমে গিয়ে সেখানকার ত্রিশ জনকে আঘাত করে তাদের বস্ত্র খুলে নিয়ে ধাঁধার অর্থকারীদেরকে জোড়া জোড়া বস্ত্র দিলেন। আর সে প্রচন্ড রেগে গেল; তিনি পিতার বাড়িতে উঠে গেলেন।
\v 20 পরে শিম্‌শোনের যে প্রিয় বন্ধু তার কাছে এসেছিল, তাকে তাঁর স্ত্রী দেওয়া হল।
\s5
\c 15
\p
\v 1 কিছু দিন পরে গম কাটার সময়ে শিম্‌শোন এক ছাগলের বাচ্চা সঙ্গে নিয়ে নিজের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন; তিনি বললেন, “আমি নিজের স্ত্রীর ঘরে প্রবেশ করব৷” কিন্তু সেই স্ত্রীর পিতা তাঁকে ভিতরে যেতে দিল না;
\v 2 তার পিতা বলল, “আমি নিশ্চয় মনে করেছিলাম, তুমি তাঁকে খুবই ঘৃণা করলে, তাই আমি তাকে তোমার প্রিয় বন্ধুকে দিয়েছি; তার ছোট বোন কি তার থেকে সুন্দরী না? অনুরোধ করি, এর পরিবর্তে তাকেই গ্রহণ কর।”
\s5
\v 3 শিম্‌শোন তাদেরকে বললেন, “এ বার আমি পলেষ্টীয়দের অনিষ্ট করলেও তাদের সম্বন্ধে নির্দোষ হব।”
\v 4 পরে শিম্‌শোন গিয়ে তিনশো শিয়াল ধরে মশাল নিয়ে তাদের লেজে লেজে যোগ করে দুই দুই লেজে এক একটি করে মশাল বাঁধলেন।
\s5
\v 5 পরে সেই মশালে আগুন দিয়ে পলেষ্টীয়দের শস্যক্ষেত্রে ছেড়ে দিলেন; তাতে বাঁধা আটি, ক্ষেত্রের শস্য ও জিতবৃক্ষের উদ্যান সবই পুড়ে গেল।
\v 6 তখন পলেষ্টীয়েরা জিজ্ঞাসা করল, “এ কাজ কে করল? লোকেরা বলল, তিম্নায়ীয়ের জামাই শিম্‌শোন করেছে; যেহেতু তার শ্বশুর তার স্ত্রীকে নিয়ে তার বন্ধুকে দিয়েছে।” তাতে পলেষ্টীয়েরা এসে সেই স্ত্রীকে ও তার পিতাকে আগুনে পুড়িয়ে মারল।
\s5
\v 7 শিম্‌শোন তাদেরকে বললেন, “তোমরা যদি এই ধরনের কাজ কর, তবে আমি নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিশোধ নেব, তারপর শান্ত হব।”
\v 8 পরে তিনি তাদেরকে আঘাত করলেন, কোমরের ওপরে উরুতে ভীষণভাবে আঘাত করলেন; আর নেমে গিয়ে ঐটম পাথরের গুহায় বাস করলেন।
\s5
\v 9 আর পলেষ্টীয়েরা উঠে গিয়ে যিহূদা দেশে শিবির তৈরী করে লিহীতে বিস্তৃত থাকল।
\v 10 তাতে যিহূদার লোকেরা জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা আমাদের বিরুদ্ধে কেন আসলে?” তারা বলল, “শিম্‌শোনকে বাঁধতে এসেছি; সে আমাদের সঙ্গে যেমন করেছে, আমরাও তার সঙ্গে তেমন করব।”
\s5
\v 11 তখন যিহূদার তিন হাজার লোক ঐটম পাথরের গুহায় নেমে গিয়ে শিম্‌শোনকে বলল, “পলেষ্টীয়েরা যে আমাদের কর্তা, তা তুমি কি জান না?” শিমশোন তাদেরকে বলল, “তবে আমাদের প্রতি যেমন করেছে, আমিও তাদের প্রতি সেরকম করেছি।”
\s5
\v 12 তারা তাঁকে বলল, “আমরা পলেষ্টীয়দের হাতে সমর্পণ করবার জন্য তোমাকে বাঁধতে এসেছি।” শিম্‌শোন তাদেরকে বললেন, “তোমরা আমাকে আক্রমণ করবে না, আমার কাছে এই শপথ কর।”
\v 13 তারা বলল, “না, কেবল তোমাকে দৃঢ়ভাবে বেঁধে তাদের হাতে সমর্পণ করব, কিন্তু আমরা যে তোমাকে হত্যা করব, তা না।” পরে তারা দু গাছা নূতন দড়ি দিয়ে তাঁকে বেঁধে ঐ পাথর থেকে নিয়ে গেল।
\s5
\v 14 তিনি লিহীতে পৌঁছালে পলেষ্টীয়েরা তার কাছে গিয়ে জয়ধ্বনি করল। তখন সদাপ্রভুর আত্মা সবলে তাঁর ওপরে আসলেন, আর তাঁর দু হাতে দুটি দড়ি আগুনে পোড়া শণের মতো হল এবং তাঁর দুই হাত থেকে বেড়ী খসে পড়ল।
\s5
\v 15 পরে তিনি গাধার টাটকা চোয়ালের হাড় দেখতে পেয়ে হাত বাড়িয়ে তা নিয়ে তা দিয়ে হাজার লোককে আঘাত করলেন।
\v 16 আর শিম্‌শোন বললেন, “গর্দ্দভের টাটকা চোয়ালের হাড় দিয়ে রাশির উপরে রাশি হল, গর্দ্দভের টাটকা চোয়ালের হাড় দিয়ে হাজার জনকে আঘাত করলাম।”
\s5
\v 17 পরে তিনি কথা শেষ করে হাত থেকে ঐ চোয়ালের হাড় নিয়ে ছুঁড়ে দিলেন, আর সেই জায়গায় নাম রামৎ-লিহী [হনূ-গিরি] রাখলেন।
\v 18 পরে তিনি অতিশয় তৃষ্ণার্ত হওয়াতে সদাপ্রভুকে ডেকে বললেন, “তুমি নিজের দাসের হাত দিয়ে এই বিজয়লাভ করেছ, এখন আমি তৃষ্ণার জন্য মারা পড়ি ও অচ্ছিন্নত্বক লোকদের হাতে পড়ি।”
\s5
\v 19 তাতে ঈশ্বর লিহীতে অবস্থিত শূন্যগর্ভ জায়গা ভেদ করলেন ও তা থেকে জল বেরিয়ে এল; তখন তিনি জল পান করলে তাঁর শক্তি ফিরে এল ও তিনি সজীব হলেন; অতএব তার নাম ঐন্‌-হক্কোরী [আহবানকারীর উনুই] রাখা হল; তা আজও লিহীতে আছে।
\v 20 পলেষ্টীয়দের সময়ে তিনি কুড়ি বছর ধরে ইস্রায়েলের বিচার করলেন।
\s5
\c 16
\p
\v 1 আর শিম্‌শোন ঘসাতে গিয়ে সেখানে একটা বেশ্যাকে দেখে তার কাছে গেলেন।
\v 2 “তাতে শিম্‌শোন এই জায়গায় এসেছে,” এই কথা শুনে ঘসাতীয়েরা তাঁকে ঘিরে রেখে সমস্ত রাত্রি তার জন্য নগরের দরজার কাছে লুকিয়ে থাকল, সমস্ত রাত্রি চুপ করে থাকল, বলল, “সকাল হলে আমরা তাকে হত্যা করব।”
\s5
\v 3 কিন্তু শিম্‌শোন মাঝরাত পর্যন্ত শয়ন করলেন, মাঝেরাতে উঠে তিনি নগর-দ্বারের স্তম্ভশুদ্ধ দুটো কবাট ও দুই বাজু ধরে উপড়ালেন এবং কাঁধে করে হিব্রোণের সামনের পর্বত শৃঙ্গে নিয়ে গেলেন।
\p
\s5
\v 4 তারপরে তিনি সোরেক উপত্যকার একটা স্ত্রীলোককে ভালবাসলেন, তার নাম দলীলা।
\v 5 তাতে পলেষ্টীয়দের শাসকেরা সেই স্ত্রীর কাছে এসে তাকে বললেন, “তুমি তাকে খোসামোদ করে দেখ, কিসে তার এমন মহাবল হয় ও কিসে আমরা তাকে জয় করে কষ্ট দেবার জন্য রাখতে পারব; তাতে আমরা প্রত্যেকে তোমাকে এগারশো রুপোর মুদ্রা দেব।”
\s5
\v 6 তখন দলীলা শিম্‌শোনকে বলল, “অনুরোধ করি, তোমার এমন মহাবল কিসে হয়, আর কষ্ট দেবার জন্য কিসে তোমাকে বাঁধতে পারা যায়, তা আমাকে বল।”
\v 7 শিম্‌শোন তাকে বললেন, “শুকনো হয়নি, এমন সাত গাছা কাঁচা তাঁত দিয়ে যদি তারা আমাকে বাঁধে, তবে আমি দুর্বল হয়ে অন্য লোকের সমান হব।”
\s5
\v 8 পলেষ্টীয়দের শাসকেরা অশুষ্ক সাত গাছা কাঁচা তাঁত এনে সেই স্ত্রীকে দিলেন; আর সে তা দিয়ে তাকে বাঁধল।
\v 9 তখন তার অন্তরাগারে গোপনভাবে লোক বসেছিল। পরে দলীলা তাঁকে বলল, “হে শিম্‌শোন, পলেষ্টীয়েরা তোমাকে ধরল।” তাতে আগুনের স্পর্শে শনের দড়ি যেমন ছিঁড়ে যায়, তেমন তিনি ঐ তাঁত সব ছিঁড়ে ফেললেন; এইভাবে তাঁর শক্তি জানা গেল না।
\s5
\v 10 পরে দলীলা শিম্‌শোনকে বলল, “দেখ, তুমি আমাকে উপহাস করলে, আমাকে মিথ্যা কথা বললে; এখন অনুরোধ করি, কিসে তোমাকে বাঁধতে পারা যায়, তা আমাকে বল।”
\v 11 তিনি তাকে বললেন, “যে দড়ি দিয়া কোন কাজ করা হয়নি, এমন কয়েক গাছা নূতন দড়ি দিয়ে যদি তারা আমাকে বাঁধে, তবে আমি দুর্বল হয়ে অন্য লোকের সমান হব।”
\v 12 তাতে দলীলা নতুন দড়ি দিয়ে তাঁকে তারা বাঁধল; পরে তাঁকে বলল, “হে শিম্‌শোন, পলেষ্টীয়েরা তোমাকে ধরল।” তখন অন্তরাগারে গোপনভাবে লোক বসেছিল। কিন্তু তিনি নিজের হাত থেকে সুতোর মতো ঐ সব ছিঁড়ে ফেললেন।
\s5
\v 13 পরে দলীলা শিম্‌শোনকে বলল, “এখন পর্যন্ত তুমি আমাকে উপহাস করলে, আমাকে মিথ্যা কথা বললে; কিসে তোমাকে বাঁধতে পারা যায়, আমাকে বল না।” তিনি বললেন, “তুমি যদি আমার মাথার সাত গুচ্ছ চুল তাঁতের সঙ্গে বোনো, তবে হতে পারে।”
\v 14 তাতে সে তাঁতের গোঁজের সঙ্গে তা বেঁধে তাঁকে বলল, “হে শিম্‌শোন, পলেষ্টীয়েরা তোমাকে ধরল। তখন তিনি ঘুম থেকে জেগে উঠে তানা শুদ্ধ তাঁতের গোঁজ উপড়িয়ে ফেললেন।”
\s5
\v 15 পরে দলীলা তাঁকে বলল, “তুমি কিভাবে বলতে পার যে, তুমি আমাকে ভালবাস? তোমার মন তো আমাতে নেই; এই তিন বার তুমি আমাকে উপহাস করলে; কিসে তোমার এমন মহাবল হয়, তা আমাকে বললে না।”
\v 16 এইভাবে সে প্রতিদিন কথা দিয়ে তাঁকে বিরক্ত করে এমন ব্যস্ত করে তুলল যে, প্রাণধারণে তাঁর বিরক্তি বোধ হল।
\s5
\v 17 তাই তিনি মনের সমস্ত কথা ভেঙ্গে বললেন, তাঁকে বললেন, আমার মস্তকে কখনও ক্ষুর ওঠেনি, কারণ মায়ের গর্ভ থেকে আমি ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নাসরীয়; ক্ষৌরি হলে আমার বল আমাকে ছেড়ে যাবে এবং আমি দুর্বল হয়ে অন্য সব লোকের সমান হব।
\s5
\v 18 তখন, এ আমাকে মনের সব কথা ভেঙ্গে বলেছে বুঝে, দলীলা লোক পাঠিয়ে পলেষ্টীয়দের শাসকদেরকে ডেকে বলল, “এই বার আসুন, কারণ সে আমাকে মনের সমস্ত কথা ভেঙ্গে বলেছে।” তাতে পলেষ্টীয়দের শাসকেরা টাকা হাতে করে তার কাছে আসলেন।
\v 19 পরে সে নিজের উরুর উপরে তাঁকে ঘুম পাড়াল এবং এক জনকে ডেকে তাঁর মস্তকের সাত গোছা চুল কেটে দিল; এইভাবে সে তাঁকে কষ্ট দিতে আরম্ভ করল, আর তাঁর বল তাঁকে ছেড়ে গেল।
\s5
\v 20 পরে সে বলল, “হে শিম্‌শোন, পলেষ্টীয়েরা তোমাকে ধরল।” তখন তিনি ঘুম থেকে উঠে বললেন, “অন্যান্য সময়ের মতো বাইরে গিয়ে গা ঝাড়া দেব।” কিন্তু সদাপ্রভু যে তাঁকে ত্যাগ করেছেন, তা তিনি বুঝলেন না।
\v 21 তখন পলেষ্টীয়েরা তাঁকে ধরে তাঁর দুই চোখ উপড়িয়ে নিল; এবং তাঁকে ঘসাতে এনে পিতলের দুই শেকল দিয়ে বেঁধে দিল; তিনি কারাগারে যাঁতা পেষণ করতে থাকলেন।
\v 22 তবু মাথা মুণ্ডন করার পর তাঁর মাথার চুল আবার বৃদ্ধি পেতে লাগল।
\s5
\v 23 পরে পলেষ্টীয়দের শাসকেরা নিজেদের দেবতা দাগোনের উদ্দেশে মহাযজ্ঞ ও আমোদ প্রমোদ করতে জড়ো হলেন; কারণ তারা বললেন, “আমাদের দেবতা আমাদের শত্রু শিম্‌শোনকে আমাদের হাতে দিয়েছেন।”
\v 24 আর তাঁকে দেখে লোকেরা নিজেদের দেবতার প্রশংসা করতে লাগল; কারণ তারা বলল, “এই যে ব্যক্তি আমাদের শত্রু ও আমাদের দেশনাশক, যে আমাদের অনেক লোককে হত্যা করেছে, একে আমাদের দেবতা আমাদের হাতে দিয়েছেন।”
\s5
\v 25 তাদের অন্তঃকরণ প্রফুল্ল হলে তারা বলল, “শিম্‌শোনকে ডাক, সে আমাদের কাছে কৌতুক করুক।” তাতে লোকেরা কারাগৃহ থেকে শিম্‌শোনকে ডেকে আনল, আর তিনি তাদের সামনে কৌতুক করতে লাগলেন। তারা স্তম্ভ সকলের মধ্যে তাঁকে দাঁড় করিয়েছিল।
\v 26 পরে যে বালক হাত দিয়ে শিম্‌শোনকে ধরেছিল, তিনি তাঁকে বললেন, “আমাকে ছেড়ে দাও, যে দুই স্তম্ভের উপরে গৃহের ভার আছে, তা আমাকে স্পর্শ করতে দাও; আমি ওতে হেলান দিয়ে দাঁড়াব।”
\s5
\v 27 পুরুষে ও স্ত্রীলোকে সেই বাড়ি পরিপূর্ণ ছিল, আর পলেষ্টীয়দের সব শাসক সেখানে ছিলেন এবং ছাদের উপরে স্ত্রী পুরুষ প্রায় তিনহাজার লোক শিম্‌শোনের কৌতুক দেখছিল।
\s5
\v 28 তখন শিম্‌শোন সদাপ্রভুকে ডেকে বললেন, “হে প্রভু সদাপ্রভু, অনুগ্রহ করে কেবল এই একটি বার আমাকে বলবান্‌ করুন, যেন আমি পলেষ্টীয়দেরকে আমার দুই চোখের জন্য একেবারেই প্রতিশোধ দিতে পারি।”
\v 29 পরে শিম্‌শোন, মধ্যস্থিত যে দুই স্তম্ভের ওপরে গৃহের ভার ছিল, তা ধরে তার একটির উপরে ডান হাত দিয়ে, অন্যটির উপরে বাঁ হাত দিয়ে নির্ভর করলেন।
\s5
\v 30 আর পলেষ্টীয়দের সঙ্গে আমার প্রাণ যাক, এই বলে শিম্‌শোন নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে নত হয়ে পড়লেন; তাতে ঐ গৃহ শাসকদের ও যত লোক ভিতরে ছিল, সমস্ত লোকের ওপরে পড়ল; এইভাবে তিনি জীবনকালে যত লোক হত্যা করেছিলেন, মরণকালে তার থেকে বেশি লোককে হত্যা করলেন।
\v 31 পরে তাঁর ভায়েরা ও তাঁর সমস্ত পিতৃকুল নেমে এসে তাঁকে নিয়ে সরা ও ইষ্টায়োলের মাঝখানে তাঁর পিতার মানোহের কবরস্থানে তাঁর কবর দিল। তিনি কুড়ি বছর ইস্রায়েলের বিচার করেছিলেন।
\s5
\c 17
\s মীখা ও দানীয়দের বিবরণ।
\p
\v 1 ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলে মীখা নামে এক ব্যক্তি ছিল।
\v 2 সে নিজের মাকে বলল, “যে এগারশো রুপোর মুদ্রা তোমার কাছ থেকে চুরি গিয়েছিল, যে বিষয়ে তুমি শাপ দিয়েছিলে ও আমাকে বলেছিলে, দেখ, সেই রুপো আমার কাছে আছে, আমিই তা নিয়েছিলাম।” তার মা বলল, “বৎস, তুমি সদাপ্রভুর আশীর্বাদপাত্র হও।”
\s5
\v 3 পরে সে ঐ এগারোশো রুপো মুদ্রা মাকে ফিরিয়ে দিলে তার মা বলল, “আমি এই রুপো সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র করছি; আমার ছেলে এটা আমার হাত থেকে নিয়ে, এক ছাঁচে ঢালা ও এক ক্ষোদিত প্রতিমা নির্ম্মাণ করুক। অতএব এখন এটা তোমাকে ফিরিয়ে দিলাম।”
\v 4 সে নিজের মাকে ঐ রুপো ফিরিয়ে দিলে তার মা দুশো রুপো মুদ্রা নিয়ে স্বর্ণকারকে দিল; আর সে এক ছাঁচে ঢালা ও এক ক্ষোদিত প্রতিমা নির্ম্মাণ করলে তা মীখার ঘরে থাকল।
\s5
\v 5 ঐ মীখার এক মন্দির ছিল; আর সে এক এফোদ ও কয়েকটি ঠাকুর নির্ম্মাণ করল, এবং নিজের এক ছেলের হাতে দিলে সে তার পুরোহিত হল।
\v 6 ঐ সময়ে ইস্রায়েলের মধ্যে রাজা ছিল না, যার দৃষ্টিতে যা ভাল মনে হত, সে তাই করত।
\s5
\v 7 সেই সময় যিহূদা গোষ্ঠীর বৈৎলেহম-যিহূদার একটা লোক ছিল, সে লেবীয়, ও সে সেখানে বাস করছিল।
\v 8 সেই ব্যক্তি যেখানে জায়গা পেতে পারে, সেখানে বাস করবার জন্য নগর থেকে, বৈৎলেহম-যিহূদা থেকে, চলে গিয়ে ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলে ঐ মীখার বাড়িতে পৌঁছালেন।
\v 9 মীখা তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কোথা থেকে আসলে?” সে তাকে বলল, “আমি বৈৎলেহম-যিহূদার এক জন লেবীয়; যেখানে জায়গা পাই, সেখানে বাস করতে যাচ্ছি।”
\s5
\v 10 মীখা তাকে বলল, “তুমি আমার এখানে থাক, আমার বাবা ও পুরোহিত হও, আমি বছরে তোমাকে দশটা রুপোর মুদ্রা, এক জোড়া বস্ত্র ও তোমার খাদ্য দ্রব্য দেব।” তাতে সেই লেবীয় ভিতরে গেল।
\v 11 সেই লেবীয় তার সেখানে থাকতে রাজী হল; আর এই যুবক তার এক ছেলের মত হল।
\s5
\v 12 পরে মীখা সেই লেবীয়ের পাওনা হাতে দিল, আর সেই যুবক মীখার পুরোহিত হয়ে তার বাড়ীতে থাকল।
\v 13 তখন মীখা বলল, “এখন আমি জানলাম যে, সদাপ্রভু আমার মঙ্গল করবেন, যেহেতু এক জন লেবীয় আমার পুরোহিত হয়েছে।”
\s5
\c 18
\p
\v 1 সেই সময়ে ইস্রায়েলের মধ্যে রাজা ছিল না; আর সেই সময়ে দানীয় বংশ নিজেদের বসবাসের জন্য অধিকারের চেষ্টা করছিল, কারণ সেই দিন পর্যন্ত ইস্রায়েল-বংশগুলোর মধ্যে তারা অধিকার প্রাপ্ত হয়নি।
\v 2 তখন দান-সন্তানরা নিজেদের পূর্ণ সংখ্যা থেকে নিজেদের গোষ্ঠীর পাঁচ জন বীর পুরুষকে দেশ নিরীক্ষণ ও অনুসন্ধান করবার জন্য সরা ও ইষ্টায়োল থেকে পাঠাল; তাদেরকে বলল, “তোমরা যাও, দেশ অনুসন্ধান কর;” তাতে তারা ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলে মীখার বাড়ি পর্যন্ত গিয়ে সেই জায়গায় রাত কাটাল।
\s5
\v 3 তারা যখন মীখার বাড়িতে ছিল, তখন সেই লেবীয় যুবকের স্বর চিনে কাছে গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করল, “এখানে তোমাকে কে এনেছে? এবং এ জায়গায় তুমি কি করছ? আর এখানে তোমার কি আছে?”
\v 4 সে তাদেরকে বলল, “মীখা আমার প্রতি এই এই ধরনের ব্যবহার করেছেন, তিনি আমাকে বেতন দিচ্ছেন, আর আমি তার পুরোহিত হয়েছি।”
\s5
\v 5 তখন তারা বলল, “অনুরোধ করি, ঈশ্বরের কাছে জিজ্ঞাসা কর, যেন আমাদের গন্তব্য পথে মঙ্গল হবে কি না, তা আমরা জানতে পারি।”
\v 6 পুরোহিত তাদেরকে বলল, “ভালোভাবে যাও, তোমরা যেখানে যাবে, তোমাদের পথ সদাপ্রভুর সামনে।”
\s5
\v 7 পরে সেই পাঁচ জন যাত্রা করে লয়িশে আসল। তারা দেখল, সেখানকার লোকেরা সীদোনীয়দের রীতি অনুসারে সুস্থির ও নিশ্চিন্ত হয়ে নির্বিঘ্নে বাস করছে এবং সে দেশে কোন বিষয়ে তাদেরকে অপ্রস্তুত করতে পারে, কর্ত্তৃত্ববিশিষ্ট এমন কেউ নেই আর সীদোনীয়দের থেকে তারা অনেক দূরে এবং অন্য কারোর সঙ্গে তাদের সম্বন্ধ নেই।
\v 8 পরে ওরা সরা ও ইষ্টায়োলে নিজের ভাইদের কাছে আসল; তাদের ভাইয়েরা জিজ্ঞাসা করল, “তোমরা কি বল?”
\s5
\v 9 তারা বলল, “ওঠ, আমরা সেই লোকদের বিরুদ্ধে যাই; আমরা সে দেশ দেখেছি; আর দেখ, তা অতি উত্তম, তোমরা কেন চুপ করে আছ? সেই দেশ অধিকার করবার জন্য সেখানে যেতে দেরী কর না।
\v 10 তোমরা গেলেই নির্বিঘ্ন এক লোক-সমাজের কাছে পৌছাবে, আর দেশ বিস্তীর্ণ; ঈশ্বর তোমাদের হাতে সেই দেশ সমর্পণ করেছেন; আর সেখানে পৃথিবীর কোন বস্তুর অভাব নেই।”
\s5
\v 11 তখন দানীয় গোষ্ঠীর ছয়শো লোক যুদ্ধাস্ত্রে সুসজ্জ হয়ে সেখান থেকে অর্থাৎ সরা ও ইষ্টায়োল থেকে যাত্রা করল।
\v 12 তারা যিহূদার কিরিয়ৎ-যিয়ারীমে উঠে গিয়ে সেখানে শিবির তৈরী করল। এই কারণ আজ পর্যন্ত সেই জায়গাকে মহনে-দান [দানের শিবির] বলে; দেখ, তা কিরিয়ৎ-যিয়ারীমের পিছনে আছে।
\s5
\v 13 পরে তারা সেখান থেকে পর্ব্বতময় ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলে গেল, ও মীখার বাড়ি পর্য্যন্ত এল।
\v 14 তখন, যে পাঁচ জন লয়িশ প্রদেশ অনুসন্ধান করতে এসেছিল, তারা নিজের ভাইদেরকে বলল, “তোমরা কি জান যে, এই বাড়িতে এক এফোদ, কয়েকটা ঠাকুর, এক ক্ষোদিত প্রতিমা ও ছাঁচে ঢালা এক প্রতিমা আছে? এখন তোমাদের যা কর্তব্য, তা বিবেচনা কর।”
\s5
\v 15 পরে তারা সেই দিকে ফিরে মীখার বাড়িতে ঐ লেবীয় যুবকের ঘরে এসে তার মঙ্গল জিজ্ঞাসা করল।
\v 16 আর দান-সন্তানদের মধ্যে যুদ্ধাস্ত্রে সুসজ্জ সেই ছয়শো পুরুষ প্রবেশদ্বারে দাঁড়িয়ে থাকল।
\s5
\v 17 আর দেশ নিরীক্ষণের জন্য যারা গিয়েছিল, সেই পাঁচ জন উঠে গেল; তারা সেখানে প্রবেশ করে ঐ ক্ষোদিত প্রতিমা, এফোদ, ঠাকুরগুলি ও ছাঁচে ঢালা প্রতিমা তুলে নিল; এবং ঐ পুরোহিত যুদ্ধাস্ত্রে সুসজ্জ ঐ ছয়শো পুরুষের সঙ্গে দ্বার-প্রবেশ-স্থানে দাঁড়িয়ে ছিল।
\v 18 যখন ওরা মীখার বাড়িতে প্রবেশ করে সেই ক্ষোদিত প্রতিমা, এফোদ, ঠাকুরগুলো ও ছাঁচে ঢালা প্রতিমা তুলে নিল, তখন পুরোহিত তাদেরকে বলল, “তোমরা কি করছ?”
\s5
\v 19 তারা বলল, “চুপ কর, মুখে হাত দিয়ে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে চল এবং আমাদের বাবা ও পুরোহিত হও। তোমার পক্ষে কোন্‌টা ভাল, এক জনের কুলের পুরোহিত হওয়া, না ইস্রায়েলের এক বংশের ও গোষ্ঠীর পুরোহিত হওয়া?”
\v 20 তাতে পুরোহিতের মন আনন্দিত হল, সে ঐ এফোদ, ঠাকুরগুলো ও ক্ষোদিত প্রতিমা নিয়ে সে লোকদের মধ্যবর্ত্তী হল।
\s5
\v 21 আর তারা মুখ ফিরিয়ে চলে গেল এবং ছোট ছেলে-মেয়ে, পশু ও দ্রব্য সামগ্রী নিজেদের সামনে রাখল।
\v 22 তারা মীখার বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে যাওয়ার পর মীখার বাড়ির কাছের বাড়িগুলির লোকেরা জড়ো হয়ে দান-সন্তানদের কাছে গিয়ে উপস্থিত হল এবং দান-সন্তানদেরকে ডাকতে লাগল।
\v 23 তাতে তারা মুখ ফিরিয়ে মীখাকে বলল, “তোমার কি হয়েছে, যে, তুমি এত লোক সঙ্গে করে নিয়ে আসছ?”
\s5
\v 24 সে বলল, “তোমরা আমার তৈরী দেবতা ও পুরোহিতকে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছ, এখন আমার আর কি আছে?” অতএব “তোমার কি হয়েছে? এটা আমাকে কেন জিজ্ঞাসা করছ?”
\v 25 দান-সন্তানরা তাকে বলল, “আমাদের মধ্যে যেন তোমার রব শোনা না যায়; পাছে রাগী লোকেরা তোমাদের উপর পড়ে এবং তুমি সপরিবারে প্রাণ হারাও।”
\v 26 পরে দান-সন্তানরা নিজের পথে গেল এবং মীখা তাদেরকে নিজের থেকে বেশি বলবান দেখে ফিরল, নিজের বাড়িতে ফিরে এল।
\s5
\v 27 পরে তারা মীখার তৈরী সমস্ত বস্তু ও তার পুরোহিতকে সঙ্গে নিয়ে লয়িশে সেই সুস্থির ও নিশ্চিন্ত লোক-সমাজের কাছে উপস্থিত হল এবং তরোয়াল দিয়ে তাদেরকে হত্যা করল, আর নগর-আগুনে পুড়িয়ে দিল।
\v 28 উদ্ধারকর্তা কেউ ছিল না, কারণ সে নগর সীদোন থেকে দূরে ছিল এবং অন্য কারও সঙ্গে তাদের সম্বন্ধে ছিল না। আর তা বৈৎ-রহোবের কাছাকাছি উপত্যকা ছিল। পরে তারা ঐ নগর নির্ম্মাণ করে সেখানে বাস করল।
\v 29 আর তাদের পূর্বপুরুষ যে দান ইস্রায়েলের পুত্র, তার নাম অনুসারে সেই নগরের নাম দান রাখল; কিন্তু আগে সেই নগরের নাম লয়িশ ছিল।
\s5
\v 30 আর দান-সন্তানরা নিজেদের জন্য সেই ক্ষোদিত প্রতিমা স্থাপন করল, এবং সেই দেশের লোকদের বন্দিত্বের সময় পর্যন্ত মোশির পুত্র গের্শোমের সন্তান যোনাথন এবং তার সন্তানরা দানীয় বংশের পুরোহিত হল।
\v 31 আর যত দিন শীলোতে ঈশ্বরের গৃহ থাকল, তারা নিজেদের জন্য মীখার তৈরী ঐ ক্ষোদিত প্রতিমা স্থাপন করে রাখল।
\s5
\c 19
\p
\v 1 সেই সময়ে ইস্রায়েলের মধ্যে রাজা ছিল না। আর ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলে প্রান্তভাগে এক জন লেবীয় বাস করত; সে বৈৎলেহম-যিহূদা থেকে এক উপপত্নী গ্রহণ করেছিল।
\v 2 পরে সেই উপপত্নী তার বিরুদ্ধে ব্যভিচার করল এবং তাকে ত্যাগ করে বৈৎলেহম-যিহূদায় নিজের বাবার বাড়িতে গিয়ে চার মাস সে জায়গায় থাকল।
\s5
\v 3 পরে তার স্বামী উঠে তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল ও ফিরিয়ে আনতে তার কাছে গেল, তার সঙ্গে তার চাকর ও দুটি গাধা ছিল। তার উপপত্নী তাকে বাবার বাড়ির মধ্যে নিয়ে গেলে সেই যুবতীর বাবা তাকে দেখে আনন্দ সহকারে তার সঙ্গে দেখা করল;
\v 4 তার শ্বশুর ঐ যুবতীর বাবা আগ্রহ সহকারে তাকে রাখলে সে তার সঙ্গে তিন দিন থাকল; এবং তারা সেই জায়গায় ভোজন পান ও রাত্রি যাপন করল।
\s5
\v 5 পরে চতুর্থ দিনে তারা ভোরবেলায় ঘুম থেকে উঠল, আর সে যাবার জন্য তৈরী হল। তখন সেই যুবতীর বাবা জামাইকে বলল, “কিছু খেয়ে-দেয়ে নিজেকে বলযুক্ত কর, পরে নিজের পথে যাও।”
\v 6 তাতে তারা দুই জন একসঙ্গে বসে ভোজন পান করল; পরে যুবতীর বাবা সেই ব্যক্তিকে বলল, “অনুরোধ করি, রাজি হও, এই রাতটুকু অপেক্ষা কর, আনন্দিত হও।”
\s5
\v 7 তবুও সেই ব্যক্তি যাবার জন্য উঠল; কিন্তু তার শ্বশুর তাকে অনুরোধ করলে সে সেই রাত্রিতে সেখানে থাকল।
\v 8 পরে পঞ্চম দিনে সে যাবার জন্য ভোরবেলায় উঠল; আর যুবতীর পিতা তাকে বলল, “অনুরোধ করি, নিজেকে বলযুক্ত কর, বিকাল পর্যন্ত তোমরা অপেক্ষা কর;” তাতে তারা উভয়ে আহার করল।
\s5
\v 9 পরে সেই পুরুষ, তার উপপত্নী ও চাকর যাবার জন্য উঠলে তার শ্বশুর ঐ যুবতীর বাবা তাকে বলল, “দেখ, প্রায় দিন শেষ হল, অনুরোধ করি, তোমরা এই রাতটুকু অপেক্ষা কর; দেখ, বেলা শেষ হয়েছে; তুমি এক জায়গায় রাত কাটাও, আনন্দিত হও; কাল তোমরা ভোরেবেলায় উঠলেই তুমি তোমার তাঁবুতে যেতে পারবে।”
\s5
\v 10 কিন্তু ঐ ব্যক্তি সেই রাতে অপেক্ষা করতে রাজি হল না; সে উঠে যাত্রা করে যিবূষের অর্থাৎ যিরূশালেমের সামনে এসে উপস্থিত হল; তার সঙ্গে সাজানো দুটি গাধা ছিল; আর তার উপপত্নীও সঙ্গে ছিল।
\v 11 যিবূষের কাছে উপস্থিত হলে দিন প্রায় একেবারে শেষ হল; তাতে চাকরটা নিজের কর্তাকে বলল, “অনুরোধ করি, আসুন, আমরা যিবূষীয়দের এই নগরে প্রবেশ করে রাত কাটাই।”
\s5
\v 12 কিন্তু তার কর্ত্তা তাকে বলল, “যারা ইস্রায়েলীয় না, এমন বিজাতীয়দের নগরে আমরা প্রবেশ করব না; আমরা বরং এগিয়ে গিয়ে গিবিয়াতে যাব।”
\v 13 সে চাকরটাকে আরও বলল, “এস, আমরা এই অঞ্চলের কোনো জায়গায় যাই, গিবিয়াতে কিম্বা রামাতে রাত কাটাই।”
\s5
\v 14 এইভাবে তারা এগিয়ে চলল; পরে বিন্যামীনের অধিকারভুক্ত গিবিয়ার কাছে উপস্থিত হলে সূর্য্য অস্ত গেল।
\v 15 তখন তারা গিবিয়াতে প্রবেশ ও রাত্রিবাস করার জন্য পথ ছেড়ে সেখানে গেল; সে সেখানে গিয়ে ঐ নগরের চকে বসে থাকল; কোন ব্যক্তি তাদেরকে নিজের বাড়িতে রাতে থাকবার জন্য জায়গা দিল না।
\s5
\v 16 আর দেখ, এক জন বৃদ্ধ সন্ধ্যাবেলায় মাঠ থেকে কাজ করে আসছিলেন; সেই ব্যক্তি ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলের লোক; আর তিনি গিবিয়াতে বাস করছিলেন, কিন্তু নগরের লোকেরা বিন্যামীনীয় ছিল।
\v 17 সেই ব্যক্তি চোখ তুলে নগরের চকে ঐ পথিককে দেখলেন; আর বৃদ্ধ জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথায় যাচ্ছ? কোথা থেকে এসেছ?”
\s5
\v 18 সে তাঁকে বলল, “আমরা বৈৎলেহম-যিহূদা থেকে ইফ্রয়িমের পাহাড়ি অঞ্চলের প্রান্তভাগে যাচ্ছি; আমি সেই স্থানের লোক; বৈৎলেহম-যিহূদা পর্যন্ত গিয়েছিলাম; আমি সদাপ্রভুর গৃহে যাচ্ছি। আর আমাকে কোনো ব্যক্তি তার বাড়িতে থাকতে দিল না।
\v 19 আমাদের সঙ্গে গাধাদের জন্য খড় ও কলাই এবং আমার জন্য, নিজের এই দাসীর জন্য এবং নিজের দাসদাসীর সঙ্গী এই যুবকের জন্য রুটি ও দ্রাক্ষারস আছে, কোনো দ্রব্যের অভাব নেই।”
\s5
\v 20 বৃদ্ধ বললেন, “তোমার শান্তি হোক, তোমার যা কিছু প্রয়োজনীয়, তার ভার আমার উপরে থাকুক; তুমি কোনোভাবে এই চকে রাত কাটিও না।”
\v 21 পরে বৃদ্ধ তাকে নিজের বাড়িতে এনে গাধাদেরকে ঘাস দিলেন এবং তারা পা ধুয়ে ভোজন পান করল।
\s5
\v 22 তারা নিজের নিজের হৃদয় আপ্যায়িত করছে, এমন সময়ে, দেখ, নগরের লোকেরা, কতগুলি পাষণ্ড, সেই বাড়ির চারদিকে ঘিরে দরজায় আঘাত করতে লাগল এবং বাড়ির কর্ত্তাকে, ঐ বৃদ্ধকে, বলল, “তোমার বাড়িতে যে পুরুষ এসেছে, তাকে বের করে আন; আমরা তার পরিচয় নেব।”
\v 23 তাতে সেই ব্যক্তি, বাড়ির কর্ত্তা, বের হয়ে তাদের কাছে গিয়ে বললেন, “হে আমার ভাইয়েরা, না, না; অনুরোধ করি, এমন খারাপ কাজ কর না; ঐ পুরুষ আমার বাড়িতে এসেছে, অতএব এমন খারাপ কাজ কর না।
\s5
\v 24 দেখ, আমার যুবতী মেয়ে এবং তার উপপত্নী; এদেরকে বের করে আনি; তোমরা তাদেরকে অপমান কর, ও তাদের প্রতি তোমাদের যা ভাল মনে হয়, তাই কর; কিন্তু সেই পুরুষের প্রতি এমন খারাপ কাজ কর না।”
\v 25 তবুও তারা তাঁর কথা শুনতে অস্বীকার করল, তখন ঐ পুরুষ নিজের উপপত্নীকে ধরে তাদের কাছে বের করে আনল; আর তারা তার পরিচয় নিল এবং প্রভাত পর্যন্ত সমস্ত রাত তার প্রতি অত্যাচার করল; পরে আলো হয়ে আসলে তাকে ছেড়ে দিল।
\v 26 তখন রাত শেষ হলে ঐ স্ত্রী স্বামীর আপ্যায়নকারী বৃদ্ধের বাড়ির দরজায় এসে সূর্য্যাদয় পর্যন্ত পড়ে থাকল।
\s5
\v 27 সকাল হলে তার স্বামী উঠে পথে যাবার জন্য ঘরের দরজা খুলে বের হয়ে এল, আর দেখ, সেই স্ত্রীলোক, তার উপপত্নী, ঘরের দরজায় ওপরে হাত রেখে পড়ে আছে।
\v 28 তাতে সে তাকে বলল, “ওঠ, চল, আমরা যাই;” কিন্তু সে কিছুই উত্তর দিল না। পরে ঐ লোকটি গর্দ্দভের ওপরে তাকে তুলে নিল এবং উঠে নিজের জায়গায় চলে গেল।
\s5
\v 29 পরে সে নিজের বাড়িতে এসে একটি ছুরি নিয়ে নিজের উপপত্নীকে ধরে অস্থি অনুসারে বারো খণ্ড করে ইস্রায়েলের সমস্ত অঞ্চলে পাঠিয়ে দিল।
\v 30 যারা তা দেখল, সবাই বলল, “ইস্রায়েলীয়দের মিসর দেশ থেকে বের হয়ে আসার দিন থেকে আজ পর্যন্ত এমন কাজ কখনও হয়নি, দেখাও যায়নি; এ বিষয়ে বিবেচনা কর, পরামর্শ কর, কি কর্তব্য বল।”
\s5
\c 20
\p
\v 1 পরে ইস্রায়েলীয়রা সবাই বাইরে এল, দান থেকে বের্‌-শেবা পর্যন্ত ও গিলিয়দ দেশ সমেত সমস্ত মণ্ডলী এক মানুষের মতো মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর কাছে সমবেত হল।
\v 2 ঈশ্বরের প্রজাদের সেই সমাজে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের সমস্ত জনসমাজের অধ্যক্ষ ও চারলাখ খড়গধারী পদাতিক উপস্থিত হল।
\s5
\v 3 আর ইস্রায়েলীয়রা মিস্‌পাতে উঠে গিয়েছে, এই কথা বিন্যামীনরা শুনতে পেল। পরে ইস্রায়েলীয়রা বলল, “বল দেখি, এই খারাপ কাজ কিভাবে হল?”
\v 4 সেই লেবীয়, মৃত স্ত্রীর পুরুষ উত্তর করে বলল্‌, “আমি ও আমার উপপত্নী রাত কাটানোর জন্য বিন্যামীনের অধিকারভুক্ত গিবিয়াতে প্রবেশ করেছিলাম।”
\s5
\v 5 আর গিবিয়ার গৃহস্থেরা আমার বিরুদ্ধে উঠে রাত্রিবেলায় আমার জন্য গৃহের চারদিক্‌ ঘিরে রাখল। তারা আমাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেছিল, আর আমার উপপত্নীকে ধর্ষণ করায় সে মারা গেল।
\v 6 পরে আমি নিজ উপপত্নীকে নিয়ে খণ্ড খণ্ড করে ইস্রায়েলের অধিকারস্থ প্রদেশের সব জায়গায় পাঠালাম, কারণ তারা ইস্রায়েলের মধ্যে খারাপ কাজ করেছে।
\v 7 দেখ, তোমরা সবাই ইস্রায়েল সন্তান; অতএব এ বিষয়ে নিজের নিজের মতামত বলে মন্ত্রণা স্থির কর।
\s5
\v 8 তখন সকল লোক এক মানুষের মতো উঠে বলল, “আমরা কেউ নিজের তাঁবুতে যাব না, কেউ নিজের বাড়িতে ফিরে যাব না;
\v 9 কিন্তু এখন গিবিয়ার প্রতি এই কাজ করব, আমরা গুলিবাঁটের মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে যাব।
\s5
\v 10 আর আমরা লোকদের জন্য খাদ্য দ্রব্য আনতে ইস্রায়েল-বংশসমূহের মধ্যে একশো লোকের প্রতি দশ, হাজারের প্রতি একশো ও দশ হাজারের প্রতি এক হাজার লোক গ্রহণ করব, যেন আমরা বিন্যামীনের গিবিয়াতে গিয়ে ইস্রায়েলের মধ্যে কৃত সমস্ত খারাপ কাজ অনুসারে প্রতিফল দিতে পারি।”
\v 11 এইভাবে ইস্রায়েলের সমস্ত লোক এক মানুষের মতো একযোগ হয়ে ঐ নগরের প্রতিকূলে জড়ো হল।
\s5
\v 12 পরে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশগুলি বিন্যামীন বংশের সমস্ত জায়গায় লোক পাঠিয়ে বলল, “তোমাদের মধ্যে এ কি খারাপ কাজ হয়েছে?”
\v 13 তোমরা এখন ঐ লোকদেরকে, গিবিয়া-নিবাসী পাষণ্ডদেরকে, সমর্পণ কর, আমরা তাদেরকে হত্যা করে ইস্রায়েল থেকে দুষ্টাচার বন্ধ করব। কিন্তু বিন্যামীন নিজের ভাইদের অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের কথা শুনতে রাজি হল না।
\v 14 বরং ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য বিন্যামীনরা নানা নগর থেকে গিবিয়াতে গিয়ে জড়ো হল।
\s5
\v 15 সেই দিন নানা নগর থেকে আসা বিন্যামীনদের ছাব্বিশ হাজার খড়গধারী লোক গণনা করা হল; এরা গিবিয়া-নিবাসীদের থেকে আলাদা; তারাও সাতশো মনোনীত লোক গণনা করা হল।
\v 16 আবার এই সকল লোকের মধ্যে সাতশো মনোনীত লোক বাঁ-হাতি ছিল; তাদের প্রত্যেক জন চুল লক্ষ্য করে ফিঙ্গার পাথর মারতে পারত, লক্ষ্যচ্যুত হত না।
\s5
\v 17 বিন্যামীন ভিন্ন ইস্রায়েলের খড়গধারী চারলাখ লোক গণনা করা হল; এরা সবাই যোদ্ধা ছিল।
\v 18 ইস্রায়েলীয়রা উঠে বৈথেলে গিয়ে ঈশ্বরের কাছে জিজ্ঞাসা করল; তারা বলল, “বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে আমাদের মধ্যে প্রথমে কে যাবে?” সদাপ্রভু বললেন, “প্রথমে যিহূদা যাবে।”
\s5
\v 19 পরে ইস্রায়েলীয়রা সকালে উঠে গিবিয়ার সামনে শিবির তৈরী করল।
\v 20 পরে ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বেরিয়ে গেল; তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে ইস্রায়েলীয়রা গিবিয়ার বিরুদ্ধে সৈন্য স্থাপন করল।
\v 21 তখন বিন্যামীনরা গিবিয়া থেকে বের হয়ে ঐ দিনে ইস্রায়েলের মধ্যে বাইশ হাজার লোককে সংহার করে ভূতলশায়ী করল।
\s5
\v 22 পরে ইস্রায়েলীয়রা নিজেদেরকে আশ্বাস দিয়ে, প্রথম দিনে যে জায়গায় সৈন্য স্থাপন করেছিল, আবার সেই জায়গায় সৈন্য স্থাপন করল।
\v 23 আর ইস্রায়েলীয়রা উঠে গিয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত সদাপ্রভুর সামনে কাঁদতে লাগল এবং সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করল, “আমরা নিজের ভাই বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে কি আবার যাব?” সদাপ্রভু বললেন, “তার বিরুদ্ধে যাও।”
\s5
\v 24 পরে ইস্রায়েলীয়রা দ্বিতীয় দিনে বিন্যামীনদের প্রতিকুলে উপস্থিত হল।
\v 25 আর বিন্যামীন সেই দ্বিতীয় দিনে তাদের বিরুদ্ধে গিবিয়া থেকে বের হয়ে আবার ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে আঠার হাজার লোককে সংহার করে ভূতলশায়ী করল, এরা সবাই খড়গধারী ছিল।
\s5
\v 26 পরে সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা, সমস্ত লোক, গিয়ে বৈথেলে উপস্থিত হল এবং সেই জায়গায় সদাপ্রভুর সামনে কাঁদল ও বসে থাকল এবং সেই দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত উপবাস করে সদাপ্রভুর সামনে হোম ও মঙ্গলের জন্য বলি উৎসর্গ করল।
\s5
\v 27 সেই সময়ে ঈশ্বরের নিয়ম-সিন্দুক ঐ জায়গায় ছিল এবং হারোণের পৌত্র ইলিয়াসরের পুত্র পীনহস তার সামনে দণ্ডায়মান ছিলেন;
\v 28 অতএব ইস্রায়েলীয়রা সদাপ্রভুকে এই কথা জিজ্ঞাসা করল, “আমরা নিজের ভাই বিন্যামীনদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এখনও কি আবার যাব? না থামব?” সদাপ্রভু বললেন, “যাও, কারণ কাল আমি তোমাদের হাতে তাদেরকে সমর্পণ করব।”
\s5
\v 29 পরে ইস্রায়েল গিবিয়ার চারদিকে ঘাঁটি বসাল।
\v 30 পরে তৃতীয় দিনে ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনদের বিরুদ্ধে উঠে গিয়ে অন্যান্য সময়ের মতো গিবিয়ার কাছে সৈন্য রচনা করল।
\s5
\v 31 তখন বিন্যামীনরা ঐ লোকদের বিরুদ্ধে বের হল এবং নগর থেকে দূরে আকর্ষিত হয়ে প্রথম বারের মতো লোকদেরকে আঘাত ও হত্যা করতে লাগল, বিশেষতঃ বৈথেলে যাবার ও ক্ষেত্রস্থ গিবিয়াতে যাবার দুই রাজপথে তারা ইস্রায়েলের মধ্যে অনুমান ত্রিশ জনকে হত্যা করল।
\s5
\v 32 তাতে বিন্যামীনরা বলল, “ওরা আমাদের সামনে আগের মতো পরাজিত হচ্ছে।” কিন্তু ইস্রায়েলীয়রা বলেছিল, “এস, আমরা পালিয়ে ওদেরকে নগর থেকে রাজপথে আকর্ষণ করি।”
\v 33 অতএব ইস্রায়েলের সমস্ত লোক নিজের নিজের জায়গা থেকে উঠে গিয়ে বাল্‌-তামরে সৈন্য স্থাপন করল; ইতিমধ্যে ইস্রায়েলের লুক্কায়িত লোকেরা নিজেদের জায়গা থেকে অর্থাৎ মারে-গেবা থেকে বের হল।
\s5
\v 34 পরে সমস্ত ইস্রায়েল থেকে দশ হাজার মনোনীত লোক গিবিয়ার সামনে আসল, তাতে ঘোরতর সংগ্রাম হল; কিন্তু ওরা জানত না যে, অমঙ্গল ওদের কাছাকাছি।
\v 35 তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সামনে বিন্যামীনকে আঘাত করলেন, আর সে দিন ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীনের পঁচিশ হাজার একশো লোককে সংহার করল, এরা সবাই খড়গধারী ছিল।
\s5
\v 36 এইভাবে বিন্যামীনরা দেখল যে, তারা আহত হয়েছে; কারণ ইস্রায়েলের লোকেরা বিন্যামীনের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল, যেহেতু তারা যাদেরকে গিবিয়ার বিরুদ্ধে স্থাপন করেছিল, সেই লুকিয়ে থাকা লোকদের উপরে নির্ভর করছিল।
\v 37 ইতিমধ্যে ঐ লুকিয়ে থাকা লোকেদের উপর সত্বর গিবিয়া আক্রমণ করল, আর প্রবেশ করে খড়গধারে সব নগরকে আঘাত করল।
\v 38 ইস্রায়েল-লোকদের ও লুক্কায়িত লোকদের মধ্যে এই চিহ্ন স্থির করা হয়েছিল, লুক্কায়িতেরা নগর থেকে ধোঁয়ার মেঘ উঠাবে।
\s5
\v 39 অতএব ইস্রায়েল-লোকেরা সংগ্রাম করতে করতে মুখ ফিরাল। তখন বিন্যামীন তাদের অনুমান ত্রিশ জনকে আঘাত ও হত্যা করেছিল, কারণ তারা বলেছিল, প্রথম যুদ্ধের মতো এবারেও ওরা আমাদের সামনে আহত হল।
\s5
\v 40 কিন্তু যখন নগর থেকে স্তম্ভাকারে ধূমময় মেঘ উঠতে লাগল, তখন বিন্যামীন পিছনে চেয়ে দেখল, আর দেখ, সব নগর ধূমময় হয়ে আকাশে উড়ে যাচ্ছে।
\v 41 আর ইস্রায়েলীয়রাও মুখ ফিরাল; তাতে অমঙ্গল আমাদের ওপরে এসে পড়ল দেখে বিন্যামীনের লোকেরা ভয় পেল।
\s5
\v 42 অতএব তারা ইস্রায়েল-লোকদের সামনে মাঠের পথের দিকে ফিরল এবং নগর কিন্তু সেই জায়গাতেও যুদ্ধ তাদের অনুবর্ত্তী হল এবং নগর সব থেকে আসা লোকেরা সেখানে তাদেরকে সংহার করল।
\s5
\v 43 তারা চারদিকে বিন্যামীনকে ঘিরে তাড়াতে লাগল এবং সূর্য্যোদয়ের দিকে গিবিয়ার সামনের দিক পর্যন্ত তাদের বিশ্রামের জায়গায় তাদেরকে দলিত করতে লাগল।
\v 44 তাতে বিন্যামীনের আঠার হাজার লোক হত হল, তারা সকলেই যোদ্ধা ছিল।
\s5
\v 45 পরে অবশিষ্টেরা প্রান্তরের দিকে ফিরে রিম্মোণ পর্ব্বতে পালিয়ে যেতে লাগল, আর ওরা রাজপথে তাদের অন্য পাঁচ হাজার লোককে হত্যা করল; পরে বেগে তাদের পিছন পিছন তাড়া করে গিদোম পর্যন্ত গিয়ে তাদের দুই হাজার লোককে আঘাত করল।
\v 46 অতএব সেই দিন বিন্যামীনের মধ্যে খড়গধারী পঁচিশ হাজার লোক হত হল; তারা সবাই বলবান লোক ছিল।
\s5
\v 47 কিন্তু ছয়শো লোক প্রান্তরের দিকে ফিরে রিম্মোণ পর্ব্বতে পালিয়ে গিয়ে সেই রিম্মোণ পর্ব্বতে চার মাস বাস করল।
\v 48 পরে ইস্রায়েলীয়রা বিন্যামীদের প্রতিকূলে ফিরে নগরস্থ মানুষ ও পশু প্রভৃতি যা যা পাওয়া গেল, সে সবকে খড়গ দিয়ে আঘাত করল; তারা যত নগর পেল, সে সব আগুনে পুড়িয়ে দিল।
\s5
\c 21
\p
\v 1 মিস্‌পাতে ইস্রায়েল-লোকেরা এই শপথ করেছিল, আমরা কেউ বিন্যামীনের মধ্যে কারও সঙ্গে নিজের মেয়ের বিয়ে দেব না।
\v 2 পরে লোকেরা বৈথেলে এসে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই জায়গায় ঈশ্বরের সামনে বসে খুব জোরে চিত্কার করে কাঁদতে লাগল।
\v 3 তারা বলল, “হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আজ ইস্রায়েলের মধ্যে এক বংশের লোপ হল, ইস্রায়েলের মধ্যে কেন এমন হল?”
\s5
\v 4 পরদিনে লোকেরা ভোরবেলায় উঠে সেই জায়গায় যজ্ঞবেদি তৈরী করল এবং হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করল।
\v 5 পরে ইস্রায়েলীয়রা বলল, “সমাজে সদাপ্রভুর কাছে আসেনি, ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে এমন কে আছে?” কারণ মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর কাছে যে না আসবে, সে অবশ্য হত হবে, এই মহাদিব্যি তারা করেছিল।
\s5
\v 6 আর ইস্রায়েলীয়রা নিজেদের ভাই বিন্যামীনের জন্য অনুতাপ করে বলল, “ইস্রায়েলের মধ্য থেকে আজ এক বংশ উচ্ছিন্ন হল।
\v 7 এখন তার অবশিষ্ট লোকদের বিয়ের বিষয়ে কি কর্ত্তব্য? আমরা তো সদাপ্রভুর নামে এই দিব্যি করেছি যে, আমরা তাদের সঙ্গে আমাদের মেয়েদের বিয়ে দেব না।”
\s5
\v 8 অতএব তারা বলল, “মিস্‌পাতে সদাপ্রভুর কাছে আসেনি, ইস্রায়েলের এমন কোন বংশ কি আছে?” আর দেখ, যাবেশ-গিলিয়দ থেকে কেউ শিবিরস্থ ঐ সমাজে আসেনি।
\v 9 লোক সকল গণনা হল, কিন্তু দেখ, যাবেশ-গিলিয়দ-নিবাসীদের এক জনও সে জায়গায় নেই।
\v 10 তাতে মণ্ডলী বলবানদের মধ্য থেকে বারো হাজার লোককে সে জায়গায় পাঠাল, আর তাদেরকে এই আজ্ঞা করল, “তোমরা যাও, যাবেশ-গিলিয়দ-নিবাসীদেরকে স্ত্রীলোক ও বালক-বালিকাশুদ্ধ খড়গ দিয়ে আঘাত কর।
\s5
\v 11 আর এই কাজ করবে; প্রত্যেক পুরুষকে এবং পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের প্রত্যেক স্ত্রীকে নিঃশেষে বিনষ্ট করবে।”
\v 12 আর তারা যাবেশ-গিলিয়দ-নিবাসীদের মধ্যে এমন চারশো কুমারী পেল, যারা পুরুষের সঙ্গে শয়ন করে তার পরিচয় প্রাপ্ত হয়নি। তারা কনান দেশস্থ শীলোর শিবিরে তাদেরকে আনল।
\s5
\v 13 পরে সমস্ত মণ্ডলী লোক পাঠিয়ে রিম্মোণ পর্ব্বতে অবস্থিত বিন্যামীনদের সঙ্গে আলাপ করল ও তাদের কাছে সন্ধি ঘোষণা করল।
\v 14 সেই সময়ে বিন্যামীনের লোকেরা ফিরে আসল, আর তারা যাবেশ-গিলিয়দস্থ যে কন্যাদেরকে জীবিত রেখেছিল, ওদের সঙ্গে তাদের বিবাহ দিল; তা সত্ত্বেও ওদের অকুলান হল।
\v 15 আর সদাপ্রভু ইস্রায়েল-বংশগুলির মধ্যে ছিদ্র করেছিলেন; এই কারণ লোকেরা বিন্যামীনের জন্য অনুতাপ করল।
\s5
\v 16 পরে মণ্ডলীর প্রাচীনেরা বললেন, “বিন্যামীন থেকে স্ত্রীজাতি উচ্ছিন্ন হয়েছে, অতএব অবশিষ্টদের বিয়ে দেবার জন্য আমাদের কি কর্ত্তব্য?”
\v 17 আরও বললেন, “ইস্রায়েলের মধ্যে এক বংশের লোপ যেন না হয়, তার জন্য বিন্যামীনের ঐ রক্ষাপ্রাপ্ত লোকদের একটি অধিকার থাকা আবশ্যক।
\s5
\v 18 কিন্তু আমরা ওদের সঙ্গে আমাদের মেয়েদের বিয়ে দিতে পারি না; কারণ ইস্রায়েলীয়রা এই দিব্যি করেছে, যে কেউ বিন্যামীনকে মেয়ে দেবে, সে অভিশাপগ্রস্ত হবে।”
\v 19 শেষে তাঁরা বললেন, “দেখ, শীলোতে প্রতিবছর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক উৎসব হয়ে থাকে।” ওটা বৈথেলের উত্তরদিকে, বৈথেল থেকে যে রাজপথ শিথিমের দিকে গিয়েছে, তার পূর্ব্বদিকে, এবং লবোনার দক্ষিণদিকে অবস্থিত।
\s5
\v 20 তাতে তাঁরা বিন্যামীনদেরকে আজ্ঞা করলেন, “তোমরা গিয়ে দ্রাক্ষাক্ষেত্রে লুকিয়ে থাক;
\v 21 নিরীক্ষণ কর, আর দেখ, যদি শীলোর কন্যারা দলের মধ্যে নাচ করতে করতে বাইরে বের হয় আসে, তবে তোমরা দ্রাক্ষাক্ষেত্র থেকে বের হয়ে এসে প্রত্যেক শীলোর কন্যাদের মধ্য থেকে নিজের নিজের স্ত্রী ধরে নিয়ে বিন্যামীন দেশে চলে যাও।
\s5
\v 22 আর তাদের পিতা কিম্বা ভায়েরা যদি বিবাদ করবার জন্য আমাদের কাছে আসে, তবে আমরা তাদেরকে বলব, তোমরা আমাদের অনুরোধে তাদেরকে দান কর; কারণ যুদ্ধের সময়ে আমরা তাদের প্রত্যেক জনের জন্য স্ত্রী পায়নি; আর তোমরাও তাদেরকে দাওনি, দিলে এখন অপরাধী হতে।”
\s5
\v 23 তখন বিন্যামীনরা সেরকম করে নিজেদের সংখ্যানুসারে নৃত্যকারিণী কন্যাদের মধ্য থেকে স্ত্রী ধরে গ্রহণ করল; পরে নিজের নিজের অধিকারে ফিরে গেল এবং আবার নগরগুলি নির্ম্মাণ করে তাদের মধ্যে বাস করল।
\v 24 আর সেই সময়ে ইস্রায়েলীয়রা সেখান থেকে প্রত্যেকে নিজের নিজের বংশের ও গোষ্ঠীর কাছে চলে গেল; তারা সেখান থেকে বের নিজের নিজের অধিকারে গেল।
\s5
\v 25 সেই সময়ে ইস্রায়েলের মধ্যে রাজা ছিল না; যার দৃষ্টিতে যা ভাল মনে হত, সে তাই করত।

146
08-RUT.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,146 @@
\id RUT
\ide UTF-8
\h রূতের বিবরণ
\toc1 রূতের বিবরণ
\toc2 রূতের বিবরণ
\toc3 rut
\mt1 রূতের বিবরণ
\s5
\c 1
\ms নয়মী ও রুৎ বৈৎলেহমে যান।
\p
\v 1 আর বিচারকর্ত্তৃগনের শাসনের সময়ে একবার দেশে দুর্ভিক্ষ হয়। আর বৈৎলেহম-যিহূদার একটি লোক, তার স্ত্রী ও দুই ছেলে মোয়াব দেশে বাস করতে যায়।
\v 2 সেই লোকটির নাম ইলীমেলক, তার স্ত্রীর নাম নয়মী এবং তার দুই ছেলের নাম মহলোন ও কিলিয়োন; এরা বৈৎলেহম-যিহূদা নিবাসী ইফ্রাথীয়। এরা মোয়াব দেশে গিয়ে সেখানে থেকে গেল।
\s5
\v 3 পরে নয়মীর স্বামী ইলীমেলক মারা গেল, তাতে সে ও তার দুই ছেলে অবশিষ্ট থাকল।
\v 4 পরে সেই দুইজনে দুই মোয়াবীয়া মেয়েকে বিয়ে করল। একজনের নাম অর্পা আরেকজনের নাম রূত। আর তারা অনুমান দশ বছর ধরে সেই জায়গায় বাস করল।
\v 5 পরে মহলোন ও কিলিয়োন এই দুই জনই মরে গেল, তাতে নয়মী স্বামীহীন ও পুত্রহীন হয়ে অবশিষ্টা থাকল।
\s5
\v 6 তখন সেই দুই ছেলের স্ত্রীদেরকে সঙ্গে নিয়ে মোয়াব দেশ থেকে ফিরে যাবার জন্য উঠল; কারণ সে মোয়াব দেশে শুনতে পেয়েছিল যে, সদাপ্রভু নিজের প্রজাদের সাহায্য করে তাদেরকে খাবার দিয়েছেন।
\v 7 সে ও তার দুই ছেলের স্ত্রী নিজের বাসস্থান থেকে বের হল এবং যিহূদা দেশে ফিরে যাবার জন্য পথে চলতে লাগল।
\s5
\v 8 তখন নয়মী দুই ছেলের স্ত্রীদেরকে বলল, “তোমরা নিজের নিজের মায়ের বাড়িতে ফিরে যাও; মৃতদের প্রতি ও আমার প্রতি তোমরা যেমন দয়া করেছ, সদাপ্রভু তোমাদের প্রতি সেরকম দয়া করুন।
\v 9 তোমরা উভয়ে যেন স্বামীর বাড়িতে বিশ্রাম পাও, সদাপ্রভু তোমাদেরকে এই বর দিন।” পরে সে তাদেরকে চুম্বন করল; তাতে তারা উচ্চঃস্বরে কাঁদল।
\v 10 আর তারা তাকে বলল, “না, আমরা তোমারই সাথে তোমার লোকেদের কাছে ফিরে যাব।”
\s5
\v 11 নয়মী বলল, “হে আমার বত্সারা, ফিরে যাও; তোমরা আমার সঙ্গে কেন যাবে? তোমাদের স্বামী হবার জন্য এখনো কি আমার গর্ভে সন্তান আছে?
\v 12 হে আমার বত্সরা, ফিরে চলে যাও; কারণ আমি বৃদ্ধা, আবার বিয়ে করতে পারি না; আর আমার প্রত্যাশা আছে, এই বলে যদি আমি আজ রাতে বিয়ে করি আর যদি ছেলেও প্রসব করি,
\v 13 তবে তোমরা কি তাদের বয়ঃপ্রাপ্তি পর্যন্ত অপেক্ষা করবে? তোমরা কি সে জন্য বিয়ে করতে নিবৃত্তা থাকবে? হে আমার বত্সরা, তা নয়, তোমাদের জন্য আমার বড় দুঃখ হয়েছে; কারণ সদাপ্রভুর হাত আমার বিরুদ্ধে প্রসারিত হয়েছে।”
\s5
\v 14 পরে তারা আবার উচ্চঃস্বরে কাঁদল এবং অর্পা নিজের শাশুড়ীকে চুম্বন করল, কিন্তু রূত তার প্রতি অনুরক্তা থাকল।
\v 15 তখন সে বলল, “ঐ দেখ, তোমার যা নিজের লোকেদের ও নিজের দেবতার কাছে ফিরে গেল, তুমিও তোমার জা-এর পিছনে পিছনে ফিরে যাও।”
\s5
\v 16 কিন্তু রূত বলল, “তোমাকে ত্যাগ করে যেতে, তোমার পিছনে চলার থেকে ফিরে যেতে, আমাকে অনুরোধ কর না; তুমি যেখানে যাবে, আমিও সেখানে যাব এবং তুমি যেখানে থাকবে, আমিও সেখানে থাকব; তোমার লোকই আমার লোক,
\v 17 তোমার ঈশ্বরই আমার ঈশ্বর; তুমি যেখানে মারা যাবে, আমিও সেখানে মারা যাব, সে জায়গায় কবর প্রাপ্ত হব; কেবল মৃত্যু ব্যতীত আর কিছুই যদি আমাকে ও তোমাকে পৃথক করতে পারে, তবে সদাপ্রভু আমাকে অমুক ও ততোধিক দন্ড দিন।”
\v 18 যখন সে দেখল, তার সঙ্গে যেতে রূত সুনিশ্চিত আছে, তখন সে তাকে আর কিছু বলল না।
\s5
\v 19 পরে তারা দুই জন চলতে চলতে শেষে যখন বৈৎলেহমে উপস্থিত হল, তখন তাদের বিষয়ে সমস্ত নগরে জনরব হল; স্ত্রী লোকেরা বলল, “এ কি নয়মী?”
\v 20 সে তাদেরকে বলল, “আমাকে নয়মী [মনোরমা] বল না, বরং মারা [তিক্তা] বলে ডাক, কারণ সর্বশক্তিমান আমার প্রতি খুব তিক্ত ব্যবহার করেছেন।
\v 21 আমি পরিপূর্ণা হয়ে যাত্রা করেছিলাম, এখন সদাপ্রভু আমাকে শূন্যা করে ফিরিয়ে আনলেন। তোমরা কেন আমাকে নয়মী বলে ডাকছ? সদাপ্রভু তো আমার বিপক্ষে প্রমাণ দিয়েছেন, সর্বশক্তিমান আমাকে নিগ্রহ করেছেন।”
\s5
\v 22 এইভাবে নয়মী ফিরে আসল, তার সঙ্গে তার ছেলের স্ত্রী মোয়াবীয়া রূত মোয়াব দেশ থেকে আসল; যব কাটা আরম্ভ হলেই তারা বৈৎলেহমে উপস্থিত হল।
\s5
\c 2
\ms রূতের প্রতি বোয়সের সৎ ব্যবহার।
\p
\v 1 নয়মীর স্বামী ইলীমেলকের গোষ্ঠীর এক জন ভদ্র ধনী লোক ছিলেন; তাঁর নাম বোয়স।
\v 2 পরে মোয়াবীয়া রূত নয়মীকে বলল, “অনুরোধ করি, আমি ক্ষেত্রে গিয়ে যার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পাই, তার পিছনে পিছনে শস্যের পড়ে থাকা শীষ কুড়াই।” নয়মী বলল, “বৎসে, যাও।”
\s5
\v 3 পরে সে গিয়ে এক ক্ষেত্রে উপস্থিত হয়ে ছেদকদের পিছনে পিছনে পড়ে থাকা শীষ কুড়াতে লাগল; আর ঘটনাক্রমে সে ইলীমেলকের গোষ্ঠীর ঐ বোয়সের ভূমিতেই গিয়ে পড়ল।
\v 4 আর দেখ, বোয়স বৈৎলেহম থেকে এসে ছেদকদেরকে বললেন, “সদাপ্রভু তোমাদের সহবর্ত্তী হোন।” তারা উত্তর করল, “সদাপ্রভু আপনাকে আশীর্ব্বাদ করুন।”
\s5
\v 5 পরে বোয়স ছেদকদের উপরে নিযুক্ত নিজের চাকরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এ যুবতী কার?”
\v 6 তখন ছেদকদের উপর নিযুক্ত চাকর বলল, “এ সেই মোয়াবীয়া যুবতী, যে নয়মীর সঙ্গে মোয়াব দেশ থেকে এসেছে;”
\v 7 সে বলল, “অনুগ্রহ করে আমাকে ছেদকদের পিছনে পিছনে আটির মধ্যে শীষ কুড়াতে দাও;” অতএব সে এসে সকাল থেকে এখন পর্যন্ত রয়েছে; কেবল ঘরে অল্পক্ষণ ছিল।
\s5
\v 8 পরে বোয়স রূতকে বললেন, “বৎসে, বলি শুন; তুমি কুড়াতে অন্য ক্ষেত্রে যেও না, এখান থেকে চলে যেও না, এখানে আমার যুবতী দাসীদের সঙ্গে সঙ্গে থাক।
\v 9 ছেদকেরা যে ক্ষেত্রের শস্য কাটবে, তার প্রতি চোখ রেখে তুমি দাসীদের পিছনে যেও; তোমাকে স্পর্শ করতে আমি কি যুবকদেরকে নিষেধ করিনি? আর পিপাসা পেলে তুমি পাত্রের কাছে গিয়ে, যুবকরা যে জল তুলেছে, তা থেকে পান কোরো।”
\s5
\v 10 তাতে সে উপুর হয়ে মাটিতে নত হয়ে তাঁকে বলল, “আমি তো বিদেশিনী, তবুও আপনি আমার বিষয় জানতে চাইছেন, আপনার দৃষ্টিতে এ অনুগ্রহ আমি কিসের জন্য পেলাম?”
\v 11 বোয়স উত্তর করলেন, “তোমার স্বামীর মৃত্যুর পরে তুমি তোমার শাশুড়ীর সঙ্গে যেমন ব্যবহার করেছ এবং নিজের বাবা-মা ও জন্মদেশ ছেড়ে, আগে যাদেরকে জানতে না, এমন লোকদের কাছে এসেছ, এ সব কথা আমার শোনা আছে।
\v 12 সদাপ্রভু তোমার কাজের উপযোগী ফল দিন; তুমি ইস্রায়েলের ঈশ্বর যে সদাপ্রভুর পক্ষের নীচে শরণ নিতে এসেছ, তিনি তোমাকে সম্পূর্ণ পুরস্কার দিন।”
\s5
\v 13 সে বলল, “হে আমার প্রভু, আপনার দৃষ্টিতে যেন আমি অনুগ্রহ পাই; আপনি আমাকে সান্ত্বনা করলেন এবং আপনার এই দাসীর কাছে মঙ্গলকাঙ্খী কথা বললেন; আমি তো আপনার একটি দাসীর মতোও নই।”
\s5
\v 14 পরে ভোজন সময়ে বোয়স তাকে বললেন, “তুমি এই জায়গায় এসে রুটি খাও এবং তোমার রুটির খন্ড সিরকায় ডুবিয়ে নাও।” তখন সে ছেদককের পাশে বসলে তারা তাকে ভাজা শস্য দিল; তাতে সে খেয়ে তৃপ্ত হল এবং কিছু রেখে দিল।
\s5
\v 15 পরে সে কুড়াতে উঠলে বোয়স নিজের চাকরদেরকে আজ্ঞা করলেন, “ওকে আটির মধ্যেও কুড়াতে দাও এবং ওকে তিরস্কার করও না;
\v 16 আবার ওর জন্য বাঁধা আঁটি থেকে কিছু টেনে রেখে দাও, ওকে কুড়াতে দাও, ধমকীয়ও না।”
\s5
\v 17 আর সে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেই ক্ষেত্রে কুড়াল; পরে সে নিজের কুড়ান শস্য মাড়াই করলে প্রায় এক ঐফা যব হল।
\v 18 পরে সে তা তুলে নিয়ে নগরে গেল এবং তার শাশুড়ী তার কুড়ান শস্য দেখল; আর সে আহার করে তৃপ্ত হলে পর যা রেখেছিল, তা বের করে তাকে দিল।
\s5
\v 19 তখন তার শাশুড়ী তাকে বলল, “তুমি আজ কোথায় কুড়িয়েছ? কোথায় কাজ করেছ? যে ব্যক্তি তোমার সাহায্য করেছেন, তিনি ধন্য হোন।” তখন সে কার কাছে কাজ করেছিলে, তা শাশুড়িকে জানিয়ে বলল, “যে ব্যক্তির কাছে আজ কাজ করেছি, তাঁর নাম বোয়স।”
\v 20 তাতে নয়মী নিজের ছেলের স্ত্রীকে বলল, “তিনি সেই সদাপ্রভুর আশীর্বাদ লাভ করুন, যিনি জীবিত ও মৃতদের প্রতি দয়া নিবৃত্ত করেননি।” নয়মী আরও বলল, “সেই ব্যক্তি আমাদের কাছের আত্মীয়, তিনি আমাদের মুক্তিকর্তা জ্ঞাতিদের মধ্যে এক জন।”
\s5
\v 21 আর মোয়াবীয়া রূত বলল, “তিনি আমাকে এটাও বললেন, আমার সমস্ত ফসল কাটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তুমি আমার চাকরদের সঙ্গে সঙ্গে থাক।”
\v 22 তাতে নয়মী নিজের ছেলের স্ত্রী রূতকে বলল, “বৎসে, তুমি যে তার দাসীদের সঙ্গে যাও এবং অন্য কোনো জায়গায় কেউ যে তোমার দেখা না পায়, সে ভাল।”
\s5
\v 23 অতএব যব ও গম কাটা শেষ হওয়া পর্যন্ত সে কুড়াবার জন্য বোয়সের দাসীদের সঙ্গে থাকল এবং নিজের শাশুড়ীর সঙ্গেঁ বাস করল।
\s5
\c 3
\p
\v 1 পরে তার শাশুড়ী নয়মী তাকে বলল, “বৎসে, তোমার যাতে মঙ্গল হয়, এমন বিশ্রামস্থান আমি কি তোমার জন্য চেষ্টা করব না?
\v 2 সম্প্রতি যে বোয়সের দাসীদের সঙ্গে তুমি ছিলে, তিনি কি আমাদের জ্ঞাতি নন? দেখ, তিনি আজ রাতে খামারে যব ঝাড়বেন।
\s5
\v 3 অতএব তুমি এখন স্নান কর, তেল মাখো, তোমার পোশাক পরিবর্তন কর এবং সেই খামারে নেমে যাও; কিন্তু সেই ব্যক্তি খাওয়া-দাওয়া শেষ না করলে তাঁকে নিজের পরিচয় দিও না।
\v 4 তিনি যখন ঘুমাবেন, তখন তুমি তাঁর শোয়ার জায়গা দেখে ঠিক কর; পরে সেই জায়গায় গিয়ে তাঁর পায়ের চাদর সরিয়ে শুয়ে পড়; তাতে তিনি নিজের কাজ তোমাকে বলবেন।”
\v 5 সে উত্তর করল, “তুমি যা বলছ, সে সমস্তই আমি করব।”
\s5
\v 6 পরে সে ঐ খামারে নেমে গিয়ে তার শাশুড়ী যা যা আদেশ করেছিল, সমস্তই করল।
\v 7 ফলে বোয়স আহার করলেন ও তাঁর হৃদয় আনন্দিত হলে তিনি শস্যরাশির প্রান্তে শুতে গেলেন; আর রূত ধীরে ধীরে এসে তাঁর পায়ের চাদর সরিয়ে শুয়ে পড়ল।
\s5
\v 8 পরে মাঝরাতে ঐ লোক চমকে গিয়ে পাশ পরিবর্তন করলেন; আর দেখ, এক স্ত্রী তাঁর পায়ের কাছে শুয়ে আছে।
\v 9 তখন তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কে গো?” সে উত্তর করল, “আমি আপনার দাসী রূত; আপনার এই দাসীর উপরে আপনি নিজের পোশাক আমার উপরে বিস্তার করুন, কারণ আপনি মুক্তিদাতা জ্ঞাতি।”
\s5
\v 10 তিনি বললেন, “অয়ি বৎসে, তুমি সদাপ্রভুর আশীর্বাদপাত্রী, কারণ ধনবান কি দরিদ্র কোনো যুবকের অনুগামিনী না হওয়াতে তুমি প্রথমের থেকে শেষে বেশি সুশীলতা দেখালে।
\v 11 এখন বৎসে, ভয় করও না, তুমি যা বলবে, আমি তোমার জন্য সে সমস্ত করব; কারণ তুমি যে সাধ্বী, এটা আমার স্বজাতীয়দের নগর-দ্বারের সবাই জানে।
\s5
\v 12 আর আমি মুক্তিকর্ত্তা জ্ঞাতি, এটা সত্য; কিন্তু আমার থেকেও কাছের সম্পর্কীয় আর এক জন জ্ঞাতি আছে।
\v 13 আজ রাতে থাক, সকালে সে যদি তোমাকে মুক্ত করে, তবে ভাল, সে মুক্ত করুক; কিন্তু তোমাকে মুক্ত করতে যদি তার ইচ্ছা না হয়, তবে জীবিত সদাপ্রভুর শপথ, আমিই তোমাকে মুক্ত করব; তুমি সকাল পর্যন্ত শুয়ে থাক।”
\s5
\v 14 তাতে রূত সকাল পর্যন্ত তাঁর পায়ের কাছে শুয়ে থাকল, পরে কেউ তাকে চিনতে পারে, এমন সময় না হতে উঠল; কারণ বোয়স বললেন, “খামারে যে স্ত্রীলোকটি এসেছে, এটা লোকে না জানুক।”
\v 15 তিনি আরও বললেন, “তোমার গায়ের চাদর আন, পেতে ধর; রূত তা পেতে ধরলে তিনি ছয় [মাণ] যব মেপে তার মাথায় দিয়ে নগরে চলে গেলেন।
\s5
\v 16 পরে রূত নিজের শাশুড়ীর কাছে আসলে তার শাশুড়ী বলল,” বৎসে, কি হল?” তাতে সে নিজের প্রতি সেই ব্যক্তির করা সমস্ত কাজ তাকে জানাল।
\v 17 আরও বলল, “শাশুড়ীর কাছে খালি হাতে যেও না; এই বলে তিনি আমাকে এই ছয় [মাণ] যব দিয়েছেন
\v 18 পরে তার শাশুড়ী তাকে বলল,” হে বৎসে, এ বিষয়ে কি হয়, তা যে পর্যন্ত জানতে না পার, সে পর্য্যন্ত বসে থাক; কারণ সে ব্যক্তি আজ এ কাজ শেষ না করে বিশ্রাম করবেন না।”
\s5
\c 4
\ms রূতের সঙ্গে বোয়সের বিয়ে
\p
\v 1 পরে বোয়স নগর-দ্বারে উঠে গিয়ে সেই জায়গায় বসলেন। আর দেখ, যে মুক্তিকর্ত্তা জ্ঞাতির কথা বোয়স বলেছিলেন, সেই ব্যক্তি পথ দিয়ে আসছিল; তাতে বোয়স তাকে বললেন, “ওহে অমুক, পথ ছেড়ে এই জায়গায় এসে বস,” তখন সে পথ ছেড়ে এসে বসল।
\v 2 পরে বোয়স নগরের দশ জন প্রাচীনকে নিয়ে বললেন, আপনারাও এই জায়গায় বসুন তাঁরা বসলেন।
\s5
\v 3 তখন বোয়স ঐ মুক্তিকর্ত্তা জ্ঞাতিকে বললেন, “আমাদের ভাই ইলীমেলকের যে জমি ছিল, তা মোয়াব দেশ থেকে আসা নয়মী বিক্রি করছেন।
\v 4 অতএব আমি তোমাকে এই কথা জানাতে স্থির করেছি; তুমি এই লোকদের সামনে ও আমার নিজের জাতের প্রাচীনবর্গের সামনে তা কিনে নাও। যদি তুমি মুক্ত করতে চাও, মুক্ত কর; কিন্তু যদি মুক্ত করতে না চাও, আমাকে বল, আমি জানতে চাই; কারণ তুমি মুক্ত করলে আর কেউ করতে পারে না; কিন্তু তোমার পরে আমি পারি।” সে বলল, “আমি মুক্ত করব।”
\s5
\v 5 তখন বোয়স বললেন, “তুমি যে দিনে নয়মীর হাত থেকে জমি কিনবে, সেই দিনে মৃত ব্যক্তির অধিকারে তার নাম উদ্ধারের জন্য তার স্ত্রী মোয়াবীয়া রূত থেকেও তা কিনতে হবে।”
\v 6 তখন ঐ মুক্তিদাতা জ্ঞাতি বলল, আমি আপনার জন্য তা মুক্ত করতে পারি না, করলে নিজের অধিকার নষ্ট করবে; আমার মুক্ত করবার বস্ত্র তুমি মুক্ত কর, কারণ আমি মুক্ত করতে পারিনা।
\s5
\v 7 মুক্তি ও বিনিময় বিষয়ের সব কথা স্থির করবার জন্য আগে ইস্রায়েলের মধ্যে এইরকম রীতি ছিল; লোকে নিজের জুতো খুলে প্রতিবাসীকে দিত; এটা ইস্রায়েলের মধ্যে সাক্ষ্যস্বরূপ হত।”
\v 8 অতএব সে মুক্তিদাতা জ্ঞাতি যখন বোয়সকে বলল, “তুমি নিজে তা কেনো, তখন সে নিজের জুতো খুলে দিল।”
\s5
\v 9 পরে বোয়স প্রাচীনদেরকে ও সকল লোককে বললেন, “আজ আপনার সাক্ষী হলেন, ইলীমেলকের যা যা ছিল এবং কিলিয়োনের ও মহলোনের যা যা ছিল, সে সমস্তই আমি নয়মীর হাত থেকে কিনলাম।
\v 10 আর নিজের ভাইদের মধ্যে ও নিজের বাসস্থানের দ্বারে সেই মৃত ব্যক্তির নাম যেন উছিন্ন না হয়, এই জন্য সেই মৃত ব্যক্তির অধিকারে তার নাম উদ্ধারের জন্য আমি নিজের স্ত্রীরূপে মহলোনের স্ত্রী মোয়াবীয়া রূতকেও কিনলাম; আজ আপনারা সাক্ষী হলেন।”
\s5
\v 11 তাতে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা সমস্ত লোক ও প্রাচীনরা বললেন, “আমরা সাক্ষী হলাম। যে স্ত্রী তোমার কুলে এসেছে, সদাপ্রভু তাকে রাহেল ও লেয়ার মতো করুন, যে দুই জন ইস্রায়েলের বংশ তৈরী করেছিলেন; আর ইফ্রাথায় তোমারই ঐশ্বর্য ও বৈৎলেহমে তোমার সুখ্যাতি হোক।
\v 12 সদাপ্রভু সেই যুবতীর গর্ভ থেকে যে ছেলে তোমাকে দেবেন, তা দিয়ে তামরের গর্ভজাত যিহূদার ছেলে পেরসের বংশের মতো তোমার বংশ হোক।”
\s5
\v 13 পরে বোয়স রূতকে বিয়ে করলে তিনি তাঁর স্ত্রী হলেন এবং বোয়স তাঁর কাছে গেলে তিনি সদাপ্রভু থেকে গর্ভধারণশক্তি পেয়ে ছেলে প্রসব করলেন।
\v 14 পরে স্ত্রীলোকেরা নয়মীকে বলল, “ধন্য সদাপ্রভু, তিনি আজ তোমাকে মুক্তিদাতা জ্ঞাতি থেকে বঞ্চিত করেননি; তাঁর নাম ইস্রায়েলের মধ্যে বিখ্যাত হোক।
\v 15 [এই বালকটি] তোমার প্রাণ উদ্ধার করবে ও বৃদ্ধাবস্থায় তোমার রক্ষণাবেক্ষণকারী হবে; কারণ যে তোমাকে ভালবাসে ও তোমার পক্ষে সাত ছেলে থেকেও সেরা, তোমার সেই ছেলের স্ত্রীই একে জন্ম দিয়েছে।”
\s5
\v 16 তখন নয়মী বালকটিকে নিয়ে নিজের কোলে রাখল ও তার অভিভাবক হল।
\v 17 পরে ‘নয়মীর এক ছেলে জন্মাল’, এই বলে তার প্রতিবাসীরা তার নাম রাখল; তারা তার নাম ওবেদ রাখল। সে যিশয়ের বাবা, আর যিশয় দায়ূদের বাবা।
\s5
\v 18 পেরসের বংশাবলী এই।
\v 19 পেরসের ছেলে হিষোণ; হিষোণের ছেলে রাম; রামের ছেলে অম্মীনাদব; অম্মীনাদবের ছেলে নহশোন;
\v 20 নহশোনের ছেলে সল্-মোন;
\v 21 সল্-মোনের ছেলে বোয়স; বোয়সের ছেলে ওবেদ; ওবেদের ছেলে যিশয়;
\v 22 ও যিশয়ের ছেলে দায়ূদ।

1342
09-1SA.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,1342 @@
\id 1SA
\ide UTF-8
\h শমূয়েলের প্রথম বই
\toc1 শমূয়েলের প্রথম বই
\toc2 শমূয়েলের প্রথম বই
\toc3 1sa
\mt1 শমূয়েলের প্রথম বই
\s5
\c 1
\ms শমূয়েলের জন্ম৷
\p
\v 1 ইফ্রয়িমের পাহাড়ী এলাকায় রামাথয়িম সোফীম শহরে ইল্‌কানা নামে একজন লোক ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর লোকদের সঙ্গে বাস করতেন। তাঁর বাবার নাম ছিল যিরোহম। যিরোহম ছিলেন ইলীহূর ছেলে, ইলীহূ ছিলেন তোহের ছেলে এবং তোহ ছিলেন সুফের ছেলে।
\v 2 তাঁর দুইজন স্ত্রী ছিল; একজনের নাম হান্না আর অন্যজনের নাম পনিন্না। পনিন্নার ছেলেমেয়ে হয়েছিল, কিন্তু হান্নার কোনো ছেলেমেয়ে হয় নি।
\s5
\v 3 এই ব্যক্তি প্রত্যেক বছর তাঁর শহর থেকে শীলোতে গিয়ে বাহিনীগণের সদাপ্রভুর উপাসনা ও বলিদান করতেন। সেখানে এলির দুই ছেলে হফ্‌নি ও পীনহস সদাপ্রভুর যাজক ছিল।
\v 4 যজ্ঞের দিনে ইল্‌কানা তাঁর স্ত্রী পনিন্না ও তাঁর সব ছেলেমেয়েদের ভাগ দিতেন।
\s5
\v 5 কিন্তু হান্নাকে দুই ভাগ দিতেন, কারণ তিনি হান্নাকে ভালবাসতেন। কিন্তু সদাপ্রভু হান্নাকে বন্ধ্যা করে রেখেছিলেন।
\v 6 সদাপ্রভু তাঁকে বন্ধ্যা রেখেছিলেন বলে তাঁর সতীন তাঁকে দুঃখ দেবার চেষ্টায় বিরক্ত করে তুলত।
\s5
\v 7 বছরের পর বছর হান্না যখনই সদাপ্রভুর ঘরে যেতেন তখন তাঁর স্বামী ঐরকম করতেন এবং পনিন্না তাঁকে ঐভাবে বিরক্ত করতেন; তাই তিনি কিছু না খেয়ে কান্নাকাটি করতেন।
\v 8 তাতে তাঁর স্বামী ইল্‌কানা তাঁকে বলতেন, “হান্না, কেন কাঁদছ? কেন কিছু খাচ্ছ না? তোমার মনে এত দুঃখ কেন? আমি কি তোমার কাছে দশটা ছেলের চেয়েও বেশী না?”
\s5
\v 9 এক সময় শীলোতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে হান্না উঠলেন৷ তখন এলি সদাপ্রভুর মন্দিরের দরজার কাছে যাজকের আসনে বসে ছিলেন।
\v 10 হান্না প্রচণ্ড দুঃখে সদাপ্রভুর কাছে কাতর স্বরে কেঁদে প্রার্থনা করতে লাগলেন।
\s5
\v 11 তিনি মানত করে বললেন, “হে বাহিনীগণের সদাপ্রভু, যদি তুমি তোমার এই দাসীর দুঃখের প্রতি মনোযোগ দাও, আমাকে স্মরণ কর এবং তোমার দাসীকে ভুলে না গিয়ে তোমার এই দাসীকে যদি একটা ছেলে দাও তবে সারা জীবনের জন্য আমি তাকে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে দান করব; তার মাথায় ক্ষুর লাগানো হবে না।”
\s5
\v 12 যতক্ষণ হান্না সদাপ্রভুর কাছে দীর্ঘ প্রার্থনা করলেন ততক্ষণ এলি তাঁর মুখের দিকে তাকিয়ে থাকলেন।
\v 13 হান্না মনে মনে কথা বলছিলেন, তাঁর ঠোঁট নড়ছিল, কিন্তু গলার আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল না। সেইজন্য এলি তাঁকে মাতাল ভাবলেন।
\v 14 তাই এলি তাঁকে বললেন, “তুমি কতক্ষণ মাতাল হয়ে থাকবে? আঙ্গুর-রস তোমার থেকে দূর কর।”
\s5
\v 15 হান্না উত্তরে বললেন, “হে আমার প্রভু, তা নয়। আমি দুঃখিনী স্ত্রী, আমি আংগুর-রস কিংবা মদ পান করি নি। সদাপ্রভুর সামনে আমার মনের কথা ভেঙ্গে বলেছি।
\v 16 আপনার এই দাসীকে আপনি একজন মন্দ স্ত্রীলোক মনে করবেন না। আসলে আমার চিন্তা ও মনের দুঃখের জন্য আমি এতক্ষণ কথা বলছিলাম।”
\s5
\v 17 তখন এলি উত্তর দিলেন, “তুমি শান্তিতে যাও; ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বরের কাছে তুমি যা চাইলে, তা যেন তিনি তোমাকে দেন।”
\v 18 হান্না বললেন, “আপনার দৃষ্টিতে আপনার এই দাসী অনুগ্রহ পাক।” এই বলে তিনি তার পথে চলে গেলেন এবং খাওয়া-দাওয়া করলেন। তাঁর মুখে আর দুঃখের ছায়া থাকল না।
\s5
\v 19 পরে তাঁরা খুব ভোরে উঠে সদাপ্রভুর উপাসনা করলেন এবং রামায় তাঁদের নিজেদের বাড়ীতে ফিরে গেলেন। পরে ইল্‌কানা তাঁর স্ত্রী হান্নার সঙ্গে মিলিত হলে সদাপ্রভু তাঁকে স্মরণ করলেন।
\v 20 তাতে নির্দিষ্ট সময়ে হান্না গর্ভবতী হয়ে একটি ছেলের জন্ম দিলেন, আর আমি সদাপ্রভুর কাছ থেকে তাকে চেয়ে নিয়েছি, এই বলে তার নাম শমূয়েল রাখলেন।
\s5
\v 21 পরে তাঁর স্বামী ইল্‌কানা ও তাঁর সমস্ত পরিবার সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বার্ষিক বলিদান ও মানত নিবেদন করতে গেলেন,
\v 22 কিন্তু হান্না গেলেন না, কারণ তিনি স্বামীকে বললেন, “ছেলেটিকে বুকের দুধ ছাড়ানোর পর আমি তাকে নিয়ে যাব, তাতে সে সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হয়ে সবসময় সেখানেই থাকবে।”
\v 23 তাঁর স্বামী ইল্‌কানা তাঁকে বললেন, “তোমার দৃষ্টিতে যা ভাল মনে হয় তাই কর; তার দুধ ছাড়ানো পর্যন্ত তুমি অপেক্ষা কর; সদাপ্রভু শুধু তাঁর বাক্য পূরণ করুন।” অতএব সেই স্ত্রী বাড়ীতেই রয়ে গেলেন এবং ছেলেটিকে দুধ না ছাড়ানো পর্যন্ত তাকে দুধ পান করালেন।
\s5
\v 24 পরে তার দুধ ছাড়ার পর তিনি তিনটি ষাঁড়, এক ঐফা সুজী ও এক থলি আংগুর-রসের সঙ্গে তাকে শীলোতে সদাপ্রভুর বাড়িতে নিয়ে গেলেন; তখন ছেলেটির অল্প বয়স ছিল।
\v 25 পরে তাঁরা ষাঁড় বলিদান করলেন এবং ছেলেটিকে এলির কাছে নিয়ে গেলেন।
\s5
\v 26 আর হান্না বললেন, “হে আমার প্রভু, আপনার প্রাণের দিব্যি, হে আমার প্রভু, যে স্ত্রী সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করতে করতে এখানে আপনার সামনে দাঁড়িয়েছিল, আমিই সেই।
\v 27 আমি এই ছেলেটির জন্য প্রার্থনা করেছিলাম আর সদাপ্রভুর কাছে যা চেয়েছিলাম তা তিনি আমাকে দিয়েছেন।
\v 28 সেইজন্য আমিও একে সদাপ্রভুকে দিলাম, এ সারাজীবনের জন্য সদাপ্রভুরই থাকবে।” পরে তাঁরা সেখানে সদাপ্রভুর উপাসনা করলেন।
\s5
\c 2
\ms হান্নার প্রশংসা গান৷
\p
\v 1 পরে হান্না প্রার্থনা করে বললেন, “আমার হৃদয় সদাপ্রভুতে উল্লাসিত; আমার শিং সদাপ্রভুতে উন্নত হলো; শত্রুদের কাছে আমার মুখ উজ্জ্বল হল; কারণ তোমার পরিত্রাণে আমি আনন্দিতা।
\s5
\v 2 সদাপ্রভুর মত পবিত্র আর কেউ নেই, তুমি ছাড়া আর কেউ নেই; আমাদের ঈশ্বরের মত শৈল আর নেই।
\s5
\v 3 তোমরা এমন গর্বের কথা আর বোলো না, তোমাদের মুখ থেকে অহংকারের কথা বের না হোক; কারণ সদাপ্রভু জ্ঞানের ঈশ্বর, তাঁর সব কাজ দাড়িপাল্লায় পরিমাপ করা হয়।
\v 4 শক্তিমানদের ধনুক ভেঙ্গে গেল, যারা পড়ে গিয়েছিল তারা শক্তিতে পরিপূর্ণ হলো।
\s5
\v 5 পরিতৃপ্তেরা খাবারের জন্য বেতনভুক্ত হলো; যাদের খিদে ছিল তাদের আর খিদে পেল না; এমনকি, বন্ধ্যা স্ত্রী সাতটি সন্তানের জন্ম দিল, আর যার অনেক সন্তান সে দুর্বল হলো।
\s5
\v 6 সদাপ্রভু মারেন ও বাঁচান; তিনিই পাতালে নামান ও উপরে তোলেন।
\v 7 সদাপ্রভু দরিদ্র করেন ও ধনী করেন, তিনি নত করেন ও উন্নত করেন।
\s5
\v 8 তিনি ধূলো থেকে গরিবকে তোলেন, আর ছাইয়ের গাদা থেকে দরিদ্রকে তোলেন, সম্মানীয় লোকদের সঙ্গে বসিয়ে দেন, প্রতাপ সিংহাসনের অধিকারী করেন। কারণ পৃথিবীর থামগুলি সদাপ্রভুরই, তিনি সেগুলির উপরে জগত স্থাপন করেছেন।
\s5
\v 9 তিনি তাঁর সাধুদের চরণ রক্ষা করবেন, কিন্তু দুষ্টরা অন্ধকারে নীরব হবে; কারণ নিজের শক্তিতে কোনো মানুষ জয়ী হবে না।
\s5
\v 10 সদাপ্রভুর সঙ্গে বিবাদকারীরা চূর্ণ বিচূর্ণ হবে, তিনি স্বর্গে থেকে তাদের বিরুদ্ধে গর্জন করবেন; সদাপ্রভু পৃথিবীর শেষ সীমা পর্যন্ত শাসন করবেন, তিনি তাঁর রাজাকে শক্তি দেবেন, তাঁর অভিষিক্ত ব্যক্তির শিং (মাথা) উন্নত করবেন।”
\s5
\v 11 পরে ইল্‌কানা রামায় নিজের বাড়ীতে গেলেন। আর ছেলেটি এলি যাজকের সামনে সদাপ্রভুর সেবা করতে লাগলেন।
\s এলির দুই ছেলের পাপ ও তার ফল
\p
\s5
\v 12 এলির দুই ছেলে ভীষণ দুষ্ট ছিল, তারা সদাপ্রভুকে জানত না।
\v 13 বাস্তবে ঐ যাজকেরা লোকদের সঙ্গে এইরকম ব্যবহার করত; কেউ বলিদান করলে যখন তার মাংস সেদ্ধ করা হত, তখন যাজকের চাকর তিনটি কাঁটাযুক্ত চামচ হাতে করে নিয়ে আসত।
\v 14 এবং সে ডেচকিতে কিংবা গামলাতে কিম্বা কড়াইতে কিম্বা পাত্রে খোঁচা মারত এবং সেই কাঁটাতে যে মাংস উঠে আসত তা সবই যাজক কাঁটায় করে নিয়ে যেত; ইস্রায়েলীয়দের যত লোক শীলোতে আসত তাদের প্রতি তারা এই রকম ব্যবহারই করত।
\s5
\v 15 আবার চর্বি আগুনে পোড়ার আগেই যাজকের চাকর এসে যে লোকটি উৎসর্গ করত তাকে বলত, “যাজককে আগুনে ঝল্‌সাবার জন্য মাংস দাও, তিনি তোমার কাছ থেকে সিদ্ধ মাংস নেবেন না, কাঁচাই নেবেন।”
\v 16 আর ঐ ব্যক্তি যখন বলত, “প্রথমে চর্বি পোড়াতে হবে, তারপর তুমি তোমার ইচ্ছামত গ্রহণ কর,” তখন সে এর উত্তরে বলত, “না, এখনই দাও, না হলে কেড়ে নেব।”
\v 17 এইভাবে সদাপ্রভুর সমানে ঐ যুবকদের পাপ ভীষণ বেড়ে গেল, কারণ লোকেরা সদাপ্রভুর নৈবেদ্য তুচ্ছ করত।
\s5
\v 18 কিন্তু ছোট ছেলে শমূয়েল মসীনা সুতোর এফোদ পরে সদাপ্রভুর সেবা করতেন।
\v 19 আর তাঁর মা প্রতি বছর একটি ছোট পোশাক তৈরী করে স্বামীর সঙ্গে বার্ষিক বলিদান করতে যাওয়ার সময়ে তা এনে তাঁকে দিতেন।
\s5
\v 20 আর এলি ইল্‌কানা ও তাঁর স্ত্রীকে এই আশীর্বাদ করলেন, “সদাপ্রভুকে যা দেওয়া হয়েছিল, তার পরিবর্তে তিনি এই স্ত্রী থেকে তোমাকে আরও সন্তান দিন।” পরে তাঁরা তাঁদের বাড়ী চলে গেলেন।
\v 21 আর সদাপ্রভু হান্নার যত্ন নিলেন; তাতে তিনি গর্ভবতী হলেন, তিনি তিনটি ছেলে ও দুই মেয়ের জন্ম দিলেন। এদিকে ছোট শমূয়েল সদাপ্রভুর সামনে বড় হয়ে উঠতে লাগলেন।
\s5
\v 22 আর এলি খুব বৃদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন এবং সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের প্রতি তাঁর ছেলেরা যা যা করে, সেই সমস্ত কথা এবং সমাগম তাঁবুর দরজার সামনে সেবায় নিয়োজিত স্ত্রীলোকদের সঙ্গে ব্যভিচার করত, সেই কথা তিনি শুনতে পেলেন।
\v 23 তখন তিনি তাদের বললেন, “তোমরা কেন এমন ব্যবহার করছ? আমি এই সব লোকের কাছ থেকে তোমাদের খারাপ কাজের কথা শুনতে পাচ্ছি।
\v 24 হে আমার সন্তানেরা না না, আমি লোকদের যে সব কথা শুনতে পাচ্ছি তা ভাল নয়; তোমরা সদাপ্রভুর প্রজাদের আজ্ঞা অমান্য করতে বাধ্য করছ।
\s5
\v 25 মানুষ যদি মানুষের বিরুদ্ধে পাপ করে, তবে ঈশ্বর তার বিচার করবেন; কিন্তু মানুষ যদি সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করে, তবে তার জন্য কে বিনতি করবে?” তবুও তারা তাদের বাবার কথায় কান দিত না, কারণ সদাপ্রভু তাদের মেরে ফেলবেন বলে ঠিক করেছিলেন।
\v 26 কিন্তু ছোট ছেলে শমূয়েল বৃদ্ধি পেয়ে সদাপ্রভু ও মানুষের কাছে অনুগ্রহ পেতেন।
\s5
\v 27 পরে ঈশ্বরের একজন লোক এলির কাছে এসে বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘যে সময়ে তোমার পূর্বপুরুষেরা মিসরে ফরৌণের বংশধরদের অধীনে ছিল, তখন আমি কি তাদের কাছে নিজেকে স্পষ্টভাবে প্রকাশ করি নি?
\v 28 আমার যাজক হওয়ার জন্য, আমার যজ্ঞবেদির ওপর বলি উত্সর্গ করতে ও ধূপ জ্বালাতে আমার সামনে এফোদ পরতে আমি না ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত বংশ থেকে তাকে মনোনীত করেছিলাম? আর ইস্রায়েল সন্তানদের আগুনে উৎসর্গ করা সমস্ত উপহার না তোমার পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলাম?
\s5
\v 29 অতএব আমি [আমার] ঘরে যা উৎসর্গ করতে আদেশ দিয়েছি, আমার সেই বলি ও নৈবেদ্যকে কেন তোমরা পদাঘাত (তুচ্ছ) করছ? এবং আমার প্রজা ইস্রায়েলীয়দের নৈবেদ্যের প্রথম অংশ, যা দিয়ে তোমরা নিজেদের মোটাসোটা কর, এই বিষয়ে তুমি কেন আমার থেকে তোমার ছেলেদের বেশি সম্মান করছ?
\v 30 সেইজন্য ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু বলেন, ‘আমি অবশ্যই বলেছিলাম, তোমার বংশ ও তোমার পূর্বপুরুষ চিরকাল আমার সামনে যাতায়াত করবে, কিন্তু এখন সদাপ্রভু বলেন, ‘তা আমার থেকে দূরে থাকুক। কারণ যারা আমাকে সম্মান করে, তাদেরকে আমি সম্মান করব; কিন্তু যারা আমাকে তুচ্ছ করে, তাদেরও তুচ্ছ করা হবে।’
\s5
\v 31 দেখ, এমন সময় আসছে, যে সময়ে আমি তোমার শক্তি ও তোমার পূর্বপুরুষদের শক্তি ধ্বংস করব, তোমার বংশে একটি বৃদ্ধও থাকবে না।
\v 32 আর ঈশ্বর ইস্রায়েলের যে সমস্ত মঙ্গল করবেন তাতে তুমি [আমার] ঘরের দুর্দশা দেখতে পাবে এবং তোমার বংশে কেউ কখনও বৃদ্ধ হবে না।
\v 33 আর আমি আমার যজ্ঞবেদি থেকে তোমার যে লোককে ছেঁটে না ফেলব, সে তোমার চোখের ক্ষয় ও প্রানের ব্যথা জন্মাবার জন্য থাকবে এবং তোমার বংশে উত্পন্ন সমস্ত লোক যৌবন অবস্থায় মারা যাবে।
\s5
\v 34 আর তোমার দুই ছেলের উপরে, হফ্‌নি ও পীনহসের সঙ্গে যা ঘটবে, তা তোমার জন্য একটা চিহ্ন হবে; তারা দুইজনেই একই দিনে মারা যাবে।
\v 35 আর আমি আমার জন্য একজন বিশ্বস্ত যাজককে উত্পন্ন করব, যে আমার হৃদয়ের ও আমার মনের মত কাজ করবে; আর আমি তার এক বংশকে স্থায়ী করব; সে সব সময় আমার অভিষিক্ত ব্যক্তির সামনে যাতায়াত করবে।
\s5
\v 36 আর তোমার বংশের মধ্যে অবশিষ্ট প্রত্যেক জন এক রুপোর মুদ্রা ও এক টুকরো রুটির জন্য তার কাছে অনুরোধ করতে আসবে, আর বলবে, ‘অনুরোধ করি, আমি যাতে এক টুকরো রুটি খেতে পাই, সেই জন্য একটি যাজকের পদে আমাকে নিযুক্ত করুন’।”
\s5
\c 3
\s শমূয়েলের দর্শনপ্রাপ্তি
\p
\v 1 ছোট ছেলে শমূয়েল এলির সামনে থেকে সদাপ্রভুর সেবা-কাজ করতেন। আর সেই সময়ে সদাপ্রভুর বাক্য খুব কমই শোনা যেত, তাঁর দর্শনও যখন-তখন পাওয়া যেত না।
\v 2 আর সেই সময় দৃষ্টি শক্তি কম হওয়াতে এলি আর দেখতে পেতেন না।
\v 3 একদিন এলি তাঁর নিজের জায়গায় শুয়ে ছিলেন, ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে যে প্রদীপ জ্বালানো হয়েছিল তা তখনও নিভে যায় নি এবং ঈশ্বরের যে সিন্দুক যে জায়গায় ছিল, শমূয়েল সেই জায়গায় অর্থাৎ ঈশ্বরের মন্দিরের মধ্যে শুয়ে আছেন।
\v 4 এমন সময় সদাপ্রভু শমূয়েলকে ডাকলেন; আর তিনি উত্তর দিলেন, “এই যে আমি।”
\s5
\v 5 পরে তিনি এলির কাছে দৌড়ে গিয়ে বললেন, “এই যে আমি, আপনি তো আমাকে ডেকেছেন৷” তিনি বললেন, “আমি ডাকি নি, তুমি গিয়ে শুয়ে পড়।” তখন তিনি গিয়ে শুয়ে পড়লেন।
\v 6 পরে সদাপ্রভু আবার ডাকলেন, "শমূয়েল," তাতে শমূয়েল উঠে এলির কাছে গিয়ে বললেন, “এই যে আমি; আপনি তো আমাকে ডেকেছেন৷” তিনি এর উত্তরে বললেন, “বাছা, আমি ডাকি নি, তুমি গিয়ে শুয়ে পড়।”
\s5
\v 7 সেই সময়ে শমূয়েল সদাপ্রভুর পরিচয় পান নি এবং তাঁর কাছে সদাপ্রভুর বাক্যও প্রকাশিত হয় নি।
\v 8 পরে সদাপ্রভু তৃতীয়বার শমূয়েলকে ডাকলেন; তাতে তিনি উঠে এলির কাছে গিয়ে বললেন, “এই যে আমি; আপনি তো আমাকে ডেকেছেন।” তখন এলি বুঝতে পারলেন, সদাপ্রভুই ছেলেটিকে ডাকছিলেন।
\s5
\v 9 সেইজন্য এলি শমূয়েলকে বললেন, “তুমি গিয়ে শুয়ে পড়; যদি তিনি আবার তোমাকে ডাকেন, তবে বলবে, ‘হে সদাপ্রভু, বলুন, আপনার দাস শুনছে’।” তখন শমূয়েল গিয়ে তাঁর নিজের জায়গায় শুয়ে পড়লেন।
\s5
\v 10 তারপর সদাপ্রভু এসে দাঁড়ালেন এবং অন্য বারের মত ডেকে বললেন, “শমূয়েল, শমূয়েল,” তখন শমূয়েল উত্তর দিলেন, “বলুন, আপনার দাস শুনছে।”
\v 11 তখন সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন, “দেখ, আমি ইস্রায়েলের মধ্যে একটি কাজ করব, তা যে শুনবে, তার দুই কান শিউরে উঠবে।
\s5
\v 12 আমি এলির বংশের বিষয়ে যা যা বলেছি, সেই সমস্ত সেই দিন তার বিরুদ্ধে তা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পূর্ণ করব।
\v 13 আমি তাকে বলেছি, সে যে অপরাধ জানে, সেই অপরাধের জন্য আমি যুগে যুগে তার বংশকে শাস্তি দেব; কারণ তার ছেলেরা নিজেদেরকে শাপগ্রস্ত করছে, তবুও সে তাদেরকে সংশোধন করে নি।
\v 14 সেইজন্য এলির বংশের বিষয় আমি এই শপথ করেছি যে, এলির বংশের অপরাধ বলিদান বা নৈবেদ্যর মাধ্যমে কখনই পরিস্কার করা যাবে না।”
\s5
\v 15 শমূয়েল সকাল পর্যন্ত শুয়ে থাকলেন, পরে সদাপ্রভুর ঘরের দরজা খুললেন, কিন্তু শমূয়েল এলিকে ঐ দর্শনের বিষয়ে বলতে ভয় পেলেন।
\v 16 পরে এলি শমূয়েলকে ডাকলেন, বললেন “হে আমার বাছা শমূয়েল!” তিনি উত্তর দিলেন, “এই যে আমি।”
\s5
\v 17 এলি জিজ্ঞাসা করলেন, “তিনি তোমাকে কি কথা বলেছেন? অনুরোধ করি, আমার কাছ থেকে তা গোপন কর না; ঈশ্বর যে সব কথা তোমাকে বলেছেন, তার কোনো কথা যদি আমার কাছ থেকে গোপন কর, তবে তিনি তোমাকে সেই রকম ও তার থেকেও বেশি শাস্তি দিন।”
\v 18 তখন শমূয়েল তাঁকে সেই সব কথা বললেন, কিছুই গোপন করলেন না। তখন এলি বললেন, “তিনি সদাপ্রভু; তাঁর দৃষ্টিতে যা ভাল মনে হয়, তা-ই করুন।”
\s5
\v 19 পরে শমূয়েল বেড়ে উঠতে লাগলেন এবং সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন, তাঁর কোন কথাই বিফল হতে দিতেন না।
\v 20 তাতে দান থেকে বের্‌-শেবা পর্যন্ত সমস্ত ইস্রায়েল জানতে পারল যে, শমূয়েল সদাপ্রভুর ভাববাদী হওয়ার জন্য বিশ্বাসযোগ্য হয়েছেন।
\v 21 আর সদাপ্রভু শীলোতে আবার দর্শন দিলেন, কারণ সদাপ্রভু শীলোতে শমূয়েলের কাছে সদাপ্রভুর বাক্যের মধ্য দিয়ে নিজেকে প্রকাশ করতেন। আর সমস্ত ইস্রায়েলের কাছে শমূয়েলের বাক্য উপস্থিত হত।
\s5
\c 4
\ms ঈশ্বরীয় সিন্দুক পলেষ্টীয়দের অধিকারে চলে যায়৷ এলির মৃত্যু৷
\p
\v 1 পরে ইস্রায়েল যুদ্ধের জন্য পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে বের হয়ে এবন্‌-এষরে শিবির স্থাপন করল এবং পলেষ্টীয়েরা অফেকে শিবির স্থাপন করল।
\v 2 আর পলেষ্টীয়েরা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সৈন্য সাজাল; যখন যুদ্ধ বেধে গেল, তখন ইস্রায়েল পলেষ্টীয়দের সামনে আহত হল; তারা ঐ যুদ্ধক্ষেত্রে সৈন্যদের মধ্যে প্রায় চার হাজার লোককে মেরে ফেলল।
\s5
\v 3 পরে লোকেরা শিবিরে প্রবেশ করলে ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা বললেন, “সদাপ্রভু আজ পলেষ্টীয়দের সামনে কেন আমাদেরকে আঘাত করলেন? এস, আমরা শীলো থেকে আমাদের কাছে সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকটি নিয়ে আসি, যেন তা আমাদের মধ্য এসে শত্রুদের হাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করে।”
\v 4 সেইজন্য লোকেরা শীলোতে দূত পাঠিয়ে বাহিনীগণের সদাপ্রভু, যিনি দুই করূবের মাঝখানে থাকেন, তাঁর নিয়ম সিন্দুক সেখান থেকে নিয়ে এল। তখন এলির দুই ছেলে, হফ্‌নি ও পীনহস, সেই জায়গায় ঈশ্বরের নিয়ম সিন্দুকের সঙ্গে ছিল।
\s5
\v 5 পরে সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকটি শিবিরে উপস্থিত হলে সমস্ত ইস্রায়েল এমন জোরে চিৎকার করে উঠল যে, পৃথিবী কাঁপতে লাগল।
\v 6 তখন পলেষ্টীয়েরা ঐ চিৎকার শুনে জিজ্ঞাসা করল, “ইব্রীয়দের শিবিরে এত আওয়াজ হচ্ছে কেন?” পরে তারা বুঝলো, সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুক শিবিরে এসেছে।
\s5
\v 7 তখন পলেষ্টীয়েরা ভয় পেয়ে বলল, “শিবিরে ঈশ্বর এসেছেন।” আরও বলল, “হায়, হায়! এর আগে তো কখনও এমন হয় নি।
\v 8 হায়, হায়, এই শক্তিশালী দেবতাদের হাত থেকে আমাদের কে রক্ষা করবে? এরা সেই দেবতা, যাঁরা মরু এলাকায় নানা রকমের আঘাতে মিসরীয়দের হত্যা করেছিলেন।
\v 9 হে পলেষ্টীয়েরা, বলবান হও, পুরুষত্ব দেখাও; ঐ ইব্রীয়েরা যেমন তোমাদের দাস হল, তেমনি তোমরা যেন তাদের দাস না হও; পুরুষত্ব দেখাও, যুদ্ধ কর।”
\s5
\v 10 তখন পলেষ্টীয়েরা যুদ্ধ করলেন এবং ইস্রায়েল আহত হয়ে প্রত্যেকজন নিজের নিজের তাঁবুতে পালিয়ে গেল। আর অনেককে হত্যা করা হল, কারণ ইস্রায়েলের মধ্য ত্রিশ হাজার পদাতিক সৈন্য মারা পড়ল।
\v 11 আর ঈশ্বরের সিন্দুক শত্রুরা নিয়ে গেল এবং এলির দুই ছেলে, হফ্‌নি ও পীনহস, মারা পড়ল।
\s5
\v 12 তখন বিন্যামীনের একজন লোক সৈন্যদলের মধ্য থেকে দৌড়ে গিয়ে সেইদিন শীলোতে উপস্থিত হল; তার পোশাক ছেঁড়া এবং মাথায় মাটি ছিল।
\v 13 যখন সে আসছিল, দেখ, পথের পাশে এলি তাঁর আসনে বসে অপেক্ষা করছিলেন; কারণ তাঁর হৃদয় ঈশ্বরের সিন্দুকের জন্য থরথর করে কাঁপছিল। পরে সেই লোকটি শহরে উপস্থিত হয়ে ঐ সংবাদ দিলে শহরের সব লোক কাঁদতে লাগলো।
\s5
\v 14 আর এলি সেই কান্নার আওয়াজ শুনে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই কোলাহলের কারণ কি?” তখন সেই লোকটি তাড়াতাড়ি গিয়ে এলিকে খবর দিল।
\v 15 ঐ সময়ে এলির আটানব্বই বছর বয়স ছিল এবং দৃষ্টিশক্তি কম হওয়াতে দেখতে পেতেন না।
\s5
\v 16 সেই ব্যক্তি এলিকে বলল, “আমি সৈন্যদল থেকে এসেছি, আজই সৈন্যদল থেকে পালিয়ে এসেছি।” এলি জিজ্ঞাসা করলেন, “বাছা, খবর কি?”
\v 17 যে সংবাদ এনেছিল, সে উত্তর দিল, “ইস্রায়েল পলেষ্টীয়দের সামনে থেকে পালিয়ে গেছে, আর অনেক লোক মারা পড়েছে, আপনার দুই ছেলে হফ্‌নি ও পীনহসও মারা গেছে এবং ঈশ্বরের সিন্দুক শত্রুরা নিয়ে গেছে।”
\s5
\v 18 তখন সে ঈশ্বরের সিন্দুকের নাম করার সঙ্গে সঙ্গেই এলি ফটকের পাশে তাঁর আসন থেকে পিছন দিকে পড়ে গেলেন এবং তাঁর ঘাড় ভেঙে গেল, তিনি মারা গেলেন, কারণ তিনি বুড়ো হয়ে গিয়েছিলেন এবং তাঁর শরীর ভারী ছিল। তিনি চল্লিশ বছর ইস্রায়েলীয়দের বিচার করেছিলেন।
\s5
\v 19 তখন তাঁর ছেলের বৌ, পীনহসের স্ত্রী, গর্ভবতী ছিল, প্রসবের সময়ও ঘনিয়ে এসেছিল; ঈশ্বরের সিন্দুক শত্রুদের হাতে চলে গেছে এবং তার শ্বশুর ও স্বামী মারা গেছেন, এই খবর শুনে সে নত হয়ে প্রসব করল; কারণ প্রসব-বেদনা হঠাৎ উপস্থিত হল।
\v 20 তখন তার মৃত্যুর সময়ে যে স্ত্রীলোকেরা কাছে দাঁড়িয়েছিল, তারা বলল, “ভয় নেই, তোমার ছেলে হয়েছে।” কিন্তু সে কোন উত্তরই দিল না, কোন কথায় মনোযোগও দিল না।
\s5
\v 21 পরে সে ছেলেটির নাম ঈখাবোদ [হীনপ্রতাপ] রেখে বলল, “ইস্রায়েলের থেকে গৌরব চলে গেল,” কারণ ঈশ্বরের সিন্দুক শত্রুদের হাতে চলে গেছে এবং তার শ্বশুর ও স্বামীর মৃত্যু হয়েছিল।
\v 22 সে বলল, “ইস্রায়েল থেকে গৌরব চলে গেল, কারণ ঈশ্বরের সিন্দুক শত্রুদের হাতে চলে গেছে।”
\s5
\c 5
\ms সিন্দুক আবার ইস্রায়েলীয়দের কাছে ফিরে এল৷
\p
\v 1 পলেষ্টীয়েরা ঈশ্বরের সিন্দুক নিয়ে এবন্‌ এষর থেকে অস্‌দোদে নিয়ে এসেছিল।
\v 2 পরে পলেষ্টীয়েরা ঈশ্বরের সিন্দুক দাগোন দেবতার মন্দিরে নিয়ে গিয়ে দাগোনের পাশে রাখল।
\v 3 পরেরদিন অস্‌দোদের লোকেরা খুব ভোরে উঠে দেখল, সদাপ্রভুর সিন্দুকের সামনে দাগোন মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে আছে; তাতে তারা দাগোনকে তুলে নিয়ে আবার তার জায়গায় রাখল।
\s5
\v 4 তার পরের দিনও লোকেরা খুব ভোরে উঠে দেখল, সদাপ্রভুর সিন্দুকের সামনে দাগোন মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে আছে এবং চৌকাঠের উপর দাগোনের মাথা ও দুই হাত ভেঙে পড়ে আছে, শুধু দেহের বাকী অংশটুকু আস্ত আছে।
\v 5 এইজন্য দাগোনের পুরোহিত এবং আর যত লোক দাগোনের মন্দিরে ঢোকে, তাদের মধ্যে আজ পর্যন্ত কেউই অস্‌দোদে অবস্থিত দাগোনের চৌকাঠের উপর পা দেয় না।
\s5
\v 6 আর অস্‌দোদীয়দের উপরে সদাপ্রভুর হাত ভারী হল এবং তিনি তাদেরকে ধ্বংস করলেন, অস্‌দোদের ও আশেপাশের লোকদেরকে ফোড়ার মাধ্যমে আঘাত করলেন।
\v 7 পরে অস্‌দোদীয়রা এইরকম দেখে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুক আমাদের কাছে থাকবে না; কারণ আমাদের ও আমাদের দেবতা দাগোনের উপরে তাঁর হাত যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠেছে।”
\s5
\v 8 সেইজন্য তারা লোক পাঠিয়ে পলেষ্টীয়দের শাসনকর্তাদের নিজেদের কাছে এক জায়গায় ডেকে এনে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুকের বিষয়ে আমাদের কি কর্তব্য?” শাসনকর্তারা বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুক গাতে নিয়ে যাওয়া হোক।” তাতে তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুক সেখানে নিয়ে গেল।
\v 9 তারা নিয়ে যাওয়ার পরে সেই শহরের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর হাত খুবই ভয়ংকর হয়ে উঠলো এবং তিনি শহরের ছোট-বড় সমস্ত লোককে আঘাত করলেন, তাদের ফোড়া হল।
\s5
\v 10 পরে তারা ঈশ্বরের সিন্দুক ইক্রোণে পাঠিয়ে দিল। কিন্তু ঈশ্বরের সিন্দুক ইক্রোণে উপস্থিত হলে ইক্রোণের লোকেরা কেঁদে বলল, “আমাদেরকে ও আমাদের লোকদেরকে মেরে ফেলবার জন্যই ওরা আমাদের কাছে ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুক নিয়ে এসেছে।”
\s5
\v 11 পরে তারা লোক পাঠিয়ে পলেষ্টীয়দের সব শাসনকর্তাদের এক জায়গায় ডেকে এনে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুক পাঠিয়ে দিন, তা নিজের জায়গাতেই ফিরে যাক, আমাদের ও আমাদের লোকদের হত্যা না করুক।” কারণ মহামারীর ভয়ে শহরের সব জায়গায় ভয় উপস্থিত হয়েছিল; সেই জায়গায় ঈশ্বরের হাত খুবই ভারী হয়েছিল।
\v 12 যে সব লোক মারা যায় নি, তারা ফোড়ায় আহত হল; আর শহরের চিত্কারের শব্দ আকাশ পর্যন্ত উঠলো।
\s5
\c 6
\p
\v 1 সদাপ্রভুর সিন্দুক পলেষ্টীয়দের দেশে সাত মাস থাকলো।
\v 2 পরে পলেষ্টীয়েরা যাজক ও গণকদের ডেকে বলল, “সদাপ্রভুর সিন্দুকের বিষয়ে আমাদের কি কর্তব্য? বল তো, আমরা কিভাবে এটাকে নিজের জায়গায় পাঠিয়ে দেব?”
\s5
\v 3 তারা বলল, “তোমরা যদি ইস্রায়েলের ঈশ্বরের সিন্দুক পাঠিয়ে দাও; তবে খালি পাঠাবে না, কোনো প্রকারে দোষার্থক উপহার তাঁর কাছে পাঠিয়ে দাও; তাতে সুস্থ হতে পারবে এবং তোমাদের থেকে তাঁর হাত কেন সরছে না, তা জানতে পারবে।”
\v 4 তারা জিজ্ঞাসা করল, “দোষার্থক উপহার হিসাবে তাঁর কাছে কি পাঠিয়ে দেব?” তারা বলল, “পলেষ্টীয়দের শাসনকর্তাদের সংখ্যা অনুসারে সোনার পাঁচটা টিউমার ও পাঁচটা সোনার ইঁদুর দাও, কারণ তোমাদের সবার উপরে ও তোমাদের শাসনকর্তাদের উপরে একই আঘাত এসেছে।
\s5
\v 5 সেইজন্য তোমরা নিজেদের টিউমারের মূর্তি দেশ ধ্বংসকারী ইঁদুরের মূর্তি তৈরী কর এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বরের গৌরব স্বীকার কর; হয়তো তিনি তোমাদের উপর থেকে, তোমাদের দেবতাদের ও দেশের উপর থেকে, তাঁর হাত সরিয়ে নেবেন।
\v 6 আর তোমরা কেন নিজেদের হৃদয় ভারী করবে? মিসরীয়রা ও ফরৌণ এইভাবে নিজেদের হৃদয় কঠিন করেছিল; তিনি যখন তাদের মধ্য আশ্চর্য্য কাজ করলেন, তখন তারা কি লোকদেরকে বিদায় করলো না?
\s5
\v 7 সেইজন্য এখন কাঠ নিয়ে একটা নতুন গাড়ী তৈরী কর এবং কখনও যোঁয়ালী বহন করেনি, দুধ দেয় এমন দুটো গরু নিয়ে সেই গাড়ীতে জুড়ে দেবে, কিন্তু তাদের বাছুরগুলো, তাদের কাছ থেকে ঘরে নিয়ে এস।
\v 8 তারপর সদাপ্রভুর সিন্দুক নিয়ে সেই গাড়ীর উপর রাখ এবং ঐ যে সোনার জিনিসগুলি দোষার্থক উপহার হিসাবে তাঁকে দেবে, তা তার পাশে একটি বাক্সের মধ্যে রাখ; পরে বিদায় কর, তা যাক।
\v 9 আর দেখো, সিন্দুক যদি নিজের সীমার পথ দিয়ে বৈৎ-শেমশে যায়, তবে তিনিই আমাদের উপর এই ভীষণ অমঙ্গল এনেছেন; নাহলে জানব, আমাদেরকে যে হাত আঘাত করেছে সে তাঁর নয়, কিন্তু আমাদের প্রতি এইসব হঠাৎই ঘটেছে৷”
\s5
\v 10 লোকেরা সেইরকম করল; দুধ দেওয়া দুটো গরু নিয়ে গাড়ীতে জুড়ল ও তাদের বাছুরগুলোকে ঘরে আটকে রাখল।
\v 11 পরে সদাপ্রভুর সিন্দুক এবং ঐ সোনার ইঁদুর ও টিউমারের মূর্তিগুলি বাক্সে নিয়ে গাড়ীর উপরে রাখল।
\v 12 আর সেই দুটো গরু বৈৎ শেমশের সোজা পথ ধরে চলল, রাজপথ দিয়ে হাম্বা রব করতে করতে চলল, ডানে কিম্বা বাঁয়ে ফিরল না এবং পলেষ্টীয়দের শাসনকর্তারা বৈৎ-শেমশের সীমা পর্যন্ত তাদের পিছনে পিছনে গেলেন।
\s5
\v 13 ঐ সময়ে বৈৎ শেমশের লোকেরা উপত্যকায় গম কাটছিল। তারা চোখ তুলে সিন্দুকটি দেখল, দেখে খুবই খুশী হল।
\s5
\v 14 পরে ঐ গাড়ী বৈৎ শেমশে যিহোশূয়ের ক্ষেতের মধ্যে উপস্থিত হয়ে থেমে গেল; সেখানে একটা বড় পাথর ছিল; পরে তারা গাড়ীটার কাঠ কেটে নিয়ে ঐ গরুগুলি হোমের জন্য সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করল।
\v 15 আর লেবীয়েরা সদাপ্রভুর সিন্দুক এবং তার সঙ্গে ঐ সোনার জিনিসগুলি সমেত বাক্সটা নামিয়ে সেই বড় পাথরটার উপর রাখল এবং বৈৎ শেমশের লোকেরা সেই দিনে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোম ও বলিদান করল।
\s5
\v 16 তখন পলেষ্টীয়দের সেই পাঁচজন শাসনকর্তা তা দেখে সেই দিনই ইক্রোণে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 17 পলেষ্টীয়েরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে দোষার্থক উপহার হিসাবে সেই সমস্ত সোনার ফোড়া উত্সর্গ করেছিল, অস্‌দোদের জন্য এক, ঘসার (গাজা) জন্য এক, অস্কিলোনের জন্য এক, গাতের জন্য এক ও ইক্রোণের জন্য এক এবং
\v 18 দেয়াল ঘেরা শহর হোক কিম্বা গ্রাম, পাঁচজন শাসনকর্তার অধীনে পলেষ্টীয়দের যত শহর ছিল, ততগুলি সোনার ইঁদুর। সদাপ্রভুর সিন্দুক যার উপর রাখা হয়েছিল, সেই বড় পাথর সাক্ষী, সেটা বৈৎ শেমশে যিহোশূয়ের ক্ষেতের মধ্যে আজও আছে।
\s5
\v 19 পরে তিনি বৈৎ শেমশের লোকদের মধ্যে কিছু জনকে আঘাত করলেন, কারণ তারা সদাপ্রভুর সিন্দুকে দৃষ্টিপাত করেছিল, তাই তিনি লোকদের মধ্যে সত্তর জনকে এবং পঞ্চাশ হাজার জনকে আঘাত করলেন, কারণ সদাপ্রভু মহা আঘাতে লোকদের আঘাত করেছিলেন।
\v 20 আর বৈৎ শেমশের লোকেরা বলল, “সদাপ্রভুর সামনে, এই পবিত্র ঈশ্বরের সামনে, কে দাঁড়াতে পারে? আর তিনি আমাদের কাছ থেকে কার কাছে যাবেন?”
\s5
\v 21 পরে তারা কিরিয়ৎ যিয়ারীমের লোকদের কাছে দূত পাঠিয়ে বলল, “পলেষ্টীয়েরা সদাপ্রভুর সিন্দুক ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে, তোমরা নেমে এস, তোমাদের কাছে তা তুলে নিয়ে যাও।”
\s5
\c 7
\p
\v 1 তাতে কিরিয়ৎ-যিয়ারীমের লোকেরা এসে সদাপ্রভুর সিন্দুক তুলে নিয়ে গিয়ে পাহাড়ে অবস্থিত অবীনাদবের বাড়ীতে রাখল এবং সদাপ্রভুর সিন্দুক রক্ষা করার জন্য তার ছেলে ইলিয়াসরকে পবিত্র করলো।
\s পলেষ্টীয়দের হাত থেকে ইস্রায়েলীয়দের উদ্ধার।
\p
\v 2 সদাপ্রভুর সিন্দুক কিরিয়ৎ-যিয়ারীমে রাখবার পর অনেক দিন পার হয়ে গেল, কুড়ি বছর গেল, আর ইস্রায়েলের সমস্ত বংশ সদাপ্রভুর কাছে বিলাপ করতে লাগল।
\s5
\v 3 তাতে শমূয়েল সমস্ত ইস্রায়েলের বংশকে বললেন, “তোমরা যদি সমস্ত অন্তরের সঙ্গে সদাপ্রভুর কাছে ফিরে আসো, তবে তোমাদের মধ্য থেকে অন্য জাতিদের দেব-দেবতা এবং অষ্টারোৎ দেবীর মূর্তিগুলো দূর কর ও সদাপ্রভুর দিকে নিজেদের অন্তর স্থির কর, শুধু তাঁরই সেবা কর; তাহলে তিনি পলেষ্টীয়দের হাত থেকে তোমাদেরকে উদ্ধার করবেন।”
\v 4 তখন ইস্রায়েল সন্তানেরা বাল দেবতাদের ও অষ্টারোৎ দেবীর মূর্তিগুলো দূর করে শুধু সদাপ্রভুর সেবা করতে লাগল।
\s5
\v 5 পরে শমূয়েল বললেন, “তোমরা সমস্ত ইস্রায়েলকে মিসপাতে জড়ো কর; আমি তোমাদের জন্য সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করব।”
\v 6 তাতে তারা সবাই মিসপাতে জড়ো হয়ে জল তুলে সদাপ্রভুর সামনে ঢেলে দিল এবং সেই দিন উপোস করে সেখানে বলল, “আমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি।” আর শমূয়েল মিসপাতে ইস্রায়েল সন্তানদের বিচার করতে লাগলেন।
\s5
\v 7 পরে পলেষ্টীয়রা যখন শুনতে পেল যে, ইস্রায়েল সন্তানেরা মিসপাতে জড়ো হয়েছে, তখন পলেষ্টীয়দের শাসনকর্তারা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে উঠে আসলেন; তা শুনে ইস্রায়েল সন্তানেরা পলেষ্টীয়দের থেকে ভয় পেল।
\v 8 আর ইস্রায়েল সন্তানেরা শমূয়েলকে বলল, “আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু পলেষ্টীয়দের হাত থেকে যেন আমাদের উদ্ধার করেন, এই জন্য আপনি তাঁর কাছে আমাদের জন্য কাঁদুন।”
\s5
\v 9 তখন শমূয়েল এমন একটা ভেড়ার বাচ্চা নিলেন যেটা দুধ ছাড়ে নি আর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গোটা বাচ্চাটা হোমবলি উৎসর্গ করলেন এবং শমূয়েল ইস্রায়েলের জন্য সদাপ্রভুর কাছে কাঁদলেন; আর সদাপ্রভু তাঁকে উত্তর দিলেন।
\s5
\v 10 যে সময়ে শমূয়েল ঐ হোমবলি উৎসর্গ করছিলেন, তখন পলেষ্টীয়েরা ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য এগিয়ে আসল। কিন্তু সেই দিন সদাপ্রভু পলেষ্টীয়দের উপরে বাজ পড়বার মত ভীষণ শব্দে গর্জন করে তাদের ব্যাকুল করলেন; তাতে তারা ইস্রায়েলের সামনে আহত হল।
\v 11 আর ইস্রায়েলের লোকেরা মিসপা থেকে বের হয়ে পলেষ্টীয়দের পেছনে পেছনে তাড়া করে বৈৎ-করের নীচে পর্যন্ত তাদেরকে আঘাত করল।
\s5
\v 12 তখন শমূয়েল একটা পাথর নিয়ে মিসপা ও শেনের মাঝখানে স্থাপন করলেন এবং “এই পর্যন্ত সদাপ্রভু আমাদের সাহায্য করেছেন,” এই বলে তার নাম এবন্‌ এষর (“সাহায্যের পাথর”) রাখলেন।
\s5
\v 13 এইভাবে পলেষ্টীয়রা নত হল এবং ইস্রায়েলীয়দের সীমানায় আর প্রবেশ করল না। আর শমূয়েল যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন পর্যন্ত সদাপ্রভুর হাত পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে ছিল।
\v 14 আর পলেষ্টীয়েরা ইস্রায়েল থেকে যে সব শহরগুলো কেড়ে নিয়েছিল, ইক্রোণ থেকে গাত পর্যন্ত সেই সব আবার ইস্রায়েলের হাতে ফিরে এল এবং ইস্রায়েল সেই সমস্ত অঞ্চল পলেষ্টীয়দের হাত থেকে উদ্ধার করল। আর ইমোরীয়দের ও ইস্রায়েলের মধ্যে শান্তি স্থাপিত হল।
\s5
\v 15 শমূয়েল যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন ইস্রায়েলের বিচার করলেন।
\v 16 তিনি প্রত্যেক বছর বৈথেলে, গিল্‌গলে ও মিসপাতে ভ্রমন করে সেই সব জায়গায় ইস্রায়েলের বিচার করতেন।
\v 17 পরে তিনি রামায় ফিরে আসতেন, কেননা সেখানে তাঁর বাড়ি ছিল এবং সেখানে তিনি ইস্রায়েলের বিচার করতেন; আর তিনি সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে একটা যজ্ঞবেদী তৈরী করেন।
\s5
\c 8
\ms ইস্রায়েলীয়রা রাজা চায়।
\p
\v 1 পরে শমূয়েল যখন বৃদ্ধ হলেন, তখন তাঁর ছেলেদেরকে শাসনকর্তা করে ইস্রায়েলের ওপর নিযুক্ত করলেন।
\v 2 তাঁর বড় ছেলের নাম যোয়েল, দ্বিতীয় ছেলের নাম অবিয়; তারা বের্‌-শেবাতে বিচার করত,
\v 3 কিন্তু তার ছেলেরা তাঁর পথে চলত না, তারা ধন লাভের আশায় বিপথে গেল, ঘুষ নিত ও উল্টো বিচার করত।
\s5
\v 4 তাই ইস্রায়েলের প্রাচীন নেতারা একত্র হলেন এবং রামায় শমূয়েলের কাছে গিয়ে,
\v 5 তারা তাঁকে বললেন, “দেখুন, আপনি বৃদ্ধ হয়েছেন এবং আপনার ছেলেরা আপনার পথে চলছে না, এখন অন্যান্য জাতিদের মত আমাদের বিচার করতে আপনি আমাদের উপরে একজন রাজা নিযুক্ত করুন।”
\s5
\v 6 “আমাদের শাসন করবার জন্য আমাদের একজন রাজা দিন,” তাদের এই কথা শমূয়েলের কাছে ভাল মনে হল না; তাতে শমূয়েল সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন।
\v 7 তখন সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন, “এই লোকেরা তোমাকে যা যা বলছে, সেই সমস্ত বিষয়ে তুমি তাদের কথা শোন, কারণ তারা তোমাকে অগ্রাহ্য করল, এমন নয়, আমাকেই অগ্রাহ্য করল, যেন আমি তাদের উপর রাজত্ব না করি।
\s5
\v 8 যে দিন মিসর থেকে তাদের বের করে নিয়ে এসেছিলাম, সেইদিন থেকে আজ পর্যন্ত তারা যেমন ব্যবহার করে চলেছে, অন্য দেবতাদের সেবা করার জন্য আমাকে ত্যাগ করেছে, তেমন ব্যবহার তোমার প্রতিও করছে।
\v 9 এখন তাদের কথা মেনে নাও; কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে সাক্ষী দাও এবং তাদের উপর যে রাজত্ব করবে, সেই রাজার নিয়ম তাদেরকে জানাও।”
\s5
\v 10 পরে যে লোকেরা শমূয়েলের কাছে রাজা চেয়েছিল, তাদেরকে তিনি সদাপ্রভুর সেই সমস্ত কথা জানালেন।
\v 11 আরও বললেন, “তোমাদের উপরে রাজত্বকারী রাজার এইরকম নিয়ম হবে; তিনি তোমাদের ছেলেদের নিয়ে তাঁর রথ ও ঘোড়ার উপর নিযুক্ত করবেন এবং তারা তাঁর রথের আগে আগে দৌড়াবে।
\v 12 আর তিনি নিজের জন্য তাদেরকে হাজার সৈন্যের উপরে ও পঞ্চাশজন সৈন্যের উপরে সেনাপতি করে নিযুক্ত করবেন এবং কাউকে কাউকে তিনি তাঁর জমি চাষের ও ফসল কাটবার কাজে এবং যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র ও রথের সাজ সরঞ্জাম তৈরী করবার কাজে লাগাবেন।
\s5
\v 13 আর তিনি তোমাদের মেয়েদের নিয়ে সুগন্ধি তৈরী, রাধুনী ও রুটি তৈরীর কাজ করাবেন।
\v 14 তিনি তোমাদের সবচেয়ে ভাল জমি, আংগুর ক্ষেত ও সমস্ত জিতবৃক্ষ নিয়ে তাঁর কর্মচারীদের দেবেন।
\v 15 তোমাদের শস্য ও আংগুরের দশ ভাগের এক ভাগ নিয়ে তিনি তাঁর কর্মচারী ও অন্যান্য দাসদের দেবেন।
\s5
\v 16 তিনি তোমাদের দাসদাসী এবং তোমাদের সেরা যুবকদের ও গাধাগুলো নিয়ে নিজের কাজে লাগাবেন।
\v 17 তোমাদের ভেড়ার পালের দশ ভাগের এক ভাগ তিনি নিয়ে নেবেন আর তোমরা তাঁর দাস হবে।
\v 18 সেই দিন তোমরা তোমাদের মনোনীত রাজার জন্য কাঁদবে, কিন্তু সেই দিন সদাপ্রভু তোমাদের উত্তর দেবেন না।”
\s5
\v 19 তবুও লোকেরা শমূয়েলের এই সব কথা শুনতে রাজী হল না, তারা বলল, “না, আমাদের উপরে একজন রাজা চাই।
\v 20 তাহলে আমরা অন্য সব জাতির সমান হব এবং আমাদের রাজা আমাদের বিচার করবেন ও আমাদের আগে আগে থেকে যুদ্ধ করবেন।”
\s5
\v 21 তখন শমূয়েল লোকদের সব কথা শুনে সদাপ্রভুর কাছে তা বললেন।
\v 22 তাতে সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন, “তুমি তাদের কথা শোন এবং তাদের জন্য একজনকে রাজা কর।” তখন শমূয়েল ইস্রায়েলীয়দের বললেন, “তোমরা প্রত্যেকে নিজের নিজের নগরে যাও।”
\s5
\c 9
\ms শৌল রাজপদে নিযুক্ত হন৷
\p
\v 1 বিন্যামীন গোষ্ঠীর একজন লোক ছিলেন, তাঁর নাম কীশ। তিনি অবীয়েলের ছেলে, ইনি সরোরের ছেলে, ইনি বখোরতের ছেলে, ইনি অফীহের ছেলে। কীশ একজন বিন্যামীনীয় বলবান বীর ছিলেন৷
\v 2 আর শৌল নামে তাঁর একটি ছেলে ছিল; তিনি যুুবক ও দেখতে সুন্দর ছিলেন; ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে তাঁর থেকে বেশি সুন্দর আর কোন পুরুষ ছিল না, তিনি অন্য সমস্ত লোকদের থেকে লম্বা ছিলেন, সবাই তাঁর কাঁধ পর্যন্ত ছিল।
\s5
\v 3 একদিন শৌলের বাবা কীশের যে সব গাধী ছিল সেগুলো হারিয়ে গেল, তাতে কীশ তাঁর ছেলে শৌলকে বললেন, “তুমি একজন চাকরকে সঙ্গে নাও, ওঠ ও গাধীগুলো খুঁজতে যাও।”
\v 4 তাতে তিনি ইফ্রয়িমের পাহাড়ী এলাকা দিয়ে ভ্রমন করে শালিশা এলাকার মধ্য দিয়ে গিয়ে, শালীম প্রদেশ দিয়ে গেলেন, সেখানেও নেই। পরে তিনি বিন্যামীনীয়দের এলাকায় গেলেন, কিন্তু তাঁরা সেখানেও পেলেন না।
\s5
\v 5 পরে সূফ এলাকায় উপস্থিত হলে শৌল তাঁর সঙ্গী চাকরটিকে বললেন, “চল, আমরা ফিরে যাই; কি জানি আমার বাবা হয়তো গাধীগুলোর চিন্তা বাদ দিয়ে আমাদের জন্য দুশ্চিন্তা করবেন।”
\v 6 সে তাঁকে বলল, “দেখুন, এই শহরে ঈশ্বরের একজন লোক আছেন; তিনি খুবই সম্মানীয়; তিনি যা কিছু বলেন, সমস্ত কিছুই সফল হয়; চলুন, আমরা এখন সেখানে যাই; হয়তো তিনি আমাদের সঠিক রাস্তা বলে দিতে পারবেন।”
\s5
\v 7 তখন শৌল তাঁর চাকরকে বললেন, “কিন্তু দেখ, যদি আমরা যাই তবে সেই ব্যক্তির কাছে কি নিয়ে যাব? আমাদের থলির মধ্যে যে খাবার ছিল তা তো শেষ হয়ে গেছে; ঈশ্বরের লোকের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদের কাছে কোন উপহার নেই; আমাদের কাছে কি আছে?”
\v 8 তখন উত্তরে সেই চাকরটি শৌলকে বলল, “দেখুন, আমার হাতে শেকলের চার ভাগের একভাগ রুপো আছে; আমি ঈশ্বরের লোককে তাই দেব, আর তিনি আমাদের পথ বলে দেবেন।”
\s5
\v 9 আগেকার দিনে ইস্রায়েলের মধ্যে কোনো লোক যদি ঈশ্বরের কাছ থেকে কোনো বিষয় জানতে চাইত তবে সে যাবার আগে বলত, “চল, আমরা দর্শকের কাছে যাই,” এখন যাঁকে ভাববাদী বলা হয় আগেকার দিনে তাঁকে দর্শক বলা হত।
\v 10 তখন শৌল তাঁর চাকরকে বললেন, “বেশ বলেছ; চল, আমরা যাই।” আর ঈশ্বরের লোক যেখানে ছিলেন সেই শহরে তাঁরা গেলেন।
\v 11 যখন তাঁরা নগরের সেই পথ ধরে উঠে যাচ্ছিলেন তখন কয়েকজন যুবতী জল নেবার জন্য বেরিয়ে এসেছিল, তাঁরা তাদের দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, “দর্শক কি এখানে আছেন?”
\s5
\v 12 উত্তরে তারা বলল, “হ্যাঁ, আছেন; আর একটু সামনে এগিয়ে যান; আপনারা তাড়াতাড়ি যান। তিনি আজই শহরে এসেছেন, কারণ ঐ উঁচু স্থানে আজ লোকেদের একটি যজ্ঞ হবে।
\v 13 আপনারা শহরে ঢুকলেই তাঁর সঙ্গে আপনাদের দেখা হবে, আপনারা দেখবেন তিনি পাহাড়ের উপরে খেতে যাচ্ছেন, কারণ তিনি না যাওয়া পর্যন্ত লোকেরা খাওয়া দাওয়া করবে না, কারণ তিনি যজ্ঞের জিনিসপত্র আশীর্বাদ করেন; তারপর নিমন্ত্রিতেরা খাওয়া দাওয়া করে, তাই আপনারা এখনই উঠে যান, এখনই তাঁর দেখা পাবেন।”
\s5
\v 14 তাঁরা শহরের মধ্যে উপস্থিত হয়ে দেখলেন, শমূয়েল উঁচু স্থানে যাবার জন্য বের হয়েছেন ও তাঁদের সামনে উপস্থিত হলেন।
\s5
\v 15 আর শৌলের আসবার আগের দিন সদাপ্রভু শমূয়েলের কাছে এই কথা প্রকাশ করেছিলেন,
\v 16 “আগামী কাল এই সময়ে আমি বিন্যামীনের এলাকা থেকে একজন লোককে তোমার কাছে পাঠাব; তুমি আমার প্রজা ইস্রায়েলের রাজা হবার জন্য তুমি তাকে অভিষেক করবে; আর সে পলেষ্টীয়দের হাত থেকে আমার লোকদের উদ্ধার করবে; কারণ আমার লোকদের কান্না আমার কানে এসে পৌঁছেছে তাই আমি তাদের প্রতি মনোযোগ দিয়েছি।”
\s5
\v 17 পরে শমূয়েল শৌলকে দেখলে সদাপ্রভু কে বললেন, “দেখ, এই সেই লোক, যার কথা আমি তোমাকে বলেছিলাম, এই আমার লোকদের উপরে কর্ত্তৃত্ব করবে।”
\v 18 তখন শৌল ফটকের মধ্যে শমূয়েলের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “দর্শকের বাড়িটা কোথায় দয়া করে আমাকে বলে দিন।”
\v 19 তখন শমূয়েল এর উত্তরে শৌলকে বললেন, “আমিই দর্শক, আমার আগে আগে উঁচু স্থানে যাও, কারণ আজ তোমরা আমার সঙ্গে খাবে; কাল সকালে আমি তোমাকে বিদায় দেব এবং তোমার মনের সমস্ত কথা তোমাকে জানাব।
\s5
\v 20 আজ তিন দিন হল, তোমার যে গাধীগুলো হারিয়ে গেছে, তাদের জন্য চিন্তা কোরো না; সেগুলো পাওয়া গেছে। আর ইস্রায়েল দেশের মধ্যে সমস্ত ভাল ভাল জিনিস কার জন্য? সে সমস্ত কি তোমার আর তোমার বাবার বংশের লোকদের নয়?”
\v 21 এর উত্তরে শৌল বললেন, “আমি কি ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্যে সবচেয়ে ছোট বিন্যামীন বংশীয় না? আবার বিন্যামীন বংশের মধ্যে আমার বংশ কি সব থেকে ছোট নয়? তবে আপনি কেন আমাকে এই সব কথা বলছেন?”
\s5
\v 22 পরে শমূয়েল শৌল ও তাঁর চাকরকে খাবার ঘরে নিয়ে গেলেন এবং প্রায় ত্রিশজন নিমন্ত্রিত লোকদের মধ্যে তাঁদের সবচেয়ে সম্মানিত জায়গায় বসালেন।
\s5
\v 23 পরে শমূয়েল যে লোকটি রান্না করেছে তাকে বললেন, “যে মাংস আলাদা করে রাখবার জন্য তোমাকে দিয়েছিলাম সেটা নিয়ে এস।”
\v 24 তাতে সে গিয়ে ঊরু আর তার উপরে যা কিছু ছিল, তা এনে শৌলের সামনে রাখল। আর শমূয়েল শৌলকে বললেন, “দেখ এটা রাখা হয়েছিল; তুমি এটা তোমার সামনে রাখ, খাও; কারণ নির্দিষ্ট সময়ের অপেক্ষাতে এটা তোমার জন্য আলাদা করে রাখা হয়েছিল, আমিই বলেছিলাম যে, আমি লোকদের নিমন্ত্রণ করেছি।” তাতে সেই দিন শৌল শমূয়েলের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করলেন।
\s5
\v 25 এর পর তাঁরা সেই উঁচু স্থান থেকে শহরের দিকে নেমে গেলেন, তারপর শমূয়েল তাঁর বাড়ির ছাদে শৌলের সঙ্গে কথাবার্তা বললেন।
\v 26 পরে তাঁরা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠলেন, আলো হলে পর শমূয়েল বাড়ির ছাদের উপর শৌলকে ডেকে বললেন, “ওঠ, আমি তোমাকে এখন বিদায় দেব।” তখন শৌল উঠলেন, আর তিনি ও শমূয়েল দুইজনে বাইরে গেলেন।
\s5
\v 27 পরে তাঁরা নেমে শহরের সীমানা দিয়ে যাচ্ছিলেন, এমন সময় শমূয়েল শৌলকে বললেন, “তোমার চাকরকে এগিয়ে যেতে বল, কিন্তু তুমি কিছুক্ষণের জন্য এখানে দাঁড়াও, আমি তোমাকে ঈশ্বর বাক্য শোনাব।” তাতে তাঁর চাকর এগিয়ে গেল।
\s5
\c 10
\p
\v 1 তারপর শমূয়েল একটা তেলের শিশি নিয়ে শৌলের মাথার উপর ঢেলে দিলেন এবং তাঁকে চুমু দিয়ে বললেন, “সদাপ্রভু কি তোমাকে তাঁর সমস্ত কিছুর উপর রাজা হিসাবে অভিষেক করেন নি?
\v 2 তুমি আমার কাছ থেকে চলে যাবার পর আজ বিন্যামীন এলাকার সীমানায় সেল্‌সহে রাহেলের কবরের কাছে দুইজন লোকের দেখা পাবে; তারা তোমাকে বলবে, ‘তুমি যে সব গাধীগুলোর খোঁজে বেরিয়েছিলে সেগুলো পাওয়া গেছে, কিন্তু এখন, তোমার বাবা গাধীগুলোর চিন্তা ছেড়ে তোমার জন্য চিন্তা করছেন, বলছেন, আমার ছেলের জন্য কি করব’?"
\s5
\v 3 তারপর তুমি সেখান থেকে এগিয়ে গিয়ে তাবোর এলাকার এলোন গাছের কাছে গেলে দেখতে পাবে, তিনজন লোক যারা বৈথেলে ঈশ্বরের কাছে যাচ্ছে, তুমি দেখবে, তাদের একজন তিনটি ছাগলের বাচ্চা, আর একজন তিনটি রুটি ও আর একজন এক পাত্র আঙুর-রস বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
\v 4 তারা তোমাকে শুভেচ্ছা জানাবে ও দুইটি রুটি দেবে এবং তুমি তা তাদের হাত থেকে নেবে।
\s5
\v 5 তারপর পলেষ্টীয়দের সৈন্যরা যেখানে আছে, ঈশ্বরের সেই পাহাড়ে উপস্থিত হবে, সেই শহরে পৌঁছালে পর, এমন এক দল ভাববাদীর সঙ্গে তোমার দেখা হবে যারা বীণা, খঞ্জনি, বাঁশী ও তবলা নিয়ে উঁচু স্থান থেকে নেমে আসছে, আর ভাববাণী প্রচার করছে।
\v 6 তখন সদাপ্রভুর আত্মা সম্পূর্ণভাবে তোমার উপরে আসবেন, তাতে তুমিও তাদের সঙ্গে ভাববাণী প্রচার করবে এবং অন্য ধরনের মানুষ হয়ে যাবে।
\s5
\v 7 এই সব চিহ্ন তোমার প্রতি ঘটলে পর তোমার তখন যা করা উচিত তুমি তাই কোরো; কারণ ঈশ্বর তোমার সঙ্গে থাকবেন।
\v 8 "আর তুমি আমার আগে নেমে গিল্‌গলে যাবে, আর দেখ হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উত্সর্গ করবার জন্য আমি তোমার কাছে যাব; আমি যতক্ষণ না তোমার কাছে গিয়ে তোমার কর্তব্য তোমাকে না জানাই সেই পর্যন্ত তুমি সাত দিন অপেক্ষা করবে।”
\s5
\v 9 পরে তিনি শমূয়েলের কাছ থেকে চলে যাবার উদ্দেশ্যে ঘুরে দাঁড়াতেই ঈশ্বর তাঁর মন বদলে দিলেন এবং সেই দিনই সেই সমস্ত চিহ্ন সফল হল।
\v 10 তাঁরা সেখানে, সেই পাহাড়ে উপস্থিত হলে, দেখ, এক দল ভাববাদী তাঁর সামনে পড়ল এবং ঈশ্বরের আত্মা শৌলের উপর সবলে এলেন ও তাঁদের মাঝখানে তিনি ভাববাণী প্রচার করতে লাগলেন।
\s5
\v 11 আর যারা তাঁকে আগে থেকেই চিনত, তারা সবাই যখন দেখল যে, তিনিও ভাববাদীদের সঙ্গে ভাববাণী প্রচার করছেন, তখন লোকেরা একে অন্যকে বলতে লাগল, “কীশের ছেলের কি হল? শৌলও কি ভাববাদীদের মধ্যে একজন?”
\v 12 তাতে সেখানকার একজন লোক বলল, “কিন্তু ওদের বাবা কে?” এইভাবে, “শৌলও কি ভাববাদীদের মধ্যে একজন?” এই কথাটি প্রবাদ হয়ে উঠল৷
\v 13 পরে তিনি ভাববাণী বলা শেষ করে উঁচু স্থানে উঠে গেলেন।
\s5
\v 14 পরে শৌলের কাকা শৌল ও তাঁর চাকরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কোথায় গিয়েছিলে?” তিনি বললেন, “গাধীগুলো খুঁজতে গিয়েছিলাম, কিন্তু সেগুলো কোথাও না পেয়ে আমরা শমূয়েলের কাছে গিয়েছিলাম।”
\v 15 শৌলের কাকা বললেন, “আমাকে বল, শমূয়েল তোমাদের কি বলেছেন?”
\v 16 তখন শৌল তাঁর কাকাকে বললেন, “তিনি আমাদের স্পষ্টই বলে দিলেন যে, গাধীগুলো পাওয়া গেছে।” কিন্তু তাঁর রাজত্ব করার সম্বন্ধে শমূয়েল তাঁকে যে কথা বলেছিলেন তা তিনি তাঁকে বললেন না।
\s5
\v 17 পরে শমূয়েল মিসপাতে সদাপ্রভুর সামনে লোকদের ডেকে জড়ো করলেন।
\v 18 আর ইস্রায়েল-সন্তানদের বললেন, “সদাপ্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর এমন বলেন, ‘আমি ইস্রায়েলেকে মিসর থেকে নিয়ে এসেছি এবং মিসরীয়দের হাত থেকে ও যে রাজ্যগুলো তোমাদের উপর অত্যাচার করত তাদের হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করেছি’।”
\v 19 “কিন্তু তোমরা আজ তোমাদের ঈশ্বরকে, যিনি সমস্ত বিপদ ও দুর্দশা থেকে তোমাদের উদ্ধার করে চলেছেন, তাঁকেই তোমরা অগ্রাহ্য করলে এবং তাঁকে বললে যে, ‘আমাদের উপরে একজন রাজা নিযুক্ত করুন, তাই তোমরা এখন নিজেদের বংশ অনুসারে ও হাজার-হাজার লোক অনুসারে সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত হও।”
\s5
\v 20 পরে শমূয়েল ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠীকে কাছে নিয়ে আসলে বিন্যামীন বংশকে নির্দিষ্ট করা হল।
\v 21 আর এক এক বংশ অনুসারে বিন্যামীন বংশকে কাছে নিয়ে এলে, মট্রীয়ের বংশকে বেছে নেওয়া হল এবং তাদের মধ্য কীশের ছেলে শৌলকে বেছে নেওয়া হল। কিন্তু তাঁর খোঁজ করা হলে তাঁকে পাওয়া গেল না।
\s5
\v 22 সেইজন্য তারা আবার সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করল, “আর কেউ কি এখানে আছে?” সদাপ্রভু বললেন, “দেখ, সে মালপত্রের মধ্যে লুকিয়ে আছে।”
\v 23 তখন তারা দৌড়ে গিয়ে সেখান থেকে শৌলকে নিয়ে আসল। আর তিনি এসে লোকদের মধ্যে দাঁড়ালে পর দেখা গেল তিনি সবার থেকে লম্বা ও সবাই তাঁর কাঁধ পর্যন্ত।
\s5
\v 24 পরে শমূয়েল সবাইকে বললেন, “তোমরা কি একে দেখতে পাচ্ছ? ইনিই সদাপ্রভুর মনোনীত; সমস্ত লোকের মধ্যে তাঁর মত আর কেউ নেই।” তখন সমস্ত লোকেরা জয়ধ্বনি দিয়ে বলল, “রাজা চিরজীবী হোন।”
\s5
\v 25 পরে শমূয়েল লোকদেরকে রাজ্য শাসনের নিয়ম-কানুনগুলো বললেন এবং সেগুলো একটা বইয়ে লিখে সদাপ্রভুর সামনে রাখলেন। তারপর শমূয়েল সমস্ত লোককে যার যার বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন।
\s5
\v 26 আর শৌলও গিবিয়াতে তাঁর নিজের বাড়িতে ফিরে গেলেন এবং ঈশ্বর যাদের হৃদয় স্পর্শ করলেন এমন একদল সৈন্য তাঁর সঙ্গে গেল।
\v 27 কিন্তু কতগুলো বাজে লোক বলল, “এই লোকটা কি করে আমাদের রক্ষা করবে?” তারা তাঁকে তুচ্ছ করল এবং কোন উপহার দিল না; তবুও তিনি বধিরের (চুপ করে) মত থাকলেন।
\s5
\c 11
\ms শৌলের বীরত্ব
\p
\v 1 পরে অম্মোনীয় নাহশ এসে যাবেশ-গিলিয়দের সামনে শিবির স্থাপন করলেন; আর যাবেশের সব লোক নাহশকে বলল, “আপনি আমাদের সঙ্গে নিয়ম তৈরী করুন; আমরা আপনার দাস হব৷”
\v 2 অম্মোনীয় নাহশ তাদেরকে এই উত্তর দিলেন, “আমি এই শর্তে তোমাদের সঙ্গে নিয়ম তৈরী করব যে, তোমাদের সবার ডান চোখ তুলে ফেলতে হবে এবং তার মাধ্যমে আমি সমস্ত ইস্রায়েলের বদনাম করব৷”
\s5
\v 3 তখন যাবেশের প্রাচীনেরা বললেন, “আপনি সাত দিন আমাদের প্রতি ধৈর্য ধরুন; আমরা ইস্রায়েলের সব জায়গায় দূত পাঠাই; তাতে কেউ যদি আমাদেরকে উদ্ধার না করে, তবে আমরা বেরিয়ে আপনার কাছে যাব৷”
\s5
\v 4 পরে দূতেরা শৌলের [বাড়ি] গিবিয়ায় এসে লোকেদের কানের কাছে এই কথা বলল, “তাতে সব লোক খুব জোরে কাঁদতে লাগলো৷”
\v 5 পরে দেখ, শৌল ক্ষেত থেকে বলদের পিছন পিছন যাচ্ছিলেন৷ শৌল জিজ্ঞাসা করলেন, “লোকেদের কি হয়েছে? ওরা কাঁদছে কেন?” লোকেরা যাবেশের লোকেদের কথা তাঁকে বলল৷
\s5
\v 6 ঐ কথা শোনার পর ঈশ্বরের আত্মা শৌলের ওপর সবলে আসলেন এবং তিনি প্রচন্ড রেগে গেলেন৷
\v 7 আর তিনি দুটি বলদ নিয়ে খন্ড খন্ড করে ঐ দূতেদের দিয়ে ইস্রায়েল দেশের সব জায়গায় পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, “যে কেউ শৌলের ও শমূয়েলের সঙ্গে বাইরে না আসবে তার বলদের সঙ্গে এই রকম করা হবে,” তাতে সদাপ্রভুর প্রতি লোকদের ভয় উপস্থিত হওয়াতে তারা এক মানুষের মত বার হল৷
\v 8 পরে তিনি বেষকে তাদের গণনা করলেন; তাতে ইস্রায়েল সন্তানদের তিন লক্ষ ও যিহূদার ত্রিশ হাজার লোক হল৷
\s5
\v 9 পরে তারা সেই আগত দূতেদের বলল, “তোমরা যাবেশ-গিলিয়দের লোকদের কে বলবে, কাল কড়া রোদের সময় তোমরা উদ্ধার পাবে৷” তখন দূতেরা এসে যাবেশের লোকেদের ঐ খবর দিল ও তারা আনন্দ পেল৷
\v 10 পরে যাবেশের লোকেরা [নাহশকে] বলল, “কাল আমরা আপনাদের কাছে যাব; আপনাদের চোখে যা ভালো মনে হয়, আমাদের প্রতি তাই করবেন৷”
\s5
\v 11 পরের দিন শৌল নিজের লোকদেরকে তিন দল করে খুব ভোরে [শত্রুদের] শিবিরের মধ্যে এসে কড়া রোদ পর্যন্ত অম্মোনীয়দেরকে হত্যা করলেন; আর তাদের অবশিষ্ট লোকেরা এমন ছিন্ন-ভিন্ন হল যে, তাদের দুজন এক জায়গায় থাকলো না৷
\s5
\v 12 পরে লোকেরা শমূয়েলকে বলল, “কে বলেছে, শৌল কি আমাদের ওপর রাজা হবে? সেই লোকেদের আন, আমরা তাদেরকে হত্যা করি৷”
\v 13 কিন্তু শৌল বললেন, “আজ কারো প্রাণদন্ড হবে না, কারণ আজ সদাপ্রভু ইস্রায়েলের মধ্যে উদ্ধার কাজ করলেন৷”
\s5
\v 14 পরে শমূয়েল লোকদেরকে বললেন, “চল, আমরা গিলগলে গিয়ে সেখানে পুনরায় রাজত্ব তৈরী করি৷”
\v 15 তাতে সমস্ত লোক গিলগলে গিয়ে সেই গিলগলে সদাপ্রভুর সামনে শৌলকে রাজা করল এবং সে স্থানে সদাপ্রভুর সামনে মঙ্গলার্থক বলি উত্সর্গ করল৷ আর সেই জায়গায় শৌল ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোক খুব আনন্দ করল৷
\s5
\c 12
\s ইস্রায়েলীয়দের কাছে শমূয়েলের উপদেশ৷
\p
\v 1 পরে শমূয়েল সমস্ত ইস্রায়েলকে বললেন, “দেখ, তোমরা আমাকে যা যা বললে, আমি তোমাদের সেই সব কথা শুনে তোমাদের উপরে একজনকে রাজা করলাম৷
\v 2 এখন দেখ, রাজা তোমাদের সামনে যাতায়াত করছেন; কিন্তু আমার বয়স হয়েছে ও চুল সাদা হয়েছে; আর দেখ, আমার ছেলেরা তোমাদের সঙ্গে আছে এবং আমি ছেলেবেলা থেকে আজ পর্যন্ত তোমাদের সামনে যাতায়াত করে আসছি৷
\s5
\v 3 আমি এই জায়গায় আছি; তোমরা সদাপ্রভুর সামনে এবং তাঁর অভিষিক্ত ব্যক্তির সামনে আমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়ে বল দেখি, আমি কার গোরু নিয়েছি? কার গাধা নিয়েছি? কাকে তাড়না করেছি? কার উপরেই বা অত্যাচার করেছি? কিংবা নিজের চোখ অন্ধ করার জন্য ঘুষ নিয়েছি? আমি তোমাদের তা ফিরিয়ে দেব৷”
\s5
\v 4 তারা বলল, “আপনি আমাদের প্রতি তাড়না করেননি, আমাদের উপরে অত্যাচার করেননি, কার হাত থেকে কিছু নেন নি৷”
\v 5 তিনি তাদেরকে বললেন, “তোমরা আমার হাতে কোনো জিনিস পাওনি, এ বিষয়ে আজ তোমাদের বিপক্ষে সদাপ্রভু সাক্ষী এবং তাঁর অভিষিক্ত ব্যক্তি সাক্ষী৷” তারা উত্তর দিল, “তিনি সাক্ষী৷”
\s5
\v 6 পরে শমূয়েল লোকদেরকে বললেন, “সদাপ্রভুই মোশি ও হারোনকে উত্পন্ন করেছিলেন এবং তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছেন৷
\v 7 তোমরা এখন দাড়াও; তোমাদের প্রতি ও তোমাদের পূর্বপুরুষদের প্রতি সদাপ্রভু যে সব ভালো কাজ করেছেন, সেই বিষয়ে আমি সদাপ্রভুর সামনে তোমাদের সঙ্গে আলোচনা করব৷
\s5
\v 8 যাকোব মিসরে যাওয়ার পর যখন তোমাদের পূর্বপুরুষেরা সদাপ্রভুর কাছে কেঁদেছিল, তখন সদাপ্রভু মোশি ও হারোনকে পাঠান; আর তাঁরা মিসর থেকে তোমাদের পূর্বপুরুষদেরকে বের করে আনলেন এবং এই জায়গায় তাদেরকে বাস করালেন৷
\v 9 কিন্তু লোকেরা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভুলে গেল, আর তিনি হাৎসোরের সেনাপতি সীষরার হাতে, পলেষ্টীয়দের হাতে ও মোয়াবরাজের হাতে তাদেরকে বিক্রয় করলেন এবং এরা তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করল৷”
\s5
\v 10 তখন তারা সদাপ্রভুর কাছে কেঁদে বলল, “আমরা পাপ করেছি, আমরা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করে বালদেবতাদের ও অস্টারোৎ দেবীদের সেবা করেছি; কিন্তু এখন তুমি শত্রুদের হাত থেকে আমাদের উদ্ধার কর, আমরা তোমার সেবা করব৷
\v 11 পরে সদাপ্রভু যিরুব্বাল, বদান, যিপ্তহ ও শমূয়েলকে পাঠিয়ে তোমাদের চারদিকের শত্রুদের হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করলেন; তাহাতে তোমরা নির্ভয়ে বাস করলে৷
\s5
\v 12 পরে যখন তোমরা দেখলে অম্মোন-সন্তানদের রাজা নাহশ তোমাদের বিরুদ্ধে বেরিয়ে আসছে, তখন, তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের রাজা থাকতেও তোমরা আমাকে বললে, না, আমাদের উপরে একজন রাজা রাজত্ব করুন৷
\v 13 অতএব এই দেখ, সেই রাজা, যাঁকে তোমরা মনোনীত করেছ ও চেয়েছ; দেখ, সদাপ্রভু তোমাদের উপরে একজন রাজা নিযুক্ত করেছেন৷
\s5
\v 14 তোমরা সদাপ্রভুকে ভয় কর, তাঁর সেবা কর ও তাঁর কথায় কান দাও এবং সদাপ্রভুর আদেশের বিরুদ্ধে যেও না, আর তোমরা ও তোমাদের উপরে ভারপ্রাপ্ত রাজা, উভয়েই যদি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অনুসারী হও তবে ভালো৷
\v 15 কিন্তু তোমরা যদি সদাপ্রভুর আওয়াজে কান না দাও, তবে সদাপ্রভুর হাত যেমন তোমাদের পূর্বপুরুষদের বিরুদ্ধ ছিল, তেমনি তোমাদেরও বিরুদ্ধ হবে৷
\s5
\v 16 অতএব তোমরা দাড়াও; সদাপ্রভু তোমাদের সামনে যে মহৎ কাজ করবেন, তা দেখ৷
\v 17 আজ কি গম কাটার সময় নয়? আমি সদাপ্রভুকে ডাকব, যেন তিনি মেঘ গর্জন ও বৃষ্টি দেন; তাতে তোমরা জানবে ও বুঝবে যে, তোমরা নিজেদের জন্য রাজা চেয়ে সদাপ্রভুর সামনে খুব খারাপ করেছ৷”
\v 18 তখন শমূয়েল সদাপ্রভুকে ডাকলে সদাপ্রভু ঐ দিনে মেঘ গর্জন ও বৃষ্টি দিলেন; তাতে সব লোক সদাপ্রভুর থেকে ও শমূয়েলের থেকে খুব ভীত হল৷
\s5
\v 19 আর সব লোক শমূয়েলকে বলল, “আমরা যেন না মরি, এই জন্য আপনি নিজের দাসদের জন্য আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন; কেননা আমরা আমাদের সব পাপের উপরে এই খারাপ কাজ করেছি যে, আমাদের জন্য রাজা চেয়েছি৷”
\v 20 পরে শমূয়েল লোকদেরকে বললেন, “ভয় করো না; তোমরা এই মন্দ কাজ করেছ ঠিকই, কিন্তু কোনো মতে সদাপ্রভুর কাছ থেকে সরে যেও না, সমস্ত হৃদয় দিয়ে সদাপ্রভুর সেবা কর৷
\v 21 সরে যেও না, গেলে সেই সব অবস্তুর অনুগামী হবে, যারা অবস্তু বলে উপকার ও উদ্ধার করতে পারে না৷
\s5
\v 22 কারণ সদাপ্রভু নিজের মহানামের গুনে নিজের প্রজাদেরকে ত্যাগ করবেন না; কেননা তোমাদেরকে নিজের প্রজা করতে সদাপ্রভুর ইচ্ছা হয়েছে৷
\v 23 আর আমিই যে তোমাদের জন্য প্রার্থনা করতে বিরত হয়ে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করব, তা দূরে থাক; আমি তোমাদেরকে ভালো ও সরল পথের শিক্ষা দেব;
\s5
\v 24 তোমরা শুধুমাত্র সদাপ্রভুকে ভয় কর ও সমস্ত হৃদয় দিয়ে সত্যে তাঁর সেবা কর; কেননা দেখ, তিনি তোমাদের জন্য কেমন মহান কাজ করলেন৷
\v 25 কিন্তু তোমরা যদি খারাপ ব্যবহার কর, তবে তোমরা ও তোমাদের রাজা উভয়েই বিনষ্ট হবে৷”
\s5
\c 13
\ms পলেষ্টীয়দের অত্যাচার৷ শৌলের অবাধ্যতা৷
\p
\v 1 শৌল ত্রিশ বছর বয়সে রাজা হন৷ দুই বছর ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করার পর
\v 2 শৌল নিজেদের জন্য ইস্রায়েলের মধ্যে তিন হাজার জন লোক নির্বাচন করলেন; তার মধ্যে দুহাজার মিকমসে ও বৈথেল পর্বতে শৌলের সঙ্গে থাকল এবং এক হাজার বিন্যামীন প্রদেশের গিবিয়াতে যোনাথনের সঙ্গে থাকল; আর অন্য সব লোককে তিনি নিজেদের তাঁবুতে পাঠিয়ে দিলেন৷
\s5
\v 3 পরে যোনাথন গেবাতে থাকা পলেষ্টীয়দের পাহারাদার সৈন্যদলকে আঘাত করলেন ও পলেষ্টীয়েরা তা শুনল; তখন শৌল দেশের সব জায়গায় তূরী বাজিয়ে বললেন, “ইব্রীয়েরা শুনুক৷”
\v 4 তখন সমস্ত ইস্রায়েল এই কথা শুনল যে, শৌল পলেষ্টীয়দের সেই পাহারাদার সৈন্যদলকে আঘাত করেছেন, আর ইস্রায়েলের জন্য পলেষ্টীয়দের তীব্র ঘৃণা জন্মেছে৷ পরে লোকেরা শৌলের সঙ্গে গিলগলে যোগ দিল৷
\s5
\v 5 পরে পলেষ্টীয়েরা ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে এল; ত্রিশ হাজার রথ, ছয় হাজার ঘোড়াচালক ও সমুদ্রতীরের বালির মতো অগুনতি লোক আসল; তারা এসে বৈৎ-আবনের পূর্বদিকে মিকমসে শিবির তৈরী করল৷
\s5
\v 6 তখন ইস্রায়েলের লোকেরা নিজেদেরকে বিপদের মধ্যে দেখল, কারণ লোকেরা পীড়িত হচ্ছিল; তখন লোকেরা গুহাতে, ঝোপে, শৈলে, উচু জায়গায় ও গর্তে লুকাল৷
\v 7 আর কয়েকজন ইব্রীয় যর্দন পার হয়ে গাদ ও গিলিয়দ দেশে গেল৷ কিন্তু তখনও শৌল গিলগলে ছিলেন এবং তাঁর পিছনে আসা লোকেরা সবাই কাঁপতে লাগল৷
\s5
\v 8 পরে শৌল শমূয়েলের ঠিক করা সময় অনুসারে সাত দিন অপেক্ষা করলেন; কিন্তু শমূয়েল গিলগলে এলেন না এবং লোকেরা তাঁর কাছ থেকে ছড়িয়ে পড়তে লাগল৷
\v 9 তাতে শৌল বললেন, “এই জায়গায় আমার কাছে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি আন৷” পরে তিনি হোমবলি উত্সর্গ করলেন৷
\v 10 হোমবলি উত্সর্গ শেষ করার সঙ্গে সঙ্গেই শমূয়েল উপস্থিত হলেন; তাতে শৌল তাঁকে অভিবাদন করার জন্য তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন৷
\s5
\v 11 পরে শমূয়েল বললেন, “তুমি কি করলে?” শৌল বললেন, “আমি দেখলাম, লোকেরা আমার কাছ থেকে ছড়িয়ে পড়ছে এবং নির্ধারিত দিনের মধ্যে আপনিও আসেন নি, আর পলেষ্টীয়েরা মিকমসে জড়ো হয়েছে;
\v 12 তাই আমি মনে মনে বললাম, ‘পলেষ্টীয়েরা এখনই আমার বিরুদ্ধে গিলগলে নেমে আসবে, আর আমি সদাপ্রভুর দয়া চাই নি; তাই ইচ্ছা না থাকলেও আমি হোমবলি উত্সর্গ করলাম৷”
\s5
\v 13 শমূয়েল শৌলকে বললেন, “তুমি বোকার মত কাজ করেছ; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে আদেশ দিয়েছেন, তা মেনে চল নি; মানলে সদাপ্রভু এখন ইস্রায়েলের উপরে তোমার রাজত্ব চিরকাল স্থায়ী করতেন৷
\v 14 কিন্তু এখন তোমার রাজত্ব স্থির থাকবে না; সদাপ্রভু নিজের মনের মত একজনকে বেছে নিয়ে তাকেই নিজের প্রজাদের শাসনকর্তার পদে নিযুক্ত করেছেন; কারণ সদাপ্রভু তোমাকে যা আদেশ করেছিলেন, তুমি তা পালন করনি৷”
\s5
\v 15 পরে শমূয়েল উঠে গিলগল থেকে বিন্যামীনের গিবিয়াতে চলে গেলেন; তখন শৌল নিজের কাছের বর্তমান লোকদেরকে গণনা করলেন, তারা অনুমান ছশো জন৷
\v 16 শৌল তাঁর ছেলে যোনাথন ও তাদের কাছের বর্তমান লোকেরা বিন্যামীনের গেবাতে থাকলেন এবং পলেষ্টীয়েরা মিকমসে শিবির তৈরী করে থাকলো৷
\s5
\v 17 পরে পলেষ্টীয়দের শিবির থেকে তিনদল বিনাশকারী সৈন্য বেরিয়ে এল, তার একদল অফ্রার রাস্তা দিয়ে শূয়াল প্রদেশে গেল৷
\v 18 আর একদল বৈৎ-হোরোণের পথের দিকে ফিরল এবং আর একদল মরুভূমির দিকে সিবোয়িম উপত্যকার দিকে সীমানার পথ দিয়ে গেল৷
\s5
\v 19 ঐ সময়ে সমস্ত ইস্রায়েল দেশে কামার পাওয়া যেত না; কারণ পলেষ্টীয়েরা বলত, “যদি ইব্রীয়েরা নিজেদের জন্য তরোয়াল কি বড়শা তৈরী করে৷”
\v 20 এই জন্য নিজেদের হলমুখ বা ফাল বা কুড়ুল বা কোদাল ধার দেবার জন্য ইস্রায়েলের সব লোককে পলেষ্টীয়দের কাছে নেমে আসতে হত৷
\v 21 সুতরাং সকলের কোদাল, ফাল, বিদা, কুড়ুলের ধার এবং রাখালের লাঠির কাঁটা ভোঁতা ছিল;
\s5
\v 22 আর যুদ্ধের দিনে শৌলের ও যোনাথনের সঙ্গী লোকদের কারও হাতে তরোয়াল বা বড়শা পাওয়া গেল না, শুধুমাত্র শৌলের ও তাঁর ছেলে যোনাথনের হাতে পাওয়া গেল৷
\v 23 পরে পলেষ্টীয়দের পাহারাদার সৈন্যদল বেরিয়ে এসে মিকমসের গিরিপথে এল৷
\s5
\c 14
\ms পলেষ্টীয়দের পরাজয়। শৌলের শপথ।
\p
\v 1 একদিন এই ঘটনা ঘটল, শৌলের ছেলে যোনাথন তাঁর অস্ত্র বহনকারী যুবকটিকে বললেন, “চল, আমরা ওপাশে পলেষ্টীয়দের সৈন্যদের ছাউনিতে যাই,” কিন্তু তিনি এই কথা তাঁর বাবাকে জানালেন না।
\s5
\v 2 তখন শৌল গিবিয়ার সীমানায় মিগ্রোণের একটা ডালিম গাছের তলায় ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে প্রায় ছয়শো লোক ছিল।
\v 3 আর এলি, যিনি শীলোতে সদাপ্রভুর যাজক ছিলেন, তার সন্তান পীনহসের ছেলে ঈখাবোদের ভাই অহীটুবের ছেলে যে অহিয়, তিনি এফোদ পরেছিলেন। আর যোনাথন যে বের হয়ে গেছেন, সেই কথা লোকেরা জানত না।
\s5
\v 4 যোনাথন যে গিরিপথ দিয়ে পলেষ্টীয়দের সৈন্য-ছাউনির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলেন, সেই ঘাটের মাঝখানের একপাশে একটি খাড়া উঁচু পাহাড়ের দেওয়াল এবং অন্যপাশে আর একটি খাড়া উঁচু পাহাড়ের দেওয়াল ছিল; তার একটির নাম বোৎসেস ও অন্যটির নাম সেনি।
\v 5 তার মধ্য একটি পাহাড়ের দেওয়াল ছিল উত্তরের মিক্‌মসের দিকে আর অন্যটি ছিল দক্ষিণে গেবার দিকে।
\s5
\v 6 আর যোনাথন তাঁর অস্ত্র বহনকারী যুবকটিকে বললেন, “চল, আমরা ওপাশে ঐ অচ্ছিন্নত্বক লোকদের ছাউনিতে যাই; হয়তো সদাপ্রভু আমাদের জন্য কিছু করবেন, কারণ অনেক লোক দিয়ে হোক বা কম লোক দিয়ে হোক, উদ্ধার করতে কোন কিছুই সদাপ্রভুকে বাধা দিতে পারে না।”
\v 7 তখন তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটি বলল, “আপনার মন যা বলে, তাই করুন; সেই দিকে যান, দেখুন, আপনার ইচ্ছামতই আমি আপনার সঙ্গে সঙ্গে আছি।”
\s5
\v 8 যোনাথন বললেন, “দেখ, আমরা ঐ লোকেদের দিকে এগিয়ে যাব, ওদের দেখা দেব।
\v 9 যদি তারা আমাদের এই কথা বলে, ‘থাক, আমরা তোমাদের কাছে আসছি, তাহলে আমরা আমাদের জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকব, ওদের কাছে উঠে যাব না।
\v 10 কিন্তু যদি এই কথা বলে, ‘আমাদের কাছে উঠে এস, তাহলে আমরা উঠে যাব, কারণ সদাপ্রভু আমাদের হাতে ওদের তুলে দিয়েছেন; ওটাই আমাদের চিহ্ন হবে।”
\s5
\v 11 পরে তাঁরা দুই জন পলেষ্টীয় সৈন্যদের সামনে গিয়ে দেখা দিলে পলেষ্টীয়েরা বলল, “দেখ, ইব্রীয়েরা যারা গর্তে লুকিয়ে ছিল, তা থেকে এখন বের হয়ে আসছে।”
\v 12 পরে সেই সৈন্য-ছাউনির লোকেরা যোনাথন ও তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটিকে বলল, “আমাদের কাছে উঠে এস, আমরা তোমাদের কিছু দেখাব।” যোনাথন তাঁর অস্ত্র বহনকারীকে বললেন, “আমার পিছনে পিছনে উঠে এস, কারণ সদাপ্রভু ওদেরকে ইস্রায়েলীয়দের হাতে দিয়েছেন।”
\s5
\v 13 পরে যোনাথন হামাগুড়ি দিয়ে উঠে গেলেন এবং তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটিও তাঁর পিছনে পিছনে উঠে গেল; তাতে সেই লোকেরা যোনাথনের সামনে মারা পড়তে লাগল, এবং তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটিও তাঁর পিছনে পিছনে তাদের মারতে লাগল।
\v 14 যোনাথন ও তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটির আক্রমণের শুরুতেই এক বিঘে জমির অর্ধেক হাল দেওয়া জমির মধ্যে প্রায় কুড়ি জন লোক মারা পড়ল।
\s5
\v 15 শিবিরের মধ্যে, ক্ষেতে ও সমস্ত সৈন্যদের মধ্যে ভীষণ ভয় উপস্থিত হল; পাহারাদার ও বিনাশকারীর দলও ভয় পেল, ভূমিকম্প হল, আর এইভাবে ঈশ্বরের কাছ থেকে মহাভয় উপস্থিত হল।
\s5
\v 16 তখন বিন্যামীনের গিবিয়াতে শৌলের যে পাহারাদার সৈন্যেরা ছিল তারা দেখতে পেল, দেখ, লোকের ভীড় ভেঙে গেল তারা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে।
\v 17 তখন শৌল তাঁর সঙ্গের লোকদের বললেন, “একবার লোক গুনে দেখ, কে আমাদের মধ্য থেকে চলে গেছে।” পরে তারা লোক গুনে দেখতে পেল, আর দেখ যোনাথন ও তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটি সেখানে নেই।
\s5
\v 18 তখন শৌল অহিয়কে বললেন, “ঈশ্বরের সিন্দুকটি এই জায়গায় নিয়ে এস,” কারণ সেই সময় ঈশ্বরের সিন্দুক ইস্রায়েলীয়দের কাছেই ছিল।
\v 19 পরে যখন শৌল যাজকের সঙ্গে কথা বলছিলেন, তখন পলেষ্টীয়দের সৈন্যদের মধ্য গোলমাল বেড়েই চলল। তাতে শৌল যাজককে বললেন, “হাত সরিয়ে নাও।”
\s5
\v 20 তারপর শৌল ও তাঁর সমস্ত সঙ্গীরা একত্র হয়ে যুদ্ধ করতে গেলেন; আর দেখ, প্রত্যেক জনের তরোয়াল তার বন্ধুর বিরুদ্ধে যাওয়াতে ভীষণ কোলাহল শোনা যাচ্ছিল।
\v 21 আর যে সব ইব্রীয়েরা আগে পলেষ্টীয়দের পক্ষে ছিল, যারা চারিদিক থেকে তাদের সঙ্গে শিবিরে গিয়েছিল তারাও শৌল ও যোনাথনের সঙ্গী ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যোগ দিল।
\s5
\v 22 আর ইস্রায়েলের যে সব লোক ইফ্রয়িমের পাহাড়ী এলাকায় লুকিয়ে ছিল, তারাও পলেষ্টীয়দের পালানোর খবর পেয়ে যুদ্ধে যোগ দিল এবং তারা তাদের তাড়া করতে লাগল।
\v 23 এইভাবে সদাপ্রভু সেই দিন ইস্রায়েলীয়দের উদ্ধার করলেন এবং বৈৎ-আবন পার পর্যন্ত যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ল।
\s5
\v 24 সেই দিন ইস্রায়েলের লোকেরা খুব কষ্টের মধ্যে ছিল, কারণ শৌল লোকদের এই দিব্যি করিয়ে নিয়েছিলেন যে, তিনি সন্ধ্যার আগে, আমি যে পর্যন্ত আমার শত্রুদের উপর প্রতিশোধ না নেওয়া পর্যন্ত, যে কেউ খাবার গ্রহণ করবে সে শাপগ্রস্ত হোক। এইজন্য লোকেদের মধ্য কেউই খাদ্য গ্রহণ করল না।
\v 25 পরে সবাই বনের মধ্যে গেল, সেখানে মাটির উপর মধু ছিল।
\v 26 আর লোকেরা যখন বনে উপস্থিত হল, দেখ, মধু ঝরে পড়ছে, কিন্তু কেউ তা মুখে দিল না, কারণ তারা সেই শপথে ভয় পেয়েছিল।
\s5
\v 27 কিন্তু যোনাথনের বাবা লোকদেরকে যে শপথ করিয়েছিলেন, যোনাথন তা শোনেন নি, তাই তিনি তাঁর হাতের লাঠির আগাটা বাড়িয়ে মৌচাকে ঢুকালেন এবং মধু হাতে নিয়ে মুখে দিলেন; তাতে তাঁর চোখ সতেজ হল।
\v 28 তখন লোকেদের মধ্য একজন বলল, “তোমার বাবা শপথের সঙ্গে একটি দৃঢ় আদেশ দিয়েছেন, ‘যে ব্যক্তি আজ খাবার গ্রহণ করবে সে শাপগ্রস্ত হোক, কিন্তু লোকেরা দুর্বল হয়ে পড়েছে।”
\s5
\v 29 যোনাথন বললেন, “আমার বাবা তো লোকদের কষ্ট দিচ্ছেন, অনুরোধ করি, দেখ, এই মধু একটুখানি মুখে দেওয়াতে আমার চোখ সতেজ হল।
\v 30 আজ যদি লোকেরা শত্রুদের কাছ থেকে লুঠে নেওয়া খাবার থেকে যদি আজ লোকেরা খেতে পারত তাহলে আরো সতেজ হত। কারণ এখনও পলেষ্টীয়দের মধ্য মহাসংহার হয় নি।”
\s5
\v 31 সেই দিন তারা মিক্‌মস থেকে অয়ালোন পর্যন্ত পলেষ্টীয়দের আঘাত করল; আর লোকেরা খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়ল।
\v 32 পরে লোকেরা লুঠের জিনিসের দিকে দৌড়িয়ে ভেড়া, গরু ও বাছুর ধরে মাটিতে ফেলে কেটে রক্ত শুদ্ধই খেতে লাগল।
\s5
\v 33 তখন কেউ কেউ শৌলকে বলল, “দেখুন, লোকেরা রক্ত শুদ্ধ মাংস খেয়ে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করছে।” তাতে তিনি বললেন, “তোমরা অবিশ্বস্ত হয়েছ; আজ আমার কাছে একটা বড় পাথর গড়িয়ে নিয়ে এস।”
\v 34 শৌল আরো বললেন, “তোমরা লোকদের মধ্যে চারিদিকে গিয়ে তাদেরকে বল, তোমরা প্রত্যেক জন নিজেদের গরু ও প্রত্যেকে নিজের নিজের ভেড়া আমার কাছে নিয়ে এস, আর এখানে মেরে খাও; রক্ত সমেত খেয়ে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করো না।” সেই রাতে প্রত্যেকে যে যার গরু নিয়ে এসে সেখানে কাটল।
\s5
\v 35 আর শৌল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে একটা যজ্ঞবেদী তৈরী করলেন, তা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তাঁর তৈরী প্রথম বেদী।
\s5
\v 36 পরে শৌল বললেন, “চল, আমরা রাতে পলেষ্টীয়দের তাড়া করি এবং সকাল পর্যন্ত তাদের জিনিসপত্র লুঠ করি এবং তাদের একজনকেও বাঁচিয়ে রাখব না।” তারা বলল, “আপনি যা ভাল মনে করেন তা-ই করুন।” পরে যাজক বললেন, “এস, আমরা এখানে ঈশ্বরের কাছে উপস্থিত হই।”
\v 37 তাতে শৌল ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের তাড়া করব? তুমি কি তাদের ইস্রায়েলীয়দের হাতে তুলে দেবে?” কিন্তু সেই দিন তিনি তাঁকে উত্তর দিলেন না।
\s5
\v 38 সেইজন্য শৌল বললেন, “সৈন্যদলের সমস্ত নেতারা, তোমরা কাছে এস, এবং আজকের এই পাপ কি করে হল, জানো ও তার খোঁজ করে দেখ।
\v 39 ইস্রায়েলের উদ্ধারকর্তা জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্য, এমনকি আমার ছেলে যোনাথনও যদি তা করে থাকে তবে নিশ্চয়ই তাকেও মরতে হবে।” কিন্তু সমস্ত লোকের মধ্য কেউই তাঁকে উত্তর দিল না।
\s5
\v 40 পরে তিনি সমস্ত ইস্রায়েলকে বললেন, “তোমরা এক দিকে থাক, আমি ও আমার ছেলে যোনাথন অন্য দিকে থাকি।” তাতে লোকেরা শৌলকে বলল, “আপনি যা ভাল মনে করেন তা-ই করুন।”
\v 41 পরে শৌল সদাপ্রভুকে বললেন, “হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সঠিক কি তা দেখিয়ে দিন,” তখন যোনাথন ও শৌল ধরা পড়লেন, কিন্তু লোকেরা মুক্ত হল।
\v 42 পরে শৌল বললেন, “আমার ও আমার ছেলে যোনাথনের মধ্যে গুলিবাঁট করা হোক।” তাতে যোনাথন ধরা পড়ল।
\s5
\v 43 তখন শৌল যোনাথনকে বললেন, “বল দেখি, তুমি কি করেছ?” যোনাথন তাঁকে বললেন, “আমার লাঠির আগা দিয়ে আমি একটুখানি মধু নিয়ে খেয়েছি, দেখুন, তাই আমাকে মরতে হবে।”
\v 44 শৌল বললেন, “ঈশ্বর তোমাকে তেমন ও তার বেশি শাস্তি দিন; যোনাথন, তুমি অবশ্যই মারা যাবে।”
\s5
\v 45 কিন্তু লোকেরা শৌলকে বলল, “ইস্রায়েলের মধ্য যিনি এই মহান উদ্ধার করেছেন, সেই যোনাথন কি মারা যাবেন? এমন না হোক; জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্য, তাঁর মাথার একটা চুলও মাটিতে পড়বে না, কারণ তিনি আজ ঈশ্বরের সঙ্গে কাজ করেছেন।” এইভাবে লোকেরা যোনাথনকে রক্ষা করল, তাঁর মৃত্যু হল না।
\v 46 পরে শৌল পলেষ্টীয়দের তাড়া করলেন না, আর পলেষ্টীয়েরাও নিজেদের দেশে চলে গেল।
\s5
\v 47 ইস্রায়েলীয়দের উপর রাজা হবার পর শৌল সমস্ত দিকে সমস্ত শত্রুদের সঙ্গে, মোয়াবের, অম্মোন সন্তানদের, ইদোমের, সোবার রাজাদের ও পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন; তিনি যেদিকে যেতেন সেদিকেই ভীষণ ক্ষতি করতেন।
\v 48 তিনি বীরের মত কাজ করতেন, অমালেকীয়দের আঘাত করলেন এবং লুঠকারীদের হাত থেকে ইস্রায়েলকে রক্ষা করলেন।
\s5
\v 49 যোনাথন, যিশ্‌বি ও মল্কীশূয় নামে শৌলের তিনজন ছেলে ছিল; তাঁর বড় মেয়ের নাম ছিল মেরব ও ছোট মেয়ের নাম ছিল মীখল।
\v 50 আর শৌলের স্ত্রীর নাম ছিল অহীনোয়ম, তিনি অহীমাসের মেয়ে; এবং তাঁর সেনাপতির নাম অব্‌নের; তিনি শৌলের কাকা নেরের ছেলে।
\v 51 আর কীশ শৌলের বাবা এবং অব্‌নেরের বাবা নের ছিলেন অবীয়েলের ছেলে।
\s5
\v 52 শৌলের রাজত্বকালে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে ভীষণ যুদ্ধ হয়েছিল। আর শৌল কোন শক্তিশালী লোক বা কোন বীর পুরুষকে দেখলেই গ্রহণ করতেন।
\s5
\c 15
\ms অমালেকীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ৷ শৌলের অবাধ্যতা৷
\p
\v 1 আর শমূয়েল শৌলকে বললেন, “সদাপ্রভু তাঁর লোকদের উপরে, ইস্রায়েলীয়দের উপরে তোমাকে রাজপদে অভিষেক করবার জন্য আমাকে পাঠিয়েছিলেন; তাই এখন তুমি সদাপ্রভুর কথায় কান দাও।
\v 2 বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘ইস্রায়েলের প্রতি অমালেক যা করেছিল, মিসর থেকে আসবার সময়ে সে পথের মধ্য তার বিরুদ্ধে যে ঘাঁটি বসিয়েছিল, আমি তা লক্ষ্য করেছি।
\v 3 এখন তুমি গিয়ে অমালেকীয়দের আক্রমণ কর ও তাদের যা কিছু আছে, সব সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে ফেলবে; তাদের প্রতি দয়া করবে না; তাদের স্ত্রী-পুরুষ, ছেলে-মেয়ে, দুধ-খাওয়া শিশু, গরু, ভেড়া, উট, গাধা সব মেরে ফেলবে’।”
\s5
\v 4 পরে শৌল লোকদের টলায়ীমে ডেকে গুনলেন; তাতে ইস্রায়েলের পদাতিক সৈন্যের সংখ্যা হল দুই লক্ষ এবং যিহূদা-গোষ্ঠীর সৈন্যের সংখ্যা হল দশ হাজার।
\v 5 শৌল অমালেকীয়দের শহরের কাছে গিয়ে সেখানকার উপত্যকার মধ্যে লুকিয়ে থাকলেন।
\s5
\v 6 আর শৌল কেনীয়দের বললেন, যাও, চলে যাও, অমালেকীয়দের মধ্য থেকে অন্য কোথাও চলে যাও, যাতে অমালেকীয়দের সঙ্গে আমি তোমাদেরও ধ্বংস করে না ফেলি; “যখন মিসর থেকে ইস্রায়েলীয়েরা বের হয়ে এসেছিল, তখন তোমরা তাদের প্রতি দয়া দেখিয়েছিলে।” তখন কেনীয়েরা অমালেকীয়দের মধ্য থেকে চলে গেল।
\v 7 পরে শৌল হবীলা এলাকা থেকে মিসরের পূর্ব দিকে শূর মরু-এলাকা পর্যন্ত সমস্ত অমালেকীয়দের আঘাত করলেন।
\s5
\v 8 তিনি অমালেকীয়দের রাজা অগাগকে জীবিত অবস্থায় ধরলেন এবং সমস্ত লোকদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করলেন।
\v 9 কিন্তু শৌল ও তাঁর সৈন্যেরা অগাগকে বাঁচিয়ে রাখলেন এবং অমালেকীয়দের ভাল ভাল গরু, ভেড়া, মোটাসোটা বাছুর এবং ভেড়ার বাচ্চাগুলির প্রতি ও সমস্ত ভালো জিনিসের উপর দয়া করলেন, সেগুলোকে সম্পূর্নভাবে ধ্বংস করে দিতে চাইলেন না, কিন্তু যেগুলো অকেজো এবং রোগা, সেগুলিকেই একেবারে শেষ করলেন।
\s5
\v 10 তখন শমূয়েলের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য উপস্থিত হল,
\v 11 “আমি শৌলকে রাজা করেছি বলে আমার দুঃখ হচ্ছে, কারণ সে আমার কাছ থেকে সরে গেছে এবং আমার বাক্য পালন করে নি।” তখন শমুয়েল রেগে গেলেন এবং গোটা রাত তিনি সদাপ্রভুর কাছে কাঁদলেন।
\s5
\v 12 পরদিন ভোরে উঠে শমূয়েল শৌলের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, সেখানে তাঁকে বলা হল যে, শৌল কর্মিল পাহাড়ে গিয়ে নিজের সম্মানের জন্য সেখানে একটা স্তম্ভ তৈরী করবার পর গিল্‌গলে চলে গেছেন।
\v 13 আর শমূয়েল শৌলের কাছে এলে, শৌল তাঁকে বললেন, “আপনি সদাপ্রভুর আশীর্বাদের পাত্র; আমি সদাপ্রভুর আদেশ পালন করেছি।”
\s5
\v 14 শমূয়েল বললেন, “তবে ভেড়ার ডাক আমার কানে আসছে কেন? গরুর ডাকই বা আমি শুনতে পাচ্ছি কেন?”
\v 15 শৌল বললেন, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করবার জন্য লোকেরা ভাল ভাল ভেড়া ও গরুর প্রতি দয়া করেছে; কিন্তু আমরা বাকী সব লোকদের একেবারে শেষ করে দিয়েছি।”
\v 16 শমূয়েল তখন শৌলকে বললেন, “চুপ কর, গত রাতে সদাপ্রভু আমাকে যা বলেছেন তা আমি তোমাকে বলি।” শৌল বললেন, “বলুন।”
\s5
\v 17 শমূয়েল বললেন, “যদিও তুমি নিজের চোখে খুবই সামান্য ছিলে, তবুও তোমাকে কি ইস্রায়েলীয়দের সমস্ত বংশের মাথা করা হয় নি? সদাপ্রভু তোমাকে ইস্রায়েল দেশের উপরে রাজপদে অভিষেক করেছেন।
\v 18 পরে সদাপ্রভু তোমাকে তোমার রাস্তায় পাঠিয়েছিলেন, বলেছিলেন, ‘যাও, সেই পাপীদের অর্থাৎ অমালেকীয়দের একেবারে ধ্বংস করবে। এবং যে পর্যন্ত না তারা ধ্বংস হয়, ততক্ষণ তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে।’
\v 19 তবে তুমি সদাপ্রভুর আদেশ পালন না করে কেন লুঠের উপর পড়ে সদাপ্রভুর চোখে যা খারাপ তাই করলে?”
\s5
\v 20 শৌল শমূয়েলকে বললেন, “আমি তো সদাপ্রভুর আদেশ পালন করেছি, যে পথে সদাপ্রভু আমাকে পাঠিয়েছিলেন আমি সেই পথে গিয়েছি, আর অমালেকীয়দের রাজাকে নিয়ে এসেছি ও অমালেকীয়দের একেবারে শেষ করে দিয়েছি।
\v 21 কিন্তু গিল্‌গলে আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করার জন্য লোকেরা রাখা জিনিস থেকে কতগুলো ভাল ভাল ভেড়া ও গরু এনেছে।”
\s5
\v 22 শমূয়েল বললেন, “সদাপ্রভুর কথা শুনলে তিনি যত খুশী হন, তেমনকি হোমে ও বলিদানে কি সদাপ্রভু তত খুশী হন? দেখ, বলিদানের থেকে আদেশ পালন করা ভাল এবং ভেড়ার চর্বির থেকে কথা শোনা অনেক ভাল।
\v 23 কারণ আদেশ অগ্রাহ্য করা আর মন্ত্রপাঠ করা একই পাপ এবং অবাধ্যতা, প্রতিমাপূজা ও অধার্মিকতার সমান। তুমি সদাপ্রভুর আদেশ অগ্রাহ্য করেছ, তাই তিনিও তোমাকে রাজা হিসাবে অগ্রাহ্য করেছেন।”
\s5
\v 24 শৌল তখন শমূয়েলকে বললেন, “আমি পাপ করেছি; সদাপ্রভুর আদেশ আর আপনার নির্দেশ আমি সত্যিই অমান্য করেছি, কারণ আমি লোকদের ভয়ে তাদের কথামতই কাজ করেছি।
\v 25 এখন অনুরোধ করি আমার পাপ ক্ষমা করে দিন, আর আমার সঙ্গে চলুন, আমি সদাপ্রভুর উপাসনা করব।”
\s5
\v 26 শমূয়েল শৌলকে বললেন, “আমি তোমার সঙ্গে ফিরে যাব না; কারণ তুমি সদাপ্রভুর আদেশ অগ্রাহ্য করেছ, আর তাই সদাপ্রভুও তোমাকে ইস্রায়েলীয়দের রাজা হিসাবে অগ্রাহ্য করেছেন।”
\v 27 এই বলে শমূয়েল চলে যাবার জন্য ঘুরে দাঁড়াতেই, শৌল তাঁর কাপড়ের একটা অংশ টেনে ধরলেন; তাতে তা ছিঁড়ে গেল।
\s5
\v 28 তখন শমূয়েল তাঁকে বললেন, “সদাপ্রভু আজ তোমার কাছ থেকে ইস্রায়েলীয়দের রাজ্য টেনে ছিঁড়লেন এবং তোমার চেয়ে ভাল তোমার এক প্রতিবেশীকে তা দিলেন।
\v 29 আবার ইস্রায়েলের বিশ্বাসভূমি মিথ্যা কথা বলেন না ও অনুশোচনা করেন না; কারণ তিনি মানুষ নন যে, অনুশোচনা করবেন।”
\s5
\v 30 তখন শৌল বললেন, “আমি পাপ করেছি; তবুও অনুরোধ করি, এখন আমার জাতির প্রাচীন নেতাদের ও ইস্রায়েলীয়দের সামনে আমার সম্মান রাখুন, আমার সঙ্গে চলুন; আমি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপাসনা করব।”
\v 31 তাতে শমূয়েল শৌলের সঙ্গে গেলেন আর শৌল সদাপ্রভুর উপাসনা করলেন।
\s5
\v 32 পরে শমূয়েল বললেন, “তোমরা অমালেকীয়দের রাজা অগাগকে আমার কাছে নিয়ে এস।” তাতে অগাগ আনন্দ মনে শমূয়েলের কাছে আসলেন, তিনি ভাবলেন মৃত্যুর যন্ত্রণা এখন আর নেই।
\v 33 কিন্তু শমূয়েল বললেন, “তোমার তলোয়ারে যেমন অনেক স্ত্রীলোক সন্তানহারা হয়েছে, তেমনি সেই সব স্ত্রীলোকদের মধ্যে তোমার মা-ও সন্তানহারা হবে।” তখন শমূয়েল গিল্‌গলে সদাপ্রভুর সামনে অগাগকে টুকরো টুকরো করে কেটে ফেললেন।
\s5
\v 34 তারপর শমূয়েল রামায় চলে গেলেন আর শৌল শৌলের গিবিয়ায় তাঁর নিজের বাড়িতে গেলেন।
\v 35 শমূয়েল যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন তিনি শৌলের সঙ্গে আর দেখা করলেন না। শমূয়েল শৌলের জন্য দুঃখ করতেন। আর সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের উপর শৌলকে রাজা করেছিলেন বলে অনুশোচনা করলেন।
\s5
\c 16
\ms শমূয়েল দায়ূদকে অভিষেক করেন৷
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন, “তুমি আর কতদিন শৌলের জন্য দুঃখ করবে? আমি তো তাঁকে ইস্রায়েলীয়দের রাজা হিসাবে অগ্রাহ্য করেছি। তুমি তোমার শিঙায় তেল ভর, যাও, আমি তোমাকে বৈৎলেহমীয় যিশয়ের কাছে পাঠাচ্ছি। কারণ তার ছেলেদের মধ্য থেকে আমি আমার জন্য একজন রাজাকে দেখে রেখেছি।”
\s5
\v 2 শমূয়েল বললেন, “আমি কি করে যাব? শৌল যদি এই কথা শোনে তাহলে আমাকে মেরে ফেলবে।” সদাপ্রভু বললেন, “তুমি একটা বাছুর তোমার সঙ্গে নিয়ে যাও বলবে, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে করতে করতে এসেছি।
\v 3 আর যিশয়কে সেই যজ্ঞে নিমন্ত্রণ করবে, তারপরে তোমাকে যা করতে হবে তা আমি বলে দেব এবং আমি তোমার কাছে যার নাম বলব, তুমি তাকেই আমার উদ্দেশ্যে অভিষেক করবে।”
\s5
\v 4 পরে শমূয়েল সদাপ্রভুর সেই কথামতই কাজ করলেন, তিনি বৈৎলেহমে উপস্থিত হলেন। তখন গ্রামের প্রাচীন নেতারা ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসলেন, আর বললেন, “আপনি শান্তিতে এসেছেন তো?”
\v 5 তিনি বললেন, “শান্তির সঙ্গেই এসেছি, আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করতে এসেছি। তোমরা নিজেদের পবিত্র করে আমার সঙ্গে যজ্ঞে এস।” আর তিনি যিশয় ও তাঁর ছেলেদের পবিত্র করে যজ্ঞে নিমন্ত্রণ করলেন।
\s5
\v 6 পরে তাঁরা এলে তিনি ইলীয়াবকে দেখে মনে মনে ভাবলেন নিশ্চয়ই সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তি তাঁর সামনে এসেছে।
\v 7 কিন্তু সদাপ্রভু শমূয়েলকে বললেন, “তার চেহারা বা সে কতটা লম্বা তা তুমি দেখো না, কারণ আমি তাকে অগ্রাহ্য করেছি। কারণ মানুষ যা দেখে তা কিছু নয়, যেহেতু মানুষ যা দেখতে পায় তাই দেখে কিন্তু সদাপ্রভু হৃদয় দেখেন।”
\s5
\v 8 তারপর যিশয় অবীনাদবকে ডেকে শমূয়েলের সামনে দিয়ে যেতে বললেন। শমূয়েল বললেন, “সদাপ্রভু একেও বেছে নেন নি।”
\v 9 পরে যিশয় শম্মকে তাঁর সামনে দিয়ে যেতে বললেন; কিন্তু শমূয়েল বললেন, “সদাপ্রভু একেও বেছে নেন নি।”
\v 10 এইভাবে যিশয় তাঁর সাতটি ছেলেকে শমূয়েলের সামনে দিয়ে যেতে বললেন। পরে শমূয়েল যিশয়কে বললেন, “সদাপ্রভু এদের কাউকেই বেছে নেন নি।”
\s5
\v 11 পরে শমূয়েল যিশয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “এরা ছাড়া কি তোমার আর ছেলে নেই?” তিনি বললেন, “সবচেয়ে ছোটটি বাকী আছে; সে ভেড়া চরাচ্ছে।” তখন শমূয়েল বললেন, “লোক পাঠিয়ে তাঁকে ডেকে নিয়ে এস। সে না এলে আমরা খেতে বসব না।”
\v 12 পরে তিনি লোক পাঠিয়ে তাঁকে আনালেন। তাঁর গায়ের রং ছিল লালচে, সুন্দর চোখ দুটো এবং তাঁকে দেখতে সুন্দর ছিল। তখন সদাপ্রভু বললেন, “ওঠ, একেই অভিষেক কর, কারণ এ সেই ব্যক্তি।”
\s5
\v 13 আর শমূয়েল তেলের শিঙা নিয়ে তাঁর ভাইদের মধ্যে তাঁকে অভিষেক করলেন। আর সেই দিন থেকে সদাপ্রভুর আত্মা দায়ূদের উপর এলেন। পরে শমূয়েল উঠে রামায় চলে গেলেন।
\s5
\v 14 তখন সদাপ্রভুর আত্মা শৌলকে ত্যাগ করে ছিলেন, আর সদাপ্রভুর কাছ থেকে একটা মন্দ আত্মা এসে তাঁকে কষ্ট দিতে লাগল।
\v 15 তখন শৌলের কর্মচারীরা তাঁকে বলল, “দেখুন ঈশ্বরের কাছ থেকে এক মন্দ আত্মা এসে আপনাকে কষ্ট দিচ্ছে।
\v 16 আমাদের প্রভু আদেশ দিন, যেন আপনার সামনে উপস্থিত এই দাসেরা একজন ভাল বীণা বাজাতে পারে এমন লোকের খোঁজ করবে, পরে যখন সেই মন্দ আত্মা ঈশ্বরের কাছ থেকে আপনার উপর আসবে তখন সেই ব্যক্তি হাত দিয়ে বীণা বাজালে আপনি আরাম বোধ করবেন।”
\s5
\v 17 তখন শৌল তাঁর দাসদের আদেশ দিলেন, বললেন, “ভাল, তোমরা একজন ভাল বীণা বাজাতে পারে এমন লোকের খোঁজ করে আমার কাছে তাকে নিয়ে এস।”
\v 18 যুবকদের একজন বলল, “আমি বৈৎলেহমে যিশয়ের এক ছেলেকে দেখেছি; সে ভাল বীণা বাজায়। সে একজন বলবান বীর এবং যোদ্ধা, সে সুন্দর করে কথা বলতে পারে ও দেখতেও সুন্দর, আর সদাপ্রভু তার সঙ্গে আছেন।”
\v 19 পরে শৌল যিশয়ের কাছে দূত পাঠিয়ে বললেন, তোমার ছেলে দায়ূদ, যে ভেড়া চড়াচ্ছে, তাকে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও।
\s5
\v 20 তখন যিশয় একটা গাধার পিঠে রুটি, এক থলি আঙুর-রস এবং একটা ছাগলের বাচ্চা তার ছেলে দায়ূদকে দিয়ে শৌলের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
\v 21 পরে দায়ূদ শৌলের কাছে এসে তাঁর সামনে দাঁড়ালে তিনি তাঁকে খুবই ভালবাসতে লাগলেন, আর তিনি তাঁর একজন অস্ত্র বহনকারী হলেন।
\s5
\v 22 পরে শৌল যিশয়কে বলে পাঠালেন, “অনুরোধ করি দায়ূদকে আমার সামনে দাঁড়াতে দাও, কারণ সে আমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়েছে।”
\v 23 পরে ঈশ্বরের কাছ থেকে যখন সেই মন্দ আত্মা শৌলের কাছে আসত, তখন দায়ূদ বীণা নিয়ে বাজাতেন, তাতে শৌলের ভাল লাগত এবং তিনি শান্তি পেতেন এবং সেই মন্দ আত্মা তাঁকে ছেড়ে চলে যেত।
\s5
\c 17
\ms দায়ূদ গলিয়াৎ বীরকে বধ করেন৷
\p
\v 1 পরে পলেষ্টীয়েরা যুদ্ধ করবার জন্য সৈন্য জড় করে যিহুদার অধীনে থাকা সোখোতে একত্র হল ও সোখোর এবং অসেকার মাঝে এফসদম্মীমে শিবির স্থাপন করলেন৷
\s5
\v 2 আর শৌল ও ইস্রায়েলের লোকেরা এক হয়ে এলার উপত্যকায় শিবির তৈরি করে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে সৈন্য সাজাল।
\v 3 এইভাবে পলেষ্টীয়েরা এক দিকের পাহাড়ে ও ইস্রায়েল অন্য দিকের পাহাড়ে দাঁড়ালো; দুই দলের মাঝে একটি উপত্যকা ছিল।
\s5
\v 4 পরে গাতের এক বীর পলেষ্টীয়দের শিবির থেকে বের হল, তার নাম গলিয়াৎ, সে লম্বায় সাড়ে ছয় হাত৷
\v 5 তার মাথায় পিতলের শিরস্ত্রান ছিল এবং আঁশের মত বর্ম তার গায়ে ছিল; সেই বর্ম পিতলের, তার ওজন পাঁচ হাজার শেকল (ষাট কেজি)।
\s5
\v 6 তাঁর পা পিতল দিয়ে ঢাকা ছিল, আর তার কাঁধে পিতলের বর্শা ছিল।
\v 7 তার বর্শার লাঠিটা ছিল তাঁতীদের লম্বা লাঠির মত ও বর্শার লোহার ফলাটার ওজন ছিল ছয়শো শেকল (সাত কেজি দুশো গ্রাম) এবং তার ঢাল বহনকারী তার আগে আগে যেত।
\s5
\v 8 সে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে ইস্রায়েলের সৈন্যদলকে লক্ষ্য করে বলল, “তোমরা কেন যুদ্ধের জন্য সৈন্য সাজাতে বার হয়ে এসেছ? আমি কি পলেষ্টীয় না, আর তোমরা কি শৌলের দাস না? তোমাদের পক্ষ থেকে তোমরা একজনকে বেছে নাও; সে আমার কাছে নেমে আসুক।
\v 9 যদি সে আমার সঙ্গে যুদ্ধ করে জয়লাভ করে, আমাকে মেরে ফেলতে পারে, তাহলে আমরা তোমাদের দাস হব; কিন্তু যদি আমি তাকে হারিয়ে দিয়ে মেরে ফেলতে পারি, তবে তোমরা আমাদের দাস হবে ও আমাদের দাসত্ব করবে।”
\s5
\v 10 সেই পলেষ্টীয় আরও বলল, “আজ আমি ইস্রায়েলের সৈন্যদলকে টিটকারী দিয়ে বলছি, আমার সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য তোমরা একজনকে দাও।”
\v 11 তখন শৌল ও সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা সেই পলেষ্টীয়ের এই সব কথা শুনে হতাশ ও ভীষণ ভয় পেলেন।
\s5
\v 12 দায়ূদ বৈৎলেহম-যিহূদায় বসবাসকারী সেই ইফ্রাথীয় পুরুষের ছেলে যার নাম যিশয়; তাঁর আটটি ছেলে ছিল। শৌলের রাজত্বের সময়ে তিনি বৃদ্ধ, লোকেদের মধ্য তিনি অনেক বয়স্ক ছিলেন।
\v 13 সেই যিশয়ের বড় তিন ছেলে শৌলের সঙ্গে যুদ্ধে গিয়েছিল। যে তিনজন যুদ্ধে গিয়েছিল তাদের মধ্যে বড়টির নাম ইলীয়াব, দ্বিতীয়টির নাম অবীনাদব এবং তৃতীয়টির নাম শম্ম।
\s5
\v 14 দায়ূদই ছিলেন সবার ছোট; আর সেই তিনজন শৌলের সঙ্গে গিয়েছিল,
\v 15 কিন্তু দায়ূদ শৌলের কাছ থেকে তাঁর বাবার ভেড়া চরাবার জন্য বৈৎলেহমে যাতায়াত করতেন।
\v 16 আর সেই পলেষ্টীয় চল্লিশ দিন পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যার সময় এগিয়ে এসে নিজেকে দেখাত।
\s5
\v 17 আর যিশয় তাঁর ছেলে দায়ূদকে বললেন, “তুমি তোমার ভাইদের জন্য এক ঐফা ভাজা শস্য আর এই দশটা রুটি নিয়ে তাড়াতাড়ি শিবিরে ভাইদের কাছে যাও,
\v 18 আর এই দশ তাল পনীর তাদের হাজারপতিদের জন্য নিয়ে যাও এবং তোমার ভাইয়েরা কেমন আছে তা দেখে এস, আর তাদের কাছ থেকে কোনো একটা চিহ্ন নিয়ে এস।
\s5
\v 19 শৌল ও তোমার ভাইয়েরা আর সমস্ত ইস্রায়েল এলা উপত্যকায় আছে এবং পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করছে।”
\v 20 দায়ূদ ভোরে উঠেই অন্য একজন রাখালের হাতে তাঁর ভেড়ার পালের ভার দিলেন এবং তারপর যিশয়ের আদেশ মত তিনি ঐ সব জিনিস নিয়ে চলে গেলেন। তিনি যখন ছাউনির কাছে পৌঁছালেন তখন ইস্রায়েলীয় সৈন্যেরা যুদ্ধে যাওয়ার জন্য বার হচ্ছিল এবং যুদ্ধের জন্য চিত্কার করছিল।
\v 21 পরে ইস্রায়েলীয়েরা ও পলেষ্টীয়েরা যুদ্ধ করবার জন্য মুখোমুখি তাদের সৈন্য সাজাল।
\s5
\v 22 তখন দায়ূদ তাঁর জিনিসগুলো মাল-রক্ষকের কাছে রেখে দৌড়ে সৈন্যদলের মধ্যে ঢুকে তাঁর ভাইদের মঙ্গল জিজ্ঞাসা করলেন।
\v 23 তিনি যখন তাঁদের সঙ্গে কথা বলছিলেন, সেই সময়ে গাৎ-নিবাসী সেই পলেষ্টীয় বীর গলিয়াৎ তার সৈন্যদল থেকে বের হয়ে আগের মতই কথা বলতে লাগল, আর দায়ূদ তা শুনলেন।
\v 24 কিন্তু ইস্রায়েলীয় সৈন্যেরা সবাই ঐ লোকটিকে দেখে তার সামনে থেকে পালিয়ে গেল কারণ তারা ভীষণ ভয় পেয়েছিল।
\s5
\v 25 আর ইস্রায়েলের লোকেরা বলাবলি করছিল, “ঐ যে লোকটা বার হয়ে আসে, ওকে তোমরা দেখেছ তো? সে ইস্রায়েলীয়দের টিটকারী দিতে আসে। ঐ একে যে মেরে ফেলতে পারবে রাজা তাকে প্রচুর ধন-সম্পত্তি দেবেন ও তাকে তাঁর মেয়ে দেবেন আর ইস্রায়েল দেশে তার পরিবারকে খাজনা থেকে মুক্তি দেবেন।”
\s5
\v 26 তখন যে লোকেরা দায়ূদের কাছে দাঁড়িয়ে ছিল, তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “যে এই পলেষ্টীয়কে মেরে ফেলে ইস্রায়েলীয়দের উপর থেকে এই অসম্মান দূর করবে তার প্রতি কি করা হবে? এই অচ্ছিন্নত্বক্ পলেষ্টীয়টা কে, যে জীবন্ত ঈশ্বরের সৈন্যদলকে টিটকারী দেয়?”
\v 27 তাতে লোকেরা যা বলাবলি করছিল সেইমতই তাঁকে জানানো হল যে, ওকে যে মেরে ফেলবে সে কি কি পুরুস্কার পাবে।
\s5
\v 28 সেই লোকদের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তার সময়ে তাঁর বড় ভাই ইলীয়াব সব শুনলেন; তাই ইলীয়াব দায়ূদের উপর রাগে জ্বলে উঠে বললেন, “তুই কেন এখানে নেমে এসেছিস? মরু-এলাকায় ভেড়াগুলো কার কাছে রেখে এসেছিস? তোর অহংকার ও তোর মনের দুষ্টতা আমি জানি। তুই যুদ্ধ দেখতে এসেছিস,”
\v 29 দায়ূদ বললেন, “আমি কি করলাম? এটা কি একটা প্রশ্ন নয়?”
\v 30 পরে তিনি অন্য লোকের কাছে গিয়ে তাকে সেই একই কথা জিজ্ঞাসা করলেন আর লোকেরা তাঁকে আগের মতই উত্তর দিল।
\s5
\v 31 তখন দায়ূদ যা যা বলছিলেন তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ল ও শৌলের কাছে তাঁর বিষয়ে জানান হল। তাতে তিনি তাঁকে ডেকে পাঠালেন।
\v 32 তখন দায়ূদ শৌলকে বললেন, “ওকে দেখে কারো হৃদয় হতাশ না হোক; আপনার এই দাস গিয়ে এই পলেষ্টীয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করবে।”
\v 33 তখন শৌল দায়ূদকে বললেন, “তুমি ঐ পলেষ্টীয়টার সঙ্গে গিয়ে যুদ্ধ করতে পারবে না, কারণ তুমি একটি ছোট ছেলে, আর ঐ পলেষ্টীয়টা অল্প বয়স থেকেই যোদ্ধা।”
\s5
\v 34 দায়ূদ শৌলকে বললেন, “আপনার এই দাস তার বাবার ভেড়ার পাল রক্ষা করছিল তখন একটি সিংহ ও একটি ভাল্লুক এসে পাল থেকে ভেড়া ধরে নিল;
\v 35 তখন আমি তার পিছনে পিছনে দৌড়ে গিয়ে তাকে মেরে তার মুখ থেকে ভেড়াটাকে রক্ষা করেছি। পরে সে উঠে যখন আমাকে রুখে দাঁড়াত তখন আমি তার দাড়ি ধরে আঘাত করে সেটাকে মেরে ফেললাম।
\s5
\v 36 আপনার এই দাস সেই সিংহ, ভাল্লুক দুটোকেই মেরে ফেলেছে, আর এই অচ্ছিন্নত্বক্ পলেষ্টীয়টা ঐগুলোর মধ্য একটার মত হবে, কারণ সে জীবন্ত ঈশ্বরের সৈন্যদলকে টিটকারী দিয়েছে।”
\s5
\v 37 দায়ূদ বললেন, “সদাপ্রভু, যিনি আমাকে সিংহ আর ভাল্লুকের থাবা থেকে রক্ষা করেছেন, তিনিই আমাকে ঐ পলেষ্টীয়টার হাত থেকেও রক্ষা করবেন।” তখন শৌল দায়ূদকে বললেন, “যাও, সদাপ্রভু তোমার সহবর্ত্তী হবেন।”
\v 38 পরে শৌল তাঁর নিজের পোশাক দায়ূদকে পরিয়ে দিলেন। তিনি তাঁর মাথায় পিতলের শিরস্ত্র আর গায়ে বর্ম্ম দিলেন।
\s5
\v 39 তখন দায়ূদ তাঁর পোশাকের উপরে শৌলের তলোয়ারটা বেঁধে হাঁটতে চেষ্টা করলেন, কারণ আগে তিনি তা কখনও অভ্যাস করেন নি। তখন দায়ূদ শৌলকে বললেন, “এই সব পরে আমি যেতে পারব না, কারণ এর আগে আমি তা কখনও অভ্যাস করিনি।” পরে দায়ূদ সেগুলো খুলে ফেললেন।
\v 40 তারপর তিনি তাঁর লাঠিখানা হাতে নিলেন এবং নদীর স্রোতের মধ্য থেকে পাঁচটা মসৃণ পাথর বেছে নিয়ে রাখালের অর্থাৎ তাঁর চামড়ার থলির মধ্যে রাখলেন। তারপর তাঁর ফিংগাটা নিয়ে তিনি সেই পলেষ্টীয়ের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলেন,
\s5
\v 41 আর সেই পলেষ্টীয়ও দায়ূদের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। তার ঢাল বহনকারী ঢাল নিয়ে তার সামনে সামনে আসছিল।
\v 42 সেই পলেষ্টীয় দায়ূদের দিকে ভাল করে তাকিয়ে দেখে তাকে তুচ্ছ করল, কারণ দায়ূদের বয়স অল্প ছিল। তাঁর গায়ের রং লালচে এবং চেহারা সুন্দর ছিল।
\v 43 পরে ঐ পলেষ্টীয় দায়ূদকে বলল, “আমি কি কুকুর যে, তুই লাঠি নিয়ে আমার কাছে আসছিস?” আর সেই পলেষ্টীয় তার দেব-দেবতার নাম করে দায়ূদকে অভিশাপ দিতে লাগল।
\s5
\v 44 পলেষ্টীয় দায়ূদকে আরও বলল, “তুই আমার কাছে আয়; আমি তোর মাংস আকাশের পাখী আর বুনো পশুদের খেতে দিই।”
\v 45 তখন দায়ূদ সেই পলেষ্টীয়কে বললেন, “তুমি আমার কাছে এসেছ তলোয়ার, বর্শা আর ছোরা নিয়ে, কিন্তু আমি তোমার কাছে যাচ্ছি বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলীয় সৈন্যদলের ঈশ্বরের নাম নিয়ে, যাঁকে তুমি টিটকারী দিয়েছ।
\s5
\v 46 আজ সদাপ্রভু তোমাকে আমার হাতে তুলে দেবেন। আমি তোমাকে আঘাত করব আর তোমার মাথা কেটে নেব। আজকেই আমি পলেষ্টীয় সৈন্যদের মৃতদেহ আকাশের পাখী ও পৃথিবীর পশুদের খেতে দেব। তা দেখে পৃথিবীর সবাই জানতে পারবে যে, ইস্রায়েলীয়দের পক্ষে একজন ঈশ্বর আছেন।
\v 47 যে সমস্ত লোক আজ এখানে রয়েছে তারাও জানতে পারবে যে, সদাপ্রভু কোন তলোয়ার বা বর্শা দিয়ে উদ্ধার করেন না, কারণ এই যুদ্ধ সদাপ্রভুর; আর তিনি আমাদের হাতে তোমাদের তুলে দেবেন।”
\s5
\v 48 ঐ পলেষ্টীয় যখন দায়ূদকে আক্রমণ করবার জন্য এগিয়ে আসতে লাগল তখন দায়ূদও তার কাছে যাবার জন্য বিপক্ষের সৈন্যদলের দিকে দৌড়ে গেলেন,
\v 49 আর তাঁর থলি থেকে একটা পাথর নিয়ে ফিংগাতে বসিয়ে ঘোরাতে ঘোরাতে সেই পলেষ্টীয়ের কপালে সেটা ছুঁড়ে মারলেন। পাথরটা তার কপালে বসে গেলে সে মুখ থুবড়ে মাটিতে পড়ে গেল।
\s5
\v 50 এইভাবে দায়ূদ শুধু একটা ফিংগা আর একটা পাথর দিয়ে সেই পলেষ্টীয়কে হারিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর হাতে কোন তলোয়ার না থাকলেও তিনি সেই পলেষ্টীয়কে আঘাত করেছিলেন এবং তাকে মেরে ফেলেছিলেন।
\v 51 তখন দায়ূদ দৌড়ে গিয়ে সেই পলেষ্টীয়ের পাশে দাঁড়ালেন এবং তারই তলোয়ার খাপ থেকে টেনে বের করে নিয়ে তাকে মেরে ফেললেন এবং তার মাথাটা কেটে নিলেন। পলেষ্টীয়েরা যখন দেখল যে, তাদের প্রধান বীর মরে গেছে তখন তারা পালাতে শুরু করল।
\s5
\v 52 তখন ইস্রায়েল আর যিহূদার লোকেরা চিৎকার করে উঠল এবং গয় ও ইক্রোণের ফটক পর্যন্ত পলেষ্টীয়দের তাড়া করে নিয়ে গেল। পলেষ্টীয়দের আহত লোকেরা গাৎ ও ইক্রোণ পর্যন্ত শারয়িমের পথে পথে পড়ে রইল।
\v 53 পরে ইস্রায়েলীয়েরা পলেষ্টীয়দের পিছনে তাড়া করা বন্ধ করে ফিরে এসে তাদের ছাউনি লুঠ করতে লাগল।
\v 54 পরে দায়ূদ সেই পলেষ্টীয় মাথাটা যিরূশালেমে নিয়ে গেলেন, আর তার অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধের পোশাক তিনি নিজের তাঁবুতে রাখলেন।
\s5
\v 55 দায়ূদকে সেই পলেষ্টীয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করতে যেতে দেখে শৌল তাঁর সেনাপতি অব্‌নেরকে বলেছিলেন, “আচ্ছা অব্‌নের, এই যুবকটি কার ছেলে?” উত্তরে অবনের বলেছিলেন, “মহারাজ, আপনার প্রাণের দিব্য দিয়ে বলছি যে, আমি জানি না।”
\v 56 তখন রাজা বলেছিলেন, “তুমি খোঁজ নাও যুবকটি কার ছেলে।”
\s5
\v 57 তারপর দায়ূদ যখন সেই পলেষ্টীয়কে মেরে ফিরে আসছিলেন তখন অব্‌নের তাঁকে নিয়ে শৌলের কাছে গেলেন। তাঁর হাতে ঐ পলেষ্টীয়ের মুণ্ডটা ছিল।
\v 58 শৌল তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যুবক, তুমি কার ছেলে?” দায়ুদ বললেন, “আমি আপনার দাস বৈৎলেহমীয় যিশয়ের ছেলে।”
\s5
\c 18
\p
\v 1 শৌলের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা শেষ হয়ে গেলে পর যোনাথনের প্রাণ আর দায়ূদের প্রাণ যেন একসঙ্গে বাঁধা পড়ে গেল এবং যোনাথন দায়ূদকে নিজের মতই ভালবাসতে লাগলেন।
\v 2 আর শৌল সেই দিন তাঁকে গ্রহণ করলেন; তাঁর বাবার বাড়িতে ফিরে যেতে দিলেন না।
\s5
\v 3 দায়ূদকে নিজের মত ভালবাসতেন বলে যোনাথন তাঁর সঙ্গে একটা চুক্তি করলেন।
\v 4 আর যোনাথন তাঁর গায়ের উপরকার লম্বা জামা খুলে দায়ূদকে দিলেন, আর তাঁর যুদ্ধের পোশাক, এমন কি, তাঁর তলোয়ার, ধনুক ও কোমর-বাঁধনিও তাঁকে দিলেন।
\s5
\v 5 আর শৌল দায়ুদকে যেখানে পাঠাতেন দায়ূদ সেখানে যেতেন এবং বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে সফলতা লাভ করতেন। সেইজন্য শৌল তাঁকে সৈন্যদলের একজন সেনাপতি করলেন। এতে সমস্ত লোক এবং শৌলের কর্মচারীরাও খুশী হল।
\s5
\v 6 দায়ূদ সেই পলেষ্টীয় গলিয়াত্‌কে মেরে ফেলবার পর লোকেরা যখন বাড়ী ফিরে আসছিল তখন ইস্রায়েলের সমস্ত গ্রাম ও শহর থেকে মেয়েরা নেচে নেচে আনন্দের গান গেয়ে এবং খঞ্জনী ও তিনতারা বাজাতে বাজাতে রাজা শৌলকে শুভেচ্ছা জানাতে বের হয়ে আসল।
\v 7 তারা নাচতে নাচতে এই গান গাইছিল, “শৌল মারলেন হাজার হাজার, আর দায়ূদ মারলেন অযুত অযুত।”
\s5
\v 8 তাতে শৌল খুব রেগে গেলেন। তিনি অসন্তুষ্ট হয়ে বললেন, “ওরা দায়ূদের বিষয়ে অযুত অযুতের কথা বলল অথচ আমার বিষয়ে বলল হাজার হাজার। এর পর রাজ্য ছাড়া দায়ূদের আর কি পাওয়ার বাকী রইল?”
\v 9 সেই দিন থেকে শৌল দায়ূদকে হিংসার চোখে দেখতে লাগলেন।
\s দায়ূদের প্রতি শৌলের হিংসা
\p
\s5
\v 10 পর দিন ঈশ্বরের কাছ থেকে একটা মন্দ আত্মা শৌলের উপর আসল। তিনি নিজের বাড়ীর মধ্যে আবোল-তাবোল কথাবার্তা বলতে লাগলেন, আর দায়ূদ অন্যান্য দিনের মত তাঁর সামনে বীণা বাজাতে লাগলেন। তখন শৌলের হাতে ছিল একটা বর্শা।
\v 11 শৌল বললেন, “আমি দায়ূদকে দেওয়ালের সঙ্গে গেঁথে ফেলব।” কিন্তু দায়ূদ দুইবার তা এড়িয়ে গেলেন।
\v 12 শৌল দায়ূদকে ভয় করতে লাগলেন, কারণ সদাপ্রভু দায়ূদের সঙ্গে ছিলেন কিন্তু শৌলকে তিনি ছেড়ে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 13 সেইজন্য শৌল দায়ূদকে নিজের কাছ থেকে সরিয়ে দিলেন এবং তাঁকে সৈন্যদলে হাজারপতির পদে নিযুক্ত করলেন। তাতে তিনি লোকেদের সক্ষাতে ভেতরে বাইরে যাতায়াত করতে লাগলেন।
\v 14 আর দায়ূদ তাঁর সমস্ত পথে বুদ্ধির পরিচয় দিতেন এবং সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
\s5
\v 15 তিনি বেশ সফলতা লাভ করেছেন দেখে শৌল তাঁর বিষয়ে ভয় পেলেন।
\v 16 কিন্তু ইস্রায়েল ও যিহূদার সমস্ত লোক দায়ূদকে ভালবাসত, কারণ তিনি তাদের সাক্ষাতে ভেতরে বাইরে যাতায়াত করতেন।
\s5
\v 17 পরে শৌল দায়ূদকে বললেন, “আমার বড় মেয়ে মেরবকে আমি তোমার সঙ্গে বিয়ে দেব। তুমি কেবল আমার পক্ষে থেকে বীরের মত সদাপ্রভুর জন্য যুদ্ধ করবে।” কিন্তু শৌলের বললেন, “আমার হাত তাঁর উপর না উঠুক,” কিন্তু পলেষ্টীয়দের হাত তাঁর উপরে উঠুক।
\v 18 আর দায়ূদ শৌলকে বললেন, “আমিই বা কে আর আমার পরিবার ও ইস্রায়েলের মধ্যে আমার বাবার বংশই বা এমন কি যে, আমি রাজার জামাই হই?”
\s5
\v 19 কিন্তু দায়ূদের সঙ্গে শৌলের মেয়ে মেরবের বিয়ের সময় উপস্থিত হলে দেখা গেল দায়ূদকে বাদ দিয়ে মহোলাৎ গ্রামের অদ্রীয়েলের সঙ্গে মেরবের বিয়ে দেওয়া হয়ে গেছে।
\s5
\v 20 তবে শৌলের আর এক মেয়ে মীখল দায়ূদকে ভালবাসতেন। লোকেরা যখন সেই কথা শৌলকে জানাল তখন শৌল খুশীই হলেন।
\v 21 তিনি মনে মনে বললেন, “আমি দায়ূদকে আমার মেয়ে দেব যাতে মেয়েটি তার কাছে একটা ফাঁদ হয় আর পলেষ্টীয়েরা তার বিরুদ্ধে ওঠে।” এই ভেবে শৌল দায়ূদকে বললেন, “এই দ্বিতীয় বার আমার জামাই হও।”
\s5
\v 22 শৌল তাঁর কর্মচারীদের এই আদেশ দিলেন, “তোমরা গোপনে দায়ূদের সঙ্গে আলাপ করে তাকে এই কথা বল, ‘রাজা আপনার উপর খুশী হয়েছেন, আর তাঁর কর্মচারীরা সবাই আপনাকে পছন্দ করে। তাই আপনি এখন রাজার জামাই হন’।”
\s5
\v 23 তারা এই সব কথা দায়ূদকে জানালে পর তিনি বললেন, “রাজার জামাই হওয়াটা কি তোমরা একটা সামান্য ব্যাপার বলে মনে কর? আমি তো গরীব, একজন সামান্য লোক।”
\v 24 দায়ূদ যা বলেছিলেন শৌলের কর্মচারীরা তা শৌলকে বলল।
\s5
\v 25 তখন শৌল বললেন, “তোমরা দায়ূদকে বল যে, রাজা কেবল তাঁর শত্রুদের উপর প্রতিশোধ হিসাবে একশো জন পলেষ্টীয়ের পুরুষাংঙ্গের সামনের চামড়া চান, অন্য কোনো পণ চান না।” শৌল ভাবলেন পলেষ্টীয়দের হাতে এবার দায়ূদকে শেষ করা যাবে।
\v 26 কর্মচারীরা দায়ূদকে সব কথা জানালে পর দায়ূদ খুশী হয়ে রাজার জামাই হতে রাজী হলেন।
\s5
\v 27 তখন সময় সম্পূর্ণ হয় নি, দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা গিয়ে দুইশো পলেষ্টীয়কে মেরে ফেললেন। তারপর দায়ূদ রাজার জামাই হবার জন্য সেই সব পলেষ্টীয়দের পুরুষাংঙ্গের সামনের চামড়া এনে রাজাকে দিলেন। তখন শৌল তাঁর সঙ্গে মীখলের বিয়ে দিলেন।
\v 28 শৌল যখন বুঝতে পারলেন যে, সদাপ্রভু দায়ূদের সঙ্গে আছেন এবং তাঁর মেয়ে মীখলও দায়ূদকে ভালবাসে,
\v 29 তখন দায়ূদের প্রতি তাঁর ভয় আরও বেড়ে গেল। আর সবসময়ই তিনি দায়ূদের শত্রু হয়ে থাকলেন।
\s5
\v 30 এর পর পলেষ্টীয়দের সেনাপতিরা যুদ্ধ করবার জন্য বেরিয়ে আসতে লাগল। যতবার তারা বেরিয়ে আসল ততবারই শৌলের অন্যান্য কর্মচারীদের চেয়ে দায়ূদ বেশী বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে সফলতা লাভ করলেন। এতে তাঁর খুব সুনাম হল।
\s5
\c 19
\p
\v 1 পরে শৌল তাঁর ছেলে যোনাথনকে ও সমস্ত কর্মচারীদের বললেন যেন তারা দায়ূদকে মেরে ফেলে। কিন্তু দায়ূদের প্রতি শৌলের ছেলে যোনাথনের খুব টান ছিল।
\v 2 যোনাথন দায়ূদকে বললেন, “আমার বাবা শৌল তোমাকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করছেন। শোন, তুমি কাল সকালে সাবধানে থেকো। একটা গোপন জায়গায় গিয়ে লুকিয়ে থেকো।
\v 3 তুমি যে মাঠে থাকবে, আমি আমার বাবাকে নিয়ে সেখানে গিয়ে দাঁড়াব। আর যদি তেমন কিছু জানতে পারি তা তোমাকে জানাব।”
\s5
\v 4 যোনাথন তাঁর বাবা শৌলের কাছে দায়ূদের সুনাম করে বললেন, “মহারাজ, আপনার দাস দায়ূদের বিরুদ্ধে আপনি কোন পাপ করবেন না। সে তো আপনার বিরুদ্ধে কোন পাপ করে নি, বরং সে যা করেছে তাতে আপনার অনেক উপকার হয়েছে।
\v 5 সে তার প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেই পলেষ্টীয়কে মেরে ফেলেছে, আর সদাপ্রভু সমস্ত ইস্রায়েলকে মহাজয় দান করেছেন; আপনি তো তা দেখে খুশী হয়েছিলেন। তবে এখন আপনি অকারণে দায়ূদকে মেরে ফেলে কেন একজন নির্দোষ লোকের রক্তপাত করে তার বিরুদ্ধে পাপ করবেন?”
\s5
\v 6 তখন শৌল যোনাথনের কথা শুনে শপথ করে বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্য তাকে মেরে ফেলা হবে না।”
\v 7 পরে যোনাথন দায়ূদকে ডেকে তাঁকে সমস্ত কথা জানালেন। তিনি তাঁকে শৌলের কাছে নিয়ে গেলেন এবং দায়ূদ আগের মতই শৌলের কাছে থাকলেন।
\s শৌলের কাছ থেকে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন৷
\p
\s5
\v 8 তারপর আবার যখন যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল তখন দায়ূদ বের হয়ে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করতে লাগলেন। তিনি তাদের অনেক লোককে মেরে ফেললেন এবং তারা তাঁর সামনে থেকে পালিয়ে গেল।
\v 9 পরে সদাপ্রভুর কাছ থেকে একটা মন্দ আত্মা শৌলের উপর আসল। শৌল তখন তাঁর ঘরে বসে ছিলেন এবং তাঁর হাতে একটা বর্শা ছিল, আর দায়ূদ বীণা বাজাচ্ছিলেন।
\s5
\v 10 এমন সময় শৌল বর্শা দিয়ে দায়ূদকে দেয়ালে গেঁথে ফেলবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু তিনি শৌলের সামনে থেকে সরে গেলেন বলে বর্শাটা দেয়ালে ঢুকে গেল এবং সেই রাতে দায়ূদ পালিয়ে রক্ষা পেলেন।
\v 11 দায়ূদের উপর নজর রাখবার জন্য শৌল তাঁর বাড়ীতে লোক পাঠিয়ে দিলেন যাতে পরের দিন সকালে তাঁকে মেরে ফেলা যায়। কিন্তু দায়ূদের স্ত্রী মীখল তাঁকে সব কিছু জানিয়ে বললেন, “আজ রাতে তুমি যদি প্রাণ নিয়ে না পালাও তবে কালই তুমি মারা পড়বে।”
\s5
\v 12 আর মীখল দায়ূদকে জানলা দিয়ে নীচে নামিয়ে দিলেন আর তিনি পালিয়ে গিয়ে রক্ষা পেলেন।
\v 13 মীখল তখন পারিবারিক দেবমূর্তিগুলো নিয়ে বিছানায় রাখলেন এবং বিছানার মাথার দিকে দিলেন ছাগলের লোমের একটা বালিশ; তারপর সেগুলো কাপড় দিয়ে ঢেকে দিলেন।
\s5
\v 14 দায়ূদকে ধরবার জন্য শৌল লোক পাঠালে মীখল বললেন, “উনি অসুস্থ।”
\v 15 এই খবর শুনে শৌল দায়ূদকে দেখবার জন্য সেই লোকদেরই আবার পাঠালেন এবং বলে দিলেন, “দায়ূদকে খাট শুদ্ধই নিয়ে এস; আমি তাকে মেরে ফেলব।”
\s5
\v 16 লোকগুলো ঘরে ঢুকে বিছানার উপর সেই দেবমূর্তিগুলো এবং বিছানার মাথার দিকে ছাগলের লোমের বালিশটা দেখতে পেল।
\v 17 পরে শৌল মীখলকে বললেন, “তুমি কেন এইভাবে আমাকে ঠকালে? তুমি আমার শত্রুকে ছেড়ে দেওয়াতে সে পালিয়ে গেছে।” মীখল তাঁকে বললেন, “তিনি বলেছিলেন, ‘আমাকে যেতে দাও৷ আমি কেন শুধু শুধু তোমাকে খুন করব’?”
\s5
\v 18 এদিকে দায়ূদ পালিয়ে গিয়ে প্রাণ বাঁচালেন। তিনি রামায় শমূয়েলের কাছে গেলেন এবং শৌল তাঁর উপর যা যা করেছেন তা সবই তাঁকে জানালেন। এর পর তিনি ও শমূয়েল গিয়ে নায়োতে বাস করতে লাগলেন।
\v 19 পরে কেউ শৌলকে বলল, “দেখুন দায়ূদ রামার নায়োতে আছেন।”
\v 20 তখন দায়ূদকে ধরে আনবার জন্য তিনি লোক পাঠিয়ে দিলেন। সেই লোকেরা গিয়ে দেখল শমূয়েলের অধীনে একদল ভাববাদী যারা ভাববানী বলেন। ঈশ্বরের আত্মা যখন শৌলের লোকদের উপরেও আসলেন তখন তারাও ভাববানী বলতে লাগল।
\s5
\v 21 শৌলকে সেই খবর জানানো হলে তিনি আরও লোক পাঠালেন কিন্তু তারাও গিয়ে ভাববানী প্রচার করতে লাগল। পরে শৌল তৃতীয়বার লোক পাঠালেন আর তারাও গিয়ে ভাববানী প্রচার করতে লাগল।
\v 22 শেষে শৌল নিজেই রামায় গেলেন এবং সেখূতে জল জমা করে রাখবার যে বড় জায়গা ছিল সেখানে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, “শমূয়েল আর দায়ূদ কোথায়?” একজন বলল, “তাঁরা রামার নায়োতে আছেন।” তখন শৌল রামার নায়োতে গেলেন৷
\s5
\v 23 আর ঈশ্বরের আত্মা তাঁর উপরেও এলে তিনি রামার নায়োত উপস্থিত না হওয়া পর্যন্ত ভাববাণী বললেন।
\v 24 আর তিনিও তাঁর পোশাক খুলে ফেলে শমূয়েলের সামনে ভাববাণী বলতে লাগলেন। তিনি সারা দিন ও সারা রাত কাপড়-চোপড় ছাড়াই পড়ে রইলেন। সেইজন্যই লোকে বলে, “শৌলও কি তবে ভাববাদীদের মধ্যে একজন?”
\s5
\c 20
\ms দায়ূদ ও যোনাথনের বন্ধুত্ব৷
\p
\v 1 পরে দায়ূদ রামার নায়োৎ থেকে পালিয়ে যোনাথনের কাছে গেলেন এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি করেছি? আমার দোষ কি? তোমার বাবার বিরুদ্ধে আমি কি পাপ করেছি যে, তিনি আমাকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করেছেন?”
\v 2 যোনাথন বললেন, “এমন না হোক, তুমি মরবে না। দেখ, আমার বাবা আমাকে না জানিয়ে ছোট-বড় কোন কাজই করেন না। তবে এই কথা তিনি আমার কাছ থেকে কেন লুকাবেন? এ হতেই পারে না।”
\s5
\v 3 তাতে দায়ূদ আবার দিব্যি করে বললেন, “তোমার বাবা খুব ভাল করেই জানেন যে, আমি তোমার দৃষ্টিতে অনুগ্রহ পেয়েছি। তাই হয়তো তিনি মনে মনে ভেবেছেন, যোনাথনকে এই বিষয়ে না জানানোই ভাল, যদি সে দুঃখ পায়। কিন্তু জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি এবং তোমার প্রাণের দিব্যি দিয়ে আমি বলছি যে, মৃত্যু আমার কাছ থেকে মাত্র এক পা দূরে।”
\s5
\v 4 যোনাথন দায়ূদকে বললেন, “তোমার প্রাণ যা বলবে আমি তোমার জন্য তা-ই করব।”
\v 5 তখন দায়ূদ যোনাথনকে বললেন, “দেখ, কাল অমাবস্যার উৎসব। রাজার সঙ্গে আমার খেতে বসতেই হবে। কিন্তু তুমি আমাকে যেতে দাও। আমি পরশু সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠের মধ্যে লুকিয়ে থাকব।
\s5
\v 6 যদি তোমার বাবা আমার খোঁজ করেন তবে তুমি তাঁকে বলবে, ‘দায়ূদ বৈৎলেহমে তার বাড়ীতে তাড়াতাড়ি যাবে বলে আমার কাছে মিনতি করে অনুমতি চেয়েছিল, কারণ সেখানে তাদের বংশের জন্য বাৎসরিক যজ্ঞ হচ্ছে।’
\v 7 তিনি যদি বলেন, ‘ভাল, তবে তোমার দাস আমি নিরাপদ; কিন্তু যদি খুব রেগে ওঠেন তবে তুমি জেনো যে, তিনি আমার ক্ষতি করবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন।
\s5
\v 8 তাই তুমি এখন আমার প্রতি বিশ্বস্ত হও, কারণ সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে তুমি আমার সঙ্গে একটা চুক্তি করেছ। আমি যদি দোষ করে থাকি তবে তুমি নিজেই আমাকে মেরে ফেল, তুমি কেন তোমার বাবার কাছে আমাকে নিয়ে যাবে?”
\v 9 যোনাথন বললেন, “তুমি কখনও এমন চিন্তা কোরো না। যদি আমি জানতে পারি যে, আমার বাবা তোমার ক্ষতি করাই স্থির করেছেন, তবে নিশ্চয়ই আমি কি তা তোমাকে জানাব না?”
\s5
\v 10 তখন দায়ূদ বললেন, “এই ব্যাপারে তোমার বাবা যদি তোমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন, তবে কে তা আমাকে জানাবে?”
\v 11 যোনাথন বললেন, “চল, আমরা মাঠে যাই।” এই বলে তাঁরা দুইজনে বের হয়ে একসঙ্গে মাঠে গেলেন।
\s5
\v 12 তারপর যোনাথন দায়ূদকে বললেন, “ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর সদাপ্রভু সাক্ষী, কাল কিম্বা পরশু এই সময়ে আমি আমার বাবার সঙ্গে কথা বলে দেখব। যদি তোমার পক্ষে ভাল বুঝি তবে আমি তখনই লোক পাঠিয়ে তোমাকে জানাব।
\v 13 যদি আমার বাবা তোমার ক্ষতি করতে চান আর আমি তোমাকে না জানাই এবং নিরাপদে তোমাকে পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা না করি তবে সদাপ্রভু যেন আমাকে শাস্তি দেন এবং তার থেকেও বেশি শাস্তি দিন। সদাপ্রভু যেমন আমার বাবার সঙ্গে ছিলেন তেমনি তোমার সঙ্গেও থাকুন।
\s5
\v 14 আমি যদি বেঁচে থাকি তবে সদাপ্রভু যেমন বিশ্বস্ত তেমনি তুমি আমার প্রতি বিশ্বস্ত থেকো। কিন্তু যদি আমি মারা যাই তবে আমার বংশের প্রতিও কোন ত্রুটি কর না
\v 15 চিরকাল বিশ্বস্ত থেকো; এমন কি, সদাপ্রভু যখন পৃথিবীর বুক থেকে দায়ূদের প্রতিটি শত্রুকে শেষ করে দেবেন তখনও বিশ্বস্ত থেকো।”
\v 16 যোনাথন তখন দায়ূদ ও তাঁর বংশধরদের সঙ্গে এই বলে চুক্তি করলেন, “সদাপ্রভু যেন দায়ূদের শত্রুদের উপর প্রতিশোধ গ্রহণ করেন।”
\s5
\v 17 যোনাথন দায়ূদকে নিজের মতই ভালবাসতেন বলে তিনি দায়ূদকে দিয়ে তাঁর প্রতি দায়ূদের ভালবাসার শপথ আবার করিয়ে নিলেন।
\v 18 পরে যোনাথন দায়ূদকে বললেন, “আগামীকাল অমাবস্যার উৎসব। সেখানে তোমার আসন খালি থাকলে তুমি যে নেই তা চোখে পড়বে।
\v 19 তুমি আগে যেখানে লুকিয়ে ছিলে পরশু দিন তাড়াতাড়ি সেখানে গিয়ে এষল নামে বড় পাথরটার কাছে অপেক্ষা কোরো।
\s5
\v 20 আমি যেন কোন কিছু লক্ষ্য করে তীর ছুঁড়ছি এইভাবে সেই পাথরের পাশে তিনটে তীর ছুঁড়ব।
\v 21 তারপর একটা ছেলেকে এই বলে পাঠিয়ে দেব, ‘যাও, তীরগুলো খুঁজে নিয়ে এসো।’ যদি আমি তাকে বলি, ‘তীরগুলো তোমার এদিকে আছে, নিয়ে এস, তাহলে তুমি চলে এসো, কারণ জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি তুমি নিরাপদ, তোমার কোন ভয় নেই।
\s5
\v 22 কিন্তু যদি ছেলেটিকে বলি, ‘তোমার ঐদিকে তীরগুলো রয়েছে, তাহলে তুমি চলে যেয়ো, বুঝবে সদাপ্রভুই তোমাকে চলে যেতে বলছেন।
\v 23 মনে রেখো, তোমার ও আমার মধ্যে এই যে চুক্তি হল সদাপ্রভুই তার চিরকালের সাক্ষী হয়ে রইলেন।”
\s5
\v 24 এর পর দায়ূদ মাঠে গিয়ে লুকিয়ে থাকলেন। এদিকে অমাবস্যার উৎসব উপস্থিত হলে রাজা অন্যান্য বারের মত দেয়ালের পাশে নিজের আসনে খেতে বসলেন।
\v 25 যোনাথন উঠে দাঁড়ালেন যেন অবনের গিয়ে শৌলের পাশে বসতে পারেন। দায়ূদের আসনটা কিন্তু খালি থাকল।
\s5
\v 26 শৌল সেই দিন কিছুই বললেন না, কারণ তিনি ভাবলেন, হয়তো এমন কিছু হয়ে গেছে যাতে দায়ূদ অশুচি হয়েছে; নিশ্চয়ই সে শুচি অবস্থায় নেই।
\v 27 পরের দিন, অর্থাৎ অমাবস্যা-উৎসবের দ্বিতীয় দিনেও দায়ূদের আসনটা খালি পড়ে রইল। তখন শৌল তাঁর ছেলে যোনাথনকে জিজ্ঞাসা করলেন, “যিশয়ের ছেলে খেতে আসে নি কেন? কালও আসে নি, আজও আসে নি।”
\s5
\v 28 যোনাথন উত্তরে বললেন, “দায়ূদ বৈৎলেহমে যাবার অনুমতি চেয়ে আমাকে খুব মিনতি করেছিল।
\v 29 সে আমাকে বলেছিল, ‘দয়া করে আমাকে যেতে দাও; আমাদের বংশের লোকেদের একটা যজ্ঞ আছে এবং আমার ভাই আমাকে সেখানে উপস্থিত থাকতে আদেশ করেছেন। যদি আমার প্রতি তোমার মনে একটু দয়া থাকে তবে আমাকে গিয়ে আমার ভাইদের দেখে আসবার অনুমতি দাও।’ সেইজন্যই সে মহারাজার ভোজে আসে নি।”
\s5
\v 30 এই কথা শুনে শৌল যোনাথনের উপর রেগে আগুন হয়ে গেলেন। তিনি তাঁকে বললেন, “ওরে বিদ্রোহিনী স্ত্রীলোকের জারজ সন্তান! আমি কি জানি না যে, তুই যিশয়ের ছেলের পক্ষ নিয়েছিস্‌ আর তাতে তুই নিজের উপর এবং তোর মায়ের উপর লজ্জা ডেকে এনেছিস?
\v 31 যতদিন যিশয়ের ছেলে এই পৃথিবীতে বেঁচে থাকবে ততদিন তুই স্থির থাকবি না, তোর রাজ্যও স্থির থাকবে না। কাজেই এখনই লোক পাঠিয়ে তাকে আমার কাছে নিয়ে আয়, তাকে মরতেই হবে।”
\s5
\v 32 যোনাথন তাঁর বাবাকে বললেন, “কেন তাকে মরতে হবে? সে কি করেছে?”
\v 33 তখন শৌল যোনাথনকে মেরে ফেলার জন্য বর্শা ছুঁড়লেন। এতে যোনাথন বুঝতে পারলেন, তাঁর বাবা দায়ূদকে মেরে ফেলবেন বলে ঠিক করেছেন।
\v 34 তখন যোনাথন ভীষণ রেগে গিয়ে টেবিল ছেড়ে উঠে গেলেন এবং সেই দিনের ভোজে কিছুই খেলেন না। তাঁর বাবা দায়ূদকে অপমান করেছিলেন বলে তাঁর মনে খুব দুঃখ হল।
\s5
\v 35 দায়ূদের সঙ্গে যোনাথনের যে ব্যবস্থা হয়েছিল সেই অনুসারে পরদিন সকালে যোনাথন বের হয়ে মাঠে গেলেন। তাঁর সঙ্গে একটি ছোট ছেলে ছিল।
\v 36 তিনি ছেলেটিকে বললেন, “আমি যে তীর ছুঁড়ব তুমি দৌড়ে গিয়ে তা খুঁজে আন।” ছেলেটি যখন দৌড়াচ্ছিল তখন তিনি ছেলেটিকে ছাড়িয়ে সামনের দিকে তীর ছুঁড়লেন।
\v 37 যোনাথনের তীরটা যেখানে পড়েছিল ছেলেটি সেখানে গেলে পর তিনি তাকে ডেকে বললেন, “তোমার ঐদিকে কি তীর নেই।”
\s5
\v 38 তারপর তিনি চেঁচিয়ে বললেন, “শিগ্‌গির দৌড়ে যাও, থেমো না।” ছেলেটি তীর কুড়িয়ে নিয়ে তার মনিবের কাছে ফিরে আসল।
\v 39 ছেলেটি এই সব বিষয়ের কিছুই বুঝল না, বুঝলেন কেবল যোনাথন আর দায়ূদ।
\v 40 এর পর যোনাথন তাঁর তীর-ধনুক ছেলেটির হাতে দিয়ে বললেন, “তুমি এগুলো নিয়ে শহরে ফিরে যাও।”
\s5
\v 41 ছেলেটি চলে গেলে পর দায়ূদ সেই পাথরটার দক্ষিণ দিক থেকে উঠে আসলেন। তিনি যোনাথনের সামনে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে তিনবার তাঁকে প্রণাম করলেন। তারপর তাঁরা একে অন্যকে চুম্বন করে কাঁদতে লাগলেন, তবে দায়ূদই বেশী কাঁদলেন।
\v 42 পরে যোনাথন দায়ূদকে বললেন, “তুমি নির্ভয়ে চলে যাও, কারণ আমরা সদাপ্রভুর নাম করে একে অন্যের কাছে শপথ করে বলেছি, ‘সদাপ্রভু তোমার ও আমার মধ্যে এবং তোমার ও আমার বংশধরদের মধ্যে চিরকাল সাক্ষী থাকবেন’।” পরে তিনি চলেগেলেন আর যোনাথন শহরে ফিরে গেলেন।
\s5
\c 21
\ms নোব, গাৎ ও অদ্দুলমে দায়ূদ পালিয়ে গেলেন৷
\p
\v 1 পরে দায়ূদ নোবে অহীমেলক যাজকের কাছে গেলেন; আর অহীমেলক কাঁপতে কাঁপতে এসে দায়ূদের সঙ্গে দেখা করলেন ও তাঁকে বললেন, “আপনি একা কেন? আপনার সঙ্গে কেউ নেই কেন?”
\v 2 দায়ুদ অহীমেলক যাজককে বললেন, “রাজা একটি কাজের দায়িত্ব দিয়ে আমাকে বলেছেন, আমি তোমাকে যে কাজে পাঠালাম ও যা আদেশ করলাম, তার কিছু যেন কেউ না জানে আর; আমি নিজের সঙ্গী যুবকদেরকে ওই জায়গায় আসতে বলেছি৷
\s5
\v 3 এখন আপনার কাছে কি আছে? পাঁচটা রুটি কিংবা যা থাকে, আমার হাতে দিন৷”
\v 4 যাজক দায়ূদকে উত্তর দিলেন, “আমার কাছে সাধারণ রুটি নেই, শুধুমাত্র পবিত্র রুটি আছে-যদি সেই যুবকেরা শুধু স্ত্রীর থেকে আলাদা হয়ে থাকে৷”
\s5
\v 5 দায়ূদ যাজককে উত্তর দিলেন, “সত্যিই তিন দিন আমাদের থেকে স্ত্রীরা আলাদা আছে; আমি যখন বেরিয়ে আসি, তখন যাত্রা সাধারণ হলেও যুবকদের পাত্রগুলি পবিত্র ছিল; তাই আজ তাদের পাত্রগুলি আরও কত না পবিত্র৷”
\v 6 তখন যাজক তাঁকে পবিত্র রুটি দিলেন; কারণ সেখানে অন্য রুটি ছিল না, কেবল ওটা তুলে নেবার দিনে সেকা রুটি রাখবার জন্য যে দর্শন-রুটি সদাপ্রভুর সামনে থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছিল, সেটাই শুধু ছিল৷
\s5
\v 7 সেই দিন শৌলের দাসেদের মধ্যে ইদোমীয় দোয়েগ নামে একজন সদাপ্রভুর সামনে আবদ্ধ হয়ে সেখানে ছিল, সে শৌলের প্রধান পশুপালক৷
\s5
\v 8 পরে দায়ূদ অহীমেলককে বললেন, “এখানে আপনার কাছে বর্শা কিংবা তলোয়ার নেই? কারণ রাজকাজের তাড়াতাড়িতে আমি নিজের তলোয়ার বা অস্ত্র সঙ্গে আনি নি৷”
\v 9 যাজক বললেন, “এলা উপত্যকায় আপনি যাকে হত্যা করেছিলেন, সেই পলেষ্টীয় গলিয়াতের তলোয়ার আছে; দেখুন, এফোদের পিছন দিকে এখানে কাপড়ে জড়ান আছে; এটা যদি নিতে চান, নিন, কারণ, এটা ছাড়া আর কোন তরোয়াল এখানে নেই৷” দায়ূদ বললেন, “সেটার মত আর নেই; সেটাই আমাকে দিন৷”
\s5
\v 10 পরে দায়ূদ উঠে সেদিন শৌলের ভয়ে পালিয়ে গাতের রাজা অখীশের কাছে গেলেন।
\v 11 তাতে অখীশের দাসেরা তাঁকে বলল, “এ ব্যক্তি কি দেশের রাজা দায়ূদ না? লোকেরা কি নাচতে নাচতে ওঁর বিষয়ে নিজেরা গান করে বলে নি, ‘শৌল হত্যা করলেন হাজার হাজার আর দায়ূদ হত্যা করলেন অযুত অযুত’?”
\s5
\v 12 আর দায়ূদ সে কথা মনে রাখলেন এবং গাতের রাজা অখীশের থেকে খুব ভীত হলেন৷
\v 13 আর তিনি তাদের সামনে তাঁর আচরণ পরিবর্তন করলেন; তিনি তাদের কাছে পাগলের মত ব্যবহার করতেন, ফটকের দরজা আঁচড়াতেন, নিজের দাড়ির উপরে লালা ঝরতে দিতেন৷
\s5
\v 14 তখন অখীশ নিজের দাসদেরকে বললেন, “দেখ, তোমরা দেখতে পাচ্ছ, এ পাগল; তবে একে আমার কাছে আনলে কেন?
\v 15 আমার কি পাগলের অভাব আছে যে, তোমরা একে আমার কাছে পাগলামি করতে এনেছ? এ কি আমার বাড়িতে আসবে?”
\s5
\c 22
\p
\v 1 পরে দায়ূদ সেখান থেকে গিয়ে অদুল্লম গুহাতে পালিয়ে গেলেন; আর তাঁর ভাইরা ও তাঁর বাবার বাড়ির সবাই তা শুনে সেখানে তাঁর কাছে চলে গেল৷
\v 2 আর পীড়িত, ঋণী ও অসন্তুষ্ট সব লোক তাঁর কাছে জড়ো হল, আর তিনি তাদের সেনাপতি হলেন; এভাবে প্রায় চারশো লোক তাঁর সঙ্গী হল৷
\s5
\v 3 পরে দায়ূদ সেখান থেকে মোয়াবের মিস্পীতে গিয়ে মোয়াব-রাজাকে বললেন, “অনুরোধ করি, ঈশ্বর আমার প্রতি কি করবেন, তা যতক্ষণ পর্যন্ত আমি জানতে না পারি ততক্ষণ আমার বাবা-মা এসে আপনাদের কাছে থাকুন৷”
\v 4 পরে তিনি তাঁদেরকে মোয়াব রাজার সামনে আনলেন; আর যতদিন দায়ূদ সেই দুর্গম জায়গায় থাকলেন, ততদিন তাঁরা ঐ রাজার সঙ্গে থাকলেন৷
\v 5 পরে গাদ ভাববাদী দায়ূদকে বললেন, “তুমি আর এই দুর্গম জায়গায় থেকো না, যিহূদা দেশে চলে যাও৷” তখন দায়ূদ হেরত বনে গিয়ে উপস্থিত হলেন৷
\s শৌলের আদেশে যাজকদের বধ
\p
\s5
\v 6 পরে শৌল শুনতে পেলেন যে, দায়ূদের ও তাঁর সঙ্গীদের খোঁজ পাওয়া গেছে৷ সেই সময়ে শৌল বর্শা হাতে গিবিয়ায়, রামার কাছের ঝাউ গাছের নিচে বসে ছিলেন এবং তাঁর চারিদিকে তাঁর সমস্ত দাস দাঁড়িয়েছিল৷
\s5
\v 7 তখন শৌল নিজের চারদিকে দাঁড়িয়ে থাকা দাসদেরকে বললেন, “হে বিন্যামীনীয়েরা শোন৷ যিশয়ের ছেলে কি তোমাদের সবাইকে ক্ষেত ও আঙুরের বাগান দেবে? সে কি তোমাদের সকলকেই সহস্রপতি ও শতপতি করবে?
\v 8 এই জন্য তোমরা সবাই কি আমার বিরুদ্ধে মতলব করেছ? যিশয়ের ছেলের সঙ্গে আমার ছেলে যে নিয়ম করেছে, তা কেউ আমাকে বলে নি এবং আমার ছেলে আজকের মত আমার বিরুদ্ধে ঘাঁটি বসাবার জন্য আমার দাসকে যে উসকে দিয়েছে, তাতেও তোমাদের মধ্যে কেউ আমার জন্য দুঃখিত হও নি বা আমাকে তা বল নি৷”
\s5
\v 9 তখন ইদোমীয় দোয়েগ-যে শৌলের দাসদের কাছে দাঁড়িয়েছিল-সে উত্তর দিল, “আমি নোবে অহীটূবের ছেলে অহীমেলকের কাছে যিশয়ের ছেলেকে যেতে দেখেছিলাম৷
\v 10 সেই ব্যক্তি তার জন্য সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করেছিল ও তাকে খাবার দিয়েছিল এবং পলেষ্টীয় গলিয়াতের তলোয়ার তাকে দিয়েছিল?”
\s5
\v 11 তখন রাজা লোক পাঠিয়ে অহীটূবের ছেলে অহীমেলক যাজককে ও তাঁর বাবার সমস্ত বংশকে, নোবে বসবাসকারী সমস্ত যাজককে ডাকলেন; আর তাঁরা সবাই রাজার কাছে আসলেন৷
\v 12 তখন শৌল বললেন, “হে অহীটূবের ছেলে, শোন৷” তিনি উত্তর দিলেন, “হে আমার প্রভু, দেখুন, এই আমি৷”
\v 13 শৌল তাঁকে বললেন, “তুমি ও যিশয়ের ছেলে আমার বিরুদ্ধে কেন মতলব করলে? সে যেন আজকের মত আমার বিরুদ্ধে উঠে ঘাঁটি বসায়, সেই জন্য তুমি তাকে রুটি ও তলোয়াল দিয়েছ এবং তার জন্য ঈশ্বরের কাছে জিজ্ঞাসা করেছ৷”
\s5
\v 14 অহীমেলক রাজাকে উত্তর দিলেন, “আপনার সব দাসের মধ্যে কে দায়ূদের মতো বিশ্বস্ত? তিনি তো মহারাজের জামাই, আপনার লুকানো পরামর্শ জানবার অধিকারী ও আপনার বাড়িতে সম্মানীয়৷
\v 15 আমি কি এই প্রথম বার তাঁর জন্য ঈশ্বরের কাছে জিজ্ঞাসা করেছি? কখনই নয়; মহারাজ আপনার এই দাসকে ও আমার সমস্ত বাবার বংশকে দোষ দেবেন না, কারণ আপনার দাস এ বিষয়ের কম কিংবা বেশি কিছুই জানে না৷”
\s5
\v 16 কিন্তু রাজা বললেন, “হে অহীমেলক, তোমাকে ও তোমার সব বাবার বংশকে মরতে হবে৷”
\v 17 তখন রাজা নিজের চারপাশে দাঁড়িয়ে থাকা পদাতিক সৈন্যদের বললেন, “তোমরা ফিরে দাঁড়াও, সদাপ্রভুর এই যাজকদেরকে হত্যা কর; কারণ এরাও দায়ূদের সাহায্য করে এবং তার পালানোর কথা জেনেও আমাকে শোনায় নি৷” সদাপ্রভুর যাজকদেরকে আক্রমন করবার জন্য হাত তুলতে রাজার দাসেরা রাজি হল না৷
\s5
\v 18 পরে রাজা দোয়েগকে বললেন, “তুমি ফিরে গিয়ে এই যাজকদেরকে আক্রমন কর৷” তখন ইদোমীয় দোয়েগ ফিরে দাঁড়াল ও যাজকদেরকে আক্রমন করে সে দিনে মসীনা-সুতোর এফোদ পরা পঁচাশী জনকে হত্যা করল৷
\v 19 পরে সে তলোয়ার দিয়ে যাজকদের নোব নগরে আঘাত করল; সে স্ত্রী, পুরুষ, ছোট ছেলে-মেয়ে ও দুধ খাওয়া শিশু এবং গোরু, গাধা ও ভেড়া সব তরোয়াল দিয়ে হত্যা করল৷
\s5
\v 20 ঐ সময়ে অহীটূবের ছেলে অহীমেলকের একমাত্র ছেলে রক্ষা পেলেন; তাঁর নাম অবিয়াথর; তিনি দায়ূদের কাছে পালিয়ে গেলেন৷
\v 21 অবিয়াথর দায়ূদকে এই খবর দিলেন যে, শৌল সদাপ্রভুর যাজকদেরকে হত্যা করেছেন৷
\s5
\v 22 দায়ূদ অবিয়াথরকে বললেন, “ইদোমীয় দোয়েগ সেখানে থাকাতে আমি সেদিনই বুঝেছিলাম যে, সে নিশ্চয়ই শৌলকে খবর দেবে৷ আমিই তোমার বাবার বংশের সব লোকের হত্যার কারণ৷
\v 23 তুমি আমার সঙ্গে থাক, ভয় পেও না৷ কারণ যে আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করে, সেই তোমাকে হত্যা করার চেষ্টা করছে৷ কিন্তু আমার সঙ্গে তুমি নিরাপদে থাকবে৷”
\s5
\c 23
\ms দায়ূদের প্রতি শৌলের তাড়না ও শৌলের প্রতি দায়ূদের দয়া৷
\p
\v 1 আর লোকেরা দায়ূদকে এই খবর দিল, “দেখ, পলেষ্টীয়রা কিয়ীলার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, আর সবার খামার থেকে শস্য লুঠ করছে৷”
\v 2 তখন দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি গিয়ে ঐ পলেষ্টীয়দেরকে আঘাত করব?” সদাপ্রভু দায়ূদকে বললেন, “যাও, সেই পলেষ্টীয়দেরকে আঘাত কর ও কিয়ীলা রক্ষা কর৷”
\s5
\v 3 দায়ূদের লোকেরা তাঁকে বলল, “দেখুন, আমাদের এই যিহূদা দেশে থাকাই ভয়ের বিষয়; তবে কিয়ীলাতে পলেষ্টীয় সৈন্যদের বিরুদ্ধে যাওয়া আরও কত না ভয়ের বিষয়?”
\v 4 তখন দায়ূদ পুনরায় সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন; আর সদাপ্রভু উত্তর দিলেন, “ওঠ, কিয়ীলাতে যাও, কারণ আমি পলেষ্টীয়দেরকে তোমার হাতে সমর্পণ করব৷”
\s5
\v 5 তখন দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা কিয়ীলাতে গেলেন এবং পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাদের পশুদেরকে নিয়ে আসলেন আর তাদেরকে হত্যা করলেন; এইভাবে দায়ূদ কিয়ীলা-নিবাসীদেরকে রক্ষা করলেন৷
\v 6 অহীমেলকের ছেলে অবিয়াথর যখন কিয়ীলাতে দায়ূদের কাছে পালিয়ে যায়, তখন তিনি এক এফোদ হাতে করে এসেছিলেন৷
\s5
\v 7 পরে দায়ূদ কিয়ীলাতে এসেছে, এই খবর পেয়ে শৌল বললেন, “ঈশ্বর তাকে আমার হাতে সমর্পণ করেছেন, কারণ ফটক ও খিলযুক্ত নগরে প্রবেশ করাতে সে আবদ্ধ হয়েছে৷”
\v 8 পরে দায়ূদকে ও তার লোকদেরকে আটকাবার জন্য শৌল যুদ্ধের জন্য কিয়ীলাতে যাবার জন্য সব লোককে ডাকলেন৷
\v 9 দায়ূদ জানতে পারলেন যে, শৌল তাঁর বিরুদ্ধে খারাপ পরিকল্পনা করছেন, তাই তিনি অবিয়াথর যাজককে বললেন, “এখানে এফোদ আন৷”
\s5
\v 10 পরে দায়ূদ বললেন, “হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, শৌল কিয়ীলাতে এসে আমার জন্য এই নগর বিনষ্ট করার চেষ্টা করছেন, তোমার দাস আমি এটা শুনলাম৷
\v 11 কিয়ীলার নিবাসীরা কি তাঁর হাতে আমাকে সমর্পণ করবে? তোমার দাস আমি যেমন শুনলাম, সে রকম শৌল কি আসবেন? হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, প্রার্থনা করি, তোমার দাসকে তা বল৷”
\s5
\v 12 সদাপ্রভু বললেন, “সে আসবে৷” দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “কিয়ীলার নিবাসীরা কি আমাকে ও আমার লোকদেরকে শৌলের হাতে সমর্পণ করবে?” সদাপ্রভু বললেন, “সমর্পণ করবে৷”
\s5
\v 13 তখন দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা, প্রায় ছশো লোক, উঠে কিয়ীলা থেকে বেরিয়ে গিয়ে যেখানে যেতে পারলেন, গেলেন; আর শৌলকে যখন বলা হল যে, দায়ূদ কিয়ীলা থেকে পালিয়ে গেছে, তখন তিনি যাওয়া থামিয়ে দিলেন;
\v 14 পরে দায়ূদ মরুভূমিতে নানা সুরক্ষিত জায়গায় বাস করলেন, সীফ মরুভূমির পাহাড়ী এলাকায় থাকলেন৷ আর শৌল প্রতিদিন তাঁর খোঁজ করলেন, কিন্তু ঈশ্বর তাঁর হাতে তাঁকে সমর্পণ করলেন না৷
\s5
\v 15 আর দায়ূদ দেখলেন যে, শৌল আমাকে হত্যা করার জন্য বেরিয়ে এসেছেন৷ তখন দায়ূদ সীফ মরুভূমির বনে ছিলেন৷
\v 16 আর শৌলের ছেলে যোনাথন উঠে বনে দায়ূদের কাছে গিয়ে ঈশ্বরে তাঁর হাত সবল করলেন৷
\s5
\v 17 আর তিনি তাঁকে বললেন, “ভয় কর না, আমার বাবা শৌল তোমাকে খুঁজে পাবে না, আর তুমি ইস্রায়েলের উপরে রাজা হবে এবং আমি তোমার পাশে থাকব, এটা আমার বাবা শৌলও জানেন৷”
\v 18 পরে তাঁরা দুজন সদাপ্রভুর সামনে নিয়ম তৈরী করলেন৷ আর দায়ূদ বনে থাকলেন; কিন্তু যোনাথন বাড়ি গেলেন৷
\s5
\v 19 পরে সীফায়েরা গিবিয়াতে শৌলের কাছে গিয়ে বলল, “দায়ূদ কি আমাদের কাছের মরুভূমির দক্ষিন দিকে হখীলা পাহাড়ের বনে কোন সুরক্ষিত জায়গায় লুকিয়ে নেই?
\v 20 অতএব হে রাজা! নেমে আসবার জন্য আপনার মনে যত ইচ্ছা আছে, সেই অনুসারে নেমে আসুন; রাজার হাতে তাকে সমর্পণ করা আমাদের কাজ৷”
\s5
\v 21 শৌল বললেন, “তোমরা সদাপ্রভুর আশীর্বাদ প্রাপ্ত হও, কারণ তোমরা আমার প্রতি দয়া করলে৷
\v 22 তোমরা যাও, আরও খোঁজ নাও, জানো, দেখে নাও, তার পা রাখবার জায়গা কোথায়? আর সেখানে তাকে কে দেখেছে? কারণ দেখ, লোকে আমাকে বলেছে, ‘সে খুব বুদ্ধির সঙ্গে চলে৷’
\v 23 অতএব যে সমস্ত গোপন জায়গায় সে লুকিয়ে থাকে, তার কোন জায়গায় সে আছে, তা দেখ, লক্ষ্য কর, পরে আমার কাছে আবার সঠিক খবর নিয়ে এস, আসলে আমি তোমাদের সঙ্গে যাব; সে যদি দেশে থাকে, তবে আমি যিহূদার সমস্ত হাজারের মধ্যে তার সন্ধান করব৷”
\s5
\v 24 তাতে তারা উঠে শৌলের আগে সীফে গেল; কিন্তু দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা মরুভূমির দক্ষিনে অরাবায়, মায়োন প্রান্তরে, ছিলেন৷
\v 25 পরে শৌল ও তাঁর লোকেরা তাঁর খোঁজে গেলেন, আর লোকেরা দায়ূদকে তার খবর দিলে তিনি শৈলে নেমে এলেন এবং মায়োন প্রান্তরে থাকলেন৷ তা শুনে শৌল মায়োন মরুভূমিতে দায়ূদের পিছনে তাড়া করতে গেলেন৷
\s5
\v 26 আর শৌল পর্বতের এক পার্শ্বে গেলেন এবং দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা পর্বতের অন্য পার্শ্বে গেলেন৷ আর দায়ূদ শৌলের ভয়ে অন্য জায়গায় যাবার জন্য দ্রুত এগিয়ে গেলেন; কারণ তাঁকে ও তাঁর লোকদেরকে ধরবার জন্য শৌল নিজের লোকদের সঙ্গে তাঁকে ঘিরে ফেলেছিলেন৷
\v 27 কিন্তু একজন দূত শৌলের কাছে এস বলল, “আপনি শীঘ্র আসুন, কেননা পলেষ্টীয়রা দেশ আক্রমন করেছে৷”
\s5
\v 28 তখন শৌল দায়ূদের পিছনে তাড়া করা বন্ধ করে ফিরে গিয়ে পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে গেলেন৷ এই জন্য সেই জায়গার নাম সেলা-হম্মলকোৎ [রক্ষা শৈল] হল৷
\v 29 পরে দায়ূদ সেখান থেকে উঠে গিয়ে ঐন-গদীস্থ নানা সুরক্ষিত জায়গায় বাস করলেন৷
\s5
\c 24
\p
\v 1 পরে শৌল পলেষ্টীয়দের আর তাড়া না করে ফিরে এলে লোকে তাঁকে এই খবর দিল, “দেখুন, দায়ূদ ঐন-গদীর উপত্যকায় আছে৷”
\v 2 তাতে শৌল সমস্ত ইস্রায়েল থেকে নির্বাচিত তিন হাজার লোক নিয়ে বন্য ছাগলের শৈলের উপরে দায়ূদের ও তাঁর লোকদের খোঁজে গেলেন৷
\s5
\v 3 পথের মধ্যে তিনি মেষবাথানে উপস্থিত হলেন; সেখানে এক গুহা ছিল; আর শৌল পা ঢাকবার জন্য তার মধ্যে প্রবেশ করলেন; কিন্তু দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা সেই গুহার একদম ভেতরে বসেছিলেন৷
\v 4 তখন দায়ূদের লোকেরা তাঁকে বলল, “দেখুন, এ সেই দিন, যে দিনের কথা সদাপ্রভু আপনাকে বলেছেন, দেখ, আমিই তোমার শত্রুকে তোমার হাতে সমর্পণ করব, তখন তুমি তার প্রতি যা ভালো বুঝবে, তাই করবে৷” তাতে দায়ূদ উঠে চুপিচুপি শৌলের কাপড়ের সামনের অংশ কেটে নিলেন৷
\s5
\v 5 তারপরে, শৌলের কাপড়ের অংশ কাটাতে দায়ূদের হৃদয় ধুকধুক করতে লাগল;
\v 6 আর তিনি নিজের লোকদেরকে বললেন, “আমার প্রভুর প্রতি, সদাপ্রভুর অভিষিক্তের প্রতি এমন কাজ করতে, তাঁর বিরুদ্ধে আমার হাত তুলতে সদাপ্রভু আমাকে না দিন; কারণ তিনি সদাপ্রভুর অভিষিক্ত৷”
\v 7 এইরকম কথা বলে দায়ূদ নিজের লোকদেরকে শাসন করলেন, শৌলের বিরুদ্ধে যেতে দিলেন না৷ পরে শৌল উঠে গুহা থেকে বেরিয়ে গিয়ে নিজের পথে চললেন৷
\s5
\v 8 তারপরে দায়ূদও উঠে গুহা থেকে বেরিয়ে এলেন এবং শৌলকে পিছন থেকে ডেকে বললেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ,” আর শৌল পিছনের দিকে তাকালে দায়ূদ ভূমিতে মাথা নিচু করে প্রণাম করলেন৷
\v 9 আর দায়ূদ শৌলকে বললেন, “মানুষের এমন কথা আপনি কেন শোনেন যে, ‘দেখুন, দায়ূদ আপনার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে?
\s5
\v 10 দেখুন, আপনি আজ নিজের চোখে দেখছেন, আজ এই গুহার মধ্যে সদাপ্রভু আপনাকে আমার হাতে সমর্পণ করেছিলেন এবং কেউ আপনাকে হত্যা করবার পরামর্শ দিয়েছিল, কিন্তু আপনার উপরে মমতা হল, আমি বললাম, ‘আমার প্রভুর বিরুদ্ধে হাত তুলব না, কারণ তিনি সদাপ্রভুর অভিষিক্ত৷’
\v 11 আর হে আমার পিতা, দেখুন; হ্যাঁ, আমার হাতে আপনার কাপড়ের এই অংশ দেখুন; কারণ আমি আপনার কাপড়ের সামনের অংশ কেটে নিয়েছি, তবুও আপনাকে হত্যা করি নি, এতে আপনি বিচার করে দেখবেন, আমি হিংসায় কি অধর্মে হাত তুলি না এবং আপনার বিরুদ্ধে পাপ করি নি; তবুও আপনি আমার প্রাণ কেড়ে নেবার জন্য [শিকার] মৃগয়া করছেন৷
\s5
\v 12 সদাপ্রভু আমার ও আপনার মধ্যে বিচার করবেন, আপনার করা অন্যায় থেকে আমাকে উদ্ধার করবেন, কিন্তু আমার হাত আপনার বিরুদ্ধে উঠবে না৷
\v 13 প্রাচীনদের প্রবাদে বলে, ‘দুষ্টদের থেকেই দুষ্টতা জন্মায়, কিন্তু আমার হাত আপনার বিরুদ্ধ হবে না৷
\s5
\v 14 ইস্রায়েলের রাজা কার পিছনে বেরিয়ে এসেছেন? আপনি কার পিছনে পিছনে তাড়া করছেন? একটা মৃত কুকুরের পিছনে, একটা মাছির পিছনে৷
\v 15 কিন্তু সদাপ্রভু বিচারকর্তা হন, তিনি আমার ও আপনার মধ্যে বিচার করুন; আর তিনি দৃষ্টিপাত করে আমার বিবাদ শেষ করুন এবং আপনার হাত থেকে আমাকে রক্ষা করুন৷”
\s5
\v 16 দায়ূদ শৌলের কাছে এই সব কথা শেষ করলে শৌল জিজ্ঞাসা করিলেন, “হে আমার সন্তান দায়ূদ, এ কি তোমার স্বর?” আর শৌল খুব জোরে কাঁদলেন৷
\s5
\v 17 পরে তিনি দায়ূদকে বললেন, “আমার থেকে তুমি ধার্মিক, কারণ তুমি আমার উপকার করেছ, কিন্তু আমি তোমার অপকার করেছি৷
\v 18 তুমি আমার প্রতি কেমন ভালো ব্যবহার করে আসছ, তা আজ দেখালে; সদাপ্রভু আমাকে তোমার হাতে সমর্পণ করলেও তুমি আমাকে হত্যা করনি৷
\s5
\v 19 মানুষ নিজের শত্রুকে পেলে কি তাকে ভালোর পথে ছেড়ে দেয়? আজ তুমি আমার প্রতি যা করলে, তার প্রতিশোধে সদাপ্রভু তোমার মঙ্গল করুন৷
\v 20 এখন দেখ, আমি জানি, তুমি অবশ্যই রাজা হবে, আর ইস্রায়েলের রাজ্য তোমার হাতে স্থির থাকবে৷
\s5
\v 21 অতএব এখন সদাপ্রভুর নামে আমার কাছে দিব্যি কর যে, তুমি আমার পরে আমার বংশ বিনাশ করবে না ও আমার বাবার বংশ থেকে আমার নাম লোপ করবে না৷”
\v 22 তখন দায়ূদ শৌলের কাছে দিব্যি করলেন৷ পরে শৌল বাড়ি চলে গেলেন, কিন্তু দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা সুরক্ষিত জায়গায় উঠে গেলেন৷
\s5
\c 25
\ms শমূয়েলের মৃত্যু৷ নাবলের বিবরণ৷
\p
\v 1 পরে শমূয়েলের মৃত্যু হল এবং সমস্ত ইস্রায়েল জড়ো হয়ে তাঁর জন্য শোক করল, আর রামায় তাঁর বাড়িতে তাঁর কবর দিল৷ পরে দায়ূদ উঠে পারণ মরুভূমিতে চলে গেলেন৷
\s5
\v 2 সেই সময়ে মায়োনে এক লোক ছিল, কর্ম্মিলে তার বিষয় সম্পত্তি ছিল; সে খুব বড় মানুষ; তার তিন হাজার ভেড়া ও এক হাজার ছাগী ছিল৷ সেই লোক কর্ম্মিলে নিজের ভেড়াদের লোম কাটছিল৷
\v 3 সেই লোকটির নাম নাবল ও তার স্ত্রীর নাম অবীগল; ঐ স্ত্রী বুদ্ধিমতি ও সুন্দরী, কিন্তু ঐ লোকটি কঠিন ও দুষ্ট ছিল; সে কালেব বংশের সন্তান৷
\s5
\v 4 আর নাবল নিজের ভেড়াদের লোম কাটছে, দায়ূদ মরুভূমিতে এই কথা শুনলেন৷
\v 5 পরে দায়ূদ দশজন যুবককে পাঠালেন; দায়ূদ সেই যুবকদেরকে বললেন, “তোমরা কর্ম্মিলে উঠে নাবলের কাছে যাও এবং আমার নামে তাকে অভিবাদন কর;
\v 6 আর তাকে এই কথা বল, ‘চিরজীবী হন; আপনার ভালো, আপনার বাড়ির ভালো ও আপনার সবকিছুর ভালো হোক৷
\s5
\v 7 আমি শুনতে পেলাম যে, আপনার কাছে লোমছেদনকারীরা আছে; ইতিমধ্যে আপনার মেষপালকরা আমাদের সঙ্গে ছিল, আমরা তাদের অপকার করি নি এবং যতদিন তারা কর্ম্মিলে ছিল, ততদিন তাদের কিছুই হারায়ও নি৷
\v 8 আপনার যুবকদেরকে জিজ্ঞাসা করুন, তারা আপনাকে বলবে; অতএব এই যুবকদের প্রতি আপনি করুনার চোখে দেখুন, কারণ আমরা শুভ দিনে আসলাম৷ অনুরোধ করি, নিজের দাসদেরকে ও নিজের ছেলে দায়ূদকে, যা আপনার হাতে ওঠে, দান করুন’৷”
\s5
\v 9 তখন দায়ূদের যুবকরা গিয়ে দায়ূদের নাম করে নাবলকে সেই সব কথা বলল, পরে তারা চুপ করে থাকল৷
\v 10 নাবল উত্তর দিয়ে দায়ূদের দাসদেরকে বলল, “দায়ূদ কে? যিশয়ের ছেলে কে? এই সময়ে অনেক দাস নিজের প্রভুর থেকে আলাদা হয়ে ঘুরছে৷
\v 11 আমি কি নিজের রুটি, জল ও নিজের ভেড়ার লোম ছেদনকারীদের জন্য যে সব পশু মেরেছি, তাদের মাংস নিয়ে অজানা কোথাকার লোকদেরকে দেব?”
\s5
\v 12 তখন দায়ূদের যুবকরা মুখ ফিরিয়ে নিজেদের পথে চলে আসল এবং তাঁর কাছে ফিরে এসে ঐ সমস্ত কথা তাঁকে বলল৷
\v 13 তখন দায়ূদ নিজের লোকদেরকে বললেন, “তোমরা প্রত্যেক জন তলোয়ার বাঁধ৷” প্রত্যেকে নিজেদের তলোয়ার বাঁধল এবং দায়ূদও নিজের তলোয়ার বাঁধলেন৷ পরে দায়ূদের সঙ্গে প্রায় চারশো লোক গেল এবং জিনিসপত্র রক্ষার জন্য দুশো লোক থাকলো৷
\s5
\v 14 এরমধ্যে যুবকদের একজন নাবলের স্ত্রী অবীগলকে খবর দিয়ে বলল, “দেখুন, দায়ূদ আমাদের কর্তাকে অভিবাদন করতে মরুভূমি থেকে দূতদেরকে পাঠিয়েছিলেন, আর তিনি তাদেরকে অপমান করলেন৷
\v 15 কিন্তু সেই লোকেরা আমাদের জন্য খুব ভালই ছিল; যখন আমরা মাঠে ছিলাম, তখন যতক্ষণ তাদের সঙ্গে ছিলাম, ততক্ষণ আমাদের ক্ষতি হয়নি, কিছুই হারায়ও নি৷
\s5
\v 16 আমরা যতদিন তাদের কাছে থেকে ভেড়া রক্ষা করছিলাম, তারা দিনরাত আমাদের চারদিকে প্রাচীরের মত ছিল৷
\v 17 অতএব এখন আপনার কি করা উচিত, সেটা বিচার করে বুঝুন, কারণ আমাদের কর্তার ও তাঁর সমস্ত বংশের ক্ষতি নিশ্চিত; কিন্তু তিনি এমন অধার্মিক যে, তাঁকে কোন কথা বলতে পারা যায় না৷”
\s5
\v 18 তখন অবীগল তাড়াতাড়ি দুশো রুটি, দু কুপা আঙুরের রস, পাঁচটা তৈরী ভেড়া, পাঁচ কাঠা ভাজা দানাশস্য, একশো গোছা শুকনো আঙুরফল ও দুশো ডুমুর-চাক নিয়ে গাধার উপরে চাপাল৷
\v 19 আর সে নিজের চাকরদেরকে বলল, “তোমরা আমার আগে চল, দেখ, আমি তোমাদের পিছনে যাচ্ছি৷” কিন্তু সে তার স্বামী নাবলকে তা জানাল না৷
\s5
\v 20 পরে সে গাধাতে চড়ে পর্বতের ভিতরদিক দিয়ে নেমে যাচ্ছিল, এরমধ্যে দেখ, দায়ূদ নিজের লোকদের সঙ্গে তার সামনে নেমে আসলেন, তাতে তার সঙ্গে তাঁদের দেখা হল৷
\s5
\v 21 দায়ূদ বলেছিলেন, “মরুভূমিতে অবস্থিত ওর সব জিনিস আমি বৃথাই রক্ষা করেছি, ওর সব জিনিসের মধ্যে কিছুই হারায় নি; আর সে উপকারের বদলে আমার অপকার করেছে৷
\v 22 যদি আমি ওর সম্পর্কীয় পুরুষদের মধ্যে এক জনকেও রাত সকাল হওয়া পর্যন্ত অবশিষ্ট রাখি, তবে ঈশ্বর দায়ূদের শত্রুদের প্রতি সেইরকম ও তার থেকেও বেশি শাস্তি দিন৷”
\s5
\v 23 পরে অবীগল দায়ূদকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে তাড়াতাড়ি গাধা থেকে নেমে দায়ূদের সামনে উপুড় হয়ে পরে ভূমিতে প্রণাম করলেন৷
\v 24 আর তাঁর পায়ে পড়ে বললেন, “হে আমার প্রভু, আমার উপরে, আমারই উপরে এই অপরাধ পড়ুক৷ অনুরোধ করি, আপনার দাসীকে আপনার কাছে কথা বলবার অনুমতি দিন; আর আপনি আপনার দাসীর কথা শুনুন৷
\s5
\v 25 অনুরোধ করি, আমার প্রভু সেই অধার্মিককে অর্থাৎ নাবালকে গণনার মধ্যে ধরবেন না; তার যেমন নাম, সেও তেমন৷ তার নাম নাবল [মুর্খ], তার মনের মধ্যে মুর্খতা৷ কিন্তু আপনার এই দাসী আমি আমার প্রভুর পাঠানো যুবকদেরকে দেখি নি৷
\v 26 অতএব হে আমার প্রভু, জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি ও আপনার জীবিত প্রাণের দিব্যি, সদাপ্রভুই আপনাকে রক্তপাতে জড়িয়ে পড়তে ও নিজের হাতে প্রতিশোধ নিতে বারণ করেছেন, কিন্তু নিজের শত্রুরা ও যারা আমার প্রভুর ক্ষতি করার চেষ্টা করে, তারা নাবলের মত হক৷
\s5
\v 27 এখন আপনার দাসী এই যে উপহার প্রভুর জন্য এনেছি, এটা প্রভুর সঙ্গে আসা যুবকদেরকে দিতে আদেশ করুন৷
\v 28 অনুরোধ করি, আপনার দাসীর অপরাধ ক্ষমা করুন, কেননা সদাপ্রভু নিশ্চয়ই আমার প্রভুর বংশ ধরে রাখবেন; কারণ সদাপ্রভুরই জন্য আমার প্রভু যুদ্ধ করছেন, সারাজীবন আপনার কোন ক্ষতি দেখা যাবে না৷
\s5
\v 29 মানুষ উঠে আপনাকে তাড়না ও হত্যার চেষ্টা করলেও আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে আমার প্রভুর প্রাণ জীবন-বোচকাতে সুরক্ষিত থাকবে, কিন্তু আপনার শত্রুদের প্রাণ তিনি ফিঙ্গার জালে দিয়ে হত্যা করবেন৷
\s5
\v 30 সদাপ্রভু আমার প্রভুর বিষয়ে যে সব মঙ্গলের কথা বলেছেন, তা যখন পূরণ করবেন, আপনাকে ইস্রায়েলের উপরে শাসনকর্তাপদে নিযুক্ত করবেন,
\v 31 তখন বিনাকারণে রক্তপাত করাতে কিংবা নিজে প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আমার প্রভুর শোক বা হৃদয়ে বাধা সৃষ্টি হবে না৷ যখন সদাপ্রভু আমার প্রভুর মঙ্গল করবেন, তখন আপনার এই দাসীকে মনে করবেন৷”
\s5
\v 32 পরে দায়ূদ অবীগলকে বললেন, “ধন্য ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি আজ আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য তোমাকে পাঠালেন৷
\v 33 আর ধন্য তোমার সুবিচার এবং ধন্যা তুমি, কারণ আজ তুমি রক্তপাত ও নিজের হাতে প্রতিশোধ নিতে আমাকে আটকালে৷
\s5
\v 34 কারণ তোমার হিংসা করতে যিনি আমাকে বারণ করেছেন, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আমার সঙ্গে দেখা করতে যদি তুমি তাড়াতাড়ি না আসতে, তবে নাবলের সম্পর্কীয় পুরুষদের মধ্যে একজনও অবশিষ্ট থাকত না৷”
\v 35 পরে দায়ূদ নিজের জন্য আনা ঐ সকল জিনিস তার হাত থেকে গ্রহণ করে তাকে বললেন, “তুমি নিশ্চিন্তে ঘরে যাও; দেখ, আমি তোমার কথা শুনে তোমাকে গ্রহণ করলাম৷”
\s5
\v 36 পরে অবীগল নাবলের কাছে আসল; আর দেখ, রাজভোজের মত তার বাড়িতে খাওয়াদাওয়া হচ্ছিল এবং নাবলের মনে আনন্দ ছিল, সে খুব মাতাল হয়েছিল; এই জন্য অবীগল রাত থেকে সকাল হওয়ার আগে ঐ বিষয়ের কম কি বেশি কিছুই তাকে বলল না৷
\s5
\v 37 কিন্তু সকালে নাবলের মত্ততা দূর হলে তার স্ত্রী তাকে ঐ সমস্ত ঘটনা বলল; তখন সে হৃদরোগে আক্রান্ত হল এবং সে পাথরের মতো হয়ে পড়ল৷
\v 38 আর দশ দিন পরে সদাপ্রভু নাবলকে আঘাত করাতে সে মারা গেল৷
\s5
\v 39 পরে নাবল মরেছে, এই কথা শুনে দায়ূদ বললেন, “ধন্য সদাপ্রভু, তিনি নাবলের হাতে আমার কলঙ্কজনক বিবাদ শেষ করলেন এবং নিজের দাসকে খারাপ কাজ করা থেকে রক্ষা করলেন; আর নাবলের হিংসা সদাপ্রভু তারই মাথায় দিলেন৷” পরে দায়ূদ লোক পাঠিয়ে অবীগলকে বিয়ে করবার প্রস্তাব তাকে জানালেন৷
\v 40 দায়ূদের দাসরা কর্ম্মিলে অবীগলের কাছে গিয়ে তাকে বলল, “দায়ূদ আপনাকে বিয়ের জন্য নিয়ে যেতে আপনার কাছে আমাদেরকে পাঠিয়েছেন৷”
\s5
\v 41 তখন সে উঠে উপুড় হয়ে ভূমিতে প্রণাম করে বলল, “দেখুন, আপনার এই দাসী আমার প্রভুর দাসদের পা ধোয়াবার দাসী৷”
\v 42 পরে অবীগল তাড়াতাড়ি উঠে গাধায় চড়ে নিজের পাঁচজন কুমারী যুবতীদের নিয়ে দায়ূদের দূতেদের সঙ্গে গেল, গিয়ে দায়ূদের স্ত্রী হল৷
\s5
\v 43 আর দায়ূদ যিষ্রিয়েলীয়া অহীনোয়মকেও বিয়ে করলেন; তাতে তারা উভয়েই তাঁর স্ত্রী হল৷
\v 44 কিন্তু শৌল মীখল নামে নিজের মেয়ে, দায়ূদের স্ত্রীকে নিয়ে গল্লীমলের লয়িশের ছেলে পলটিকে দিয়েছিলেন৷
\s5
\c 26
\ms শৌলের অত্যাচার৷ তাঁর প্রতি দায়ূদের দয়া৷
\p
\v 1 পরে সীফীয়েরা গিবিয়াতে শৌলের কাছে গিয়ে বলল, “দায়ূদ কি মরুভূমির সামনের হখীলা পাহাড়ে লুকিয়ে নেই?”
\v 2 তখন শৌল উঠলেন ও সীফ মরুভূমিতে দায়ূদের খোঁজে ইস্রায়েলের তিন হাজার মনোনীত লোককে সঙ্গে নিয়ে সীফ মরুভূমিতে নেমে গেলেন৷
\s5
\v 3 আর শৌল মরুভূমির সামনের হখীলা পাহাড়ে পথের পাশে শিবির স্থাপন করলেন৷ কিন্তু দায়ূদ মরুভূমিতে ছিলেন; আর তিনি দেখতে পেলেন, শৌল তাঁর পরে মরুভূমিতে আসছেন৷
\v 4 তখন দায়ূদ চর পাঠিয়ে শৌল সত্যিই এসেছেন, এটা জানলেন৷
\s5
\v 5 পরে দায়ূদ উঠে শৌলের শিবিরের জায়গায় গেলেন এবং দায়ূদ শৌলের ও তাঁর সেনাপতি, নেরের ছেলে অবনেরের শোয়ার-জায়গা দেখলেন; শৌল শকটমণ্ডলের মধ্যে শুয়েছিলেন এবং লোকেরা তাঁর চারিদিকে ছাউনি করে রেখেছিল৷
\s5
\v 6 পরে দায়ূদ তখন হিত্তীয় অহীমেলক ও সরূয়ার ছেলে যোয়াবের ভাই অবীশয়কে বললেন, “ঐ শিবিরে শৌলের কাছে তোমরা কে আমার সঙ্গে যাবে?” অবীশয় বলল, “আমি যাব।”
\v 7 পরে রাতের বেলা দায়ূদ ও অবীশয় শৌলের সৈন্যদের মধ্যে গেলেন। শৌল ছাউনিতে মালপত্রের মাঝখানে ঘুমিয়ে ছিলেন। তাঁর বর্শাটা তাঁর মাথার কাছে মাটিতে পোঁতা ছিল। অব্‌নের ও সৈন্যেরা তাঁর চারপাশে শুয়ে ছিল।
\v 8 তখন অবীশয় দায়ূদকে বলল, “আজ ঈশ্বর আপনার শত্রুকে আপনার হাতে তুলে দিয়েছেন। তাই অনুরোধ করি অনুমতি দিন, আমার বর্শার এক ঘায়ে ওঁকে মাটিতে গেঁথে ফেলি। আমাকে দুইবার আঘাত করতে হবে না।”
\s5
\v 9 দায়ূদ তাকে বললেন, “না, ওঁকে মেরে ফেলো না। সদাপ্রভুর অভিষেক করা লোকের উপর হাত তুলে কে নির্দোষ থাকতে পারে?”
\v 10 দায়ূদ আরো বললেন “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যে, সদাপ্রভু নিজেই ওকে শাস্তি দেবেন। হয় তিনি এমনিই মারা যাবেন, না হয় যুদ্ধে গিয়ে শেষ হয়ে যাবেন।
\s5
\v 11 আমি যে সদাপ্রভুর অভিষেক করা লোকের উপর হাত তুলি, সদাপ্রভু এমন না করুক। কিন্তু তাঁর মাথার কাছ থেকে বর্শাটা এবং জলের পাত্রটা তুলে নিয়ে এস, পরে আমরা চলে যাব।”
\v 12 দায়ূদ তারপর শৌলের মাথার কাছ থেকে তাঁর বর্শা ও জলের পাত্রটা নিয়ে চলে গেলেন। কেউ তা দেখল না, জানল না, কেউ জেগেও উঠল না। কারণ তারা সবাই ঘুমাচ্ছিল, কারণ সদাপ্রভু তাদের একটা গভীর ঘুমের মধ্যে ফেলে রেখেছিলেন।
\s5
\v 13 পরে দায়ূদ অন্য পারে গিয়ে দূরের একটা পাহাড়ের উপরে গিয়ে দাঁড়ালেন। তাঁদের মধ্য অনেকটা দূরত্ব ছিল,
\v 14 তারপর দায়ূদ সৈন্যদের এবং নেরের ছেলে অব্‌নেরকে ডাক দিয়ে বললেন, “অব্‌নের, তুমি কি কিছু বলবে না?” উত্তরে অব্‌নের বলল, “কে তুমি, রাজাকে ডাকাডাকি করছ?”
\s5
\v 15 দায়ূদ বললেন, “তুমি কি একজন পুরুষ না? ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে তোমার সমান আর কে আছে? তবে তুমি কেন শত্রুর বিপক্ষে তোমার প্রভু মহারাজকে পাহারা দিয়ে কেন রাখনি? তোমার প্রভু মহারাজকে মেরে ফেলবার জন্য একজন লোক গিয়েছিল।
\v 16 তুমি যা করেছ তা মোটেই ঠিক হয়নি। জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যে, তুমি ও তোমার লোকদের মরা উচিত, কারণ আপনাদের মনিব, যিনি সদাপ্রভুর অভিষেক করা লোক, তাঁকে তোমরা শত্রুদের থেকে পাহারা দিয়ে রাখনি। তুমি একবার দেখ রাজার মাথার কাছে তাঁর যে বর্শা ও জলের পাত্র ছিল সেগুলো কোথায়?”
\s5
\v 17 শৌল দায়ূদের গলার স্বর চিনে বললেন, “হে আমার ছেলে দায়ূদ, এ কি সত্যিই তোমার গলার স্বর?” দায়ূদ বললেন, “হ্যাঁ প্রভু মহারাজ, এ আমারই গলার স্বর।”
\v 18 তারপর তিনি আরও বললেন, “কেন আমার মনিব তাঁর দাসের পিছনে তাড়া করে বেড়াচ্ছেন? আমি কি করেছি? কি অন্যায় করেছি?
\s5
\v 19 আমার মহারাজ, আমার প্রভু, এখন দয়া করে আপনার দাসের কথা শুনুন। যদি সদাপ্রভুই আপনাকে আমার বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে থাকেন তবে আমার করা উৎসর্গ তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য হোক। কিন্তু যদি মানুষ তা করে থাকে তবে তাদের উপর যেন সদাপ্রভুর অভিশাপ নেমে আসে, কারণ তারা আজ সদাপ্রভুর দেওয়া সম্পত্তিতে আমার যে ভাগ আছে তা থেকে আমাকে তাড়িয়ে দেবার চেষ্টা করছে। তারা বলছে, ‘চলে যাও, দেব-দেবতার পূজা কর গিয়ে।’
\v 20 কিন্তু আপনার কাছে আমার এই মিনতি যে, সদাপ্রভু নেই এমন দূরের কোন জায়গায় যেন আমার রক্তপাত না হয়। লোকে পাহাড়ে যেমন করে তিতির পাখী ধরতে যায় ইস্রায়েলীয়দের রাজা তেমনি করে একটা পোকার খোঁজে বের হয়ে এসেছেন।”
\s5
\v 21 তখন শৌল বললেন, “আমি পাপ করেছি। বত্স দায়ূদ, তুমি ফিরে এস। কারণ আজ প্রাণ তোমার দৃষ্টিতে মূল্যবান ছিল; দেখ আমি বোকার মত কাজ করেছি।”
\s5
\v 22 উত্তরে দায়ূদ বললেন, “মহারাজ, এই যে সেই বর্শা, আপনার কোন লোক এসে ওটা নিয়ে যাক।
\v 23 সদাপ্রভু প্রত্যেক লোককে তার বিশ্বস্ততা ও সততার পুরস্কার দেন। সদাপ্রভু আজ আপনাকে আমার হাতে তুলে দিয়েছিলেন, কিন্তু আমি সদাপ্রভুর অভিষেক করা লোকের উপর হাত তুলতে চাই নি।
\s5
\v 24 আজ আমার কাছে আপনার জীবন যেমন মহামূল্যবান হল তেমনি সদাপ্রভুর কাছেও যেন আমার জীবন মহামূল্যবান হয়। তিনি যেন সমস্ত বিপদ থেকে আমাকে উদ্ধার করেন।”
\v 25 তখন শৌল দায়ূদকে বললেন, “বত্স দায়ূদ, তুমি ধন্য! তুমি অবশ্যই অনেক বড় বড় কাজ করবে আর জয়ী হবে।” এর পর দায়ূদ তাঁর পথে চলে গেলেন আর শৌলও তাঁর নিজের জায়গায় ফিরে গেলেন।
\s5
\c 27
\ms দায়ূদ গাৎ নগরে আশ্রয় নিলেন৷
\p
\v 1 পরে দায়ূদ মনে মনে ভাবলেন, “কোনো একদিন এই শৌলের হাতেই আমাকে মারা পড়তে হবে, তাই পলেষ্টীয়দের দেশে পালিয়ে যাওয়াই আমার পক্ষে সবচেয়ে ভাল হবে। তাহলে ইস্রায়েল দেশের মধ্যে তিনি আর আমাকে খুঁজে বেড়াবেন না, আর আমিও তাঁর হাত থেকে রক্ষা পাব।”
\s5
\v 2 এই ভেবে দায়ূদ তাঁর সঙ্গের ছয়শো লোক নিয়ে সেই জায়গা ছেড়ে মায়োকের ছেলে আখীশের কাছে গেলেন। আখীশ গাতের রাজা ছিলেন।
\v 3 দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা গাতে আখীশের কাছে বাস করতে লাগলেন। তাঁর লোকদের প্রত্যেকের সঙ্গে ছিল তাদের পরিবার, আর দায়ূদের সঙ্গে ছিলেন তাঁর দুই স্ত্রী, যিষ্রীয়েল গ্রামের অহীনোয়ম এবং কর্মিল গ্রামের অবীগল। অবীগল ছিলেন নাবলের বিধবা স্ত্রী।
\v 4 শৌল যখন জানতে পারলেন যে, দায়ূদ গাতে পালিয়ে গেছেন তখন তিনি তাঁর খোঁজ করা বন্ধ করে দিলেন।
\s5
\v 5 পরে দায়ূদ আখীশকে বললেন, “আপনি যদি আমার উপর সন্তুষ্ট হয়ে থাকেন তবে এই দেশের কোন একটা গ্রামে আমাকে কিছু জায়গা দিন যাতে আমি সেখানে গিয়ে বাস করতে পারি। আপনার এই দাস কেন আপনার সঙ্গে রাজধানীতে বাস করবে?”
\v 6 তখন আখীশ সিক্লগ শহরটা দায়ূদকে দান করলেন। সেইজন্য আজও সিক্লগ যিহূদার রাজাদের অধিকারে আছে।
\v 7 দায়ূদ পলেষ্টীয়দের দেশে এক বছর চার মাস ছিলেন।
\s5
\v 8 সেই সময়ের মধ্যে তিনি তাঁর লোকদের নিয়ে গশূরীয়, গির্ষীয় ও অমালেকীয়দের দেশে লুঠ পাট করতে গিয়েছিলেন। এই সব জাতির লোকেরা অনেক কাল আগে শূর থেকে মিসর পর্যন্ত সমস্ত এলাকাটায় বাস করত।
\v 9 দায়ূদ যখন কোন এলাকা আক্রমণ করতেন তখন সেখানকার স্ত্রী-পুরুষ সবাইকে মেরে ফেলতেন এবং তাদের ভেড়া, গরু, গাধা, উট, আর কাপড়-চোপড় নিয়ে আসতেন।
\s5
\v 10 যখন তিনি আখীশের কাছে ফিরে আসতেন তখন আখীশ জিজ্ঞাসা করতেন, “আজ কোথায় লুটপাট করতে গিয়েছিলে?” উত্তরে দায়ূদ বলতেন যে, তিনি যিহূদার দক্ষিণাঞ্চলে কিম্বা যিরহমেলীয়দের দক্ষিণাঞ্চলে কিম্বা কেনীয়দের দক্ষিণাঞ্চলে গিয়েছিলেন।
\s5
\v 11 কিন্তু দায়ূদ কোন স্ত্রীলোক কিম্বা পুরুষকে গাতে নিয়ে আসবার জন্য বাঁচিয়ে রাখতেন না, কারণ তিনি মনে করতেন, তারা তাদের বিষয় সব কথা জানিয়ে দিয়ে বলবে যে, দায়ূদ এই কাজ করেছে। পলেষ্টীয়দের দেশে আসবার পর থেকে দায়ূদ বরাবরই এই রকম করতেন,
\v 12 কিন্তু আখীশ দায়ূদকে বিশ্বাস করতেন আর ভাবতেন দায়ূদ এই সব কাজ করে তাঁর নিজের জাতি ইস্রায়েলীয়দের কাছে নিজেকে খুব ঘৃণার পাত্র করে তুলেছে আর তাতে সে চিরকাল আমার দাস হয়ে থাকবে।
\s5
\c 28
\ms শৌলের হতাশা
\p
\v 1 সেই সময়ে পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের সঙ্গে সংগ্রাম করার উদ্দেশ্যে যুদ্ধের জন্য নিজেদের সৈন্যদল সংগ্রহ করল। আর আখীশ দায়ূদকে বললেন, “নিশ্চয় জানবে, তোমাকে ও তোমার লোকদেরকে সৈন্যদলে যুক্ত করে আমার সঙ্গে যেতে হবে।”
\v 2 দায়ূদ আখীশকে বললেন, “ভাল, আপনার এই দাস কি করতে পারে, তা আপনি জানতে পারেন।” আখীশ দায়ূদকে বললেন, “ভাল, আমি তোমাকে সারাজীবন মাথা রক্ষক হিসাবে নিযুক্ত করব।”
\s5
\v 3 তখন শমূয়েল মারা গিয়েছিলেন এবং সমস্ত ইস্রায়েল তাঁর জন্য শোক করেছিল এবং রামায়, তাঁর নিজের নগরে, তাকে কবর দিয়েছিল। আর শৌল ভূতুড়ে ও গুণীদেরকে দেশ থেকে দূর করে দিয়েছিলেন।
\v 4 পরে পলেষ্টীয়রা জড়ো হল এবং এসে শূনেমে শিবির স্থাপন করল, আর শৌল সমস্ত ইস্রায়েলকে জড়ো করে গিলবোয়ে শিবির স্থাপন করলেন।
\s5
\v 5 কিন্তু শৌল পলেষ্টীয়দের সৈন্য দেখে ভয় পেলেন, তার খুব হৃদয় কেঁপে উঠল।
\v 6 তখন শৌল সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, কিন্তু সদাপ্রভু তাকে উত্তর দিলেন না; স্বপ্ন দিয়েও না, ঊরীম দিয়েও না, ভাববাদীদের দিয়েও না।
\v 7 তখন শৌল নিজের দাসদেরকে বললেন, “আমার জন্য একটি ভূতুড়ে স্ত্রীলোকের খোঁজ কর; আমি তার কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করব।” তার দাসরা বলল, “দেখুন, ঐনদোরে একটি ভূতুড়ে স্ত্রী লোক আছে।”
\s5
\v 8 তখন শৌল ছদ্মবেশ ধরলেন, অন্য বস্ত্র পরলেন ও দুই জন পুরুষকে সঙ্গে নিয়ে যাত্রা করলেন এবং রাতে সেই স্ত্রী লোকটার কাছে এসে বললেন, “অনুরোধ করি, তুমি আমার জন্য ভূতের দ্বারা মন্ত্র পড়ে, যার নাম আমি তোমাকে বলব, তাকে উঠিয়ে আন।”
\v 9 সেই স্ত্রী লোক তাকে বলল, “দেখ, শৌল যা করেছেন, তিনি যে ভূতুড়েদেরকে ও গুণীদেরকে দেশের মধ্যে থেকে উচ্ছিন্ন করেছেন, তা তুমি জানো; অতএব আমাকে হত্যা করতে আমার প্রাণের বিরুদ্ধে কেন ফাঁদ পাতছ?”
\v 10 তখন শৌল তার কাছে সদাপ্রভুর দিব্যি করে বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, এজন্য তোমার উপরে দোষ আসবে না।”
\s5
\v 11 তখন সেই স্ত্রী লোক জিজ্ঞাসা করল, “আমি তোমার কাছে কাকে উঠিয়ে আনব?” তিনি বললেন, “শমূয়েলকে উঠিয়ে আন।”
\v 12 পরে সেই স্ত্রী লোক শমূয়েলকে দেখতে পেয়ে উচ্চস্বরে কাঁদতে লাগল; আর সেই স্ত্রী লোক শৌলকে বলল, “আপনি কেন আমাকে প্রতারণা করলেন? আপনি শৌল।”
\s5
\v 13 রাজা তাকে বললেন, “ভয় নেই; তুমি কি দেখছ?” স্ত্রী লোকটা শৌলকে বলল, “আমি দেখছি, দেবতা ভূমি থেকে উঠে আসছেন।”
\v 14 শৌল জিজ্ঞাসা করলেন, “তার আকার কেমন?” সে বলল, “একজন বৃদ্ধ উঠছেন, তিনি পোশাকে আবৃত।” তাতে শৌল বুঝতে পারলেন, তিনি শমূয়েল, আর মাথা নত করে ভূমিতে নীচু হয়ে প্রার্থনা করলেন।
\s5
\v 15 পরে শমূয়েল শৌলকে বললেন, “কি জন্য আমাকে উঠিয়ে কষ্ট দিলে?” শৌল বললেন, “আমি মহা সঙ্কটে পড়েছি, পলেষ্টীয়রা আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, ঈশ্বরও আমাকে ত্যাগ করেছেন, আমাকে আর উত্তর দেন না, ভাববাদীদের মাধ্যমেও না, স্বপ্ন দিয়েও না। অতএব আমার যা কর্তব্য, তা আমাকে জানানোর জন্য আপনাকে ডাকলাম।”
\s5
\v 16 শমূয়েল বললেন, “যখন সদাপ্রভু তোমাকে ত্যাগ করে তোমার বিপক্ষ হয়েছেন, তখন আমাকে কেন জিজ্ঞাসা কর?
\v 17 সদাপ্রভু আমার মাধ্যমে যেমন বলেছেন, সেইরকম আপনার জন্য করলেন; ফলতঃ সদাপ্রভু তোমার হাত থেকে রাজ্য টেনে ছিঁড়েছেন ও তোমার প্রতিবাসী, দায়ূদকে দিয়েছেন।
\s5
\v 18 যেহেতু তুমি সদাপ্রভুর রবে কান দেওনি এবং অমালেকের প্রতি তার প্রচণ্ড রাগ সফল করনি, এই জন্য আজ সদাপ্রভু এইরকম করলেন।
\v 19 আর সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে ইস্রায়েলকেও পলেষ্টীয়দের হাতে সমর্পণ করবেন। কাল তোমার ও তোমার পুত্ররা আমার সঙ্গী হবে; আর সদাপ্রভু ইস্রায়েলের সৈন্যদলকেও পলেষ্টীয়দের হাতে সমর্পণ করবেন।”
\s5
\v 20 শৌল তখনই ভূমিতে লম্বা হয়ে পড়লেন; শমূয়েলের কথায় তিনি খুব ভয় পেলেন এবং সমস্ত দিন-রাত অনাহারে থাকাতে তিনি শক্তিহীন হয়ে পড়েছিলেন।
\v 21 পরে সেই স্ত্রী লোক শৌলের কাছে এসে তাকে খুবই চিন্তিত দেখে, বললেন, “দেখুন, আপনার দাসী আমি আপনার কথা রেখেছি, আপনি আমাকে যা বলেছিলেন, প্রাণ হাতে করে আপনার সেই কথা রেখেছি।
\s5
\v 22 অতএব অনুরোধ করি, এখন আপনিও এই দাসীর কথা রাখুন; আমি আপনার সামনে কিছু খাবার রাখি, আপনি ভোজন করুন, তা হলে পথে চলবার সময় শক্তি পাবেন।”
\v 23 কিন্তু তিনি অসম্মত হয়ে বললেন, “আমি ভোজন করব না,” তবুও তার দাসরা ও সেই স্ত্রী লোকটি আগ্রহ করে অনুরোধ করলে তিনি তাদের কথা শুনে ভূমি থেকে উঠে খাটে বসলেন।
\s5
\v 24 তখন সেই স্ত্রী লোকের গৃহে একটা মোটাসোটা গোবত্স ছিল, আর সে তাড়াতাড়ি সেটি মারল এবং সূজী নিয়ে ঠেসে তাড়ীশূন্য রুটি তৈরী করল।
\v 25 পরে শৌলের ও তার দাসদের সামনে তা আনল, আর তারা ভোজন করলেন; পরে সেই রাতে উঠে চলে গেলেন।
\s5
\c 29
\ms অমালেকীয়দের ওপরে দায়ূদের জয়লাভ
\p
\v 1 পরে পলেষ্টীয়রা নিজেদের সমস্ত সৈন্যদল অফেকে জড়ো করল এবং ইস্রায়েলীয়দের যিষ্রিয়েলে অবস্থিত উনুই-এর কাছে শিবির স্থাপন করলেন।
\v 2 পলেষ্টীয়দের শাসকেরা একশো সংখ্যক ও হাজার সংখ্যক সৈন্যদল নিয়ে এগিয়ে যেতে লাগলেন, আর সবার শেষে আখীশের সঙ্গে দায়ূদ ও তার লোকেরা এগিয়ে গেলেন।
\s5
\v 3 তখন পলেষ্টীয়দের অধ্যক্ষরা জিজ্ঞাসা করলেন, “এই ইব্রীয়েরা এখানে কি করে?” আখীশ পলেষ্টীয়দের অধ্যক্ষদের উত্তর করলেন, “এই ব্যক্তি কি ইস্রায়েলের রাজা শৌলের দাস দায়ূদ না? সে এতদিন ও এত বছর আমার সঙ্গে বাস করছে এবং যেদিন আমার পক্ষে এসেছে, সেই থেকে আজ পর্যন্ত এর কোনো ত্রুটি দেখিনি।”
\s5
\v 4 তাতে পলেষ্টীয়দের অধ্যক্ষরা তার উপর ক্রুদ্ধ হলেন; আর পলেষ্টীয়দের অধ্যক্ষরা তাকে বললেন, “তুমি তাকে ফিরিয়ে পাঠিয়ে দাও; সে তোমার নিরুপিত নিজের জায়গায় ফিরে যাক, আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে না আসুক, যদি সে যুদ্ধে আমাদের বিপক্ষ হয়; কারণ এইসব লোকের মুন্ডু ছাড়া আর কিসে নিজের কর্তাকে প্রসন্ন করবে?
\s5
\v 5 এই কি সেই দায়ূদ না, যার বিষয়ে লোকেরা নেচে নেচে পরস্পর গান করত,
\q1 “শৌল হত্যা করলেন হাজার হাজার আর দায়ূদ হত্যা করলেন অযুত অযুত?”
\p
\s5
\v 6 তখন আখীশ দায়ূদকে ডেকে বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, তুমি সরল লোক এবং সৈন্যের মধ্যে আমার সঙ্গে তোমার যাতায়াত আমার দৃষ্টিতে ভাল, কারণ তোমার আসবার দিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি তোমার কোনো দোষ পায়নি, তবুও শাসকেরা তোমার উপরে সন্তুষ্ট নন।
\v 7 অতএব এখন শান্তিতে ফিরে যাও, পলেষ্টীয়দের শাসকের দৃষ্টিতে যা খারাপ তা কর না।”
\s5
\v 8 তখন দায়ূদ আখীশকে বললেন, “কিন্তু আমি কি করেছি? আজ পর্যন্ত যতদিন আপনার সামনে আছি, আপনি এই দাসের কি দোষ পেয়েছেন যে, আমি নিজের প্রভু মহারাজের শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারব না?”
\v 9 তাতে আখীশ উত্তর করে দায়ূদকে বললেন “আমি জানি, ঈশ্বরের দূতের মতো তুমি আমার দৃষ্টিতে ভালো, কিন্তু পলেষ্টীয়দের অধ্যক্ষরা বলেছেন, সেই ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে যেতে পারবে না।"
\s5
\v 10 অতএব তোমার সঙ্গে তোমার প্রভুর যে দাসেরা এসেছেন, তাদেরকে নিয়ে ভোরবেলায় ওঠ; আর ভোরবেলায় ওঠা মাত্র আলো হলে চলে যেও।”
\v 11 তাতে দায়ূদ ও তার লোকেরা ভোরবেলায় উঠে সকালে যাত্রা করে পলেষ্টীয়দের দেশে ফিরে গেলেন। আর পলেষ্টীয়েরা যিষ্রিয়েলে গেলেন।
\s5
\c 30
\p
\v 1 পরে দায়ূদ ও তার লোকেরা তৃতীয় দিনে সিক্লগে উপস্থিত হলেন৷ এর মধ্যে অমালেকীয়রা দক্ষিণ অঞ্চলেও সিক্লগে চড়াও হয়েছিল, সিক্লগে আঘাত করে তা আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল৷
\v 2 তারা সেখানকার স্ত্রী লোক এবং ছোট বড় সবাইকে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিল; তারা কাউকেও হত্যা করেনি, কিন্তু সবাইকে নিয়ে নিজেদের পথে চলে গিয়েছিল৷
\s5
\v 3 পরে দায়ূদ ও তার লোকেরা যখন সেই নগরে উপস্থিত হলেন, দেখ, নগর আগুনে পুড়ে গিয়েছে ও তাদের স্ত্রী ছেলেমেয়েদের বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷
\v 4 তখন দায়ূদ ও তার সঙ্গী লোকেরা উচ্চস্বরে কাঁদতে লাগল, শেষে কাঁদতে তাদের আর শক্তি থাকল না৷
\s5
\v 5 ঐ সময় দায়ূদের দুই স্ত্রী, যিষ্রিয়েলীয়া অহীনোয়ম ও কর্ম্মিলীয় নাবলের বিধবা অবীগল বন্দী হয়েছিলেন৷
\v 6 তখন দায়ূদ খুব ব্যাকুল হলেন, কারণ প্রত্যেক জনের মন নিজের নিজের পুত্র-কন্যার জন্য শোকাকুল হওয়াতে লোকেরা দায়ূদকে পাথর দিয়ে আঘাত করার কথা বলতে লাগলেন; তবুও দায়ূদ নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুতে নিজেকে সবল করলেন৷
\s5
\v 7 পরে দায়ূদ অহীমেলকের পুত্র অবিয়াথর যাজককে বললেন, “অনুরোধ করি, এখানে আমার কাছে এফোদ আন,” তাতে অবিয়াথর দায়ূদের কাছে এফোদ আনলেন৷
\v 8 তখন দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে এই কথা জিজ্ঞাসা করলেন, “ঐ সৈন্যদলের পিছনে পিছনে গেলে আমি কি তাদের নাগাল পাব?” তিনি তাকে বললেন, “তাদের পিছনে পিছনে তাড়া করে যাও, নিশ্চয়ই তাদের নাগাল পাবে ও সবাইকে উদ্ধার করবে৷”
\s5
\v 9 তখন দায়ূদ ও তার সঙ্গী ছয়শো লোক গিয়ে বিষোর স্রোতে উপস্থিত হলে কিছু লোককে সেখানে রাখা হল;
\v 10 কিন্তু দায়ূদ ও তার সঙ্গী চারশো লোক শত্রুদের পিছনে পিছনে তাড়া করে গেলেন; কারণ দুশো লোক ক্লান্তির জন্য বিষোর স্রোত পার হতে না পারাতে সেই জায়গায় থাকল৷
\s5
\v 11 পরে তারা মাঠের মধ্যে একজন মিস্রীয়কে পেয়ে তাকে দায়ূদের কাছে আনল এবং তাকে রুটি দিলে সে ভোজন করল, আর তারা তাকে জলপান করতে দিল;
\v 12 আর তারা ডুমুরচাকের একখন্ড ও দুই থলে শুকনো দ্রাক্ষা তাকে দিল; তা খেলে পর সে পুনরায় শক্তি লাভ করল, কারণ তিন দিনরাত সে রুটি ভোজন কি জলপান করেনি৷
\s5
\v 13 পরে দায়ূদ তাকে জিজ্ঞাসা করল, “তুমি কার লোক? কোন জায়গা থেকে এসেছ?” সে বলল, “আমি একজন মিস্রীয় যুবক, একজন অমালেকীয়ের দাস; আজ তিন দিন হল, আমি অসুস্থ হয়ে ছিলাম বলে আমার কর্তা আমাকে ত্যাগ করে গেলেন৷
\v 14 আমরা করেথীয়দের দক্ষিণ অঞ্চলে, যিহূদার অধিকারে ও কালেবের অধিকারের দক্ষিণ অঞ্চলে চড়াও হয়েছিলাম, আর সিক্লগ আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলাম৷”
\s5
\v 15 পরে দায়ূদ তাকে বললেন, “সেই দলের কাছে কি আমাকে পৌঁছিয়ে দেবে?” সে বলল, “আপনি আমার কাছে ঈশ্বরের নামে দিব্যি করুন যে, আমাকে হত্যা করবেন না, বা আমার কর্তার হাতে আমাকে সমর্পন করবেন না, তা হলে আমি সেই দলের কাছে আপনাকে পৌঁছিয়ে দেব৷”
\s5
\v 16 পরে যখন সে তাকে পৌছিয়ে দিল, দেখ, তারা সমস্ত ভূমি জুড়ে, ভোজন পান ও উত্সব করছিল, কারণ পলেষ্টীয়দের দেশ ও যিহূদার দেশ থেকে তারা প্রচুর লুঠ দ্রব্য এনেছিল৷
\v 17 দায়ূদ সন্ধ্যা থেকে পরের দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত তাদেরকে আঘাত করলেন; তাদেরও মধ্যে একজনও রক্ষা পেল না, শুধু চারশো যুবক উটে চড়ে পালাল৷
\s5
\v 18 আর অমালেকীয়েরা যা কিছু নিয়ে গিয়েছিল, দায়ূদ সে সমস্ত উদ্ধার করলেন, বিশেষত দায়ূদ নিজের দুই স্ত্রীকেও মুক্ত করলেন৷
\v 19 তাদের ছোট কি বড়, পুত্র কি কন্যা, অথবা দ্রব্য সামগ্রী প্রভৃতি যা ওরা নিয়ে গিয়েছিল, তার কিছুই বাদ গেল না; দায়ূদ সবই ফিরিয়ে আনলেন৷
\v 20 আর দায়ূদ সমস্ত মেষপাল ও গরুর পাল নিলেন এবং লোকেরা সেগুলিকে অন্য পশুপালের আগে আগে চালাল, আর বলল, “এটা দায়ূদের লুঠ দ্রব্য৷”
\s5
\v 21 পরে যে দুশো লোক ক্লান্তির জন্য দায়ূদের পিছনে যেতে পারেনি, যাদেরকে তারা বিষোর স্রোতের ধারে রেখে গিয়েছিলেন, তাদের কাছে দায়ূদ আসলেন; তারা দায়ূদ ও তার সঙ্গী লোকদের সঙ্গে দেখা করতে গেল; আর দায়ূদ লোকেদের সঙ্গে কাছে এসে তাদের খবরাখবর নিলেন৷
\v 22 কিন্তু দায়ূদের সঙ্গে যারা গিয়েছিল, তাদের মধ্যে দুষ্ট লোকেরা সবাই বলল, “ওরা আমাদের সঙ্গে যায়নি; অতএব আমরা যে লুঠ দ্রব্য উদ্ধার করেছি, ওদেরকে তা থেকে কিছুই দেব না, ওরা প্রত্যেকে কেবল নিজের নিজের স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে চলে যাক৷”
\s5
\v 23 তখন দায়ূদ উত্তর করলেন, “হে আমার ভায়েরা, যে সদাপ্রভু আমাদেরকে রক্ষা করে আমাদের বিরুদ্ধে আসা সৈন্যদলকে আমাদের হাতে সমর্পন করলেন, তিনি আমাদেরকে যা দিলেন, তা নিয়ে তোমরা এরকম কর না৷
\v 24 কে বা এ বিষয়ে তোমাদের কথা শুনবে? যে যুদ্ধে যায়, সে যেমন অংশ পাবে, যে জিনিসপত্রের কাছে থাকে, সেও সেরকম অংশ পাবে; উভয়ের সমান অংশ হবে৷”
\v 25 সেই দিন থেকে দায়ূদ ইস্রায়েলের জন্য এই বিধি ও শাসন স্থির করলেন, এটা আজ পর্যন্ত চলছে৷
\s5
\v 26 পরে দায়ূদ যখন সিক্লগে উপস্থিত হলেন, তখন নিজের বন্ধু যিহূদার প্রাচীনদের কাছে লুঠ দ্রব্যের কিছু পাঠিয়ে দিয়ে বললেন, “দেখ, সদাপ্রভুর শত্রুদের থেকে আনা লুঠ দ্রব্যের মধ্যে এটা তোমাদের জন্য উপহার৷”
\v 27 বৈথেল, দক্ষিণ অঞ্চলে অবস্থিত রামোৎ,
\v 28 যত্তীর, অরোয়ের, শিফমোৎ, ইষ্টিমোয়, রাখলের লোক,
\s5
\v 29 যিরহমেলীয়দের নগর সব, হর্ম্মা, কোরআশন,
\v 30 অথাক ও হিব্রোণ, যে যে জায়গায় দায়ূদের ও তার লোকেদের যাতায়াত হত,
\v 31 সে সব জায়গার লোকদের কাছে তিনি তা পাঠালেন৷
\s5
\c 31
\ms শৌল ও যোনাথনের মৃত্যু।
\p
\v 1 এর মধ্যে পলেষ্টীয়রা ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করলে ইস্রায়েল লোকেরা পলেষ্টীয়দের সামনে থেকে পালিয়ে গেল এবং গিলবোয় পর্বতে মারা পড়তে লাগল৷
\v 2 আর পলেষ্টীয়রা শৌলের ও তার ছেলেদের পিছনে পিছনে দৌড়াল এবং পলেষ্টীয়রা যোনাথন, অবীনাদব ও মলকি-শূয় শৌলের এই ছেলেদের হত্যা করল৷
\v 3 পরে শৌলের বিরুদ্ধে ভীষণভাবে সংগ্রাম হল, আর ধনুর্দ্ধরেরা তার নাগাল পেল; সেই ধনুর্দ্ধারীদের থেকে শৌল খুব ভয় পেলেন৷
\s5
\v 4 আর শৌল নিজের অস্ত্রবাহককে বললেন, “তোমার তলোয়ার বার কর, ওটা দিয়ে আমাকে বিদ্ধ কর; না হলে কি জানি, ঐ অছিন্নত্বকেরা এসে আমাকে বিদ্ধ করে আমার অপমান করবে৷” কিন্তু তাঁর অস্ত্রবাহক তা করতে চাইল না, কারণ সে খুব ভয় পেয়েছিল; অতএব শৌল তলোয়ার নিয়ে নিজে তার উপরে পড়লেন৷
\v 5 আর শৌল মারা গিয়েছেন দেখে তার অস্ত্রবাহকও নিজের তলোয়ারের ওপরে পড়ে তার সঙ্গে মারা গেল৷
\v 6 এইভাবে সেই দিন শৌল, তাঁর তিন ছেলে, তাঁর অস্ত্রবাহক ও তাঁর সমস্ত লোক একসঙ্গে মারা যান৷
\s5
\v 7 পরে ইস্রায়েলের যে লোকেরা উপত্যকার ওপরে ও যর্দনের ওপরে ছিল, তারা যখন দেখতে পেল যে, ইস্রায়েলের লোকেরা পালিয়ে গেছে এবং শৌল ও তার ছেলেরা মারা গিয়েছে, তখন তারা সবাই নগর ছেড়ে পালাল, আর পলেষ্টীয়রা এসে সেইসব নগরের মধ্যে বাস করতে লাগল৷
\v 8 পরের দিন পলেষ্টীয়রা নিহত লোকদের পোশাক খুলে নিয়ে এসে গিলবোয় পর্বতে পড়ে থাকা শৌল ও তাঁর তিন ছেলেকে দেখতে পেল;
\s5
\v 9 তখন তারা তাঁর মাথা কেটে পোশাক খুলে নিল এবং নিজেদের দেবালয়ে ও লোকেদের মধ্যে সেই বার্তা জানানোর জন্য পলেষ্টীয়দের দেশে সব জায়গায় পাঠাল৷
\v 10 পরে তারা পোশাক অষ্টারোৎ দেবদেবীর গৃহে রাখল এবং তাঁর মৃতদেহ বৈৎশানের দেওয়ালে টাঙ্গিয়ে দিল৷
\s5
\v 11 পরে যখন যাবেশ গিলিয়দ নিবাসীরা শৌলের প্রতি পলেষ্টীয়দের করা সেই কাজের সংবাদ পেল,
\v 12 তখন সমস্ত শক্তিশালী লোক উঠল এবং সমস্ত রাত হেঁটে গিয়ে শৌলের ও তাঁর ছেলেদের শরীর বৈৎশানের দেওয়াল থেকে নামাল, আর যাবেশে এসে সেখানে তাঁদের মৃতদেহ পুড়িয়ে দিল৷
\v 13 আর তারা তাঁদের হাড় নিয়ে যাবেশে অবস্থিত ঝাউ গাছের তলায় পুঁতে রাখল, পরে সাত দিন উপোশ করল৷

1112
10-2SA.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,1112 @@
\id 2SA
\ide UTF-8
\h শমূয়েলের দ্বিতীয় বই৷
\toc1 শমূয়েলের দ্বিতীয় বই৷
\toc2 শমূয়েলের দ্বিতীয় বই৷
\toc3 2sa
\mt1 শমূয়েলের দ্বিতীয় বই৷
\s5
\c 1
\ms শমূয়েলের দ্বিতীয় বই
\s শৌল ও যোনাথনের জন্য দায়ূদের বিলাপ সঙ্গীত৷
\p
\v 1 শৌলের মৃত্যুর পরে এই ঘটনা হল; দায়ূদ অমালেকীয়দেরকে হত্যা করে ফিরে এলেন;
\v 2 আর দায়ূদ সিক্লগে দুই দিন থাকলেন; পরে তৃতীয় দিনে, দেখ, শৌলের শিবির থেকে একটা লোক এল, তার কাপড় ছেঁড়া ও মাথায় মাটি ছিল, দায়ূদের কাছে এসে সে মাটিতে পড়ে প্রণাম করল৷
\s5
\v 3 দায়ূদ তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোথা থেকে এসেছ?” সে বলল, “আমি ইস্রায়েলের শিবির থেকে পালিয়ে এসেছি৷”
\v 4 দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “খবর কি? আমাকে তা বল৷” সে উত্তর দিল, “লোকেরা যুদ্ধ থেকে পালিয়ে গেছে; আবার লোকেদের মধ্যেও অনেকে পড়ে গিয়েছে, মারা গেছে এবং শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথনও মারা গেছেন৷”
\v 5 পরে দায়ূদ সেই সংবাদদাতা যুবককে জিজ্ঞাসা করলেন, “শৌল ও তাঁর ছেলে যোনাথন যে মারা গেছেন, এটা তুমি কি করে জানলে?”
\s5
\v 6 তাতে সেই সংবাদদাতা যুবক তাঁকে বলল, “আমি ঘটনাক্রমে গিলবোয় পর্বতে গিয়েছিলাম, আর দেখ, শৌল বর্শার উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন এবং দেখ, রথ ও ঘোড়াচালকেরা চাপাচাপি করে তাঁর খুব কাছে এসে পড়েছিল৷
\v 7 ইতিমধ্যে তিনি পিছনের দিকে মুখ ফিরিয়ে আমাকে দেখে ডাকলেন৷
\s5
\v 8 আমি বললাম, ‘এই যে আমি৷’ তিনি আমাকে বললেন, ‘তুমি কে? আমি বললাম, ‘আমি একজন অমালেকীয়৷’
\v 9 তিনি আমাকে বললেন, ‘অনুরোধ করি, আমার কাছে দাঁড়িয়ে আমাকে হত্যা কর, কারণ আমার মাথা ঘুরছে, আর এখনও আমার মধ্যে সম্পূর্ণ প্রাণ রয়েছে৷’
\v 10 তাতে আমি কাছে দাঁড়িয়ে তাঁকে হত্যা করলাম; কারণ পতনের পরে তিনি যে আর জীবিত থাকবেন না, এটা ঠিকই বুঝলাম; আর তাঁর মাথায় যে মুকুট ছিল ও হাতে যে বালা ছিল, তা নিয়ে এই জায়গায় আমার প্রভুর কাছে এসেছি৷”
\s5
\v 11 তখন দায়ূদ নিজের কাপড় ছিঁড়ল এবং তাঁর সঙ্গীরাও সবাই সেই রকম করল,
\v 12 আর শৌল, তাঁর ছেলে যোনাথন, সদাপ্রভুর প্রজারা ও ইস্রায়েলের কুল তরোয়ালে পতিত হওয়ার ফলে তাঁদের জন্য তাঁরা শোক ও বিলাপ এবং সন্ধ্যা পর্যন্ত উপোস করলেন৷
\v 13 পরে দায়ূদ ঐ সংবাদদাতা যুবককে বললেন, “তুমি কোথাকার লোক?” সে বলল, “আমি একজন প্রবাসীর ছেলে, অমালেকীয়৷”
\s5
\v 14 দায়ূদ তাকে বললেন, “সদাপ্রভুর অভিষিক্তকে হত্যা করার জন্য নিজের হাত তুলতে তুমি কেন ভয় পেলে না?”
\v 15 পরে দায়ূদ যুবকদের একজনকে ডেকে আদেশ দিলেন, “তুমি কাছে গিয়ে একে আক্রমণ কর৷” তাতে সে তাকে আঘাত করলে সে মারা গেল৷
\v 16 আর দায়ূদ তাকে বললেন, “তোমার মৃত্যুর জন্য তুমি নিজেই দায়ী; কারণ তোমারই মুখ তোমার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছে, তুমিই বলেছ, আমিই সদাপ্রভুর অভিষিক্ত ব্যক্তিকে হত্যা করেছি৷”
\s5
\v 17 পরে দায়ূদ শৌলের ও তাঁর ছেলে যোনাথনের বিষয়ে এই বিলাপ গান গাইলেন
\v 18 এবং যিহূদার সন্তানদেরকে এই ধনুকের গান শেখাতে আদেশ দিলেন; দেখ, সেটা যাশের গ্রন্থে লেখা আছে৷
\v 19 “হে ইস্রায়েল, তোমার উঁচু জায়গায় তোমার মহিমা মারা পড়ল! হায়! বীরেরা পরাজিত হলেন৷
\v 20 গাতে খবর দিও না, অস্কিলোনের রাস্তায় প্রকাশ কর না; যদি পলেষ্টীয়দের মেয়েরা আনন্দ করে, যদি অচ্ছিন্নত্বকদের মেয়েরা উল্লাস করে৷
\s5
\v 21 হে গিলবোয়ের পর্বতমালা, তোমাদের ওপরে শিশির কিংবা বৃষ্টি না পড়ুক, উপহারের ক্ষেত না থাকুক; কারণ সেখানে বীরেদের ঢাল অশুদ্ধ হল, শৌলের ঢাল তেল দিয়ে অভিষিক্ত হল না৷
\v 22 মৃতদের রক্ত ও বীরদের মেদ না পেলে যোনাথনের ধনুক ফিরে আসত না, শৌলের তরোয়ালও ওই ভাবে ফিরে আসত না৷
\s5
\v 23 শৌল ও যোনাথান জীবনকালে প্রিয় ও আনন্দিত ছিলেন, তাঁরা মারা গিয়েও আলাদা হলেন না; তাঁদের গতি ঈগলের থেকেও দ্রুত ছিল, সিংহের থেকেও শক্তিশালী ছিলেন৷
\v 24 ইস্রায়েলের মেয়েরা! শৌলের জন্য কাঁদ, তিনি সুন্দর লাল রঙের পোশাক তোমাদের পড়াতেন, তোমাদের পোশাকের ওপর সোনার গয়না পড়াতেন৷
\s5
\v 25 হায়! যুদ্ধের মধ্যে বীরেরা পরাজিত হলেন৷ যোনাথন তোমাদের উঁচু জায়গায় মারা গেলেন৷
\v 26 হ্যাঁ, ভাই যোনাথন৷ তোমার জন্য আমি চিন্তিত৷ তুমি আমার কাছে খুব আনন্দদায়ক ছিলে; তোমার ভালবাসা আমার কাছে খুবই মূল্যবান ছিল, নারীদের ভালবাসার থেকেও বেশি ছিল!
\v 27 হায়! বীরেরা পরাজিত হল, যুদ্ধের সমস্ত অস্ত্রগুলি ধ্বংস হল!”
\s5
\c 2
\s দায়ূদ যিহূদা বংশের উপরে রাজা হিসাবে অভিষিক্ত হন৷
\p
\v 1 তারপরে দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি যিহূদার কোনো একটি নগরে উঠে যাব?” সদাপ্রভু বললেন, “যাও৷” পরে দায়ূদ জিজ্ঞাসা করলেন, “কোথায় যাব?” তিনি বললেন, “হিব্রোণে৷”
\v 2 অতএব দায়ূদ আর তাঁর দুই স্ত্রী, যিষ্রিয়েলীয়া অহীনোয়ম ও কর্ম্মিলীয় নাবলের বিধবা অবীগল, সেই জায়গায় গেলেন৷
\v 3 আর দায়ূদ প্রত্যেকের পরিবারের সঙ্গে নিজের সঙ্গীদেরকেও নিয়ে গেলেন, তাতে তারা হিব্রোণের নগরগুলিতে বসবাস করিল৷
\s5
\v 4 পরে যিহূদার লোকেরা এসে সেই জায়গায় দায়ূদকে যিহূদার বংশের উপরে রাজপদে অভিষেক করল৷ পরে “যাবেশ-গিলিয়দের লোকেরা শৌলের কবর দিয়েছে,” এই খবর লোকেরা দায়ূদকে দিল৷
\v 5 তখন দায়ূদ যাবেশ-গিলিয়দের লোকেদের কাছে দূতদেরকে পাঠিয়ে বললেন, “তোমরা সদাপ্রভুর আশীর্বাদের পাত্র, কারণ তোমরা নিজের প্রভুর প্রতি, শৌলের প্রতি, এই দয়া করেছ, তাঁর কবর দিয়েছ৷
\s5
\v 6 অতএব সদাপ্রভু তোমাদের প্রতি দয়া ও সত্য ব্যবহার করুন এবং তোমরা এই কাজ করেছ, এই জন্য আমিও তোমাদের প্রতি ভালো ব্যবহার করব৷
\v 7 অতএব এখন তোমাদের হাত সবল হোক ও তোমরা সাহসী হও, কারণ তোমাদের প্রভু শৌল মারা গেছেন, আর যিহূদার বংশ তাদের উপরে আমাকে রাজপদে অভিষেক করেছে৷”
\s5
\v 8 ইতিমধ্যে নেরের ছেলে অবনের শৌলের সেনাপতি, শৌলের ছেলে ঈশবোশৎকে ওপারে মহনয়িমে নিয়ে গেলেন;
\v 9 আর গিলিয়দের, অশূরীয়দের, যিষ্রিয়েলের, ইফ্রয়িমের ও বিন্যামীনের এবং সমস্ত ইস্রায়েলের উপরে রাজা করলেন৷
\s5
\v 10 শৌলের ছেলে ঈশবোশৎ চল্লিশ বছর বয়সে ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং দুই বছর রাজত্ব করেন৷ কিন্তু যিহূদা বংশ দায়ূদকে অনুসরণ করত৷
\v 11 আর দায়ূদ সাত বছর ছয় মাস হিব্রোণে যিহূদা বংশের উপরে রাজত্ব করলেন৷
\s5
\v 12 একসময়ে নেরের ছেলে অবনের এবং শৌলের ছেলে ঈশবোশতের দাসরা মহনয়িম থেকে গিবিয়োনে গেলেন৷
\v 13 তখন সরূয়ার ছেলে যোয়াব ও দায়ূদের দাসরা বেরিয়ে এলেন, আর গিবিয়োনের পুকুরের কাছে তাঁরা পরস্পর মুখোমুখি হল, একদল পুকুরের এপারে, অন্যদল পুকুরের ওপারে বসল৷
\s5
\v 14 পরে অবনের যোয়াবকে বললেন, “অনুরোধ করি, যুবকরা উঠে আমাদের সামনে যুদ্ধের প্রতিযোগিতা করুক৷” যোয়াব বললেন, “ওরা উঠুক৷”
\v 15 অতএব লোকেরা সংখ্যা অনুসারে উঠে এগিয়ে গেল; শৌলের ছেলে ঈশবোশতের ও বিন্যামীনের পক্ষে বারো জন এবং দায়ূদের দাসেদের মধ্যে থেকে বার জন৷
\s5
\v 16 আর তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের প্রতিযোদ্ধার মাথা ধরে পাঁজরে তরোয়াল বিদ্ধ করার ফলে সকলে এক জায়গায় মৃত্যু বরণ করল৷ এই জন্য সেই জায়গার নাম হিলকত্হত্সূরীম [ছুরিকা-ভূমি] হল; তা গিবিয়োনে আছে৷
\v 17 আর সেই দিন ভীষণ যুদ্ধ হল এবং অবনের ও ইস্রায়েলের লোকেরা দায়ূদের দাসেদের সামনে হেরে গেল৷
\s5
\v 18 সেই জায়গায় যোয়াব, অবীশয় ও অসাহেল নামে সরূয়ার তিন ছেলে ছিলেন, সেই অসাহেল বনের হরিণের মত তাঁর পা দ্রতগামী ছিল৷
\v 19 আর অসাহেল অবনেরের পিছু পিছু দৌড়াতে লাগলেন, যেতে যেতে অবনেরের পিছু নেওয়া থেকে ডানদিকে কিংবা বাঁদিকে ফিরলেন না৷
\s5
\v 20 পরে অবনের পিছন দিকে ফিরে বললেন, “তুমি কি অসাহেল?” তিনি উত্তর দিলেন, “আমি সেই৷”
\v 21 অবনের তাঁকে বললেন, “তুমি ডানদিকে কিংবা বাঁদিকে ফিরে এই যুবকদের কোন একজনকে ধরে তার মত সাজ৷” কিন্তু অসাহেল তাঁর পিছু নেওয়া থেকে ফিরতে রাজি হলেন না৷
\s5
\v 22 পরে অবনের অসাহেলকে পুনরায় বললেন, “আমার পিছু নেওয়া বন্ধ কর; আমি কেন তোমাকে আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেব? এমন করলে তোমার ভাই যোয়াবের সামনে কি করে মুখ দেখাব?”
\v 23 তবু তিনি ফিরতে রাজি হলেন না; অতএব অবনের বড়শার গোড়া তাঁর পেটে এমন গেঁথে দিলেন যে, বড়শা তাঁর পিঠ দিয়ে বেরল; তাতে তিনি সেখানে পড়ে গেলেন, সেই জায়গাতেই মরলেন এবং যত লোক অসাহেলের পতন ও মৃত্যুর স্থানে উপস্থিত হল, সবাই দাঁড়িয়ে থাকল৷
\s5
\v 24 কিন্তু যোয়াব ও অবীশয় অবনেরের পিছনে পিছনে তাড়া করে গেলেন; সূর্য্য অস্ত যাবার সময় গিবিয়োনের মরুভূমির কাছে রাস্তার কাছে গীহের সামনের অম্মা গিরির কাছে উপস্থিত হলেন৷
\v 25 আর বিন্যামীন সন্তানরা অবনেরের সঙ্গে একসাথে জড়ো হয়ে এই গিরির চূড়ায় দাঁড়িয়ে থাকল৷
\s5
\v 26 তখন অবনের যোয়াবকে ডেকে বললেন, “তরোয়াল কি চিরকাল গ্রাস করবে? অবশেষে তিক্ততা হবে, এটা কি জান না? অতএব তুমি নিজের ভাইদের পিছনে তাড়া না করে ফিরে আসতে নিজের লোকদেরকে কতদিন আদেশ করবে না?”
\v 27 যোয়াব বললেন, “জীবন্ত ঈশ্বরের দিব্যি, তুমি যদি কথা না বলতে, তবে লোকে সকালেই চলে যেত, নিজের নিজের ভাইয়ের পিছনে পিছনে যেত না৷”
\s5
\v 28 পরে যোয়াব তূরী বাজালেন; তাতে সমস্ত লোক থেমে গেল, ইস্রায়েলের পিছনে আর তাড়া করল না, আর যুদ্ধ করল না৷
\v 29 পরে অবনের ও তাঁর লোকেরা অরাবা উপত্যকা দিয়ে সেই সমস্ত রাত পায়ে হেঁটে যর্দন পার হলেন এবং পুরো বিথোণ দিয়ে মহনয়িমে উপস্থিত হলেন৷
\s5
\v 30 আর যোয়াব অবনেরের পিছনে তাড়া না করে ফিরে এলেন; পরে সমস্ত লোককে একসাথে করলে দায়ূদের দাসদের মধ্যে ঊনিশ জনের ও অসাহেলের অভাব হল৷
\v 31 কিন্তু দায়ূদের দাসদের আঘাতে বিন্যামীনের ও অবনেরের লোকদের তিনশো ষাট জন মারা গেল৷
\v 32 পরে লোকেরা অসাহেলকে তুলে নিয়ে বৈৎলেহমে, তাঁর বাবার কবরে কবর দিল৷ পরে যোয়াব ও তাঁর লোকেরা সমস্ত রাত হেঁটে সকালে হিব্রোণে পৌঁছালেন৷
\s5
\c 3
\s দায়ূদের বলবৃদ্ধি৷ অবনেরের মৃত্যু৷
\p
\v 1 শৌলের বংশে ও দায়ূদের বংশে পরস্পরের মধ্য অনেক দিন যুদ্ধ হল; তাতে দায়ূদ শক্তিশালী হয়ে উঠলেন, কিন্তু শৌলের বংশ দুর্বল হয়ে পড়ল৷
\s5
\v 2 আর হিব্রোণে দায়ূদের একটি ছেলে হল; তাঁর বড় ছেলে অম্মোন, সে যিষ্রিয়েলীয়া অহীনোয়মের ছেলে;
\v 3 তাঁর দ্বিতীয় ছেলে কিলাব, সে কর্ম্মিলীয় নাবলের বিধবা অবীগলের ছেলে; তৃতীয় অবশালোম, সে গশূরের তলময় রাজার মেয়ে মাখার ছেলে;
\s5
\v 4 চতুর্থ অদোনিয়, সে হগীতের ছেলে; পঞ্চম শফটিয়, সে অবীটলের ছেলে
\v 5 এবং ষষ্ঠ যিত্রিয়ম, সে দায়ূদের স্ত্রী ইগ্লার ছেলে; দায়ূদের এই সব ছেলের হিব্রোণে জন্ম হল৷
\s5
\v 6 যে সময়ে শৌলের বংশে ও দায়ূদের বংশে পরস্পর যুদ্ধ হল, সেই সময়ে অবনের শৌলের বংশের হয়ে বীরত্ব দেখালেন৷
\v 7 কিন্তু অয়ার মেয়ে রিসপা নামে শৌলের একজন উপপত্নী ছিল; ঈশবোশৎ অবনেরকে বললেন, “তুমি আমার বাবার উপপত্নীর সঙ্গে কেন শয়ন করেছ?”
\s5
\v 8 ঈশবোশতের এই কথায় অবনের খুব রেগে গিয়ে বললেন, “আমি কি যিহূদা কুলের কুকুরের মাথা? আজ পর্যন্ত তোমার বাবা শৌলের বংশের প্রতি, তাঁর ভাইয়েরা এবং বন্ধুদের প্রতি দয়া করছি এবং তোমাকে দায়ূদের হাতে তুলে দিইনি; তবু তুমি আজ ওই মহিলার বিষয়ে আমাকে অপরাধী করছ?
\s5
\v 9 ঈশ্বর অবনেরকে ঐরকম ও তার থেকে বেশি শাস্তি দিন, যদি দায়ূদের বিষয়ে সদাপ্রভু যে শপথ করেছেন, আমি সেই অনুসারে কাজ না করি,
\v 10 শৌলের বংশ থেকে রাজ্য নিয়ে দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত ইস্রায়েলের উপরে ও যিহূদার উপরে দায়ূদের সিংহাসন স্থাপন করার চেষ্টা না করি৷”
\v 11 তখন তিনি অবনেরকে আর একটা কথাও বলতে পারলেন না, কারণ তিনি তাঁকে ভয় করলেন৷
\s5
\v 12 পরে অবনের নিজের হয়ে দায়ূদের কাছে দূতদের পাঠিয়ে বললেন, “এই দেশ কার?” আরও বললেন, “আপনি আমার সঙ্গে নিয়ম করুন, আর দেখুন, সমস্ত ইস্রায়েলকে আপনার পক্ষে আনতে আমার হাত আপনার সাহায্যকারী হবে৷”
\v 13 দায়ূদ বললেন, “ভালো; আমি তোমার সঙ্গে নিয়ম করব; শুধু একটা বিষয় আমি তোমার কাছে চাই; যখন তুমি আমার মুখ দেখতে আসবে, তখন শৌলের মেয়ে মীখলকে না আনলে আমার মুখ দেখতে পাবে না৷”
\s5
\v 14 আর দায়ূদ শৌলের ছেলে ঈশবোশতের কাছে দূত পাঠিয়ে বললেন, “আমি পলেষ্টীয়দের একশোটা লিঙ্গের চামড়া যৌতুক দিয়ে যাকে বিয়ে করেছি, আমার সেই স্ত্রী মীখলকে দাও৷”
\v 15 তাতে ঈশবোশৎ লোক পাঠিয়ে তাঁর স্বামী অর্থাৎ লয়িশের ছেলে পলটিয়ের কাছ থেকে মীখলকে নিয়ে আসলেন৷
\v 16 তখন তাঁর স্বামী তাঁর পিছন পিছন কাঁদতে কাঁদতে বহুরীম পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে চলতে লাগলো৷ পরে অবনের তাকে বললেন, “যাও, ফিরে যাও,” তাতে সে ফিরে গেল৷
\s5
\v 17 পরে অবনের ইস্রায়েলের প্রাচীনদের সঙ্গে এইরকম কথাবার্তা করলেন, “তোমরা এর আগেই নিজেদের উপরে দায়ূদকে রাজা করার চেষ্টা করেছিলে৷
\v 18 এখন তাই কর, কারণ সদাপ্রভু দায়ূদের বিষয়ে বলেছেন, ‘আমি নিজের দাস দায়ূদের হাত দিয়ে নিজের প্রজা ইস্রায়েলকে পলেষ্টীয়দের হাত থেকে ও সব শত্রুর হাত থেকে উদ্ধার করব’৷”
\s5
\v 19 আর অবনের বিন্যামীন বংশের কানের কাছেও সেই কথা বললেন৷ আর ইস্রায়েলের ও বিন্যামীনের সব বংশের চোখে যা ভালো মনে হল, অবনের সেই সব কথা দায়ূদের কানের কাছে বলার জন্য হিব্রোণে গেলেন৷
\v 20 তখন অবনের কুড়ি জনকে সঙ্গে নিয়ে হিব্রোণে দায়ূদের কাছে উপস্থিত হলে দায়ূদ অবনেরের ও তাঁর সঙ্গীদের জন্য আহার তৈরী করলেন৷
\s5
\v 21 পরে অবনের দায়ূদকে বললেন, “আমি উঠে গিয়ে সকল ইস্রায়েলকে আমার প্রভু মহারাজের কাছে জড়ো করি; যেন তারা আপনার সঙ্গে নিয়ম করে, আর আপনি নিজের প্রাণের ইচ্ছামত সবার উপরে রাজত্ব করেন৷” পরে দায়ূদ অবনেরকে বিদায় দিলে তিনি ভালোভাবে চলে গেলেন৷
\s5
\v 22 আর দেখ, দায়ূদের দাসেরা ও যোয়াব আক্রমণ করে ফিরে আসলেন, অনেক লুট করা জিনিস সঙ্গে করে নিয়ে আসলেন৷ তখন অবনের হিব্রোণে দায়ূদের কাছে ছিলেন না, কারণ দায়ূদ তাঁকে বিদায় করেছিলেন, তিনি ভালোভাবে চলে গিয়েছিলেন৷
\v 23 পরে যোয়াব ও তাঁর সঙ্গী সমস্ত সৈন্য আসলে লোকেরা যোয়াবকে বলল, “নেরের ছেলে অবনের রাজার কাছে এসেছিলেন, রাজা তাঁকে বিদায় দিয়েছেন, তিনি ভালোভাবে চলে গেছেন৷”
\s5
\v 24 তখন যোয়াব রাজার কাছে গিয়ে বললেন, “আপনি কি করেছেন? দেখুন, অবনের আপনার কাছে এসেছিল, আপনি কেন তাকে বিদায় দিয়ে একেবারে চলে যেতে দিয়েছেন?
\v 25 আপনি তো নেরের ছেলে অবনেরকে জানেন; আপনাকে ভুলাবার জন্য, আপনার বাইরে ও ভিতরে যাতায়াত জানার জন্য, আর আপনি যা যা করছেন, সে সমস্ত জানার জন্য সে এসেছিল৷”
\v 26 পরে যোয়াব দায়ূদের কাছ থেকে বেরিয়ে গিয়ে অবনেরের পিছনে দূতদেরকে পাঠালেন; তারা সিরা কূপের কাছ থেকে তাঁকে ফিরিয়ে আনলো; কিন্তু দায়ূদ তা জানতেন না৷
\s5
\v 27 পরে অবনের হিব্রোণে ফিরে এলে যোয়াব তাঁর সঙ্গে গোপনে আলাপ করার ছলনায় নগরের ফটকের ভিতরে তাঁকে নিয়ে গেলেন, পরে নিজের ভাই অসাহেলের রক্তের প্রতিশাধের জন্য সেই জায়গায় তাঁর পেটে আঘাত করলেন, তাতে তিনি মারা গেলেন৷
\s5
\v 28 তারপর দায়ূদ যখন সেই কথা শুনলেন, তখন তিনি বললেন, “নেরের ছেলে অবনেরের রক্তপাতের বিষয়ে আমি ও আমার রাজ্য সদাপ্রভুর সামনে চিরকাল নির্দোষ৷
\v 29 সেই রক্ত যোয়াবের ও তার সমস্ত বংশের উপরে পড়ুক এবং যোয়াবের বংশের বহুমূত্র রোগ কিংবা কুষ্ঠী কিংবা লাঠিতে ভর দিয়ে চলার কিংবা তলোয়ারে মারা যাওয়ার কিংবা খাবারের অভাবে কষ্ট পাওয়ার লোকের অভাব না হোক৷”
\v 30 এইভাবে যোয়াব ও তাঁর ভাই অবীশয় অবনেরকে হত্যা করলেন, কারণ তিনি গিবিয়োনে যুদ্ধের সময়ে তাঁদের ভাই অসাহেলকে হত্যা করেছিলেন৷
\s5
\v 31 পরে দায়ূদ যোয়াবকে ও তাঁর সঙ্গী সব লোককে বললেন, “তোমরা নিজের নিজের পোশাক ছিঁড়ে চট পর এবং শোক করতে করতে অবনেরের আগে আগে চল৷” আর দায়ূদ রাজাও শবযাত্রার পিছনে পিছনে চললেন৷
\v 32 আর হিব্রোণে অবনেরকে কবর দেওয়া হল; তখন রাজা অবনেরের কবরের কাছে খুব জোরে কাঁদতে লাগলেন, সব লোকও কাঁদলো৷
\s5
\v 33 রাজা অবনেরের বিষয়ে দুঃখ করে বললেন, “যেমন মূর্খ মরে, সেই ভাবেই কি অবনের মরলেন?”
\v 34 তোমার হাত বাঁধা ছিল না, তোমার পায়ে শিকলও ছিল না; যেমন কেউ অন্যায়কারীদের সামনে পড়ে, তেমনভাবে তুমিও পড়লে৷ তখন সব লোক তাঁর জন্য আবার কাঁদলো৷
\s5
\v 35 পরে বেলা থাকতে সব লোক দায়ূদকে খাবার খাওয়াতে এল, কিন্তু দায়ূদ এই শপথ করলেন, “ঈশ্বর আমাকে ওই রকম ও তার থেকে বেশি শাস্তি দিন, যদি সূর্য্য অস্ত যাবার আগে আমি রুটি কিংবা অন্য কোনো জিনিসের স্বাদ গ্রহণ করি৷”
\v 36 তখন সব লোক তা লক্ষ্য করল ও সন্তুষ্ট হল; রাজা যা কিছু করলেন, তাতেই সব লোক সন্তুষ্ট হল৷
\s5
\v 37 আর নেরের ছেলে অবনেরের হত্যা রাজার থেকে হয় নি, এটা সব লোক ও সমস্ত ইস্রায়েল, সেই দিনে জানতে পারল৷
\v 38 আর রাজা নিজের দাসেদের বললেন, “তোমরা কি জান না যে, আজ ইস্রায়েলের মধ্যে প্রধান ও মহান একজন মারা গেছেন? আর রাজপদে অভিষিক্ত হলেও আজ আমি দুর্বল;
\v 39 এই কয়েকজন লোক, সরূয়ার ছেলেরা, আমার অবাধ্য৷ সদাপ্রভু খারাপ কাজ করা ব্যক্তিকে, তার দুষ্টতা অনুযায়ী প্রতিফল দিন৷”
\s5
\c 4
\s ঈশবোশতের মৃত্যু৷
\p
\v 1 পরে যখন শৌলের ছেলে শুনলেন যে, অবনের হিব্রোণে মারা গেছেন, তখন তাঁর হাত দুর্বল হল এবং সমস্ত ইস্রায়েল ভয় পেল৷
\v 2 শৌলের ছেলের দুজন দলপতি ছিল, একজনের নাম বানা, আরেকজনের নাম রেখব, তারা বিন্যামীন বংশের বেরোতীয় রিম্মোণের ছেলে৷
\v 3 আসলে বেরোৎও বিন্যামীনের অধিকারের মধ্যে গণিত, কিন্তু বেরোতীয়েরা গিত্তয়িমে পালিয়ে যায়, আর সেখানে এখনো পর্যন্ত প্রবাসী হয়ে আছে৷
\s5
\v 4 আর শৌলের ছেলে যোনাথনের এক ছেলে ছিল, তার দুপায়েই খোঁড়া; যিষ্রিয়েল থেকে যখন শৌলের ও যোনাথনের মৃত্যুর সংবাদ এসেছিল, তখন তার বয়স ছিল পাঁচ বছর; তার ধাত্রী তাকে তুলে নিয়ে পালিয়ে যাচ্ছিল, কিন্তু ধাত্রী খুব তাড়াতাড়ি পালানোর সময় ছেলেটি পড়ে গিয়ে খোঁড়া হয়ে গিয়েছিল; তার নাম মফীবোশৎ৷
\s5
\v 5 একসময় বেরোতীয় রিম্মোণের ছেলে রেখব ও বানা গিয়ে দিনের রোদের সময় ঈশবোশতের বাড়িতে উপস্থিত হল, তখন তিনি দুপুরবেলা বিশ্রাম নিচ্ছিলেন৷
\v 6 আর তারা প্রবেশ করে গম নেবার ছলনায় বাড়ির মাঝখান পর্যন্ত গিয়ে সেখানে তাঁর পেটে আঘাত করল; পরে রেখব ও তার ভাই বানা পালিয়ে গেল৷
\v 7 তিনি যে সময়ে শোয়ারঘরে নিজের খাটিয়াতে শুয়েছিলেন, সেই সময় তারা ভিতরে গিয়ে আঘাত করে তাঁকে হত্যা করল; পরে তাঁর মাথা কেটে মাথাটি নিয়ে অরাবা উপত্যকার পথ ধরে সমস্ত রাত হাঁটল৷
\s5
\v 8 তারা ঈশবোশতের মাথা হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এনে রাজাকে বলল, “দেখুন আপনার শত্রু শৌল, যে আপনাকে হত্যা করার চেষ্টা করত, তার ছেলে ঈশবোশতের মাথা; সদাপ্রভু আজ আমাদের প্রভু মহারাজের পক্ষে শৌলকে ও তার বংশকে অন্যায়ের প্রতিফল দিলেন৷”
\v 9 কিন্তু দায়ূদ বেরোতীয় রিম্মণের ছেলে রেখব ও তার ভাই বানাকে এই উত্তর দিলেন, “যিনি সব বিপদ থেকে আমার প্রাণ মুক্ত করেছেন,
\v 10 সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, যে ব্যক্তি আমাকে বলেছিল, ‘দেখ, শৌল মারা গেছে, সে শুভ খবর এনেছে মনে করলেও আমি তাকে ধরে সিক্লগে হত্যা করেছিলাম, তার খবরের জন্য আমি তাকে এই পুরস্কার দিয়েছিলাম৷
\s5
\v 11 এখন যারা ধার্মিক ব্যক্তিকে তাঁরই ঘরের মধ্যে তাঁর খাটিয়ার উপরে হত্যা করেছে, সেই দুষ্ট লোক যে তোমরা, আমি তোমাদের থেকে তার রক্তের প্রতিশোধ কি আরও নেব না? পৃথিবী থেকে কি তোমাদের উচ্ছেদ করব না?”
\v 12 পরে দায়ূদ নিজের যুবকদেরকে আদেশ করলে তারা তাদেরকে হত্যা করল এবং তাদের হাত পা কেটে হিব্রোণের পুকুরের পাড়ে টাঙ্গিয়ে দিল৷ কিন্তু ঈশবোশতের মাথা নিয়ে হিব্রোণে অবনেরের কবরে পুঁতে রাখল৷
\s5
\c 5
\s যিরূশালেমে দায়ূদের সম্মান বৃদ্ধি৷
\p
\v 1 পরে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশ হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এসে বলল, “দেখুন, আমরা আপনার হাড় ও মাংস৷
\v 2 আগে যখন শৌল আমাদের রাজা ছিলেন, তখন আপনিই ইস্রায়েলকে বাইরে ও ভিতরে নিয়ে যেতেন৷ আর সদাপ্রভু আপনাকে বলেছিলেন, ‘তুমিই আমার প্রজা ইস্রায়েলকে চরাবে ও ইস্রায়েলের নায়ক হবে’৷”
\s5
\v 3 এইভাবে ইস্রায়েলের প্রাচীনেরা সবাই হিব্রোণে রাজার কাছে আসলেন; তাতে দায়ূদ রাজা হিব্রোণে সদাপ্রভুর সামনে তাঁদের সঙ্গে নিয়ম করলেন এবং তাঁরা ইস্রায়েলের উপরে দায়ূদকে রাজপদে অভিষিক্ত করলেন৷
\v 4 দায়ূদ ত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং চল্লিশ বছর রাজত্ব করেন৷
\v 5 তিনি হিব্রোণে যিহূদার উপরে সাত বছর ছমাস রাজত্ব করেন; পরে যিরূশালেমে সমস্ত ইস্রায়েল ও যিহূদার উপরে তেত্রিশ বছর রাজত্ব করেন৷
\s5
\v 6 পরে রাজা ও তাঁর লোকেরা দেশে বসবাসকারী যিবূষীয়দের বিরুদ্ধে যিরূশালেমে যাত্রা করলেন; তাতে তারা দায়ূদকে বলল, “তুমি এই জায়গায় প্রবেশ করতে পারবে না, অন্ধ ও খোঁড়ারাই তোমাকে তাড়িয়ে দেবে৷” তারা ভেবেছিল, দাযূদ এই জায়গায় প্রবেশ করতে পারবেন না৷
\v 7 কিন্তু দায়ূদ সিয়োনের দুর্গ দখল করলেন; সেটাই দায়ূদ-নগর৷
\s5
\v 8 ঐ দিনে দায়ূদ বললেন, “যে কেউ যিবূষীয়দেরকে আঘাত করে, সে জলস্রোত দিয়ে গিয়ে দায়ূদের প্রাণের ঘৃণিত খোঁড়া ও অন্ধদেরকে আঘাত করুক৷” যেহেতু, লোকে বলে, “অন্ধ ও খোঁড়ারা রয়েছে, সে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করবে না৷”
\v 9 আর দায়ূদ সেই দুর্গে বাস করে তার নাম রাখলেন দায়ূদ-নগর এবং দায়ূদ মিল্লো থেকে ভিতর পর্যন্ত চারিদিকে প্রাচীর গাঁথলেন৷
\v 10 পরে দায়ূদ ক্রমশ মহান হয়ে উঠলেন, কারণ বাহিনীগণের ঈশ্বর সদাপ্রভূ, তাঁর সহবর্তী ছিলেন৷
\s5
\v 11 আর সোরের রাজা হীরম দায়ূদের কাছে দূতদেরকে এবং এরস কাঠ, ছুতোর ও রাজমিস্ত্রীদেরকে পাঠালেন; তারা দায়ূদের জন্য এক বাড়ি তৈরী করল৷
\v 12 তখন দায়ূদ বুঝলেন যে, সদাপ্রভু ইস্রায়েলের রাজপদে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং নিজের প্রজা ইস্রায়েলের জন্য তাঁর রাজ্যের উন্নতি করেছেন৷
\s5
\v 13 আর দায়ূদ হিব্রোণ থেকে আসার পর যিরূশালেমে আরও উপপত্নী ও স্ত্রী গ্রহণ করলেন, তাতে দায়ূদের আরও ছেলে মেয়ে হল৷
\v 14 যিরূশালেমে তাঁর যে সব ছেলে জন্মাল, তাদের নাম; সম্মূয়, শোবব, নাথন, শলোমন,
\v 15 যিভর, ইলীশূয়, নেফগ, যাফিয়,
\v 16 ইলীশামা, ইলিয়াদা ও ইলীফেলট৷
\s5
\v 17 পলেষ্টীয়রা যখন শুনল যে, দায়ূদ ইস্রায়েলের উপরে রাজপদে অভিষিক্ত হয়েছেন, তখন পলেষ্টীয় সব লোক দায়ূদের খোঁজে উঠে এল; দায়ূদ তা শুনে দুর্গে নেমে গেলেন৷
\v 18 আর পলেষ্টীয়েরা এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল৷
\s5
\v 19 তখন দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে উঠে যাব? তুমি আমার হাতে তাদেরকে সমর্পণ করবে?” সদাপ্রভু দায়ূদকে বললেন, “যাও, আমি অবশ্যই তোমার হাতে পলেষ্টীয়দেরকে সমর্পণ করব৷”
\v 20 পরে দায়ূদ বাল-পরাসীমে আসলেন ও দায়ূদ তাদেরকে আঘাত করলেন, আর বললেন, “সদাপ্রভু আমার সামনে আমার শত্রুদেরকে সেতু ভাঙ্গার মত করে ভেঙ্গে ফেললেন,” এই জন্য সেই জায়গার নাম বাল-পরাসীম [ভাঙ্গা-স্থান] রাখলেন৷
\v 21 সেই জায়গায় তারা নিজেদের প্রতিমাগুলো ফেলে গিয়েছিল, আর দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা সেগুলো তুলে নিয়ে গেলেন৷
\s5
\v 22 পরে পলেষ্টীয়েরা আবার এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল৷
\v 23 তাতে দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, আর তিনি বললেন, “তুমি যেও না, কিন্তু ওদের পিছনে ঘুরে এসে তুঁত গাছের সামনে ওদেরকে আক্রমণ কর৷
\s5
\v 24 সেই সব তুঁত গাছের ওপরে সৈন্য যাওয়ার আওয়াজ শুনলে তুমি জেগে উঠবে; কারণ তখনই সদাপ্রভু পলেষ্টীয়দের সৈন্যকে আঘাত করার জন্য তোমার সামনে এগিয়ে গেছেন৷”
\v 25 দায়ূদ সদাপ্রভুর আদেশ অনুযায়ী কাজ করলেন৷ গেবা থেকে গেষরের কাছ পর্যন্ত পলেষ্টীয়দের আঘাত করলেন৷
\s5
\c 6
\s নিয়ম-সিন্দুক যিরূশালেমে আনা হল৷
\p
\v 1 পরে দায়ূদ আবার ইস্রায়েলের সব মনোনীত লোককে, ত্রিশ হাজার জনকে, জড়ো করলেন৷
\v 2 আর দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গী সব লোক উঠে ঈশ্বরের সিন্দুক, যার উপরে সেই নাম, বাহিনীগণের সদাপ্রভু, যিনি স্বর্গদূতদের মধ্যে বসবাসকারী, তাঁর নাম কীর্তিত, তা বালি-যিহূদা থেকে আনতে যাত্রা করলেন৷
\s5
\v 3 পরে তাঁরা ঈশ্বরের সিন্দুক এক নতুন গোরুর গাড়িতে পাহাড়ে অবস্থিত অবীনাদবের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লেন, আর অবীনাদবের ছেলে উষ ও অহিয়ো সেই নতুন গোরুর গাড়ি চালাল৷
\v 4 তারা পাহাড়ে অবস্থিত অবীনাদবের বাড়ি থেকে ঈশ্বরের সিন্দুকসহ গোরুর গাড়ি বের করে আনল এবং অহিয়ো সিন্দুকটার আগে আগে চলল৷
\v 5 আর দায়ূদ ও ইস্রায়েলের সব বংশ সদাপ্রভুর সামনে দেবদারু কাঠের তৈরী সবরকমের বাদ্য-যন্ত্র এবং বীণা, নেবল, তবল, জয়শৃঙ্গ ও করতাল বাজালেন৷
\s5
\v 6 পরে তারা নাখোনের খামার পর্যন্ত গেলে উষ হাত ছড়িয়ে ঈশ্বরের সিন্দুক ধরল, কারণ বলদ দুটি পিছিয়ে পড়েছিল৷
\v 7 তখন উষের প্রতি সদাপ্রভু প্রচণ্ড রেগে গেলেন ও তার হঠকারিতার জন্য ঈশ্বর সেই জায়গায় তাকে আঘাত করলেন; তাতে সে সেখানে ঈশ্বরের সিন্দুকের পাশে মারা গেল৷
\s5
\v 8 সদাপ্রভু উষকে আক্রমন করায় দায়ূদ অসন্তুষ্ট হলেন, আর সেই জায়গার নাম পেরস-উষ [উষ-ভাঙ্গা] রাখলেন; আজ পর্যন্ত সেই নাম প্রচলিত আছে৷
\v 9 আর দায়ূদ সেইদিন সদাপ্রভুর থেকে ভয় পেয়ে বললেন, “সদাপ্রভুর সিন্দুক কি করে আমার কাছে আসবে?”
\s5
\v 10 তাই দায়ূদ সদাপ্রভুর সিন্দুক দায়ূদ-নগরে নিজের কাছে আনতে অনিচ্ছুক হলেন, কিন্তু দায়ূদ পথের পাশে গাতীয় ওবেদ-ইদোমের বাড়িতে নিয়ে রাখলেন৷
\v 11 সদাপ্রভুর সিন্দুক গাতীয় ওবেদ-ইদোমের বাড়িতে তিনমাস থাকল; আর সদাপ্রভু ওবেদ-ইদোমকে ও তার সমস্ত বাড়িকে আশীর্বাদ করলেন৷
\s5
\v 12 পরে দায়ূদ রাজা শুনলেন, ঈশ্বরের সিন্দুকের জন্য সদাপ্রভু ওবেদ-ইদোমের বাড়ি ও তার সমস্ত কিছুকে আশীর্বাদ করেছেন; তাতে দায়ূদ গিয়ে ওবেদ-ইদোমের বাড়ি থেকে আনন্দ সহকারে ঈশ্বরের সিন্দুক দায়ূদ-নগরে আনলেন৷
\v 13 আর এইরকম হল, সদাপ্রভুর সিন্দুক-বাহকেরা ছয় পা গেলে তিনি এক গোরু ও একটি মোটাসোটা বাছুর বলিদান করলেন৷
\s5
\v 14 আর দায়ূদ সদাপ্রভুর সামনে পুরো শক্তি দিয়ে নাচতে লাগলেন; তখন দায়ূদ সাদা এফোদ পরে ছিলেন৷
\v 15 এইভাবে দায়ূদ ও ইস্রায়েলের সমস্ত বংশ জয়ধ্বনি ও তূরীধ্বনি দিয়ে সদাপ্রভুর সিন্দুক আনলেন৷
\s5
\v 16 আর দায়ূদ-নগরে সদাপ্রভুর সিন্দুকের প্রবেশের সময় শৌলের মেয়ে মীখল জানালা দিয়ে দেখলেন এবং সদাপ্রভুর সামনে দায়ূদ রাজাকে লাফাতে ও নাচতে দেখে মনে মনে তুচ্ছ করলেন৷
\v 17 পরে লোকেরা সদাপ্রভুর সিন্দুক ভিতরে এনে নিজের জায়গায়, অর্থাৎ সিন্দুকের জন্য দায়ূদ যে তাঁবু স্থাপন করেছিলেন, তার মধ্যে রাখল এবং দায়ূদ সদাপ্রভুর সামনে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলির উত্সর্গ করলেন৷
\s5
\v 18 আর হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলির উত্সর্গ শেষ করার পর দায়ূদ বাহিনীগণের সদাপ্রভুর নামে লোকদেরকে আশীর্বাদ করলেন৷
\v 19 আর তিনি সব লোকের মধ্যে অর্থাৎ ইস্রায়েলের সমস্ত লোকেদের মধ্যে প্রত্যেক পুরুষকে ও প্রত্যেক স্ত্রীকে একটি করে রুটি ও একভাগ মাংস ও একখানা আঙ্গুর রসের পাত্র দিলেন; পরে সব লোক নিজের নিজের ঘরে চলে গেল৷
\s5
\v 20 পরে দায়ূদ নিজের আত্মীয়দেরকে আশীর্বাদ করার জন্য ফিরে আসলেন; তখন শৌলের মেয়ে মীখল দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে বাইরে এসে বললেন, “আজ ইস্রায়েলের রাজা কেমন মহিমান্বিত হলেন, কোনো নির্বোধ লোক যেমন লজ্জাহীন ভাবে বস্ত্রহীন হয়, সেইরকম তিনি আজ নিজের দাস ও দাসীদের সামনে বস্ত্রহীন হলেন৷”
\s5
\v 21 তখন দায়ূদ মীখলকে বললেন, “সদাপ্রভুর প্রজার উপরে, ইস্রায়েলের উপরে শাসনকর্তার পদে আমাকে নিযুক্ত করার জন্য যিনি তোমার বাবা ও তাঁর সমস্ত বংশের থেকে আমাকে মনোনীত করেছেন, সেই সদাপ্রভুর সামনেই তা করেছি; অতএব আমি সদাপ্রভুরই সামনে আনন্দ করব৷
\v 22 আর এর থেকে আরও ছোট হব এবং আমার নিজের চোখে আরও নীচ হব; কিন্তু তুমি যে দাসীদের কথা বললে, তাদের কাছে মহিমান্বিত হব৷”
\v 23 আর শৌলের মেয়ে মীখলের, মৃত্যুর সময় পর্যন্ত সন্তান হল না৷
\s5
\c 7
\s দায়ূদের কাছে ঈশ্বরের শপথ৷
\p
\v 1 পরে রাজা যখন নিজের ঘরে বাস করতে লাগলেন এবং সদাপ্রভু চারিদিকের সব শত্রুর থেকে তাঁকে বিশ্রাম দিলেন,
\v 2 তখন রাজা নাথন ভাববাদীকে বললেন, “দেখুন, আমি এরস কাঠের ঘরে বাস করছি, কিন্তু ঈশ্বরের সিন্দুক যবনিকার মধ্যে বাস করছে৷”
\s5
\v 3 নাথন রাজাকে বললেন, “ভালো, যা কিছু আপনার মনে আছে, তাই করুন; কারণ সদাপ্রভু আপনার সহবর্তী৷”
\v 4 কিন্তু সেই রাতে সদাপ্রভুর এই বাক্য নাথনের কাছে উপস্থিত হল,
\v 5 “তুমি যাও, আমার দাস দায়ূদকে বল, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তুমি কি আমার বসবাসের জন্য ঘর তৈরী করবে?
\s5
\v 6 ইস্রায়েল সন্তানদেরকে মিসর থেকে বের করে আনার দিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি তো কোন ঘরে বসবাস করিনি, শুধু তাঁবুতে ও পবিত্র স্থানে থেকে যাতায়াত করেছি৷
\v 7 সমস্ত ইস্রায়েল সন্তানদের মধ্যে আমার যাওয়া আসার সময় আমি যাকে নিজের প্রজা ইস্রায়েলকে পালন করার দায়িত্ব দিয়েছিলাম, ইস্রায়েলের এমন কোনো বংশকে কি কখনও এই কথা বলেছি যে, তোমরা কেন আমার জন্য এরস কাঠের ঘর তৈরী কর নি?
\s5
\v 8 অতএব এখন তুমি আমার দাস দায়ূদকে এই কথা বল, ‘বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা বলেন, আমার প্রজার উপরে, ইস্রায়েলের উপরে শাসক করার জন্য আমিই তোমাকে পশু চরাবার মাঠ থেকে ও ভেড়া চরানোর সময় গ্রহণ করেছি৷
\v 9 আর তুমি যে কোনো জায়গায় গেছ, সেই জায়গায় তোমার সহবর্তী থেকে তোমার সামনে থেকে তোমার সব শত্রুকে ধ্বংস করেছি৷ আর আমি পৃথিবীর মহাপুরুষদের নামের মত তোমার নাম মহান করব৷
\s5
\v 10 আর আমি নিজের প্রজা ইস্রায়েলের জন্য একটি জায়গা নির্বাচন করব ও তাদেরকে রোপন করব; যেন নিজেদের সেই জায়গায় তারা বসবাস করে এবং আর বিচলিত না হয়৷ দুষ্ট লোকেরা তাদেরকে আর দুঃখ দেবে না, যেমন আগে দিত
\v 11 এবং যখন থেকে আমি নিজের প্রজা ইস্রায়েলের উপরে বিচারকর্তাদেরকে নিযুক্ত করেছিলাম, তখন পর্যন্ত যেমন দিত৷ আর আমি যাবতীয় শত্রুর থেকে তোমাকে বিশ্রাম দেব৷’ আরও সদাপ্রভু তোমাকে বলছেন যে, ‘তোমার জন্য সদাপ্রভু এক বংশ তৈরী করবেন৷
\s5
\v 12 তোমার দিন সম্পূর্ণ হলে যখন তুমি নিজের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়বে, তখন আমি তোমার পরে তোমার বংশকে, যে তোমার ঔরসে জন্মাবে তাকে স্থাপন করব এবং তার রাজ্য প্রতিষ্ঠা করব৷
\v 13 আমার নামের জন্য সে এক ঘর তৈরী করবে এবং আমি তার রাজসিংহাসন চিরস্থায়ী করব৷
\v 14 আমি তার বাবা হব ও সে আমার ছেলে হবে; সে অপরাধ করলে আমি লোকেদের শাস্তি ও মানব-সন্তানদের বেত দিয়ে আঘাত করে তাকে শাস্তি দেব৷
\s5
\v 15 কিন্তু আমি তোমার সামনে থেকে যাকে দূর করলাম, সেই শৌল থেকে আমি যেমন নিজের দয়া সরিয়ে নিলাম, তেমনি আমার দয়া তার থেকে দূরে যাবে না৷
\v 16 আর তোমার বংশ ও তোমার রাজত্ব তোমার সামনে চিরকাল স্থির থাকবে; তোমার সিংহাসন চিরকাল স্থায়ী হবে’৷”
\v 17 নাথন দায়ূদকে এই সব বাক্য অনুসারে ও এই সব দর্শন অনুসারে কথা বললেন৷
\s5
\v 18 তখন দায়ূদ রাজা ভিতরে গিয়ে সদাপ্রভুর সামনে বসলেন, আর বললেন, “হে প্রভু সদাপ্রভু, আমি কে, আমার বংশই বা কি যে, তুমি আমাকে এ পর্যন্ত এনেছ?
\v 19 আর হে প্রভু সদাপ্রভু, তোমার চোখে এটাও ছোট বিষয় হল; তুমি নিজের দাসের বংশের বিষয়েও ভবিষ্যতের জন্য কথা বললে; হে প্রভু সদাপ্রভু, এটা কি মানুষের নিয়ম?
\v 20 আর দায়ূদ তোমাকে আর কি বলবে? হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমি তো নিজের দাসকে জানো৷
\s5
\v 21 তোমার কথার অনুরোধে ও তোমার হৃদয় অনুসারে এই সমস্ত মহান কাজ সম্পন্ন করে নিজের দাসকে জানিয়েছ৷
\v 22 অতএব, হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তুমি মহান; কারণ তোমার মত কেউ নেই ও তুমি ছাড়া কোন ঈশ্বর নেই; আমার নিজের কানে যা যা শুনেছি, সেই অনুযায়ী এটা জানি৷
\v 23 পৃথিবীর মধ্যে কোন একটি জাতি তোমার প্রজা ইস্রায়েলের মত? ঈশ্বর তাকে নিজের প্রজা করার জন্য এবং নিজের নাম প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মুক্ত করতে গিয়েছিলেন, তুমি আমাদের পক্ষে মহান মহান কাজ ও তোমার দেশের হয়ে ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্কর কাজ তোমার প্রজাদের সামনে সম্পন্ন করেছিলে, তাদেরকে তুমি মিসর, জাতিদের ও দেবতাদের থেকে মুক্ত করেছিলে৷
\s5
\v 24 তুমি তোমার জন্য নিজের প্রজা ইস্রায়েলকে স্থাপন করে চিরকালের জন্য তোমার প্রজা করেছ; আর হে সদাপ্রভু, তুমি তাদের ঈশ্বর হয়েছ৷
\v 25 এখন হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তুমি নিজের দাসের ও তার বংশের বিষয়ে যে বাক্য বলেছ, তা চিরকালের জন্য স্থির কর; যেমন বলেছ, সেই অনুসারে কর৷
\v 26 তোমার নাম চিরকাল মহিমান্বিত হোক; লোকে বলুক, ‘বাহিনীগণের সদাপ্রভুই ইস্রায়েলের উপরে ঈশ্বর; আর তোমার দাস দায়ূদের বংশ তোমার সামনে প্রতিষ্ঠিত হবে৷’
\s5
\v 27 হে বাহিনীগণের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমিই নিজের দাসের কাছে প্রকাশ করেছ, বলেছ, ‘আমি তোমার জন্য এক বংশ তৈরী করব, এই কারণ তোমার কাছে এই প্রার্থনা করতে তোমার দাসের মনে সাহস জন্মালো৷
\v 28 আর এখন, হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমিই ঈশ্বর, তোমার বাক্য সত্য, আর তুমি নিজের দাসের কাছে এই মঙ্গল শপথ করেছ৷
\v 29 অতএব দয়া করে তোমার দাসের বংশকে আশীর্বাদ কর, তা যেন তোমার সামনে চিরকাল থাকে৷ কারণ হে প্রভু সদাপ্রভু, তুমি নিজে এটা বলেছ; আর তোমার আশীর্বাদে তোমার এই দাসের বংশ চিরকাল আশীর্বাদপ্রাপ্ত থাকুক৷”
\s5
\c 8
\s দায়ূদের বিজয়লাভ৷
\p
\v 1 তারপরে দায়ূদ পলেষ্টীয়দেরকে আঘাত করে পরাজিত করলেন, আর দায়ূদ পলেষ্টীয়দের হাত থেকে প্রধান নগরের কর্ত্তৃত্ব কেড়ে নিলেন৷
\s5
\v 2 আর তিনি মোয়াবীয়দেরকে আঘাত করে দড়ি দিয়ে মাপলেন, মাটিতে শুইয়ে হত্যা করার জন্য দুই দড়ি এবং জীবিত রাখবার জন্য সম্পূর্ণ এক দড়ি দিয়ে মাপলেন; তাতে মোয়াবীয়েরা দায়ূদের দাস হয়ে উপহার আনল৷
\s5
\v 3 আর যে সময়ে সোবার রাজা রহোবের ছেলে হদদেষর ফরাৎ নদীর কাছে নিজের কর্ত্তৃত্ব আবার স্থাপন করতে যান, তখন দায়ূদ তাঁকে আঘাত করেন৷
\v 4 দায়ূদ তাঁর কাছ থেকে সতেরশো ঘোড়াচালক ও কুড়ি হাজার পদাতিক সৈন্য নিজের দখলে আনলেন, আর দায়ূদ তাঁর রথের ঘোড়াদের পায়ের শিরা ছিঁড়ে দিলেন, কিন্তু তার মধ্যে একশোটি রথের জন্য ঘোড়া রাখলেন৷
\s5
\v 5 পরে দম্মেশকের অরামীয়েরা সোবার হদদেষের রাজাকে সাহায্য করতে এলে দায়ূদ সেই অরামীয়দের মধ্যে বাইশ হাজার জনকে আঘাত করলেন৷
\v 6 আর দায়ূদ দম্মেশকের অরাম দেশে সৈন্য স্থাপন করলেন, তাতে অরামীয়েরা দায়ূদের দাস হয়ে উপহার আনল৷ এইভাবে দায়ূদ যে কোন জায়গায় যেতেন, সেই জায়গায় সদাপ্রভু তাঁকে বিজয়ী করতেন৷
\s5
\v 7 আর দায়ূদ হদদেষরের দাসদের সোনার ঢালগুলো খুলে যিরূশালেমে আনলেন৷
\v 8 আর দায়ূদ রাজা হদদেষরের বেটহ ও বেরোথা নগর থেকে অনেক পিতল আনলেন৷
\s5
\v 9 আর দায়ূদ হদদেষরের সমস্ত সৈন্যদলকে আঘাত করেছেন শুনে হমাতের রাজা তয়ি দায়ূদ রাজা কেমন আছেন জিজ্ঞাসা করবার জন্য
\v 10 এবং তিনি হদদেষরের সঙ্গে যুদ্ধ করে তাঁকে আঘাত করেছেন বলে তাঁর ধন্যবাদ করবার জন্য নিজের ছেলে যোরামকে তাঁর কাছে পাঠালেন; কারণ হদদেষরের সঙ্গে তয়িরও যুদ্ধ হয়েছিল৷ যোরাম রুপোর পাত্র, সোনার পাত্র ও পিতলের পাত্র সঙ্গে নিয়ে আসলেন৷
\s5
\v 11 তাতে দায়ূদ রাজা সে সেগুলিও সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র করলেন; তাই অরাম, মোয়াব, অম্মোনের লোকেরা এবং পলেষ্টীয় ও অমালেক প্রভৃতি যে সমস্ত জাতিকে তিনি বশীভূত করেছিলেন,
\v 12 তাদের থেকে পাওয়া জিনিসের মধ্যে রূপো ও সোনা এবং সোবার রাজা রহোবের ছেলে হদদেষর থেকে পাওয়া লুঠিত জিনিস সকল তিনি পবিত্র করেছিলেন৷
\s5
\v 13 আর দায়ূদ অরামকে আঘাত করে ফিরে আসবার সময় লবণ উপত্যকাতে আঠারো হাজার জনকে হত্যা করে খুব সুনাম অর্জন করলেন৷
\v 14 পরে দায়ূদ ইদোমে সৈন্যদল স্থাপন করলেন, সমস্ত ইদোমে সৈন্যদল রাখলেন এবং ইদোমীয় সব লোক দায়ূদের দাস হল৷ আর দায়ূদ যে কোনো জায়গায় যেতেন, সেই জায়গায় সদাপ্রভু তাঁকে বিজয়ী করতেন৷
\s5
\v 15 দায়ূদ সমস্ত ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করলেন; দায়ূদ নিজের সমস্ত প্রজা লোকের পক্ষে বিচার ও ন্যায় সম্পন্ন করতেন৷
\v 16 আর সরূয়ার ছেলে যোয়াব প্রধান সেনাপতি ছিলেন এবং অহীলূদের ছেলে যিহোশাফট যিনি ইতিহাসের লেখক ছিলেন;
\v 17 আর অহীটূবের ছেলে সাদোক ও অবিয়াথরের ছেলে অহীমেলক যাজক ছিলেন এবং সরায় লেখক ছিলেন;
\v 18 আর যিহোয়াদার ছেলে বনায় করেথীয় ও পলেথীদের উপরে নিযুক্ত ছিলেন এবং দায়ূদের ছেলেরা যাজক (রাজমন্ত্রী) ছিলেন৷
\s5
\c 9
\s মফীবোশতের প্রতি দায়ূদের দয়া৷
\p
\v 1 পরে দায়ূদ বললেন, “আমি যোনাথনের জন্য যার প্রতি দয়া করতে পারি, এমন কেউ কি শৌলের বংশে অবশিষ্ট আছে?”
\v 2 সীবঃ নামে শৌলের বংশে এক দাস ছিল, তাকে দায়ূদের কাছে ডাকা হলে রাজা তাকে বললেন, “তুমি কি সীবঃ?” সে বলল, “হ্যাঁ আমিই সেই দাস৷”
\s5
\v 3 রাজা বললেন, “আমি যার প্রতি ঈশ্বরের দয়া দেখাতে পারি, শৌলের বংশে এমন কেউই কি অবশিষ্ট নেই?” সীবঃ রাজাকে বলল, “যোনাথানের এক ছেলে এখনও অবশিষ্ট আছেন, তাঁর পা খোঁড়া৷”
\v 4 রাজা বললেন, “সে কোথায়?” সীবঃ রাজাকে বলল, “দেখুন, তিনি লো-দবারে অম্মীয়েলের ছেলে মাখীরের বাড়িতে আছেন৷”
\s5
\v 5 পরে দায়ূদ রাজা লো-দবারে লোক পাঠিয়ে অম্মীয়েলের ছেলে মাখীরের বাড়ি থেকে তাঁকে আনলেন৷
\v 6 তখন শৌলের নাতি যোনাথনের ছেলে মফীবোশৎ দায়ূদের কাছে এসে উপুড় হয়ে পড়ে প্রণাম করলেন৷ তখন দায়ূদ বললেন, “মফীবোশৎ৷” তিনি উত্তর দিলেন, “দেখুন, এই আপনার দাস৷”
\s5
\v 7 দায়ূদ তাঁকে বললেন, “ভয় করো না, আমি তোমার বাবা যোনাথনের জন্য অবশ্যই তোমার প্রতি দয়া করব, আমি তোমার দাদু শৌলের সমস্ত জমি তোমাকে ফিরিয়ে দেব, আর তুমি রোজ আমার টেবিলে আহার করবে৷”
\v 8 তাতে তিনি প্রণাম করে বললেন, “আপনার এই দাস কে যে, আপনি আমার মত মরা কুকুরের প্রতি চোখ তুলে দেখছেন?”
\s5
\v 9 পরে রাজা শৌলের চাকর সীবঃকে ডেকে বললেন, “আমি তোমার মনিবের ছেলেকে শৌলের ও তাঁর সমস্ত বংশের সব কিছু দিলাম৷
\v 10 আর তুমি, তোমার ছেলেরা ও দাসেরা তাঁর জন্য জমিতে লাঙ্গল দেবে এবং তোমার মনিবের ছেলের খাদ্যের জন্য উত্পন্ন শস্য এনে দেবে; কিন্তু তোমার মনিবের ছেলে মহীবোশৎ রোজ আমার টেবিলে আহার করবেন৷” ঐ সীবের পনেরটা ছেলে ও কুড়িটা দাস ছিল৷
\s5
\v 11 তখন সীবঃ রাজাকে বলল, “আমার প্রভু মহারাজ নিজের দাসকে যে আদেশ করলেন, সেই অনুসারে আপনার এই দাস সবকিছুই করবে৷” আর মফীবোশৎ রাজার ছেলেদের একজনের মত রাজার টেবিলে আহার করতে লাগলেন৷
\v 12 মফীবোশতের মীখা নামে একটি ছোট ছেলে ছিল৷ আর সীবের ঘরে বাসকারী সব লোক মফীবোশতের দাস ছিল৷
\v 13 মফীবোশৎ যিরূশালেমে বাস করলেন, কারণ তিনি রোজ রাজার টেবিলে আহার করতেন, তিনি দু পায়েই খোঁড়া ছিলেন৷
\s5
\c 10
\s অম্মোনীয় ও অরামীয়দের পরাজয়৷
\p
\v 1 তারপরে অম্মোনীয়দের রাজা মারা গেলে তাঁর ছেলে হানূন তাঁর জায়গায় রাজা হলেন৷
\v 2 তখন দায়ূদ বললেন, “হানূনের বাবা নাহশ আমার প্রতি যেমন ভালো ব্যবহার করেছিলেন, আমিও হানূনের প্রতি তেমনি ভালো ব্যবহার করব৷” পরে দায়ূদ তাঁকে বাবার শোকে সান্ত্বনা দেবার জন্য নিজের কয়েক জন দাসকে পাঠালেন৷ তখন দায়ূদের দাসেরা অম্মোনীয়দের দেশে উপস্থিত হল৷
\v 3 কিন্তু অম্মোনীয়দের শাসনকর্তারা নিজেদের প্রভু হানূনকে বললেন, “আপনি কি মনে করছেন যে, দায়ূদ আপনার বাবার সম্মান করে বলে আপনার কাছে সান্ত্বনাকারীদেরকে পাঠিয়েছে? দায়ূদ কি নগরে সন্ধান নেবার ও নগর পর্যবেক্ষণ করে নষ্ট করবার জন্য নিজের দাসদেরকে পাঠায় নি?”
\s5
\v 4 তখন হানূন দায়ূদের দাসদেরকে ধরে তাদের দাড়ির অর্ধেক চেঁচে দিলেন ও পোশাকের অর্ধেক অর্থাৎ কোমর পর্যন্ত কেটে তাদেরকে বিদায় করলেন৷
\v 5 পরে তারা দায়ূদকে এই কথা বলে পাঠাল, তিনি তাদের সঙ্গে দেখা করতে লোক পাঠালেন; কারণ তারা খুব লজ্জিত হয়েছিল৷ রাজা বলে পাঠালেন, “যতদিন তোমাদের দাড়ি না বাড়ে, ততদিন তোমরা যিরীহোতে থাক, তারপরে ফিরে এসো৷”
\s5
\v 6 অম্মোনীয়রা যখন দেখল যে, তারা দায়ূদের কাছে ঘৃণার পাত্র হয়েছে, তখন অম্মোনীয়রা লোক পাঠিয়ে বৈৎ-রহোবে ও সোবায় অরামীয়দের কুড়ি হাজার পদাতিককে, এক হাজার লোক সমেত মাখার রাজাকে এবং টোবের বারো হাজার লোককে ভাড়া করে নিয়ে এল৷
\v 7 এই খবর পেয়ে দায়ূদ যোয়াবকে ও শক্তিশালী সমস্ত সৈন্যকে সেখানে পাঠালেন৷
\v 8 অম্মোন সন্তানেরা বাইরে এসে নগরের ফটকের প্রবেশস্থানে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সাজাল এবং সোবার ও রহোবের অরামীয়রা, আর টোবের ও মাখার লোকেরা মাঠে তৈরী থাকল৷
\s5
\v 9 এইভাবে সামনে ও পিছনে দুই দিকেই তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ হবে দেখে যোয়াব ইস্রায়েলের সমস্ত মনোনীত লোকের মধ্যে থেকে লোক বেছে নিয়ে অরামীয়দের সামনে সৈন্য সাজালেন;
\v 10 আর অবশিষ্ট লোকদেরকে তিনি নিজের ভাই অবীশয়ের হাতে সমর্পণ করলেন; আর তিনি অম্মোন সন্তানদের সামনে সৈন্য সাজালেন৷
\s5
\v 11 তিনি বললেন, “যদি অরামীয়েরা আমার থেকে শক্তিশালী হয়, তবে তুমি আমায় সাহায্য করবে; আর যদি অম্মোন সন্তানরা তোমার থেকে শক্তিশালী হয়, তবে আমি গিয়ে তোমায় সাহায্য করব৷
\v 12 সাহস কর, আমাদের জাতির জন্য ও আমাদের ঈশ্বরের সকল নগরের জন্য আমরা নিজেদেরকে বলবান করব; আর সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল, তিনি তাই করুন৷”
\s5
\v 13 পরে যোয়াব ও তাঁর সঙ্গী লোকেরা অরামীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মুখোমুখি হলে তারা তাঁর সামনে থেকে পালিয়ে গেল৷
\v 14 আর অরামীয়েরা পালিয়ে গেছে দেখে অম্মোনীয়রা অবীশয়ের সামনে থেকে পালিয়ে নগরে ঢুকল৷ পরে যোয়াব অম্মোনীয়দের কাছ থেকে যিরূশালেমে ফিরে আসলেন৷
\s5
\v 15 অরামীয়েরা যখন দেখতে পেল যে, তারা ইস্রায়েলের সামনে হেরে গেল, তখন তারা জড়ো হল৷
\v 16 আর হদরেষর লোক পাঠিয়ে [ফরাৎ] নদীর পারের অরামীয়দেরকে বের করে আনলেন; তারা হেলমে এল; হদরেষরের দলের সেনাপতি শোবক তাদের থেকে এগিয়ে ছিলেন৷
\s5
\v 17 পরে দায়ূদকে এই খবর দিলে তিনি সমস্ত ইস্রালেকে জড়ো করলেন এবং যর্দন পার হয়ে হেলমে উপস্থিত হলেন৷ তাতে অরামীয়েরা দায়ূদের সামনে সৈন্য সাজিয়ে তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করল৷
\v 18 আর অরামীয়েরা ইস্রায়েলের সামনে থেকে পালিয়ে গেল৷ আর দায়ূদ অরামীয়দের সাতশো রথ চালক ও চল্লিশ হাজার ঘোড়া চালক সৈন্য হত্যা করলেন এবং তাদের দলের সেনাপতি শোবককেও আঘাত করলেন, তাতে তিনি সেই জায়গায় মারা গেলেন৷
\v 19 হদরেষরের অধীনে সমস্ত রাজা যখন দেখলেন যে, তাঁরা ইস্রায়েলের সামনে হেরে গেছেন, তখন তাঁরা ইস্রায়েলের সঙ্গে সন্ধি করে তাদের দাস হলেন৷ তখন থেকে অরামীয়েরা অম্মোন সন্তানদের সাহায্য করতে ভয় পেল৷
\s5
\c 11
\s দায়ূদের মহাপাপের বিবরণ৷
\p
\v 1 পরে বছর ফিরে এলে রাজাদের যুদ্ধে যাবার সময়ে দায়ূদ যোয়াবকে, তাঁর সঙ্গে নিজের দাসদেরকে ও সমস্ত ইস্রায়েলকে পাঠালেন; তারা গিয়ে অম্মোনীয়দের হত্যা করে রব্বা নগর ঘিরে ফেলল; কিন্তু দায়ূদ যিরূশালেমে থাকলেন৷
\s5
\v 2 একসময়ে বিকালে দায়ূদ বিছানা থেকে উঠে রাজবাড়ির ছাদে বেড়াচ্ছিলেন, আর ছাদ থেকে দেখতে পেলেন যে, একটি মহিলা স্নান করছে; মহিলাটি দেখতে খুব সুন্দরী ছিল৷
\v 3 দায়ূদ তার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে লোক পাঠালেন৷ একজন বলল, “এ কি ইলিয়ামের মেয়ে, হিত্তীয় ঊরিয়ের স্ত্রী বৎশেবা নয়?”
\s5
\v 4 তখন দায়ূদ লোক পাঠিয়ে তাকে আনলেন এবং সে তাঁর কাছে আসলে দায়ূদ তার সঙ্গে শয়ন করলেন; সে স্ত্রী ঋতুস্নান করে শুচি হয়েছিল৷ পরে সে নিজের ঘরে ফিরে গেলে,
\v 5 পরে সেই স্ত্রী গর্ভবতী হল; আর লোক পাঠিয়ে দায়ূদকে এই খবর দিল, “আমার গর্ভ হয়েছে৷”
\s5
\v 6 তখন দায়ূদ যোয়াবের কাছে লোক পাঠিয়ে এই আদেশ দিলেন, “হিত্তীয় ঊরিয়কে আমার কাছে পাঠিয়ে দাও৷” তাতে যোয়াব দায়ূদের কাছে ঊরিয়কে পাঠালেন৷
\v 7 ঊরিয় তাঁর কাছে উপস্থিত হলে দায়ূদ তাকে যোয়াবের খবর, লোকদের খবর ও যুদ্ধের খবর জিজ্ঞাসা করলেন৷
\v 8 পরে দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “তুমি নিজের বাড়িতে গিয়ে পা ধোও৷” তখন ঊরিয় রাজবাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল, আর রাজার কাছ থেকে তার পিছনে পিছনে উপহার গেল৷
\s5
\v 9 কিন্তু ঊরিয় নিজের প্রভুর দাসদের সঙ্গে রাজবাড়ির ফটকে ঘুমিয়ে পড়ল, ঘরে গেল না৷
\v 10 পরে এই কথা দায়ূদকে বলা হল যে, “ঊরিয় ঘরে যায় নি৷” দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “তুমি কি পথ ঘুরে আসো নি? তবে কেন বাড়িতে গেলে না?”
\v 11 ঊরিয় দায়ূদকে বলল, “সিন্দুক, ইস্রায়েল ও যিহুদা কুটীরে বাস করছে এবং আমার প্রভু যোয়াব ও আমার প্রভুর দাসরা খোলা মাঠে ছাউনী করে আছেন; তবে আমি কি খাওয়া-দাওয়া করতে ও স্ত্রীর সঙ্গে শুতে নিজের ঘরে যেতে পারি? আপনার জীবনের ও আপনার জীবিত প্রাণের দিব্যি, আমি এমন কাজ করব না৷”
\s5
\v 12 তখন দায়ূদ ঊরিয়কে বললেন, “আজও তুমি এখানে থাক, কাল তোমাকে বিদায় করব৷” তাতে ঊরিয় সে দিন ও পরের দিন যিরূশালেমে থাকল৷
\v 13 আর দায়ূদ তাকে নিমন্ত্রণ করলে সে তাঁর সামনে খাওয়া-দাওয়া করল; আর তিনি তাকে মাতাল করলেন; কিন্তু সে সন্ধ্যাবেলা নিজের প্রভুর দাসদের সঙ্গে নিজের বিছানায় ঘুমানোর জন্য বাইরে গেল, ঘরে গেল না৷
\s5
\v 14 সকালে দায়ূদ যোয়াবের কাছে এক চিঠি লিখে ঊরিয়ের হাতে দিয়ে পাঠালেন৷
\v 15 চিঠিতে তিনি লিখেছিলেন, “তোমরা এই ঊরিয়কে তুমুল যুদ্ধের সামনে নিযুক্ত কর, পরে এর পিছন থেকে সরে যাও, যেন এ আহত হয়ে মারা যায়৷”
\s5
\v 16 পরে কোন জায়গায় শক্তিশালী লোক আছে, তা জানাতে যোয়াব নগর অবরোধের সময় সেই জায়গায় ঊরিয়কে নিযুক্ত করলেন৷
\v 17 পরে নগরের লোকেরা বেরিয়ে গিয়ে যোয়াবের সঙ্গে যুদ্ধ করলে কয়েক জন লোক, দায়ূদের দাসদের মধ্যে কয়েক জন, পড়ে গেল, বিশেষত হিত্তীয় ঊরিয়ও মারা গেল৷
\s5
\v 18 পরে যোয়াব লোক পাঠিয়ে যুদ্ধের সমস্ত ঘটনা দায়ূদকে জানালেন,
\v 19 আর দূত আদেশ করলেন, “তুমি রাজার সামনে যুদ্ধের সমস্ত ঘটনা শেষ করলে,
\v 20 যদি রাজা রেগে যায়, আর যদি তিনি বলেন, তোমরা যুদ্ধ করতে নগরের এত কাছে কেন গিয়েছিলে? তারা দেওয়ালের উপর থেকে তির মারবে এটা কি জানতে না?
\s5
\v 21 যিরূব্বেশতের ছেলে অবীমেলককে কে আঘাত করেছিল? তেবেষে একটা মহিলা যাঁতার একটি উপরের পাট প্রাচীর থেকে তার উপরে ফেলে দিলে সে কি তাতেই মারা যায় নি? তোমরা কেন দেওয়ালের কাছে গিয়েছিলে? তা হলে তুমি বলবে, আপনার দাস হিত্তীয় ঊরিয় মারা গেছে৷”
\s5
\v 22 পরে সেই দূত সেখান থেকে গিয়ে যোয়াবের প্রেরিত সমস্ত কথা দায়ূদকে জানাল৷
\v 23 দূত দায়ূদকে বলল, “সেই লোকেরা আমাদের বিপক্ষে প্রবল হয়ে মাঠে আমাদের কাছে বাইরে এসেছিল; তখন আমাদের ফটকের দরজা পর্যন্ত তাদের পিছু পিছু তাড়া করেছিলাম৷
\s5
\v 24 তখন ধনুকধারীরা প্রাচীর থেকে আপনার দাসদের উপরে তির ছুড়ল; তাই মহারাজের কিছু দাস মারা পড়েছে; আর আপনার দাস হিত্তীয় ঊরিয়ও মারা গেছে৷”
\v 25 তখন দায়ূদ দূতকে বললেন, “যোয়াবকে এই কথা বলো, ‘তুমি এতে অসন্তুষ্ট হয়ো না, কারণ তরোয়াল যেমন এক জনকে তেমনি আরও এক জনকেও গ্রাস করে; তুমি নগরের বিরুদ্ধে আরও পরাক্রমের সঙ্গে যুদ্ধ কর, নগর উচ্ছেদ কর, এইভাবে তাকে আশ্বাস দেবে৷”
\s5
\v 26 আর উরিয়ের স্ত্রী নিজের স্বামী উরিয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বামীর জন্য শোক করল৷
\v 27 পরে শোক অতীত হলে, দায়ূদ লোক পাঠিয়ে তাকে নিজের বাড়িতে আনলেন, তাতে সে তাঁর স্ত্রী হল ও তাঁর জন্য ছেলের জন্ম দিল৷ কিন্তু দায়ূদের করা এই কাজ সদাপ্রভু খারাপ চোখে দেখলেন৷
\s5
\c 12
\p
\v 1 পরে সদাপ্রভু দায়ূদের কাছে নাথনকে পাঠালেন৷ আর তিনি তাঁর কাছে এসে তাঁকে বললেন, “একটি নগরে দুইজন লোক ছিল; তাদের মধ্যে একজন ধনী, আর একজন গরিব৷
\v 2 ধনী ব্যক্তির অনেক ভেড়া পাল ও গোরুর পাল ছিল৷
\v 3 কিন্তু সেই গরিবের কিছুই ছিল না, শুধু একটি বাচ্চা ভেড়া ছিল, সে তাকে কিনে পুষছিল; আর সেটা তার সঙ্গে ও তার সন্তানদের সঙ্গে থেকে বেড়ে উঠছিল; সে তার খাবার খেত ও তারই পাত্রে পান করত, আর তার বুকের মধ্যে ঘুমাত ও তার মেয়ের মত ছিল৷
\s5
\v 4 পরে ঐ ধনীর ঘরে একজন পথিক এল, তাতে বাড়িতে আসা অতিথির জন্য খাবার তৈরী করার জন্য সে নিজের ভেড়ার পাল ও গোরুর পাল থেকে কিছু নিতে দুঃখ পেল, কিন্তু সেই গরিবের বাচ্চা ভেড়াটি নিয়ে, যে অতিথি এসেছিল, তার জন্য তা দিয়ে রান্না করল৷”
\v 5 তাতে দায়ূদ সেই ধনীর প্রতি প্রচণ্ড রেগে গেলেন; তিনি নাথনকে বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, যে ব্যক্তি এমন কাজ করেছে, সে মৃত্যুর সন্তান;
\v 6 সে কিছু দয়া না করে এ কাজ করেছে, এই জন্য সেই বাচ্চা ভেড়াটির চার গুণ ফিরিয়ে দেবে৷”
\s5
\v 7 তখন নাথন দায়ূদকে বললেন, “আপনিই সেই ব্যক্তি৷ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি তোমাকে ইস্রায়েলের উপরে রাজপদে অভিষিক্ত করেছি এবং শৌলের হাত থেকে উদ্ধার করেছি;
\v 8 আর তোমার প্রভুর বাড়ি তোমাকে দিয়েছি ও তোমার প্রভুর স্ত্রীদেরকে তোমার বুকে দিয়েছি এবং ইস্রায়েলের ও যিহূদার বংশ তোমাকে দিয়েছি; আর তা যদি অল্প হতো, তবে তোমাকে আরও অনেক বস্তু দিতাম৷’
\s5
\v 9 তুমি কেন সদাপ্রভুর বাক্য তুচ্ছ করে তাঁর চোখে যা খারাপ, তাই করেছ? তুমি হিত্তীয় উরিয়কে তরোয়াল দিয়ে আঘাত করিয়েছ ও তার স্ত্রীকে নিয়ে নিজের স্ত্রী করেছ, অম্মোনীয়দের তরোয়াল দিয়ে উরিয়কে মেরে ফেলেছ৷
\v 10 অতএব তরোয়াল কখনো তোমার বংশকে ছেড়ে যাবে না; কারণ তুমি আমাকে তুচ্ছ করে হিত্তীয় উরিয়ের স্ত্রীকে নিয়ে নিজের স্ত্রী করেছ৷
\s5
\v 11 সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘দেখ, আমি তোমার বংশ থেকেই তোমার বিরুদ্ধে অমঙ্গল উত্পন্ন করব এবং তোমার সামনে তোমার স্ত্রীদেরকে নিয়ে তোমার আত্মীয়কে দেব; তাতে সে এই সূর্য্যের সামনে তোমার স্ত্রীদের সঙ্গে শয়ন করবে৷’
\v 12 যেহেতু তুমি গোপনে এই কাজ করেছ, কিন্তু আমি সমস্ত ইস্রায়েলের সামনে ও সূর্য্যের সামনে এই কাজ করব৷”
\v 13 তখন দায়ূদ নাথনকে বললেন, “আমি সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছি৷” নাথন দায়ূদকে বললেন, “সদাপ্রভুও আপনার পাপ দূর করলেন, আপনি মরবেন না৷
\s5
\v 14 কিন্তু এই কাজ দ্বারা আপনি সদাপ্রভুর শত্রুদেরকে নিন্দা করবার বড় সুযোগ দিয়েছেন, এই জন্য আপনার যে ছেলেটি জন্মেছে সে অবশ্য মরবে৷”
\v 15 পরে নাথন নিজের ঘরে চলে গেলেন৷ আর সদাপ্রভু উরিয়ের স্ত্রীর গর্ভে জন্মানো দায়ূদের ছেলেটাকে আঘাত করলে সে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ল৷
\s5
\v 16 পরে দায়ূদ ছেলেটার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলেন, আর দায়ূদ উপোস করলেন, ভিতরে প্রবেশ করে পুরো রাত মাটিতে পড়ে থাকলেন৷
\v 17 তখন তাঁর বাড়ির প্রাচীনেরা উঠে তাঁকে ভূমি থেকে তুলবার জন্য তাঁর কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন, কিন্তু তিনি রাজি হলেন না এবং তাঁদের সঙ্গে আহারও করলেন না৷
\v 18 পরে সপ্তম দিনে ছেলেটা মরল; তাতে ছেলেটা মরেছে, এই কথা দায়ূদকে বলতে তাঁর দাসেরা ভয় পেল, কারণ তারা বলল, “দেখো ছেলেটা জীবিত থাকতে আমরা তাঁকে বললেও তিনি আমাদের কথা শোনেন নি; এখন ছেলেটা মরেছে, এ কথা কেমন করে তাঁকে বলব? বললে তিনি নিজের ক্ষতি করবেন৷”
\s5
\v 19 কিন্তু দাসেরা কানাকানি করছে দেখে দায়ূদ বুঝলেন, ছেলেটা মারা গেছে; দায়ূদ নিজের দাসদেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ছেলেটা কি মারা গিয়েছে? তারা বলল মারা গিয়েছে৷”
\v 20 তখন দায়ূদ ভূমি থেকে উঠে স্নান করলেন, তেল মাখলেন ও পোশাক পরিবর্তন করলেন এবং সদাপ্রভুর ঘরে প্রবেশ করে প্রণাম করলেন; পরে নিজের ঘরে এসে আদেশ করলে তারা তাঁর সামনে খাবার জিনিস রাখল; আর তিনি ভোজন করলেন৷
\s5
\v 21 তখন তাঁর দাসরা তাঁকে বলল, “আপনি এ কেমন কাজ করলেন? ছেলেটা জীবিত থাকতে আপনি তার জন্য উপোস ও কাঁদছিলেন, কিন্তু ছেলেটা মারা যাবার পরই উঠে খাবার খেলেন৷”
\v 22 তিনি বললেন, “ছেলেটা জীবিত থাকতে আমি উপোস ও কান্না করছিলাম; কারণ ভেবেছিলাম, কি জানি, সদাপ্রভু আমার প্রতি দয়া করলে ছেলেটা বাঁচতে পারে৷”
\v 23 কিন্তু এখন সে মারা গেছে, তবে আমি কি জন্য উপোস করব? আমি কি তাকে ফিরিয়ে আনতে পারি? আমি তার কাছে যাব, কিন্তু সে আমার কাছে ফিরে আসবে না৷"
\s5
\v 24 পরে দায়ূদ নিজের স্ত্রী বৎশেবাকে সান্তনা দিলেন ও তার কাছে গিয়ে তার সঙ্গে শয়ন করলেন এবং সে ছেলের জন্ম দিলে, দায়ূদ তার নাম শলোমন রাখলেন; আর সদাপ্রভু তাকে প্রেম করলেন৷
\v 25 আর তিনি নাথন ভাববাদীকে পাঠালেন, আর তিনি সদাপ্রভুর জন্য তার নাম যিদীদীয় [সদাপ্রভুর প্রিয়] রাখলেন৷
\s5
\v 26 ইতিমধ্যে যোয়াব অম্মোন সন্তানদের রব্বা নগরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে রাজনগর দখল করলেন৷
\v 27 তখন যোয়াব দায়ূদের কাছে দূতদেরকে পাঠিয়ে বললেন, “আমি রব্বার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জলনগর দখল করেছি৷
\v 28 এখন আপনি অবশিষ্ট লোকদেরকে জড়ো করে নগরের কাছে শিবির স্থাপন করুন, সেটা দখল করুন, নাহলে কি জানি, আমি ঐ নগর দখল করলে তার উপরে আমারই নামের জয়গান হবে৷”
\s5
\v 29 তখন দায়ূদ সমস্ত লোককে জড়ো করলেন ও রব্বাতে গিয়ে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা দখল করলেন৷
\v 30 আর তিনি সেখানকার রাজার মাথা থেকে তার মুকুট কেড়ে নিলেন; তাতে এক তালন্ত পরিমান সোনা ও মণি ছিল; আর তা দায়ূদের মাথায় অর্পিত হল এবং তিনি ঐ নগর থেকে অনেক লুঠ করা জিনিস বার করে আনলেন৷
\s5
\v 31 আর দায়ূদ সেখানকার লোকদের বের করে এনে করাতের, লোহার মই ও লোহার কুড়ালের মুখে রাখলেন এবং ইটের পাঁজার মধ্য দিয়ে যেতে বাধ্য করালেন৷ তিনি অম্মোনীয়দের সমস্ত নগরের প্রতি এইরকম করলেন৷ পরে দায়ূদ ও সমস্ত লোক যিরূশালেমে ফিরে গেলেন৷
\s5
\c 13
\s অম্নোনের মন্দ কাজ ও তার ফল৷
\p
\v 1 তারপরে এই ঘটনা হল; দায়ূদের ছেলে অবশালোমের তামর নামে একটি সুন্দরী বোন ছিল; দায়ূদের ছেলে অম্নোন তাকে ভালবাসল৷
\v 2 অম্নোন এমন ব্যাকুল হল যে, নিজের বোন তামরের জন্য অসুস্থ হয়ে পড়ল, কারণ সে কুমারী ছিল এবং তার প্রতি কিছু করা অসাধ্য মনে হল৷
\s5
\v 3 কিন্তু দায়ূদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাদব নামে অম্নোনের এক বন্ধু ছিল; সেই যোনাদব খুব চালক ছিল৷
\v 4 সে অম্নোনকে বলল, “রাজপুত্র, তুমি দিন দিন এত রোগা হয়ে যাচ্ছ কেন? আমাকে কি বলবে না?” অম্নোন তাকে বলল, “আমি নিজের ভাই অবশালোমের বোন তামরকে ভালবাসি৷”
\s5
\v 5 যোনাদব বলল, “তুমি নিজের খাটের উপরে শুয়ে অসুস্থের ভাণ কর; পরে তোমার বাবা তোমাকে দেখতে আসলে তাঁকে বলো, অনুগ্রহ করে আমার বোন তামরকে আমার কাছে আসতে আদেশ করুন, সে আমাকে রুটি খেতে দিক এবং আমি তা দেখে যেন তার হাতে খাবার খাই, এইজন্য আমার সামনেই খাবার তৈরী করুক৷”
\v 6 পরে অম্মোন অসুস্থতার ভাণ করে পড়ে রইল; তাতে রাজা তাকে দেখতে এলে অম্নোন রাজাকে বলল, “অনুরোধ করি, আমার বোন তামর এসে আমার সামনে দুটো পিঠে তৈরী করে দিক, আমি তার হাতে খাবো৷”
\s5
\v 7 তখন দায়ূদ তামরের ঘরে লোক পাঠিয়ে বললেন, “তুমি একবার তোমার ভাই অম্নোনের ঘরে গিয়ে তাকে কিছু খাবার তৈরী করে দাও৷”
\v 8 অতএব তামর নিজের ভাই অম্নোনের ঘরে গেল; তখন সে শুয়েছিল৷ পরে তামর সূজি নিয়ে মেখে তার সামনে পিঠে তৈরী করল;
\v 9 আর চাটু নিয়ে গিয়ে তার সামনে ঢেলে দিল, কিন্তু সে খেতে রাজি হলো না৷ অম্নোন বলল, “আমার কাছ থেকে সবাই বাইরে যাক৷” তাতে সকলে তার কাছ থেকে বাইরে গেল৷
\s5
\v 10 তখন অম্নোন তামরকে বলল, “খাবারগুলি এই ঘরের মধ্যে আন; আমি তোমার হাতে খাব৷” তাতে তামর নিজের তৈরী করা ঐ পিঠেগুলি নিয়ে ঘরের মধ্যে নিজের ভাই অম্নোনের কাছে গেল৷
\v 11 পরে সে তাকে খাওয়ানোর জন্য তার কাছে তা নিয়ে গেলে অম্নোন তাকে ধরে বলল, “হে আমার বোন, এসো, আমার সঙ্গে শোও৷”
\v 12 সে উত্তর করল, “হে আমার ভাই, না, না, আমার সম্মান নষ্ট করো না, ইস্রায়েলের মধ্যে এমন কাজ করা ঠিক নয়;
\s5
\v 13 তুমি এরকম মুর্খতার কাজ করো না৷ আমি কোথায় আমার লজ্জা বহন করব? আর তুমিও ইস্রায়েলের মধ্যে একজন মুর্খের সমান হবে৷ অতএব অনুরোধ করি, বরং রাজার কাছে বল, তিনি তোমার হাতে আমাকে দিতে আপত্তি করবেন না৷”
\v 14 কিন্তু অম্নোন তার কথা শুনতে চাইল না; নিজে তার থেকে শক্তিশালী হওয়ার জন্য তার সম্মান নষ্ট করলো, তার সঙ্গে শুলো৷
\s5
\v 15 পরে অম্নোন তাকে খুবই ঘৃণা করতে লাগল; অর্থাৎ সে তাকে যেমন ভালোবেসে ছিল, তার থেকেও বেশি ঘৃণা করতে লাগল; আর অম্নোন তাকে বলল, “ওঠ, চলে যাও৷”
\v 16 সে তাকে বলল, “সেটা কর না, কারণ আমার সঙ্গে করা তোমার প্রথম অন্যায় থেকে আমাকে বের করে দেওয়া, এই মহা অপরাধ আরও বড় অন্যায়৷” কিন্তু অম্নোন তার কথা শুনতে চাইল না৷
\v 17 সে নিজের যুবক চাকরটিকে ডেকে বলল, “একে আমার কাছ থেকে বের করে দাও, পরে দরজায় খিল লাগিয়ে দাও৷”
\s5
\v 18 সেই মেয়েটির গায়ে লম্বা কাপড় ছিল, কারণ ঐ কুমারী রাজকুমারীরা সেই রকম পোশাক পরতো৷ অম্নোনের চাকর তাকে বের করে দিয়ে পরে দরজায় খিল লাগিয়ে দিল৷
\v 19 তখন তামর নিজের মাথায় ছাই দিল এবং নিজের গায়ে ঐ লম্বা কাপড় ছিঁড়ে মাথায় হাত দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল৷
\s5
\v 20 আর তার দাদা অবশালোম তাকে জিজ্ঞাসা করলো, “তোমার ভাই অম্নোন কি তোমার সঙ্গে সম্পর্ক করেছে? কিন্তু এখন হে আমার বোন, চুপ থাক, সে তোমার ভাই; তুমি এ বিষয় চিন্তা করো না৷” সেই থেকে তামর নিঃসঙ্গ ভাবে নিজের দাদা অবশালোমের ঘরে থাকল৷
\v 21 কিন্তু দায়ূদ রাজা এই সব কথা শুনে খুব রেগে গেলেন৷
\v 22 আর অবশালোম অম্নোনকে ভালো মন্দ কিছুই বলল না, কারণ তার বোন তামরের সে সম্মান নষ্ট করাতে অবশালোম অম্নোনকে ঘৃণা করল৷
\s5
\v 23 পুরো দুই বছর পরে ইফ্রয়িমের কাছের বাল-হাৎসোরে অবশালোমের ভেড়াদের লোমকাটা হল এবং অবশালোম রাজার সব ছেলেকে নিমন্ত্রণ করল৷
\v 24 আর অবশালোম রাজার কাছে এসে বলল, “দেখুন, আপনার এই দাসের ভেড়াদের লোমকাটা হচ্ছে; অতএব অনুরোধ করি, মহারাজ ও রাজার দাসেরা আপনার দাসের সঙ্গে আসুক৷”
\s5
\v 25 রাজা অবশালোমকে বললেন, “হে আমার সন্তান, তা নয়, আমরা সবাই যাব না, হয়ত তোমার বোঝা হব৷” তারপরও সে জোরাজোরি করল, তবুও রাজা যেতে রাজি হলেন না, কিন্তু তাকে আশীর্বাদ করলেন৷
\v 26 তখন অবশালোম বলল, “যদি তা না হয়, তবে আমার ভাই অম্নোনকে আমাদের সঙ্গে যেতে দিন,” রাজা তাকে বললেন, “সে কেন তোমার সঙ্গে যাবে?”
\s5
\v 27 কিন্তু অবশালোম তাঁকে জোর করলে রাজা অম্নোনকে তার সঙ্গে সব রাজপুত্রকে যেতে দিলেন৷
\v 28 পরে অবশালোম সব চাকরদেরকে এই আদেশ দিল, “দেখ, আঙ্গুররসে অম্নোনের মন আনন্দিত হলে যখন আমি তোমাদেরকে বলব, অম্নোনকে মার, তখন তোমরা তাকে হত্যা করবে, ভয় পেয় না৷ আমি কি তোমাদেরকে আদেশ দিই নি? তোমরা সাহস কর, বলবান হও৷”
\v 29 পরে অবশালোমের চাকরেরা অম্নোনের প্রতি অবশালোমের আদেশ মত কাজ করল৷ তখন রাজপুত্রেরা সকলে উঠে নিজেদের খচ্চরে চড়ে পালিয়ে গেল৷
\s5
\v 30 তারা পথে ছিল, এমন সময়ে দায়ূদের কাছে এই সংবাদ পৌঁছালো, “অবশালোম সমস্ত রাজপুত্রকে হত্যা করেছে, তাদের একজনও অবশিষ্ট নেই৷”
\v 31 তখন রাজা উঠে নিজের পোশাক ছিঁড়ে ভূমিতে লম্বা হয়ে পড়লেন এবং তাঁর দাসেরা সবাই নিজেদের পোশাক ছিঁড়ে তাঁর কাছে দাঁড়িয়ে থাকল৷
\s5
\v 32 তখন দায়ূদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাদব বলল, “আমার প্রভু মনে করবেন না যে, সমস্ত রাজকুমার মারা গেছে; শুধু অম্নোন মরেছে, কারণ যে দিন সে অবশালোমের বোন তামরের সম্মান নষ্ট করেছে, সেদিন থেকে অবশালোম এটা ঠিক করে রেখেছিল৷
\v 33 অতএব সমস্ত রাজপুত্র মারা গেছে ভেবে আমার প্রভু শোক করবেন না; শুধু অম্নোন মারা গেছে৷”
\s5
\v 34 কিন্তু অবশালোম পালিয়ে গিয়েছিল৷ আর যুবক পাহারাদার চোখ তুলে ভালো করে দেখল, আর দেখ, পাহাড়ের পাশ থেকে তার পিছনের দিকের রাস্তা দিয়ে অনেক লোক আসছে৷
\v 35 আর যোনাদব রাজাকে বলল, “দেখুন, রাজপুত্ররা আসছে, আপনার দাস যা বলেছে, তাই ঠিক হল৷”
\v 36 তার কথা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই, দেখ, রাজপুত্ররা উপস্থিত হয়ে খুব জোর কান্নাকাটি করল৷ এবং রাজা ও তাঁর সমস্ত দাসেরাও অনেক কাঁদল৷
\s অবশালোম পালিয়ে গেলেন ও যিরূশালেমে আবার ফিরে এলেন৷
\p
\s5
\v 37 কিন্তু অবশালোম পালিয়ে গশূরের রাজা অম্মীহূরের ছেলে তলময়ের কাছে গেল, আর দায়ূদ প্রতিদিন নিজের ছেলের জন্য শোক করতে লাগলেন৷
\v 38 অবশালোম পালিয়ে গশূরে গিয়ে সেখানে তিন বছর বাস করলেন৷
\v 39 পরে দায়ূদ রাজা অবশালোমের কাছে যাবার ইচ্ছা করলেন, কারণ অম্নোন মারা গেছে জেনে তিনি তার বিষয়ে সান্ত্বনা পেয়েছিলেন৷
\s5
\c 14
\p
\v 1 পরে সরূয়ার ছেলে যোয়াব রাজার মন অবশালোমের জন্য ব্যাকুল দেখে,
\v 2 তকোয়ে দূত পাঠিয়ে সেখান থেকে এক চালাক মহিলাকে এনে তাকে বললেন, “তুমি একবার ছলনা করে শোক কর এবং শোকের পোশাক পর; গায়ে তেল মেখো না, কিন্তু মৃতের জন্য বহু বছর শোককারা স্ত্রীর মত হও;
\v 3 আর রাজার কাছে গিয়ে তাঁকে এই রকম কথা বল৷” আর কি বলতে হবে, যোয়াব তাকে শিখিয়ে দিলেন৷
\s5
\v 4 পরে তকোয়ের সেই মহিলাটা রাজার কাছে কথা বলতে গিয়ে উপুড় হয়ে মাটিতে পরে প্রণাম করে বলল, “মহারাজ রক্ষা করুন৷”
\v 5 রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার কি হয়েছে?” মহিলাটা বলল, “সত্যি বলছি, আমি বিধবা; আমার স্বামী মারা গেছেন৷
\v 6 আর আপনার দাসীর দুটো ছেলে ছিল, তারা ক্ষেতে একজন অন্যজনের সঙ্গে ঝগড়া করল; তখন তাদেরকে ছাড়িয়ে দেবার কেউ না থাকতে একজন অন্যজনকে আঘাত করে মেরে ফেলল৷
\s5
\v 7 আর দেখুন, পুরো জাতি আপনার দাসীর বিরুদ্ধে উঠে বলছে, ‘তুমি সেই ভাইয়ের হত্যাকারীকে সমর্পণ কর, আমরা তার মৃত ভাইয়ের প্রাণের পরিবর্তে তার প্রাণ নেব, আমরা উত্তরাধিকারীকেও উচ্ছেদ করব৷’ এইভাবে তারা আমার শেষ আগুনের শিখাটাও নিভিয়ে দিতে চায় এবং পৃথিবীতে আমার স্বামীর নামে কিছুই অবশিষ্ট রাখতে চায় না৷”
\s5
\v 8 তখন রাজা মহিলাটাকে বললেন, “তুমি ঘরে যাও, আমি তোমার বিষয়ে আদেশ দেব৷”
\v 9 পরে ঐ তকোয়ীয়া মহিলা রাজাকে বলল, “হে আমার প্রভু৷ হে মহারাজ৷ আমারই প্রতি ও আমার বাবার বংশের প্রতি এই অপরাধ পড়ুক; মহারাজ ও তাঁর সিংহাসন নির্দোষ হন৷”
\s5
\v 10 রাজা বললেন, “যে কেউ তোমাকে কিছু বলে, তাকে আমার কাছে আন, সে তোমাকে স্পর্শ করবে না৷”
\v 11 পরে সেই মহিলা বলল, “প্রার্থনা করি, মহারাজ নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে স্মরণ করুন, যেন রক্তের প্রতিশোধদাতা আর ধ্বংস না করে;” নাহলে তারা আমার ছেলেকে হত্যা করবে৷ রাজা বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, তোমার ছেলের একটা চুলও মাটিতে পরবে না৷”
\s5
\v 12 তখন সেই মহিলা বলল, “প্রার্থনা করি, আপনার দাসীকে আমার প্রভু মহারাজের কাছে একটা কথা বলতে দিন৷” রাজা বললেন, “বল৷”
\v 13 সেই মহিলা বলল, “তবে ঈশ্বরের প্রজার বিরুদ্ধে আপনি কেন সেরকম পরিকল্পনা করছেন?” ফলে এই কথা বলাতে মহারাজ এক প্রকার দোষী হয়ে পড়লেন, যেহেতুক মহারাজ আপনার নির্বাসিত সন্তানটিকে ফিরিয়ে আনছেন না৷
\v 14 আমরা তো নিশ্চয়ই মরব এবং যা একবার মাটিতে ঢেলে ফেললে পরে তুলে নেওয়া যায় না, এমন জলের মত হবে; নাহলে ঈশ্বরও প্রাণ কেড়ে নেন না, কিন্তু নির্বাসিত লোক যাতে তাঁর থেকে নির্বাসিত না থাকে, তার উপায় চিন্তা করেন৷
\s5
\v 15 এখন আমি যে নিজের প্রভু মহারাজের কাছে প্রার্থনা করতে আসলাম, তার কারণ এই; লোকেরা আমার ভয় জন্মিয়েছিল; তাই আপনার দাসী বলল, “আমি মহারাজের কাছে প্রার্থনা করব; হতে পারে, মহারাজ নিজের দাসীর প্রার্থনা অনুসারে কাজ করবেন৷
\v 16 আমার ছেলের সঙ্গে আমাকে ঈশ্বরের অধিকার থেকে উচ্ছেদ করতে যে চেষ্টা করে, তার হাত থেকে আপনার দাসীকে রক্ষা করতে মহারাজ অবশ্যই মনোযোগ করবেন৷”
\v 17 আপনার দাসী বলল, “আমার প্রভু মহারাজের কথা শান্তিপূর্ণ হোক, কারণ ভাল মন্দ বিবেচনা করতে আমার প্রভু মহারাজ ঈশ্বরের দূতের মত; আর আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনার সঙ্গে সঙ্গে থাকুন৷”
\s5
\v 18 তখন রাজা উত্তর দিয়ে মহিলাটাকে বললেন, “অনুরোধ করি, তোমাকে যা জিজ্ঞাসা করব, তা আমার থেকে গোপন করো না৷” সেই মহিলা বলল, “আমার প্রভু মহারাজ বলুন৷”
\v 19 রাজা বললেন, “এই সমস্ত ব্যাপারে তোমার সঙ্গে কি যোয়াবের হাত আছে?” সেই মহিলা উত্তর করে বলল, “হে আমার প্রভু, মহারাজ, আপনার জীবিত প্রাণের দিব্যি, আমার প্রভু মহারাজ যা বলেছেন, তার ডানে কিংবা বামে ফেরার উপায় নেই; আপনার দাস যোয়াবই আমাকে আদেশ করেছেন, এই সমস্ত কথা আপনার দাসীকে শিখিয়ে দিয়েছেন৷
\v 20 এই বিষয়ে নতুন আকার দেখাবার জন্য আপনার দাস যোয়াব এই কাজ করেছেন; যাই হোক, আমার প্রভু পৃথিবীর সমস্ত বিষয় জানতে ঈশ্বরের দূতের মত বুদ্ধিমান৷”
\s5
\v 21 পরে রাজা যোয়াবকে বললেন, “এখন দেখ, আমিই এই কাজ করছি; অতএব যাও, সেই যুবক অবশালোমকে আবার আন৷”
\v 22 তাতে যোয়াব উপুড় হয়ে মাটিতে পড়ে প্রনাম করলেন এবং রাজার ধন্যবাদ করলেন, আর যোয়াব বললেন, “হে আমার প্রভু, মহারাজ, আপনি আপনার দাসের প্রার্থনা পূরণ করলেন, এতে আমি যে আপনার চোখে দয়া পেলাম, তা আজ আপনার এই দাস জানল৷”
\s5
\v 23 পরে যোয়াব উঠে গশূরে গিয়ে অবশালোমকে যিরূশালেমে আনলেন৷
\v 24 পরে রাজা বললেন, “সে ফিরে নিজের বাড়িতে যাক, সে আমার মুখ না দেখুক৷” তাতে অবশালোম নিজের বাড়িতে ফিরে গেল, রাজার মুখ দেখতে পেল না৷
\s5
\v 25 সমস্ত ইস্রায়েলের মধ্যে অবশালোমের মত সৌন্দর্য্যেও খুব প্রশংসনীয় কেউ ছিল না; তার পায়ের তালু থেকে মাথার তালু পর্যন্ত নিখুঁত ছিল৷
\v 26 আর তার মাথার চুল ভারী মনে হলে সে তা কেটে ফেলত; এক বছর অন্তর কেটে ফেলত; মাথা কামানোর সময়ে মাথার চুল ওজন করত; তাতে রাজ পরিমান অনুসারে তা দুশো শেকল পরিমাপের হত৷
\v 27 অবশালোমের তিনটি ছেলে ও একটি মেয়ে হয়েছিল, মেয়েটির নাম তামর; সে দেখতে সুন্দরী ছিল৷
\s5
\v 28 আর অবশালোম সম্পূর্ণ দু বছর যিরূশালেমে বাস করল, কিন্তু রাজার মুখ দেখতে পেল না৷
\v 29 পরে অবশালোম রাজার কাছে পাঠাবার জন্য যোয়াবকে ডেকে পাঠাল, কিন্তু তিনি তার কাছে আসতে রাজি হলেন না; পরে দ্বিতীয় বার লোক পাঠাল, তখনও তিনি আসতে রাজি হলেন না৷
\s5
\v 30 অতএব সে নিজের দাসদেরকে বলল, “দেখ, আমার জমির পাশে যোয়াবের ক্ষেত আছে; সেখানে তার যে যব আছে, তোমরা গিয়ে তাতে আগুন লাগিয়ে দাও৷” তাতে অবশালোমের দাসেরা সেই ক্ষেতে আগুন লাগিয়ে দিল৷
\v 31 তখন যোয়াব উঠে অবশালোমের কাছে তার ঘরে এসে তাকে বললেন, “তোমার দাসেরা আমার ক্ষেতে কেন আগুন দিয়েছে?”
\s5
\v 32 অবশালোম যোয়াবকে বলল, “দেখ, আমি তোমার কাছে লোক পাঠিয়ে এখানে আসতে বলেছিলাম, তার ফলে রাজার কাছে এই কথা প্রার্থনা করবার জন্য তোমাকে পাঠাব বলেছিলাম যে, ‘আমি গশূর থেকে কেন আসলাম? সেখানে থাকলে আমার আরো ভালো হত৷’ এখন আমাকে রাজার মুখ দেখতে দিন, আর যদি আমার অপরাধ থাকে, তবে তিনি আমাকে মেরে ফেলুন৷”
\v 33 পরে যোয়াব রাজার কাছে গিয়ে তাঁকে সেই কথা জানালে রাজা অবশালোমকে ডেকে পাঠালেন, তাতে সে রাজার কাছে গিয়ে রাজার সামনে উপুড় হয়ে মাটিতে পড়ে প্রণাম করল, আর রাজা অবশালোমকে চুমু দিলেন৷
\s5
\c 15
\s অবশালোমের বিদ্রোহ৷ দায়ূদ পালিয়ে গেলেন৷
\p
\v 1 তারপরে অবশালোম নিজের জন্য রথ, ঘোড়া ও তার আগে আগে দৌড়াবার জন্য পঞ্চাশ জন লোক রাখল৷
\v 2 আর অবশালোম খুব ভোরে উঠে রাজ ফটকের পথের পাশে দাঁড়াত এবং যে কেউ বিচারের জন্য রাজার কাছে সমস্যার কথা জানাতে আসত, অবশালোম তাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করত, “তুমি কোন নগরের লোক?” সে বলত, “আপনার দাস আমি ইস্রায়েলের অমুক বংশের লোক৷”
\s5
\v 3 তখন অবশালোম তাকে বলত, “দেখ, তোমার সমস্যার কথা ভাল ও সঠিক; কিন্তু তোমার কথা শোনার মতো রাজার কোনো লোক নেই৷”
\v 4 অবশালোম আরো বলত, “হায়, আমাকে কেন দেশের বিচারকর্তাপদে নিযুক্ত করা হয়নি? তা করলে যে কোনো ব্যক্তির সমস্যা ও বিচারের কোন কথা থাকে, সে আমার কাছে আসলে আমি তার বিষয়ে ন্যায় বিচার করতাম৷”
\s5
\v 5 আর যে কেউ তার কাছে প্রণাম করতে তার কাছে আসত, সে তাকে হাত বাড়িয়ে ধরে চুম্বন করত৷
\v 6 ইস্রায়েলের যত লোক বিচারের জন্য রাজার কাছে যেত, সকলের প্রতি অবশালোম এইরকম ব্যবহার করত৷ এইভাবে অবশালোম ইস্রায়েল লোকদের মন জয় করলো৷
\s5
\v 7 পরে চার বছর পার হলে অবশালোম রাজাকে বলল, “অনুরোধ করি, আমি সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যা মানত করেছি, তা পরিশোধ করতে আমাকে হিব্রোণে যেতে দিন৷
\v 8 কারণ আপনার দাস আমি যখন অরামের গশূরে ছিলাম, তখন মানত করে বলেছিলাম, যদি সদাপ্রভু আমাকে যিরূশালেমে ফিরিয়ে আনেন, তবে আমি সদাপ্রভুর সেবা করব৷”
\s5
\v 9 রাজা বললেন, “শান্তিতে যাও৷” তখনই সে উঠে হিব্রোণে চলে গেল৷
\v 10 কিন্তু অবশালোম ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের কাছে চর পাঠিয়ে বলল, “তূরীধ্বনি শোনার সঙ্গে সঙ্গে তোমরা বলবে,”
\s5
\v 11 “অবশালোম হিব্রোণের রাজা হলেন৷” আর যিরূশালেম থেকে দুশো লোক অবশালোমের সঙ্গে গেল; এদেরকে ডাকা হয়েছিল এবং সরল মনে গেল, কিছুই জানত না৷
\v 12 পরে অবশালোম বলিদানের সময়ে দায়ূদের মন্ত্রী গীলোনীয় অহীথোফলকে তার নগর থেকে, গীলো থেকে, ডেকে পাঠাল৷ আর চক্রান্ত মজবুত হল, কারণ অবশালোমের দলের লোক দিন দিন বাড়তে লাগল৷
\s5
\v 13 পরে একজন দায়ূদের কছে এসে এই খবর দিল, “ইস্রায়েল লোকেদের মন অবশালোমের অনুগামী হয়েছে৷”
\v 14 তখন দায়ূদের যে সব দাস যিরূশালেমে তাঁর কাছে ছিল, তাদেরকে তিনি বললেন, “এস, আমরা উঠে পালিয়ে যাই, কারণ অবশালোম থেকে আমাদের কারও বাঁচবার উপায় নেই; তাড়াতাড়ি চল, নাহলে সে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আমাদের সঙ্গ ধরে আমাদেরকে বিপদে ফেলবে ও তরোয়াল দিয়ে নগরে আঘাত করবে৷”
\v 15 তাতে রাজার দাসেরা রাজাকে বলল, “দেখুন, আমাদের প্রভু মহারাজের যা ইচ্ছা হবে, তাই করতে আপনার দাসেরা তৈরী আছে৷”
\s5
\v 16 পরে রাজা চলে গেলেন এবং তাঁর সমস্ত আত্মীয় তাঁর পিছনে পিছনে চলল; আর রাজা বাড়ি রক্ষার জন্য দশটি উপপত্নীকে রেখে গেলেন৷
\v 17 রাজা চলে গেলেন ও সমস্ত লোক তাঁর পিছনে পিছনে চলল, তাঁরা বৈৎমির্হকে গিয়ে থামলেন৷
\v 18 পরে তাঁর সব দাস তাঁর পাশে পাশে এগিয়ে চলল এবং করেথীয় ও পলেথীয় সমস্ত লোক, আর গাতীয় সমস্ত লোক, তাঁর পিছনে পিছনে গাৎ থেকে আসা ছশো লোক, রাজার সামনে এগিয়ে চলল৷
\s5
\v 19 তখন রাজা গাতীয় ইত্তয়কে বললেন, “আমাদের সঙ্গে তুমিও কেন যাবে? তুমি ফিরে গিয়ে রাজার সঙ্গে বাস কর, কারণ তুমি বিদেশী এবং নির্বাসিত লোক, তুমি নিজের জায়গায় ফিরে যাও৷
\v 20 তুমি কালকেই এসেছ, আজ আমি কি তোমাকে আমাদের সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়াবো? আমি যেখানে পারি, সেখানে যাব; তুমি ফিরে যাও; নিজের ভাইদেরকেও নিয়ে যাও; দয়া ও সত্য তোমার সঙ্গে সঙ্গে থাকুক৷”
\s5
\v 21 ইত্তয় রাজাকে উত্তর দিলেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি এবং আমার প্রভু মহারাজের প্রাণের দিব্যি, জীবনের জন্য হোক, কিম্বা মরণের জন্য হোক, আমার প্রভু মহারাজ যেখানে থাকবেন, আপনার দাসও সেখানে অবশ্য থাকবে৷”
\v 22 দায়ূদ ইত্তয়কে বললেন, “তবে চল, এগিয়ে যাও৷” তখন গাতীয় ইত্তয়, তাঁর সমস্ত লোক ও সঙ্গী সমস্ত ছোট ছেলে-মেয়েরা এগিয়ে চলল৷
\v 23 দেশের সব লোক চিত্কার করে কাঁদলো ও সমস্ত লোক এগিয়ে চলল৷ রাজাও কিদ্রোণ স্রোত পার হলেন এবং সমস্ত লোক মরুভূমির পথ ধরে এগিয়ে চলল৷
\s5
\v 24 আর দেখ, সাদোকও আসলেন এবং তাঁর সঙ্গে লেবীয়েরা সবাই আসল, তারা ঈশ্বরের নিয়ম সিন্দুক বহন করছিল; পরে নগর থেকে সমস্ত লোকের বেরিয়ে না আসা পর্যন্ত তারা ঈশ্বরের সিন্দুক নামিয়ে রাখল এবং অবিয়াথর উঠে গেলেন৷
\v 25 পরে রাজা সাদোককে বললেন, “তুমি ঈশ্বরের সিন্দুক আবার নগরে নিয়ে যাও; যদি সদাপ্রভুর চোখে আমি অনুগ্রহ পাই, তবে তিনি আমাকে পুনরায় এনে সেটা ও তাঁর বাসস্থান দেখাবেন৷
\v 26 কিন্তু যদি তিনি এই কথা বলেন, ‘তোমার প্রতি আমি সন্তুষ্ট নই, তবে দেখ, এই আমি, তাঁর চোখে যা ভাল, আমার প্রতি তাই করুন৷”
\s5
\v 27 রাজা সাদোক যাজককে আরও বললেন, “তুমি দেখছ? তুমি শান্তিতে নগরে ফিরে যাও এবং তোমার ছেলে অহীমাস ও অবিয়াথরের ছেলে যোনাথন, তোমাদের এই দুই ছেলে তোমাদের সঙ্গে যাক৷
\v 28 দেখ, যতদিন তোমাদের কাছ থেকে আমার কাছে ঠিক খবর না আসে, ততদিন আমি মরুভূমির পারঘাটায় থেকে অপেক্ষা করব৷”
\v 29 অতএব সাদোক ও অবিয়াথর ঈশ্বরের সিন্দুক আবার যিরূশালেমে নিয়ে গিয়ে সেখানে রাখলেন৷
\s5
\v 30 পরে দায়ূদ জৈতুন পর্বতের উপরের দিকে পথ দিয়ে উঠলেন; তিনি উঠবার সময়ে কাঁদতে কাঁদতে চললেন; তাঁর মুখ ডাকা ও পা খালি ছিল এবং তাঁর সঙ্গীরা সবাই নিজেদের মুখ ঢেকে রেখেছিল এবং উঠবার সময়ে কাঁদতে কাঁদতে চলল৷
\v 31 পরে কেউ দায়ূদকে বলল, “অবশালোমের সঙ্গে চক্রান্তকারীদের মধ্যে অহীথোফলও আছে,” তখন দায়ূদ বললেন, “হে সদাপ্রভু, অনুগ্রহ করে অহীথোফলের পরিকল্পনাকে বোকামিতে পরিণত করো৷”
\s5
\v 32 পরে যেখানে লোকেরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে প্রণাম করত, দায়ূদ পর্বতের সেই চূড়ায় উপস্থিত হলে দেখ, অর্কীয় হূশয় ছেঁড়া পোশাক পড়ে মাথায় মাটি দিয়ে দায়ূদের সঙ্গে দেখা করতে আসলেন৷
\v 33 দায়ূদ তাঁকে বললেন, “তুমি যদি আমার সঙ্গে এগিয়ে চল, তবে আমার কাছে বোঝা হবে৷
\v 34 কিন্তু যদি নগরে ফিরে গিয়ে অবশালোমকে বল, ‘হে রাজা, আমি আপনার দাস হব, এর আগে যেমন আপনার বাবার দাস ছিলাম, তেমনি এখন আপনার দাস হব, তা হলে তুমি আমার জন্য অহীথোফলের পরিকল্পনা ব্যর্থ করতে পারবে৷
\s5
\v 35 সেখানে সাদোক ও অবিয়াথর, এই দুই যাজক কি তোমার সঙ্গে থাকবেন না? অতএব তুমি রাজবাড়ির যে কোনো কথা শুনবে, তা সাদোক ও অবিয়াথর যাজককে বলবে৷
\v 36 দেখ, সেখানে তাঁদের সঙ্গে তাঁদের দুই ছেলে, সাদোকের ছেলে অহীমাস ও অবিয়াথরের ছেলে যোনাথন আছে; তোমরা যে কোন কথা শুনবে, তাদের মাধ্যমে আমার কাছে তার খবর পাঠিয়ে দেবে৷”
\v 37 অতএব দায়ূদের বন্ধু হূশয়, নগরে গেলেন আর অবশালোম যিরূশালেমে প্রবেশ করলেন৷
\s5
\c 16
\p
\v 1 পরে দায়ূদ পর্বতের চূড়া পিছনে ফেলে কিছুটা এগিয়ে গেলে দেখ, মফীবোশতের দাস সীবঃ সাজানো দুইটি গাধা সঙ্গে করে তাঁর সঙ্গে মিলিত হল৷ সেই গাধার পিঠে দুশো রুটি ও একশো গুচ্ছ শুকনো আঙ্গুরফল ও একশো চাপ গ্রীষ্মকালের ফল ও এক কুপা আঙ্গুররস ছিল৷
\v 2 রাজা সীবঃকে বললেন, “তোমার এই সমস্ত কিছুর উদ্দেশ্য কি?” সীবঃ বলল, “এই দুই গাধা রাজার লোকেদের সঙ্গী হবে, আর এই রুটি ও ফল যুবকদের খাবার এবং আঙ্গুররস মরুভূমিতে ক্লান্ত লোকদের পানীয় হবে৷”
\s5
\v 3 পরে রাজা বললেন, “তোমার কর্তার ছেলে কোথায়?” সীবঃ রাজাকে বললেন, “দেখুন, তিনি যিরূশালেমে রয়েছেন, কারণ তিনি বললেন, ‘ইস্রায়েল বংশ আজ আমার বাবার রাজ্য আমাকে ফিরিয়ে দেবে’৷”
\v 4 রাজা সীবঃকে বললেন, “দেখ, মফীবোশতের সব কিছুই তোমার৷” সীবঃ বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, নমস্কার করি, অনুরোধ করি, যেন আমি আপনার চোখে অনুগ্রহ পাই৷”
\s5
\v 5 পরে দায়ূদ রাজা বহুরীমে উপস্থিত হলে দেখ, শৌলের বংশের অন্তর্ভুক্ত গেরার ছেলে শিমিয়ি নামে এক ব্যক্তি সেখান থেকে বের হয়ে আসতে আসতে অভিশাপ দিল৷
\v 6 আর সে দায়ূদের ও দায়ূদ রাজার সমস্ত দাসদের দিকে পাথর ছুঁড়ল; তখন সমস্ত লোক ও সমস্ত বীর তাঁর ডান দিকে ও বাম দিকে ছিল৷
\s5
\v 7 শিমিয়ি অভিশাপ দিতে দিতে এই কথা বলল, “যা, যা, তুই রক্তপাতী, তুই নিষ্ঠুর৷
\v 8 তুই যার পদে রাজত্ব করেছিস, সেই শৌলের বংশের সমস্ত রক্তপাতের প্রতিফল সদাপ্রভু তোকে দিচ্ছেন এবং সদাপ্রভু তোর ছেলে অবশালোমের হাতে রাজ্য সমর্পণ করেছেন; দেখ, তুই নিজের দুষ্টতায় আটকা পরেছিস, কারণ তুই রক্তপাতী৷”
\s5
\v 9 তখন সরূয়ার ছেলে অবীশয় রাজাকে বললেন, “ঐ মরা কুকুর কেন আমার প্রভু মহারাজকে অভিশাপ দিচ্ছে? আপনি অনুমতি দিলে আমি পার হয়ে গিয়ে ওর মাথা কেটে ফেলি৷”
\v 10 কিন্তু রাজা বললেন, “হে সরূয়ার ছেলেরা, তোমাদের সঙ্গে আমার বিষয় কি? ও যখন অভিশাপ দেয় এবং সদাপ্রভু যখন ওকে বলে দেন, দায়ূদকে অভিশাপ দাও, তখন কে বলবে, এমন কাজ কেন করছ?”
\s5
\v 11 দায়ূদ অবীশয়কে ও নিজের সমস্ত দাসকে আরো বললেন, “দেখ, আমার ঔরসজাত ছেলে আমার জীবন নষ্ট করার চেষ্টা করছে, তবে ঐ বিন্যামীন বংশীয় কি না করবে? ওকে থাকতে দাও ও অভিশাপ দিক, কারণ সদাপ্রভু ওকে অনুমতি দিয়েছেন৷
\v 12 হয় তো সদাপ্রভু আমার উপরে করা অন্যায়ের প্রতি মনোযোগ দেবেন এবং আজ আমাকে দেওয়া অভিশাপের পরিবর্তে সদাপ্রভু আমার মঙ্গল করবেন৷”
\s5
\v 13 এইভাবে দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা পথ দিয়ে যেতে লাগলেন, আর শিমিয়ি তাঁর অন্যপারে পর্বতের পাশ দিয়ে চলতে চলতে অভিশাপ দিতে লাগল এবং সেই পার থেকেই পাথর ছুঁড়লো ও ধুলো ছড়িয়ে দিল৷
\v 14 পরে রাজা ও তাঁর সঙ্গীরা সকলে অয়েফীমে [শ্রান্তদের স্থানে] এলেন, আর তিনি সেখানে বিশ্রাম করলেন৷
\s5
\v 15 আর অবশালোম ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোক যিরূশালেমে প্রবেশ করল, অহীথোফলও তার সঙ্গে আসল৷
\v 16 তখন দায়ূদের বন্ধু অর্কীয় হূশয় অবশালোমের কাছে আসলেন৷ হূশয় অবশালোমকে বললেন, “মহারাজ চিরজীবী হন, মহারাজ চিরজীবী হন৷”
\s5
\v 17 অবসালোম হুশয়কে বলল, “এই কি বন্ধুর প্রতি তোমার দয়া? তুমি নিজের বন্ধুর সঙ্গে কেন গেলে না?”
\v 18 হূশয় অবশালোমকে বললেন, “তা নয়; কিন্তু সদাপ্রভু, এই জাতি ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোক যাঁকে মনোনীত করেছেন, আমি তাঁরই হব, তাঁরই সঙ্গে থাকব৷
\s5
\v 19 আর পুনরায় আমি কার সেবা করব? তাঁর ছেলের সামনে কি নয়? যেমন আপনার বাবার সামনে সেবা করেছ, তেমনি আপনার সামনে করব৷”
\s5
\v 20 পরে অবশালোম অহীথোফলকে বলল, “এখন কি কর্ত্তব্য? তোমরা পরিকল্পনা বল৷”
\v 21 অহীথোফল অবশালোমকে বলল, “তোমার বাবা বাড়ি রক্ষার জন্য যাদেরকে রেখে গেছেন, তুমি নিজের বাবার সেই উপপত্নীদের কাছে যাও; তাতে সমস্ত ইস্রায়েল শুনবে যে, তুমি বাবার ঘৃণার পাত্র হয়েছ, তখন তোমার সঙ্গী সমস্ত লোকের হাত সবল হবে৷”
\s5
\v 22 পরে লোকেরা অবশালোমের জন্য প্রাসাদের ছাদে একটা তাঁবু স্থাপন করল, তাতে অবশালোম সমস্ত ইস্রায়েলের সামনে নিজের বাবার উপপত্নীদের কাছে গেল৷
\v 23 ঐ সময়ে অহীথোফল যে উপদেশ দিত, সেই উপদেশ ঈশ্বরের বাক্যে থেকে উত্তর পাওয়ার মত ছিল৷ দায়ূদের ও অবশালোমের উভয়ের পক্ষে অহীথোফলের সমস্ত উপদেশ সেই রকম ছিল৷
\s5
\c 17
\p
\v 1 অহীথোফল অবশালোমকে আরও বলল, “আমি বারো হাজার লোক মনোনীত করে আজ রাতে উঠে দায়ূদের পিছনে পিছনে তাড়া করতে যাই;
\v 2 যখন তিনি ক্লান্ত ও তাঁর হাত দূর্বল হয়ে পড়বে, সেই সময়ে হঠাৎ তাকে আক্রমণ করে ভয় দেখাব; তাতে তাঁর সঙ্গী সমস্ত লোক পালিয়ে যাবে, আর আমি শুধু রাজাকে আঘাত করব৷
\v 3 এইভাবে সমস্ত লোককে তোমার পক্ষে আনব; তুমি যাঁর অন্বেষণ করছ, তাঁরই মরণ ও সকলের ফেরা দুই সমান; সমস্ত লোক শান্তিতে থাকবে৷”
\v 4 এই কথা অবশালোমের ও ইস্রায়েলের সমস্ত প্রাচীনদের সন্তুষ্ট করলো৷
\s5
\v 5 তখন অবশালোম বলল, “একবার অর্কীয় হূশয়কে ডাক; তিনি কি বলেন, আমরা তাও শুনি৷”
\v 6 পরে হূশয় অবশালোমের কাছে আসলে অবশালোম তাঁকে বলল, “অহীথোফল এই ভাবে কথা বলেছে, এখন তার কথা অনুযায়ী কাজ করা আমাদের কর্ত্তব্য কি না?
\v 7 যদি না হয়, তুমি বল৷” হূশয় অবশালোমকে বললেন, “এই বার অহীথোফল ভাল পরামর্শ দেন নি৷”
\s5
\v 8 হূশয় আরও বললেন, “আপনি নিজের বাবাকে ও তাঁর লোকদেরকে জানেন, তাঁরা বীর ও রাগী এবং মাঠের ভাল্লুকের মত, আর আপনার বাবা যোদ্ধা; তিনি লোকদের সঙ্গে রাত কাটাবেন না৷
\v 9 দেখুন, এখন তিনি কোন গর্তে কিংবা আর কোন জায়গায় লুকিয়ে আছেন; আর প্রথমে তিনি ঐ লোকদেরকে আক্রমণ করলে যে কেউ তা শুনবে, সে বলবে, অবশালোমের অনুগামী লোকরা হত্যাকান্ড করছে৷
\v 10 তা হলে বলবান লোকেরা যাদের হৃদয় সিংহের মত, সেও একসময়ে দূর্বল হয়ে যাবে; কারণ সমস্ত ইস্রায়েল জানে যে, আপনার বাবা খুবই শক্তিশালী ও তাঁর সঙ্গীরা সাহসী লোক৷
\s5
\v 11 কিন্তু আমার পরামর্শ এই, দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত সমুদ্র-তীরের বালির মত অসংখ্য সমস্ত ইস্রায়েল আপনার কাছে জড়ো হোক, পরে আপনি নিজে যুদ্ধে যান৷
\v 12 তাতে যে কোন জায়গায় তাঁকে পাওয়া যাবে, সেখানে আমরা তাঁর সামনে উপস্থিত হয়ে জমিতে শিশির পড়ার মত তাঁর উপরে উঠে পড়ব; তাঁকে বা তাঁর সঙ্গী সমস্ত লোকের মধ্যে এক জনকেও রাখব না৷
\s5
\v 13 আর যদি তিনি কোন নগরে চলে যান, তবে সমস্ত ইস্রায়েল সেই নগরে দড়ি বাঁধবে, আর আমরা স্রোত পর্যন্ত সেটা টেনে নিয়ে যাব, শেষে সেখানে একটা পাথর কুঁচোও আর পাওয়া যাবে না৷”
\v 14 পরে অবশালোম ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোক বলল, “অহীথোফলের পরিকল্পনার থেকে অর্কীয় হূশের পরিকল্পনা ভাল৷” বাস্তুবিক সদাপ্রভু যেন অবশালোমের ওপর অমঙ্গল ঘটাতে পারেন, তার জন্য অহীথোফলের ভাল পরিকল্পনা ব্যর্থ করার জন্য সদাপ্রভু এটা স্থির করেছিলেন৷
\s5
\v 15 পরে হূশয় সাদোক ও অবিয়াথর এই দুই যাজককে বললেন, “অহীথোফল অবশালোমকে ও ইস্রায়েলের প্রাচীনদেরকে এই রকম পরিকল্পনা দিয়েছিল, কিন্তু আমি এই রকম পরিকল্পনা দিয়েছি৷
\v 16 অতএব তোমরা তাড়াতাড়ি দায়ূদের কাছে লোক পাঠিয়ে তাঁকে বল, আপনি মরুভূমির পারঘাটায় আজকে রাতে থাকবেন না, কোন ভাবে পার হয়ে যাবেন; নাহলে মহারাজ ও আপনার সঙ্গী সমস্ত লোক নিহত হবেন৷”
\s5
\v 17 তখন যোনাথন ও অহীমাস ঐন-রোগেলে ছিল; এই দাসী গিয়ে তাদেরকে খবর দিত, পরে তারা গিয়ে দায়ুদ রাজাকে খবর দিত কারণ তারা নগরে এসে দেখা করতে পারত না৷
\v 18 কিন্তু একটা যুবক তাদেরকে দেখে অবশালোমকে জানালো; আর তারা দুজন তাড়াতাড়ি গিয়ে বহুরীমে একজন লোকের বাড়িতে প্রবেশ করল এবং তার উঠানের মধ্যে এক কুয়ো ছিল, সেই কুয়োয় নামল৷
\s5
\v 19 পরে সেই বাড়ির মহিলা কুয়োটির মুখে ঢাকা দিয়ে তার উপরে মাড়াই করা শস্য মেলে দিল, তাতে কেউ কিছু জানতে পারল না৷
\v 20 পরে অবশালোমের দাসেরা সেই মহিলাটির বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসা করল, “অহীমাস ও যোনাথন কোথায়?” মহিলাটি তাদেরকে বলল, “তারা ঐ জলস্রোত পার হয়ে চলে গেল৷” পরে তারা খুঁজে না পেয়ে যিরূশালোমে ফিরে গেল৷
\s5
\v 21 তারা চলে যাবার পর ঐ দুজন কুয়ো থেকে উঠে গিয়ে দায়ূদ রাজাকে খবর দিল; আর তারা দায়ূদকে বলল, “আপনারা উঠুন, তাড়াতাড়ি জল পার হয়ে যান, কারণ অহীথোফল আপনাদের বিরুদ্ধে এই রকম পরিকল্পনা করেছে৷”
\v 22 তাতে দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গীরা সবাই উঠে যর্দন পার হলেন; যর্দন পার হন নি এরকম একজনও সকালের আলো পর্যন্ত অবশিষ্ট থাকলো না৷
\s5
\v 23 আর অহীথোফল যখন দেখল যে, তার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করা হল না, তখন সে গাধা সাজাল এবং উঠে নিজের বাড়িতে, নিজের নগরে গেল এবং নিজের বাড়ির সব ব্যবস্থা করে, নিজে গলায় দড়ি দিয়ে মরল৷ পরে তার বাবার কবরে তাকে কবর দেওয়া হল৷
\s অবশালোমের পরাজয় ও মৃত্যু৷
\p
\s5
\v 24 পরে দায়ূদ মহনয়িমে আসলেন এবং সমস্ত ইস্রায়েল লোকের সঙ্গে অবশালোম যর্দন পার হল৷
\v 25 আর অবশালোম যোয়াবের জায়গায় অমাসাকে সৈন্যদলের উপরে নিযুক্ত করেছিল৷ ঐ অমাসা ইস্রায়েলীয় যিথ্র নামে এক ব্যক্তির ছেলে; সেই ব্যক্তি নাহশের মেয়ে অবীগলের কাছে গিয়েছিল; ওই স্ত্রী যোয়াবের মা সরূয়ার বোন৷
\v 26 পরে ইস্রায়েল ও অবশালোম গিলিয়দ দেশে শিবির স্থাপন করল৷
\s5
\v 27 দায়ূদ মহনয়িমে উপস্থিত হওয়ার পর অম্মোন সন্তানদের রব্বার অধিবাসী নাহশের ছেলে শোবি, আর লোদবার অধিবাসী অম্মীয়েলের ছেলে মাখীর এবং রোগলীমের অধিবাসী গিলিয়দীয় বর্সিল্লয় দায়ূদের ও তাঁর সঙ্গী লোকদের জন্য
\v 28 বিছানা, গামলা, মাটির পাত্র এবং খাবার জন্য গম, যব, সুজি, ভাজা শস্য, শিম, মসুর, ভাজা কড়াই,
\v 29 মধু, দই এবং ভেড়ার পাল ও গরুর দুধের ছানা আনলেন৷ কারণ তাঁরা বললেন, “মরুভূমিতে লোকেরা ক্ষিধে, তেষ্টায় ক্লান্ত হয়েছে৷”
\s5
\c 18
\p
\v 1 পরে দায়ূদ নিজের সঙ্গীদেরকে গুনে তাদের উপরে সহস্রপতি ও শতপতিদেরকে নিযুক্ত করলেন৷
\v 2 আর দায়ূদ যোয়াবের হাতে লোকদের তৃতীয় অংশ, যোয়াবের ভাই সরূয়ার ছেলে অবীশয়ের হাতে তৃতীয় অংশ এবং গাতীয় ইত্তয়ের হাতে তৃতীয় অংশ দিয়ে পাঠালেন৷ আর রাজা লোকদেরকে বললেন, “আমিও তোমাদের সঙ্গে যাবো৷”
\s5
\v 3 কিন্তু লোকেরা বলল, “আপনি যাবেন না; কারণ যদি আমরা পালাই, তবে আমাদের বিষয় তারা মনে করবে না, আমাদের অর্দ্ধেক লোক মারা গেলেও আমাদের বিষয় মনে করবে না; কিন্তু আপনি আমাদের দশ হাজারের সমান; তাই নগর থেকে আমাদের সাহায্য করার জন্য আপনি প্রস্তুত থাকলে ভালো হয়৷”
\v 4 তখন রাজা তাদেরকে বললেন, “তোমরা যা ভালো বোঝো, আমি তাই করব৷” পরে রাজা নগরের ফটকের পাশে দাঁড়িয়ে থাকলেন এবং সমস্ত লোক শত শত ও হাজার হাজার হয়ে বেরিয়ে গেল৷
\s5
\v 5 তখন রাজা যোয়াব, অবীশয় ও ইত্তয়কে আদেশ দিয়ে বললেন, “তোমরা আমার অনুরোধে সেই যুবকের প্রতি, অবশালোমের প্রতি, নরম ব্যবহার কোরো৷” অবশালোমের বিষয় সমস্ত সেনাপতিকে দেওয়া রাজার এই আদেশ সবাই শুনল৷
\s5
\v 6 পরে লোকেরা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জায়গায় চলে গেল; ইফ্রয়িম বনে যুদ্ধ হল৷
\v 7 সেখানে ইস্রায়েলের লোকেরা দায়ূদের দাসদের সামনে আহত হল, আর সেদিন সেখানে বড় হত্যাকান্ড হল, কুড়ি হাজার লোক মারা গেল৷
\v 8 তার ফলে যুদ্ধ সেখানকার সমস্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে গেল এবং সেই দিন তলোয়ার যত লোককে শেষ করল, বরং তার থেকে বেশি লোককে শেষ করল৷
\s5
\v 9 আর অবশালোম হঠাৎ দায়ূদের দাসেদের সামনে পড়ল; অবশালোম নিজের খচ্চরে চড়েছিল, সেই খচ্চর সেখানকার বড় একটা এলা গাছের ডালের নীচে দিয়ে যাওয়ার সময় সেই এলা গাছে অবশালোমের মাথা আটকে গেল; তাতে সে আকাশের ও পৃথিবীর মধ্যে ঝুলে রইল এবং যে খচ্চরটী তার নীচে ছিল, সেটি চলে গেল৷
\v 10 আর একটি লোক সেটা দেখে যোয়াবকে বলল, “দেখুন, আমি দেখলাম, অবশালোম এলা বৃক্ষে ঝুলছে৷”
\v 11 তখন যোয়াব সেই সংবাদদাতাকে বললেন, “দেখ, তুমি দেখেছিলে, তবে কেন সেই জায়গায় তাকে মেরে মাটিতে ফেলে দিলে না? সেটা করলে আমি তোমাকে দশ শেকল রুপো ও একটী কোমর বন্ধনী দিতাম৷”
\s5
\v 12 সেই ব্যক্তি যোয়াবকে বলল, আমি যদিও হাজার শেকল রুপো এই হাতে পেতাম, তবুও রাজপুত্রের বিরুদ্ধে হাত তুলতাম না; কারণ আমাদেরই কানের কাছে রাজা আপনাকে, অবীশয়কে ও ইত্তয়কে এই আদেশ দিয়েছিলেন, তোমরা যে কেউ হও, সেই যুবক অবশালোমের বিষয়ে সাবধান থাকবে৷
\v 13 আর যদি আমি তাঁর প্রাণের বিরুদ্ধে বিশাসঘাতকতা করতাম, রাজার থেকে তো কোন বিষয় লুকানো থাকে না তবে আপনি আমার বিপক্ষ হতেন৷
\s5
\v 14 তখন যোয়াব বললেন, “তোমার সামনে আমার এরকম দেরী করা অনুচিত৷” পরে তিনি হাতে তিনটি খোঁচা নিয়ে অবশালোমের বুক বিদ্ধ করলেন; তখনও সে এলা গাছের মধ্যে জীবিত ছিল৷
\v 15 আর যোয়াবের অস্ত্র বহনকারী দশজন যুবক অবশালোমকে ঘিরে ধরল ও আঘাত করে হত্যা করল৷
\s5
\v 16 পরে যোয়াব তূরী বাজালেন, তাতে লোকেরা ইস্রায়েলের পিছনে তাড়া করা বন্ধ করল; কারণ যোয়াব লোকদেরকে ফিরিয়ে আনলেন৷
\v 17 আর তারা অবশালোমকে নিয়ে বনের এক বড় গর্তে ফেলে দিয়ে তার উপরে পাথরের এক বড় ঢিবি করলো৷ ইতিমধ্যে সমস্ত ইস্রায়েলীয় নিজেদের তাঁবুতে পালিয়ে গেল৷
\s5
\v 18 রাজার উপত্যকাতে যে স্তম্ভ আছে, অবশালোম জীবনকালে সেটা তৈরী করে নিজের জন্য স্থাপন করেছিল, কারণ সে বলেছিল, “আমার নাম রক্ষা করার জন্য আমার ছেলে নেই;” তাই সে নিজের নাম অনুসারে ঐ স্তম্ভের নাম রেখেছিল; আজ পর্যন্ত সেটা অবশালোমের স্তম্ভ বলে বিখ্যাত আছে৷
\s5
\v 19 পরে সাদোকের ছেলে অহীমাস বলল, “আমি দৌড়ে গিয়ে, সদাপ্রভু কি ভাবে রাজার শত্রুদেরহাত থেকে রাজাকে বাঁচিয়েছেন, এই খবর রাজাকে দিই৷”
\v 20 কিন্তু যোয়াব তাকে বললেন, “আজ তুমি সংবাদদাতা হবে না, অন্য দিন খবর দেবে; রাজপুত্র মারা গেছে, এই জন্য আজ তুমি খবর দেবে না৷”
\s5
\v 21 পরে যোয়াব কূশীয়কে বললেন, “যাও যা দেখলে, রাজাকে গিয়ে বল৷” তাতে কূশীয় যোয়াবকে প্রণাম করে দৌড়ে চলে গেল৷
\v 22 পরে সাদোকের ছেলে অহীমাস আবার যোয়াবকে বলল, “যা হয় হোক, অনুরোধ করি, কূশীয়ের পিছনে আমাকেও দৌড়াতে দিন৷” যোয়াব বললেন, “বাছা তুমি কেন দৌড়াবে? তুমি তো খবরের জন্য পুরস্কার পাবে না?”
\v 23 সে বলল, “যা হয় হোক, আমি দৌড়াব৷” তাতে তিনি বললেন, “দৌড়াও৷” তখন অহীমাস সমভূমির পথ দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে কূশীয়কে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেল৷
\s5
\v 24 সেই সময়ে দায়ূদ দুই নগরের ফটকের মাঝখানে বসেছিলেন৷ আর পাহারাদার নগরের ফটকের উপরের দিকে, প্রাচীরে উঠল, আর চোখ তুলে পর্যবেক্ষণ করল, আর দেখল, একজন একা দৌড়ে আসছে৷
\v 25 তাতে পাহারাদার চিত্কার করে রাজাকে সেটা বলল; রাজা বললেন, “সে যদি একা হয়, তবে তার কাছে খবর আছে৷” পরে সে আসতে আসতে কাছাকাছি এল৷
\s5
\v 26 পাহারাদার আর একজনকে দৌড়ে আসতে দেখে চিত্কার করে দারোয়ানকে বলল, “দেখ, আর একজন একা দৌড়ে আসছে৷” তখন রাজা বললেন, “সেও খবর আনছে৷”
\v 27 পরে পাহারাদার বলল, “প্রথম যে ব্যক্তি দৌড়াচ্ছে তাকে সাদোকের ছেলে অহীমাস বলে মনে হচ্ছে৷” রাজা বললেন, “সে ভাল মানুষ, ভাল খবর নিয়ে আসছে৷”
\s5
\v 28 তখন অহীমাস চিত্কার করে রাজাকে বলল, “মঙ্গল হোক৷” পরে সে রাজার সামনে উপুড় হয়ে প্রণাম করে বলল, “আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু ধন্য, আমার প্রভু মহারাজের বিরুদ্ধে যে লোকেরা হাত তুলেছিল, তাদেরকে তিনি সমর্পণ করেছেন৷”
\v 29 পরে রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “যুবক অবশালোম কি ভালো আছে?” অহীমাস বলল, “যে সময়ে যোয়াব মহারাজের দাসকে, আপনার দাস আমাকে পাঠান, সেই সময়ে অনেক লোকের ভীড় দেখলাম, কিন্তু কি হয়েছিল তা জানি না৷”
\v 30 রাজা বললেন, “এক পাশে যাও, এখানে দাঁড়াও; তাতে সে গিয়ে এক পাশে দাঁড়াল৷”
\s5
\v 31 আর দেখ, কূশীয় আসল ও কূশীয় বলল, “আমার প্রভু মহারাজের জন্য খবর এনেছি; আপনার বিরুদ্ধে যারা উঠেছিল, সেই সবার হাত থেকে সদাপ্রভু আজ আপনাকে রক্ষা করেছেন৷”
\v 32 রাজা কূশীয়কে জিজ্ঞাসা করলেন, “যুবক অবশালোম কি ভালো আছে?” কূশীয় বলল, “আমার প্রভু মহারাজের শত্রুরা ও যারা অমঙ্গল করার জন্য আপনার বিরুদ্ধে উঠে, তারা সকলের সেই যুবকের মত হোক৷”
\v 33 তখন রাজা অধৈর্য্য হয়ে নগরের ফটকের ছাদের উপরের কুঠরীতে উঠে কাঁদতে লাগলেন এবং যেতে যেতে বললেন, “হায়! আমার ছেলে অবশালোম! আমার ছেলে, আমার ছেলে অবশালোম! কেন তোমার পরিবর্তে আমি মারা গেলাম না? হায় অবশালোম! আমার ছেলে! আমার ছেলে!”
\s5
\c 19
\p
\v 1 পরে কেউ যোয়াবকে বলল, “দেখ, রাজা অবশালোমের জন্য কাঁদছেন ও দুঃখ করছেন৷”
\v 2 আর সেই দিনে সমস্ত লোকের জন্য বিজয় দুঃখের বিষয় হয়ে উঠলো, কারণ রাজা নিজের ছেলের বিষয়ে দুঃখিত ছিলেন, এটা লোকেরা সেই দিন শুনল৷
\s5
\v 3 আর যুদ্ধক্ষেত্র থেকে পালাবার সময় লোকেরা যেমন বিষন্ন হয়ে চোরের মত চলে, তেমন লোকেরা ঐ দিনে চোরের মত নগরে ঢুকল৷
\v 4 আর রাজা নিজের মুখ ঢেকে চিত্কার করে কেঁদে বলতে লাগলেন, “হায়৷ আমার ছেলে অবশালোম! হায় অবশালোম! আমার ছেলে৷ আমার ছেলে৷”
\s5
\v 5 পরে যোয়াব ঘরের মধ্যে রাজার কাছে এসে বললেন, “যারা আজ আপনার প্রাণ, আপনার ছেলে-মেয়েদের প্রাণ ও আপনার স্ত্রীদের প্রাণ ও আপনার উপপত্নীদের প্রাণ রক্ষা করেছে, আপনার সেই দাসদেরকে আপনি আজ দুঃখিত করলেন৷”
\v 6 বাস্তবিক আপনি নিজের শত্রুদেরকে প্রেম ও নিজের প্রিয়জনকে ঘৃণা করছেন; ফলে আপনি আজ প্রকাশ করছেন যে, শাসনকর্তারা ও দাসেরা আপনার কছে কিছুই নয়; কারণ আজ আমি দেখতে পাচ্ছি, যদি অবশালোম বেঁচে থাকত, আর আমরা আজ সকলে আজ মরতাম, তাহলে আপনি সন্তুষ্ট হতেন৷
\s5
\v 7 অতএব আপনি এখন উঠে বাইরে গিয়ে নিজের দাসদের সাথে আনন্দদায়ক কথা বলুন৷ আমি সদাপ্রভুর নামে শপথ করছি, যদি আপনি বাইরে না যান, তবে এই রাতে আপনার সঙ্গে একজনও থাকবে না এবং আপনার যুবক অবস্থা থেকে এখন পর্যন্ত যত অমঙ্গল ঘটেছে, সে সব কিছু থেকেও আপনার এই অমঙ্গল বেশি হবে৷
\v 8 তখন রাজা উঠে নগরের ফটকে বসলেন; আর সমস্ত লোককে বলা হল, “দেখ, রাজা ফটকের কাছে বসে আছেন৷” তাতে সমস্ত লোক রাজার সামনে আসল৷
\s দায়ূদ যিরূশালেমে আবার ফিরে যান৷
\p
\s5
\v 9 ইস্রায়েলের লোকরা প্রত্যেকে নিজের নিজের তাঁবুতে পালিয়ে গিয়েছিল৷ পরে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে সমস্ত লোক ঝগড়া করে বলতে লাগল, “রাজা শত্রুদের হাত থেকে আমাদেরকে রক্ষা করেছিলেন ও পলেষ্টীয়দের হাত থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করেছিলেন; সম্প্রতি তিনি অবশালোমের ভয়ে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন৷
\v 10 আর আমরা যে অবশালোমকে নিজেদের উপরে অভিষিক্ত করেছিলাম, তিনি যুদ্ধে মারা গেছেন; অতএব তোমরা এখন রাজাকে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে একটি কথাও বলছ না কেন?”
\s5
\v 11 পরে দায়ূদ রাজা সাদোক ও অবিয়াথর এই দুই যাজকের কাছে দূত পঠিয়ে বললেন, “তোমরা যিহূদার প্রাচীনদেরকে বল, ‘রাজাকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে তোমরা কেন সকলের শেষে পড়ছ? রাজাকে নিজের বাড়িতে ফিরিয়ে আনবার জন্য সমস্ত ইস্রায়েলের প্রার্থনা তাঁর কাছে উপস্থিত হয়েছে৷
\v 12 তোমরাই আমার ভাই, তোমরাই আমার হাড় ও আমার মাংস; অতএব রাজাকে ফিরিয়ে আনতে কেন সকলের শেষে পড়ছ?
\s5
\v 13 তোমরা অমাসাকে বল, ‘তুমি কি আমার হাড় ও আমার মাংস নও? যদি তুমি সর্বদা আমার সামনে যোয়াবের পদে সৈন্যদলের সেনাপতি না হও, তবে ঈশ্বর আমাকে সেই রকম ও তার থেকে বেশি শাস্তি দিন’৷”
\v 14 এইভাবে তিনি যিহূদার সমস্ত লোকের হৃদয়কে একজনের হৃদয়ের মত নত করলেন, তাতে তারা লোক পাঠিয়ে রাজাকে বলল, “আপনি ও আপনার সব দাস পুনরায় ফিরে আসুন৷”
\v 15 পরে রাজা পুনরায় ফিরে যর্দন পর্যন্ত আসলেন৷ আর যিহূদার লোকেরা রাজার সঙ্গে দেখা করতে ও তাঁকে যর্দন পার করে আনতে গিলগলে গেল৷
\s5
\v 16 তখন দায়ূদ রাজার সঙ্গে দেখা করতে বহুরীমের অধিবাসী গেরার ছেলে বিন্যামীন বংশের শিমিয়ি তাড়াতাড়ি করে যিহূদার লোকেদের সঙ্গে আসল৷
\v 17 আর বিন্যামীন বংশের এক হাজার লোক তার সঙ্গে ছিল এবং শৌলের বংশের দাস সীবঃ ও তার পনেরোটি ছেলে ও কুড়িটি দাস তার সঙ্গে ছিল, তারা রাজার সামনে জলের মধ্য দিয়ে যর্দন পার হল৷
\v 18 তখন ফেরির নৌকা রাজার আত্মীয়দেরকে পার করতে ও তাঁর ইচ্ছামত কাজ করতে অন্য পারে গিয়েছিল৷ রাজার যর্দন পার হবার সময়ে গেরার ছেলে শিমিয়ি রাজার সামনে উপুড় হয়ে পড়ল৷
\s5
\v 19 সে রাজাকে বলল, “আমার প্রভু আমার অপরাধ নেবেন না; যে দিন আমার প্রভু মহারাজ যিরূশালেম থেকে বের হন, সেই দিন আপনার দাস আমি যে খারাপ কাজ করেছিলাম, তা মনে রাখবেন না, মহারাজ কিছু মনে করবেন না৷
\v 20 আপনার দাস আমি জানি, আমি পাপ করেছি, এই জন্য দেখুন, যোষেফের সমস্ত বংশের মধ্যে প্রথমে আমিই আজ আমার প্রভু মহারাজের সঙ্গে দেখা করতে নেমে এসেছি৷”
\s5
\v 21 কিন্তু সরূয়ার ছেলে অবীশয় উত্তর করলেন, “এজন্য কি শিমিয়ির প্রাণদণ্ড হবে না যে, সে সদাপ্রভুর অভিশিক্তকে ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছিল?”
\v 22 দায়ূদ বললেন, “হে সরূয়ার ছেলেরা৷ তোমাদের সঙ্গে আমার বিষয় কি যে, তোমরা আজ আমার বিপক্ষ হচ্ছো? আজ কি ইস্রায়েলের মধ্যে কারও প্রাণদন্ড হতে পারে? কারণ আমি কি জানি না যে, আজ আমি ইস্রায়েলের উপরে রাজা?”
\v 23 পরে রাজা শিমিয়িকে বললেন, “তোমার প্রাণদন্ড হবে না;” তার ফলে রাজা তার কাছে শপথ করলেন৷
\s5
\v 24 পরে শৌলের নাতি মফীবোশৎ রাজার সঙ্গে দেখা করতে নেমে আসলেন; রাজার ভালো ভাবে ফিরে আসার দিন পর্যন্ত তিনি নিজের পায়ের প্রতি যত্ন নেননি, দাড়ি পরিষ্কার করেননি ও পোশাক পরিষ্কার করেননি৷
\v 25 আর যখন তিনি যিরূশালেমের রাজার সঙ্গে দেখা করতে আসলেন, তখন রাজা তাঁকে বললেন, “হে মফীবোশৎ, তুমি কেন আমার সঙ্গে যাও নি?”
\s5
\v 26 তিনি উত্তর দিলেন, “হে আমার প্রভু, হে রাজা, আমার দাস আমাকে ঠকিয়েছিল; কারণ আপনার দাস আমি বলেছিলাম, ‘আমি গাধা সাজিয়ে তার উপরে চড়ে মহারাজের সঙ্গে যাব, কারণ আপনার দাস আমি খোঁড়া৷
\v 27 সে আমার প্রভু মহারাজের কাছে আপনার এই দাসের নিন্দা করেছে; কিন্তু আমার প্রভু মহারাজ ঈশ্বরের দূতের সমান; অতএব আপনার চোখে যা ভাল মনে হয়, তাই করুন৷
\v 28 আমার প্রভু মহারাজের সামনে আমার সমস্ত বাবার বংশ একদম মৃত্যুর যোগ্য ছিল, তবুও যারা আপনার টেবিলে আহার করে, আপনি তাদের সঙ্গে বসতে আপনার এই দাসকে জায়গা দিয়েছিলেন; অতএব আমার আর কি অধিকার আছে যে, মহারাজের কাছে পুনরায় কাঁদবো?”
\s5
\v 29 রাজা তাকে বললেন, “তোমার বিষয়ে বেশি কথার কি প্রয়োজন? আমি বলছি, তুমি ও সীবঃ উভয়ে সেই জমি ভাগ করে নাও৷”
\v 30 তখন মফীবোশৎ রাজাকে বললেন, “সে সমস্তই নিয়ে নিক, কারণ আমার প্রভু মহারাজ ভালো ভাবে নিজের বাড়িতে ফিরে এসেছেন৷”
\s5
\v 31 আর গিলিয়দীয় বর্সিল্লয় রোগলীম থেকে নেমে এসেছিলেন, তিনি রাজাকে যর্দনের পারে রেখে যাবার জন্য তাঁর সঙ্গে যর্দন পার হয়েছিলেন৷
\v 32 বর্সিল্লয় খুব বৃদ্ধ, তাঁর আশী বছর বয়স ছিল; আর মহনয়িমে রাজার থাকার সময়ে তিনি রাজার খাদ্য যোগাচ্ছিলেন, কারণ তিনি একজন খুব বড় মানুষ ছিলেন৷
\v 33 রাজা বর্সিল্লয়কে বললেন, “তুমি আমার সঙ্গে পার হয়ে এসো, আমি তোমাকে যিরূশালেমে আমার সঙ্গে লালনপালন করব৷”
\s5
\v 34 কিন্তু বর্সিল্লয় রাজাকে বললেন, “আমার আয়ুর আর কতদিন আছে যে, আমি মহারাজের সঙ্গে যিরূশালেমে উঠে যাব?
\v 35 আজ আমার বয়স আশী বছর; এখন কি ভাল মন্দের বিশেষ বুঝতে পারি? যা খাই বা যা পান করি, আপনার দাস আমি কি তার স্বাদ বুঝতে পারি? এখন কি আর গায়ক ও গায়িকাদের গানের শব্দ শুনতে পাই? তবে কেন আপনার এই দাস আমার প্রভু মহারাজের বোঝা হবে?
\v 36 আপনার দাস মহারাজের সঙ্গে কেবল যর্দন পার হয়ে যাব, এই মাত্র; মহারাজ কেন এমন পুরস্কারে আমাকে পুরষ্কৃত করবেন?
\s5
\v 37 অনুগ্রহ করে আপনার এই দাসকে ফিরে যেতে দিন; আমি নিজের নগরে নিজের বাবা-মার কবরের কাছে মরব৷ কিন্তু দেখুন, এই আপনার দাস কিমহম; এ আমার প্রভু মহারাজের সঙ্গে পার হয়ে যাক; আপনার যা ভাল বোধ হয়, এর প্রতি করবেন৷”
\s5
\v 38 রাজা উত্তর দিলেন, কিমহম আমার সঙ্গে পার হয়ে যাবে; তোমার যা ভাল মনে হয়, আমি তার প্রতি তাই করব এবং তুমি আমাকে যা করতে বলবে, তোমার জন্য আমি তাই করব৷
\v 39 পরে সমস্ত লোক যর্দন পার হল, রাজাও পার হলেন এবং রাজা বর্সিল্লয়কে চুমু করলেন ও আশীর্বাদ করলেন; পরে তিনি নিজের জায়গায় ফিরে গেলেন৷
\s5
\v 40 আর রাজা পার হয়ে গিলগলে গেলেন এবং কিমহম তাঁর সঙ্গে গেল৷ এবং যিহূদার সমস্ত লোক ও ইস্রায়েলের অর্দ্ধেক লোক গিয়ে রাজাকে পার করে নিয়ে এসেছিল৷
\s শেবের বিদ্রোহ ও মৃত্যু৷
\p
\v 41 আর দেখ, ইস্রায়েলের সব লোক রাজার কাছে এসে রাজাকে বলল, “আমাদের ভাই যিহূদার লোকেরা কেন আপনাকে চুরি করে আনল? মহারাজাকে, তাঁর আত্মীয়দেরকে ও দায়ূদের সঙ্গে তাঁর সমস্ত লোককে, যর্দন পার করে কেন আনল?”
\s5
\v 42 তখন যিহূদার সব লোক ইস্রায়েলের লোকদেরকে উত্তর করল, “রাজা তো আমাদের কাছে আত্মীয়, তবে তোমরা এ বিষয়ে কেন রেগে যাও? আমরা কি রাজার কিছু খেয়েছি? অথবা তিনি কি আমাদেরকে কিছু উপহার দিয়েছেন?”
\v 43 তখন ইস্রায়েলের লোকেরা উত্তর দিয়ে যিহূদার লোকদেরকে বলল, “রাজার ওপর আমাদের দশ ভাগ অধিকার আছে, আরও দায়ূদের ওপর তোমাদের থেকে আমাদের অধিকার বেশি৷ অতএব আমাদেরকে কেন তুচ্ছ মনে করলে? আর আমাদের রাজাকে ফিরিয়ে আনবার প্রস্তাব কি প্রথমে আমরাই করি নি?” তখন ইস্রায়েল লোকেদের কথার থেকে যিহূদার লোকেদের কথা বেশি কঠিন হল৷
\s5
\c 20
\p
\v 1 ঐ সময়ে সেখানে বিন্যামীনীয় বিখ্রির ছেলে শেবঃ নামে একজন নিষ্ঠুর লোক ছিল; সে তূরী বাজিয়ে বলল, “দায়ূদের উপর আমাদের কোন ভাগ নেই, যিশয়ের ছেলের উপরে আমাদের কোন অধিকার নেই; হে ইস্রায়েল তোমরা সবাই নিজেদের তাঁবুতে যাও৷”
\v 2 তাতে সমস্ত ইস্রায়েল দায়ূদের পিছনে গিয়ে বিখ্রির ছেলে শেবের পিছনে পিছনে গেল; কিন্তু যর্দন থেকে যিরূশালেম পর্যন্ত যিহূদার লোকেরা নিজেদের রাজাতে আসক্ত থাকল৷
\s5
\v 3 পরে দায়ূদ যিরূশালেমে নিজের ঘরে আসলেন৷ আর রাজা বাড়ি রক্ষার জন্য তাঁর যে দশটি উপপত্নীকে রেখে গিয়েছিলেন, তাদেরকে নিয়ে কারাগারে আটকে রাখলেন এবং রক্ষা করলেন, কিন্তু তাদের কাছে গেলেন না; অতএব তারা মারা যাওয়ার দিন পর্যন্ত বিধবার মত আটকে থাকলো৷
\s5
\v 4 পরে রাজা অমাসাকে বললেন, “তুমি তিন দিনের মধ্যে যিহূদার লোকদেরকে ডেকে আমার জন্য জড়ো কর, আর তুমিও সেখানে উপস্থিত হও৷”
\v 5 তখন অমাসা যিহূদার লোকদেরকে ডেকে জড়ো করতে গেলেন, কিন্তু রাজা যে সময়ে নির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন, সেই নির্দ্দিষ্ট সময়ের থেকে তিনি অনেক বেশি দেরী করলেন৷
\s5
\v 6 তাতে দায়ূদ অবীশয়কে বললেন, “অবশালোম যা করেছিল, তার থেকে বিখ্রির ছেলে শেবঃ এখন আমাদের বেশি ক্ষতি করবে; তুমি নিজের প্রভুর দাসদেরকে নিয়ে তার পিছন পিছন তাড়া কর, নাহলে সে প্রাচীরে ঘেরা কোন কোন নগর দখল করে আমাদের নজর এড়াবে৷”
\v 7 তাতে যোয়াবের লোকজন, আর করেথীয় ও পলেথীয়রা এবং সমস্ত বীর তাঁর সঙ্গে বেরিয়ে এল; তারা বিখ্রির ছেলে শেবের পিছন পিছন তাড়া করার জন্য যিরূশালেম থেকে চলে গেল৷
\s5
\v 8 তারা গিবিয়োনের বড় পাথরের কাছে উপস্থিত হলে অমাসা তাদের সামনে এলেন৷ তখন যোয়াবের সৈনিক বেশ কোমরবন্ধনীর নিয়ে তৈরী ছিলেন, তার উপরে তলোয়ারের কোমরবন্ধনী ছিল; খোলা তলোয়ারটি তাঁর কোমরে বাঁধা ছিল, পরে যখন তিনি বাইরে যাচ্ছিলেন তখন তলোয়ারটি খুলে পড়তে দিলেন৷
\s5
\v 9 আর যোয়াব অমাসাকে বললেন, “হে আমার ভাই, তোমার খবর ভালো তো?” পরে যোয়াব অমাসাকে চুমু দেওয়ার জন্য ডান হাত দিয়ে তাঁর দাড়ি ধরলেন৷
\v 10 কিন্তু যোয়াবের হাতের তলোয়ারের দিকে অমাসার লক্ষ্য না থাকাতে তিনি সেটা দিয়ে তার পেটে আঘাত করলেন, তাঁর ভূঁড়ি বেরিয়ে গিয়ে মাটিতে পড়ল; যোয়াব দ্বিতীয় বার তাঁকে আঘাত করলেন না, তিনি মারা গেলেন৷ পরে যোয়াব ও তাঁর ভাই অবীশয় বিখ্রির ছেলে শেবের পিছন পিছন তাড়া করলেন৷
\s5
\v 11 ইতিমধ্যে শেবের কাছে যোয়াবের একজন যুবক দাঁড়িয়ে বলতে লাগল, “যে যোয়াবকে ভালবাসে ও দায়ূদের পক্ষে, সে যোয়াবকে অনুসরণ করুক৷”
\v 12 তখনও অমাসা রাজপথের মধ্যে নিজের রক্তে গড়াগড়ি দিচ্ছিলেন; অতএব সমস্ত লোক দাঁড়িয়ে আছে দেখে ঐ ব্যক্তি অমাসাকে রাজপথ থেকে ক্ষেতে সরিয়ে দিয়ে তাঁর উপরে একটি কাপড় ফেলে দিল; কারণ সে দেখল, যে কেউ তাঁর কাছ দিয়ে যায়, সে দাঁড়িয়ে থাকে৷
\v 13 তখন অমাসাকে রাজপথ থেকে সরান হলে সমস্ত লোক বিখ্রির ছেলে শেবের পিছন পিছন তাড়া করার জন্য যোয়াবের অনুগামী হল৷
\s5
\v 14 আর তিনি ইস্রায়েলের সব বংশের মধ্যে দিয়ে আবেল ও বৈৎমাখায় এবং বেরীয়দের সমস্ত অঞ্চল পর্যন্ত গেলেন, তাতে লোকেরা জড়ো হয়ে শেবের পিছন পিছন চলল৷
\v 15 পরে তারা আবেল ও বৈৎমাখাতে এসে তাকে ঘিরে ধরে নগরের কাছে ঢিবি প্রস্তুত করল এবং সেটা প্রাচীরের সমান হল; আর যোয়াবের সঙ্গী সমস্ত লোক প্রাচীর ধ্বংস করার জন্য সেটা ভাঙ্গতে লাগল৷
\v 16 পরে নগরের মধ্যে থেকে একটী বুদ্ধিমতি মহিলা চিত্কার করে বলল, “শোন, অনুগ্রহ করে যোয়াবকে এখান পর্যন্ত আসতে বল, আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলব৷”
\s5
\v 17 পরে যোয়াব তার কাছে গেলে সে মহিলাটি জিজ্ঞাসা করল, “আপনি কি যোয়াব?” তিনি উত্তর করলেন, “আমি যোয়াব৷” সে মহিলাটি বলল, “আপনার দাসীর কথা শুনুন;” তিনি উত্তর দিলেন, “শুনছি৷”
\v 18 পরে মহিলাটি এই কথা বলল, “আগেকার দিনে লোকে বলত, তারা আবেলে পরিকল্পনা জানতে চাইবেই চাইবে, এইভাবে তারা কাজ শেষ করত৷
\v 19 আমি ইস্রায়েলের শান্তিপ্রিয় ও বিশ্বাসী লোকদের একজন, কিন্তু আপনি ইস্রায়েলে মায়ের মত একটি নগর বিনাশ করতে চেষ্টা করছেন; আপনি কেন সদাপ্রভুর অধিকার গ্রাস করবেন?”
\s5
\v 20 যোয়াব উত্তর করলেন, “গ্রাস করা কিংবা বিনাশ করা আমার থেকে দূরে থাকুক, দূরে থাকুক৷ ব্যাপার এইরকম নয়৷
\v 21 কিন্তু বিখ্রির ছেলে শেবঃ নামে পর্বতময় ইফ্রয়িম প্রদেশের একজন লোক রাজার বিরুদ্ধে, দায়ূদের বিরুদ্ধে হাত তুলেছে; তোমরা শুধু তাকে সমর্পণ কর, তাতে আমি এই নগর থেকে চলে যাব৷” তখন সেই মহিলা যোয়াবকে বলল, “দেখুন, প্রাচীরের উপর দিয়ে তার মাথা আপনার কাছে ছোঁড়া হবে৷”
\v 22 পরে সেই মহিলা বুদ্ধি করে সব লোকের কাছে গেল৷ তাতে লোকেরা বিখ্রির ছেলে শেবের মাথা কেটে যোয়াবের কাছে বাইরে ফেলে দিল৷ তখন তিনি তূরী বাজালে লোকেরা নগর থেকে ছিন্নভিন্ন হয়ে নিজের তাঁবুতে গেল এবং যোয়াব যিরূশালেমে রাজার কাছে ফিরে গেলেন৷
\s5
\v 23 ঐ সময়ে যোয়াব ইস্রায়েলের সমস্ত সেনার শাসনকর্তা ছিলেন এবং যিহোয়াদার ছেলে বনায় করেথীয় ও পলেথীয়দের শাসনকর্তা ছিলেন;
\v 24 আর অদোরাম রাজার কাজে নিযুক্ত দাসদের শাসনকর্তা এবং অহীলূদের ছেলে যিহোশাফট ইতহাসকর্ত্তা,
\v 25 আর শবা লেখক ছিলেন এবং সাদোক ও অবীয়াথর যাজক ছিলেন৷
\v 26 আর যায়ীরীয় ঈরাও দায়ূদের যাজক (রাজমন্ত্রী) ছিলেন৷
\s5
\c 21
\s দুর্ভিক্ষের বিবরণ৷
\p
\v 1 দায়ূদের সময়ে একটানা তিন বছর দুর্ভিক্ষ হয়; তাতে দায়ূদ সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করলে সদাপ্রভু উত্তর করলেন, “শৌল ও তার বংশের রক্তপাতের দোষ রয়েছে, কারণ সে গিবিয়োনীয়দেরকে হত্যা করেছিল৷”
\s5
\v 2 তাতে রাজা গিবিয়োনীয়দেরকে ডেকে তাদের সঙ্গে আলাপ করলেন৷ গিবিয়োনীয়রা ইস্রায়েল সন্তান নয়, এরা ইমোরীয়দের অবশিষ্ট অংশের লোক এবং ইস্রায়েল সন্তানরা তাদের কাছে দিব্যি করেছিল, কিন্তু শৌল ইস্রায়েল ও যিহুদা সন্তানদের পক্ষে উদ্যোগী হয়ে তাদেরকে হত্যা করতে চেষ্টা করেছিলেন৷
\v 3 দায়ূদ গিবিয়োনীয়দেরকে বললেন, “আমি তোমাদের জন্য কি করব? তোমরা যেন সদাপ্রভুর অধিকারকে আশীর্বাদ কর, এইজন্য আমি কি দিয়ে প্রায়শ্চিত্ত করব?”
\s5
\v 4 গিবিয়োনীয়েরা তাঁকে বলল, “শৌলের সঙ্গে কিংবা তার বংশের সঙ্গে আমাদের রুপো বা সোনা নিয়ে কোন সমস্যা নেই, আবার ইস্রায়েলের মধ্যে কাউকেও হত্যা করা আমাদের কাজ নয়৷” পরে তিনি বললেন, “তবে তোমরা কি বলছ? আমি তোমাদের জন্য কি করব?”
\s5
\v 5 তারা রাজাকে বলল, “যে ব্যক্তি আমাদের হত্যা করেছে ও আমরা যেন ইস্রায়েলের সীমার মধ্যে কোথাও টিকতে না পারি, বিনষ্ট হই,
\v 6 এই জন্য কুপরিকল্পনা করেছিল, তার সন্তানদের মধ্যে সাতজন পুরুষকে আমাদের কাছে সমর্পণ করুক; আমরা সদাপ্রভুর মনোনীত শৌলের গিবিয়াতে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তাদেরকে ফাঁসি দেব৷”
\s5
\v 7 তখন রাজা বললেন, “সমর্পণ করব৷ দায়ূদের ও শৌলের ছেলে যোনাথনের মধ্যে সদাপ্রভুর নামে এই শপথ হয়েছিল, তার জন্য রাজা শৌলের নাতি, যোনাথনের ছেলে মফীবোশতের প্রতি দয়া করলেন৷”
\v 8 কিন্তু অয়ার মেয়ে রিস্পা শৌলের জন্য অম্মোনি ও মফীবোশৎ নামে দুটি ছেলের জন্ম দিয়েছিল এবং মহোলাতীয় বর্সিল্লয়ের ছেলে অদ্রীয়েলের জন্য শৌলের মেয়ে মীখল যে পাঁচটি ছেলের জন্ম দিয়েছিল, তাদেরকে নিয়ে রাজা গিবিয়োনীয়দের হাতে তুলে দিলেন;
\v 9 যারা ঐ পর্বতে সদাপ্রভুর সামনে তাদেরকে ফাঁসি দিল৷ সে সাতজন একেবারে মারা পড়ল; তারা প্রথম ফসল কাটার সময়ে অর্থাৎ যব কাটার শুরুতে নিহত হল৷
\s5
\v 10 পরে অয়ার মেয়ে রিস্পা চট নিয়ে যব কাটার শুরু থেকে যে পর্যন্ত আকাশ থেকে তাদের উপরে জল না পড়ল, সে পর্যন্ত পাষাণের উপরে নিজের বিছানার মত সেই চটটি পেতে রাখল এবং দিনে আকাশের পাখিকে ও রাতে বনের পশুদেরকে তাদের উপরে বিশ্রাম করতে দিত না৷
\v 11 পরে অয়ার মেয়ে রিস্পা, শৌলের উপপত্নী, সেই যে কাজ করল, সেটা দায়ূদ রাজাকে জানানো হল৷
\s5
\v 12 তখন দায়ূদ গিয়ে যাবেশ গিলিয়দের লোকেদের কাছ থেকে শৌলের হাড় ও তাঁর ছেলে যোনাথনের হাড় গ্রহণ করলেন; কারণ গিলবোয়ে পলেষ্টীয়দের দ্বারা শৌলের নিহত হবার সময়ে তাঁদের দুজনের মৃতদেহ পলেষ্টীয়দের দ্বারা বৈৎশানের চকে টাঙ্গানোর পর তারা সেখান থেকে তা চুরি করে এনেছিল৷
\v 13 তিনি সেখান থেকে শৌলের হাড় ও তাঁর ছেলে যোনাথনের হাড় আনলেন এবং লোকেরা সেই ফাঁশি দেওয়া লোকদের হাড় সংগ্রহ করল৷
\s5
\v 14 পরে তারা শৌলের ও তাঁর ছেলে যোনাথনের হাড় বিন্যামীন দেশের সেলাতে, তাঁর বাবা কীশের কবরের মধ্যে রাখল৷ তারা রাজার আদেশ অনুসারে সমস্ত কাজ করল৷ তারপরে দেশের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করা হলে তিনি সন্তুষ্ট হলেন৷
\s পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ৷
\p
\s5
\v 15 পলেষ্টীয়দের সঙ্গে ইস্রায়েলের আবার যুদ্ধ বাঁধল; তাতে দায়ূদ নিজের দাসদের সঙ্গে গিয়ে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন; আর দায়ূদ ক্লান্ত হলেন৷
\v 16 তখন তিনি তিনশো শেকল পরিমাপের পিতলের বড়শাধারী যিশবী-বনোব নামে রফার এক সন্তান নতুন সাজে সেজে দায়ূদকে আঘাত করবে ঠিক করলেন৷
\v 17 কিন্তু সরূয়ার ছেলে অবীশয় তাঁর সাহায্য করে সেই পলেষ্টীয়কে আঘাত ও হত্যা করলেন৷ তখন দায়ূদের লোকেরা তাঁর কাছে দিব্যি করে বলল, “আপনি আর আমাদের সঙ্গে যুদ্ধে যাবেন না, ইস্রায়েলের প্রদীপ নেভাবেন না৷”
\s5
\v 18 তারপরে আর একবার গোবে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ হল; তখন হূশাতীয় সিব্বখয় রফার সন্তান সফকে হত্যা করল৷
\v 19 আবার পলেষ্টীয়দের সঙ্গে গোবে যুদ্ধ হল; আর যারেওরগীমের ছেলে বৈৎলেহমীয় ইলহানান তাঁতের নরাজের মত বড়শাধারী গাতীয় গলিয়াতকে হত্যা করল, ওর বড়শা তাঁতের মত ছিল৷
\s5
\v 20 আর একবার গাতে যুদ্ধ হল; আর সেখানে খুব লম্বা একজন ছিল, প্রতি হাত পায়ে তার ছটি করে আঙ্গুল, মোট চব্বিশ আঙ্গুল ছিল, সেও রফার সন্তান৷
\v 21 সে ইস্রায়েলকে টিটকারী দিলে দায়ূদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাথন তাকে হত্যা করল৷
\v 22 রফার এই চার সন্তান গাতে জন্মেছিল, এরা দায়ূদ ও তাঁর দাসেদের হাতে বিনষ্ট হল৷
\s5
\c 22
\s দায়ূদের প্রশংসা-গীত৷
\p
\v 1 যেদিন সদাপ্রভু সমস্ত শত্রুদের হাত থেকে এবং শৌলের হাত থেকে দায়ূদকে বাঁচালেন, সেইদিন তিনি সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এই গান গেয়েছিলেন৷
\v 2 সদাপ্রভুই আমার শৈল, আমার দুর্গ ও আমার রক্ষাকর্তা;
\s5
\v 3 ঈশ্বরই আমার শৈল, তাঁরই মধ্যে আমি আশ্রয় নিই, আমার ঢাল, আমার রক্ষাকারী শিং, আমার উঁচু দুর্গ, আমার আশ্রয়-স্থান, আমার উদ্ধারকর্তা যিনি বিপদ থেকে রক্ষা করেন।
\v 4 আমি সদাপ্রভুকে ডাকি যিনি প্রশংসার যোগ্য, তাতে আমার শত্রুদের হাত থেকে আমি রক্ষা পাব।
\s5
\v 5 কারণ মৃত্যুর ঢেউ আমাকে ঘিরে ধরেছে, অধার্মিকদের বন্যাতে আমি আশঙ্কিত ছিলাম।
\v 6 আমি পাতালের দড়িতে বাঁধা পড়েছিলাম, মৃত্যুর ফাঁদে জড়িয়ে ছিলাম।
\s5
\v 7 আমি বিপদে সদাপ্রভুকে ডাকলাম; তাঁর মন্দির থেকে তিনি আমার রব শুনলেন, আমার কান্না তাঁর কানে পৌঁছাল।
\s5
\v 8 তখন পৃথিবী কেঁপে উঠল আর টলতে লাগল, আকাশের সমস্ত ভিত্তিগুলি কেঁপে উঠল ও টলতে লাগল; কারণ তিনি প্রচণ্ড রেগে গেলেন।
\v 9 তাঁর নাক থেকে ধোঁয়া বার হোল, তাঁর মুখের আগুন গ্রাস করল, তার মাধ্যমে কয়লা জ্বলে উঠল।
\s5
\v 10 তিনি আকাশ নুইয়ে নেমে আসলেন; অন্ধকার তাঁর পায়ের নীচে ছিল।
\v 11 তিনি করূবে চড়ে উড়ে আসলেন, বাতাসের ডানায় তাঁকে দেখা গেল।
\v 12 তিনি অন্ধকারের তাঁবু দিয়ে নিজেকে ঘিরে ফেললেন; বৃষ্টি ও ঘন মেঘ স্থাপন করলেন।
\s5
\v 13 তাঁর সম্মুখবর্তী তেজ দিয়ে কয়লার আগুন জ্বলে উঠলো।
\v 14 সদাপ্রভু আকাশ থেকে গর্জন করলেন, মহান ঈশ্বর তাঁর স্বর শোনালেন।
\v 15 তিনি তীর ছুঁড়লেন, তাদেরকে ছিন্নভিন্ন করলেন, বিদ্যুৎ দিয়ে তাদেরকে ব্যাকুল করলেন।
\s5
\v 16 তখন সদাপ্রভুর ধমকে, তাঁর নিঃশ্বাসের ঝাপ্‌টায় সমুদ্রের গতিপথ প্রকাশ পেল, পৃথিবীর সমস্ত ভিত্তিমূলগুলি বেরিয়ে পড়ল।
\s5
\v 17 তিনি উপর থেকে হাত বাড়ালেন, আমাকে ধরলেন, গভীর জলের মধ্য থেকে আমাকে টেনে তুললেন।
\v 18 আমাকে উদ্ধার করলেন, আমার শক্তিমান শত্রু থেকে, আমার বিপক্ষদের হাত থেকে, কারণ তারা আমার থেকেও বেশী শক্তিশালী।
\s5
\v 19 আমার বিপদের দিনে তারা আমার কাছে এল, কিন্তু সদাপ্রভুই আমার অবলম্বন হলেন।
\v 20 তিনি আমাকে একটা খোলা জায়গায় বের করে আনলেন; আমাকে উদ্ধার করলেন, কারণ তিনি আমার উপরে সন্তুষ্ট ছিলেন।
\v 21 সদাপ্রভু আমার ধার্মিকতা অনুসারেই আমাকে পুরস্কার দিলেন, আমার হাতের শুচিতা অনুযায়ী ফল দিলেন।
\s5
\v 22 কারণ আমি সদাপ্রভুর পথেই চলাফেরা করেছি; মন্দভাবে আমার ঈশ্বরকে ছাড়ি নি।
\v 23 কারণ তাঁর সমস্ত শাসন আমার সামনে ছিল; আমি তাঁর নিয়ম থেকে সরে যাই নি।
\s5
\v 24 আর আমি তাঁর সামনে নির্দোষ ছিলাম, আমার অপরাধ থেকে নিজেকে রক্ষা করতাম।
\v 25 তাই সদাপ্রভু আমাকে আমার ধার্মিকতা অনুসারে, তাঁর চোখে আমার শুচিতা অনুসারে পুরস্কার দিলেন।
\s5
\v 26 তুমি দয়ালুদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবে, নির্দোষদের সঙ্গে কর নির্দোষ ব্যবহার করবে।
\v 27 তুমি পবিত্রদের সঙ্গে পবিত্র ব্যবহার করবে, আর কুটিলদের সঙ্গে চতুরতার সঙ্গে ব্যবহার করবে।
\s5
\v 28 তুমি দুঃখীদের রক্ষা করবে, কিন্তু অহংকারীদের উপরে তোমার দৃষ্টি আছে।
\v 29 হে সদাপ্রভু, তুমিই আমার প্রদীপ; সদাপ্রভুই আমার অন্ধকারকে আলোকিত করেন।
\s5
\v 30 কারণ তোমার সাহায্যেই আমি সৈন্যদলের বিরুদ্ধে দৌড়িয়ে যাই, আমার ঈশ্বরের সাহায্যে দেয়াল পার করি।
\v 31 তিনিই ঈশ্বর, তাঁর পথে কোনো খুঁত নেই; সদাপ্রভুর বাক্য খাঁটি। তিনি তাঁর মধ্যে আশ্রয় গ্রহণকারী সবার ঢাল।
\s5
\v 32 কারণ একমাত্র সদাপ্রভু ছাড়া ঈশ্বর আর কে আছে? আমাদের ঈশ্বর ছাড়া আর শৈল কে আছে?
\v 33 ঈশ্বর আমার দৃঢ় দুর্গ; তিনি নির্দোষকে তাঁর পথে চালান।
\s5
\v 34 তিনি তার পা হরিণীর পায়ের মত করেন; আমার উঁচু জায়গায় তিনিই আমাকে স্থাপন করেছেন।
\v 35 তিনি আমার হাতকে যুদ্ধ করতে শিক্ষা দেন, তাই আমার হাত ব্রোঞ্জের ধনুক বাঁকাতে পারে।
\s5
\v 36 তুমি আমাকে তোমার রক্ষাকারী ঢাল দিয়েছ; তোমার নম্রতা আমাকে মহান করেছে।
\v 37 তুমি আমার চলার পথ চওড়া করেছ, তাই আমার পায়ে হোঁচট লাগে নি।
\s5
\v 38 আমি আমার শত্রুদের তাড়া করে তাদের ধ্বংস করেছি; ধ্বংস না করা পর্যন্ত ফিরে আসি নি।
\v 39 আমি তাদেরকে আঘাত করে চুরমার করেছি, তাই তারা উঠতে পারে না; তারা আমার পায়ের তলায় পড়েছে।
\s5
\v 40 কারণ তুমি যুদ্ধ করার জন্য শক্তি দিয়ে আমার কোমরে বেল্ট পরিয়েছ, যারা আমার বিরুদ্ধে উঠেছিল; তাদের তুমি আমার অধীনে নত করেছ।
\v 41 তুমি আমার শত্রুদের আমার কাছ থেকে ফিরিয়ে দিয়েছ; যারা আমাকে ঘৃণা করে তাদের আমি ধ্বংস করেছি।
\s5
\v 42 তারা তাকিয়ে থাকল, কিন্তু বাঁচাবার কেউ নেই; তারা সদাপ্রভুর দিকে তাকালো, কিন্তু তিনিও তাদের উত্তর দিলেন না।
\v 43 তখন আমি পৃথিবীর ধুলোর মত তাদের চূরমার করলাম; রাস্তার কাদা-মাটির মত পায়ে মাড়ালাম এবং ছড়িয়ে ফেললাম।
\s5
\v 44 তুমি আমাকে প্রজাদের বিদ্রোহ থেকে উদ্ধার করেছ, জাতিগুলির উপর আমাকে প্রধান হওয়ার জন্য রেখেছ; আমার অপরিচিত জাতি আমার দাস হবে।
\v 45 অন্য জাতির লোকেরা আমার কর্ত্তৃত্ব স্বীকার করবে; শোনার সঙ্গে সঙ্গেই তারা আমার বাধ্য হবে।
\v 46 অন্য জাতির লোকেরা নিরাশ হবে; তারা কাঁপতে কাঁপতে তাদের গোপন জায়গা থেকে বের হয়ে আসবে।
\s5
\v 47 সদাপ্রভু জীবন্ত, আমার শৈলর প্রশংসা হোক; আমার ঈশ্বর, যিনি আমার রক্ষাকারী পাহাড়, তাঁর সম্মান বৃদ্ধি হোক।
\v 48 সেই ঈশ্বর আমার পক্ষে প্রতিশোধ দেন, অন্য জাতিদের আমার সামনে নত করেন।
\v 49 আমার শত্রুদের হাত থেকে আমাকে রক্ষা করেন; যারা আমার বিরুদ্ধে ওঠে, তুমি তাদের উপরেও আমাকে উন্নত করছ; তুমি অত্যাচারী লোকদের হাত থেকে আমাকে উদ্ধার করে থাক।
\s5
\v 50 এইজন্য, হে সদাপ্রভু, আমি অন্য জাতিদের মধ্যে তোমার ধন্যবাদ করব, তোমার নামের উদ্দেশ্যে প্রশংসা গাইব।
\v 51 তিনি তাঁর রাজাকে মহাপরিত্রান দান করেন; তাঁর অভিষেক করা লোকের প্রতি দয়া করেন, চিরকাল দায়ূদ ও তাঁর বংশের প্রতি দয়া করেন।
\s5
\c 23
\s দায়ূদের শেষ কথা৷
\p
\v 1 দায়ূদের শেষ বাক্য এই৷ যিশয়ের ছেলে দায়ূদ বলছে, “সেই পুরুষ যাকে সম্মানিত করা হয়েছে, তিনি বলছেন, যাকে যাকোবের ঈশ্বর অভিষিক্ত করেছেন, যে ইস্রায়েলের মধুর গায়ক, সে বলছে,
\v 2 আমার মাধ্যমে সদাপ্রভুর আত্মা বলেছেন, ‘তাঁর বাণী আমার জিভে রয়েছে৷’
\s5
\v 3 ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন, ইস্রায়েলের শৈল আমাকে বলেছেন, ‘যিনি মানুষদের উপরে ধার্মিকতায় কর্ত্তৃত্ব করেন, যিনি ঈশ্বরের ভয়ে কর্ত্তৃত্ব করেন,
\v 4 তিনি সকালের, সূর্য্যোদয়ের সময়, মেঘ বিহীন সকালের আলোর মত হবেন; যখন বৃষ্টির পরে প্রাণ পাওয়া পৃথিবী থেকে নতুন ঘাস গজিয়ে ওঠে৷
\s5
\v 5 ঈশ্বরের কাছে আমার বংশ কি সেই রকম নয়? হ্যাঁ, তিনি আমার সঙ্গে এক অনন্তকালীন নিয়ম করেছেন; তা সব বিষয়ে সুসম্পন্ন ও সুরক্ষিত; এটা তো আমার সম্পূর্ণ উদ্ধার ও সমস্ত বাসনা; তিনি কি তা বাড়িয়ে তুলবেন না?
\s5
\v 6 কিন্তু নিষ্ঠুরেরা সকলে খোঁচা দেওয়া কাঁটা; কাঁটা তো হাতে ধরা যায় না৷
\v 7 যে পুরুষ তাদেরকে স্পর্শ করবেন, তিনি প্রেক ও বড়শার শাস্তি দেবেন৷ পরে তারা নিজের জায়গায় আগুনে ভস্মীভূত হবে’৷”
\s দায়ূদের প্রধান প্রধান বীরের তালিকা৷
\p
\s5
\v 8 দায়ূদের বীরেদের নামের তালিকা৷ তখ-মোনীয় যোশেব-বশেবৎ সৈন্যদলের প্রধান ছিলেন; ইসনীয় আদীনো, তিনি এককালে আটশো লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন৷
\s5
\v 9 তাঁর পরে একজন অহোহীয়ের সন্তান দোদয়ের ছেলে ইলিয়াসর; তিনি দায়ূদের সঙ্গী বীরএয়ের একজন; তাঁরা পলেষ্টীয়দেরকে টিটকারী দিলে পলেষ্টীয়েরা যুদ্ধের জন্য সেখানে জড়ো হল এবং ইস্রায়েলের লোকেরা কাছে আসছিল,
\v 10 ইতিমধ্যে তিনি দাঁড়িয়ে যে পর্যন্ত তাঁর হাত ক্লান্ত না হল, ততক্ষণ পলেষ্টীয়দেরকে আঘাত করলেন; শেষে তলোয়ারে তাঁর হাত জোড়া লেগে গেল; আর সদাপ্রভু সেইদিন বিজয় মহাজয় দিলেন এবং লোকেরা শুধুমাত্র লুঠ করার জন্য তাঁর পিছন পিছন গেল৷
\s5
\v 11 তারপরে হরারীয় আগির ছেলে শম্ম; পলেষ্টীয়রা এক মসূরক্ষেতের কাছে জড়ো হয়ে দল বাঁধলে যখন লোকেরা পলেষ্টীয়দের থেকে পালিয়ে গেল,
\v 12 তখন শম্ম সেই ক্ষেতের মধ্যে দাঁড়িয়ে তা উদ্ধার করলেন এবং পলেষ্টীয়দেরকে হত্যা করলেন; আর সদাপ্রভু মহাজয় তাদেরকে দিলেন৷
\s5
\v 13 আর ত্রিশজন প্রধানের মধ্যে তিনজন ফসল কাটার সময়ে অদুল্লম গুহাতে দায়ূদের কাছে এলেন; তখন পলেষ্টীয়দের সৈন্য রফায়ীম উপত্যকায় শিবির স্থাপন করেছিল৷
\v 14 আর দায়ূদ সুরক্ষিত জায়গায় ছিলেন এবং পলেষ্টীয়দের পাহারায় নিযুক্ত সৈন্যদল বৈৎলেহমে ছিল৷
\s5
\v 15 পরে দায়ূদ পিপাসিত হয়ে বললেন, “হায়৷ কে আমাকে বৈৎলেহমের ফটকের কাছের কূপের জল এনে পান করতে দেবে?”
\v 16 তাতে ঐ বীরত্রয় পলেষ্টীয় সৈন্যের মধ্য দিয়ে গিয়ে বৈৎলেহমে ফটকের কাছের কূপের জল তুলে দায়ূদের কাছে আসলেন, কিন্তু তিনি তা পান করতে রাজি হলেন না, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে ঢেলে ফেললেন;
\v 17 তিনি বললেন, “হে সদাপ্রভু, এমন কাজ যেন আমি না করি; এটা কি সেই মানুষদের রক্ত নয়, যারা প্রাণপণে গিয়েছিল;” অতএব তিনি তা পান করতে রাজি হলেন না৷ ঐ বীরত্রয় এই সকল কাজ করেছিলেন৷
\s5
\v 18 আর সরূয়ার ছেলে যোয়াবের ভাই অবীশয় সেই তিন জনের মধ্যে প্রধান ছিলেন৷ তিনি তিনশো লোকের উপরে নিজের বড়শা চালিয়ে তাদেরকে হত্যা করলেন ও নরত্রয়ের মধ্যে বিখ্যাত হলেন৷
\v 19 তিনি কি সেই তিনজনের মধ্যে বেশি মর্য্যাদা সম্পন্ন ছিলেন না? এই জন্য তাঁদের সেনাপতি হলেন, তবে প্রথম নরত্রয়ের মত ছিলেন না৷
\s5
\v 20 আর কবসেলীয় এক বীরের সন্তান যিহোয়াদার ছেলে যে বনায় যিনি অনেক মহান কাজ করেছিলেন, তিনি মোয়াবীয় অরীয়েলের দুই ছেলেকে হত্যা করলেন; সেটা ছাড়াও তিনি বরফ পরার সময়ে গর্তের মধ্যে একটা সিংহকে মারলেন৷
\v 21 আর তিনি একজন সুপুরুষ মিস্রীয়কে হত্যা করলেন৷ সেই মিস্রীয়ের হাতে এক বড়শা এবং তাঁর হাতে এক লাঠি ছিল; পরে তিনি গিয়ে সেই মিস্রীয়দের হাত থেকে বড়শাটী কেড়ে নিয়ে তার বড়শা দ্বারা তাকে হত্যা করলেন৷
\s5
\v 22 যিহোয়াদার ছেলে বনায় এই সব কাজ করলেন, তাতে তিনি বীরত্রয়ের মধ্যে খ্যাতনামা হলেন৷
\v 23 তিনি ঐ ত্রিশ জনের থেকেও মর্য্যাদা সম্পন্ন, কিন্তু প্রথম নরত্রয়ের সমান ছিলেন না; দায়ূদ তাঁকে নিজের সেনাবাহিনীর শাসনকর্তা করলেন৷
\s5
\v 24 যোয়াবের ভাই অসাহেল ঐ ত্রিশের মধ্যে একজন ছিলেন; বৈৎলেহমের দোদয়ের ছেলে ইলহানান,
\v 25 হরোদীয় শম্ম, হরোদীয় ইলীকা,
\v 26 পল্টীয় হেলস, তকোয়ীয় ইক্কেশের ছেলে ঈরা,
\v 27 অনাথোতীয় অবীয়েষর, হুশাতীয় মবুন্নয়,
\v 28 অহোহীয় সলমোন, নটোফাতীয় মহরয়,
\s5
\v 29 নটোফাতীয় বানার ছেলে হেলব, বিন্যামীনীয় সন্তানদের গিবিয়ার অধিবাসী রীবয়ের ছেলে ইত্তয়,
\v 30 পিরিয়াথোনীয় বনায়, গাশ উপত্যকার অধিবাসী হিদ্দয়,
\v 31 অর্বতীয় অবিয়লবোন, বরহূমীয় অসমাবৎ,
\v 32 শালবোনীয় ইলিয়হবা, যাশেনের ছেলে যোনাথন,
\s5
\v 33 হরারীয় শম্ম, অরারীয় সাররের ছেলে অহীয়াম,
\v 34 মাখাথীয়ের নাতি অহসবয়ের ছেলে ইলীফেলট, গীলোনীয় অহীথোফলের ছেলে ইলীয়াম,
\v 35 কর্মিলীয় হিষ্রয়, অর্ব্বীয় পারয়,
\v 36 সোবার অধিবাসী নাথনের ছেলে যিগাল, গাদীয় বানী,
\s5
\v 37 অম্মোনীয় সেলক, সরূয়ার ছেলে যোয়াবের অস্ত্রবাহক বেরোতীয় নহরয়,
\v 38 যিত্রীয় ঈরা, যিত্রীয় গারেব,
\v 39 হিত্তীয় ঊরিয়; মোট সাঁইত্রিশ জন৷
\s5
\c 24
\s দায়ূদের প্রজা গণনা ও তার ফল৷
\p
\v 1 আর ইস্রায়েলের প্রতি সদাপ্রভু পুনরায় প্রচণ্ড রেগে গেলেন, তিনি তাদের বিরুদ্ধে দায়ূদকে উস্কানি দিলেন, বললেন, “যাও, ইস্রায়েল ও যিহূদাকে গণনা কর৷”
\v 2 তখন রাজা নিজের সৈন্যদলের সেনাপতি যোয়াব, যিনি তাঁর সঙ্গে ছিলেন, তাঁকে আদেশ দিলেন, “তুমি দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত ইস্রায়েলের সব বংশের মধ্যে ঘুরে দেখ, তোমরা লোকদেরকে গণনা কর, আমি প্রজাদের সংখ্যা জানব৷”
\s5
\v 3 যোয়াব রাজাকে বললেন, “এখন যত লোক আছে, আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু তার একশো গুণ বৃদ্ধি করুন এবং আমার প্রভু মহারাজ তা নিজের চোখে দেখুন; কিন্তু এই কাজে আমার প্রভু মহারাজের ইচ্ছা কেন হল?”
\v 4 তবু যোয়াবের উপরে ও সেনাপতিদের উপরে রাজার কথাই ধার্য হল৷ পরে যোয়াব ও সেনাপতিরা ইস্রায়েলের লোকদেরকে গণনা করবার জন্য রাজার সামনে থেকে চলে গেলেন৷
\s5
\v 5 তাঁরা যর্দন পার হয়ে, গাদ দেশের উপত্যকার মধ্যে অবস্থিত নগরের দক্ষিণ পাশে অরোয়েরে এবং যাসেরে শিবির স্থাপন করলেন৷
\v 6 পরে তারা গিলিয়দে ও তহতীম-হদশি দেশে আসলেন; তার পর দান-যানে গিয়ে ঘুরে সীদোনে উপস্থিত হলেন৷
\v 7 পরে সোরদুর্গে এবং হিব্বীয়দের ও কনানীয়দের সমস্ত নগরে গেলেন, আর শেষে যিহূদার দক্ষিণ অঞ্চলে বের-শেবাতে উপস্থিত হলেন৷
\s5
\v 8 এই ভাবে সমস্ত দেশ ঘোরার পর তাঁরা নয় মাস কুড়ি দিনের শেষে যিরূশালেমে ফিরে আসলেন৷
\v 9 পরে যোয়াব গণনা লোকেদের সংখ্যা রাজার কাছে দিলেন; ইস্রায়েলে তলোয়ারধারী আট লক্ষ বলবান লোক ছিল; আর যিহূদার পাঁচ লক্ষ লোক ছিল৷
\s5
\v 10 দায়ূদ লোকদেরকে গণনা করার পর তাঁর হৃদয় ধুকধুক করতে লাগল৷ দায়ূদ সদাপ্রভুকে বললেন, “এই কাজ করে আমি মহাপাপ করেছি; এখন, হে সদাপ্রভু, অনুরোধ করি, নিজ দাসের অপরাধ ক্ষমা কর, কারণ আমি বড়ই অজ্ঞানের কাজ করেছি৷”
\s5
\v 11 পরে যখন দায়ূদ খুব ভোরে উঠলেন, তখন দায়ূদের দর্শক গাদ ভাববাদীর কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য উপস্থিত হল,
\v 12 “তুমি গিয়ে দায়ূদকে বল, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি তোমার সামনে তিনটি শাস্তি রাখি, তার মধ্যে তুমি একটা মনোনীত কর, আমি তাই তোমার প্রতি করব’৷”
\s5
\v 13 পরে গাদ দায়ূদের কাছে এসে তাঁকে জানালেন, বললেন, “আপনার দেশে সাত বছর ধরে কি দুর্ভিক্ষ হবে? না আপনার শত্রুরা যতদিন আপনার পিছন পিছন তাড়া করবে, ততদিন আপনি তিনদিন পর্যন্ত তাদের আগে আগে পালিয়ে বেড়াবেন? না তিনমাস পর্যন্ত আপনার দেশে মহামারী হবে? যিনি আমাকে পাঠালেন, তাঁকে কি উত্তর দেবো, তা এখন বিবেচনা করে দেখুন৷”
\v 14 দায়ূদ গাদকে বললেন, “আমি বড়ই বিপদে পড়লাম; আসুন, আমরা সদাপ্রভুর হাতে পড়ি, কারণ তাঁর করুণা প্রচুর; কিন্তু আমি মানুষের হাতে পড়তে চাইনা৷”
\s5
\v 15 পরে সকালে থেকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপরে মহামারী পাঠালেন; আর দান থেকে বের-শেবা পর্যন্ত লোকেদের মধ্যে সত্তর হাজার লোক মারা গেল৷
\v 16 আর যখন দূত যিরূশালেম বিনষ্ট করতে তারপ্রতি হাত তুললেন, তখন সদাপ্রভু এই বিপদের জন্য অনুশোচনা করে সেই লোকবিনাশকারী দূতকে বললেন, “যথেষ্ট হয়েছে, এখন তোমার হাত গুটিয়ে নাও৷” তখন সদাপ্রভুর দূত যিবূষীয় অরৌণার খামারের কাছে ছিলেন৷
\s5
\v 17 পরে দায়ূদ সেই লোকঘাতী দূতকে দেখে সদাপ্রভুকে বললেন, “দেখ, আমিই পাপ করেছি, আমিই অপরাধ করেছি, কিন্তু এই মেষেরা কি করল? অনুরোধ করি, আমারই বিরুদ্ধে ও আমার বাবার বংশের বিরুদ্ধে হাত তোলো৷”
\s5
\v 18 সেই দিন গাদ দায়ূদের কাছে এসে তাঁকে বললেন, “আপনি উঠে গিয়ে যিবুষীয় অরৌণার খামারে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক যজ্ঞবেদী স্থাপন করুন৷”
\v 19 অতএব দায়ূদ সদাপ্রভুর আদেশ মত গাদের বাক্য অনুসারে উঠে গেলেন৷
\v 20 তখন অরৌণা চোখ তুলে দেখতে পেল যে, রাজা ও তাঁর দাসেরা তাঁর কাছে আসছেন; তাতে অরৌণা বাইরে এসে রাজার সামনে মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করল৷
\s5
\v 21 আর অরৌণা বলল, “আমার প্রভু মহারাজ নিজের দাসের কাছে কি জন্য এসেছেন?” দায়ূদ বললেন, “লোকেদের উপর থেকে মহামারী যেন দূর হয়, এইজন্য সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক যজ্ঞবেদী তৈরী করব বলে আমি তোমার কাছে এই খামার কিনতে এসেছি৷”
\v 22 তখন অরৌণা দায়ূদকে বলল, “আমার প্রভু মহারাজের চোখে যা ভাল মনে হয়, তাই নিয়ে উত্সর্গ করুন; দেখুন, হোমবলির জন্য এই ষাঁড়গুলি এবং কাঠের জন্য এই মারাই করা যন্ত্র ও ষাঁড়দের সজ্জা আছে;
\v 23 হে রাজা, অরৌণা রাজাকে এই সমস্ত দিচ্ছে৷” অরৌণা রাজাকে আরও বলল, “সদাপ্রভু আপনার ঈশ্বর আপনাকে গ্রহণ করুন৷”
\s5
\v 24 কিন্তু রাজা অরৌণাকে বললেন, “তা নয়, আমি অবশ্যই মূল্য দিয়ে তোমার কাছে থেকে এই সমস্ত কিনব; আমি আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বিনামূল্যে হোমবলি উত্সর্গ করব না৷” পরে দায়ূদ পঞ্চাশ শেকল রুপো দিয়ে সেই খামার ও ষাঁড়গুলি কিনে নিলেন৷
\v 25 আর দায়ূদ সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক যজ্ঞবেদী নির্মাণ করে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উত্সর্গ করলেন৷ এইভাবে দেশের জন্য সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলে তিনি সন্তুষ্ট হলেন এবং ইস্রায়েলের উপর থেকে মহামারী দূর হল৷

1288
11-1KI.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,1288 @@
\id 1KI
\ide UTF-8
\sts - 1 Kings
\h প্রথম রাজাবলি।
\toc1 প্রথম রাজাবলি।
\toc2 প্রথম রাজাবলি।
\toc3 1ki
\mt1 প্রথম রাজাবলি।
\s5
\c 1
\ms প্রথম রাজাবলি।
\s দায়ূদের বৃদ্ধ বয়স। শলোমনের রাজ্যাভিষেক।
\p
\v 1 দায়ূদ রাজা বৃদ্ধ ও তাঁর অনেক বয়স হয়েছিল। লোকেরা তাঁর শরীরে অনেক কাপড় দিয়ে ঢেকে দিলেও তা আর গরম হত না।
\v 2 সেইজন্য তাঁর কর্মচারীরা তাঁকে বলল, “আমাদের প্রভু মহারাজের জন্য আমরা একজন যুবতী কুমারী মেয়ের খোঁজ করি। সে রাজার কাছে থেকে তাঁর সেবা যত্ন করুক। আমাদের প্রভু মহারাজের শরীর যাতে গরম হয়, সেইজন্য সে তাঁর বুকের ওপরে শুয়ে থাকুক।”
\s5
\v 3 তাতে তারা গোটা ইস্রায়েল দেশে একটা সুন্দরী মেয়ের খোঁজ করতে লাগল। পরে তারা শূনেমীয়া অবীশগকে পেল এবং তাকে রাজার কাছে নিয়ে গেল।
\v 4 সেই মেয়েটি খুব সুন্দরী ছিল। সে রাজার কাছে থেকে তাঁর সেবা যত্ন করতে লাগল, কিন্তু রাজা তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হলেন না।
\s5
\v 5 দায়ূদের স্ত্রী হগীতের ছেলে আদোনিয় গর্ব করে বলতে লাগল, “আমিই রাজা হব।” এই বলে সে কতগুলো রথ ও ঘোড়সওয়ার ও তার আগে আগে যাবার জন্য পঞ্চাশজন লোকও নিযুক্ত করল।
\v 6 তার বাবা কোনো কাজে তাকে কখনও বাধা দেন নি, বলেন নি, “কেন তুমি এই কাজ করেছ?” আদোনিয় দেখতে সুন্দর ছিল; তার জন্ম হয়েছিল অবশালোমের পরে।
\s5
\v 7 সরূয়ার ছেলে যোয়াব ও যাজক অবিয়াথরের সঙ্গে আদোনিয় পরামর্শ করল, আর তাঁরাও তার পক্ষ হয়ে তাকে সাহায্য করলেন।
\v 8 কিন্তু যাজক সাদোক যিহোয়াদার ছেলে বনায়, ভাববাদী নাথন, শিমিয়ি, রেয়ি এবং দায়ূদের বীর যোদ্ধারা আদোনিয়ের পক্ষে যোগ দিলেন না।
\s5
\v 9 ঐন্‌ রোগেলের পাশে সোহেলৎ পাথরের কাছে আদোনিয় কতগুলো ভেড়া, ষাঁড় এবং মোটাসোটা বাছুর বলিদান করে তার সব ভাইদের, রাজার ছেলেদের ও যিহূদার সমস্ত রাজকর্মচারীদের নিমন্ত্রণ করল।
\v 10 কিন্তু সে ভাববাদী নাথন, বনায়, দায়ূদের বীর যোদ্ধাদের আর তার ভাই শলোমনকে নিমন্ত্রণ করল না।
\s5
\v 11 তখন নাথন শলোমনের মা বৎশেবাকে বললেন, “আমাদের মনিব দায়ূদের অজান্তে হগীতের ছেলে আদোনিয় যে রাজা হয়েছে তা কি আপনি শোনেন নি?
\v 12 আপনি কেমন করে আপনার নিজের ও আপনার ছেলে শলোমনের প্রাণ রক্ষা করতে পারবেন আমি এখন আপনাকে সেই পরামর্শ দিচ্ছি।
\s5
\v 13 আপনি এখনই রাজা দায়ূদের কাছে গিয়ে বলুন, ‘আমার প্রভু মহারাজ, আপনার দাসীর কাছে কি আপনি এই বলে প্রতিজ্ঞা করেন নি যে, আপনার পরে নিশ্চয়ই আপনার ছেলে শলোমনই রাজা হবে এবং সেই আপনার সিংহাসনে বসবে? তাহলে কেন আদোনিয় রাজা হয়েছে?
\v 14 আপনি যখন রাজার সঙ্গে কথা বলতে থাকবেন তখন আমিও সেখানে গিয়ে আপনার কথায় সায় দেব।”
\s5
\v 15 পরে বৎশেবা রাজার ঘরে গেলেন। সেই সময় রাজা খুব বুড়ো হয়ে গিয়েছিলেন এবং শূনেমীয়া অবীশগ তাঁর দেখাশোনা করছিল।
\v 16 বৎশেবা রাজার সামনে উপুড় হয়ে প্রণাম করলেন। রাজা জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি চাও?”
\v 17 বৎশেবা তাঁকে বললেন, “হে আমার প্রভু, আপনি নিজেই আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে শপথ করে আপনার এই দাসীকে বলেছিলেন যে, আমার পরে তোমার ছেলে শলোমন রাজত্ব করবে, সেই আমার সিংহাসনে বসবে।
\s5
\v 18 এখন, দেখুন, আদোনিয় রাজা হয়েছে আর আপনি, আমার প্রভু মহারাজ, এই বিষয়ে কিছুই জানেন না।
\v 19 সে অনেক গরু, মোটাসোটা বাছুর ও ভেড়া উৎসর্গ করেছে এবং রাজার সব ছেলেদের, যাজক অবিয়াথরকে ও সেনাপতি যোয়াবকে নিমন্ত্রণ করেছে, কিন্তু আপনার দাস শলোমনকে সে নিমন্ত্রণ করে নি।
\s5
\v 20 হে আমার প্রভু মহারাজ, সমস্ত ইস্রায়েলের চোখ আপনার উপর রয়েছে। তারা আপনার কাছ থেকে জানতে চায় আপনার পরে কে আমার প্রভু মহারাজের সিংহাসনে বসবে।
\v 21 তা না হলে যখনই আমার প্রভু মহারাজ তাঁর পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যাবেন তখনই আমাকে ও আমার ছেলে শলোমনকে দোষী বলে ধরা হবে।”
\s5
\v 22 রাজার সঙ্গে বৎশেবার কথা শেষ হতে না হতেই ভাববাদী নাথন সেখানে উপস্থিত হলেন।
\v 23 তখন কেউ একজন রাজাকে বলল, “ভাববাদী নাথন এখানে এসেছেন।” তখন সে রাজার সামনে গিয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে তাঁকে প্রণাম জানালেন।
\s5
\v 24 তারপর তিনি রাজাকে বললেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনি কি ঘোষণা করেছেন যে, আপনার পরে আদোনিয় রাজা হবে, আর সেই আপনার সিংহাসনে বসবে?
\v 25 সে তো আজ গিয়ে অনেক ষাঁড়, মোটাসোটা বাছুর এবং ভেড়া বলিদান করে রাজার সব ছেলেদের, সেনাপতিদের এবং পুরোহিত অবিয়াথরকে নিমন্ত্রণ করেছে। এখন তারা তার সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করছে আর বলছে, ‘রাজা আদোনিয় চিরজীবী হোন।’
\s5
\v 26 আপনার দাস আমাকে, যাজক সাদোককে, যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে এবং আপনার দাস শলোমনকে সে নিমন্ত্রণ করে নি।
\v 27 আমার প্রভু মহারাজের পরে কে সিংহাসনে বসবে তা কি আমার প্রভু মহারাজ তাঁর দাসদের না জানিয়েই ঠিক করেছেন?” শলোমন রাজা হলেন
\s5
\v 28 তখন রাজা দায়ূদ বললেন, “বৎশেবাকে ডাক।” তাতে বৎশেবা রাজার সামনে গিয়ে দাঁড়ালেন।
\v 29 রাজা তখন শপথ করে বললেন, “যিনি আমাকে সমস্ত বিপদ থেকে উদ্ধার করেছেন, সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যে,
\v 30 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে যে শপথ আমি তোমার কাছে করেছিলাম আজ আমি নিশ্চয়ই তা পালন করব। তোমার ছেলে শলোমন আমার পরে রাজা হবে আর সেই আমার জায়গায় সিংহাসনে বসবে।”
\v 31 তখন বৎশেবা মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করে রাজাকে বললেন, “আমার প্রভু মহারাজ দায়ূদ চিরজীবী হোন।”
\s5
\v 32 রাজা দায়ূদ বললেন, “যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন এবং যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে আমার কাছে ডেকে আন।” তাঁরা রাজার কাছে আসলেন।
\v 33 রাজা তাঁদের বললেন, “আপনারা আমার দাসদেরকে সঙ্গে নিন এবং আমার ছেলে শলোমনকে আমার নিজের খচ্চরে বসিয়ে তাকে নিয়ে গীহোন উপত্যকায় নেমে যান।
\v 34 যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন সেখানে তাকে ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে অভিষেক করুন। তারপর আপনারা তূরী বাজিয়ে চিৎকার করে বলুন, ‘রাজা শলোমন চিরজীবী হোন।’
\s5
\v 35 এর পর আপনারা তার পিছনে পিছনে ফিরে আসবেন। সে এসে আমার সিংহাসনে বসবে এবং আমার জায়গায় রাজত্ব করবে। আমি তাকে ইস্রায়েল ও যিহূদার শাসনকর্তা নিযুক্ত করলাম।”
\v 36 তখন যিহোয়াদার ছেলে বনায় রাজাকে বললেন, “আমেন। আমাদের প্রভু মহারাজের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাই করুন।
\v 37 সদাপ্রভু যেমন আমার প্রভু মহারাজের সঙ্গে থেকেছেন তেমনি শলোমনের সঙ্গেও থাকুন এবং আমার প্রভু রাজা দায়ূদের রাজ্যের চেয়েও তাঁর রাজ্য আরও বড় করুন!”
\s5
\v 38 তখন যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন, যিহোয়াদার ছেলে বনায়, করেথীয় ও পলেথীয়েরা গিয়ে শলোমনকে রাজা দায়ূদের খচ্চরে বসিয়ে গীহোনে নিয়ে গেলেন।
\v 39 যাজক সাদোক পবিত্র তাঁবু থেকে তেলের শিঙ্গাটা নিয়ে এসে শলোমনকে অভিষেক করলেন। তারপর তাঁরা তূরী বাজালেন এবং সমস্ত লোকেরা চিৎকার করে বলল, “রাজা শলোমন চিরজীবী হোন।”
\v 40 তারপর সমস্ত লোক বাঁশী বাজাতে বাজাতে এবং খুব আনন্দ করতে করতে শলোমনের পিছনে পিছনে ফিরে আসল। তারা এমনভাবে আনন্দ করল যে, তার শব্দে পৃথিবী কেঁপে উঠল।
\s5
\v 41 সেই সময় আদোনিয় ও সমস্ত নিমন্ত্রিত লোকেরা খাওয়ার শেষের দিকে সেই শব্দ শুনল। তূরীর আওয়াজ শুনে যোয়াব জিজ্ঞাসা করলেন, “শহরে এই সব গোলমাল হচ্ছে কেন?”
\v 42 তাঁর কথা শেষ হতে না হতেই যাজক অবিয়াথরের ছেলে যোনাথন সেখানে উপস্থিত হল। আদোনিয় তাকে বলল, “আসুন, আসুন। আপনি তো ভাল লোক, নিশ্চয়ই ভাল সংবাদ এনেছেন।”
\s5
\v 43 উত্তরে যোনাথন বলল, “আমাদের প্রভু মহারাজ দায়ূদ শলোমনকে রাজা করেছেন।
\v 44 রাজা তাঁর সঙ্গে যাজক সাদোক, ভাববাদী নাথন, যিহোয়াদার ছেলে বনায়, করেথীয় ও পলেথীয়দের পাঠিয়েছেন। তাঁরা তাঁকে রাজার খচ্চরের উপর বসিয়েছেন,
\v 45 আর যাজক সাদোক ও ভাববাদী নাথন গীহোনে তাঁকে রাজপদে অভিষেক করেছেন। সেখান থেকে লোকেরা আনন্দ করতে করতে ফিরে গিয়েছে আর শহরে সেই গোলমালই হচ্ছে। সেই আওয়াজই আপনারা শুনতে পাচ্ছেন।
\s5
\v 46 এছাড়া শলোমন রাজ সিংহাসনেও বসেছেন,
\v 47 আর রাজার কর্মচারীরা আমাদের মনিব রাজা দায়ূদকে তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেছে, ‘আপনার ঈশ্বর আপনার নামের চেয়েও শলোমনের নাম মহান করুন এবং আপনার রাজ্যের চেয়েও তাঁর রাজ্য আরও বড় করুন।’ রাজা বিছানার ওপরেই নত হলেন।
\v 48 রাজা আরো বললেন, ‘ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব হোক। আমার সিংহাসনের অধিকারীকে আজ তিনি আমাকে দেখতে দিলেন।’ ”
\s5
\v 49 এই কথা শুনে আদোনিয়ের নিমন্ত্রিত সব লোকেরা খুব ভয় পেল এবং উঠে যে যার পথে চলে গেল।
\v 50 আদোনিয় শলোমনের ভয়ে উঠে গিয়ে বেদীর শিং ধরে থাকল।
\v 51 তখন শলোমনকে কেউ একজন বলল যে, আদোনিয় তাঁর ভয়ে বেদীর শিং আঁকড়ে ধরেছে। সে বলেছে, “রাজা শলোমন আজ আমার কাছে শপথ করুন যে, তিনি তাঁর দাসকে মেরে ফেলবেন না।”
\s5
\v 52 উত্তরে শলোমন বললেন, “সে যদি নিজেকে ভাল লোক হিসাবে দেখাতে পারে তবে তার মাথার একটা চুলও মাটিতে পড়বে না; কিন্তু যদি তার মধ্যে মন্দ কিছু পাওয়া যায় তবে সে মরবে।”
\v 53 এই বলে রাজা শলোমন লোক পাঠিয়ে দিলেন আর তারা গিয়ে আদোনিয়কে বেদী থেকে নিয়ে আসল। আদোনিয় এসে রাজা শলোমনের সামনে মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করলো। শলোমন বললেন, “তোমার ঘরে চলে যাও।”
\s5
\c 2
\ms দায়ূদের মৃত্যু।
\p
\v 1 দাউদের মৃত্যুর সময় কাছাকাছি আসলে, তিনি তাঁর ছেলে শলোমনকে এই সব নির্দেশ দিয়ে বললেন,
\v 2 “পৃথিবীর সকলেই যে পথে যায় আমিও এখন সেই পথে যাচ্ছি। তাই তুমি শক্তিশালী হও, নিজেকে উপযুক্ত পুরুষ হিসাবে দেখাও।
\v 3 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ মত তুমি তাঁর পথে চলবে এবং মোশির ব্যবস্থায় লেখা সদাপ্রভুর সব নিয়ম, তাঁর আদেশ, তাঁর নির্দেশ ও তাঁর দাবি মেনে চলবে। এতে তুমি যা কিছু কর না কেন এবং যেখানেই যাও না কেন সফল হতে পারবে।
\v 4 যেন সদাপ্রভু যে বিষয় আমার কাছে বলেছেন তা পূরণ করতে পারেন। তিনি বলেছেন, ‘যদি তোমার সন্তানেরা সমস্ত হৃদয়ে ও সমস্ত প্রাণ দিয়ে বিশ্বস্তভাবে আমার সামনে চলাফেরা করবার জন্য সাবধানে জীবন কাটায় তবে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবার জন্য তোমার বংশে লোকের অভাব হবে না।’
\s5
\v 5 সরূয়ার ছেলে যোয়াব আমার প্রতি যা করেছে এবং ইস্রায়েলীয় সৈন্যদলের দুই সেনাপতির প্রতি, অর্থাৎ নেরের ছেলে অব্‌নের ও যেথরের ছেলে অমাসার প্রতি যা করেছে তা তো তুমি জান। সে তাদের খুন করেছে, শান্তির সময়েও যুদ্ধের সময়ের মত করে সে তাদের রক্তপাত করেছে আর সেই রক্ত তাঁর কোমর বন্ধনীতে ও পায়ের জুতোতে লেগেছে।
\v 6 তুমি তার সঙ্গে বুদ্ধি করে চলবে, তবে বুড়ো বয়সে তুমি তাকে শান্তিতে মৃতস্থানে যেতে দেবে না।
\s5
\v 7 কিন্তু গিলিয়দের বর্সিল্লয়ের ছেলেদের প্রতি বিশ্বস্ত থেকো। তোমার টেবিলে যারা তোমার সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করে তাদের মধ্যে তুমি তাদেরও জায়গা দিয়ো। তোমার ভাই অবশালোমের কাছ থেকে পালিয়ে যাবার সময় তারা আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছিল।
\s5
\v 8 মনে রেখো, বহুরীমের বিন্যামীন গোষ্ঠীর গেরার ছেলে শিমিয়ি তোমার সঙ্গে আছে। আমি যেদিন মহনয়িমে যাই সেই দিন সে আমাকে ভীষণ অভিশাপ দিয়েছিল। যর্দনে সে আমার সঙ্গে দেখা করতে আসলে পর আমি সদাপ্রভুর নামে তার কাছে শপথ করেছিলাম যে, আমি তাকে মেরে ফেলব না।
\v 9 কিন্তু এখন তুমি তাকে নির্দোষ বলে মনে কোরো না। তুমি বুদ্ধিমান; তার প্রতি তুমি কি করবে তা তুমি নিজেই বুঝতে পারবে। তার বুড়ো বয়সে রক্তপাতের মধ্য দিয়েই তাকে মৃতস্থানে পাঠিয়ে দেবে।”
\s5
\v 10 এর পর দায়ূদ তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চির নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে দায়ূদ শহরে কবর দেওয়া হল।
\v 11 তিনি ইস্রায়েলের উপরে চল্লিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন সাত বছর হিব্রোণে আর তেত্রিশ বছর যিরূশালেমে।
\v 12 পরে শলোমন তাঁর বাবা দায়ূদের সিংহাসনে বসলেন এবং তাঁর রাজত্ব শক্তভাবে স্থাপিত হল।
\s শলোমনের রাজত্ব শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত হল
\m
\s5
\v 13 পরে হগীতের ছেলে আদোনিয় শলোমনের মা বৎশেবার কাছে গেল।
\v 14 বৎশেবা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কি ভাল মন নিয়ে এসেছ?” সে বলল, “হ্যাঁ, ভাল মন নিয়েই এসেছি। আপনাকে আমার কিছু বলবার আছে।” বৎশেবা বললেন, “বল।”
\v 15 তখন সে বলল, “আপনি তো জানেন রাজ্যটা আমারই ছিল। সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা চেয়েছিল আমি রাজা হব। কিন্তু অবস্থাটা বদলে গিয়ে রাজ্যটা আমার ভাইয়ের হাতে গেছে, কারণ এটা সদাপ্রভুর কাছ থেকেই সে পেয়েছে।
\s5
\v 16 এখন আপনার কাছে আমার একটা অনুরোধ আছে। আপনি আমাকে ফিরিয়ে দেবেন না।” তিনি বললেন, “বল।”
\v 17 সে তখন বলতে লাগল, “আপনি রাজা শলোমনকে বলুন যেন তিনি শূনেমীয়া অবীশগকে আমার সঙ্গে বিয়ে দেন। তিনি আপনার কথা ফেলবেন না।”
\v 18 উত্তরে বৎশেবা বললেন, “বেশ ভাল, আমি তোমার কথা রাজাকে বলব।”
\s5
\v 19 বৎশেবা যখন আদোনিয়ের কথা বলবার জন্য রাজা শলোমনের কাছে গেলেন তখন রাজা উঠে তাঁর কাছে গিয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন এবং তারপর তাঁর সিংহাসনে বসলেন। রাজা তাঁর মায়ের জন্য একটা আসন আনিয়ে তাঁর ডান পাশে রাখলেন এবং তাঁর মা সেখানে বসলেন।
\v 20 বৎশেবা বললেন, “আমি তোমাকে একটা ছোট্ট অনুরোধ করব; তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিয়ো না।” উত্তরে রাজা বললেন, “বল মা, আমি তোমাকে ফিরিয়ে দেব না।”
\v 21 বৎশেবা তখন বললেন, “তোমার ভাই আদোনিয়ের সঙ্গে শূনেমীয়া অবীশগের বিয়ে দেওয়া হোক।”
\s5
\v 22 উত্তরে রাজা শলোমন তাঁর মাকে বললেন, “আদোনিয়ের জন্য কেন তুমি শূনেমীয়া অবীশগকে চাইছ? তুমি তার জন্য রাজ্যটাও তো চাইতে পারতে, কারণ সে আমার বড় ভাই; হ্যাঁ, তার জন্য, যাজক অবিয়াথরের জন্য আর সরূয়ার ছেলে যোয়াবের জন্যও তা চাইতে পারতে।”
\v 23 এর পর রাজা শলোমন সদাপ্রভুর নামে শপথ করে বললেন, “এই অনুরোধের জন্য যদি আদোনিয়ের প্রাণ নেওয়া না হয় তবে সদাপ্রভু যেন আমাকে শাস্তি দেন, আর তা ভীষণভাবেই দেন।
\s5
\v 24 যিনি আমার বাবা দায়ূদের সিংহাসনে আমাকে শক্তভাবে স্থাপিত করেছেন এবং তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমার জন্য একটা রাজবংশের প্রতিষ্ঠা করেছেন সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি দিয়ে বলছি, আজই আদোনিয়কে মেরে ফেলা হবে।”
\v 25 তারপর রাজা শলোমন যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে হুকুম দিলেন, আর বনায় আদোনিয়কে মেরে ফেললেন।
\s5
\v 26 পরে রাজা যাজক অবিয়াথরকে বললেন, “আপনি অনাথোতে নিজের জায়গায় ফিরে যান। আপনি মৃত্যুর যোগ্য, কিন্তু এখন আমি আপনাকে মেরে ফেলব না, কারণ আপনি আমার বাবা দায়ূদের সময়ে প্রভু সদাপ্রভুর সিন্দুকটা বয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং আমার বাবার সমস্ত দুঃখ কষ্টের ভাগী হয়েছিলেন।”
\v 27 এইভাবে শলোমন অবিয়াথরকে সদাপ্রভুর যাজক পদ থেকে সরিয়ে দিলেন। সদাপ্রভু শীলোতে এলির বংশ সম্বন্ধে যা বলেছিলেন তাঁর সেই কথা এইভাবে পূর্ণ হল।
\s5
\v 28 এই সব খবর যোয়াবের কানে গেল। তিনি অবশালোমের পক্ষে না গেলেও আদোনিয়ের পক্ষে গিয়েছিলেন, তাই তিনি পালিয়ে সদাপ্রভুর তাঁবুতে গিয়ে বেদীর শিং ধরে থাকলেন।
\v 29 রাজা শলোমনকে বলা হল যে, যোয়াব পালিয়ে সদাপ্রভুর তাঁবুতে গেছেন এবং বেদীর কাছে আছেন। তখন শলোমন যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে এই আদেশ দিলেন, “আপনি গিয়ে তাঁকে মেরে ফেলুন।”
\s5
\v 30 কাজেই বনায় সদাপ্রভুর তাঁবুতে ঢুকে যোয়াবকে বললেন, “রাজা আপনাকে বের হয়ে আসতে বলেছেন।” কিন্তু যোয়াব বললেন, “না, আমি এখানেই মরব।” বনায় রাজাকে সেই খবর জানিয়ে বললেন, “যোয়াব আমাকে এই উত্তর দিয়েছেন।”
\v 31 তখন রাজা বনায়কে এই হুকুম দিলেন, “তিনি যা বলেছেন তাই করুন। তাঁকে মেরে ফেলে কবর দিয়ে দিন। যোয়াব যে নির্দোষ লোকদের রক্তপাত করেছেন তার দোষ আপনি আমার ও আমার বাবার বংশ থেকে এইভাবে দূর করে দিন।
\s5
\v 32 যে রক্তপাত তিনি করেছেন তার শোধ সদাপ্রভু নেবেন, কারণ আমার বাবা দায়ূদের অজান্তে তিনি দুইজন লোককে আক্রমণ করে মেরে ফেলেছিলেন। তাঁরা হলেন ইস্রায়েলের সৈন্যদলের সেনাপতি নেরের ছেলে অব্‌নের আর যিহূদার সৈন্যদলের সেনাপতি যেথরের ছেলে অমাসা। এই দুইজন ছিলেন তাঁর চেয়ে আরও ধার্মিক এবং আরও ভাল লোক।
\v 33 তাঁদের রক্তপাতের দোষ যোয়াবের ও তাঁর বংশের লোকদের মাথার উপরে চিরকাল থাকুক। কিন্তু দায়ূদ ও তাঁর বংশের লোকদের উপর এবং তাঁর পরিবার ও তাঁর সিংহাসনের উপর সদাপ্রভুর শান্তি চিরকাল থাকুক।”
\s5
\v 34 তখন যিহোয়াদার ছেলে বনায় গিয়ে যোয়াবকে মেরে ফেললেন। তাঁকে মরু এলাকায় তাঁর নিজের বাড়ীতে কবর দেওয়া হল।
\v 35 রাজা তখন যোয়াবের জায়গায় যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে সেনাপতি হিসাবে নিযুক্ত করলেন এবং অবিয়াথরের জায়গায় বসালেন যাজক সাদোককে।
\s5
\v 36 তারপর রাজা লোক পাঠিয়ে শিমিয়িকে ডেকে এনে বললেন, “তুমি যিরূশালেমে একটা বাড়ী তৈরী করে সেখানেই থাকবে, অন্য কোথাও তোমার যাওয়া চলবে না।
\v 37 যেদিন তুমি সেখান থেকে বের হয়ে কিদ্রোণ উপত্যকা পার হবে সেই দিন তুমি নিশ্চয় করে জেনে রেখো যে, তোমাকে মরতেই হবে; তোমার রক্তপাতের দোষ তোমার নিজের মাথার উপরেই পড়বে।”
\v 38 উত্তরে শিমিয়ি রাজাকে বললেন, “আপনি ভালই বলেছেন। আমার মনিব মহারাজ যা বললেন আপনার দাস তাই করবে।” এর পর শিমিয়ি অনেক দিন যিরূশালেমে থাকল।
\s5
\v 39 কিন্তু তিন বছর পরে শিমিয়ির দুইজন দাস মাখার ছেলে গাতের রাজা আখীশের কাছে পালিয়ে গেল। শিমিয়িকে বলা হল যে, তার দাসেরা গাতে আছে।
\v 40 তখন শিমিয়ি তার গাধার উপর গদি চাপিয়ে তার দাসদের খোঁজে গাতে আখীশের কাছে গেল এবং সেখান থেকে তাদের ফিরিয়ে আনল।
\s5
\v 41 পরে শলোমনকে জানানো হল যে, শিমিয়ি যিরূশালেম থেকে গাতে গিয়ে আবার ফিরে এসেছে।
\v 42 রাজা তখন শিমিয়িকে ডাকিয়ে এনে বললেন, “আমি কি সদাপ্রভুর নামে তোমাকে শপথ করিয়ে সাক্ষ্য দিই নি যে, যেদিন তুমি বেরিয়ে বাইরে দুরে কোথাও যাবে সেই দিন তোমাকে নিশ্চয়ই মরতে হবে? সেই সময় তুমি আমাকে বলেছিলে, যেটা বলেছিলে সেটা ভালো।
\s5
\v 43 তাহলে কেন তুমি সদাপ্রভুর কাছে করা দিব্যি ও আমার আদেশ পালন কর নি?”
\v 44 শলোমন শিমিয়িকে আরও বললেন, “আমার বাবা দায়ূদের প্রতি তুমি যে সব অন্যায় করেছ তা তো তোমার অন্তর জানে। এখন সদাপ্রভুই তোমাকে তোমার অন্যায় কাজের প্রতিফল দেবেন।
\s5
\v 45 কিন্তু রাজা শলোমনের উপরে আশীর্বাদ থাকবে, আর দায়ূদের সিংহাসন সদাপ্রভুর সামনে চিরকাল অটল থাকবে।”
\v 46 এর পর রাজা যিহোয়াদার ছেলে বনায়কে হুকুম দিলেন আর বনায় গিয়ে শিমিয়িকে মেরে ফেললেন। এইভাবে শলোমনের হাতে রাজ্যটা ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হল।
\s5
\c 3
\ms শলোমনের বিয়ে ও প্রার্থনা
\p
\v 1 শলোমন মিসরের রাজা ফরৌণের মেয়েকে বিয়ে করে তাঁর সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপন করলেন। শলোমনের রাজবাড়ী, সদাপ্রভুর ঘর এবং যিরূশালেমের চারপাশের দেয়াল গাঁথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তাঁর স্ত্রীকে দায়ূদ শহরেই রাখলেন।
\v 2 লোকেরা তখনও উপাসনার উঁচু জায়গাগুলোতে তাদের পশু বলিদানের অনুষ্ঠান করত, কারণ তখনও সদাপ্রভুর উপাসনার জন্য কোনো ঘর তৈরী করা হয় নি।
\v 3 শলোমন সদাপ্রভুকে ভালবাসতেন, সেইজন্য তাঁর বাবা দায়ূদের আদেশ অনুসারে চলাফেরা করতেন; কিন্তু তিনি উপাসনার উঁচু জায়গাগুলোতে পশু বলিদান করতেন এবং ধূপ জ্বালাতেন।
\s5
\v 4 রাজা একদিন পশু বলিদানের জন্য গিবিয়োনে গিয়েছিলেন, কারণ উৎসর্গের জন্য সেখানকার উপাসনার উঁচু স্থানটা ছিল প্রধান। শলোমন সেখানে এক হাজার পশু দিয়ে হোমবলির অনুষ্ঠান করলেন।
\v 5 গিবিয়োনে রাতের বেলা সদাপ্রভু স্বপ্নের মধ্যে শলোমনের কাছে উপস্থিত হলেন। ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “বল, আমি তোমাকে কি দেব?”
\s5
\v 6 উত্তরে শলোমন বললেন, “তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদকে তুমি অনেক বিশ্বস্ততা দেখিয়েছ, কারণ তিনি তোমার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন এবং খাঁটি ও সৎ ছিলেন। আজ তাঁর সিংহাসনে বসবার জন্য তুমি তাঁকে একটি ছেলে দিয়েছ এবং এইভাবে তোমার সেই সীমাহীন বিশ্বস্ততা তাঁকে দেখিয়ে যাচ্ছ।
\s5
\v 7 হে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমার বাবা দায়ূদের জায়গায় তুমি এখন তোমার দাসকে রাজা করেছ। কিন্তু বয়স আমার খুবই কম, আমি জানি না কি করে বাইরে যেতে হয় এবং ভিতরে আসতে হয়।
\v 8 এখানে তোমার দাস তোমার বেছে নেওয়া লোকদের মধ্যে রয়েছে। তারা এমন একটা মহাজাতি যে, তাদের সংখ্যা গণনা করা যায় না।
\v 9 সেইজন্য তোমার লোকদের শাসন করবার জন্য এবং কোনটা ঠিক বা কোনটা ভুল তা জানবার জন্য তুমি তোমার দাসের মনে বোঝবার ক্ষমতা দাও। কারণ কার সাধ্য আছে তোমার এই মহাজাতিকে বিচার করে?”
\s5
\v 10 শলোমনের এই অনুরোধ সদাপ্রভুকে সন্তুষ্ট করল।
\v 11 ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “তুমি অনেক আয়ু, কিম্বা নিজের জন্য ধন সম্পদ, কিম্বা তোমার শত্রুদের মৃত্যু না চেয়ে যখন সুবিচার করবার জন্য বোঝবার ক্ষমতা চেয়েছ,
\v 12 তখন তুমি যা চেয়েছ তাই আমি তোমাকে দেব। আমি তোমার অন্তরে এমন জ্ঞান ও বিচারবুদ্ধি দিলাম যার জন্য দেখা যাবে যে, এর আগে তোমার মত আর কেউ ছিল না আর পরেও হবে না।
\s5
\v 13 আমি তোমাকে সেটা দিলাম যেটা তুমি চাওনি। আমি তোমাকে এমন ধন সম্পদ ও সম্মান দিলাম যার ফলে তোমার জীবনকালে রাজাদের মধ্যে আর কেউ তোমার সমান হবে না।
\v 14 তোমার বাবা দায়ূদের মত করে যদি তুমি আমার সব নিয়ম ও আদেশ পালন করার জন্য আমার পথে চল তবে আমি তোমাকে অনেক আয়ু দেব।”
\s5
\v 15 এর পর শলোমন জেগে উঠলেন আর বুঝতে পারলেন যে, ওটা একটা স্বপ্ন ছিল। পরে শলোমন যিরূশালেমে ফিরে গিয়ে সদাপ্রভুর সাক্ষ্য সিন্দুকের সামনে দাঁড়ালেন এবং অনেক পশু দিয়ে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলির অনুষ্ঠান করলেন। তারপর তাঁর সমস্ত কর্মচারীদের জন্য একটা ভোজ দিলেন।
\s শলোমনের জ্ঞান ও ধনসম্পদ
\m
\s5
\v 16 সেই সময়ে দুইজন বেশ্যা স্ত্রীলোক এসে রাজার সামনে দাঁড়াল।
\v 17 তাদের মধ্যে একজন বলল, “হে আমার প্রভু, এই স্ত্রীলোকটি এবং আমি একই ঘরে থাকি। সে সেখানে থাকবার সময় আমার একটি সন্তান প্রসব হয়।
\s5
\v 18 আমার প্রসবের তিন দিন পরে এই স্ত্রীলোকটিও প্রসব করল। ঘরে আর কেউ ছিল না, শুধু আমরা দুইজনই ছিলাম।
\v 19 রাতের বেলা এই স্ত্রীলোকটির চাপে তার সন্তানটি মারা গেল।
\v 20 মাঝ রাতে আপনার দাসী আমি যখন ঘুমিয়ে ছিলাম, তখন সে উঠে আমার পাশ থেকে আমার সন্তানকে নিয়ে নিজের বুকের কাছে রাখল আর তার মরা সন্তানকে নিয়ে আমার বুকের কাছে রাখল।
\s5
\v 21 ভোররাতে আমার সন্তানকে দুধ খাওয়াতে উঠে দেখলাম ছেলেটি মরা। সকালের আলোতে আমি যখন তাকে ভাল করে দেখলাম তখন বুঝলাম সে আমার নিজের জন্ম দেওয়া ছেলে নয়।”
\v 22 তখন অন্য স্ত্রীলোকটি বলল, “না, না, জীবিত ছেলেটি আমার আর মরাটা তোমার।” কিন্তু প্রথমজন জোর দিয়ে বলল, “না, মরাটা তোমার আর জীবিতটা আমার।” এইভাবে রাজার সামনেই তারা কথা বলতে লাগল।
\s5
\v 23 রাজা বললেন, “এ বলছে, ‘আমার ছেলে বেঁচে আছে আর তোমারটা মারা গেছে।’ আবার ও বলছে, ‘না, না, তোমার ছেলে মারা গেছে আমারটা বেঁচে আছে’।”
\v 24 তখন রাজা বললেন, “আমাকে একটা তলোয়ার দাও।” তখন তারা রাজার কাছে একটা তলোয়ার আনা হল।
\v 25 তিনি হুকুম দিলেন, “জীবিত ছেলেটিকে কেটে দুইভাগ কর এবং একে অর্ধেক আর ওকে অর্ধেক দাও।”
\s5
\v 26 যার ছেলেটি বেঁচে ছিল ছেলের জন্য সেই স্ত্রীলোকের মন ব্যাকুল হওয়াতে সে রাজাকে বলল, “হে আমার প্রভু, মিনতি করি, ওকেই আপনি জীবিত ছেলেটি দিয়ে দিন; ছেলেটিকে মেরে ফেলবেন না।” কিন্তু অন্য স্ত্রীলোকটি বলল, “ও তোমারও না হোক আর আমারও না হোক। ওকে কেটে দুই টুকরো কর।”
\v 27 রাজা তখন তাঁর রায় দিয়ে বললেন, “জীবিত ছেলেটি ঐ প্রথম স্ত্রীলোকটিকে দাও। ওকে কেটো না; ওই ওর মা।”
\v 28 রাজার দেওয়া রায় শুনে ইস্রায়েলের সকলের মনে রাজার প্রতি ভক্তিপূর্ণ ভয় জেগে উঠল, কারণ তারা দেখতে পেল যে, সুবিচার করবার জন্য তাঁর মনে ঈশ্বরের দেওয়া জ্ঞান রয়েছে।
\s5
\c 4
\p
\v 1 রাজা শলোমন পুরো ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করতেন।
\v 2 এরাই ছিলেন তাঁর প্রধান কর্মচারী: সাদোকের ছেলে অসরিয় ছিলেন রাজার পরামর্শদাতা যাজক;
\v 3 শীশার দুই ছেলে ইলীহোরফ ও অহিয় ছিলেন রাজার লেখক; অহীলুদের ছেলে যিহোশাফট ছিলেন ইতিহাস লেখক;
\v 4 যিহোয়াদার ছেলে বনায় ছিলেন প্রধান সেনাপতি; সাদোক ও অবিয়াথর ছিলেন যাজক;
\s5
\v 5 নাথনের ছেলে অসরিয়ের উপর ছিল বিভিন্ন শাসনকর্তাদের ভার; নাথনের ছেলে সাবূদ ছিলেন রাজার ব্যক্তিগত পরামর্শদাতা;
\v 6 অহীশারের উপর ছিল রাজবাড়ীর দেখাশোনার ভার; অব্দের ছেলে অদোনীরামের ছিল কাজের জন্য নিয়োগ করা দাসদের অধ্যক্ষ।
\s5
\v 7 সমস্ত ইস্রায়েলের উপর শলোমন বারোজন শাসনকর্তা নিযুক্ত করেছিলেন। তাঁরা রাজা ও রাজপরিবারের জন্য খাবারের জোগান দিতেন। তাঁদের প্রত্যেককেই বছরে এক মাস করে খাবারের জোগান দিতে হত।
\v 8 তাঁদের নামগুলি হল, ইফ্রয়িমের পাহাড়ী অঞ্চলের বিন্‌ হূর।
\v 9 মাকসে, শালবীমে, বৈৎ শেমশে ও এলোন বৈৎ হাননে বিন দেকর।
\v 10 অরুব্বোতে, সোখোতে ও হেফরের সমস্ত এলাকায় বিন হেষদ।
\s5
\v 11 নাফৎ দোরের সমস্ত এলাকায় বিন্‌ অবীনাদব। ইনি শলোমনের মেয়ে টাফৎকে বিয়ে করেছিলেন।
\v 12 তানকে, মগিদ্দোতে এবং সর্তনের কাছে ও যিষ্রিয়েলের নীচে অবস্থিত বৈৎ শান শহর থেকে আবেল মহোলা ও যক্‌মিয়াম পর্যন্ত বৈৎ শানের সমস্ত এলাকায় অহীলূদের ছেলে বানা।
\v 13 রামোৎ গিলিয়দে বিন্‌ গেবর। তিনি ছিলেন গিলিয়দের মনঃশির ছেলে যায়ীরের সমস্ত গ্রামের এবং বাশনের অর্গোব এলাকার শাসনকর্তা। অর্গোব এলাকায় ছিল দেয়াল ঘেরা এবং পিতলের খিল দেওয়া দরজা সুদ্ধ ষাটটা বড় বড় গ্রাম।
\v 14 মহনয়িমে ইদ্দোর ছেলে অহীনাদব।
\s5
\v 15 নপ্তালিতে অহীমাস। তিনি আবার স্ত্রী হিসাবে শলোমনের মেয়ে বাসমৎকে বিয়ে করেছিলেন।
\v 16 আশেরে ও বালোতে হূশয়ের ছেলে বানা।
\v 17 ইষাখরে পারূহের ছেলে যিহোশাফট।
\s5
\v 18 বিন্যামীনে এলার ছেলে শিমিয়ি।
\v 19 গিলিয়দে, অর্থাৎ ইমোরীয়দের রাজা সীহোনের ও বাশনের রাজা ওগের দেশে ঊরির ছেলে গেবর। সেই জায়গায় তিনিই ছিলেন একমাত্র শাসনকর্তা।
\s5
\v 20 যিহূদা ও ইস্রায়েলের লোকসংখ্যা ছিল সাগরের কিনারার বালুকণার মত অসংখ্য। তারা খাওয়া দাওয়া করে সুখেই ছিল।
\v 21 ইউফ্রেটিস নদী থেকে শুরু করে মিসর ও পলেষ্টীয়দের দেশের সীমা পর্যন্ত সমস্ত রাজ্যগুলো শলোমনের শাসনের অধীনে ছিল। শলোমন যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন তারা তাঁকে কর দিত এবং তাঁকে সেবা করত।
\v 22 শলোমনের জন্য প্রতিদিন যে সব খাবার লাগত তা এই: প্রায় সাড়ে পাঁচ টন মিহি ময়দা, প্রায় এগারো টন সুজি,
\v 23 ঘরে খাওয়ানো দশটা গরু, চরে খাওয়ানো কুড়িটা গরু এবং একশোটা ভেড়া; তাছাড়া হরিণ, কৃষ্ণসার, চিতল হরিণ এবং মোটাসোটা হাঁস ও মুরগী।
\s5
\v 24 শলোমন ইউফ্রেটিস নদীর পশ্চিম দিকের সমস্ত রাজ্যগুলো, অর্থাৎ তিপ্‌সহ থেকে গাজা পর্যন্ত রাজত্ব করতেন এবং তার রাজ্যের সব জায়গায় শান্তি ছিল।
\v 25 শলোমনের জীবনকালে যিহূদা ও ইস্রায়েল, অর্থাৎ দান থেকে বের্‌ শেবা পর্যন্ত সকলেরই নিজের নিজের আঙ্গুর গাছ ও ডুমুর গাছ ছিল আর তারা নিরাপদে বাস করত।
\s5
\v 26 শলোমনের রথের ঘোড়াগুলোর জন্য ছিল চল্লিশ হাজার ঘর আর বারো হাজার ঘোড়সওয়ার।
\v 27 শাসনকর্তাদের প্রত্যেকে তাঁর পালার মাসে রাজা শলোমন ও তাঁর টেবিলে যারা খেতেন তাঁদের সকলের জন্য খাবারের জোগান দিতেন। তাঁরা কোনো কিছুরই অভাব পড়তে দিত না।
\v 28 রথের ঘোড়া ও সওয়ারী ঘোড়াগুলোর জন্য তাঁদের প্রত্যেকের কাজের ভার অনুসারে তাঁরা যব ও খড় নির্দিষ্ট জায়গায় আনতেন।
\s5
\v 29 ঈশ্বর শলোমনকে সাগর পারের বালুকণার মত প্রচুর পরিমাণে জ্ঞান, বিচারবুদ্ধি ও বোঝবার ক্ষমতা দান করলেন।
\v 30 পূর্বদেশের এবং মিসরের সমস্ত জ্ঞানী লোকদের চেয়ে শলোমনের জ্ঞান ছিল বেশী।
\v 31 সমস্ত লোকের চেয়ে, এমন কি, ইষ্রাহীয় এথন এবং মাহোলের ছেলে হেমন, কল্‌কোল ও দর্দার চেয়েও তিনি বেশী জ্ঞানবান ছিলেন। তাঁর সুনাম আশেপাশের সমস্ত জাতির মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল।
\s5
\v 32 তিনি তিন হাজার সৎ উপদেশের কথা বলেছিলেন এবং এক হাজার পাঁচটা গান রচনা করেছিলেন।
\v 33 তিনি লেবাননের এরস গাছ থেকে শুরু করে দেয়ালের গায়ে গজানো এসোব গাছ পর্যন্ত সমস্ত গাছের বর্ণনা করেছেন। তিনি জীব জন্তু, পাখী, বুকে হাঁটা প্রাণী ও মাছেরও বর্ণনা করেছেন।
\v 34 পৃথিবীর যে সব রাজারা শলোমনের জ্ঞানের বিষয় শুনেছিলেন তাঁরা তাঁর জ্ঞানপূর্ণ কথা শুনবার জন্য লোকদের পাঠিয়ে দিতেন। আর সমস্ত জাতির লোক তাঁর কাছে আসত।
\s5
\c 5
\ms মন্দির তৈরীর জন্য শলোমনের আয়োজন।
\p
\v 1 সোরের রাজা হীরম যখন শুনলেন যে, শলোমনকে তাঁর বাবার জায়গায় রাজপদে অভিষেক করা হয়েছে তখন তাঁর দাসদের তিনি শলোমনের কাছে পাঠালেন, কারণ দায়ূদের সঙ্গে হীরমের সব সময়ই বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল।
\v 2 শলোমন হীরমকে বলে পাঠালেন,
\v 3 “আমার বাবা দায়ূদের বিরুদ্ধে চারদিক থেকে যুদ্ধ হয়েছিল, তাই যতদিন সদাপ্রভু তাঁর শত্রুদের তাঁর পায়ের তলায় না আনলেন ততদিন তিনি তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে কোনো উপাসনা ঘর তৈরী করতে পারেন নি। আপনি তো এই সব কথা জানেন।
\s5
\v 4 কিন্তু এখন আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সব দিক থেকেই আমাকে বিশ্রাম দিয়েছেন। এখন আমার কোনো শত্রু নেই এবং কোনো দুর্ঘটনাও ঘটেনি।
\v 5 সেইজন্য আমি আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে একটা উপাসনা ঘর তৈরী করতে চাই। যেমন সদাপ্রভু আমার বাবা দায়ূদকে বলেছিলেন, ‘তোমার যে ছেলেকে আমি সিংহাসনে তোমার জায়গায় বসাব সেই আমার উদ্দেশ্যে উপাসনা ঘর তৈরী করবে।’
\s5
\v 6 কাজেই আপনি হুকুম করুন যাতে আমার জন্য লিবানোন দেশের এরস গাছ কাটা হয়। অবশ্য আমার লোকেরা আপনার লোকদের সঙ্গে থাকবে এবং আপনি যে মজুরি ঠিক করে দেবেন আমি সেই মজুরিই আপনার লোকদের দেব। আপনার তো জানা আছে যে, গাছ কাটবার জন্য সীদোনীয়দের মত পাকা লোক আমাদের মধ্যে কেউ নেই।”
\s5
\v 7 শলোমনের কাছ থেকে এই খবর পেয়ে হীরম খুব খুশী হয়ে বললেন, “আজ সদাপ্রভুর গৌরব হোক, কারণ এই মহান জাতির উপরে রাজত্ব করবার জন্য দায়ূদকে তিনি এমন একটি জ্ঞানী ছেলে দান করেছেন।”
\v 8 হীরম শলোমনকে এই খবর পাঠালেন, “আপনার পাঠানো খবর আমি পেয়েছি। এরস ও দেবদারু কাঠের ব্যাপারে আপনার সব ইচ্ছাই আমি পূর্ণ করব।
\s5
\v 9 আমার লোকেরা সেগুলো লিবানোন থেকে নামিয়ে সমুদ্রে আনবে। তারপর আমি সেগুলো দিয়ে ভেলা তৈরী করে সমুদ্রে ভাসিয়ে আপনার নির্দিষ্ট করা জায়গায় পাঠিয়ে দেব। সেখানে তারা সেগুলো খুলে ফেলবে আর তখন আপনি সেগুলো নিয়ে যেতে পারবেন। আমার রাজবাড়ীর লোকদের জন্য খাবার দেওয়ার মাধ্যমে আপনি আমার ইচ্ছা পূরণ করবেন।”
\s5
\v 10 ফলে হীরম শলোমনের চাহিদামত সমস্ত এরস ও দেবদারু কাঠ দিতে লাগলেন,
\v 11 আর শলোমন হীরমকে তাঁর রাজবাড়ীর লোকদের খাবারের জন্য তিন হাজার ছশো টন গম ও চার হাজার আটশো লিটার খাঁটি তেল দিলেন। শলোমন বছরের পর বছর তা দিতে থাকলেন।
\v 12 সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে শলোমনকে জ্ঞান দিলেন। হীরম ও শলোমনের মধ্যে শান্তির সম্বন্ধ ছিল এবং তাঁরা দুজনে একটা চুক্তি করলেন।
\s5
\v 13 রাজা শলোমন সমস্ত ইস্রায়েল থেকে ত্রিশ হাজার লোককে কাজ করতে বাধ্য করলেন।
\v 14 প্রতি মাসে পালা পালা করে তাদের মধ্য থেকে তিনি দশ হাজার লোককে লেবাননে পাঠাতেন। তারা একমাস লেবাননে থাকত আর দু মাস থাকত নিজের বাড়ীতে। তাদের এই কাজের দেখাশোনার ভার ছিল অদোনীরামের উপর।
\s5
\v 15 শলোমনের অধীনে ছিল সত্তর হাজার ভারবহনকারী লোক ও পাহাড়ে পাথর কাটবার জন্য আশি হাজার লোক।
\v 16 তাদের কাজের দেখাশোনা করবার জন্য তিন হাজার তিনশো কর্মচারী ছিল।
\s5
\v 17 উপাসনা ঘরের ভিত্তি গাঁথবার জন্য তারা রাজার আদেশে খাদ থেকে বড় বড় দামী পাথর কেটে তুলে আনত।
\v 18 শলোমন ও হীরমের মিস্ত্রিরা ও গিব্লীয়েরা সেই পাথরগুলো সুন্দর করে কেটে উপাসনা ঘরটি তৈরী করবার জন্য কাঠ ও পাথর তৈরী করল।
\s5
\c 6
\ms শলোমনের মন্দির নির্মাণ
\p
\v 1 মিসর দেশ থেকে ইস্রায়েলীয়দের বেরিয়ে আসবার পর চারশো আশি বছরের সময়ে ইস্রায়েলীয়দের উপর শলোমনের রাজত্বের চতুর্থ বৎসরের সিব মাসে, অর্থাৎ দ্বিতীয় মাসে শলোমন সদাপ্রভুর ঘরটি তৈরী করতে শুরু করলেন।
\v 2 রাজা শলোমন সদাপ্রভুর জন্য যে ঘরটি তৈরী করেছিলেন তা লম্বায় ছিল ষাট হাত, চওড়ায় কুড়ি হাত ও উচ্চতায় ত্রিশ হাত।
\s5
\v 3 উপাসনা ঘরের প্রধান কামরাটির সামনে যে বারান্দা ছিল সেটি ঘরের চওড়ার মাপ অনুসারে কুড়ি হাত লম্বা আর ঘরের সামনে থেকে তার চওড়া দিকটা ছিল দশ হাত।
\v 4 ঘরটার দেয়ালের মধ্যে তিনি সরু জালি দেওয়া জানালা তৈরী করলেন।
\s5
\v 5 আর তিনি ঘরের ভিতরের দেওয়ালের চারিদিকে, মন্দিরের ও ভিতরের ঘরের দেওয়ালের চারিদিকে থাক তৈরী করলেন এবং চারিদিকে কামরা তৈরী করলেন। তার মধ্যে অনেকগুলো কামরা ছিল।
\v 6 নীচের তলার কামরাগুলো ছিল পাঁচ হাত চওড়া, দ্বিতীয় তলার কামরাগুলো ছিল ছয় হাত চওড়া এবং তৃতীয় তলার কামরাগুলো ছিল সাত হাত চওড়া, কারণ উপাসনা ঘরের দেয়ালের বাইরের দিকের গায়ে কয়েকটা থাক তৈরী করা হয়েছিল। তার ফলে ঐ তিন তলা ঘর তৈরী করবার জন্য উপাসনা ঘরের দেয়ালের গায়ে কোনো কড়িকাঠ লাগাবার দরকার হল না।
\s5
\v 7 খাদের যে সব পাথর কেটে ঠিক করা হয়েছিল কেবল সেগুলোই এনে উপাসনা ঘরটা তৈরীর কাজে ব্যবহার করা হল। উপাসনা ঘরটি তৈরী করবার সময় সেখানে কোনো হাতুড়ি, কুড়াল কিম্বা অন্য কোনো লোহার যন্ত্রপাতির আওয়াজ শোনা গেল না।
\v 8 নীচের তলায় ঢুকবার পথ ছিল উপাসনা ঘরের দক্ষিণ দিকে; সেখান থেকে একটা সিঁড়ি দোতলা এবং তার পরে তিন তলায় উঠে গেছে।
\s5
\v 9 এইভাবে তিনি উপাসনা ঘরটা তৈরী করেছিলেন এবং তা শেষও করেছিলেন। তিনি এরস কাঠের তক্তা ও কড়িকাঠ দিয়ে তার ছাদও দিয়েছিলেন।
\v 10 উপাসনা ঘরের চারিদিকে পাঁচ হাত করে উঁচু ঘরের থাক করলেন, তা এরস কাঠের মাধ্যমে ঘরের সঙ্গে যুক্ত ছিল।
\s5
\v 11 শলোমনের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য বলা হল,
\v 12 “তুমি যদি আমার নির্দেশ মত চল, আমার সব নিয়ম পালন কর এবং আমার সমস্ত আদেশের বাধ্য হও তাহলে যে উপাসনা ঘরটি তুমি তৈরী করছ তার বিষয়ে আমি তোমার বাবা দায়ূদের কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছি তা আমি তোমার মধ্য দিয়ে পূর্ণ করব।
\v 13 আমি ইস্রায়েলীয়দের মধ্যে বাস করব এবং আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের আমি ত্যাগ করব না।”
\s5
\v 14 শলোমন উপাসনা ঘরটি তৈরী করে এইভাবে শেষ করলেন।
\v 15 মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত এরস কাঠের তক্তা দিয়ে তিনি দেয়ালের ভিতরের দিকটা ঢেকে দিলেন এবং মেঝেটা ঢেকে দিলেন দেবদারু কাঠের তক্তা দিয়ে।
\s5
\v 16 উপাসনা ঘরের মধ্যে মহাপবিত্র স্থান নামে একটা ভিতরের কামরা তৈরী করবার জন্য তিনি উপাসনা ঘরের পিছনের অংশের কুড়ি হাত জায়গা মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত এরস কাঠের তক্তা দিয়ে আলাদা করে নিলেন।
\v 17 মহাপবিত্র স্থানের সামনে প্রধান বড় কামরাটি ছিল চল্লিশ হাত লম্বা।
\v 18 উপাসনা ঘরের মধ্যেকার এরস কাঠের উপরে লতানো গাছের ফল ও ফোটা ফুল খোদাই করা হল। সব কিছু এরস কাঠের ছিল, কোনো পাথর দেখা যাচ্ছিল না।
\s5
\v 19 উপাসনা ঘরের মধ্যে সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুকটি বসাবার জন্য শলোমন এইভাবে মহাপবিত্র স্থানটা তৈরী করলেন।
\v 20 সেই স্থানটা ছিল কুড়ি হাত লম্বা, কুড়ি হাত চওড়া ও কুড়ি হাত উঁচু। খাঁটি সোনা দিয়ে তিনি তার ভিতরটা মুড়িয়ে দিলেন এবং বেদীটাও তিনি এরস কাঠ দিয়ে ঢেকে দিলেন।
\s5
\v 21 উপাসনা ঘরের প্রধান কামরার দেয়াল তিনি খাঁটি সোনা দিয়ে ঢেকে দিলেন এবং মহাপবিত্র স্থানের সামনে সোনার শিকল লাগিয়ে দিলেন। সেই মহাপবিত্র স্থানের দেয়ালও তিনি সোনা দিয়ে ঢেকে দিলেন।
\v 22 উপাসনা ঘরের ভিতরের সমস্ত জায়গাটা তিনি এইভাবে সোনা দিয়ে মুড়ে দিয়েছিলেন, যে পর্যন্ত না সমস্ত শেষ হলো। মহাপবিত্র স্থানের বেদীও তিনি সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 23 তিনি মহাপবিত্র জায়গার মধ্যে জিতকাঠের দুটি করূব তৈরী করলেন, যার উচ্চতা দশ হাত।
\v 24 এক করূবের একটি ডানা পাঁচ হাত ও অন্য ডানা পাঁচ হাত ছিল; একটি ডানার শেষভাগ থেকে অন্য ডানার শেষ ভাগ পর্যন্ত দশ হাত হল।
\v 25 আর দ্বিতীয় করূবও দশ হাত ছিল; দুটি করূবের পরিমাণ ও আকার সমান ছিল।
\v 26 প্রথম ও দ্বিতীয় দুটি করূবই দশ হাত উঁচু ছিল।
\s5
\v 27 মহাপবিত্র স্থানে তিনি সেই করূব দুটি ডানা মেলে দেওয়া অবস্থায় রাখলেন। একটি করূবের ডানা এক দেয়াল ও অন্য করূবটির ডানা অন্য দেয়াল ছুঁয়ে থাকল আর ঘরের মাঝখানে তাদের অন্য ডানা দুটি একটি অন্যটির আগা ছুঁয়ে থাকল।
\v 28 তিনি করূব দুটিকে সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিলেন।
\s5
\v 29 উপাসনা ঘরের দুইটি কামরার সমস্ত দেয়ালে করূব, খেজুর গাছ এবং ফোটা ফুল খোদাই করা ছিল।
\v 30 কামরা দুটির মেঝেও তিনি সোনা দিয়ে ঢেকে দিলেন।
\s5
\v 31 মহাপবিত্র স্থানের দরজাটা তিনি জিতকাঠ দিয়ে তৈরী করলেন। সেই দরজার কাঠামোর পাঁচটা কোণা ছিল।
\v 32 দরজার দুই পাল্লাতে তিনি করূব, খেজুর গাছ ও ফোটা ফুল খোদাই করে সোনা দিয়ে মুড়িয়ে দিলেন এবং সেই করূব ও খেজুর গাছের উপরকার সোনা পিটিয়ে সেগুলোর আকার দিলেন।
\s5
\v 33 প্রধান কামরার দরজার জন্য তিনি জিতকাঠ দিয়ে একটা চারকোণা কাঠামো তৈরী করলেন এবং দেবদারু কাঠ দিয়ে দরজার দুটি পাল্লা তৈরী করলেন।
\v 34 কব্‌জা লাগানো দুটি তক্তা দিয়ে প্রত্যেকটা পাল্লা তৈরী করা হল। তাতে পাল্লাগুলো ভাঁজ করা যেত।
\v 35 সেই পাল্লাগুলোর উপর তিনি করূব, খেজুর গাছ ও ফোটা ফুল খোদাই করে সোনার পাত দিয়ে মুড়িয়ে দিলেন।
\s5
\v 36 সুন্দর করে কাটা তিন সারি পাথর ও এরস গাছের এক সারি মোটা কাঠ দিয়ে তিনি ভিতরের উঠানের চারপাশের দেয়াল তৈরী করলেন।
\s5
\v 37 চতুর্থ বছরের সিব মাসে সদাপ্রভুর ঘরের ভিত্তি গাঁথা হয়েছিল।
\v 38 পরিকল্পনা অনুসারে উপাসনা ঘরটির সমস্ত কাজ এগারো বছরের বূল মাসে, অর্থাৎ অষ্টম মাসে শেষ হয়েছিল। এই উপাসনা ঘরটি তৈরী করতে শলোমন সাত বছর নিয়েছিল।
\s5
\c 7
\ms শলোমনের পাকা বাড়ি তৈরী।
\p
\v 1 শলোমন নিজের রাজবাড়ীটা তৈরী করতে তেরো বছর নিয়েছিলেন এবং তিনি তার বাড়ি তৈরী করা শেষ করলেন।
\v 2 তিনি লেবাননের বনের রাজবাড়িটি তৈরী করেছিলেন। এই ঘরটা একশো হাত লম্বা, পঞ্চাশ হাত চওড়া ও ত্রিশ হাত উঁচু ছিল। এরস কাঠের চার সারি থামের উপর এরস কাঠের ছেঁটে নেওয়া কড়িকাঠগুলি বসানো ছিল।
\s5
\v 3 থামের উপর বসানো কড়িকাঠগুলির উপরে এরস কাঠ দিয়ে ছাদ দেওয়া হল; এক এক সারিতে পনেরোটা করে পঁয়তাল্লিশটা কড়িকাঠ ছিল।
\v 4 ঘরের চারপাশের দেয়ালে মুখোমুখি তিন সারি জানলা দেওয়া হল।
\v 5 সমস্ত দরজা ও থামগুলো ছিল চার কোণা কড়িকাঠের; জানলাগুলো তিন সারিতে মুখোমুখি করে তৈরী করা হয়েছিল।
\s5
\v 6 সেখানে একটি স্তম্ভশ্রেণী ছিল যেটি লম্বায় পঞ্চাশ হাত আর চওড়ায় ত্রিশ হাত। তার সামনে ছিল একটা ছাদ দেওয়া বারান্দা, আর সেই ছাদ কতগুলো থামের উপর বসানো ছিল।
\s5
\v 7 সিংহাসনের বড় ঘরে তিনি বিচার করবেন, বিচার করবার জন্য এই ঘরটা তৈরী করা হল। ঘরের দেয়াল নীচ থেকে উপর পর্যন্ত তিনি এরস কাঠ দিয়ে ঢেকে দিলেন।
\s5
\v 8 যে ঘরে তিনি বাস করবেন সেটা বিচারের ঘরের পিছনে একই রকম তৈরী করলেন। ফরৌণের যে মেয়েকে তিনি বিয়ে করেছিলেন তাঁর জন্য সেই রকম করেই আর একটা ঘর তৈরী করলেন।
\s5
\v 9 রাজবাড়ীর বড় উঠান এবং সমস্ত দালানগুলোর ভিত্তি থেকে ওপর পর্যন্ত সবই ঠিক মাপে কাটা দামী পাথর দিয়ে তৈরী করা হয়েছিল। সেই পাথরগুলো করাত দিয়ে সমান করে কেটে নেওয়া হয়েছিল।
\v 10 দালানগুলোর ভিত্তি গাঁথা হয়েছিল বড় বড় দামী পাথর দিয়ে। সেগুলোর কোনো কোনোটা ছিল দশ হাত আবার কোনো কোনোটা আট হাত।
\s5
\v 11 ভিত্তির পাথরগুলোর উপর ছিল ঠিক মাপে কাটা দামী পাথর ও এরস কাঠ।
\v 12 বারান্দা সুদ্ধ সদাপ্রভুর ঘরের ভিতরের উঠানের মতই রাজবাড়ীর বড় উঠানের চারপাশের দেয়াল সুন্দর করে কাটা তিন সারি পাথর ও এরস গাছের এক সারি মোটা কাঠ দিয়ে তৈরী করা হয়েছিল।
\s উপাসনা ঘরের আসবাবপত্রের বর্ণনা।
\m
\s5
\v 13 রাজা শলোমন সোরে লোক পাঠিয়ে হীরমকে আনালেন।
\v 14 তাঁর মা ছিলেন বিধবা এবং নপ্তালি গোষ্ঠীর মেয়ে। তাঁর বাবা ছিলেন সোরের লোক। হীরম ব্রোঞ্জের কারিগর ছিলেন। হীরম ব্রোঞ্জের সমস্ত রকম কাজ জানতেন এবং সেই কাজে তিনি খুব পাকা ছিলেন। তিনি রাজা শলোমনের কাছে আসলেন এবং তাঁকে যে সব কাজ দেওয়া হল তা করলেন।
\s5
\v 15 হীরম ব্রোঞ্জের দুটি থাম তৈরী করলেন। তার প্রত্যেকটা লম্বায় ছিল আঠারো হাত আর পরিধিতে বারো হাত।
\v 16 সেই দুটি থামের উপরে দেবার জন্য তিনি ব্রোঞ্জ ছাঁচে ফেলে দুটি মাথা তৈরী করলেন। মাথা দুটির প্রত্যেকটা পাঁচ হাত করে উঁচু ছিল।
\v 17 স্তম্ভের উপরে অবস্থিত সে মাথার জন্য জালি কাজের জাল ও শিকলের কাজের পাকান দড়ি ছিল; এক মাথার জন্য সাতটা, অন্য মাথার জন্যও সাতটা।
\s5
\v 18 পাকানো সাতটা শিকল আর দুই সারি ব্রোঞ্জের ডালিম ফল তৈরী করলেন।
\v 19 থামের উপরকার মাথা দুটির উপরের চার হাত ছিল লিলি ফুলের আকারের।
\s5
\v 20 মাথার নীচের অংশটা গোলাকার ছিল। সেই গোলাকার অংশের চারপাশে শিকলগুলো লাগানো ছিল। প্রত্যেকটি মাথার চারপাশে শিকলের সঙ্গে সারি সারি করে দুশো ডালিম ফল লাগানো ছিল।
\v 21 হীরম সেই দুইটি ব্রোঞ্জের থাম উপাসনা ঘরের বারান্দায় স্থাপন করলেন। ডান দিকে যেটা রাখলেন তার নাম দেওয়া হল যাখীন যার মানে “যিনি স্থাপন করেন” এবং বাম দিকে যেটা রাখলেন তার নাম দেওয়া হল বোয়স যার মানে “তাঁর মধ্যেই শক্তি”।
\v 22 লিলি ফুলের আকারের ব্রোঞ্জের মাথা দুটি সেই থাম দুটির উপরে বসানো ছিল। এইভাবে সেই থাম তৈরীর কাজ শেষ করা হল।
\s5
\v 23 তারপর হীরম ব্রোঞ্জের ছাঁচে ঢেলে জল রাখবার জন্য একটা গোল বিরাট পাত্র তৈরী করলেন। পাত্রটার এক দিক থেকে সোজাসুজি অন্য দিকের মাপ ছিল দশ হাত, গভীরতা পাঁচ হাত এবং বেড়ের চারপাশের মাপ ত্রিশ হাত।
\v 24 পাত্রটার মুখের বাইরের কিনারার নীচে প্রতি হাত জায়গায় দশটা করে দুই সারি ব্রোঞ্জের লতানো গাছের ফল ছিল। যে ছাঁচের মধ্যে পাত্রটা তৈরী করা হয়েছিল সেই ছাঁচের মধ্যেই ফলগুলোর আকার ছিল বলে সবটা মিলে একটা জিনিসই হল।
\s5
\v 25 পাত্রটা বারোটা ব্রোঞ্জের গরুর পিঠের উপর বসানো ছিল। সেগুলোর তিনটা উত্তরমুখী, তিনটা পশ্চিমমুখী, তিনটা দক্ষিণমুখী ও তিনটা পূর্বমূখী ছিল এবং তাদের পিছনগুলো ছিল ভিতরের দিকে।
\v 26 পাত্রটা ছিল চার আঙ্গুল পুরু। তার মুখটা একটা বাটির মুখের মত ছিল এবং লিলি ফুলের পাপড়ির মত বাইরের দিকে উল্টানো ছিল। তাতে চুয়াল্লিশ হাজার লিটার জল ধরত।
\s5
\v 27 হীরম ব্রোঞ্জের দশটা বেদির মত জিনিস তৈরী করলেন। সেগুলোর প্রত্যেকটা চার হাত লম্বা, চার হাত চওড়া ও তিন হাত উঁচু ছিল।
\v 28 বেদির চারপাশের ব্রোঞ্জের পাত কাঠামোর মধ্যে বসানো ছিল।
\v 29 সেই পাতগুলোর উপরে সিংহ, গরু ও করূবের মূর্তি ছিল এবং উপরের কাঠামোর সঙ্গে লাগানো একটা গামলা বসাবার আসন ছিল, সিংহ ও গরুর নীচে ফুলের মত নক্‌শা করা ছিল।
\s5
\v 30 প্রত্যেকটা বেদিতে ব্রোঞ্জের চক্র সুদ্ধ ব্রোঞ্জের চারটা চাকা ছিল। গামলা বসাবার জন্য চার কোণায় ব্রোঞ্জের চারটা অবলম্বন ছিল। সেগুলোতেও ফুলের মত নকশা করা ছিল।
\v 31 গামলা বসাবার আসনের মধ্যে একটা গোলাকার ফাঁকা জায়গা ছিল। সেই ফাঁকা জায়গাটার এক দিক থেকে সোজাসুজি অন্য দিকের মাপ হল দেড় হাত। সেই ফাঁকা জায়গার চারদিকে খোদাই করা কারুকাজ ছিল। গামলাটা সেই ফাঁকা জায়গার মধ্যে বসানো হলে পর আসন থেকে গামলাটার উচ্চতা হল এক হাত। বাক্সের পাতগুলো গোল ছিল না, চৌকো ছিল।
\s5
\v 32 পাতগুলোর নীচে চারটা চাকা ছিল আর চাকার অক্ষদন্ডগুলো বাক্সের সঙ্গে লাগানো ছিল। প্রত্যেকটা চাকা দেড় হাত উঁচু ছিল।
\v 33 চাকাগুলো রথের চাকার মত ছিল; অক্ষদন্ড, চাকার বেড়, শিক ও মধ্যের নাভি সবই ছাঁচে ঢালাই করা ধাতু ছিল।
\s5
\v 34 প্রত্যেকটা বাক্সের চার কোণায় চারটা অবলম্বন লাগানো ছিল।
\v 35 বেদির উপরে পিতল দিয়ে তৈরী আধ হাত উঁচু একটা গোলাকার জিনিস ছিল। এই গোলাকার জিনিসটা বেদির সঙ্গেই তৈরী করা হয়েছিল।
\s5
\v 36 সেই গোলাকার জিনিসের বাইরের দিকে ভাগে ভাগে করূব, সিংহ ও খেজুর গাছ খোদাই করা হয়েছিল। প্রতিটি ভাগের ফাঁকে অবলম্বন ছিল, আর সেই অবলম্বনের উপরে তৈরী করা ছিল ফুলের মত নক্‌শা।
\v 37 এইভাবেই তিনি দশটা বেদি তৈরী করলেন। সেগুলো একই ছাঁচে ঢালা হয়েছিল এবং আয়তন ও আকারে একই রকম ছিল।
\s5
\v 38 তিনি প্রত্যেকটা বেদির জন্য একটা করে ব্রোঞ্জের দশটা গামলা তৈরী করলেন। প্রত্যেকটা গামলার বেড় ছিল চার হাত এবং তাতে চল্লিশ বাৎ আনুমানিক আটশো আশি লিটার জল ধরত। ঐ দশটি বেদির মধ্যে এক একটি বেদির ওপরে এক এক গামলা থাকত।
\v 39 তিনি উপাসনা ঘরের দক্ষিণ দিকে পাঁচটা এবং উত্তর দিকে পাঁচটা বাক্স রাখলেন; আর দক্ষিণ পূর্ব কোণায় রাখলেন সেই বিরাট পাত্রটা।
\s5
\v 40 এছাড়া তিনি অন্যান্য পাত্র, বড় হাতা ও বাটি তৈরী করলেন। এইভাবে রাজা শলোমনের জন্য হীরম সদাপ্রভুর ঘরের যে যে কাজ আরম্ভ করেছিলেন তা শেষ করলেন। সেগুলো হল:
\v 41 দুটো থাম, থামের উপরকার গোলাকার দুটো বাটির মতো জিনিস ছিল, সেই বাটির উপরটা সাজাবার জন্য দুই সারি কারুকাজ করা জালির ঢাকনা ছিল;
\s5
\v 42 সেই জালিকার্য্যের জন্য চারশো ডালিম থামের উপরকার বাটির গোলাকার অংশটা সাজাবার জন্য প্রত্যেক সারি জালিকার্য্যের জন্য দুই সারি ডালিম;
\v 43 দশটা বেদি ও বেদির ওপরে দশটা গামলা;
\s5
\v 44 বিরাট পাত্র ও তার নীচের বারোটা গরু তৈরী করছিলেন;
\v 45 পাত্র, বড় হাতা ও বাটি। হীরম যে সব জিনিস রাজা শলোমনের নির্দেশে সদাপ্রভুর ঘরের জন্য তৈরী করেছিলেন সেগুলো ছিল চক্‌চকে পিতলের।
\s5
\v 46 যর্দনের সমভূমিতে সুক্কোৎ ও সর্ত্তনের মাঝামাঝি এক জায়গায় রাজা এই সব জিনিস মাটির ছাঁচে ফেলে তৈরী করিয়েছিলেন।
\v 47 জিনিসগুলোর সংখ্যা এত বেশী ছিল যে, শলোমন সেগুলো ওজন করেননি কারণ তার ওজন বেশি ভারী ছিল; সেইজন্য পিতলের পরিমাণ জানা যায় নি।
\s5
\v 48 সদাপ্রভুর ঘরের যে সব জিনিসপত্র শলোমন তৈরী করিয়েছিলেন সেগুলো হল: সোনার বেদী, দর্শন রুটি রাখবার টেবিল;
\v 49 খাঁটি সোনার বাতিদান সেগুলো ছিল মহাপবিত্র স্থানের সামনে, ডানে পাঁচটা ও বাঁয়ে পাঁচটা; সোনার ফুল, বাতি এবং চিম্‌টা;
\s5
\v 50 খাঁটি সোনার পেয়ালা, সলতে পরিষ্কার করবার চিমটা, বাটি, চামচ ও আগুন রাখবার পাত্র; ভিতরের কামরার, অর্থাৎ মহাপবিত্র স্থানের দরজার জন্য এবং উপাসনা ঘরের প্রধান কামরার দরজার জন্য সোনার কবজা।
\s5
\v 51 এইভাবে রাজা শলোমন সদাপ্রভুর ঘরের সমস্ত কাজ শেষ করলেন। তারপর তিনি তাঁর বাবা দায়ূদ যে সব জিনিস সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আলাদা করে রেখেছিলেন সেগুলো নিয়ে আসলেন। সেগুলো ছিল সোনা, রূপা এবং বিভিন্ন পাত্র। সেগুলো তিনি সদাপ্রভুর ঘরের ধনভাণ্ডারে রেখে দিলেন।
\s5
\c 8
\ms মন্দির প্রতিষ্ঠা।
\p
\v 1 তখন রাজা শলোমন দায়ূদ শহর, অর্থাৎ সিয়োন থেকে সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুকটি নিয়ে আসবার জন্য ইস্রায়েলের বৃদ্ধ নেতাদের, গোষ্ঠী সর্দারদের ও ইস্রায়েলীয় বংশের প্রধান লোকদের যিরূশালেমে তাঁর কাছে উপস্থিত করলেন।
\v 2 তাতে এথানীম মাসে, অর্থাৎ সপ্তম মাসে পর্বের সময়ে ইস্রায়েলের ঐ সমস্ত লোক রাজা শলোমনের কাছে জড়ো হলেন।
\s5
\v 3 ইস্রায়েলের সব বৃদ্ধ নেতারা উপস্থিত হলে পর যাজকরা সিন্দুকটি তুলে নিলেন।
\v 4 তাঁরা এবং লেবীয়েরা সদাপ্রভুর সিন্দুক, মিলন তাঁবু এবং সমস্ত পবিত্র পাত্র বয়ে নিয়ে আসলেন।
\v 5 রাজা শলোমন ও তাঁর কাছে জড়ো হওয়া সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা সিন্দুকটির সামনে এত ভেড়া ও গরু উৎসর্গ করলেন যে, সেগুলোর সংখ্যা গোনা গেল না।
\s5
\v 6 তারপর যাজকেরা সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকটি নির্দিষ্ট জায়গায়, উপাসনা ঘরের ভিতরের কামরায়, অর্থাৎ মহাপবিত্র স্থানে করূবদের ডানার নীচে নিয়ে রাখলেন।
\v 7 তাতে করূবদের মেলে দেওয়া ডানায় সিন্দুক ও তা বহন করবার ডাণ্ডাগুলো ঢাকা পড়ল।
\v 8 এই ডাণ্ডাগুলো এত লম্বা ছিল যে, সেগুলোর মাথা ভিতরের কামরার সামনের প্রধান কামরা, অর্থাৎ পবিত্র স্থান থেকে দেখা যেত, কিন্তু পবিত্র স্থানের বাইরে থেকে দেখা যেত না। সেগুলো আজও সেখানে রয়েছে।
\s5
\v 9 ইস্রায়েলীয়েরা মিসর দেশ থেকে বের হয়ে আসবার পর সদাপ্রভু হোরেব পাহাড়ে তাদের জন্য যখন ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন তখন মোশি সিন্দুকের মধ্যে যে পাথরের ফলক দুটি রেখেছিলেন সেই দুটি ছাড়া আর কিছুই তার মধ্যে ছিল না।
\v 10 পবিত্র স্থান থেকে যাজকেরা বের হয়ে আসবার পরেই সদাপ্রভুর ঘরের ভিতরটা মেঘে ভরে গেল।
\v 11 সেই মেঘের জন্য যাজকেরা সেবা কাজ করতে পারলেন না, কারণ সদাপ্রভুর মহিমায় তাঁর ঘরটা পরিপূর্ণ হয়ে গিয়েছিল।
\s5
\v 12 তখন শলোমন বললেন, “সদাপ্রভু, তুমি বলেছিলে তুমি ঘন অন্ধকারে বাস করবে।
\v 13 কিন্তু আমি এখন তোমার জন্য একটা উঁচু বাসস্থান তৈরী করেছি; এটা হবে তোমার চিরকালের বাসস্থান।”
\s5
\v 14 এই বলে রাজা জড়ো হওয়া সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের দিকে ঘুরে তাদের আশীর্বাদ করলেন। তখন লোকেরা দাঁড়িয়ে ছিল।
\v 15 তারপর তিনি বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব হোক। তিনি আমার বাবা দায়ূদের কাছে নিজের মুখে যা প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তা নিজেই পূর্ণ করলেন। তিনি বলেছিলেন,
\v 16 ‘আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের মিসর থেকে বের করে আনবার পর আমি ইস্রায়েলীয়দের কোনো গোষ্ঠীর শহর বেছে নিইনি যেখানে নিজেকে প্রকাশ করবার জন্য বাসস্থান হিসাবে একটা ঘর তৈরী করা যায়। কিন্তু আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের শাসন করবার জন্য আমি দায়ূদকে বেছে নিয়েছি।’
\s5
\v 17 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নাম একটা ঘর তৈরী করবার ইচ্ছা আমার বাবা দায়ূদের অন্তরে ছিল।
\v 18 কিন্তু সদাপ্রভু আমার বাবা দায়ূদকে বলেছিলেন, ‘আমার নামের একটা ঘর তৈরী করবার ইচ্ছা যে তোমার অন্তরে আছে তা ভাল।
\v 19 তবে ঘরটি তুমি তৈরী করবে না, করবে তোমার ছেলে, যে তোমার নিজের সন্তান। সেই আমার জন্য সেই ঘর তৈরী করবে।’
\s5
\v 20 সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞা রক্ষা করেছেন। আমার বাবা যে পদে ছিলেন আমি সেই পদ পেয়েছি। সদাপ্রভুর প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমি ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসেছি এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের জন্য আমি এই ঘরটি তৈরী করেছি।
\v 21 আমি সেখানে সেই সাক্ষ্য সিন্দুকটি রাখবার জায়গা ঠিক করেছি যার মধ্যে রয়েছে সদাপ্রভুর দেওয়া ব্যবস্থা, যা তিনি মিসর থেকে আমাদের পূর্বপুরুষদের বের করে আনবার পর তাঁদের জন্য স্থাপন করেছিলেন।”
\s5
\v 22 তারপর শলোমন সেখানে জড়ো হওয়া ইস্রায়েলীয়দের সামনে সদাপ্রভুর বেদীর কাছে দাঁড়িয়ে স্বর্গের দিকে হাত তুললেন।
\v 23 তিনি বললেন, “হে সদাপ্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, উপরে স্বর্গে কিম্বা নীচে পৃথিবীতে তোমার মত ঈশ্বর আর কেউ নেই। তোমার যে দাসেরা মনে প্রাণে তোমার পথে চলে তুমি তাদের পক্ষে তোমার অটল ভালবাসার ব্যবস্থা রক্ষা করে থাক।
\v 24 তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদের কাছে তুমি যে প্রতিজ্ঞা করেছিলে তা তুমি রক্ষা করেছ। তুমি মুখে যা বলেছ কাজেও তা করেছ, আর আজকে আমরা তা দেখতে পাচ্ছি।
\s5
\v 25 এখন হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদের কাছে তুমি যে প্রতিজ্ঞা করেছিলে তা রক্ষা কর। তুমি বলেছিলে যদি তাঁর ছেলেরা তাঁর মত করে তাদের সব কাজে তোমার ইচ্ছামত চলে তবে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবার জন্য তাঁর বংশে লোকের অভাব হবে না। যদি কেবলমাত্র আমার সামনে তুমি যেমন চলেছ তেমনি তোমার বংশধরেরা আমার সামনে চলবার জন্য নিজের নিজের পথে সচেতন থাকে।
\v 26 এখন, হে ইস্রায়েলের ঈশ্বর, যে প্রতিজ্ঞা তুমি তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদের কাছে করেছিলে তা সফল হোক।
\s5
\v 27 কিন্তু সত্যিই কি ঈশ্বর পৃথিবীতে বাস করবেন? মহাকাশে, এমন কি, মহাকাশের সমস্ত জায়গা জুড়েও যখন তোমার জায়গা কম হয় তখন আমার তৈরী এই ঘরে কি তোমার জায়গা হবে?
\v 28 তবুও হে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমার দাসের প্রার্থনা ও অনুরোধে তুমি কান দাও। তোমার দাস আজ তোমার কাছে কাকুতি মিনতি ও প্রার্থনা করছে তা তুমি শোন।
\s5
\v 29 যে জায়গার বিষয় তুমি বলেছ, ‘এই জায়গায় আমার বাসস্থান হবে, সেই জায়গার দিকে, অর্থাৎ এই উপাসনা ঘরের দিকে তোমার চোখ দিনরাত খোলা থাকুক; আর এই জায়গার দিকে ফিরে তোমার দাস যখন প্রার্থনা করবে তখন তুমি তা শুনো।
\v 30 এই জায়গার দিকে ফিরে তোমার দাস ও তোমার লোক ইস্রায়েলীয়েরা যখন অনুরোধ করবে তখন তাতে তুমি কান দিয়ো। তোমার বাসস্থান স্বর্গ থেকে তা তুমি শুনো এবং তাদের ক্ষমা কোরো।
\s5
\v 31 কোনো লোককে প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে পাপ করবার দোষে দোষী করা হলে তার নিজের উপর অভিশাপ ডেকে আনবার জন্য যদি তাকে শপথ করতে বাধ্য করা হয় এবং সে গিয়ে তোমার এই ঘরের বেদীর সামনে সেই শপথ করে,
\v 32 তবে তুমি স্বর্গ থেকে সেই কথা শুনো এবং সেইমত কাজ কোরো। তখন তোমার দাসদের তুমি বিচার করে দোষীর কাজের ফল তার মাথায় চাপিয়ে দিয়ে তাকে দোষী বলে প্রমাণ কোরো আর ধার্মিককে তার কাজ অনুসারে ফল দিয়ে তাকে ধার্মিক বলে প্রমাণ কোরো।
\s5
\v 33 তোমার বিরুদ্ধে পাপ করবার দরুন যখন তোমার লোক ইস্রায়েলীয়েরা শত্রুর কাছে হেরে গিয়ে আবার তোমার কাছে ফিরে আসবে এবং এই উপাসনা ঘরে তোমার গৌরব করে তোমার কাছে প্রার্থনা ও অনুরোধ করবে,
\v 34 তখন স্বর্গ থেকে তুমি তা শুনো এবং নিজের লোক ইস্রায়েলীয়দের পাপ ক্ষমা করে যে দেশ তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছ সেখানে আবার তাদের ফিরিয়ে নিয়ে এসো।
\s5
\v 35 তোমার বিরুদ্ধে তোমার লোকদের পাপ করবার দরুন যখন আকাশ বন্ধ হয়ে বৃষ্টি পড়বে না, তখন তারা যদি এই জায়গার দিকে ফিরে তোমার গৌরব করে ও তোমার কাছে প্রার্থনা করে এবং তোমার কাছ থেকে কষ্ট পেয়ে পাপ থেকে ফেরে,
\v 36 তবে তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনো এবং তোমার দাসদের, অর্থাৎ তোমার লোক ইস্রায়েলীয়দের পাপ ক্ষমা করে দিয়ো। জীবনে ঠিক ভাবে সৎ পথে চলতে তাদের শিক্ষা দিয়ো এবং সম্পত্তি হিসাবে যে দেশ তুমি তাদের দিয়েছ সেই দেশের উপর বৃষ্টি দিয়ো।
\s5
\v 37 যদি দেশে দুর্ভিক্ষ কিম্বা মহামারী দেখা দেয়, যদি ফসল শুকিয়ে যাওয়া রোগ কিম্বা ছাতাপড়া রোগ হয়, যদি ফসলে শুঁয়াপোকা বা পঙ্গপাল লাগে, যদি শত্রু তাদের কোনো শহর ঘেরাও করে, যে কোনো রকম মহামারী কিম্বা রোগ দেখা দিক না কেন,
\v 38 তখন যদি তোমার লোক ইস্রায়েলীয়দের কেউ অনুতপ্ত হয়ে মনের কষ্টে এই উপাসনা ঘরের দিকে হাত বাড়িয়ে কোনো প্রার্থনা বা অনুরোধ করে,
\s5
\v 39 তবে তোমার বাসস্থান স্বর্গ থেকে তুমি তা শুনো। তুমি তাকে ক্ষমা কোরো ও সেইমত কাজ কোরো; তার সব কাজ অনুসারে বিচার কোরো, কারণ তুমি তো তার হৃদয়ের অবস্থা জান, কেবল তুমিই সমস্ত মানুষের হৃদয় জান।
\v 40 তুমি এটাই কোরো যাতে আমাদের পূর্বপুরুষদের তুমি যে দেশ দিয়েছ সেখানে সারা জীবন তোমার লোকেরা তোমাকে ভয় করে চলে।
\s5
\v 41 এছাড়া তোমার লোক ইস্রায়েলীয় নয় এমন কোনো বিদেশী তোমার মহান নাম এবং তোমার শক্তিশালী হাত
\v 42 ও বাড়িয়ে দেওয়া হাতের কথা শুনে তোমার উপাসনার জন্য যখন দূর দেশ থেকে এসে এই উপাসনা ঘরের দিকে ফিরে প্রার্থনা করবে,
\v 43 তখন তোমার বাসস্থান স্বর্গ থেকে তুমি তা শুনো। সে যা চায় তার জন্য তা কোরো যেন পৃথিবীর সমস্ত লোক তোমাকে জানতে পারে এবং তোমার নিজের লোক ইস্রায়েলীয়দের মত তারাও তোমাকে ভয় করতে পারে আর জানতে পারে যে, আমার তৈরী এই ঘর তোমারই ঘর।
\s5
\v 44 তুমি যখন তোমার লোকদের তাদের শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠাবে তখন তারা যেখানেই থাকুক না কেন সেখান থেকে যদি তোমার বেছে নেওয়া এই শহরের দিকে ও তোমার জন্য আমার তৈরী এই ঘরের দিকে ফিরে প্রার্থনা করে,
\v 45 তবে স্বর্গ থেকে তুমি তাদের প্রার্থনা ও অনুরোধ শুনো এবং তাদের বিষয়ে সাহায্য কর।
\s5
\v 46 তারা যখন তোমার বিরুদ্ধে পাপ করবে অবশ্য পাপ করে না এমন লোক নেই আর তুমি তাদের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে শত্রুর হাতে তাদের তুলে দেবে ও শত্রুরা তাদের বন্দী করে কাছে বা দূরে তাদের নিজেদের দেশে নিয়ে যাবে,
\v 47 তখন বন্দী হয়ে থাকা সেই দেশে যদি তারা মন ফিরায় এবং অনুতপ্ত হয়ে তোমাকে অনুরোধ করে বলে, ‘আমরা পাপ করেছি, অন্যায় করেছি এবং মন্দভাবে চলেছি, তবে তুমি তাদের প্রার্থনা শুনো।
\s5
\v 48 ঐ দেশে যদি তারা মনে প্রাণে তোমার দিকে ফেরে এবং তাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ তুমি দিয়েছ সেই দেশের দিকে, তোমার বেছে নেওয়া শহরের দিকে, তোমার জন্য আমার তৈরী এই ঘরের দিকে ফিরে তোমার কাছে প্রার্থনা করে,
\s5
\v 49 তবে তুমি তোমার বাসস্থান স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা ও অনুরোধ শুনো এবং তাদের বিষয়ে সাহায্য কর।
\v 50 আর তোমার যে লোকেরা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে সেই লোকদের তুমি ক্ষমা কোরো এবং তোমার বিরুদ্ধে করা তাদের সমস্ত দোষও ক্ষমা করো। তাদের যারা বন্দী করে নিয়ে গেছে সেই লোকদের মন এমন করো যাতে তারা তাদের প্রতি দয়া করে;
\s5
\v 51 কারণ ইস্রায়েলীয়েরা তো তোমারই লোক, তোমারই সম্পত্তি যাদের তুমি মিসর থেকে উদ্ধার করে এনেছ, বের করে এনেছ লোহা গলানো চুল্লীর ভিতর থেকে।
\v 52 তোমার দাসের ও তোমার লোক ইস্রায়েলীয়দের অনুরোধের প্রতি তুমি মনোযোগ দিয়ো, আর যখন তারা তোমাকে ডাকবে তখন তুমি তাদের কথা শুনো।
\v 53 হে প্রভু সদাপ্রভু, আমাদের পূর্বপুরুষদের মিসর থেকে বের করে আনবার সময় তোমার দাস মোশির মধ্য দিয়ে তোমার ঘোষণা অনুসারে তোমার নিজের সম্পত্তি হবার জন্য জগতের সমস্ত জাতির মধ্য থেকে তুমি ইস্রায়েলীয়দের আলাদা করে নিয়েছ।”
\s5
\v 54 সদাপ্রভুর কাছে এই সব প্রার্থনা ও মিনতি শেষ করবার পর শলোমন সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদীর সামনে থেকে উঠলেন; এতক্ষণ তিনি হাঁটু পেতে স্বর্গের দিকে হাত বাড়িয়ে ছিলেন।
\v 55 তিনি উঠে দাঁড়িয়ে জড়ো হওয়া সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের জোর গলায় এই বলে আশীর্বাদ করলেন,
\v 56 “ধন্য সদাপ্রভু, যিনি তাঁর নিজের প্রতিজ্ঞা অনুসারে তাঁর লোক ইস্রায়েলীয়দের বিশ্রাম দিয়েছেন। তাঁর দাস মোশির মধ্য দিয়ে তিনি যে সব মঙ্গল করবার প্রতিজ্ঞা করেছিলেন তার একটা কথাও তিনি খেলাপ করেন নি।
\s5
\v 57 আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যেমন আমাদের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ছিলেন তেমনি তিনি আমাদের সঙ্গেও থাকুন। তিনি যেন কখনও আমাদের ছেড়ে না যান কিম্বা ছেড়ে না দেন।
\v 58 আমরা তাঁর সব পথে চলবার জন্য এবং আমাদের পূর্বপুরুষদের কাছে তিনি যে সব আদেশ, নিয়ম ও নির্দেশ দিয়েছিলেন তা মেনে চলবার জন্য তিনি আমাদের হৃদয় তাঁর প্রতি বিশ্বস্ত রাখুন।
\s5
\v 59 আমি যে সব কথা বলে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করেছি তা দিনরাত আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনে থাকুক যাতে তিনি তাঁর নিজের দাসের ও তাঁর লোক ইস্রায়েলীয়দের প্রতিদিনের প্রয়োজন অনুসারে ব্যবস্থা করেন।
\v 60 এতে পৃথিবীর সমস্ত জাতিই জানতে পারবে যে, সদাপ্রভুই ঈশ্বর এবং তিনি ছাড়া ঈশ্বর আর কেউ নেই।
\v 61 অতএব আজকে যেমন সদাপ্রভুর নিয়ম ও আদেশ মেনে চলবার জন্য তোমাদের হৃদয় সম্পূর্ণভাবে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে আছে তেমনি সব সময় থাকুক।”
\s5
\v 62 তারপর রাজা ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা সদাপ্রভুর প্রতি উৎসর্গ করলেন।
\v 63 সদাপ্রভুর জন্য শলোমন বাইশ হাজার গরু ও এক লক্ষ কুড়ি হাজার ভেড়া দিয়ে মঙ্গলার্থক বলি অনুষ্ঠান করলেন। এইভাবে রাজা ও সমস্ত ইস্রায়েলীয় সদাপ্রভুর ঘর প্রতিষ্ঠা করলেন।
\s5
\v 64 সেই একই দিনে রাজা সদাপ্রভুর ঘরের সামনের উঠানের মাঝখানের অংশ সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আলাদা করলেন। সেখানে তিনি হোমবলি ও শস্য উৎসর্গের অনুষ্ঠান করলেন এবং মঙ্গলার্থক বলির চর্বি উৎসর্গ করলেন, কারণ সদাপ্রভুর সামনে থাকা পিতলের বেদীটা এই সব উৎসর্গের অনুষ্ঠান করবার জন্য ছোট ছিল।
\s5
\v 65 এইভাবে শলোমন ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা সেই সময় আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে সাত দিন ও আরও সাত দিন, মোট চৌদ্দ দিন ধরে একটা উৎসব করলেন। তারা ছিল এক বিরাট জনসংখ্যা; তারা হমাতের ঢোকার জায়গা থেকে মিসরের ছোট নদী পর্যন্ত সমস্ত এলাকা থেকে এসে যোগ দিয়েছিল।
\v 66 অষ্টম দিনে তিনি লোকদের বিদায় দিলেন। সদাপ্রভু তাঁর দাস দায়ূদ ও তাঁর লোক ইস্রায়েলীয়দের প্রতি যে সব মঙ্গল করেছেন তার জন্য আনন্দিত ও খুশী হয়ে লোকেরা রাজাকে ধন্যবাদ দিয়ে নিজের নিজের বাড়ি চলে গেল।
\s5
\c 9
\ms শলোমনের কাছে ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা ইত্যাদি।
\p
\v 1 এইভাবে শলোমন সদাপ্রভুর ঘর, রাজবাড়ী আর নিজের ইচ্ছামত যে সব কাজ করতে চেয়েছিলেন তা শেষ করলেন।
\v 2 তখন এইরূপ হলো যে, সদাপ্রভু দ্বিতীয়বার তাঁকে দেখা দিলেন যেমন গিবিয়োনে একবার তাঁকে দেখা দিয়েছিলেন।
\s5
\v 3 সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “তুমি যে প্রার্থনা ও অনুরোধ আমার কাছে করেছ তা আমি শুনেছি। এই যে ঘর তুমি তৈরী করেছ; এর মধ্যে চিরকালের জন্য আমার নাম স্থাপনের জন্য আমি এটা পবিত্র করলাম এবং এই জায়গায় সব সময় আমার চোখ ও মন থাকবে।
\s5
\v 4 আর তুমি, তুমি যদি তোমার বাবা দায়ূদের মত হৃদয়ের বিশুদ্ধতা, সৎভাবে আমার সামনে চল এবং আমার সব আদেশ, নিয়ম ও নির্দেশ পালন কর,
\v 5 তবে আমি চিরকালের জন্য ইস্রায়েলের উপর তোমার রাজসিংহাসন স্থায়ী করব। এই কথা আমি তোমার বাবা দায়ূদকে প্রতিজ্ঞা করে বলেছিলাম, ‘ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবার জন্য তোমার বংশে লোকের অভাব হবে না।’
\s5
\v 6 কিন্তু যদি তোমরা কিম্বা তোমাদের সন্তানেরা আমার কাছ থেকে ফিরে যাও এবং তোমাদের কাছে দেওয়া আমার আদেশ ও নিয়ম পালন না করে দেব দেবতার সেবা ও পূজা কর,
\v 7 তবে ইস্রায়েলীয়দের যে দেশ আমি দিয়েছি তা থেকে আমি তাদের দূর করে দেব। এই যে উপাসনা ঘরটি আমি আমার বাসস্থান হিসাবে আলাদা করেছি সেটাও আমার চোখের সামনে থেকে দূর করে দেব। তখন ইস্রায়েল অন্যান্য সব জাতির কাছে টিট্‌কারির ও তামাশার পাত্র হবে।
\s5
\v 8 এই উপাসনা ঘরটি এখন মহান হলেও তখন যারা তার পাশ দিয়ে যাবে তারা চমকে উঠবে এবং ঠাট্টা করে বলবে, ‘কেন সদাপ্রভু এই দেশ ও এই উপাসনা ঘরটির প্রতি এই রকম করলেন?
\v 9 এর উত্তরে লোকে বলবে, ‘এর কারণ হল, যিনি তাদের পূর্বপুরুষদের মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন সেই পূর্বপূরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে তারা ত্যাগ করেছে। তারা দেব দেবতার পিছনে গিয়ে তাদের পূজা ও সেবা করেছে। সেইজন্যই সদাপ্রভু এই সব অমঙ্গল তাদের উপর এনেছেন’।”
\s5
\v 10 সদাপ্রভুর ঘর ও রাজবাড়ী তৈরী করতে শলোমনের কুড়ি বছর লেগেছিল।
\v 11 সোরের রাজা হীরম শলোমনের ইচ্ছামত এরস ও দেবদারু কাঠ ও সোনা জুগিয়েছিলেন বলে রাজা শলোমন গালীল দেশের কুড়িটা গ্রাম তাঁকে দান করলেন।
\s5
\v 12 হীরম শলোমনের দেওয়া সেই শহরগুলো দেখবার জন্য সোর থেকে আসলেন, কিন্তু সেগুলো দেখে তিনি সন্তুষ্ট হলেন না।
\v 13 তিনি শলোমনকে বললেন, “ভাই, এগুলো কি রকম শহর আপনি আমাকে দিলেন?” তিনি সেগুলোর নাম দিলেন কাবূল দেশ যার মানে “কোনো কাজের নয়”। আজও সেগুলোর সেই নামই রয়ে গেছে।
\v 14 হীরম মোট সাড়ে চার টনেরও বেশী সোনা রাজাকে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 15 রাজা শলোমন সদাপ্রভুর ঘর, নিজের রাজবাড়ী, মিল্লো, যিরূশালেমের দেয়াল, হাৎসোর, মগিদ্দো ও গেষর তৈরী করবার জন্য অনেক লোকদের কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন।
\v 16 এর আগে মিসরের রাজা ফরৌণ গেষর অধিকার করে সেটা আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিলেন আর সেখানকার বাসিন্দা কনানীয়দের মেরে ফেলেছিলেন। পরে ফরৌণ জায়গাটা তাঁর মেয়েকে, অর্থাৎ শলোমনের স্ত্রীকে বিয়ের যৌতুক হিসাবে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 17 সেইজন্য শলোমন গেষর আবার তৈরী করে নিয়েছিলেন। এছাড়া তিনি নীচের বৈৎ হোরোণ,
\v 18 বালৎ, যিহূদার মরু এলাকার তামর,
\v 19 তাঁর সমস্ত ভাণ্ডার শহর এবং রথ ও ঘোড়সওয়ারদের জন্য শহর তৈরী করলেন, অর্থাৎ যিরূশালেম, লেবানন ও তাঁর শাসনের অধীনে যে সব রাজ্য ছিল সেগুলোর মধ্যে যা যা নিজের খুশির জন্য তিনি তৈরী করতে চেয়েছিলেন তা সবই করলেন।
\s5
\v 20 যারা ইস্রায়েলীয় ছিল না, অর্থাৎ যে সব ইমোরীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের বংশধরেরা তখনও দেশে বেঁচে ছিল,
\v 21 যাদের ইস্রায়েলীয়েরা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে পারে নি, তাদেরকেই শলোমন দাস হিসাবে কাজ করতে বাধ্য করেছিলেন, আর তারা আজও সেই কাজ করছে।
\s5
\v 22 কিন্তু তিনি কোনো ইস্রায়েলীয়কে দাস করেন নি; তারা ছিল তাঁর যোদ্ধা, তাঁর কর্মচারী, তাঁর অধীন শাসনকর্তা, তাঁর সেনাপতি এবং তাঁর রথচালক ও ঘোড়সওয়ারদের সেনাপতি।
\s5
\v 23 এছাড়া শলোমনের সব কাজের দেখাশোনার ভার পাওয়া পাঁচশো পঞ্চাশ জন প্রধান কর্মচারী ছিল। যে লোকেরা কাজ করত এরা তাদের কাজ তদারক করত।
\s5
\v 24 ফরৌণের মেয়ে দায়ূদ শহর ছেড়ে তাঁর জন্য শলোমনের তৈরী করা রাজবাড়ীতে চলে আসলে পর শলোমন মিল্লো তৈরী করলেন।
\s5
\v 25 সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে শলোমন যে বেদীটা তৈরী করেছিলেন সেখানে বছরে তিনবার তিনি হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উত্সর্গ করতেন। সেই সঙ্গে তিনি সদাপ্রভুর সামনে ধূপও জ্বালাতেন। তাহলে দেখা যায়, শলোমন উপাসনা ঘরের সব কাজ শেষ করেছিলেন।
\s5
\v 26 রাজা শলোমন সুফসাগরের তীরে ইদোমের এলৎ শহরের কাছে ইৎসিয়োন গেবরে কিছু জাহাজ তৈরী করলেন।
\v 27 শলোমনের লোকদের সঙ্গে নৌবহরে কাজ করবার জন্য হীরম তাঁর কয়েকজন দক্ষ নাবিক সেই সব জাহাজে পাঠিয়ে দিলেন।
\v 28 তারা ওফীরে গিয়ে প্রায় সাড়ে ষোল টন সোনা নিয়ে এসে রাজা শলোমনকে দিল।
\s5
\c 10
\ms শলোমনের কাছে শিবা দেশের রাণীর আগমন।
\p
\v 1 শলোমনের সুনাম ও তাঁর মধ্য দিয়ে প্রকাশিত সদাপ্রভুর গৌরবের কথা শুনে শিবার দেশের রাণী কঠিন কঠিন প্রশ্ন করে তাঁকে পরীক্ষা করবার জন্য আসলেন।
\v 2 তিনি অনেক লোক ও উট নিয়ে যিরূশালেমে এসে পৌঁছালেন। উটের পিঠে ছিল সুগন্ধি মশলা, প্রচুর পরিমাণে মূল্যবান সোনা ও মণি মুক্তা। তিনি শলোমনের কাছে এসে তাঁর মনে যা যা ছিল তা সবই তাঁকে বললেন।
\s5
\v 3 শলোমন তাঁর সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন। রাজার কাছে কোনো কিছুই অজানা ছিল না, যা তিনি উত্তর দিতে পারবেন না।
\v 4 যখন শিবার রাণী শলোমনের সমস্ত জ্ঞান ও তাঁর তৈরী রাজবাড়ী দেখলেন।
\v 5 তিনি আরও দেখলেন তাঁর টেবিলের খাবার, তাঁর কর্মচারীদের থাকবার জায়গা, সুন্দর পোশাক পরা তাঁর সেবাকারীদের, তাঁর পানীয় পরিবেশকদের এবং সদাপ্রভুর ঘরে তাঁর হোমবলির পশুর সংখ্যা। এই সব দেখে তিনি অবাক হয়ে গেলেন।
\s5
\v 6 তিনি রাজাকে বললেন, “আমার নিজের দেশে থাকতে আপনার কাজ ও জ্ঞানের বিষয় যে খবর শুনেছি তা সত্যি।
\v 7 কিন্তু এখানে এসে নিজের চোখে না দেখা পর্যন্ত আমি সেই সব কথা বিশ্বাস করিনি। সত্যি, এর অর্ধেকও আমাকে বলা হয় নি। যে খবর আমি পেয়েছি আপনার জ্ঞান ও ধন তার চেয়ে অনেক বেশী।
\s5
\v 8 আপনার লোকেরা কত সুখী! যারা সব সময় আপনার সামনে থাকে ও আপনার জ্ঞানের কথা শোনে আপনার সেই কর্মচারীরা কত ধন্য!
\v 9 আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব হোক, যিনি আপনার উপর খুশী হয়ে আপনাকে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসিয়েছেন। ইস্রায়েলীয়দের তিনি চিরকাল ভালবাসেন বলে তিনি সুবিচার ও ন্যায় রক্ষার জন্য আপনাকে রাজা করেছেন।”
\s5
\v 10 তিনি রাজাকে সাড়ে চার টনেরও বেশী সোনা, অনেক সুগন্ধি মশলা ও মণি মুক্তা দিলেন। শিবার রাণী রাজা শলোমনকে যত মশলা দিয়েছিলেন তত মশলা আর কখনও দেশে আনা হয় নি।
\s5
\v 11 এছাড়া হীরমের যে জাহাজগুলো ওফীর থেকে সোনা নিয়ে আসত সেগুলো প্রচুর নীরস কাঠ আর মণি মুক্তাও নিয়ে আসত।
\v 12 রাজা সেই সব নীরস কাঠ দিয়ে সদাপ্রভুর ঘরের ও রাজবাড়ীর রেলিং এবং গায়কদের জন্য বীণা ও সুরবাহার তৈরী করালেন। আজ পর্যন্ত এত নীরস কাঠ কখনও দেশে আনা হয় নি আর দেখাও যায় নি।
\s5
\v 13 রাজা শলোমন দান হিসাবে শিবার রাণীকে অনেক কিছু দিয়েছিলেন। তা ছাড়াও রাণী যা কিছু চেয়েছিলেন তা সবই দিয়েছিলেন। এর পর রাণী তাঁর লোকজন নিয়ে নিজের দেশে ফিরে গেলেন।
\s শলোমনের ধনসম্পত্তি
\m
\s5
\v 14 প্রতি বছর শলোমনের কাছে যে সোনা আসত তার ওজন ছিল প্রায় ছাব্বিশ টন।
\v 15 এছাড়া বণিক ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে, আরবীয় রাজাদের কাছ থেকে ও দেশের শাসনকর্তাদের কাছ থেকেও সোনা আসত।
\s5
\v 16 রাজা শলোমন পিটানো সোনা দিয়ে দুশো বড় ঢাল তৈরী করালেন। প্রত্যেকটা ঢালে সাত কেজি আটশো গ্রাম সোনা লেগেছিল।
\v 17 পিটানো সোনা দিয়ে তিনি তিনশো ছোট ঢালও তৈরী করিয়েছিলেন। তার প্রত্যেকটাতে সোনা লেগেছিল প্রায় দুই কেজি করে। তিনি সেগুলো লেবানন বন কুটিরে রাখলেন।
\s5
\v 18 এর পরে রাজা হাতির দাঁতের একটা বড় সিংহাসন তৈরী করিয়ে খাঁটি সোনা দিয়ে তা মুড়িয়ে নিলেন।
\v 19 সেই সিংহাসনের সিঁড়ির ছয়টা ধাপ ছিল এবং সিংহাসনের পিছন দিকের উপর দিকটা ছিল গোল। বসবার জায়গার দুইদিকে ছিল হাতল এবং হাতলের পাশে ছিল দাঁড়ানো সিংহমূর্তি।
\v 20 সেই ছয়টা ধাপের প্রত্যেকটার দুইপাশে একটা করে মোট বারোটা সিংহমূর্তি ছিল। অন্য কোনো রাজ্যে এই রকম সিংহাসন কখনও তৈরী হয় নি।
\s5
\v 21 শলোমনের পানীয়ের সমস্ত পাত্রগুলো ছিল সোনার আর লেবানন বন কুটিরের সমস্ত পাত্রগুলোও ছিল খাঁটি সোনার তৈরী। রূপার তৈরী কিছুই ছিল না, কারণ শলোমনের সময়ে রূপার তেমন কোনো দাম ছিল না।
\v 22 সাগরে হীরমের জাহাজের সঙ্গে রাজারও বড় বড় তর্শীশ জাহাজ ছিল। প্রতি তিন বছর পর পর সেই জাহাজগুলো সোনা, রূপা, হাতির দাঁত, বানর ও বেবুন নিয়ে ফিরে আসত।
\s5
\v 23 রাজা শলোমন পৃথিবীর অন্য সব রাজাদের চেয়ে ধনী ও জ্ঞানী হয়ে উঠেছিলেন।
\v 24 ঈশ্বর শলোমনের অন্তরে যে জ্ঞান দিয়েছিলেন সেই জ্ঞানের কথা শুনবার জন্য পৃথিবীর সব দেশের লোক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেষ্টা করত।
\v 25 যারা আসত তারা প্রত্যেকে কিছু না কিছু উপহার আনত। সেগুলোর মধ্যে ছিল সোনা রূপার পাত্র, পোশাক, অস্ত্রশস্ত্র, সুগন্ধি মশলা, ঘোড়া আর খচ্চর। বছরের পর বছর এই রকম চলত।
\s5
\v 26 শলোমন অনেক রথ ও ঘোড়া জোগাড় করলেন। তাঁর রথের সংখ্যা ছিল এক হাজার চারশো আর ঘোড়ার সংখ্যা ছিল বারো হাজার। তিনি সেগুলো রথ রাখবার শহরে এবং যিরূশালেমে নিজের কাছে রাখতেন।
\v 27 রাজা যিরূশালেমে রুপোকে করলেন পাথরের মত, আর এরস কাঠকে করলেন নীচু পাহাড়ী এলাকায় গজানো ডুমুর গাছের মত প্রচুর।
\s5
\v 28 মিসর ও কিলিকিয়া থেকে শলোমনের ঘোড়াগুলো কিনে আনা হত। রাজার বণিকেরা কিলিকিয়া থেকে সেগুলো কিনে আনত।
\v 29 মিসর থেকে আনা প্রত্যেকটা রথের দাম পড়ত সাত কেজি আটশো গ্রাম রুপো এবং প্রত্যেকটা ঘোড়ার দাম পড়ত সাত কেজি আটশো গ্রাম রুপো। সেই বণিকেরা হিত্তীয় ও অরামীয় সব রাজাদের কাছে সেগুলো বিক্রি করত।
\s5
\c 11
\ms শলোমনের পাপে পতন ও তার ফল।
\p
\v 1 রাজা শলোমন ফরৌণের মেয়েকে ছাড়া আরও অনেক বিদেশী স্ত্রীলোকদের ভালবাসতেন। তারা জাতিতে ছিল মোয়াবীয়, অম্মোনীয়, ইদোমীয়, সীদোনীয় ও হিত্তীয়।
\v 2 তারা সেই সব জাতি থেকে এসেছিল যাদের সম্বন্ধে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের বলেছিলেন, “তোমরা তাদের বিয়ে করবে না, কারণ তারা নিশ্চয়ই তোমাদের মন তাদের দেব দেবতাদের দিকে টেনে নেবে।” কিন্তু শলোমন এইসব স্ত্রীলোকদের ভালবাসতেন।
\s5
\v 3 তাঁর সাতশো স্ত্রী ছিল, যারা ছিল রাজপরিবারের মেয়ে; এছাড়া তাঁর তিনশো উপস্ত্রী ছিল। তাঁর স্ত্রীরা তাঁকে বিপথে নিয়ে গিয়েছিল।
\v 4 শলোমনের বুড়ো বয়সে তাঁর স্ত্রীরা তাঁর মন দেব দেবতাদের দিকে টেনে নিয়েছিল। তার ফলে তাঁর বাবা দায়ূদের মত তাঁর হৃদয় তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি ভক্তিতে পূর্ণ ছিল না।
\s5
\v 5 তিনি সীদোনীয়দের দেবী অষ্টোরতের ও অম্মোনীয়দের জঘন্য দেবতা মিল্কমের সেবা করতে লাগলেন।
\v 6 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ শলোমন তাই করলেন। তাঁর বাবা দায়ূদ যেমন সদাপ্রভুকে সম্পূর্ণভাবে ভক্তি করতেন তিনি তেমন করতেন না।
\s5
\v 7 সেই সময় শলোমন যিরূশালেমের পূর্ব দিকের পাহাড়ের উপরে তিনি মোয়াবের জঘন্য দেবতা কমোশ ও অম্মোনীয়দের জঘন্য দেবতা মোলকের উদ্দেশ্যে উঁচু জায়গা তৈরী করলেন।
\v 8 তাঁর সমস্ত বিদেশী স্ত্রী যারা নিজের নিজের দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাত ও পশু বলি দিত তাদের সকলের জন্য তিনি তাই করলেন।
\s5
\v 9 এতে সদাপ্রভু শলোমনের উপরে ভীষণ অসন্তুষ্ট হলেন, কারণ যিনি তাঁকে দুবার দেখা দিয়েছিলেন সেই ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিক থেকে তাঁর মন ফিরে গিয়েছিল।
\v 10 তিনি দেব দেবতাদের পিছনে যেতে তাঁকে মানা করেছিলেন কিন্তু শলোমন সদাপ্রভুর আদেশ পালন করেননি।
\s5
\v 11 কাজেই সদাপ্রভু শলোমনকে বললেন, “তোমার এই ব্যবহারের জন্য এবং আমার দেওয়া ব্যবস্থা ও নিয়ম অমান্য করবার জন্য আমি অবশ্যই তোমার কাছ থেকে রাজ্য ছিঁড়ে নিয়ে তোমার কর্মচারীকে দেব।
\v 12 তবে তোমার বাবা দায়ূদের কথা মনে করে তোমার জীবনকালে আমি তা করব না, কিন্তু তোমার ছেলের হাত থেকে আমি তা ছিঁড়ে নেব।
\v 13 অবশ্য রাজ্যের সবটা আমি তার কাছ থেকে ছিঁড়ে নেব না, কিন্তু আমার দাস দায়ূদের কথা এবং আমার বেছে নেওয়া যিরূশালেমের কথা মনে করে একটা গোষ্ঠী আমি তোমার ছেলেকে দেব।”
\s5
\v 14 এর পর সদাপ্রভু শলোমনের বিরুদ্ধে ইদোমীয় হদদকে শত্রু হিসাবে দাঁড় করালেন। ইদোমের রাজবংশে তার জন্ম হয়েছিল।
\v 15 দায়ূদ যখন ইদোম দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন তখন তাঁর সেনাপতি যোয়াব মৃত লোকদের কবর দেবার জন্য ইদোমে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকবার সময় তিনি ইদোমীয় সব পুরুষ লোককে মেরে ফেলেছিলেন।
\v 16 যোয়াব ও ইস্রায়েলের সব সৈন্যেরা ছয় মাস ইদোমে ছিলেন এবং সেখানকার সব পুরুষ লোককে মেরে ফেলেছিলেন।
\v 17 কিন্তু হদদ তার বাবার কয়েকজন ইদোমীয় কর্মচারীর সঙ্গে মিসরে পালিয়ে গিয়েছিল। সেই সময় সে ছোট ছিল।
\s5
\v 18 তারা মিদিয়ন থেকে রওনা হয়ে পারণে গিয়েছিল এবং পরে সেখান থেকে কিছু লোক নিয়ে তারা মিসরের রাজা ফরৌণের কাছে গিয়েছিল। ফরৌণ হদদকে বাড়ী, জায়গা জমি ও খাবার দিয়েছিলেন।
\v 19 ফরৌণ হদদের উপর এত সন্তুষ্ট হয়েছিলেন যে, ফরৌণের স্ত্রী রাণী তহ্‌পনেষের বোনের সঙ্গে তার বিয়ে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 20 তহ্‌পনেষের বোনের গর্ভে হদদের একটি ছেলের জন্ম হয়েছিল; সেই ছেলের নাম ছিল গনুবৎ। তহ্‌পনেষ ছেলেটিকে রাজবাড়ীতে রাখলেন এবং সেখানেই সে মায়ের দুধ খাওয়া ছাড়ল। গনুবৎ সেখানে ফরৌণের ছেলেমেয়েদের সঙ্গেই থাকত।
\v 21 মিসরে থাকতেই হদদ শুনল যে, দায়ূদকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হয়েছে এবং সেনাপতি যোয়াবও মারা গেছেন। তখন হদদ ফরৌণকে বলল, “এবার আমাকে যেতে দিন যাতে আমি আমার নিজের দেশে ফিরে যেতে পারি।”
\v 22 ফরৌণ জিজ্ঞাসা করলেন, “এখানে তোমার কিসের অভাব হয়েছে যে, তুমি নিজের দেশে ফিরে যেতে চাইছ?” উত্তরে হদদ বলল, “কিছুরই অভাব হয় নি, কিন্তু তবুও আমাকে যেতে দিন।”
\s5
\v 23 শলোমনের বিরুদ্ধে ঈশ্বর আর একজন শত্রু দাঁড় করালেন। সে হল ইলিয়াদার ছেলে রষোণ। সে তার মনিব সোবার রাজা হদদেষরের কাছ থেকে পালিয়ে গিয়েছিল।
\v 24 দায়ূদ যখন সোবার সৈন্যদের মেরে ফেলেছিলেন তখন রষোণ কিছু লোক জোগাড় করে নিয়ে একটা লুটেরা দল তৈরী করে তার নেতা হয়ে বসল। এই লোকেরা দম্মেশক দখল করে সেখানে রাজত্ব করতে লাগল।
\v 25 শলোমন যতদিন জীবিত ছিলেন ততদিন রষোণ ইস্রায়েলের সঙ্গে শত্রুতা করেছিল আর সেই সময় হদদও ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে কাজ করছিল। ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে একটা শত্রুভাব নিয়ে রষোণ অরাম দেশে রাজত্ব করত।
\s5
\v 26 নবাটের ছেলে যারবিয়ামও রাজা শলোমনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন। তিনি ছিলেন শলোমনের কর্মচারী, সরেদা গ্রামের একজন ইফ্রয়িমীয় লোক। তাঁর মায়ের নাম ছিল সরূয়া; তিনি বিধবা ছিলেন।
\v 27 রাজার বিরুদ্ধে যারবিয়ামের বিদ্রোহের একটা কারণ ছিল। যে সময় শলোমন মিল্লো তৈরী করছিলেন এবং তাঁর বাবা দায়ূদের শহরের দেয়ালের ভাঙ্গা অংশ মেরামত করছিলেন,
\s5
\v 28 সেই সময় যারবিয়াম সেখানে কাজ করছিলেন এবং তাঁর কাজের বেশ সুনাম ছিল। শলোমন যখন দেখলেন যে, যুবকটি বেশ কাজের লোক তখন তিনি তাঁকে যোষেফের বংশের সমস্ত মজুরদের দেখাশোনার ভার দিলেন।
\v 29 সেই সময় যারবিয়াম এক দিন যিরূশালেমের বাইরে গেলেন। পথে তাঁর সঙ্গে শীলোর ভাববাদী অহিয়ের দেখা হল। অহিয়ের গায়ে ছিল একটা নতুন চাদর। পথে তাঁরা দুজন ছাড়া আর কেউ ছিল না।
\v 30 তখন অহিয় তাঁর গায়ের চাদরটা নিয়ে ছিঁড়ে বারোটা টুকরো করলেন।
\s5
\v 31 তারপর তিনি যারবিয়ামকে বললেন, “দশটা টুকরো তুমি তুলে নাও, কারণ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে বলছেন, ‘দেখ, আমি শলোমনের হাত থেকে রাজ্যটা ছিঁড়ে নেব এবং তোমাকে দশটা গোষ্ঠীর ভার দেব।
\v 32 কিন্তু আমার দাস দায়ূদের জন্য ও ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠীর এলাকা থেকে আমার বেছে নেওয়া যিরূশালেমের জন্য কেবল একটা গোষ্ঠী শলোমনের হাতে থাকবে।
\v 33 আমি এটা করব, কারণ সেই দশ গোষ্ঠী আমাকে ত্যাগ করে সীদোনীয়দের দেবী অষ্টোরতের, মোয়াবের দেবতা কমোশের ও অম্মোনীয়দের দেবতা মিলকমের পূজা করেছে। শলোমনের বাবা দায়ূদ যেমন করতেন তারা তেমন করে নি। তারা আমার পথে চলেনি, আমার চোখে যা ঠিক তা করেনি এবং আমার নিয়ম ও নির্দেশ পালন করেনি।
\s5
\v 34 তবুও আমি শলোমনের হাত থেকে গোটা রাজ্যটা নিয়ে নেব না। আমার দাস দায়ূদ, যাকে আমি বেছে নিয়েছিলাম এবং যে আমার আদেশ ও নিয়ম পালন করত, তার জন্যই আমি শলোমনকে সারা জীবনের জন্য রাজপদে রাখব।
\v 35 আমি তার ছেলের হাত থেকে রাজ্যটা নিয়ে তোমার হাতে দশটা গোষ্ঠীর ভার দেব।
\v 36 আমার বাসস্থান হিসাবে বেছে নেওয়া যিরূশালেম শহরে যেন আমার সামনে আমার দাস দায়ূদের একটা প্রদীপ থাকে সেইজন্য আমি তার ছেলেকে একটা গোষ্ঠীর ভার দেব।
\s5
\v 37 কিন্তু আমি তোমাকেই ইস্রায়েলের উপর রাজা করব আর তুমি তোমার প্রাণের সমস্ত ইচ্ছা অনুসারে রাজত্ব করবে।
\v 38 যদি তুমি আমার আদেশ অনুসারে কাজ কর এবং আমার পথে চল আর আমার দাস দায়ূদের মত আমার নিয়ম ও আদেশ পালন করে আমার চোখে যা ঠিক তাই কর তবে আমি তোমার সঙ্গে থাকব। আমি দায়ূদের মতই তোমার বংশে রাজপদ স্থায়ী করব এবং তোমার হাতে ইস্রায়েলকে দেব।
\v 39 তাদের অবাধ্যতার জন্য আমি দায়ূদের বংশধরদের নীচু করব, কিন্তু চিরদিনের জন্য নয়’।”
\s5
\v 40 সেইজন্য শলোমন যারবিয়ামকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করলেন, কিন্তু তিনি মিসরের রাজা শীশকের কাছে পালিয়ে গেলেন এবং শলোমনের মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকলেন।
\s5
\v 41 শলোমনের রাজত্বের বাকি ঘটনার কথা, অর্থাৎ তাঁর কাজ ও জ্ঞানের কথা শলোমনের রাজত্বের ইতিহাসের বইয়ে কি লেখা নেই?
\v 42 শলোমন যিরূশালেমে চল্লিশ বছর ধরে গোটা ইস্রায়েল জাতির উপর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 43 তারপর তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন। তাঁকে তাঁর বাবা দায়ূদের শহরে কবর দেওয়া হল। তারপর তাঁর ছেলে রহবিয়াম তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 12
\ms রহবিয়ামের রাজ্যাভিষেক।
\s দশ গোষ্ঠীর বিদ্রোহ।
\p
\v 1 রহবিয়াম শিখিমে গেলেন, কারণ ইস্রায়েলীয়েরা সকলে তাঁকে রাজা করার জন্য সেখানে গিয়েছিল।
\v 2 তখন নবাটের ছেলে যারবিয়াম মিসর দেশে ছিলেন, কারণ তিনি রাজা শলোমনের কাছ থেকে পালিয়ে সেখানে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকার সময় তিনি রহবিয়ামের রাজা হওয়ার খবর শুনলেন।
\s5
\v 3 লোকেরা যারবিয়ামকে ডেকে পাঠালেন এবং যারবিয়াম সব ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে রহবিয়ামের কাছে গিয়ে বললেন,
\v 4 “আপনার বাবা আমাদের উপর একটা ভারী যোঁয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু এখন আপনি আমাদের উপর চাপানো সেই কঠিন পরিশ্রম কমিয়ে ভারী যোঁয়ালটা হালকা করে দিন; তাহলে আমরা আপনার সেবা করব।”
\v 5 উত্তরে রহবিয়াম বললেন, “তোমরা এখন চলে যাও, তিন দিন পর আমার কাছে আবার এসো।” তাতে লোকেরা চলে গেল।
\s5
\v 6 যে সব বৃদ্ধ নেতারা তাঁর বাবা শলোমনের জীবনকালে তাঁর সেবা করতেন রহবিয়াম তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করবার জন্য বললেন, “এই লোকদের উত্তর দেবার জন্য আপনারা আমাকে কি পরামর্শ দেন?”
\v 7 উত্তরে তাঁরা তাঁকে বললেন, “আজকে যদি আপনি এই সব লোকদের সেবাকারী হয়ে তাদের সেবা করেন এবং তাদের অনুরোধ রক্ষা করেন তবে তারা সব সময় আপনার দাস হয়ে থাকবে।”
\s5
\v 8 কিন্তু রহবিয়াম বৃদ্ধ নেতাদের উপদেশ অগ্রাহ্য করে সেই সব যুবকদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন যারা তাঁর সঙ্গে বড় হয়েছিল এবং তাঁর সেবা করত।
\v 9 তিনি তাদের বললেন, “লোকেরা বলছে, ‘আপনার বাবা যে ভারী যোঁয়াল আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন তা হালকা করুন।’ এই ব্যাপারে তোমাদের পরামর্শ কি? আমরা তাদের কি উত্তর দেব?”
\s5
\v 10 উত্তরে সেই যুবকেরা বলল, “যে সব লোকেরা আপনার বাবার চাপিয়ে দেওয়া ভারী যোঁয়াল হালকা করে দেবার কথা বলেছে তাদের আপনি বলুন যে, আপনার বাবার কোমরের চেয়েও আপনার কড়ে আঙ্গুলটা মোটা।
\v 11 এখন আমার বাবা তোমাদের উপর যে ভারী যোঁয়াল চাপিয়ে দিয়েছিলেন তা আমি আরও ভারী করব। আমার বাবা তোমাদের মেরেছিলেন চাবুক দিয়ে কিন্তু আমি তোমাদের মারব কাঁকড়া বিছা দিয়ে।”
\s5
\v 12 পরে তৃতীয় দিনে আমার কাছে ফিরে এস, রাজার বলা এই কথা অনুসারে যারবিয়াম এবং সব লোক রহবিয়ামের কাছে তৃতীয় দিনে এল।
\v 13 রাজা বৃদ্ধ নেতাদের উপদেশ অগ্রাহ্য করে লোকদের খুব কড়া উত্তর দিলেন।
\v 14 তিনি সেই যুবকদের পরামর্শ মত বললেন, “আমার বাবা তোমাদের যোঁয়াল ভারী করেছিলেন, আমি তা আরও ভারী করব। আমার বাবা চাবুক দিয়ে তোমাদের মেরেছিলেন, আমি তোমাদের শাস্তি দেব কাঁকড়া বিছা দিয়ে।”
\s5
\v 15 এইভাবে রাজা লোকদের কথায় কান দিলেন না। কারণ শীলোনীয় অহিয়ের মধ্য দিয়ে সদাপ্রভু নবাটের ছেলে যারবিয়ামকে যে কথা বলেছিলেন তা পূর্ণ করবার জন্য সদাপ্রভু থেকেই এই ঘটনাটা ঘটল।
\s5
\v 16 ইস্রায়েলীয়েরা যখন বুঝল যে, রাজা তাদের কথা শুনবেন না তখন তারা রাজাকে বলল, “দায়ূদের উপর আমাদের কোনো দাবি নেই। যিশয়ের ছেলের উপর আমাদের কোনো অধিকার নেই। হে ইস্রায়েল, তোমরা নিজের তাঁবুতে ফিরে যাও। হে দায়ূদ, এখন তোমার নিজের গোষ্ঠী তুমি নিজেই দেখ।” কাজেই ইস্রায়েলীয়েরা যে যার বাড়ীতে ফিরে গেল।
\v 17 তবে যিহূদা গোষ্ঠীর গ্রাম ও শহরগুলোতে যে সব ইস্রায়েলীয় বাস করত রহবিয়াম তাদের উপরে রাজত্ব করতে থাকলেন।
\s5
\v 18 যাদের কাজ করতে বাধ্য করা হত তাদের ভার যার উপরে ছিল সেই অদোরামকে রাজা রহবিয়াম ইস্রায়েলীয়দের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, কিন্তু তারা তাকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলল। তখন রাজা রহবিয়াম তাড়াতাড়ি তাঁর রথে উঠে যিরূশালেমে পালিয়ে গেলেন।
\v 19 এইভাবে ইস্রায়েলীয়েরা দায়ূদের বংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল; অবস্থাটা আজও তাই আছে।
\s5
\v 20 যারবিয়ামের ফিরে আসবার খবর শুনে ইস্রায়েলীয়েরা লোক পাঠিয়ে তাঁকে তাদের সভায় ডেকে আনল এবং সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের উপর তারা তাঁকেই রাজা করল। কেবল যিহূদা বংশের লোকেরা ছাড়া আর কোনো বংশ দায়ূদের বংশের প্রতি বিশ্বস্ত থাকল না।
\s5
\v 21 যিরূশালেমে পৌঁছে রহবিয়াম যিহূদা ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর সমস্ত লোককে যুদ্ধের জন্য জড়ো করলেন। তাতে এক লক্ষ আশি হাজার সৈন্য হল। এটা করা হল যাতে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করে রাজ্যটা আবার শলোমনের ছেলে রহবিয়ামের হাতে নিয়ে আসা যায়।
\s5
\v 22 কিন্তু ঈশ্বরের লোক শময়িয়ের কাছে ঈশ্বরের এই বাক্য প্রকাশিত হল,
\v 23 তুমি যিহূদার রাজা শলোমনের ছেলে রহবিয়ামকে, যিহূদা ও বিন্যামীনের সমস্ত বংশকে এবং বাকী সব লোকদের বল যে,
\v 24 “সদাপ্রভু বলেন, তোমরা যেও না, তোমাদের ভাইদের সাথে, ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ কর না; প্রত্যেকজন নিজের নিজের ঘরে ফিরে যাও, কারণ এই ঘটনা আমার মাধ্যমে হল।” অতএব তারা সদাপ্রভুর বাক্য মেনে তাঁর আদেশ অনুসারে ফিরে গেল।
\s যারবিয়ামের প্রতিমাপূজা স্থাপন।
\m
\s5
\v 25 পরে যারবিয়াম ইফ্রয়িমের পাহাড়ী এলাকার শিখিম গড়ে নিয়ে সেখানে বাস করতে লাগলেন। তিনি সেখান থেকে গিয়ে পনূয়েলও দুর্গের মত করে গড়ে নিলেন।
\v 26 যারবিয়াম ভাবলেন, “এবার হয়তো রাজ্যটা আবার দায়ূদের বংশের হাতে ফিরে যাবে।
\v 27 লোকেরা যদি যিরূশালেমে সদাপ্রভুর উপাসনা ঘরে উৎসর্গ করার জন্য যায় তবে আবার তারা তাদের প্রভু যিহূদার রাজা রহবিয়ামের অধীনতা মেনে নেবে। তারা আমাকে মেরে ফেলে রাজা রহবিয়ামের কাছে ফিরে যাবে।”
\s5
\v 28 রাজা যারবিয়াম তখন পরামর্শ করে দুটো সোনার বাছুর তৈরী করালেন। তারপর তিনি লোকদের বললেন, “যিরূশালেমে যাওয়া তোমাদের জন্য খুব কষ্টের ব্যাপার। হে ইস্রায়েল, এঁরাই তোমাদের দেবতা, এঁরাই মিসর থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন।”
\v 29 বাছুর দুটার একটাকে তিনি রাখলেন বৈথেলে এবং অন্যটাকে রাখলেন দানে,
\v 30 তাই লোকেরা পূজা করবার জন্য দান পর্যন্তও যেতে লাগল। এই ব্যাপারটা তাদের পাপের কারণ হয়ে দাঁড়াল।
\s5
\v 31 যারবিয়াম উঁচু স্থানগুলোতে মন্দির তৈরী করলেন এবং এমন সব লোকদের মধ্য থেকে যাজক নিযুক্ত করলেন যারা লেবির বংশের লোক ছিল না।
\v 32 যিহূদা এলাকার মধ্যে যে পর্ব হত সেই পর্বের মত অষ্টম মাসের পনের দিনের দিন তিনি বৈথেলেও একটা পর্বের ব্যবস্থা করলেন এবং নিজের তৈরী বাছুরের উদ্দেশ্যে বেদীর উপর পশু উৎসর্গ করলেন। তিনি বৈথেলে পূজার উঁচু স্থানগুলোতে তাঁর তৈরী মন্দিরে যাজকও নিযুক্ত করলেন।
\s5
\v 33 অষ্টম মাসের পনেরো দিনের দিন বৈথেলে তাঁর তৈরী বেদীতে তিনি পশু উৎসর্গ করলেন। সময়টা তাঁর নিজেরই বেছে নেওয়া। এইভাবে তিনি ইস্রায়েলীয়দের জন্য পর্বের ব্যবস্থা করলেন এবং ধূপ জ্বালাবার জন্য বেদীতে উঠলেন।
\s5
\c 13
\ms একজন ভাববাদীর বর্ণনা।
\p
\v 1 ধূপ জ্বালাবার জন্য যারবিয়াম যখন বেদীর কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন তখন সদাপ্রভুর কথামত ঈশ্বরের একজন লোক যিহূদা থেকে বৈথেলে উপস্থিত হলেন।
\v 2 তিনি সদাপ্রভুর কথামত বেদীর বিরুদ্ধে ঘোষণা করলেন, “ওহে বেদী, ওহে বেদী, সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘দায়ূদের বংশে যোশিয় নামে একটি ছেলের জন্ম হবে। উঁচু স্থানগুলোর যে যাজকেরা এখন তোমার উপর ধূপ জ্বালিয়েছে সেই যাজকদের সে তোমার উপরেই উৎসর্গ করবে এবং মানুষের হাড়ও পোড়াবে।’ ”
\v 3 ঐ একই দিনে ঈশ্বরের লোকটি একটা চিহ্নের কথা বললেন। তিনি বললেন, “সদাপ্রভু এই চিহ্নের কথা ঘোষণা করেছেন যে, এই বেদীটা ফেটে যাবে এবং তার উপরকার ছাই সব পড়ে যাবে।”
\s5
\v 4 বৈথেলে বেদীর বিরুদ্ধে ঈশ্বরের লোকটির কথা শুনে রাজা যারবিয়াম বেদীর উপর থেকে হাত বাড়িয়ে বললেন, “ওকে ধর।” কিন্তু যে হাতটি তিনি লোকটির দিকে বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেটা শুকিয়ে গেল। তিনি আর সেটা কাছে টেনে নিতে পারলেন না।
\v 5 তাছাড়া বেদীটা ফেটে গেল এবং তার ছাই ছড়িয়ে পড়ল, যেমন সদাপ্রভু ঈশ্বরের লোকটির মাধ্যমে চিহ্নের বিষয়ে বর্ণনা করেছিলেন।
\s5
\v 6 তখন রাজা ঈশ্বরের লোকটিকে বললেন, “আপনি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অনুরোধ করুন এবং আমার জন্য প্রার্থনা করুন যাতে আমার হাত আবার ভাল হয়ে যায়।” তাতে ঈশ্বরের লোকটি সদাপ্রভুকে অনুরোধ করলেন আর রাজার হাতটা আবার ভাল হয়ে আগের মত হয়ে গেল।
\v 7 রাজা ঈশ্বরের লোকটিকে বললেন, “আপনি আমার বাড়ীতে এসে আরাম করুন আর আমি আপনাকে একটা উপহার দেব।”
\s5
\v 8 কিন্তু ঈশ্বরের লোকটি উত্তরে রাজাকে বললেন, “আপনার সম্পত্তির অর্ধেকটা দিলেও আমি আপনার সঙ্গে যাব না কিম্বা কোনো খাবার বা জলও এখানে খাব না।
\v 9 এর কারণ হল, সদাপ্রভুর কথামত আমি এই আদেশ পেয়েছি যে, “তুমি কোনো খাবার খেয় না বা জল পান কর না এবং যে পথ দিয়ে যাবে, সেই পথ দিয়ে এস না।”
\v 10 কাজেই তিনি যে পথে বৈথেলে এসেছিলেন সেই পথে ফিরে না গিয়ে অন্য পথ ধরলেন।
\s5
\v 11 বৈথেলে একজন বয়স্ক ভাববাদী বাস করতেন। ঈশ্বরের লোকটি সেই দিন সেখানে যা করেছিলেন তাঁর ছেলেরা গিয়ে তাঁকে তা সবই জানাল। রাজাকে তিনি যা বলেছিলেন তাও তারা তাদের বাবাকে বলল।
\v 12 তাদের বাবা তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তিনি কোন পথে গেছেন?” যিহূদার সেই ঈশ্বরের লোকটি যে পথ ধরে চলে গিয়েছিলেন তাঁর ছেলেরা তা দেখেছিল।
\v 13 তখন তিনি তাঁর ছেলেদের বললেন, “আমার জন্য গাধার উপরে গদি চাপাও।” তারা তা করলে পর তিনি তাতে চড়লেন।
\s5
\v 14 তারপর তিনি ঈশ্বরের লোকটির খোঁজে গেলেন। তিনি তাঁকে একটা এলোন গাছের তলায় বসে থাকতে দেখে জিজ্ঞাসা করলেন, “আপনিই কি ঈশ্বরের সেই লোক যিনি যিহূদা দেশ থেকে এসেছেন?” উত্তরে তিনি বললেন, “হ্যাঁ, আমিই সেই লোক।”
\v 15 তখন ভাববাদী তাঁকে বললেন, “আমার সঙ্গে বাড়ী চলুন, খাওয়া দাওয়া করুন।”
\v 16 ঈশ্বরের লোকটি বললেন, “আমি আপনার সঙ্গে ফিরেও যেতে পারি না কিম্বা আপনার সঙ্গে এই জায়গায় খাবার বা জল খেতেও পারি না।
\v 17 কারণ ঈশ্বর আমাকে আদেশ দিয়ে বলেছেন যে, তুমি যেন সেখানে খাবার খেও না বা জল পান করো না কিম্বা যে পথে এসেছ সেই পথে ফিরে যেও না।”
\s5
\v 18 উত্তরে সেই ভাববাদী বললেন, “আমি আপনার মতই একজন ভাববাদী। সদাপ্রভুর কথামত একজন স্বর্গদূত আমাকে বলেছেন যেন আমি আপনাকে আমার বাড়ীতে ফিরিয়ে নিয়ে যাই যাতে আপনি খাবার ও জল খেতে পারেন।” কিন্তু তিনি তাঁকে মিথ্যা কথা বললেন।
\v 19 ঈশ্বরের লোকটি তখন তাঁর সঙ্গে ফিরে গেলেন এবং তাঁর বাড়ীতে খাওয়া দাওয়া করলেন।
\s5
\v 20 তাঁরা তখনও টেবিলের কাছে বসে আছেন, এমন সময় যিনি ঈশ্বরের লোকটিকে ফিরিয়ে এনেছিলেন সেই ভাববাদীর কাছে সদাপ্রভুর বাক্য প্রকাশিত হল।
\v 21 যিহূদা থেকে আসা ঈশ্বরের লোকটিকে সেই ভাববাদী চিৎকার করে বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলছেন যে, আপনি সদাপ্রভুর কথা অমান্য করেছেন এবং আপনাকে দেওয়া আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ আপনি পালন করেন নি।
\v 22 যে জায়গায় তিনি আপনাকে খাওয়া দাওয়া করতে নিষেধ করেছিলেন আপনি সেখানে ফিরে গিয়ে খাবার ও জল খেয়েছেন। কাজেই আপনার পূর্বপুরুষদের কবরে আপনার দেহ রাখা হবে না।”
\s5
\v 23 ঈশ্বরের লোকটি খাওয়া দাওয়া শেষ করলে পর তাঁর জন্য সেই ভাববাদী তাঁর একটা গাধার উপর গদি চাপালেন।
\v 24 ঈশ্বরের লোকটি রওনা হলে পর পথে একটা সিংহ তাঁকে রাস্তার উপরে পেয়ে মেরে ফেলল। তাঁর দেহটা রাস্তার উপরে পড়ে থাকল আর সেই দেহের পাশে দাঁড়িয়ে থাকল সেই গাধা আর সিংহ।
\v 25 কিছু লোক সেই পথ দিয়ে যাবার সময় দেখল একটি মৃতদেহ পড়ে আছে এবং দেখল তার পাশে একটা সিংহ দাঁড়িয়ে রয়েছে। তারা গিয়ে সেই বয়স্ক ভাববাদীর গ্রামে খবর দিল।
\s5
\v 26 সেই কথা শুনে যে ভাববাদী তাঁকে তাঁর পথ থেকে ফিরিয়ে এনেছিলেন তিনি বললেন, “তিনি ঈশ্বরের সেই লোক যিনি সদাপ্রভুর আদেশ অমান্য করেছিলেন। সদাপ্রভু তাঁকে যে কথা বলেছিলেন সেই অনুসারেই তিনি তাঁকে সিংহের হাতে তুলে দিয়েছেন এবং সিংহ তাঁকে ছিঁড়ে খুঁড়ে মেরে ফেলেছে।”
\v 27 তারপর সেই ভাববাদী তাঁর ছেলেদের বললেন, “আমার জন্য গাধার উপর গদি চাপাও।” ছেলেরা তাই করল।
\v 28 তারপর তিনি গিয়ে দেখলেন রাস্তার উপরে মৃতদেহটা পড়ে রয়েছে আর তার পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছে গাধা আর সিংহটা। সিংহটা সেই মৃতদেহ খায়নি আর গাধাটাকেও আঘাত করেনি।
\s5
\v 29 ঈশ্বরের লোকটিকে কবর দিতে ও তাঁর জন্য শোক প্রকাশ করতে সেই ভাববাদী তাঁর দেহটা তুলে নিয়ে গাধার উপর চাপিয়ে নিজের গ্রামে ফিরে গেলেন।
\v 30 তিনি নিজের জন্য তৈরী করা কবরেই তাঁকে কবর দিলেন। তিনি ও তাঁর ছেলেরা এই বলে তাঁর জন্য শোক করতে লাগলেন, “হায়, ভাই আমার!”
\s5
\v 31 তাঁকে কবর দেবার পর সেই ভাববাদী তাঁর ছেলেদের বললেন, “ঈশ্বরের লোকটিকে যেখানে কবর দেওয়া হয়েছে আমি মারা গেলে পর আমাকে সেই কবরেই কবর দিয়ো, আমার হাড় তাঁর হাড়ের পাশেই রেখো;
\v 32 কারণ বৈথেলের বেদী ও শমরিয়ার সব গ্রামের উঁচু স্থানগুলোর মন্দিরের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর কথামত তিনি যে বিষয় ঘোষণা করেছেন তা নিশ্চয়ই সফল হবে।”
\s5
\v 33 এর পরেও যারবিয়াম তাঁর কুপথ থেকে ফিরলেন না বরং উঁচু স্থানগুলোর জন্য সব লোকদের মধ্য থেকে যাজক নিযুক্ত করলেন। যে কেউ যাজক হতে চাইত তাকেই তিনি উঁচু স্থানের যাজক হিসাবে নিযুক্ত করতেন।
\v 34 এই সব কাজ যারবিয়ামের বংশের পক্ষে পাপ হয়ে দাঁড়াল যেন তারা ধ্বংস হয় ও পৃথিবী থেকে মুছে যেতে পারে।
\s5
\c 14
\ms যারবিয়ামের বিরুদ্ধে অহিয়ের ভাববাণী।
\p
\v 1 সেই সময় যারবিয়ামের ছেলে অবিয় অসুস্থ হয়ে পড়ল।
\v 2 তখন যারবিয়াম নিজের স্ত্রীকে বললেন, “উঠ, তুমি এমন কাপড় পর যাতে তোমাকে যারবিয়ামের স্ত্রী বলে চেনা না যায়। তারপর তুমি শীলোতে যাও। ভাববাদী অহিয় সেখানে আছেন। তিনিই আমাকে বলেছিলেন যে, আমি এই লোকদের রাজা হব।
\v 3 তুমি সঙ্গে করে দশটা রুটি, কিছু পিঠা ও এক ভাঁড় মধু নিয়ে তাঁর কাছে যাও। ছেলেটির কি হবে তা তিনি তোমাকে বলে দেবেন।”
\s5
\v 4 যারবিয়ামের স্ত্রী তাঁর কথামতই কাজ করলেন এবং শীলোতে অহিয়ের বাড়ীতে গেলেন। তখন অহিয় চোখে দেখতে পেতেন না; কারণ বেশী বয়স হওয়ার জন্য তাঁর দেখবার শক্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।
\v 5 কিন্তু সদাপ্রভু অহিয়কে বলেছিলেন, “যারবিয়ামের স্ত্রী তোমার কাছে তার ছেলের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে আসছে। ছেলেটির অসুখ হয়েছে। তুমি তার কথার এই এই উত্তর দেবে। এখানে এসে সে অন্য আর একজন স্ত্রীলোক বলে অপরিচিতের মত ভান করবে।”
\s5
\v 6 তখন দরজার কাছে তাঁর পায়ের শব্দ শুনে অহিয় বললেন, “ভিতরে এস, যারবিয়ামের স্ত্রী। তুমি কেন অপরিচিতের মত ভান করছ? তোমাকে খারাপ খবর দেবার জন্য আমাকে বলা হয়েছে।
\v 7 যাও, তুমি গিয়ে যারবিয়ামকে বল যে, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এইকথা বলেন, ‘আমি লোকদের মধ্য থেকে তোমাকে উঁচুতে তুলেছি এবং আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের উপরে নেতা করেছি।
\v 8 আমি দায়ূদের বংশ থেকে রাজ্য ছিঁড়ে নিয়ে তোমাকে দিয়েছি, কিন্তু তুমি আমার দাস দায়ূদের মত হও নি। দায়ূদ আমার আদেশ মেনে চলত এবং মনে প্রাণে আমার বাধ্য ছিল। আমার চোখে যা ঠিক সে কেবল তাই করত।
\s5
\v 9 তোমার আগে যারা ছিল তুমি তাদের চেয়েও বেশী খারাপ কাজ করেছ। তুমি নিজের জন্য দেব দেবতা বানিয়ে নিয়েছ আর ছাঁচে ঢেলে মূর্তি তৈরী করেছ। তুমি আমাকে অসন্তুষ্ট করে তুলেছ এবং আমাকে তোমার পিছনে ফেলে রেখেছ।
\v 10 এইজন্য আমি যারবিয়ামের বংশের উপর বিপদ নিয়ে আসব। তার বংশ থেকে প্রত্যেকটি পুরুষকে আমি শেষ করে দেব, সে দাস হোক বা স্বাধীন হোক। লোকে যেমন করে ঘুঁটে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলে তেমনি করে আমি যারবিয়ামের বংশকে একেবারে শেষ করে দেব।
\s5
\v 11 তার বংশের যে সব লোক শহরে মরবে তাদের খাবে কুকুরে আর যারা মাঠের মধ্যে মরবে তাদের খাবে পাখীতে। কারণ আমি সদাপ্রভুই এই কথা বলেছি।’
\v 12 সুতরাং তুমি উঠ, এখন বাড়ী ফিরে যাও। তুমি শহরে পা দেওয়া মাত্রই ছেলেটি মারা যাবে।
\v 13 ইস্রায়েলের সবাই তার জন্য শোক করতে করতে তাকে কবর দেবে। যারবিয়ামের নিজের লোকদের মধ্যে কেবল সেই কবর পাবে, কারণ যারবিয়ামের বংশে কেবলমাত্র সেই ছেলেটির মধ্যেই ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর প্রতি ভক্তি দেখতে পেয়েছেন।
\s5
\v 14 সদাপ্রভু নিজের উদ্দেশ্যে ইস্রায়েলের লোকদের উপরে এমন একজনকে রাজা করবেন যে যারবিয়ামের বংশকে একেবারে ধ্বংস করে দেবে। আজকেই সেই দিন, হ্যাঁ, এখনই।
\v 15 সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে আঘাত করবেন, আর তাতে তা জলের মধ্যে দুলতে থাকা নল খাগড়ার মত হবে। যে দেশ তিনি তাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলেন সেই সুন্দর দেশ থেকে তিনি তাদের উপড়ে তুলে ফরাৎ (ইউফ্রেটিস) নদীর ওপারে ছড়িয়ে দেবেন, কারণ আশেরা মূর্তি স্থাপন করে তারা সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করে তুলেছে।
\v 16 যারবিয়াম নিজে যে সব পাপ করেছে এবং ইস্রায়েলীয়দের লোকদের দিয়ে করিয়েছে তার জন্য সদাপ্রভু তাদের ত্যাগ করবেন।”
\s5
\v 17 এর পর যারবিয়ামের স্ত্রী উঠলেন এবং তির্সা শহরে গিয়ে উপস্থিত হলেন। তিনি বাড়ীর দরজার চৌকাঠে পা দেওয়া মাত্রই ছেলেটি মারা গেল।
\v 18 সদাপ্রভু নিজের দাস ভাববাদী অহিয়ের মধ্য দিয়ে যেমন যে বাক্য বলেছিলেন তেমনই ইস্রায়েলের সমস্ত লোক ছেলেটির জন্য শোক করতে করতে তাকে কবর দিল।
\s5
\v 19 যারবিয়ামের অন্যান্য কাজ, তাঁর সব যুদ্ধ এবং রাজত্ব করবার কথা “ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
\v 20 বাইশ বছর রাজত্ব করবার পর তিনি তাঁর পূর্বপরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে নাদব রাজা হলেন।
\s যিহূদার রাজা রহবিয়াম, অবিয় ও আসার বর্ণনা।
\m
\s5
\v 21 এদিকে যিহূদা দেশে শলোমনের ছেলে রহবিয়াম রাজত্ব করলেন। তিনি যখন রাজত্ব করতে শুরু করেন তখন তাঁর বয়স ছিল একচল্লিশ। ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলোর সমস্ত জায়গার মধ্য থেকে যে শহরটা সদাপ্রভু নিজের বাসস্থান হিসাবে বেছে নিয়েছিলেন সেই যিরূশালেম শহরে রহবিয়াম সতেরো বছর রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল নয়মা; তিনি জাতিতে ছিলেন একজন অম্মোনীয়।
\v 22 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ যিহূদা লোকেরা তাই করতে লাগল। তাদের পূর্বপুরুষরা যা করেছে তার চেয়ে তাদের পাপের মধ্য দিয়ে তারা সদাপ্রভুর অন্তরের জ্বালা আরও বেশী করে জাগিয়ে তুলতো।
\s5
\v 23 এছাড়া তারা নিজেদের জন্য প্রত্যেকটা উঁচু পাহাড়ের উপরে ও প্রত্যেকটা ডালপালা ছড়ানো সবুজ গাছের নীচে উঁচু জায়গা ঠিক করেছিল এবং পবিত্র পাথর ও আশেরা খুঁটি স্থাপন করেছিল।
\v 24 এমন কি, তাদের দেশে পুরুষ বেশ্যাও ছিল। যে জাতিগুলোকে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে দূর করে দিয়েছিলেন তাদের সমস্ত ঘৃণার কাজ যিহূদার লোকেরা করতে লাগল।
\s5
\v 25 রাজা রহবিয়ামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে মিসরের রাজা শীশক যিরূশালেম আক্রমণ করলেন।
\v 26 তিনি সদাপ্রভুর ঘরের সম্পত্তি ও রাজবাড়ির সম্পত্তি নিয়ে গেলেন; তিনি সব কিছুই নিয়ে গেলেন, এমন কি, শলোমনের তৈরী সোনার সব ঢালগুলোও নিয়ে গেলেন।
\s5
\v 27 কাজেই রাজা রহবিয়াম সেগুলোর বদলে পিতলের ঢাল তৈরী করালেন। রাজবাড়ীর দরজায় যে সব সৈন্যেরা পাহারা দিত তাদের সেনাপতিদের কাছে তিনি সেগুলো রক্ষা করবার ভার দিলেন।
\v 28 রাজা যখন সদাপ্রভুর ঘরে যেতেন তখন পাহারাদার সৈন্যেরা সেই ঢালগুলো ধরে নিয়ে তাঁর সঙ্গে যেত এবং পরে সেগুলো তারা পাহারা ঘরে জমা দিত।
\s5
\v 29 রহবিয়ামের অন্যান্য কাজ, অর্থাৎ তিনি যা কিছু করেছিলেন তা সব “যিহূদার রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 30 রহবিয়াম ও যারবিয়ামের মধ্যে অনবরত যুদ্ধ চলত।
\v 31 পরে রহবিয়াম নিজের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং দায়ূদ শহরে কবর প্রাপ্ত হলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল নয়মা; তিনি অম্মোনীয়া। পরে তাঁর ছেলে অবিয়াম তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 15
\p
\v 1 নবাটের ছেলে যারবিয়ামের রাজত্বের আঠারো বছরের সময় অবিয়াম যিহূদায় রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\v 2 তিনি তিন বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল মাখা; তিনি অবীশালোমের মেয়ে।
\v 3 অবিয়ামের বাবা যে সব পাপ করেছিলেন তিনিও সেই সব পাপ করতে থাকলেন। তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মত তাঁর হৃদয় তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি ভক্তি ছিল না।
\s5
\v 4 তবুও দায়ূদের কথা মনে করে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁকে যিরূশালেমে একটা প্রদীপ দিলেন, অর্থাৎ তাঁর সিংহাসনে বসবার জন্য তাঁকে একটা ছেলে দিলেন এবং যিরূশালেমকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করলেন,
\v 5 কারণ সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক দায়ূদ তাই করতেন। কেবল হিত্তীয় ঊরিয়ের ব্যাপারটা ছাড়া তাঁর সারা জীবনে তিনি সদাপ্রভুর কোনো আদেশই অমান্য করেননি।
\v 6 রহবিয়াম ও যারবিয়ামের মধ্যে যে যুদ্ধ আরম্ভ হয়েছিল তা অবিয়ামের সারা জীবন ধরে চলেছিল।
\s5
\v 7 অবিয়ামের অন্যান্য কাজ, অর্থাৎ তিনি যা কিছু করেছিলেন তা “যিহূদার রাজাদের ইতিহাস” নামক বইটিতে কি লেখা নেই? অবিয়াম ও যারবিয়ামের মধ্যে যুদ্ধ হত।
\v 8 পরে অবিয়াম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন, আর দায়ূদ শহরে তাঁকে কবর দেওয়া হল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে আসা রাজা হলেন।
\s5
\v 9 ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের কুড়ি বছরের সময়ে আসা যিহূদায় রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 10 তিনি একচল্লিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর ঠাকুমার নাম ছিল মাখা। তিনি ছিলেন অবীশালোমের মেয়ে।
\v 11 তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মত আসা সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক তাই করতেন।
\s5
\v 12 তিনি দেশ থেকে পুরুষ বেশ্যাদের তাড়িয়ে দিলেন এবং পূর্বপুরুষদের তৈরী সব মূর্তিগুলোও সরিয়ে দিলেন।
\v 13 এমন কি, তিনি তাঁর ঠাকুমা মাখাকেও রাজমাতার পদ থেকে সরিয়ে দিলেন, কারণ তিনি একটা জঘন্য আশেরা মূর্তি তৈরী করিয়েছিলেন। আসা সেই মূর্তিটা কেটে ফেলে কিদ্রোণ উপত্যকায় নিয়ে গিয়ে সেটা পুড়িয়ে দিলেন।
\s5
\v 14 উঁচু জায়গাগুলো যদিও তিনি ধ্বংস করেননি তবুও সারা জীবন তাঁর হৃদয় সদাপ্রভুর প্রতি সম্পূর্ণ অনুগত ছিল।
\v 15 তিনি ও তাঁর বাবা যে সব সোনা, রুপো ও অন্যান্য জিনিস সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র করে রেখেছিলেন সেগুলো তিনি সদাপ্রভুর ঘরে নিয়ে গেলেন।
\s5
\v 16 আসা ও ইস্রায়েলের রাজা বাশার গোটা রাজত্বকাল ধরে তাঁদের মধ্যে যুদ্ধ চলেছিল।
\v 17 ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদার লোকদের বিরুদ্ধে গিয়ে রামা শহরটা দুর্গের মত করে গড়ে তুলতে লাগলেন যাতে কেউ যিহূদার রাজা আসার কাছে যাওয়া আসা করতে না পারে।
\s5
\v 18 সদাপ্রভুর ঘরে এবং নিজের রাজবাড়ীর ভাণ্ডারে যে সব সোনা ও রূপা ছিল আসা সেগুলো সব বের করে নিলেন। সেগুলো তাঁর কর্মচারীদের হাতে দিয়ে অরামের রাজা বিন্‌হদদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। বিন্‌হদদ ছিলেন টব্রিম্মোণের ছেলে হিষিয়োণের নাতি। তিনি তখন দম্মেশকে রাজত্ব করছিলেন। আসা তাঁকে বলে পাঠালেন,
\v 19 “আমার ও আপনার বাবার মত আসুন, আমরাও আমাদের মধ্যে একটা চুক্তি করি। আমি আপনাকে এই সব সোনা ও রূপো উপহার পাঠালাম। ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে আপনি এখন চুক্তি ভেঙ্গে ফেলুন, তাতে সে আমার কাছ থেকে চলে যাবে।”
\s5
\v 20 রাজা আসার কথায় বিন্‌হদদ রাজী হয়ে তাঁর সেনাপতিদের ইস্রায়েলের শহরগুলোর বিরুদ্ধে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি ইয়োন, দান, আবেল বৈৎ মাখা ও সমস্ত কিন্নেরৎ এবং তার সঙ্গে নপ্তালি এলাকাটা দখল করে নিলেন।
\v 21 বাশা এই কথা শুনে রামা শহর গড়ে তুলবার কাজ বন্ধ করে তির্সাতে ফিরে গেলেন।
\v 22 তারপর রাজা আসা যিহূদার সকলের উপর একটা ঘোষণা করলেন, কাউকে বাদ দিলেন না। তাতে লোকেরা রামায় বাশার ব্যবহার করা পাথর ও কাঠ সব নিয়ে গেল। রাজা আসা সেই সব দিয়ে বিন্যামীনের গেবা ও মিস্পা শহর দুর্গের মত করে গড়ে তুললেন।
\s5
\v 23 আসার অন্যান্য সব কাজ, যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা, তিনি যা কিছু করেছিলেন এবং যে সব শহর তিনি গড়ে তুলেছিলেন তা “যিহূদার রাজাদের ইতিহাস” নামক বইটিতে কি লেখা নেই? বুড়ো বয়সে আসার পায়ে একটা রোগ হল।
\v 24 পরে আসা তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁকে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যিহোশাফট তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s ইস্রায়েলের নাদব প্রভৃতি চারজন রাজার বর্ণনা।
\m
\s5
\v 25 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে যারবিয়ামের ছেলে নাদব ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করতে শুরু করলেন। তিনি ইস্রায়েলে দুই বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 26 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তিনি তাই করতেন। তিনি তাঁর বাবার মত চলতেন, অর্থাৎ তাঁর বাবা ইস্রায়েলীয়দের দিয়ে যেমন পাপ করিয়েছিলেন তিনিও তাই করেছিলেন।
\s5
\v 27 ইষাখর গোষ্ঠীর অহিয়ের ছেলে বাশা নাদবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। নাদব ও সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা যখন পলেষ্টীয়দের গিব্বথোন ঘেরাও করেছিল তখন বাশা গিব্বথোনে নাদবকে মেরে ফেললেন।
\v 28 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের তৃতীয় বছরে বাশা নাদবকে মেরে ফেলে তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 29 তিনি রাজা হয়েই যারবিয়ামের পরিবারের সবাইকে মেরে ফেললেন। সদাপ্রভু তাঁর দাস শীলোনীয় ভাববাদী অহিয়ের মধ্য দিয়ে যে কথা বলেছিলেন সেই অনুসারে বাশা যারবিয়ামের পরিবারের সবাইকে ধ্বংস করে ফেললেন।
\v 30 এর কারণ হল, যারবিয়াম নিজে পাপ করেছিলেন এবং ইস্রায়েলকে দিয়েও পাপ করিয়েছিলেন আর তা করে তিনি ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করে তুলেছিলেন।
\s5
\v 31 নাদবের অন্যান্য কাজ, অর্থাৎ তিনি যা কিছু করেছিলেন তা “ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 32 আসা ও ইস্রায়েলের রাজা বাশার গোটা রাজত্বকাল ধরে তাঁদের মধ্যে যুদ্ধ হয়েছিল।
\s5
\v 33 ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের তৃতীয় বছরে গোটা ইস্রায়েল দেশের উপরে অহিয়ের ছেলে বাশা তির্সায় রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন। তিনি চব্বিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 34 তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন। তিনি যারবিয়ামের মত চলতেন, অর্থাৎ যারবিয়াম যেমন ইস্রায়েলীয়দের দিয়ে পাপ করিয়েছিলেন তিনিও তাই করেছিলেন।
\s5
\c 16
\p
\v 1 তখন বাশার বিরুদ্ধে হনানির ছেলে যেহূর কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য প্রকাশিত হল,
\v 2 “আমি তোমাকে ধুলো থেকে তুলে এনেছি এবং আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের নেতা করেছি, তুমি যারবিয়ামের পথে চলেছ ও আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের দিয়ে পাপ করিয়েছ, ফলে তাদের সেই পাপের মাধ্যমে আমাকে অসন্তুষ্ট করে তুলেছ।
\s5
\v 3 দেখো, আমি বাশাকে ও তার পরিবারকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করব। আমি তোমার বংশকে নবাটের ছেলে যারবিয়ামের বংশের মত করব।
\v 4 বাশার যে কেউ শহরে মরবে তাদের খাবে কুকুরে এবং যে কেউ মাঠের মধ্যে মরবে তাদের খাবে পাখীতে।”
\s5
\v 5 বাশার অন্যান্য কাজ, যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা এবং তিনি যা কিছু করেছিলেন তা “ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 6 পরে বাশা তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন ও তির্সায় তাঁকে কবর দেওয়া হল এবং তাঁর ছেলে এলা তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 7 হনানির ছেলে ভাববাদী যেহূর মধ্য দিয়ে বাশা ও তাঁর বংশের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর বাক্য প্রকাশিত হয়েছিল, কারণ যারবিয়ামের বংশের মত তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তা করে সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করেছিলেন এবং যারবিয়ামের বংশকে হত্যা করেছিলেন।
\s5
\v 8 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের ছাব্বিশ বছরে, বাশার ছেলে এলা ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করতে শুরু করেন; তিনি তির্সায় দুই বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 9 পরে তাঁর অর্ধেক সংখ্যক রথের তত্ত্বাবধায়ক সিম্রি নামক তাঁর দাস তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। এলা তির্সাতে রাজবাড়ির পরিচালক অর্সার বাড়িতে পান করে মাতাল হলেন,
\v 10 আর সিম্রি ভিতরে গিয়ে যিহূদার রাজা আসার সাতাশ বছরে তাঁকে আক্রমণ করে মেরে ফেললেন ও তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 11 যখন সিম্রি রাজত্ব করতে শুরু করলেন এবং সিংহাসনে বসার সঙ্গে সঙ্গেই বাশার বংশের সবাইকে মেরে ফেললেন। তাঁর আত্মীয় বন্ধু কোনো পুরুষকেই তিনি বাঁচিয়ে রাখলেন না।
\v 12 ভাববাদী যেহূর মধ্য দিয়ে সদাপ্রভু বাশার বিরুদ্ধে যে কথা বলেছিলেন সেই অনুসারে সিম্রি বাশার বংশের সবাইকে ধ্বংস করে দিলেন।
\v 13 এর কারণ বাশার সব পাপ ও তাঁর ছেলে এলার পাপ আচরণ; তাঁরা নিজেরা পাপ করেছিলেন এবং ইস্রায়েলকেও পাপ করিয়েছিল ফলে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে তাঁদের মূর্তির মাধ্যমে ক্রুদ্ধ করেছিল।
\s5
\v 14 এলার অন্যান্য কাজ, অর্থাৎ তিনি যা কিছু করেছিলেন তা “ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\s5
\v 15 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের সাতাশ বছরে সিম্রি তির্সায় সাত দিন রাজত্ব করেছিলেন। সেই সময় সৈন্যদল পলেষ্টীয়দের অধিকার করা গিব্বথোনে শিবির স্থাপন করেছিল।
\v 16 পরে সেই শিবিরে অবস্থিত লোকেরা শুনল যে, সিম্রি ষড়যন্ত্র করেছে ও রাজাকে মেরে ফেলেছে; তখন সমস্ত ইস্রায়েল সেই দিন শিবিরের মধ্যে অম্রি নামক সেনাপতিকে ইস্রায়েলের উপরে রাজা করল।
\v 17 তখন অম্রি ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা গিব্বথোন থেকে সরে এসে তির্সা ঘেরাও করল।
\s5
\v 18 ফলে শহর অধিকার করা হয়ে গেছে দেখে সিম্রি রাজবাড়িতে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিলেন ও তিনি পুড়ে মারা গেলেন।
\v 19 এর কারণ তাঁর পাপ আচরণ, ফলে সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, তিনি তাই করতেন। তিনি যারবিয়ামের মত চলতেন, তিনি নিজে পাপ করে ইস্রায়লীয়দেরও পাপ করিয়েছিলেন।
\v 20 সিম্রির অন্যান্য কাজ এবং তাঁর বিদ্রোহের কথা “ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\s5
\v 21 এর পর ইস্রায়েলীয়েরা দুই দলে ভাগ হয়ে গেল। তাদের অর্ধেক লোক চাইল গীনতের ছেলে তিব্‌নিকে রাজা করতে আর বাকী অর্ধেক চাইল অম্রিকে রাজা করতে।
\v 22 কিন্তু অম্রির পক্ষের লোকেরা গীনতের ছেলে তিব্‌নির পক্ষের লোকদের হারিয়ে দিল। এতে তিব্‌নি মারা গেল আর অম্রি রাজা হলেন।
\s অম্রি ও আহাব রাজার বর্ণনা।
\m
\s5
\v 23 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের একত্রিশ বছরে অম্রি ইস্রায়েলে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং তিনি বারো বছর রাজত্ব করেছিলেন, তিনি ছয় বছর রাজত্ব করেছিলেন তির্সায়।
\v 24 তিনি দুই তালন্ত রুপো দিয়ে শেমরের কাছে শমরিয়া পাহাড় কিনলেন, সেই পাহাড়ের উপরে গাঁথলেন এবং যে শহর গাঁথলেন, ঐ পাহাড়ের অধিকারী শেমরের নাম অনুসারে সেই শহরের নাম শমরিয়া রাখলেন।
\s5
\v 25 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, অম্রি তাই করতেন এবং তাঁর আগে যাঁরা ছিলেন তাঁদের সবার চেয়ে তিনি বেশী খারাপ কাজ করলেন।
\v 26 বাস্তবে তিনি নবাটের ছেলে যারবিয়ামের মত চলতেন এবং তিনি যে পাপের মাধ্যমে ইস্রায়েলকে পাপ করিয়ে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে তাদের মূর্তির মাধ্যমে অসন্তুষ্ট করেছিলেন, তিনিও সেই সব পাপের পথে চলতেন।
\s5
\v 27 অম্রির বাকি কাজের কথা এবং যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা “ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 28 পরে অম্রি তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে শমরিয়ায় কবর দেওয়া হল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে আহাব রাজা হলেন।
\s5
\v 29 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের আটত্রিশ বছরের সময় অম্রির ছেলে আহাব ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব শুরু করেন। তিনি বাইশ বছর শমরিয়ায় থেকে ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 30 তাঁর আগে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের সবার থেকে অম্রির ছেলে আহাব সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, তাই বেশি করতেন।
\s5
\v 31 নবাটের ছেলে যারবিয়াম যে সব পাপ করেছিলেন সেগুলোকে তিনি সামান্য ব্যাপার বলে মনে করতেন। তাই তিনি সীদোনীয়দের রাজা ইৎবালের মেয়ে ঈষেবলকে বিয়ে করলেন এবং বালদেবতার সেবা ও প্রণাম করতে লাগলেন।
\v 32 তিনি শমরিয়াতে বালদেবতার জন্য যে মন্দির তৈরী করেছিলেন সেখানে তার জন্য একটা বেদী তৈরী করলেন।
\v 33 আর আহাব আশেরা মূর্তি তৈরী করলেন। তাঁর আগে ইস্রায়েলে যত রাজা ছিলেন, সেই সবার থেকে আহাব ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অসন্তোষজনক আরও কাজ করলেন।
\s5
\v 34 তাঁর সময়ে বৈথেলীয় হীয়েল যিরীহো শহর তৈরী করল; তাতে নূনের ছেলে যিহোশূয়ের মধ্য দিয়ে সদাপ্রভুর বাক্য অনুসারে সেই শহরের ভিত্তি গাঁথার জন্য নিজের বড় ছেলে অবীরামকে প্রাণ দিতে হল এবং তার ফটকের দরজা লাগাবার জন্য তার ছোট ছেলে সগূবকে প্রাণ দিতে হল।
\s5
\c 17
\ms এলিয়ের বর্ণনা।
\p
\v 1 গিলিয়দের তিশ্‌বী গ্রামের এলিয় আহাবকে বললেন, “আমি যাঁর সেবা করি ইস্রায়েলীয়দের সেই জীবন্ত ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিব্যি দিয়ে বলছি যে, আমি না বলা পর্যন্ত আগামী কয়েক বছরে শিশিরও পড়বে না, বৃষ্টিও পড়বে না।”
\s5
\v 2 পরে সদাপ্রভু এলিয়কে বললেন,
\v 3 “তুমি এই জায়গা ছেড়ে পূর্ব দিকে যাও এবং যর্দনের পূর্ব দিকে করীৎ স্রোতের ধারে লুকিয়ে থাক।
\v 4 তুমি সেই স্রোতের জল খাবে আর সেখানে তোমাকে খাবার দেবার জন্য আমি দাঁড়কাকদের আদেশ দিয়েছি।”
\s5
\v 5 কাজেই সদাপ্রভু এলিয়কে যা বললেন তিনি তাই করলেন। তিনি যর্দনের পূর্ব দিকে করীৎ স্রোতের ধারে গিয়ে থাকতে লাগলেন।
\v 6 দাঁড়কাকেরা সকালে ও বিকালে তাঁর জন্য রুটি ও মাংস আনত এবং তিনি সেই স্রোতের জল খেতেন।
\v 7 দেশে বৃষ্টি না হওয়াতে কিছুকাল পরে সেই স্রোতের জল শুকিয়ে গেল।
\s5
\v 8 পরে তাঁর কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য এল,
\v 9 “তুমি উঠ, এখন সীদোনের সারিফতে গিয়ে থাক। তোমাকে খাবার জোগাবার জন্য আমি সেখানকার এক বিধবাকে আজ্ঞা দিয়েছি।”
\v 10 তখন তিনি উঠে সারিফতে গেলেন; আর যখন সেই শহরের দরজায় আসলেন, দেখ, সেই জায়গায় এক বিধবা কাঠ কুড়াচ্ছে। তিনি তাকে ডেকে বললেন, “অনুরোধ করি, তুমি একটি পাত্রে করে সামান্য জল আন, আমি পান করব”
\s5
\v 11 সেই স্ত্রীলোকটি যখন জল আনতে যাচ্ছিল তখন তিনি তাকে ডেকে বললেন, “অনুরোধ করি, আমার জন্য এক টুকরো রুটি হাতে করে আন।”
\v 12 উত্তরে সেই বিধবা বলল, “আপনার ঈশ্বর জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি দিয়ে বলছি যে, আমার কাছে একটাও রুটি নেই। পাত্রে কেবল এক মুঠো ময়দা আর ভাঁড়ে একটুখানি তেল রয়েছে। বাড়ী নিয়ে যাবার জন্য আমি কতগুলো কাঠ কুড়াচ্ছি; তা দিয়ে আমার ও আমার ছেলের জন্য কিছু খাবার তৈরী করব। তারপর তা খেয়ে আমরা মরব।”
\v 13 এলিয় তাকে বললেন, “ভয় কোরো না। যা বললে, তাই কর গিয়ে, কিন্তু প্রথমে তা থেকে আমার জন্য একটি ছোট রুটি তৈরী করে আনো; পরে নিজের ও ছেলেটির জন্য তৈরী কর।
\s5
\v 14 কারণ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন, সদাপ্রভু পৃথিবীতে বৃষ্টি না দেওয়া পর্যন্ত ঐ ময়দার পাত্রটাও খালি হবে না আর তেলের ভাঁড়ও খালি হবে না।”
\v 15 তাতে সে গিয়ে এলিয়ের কথামত করল; আর সে ও এলিয় এবং সেই স্ত্রীলোকের আত্মীয় অনেক দিন পর্যন্ত খেল।
\v 16 এলিয়ের মধ্য দিয়ে সদাপ্রভু যে কথা বলেছিলেন সেই অনুসারে ঐ ময়দার পাত্রটাও খালি হল না, তেলের ভাঁড়ও খালি হল না।
\s5
\v 17 এই সব ঘটনার পরে সেই স্ত্রীলোকের, অর্থাৎ সেই বিধবার ছেলে অসুস্থ হল এবং তার অসুখ এমন বেশি হল যে, তার শরীরে আর শ্বাসবায়ু থাকল না।
\v 18 স্ত্রীলোকটি তখন এলিয়কে বলল, “হে ঈশ্বরের লোক, আপনার সঙ্গে আমার কি করার আছে? আপনি কি আমাকে আমার পাপের কথা মনে করিয়ে দিতে আর আমার ছেলেকে মেরে ফেলতে এসেছেন?”
\s5
\v 19 তিনি তাকে বললেন, “তোমার ছেলেকে আমার কাছে দাও।” পরে তিনি ছেলেটিকে সেই স্ত্রীলোকের কোল থেকে নিয়ে উপরের নিজের থাকবার ঘরে গিয়ে নিজের বিছানায় শুইয়ে দিলেন।
\v 20 আর তিনি সদাপ্রভুকে ডেকে বললেন, “হে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, আমি যে বিধবার বাড়ীতে থাকি তার ছেলেকে মেরে ফেলে তারও উপরে বিপদ নিয়ে আসলে?”
\v 21 তারপর তিনি তিন বার ছেলেটির উপরে লম্বা হয়ে শুয়ে সদাপ্রভুকে ডেকে বললেন, “হে সদাপ্রভু আমার ঈশ্বর, অনুরোধ করি, ছেলেটির প্রাণ তার মধ্যে ফিরে আসুক।”
\s5
\v 22 তখন সদাপ্রভু এলিয়ের কথা শুনলেন তাতে ছেলেটির প্রাণ তার মধ্যে ফিরে আসল আর সে বেঁচে উঠল।
\v 23 পরে এলিয় ছেলেটিকে তুলে নিয়ে উপরের ঘর থেকে নীচে নেমে তাকে তার মায়ের কাছে দিয়ে বললেন, “দেখ, তোমার ছেলে বেঁচে আছে।”
\v 24 তাতে সেই স্ত্রীলোকটি এলিয়কে বলল, “আমি এখন জানতে পারলাম আপনি ঈশ্বরের লোক এবং সদাপ্রভু আপনার মধ্য দিয়ে যা বলেন তা সত্য।”
\s5
\c 18
\ms বালদেবের যাজকদের লজ্জিত ও নিহত হবার বর্ণনা।
\p
\v 1 এর অনেক দিন পরে, বৃষ্টি না হওয়ার তৃতীয় বছরের সময় সদাপ্রভু থেকে এলিয়ের জন্য এই বাক্য এলো, “তুমি গিয়ে আহাবকে দেখা দাও। পরে আমি দেশে বৃষ্টি পাঠিয়ে দিচ্ছি।”
\v 2 তাতে এলিয় আহাবকে দেখা দিতে গেলেন। তখন শমরিয়াতে ভীষণ দুর্ভিক্ষ হয়েছিল।
\s5
\v 3 আর আহাব রাজবাড়ির পরিচালক ওবদিয়কে ডাকলেন। ওবদিয় সদাপ্রভুকে খুব ভয় করতেন।
\v 4 ঈষেবল যখন সদাপ্রভুর ভাববাদীদের মেরে ফেলছিলেন তখন ওবদিয় একশোজন ভাববাদীকে নিয়ে পঞ্চাশ পঞ্চাশ করে দুটো গুহায় লুকিয়ে রেখেছিলেন। তিনি তাঁদের খাবার ও জলের জোগান দিতেন।
\s5
\v 5 আহাব ওবদিয়কে বললেন, “তুমি দেশের মধ্যে যেসব উনুই ও ছোট নদী আছে, সেগুলির কাছে যাও। ঘোড়া আর খচ্চরগুলোর প্রাণ রক্ষার জন্য হয়তো কিছু ঘাস পাওয়া যাবে। নাহলে সমস্ত পশু হারাতে হবে।”
\v 6 তাঁরা দুইজন ঘুরে দেখবার জন্য দেশটা ভাগ করে নিলেন। আহাব নিজে গেলেন এক দিকে আর ওবদিয় গেলেন অন্য দিকে।
\s5
\v 7 ওবদিয় পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন, এমন সময়ে, দেখ, এলিয় তাঁর সামনে; ওবদিয় তাঁকে চিনতে পেরে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে বললেন, “আমার প্রভু এলিয়?”
\v 8 তিনি বললেন, “আমিই সেই; যাও, তোমার প্রভুকে গিয়ে জানাও যে, এলিয় এখানে আছেন।”
\s5
\v 9 তিনি বললেন, “আমি কি পাপ করেছি যে, আপনি আপনার দাস আমাকে মেরে ফেলবার জন্য আহাবের হাতে তুলে দিচ্ছেন?
\v 10 আপনার ঈশ্বর জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, এমন কোনো জাতি বা রাজ্য নেই যার কাছে আমার প্রভু আপনার খোঁজে লোক পাঠাননি। আর যখন তারা বলল, সেই লোকটি নেই; তখন তারা আপনাকে পায়নি বলে তিনি সেই সব রাজ্যের ও জাতির লোকদেরকেও শপথ করিয়েছেন।
\v 11 এখন আপনি বলছেন, যাও, তোমার প্রভুকে বল, দেখুন, এলিয় এখানে আছেন।
\s5
\v 12 আর আমি আপনার কাছ থেকে চলে গেলেই সদাপ্রভুর আত্মা আমার অজানা কোনো জায়গায় আপনাকে নিয়ে যাবেন, তাতে আমি গিয়ে আহাবকে খবর দিলে যদি তিনি খুঁজে না পান, তবে আমাকে হত্যা করবেন; কিন্তু আপনার দাস আমি ছোটবেলা থেকে সদাপ্রভুকে ভয় করে আসছি।
\v 13 ঈষেবল যখন সদাপ্রভুর ভাববাদীদের মেরে ফেলছিলেন, তখন আমি যা করেছিলাম, তা কি আমার প্রভু শোনেন নি? সদাপ্রভুর ভাববাদীদের একশো জনকে পঞ্চাশ পঞ্চাশ করে দুটো গুহায় লুকিয়ে রেখেছি এবং তাদের খাবার ও জলের জোগান দিয়েছি।
\s5
\v 14 আর এখন আপনি বলছেন, যাও, তোমার প্রভুকে বল, দেখুন, এলিয় এখানে আছেন। তিনি তো আমাকে মেরে ফেলবেন।”
\v 15 এলিয় বললেন, “আমি যাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছি, সেই বাহিনীগণের জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আমি আজ অবশ্য তাঁকে দেখা দেব।”
\s5
\v 16 তখন ওবদিয় আহাবের সঙ্গে দেখা করে কথাটা তাঁকে বললেন; তাতে আহাব এলিয়ের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।
\v 17 এলিয়কে দেখে আহাব বললেন, “হে ইস্রায়েলের কাঁটা, এ কি তুমি?”
\s5
\v 18 এলিয় বললেন, “আমি কাঁটা হইনি, কিন্তু আপনি ও আপনার বাবার বংশের লোকেরাই; কারণ আপনারা সদাপ্রভুর আদেশ ত্যাগ করে বালদেবতাদের পিছনে গিয়েছেন।
\v 19 এখন লোক পাঠিয়ে ইস্রায়েলের সবাইকে কর্মিল পর্বতে আমার কাছে জড়ো করুন। ঈষেবলের টেবিলে বালদেবতার যে চারশো পঞ্চাশজন ভাববাদী এবং আশেরার চারশোজন ভাববাদী খাওয়া দাওয়া করে তাদের নিয়ে আসুন।”
\s5
\v 20 তাতে আহাব ইস্রায়েলের সব লোকদের কাছে খবর পাঠালেন এবং কর্মিল পর্বতে ঐ ভাববাদীদের জড়ো করলেন।
\v 21 পরে এলিয় লোকদের সামনে গিয়ে বললেন, “আর কতদিন তোমরা দুই নৌকায় পা দিয়ে থাকবে? যদি সদাপ্রভুই ঈশ্বর হন তবে তাঁর অনুসরণ কর, আর যদি বালদেবতাই ঈশ্বর হন তবে তাঁর অনুসরণ কর।” কিন্তু লোকেরা কোনো উত্তর দিল না।
\s5
\v 22 তখন এলিয় তাদের বললেন, “সদাপ্রভুর ভাববাদীদের মধ্যে কেবল আমিই বাকী আছি, কিন্তু বালদেবতার ভাববাদী রয়েছে সাড়ে চারশো জন।
\v 23 আমাদের জন্য দুটো ষাঁড় দেওয়া হোক। ওরা নিজেদের জন্য একটা ষাঁড় বেছে নিয়ে কেটে টুকরো টুকরো করে কাঠের উপর রাখুক, কিন্তু তাতে আগুন না দিক। আমি অন্য ষাঁড়টা নিয়ে কেটে প্রস্তুত করে কাঠের উপরে রাখব, কিন্তু তাতে আগুন দেব না।
\v 24 তারপর ওরা ওদের দেবতাকে ডাকবে আর আমি ডাকব সদাপ্রভুকে। যিনি আগুন পাঠিয়ে এর উত্তর দেবেন তিনিই ঈশ্বর।” এই কথা শুনে সবাই বলল, “এ ভালো কথা।”
\s5
\v 25 এলিয় বাল দেবতার ভাববাদীদের বললেন, “তোমরা তো অনেকে আছ, আগে তোমরাই নিজেদের জন্য একটা ষাঁড় বেছে নিয়ে তৈরী কর এবং তোমরা নিজেদের দেবতাকে ডাক, কিন্তু আগুন দেবে না।”
\v 26 যে ষাঁড়টা তাদের দেওয়া হল তা নিয়ে তারা তৈরী করে নিল। তারপর তারা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বাল দেবতাকে এই বলে ডাকতে লাগল, “হে বালদেব, আমাদের উত্তর দাও।” কিন্তু কোনো সাড়া মিলল না, কেউ উত্তর দিল না। যে বেদী তারা তৈরী করেছিল তার চারপাশে তারা নাচতে লাগল।
\s5
\v 27 দুপুর বেলা এলিয় তাদের ঠাট্টা করে বললেন, “জোরে চিৎকার কর, সে তো দেবতা। হয়তো সে গভীর চিন্তা করছে, বা কোথাও গিয়েছে, বা পথে চলেছে। কিংবা হয়তো সে ঘুমাচ্ছে, তাকে জাগাতে হবে।”
\v 28 তখন তারা আরও জোরে চিৎকার করতে লাগল এবং তাদের ব্যবহার অনুসারে দেহে রক্তের ধারা বয়ে না যাওয়া পর্যন্ত ছোরা ও কাঁটা দিয়ে নিজেদের আঘাত করতে থাকল।
\v 29 দুপুর গড়িয়ে গেল আর তারা বিকাল বেলার বলিদানের সময় পর্যন্ত ভাববাণী প্রচার করল, কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া গেল না, কেউ উত্তর দিল না, কেউ মনোযোগও দিল না।
\s5
\v 30 তখন এলিয় সমস্ত লোকদের বললেন, “আমার কাছে এস।” তারা তাঁর কাছে গেল। এলিয় সদাপ্রভুর ভেঙ্গে পড়া বেদী মেরামত করে নিলেন।
\v 31 তিনি যাকোবের ছেলেদের প্রত্যেক গোষ্ঠীর জন্য একটা করে বারোটা পাথর নিলেন। এই যাকোবের কাছেই সদাপ্রভুর বাক্য এসেছিল, বলেছিলেন, “তোমার নাম হবে ইস্রায়েল।”
\v 32 সেই পাথরগুলো দিয়ে এলিয় সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে একটা বেদী তৈরী করলেন এবং তার চারপাশে এমন নালা খুঁড়লেন যার মধ্যে দুই কাঠা বীজ ধরতে পারে।
\s5
\v 33 পরে তিনি কাঠ সাজিয়ে ষাঁড়টা টুকরা টুকরা করে কাঠের উপর রাখলেন আর বললেন, “চারটা কলসী জলে ভরে এই হোমবলির ও কাঠের উপরে ঢেলে দাও।”
\v 34 তারপর তিনি বললেন, “দ্বিতীয়বার ওটা কর।” এবং তারা দ্বিতীয়বার তাই করল। তিনি আদেশ দিলেন, “তৃতীয়বার কর।” তারা তৃতীয়বার তাই করল।
\v 35 তখন বেদীর চারদিকে জল গেল এবং নালা জলে ভরতি হয়ে গেল।
\s5
\v 36 পরে বিকালের বলিদানের সময় হলে পর ভাববাদী এলিয় কাছে এগিয়ে আসলেন এবং বললেন, “হে সদাপ্রভু, অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও ইস্রায়েলের ঈশ্বর, আজকে তুমি জানিয়ে দাও যে, ইস্রায়েলের মধ্যে তুমিই ঈশ্বর এবং আমি তোমার দাস, আর তোমার আদেশেই আমি এই সব করেছি।
\v 37 হে সদাপ্রভু, আমাকে উত্তর দাও; যাতে এই সব লোকেরা জানতে পারে যে, হে সদাপ্রভু, তুমিই ঈশ্বর আর তুমিই তাদের মন ফিরিয়ে এনেছ।”
\s5
\v 38 তখন উপর থেকে সদাপ্রভুর আগুন পড়ে হোমবলি, কাঠ, পাথর ও ধুলো গ্রাস করল এবং নালার জলও শুষে নিল।
\v 39 তা দেখে লোকেরা সবাই মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে বলল, “সদাপ্রভুই ঈশ্বর, সদাপ্রভুই ঈশ্বর।”
\v 40 তখন এলিয় তাদেরকে বললেন, “বাল দেবতার ভাববাদীদের ধর। তাদের একজনকেও পালিয়ে যেতে দিয়ো না।” তখন লোকেরা তাদের ধরে ফেলল। এলিয় তাদেরকে ছোট কীশোন নদীতে নিয়ে গেলেন এবং সেখানে তাদের মেরে ফেললেন।
\s5
\v 41 তারপর এলিয় আহাবকে বললেন, “আপনি উঠে গিয়ে খাওয়া দাওয়া করুন, কারণ ভীষণ বৃষ্টির শব্দ শোনা যাচ্ছে।”
\v 42 এতে আহাব খাওয়া দাওয়া করতে গেলেন। আর এলিয় গিয়ে কর্মিলের চূড়ায় উঠলেন। তিনি মাটিতে নিচু হয়ে দুই হাঁটুর মধ্যে মুখ রাখলেন।
\s5
\v 43 পরে তিনি তাঁর চাকরকে বললেন, “তুমি গিয়ে সাগরের দিকে চেয়ে দেখ।” সে গিয়ে দেখে বলল, “ওখানে কিছু নেই।” এলিয় বললেন, “আবার সাতবার যাও।”
\v 44 সপ্তম বারে চাকরটি এসে বলল, “মানুষের হাতের মত ছোট একটা মেঘ সমুদ্র থেকে উঠছে।” তখন এলিয় তাকে বললেন, “উঠে গিয়ে আহাবকে বল যেন তিনি তাঁর রথ ঠিক করে নিয়ে নেমে যান, যদি বৃষ্টি আপনাকে যেতে বাধা দেয়।”
\s5
\v 45 অমনি আকাশ মেঘে ও বাতাসে অন্ধকার হয়ে উঠল এবং ভীষণ বৃষ্টি এসে গেল। আহাব রথে করে যিষ্রিয়েলে গেলেন।
\v 46 আর সদাপ্রভুর হাত এলিয়ের উপর ছিল। তিনি তাঁর কাপড়খানা কোমর বাঁধনিতে গুঁজে নিয়ে আহাবের আগে আগে দৌড়ে যিষ্রিয়েলের প্রবেশ স্থানে গেলেন।
\s5
\c 19
\ms এলিয়ের মরুভূমিতে পলায়ন। ইলীশায়ের আহ্বান।
\p
\v 1 এলিয় যা যা করেছেন এবং কেমন করে তরোয়াল দিয়ে সমস্ত ভাববাদীদের মেরে ফেলেছেন তা সবই আহাব ঈষেবলকে বললেন।
\v 2 তাতে ঈষেবল লোক দিয়ে এলিয়কে বলে পাঠালেন, “কাল এই সময়ের মধ্যে তোমার প্রাণের দশা যদি তাদের একজনের মত না করি, তবে দেবতারা যেন আমাকে শাস্তি দেন আর তা ভীষণভাবেই দেন।”
\v 3 এলিয় তা দেখে উঠলেন এবং প্রাণ বাঁচাবার জন্য পালিয়ে গেলেন। তিনি যিহূদা এলাকার বের্‌ শেবাতে পৌঁছে তাঁর চাকরকে সেখানে রাখলেন,
\s5
\v 4 কিন্তু তিনি নিজে মরু এলাকার মধ্যে একদিনের পথ গিয়ে একটা রোতম গাছের নীচে বসলেন এবং নিজের মৃত্যুর জন্য প্রার্থনা করলেন। তিনি বললেন, “হে সদাপ্রভু, এই যথেষ্ট, এখন তুমি আমার প্রাণ নাও; কারণ আমি তো আমার পূর্বপুরুষদের চেয়ে ভাল নই।”
\v 5 তারপর তিনি এক রোতম গাছের তলায় শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লেন। আকস্মিক একজন স্বর্গদূত তাঁকে ছুঁয়ে বললেন, “ওঠ, খাও।”
\v 6 তিনি চেয়ে দেখলেন; তাঁর মাথার কাছে গরম পাথরে সেঁকা একখানা রুটি ও এক পাত্র জল রয়েছে। তা খেয়ে তিনি আবার শুয়ে পড়লেন।
\s5
\v 7 সদাপ্রভুর দূত দ্বিতীয়বার এসে তাঁকে ছুঁয়ে বললেন, “ওঠ, খাও, কারণ তোমার শক্তি থেকেও পথ বেশি।”
\v 8 তাতে তিনি উঠে খেলেন। সেই খাবার খেয়ে শক্তিলাভ করে তিনি চল্লিশ দিন ও চল্লিশ রাত হেঁটে ঈশ্বরের পাহাড় হোরেবে গিয়ে উপস্থিত হলেন।
\s5
\v 9 সেখানে একটা গুহার মধ্যে ঢুকে তিনি রাতটা কাটালেন। তারপর, তাঁর কাছে সদাপ্রভুর বাক্য উপস্থিত হল এবং তিনি তাকে বললেন, “এলিয়, তুমি এখানে কি করছ?”
\v 10 এলিয় বললেন, “আমি বাহিনীদের সদাপ্রভুর পক্ষে খুবই আগ্রহী হয়েছি, কারণ ইস্রায়েলীয়েরা তোমার স্থাপন করা ব্যবস্থা ত্যাগ করেছে, তোমার সব বেদী ভেঙ্গে ফেলেছে এবং তরোয়াল দিয়ে তোমার ভাববাদীদের মেরে ফেলেছে। কেবল আমিই বাকী আছি আর আমাকেও এখন তারা মেরে ফেলবার চেষ্টা করছে।”
\s5
\v 11 পরে তিনি বললেন, “তুমি বাইরে গিয়ে এই পর্বতের উপরে সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়াও।” সেই সময় সদাপ্রভু ওখান দিয়ে যাচ্ছিলেন, আর তাঁর সামনে একটা ভীষণ শক্তিশালী বাতাস পর্বতগুলিকে চিরে দুই ভাগ করল এবং সব পাথর ভেঙ্গে টুকরা টুকরা করল, কিন্তু সেই বাতাসের মধ্যে সদাপ্রভু ছিলেন না। সেই বাতাসের পরে একটা ভূমিকম্প হল, কিন্তু সেই ভূমিকম্পের মধ্যেও সদাপ্রভু ছিলেন না।
\v 12 ভূমিকম্পের পরে দেখা দিল আগুন, কিন্তু সেই আগুনের মধ্যেও সদাপ্রভু ছিলেন না। সেই আগুনের পরে ফিস্‌ ফিস্‌ শব্দের মত সামান্য শব্দ শোনা গেল।
\s5
\v 13 এলিয় তা শুনে তাঁর গায়ের চাদর দিয়ে মুখ ঢেকে ফেললেন এবং বাইরে গিয়ে গুহার মুখের কাছে দাঁড়ালেন। তারপর তিনি এই কথা শুনলেন, “এলিয়, তুমি এখানে কি করছ?”
\v 14 এলিয় বললেন, “আমি বাহিনীদের সদাপ্রভুর পক্ষে খুবই আগ্রহী হয়েছি, কারণ ইস্রায়েলীয়েরা তোমার স্থাপন করা ব্যবস্থা ত্যাগ করেছে, তোমার সব যজ্ঞবেদী ভেঙ্গে ফেলেছে এবং তোমার ভাববাদীদের মেরে ফেলেছে। কেবল আমিই বাকী আছি আর আমাকেও এখন তারা মেরে ফেলবার চেষ্টা করছে।”
\s5
\v 15 তখন সদাপ্রভু তাঁকে বললেন, “যাও, তুমি যে পথে এসেছ সেই পথে ফিরে গিয়ে দম্মেশকের মরু এলাকায় যাও। সেখানে পৌঁছে তুমি হসায়েলকে অরামের উপরে রাজপদে অভিষেক কর।
\v 16 এছাড়া নিম্‌শির ছেলে যেহূকে ইস্রায়েলের রাজার পদে অভিষেক কর, আর তোমার পদে ভাববাদী হওয়ার জন্য আবেলমহোলার শাফটের ছেলে ইলীশায়কে অভিষেক কর।
\s5
\v 17 হসায়েলের তলোয়ার যারা এড়িয়ে যাবে যেহূ তাদের মেরে ফেলবে আর যেহূর তলোয়ার যারা এড়িয়ে যাবে ইলীশায় তাদের মেরে ফেলবে।
\v 18 কিন্তু ইস্রায়েলে আমি আমার জন্য সাত হাজার লোককে রেখে দেব যারা বাল দেবতার সামনে হাঁটু পাতেনি ও সেই সবার মুখ তাকে চুম্বনও করে নি।”
\s5
\v 19 পরে তিনি সেখান থেকে চলে গিয়ে শাফটের ছেলে ইলীশায়ের দেখা পেলেন; সেই সময় তিনি বারো জোড়া বলদ দিয়ে জমি চাষ করছিলেন এবং তিনি নিজে শেষ জোড়ার সঙ্গে ছিলেন। এলিয় তাঁর কাছে গিয়ে নিজের গায়ের চাদরখানা তাঁর গায়ে ফেলে দিলেন।
\v 20 ইলীশায় তখন তাঁর বলদ ফেলে এলিয়ের পিছনে পিছনে দৌড়ে গেলেন। ইলীশায় বললেন, “মিনতি করি, আমাকে আমার মা বাবাকে চুম্বন করে আসতে দিন। তারপর আমি আপনার সঙ্গে যাব।” উত্তরে এলিয় বললেন, “ফিরে যাও, কিন্তু আমি তোমার কি করলাম?”
\s5
\v 21 পরে ইলীশায় তাঁকে ছেড়ে ফিরে গেলেন। তিনি তাঁর বলদ জোড়াটা নিয়ে বলি দিলেন এবং যোঁয়ালির কাঠ দিয়ে মাংস রান্না করে লোকদের দিলেন আর লোকেরা তা খেল। তারপর তিনি এলিয়ের সঙ্গে যাবার জন্য বের হলেন এবং তাঁর সেবাকারী হলেন।
\s5
\c 20
\ms আহাবের মাধ্যমে অরামীয় রাজার পরাজয়।
\p
\v 1 অরামের রাজা বিন্‌হদদ তাঁর সমস্ত সৈন্য জড়ো করলেন। তিনি বত্রিশজন রাজা ও অনেক ঘোড়া আর রথ সঙ্গে নিয়ে শমরিয়া আক্রমণ করবার জন্য ঘেরাও করলেন এবং যুদ্ধ করলেন।
\v 2 তিনি কয়েকজন লোককে শহরে পাঠিয়ে ইস্রায়েলের রাজা আহাবকে এই কথা জানালেন, “বিন্‌হদদ বলছেন,
\v 3 ‘তোমার সোনা ও তোমার রুপো আমার, আর তোমার স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের মধ্যে যারা ভালো, তারা আমার’।”
\s5
\v 4 উত্তরে ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আপনার কথা ঠিক। আমি এবং আমার সব কিছুই আপনার।”
\v 5 পরে দূতেরা আহাবের কাছে আবার এসে বলল, “বিন্‌হদদ বলছেন, ‘তোমার সোনা রুপো, স্ত্রীদের ও ছেলেমেয়েদের যে আমাকে দিতে হবে আমি লোক পাঠিয়ে বলে দিয়েছিলাম।
\v 6 কিন্তু আগামী কাল এই সময়ে আমার দাসদেরকে আমি তোমার কাছে পাঠাব। তারা আপনার রাজবাড়ী ও আপনার কর্মচারীদের বাড়ীতে খোঁজ করবে এবং যে সমস্ত জিনিস আপনার চোখে মূল্যবান তা সবই নিয়ে আসবে।’ ”
\s5
\v 7 তখন ইস্রায়েলের রাজা দেশের সমস্ত প্রাচীনদের ডেকে বললেন, “অনুরোধ করি, বিবেচনা করে দেখ, এই লোকটি শুধু ক্ষতি করবার চেষ্টা করছে, কারণ সে যখন আমার স্ত্রীদের ও ছেলেমেয়েদের এবং সোনা রুপোর জন্য আদেশ পাঠালে আমি তা দিতে অস্বীকার করিনি।”
\v 8 সব প্রাচীনরা এবং সমস্ত লোকেরা তাঁকে বলল, “আপনি শুনবেন না কিম্বা রাজি হবেন না।”
\s5
\v 9 তখন আহাব বিন্‌হদদের দূতদেরকে বললেন, “আমার প্রভু মহারাজকে বলবে যে, তাঁর প্রথম দাবি অনুসারে আমি সবই করব, কিন্তু এই কাজ করতে পারব না।” পরে দূতেরা তখন সেই খবর নিয়ে বিন্‌হদদের কাছে চলে গেল।
\v 10 তখন তিনি তাঁর কাছে এই সংবাদ পাঠালেন, “আমার অনুসরণকারী সব লোককে এক এক মুঠো করে দেবার মত ধুলাও যদি শমরিয়াতে থেকে যায় তাহলে দেবতারা যেন আমাকে শাস্তি দেন আর তা ভীষণভাবেই দেন।”
\s5
\v 11 তাতে উত্তরে ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “তাঁকে বলবে, ‘যে লোক যুদ্ধের সজ্জা পড়ে, সে সজ্জা খুলে রাখা লোকের মত গর্ব না করুক।’ ”
\v 12 বিন্‌হদদের কাছে এই খবর গিয়ে যখন পৌঁছাল তখন তিনি ও অন্যান্য রাজারা তাঁদের তাঁবুতে পান করছিলেন। তিনি তাঁর লোকদের আদেশ দিলেন, “যুদ্ধের জন্য তোমরা তৈরী হও।” কাজেই তারা শহরটা আক্রমণ করবার জন্য তৈরী হল।
\s5
\v 13 এর মধ্যে ইস্রায়েলের রাজা আহাবের কাছে একজন ভাববাদী এসে এই কথা ঘোষণা করলেন, “সদাপ্রভু বলছেন, ‘তুমি ঐ বিশাল সৈন্যবাহিনীকে দেখতে পাচ্ছ কি? আজই আমি ওদের তোমার হাতে তুলে দেব আর তখন তুমি জানতে পারবে যে, আমিই সদাপ্রভু।’ ”
\v 14 আহাব বললেন, “কিন্তু কাকে দিয়ে তিনি তা করাবেন?” ভাববাদী উত্তরে বললেন, “সদাপ্রভু বলছেন যে, বিভিন্ন এলাকার শাসনকর্তাদের অধীনে যে যুবক সৈন্যেরা আছে তারাই তা করবে।” আহাব জিজ্ঞাসা করলেন, “যুদ্ধটা শুরু করবে কে?” উত্তরে ভাববাদী বললেন, “আপনিই করবেন।”
\v 15 আহাব এই কথা শুনে বিভিন্ন এলাকার শাসনকর্তাদের অধীন যুবক সৈন্যদের জড়ো করলেন। তাতে তারা মোট দুশো বত্রিশজন হল। তারপর তিনি সব ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের জড়ো করলে পর সাত হাজার সৈন্য হল।
\s5
\v 16 তারা দুপুর বেলায় বেরিয়ে পড়ল। বিন্‌হদদ ও তাঁর সঙ্গে যুক্ত বত্রিশজন রাজা তাদের তাঁবুর মধ্যে পান করে মাতাল হয়েছিলেন।
\v 17 রাজ্যপালদের সেই যুবকরা বাইরে গেল; সেই সময় বিন্‌হদদ খোঁজ নেবার জন্য লোক পাঠিয়ে দিলে তারা তাঁকে খবর দিল, “শমরিয়া থেকে লোকেরা এগিয়ে এসেছে।”
\s5
\v 18 তিনি বললেন, “তারা সন্ধির জন্য এসে থাকলে তাদের জীবন্ত ধরবে, আবার যুদ্ধের জন্য এসে থাকলেও তাদের জীবন্ত ধরবে।”
\v 19 এর মধ্যে ওরা অর্থাৎ রাজ্যপালদের সেই যুবকরা ও তাদের পিছনে আসা সৈন্যদল শহর থেকে বের হল।
\s5
\v 20 তারা প্রত্যেকে তাদের নিজের নিজের বাধাদানকারীকে মেরে ফেলল। তা দেখে অরামীয়েরা পালিয়ে গেল আর ইস্রায়েলীয়েরা তাদের পিছনে তাড়া করল এবং অরামের রাজা বিন্‌হদদ তাঁর কয়েকজন ঘোড়সওয়ারকে সঙ্গে নিয়ে ঘোড়ার পিঠে করে পালিয়ে গেলেন।
\v 21 পরে ইস্রায়েলের রাজা বের হয়ে তাদের ঘোড়া ও রথ সব ধ্বংস করে দিলেন এবং প্রচুর অরামীয়দের হত্যা করলেন।
\s5
\v 22 পরে ঐ ভাববাদী ইস্রায়েলের রাজার কাছে এসে বললেন, “আপনার শক্তি বাড়ান এবং কি করতে হবে তা ভেবে দেখুন, কারণ আগামী বছর আসলে অরামের রাজা আপনাকে আবার আক্রমণ করবেন।”
\v 23 আর অরামের রাজার দাসেরা তাঁকে বলল, “ওদের দেবতাগুলো পাহাড়ের দেবতা, তাই আমাদের চেয়ে ওরা বেশী শক্তিশালী। কিন্তু আমরা যদি সমভূমিতে ওদের সঙ্গে যুদ্ধ করি তবে নিশ্চয়ই আমরা ওদের চেয়ে শক্তিশালী হব।
\s5
\v 24 আপনি এই কাজ করুন, রাজাদের সরিয়ে দিয়ে তাদের জায়গায় সেনাপতিদের নিযুক্ত করুন।
\v 25 আর আপনার নিজের যত সৈন্য, যত ঘোড়া ও রথ নষ্ট হয়েছে, তত সৈন্য, তত ঘোড়া ও রথ সংগ্রহ করুন; তাহলে আমরা সমভূমিতে ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করতে পারব। তখন নিশ্চয়ই আমরা তাদের চেয়ে শক্তিশালী হব।” তিনি তাদের কথায় রাজী হয়ে সেইমতই কাজ করলেন।
\s5
\v 26 পরের বছর আসলে বিন্‌হদদ অরামীয়দেরকে জড়ো করে নিয়ে ইস্রায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য অফেকে গেলেন।
\v 27 এদিকে ইস্রায়েলীয়দের জড়ো করা হল। তাদের খাবার জোগান দেবার ব্যবস্থা করা হলে পর তারাও অরামীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য বেরিয়ে গেল। ইস্রায়েলীয়েরা অরামীয়দের সামনের দিকে দুটি ছাগলের পালের মত ছাউনি ফেলল। কিন্তু অরামীয়েরা গোটা দেশটা জুড়ে থাকল।
\s5
\v 28 তখন ঈশ্বরের একজন লোক এসে ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘অরামীয়েরা বলেছে, সদাপ্রভু পাহাড়ের ঈশ্বর, উপত্যকার ঈশ্বর নন; সেইজন্য আমি এই বিরাট সৈন্যদলকে তোমার হাতে তুলে দেব, আর এতে তোমরা জানতে পারবে যে, আমিই সদাপ্রভু।’ ”
\s5
\v 29 আর সাত দিন পর্যন্ত তারা একে অন্যের সামনাসামনি ছাউনি ফেলে থাকল, তারপর সপ্তম দিনে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। ইস্রায়েলীয়েরা এক দিনেই এক লক্ষ অরামীয় পদাতিক সৈন্য মেরে ফেলল।
\v 30 বাদবাকী সৈন্যেরা অফেকে পালিয়ে গেল আর সেখানে তাদের সাতাশ হাজার সৈন্যের উপরে দেয়াল ধসে পড়ল। আর বিন্‌হদদ সেখানে পালিয়ে গিয়ে বাড়ীর ভিতরের একটা কামরায় লুকিয়ে থাকলেন।
\s5
\v 31 পরে তাঁর দাসেরা তাঁকে বলল, “দেখুন, আমরা শুনেছি যে, ইস্রায়েলের রাজারা দয়ালু। চলুন, আমরা কোমরে চট পরে আর মাথায় দড়ি বেঁধে ইস্রায়েলের রাজার কাছে যাই। হয়তো তিনি আপনার প্রাণ রক্ষা করবেন।”
\v 32 পরে তাঁরা কোমরে চট পরে ও মাথায় দড়ি বেঁধে ইস্রায়েলের রাজার কাছে গিয়ে বললেন, “তোমার দাস বিন্‌হদদ বলছেন যে, ‘অনুরোধ করি, আমার প্রাণ রক্ষা করুন’।” তিনি বললেন, “তিনি কি এখনও বেঁচে আছেন? তিনি আমার ভাই।”
\s5
\v 33 সেই লোকেরা এটাকে ভাল লক্ষণ মনে করে তাড়াতাড়ি করে তাঁর কথা বুঝতে পেরে বলল, “হ্যাঁ, বিন্‌হদদ নিশ্চয়ই আপনার ভাই।” রাজা বললেন, “আপনারা গিয়ে তাঁকে নিয়ে আসুন।” বিন্‌হদদ বের হয়ে আসলে পর আহাব তাঁকে তাঁর রথে তুলে নিলেন।
\v 34 বিন্‌হদদ বললেন, “তোমার বাবার কাছ থেকে আমার বাবা যে সব গ্রাম নিয়ে নিয়েছেন আমি সেগুলো আপনাকে ফিরিয়ে দেব। আমার বাবা যেমন শমরিয়াতে বাজার বসিয়েছিলেন তেমনি আপনিও দম্মেশকের বিভিন্ন জায়গায় বাজার বসাতে পারবেন।” আহাব বললেন, “একটা সন্ধি করে আপনাকে আমি ছেড়ে দেব।” এই বলে তিনি বিন্‌হদদের সঙ্গে একটা সন্ধি করে তাঁকে ছেড়ে দিলেন।
\s5
\v 35 সদাপ্রভুর আদেশে শিষ্য ভাববাদীদের মধ্যে একজন তাঁর সঙ্গীকে বললেন, “দয়া করে আমাকে আঘাত কর।” কিন্তু লোকটি আঘাত করতে রাজী হল না।
\v 36 তখন সেই ভাববাদী তাঁকে বললেন, “তুমি সদাপ্রভুর কথার বাধ্য হলে না বলে আমাকে ছেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একটা সিংহ তোমাকে মেরে ফেলবে।” লোকটি চলে যাওয়ার পরেই একটা সিংহ তাকে দেখতে পেয়ে মেরে ফেলল।
\s5
\v 37 সেই ভাববাদী আর একজন লোককে দেখতে পেয়ে তাকে বললেন, “দয়া করে আমাকে আঘাত কর।” লোকটি তাঁকে আঘাত করে ক্ষত করল।
\v 38 তারপর সেই ভাববাদী রাস্তার পাশে গিয়ে দাঁড়িয়ে রাজার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন। তিনি তাঁর মাথায় কাপড় বেঁধে তা চোখের উপরে নামিয়ে এনে নিজের পরিচয় গোপন করলেন।
\s5
\v 39 রাজা ঐ পথে যাওয়ার সময় সেই ভাববাদী কেঁদে তাঁকে বললেন, “আপনার দাস আমি যুদ্ধের মাঝখানে গিয়েছিলাম। তখন একজন লোক একজন বন্দীকে আমার কাছে এনে বলল, ‘এই লোকটাকে পাহারা দিয়ে রাখ। যদি সে হারিয়ে যায় তবে তার প্রাণের বদলে তোমার প্রাণ নেওয়া হবে, আর তা না হলে ঊনচল্লিশ কেজি রুপো দিতে হবে।’
\v 40 কিন্তু আপনার দাস আমি এদিকে ওদিকে ব্যস্ত ছিলাম, এরমধ্যে সে কোথায় চলে গেছে।” তখন ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “ঐ শাস্তিই তোমার হবে। তুমি নিজের মুখেই তা বলেছ।”
\s5
\v 41 তখন সেই ভাববাদী তাড়াতাড়ি চোখের উপর থেকে মাথার কাপড়টা সরিয়ে ফেললেন আর ইস্রায়েলের রাজা তাঁকে ভাববাদীদের একজন বলে চিনতে পারলেন।
\v 42 সেই ভাববাদী রাজাকে বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘আমি যে লোককে ধ্বংসের অভিশাপের অধীন করেছিলাম তুমি তাকে ছেড়ে দিয়েছ। কাজেই তার প্রাণের বদলে তোমার প্রাণ আর তার লোকদের বদলে তোমার লোকদের প্রাণ যাবে।’ ”
\v 43 এতে ইস্রায়েলের রাজা বিষন্ন ও বিরক্ত হয়ে তাঁর নিজের বাড়িতে চলে গেলেন ও পরে তিনি শমরিয়াতে পৌঁছালেন।
\s5
\c 21
\ms নাবোতের হত্যা ও তার জন্য আহাবের শাস্তি নির্ণয়।
\p
\v 1 এর পরে যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের আঙ্গুর ক্ষেত নিয়ে একটা ঘটনা ঘটে গেল। এই আঙ্গুর ক্ষেতটা ছিল যিষ্রিয়েলে শমরিয়ার রাজা আহাবের রাজবাড়ীর কাছেই।
\v 2 আহাব নাবোৎকে বললেন, “সব্জির ক্ষেত করবার জন্য তোমার আঙ্গুর ক্ষেতটা আমাকে দিয়ে দাও, কারণ ওটা আমার রাজবাড়ীর কাছেই। এর বদলে আমি তোমাকে আরও ভাল একটা আঙ্গুর ক্ষেত দেব তুমি যদি চাও তবে তার উচিৎ মূল্যও তোমাকে দেব।”
\s5
\v 3 নাবোৎ আহাবকে বলল, “আমার পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে পাওয়া অধিকার যে আমি আপনাকে দিয়ে দিই সদাপ্রভু যেন তা হতে না দেন।”
\v 4 তখন “আমার পূর্বপুরুষদের অধিকার আমি আপনাকে দেব না,” যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের এই কথার জন্য আহাব বিষন্ন ও বিরক্ত হয়ে বাড়ী চলে গেলেন। তিনি বিছানায় শুয়ে মুখ ফিরিয়ে থাকলেন, কোনো খাবার তিনি খেলেন না।
\s5
\v 5 তখন ঈষেবল তাঁর স্ত্রী তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি মন খারাপ করে আছ কেন? খেতে চাইছ না কেন?”
\v 6 উত্তরে রাজা তাঁকে বললেন, “আমি যিষ্রিয়েলীয় নাবোৎকে বলেছিলাম টাকা নিয়ে তোমার আঙ্গুর ক্ষেত আমাকে দাও; কিংবা যদি সন্তুষ্ট হও, তবে আমি তাঁর পরিবর্তে আর একটা আঙ্গুর খেত তোমাকে দেব,” তাতে সে উত্তর দিল, “আমার আঙ্গুর খেত আপনাকে দেব না।”
\v 7 তখন তাঁর স্ত্রী ঈষেবল তাঁকে বললেন, “তুমি না ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করছ? ওঠো, খাওয়া দাওয়া কর, আনন্দিত হও। যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের আঙ্গুর ক্ষেত আমি তোমাকে দেব।”
\s5
\v 8 পরে ঈষেবল আহাবের নাম করে কতগুলো চিঠি লিখে সেগুলোর উপর আহাবের সীলমোহর দিলেন এবং নাবোতের শহরে বাসকারী বৃদ্ধ নেতা ও গণ্যমান্য লোকদের কাছে চিঠিগুলো পাঠিয়ে দিলেন।
\v 9 সেই চিঠিগুলোতে সে এই কথা লিখেছিল, “আপনারা উপবাস ঘোষণা করুন এবং লোকদের মধ্যে নাবোৎকে উঁচু জায়গা দিন।
\v 10 তার সামনে দুটো আসনে দুজন খারাপ লোককে বসান। তারা এই বলে তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিক যে, সে ঈশ্বর ও রাজার বিরুদ্ধে অপমানের কথা বলেছে। তারপর তাকে সেখান থেকে বের করে নিয়ে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলুন।”
\s5
\v 11 পরে তাঁর শহরে বাসকারী প্রাচীনরা ও গণ্যমান্য লোকেরা ঈষেবলের চিঠিতে লেখা নির্দেশমত কাজ করলেন।
\v 12 তাঁরা উপবাস ঘোষণা করে নাবোৎকে লোকদের মধ্যে উঁচু জায়গায় বসালেন।
\v 13 তারপর দুজন খারাপ লোক এসে নাবোতের সামনে বসে লোকদের কাছে তার বিরুদ্ধে এই সাক্ষ্য দিল যে, “নাবোৎ ঈশ্বর ও রাজার বিরুদ্ধে অপমানের কথা বলেছে।” তারপর লোকেরা তাকে শহরের বাইরে নিয়ে গিয়ে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলল।
\v 14 এর পর সেই প্রাচীনরা ঈষেবলের কাছে খবর পাঠালেন যে, “নাবোৎকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলা হয়েছে।”
\s5
\v 15 নাবোৎকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলা হয়েছে শুনেই ঈষেবল আহাবকে বললেন, “ওঠ, যিষ্রিয়েলীয় নাবোৎ যে আঙ্গুর ক্ষেতটা তোমার কাছে বিক্রি করতে চায় নি তার দখল নাও; কারণ নাবোৎ আর বেঁচে নেই, মরে গেছে।”
\v 16 নাবোৎ মারা গেছে শুনে তিনি উঠে নাবোতের আঙ্গুর ক্ষেতের দখল নিতে গেলেন।
\s5
\v 17 তখন তিশ্‌বীয় এলিয়ের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য প্রকাশিত হল,
\v 18 “ওঠ, শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজা আহাবের সঙ্গে দেখা করতে যাও। দেখো, সে এখন নাবোতের আঙ্গুর ক্ষেতে আছে। সে ওটার দখল নেবার জন্য সেখানে গেছে।
\s5
\v 19 তুমি তাকে বল যে, সদাপ্রভু বলছেন, ‘তুমি কি একজন লোককে মেরে ফেলেছ এবং তার সম্পত্তি দখল করেছ? তারপর তাকে বল যে, সদাপ্রভু বলছেন, ‘কুকুরেরা যেখানে নাবোতের রক্ত চেটে খেয়েছে সেখানে তারা তোমার রক্ত, হ্যাঁ, তোমারই রক্ত চেটে খাবে’।”
\v 20 আহাব সেই কথা শুনে এলিয়কে বললেন, “হে আমার শত্রু, এবার কি তুমি আমাকে পেয়েছ?” উত্তরে এলিয় বললেন, “হ্যাঁ, পেয়েছি; কারণ সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করবার জন্য নিজেকে বিক্রি করেছ।
\s5
\v 21 সেইজন্য সদাপ্রভু বলছেন, ‘আমি তোমার উপর বিপদ নিয়ে আসব। তোমাকে আমি একেবারে ধ্বংস করব। আহাব বংশের প্রত্যেক পুরুষকে এবং ইস্রায়েলের মধ্যে দাস ও স্বাধীন লোককে শেষ করে দেব।
\v 22 আমি তোমার বংশকে নবাটের ছেলে যারবিয়াম এবং অহিয়ের ছেলে বাশার বংশের মত করব, এর কারণ তোমার অসন্তোষজনক ব্যবহার, যার মাধ্যমে তুমি আমার ক্রোধ জাগিয়ে তুলেছ এবং ইস্রায়েলকে দিয়ে পাপ করিয়েছ।
\s5
\v 23 এছাড়া ঈষেবলের সম্বন্ধেও আমি বলছি যে, যিষ্রিয়েলের দেয়ালের কাছে কুকুরেরা তাকে খেয়ে ফেলবে।
\v 24 তোমার যে সব লোক শহরে মরবে তাদের খাবে কুকুরে আর যারা মাঠের মধ্যে মরবে তাদের খাবে আকাশের পাখীতে’।”
\s5
\v 25 স্ত্রীর কু পরামর্শ সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ আহাব তাই করবার জন্য নিজেকে বিকিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর মত আর কেউ এই রকম কাজ করে নি।
\v 26 আর ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে সদাপ্রভু যে ইমোরীয়দের তাড়িয়ে দিয়েছিলেন, তাদের সমস্ত কাজ অনুসারে তিনি প্রতিমা পূজাকারী অনুগামী হয়ে তিনি জঘন্য কাজ করতেন।
\s5
\v 27 আহাব সদাপ্রভুর কথা শুনে নিজের কাপড় ছিঁড়ে ফেলে চট পরলেন এবং উপবাস করলেন। তিনি চট পরেই শুয়ে থাকতেন এবং ধীরে ধীরে চলতে লাগলেন।
\v 28 তখন সদাপ্রভুর এই বাক্য তিশ্‌বীয় এলিয়ের কাছে আসল, বলল,
\v 29 “আহাব আমার সামনে নিজেকে কেমন করে নত করেছে, তুমি কি লক্ষ্য করেছ? সে নিজেকে নত করেছে বলে এই বিপদ আমি তার জীবনকালে আনব না, কিন্তু তার ছেলের জীবনকালে তার বংশের উপরে এই বিপদ আনব।”
\s5
\c 22
\ms আহাবের অবাধ্যতা ও মৃত্যু।
\p
\v 1 অরাম ও ইস্রায়েলের মধ্যে তিন বছর পর্যন্ত কোনো যুদ্ধ হয় নি।
\v 2 তৃতীয় বছরে যিহূদার রাজা যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন।
\s5
\v 3 ইস্রায়েলের রাজা তাঁর দাসদের বললেন, “আপনারা কি জানেন যে, রামোৎ গিলিয়দ আমাদের? অথচ আমরা অরামের রাজার কাছ থেকে সেটা ফিরিয়ে নেবার জন্য কিছুই করছি না।”
\v 4 তখন তিনি যিহোশাফটকে বললেন, “আপনি কি যুদ্ধ করবার জন্য আমার সঙ্গে রামোৎ গিলিয়দে যাবেন?” উত্তরে যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “আমি ও আপনি আমার লোক ও আপনার লোক সবাই এক, আর আমার ঘোড়া আপনারই ঘোড়া।”
\s5
\v 5 পরে যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজাকে এই কথা বললেন, “আজ সদাপ্রভুর বাক্য জানুন।”
\v 6 কাজেই ইস্রায়েলের রাজা ভাববাদীদের ডেকে জড়ো করলেন। তাদের সংখ্যা ছিল প্রায় চারশো। তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “রামোৎ গিলিয়দের বিরুদ্ধে কি আমি যুদ্ধ করতে যাব, না যাব না?” তারা বলল, “যান, কারণ প্রভু ওটা রাজার হাতেই তুলে দেবেন।”
\s5
\v 7 কিন্তু যিহোশাফট বললেন, “এখানে কি সদাপ্রভুর কোনো ভাববাদী নেই যার কাছে আমরা জিজ্ঞাসা করতে পারি?”
\v 8 উত্তরে ইস্রায়েলের রাজা যিহূদার রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “এখনও এমন একজন লোক আছে যার মধ্য দিয়ে আমরা সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করতে পারি, সে হল যিম্লের ছেলে মীখায়, কিন্তু আমি তাকে ঘৃণা করি, কারণ সে আমার সম্বন্ধে মঙ্গলের কথা বলে না, শুধু অমঙ্গলের কথাই বলে।” উত্তরে যিহোশাফট বললেন, “রাজা যেন ঐ রকম কথা না বলেন।”
\v 9 তখন ইস্রায়েলের রাজা তাঁর একজন কর্মচারীকে আদেশ করলেন, “তুমি এখনই যিম্লের ছেলে মীখায়কে ডেকে নিয়ে এস।”
\s5
\v 10 ইস্রায়েলের রাজা ও যিহূদার রাজা যিহোশাফট রাজপোশাক পরে শমরিয়া শহরের ফটকের কাছে খোলা জায়গায় তাঁদের সিংহাসনের উপরে বসে ছিলেন আর ভাববাদীরা সবাই তাঁদের সামনে ভবিষ্যতের কথা বলছিল।
\v 11 লোহার শিং তৈরী করে নিয়ে কনানার ছেলে সিদিকিয় এই কথা ঘোষণা করল, “সদাপ্রভু বলছেন যে, অরামীয়েরা শেষ হয়ে না যাওয়া পর্যন্ত আপনি এগুলো দিয়েই তাদের গুঁতাতে থাকবেন।”
\v 12 অন্যান্য ভাববাদীরাও একই রকম কথা বলল। তারা বলল, “রামোৎ গিলিয়দ আক্রমণ করে তা জয় করে নিন, কারণ সদাপ্রভু সেটা রাজার হাতে তুলে দেবেন।”
\s5
\v 13 যে লোকটি মীখায়কে ডেকে আনতে গিয়েছিল সে তাঁকে বলল, “দেখুন, অন্যান্য ভাববাদীরা সবাই একমুখে রাজার সফলতার কথা বলছেন। আপনার কথাও যেন তাঁদের কথার মতই হয়। আপনি মঙ্গলের কথাই বলবেন।”
\v 14 কিন্তু মীখায় বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যে, সদাপ্রভু আমাকে যা বলবেন আমি কেবল সেই কথাই বলব।”
\v 15 পরে তিনি আসলে রাজা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মীখায়, আমরা কি রামোৎ গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, না যাব না?” উত্তরে মীখায় বললেন, “হ্যাঁ, যান, আক্রমণ করে জয়লাভ করুন, সদাপ্রভু তা মহারাজের হাতে দেবেন।”
\s5
\v 16 রাজা তাঁকে বললেন, “সদাপ্রভুর নামে তুমি সত্যি কথা ছাড়া আর কিছু বলবে না কতবার আমি তোমাকে এই শপথ করতে বলব?”
\v 17 উত্তরে মীখায় বললেন, “আমি দেখলাম, ইস্রায়েলীয়েরা সবাই রাখালহীন ভেড়ার মত পাহাড়ের উপরে ছড়িয়ে পড়েছে। তাই সদাপ্রভু বললেন, ‘এদের কোনো প্রভু নেই, কাজেই তারা শান্তিতে যে যার বাড়ীতে চলে যাক’।”
\s5
\v 18 তখন ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমি কি আপনাকে আগেই বলি নি যে, সে আমার সম্বন্ধে অমঙ্গল ছাড়া মঙ্গলের কথা বলবে না?”
\v 19 মীখায় বলতে লাগলেন, “আপনি সদাপ্রভুর কথা শুনুন। আমি দেখলাম, সদাপ্রভু তাঁর সিংহাসনে বসে আছেন এবং তাঁর ডান ও বাঁ দিকে সমস্ত স্বর্গদূতেরা রয়েছেন।
\v 20 তখন সদাপ্রভু বললেন, ‘রামোৎ গিলিয়দ আক্রমণ করবার জন্য কে আহাবকে ভুলিয়ে সেখানে নিয়ে যাবে যাতে সে মারা যায়? তখন এক একজন এক এক কথা বললেন।
\s5
\v 21 তখন একটি আত্মা এগিয়ে আসলো, সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়ালো এবং বলল, ‘আমি তাকে ভুলিয়ে নিয়ে যাব।’
\v 22 সদাপ্রভু জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কেমন করে করবে? সে বলল, ‘আমি গিয়ে তার সব ভাববাদীদের মুখে মিথ্যা বলবার আত্মা হব।’ সদাপ্রভু বললেন, ‘তুমিই তাকে ভুলিয়ে নিয়ে যেতে পারবে। এখন যাও এবং তুমি গিয়ে তাই কর।’
\v 23 এইজন্যই সদাপ্রভু এখন আপনার এই সব ভাববাদীদের মুখে মিথ্যা বলবার আত্মা দিয়েছেন। তোমার সর্বনাশ হবার জন্য সদাপ্রভু আদেশ দিয়েছেন।”
\s5
\v 24 তখন কনানার ছেলে সিদিকিয় গিয়ে মীখায়ের গালে চড় মেরে বলল, “সদাপ্রভুর আত্মা তোর সঙ্গে কথা বলবার জন্য আমার কাছ থেকে বেরিয়ে কোন পথে গিয়েছিলেন?”
\v 25 মীখায় বললেন, “দেখ, যেদিন তুমি নিজেকে লুকাবার জন্য ভিতরের ঘরে গিয়ে ঢুকবে সেই দিন তুমি তা জানতে পারবে।”
\s5
\v 26 ইস্রায়েলের রাজা তখন এই বললেন, “মীখায়কে শহরের শাসনকর্তা আমোন ও রাজপুত্র যোয়াশের কাছে আবার পাঠিয়ে দাও।
\v 27 তাদের বল রাজা বলেছেন এই লোকটিকে যেন জেলে রাখা হয় এবং রাজা নিরাপদে ফিরে না আসা পর্যন্ত তাকে অল্প জল আর অল্প রুটি ছাড়া যেন আর কিছু দেওয়া না হয়।”
\v 28 তখন মীখায় বললেন, “যদি আপনি সত্যিই নিরাপদে ফিরে আসেন তবে জানবেন সদাপ্রভু আমার মধ্য দিয়ে কথা বলেন নি।” তারপর তিনি আবার বললেন, “আপনারা সবাই আমার কথাটা শুনে রাখুন।”
\s5
\v 29 এর পরে ইস্রায়েলের রাজা ও যিহূদার রাজা যিহোশাফট রামোৎ গিলিয়দ আক্রমণ করতে গেলেন।
\v 30 আহাব যিহোশাফটকে বললেন, “আমাকে যাতে লোকেরা চিনতে না পারে সেইজন্য আমি অন্য পোশাক পরে যুদ্ধে যোগ দেব, কিন্তু আপনি আপনার রাজপোশাকই পরুন।” এই বলে ইস্রায়েলের রাজা অন্য পোশাক পরে যুদ্ধ করতে গেলেন।
\s5
\v 31 অরামের রাজা তাঁর রথগুলোর বত্রিশজন সেনাপতিকে এই আদেশ দিয়ে রেখেছিলেন, “একমাত্র ইস্রায়েলের রাজা ছাড়া আপনারা ছোট কি বড় আর কারও সঙ্গে যুদ্ধ করবেন না।”
\v 32 রথের সেনাপতিরা যিহোশাফটকে দেখে ভেবেছিলেন যে, “তিনি নিশ্চয়ই ইস্রায়েলের রাজা।” কাজেই তাঁরা ফিরে তাঁকে আক্রমণ করতে গেলেন কিন্তু যিহোশাফট চেঁচিয়ে উঠলেন।
\v 33 এতে সেনাপতিরা বুঝলেন যে, তিনি ইস্রায়েলের রাজা নন সেইজন্য তাঁরা আর তাঁর পিছনে তাড়া করলেন না।
\s5
\v 34 কিন্তু একজন লোক লক্ষ্য স্থির না করেই তার ধনুকে টান দিয়ে ইস্রায়েলের রাজার বুক ও পেটের বর্মের মাঝামাঝি ফাঁকে আঘাত করে বসল। তখন রাজা তাঁর রথ চালককে বললেন, “রথ ঘুরিয়ে তুমি যুদ্ধের জায়গা থেকে আমাকে বাইরে নিয়ে যাও। আমি আঘাত পেয়েছি।”
\s5
\v 35 সারা দিন ধরে ভীষণ যুদ্ধ চলল আর রাজাকে অরামীয়দের মুখোমুখি করে রথের মধ্যে বসিয়ে রাখা হল। তাঁর ক্ষত থেকে রক্ত ঝরে রথের মেঝের উপর পড়তে লাগল আর সন্ধ্যাবেলার দিকে তিনি মারা গেলেন।
\v 36 সূর্য ডুবে যাবার সময় সৈন্যদলের মধ্যে এই কথা ঘোষণা করা হল, “তোমরা প্রত্যেকেই নিজের নিজের শহরে ও নিজের নিজের বাড়ীতে ফিরে যাও।”
\s5
\v 37 এইভাবে ইস্রায়েলের রাজা মারা গেলেন এবং তাঁকে শমরিয়াতে আনা হল। লোকেরা তাঁকে সেখানেই কবর দিল।
\v 38 শমরিয়ার পুকুরের ধারে তাঁর রথটা ধোওয়া হল এবং সদাপ্রভুর ঘোষণা অনুসারে কুকুরেরা সেখানে তাঁর রক্ত চেটে খেল আর বেশ্যারা সেই পুকুরে স্নান করল।
\s5
\v 39 আহাবের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা, অর্থাৎ তিনি যা কিছু করেছিলেন সেই সব কথা, হাতীর দাঁতের কাজ করা যে রাজবাড়ী তিনি তৈরী করেছিলেন তার কথা এবং যে শহরগুলো তিনি শক্তিশালী করে গড়ে তুলেছিলেন সেগুলোর কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 40 আহাব তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন; আর তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে অহসিয় রাজা হলেন।
\s যিহোশাফটের মৃত্যু ও অহসিয়ের রাজ্যাভিষেক।
\m
\s5
\v 41 ইস্রায়েলের রাজা আহাবের রাজত্বের চার বছরের সময় আসার ছেলে যিহোশাফট যিহূদা দেশের রাজা হয়েছিলেন।
\v 42 যিহোশাফট পঁয়ত্রিশ রাজত্ব শুরু করেন এবং পঁচিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মা ছিলেন শিল্‌হির মেয়ে অসূবা।
\s5
\v 43 যিহোশাফট সব ব্যাপারেই তাঁর বাবা আসার পথ ধরেই চলতেন, কখনও সেই পথ ছেড়ে যান নি। সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক তিনি তাই করতেন। উঁচু স্থানগুলো ধ্বংস করা হয়নি এবং লোকেরা সেখানে পশু উৎসর্গ করতে ও ধূপ জ্বালাতে থাকল।
\v 44 ইস্রায়েলের রাজার সঙ্গে তিনি সন্ধি স্থাপন করেছিলেন।
\s5
\v 45 যিহোশাফটের অন্যান্য বিবরণ এবং তিনি যে যে শক্তিশালী কাজ করলেন ও যে সব যুদ্ধ করলেন, সে সব যিহূদার রাজাদের ইতিহাস বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 46 তাঁর বাবা আসার রাজত্বের পরেও যে সব পুরুষ বেশ্যারা বাকী রয়ে গিয়েছিল তিনি দেশ থেকে তাদের দূর করে দিয়েছিলেন।
\v 47 সেই সময় ইদোমে কোনো রাজা ছিল না। একজন প্রতিনিধি সেখানে রাজত্ব করতেন।
\s5
\v 48 যিহোশাফট সোনার জন্য ওফীরে পাঠানোর জন্য কতগুলো বড় বড় তর্শীশ জাহাজ তৈরী করলেন, কিন্তু সেগুলোর আর যাওয়া হল না, কারণ ইৎসিয়োন গেবরে সেগুলো ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল।
\v 49 তখন আহাবের ছেলে অহসিয় যিহোশাফটকে বললেন, “আমার লোকেরা আপনার লোকদের সঙ্গে জাহাজে যাক।” কিন্তু যিহোশাফট রাজী হলেন না।
\v 50 পরে যিহোশাফট তাঁর পূর্বপুুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল; তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে যিহোরাম রাজা হলেন।
\s5
\v 51 যিহূদার রাজা যিহোশাফটের রাজত্বের সতেরো বছরের সময় আহাবের ছেলে অহসিয় শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজা হলেন। তিনি ইস্রায়েলের উপরে দুই বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 52 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তিনি তাই করতেন। তিনি তাঁর বাবা ও মায়ের মত এবং নবাটের ছেলে যারবিয়ামের মত চলতেন। এই যারবিয়াম যেমন ইস্রায়েলের লোকদের দিয়ে পাপ করিয়েছিলেন অহসিয়ও তাই করেছিলেন।
\v 53 তিনি বাল দেবতার সেবা ও পূজা করতেন এবং তাঁর বাবা যেমন করেছিলেন তিনিও তেমনি করে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করে তুলেছিলেন।

1141
12-2KI.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,1141 @@
\id 2KI
\ide UTF-8
\sts - 2 Kings
\h দ্বিতীয় রাজাবলি।
\toc1 দ্বিতীয় রাজাবলি।
\toc2 দ্বিতীয় রাজাবলি।
\toc3 2ki
\mt1 দ্বিতীয় রাজাবলি।
\s5
\c 1
\s এলিয়ের সাহস ও স্বর্গে গমন।
\p
\v 1 আহাবের মৃত্যুর পর মোয়াব ইস্রায়েলের অধীনে আর থাকলো না।
\v 2 আর অহসিয় শমরিয়াতে তাঁর বাড়ির উপরের কুঠরীর সিঁড়ির ফটক দিয়ে নীচে পড়ে গিয়ে অসুস্থ হলেন; তাতে তিনি কয়েকজন দূতকে বলে পাঠালেন, “যাও, ইক্রোণের দেবতা বাল্‌-সবূবের কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা কর যে, এই অসুস্থতা থেকে আমি সুস্থ হব কি না?”
\s5
\v 3 কিন্তু সদাপ্রভুর দূত তিশ্‌বীয় এলিয়কে বললেন, “তুমি গিয়ে শমরিয়ার রাজার দূতেদের সঙ্গে দেখা করে তাদের বল, ‘ইস্রায়েলের মধ্যে কি ঈশ্বর নেই যে, তোমরা ইক্রোণের দেবতা বাল্‌-সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করতে যাচ্ছ?
\v 4 তাই সদাপ্রভু বলছেন, ‘তুমি যে খাটে উঠে শুয়েছ, তা থেকে তুমি আর নামবে না, তুমি নিশ্চয়ই মারা যাবে’।” এই বলে এলিয় চলে গেলেন।
\s5
\v 5 আর সেই দূতেরা রাজার কাছে ফিরে আসলে তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কেন ফিরে আসলে?”
\v 6 তারা বলল, “একজন ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে দেখা করে বললেন, ‘যে রাজা তোমাদের পাঠিয়েছেন, তোমরা তাঁর কাছে ফিরে গিয়ে বল যে’, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘ইস্রায়েলের মধ্যে কি ঈশ্বর নেই যে, তুমি ইক্রোণের দেবতা বাল্‌ সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করতে লোক পাঠিয়েছ? অতএব তুমি যে খাটে উঠে শুয়েছ সেখান থেকে আর নামবে না; তুমি নিশ্চয়ই মারা যাবে’।”
\s5
\v 7 রাজা তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, “যে লোকটা তোমাদের সঙ্গে দেখা করে এই কথা বলেছে সে দেখতে কেমন?”
\v 8 উত্তরে তারা বলল, “তার গা লোমে ভরা ছিল এবং তাঁর কোমরে ছিল চামড়ার কোমর-বন্ধনি।” রাজা বললেন, “সে তিশ্‌বীয় এলিয়।”
\s5
\v 9 এরপর রাজা একজন সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশজন সৈন্যকে এলিয়ের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, এলিয় তখন একটা পাহাড়ের উপরে বসে ছিলেন। সেই সেনাপতি এলিয়ের কাছে উঠে গিয়ে বললেন, “হে ঈশ্বরের লোক, রাজা আপনাকে নেমে আসতে বলেছেন।”
\v 10 উত্তরে এলিয় সেই সেনাপতিকে বললেন, “আমি যদি ঈশ্বরেরই লোক হই, তবে আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তোমাকে ও তোমার পঞ্চাশজন লোককে পুড়িয়ে ফেলুক।” তখন আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে সেই সেনাপতি ও তার পঞ্চাশজন সৈন্যকে পুড়িয়ে ফেলল।
\s5
\v 11 পরে রাজা আবার একজন সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশজন সৈন্যকে এলিয়ের কাছে পাঠালেন। সেই সেনাপতি এলিয়কে বললেন, “হে ঈশ্বরের লোক, রাজা আপনাকে এখনই নেমে আসতে বলেছেন।”
\v 12 উত্তরে এলিয় বললেন, “আমি যদি ঈশ্বরেরই লোক হই তবে আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তোমাকে ও তোমার পঞ্চাশজন সৈন্যকে পুড়িয়ে ফেলুক।” তখন আকাশ থেকে আগুন নেমে এসে তাকে ও তার পঞ্চাশজন সৈন্যকে পুড়িয়ে ফেলল।
\s5
\v 13 পরে রাজা তৃতীয় বার একজন সেনাপতি ও তাঁর পঞ্চাশজন সৈন্যকে পাঠালেন। এই তৃতীয় সেনাপতি উপরে উঠে গিয়ে এলিয়ের সামনে হাঁটু পেতে অনুরোধ করে বলল, “হে ঈশ্বরের লোক, আমি অনুরোধ করি, আমার ও আপনার এই পঞ্চাশজন দাসের প্রাণ রক্ষা করুন।
\v 14 দেখুন, আকাশ থেকে আগুন পড়ে এর আগে দুজন সেনাপতি ও তাদের পঞ্চাশ পঞ্চাশ জনকে পুড়িয়ে ফেলেছে। কিন্তু এবার আপনি আমার প্রাণ রক্ষা করুন।”
\s5
\v 15 তখন সদাপ্রভুর দূত এলিয়কে বললেন, “তুমি ওর সঙ্গে নেমে যাও, ওকে ভয় কোরো না।” তখন এলিয় তাঁর সঙ্গে নেমে রাজার কাছে গেলেন।
\v 16 তিনি রাজাকে বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘যে, তুমি ইক্রোণের দেবতা বাল্‌-সবূবের কাছে জিজ্ঞাসা করবার জন্য দূতদের পাঠিয়েছিলে; এর কারণ কি এই যে, ইস্রায়েলের মধ্যে ঈশ্বর নেই, যাঁর বাক্য জিজ্ঞাসা করা যায়? তাই তুমি যে বিছানায় শুয়ে আছ, তা থেকে আর নামবে না। তুমি নিশ্চয়ই মারা যাবে’।”
\s5
\v 17 আর এলিয়কে দিয়ে সদাপ্রভুর বলা বাক্য অনুযায়ী অহসিয় মারা গেলেন। অহসিয়ের কোন ছেলে ছিল না বলে তাঁর জায়গায় যিহোরাম রাজা হলেন। যিহূদার রাজা যিহোশাফটের ছেলে যিহোরামের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে, রাজা হলেন।
\v 18 অহসিয়ের বাকি সমস্ত কাজের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস বইতে কি লেখা নেই?
\s5
\c 2
\p
\v 1 পরে যখন সদাপ্রভু ঘুর্ণিঝড়ে এলিয়কে স্বর্গে তুলে নিতে চাইলেন তখন এলিয় ও ইলীশায় গিল্‌গল থেকে বের হলেন।
\v 2 আর এলিয় ইলীশায়কে বললেন, “অনুরোধ করি, তুমি এখানে থাক; কারণ সদাপ্রভু আমাকে বৈথেল পর্যন্ত পাঠালেন।” ইলীশায় বললেন, “যতদিন সদাপ্রভু আছেন ও আপনি আছেন, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” কাজেই তাঁরা বৈথেলে নেমে গেলেন।
\s5
\v 3 তখন বৈথেলের ভাববাদীদের সন্তানেরা ইলীশায়ের কাছে গিয়ে বলল, “আপনি কি জানেন যে, সদাপ্রভু আপনার প্রভুকে আজ আপনার কাছ থেকে নিয়ে যাবেন?” উত্তরে ইলীশায় বললেন, “হ্যাঁ, আমি জানি। তোমরা চুপ করো।”
\v 4 এরপর এলিয় তাঁকে বললেন, “ইলীশায়, অনুরোধ করি, তুমি এখানে থাক; কারণ সদাপ্রভু আমাকে যিরীহোতে পাঠালেন।” ইলীশায় বললেন, “যতদিন সদাপ্রভু আছেন ও আপনি আছেন, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” সুতরাং তাঁরা যিরীহোতে গেলেন।
\s5
\v 5 তখন যিরীহোর ভাববাদীদের সন্তানেরা ইলীশায়ের কাছে গিয়ে বললেন, “আপনি কি জানেন যে, সদাপ্রভু আপনার প্রভুকে আজ আপনার কাছ থেকে নিয়ে যাবেন?” উত্তরে ইলীশায় বললেন, “হ্যাঁ, আমি জানি। তোমরা চুপ করো।”
\v 6 এরপর এলিয় তাঁকে বললেন, “অনুরোধ করি, তুমি এখানে থাক; কারণ সদাপ্রভু আমাকে যর্দন নদীর পারে পাঠালেন।” উত্তরে তিনি বললেন, “যতদিন সদাপ্রভু আছেন ও আপনি আছেন, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” সুতরাং তাঁরা দুজন চলতে লাগলেন।
\s5
\v 7 তখন পঞ্চাশজন ভাববাদীদের সন্তানেরা এসে তাঁদের সামনে দাঁড়ালো, আর যর্দন নদীর ধারে ঐ দুজন দাঁড়ালেন।
\v 8 পরে এলিয় তাঁর গায়ের চাদরটা গুটিয়ে নিয়ে তা দিয়ে জলের উপর আঘাত করলেন, তাতে জল দুদিকে ভাগ হয়ে গেল আর তাঁরা দুজনে শুকনো মাটির উপর দিয়ে পার হয়ে গেলেন।
\s5
\v 9 পার হয়ে এসে এলিয় ইলীশায়কে বললেন, “আমাকে বল, তোমার কাছ থেকে আমাকে তুলে নেবার আগে আমি তোমার জন্য কি করব?” উত্তরে ইলীশায় বললেন, “অনুরোধ করি, আপনার আত্মার দ্বিগুন শক্তি যেন আমি পাই।”
\v 10 তিনি বললেন, “তুমি একটি কঠিন জিনিস চেয়েছ; তোমার কাছ থেকে আমাকে নিয়ে যাবার সময় যদি তুমি আমাকে দেখতে পাও তবে তুমি তা পাবে; দেখতে না পেলে পাবে না।”
\s5
\v 11 পরে এইরকম ঘটল; তাঁরা যেতে যেতে কথা বলছেন, এমন সময় হঠাৎ একটা আগুনের রথ ও আগুনের কতগুলি ঘোড়া এসে তাঁদের দুজনকে আলাদা করে দিল এবং এলিয় একটা ঘূর্ণিঝড়ে স্বর্গে চলে গেলেন।
\v 12 আর ইলীশায় তা দেখে চিৎকার করে বললেন, “হে আমার পিতা, হে আমার পিতা, হে ইস্রায়েলের সমস্ত রথ ও তার ঘোড়াচালকরা।” পরে তিনি আর তাঁকে দেখতে পেলেন না; তখন তিনি নিজের কাপড় ধরে ছিঁড়ে দুভাগ করলেন।
\s5
\v 13 আর তিনি এলিয়ের গা থেকে পড়ে যাওয়া চাদরখানা তুলে নিলেন এবং ফিরে যর্দনের ধারে গিয়ে দাঁড়ালেন।
\v 14 পরে সেই চাদরখানা দিয়ে তিনি জলে আঘাত করে বললেন, “এলিয়ের ঈশ্বর সদাপ্রভু কোথায়?” আর তিনিও জলে আঘাত করলে জল দুদিকে ভাগ হয়ে গেল এবং ইলীশায় পার হয়ে গেলেন।
\s5
\v 15 তখন যিরীহোর যে ভাববাদীদের সন্তানেরা সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল তারা বলল, “এলিয়ের আত্মা ইলীশায়ের উপর এসেছে।” পরে তারা তাঁর সঙ্গে দেখা করে তাঁর সামনে মাটিতে প্রণাম করল।
\v 16 আর তাঁকে বলল, “দেখুন, এখানে আপনার পঞ্চাশজন শক্তিশালী দাস আছে; অনুরোধ করি, তারা আপনার প্রভুকে খুঁজতে যাক; কি জানি, সদাপ্রভুর আত্মা তাঁকে তুলে নিয়ে গিয়ে কোন পর্বতে কিংবা কোন উপত্যকায় ফেলে গেছেন।” তিনি বললেন, “পাঠিও না।”
\s5
\v 17 তবুও তারা তাঁকে পীড়াপীড়ি করলে তিনি লজ্জায় পড়ে বললেন, “পাঠাও।” অতএব তারা পঞ্চাশজন লোক পাঠালো; তারা তিন দিন ধরে খোঁজ করেও তাঁকে পেল না।
\v 18 পরে তারা ইলীশায়ের কাছে ফিরে এলো; ইলীশায় তখন যিরীহোতে ছিলেন। তিনি বললেন, “আমি তোমাদেরকে বলেছিলাম যে যেতে হবে না।”
\s ইলীশয়ের বর্ণনা।
\p
\s5
\v 19 পরে নগরের লোকেরা ইলীশায়কে বলল, “অনুরোধ করি, দেখুন, এই নগরের জায়গাটা চমৎকার ঠিকই, এটা তো প্রভু দেখছেন; কিন্তু এর জল ভাল নয় আর জমি ফলবান না।”
\v 20 তিনি বললেন, “আমার কাছে একটা নতুন ভাঁড় এনে তাতে লবণ রাখ।” পরে তাঁর কাছে তা আনল।
\s5
\v 21 তিনি বাইরে বেরিয়ে জলের উনুইর কাছে গিয়ে তার মধ্যে লবণ ফেলে দিয়ে বললেন, “সদাপ্রভু বলেন, ‘আমি এই জল ভাল করে দিলাম, আজ থেকে এটা আর মৃত্যু ঘটাবে না এবং ফলও নষ্ট হবে না’।”
\v 22 ইলীশায়ের সেই কথামত আজ পর্যন্ত সেই জল ভালই আছে।
\s5
\v 23 পরে তিনি সেখান থেকে বৈথেলে গেলেন; আর তিনি পথে যাওয়ার সময় নগর থেকে অনেকগুলো ছেলে এসে তাঁকে ঠাট্টা করে বলতে লাগল, “ও টাকপড়া, উঠে আয়; ও টাকপড়া, উঠে আয়।”
\v 24 তখন তিনি পিছনের দিকে মুখ ফিরিয়ে তাদেরকে দেখলেন এবং সদাপ্রভুর নামে তাদেরকে অভিশাপ দিলেন; আর বন থেকে দুটি ভাল্লূকী বেরিয়ে এসে তাদের মধ্য থেকে বিয়াল্লিশজন বালককে আহত করলো।
\v 25 এরপর তিনি সেখান থেকে কর্মিল পর্বতে গেলেন এবং সেখান থেকে শমরিয়াতে ফিরে আসলেন।
\s5
\c 3
\s ইস্রায়েলীয় ও যিহূদীয় সৈন্যদের রক্ষা।
\p
\v 1 যিহূদার রাজা যিহোশাফটের রাজত্বের আঠারো বছরে আহাবের ছেলে যিহোরাম শমরিয়ায় ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং বারো বছর রাজত্ব করেন।
\v 2 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, তিনি তাই করতেন; তবে তাঁর বাবা মায়ের মত ছিলেন না; কারণ তাঁর বাবার তৈরী বাল দেবতার মূর্তি তিনি দূর করে দিলেন।
\v 3 কিন্তু নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন, তাঁর সেই সব পাপে তিনি মেতে থাকলেন, সেইসব থেকে ফিরলেন না।
\s5
\v 4 মোয়াবের রাজা মেশার অনেক ভেড়া ছিল; তিনি ইস্রায়েলের রাজাকে কর হিসাবে এক লক্ষ ভেড়ার বাচ্চা ও এক লক্ষ ভেড়ার লোম দিতেন।
\v 5 কিন্তু আহাবের মৃত্যুর পর মোয়াবের রাজা ইস্রায়েলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন।
\v 6 তখন রাজা যিহোরাম শমরিয়া থেকে বের হয়ে সমস্ত ইস্রায়েলকে জড়ো করলেন।
\s5
\v 7 পরে তিনি যিহূদার রাজা যিহোশাফটের কাছে দূত পাঠিয়ে বললেন, “মোয়াবের রাজা আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছে, আপনি কি আমার সঙ্গে মোয়াবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেন?” তিনি বললেন, “করবো, আমি ও আপনি, আমার লোক ও আপনার লোক, আমার ঘোড়া ও আপনার ঘোড়া, সবই এক।”
\v 8 তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “আমরা কোন্‌ পথ দিয়ে যাব?” যিহোরাম বললেন, “ইদোমের মরুভূমির পথ দিয়ে।”
\s5
\v 9 পরে যিহূদার রাজা ও ইদোমের রাজার সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজা বের হলেন; তাঁরা সাত দিনের পথ ঘুরে গেলেন; তখন তাঁদের সৈন্যদলের ও তাদের সঙ্গে আসা পশুদের জন্য জল পাওয়া গেল না।
\v 10 ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “হায়, হায়! সদাপ্রভু মোয়াবের হাতে তুলে দেবার জন্যই কি এই তিন রাজাকে একসঙ্গে ডেকেছেন?”
\s5
\v 11 কিন্তু যিহোশাফট বললেন, “এখানে কি সদাপ্রভুর কোনো ভাববাদী নেই যে, তাঁর মাধ্যমে আমরা সদাপ্রভুর খোঁজ করতে পারি?” ইস্রায়েলের রাজার একজন দাস উত্তরে বলল, “শাফটের ছেলে ইলীশায় যে এলিয়ের হাতের উপর জল ঢালতেন, তিনি এখানে আছেন।”
\v 12 যিহোশাফট বললেন, “সদাপ্রভুর বাক্য তাঁর কাছে আছে।” পরে ইস্রায়েলের রাজা, ইদোমের রাজা ও যিহোশাফট তাঁর কাছে নেমে গেলেন।
\s5
\v 13 তখন ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “আপনার সঙ্গে আমার কিসের সম্পর্ক? আপনি আপনার বাবা অথবা মায়ের ভাববাদীদের কাছে যান।” ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “তা নয়, কারণ মোয়াবের হাতে তুলে দেবার জন্য সদাপ্রভু এই তিন রাজাকে একসঙ্গে ডেকেছেন।”
\v 14 ইলীশায় বললেন, “আমি যাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছি, সেই বাহিনীগনের জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যদি, যিহূদার রাজা যিহোশাফটের মুখের দিকে না চাইতাম, তবে আমি আপনার দিকে চেয়েও দেখতাম না, খেয়ালও করতাম না।
\s5
\v 15 যাই হোক, এখন বীণা বাজায় এমন একজন লোককে আমার কাছে নিয়ে আসুন।” পরে লোকটি যখন বীণা বাজাচ্ছিল তখন সদাপ্রভুর হাত ইলীশায়ের উপর আসল।
\v 16 আর তিনি বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা এই উপত্যকায় অনেক খাদ তৈরী কর।
\v 17 কারণ সদাপ্রভু এই কথা বলেন, তোমরা বাতাস কিংবা বৃষ্টি দেখতে না পেলেও এই উপত্যকা জলে ভরে যাবে; তাতে তোমরা, তোমাদের গৃহপালিতেরা ও অন্যান্য সব পশুও জল খাবে।
\s5
\v 18 আর সদাপ্রভুর চোখে এটা খুব ছোট বিষয়, তিনি মোয়াবকেও তোমাদের হাতে তুলে দেবেন।
\v 19 তখন তোমরা দেওয়াল ঘেরা নগর এবং প্রত্যেকটা ভালো নগরে আঘাত করবে, আর প্রত্যেকটা ভাল গাছ কেটে ফেলবে ও জলের সমস্ত উনুই বুজিয়ে দেবে এবং সব ভাল ক্ষেত পাথর দিয়ে নষ্ট করে দেবে।”
\s5
\v 20 পরে সকালবেলায় নৈবেদ্য উৎসর্গের সময় ইদোমের পথ দিয়ে জল বয়ে এসে দেশটা ভরে গেল।
\s5
\v 21 সমস্ত মোয়াবীয়েরা শুনতে পেল যে, সেই রাজারা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এসেছেন, তখন যারা যুদ্ধসজ্জা পরতে পারত, তারা সবাই এবং তার থেকে বেশি বয়সের সবাই জড়ো হয়ে দেশের সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকলো।
\v 22 পরে তারা খুব সকালে ঘুম থেকে উঠল, তখন সূর্য জলের উপর চক্‌মক্‌ করছিল, তাতে মোয়াবীয়রা তাদের সামনের জলকে লাল রক্তের মত দেখল।
\v 23 তখন তারা বলল, “এ যে রক্ত! সেই রাজারা নিশ্চয়ই ধ্বংস হয়েছে, আর লোকেরা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে মারা গেছে; কাজেই হে মোয়াব, এখন লুট করতে চল।”
\s5
\v 24 পরে তারা ইস্রায়েলের শিবিরের কাছে গেল তখন ইস্রায়েলীয়েরা বের হয়ে মোয়াবীয়দের আক্রমণ করল, তাতে তারা তাদের সামনে থেকে পালিয়ে গেল এবং তারা মোয়াবীয়দের মারতে মারতে এগিয়ে গিয়ে তাদের দেশে ঢুকে পড়ল।
\v 25 তারা নগরগুলি ধ্বংস করল ও প্রত্যেকে পাথর ফেলে সমস্ত ভাল ক্ষেতগুলি ভর্তি করল এবং জলের সমস্ত উনুইগুলি বুজিয়ে দিল ও ভাল ভাল গাছপালা সব কেটে ফেলল, কেবল কীর্‌-হরাসতের সেখানকার পাথরগুলি বাকি রাখল, কিন্তু ফিঙ্গা হাতে সৈন্যেরা চারিদিকে ঘেরাও করে আঘাত করল।
\s5
\v 26 মোয়াবের রাজা যখন দেখলেন যে, তিনি যুদ্ধে হেরে যাচ্ছেন, তখন সৈন্যদলের মধ্য দিয়ে ইদোমের রাজার কাছে যাবার জন্য তাঁর সঙ্গে সাতশো তলোয়ারধারীকে নিলেন, কিন্তু তারা পারল না।
\v 27 পরে যে তাঁর জায়গায় রাজা হত, তাঁর সেই বড় ছেলেকে নিয়ে তিনি প্রাচীরের উপরে হোমবলি হিসাবে উৎসর্গ করলেন। আর ইস্রায়েলের উপর ভয়ংকর রাগ হল; পরে তারা তাঁর কাছ থেকে চলে গিয়ে নিজেদের দেশে ফিরে গেল।
\s5
\c 4
\s ইলীশায়ের করা নানা অলৌকিক কাজ।
\p
\v 1 একদিন ভাববাদীদের সন্তানদের মধ্যে একজনের স্ত্রী কেঁদে ইলীশায়কে বলল, “আপনার দাস আমার স্বামী মারা গেছেন; আপনি জানেন, আপনার দাস সদাপ্রভুকে ভয় করতেন; এখন মহাজন আমার দুই ছেলেকে তার দাস বানাবার জন্য নিয়ে যেতে এসেছে।”
\v 2 ইলীশায় তাকে বললেন, “আমি তোমার জন্য কি করতে পারি? বল দেখি, তোমার ঘরে কি আছে?” সে বলল, “একবাটি তেল ছাড়া আপনার দাসীর আর কিছু নেই।”
\s5
\v 3 তখন তিনি বললেন, “যাও, তুমি বাইরে গিয়ে তোমার সমস্ত প্রতিবেশীদের কাছ থেকে খালি পাত্র চেয়ে আন, মাত্র অল্প কয়েকটি আনবে না।
\v 4 তারপর তুমি ও তোমার ছেলেরা ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেবে এবং সেই পাত্রতে তেল ঢালবে; আর একটা করে পাত্র ভর্তি হলে পর সেটা সরিয়ে রাখবে।”
\s5
\v 5 পরে সেই স্ত্রীলোকটি তাঁর কাছ থেকে চলে গেল, আর সে ও তার ছেলেরা গৃহে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল; তারা বার বার পাত্র আনতে লাগল এবং সে তেল ঢালতেই থাকল।
\v 6 সব পাত্র ভরে গেলে পর সে তার ছেলেকে বলল, “আরো পাত্র নিয়ে এস।” ছেলেটি বলল, “আর পাত্র নেই।” তখন তেল পড়া বন্ধ হয়ে গেল।
\s5
\v 7 পরে সে গিয়ে ঈশ্বরের লোককে খবর দিল। তিনি বললেন, “যাও, সেই তেল বিক্রি করে তোমার দেনা শোধ করে দাও এবং যা বাকী থাকবে তা দিয়ে তুমি ও তোমার ছেলেরা দিন কাটাও”।
\s5
\v 8 একদিন ইলিশায় শূনেমে যান, সেখানে একজন ধনী মহিলা ছিলেন; তিনি তাঁকে আগ্রহ সহকারে খাওয়ার জন্য নিমন্ত্রণ করলেন। পরে যতবার তিনি সেই পথ দিয়ে যেতেন, ততবারই সেই বাড়িতে খাওয়া-দাওয়া করবার জন্য যেতেন।
\v 9 আর সেই মহিলা তাঁর স্বামীকে বললেন, “দেখ, আমি বুঝতে পেরেছি যে, এই যে ব্যক্তি আমাদের কাছ দিয়ে যখন তখন যাতাযাত করেন, তিনি ঈশ্বরের একজন পবিত্র লোক।
\s5
\v 10 অনুরোধ করি, এস, আমরা ছাদের উপরে একটা ছোট ঘর তৈরী করি এবং তার মধ্যে তাঁর জন্য একটা খাট, একটা টেবিল, একটা চেয়ার ও একটা বাতিদান রাখি; তাহলে তিনি আমাদের কাছে আসলে ওখানে থাকতে পারবেন।”
\v 11 একদিন ইলীশায় সেখানে এসে সেই উপরের কুঠুরীতে গিয়ে শুয়ে থাকলেন।
\s5
\v 12 পরে তিনি তাঁর চাকর গেহসিকে বললেন, “তুমি ঐ শূনেমীয় স্ত্রীলোকটিকে ডাক।” সে তাঁকে ডাকলে স্ত্রীলোকটি এসে তাঁর সামনে দাঁড়ালেন।
\v 13 তখন ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “ওঁনাকে বল, ‘দেখুন, আমাদের জন্য এত চিন্তা করলেন, এখন আমরা আপনার জন্য কি করতে পারি? রাজা বা সেনাপতির কাছে আপনার কি কোনো অনুরোধ আছে’?” উত্তরে তিনি বললেন, “আমি আমার নিজের লোকদের মধ্যে বসবাস করছি।”
\s5
\v 14 পরে ইলীশায় বললেন, “তবে তাঁর জন্য কি করতে হবে?” গেহসি বলল, “নিশ্চয়ই তাঁর কোন ছেলে নেই, স্বামীও বুড়ো হয়ে গেছেন।”
\v 15 ইলীশায় বললেন, “তাঁকে ডাক,” পরে তাঁকে ডাকলে তিনি এসে দরজার কাছে দাঁড়ালেন।
\v 16 তখন ইলীশায় বললেন, “আগামী বছরের এই সময়ে আপনার কোলে একটা ছেলে থাকবে।” কিন্তু তিনি বললেন, “না; হে প্রভু, হে ঈশ্বরের লোক, আপনার দাসীকে মিথ্যা কথা বলবেন না।”
\s5
\v 17 পরে ইলীশায়ের বাক্য অনুসারে সেই স্ত্রীলোকটি গর্ভবতী হয়ে সেই একই সময় উপস্থিত হলে তিনি ছেলের জন্ম দিলেন।
\v 18 ছেলেটি বড় হওয়ার পর একদিন তার বাবা যখন ফসল কাটবার লোকদের সঙ্গে ছিলেন, তখন সে তার বাবার কাছে গেল।
\v 19 পরে সে বাবাকে বলল, “আমার মাথা, আমার মাথা।” তার বাবা একজন চাকরকে বললেন, “তুমি ওকে তুলে ওর মায়ের কাছে নিয়ে যাও।”
\v 20 পরে সে তাকে তুলে নিয়ে মায়ের কাছে আনলে ছেলেটি দুপুর পর্যন্ত মায়ের কোলে বসে থাকল, তারপর মারা গেল।
\s5
\v 21 তখন মা উপরে গিয়ে ঈশ্বরের লোকের বিছানায় তাকে শুইয়ে দিয়ে দরজা বন্ধ করে বেরিয়ে এলেন।
\v 22 তারপর তাঁর স্বামীকে ডেকে বললেন, “অনুরোধ করি, তুমি একজন চাকর ও একটা গর্দ্দভী আমার কাছে পাঠিয়ে দাও, আমি তাড়াতাড়ি ঈশ্বরের লোকের কাছে গিয়ে ফিরে আসব।”
\s5
\v 23 তিনি বললেন, “তাঁর কাছে আজকে যাবে কেন? আজকে তো অমাবস্যাও নয়, বিশ্রামবারও নয়।” মহিলাটি বললেন, “মঙ্গল হবে।”
\v 24 তারপর তিনি গর্দ্দভী সাজিয়ে তাঁর চাকরকে বললেন, “গর্দ্দভী চালিয়ে চল, আমি না বললে আস্তে চালাবে না।”
\s5
\v 25 পরে তিনি কর্মিল পর্বতে ঈশ্বরের লোকের কাছে চললেন। তখন তাঁকে দূর থেকে দেখে ঈশ্বরের লোক তাঁর চাকর গেহসিকে বললেন, “দেখ, সেই শূনেমীয়া।
\v 26 তুমি দৌড়ে তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করে জিজ্ঞাসা কর যে, ‘আপনি, আপনার স্বামী ও আপনার ছেলে সবাই ঠিক আছেন’?” উত্তরে তিনি বললেন, “সবাই ভাল আছে।”
\s5
\v 27 পরে পর্বতে ঈশ্বরের লোকের কাছে উপস্থিত হয়ে তিনি তাঁর পা জড়িয়ে ধরলেন; তাতে গেহসি তাঁকে সরিয়ে দেবার জন্য কাছে আসলে ঈশ্বরের লোক বললেন, “ওঁনাকে থাকতে দাও। ওঁনার মনে খুব কষ্ট হয়েছে, আর সদাপ্রভু আমার কাছ থেকে তা লুকিয়ে রেখেছেন, আমাকে জানান নি।”
\s5
\v 28 তখন স্ত্রীলোকটি বললেন, “আমার প্রভুর কাছে আমি কি ছেলে চেয়েছিলাম? আমি কি আপনাকে বলি নি যে, আমার সাথে ছলনা করবেন না?”
\v 29 তখন ইলীশায় গেহসিকে বললেন, “কোমর বেঁধে নাও, আমার এই লাঠিটি হাতে নিয়ে যাও; কারও সঙ্গে দেখা হলে তাকে শুভেচ্ছা জানাবে না এবং কেউ শুভেচ্ছা জানালে তার উত্তরও দেবে না; পরে আমার এই লাঠিটি ছেলেটির মুখের উপর রেখে দিয়ো।”
\s5
\v 30 তখন ছেলেটির মা বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর ও আপনার প্রাণের দিব্যি, আমি আপনাকে ছাড়ব না।” কাজেই ইলীশায় উঠে তাঁর পিছনে পিছনে চললেন।
\v 31 ইতিমধ্যে গেহসি তাঁদের আগে গিয়ে ছেলেটির মুখের উপর লাঠিটি রাখল, কিন্তু কোনো শব্দ হল না, কোনো সাড়াও পাওয়া গেল না। তাই গেহসি ইলীশায়ের সঙ্গে দেখা করবার জন্য ফিরে গিয়ে তাঁকে বলল, “ছেলেটি জাগে নি।”
\s5
\v 32 পরে ইলীশায় সেই গৃহে এসে দেখলেন তাঁরই বিছানার উপর মৃত ছেলেটি শোয়ানো রয়েছে।
\v 33 তখন তিনি গৃহে ঢুকলেন এবং তাদের দুজনকে বাইরে রেখে দরজা বন্ধ করে সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন।
\v 34 তারপর তিনি বিছানার উপর উঠে ছেলেটির উপরে শুলেন; তিনি তার মুখের উপরে নিজের মুখ, চোখের উপরে চোখ এবং হাতের উপরে হাত রেখে তার উপর নিজে লম্বা হয়ে শুলেন; তাতে ছেলেটির গা গরম হয়ে উঠল।
\s5
\v 35 তারপর তিনি ফিরে এসে ঘরের মধ্যে পায়চারি করতে লাগলেন, আবার উঠে তার উপর লম্বা হয়ে শুলেন; তাতে ছেলেটি সাতবার হাঁচি দিয়ে চোখ খুলল।
\v 36 তখন তিনি গেহসিকে ডেকে বললেন, “ঐ শূনেমীয়াকে ডাক।” সে তাঁকে ডাকলে স্ত্রীলোকটি তাঁর কাছে আসলেন। ইলীশায় বললেন, “আপনার ছেলেকে তুলে নিন।”
\v 37 তখন সেই স্ত্রীলোকটি কাছে গিয়ে তাঁর পায়ে পড়ে মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে তাঁকে প্রণাম করলেন এবং তাঁর ছেলেকে তুলে নিয়ে তিনি বেরিয়ে গেলেন।
\s5
\v 38 ইলীশায় আবার গিল্‌গলে ফিরে গেলেন। তখন দেশে দুর্ভিক্ষ চলছিল। তখন ভাববাদীদের সন্তানেরা তাঁর সঙ্গে বসে ছিল; তিনি তাঁর চাকরকে আদেশ দিলেন, “বড় হাঁড়ি চাপিয়ে এদের জন্য কিছু তরকারি রান্না কর।”
\v 39 তখন তাদের একজন তরকারী সংগ্রহ করতে মাঠে গিয়ে বুনো শসার লতা দেখতে পেয়ে তার বুনো ফল কাপড় ভর্তি করে এনে তা কেটে তরকারির হাঁড়িতে দিল; কিন্তু সেগুলো কি তা কারোর জানা ছিল না।
\s5
\v 40 পরে লোকদের খেতে দেওয়ার জন্য ঢালা হলে তারা সেই তরকারী খেতে গিয়ে চিৎকার করে বলল, “হে ঈশ্বরের লোক, হাঁড়ির মধ্যে মৃত্যু!” তারা তা খেতে পারল না।
\v 41 তখন তিনি বললেন, “কিছু ময়দা নিয়ে এস।” তখন তিনি হাঁড়ির মধ্যে তা ফেলে দিয়ে বললেন, “লোকেদের জন্য ঢেলে দাও, তারা খেয়ে দেখুক।” এতে খারাপ কিছু হাঁড়ির মধ্যে থাকলো না।
\s5
\v 42 আর বাল্‌-শালিশা থেকে একজন লোক ঈশ্বরের লোকের জন্য প্রথমে কাটা ফসল থেকে কুড়িটা যবের রুটি সেঁকে নিয়ে আসল, আর তার সঙ্গে নিয়ে আসল কিছু নতুন শস্যের শীষ। আর তিনি বললেন, “এগুলো লোকদের খেতে দাও।”
\v 43 তখন তাঁর পরিচারক বলল, “আমি কি একশো জন লোককে এটি পরিবেশন করব?” কিন্তু ইলীশায় বললেন, “এই লোকদের খেতে দাও; কারণ সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তারা খাবে ও কিছু বাকীও থাকবে’।”
\v 44 অতএব তার দাস তাদের সামনে তা রাখল, আর সদাপ্রভুর বাক্য অনুযায়ী তারা খেল আবার কিছু বাকীও রেখে দিল।
\s5
\c 5
\s কুষ্ঠী নামানের সুস্থতা।
\p
\v 1 অরামের রাজার সেনাপতি নামান ছিলেন তাঁর মনিবের চোখে একজন মহান ও সম্মানিত লোক, কারণ তাঁরই মাধ্যমে সদাপ্রভু অরামকে জয়ী করেছিলেন; আর তিনি ছিলেন বলবান বীর, কিন্তু কুষ্ঠরোগী ছিলেন।
\v 2 এক সময়ে অরামীয়েরা দলে দলে গিয়েছিল; তারা ইস্রায়েল দেশ থেকে একটি ছোট মেয়েকে বন্দী করে আনলে সে নামানের স্ত্রীর দাসী হয়েছিল।
\s5
\v 3 সে তার কর্ত্রীকে বলল, “আমার মনিব যদি শমরিয়ার ভাববাদীর সঙ্গে দেখা করতে পারতেন, তাহলে তিনি তাঁকে কুষ্ঠরোগ থেকে উদ্ধার করতেন।”
\v 4 পরে নামান গিয়ে তাঁর মনিবকে বললেন, ইস্রায়েল দেশ থেকে আনা সেই মেয়েটি এই কথা বলছে।
\s5
\v 5 অরামের রাজা বললেন, “সেখানে তুমি যাও, আমি ইস্রায়েলের রাজার কাছে চিঠি পাঠাই।” তখন তিনি নিজের সঙ্গে দশ তালন্ত রুপো, ছয় হাজার সোনার মুদ্রা ও দশ জোড়া কাপড় নিয়ে চলে গেলেন।
\v 6 আর তিনি ইস্রায়েলের রাজার কাছে চিঠিটি নিয়ে গেলেন, চিঠিতে লেখা ছিল, “এই চিঠি যখন আপনার কাছে পৌঁছাবে, তখন দেখুন, আমি আমার দাস নামানকে আপনার কাছে পাঠালাম, আপনি তাকে কুষ্ঠরোগ থেকে উদ্ধার করবেন।”
\s5
\v 7 যখন ইস্রায়েলের রাজা সেই চিঠি পড়লেন তিনি তাঁর কাপড় ছিঁড়ে বললেন, “মারবার ও বাঁচাবার ঈশ্বর কি আমি যে, এই ব্যক্তি একজন মানুষকে কুষ্ঠ হতে উদ্ধার করার জন্য আমার কাছে পাঠাচ্ছে? অনুরোধ করি, তোমরা বিচার করে দেখ, সে আমার বিরুদ্ধে তর্কের জন্য সূত্র খোঁজ করছে।”
\s5
\v 8 পরে ইস্রায়েলের রাজা কাপড় ছিঁড়েছেন এই কথা শুনে ঈশ্বরের লোক ইলীশায় রাজার কাছে এই কথা বলে পাঠালেন, “কেন আপনি কাপড় ছিঁড়েছেন? সে ব্যক্তি আমার কাছে আসুক; তাতে জানতে পারবে যে, ইস্রায়েলের মধ্যে একজন ভাববাদী আছে।”
\v 9 কাজেই নামান তাঁর সব রথ ও ঘোড়া নিয়ে এসে ইলীশায়ের বাড়ীর দরজার কাছে গিয়ে উপস্থিত হলেন।
\v 10 তখন ইলীশায় তাঁর কাছে একজন লোক পাঠিয়ে বললেন, “আপনি গিয়ে সাতবার যর্দনে স্নান করুন, আপনার নতুন মাংস হবে ও আপনি শুচি হবেন।”
\s5
\v 11 তখন নামান ভীষণ রেগে চলে গেলেন, আর বললেন, “দেখ, আমি ভেবেছিলাম, তিনি নিশ্চয়ই বের হয়ে আমার কাছে আসবেন এবং দাঁড়িয়ে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ডাকবেন, আর কুষ্ঠরোগের উপরে হাত বুলিয়ে কুষ্ঠীকে সুস্থ করবেন।
\v 12 ইস্রায়েলের সমস্ত জলাশয় থেকে দম্মেশকের অবানা ও পর্পর নদী কি ভাল নয়? সেখানে স্নান করে কি আমি শুচি হতে পারি না?” আর তিনি মুখ ফিরিয়ে রেগে গিয়ে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 13 কিন্তু তাঁর দাসেরা কাছে গিয়ে অনুরোধ করে বলল, “বাবা, ঐ ভাববাদী যদি আপনাকে কোনো কঠিন কাজ করতে আদেশ দিতেন, তাহলে কি আপনি তা করতেন না? তবে ‘স্নান করে শুচি হন’ তাঁর এই আদেশটি কি মানবেন না?”
\v 14 তখন তিনি ঈশ্বরের লোকের আদেশ অনুযায়ী নেমে গিয়ে যর্দনে সাতবার ডুব দিলেন, তাতে ছোট ছেলের মত তাঁর নতুন মাংস হল ও তিনি শুচি হলেন।
\s5
\v 15 পরে তিনি তাঁর সঙ্গীদের জনগনের সঙ্গে ঈশ্বরের লোকের কাছে ফিরে এসে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “দেখুন, আমি এখন জানতে পারলাম যে, একমাত্র ইস্রায়েলের ঈশ্বর ছাড়া সারা পৃথিবীতে আর কোন ঈশ্বর নেই; অতএব অনুরোধ করি, আপনার দাসের কাছ থেকে উপহার নিন।”
\v 16 কিন্তু তিনি বললেন, “আমি যাঁর সামনে দাঁড়িয়ে আছি, সেই জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি যে, আমি কোনো কিছু নেব না।” নামান জোর করলেও তিনি রাজী হলেন না।
\s5
\v 17 পরে নামান বললেন, “তা যদি না হয়, তবে অনুরোধ করি, দুটো খচ্চরে বয়ে নিয়ে যেতে পারে এমন মাটি আপনার দাসকে দিন; কারণ আজ থেকে আপনার এই দাস সদাপ্রভু ছাড়া অন্য কোন দেবতার উদ্দেশ্যে হোম কিংবা বলিদান করবে না।
\v 18 শুধু এই বিষয়ে সদাপ্রভু তাঁর দাসকে ক্ষমা করুন; আমার মনিব উপাসনা করার জন্য যখন রিম্মোণের মন্দিরে ঢুকে আমার হাতের উপর ভর দেন, তখন যদি আমি রিম্মোণের মন্দিরে প্রনাম করি, তবে সদাপ্রভু যেন এই ব্যাপারে আমাকে ক্ষমা করেন।”
\v 19 ইলীশায় তাঁকে বললেন, “শান্ত ভাবে চলে যান। পরে তিনি তাঁর সামনে থেকে কিছু দূর এগিয়ে গেলেন।”
\s5
\v 20 তখন ঈশ্বরের লোক ইলীশায়ের চাকর গেহসি নিজের মনে বলল, “দেখ, আমার মনিব ঐ অরামীয় নামানকে এমনিই ছেড়ে দিলেন, যা এনেছিলেন তা নিলেন না, জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আমি তাঁর পিছনে পিছনে দৌড়ে গিয়ে তাঁর কাছ থেকে কিছু নেব।”
\v 21 পরে গেহসি নামানের অনুসরণ করে দৌড়ে গেল; তাতে নামান তাঁর পিছনে দৌড়ে আসতে দেখে তার সঙ্গে দেখা করবার জন্য রথ থেকে নেমে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “সব খবর ভালো তো?”
\v 22 সে বলল, “সব ঠিক আছে। আমার মনিব এই কথা বলবার জন্য আমাকে পাঠিয়েছেন যে, দেখুন, ইফ্রয়িমের পর্বতময় এলাকা থেকে ভাববাদীদের সন্তানদের মধ্যে দুজন যুবক এসেছে; অনুরোধ করি, তাদের জন্য এক তালন্ত রুপো ও দুই জোড়া পোশাক দিন।”
\s5
\v 23 নামান বললেন, “দয়া করে দুই তালন্ত নাও।” পরে তিনি আগ্রহের সঙ্গে দুই তালন্ত রুপো দুটি থলিতে বেঁধে দুই জোড়া কাপড় তাঁর দুজন দাসকে দিলে তারা তার আগে আগে বয়ে নিয়ে যেতে লাগল।
\v 24 পরে পাহাড়ে এসে গেহসি তাদের কাছ থেকে সেগুলি নিয়ে গৃহের মধ্যে রাখল এবং তাদের বিদায় করে দিলে তারা চলে গেল।
\v 25 পরে সে ভিতরে গিয়ে তার মনিবের সামনে দাঁড়াল। তখন ইলীশায় তাকে বললেন, “গেহসি, তুমি কোথায় গিয়েছিলে?” এবং সে বলল, “আপনার দাস কোথাও যায় নি।”
\s5
\v 26 তখন তিনি তাকে বললেন, “সেই লোকটি যখন তোমার সঙ্গে দেখা করবার জন্য রথ থেকে নামলেন, তখন আমার মন কি তোমার সাথে যায় নি? রুপো, পোশাক, জিতবৃক্ষের বাগান, আঙ্গুর ক্ষেত, গরু, ভেড়া, দাস ও দাসী নেবার এটাই কি সময়?
\v 27 অতএব নামানের কুষ্ঠরোগ তোমার ও তোমার বংশের মধ্যে চিরকাল লেগে থাকবে।” তখন গেহসি তুষারের মত সাদা কুষ্ঠগ্রস্ত হয়ে তাঁর সামনে থেকে চলে গেল।
\s5
\c 6
\s ইলীশায়ের করা আরও নানা কাজ।
\p
\v 1 একসময়ে ভাববাদীদের সন্তানেরা ইলীশায়কে বলল, “দেখুন, যে জায়গায় আমরা আপনার সঙ্গে বাস করছি, সেটা আমাদের জন্য খুবই ছোট।
\v 2 অনুমতি দিন, আমরা যর্দনের কাছে গিয়ে প্রত্যেকে সেখান থেকে একটি করে কাঠ নিয়ে আমাদের জন্য সেখানে একটা থাকবার জায়গা তৈরী করি।” তিনি বললেন, “যাও।”
\v 3 আর একজন বলল, “আপনি দয়া করে আপনার দাসদের সঙ্গে চলুন।” তিনি বললেন, “যাব।”
\s5
\v 4 অতএব তিনি তাদের সঙ্গে গেলেন; পরে যর্দনের কাছে গিয়ে তারা কাঠ কাটতে লাগল।
\v 5 কিন্তু একজন যখন কাঠ কাটছিল, তখন তার কুড়ালের ফলাটি জলে পড়ে গেল; তাতে সে চিৎকার করে বলল, “হায়, হায়! প্রভু, আমি তো ওটা ধার করে এনেছিলাম।”
\s5
\v 6 তখন ঈশ্বরের লোক জিজ্ঞাসা করলেন, “ওটা কোথায় পড়েছে?” সে তাঁকে সেই জায়গাটা দেখিয়ে দিল, তখন ইলীশায় একটি কাঠ কেটে নিয়ে সেখানে ছুঁড়ে ফেলে লোহার ফলাটিকে ভাসিয়ে তুললেন।
\v 7 আর তিনি বললেন, “ওটা তুলে নাও।” তাতে সে হাত বাড়িয়ে সেটা তুলে নিল।
\s5
\v 8 এক সময় অরামের রাজা ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছিলেন; আর যখন তিনি তাঁর দাসেদের সঙ্গে পরামর্শ করে বলতেন, “ঐ ঐ জায়গায় আমি শিবির করব,”
\v 9 তখন ঈশ্বরের লোক ইস্রায়েলের রাজাকে বলে পাঠাতেন, “সাবধান, ঐ জায়গায় যাবেন না, কারণ অরামীয়েরা সেখানে নেমে আসছে।”
\s5
\v 10 তাতে ঈশ্বরের লোক যে জায়গাটার বিষয়ে তাঁকে সাবধান করে দিতেন, সেখানে ইস্রায়েলের রাজা সৈন্য পাঠিয়ে বারবার নিজেকে রক্ষা করতেন।
\v 11 এই বিষয়ের জন্য অরামের রাজার হৃদয় বিচলিত হল, তিনি তাঁর দাসেদের ডেকে বললেন, “আমাদের মধ্যে কে ইস্রায়েলের রাজার পক্ষে রয়েছে, তা কি তোমরা আমাকে বলবে না?”
\s5
\v 12 তখন তাঁর দাসেদের মধ্যে একজন বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, কেউ না; কিন্তু আপনি আপনার শোবার গৃহে যে সব কথা বলেন, সেই সব কথা ইস্রায়েলের ভাববাদী ইলীশায় ইস্রায়েলের রাজাকে জানান।”
\v 13 তখন তিনি বললেন, “সে কোথায় আছে তোমরা গিয়ে তা খুঁজে বের কর, আমি লোক পাঠিয়ে তাকে আনব।” পরে কেউ তাঁকে এই খবর দিল, “দেখুন, তিনি দোথনে আছেন।”
\s5
\v 14 তাতে তিনি অনেক ঘোড়া, রথ ও একটি বড় সৈন্যদল সেখানে পাঠালেন। তারা রাতের বেলায় গিয়ে নগরটি ঘিরে ধরল।
\v 15 আর ভোরে ঈশ্বরের লোকের চাকর উঠে যখন বাইরে গেল, তখন সে দেখতে পেল অনেক ঘোড়া ও রথ নিয়ে একদল সৈন্য নগর ঘিরে রেখেছে। তাঁর চাকর তখন তাঁকে বলল, “হায়, হায়! হে প্রভু, আমরা কি করব?”
\v 16 তিনি বললেন, “ভয় কোরো না, যারা আমাদের সঙ্গে আছে তারা ওদের চেয়ে সংখ্যায় বেশী।”
\s5
\v 17 তারপর ইলীশায় প্রার্থনা করে বললেন, “হে সদাপ্রভু, অনুরোধ করি, এর চোখ খুলে দাও, যেন এ দেখতে পায়।” তখন সদাপ্রভু সেই চাকরের চোখ খুলে দিলেন এবং সে দেখতে পেল, ইলীশায়ের চারপাশে ঘোড়া ও আগুনের রথে পর্বতে ভরা ছিল।
\v 18 পরে সেই সৈন্যরা তাঁর কাছে আসলে ইলীশায় সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “অনুরোধ করি, এই লোকগুলিকে তুমি অন্ধ করে দাও।” ইলীশায়ের প্রার্থনা অনুসারে সদাপ্রভু তাদের অন্ধ করে দিলেন।
\v 19 পরে ইলীশায় তাদেরকে বললেন, “এটা সেই রাস্তাও নয় আর সেই নগরও নয়; তোমরা আমার পিছনে পিছনে এস; যে লোকের খোঁজ তোমরা করছ আমি তার কাছে তোমাদের নিয়ে যাব।” আর তিনি তাদের শমরিয়াতে নিয়ে গেলেন।
\s5
\v 20 তারা শমরিয়াতে ঢুকবার পর ইলীশায় বললেন, “হে সদাপ্রভু, এবার ওদের চোখ খুলে দাও, যেন ওরা দেখতে পায়।” তখন সদাপ্রভু তাদের চোখ খুলে দিলেন এবং তারা দেখল যে, তারা শমরিয়ার গিয়ে উপস্থিত হয়েছে।
\v 21 আর ইস্রায়েলের রাজা তাদের দেখে ইলীশায়কে বললেন, “হে, পিতা, ওদের কি মেরে ফেলব?”
\s5
\v 22 ইলীশায় বললেন, “ওদের মেরো না। তুমি যাদের তরোয়াল ও ধনুক দিয়ে বন্দী কর, তাদের কি মেরে ফেল? ওদের রুটি ও জল দাও, ওরা খেয়ে তাদের মনিবের কাছে ফিরে যাক।”
\v 23 তখন তিনি তাদের জন্য বড় ভোজের আয়োজন করলেন এবং তারা খাওয়া-দাওয়া করলে, তিনি তাদের বিদায় দিলেন; তারা তাদের মনিবের কাছে ফিরে গেল। পরে অরামের সৈন্যদল ইস্রায়েল দেশে আর এল না।
\s5
\v 24 তার পরে অরামের রাজা বিন্‌হদদ তাঁর সমস্ত সৈন্যদল জড়ো করলেন এবং শমরিয়া আক্রমণ করে ঘেরাও করলেন।
\v 25 তাতে শমরিয়ায় খুব দুর্ভিক্ষ দেখা দিল; আর দেখ, তারা ঘেরাও করে থাকলে শেষে একটি গাধার মাথা আশিটি রুপোর টাকা ও এক কাবের চার ভাগের এক ভাগ পায়রার মল পাঁচটি রুপোর টাকা দাম হল।
\v 26 ইস্রায়েলের রাজা একদিন নগরের দেয়ালের উপর দিয়ে যাচ্ছিলেন, এমন সময় একজন স্ত্রীলোক কাঁদতে কাঁদতে তাঁকে বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, আমাকে রক্ষা করুন।”
\s5
\v 27 রাজা বললেন, “সদাপ্রভু যদি না রক্ষা করেন, আমি কোথা থেকে তোমাকে রক্ষা করব? খামার থেকে, না আঙ্গুর মাড়াইয়ের যন্ত্র থেকে?”
\v 28 রাজা আরও বললেন, “তোমার কি হয়েছে?” উত্তরে সে বলল, “এই স্ত্রীলোকটি আমাকে বলেছিল, ‘তোমার ছেলেটিকে দাও, আজ আমরা তাকে খাই, কাল আমার ছেলেটিকে খাব।’
\v 29 তখন আমরা আমার ছেলেটিকে রান্না করে খেলাম। পরের দিন আমি তাকে বললাম, ‘তোমার ছেলেটিকে দাও, আমরা খাই, কিন্তু এ তার ছেলেকে লুকিয়ে রেখেছে।”
\s5
\v 30 স্ত্রীলোকটির এই কথা শুনে রাজা তাঁর পোশাক ছিঁড়লেন; তখনও তিনি দেওয়ালের উপর দিয়ে হাঁটছিলেন; তাতে লোকেরা দেখতে পেল যে, পোশাকের নিচে তাঁর গায়ে চট বাঁধা।
\v 31 পরে তিনি বললেন, “আজ যদি শাফটের ছেলে ইলীশায়ের মাথা তার কাঁধে থাকে, তবে ঈশ্বর যেন আমাকে ঐ রকম ও তার থেকে বেশি শাস্তি দেন।”
\s5
\v 32 ইলীশায় তখন তাঁর গৃহে বসে ছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে প্রাচীনেরা বসেছিলেন; ইতিমধ্যে রাজা তাঁর সামনে থেকে একজন লোক পাঠালেন। কিন্তু সেই দূতটি সেখানে পৌঁছাবার আগেই ইলীশায় প্রাচীনদের বললেন, “তোমরা কি দেখতে পাচ্ছ, সেই খুনীর ছেলে আমার মাথা কেটে ফেলবার জন্য লোক পাঠিয়েছে? দেখ, সেই দূত এলে দরজা বন্ধ কোরো এবং তার সামনেই দরজাটি বন্ধ করবে; তার মালিকের পায়ের শব্দ কি তার পিছু পিছু শোনা যাচ্ছে না?”
\v 33 তিনি তাদের সঙ্গে কথা বলছেন, এমন সময়ে দেখ, দূতটি তাঁর কাছে এল; তারপর রাজা বললেন, “দেখ, এই বিপদ সদাপ্রভুর কাছ থেকেই হল, তবে আমি কেন সদাপ্রভুর অপেক্ষা করব?”
\s5
\c 7
\p
\v 1 ইলীশায় বললেন, “তোমরা সদাপ্রভুর বাক্য শোনো। তিনি এই কথা বলেন, ‘আগামী কাল এই সময়ে শমরিয়ার ফটকে শেকলে এক পসুরী সূজী ও শেকলে দুই পসুরী যব বিক্রি হবে’।”
\v 2 তখন রাজা যে সেনাপতির ওপর নির্ভর করেছিলেন, তিনি উত্তরে ঈশ্বরের লোককে বললেন, “দেখ, সদাপ্রভু যদি আকাশের জানালাও খুলে দেন, তবুও কি এটা হতে পারে?” ইলীশায় উত্তর দিলেন, “তুমি নিজের চোখেই তা দেখতে পাবে, কিন্তু তার কিছুই তুমি খেতে পারবে না।”
\s5
\v 3 তখন নগরের ফটকে ঢোকার পথে চারজন কুষ্ঠরোগী ছিল। তারা একে অন্যকে বলল, “আমরা এখানে বসে থেকে কেন মরব?
\v 4 যদি বলি, নগরে যাব, তবে নগরের মধ্যে দুর্ভিক্ষ আছে, সেখানে মরব; আর যদি এখানে বসে থাকি তবুও মরব। এখন এস, আমরা অরামীয়দের শিবিরে যাই, যদি তারা আমাদের বাঁচায় তো বাঁচব, মেরে ফেলে তো মরব।”
\s5
\v 5 তখন তারা অরামীয়দের শিবিরে যাবার জন্য সন্ধ্যার সময় উঠল; যখন তারা অরামীয়দের শিবিরের শেষ প্রান্তে গিয়ে উপস্থিত হল, তখন সেখানে কেউ ছিল না।
\v 6 কারণ প্রভু অরামীয়দের সৈন্যদলকে রথ, ঘোড়া, ও মস্ত বড় সৈন্যের আওয়াজ শুনিয়েছিলেন; তাতে তারা একে অন্যকে বলেছিল, “দেখ, ইস্রায়েলের রাজা হিত্তীয় ও মিসরীয় রাজাদের টাকা দিয়েছে, যেন তারা আমাদের আক্রমণ করে।”
\s5
\v 7 তাই তারা সন্ধ্যাবেলা উঠে পালিয়েছিল; তাদের শিবির, ঘোড়া, গাধা সব যেমন ছিল, তেমনি ফেলে রেখে নিজের প্রাণ বাঁচানোর জন্য পালিয়ে গিয়েছিল।
\v 8 পরে ঐ কুষ্ঠীরোগীরা শিবিরের শেষ প্রান্তে এসে একটি তাঁবুর ভিতরে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করল এবং সেখান থেকে রুপো, সোনা ও পোশাক নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখল; পরে আবার এসে আর একটি তাঁবুতে মধ্যে ঢুকে সেখান থেকে জিনিসপত্র নিয়ে গিয়ে লুকিয়ে রাখল।
\s5
\v 9 পরে তারা একে অন্যকে বলল, “আমাদের এই কাজটি করা ভাল নয়; আজ সুখবরের দিন, কিন্তু আমরা চুপ করে আছি; যদি সকাল পর্যন্ত দেরি করি, তবে শাস্তি আমাদের উপর নেমে আসবে। এখন এস, আমরা গিয়ে রাজবাড়ীতে খবরটা দিই।”
\v 10 পরে তারা গিয়ে নগরের ফটকের পাহারাদারদের ডেকে তাদেরকে খবর দিল যে, “আমরা অরামীয়দের শিবিরে গিয়েছিলাম; আর দেখ, সেখানে কেউ নেই, মানুষের শব্দও নেই, কেবল ঘোড়াগুলি আর গাধাগুলি বাঁধা, আর তাঁবুগুলি যেমন ছিল, তেমনি আছে।”
\v 11 তাতে পাহারাদারদের ডাকা হলে তারা ভিতরে রাজবাড়ীতে খবর দিল।
\s5
\v 12 পরে রাজা রাতের বেলা উঠে তাঁর দাসেদের বললেন, “অরামীয়েরা আমাদের প্রতি যা করেছে, তা আমি তোমাদের বলি; তারা জানে, আমরা যে না খেয়ে আছি, তাই তারা মাঠে গিয়ে লুকিয়ে থাকার জন্য শিবির থেকে বাইরে গেছে, আর বলেছে, ‘ওরা যখন নগর থেকে বাইরে আসবে, তখন আমরা তাদের জীবিত ধরব ও নগরের মধ্যে ঢুকব’।”
\v 13 তখন তাঁর দাসেদের মধ্যে একজন দাস উত্তর দিয়ে বলল, “তবে অনুরোধ করি, কয়েকজন লোক শহরে যে ঘোড়াগুলি অবশিষ্ট আছে তার মধ্য থেকে পাঁচটা ঘোড়া নিয়ে দেখুক যে, তারা এবং নগরের বাকি সব ইস্রায়েলের অবশিষ্ট লোকের সমান, অনেকে তো এখন মৃত, কাজেই আমরা তাদের একবার পাঠিয়ে দেখি।”
\s5
\v 14 পরে তারা ঘোড়া সুদ্ধ দুটি রথ বেছে নিল; রাজা অরামীয় সৈন্যদের খোঁজে তাদের পাঠিয়ে বললেন, “যাও, গিয়ে দেখ।”
\v 15 তাতে তারা যর্দন পর্যন্ত তাদের পিছু পিছু গেল, আর দেখল অরামীয়েরা তাড়াতাড়িতে যা যা ফেলে গেছে, সেই সব পোশাক ও পাত্রে সমস্ত রাস্তা ভর্তি। তখন দূতেরা ফিরে এসে রাজাকে সব খবর দিল।
\s5
\v 16 আর লোকেরা বাইরে গিয়ে অরামীয়দের শিবির লুট করল; তাতে সদাপ্রভুর বাক্য অনুসারে শেকলে এক পসুরী সূজী এবং শেকলে দুই পসুরী যব বিক্রি হল।
\v 17 আর রাজা যে সেনাপতির ওপর নির্ভর করেছিলেন, তাঁকে তিনি নগরের ফটকের অধ্যক্ষ করে দিলেন; কিন্তু লোকেরা ফটকের কাছে তাদের পায়ের তলায় চাপা দিয়ে তাকে মেরে ফেলল; ঈশ্বরের লোকের কাছে রাজা যখন গিয়েছিলেন, তখন ঈশ্বরের লোক যা বলেছিলেন, তাই সফল হল।
\s5
\v 18 ঈশ্বরের লোক রাজাকে বলেছিলেন, “আগামী কাল এই সময়ে শমরিয়ার ফটকে শেকলে দুই পসুরী যব এবং শেকলে এক পসুরী সূজী বিক্রি হবে।”
\v 19 আর ঐ সেনাপতি উত্তরে ঈশ্বরের লোককে বলেছিলেন, “দেখ, সদাপ্রভু যদি আকাশের জানালাও খুলে দেন তবুও কি এটা হতে পারে?” ইলীশায় বলেছিলেন, “তুমি নিজের চোখেই তা দেখতে পাবে, কিন্তু তার কিছুই তুমি খেতে পারবে না।”
\v 20 তাঁর, সেই দশা ঘটল, কারণ ফটকে লোকদের পায়ের তলায় চাপা পড়ার ফলে তিনি মারা গেলেন৷
\s5
\c 8
\s আরও দুটি ঘটনা।
\p
\v 1 ইলীশায় যে স্ত্রীলোকটির ছেলেকে জীবিত করে তুলেছিলেন, তাঁকে বলেছিলেন, “তুমি তোমার পরিবার নিয়ে যেখানে পার সেখানে গিয়ে বাস কর; কারণ সদাপ্রভু দুর্ভিক্ষ পাঠাবেন, আর তা সাত বছর পর্যন্ত এই দেশে থাকবে।”
\v 2 তাতে সেই স্ত্রীলোকটি উঠে ঈশ্বরের লোকের বাক্য অনুসারে কাজ করলেন; তিনি ও তাঁর পরিবার সেখান থেকে গিয়ে সাত বছর পলেষ্টীয়দের দেশে বাস করলেন।
\s5
\v 3 সাত বছরের শেষে সেই স্ত্রীলোকটি পলেষ্টীয়দের দেশ থেকে ফিরে এসে তাঁর বাড়ী ও জমি ফেরৎ চাওয়ার জন্য রাজার কাছে কাঁদতে গেল।
\v 4 ঐ সময় রাজা ঈশ্বরের লোকের চাকর গেহসির সঙ্গে কথা বলছিলেন; তিনি বললেন, “ইলীশায় যে সব মহান কাজ করেছেন, সেই সব ঘটনা আমাকে বল।”
\s5
\v 5 তাতে ইলীশায় কিভাবে মৃতকে জীবিত করেছিলেন, রাজাকে তার বর্ণনা দিচ্ছিলেন, তখন যাঁর ছেলেকে তিনি জীবিত করেছিলেন, সেই স্ত্রীলোকটি রাজার কাছে তাঁর বাড়ী ও জমির জন্য এসে কাঁদতে লাগলেন। গেহসি তখন বলল, “হে আমার প্রভু মহারাজ, এই সেই স্ত্রীলোক এবং এই তাঁর ছেলে, যাকে ইলীশায় বাঁচিয়ে তুলেছিলেন।”
\v 6 আর রাজা স্ত্রীলোকটিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি তাঁকে সব কথা বললেন। আর রাজা তাঁর পক্ষে একজন কর্মচারীকে নিযুক্ত করে বললেন, “তার সব কিছু এবং এ যে দিন থেকে দেশ ছেড়েছে, সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত তার জমিতে যা ফসল উত্পন্ন হয়েছে তা ফিরিয়ে দাও।”
\s5
\v 7 এক সময় ইলীশায় দম্মেশকে উপস্থিত হলেন। তখন অরামের রাজা বিন্‌হদদ অসুস্থ ছিলেন; তিনি খবর পেলেন যে, “ঈশ্বরের লোকটি এখানে এসেছেন।”
\v 8 রাজা তখন হসায়েলকে বললেন, “তুমি একটা উপহার নিয়ে ঈশ্বরের লোকের সঙ্গে দেখা করতে যাও এবং তাঁর মধ্যে দিয়ে সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা কর, আমি কি এই অসুখে বাঁচব?”
\v 9 পরে হসায়েল তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তিনি উপহার সঙ্গে নিয়ে, এমন কি, দম্মেশকের সবচেয়ে ভাল ভাল জিনিস চল্লিশটি উটের পিঠে বোঝাই করে নিয়ে এসে তাঁর সামনে দাঁড়িয়ে বললেন, “আপনার ছেলে অরামের রাজা বিন্‌হদদ আপনার কাছে আমাকে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘আমি কি এই অসুখে বাঁচব’?”
\s5
\v 10 ইলীশায় তাঁকে বললেন, “আপনি গিয়ে তাঁকে বলুন যে, আপনি অবশ্যই সুস্থ হবেন; কিন্তু সদাপ্রভু আমার কাছে প্রকাশ করেছেন যে, তিনি অবশ্যই মারা যাবেন।”
\v 11 আর হসায়েল লজ্জা না পাওয়া পর্যন্ত তিনি তার দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকলেন; তারপর ঈশ্বরের লোক কাঁদতে লাগলেন।
\v 12 হসায়েল জিজ্ঞাসা করলেন, “আমার প্রভু কেন কাঁদছেন?” উত্তরে তিনি বললেন, “কারণ আপনি ইস্রায়েল সন্তানদের কি ক্ষতি করবেন তা আমি জানি; আপনি তাদের মজবুত দুর্গগুলি আগুনে পোড়াবেন, তরোয়ালের ঘায়ে তাদের যুবকদের মেরে ফেলবেন, তাদের শিশুদেরকে ধরে আছাড় মারবেন এবং তাদের গর্ভবতী স্ত্রীলোকদের পেট চিরে দেবেন।”
\s5
\v 13 হসায়েল বললেন, “আপনার এই কুকুরের মত দাস কে যে, এমন বড় কাজ করবে?” ইলীশায় বললেন, “সদাপ্রভু আমাকে দেখিয়েছেন যে, আপনি অরামের রাজা হবেন।”
\v 14 তখন তিনি ইলীশায়ের কাছ থেকে তাঁর মনিবের কাছে চলে গেলেন; রাজা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ইলীশায় তোমাকে কি বলেছেন?” হসায়েল বললেন, “তিনি আমাকে বলেছেন, আপনি নিশ্চয়ই সুস্থ হবেন।”
\v 15 কিন্তু তার পরের দিন হসায়েল কম্বল জলে ডুবিয়ে রাজার মুখের উপর চাপা দিলেন, তাতে রাজা মারা গেলেন এবং হসায়েল তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s যিহূদার যিহোরাম ও অহসিয় রাজার বর্ণনা।
\p
\s5
\v 16 ইস্রায়েলের রাজা আহাবের ছেলে যোরামের রাজত্বের পঞ্চম বছরে যখন যিহোশাফট যিহূদার রাজা ছিলেন, তখন যিহূদার রাজা যিহোশাফটের ছেলে যিহোরাম রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\v 17 যিহোরাম বত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করে আট বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন।
\s5
\v 18 আহাবের বংশের লোকদের মতই তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলতেন, কারণ তিনি আহাবের মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন; ফলে সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, তিনি তাই করতেন।
\v 19 তবুও সদাপ্রভু নিজের দাস দায়ূদের কথা মনে করে যিহূদাকে ধ্বংস করতে চাইলেন না, তিনি তো দায়ূদের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে, তাঁকে তাঁর সন্তানদের জন্য চিরকাল একটি প্রদীপ দেবেন।
\s5
\v 20 তাঁর সময়ে ইদোম যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে নিজেদের জন্য একজন রাজা ঠিক করল।
\v 21 তাই যোরাম তাঁর সব রথ সঙ্গে নিয়ে সায়ীরে গেলেন; আর রাতের বেলায় উঠে, যারা তাঁকে ঘিরে ছিল, সেই ইদোমীয়দেরকে ও তাদের রথের সেনাপতিদেরকে আঘাত করলেন, আর সেই লোকেরা নিজেদের তাঁবুতে পালিয়ে গেল।
\s5
\v 22 এইভাবে ইদোম আজও যিহূদার বিদ্রোহী হয়ে আছে। আর ঐ একই সময়ে লিব্‌নাও বিদ্রোহ করল।
\v 23 যোরামের বাকি সমস্ত কাজের কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাস বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 24 পরে যোরাম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন এবং তাঁকে দায়ূদ নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে অহসিয় তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 25 ইস্রায়েলের রাজা আহাবের ছেলে যোরামের রাজত্বের বারো বছরের সময় যিহূদার রাজা যিহোরামের ছেলে অহসিয় রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\v 26 অহসিয় বাইশ বছর বয়সে রাজত্ব শুরু করে এক বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন। তাঁর মা অথলিয়া, তিনি ইস্রায়েলের রাজা অম্রির নাতনী।
\v 27 অহসিয় আহাবের বংশের লোকেদের পথে চলতেন, সদাপ্রভুর চোখে যা খারাপ, আহাবের বংশের মত তাই করতেন, কারণ তিনি আহাবের বংশের জামাই ছিলেন।
\s5
\v 28 তিনি আহাবের ছেলে যোরামের সঙ্গে অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য রামোৎ-গিলিয়দে গেলেন; তাতে অরামীয়েরা যোরামকে আঘাত করল।
\v 29 অতএব যোরাম রাজা অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময়ে রামাতে অরামীয়েরা তাঁকে যে সব আঘাত করে, তা থেকে ভাল হবার জন্য যিষ্রিয়েলে ফিরে গেলেন; আর আহাবের ছেলে যোরাম আঘাত পেয়েছিলেন বলে যিহূদার রাজা যিহোরামের ছেলে অহসিয় তাঁকে দেখতে যিষ্রিয়েলে নেমে গেলেন।
\s5
\c 9
\s যেহূর বর্ণনা। আহাব বংশের বিনাশ।
\p
\v 1 তখন ইলীশায় ভাববাদী ভাববাদীদের সন্তানদের একজন শিষ্য ভাববাদীকে ডেকে বললেন, “তুমি কোমর বেঁধে নাও এবং এই তেলের শিশিটি নিয়ে রামোৎ-গিলিয়দে যাও।
\v 2 সেখানে গিয়ে নিম্‌শির নাতি যিহোশাফটের ছেলে যেহূর খোঁজ কর এবং কাছে গিয়ে তাঁকে তাঁর ভাইদের মধ্যে থেকে উঠিয়ে একটি ভিতরের কুঠরীতে নিয়ে যাও।
\v 3 তারপর তেলের শিশিটি নিয়ে তাঁর মাথায় তেল ঢেলে দিয়ে বল, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘ইস্রায়েলের উপরে আমি তোমাকে রাজা হিসাবে অভিষেক করলাম।’ পরে তুমি দরজা খুলে পালিয়ে যাবে, দেরি করবে না।”
\s5
\v 4 তখন সেই যুবক, সেই যুবক ভাববাদী, রামোৎ-গিলিয়দে গেল।
\v 5 সে সেখানে পৌঁছে দেখল, সেনাপতিরা এক জায়গায় বসে ছিলেন। সে বলল, “সেনাপতি, আপনার জন্য আমার কিছু খবর আছে।” যেহূ বললেন, “আমাদের সকলের মধ্যে কার জন্য?” সে বলল, “সেনাপতি, আপনার জন্য।”
\v 6 তখন যেহূ উঠে গৃহে র মধ্যে গেলেন। তাতে সে তাঁর মাথায় তেল ঢেলে তাঁকে বলল, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘আমি সদাপ্রভুর প্রজাদের উপরে, ইস্রায়েলের উপরে, তোমাকে রাজা হিসাবে অভিষেক করলাম।
\s5
\v 7 তুমি তোমার মনিব আহাবের বংশকে ধ্বংস করবে এবং আমি আমার ভাববাদীদের রক্তের প্রতিশোধ ও সদাপ্রভুর সব দাসদের রক্তের প্রতিশোধ ঈষেবলের হাত থেকে নেব।
\v 8 কারণ আহাবের বংশের সবাই ধ্বংস হবে; আহাবের বংশের প্রত্যেকটি পুরুষকে, ইস্রায়েলের মধ্যে দাস বা স্বাধীন লোককে, আমি উচ্ছেদ করব।
\s5
\v 9 আর আহাবের বংশকে নবাটের ছেলে যারবিয়ামের বংশের ও অহিয়ের ছেলে বাশার বংশের সমান করব।
\v 10 আর কুকুরেরা ঈষেবলকে যিষ্রিয়েলের জমিতে খাবে, তাকে কেউ কবর দেবে না’।” পরে সেই যুবক দরজা খুলে পালিয়ে গেল।
\s5
\v 11 তখন যেহূ তাঁর মনিবের দাসেদের কাছে বাইরে এলে একজন তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “সব কিছু ভাল তো? ঐ পাগলটা তোমার কাছে কেন এসেছিল?” তিনি বললেন, “তোমরা তো তাকে চেন, সে কি রকম কথা বলে তাও জান।”
\v 12 তারা বলল, “এই কথা মিথ্যা, আমাদের সত্যি বল।” তখন তিনি বললেন, “সে আমাকে বলল, সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘ইস্রায়েলের রাজা হিসাবে আমি তোমাকে অভিষেক করলাম’।”
\v 13 তখন তারা তাড়াতাড়ি করে তাদের গায়ের কাপড় খুলে সিঁড়ির উপর তাঁর পায়ের নীচে পেতে দিল এবং তূরী বাজিয়ে বলল, “যেহূ রাজা হলেন।”
\s5
\v 14 এইভাবে নিম্‌শির নাতি যিহোশাফটের ছেলে যেহূ যোরামের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। সেই সময় যোরাম ও সমস্ত ইস্রায়েলীয়রা অরামের রাজা হসায়েলের থেকে রামোৎ-গিলিয়দ রক্ষা করেছিলেন;
\v 15 কিন্তু অরামের রাজা হসায়েলের সঙ্গে যোরামের রাজার যুদ্ধের সময় অরামীয়েরা তাঁকে যেসব আঘাত করেছিল, তা থেকে সুস্থ হয়ে উঠার জন্য তিনি যিষ্রিয়েলে ফিরে গিয়েছিলেন। পরে যেহূ যোরামের দাসেদের বললেন, “যদি তোমরা একমত হও, তবে যিষ্রিয়েলে খবর দেবার জন্য কাউকে পালিয়ে এই নগর থেকে বেরতে দিও না।”
\v 16 তারপর যেহূ রথে চড়ে যিষ্রিয়েলে গেলেন, কারণ যোরাম সেখানে বিছানায় শুয়ে ছিলেন। আর যিহূদার রাজা অহসিয় যোরামকে দেখতে নেমে গিয়েছিলেন।
\s5
\v 17 তখন যিষ্রিয়েলের দুর্গের উপর পাহারাদার দাঁড়িয়েছিল; যেহূর আসার সময়ে সে তাঁর দলকে দেখে বলল, “আমি একটি দল দেখছি।” যোরাম বললেন, “তাদের সঙ্গে দেখা করতে একজন ঘোড়াচালককে পাঠিয়ে দাও, সে গিয়ে জিজ্ঞাসা করুক, ‘সব কিছু ঠিক আছে তো’?”
\v 18 পরে একজন ঘোড়াচালক তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে বলল, “রাজা জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘সব কিছু ঠিক আছে তো’?” যেহূ বললেন, “মঙ্গল নিয়ে তোমার দরকার কি? তুমি আমার পিছনে পিছনে এস।” পরে পাহারাদার এই খবর দিল, “সেই দূত তাদের কাছে গেল ঠিকই, কিন্তু ফিরে এলো না।”
\s5
\v 19 তখন রাজা আর একজনকে ঘোড়ায় করে পাঠালেন; সে তাদের কাছে গিয়ে বলল, “রাজা জিজ্ঞাসা করেছেন, ‘সব কিছু ঠিক আছে তো’?” যেহূ বললেন, “মঙ্গল নিয়ে তোমার দরকার কি? তুমি আমার পিছনে পিছনে এস।”
\v 20 সেই পাহারদারটি খবর দিল, “এই লোকটি তাদের কাছে গেল, কিন্তু সেও এলো না; আর রথ চালানো দেখে মনে হচ্ছে নিম্‌শির নাতি যেহূ, কারণ সে পাগলের মতই রথ চালায়।”
\s5
\v 21 তখন যোরাম বললেন, “রথ সাজাও।” তখন তারা তাঁর রথ সাজাল। তারপর ইস্রায়েলের রাজা যোরাম ও যিহূদার রাজা অহসিয় নিজের নিজের রথে চড়ে যেহূর সঙ্গে দেখা করবার জন্য বের হলেন। যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের জমিতে তাঁর দেখা পেলেন।
\v 22 যোরাম যেহূকে দেখেই জিজ্ঞাসা করলেন, “যেহূ, সব কিছু ঠিক আছে তো?” উত্তরে তিনি বললেন, “যতক্ষণ তোমার মা ঈষেবলের ব্যভিচার ও যাদুবিদ্যা থাকে, সে পর্যন্ত মঙ্গল কি করে হতে পারে?”
\s5
\v 23 তখন যোরাম ঘুরে পালাবার সময় অহসিয়কে ডেকে বললেন, “হে অহসিয়, বিশ্বাসঘাতকতা।”
\v 24 পরে যেহূ তাঁর সমস্ত শক্তি দিয়ে ধনুকে টান দিয়ে যোরামের দুই কাঁধের মাঝখানে তীর ছুঁড়লেন, আর তির গিয়ে তাঁর হৃদপিণ্ডে বিঁধল, তাতে তিনি তাঁর রথের মধ্যে নিচু হয়ে পড়ে গেলেন।
\s5
\v 25 তখন যেহূ তাঁর সেনাপতি বিদ্‌করকে বললেন, “তুমি ওকে তুলে নিয়ে যিষ্রিয়েলীয় নাবোতের জমিতে ফেলে দাও; কারণ মনে করে দেখ, আমি আর তুমি তাঁর বাবা আহাবের পিছনে ঘোড়ায় করে যখন যাচ্ছিলাম, তখন সদাপ্রভু তাঁর বিরুদ্ধে এই ভাববাণী বলেছিলেন,
\v 26 ‘গতকাল আমি নাবোত ও তার ছেলেদের রক্ত দেখেছি, এটাই সদাপ্রভু বলেন, আর সদাপ্রভু বলেন, ‘এই জমিতে তোমার আমি প্রতিশোধ নেব।’ অতএব, তুমি এখন সদাপ্রভুর কথা অনুসারে ওকে তুলে নিয়ে ঐ জমিতে ফেলে দাও।”
\s5
\v 27 তখন যিহূদার রাজা অহসিয় তা দেখে বাগানবাড়ির পথ ধরে পালিয়ে গেলেন; আর যেহূ তাঁর পিছনে যেতে যেতে বললেন, “ওকেও রথের মধ্যে আঘাত কর,” তখন তারা যিব্‌লিয়মের কাছে গূরের নামে উঠবার পথে তাঁকে আঘাত করল; পরে তিনি মগিদ্দোতে পালিয়ে গিয়ে সেখানে মারা গেলেন।
\v 28 আর তাঁর দাসেরা তাঁকে রথে করে যিরূশালেমে নিয়ে গিয়ে দায়ূদ নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁর কবরে তাঁকে কবর দিল।
\s5
\v 29 আহাবের ছেলে অহসিয় যিহোরামের রাজত্বের এগারো বছরে যিহূদার রাজত্ব শুরু করেছিলেন।
\s5
\v 30 পরে যেহূ যিষ্রিয়েলে গেলেন; ঈষেবল সেই কথা শুনে চোখে কাজল দিয়ে সুন্দর করে চুল বেঁধে জানলা দিয়ে দেখছিল
\v 31 এবং যেহূ ফটক দিয়ে ঢুকলে সে তাঁকে বলল, “ওহে সিম্রি! নিজের মনিবের হত্যাকারী! মঙ্গল তো?”
\v 32 যেহূ তখন উপরে জানলার দিকে তাকিয়ে বললেন, “আমার পক্ষে কে? কে?” তখন দুই তিনজন নপুংসক তাঁর দিকে চেয়ে দেখল।
\s5
\v 33 আর তিনি আদেশ দিলেন, “ওকে নীচে ফেলে দাও।” তারা ঈষেবলকে নীচে ফেলে দিল, আর তাঁর রক্ত ছিট্‌কে গিয়ে দেয়ালে আর ঘোড়ার গায়ে ছিটকে পড়ল; যেহূ তাকে পা দিয়ে মাড়িয়ে গেলেন।
\v 34 তারপর যেহূ ভিতরে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করলেন; আর বললেন, “তোমরা ঐ অভিশপ্তাকে কবর দাও, কারণ সে একজন রাজকন্যা।”
\s5
\v 35 এতে লোকেরা তাকে কবর দিতে গেল, কিন্তু তার মাথার খুলি, হাত ও পা ছাড়া আর কিছুই পেল না।
\v 36 কাজেই তারা ফিরে গিয়ে তাঁকে খবর দিলে তিনি বললেন, “এটা সদাপ্রভুর বাক্য অনুসারে হল, তিনি তাঁর দাস তিশ্‌বীয় এলিয়ের মধ্যে দিয়ে এই কথা বলেছিলেন, ‘যিষ্রিয়েলের জমিতে কুকুরেরা ঈষেবলের মাংস খাবে
\v 37 এবং যিষ্রিয়েলের জমিতে ঈষেবলের মৃতদেহ এমন সারের মত পড়ে থাকবে যে, কেউ বলতে পারবে না যে, এটাই ঈষেবল’।”
\s5
\c 10
\p
\v 1 শমরিয়াতে আহাবের সত্তরজন ছেলে ছিল। যেহূ চিঠি লিখে শমরিয়াতে যিষ্রিয়েলের শাসনকর্তাদের অর্থাৎ প্রাচীনদের কাছে এবং আহাবের ছেলেদের অভিভাবকদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি লিখলেন,
\v 2 “তোমাদের মনিবের ছেলেরা তোমাদের কাছে আছে এবং কতকগুলি রথ, ঘোড়া, একটি সুরক্ষিত নগর এবং অস্ত্রশস্ত্রও আছে।
\v 3 তাই তোমাদের কাছে এই চিঠি পৌঁছানো মাত্রই তোমাদের মনিবের সব চেয়ে সৎ ও যোগ্য ছেলেকে বেছে তার বাবার সিংহাসনে বসাও এবং নিজের মনিবের বংশের জন্য যুদ্ধ কর।”
\s5
\v 4 কিন্তু তারা ভীষণ ভয় পেয়ে বলল, “দেখ, দুজন রাজা যাঁর সামনে দাঁড়াতে পারলেন না, তাঁর সামনে আমরা কি করে দাঁড়াবো?”
\v 5 কাজেই রাজবাড়ীর শাসনকর্তা, নগরের শাসনকর্তা, প্রাচীনেরা ও অভিভাবকেরা যেহূকে এই কথা বলে পাঠাল, “আমরা আপনার দাস, আপনি আমাদের যা বলবেন, সে সবই করব, কাউকেই রাজা করব না; আপনি যা ভাল মনে করেন তাই করুন।”
\s5
\v 6 পরে তিনি তাদের কাছে এই বলে দ্বিতীয় চিঠি লিখলেন, “তোমরা যদি আমার পক্ষে হও ও আমার কথা শোনো, তবে তোমাদের মনিবের ছেলেদের মাথাগুলি নিয়ে আগামীকাল এই সময়ে যিষ্রিয়েলে আমার কাছে চলে এস।” সেই রাজকুমারের সত্তরজন, তারা তাদের নগরের প্রধান লোকদের কাছে ছিল, যারা তাদের দেখাশোনা করত।
\v 7 আর চিঠিটি তাদের কাছে পৌঁছালে তারা সেই সত্তরজন রাজকুমারকে হত্যা করল এবং কতগুলি ঝুড়িতে করে তাদের মাথাগুলি যিষ্রিয়েলে তাঁর কাছে পাঠিয়ে দিল।
\s5
\v 8 পরে একজন দূত এসে তাঁকে খবর দিয়ে বলল, “রাজকুমারদের মাথা আনা হয়েছে।” তিনি বললেন, “ওগুলি দুটি স্তরে গাদা করে ফটকে ঢুকবার পথে সকাল পর্যন্ত রেখে দাও।”
\v 9 পরে সকালে তিনি বাইরে গিয়ে দাঁড়ালেন ও সবাইকে বললেন, “তোমরা নির্দোষ ব্যক্তি; দেখ, আমি আমার মনিবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁকে মেরে ফেলেছি; কিন্তু এদের কে হত্যা করল?
\s5
\v 10 তোমরা জেনে রাখ, সদাপ্রভু আহাবের বংশের বিরুদ্ধে যা কিছু বলেছেন, সদাপ্রভুর বলা একটা কথাও মাটিতে পরার নয়; কারণ সদাপ্রভু তাঁর দাস এলিয়ের মাধ্যমে যা কিছু বলেছেন, তাই করলেন।”
\v 11 পরে যিষ্রিয়েলে আহাবের বংশের যত লোক বাকী ছিল, যেহূ তাঁদেরকে, তাঁর সমস্ত গণ্যমান্য লোককে, তাঁর বিশেষ বন্ধুদেরকে ও তাঁর যাজকদেরকে হত্যা করলেন। তাঁদের নিকটতম কেউ বেঁচে ছিল না।
\s5
\v 12 পরে তিনি উঠে চলে গেলেন, শমরিয়ার গেলেন। পথে মেষপালকদের মেষের লোম কাটার গৃহে গেলে, যিহূদার রাজা অহসিয়ের ভাইদের সঙ্গে যেহূর দেখা হল।
\v 13 তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কারা?” তারা বলল, “আমরা অহসিয়ের ভাই; আমরা রাজা ও রাণী ঈষেবলের সন্তানদেরকে শুভেচ্ছা জানাতে যাচ্ছি।”
\v 14 তখন তিনি বললেন, “ওদের জীবন্ত ধর।” তাতে লোকেরা তাদের জীবন্ত ধরে মেষের লোম কাটার গৃহে র কূয়ার কাছে তাদের হত্যা করল, বিয়াল্লিশজনের মধ্যে একজনকেও তিনি বাকি রাখলেন না।
\s5
\v 15 যেহূ সেখান থেকে চলে গেলে রেখবের ছেলে যিহোনাদবের সঙ্গে তাঁর দেখা হল; তিনি তাঁরই কাছে আসছিলেন। যেহূ তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বললেন, “তোমার প্রতি আমার মন যেমন, তেমনি কি তোমার মন সরল?” যিহোনাদব বললেন, “সরল।” যেহূ বললেন, “যদি তাই হয়, তবে তোমার হাত দাও।” পরে যিহোনাদব তাঁকে হাত দিলে যেহূ তাঁকে নিজের কাছে রথে তুলে নিলেন।
\v 16 আর যেহূ বললেন, “আমার সঙ্গে চল, সদাপ্রভুর জন্য আমার যে আগ্রহ, তা দেখ;” এইভাবে তাঁকে তাঁর রথে করে নিয়ে চললেন।
\v 17 পরে যেহূ শমরিয়াতে এসে আহাবের বংশের বাকী সব লোকদের হত্যা করলেন, যে পর্যন্ত না আহাবের বংশকে একেবারে ধ্বংস করলেন; সদাপ্রভু এলিয়কে যেমন বলেছিলেন, সেই অনুসারেই করলেন।
\s5
\v 18 তারপর যেহূ সমস্ত লোকদের জড়ো করে তাদের বললেন, “আহাব বাল দেবতার সেবা সামান্যই করতেন, কিন্তু যেহূ তাঁর সেবা অনেক বেশী করবে।
\v 19 তাই এখন বাল দেবতার সব ভাববাদী, তাঁর সমস্ত পূজারী ও যাজকদের আমার কাছে তোমরা ডেকে আন, যেন কেউ বাদ না পড়ে; কারণ বাল দেবতার উদ্দেশ্যে আমাকে বড় যজ্ঞ করতে হবে। যে কেউ যদি আসবে না, সে বাঁচবে না।” কিন্তু আসলে যেহূ বাল দেবতার পূজাকারীদের ধ্বংস করবার জন্যই এই ছলনা করেছিলেন।
\v 20 পরে যেহূ বললেন, “বাল দেবতার উদ্দেশ্যে একটা সভা ডাক।” তারা পর্ব ঘোষণা করে দিল।
\s5
\v 21 আর যেহূ ইস্রায়েলের সব জায়গায় লোক পাঠালে বাল দেবতার সমস্ত পূজাকারীরা এসে হাজির হল, কেউই অনুপস্থিত থাকলো না। তারা বাল দেবতার মন্দিরে ঢুকলে মন্দিরের এপাশ থেকে ওপাশ পর্যন্ত লোকে ভরে গেল।
\v 22 তখন তিনি পোশাক রক্ষককে বললেন, “বাল দেবতার পূজাকারী সকলের জন্য পোশাক নিয়ে এস।” তাতে সে তাদের জন্য পোশাক বের করে আনল।
\s5
\v 23 তারপর যেহূ ও রেখবের ছেলে যিহোনাদব বাল দেবতার মন্দিরে ঢুকলেন; তিনি বাল দেবতার পূজাকারীদের বললেন, “তোমরা ভাল করে খুঁজে দেখ, যাতে সদাপ্রভুর দাসদের মধ্যে কেউ এখানে না থাকে, শুধু বাল দেবতার পূজাকারীরাই থাকবে।”
\v 24 তখন তারা বলিদান ও হোম করতে ভেতরে গেলেন। এদিকে যেহূ আশিজন লোককে বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে বলেছিলেন, “আমি তোমাদের হাতে ঐ যাদের ভার দিলাম, তাদের একজনও যদি পালিয়ে বাঁচে, তবে যে তাকে ছেড়ে দেবে তার প্রাণের বদলে তার প্রাণ যাবে।”
\s5
\v 25 পরে হোমের কাজ শেষ হলে যেহূ পাহারাদার ও সেনাপতিদের বললেন, “ভিতরে যাও, ওদের হত্যা কর, একজনকেও বাইরে আসতে দিও না।” তখন তারা তরোয়াল দিয়ে তাদের আঘাত করল; পরে পাহারাদার ও সেনাপতিরা তাদের বাইরে ফেলে দিল; পরে তারা বাল মন্দিরের ভিতরের গৃহে গেল।
\v 26 এবং বাল দেবতার মন্দির থেকে পাথরের পবিত্র থামগুলি তারা বের করে এনে পুড়িয়ে ফেলল।
\v 27 তারপর তারা বাল দেবতার থামটি ভেঙ্গে দিল এবং মন্দিরটা ভেঙ্গে ফেলল এবং সেখানে একটি পায়খানা তৈরী করলো। তা আজও আছে।
\v 28 এইভাবে যেহূ ইস্রায়েল বাল দেবতাকে ধংস করলেন এবং ইস্রায়েল থেকে এর পূজা বন্ধ করে দিলেন।
\s5
\v 29 কিন্তু নবাটের ছেলে যে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন অর্থাৎ বৈথেল ও দানের সোনার বাছুরের পূজা করার মত পাপ থেকে তিনি সরে আসেন নি।
\v 30 সুতরাং সদাপ্রভু যেহূকে বললেন, যেহেতু “আমার চোখে যা ঠিক তা তুমি করে ভাল করেছ এবং আহাবের বংশের প্রতি আমার যে ইচ্ছা ছিল তাও তুমি করেছ, সেইজন্য তোমার বংশধরেরা চতুর্থ পুরুষ পর্যন্ত ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবে।”
\v 31 তবুও যেহূ সমস্ত হৃদয় দিয়ে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ব্যবস্থা মেনে চলবার জন্য সতর্ক হলেন না। যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন তা থেকে তিনি মন ফেরালেন না।
\s5
\v 32 সেই সময়ে সদাপ্রভু ইস্রায়েল দেশের সীমা কেটে ছোট করতে শুরু করলেন। হসায়েল ইস্রায়েলীয়দের আঘাত করে ইস্রায়েলের সীমানায় তাদের হারিয়ে দিলেন।
\v 33 সেই জায়গাগুলি হল যর্দনের পূর্ব দিকের অর্ণোন উপত্যকার পাশে অরোয়ের থেকে সমস্ত গিলিয়দ ও বাশন দেশ। এটা ছিল গাদ, রূবেণ ও মনঃশির এলাকা।
\s5
\v 34 যেহূর অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা এবং তাঁর জয়ের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 35 পরে যেহূ তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তারা তাঁকে শমরিয়াতে কবর দিল। তখন তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে যিহোয়াহস রাজা হলেন।
\v 36 যেহূ শমরিয়াতে আটাশ বছর ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করেছিলেন।
\s5
\c 11
\s অথলিয়া রাণীর নিষ্ঠুরতা ও তার ফলাফল।
\p
\v 1 ইতিমধ্যে অহসিয়ের মা অথলিয়া যখন দেখল যে, তার ছেলে মারা গেছে, তখন সে উঠে সমস্ত রাজবংশকে ধ্বংস করল।
\v 2 কিন্তু রাজা যোরামের মেয়ে, অহসিয়ের বোন যিহোশেবা, অহসিয়ের ছেলে যোয়াশকে নিয়ে, নিহত রাজপুত্রদের মধ্য থেকে চুরি করে নিয়ে তাঁর ধাত্রীর সঙ্গে একটি শোবার গৃহে রাখলেন; তাঁরা অথলিয়ার কাছ থেকে তাঁকে লুকিয়ে রাখলেন, তাই তিনি মারা যান নি।
\v 3 আর তিনি তাঁর সঙ্গে ছয় বছর সদাপ্রভুর গৃহে লুকানো অবস্থায় ছিলেন; তখন দেশে অথলিয়া রাজত্ব করছিল।
\s5
\v 4 পরে সপ্তম বছরে যিহোয়াদা লোক পাঠিয়ে রক্ষীদলের ও পাহারাদারদের শতপতিদের ডেকে সদাপ্রভুর গৃহে তাদের কাছে আনলেন এবং তাদের সঙ্গে একটি চুক্তি করে সদাপ্রভুর গৃহে তাদেরকে শপথ করিয়ে রাজপুত্রকে দেখালেন।
\v 5 আর তিনি তাদের আদেশ দিয়ে বললেন, “তোমাদের যা করতে হবে তা এই, তোমাদের মধ্যে যারা বিশ্রামবারে আসবে, তাদের তিন ভাগের এক ভাগ রাজবাড়ী পাহারা দেবে;
\v 6 এক ভাগ সূর ফটকে থাকবে এবং এক ভাগ পাহারাদারদের পিছনের ফটকে থাকবে। এইভাবে তোমরা আক্রমনের হাত থেকে বাঁচার জন্য গৃহে পাহারা দেবে।
\s5
\v 7 আর তোমাদের সবার, দুই দল রাজার সামনে সদাপ্রভুর গৃহে বিশ্রামবারে পাহারা দেবে।
\v 8 তোমরা প্রত্যেকে নিজের অস্ত্র হাতে নিয়ে রাজার চারপাশ ঘিরে থাকবে; আর যে কেউ সারির ভিতরে আসে, সে নিহত হবে এবং রাজা যখন বাইরে যান বা ভিতরে আসেন, তখন তোমরা তাঁর সঙ্গে থাকবে।”
\s5
\v 9 পরে যিহোয়াদা যাজক যা আদেশ করলেন, শতপতিরা তাই করল। তার ফলে তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের লোকদের নিয়ে, যারা বিশ্রামবারে ভিতরে যাওয়া আসা করে, তাদের নিয়ে যিহোয়াদা যাজকের কাছে আসল।
\v 10 পরে দায়ূদ রাজার যে সব বর্শা ও ঢাল সদাপ্রভুর গৃহে ছিল, সেগুলি যাজক নিয়ে শতপতিদের হাতে দিলেন।
\s5
\v 11 আর গৃহের ডান দিক থেকে বাম দিক পর্যন্ত যজ্ঞবেদীর ও গৃহের কাছে পাহারাদার সৈন্যরা প্রত্যেকে নিজের অস্ত্র হাতে রাজার চারিদিকে দাঁড়াল।
\v 12 পরে তিনি রাজপুত্রকে বের করে এনে তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে দিয়ে তাঁর হাতে ব্যবস্থার বইটি দিলেন এবং তাঁরা তাঁকে রাজা হিসাবে অভিষেক করলেন; আর হাততালি দিয়ে বললেন, “রাজা চিরজীবী হোন।”
\s5
\v 13 তখন পাহারাদার ও লোকদের চিৎকার শুনে অথলিয়া সদাপ্রভুর গৃহে লোকদের কাছে এল;
\v 14 আর দেখল যে, নিয়ম অনুসারে রাজা মঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন। সেনাপতিরা ও তূরী বাদকেরা রাজার পাশে রয়েছে এবং দেশের সব লোক আনন্দ করছে ও তূরী বাজাচ্ছে। তখন অথলিয়া তার পোশাক ছিঁড়ে চিৎকার করে বলল, “বিশ্বাসঘাতকতা! বিশ্বাসঘাতকতা!”
\s5
\v 15 কিন্তু যিহোয়াদা যাজক যাদের উপর সৈন্যদলের ভার ছিল সেই শতপতিদের এই আদেশ দিলেন, “ওকে বের করে দুই সারির মাঝখান দিয়ে নিয়ে যাও; আর যে ওর পিছনে পিছনে যাবে, তাকে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করবে,” কারণ যাজক বলেছিলেন, সদাপ্রভুর গৃহের মধ্যে তাকে যেন হত্যা না করা হয়।
\v 16 পরে লোকেরা তার জন্য দুই সারি হয়ে পথ ছাড়লে সে ঘোড়া ফটকের পথ দিয়ে রাজবাড়ীতে ঢুকল এবং সেখানে হত হল।
\s5
\v 17 আর যিহোয়াদা সদাপ্রভুর এবং রাজার ও লোকদের মধ্যে এক চুক্তি করলেন, যেন তারা সদাপ্রভুর প্রজা হয়; রাজা ও লোকদের মধ্যেও একটি চুক্তি করলেন।
\v 18 তারপর দেশের সমস্ত লোক বাল দেবতার মন্দিরে গিয়ে সেটা ভেঙ্গে ফেলল এবং তার যজ্ঞবেদী ও মূর্তিগুলি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে ফেলল; আর বেদীগুলির সামনে বাল দেবতার যাজক মত্তনকে মেরে ফেলল। পরে যাজক সদাপ্রভুর গৃহে পাহারাদার নিযুক্ত করলেন।
\s5
\v 19 আর তিনি শতপতিদের, রক্ষীদের, পাহারাদারদের এবং দেশের সব লোকদের সঙ্গে নিলেন; তারা সদাপ্রভুর গৃহ থেকে রাজাকে নিয়ে পাহারাদারদের ফটকের পথ দিয়ে রাজবাড়ীতে এল; আর তিনি সিংহাসনে বসলেন।
\v 20 তখন দেশের সব লোক আনন্দ করল এবং নগরটি শান্ত হল; আর অথলিয়াকে তারা রাজবাড়ীতে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করেছিল।
\s5
\v 21 যিহোয়াশ সাত বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\s5
\c 12
\p
\v 1 যেহূর সপ্তম বছরে যিহোয়াশ রাজত্ব করতে শুরু করে যিরূশালেমে চল্লিশ বছর রাজত্ব করেন। তাঁর মায়ের নাম সিবিয়া, তিনি বের্‌-শেবা নগরের মেয়ে।
\v 2 যিহোয়াদা যাজক যতদিন যিহোয়াশকে পরামর্শ দিতেন, ততদিন যিহোয়াশ সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন।
\v 3 তবুও উপাসনার উঁচু স্থানগুলো ধ্বংস করা হল না, লোকেরা তখনও সেখানে বলিদান করত ও ধূপ জ্বালাত।
\s5
\v 4 পরে যিহোয়াশ যাজকদের বললেন, “সদাপ্রভুর গৃহে পবিত্র দান হিসাবে যে টাকা আনা হয়, তা হলো করের টাকা, প্রত্যেকের হিসাব অনুযায়ী প্রাণীর মূল্য স্বরূপ নির্ধারিত টাকা ও মানুষের মনের ইচ্ছা পূরণের জন্য আনা রুপো,
\v 5 এই সমস্ত টাকা যাজকেরা নিজের পরিচিত লোকের হাত থেকে গ্রহণ করুক এবং সেগুলি দিয়ে গৃহটি সারাই করুক, যেখানে মেরামতের প্রয়োজন।”
\s5
\v 6 কিন্তু যিহোয়াশ রাজার তেইশ বছর পর্যন্ত যাজকেরা সেই গৃহের ভাঙ্গা জায়গাগুলি মেরামত করেন নি।
\v 7 তাতে রাজা যিহোয়াশ যাজক যিহোয়াদা ও অন্যান্য যাজকদের ডেকে বললেন, “তোমরা গৃহের ভাঙ্গা জায়গাগুলি মেরামত করছ না কেন? তাই এখন তোমরা পরিচিত লোকদের কাছ থেকে আর টাকা নেবে না, কিন্তু তা গৃহের ভাঙ্গা জায়গাগুলি মেরামতের কাজে তা দিয়ে দেবে।”
\v 8 তখন যাজকেরা রাজী হলেন যে, তারা লোকদের কাছ থেকে আর টাকা নেবে না এবং গৃহের ভাঙ্গা জায়গা মেরামতের কাজও করবেন না।
\s5
\v 9 কিন্তু যিহোয়াদা যাজক একটি সিন্দুক নিলেন ও তার দালাতে একটি ছিদ্র করে যজ্ঞবেদীর কাছে সদাপ্রভুর গৃহের ঢোকার জায়গার ডান দিকে রাখলেন; আর ফটকের পাহারায় নিযুক্ত যাজকেরা সদাপ্রভুর গৃহে আনা সব টাকা তার মধ্যে রাখত।
\v 10 পরে যখন তারা দেখতে পেল সেই সিন্দুকে অনেক টাকা জমা হয়েছে, তখন রাজার লেখক ও মহাযাজক এসে সদাপ্রভুর গৃহে আনা ঐ টাকাগুলি থলিতে করে গুনে রাখতেন।
\s5
\v 11 পরে তাঁরা সেই পরিমাপের টাকা কর্মকারীদের হাতে, সদাপ্রভুর গৃহের তদারকের জন্য নিযুক্ত করা লোকদের হাতে দিতেন, আর তাঁরা সদাপ্রভুর গৃহের ছুতোর মিস্ত্রি ও ঘর তৈরী করবার মিস্ত্রি,
\v 12 এবং রাজমিস্ত্রি ও পাথর কাটবার মিস্ত্রিদের দিতেন। এছাড়া সদাপ্রভুর গৃহের ভাঙ্গা জায়গা মেরামতের জন্য কাঠ ও কাটা পাথর কেনার জন্য এবং গৃহ সারাইয়ের জন্য যা যা লাগত, সেই সবকিছুর জন্য খরচ করতেন।
\s5
\v 13 কিন্তু সদাপ্রভুর গৃহের জন্য রুপোর পেয়ালা, বাতি পরিষ্কার করবার চিম্‌টা, বাটি, তূরী, কোনো সোনার বা রুপোর পাত্র সদাপ্রভুর গৃহে আনা সেই রুপো দিয়ে করা হল না;
\v 14 কারণ তাঁরা কর্মকারীদেরকেই সেই টাকা দিতেন এবং তাঁরা তা নিয়ে সদাপ্রভুর গৃহ সারালেন।
\s5
\v 15 কিন্তু তাঁরা কর্মকারীদেরকে দেবার জন্য যাঁদের হাতে টাকা দিতেন, তাঁদের সঙ্গে হিসাব করতেন না, কারণ তাঁরা সম্পূর্ণ বিশ্বস্তভাবে কাজ করতেন।
\v 16 দোষার্থক ও পাপার্থক বলির যে টাকা, তা সদাপ্রভুর গৃহে আনা হত না; সেগুলি যাজকদেরই হত।
\s5
\v 17 ঐ সময়ে অরামের রাজা হসায়েল গিয়ে গাৎ আক্রমণ করে তা অধিকার করে নিলেন; তারপর তিনি যিরূশালেম আক্রমণ করবার জন্য এগিয়ে গেলেন।
\v 18 তাতে যিহূদার রাজা যিহোয়াশ তাঁর পূর্বপুরুষদের, অর্থাৎ যিহূদার রাজা যিহোশাফট, যিহোরাম ও অহসিয় রাজার ও তাঁর নিজের পবিত্র করা বস্তুগুলি এবং সদাপ্রভুর গৃহের ভাণ্ডারের ও রাজবাড়ীর ভাণ্ডারে যত সোনা পাওয়া গেল, সেই সব নিয়ে অরামের রাজা হসায়েলের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, তাতে তিনি যিরূশালেমের সামনে থেকে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 19 যোয়াশের বাকি সমস্ত কাজের কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাসের বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 20 পরে যোয়াশের দাসেরা উঠে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল এবং সিল্লা যাবার পথে মিল্লো নামে বাড়িতে তাঁকে আঘাত করল।
\v 21 ফলে শিমিয়তের ছেলে যোষাখর ও শোমরের ছেলে যিহোষাবদ, তাঁর দুজন দাস, তাঁকে আঘাত করলে তিনি মারা গেলেন; পরে লোকেরা দায়ূদ নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁকে কবর দিল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে অমৎসিয় রাজা হলেন।
\s5
\c 13
\s ইস্রায়েলীয় যিহোয়াহস ও যোয়াশের বর্ণনা। ইলীশায়ের মৃত্যু।
\p
\v 1 অহসিয়ের ছেলে যিহূদার রাজা যোয়াশের তেইশ বছরে যেহূর ছেলে যিহোয়াহস শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজত্ব করতে আরম্ভ করেন এবং সতের বছর রাজত্ব করেন।
\v 2 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, তিনি তাই করতেন এবং নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন, তাঁর সেই পাপের পথ অনুসরন করলেন; তা থেকে তিনি ফিরলেন না।
\s5
\v 3 সেইজন্য ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর ক্রোধ জ্বলে উঠল, আর তিনি অরামের রাজা হসায়েল ও তাঁর ছেলে বিন্‌হদদের হাতে তাদের তুলে দিলেন, তারা যিহোয়াহসের সমস্ত রাজত্ব কালে তাঁদের উপরে থাকলো।
\v 4 পরে যিহোয়াহস সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করলেন, আর সদাপ্রভু তাঁর কথা শুনলেন, কারণ অরামের রাজা ইস্রায়েলের উপর যে অত্যাচার করতেন, সেই অত্যাচার তিনি দেখলেন।
\v 5 তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে একজন উদ্ধারকর্তা দিলেন, তাতে ইস্রায়েলীয়েরা অরামের হাত থেকে উদ্ধার পেল এবং ইস্রায়েল সন্তানরা আগের মতই নিজেদের তাঁবুতে বাস করতে লাগল।
\s5
\v 6 তবুও যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন, তাঁর বংশের সেই সব পাপ থেকে তারা ফিরল না, সেই পথেই চলত। এছাড়া আশেরা মূর্তি তখনও শমরিয়াতে থাকলো।
\v 7 ফলে অরামের রাজা কেবল পঞ্চাশজন ঘোড়াচালক, দশটি রথ ও দশ হাজার পদাতিক সৈন্য ছাড়া যিহোয়াহসের সৈন্যদলে আর কেউকে রাখেন নি, তিনি তাদের ধ্বংস করে দিয়েছিলেন, মাটির মতই পায়ে মাড়িয়েছিলেন।
\s5
\v 8 যিহোয়াহসের বাকি সমস্ত কাজের কথা ও তাঁর জয়ের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 9 পরে যিহোয়াহস তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন, আর শমরিয়াতে তাঁকে কবর দেওয়া হল এবং তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে যোয়াশ রাজা হলেন।
\s5
\v 10 যিহূদার রাজা যোয়াশের সাঁইত্রিশ বছরে যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশ শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং ষোল বছর রাজত্ব করেন।
\v 11 সদাপ্রভুর চোখে যা খারাপ তিনি তাই করতেন; নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন, তাঁর সেই সব পাপ থেকে ফিরলেন না, সেই পথেই চলতেন।
\s5
\v 12 যোয়াশের বাকি সমস্ত কাজের কথা এবং যে শক্তি দিয়ে তিনি যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের সঙ্গে যুদ্ধ করলেন, সেই সমস্ত কথা কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে লেখা নেই?
\v 13 পরে যোয়াশ তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে নিদ্রাগত হলেন; আর যারবিয়াম তাঁর সিংহাসনে বসলেন এবং শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজাদের সঙ্গে যোয়াশকে কবর দেওয়া হয়েছিল।
\s5
\v 14 ইলীশায় অসুস্থ হলেন, সেই অসুখেই তাঁর মৃত্যু হয়। ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশ তাঁর কাছে গিয়ে তাঁর মুখের উপরে নিচু হয়ে কেঁদে বললেন, “হে আমার পিতা, হে আমার পিতা, ইস্রায়েলের রথ ও ঘোড়াচালক।”
\v 15 তখন ইলীশায় তাঁকে বললেন, “আপনি তীর-ধনুক নিন।” তিনি তীর-ধনুক নিলেন।
\v 16 পরে তিনি ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “ধনুকের উপরে হাত রাখুন।” তিনি হাত রাখলেন। পরে ইলীশায় রাজার হাতের উপর তাঁর হাত রেখে বললেন,
\s5
\v 17 “পূর্ব দিকের জানলাটা খুলে দিন।” তিনি খুললেন। তারপর ইলীশায় বললেন, “তীর ছুঁড়ুন।” তিনি তীর ছুঁড়লেন। তখন ইলীশায় বললেন, “এটা হল সদাপ্রভুর জয়লাভের তীর, অরামের বিপক্ষে জয়লাভের তীর, কারণ আপনি অফেকে অরামীয়দের আঘাত করে তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে নিঃশেষ করে দেবেন।”
\v 18 পরে তিনি বললেন, “ঐ সব তীরগুলি নিন।” রাজা সেগুলি হাতে নিলে তিনি বললেন, “মাটিতে আঘাত করুন,” রাজা তিনবার আঘাত করে থেমে গেলেন।
\v 19 তখন ঈশ্বরের লোক তাঁর ওপর রাগ করে বললেন, “পাঁচ ছয়বার আঘাত করলে অরামীয়দের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করতে পারতেন, কিন্তু এখন আপনি মাত্র তিনবার অরামকে আঘাত করবেন।”
\s5
\v 20 পরে ইলীশায় মারা গেলেন এবং লোকেরা তাঁর কবর দিল। তখন মোয়াবীয় লুটকারী সৈন্যদল বছরের শুরুতে দেশে ঢুকল।
\v 21 আর লোকেরা একজনকে কবর দিচ্ছিল, আর একদল লুটকারী সৈন্যদল দেখে তারা মৃতদেহটি ইলীশায়ের কবরে ফেলে দিল; তখন লোকটির মৃতদেহ ইলীশায়ের হাড়গুলিতে ছোঁওয়া মাত্রই বেঁচে উঠে পায়ে ভর দিয়ে দাঁড়াল।
\s5
\v 22 যিহোয়াহসের সময় অরামের রাজা হসায়েল ইস্রায়েলের উপর অত্যাচার করতেন।
\v 23 কিন্তু সদাপ্রভু অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের সঙ্গে যে ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলেন, সেইজন্য তিনি তাদের উপর দয়া ও করুণা করলেন, তাদের পক্ষে থাকলেন, তাদের ধ্বংস করতে চাননি, তখনও তাঁর সামনে থেকে দূর করে দিতে চাইলেন না।
\v 24 পরে অরামের রাজা হসায়েল মারা গেলে তাঁর ছেলে বিন্‌হদদ তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\v 25 যিহোয়াশের বাবা যিহোয়াহসের হাত দিয়ে হসায়েল সেই সব নগরগুলি আবার দখল করে নিলেন, যেগুলি হসায়েলের ছেলে বিন্‌হদদ তাঁর বাবা যিহোয়াহসের কাছ থেকে যুদ্ধে জয় করে নিয়েছিলেন। যোয়াশ তিনবার তাঁকে আঘাত করে ইস্রায়েলীয় নগরগুলি উদ্ধার করলেন।
\s5
\c 14
\s যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের বিবরণ।
\p
\v 1 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশের রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 2 তাঁর বয়স যখন পঁচিশ বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেন। তিনি যিরূশালেমে ঊনত্রিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল যিহোয়দ্দিন; তিনি যিরূশালেমের বাসিন্দা ছিলেন।
\v 3 তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক অমৎসিয় তাই করতেন, তবে তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মত করতেন না। তিনি তাঁর বাবা যোয়াশ যেমন করতেন তিনি সেই মতই সমস্ত কাজ করতেন।
\s5
\v 4 কিন্তু উঁচু স্থানগুলো তিনি ধ্বংস করলেন না; লোকেরা তখনও সেই উঁচুস্থানে বলি দিত এবং ধূপ জ্বালাত।
\v 5 পরে রাজ্য তাঁর হাতে এসে প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর, যে দাসেরা রাজাকে, অর্থাৎ তাঁর বাবাকে মেরে ফেলেছিল, তিনি তাদেরকে হত্যা করলেন।
\s5
\v 6 কিন্তু মোশির ব্যবস্থার বইতে যা লেখা আছে সেইমত তিনি তাদের সন্তানদের হত্যা করলেন না। সেই ব্যবস্থার বইতে সদাপ্রভুর এই আদেশ লেখা ছিল, “সন্তানদের জন্য বাবাকে কিম্বা বাবার কারণে সন্তানদের হত্যা করা চলবে না, তবে প্রত্যেককেই তার নিজের নিজের পাপের জন্য মরতে হবে।”
\v 7 তিনি লবণ উপত্যকায় দশ হাজার ইদোমীয় লোককে হত্যা করলেন এবং যুদ্ধ করে সেলা দখল করে তার নাম যক্তেল রাখলেন; আজও সেই নাম আছে।
\s5
\v 8 তখন অমৎসিয় দূত পাঠিয়ে যেহূর নাতি, অর্থাৎ যিহোয়াহসের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশকে বলে পাঠালেন, “আসুন, যুদ্ধ ক্ষেত্রে আমরা পরস্পরের মুখোমুখি হই।”
\v 9 কিন্তু যিহোয়াশ ইস্রায়েলের রাজা দূতের মাধ্যমে উত্তরে দিয়ে যিহূদার রাজা অমৎসিয়র কাছে লোক বা দূত পাঠিয়ে বললেন, “লেবাননের এক শিয়ালকাঁটা লেবাননেরই এরস গাছের কাছে বলে পাঠাল, ‘আমার ছেলের সঙ্গে আপনার মেয়ের বিয়ে দিন।’ কিন্তু লেবাননের একটা বন্য পশু এসে সেই শিয়ালকাঁটাকে পায়ে মাড়িয়ে দিল।
\v 10 তুমি ইদোমকে আক্রমণ করেছ এবং তোমার হৃদয় সত্যিই গর্বিত হয়েছে। নিজের জয়ের জন্য গর্ব কর, কিন্তু নিজের গৃহে থাকো। কারণ তুমি কেন নিজের বিপদের কারণ হবে? আর তার সঙ্গে ডেকে আনবে নিজের ও যিহূদার ধ্বংস?”
\s5
\v 11 কিন্তু অমৎসিয় সেই কথা শুনলেন না। তাই ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ আক্রমণ করলেন। তিনি ও যিহূদার রাজা অমৎসিয় যিহূদার বৈৎ-শেমশে একে অপরের মুখোমুখি হলেন।
\v 12 ইস্রায়েলের কাছে যিহূদা হেরে গেল এবং প্রত্যেকে নিজের বাড়িতে পালিয়ে গেল।
\s5
\v 13 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশ বৈৎ-শেমশে অহসিয়ের নাতি, অর্থাৎ যোয়াশের ছেলে যিহূদার রাজা অমৎসিয়কে ধরলেন। তারপর যিহোয়াশ যিরূশালেমে গিয়ে সেখানকার দেয়ালের ইফ্রয়িমের ফটক থেকে কোণের ফটক পর্যন্ত প্রায় চারশো হাত ভেঙ্গে দিলেন।
\v 14 তিনি সোনা ও রুপো এবং অন্যান্য জিনিসপত্র যা সদাপ্রভুর গৃহে পাওয়া গিয়েছিল এবং রাজবাড়ীর ধনভাণ্ডারে যে সব মূল্যবান জিনিস ছিল তা সবই নিয়ে গেলেন। তিনি জামিন হিসাবে কতগুলো লোককে নিয়ে শমরিয়াতে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 15 যিহোয়াশের করা অবশিষ্ট অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা, যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা এবং যিহূদার রাজা কেমন করে অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে তিনি যুদ্ধ করেছিলেন সেই সব ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 16 পরে যিহোয়াশ তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে শমরিয়াতে ইস্রায়েলের রাজাদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল এবং তাঁর ছেলে যারবিয়াম তাঁর পদে রাজা হলেন।
\s5
\v 17 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের ছেলে যিহোয়াশের মৃত্যুর পর যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় আরও পনেরো বছর বেঁচে ছিলেন।
\v 18 অমৎসিয়ের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 19 যিরূশালেমে অমৎসিয়ের বিরুদ্ধে তারা ষড়যন্ত্র করলো এবং তিনি লাখীশে পালিয়ে গেলেন, কিন্তু তারা তার পিছনে পিছনে লাখীশে লোক পাঠালো এবং সেখানে তাঁকে হত্যা করলো।
\s5
\v 20 তাঁর দেহটা তারা ঘোড়ার পিঠে করে যিরূশালেমে ফিরিয়ে আনল এবং তাঁকে দায়ূদ-শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দিল।
\v 21 তারপর যিহূদার সমস্ত লোক অসরিয়কে যার বয়স ষোলো বছর ছিল তাঁকে নিয়ে তাঁর বাবা অমৎসিয়ের জায়গায় রাজা করল।
\v 22 অমৎসিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় যাবার পর পরে অসরিয় এলৎ শহরটি পুনরায় তৈরী করলেন এবং তা যিহূদার অধীনে করলেন।
\s ইস্রায়েলের ছয় জন রাজার বিবরণ।
\p
\s5
\v 23 যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয়ের রাজত্বের পনেরো বছরের সময় ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াশের ছেলে যারবিয়াম শমরিয়াতে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং তিনি একচল্লিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 24 সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তিনি তাই করতেন এবং নবাটের ছেলে যারবিয়াম যে সব পাপ ইস্রায়েলকে দিয়ে করিয়েছিলেন তিনি সেই সব পাপ করতে ছাড়লেন না।
\v 25 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর দাস গাৎ-হেফরের অমিত্তয়ের ছেলে যোনা ভাববাদীর মধ্য দিয়ে যে কথা বলেছিলেন সেই কথা অনুযায়ী যারবিয়াম হমাৎ এলাকা থেকে অরাবার সমুদ্র পর্যন্ত আগে ইস্রায়েলের রাজ্যের যে সীমা ছিল তা পুনরায় নিজের হাতে ফিরিয়ে এনেছিলেন।
\s5
\v 26 কারণ, সদাপ্রভু দেখেছিলেন যে ইস্রায়েলের স্বাধীন মানুষ কিম্বা দাস সবাই ভীষণভাবে কষ্ট পাচ্ছে; কেউ তাদের সাহায্য করবার মত ছিল না।
\v 27 ফলে সদাপ্রভু বললেন যে তিনি আকাশের নীচ থেকে ইস্রায়েলের নাম মুছে ফেলবেন না। সেইজন্য তিনি যিহোয়াশের ছেলে যারবিয়ামের মধ্য দিয়ে তাদের উদ্ধার করলেন।
\s5
\v 28 যারবিয়ামের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্টের কাজের কথা, যুদ্ধে তাঁর জয়ের কথা এবং এক সময় যিহূদার অধিকারে থাকা দম্মেশক ও হমাৎ কিভাবে তিনি ইস্রায়েলের জন্য আবার অধিকার করে নিয়েছিলেন সেই কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 29 পরে যারবিয়াম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলে, ইস্রায়েলের রাজাদের কাছে চলে গেলেন এবং তাঁর ছেলে সখরিয় তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 15
\p
\v 1 ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের সাতাশ বছরের সময় কালে যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের ছেলে অসরিয় রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 2 অসরিয়ের ষোল বছর বয়সে যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি বাহান্ন বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল যিথলিয়া; তিনি যিরূশালেমের বাসিন্দা ছিলেন।
\v 3 অসরিয় তাঁর বাবা অমৎসিয়ের অনুসরণ করে তাঁর মতই সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু ঠিক তাই করতেন।
\s5
\v 4 যদিও উপাসনার উঁচু স্থানগুলো ধ্বংস করা হয় নি; তখনো লোকেরা সেখানে বলিদান করত এবং ধূপ জ্বালাত।
\v 5 পরে সদাপ্রভু রাজাকে আঘাত করলেন ফলে তিনি মৃত্যু পর্যন্ত কুষ্ঠরোগে ভুগেছিলেন এবং তিনি আলাদা গৃহে বাস করতেন। রাজার ছেলে যোথম রাজবাড়ীর কর্তা হলেন এবং দেশের লোকদের শাসন করতে লাগলেন।
\s5
\v 6 অসরিয়ের অন্যান্য সমস্ত ঘটনা ও যা কিছু তিনি করেছিলেন যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 7 পরে অসরিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে দায়ূদের শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে যোথম রাজা হলেন।
\s5
\v 8 যিহূদার রাজা অসরিয়ের আটত্রিশ বছরে সময় কালে যারবিয়ামের ছেলে সখরিয় শমরিয়াতে ইস্রায়েলের উপর ছয় মাস রাজত্ব করেছিলেন।
\v 9 তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের মতই সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন তিনি তাঁর সেই সমস্ত পাপ ত্যাগ করলেন না।
\s5
\v 10 যাবেশের ছেলে শল্লুম সখরিয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন ও লোকদের সামনেই তাঁকে আক্রমণ করে হত্যা করলেন এবং তাঁর জায়গায় তিনি রাজা হলেন।
\v 11 সখরিয়ের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে লেখা আছে।
\v 12 সদাপ্রভু যেহূকে এই সব কথা বলেছিলেন, “তোমার বংশের চার পুরুষ পর্যন্ত ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবে,” এবং তাই হল।
\s5
\v 13 যিহূদার রাজা উষিয়ের রাজত্বের ঊনচল্লিশ বছরের সময় যাবেশের ছেলে শল্লুম রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং শমরিয়াতে এক মাস রাজত্ব করেছিলেন।
\v 14 তারপর গাদির ছেলে মনহেম তির্সা থেকে উঠে শমরিয়াতে গেলেন। সেখানে তিনি যাবেশের ছেলে শল্লুমকে আক্রমণ করে তাঁকে হত্যা করলেন এবং তাঁর জায়গায় তিনি রাজা হলেন।
\s5
\v 15 শল্লুমের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা এবং তাঁর ষড়যন্ত্রের কথা ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে লেখা আছে।
\v 16 তখন মনহেম তির্সা থেকে বের হয়ে তিপ্‌সহ এবং সেখানকার সব বাসিন্দা ও তার আশেপাশের এলাকার সবাইকে আক্রমণ করলেন, কারণ তারা তাদের শহরের ফটক খুলে দিতে রাজী হয় নি। সেইজন্য তিনি তিপ্‌সহ আঘাত করলেন এবং সমস্ত গর্ভবতী স্ত্রীলোকদের পেট চিরে দিলেন।
\s5
\v 17 যিহূদার রাজা অসরিয়ের রাজত্বের ঊনচল্লিশ বছরের সময় গাদির ছেলে মনহেম ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করতে শুরু করেন। তিনি শমরিয়াতে দশ বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 18 সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তিনি তাই করতেন। তাঁর গোটা রাজত্বকালে তিনি সেই সব পাপ করতে থাকলেন যা নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে করিয়েছিলেন।
\s5
\v 19 এর পর অশূর রাজা পূল দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ করলেন। তখন মনহেম পূলের সাহায্যে দেশে তাঁর রাজত্ব স্থির রাখবার জন্য তাঁকে এক হাজার তালন্ত রুপো দিলেন।
\v 20 মনহেম এই টাকা ইস্রায়েলের সমস্ত ধনবান লোকদের কাছ থেকে আদায় করলেন। অশূরের রাজাকে দেবার জন্য প্রত্যেক ধনী লোক পঞ্চাশ শেকল রুপো করলে কেমন হয় দিল। তখন অশূরের রাজা ফিরে গেলেন এবং সেই দেশ আর থাকলেন না।
\s5
\v 21 মনহেমের অন্যান্য অবশিষ্ট সমস্ত কাজের কথা এবং যে সব কাজ তিনি করেছিলেন, ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে সেগুলি কি লেখা নেই?
\v 22 পরে মনহেম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং পকহিয় তাঁর ছেলে তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 23 যিহূদার রাজা অসরিয়ের পঞ্চাশ বছরের সময় মনহেমের ছেলে পকহিয় শমরিয়াতে ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব শুরু করেছিলেন; তিনি দুই বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 24 সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ পকহিয় তাই করতেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন পকহিয় তিনি তাঁর সেই সমস্ত পাপ ত্যাগ করলেন না।
\s5
\v 25 রমলিয়ের ছেলে পেকহ নামে তাঁর একজন সেনাপতি পকহিয়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। পেকহ গিলিয়দের পঞ্চাশজন লোককে সঙ্গে নিয়ে শমরিয়ার রাজবাড়ীর দুর্গে পকহিয় এবং তাঁর সঙ্গে অর্গোব ও অরিয়িকে হত্যা করলেন। তিনি তাঁকে হত্যা করে তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\v 26 পকহিয়ের অন্যান্য অবশিষ্ট সমস্ত কাজের কথা, যেসব তিনি করেছিলেন ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে লেখা আছে।
\s5
\v 27 যিহূদার রাজা অসরিয়ের রাজত্বের বাহান্ন বছরের সময়ে রমলিয়ের ছেলে পেকহ শমরিয়াতে ইস্রায়েলের উপর রাজত্ব করতে শুরু করলেন। তিনি কুড়ি বছর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 28 তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তাই করতেন। নবাটের ছেলে যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে সব পাপ করিয়েছিলেন পেকহ সেই সব পাপ থেকে ফিরলেন না।
\s5
\v 29 ইস্রায়েলের রাজা পেকহের সময়ে অশূর রাজা তিগ্লৎ পিলেষর আসলেন এবং ইয়োন, আবেলবৈৎমাখা, যানোহ, কেদশ, হাৎসোর, গিলিয়দ, গালীল ও নপ্তালির সমস্ত জায়গা দখল করলেন। আর সেখান থেকে তিনি সমস্ত লোকদের বন্দী করে অশূরে নিয়ে গেলেন।
\v 30 পরে উষিয়ের ছেলে যোথমের রাজত্বের কুড়ি বছরের সময় কালে, এলার ছেলে হোশেয় রমলিয়ের ছেলে পেকহের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন। তিনি তাঁকে আক্রমণ করলেন এবং হত্যা করে তাঁর জায়গায় তিনি রাজা হলেন।
\v 31 পেকহের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা, তিনি যা করেছিলেন ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে লেখা আছে।
\s যিহূদার রাজা যোথম ও আহস রাজার বিবরণ।
\p
\s5
\v 32 রমলিয়ের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা পেকহের দ্বিতীয় বছরে যিহূদার রাজা উষিয়ের ছেলে যোথম রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 33 তিনি পঁচিশ বছর বয়সের ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন; তিনি ষোল বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন। তাঁর মায়ের নাম যিরূশা ছিল; তিনি সাদোকের মেয়ে ছিলেন।
\s5
\v 34 যোথম সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু ঠিক তাই করতেন। তিনি তাঁর বাবা উষিয়ের কাজ অনুসরণ করেন সমস্ত কাজ করতেন।
\v 35 উঁচু স্থানগুলিকে তখনও ধ্বংস করা হয়নি। লোকেরা তখনও সেই উচুঁ জায়গায় বলিদান করত ও ধূপ জ্বালাত। যোথম সদাপ্রভুর গৃহে উঁচু দরজা তৈরী করেছিলেন।
\v 36 যোথমের অবশিষ্ট কাজের কথা ও সমস্ত কাজের বিবরণ যিহূদার রাজাদের ইতিহাসের বইতে কি লেখা নেই?
\v 37 সদাপ্রভু সেই সময় থেকেই অরামের রাজা রৎসীন এবং রমলিয়ের ছেলে পেকহকে যিহূদার বিরুদ্ধে পাঠাতে শুরু করলেন।
\v 38 পরে যোথম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের শহরে তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে কবর দেওয়া হয়েছিল। তখন তাঁর ছেলে আহস তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 16
\p
\v 1 রমলিয়ের ছেলে পেকহের সতেরো বছরের সময় যিহূদার রাজা যোথমের ছেলে আহস রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\v 2 আহস কুড়ি বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং তিনি ষোল বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। আহস তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদ যেমন তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন, তিনি তেমন করতেন না।
\s5
\v 3 তার পরিবর্তে তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের মতই চলতেন; এমন কি, সদাপ্রভু যে সব জাতিকে ইস্রায়েলের মানুষদের সামনে থেকে দূর করে দিয়েছিলেন তাদের মত তিনিও তাঁর নিজের ছেলেকে আগুনে ফেলে দিয়ে হোম উৎসর্গ করলেন।
\v 4 তিনি উঁচু জায়গাগুলিতে, পাহাড়ের উপরে ও প্রত্যেকটি সবুজ গাছের নীচে বলিদান উৎসর্গ করতেন ও ধূপ জ্বালাতেন।
\s5
\v 5 অরামের রাজা রৎসীন ও রমলিয়ের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা পেকহ যিরূশালেমে এসে আহস সুদ্ধ শহরটা ঘেরাও করলেন, কিন্তু তাঁরা আহসকে জয় করতে পারলেন না।
\v 6 সেই সময় অরামের রাজা রৎসীন এলৎ শহর আবার অরামের অধীনে নিয়ে আসলেন এবং এলৎশহর থেকে যিহূদার লোকদের তাড়িয়ে দিলেন। তারপর অরামীয়েরা এলতে গেলো, যেখানে আজও তারা বাস করছে।
\s5
\v 7 পরে আহস অশূরের রাজা তিগ্লৎ-পিলেষরের কাছে এই কথা বলতে লোক পাঠিয়ে দিলেন, “আমি আপনার দাস এবং আপনার ছেলে। আপনি আসুন এবং অরামের রাজার হাত থেকে এবং ইস্রায়েলের রাজার হাত থেকে আমাকে রক্ষা করুন, যারা আমাকে আক্রমণ করেছে।”
\v 8 আহস সদাপ্রভুর গৃহে গিয়েছিলেন ও রাজবাড়ীর ভাণ্ডার থেকে সোনা ও রুপো নিলেন এবং উপহার হিসাবে অশূরের রাজার কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
\v 9 তখন অশূরের রাজা তাঁর কথা শুনলেন এবং দম্মেশকের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে তা দখল করলেন এবং তিনি সেখানকার লোকদের বন্দী করে কীরে নিয়ে গেলেন এবং অরামের রাজা রৎসীনকেও মেরে ফেললেন।
\s5
\v 10 তখন রাজা আহস দম্মেশকে অশূরের রাজা তিগ্লৎ-পিলেষরের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন। তিনি সেখানকার বেদীটা দেখে তাঁর আকার, শিল্পকার্য্য, নকশা ও সেটা তৈরী করবার পুরো পদ্ধতি ঊরিয় যাজকের কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
\v 11 দম্মেশক থেকে রাজা আহসের পাঠানো সব পরিকল্পনা মতই যাজক ঊরিয় একটা বেদী তৈরী করলেন এবং রাজা আহস দম্মেশক থেকে ফিরে আসবার আগেই তা শেষ করলেন।
\v 12 দম্মেশক থেকে ফিরে এসে রাজা সেই বেদীটা দেখলেন এবং সেই বেদীর কাছে গিয়ে তার উপর বলি উৎসর্গ করলেন।
\s5
\v 13 তিনি সেখানে তাঁর হোমবলি উৎসর্গ, শস্য উৎসর্গ ও পানীয় উৎসর্গ করলেন এবং তাঁর মঙ্গলার্থক উৎসর্গের রক্তও ছিটিয়ে দিলেন।
\v 14 তিনি সদাপ্রভুর সামনে রাখা ব্রোঞ্জের বেদীটা সদাপ্রভুর ঘর ও তাঁর নতুন বেদীর মাঝখান থেকে সরিয়ে এনে নিজের নতুন বেদীর উত্তর ধারে রাখলেন।
\s5
\v 15 তখন পরে রাজা আহস যাজক ঊরিয়কে এই সব আদেশ দিলেন, “ঐ বড় বেদীটার উপর সকালবেলার হোমবলি ও সন্ধায় শস্য উৎসর্গ এবং তার উপর রাজার হোমবলি ও শস্য উৎসর্গ এবং দেশের সব লোকদের হোমবলি ও তাদের শস্য উৎসর্গ আর পানীয় উৎসর্গ অনুষ্ঠান করবেন। সমস্ত হোমবলি ও অন্যান্য পশু উৎসর্গের রক্ত নিজেই সেই বেদীর উপর ছিটিয়ে দেবেন। কিন্তু ঈশ্বরের সাহায্য পাওয়ার জন্য আমি ঐ ব্রোঞ্জের বেদীটা ব্যবহার করব।”
\v 16 যাজক ঊরিয় রাজা আহস যেমন আদেশ দিয়েছিলেন ঠিক সেই মতই সব করলেন।
\s5
\v 17 রাজা আহস গামলা বসাবার ব্রোঞ্জের আসনগুলোর পাশের সব পাত খুলে ফেললেন এবং সেখান থেকে জলাধারগুলো খুলে ফেললেন। ব্রোঞ্জের গরুগুলোর উপর যে জলাধারটি বসানো ছিল সেটা তিনি খুলে নিয়ে একটা পাথর দিয়ে বাঁধানো এমন জায়গায় বসালেন।
\v 18 সদাপ্রভুর গৃহে বিশ্রামবারের উদ্দেশ্যে যে চাঁদোয়া তৈরী করা হয়েছিল অশূরের রাজার ভয়ে আহস সেটা খুলে অন্য জায়গায় রাখলেন এবং সদাপ্রভুর গৃহে র বাইরের দিকে রাজার ঢুকবার জন্য যে বিশেষ পথ তৈরী করা হয়েছিল তাও সরিয়ে অন্য জায়গায় রাখলেন।
\s5
\v 19 আহসের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে লেখা নেই?
\v 20 পরে আহস নিজের পূর্বপুরুষদের কাছে চলে গেলেন এবং দায়ূদ শহরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁকে কবর দেওয়া হল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে হিষ্কিয় রাজা হলেন।
\s5
\c 17
\s ইস্রায়েল রাজ্যের বিনাশ।
\p
\v 1 যিহূদার রাজা আহসের রাজত্বের বারো বছরের সময় এলার ছেলে হোশেয় রাজত্ব করতে শুরু করেন। তিনি নয় বছর শমরিয়াতে ইস্রায়েলের ওপর রাজত্ব করেছিলেন।
\v 2 সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তিনি তাই করতেন, কিন্তু তাঁর আগে ইস্রায়েলে যে সব রাজারা ছিলেন, তাদের মত নয়।
\v 3 অশূর রাজা শল্‌মনেষর হোশেয়কে আক্রমণ করতে আসলেন। তার ফলে হোশেয় তাঁর দাস হলেন এবং তাঁকে উপঢৌকন দিতে লাগলেন।
\s5
\v 4 কিন্তু অশূরের রাজা জানতে পারলেন যে, হোশেয় তাঁর বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে, কারণ তিনি মিসরের সো রাজার কাছে দূত পাঠিয়েছিলেন এবং অশূরের রাজাকে প্রতি বছরে যে উপঢৌকন দিতেন তা আর পাঠালেন না। সুতরাং শল্‌মনেষর হোশেয়কে বন্দী করে জেলে দিলেন।
\v 5 অশূরের রাজা সমস্ত দেশটা আক্রমণ করে শমরিয়াতে গেলেন এবং তিন বছর ধরে সেটা ঘেরাও করে রাখলেন।
\v 6 হোশেয়ের রাজত্বের নয় বছর কালীন অশূরের রাজা শমরিয়াকে দখল করলেন এবং ইস্রায়েলীয়দের বন্দী করে অশূরে নিয়ে গেলেন। তাদের তিনি হলহে, গোষণের হাবোর নদীর ধারে এবং মাদীয়দের শহরগুলোতে বাস করতে দিলেন।
\s5
\v 7 এই সব ঘটনা ঘটেছিল, কারণ যিনি মিসর থেকে, মিসরের রাজা ফরৌণের শাসন থেকে তাদের বের করে এনেছিলেন ইস্রায়েলীয়েরা তাদের সেই ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করেছিল। সেই লোকেরা অন্য দেব দেবতার পূজা করত
\v 8 এবং যাদেরকে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের মতই চলাফেরা করত। এছাড়া ইস্রায়েলের রাজাদের রীতিনীতি অনুসারে তারা চলত।
\s5
\v 9 ইস্রায়েলীয়েরা গোপনে সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে যা কিছু ঠিক নয় সেই সব খারাপ কাজ করত। তারা প্রহরীদের উঁচু ঘর থেকে বড় দেওয়ালে ঘেরা শহর পর্যন্ত সব জায়গায় নিজেদের জন্য পূজার উঁচু স্থান তৈরী করে নিয়েছিল।
\v 10 তারা প্রত্যেকটা উঁচু পাহাড়ের উপরে এবং প্রত্যেকটা সবুজ গাছের নীচে পূজার পাথর ও আশেরা মূর্তি স্থাপন করেছিল।
\s5
\v 11 যে সব জাতিকে সদাপ্রভু তাদের সামনে থেকে বের করে দিয়েছিলেন তাদের মত তারাও প্রত্যেকটি উঁচু স্থানে ধূপ জ্বালাত। এছাড়া ইস্রায়েলীয়রা আরও খারাপ কাজ করে সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করত।
\v 12 তারা মূর্তি পূজা করত, যার বিষয়ে সদাপ্রভু তাদের বলেছিলেন “তোমরা এই কাজগুলি করবে না।”
\s5
\v 13 যদিও সদাপ্রভু তাঁর সমস্ত ভাববাদী ও দর্শকদের মধ্য দিয়ে ইস্রায়েল ও যিহূদাকে সাবধান করে বলেছিলেন, “তোমরা তোমাদের খারাপ পথ থেকে ফেরো এবং সমস্ত আইন কানুন যা আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের পালনের জন্য দিয়েছিলাম আর আমার দাসদের অর্থাৎ ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে তোমাদের জানিয়েছিলাম তোমরা সেই অনুযায়ী আমার সব আদেশ ও নিয়ম পালন কর।”
\s5
\v 14 কিন্তু তারা সেই কথা শোনেনি; তার পরিবর্তে তারা তাদের পূর্বপুরুষেরা যারা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করত না, তাদের মতই তারা চলত।
\v 15 তারা তাঁর সব নিয়ম, তাদের পূর্বপুরুষদের জন্য স্থাপন করা তাঁর ব্যবস্থা এবং তাদের কাছে তাঁর দেওয়া সমস্ত সাক্ষ্য মানতে অস্বীকার করেছিল। তারা অসার বস্তুর অনুগামী হয়ে নিজেরাও অসার অকেজো হয়ে পড়েছিল। আর সদাপ্রভু যাদের মত চলতে তাদেরকে নিষেধ করেছিলেন তারা তাদের চারদিকের সেই জাতিগুলোরই অনুসরণ করে চলত।
\s5
\v 16 তারা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সমস্ত আদেশ ত্যাগ করে নিজেদের জন্য ছাঁচ দিয়ে বানানো ধাতু দিয়ে দুইটি বাছুরের মূর্তি তৈরী করে পূজা করত। একটা আশেরা মূর্তিও তৈরী করেছিল এবং তারা আকাশের সমস্ত বাহিনীরপূজো করত এবং বাল দেবতার পূজা করত।
\v 17 তারা নিজেদের ছেলেমেয়েদের আগুনে পুড়িয়ে হোমবলি হিসাবে উৎসর্গ করত। তারা মন্ত্র ও মায়াজালের ব্যবহার করত এবং সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ সেই সব কাজ করবার জন্য নিজেদের বিক্রি করে দিয়েছিল এবং এইরূপে সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করেছিল।
\v 18 সেই জন্য ইস্রায়েলের লোকদের উপর সদাপ্রভু ভীষণ রেগে গিয়ে তাঁর সামনে থেকে তাঁদের দূরে সরিয়ে দিলেন। সেখানে কেবল যিহূদা গোষ্ঠী ছাড়া আর কেউ ছিল না।
\s5
\v 19 এমনকি যিহূদা গোষ্ঠীও তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ পালন করলো না কিন্তু তার পরিবর্তে ইস্রায়েল যা করত সেই বিধি অনুযায়ী চলতে লাগল।
\v 20 সে কারণে সদাপ্রভু সমস্ত ইস্রায়েলের বংশকে বাতিল করে দিলেন। তিনি তাদের কষ্ট দিলেন এবং লুটেরাদের হাতে তুলে দিলেন এবং শেষে নিজের সামনে থেকে তাদের দূরে সরিয়ে দিলেন।
\s5
\v 21 সদাপ্রভু দায়ূদের বংশ থেকে যখন ইস্রায়েলকে ছিঁড়ে আলাদা করলেন, তখন তারা নবাটের ছেলে যারবিয়ামকে তাদের রাজা করেছিল। যারবিয়াম ইস্রায়েলকে সদাপ্রভুর পথ থেকে সরিয়ে নিয়ে তাদের দিয়ে মহাপাপ করিয়েছিলেন।
\v 22 ইস্রায়েলের লোকেরা যারবিয়ামের সমস্ত পাপের পথ অনুসরণ করেছিল। তারা সেসব থেকে ফিরে আসে নি।
\v 23 শেষে সদাপ্রভু তাঁর সমস্ত দাসদের অর্থাৎ ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে যেমন বলেছিলেন সেই অনুসারে তাঁর সামনে থেকে ইস্রায়েলকে দূরে ফেলে দিলেন। সেকারণে ইস্রায়েলের লোকদের তাদের নিজেদের দেশ থেকে বন্দী করে অশূর দেশে নিয়ে যাওয়া হল এবং আজও তারা সেই জায়গায় আছে।
\p
\s5
\v 24 অশূরের রাজা ইস্রায়েলের লোকদের বদলে বাবিল, কূথা, অব্বা, হমাৎ ও সফর্বয়িম থেকে লোক নিয়ে এসে শমরিয়ার নগরগুলিতে বসিয়ে দিলেন। তারা শমরিয়া অধিকার করে সেই সব জায়গায় বসবাস করতে লাগল।
\v 25 সেখানে তারা বসবাস করবার প্রথম দিকের সময়ে তারা সদাপ্রভুর সম্মান করত না, তাই সদাপ্রভু তাদের মধ্যে সিংহ পাঠিয়ে দিলেন, যেগুলি তাদের কিছু লোককে মেরে ফেলল।
\v 26 তখন তারা অশূরের রাজার কাছে গিয়ে এইরকম বলল, “যে সমস্ত জাতিদের আপনি বন্দী করে শমরিয়ায় সব জায়গায় বাস করবার জন্য বসিয়ে দিয়েছেন, তারা সেই দেশের ঈশ্বরের নিয়ম জানে না সেই দেশের ঈশ্বরকে কিভাবে সন্তুষ্ট করতে হয়। সে কারণে ঈশ্বর তাদের মধ্যে সিংহ পাঠিয়ে দিয়েছেন, আর দেখো, সিংহগুলি তাদের মেরে ফেলছে কারণ তারা সেই দেশের ঈশ্বরের বিধি জানে না।”
\s5
\v 27 তখন অশূরের রাজা এই বলে আদেশ দিলেন, “যে সব যাজকদের আপনারা এনেছিলেন তাদের মধ্য থেকে একজনকে আপনারা সেখানে পাঠিয়ে দিন যাতে সে সেখানে গিয়ে বাস করে এবং সেই দেশের ঈশ্বরের নিয়ম কানুন সম্পর্কে তাদের শিক্ষা দেয়।”
\v 28 সুতরাং শমরিয়া থেকে নিয়ে যাওয়া যাজকদের মধ্য থেকে একজনকে নিয়ে বৈথেলে গেলেন এবং সেখানে বাস করতে লাগলেন এবং তিনিই তাদের শিক্ষা দিলেন কিভাবে সদাপ্রভুর উপাসনা করতে হয়।
\s5
\v 29 তবুও প্রত্যেক জাতির লোকেরা নিজের নিজের দেবতা তৈরী করে নিল এবং শহরে যেখানে তারা বাস করত সেখানে শমরিয়েরা উঁচু স্থানগুলিতে যে সমস্ত ঘর তৈরী করেছিল, তার মধ্যে প্রত্যেক জাতি তাদের নগরে তাদের দেবতাকে স্থাপন করলেন।
\v 30 এইভাবে বাবিলের লোকেরা তৈরী করল সুক্কোৎ-বনোৎ, কূথের লোকেরা নের্গল তৈরী করলেন, হমাতের লোকেরা অশীমার মূর্তি তৈরী করলেন,
\v 31 আর অব্বীয়েরা তৈরী করল নিভস ও তর্ত্তক আর সফর্বীয়েরা অদ্রম্মেলক ও অনম্মেলকের উদ্দেশ্যে তাদের নিজেদের ছেলেমেয়েদের আগুনে পুড়িয়ে হোম উৎসর্গ করল।
\s5
\v 32 তারা সদাপ্রভুকে ভয় করত এবং উঁচু স্থানগুলিতে যাজকদের কাজ করবার জন্য নিজেদের মধ্য থেকে লোক নিযুক্ত করত এবং তারাই তাদের জন্য উচ্চ স্থানের গৃহে বলি উত্সর্গ করত।
\v 33 তারা সদাপ্রভুকে ভয় করত এবং সেই সঙ্গে যে সব দেশ থেকে তাদের নিয়ে আসা হয়েছিল সেই সব দেশের নিয়ম অনুসারে তারা তাদের দেবতাদেরও পূজা করত।
\s5
\v 34 আজ পর্যন্ত তারা সেই পুরানো নিয়ম মেনে চলছে। তারা আসলে সদাপ্রভুর উপাসনা করে না, এমন কি সদাপ্রভু যে যাকোবের নাম ইস্রায়েল রেখেছিলেন সেই যাকোবের লোকদের কাছে সদাপ্রভুর দেওয়া ব্যবস্থা, আদেশ অনুযায়ী চলে না।
\v 35 এবং তাদের সঙ্গে ব্যবস্থা স্থাপন করবার সময় এই আদেশ দিয়েছিলেন, “তোমরা অন্য কোন দেব দেবতার ভয় করবে না কিম্বা তাদের কাছে মাথা নীচু করবে না এবং তাদের সেবা করবে না বা তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলিদান করবে না।
\s5
\v 36 কিন্তু সদাপ্রভু, যিনি মহাশক্তিতে মিসর থেকে তোমাদের বের করে এনেছেন তোমরা সেই একজনকেই সম্মান করবে, তাঁর কাছেই মাথা নীচু করবে ও তাঁর উদ্দেশ্যেই সব বলিদান দেবে।
\v 37 তিনি যে সব বিধি, নির্দেশ, ব্যবস্থা ও আদেশ তোমাদের জন্য লিখে দিয়েছিলেন তা যত্নের সঙ্গে পালন করবে। তোমরা অন্য দেব দেবতার ভয় করবে না।
\v 38 এবং তোমাদের সঙ্গে যে ব্যবস্থা আমি তৈরী করেছি তোমরা তা ভুলে যাবে না; না অন্য কোন দেব দেবতাকেভয় করবে না।
\s5
\v 39 কিন্তু সদাপ্রভু তোমাদের ঈশ্বরকেই সম্মান করবে। তিনিই তোমাদের সব শত্রুদের হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করবেন।”
\v 40 তবুও তারা সেই কথা শুনলো না, কারণ তারা আগে যা করেছিল সেই মতই চলতে লাগল।
\v 41 এইভাবে সেই জাতিরা সদাপ্রভুর ভয়ও করত আবার তাদের খোদাই করা মূর্তির পূজাও করত। আজও তাদের ছেলেমেয়ে ও নাতিপুতিরা তাদের পূর্বপুরুষরা যা করেছিল সেই মতই করছে।
\s5
\c 18
\s যিহূদার হিষ্কিয় রাজার বিবরণ। অশূরীয়দের হস্ত হইতে রক্ষা।
\p
\v 1 এলার ছেলে ইস্রায়েলের রাজা হোশেয়ের রাজত্বের তিন বছরের মাথায় যিহূদার রাজা আহসের ছেলে হিষ্কিয় রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 2 তিনি পঁচিশ বছর বয়সী ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি ঊনত্রিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল অবী, তিনি সখরিয়ের মেয়ে ছিলেন।
\v 3 হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের সব কাজের মতই সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক তিনি তাই করতেন।
\s5
\v 4 তিনি উঁচু জায়গাগুলো ধ্বংস করলেন, পাথরের স্তম্ভগুলো নষ্ট করে দিলেন এবং আশেরা মূর্তিগুলি কেটে ফেললেন। মোশি যে পিতল সাপটা তৈরী করেছিলেন তিনি সেটি ভেঙ্গে ফেললেন, কারণ ইস্রায়েলের লোকেরা সেই সময় পর্যন্তও সেই সাপের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাচ্ছিল। তিনি ব্রোঞ্জের সাপটার নাম দিলেন নহুষ্টন (পিত্তলের টুকরো)।
\v 5 হিষ্কিয় ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করতেন। সুতরাং তাঁর পরে যিহূদার রাজাদের মধ্যে তাঁর মত আর কেউ ছিলেন না, তাঁর আগেও ছিল না।
\s5
\v 6 সেজন্য তিনি সদাপ্রভুকে আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন। তাঁর পথ থেকে তিনি ফিরলেন না বরং সদাপ্রভু মোশিকে যে সব আদেশ দিয়েছিলেন সেগুলি সব তিনি পালন করতেন।
\v 7 আর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে সঙ্গে থাকতেন এবং তিনি যে কোন জায়গায় যেতেন তাতে সফল হতেন। অশূরের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন এবং তিনি তাঁর অধীনতা অস্বীকার করলেন।
\v 8 তিনি ঘসা (গাজা) ও তার সীমানা, চৌকি দেওয়ার উঁচু ঘর থেকে উঁচু দেওয়াল বিশিষ্ট শহর পর্যন্ত এবং পলেষ্টীয়দের তিনি আক্রমণ করলেন।
\s5
\v 9 রাজা হিষ্কিয়ের চতুর্থ বছরে, অর্থাৎ ইস্রায়েলের রাজা এলার ছেলে হোশেয়ের রাজত্বের সপ্তম বছরে অশূরের রাজা শল্‌মনেষর শমরিয়ার বিরুদ্ধে এসে শহরটা ঘেরাও করলেন।
\v 10 এবং তিন বছর পরে অশূরের লোকেরা তা অধিকার করল, হিষ্কিয়ের রাজত্বের ষষ্ঠ বছরে আর ইস্রায়েলের রাজা হোশেয়ের নবম বছরে শমরীয়কে দখল বা অধিকার করে নেওয়া হয়।
\s5
\v 11 পরে অশূরের রাজা ইস্রায়েলের লোকদের বন্দী করে অশূরিয়াতে নিয়ে গেলেন এবং হলহে, হাবোর নদীর ধারে গোষণ এলাকায় এবং মাদীয়দের বিভিন্ন শহরে তাদের বসবাস করতে দিলেন।
\v 12 তিনি এই সব করেছিলেন, কারণ তাদের নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বাক্য তারা মেনে চলে নি, বরং তাঁর ব্যবস্থা, অর্থাৎ সদাপ্রভুর দাস মোশির সমস্ত আদেশ তারা অমান্য করত। সেই সব আদেশের কথা তারা শুনতও না এবং তা পালন করতে অস্বীকার করেছিল।
\s5
\v 13 পরে রাজা হিষ্কিয়ের চৌদ্দ বছরে রাজত্বের সময় অশূরের রাজা সন্‌হেরীব যিহূদার সমস্ত দেয়ালে ঘেরা শহরগুলো আক্রমণ করে তাদের দখল করে নিলেন।
\v 14 তখন যিহূদার রাজা হিষ্কিয় লাখীশে অশূরের রাজাকে এই কথা বলে পাঠালেন, “আমি তোমার বিরুদ্ধে অন্যায় করেছি। আপনি ফিরে যান। আপনি আমাকে যা ভার দেবেন আমি তা বহন করব।” এতে অশূরের রাজা যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের কাছে প্রায় বারো টন রুপো এবং প্রায় এক টনের মত সোনা দাবি করেছিলেন।
\v 15 ফলে হিষ্কিয় সদাপ্রভুর গৃহে যত রুপো পেয়েছিলেন এবং রাজবাড়ীর ভাণ্ডারগুলোতে যত রুপো ছিল সবই তাঁকে দিলেন।
\s5
\v 16 যিহূদার রাজা হিষ্কিয় সদাপ্রভুর গৃহে র দরজা ও দরজার চৌকাঠ যে সোনা দিয়ে মুড়িয়েছিলেন সেগুলি কেটে নিয়ে অশূরের রাজাকে দিলেন।
\v 17 পরে অশূরের রাজা লাখীশ থেকে তর্ত্তনকে, রব্‌সারীসকে ও রব্‌শাকিকে মস্ত বড় এক দল সৈন্য দিয়ে যিরূশালেমে রাজা হিষ্কিয়ের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। তাঁরা যাত্রা করে যিরূশালেমে এসে ধোপার মাঠের রাস্তার ধারে উঁচু জায়গার পুকুরের সঙ্গে লাগানো জলের নালার কাছে পৌঁছালেন।
\v 18 যখন তাঁরা রাজাকে ডাকলেন তখন রাজবাড়ীর পরিচালক হিল্কিয়ের ছেলে ইলিয়াকীম, রাজার লেখক শিব্‌ন এবং ইতিহাস লেখক আসফের ছেলে যোয়াহ বের হয়ে তাঁদের কাছে দেখা করতে গেলেন।
\s5
\v 19 তখন রব্‌শাকি তাঁদের বললেন, “আপনারা হিষ্কিয়কে এই কথা বলুন যে, সেই মহান রাজা, অশূরের রাজা বলেছেন, ‘তোমার সাহসের উত্স কি?
\v 20 তুমি বলেছ তোমার যুদ্ধ করবার বুদ্ধি ও শক্তি আছে, কিন্তু সেগুলো শুধু মুখের কথা মাত্র। বল দেখি, তুমি কার উপর নির্ভর করছ? কে তোমাকে সাহস দিয়েছে আমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে?
\v 21 দেখো, তুমি তো নির্ভর করছ সেই থেঁৎলে যাওয়া নলের মত দণ্ডে, অর্থাৎ মিসরের উপর। কিন্তু যে কেউ সেই নলের উপর নির্ভর করবে তা তার হাতে ফুটে বিদ্ধ করবে। মিসরের রাজা ফরৌণের উপর যারা নির্ভর করে তাদের প্রতি সে সেইরূপ করে।’
\s5
\v 22 কিন্তু তোমরা যদি আমাকে বল যে, আমরা নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপরে নির্ভর করেছি, তাহলে কি তিনি সেই নন যাঁর উঁচু স্থান ও বেদীগুলো হিষ্কিয় দূর করে দিয়েছেন এবং যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের বলেছে তোমরা যিরূশালেমের এই বেদীর সামনে উপাসনা করবে?
\v 23 অশূররে এখন তুমি আমার হয়ে তোমাদের রাজাকে একবার বল, ‘তুমি যদি পার তবে আমার মালিক অশূরের রাজার সঙ্গে এই প্রতিজ্ঞা কর যে, আমি তোমাকে দুই হাজার ঘোড়া দেব যদি তুমি তাতে চড়বার জন্য লোক দিতে পার।
\s5
\v 24 যদি তাই না পার তবে আমার মালিকের কর্মচারীদের মধ্যে সব থেকে যে ছোট তাকেই বা তুমি কেমন করে বাধা দেবে? তুমিতো মিসরের রথ আর ঘোড়সওয়ারের উপর নির্ভর করেছ!
\v 25 আমি কি সদাপ্রভুর কাছ থেকে অনুমতি না নিয়েই এই জায়গা আক্রমণ ও ধ্বংস করতে এসেছি? সদাপ্রভুই আমাকে বলেছেন, এই দেশের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে তা ধ্বংস করে দিতে’।”
\s5
\v 26 তখন হিল্কিয়ের ছেলে ইলীয়াকীম, শিব্‌ন ও যোয়াহ রব্‌শাকিকে বললেন, “অনুরোধ করি আপনার দাসদের কাছে আপনি অরামীয় ভাষায় কথা বলুন, কারণ আমরা এটা বুঝতে পারি। দেয়ালের উপরকার লোকদের সামনে আপনি আমাদের সঙ্গে ইব্রীয় ভাষায় কথা বলবেন না।”
\v 27 কিন্তু রব্‌শাকি উত্তর দিয়ে তাদের বললেন, “আমার মালিক কি কেবল তোমাদের মালিক ও তোমাদের কাছে এই সব কথা বলতে আমাকে পাঠিয়েছেন? যারা দেয়ালের উপরে বসা ঐ সব লোকেদের কাছে, যারা তোমার মত নিজের নিজের পায়খানা ও প্রস্রাব খেতে হবে তাদের কাছেও কি বলে পাঠান নি?”
\s5
\v 28 তারপর রব্‌শাকি দাঁড়িয়ে জোরে জোরে ইব্রীয় ভাষায় বললেন, “তোমরা মহান রাজা অশূর রাজার কথা শোন।
\v 29 রাজা বলছেন যে, হিষ্কিয় যেন তোমাদের না ঠকায়। কারণ সে তাঁর শক্তি থেকে তোমাদের রক্ষা করতে পারবে না।
\v 30 আর হিষ্কিয় যেন এই কথা বলে সদাপ্রভুর উপর তোমাদের বিশ্বাস না জন্মায় যে, ‘সদাপ্রভু অবশ্যই আমাদের উদ্ধার করবেন; এই শহর অশূর রাজার হাতে তুলে দেবেন না।’
\s5
\v 31 তোমরা হিষ্কিয়ের কথা শুনো না। কারণ অশূরের রাজা এই কথা বলেছেন যে, ‘আমার সঙ্গে তোমরা সন্ধি কর এবং বের হয়ে আমার কাছে এস। তখন তোমরা প্রত্যেকে তার নিজের আঙুর ও ডুমুর গাছের ফল খেতে পারবে এবং নিজের কূয়া থেকে জল পান করতে পারবে।
\v 32 তারপর আমি এসে তোমাদের নিজের দেশের মত আর এক দেশে তোমাদের নিয়ে যাব। সেই দেশ হল শস্য ও নতুন আঙুর রসের দেশ, রুটি ও আঙুর ক্ষেতের দেশ, জিতবৃক্ষের ও মধুর দেশ। তাতে তোমরা মরবে না বরং বাঁচবে। কিন্তু হিষ্কিয়ের কথা শুনো না যখন তোমাদের বলবে এবং ভুলাবে যে, সদাপ্রভু আমাদের উদ্ধার করবেন।
\s5
\v 33 অন্যান্য জাতির কোন দেবতারা কি অশূর রাজার শক্তি থেকে নিজের নিজের দেশ রক্ষা করতে পেরেছে?
\v 34 হমাৎ ও অর্পদের দেবতারা কোথায়? সফর্বয়িম, হেনা ও ইব্বার দেবতারা কোথায়? তারা কি আমার হাত থেকে শমরিয়াকে রক্ষা করতে পেরেছে?
\v 35 এই সব দেশের সমস্ত দেব দেবতাদের মধ্যে কে আমার হাত থেকে নিজের দেশকে রক্ষা করেছে? তবে কেমন করে সদাপ্রভু আমার হাত থেকে যিরূশালেমকে রক্ষা করবেন’?”
\s5
\v 36 কিন্তু লোকেরা চুপ করে রইল, কোন উত্তর দিল না, কারণ রাজা কোন উত্তর না দেওয়ার তাদের আদেশ করেছিলেন।
\v 37 তার পরে রাজবাড়ীর পরিচালক হিল্কিয়ের ছেলে ইলীয়াকীম, রাজার লেখক শিব্‌ন এবং ইতিহাস লেখক আসফের ছেলে যোয়াহ তাঁদের নিজের কাপড় ছিঁড়ে হিষ্কিয়ের কাছে গেলেন এবং রব্‌শাকির সমস্ত কথা তাঁকে জানালেন।
\s5
\c 19
\p
\v 1 রাজা হিষ্কিয় এই কথা শোনার পর নিজের কাপড় ছিঁড়লেন আর চটের পোশাক পরলেন এবং সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন।
\v 2 তিনি রাজবাড়ীর পরিচালক ইলিয়াকীম, রাজার লেখক শিব্‌ন ও যাজকদের প্রাচীনদের চট পরিয়ে আমোসের ছেলে যিশাইয় ভাববাদীর কাছে পাঠিয়ে দিলেন।
\s5
\v 3 তাঁরা যিশাইয়কে বললেন, “হিষ্কিয় বলছেন যে, আজকের দিনটা হল কষ্টের, তিরস্কার হওয়ার ও অসম্মানের দিন। কারণ যেন সন্তানেরা জন্ম হবার মুখে এসেছে কিন্তু তাদের জন্ম দেবার শক্তি নেই।
\v 4 অশূরের রাজা যিনি জীবন্ত ঈশ্বরকে ঠাট্টা বিদ্রূপ করতে রব্‌শাকিকে পাঠিয়েছেন কিন্তু আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু হয়তো সেই সব কথা শুনে তাকে ধমক দেবেন। তাই যারা এখনও বেঁচে আছে তাদের জন্য আপনি প্রার্থনা করুন।”
\s5
\v 5 তখন রাজা হিষ্কিয়ের কর্মচারীরা যিশাইয়ের কাছে আসলেন,
\v 6 এবং যিশাইয় তাঁদের বললেন “তোমাদের মালিককে বল যে, সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘তুমি যা শুনেছ, অর্থাৎ অশূরের রাজার কর্মচারীরা আমার বিরুদ্ধে যে সব অপমানের কথা বলেছে তাতে তুমি ভয় পেয়ো না।
\v 7 দেখো, আমি তার মধ্যে এমন একটা আত্মা দেব যার ফলে সে একটা সংবাদ শুনতে পাবে এবং নিজের দেশে ফিরে যাবে। আমি তাকে তার নিজের দেশে তলোয়ারের দ্বারা শেষ করে দেব’।”
\p
\s5
\v 8 পরে রব্‌শাকি ফিরে গেলেন এবং দেখলেন যে, অশূরের রাজা লিব্‌নার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছেন। কারণ তিনি লাখীশ থেকে চলে গিয়েছিলেন একথা রব্‌শাকি শুনেছিলেন।
\v 9 অশূরের রাজা সন্‌হেরীব শুনতে পেলেন যে, কূশ দেশের রাজা তির্হকঃ তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য বের হয়েছেন। তাই তিনি আবার দূতদের দিয়ে হিষ্কিয়ের কাছে খবর পাঠালেন,
\s5
\v 10 “তোমরা যিহূদার রাজা হিষ্কিয়কে বলবে, তুমি যাঁকে বিশ্বাস কর সেই ঈশ্বর এইরকম বলে তোমাদের প্রতারণা না করুক যে, রাজা অশূরের হাতে যিরূশালেমকে দেওয়া হবে না।
\v 11 দেখো, অশূরের রাজারা কিভাবে অন্য সব দেশগুলি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছেন তা তুমি নিশ্চয়ই শুনেছ; তাহলে তুমি কি রক্ষা পাবে?
\s5
\v 12 আমার পূর্বপুরুষেরা যে সব জাতিকে ধ্বংস করেছেন তাদের দেবতারা, অর্থাৎ গোষণ, হারণ, রেৎসফ এবং তলঃসরে বাসকারী এদনের লোকদের দেবতারা কি তাদের রক্ষা করেছে?
\v 13 হমাতের রাজা, অর্পদের রাজা, সফর্বয়িম শহরের রাজা অথবা হেনা ও ইব্বার রাজা কোথায়?”
\p
\s5
\v 14 হিষ্কিয় দূতদের কাছ থেকে চিঠিখানা নিলেন এবং সেটি পড়লেন। পরে তিনি সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন এবং তাঁর সামনে চিঠিটা মেলে দিলেন।
\v 15 হিষ্কিয় সদাপ্রভুর কাছে এই প্রার্থনা করলেন এবং বললেন, “বাহিনীগনের সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, করূবের মাঝে অবস্থিত হে সদাপ্রভু, তুমিই একমাত্র পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের ঈশ্বর। তুমি মহাকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছ।
\s5
\v 16 হে সদাপ্রভু, কান ফিরাও এবং শোন; তোমার চোখ খোল সদাপ্রভু এবং দেখ, সন্‌হেরীবের কথা শোন যা জীবন্ত ঈশ্বরকে অপমান করবার জন্য বলে পাঠিয়েছে।
\v 17 সত্য, হে সদাপ্রভু, যে অশূরের রাজারা সব জাতিকে এবং তাদের দেশ ধ্বংস করেছে।
\v 18 তারা তাদের দেবতাদের আগুনে ফেলে দিয়েছে। কারণ সেগুলো তো ঈশ্বর ছিল না কিন্তু শুধুমাত্র মানুষের হাতে তৈরী কেবল কাঠ আর পাথর; সেইজন্য অশূরেরা তাদের ধ্বংস করে দিয়েছে।
\s5
\v 19 এখন হে সদাপ্রভু আমাদের ঈশ্বর, অশূরের রাজার হাত থেকে তুমি আমাদের রক্ষা কর, যাতে পৃথিবীর সমস্ত রাজ্য জানতে পারে যে, হে সদাপ্রভু, তুমি, একমাত্র তুমিই ঈশ্বর।”
\p
\s5
\v 20 তখন আমোসের ছেলে যিশাইয় হিষ্কিয়ের কাছে একটি খবর পাঠালেন, “সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলছেন যে, অশূরের রাজা সন্‌হেরীব সম্বন্ধে আপনার প্রার্থনা আমি শুনেছি।
\v 21 তার বিষয়ে সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘সিয়োন কুমারী মেয়ে তোমাকে তুচ্ছ করছে এবং হাসাহাসি করছে। যিরূশালেমের মেয়েরা তোমার দিকে মাথা নাড়ছে।
\v 22 তুমি কাকে তুচ্ছ করেছ? কার বিরুদ্ধে অপমানের কথা বলেছ? তুমি কার বিরুদ্ধে চিৎকার করেছ এবং গর্ব সহকারে চোখ তুলে তাকিয়েছ? তুমি ইস্রায়েলের পবিত্রতমের বিরুদ্ধেই এই সব করেছ।
\s5
\v 23 তোমার লোকদের দিয়ে তুমি প্রভুকে অপমান করে বলেছ যে, আমি সব রথ দিয়ে পাহাড়গুলোর চূড়ায় উঠেছি, লেবাননের সবচেয়ে উঁচু চূড়ায় উঠেছি। আমি তার সবচেয়ে লম্বা লম্বা এরস গাছ আর ভাল ভাল দেবদারু গাছ কেটে ফেলব। আমি তার বনের শেষপ্রান্ত, সুন্দর ফলবান জায়গায় ঢুকব।
\v 24 আমি বিদেশের মাটিতে কূয়া খুঁড়েছি এবং সেখানকার জল খেয়েছি। আমি নিজের পা দিয়ে মিসরের সব নদীগুলো শুকনো করব।
\s5
\v 25 তুমি কি শোন নি যে, বহুদিন পূর্বেই আমি তা ঠিক করে রেখেছিলাম? বহুকাল আগেই আমি তার পরিকল্পনা করেছিলাম? আর এখন আমি তা করলাম। তোমার মাধ্যমে দেয়াল দিয়ে ঘেরা শহরগুলো ধ্বংস করে পাথরের ঢিবি করতে পেরেছি।
\v 26 সেখানকার লোকেরা শক্তিহীন হয়েছে এবং ভীষণ ভয় ও লজ্জা পেয়েছে। তারা ক্ষেতের চারার মত, গজিয়ে ওঠা সবুজ ঘাসের মত, ছাদের উপরে গজানো ঘাসের মত যা বেড়ে উঠবার আগেই শুকিয়ে যাবে সেরকম হলো।
\s5
\v 27 কিন্তু তোমার মধ্যে বসে থাকা আর কখন বাইরে যাওয়া বা ভিতরে আসা এবং কেমন করে আমার বিরুদ্ধে রেগে ওঠ আমি তা জানি।
\v 28 কারণ আমার বিরুদ্ধে তুমি রেগে উঠেছ এবং তোমার গর্বের কথা আমার কানে এসেছে বলে আমি আমার কড়া তোমার নাকে লাগাব এবং তোমার মুখে আমার বল্‌গা লাগাব; আর যে পথ দিয়ে তুমি এসেছ সেই পথেই তোমাকে ফিরিয়ে দেব
\s5
\v 29 আর হে হিষ্কিয়, তোমার জন্য চিহ্ন হবে এই, এই বছরে নিজের থেকেই যা জন্মাবে তোমরা তাই খাবে এবং দ্বিতীয় বছরে তা থেকে যা জন্মাবে তা খাবে। কিন্তু তৃতীয় বছরে তোমরা অবশ্যই বীজ বুনবে ও ফসল কাটবে আর আঙুর গাছ লাগিয়ে তার ফল খাবে।
\v 30 যিহূদা গোষ্ঠীর যে লোকেরা তখনও বেঁচে থাকবে তারা আবার গাছের মত নীচে শিকড় বসাবে আর উপরে ফল দেবে।
\v 31 যিরূশালেম থেকে অবশিষ্ট লোকেরা আসবে, আর সিয়োন পাহাড় থেকে আসবে বেঁচে যাওয়া লোক। বাহিনীগনের সদাপ্রভুর আগ্রহেই এই সব করবে।
\s5
\v 32 সেজন্য অশূরের রাজার সম্পর্কে সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘সে এই শহরে আসবে না কিম্বা এখানে একটা তীরও ছুড়বে না। সে ঢাল নিয়ে এর সামনে আসবে না কিম্বা ওঠা নামা করবার জন্য কিছু তৈরী করবে না।
\v 33 সে যে পথ দিয়ে এসেছে সেই পথ দিয়েই ফিরে যাবে; এই শহরে সে প্রবেশ করবে না। এটাই হলো সদাপ্রভুর ঘোষণা।
\v 34 কারণ আমি আমার ও আমার দাস দায়ূদের জন্য এই শহরটা রক্ষা করব ও তার ঢাল হয়ে থাকব’।”
\s5
\v 35 সেই রাতে সদাপ্রভুর দূত বের হয়ে অশূরীয়দের শিবির আক্রমণ করলেন এবং এক লক্ষ পঁচাশি হাজার সৈন্যকে মেরে ফেললেন। পরদিন ভোরবেলায় লোকেরা যখন উঠল তখন দেখতে পেল সব জায়গায় শুধু মৃতদেহ।
\v 36 সেজন্য অশূর রাজা সন্‌হেরীব তাঁর সৈন্যদল নিয়ে ইস্রায়েল থেকে চলে গেলেন এবং নীনবীতে ফিরে গিয়ে সেখানে থাকতে লাগলেন।
\v 37 পরে, সন্‌হেরীব যেমন তাঁর দেবতা নিষ্রোকের মন্দিরে পূজা করছিলেন, তাঁর ছেলেরা অদ্রম্মেলক ও শরেৎসর তাঁকে তলোয়ার দিয়ে মেরে ফেলে তারা অরারট দেশে পালিয়ে গেল। তখন সন্‌হেরীবের জায়গায় তাঁর ছেলে এসরহদ্দোন রাজা হলেন।
\s5
\c 20
\s হিষ্কিয়ের অসুস্থতার বর্ণনা।
\p
\v 1 সেই সময়ে হিষ্কিয় খুব অসুস্থ হয়েছিলেন। তখন আমোসের ছেলে যিশাইয় ভাববাদী তাঁর কাছে গেলেন এবং তাঁকে বললেন, “সদাপ্রভু বলছেন যে, ‘তুমি তোমার বাড়ির ব্যবস্থা করে রাখ, কারণ তোমার মৃত্যু হবে, বাঁচবে না’।”
\v 2 তখন হিষ্কিয় দেয়ালের দিকে মুখ ফিরালেন এবং সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন,
\v 3 “হে সদাপ্রভু, তুমি স্মরণ করে দেখ আমি তোমার সামনে কেমন বিশ্বস্তভাবে ও সমস্ত হৃদয় দিয়ে চলেছি এবং তোমার চোখে যা কিছু ভালো তাই করেছি।” এবং হিষ্কিয় খুব কাঁদলেন।
\s5
\v 4 যিশাইয় বের হয়ে রাজবাড়ীর মাঝখানের উঠান পার হয়ে যাওয়ার আগেই সদাপ্রভুর বাক্য তাঁর কাছে প্রকাশিত হল, বললেন,
\v 5 “তুমি ফিরে যাও এবং আমার লোকদের নেতা হিষ্কিয়কে বল যে, তার পূর্বপুরুষ দায়ূদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন, ‘আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি ও তোমার চোখের জল দেখেছি। আমি তোমাকে তৃতীয় দিনে সুস্থ করব এবং তুমি সদাপ্রভুর গৃহে যাবে।
\s5
\v 6 আমি তোমার আয়ু আরও পনেরো বছর বাড়িয়ে দেব এবং আমি অশূর রাজার হাত থেকে তোমাকে এবং এই শহরকে উদ্ধার করব। আমার জন্য ও আমার দাস দায়ূদের জন্য আমি এই শহরকে রক্ষা করব’।”
\v 7 ফলে যিশাইয় বললেন, “ডুমুর ফলের একটা চাক নিয়ে এস।” লোকেরা তা এনে হিষ্কিয়ের ফোড়ার উপরে দিল এবং তিনি সুস্থ হলেন।
\s5
\v 8 হিষ্কিয় যিশাইয়কে বলেছিলেন যে, “সদাপ্রভু আমাকে সুস্থ করবেন এবং এখন থেকে তৃতীয় দিনে আমি যে সদাপ্রভুর গৃহে যাব তার চিহ্ন কি?”
\v 9 যিশাইয় উত্তর দিয়ে বলেছিলেন, “সদাপ্রভু যে তাঁর প্রতিজ্ঞা রক্ষা করবেন তার জন্য তিনি আপনাকে জন্য একটি চিহ্ন দেবেন। ছায়া কি দশ ধাপ এগিয়ে যাবে, না দশ ধাপ পিছিয়ে যাবে?”
\s5
\v 10 হিষ্কিয় উত্তর দিয়ে বলেছিলেন, “ছায়াটি দশ ধাপ এগিয়ে যাওয়াটাই সহজ ব্যাপার। না, ছায়াটি দশ ধাপ পিছিয়ে যাক।”
\v 11 তখন যিশাইয় ভাববাদী সদাপ্রভুকে চীত্কার করে ডাকলেন। এবং তাতে আহসের সিঁড়ি থেকে ছায়াটা যেখানে ছিল সেখান থেকে দশ ধাপ পিছিয়ে পড়েছিল।
\s5
\v 12 সেই সময়ে বলদনের ছেলে বাবিলের রাজা বরোদক্‌বলদন্‌ হিষ্কিয়ের কাছে চিঠি ও উপহার পাঠিয়ে দিলেন, কারণ তিনি শুনেছিলেন যে হিষ্কিয় অসুস্থ ছিলেন।
\v 13 হিষ্কিয় সেই চিঠিগুলি গ্রহণ করলেন এবং তাঁর সব ভাণ্ডারগুলোতে যা মূল্যবান বস্তু ছিল, অর্থাৎ সোনা, রুপো, সুগন্ধি মশলা, দামী তেল এবং তাঁর অস্ত্রশস্ত্রের ভাণ্ডার ও ধনভাণ্ডারে যা কিছু ছিল সব সেই দূতদের দেখালেন। হিষ্কিয়ের রাজবাড়ীতে কিম্বা তাঁর সারা রাজ্যে এমন কিছু ছিল না যা তিনি তাদের দেখান নি।
\s5
\v 14 তখন যিশাইয় ভাববাদী রাজা হিষ্কিয়ের কাছে আসলেন এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “এই লোকগুলি আপনাকে কি বলল? কোথা থেকেই বা তারা আপনার কাছে এসেছিল?” হিষ্কিয় বললেন, “ওরা দূর দেশ থেকে, বাবিল থেকে এসেছিল।”
\v 15 যিশাইয় জিজ্ঞাসা করলেন, “তারা আপনার রাজবাড়ীর মধ্যে কি কি দেখেছে?” হিষ্কিয় উত্তর দিয়ে বললেন, “তারা আমার রাজবাড়ীর সব কিছুই দেখেছে। আমার ধনভাণ্ডারের এমন কিছু মূল্যবান জিনিস নেই যা আমি তাদের দেখায়নি।”
\s5
\v 16 অতএব যিশাইয় হিষ্কিয়কে বললেন, “সদাপ্রভুর বাক্য শুনুন।
\v 17 দেখো, এমন দিন আসছে যে, যখন আপনার রাজবাড়ীর সব কিছু এবং আপনার পূর্বপুরুষরা যা কিছু আজ পর্যন্ত জমিয়ে রেখেছে সবই বাবিলে নিয়ে যাওয়া হবে, কিছুই পড়ে থাকবে না, এটি সদাপ্রভু বলেন।
\v 18 এবং আপনার নিজের সন্তান, কয়েকজন বংশধর, যাদের আপনি জন্ম দিয়েছেন তাদের মধ্য থেকে কয়েকজনকে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তারা বাবিলের রাজাবাড়ীতে নপুংসক হয়ে থাকবে।”
\s5
\v 19 তখন উত্তর দিয়ে হিষ্কিয় যিশাইয়কে বললেন, “সদাপ্রভুর কথা যা আপনি বললেন, তা ভাল।” কারণ তিনি ভেবেছিলেন যে, যদি আমার সময়ে শান্তি ও সত্য হয়, তবে সেটা কি ভাল নয়?
\v 20 হিষ্কিয়ের অন্যান্য বাকি সমস্ত কাজের কথা এবং সব শক্তি এবং কেমন করে তিনি পুকুর ও সুড়ঙ্গ কেটেছিলেন ও শহরে জল নিয়ে এসেছিলেন সেগুলি কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে লেখা নেই?
\v 21 হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন এবং তাঁর ছেলে মনঃশি তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 21
\s মনঃশি ও আমন রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 মনঃশির বারো বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি পঞ্চান্ন বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম হিফ্‌সীবা।
\v 2 সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয় সন্তানদের সামনে থেকে যে সব জাতিদেরকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন, ঠিক তাদের মত জঘন্য কাজ করে মনঃশি সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তিনি তাই করতেন।
\v 3 কারণ তাঁর বাবা হিষ্কিয় যে সব উঁচু স্থান ধ্বংস করেছিলেন এবং সেগুলো তিনি আবার তৈরী করেছিলেন। ইস্রায়েলের রাজা আহাব যেমন করেছিলেন তেমনি তিনিও বাল দেবতার জন্য কতগুলো যজ্ঞবেদী ও একটা আশেরা মূর্তি তৈরী করলেন। তিনি আকাশের সমস্ত বাহিনীদের কাছে মাথা নিচু করে তাদের সেবা করতেন।
\s5
\v 4 সদাপ্রভু যে গৃহে র বিষয় বলেছিলেন, “আমি যিরূশালেমে আমার নাম স্থাপন করব,” সদাপ্রভুর সেই গৃহে র মধ্যে মনঃশি কতগুলো যজ্ঞবেদী তৈরী করলেন।
\v 5 সদাপ্রভুর গৃহে র দুইটি উঠানেই তিনি আকাশের সমস্ত বাহিনীদের জন্য কতগুলো যজ্ঞবেদী তৈরী করলেন।
\v 6 তিনি নিজের ছেলেকে আগুনে হোমবলি উৎসর্গ করলেন। তিনি মায়াবিদ্যা ব্যবহার করতেন ও ভবিষ্যতবাণী করতেন এবং যারা ভূতের মাধ্যম হয় এবং মন্দ আত্মাদের সঙ্গে সম্বন্ধ রেখে তিনি তাদের সঙ্গে শলা পরামর্শ করতেন। তিনি সদাপ্রভুর চোখে অনেক মন্দ কাজ করে তাঁকে অসন্তুষ্ট করলেন।
\s5
\v 7 তিনি যে আশেরা মূর্তি তৈরী করেছিলেন সেটা সদাপ্রভুর গৃহে রেখেছিলেন। এটি সেই গৃহ যার সম্বন্ধে সদাপ্রভু দায়ূদ ও তাঁর ছেলে শলোমনকে বলেছিলেন, “এই গৃহে এবং ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্য থেকে আমার বেছে নেওয়া এই যিরূশালেমে আমি চিরকালের জন্য আমার নাম স্থাপন করব।
\v 8 ইস্রায়েলীয়েরা যদি কেবল আমার সব আদেশ যত্নের সঙ্গে পালন করে এবং আমার দাস মোশি তাদের যে ব্যবস্থা দিয়েছে সেই মত চলে তবে আমি তাদের পূর্বপুরুষদের যে দেশ দিয়েছি সেই ইস্রায়েল দেশ থেকে তাদের পা আর নাড়াতে দেব না।”
\v 9 কিন্তু লোকেরা সেই কথা শোনেনি। যে সব জাতিকে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয় লোকদের সামনে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন তাদের থেকেও তারা আরও বেশি খারাপ কাজ করার জন্য মনঃশি তাদের পরিচালিত করলো।
\s5
\v 10 তাই সদাপ্রভু তাঁর দাস ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে এই কথা বললেন,
\v 11 “যিহূদার রাজা মনঃশি এই সব জঘন্য পাপ করেছে। তার আগে যে ইমোরীয়েরা ছিল তাদের থেকেও সে আরও বেশি ঘৃণার কাজ করেছে এবং নিজের প্রতিমাগুলো দিয়ে যিহূদাকেও পাপের কাজ করিয়েছে।
\v 12 সুতরাং সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর বলেছেন যে, দেখো, আমি যিরূশালেম ও যিহূদার উপর এমন বিপদ আনব যে, যে কেউ সেই কথা শুনবে তাদের সকলের কান শিউরে উঠবে।
\s5
\v 13 শমরিয়ার উপর যে দড়ি এবং আহাবের পরিবারের উপর যে ওলন দড়ি ব্যবহার করা হয়েছিল তা আমি যিরূশালেমের উপর ব্যবহার করব। যেমন একজন থালা মুছে নিয়ে উপুড় করে রাখে তেমনি করে আমি যিরূশালেমকে মুছে ফেলব।
\v 14 আমার নিজের বংশধিকারের বাকী অংশকে আমি ত্যাগ করব এবং তাদের শত্রুদের হাতে তাদেরকে তুলে দেব। তাদের নিজের সমস্ত শত্রুদের কাছে শিকারের জিনিস এবং লুঠের জিনিসের মত হবে।
\v 15 কারণ তারা আমার চোখে যা মন্দ তাই করেছে এবং যেদিন তাদের পূর্বপুরুষেরা মিসর থেকে বের হয়ে এসেছিল সেই দিন থেকে আজ পর্যন্ত তারা আমাকে অসন্তুষ্ট করে আসছে।”
\s5
\v 16 আবার, মনঃশি নির্দোষ লোকদের রক্তপাত করেছিলেন যে, সেই রক্তে যিরূশালেমের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত পূর্ণ করেছিলেন। তিনি যিহূদার লোকদের দিয়ে পাপ করিয়েছিলেন যার ফলে তারা সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করেছিল।
\v 17 মনঃশির অন্যান্য সমস্ত কাজের বিবরণ এবং তাঁর পাপের কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামক বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 18 পরে মনঃশি নিজের পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রায় গেলেন এবং তাঁকে নিজের রাজবাড়ীর বাগানে, উষের বাগানে কবর দেওয়া হল। আমোন, তাঁর ছেলে তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 19 আমোন বাইশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন; তিনি দুই বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল মশুল্লেমৎ; তিনি যট্‌বা হারুষের মেয়ে ছিলেন।
\v 20 আমোন তাঁর বাবা মনঃশি যেমন করেছিলেন তেমনই তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন।
\s5
\v 21 আমোন তাঁর বাবা যে সব পথে চলেছিলেন তিনিও সেই সব পথ অনুসরণ করলেন; তাঁর বাবা যে সব প্রতিমার পূজা করেছিলেন তিনিও সেগুলোকে পূজা করতেন এবং তাদের সামনে মাথা নত করে প্রণাম করতেন।
\v 22 তিনি সদাপ্রভু তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরকে ত্যাগ করেছিলেন এবং সদাপ্রভুর পথে চলতেন না।
\v 23 আমোনের দাসেরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁর নিজের রাজবাড়ীতেই তাঁকে হত্যা করল।
\s5
\v 24 কিন্তু রাজা আমোনের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল দেশের লোকেরা তাদের সবাইকে মেরে ফেলল এবং তারা যোশিয়কে, তাঁর ছেলে, তাঁর জায়গায় রাজা করল।
\v 25 আমোনের অন্যান্য সব কাজের বিষয়ের অবশিষ্ট কথা যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 26 উষের বাগানে তাঁর নিজের জন্য করা কবরে তাঁকে কবর দেওয়া হল এবং যোশিয়, তাঁর ছেলে তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 22
\s যোশিয় রাজার বিবরণ। ধর্মসংশোধন।
\p
\v 1 যোশিয় আট বছর বয়সে তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি একত্রিশ বছর পর্যন্ত যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল যিদীদা; তিনি বস্কতীয় অদায়ার মেয়ে ছিলেন।
\v 2 যোশিয় সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন। তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের পথে চলতেন এবং তিনি সেই পথ থেকে ডান দিকে কিম্বা বাঁদিকে ফিরতেন না।
\s5
\v 3 যোশিয় রাজার আঠারো বছরে তিনি মশুল্লমের নাতি, অর্থাৎ অৎসলিয়ের ছেলে লেখক শাফনকে এই কথা বলে সদাপ্রভুর গৃহে পাঠিয়ে দিলেন,
\v 4 “আপনি মহাযাজক হিল্কিয়ের কাছে যান এবং তাঁকে বলুন, যেন তিনি সদাপ্রভুর গৃহে নিয়ে আসা সেই সমস্ত টাকা পয়সা, যা মন্দিরের দারোয়ানেরা লোকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছে তার হিসাব তৈরী করে রাখেন।
\v 5 সদাপ্রভুর উপাসনা গৃহের কাজ তদারক করবার জন্য যে লোকদের নিযুক্ত করা হয়েছে তিনি যেন সেই টাকা তাদের হাতে দেন এবং তদারককারীরা যেন সেই টাকা সদাপ্রভুর গৃহের ভাঙ্গা জায়গা সারাই করবার জন্য তাদের হাতে দেন।
\s5
\v 6 সেই টাকা দিয়ে যেন ছুতোর মিস্ত্রিদের, ঘর তৈরীর মিস্ত্রিদের এবং রাজমিস্ত্রিদের মজুরি দেয় এবং এছাড়াও মন্দির সারাই করার জন্য যেন তারা কাঠ ও সুন্দর করে কাটা পাথর কেনে।
\v 7 কিন্তু তাদের হাতে যে টাকা দেওয়া হল তার কোনো হিসাব তাদের আর দিতে হবে না, কারণ তারা বিশ্বস্তভাবেই কাজ করেছে।”
\s5
\v 8 তখন রাজার লেখক শাফনকে হিল্কিয় মহাযাজক বললেন, “আমি সদাপ্রভুর গৃহে র মধ্যে ব্যবস্থার বইটি পেয়েছি।” তখন হিল্কিয় সেই বইটি শাফনকে দিলেন এবং তিনি সেটি পড়লেন।
\v 9 পরে শাফন লেখক সেই বইটি রাজার কাছে নিয়ে গেলেন এবং তাঁকে খবর দিয়ে বললেন, “সদাপ্রভুর গৃহে যে টাকা পাওয়া গিয়েছিল তা আপনার দাসেরা বের করে খরচ করেছে এবং সদাপ্রভুর গৃহে র কাজের তদারককারীদের হাতে দিয়েছে।”
\v 10 তখন শাফন লেখক এই কথা রাজাকে বললেন, “হিল্কিয় যাজক আমাকে একটি বই দিয়েছেন।” আর তখন শাফন সেটি রাজার সামনে পড়ে শোনালেন।
\s5
\v 11 যখন রাজা ব্যবস্থার বইতে লেখা বাক্যগুলি শুনলেন, তিনি নিজের পোশাক ছিঁড়লেন।
\v 12 তিনি হিল্কিয় যাজককে, শাফনের ছেলে অহীকাম, মীখায়ের ছেলে অক্‌বোর, শাফন লেখক এবং রাজার নিজের দাস অসায়কে আদেশ দিয়ে বললেন,
\v 13 “যাও এবং এই যে বইটি পাওয়া গেছে তার মধ্যে যে সমস্ত ব্যবস্থার কথা লেখা আছে সেই সব কথা সম্বন্ধে তোমরা গিয়ে আমার জন্য এবং এখানকার ও সমস্ত যিহূদার লোকদের জন্য সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা কর। সদাপ্রভু আমাদের বিরুদ্ধে ক্রোধের আগুনে জ্বলে উঠেছেন, কারণ আমাদের পালন করার জন্য যে সব ব্যবস্থার কথা লেখা আছে আমাদের পূর্বপুরুষেরা সে সব শোনেন নি এবং পালন করবার জন্য যে সব কথা সেখানে লেখা আছে সেই অনুসারে তাঁরা কাজ করেন নি।”
\s5
\v 14 এই কথা শোনার পর হিল্কিয় যাজক, অহীকাম, অক্‌বোর, শাফন ও অসায় হুল্‌দা ভাববাদিনীর কাছে গিয়ে কথাবার্তা বললেন। হুল্‌দা ছিলেন বস্ত্র রক্ষাকারী শল্লুমের স্ত্রী। শল্লূম ছিলেন হর্হসের নাতি, অর্থাৎ তিক্‌বের ছেলে। হুল্‌দা যিরূশালেমের দ্বিতীয় অংশে বাস করতেন।
\v 15 তিনি তাঁদের বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন যে, আমার কাছে যিনি আপনাদেরকে পাঠিয়েছেন তাঁকে গিয়ে বলুন,”
\v 16 “সদাপ্রভু এই কথা বলেছেন, ‘দেখো, আমি এই জায়গার উপর ও তার লোকদের উপর যিহূদার রাজা বইটিতে লেখা যা কিছু পড়া হয়েছে আমি সেই মতই প্রত্যেকটা বিপদ নিয়ে আসব।
\s5
\v 17 কারণ তারা আমাকে ত্যাগ করেছে এবং অন্য দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালিয়েছে, সুতরাং এইভাবে তাদের কাজের মাধ্যমে তারা আমাকে অসন্তুষ্ট করেছে; সেইজন্য এই জায়গার বিরুদ্ধে আমার ক্রোধের আগুন জ্বলে উঠবে এবং সেটি কখনো নিভানো যাবে না’।”
\v 18 কিন্তু সদাপ্রভুর ইচ্ছা জানবার জন্য যিনি আপনাদের পাঠিয়েছেন সেই যিহূদার রাজাকে আপনারা গিয়ে এই কথা বলবেন যে, “সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর এই কথা বলেছেন, ‘আপনারা যে সব কথা শুনেছেন,
\v 19 কারণ তোমার হৃদয় কোমল হয়েছে এবং তুমি নিজেকে সদাপ্রভুর সামনে নত করেছ, সেই কারণে যখন আমি এই জায়গা ও তার লোকদের বিরুদ্ধে যে অভিশাপ ও ধ্বংসের কথা বলেছি তা শুনেছ এবং তোমার নিজের পোশাক ছিঁড়েছ এবং আমার সামনে কেঁদেছ। তুমি এই সব করেছ বলে আমি সদাপ্রভু তোমার প্রার্থনা শুনেছি’। এটিই হলো সদাপ্রভুর ঘোষণা।
\s5
\v 20 অতএব দেখ, আমি তোমাকে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে নিয়ে যাব এবং তুমি শান্তিতে নিজের কবরে কবর প্রাপ্ত হবে। এই জায়গা ও লোকদের উপর আমি যে সব দুর্ঘটনা নিয়ে আসব সে সব তোমার চোখ দেখতে পাবে না।” তখন তাঁরা হুল্‌দার বাক্য নিয়ে রাজার কাছে ফিরে গেলেন।
\s5
\c 23
\p
\v 1 পরে রাজা লোক পাঠিয়ে যিহূদা ও যিরূশালেমের সমস্ত প্রাচীন নেতাদের ডেকে তাঁর কাছে জড়ো করলেন।
\v 2 তখন রাজা যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের, যাজকদের, ভাববাদীদের এবং ছোট ও মহান সমস্ত লোকদের তাঁর সঙ্গে নিয়ে সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন। তখন তিনি সদাপ্রভুর গৃহে ব্যবস্থার যে বইটি পাওয়া গিয়েছিল তার সমস্ত কথা তিনি তাদের শুনিয়ে পড়লেন।
\s5
\v 3 রাজা মঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে সদাপ্রভুর পথে চলবার জন্য এবং সমস্ত মন প্রাণ দিয়ে তাঁর সব আদেশ, নিয়ম ও নির্দেশ মেনে চলবার জন্য, অর্থাৎ এই বইয়ের মধ্যে লেখা ব্যবস্থার সমস্ত কথা পালন করবার জন্য সদাপ্রভুর সামনে প্রতিজ্ঞা করলেন এবং সমস্ত লোকেরাও রাজার সঙ্গে একই প্রতিজ্ঞায় সম্মতি দিল।
\s5
\v 4 রাজা তখন বাল দেবতা ও আশেরা এবং আকাশের সমস্ত তারাগুলোর পূজার জন্য তৈরী সব জিনিসপত্র সদাপ্রভুর ঘর থেকে বের করে ফেলবার জন্য মহাযাজক হিল্কিয়কে, দ্বিতীয় শ্রেণীর যাজককে এবং দারোয়ানদের আদেশ দিলেন। তিনি সেগুলো যিরূশালেমের বাইরে কিদ্রোণ উপত্যকার মাঠে পুড়িয়ে দিলেন এবং ছাইগুলো বৈথেলে নিয়ে গেলেন।
\v 5 তিনি যিহূদার শহরগুলোর এবং যিরূশালেমের চারপাশের উঁচু স্থানগুলোতে ধূপ জ্বালাবার জন্য যিহূদার রাজারা যে সব প্রতিমাপূজাকারী যাজকদের নিযুক্ত করেছিলেন, অর্থাৎ যারা বাল দেবতা, চাঁদ, সূর্য, গ্রহদের এবং আকাশের সমস্ত বাহিনীদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাত তাদের তিনি দূর করে দিলেন।
\s5
\v 6 তিনি সদাপ্রভুর ঘর থেকে আশেরার মূর্তির খুঁটিটা বার করে নিয়ে এসে যিরূশালেমের বাইরে কিদ্রোণ উপত্যকাতে সেটা নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দিলেন। তারপর সেটা গুঁড়া করলেন এবং তার ধুলো সাধারণ লোকদের কবরের উপরে ছড়িয়ে দিলেন।
\v 7 পুরুষ বেশ্যাদের যে কামরাগুলো সদাপ্রভুর গৃহে ছিল যেখানে স্ত্রীলোকেরা আশেরার জন্য কাপড় বুনত তিনি সেগুলো ভেঙ্গে পরিষ্কার করে দিলেন।
\s5
\v 8 যোশিয় যিহূদার শহর ও গ্রামগুলো থেকে সমস্ত যাজকদের বাইরে আনালেন এবং গেবা থেকে বের্‌শেবা পর্যন্ত যে সব পূজার উঁচু স্থানগুলোতে সেই যাজকদেরা ধূপ জ্বালাত সেগুলো অশূচি করে দিলেন। তিনি শাসনকর্তা যিহোশূয়ের ফটকে ঢোকার পথে যে সব পূজার উঁচু স্থান ছিল সেগুলো ভেঙ্গে ফেললেন। এই ফটকদ্বার শহরের প্রধান ফটকে প্রবেশকারীর বাঁদিকে ছিল।
\v 9 সেই উঁচুস্থানগুলোর যাজকদের যিরূশালেমে সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদীতে বলিদান করতে অনুমতি ছিল না, কিন্তু তারা অন্যান্য যাজক ভাইদের সঙ্গে খামি ছাড়া রুটি খেতে পারত।
\s5
\v 10 অন্য কেউ যাতে মোলক দেবতার উদ্দেশ্যে নিজের ছেলে বা মেয়েকে আগুনে পুড়িয়ে হোমবলি উৎসর্গ করতে না পারে সেইজন্য যোশিয় বেন্‌হিন্নোম উপত্যকার তোফৎ নামে জায়গাটা অশূচি করলেন।
\v 11 যিহূদার রাজারা যে সব রথ ও ঘোড়াগুলো সূর্যের উদ্দেশ্যে দিয়েছিলেন যোশিয় সেই ঘোড়াগুলো দূর করে দিয়ে রথগুলো পুড়িয়ে দিলেন। সদাপ্রভুর গৃহে ঢোকবার পথের পাশে, উঠানের মধ্যে, নথন-মেলক নামে একজন রাজকর্মচারীর কামরার কাছে ঘোড়াগুলো রাখা হত।
\s5
\v 12 রাজা আহসের উপরের কামরার ছাদের উপরে যিহূদার রাজারা যে সব যজ্ঞবেদী তৈরী করেছিলেন এবং সদাপ্রভুর গৃহের দুটি উঠানে মনঃশি যে সব যজ্ঞবেদী তৈরী করেছিলেন যোশিয় সেগুলো ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে কিদ্রোণ উপত্যকায় ফেলে দিলেন।
\v 13 যিরূশালেমের পূর্ব দিকে ধ্বংসের পাহাড়ের দক্ষিণে যে সব উঁচু স্থান ছিল সেগুলো তিনি অশূচি করলেন। ইস্রায়েলের রাজা শলোমন সীদোনীয়দের জঘন্য দেবী অষ্টোরতের জন্য, মোয়াবের জঘন্য দেবতা কমোশের জন্য এবং অম্মোনের লোকদের জঘন্য দেবতা মিল্কমের জন্য এই সব উঁচু স্থান তৈরী করেছিলেন। সে সকলই তিনি অশূচি করলেন।
\v 14 যোশিয় রাজা পবিত্র পাথরগুলো ভেঙ্গে ফেললেন এবং আশেরার মূর্তিগুলিও কেটে ফেললেন আর সেই জায়গাগুলো মানুষের হাড়ে পূরণ করে দিলেন।
\s5
\v 15 নবাটের ছেলে যারবিয়াম যিনি ইস্রায়েলকে দিয়ে পাপ করিয়েছিলেন তিনি বৈথেলে যে যজ্ঞবেদী ও উঁচু স্থান তৈরী করেছিলেন সেটি যোশিয় ভেঙ্গে দিয়েছিলেন। যোশিয় সেই উঁচু স্থানটা আগুনে পুড়িয়ে দিলেন ও পিষে গুড়ো করলেন।
\v 16 তারপর তিনি চারপাশে তাকিয়ে দেখলেন এবং পাহাড়ের কাছে কিছু কবর দেখতে পেলেন। তিনি তাঁর লোক পাঠিয়ে সেই কবর থেকে হাড় আনিয়ে সেগুলো যজ্ঞবেদীর উপর পোড়ালেন এবং সেটি অশূচি করলেন। সদাপ্রভুর সেই কথা অনুযায়ী সবই হয়েছিল যা ঈশ্বরের লোক সব ঘটনার কথা আগে ঘোষণা করেছিলেন।
\s5
\v 17 তখন তিনি বললেন, “আমি ওটা কোন স্তম্ভ দেখতে পাচ্ছি?” শহরের লোকেরা তাঁকে বলল, “ঈশ্বরের যে লোক যিহূদা থেকে এসে বৈথেলের যজ্ঞবেদীর বিরুদ্ধে আপনার এই সমস্ত কাজের কথা প্রচার করেছিলেন, এটি তাঁরই কবর।”
\v 18 তখন যোশিয় বললেন, “ওটা থাকুক; কেউ যেন তাঁর হাড়গুলো না সরিয়ে দেয়।” সুতরাং লোকেরা তাঁর হাড়গোড় এবং যে ভাববাদী শমরিয়া থেকে এসেছিলেন তাঁর হাড়গোড় তেমনই থাকতে দিল।
\s5
\v 19 শমরিয়ার শহর ইস্রায়েলের রাজারা উঁচু স্থানে যে সব মন্দির তৈরী করে সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করেছিলেন, যোশিয় সেগুলো দূর করে দিলেন এবং সেগুলির অবস্থা বৈথেলে যেমন করেছিলেন ঠিক সেই রকম করলেন।
\v 20 তিনি সেই সব যজ্ঞবেদীর উপরে সেখানকার যাজকদের বলিদান করলেন এবং সেগুলির উপর মানুষের হাড় পোড়ালেন। তারপরে তিনি যিরূশালেমে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 21 তখন রাজা সব লোকদের আদেশ দিয়ে বললেন, “ব্যবস্থার বইয়ে যেমন লেখা আছে তেমনি করে আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব পালন করুন।”
\v 22 ইস্রায়েলীয়দের শাসনকালে বিচারকদের আমলে কিম্বা ইস্রায়েল ও যিহূদার রাজাদের আমলে এই ধরনের নিস্তারপর্ব কখনো পালন করা হয় নি।
\v 23 যদিও যোশিয় রাজার রাজত্বকালে আঠারো বছরের সময়ে যিরূশালেমে সদাপ্রভুর জন্য এই নিস্তারপর্ব পালন করা হয়েছিল।
\s5
\v 24 এছাড়া যারা মৃতদের সঙ্গে এবং যারা মন্দ আত্মার সঙ্গে কথা বলতেন যোশিয় তাদের তাড়িয়ে দিলেন। তিনি পারিবারিক দেবতার মূর্তি, প্রতিমা এবং যিহূদা ও যিরূশালেমে যে সব ঘৃণার জিনিসপত্র দেখতে পেলেন সেগুলোও সব দূর করে দিলেন। হিল্কিয় যাজক সদাপ্রভুর গৃহে যে ব্যবস্থার কথা লেখা বই খুঁজে পেয়েছিলেন তার সব বাক্য যেন সঠিকভাবে মান্য করা হয় সেইজন্য যোশিয় এই সব কাজ করেছিলেন।
\v 25 যোশিয় রাজার আগে আর কোনো রাজাই তাঁর মত ছিলেন না যিনি তাঁর মত সমস্ত মন, প্রাণ ও শক্তি দিয়ে মোশির সমস্ত ব্যবস্থা অনুযায়ী সদাপ্রভুর পথে চলতেন। না কোনো রাজা যোশিয় রাজার মত পরে উঠেছিলেন।
\s5
\v 26 তবুও, যিহূদার বিরুদ্ধে যে ভয়ংকর ক্রোধে সদাপ্রভু প্রজ্বলিতি হয়ে উঠেছিলেন তা থেকে তিনি ফিরলেন না, যেমন মনঃশির অসন্তোষ জনক কাজের ফলে সদাপ্রভু অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন।
\v 27 সেইজন্য সদাপ্রভু বললেন, “আমি আমার চোখের সামনে থেকে যেমন করে আমি ইস্রায়েলকে দূর করেছি তেমনি করে যিহূদাকেও দূর করব, আর যে শহরকে আমি বেছে নিয়েছিলাম সেই যিরূশালেমকে এবং যার সম্বন্ধে আমি বলেছিলাম, ‘আমার নাম সেখানে থাকবে’ সেই ঘরকেও আমি অগ্রাহ্য করব।”
\s5
\v 28 যোশিয়ের অন্যান্য সমস্ত অবশিষ্ট কাজের কথা যা কিছু তিনি করেছিলেন যিহূদার রাজাদের ইতিহাস বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 29 তাঁর রাজত্বের সময়ে মিসরের রাজা ফরৌণ নখো অশূর রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ইউফ্রেটিস নদীর দিকে গেলেন। তখন যোশিয় রাজা নখোর সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য বের হলেন এবং ফরৌণ নখো যুদ্ধ করে তাঁকে মগিদ্দোতে মেরে ফেললেন।
\v 30 যোশিয়ের দাসেরা তাঁর মৃত দেহ রথে করে মগিদ্দো থেকে যিরূশালেমে নিয়ে আসলো এবং তাঁর নিজের কবরে তাঁকে কবর দিল। পরে দেশের লোকেরা যোশিয়ের ছেলে যিহোয়াহসকে অভিষেক করে তাঁর বাবার জায়গায় তাঁকে রাজা করল।
\s যিহোয়াহস ও চারজন রাজার বিবরণ। যিরূশালেম ও যিহুদা রাজ্যের ধ্বংস।
\p
\s5
\v 31 যিহোয়াহস তেইশ বছর বয়সে ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং তিনি তিন মাস যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল হমূটল; তিনি লিব্‌নার বাসিন্দা যিরমিয়ের মেয়ে ছিলেন।
\v 32 যিহোয়াহস তাঁর পূর্বপুরুষরা যেমন করেছিলেন, তেমনই তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন।
\v 33 ফরৌণ নখো তাঁকে হমাৎ দেশের রিব্‌লাতে আটক করে রাখলেন যেন তিনি যিরূশালেমে রাজত্ব করতে না পারেন। তখন নখো একশো তালন্ত রূপো (প্রায় চার টন রূপো) ও এক তালন্ত সোনা (ঊনচল্লিশ কেজি সোনা) যিহূদা দেশের উপর জরিমানা করলেন।
\s5
\v 34 পরে ফরৌণ নখো যোশিয়ের অন্য ছেলে ইলিয়াকীমকে তাঁর বাবা যোশিয়ের জায়গায় রাজা করলেন এবং ইলিয়াকীমের নাম বদল করে যিহোয়াকীম রাখলেন। কিন্তু ফরৌণ নখো যিহোয়াহসকে মিসরে নিয়ে গেলেন এবং সেখানে যিহোয়াহস মারা গেলেন।
\v 35 যিহোয়াকীম ফরৌণকে সেই সোনা ও রুপো দিলেন। ফরৌণের আদেশ অনুসারে তা দেওয়ার জন্য তিনি দেশের লোকদের উপর কর চাপালেন। দেশের প্রত্যেকে মানুষের উপর কর ধার্য্য করে সেই সোনা ও রুপো তিনি ফরৌণ নখোকে দেবার জন্য দেশের লোকদের কাছ থেকে আদায় করলেন।
\s5
\v 36 যিহোয়াকীমের বয়স পঁচিশ বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করলেন। তিনি এগারো বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল সবীদা; তিনি ছিলেন রূমায় বাসিন্দা পদায়ের মেয়ে।
\v 37 যিহোয়াকীম তাঁর পূর্বপুরুষের যেমন করেছিলেন তেমনই সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তাই করতেন।
\s5
\c 24
\p
\v 1 যিহোয়াকীমের সময়ে বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসর যিহূদা দেশ আক্রমণ করলেন। যিহোয়াকীম তিন বছর পর্যন্ত তাঁর দাস ছিলেন। পরে তিনি ফিরলেন এবং নবূখদ্‌নিৎসরের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন।
\v 2 সদাপ্রভু যিহোয়াকীমের বিরুদ্ধে বাবিলোনীয়, অরামীয়, মোয়াবীয় ও অম্মোনীয় লুটেরাদের পাঠিয়ে দিলেন। তাঁর দাস ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে যে কথা বলেছিলেন সেই অনুযায়ী যিহূদা দেশকে ধ্বংস করবার জন্য তিনি তাদের পাঠিয়ে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 3 বস্তুত সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারেই যিহূদার প্রতি এই সব ঘটেছিল যাতে তিনি নিজের চোখের সামনে থেকে তাদের দূর করে দিতে পারেন। কারণ এই সব ঘটেছিল মনঃশির সমস্ত পাপের জন্য,
\v 4 এবং নির্দোষ লোকদের রক্তপাতের জন্য, কারণ তিনি তাদের রক্তে যিরূশালেম পূর্ণ করেছিলেন, আর সদাপ্রভু তা ক্ষমা করতে রাজী হলেন না।
\s5
\v 5 যিহোয়াকীমের অন্যান্য অবশিষ্ট সমস্ত কাজের বিবরণ যিহূদার রাজাদের ইতিহাস নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\v 6 পরে তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে নিদ্রাগত হলেন এবং তাঁর ছেলে যিহোয়াখীন তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 7 মিসরের রাজা আক্রমণ করবার জন্য তাঁর রাজ্য থেকে আর বের হন নি, কারণ বাবিলের রাজা মিসরের রাজার যতটা রাজ্য ছিল মিসরের ছোট নদী থেকে ইউফ্রেটিস নদী পর্যন্ত সমস্ত রাজ্যটা দখল করে নিয়েছিলেন।
\s5
\v 8 যিহোয়াখীন যখন রাজত্ব শুরু করেন তখন তাঁর বয়স আঠারো বছর ছিল এবং তিনি তিন মাস রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল নহুষ্টা; তিনি যিরূশালেমের বাসিন্দা ইল্‌নাথনের মেয়ে ছিলেন।
\v 9 যিহোয়াখীন সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তাই করতেন, তিনি তাঁর বাবার যা করেছিলেন তেমনই করলেন।
\s5
\v 10 সেই সময়ে বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসরের সৈন্যেরা যিরূশালেম আক্রমণ করলো এবং সেই শহর অবরোধ করল।
\v 11 তাঁর সৈন্যেরা যখন শহর অবরোধ করছিল তখন নবূখদ্‌নিৎসর নিজে শহরে গিয়েছিলেন।
\v 12 এবং যিহূদার রাজা যিহোয়াখীন, তাঁর মা, তাঁর সাহায্যকারীরা, তাঁর সেনাপতিরা ও তাঁর কর্মচারীরা সবাই বাবিলের রাজার হাতে নিজেদের তুলে দিলেন। আর বাবিলের রাজা রাজত্বের আট বছরের সময় তিনি যিহোয়াখীনকে বন্দী করে নিয়ে গেলেন।
\s5
\v 13 যেমন সদাপ্রভু বলেছিলেন তেমনি করে নবূখদ্‌নিৎসর সদাপ্রভুর ঘর ও রাজবাড়ী থেকে সব ধনরত্ন নিয়ে গেলেন এবং ইস্রায়েলের রাজা শলোমন সদাপ্রভুর গৃহের জন্য সোনা দিয়ে যে সব জিনিস তৈরী করেছিলেন তা তিনি কেটে টুকরা টুকরা করলেন।
\v 14 তিনি যিরূশালেমের সবাইকে, অর্থাৎ সমস্ত নেতাবর্গ ও সমস্ত যোদ্ধা বীর, সমস্ত শিল্পকার ও কর্মকারদের মোট দশ হাজার লোককে বন্দী করে নিয়ে গেলেন। দেশে গরীব লোক ছাড়া আর কাউকে অবশিষ্ট রাখলেন না।
\s5
\v 15 নবূখদ্‌নিৎসর যিহোয়াখীনকে বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি যিরূশালেম থেকে রাজার মাকে, তাঁর স্ত্রীদের, তাঁর কর্মচারীদের এবং দেশের গণ্যমান্য লোকদেরও বন্দী করে তিনি বাবিলে নিয়ে গেলেন।
\v 16 বাবিলের রাজা সমস্ত যুদ্ধের জন্য উপযুক্ত ও শক্তিশালী সাত হাজার যোদ্ধার পুরো সৈন্যদল এবং এক হাজার শিল্পকার এবং কামারদের বন্দী করে বাবিলে নিয়ে গিয়েছিলেন।
\v 17 বাবিলের রাজা যিহোয়াখীনের বাবার ভাই মত্তনিয়কে তাঁর জায়গায় রাজা করলেন এবং তাঁর নাম বদ্‌ল করে সিদিকিয় রাখলেন।
\s5
\v 18 সিদিকিয় একুশ বছর বয়সে ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন। তিনি যিরূশালেমে এগারো বছর রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল হমূটল; তিনি ছিলেন লিব্‌নার বাসিন্দা যিরমিয়ের মেয়ে।
\v 19 সিদিকিয় সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন, যিহোয়াকীম যা করেছিলেন তিনি তা সবই করতেন।
\v 20 সদাপ্রভুর ক্রোধের কারণে এবং যতক্ষণ না তিনি তাঁর সামনে থেকে তাদের দূর করে দিলেন, যিরূশালেম ও যিহূদায় এই সব ঘটনা ঘটেছিল। তখন সিদিকিয় বাবিলের রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করলেন।
\s5
\c 25
\p
\v 1 সিদিকিয়ের রাজত্বের নবম বছরের দশম মাসের দশ দিনের দিন নবূখদ্‌নিৎসর বাবিলের রাজা তাঁর সব সৈন্যদল নিয়ে যিরূশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে এলেন। তিনি শহরের বাইরে শিবির তৈরী করলেন এবং শহরের চারপাশে ঘিরে উঁচু দেয়াল তৈরী করলেন।
\v 2 রাজা সিদিকিয়ের রাজত্বের এগারো বছর পর্যন্ত শহরটা অবরোধ করে রাখা হয়েছিল।
\v 3 সেই বছরে চতুর্থ মাসের নয় দিনের দিন শহরে দুর্ভিক্ষের অবস্থা এমন বেশি হল যে, দেশের লোকদের জন্য কিছুই খাদ্য ছিল না।
\s5
\v 4 পরে শহরের একটা জায়গা ভেঙ্গে গেল এবং রাতের বেলা যিহূদার সমস্ত সৈন্য রাজার বাগানের কাছে দুই দেয়ালের মাঝখানের ফটক দিয়ে পালিয়ে গেল। যদিও কলদীয়েরা তখনও শহরটা চারিদিকে ঘেরাও করে ছিল। আর রাজা অরাবার রাস্তার দিকে চলে গেলেন।
\v 5 কিন্তু কলদীয় সৈন্যদল সিদিকিয় রাজার পিছনে তাড়া করে যিরীহোর উপত্যকাতে তাঁকে ধরে ফেলল। তাঁর সমস্ত সৈন্য তাঁর কাছ থেকে আলাদা হয়ে গিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল।
\s5
\v 6 তাঁরা রাজাকে বন্দী করে রিব্‌লাতে বাবিলের রাজার কাছে নিয়ে গেল। সেখানে তারা তাঁর উপর শাস্তির আদেশ দিল।
\v 7 সৈন্যেরা সিদিকিয়ের চোখের সামনেই তাঁর ছেলেদের হত্যা করলো। তারপর তাঁর চোখ দুটি তুলে ফেলে তাঁকে ব্রোঞ্জের শিকল দিয়ে বাঁধলো এবং তাঁকে বাবিলে নিয়ে গেল।
\s5
\v 8 পরে বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসরের রাজত্বের ঊনিশ বছরের পঞ্চম মাসের সপ্তম দিনে বাবিল রাজার দাস নবূষরদন নামে রক্ষীদলের সেনাপতি যিরূশালেমে আসলেন।
\v 9 তিনি সদাপ্রভুর গৃহে, রাজবাড়ীতে এবং যিরূশালেমের সমস্ত বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিলেন। শহরের সমস্ত প্রধান বাড়িগুলিও তিনি পুড়িয়ে দিলেন।
\v 10 রাজার রক্ষীদলের সেনাপতির অধীনে সমস্ত বাবিলীয় সৈন্যদল যিরূশালেমের চারিদিকের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলল।
\s5
\v 11 শহরের বাকী লোকরা যারা থেকে গেছিল এবং যারা দুরে নির্জন জায়গায় বাবিলের রাজার পক্ষে গিয়েছিল তাদের সবাইকে রক্ষীদলের সেনাপতি নবূষরদন বন্দী করে নিয়ে গেলেন,
\v 12 কিন্তু আঙুর ক্ষেত দেখাশোনা ও জমি চাষ করবার জন্য কিছু গরীব লোককে রক্ষীদলের সেনাপতি দেশে রেখে গেলেন।
\s5
\v 13 কলদীয়েরা সদাপ্রভুর গৃহের ব্রোঞ্জের যে দুটি থাম ছিল এবং গামলা বসাবার ব্রোঞ্জের দানিগুলি এবং পিতলের বিরাট পাত্রটি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে বাবিলে নিয়ে গেলন।
\v 14 এছাড়া সব পাত্র, বেল্‌চা, সল্‌তে চিম্‌টা, হাতা এবং উপাসনা গৃহে সেবা কাজের জন্য অন্যান্য সমস্ত ব্রোঞ্জের জিনিস কলদীয়েরা নিয়ে গেল।
\v 15 আর আগুন রাখার পাত্র এবং গামলা যে গুলি সোনা ও রুপো র তৈরী, সে সমস্ত জিনিসও রাজার রক্ষীদলের সেনাপতি নিয়ে গেলেন।
\s5
\v 16 সদাপ্রভুর গৃহে র জন্য শলোমন যে দুটি থাম, বড় জলপাত্র এবং আসনগুলো তৈরী করিয়েছিলেন সেগুলিতে এতো ব্রোঞ্জ ছিল যে ওজন করা অসম্ভব ছিল।
\v 17 প্রত্যেকটা থাম ছিল আঠারো হাত উঁচু ও তার উপরে মাথা ছিল যার উচ্চতা ছিল তিন হাত উঁচু। মাথাটার চারপাশ ব্রোঞ্জের শিকল ও ব্রোঞ্জের ডালিম দিয়ে সাজানো ছিল। দ্বিতীয় থামটিও প্রথমটির মতই তৈরী ছিল।
\s5
\v 18 প্রধান যাজক সরায়, দ্বিতীয় যাজক সফনিয় ও তিনজন দারোয়ানকে রক্ষীদলের সেনাপতি বন্দী করে নিয়ে গেলেন।
\v 19 যারা তখনও শহরে ছিল তাদের মধ্য থেকে তিনি যোদ্ধাদের উপরে নিযুক্ত একজন কর্মচারী ও রাজার পাঁচজন উপদেশদাতাকে ধরলেন। এছাড়া সেনাপতির লেখক যিনি সৈন্যদলে লোক সংগ্রহ করতেন তাঁকে এবং যারা শহরের মধ্যে ছিলেন তাদের মধ্যে আরও ষাটজন গুরুত্বপূর্ণ লোককেও ধরলেন।
\s5
\v 20 রক্ষীদলের সেনাপতি নবূষরদন তাদের সবাইকে রিব্‌লাতে বাবিলের রাজার কাছে বন্দী করে নিয়ে গেলেন।
\v 21 বাবিলের রাজা হমাৎ দেশের রিব্‌লাতে এই সব লোকদের হত্যা করলেন। এইভাবে যিহূদার লোকদের বন্দী করে নিজের দেশ থেকে নিয়ে যাওয়া হল।
\s5
\v 22 বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসর যে সব লোকদের যিহূদা দেশে অবশিষ্ট রেখে গিয়েছিলেন তাদের উপরে তিনি শাফনের নাতি, অর্থাৎ অহীকামের ছেলে গদলিয়কে শাসনকর্তা হিসাবে নিযুক্ত করলেন।
\v 23 বাবিলের রাজা গদলিয়কে শাসনকর্তা করে নিযুক্ত করেছেন শুনে যিহূদার কিছু সেনাপতি ও তাঁদের লোকেরা, অর্থাৎ এই লোকেরা ছিল নথনিয়ের ছেলে ইশ্মায়েল, কারেয়ের ছেলে যোহানন, নটোফাতীয় তন্‌হূমতের ছেলে সরায় ও মাখাথীয়ের ছেলে যাসনিয় এবং তাদের লোকেরা মিসপাতে গদলিয়ের কাছে আসলেন।
\v 24 গদলিয় তাদের কাছে এবং তাদের লোকদের কাছে এক শপথ করলেন এবং তাদের বললেন, “আপনারা কলদীয় দাসেদের ভয় করবেন না। আপনারা দেশে বাস করুন এবং বাবিলের রাজার সেবা করুন, তাতে আপনাদের মঙ্গল হবে।”
\s5
\v 25 কিন্তু সাত মাসের সময়ে ইলীশামার নাতি, অর্থাৎ নথনিয়ের ছেলে রাজবংশীয় ইশ্মায়েল দশজন লোক সঙ্গে করে নিয়ে এসে গদলিয়কে আক্রমণ করলেন। যিহূদার যে সব লোকেরা ও বাবিলীয়েরা মিসপাতে তাঁর সঙ্গে ছিল তাদের সবার সঙ্গে গদলিয়কে হত্যা করলেন।
\v 26 তখন ছোট বড় সব লোক ও সেনাপতিরা উঠে মিসরে চলে গেল। কারণ তারা বাবিলীয়দের ভয় পেয়েছিল।
\s5
\v 27 পরে যিহূদার রাজা যিহোয়াখীনের বন্দীত্বের সাঁইত্রিশ বছরের সময় ইবিল মরোদক বাবিলের রাজা হলেন। যে বছরে তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন সেই বছরের বারোতম মাসের সাতাশ দিনের দিন যিহোয়াখীনকে জেলখানা থেকে ছেড়ে দিলেন।
\s5
\v 28 তিনি যিহোয়াখীনের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বললেন এবং বাবিলে তাঁর সঙ্গে আর যে সব রাজারা ছিলেন তাঁদের সকলের আসন থেকেও তাঁকে আরও সম্মানের আসন দিলেন।
\v 29 ইবিল মরোদক যিহোয়াখীনের জেলখানার পোষাক খুলে দিলেন এবং জীবনের বাকী দিনগুলো নিয়মিতভাবে রাজার সঙ্গে একই টেবিলে খাওয়া দাওয়া করে কাটিয়ে দিলেন।
\v 30 তাঁর অবশিষ্ট সমস্ত জীবন ধরে রাজা নিয়মিতভাবে তাঁকে প্রতিদিনের জন্য একটা ভাতা দিতেন ও উপযুক্ত জিনিসপত্র দিতেন।

1695
13-1CH.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,1695 @@
\id 1CH
\ide UTF-8
\sts - 1 Chronicles
\h বংশাবলির প্রথম খণ্ড।
\toc1 বংশাবলির প্রথম খণ্ড।
\toc2 বংশাবলির প্রথম খণ্ড।
\toc3 1ch
\mt1 বংশাবলির প্রথম খণ্ড।
\s5
\c 1
\ms বংশাবলির প্রথম খন্ড।
\s আদমের বংশাবলি।
\p
\v 1 আদম, শেথ, ইনোশ,
\v 2 কৈনন, মহললেল, যেরদ,
\v 3 হনোক, মথূশেলহ, লেমক।
\p
\v 4 নোহ, শেম, হাম ও যেফৎ।
\p
\s5
\v 5 যেফতের ছেলেরা হল গোমর, মাগোগ, মাদয়, যবন, তুবল, মেশক ও তীরস।
\v 6 গোমরের ছেলেরা হল অস্কিনস, দীফৎ ও তোগর্ম।
\v 7 যবনের ছেলেরা হল ইলীশা, তর্শীশ, কিত্তীম ও রোদানীম।
\p
\s5
\v 8 হামের ছেলেরা হল কূশ, মিসর, পূট ও কনান।
\v 9 কূশের ছেলেরা হল সবা, হবীলা, সপ্তা, রয়মা ও সপ্তকা। রয়মার ছেলেরা হল শিবা ও দদান।
\v 10 নিম্রোদ কূশের ছেলে। তিনি পৃথিবীতে একজন ক্ষমতাশালী পুরুষ হয়ে উঠেছিলেন।
\s5
\v 11 লূদীয়, অনামীয়, লহাবীয়, নপ্তুহীয়,
\v 12 পথ্রোষীয়, কস্‌লূহীয়েরা ছিল পলেষ্টীয়দের পূর্বপুরুষ এবং কপ্তোরীয়, এই সব মিশরের বংশের লোক।
\s5
\v 13 কনানের বড় ছেলের নাম সীদোন।
\v 14 তার পরে হেৎ, যিবূষীয়, ইমোরীয়, গির্গাশীয়,
\v 15 হিব্বীয়,
\v 16 অর্কীয়, সীনীয়, অর্বদীয়, সমারীয় এবং হমাতীয়।
\p
\s5
\v 17 শেমের ছেলেরা হল এলম, অশূর, অর্ফক্‌ষদ, লূদ ও অরাম এবং ঊষ, হূল, গেথর ও মেশেক।
\v 18 অর্ফক্‌ষদ শেলহের জন্ম দিলেন ও শেলহ এবরের জন্ম দিলেন।
\v 19 এবরের দুইটি ছেলে হয়েছিল। তাদের একজনের নাম পেলগ(বিভাগ); কারণ তার সময়ে পৃথিবী ভাগ হয়েছিল; তাঁর ভাইয়ের নাম ছিল যক্তন।
\p
\s5
\v 20 যক্তনের ছেলেরা হল অল্‌মোদদ, শেলফ,
\v 21 হৎসর্মাবৎ, যেরহ, হদোরাম, ঊসল, দিক্ল,
\v 22 এবল, অবীমায়েল, শিবা,
\v 23 ওফীর, হবীলা ও যোববের জন্ম দিলেন। এরা সবাই যক্তনের ছেলে।
\p
\s5
\v 24 শেম, অর্ফক্‌ষদ, শেলহ,
\v 25 এবর, পেলগ, রিয়ূ,
\v 26 সরূগ, নাহোর, তেরহ,
\v 27 অব্রাম, অর্থাৎ অব্রাহাম।
\p
\s5
\v 28 অব্রাহামের ছেলেরা হল ইস্‌হাক ও ইশ্মায়েল।
\v 29 তাঁদের বংশের কথা এই: ইশ্মায়েলের বড় ছেলে নবায়োৎ, তার পরে কেদর, অদ্‌বেল, মিব্‌সম,
\v 30 মিশ্‌ম, দূমা, মসা, হদদ, তেমা,
\v 31 যিটূর, নাফীশ ও কেদমা। এরা ইশ্মায়েলের ছেলে।
\p
\s5
\v 32 অব্রাহামের উপপত্নী কটূরার ছেলেরা হল সিম্রণ, যক্‌ষণ, মদান, মিদিয়ন, যিশ্‌বক ও শূহ। যক্‌ষণের ছেলেরা হল শিবা ও দদান।
\v 33 মিদিয়নের ছেলেরা হল ঐফা, এফর, হনোক, অবীদ ও ইল্‌দায়া। এরা সবাই ছিল কটূরার বংশধর।
\p
\s5
\v 34 অব্রাহামের ছেলে ইস্‌হাকের ছেলেরা হল এষৌ আর ইস্রায়েল।
\v 35 এষৌর ছেলেরা হল ইলীফস, রূয়েল, যিয়ূশ, যালম ও কোরহ।
\v 36 ইলীফসের ছেলেরা হল তৈমন, ওমার, সফী, গয়িতম, কনস এবং তিম্না ও অমালেক।
\v 37 রূয়েলের ছেলেরা হল নহৎ, সেরহ, শম্ম ও মিসা।
\p
\s5
\v 38 সেয়ীরের ছেলেরা হল লোটন, শোবল, শিবিয়োন, অনা, দিশোন, এৎসর ও দীশন।
\v 39 লোটনের ছেলেরা হল হোরি ও হোমম। তিম্না ছিল লোটনের বোন।
\v 40 শোবলের ছেলেরা হল অলিয়ন, মানহৎ, এবল, শফী ও ওনম। সিবিয়োনের ছেলেরা হল অয়া ও অনা।
\s5
\v 41 অনার ছেলে হল দিশোন। দিশোনের ছেলেরা হল হম্রণ, ইশ্‌বন, যিত্রণ ও করাণ।
\v 42 এৎসরের ছেলেরা হল বিল্‌হন, সাবন ও যাকন। দীশনের ছেলেরা হল ঊষ ও অরাণ।
\p
\s5
\v 43 ইস্রায়েলীয়দের উপরে কোনো রাজা রাজত্ব করবার আগে এরা ইদোম দেশের রাজা ছিলেন; বিয়োরের ছেলে বেলা। তাঁর রাজধানীর নাম ছিল দিন্‌হাবা।
\v 44 বেলার মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় বস্রা শহরের সেরহের ছেলে যোবব রাজত্ব করেন।
\v 45 যোববের মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় তৈমন দেশের হূশম রাজা হয়েছিলেন।
\s5
\v 46 হূশমের মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় বদদের ছেলে হদদ্‌ রাজা হয়েছিলেন। তিনি মোয়াব দেশে মিদিয়নীয়দের হারিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁর রাজধানীর নাম ছিল অবীৎ।
\v 47 আর হদদের মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় মস্রেকা শহরের সম্ল রাজা হয়েছিলেন।
\v 48 আর সম্লর মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় সেই জায়গায় (ফরাৎ বা ইউফ্রেটিস) নদীর কাছে রহোবোৎ শহরের শৌল তাঁর পদে রাজা হয়েছিলেন।
\s5
\v 49 আর শৌলেরমৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় অক্‌বোরের ছেলে বাল্‌ হানন রাজা হয়েছিলেন।
\v 50 আর বাল্‌ হাননের মৃত্যুর পরে তাঁর জায়গায় হদদ্‌ রাজা হয়েছিলেন। তাঁর রাজধানীর নাম ছিল পায় এবং তাঁর স্ত্রীর নাম ছিল মহেটবেল। তিনি মট্রেদের মেয়ে এবং মেষাহবের নাতনী।
\s5
\v 51 পরে হদদের মৃত্যু হয়েছিল।
\v 52 ইদোমের দলপতিদের নাম তিম্ন, অলিয়া, যিথেৎ, অহলীবামা, এলা, পীনোন,
\v 53 কনস, তৈমন, মিব্‌সর,
\v 54 মগদীয়েল ও ঈরম। এরা সবাই ইদোমের দলপতি ছিল।
\s5
\c 2
\p
\v 1 ইস্রায়েলের ছেলেরা হল রূবেণ, শিমিয়োন, লেবি, যিহূদা, ইষাখর, সবূলূন,
\v 2 দান, যোষেফ, বিন্যামীন, নপ্তালি, গাদ ও আশের।
\s যিহূদার বংশ তালিকা
\p
\s5
\v 3 যিহূদার ছেলেরা হল এর, ওনন ও শেলা। তাঁর এই তিনজন ছেলে কনানীয় বৎ শূয়ার গর্ভে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন৷ যিহূদার বড় ছেলে সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে খারাপ হওয়াতে তিনি তাকে মেরে ফেললেন।
\v 4 যিহূদার ছেলের স্ত্রী তামরের গর্ভে যিহূদার ঔরসে পেরস ও সেরহ দুই ছেলের জন্ম হয়েছিল। যিহূদার মোট পাঁচটি ছেলে ছিল।
\s5
\v 5 পেরসের ছেলেরা হল হিষ্রোণ ও হামূল।
\v 6 সেরহের ছেলেরা হল শিম্রি, এথন, হেমন, কল্‌কোল ও দারা। এরা ছিল মোট পাঁচজন।
\v 7 কর্মির ছেলে আখর বাদ দেওয়া জিনিসের বিষয়ে অবাধ্য হয়ে ইস্রায়েলের কাঁটাস্বরূপ হয়েছিল।
\v 8 এথনের ছেলে অসরিয়।
\s5
\v 9 হিষ্রোণের ছেলেরা হল যিরহমেল, রাম ও কালুবায়।
\p
\v 10 রামের ছেলে হল অম্মীনাদব ও অম্মীনাদবের ছেলে হল নহশোন; তিনি যিহূদা বংশের নেতা ছিলেন।
\v 11 নহশোনের ছেলে সল্‌মোন ও সল্‌মোনের ছেলে বোয়স।
\v 12 বোয়সের ছেলে ওবেদ আর ওবেদের ছেলে যিশয়।
\p
\s5
\v 13 যিশয়ের বড় ছেলে হল ইলীয়াব, দ্বিতীয় অবীনাদব, তৃতীয় শম্ম,
\v 14 চতুর্থ নথনেল, পঞ্চম রদ্দয়,
\v 15 ষষ্ঠ ওৎসম ও সপ্তম দায়ূদ।
\s5
\v 16 আর তাদের বোনেরা হল সরূয়া ও অবীগল। অবীশয়, যোয়াব ও অসাহেল ছিলেন সরূয়ার তিনজন ছেলে।
\v 17 অবীগলের ছেলে অমাসা আর ইশ্মায়েলীয় যেথর ছিলেন অমাসার বাবা।
\p
\s5
\v 18 হিষ্রোণের ছেলে কালেবের স্ত্রী অসূবার গর্ভে ও যিরিয়োতের গর্ভে ছেলেমেয়ে হয়েছিল। অসূবার ছেলেরা হল যেশর, শোবব ও অর্দোন।
\v 19 পরে অসূবা মারা গেলে কালেব ইফ্রাথাকে বিয়ে করলেন। ইফ্রাথার গর্ভে হূরের জন্ম হয়েছিল।
\v 20 হূরের ছেলে ঊরি ও ঊরির ছেলে বৎসলেল।
\p
\s5
\v 21 পরে হিষ্রোণ ষাট বছর বয়সে মাখীরের মেয়ের কাছে গেল; সে তাকে বিয়ে করল, তাতে সেই স্ত্রী তার ঔরসে সগূবের জন্ম দিল।
\v 22 সগূবের ছেলের যায়ীর, গিলিয়দ দেশে তাঁর তেইশটা গ্রাম ছিল।
\s5
\v 23 আর গশূর ও অরাম তাদের থেকে যায়ীরের গ্রাম সব নিয়ে নিল এবং তার সঙ্গে কনাৎ ও তার উপনগর সব, অর্থাৎ ষাটটা গ্রাম অধিকার করে নিল। এরা সবাই গিলিয়দের বাবা মাখীরের বংশের লোক।
\p
\v 24 কালেব ইফ্রাথায় হিষ্রোণের মৃত্যুর পর হিষ্রোণের স্ত্রী অবিয়া তাঁর জন্য তকোয়ের বাবা অসহূরকে জন্ম দিল।
\p
\s5
\v 25 হিষ্রোণের বড় ছেলে যিরহমেলের ছেলেরা হল; বড় ছেলে রাম, তারপর বূনা, ওরণ, ওৎসম ও অহিয়।
\v 26 অটারা নামে যিরহমেলের আর একজন স্ত্রী ছিল। সে ওনমের মা ছিল।
\v 27 যিরহমেলের বড় ছেলে রামের ছেলেরা হল মাষ, যামীন ও একর।
\v 28 ওনমের ছেলেরা হল শম্ময় ও যাদা। শম্ময়ের ছেলেরা হল নাদব ও অবীশূর।
\s5
\v 29 অবীশূরের স্ত্রীর নাম ছিল অবীহয়িল। তার গর্ভে অহবান ও মোলীদের জন্ম হয়েছিল।
\v 30 নাদবের ছেলেরা হল সেলদ ও অপ্পয়িম, কিন্তু সেলদ ছেলে ছাড়াই মারা গেল।
\v 31 অপ্পয়িমের ছেলে যিশী, যিশীর ছেলে শেশন ও শেশনের ছেলে অহলয়।
\v 32 শম্ময়ের ভাই যাদার ছেলেরা হল যেথর ও যোনাথন; যেথর ছেলে ছাড়াই মারা গেলেন।
\v 33 যোনাথনের ছেলেরা হল পেলৎ ও সাসা। এরা ছিল যিরহমেলের বংশধর।
\p
\s5
\v 34 শেশনের শুধু মেয়ে ছিল, কোনো ছেলে ছিল না। যার্হা নামে শেশনের একজন মিশরীয় দাস ছিল।
\v 35 শেশন তার দাস যার্হার সঙ্গে তার একজন মেয়ের বিয়ে দিল এবং সেই মেয়ের গর্ভে অত্তয়ের জন্ম হয়েছিল।
\s5
\v 36 অত্তয়ের ছেলে নাথন, নাথনের ছেলে সাবদ,
\v 37 সাবদের ছেলে ইফ্‌লল, ইফ্‌ললের ছেলে ওবেদ,
\v 38 ওবেদের ছেলে যেহূ, যেহূর ছেলে অসরিয়,
\s5
\v 39 অসরিয়ের ছেলে হেলস, হেলসের ছেলে ইলীয়াসা,
\v 40 ইলীয়াসার ছেলে সিস্‌ময়, সিস্‌ময়ের ছেলে শল্লুম,
\v 41 শল্লুমের ছেলে যিকমিয় আর যিকমিয়ের ছেলে ইলীশামা।
\p
\s5
\v 42 যিরহমেলের ভাই কালেবের ছেলেদের মধ্যে মেশা ছিল বড়। মেশার ছেলে সীফ, সীফের ছেলে মারেশা আর মারেশার ছেলে হিব্রোণ।
\v 43 হিব্রোণের ছেলেরা হল কোরহ, তপূহ, রেকম ও শেমা।
\v 44 শেমার ছেলে রহম, রহমের ছেলে যর্কিয়ম। রেকমের ছেলে শম্ময়,
\s5
\v 45 শম্ময়ের ছেলে মায়োন আর মায়োনের ছেলে বৈৎসূর।
\v 46 কালেবের উপপত্নী ঐফার গর্ভে হারণ, মোৎসা ও গাসেসের জন্ম হয়েছিল এবং হারণের ছেলে গাসেস।
\v 47 যেহদয়ের ছেলেরা হল রেগম, যোথম, গেসন, পেলট, ঐফা ও শাফ।
\s5
\v 48 কালেবের উপপত্নী মাখার গর্ভে শেবর, তির্হনঃ, শাফ ও শিবার জন্ম হয়েছিল।
\v 49 আরও সে মদ্‌মন্নার বাবা শাফকে এবং মক্‌বেনার ও গিবিয়ার বাবা শিবার জন্ম দিল; আর কালেবের মেয়ের নাম ছিল অক্‌ষা। এরা ছিল কালেবের বংশধর।
\p
\v 50 ইফ্রাথার বড় ছেলে বিনহূর; শোবল কিরিয়ৎ যিয়ারীমের বাবা;
\s5
\v 51 বৈৎ লেহমের বাবা শল্‌ম, বৈৎ গাদের বাবা হারেফ।
\s5
\v 52 কিরিয়ৎ যিয়ারীমের বাবা শোবলের ছেলে হরোয়া, মনূহোতীয়দের অর্ধেক লোক।
\v 53 আর কিরিয়ৎ যিয়ারীমের গোষ্ঠী; যিত্রীয়, পূথীয়, শূমাথীয় ও মিশ্রায়ীয়েরা, এদের থেকে সরাথীয় ও ইষ্টায়োলীয় বংশের সৃষ্টি হয়েছিল।
\s5
\v 54 শল্‌মের বংশের লোকেরা হল বৈৎলেহম ও নটোফাতীয়েরা, অট্রোৎ বৈৎ যোয়াব, মনহতীয়দের অর্ধেক লোক, সরায়ীয়।
\v 55 আর যাবেষে বাসকারী লেখকেরা, তিরিয়াথীয়েরা, শিমিয়থীয়েরা ও সূখাথীয়েরা। এরা ছিল কীনীয় গোষ্ঠী, রেখবীয়দের বাবা হম্মতের বংশের লোক।
\s5
\c 3
\p
\v 1 দায়ূদের যে সব ছেলেদের হিব্রোণে জন্ম হয়েছিল তারা হল তাঁর বড় ছেলে অম্নোন, সে যিষ্রিয়েলীয়া অহীনোয়মের গর্ভে জন্মানো; দ্বিতীয় দানিয়েল, সে কর্মিলীয়া অবীগলের গর্ভে জন্মানো;
\v 2 তৃতীয় অবশালোম, সে গশূরের রাজা তল্‌ময়ের মেয়ে মাখার গর্ভে জন্মানো; চতুর্থ ছেলে ছিল হগীতের ছেলে আদোনিয়;
\v 3 পঞ্চম ছেলে শফটিয়, সে অবীটলের গর্ভে জন্মানো; ষষ্ঠ যিত্রিয়ম, সে তাঁর স্ত্রী ইগ্লার গর্ভে জন্মানো।
\s5
\v 4 দায়ূদ হিব্রোণে সাড়ে সাত বছর রাজত্ব করেছিলেন, আর সেই সময় হিব্রোণে তাঁর এই ছয় ছেলের জন্ম হয়েছিল। দায়ূদ তেত্রিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন।
\v 5 আর তাঁর এই সব ছেলে যিরুশালেমে জন্মায়; বত্শূয়ার(বৎশেবা) গর্ভে তাঁর চারজন ছেলের জন্ম হয়েছিল। তারা হল শিমিয়, শোবব, নাথন ও শলোমন।
\s5
\v 6 আর যিভর, ইলীশামা, ইলীফেলট,
\v 7 নোগহ, নেফগ, যাফিয়,
\v 8 ইলীশামা, ইলীয়াদা, ও ইলীফেলট।
\v 9 এরা ছিল দায়ূদের ছেলে, আর তাদের বোনের নাম ছিল তামর। উপপত্নীদের সন্তানদের থেকে এরা আলাদা।
\p
\s5
\v 10 শলোমনের ছেলে রহবিয়াম, তাঁর ছেলে অবিয়, তাঁর ছেলে আসা, তাঁর ছেলে যিহোশাফট,
\v 11 তাঁর ছেলে যোরাম, তাঁর ছেলে অহসিয়, তাঁর ছেলে যোয়াশ,
\v 12 যোয়াশের ছেলে অমৎসিয়, তাঁর ছেলে অসরিয়, তাঁর ছেলে যোথম,
\s5
\v 13 তাঁর ছেলে আহস, তাঁর ছেলে হিষ্কিয়, তাঁর ছেলে মনঃশি,
\v 14 তাঁর ছেলে আমোন ও তাঁর ছেলে যোশিয়।
\s5
\v 15 যোশিয়ের প্রথম ছেলে যোহানন, দ্বিতীয় যিহোয়াকীম, তৃতীয় সিদিকিয়, চতুর্থ শল্লুম।
\v 16 যিহোয়াকীমের ছেলেরা হল যিকনিয় ও সিদিকিয়।
\p
\s5
\v 17 বন্দী যিকনিয়ের ছেলেরা হল শল্টীয়েল,
\v 18 মল্‌কীরাম, পদায়, শিনৎসর, যিকমিয়, হোশামা ও নদবিয়।
\s5
\v 19 পদায়ের ছেলেরা হল সরুব্বাবিল ও শিমিয়ি। সরুব্বাবিলের ছেলেরা হল মশল্লুম ও হনানিয়। তাদের বোনের নাম ছিল শলোমীৎ।
\v 20 আর হশুবা, ওহেল, বেরিখিয়, হসদিয় ও যুশবহেষদ, এই পাঁচ জন।
\p
\v 21 হনানিয়ের বংশের লোকেরা হল পলটিয় ও যিশায়াহ; এবং রফায়ের, অর্ণনের, ওবদিয়ের ও শখনিয়ের ছেলেরা।
\s5
\v 22 শখনিয়ের বংশের লোকেরা হল শময়িয় ও তার ছেলেরা; হটুশ, যিগাল, বারীহ, নিয়রিয় ও শাফট। মোট ছয়জন।
\v 23 নিয়রিয়ের তিনজন ছেলে হল ইলীয়ৈনয়, হিষ্কিয় ও অস্রীকাম।
\v 24 ইলীয়ৈনয়ের সাতজন ছেলে হল হোদবিয়, ইলীয়াশীব, পলায়ঃ, অক্কুব, যোহানন, দলায় ও অনানি।
\s5
\c 4
\p
\v 1 যিহূদার বংশের লোকেরা হল পেরস, হিষ্রোণ, কর্মী, হূর ও শোবল।
\v 2 শোবলের ছেলে রায়া, রায়ার ছেলে যহৎ এবং যহতের ছেলে অহূময় ও লহদ। এরা ছিল সরাথীয় বংশের লোক।
\p
\s5
\v 3 আর এই সব ঐটমের বাবার ছেলে যিষ্রিয়েল, যিশ্মা ও যিদ্‌বশ। তাদের বোনের নাম ছিল হৎসলিল পোনী।
\v 4 গাদোরের বাবা পনূয়েল ও হূশের বাবা এসর। এরা বৈৎলেহমের বাবা ইফ্রাথার বড় ছেলে হূরের বংশধর।
\s5
\v 5 তকোয়ের বাবা অস্‌হূরের দুইজন স্ত্রী ছিল হিলা ও নারা।
\v 6 নারার গর্ভে অহুষম, হেফর, তৈমিনি ও অহষ্টরির জন্ম হয়েছিল। এরা ছিল নারার ছেলে।
\v 7 হিলার ছেলেরা হল সেরৎ, যিৎসোহর ও ইৎনন।
\v 8 কোষের (হক্কোষ) ছেলেরা হল আনূব ও সোবেবা এবং হারুমের ছেলে অহর্হলের গোষ্ঠী সব।
\p
\s5
\v 9 যাবেষ তাঁর ভাইদের চেয়ে আরও সম্মানিত লোক ছিলেন। তাঁর মা যাবেশ নাম রেখে বলেছিলেন, “আমি খুব কষ্টে তাকে জন্ম দিয়েছি।”
\v 10 যাবেষ ইস্রায়েলের ঈশ্বরকে ডেকে বলেছিলেন, “তুমি আমাকে আশীর্বাদ কর আর আমার রাজ্যাংশ বাড়িয়ে দাও। তোমার শক্তি আমার সঙ্গে সঙ্গে থাকুক এবং সমস্ত বিপদ থেকে তুমি আমাকে রক্ষা কর যাতে আমি কষ্ট না পাই।” আর ঈশ্বর তাঁর প্রার্থনা শুনলেন।
\p
\s5
\v 11 শূহের ভাই কলূবের ছেলে মহীর, তিনি ইষ্টোনের বাবা
\v 12 আর ইষ্টোনের ছেলেরা হল বৈৎ রাফা, পাসেহ এবং ঈরনাহসের বাবা তহিন্ন। এরা সবাই ছিল রেকার লোক।
\p
\s5
\v 13 কনসের ছেলেরা হল অৎনীয়েল ও সরায় এবং অৎনীয়েলের ছেলে হথৎ।
\v 14 মিয়োনোথয়ের ছেলে হল অফ্রা আর সরায়ের ছেলে শিল্পকারদের উপত্যকা নিবাসীদের বাবা যোয়াব, কারণ তারা শিল্পকার ছিল।
\v 15 যিফুন্নির ছেলে কালেবের ছেলেরা হল ঈরূ, এলা ও নয়ম। এলার ছেলের নাম ছিল কনস।
\v 16 যিহলিলেলের ছেলেরা হল সীফ, সীফা, তীরিয় ও অসারেল।
\s5
\v 17 ইষ্রার ছেলেরা হল যেথর, মেরদ, এফর ও যালোন। মেরদ ফরৌণের একজন মেয়ে বিথিয়াকে বিয়ে করেছিল।
\v 18 আর তার যিহূদীয়া স্ত্রী গদরের বাবা যেরদকে, সোখোর বাবা হেবরকে ও সানোহের বাবা যিকুথীয়েলকে জন্ম দিল। ওরা ফরৌণের মেয়ে বিথিয়ার সন্তান, যাকে মেরদ বিয়ে করেছিল।
\s5
\v 19 নহমের বোনকে হোদিয় বিয়ে করেছিল, তার ছেলেরা হল গর্মীয় কিয়ীলার বাবা ও মাখাথীয় ইষ্টিমোয়।
\v 20 শীমোনের ছেলেরা হল অম্নোন, রিন্ন, বিন্‌ হানন ও তীলোন। যিশীর ছেলেরা হল সোহেৎ ও বিন্‌ সোহেৎ।
\p
\s5
\v 21 যিহূদার ছেলে শেলার বংশের লেকার বাবা এর ও মারেশার বাবা লাদা, বৈৎ অসবেয়ের যে লোকেরা মসীনার কাপড় বুনত তাদের সব বংশ,
\v 22 আর যোকীম ও কোষেবার লোক এবং যোয়াশ ও সারফ নামে মোয়াবের দুই শাসনকর্তা ও যাশূবিলেহম এগুলো ছিল খুব পুরানো দিনের তালিকা।
\v 23 এরা ছিল কুমোর এবং নতায়ীম ও গদেরাতে বাস করত; তারা রাজার কাজকর্ম করবার জন্যই তারা সেখানে থাকত।
\s শিমিয়োনের বংশ তালিকা।
\p
\s5
\v 24 শিমিয়োনের ছেলেরা হল নমূয়েল, যামীন, যারীব, সেরহ ও শৌল।
\v 25 শৌলের ছেলে হল শল্লুম, শল্লুমের ছেলে মিব্‌সম ও মিব্‌সমের ছেলে মিশ্‌ম।
\v 26 মিশ্‌মের ছেলে হম্মুয়েল, তার ছেলে শক্কুর ও তার ছেলে শিময়ি।
\s5
\v 27 শিময়ির ষোলজন ছেলে ও ছয়জন মেয়ে ছিল, কিন্তু তার ভাইদের বেশি ছেলেমেয়ে ছিল না। সেইজন্য তাদের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্যে যিহূদা গোষ্ঠীর মত এত লোক বৃদ্ধি পায়নি।
\v 28 শিমিয়োন গোষ্ঠীর লোকেরা বের্‌ শেবাতে,
\s5
\v 29 মোলাদাতে, হৎসর শূয়ালে, বিল্‌হাতে, এৎসমে, তোলদে,
\v 30 বথূয়েলে, হর্মাতে, সিক্লগে, বৈৎ মর্কাবোতে, হৎসর সূষীমে,
\v 31 বৈৎ বিরীতে ও শারয়িমে বাস করত। দায়ূদের রাজত্ব পর্যন্ত এই সব শহর তাদের ছিল।
\s5
\v 32 তাদের অন্যান্য গ্রামগুলোর নাম ছিল ঐটম, ঐন, রিম্মোণ, তোখেন ও আশন। বাল পর্যন্ত এই পাঁচটা গ্রামের চারপাশের জায়গাগুলোও তাদের অধীনে ছিল।
\v 33 এগুলোতে তারা বাস করত এবং তাদের নিজস্ব বংশ তালিকা ছিল।
\p
\s5
\v 34 মশোবব, যম্লেক, অমৎসিয়ের ছেলে যোশঃ, যোয়েল
\v 35 এবং যোশিবিয়ের অসায়েলের ছেলে সরায়ের ছেলে যোশিবিয়ের ছেলে যেহূ।
\v 36 আর ইলিয়ৈনয়, যাকোবা, যিশোহায়, অসায়, অদীয়েল, যিশীমীয়েল, বনায়
\v 37 এবং শময়িয়ের ছেলে শিম্রির ছেলে যিদয়িয়ের ছেলে অলোনের ছেলে শিফির ছেলে সীষঃ;
\v 38 নিজের নিজের নামে উল্লিখিত এই লোকেরা নিজের নিজের গোষ্ঠীর মধ্যে নেতা ছিল এবং এদের সব বংশ খুব বেড়ে গেল।
\s5
\v 39 পশুপাল চরাবার জায়গার খোঁজে এই লোকেরা গদোরের বাইরে উপত্যকার পূর্ব দিকে চলে গেল।
\v 40 তারা বহু ঘাসযুক্ত জায়গা পেল, আর সে দেশ বেশ বড়, শান্তিপূর্ণ ও নিরিবিলি ছিল। কারণ আগে হামের বংশের কিছু লোক সেখানে বাস করত।
\v 41 শিমিয়োন গোষ্ঠীর এই সব নথিভুক্ত করা লোকেরা যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের সময়ে সেখানে গিয়েছিল। তারা হামীয়দের বাসস্থানে গিয়ে তাদের আক্রমণ করল। এছাড়া তারা সেখানকার মিয়ূনীয়দেরও আক্রমণ করে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করল। তারপর তারা ঐ লোকদের জায়গায় বাস করতে লাগল, কারণ তাদের পশুপালের জন্য সেখানে প্রচুর ঘাস ছিল।
\s5
\v 42 শিমিয়োনীয়দের মধ্যে পাঁচশো লোক যিশীর ছেলে পলটিয়, নিয়রিয়, রফায়িয় ও উষীয়েলকে তাদের নেতা করে নিয়ে সেয়ীর নামে পাহাড়ে গেল।
\v 43 আগে অমালেকীয়দের কিছু লোক সেয়ীরে পালিয়ে এসে সেখানে বাস করছিল। শিমিয়োনীয়েরা সেই সব লোকদের মেরে ফেলে সেখানে বাস করতে লাগল। আজও তারা সেখানে বাস করছে।
\s5
\c 5
\ms রূবেন, গাদ, ও মনশিঃর বংশাবলি
\p
\v 1 ইস্রায়েলের বড় ছেলে রূবেণের ছেলে বড় ছিলেন যদিও, কিন্তু তিনি নিজের বাবার বিছানা অপবিত্র করেছিলেন, এজন্য তাঁর বড় ছেলের অধিকার ইস্রায়েলের ছেলে যোষেফের ছেলেদের দেওয়া হল, আর বংশাবলির বড় ছেলে অনুসারে উল্লেখ করা হয়না।
\v 2 কারণ যিহূদা নিজের ভাইদের মধ্যে শক্তিশালী হল এবং তাঁর থেকেই নেতা সৃষ্টি হয়েছিল, কিন্তু বড় ছেলের অধিকার যোষেফের হল।
\v 3 ইস্রায়েলের বড় ছেলে রূবেণের ছেলেরা হল হনোক, পল্লু, হিষ্রোণ ও কর্মী।
\p
\s5
\v 4 যোয়েলের বংশধর তাঁর ছেলে শিময়িয়, শিময়িয়ের ছেলে গোগ, গোগের ছেলে শিমিয়ি,
\v 5 শিমিয়ির ছেলে মীখা, মীখার ছেলে রায়া, রায়ার ছেলে বাল এবং বালের ছেলে বেরা।
\v 6 বেরা ছিলেন রূবেণীয়দের নেতা। অশূরের রাজা তিলগৎ পিলনেষর তাঁকে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিলেন।
\p
\s5
\v 7 যখন তাদের বংশাবলি লেখা হল, তখন নিজের নিজের গোষ্ঠী অনুসারে তার এই ভাইদের [উল্লেখ করা হল];
\v 8 প্রধান হল যিয়ীয়েল ও সখরিয়, আর যোয়েলের ছেলে শেমার ছেলে আসসের ছেলে বেলা; সে অরোয়েরে নবো ও বাল্‌ মিয়োন পর্যন্ত জায়গায় বাস করত।
\v 9 আর পূর্বদিকের ফরাৎ নদী থেকে [বিস্তৃত] মরু এলাকার প্রবেশস্থান পর্যন্ত বাস করত; কারণ গিলিয়দ দেশে তাদের পশুপালের সংখ্যা বেড়ে গিয়েছিল।
\p
\s5
\v 10 আর শৌলের রাজত্বের সময় তারা হাগরীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করল এবং এরা তাদের হাতে পরাজিত হল; আর তারা এদের তাঁবুতে গিলিয়দের পূর্ব দিকে সব জায়গায় বাস করল।
\p
\s5
\v 11 গাদ গোষ্ঠীর লোকেরা তাদের সামনে বাশন দেশের সলখা পর্যন্ত বাস করত।
\v 12 প্রধান যোয়েল, দ্বিতীয় শাফম, আর যানয় ও শাফট, এরা বাশনে থাকতেন।
\v 13 আর তাদের পরিবার অনুযায়ী আত্মীয় মীখায়েল, মশুল্লম, শেবা, যোরায়, যাকন, সীয় ও এবর, সবসুদ্ধ সাত জন।
\s5
\v 14 বূষের ছেলে যহদো, যহদোর ছেলে যিশীশয়, যিশীশয়ের ছেলে মীখায়েল, মীখায়েলের ছেলে গিলিয়দ, গিলিয়দের ছেলে যারোহ, যারোহের ছেলে হূরি, হূরির ছেলে অবীহয়িল, তারা সেই অবীহয়িলের ছেলে।
\v 15 অব্দিয়েলের ছেলে অহি ছিলেন তাদের পিতৃকুলের প্রধান আর অব্দিয়েল ছিল গূনির ছেলে।
\s5
\v 16 তারা গিলিয়দে বাশনে ও সেখানকার উপনগর সকলে এবং তাদের সীমা পর্যন্ত শারোণের সমস্ত পশু চরাবার জায়গায় বাস করত।
\v 17 যিহূদার রাজা যোথম ও ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের সময়ে তাদের সবার বংশ তালিকা লেখা হয়েছিল।
\p
\s5
\v 18 রূবেণীয়দের, গাদীয়দের ও মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোক থেকে চুয়াল্লিশ হাজার সাতশো ষাটজন শক্তিশালী লোক যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল। তারা ঢাল, তলোয়ার ও ধনুকের ব্যবহার জানত এবং যুদ্ধে বেশ দক্ষ ছিল।
\v 19 তারা হাগরীয়দের সঙ্গে এবং যিটূরের, নাফীশের ও নোদবের সঙ্গে যুদ্ধ করল।
\s5
\v 20 এদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার সময় ঈশ্বর তাদের সাহায্য করেছিলেন। তিনি হাগরীয় ও তাদের পক্ষের সমস্ত লোকদের তাদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন, কারণ যুদ্ধের সময় তারা ঈশ্বরের কাছে কেঁদেছিল। তারা তাঁর উপর নির্ভর করেছিল বলে তিনি তাদের প্রার্থনার উত্তর দিয়েছিলেন।
\v 21 তারা হাগরীয়দের পঞ্চাশ হাজার উট, আড়াই লক্ষ ভেড়া ও দুই হাজার গাধা দখল করে নিল এবং এক লক্ষ লোককে বন্দী করে নিয়ে গেল।
\v 22 প্রকৃতপক্ষে অনেকে মারা গেল, কারণ ঈশ্বরের পরিচালনায় এই যুদ্ধ হয়েছিল। আর তারা বন্দী হবার সময় পর্যন্ত ওখানে বাস করল।
\p
\s5
\v 23 মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোক সেই দেশে বাস করত; তারা সংখ্যায় বেড়ে গিয়ে বাশন থেকে বাল হর্মোণ, সনীর ও হর্মোণ পাহাড় পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছিল।
\v 24 এইসব লোক তাদের বংশের নেতা ছিলেন এফর, যিশী, ইলীয়েল, অস্রীয়েল, যিরমিয়, হোদবিয় ও যহদীয়েল। এই সব শক্তিশালী বীর ও বিখ্যাত লোকেরা নিজের নিজের পরিবারের নেতা ছিলেন।
\s5
\v 25 এরা নিজের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অবিশ্বস্ত হল এবং ঈশ্বর সেই দেশের যে জাতিদেরকে তাঁদের সামনে থেকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন, তারা তাদের দেব দেবতাদের অনুসরণ করে ব্যভিচারী হল।
\v 26 তাতে ইস্রায়েলের ঈশ্বর অশূরের রাজা পূলের মন, অশূরের রাজা তিগ্লৎ পিলেষরের মন উত্তেজিত করে তুললেন, আর তিনি তাদেরকে অর্থাৎ রূবেণীয়, গাদীয়দেরকে এবং মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোককে নিয়ে গিয়ে হেলহ, হাবোর ও হারা এলাকায় এবং গোষণ নদীর ধারে নিয়ে গেলেন; আর আজও তারা সেখানেই আছে।
\s5
\c 6
\ms লেবির বংশ তালিকা।
\p
\v 1 লেবির ছেলেরা হল গের্শোন, কহাৎ ও মরারি।
\v 2 কহাতের ছেলেরা হল অম্রাম, যিষ্‌হর, হিব্রোণ ও উষীয়েল।
\v 3 অম্রামের ছেলেরা হল হারোণ, মোশি ও মরিয়ম। হারোণের ছেলেরা হল নাদব, অবীহূ, ইলিয়াসর ও ঈথামর।
\s5
\v 4 ইলিয়াসরের ছেলে পীনহস, পীনহসের ছেলে অবিশূয়,
\v 5 অবিশূয়ের ছেলে বুক্কি, বুক্কির ছেলে উষি,
\v 6 উষির ছেলে সরহিয়, সরহিয়ের ছেলে মরায়োৎ,
\s5
\v 7 মরায়োতের ছেলে অমরিয়, অমরিয়ের ছেলে অহীটূব,
\v 8 অহীটূবের ছেলে সাদোক, সাদোকের ছেলে অহীমাস,
\v 9 অহীমাসের ছেলে অসরিয়, অসরিয়ের ছেলে যোহানন,
\s5
\v 10 যোহাননের ছেলে অসরিয়; ইনি যিরূশালেমে শলোমনের তৈরী মন্দিরে যাজকের কাজ করতেন।
\v 11 অসরিয়ের ছেলে অমরিয়, অমরিয়ের ছেলে অহীটূব,
\v 12 অহীটূবের ছেলে সাদোক, সাদোকের ছেলে শল্লুম,
\s5
\v 13 শল্লুমের ছেলে হিল্কিয়, হিল্কিয়ের ছেলে অসরিয়,
\v 14 অসরিয়ের ছেলে সরায় এবং সরায়ের ছেলে যিহোষাদক।
\v 15 সদাপ্রভু যে সময় নবূখদ্‌নিৎসরকে দিয়ে যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের নিয়ে গেলেন, সেই সময়ে এই যিহোষাদকও গেলেন।
\p
\s5
\v 16 লেবির ছেলেরা হল গের্শোম, কহাৎ ও মরারি।
\v 17 গের্শোমের ছেলেদের নাম হল লিব্‌নি আর শিমিয়ি।
\v 18 কহাতের ছেলেরা হল অম্রাম, যিষ্‌হর, হিব্রোণ ও উষীয়েল।
\s5
\v 19 মরারির ছেলেরা হল মহলি ও মূশি। নিজের নিজের পূর্বপুরুষদের বংশ অনুসারে এইসব লেবীয়দের গোষ্ঠী।
\v 20 গের্শোমের [বংশধর]; তাঁর ছেলে লিব্‌নি, লিব্‌নির ছেলে যহৎ, যহতের ছেলে সিম্ম,
\v 21 সিম্মের ছেলে যোয়াহ, যোয়াহের ছেলে ইদ্দো, ইদ্দোর ছেলে সেরহ, সেরহের ছেলে যিয়ত্রয়।
\s5
\v 22 কহাতের বংশধর, তার ছেলে অম্মীনাদব, অম্মীনাদবের ছেলে কোরহ, কোরহের ছেলে অসীর,
\v 23 তার ছেলে ইল্‌কানা, তার ছেলে ইবীয়াসফ, ইবীয়াসফের ছেলে অসীর,
\v 24 তার ছেলে তহৎ, তার ছেলে ঊরীয়েল, তার ছেলে ঊষিয়, তার ছেলে শৌল।
\s5
\v 25 ইল্‌কানার ছেলেরা হল অমাসয়, অহীমোৎ ও ইল্‌কানা
\v 26 ইল্‌কানার ছেলে সোফী, তার ছেলে নহৎ,
\v 27 তার ছেলে ইলীয়াব, তার ছেলে যিরোহম, তার ছেলে ইল্‌কানা এবং তার ছেলে শমূয়েল।
\s5
\v 28 শমূয়েলের প্রথম ছেলের নাম যোয়েল ও দ্বিতীয় ছেলের নাম অবিয়।
\v 29 মরারির ছেলের নাম হল মহলি, তার ছেলে লিব্‌নি, তার ছেলে শিমিয়ি, তার ছেলে উষঃ,
\v 30 তার ছেলে শিমিয়, তার ছেলে হগিয় এবং তার ছেলে অসায়।
\p
\s5
\v 31 [নিয়ম সিন্দুক] বিশ্রামস্থান পেলে পর দায়ূদ যাদেরকে সদাপ্রভুর ঘরে গানের কাজে নিযুক্ত করলেন তাদের নাম।
\v 32 শলোমন যিরূশালেমে সদাপ্রভুর ঘর তৈরী না করা পর্যন্ত সেই লোকেরা আবাস তাঁবুর সামনে, অর্থাৎ মিলন তাঁবুর সামনে গান বাজনা করে সদাপ্রভুর সেবা করত। তাদের জন্য যে নিয়ম ঠিক করে দেওয়া হয়েছিল সেই অনুসারে তারা নিজেদের কাজ করত।
\p
\s5
\v 33 এই সেবার কাজে যে সব লোকেরা এবং তাদের বংশধরেরা নিযুক্ত হয়েছিল তারা হল: কহাতীয়দের মধ্যে ছিলেন গায়ক হেমন। তিনি ছিলেন যোয়েলের ছেলে, যোয়েল শমূয়েলের ছেলে,
\v 34 শমূয়েল ইল্‌কানার ছেলে, ইল্‌কানা যিরোহমের ছেলে, যিরোহম ইলীয়েলের ছেলে, ইলীয়েল তোহের ছেলে,
\v 35 তোহ সূফের ছেলে, সূফ ইল্‌কানার ছেলে, ইল্‌কানা মাহতের ছেলে, মাহৎ অমাসয়ের ছেলে,
\s5
\v 36 অমাসয় ইল্‌কানার ছেলে, ইল্‌কানা যোয়েলের ছেলে, যোয়েল অসরিয়ের ছেলে, অসরিয় সফনিয়ের ছেলে,
\v 37 সফনিয় তহতের ছেলে, তহৎ অসীরের ছেলে, অসীর ইবীয়াসফের ছেলে, ইবীয়াসফ কোরহের ছেলে,
\v 38 কোরহ যিষ্‌হরের ছেলে, যিষ্‌হর কহাতের ছেলে, কহাৎ লেবির ছেলে এবং লেবি ইস্রায়েলের ছেলে।
\p
\s5
\v 39 হেমনের সহকর্মী আসফ, তিনি তার ডান দিকে দাঁড়াত; সেই আসফ ছিলেন বেরিখিয়ের ছেলে, বেরিখিয় শিমিয়ের ছেলে,
\v 40 শিমিয় মীখায়েলের ছেলে, মীখায়েল বাসেয়ের ছেলে, বাসেয় মল্কিয়ের ছেলে,
\v 41 মল্কিয় ইৎনির ছেলে, ইৎনি সেরহের ছেলে, সেরহ অদায়ার ছেলে,
\v 42 অদায়া এথনের ছেলে, এথন সিম্মের ছেলে, সিম্ম শিমিয়ির ছেলে,
\v 43 শিমিয়ি যহতের ছেলে, যহৎ গের্শোমের ছেলে এবং গের্শোম লেবির ছেলে।
\p
\s5
\v 44 তাঁদের সহকর্মীরা, অর্থাৎ মরারির ছেলেরা এদের বাম দিকে দাঁড়াতেন। এথন ছিলেন কীশির ছেলে, কীশি অব্দির ছেলে, অব্দি মল্লুকের ছেলে,
\v 45 মল্লুক হশবিয়ের ছেলে, হশবিয় অমৎসিয়ের ছেলে, অমৎসিয় হিল্কিয়ের ছেলে,
\v 46 হিল্কিয় অম্‌সির ছেলে, অম্‌সি বানির ছেলে, বানি শেমরের ছেলে,
\v 47 শেমর মহলির ছেলে, মহলি মূশির ছেলে, মূশি মরারির ছেলে এবং মরারি লেবির ছেলে।
\p
\s5
\v 48 তাঁদের সঙ্গী লেবীয়দের আবাস তাঁবুর, অর্থাৎ ঈশ্বরের গৃহের অন্যান্য সমস্ত কাজে নিযুক্ত করা হয়েছিল।
\s5
\v 49 কিন্তু হারোণ ও তাঁর ছেলেরা ঈশ্বরের দাস মোশির সমস্ত আদেশ অনুসারে হোমযজ্ঞ বেদী ও ধূপবেদীর ওপরে উপহার দাহ করতেন এবং মহাপবিত্র স্থানে যা কিছু করবার দরকার তা করতেন আর ইস্রায়েলের পাপ মোচনের জন্য ব্যবস্থা করতেন।
\p
\s5
\v 50 হারোণের বংশ তালিকাটি এই হারোণের ছেলে ইলিয়াসর, ইলিয়াসরের ছেলে পীনহস, পীনহসের ছেলে অবীশূয়,
\v 51 অবীশূয়ের ছেলে বুক্কি, বুক্কির ছেলে উষি, উষির ছেলে সরাহিয়,
\v 52 সরাহিয়ের ছেলে মরায়োৎ, মরায়োতের ছেলে অমরিয়, অমরিয়ের ছেলে অহীটূব,
\v 53 অহীটূবের ছেলে সাদোক এবং সাদোকের ছেলে অহীমাস।
\p
\s5
\v 54 আর তাঁদের সীমার মধ্যে শিবির স্থাপন অনুযায়ী এইসব তাঁদের বাসস্থান; কহাতীয় হারোণের বংশের লোকদের জন্য প্রথম গুলিবাঁট করা হল।
\v 55 ফলে, তাঁদেরকে যিহূদা এলাকার আশ্রয় শহর হিব্রোণ ও তার চারপাশের পশু চরাবার মাঠ দেওয়া হল।
\v 56 কিন্তু শহরের চারপাশের ক্ষেত খামার ও গ্রামগুলো দেওয়া হয়েছিল যিফুন্নির ছেলে কালেবকে।
\s5
\v 57 আর হারোণের ছেলেদের আশ্রয় শহর হিব্রোণ, আর পশু চরাবার মাঠের সঙ্গে লিব্‌না এবং যত্তীর ও
\v 58 পশু চরাবার মাঠের সঙ্গে ইষ্টিমোয়, পশু চরাবার মাঠের সঙ্গে ছিলেন,
\s5
\v 59 পশু চরাবার মাঠের সঙ্গে দবীর, আশন ও বৈৎশেমশ;
\v 60 বিন্যামীন গোষ্ঠীর জায়গা থেকে তাঁদের দেওয়া হল গেবা, আলেমৎ, অনাথোৎ ও এগুলোর চারপাশের পশু চরাবার মাঠ। মোট তেরোটা শহর ও গ্রাম কহাতীয় বংশগুলো পেয়েছিল।
\p
\s5
\v 61 মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের এলাকা থেকে দশটা শহর ও গ্রাম গুলিবাঁট অনুসারে কহাতের বাকী বংশের লোকদের দেওয়া হল।
\v 62 বংশ অনুসারে গের্শোমের বংশের লোকদের দেওয়া হল ইষাখর, আশের, নপ্তালি এবং বাশনের মনঃশি গোষ্ঠীর এলাকা থেকে তেরোটা শহর ও গ্রাম।
\p
\s5
\v 63 রূবেণ, গাদ ও সবূলূন গোষ্ঠীর এলাকা থেকে গুলিবাঁট করে বারোটা শহর ও বংশ অনুসারে মরারির বংশের লোকদের দেওয়া হল।
\p
\v 64 এইভাবে ইস্রায়েলীয়েরা এই সব শহর ও সেগুলোর পশু চরাবার মাঠ লেবীয়দের দিল।
\v 65 যিহূদা, শিমিয়োন ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর এলাকা থেকে যে সব শহরের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলোও গুলিবাঁট অনুসারে দেওয়া হয়েছিল।
\p
\s5
\v 66 কহাতীয়দের কোনো কোনো গোষ্ঠী ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর থেকে কতগুলো শহর দেওয়া হয়েছিল।
\v 67 ইফ্রয়িমের পার্বত্য অঞ্চল থেকে আশ্রয় নগর শিখিম
\v 68 গেষর, যক্‌মিয়াম, বৈৎ হোরণ, অয়ালোন
\v 69 ও গাৎ রিম্মোণ এবং এগুলোর চারপাশের পশু চরাবার মাঠ তাদের দেওয়া হল।
\s5
\v 70 এছাড়া মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের এলাকা থেকে আনের ও বিল্‌য়ম এবং সেগুলোর চারপাশের পশু চরাবার মাঠ কহাতের বাকী বংশগুলোকে দেওয়া হল।
\p
\s5
\v 71 গের্শোমীয়েরা মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের এলাকা থেকে পশু চরাবার মাঠ সমেত বাশনের গোলন ও অষ্টারোৎ পেল;
\v 72 তারা ইষাখর গোষ্ঠীর এলাকা থেকে পেল কেদশ,
\v 73 দাবরৎ, রামোৎ ও আনেম এবং এগুলোর চারপাশের পশু চরাবার মাঠ।
\s5
\v 74 আশের গোষ্ঠীর এলাকা থেকে তারা পশু চরাবার মাঠ সমেত মশাল,
\v 75 আব্দোন, হূকোক ও রহোব পেল;
\v 76 নপ্তালি গোষ্ঠীর এলাকা থেকে পেল পশু চরাবার মাঠ সমেত গালীলের কেদশ, হম্মোন ও কিরিয়াথয়িম।
\p
\s5
\v 77 বাকী লেবীয়েরা, অর্থাৎ মরারীয়েরা সবূলূন গোষ্ঠীর এলাকা থেকে পশু চরাবার মাঠ সমেত রিম্মোণ ও তাবোর পেল;
\v 78 তারা যিরীহোর পূর্ব দিকে যর্দনের ওপারে রূবেণ গোষ্ঠীর এলাকা থেকে মরু এলাকার বেৎসর, যাহসা,
\v 79 কদেমোৎ ও মেফাৎ;
\s5
\v 80 তারা গাদ গোষ্ঠীর এলাকা থেকে পেল গিলিয়দের রামোৎ,
\v 81 মহনয়িম, হিষ্‌বোণ ও যাসের এবং এগুলোর চারপাশের পশু চরাবার মাঠ।
\s5
\c 7
\ms ইষাখর, বিন্যামীন প্রভৃতি ছয় গোষ্ঠীর বংশাবলি।
\p
\v 1 ইষাখরের চারজন ছেলে হল তোলয়, পূয়, যাশূব ও শিম্রোণ।
\v 2 তোলয়ের ছেলেরা হল উষি, রফায়, যিরীয়েল, যহময়, যিব্‌সম, ও শমূয়েল। এঁরা ছিলেন নিজের নিজের বংশের নেতা। দায়ূদের রাজত্বের সময়ে তোলয়ের বংশের যে সব লোকদের যোদ্ধা হিসাবে বংশ তালিকায় নাম লেখা হয়েছিল তারা সংখ্যায় ছিল বাইশ হাজার ছয়শো।
\p
\v 3 উষির ছেলের নাম যিষ্রাহিয়। যিষ্রাহিয়ের ছেলেরা হল মীখায়েল, ওবদিয়, যোয়েল ও যিশিয়। যিষ্রাহিয় মোট পাঁচজন, এরা সবাই প্রধান লোক ছিলেন।
\s5
\v 4 তাঁদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে ছিল অনেক; কাজেই তাঁদের বংশ তালিকার হিসাব মত যুদ্ধ করবার জন্য প্রস্তুত লোকদের সংখ্যা ছিল ছত্রিশ হাজার।
\v 5 ইষাখর গোষ্ঠীর সমস্ত বংশের ভাইয়েরা ও বলবান বীর ছিল, মোট সাতাশি হাজার যোদ্ধার নাম বংশ তালিকায় লেখা হয়েছিল।
\p
\s5
\v 6 বিন্যামীনের তিনজন ছেলে হল বেলা, বেখর, ও যিদীয়েল।
\v 7 বেলার পাঁচজন ছেলে হল ইষ্‌বোণ, উষি, উষীয়েল, যিরেমোৎ ও ঈরী। এঁরা ছিলেন নিজের নিজের বংশের নেতা। তাঁদের বংশ তালিকায় বাইশ হাজার চৌত্রিশ জন লোকের নাম যোদ্ধা হিসাবে লেখা হয়েছিল।
\p
\s5
\v 8 বেখরের ছেলেরা হল সমীরাঃ, যোয়াশ, ইলীয়েষর, ইলিয়ো ঐনয়, অম্রি, যিরেমোৎ, অবিয়, অনাথোৎ ও আলেমৎ।
\v 9 তাদের বংশ তালিকায় নেতাদের নাম ও কুড়ি হাজার দুশো জন যোদ্ধার নাম লেখা হয়েছিল।
\p
\v 10 যিদীয়েলের একজন ছেলের নাম বিল্‌হন। বিল্‌হনের ছেলেরা হল যিয়ূশ, বিন্যামীন, এহূদ, কনানা, সেথন, তর্শীশ ও অহীশহর।
\s5
\v 11 যিদীয়েলের বংশের এই সব লোকেরা ছিলেন বংশের নেতা ও বীর যোদ্ধা। তাঁদের সতেরো হাজার দুশো লোক যুদ্ধে যাবার জন্য যোগ্য ছিল।
\p
\v 12 শুপ্পীম ও হুপ্পীম ছিল ঈরের ছেলে এবং হূশীম ছিল অহেরের ছেলে।
\p
\s5
\v 13 নপ্তালির ছেলেরা হল যহসিয়েল, গূনি, যেৎসর ও শল্লুম। এরা বিল্‌হার নাতি ছিল।
\p
\s5
\v 14 মনঃশির ছেলেরা হল অস্রীয়েল ও গিলিয়দের বাবা মাখীর। মনঃশির অরামীয় উপস্ত্রীর গর্ভে এদের জন্ম হয়েছিল।
\v 15 মাখীর হুপ্পীম ও শুপ্পীম থেকে একটি স্ত্রী গ্রহণ করেছিলেন। মাখীরের বোনের নাম ছিল মাখা। মনঃশির বংশের আর একজন লোক ছিল সলফাদ। তার ছিল সব মেয়ে।
\v 16 মাখীরের স্ত্রী মাখার গর্ভে পেরশ নামে একটি ছেলের জন্ম হয়েছিল। তার ভাইয়ের নাম ছিল শেরশ এবং তার ছেলেদের নাম ছিল ঊলম ও রেকম।
\p
\s5
\v 17 ঊলমের একজন ছেলের নাম বদান। এরা ছিল গিলিয়দের বংশের লোক। গিলিয়দ মাখীরের ছেলে আর মাখীর মনঃশির ছেলে।
\v 18 গিলিয়দের বোন হম্মোলেকতের ছেলেরা হল ঈশ্‌হোদ, অবীয়েষর ও মহলা।
\p
\v 19 শমীদার ছেলেরা হল অহিয়ন, শেখম, লিক্‌হি ও অনীয়াম।
\p
\s5
\v 20 ইফ্রয়িমের একজন ছেলের নাম শূথেলহ, শূথেলহের ছেলে বেরদ, বেরদের ছেলে তহৎ, তহতের ছেলে ইলিয়াদা, ইলিয়াদার ছেলে তহৎ,
\v 21 তহতের ছেলে সাবদ এবং সাবদের ছেলে শূথেলহ। ইফ্রয়িমের আরও দুই ছেলের নাম ছিল এৎসর ও ইলিয়দ। দেশে জন্মগ্রহণকারী গাতের লোকদের হাতে তারা মারা পড়েছিল, কারণ তারা গাতীয়দের পশু চুরি করবার জন্য গাতে গিয়েছিল।
\v 22 তাদের বাবা ইফ্রয়িম অনেক দিন পর্যন্ত তাদের জন্য শোক করেছিলেন। তাঁর আত্মীয়স্বজনেরা তাঁকে সান্ত্বনা দিতে এসেছিল।
\s5
\v 23 এর পর তিনি স্ত্রীর সঙ্গে মিলিত হলে পর তাঁর স্ত্রী গর্ভবতী হলেন এবং একটি ছেলের জন্ম হল। ইফ্রয়িম তার নাম রাখলেন বরীয়, কারণ তাঁর পরিবারে তখন অমঙ্গল নেমে এসেছিল।
\v 24 তাঁর মেয়ের নাম ছিল শীরা। শীরা উপরের ও নীচের বৈৎ হোরোণ ও উষেণশীরা গড়ে তুলেছিল।
\p
\s5
\v 25 বরীয়ের ছেলে রেফহ, রেফহের ছেলে রেশফ, রেশফের ছেলে তেলহ, তেলহের ছেলে তহন,
\v 26 তহনের ছেলে লাদন, লাদনের ছেলে অম্মীহূদ, অম্মীহূদের ছেলে ইলীশামা,
\v 27 ইলীশামার ছেলে নূন ও নূনের ছেলে যিহোশূয়।
\p
\s5
\v 28 বৈথেল ও তার চারপাশের গ্রামগুলো, পূর্ব দিকে নারণ, পশ্চিম দিকে গেষর ও তার চারপাশের গ্রামগুলো ছিল ইফ্রয়িমের জমিজমা ও বাসস্থান। এছাড়া শিখিম ও তার গ্রামগুলো থেকে অয়া ও তার গ্রামগুলো পর্যন্ত ছিল তাদের এলাকা।
\v 29 মনঃশির সীমানা বরাবর বৈৎশান, তানক, মগিদ্দো, দোর ও এগুলোর চারপাশের সব গ্রামও ছিল তাদের। ইস্রায়েলের ছেলে যোষেফের বংশধরেরা এই সব শহরে ও গ্রামে বাস করত।
\p
\s5
\v 30 আশেরের ছেলেরা হল যিম্ন, যিশ্‌বাঃ, যিশ্‌বী ও বরীয়। সেরহ ছিল তাদের বোন।
\v 31 বরীয়ের ছেলেরা হল হেবর ও মল্কীয়েল। মল্কীয়েল ছিল বির্ষোতের বাবা।
\v 32 হেবরের ছেলেরা হল যফ্‌লেট, শোমের ও হোথম। শূয়া ছিল তাদের বোন।
\s5
\v 33 যফ্‌লেটের ছেলেরা হল পাসক, বিম্‌হল ও অশ্বৎ।
\v 34 শেমরের ছেলেরা হল অহি, রোগহ, যিহুব্ব ও অরাম।
\v 35 শেমরের ভাই হেলমের ছেলেরা হল শোফহ, যিম্ন, শেলশ ও আমল।
\s5
\v 36 শোফহের ছেলেরা হল সূহ, হর্ণেফর, শূয়াল, বেরী, যিম্র,
\v 37 বেৎসর, হোদ, শম্ম, শিল্‌শ, যিত্রণ ও বেরা।
\v 38 যেথরের ছেলেরা হল যিফুন্নি, পিসপ ও অরা।
\s5
\v 39 উল্লের ছেলেরা হল আরহ, হন্নীয়েল ও রিৎসিয়।
\v 40 আশের গোষ্ঠীর এই সব লোকেরা ছিলেন নিজের নিজের বংশের নেতা। এঁরা প্রত্যেকে ছিলেন বাছাই করা শক্তিশালী যোদ্ধা ও প্রধান নেতা। আশেরের বংশ তালিকায় লেখা লোকদের মধ্যে যুদ্ধে যাবার জন্য প্রস্তুত লোকের সংখ্যা ছিল ছাব্বিশ হাজার।
\s5
\c 8
\p
\v 1 বিন্যামীনের বড় ছেলে হল বেলা, দ্বিতীয় অস্‌বেল, তৃতীয় অহর্হ,
\v 2 চতুর্থ নোহা ও পঞ্চম রাফা।
\v 3 বেলার ছেলেরা হল অদ্দর, গেরা, অবীহূদ,
\v 4 অবীশূয়, নামান, আহোহ,
\v 5 গেরা, শফূফন ও হূরম।
\p
\s5
\v 6 এহূদের ছেলেরা হল নামান, অহিয় ও গেরা। এঁরা ছিলেন গেবায় বাসকারী লোকদের বংশগুলোর নেতা।
\v 7 গেরা তাঁর দুই ভাইকে গেবা থেকে জোর করে বের করে দিলেন; তাতে তাঁরা মানহতে গিয়ে বাস করতে লাগলেন। গেরা ছিল উষঃ ও অহীহূদের বাবা।
\p
\s5
\v 8 আর তিনি তাঁদেরকে বিদায় করলে পর শহরয়িম মোয়াব ক্ষেত্রে ছেলেদের জন্ম দিলেন। তার দুই স্ত্রী হূশীম ও বারা।
\v 9 মোয়াব দেশে তার অন্য স্ত্রী হোদশের গর্ভে তার এই সব ছেলেদের জন্ম হয়েছিল, যোবব, সিবিয়, মেশা, মল্কম,
\v 10 যিয়ূশ, শখিয় ও মির্ম। এঁরা ছিলেন নিজের নিজের বংশের প্রধান।
\v 11 হূশীমের গর্ভে তার আরও দুই ছেলে অহীটূব ও ইল্পালের জন্ম হয়েছিল।
\p
\s5
\v 12 ইল্পালের ছেলেরা হল এবর, মিশিয়ম, এবং ওনো, লোদ ও তার উপনগর সকলের পত্তনকারী শেমদ এবং বরীয় ও শেমা।
\v 13 বরীয় ও শেমা ছিলেন অয়ালোনে বাসকারী লোকদের বংশগুলোর নেতা। গাতের লোকদের এঁরা তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
\p
\s5
\v 14 বরীয়ের ছেলেরা হল অহিয়ো,
\v 15 শাশক, যিরেমোৎ, সবদিয়,
\v 16 অরাদ, এদর, মীখায়েল, যিশ্‌পা ও যোহ।
\v 17 ইল্পালের ছেলেরা হল সবদিয়, মশুল্লম,
\v 18 হিষ্কি, হেবর, যিশ্মরয়, যিষ্‌লিয় ও যোবব।
\s5
\v 19 শিমিয়ির ছেলেরা হল যাকীম,
\v 20 সিখ্রি, সব্দি, ইলিয়ৈনয়, সিল্লথয়,
\v 21 ইলীয়েল, অদায়া, বরায়া ও শিম্রৎ।
\s5
\v 22 শাশকের ছেলেরা হল যিশ্‌পন,
\v 23 এবর, ইলীয়েল, অব্দোন,
\v 24 সিখ্রি, হানন, হনানিয়,
\v 25 এলম, অন্তোথিয়, যিফদিয় ও পনূয়েল।
\s5
\v 26 যিরোহমের ছেলেরা হল শিম্‌শরয়,
\v 27 শহরিয়, অথলিয়, যারিশিয়, এলিয় ও সিখ্রি।
\v 28 এঁরা সবাই ছিলেন নিজের নিজের বংশের নেতা এবং বংশ তালিকা অনুসারে এঁরা প্রত্যেকে ছিলেন প্রধান লোক। এঁরা যিরূশালেমে বাস করতেন।
\p
\s5
\v 29 যিয়ীয়েল গিবিয়োনে বাস করত। তার স্ত্রীর নাম ছিল মাখা;
\v 30 তার প্রথম ছেলে হল অব্দোন, তারপর সূর, কীশ, বাল, নাদব,
\v 31 গদোর, অহিয়ো ও সখর।
\s5
\v 32 মিক্লোতের ছেলে হল শিমিয়। এরাও যিরূশালেমে তাদের বংশের লোকদের কাছে বাস করত।
\p
\v 33 নেরের ছেলে কীশ আর কীশের ছেলে শৌল। শৌলের ছেলেরা হল যোনাথন, মল্কীশূয়, অবীনাদব ও ইশ্‌বাল।
\v 34 যোনাথনের ছেলে মরীব্‌বাল ও মরীব্‌বালের ছেলে মীখা।
\s5
\v 35 মীখার ছেলেরা হল পিথোন, মেলক, তরেয় ও আহস।
\v 36 আহসের ছেলে যিহোয়াদা, যিহোয়াদার ছেলেরা হল আলেমৎ, অস্‌মাবৎ ও সিম্রি। সিম্রির ছেলে মোৎসা,
\v 37 মোৎসার ছেলে বিনিয়া, বিনিয়ার ছেলে রফায়, রফায়ের ছেলে ইলীয়াসা ও ইলীয়াসার ছেলে আৎসেল।
\s5
\v 38 আৎসেলের ছয়জন ছেলের নাম হল অস্রীকাম, বোখরূ, ইশ্মায়েল, শিয়রিয়, ওবদিয় ও হানান।
\v 39 আৎসেলের ভাই এশকের ছেলেদের মধ্যে প্রথম হল ঊলম, দ্বিতীয় যিয়ূশ ও তৃতীয় এলীফেলট।
\v 40 ঊলমের ছেলেরা শক্তিশালী যোদ্ধা ছিল। এরা ধনুকের ব্যবহার জানত। তাদের অনেক ছেলে ও নাতি ছিল। তাদের সংখ্যা ছিল একশো পঞ্চাশ জন। এরা সকলে বিন্যামীন বংশধর।
\s5
\c 9
\p
\v 1 এইভাবে সমস্ত ইস্রায়েলের বংশাবলি লেখা হল, আর দেখ, তা “ইস্রায়েলীয় রাজাদের বইতে” সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের বংশ তালিকা লেখা রয়েছে। পরে যিহূদার লোকদের অবিশ্বস্ততার জন্য তাদের বাবিলে বন্দী করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
\s যিরুশালেমে বসবাসকারীদের তালিকা।
\p
\v 2 নিজেদের নানা শহরে যারা প্রথমে নিজের নিজের অধিকারে বাস করল, তারা এই ইস্রায়েলীয়রা, যাজকরা, লেবীয়রা ও নথীনীয়রা।
\p
\v 3 যিহূদা, বিন্যামীন, ইফ্রয়িম ও মনঃশি গোষ্ঠীর মধ্যে এই লোকেরা যিরূশালেমে বাস করতে লাগল।
\p
\s5
\v 4 যিহূদার ছেলে পেরসের বংশের উথয়। উথয় ছিল অম্মীহূদের ছেলে, অম্মীহূদ অম্রির ছেলে, অম্রি ইম্রির ছেলে, ইম্রি বানির ছেলে ও বানি পেরসের ছেলে।
\p
\v 5 শীলোনীয়দের মধ্যে বড় অসায় ও তার ছেলেরা।
\p
\v 6 সেরহের ছেলেদের মধ্যে যুয়েল ও তাদের ভাইরা, এরা ছয়শো নব্বই জন।
\p
\s5
\v 7 বিন্যামীন গোষ্ঠীর মধ্যে মশুল্লমের ছেলে সল্লু, মশুল্লম হোদবিয়ের ছেলে, তিনি হস্‌নূয়ের ছেলে।
\p
\v 8 যিরোহমের ছেলে যিব্‌নিয়। মিখ্রির নাতি, অর্থাৎ উষির ছেলে এলা। শফটিয়ের ছেলে মশুল্লম। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল রূয়েল ও যিব্‌নিয়।
\p
\v 9 এরা ও এদের ভাইরা নিজের নিজের বংশ অনুসারে নয়শো ছাপান্ন জন। এরা সবাই নিজের নিজের বংশের নেতা ছিল।
\p
\s5
\v 10 যাজকদের মধ্যে যিদয়িয়, যিহোয়ারীব, যাখীন;
\v 11 হিল্কিয়ের ছেলে অসরিয়। অসরিয় ছিলেন ঈশ্বরের ঘরের ভার পাওয়া লোকদের মধ্যে প্রধান। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিলেন মশুল্লম, সাদোক, মরায়োৎ ও অহীটূব।
\p
\s5
\v 12 যিরোহমের ছেলে অদায়া। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল পশ্‌হূর ও মল্কিয়। অদীয়েলের ছেলে মাসয়। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল যহসেরা, মশুল্লম, মশিল্লমীত ও ইম্মের।
\p
\v 13 এঁরা ছিলেন নিজের নিজের বংশের নেতা। এরা ও এদের ভাইরা এক হাজার সাতশো ষাট জন। এঁরা ঈশ্বরের গৃহের সেবাকাজের ভারপাওয়া যোগ্য লোক।
\p
\s5
\v 14 লেবীয়দের মধ্যে হশূবের ছেলে শময়িয়। তার পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল অস্রীকাম, হশবিয় ও মরারি।
\p
\v 15 বকবকর, হেরশ, গালল ও মীখার ছেলে মত্তনিয়। মত্তনিয়ের পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল সিখ্রি ও আসফ।
\p
\v 16 শময়িয়ের ছেলে ওবদিয়। তার পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল গালল ও যিদূথূন। ইল্‌কানার নাতি, অর্থাৎ আসার ছেলে বেরিখিয়। সে নটোফাতীয়দের গ্রামে বাস করত।
\p
\s5
\v 17 রক্ষীদের মধ্যে শল্লুম, অক্কুব, টল্‌মোন, অহীমান ও তাদের ভাইরা, এদের মধ্যে শল্লুম প্রধান।
\v 18 এরাই এ পর্যন্ত পূর্ব দিকে অবস্থিত রাজদ্বারে থাকত, এই লোকেরা ছিল লেবি গোষ্ঠীর ছাউনির রক্ষী। কোরির ছেলে শল্লুম ছিলেন তাদের নেতা। তাঁর পূর্বপুরুষদের মধ্যে ছিল ইবীয়াসফ ও কোরহ।
\v 19 শল্লুম ও তাঁর বংশের লোকদের, অর্থাৎ কোরহীয়দের উপর মন্দিরের দরজাগুলো পাহারা দেবার ভার ছিল। এরা এতদিন পর্যন্ত রাজবাড়ীর পূর্ব দিকের দরজায় থাকত। তাদের পূর্বপুরুষদের উপরেও ঠিক এইভাবেই সদাপ্রভুর আবাসতাঁবুর দরজা পাহারা দেবার ভার ছিল।
\s5
\v 20 সেই সময় ইলিয়াসরের ছেলে পীনহসের উপর রক্ষীদের দেখাশোনার ভার ছিল এবং সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
\v 21 মশেলেমিয়ের ছেলে সখরিয় মিলনতাঁবুর দরজার পাহারাদার ছিল।
\p
\s5
\v 22 দরজাগুলো পাহারা দেবার জন্য যাদের বেছে নেওয়া হয়েছিল তাদের সংখ্যা ছিল মোট দুইশো বারো। তাদের গ্রামগুলোতে যে সব বংশ তালিকা ছিল সেখানে তাদের নাম লেখা হয়েছিল। দায়ূদ ও শমূয়েল দর্শক এই লোকদের দায়িত্বপূর্ণ দারোয়ানের কাজে নিযুক্ত করেছিলেন।
\v 23 তাদের ও তাদের বংশের লোকেরা সদাপ্রভুর ঘরের, অর্থাৎ আবাসতাম্বুর দরজাগুলো পাহারা দিত।
\v 24 পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ এই চারদিকেই রক্ষীরা পাহারা দিত।
\s5
\v 25 গ্রাম থেকে তাদের ভাইদেরও পালা অনুসারে এসে সাত দিন করে তাদের কাজে সাহায্য করতে হত।
\v 26 যে চারজন লেবীয় প্রধান রক্ষী ছিল তাদের উপর ছিল ঈশ্বরের ঘরের ধনভাণ্ডারের কামরাগুলোর ভার।
\v 27 তারা ঈশ্বরের ঘরের কাছে বাস করত, কারণ সেই ঘর রক্ষা করবার ভার তাদের উপর ছিল, আর রোজ সকালে ঘরের দরজাও তাদের খুলে দিতে হত।
\p
\s5
\v 28 লেবীয়দের মধ্যে কয়েকজনের উপর উপাসনাঘরের সেবাকাজে ব্যবহার করা জিনিসপত্র রক্ষা করবার ভার ছিল। সেগুলো বের করবার ও ভিতরে আনবার সময় তারা গুণে দেখত।
\v 29 অন্যদের উপর ছিল উপাসনাঘরের আসবাবপত্র এবং সমস্ত পাত্র, ময়দা ও আংগুরের রস, তেল, কুন্দুরু ও সব সুগন্ধি মশলা দেখাশোনা করবার ভার।
\s5
\v 30 সুগন্ধি মশলাগুলো মেশাবার ভার ছিল কয়েকজন যাজক সন্তানদের উপর।
\v 31 লেবীয়দের মধ্যে কোরহীয় শল্লুমের বড় ছেলে মত্তথিয়ের উপর উৎসর্গের রুটি তৈরী করার ভার দেওয়া হয়েছিল।
\v 32 প্রত্যেক বিশ্রামবারে টেবিলের উপর যে দর্শনরুটি সাজিয়ে রাখা হত তা তৈরী করবার ভার ছিল লেবীয়দের মধ্যে কয়েকজন কহাতীয়ের উপর।
\p
\s5
\v 33 লেবিগোষ্ঠীর বংশনেতারা যাঁরা গায়ক ছিল তাঁরা উপাসনাঘরের কামরাগুলোতে থাকতেন। গানবাজনার কাজে তাঁরা দিনরাত ব্যস্ত থাকতেন বলে তাঁদের উপর অন্য কোনো কাজের ভার দেওয়া হয়নি।
\p
\v 34 বংশ তালিকা অনুসারে এঁরা সবাই ছিলেন লেবীয় গোষ্ঠীর প্রধান নেতা। এঁরা যিরূশালেমে বাস করতেন।
\s শৌলের বংশ তালিকা ও মৃত্যু
\p
\s5
\v 35 গিবিয়োনের বাবা যিয়ীয়েল গিবিয়োনে বাস করতেন। তার স্ত্রীর নাম ছিল মাখা।
\v 36 তার বড় ছেলের নাম অব্দোন, তার পরে সূর, কীশ, বাল, নের, নাদব,
\v 37 গাদোর, অহিয়ো, সখরিয় ও মিক্লোৎ।
\s5
\v 38 মিক্লোতের ছেলে শিমিয়াম। তারা তাদের ভাইদের কাছে যিরূশালেমে বাস করত।
\p
\v 39 নেরের ছেলে কীশ, কীশের ছেলে শৌল এবং শৌলের ছেলেরা হল যোনাথন, মল্কীশূয়, অবীনাদব ও ইশ্‌বাল।
\v 40 যোনাথনের ছেলে মরীব্‌বাল, মরীব্‌বালের ছেলে মীখা
\s5
\v 41 মীখার ছেলেরা হল পিথোন, মেলক, তহরেয় ও আহস।
\v 42 আহসের ছেলে যারঃ, যারের ছেলেরা হল আলেমৎ, অস্‌মাবৎ ও সিম্রি। সিম্রির ছেলে মোৎসা,
\v 43 মোৎসার ছেলে বিনিয়া, বিনিয়ার ছেলে রফায়, রফায়ের ছেলে ইলীয়াসা এবং ইলীয়াসার ছেলে আৎসেল।
\v 44 আৎসেলের ছয়জন ছেলের নাম হল অস্রীকাম, বোখরূ, ইশ্মায়েল, শিয়রিয়, ওবদিয় ও হানান। এরা আৎসেলের ছেলে ছিল।
\s5
\c 10
\p
\v 1 একবার পলেষ্টীয়েরা ইস্রায়েলীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করল আর ইস্রায়েলীয়েরা পলেষ্টীয়দের সামনে থেকে পালিয়ে গেল এবং গিল্‌বোয় পর্বতে আহত হয়ে পড়তে লাগল।
\v 2 আর পলেষ্টীয়েরা শৌল ও তাঁর ছেলেদের পিছনে পিছনে তাড়া করে তাঁর ছেলে যোনাথন, অবীনাদব ও মল্কীশূয়কে মেরে ফেলল।
\v 3 তারপর শৌলের বিরুদ্ধে আরও ভীষণভাবে যুদ্ধ চলতে লাগল। ধনুকধারীরা তাকে দেখতে পেল। ধনুকধারীদের কারণে তাঁর ভীষণ ভয় উপস্থিত হল।
\p
\s5
\v 4 শৌল তখন তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটিকে বললেন, “তোমার তলোয়ার বের কর এবং আমার দেহে বিঁধিয়ে দাও; তা না হলে ঐ অচ্ছিন্নত্বক লোকেরা এসে আমাকে অপমান করবে।” কিন্তু তাঁর অস্ত্র বহনকারী লোকটি তা করতে রাজী হল না, কারণ সে খুব ভয় পেয়েছিল। তখন শৌল তাঁর নিজের তলোয়ার নিয়ে নিজেই তার উপরে পড়লেন।
\s5
\v 5 শৌল মারা গেছেন দেখে তাঁর অস্ত্র বহনকারীও নিজের তলোয়ারের উপর পড়ে মারা গেল।
\v 6 এভাবে শৌল, তাঁর তিন ছেলে এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা এক সঙ্গে মারা গেলেন।
\p
\s5
\v 7 যেসব ইস্রায়েলীয় লোক সেই সময় উপত্যকায় ছিল, তারা যখন দেখল যে, লোকেরা পালিয়ে গেছে এবং শৌল ও তাঁর ছেলেরা মারা পড়েছেন তখন তারাও তাদের নগরগুলো ছেড়ে পালিয়ে গেল, আর পলেষ্টীয়েরা এসে সেই সব নগরে বাস করতে লাগল।
\p
\v 8 পরের দিন পলেষ্টীয়েরা মৃত লোকদের সব কিছু লুট করতে এসে দেখল গিলবোয় পর্বতের উপরে শৌল ও তাঁর ছেলেদের মৃতদেহ পড়ে আছে।
\s5
\v 9 তখন তারা শৌলের মাথা কেটে নিল এবং তাঁর সাজ পোশাক ও অস্ত্রশস্ত্র খুলে নিল। এই খবর তাদের সমস্ত দেব দেবতা ও লোকদের কাছে ঘোষণা করবার জন্য তারা পলেষ্টীয় দেশের সব জায়গায় সেগুলো পাঠিয়ে দিল।
\v 10 তারপর তারা শৌলের অস্ত্রশস্ত্র তাদের দেবতাদের মন্দিরে রাখল আর তার মাথাটা দাগোন দেবতার মন্দিরে টাঙ্গিয়ে দিল।
\p
\s5
\v 11 পলেষ্টীয়েরা শৌলের প্রতি যা করেছে যাবেশ গিলিয়দের সমস্ত লোক তা শুনতে পেল।
\v 12 তখন সেখানকার বীর সৈন্যেরা গিয়ে শৌল ও তাঁর ছেলেদের মৃতদেহগুলো যাবেশে নিয়ে এল। যাবেশের এলা গাছের তলায় তারা তাঁদের হাড়গুলো কবর দিল এবং সাত দিন উপবাস করল।
\p
\s5
\v 13 সদাপ্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছিলেন বলে শৌল মারা গেলেন। তিনি সদাপ্রভুর কথা মেনে চলেন নি; এমন কি, সদাপ্রভুর কাছ থেকে পরামর্শ না চেয়ে তিনি কোনো একজনের কাছে পরামর্শ নিয়েছিলেন যে মন্দ আত্মার থাকে।
\v 14 সেইজন্যই সদাপ্রভু তাঁর মৃত্যু ঘটালেন এবং রাজ্যটা যিশয়ের ছেলে দায়ূদের হাতে তুলে দিলেন।
\s5
\c 11
\ms দায়ূদের রাজ্যাভিষেক।
\p
\v 1 ইস্রায়েলীয়েরা সবাই হিব্রোণে দায়ূদের কাছে জড়ো হয়ে বলল, “দেখুন, আমরা আপনার হাড় ও মাংস।
\v 2 এর আগে যখন শৌল রাজা ছিলেন তখন যুদ্ধের সময় আপনিই ইস্রায়েলীয়দের সৈন্য পরিচালনা করতেন; আর আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু আপনাকে বলেছেন যেন আপনিই তাঁর লোকদের, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের দেখাশোনা করবেন ও তাদের নেতা হবেন।”
\p
\v 3 এইভাবে ইস্রায়েল দেশের সমস্ত প্রাচীনেরা হিব্রোণে রাজার কাছে এলেন। তখন দায়ূদ সদাপ্রভুকে সাক্ষী রেখে তাঁদের সঙ্গে একটা চুক্তি করলেন, আর শমূয়েলের মধ্য দিয়ে বলা সদাপ্রভুর কথা অনুসারে তাঁরা দায়ূদকে ইস্রায়েল দেশের উপর রাজা হিসাবে অভিষেক করলেন।
\p
\s5
\v 4 পরে দায়ূদ ও সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা যিরূশালেমে, অর্থাৎ যিবূষে গেলেন। যিবূষীয়েরা সেখানে বাস করত।
\v 5 তারা দায়ূদকে বলল, “তুমি এখানে ঢুকতে পারবে না।” তবুও দায়ূদ সিয়োনের দুর্গটা অধিকার করলেন। সেটাই দায়ূদ শহর।
\p
\v 6 দায়ূদ বলেছিলেন, “যে লোক প্রথমে যিবূষীয়দের আক্রমণ করবে সেই হবে প্রধান সেনাপতি।” এতে সরূয়ার ছেলে যোয়াব প্রথমে আক্রমণ করতে গেলেন, আর সেইজন্য তাঁকে প্রধান সেনাপতি করা হল।
\p
\s5
\v 7 এর পর দায়ূদ সেই দুর্গে বাস করতে লাগলেন; সেইজন্য লোকেরা তাঁর নাম দায়ূদ শহর রাখল।
\v 8 তিনি মিল্লোর কাছে শহর গড়ে তুললেন এবং যোয়াব শহরের বাদবাকী অংশ মেরামত করলেন।
\v 9 দায়ূদ দিনে দিনে আরও মহান হয়ে উঠলেন, কারণ বাহিনীগণের সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
\s দায়ূদের বীরদের ও তাঁর সঙ্গী ইস্রায়েলীয়দের বিবরণ।
\p
\s5
\v 10 সদাপ্রভুর প্রতিজ্ঞা অনুসারে দায়ূদ যাতে গোটা দেশটার উপর তাঁর অধিকার স্থাপন করতে পারেন সেইজন্য তাঁর শক্তিশালী লোকদের মধ্যে যাঁরা প্রধান ছিলেন তারা সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে মিলে তাঁর পক্ষ নিয়ে তাঁর রাজকীয় ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুললেন।
\v 11 দায়ূদের বীরদের সংখ্যা এই; যাশবিয়াম নামে হক্‌মোনীয়দের একজন ছেলে ছিলেন, ত্রিশ জন বীর যোদ্ধাদের দলের প্রধান। তিনি বর্শা চালিয়ে একই সময়ে তিনশো লোককে মেরে ফেলেছিলেন।
\s5
\v 12 তাঁর পরের জন ছিলেন ইলিয়াসর। ইনি ছিলেন অহোহীয় দোদোরের ছেলে। নাম করা তিনজন বীরের মধ্যে ইনি ছিলেন একজন।
\v 13 পলেষ্টীয়েরা যখন যুদ্ধের জন্য পস্‌ দম্মীমে জড়ো হয়েছিল তখন ইলিয়াসর দায়ূদের সঙ্গে ছিলেন। একটা জায়গায় যবে ভরা একটা ক্ষেতে ইস্রায়েলীয় সৈন্যেরা পলেষ্টীয়দের সামনে থেকে পালিয়ে গেল।
\v 14 তারা সেই ক্ষেতের মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালেন। তাঁরা সেই ক্ষেতটা রক্ষা করলেন এবং পলেষ্টীয়দের শেষ করে দিলেন। সেই দিন সদাপ্রভু তাঁদের রক্ষা করলেন ও মহাজয় দান করলেন।
\p
\s5
\v 15 ত্রিশজন বীরের মধ্যে তিনজন অদুল্লম গুহার কাছে যে পাথরটা ছিল সেখানে দায়ূদের কাছে আসলেন। তখন পলেষ্টীয়দের সৈন্যরা রফায়ীম উপত্যকায় ছাউনি ফেলে ছিল।
\v 16 সেই সময় দায়ূদ দুর্গম জায়গায় ছিলেন আর পলেষ্টীয় সৈন্যদল ছিল বৈৎলেহমে।
\v 17 এমন সময় দায়ূদের খুব পিপাসিত হলেন এবং বললেন, “হায়! কে আমাকে বৈৎলেহমের দরজার কাছের কূয়োর জল এনে পান করতে দেবে?”
\s5
\v 18 এই কথা শুনে সেই তিনজন বীর পলেষ্টীয় সৈন্যদলের ভিতর দিয়ে গিয়ে বৈৎলেহমের ফটকের কাছের কূয়াটা থেকে জল তুলে দায়ূদের কাছে নিয়ে গেলেন। কিন্তু দায়ূদ তা পান করতে রাজি হলেন না; তার বদলে তিনি সেই জল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে ঢেলে ফেলে দিলেন।
\v 19 আর বললেন, “হে ঈশ্বর, আমি যে এই জল খাব তা দূরে থাক্‌। এই লোকেরা, যারা তাদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে গিয়েছিল তাদের রক্ত কি আমি খাব?” তাঁরা তাঁদের প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে সেই জল এনেছিল বলে দায়ূদ তা পান করতে রাজী হলেন না। সেই তিনজন নাম করা বীর এই সব কাজ করেছিল।
\p
\s5
\v 20 যোয়াবের ভাই অবীশয় ছিলেন সেই তিনজনের মধ্যে প্রধান। তিনি বর্শা চালিয়ে তিনশো লোককে মেরে ফেলেছিলেন এবং তিনিও ঐ তিনজনের মত নাম করা হয়ে উঠেছিলেন।
\v 21 তিনি সেই তিনজনের চেয়ে আরও বেশী সম্মান পেয়েছিলেন এবং তাঁদের সেনাপতি হয়েছিলেন, অথচ তিন জনের সমান ছিলেন না।
\p
\s5
\v 22 কব্‌সেলীয় যিহোয়াদার ছেলে বনায় ছিলেন একজন বীর যোদ্ধা। তিনিও বড় বড় কাজ করেছিলেন। মোয়াবীয় অরিয়েলের দুই ছেলেকে তিনি মেরে ফেলেছিলেন। এক তুষার পড়া দিনে তিনি একটা গর্তের মধ্যে নেমে গিয়ে একটা সিংহকে মেরে ফেলেছিলেন।
\v 23 আবার একজন পাঁচ হাত (সাড়ে সাত ফুট) লম্বা মিসরীয়কে তিনি মেরে ফেলেছিলেন। সেই মিসরীয়ের হাতে ছিল তাঁতীর বীমের মত একটা বর্শা, কিন্তু তবুও তিনি লাঠি হাতে তার দিকে এগিয়ে গিয়েছিলেন। সেই মিসরীয়ের হাত থেকে বর্শাটা কেড়ে নিয়ে তিনি সেই বর্শা দিয়ে তাকে মেরে ফেলেছিলেন।
\s5
\v 24 যিহোয়াদার ছেলে বনায় এই সব কাজ করলেন। তিনিও সেই তিনজন বীরের মধ্যে নাম করা হয়ে উঠেছিলেন।
\v 25 সেই তিনজনের মধ্যে তাঁকে ধরা না হলেও তিনি ত্রিশজনের থেকে বেশি সম্মানীয় ছিলেন। দায়ূদ তাঁর দেহরক্ষীদের ভার বনায়ের উপরেই দিয়েছিলেন।
\p
\s5
\v 26 সেই শক্তিশালী লোকেরা হলেন যোয়াবের ভাই অসাহেল, বৈৎলেহমের দোদোর ছেলে ইল্‌হানন,
\v 27 হরোরীয় শম্মোৎ, পলোনীয় হেলস,
\v 28 তকোয়ের ইক্কেশের ছেলে ঈরা, অনাথোতের অবীয়েষর,
\v 29 হূশাতীয় সিব্বখয়, অহোহীয় ঈলয়,
\s5
\v 30 নটোফাতীয় মহরয়, নটোফাতীয় বানার ছেলে হেলদ,
\v 31 বিন্যামীন গোষ্ঠীর গিবিয়ার রীবয়ের ছেলে ইথয়, পিরিয়াথোনীয় বনায়,
\v 32 গাশের উপত্যকা থেকে হূরয়, অর্বতীয় অবীয়েল,
\v 33 বাহরূমীয় অস্‌মাবৎ, শাল্‌বোনীয় ইলীয়হবঃ,
\s5
\v 34 গিষোণীয় হাষেমের ছেলেরা, হরারীয় শাগির ছেলে যোনাথন,
\v 35 হরারীয় সাখরের ছেলে অহীয়াম, ঊরের ছেলে ইলীফাল,
\v 36 মখেরাতীয় হেফর, পলোনীয় অহিয়,
\v 37 কর্মিলীয় হিষ্রো, ইষ্‌বয়ের ছেলে নারয়,
\s5
\v 38 নাথনের ভাই যোয়েল, হগ্রির ছেলে মিভর,
\v 39 অম্মোনীয় সেলক, সরূয়ার ছেলে যোয়াবের অস্ত্র বহনকারী বেরোতীয় নহরয়,
\v 40 যিত্রীয় ঈরা, যিত্রীয় গারেব,
\v 41 হিত্তীয় ঊরিয়, অহলয়ের ছেলে সাবদ,
\s5
\v 42 রূবেণীয় শীষার ছেলে অদীনা তিনি ছিলেন রূবেণীয়দের নেতা এবং তাঁর সঙ্গে ছিল ত্রিশজন লোক,
\v 43 মাখার ছেলে হানান, মিত্নীয় যোশাফট,
\v 44 অষ্টরোতীয় উষিয়, অরোয়েরীয় হোথমের দুই ছেলে শাম ও যিয়ীয়েল,
\s5
\v 45 শিম্রির ছেলে যিদিয়েল ও তাঁর ভাই তীষীয় যোহা,
\v 46 মহবীয় ইলীয়েল, ইল্‌নামের দুই ছেলে যিরীবয় ও যোশবিয়, মোয়াবীয় যিৎমা,
\v 47 ইলীয়েল, ওবেদ ও মসোবায়ীয় যাসীয়েল।
\s5
\c 12
\p
\v 1 কীশের ছেলে শৌলের সামনে থেকে দায়ূদকে দূর করা হলে পর অনেক লোক সিক্লগে দায়ূদের কাছে এসেছিল। যুদ্ধের সময় যে যোদ্ধারা দায়ূদকে সাহায্য করেছিল এরা তাদের মধ্যে ছিল।
\v 2 এরা ধনুকধারী ছিল এবং বাঁ হাতে ও ডান হাতে তীর মারতে ও ফিংগা দিয়ে পাথর ছুঁড়তে পারত। এরা ছিল বিন্যামীন গোষ্ঠীর শৌলের বংশের লোক।
\s5
\v 3 অহীয়েষর প্রধান ছিলেন পরে যোয়াশ, এরা গিবিয়াতীয় শমায়ের ছেলে; অস্‌মাবতের ছেলে যিষীয়েল ও পেলট, বরাখা, অনাথোতীয় যেহূ;
\v 4 গিবিয়োনীয় যিশ্ময়িয়, ইনি সেই ত্রিশজনের মধ্যে একজন নেতা ও ত্রিশজনের ওপরে নিযুক্ত ছিলেন; যিরমিয়, যহসীয়েল, যোহানন, গদেরাথীয় যোষাবদ;
\s5
\v 5 ইলিয়ূষয়, যিরীমোৎ, বালিয়, শমরিয়, হরূফীয় শফটিয়;
\v 6 কোরহীয়দের মধ্যে ইল্কানা, যিশিয়, অসরেল, যোয়েষর, যাশবিয়াম;
\v 7 গদোরীয় যিরোহমের ছেলে যোয়েলা ও সবদিয়।
\p
\s5
\v 8 গাদীয়দের কিছু লোক নিজেদের দল ছেড়ে মরু এলাকার দুর্গের মত জায়গায় দায়ূদের কাছে এসেছিলেন। তাঁরা ছিলেন যুদ্ধের শিক্ষা পাওয়া শক্তিশালী যোদ্ধা। তাঁরা ঢাল ও বর্শার ব্যবহার জানতেন। তাঁদের মুখ সিংহের মত ভয়ংকর ছিল এবং পাহাড়ী হরিণের মত তাঁরা জোরে দৌড়াতে পারতেন।
\s5
\v 9 সেখানে এষর তাদের নেতা ছিলেন, দ্বিতীয় ওবদিয়, তৃতীয় ইলীয়াব,
\v 10 চতুর্থ মিশ্মন্না, পঞ্চম যিরমিয়,
\v 11 ষষ্ঠ অত্তয়, সপ্তম ইলীয়েল,
\v 12 অষ্টম যোহানন, নবম ইল্‌সাবাদ,
\v 13 দশম যিরমিয় ও একাদশ মগ্‌বন্নয়।
\p
\s5
\v 14 এই গাদীয়েরা ছিলেন সৈন্যদলের সেনাপতি। তাঁদের মধ্যে যিনি সবচেয়ে ছোট তিনি ছিলেন একাই একশো জনের সমান এবং যিনি সবচেয়ে বড় তিনি ছিলেন একাই হাজার জনের সমান।
\v 15 সেই বছরের প্রথম মাসে যখন যর্দন নদীর জল কিনারা ছাপিয়ে গিয়েছিল তখন এঁরাই পার হয়ে গিয়ে নদীর পূর্ব ও পশ্চিম দিকের উপত্যকায় বসবাসকারী প্রত্যেককে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
\p
\s5
\v 16 এছাড়া বিন্যামীন গোষ্ঠীর অন্য লোকেরা এবং যিহূদার কিছু লোক দায়ূদের কাছে দুর্গম জায়গায় এসেছিল।
\v 17 দায়ূদ তাদের সঙ্গে দেখা করতে বের হয়ে এসে বললেন, “আপনারা যদি শান্তির মনোভাব নিয়ে আমাকে সাহায্য করতে এসে থাকেন তবে আমি আপনাদের সঙ্গে এক হতে প্রস্তুত আছি, কিন্তু আমি কোন অন্যায় না করলেও যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে শত্রুর হাতে আমাকে তুলে দেবার জন্য এসে থাকেন তবে আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর যেন তা দেখেন এবং আপনাদের তিরস্কার করুন।”
\p
\s5
\v 18 যিনি পরে ত্রিশজনের মধ্যে নেতা হয়েছিলেন সেই অমাসয়ের উপর সদাপ্রভুর আত্মা এলেন। তখন তিনি বললেন, “হে দায়ূদ, আমরা তোমারই। হে যিশয়ের ছেলে, আমরা তোমারই পক্ষে। মঙ্গল হোক, তোমার মঙ্গল হোক, মঙ্গল হোক তাদের, যারা আপনাকে সাহায্য করে, কারণ তোমার ঈশ্বরই তোমাকে সাহায্য করেন।” তখন দায়ূদ তাঁদের গ্রহণ করে তাঁর সৈন্যদলের উপর সেনাপতি করলেন।
\p
\s5
\v 19 দায়ূদ যখন পলেষ্টীয়দের সঙ্গে শৌলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাচ্ছিলেন তখন মনঃশি গোষ্ঠীর কিছু লোক নিজেদের দল ছেড়ে দায়ূদের কাছে গিয়েছিলেন। অবশ্য দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা পলেষ্টীয়দের সাহায্য করেন নি, কারণ পলেষ্টীয় শাসনকর্তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করবার পর দায়ূদকে বিদায় করে দিয়েছিলেন। তাঁরা বলেছিলেন, “তিনি যদি আমাদের ত্যাগ করে তাঁর মনিব শৌলের সঙ্গে গিয়ে যোগ দেন তবে আমাদের বেঁচে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।”
\v 20 দায়ূদ সিক্লগে ফিরে যাবার সময় মনঃশি গোষ্ঠীর যে লোকেরা দল ছেড়ে তাঁর কাছে গিয়েছিলেন তাঁরা হলেন অদ্‌ন, যোষাবদ, যিদীয়েল, মীখায়েল, যোষাবদ, ইলীহূ ও সিল্লথয়। এঁরা ছিলেন মনঃশি গোষ্ঠীর এক এক হাজার সৈন্যের সেনাপতি।
\s5
\v 21 অন্যান্য আক্রমণকারী দলগুলোর বিরুদ্ধে এঁরা দায়ূদকে সাহায্য করেছিলেন। এঁরা সবাই ছিলেন শক্তিশালী যোদ্ধা এবং সৈন্যদলের সেনাপতি হলেন।
\v 22 এইভাবে দিনের পর দিন লোকেরা দায়ূদকে সাহায্য করতে আসতে লাগল। শেষে ঈশ্বরের সৈন্যদলের মত তাঁর একটা মস্ত বড় সৈন্যদল গড়ে উঠল।
\p
\s5
\v 23 সদাপ্রভুর কথা অনুসারে যুদ্ধ করে শৌলের রাজ্য দায়ূদের হাতে তুলে দেবার জন্য যারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হিব্রোণে দায়ূদের কাছে এসেছিল তাদের সংখ্যা এই,
\p
\v 24 যুদ্ধের সাজে সজ্জিত ঢাল ও বর্শাধারী যিহূদা গোষ্ঠীর ছয় হাজার আটশো জন।
\p
\v 25 শিমিয়োন গোষ্ঠীর সাত হাজার একশো শক্তিশালী যোদ্ধা।
\p
\s5
\v 26 লেবি গোষ্ঠীর চার হাজার ছয়শো জন।
\v 27 তাঁদের মধ্যে ছিলেন হারোণের বংশের নেতা যিহোয়াদা, যাঁর সঙ্গে ছিল তিন হাজার সাতশো জন লোক।
\v 28 এছাড়া ছিলেন সাদোক নামে একজন শক্তিশালী যুবক যোদ্ধা ও তাঁর বংশের বাইশজন সেনাপতি।
\p
\s5
\v 29 শৌলের নিজের গোষ্ঠীর, অর্থাৎ বিন্যামীন গোষ্ঠীর তিন হাজার জন। কিন্তু এই গোষ্ঠীর বেশীর ভাগ লোক তখনও শৌলের পরিবারের পক্ষে ছিল।
\p
\v 30 ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর বিশ হাজার আটশো শক্তিশালী যোদ্ধা। এরা নিজের নিজের বংশে বিখ্যাত ছিল।
\p
\v 31 মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক বংশের আঠারো হাজার লোক। এই লোকদের নাম করে বলা হয়েছিল যেন তারা এসে দায়ূদকে রাজা করে।
\p
\s5
\v 32 ইষাখর গোষ্ঠীর দুইশো জন নেতা। তাঁরা ছিলেন বুদ্ধিমান এবং বুঝতে পারতেন ইস্রায়েলীয়দের কখন কি করা উচিত। তাঁদের সঙ্গে ছিল তাঁদের অধীন নিজেদের গোষ্ঠীর লোকেরা।
\p
\v 33 সবূলূন গোষ্ঠীর পঞ্চাশ হাজার দক্ষ সৈন্য। তারা সব রকম অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে পারত। তারা সম্পূর্ণ বিশ্বস্তভাবে দায়ূদকে সাহায্য করেছিল।
\p
\s5
\v 34 নপ্তালি গোষ্ঠীর এক হাজার সেনাপতি। তাঁদের সঙ্গে ছিল ঢাল ও বর্শাধারী সাঁইত্রিশ হাজার লোক।
\p
\v 35 দান গোষ্ঠীর আটাশ হাজার ছয়শো দক্ষ সৈন্য।
\p
\s5
\v 36 আশের গোষ্ঠীর চল্লিশ হাজার দক্ষ সৈন্য।
\p
\v 37 সব রকম অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে যর্দনের পূর্ব দিক থেকে এসেছিল এক লক্ষ কুড়ি হাজার লোক। এরা এসেছিল রূবেণ, গাদ ও মনশিঃ গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের মধ্য থেকে।
\p
\s5
\v 38 এরা সকলেই ছিল দক্ষ যোদ্ধা। সমস্ত ইস্রায়েলের উপর দায়ূদকে রাজা করবার জন্য তারা পুরোপুরি মন স্থির করে হিব্রোণে এসেছিল। দায়ূদকে রাজা করবার ব্যাপারে বাদবাকী ইস্রায়েলীয়েরাও একমত হয়েছিল।
\v 39 এই লোকেরা তিন দিন দায়ূদের সঙ্গে থেকে খাওয়া দাওয়া করল। তাদের আত্মীয়রাই তাদের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করেছিল।
\v 40 এছাড়া ইষাখর, সবূলূন ও নপ্তালি এলাকা থেকেও লোকেরা গাধা, উট, খচ্চর ও বলদের পিঠে করে তাদের জন্য খাবার নিয়ে এসেছিল। ইস্রায়েল দেশের লোকদের মনে আনন্দ ছিল বলে তারা প্রচুর পরিমাণে ময়দা, ডুমুর ও কিশ্‌মিশের তাল, আঙ্গুর রস, তেল এবং বলদ ও ভেড়া নিয়ে এসেছিল।
\s5
\c 13
\ms যিরুশালেমে নিয়ম সিন্দুক নিয়ে আসা। পলেষ্টীয়দের পরাজয়, ইত্যাদি।
\p
\v 1 পরে দায়ূদ সহস্রপতিদের ও শতপতিদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন।
\v 2 তারপর তিনি ইস্রায়েলীয়দের গোটা দলটাকে বললেন, “আপনারা যদি ভাল মনে করেন আর এটাই যদি আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছা হয় তবে আসুন, আমরা ইস্রায়েলের সমস্ত এলাকায় আমাদের বাদবাকী ভাইদের কাছে ও তাদের সঙ্গে যে সব যাজক ও লেবীয়েরা তাদের নগরে আছে তাদের কাছে খবর পাঠিয়ে দিই যেন তারা এসে আমাদের কাছে একত্র হয়।
\v 3 আসুন, আমাদের ঈশ্বরের সাক্ষ্য সিন্দুকটা আমাদের কাছে ফিরিয়ে আনি; শৌলের রাজত্বকালে আমরা তো সিন্দুকটির দিকে কোন মনোযোগ দিইনি।”
\v 4 তখন গোটা সমাজ তা করতে রাজী হল, কারণ সব লোকের কাছে সেটাই উচিত বলে মনে হল।
\p
\s5
\v 5 কাজেই কিরিয়ৎ যিয়ারীম থেকে ঈশ্বরের সিন্দুক নিয়ে আসবার জন্য দায়ূদ মিসরের সীহোর নদী থেকে হমাতের সীমা পর্যন্ত সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের একত্র করলেন।
\v 6 যিহূদা দেশের বালা, অর্থাৎ কিরিয়ৎ যিয়ারীম থেকে ঈশ্বর সদাপ্রভুর সিন্দুকটি নিয়ে আসবার জন্য দায়ূদ ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা সেখানে গেলেন। এই সিন্দুকটি সদাপ্রভুর নামে পরিচিত, কারণ তিনি সেখানে করূবদের মাঝখানে থাকেন।
\p
\s5
\v 7 লোকেরা অবীনাদবের বাড়ী থেকে ঈশ্বরের সিন্দুকটি বের করে একটা নতুন গাড়ির উপরে বসিয়ে নিয়ে চলল। উষঃ ও অহিয়ো সেই গাড়িটা চালাচ্ছিল,
\v 8 আর দায়ূদ ও সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা সদাপ্রভুর সামনে তাঁদের সমস্ত শক্তি দিয়ে গান গাইছিলেন এবং সুরবাহার, বীণা, খঞ্জনী, করতাল ও তূরী বাজাচ্ছিলেন।
\p
\s5
\v 9 তাঁরা কীদোনের খামারের কাছে আসলে পর বলদ দুটো হোচট খেল আর উষঃ সিন্দুকটা ধরবার জন্য হাত বাড়াল।
\v 10 এতে উষের উপর সদাপ্রভু ক্রোধে জ্বলে উঠলেন। সিন্দুকে হাত দেওয়ার দরুন তিনি তাকে আঘাত করলেন। এতে সে ঈশ্বরের সামনেই সেখানে মারা গেল।
\p
\v 11 উষের উপর সদাপ্রভুর এই ক্রোধ দেখে দায়ূদ অসন্তুষ্ট হলেন। আজও সেই জায়গাটাকে বলা হয় পেরষ উষঃ [উষঃ আক্রমণ] রাখলেন; আজও সেই নাম প্রচলিত আছে।
\p
\s5
\v 12 দায়ূদ সেই দিন ঈশ্বরকে খুব ভয় করলেন। তিনি বললেন, “ঈশ্বরের সিন্দুকটি তবে কি করে আমার কাছে আনা যাবে?”
\v 13 সিন্দুকটি তিনি দায়ূদ শহরে নিজের কাছে নিয়ে গেলেন না, তিনি সেটি নিয়ে গাতীয় ওবেদ ইদোমের বাড়ীতে রাখলেন।
\v 14 ঈশ্বরের সিন্দুকটি তিন মাস ওবেদ ইদোমের বাড়ীতে তার পরিবারের কাছে থাকল; এতে সদাপ্রভু তার পরিবারকে ও তার সব কিছুকে আশীর্বাদ করলেন।
\s5
\c 14
\p
\v 1 পরে সোরের রাজা হীরম দায়ূদের কাছে কয়েকজন লোক পাঠিয়ে দিলেন, তাদের সঙ্গে পাঠালেন দায়ূদের জন্য রাজবাড়ী তৈরী করবার উদ্দেশ্যে এরস কাঠ, রাজমিস্ত্রি ও ছুতার মিস্ত্রি।
\v 2 তখন দায়ূদ বুঝতে পারলেন যে, সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপর তাঁর রাজপদ স্থির করেছেন এবং তাঁর লোকদের, অর্থাৎ ইস্রায়েলীয়দের জন্য তাঁর রাজ্যের অনেক উন্নতি করেছেন।
\p
\s5
\v 3 দায়ূদ যিরূশালেমে আরও স্ত্রী গ্রহণ করলেন এবং তাঁর আরও ছেলেমেয়ের জন্ম হল।
\v 4 যিরূশালেমে তাঁর যে সব সন্তানের জন্ম হয়েছিল তাদের নাম হল শম্মূয়, শোবব, নাথন, শলোমন,
\v 5 যিভর, ইলীশূয়, ইল্পেলট,
\v 6 নোগহ, নেফগ, যাফিয়,
\v 7 ইলীশামা, বীলিয়াদা ও ইলীফেলট।
\p
\s5
\v 8 পলেষ্টীয়েরা যখন শুনতে পেল যে, গোটা ইস্রায়েলের উপরে দায়ূদকে রাজপদে অভিষেক করা হয়েছে তখন তারা সমস্ত সৈন্য নিয়ে তাঁর খোঁজে বেরিয়ে এল; তা শুনে দায়ূদ তাদের বিরুদ্ধে বের হলেন।
\v 9 পলেষ্টীয়েরা এসে রফায়ীম উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল।
\s5
\v 10 তখন দায়ূদ ঈশ্বরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কি পলেষ্টীয়দের আক্রমণ করব? তুমি কি আমার হাতে তাদের তুলে দেবে?” উত্তরে সদাপ্রভু বললেন, “যাও, তাদের আমি তোমার হাতে তুলে দেব।”
\p
\v 11 তখন দায়ূদ ও তাঁর লোকেরা বাল্‌ পরাসীমে গিয়ে তাদের হারিয়ে দিলেন। দায়ূদ বললেন, “ঈশ্বর জলের বাঁধ ভাঙ্গার মত করে আমার হাত দিয়ে আমার শত্রুদের ভেঙ্গে ফেললেন।” এইজন্যই সেই জায়গার নাম হল বাল্‌ পরাসীম [ভাঙ্গা জায়গা] রাখা হল।
\v 12 পলেষ্টীয়েরা তাদের দেবমূর্তিগুলো সেখানে ফেলে গিয়েছিল। দায়ূদের হুকুমে লোকেরা সেগুলো আগুনে পুড়িয়ে দিল।
\p
\s5
\v 13 পলেষ্টীয়েরা আবার এসে সেই উপত্যকায় ছড়িয়ে পড়ল।
\v 14 তখন দায়ূদ আবার ঈশ্বরের কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, আর উত্তরে ঈশ্বর তাঁকে বললেন, “তোমরা সোজাসুজি তাদের দিকে যেয়ো না, বরং তাদের পিছন দিক থেকে বাঁকা গাছগুলোর সামনে তাদের আক্রমণ কর।
\s5
\v 15 বাঁকা গাছগুলোর মাথায় যখন তুমি সৈন্যদলের চলবার মত শব্দ শুনবে তখনই তুমি যুদ্ধের জন্য বেরিয়ে পড়বে, এর মানে হল, পলেষ্টীয় সৈন্যদের আঘাত করবার জন্য ঈশ্বর তোমার আগে আগে গেছেন।”
\v 16 ঈশ্বরের আদেশ মতই দায়ূদ কাজ করলেন; তারা গিবিয়োন থেকে গেষর পর্যন্ত সমস্ত পথে পলেষ্টীয় সৈন্যদেরকে আঘাত করল।
\p
\v 17 এইভাবে দায়ূদের সুনাম সব দেশে ছড়িয়ে পড়ল, আর সদাপ্রভু সব জাতির মধ্যে তাঁর সম্বন্ধে একটা ভয়ের ভাব জাগিয়ে দিলেন।
\s5
\c 15
\p
\v 1 দায়ূদ শহরে নিজের জন্য ঘর বাড়ী তৈরী করবার পর দায়ূদ ঈশ্বরের সিন্দুকের জন্য একটা জায়গা প্রস্তুত করে সেখানে একটা তাঁবু খাটালেন।
\v 2 তারপর তিনি বললেন, “ঈশ্বরের সিন্দুক লেবীয়েরা ছাড়া আর কেউ বহন করতে পারবে না, কারণ সদাপ্রভুর সিন্দুক বহন করবার জন্য এবং চিরকাল তাঁর সেবা করবার জন্য সদাপ্রভু তাদেরই মনোনীত করেছেন।”
\p
\v 3 সদাপ্রভুর সিন্দুকের জন্য দায়ূদ যে জায়গা প্রস্তুত করেছিলেন সেখানে সিন্দুকটি আনবার জন্য তিনি সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের যিরূশালেমে জড়ো করলেন।
\s5
\v 4 তিনি হারোণের বংশের যে লোকদের ও যে লেবীয়দের ডেকে জড়ো করলেন তাঁরা হলেন,
\v 5 কহাতের বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা ঊরীয়েল এবং তাঁর ভাইয়েরা একশো কুড়ি জন;
\v 6 মরারির বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা অসায় এবং তাঁর ভাইয়েরা দুইশো কুড়িজন;
\s5
\v 7 গের্শোনের বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা যোয়েল এবং তাঁর ভাইয়েরা একশো ত্রিশজন;
\v 8 ইলীষাফণের বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা শময়িয় এবং তাঁর ভাইয়েরা দুইশো জন;
\v 9 হিব্রোণের বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা ইলীয়েল এবং তাঁর ভাইয়েরা আশিজন;
\v 10 উষীয়েলের বংশের লোকদের মধ্য থেকে নেতা অম্মীনাদব এবং তাঁর ভাইয়েরা একশো বারোজন।
\p
\s5
\v 11 তারপর দায়ূদ পুরোহিত সাদোক ও অবিয়াথরকে এবং লেবীয় ঊরীয়েল, অসায়, যোয়েল, শময়িয়, ইলীয়েল ও অম্মীনাদবকে ডেকে পাঠালেন।
\v 12 তিনি তাঁদের বললেন, “আপনারা হলেন লেবি গোষ্ঠীর বিভিন্ন বংশের নেতা; আপনারা ও আপনাদের সঙ্গী লেবীয়েরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিজেদের আলাদা করে নেবেন, যাতে যে জায়গা আমি প্রস্তুত করে রেখেছি সেই জায়গায় আপনারা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সিন্দুকটি এনে রাখতে পারেন।
\s5
\v 13 প্রথমবার আপনারা সেটি আনেন নি বলে আমাদের উপর আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু ক্রোধে জ্বলে উঠেছিলেন। তাঁর আদেশ অনুসারে কিভাবে সেটি আনতে হবে আমরা তাঁর কাছে তা জানতে চাই নি।”
\p
\v 14 এতে যাজকেরা ও লেবীয়েরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে নিজেদের পবিত্র করে নিলেন যাতে তাঁরা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সিন্দুকটি নিয়ে আসতে পারেন।
\v 15 সদাপ্রভুর নির্দেশ মত মোশির আদেশ অনুসারে লেবীয়েরা ঈশ্বরের সিন্দুকটি বহন করবার ডাণ্ডা কাঁধের উপর নিয়ে সেটি নিয়ে আসলেন।
\p
\s5
\v 16 দায়ূদ লেবীয়দের নেতাদের বললেন যে, “তারা যেন বাদ্যযন্ত্র, অর্থাৎ বীণা, সুরবাহার ও করতাল বাজিয়ে আনন্দের গান গাইবার জন্য তাঁদের গায়ক ভাইদের নিযুক্ত করেন।”
\v 17 কাজেই লেবীয়েরা যোয়েলের ছেলে হেমনকে ও তাঁর বংশের লোকদের মধ্য থেকে বেরিখিয়ের ছেলে আসফকে এবং তাঁদের গোষ্ঠী ভাই মরারীয়দের মধ্য থেকে কূশায়ার ছেলে এথনকে নিযুক্ত করলেন।
\v 18 তাঁদের সঙ্গে নিযুক্ত করা হল তাঁদের বংশের দ্বিতীয় শ্রেণীর আত্মীয়দের। তারা হল সখরিয়, বেন, যাসীয়েল, শমীরামোৎ, যিহীয়েল, উন্নি, ইলীয়াব, বনায়, মাসেয়, মত্তিথিয়, ইলীফলেহূ, মিক্‌নেয় এবং ওবেদ ইদোম ও যিয়ীয়েল নামে দরজার দুইজন পাহারাদার।
\p
\s5
\v 19 উঁচু সুরে পিতলের করতাল বাজাবার জন্য নিযুক্ত করা হলো গায়ক হেমন, আসফ ও এথনের উপর।
\v 20 বীণা বাজাবার ভার পড়ল সখরিয়, অসীয়েল, শমীরামোৎ, যিহীয়েল, উন্নি, ইলীয়াব, মাসেয় ও বনায়ের উপর।
\v 21 নীচু সুরে সুরবাহার বাজাবার ভার পড়ল মত্তিথিয়, ইলীফলেহূ, মিক্‌নেয়, ওবেদ ইদোম, যিয়ীয়েল ও অসসিয়ের উপর।
\s5
\v 22 গান পরিচালনার ভার পড়ল লেবীয় নেতা কননিয়ের উপর। তিনি গানের ওস্তাদ ছিলেন বলে তাঁর উপর গান শেখানোর জন্য দায়িত্ব পড়েছিল।
\p
\v 23 সিন্দুকটি পাহারাদার ছিলেন বেরিখিয়, ইল্‌কানা।
\v 24 ঈশ্বরের সিন্দুকের সামনে তূরী বাজাবার ভার পড়ল যাজক শবনিয়, যিহোশাফট, নথনেল, অমাসয়, সখরিয়, বনায় ও ইলীয়েষরের উপর এবং ওবেদ ইদোম ও যিহিয় সিন্দুকের পাহারাদার ছিলেন।
\p
\s5
\v 25 এর পরে দায়ূদ, ইস্রায়েলের বৃদ্ধ নেতারা আর সৈন্যদলের হাজার সৈন্যের সেনাপতিরা আনন্দ করতে করতে ওবেদ ইদোমের বাড়ী থেকে সদাপ্রভুর সেই ব্যবস্থা সিন্দুকটি আনবার জন্য গেলেন।
\v 26 যে লেবীয়েরা সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুকটি বয়ে আনছিল ঈশ্বর তাদের পরিচালনা করেছিলেন বলে সাতটা বলদ ও সাতটা ভেড়া উৎসর্গ করা হল।
\s5
\v 27 সিন্দুক বহনকারী লেবীয়েরা, গায়কেরা এবং গানের দলের পরিচালক কননিয় মসীনার পাতলা কাপড়ের পোশাক পরেছিল। দায়ূদও মসীনার পাতলা কাপড়ের পোশাক এবং মসীনার এফোদ পরেছিলেন।
\v 28 এইভাবে সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা চিৎকার করতে করতে এবং শিঙ্গা, তূরী, করতাল, বীণা ও সুরবাহার বাজাতে বাজাতে সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুকটি যিরূশালেমে নিয়ে আসল।
\p
\s5
\v 29 সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুকটি দায়ূদ শহরে ঢুকবার সময় শৌলের মেয়ে মীখল জানলা দিয়ে তা দেখলেন। রাজা দায়ূদকে নাচতে ও আনন্দ করতে দেখে তিনি মনে মনে দায়ূদকে তুচ্ছ করলেন।
\s5
\c 16
\p
\v 1 ঈশ্বরের সিন্দুকের জন্য দায়ূদ যে তাঁবু খাটিয়েছিলেন লোকেরা সিন্দুকটি এনে তার ভিতরে রাখল। এর পর ঈশ্বরের সামনে হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উত্সর্গ করা হল।
\v 2 সেই সব উৎসর্গের অনুষ্ঠান করা শেষ হয়ে গেলে পর দায়ূদ সদাপ্রভুর নামে লোকদের আশীর্বাদ করলেন।
\v 3 তারপর তিনি ইস্রায়েলীয় প্রত্যেক স্ত্রীলোক ও পুরুষকে একটা করে রুটি, এক খণ্ড মাংস ও এক তাল কিশমিশ দিলেন।
\p
\s5
\v 4 সদাপ্রভুর সিন্দুকের সামনে সেবা কাজের জন্য দায়ূদ কয়েকজন লেবীয়কে নিযুক্ত করলেন যাতে তারা প্রার্থনা করতে, ধন্যবাদ দিতে এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব করতে পারে।
\v 5 এই লোকদের নেতা ছিলেন আসফ, দ্বিতীয় ছিলেন সখরিয়, তারপরে ছিলেন যিয়ীয়েল, শমীরামোৎ, যিহীয়েল, মত্তিথিয়, ইলীয়াব, বনায়, ওবেদ ইদোম ও যিয়ীয়েল। এঁরা বাজাতেন বীণা ও সুরবাহার আর আসফ বাজাতেন করতাল;
\v 6 যাজক বনায় আর যহসীয়েল ঈশ্বরের সেই ব্যবস্থা সিন্দুকের সামনে নিয়মিত ভাবে তূরী বাজাতেন।
\p
\s5
\v 7 সেই দিন দায়ূদ প্রথমে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে ধন্যবাদের এই গান গাইবার ভার আসফ ও তাঁর ভাইদের উপর দিলেন:
\s ঈশ্বরের প্রশংসার জন্য গান।
\p
\v 8 "সদাপ্রভুকে ধন্যবাদ দাও, তাঁর গুণের কথা ঘোষণা কর; তাঁর কাজের কথা অন্যান্য জাতিদের জানাও।
\p
\v 9 তাঁর উদ্দেশ্যে গান গাও, তাঁর প্রশংসা গান কর; তাঁর সব আশ্চর্য্য কাজের কথা বল।
\p
\s5
\v 10 তাঁর পবিত্রতার গৌরব কর; যারা সদাপ্রভুকে গভীরভাবে জানতে আগ্রহী তাদের অন্তর আনন্দিত হোক।
\p
\v 11 সদাপ্রভু ও তাঁর শক্তিকে বুঝতে চেষ্টা কর; সব সময় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে আগ্রহী হও।
\p
\s5
\v 12 তাঁর আশ্চর্য্য কাজগুলোর কথা মনে রেখো; তাঁর আশ্চর্য্য কাজ ও মুখনির্গত আদেশ সব।
\v 13 হে তাঁর দাস ইস্রায়েলের বংশধরেরা, তাঁর মনোনীত যাকোবের লোকেরা।
\p
\v 14 তিনিই আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু; গোটা দুনিয়া তাঁরই শাসনে চলছে।
\p
\s5
\v 15 যে বাক্যের নির্দেশ তিনি দিয়েছিলেন হাজার হাজার বংশের জন্য, তাঁর সেই ব্যবস্থার কথা চিরকাল মনে রেখো।
\p
\v 16 সেই নিয়ম তিনি অব্রাহামের জন্য স্থাপন করেছিলেন আর ইস্‌হাকের কাছে শপথ করেছিলেন।
\p
\v 17 তিনি তা যাকোবের জন্য বিধি হিসাবে আর ইস্রায়েলের কাছে অনন্তকালীন নিয়ম হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন।
\p
\v 18 তিনি বলেছিলেন, “আমি তোমাকে কনান দেশটা দেব, সেটাই হবে তোমার পাওনা সম্পত্তি।”
\p
\s5
\v 19 সেখানে তোমরা সংখ্যায় বেশি ছিলে না, অল্প ছিলে এবং সেখানে বিদেশী ছিলে।
\p
\v 20 তারা এক জাতি থেকে অন্য জাতির কাছে, এক রাজ্য থেকে অন্য লোকদের কাছে বেড়াত।
\p
\v 21 তখন তিনি কাউকে তাদের অত্যাচার করতে দিতেন না। তাদের জন্য তিনি রাজাদের শাস্তি দিতেন,
\p
\v 22 বলতেন, “আমার অভিষিক্ত লোকদের ছোঁবে না; আমার ভাববাদীদের কোনো ক্ষতি করবে না।”
\p
\s5
\v 23 পৃথিবীর সব লোক, তোমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গান গাও; তাঁর দেওয়া উদ্ধারের কথা দিনের পর দিন ঘোষণা কর।
\p
\v 24 বিভিন্ন জাতির মধ্যে তাঁর মহিমা ঘোষণা কর; সমস্ত লোকের মধ্যে তাঁর সব আশ্চর্য্য কাজের কথা ঘোষণা কর।
\p
\s5
\v 25 সদাপ্রভুই মহান এবং সবার উপরে প্রশংসার যোগ্য; সব দেব দেবতার চেয়ে তিনি বেশী ভয়ার্হ।
\p
\v 26 বিভিন্ন জাতির দেব দেবতারা অসার মাত্র, কিন্তু সদাপ্রভু আকাশমন্ডলের সৃষ্টিকর্তা।
\p
\v 27 তাঁকেই ঘিরে রয়েছে গৌরব ও মহিমা; তাঁর বাসস্থানে রয়েছে শক্তি ও আনন্দ।
\p
\s5
\v 28 হে বিভিন্ন জাতির সমস্ত গোষ্ঠী, স্বীকার কর সমস্ত গৌরব ও শক্তি সদাপ্রভুরই।
\p
\v 29 তোমরা স্বীকার কর সমস্ত গৌরব সদাপ্রভুর; উৎসর্গের জিনিস নিয়ে তাঁর সামনে এস। সদাপ্রভুর মহিমাপূর্ণ পবিত্রতায় আরাধনা কর।
\p
\s5
\v 30 পৃথিবীর সমস্ত লোক, তোমরা তাঁর সামনে কেঁপে ওঠো। পৃথিবী অটলভাবে স্থাপিত হল, তা কখনও নড়বে না।
\p
\v 31 আকাশমন্ডল আনন্দ করুক, পৃথিবী খুশী হোক; বিভিন্ন জাতির মধ্যে তারা ঘোষণা করুক, “সদাপ্রভুই রাজত্ব করেন।”
\p
\s5
\v 32 সাগর ও তার মধ্যেকার সব কিছু গর্জন করুক; মাঠ ও তার মধ্যেকার সব কিছু আনন্দিত হোক।
\p
\v 33 তাহলে বনের গাছপালাও সদাপ্রভুর সামনে আনন্দে গান করবে, কারণ তিনি পৃথিবীর বিচার করতে আসছেন।
\p
\s5
\v 34 তোমরা সদাপ্রভুর ধন্যবাদ কর, কারণ তিনি মঙ্গলময়; তাঁর অটল ভালবাসা অনন্তকাল স্থায়ী।
\p
\v 35 তোমরা বল, “হে আমাদের উদ্ধারকর্তা ঈশ্বর, আমাদের উদ্ধার কর; অন্যান্য জাতিদের মধ্য থেকে তুমি আমাদের এক জায়গায় নিয়ে এসে আমাদের রক্ষা কর, যাতে আমরা তোমার পবিত্রতার উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ দিতে পারি আর তোমার প্রশংসায় গৌরব করি।
\p
\s5
\v 36 সৃষ্টির আগে থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব হোক।” এর পর সব লোকেরা বলল, “আমেন, আর সদাপ্রভুর গৌরব করলো।”
\p
\s5
\v 37 প্রতিদিনের প্রয়োজন অনুসারে নিয়মিত সেবা কাজের জন্য দায়ূদ সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকের কাছে আসফ ও তাঁর ভাইদের রেখে গেলেন।
\v 38 তাদের সাহায্য করবার জন্য তিনি ওবেদ ইদোম ও তাঁর আটষট্টি জন লোককেও রেখে গেলেন। যিদূথূনের ছেলে ওবেদ ইদোম ও হোষা ছিলেন দরজার পাহারাদার।
\p
\v 39 দায়ূদ গিবিয়োনের উপাসনার উঁচু স্থানে সদাপ্রভুর আবাস তাঁবুর সামনে যাজক সাদোক ও তাঁর সঙ্গী যাজকদের রেখে গেলেন।
\s5
\v 40 এর উদ্দেশ্য ছিল সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের যে ব্যবস্থার আদেশ দিয়েছিলেন তাতে যা যা লেখা ছিল সেই অনুসারে যেন তাঁরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বেদীর উপর প্রতিদিন সকালে ও বিকালে নিয়মিতভাবে হোমবলির অনুষ্ঠান করতে পারেন।
\v 41 তাঁদের সঙ্গে ছিলেন হেমন ও যিদূথূন আর বাদবাকী লোক, যাদের নাম উল্লেখ করে বেছে নেওয়া হয়েছিল যাতে তারা সদাপ্রভুর অনন্তকাল স্থায়ী অটল ভালবাসার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ দিতে পারে।
\s5
\v 42 ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গান করবার সময়ে তূরী, করতাল ও অন্যান্য বাজনা বাজাবার জন্য হেমন ও যিদূথূনের উপর ভার দেওয়া হল। যিদূথূনের ছেলেরা লোকদের দরজার পাহারাদার হল।
\p
\v 43 এর পর সব লোক যে যার বাড়ীর দিকে রওনা হল এবং দায়ূদ তাঁর পরিবারের লোকদের আশীর্বাদ করবার জন্য বাড়ীতে ফিরে গেলেন।
\s5
\c 17
\ms ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞার জন্য দায়ূদের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ
\p
\v 1 নিজের বাড়িতে বাস করবার সময় একদিন দায়ূদ ভাববাদী নাথনকে বললেন, “আমি এখন এরস কাঠের ঘরে বাস করছি কিন্তু সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকটি রয়েছে একটা তাঁবুর মধ্যে।”
\p
\v 2 উত্তরে নাথন দায়ূদকে বললেন, “আপনার মনে যা আছে আপনি তাই করুন; কারণ ঈশ্বর আপনার সঙ্গে আছেন।”
\p
\s5
\v 3 সেই রাতে ঈশ্বরের বাক্য নাথনের কাছে উপস্থিত হলো; তিনি বললেন,
\v 4 “তুমি গিয়ে আমার দাস দায়ূদকে বল যে, সদাপ্রভু বলছেন, ‘আমার থাকবার ঘর তুমি তৈরী করবে না।
\v 5 মিসর দেশ থেকে ইস্রায়েলীয়দের বের করে আনবার দিন থেকে আজ পর্যন্ত আমি কোনো ঘরে বাস করিনি। এক তাঁবু থেকে অন্য তাঁবুতে, এক বাসস্থান থেকে অন্য বাসস্থানে গিয়েছি।
\v 6 যে সব নেতাদের উপর আমি আমার লোকদের পালন করবার ভার দিয়েছিলাম, বিভিন্ন জায়গায় ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে ঘুরে বেড়াবার সময় আমি সেই নেতাদের কি কোনো সময় বলেছি যে, তারা কেন আমার জন্য এরস কাঠের ঘর তৈরী করেনি?
\p
\s5
\v 7 “এখন তুমি আমার দাস দায়ূদকে বল যে, বাহিনীগণের সদাপ্রভু এই কথা বলছেন, ‘আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের শাসনকর্তা হবার জন্য আমিই তোমাকে পশু চরাবার মাঠ থেকে, ভেড়ার পালের পিছন থেকে নিয়ে এসেছি।
\v 8 তুমি যে সব জায়গায় গিয়েছ আমিও সেখানে তোমার সঙ্গে গিয়েছি এবং তোমার সামনে থেকে তোমার সমস্ত শত্রুদের শেষ করে দিয়েছি। আমি তোমার নাম পৃথিবীর মহান লোকদের নামের মত বিখ্যাত করব।
\s5
\v 9 আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের জন্য আমি একটা জায়গা ঠিক করে সেখানেই গাছের মত তাদের লাগিয়ে দেব যাতে তারা নিজেদের জায়গায় শান্তিতে বাস করতে পারে
\v 10 এবং আমার লোক ইস্রায়েলীয়দের উপর শাসনকর্তা নিযুক্ত করবার পর থেকে দুষ্ট লোকেরা তাদের উপর যে অত্যাচার করে আসছে তারা যেন আর তা করতে না পারে। আমি তোমার সব শত্রুদেরও দমন করব। আমি আরও বলছি যে, আমি সদাপ্রভু তোমার বংশকে গড়ে তুলব।
\s5
\v 11 তোমার আয়ু শেষ হলে পর যখন তুমি তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে চলে যাবে তখন আমি তোমার জায়গায় তোমার বংশের একজনকে, তোমার নিজের বংশধরদেরকে বসাব এবং তার রাজ্য স্থির রাখব।
\v 12 তোমার সেই ছেলেই আমার জন্য একটা ঘর তৈরী করবে, আর তার সিংহাসন আমি চিরকাল স্থায়ী করব।
\s5
\v 13 আমি হব তার বাবা আর সে হবে আমার ছেলে। আমার ভালবাসা আমি কখনও তার উপর থেকে তুলে নেব না, যেমন করে আমি তুলে নিয়েছিলাম তোমার আগে যে ছিল তার উপর থেকে।
\v 14 আমার ঘরে ও আমার রাজ্যে আমি তাকে চিরকাল স্থির রাখব এবং তার সিংহাসন চিরস্থায়ী হবে।”
\p
\v 15 এই দর্শনের সমস্ত কথাগুলো নাথন দায়ূদকে বললেন।
\s5
\v 16 এই সব কথা শুনে রাজা দায়ূদ তাঁবুর ভিতরে গেলেন এবং সদাপ্রভুর সামনে বসে বললেন, “হে ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমিই বা কি, আর আমার বংশই বা কি যে, তুমি আমাকে এত দূর পর্যন্ত নিয়ে এসেছ?
\v 17 আর হে ঈশ্বর, এটাও তোমার চোখে যথেষ্ট হয়নি; এর সঙ্গে তোমার দাসের বংশের ভবিষ্যতের কথাও তুমি বলেছ। হে ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমি যেন একজন মহান লোক সেই চোখেই তুমি আমাকে দেখেছ।
\p
\v 18 তোমার দাস আমাকে যে সম্মান দেখালে তাতে আমি তোমার কাছে আর বেশী কি বলতে পারি? তুমি তো তোমার দাসকে জান।
\s5
\v 19 হে সদাপ্রভু, তোমার দাসের জন্য তোমার ইচ্ছা অনুসারে এই মহৎ কাজ তুমি করেছ আর তোমার দাসকে তা জানিয়েছ।
\p
\v 20 হে সদাপ্রভু, তোমার মত আর কেউ নেই এবং তুমি ছাড়া কোনো ঈশ্বর নেই; আমরা নিজের কানেই এই কথা শুনেছি।
\v 21 তোমার ইস্রায়েল জাতির মত পৃথিবীতে আর কোনো জাতি নেই, যাকে তুমি তোমার নিজের লোক করবার জন্য মুক্ত করেছ। তুমি তাদের মিসর দেশ থেকে মুক্ত করে তাদের সামনে থেকে অন্যান্য জাতিদের দূর করে দিয়েছ। তোমার নিজের গৌরব প্রকাশের জন্য মহৎ ও ভয়ংকর কাজের মধ্য দিয়ে তুমি তা করেছ।
\s5
\v 22 তোমার লোক ইস্রায়েলীয়দের তুমি নিজের উদ্দেশ্যে চিরকাল তোমার নিজের লোক করেছ, আর তুমি, হে সদাপ্রভু, তুমি তাদের ঈশ্বর হয়েছ।
\p
\v 23 এখন হে সদাপ্রভু, আমার ও আমার বংশের বিষয়ে তুমি যে প্রতিজ্ঞা করেছ তা চিরকাল রক্ষা কর। তোমার প্রতিজ্ঞা অনুসারেই তা কর।
\v 24 এতে আমার বংশ স্থায়ী হবে এবং চিরকাল তোমার গৌরব হবে। তখন লোকে বলবে, ‘সর্বক্ষমতার অধিকারী সদাপ্রভুই ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর, সত্যিই ইস্রায়েলীয়দের ঈশ্বর’! আর তোমার দাস দায়ূদের বংশ তোমার সামনে স্থির থাকবে।
\s5
\v 25 হে আমার ঈশ্বর, তুমিই আমার কাছে এই বিষয় প্রকাশ করে বলেছ যে, তুমি আমার মধ্য দিয়ে একটা বংশ গড়ে তুলবে। তাই তোমার কাছে এই প্রার্থনা করতে আমার মনে সাহস হয়েছে।
\v 26 হে সদাপ্রভু, তুমিই ঈশ্বর। এই মঙ্গলের প্রতিজ্ঞা তুমিই তোমার দাসের কাছে করেছ।
\v 27 আমার বংশকে তুমি খুশী হয়ে আশীর্বাদ করেছ যাতে এই বংশ চিরকাল তোমার সামনে থাকে; কারণ, হে সদাপ্রভু তুমিই আশীর্ব্বাদ করেছ এবং চিরকালের জন্য আশীর্ব্বাদযুক্ত।"
\s5
\c 18
\ms নানাজাতীয় লোকদের ওপর দায়ূদের জয়লাভ।
\p
\v 1 পরে দায়ূদ পলেষ্টীয়দের আঘাত করে তাদের নিজের অধীনে আনলেন। তিনি পলেষ্টীয়দের হাত থেকে গাৎ ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো দখল করে নিলেন।
\v 2 আর তিনি মোয়াবীয়দেরও আঘাত করলেন। তাতে মোয়াবীয়রা দায়ূদের দাস হল এবং উপঢৌকন দিতে লাগলো।
\p
\s5
\v 3 পরে সোবার রাজা হদরেষর যখন ইউফ্রেটিস নদী বরাবর তাঁর জায়গাগুলোতে আবার তাঁর কর্তৃত্ব স্থাপন করতে গেলেন তখন দায়ূদ তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করতে হমাৎ পর্যন্ত গেলেন।
\v 4 দায়ূদ তাঁর এক হাজার রথ, সাত হাজার অশ্বারোহী এবং কুড়ি হাজার পদাতিক সৈন্য আটক করলেন। তাদের একশোটা রথের ঘোড়া রেখে তিনি বাকী সব ঘোড়ার পায়ের শিরা কেটে দিলেন।
\p
\s5
\v 5 দম্মেশকের অরামীয়েরা যখন সোবার রাজা হদরেষরকে সাহায্য করতে আসল তখন দায়ূদ তাদের বাইশ হাজার লোককে মেরে ফেললেন।
\v 6 দায়ূদ অরাম রাজ্যের দম্মেশকে সৈন্যদল রাখলেন। তাতে অরামীয়েরা তাঁর দাস হলো এবং তাঁকে কর্‌ দিল। এইভাবে দায়ূদ যে কোনো জায়গায় যেতেন সদাপ্রভু সেখানে তাঁকে জয়ী করতেন।
\p
\s5
\v 7 হদরেষরের লোকদের সোনার ঢালগুলো দায়ূদ যিরূশালেমে নিয়ে আসলেন।
\v 8 টিভৎ ও কূন নামে হদরেষরের দুটো শহর থেকে দায়ূদ প্রচুর পরিমাণে পিতলও নিয়ে আসলেন। এই পিতল দিয়ে শলোমন সেই বিরাট পাত্র, থাম ও পিতলের অন্যান্য জিনিস তৈরী করেছিলেন।
\p
\s5
\v 9 হমাতের রাজা তয়ূ শুনতে পেলেন যে, দায়ূদ সোবার রাজা হদরেষরের গোটা সৈন্যদলকে হারিয়ে দিয়েছেন।
\v 10 দায়ূদ হদরেষরের সঙ্গে যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন বলে তাঁকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাবার জন্য তয়ি তাঁর ছেলে হদোরামকে রাজা দায়ূদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন। এই হদরেষরের সঙ্গে তয়ূর অনেকবার যুদ্ধ হয়েছিল। হদোরাম দায়ূদের জন্য সঙ্গে করে সোনা, রূপা ও পিতলের নানা রকম জিনিস নিয়ে এসেছিলেন।
\v 11 এর আগে রাজা দায়ূদ ইদোমীয়, মোয়াবীয়, অম্মোনীয়, পলেষ্টীয় এবং অমালেকীয়দের কাছ থেকে সোনা ও রূপা নিয়ে এসে যেমন সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আলাদা করে রেখেছিলেন তেমনি এগুলো নিয়েও তিনি তাই করলেন।
\p
\s5
\v 12 সরূয়ার ছেলে অবীশয় লবণ উপত্যকায় আঠারো হাজার ইদোমীয়কে মেরে ফেললেন।
\v 13 তিনি ইদোমের কয়েক জায়গায় সৈন্যদল রাখলেন আর তাতে সমস্ত ইদোমীয়েরা দায়ূদের অধীন হল। দায়ূদ যে কোনো জায়গায় যেতেন সদাপ্রভু সেখানেই তাঁকে জয়ী করতেন।
\p
\s5
\v 14 দায়ূদ সমস্ত ইস্রায়েল দেশের উপর রাজত্ব করতে লাগলেন। তাঁর লোকদের তিনি ন্যায়ভাবে বিচার ও শাসন করতেন।
\v 15 সরূয়ার ছেলে যোয়াব ছিলেন তাঁর প্রধান সেনাপতি আর অহীলূদের ছেলে যিহোশাফট তাঁর রাজত্বের সব ইতিহাস লিখে রাখতেন।
\v 16 অহীটূবের ছেলে সাদোক ও অবিয়াথরের ছেলে অবীমেলক ছিলেন যাজক আর শব্‌শ ছিলেন রাজার লেখক।
\v 17 যিহোয়াদার ছেলে বনায় করেথীয় ও পলেথীয়দের প্রধান, আর দায়ূদের ছেলেরা রাজার প্রধান প্রধান পদে নিযুক্ত ছিলেন।
\s5
\c 19
\p
\v 1 পরে অম্মোনীয় রাজা নাহশ মারা গেলে পর তাঁর ছেলে হানূন তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\v 2 দায়ূদ বললেন, “হানূনের বাবা নাহশ আমার প্রতি বিশ্বস্ত ছিলেন বলে আমিও হানূনের প্রতি বিশ্বস্ত থাকব।” সেইজন্য তাঁর বাবার মৃত্যুতে তাঁকে সান্ত্বনা দেবার জন্য তিনি কয়েকজন লোক পাঠিয়ে দিলেন। দায়ূদের লোকেরা হানূনকে সান্ত্বনা দেবার জন্য অম্মোনীয়দের দেশে গেল।
\v 3 কিন্তু অম্মোনীয় নেতারা হানূনকে বললেন, “আপনি কি মনে করেন যে, দায়ূদ আপনার বাবার প্রতি সম্মান দেখাবার জন্য আপনাকে সান্ত্বনা দিতে লোক পাঠিয়েছে? সে তাদের আপনার কাছে পাঠিয়েছে যাতে তারা গুপ্তচর হিসাবে দেশের খোঁজখবর নিয়ে পরে সেটা ধ্বংস করে দিতে পারে।”
\s5
\v 4 হানূন তখন দায়ূদের লোকদের ধরে তাদের দাড়ি কামিয়ে দিলেন এবং লম্বা জামার অর্ধেকটা, অর্থাৎ কোমর পর্যন্ত কেটে দিয়ে তাদের বিদায় করে দিলেন।
\p
\v 5 কেউ এসে দায়ূদকে সেই লোকদের প্রতি কি করা হয়েছে তা জানালে পর তাঁর পাঠানো সেই লোকদের সঙ্গে দেখা করবার জন্য তিনি কয়েকজন লোক পাঠিয়ে দিলেন, কারণ সেই লোকেরা খুব লজ্জিত ছিল। রাজা তাদের বলে পাঠালেন, “তোমাদের দাড়ি বেড়ে না ওঠা পর্যন্ত তোমরা যিরীহোতেই থাক; তারপর তোমরা ফিরে এসো।”
\p
\s5
\v 6 অম্মোনীয়েরা যখন বুঝতে পারল যে, তারা দায়ূদের কাছে নিজেদের ঘৃণার পাত্র করে তুলেছে, তখন হানূন ও অম্মোনীয়েরা অরাম নহরয়িম, অরাম মাখা ও সোবা থেকে রথ ও অশ্বারোহীদের ভাড়া করে আনবার জন্য ঊনচল্লিশ হাজার কেজি রূপা পাঠিয়ে দিল।
\v 7 তারা বত্রিশ হাজার রথ এবং সৈন্যদল সমেত মাখার রাজাকে ভাড়া করল। তিনি ও তাঁর সৈন্যেরা এসে মেদবার কাছে ছাউনি ফেললেন আর ওদিকে অম্মোনীয়েরা নিজের নিজের শহর থেকে একত্র হয়ে যুদ্ধের জন্য বের হল।
\p
\s5
\v 8 এই সব শুনে দায়ূদ যোয়াবকে এবং তাঁর সমস্ত শক্তিশালী সৈন্যদলকে পাঠিয়ে দিলেন।
\v 9 তখন অম্মোনীয়েরা বের হয়ে তাদের শহরের ফটকে ঢুকবার পথে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সাজাল। এদিকে যে রাজারা এসেছিলেন তাঁরা খোলা মাঠে থাকলেন।
\p
\s5
\v 10 যোয়াব দেখলেন তাঁর সামনে এবং পিছনে অরামীয় সৈন্যদের সাজানো হয়েছে। সেইজন্য তিনি তাঁর সৈন্যদের মধ্য থেকে কতগুলো বাছাই করা সৈন্য নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সাজালেন।
\v 11 বাকী সৈন্যদের তিনি তাঁর ভাই অবীশয়ের অধীনে রাখলেন; তাতে তারা অম্মোনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য নিজেদের সাজাল।
\s5
\v 12 যোয়াব তাঁর ভাইকে বললেন, “যদি অরামীয়েরা আমার চেয়ে শক্তিশালী হয় তবে তুমি আমাকে সাহায্য করতে আসবে, আর যদি অম্মোনীয়েরা তোমার চেয়ে শক্তিশালী হয় তবে আমি তোমাকে সাহায্য করতে যাব।
\v 13 সাহস কর; আমাদের লোকদের জন্য এবং আমাদের ঈশ্বরের শহরগুলোর জন্য এস, আমরা সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করি। সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তিনি তাই করবেন।”
\p
\s5
\v 14 এই বলে যোয়াব তাঁর সৈন্যদল নিয়ে অরামীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য এগিয়ে গেলে পর অরামীয়েরা তাঁর সামনে থেকে পালিয়ে গেল।
\v 15 অরামীয়দের পালিয়ে যেতে দেখে অম্মোনীয়েরাও যোয়াবের ভাই অবীশয়ের সামনে থেকে পালিয়ে গিয়ে শহরের ভিতরে ঢুকল। কাজেই যোয়াব যিরূশালেমে ফিরে গেলেন।
\p
\s5
\v 16 অরামীয়েরা যখন দেখল যে, তারা ইস্রায়েলীয়দের কাছে সম্পূর্ণভাবে হেরে গেছে তখন তারা লোক পাঠিয়ে ইউফ্রেটিস নদীর ওপারে বাস করা অরামীয়দের নিয়ে আসল। হদরেষরের সৈন্যদলের সেনাপতি শোবক তাদের পরিচালনা করে নিয়ে আসলেন।
\p
\v 17 দায়ূদকে সেই কথা জানালে পর তিনি সমস্ত ইস্রায়েলীয় সৈন্যদের জড়ো করলেন এবং যর্দন নদী পার হয়ে তাদের বিরুদ্ধে এগিয়ে গেলেন এবং তাদের সামনের দিকে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সাজালেন। তখন অরামীয়েরা দায়ূদের সঙ্গে যুদ্ধ করল।
\s5
\v 18 কিন্তু ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে তারা পালিয়ে গেল। তখন দায়ূদ তাদের সাত হাজার রথচালক ও চল্লিশ হাজার পদাতিক সৈন্য মেরে ফেললেন। তিনি তাদের সেনাপতি শোবককেও মেরে ফেললেন।
\v 19 হদরেষরের অধীন রাজারা যখন দেখলেন যে, তাঁরা ইস্রায়েলীয়দের কাছে হেরে গেছেন তখন দায়ূদের সঙ্গে শান্তি চুক্তি করে তাঁরা তাঁর অধীন হলেন। কাজেই অম্মোনীয়দের সাহায্য করতে অরামীয়েরা আর রাজী হল না।
\s5
\c 20
\p
\v 1 বসন্তকালে যখন রাজারা সাধারণত: যুদ্ধ করতে বের হন তখন যোয়াব সৈন্যদল নিয়ে বের হলেন। তিনি অম্মোনীয়দের দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়ে রব্বাতে গিয়ে সেটা ঘেরাও করলেন। দায়ূদ কিন্তু যিরূশালেমেই রয়ে গেলেন। যোয়াব রব্বা আক্রমণ করে সেটা ধ্বংস করে দিলেন।
\s5
\v 2 দায়ূদ সেখানকার রাজার মাথা থেকে মুকুটটা খুলে নিলেন। সেটা প্রায় চৌত্রিশ কেজি সোনা দিয়ে তৈরী ছিল, আর তাতে দামী পাথর বসানো ছিল। মুকুটটা দায়ূদের মাথায় পরিয়ে দেওয়া হল। দায়ূদ সেই শহর থেকে অনেক লুটের মাল নিয়ে আসলেন।
\v 3 তিনি শহরের লোকদের বের করে আনলেন এবং করাত, লোহার মই ও কুড়ুল দিয়ে তাদের কেটে ফেললেন। অম্মোনীয়দের সমস্ত শহরেও তিনি তাই করলেন। এর পর দায়ূদ তাঁর সমস্ত সৈন্যদল নিয়ে যিরূশালেমে ফিরে গেলেন।
\p
\s5
\v 4 পরে গেষরে পলেষ্টীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ আরম্ভ হল। সেই সময় হূশাতীয় সিব্বখয় রফায়ীয়দের বংশের সিপ্পয় নামে একজনকে মেরে ফেলল, আর এতে পলেষ্টীয়েরা হেরে গেল।
\v 5 পলেষ্টীয়দের সঙ্গে আর একটা যুদ্ধে যায়ীরের ছেলে ইল্‌হানন গাতীয় গলিয়াতের ভাই লহমিকে মেরে ফেলল। তার বর্শাটা ছিল তাঁতীদের বীমের মত।
\s5
\v 6 গাতে আর একটা যুদ্ধ হয়েছিল। সেই যুদ্ধে একজন লম্বা চওড়া লোক ছিল যার দুই হাতে ও দুই পায়ে ছয়টা করে মোট চব্বিশটা আঙ্গুল ছিল। সেও ছিল একজন রফায়ীয়ের বংশধর।
\v 7 সে যখন ইস্রায়েল জাতিকে টিট্‌কারি দিল তখন দায়ূদের ভাই শিমিয়ের ছেলে যোনাথন তাকে মেরে ফেলল।
\v 8 গাতের এই লোকেরা ছিল রফার বংশের লোক। দায়ূদ ও তাঁর লোকদের হাতে এরা মারা পড়েছিল।
\s5
\c 21
\ms লোকগণনার জন্য ঈশ্বরের কোপ।
\p
\v 1 শয়তান এবার ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে উঠে পড়ে লাগল। ইস্রায়েল জাতির লোক গণনা করবার জন্য সে দায়ূদকে উত্তেজিত করেছিল।
\v 2 দায়ূদ তখন যোয়াব ও সৈন্যদলের সেনাপতিদের বললেন, “বের্‌শেবা থেকে দান পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়দের গণনা কর। তারপর ফিরে এসে আমাকে হিসাব দিয়ো যাতে এদের সংখ্যা কত তা আমি জানতে পারি।”
\p
\v 3 কিন্তু যোয়াব উত্তরে বললেন, “সদাপ্রভু যেন তাঁর নিজের লোকদের সংখ্যা একশো গুণ বাড়িয়ে দেন। আমার প্রভু মহারাজ, এরা সবাই কি আপনার দাস নয়? তবে কেন আমার প্রভু এটা করতে চাইছেন? কেন আপনার জন্য গোটা ইস্রায়েল জাতি দোষী হবে?”
\p
\s5
\v 4 কিন্তু যোয়াবের কাছে রাজার আদেশ বহাল থাকল; কাজেই যোয়াব গিয়ে গোটা ইস্রায়েল দেশটা ঘুরে যিরূশালেমে ফিরে আসলেন।
\v 5 যারা তলোয়ার চালাতে পারে তাদের সংখ্যা তিনি দায়ূদকে জানালেন তা হল গোটা ইস্রায়েলে এগারো লক্ষ এবং যিহূদায় চার লক্ষ সত্তর হাজার।
\p
\s5
\v 6 যোয়াব কিন্তু সেই গণনার মধ্যে লেবি ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকদের ধরেননি, কারণ রাজার এই আদেশ তাঁর কাছে খারাপ মনে হয়েছিল।
\v 7 এই আদেশ ঈশ্বরের চোখেও ছিল মন্দ; তাই তিনি ইস্রায়েল জাতিকে শাস্তি দিলেন।
\p
\v 8 তখন দায়ূদ ঈশ্বরকে বললেন, “আমি এই কাজ করে ভীষণ পাপ করেছি। এখন আমি তোমার কাছে মিনতি করি, তুমি তোমার দাসের এই অন্যায় ক্ষমা কর। আমি খুবই বোকামির কাজ করেছি।”
\p
\s5
\v 9 সদাপ্রভু তখন দায়ূদের ভাববাদী গাদকে বললেন,
\v 10 “তুমি গিয়ে দায়ূদকে এই কথা বল, ‘আমি সদাপ্রভু তোমাকে তিনটি শাস্তির মধ্য থেকে একটা বেছে নিতে বলছি। তুমি তার মধ্য থেকে যেটা বেছে নেবে আমি তোমার প্রতি তাই করব।”
\p
\s5
\v 11 তখন গাদ দায়ূদের কাছে গিয়ে বললেন, “সদাপ্রভু আপনাকে এগুলোর মধ্য থেকে একটা বেছে নিতে বলছেন
\v 12 তিন বছর ধরে দুর্ভিক্ষ, কিম্বা আপনার শত্রুদের কাছে হেরে গিয়ে তাদের সামনে থেকে তিন মাস ধরে পালিয়ে বেড়ানো, কিম্বা তিন দিন পর্যন্ত সদাপ্রভুর তলোয়ার, অর্থাৎ দেশের মধ্যে মহামারী। সেই তিন দিন সদাপ্রভুর দূত ইস্রায়েলের সব জায়গায় ধ্বংসের কাজ করে বেড়াবেন। এখন আপনি বলুন, যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁকে আমি কি উত্তর দেব?”
\p
\s5
\v 13 দায়ূদ গাদকে বললেন, “আমি খুব বিপদে পড়েছি। আমি যেন মানুষের হাতে না পড়ি, তার চেয়ে বরং সদাপ্রভুর হাতেই পড়ি, কারণ তাঁর করুণা অসীম।”
\p
\v 14 তখন সদাপ্রভু ইস্রায়েলের উপর একটা মহামারী পাঠিয়ে দিলেন আর তাতে ইস্রায়েলের সত্তর হাজার লোক মারা পড়ল।
\v 15 যিরূশালেম শহর ধ্বংস করবার জন্য ঈশ্বর একজন দূতকে পাঠিয়ে দিলেন। কিন্তু সেই দূত যখন সেই কাজ করতে যাচ্ছিলেন তখন সদাপ্রভু সেই ভীষণ শাস্তি দেওয়া থেকে মন ফিরালেন। সেই ধ্বংসকারী স্বর্গদূতকে তিনি বললেন, “থাক্‌, যথেষ্ট হয়েছে, এবার তোমার হাত গুটাও।” সদাপ্রভুর দূত তখন যিবূষীয় অর্ণানের খামারের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
\p
\s5
\v 16 এর মধ্যে দায়ূদ উপর দিকে তাকিয়ে দেখলেন যে, সদাপ্রভুর দূত পৃথিবী এবং আকাশের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছেন আর তাঁর হাতে রয়েছে যিরূশালেমের উপর মেলে ধরা খোলা তলোয়ার। এ দেখে দায়ূদ ও বৃদ্ধ নেতারা চট্‌ পরা অবস্থায় মাটির উপর উপুড় হয়ে পড়লেন।
\p
\v 17 তখন দায়ূদ ঈশ্বরকে বললেন, “লোকদের গণনা করবার হুকুম কি আমিই দিই নি? পাপ আমিই করেছি, অন্যায়ও করেছি আমি। এরা তো ভেড়ার মত, এরা কি করেছে? হে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, আমার ও আমার পরিবারের উপর তুমি শাস্তি দাও, কিন্তু এই মহামারী যেন আর তোমার লোকদের উপর না থাকে।”
\p
\s5
\v 18 তখন সদাপ্রভুর দূত গাদকে আদেশ দিলেন যেন তিনি দায়ূদকে যিবূষীয় অর্ণানের খামারে গিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে একটা বেদী তৈরী করতে বলেন।
\v 19 সদাপ্রভুর নাম করে গাদ তাঁকে যে কথা বলেছিলেন সেই কথার বাধ্য হয়ে দায়ূদ সেখানে গেলেন।
\v 20 অর্ণান গম ঝাড়তে ঝাড়তে ঘুরে সেই স্বর্গদূতকে দেখতে পেল, আর তার সঙ্গে তার যে চারটি ছেলে ছিল তারা গিয়ে লুকাল।
\s5
\v 21 দায়ূদ এগিয়ে গেলেন আর তাঁকে দেখে অর্ণান খামার ছেড়ে তাঁর সামনে গিয়ে মাটিতে উপুড় হয়ে পড়ে তাঁকে প্রণাম করল।
\p
\v 22 দায়ূদ তাকে বললেন, “তোমার ঐ খামার বাড়ীর জায়গাটা আমাকে দাও। আমি সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে একটা বেদী তৈরী করব যাতে লোকদের মধ্যে এই মহামারী থেমে যায়। পুরো দাম নিয়েই ওটা আমার কাছে বিক্রি কর।”
\p
\s5
\v 23 অর্ণান দায়ূদকে বলল, “আপনি ওটা নিন। আমার প্রভু মহারাজের যা ভাল মনে হয় তাই করুন। দেখুন, হোমবলির জন্য আমি আমার ষাঁড়গুলো দিচ্ছি, জ্বালানি কাঠের জন্য দিচ্ছি শস্য মাড়াইয়ের কাঠের যন্ত্র আর শস্য উৎসর্গের জন্য গম। আমি এই সবই আপনাকে দিচ্ছি।”
\p
\v 24 কিন্তু উত্তরে রাজা দায়ূদ অর্ণানকে বললেন, “না, তা হবে না। আমি এর পুরো দাম দিয়েই কিনে নেব। যা তোমার তা আমি সদাপ্রভুর জন্য নেব না, কিম্বা বিনামূল্যে পাওয়া এমন কোনো জিনিস দিয়ে হোমবলি উৎসর্গও করব না।”
\p
\s5
\v 25 এই বলে সেই জমির জন্য দায়ূদ অর্ণানকে সাত কেজি আটশো গ্রাম সোনা দিলেন।
\v 26 দায়ূদ সেখানে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে একটা বেদী তৈরী করলেন এবং হোমবলি ও মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গ করলেন। তিনি সদাপ্রভুর কাছে মিনতি করলেন আর সদাপ্রভু হোমবলির বেদীর উপর স্বর্গ থেকে আগুন পাঠিয়ে উত্তর দিলেন।
\v 27 এর পর সদাপ্রভু ঐ স্বর্গদূতকে আদেশ দিলেন আর তিনি তাঁর তলোয়ার খাপে ঢুকিয়ে রাখলেন।
\s5
\v 28 সেই সময় দায়ূদ যখন দেখলেন যে, যিবূষীয় অর্ণানের খামারে সদাপ্রভু তাঁকে উত্তর দিলেন তখন তিনি সেখানে আরও উৎসর্গের অনুষ্ঠান করলেন।
\v 29 মরু এলাকায় মোশি সদাপ্রভুর জন্য যে আবাস তাঁবু তৈরী করেছিলেন সেটা এবং হোমবলির বেদীটা সেই সময় গিবিয়োনের উপাসনার উঁচু জায়গায় ছিল।
\v 30 কিন্তু সদাপ্রভুর দূতের তলোয়ারের ভয়ে দায়ূদ ঈশ্বরের ইচ্ছা জানবার জন্য সেই বেদীর সামনে যেতে পারলেন না।
\s5
\c 22
\ms মন্দির তৈরীর জন্য দায়ূদের আয়োজন।
\p
\v 1 এর পর দায়ূদ বললেন, “ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘর এবং ইস্রায়েলের হোমবলির বেদীর স্থান এখানেই হবে।”
\p
\v 2 বিভিন্ন জাতির যে সব লোকেরা ইস্রায়েল দেশে বাস করত দায়ূদ আদেশ দিলেন যেন তাদের জড়ো করা হয়। তাদের মধ্য থেকে তিনি পাথর কাটবার লোকদের বেছে নিলেন যাতে ঈশ্বরের ঘর তৈরীর জন্য তারা পাথর কেটে ছেঁটে প্রস্তুত করতে পারে।
\s5
\v 3 ফটকগুলোর দরজার পেরেক ও কব্‌জার জন্য তিনি প্রচুর পরিমাণে লোহা দিলেন, আর এত পিতল দিলেন যে, তা ওজন করা যায় না।
\v 4 এছাড়া তিনি অসংখ্য এরস কাঠও দিলেন, কারণ সীদোনীয় ও সোরীয়েরা দায়ূদকে প্রচুর এরস কাঠ এনে দিয়েছিল।
\p
\v 5 দায়ূদ বললেন, “আমার ছেলে শলোমনের বয়স কম এবং তার অভিজ্ঞতাও কম, কিন্তু সদাপ্রভুর জন্য যে ঘর তৈরী করতে হবে তা যেন সমস্ত জাতির চোখে খুব বিখ্যাত এবং জাঁকজমকে ও গৌরবে পূর্ণ হয়। কাজেই তার জন্য আমি সব কিছু প্রস্তুত করে রাখব।” এই বলে দায়ূদ তাঁর মৃত্যুর আগে অনেক কিছুর আয়োজন করে রাখলেন।
\p
\s5
\v 6 তারপর তিনি তাঁর ছেলে শলোমনকে ডেকে তাঁর উপর ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য একটা ঘর তৈরীর ভার দিলেন।
\v 7 দায়ূদ শলোমনকে বললেন, “বাবা, আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য একটা ঘর তৈরীর ইচ্ছা আমার অন্তরে ছিল।
\v 8 কিন্তু সদাপ্রভুর এই কথা আমাকে জানানো হল, ‘তুমি অনেক রক্তপাত করেছ এবং অনেক যুদ্ধও করেছ। তুমি আমার নামে ঘর তৈরী করবে না, কারণ আমার চোখের সামনে তুমি পৃথিবীতে অনেক রক্তপাত করেছ।
\s5
\v 9 কিন্তু তোমার একটি ছেলে হবে যে শান্তি ভালবাসবে। তার চারপাশের শত্রুদের হাত থেকে আমি তাকে শান্তিতে রাখব। তার নাম হবে শলোমন (যার মানে শান্তি), কারণ আমি তার রাজত্বের সময়ে ইস্রায়েলকে শান্তিতে ও নিরাপদে রাখব।
\v 10 সেই আমার জন্য একটা ঘর তৈরী করবে। সে হবে আমার ছেলে আর আমি হব তার বাবা। ইস্রায়েলের উপরে তার রাজত্ব আমি চিরকাল স্থায়ী করব।’
\p
\s5
\v 11 এখন বাবা আমার, সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে থাকুন; তুমি সফলতা লাভ কর আর সদাপ্রভুর কথামত তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘর তৈরী কর।
\v 12 সদাপ্রভু তোমার উপরে যখন ইস্রায়েলের শাসনভার দেবেন তখন যেন তিনি তোমাকে বুদ্ধি বিবেচনা ও বুঝবার শক্তি দেন যাতে তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আইন কানুন মেনে চলতে পার।
\v 13 মোশির মধ্য দিয়ে সদাপ্রভু ইস্রায়েলকে যে নিয়ম ও নির্দেশ দিয়েছেন তা যদি তুমি যত্নের সঙ্গে পালন কর তাহলেই তুমি সফলতা লাভ করতে পারবে। তুমি শক্তিশালী হও আর মনে সাহস রাখ। ভয় কোরো না কিম্বা নিরাশ হোয়ো না।
\p
\s5
\v 14 আমি অনেক কষ্ট করে সদাপ্রভুর ঘরের জন্য তিন হাজার ন’শো টন সোনা ও ঊনচল্লিশ হাজার টন রূপা রেখেছি। এছাড়া এত বেশী পিতল ও লোহা রেখেছি আর কাঠ এবং পাথরও ঠিক করে রেখেছি। অবশ্য এর সঙ্গে তুমিও কিছু দিতে পারবে।
\s5
\v 15 তোমার অনেক কাজের লোক আছে; তারা হল পাথর কাটবার মিস্ত্রি, রাজমিস্ত্রি ও ছুতার মিস্ত্রি।
\v 16 এছাড়া রয়েছে অন্য সব রকম কাজ করবার ওস্তাদ লোক যারা সোনা, রূপা, পিতল ও লোহার কাজ করতে পারে। এই সব কারিগরদের সংখ্যা অনেক। এখন তুমি কাজ শুরু করে দাও আর সদাপ্রভু তোমার সঙ্গে থাকুন।”
\p
\s5
\v 17 দায়ূদ তারপর তাঁর ছেলে শলোমনকে সাহায্য করবার জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত নেতাদের হুকুম দিয়ে বললেন,
\v 18 “আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু কি আপনাদের সঙ্গে নেই? তিনি কি সব দিকেই আপনাদের শান্তি দেন নি? তিনি তো এই দেশের লোকদের আমার হাতে তুলে দিয়েছেন আর দেশটা সদাপ্রভু ও তাঁর লোকদের অধীন হয়েছে।
\v 19 এখন আপনারা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছা জানবার জন্য আপনাদের সমস্ত মন প্রাণ স্থির করুন এবং উঠ, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তাঁর পবিত্র ঘরটি তৈরী কর, যাতে তার মধ্যে সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুক ও ঈশ্বরের পবিত্র জিনিসগুলো এনে রাখা যায়।”
\s5
\c 23
\ms লেবীয়দের নির্দিষ্ট কাজ।
\p
\v 1 দায়ূদ যখন খুব বেশী বুড়ো হয়ে গেলেন তখন তাঁর ছেলে শলোমনকে তিনি ইস্রায়েলের উপরে রাজা করলেন।
\p
\v 2 দায়ূদ ইস্রায়েলের সমস্ত নেতা, যাজক এবং লেবীয়দের জড়ো করলেন।
\v 3 যে সব লেবীয় পুরুষেরা ত্রিশ কিম্বা তার বেশী বয়সের ছিল তাদের গণনা করলে দেখা গেল তাদের সংখ্যা আটত্রিশ হাজার।
\s5
\v 4 এদের মধ্য থেকে চব্বিশ হাজার জন সদাপ্রভুর ঘরের কাজের দেখাশোনা করবার জন্য নিযুক্ত হল আর ছয় হাজার জন হল কর্মকর্তা ও বিচারক এবং চার হাজার জন হল রক্ষী।
\v 5 দায়ূদ যে সব বাজনা তৈরী করিয়েছিলেন তা ব্যবহার করে সদাপ্রভুর প্রশংসা করবার জন্য বাকী চার হাজার লেবীয় নিযুক্ত হল।
\p
\v 6 লেবির ছেলে গের্শোন, কহাৎ ও মরারির বংশ অনুসারে দায়ূদ লেবীয়দের ভাগ করে দিলেন।
\p
\s5
\v 7 গের্শোনের বংশের মধ্যে ছিলেন লাদন ও শিমিয়ি।
\v 8 লাদনের তিনজন ছেলের মধ্যে প্রধান ছিলেন যিহীয়েল, তারপর সেথম ও যোয়েল।
\v 9 শিমিয়ির তিনজন ছেলে হল শলোমৎ, হসীয়েল ও হারণ। এঁরা ছিলেন লাদনের বিভিন্ন বংশের নেতা।
\p
\s5
\v 10 শিমিয়ির চারজন ছেলে হল যহৎ, সীন, যিয়ূশ ও বরীয়।
\v 11 এঁদের মধ্যে প্রথম ছিলেন যহৎ আর দ্বিতীয় ছিলেন সীন; কিন্তু যিয়ূশ ও বরীয়ের ছেলের সংখ্যা কম ছিল বলে তাঁদের সবাইকে একটা বংশের মধ্যে ধরা হল।
\p
\s5
\v 12 কহাতের চারজন ছেলে হল অম্রাম, যিষ্‌হর, হিব্রোণ ও উষীয়েল।
\v 13 অম্রামের ছেলেরা হল হারোণ ও মোশি। হারোণ ও তাঁর বংশধরদের চিরকালের জন্য ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আলাদা করা হল যেন তাঁরা মহাপবিত্র জিনিসগুলোর ভার নিতে পারেন, সদাপ্রভুর সামনে ধূপ জ্বালাতে পারেন, তাঁর সামনে সেবা কাজ করতে পারেন এবং তাঁর নামে আশীর্বাদ উচ্চারণ করতে পারেন।
\v 14 কিন্তু যেমন ঈশ্বরের লোক মোশি তাঁর ছেলেদের লেবীয়দের মধ্যে ধরা হত।
\s5
\v 15 মোশির ছেলেরা হল গের্শোম ও ইলীয়েষর।
\v 16 গের্শোমের বংশধরদের মধ্যে শবূয়েল ছিলেন নেতা।
\v 17 ইলীয়েষরের বংশধরদের মধ্যে রহবিয় ছিলেন নেতা। ইলীয়েষরের আর কোনো ছেলে ছিল না, কিন্তু রহবিয়ের ছেলের সংখ্যা ছিল অনেক।
\v 18 যিষ্‌হরের বংশধরদের মধ্যে শলোমীৎ ছিলেন নেতা।
\s5
\v 19 হিব্রোণের ছেলেদের মধ্যে প্রথম ছিলেন যিরিয়, দ্বিতীয় অমরিয়, তৃতীয় যহসীয়েল ও চতুর্থ যিকমিয়াম।
\v 20 উষীয়েলের ছেলেদের মধ্যে মীখা ছিলেন প্রথম ও যিশিয় ছিলেন দ্বিতীয়।
\p
\s5
\v 21 মরারির ছেলেরা হল মহলি ও মূশি। মহলির ছেলেরা হল ইলিয়াসর ও কীশ।
\v 22 ইলিয়াসর কোনো ছেলে না রেখেই মারা গেলেন, তাঁর কেবল মেয়েই ছিল। কীশের ছেলেরা, আর তাদের আত্মীয় কীশের ছেলেরা তাদেরকে বিয়ে করল।
\v 23 মূশির তিনজন ছেলে হল মহলি, এদর ও যিরেমোৎ।
\p
\s5
\v 24 এঁরাই ছিলেন বংশ অনুসারে লেবি গোষ্ঠীর বিভিন্ন বংশের নেতা। এঁদের বংশের লোকদের মধ্যে যাদের বয়স ছিল কুড়ি কিম্বা তার চেয়েও বেশী তাদের গণনা করে নাম লেখা হয়েছিল, আর তারাই ছিল সদাপ্রভুর ঘরের সেবাকারী।
\v 25 দায়ূদ বলেছিলেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর লোকদের শান্তি দিয়েছেন এবং তিনি চিরকালের জন্য যিরূশালেমে বাস করবেন।
\v 26 কাজেই সেবা কাজে ব্যবহার করবার জন্য আবাস তাঁবু কিম্বা অন্য কোনো জিনিস লেবীয়দের আর বহন করে নিয়ে যেতে হবে না।”
\s5
\v 27 দায়ূদের শেষ নির্দেশ অনুসারে কুড়ি বছর থেকে শুরু করে তার বেশী বয়সের লেবীয়দের গণনা করা হয়েছিল।
\p
\v 28 এই লেবীয়দের কাজ ছিল সদাপ্রভুর ঘরের সেবা কাজে হারোণের বংশধরদের সাহায্য করা। এর মধ্যে ছিল উপাসনা ঘরের উঠান ও পাশের কামরাগুলোর দেখাশোনা করা, সমস্ত পবিত্র জিনিসগুলো শুচি করে নেওয়া এবং ঈশ্বরের ঘরের অন্যান্য কাজ করা।
\v 29 তাদের উপরে এই সব জিনিসের ভার ছিল দর্শন রুটি, শস্য উৎসর্গের ময়দা, খামিহীন রুটি, সেঁকা রুটি এবং তেল মেশানো ময়দা। এছাড়া তাদের উপর ভার ছিল সব কিছুর ওজন ও পরিমাণ দেখা,
\s5
\v 30 প্রত্যেক দিন সকালে এবং বিকালে দাঁড়িয়ে সদাপ্রভুর ধন্যবাদ ও প্রশংসা করা এবং বিশ্রামবারে, অমাবস্যার উৎসবে ও অন্যান্য নির্দিষ্ট পর্বে যখন সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোমবলির অনুষ্ঠান করা হয় সেই সময়ও সদাপ্রভুর ধন্যবাদ ও প্রশংসা করা।
\v 31 সদাপ্রভুর সামনে নিয়মিত ভাবে, তাঁর নির্দেশ অনুসারে এবং নির্দিষ্ট সংখ্যায় তাদের সেবা কাজ করতে হত।
\p
\s5
\v 32 এইভাবে লেবীয়েরা মিলন তাঁবুর ও পবিত্র স্থানের দেখাশোনা করত এবং সদাপ্রভুর ঘরের সেবা কাজের জন্য তাদের ভাই হারোণের বংশধরদের সাহায্য করে।
\s5
\c 24
\p
\v 1 হারোণের বংশের লোকদের বিভিন্ন দলে ভাগ করা হয়েছিল। হারোণের ছেলেরা হল নাদব, অবীহূ, ইলিয়াসর ও ঈথামর।
\v 2 হারোণ মারা যাবার আগেই নাদব ও অবীহূ কোনো ছেলে না রেখেই মারা গিয়েছিলেন; কাজেই ইলিয়াসর ও ঈথামর যাজকের কাজ করতেন।
\v 3 সাদোক নামে ইলিয়াসরের একজন বংশধর এবং অহীমেলক নামে ঈথামরের একজন বংশধরের সাহায্যে দায়ূদ যাজকদের কাজ অনুসারে তাঁদের বিভিন্ন দলে ভাগ করে দিলেন।
\s5
\v 4 এতে ঈথামরের বংশের লোকদের চেয়ে ইলিয়াসরের বংশের লোকদের মধ্যে অনেক বেশী নেতা পাওয়া গেল। সেইজন্য ইলিয়াসরের বংশের ষোলজন নেতার জন্য তাঁদের ষোল দলে এবং ইথামরের বংশের আটজন নেতার জন্য তাঁদের আট দলে ভাগ করা হল।
\v 5 ইলিয়াসর ও ঈথামর, এই দুই বংশের নেতারা উপাসনা ঘরের ও ঈশ্বরের কর্মচারী ছিলেন বলে কারো পক্ষ না টেনে গুলিবাঁট করে যাজকদের কাজ ভাগ করা হল।
\p
\s5
\v 6 রাজা ও তাঁর উঁচু পদের কর্মচারীদের সামনে এবং সাদোক যাজক, অবিয়াথরের ছেলে অহীমেলক, যাজক বংশের নেতাদের ও লেবীয়দের সামনে নথনেলের ছেলে শময়িয় নামে একজন লেবীয় লেখক সেই নেতাদের নাম তালিকায় লিখলেন। পালা পালা করে ইলিয়াসরের বিভিন্ন বংশের মধ্য থেকে একজন ও তারপর ঈথামরের বিভিন্ন বংশের মধ্য থেকে একজনের জন্য গুলিবাঁট করা হল।
\p
\s5
\v 7 তখন প্রথম বারে গুলি উঠল যিহোয়ারীবের নামে, দ্বিতীয় বারে যিদয়িয়ের,
\v 8 তৃতীয় বারে হারীমের, চতুর্থ বারে সিয়োরীমের,
\v 9 পঞ্চম বারে মল্কিয়ের, ষষ্ঠ বারে মিয়ামীনের,
\v 10 সপ্তম বারে হক্কোষের, অষ্টম বারে অবিয়ের,
\s5
\v 11 নবম বারে যেশূয়ের, দশম বারে শখনিয়ের,
\v 12 এগারো বারে ইলীয়াশীবের, বারো বারে যাকীমের,
\v 13 তেরো বারে হুপ্পের, চৌদ্দ বারে যেশবাবের,
\v 14 পনেরো বারে বিল্‌গার, ষোল বারে ইম্মেরের,
\s5
\v 15 সতেরো বারে হেষীরের, আঠারো বারে হপ্পিসেসের,
\v 16 ঊনিশ বারে পথাহিয়ের, কুড়ি বারে যিহিষ্কেলের,
\v 17 একুশ বারে যাখীনের, বাইশ বারে গামূলের,
\v 18 তেইশ বারে দলায়ের ও চব্বিশ বারে মাসিয়ের নামে।
\p
\s5
\v 19 তাঁদের পূর্বপুরুষ হারোণকে দেওয়া ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নির্দেশ অনুসারে হারোণ তাঁদের জন্য যে নিয়ম ঠিক করে দিয়েছিলেন সেইমত সদাপ্রভুর ঘরে গিয়ে সেবা কাজ করবার জন্য এইভাবে তাঁদের পালা ঠিক করা হল।
\p
\s5
\v 20 লেবি গোষ্ঠীর বাকী বংশগুলোর কথা এই: অম্রামের বংশের শবূয়েল, শবূয়েলের বংশ নেতা যেহদিয়
\v 21 রহবিয়ের কথা; রহবিয়ের বংশ নেতা যিশিয়।
\v 22 যিষ্‌হরীয়দের বংশের বাবা শলোমোৎ ও শলোমোতের বংশ নেতা যহৎ।
\s5
\v 23 হিব্রোণের বংশের মধ্যে প্রথম যিরিয়, দ্বিতীয় অমরিয়, তৃতীয় যহসীয়েল এবং চতুর্থ যিকমিয়াম ছিলেন বংশের বাবা।
\v 24 ঊষীয়েলের ছেলে মীখা; মীখা ছেলেদের মধ্যে শামীর।
\v 25 মীখার ভাই যিশিয়; যিশিয়ের ছেলেদের মধ্যে সখরিয়।
\p
\s5
\v 26 মরারির ছেলে মহলি, মূশি ও যাসিয়; যাসিয়ের বংশের বিনো
\v 27 মরারির ছেলে যাসিয়ের ছেলে বিনো, শোহম, শক্কুর ও ইব্রি ছিলেন বংশের বাবা।
\v 28 মহলির বংশের ইলিয়াসর ও কীশ; ইলিয়াসরের কোনো ছেলে ছিল না।
\s5
\v 29 কীশের বংশ নেতা ছিলেন যিরহমেল।
\v 30 মূশির বংশের মহলি, এদর ও যিরেমোৎ ছিলেন বংশের বাবা। বিভিন্ন বংশ অনুসারে এঁরা ছিলেন লেবীয়।
\v 31 এঁরাও রাজা দায়ূদ, সাদোক, অহীমেলক এবং যাজক ও লেবীয়দের বংশ নেতাদের সামনে এঁদের ভাইদের, অর্থাৎ হারোণের বংশের লোকদের মত করে গুলিবাঁট করেছিলেন। বড় ভাই হোক বা ছোট ভাই হোক তাদের সকলের জন্য একইভাবে গুলিবাঁট করা হয়েছিল।
\s5
\c 25
\ms গায়ক ও বাদকদের জন্য নির্দিষ্ট কাজ
\p
\v 1 উপাসনা ঘরের সেবা কাজ করবার জন্য দায়ূদ এবং সৈন্যদলের সেনাপতিরা আসফ, হেমন ও যিদূথূনের ছেলেদের আলাদা করে নিলেন যাতে তাঁরা সুরবাহার, বীণা ও করতালের সঙ্গে গানের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের বাক্য প্রকাশ করতে পারেন। যাঁরা এই কাজ করতেন তাঁদের তালিকা এই:
\p
\v 2 আসফের ছেলে সক্কুর, যোষেফ, নথনিয় ও অসারেল। তাঁরা রাজার আদেশে আসফের পরিচালনায় গানের মধ্য দিয়ে ঈশ্বরের বাক্য প্রকাশ করতেন।
\p
\v 3 যিদূথূনের ছয়জন ছেলে গদলিয়, সরী, যিশায়াহ, শিমিয়ি, হশবিয় ও মত্তিথিয়। তাঁরা তাঁদের বাবা যিদূথূনের পরিচালনায় সুরবাহার বাজিয়ে সদাপ্রভুর প্রশংসা ও ধন্যবাদের মধ্য দিয়ে তাঁর বাক্য প্রকাশ করতেন।
\p
\s5
\v 4 হেমনের ছেলে বুক্কিয়, মত্তনিয়, উষীয়েল, শবূয়েল, যিরীমোৎ, হনানিয়, হনানি, ইলীয়াথা, গিদ্দল্‌তি, রোমাম্‌তী এষর, যশ্‌বকাশা, মল্লোথি, হোথীর ও মহসীয়োৎ।
\p
\v 5 এঁরা সবাই ছিলেন রাজার দর্শক হেমনের ছেলে। ঈশ্বরের প্রতিজ্ঞা অনুসারে হেমনকে শক্তিশালী করবার জন্য ঈশ্বর তাঁকে চৌদ্দটি ছেলে ও তিনটি মেয়ে দিয়েছিলেন।
\p
\s5
\v 6 ঈশ্বরের ঘরের সেবা কাজের জন্য এঁরা সবাই তাঁদের বাবা আসফ, যিদূথূন আর হেমনের পরিচালনার অধীন ছিলেন। তাঁরা রাজার আদেশে করতাল, বীণা ও সুরবাহার নিয়ে সদাপ্রভুর ঘরে গান বাজনা করতেন।
\v 7 সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তাঁদের বংশের গান বাজনায় শিক্ষিত ও দক্ষ লোকদের নিয়ে তাঁদের সংখ্যা ছিল দুশো অষ্টাশি জন।
\v 8 ছেলে বুড়ো, শিক্ষক ছাত্র সকলের কাজের পালা গুলিবাঁট করে ঠিক করা হয়েছিল।
\p
\s5
\v 9 আসফের পক্ষে প্রথম বারের গুলিবাঁটে যোষেফের নাম উঠল। দ্বিতীয় বারের গুলিবাঁটে উঠল গদলিয়ের নাম; তিনি, তাঁর আত্মীয় স্বজন ও ছেলেরা ছিলেন বারোজন।
\v 10 তৃতীয় বারের গুলিবাঁটে উঠল সক্কুরের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 11 চতুর্থ বারের গুলিবাঁটে উঠল যিষ্রির নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 12 পঞ্চম বারে গুলিবাঁটে উঠল নথনিয়ের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\s5
\v 13 ষষ্ঠ বারের গুলিবাঁটে উঠল বুক্কিয়ের নাম; তিনি, তার ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 14 সপ্তম বারের গুলিবাঁটে উঠল যিশারেলার নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 15 অষ্টম বারের গুলিবাঁটে উঠল যিশয়াহের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 16 নবম বারের গুলিবাঁটে উঠল মত্তনিয়ের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\s5
\v 17 দশম বারের গুলিবাঁটে উঠল শিমিয়ির নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 18 এগারো বারের গুলিবাঁটে উঠল অসরেলের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\p
\v 19 বারো বারের গুলিবাঁটে উঠল হশবিয়ের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারো জন।
\v 20 তেরো বারের গুলিবাঁটে উঠল শবূয়েলের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\s5
\v 21 চৌদ্দ বারের গুলিবাঁটে উঠল মত্তিথিয়ের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 22 পনেরো বারের গুলিবাঁটে উঠল যিরেমোতের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 23 ষোল বারের গুলিবাঁটে উঠল হনানিয়ের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 24 সতেরো বারের গুলিবাঁটে উঠল যশ্‌বকাশার নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\s5
\v 25 আঠারো বারের গুলিবাঁটে উঠল হনানির নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 26 ঊনিশ বারের গুলিবাঁটে উঠল মল্লোথির নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 27 কুড়ি বারের গুলিবাঁটে উঠল ইলীয়াথার নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 28 একুশ বারের গুলিবাঁটে উঠল হোথীর নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\s5
\v 29 বাইশ বারের গুলিবাঁটে উঠল গিদ্দল্‌তির নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 30 তেইশ বারের গুলিবাঁটে উঠল মহসীয়োতের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\v 31 চব্বিশ বারের গুলিবাঁটে উঠল রোমাম্‌তী এষরের নাম; তিনি, তাঁর ছেলেরা ও আত্মীয় স্বজনেরা ছিলেন বারোজন।
\s5
\c 26
\ms দরজার রক্ষী প্রভৃতি কর্মচারীদের নির্দিষ্ট কাজ।
\p
\v 1 রক্ষীদের বিভিন্ন দলে ভাগ করা হয়েছিল। কোরহীয়দের মধ্য থেকে আসফের বংশের কোরির ছেলে মশেলিমিয় ছিলেন বংশের লোক।
\v 2 মশেলিমিয়ের ছেলেরা হল, প্রথম সখরিয়, দ্বিতীয় যিদীয়েল, তৃতীয় সবদিয়, চতুর্থ যৎনীয়েল,
\v 3 পঞ্চম এলম, ষষ্ঠ যিহোহানন, সপ্তম ইলিহৈনয়।
\s5
\v 4 ওবেদ ইদোমের ছেলে ছিল। তাঁর ছেলেরা হল, প্রথম শময়িয়, দ্বিতীয় যিহোষাবদ, তৃতীয় যোয়াহ, চতুর্থ সাখর, পঞ্চম নথনেল,
\v 5 ষষ্ঠ অম্মীয়েল, সপ্তম ইষাখর ও অষ্টম পিয়ূল্লতয়।
\v 6 ওবেদ ইদোমের ছেলে শময়িয়েরও কয়েকজন ছেলে ছিল; তাঁরা প্রত্যেকে তাঁদের বংশের নেতা ছিলেন, কারণ তাঁরা ছিলেন বীর যোদ্ধা।
\s5
\v 7 শময়িয়ের ছেলেরা হল অৎনি, রফায়েল, ওবেদ, ইল্‌সাবদ। শময়িয়ের বংশের ইলীহূ আর সমথিয়ও ছিলেন শক্তিশালী লোক।
\v 8 এঁরা সবাই ছিলেন ওবেদ ইদোমের বংশের লোক। তাঁরা, তাঁদের ছেলেরা ও বংশের লোকেরা ছিলেন উপযুক্ত ও শক্তিশালী। ওবেদ ইদোমের বংশের লোকেরা ছিলেন মোট বাষট্টিজন।
\v 9 মশেলিমিয়ের ছেলেরা ও তাঁর বংশের লোকেরা ছিলেন শক্তিশালী লোক। তাঁরা ছিলেন মোট আঠারোজন।
\s5
\v 10 মরারি বংশের হোষার চারজন ছেলের মধ্যে প্রথম শিম্রি, দ্বিতীয় হিল্কিয়, তৃতীয় টবলিয়, চতুর্থ সখরিয়।
\v 11 শিম্রি অবশ্য প্রথম ছেলে ছিলেন না, কিন্তু তাঁর বাবা তাঁকে নেতার স্থান দিয়েছিলেন। হোষার ছেলেরা ও তাঁর বংশের লোকেরা মোট ছিলেন তেরোজন।
\p
\s5
\v 12 ভিন্ন ভিন্ন দলে ভাগ করা এই সব রক্ষীরা তাঁদের নেতাদের অধীনে থেকে তাঁদের গোষ্ঠী ভাইদের মতই সদাপ্রভুর ঘরে সেবা কাজের ভার পেয়েছিলেন।
\v 13 বংশ অনুসারে ছেলে বুড়ো সকলের জন্যই গুলিবাঁট করা হয়েছিল যাতে ঠিক করা যায় কোন্‌ দল কোন্‌ ফটকে পাহারা দেবে।
\p
\v 14 পূর্ব দিকের ফটকের জন্য গুলি উঠল শেলিমিয়ের নামে। তারপর তাঁর ছেলে সখরিয়ের জন্য গুলিবাঁট করা হলে তাঁর নামে উত্তর দিকের ফটকের জন্য গুলি উঠল। তিনি ছিলেন একজন জ্ঞানী পরামর্শদাতা।
\s5
\v 15 দক্ষিণ দিকের ফটকের জন্য গুলি উঠল ওবেদ ইদোমের নামে। ভাণ্ডার ঘরের জন্য গুলি উঠল তাঁর ছেলেদের নামে।
\v 16 পশ্চিম দিকের ফটকের জন্য গুলি উঠল শুপ্পীম ও হোষার নামে। এই ফটকটা ছিল উপর দিকের রাস্তার উপরকার শল্লেখৎ নামে ফটকের কাছে।
\s5
\v 17 এই সব লেবীয়েরা পালা পালা করে কাজ করতেন পূর্ব দিকে প্রতিদিন ছয়জন, উত্তর দিকে চারজন আর দক্ষিণ দিকে চারজন পাহারাদারের কাজ করতেন এবং ভাণ্ডার ঘরে দুজন দুজন করে থাকতেন।
\v 18 পশ্চিমের উঠানের জন্য রাস্তার দিকে চারজন এবং উঠানে দুজন থাকতেন।
\p
\v 19 এই ছিল কোরহ আর মরারির বংশের রক্ষীদের দলভাগ। ধনভাণ্ডারের দেখাশোনাকারী ও অন্যান্য কর্মচারী
\p
\s5
\v 20 ঈশ্বরের ঘরের ধনভাণ্ডার এবং ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আলাদা করা জিনিসের ভাণ্ডারের দেখাশোনার ভার ছিল বাকী লেবীয়দের মধ্য থেকে অহিয়ের উপর।
\p
\v 21 গের্শোনীয় লাদনের ছেলে হল যিহীয়েলি। যিহীয়েলির ছেলে সেথম ও তাঁর ভাই
\v 22 যোয়েলের উপর ছিল সদাপ্রভুর ঘরের ধনভাণ্ডারের দেখাশোনার ভার। এঁরা ছিলেন তাঁদের নিজের নিজের বংশের নেতা।
\p
\s5
\v 23 অম্রামীয়, যিষ্‌হরীয়, হিব্রোণীয় ও উষীয়েলীয়দেরও কাজের ভার দেওয়া হয়েছিল।
\v 24 শবূয়েল নামে মোশির ছেলে গের্শোমের একজন বংশধর প্রধান ধনরক্ষক ছিলেন।
\v 25 গের্শোমের ভাই ইলীয়ষেরের মধ্য দিয়ে শলোমোৎ ছিলেন শবূয়েলের বংশের লোক। ইলীয়ষেরের ছেলে রহবিয়, রহবিয়ের ছেলে যিশায়াহ, যিশায়াহের ছেলে যোরাম, যোরামের ছেলে সিখ্রি, সিখ্রির ছেলে শলোমোৎ।
\s5
\v 26 রাজা দায়ূদ, ইস্রায়েলের বিভিন্ন বংশের নেতারা, হাজার ও শত সৈন্যের সেনাপতিরা এবং প্রধান সেনাপতিরা যে সব জিনিস ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আলাদা করে রেখেছিলেন শলোমোৎ ও তাঁর বংশের লোকেরা সেই সব জিনিসের ভাণ্ডারের দেখাশোনাকারী ছিলেন।
\v 27 যুদ্ধে লুঠ করা কতগুলো জিনিস তাঁরা সদাপ্রভুর ঘর মেরামতের জন্য তাঁর উদ্দেশ্যে আলাদা করে রেখেছিলেন।
\v 28 এছাড়া দর্শক শমূয়েল, কীশের ছেলে শৌল, নেরের ছেলে অব্‌নের ও সরূয়ার ছেলে যোয়াব যে সব জিনিস ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে আলাদা করে রেখেছিলেন, মোট কথা, সমস্ত আলাদা করা জিনিসের দেখাশোনার ভার ছিল শলোমোৎ ও তাঁর বংশের লোকদের উপর।
\p
\s5
\v 29 যিষ্‌হরীয়দের মধ্য থেকে কননিয় ও তাঁর ছেলেরা উপাসনা ঘরের কাজে নয়, কিন্তু ইস্রায়েল দেশের উপরে কর্মকর্তা ও বিচারকের কাজে নিযুক্ত হলেন।
\v 30 হিব্রোণীয়দের মধ্য থেকে হশবিয় ও তাঁর বংশের এক হাজার সাতশো শক্তিশালী লোক সদাপ্রভুর ও রাজার সমস্ত কাজ করবার জন্য যর্দন নদীর পশ্চিম দিকের ইস্রায়েলীয়দের উপরে নিযুক্ত হলেন।
\s5
\v 31 হিব্রোণীয়দের মধ্যে যিরিয় ছিলেন নেতা। দায়ূদের রাজত্বের চল্লিশ বছরের সময় তাদের বংশ তালিকাগুলোর মধ্যে খোঁজ করা হল এবং গিলিয়দের যাসেরে হিব্রোণীয়দের মধ্যে অনেক বীর যোদ্ধা পাওয়া গেল।
\v 32 যিরিয়ের বংশের দুই হাজার সাতশো জন লোক ছিলেন শক্তিশালী। তাঁরা ছিলেন নিজের নিজের পরিবারের কর্তা। রাজা দায়ূদ ঈশ্বরের ও রাজার সমস্ত কাজ করবার জন্য রূবেণীয়, গাদীয় ও মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের উপরে এই হিব্রোণীয়দের নিযুক্ত করলেন।
\s5
\c 27
\ms সেনাপতি প্রভৃতি নেতাদের নাম।
\p
\v 1 এই হল ইস্রায়েলীয় বংশের নেতা, হাজার ও শত সৈন্যের সেনাপতি ও তাঁদের অধীন কর্মচারীদের তালিকা। এঁরা বিভিন্ন সৈন্যদলের সমস্ত বিষয়ে রাজাকে সাহায্য করতেন। বারোটি দলের প্রত্যেকটিতে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল। সারা বছর ধরে এক একটি দল এক এক মাস করে কাজ করত।
\p
\v 2 প্রথম মাসের জন্য প্রথম সৈন্যদলের ভার ছিল সব্দীয়েলের ছেলে যাশবিয়ামের উপর। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\v 3 তিনি ছিলেন পেরসের বংশধর। তিনি প্রথম মাসের জন্য সমস্ত সেনাপতিদের নেতা ছিলেন।
\p
\s5
\v 4 দ্বিতীয় মাসের জন্য সৈন্যদলের ভার ছিল অহোহীয় দোদাইয়ের উপর। তাঁর অধীনে দলনেতা ছিলেন মিক্লোৎ। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\p
\v 5 তৃতীয় মাসের জন্য সেনাপতি ছিলেন যাজক যিহোয়াদার ছেলে বনায়। তিনি ছিলেন তৃতীয় দলের নেতা। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\v 6 ইনি সেই বনায় যিনি ত্রিশজন বীর যোদ্ধাদের দলের একজন ছিলেন এবং সেই দলের নেতা ছিলেন। তাঁর ছেলে অম্মীষাবাদ তাঁর দলে ছিলেন।
\p
\s5
\v 7 চতুর্থ মাসের জন্য চতুর্থ দলের সেনাপতি ছিলেন যোয়াবের ভাই অসাহেল। তাঁর মৃত্যুর পরে সেনাপতি হয়েছিলেন তাঁর ছেলে সবদিয়। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\p
\v 8 পঞ্চম মাসের জন্য পঞ্চম দলের সেনাপতি ছিলেন যিষ্রাহীয় শমহূৎ। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\p
\v 9 ষষ্ঠ মাসের জন্য ষষ্ঠ দলের সেনাপতি ছিলেন তকোয়ীয় ইক্কেশের ছেলে ঈরা। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\p
\s5
\v 10 সপ্তম মাসের জন্য সপ্তম দলের সেনাপতি ছিলেন পলোনীয় হেলস; তিনি ছিলেন ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\p
\v 11 অষ্টম মাসের জন্য অষ্টম দলের সেনাপতি ছিলেন হূশাতীয় সিব্বখয়; তিনি ছিলেন সেরহের বংশের একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\p
\v 12 নবম মাসের জন্য নবম দলের সেনাপতি ছিলেন অনাথোতীয় অবীয়েষর; তিনি ছিলেন বিন্যামীন গোষ্ঠীর একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\p
\s5
\v 13 দশম মাসের জন্য দশম দলের সেনাপতি ছিলেন নটোফাতীয় মহরয়। তিনি ছিলেন সেরহের বংশের একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\p
\v 14 একাদশ মাসের জন্য একাদশ দলের সেনাপতি ছিলেন পিরিয়াথোনীয় বনায়। তিনি ছিলেন ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\p
\v 15 দ্বাদশ মাসের জন্য দ্বাদশ দলের সেনাপতি ছিলেন নটোফাতীয় হিল্‌দয়। তিনি ছিলেন অৎনীয়েলের বংশের একজন লোক। তাঁর দলে চব্বিশ হাজার সৈন্য ছিল।
\p
\s5
\v 16 ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলোর প্রধান নেতাদের তালিকা এই: রূবেণীয়দের নেতা সিখ্রির ছেলে ইলীয়েষর, শিমিয়োনীয়দের নেতা মাখার ছেলে শফটিয়,
\v 17 লেবি গোষ্ঠীর নেতা কমূয়েলের ছেলে হশবিয়, হারোণের বংশের নেতা সাদোক,
\v 18 যিহূদা গোষ্ঠীর নেতা দায়ূদের ভাই ইলীহূ, ইষাখর গোষ্ঠীর নেতা মীখায়েলের ছেলে অম্রি,
\s5
\v 19 সবূলূন গোষ্ঠীর নেতা ওবদিয়ের ছেলে যিশ্মায়য়, নপ্তালি গোষ্ঠীর নেতা অস্রীয়েলের ছেলে যিরেমোৎ,
\v 20 ইফ্রয়িমের বংশের নেতা অসসিয়ের ছেলে হোশেয়, মনঃশি গোষ্ঠীর অর্ধেক লোকদের নেতা পদায়ের ছেলে যোয়েল,
\v 21 গিলিয়দে বাসকারী মনঃশি গোষ্ঠীর বাকী অর্ধেক লোকদের নেতা সখরিয়ের ছেলে যিদ্দো, বিন্যামীন গোষ্ঠীর নেতা অব্‌নেরের ছেলে যাসীয়েল,
\v 22 দান গোষ্ঠীর নেতা যিরোহমের ছেলে অসরেল। এঁরাই ছিলেন ইস্রায়েলের গোষ্ঠীগুলোর প্রধান নেতা।
\p
\s5
\v 23 দায়ূদ কুড়ি কিম্বা তার চেয়ে কম বয়সী লোকদের সংখ্যা গণনা করলেন না, কারণ সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের সংখ্যা আকাশের তারার মত অসংখ্য করবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন।
\v 24 সরূয়ার ছেলে যোয়াব লোকগণনা করতে শুরু করেছিলেন, কিন্তু তা শেষ করেননি। লোকগণনার জন্য ইস্রায়েলের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধ নেমে এসেছিল। সেইজন্য রাজা দায়ূদের ইতিহাস বইতে লোকদের কোনো সংখ্যা লেখা হয়নি।
\p
\s5
\v 25 রাজার ভাণ্ডারের দেখাশোনার ভার ছিল অদীয়েলের ছেলে অস্‌মাবতের উপর। ক্ষেত খামারে, শহরে, গ্রামে ও পাহারা দেওয়ার উঁচু ঘরগুলোতে যে সব গুদাম ছিল তার দেখাশোনা করবার ভার ছিল উষিয়ের ছেলে যোনাথনের উপর।
\v 26 চাষীদের দেখাশোনার ভার ছিল কলূবের ছেলে ইষ্রির উপর।
\v 27 আঙ্গুর ক্ষেতের ভার ছিল রামাথীয় শিমিয়ির উপর। আঙ্গুর ক্ষেত থেকে যে আঙ্গুর-রস পাওয়া যেত তার ভাণ্ডারের ভার ছিল শিফমীয় সব্দির উপর।
\s5
\v 28 নীচু পাহাড়ী এলাকার জিতবৃক্ষ ও ডুমুর গাছের ভার ছিল গদেরীয় বাল হাননের উপর। জলপাইয়ের তেলের ভাণ্ডারের ভার ছিল যোয়াশের উপর।
\v 29 শারোণে যে সব গরুর পাল চরত তাদের ভার ছিল শারোণীয় সিট্রয়ের উপর। উপত্যকার গরুর পালের ভার ছিল অদ্‌লয়ের ছেলে শাফটের উপর।
\s5
\v 30 ইশ্মায়েলীয় ওবীলের উপর ভার ছিল উটের পালের। মেরোণোথীয় যেহদিয়ের উপর ছিল গর্দ্দভীদের ভার।
\v 31 ছাগল ও ভেড়ার পালের ভার ছিল হাগরীয় যাসীষের উপর। রাজা দায়ূদের সম্পত্তির দেখাশোনার ভার ছিল এই সব তদারককারীদের উপর।
\p
\s5
\v 32 দায়ূদের কাকা যোনাথন ছিলেন পরামর্শদাতা, বুদ্ধিমান লোক ও রাজার লেখক। রাজার ছেলেদের শিক্ষার ব্যবস্থার ভার ছিল হক্‌মোনির ছেলে যিহীয়েলের উপর।
\v 33 অহীথোফল ছিলেন রাজার পরামর্শদাতা, অর্কীয় হূশয় ছিলেন রাজার বন্ধু।
\v 34 অহীথোফলের মৃত্যুর পরে অবীয়াথর ও বনায়ের ছেলে যিহোয়াদা রাজার পরামর্শদাতা হয়েছিলেন। রাজার সৈন্যদলের সেনাপতি ছিলেন যোয়াব।
\s5
\c 28
\ms প্রজাদের ও শলোমনের প্রতি দায়ূদের উপদেশ
\p
\v 1 দায়ূদ ইস্রায়েলের সমস্ত কর্মকর্তাদের যিরূশালেমে এসে জড়ো হবার জন্য আদেশ দিলেন। এতে সমস্ত বীর যোদ্ধারা এসেছিলেন। তাঁরা ছিলেন বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতারা, রাজার বারোটি সৈন্যদলের প্রধান সেনাপতিরা, হাজার ও একশো সৈন্যের সেনাপতিরা, রাজা ও রাজার ছেলেদের সমস্ত সম্পত্তি তদারককারীরা, রাজবাড়ীর কর্মকর্তারা ও বীর যোদ্ধারা।
\p
\s5
\v 2 পরে রাজা দায়ূদ উঠে দাঁড়িয়ে তাঁদের বললেন, “আমার ভাইয়েরা ও আমার লোকেরা, আমার কথায় মনোযোগ দিন। সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকের জন্য, অর্থাৎ আমাদের ঈশ্বরের পা রাখবার জায়গার জন্য একটা স্থায়ী ঘর তৈরী করবার ইচ্ছা আমার মনে ছিল, আর আমি তা তৈরী করবার আয়োজনও করেছিলাম।
\v 3 কিন্তু ঈশ্বর আমাকে বললেন, ‘আমার নামে তুমি ঘর তৈরী করবে না, কারণ তুমি একজন যোদ্ধা এবং তুমি রক্তপাত করেছ।’
\p
\s5
\v 4 “তবুও ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু চিরকাল ইস্রায়েলের উপর রাজা হওয়ার জন্য আমার গোটা পরিবারের মধ্য থেকে আমাকেই বেছে নিয়েছিলেন। তিনি নেতা হিসাবে যিহূদাকে বেছে নিয়েছিলেন, তারপর যিহূদা-গোষ্ঠী থেকে আমার বাবার বংশকে বেছে নিয়েছিলেন এবং ইস্রায়েলের উপরে রাজা হওয়ার জন্য তিনি খুশী হয়ে আমার ভাইদের মধ্য থেকে আমাকেই বেছে নিয়েছিলেন।
\v 5 সদাপ্রভু আমাকে অনেক ছেলে দিয়েছেন, আর সেই সব ছেলেদের মধ্যে সদাপ্রভুর রাজ্য ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসবার জন্য তিনি আমার ছেলে শলোমনকে বেছে নিয়েছেন।
\s5
\v 6 তিনি আমাকে বলেছেন, ‘তোমার ছেলে শলোমনই সেই লোক, যে আমার ঘর ও উঠান তৈরী করবে, কারণ আমি তাকেই আমার ছেলে হবার জন্য বেছে নিয়েছি আর আমি তার বাবা হব।
\v 7 যেমন এখন করা হচ্ছে সেইভাবে যদি সে আমার আদেশ ও নির্দেশ পালন করবার ব্যাপারে স্থির থাকে তবে আমি তার রাজ্য চিরকাল স্থায়ী করব।’
\p
\s5
\v 8 “কাজেই সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের, অর্থাৎ সদাপ্রভুর সমাজের লোকদের এবং আমাদের ঈশ্বরের সামনে আমি আপনাদের এখন এই আদেশ দিচ্ছি যে, আপনারা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সমস্ত আদেশ পালন করতে মনোযোগী হন যাতে আপনারা এই চমৎকার দেশে থাকতে পারেন এবং চিরকালের সম্পত্তি হিসাবে আপনাদের বংশধরদের হাতে তা দিয়ে যেতে পারেন।"
\p
\s5
\v 9 “আর তুমি, আমার ছেলে শলোমন, তুমি তোমার বাবার ঈশ্বরকে সামনে রেখে চলবে এবং তোমার অন্তর স্থির রেখে ও মনের ইচ্ছা দিয়ে তাঁর সেবা করবে, কারণ সদাপ্রভু প্রত্যেকটি অন্তর খুঁজে দেখেন এবং চিন্তার প্রত্যেকটি উদ্দেশ্য বোঝেন। তাঁর ইচ্ছা জানতে চাইলে তুমি তা জানতে পারবে, কিন্তু যদি তুমি তাঁকে ত্যাগ কর তবে তিনিও তোমাকে চিরকালের জন্য অগ্রাহ্য করবেন।
\v 10 এখন মনোযোগী হও, কারণ উপাসনা করবার জন্য একটা ঘর তৈরী করতে সদাপ্রভু তোমাকেই বেছে নিয়েছেন। তুমি শক্তিশালী হও এবং কাজ কর।”
\p
\s5
\v 11 তারপর দায়ূদ তাঁর ছেলে শলোমনকে উপাসনা ঘরের বারান্দা, তাঁর দালানগুলো, ভাণ্ডার ঘরগুলো, উপরের ও ভিতরের কামরাগুলো এবং পাপ ঢাকা দেবার জায়গার নক্‌শা দিলেন।
\v 12 সদাপ্রভুর ঘরের উঠান, তার চারপাশের কামরা, ঈশ্বরের ঘরের ধনভাণ্ডার এবং উৎসর্গের জিনিস রাখবার ভাণ্ডারের যে পরিকল্পনা পবিত্র আত্মা দায়ূদের কাছে প্রকাশ করেছিলেন তা সবই তিনি শলোমনকে জানালেন।
\s5
\v 13 যাজক ও লেবীয়দের বিভিন্ন দলের কাজ, সদাপ্রভুর ঘরের সমস্ত সেবা কাজ এবং সেই কাজে ব্যবহারের সমস্ত জিনিসপত্র সম্বন্ধে তিনি তাঁকে নির্দেশ দিলেন।
\v 14 বিভিন্ন সেবা কাজের জন্য যে সব সোনা ও রূপার জিনিস ব্যবহার করা হবে তিনি তার জন্য কতটা সোনা ও রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
\v 15 প্রত্যেকটি সোনার বাতিদান ও বাতির জন্য কতটা সোনা এবং ব্যবহার অনুসারে প্রত্যেকটা রূপার বাতিদান ও বাতির জন্য কতটা রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
\s5
\v 16 দর্শন রুটি রাখবার সোনার টেবিলের জন্য কতটা সোনা এবং রূপার টেবিলগুলোর জন্য কতটা রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
\v 17 মাংস তুলবার কাঁটা, উৎসর্গের রক্ত রাখবার বাটি ও কলসী আর ধূপ বেদীর জন্য কতটা খাঁটি সোনা লাগবে এবং প্রত্যেকটি সোনা ও রূপার পাত্রের জন্য কতটা সোনা ও রূপা লাগবে তার নির্দেশ দিলেন।
\s5
\v 18 এছাড়া ধূপ বেদির জন্য, অর্থাৎ সদাপ্রভুর ব্যবস্থা সিন্দুকটি ঢেকে রাখবার জন্য যে সোনার করূবেরা পাখা মেলা অবস্থায় থাকবে তাদের জন্য কতটা খাঁটি সোনা লাগবে তিনি তারও নির্দেশ দিলেন।
\p
\v 19 দায়ূদ বললেন, “সদাপ্রভু যে নমুনা আমার কাছে প্রকাশ করেছিলেন তাঁর পরিচালনায় আমি তা এঁকেছিলাম, আর সেই নমুনার খুঁটিনাটি বুঝবার জ্ঞান তিনি আমাকে দিয়েছিলেন।”
\p
\s5
\v 20 দায়ূদ তাঁর ছেলে শলোমনকে এই কথাও বললেন, “তুমি শক্তিশালী হও, মনে সাহস আন এবং কাজ কর। তুমি ভয় কোরো না, নিরাশ হোয়ো না, কারণ সদাপ্রভু ঈশ্বর, আমার ঈশ্বর তোমার সঙ্গে আছেন। সদাপ্রভুর সেবা কাজের জন্য উপাসনা ঘর তৈরীর সব কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি তোমাকে ছেড়ে যাবেন না বা ত্যাগ করবেন না।
\v 21 ঈশ্বরের ঘরের সমস্ত সেবা কাজের জন্য বিভিন্ন দলের যাজক ও লেবীয়েরা প্রস্তুত আছে। সমস্ত কাজে তোমাকে সাহায্য করবার জন্য দক্ষ ও ইচ্ছুক লোকেরাও আছে। নেতারা ও সমস্ত লোকেরা তোমার আদেশ মানতে রাজি।”
\s5
\c 29
\p
\v 1 রাজা দায়ূদ তারপর সমস্ত লোকদের বললেন, “আমার ছেলে শলোমনকেই একমাত্র ঈশ্বর বেছে নিয়েছেন; তার বয়সও বেশী নয় এবং অভিজ্ঞতাও কম। এই কাজ খুব মহৎ, কারণ এই বড় দালানটি ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য, কোনো মানুষের জন্য নয়।
\v 2 আমার ক্ষমতা অনুসারে আমি আমার ঈশ্বরের ঘরের জন্য এই সব জোগাড় করে রেখেছি সোনার জিনিসের জন্য সোনা, রূপার জিনিসের জন্য রূপা, পিতলের জিনিসের জন্য পিতল, লোহার জিনিসের জন্য লোহা এবং কাঠের জিনিসের জন্য কাঠ। এছাড়া বৈদুর্যমণি, বসাবার জন্য বিভিন্ন মণি, চক্‌চকে পাথর, নানা রঙয়ের পাথর ও সমস্ত রকমের দামী পাথর রেখেছি আর অনেক মার্বেল পাথরও রেখেছি।
\s5
\v 3 এই পবিত্র উপাসনা ঘরের জন্য আমি যা যা জোগাড় করেছি তা ছাড়াও আমার ঈশ্বরের ঘরের প্রতি আমার ভালবাসার জন্য এখন আমি আমার নিজের সোনা ও রূপা দিচ্ছি।
\v 4 সেই ঘরের দেয়াল ঢাকবার জন্য এবং কারিগরদের সমস্ত কাজের জন্য আমি মোট একশো সতেরো টন ওফীরের সোনা ও দুইশো তিয়াত্তর টন খাঁটি রূপা দিলাম।
\v 5 আজ আপনারা কে কে খুশী হয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেকে উৎসর্গ করে দান দিতে চান?”
\p
\s5
\v 6 তখন বংশের নেতারা, ইস্রায়েলীয়দের বিভিন্ন গোষ্ঠীর নেতারা, হাজার সৈন্যের ও শত সৈন্যের সেনাপতিরা ও রাজার কাজের তদারককারীরা খুশী হয়ে দান করলেন।
\v 7 ঈশ্বরের ঘরের কাজের জন্য তাঁরা একশো পঁচানব্বই টন সোনা, দশ হাজার সোনার অদর্কোন, তিনশো নব্বই টন রূপা, সাতশো দুই টন পিতল ও তিন হাজার নশো টন লোহা দিলেন।
\s5
\v 8 যাঁদের কাছে দামী পাথর ছিল তাঁরা সেগুলো সদাপ্রভুর ঘরের ভাণ্ডারে রাখবার জন্য গের্শোনীয় যিহীয়েলের হাতে দিলেন।
\v 9 তাঁরা খুশী মনে এবং খোলা হাতে সমস্ত অন্তর দিয়ে সদাপ্রভুকে দিতে পেরে আনন্দিত হলেন। রাজা দায়ূদও খুব আনন্দিত হয়েছিলেন।
\p
\s5
\v 10 দায়ূদ সমস্ত লোকের সামনে এই বলে সদাপ্রভুর গৌরব করলেন, “হে সদাপ্রভু, আমাদের পূর্বপুরুষ ইস্রায়েলের ঈশ্বর, অনাদিকাল থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত তোমার গৌরব হোক।
\p
\v 11 হে সদাপ্রভু, মহিমা, শক্তি, জাঁকজমক, জয় আর গৌরব তোমার, কারণ স্বর্গের ও পৃথিবীর সব কিছু তোমারই। হে সদাপ্রভু, তুমিই সব কিছুর উপরে রাজত্ব করছ; তোমার জায়গা সবার উপরে।
\p
\s5
\v 12 ধন ও সম্মান আসে তোমারই কাছ থেকে; তুমিই সব কিছু শাসন করে থাক। তোমার হাতেই রয়েছে শক্তি আর ক্ষমতা; মানুষকে উন্নত করবার ও শক্তি দেবার অধিকার তোমারই।
\p
\v 13 এখন, হে আমাদের ঈশ্বর, আমরা তোমাকে ধন্যবাদ দিই, তোমার গৌরবময় নামের প্রশংসা করি।
\p
\s5
\v 14 কিন্তু হে সদাপ্রভু, আমি কে আর আমার লোকেরাই বা কারা যে, আমরা এইভাবে খুশী হয়ে নিজের ইচ্ছায় দিতে পারি? সব কিছুই তো তোমার কাছ থেকে আসে। তোমার হাত থেকে যা পেয়েছি আমরা কেবল তোমাকে তাই দিয়েছি।
\v 15 আমরা তোমার চোখে আমাদের সমস্ত পূর্বপুরুষদের মতই পরদেশী বাসিন্দা। পৃথিবীতে আমাদের দিনগুলো ছায়ার মত, আমাদের কোনো আশা নেই।
\s5
\v 16 হে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তোমার পবিত্র নামের উদ্দেশ্যে একটা ঘর তৈরীর জন্য এই যে প্রচুর জিনিসের আয়োজন আমরা করেছি তা তোমার কাছ থেকেই এসেছে এবং এর সব কিছুই তোমার।
\v 17 হে আমার ঈশ্বর, আমি জানি যে, তুমি অন্তরের পরীক্ষা করে থাক এবং সততায় খুশী হও। এই সব জিনিস আমি খুশী হয়ে এবং অন্তরের সততায় দিয়েছি। আর এখন আমি দেখে আনন্দিত হলাম যে, তোমার লোকেরা যারা এখানে আছে তারাও কেমন খুশী হয়ে তোমাকে দিয়েছে।
\s5
\v 18 হে সদাপ্রভু, আমাদের পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইসহাক ও ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তোমার লোকদের অন্তরে এই রকম ইচ্ছা তুমি চিরকাল রাখ এবং তোমার প্রতি তাদের হৃদয় বিশ্বস্ত রাখ।
\v 19 আমার ছেলে শলোমনকে এমন স্থির অন্তর দান কর যাতে সে তোমার আদেশ, তোমার বাক্য ও তোমার নিয়ম পালন করতে পারে এবং আমি যে দালান তৈরীর আয়োজন করেছি তা তৈরী করতে পারে।”
\p
\s5
\v 20 পরে দায়ূদ সমস্ত লোকদের বললেন, “আপনারা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব করুন।” তখন তারা সবাই তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব করল এবং সদাপ্রভু ও রাজার উদ্দেশ্যে উপুড় হয়ে প্রণাম জানাল।
\p
\v 21 পরের দিন তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পশু উৎসর্গ এবং হোমবলির অনুষ্ঠান করল। সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের জন্য তারা এক হাজার ষাঁড়, এক হাজার ভেড়া ও এক হাজার ভেড়ার বাচ্চা উৎসর্গ করল এবং প্রত্যেকটির সঙ্গে নিয়মিত পানীয় উৎসর্গ এবং প্রচুর পশু দিয়ে অন্যান্য উৎসর্গের অনুষ্ঠান করল।
\s5
\v 22 সেই দিন তারা সদাপ্রভুর সামনে খুব আনন্দের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করল। তারা দায়ূদের ছেলে শলোমনকে এই দ্বিতীয় বার রাজা করল এবং তাঁকে রাজা ও সাদোককে যাজককে হিসাবে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে অভিষেক করল।
\v 23 তখন শলোমন তাঁর বাবা দায়ূদের জায়গায় রাজা হিসাবে সদাপ্রভুর সিংহাসনে বসলেন। তিনি সব বিষয়ে সফলতা লাভ করলেন এবং সমস্ত ইস্রায়েল তাঁর কথামত চলত।
\s5
\v 24 সমস্ত নেতারা ও সৈন্যেরা এবং রাজা দায়ূদের অন্য সব ছেলেরা রাজা শলোমনের অধীনতা স্বীকার করলেন।
\p
\v 25 সদাপ্রভু সমস্ত ইস্রায়েলের চোখে শলোমনকে খুব মহান করলেন এবং তাঁকে এমন রাজকীয় গৌরব দান করলেন যা এর আগে ইস্রায়েলের কোনো রাজাই পাননি।
\s দায়ূদের মৃত্যু।
\p
\s5
\v 26 যিশয়ের ছেলে দায়ূদ সমস্ত ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করেছিলেন
\v 27 তিনি চল্লিশ বছর রাজত্ব করেছিলেন সাত বছর হিব্রোণে এবং তেত্রিশ বছর যিরূশালেমে।
\v 28 তিনি অনেক বছর বেঁচে থেকে ধন ও সম্মান লাভ করে খুব বুড়ো বয়সে মারা গেলেন। তাঁর ছেলে শলোমন তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\v 29 ভাববাদী শমূয়েলের, ভাববাদী নাথনের ও ভাববাদী গাদের ইতিহাস বইয়ে রাজা দায়ূদের রাজত্বের সমস্ত কথা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লেখা রয়েছে।
\v 30 তাঁর রাজত্বের খুঁটিনাটি ও ক্ষমতার কথা এবং তাঁকে নিয়ে, ইস্রায়েলকে নিয়ে আর অন্যান্য দেশের সব রাজ্যগুলোকে নিয়ে যে সব ঘটনা ঘটেছিল সেই সব কথাও সেখানে লেখা রয়েছে।

1333
14-2CH.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,1333 @@
\id 2CH
\ide UTF-8
\sts - 2 Chronicles
\h বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড৷
\toc1 বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড৷
\toc2 বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড৷
\toc3 2ch
\mt1 বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড৷
\s5
\c 1
\s শলোমনের প্রার্থনার উত্তর৷ তাঁর সম্মান বৃদ্ধি৷
\p
\v 1 আর দায়ূদের ছেলে শলোমন নিজের রাজ্যে নিজেকে শক্তিশালী করলেন এবং তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে থেকে তাঁকে খুব মহান করলেন৷
\s5
\v 2 পরে শলোমন সমস্ত ইস্রায়েলের অর্থাৎ সহস্রপতিদের, শতপতিদের, বিচারকর্তাদের ও সমস্ত ইস্রায়েলের যাবতীয় শাসনকর্তাদের বংশ প্রধানদের সঙ্গে কথা বললেন৷
\v 3 তাতে শলোমন ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত সমাজ গিবিয়োনের উঁচু জায়গায় গেলেন; কারণ সদাপ্রভুর দাস মোশি মরুভূমিতে যা তৈরী করেছিলেন, ঈশ্বরের সেই সমাগম তাঁবু সেখানে ছিল৷
\v 4 কিন্তু ঈশ্বরের সিন্দুক দায়ূদ কিরিয়ৎ-যিয়ারীম থেকে, দায়ূদ তার জন্য যে জায়গা তৈরী করেছিলেন, সেখানে এনেছিলেন, কারণ তিনি তার জন্য যিরূশালেমে একটি তাঁবু স্থাপন করেছিলেন৷
\v 5 আর হূরের নাতি ঊরির ছেলে বৎসলেল যে পিতলের যজ্ঞবেদী তৈরী করেছিলেন, তা সদাপ্রভুর সমাগম তাঁবু সামনে ছিল; আর শলোমন ও সমাজ তার কাছে গেলেন৷
\s5
\v 6 তখন শলোমন সেখানে সমাগম তাঁবুর কাছে পিতলের বেদিতে সদাপ্রভুর সামনে যজ্ঞ করলেন, এক হাজার হোমবলি উত্সর্গ করলেন৷
\v 7 সেই রাতে ঈশ্বর শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন, “চাও, আমি তোমাকে কি দেব?”
\s5
\v 8 তখন শলোমন ঈশ্বরকে বললেন, “তুমি আমার পিতা দায়ূদের প্রতি অনেক দয়া দেখিয়েছ, আর তাঁর পদে আমাকে রাজা করেছ৷
\v 9 এখন, হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তুমি আমার পিতা দায়ূদের কাছে যে কথা বলেছ, তাই স্থায়ী হোক; কারণ তুমিই পৃথিবীর ধূলোর মত বহুসংখ্যক এক জাতির উপরে আমাকে রাজা করেছ৷
\v 10 আমি যেন এই লোকেদের সামনেই বাইরে যেতে ও ভেতরে আসতে পারি, সেই জন্য এখন আমাকে বুদ্ধি ও জ্ঞান দাও; কারণ তোমার এমন বিশাল প্রজাদের বিচার করার ক্ষমতা কার আছে?”
\v 11 তখন ঈশ্বর শলোমনকে বললেন, “এটাই তোমার মনে হয়েছে; তুমি ঐশ্বর্য্য, সম্পত্তি, গৌরব কিংবা শত্রুদের প্রাণ চাও নি, লম্বা আয়ুও চাও নি; কিন্তু আমি আমার যে প্রজাদের উপরে তোমাকে রাজা করেছি, তুমি তাদের বিচার করার জন্য নিজের জন্য বুদ্ধি ও জ্ঞান চেয়েছ৷
\s5
\v 12 বুদ্ধি ও জ্ঞান তোমাকে দেওয়া হল; এমনকি তোমার আগে কোনো রাজার ছিল না এবং তোমার পরেও কোনো রাজার হবে না, তত ঐশ্বর্য্য, সম্পত্তি ও গৌরব আমি তোমাকে দেব৷”
\v 13 পরে শলোমন গিবিয়োনের উঁচু জায়গা থেকে, সমাগম তাঁবুর সামনে থেকে, যিরূশালেমে এলেন, আর ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করতে থাকলেন৷
\s5
\v 14 আর শলোমন অনেক রথ ও ঘোড়াচালক সংগ্রহ করলেন; তাঁর এক হাজার চারশো রথ ও বারো হাজার ঘোড়াচালক ছিল; আর সেই সব তিনি রথ নগরে এবং যিরূশালেমে রাজার কাছে রাখতেন৷
\v 15 রাজা যিরূশালেমে রুপো ও সোনাকে পাথরের মত এবং এরস কাঠকে উপত্যকার ডুমুর গাছের মত প্রচুর করলেন৷
\v 16 আর শলোমনের ঘোড়াগুলি মিসর থেকে আনা হত, রাজার বণিকেরা দল হিসাবে দাম দিয়ে পালে পালে ঘোড়া পেত৷
\v 17 আর মিসর থেকে কেনা ও আনা এক একটি রথের দাম ছশো শেকল রুপো ও এক একটি ঘোড়ার দাম একশো পঞ্চাশ শেকল ছিল৷ এই ভাবে তাদের মাধ্যমে সমস্ত হিত্তীয় রাজার ও অরামীয় রাজার জন্যও ঘোড়া আনা হত৷
\s5
\c 2
\s মন্দির প্রতিষ্ঠার জন্য আয়োজন৷
\p
\v 1 পরে শলোমন সদাপ্রভুর নামে একটি বাড়ি ও নিজের রাজ্যের জন্য একটি বাড়ি তৈরী করার কথা ঠিক করলেন;
\v 2 আর শলোমন ভার বইবার জন্য সত্তর হাজার লোক, পর্বতে কাঠ কাটার জন্য আশী হাজার লোক ও তাদের পরিচালনার জন্য তিন হাজার ছশো প্রধান কর্মচারীদের নিযুক্ত করলেন৷
\v 3 আর শলোমন সোরের হূরম রাজার কাছে লোক পাঠিয়ে বললেন, “আপনি আমার বাবা দায়ূদের সাথে যেরকম ব্যবহার করেছিলেন ও তাঁর বসবাসের জন্য বাড়ি তৈরীর জন্য তাঁর কাছে যেরকম এরস কাঠ পাঠিয়েছিলেন, সেই রকম আমার জন্যও করুন৷
\s5
\v 4 দেখুন, আমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশ্যে একটি বাড়ি তৈরী করার পরিকল্পনা নিয়েছি; তাঁর সামনে সুগন্ধি জিনিস জ্বালানোর জন্য, প্রত্যেক দিনের দর্শন-রুটির জন্য এবং প্রতি সকালে ও সন্ধ্যাবেলায়, বিশ্রামবারে, অমাবস্যায় ও আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সকল পর্বের হোম করার জন্য সেটা পবিত্র করব৷ এগুলি ইস্রায়েলের প্রতিদিনের কাজ৷
\v 5 আর আমি যে বাড়ি তৈরী করব, সেটা খুব বড় হবে, কারণ আমাদের ঈশ্বর সকল দেবতার থেকে মহান৷
\s5
\v 6 কিন্তু তাঁর জন্য বাড়ি তৈরী করার ক্ষমতা কার আছে? কারণ স্বর্গ এবং স্বর্গের স্বর্গও তাঁকে ধারণ করতে পারে না; তবে আমি কে যে, তাঁর উদ্দেশ্যে গৃহ তৈরী করি? শুধুমাত্র তাঁর সামনে ধূপদান করার জায়গা তৈরী করতে পারি৷
\v 7 অতএব আমার বাবা দায়ূদের মাধ্যমে নিযুক্ত যে জ্ঞানী লোকেরা যিহূদায় ও যিরূশালেমে আমার কাছে আছে, তাদের সঙ্গে সোনা, রুপো, পিতল, লোহা এবং বেগুনী, গাড়ো লাল ও নীল রঙের সুতোর কাজ করার জন্য ও সব রকমের ক্ষোদিত কাজে পারদর্শী একজন লোককে পাঠাবেন৷
\s5
\v 8 আর লিবানোন থেকে এরস কাঠ, দেবদারু কাঠ ও আলগুম কাঠ আমার এখানে পাঠাবেন; কারণ আমি জানি, আপনার দাসেরা লিবানোনে খুব ভালো কাঠ কাটতে পারে; আর দেখুন, আমার দাসেরাও আপনার দাসের সঙ্গে থাকবে৷
\v 9 আমার জন্য অনেক কাঠ তৈরী করতে হবে, কারণ আমি যে গৃহ তৈরী করব, সেটা বড় মহৎ ও আশ্চর্য্যজনক হবে৷
\v 10 আর দেখুন, আমি আপনার দাসদেরকে, যে কাঠুরিয়ারা গাছ কাটবে, তাদেরকে কুড়ি হাজার কোর্ পরিমাপের পেষাই করা গম, কুড়ি হাজার কোর্ পরিমাপের যব, কুড়ি হাজার বাৎ আঙ্গুর রস ও কুড়ি হাজার বাৎ তেল দেব৷”
\s5
\v 11 পরে সোরের রাজা হূরম শলোমনের কাছে এই উত্তর লিখে পাঠালেন, “সদাপ্রভু তাঁর প্রজাদেরকে ভালবাসেন, তাই তাদের উপরে আপনাকে রাজা করেছেন৷”
\v 12 হূরম আরও বললেন, “ধন্য সদাপ্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, স্বর্গ মর্ত্যের সৃষ্টিকর্তা, যিনি দায়ূদ রাজাকে দূরদর্শী ও বুদ্ধিমান এক জ্ঞানবান ছেলে দিয়েছেন, সেই ছেলে সদাপ্রভুর জন্য এক গৃহ ও নিজের রাজ্যের এক বাড়ি তৈরী করবেন৷
\s5
\v 13 এখন আমি হূরম-আবি নামে একজন জ্ঞানবান ও বুদ্ধিমান লোককে পাঠালাম৷
\v 14 সে দান বংশের এক স্ত্রীর ছেলে, তার বাবা সোরের লোক; সে সোনা, রুপো, পিতল, লোহা, পাথর ও কাঠ এবং বেগুনী, নীল, মসীনা সুতোর ও গাড় লাল রঙের সুতোর কাজ খুব ভালো করতে পারে৷ আর সে সব রকমের খোদিত কাজ করতে ও সব রকমের নকশার কাজ খুব ভালো তৈরী করতে পারে৷ তাকে আপনার পারদর্শী লোকেদের সঙ্গে এবং আপনার বাবা আমার প্রভু দায়ূদের পারদর্শী লোকেদের সঙ্গে জায়গা দেওয়া হোক৷
\s5
\v 15 অতএব আমার প্রভু যে গম, যব, তেল ও আঙ্গুর রসের কথা বলেছেন, তা নিজের দাসদের কাছে পাঠিয়ে দিন৷
\v 16 আর আপনার যত কাঠের প্রয়োজন হবে, আমরা লিবানোনে তত কাঠ কাটব এবং ভেলায় করে বেঁধে সমুদ্রপথে যাফোতে আপনার জন্য পৌঁছে দেব; পরে আপনি তা যিরূশালেমে তুলে নিয়ে যাবেন৷”
\v 17 আর শলোমন তাঁর বাবা দায়ূদের গণনার পরে ইস্রায়েল দেশে বসবাসকারী সমস্ত লোক গণনা করালেন, তাতে এক লক্ষ তিপ্পান্ন হাজার ছশো লোক পাওয়া গেল৷
\v 18 তাদের মধ্যে তিনি ভার বইবার জন্য সত্তর হাজার লোক, পর্বতে কাঠ কাটতে আশী হাজার লোক ও লোকদেরকে কাজ করাবার জন্য তিন হাজার ছশো প্রধান কর্মচারীদের নিযুক্ত করলেন৷
\s5
\c 3
\s মন্দির তৈরী৷
\p
\v 1 পরে শলোমন যিরূশালেমে মোরিয়া পর্বতে সদাপ্রভুর গৃহ তৈরী করতে শুরু করলেন; সদাপ্রভু সেখানে তাঁর বাবা দায়ূদকে দর্শন দিয়েছিলেন এবং দায়ূদ সেই জায়গা নির্বাচন করেছিলেন; তা যিবূষীয় অর্ণানের খামার৷
\v 2 তিনি তাঁর রাজত্বের চতুর্থ বছরের দ্বিতীয় মাসের দ্বিতীয় দিনে তৈরীর কাজ শুরু করলেন৷
\v 3 শলোমন ঈশ্বরের গৃহ তৈরী করতে যে মূল উপদেশ পেয়েছিলেন, সেই অনুসারে হাতের প্রাচীন পরিমাণে গৃহের দৈর্ঘ্য ষাট হাত ও প্রস্থ কুড়ি হাত করা হল৷
\s5
\v 4 আর গৃহের সামনের বারান্দা গৃহের প্রস্থ অনুসারে কুড়ি হাত লম্বা ও একশো কুড়ি হাত উঁচু হল; আর তিনি ভেতরে তা পরিস্কার সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন৷
\v 5 তিনি বড় গৃহের দেওয়াল ভালো সোনায় মোড়া দেবদারু কাঠে ঢেকে দিলেন ও তার উপরে খেজুর গাছ ও শিকলের ছবি খোদাই করলেন৷
\s5
\v 6 আর শোভার জন্য গৃহটি দামী পাথর দিয়ে সাজালেন; ঐ সোনা পর্বয়িম দেশের সোনা৷
\v 7 আর তিনি গৃহ, গৃহের কড়িকাঠ, গোবরাট, দেওয়াল ও দরজা সোনায় মুড়ে দিলেন এবং দেওয়ালের উপরে করূবের ছবি খোদাই করলেন৷
\s5
\v 8 আর তিনি অতি পবিত্র জায়গা নির্মাণ করলেন, তার দৈর্ঘ্য গৃহের প্রস্থের মত কুড়ি হাত ও প্রস্থ কুড়ি হাত এবং তিনি ছশো তালন্ত ভালো সোনা দিয়ে তা মুড়ে দিলেন৷
\v 9 প্রেকের পরিমান পঞ্চাশ শেকল সোনা৷ তিনি উপরের কুঠরীগুলিও সোনা দিয়ে মুড়ে দিলেন৷
\s5
\v 10 অতি পবিত্র গৃহের মধ্যে তিনি দুটি করূবের ছবি খোদাই করলেন; আর তা সোনা দিয়ে মোড়া হল৷
\v 11 এই করূব দুটির ডানা কুড়ি হাত লম্বা, একটির পাঁচ হাত লম্বা একটি ডানা গৃহের দেওয়াল স্পর্শ করল এবং পাঁচ লম্বা অন্য ডানা দ্বিতীয় করূবের ডানা স্পর্শ করল৷
\v 12 সেই করূবের পাঁচ হাত লম্বা প্রথম ডানাটি গৃহের দেওয়াল স্পর্শ করল এবং পাঁচ হাত লম্বা দ্বিতীয় ডানাটি ঐ করূবের ডানা স্পর্শ করল৷
\s5
\v 13 সেই করূব দুটির ডানা মোট কুড়ি হাত বিস্তারিত, তারা পায়ের কাছে দাড়িয়ে ছিল এবং তাদের মুখ গৃহের দিকে ছিল৷
\v 14 আর তিনি নীল, বেগুনী ও রক্তের রঙের এবং মসীনা সুতোর পর্দা তৈরী করলেন ও তাতে করূব তৈরী করলেন৷
\v 15 আর তিনি গৃহের সামনে পঁয়ত্রিশ হাত উঁচু দুটি স্তম্ভ তৈরী করলেন, এক একটি স্তম্ভের উপরে পাঁচ হাত হল৷
\v 16 আর তিনি গৃহের মধ্যে শেকল তৈরী করে সেই স্তম্ভের মাথায় দিলেন এবং একশো ডালিমের মত করে তৈরী করে ঐ শেকলের উপরে রাখলেন৷
\v 17 সেই দুটি স্তম্ভ তিনি মন্দিরের সামনে স্থাপন করলেন, একটা ডান দিকে ও অন্যটা বামে রাখলেন এবং যেটি ডান দিকে, সেটির নাম যাখীন যার অর্থ, তিনি স্থির করবেন ও যেটি বামে, সেটির নাম বোয়স যার অর্থ, এতেই বল, রাখলেন৷
\s5
\c 4
\p
\v 1 আর তিনি পিতলের এক যজ্ঞবেদি তৈরী করলেন, তার দৈর্ঘ্য কুড়ি হাত, প্রস্থ কুড়ি হাত ও উচ্চতা দশ হাত৷
\v 2 আর তিনি ছাঁচে ঢালা গোলাকার চৌবাচ্চা তৈরী করলেন; তা এক কাণা থেকে অন্য কাণা পর্য্যন্ত দশ হাত ও তার উচ্চতা পাঁচ হাত এবং তার পরিধি ত্রিশ হাত করলেন৷
\v 3 চৌবাচ্চার নীচের চারপাশ ঘিরে বলদের আকৃতি ছিল, প্রত্যেক আকৃতির পরিমাণ দশ হাত করে ছিল; যে ছাঁচের মধ্যে পাত্রটা তৈরী করা হয়েছিল সেই ছাঁচের মধ্যেই গরুগুলোর আকার ছিল বলে সবটা মিলে একটা জিনিসই হল৷
\s5
\v 4 ঐ চৌবাচ্চা বারটি বলদের উপরে স্থাপিত ছিল, তাদের তিনটির মুখ উত্তর দিকে, তিনটির মুখ পশ্চিম দিকে, তিনটির মুখ দক্ষিণ দিকে ও তিনটির মুখ পূর্বদিকে ছিল এবং চৌবাচ্চাটি তাদের উপরে ছিল; তাদের সকলের পিছনের ভাগ ভিতরে থাকল৷
\v 5 সেটা চার আঙ্গুল মোটা ও তার কাণা পানপাত্রের কাণার মতো, লিলি ফুলের মতো আকার ছিল, তাতে তিন হাজার বাত ধরত৷
\v 6 আর তিনি দশটি গামলা তৈরী করলেন এবং ধোবার জন্য পাঁচটা ডানে ও পাঁচটা বামে স্থাপন করলেন; তার মধ্যে তারা হোম বলিদানের জিনিসপত্র ধোয়াধুয়ি করত, কিন্তু চৌবাচ্চাটি যাজকদের নিজেদের ধোবার জন্য ছিল৷
\s5
\v 7 আর তিনি বিধি মতে সোনার দশটি বাতি দান তৈরী করে মন্দিরে স্থাপন করলেন, তার পাঁচটি ডান দিকে ও পাঁচটি বামে রাখলেন৷
\v 8 আর তিনি দশখানি টেবিলও তৈরী করলেন, তার পাঁচটি ডান দিকে ও পাঁচটি বামে মন্দিরের মধ্যে রাখলেন৷ আর তিনি একশোটি সোনার বাটিও তৈরী করলেন৷
\s5
\v 9 আর তিনি যাজকদের উঠান, বড় উঠান ও উঠানের দরজাগুলি তৈরী করলেন ও তার দরজাগুলি পিতলে মুড়ে দিলেন৷
\v 10 আর চৌবাচ্চা ডান পাশে পূর্বদিকে দক্ষিণদিকের সামনে স্থাপন করলেন৷
\s5
\v 11 আর হূরম পাত্র, হাতা ও বাটি সমস্ত কিছু তৈরী করল৷ এইভাবে হূরম শলোমন রাজার জন্য ঈশ্বরের গৃহের যে কাজ করছিল, তা শেষ করল;
\v 12 অর্থাৎ দুটি স্তম্ভ ও সেই দুটি স্তম্ভের উপরের গোলাকার ও মাথলা এবং সেই স্তম্ভের উপরের মাথলার দুটি গোলাকার আচ্ছাদনের দুটি জালির কাজ
\v 13 এবং দুই প্রস্ত জালির কাজের জন্য চারশো ডালিমের মত, অর্থাৎ স্তম্ভের উপরের মাথলার দুটি গোলাকার অংশ সাজানোর জন্য এক একটি জালির কাজের জন্য দুই সারি ডালিমের মত তৈরী করল৷
\s5
\v 14 আর সে ভিত তৈরী করল এবং সেই ভিতের উপরে গামলাগুলি রাখল;
\v 15 একটি চৌবাচ্চা ও তার নীচে বারটি বলদ
\v 16 এবং পাত্র, হাতা ও তিনটি কাঁটা যুক্ত চামচ এবং অন্য সমস্ত পাত্র হূরম-আবি শলোমন রাজার সদাপ্রভুর গৃহের জন্য পালিশ করা পিতলে তৈরী করল৷
\s5
\v 17 রাজা যর্দনের অঞ্চলে সুক্কোৎ ও সরেদার মাঝের কাদা মাটিতে সেটা ঢালালেন৷
\v 18 আর শলোমন এই যে সকল পাত্র তৈরী করলেন, তা অনেক, কারণ পিতলের পরিমাণ নির্ণয় করা গেল না৷
\s5
\v 19 শলোমন ঈশ্বরের গৃহের সমস্ত পাত্র এবং সোনার বেদি ও দর্শন-রুটি রাখবার টেবিল
\v 20 এবং ভিতরের গৃহের সামনে বিধিমতে জ্বালাবার জন্য বিশুদ্ধ সোনার বাতিদান সকল
\v 21 এবং ফুল, প্রদীপ ও চিমটি সকল সোনা দিয়ে তৈরী করলেন,
\v 22 সেই সোনা বিশুদ্ধ; আর কাঁচি, বাটি, চামচ ও ধুনুচি খাঁটি সোনায় এবং গৃহের দরজা, মহাপবিত্র জায়গায় ভিতরের দরজা ও গৃহের অর্থাৎ মন্দিরের দরজাগুলি সোনা দিয়ে তৈরী করলেন৷
\s5
\c 5
\p
\v 1 এইভাবে সদাপ্রভুর গৃহের জন্য শলোমনের করা সমস্ত কাজ সম্পন্ন হল৷ আর শলোমন তাঁর বাবা দায়ূদের উত্সর্গ করা জিনিসগুলি অর্থাৎ রুপো, সোনা ও সকল পাত্র এনে ঈশ্বরের গৃহের ভান্ডারে রাখলেন৷
\s মন্দির প্রতিষ্ঠা৷
\p
\s5
\v 2 পরে শলোমন দায়ূদ-নগর অর্থাৎ সিয়োন থেকে সদাপ্রভুর নিয়ম-সিন্দুক নিয়ে আসার জন্য ইস্রায়েলের প্রাচীনদেরকে ও বংশের প্রধানদের, অর্থাৎ ইস্রায়েল সন্তানদের বাবার বংশের শাসনকর্তাদেরকে, যিরূশালেমে জড়ো করলেন৷
\v 3 তার ফলে সপ্তম মাসে, উত্সবের সময়ে ইস্রায়েলের সব লোক রাজার কাছে এল৷
\s5
\v 4 পরে ইস্রায়েলের প্রত্যেক প্রাচীনেরা উপস্থিত হলে লেবীয়েরা সিন্দুকটি তুলল৷
\v 5 আর তারা সিন্দুক, সমাগম তাঁবু ও তাঁবুর মধ্যে থাকা সমস্ত পবিত্র পাত্র তুলে আনলো; লেবীয় যাজকরা এই সব কিছু তুলে আনলো৷
\v 6 আর শলোমন রাজা এবং তাঁর কাছে আসা সমস্ত ইস্রায়েলের মন্ডলী সিন্দুকের সামনে থেকে অনেক ভেড়া ও ষাঁড় বলি দিলেন, সে সমস্ত অসংখ্য ও অগণ্য ছিল৷
\s5
\v 7 পরে যাজকেরা সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুক নিয়ে গিয়ে নিজের জায়গায়, বাড়ির ভেতরের ঘরে, মহাপবিত্র জায়গায় দুটি করূবের ডানার নিচে স্থাপন করল৷
\v 8 করূব দুটি যেখানে সিন্দুক রাখা হল তার উপরে ডানা মেলে থাকলো, আর উপরে করূবেরা সিন্দুক ও সেটা বয়ে নিয়ে যাবার ডাণ্ডা দুটি ঢেকে দিল৷
\s5
\v 9 সিন্দুকের সেই ডাণ্ডা দুটি এত লম্বা ছিল যে, তার সামনের অংশ সিন্দুকের সামনে দখা যেত৷ তথাপি তা বাইরে দেখা যেত না৷ আজ পর্যন্ত তা সেই জায়গায় আছে৷
\v 10 সিন্দুকের মধ্যে আর কিছু ছিল না, শুধু সেই দুটি পাথরের ফলক ছিল, যা মোশি হোরেবে তার মধ্যে রেখেছিলেন; সেই সময়ে মিসর থেকে ইস্রায়েল সন্তানদের বেরিয়ে আসার পর, সদাপ্রভু তাদের সঙ্গে নিয়ম করেছিলেন৷
\s5
\v 11 বাস্তবিক যাজকেরা পবিত্র জায়গা থেকে বেরলো, সেখানে উপস্থিত যাজকেরা সকলেই নিজেদেরকে পবিত্র করেছিল, তাদেরকে নিজেদের পালা রক্ষা করতে হল না
\v 12 এবং গায়ক লেবীয়েরা সবাই, আসফ, হেমন, যিদূথূন ও তাঁদের ছেলেরা ও ভাইয়েরা, মসীনা পোশাক পরে এবং করতাল, নেবল ও বীণা সঙ্গে নিয়ে যজ্ঞবেদির পূর্ব দিকে দাড়িয়ে থাকল এবং তূরীবাদক একশো কুড়িজন যাজক তাদের সঙ্গে ছিল৷
\v 13 সেই তূরীবাদকেরা ও গায়কেরা সবাই একসাথে সদাপ্রভুর প্রশংসা ও স্তব করার জন্য একজন ব্যক্তির মত উপস্থিত ছিল এবং যখন তারা তূরী ও করতাল ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে মহাশব্দ করে ‘তিনি মঙ্গলময়, হ্যাঁ, তাঁর দয়া অনন্তকাল স্থায়ী, এই কথা বলে সদাপ্রভুর প্রশংসা করল, তখন বাড়ি, সদাপ্রভুর বাড়ি মেঘে এমন ভরে গেল যে,
\v 14 মেঘের জন্য যাজকেরা সেবা করার জন্য দাঁড়াতে পারল না; কারণ ঈশ্বরের বাড়ি সদাপ্রভুর প্রতাপে ভরে গিয়েছিল৷
\s5
\c 6
\p
\v 1 তখন শলোমন বললেন, “সদাপ্রভু বলেছেন যে, তিনি ঘন অন্ধকারে বাস করবেন৷
\v 2 কিন্তু আমি তোমার এক বসবাসের গৃহ নির্মাণ করলাম; এটা চিরকালের জন্য তোমার বসবাসের জায়গায়৷”
\v 3 পরে রাজা মুখ ফিরিয়ে সমস্ত ইস্রায়েল সমাজকে আশীর্বাদ করলেন; আর সমস্ত ইস্রায়েল সমাজ দাঁড়িয়ে থাকলো৷
\s5
\v 4 আর তিনি বললেন, “ধন্য সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর; তিনি আমার বাবা দায়ূদের কাছে নিজের মুখে এই কথা বলেছেন এবং নিজের হাতে করে এটা সফল করেছেন, যথা,
\v 5 যে দিন আমার প্রজাদেরকে মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছি, সেই দিন থেকে আমি নিজের নাম স্থাপনের জন্য গৃহ তৈরীর জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে কোনো নগর মনোনীত করিনি এবং নিজের প্রজা ইস্রায়েলের শাসনকর্তা হবার জন্য কোনো মানুষকে মনোনীত করিনি৷
\v 6 কিন্তু নিজের নাম স্থাপনের জন্য আমি যিরূশালেম মনোনীত করেছি ও আমার প্রজা ইস্রায়েলের শাসনকর্তা হবার জন্য দায়ূদকে মনোনীত করেছি৷
\s5
\v 7 আর ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশ্যে এক গৃহ তৈরী করতে আমার বাবা দায়ূদের ইচ্ছা ছিল৷
\v 8 কিন্তু সদাপ্রভু আমার বাবা দায়ূদকে বললেন, ‘আমার নামের উদ্দেশ্যে একটি গৃহ তৈরী করতে তোমার ইচ্ছা হয়েছে; তোমার এইরকম ইচ্ছা হওয়া অবশ্যই ভাল৷
\v 9 তবুও তুমি সেই গৃহ তৈরী করবে না, কিন্তু তোমার কটি থেকে উত্পন্ন ছেলেই আমার নামের উদ্দেশ্যে গৃহ তৈরী করবে৷’
\s5
\v 10 সদাপ্রভু এই যে কথা বলেছেন, তা সফল করলেন; সদাপ্রভু প্রতিজ্ঞা অনুসারে আমি আমার বাবা দায়ূদের পদে উত্পন্ন ও ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামের উদ্দেশ্যে এই গৃহ তৈরী করেছি৷
\v 11 আর সদাপ্রভু ইস্রায়েল সন্তানদের সঙ্গে যে নিয়ম করেছিলেন, তার আধার সিন্দুক এর মধ্যে রাখলাম৷”
\s5
\v 12 পরে তিনি সমস্ত ইস্রায়েল সমাজের উপস্থিতিতে সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদির সামনে দাঁড়িয়ে অঞ্জলি করলেন;
\v 13 কারণ শলোমন পাঁচ হাত লম্বা, পাঁচ হাত প্রস্থ ও তিন হাত উঁচু পিতলের একটি মঞ্চ তৈরী করে উঠানের মাঝখানে রেখেছিলেন; তিনি তার উপর দাঁড়ালেন, পরে সমস্ত ইস্রায়েল সমাজের সামনে হাঁটু পেতে স্বর্গের দিকে অঞ্জলি বিস্তার করলেন;
\s5
\v 14 আর তিনি বললেন, “হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, স্বর্গে কি পৃথিবীতে তোমার মত ঈশ্বর নেই৷ যারা সমস্ত মনপ্রাণ দিয়ে তোমার সঙ্গে চলে, তোমার সেই দাসেদের পক্ষে তুমি নিয়ম ও দয়া পালন কর;
\v 15 তুমি তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদের কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছিলে তা পালন করেছ, যা নিজের মুখে বলেছিলে, তা নিজের হাতে পূরণ করেছ, যেমন আজ দেখা যাচ্ছে৷
\s5
\v 16 এখন, হে সদাপ্রভু ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি তোমার দাস আমার বাবা দায়ূদের কাছে যা প্রতিজ্ঞা করেছিলে, তা রক্ষা কর৷ তুমি বলেছিলে, আমার দৃষ্টিতে ইস্রায়েলের সিংহাসনে বসতে তোমার বংশে লোকের অভাব হবে না, কেবলমাত্র যদি আমার সামনে তুমি যেমন চলছো, তোমার সন্তানেরা আমার সামনে সেইভাবে চলার জন্য নিজেদের পথে সাবধান থাকে৷
\v 17 এখন, হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তোমার দাস দায়ূদের কাছে যে কথা তুমি বলেছিলে, তা সত্য হোক৷
\s5
\v 18 কিন্তু ঈশ্বর কি সত্যিই পৃথিবীতে মানুষের সঙ্গে বাস করবেন? দেখ, স্বর্গ ও স্বর্গের স্বর্গ তোমাকে ধরে রাখতে পারে না, তবে আমার তৈরী এই গৃহ কি পারবে?
\v 19 সুতরাং হে সদাপ্রভু, আমার ঈশ্বর, তুমি তোমার দাসের প্রার্থনাতে ও বিনতিতে মনোযোগ দাও, তোমার দাস তোমার কাছে যেভাবে কাঁদছে ও প্রার্থনা করছে, তা শোন৷
\v 20 যে জায়গার বিষয়ে তুমি বলেছ যে, তোমার নাম সেই জায়গার রাখবে, সেই জায়গায় অর্থাৎ এই গৃহের ওপর দিনরাত তোমার দৃষ্টি থাকুক এবং এই জায়গায় সামনে তোমার দাস যে প্রার্থনা করে, তা শোনো৷
\s5
\v 21 আর তোমার দাস ও তোমার লোক ইস্রায়েল যখন এই জায়গায় সামনে প্রার্থনা করবে, তখন তাদের সব অনুরোধে কান দিও; তোমার বাসজায়গা থেকে, স্বর্গ থেকে, তাহা শুনো এবং শুনে ক্ষমা কোরো৷
\s5
\v 22 কেউ নিজের প্রতিবাসীর বিরুদ্ধে পাপ করলে যদি তাকে শপথ করার জন্য কোনো শপথ সুনিশ্চিত হয়, আর সে এসে এই গৃহে তোমার যজ্ঞবেদির সামনে সেই শপথ করে,
\v 23 তবে তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনো এবং সমাধান করে তোমার দাসদের বিচার কোরো; দোষীকে দোষী করে তার কাজের ফল তার মাথায় দিও এবং ধার্মিককে ধার্মিক করে তার ধার্মিকতা অনুযায়ী ফল দিও৷
\s5
\v 24 তোমার প্রজা ইস্রায়েল তোমার বিরুদ্ধে পাপ করার জন্য শত্রুর সামনে আহত হওয়ার পর যদি পুনরায় ফেরে এবং এই গৃহে তোমার নাম স্তব করে তোমার কাছে প্রার্থনা ও অনুরোধ করে;
\v 25 তবে তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনো এবং তোমার প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা কোরো, আর তাদেরকে ও তার পূর্বপুরুষদেরকে এই যে দেশ দিয়েছ, এখানে পুনরায় তাদেরকে এনো৷
\s5
\v 26 তোমার বিরুদ্ধে তাদের পাপের জন্য যদি আকাশ থেমে যায়, বৃষ্টি না হয়, আর লোকেরা যদি এই জায়গার সামনে প্রার্থনা করে, তোমার নামের স্তব করে এবং তোমার থেকে দুঃখ পাওয়ার পর নিজেদের পাপ থেকে ফেরে,
\v 27 তবে তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনো এবং তোমার দাসের ও তোমার প্রজা ইস্রায়েলের পাপ ক্ষমা কোরো ও তাদের যাতায়াতের সত্পথ তাদেরকে দেখিও এবং তুমি তোমার প্রজাদেরকে যে দেশের অধিকার দিয়েছ, তোমার সেই দেশে বৃষ্টি পাঠিও৷
\s5
\v 28 দেশের মধ্যে যদি দুর্ভিক্ষ হয়, যদি মহামারী হয়, যদি শস্যের শেষ কি ধ্বংস হয় অথবা পঙ্গপাল কিম্বা কীট হয়, যদি তাদের শত্রুরা তাদের দেশে নগরে নগরে তাদেরকে আটকে রাখে, যদি কোনো মহামারী বা রোগ দেখা হয়;
\v 29 তাহলে কোনো ব্যক্তি বা তোমার সমস্ত প্রজা ইস্রায়েল, যারা প্রত্যেকে নিজেদের মনের যন্ত্রণা ও শোক জানে এবং এই গৃহের দিকে যদি অঞ্জলি দিয়ে কোনো প্রার্থনা কি অনুরোধ করে;
\v 30 তবে তুমি তোমার বসবাসের জায়গা স্বর্গ থেকে সেটা শুনো এবং ক্ষমা কোরো এবং প্রত্যেক জনকে নিজেদের সমস্ত পথ অনুযায়ী প্রতিফল দিও; তুমি তো তাদের হৃদয় জানো; কারণ একমাত্র তুমিই মানুষের হৃদয় সম্বন্ধে জানো;
\v 31 যেন আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে তুমি যে দেশ দিয়েছ, এই দেশে তারা যত দিন জীবিত থাকে, তোমার পথে চলার জন্য তোমাকে ভয় করে৷
\s5
\v 32 বিশেষত তোমার প্রজা ইস্রায়েল গোষ্ঠীর নয়, এমন কোনো বিদেশী যখন তোমার মহানাম, তোমার শক্তিশালী হাত ও তোমার প্রসারিত বাহুর উদ্দেশ্যে দূর দেশ থেকে আসবে, যখন তারা এসে এই গৃহের সামনে প্রার্থনা করবে,
\v 33 তখন তুমি স্বর্গ থেকে, তোমার বসবাসের জায়গা থেকে তা শুনো এবং সেই বিদেশী যে তোমার কাছে যা কিছু প্রার্থনা করবে, সেই অনুসারে কোরো; যেন তোমার প্রজা ইস্রায়েলের মত পৃথিবীর সমস্ত জাতি তোমার নাম জানে ও তোমাকে ভয় করে এবং তারা যেন জানতে পায় যে, আমার তৈরী করা এই গৃহের উপরে তোমারই নাম মহিমান্বিত৷
\s5
\v 34 তুমি তোমার প্রজাদেরকে কোন পথে চালালে, যদি তারা তাদের শত্রুদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বের হয় এবং তোমার মনোনীত এই নগরের সামনে ও তোমার নামের জন্য আমার তৈরী করা গৃহের সামনে তোমার কাছে প্রার্থনা করে;
\v 35 তবে তুমি স্বর্গ থেকে তাদের প্রার্থনা ও অনুরোধ শুনো এবং তাদের বিচার পরিপূর্ণ কোরো৷
\s5
\v 36 তারা যদি তোমার বিরুদ্ধে পাপ করে, কারণ পাপ করে না, এমন কোনো মানুষ নেই এবং তুমি যদি তাদের প্রতি প্রচন্ড রেগে গিয়ে শত্রুর হাতে তাদেরকে সমর্পণ করো ও শত্রুরা তাদেরকে বন্দী করে দূরের কিংবা কাছের কোনো দেশে নিয়ে যাবে;
\v 37 তবুও যে দেশে তারা বন্দী হিসাবে নীত হয়েছে, সেই দেশে যদি মনে মনে বিবেচনা করে ও ফেরে, নিজেদের বন্দিত্বের দেশে তোমার কাছে অনুরোধ করে যদি বলে, আমরা পাপ করেছি; অপরাধ করেছি ও দুষ্টুমি করেছি
\v 38 এবং যে দেশে বন্দী হিসাবে নীত হয়েছি, সেই বন্দিত্বের দেশে যদি সমস্ত হৃদয় দিয়ে ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তোমার কাছে ফিরে আসে এবং তুমি তাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে দেশ দিয়েছ, আপনাদের সেই দেশের সামনে, তোমার মনোনীত নগরের সামনে ও তোমার নামের জন্য আমার তৈরী করা গৃহের সামনে যদি প্রার্থনা করে;
\v 39 তবে তুমি স্বর্গ থেকে, তোমার বাসজায়গা থেকে তাদের প্রার্থনা ও অনুরোধ শুনো এবং তাদের বিচার সম্পূর্ণ কোরো; আর তোমার যে প্রজারা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছে, তাদের ক্ষমা কোরো৷
\v 40 এখন, হে আমার ঈশ্বর, অনুরোধ করি, এই জায়গায় যে প্রার্থনা হবে, তার প্রতি যেন তোমার দৃষ্টি ও কান খোলা থাকে৷
\v 41 হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, এখন তুমি উঠে তোমার বিশ্রামের জায়গায় যাও; তুমি ও তোমার শক্তির সিন্দুক৷ হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তোমার যাজকরা পরিত্রানের পোশাক পড়ুক ও তোমার সাধুরা মঙ্গলের জন্য আনন্দ করুক৷
\v 42 হে সদাপ্রভু ঈশ্বর, তুমি তোমার অভিষিক্তের মুখ ফিরিয়ে দিও না, তোমার দাস দায়ূদের প্রতি করা সমস্ত দয়া স্মরণ কর৷”
\s5
\c 7
\p
\v 1 শলোমন প্রার্থনা শেষ করার পর আকাশ থেকে আগুন নেমে সব হোম ও বলি গ্রাস করল এবং সদাপ্রভুর মহিমায় গৃহ পূর্ণ হল৷
\v 2 আর যাজকরা সদাপ্রভুর গৃহে ঢুকতে পারল না, কারণ সদাপ্রভুর মহিমায় সদাপ্রভুর গৃহ পরিপূর্ণ হয়েছিল৷
\v 3 যখন আগুন নামল এবং সদাপ্রভুর মহিমা গৃহের উপরে বিরাজ করল, তখন ইস্রায়েলের সন্তানরা সবাই তা দেখতে পেল, আর তারা নত হয়ে পাথর বাঁধা মাটিতে উপুড় হয়ে প্রণাম করল এবং সদাপ্রভুর স্তব করে বলল, “তিনি মঙ্গলময়, হ্যাঁ, তাঁর দয়া অনন্তকাল স্থায়ী৷”
\s5
\v 4 পরে রাজা ও সমস্ত লোক সদাপ্রভুর সামনে যজ্ঞ করলেন৷
\v 5 শলোমন রাজা বাইশ হাজার গরু ও এক লক্ষ কুড়ি হাজার মেষ বলিদান করলেন৷ এইভাবে রাজা ও সমস্ত লোক ঈশ্বরের গৃহ প্রতিষ্ঠা করলেন৷
\v 6 আর যাজকরা নিজেদের পদ অনুসারে দাঁড়িয়ে ছিল এবং লেবীয়েরাও সদাপ্রভুর সঙ্গীতের জন্য বাদ্যযন্ত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল; যখন দায়ূদ তাদের মাধ্যমে প্রশংসা করেন, তখন সদাপ্রভুর দয়া অনন্তকাল স্থায়ী বলে যেন তাঁর স্তব করা হয়, এই জন্য দায়ূদ রাজা সব যন্ত্র তৈরী করেছিলেন; আর তাদের সামনে যাজকরা তূরী বাজাচ্ছিল এবং সমস্ত ইস্রায়েল দাড়িয়ে ছিল৷
\s5
\v 7 আর শলোমন সদাপ্রভুর গৃহের সামনে উঠানের মাঝের জায়গাটি পবিত্র করলেন, কারণ তিনি সেখানে সমস্ত হোমবলি এবং মঙ্গলার্থক বলির মেদ উত্সর্গ করলেন, কারণ হোমবলি, ভক্ষ্য-নৈবেদ্য এবং সেই মেদ গ্রহণের জন্য শলোমনের তৈরী পিতলের যজ্ঞবেদি ছোট ছিল৷
\s5
\v 8 এইভাবে সেই সময়ে শলোমন ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েল, হমাতের প্রবেশ-জায়গা থেকে মিসরের স্রোত পর্যন্ত একটি বিরাট জনতা, সাত দিন উত্সব করলেন৷
\v 9 পরে তাঁরা অষ্টম দিনে উত্সব-সভা করলেন, তার ফলে তাঁরা সাত দিন যজ্ঞবেদির প্রতিষ্ঠা ও সাত দিন উত্সব পালন করলেন৷
\v 10 শলোমন সপ্তম মাসের তেইশতম দিনে লোকদেরকে নিজেদের তাঁবুতে বিদায় করলেন৷ সদাপ্রভু দায়ূদের, শলোমনের ও তাঁর প্রজা ইস্রায়েলের যা কিছু মঙ্গল করেছিলেন, তার জন্য তারা আনন্দিত ও উল্লাসিত হয়েছিল৷
\s5
\v 11 এইভাবে শলোমন সদাপ্রভুর গৃহ ও রাজবাড়ি তৈরীর কাজ শেষ করলেন; সদাপ্রভুর গৃহে ও নিজের বাড়িতে যা যা করতে শলোমনের ইচ্ছা হয়েছিল, সে সমস্ত তিনি ভালোভাবে সম্পূর্ণ করলেন৷
\s শলোমনের প্রার্থনা ও ঈশ্বরের উত্তর৷
\p
\v 12 পরে সদাপ্রভু রাতের বেলায় শলোমনকে দর্শন দিয়ে বললেন, “আমি তোমার প্রার্থনা শুনেছি ও যজ্ঞ-গৃহ হিসাবে এই জায়গা আমার জন্য মনোনীত করেছি৷
\s5
\v 13 আমি যদি আকাশকে থামিয়ে দিই, আর বৃষ্টি না হয়, কিংবা দেশ ধ্বংস করতে পঙ্গপালদেরকে আদেশ করি, অথবা আমার প্রজাদের মধ্যে মহামারী পাঠাই,
\v 14 আমার প্রজারা, যাদেরকে আমার নামে ডাকা হয়েছে, তারা যদি নম্র হয়ে প্রার্থনা করে ও আমার মুখ খোঁজে এবং নিজেদের খারাপ পথ থেকে ফেরে, তবে আমি স্বর্গ থেকে তা শুনব, তাদের পাপ ক্ষমা করব ও তাদের দেশকে রোগ মুক্ত করব৷
\v 15 এখানে যে প্রার্থনা হবে, তার প্রতি আমার দৃষ্টি থাকবে ও কান খোলা থাকবে৷
\s5
\v 16 কারণ এই গৃহে যেন আমার নাম চিরকালের জন্য থাকে, তাই আমি এখন এটা মনোনীত ও পবিত্র করলাম এবং এখানে সর্বদা আমার দৃষ্টি ও মন থাকবে৷
\v 17 আর তোমার বাবা দায়ূদ যেমন চলত, তেমনি তুমিও যদি আমার সঙ্গে চল, আমি তোমাকে যে সব আদেশ দিয়েছি, যদি সেই অনুসারে কাজ কর এবং আমার বিধি ও শাসনগুলি মেনে চল;
\v 18 তবে ‘ইস্রায়েলের উপরে কর্তৃত্ব করতে তোমার বংশে লোকের অভাব হবে না, এই বলে আমি তোমার বাবা দায়ূদের সঙ্গে যে নিয়ম করেছিলাম, সেই অনুসারে তোমার রাজসিংহাসন স্থির করব৷
\s5
\v 19 কিন্তু যদি তোমরা আমার থেকে ফেরো ও তোমাদের সামনে স্থাপিত আমার বিধি ও আদেশগুলি পরিত্যাগ কর, আর গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা কর ও তাদের প্রণাম কর,
\v 20 তবে আমি ইস্রায়েলীয়দেরকে আমার যে দেশ দিয়েছি, সেখান থেকে তাদেরকে বংশ সমেত উচ্ছেদ করব এবং আমার নামের জন্য এই যে গৃহ পবিত্র করলাম, এটা আমার চোখের সামনে থেকে দূর করব এবং সমস্ত জাতির মধ্যে তা প্রবাদের ও উপহাসের পাত্র করব৷
\v 21 আর এই গৃহ উঁচু হলেও যে কেউ এর কাছ দিয়ে যাবে, সে চমকে উঠবে ও জিজ্ঞাসা করবে, ‘এই দেশের ও এই গৃহের প্রতি সদাপ্রভু কেন এরকম করেছেন?
\v 22 আর লোকে বলবে, ‘এর কারণ হল, যিনি এদের পূর্বপুরুষদেরকে মিসর দেশ থেকে বের করে এনেছিলেন, ওরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছে এবং অন্য দেবতাদের কাছে মাথা নিচু করেছে ও তাদের সেবা করেছে, সেই জন্য তিনি তাদের উপর এইসব অমঙ্গল আনলেন৷
\s5
\c 8
\s শলোমনের ধনসম্পত্তি।
\p
\v 1 সদাপ্রভুর মন্দির ও তাঁর নিজের বাড়ী তৈরী করতে শলোমনের কুড়ি বছর লাগল।
\v 2 তারপর, হূরম শলোমনকে যে সব নগর দিয়েছিলেন, শলোমন সেগুলি পুনরায় তৈরী করে সেখানে ইস্রায়েল সন্তানদের বাস করতে দিলেন।
\s5
\v 3 তারপর শলোমন হমাৎ-সোবাতে গিয়ে সেটা দখল করলেন।
\v 4 তিনি মরুভূমিতে তদ্‌মোর নগর এবং তৈরী করলেন হমাতে সমস্ত ভাণ্ডার-নগর তৈরী করলেন।
\s5
\v 5 তাই তিনি উপরের বৈৎ-হোরোণ ও নীচের বৈৎ-হোরোণ এই দুটি প্রাচীরে ঘেরা নগর প্রাচীর, দরজা ও অর্গলের মাধ্যমে শক্তিশালী করলেন।
\v 6 আর বালৎ এবং শলোমনের সব ভাণ্ডার-নগর এবং তাঁর রথের ও ঘোড়াচালকদের নগরগুলি, আর যিরূশালেমে, লিবানোনে ও তাঁর অধিকার দেশের সব জায়গায় যা যা তৈরী করতে শলোমনের ইচ্ছা ছিল, তিনি সবই তৈরী করলেন।
\s5
\v 7 হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয় যে সব লোক অবশিষ্ট ছিল, যারা ইস্রায়েলীয় নয়, যাদেরকে ইস্রায়েল সন্তানরা সম্পূর্ণ ভাবে ধ্বংস করেনি,
\v 8 দেশে অবশিষ্ট সেই লোকদের সন্তানদেরকে শলোমন নিজের দাস হিসাবে সংগ্রহ করলেন; তারা আজ পর্যন্ত সেই কাজ করছে।
\s5
\v 9 কিন্তু শলোমন তাঁর কাজ করবার জন্য ইস্রায়েল সন্তানদের মধ্যে কাউকে দাস বানান নি; তারা যোদ্ধা, তাঁর প্রধান সেনাপতি এবং তাঁর রথের ও ঘোড়াচালকদের সেনাপতি হল।
\v 10 আর তাদের মধ্যে শলোমন রাজার নিযুক্ত দুশো পঞ্চাশ জন প্রধান শাসনকর্তা প্রজাদের উপরে কর্তৃত্ব করত।
\s5
\v 11 পরে শলোমন ফরৌণের মেয়ের জন্য যে বাড়ী তৈরী করেছিলেন, সেই বাড়িতে দায়ূদ-নগর থেকে তাঁকে নিয়ে এলেন; কারণ তিনি বললেন, “আমার স্ত্রী ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের বাড়ীতে থাকবেন না, কারণ যে সব জায়গায় সদাপ্রভুর সিন্দুক আনা হয়েছে সেই জায়গাগুলি পবিত্র।”
\s5
\v 12 আর শলোমন বারান্দার সামনে সদাপ্রভুর যে যজ্ঞবেদি তৈরী করেছিলেন, তার উপরে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোম করতে লাগলেন।
\v 13 তিনি মোশির আদেশ মতে বিশ্রামবারে, অমাবস্যায় ও বছরের মধ্যে নির্ধারিত তিনটি উত্সবে, অর্থাৎ তাড়ীশূন্য রুটির উত্সবে, সপ্তাহের উত্সবে ও কুঁঠীর উত্সবে প্রতিদিনের নিয়ম অনুসারে বলি উৎসর্গ করতেন।
\s5
\v 14 আর তিনি তাঁর বাবা দায়ূদের নির্ধারিত যাজকদের সেবা কাজের জন্য তাদের সময়সূচি নির্দিষ্ট করে দিলেন এবং প্রতিদিনের নিয়ম অনুসারে প্রশংসা ও যাজকদের সামনে পরিচর্যা করতে লেবীয়দেরকে নিজেদের কাজে নিযুক্ত করলেন। আর তিনি পালা অনুসারে প্রত্যেকটি দরজা দারোয়ানদের নিযুক্ত করলেন, কারণ ঈশ্বরের লোক দায়ূদ সেই রকম আদেশ দিয়েছিলেন।
\v 15 আর রাজা যাজকদেরকে ও লেবীয়দেরকে ভাণ্ডার প্রভৃতি যে কোনো বিষয়ে যে আদেশ দিতেন, তার অমান্য তারা করত না।
\s5
\v 16 সদাপ্রভুর গৃহের ভিত গাঁথা থেকে শুরু করে তা শেষ করবার দিন পর্যন্ত শলোমনের সমস্ত কাজ নিয়ম করে চলল-সদাপ্রভুর গৃহের কাজ শেষ হল।
\v 17 তারপর শলোমন ইদোম দেশের সমুদ্র পারের ইৎসিয়োন-গেবরে ও এলতে গেলেন।
\v 18 আর হূরম তাঁর দাসেদের দিয়ে তাঁর কাছে কয়েকটি জাহাজ ও সামুদ্রিক কাজে দক্ষ দাসদেরকে পাঠালেন; তারা শলোমনের দাসেদের সঙ্গে ওফীরে গিয়ে সেখান থেকে চারশো পঞ্চাশ তালন্ত সোনা নিয়ে শলোমন রাজার কাছে আনলো।
\s5
\c 9
\s শিবাদেশের রানীর আগমন।
\p
\v 1 আর শিবার রাণী শলোমনের সুনাম শুনে কঠিন বাক্য দিয়ে শলোমনের পরীক্ষা করার জন্য প্রচুর পরিমাণে ঐশ্বর্য্য নিয়ে এবং প্রচুর সুগন্ধি মশলা, সোনা ও মণিবাহক উটদের সঙ্গে নিয়ে যিরূশালেমে আসলেন এবং শলোমনের কাছে এসে তাঁর মনে যা যা ছিল তা সবই তাঁকে বললেন।
\v 2 আর শলোমন তাঁর সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন; শলোমনের কাছে কোনো কিছুই না বোঝার মত ছিল না, তিনি তাঁকে সবই বললেন।
\s5
\v 3 এইভাবে শিবার রাণী শলোমনের জ্ঞান ও তাঁর তৈরী গৃহ
\v 4 এবং তাঁর টেবিলের খাবার ও তাঁর কর্মচারীদের থাকবার জায়গা ও দাঁড়িয়ে থাকা চাকরদের শ্রেণী ও তাদের পোশাক এবং তাঁর পানীয় পরিবেশকদের ও তাদের পোশাক এবং সদাপ্রভুর গৃহে উঠার জন্য তাঁর তৈরী সিঁড়ি, এই সব দেখে অবাক হয়ে গেলেন।
\s5
\v 5 আর তিনি রাজাকে বললেন, “আমি আমার দেশে থেকে আপনার বাক্য ও জ্ঞানের বিষয়ে যে কথা শুনেছিলাম, তা সত্যি।
\v 6 কিন্তু আমি যতক্ষণ এসে নিজের চোখে না দেখলাম, ততক্ষণ লোকেদের সেই সব কথায় আমার বিশ্বাস হয় নি; আর দেখুন, আপনার জ্ঞানের অর্ধেকও আমাকে বলা হয় নি; আমি যে সুনাম শুনেছিলাম, তার থেকে আপনার গুণ অনেক বেশী।
\s5
\v 7 ধন্য আপনার লোকেরা এবং ধন্য আপনার এই দাসেরা, যারা সব সময় আপনার সামনে দাঁড়িয়ে থেকে আপনার জ্ঞানের কথা শোনে।
\v 8 ধন্য আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভু, যিনি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর জন্য রাজা করে তাঁর সিংহাসনে আপনাকে বসবার জন্য আপনার উপর সন্তুষ্ট হয়েছেন। ইস্রায়েলের লোকদেরকে চিরস্থায়ী করার জন্য আপনার ঈশ্বর তাদেরকে ভালবাসেন, এই জন্য সুবিচার ও ন্যায় রক্ষার জন্য আপনাকে রাজা করেছেন।”
\s5
\v 9 পরে তিনি রাজাকে সাড়ে একশো কুড়ি তালন্ত সোনা, অনেক সুগন্ধি মশলা ও মণি উপহার দিলেন। শিবার রাণী রাজা শলোমনকে যে রকম সুগন্ধি মশলা দিলেন, সেই রকম সুগন্ধি মশলা আর হয় নি।
\s5
\v 10 আর হূরমের ও শলোমনের যে দাসরা ওফীর থেকে সোনা নিয়ে আসত, তারা চন্দন কাঠ আর মণিও আনত।
\v 11 সেই সব চন্দন কাঠ দিয়ে সদাপ্রভুর রাজা গৃহের ও রাজবাড়ীর জন্য সিঁড়ি, গায়কদের জন্য বীণা ও নেবল তৈরী করালেন। এর আগে যিহূদা দেশে কেউ কখনও সেইরকম দেখে নি।
\v 12 আর শলোমন রাজা শিবার রাণীর ইচ্ছা অনুসারে চাওয়া সবই তাঁকে দিলেন, রাণী তাঁর জন্য যা এনেছিলেন তার চেয়ে অনেক বেশী উপহার তিনি তাঁকে দিলেন; পরে রাণী ও তাঁর দাসেরা নিজের দেশে ফিরে গেলেন।
\s শলোমনের ঐশ্বর্য্য ও মৃত্যু।
\p
\s5
\v 13 এক বছরের মধ্যে শলোমনের কাছে ছশো ছেষট্টি তালন্ত পরিমাপের সোনা আসত।
\v 14 এছাড়া বণিক ও ব্যবসায়ীরা সোনা নিয়ে আসত এবং আরবের সমস্ত রাজারা ও দেশের শাসনকর্তারা শলোমনের কাছে সোনা ও রূপা নিয়ে আসতেন।
\s5
\v 15 তাতে শলোমন রাজা পেটানো সোনা দিয়ে দু’শো বড় ঢাল তৈরী করলেন। প্রত্যেকটা ঢালে ছশো শেকল পরিমাপের পেটানো সোনা ছিল।
\v 16 আর তিনি পেটানো সোনা দিয়ে তিনশো ছোট ঢাল তৈরী করলেন; তার প্রত্যেক ঢালে তিনশো শেকল পরিমাপের সোনা ছিল। পরে রাজা লিবানোন অরণ্যের বাড়িতে সেগুলি রাখলেন।
\s5
\v 17 আর রাজা হাতির দাঁতের একটা বড় সিংহাসন তৈরী করিয়ে খাঁটি সোনা দিয়ে মুড়লেন।
\v 18 ঐ সিংহাসনের সিঁড়ির ছয়টা ধাপ, আর একটি সোনার পা রাখবার আসন সিংহাসনের সঙ্গে লাগানো ছিল এবং আসনের দু’দিকে হাতল ছিল এবং সেই হাতলের পাশে দুটি সিংহমূর্তি দাঁড়ানো ছিল,
\s5
\v 19 আর সেই ছয়টা ধাপের উপরে দুপাশে বারোটি সিংহমূর্তি দাঁড়িয়ে ছিল; এই রকম সিংহাসন অন্য কোনো রাজ্যে তৈরী হয় নি।
\v 20 শলোমন রাজার সমস্ত পানীয়ের পাত্রগুলো সোনার ছিল ও লিবানোন অরণ্যের বাড়ির সমস্ত পাত্র ছিল খাঁটি সোনার তৈরী; শলোমনের সময়ে রুপো কোনো কিছুর মধ্যে গণনা করা হত না।
\v 21 কারণ হূরমের দাসেদের সঙ্গে রাজার কতগুটি জাহাজ তর্শীশে যেত; সেই তর্শীশের জাহাজগুলি তিন বছরে একবার সোনা, রুপো, হাতির দাঁত, বানর ও ময়ূর নিয়ে আসত।
\s5
\v 22 এইভাবে ঐশ্বর্য্য ও জ্ঞানে শলোমন রাজা পৃথিবীর সব রাজার মধ্যে প্রধান হলেন।
\v 23 আর ঈশ্বর শলোমনের হৃদয়ে যে জ্ঞান দিয়েছিলেন, তাঁর সেই জ্ঞানের কথাবার্তা শুনবার জন্য পৃথিবীর সব রাজা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চেষ্টা করতেন।
\v 24 আর সবাই উপহার, সোনা-রুপোর পাত্র, পোশাক, অস্ত্র ও সুগন্ধি মশলা, ঘোড়া আর খচ্চর আনতেন; প্রতি বছর এই রকম হত।
\s5
\v 25 আর ঘোড়া ও রথের জন্য শলোমনের চার হাজার ঘর ছিল ও বারো হাজার ঘোড়াচালক ছিল; তিনি তাদের রথ রাখবার নগরগুলিতে এবং যিরূশালেমে রাজার কাছে রাখতেন।
\v 26 আর তিনি ফরাৎ নদী থেকে পলেষ্টীয়দের দেশ ও মিসরের সীমানা পর্যন্ত সমস্ত রাজাদের উপরে রাজত্ব করতেন।
\s5
\v 27 রাজা যিরূশালেমে রুপোকে পাথরের মত এবং এরস কাঠকে উপত্যকার ডুমুর গাছের মত অনেক করলেন।
\v 28 আর লোকেরা মিসর ও সব দেশ থেকে শলোমনের জন্য ঘোড়া আনত।
\v 29 শলোমনের সমস্ত কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত নাথন ভাববাদীর বইয়ে ও শীলোনীয় অহীয়ের ভাববাণীতে এবং নবাটের ছেলে যারবিয়ামের বিষয়ে ‘ইদ্দো দর্শকের দর্শন’ নামক বইতে কি লেখা নেই?
\v 30 পরে শলোমন যিরূশালেমে চল্লিশ বছর ধরে সমস্ত ইস্রায়েলের উপরে রাজত্ব করলেন।
\v 31 তারপরে শলোমন তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন ও তাঁর বাবা দায়ূদের শহরে কবর দেওয়া হল এবং তাঁর ছেলে রহবিয়াম তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 10
\s রহবিরাম রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 রহবিয়াম শিখিমে গেলেন, কারণ তাঁকে রাজা করবার জন্য ইস্রায়েলীয়েরা সকলে শিখিমে উপস্থিত হয়েছিল।
\v 2 আর যখন নবাটের ছেলে যারবিয়াম এই কথা শুনলেন, কারণ তিনি মিশরে ছিলেন, শলোমন রাজার সামনে থেকে সেখানে পালিয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু যারবিয়াম মিসর থেকে ফিরে আসলেন।
\s5
\v 3 লোকেরা দূত পাঠিয়ে তাঁকে ডেকে আনল; আর যারবিয়াম ও ইস্রায়লীয়েরা সবাই রহবিয়ামের কাছে গিয়ে বললেন,
\v 4 “আপনার বাবা আমাদের উপর কঠিন জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছেন; তাই আপনার বাবা আমাদের উপরে যে কঠিন দাসত্ব ও ভারী জোয়াল চাপিয়েছেন, আপনি তা হালকা করুন, তাহলে আমরা আপনার সেবা করব।”
\v 5 তিনি তাদের বললেন, “তিন দিন পর আবার আমার কাছে এসো;” তাতে লোকেরা চলে গেল।
\s5
\v 6 পরে রহবিয়াম রাজা, তাঁর বাবা শলোমনের জীবনকালে যে সব বৃদ্ধ নেতারা তাঁর সামনে থাকতেন, তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করে বললেন, “আমি এই লোকদের কি উত্তর দেব? তোমরা কি পরামর্শ দাও?”
\v 7 তাঁরা তাঁকে বললেন, “যদি আপনি এই সব লোকদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করে তাদের সন্তুষ্ট করেন এবং তাদের ভালো কথা বলেন, তবে তারা সব সময় আপনার সেবা করবে।”
\s5
\v 8 কিন্তু তিনি ঐ বৃদ্ধ নেতাদের উপদেশ অগ্রাহ্য করে সমবয়সী যুবকেরা যারা তাঁর সামনে দাঁড়াতো, তাদের সঙ্গে পরামর্শ করলেন।
\v 9 তিনি তাদের বললেন, “ঐ লোকেরা বলছে, ‘আপনার বাবা যে ভারী জোয়াল আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন তা হালকা করুন; এখন আমরা তাদের কি উত্তর দেব? তোমরা কি পরামর্শ দাও?”
\s5
\v 10 তাঁর সমবয়সী যুবকেরা বলল, “যে লোকেরা আপনাকে বলছে, ‘আপনার বাবা যে ভারী জোয়াল আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন তা হালকা করুন, তাদের এই কথা বলুন, ‘আমার কড়ে আঙুলটা আমার বাবার কোমরের চেয়েও মোটা;
\v 11 এখন আমার বাবা তোমাদের উপর যে ভারী জোয়াল চাপিয়ে দিয়েছিলেন, কিন্তু আমি তোমাদের জোয়াল আরও ভারী করব; আমার বাবা তোমাদের চাবুক মেরে শাস্তি দিতেন, কিন্তু আমি কাঁকড়া-বিছা দিয়ে দেব।”
\s5
\v 12 পরে “তিন দিন পর আবার আমার কাছে এসো,” রাজার এই কথা অনুসারে যারবিয়াম ও সমস্ত লোকেরা তিন দিন পর রহবিয়ামের কাছে এল।
\v 13 আর রাজা তাদের খুব কড়া উত্তর দিলেন; ফলে রহবিরাম রাজা বৃদ্ধ নেতাদের উপদেশ ত্যাগ করলেন
\v 14 এবং সেই যুবকদের পরামর্শ মত তাদের তিনি বললেন, “আমার বাবা তোমাদের জোয়াল ভারী করেছিলেন, কিন্তু আমি তা আরও ভারী করব; আমার বাবা তোমাদের চাবুক দিয়ে শাস্তি দিতেন, কিন্তু আমি তোমাদের কাঁকড়া-বিছা দিয়ে দেব।”
\s5
\v 15 এইভাবে রাজা লোকদের কথায় কান দিলেন না, কারণ শীলোনীয় অহিয়ের মাধ্যমে সদাপ্রভু নবাটের ছেলে যারবিয়ামকে যে কথা বলেছিলেন, তা পূর্ণ করবার জন্য ঈশ্বর থেকেই এই ঘটনা ঘটল।
\s5
\v 16 যখন সমস্ত ইস্রায়েল দেখল, রাজা তাদের কথা শুনলেন না, তখন লোকেরা রাজাকে উত্তরে বলল, “দায়ূদের সঙ্গে আমাদের কি সম্পর্ক? যিশয়ের ছেলের উপর আমাদের কোনো অধিকার নেই; হে ইস্রায়েল, সবাই নিজেদের তাঁবুতে যাও; দায়ূদ! এখন তোমার নিজের বংশ তুমি নিজেই দেখ।” তারপরে সমস্ত ইস্রায়েল নিজেদের তাঁবুতে চলে গেল।
\v 17 তবে যে সব ইস্রায়েলীয়রা যিহূদার নগরগুলিতে বাস করত, রহবিয়াম তাদের উপরে রাজত্ব করলেন।
\v 18 পরে রহবিয়াম রাজা তাঁর কাজে নিযুক্ত দাসেদের শাসনকর্তা হদোরামকে পাঠালেন; কিন্তু ইস্রায়েলীয় সন্তানরা তাকে পাথর মারলো, তাতে সে মারা গেল। আর রাজা রহবিয়াম তাড়াতাড়ি তাঁর রথে উঠে যিরূশালেমে পালিয়ে গেলেন।
\v 19 এইভাবে ইস্রায়েলীয়েরা দায়ূদের বংশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল; আজ পর্যন্ত সেইভাবেই রয়েছে।
\s5
\c 11
\p
\v 1 যিরূশালেমে পৌঁছে রহবিয়াম যিহূদা ও বিন্যামীন বংশ অর্থাৎ এক লক্ষ আশি হাজার মনোনীত সৈন্যকে ইস্রায়েলীয়দের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য, রাজ্যটি রহবিয়ামের বশবর্তী করার জন্য জড়ো করলেন।
\s5
\v 2 কিন্তু ঈশ্বরের লোক শময়িয়ের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য পৌঁছালো,
\v 3 “তুমি শলোমনের ছেলে যিহূদার রাজা রহবিয়ামকে এবং যিহূদা ও বিন্যামীনে বসবাসকারী সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের বল,
\v 4 সদাপ্রভু বলেন, ‘তোমরা তোমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যেও না; প্রত্যেক জন নিজেদের গৃহে ফিরে যাও, কারণ এই ঘটনা আমার থেকে হল।’ ” তাই তারা সদাপ্রভুর কথা মেনে নিয়ে যারবিয়ামের বিরুদ্ধে না গিয়ে ফিরে গেল।
\s5
\v 5 পরে রহবিয়াম যিরূশালেমে বাস করে দেশ রক্ষা করবার জন্য যিহূদা দেশের নগরগুলি গাঁথলেন।
\v 6 তার ফলে বৈৎলেহম, ঐটম, তকোয়,
\v 7 বৈৎ-সুর, সেখো, অদুল্লম,
\v 8 গাৎ, মারেশা, সীফ,
\v 9 অদোরয়িম, লাখীশ, অসেকা,
\v 10 সরা, অয়ালোন ও হিব্রোণ, এই যে সব প্রাচীরে ঘেরা নগর যিহূদা ও বিন্যামীন দেশে আছে, তিনি সেগুলি গাঁথলেন।
\s5
\v 11 আর তিনি দুর্গগুলি শক্তিশালী করে সেখানে সেনাপতিদের রাখলেন এবং খাবার-দাবার, তেল ও আঙ্গুর রসের ভাণ্ডার করলেন।
\v 12 আর সমস্ত নগরে ঢাল ও বর্শা রাখলেন ও নগরগুলি খুব শক্তিশালী করলেন। আর যিহূদা ও বিন্যামীন তাঁর অধীনে ছিল।
\s5
\v 13 আর সমস্ত ইস্রায়েলের মধ্যে যে যাজক ও লেবীয়েরা ছিল, তারা নিজের নিজের সব এলাকা থেকে তাঁর কাছে এল।
\v 14 ফলে লেবীয়েরা তাদের পশু চরাবার মাঠ ও সম্পত্তি ত্যাগ করে যিহূদায় ও যিরূশালেমে এল, কারণ যারবিয়াম আর তাঁর ছেলেরা সদাপ্রভুর যাজকের কাজ করতে না দিয়ে তাদের অমান্য করেছিলেন।
\v 15 আর তিনি উঁচু জায়গা গুলির, ছাগদের ও তাঁর তৈরী বাছুর দুটির জন্য নিজে যাজকদের নিযুক্ত করেছিলেন।
\s5
\v 16 ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে যারা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর খোঁজে আগ্রহী ছিল, তারা লেবীয়দের সঙ্গে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করতে যিরূশালেমে আসল।
\v 17 তারা তিন বছর পর্যন্ত যিহূদার রাজ্য শক্তিশালী করল ও শলোমনের ছেলে রহবিয়ামকে বলবান করল; কারণ তিন বছর পর্যন্ত তারা দায়ূদ ও শলোমনের পথে চলল।
\s5
\v 18 আর রহবিয়াম দায়ূদের ছেলে যিরীমোতের মেয়ে মহলৎকে বিয়ে করলেন; তাঁর মা অবীহয়িল যিশয়ের ছেলে, ইলীয়াবের মেয়ে।
\v 19 সেই স্ত্রী তাঁর জন্য যিয়ূশ, শমরিয় ও সহম নামে তিনটি ছেলের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 20 তারপর তিনি অবশালোমের মেয়ে মাখাকে বিয়ে করলেন; এই স্ত্রী তাঁর জন্য অবিয়, অত্তয়, সীষ ও শলোমীতের জন্ম দিলেন।
\v 21 রহবিয়াম তাঁর সব স্ত্রী ও উপপত্নীদের মধ্যে অবশালোমের মেয়ে মাখাকে বেশী ভালবাসতেন; তাঁর মোট আঠারো জন স্ত্রী ও ষাটজন উপপত্নী ছিল এবং আটাশ জন ছেলে ও ষাটজন মেয়ের জন্ম দিলেন।
\s5
\v 22 পরে রহবিয়াম মাখার ছেলে অবিয়কে প্রধান, ভাইদের মধ্যে নায়ক করলেন, কারণ তাঁকেই রাজা করার তাঁর ইচ্ছা ছিল।
\v 23 আর তিনি সতর্ক হয়ে চললেন, সম্পূর্ণ যিহূদা ও বিন্যামীন দেশের প্রাচীরে ঘেরা প্রত্যেকটি নগরে তাঁর ছেলেদেরকে নিযুক্ত করলেন এবং তাদেকে প্রচুর খাবার-দাবার দিলেন এবং তাঁদের জন্য অনেক স্ত্রীর ব্যবস্থা করলেন।
\s5
\c 12
\s রহবিয়ামের অপরাধের জন্য শাস্তি।
\p
\v 1 পরে যখন রহবিয়ামের রাজ্য শক্তিশালী হল এবং তিনি শক্তিমান হয়ে উঠলেন, তখন তিনি ও তাঁর সঙ্গে সমস্ত ইস্রায়েল সদাপ্রভুর ব্যবস্থা ত্যাগ করলেন।
\s5
\v 2 আর রহবিরাম রাজার পঞ্চম বছরে মিসরের রাজা শীশক যিরূশালেম আক্রমণ করলেন, কারণ লোকেরা সদাপ্রভুকে অমান্য করেছিল।
\v 3 সেই রাজার সঙ্গে বারোশো রথ ও ষাট হাজার ঘোড়াচালক ছিল এবং মিসর থেকে তাঁর সঙ্গে অসংখ্য লূবীয়, সুক্কীয় ও কূশীয় সৈন্য এসেছিল।
\v 4 আর তিনি যিহূদার প্রাচীরে ঘেরা নগরগুলি অধিকার করে নিয়ে যিরূশালেম পর্যন্ত আসলেন।
\s5
\v 5 তখন শময়িয় ভাববাদী রহবিয়ামের কাছে এবং যিহূদার যে শাসনকর্তারা শীশকের ভয়ে যিরূশালেমে এসে জড়ো হয়েছিলেন, তাঁদের কাছে এসে বললেন, “সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তোমরা আমাকে ত্যাগ করেছ, সেইজন্য আমিও তোমাদেরকে শীশকের হাতে ছেড়ে দিলাম।’”
\v 6 তাতে ইস্রায়েলের শাসনকর্তা ও রাজা নিজেদের নত করে বললেন, “সদাপ্রভু ন্যায় পরায়ণ।”
\s5
\v 7 যখন সদাপ্রভু দেখলেন যে, তারা নিজেদের নত করেছে, তখন শময়িয়ের কাছে সদাপ্রভুর এই বাক্য আসলো, “তারা নিজেদের নত করেছে, আমি তাদের ধ্বংস করব না; কিছু সময়ের মধ্যেই তাদের উদ্ধার করব। শীশকের মধ্য দিয়ে যিরূশালেমের উপর আমার ক্রোধ ঢেলে দেব না।
\v 8 কিন্তু তারা তার দাস হবে, এতে তারা আমার দাস হওয়া কি এবং অন্য দেশীয় রাজ্যের দাস হওয়া কি, এটা তারা বুঝতে পারবে।”
\s5
\v 9 মিসরের রাজা শীশক যিরূশালেম আক্রমণ করে সদাপ্রভুর গৃহের ও রাজবাড়ীর সমস্ত ধন সম্পদ নিয়ে গেলেন; তিনি সব কিছুই নিয়ে গেলেন; শলোমনের তৈরী সোনার ঢালগুলিও নিয়ে গেলেন।
\v 10 পরে রাজা রহবিয়াম সেগুলির বদলে পিতলের ঢাল তৈরী করে রাজবাড়ীর দারোয়ানের শাসনকর্তাদের হাতে সেগুলির ভার দিলেন।
\s5
\v 11 রাজা যখন সদাপ্রভুর গৃহে যেতেন, তখন ঐ দারোয়ানরা সেই ঢালগুলি ধরত, পরে দারোয়ানদের ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেত।
\v 12 রহবিয়াম নিজেকে নত করার ফলে সদাপ্রভুর ক্রোধ তার থেমে গেল, তাঁর সর্বনাশ হল না। আর যিহূদার মধ্যেও কিছু কিছু ভাল লোক ছিল।
\s5
\v 13 রাজা রহবিয়াম যিরূশালেমে নিজেকে বলবান করে রাজত্ব করলেন; তার ফলে রহবিয়াম একচল্লিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করলেন এবং সদাপ্রভু নিজের নাম স্থাপনের জন্য ইস্রায়েলের সমস্ত বংশের মধ্যে থেকে যে নগর মনোনীত করেছিলেন, সেই যিরূশালেমে তিনি সতেরো বছর রাজত্ব করেছিলেন। রহবিয়ামের মায়ের নাম নয়মা, তিনি অম্মোনীয়া।
\v 14 রহবিয়াম সদাপ্রভুর ইচ্ছামত চলবার জন্য মন স্থির করেন নি বলে যা খারাপ তাই করতেন।
\v 15 রহবিয়ামের কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত শময়িয় ভাববাদীর ও ইদ্দো দর্শকের বংশবলির বইয়ে কি লেখা নেই? রহবিয়ামের ও যারবিয়ামের মধ্যে সব সময় যুদ্ধ হত।
\v 16 পরে রহবিয়াম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং দায়ূদ নগরে তাঁকে কবর দেওয়া হল, আর তাঁর ছেলে অবিয় তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 13
\s অবিয় রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 যারবিয়াম রাজার আঠারো বছরে অবিয় যিহূদার উপরে রাজত্ব করতে শুরু করলেন।
\v 2 তিনি তিন বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করলেন; তাঁর মায়ের নাম ছিল মীখায়া, তিনি গিবিয়ার অধিবাসী ঊরীয়েলের মেয়ে। অবিয় আর যারবিয়ামের মধ্যে যুদ্ধ হত।
\v 3 অবিয় চার লক্ষ মনোনীত বীর যোদ্ধার সঙ্গে যুদ্ধ করতে গেলেন এবং যারবিয়াম আট লক্ষ মনোনীত বলবান বীরের সঙ্গে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য সৈন্য সাজালেন।
\s5
\v 4 আর অবিয় পর্বতময় ইফ্রয়িম এলাকার সমারয়িম পর্বতের উপরে দাঁড়িয়ে বললেন, “হে যারবিয়াম, তুমি ও সমস্ত ইস্রায়েলের লোকেরা, আমার কথা শোন।
\v 5 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু ইস্রায়েলের রাজপদ চিরকালের জন্য দায়ূদকে দিয়েছেন; তাঁকে ও তাঁর সন্তানদেরকে লবণ নিয়মের মাধ্যমে দিয়েছেন, এটা জানার কি তোমাদের প্রয়োজন নেই?
\s5
\v 6 তবুও দায়ূদের ছেলে শলোমনের দাস যে নবাটের ছেলে যারবিয়াম, সেই লোক তাঁর মনিবের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করল।
\v 7 আর নিষ্ঠুর বিবেকবিহীন লোকেরা তার সঙ্গে জড়ো হয়ে শলোমনের ছেলে রহবিয়ামের বিরুদ্ধে নিজেদের শক্তিশালী করল। সেই সময় রহবিয়াম যুবক ও নরম হৃদয়ের ছিলেন, তাদের সামনে নিজেকে বলবান করতে পারলেন না।
\s5
\v 8 আর এখন তোমরাও দায়ূদের সন্তানদের হাতে সদাপ্রভুর যে রাজ্য, তার বিরুদ্ধে নিজেদেরকে বলবান করতে চাইছেন; তোমরা বিশাল জনতা এবং সেই দুটি সোনার বাছুর তোমাদের সঙ্গে আছে, যা যারবিয়াম তোমাদের জন্য দেবতা হিসাবে তৈরী করেছেন।
\v 9 তোমরা কি সদাপ্রভুর যাজকদেরকে, হারোণের সন্তানদেরকে ও লেবীয়দেরকে তাড়িয়ে দাও নি? আর অন্য দেশের জাতিদের মত নিজেদের জন্য যাজকদের নিযুক্ত করনি? একটি বাছুর ও সাতটা ভেড়া সঙ্গে নিয়ে যে কেউ নিজেকে পবিত্র করবার জন্য উপস্থিত হয়, সে ওদের যাজক হতে পারে, যারা ঈশ্বর নয়।
\s5
\v 10 কিন্তু আমরা সেই রকম নই, সদাপ্রভুই আমাদের ঈশ্বর; আমরা তাঁকে ত্যাগ করি নি এবং যাজকরা, হারোণের বংশধরেরা সদাপ্রভুর সেবা করছে এবং আর লেবীয়েরাও তাদের কাজে নিযুক্ত আছে।
\v 11 আর তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে প্রতিদিন সকালে ও সন্ধ্যায় হোমবলি পোড়ায় ও সুগন্ধি ধূপ জ্বালায়, আর শুচি টেবিলের উপরে দর্শন রুটি সাজিয়ে রাখে এবং প্রতিদিন সন্ধ্যাবেলায় জ্বালাবার জন্য বাতিগুলির সঙ্গে সোনার বাতিদান তৈরী করে; বাস্তবিক আমরা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর আদেশ রক্ষা করি; কিন্তু তোমরা তাঁকে ত্যাগ করেছ।
\s5
\v 12 আর দেখ, ঈশ্বর আমাদের সঙ্গে আছেন, তিনি আমাদের সামনে যাচ্ছেন এবং তাঁর যাজকেরা তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দেবার জন্য তূরী নিয়ে আমাদের সঙ্গে আছেন। হে ইস্রায়েলের সন্তানরা, তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ কোরো না, করলে সফল হবে না।”
\s5
\v 13 পরে যারবিয়াম পিছনের দিকে তাদের আক্রমনের জন্য গোপনে একদল সৈন্য পাঠিয়ে দিলেন; তাতে তাঁর লোকেরা যিহূদার সামনে ও সেই লুকানো দল পিছনে ছিল।
\v 14 পরে যিহূদার লোকেরা মুখ ফিরিয়ে দেখতে পেল যে, তাদের সামনে ও পিছনে দুদিকে সৈন্য; তখন তারা সদাপ্রভুর কাছে কান্নাকাটি করল এবং যাজকরা তূরী বাজাল।
\v 15 পরে যিহূদার লোকেরা যুদ্ধের ডাক দিল; তাতে যিহূদার লোকেদের যুদ্ধের ডাক দেবার সময়ে ঈশ্বর অবিয়ের ও যিহূদার সামনে থেকে যারবিয়াম ও সমস্ত ইস্রায়েলকে আঘাত করলেন।
\s5
\v 16 তখন ইস্রায়েলেরয় লোকেরা যিহূদার সামনে থেকে পালাল এবং ঈশ্বর তাদেরকে যিহূদার হাতে সমর্পণ করলেন।
\v 17 আর অবিয় ও তাঁর সৈন্যরা অনেক লোককে মেরে ফেলল; ফলে ইস্রায়েলের পাঁচ লক্ষ মনোনীত লোক মারা পড়ল।
\v 18 এইভাবে সেই সময়ে ইস্রায়েল সন্তানরা নত হল ও যিহূদা সন্তানরা বলবান হল, কারণ তারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করল।
\v 19 পরে অবিয় যারবিয়ামের পিছনে তাড়া করতে গিয়ে তাঁর হাত থেকে বৈথেল ও তার উপনগরগুলি, যিশানা ও তার উপনগরগুলি এবং ইফ্রোণ ও তার উপনগরগুলি দখল করে নিলেন।
\v 20 অবিয়ের সময়ে যারবিয়াম আর বলবান হতে পারেন নি; পরে সদাপ্রভু তাঁকে আঘাত করলে তিনি মারা গেলেন।
\v 21 কিন্তু অবিয় বলবান হয়ে উঠলেন, আর তাঁর চৌদ্দজন স্ত্রী ছিল এবং তিনি বাইশজন ছেলে ও ষোলজন মেয়ে জন্ম দিলেন।
\v 22 অবিয়ের অবশিষ্ট কাজের কথা, তার আচার ব্যবহার এবং তাঁর কথা বলেছিলেন ইদ্দো ভাববাদীর ব্যাখামূলক বইয়ে লেখা আছে।
\s5
\c 14
\s আসা রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 পরে অবিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং তাঁকে দায়ূদ নগরে কবর দেওয়া হল। আর তাঁর ছেলে আসা তাঁর জায়গায় রাজা হলেন; তাঁর সময়ে দশ বছর দেশে শান্তি ছিল।
\v 2 আসা তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল ও সঠিক, তাই করতেন;
\v 3 তিনি পরজাতিদের যজ্ঞবেদি ও উঁচু জায়গা গুলি ধ্বংস করলেন, থামগুলি ভেঙ্গে চুরমার করলেন ও আশেরা-মূর্তিগুলি কেটে ফেললেন;
\v 4 আর তিনি যিহূদার লোকেদেরকে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছামত চলতে এবং তাঁর ব্যবস্থা ও আদেশ পালন করতে বললেন।
\s5
\v 5 আর তিনি যিহূদার সব নগরের মধ্যে থেকে উঁচু জায়গা গুলি ও সূর্য্য প্রতিমাগুলি ধ্বংস করলেন; আর তাঁর অধীনে রাজ্যে শান্তি ছিল।
\v 6 আর তিনি যিহূদা দেশে প্রাচীরে ঘেরা কয়েকটি নগর গাঁথলেন, কারণ দেশে শান্তি ছিল এবং কয়েক বছর পর্যন্ত কেউ তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করল না, কারণ ঈশ্বর তাঁকে বিশ্রাম দিয়েছিলেন।
\s5
\v 7 অতএব তিনি যিহূদাকে বললেন, “এস, আমরা এই নগরগুলি গাঁথি এবং তার চারপাশে প্রাচীর, দুর্গ, দরজা ও অর্গল তৈরী করি; দেশ তো এখনও আমাদের হাতে আছে, কারণ আমরা আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছামত চলেছি, আমরা তাঁর ইচ্ছামত চলেছি, আর তিনি সব দিক থেকেই আমাদের বিশ্রাম দিয়েছেন।” এইভাবে তারা নগরগুলি গাঁথার কাজ ভালো ভাবে শেষ করল।
\v 8 আসার ঢাল ও বর্শাধারী অনেক সৈন্য ছিল, যিহূদার তিন লক্ষ ও বিন্যামীনের ঢাল ও ধনুকধারী দুই লক্ষ আশি হাজার; এরা সবাই বলবান বীর ছিল।
\s5
\v 9 পরে কূশ দেশের সেরহ দশ লক্ষ সৈন্য ও তিনশো রথ সঙ্গে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে বের হয়ে মারেশা পর্যন্ত এলেন।
\v 10 তাতে আসা তাঁর বিরুদ্ধে বের হলেন। তারা মারেশার কাছে সফাথা উপত্যকায় সৈন্য সাজালেন।
\v 11 তখন আসা তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ডেকে বললেন, “হে সদাপ্রভু, তুমি ছাড়া এমন আর কেউ নেই, যে বলবানের ও বলহীনের মধ্যে সাহায্য করে; হে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, আমাদের সাহায্য কর; কারণ আমরা তোমার উপরেই নির্ভর করি এবং তোমারই নামে এই বিশাল সৈন্যদলের বিরুদ্ধে এসেছি। হে সদাপ্রভু, তুমি আমাদের ঈশ্বর, তোমার বিরুদ্ধে মানুষকে জয়লাভ করতে দিয়ো না।”
\s5
\v 12 তখন সদাপ্রভু আসার ও যিহূদার সামনে কূশীয়দেরকে আঘাত করলেন, আর কূশীয়েরা পালিয়ে গেল।
\v 13 আর আসা ও তাঁর সঙ্গীরা গরার পর্যন্ত তাদের তাড়া করে নিয়ে গেলেন, তাতে এত কূশীয় মারা পড়ল যে, তারা আর শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারল না; কারণ সদাপ্রভুর ও তাঁর সৈন্যদলের সামনে তারা শেষ হয়ে গেল এবং লোকেরা প্রচুর লুটের জিনিস নিয়ে আসল।
\v 14 আর তারা গরারের চারপাশের সমস্ত নগরকে আঘাত করল, কারণ সদাপ্রভুকে তারা ভীষণ ভয় করেছিল; আরও তারা এই সব নগর লুট করল, কারণ সেখানে লুট করবার মত অনেক জিনিস ছিল।
\v 15 আর তারা পশুপালকদের তাঁবুগুলিও আঘাত করল এবং প্রচুর পরিমাণে ভেড়া, ছাগল ও উট নিয়ে যিরূশালেমে ফিরে এল।
\s5
\c 15
\p
\v 1 পরে ঈশ্বরের আত্মা ওদেদের ছেলে অসরিয়ের উপরে আসলেন,
\v 2 তখন তিনি আসার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাকে বললেন, “হে আসা এবং যিহূদা ও বিন্যামীনের লোক সকল, তোমরা আমার কথা শোনো; তোমরা যতদিন সদাপ্রভুর সঙ্গে থাকবে ততদিন তিনিও তোমাদের সঙ্গে আছেন; আর যদি তোমরা তাঁর খোঁজ কর, তবে তিনি তোমাদেরকে তাঁর উদ্দেশ্য জানাবেন; কিন্তু তাঁকে যদি ত্যাগ কর, তবে তিনি তোমাদেরকে ত্যাগ করবেন।
\s5
\v 3 ইস্রায়েলীয়েরা অনেক দিন ধরে সত্য ঈশ্বর ছাড়া, শিক্ষা দেবার জন্য যাজক ছাড়া এবং ব্যবস্থা ছাড়াই চলছিল;
\v 4 কিন্তু সংকটের সময়ে তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে ফিরে তাঁর খোঁজ করল, তখন তিনি তাদেরকে তাঁর উদ্দেশ্য জানালেন।
\v 5 সেই সময়ে কোথাও যাওয়া-আসা করা নিরাপদ ছিল না, কারণ সমস্ত জায়গার লোকেরা তখন খুব অসুবিধার মধ্যে ছিল।
\s5
\v 6 তারা চূর্ণ-বিচূর্ণ হত, এক জাতি অন্য জাতিকে ও এক নগর অন্য নগরকে আঘাত করত, কারণ সব রকমের সংকট দিয়ে ঈশ্বর তাদের কষ্ট দিচ্ছিলেন।
\v 7 কিন্তু তোমরা বলবান হও, তোমাদের হাত দুর্বল না হোক, কারণ তোমাদের কাজের জন্য পুরস্কার পাবে।”
\s5
\v 8 যখন আসা এই সব কথা, অর্থাৎ ওদেদের ছেলে ভাববাদী অসরিয়ের ভাববাণী শুনে সাহস পেয়ে যিহূদার ও বিন্যামীনের সমস্ত দেশ থেকে এবং তিনি পর্বতে ঘেরা ইফ্রয়িম দেশে যে সব নগর দখল করেছিলেন, সেখান থেকে জঘন্য জিনিসগুলি ধ্বংস করলেন এবং সদাপ্রভুর বারান্দার সামনের সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদি মেরামত করলেন।
\v 9 পরে তিনি সমস্ত যিহূদা ও বিন্যামীনকে এবং তাদের মধ্যে বসবাসকারী ইফ্রয়িম, মনঃশি ও শিমিয়োন থেকে আসা লোকেদেরকে জড়ো করলেন; কারণ তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁর সঙ্গে আছেন দেখে, ইস্রায়েলের অনেক লোক তাঁর পক্ষে এসেছিল।
\s5
\v 10 আসার রাজত্বের পনেরো বছরের তৃতীয় মাসে লোকেরা যিরূশালেমে জড়ো হয়েছিল।
\v 11 আর সেই দিনে তারা লুট করে আনা দ্রব্য থেকে সাতশো গরু ও সাত হাজার ভেড়া সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করল।
\s5
\v 12 আর তারা এই প্রতিজ্ঞা করল যে, তারা সমস্ত মন-প্রাণ দিয়ে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর খোঁজ করবে;
\v 13 ছোট-বড়, স্ত্রী-পুরুষ, যে কেউ ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর খোঁজ না করবে তাদের মেরে ফেলা হবে।
\s5
\v 14 তারা চিৎকার করে জয়ধ্বনির সঙ্গে তূরী ও শিংগা বাজিয়ে সদাপ্রভুর কাছে শপথ করল।
\v 15 এই শপথে সমস্ত যিহূদা আনন্দ করল, কারণ তারা তাদের সমস্ত হৃদয় দিয়ে শপথ করেছিল এবং সমস্ত ইচ্ছার সঙ্গে সদাপ্রভুর খোঁজ করায় তিনি তাদেরকে তাঁর উদ্দেশ্য জানালেন; আর তিনি চারিদিকে তাদের বিশ্রাম দিলেন।
\s5
\v 16 আর রাজা আসার মা মাখা একটা জঘন্য আশেরার প্রতিমা তৈরী করেছিলেন বলে আসা তাঁকে রাজমাতার পদ থেকে সরিয়ে দিলেন এবং আসা তাঁর সেই জঘন্য প্রতিমা ভেঙ্গে ফেললেন ও কিদ্রোণ স্রোতের ধারে সেটা পুড়িয়ে দিলেন।
\v 17 কিন্তু ইস্রায়েলের মধ্যে সব উঁচু জায়গা গুলি ধ্বংস হয়নি; তবুও সাসার হৃদয় সারাজীবন একরকম ছিল।
\v 18 আর তিনি তাঁর বাবার পবিত্র করা ও তাঁর পবিত্র করা রুপো, সোনা ও পাত্রগুলি ঈশ্বরের গৃহে নিয়ে এলেন।
\v 19 আসার রাজত্বের পঁয়ত্রিশ বছর পর্যন্ত আর কোনো যুদ্ধ হয় নি।
\s5
\c 16
\p
\v 1 আসার রাজত্বের ছত্রিশ বছরে ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদার বিরুদ্ধে গেলেন এবং তিনি যিহূদার রাজা আসার কাছে কাউকে যাওয়া-আসা করতে না দেবার জন্য রামা গাঁথলেন।
\s5
\v 2 তখন আসা সদাপ্রভুর গৃহের ও রাজবাড়ীর ভাণ্ডার থেকে সোনা ও রুপো বের করে নিয়ে দম্মেশকের অধিবাসী অরামের রাজা বিন্‌হদদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, তাঁকে বলে পাঠালেন,
\v 3 “আমার ও আপনার মধ্যে চুক্তি করা আছে, যেমন আমার বাবা ও আপনার বাবার মধ্যে ছিল; দেখুন, আমি আপনাকে সোনা ও রুপো উপহার পাঠালাম। আপনি গিয়ে ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে আপনার যে চুক্তি আছে, তা ভেঙ্গে ফেলুন; তাতে সে আমার কাছ থেকে চলে যাবে।”
\s5
\v 4 তখন বিন্‌হদদ রাজা আসার কথায় রাজী হয়ে ইস্রায়েলের নগরগুলির বিরুদ্ধে তাঁর সেনাপতিদের পাঠালেন এবং তারা ইয়োন, দান, আবেল-ময়িম ও নপ্তালির সমস্ত ভাণ্ডার-নগরগুলিকে আঘাত করল।
\v 5 তখন বাশা এই খবর পেয়ে রামা তৈরীর কাজ বন্ধ করে দিলেন, তাঁর কাজ থেমে গেল।
\v 6 পরে রাজা আসা সমস্ত যিহূদাকে সঙ্গে নিয়ে এসে রামায় বাশা যে সব পাথর ও কাঠ দিয়ে গেঁথেছিলেন, তারা সেই সব নিয়ে গেল। পরে আসা সেগুলি দিয়ে গেবা ও মিসপা নগর গাঁথলেন।
\s5
\v 7 সেই সময় দর্শক হনানি যিহূদার রাজা আসার কাছে এসে বললেন, “আপনি আপনার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর নির্ভর না করে অরামের রাজার উপর নির্ভর করলেন, তাই অরাম রাজার সৈন্যদল আপনার হাতছাড়া হয়ে গেল।
\v 8 কূশীয় ও লূবীয়দের কি অনেক সৈন্য এবং রথ ও ঘোড়াচালক ছিল না? কিন্তু আপনি সদাপ্রভুর উপর নির্ভর করেছিলেন বলে তিনি আপনার হাতে তাদের তুলে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 9 কারণ সদাপ্রভুর প্রতি যাদের হৃদয় এক থাকে, তাদের জন্য নিজেকে বলবান দেখাবার জন্য তাঁর চোখ পৃথিবীর সব জায়গায় থাকে। এ বিষয়ে আপনি বোকামির কাজ করেছেন, কারণ এর পরে পুনরায় আপনি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়বেন।”
\v 10 তখন আসা ঐ দর্শকের উপর অসন্তুষ্ট হয়ে তাঁকে জেলখানায় পাঠিয়ে দিলেন; কারণ ঐ কথার জন্য তিনি তাঁর উপরে ভীষণ রেগে গিয়েছিলেন। আর একই সময়ে আসা প্রজাদের মধ্যে কতগুলি লোকের উপর অত্যাচার করলেন।
\s5
\v 11 আর দেখ, আসার সমস্ত কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত “যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
\v 12 আসার রাজত্বের ঊনচল্লিশ বছরে তাঁর পায়ে রোগ হল; তাঁর এই রোগ ভীষণ হলেও তিনি সদাপ্রভুর সাহায্য না চেয়ে কেবল ডাক্তারদের খোঁজ করলেন।
\s5
\v 13 পরে আসা তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন, তাঁর রাজত্বের একচল্লিশ বছরে তিনি মারা গেলেন।
\v 14 আর তিনি দায়ূদ-নগরে নিজের জন্য যে কবর খুঁড়ে রেখেছিলেন, তার মধ্যে লোকেরা তাঁকে কবর দিল এবং নানা রকম মশলা ও মেশানো সুগন্ধি জিনিষে পরিপূর্ণ খাটে তাঁকে শোয়ালো, আর তাঁর জন্য বিরাট দাহ কাজ হল।
\s5
\c 17
\s যিহোশাফট রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 পরে তাঁর ছেলে যিহোশাফট তাঁর জায়গায় রাজা হলেন এবং ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে নিজেকে শক্তিশালী করে তুললেন।
\v 2 তিনি যিহূদার সমস্ত প্রাচীরে ঘেরা নগরগুলিতে সৈন্যদল রাখলেন এবং যিহূদা দেশ ও তাঁর বাবা আসার দখল করা ইফ্রয়িম এলাকার নগরগুলিতেও সৈন্য রাখলেন।
\s5
\v 3 আর সদাপ্রভু যিহোশাফটের সঙ্গে ছিলেন, কারণ তিনি তার পূর্বপুরুষ দায়ূদ প্রথমে যেভাবে চলতেন, বাল দেবতাদের খোঁজ করেন নি; তিনিও সেইভাবে চলতেন।
\v 4 কিন্তু তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের উপাসনা করতেন ও তাঁর আদেশ মত চলতেন, ইস্রায়েলের মত কাজ করতেন না।
\s5
\v 5 সেইজন্য সদাপ্রভু তাঁর অধীনে রাজ্য মজবুত করলেন; আর সমস্ত যিহূদা যিহোশাফদের কাছে উপহার আনলো এবং তাঁর ধন সম্পদ ও সম্মান অনেক বেড়ে গেল।
\v 6 আর সদাপ্রভুর পথে তাঁর হৃদয় উন্নত হল; আবার তিনি যিহূদার মধ্যে থেকে উঁচু জায়গা গুলি ও আশেরা-মূর্তিগুলি ধ্বংস করলেন।
\s5
\v 7 পরে তিনি তাঁর রাজত্বের তৃতীয় বছরে যিহূদার সমস্ত নগরে শিক্ষা দেবার জন্য তাঁর কয়েকজন প্রধান কর্মচারী অর্থাৎ বিন্‌-হয়িল, ওবদিয়, সখরিয়, নথনেল ও মীখায়কে পাঠালেন।
\v 8 আর তাঁদের সঙ্গে কয়েকজন লেবীয়কে অর্থাৎ শময়িয়, নথনিয়, সবদিয়, অসাহেল, শমীরামোৎ, যিহোনাথন, অদোনিয়, টোবিয় ও টোব্‌-অদোনীয় নামে এইসব লেবীয়কে এবং তাদের সঙ্গে ইলীশামা ও যিহোরাম নামে দুজন যাজককে পাঠালেন।
\v 9 তাঁরা সদাপ্রভুর ব্যবস্থার বই সঙ্গে নিয়ে যিহূদা দেশে শিক্ষা দিতে লাগলেন। তারা যিহূদার সব নগরে গিয়ে লোক দেরকে শিক্ষা দিলেন।
\s5
\v 10 আর যিহূদা চারদিকের দেশের সব রাজ্যের উপর সদাপ্রভুর কাছ থেকে এমন ভয় নেমে আসল যে, তারা যিহোশাফটের সঙ্গে যুদ্ধ করল না।
\v 11 আর পলেষ্টীয়দের কেউ কেউ যিহোশাফটের কাছে কর হিসাবে উপহার ও রুপো নিয়ে এল এবং আরবীয়েরা তাঁর কাছে পশুপাল, সাত হাজার সাতশো ভেড়া আর সাত হাজার সাতশো ছাগল নিয়ে এল।
\s5
\v 12 এইভাবে যিহোশাফট খুব মহান হয়ে উঠলেন এবং যিহূদা দেশে অনেক দুর্গ ও ভাণ্ডার-নগর গাঁথলেন।
\v 13 আর যিহূদার নগরগুলির মধ্যে তাঁর অনেক কাজ ছিল এবং যিরূশালেমে তাঁর দক্ষ যোদ্ধারা থাকত।
\s5
\v 14 তাদের বংশ অনুসারে তাদের সংখ্যা এই; যিহূদার সহস্রপতিদের মধ্যে অদ্‌ন সেনাপতি ছিলেন, তাঁর সঙ্গে তিন লক্ষ বলবান বীর ছিল।
\v 15 তাঁর পরে সেনাপতি যিহোহানন, তাঁর সঙ্গে দু লক্ষ আশি হাজার লোক ছিল।
\v 16 তাঁর পরে সিখির ছেলে অমসিয়; সেই ব্যক্তি নিজেকে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেছিলেন; তাঁর সঙ্গে দু লক্ষ বলবান বীর ছিল।
\v 17 আর বিন্যামীনের মধ্যে বলবান বীর ইলিয়াদা, তাঁর সঙ্গে দুই লক্ষ ধনুক ও ঢালধারী ছিল।
\v 18 তাঁর পরে যিহোষাবদ; তাঁর সঙ্গে যুদ্ধের জন্য তৈরী এক লক্ষ আশি হাজার লোক ছিল। এরা রাজার পরিচর্য্যা করতেন।
\v 19 এঁনাদের ছাড়াও রাজা যিহূদার সব জায়গায় পাঁচিলে ঘেরা নগরগুলিতে কর্মচারী রাখতেন।
\s5
\c 18
\p
\v 1 যিহোশাফট প্রচুর ধনী ও সম্মানীয় হলেন, আর তিনি আহাবের সঙ্গে কুটুম্বিতা করলেন।
\v 2 কয়েক বছর পরে তিনি শমরিয়াতে আহাবের কাছে গেলেন; আর আহাব তাঁর জন্য ও তাঁর সঙ্গী লোকদের জন্য অনেক ভেড়া ও বলদ মারলেন এবং রামোৎ-গিলিয়দে যেতে তাঁকে প্ররোচনা করলেন।
\v 3 আর ইস্রায়েলের রাজা আহাব যিহূদার রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আপনি কি রামোৎ-গিলিয়দে আমার সঙ্গে যাবেন?” তিনি উত্তরে বললেন, “আমি ও আপনি এবং আমার লোক ও আপনার লোক, সবাই এক, আমরা আপনার সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দেব।”
\s5
\v 4 পরে যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজাকে বললেন, “অনুরোধ করি, আজ সদাপ্রভুর বাক্যের খোঁজ করুন।”
\v 5 তাতে ইস্রায়েলের রাজা ভাববাদীদেরকে, চারশো জনকে, এক সাথে জড়ো করে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমরা রামোৎ-গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, না আমি থেমে যাব?” তখন তারা বলল, “যান, ঈশ্বর ওটা মহারাজের হাতেই তুলে দেবেন।”
\s5
\v 6 কিন্তু যিহোশাফট বললেন, “এদের ছাড়া সদাপ্রভুর এমন কোনো ভাববাদী কি এখানে নেই যে, আমরা তার কাছেই খোঁজ করতে পারি?”
\v 7 ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমরা যার মধ্য দিয়ে সদাপ্রভুর খোঁজ করতে পারি, এমন আর একজন লোক আছে, কিন্তু আমি তাকে ঘৃণা করি, কারণ সে আমার সম্বন্ধে কখনও মঙ্গলের নয়, সব সময় অমঙ্গলের কথাই বলে; সে ব্যক্তি যিম্লের ছেলে মীখায়।” যিহোশাফট বললেন, “মহারাজ, এমন কথা বলবেন না।”
\v 8 তখন ইস্রায়েলের রাজা একজন কর্মচারীকে ডেকে আদেশ দিয়ে বললেন, “যিম্লের ছেলে মীখায়কে তাড়াতাড়ি নিয়ে এস।”
\s5
\v 9 সেই সময় ইস্রায়েলের রাজা ও যিহূদার রাজা যিহোশাফট নিজের নিজের রাজপোশাক পরে শমরিয়া শহরের দরজার কাছে খোলা জায়গায় তাঁদের সিংহাসনের উপরে বসে ছিলেন এবং তাঁদের সামনে ভাববাদীরা সবাই ভাববাণী করছিলেন।
\v 10 আর কনানার ছেলে সিদিকিয় লোহার শিং তৈরী করে বলল, “সদাপ্রভু এইকথা বলছেন যে, ‘এটা দিয়েই আপনি অরামের ধ্বংসের সময় পর্যন্ত গুঁতাতে থাকবেন।’ ”
\v 11 আর ভাববাদীরা সবাই একই রকম ভাববাণী করে বলল, “আপনি রামোৎ-গিলিয়দ আক্রমণ করুন, তা জয় করে নিন, কারণ সদাপ্রভু সেটা মহারাজের হাতে তুলে দেবেন।”
\s5
\v 12 আর যে দূত মীখায়কে ডাকতে গিয়েছিল সে তাঁকে বলল, “দেখুন, সব ভাববাদীই একবাক্যে রাজার সফলতার কথা বলছে; তাই অনুরোধ করি, আপনার কথাও যেন তাঁদের কথার মতই হয়, আপনি মঙ্গলের কথা বলুন।”
\v 13 মীখায় বললেন, “জীবন্ত সদাপ্রভুর দিব্যি, আমার ঈশ্বর যা বলেন, আমিও তাই বলব।”
\v 14 পরে তিনি রাজার কাছে এলে রাজা তাঁকে জিজ্ঞাসা করলেন, “মীখায়, আমরা কি রামোৎ-গিলিয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে যাব, নাকি থেমে যাব?” তিনি বললেন, “আপনারা যান, জয়লাভ করুন, সেখানকার লোকদের আপনাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।”
\s5
\v 15 রাজা তাঁকে বললেন, “তুমি সদাপ্রভুর নামে সত্যি কথা ছাড়া আর কিছু বলবে না, কতবার আমি তোমাকে এই শপথ করাবো?”
\v 16 তখন তিনি উত্তরে বললেন, “আমি সমস্ত ইস্রায়েলকে রাখালহীন ভেড়ার মত পাহাড়ের উপরে ছড়িয়ে পড়তে দেখলাম এবং সদাপ্রভু বললেন, ‘এদের কোনো মনিব নেই; তারা সবাই শান্তিতে নিজের বাড়ীতে ফিরে যাক।’ ”
\s5
\v 17 তখন ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফট বললেন, “আমি কি আপনাকে আগেই বলি নি যে, এই ব্যক্তি আমার সম্বন্ধে অমঙ্গল ছাড়া মঙ্গলের কথা বলে না?”
\v 18 আর মীখায় বললেন, “তাই আপনারা সদাপ্রভুর কথা শুনুন; আমি দেখলাম, সদাপ্রভু তাঁর সিংহাসনে বসে আছেন, আর তাঁর ডান ও বাঁ দিকে সমস্ত বাহিনী দাঁড়িয়ে আছে।
\s5
\v 19 তখন সদাপ্রভু বললেন, ‘ইস্রায়েলের রাজা আহাব যেন রামোৎ-গিলিয়দ আক্রমণ করে সেখানে মারা যায়, এই জন্য কে তাকে মুগ্ধ করবে? তখন এক একজন এক এক রকম কথা বলল।
\s5
\v 20 শেষে একটি আত্মা গিয়ে সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে বলল, ‘আমি তাকে মুগ্ধ করব।’
\v 21 সদাপ্রভু জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কেমন করে করবে? সে বলল, ‘আমি গিয়ে তার সব ভাববাদীদের মুখে মিথ্যা বলবার আত্মা হব।’ সদাপ্রভু বললেন, ‘তুমিই তাকে মুগ্ধ করতে সফল হবে; তুমি গিয়ে তাই কর।’
\s5
\v 22 এইজন্যই সদাপ্রভু এখন তাঁর এই ভাববাদীদের মুখে মিথ্যা বলবার আত্মা দিয়েছেন; আর সদাপ্রভু আপনার অমঙ্গলের কথা বলেছেন।”
\s5
\v 23 তখন কনানার ছেলে সিদিকিয়র কাছে গিয়ে মীখায়ের গালে চড় মেরে বলল, “সদাপ্রভুর আত্মা তোর সঙ্গে কথা বলবার জন্য আমার কাছ থেকে কোনো পথে গিয়েছিলেন?”
\v 24 মীখায় বললেন, “দেখ, যেদিন তুমি নিজেকে লুকাবার জন্য একটি ভিতরের কুঠুরীতে যাবে, সেদিন তা জানবে।”
\s5
\v 25 পরে ইস্রায়েলের রাজা বললেন, “মীখায়কে ধরে পুনরায় নগরের শাসনকর্তা আমোন ও রাজপুত্র যোয়াশের কাছে নিয়ে যাও।
\v 26 আর বল, রাজা বলেছেন, ‘একে জেলে আটকে রাখ এবং যতক্ষণ আমি নিরাপদে ফিরে না আসি, ততক্ষণ একে খাওয়ার জন্য অল্প জল ও অল্প খাবার দিও।”
\v 27 মীখায় বললেন, “যদি আপনি কোনো ভাবে নিরাপদে ফিরে আসেন, তবে জানবেন সদাপ্রভু আমার মধ্য দিয়ে কথা বলেন নি।” তারপর তিনি আবার বললেন, “লোকেরা, তোমরা সবাই আমার কথাটা শুনে রাখ।”
\s5
\v 28 পরে ইস্রায়েলের রাজা ও যিহূদার রাজা যিহোশাফট রামোৎ-গিলিয়দ আক্রমণ করতে গেলেন।
\v 29 আর ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটকে বললেন, “আমি ছদ্দবেশে যুদ্ধে যোগ দেব, আপনি আপনার রাজপোশাকই পরুন।” পরে ইস্রায়েলের রাজা ছদ্মবেশে যুদ্ধ করতে গেলেন।
\v 30 অরামের রাজা তাঁর রথগুলির সেনাপতিদের এই আদেশ দিয়েছিলেন, “তোমরা একমাত্র ইস্রায়েলের রাজা ছাড়া ছোট কি বড় আর কারও সঙ্গে যুদ্ধ করবে না।”
\s5
\v 31 পরে রথের সেনাপতিরা যিহোশাফটকে দেখে তিনি নিশ্চয়ই ইস্রায়েলের রাজা, এই বলে তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য ঘুরে এলেন; তখন যিহোশাফট চেঁচিয়ে উঠলেন, আর সদাপ্রভু তাঁকে সাহায্য করলেন এবং ঈশ্বর তার কাছ থেকে চলে গেল।
\v 32 ফলে সেনাপতিরা যখন দেখলেন, তিনি ইস্রায়েলের রাজা নন, তখন তাঁরা আর তাঁর পিছনে তাড়া না করে ফিরে আসলেন।
\s5
\v 33 কিন্তু একজন লোক লক্ষ্য স্থির না করেই তার ধনুকে টান দিয়ে ইস্রায়েলের রাজার বুক ও পেটের বর্মের মাঝামাঝি জায়গায় আঘাত করল; তাতে তিনি তাঁর রথচালককে বললেন, “রথ ঘুরিয়ে সৈন্যদলের মধ্যে থেকে আমাকে নিয়ে যাও, আমি খুব আঘাত পেয়েছি।”
\v 34 সেইদিন ভীষণ যুদ্ধ হল; আর ইস্রায়েলের রাজা অরামীয়দের মুখোমুখি সন্ধ্যা পর্যন্ত রথের মধ্যে বসে থাকলেন, কিন্তু সূর্য ডুবে যাবার সময় তিনি মারা গেলেন।
\s5
\c 19
\p
\v 1 পরে যিহূদার রাজা যিহোশাফট ভালোভাবে যিরূশালেমে তাঁর বাড়ীতে ফিরে আসলেন।
\v 2 আর হনানির ছেলে দর্শক যেহূ তাঁর সঙ্গে দেখা করে যিহোশাফট রাজাকে বললেন, “দুষ্টদের সাহায্য করা এবং যারা সদাপ্রভুকে ঘৃণা করে তাদের ভালবাসা কি আপনার উচিত? এইজন্য সদাপ্রভুর ক্রোধ আপনার উপর নেমে এল।
\v 3 তবে আপনার মধ্যে কিছু ভালও আছে; কারণ আপনি দেশ থেকে আশেরা-মূর্তিগুলি ধ্বংস করেছেন এবং ঈশ্বরের খোঁজ করার জন্য আপনার হৃদয় স্থির করেছেন।”
\s5
\v 4 আর যিহোশাফট যিরূশালেমে বাস করলেন; পরে আবার বের্‌-শেবা থেকে পাহাড়ে ঘেরা ইফ্রয়িম দেশ পর্যন্ত লোকদের কাছে গিয়ে তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে তাদের ফিরিয়ে আনলেন।
\v 5 আর দেশের মধ্যে অর্থাৎ যিহূদার প্রাচীরে ঘেরা নগরগুলির মধ্যে বিচারকদের নিযুক্ত করলেন।
\s5
\v 6 তিনি বিচারকদের বললেন, “তোমরা সাবধান হয়ে সব কাজ করবে, কারণ তোমরা মানুষের জন্য নয়, কিন্তু সদাপ্রভুর জন্যই বিচার করবে এবং বিচারের সময়ে তিনি তোমাদের সঙ্গে থাকবেন।
\v 7 অতএব সদাপ্রভুর প্রতি তোমাদের মধ্যে ভয় থাকুক; তোমরা সাবধানে কাজ করবে, কারণ অন্যায়, পক্ষপতিত্ব কিম্বা ঘুষ খাওয়ার সঙ্গে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু রাজি নন।”
\s5
\v 8 আর যিহোশাফট যিরূশালেমেও সদাপ্রভুর হয়ে বিচারের জন্য এবং ঝগড়া-বিবাদের মীমাংসার জন্য কয়েকজন লেবীয়দের, যাজকদের এবং ইস্রায়েলীয় বংশের প্রধানদের নিযুক্ত করলেন। আর তাঁরা যিরূশালেমে ফিরে এলেন।
\v 9 তিনি তাঁদের এই আদেশ দিলেন, “তোমরা সদাপ্রভুকে ভয় করে বিশ্বস্তভাবে সমস্ত হৃদয় দিয়ে কাজ করবে।
\s5
\v 10 রক্তপাতের বিষয়ে, ব্যবস্থা ও আদেশ এবং নিয়ম ও শাসনের বিষয়ে যে কোনো বিচার তোমাদের নগরে বসবাসকারী ভাইয়েদের থেকে তোমাদের কাছে আসবে, সেই বিষয়ে তাদেরকে উপদেশ দেবে, নাহলে যদি তারা সদাপ্রভুর চোখে দোষী হয়, তাহলে তোমাদের ও তোমাদের ভাইদের ওপরে ক্রোধ পড়বে; এইভাবে কাজ কোরো, তাহলে তোমরা দোষী হবে না।
\s5
\v 11 আর দেখ, সদাপ্রভুর সব বিচারে প্রধান যাজক অমরিয় এবং রাজার সমস্ত বিচারে যিহূদা বংশের শাসনকর্তা ইশ্মায়েলের ছেলে সবদিয় তোমাদের উপরে নিযুক্ত আছেন; কর্মচারী লেবীয়েরা তোমাদের সামনে আছে। তোমরা সাহসের সঙ্গে কাজ কর, যাঁরা সাহসিকতার সঙ্গে কাজ করবেন সদাপ্রভু তাঁদের সঙ্গে থাকবেন।”
\s5
\c 20
\s শত্রুদের হাত থেকে ইস্রায়েলীয়দের রক্ষা।
\p
\v 1 পরে মোয়াব সন্তানরা ও অম্মোন সন্তানরা এবং তাদের সঙ্গে কতগুলি মায়োনীয়দের লোক যিহোশাফটের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে আসল।
\v 2 তখন কয়েকজন লোক এসে যিহোশাফটকে বলল, “সাগরের ওপারের অরাম দেশ থেকে এক বিরাট সৈন্যদল আপনার বিরুদ্ধে আসছে; দেখুন, তারা হৎসসোন-তামরে, অর্থাৎ ঐন্‌-গদীতে আছে।”
\s5
\v 3 তাতে যিহোশাফট ভয় পেয়ে সদাপ্রভুর খোঁজ করতে চাইলেন এবং যিহূদার সব জায়গায় উপবাস ঘোষণা করলেন।
\v 4 আর যিহূদার লোকেরা সদাপ্রভুর কাছে সাহায্য চাইবার জন্য জড়ো হল; যিহূদার সমস্ত নগর থেকেও লোকেরা সদাপ্রভুর খোঁজ করতে আসল।
\s5
\v 5 পরে যিহোশাফট সদাপ্রভুর গৃহে নতুন উঠানের সামনে যিহূদা ও যিরূশালেমের সমস্ত লোকদের সামনে দাঁড়িয়ে বললেন,
\v 6 “হে আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু, তুমি কি স্বর্গের ঈশ্বর নও? তুমি কি জাতির সমস্ত রাজ্যের কর্তা নও? আর শক্তি ও ক্ষমতা তোমারই হাতে, তোমার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে কারও সাধ্য নেই।
\v 7 হে আমাদের ঈশ্বর, তুমিই কি তোমার প্রজা ইস্রায়েলের সামনে থেকে এই দেশের বাসিন্দাদের তাড়িয়ে দাও নি? এবং তোমার বন্ধু অব্রাহামের বংশকে চিরকালের জন্য এই দেশ দাও নি?
\s5
\v 8 আর তারা এই দেশে বাস করেছে এবং এই দেশে তোমার নামের জন্য একটি ধর্মধাম তৈরী করে বলেছে,
\v 9 ‘তরোয়াল, বিচার, মহামারী, দুর্ভিক্ষ যখন আমাদের সঙ্গে ঘটবে, তখন আমরা এই ঘরের সামনে, তোমার সামনে দাঁড়াব, কারণ এই ঘরে তোমার নাম আছে এবং আমাদের কষ্টের সময় আমরা তোমার কাছে কাঁদব, তাতে তুমি তা শুনে আমাদের উদ্ধার করবে।’
\s5
\v 10 “আর এখন দেখ, অম্মোনের ও মোয়াবের সন্তানরা এবং সেয়ীর পর্বতের অধিবাসীরা, যাদের দেশে তুমি ইস্রায়েলকে মিসর দেশে আসবার সময়ে ঢুকতে দাও নি, কিন্তু এরা তাদের কাছ থেকে অন্য পথে চলে গিয়েছিল, তাদের ধ্বংস করে নি;
\v 11 দেখ, তারা আমাদের কিভাবে ক্ষতি করছে; তুমি অধিকার হিসাবে যে সম্পত্তি আমাদের দিয়েছ, তোমার সেই অধিকার থেকে আমাদের তাড়িয়ে দিতে আসছে।
\s5
\v 12 হে আমাদের ঈশ্বর, তুমি কি তাদের বিচার করবে না? আমাদের বিরুদ্ধে ঐ যে বিরাট সৈন্যদল আসছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের তো নিজের কোনো শক্তি নেই; কি করতে হবে, তাও আমরা জানি না; আমরা কেবল তোমার দিকে চেয়ে আছি।”
\v 13 এইভাবে শিশু, স্ত্রী ও ছেলেমেয়েদের সঙ্গে সমস্ত যিহূদা সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে থাকলো।
\s5
\v 14 আর সমাজের মধ্যে যহসীয়েল নামে একজন লেবীয়ের উপর সদাপ্রভুর আত্মা আসলেন। তিনি অসফের বংশের মত্তনিয়ের সন্তান যিয়েলের সন্তান বনায়ের সন্তান সখরিয়ের ছেলে।
\v 15 তখন তিনি বললেন, “হে সমস্ত যিহূদা, হে যিরূশালেমের লোক সকল, আর হে মহারাজ যিহোশাফট, শোনো; সদাপ্রভু তোমাদের এই কথা বলেন, ‘এই বিরাট সৈন্যদল দেখে তোমরা ভয় পেয়ো না বা নিরাশ হোয়ো না, কারণ এই যুদ্ধ তোমাদের নয়, কিন্তু ঈশ্বরের।
\s5
\v 16 তোমরা আগামী কাল তাদের বিরুদ্ধে যাও; দেখ, তারা সীস নামে আরোহন-জায়গা দিয়ে আসছে; তোমরা যিরূয়েল মরুভূমির সামনে উপত্যকার শেষের দিকে তাদের পাবে।
\v 17 এবার তোমাদেরকে যুদ্ধ করতে হবে না; হে যিহূদা ও যিরূশালেম, তোমরা সারি বেঁধে দাঁড়াও, আর সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে আছেন, তিনি কিভাবে উদ্ধার করেন তা দেখো; ভয় কোরো না, নিরাশ হয়ো না; কালকে গিয়ে তাদের মুখোমুখি হবে আর সদাপ্রভু তোমাদের সঙ্গে থাকবেন।’”
\s5
\v 18 তখন যিহোশাফট মাটিতে উবুড় হয়ে প্রণাম করলেন এবং সমস্ত যিহূদা ও যিরূশালেমের অধিবাসীরা প্রণাম করার জন্য সদাপ্রভুর সামনে মাটিতে উপুড় হল।
\v 19 তারপর কহাৎ ও কোরহ বংশের লেবীয়েরা উঠে দাঁড়িয়ে চিত্কার করে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রশংসা করতে লাগল।
\s5
\v 20 পরে তারা খুব সকালে উঠে তকোয় মরুভূমির দিকে রওনা হল; তাদের রওনা হবার সময়ে যিহোশাফট দাঁড়িয়ে বললেন, “হে যিহূদা, হে যিরূশালেমের অধিবাসীরা, আমার কথা শোনো; তোমরা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উপর বিশ্বাস কর, তাহলে স্থির থাকবে; তাঁর ভাববাদীদের বিশ্বাস কর, তাতে সফল হবে।”
\v 21 আর তিনি লোকদের সঙ্গে পরামর্শ করে লোকদের নিযুক্ত করলেন, যেন তারা সৈন্যদলের আগে আগে গিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গান ও মহিমাপূর্ণ পবিত্রতার প্রশংসা করে এবং এই কথা বলে, “সদাপ্রভুর ধন্যবাদ দাও, কারণ তাঁর দয়া চিরকাল স্থায়ী”।
\s5
\v 22 যখন তারা আনন্দের গান ও প্রশংসা করতে শুরু করল, তখন সদাপ্রভু যিহূদার বিরুদ্ধে আসা অম্মোনের ও মোয়াবের সন্তানদের এবং সেয়ীর পর্বতের লোকদের বিরুদ্ধে গুপ্ত সৈন্য নিযুক্ত করলেন; তাতে তারা পরাজিত হল।
\v 23 অম্মোনের ও মোয়াবের সন্তানরা সেয়ীর পর্বতের অধিবাসীদের বিরুদ্ধে উঠল তাদের সম্পূর্ণভাবে হত্যা ও ধ্বংস করার জন্য; আর সেয়ীরের অধিবাসীদের মেরে ফেলবার পর তারা একে অন্যের ধ্বংসে সাহায্য করল।
\s5
\v 24 তখন যিহূদার লোকেরা মরুভূমির প্রহরী দুর্গে এসে সেই বিরাট সৈন্যদলের দিকে তাকিয়ে দেখল যে, মাটিতে কেবল মৃত দেহগুলি পড়ে রয়েছে, কেউই পালিয়ে বাঁচতে পারে নি।
\s5
\v 25 তখন যিহোশাফট ও তাঁর লোকেরা তাদের লুটের জিনিস আনতে গিয়ে সেই মৃত দেহগুলির সঙ্গে অনেক সম্পত্তি ও দামী ধন-রত্ন দেখতে পেলেন; তারা নিজেদের জন্য এত ধন-রত্ন সংগ্রহ করল যে, সেগুলি সব বয়ে নিয়ে যেতে পারল না; সেই লুটের জিনিস বেশী হওয়াতে তা নিয়ে যেতে তাদের তিন দিন লাগল।
\v 26 আর চতুর্থ দিনে তাঁরা বরাখা উপত্যকায় জড়ো হলেন; কারণ সেখানে তারা সদাপ্রভুর ধন্যবাদ করল, এইজন্য আজ পর্যন্ত সেই জায়গা বরাখা উপত্যকা (ধন্যবাদ) নামে পরিচিত।
\s5
\v 27 তারপর যিহূদা ও যিরূশালেমের সমস্ত লোক এবং তাদের আগে আগে যিহোশাফট আনন্দ করতে করতে যিরূশালেমে ফিরে গেলেন, কারণ সদাপ্রভু তাদের শত্রুদের উপরে সদাপ্রভু তাদের আনন্দিত করেছিলেন।
\v 28 আর তাঁরা নেবল, বীণা ও তূরী বাজাতে বাজাতে যিরূশালেমে ফিরে এসে সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন।
\s5
\v 29 আর ইস্রায়েলের শত্রুদের বিরুদ্ধে সদাপ্রভু যুদ্ধ করেছেন, সেই কথা শুনে অন্যান্য দেশের সমস্ত লোকদের উপর সদাপ্রভু সম্বন্ধে একটা ভয় নেমে আসল।
\v 30 এইভাবে যিহোশাফটের রাজ্য স্থির হল, তাঁর ঈশ্বর চারিদিকে তাঁকে বিশ্রাম দিলেন।
\s5
\v 31 যিহোশাফট যিহূদার উপর রাজত্বকরলেন; যিহোশাফট পঁয়ত্রিশ বছর বয়সে যিহূদার রাজা হয়েছিলেন এবং পঁচিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল অসূবা, তিনি ছিলেন শিল্‌হির মেয়ে।
\v 32 যিহোশাফট তাঁর বাবা আসার পথে চলতেন, কখনও সেই পথ ছেড়ে যান নি, সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক তিনি তাই করতেন।
\v 33 কিন্তু উঁচু জায়গা গুলির ধ্বংস করা হয় নি এবং তখনও লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের প্রতি তাদের হৃদয় স্থির করবে না।
\s5
\v 34 যিহোশাফটের বাকি কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখো “ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে হনানির ছেলে যেহূর লেখা বইতে পাওয়া যায়।
\s5
\v 35 পরে যিহূদার রাজা যিহোশাফট ইস্রায়েলের রাজা অহসিয়ের সঙ্গে যোগ দিলেন, সে খারাপ লোক;
\v 36 তিনি তর্শীশে যাবার জন্য জাহাজ তৈরীর কাজে তাঁর সঙ্গে যোগ দিলেন, আর তাঁরা ইৎসিয়োন-গেবরে সেই জাহাজগুলি তৈরী করলেন।
\v 37 তখন মারেশার অধিবাসী দোদাবাহূর ছেলে ইলীয়েষর যিহোশাফটের বিরুদ্ধে এই ভবিষ্যদ্বাণী করলেন, “আপনি অহসিয়ের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন, এই জন্য না আপনি যা তৈরী করেছেন তা সদাপ্রভু ভেঙ্গে ফেললেন।” আর ঐ সকল জাহাজগুলি ভেঙ্গে গেল, তর্শীশে যেতে পারল না।
\s5
\c 21
\s যিহোরাম রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 পরে যিহোশাফট তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং দায়ূদ-নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁকে কবর দেওয়া হল। আর তাঁর ছেলে যিহোরাম তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\v 2 যিহোশাফটের ছেলে যিহোরামের মধ্যে তাঁর ভাইদের নাম ছিল অসরিয়, যিহীয়েল, সখরিয়, অসরিয়, মীখায়েল ও শফটিয়, এরা সবাই ছিল ইস্রায়েলের রাজা যিহোশাফটের ছেলে।
\v 3 আর তাদের বাবা তাদেরকে অনেক সম্পত্তি, অর্থাৎ রুপো, সোনা ও অনেক দামী জিনিস এবং যিহূদা দেশে প্রাচীরে ঘেরা গ্রাম নগরগুলি দান করেছিলেন, কিন্তু যিহোরাম বড় ছেলে বলে তাঁকে রাজ্য দিয়েছিলেন।
\s5
\v 4 যিহোরাম তাঁর বাবার রাজ্য অধীনে এনে নিজেকে শক্তিশালী করলেন; আর নিজের সমস্ত ভাইদের এবং ইস্রায়েলের কয়েকজন শাসনকর্তাকেও তরোয়াল দিয়ে হত্যা করলেন।
\v 5 যিহোরাম বত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করে যিরূশালেমে আট বছর রাজত্ব করেন।
\s5
\v 6 আহাবের বংশের লোকদের মতই তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলতেন; কারণ তিনি আহাবের মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। ফলে সদাপ্রভুর চোখে যা খারাপ তিনি তাই করতেন।
\v 7 তবুও সদাপ্রভু দায়ূদের সঙ্গে তাঁর করা নিয়মের জন্য এবং তাঁকে ও তাঁর সন্তানদেরকে চিরকাল একটা প্রদীপ দেবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, সেইজন্য তিনি দায়ূদের বংশকে ধ্বংস করতে চাইলেন না।
\s5
\v 8 তাঁর সময়ে ইদোম যিহূদার কর্তৃত্ব না মেনে নিজেদের জন্য একজন রাজা ঠিক করল।
\v 9 কাজেই যিহোরাম তাঁর সেনাপতিদের ও সব রথ নিয়ে সেখানে গেলেন; আর রাতের বেলায় তিনি উঠে, যারা তাঁকে ঘেরাও করেছিল, সেই ইদোমীয়দের ও তাদের রথের সেনাপতিদের আঘাত করলেন।
\v 10 এইভাবে ইদোম আজও যিহূদার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে আছে; আর ঐ সময়ে লিব্‌নাও তাঁর কর্তৃত্ব অস্বীকার করল, কারণ তিনি তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছিলেন।
\s5
\v 11 আরও তিনি যিহূদার অনেক পর্বতে উঁচু জায়গা তৈরী করলেন এবং যিরূশালেমের অধিবাসীদের ব্যভিচার করালেন ও যিহূদাকে বিপথে চালালেন।
\s5
\v 12 পরে তাঁর কাছে এলিয় ভাববাদীর কাছ থেকে একটা লিপি আসল; “তোমার বাবা দায়ূদের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই কথা বলেন, ‘তুমি তোমার নিজের বাবা যিহোশাফটের পথে ও যিহূদার রাজা আসার পথে চল নি;
\v 13 কিন্তু ইস্রায়েলের রাজাদের পথে চলেছ এবং আহাবের বংশের কাজ অনুসারে যিহূদাকে ও যিরূশালেমের লোকেদেরকে ব্যভিচার করিয়েছ; আরও তোমার চেয়ে ভাল বাবার বংশের ভাইদের মেরে ফেলেছ;
\v 14 তাই দেখ, সদাপ্রভু তোমার প্রজাদেরকে, তোমার সন্তানদের, তোমার স্ত্রীদেরকে ও তোমার সমস্ত সম্পত্তির উপর ভয়ংকর আঘাতে আহত করবেন।
\v 15 আর তুমি অন্ত্রের অসুখে ভুগতে থাকবে আর সেই অসুখে তোমার অন্ত্র বের হয়ে আসবে।’”
\s5
\v 16 পরে সদাপ্রভু যিহোরামের বিরুদ্ধে পলেষ্টীয়দের মন ও কূশীয়দের কাছে আরবীয়দের মন উত্তেজিত করে তুললেন
\v 17 এবং তারা যিহূদার বিরুদ্ধে এসে প্রাচীর ভেঙ্গে রাজবাড়ীতে পাওয়া সব সম্পত্তি এবং তাঁর ছেলেদের ও তাঁর স্ত্রীদের নিয়ে গেল; ছোট ছেলে যিহোয়াহস ছাড়া তাঁর আর কোনো ছেলে বাকি থাকল না।
\s5
\v 18 এই সমস্ত ঘটনার পরে সদাপ্রভু তাঁকে দারুন অন্ত্রের অসুখ দিলেন যা ভাল হবার না।
\v 19 তাতে দ্বিতীয় বছরের শেষে সেই রোগের দরুন তাঁর অন্ত্র বের হয়ে আসল এবং তিনি খুব যন্ত্রণা পেয়ে মারা গেলেন। আর তাঁর প্রজারা তাঁর জন্য তাঁর পূর্বপুরুষদের নিয়ম অনুযায়ী আগুন জ্বালাল না।
\v 20 তিনি বত্রিশ বছর বয়সে রাজত্ব করা শুরু করেন এবং আট বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন; তাঁর মৃত্যুতে কেউ দুঃখ প্রকাশ করে নি। আর লোকেরা দায়ূদ নগরে তাঁকে কবর দিল, কিন্তু রাজাদের কবরের জায়গা ছিল না।
\s5
\c 22
\s অহসিয় ও অথলিয়ার বর্ণনা।
\p
\v 1 পরে যিরূশালেমের অধিবাসীরা তাঁর ছোট ছেলে অহসিয়কে তাঁর জায়গায় রাজা করল, কারণ আরবীয়দের সঙ্গে শিবিরে যে দল এসেছিল, তারা তাঁর সব বড় ছেলেদের মেরে ফেলেছিল। কাজেই যিহূদার রাজা যিহোরামের ছেলে অহসিয় রাজত্ব করতে শুরু করেন।
\v 2 অহসিয় বিয়াল্লিশ বছর বয়সে রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং এক বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন; তাঁর মা অথলিয়া ছিলেন অম্রির নাতনী।
\v 3 অহসিয়ের মা তাঁকে খারাপ কাজ করবার জন্য পরামর্শ দিতেন, তাই তিনিও আহাবের বংশের পথে চলতেন।
\s5
\v 4 আহাবের বংশের লোকেরা যেমন করত, তেমনি সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ, তিনি তাই করতেন; কারণ বাবার মৃত্যুর পরে তারাই তাঁর ধ্বংসকারী মন্ত্রী হল।
\v 5 তাদের পরামর্শ অনুসারে তিনি চলতেন, আর তিনি ইস্রায়েলের রাজা আহাবের ছেলে যিহোরামের সঙ্গে রামোৎ-গিলিয়দে অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন। তাতে অরামীয়েরা যোরামকে আঘাত করল।
\s5
\v 6 অতএব অরামের রাজা হসায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সময়ে যিহোরাম রামাতে যে সব আঘাত পান, তা থেকে সুস্থ হবার জন্য যিষ্রিয়েলে ফিরে গেলেন এবং আহাবের ছেলে যিহোরাম আঘাত পেয়েছিলেন বলে যিহূদার রাজা যিহোরামের ছেলে অহসিয় তাঁকে দেখবার জন্য যিষ্রিয়েলে নেমে গেলেন।
\s5
\v 7 কিন্তু যোরামের কাছে আসার জন্য ঈশ্বরের থেকে অহসিয়ের পতন ঘটল; কারণ তিনি যখন আসলেন, তখন যিহোরামের সঙ্গে নিমশির ছেলে সেই যেহূর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন, যাঁকে ঈশ্বর আহাবের বংশকে ধ্বংস করবার জন্য অভিষেক করেছিলেন।
\v 8 পরে যেহূ যখন আহাবের বংশের লোকদের শাস্তি দিচ্ছিলেন, তখন তিনি যিহূদার শাসনকর্তাদের ও অহসিয়ের সাহায্যকারী তাঁর সব ভাইয়ের ছেলেদেরকে পেয়ে মেরে ফেললেন।
\s5
\v 9 তারপর তিনি অহসিয়ের খোঁজ করলেন; সেই সময়ে অহসিয় শমরিয়াতে লুকিয়ে ছিলেন; আর লোকেরা তাঁকে ধরে যেহূর কাছে নিয়ে গিয়ে তাঁকে মেরে ফেলল এবং তারা তাঁকে কবর দিল, কারণ তারা বলল, “যে যিহোশাফটের নাতি যিনি সমস্ত হৃদয় দিয়ে সদাপ্রভুর খোঁজ করতেন এ তারই সন্তান।” আর অহসিয়ের বংশের মধ্যে রাজত্ব গ্রহণ করতে ক্ষমতা কারও ছিল না।
\s5
\v 10 ইতিমধ্যে অহসিয়ের মা অথলিয়া যখন দেখল যে, তার ছেলে মারা গেছে, তখন সে উঠে যিহূদার বংশের সমস্ত রাজার ছেলেদের হত্যা করল।
\v 11 কিন্তু রাজকন্যা যিহোশাবৎ অহসিয়ের ছেলে যোয়াশকে মারা যাওয়া রাজপুত্রদের মধ্য থেকে চুরি করে, তাঁর ধাইমার সঙ্গে একটা শোবার ঘরে রাখলেন; এইভাবে যিহোয়াদা যাজকের স্ত্রী, রাজা যিহোরামের মেয়ে এবং অহসিয়ের বোন অথলিয়ার কাছ থেকে তাকে লুকিয়ে রাখলেন, তাই সে তাঁকে হত্যা করতে পারল না।
\v 12 আর যোয়াশ তাঁদের সঙ্গে ঈশ্বরের গৃহে ছয় বছর লুকিয়ে থাকলেন; তখন অথলিয়া দেশের উপর রাজত্ব করছিল।
\s5
\c 23
\s যোয়াশ রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 পরে সপ্তম বছরে যিহোয়াদা নিজেকে শক্তিশালী করে শতপতিদের যিহোরামের ছেলে অসরিয়কে, যিহোহাননের ছেলে ইশ্মায়েলকে, ওবেদের ছেলে অসরিয়, অদায়ার ছেলে মাসেয় ও সিখ্রির ছেলে ইলীশাফটকে নিয়ে একটা চুক্তি করলেন।
\v 2 পরে তাঁরা যিহূদা দেশে ঘুরে যিহূদার সমস্ত নগর থেকে লেবীয়দেরকে এবং ইস্রায়েলের পিতার বংশের নেতাদের জড়ো করলে তারাও যিরূশালেমে এল।
\v 3 পরে সব সমাজ মিলে ঈশ্বরের গৃহে রাজার সঙ্গে একটি চুক্তি করল। আর যিহোয়াদা তাদের বললেন, “দেখ, দায়ূদের সন্তানদের বিষয়ে সদাপ্রভু যে কথা বলেছেন, সেই অনুসারে রাজপুত্রই রাজত্ব করবেন।
\s5
\v 4 তোমারা এই কাজ করবে: তোমাদের অর্থাৎ যাজকদের ও লেবীয়দের যে তিন ভাগের এক ভাগ যারা বিশ্রামবারে কাজ করবে, তারা দারোয়ান হবে।
\v 5 অন্য এক ভাগ রাজবাড়ীতে থাকবে, আর এক ভাগ ভিত্তি-দরজাে থাকবে এবং সবাই থাকবে সদাপ্রভুর গৃহের উঠানে।
\s5
\v 6 কিন্তু যাজকরা ও সেবা-কাজে থাকা লেবীয়েরা ছাড়া আর কেউকে সদাপ্রভুর ঘরে ঢুকতে দিও না; এরা ঢুকবে, কারণ এরা ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে পবিত্র; কিন্তু অন্য সব লোক সদাপ্রভুর আদেশ রক্ষা করবে।
\v 7 আর লেবীয়েরা প্রত্যেকে নিজের নিজের অস্ত্র হাতে নিয়ে রাজার চারপাশ ঘিরে থাকবে, আর যে কেউ গৃহে ঢুকবে, তাকে মেরে ফেলা হবে এবং রাজা যখন ভিতরে যাওয়া-আসা করেন, তখন তোমরা তাঁর সঙ্গে থাকবে।”
\s5
\v 8 পরে যিহোয়াদা যাজক যে আদেশ দিলেন, লেবীয়েরা ও যিহূদার সবাই তাই করল; ফলে তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের লোকদের, অর্থাৎ যারা বিশ্রামবারে বাইরে যাওয়া-আসা করে, তাদেরকে নিল, কারণ যিহোয়াদা যাজক এদের কোনো দলকেই ছুটি দেন নি।
\v 9 আর রাজা দায়ূদের যে সব বর্শা, ঢাল ও ঈশ্বরের গৃহে ছিল, যিহোয়াদা যাজক সেগুলি নিয়ে শতপতিদের দিলেন।
\s5
\v 10 আর তিনি সমস্ত লোককে স্থাপন করলেন, প্রত্যেক জন নিজের নিজের হাতে অস্ত্র নিয়ে দক্ষিণ দিক থেকে উত্তর দিক পর্যন্ত যজ্ঞবেদির ও গৃহের কাছে রাজার চারদিকে দাঁড়ালেন।
\v 11 তারপর তাঁরা রাজপুত্রকে বের করে এনে তাঁর মাথায় মুকুট পরিয়ে দিলেন ও তাঁকে ব্যবস্থার বই দিলেন এবং তারা তাঁকে রাজা করলেন এবং যিহোয়াদা ও তাঁর ছেলেরা তাঁকে রাজা হিসাবে অভিষেক করলেন; পরে তাঁরা বলল, “রাজা চিরজীবী হোন।”
\s5
\v 12 আর লোকেরা দৌড়াদৌড়ি করে রাজার প্রশংসা করলে অমলিয়া সেই আওয়াজ শুনে অথলিয়া সদাপ্রভুর গৃহে তাদের কাছে গেল;
\v 13 আর দেখল, গৃহে ঢুকবার পথে রাজা তাঁর মঞ্চের উপরে দাঁড়িয়ে আছেন এবং সেনাপতিরা ও তূরী বাদকেরা রাজার পাশে আছে এবং দেশের সব লোক আনন্দ করছে ও তূরী বাজাচ্ছে আর গায়কেরা বাজনা বাজিয়ে প্রশংসা গান করছে; তখন অথলিয়া তার পোশাক ছিঁড়ে বলল, “এ তো বিশ্বাসঘাতকতা! বিশ্বাসঘাতকতা!”
\s5
\v 14 কিন্তু যিহোয়াদা যাজক সৈন্যদলের উপরে নিযুক্ত শতপতিদের বাইরে এনে বললেন, “ওকে বের করে দুই সারির মাঝখান দিয়ে নিয়ে যাও; আর যে তার পিছনে আসবে তাকে তরোয়াল দিয়ে হত্যা করবে;” কারণ যাজক আদেশ দিয়েছিলেন যে, সদাপ্রভুর গৃহের মধ্যে ওকে হত্যা কোরো না।
\v 15 কাজেই লোকেরা তাঁর জন্য দুই সারি হয়ে রাস্তা ছেড়ে দিলে সে রাজবাড়ীর অশ্বদ্বারে ঢুকবার পথে গেল; সেখানে তারা তাকে হত্যা করল।
\s5
\v 16 তারপর যিহোয়াদা তাঁর, সব লোকের ও রাজার মধ্যে এক চুক্তি করলেন, যেন তারা সদাপ্রভুর প্রজা হয়।
\v 17 পরে সব লোক বাল দেবতার মন্দিরে গিয়ে সেটা ভেঙ্গে ফেলল, তার যজ্ঞবেদি ও মূর্তিগুলি চুরমার করে দিল এবং বেদিগুলির সামনে বাল দেবতার যাজক মত্তনকে মেরে ফেলল।
\s5
\v 18 তারপর দায়ূদের আদেশ মতে আনন্দের সঙ্গে গান করে মোশির ব্যবস্থা অনুসারে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোম করতে দায়ূদ যে লেবীয় যাজকদের সদাপ্রভুর গৃহের জন্য নির্ধারণ করেছিলেন, তাদের হাতে যিহোয়াদা সদাপ্রভুর গৃহের দেখাশোনার ভার দিলেন।
\v 19 আর কোনো রকম অশুচি লোক যাতে ঢুকতে না পারে সেইজন্য তিনি সদাপ্রভুর গৃহের দরজাগুলিতে দারোয়ান রাখলেন।
\s5
\v 20 পরে তিনি শতপতিদের, কুলীনদের, লোকেদের শাসনকর্তাদের ও দেশের সব লোকদের সঙ্গে নিলেন, তারা সদাপ্রভুর গৃহ থেকে রাজাকে বের করে আনলেন; তারপর তাঁরা উঁচু দরজা দিয়ে রাজবাড়ীতে গিয়ে রাজাকে রাজ সিংহাসনে বসালেন।
\v 21 তখন দেশের সব লোক আনন্দ করল এবং নগরটি শান্ত হল; আর অথলিয়াকে তারা তরোয়াল দিয়ে হত্যা করেছিল।
\s5
\c 24
\p
\v 1 সাত বছর বয়সে যোয়াশ রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং যিরূশালেমে চল্লিশ বছর রাজত্ব করেন; তাঁর মায়ের নাম সিবিয়া, তিনি বের্‌-শেবা নগরের মেয়ে।
\v 2 যিহোয়াদা যাজকের সমস্ত জীবনকালে যোয়াশ সদাপ্রভুর চোখে যা ঠিক, তাই করতেন।
\v 3 আর যিহোয়াদা তাঁর দুটি বিয়ে দিলেন; তারপর তাঁর ছেলেমেয়ে হল।
\s5
\v 4 পরে যোয়াশ সদাপ্রভুর গৃহ মেরামত করবার জন্য স্থির করলেন।
\v 5 তাতে তিনি যাজকদের ও লেবীয়দের ডেকে জড়ো করে বললেন, “তোমরা যিহূদার নগরে নগরে যাও এবং প্রতি বছর তোমাদের ঈশ্বরের গৃহ মেরামত করবার জন্য সমস্ত ইস্রায়েলের কাছ থেকে রুপো আদায় কর; এই কাজটি তাড়াতাড়ি কর।” কিন্তু লেবীয়েরা সেই কাজ তাড়াতাড়ি করল না।
\s5
\v 6 পরে রাজা প্রধান যাজক যিহোয়াদাকে ডেকে বললেন, “সাক্ষ্য তাঁবুর জন্য ঈশ্বরের দাস মোশি ও ইস্রায়েল সমাজের মাধ্যমে যে কর নির্ধারিত হয়েছে, তা যিহূদা ও যিরূশালেম থেকে আদায় করতে আপনি লেবীয়দের বলে দেন নি কেন?”
\v 7 কারণ সেই দুষ্টা স্ত্রীলোক অথলিয়ার ছেলেরা ঈশ্বরের গৃহ ভেঙ্গে ফেলেছিল এবং সদাপ্রভুর গৃহের সমস্ত পবিত্র জিনিসগুলি নিয়ে বাল দেবতার জন্য ব্যবহার করেছিল।
\s5
\v 8 পরে রাজা আদেশ দিলে তারা একটি সিন্দুক তৈরী করে সদাপ্রভুর গৃহের দরজাের ঠিক বাইরে স্থাপন করল।
\v 9 আর ঈশ্বরের দাস মোশি যে কর মরুভূমিতে দিতে হবে বলে ঠিক করেছিল, সদাপ্রভুর কাছে নিয়ে আসার কথা তারা যিহূদা ও যিরূশালেমে ঘোষণা করল।
\v 10 তাতে সমস্ত শাসনকর্তা ও সমস্ত প্রজা আনন্দ করে তা আনতে লাগল এবং যতক্ষণ না কাজ শেষ হল, ততক্ষণ সিন্দুকে তা রাখত।
\s5
\v 11 আর যে সময়ে লেবীয়দের হাতে করে সেই সিন্দুক রাজার কর্মচারীদের কাছে নিয়ে আসত, তখন তার তার মধ্যে অনেক রুপো দেখা গেলে রাজার লেখক ও প্রধান যাজকের কর্মচারী এসে সিন্দুকটি খালি করত, পরে আবার সেটা তুলে তার জায়গায় রাখত; দিন দিন এইভাবে অনেক রুপো জমা করলো।
\v 12 পরে রাজা ও যিহোয়াদা সদাপ্রভুর গৃহে যাদের উপর দায়িত্ব ছিল সেগুলি তাদের হাতে দিতেন; তারা সদাপ্রভুর গৃহ মেরামত করবার জন্য রাজমিস্ত্রি ও ছুতোরকে মজুরি দিত এবং সদাপ্রভুর গৃহ মেরামত করার জন্য লোহা ও পিতলের কারিগরদেরকেও দিত।
\s5
\v 13 এইভাবে যারা সারাইয়ের কাজ করছিল তারা খুব পরিশ্রম করলে তাদের মাধ্যমে কাজ এগিয়ে চলল; আর তারা ঈশ্বরের গৃহটি মেরামত করে আগের মত মজবুত করল।
\v 14 কাজ শেষ করে তারা বাকী রুপো রাজা ও যিহোয়াদার কাছে নিয়ে আসত এবং তার ফলে সদাপ্রভুর গৃহের জন্য নানা পাত্র, অর্থাৎ সেবার জন্য ও হোমের পাত্র এবং চামচ, সোনা ও রুপোর পাত্র তৈরী হল। আর তারা যিহোয়াদা যতদিন বেঁচে ছিলেন ততদিন সদাপ্রভুর গৃহে নিয়মিত হোম করত।
\s5
\v 15 পরে যিহোয়াদা বুড়ো হয়ে আয়ু পূর্ণ হলে মারা গেলেন; সেই সময়ে তাঁর একশো ত্রিশ বছর বয়স হয়েছিল।
\v 16 লোকেরা দায়ূদ নগরে রাজাদের সঙ্গে তাঁর কবর দিল, কারণ তিনি ইস্রায়েলের মধ্যে এবং ঈশ্বর ও তাঁর গৃহের জন্য ভাল কাজ করেছিলেন।
\s5
\v 17 যিহোয়াদার মৃত্যুর পরে যিহূদার শাসনকর্তারা এসে রাজাকে প্রণাম করল; তখন রাজা তাদের কথাই শুনলেন।
\v 18 পরে তারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৃহ ত্যাগ করে আশেরা-মূর্তির ও নানা প্রতিমার পূজা করতে লাগল; আর তাদের এই পাপের জন্য যিহূদা ও যিরূশালেমের উপর ক্রোধ নেমে এল।
\v 19 যদিও সদাপ্রভুর দিকে তাদের ফিরিয়ে আনবার জন্য তিনি তাদের কাছে ভাববাদীদেরকে পাঠালেন, আর তাঁরা তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন; কিন্তু লোকরা সেই কথা শুনতে চাইল না।
\s5
\v 20 পরে ঈশ্বরের আত্মা যিহোয়াদা যাজকের ছেলে সখরিয়ের উপর এলে, তিনি লোকদের থেকে উঁচু জায়গায় দাঁড়িয়ে তাদের বললেন, “ঈশ্বর এই কথা বলছেন, ‘তোমরা কেন সদাপ্রভুর আদেশ অমান্য করছ? এতে সফল হবে না। তোমরা সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছ, তিনিও তোমাদের ত্যাগ করলেন।’ ”
\v 21 তাতে লোকেরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে রাজার আদেশে সদাপ্রভুর গৃহের উঠানে তাঁকে পাথর ছুঁড়ে মেরে ফেলল।
\v 22 তাঁর বাবা যিহোয়াদা রাজার প্রতি যে দয়া দেখিয়েছিলেন, তা মনে না রেখে যোয়াশ রাজা তাঁর ছেলেকে মেরে ফেললেন; তিনি মারা যাবার সময় বললেন, “সদাপ্রভু এই কাজ দেখে আপনাকে শাস্তি দেবেন।”
\s5
\v 23 পরের বছর অরামের সৈন্যেরা যোয়াশের বিরুদ্ধে আসল। তারা যিহূদা ও যিরূশালেম আক্রমণ করে সব শাসনকর্তাদের মেরে ফেলল এবং তাদের সমস্ত জিনিস লুট করে দম্মেশকে রাজার কাছে পাঠিয়ে দিল।
\v 24 বাস্তবিক অরামীয় সৈন্যদলে কম লোক আসলো, আর সদাপ্রভু তাদের হাতে অনেক বড় সৈন্যদলকে তুলে দিলেন, কারণ লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছিল । এইভাবে অরামীয়দের মাধ্যমে যোয়াশকে শাস্তি দেওয়া হল।
\s5
\v 25 তারা তাঁকে খুব আহত অবস্থায় ফেলে রেখে চলে গেলে তাঁর দাসেরা যিহোয়াদা যাজকের ছেলেদের রক্তপাতের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁর বিছানার উপরেই তাঁকে মেরে ফেলল এবং তিনি মারা যাওয়ার পর তাঁকে দায়ূদ নগরে তাঁর কবর দিল ঠিকই, কিন্তু রাজাদের কবরের জায়গায় কবর দিল না।
\v 26 অম্মোনীয় শিমিয়তের ছেলে সাবদ ও মোয়াবীয়া শিম্রীতের ছেলে যিহোষাবদ, এই দুজন তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল।
\s5
\v 27 তাঁর ছেলেদের কথা, তাঁর বিষয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাববানীর কথা ও ঈশ্বরের গৃহ মেরামতের বর্ণনা দেখো, এইসব বিষয় “রাজাদের ইতিহাস” নামক বইতে ব্যাখ্যান গ্রন্থে লেখা আছে; পরে তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে অমৎসিয় রাজা হলেন।
\s5
\c 25
\s অমৎসিয় রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 অমৎসিয় পঁচিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং ঊনত্রিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেন; তাঁর মায়ের নাম ছিল যিহোয়দ্দন, তিনি ছিলেন যিরূশালেমের মেয়ে।
\v 2 সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল অমৎসিয় তাই করতেন ঠিকই, তবে সমস্ত মন দিয়ে করতেন না।
\s5
\v 3 পরে রাজ্যটি শক্তভাবে তাঁর অধীনে আনবার পর যে দাসেরা রাজাকে, অর্থাৎ তাঁর বাবাকে মেরে ফেলেছিল তাদের তিনি হত্যা করলেন।
\v 4 কিন্তু তিনি তাদের সন্তানদের হত্যা করলেন না, ব্যবস্থার গ্রন্থে, মোশির বইয়ে সদাপ্রভুর যে আদেশ লেখা আছে, সেইমতই কাজ করলেন, যেমন, “সন্তানদের জন্য বাবা, কিম্বা বাবার জন্য সন্তান মারা যাবে না, কিন্তু প্রত্যেকেই তার নিজের পাপে মরবে।”
\s5
\v 5 পরে অমৎসিয় যিহূদাকে জড়ো করেস সমস্ত, যিহূদা ও সমস্ত বিন্যামীনের পূর্বপুরুষদের বংশ অনুসারে সহস্রপতি ও শতপতিদের অধীনে লোকদের দাঁড় করালেন এবং কুড়ি বছর ও তার থেকে বেশী বয়সের লোকদের গণনা করে দেখলেন, যুদ্ধে যাবার জন্য তিন লক্ষ উপযুক্ত লোক রয়েছে, যারা বর্শা ও ঢাল ব্যবহার করতে সক্ষম।
\v 6 আর তিনি একশো তালন্ত রুপো মজুরি দিয়ে ইস্রায়েল থেকে এক লক্ষ বলবান বীর নিলেন।
\s5
\v 7 কিন্তু ঈশ্বরের একজন লোক এসে তাঁকে বললেন, “হে রাজা, ইস্রায়েলের সৈন্যদল তোমার সঙ্গে যেন না যায়; কারণ ইস্রায়েলের সঙ্গে, অর্থাৎ সমস্ত ইফ্রয়িম সন্তানদের সঙ্গে সদাপ্রভু থাকেন না।
\v 8 তুমি গিয়ে যুদ্ধ কর এবং যুদ্ধে জয়ী হও; শত্রুর কাছে ঈশ্বর তোমাকে পরাজিত করবেন, কারণ সাহায্য করবার অথবা পরাজিত করবার ক্ষমতা ঈশ্বরের আছে।”
\s5
\v 9 তখন অমৎসিয় ঈশ্বরের লোককে বললেন, “ভাল, কিন্তু সেই ইস্রায়েলীয় সৈন্যদলকে যে একশো তালন্ত রুপো দিয়েছি, তার জন্য কি করা যায়?” ঈশ্বরের লোক বললেন, “সদাপ্রভু তোমাকে এর থেকে আরও অনেক বেশী দিতে পারেন।”
\v 10 তাতে অমৎসিয় তাদের অর্থাৎ ইফ্রয়িম থেকে তাঁর কাছে আসা সেই সৈন্যদলকে বাড়ী পাঠাবার জন্য আলাদা করলেন; কাজেই যিহূদার বিরুদ্ধে তাদের ক্রোধ জ্বলে উঠল, তারা রেগে আগুন হয়ে নিজের জায়গায় ফিরে গেল।
\s5
\v 11 পরে অমৎসিয় নিজেকে শক্তিশালী করলেন এবং তাঁর লোকেদের বের করে লবণ উপত্যকায় গিয়ে সেয়ীর সন্তানদের দশ হাজার লোককে হত্যা করলেন।
\v 12 আর যিহূদার সন্তানরা তাদের দশ হাজার জীবিত লোককে বন্দি করে পাহাড়ের চূড়ায় নিয়ে গিয়ে সেখান থেকে নীচে ফেলে দিল, এতে তারা সবাই একেবারে থেঁৎলে গেল।
\s5
\v 13 কিন্তু অমৎসিয় তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করতে না দিয়ে ফেএ সন্তানদের রৎ পাঠিয়েছিলেন, তারা শমরিয়া থেকে বৈৎ-হোরণ পর্যন্ত যিহূদার নগর আক্রমণ করে তাদের তিন হাজার লোককে আঘাত করল এবং অনেক জিনিস লুঠ করে নিয়ে গেল।
\s5
\v 14 ইদোমীয়দের হত্যা করে ফিরে আসবার পর অমৎসিয় সেয়ীর সন্তানদের প্রতিমাগুলি সঙ্গে করে নিয়ে আসলেন, নিজের দেবতা হিসাবে তাদের স্থাপন করলেন এবং তাদেরকে প্রণাম করতে ও তাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাতে লাগলেন।
\v 15 এতে অমৎসিয়ের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধ জ্বলে উঠল, তিনি একজন ভাববাদীকে তাঁর কাছে পাঠালেন; ভাববাদী তাঁকে বললেন, “ঐ লোকদের যে দেবতারা নিজের হাত থেকে তাদের প্রজাদেরকে উদ্ধার করে নি, আপনি তাদের কেন খোঁজ করেছন?”
\s5
\v 16 তাঁর এই কথার উত্তরে রাজা তাকে বললেন, “আমরা কি তোমাকে রাজার মন্ত্রীর পদে নিযুক্ত করেছি? তুমি থামবে নাকি মার খাবে?” তখন সেই ভাববাদী থামলেন, তবুও বললেন, “আমি জানি, ঈশ্বর আপনাকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করেছেন, কারণ আপনি এই কাজ করেছেন, আর আমার পরামর্শ শোনেন নি।”
\s5
\v 17 পরে যিহূদার রাজা অমৎসিয় পরামর্শ করে যেহূর নাতি যিহোয়াহসের ছেলে ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশের কাছে বলে পাঠালেন, “আসুন, আমরা মুখোমুখি হই।”
\s5
\v 18 তখন ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশ যিহূদার রাজা অমৎসিয়ের বলে পাঠালেন, “লিবানোনের শিয়ালকাঁটা লিবানোনেরই এরস গাছের কাছে বলে পাঠাবলে পাঠালেন, কাছে লোক দিয়ে ল, ‘আমার ছেলের সঙ্গে তোমার মেয়ের বিয়ে দাও; তারপর লিবানোনের একটি বুনো জন্তু এসে সেই শিয়ালকাঁটাকে পায়ে মাড়িয়ে দিল।
\v 19 তুমি বলছ, ‘দেখ, আমি ইদোমকে আঘাত করেছি; মনে মনে এই কথা ভেবে আপনি গর্ব করছ; এখন তুমি ঘরে বসে থাক, অমঙ্গলের সঙ্গে বিরোধ করতে কেন এগিয়ে যাবে এবং তুমি ও যিহূদা, উভয়ে কেন ধ্বংস হবে?”
\s5
\v 20 কিন্তু অমৎসিয় সেই কথা শুনলেন না, কারণ লোকেরা ইদোমের দেবতাদের খোঁজ করেছিল বলে তারা যেন শত্রুদের হাতে ধরা পড়ে, তাই এটা ঈশ্বর থেকে হল।
\v 21 পরে ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশ যুদ্ধে গেলেন এবং যিহূদার দখলে থাকা বৈৎ-শেমশে তিনি ও যিহূদার রাজা অমৎসিয় একে অন্যের মুখোমুখি হলেন।
\v 22 তখন ইস্রায়েলের কাছে যিহূদা সম্পূর্ণভাবে হেরে গেল, প্রত্যেকে নিজের নিজের তাঁবুতে পালিয়ে গেল।
\s5
\v 23 আর ইস্রায়েলের রাজা যোয়াশ বৈৎ-শেমশে যিহোয়াহসের নাতি, যোয়াশের ছেলে, যিহূদার রাজা অমৎসিয়কে বন্দী করে যিরূশালেমে আনলেন এবং ইফ্রয়িমের দরজা থেকে কোণের দরজা পর্যন্ত যিরূশালেমের চারশো হাত লম্বা প্রাচীর ভেঙ্গে ফেললেন।
\v 24 আর ঈশ্বরের গৃহে ওবেদ-ইদোমের দখলে যত সোনা, রুপো ও পাত্র পাওয়া গিয়েছিল, সে সমস্ত এবং রাজবাড়ীর ধন-সম্পদ ও জামিন হিসাবে কতগুলি মানুষকে নিয়ে শমরিয়াতে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 25 ইস্রায়েলের রাজা যিহোয়াহসের ছেলে যোয়াশের মৃত্যুর পরে যিহূদার রাজা যোয়াশের ছেলে অমৎসিয় আরও পনেরো বছর বেঁচে ছিলেন।
\v 26 অমৎসিয়ের বাকি কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত “যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে কি লেখা নেই?
\s5
\v 27 অমৎসিয় সদাপ্রভুর পথে চলা থেকে সরে যাওয়ার পর লোকেরা যিরূশালেমে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করল, এতে তিনি লাখীশে পালিয়ে গেলেন, কিন্তু তারা তাঁর পিছনে পিছনে লাখীশে লোক পাঠিয়ে সেখানে তাঁকে হত্যা করল।
\v 28 পরে ঘোড়ার পিঠে করে তাঁকে এনে যিহূদার নগরে তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে তাঁর কবর দিল।
\s5
\c 26
\s উষয় রাজার বিবরণ।
\p
\v 1 আর যিহূদার সমস্ত লোক ষোল বছরের উষিয়কে নিয়ে তাঁর বাবা অমৎসিয়ের জায়গায় রাজা করল।
\v 2 দ্বিতীয়বার রাজা অমৎসিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লে উষিয় এলৎ নগরটি আবার তৈরী করলেন এবং যিহূদার অধীনে আনলেন।
\v 3 উষিয় ষোল বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেন এবং যিরূশালেমে বাহান্ন বছর রাজত্ব করেন; তাঁর মায়ের নাম যিখলিয়া, তিনি যিরূশালেমের মেয়ে।
\s5
\v 4 উষিয় তাঁর বাবা অমৎসিয়ের সমস্ত কাজ অনুসারে সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন।
\v 5 আর ঈশ্বরের দর্শক, বুদ্ধিমান যে সখরিয়ের জীবনকালে তিনি ঈশ্বরের খোঁজ করতেন; আর যতদিন তিনি সদাপ্রভুর খোঁজ করলেন, ততদিন ঈশ্বরও তাঁকে সফলতা দান করলেন।
\s5
\v 6 তিনি পলেষ্টীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলেন এবং গাৎ, যব্‌নির ও অসদোদ প্রাচীর ভেঙ্গে ফেললেন এবং অসদোদ এলাকায় এবং পলেষ্টীয়দের মধ্যে কতগুলি নগর তৈরী করলেন।
\v 7 আর ঈশ্বর পলেষ্টীয়দের, গূরবালে বাসকারী আরবীয়দের ও মিয়ূনীয়দের বিরুদ্ধে তাঁকে সাহায্য করলেন।
\v 8 অম্মোনীয়েরা উষিয়কে উপহার দিল এবং তাঁর সুনাম মিসরের সীমানা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ল; কারণ তিনি খুব শক্তিশালী হয়ে উঠেছিলেন।
\s5
\v 9 উষিয় যিরূশালেমের কোণের দরজায়, উপত্যকার দরজায় এবং প্রাচীরের কোণে উঁচু ঘর তৈরী করে সেগুলি শক্তিশালী করলেন।
\v 10 আর তিনি মরুভূমিতে উঁচু ঘর তৈরী করলেন ও অনেক কূপ খুঁড়লেন, কারণ তাঁর অনেক পশুপাল ছিল, উপত্যকা ও সমভূমিতেও তাই করলেন এবং পর্বতে ও উর্বর ক্ষেতে তাঁর চাষীরা ও আঙ্গুর ক্ষেতের চাষীরা ছিল; কারণ তিনি কৃষিকাজ ভালবাসতেন।
\s5
\v 11 আবার উষিয়ের দক্ষ সৈন্যদল ছিল; রাজার হনানীয় নামে একজন সেনাপতির পরিচালনার অধীনে লেখক যিয়ূয়েল ও শাসনকর্তা মাসেয় হাতে লেখা সংখ্যা অনুসারে তারা দলে দলে যুদ্ধে করতে যেত।
\v 12 পূর্বপুরুষের নেতা, শক্তিশালী যোদ্ধা সবমিলিয়ে তারা মোট দুহাজার ছশো জন ছিল।
\v 13 আর তাদের পরিচালনার অধীনে শক্তিশালী সৈন্যদল, শত্রুদের বিরুদ্ধে রাজাকে সাহায্য করবার জন্য দক্ষ যোদ্ধা ছিল তিন লক্ষ সাত হাজার পাঁচশো লোক ছিল।
\s5
\v 14 উষিয় সমস্ত সৈন্যদলের জন্য ঢাল, বর্শা, শিরস্ত্রাণ, বর্ম, ধনুক ও ফিংগার পাথর তৈরী করলেন।
\v 15 আর যিরূশালেমে তিনি দক্ষতাপূর্ণ শিল্পীদের দ্বারা স্বপ্নের যন্ত্রপাতি তৈরী করে সেটা দিয়ে তীর ও বড় বড় পাথর ছুঁড়ে মারার জন্য দুর্গের পিছনে ও প্রাচীরের চূড়াতে তা স্থাপন করলেন। তাঁর সুনাম দূর দেশে ছড়িয়ে পড়ল, কারণ তিনি সাহায্য পেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠলেন।
\s5
\v 16 কিন্তু শক্তিশালী হয়ে উঠার পর তাঁর মনে গর্ব আসল, তাতে তাঁর পতন হল, আর তিনি তাঁর সদাপ্রভুর বিরুদ্ধে পাপ করলেন; কারণ তিনি ধূপবেদিতে ধূপ জ্বালাবার জন্য সদাপ্রভুর মন্দিরে ঢুকলেন।
\v 17 তাতে অসরিয় যাজক ও তাঁর সঙ্গে সদাপ্রভুর আশিজন সাহসী যাজক তাঁর পিছু পিছু ভিতরে গেলেন।
\v 18 তাঁরা উষিয় রাজার সামনে দাঁড়িয়ে তাঁকে বললেন, “হে উষিয়, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাবার অধিকার আপনার নেই, কিন্তু হারোণের সন্তানদের যে যাজকেরা ধূপ জ্বালাবার জন্য পবিত্র করা হয়েছে, তাদেরই অধিকার আছে; এই পবিত্র জায়গা থেকে আপনি বের হয়ে যান, কারণ আপনি পাপ করেছেন, এই বিষয়ে ঈশ্বর সদাপ্রভুর থেকে আপনার গৌরব হবে না।”
\s5
\v 19 তখন উষিয় রেগে আগুন হয়ে গেলেন, আর তাঁর হাতে ধূপ জ্বালাবার জন্য একটা ধূপদানি ছিল; কিন্তু তিনি যাজকদের উপর প্রচন্ড রাগ করেছিলেন বলে সদাপ্রভুর গৃহে যাজকদের সামনে ধূপবেদির কাছে তাঁর কপালে কুষ্ঠরোগ দেখা দিল।
\v 20 তখন প্রধান যাজক অসরিয় এবং অন্যান্য সব যাজকেরা তাঁর দিকে তাকিয়ে তাঁর কপালে সেই কুষ্ঠরোগ দেখতে পেলেন; কাজেই তাঁরা তাড়াতাড়ি তাঁকে বের করে দিলেন, এমন কি, তিনি নিজেও তাড়াতাড়ি বেরিয়ে যেতে চাইলেন, কারণ সদাপ্রভু তাঁকে আঘাত করেছিলেন।
\s5
\v 21 আর মৃত্যু পর্যন্ত রাজা উষিয় কুষ্ঠরোগী ছিলেন; কুষ্ঠ হওয়ার জন্য তিনি একটা আলাদা ঘরে থাকতেন, কারণ সদাপ্রভুর গৃহে যাওয়া থেকে তিনি বাদ পড়েছিলেন; তাতে তাঁর ছেলে যোথম রাজবাড়ির কর্তা হয়ে দেশের লোকেদের শাসন করতে লাগলেন।
\s5
\v 22 উষিয়ের বাকি সমস্ত কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আমোসের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় লিখে রেখেছেন।
\v 23 পরে উষিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সাথে ঘুমিয়ে পড়লে, লোকেরা তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে রাজাদের কবর দেওয়ার জায়গা তাঁর কবর দিল, কারণ তারা বলল, “তাঁর কুষ্ঠরোগ হয়েছিল।” তারপর তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে যোথম রাজা হলেন।
\s5
\c 27
\s যোথম রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 যোথম পঁচিশ বছর বয়সে রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং যিরূশালেমে ষোল বছর রাজত্ব করেন; তাঁর মায়ের নাম যিরূশা, তিনি সাদোকের মেয়ে।
\v 2 যোথম তাঁর বাবা উষিয়ের সমস্ত কাজ অনুসারে সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তাই করতেন, কিন্তু সদাপ্রভুর মন্দিরে যেতেন না এবং লোকেরা তখনও খারাপ কাজ করত।
\s5
\v 3 তিনি সদাপ্রভুর গৃহের উঁচু দরজা তৈরী করলেন এবং ওফল পাহাড়ের ওপরের অনেক জায়গা মজবুত করলেন;
\v 4 আর তিনি যিহূদার পর্বতে ঘেরা দেশে নানা জায়গায় নগর এবং বনে উঁচু পাহারা-ঘর ও দুর্গ তৈরী করলেন।
\s5
\v 5 আর তিনি অম্মোন সন্তানদের রাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তাদের পরাজিত করলেন; তাতে অম্মোন সন্তানরা সেই বছর তাঁকে একশো তালন্ত রুপো, দশ হাজার কোর্ গম ও দশ হাজার কোর্ যব দিল এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছরেও অম্মোন সন্তানরা তাঁকে একই পরিমাণে দিল।
\s5
\v 6 এইভাবে যোথম শক্তিশালী হয়ে উঠলেন, কারণ তিনি বিশ্বস্তভাবে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর পথে চলতেন।
\v 7 যোথমের বাকি কাজের কথা, তাঁর সব যুদ্ধের কথা এবং চরিত্র, দেখো, “ইস্রায়েল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস” বইটিতে লেখা আছে।
\s5
\v 8 তিনি পঁচিশ বছর বয়সে রাজত্ব শুরু করেন এবং যিরূশালেমে ষোল বছর রাজত্ব করেন।
\v 9 পরে যোথম তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লে লোকেরা তাঁকে দায়ূদ নগরে কবর দিল এবং তাঁর ছেলে আহস তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 28
\s আহস রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 আহসের বয়স কুড়ি বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি যিরূশালেমে ষোল বছর রাজত্ব করেছিলেন। তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদ যেমন করেছিলেন তেমন সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল তা তিনি করতেন না।
\v 2 তিনি ইস্রায়েলের রাজাদের মতই চলতেন এবং বাল দেবতার জন্য তিনি ছাঁচে ঢেলে মূর্তি তৈরী করিয়েছিলেন।
\s5
\v 3 তিনি বিন্‌-হিন্নোমের ছেলের উপত্যকাতে ধূপ জ্বালাতেন এবং সদাপ্রভু যে সব জাতিকে ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে দূর করে দিয়েছিলেন তাদের জঘন্য কাজের মতই তিনিও তাঁর ছেলেদের আগুনে পুড়িয়ে হোম উৎসর্গ করলেন।
\v 4 তিনি উঁচু জায়গা গুলোতে, পাহাড়ের উপরে ও প্রত্যেকটি ডালপালা ছড়ানো সবুজ গাছের নীচে পশু উৎসর্গ করতেন ও ধূপ জ্বালাতেন।
\s5
\v 5 সেইজন্যই আহসের ঈশ্বর সদাপ্রভু তাঁকে অরামের রাজার হাতে তুলে দিলেন। অরামীয়েরা তাঁকে হারিয়ে দিল এবং তাঁর অনেক লোককে বন্দী করে দামেশকে নিয়ে গেল। আবার তিনি ইস্রায়েলের রাজার হাতেও আহসকে তুলে দিল। ইস্রায়েলের রাজা তাঁর অনেক লোককে মেরে ফেললেন।
\v 6 কারণ রমলিয়ের ছেলে পেকহ একদিনের মধ্যে যিহূদায় এক লক্ষ কুড়ি হাজার সাহসী সৈন্যকে মেরে ফেললেন, কারণ যিহূদার লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ত্যাগ করেছিল।
\s5
\v 7 আর সিখ্রি নামে একজন ইফ্রয়িমীয় শক্তিশালী যোদ্ধা রাজার ছেলে মাসেয়কে ও রাজবাড়ীর ভার পাওয়া কর্মচারী অস্রীকামকে এবং রাজার পরে দ্বিতীয় জায়গা যিনি ছিলেন সেই ইল্কানাকে মেরে ফেলল।
\v 8 ইস্রায়েলীয়েরা তাদের জাতি ভাইদের মধ্য থেকে স্ত্রীলোক ও ছেলেমেয়েদের বন্দী করে নিয়ে গেল। তাদের সংখ্যা ছিল দুই লক্ষ। তারা অনেক জিনিসও লুট করে শমরিয়াতে নিয়ে গেল।
\s5
\v 9 কিন্তু সেখানে ওদেদ নামে সদাপ্রভুর একজন ভাববাদী ছিলেন। সৈন্যদল যখন শমরিয়াতে ফিরে আসছিল তখন তিনি তাদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেন এবং তাদের বললেন, “আপনাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু যিহূদার উপর ভীষণ অসন্তুষ্ট হয়েছেন বলে তিনি তাদের আপনাদের হাতে তুলে দিয়েছেন। কিন্তু রাগের চোটে আপনারা তাদের যেভাবে মেরে ফেলেছেন সেই কথা স্বর্গ পর্যন্ত পৌঁছেছে।
\v 10 আর এখন আপনারা যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের আপনাদের দাস দাসী করে রাখতে চাইছেন। কিন্তু আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে কি আপনারাও দোষী নন?
\v 11 এখন আপনারা আমার কথা শুনুন। আপনাদের জাতি ও ভাইদের মধ্য থেকে যাদের আপনারা বন্দী করে নিয়ে এসেছেন তাদের আপনারা ফেরত পাঠিয়ে দিন, কারণ সদাপ্রভুর ভয়ংকর ক্রোধ আপনাদের উপরে রয়েছে।”
\s5
\v 12 তখন ইফ্রয়িমের কয়েকজন নেতা যেমন সেই নেতারা হলেন যিহোহাননের ছেলে অসরিয়, মশিল্লেমোতের ছেলে বেরিখিয়, শল্লুমের ছেলে যিহিষ্কিয় ও হদ্‌লয়ের ছেলে অমাসা এরা যুদ্ধ থেকে যারা ফিরে আসছিল তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ালেন ।
\v 13 তাঁরা তাদের বললেন, “ঐ বন্দীদের তোমরা এখানে আনবে না কারণ আমাদের পাপ ও দশ সবার থেকে বেশি; আনলে আমরা সদাপ্রভুর কাছে দোষী হব। আমাদের পাপ ও দোষের সঙ্গে কি তোমরা আরও কিছু যোগ দিতে চাও? আমরা তো ভীষণভাবে দোষী হয়েই রয়েছি আর সদাপ্রভুর ভয়ংকর ক্রোধ ইস্রায়েলের উপর রয়েছে।”
\s5
\v 14 তখন সৈন্যেরা সেই নেতাদের ও সমস্ত লোকদের সামনে সেই বন্দীদের ও লুটের জিনিসগুলো রাখল।
\v 15 পরে সেই লোকেরা লুটের জিনিস থেকে কাপড় চোপড় নিয়ে বন্দীদের মধ্যে যারা উলঙ্গ ছিল তাদের সবাইকে কাপড় পরালেন। তাঁরা তাদের কাপড় চোপড়, জুতা ও খাবার দিলেন এবং তাদের আঘাতের উপর তেল ঢেলে দিলেন। এবং দুর্বলদের তাঁরা গাধার উপর চড়িয়ে যিরীহোতে, অর্থাৎ খেজুর শহরে তাদের নিজের লোকদের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে গেলেন। পরে তাঁরা শমরিয়াতে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 16 সেই সময় রাজা আহস সাহায্য চাইবার জন্য অশুর রাজার কাছে লোক পাঠালেন।
\v 17 এর কারণ হল, ইদোমীয়েরা আবার এসে যিহূদা আক্রমণ করে লোকদের বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিল।
\v 18 এদিকে আবার পলেষ্টীয়েরা তখন নীচু পাহাড়ী এলাকার গ্রামগুলোতে এবং যিহূদার দক্ষিন অঞ্চলের নগরগুলি আক্রমন করে নেগেভে হানা দিয়েছিল বৈৎশেমশ, অয়ালোন, গদেরোৎ এবং আশেপাশের জায়গা সুদ্ধ সোখো, তিম্না ও গিম্‌সো অধিকার করে নিয়ে সেই সব জায়গায় বাস করছিল।
\s5
\v 19 কারণ রাজা আহসের জন্য সদাপ্রভু যিহূদাকে নীচু করেছিলেন, কারণ আহস যিহূদায় মন্দতা বৃদ্ধি পেতে দিয়েছিলেন এবং নিজে সদাপ্রভুর প্রতি খুব বেশী পাপ করেছিলেন।
\v 20 আরে অশুর রাজা তিগ্লৎ পিলনেষর তাঁর কাছে এসেছিলেন কিন্তু তিনি শক্তি বৃদ্ধির বদলে আহসকে কষ্টই দিলেন।
\v 21 তখন আহস সদাপ্রভুর ঘর থেকে এবং রাজবাড়ী থেকে এবং নেতাদের কাছ থেকে কিছু দামী জিনিসপত্র নিয়ে অশুর রাজাকে উপহার দিলেন, কিন্তু তাতে কিছু লাভ হল না।
\s5
\v 22 তাঁর এই কষ্টের সময়ে এই একই রাজা আহস সদাপ্রভুর প্রতি আরও বেশী পাপ করলেন।
\v 23 কারণ দম্মেশকের যে দেবতারা তাঁকে হারিয়ে দিয়েছিল, তিনি সেই দেবতাদের কাছে পশু বলিদান করলেন। তিনি বললেন, “অরামের রাজাদের দেবতারা তাঁদের সাহায্য করে, আর আমি সাহায্য পাবার জন্য সেই দেবতাদের কাছে পশু বলি দেব।” আর তারা আমাকেও সাহায্য করবেন কিন্তু সেই দেবতারাই হল তাঁর ও সমস্ত ইস্রায়েলের সর্বনাশের কারণ।
\s5
\v 24 পরে আহস ঈশ্বরের ঘরের জিনিসপত্রগুলি একত্রে জড়ো করে কেটে কেটে টুকরো করলেন। তিনি সদাপ্রভুর ঘরের দরজাগুলো বন্ধ করে দিলেন এবং যিরূশালেমের সমস্ত জায়গায় তিনি নিজের জন্য বেদী তৈরী করলেন।
\v 25 আর অন্য দেব দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালাবার জন্য তিনি যিহূদার প্রত্যেকটি শহর ও গ্রামে পূজার উঁচু বেদী তৈরী করলেন, এইভাবে তাঁর নিজের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অসন্তুষ্ট করে তুললেন।
\s5
\v 26 দেখো, আহসের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা এবং প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত তাঁর সমস্ত চাল চলনের কথা “যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামক বইটিতে লেখা আছে।
\v 27 পরে আহস তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং তারা যিরূশালেম শহরে তাঁকে কবর দিল, কিন্তু তারা তাঁকে ইস্রায়েলের রাজাদের কবরের জায়গা নিয়ে যায় নি। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে হিষ্কিয় রাজা হলেন।
\s5
\c 29
\s হিষ্কিয় রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 হিষ্কিয় পঁচিশ বছর বয়সে রাজা হয়ে রজত্ব শুরু করেন এবং যিরূশালেমে ঊনত্রিশ বছর পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর মায়ের নাম ছিল অবিয়া; তিনি ছিলেন সখরিয়ের মেয়ে।
\v 2 হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের মতই সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু ভাল তাই করতেন।
\s5
\v 3 তাঁর রাজত্বের প্রথম বছরের প্রথম মাসেই তিনি সদাপ্রভুর ঘরের দরজাগুলি খুলে দিলেন এবং সারাই করলেন।
\v 4 তিনি পূর্ব দিকের উঠানে যাজক ও লেবীয়দের একত্রে জড়ো করলেন।
\v 5 তিনি তাদের বললেন এখন “লেবীয়েরা, আমার কথা শোন; তোমরা নিজেদের এবং তোমাদের নিজেদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘরটি শুচি কর। এই পবিত্র জায়গা থেকে সমস্ত অশুচি জিনিস দূর করে দাও।
\s5
\v 6 কারণ আমাদের পূর্বপুরুষেরা সত্যকে অস্বীকার করেছেন এবং আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাঁরা সেই সব কাজ করেছেন এবং তাঁকে ত্যাগ করেছেন। সদাপ্রভুর বাসজায়গা থেকে তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন এবং তাঁর দিকে পিছন ফিরিয়েছেন।
\v 7 তাঁরা বারান্দার দরজাগুলোও বন্ধ করে দিয়েছেন এবং বাতিগুলো নিভিয়ে দিয়েছেন। এই পবিত্র জায়গায় তাঁরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালান নি কিম্বা কোনো হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠান করেন নি।
\s5
\v 8 সেই জন্য যিহূদা ও যিরূশালেমের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধ নেমে এসেছে। সেই জন্য তোমরা নিজের চোখেই দেখতে পাচ্ছ যে, তিনি তাদের ভীষণ ভয়ের ও ঘৃণার পাত্র করেছেন; তাদের দেখে লোকেরা বিস্মিত হচ্ছে।
\v 9 এইজন্য আমাদের পূর্বপুরুষেরা খড়গ দ্বারা মারা পড়েছেন এবং আমাদের স্ত্রী, ছেলেরা ও মেয়েরা বন্দী হয়ে আছে।
\s5
\v 10 এখন হৃদয় থেকে চাই ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সঙ্গে একটা চুক্তি করতে যাতে তাঁর ভয়ংকর ক্রোধ আমাদের উপর থেকে দুরে চলে যায়।
\v 11 হে আমার সন্তানেরা, তোমরা এখন আর অলস হয়ে থেকো না, কারণ সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়াতে এবং তাঁর পরিচারক হিসাবে তাঁর কাজ করতে ও ধূপ জ্বালাতে তিনি তোমাদেরই বেছে নিয়েছেন।”
\s5
\v 12 তখন সেই সব লেবীয়েরা উঠে কাজে লাগলেন: কহাতীয়দের মধ্য থেকে অমাসয়ের ছেলে মাহৎ ও অসরিয়ের ছেলে যোয়েল; মরারিরদের মধ্য থেকে অব্দির ছেলে কীশ এবং যিহলিলেলের ছেলে অসরিয়; গের্শোনীয়দের মধ্য থেকে সিম্মের ছেলে যোয়াহ ও যোয়াহের ছেলে এদন;
\v 13 ইলীষাফণের বংশধরদের মধ্য থেকে শিম্রি ও যিয়ূয়েল; আসফের বংশধরদের মধ্য থেকে সখরিয় ও মত্তনিয়;
\v 14 হেমনের বংশধরদের মধ্য থেকে যিহূয়েল ও শিমিয়ি এবং যিদূথূনের বংশধরদের মধ্য থেকে শময়িয় ও উষীয়েল।
\s5
\v 15 তাঁরা তাঁদের লেবীয় ভাইদের একত্রে জড়ো করলেন, সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিজেদের পবিত্র করলেন। তারপর সদাপ্রভুর কথামত রাজার আদেশ অনুযায়ী তাঁরা সদাপ্রভুর ঘর শুচি করবার জন্য ভিতরে গেলেন।
\v 16 যাজকেরা সেখানে যে সব অশুচি জিনিস সদাপ্রভুর গৃহে পেলেন সেগুলো সবই সদাপ্রভুর ঘরের উঠানে বের করে নিয়ে আসলেন। পরে লেবীয়রা সেগুলো বয়ে নিয়ে কিদ্রোণ উপত্যকায় গেল।
\v 17 আর তাঁরা প্রথম মাসের প্রথম দিনে সদাপ্রভুর ঘর শুচি করতে শুরু করলেন এবং মাসের আট দিনের দিন ঘরের বারান্দা পর্যন্ত আসলেন। আর আটদিনের মধ্যে তাঁরা সদাপ্রভুর ঘরটি শুচি করলেন এবং প্রথম মাসের ষোল দিনের দিন সেগুলি শেষ করলেন।
\s5
\v 18 তারপর তাঁরা রাজার বাড়িতে গিয়ে হিষ্কিয়ের কাছে বললেন, “আমরা সদাপ্রভুর সমস্ত ঘর হোম উৎসর্গের বেদী ও তার বাসন পত্র এবং দর্শন রুটি রাখবার টেবিল ও তার সব জিনিসপত্র সুদ্ধ সদাপ্রভুর ঘরটি শুচি করেছি।
\v 19 সদাপ্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত হয়ে রাজা আহস তাঁর রাজত্বের সময় যে সব জিনিস বাদ দিয়েছিলেন সেগুলো আমরা আবার ঠিক করে শুচি করে নিয়েছি। সেগুলি এখন সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদীর সামনে রয়েছে।”
\s5
\v 20 পরের দিন ভোরবেলায় রাজা হিষ্কিয় শহরের উঁচু পদের কর্মচারীদের জড়ো করলেন এবং তিনি সদাপ্রভুর গৃহে গেলেন।
\v 21 তাঁরা রাজ্যের জন্য, উপাসনা ঘরের জন্য ও যিহূদার লোকদের জন্য পাপের জন্য বলি উৎসর্গ হিসাবে সাতটা ষাঁড়, সাতটা ভেড়া, সাতটা ভেড়ার বাচ্চা ও সাতটা ছাগল নিয়ে আসলেন। আর পরে তিনি যাজকদের অর্থাৎ হারোণের বংশধরদের সদাপ্রভুর বেদীর উপর হোম উৎসর্গ করবার জন্য আদেশ দিলেন।
\s5
\v 22 সুতরাং যাজকেরা প্রথমে সেই ষাঁড়গুলো কেটে তাদের রক্ত নিয়ে বেদীর গায়ে ছিটিয়ে দিলেন; তারপর ভেড়াগুলো ও শেষে ভেড়ার বাচ্চাগুলো বলি দিয়ে সেগুলোর রক্তও বেদির উপর ছিটিয়ে দিলেন।
\v 23 তারপর যাজকেরা পাপের জন্য উৎসর্গের উদ্দেশ্যে ছাগলগুলো রাজা ও সব জনগনের সামনে আনলেন; তাঁরা সেগুলোর মাথার উপর হাত রাখলেন।
\v 24 এর পরে যাজক সেই ছাগলগুলো বলি দিলেন এবং সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের পাপ ঢাকা দেবার উদ্দেশ্যে বেদীর উপরে সেই রক্ত দিয়ে পাপের জন্য উৎসর্গের অনুষ্ঠান করলেন। সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের জন্য হোম উৎসর্গ ও পাপের জন্য উৎসর্গ করবার আদেশ রাজাই দিয়েছিলেন।
\s5
\v 25 আর তিনি রাজা দায়ূদ, তাঁর দর্শক গাদ এবং ভাববাদী নাথনের আদেশ অনুসারে রাজা হিষ্কিয় লেবীয়দের বললেন যেন তারা করতাল, বীণা ও নেবল নিয়ে সদাপ্রভুর ঘরে রাখলেন। কারণ সদাপ্রভু তাঁর ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে এই আদেশই দিয়েছিলেন।
\v 26 সেইজন্য লেবীয়েরা দায়ূদের বাজনাগুলো নিয়ে আর যাজকেরা তাঁদের তূরী হাতে নিয়ে গিয়ে দাঁড়ালেন।
\s5
\v 27 তারপর হিষ্কিয় বেদীর উপরে হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠানের আদেশ দিলেন। আর উৎসর্গের অনুষ্ঠান আরম্ভ হলে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে গানও আরম্ভ হল আর তার সঙ্গে ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের বাজনা ও তূরী বাজানো হল।
\v 28 আর গায়কেরা গান করতে ও তূরী বাদকেরা তূরী বাজাতে থাকল এবং সব লোক মাটিতে উপুড় হয়ে সদাপ্রভুকে আরাধনা করলো। হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই সবই চলতে থাকল।
\s5
\v 29 পরে হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠান শেষ হলে রাজা এবং তাঁর সাথীরা সকলে হাঁটু পেতে সদাপ্রভুকে প্রনাম করলেন।
\v 30 রাজা হিষ্কিয় ও তাঁর কর্মচারীরা দায়ূদের এবং দর্শক আসফের বাক্য দ্বারা গান দিয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে প্রশংসা করবার জন্য লেবীয়দের আদেশ দিলেন। তখন তারা খুশী হয়ে প্রশংসা গান করল এবং তারা মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে সদাপ্রভুকে প্রণাম করলো।
\s5
\v 31 তার পর হিষ্কিয় উত্তর দিয়ে বললেন, “এখন আপনারা সদাপ্রভুর কাছে নিজেদের দিয়ে দিয়েছেন। এখানে আপনারা এসে সদাপ্রভুর ঘরে পশু বলি ও ধন্যবাদ উৎসর্গের অনুষ্ঠানের জিনিস আনুন।” তখন লোকেরা পশু বলি ও ধন্যবাদ উত্সর্গের এবং যাদের হৃদয় চাইল তারা হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠানের জিনিসও আনল।
\s5
\v 32 লোকেরা হোম উৎসর্গের জন্য সত্তরটা ষাঁড়, একশোটা ভেড়া ও দু’শোটা ভেড়ার বাচ্চা নিয়ে আসল। এই সব ছিল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠানের জন্য।
\v 33 উৎসর্গের জন্য যে সব পশু পবিত্র করা হলো সেগুলোর সংখ্যা হল ছ’শো ষাঁড় ও তিন হাজার ভেড়া।
\s5
\v 34 কিন্তু যাজকদের সংখ্যা কম হওয়ায় তাঁরা সব হোম উৎসর্গের পশুর চামড়া ছাড়াতে পারলেন না; ফলে কাজ শেষ না হওয়া অবধি এবং অন্য যাজকেরা শুচি না হওয়া অবধি তাঁদের লেবীয় ভাইয়েরা তাঁদের কাজে সাহায্য করল, কারণ নিজেদের শুচি করবার জন্য যাজকদের থেকেও লেবীয়েরা আরও বেশী যত্নবান ছিল।
\s5
\v 35 আর মঙ্গলের জন্য উৎসর্গের পশুর চর্বি পোড়ানো অনুষ্ঠান ও হোম উৎসর্গের অনুষ্ঠান এবং তার সঙ্গেকার নৈবেদ্য উৎসর্গের অনুষ্ঠান নিয়ে অনেকগুলো উৎসর্গের অনুষ্ঠান হল। এইভাবে সদাপ্রভুর ঘরের সেবার কাজ সুন্দর ভাবে করা হল।
\v 36 আর ঈশ্বর তাঁর লোকদের জন্য এই সব কাজ খুব তাড়াতাড়ি করেছিলেন বলে হিষ্কিয় ও তাঁর সবলোকেরা আনন্দ করলেন ।
\s5
\c 30
\p
\v 1 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব পালন করবার জন্য লোকেরা যাতে যিরূশালেমে সদাপ্রভুর ঘরে আসে সেইজন্য হিষ্কিয় সমস্ত ইস্রায়েলে ও যিহূদায় খবর পাঠালেন এবং ইফ্রয়িম ও মনঃশি-গোষ্ঠীর লোকদের চিঠি লিখলেন।
\v 2 কারণ রাজা ও তাঁর কর্মচারীরা এবং যিরূশালেমের সমস্ত লোক ঠিক করল যে, দ্বিতীয় মাসে নিস্তারপর্ব পালন করা হবে।
\v 3 এর কারণ হল, অনেক যাজক নিজেদের শুচি করেন নি আর লোকেরাও এসে যিরূশালেমে জড়ো হয়নি বলে নিয়মিত সময়ে তারা এটা পালন করতে পারে নি।
\s5
\v 4 এই পরিকল্পনা রাজা ও সমস্ত জনতার কাছে উপযুক্ত বলে মনে হল।
\v 5 ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব পালন করবার জন্য যাতে সবাই যিরূশালেমে আসে সেইজন্য তারা বের্‌-শেবা থেকে দান পর্যন্ত ইস্রায়েলের সমস্ত জায়গায় লোক পাঠিয়ে ঘোষণা করল। অনেক বছর ধরে তারা নিয়ম অনুসারে অনেক লোক একত্র হয়ে এই পর্ব পালন করে নি।
\s5
\v 6 রাজার আদেশে রাজা ও তাঁর কর্মচারীদের কাছ থেকে চিঠি নিয়ে লোকেরা ইস্রায়েল ও যিহূদার সব জায়গায় গিয়ে এই কথা ঘোষণা করল, “হে ইস্রায়েলীয়েরা, আপনারা অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ফিরে আসুন, তাতে যাঁরা আসিরিয়ার রাজার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন তাঁদের কাছে, অর্থাৎ তোমাদের কাছে তিনিও ফিরে আসবেন।
\s5
\v 7 তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষ ও ভাইদের মত হয়ো না। কারণ নিজের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি অবিশ্বস্ত হয়েছিল বলে তিনি তাদের ভীষণ শাস্তি দিয়েছিলেন। তোমরা যেমন দেখতে পাচ্ছ।
\v 8 “তোমরা তোমাদের পূর্বপুরুষদের মত অবাধ্য হয়ো না কিন্তু সদাপ্রভুর হাতে নিজেদের দিয়ে দাও এবং তাঁর পবিত্র জায়গা এস, যে পবিত্র ঘরকে তিনি চিরকালের জন্য নিজের উদ্দেশ্যে আলাদা করেছেন এবং তোমাদের নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা কর যাতে তোমাদের উপর থেকে তাঁর সেই ভয়ংকর ক্রোধ চলে যায়।
\v 9 কারণ তোমরা যদি সদাপ্রভুর কাছে আবার ফিরে আস তবে তোমাদের ভাই ও ছেলেমেয়েদের যারা বন্দী করে রেখেছে তারা তাদের প্রতি দয়া দেখাবে। তখন তারা এই দেশে ফিরে আসতে পারবে, কারণ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু দয়াময় ও করুণাময়। তোমরা যদি তাঁর কাছে ফিরে আসো তাহলে তিনি তাঁর মুখ ফিরিয়ে রাখবেন না।”
\s5
\v 10 সংবাদ বহনকারীরা ইফ্রয়িম ও মনঃশির সমস্ত গ্রাম ও শহরে এবং সবূলূন পর্যন্ত গেল, কিন্তু সেখানকার লোকেরা তাদের প্রতি ঠাট্টা ও বিদ্রূপ করতে লাগল।
\v 11 তবুও আশের, মনঃশি ও সবূলূন গোষ্ঠীর কিছু লোক নিজেদের নম্র করে যিরূশালেমে এলো।
\v 12 ঈশ্বরের হাত যিহূদার লোকদের উপরে আসলো, তাই সদাপ্রভুর বাক্য অনুযায়ী রাজা ও তাঁর কর্মচারীদের আদেশ পালন করবার জন্য তিনি তাদের মন এক করলেন।
\s5
\v 13 দ্বিতীয় মাসে খামির বিহীন রুটির পর্ব পালন করবার জন্য অনেক লোক, এক মহাজনতা যিরূশালেমে জড়ো হল।
\v 14 আর পূজা করবার জন্য পশু উৎসর্গের যে সব বেদী এবং যে সব ধূপদানী যিরূশালেমে ছিল তারা সেগুলো নিয়ে কিদ্রোণ উপত্যকায় ফেলে দিল।
\v 15 তারা দ্বিতীয় মাসের চৌদ্দ দিনের দিন নিস্তারপর্বের ভেড়ার বাচ্চা বলি দিল। এতে যাজক ও লেবীয়েরা লজ্জা পেয়ে নিজেদের শুচি করলেন এবং সদাপ্রভুর ঘরে হোম বলির জিনিস নিয়ে আসলেন।
\s5
\v 16 তারপর ঈশ্বরের লোক মোশির ব্যবস্থা অনুযায়ী তাঁরা তাঁদের নির্দিষ্ট জায়গা গিয়ে দাঁড়ালেন। যাজকেরা লেবীয়দের হাত থেকে যে রক্ত পেয়েছিল তা নিয়ে ছিটিয়ে দিলেন।
\v 17 কারণ লোকদের মধ্যে অনেকে নিজেদের শুচি করেনি এমন লোক ছিল। সেইজন্য সব লোকদের হয়ে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবার জন্য নিস্তার পর্বের মেষের বাচ্চা লেবীয়দেরই বলি দিতে হয়েছিল।
\s5
\v 18 কারণ ইফ্রয়িম, মনঃশি, ইষাখর ও সবূলূন গোষ্ঠীর থেকে আসা অনেক লোক আবার নিজেদের শুচি করেনি, তবুও তারা নিয়মের বিরুদ্ধে নিস্তার পর্বের ভোজ খেয়েছিল। কিন্তু হিষ্কিয় তাদের জন্য প্রার্থনা করে বললেন, “মঙ্গলময় ঈশ্বর যেন সবাইকে ক্ষমা করেন
\v 19 যদিও উপাসনা ঘরের ব্যবস্থা অনুযায়ী তারা শুচি হয় নি তবুও যারা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ইচ্ছামত চলবার জন্য নিজেদের হৃদয় স্থির করেছে মঙ্গলময় ঈশ্বর সদাপ্রভু যেন তাদের ক্ষমা করেন।”
\v 20 সুতরাং সদাপ্রভু হিষ্কিয়ের প্রার্থনা শুনে লোকদের সুস্থ করলেন।
\s5
\v 21 এইভাবে যে সব ইস্রায়েলীয় যিরূশালেমে উপস্থিত হয়েছিল তারা খুব আনন্দের সঙ্গে সাত দিন ধরে খামির বিহীন রুটির পর্ব পালন করল; আর এদিকে লেবীয় ও যাজকেরা প্রতিদিন সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উচ্চস্বরে বাজনা বাজিয়ে প্রশংসা গান করলেন।
\v 22 সদাপ্রভুর সেবাকাজে যে সব লেবীয়েরা দক্ষ ছিল হিষ্কিয় তাদের উৎসাহমূলক কথা বললেন। এইভাবে তারা মঙ্গলার্থক বলি উৎসর্গের অনুষ্ঠান করে সাত দিন ধরে খাওয়া দাওয়া করল এবং তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর গৌরব করল।
\s5
\v 23 তারপর সভার সমস্ত লোক আরও সাত দিন সেই পর্ব পালন করবে বলে ঠিক করল; এবং আরও সাত দিন তারা আনন্দের সঙ্গে সেই পর্ব পালন করল।
\v 24 পরে যিহূদার রাজা হিষ্কিয় সভার সমস্ত লোকের উপহারের জন্য এক হাজার ষাঁড় ও সাত হাজার মেষ দিলেন আর উঁচু পদের কর্মচারীরা দিলেন এক হাজার ষাঁড় ও দশ হাজার ভেড়া । আর যাজকদের মধ্যে অনেকে নিজেদের শুচি করলেন।
\s5
\v 25 যিহূদার সব সমাজের লোকেরা, যাজকেরা, লেবীয়েরা, ইস্রায়েল থেকে আসা সব লোকেরা এবং ইস্রায়েল ও যিহূদায় বাসকারী যে বিদেশীরা এসেছিল তারা সবাই আনন্দ করল।
\v 26 এইভাবে যিরূশালেমে খুব আনন্দ হল; ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের ছেলে শলোমনের পরে যিরূশালেমে আর এইভাবে পর্ব পালন করা হয় নি।
\v 27 পরে যে লেবীয়েরা যাজক ছিলেন তাঁরা দাঁড়িয়ে লোকদের আশীর্বাদ করলেন, আর তাঁদের প্রার্থনা শুনা গেল, কারণ তাঁদের প্রার্থনা স্বর্গে তাঁর পবিত্র জায়গা পৌঁছেছিল।
\s5
\c 31
\p
\v 1 পর্বের সব কিছু শেষ হবার পরে সেখানে উপস্থিত ইস্রায়েলীয়েরা বের হয়ে যিহূদার শহরগুলোতে গিয়ে পূজার পাথরগুলো, আশেরা মূর্তিগুলো, পূজার উঁচু জায়গা ও বেদীগুলো একেবারে ধ্বংস করে দিল। তারা যিহূদা, বিন্যামীন, ইফ্রয়িম ও মনঃশি-গোষ্ঠীর সমস্ত এলাকায় একই কাজ করল যতক্ষণ না তারা এই সব ধ্বংস করলো। পরে ইস্রায়েলীয়েরা গ্রামে ও শহরে নিজের নিজের জায়গায় ফিরে গেল।
\s5
\v 2 আর হিস্কীয় উপাসনার জন্য হোম উৎসর্গ ও মঙ্গলের জন্য উৎসর্গের অনুষ্ঠান করবার জন্য, সেবা কাজের জন্য এবং ঈশ্বরের ঘরে ধন্যবাদ ও প্রশংসা গান করবার জন্য হিষ্কিয় যাজক ও লেবীয়দের প্রত্যেকের কাজ অনুসারে তাদের বিভিন্ন দলকে নিযুক্ত করলেন।
\v 3 সদাপ্রভুর ব্যবস্থায় যেমন লেখা আছে সেইমত সকাল ও সন্ধ্যার হোম উৎসর্গের জন্য এবং বিশ্রামবার, অমাবস্যা এবং নির্দিষ্ট পর্বের সময়কার হোম উৎসর্গের জন্য রাজা তাঁর নিজের সম্পত্তি থেকে দান করলেন।
\s5
\v 4 যাজক ও লেবীয়েরা যাতে সদাপ্রভুর ব্যবস্থা পালন করবার ব্যাপারে নিজেদের সম্পূর্ণভাবে মনোযোগী হতে পারেন সেইজন্য তাঁদের পাওনা অংশ দিতে তিনি যিরূশালেমে বসবাসকারী লোকদের আদেশ দিলেন।
\v 5 এই আদেশ বের হবার সঙ্গে সঙ্গে ইস্রায়েলীয়েরা তাদের ফসল, নতুন আংগুর রস, তেল ও মধুর প্রথম অংশ এবং ক্ষেতে আর যা কিছু জন্মায় তারও প্রথম অংশ প্রচুর পরিমাণে দান করল। এছাড়া তারা সব কিছুর দশ ভাগের একভাগ আনল এবং তা পরিমাণে অনেক হল।
\s5
\v 6 ইস্রায়েল ও যিহূদার যে সব লোক যিহূদার গ্রাম ও শহরগুলোতে বাস করত তারাও তাদের গরু, মেষ ও ছাগলের দশ ভাগের এক ভাগ আনল এবং তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আলাদা করে রাখা জিনিসের দশ ভাগের একভাগ এনে কতগুলো স্তূপ করল।
\v 7 তৃতীয় মাসে এই স্তূপ করতে শুরু করে তারা সপ্তম মাসে শেষ করল।
\v 8 হিষ্কিয় ও তাঁর নেতাবর্গ এসে সেই স্তূপগুলো দেখে সদাপ্রভুর গৌরব করলেন এবং তাঁর লোকেরা ইস্রায়েলীয়দের প্রশংসা করলেন।
\s5
\v 9 হিষ্কিয় সেই স্তূপগুলোর বিষয়ে যাজক এবং লেবীয়দের জিজ্ঞাসা করলেন।
\v 10 এতে সাদোকের বংশের অসরিয় নামে প্রধান যাজক উত্তর করে বললেন, “সদাপ্রভুর ঘরের জন্য লোকেরা যখন তাদের দান আনতে শুরু করল তখন থেকে আমরা যেমন যথেষ্ট খাবার খেয়েছি তেমনি বাড়তিও রয়েছে প্রচুর, কারণ সদাপ্রভু তাঁর লোকদের আশীর্বাদ করেছেন, তাই এই সমস্ত জিনিস প্রচুর বেঁচে গেছে।”
\v 11 পরে তখন হিষ্কিয় সদাপ্রভুর ঘরে কতগুলো ভাণ্ডার ঘর তৈরী করবার আদেশ দিলেন এবং সেগুলো তারা তৈরী করল।
\v 12 তারপর লোকেরা উপহার, সব জিনিসের দশ ভাগের এক ভাগ ও সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে আলাদা করে রাখা জিনিস বিশ্বস্তভাবে ভাণ্ডার ঘরে আনল। কনানিয় নামে একজন লেবীয় লোক তাদের উপরে ছিল এই সব জিনিসের দেখাশোনার ভার ও পরিচারক ছিল আর তাঁর ভাই শিমিয়ি তাঁর সাহায্যকারী পরিচারক ছিল।
\v 13 কনানিয় এবং তাঁর ভাই শিমিয়ির অধীনে রাজা হিষ্কিয় ও সদাপ্রভুর ঘরের প্রধান কর্মচারী অসরিয়ের আদেশে যিহীয়েল, অসসিয়, নহৎ, অসাহেল, যিরীমোৎ, যোষাবদ, ইলীয়েল, যিস্মখিয়, মাহৎ ও বনায় তদারক করবার ভার পেল।
\s5
\v 14 লোকদের নিজেদের ইচ্ছায় দেওয়া উৎসর্গের জিনিসের ভার ছিল পূর্ব দিকের দরজার রক্ষী লেবীয় যিম্নার ছেলে কোরির উপরে। সদাপ্রভুকে দেওয়া সব উপহার ও মহাপবিত্র জিনিস ভাগ বা বন্টন করে দেবার ভারও তাঁর উপর ছিল।
\v 15 যাজকদের শহর গুলোতে তাঁদের বিভিন্ন দল অনুসারে বয়সে ছোট বা বড় ভাই, দরকারী ও অদরকারী উভয়ই তাঁদের সংগী যাজকদের ঠিকভাবে ভাগ করে দেবার জন্য কোরির অধীনে এদন, বিন্যামীন, যেশূয়, শময়িয়, অমরিয় ও শখনিয় বিশ্বস্তভাবে কাজ করতেন।
\s5
\v 16 এছাড়া বিভিন্ন দল অনুসারে যে সব যাজকেরা নিজেদের প্রতিদিনের কর্তব্য পালন করবার জন্য সদাপ্রভুর ঘরে ঢুকতেন তাদের নিজেদের সেবা কাজের জন্য। এঁরা ছিলেন তিন বছর ও তার বেশী বয়সের পুরুষ যাঁদের নাম যাজকদের বংশ তালিকায় লেখা ছিল।
\s5
\v 17 বংশ তালিকায় যাজকদের নাম পিতৃপুরুষদের বংশ অনুসারে লেখা হয়েছিল এবং কুড়ি বছর ও তার বেশী বয়সের লেবীয়দের নাম দায়িত্ব ও বিভিন্ন দলের ভাগ অনুযায়ী লেখা হয়েছিল।
\v 18 এছাড়া তাঁদের স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েদের, অর্থাৎ গোটা সমাজের নাম বংশ তালিকা করা হয়েছিল, কারণ যাজক ও লেবীয়েরা বিশ্বস্তভাবে ঈশ্বরের কাজ অনুযায়ী পবিত্রতায় নিজেদের আলাদা করেছিলেন।
\v 19 কারণ যে যাজকেরা, অর্থাৎ হারোণের যে বংশধরেরা তাঁদের শহরের ও গ্রামের চারি পাশের ক্ষেতের জমিতে বাস করতেন তাঁদের খাবারের ভাগ দেবার জন্য প্রত্যেক শহরে কয়েকজন লোকের নাম উল্লেখ করে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তাঁরা প্রত্যেক যাজককে এবং বংশ তালিকায় লেখা প্রত্যেক লেবীয়কে খাবারের ভাগ দিতেন।
\s5
\v 20 হিষ্কিয় যিহূদার সব জায়গায় এই কাজ করলেন। তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা ভাল, ন্যায্য এবং সত্য তিনি তাই সব করলেন।
\v 21 ঈশ্বরের ইচ্ছামত চলবার জন্য ঈশ্বরের ঘরের কাজে, ব্যবস্থায় এবং আদেশ পালন করবার ব্যাপারে তিনি যে কাজই শুরু করলেন তা সমস্ত হৃদয় দিয়ে করলেন, আর সেইজন্য তিনি সফল হলেন।
\s5
\c 32
\s অশুরীয়দের পরাজয়।
\p
\v 1 এই সব কাজ বিশ্বস্তভাবে করবার পরে অশুর রাজা সনহেরীব এসে যিহূদা দেশে প্রবেশ করলেন এবং তিনি আক্রমণ করলেন। তিনি দেয়াল দিয়ে ঘেরা শহর ও গ্রামগুলো ঘেরাও করলেন, ভাবলেন সেগুলো নিজের জন্য জয় করে নেবেন।
\s5
\v 2 যখন হিষ্কিয় দেখলেন সন্‌হেরীব এসে গেছেন এবং যিরূশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবার জন্য তিনি মন স্থির করেছেন।
\v 3 তখন তিনি তাঁর সেনাপতিদের ও যোদ্ধাদের সঙ্গে পরামর্শ করে শহরের বাইরের ফোয়ারাগুলোর জল বন্ধ করে দেবেন বলে ঠিক করলেন। এটি করার জন্য তাঁরা তাঁকে সাহায্য করলেন।
\v 4 সুতরাং অনেক লোক জড়ো হয়ে সমস্ত ফোয়ারা ও দেশের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া জলের স্রোত বন্ধ করে দিল। তারা বলল, “অশুর রাজারা এসে কেন এত জল পাবে?”
\s5
\v 5 হিষ্কিয় দেয়ালের সব ভাঙ্গা অংশগুলো এবং পাহারা দেওয়ার ঘরগুলোর মত উঁচু করে সারাই করে নিজেকে শক্তিশালী করলেন। এছাড়া সেই দেয়ালের বাইরে তিনি আর একটা দেয়াল তৈরী করলেন এবং দায়ূদ শহরের মিল্লো আরও মজবুত করলেন এবং তিনি অনেক অস্ত্রশস্ত্র ও ঢাল তৈরী করলেন।
\s5
\v 6 তিনি লোকদের উপরে সেনাপতিদের নিযুক্ত করলেন এবং শহরের দরজার বড় জায়গায় তাদের জড়ো করে এই কথা বলে উৎসাহ দিলেন,
\v 7 “আপনারা শক্তিশালী হন এবং সাহস করুন। অশুর রাজা ও তাঁর বিরাট সৈন্যদল দেখে আপনারা ভয় পাবেন না অথবা হতাশ হবেন না, কারণ তাঁর সঙ্গে যারা আছে তাদের চেয়েও যিনি আমাদের সঙ্গে আছেন তিনি আরও মহান।
\v 8 তাঁর সঙ্গে রয়েছে কেবল মানুষের শক্তি, কিন্তু আমাদের সাহায্য করতে ও আমাদের পক্ষে যুদ্ধ করতে আমাদের সঙ্গে রয়েছেন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।” লোকেরা যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের কথা শুনে তাঁর কথার উপর নির্ভর করে নিজেরা সান্তনা পেল।
\s5
\v 9 পরে অশুর রাজা সনহেরীব তাঁর সমস্ত সৈন্যদলের সঙ্গে লাখীশ ঘেরাও করলেন এবং তাঁর কয়েকজন লোককে তিনি যিরূশালেমে পাঠিয়ে দিলেন। তিনি যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের কাছে এবং সেখানে উপস্থিত যিহূদার সমস্ত লোকদের কাছে এই কথা বলে পাঠালেন,
\v 10 অশুর রাজা সনহেরীব এই কথা বলছেন, ‘তোমরা কিসের উপর নির্ভর করে আছ যার দরুনযে কারণে তোমরা ঘেরাও হলেও যিরূশালেমেই থাকবে?
\s5
\v 11 খিদে ও পিপাসায় যাতে তোমরা মর তাই হিষ্কিয় এই কথা বলে কি তোমাদের ভুলাচ্ছে না?, তখন সে বলেন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুই অশুর রাজার হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করবেন।
\v 12 এই হিষ্কিয় নিজেই কি তার উঁচু জায়গা আর বেদীগুলো ধ্বংস করে দেয় নি? যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের কি সে আদেশ দেয়নি যে, মাত্র একটি বেদীর সামনেই তাদের উপাসনা করতে হবে এবং তার উপরই ধূপ জ্বালাতে হবে?
\s5
\v 13 “ ‘অন্যান্য দেশের সব জাতিদের প্রতি আমি ও আমার পূর্বপুরুষেরা যা করেছি তা কি তোমরা জান না? সেই দেশের সব জাতির দেবতারা কি আমার হাত থেকে তাদের দেশ উদ্ধার করতে পেরেছে?
\v 14 যে জাতিগুলোকে আমার পূর্বপুরুষেরা ধ্বংস করে ফেলেছেন তাদের দেবতাদের মধ্যে কে আমার হাত থেকে তার লোকদের উদ্ধার করতে পেরেছিল? তাহলে কি সম্ভব যে তোমাদের ঈশ্বর আমার হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করবে?
\v 15 এখন এইরূপে তোমরা হিষ্কিয়কে তোমাদের প্রতি ছলনা করতে ও ভুলিয়ে রাখতে দিয়ো না। তোমরা তাকে বিশ্বাস কোরো না, কারণ কোনো জাতির বা কোনো রাজ্যের দেবতা আমার কিম্বা আমার পূর্বপুরুষদের হাত থেকে তার লোকদের উদ্ধার করতে পারেনি। তাহলে কতটা নিশ্চিত যে, তোমাদের দেবতারা আমার হাত থেকে তোমাদের উদ্ধার করবে?।’ ”
\s5
\v 16 সনহেরীবের লোকেরা ঈশ্বর সদাপ্রভু ও তাঁর দাস হিষ্কিয়ের বিরুদ্ধে আরও অনেক কথা বলল।
\v 17 এছাড়া সন্‌হেরীব ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে অপমান করবার জন্য চিঠিতে তাঁর বিরুদ্ধে এই কথা লিখলেন, “অন্যান্য দেশের জাতিদের দেবতারা যেমন আমার হাত থেকে তাদের লোকদের উদ্ধার করে নি, ঠিক সেইভাবে হিষ্কিয়ের ঈশ্বরও আমার হাত থেকে তার লোকদের উদ্ধার করবে না।”
\s5
\v 18 তাঁরা ইব্রীয় ভাষায় চিৎকার করে ঐ কথা বলতে লাগল, যাতে যিরূশালেমের যে লোকেরা দেয়ালের উপরে ছিল তারা ভীষণ ভয় পায় আর যাতে তারা শহরটা দখল করে নিতে পারে।
\v 19 তারা মানুষের হাতে তৈরী পৃথিবীর সব জাতির দেবতাদের সম্বন্ধে যা বলেছিল যিরূশালেমের ঈশ্বরের বিষয়েও তাই বলল।
\s5
\v 20 সেইজন্য রাজা হিষ্কিয় ও আমোসের ছেলে ভাববাদী যিশাইয় প্রার্থনার মধ্য দিয়ে স্বর্গের ঈশ্বরের কাছে কান্নাকাটি করলেন।
\v 21 এতে সদাপ্রভু একজন স্বর্গদূতকে পাঠিয়ে দিলেন তিনি অশুর রাজার শিবিরের মধ্যে সমস্ত যোদ্ধা, নেতা ও সেনাপতিদের সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে ফেললেন। এতে সন্‌হেরীব লজ্জা পেয়ে নিজের দেশে ফিরে গেলেন। পরে তিনি তাঁর দেবতার মন্দিরে গেলে, তাঁর কয়েকজন ছেলে তাঁকে তরোয়াল দিয়ে মেরে ফেলল।
\s5
\v 22 এইভাবে সদাপ্রভু আসিরিয়ার রাজা সন্‌হেরীবের এবং অন্যান্য সকলের হাত থেকে হিষ্কিয়কে ও যিরূশালেমের বসবাসকারী লোকদের রক্ষা করলেনএবং তিনি সব দিক দিয়েই তাদের নিরাপদে রাখলেন।
\v 23 এর জন্য অনেকেই যিরূশালেমে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উপহার নিয়ে আসল এবং যিহূদার রাজা হিষ্কিয়ের জন্য দামী উপহার আনল। তাতে সেই সময় থেকে সমস্ত জাতির লোক তাঁকে খুব সম্মান ও উচ্চকৃত করতে লাগল।
\s হিষ্কিয়ের গর্ব, সফলতা ও মৃত্যু
\p
\s5
\v 24 সেই সময় হিষ্কিয় খুব অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হলেন। হিষ্কিয় সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন, আর সদাপ্রভু উত্তর দিলেন এবং তাঁকে একটা আশ্চর্য চিহ্ন দিলেন যে তিনি সুস্থ হবেন।
\v 25 কিন্তু হিষ্কিয়ের হৃদয়ে গর্ব দেখা দিল। তাঁর প্রতি যে রকম আশীর্বাদ করা হয়েছিল সেই অনুসারে তিনি কাজ করলেন না; এতে তাঁর উপর এবং যিহূদা ও যিরূশালেমের উপর সদাপ্রভুর ক্রোধ নেমে আসলো।
\v 26 তখন হিষ্কিয় তাঁর নিজের হৃদয়ের গর্বের জন্য নিজেকে নত করলেন এবং যিরূশালেমের বসবাসকারী লোকেরাও তাই করল। সেইজন্য হিষ্কিয়ের সময়ে সদাপ্রভুর ক্রোধ তাদের উপর নেমে আসল না।
\s5
\v 27 হিষ্কিয়ের অনেক ধন সম্পদ ও সম্মান ছিল। তাঁর নিজের জন্য সোনা রূপা, মণি মুক্তা, সুগন্ধি মশলা, ঢাল ও সমস্ত রকম দামী জিনিসপত্র রাখবার জন্য তিনি ধনভাণ্ডার তৈরী করালেন।
\v 28 এছাড়া তিনি শস্য, নতুন আঙুর রস ও তেল রাখবার জন্য ভাণ্ডার ঘর তৈরী করালেন এবং বিভিন্ন রকম পশু, ছাগল ও ভেড়ার থাকবার ঘরও তৈরী করালেন।
\v 29 তিনি নিজের জন্য অনেক গ্রাম ও শহর গড়ে তুললেন। তাঁর গরু, ছাগল ও ভেড়ার সংখ্যা অনেক হল, কারণ ঈশ্বর তাঁকে অনেক ধন সম্পদ দিয়েছিলেন।
\s5
\v 30 এই হিষ্কিয় গীহোন ফোয়ারার উপরের মুখ বন্ধ করে দায়ূদ শহরের পশ্চিম দিক দিয়ে জল নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি তাঁর সকল কাজেই সফল হয়েছিলেন।
\v 31 দেশে যে আশ্চর্য চিহ্ন দেখানো হয়েছিল সেই বিষয় জিজ্ঞাসা করবার জন্য যখন বাবিলের নেতারা দূত পাঠিয়েছিলেন তখন ঈশ্বর তাঁকে পরীক্ষা করবার জন্য তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন, যাতে তাঁর মনে কি আছে তা প্রকাশ পায়।
\s5
\v 32 হিষ্কিয়ের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা এবং তাঁর ঈশ্বরভক্তির কাজ সম্বন্ধে আমোসের ছেলে ভাববাদী যিশাইয়ের দর্শনের বইতে এবং “যিহূদা ও ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
\v 33 পরে হিষ্কিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়লেন এবং দায়ূদের বংশধরদের কবরের জায়গার উপরের জায়গায় তাঁকে কবর দেওয়া হল। তিনি মারা যাবার সময় যিহূদার সকলে এবং যিরূশালেমের লোকেরা তাঁকে সম্মান করলো। তাঁর ছেলে মনঃশি তাঁর জায়গায় রাজা হলেন।
\s5
\c 33
\s মনঃশি ও আমোন রাজার বিবরণ।
\p
\v 1 মনঃশির বয়স বারো বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং যিরূশালেমে পঞ্চান্ন বছর ধরে রাজত্ব করেছিলেন।
\v 2 তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা মন্দ তাই করতেন; সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে যে সব জাতিকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেন তাদের মত জঘন্য কাজ করতেন।
\v 3 তাঁর বাবা হিষ্কিয় পূজার যে সব উঁচু জায়গা ধ্বংস করেছিলেন তিনি সেগুলো আবার তৈরী করালেন। এছাড়া তিনি বাল দেবতার উদ্দেশ্যে কতগুলো বেদী ও আশেরা মূর্তি তৈরী করলেন। তিনি আকাশের সব তারাগুলোর সামনে মাথা নত করে পূজা ও সেবা করলেন।
\s5
\v 4 যে ঘরের বিষয় সদাপ্রভু বলেছিলেন, “আমার নাম চিরকাল যিরূশালেমে থাকবে,” সদাপ্রভুর সেই ঘরের মধ্যে তিনি কতগুলো বেদী তৈরী করলেন।
\v 5 সদাপ্রভুর ঘরের দু’টা উঠানেই তিনি আকাশের সমস্ত তারাগুলোর উদ্দেশ্যে যজ্ঞবেদী তৈরী করলেন।
\v 6 বিন্‌-হিন্নোম উপত্যকায় তাঁর নিজের ছেলেদের তিনি আগুনে পুড়িয়ে উৎসর্গ করলেন। যারা গণনা করে ভবিষ্যতের কথা বলে, মায়াবিদ্যা ও যাদুবিদ্যা ব্যবহার করে এবং মৃতদের সঙ্গে কথা বলে আর মন্দ আত্মাদের সঙ্গে যারা কথা বলে তিনি তাদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। সদাপ্রভুর চোখে অনেক মন্দ কাজ করে তিনি তাঁকে অসন্তুষ্ট করেছেন।
\s5
\v 7 তিনি নিজে যে মূর্তিটি খোদাই করে তৈরী করেছিলেন সেটা নিয়ে ঈশ্বরের ঘরে রাখলেন। ঈশ্বর যে ঘর সম্পর্কে দায়ূদ ও তাঁর ছেলে শলোমনকে বলেছিলেন, “এই ঘর ও ইস্রায়েলের সমস্ত গোষ্ঠীর মধ্য থেকে আমার বেছে নেওয়া এই যিরূশালেমে আমি চিরকালের জন্য আমার নামের বসবাসের জায়গা করব।
\v 8 আমি ইস্রায়েলীয়দের যে সব আদেশ দিয়েছি, অর্থাৎ মোশির মধ্য দিয়ে যে সব ব্যবস্থা, নিয়ম ও নির্দেশ দিয়েছি যদি কেবল তারা যত্নের সঙ্গে তা পালন করে তবে যে দেশ আমি তোমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছি সেখান থেকে তাদের আর দূর করে দেব না।”
\v 9 যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের মনঃশি বিপথে নিয়ে গেলেন; তার ফলে সদাপ্রভু ইস্রায়েলীয়দের সামনে থেকে যে সব জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছিলেন তাদের চেয়েও তারা আরও খারাপ কাজ করত।
\s5
\v 10 সদাপ্রভু মনঃশি ও তাঁর লোকদের কাছে কথা বলতেন কিন্তু তারা তাতে কান দিত না।
\v 11 কাজেই সদাপ্রভু তাদের বিরুদ্ধে অশুর রাজার সেনাপতিদের নিয়ে আসলেন। তারা মনঃশিকে বন্দী করে তাঁর হাতকড়ি পরিয়ে ব্রোঞ্জের শিকল দিয়ে বেঁধে তাঁকে বাবিলে নিয়ে গেল।
\s5
\v 12 যখন মনঃশি বিপদে পড়লেন, তিনি তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে দয়া ভিক্ষা করলেন এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের সামনে নিজেকে খুবই নত করলেন।
\v 13 এইভাবে তিনি প্রার্থনা করলে সদাপ্রভুর তাঁর প্রার্থনা গ্রাহ্য করলেন এবং তাঁর মিনতি শুনে তিনি তাঁকে যিরূশালেমে ও তাঁর রাজ্যে ফিরিয়ে আনলেন। তখন মনঃশি জানতে পারলেন যে, সদাপ্রভুই ঈশ্বর।
\s5
\v 14 পরে তিনি দায়ূদ শহরের বাইরের দেয়ালটা উপত্যকার মধ্যেকার গীহোন ফোয়ারা থেকে ওফল পাহাড় ঘিরে পশ্চিম দিকে মাছ দরজায় ঢুকবার পথ পর্যন্ত আরও উঁচু করে তৈরী করে শক্তিশালী করলেন। যিহূদার দেয়াল ঘেরা সমস্ত শহরগুলোতে তিনি সেনাপতিদের নিযুক্ত করলেন।
\v 15 তিনি সদাপ্রভুর ঘর থেকে বিজাতীয় দেবতাদের মূর্তিগুলোকে নিয়ে বাইরে ফেলে দিলেন। তিনি যিরূশালেমে এবং সদাপ্রভুর ঘরের পাহাড়ের উপরে যে সব বেদী তৈরী করেছিলেন সেগুলোও নিয়ে তিনি শহরের বাইরে ফেলে দিলেন।
\s5
\v 16 পরে তিনি সদাপ্রভুর বেদী পুনরায় ঠিক করলেন এবং তার উপরে মঙ্গলের জন্য বলি ও কৃতজ্ঞতা উৎসর্গের অনুষ্ঠান করলেন। তিনি যিহূদার লোকদের নির্দেশ দিলেন যেন তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা করে।
\v 17 অবশ্য লোকেরা তখনও পূজার উঁচু জায়গা গুলোতে যজ্ঞ করত, কিন্তু তারা শুধুমাত্র তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুরই উদ্দেশ্যেই করত।
\s5
\v 18 মনঃশির আরো অন্যান্য সব কাজের কথা, ঈশ্বরের কাছে তাঁর প্রার্থনা এবং ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নামে দর্শকেরা তাঁকে যে কথা বলেছিল, দেখো, তা সবই “ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
\v 19 তাঁর প্রার্থনার কথা, আর কেমন করে তাঁর মিনতি ঈশ্বরে গ্রাহ্য করলেন তার কথা, তাঁর সব পাপ ও অবিশ্বস্ততার কথা এবং তিনি নিজেকে ঈশ্বরের সামনে নত করবার আগে পূজার যে সব উঁচু জায়গা তৈরী করেছিলেন আর আশেরা মূর্তি ও খোদাই করা প্রতিমা স্থাপন করেছিলেন সেই সব কথা দর্শকদের বইয়ে লেখা আছে।
\v 20 পরে মনঃশি তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়েন। এবং তাঁর নিজের বাড়ীতেই তাঁকে লোকেরা কবর দিল। তাঁর জায়গায় তাঁর ছেলে আমোন রাজা হলেন।
\s যিহূদার রাজা আমোন
\p
\s5
\v 21 আমোনের বয়স বাইশ বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং যিরূশালেমে দু’বছর কাল রাজত্ব করেছিলেন।
\v 22 তিনি তাঁর বাবা মনঃশির মতই তিনি সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তাই করতেন। মনঃশি যে সব প্রতিমা খোদাই করে তৈরী করেছিলেন আমোন তাদের পূজা করতেন ও তাদের কাছে পশু উৎসর্গ করতেন।
\v 23 আর তিনি তাঁর বাবা মনঃশির মত সদাপ্রভুর সামনে নিজেকে নত করেন নি; পরিবর্তে, তিনি পাপ করতেই থাকলেন।
\s5
\v 24 আমোনের দাসেরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাঁর নিজের বাড়ীতেই তাঁকে খুন করল।
\v 25 কিন্তু যারা রাজা আমোনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল দেশের লোকেরা তাদের সবাইকে মেরে ফেলল এবং তারা তাঁর ছেলে যোশিয়কে তাঁর জায়গায় রাজা করল।
\s5
\c 34
\s যোশিয় রাজার বর্ণনা।
\p
\v 1 যোশিয়ের বয়স আট বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেন এবং তিনি একত্রিশ বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন।
\v 2 সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু ভাল তিনি তাই করতেন এবং তাঁর নিজের পূর্বপুরুষ দায়ূদের পথে চলতেন; সেই পথ থেকে ডানদিকে বা বাঁদিকে যেতেন না।
\v 3 তাঁর রাজত্বের অষ্টম বছরে তাঁর বয়স কম থাকলেও তিনি তাঁর পূর্বপুরুষ দায়ূদের ঈশ্বরের ইচ্ছামত চলবার জন্য মন স্থির করলেন। রাজত্বের বারো বছরের সময় তিনি পূজার সব উঁচু জায়গা , আশেরা মূর্তি, খোদাই করা প্রতিমা ও ছাঁচে ঢালা মূর্তি যিহূদা ও যিরূশালেম থেকে পরিষ্কার করতে লাগলেন।
\s5
\v 4 তাঁর উপস্থিতে লোকেরা বাল দেবতার বেদীগুলো ভেঙ্গে ফেলল; সেগুলোর উপরে যে সব ধূপদানী ছিল সেগুলো কেটে টুকরা টুকরা করল এবং আশেরা খুঁটি, খোদাই করা প্রতিমা ও ছাঁচে ঢালা মূর্তিগুলো ভেঙ্গে ধুলোয় পরিনত করল। যারা সেগুলোর কাছে পশু বলি দিত তাদের কবরের উপরে সেই ধুলাগুলি ছড়িয়ে দিল।
\v 5 তিনি বেদীগুলোর উপরে যাজকদের হাড় পোড়ালেন। এইভাবে তিনি যিহূদা ও যিরূশালেমকে শুচি করলেন।
\s5
\v 6 আর মনঃশি, ইফ্রয়িম ও শিমিয়োন এলাকার গ্রাম ও শহরগুলোতে এবং তার আশেপাশের ধ্বংসের জায়গা গুলোর মধ্যে, এমন কি, নপ্তালি এলাকা পর্যন্ত সব জায়গায় এইরকম করলেন।
\v 7 তিনি সমস্ত বেদী ও আশেরা খুঁটি ভেঙ্গে ফেললেন এবং খোদাই করা প্রতিমাগুলো ভেঙ্গে গুঁড়ো করে ফেললেন আর ইস্রায়েলের সমস্ত জায়গায় তিনি সব ধূপদানী কেটে টুকরা টুকরা করলেন। তারপর তিনি যিরূশালেমে ফিরে আসলেন।
\s5
\v 8 যোশিয়ের রাজত্বের আঠারো বছরের সময়ে তিনি দেশ ও উপাসনা ঘর শুচি করবার পর তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর ঘর সারাই করবার জন্য অৎসলিয়ের ছেলে শাফনকে, শহরের শাসনকর্তা মাসেয়কে ও যোয়াহসের ছেলে যোয়াহকে যিনি ইতিহাস লেখক এদেরকে পাঠিয়ে দিলেন।
\v 9 তাঁরা মহাযাজক হিল্কিয়ের কাছে গেলেন এবং ঈশ্বরের ঘরে যে সব রুপো আনা হয়েছিল, অর্থাৎ যে সব রুপো রক্ষী লেবীয়েরা, মনঃশি ও ইফ্রয়িম গোষ্ঠীর লোকদের এবং ইস্রায়েলের বাকী সমস্ত লোকদের কাছ থেকে এবং যিহূদা ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর সমস্ত লোকদের ও যিরূশালেমের বাসিন্দাদের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিল তা মহাযাজকের কাছে রেখে দিলেন।
\s5
\v 10 তারপর সেই টাকা সদাপ্রভুর ঘরের কাজের দেখাশুনা করবার জন্য যে লোকদের নিযুক্ত করা হয়েছিল তাদের হাতে দেওয়া হয়েছিল। তদারককারীরা উপাসনা ঘরটি সারাই ও আবার ঠিকঠাক করবার জন্য মিস্ত্রিদের সেই টাকা দিল,
\v 11 অর্থাৎ যিহূদার রাজারা যেসব ঘরগুলো ধ্বংস করেছিলেন সেগুলোর জন্য তারা ছুতার মিস্ত্রি ও রাজমিস্ত্রিদের টাকা দিল যাতে তারা সুন্দর করে কাটা পাথর এবং ঘর সারাই করার জন্য ও কড়িকাঠের জন্য কাঠ কিনতে পারে।
\s5
\v 12 সেই মিস্ত্রিরা বিশ্বস্তভাবে কাজ করেছিল। তাদের তদারক করবার জন্য তাদের উপরে ছিল যহৎ ও ওবদিয় নামে মরারি বংশের দু’জন লেবীয় এবং কহাৎ বংশের সখরিয় ও মশুল্লম আর যে লেবীয়েরা ভাল বাজনা বাজাতে পারত তারা সকলে মিস্ত্রিদের পরিচালনা করেছিল।
\v 13 এরা বাড়ি তৈরির জিনিসপত্র বইবার লোকদের উপর নিযুক্ত ছিল এবং বিভিন্ন কাজে নিযুক্ত কাজের লোকদের সকলের দেখাশুনা করত। লেবীয়দের মধ্যে কেউ কেউ ছিল লেখক, কর্মকর্তা ও রক্ষী।
\s5
\v 14 তাঁরা যখন সদাপ্রভুর ঘরে আনা টাকা বের করে আনছিলেন তখন যাজক হিল্কিয় মোশির দ্বারা দেওয়া সদাপ্রভুর ব্যবস্থার বইটি পেলেন।
\v 15 হিল্কিয় তখন রাজার লেখক শাফনকে বললেন, “সদাপ্রভুর ঘরে আমি এই ব্যবস্থার বইটি পেয়েছি।” এই বলে তিনি শাফনকে সেই বইটি দিলেন।
\v 16 শাফন সেই বইটি রাজার কাছে নিয়ে গিয়ে তাঁকে বললেন, “আপনার কর্মচারীদের উপর যে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁরা তা সবই করছেন।
\s5
\v 17 সদাপ্রভুর ঘরে যে টাকা পাওয়া গিয়েছিল তাঁরা তা বের করে তদারককারী ও কাজের লোকদের দিয়েছেন।”
\v 18 তখন লেখক শাফন রাজাকে জানালেন, “যাজক হিল্কিয় আমাকে একটি বই দিয়েছেন।” এই বলে শাফন তা রাজাকে পড়ে শোনালেন।
\v 19 রাজা ব্যবস্থার কথাগুলো যখন শুনলেন, তখন তিনি নিজের পোশাক ছিঁড়ে ফেললেন।
\s5
\v 20 তিনি হিল্কিয়, শাফনের ছেলে অহীকাম, মীখায়ের ছেলে অব্দোন, শাফন ও রাজার সাহায্যকারী অসায়কে এই আদেশ দিলেন এবং বললেন,
\v 21 আপনারা যান, “যে বইটি পাওয়া গেছে তার মধ্যে কি লেখা রয়েছে তা আপনারা গিয়ে আমার এবং ইস্রায়েল ও যিহূদার বাকী লোকদের জন্য সদাপ্রভুকে জিজ্ঞাসা করুন। আমাদের পূর্বপুরুষেরা সদাপ্রভুর বাক্য পালন করেন নি এবং এই বইয়ে যা লেখা আছে সেই অনুসারে কাজ করেন নি বলে সদাপ্রভুর ভীষণ ক্রোধ আমাদের উপরে পড়েছে।”
\s5
\v 22 তখন হিল্কিয় এবং রাজা যাদের হিল্কিয়ের সঙ্গে পাঠিয়েছিলেন তাঁরা এই বিষয়ে কথা বলবার জন্য মহিলা ভাববাদীনী হুল্‌দার কাছে গেলেন। হুল্‌দা ছিলেন কাপড় চোপড় রক্ষাকারী শল্লুমের স্ত্রী। শল্লুম ছিলেন হস্রহের নাতি, অর্থাৎ তোখতের ছেলে। তিনি যিরূশালেমের দ্বিতীয় অংশে বাস করতেন।
\s5
\v 23 হুল্‌দা তাঁদের বললেন, “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু আমাকে বলতে বললেন যে, আমার কাছে যিনি আপনাদের পাঠিয়েছেন তাঁকে গিয়ে বলুন,
\v 24 “ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু বলেছেন: দেখো, যিহূদার রাজার সামনে সেই বইয়ে লেখা যে সব অভিশাপের কথা পড়া হয়েছে সেই সব বিপদ আমি এই জায়গা ও সেখানে বসবাসকারী লোকদের উপরে আনব।
\v 25 কারণ তারা আমাকে ত্যাগ করেছে এবং অন্য দেব দেবতাদের উদ্দেশ্যে ধূপ জ্বালিয়েছে এবং তাদের হাতের তৈরী সমস্ত প্রতিমার দ্বারা আমাকে অসন্তুষ্ট করেছে। সেইজন্য এই জায়গার উপর আমার ক্রোধ আমি ঢেলে দেব এবং ক্রোধের সেই আগুন নিভানো যাবে না।”
\s5
\v 26 সদাপ্রভুর কাছে জিজ্ঞাসা করবার জন্য যিনি আপনাদের পাঠিয়েছেন সেই যিহূদার রাজাকে বলবেন যে, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভু এই বলছেন: যে বাক্য সম্পর্কে যে আপনারা শুনেছেন:
\v 27 কারণ ‘এই জায়গা ও সেখানে বসবাসকারী লোকদের বিরুদ্ধে আমি যা বলেছি তা শুনে তোমার হৃদয় তাতে উত্তর দিয়েছে এবং আমার সামনে তুমি নিজেকে নত করেছ ও তোমার পোশাক ছিঁড়ে আমার কাছে কান্নাকাটি করেছ। তুমি এই সব করেছ বলে আমি সদাপ্রভু তোমার প্রার্থনা শুনেছি। এটি হল সদাপ্রভুর ঘোষণা।
\v 28 দেখো, আমি শীঘ্রই তোমাকে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে নিয়ে যাব এবং তুমি শান্তিতে কবর পাবে। এই জায়গার উপরে এবং যারা এখানে বাস করে তাদের উপরে আমি যে সব বিপদ নিয়ে আসব তোমার চোখ তা দেখবে না।’” তাঁরা হুল্‌দার এর উত্তর নিয়ে রাজার কাছে ফিরে গেলেন।
\s5
\v 29 তখন রাজা বার্তাবাহক পাঠিয়ে যিহূদা ও যিরূশালেমের সমস্ত প্রাচীনদের ডেকে একত্র করলেন।
\v 30 তিনি যিহূদা ও যিরূশালেমের লোকদের, যাজক ও লেবীয়দের এবং সাধারণ ও গণ্যমান্য সমস্ত লোকদের নিয়ে সদাপ্রভুর ঘরে গেলেন। সদাপ্রভুর ঘরে ব্যবস্থার যে বইটি পাওয়া গিয়েছিল তার সমস্ত কথা তিনি তাদের কাছে পড়ে শোনালেন।
\s5
\v 31 রাজা তাঁর নিজের জায়গায় দাঁড়ালেন এবং সদাপ্রভুর পথে চলবার জন্য এবং সমস্ত মন ও প্রাণ দিয়ে তাঁর সব আদেশ, নিয়ম ও নির্দেশ মেনে চলবার জন্য, অর্থাৎ এই বইয়ের মধ্যে লেখা ব্যবস্থার সমস্ত কথা পালন করবার জন্য সদাপ্রভুর সামনে প্রতিজ্ঞা করলেন।
\v 32 তারপর তিনি যিরূশালেম ও বিন্যামীনের উপস্থিত সমস্ত লোককে সেই একই প্রতিজ্ঞা করালেন। যিরূশালেমের লোকেরা ঈশ্বরের, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করতে শুরু করল।
\s5
\v 33 যোশিয় ইস্রায়েলীয় লোকদের অধিকারে থাকা সমস্ত দেশ থেকে সব জঘন্য প্রতিমা দূর করে দিলেন এবং ইস্রায়েলে উপস্থিত সকলকে দিয়ে তিনি তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেবা করালেন। যতদিন তিনি বেঁচে ছিলেন ততদিন লোকেরা তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর পথে চলেছিল।
\s5
\c 35
\p
\v 1 পরে যোশিয় যিরূশালেমে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব পালন করলেন। এবং প্রথম মাসের চৌদ্দ দিনের দিন লোকেরা নিস্তারপর্বের মেষ বলি দিল।
\v 2 তিনি যাজকদের তাঁদের কাজে নিযুক্ত করলেন এবং সদাপ্রভুর ঘরের সেবা কাজে তাঁদের উৎসাহ করলেন।
\s5
\v 3 যে লেবীয়েরা, যাঁরা সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের শিক্ষা দিতেন এবং সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে যাঁদের আলাদা করা হয়েছিল তাঁদের তিনি বললেন, “ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের ছেলে শলোমন যে ঘর তৈরী করিয়েছিলেন সেখানে আপনারা পবিত্র সিন্দুকটি রাখুন। এটা আর আপনাদের কাঁধে করে বহন করতে হবে না। এখন আপনারা আপনাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ও তাঁর লোক ইস্রায়েলীয়দের সেবা করুন।
\v 4 ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদ ও তাঁর ছেলে শলোমনের লেখা নির্দেশ মত, আপনাদের নিজের নিজের বংশ অনুসারে নির্দিষ্ট দলে সেবা কাজের জন্য আপনারা নিজেদের প্রস্তুত করুন।
\s5
\v 5 তোমাদের ভাইদের অর্থাৎ প্রজাদের পিতৃপুরুষদের প্রত্যেকটি ভাগের জন্য কয়েকজন লেবীয়কে তাঁদের বংশ অনুসারে সেই ভাগের লোকদের সঙ্গে নিয়ে পবিত্র ঘরের উঠানে গিয়ে দাঁড়ান।
\v 6 আপনারা নিস্তারপর্বের মেষগুলো বলি দেবেন বলে নিজেদের শুচি করুন এবং মোশির মধ্য দিয়ে দেওয়া সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে নিজেদের ভাইয়েরা যাতে নিস্তারপর্ব পালন করতে পারে তার ব্যবস্থা করুন।”
\s5
\v 7 তারপর যোশিয় সেখানে উপস্থিত সমস্ত লোকদের জন্য নিস্তারপর্বের উৎসর্গের উদ্দেশ্যে ত্রিশ হাজার ছাগল ও মেষ বাচ্চা এবং তিন হাজার ষাঁড় দিলেন। এবং এগুলো সবই রাজার নিজের সম্পত্তি থেকে দেওয়া হল।
\v 8 তাঁর কর্মচারীরাও নিজের ইচ্ছায় লোকদের, যাজকদের ও লেবীয়দের দান করলেন। হিল্কিয়, সখরিয় ও যিহীয়েল নামে ঈশ্বরের ঘরের নেতারা নিস্তারপর্বের উৎসর্গের জন্য দু’হাজার ছ’শো ছাগল ও ভেড়া এবং তিনশো ষাঁড় যাজকদের দিলেন।
\v 9 কনানিয় এবং তার ভাইয়ের শময়িয় ও নথনেল, হশবিয়, যীয়ীয়েল ও যোষাবদ লেবীয়দের এই নেতারা নিস্তারপর্বের উৎসর্গের জন্য পাঁচ হাজার ছাগল ও মেষ এবং পাঁচশো ষাঁড় লেবীয়দের দিলেন।
\s5
\v 10 এইভাবে সেবা কাজের আয়োজন করা হল এবং রাজার আদেশ মত যাজকেরা নিজের নিজের জায়গায় আর লেবীয়েরা তাদের বিভিন্ন দল অনুযায়ী দাঁড়ালেন।
\v 11 লেবীয়েরা নিস্তারপর্বের ছাগল ও মেষ বলি করল এবং যাজকেরা তাদের হাত থেকে রক্ত নিয়ে তা ছিটিয়ে দিলেন, আর লেবীয়েরা পশুগুলোর চামড়া ছাড়াল।
\v 12 মোশির বইয়ে লেখা আদেশ অনুযায়ী সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবার জন্য তারা প্রত্যেক বংশের বিভিন্ন ভাগের লোকদের দেবার জন্য পোড়ানো উৎসর্গের জিনিস সরিয়ে রাখল। ষাঁড়ের বেলায়ও তারা তাই করল।
\s5
\v 13 নিয়ম অনুসারে তারা নিস্তারপর্বের মেষগুলি আগুনে ঝল্‌সে নিল এবং বলির মাংস ডেকচি, কড়াই ও হাঁড়িতে সিদ্ধ করল আর তাড়াতাড়ি করে লোকদের খেতে দিল।
\v 14 তারপর তারা নিজেদের ও যাজকদের জন্য আয়োজন করল, কারণ যাজকেরা, অর্থাৎ হারোণের বংশধরেরা উৎসর্গের জিনিস ও চর্বির অংশ পোড়ানোর জন্য রাত পর্যন্ত ব্যস্ত ছিল। সেইজন্য লেবীয়েরা নিজেদের ও হারোণ-বংশের যাজকদের জন্য ব্যবস্থা করল।
\s5
\v 15 দায়ূদ, আসফ, হেমন এদের ও রাজার দর্শক যিদূথূনের নির্দেশ অনুসারে আসফের বংশের গায়ক ও বাদকেরা নিজের নিজের জায়গায় ছিলেন। প্রত্যেকটি প্রবেশ দরজায় রক্ষী ছিল। তাদের কাজ ছেড়ে আসবার দরকার হয় নি, কারণ তাদের লেবীয় ভাইয়েরা তাদের জন্য আয়োজন করেছিল।
\s5
\v 16 এইভাবে রাজা যোশিয়ের আদেশ মত নিস্তারপর্ব পালনের জন্য এবং সদাপ্রভুর বেদীর উপরে হোমের অনুষ্ঠান করবার জন্য সেই দিন সদাপ্রভুর সমস্ত সেবা কাজের আয়োজন করা হল।
\v 17 যে সব ইস্রায়েলীয় উপস্থিত ছিল তারা সেই সময় নিস্তারপর্ব এবং সাত দিন ধরে খামির বিহীন রুটির পর্ব পালন করল।
\s5
\v 18 ভাববাদী শমূয়েলের পর থেকে আর কখনও ইস্রায়েলে এইভাবে নিস্তারপর্ব পালন করা হয়নি। যাজক, লেবীয় এবং যিরূশালেমের লোকদের সঙ্গে উপস্থিত যিহূদা ও ইস্রায়েলের সমস্ত লোকদের নিয়ে যোশিয় যেভাবে নিস্তারপর্ব পালন করেছিলেন ইস্রায়েলের রাজাদের মধ্যে আর কেউ তেমনভাবে পালন করেননি।
\v 19 যোশিয়ের রাজত্বের আঠারো বছরের সময় এই নিস্তারপর্ব পালন করা হয়েছিল।
\s যোশিয়ের মৃত্যু
\p
\s5
\v 20 যোশিয় মন্দিরের সব কাজ শেষ করবার পরে মিসরের রাজা নখো ফরাত (ইউফ্রেটিস) নদীর কাছে কর্কমীশে যুদ্ধ করতে গেলেন। তখন তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য যোশিয় বের হয়ে গেলেন।
\v 21 কিন্তু নখো রাজদূত পাঠিয়ে তাঁকে বললেন, “হে যিহূদার রাজা, আপনার সঙ্গে আমার কি করে হবে? আজ আমি যে আপনার সঙ্গে যুদ্ধ করতে আসছি তা নয়, কিন্তু আক্রমণ করছি সেই লোকদের যাদের সঙ্গে আমার যুদ্ধ বেধেছে। ঈশ্বর আমাকে তাড়াতাড়ি করতে আদেশ করেছেন, সুতরাং ঈশ্বর যিনি আমার সঙ্গে আছেন আপনি তাঁকে বাধা দেবেন না, নাহলে তিনি আপনাকে ধ্বংস করবেন।”
\s5
\v 22 যদিও যোশিয় ফিরে যেতে অস্বীকার করলেন, বরং তাঁর সঙ্গে যুদ্ধ করবার জন্য ভিন্ন পোশাকে নিজেকে সাজালেন। ঈশ্বরের আদেশ মত নখো তাঁকে যা বললেন তাতে তিনি না শুনে মগিদ্দোর সমভূমিতে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গেলেন।
\s5
\v 23 তখন ধনুকধারীরা রাজা যোশিয়কে তীর মারলে তিনি তাঁর দাসদের বললেন, “আমাকে নিয়ে যাও, আমি অনেক আঘাত পেয়েছি।”
\v 24 আর তাঁর দাসেরা তাঁর রথ থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে তাঁর অন্য রথটিতে রেখে তাঁকে যিরূশালেমে নিয়ে আসল, যেখানে তিনি মারা গেলেন। তাঁর পূর্বপুরুষদের কবরে তাঁকে কবর দেওয়া হল, আর যিহূদা ও যিরূশালেমের সব লোক তাঁর জন্য দুঃখী হলো।
\s5
\v 25 যোশিয়ের জন্য যিরমিয় বিলাপের গান রচনা করলেন এবং আজও সমস্ত গায়ক গায়িকারা যোশিয়ের বিষয়ে বিলাপ গান করে। ইস্রায়েলে এটা একটা চল্‌তি নিয়ম হয়ে গেল এবং দেখো, বিলাপ গানের বইয়ে তা লেখা হল।
\v 26 যোশিয়ের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা এবং সদাপ্রভুর আইন-কানুন অনুসারে তাঁর
\v 27 ঈশ্বরভক্তির সব কাজের কথা প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত আজও “ইস্রায়েল ও যিহূদার রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে।
\s5
\c 36
\s যিহোয়াহস প্রভৃতি চারি জন রাজার বিবরণ। যিরুশালেমের পতন।
\p
\v 1 পরে দেশের লোকেরা যোশিয়ের ছেলে যিহোয়াহসকে নিয়ে যিরূশালেমে তাঁর বাবার পরিবর্তে রাজা করল।
\v 2 যিহোয়াহস তেইশ বছর বয়সী ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং তিনি তিন মাস যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন।
\s5
\v 3 পরে মিসরের রাজা যিরূশালেমে তাঁকে সিংহাসন থেকে সরিয়ে দিয়ে যিহূদার উপরে প্রায় একশত রূপার তালন্ত ও এক তালন্ত সোনা জরিমানা করলেন।
\v 4 মিসরের রাজার এক ভাই ইলীয়াকীমকে যিহূদা ও যিরূশালেমের উপরে রাজা করলেন এবং ইলীয়াকীমের নাম বদলে যিহোয়াকীম রাখলেন। নখো তাঁর ভাই যিহোয়াহসকে ধরে মিসরে নিয়ে গেলেন।
\s যিহূদার রাজা যিহোয়াকীম
\p
\s5
\v 5 যিহোয়াকীমের পঁচিশ বছর বয়স ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং তিনি এগারো বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু খারাপ ছিল তিনি তা-ই করতেন।
\v 6 বাবিলের রাজা নবুখদ্‌নিৎসর তাঁকে আক্রমণ করে বাবিলে নিয়ে যাবার জন্য তাঁকে পিতলের শিকল দিয়ে বাঁধলেন।
\v 7 নবুখদ্‌নিৎসর সদাপ্রভুর ঘর থেকে কিছু জিনিসপত্রও বাবিলে নিয়ে গিয়ে এবং সেগুলি তাঁর প্রাসাদে রাখলেন।
\s5
\v 8 যিহোয়াকীমের অন্যান্য সমস্ত কাজের কথা এবং তিনি যে সব জঘন্য কাজ করেছিলেন ও তাঁর বিরুদ্ধে যা কিছু পাওয়া গিয়েছিল, দেখো, যে সব “ইস্রায়েল এবং যিহূদার রাজাদের ইতিহাস” নামে বইটিতে লেখা আছে। তাঁর পরে তাঁর ছেলে যিহোয়াখীন তাঁর পরিবর্তে রাজা হলেন।
\s5
\v 9 যিহোয়াখীন আট বছর বয়সী ছিলেন যখন তিনি রাজত্ব করতে শুরু করেছিলেন এবং তিনি তিন মাস দশ দিন যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন। সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু খারাপ তিনি তা-ই করতেন।
\v 10 বছরের শেষে রাজা নবূখদ্‌নিৎসর লোক পাঠিয়ে তাঁকে ও তাঁর সঙ্গে সদাপ্রভুর ঘরের মূল্যবান জিনিসপত্র বাবিলে নিয়ে গেলেন, আর যিহোয়াখীনের আত্মীয় সিদিকিয়কে যিহূদা ও যিরূশালেমের রাজা করলেন।
\s5
\v 11 সিদিকিয়র বয়স একুশ বছর ছিল যখন তিনি রাজত্ব শুরু করেছিলেন এবং এগারো বছর যিরূশালেমে রাজত্ব করেছিলেন।
\v 12 তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর চোখে যা কিছু মন্দ তিনি তা-ই করেছিলেন। তিনি ভাববাদী যিরমিয়, যিনি সদাপ্রভুর বাক্য বলতেন, তাঁর সামনে নিজেকে নত করলেন না।
\s5
\v 13 সিদিকিয় রাজা নবূখদ্‌নিৎসর, যিনি ঈশ্বরের নামে তাঁকে শপথ করিয়েছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে তিনি বিদ্রোহ করলেন। কিন্তু সিদিকিয় একগুঁয়েমি করে এবং নিজের হৃদয় কঠিন করে ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দিকে ফিরলেন না।
\v 14 এছাড়া যাজকদের সব নেতারা ও লোকেরা অন্যান্য জাতির জঘন্য অভ্যাস মত চলে ভীষণ পাপ করল এবং সদাপ্রভু যিরূশালেমে তাঁর যে ঘরকে নিজের উদ্দেশ্যে আলাদা করেছিলেন তা অশুচি করল।
\s5
\v 15 ইস্রায়েলীয়দের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু বার বার লোক পাঠিয়ে তাদের সাবধান করতেন, কারণ তাঁর লোকদের ও তাঁর বসবাসের জায়গার প্রতি তাঁর সহানুভুতি ছিল।
\v 16 কিন্তু ঈশ্বরের পাঠানো লোকদের তারা উপহাস করত, তাঁর কথা তুচ্ছ করত এবং তাঁর ভাববাদীদের ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত যতক্ষণ না সদাপ্রভুর ক্রোধ তাঁর লোকদের বিরুদ্ধে জেগে উঠল এবং যতক্ষণ না তাদের রক্ষা পাওয়ার আর কোনো পথ থাকলো না।
\s5
\v 17 তাদের বিরুদ্ধে সদাপ্রভু কলদীয়দের রাজাকে নিয়ে আসলেন। সেই রাজা উপাসনা-ঘরে তাদের যুবকদের খড়গ দিয়ে মেরে ফেললেন এবং যুবক-যুবতী, বুড়ো বা বয়স্ক কাউকেই দয়া দেখালেন না। ঈশ্বর তাদের সবাইকে সেই রাজার হাতে তুলে দিলেন।
\s5
\v 18 তিনি ঈশ্বরের ঘরের ছোট-বড় সব জিনিস ও ধন-দৌলত এবং রাজা ও তাঁর কর্মচারীদের ধন-দৌলত বাবিলে নিয়ে গেলেন।
\v 19 তাঁর লোকেরা ঈশ্বরের ঘর পুড়িয়ে দিল এবং যিরূশালেমের দেয়াল ভেঙ্গে ফেলল। তারা সেখানকার সব বড় বড় বাড়ী পুড়িয়ে দিল ও সমস্ত দামী জিনিস নষ্ট করে ফেলল।
\s5
\v 20 যারা মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল তাদের তিনি বাবিলে নিয়ে গেলেন, আর পারস্য-রাজ্য ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত তারা নবূখদ্‌নিৎসর ও তাঁর বংশধরদের দাস হয়ে থাকলো।
\v 21 এই সময় ইস্রায়েল দেশ তার বিশ্রাম-বছরের বিশ্রাম ভোগ করল। যিরমিয়ের মধ্য দিয়ে বলা সদাপ্রভুর বাক্যের সত্তর বছর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তাদের দেশের সমস্ত জমি এমনি পড়ে থেকে বিশ্রাম ভোগ করল।
\s5
\v 22 যিরমিয়ের মধ্য দিয়ে বলা সদাপ্রভুর বাক্য পূর্ণ হবার জন্য পারস্যের রাজা কোরসের রাজত্বের প্রথম বছরে সদাপ্রভু কোরসের হৃদয়ে এমন ইচ্ছা করলেন যার জন্য তিনি তাঁর সমস্ত রাজ্যে লিখিতভাবে এই ঘোষণা দিলেন l তিনি বললেন
\v 23 “পারস্যের রাজা কোরস এই কথা বলছেন, স্বর্গের ঈশ্বর সদাপ্রভু পৃথিবীর সমস্ত রাজ্য আমাকে দিয়েছেন এবং যিহূদা দেশের যিরূশালেমে তাঁর জন্য একটা ঘর তৈরী করবার জন্য আমাকে নিযুক্ত করেছেন। তাঁর লোকদের মধ্যে, অর্থাৎ তোমাদের মধ্যে যে চায় সে সেখানে যাক এবং তার ঈশ্বর সদাপ্রভু তার সঙ্গে থাকুন।”

443
15-EZR.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,443 @@
\id EZR
\ide UTF-8
\sts - Ezra
\h ইষ্রা৷
\toc1 ইষ্রা৷
\toc2 ইষ্রা৷
\toc3 ezr
\mt1 ইষ্রা৷
\s5
\c 1
\s যিহুদীদের নিজ দেশে ফিরে যাবার অনুমতি পত্র৷
\p
\v 1 পারস্যের রাজা কোরসের প্রথম বছরে সদাপ্রভুর যে কথা যিরমিয় বলেছিলেন তা সম্পূর্ণ করার জন্য সদাপ্রভু পারস্যের রাজা কোরসের মনকে চঞ্চল করলেন, তাই তিনি নিজের রাজ্যের সব জায়াগায় ঘোষণার মাধ্যমে এবং লিখিত বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই আদেশ দিলেন,
\v 2 পারস্যের রাজা কোরস এই কথা বলেন, “স্বর্গের ঈশ্বর সদাপ্রভু পৃথিবীর সব রাজ্য আমাকে দান করেছেন, আর তিনি যিহূদা দেশের যিরূশালেমে তাঁর জন্য এই বাড়ি বানানোর ভার আমাকে দিয়েছেন৷
\s5
\v 3 তোমাদের মধ্যে, তাঁর সমস্ত প্রজার মধ্যে, যে কেউ হোক, তার ঈশ্বর তার সঙ্গে সঙ্গে থাকুন; সে যিহূদা দেশের যিরূশালেমে যাক, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর যিরূশালেমের বাড়ি তৈরী করুক; তিনিই ঈশ্বর৷
\v 4 আর যে কোনো জায়গায় যে কেউ অবশিষ্ট আছে, বাস করছে, সেখানের লোকেরা ঈশ্বরের যিরূশালেমের বাড়ির জন্য নিজের ইচ্ছায় দেওয়া উপহার ছাড়াও রুপো, সোনা, অনান্য জিনিস ও পশু দিয়ে তার সাহায্য করুক৷”
\s5
\v 5 তখন যিহূদার ও বিন্যামীন বংশের পূর্বপুরুষদের প্রধানেরা এবং যাজকেরা ও লেবীয়েরা, আর সদাপ্রভুর বাড়ি তৈরী করতে যিরূশালেমে যাওয়ার জন্য যে লোকদের মনে ঈশ্বর প্রবল ইচ্ছা দিলেন, তাঁরা সবাই উঠল৷
\v 6 আর তাদের চারদিকের সব লোক নিজের ইচ্ছায় দেওয়া উপহার ছাড়াও রুপোর পাত্র, সোনা, অনান্য জিনিস এবং পশু ও দামী জিনিস তাদেরকে দিয়ে তাদের হাত সবল করলো৷
\s5
\v 7 আর নবূখদনিত্সর সদাপ্রভুর বাড়ির যে সব পাত্র যিরূশালেম থেকে এনে নিজের দেবতার ঘরে রেখেছিলেন, কোরস রাজা সেই সব বের করে দিলেন৷
\v 8 পারস্যের রাজা কোরস সেগুলি কোষাধ্যক্ষ মিত্রদাতের মাধ্যমে বের করে এনে, গণনা করে যিহূদার শাসনকর্তা শেশবসরের কাছে তা গুনে সমর্পণ করলেন৷
\s5
\v 9 সেই সব জিনিসের সংখা; ত্রিশটি সোনার থালা, হাজারটি রুপোর থালা, ঊনত্রিশটি ছুরি,
\v 10 ত্রিশটি সোনার বাটি, চারশো দশটি দ্বিতীয় শ্রেণীর বাটি এবং এক হাজার অন্যান্য পাত্র;
\v 11 মোট পাঁচ হাজার চারশো সোনার ও রুপোর পাত্র৷ বন্দীদেরকে বাবিল থেকে যিরূশালেমে আনার সময়ে শেশবসর এই সব জিনিস আনলেন৷
\s5
\c 2
\s ফিরে আসা যিহূদীদের প্রথম তালিকা৷
\p
\v 1 যাদের বন্দী করে রাখা হয়েছিল, বাবিলের রাজা নবূখদনিত্সর তাদেরকে বাবিলে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে প্রদেশের এই লোকেরা বন্দীদশা থেকে যাত্রা করে যিরূশালেমে ও যিহূদাতে নিজেদের নগরে ফিরে এল;
\v 2 এরা সরুব্বাবিল, যেশূয়, নহিমিয়, সরায়, রিয়েলার, মর্দখয়, বিলশন, মিস্পর, বিগরয়, রহূম ও বানা এনাদের সঙ্গে ফিরে এল৷ সেই ইস্রায়েল লোকেদের পুরুষের সংখ্যা;
\s5
\v 3 পরোশের বংশধরদের সংখ্যা দুই হাজার একশো বাহাত্তর জন৷
\v 4 শফটিয়ের বংশধরদের সংখ্যা তিনশো বাহাত্তর জন৷
\v 5 আরহের সন্তান সাতশো পঁচাত্তর জন৷
\v 6 বংশধরদের সংখ্যা যেশূয় ও যোয়াবের বংশধরদের মধ্যে পহৎ-মোয়াবের বংশধর দুই হাজার আটশো বারো জন৷
\s5
\v 7 বংশধরদের সংখ্যা এলমের বংশধর এক হাজার দুশো চুয়ান্ন জন৷
\v 8 বংশধরদের সংখ্যা সত্তূর বংশধর নশো পঁয়তাল্লিশ জন৷
\v 9 সক্কেয়ের বংশধর সাতশো ষাট জন৷
\v 10 বানির বংশধর ছয়শো বিয়াল্লিশ জন৷
\s5
\v 11 বেবয়ের বংশধর ছয়শো তেইশ জন৷
\v 12 অসগদের বংশধর এক হাজার দুশো বাইশ জন৷
\v 13 অদোনীকামের বংশধর ছয়শো ছেষট্টি জন৷
\v 14 বিগবয়ের বংশধর দুই হাজার ছাপ্পান্ন জন৷
\s5
\v 15 আদীনের বংশধর চারশো চুয়ান্ন জন৷
\v 16 যিহিষ্কিয়ের বংশের আটেরের বংশধর আটানব্বই জন৷
\v 17 বেৎসয়ের বংশধর তিনশো তেইশ জন৷
\v 18 যোরাহের বংশধর একশো বারো জন৷
\s5
\v 19 হশুমের বংশধর দুশো তেইশ জন৷
\v 20 গিব্বরের বংশধর পঁচানব্বই জন৷
\v 21 বৈৎলেহমের বংশধর একশো তেইশ জন৷
\v 22 নটোফার লোক ছাপ্পান্ন জন৷
\s5
\v 23 অনাথোতের লোক একশো আঠাশ জন৷
\v 24 অসমাবতের বংশধর বেয়াল্লিশ জন৷
\v 25 কিরিয়ৎ-আরীম, কফীরা ও বেরোতের বংশধর সাতশো তেতাল্লিশ জন৷
\v 26 রামার ও গেবার বংশধর ছয়শো একুশ জন৷
\s5
\v 27 মিকমসের লোক একশো বাইশ জন৷
\v 28 বৈথেলের ও অয়ের লোক দুশো তেইশ জন৷
\v 29 নবোর বংশধর বাহান্ন জন৷
\v 30 মগবীশের বংশধর একশো ছাপ্পান্ন জন৷
\s5
\v 31 অন্য এলমের বংশধর এক হাজার দুশো চুয়ান্ন জন৷
\v 32 হারীমের বংশধর তিনশো কুড়ি জন৷
\v 33 লোদ, হাদীদ ও ওনোর বংশধর সাতশো পঁচিশ জন৷
\s5
\v 34 যিরিহোর বংশধর তিনশো পঁয়তাল্লিশ জন৷
\v 35 সনায়ার বংশধর তিন হাজার ছয়শো ত্রিশ জন৷
\s5
\v 36 যাজকেরা; যেশূয় বংশের মধ্যে যিদয়িয়ের বংশধর নয়শো তেয়াত্তর জন৷
\v 37 ইম্মেরের বংশধর এক হাজার বাহান্ন জন৷
\v 38 পশহূরের বংশধর এক হাজার দুশো সাতচল্লিশ জন৷
\v 39 হারীমের বংশধর এক হাজার সতের জন৷
\s5
\v 40 লেবীয়েরা; হোদবিয়ের বংশধরদের মধ্যে যেশূয় ও কদমীয়েলের বংশধর চুয়াত্তর জন৷
\v 41 গায়কেরা; আসফের বংশধর একশো আঠাশ জন৷
\v 42 দারোয়ানদের বংশধররা; শল্লুমের বংশধর, আটেরের বংশধর, টলমোনের বংশধর, অক্কূবের বংশধর, হটীটার বংশধর, শোবয়ের বংশধর মোট একশো ঊনচল্লিশ জন৷
\s5
\v 43 নথীনীয়েরা (মন্দিরের কর্মচারীরা); সীহের বংশধর, হসূফার বংশধর, টব্বায়োতের বংশধর,
\v 44 কেরোসের বংশধর, সীয়ের বংশধর, পাদোনের বংশধর,
\v 45 লবানার বংশধর, হগাবের বংশধর, অক্কূবের বংশধর,
\v 46 হাগবের বংশধর, শময়লের বংশধর, হাননের সন্তান,
\s5
\v 47 গিদ্দেলের বংশধর, গহরের বংশধর, রায়ার বংশধর,
\v 48 রৎসীনের বংশধর, নকোদের বংশধর, গসমের বংশধর,
\v 49 উষের বংশধর, পাসেহের বংশধর, বেষয়ের বংশধর,
\v 50 অস্নার বংশধর, মিয়ূনীমের বংশধর, নফূষীমের বংশধর;
\s5
\v 51 বকবূকের বংশধর, হকূফার বংশধর, হর্হূরের বংশধর,
\v 52 বসলূতের বংশধর, মহীদার বংশধর, হর্শার বংশধর,
\v 53 বর্কোসের বংশধর, সীষরার বংশধর, তেমহের বংশধর,
\v 54 নৎসীহের বংশধর, হটীফার বংশধররা৷
\s5
\v 55 শলোমনের দাসদের বংশধররা; সোটয়ের বংশধর, হসসোফেরতের বংশধর, পরূদার বংশধর;
\v 56 যালার বংশধর, দর্কোনের বংশধর, গিদ্দেলের বংশধর,
\v 57 শফটিয়ের বংশধর, হটীলের বংশধর, পোখেরৎ-হৎসবায়ীমের বংশধর, আমীর বংশধররা৷
\v 58 নথীনীয়েরা (যারা মন্দিরের কাজ করত) ও শলোমনের দাসদের বংশধররা মোট তিনশো বিরানব্বই জন৷
\s5
\v 59 আর তেল-মেলহ, তেল-হর্শা, করূব, অদ্দন ও ইম্মের, এক সব জায়গা থেকে নিচে লেখা লোকেরা এল, কিন্তু তারা ইস্রায়েলীয় কি না, এ বিষয়ে তারা তাদের পূর্বপুরুষদের কিংবা বংশের প্রমাণ দিতে পারল না;
\v 60 দলায়ের বংশধর, টোবিয়ের বংশধর, নকোদের বংশধর ছয়শো বাহান্ন জন৷
\s5
\v 61 আর যাজক বংশধরদের মধ্যে হবায়ের বংশধর, হক্কোসের বংশধর ও বর্সিল্লয়ের বংশধরেরা; এই বর্সিল্লয় গিলিয়দীয় বর্সিল্লয়ের একটি মেয়েকে বিয়ে করে তাদের নামে পরিচিত হয়েছিল৷
\v 62 বংশাবলিতে নথিভুক্ত লোকেদের মধ্যে এরা নিজেদের বংশতালিকা খুঁজে পেল না, তাই তারা অশুচি বলে যাজকত্ব পদ হারালো৷
\v 63 আর শাসনকর্তা তাদেরকে বললেন, “যে পর্যন্ত ঊরীম ও তুম্মীমের অধিকারী একজন যাজক তৈরী না হয়, ততদিন তোমরা অতি পবিত্র জিনিস খাবে না৷”
\s5
\v 64 জড়ো হওয়া সমস্ত সমাজ মোট বিয়াল্লিশ হাজার তিনশো ষাট জন ছিল৷
\v 65 তাছাড়াও তাদের সাত হাজার তিনশো সাঁইত্রিশ জন দাসদাসী ছিল, আর তাদের মন্দিরে দুশো জন গায়ক ও গায়িকা ছিল৷
\s5
\v 66 তাদের সাতশো ছত্রিশটি ঘোড়া, দুশো পঁয়তাল্লিশটি ঘোড়ার রথ,
\v 67 চারশো পঁয়ত্রিশটি উট ও ছয় হাজার সাতশো কুড়িটি গাধা ছিল৷
\s5
\v 68 পরে পুর্বপুরুষদের বংশের প্রধানদের মধ্যে কতগুলি লোক সদাপ্রভুর যিরূশালেমের বাড়ির কাছে আসলে ঈশ্বরের সেই বাড়ি নিজের জায়গায় স্থাপন করার জন্য সম্পূর্ণ ইচ্ছায় দান করল৷
\v 69 তারা নিজেদের শক্তি অনুসারে ঐ কাজের ভান্ডারে একষট্টি হাজার অদর্কোন সোনা ও পাঁচ হাজার মানি রুপো ও যাজকদের জন্য একশোটি পোশাক দিল৷
\s5
\v 70 পরে যাজকেরা, লেবীয়েরা ও অন্যান্য লোকেরা এবং গায়কেরা, দারোয়ানরা ও নথীনীয়েরা নিজেদের নগরে এবং সমস্ত ইস্রায়েল নিজেদের নগরে বাস করল৷
\s5
\c 3
\s যজ্ঞবেদি স্থাপন৷ মন্দির নির্মানের কাজ শুরু৷
\p
\v 1 পরে সপ্তম মাস উপস্থিত হল, আর ইস্রায়েলের লোকেরা ওই সব নগরে ছিল; তখন লোকেরা একজন ব্যক্তির মত যিরূশালেমে জড়ো হল৷
\v 2 আর যোষাদকের ছেলে যেশূয় ও তাঁর যাজক ভাইয়েরা এবং শল্টীয়েলের ছেলে সরুব্বাবিল ও তাঁর ভাইয়েরা উঠে ঈশ্বরের লোক মোশির ব্যবস্থাতে লিখিত বিধি অনুসারে হোমীয় বলি উত্সর্গ করার জন্য ইস্রায়েলের ঈশ্বরের যজ্ঞবেদি তৈরী করলেন৷
\s5
\v 3 তাঁরা যজ্ঞবেদি নিজের জায়গায় স্থাপন করলেন, কারণ সেই সব দেশের লোককে তাঁরা ভয় পেলেন আর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তার উপরে হোমবলি অর্থাৎ সকালে ও সন্ধ্যা বেলায় হোমবলি দিলেন৷
\v 4 আর তাঁরা লিখিত বিধি অনুসারে কুটীর উত্সব পালন করলেন এবং প্রত্যেক দিনের উপযুক্ত সংখ্যা অনুসারে বিধিমতে প্রতি দিন হোমার্থক বলি উত্সর্গ করলেন৷
\v 5 তারপর থেকে তাঁরা নিয়মিত হোম, অমাবস্যায় এবং সদাপ্রভুর সমস্ত পবিত্র পর্বের উপহার এবং যারা ইচ্ছা করে সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিজের ইচ্ছায় দেওয়া উপহার আনতো, তাদের সবার উপহার উত্সর্গ করতে লাগলেন৷
\s5
\v 6 সপ্তম মাসের প্রথম দিনে তাঁরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোম করতে আরম্ভ করলেন, কিন্তু তখনও সদাপ্রভুর বাড়ির ভীত তৈরী হয় নি৷
\v 7 আর পারস্যের রাজা কোরস তাঁদেরকে যে অনুমতি দিয়েছিলেন, সেই অনুযায়ী তাঁরা রাজমিস্ত্রী ও ছুতোরদেরকে রুপো দিলেন এবং লিবানোন থেকে যাফোর সমুদ্র তীরে এরস কাঠ আনবার জন্য সীদোনীয় ও সোরীয়দেরকে খাদ্য, পানীয় দ্রব্য ও তেল দিলেন৷
\s5
\v 8 আর যিরূশালেমে ঈশ্বরের বাড়ির জায়গায় আসার পর দ্বিতীয় বছরের দ্বিতীয় মাসে শল্টীয়েলের ছেলে সরুব্বাবিল ও যোষাদকের ছেলে যেশূয় এবং তাঁদের অবশিষ্ট ভাইয়েরা, অর্থাৎ যাজকেরা ও লেবীয়েরা এবং বন্দীদশা থেকে যিরূশালেমে আসা সমস্ত লোক কাজ শুরু করলেন এবং সদাপ্রভুর বাড়ির কাজের দেখাশোনা করার জন্য কুড়ি বছর ও তার থেকে বেশি বয়সের লেবীয়দেরকে নিযুক্ত করলেন৷
\v 9 তখন যেশূয়, তাঁর ছেলেরা ও ভাইয়েরা, যিহূদার সন্তান কদমীয়েল ও তাঁর ছেলেরা ঈশ্বরের বাড়ির কর্মচারীদের কাজের দেখাশোনার জন্য জড়ো হয়ে দাঁড়ালেন; লেবীয় হেনাদনের সন্তানরা ও তাদের ছেলে ও ভাইয়েরা সেই রকম করলো৷
\s5
\v 10 আর রাজমিস্ত্রিরা যখন সদাপ্রভুর মন্দিরের ভীত স্থাপন করলো, তখন ইস্রায়েলের রাজা দায়ূদের আদেশ অনুসারে সদাপ্রভুর প্রশংসা করার জন্য নিজেদের পোশাক পরা যাজকেরা তূরী নিয়ে ও অসফের সন্তান লেবীয়েরা করতাল নিয়ে দাড়িয়ে থাকলো৷
\v 11 তারা সদাপ্রভুর প্রশংসা ও স্তব করে পালা অনুসারে এই গান করলো; “তিনি মঙ্গলময়, ইস্রায়েলের প্রতি তাঁর দয়া অনন্তকালস্থায়ী৷” আর সদাপ্রভুর বাড়ির ভীত স্থাপনের সময়ে সদাপ্রভুর প্রশংসা করতে করতে সমস্ত লোক খুব জোরে জয়ধ্বনি করল৷
\s5
\v 12 কিন্তু যাজকদের, লেবীযদের ও বাবার বংশের প্রধানদের মধ্যে অনেক লোক, অর্থাৎ যে বয়স্করা আগেকার বাড়ি দেখেছিলেন, তাঁদের চোখের সামনে যখন এই বাড়ির ভীত স্থাপন হল, তাঁরা চিত্কার করে কাঁদতে লাগলেন, আবার অনেকে আনন্দে চিত্কার করে জয়ধ্বনি করল৷
\v 13 তখন লোকেরা আনন্দের জন্য জয়ধ্বনির শব্দ ও জনতার কান্নার শব্দের মধ্যে পার্থক্য করতে পারল না, যেহেতু লোকেরা খুব জোরে জয়ধ্বনি করল এবং তার শব্দ দূর পর্যন্ত শোনা গেল৷
\s5
\c 4
\s শমরীয়দের মাধ্যমে মন্দির তৈরীর কাজে বাধা৷
\p
\v 1 পরে যিহূদার ও বিন্যামীনের শত্রুরা শুনলো যে, বন্দীদশা থেকে আসা লোকেরা ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে মন্দির তৈরী করছে৷
\v 2 তখন তারা সরুব্বাবিলের ও পূর্বপুরুষদের প্রধানদের কাছে এসে তাঁদেরকে বলল, “তোমাদের সঙ্গে আমরাও গাঁথি, কারণ তোমাদের মত আমরাও তোমাদের ঈশ্বরের খোঁজ করি; আর যে অশূরের রাজা এরস-হদ্দোন আমাদেরকে এখানে এনেছিলেন, তাঁর সময় থেকে আমরা তাঁরই উদ্দেশ্যে যজ্ঞ করে আসছি৷”
\s5
\v 3 কিন্তু সরুব্বাবিল, যেশূয় ও ইস্রায়েলের অন্য সবার পূর্বপুরুষদের প্রধানরা তাদেরকে বললেন, “আমাদের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে বাড়ি তৈরীর বিষয়ে আমাদের সঙ্গে তোমাদের সম্পর্ক নেই; কিন্তু কোরস রাজা, পারস্যের রাজা আমাদেরকে যা আদেশ করেছেন, সেই অনুসারে শুধুমাত্র আমরাই ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে তৈরী করবো৷”
\s5
\v 4 তখন দেশের লোকেরা যিহূদার লোকেদের হাত দুর্বল করতে ও তৈরীর কাজে তাদেরকে ভয় দেখাতে লাগলো
\v 5 এবং তাদের ইচ্ছা ব্যর্থ করার জন্য পারস্যের রাজা কোরসের সময় কালে ও পারস্যের রাজা দারিয়াবসের রাজত্বের ভার পাওয়া পর্যন্ত, টাকা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে পরামর্শদাতাদের নিযুক্ত করত৷
\s পারস্যের রাজার কাছে প্রার্থনা৷
\p
\v 6 অহশ্বেরশের রাজত্বের সময়, তাঁর রাজত্ব শুরুর সময়ে, লোকেরা যিহূদা ও যিরূশালেমে বসবাসকারীদের বিরুদ্ধে এক অভিযোগের চিঠি লিখল৷
\s5
\v 7 আর অর্তক্ষস্তের সময়ে বিশ্লম, মিত্রদাৎ, টাবেল ও তার অন্য সঙ্গীরা পারস্যের অর্তক্ষস্ত রাজার কাছে একটি চিঠি লিখল, তা অরামীয় অক্ষরে লিপিবদ্ধ ও অরামীয় ভাষা থেকে অনুবাদ করা হয়েছিল৷
\v 8 রহূম মন্ত্রী ও শিমশয় লেখক যিরূশালেমের বিরুদ্ধে অর্তক্ষস্ত রাজার কাছে এইভাবে চিঠি লিখল;
\s5
\v 9 “রহূম মন্ত্রী ও শিমশয় লেখক ও তাদের সঙ্গী অন্য সবাই, অর্থাৎ দীনীয়, অফর্সত্খীয় টর্পলীয়, অফর্সীয়, অর্কবীয়, বাবিলীয়, শূশনখীয়, দেহ্বীয় ও এলমীয় লোকেরা
\v 10 এবং মহান ও অভিজাত অস্নপ্পরের মাধ্যমে নিয়ে আসা ও শমরিয়ার নগরে এবং ফরাৎ নদীর পারের অন্য সব দেশে স্থাপিত অন্য সব জাতি ইত্যাদি৷”
\s5
\v 11 তারা অর্তক্ষস্ত রাজার কাছে সেই যে চিঠি পাঠালো, তার অনুলিপি এই; “ফরাৎ নদীর পারের আপনার দাসেরা ইত্যাদি৷
\v 12 মহারাজের কাছে এই প্রার্থনা; যিহূদীরা আপনার কাছে থেকে আমাদের এখানে যিরূশালেমে এসেছে; তারা সে বিদ্রোহী মন্দ নগর তৈরী করছে, প্রাচীর শেষ করেছে, ভীত মেরামত করেছে৷
\s5
\v 13 অতএব মহারাজের কাছে এই প্রার্থনা, যদি এই নগর তৈরী ও প্রাচীর স্থাপন হয়, তবে ঐ লোকেরা কর, রাজস্ব ও মাশুল আর দেবে না, এর ফলে রাজকোষের ক্ষতি হবে৷
\s5
\v 14 আমরা রাজবাড়ির নুন খেয়ে থাকি, অতএব মহারাজের অপমান দেখা আমাদের উচিত নয়, তাই লোক পাঠিয়ে মহারাজকে জানালাম৷
\v 15 আপনার পূর্বপুরুষদের ইতিহাস বইয়ে খুঁজে দেখা হোক; সেই ইতিহাস বই দেখে জানতে পারবেন, এই নগর বিদ্রোহী নগর এবং রাজাদের ও দেশের সবার জন্য ক্ষতিকর, আর এই নগরে অনেকদিন থেকে রাজবিদ্রোহ হচ্ছিল, তাই এই নগর বিনষ্ট হয়৷
\v 16 আমরা মহারাজকে জানালাম, যদি এই নগর তৈরী ও এর প্রাচীর স্থাপন হয়, তবে এর মাধ্যমে নদীর এ পারে আপনার কিছু অধিকার থাকবে না৷”
\s5
\v 17 রাজা রহূম মন্ত্রীকে, শিমশয় লেখককে ও শমরিয়ার অধিবাসী তাদের অন্য সঙ্গীদেরকে এবং নদীর পারের অন্য লোকদেরকে উত্তরে লিখলেন, “মঙ্গল হোক, ইত্যাদি৷
\v 18 তোমরা আমাদের কাছে যে চিঠি পাঠিয়েছ, তা আমার সামনে স্পষ্ট ভাবে পড়া হয়েছে৷
\v 19 আমার আদেশে খোঁজ করে জানা গেল, পূর্বকাল থেকে সেই নগর রাজদ্রোহ করছিল এবং সেখানে বিদ্রোহ ও বিক্ষোভ হত৷
\s5
\v 20 আর যিরূশালেমে পরাক্রমী রাজারাও ছিলেন, তাঁরা নদীর পারে সবার উপরে রাজত্ব করতেন এবং তাঁদেরকে কর, রাজস্ব ও মাশুল দেওয়া হত৷
\v 21 সেই লোকদেরকে থামতে এবং যতদিন না আমি কোন আদেশ দিই, ততদিন ঐ নগর তৈরী না করতে আদেশ কর৷
\v 22 সাবধান, এই কাজে তোমরা নরম হয়ো না; রাজকোষের ক্ষতিকর লোকসান কেন হবে?”
\s5
\v 23 পরে রহূমের, শিমশয় লেখকের ও তাদের সঙ্গী লোকেদের কাছে অর্তক্ষস্ত রাজার চিঠি পড়ার পরেই তারা খুব তাড়াতাড়ি যিরূশালেমে যিহূদীদের কাছে গিয়ে হাত ও বলপ্রয়োগ করে তাদের ঐ কাজ থামিয়ে দিল৷
\v 24 তখন যিরূশালেমে ঈশ্বরের বাড়ির কাজ থেমে গেল, পারস্যের রাজা দারিয়াবসের রাজত্বের দ্বিতীয় বছর পর্যন্ত তা থেমে থাকলো৷
\s5
\c 5
\s মন্দির তৈরীর কাজ শেষ হল৷
\p
\v 1 পরে হগয় ভাববাদী ও ইদ্দোরের ছেলে সখরিয়, এই দুজন ভাববাদী যিহূদা ও যিরূশালেমের যিহূদীদের কাছে ভাববাণী প্রচার করতে লাগলো; ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নামে তাদের কাছে ভাববাণী প্রচার করতে লাগলো৷
\v 2 তখন শল্টীয়েলের ছেলে সরুব্বাবিল ও যোষাদকের ছেলে যেশূয় উঠে যিরূশালেমে ঈশ্বরের বাড়ি তৈরী করতে শুরু করলেন, আর ঈশ্বরের ভাববাদীরা তাঁদের সঙ্গে থেকে তাঁদেরকে সাহায্য করতেন৷
\s5
\v 3 তখন নদীর পারের দেশের শাসনকর্তা তত্তনয়, শথরবোষণয় এবং তাঁদের সঙ্গীরা তাঁদের কাছে এসে বললেন, “এই বাড়ি তৈরীতে ও দেওয়াল তৈরী করতে তোমাদেরকে কে আদেশ দিয়েছে?”
\v 4 তারা আরও প্রশ্ন করলো, সেই গাঁথনিকারী লোকদের নাম কি?
\v 5 কিন্তু যিহূদীদের প্রাচীনদের প্রতি তাঁদের ঈশ্বরের দৃষ্টি ছিল, আর যতদিন দারিয়াবসের কাছে অনুরোধ করা না যায় এবং এই কাজের বিষয়ে পুনরায় চিঠি না আসে, ততদিন ওঁরা তাঁদের থামালেন না৷
\s5
\v 6 নদীর পারের দেশের শাসনকর্তা তত্তনয়, শথরবোষণয় এবং তাঁদের সঙ্গী অফর্সখীয়েরা দারিয়াবস রাজার কাছে যে চিঠি পাঠালেন, তার অনুলিপি এই৷
\v 7 তাঁরা এই সব কথা বলে একটি চিঠি পাঠালেন, “মহারাজ দারিয়াবসের সব কিছু ভাল হোক৷
\s5
\v 8 মহারাজের কাছে আমাদের এই অনুরোধ, আমরা যিহূদা প্রদেশে মহান ঈশ্বরের বাড়িতে গিয়েছিলাম, তা অনেক বড় পাথর দিয়ে তৈরী এবং তার দেওয়ালে কারুকার্য কাঠ বসানো হচ্ছে; আর এই কাজ যত্ন সহকারে চলছে ও তারা ভালো ভাবে তা করছে৷
\v 9 আমরা সেই প্রাচীনদের জিজ্ঞাসা করলাম, তাদেরকে এই কথা বললাম, ‘এই বাড়ি তৈরী ও দেওয়াল গাঁথতে তোমাদেরকে কে আদেশ দিয়েছে?
\v 10 আর আমরা আপনাকে জানানোর জন্য তাদের প্রধানদের নাম লিখে নেবার জন্য তাদের নামও জিজ্ঞাসা করলাম৷
\s5
\v 11 তারা আমাদেরকে এই উত্তর দিল, ‘যিনি স্বর্গের ও পৃথিবীর ঈশ্বর, আমরা তাঁরই দাস; আর এই যে বাড়ি তৈরী করছি, এটা অনেক বছর আগে তৈরী হয়েছিল, ইস্রায়েলের একজন মহান রাজা তা তৈরী ও সমাপ্ত করেছিলেন৷
\s5
\v 12 পরে আমাদের পূর্বপুরুষেরা স্বর্গের ঈশ্বরকে অসন্তুষ্ট করায় তিনি তাদেরকে বাবিলের রাজা কলদীয় নবূখদনিত্সরের হাতে সমর্পণ করেন; তিনি এই বাড়ি ধ্বংস করেন এবং লোকদেরকে বাবিলে নিয়ে যান৷
\v 13 কিন্তু বাবিলের রাজা কোরসের প্রথম বছরে কোরস রাজা ঈশ্বরের এই বাড়ি তৈরী করতে আদেশ দিলেন৷
\s5
\v 14 আর নবূখদনিত্সর ঈশ্বরের বাড়ির যে সব সোনার ও রুপোর পাত্র যিরূশালেমের মন্দির থেকে নিয়ে গিয়ে বাবিলের মন্দিরে রেখেছিলেন, সেই সব পাত্র কোরস রাজা বাবিলের মন্দির থেকে বের করে তাঁর নিযুক্ত শেশবসর নামে শাসনকর্তার হাতে সমর্পণ করলেন’
\v 15 এবং তাঁকে বললেন, ‘তুমি এই সব পাত্র যিরূশালেমের মন্দিরে নিয়ে গিয়ে সেখানে রাখো এবং ঈশ্বরের বাড়ি নিজের জায়গায় তৈরী হোক৷’
\s5
\v 16 তারপর সেই শেশবসর এসে যিরূশালেমে ঈশ্বরের বাড়ির ভীত স্থাপন করলেন; তখন থেকে এখন পর্যন্ত এর গাঁথনি হচ্ছে, কিন্তু শেষ হয় নি৷
\s5
\v 17 অতএব এখন যদি মহারাজের ভালো মনে হয়, তবে কোরস রাজা যিরূশালেমে ঈশ্বরের বাড়ি তৈরী করার আদেশ দিয়েছিলেন কিনা, তা মহারাজের ঐ বাবিলের রাজস্য নথিপত্র খোঁজ করা হোক; পরে মহারাজ এ বিষয়ে আমাদের কাছে আপনার ইচ্ছা বলে পাঠাবেন৷”
\s5
\c 6
\p
\v 1 তখন দারিয়াবস রাজা আদেশ করলে বাবিলের নথিপত্র রাখার জায়গায় খোঁজ করে দেখল৷
\v 2 পরে মাদীয় প্রদেশের অকমখা নাম রাজপুরীতে একটি বই (স্ক্রল বা গুটানো বই) পাওয়া গেল; তার মধ্যে স্মরনীয় হিসাবে এই কথা লেখা ছিল,
\s5
\v 3 “কোরস রাজার প্রথম বছরে কোরস রাজা যিরূশালেমে ঈশ্বরের বাড়ির বিষয়ে এই আদেশ করলেন, সেই বাড়ি যজ্ঞ-স্থান বলে তৈরী হোক ও তার ভীত মজবুত ভাবে স্থাপন করা হোক; তা ষাট হাত লম্বা ও ষাট হাত চওড়া হবে৷
\v 4 সেটি তিনটি সারি করে বড় পাথরে ও একটি সারি করে নূতন কড়িকাঠে গাঁথা হোক এবং রাজবাড়ি থেকে তার খরচ দেওয়া হোক৷
\v 5 আর ঈশ্বরের বাড়ির যে সব সোনা ও রুপোর পাত্র নবূখদনিত্সর যিরূশালেমের মন্দির থেকে নিয়ে বাবিলে রেখেছিলেন, সে সব ফিরিয়ে দেওয়া যাক এবং প্রত্যেক পাত্র যিরূশালেমের মন্দিরে নিজের জায়গায় রাখা হোক, তা ঈশ্বরের গৃহে রাখতে হবে৷
\s5
\v 6 অতএব নদীর পারের দেশের শাসনকর্তা তত্তনয়, শথর-বোষণয় ও নদীর পারের তোমাদের সঙ্গী অফর্সখীয়েরা, তোমরা এখন সেখান থেকে দূরে থাক৷
\v 7 ঈশ্বরের সেই বাড়ির কাজ হতে দাও; যিহূদীদের শাসনকর্তা ও যিহূদীদের প্রাচীনেরা ঈশ্বরের সেই বাড়ি তার জায়গায় তৈরী করুক৷
\s5
\v 8 আর ঈশ্বরের সেই বাড়ির গাঁথনির জন্য তোমরা যিহূদী প্রাচীনদের কিভাবে সাহায্য করবে, আমি সেই বিষয়ে আদেশ দিচ্ছি; তাদের যেন বাধা না হয়, তাই রাজার সম্পত্তি, অর্থাৎ নদীর পারের রাজকর থেকে যত্ন করে সেই লোকদেরকে প্রয়োজন অনুযায়ী টাকা দেওয়া হোক৷
\v 9 আর তাদের প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র অর্থাৎ স্বর্গের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে হোমের জন্য যুবক ষাঁড়, ভেড়া ও ভেড়ার বাচ্ছা এবং গম, লবণ, আঙ্গুর রস ও তেল যিরূশালেমে যাজকদের প্রয়োজন অনুসারে বিনা বাধায় প্রত্যেক দিন তাদেরকে দেওয়া হোক,
\v 10 যেন তারা স্বর্গের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে সুন্দর উপহার উত্সর্গ করে এবং রাজার ও তাঁর ছেলেদের জীবনের জন্য প্রার্থনা করে৷
\s5
\v 11 আমি আরও আদেশ দিলাম, যে কেউ এই কথা অমান্য করবে, তার বাড়ি থেকে একটি কড়িকাঠ বের করে এনে সেই কাঠে তাকে তুলে টাঙ্গাতে হবে এবং সেই দোষের জন্য তার বাড়ি সারের ঢিবি করা হবে৷
\v 12 আর যে কোন রাজা কিংবা প্রজা আদেশের অমান্য করে সেই যিরূশালেমে ঈশ্বরের গৃহ বিনাশ করতে হাত লাগাবে, ঈশ্বর যিনি সেই জায়গায় নিজের নাম স্থাপন করেছেন, তিনি তাকে বিনষ্ট করবেন৷ আমি দারিয়াবস আদেশ করলাম এটা যত্নের সঙ্গে সমাপ্ত করা হোক৷”
\s5
\v 13 তখন নদীর পারের দেশের শাসনকর্তা তত্তনয়, শথর-বোষণয় ও তাদের সঙ্গীরা যত্নের সঙ্গে দারিয়াবস রাজার পাঠানো আদেশ অনুসারে কাজ করলেন৷
\v 14 আর যিহূদীদের প্রাচীনেরা গাঁথনি করে হগয় ভাববাদীর ও ইদ্দোর ছেলে সখরিয়ের ভাববাণীর মাধ্যমে সফল হলেন এবং তাঁরা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের আদেশ অনুসারে ও পারস্যের রাজা কোরসের, দারিয়াবসের ও অর্তক্ষস্তের আদেশ অনুসারে গাঁথনি করে কাজ শেষ করলেন৷
\v 15 দারিয়াবস রাজার রাজত্বের ষষ্ঠ বছরে অদর মাসের তৃতীয় দিনে বাড়ির কাজ শেষ হল৷
\s5
\v 16 পরে ইস্রায়েল সন্তানরা, যাজকেরা, লেবীয়েরা ও বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা লোকেদের বাকি লোকেরা আনন্দে ঈশ্বরের সেই বাড়ি প্রতিষ্ঠা করল৷
\v 17 আর ঈশ্বরের সেই বাড়ি প্রতিষ্ঠার সময়ে একশো ষাঁড়, দুশো ভেড়া, চারশো ভেড়ার বাচ্ছা এবং সমস্ত ইস্রায়েলের জন্য পাপার্থক বলি হিসাবে ইস্রায়েলের বংশের সংখ্যা অনুসারে বারোটি ছাগল উত্সর্গ করল৷
\v 18 আর যিরূশালেমে ঈশ্বরের সেবা কাজের জন্য যাজকদেরকে তাদের বিভাগ অনুসারে ও লেবীয়দেরকে তাদের পালা অনুসারে নিযুক্ত করা হল; যেমন মোশির বইয়ে লেখা আছে৷
\s5
\v 19 পরে প্রথম মাসের চৌদ্দ দিনে বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা লোকেরা নিস্তারপর্ব পালন করল৷
\v 20 কারণ যাজকেরা ও লেবীয়েরা নিজেদেরকে শুচি করেছিল; তারা সকলেই শুচি হয়েছিল এবং বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা সমস্ত লোকের জন্য, তাদের যাজক ভাইয়েদের ও নিজেদের জন্য নিস্তারপর্বের বলিগুলি হত্যা করল৷
\s5
\v 21 আর বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা ইস্রায়েলের সন্তানরা এবং যত লোক ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর খোঁজে তাদের পক্ষ হয়ে দেশের লোকজন জাতির অশুচিতা থেকে নিজেদেরকে আলাদা করেছিল,
\v 22 সবাই সেটা খেলো এবং সাত দিন পর্যন্ত আনন্দে তাড়ীশূন্য রুটির উত্সব পালন করল, যেহেতু সদাপ্রভু তাদেরকে আনন্দিত করেছিলেন, আর ঈশ্বরের, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের, বাড়ির কাজে তাদের হাত মজবুত করার জন্য অশূরের রাজার হৃদয় তাদের দিকে ফিরিয়েছিলেন৷
\s5
\c 7
\s যিরূশালেমে ইষ্রার যাত্রা৷
\p
\v 1 সেইসব ঘটনার পরে পারস্যের রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বের সময় সরায়ের ছেলে ইষ্রা বাবিল থেকে যাত্রা করলেন৷ ওই সরায় অসরিয়ের সন্তান, অসরিয় হিল্কিয়ের সন্তান,
\v 2 হিল্কিয় শল্লুমের সন্তান, শল্লুম সাদোকের সন্তান, সাদোক অহীটূবের সন্তান,
\v 3 অহীটূব অমরিয়ের সন্তান, অমরিয় অসরিয়ের সন্তান, অসরিয় মরায়োতের সন্তান,
\v 4 মরায়োৎ সরহিয়ের সন্তান, সরহিয় উষির সন্তান, উষি বুক্কির সন্তান,
\v 5 বুক্কি অবীশূয়ের সন্তান, অবীশূয় পীনহসের সন্তান, পীনহস ইলিয়াসের সন্তান, ইলিয়াস প্রধান যাজক হারোণের সন্তান৷
\s5
\v 6 ইষ্রা মোশির ব্যবস্থায়, ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া ব্যবস্থায় অভিজ্ঞ, লেখক ছিলেন এবং তাঁর উপরে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর হাত থাকায় রাজা তাঁর সব অনুরোধ পূরণ করলেন৷
\v 7 অর্তক্ষস্ত রাজার সপ্তম বছরে ইস্রায়েল সন্তানদের, যাজকদের, লেবীয়দের, গায়কদের, দারোয়ানদের ও নথীনীয়দের (যারা মন্দিরের ভিতরে সেবা করত) বেশ কিছু লোক যিরূশালেমে গেল৷
\s5
\v 8 আর রাজার ঐ সপ্তম বছরের পঞ্চম মাসে ইষ্রা যিরূশালেমে এলেন৷
\v 9 প্রথম মাসের প্রথম দিনে বাবিল থেকে যাত্রা শুরু করেছিলেন এবং তাঁর উপরে তাঁর ঈশ্বরের মঙ্গলময় হাত থাকায় তিনি পঞ্চম মাসের প্রথম দিনে যিরূশালেমে উপস্থিত হলেন৷
\v 10 কারণ সদাপ্রভুর ব্যবস্থা অনুশীলন ও পালন করতে এবং ইস্রায়েলের বিধি ও শাসন শিক্ষা দিতে ইষ্রা নিজের হৃদয়কে তৈরী করেছিলেন৷
\s5
\v 11 অর্তক্ষস্ত রাজা যে চিঠি ইষ্রা যাজককে সেই লিপিকারকে, যিনি সদাপ্রভুর অদেশবাক্যের ও ইস্রায়েলের প্রতি তাঁর বিধির শিক্ষক ছিলেন তাঁকে দিয়েছিলেন, তার অনুলিপি এই,
\v 12 “রাজাদের রাজা অর্তক্ষস্ত, ইষ্রা যাজকের কাছে, যিনি স্বর্গের ঈশ্বরের ব্যবস্থার লিপিকার৷
\v 13 আমি এই আদেশ করছি, আমার রাজ্যের মধ্যে ইস্রায়েল জাতির যত লোক, তাদের যত যাজক ও লেবীয় যিরূশালেমে যেতে চায়, তারা তোমার সঙ্গে যাক৷
\s5
\v 14 কারণ তোমাকে রাজা ও তাঁর সাতজন মন্ত্রী পাঠালেন, যেন তোমার ঈশ্বরের যে ব্যবস্থা তোমার হাতে আছে, সেই অনুসারে তুমি যিহূদার ও যিশালেমের বিষয়ে খোঁজ করে দেখ,
\v 15 এবং যিরূশালেমে যিনি বাস করেন, ইস্রায়েলের সেই ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে রাজা ও তাঁর মন্ত্রীরা স্ব-ইচ্ছায় যে রুপো ও সোনা দিয়েছেন,
\v 16 আর তুমি বাবিলের সমস্ত প্রদেশের যত রুপো ও সোনা পেতে পার এবং লোকেরা যাজকেরা নিজের ঈশ্বরের যিরূশালেমের বাড়ির জন্য যা কিছু দান দিতে ইচ্ছা করে, সেই সব যেন সেখানে নিয়ে যাও৷
\s5
\v 17 অতএব সেই রুপো দিয়ে তুমি ষাঁড়, ভেড়া, ভেড়ার বাচ্ছা ও তাদের খাবার ও পেয় নৈবেদ্য যত্ন করে কিনে তোমদের ঈশ্বরের যিরূশালেমের বাড়ির যজ্ঞবেদির উপরে উত্সর্গ করবে৷
\v 18 আর অবশিষ্ট রূপো ও সোনা দিয়ে তোমার ও তোমার ভাইয়েদের মনে যা ভালো মনে হয়, সেটা নিজেদের ঈশ্বরের ইচ্ছা অনুসারে করবে৷
\s5
\v 19 আর তোমার ঈশ্বরের বাড়ির সেবার জন্য যে সব পাত্র তোমাকে দেওয়া হল, তা যিরূশালেমের ঈশ্বরের সামনে সমর্পণ করবে৷
\v 20 আর সেটা ছাড়া তোমার ঈশ্বরের বাড়ির জন্য যা কিছু প্রয়োজন, তা রাজভাণ্ডার থেকে নিয়ে খরচ করবে৷
\s5
\v 21 আর আমি, অর্তক্ষস্ত রাজা, আমি নদীর পারের সমস্ত কোষাধ্যক্ষকে আদেশ করছি, স্বর্গের ঈশ্বরের ব্যবস্থায় লিপিকার ইষ্রা যাজক তোমাদের কাছে যা যা চাইবেন, সে সমস্ত যেন যত্ন করে দেওয়া হয়,
\v 22 একশো তালন্ত পর্যন্ত রুপো, একশো কোর্ পর্যন্ত গম, একশো বাৎ পর্যন্ত তেল এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে লবন৷
\v 23 স্বর্গের ঈশ্বর যা আদেশ করেন, তা স্বর্গের ঈশ্বরের বাড়ির জন্য ঠিকঠাক ভাবে করা হোক; রাজার ও তাঁর ছেলেদের এবং রাজ্যের প্রতি কেন রাগ করবেন?
\s5
\v 24 আর তোমাদেরকে জানানো হচ্ছে যে, যাজকদের, লেবীয়দের, গায়কদের, দারোয়ানদের, নথীনীয়দের ও সেই ঈশ্বরের গৃহের কাজে নিযুক্ত অন্য লোকদের মধ্যে কারও কর কিংবা রাজস্ব কিংবা মাশুল গ্রহণ করা উচিত না৷
\s5
\v 25 আর হে ইষ্রা, তোমার ঈশ্বরের বিষয়ে যে জ্ঞান তোমার হাতে আছে, সেই অনুসারে নদীর পারের সব লোকের বিচার করার জন্য, যারা তোমার ঈশ্বরের ব্যবস্থা জানে, এমন শাসনকর্তা ও বিচারকর্তাদেরকে নিযুক্ত কর এবং যে তা না জানে, তোমরা তাকে শেখাও৷
\v 26 আর যে কেউ তোমার ঈশ্বরের ব্যবস্থা ও রাজার ব্যবস্থা পালন করতে না চায়, তাকে যত্ন সহকারে শাসন করা হোক, তার প্রাণদণ্ড, নির্বাসন, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত কিংবা কারাদণ্ড হোক৷”
\s ইষ্রার নিজের কথা৷
\p
\s5
\v 27 আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু ধন্য, কারণ তিনিই সদাপ্রভুর যিরূশালেমের গৃহের মহিমা করতে এমন ইচ্ছা রাজার হৃদয়ে দিলেন,
\v 28 এবং রাজার, তাঁর মন্ত্রীদের ও রাজার সকল পরাক্রমী শাসনকর্তাদের সামনে আমাকে দয়া পেতে সাহায্য করলেন৷ আর আমার উপরে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর হাত থাকায় আমি সবল হলাম এবং আমার সঙ্গে যাবার জন্য ইস্রায়েলের মধ্যে থেকে প্রধান লোকেদেরকে জড়ো করলাম৷
\s5
\c 8
\p
\v 1 অর্তক্ষস্ত রাজার রাজত্বকালে তাদের যে পূর্বপুরুষদের প্রধানেরা আমার সঙ্গে বাবিল থেকে গেল, তাদের নাম ও বংশাবলি এই৷
\v 2 পীনহসের সন্তানদের মধ্যে গের্শোম, ঈথামরের সন্তানদের মধ্যে দানিয়েল, দায়ূদের সন্তানদের মধ্যে হটূশ৷
\v 3 শখনিয়ের সন্তানদের মধ্যে, পরোশের সন্তানদের মধ্যে সখরিয় এবং বংশাবলিতে নির্দিষ্ট তার সঙ্গী একশো পঞ্চাশ জন পুরুষ৷
\s5
\v 4 পহৎ-মোয়াবের সন্তানদের মধ্যে সরহিয়ের ছেলে ইলীয়ৈনয় ও তার সঙ্গী দুশো জন পুরুষ৷
\v 5 শখনিয়ের সন্তানদের মধ্যে মহসীয়েলের ছেলে ও তার সঙ্গী তিনশো জন পুরুষ৷
\v 6 আদীনের সন্তানদের মধ্যে যোনাথনের ছেলে এবদ ও তার সঙ্গী পঞ্চাশ জন পুরুষ৷
\v 7 এলমের সন্তানদের মধ্যে অথলিয়ের ছেলে যিশায়াহ ও তার সঙ্গী সত্তর জন পুরুষ৷
\s5
\v 8 শফটিয়ের সন্তানদের মধ্যে মীখায়েলের ছেলে সবদিয় ও তার সঙ্গী আশি জন পুরুষ৷
\v 9 যোয়াবের সন্তানদের মধ্যে যিহিয়েলের ছেলে ওবদিয় ও তার সঙ্গী দুশো আঠার জন পুরুষ৷
\v 10 শলোমীতের সন্তানদের মধ্যে যোষিফিয়ের ছেলে ও তার সঙ্গী একশো ষাট জন পুরুষ৷
\v 11 আর বেবয়ের সন্তানদের মধ্যে বেবয়ের ছেলে সখরিয় ও তার সঙ্গী আটাশ জন পুরুষ৷
\s5
\v 12 অসগদের সন্তানদের মধ্যে হকাটনের ছেলে যোহানন ও তার সঙ্গী একশো দশজন পুরুষ৷
\v 13 অদোনীকামের শেষ সন্তানদের মধ্যে কয়েক জন, তাদের নাম ইলীফেলট, যিয়ুয়েল ও শমরিয় ও তাদের সঙ্গী ষাট জন৷
\v 14 বিগবয়ের সন্তানদের মধ্যে ঊথয় ও সব্বূদ ও তাদের সঙ্গী সত্তর জন পুরুষ৷
\s5
\v 15 আমি তাদের অহবা-গামিনী নদীর কাছে জড়ো করেছিলাম; সেখানে আমরা শিবির তৈরী করে তিন দিন থাকলাম, আর লোকদের ও যাজকদের প্রতি পর্যবেক্ষণ করলে আমি সেখানে লেবির সন্তানদের কাউকে দেখতে পেলাম না৷
\v 16 তখন আমি ইলীয়েষর, অরীয়েল, শমরিয়, ইলনাথন, যারিব, ইলনাথন, নাথন, সখরিয় ও মশুল্লম এই সমস্ত প্রধান লোককে এবং যোয়ারীব ও ইলনাথন নামে দুজন শিক্ষককে ডাকলাম৷
\s5
\v 17 কাসিফিয়ার প্রধান ইদ্দোরের কাছে তাদেরকে পাঠালাম, আর ‘তোমরা আমাদের ঈশ্বরের বাড়ির জন্য দাসদের আমাদের কাছে আন, কাসিফিয়ার লোক ইদ্দোকে ও তার ভাই নথীনীয়দেরকে এই কথা বলতে তাদেরকে আদেশ করলাম৷
\s5
\v 18 আর আমাদের উপরে আমাদের ঈশ্বরের মঙ্গলময় হাত থাকায় তারা আমাদের কাছে ইস্রায়েলের ছেলে লেবির বংশের মহলির সন্তানদের মধ্যে একজন বৃদ্ধকে, আর শেরেবিয়কে এবং তার ছেলে ও আঠারোজন ভাইকে,
\v 19 আর হশবিয়কে ও তার সঙ্গে মরারির সন্তানদের মধ্যে যিশায়াহকে, তার ভাইয়েরা ও ছেলেরা কুড়ি জনকে আনলো৷
\v 20 আর দায়ূদ ও শাসনকর্তারা যাদেরকে লেবীয়দের সেবা কাজের জন্য দিয়েছিলেন, সেই নথীনীয়দের মধ্যে দুশো কুড়ি জনকেও আনলো; তাদের সবার নাম লেখা হল৷
\s5
\v 21 পরে আমাদের জন্য এবং আমাদের ছেলে মেয়েদের ও সমস্ত সম্পত্তির জন্য সঠিক পথ চাওয়ার ইচ্ছায় আমাদের ঈশ্বরের সামনে আমাদের প্রার্থনা করার জন্য আমি সেখানে অহবা নদীর কাছে উপোস ঘোষণা করলাম৷
\v 22 কারণ পথে শত্রুদের বিরুদ্ধে আমাদের সাহায্য করার জন্য রাজার কাছে একদল সৈন্য কি ঘোড়াচালক চাইতে আমার লজ্জা করছিল; কারণ আমরা রাজাকে এই কথা বলেছিলাম, “আমাদের ঈশ্বরের হাত মঙ্গলের জন্য তাঁর সমস্ত অনুগামীর ওপর আছে, কিন্তু যারা তাঁকে ত্যাগ করে, তাঁর পরাক্রম ও রাগ তাদের সকলের বিরুদ্ধে৷”
\v 23 অতএব আমরা উপোস করলাম ও আমাদের ঈশ্বরের কাছে সেই বিষয়ে জন্য প্রার্থনা করলাম; তাতে তিনি আমাদের অনুরোধ গ্রহণ করলেন৷
\s5
\v 24 পরে আমি যাজকদের মধ্যে বারো জন প্রধানকে, অর্থাৎ শেরেবিয়কে, হশবিয়কে ও তাদের সঙ্গে তাদের দশজন ভাইকে আলাদা করলাম;
\v 25 আর রাজা, তাঁর মন্ত্রীরা, শাসনকর্তারা ও উপস্থিত সমস্ত ইস্রায়েল আমাদের ঈশ্বরের বাড়ির জন্য হিসাবে যে রুপো, সোনা ও পাত্র দিয়েছিলেন, তাদেরকে তা পরিমাপ করে দিলাম;
\s5
\v 26 আমি ছশো পঞ্চাশ তালন্ত রুপো, একশো তালন্ত পরিমানে রুপোর পাত্র, একশো তালন্ত সোনা,
\v 27 এক হাজার অদর্কোন মূল্যের কুড়িটি সোনার পাত্র এবং সোনার মত দামী ভালো পরিস্কার তামার দুটি পাত্র মাপ করে তাদের হাতে দিলাম৷
\s5
\v 28 আর তাদেরকে বললাম, “তোমরা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র এবং এই পাত্র সকলও পবিত্র এবং এই রুপো ও সোনা তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে স্ব-ইচ্ছায় দত্ত নৈবেদ্য৷
\v 29 অতএব তোমরা যিরূশালেমে সদাপ্রভুর বাড়ির কুঠুরীতে প্রধান যাজকদের, লেবীয়দের ও ইস্রায়েলের পূর্বপুরুষদের কাছে যে পর্যন্ত না তা মেপে দেবে, সে পর্যন্ত সতর্ক থেকে রক্ষা করবে৷
\v 30 পরে যাজকেরা ও লেবীয়েরা যিরূশালেমে আমাদের ঈশ্বরের বাড়িতে যাবার জন্য সেই পরিমাপের রুপো, সোনা ও পাত্র গ্রহণ করল৷
\s5
\v 31 পরে প্রথম মাসের বারো দিনের দিন আমরা যিরূশালেমে যাবার জন্য অহবা নদী থেকে চলে গেলাম, আর আমাদের উপরে আমাদের ঈশ্বরের হাত ছিল, তিনি পথের মধ্যে শত্রুদের ও গুপ্ত ডাকাতদের হাত থেকে আমাদের উদ্ধার করলেন৷
\v 32 পরে আমরা যিরূশালেমে গিয়ে সেখানে তিন দিন থাকলাম৷
\s5
\v 33 পরে চতুর্থ দিনে সেই রুপো, সোনা ও পাত্র সকল আমাদের ঈশ্বরের বাড়িতে ঊরিয়ের ছেলে মরেমোৎ যাজকের হাতে মেপে দেওয়া গেল, আর তার সঙ্গে পীনহসের ছেলে ইলিয়াসর এবং তাদের সঙ্গে যেশূয়ের ছেলে যোষাবদ ও বিন্নূয়ির ছেলে নোয়দিয়, এই দুজন লেবীয় ছিল৷
\v 34 সমস্ত দ্রব্য হিসাব করে মেপে দেওয়া হল এবং সে সময়ে সমস্ত ওজনের পরিমান লেখা হল৷
\s5
\v 35 নির্বাসিত যারা বন্দীদশা থেকে ফিরে এসেছিল, তারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে হোমবলি উত্সর্গ করল; তারা সমুদয় ইস্রায়েলের জন্য বারোটি ষাঁড়, ছিয়ানব্বইটি ভেড়া, সাতাত্তরটি ভেড়ার বাচ্ছা ও পাপার্থক বলির জন্য বারোটি ছাগল, এই সকল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হোমের জন্য বলিদান করল৷
\v 36 পরে রাজ প্রতিনিধি আধিকারিকদের কাছে ও নদীর পারের শাসনকর্তাদেরকে কাছে রাজার আদেশপত্র দেওয়া হল, আর তাঁরা লোকদের এবং ঈশ্বরের বাড়িরও সাহায্য করলেন৷
\s5
\c 9
\s যিহূদীদের অপরাধ ও মন পরিবর্তন৷
\p
\v 1 সেই কাজ শেষ হওয়ার পরে শাসনকর্তারা আমার কাছে এসে বললেন, “ইস্রায়েলের লোকেরা, যাজকেরা ও লেবীয়েরা নানা দেশে বসবাসকারী জাতিদের থেকে নিজেদেরকে আলাদা করেনি; কনানীয়, হিত্তীয়, পরিষীয়, যিবূষীয়, অম্মোনীয়, মোয়াবীয়, মিশরিয় ও ইমোরীয় লোকদের মত নোংরা বা জঘন্য কাজ করছে৷
\v 2 তার ফলে তারা নিজেদের জন্য ও নিজেদের ছেলেদের জন্য তাদের মেয়েদের গ্রহণ করেছে; এইভাবে পবিত্র বংশ নানা দেশে বসবাসকারী জাতিদের সঙ্গে মিশে গেছে এবং অধ্যক্ষরা ও শাসনকর্তারাই প্রথমে এই অবিশ্বস্ততার কাজ করেছেন৷”
\s5
\v 3 এই কথা শুনে আমি নিজের পোশাক ও কাপড় ছিঁড়লাম এবং নিজের মাথার চুল ও দাড়ি ছিঁড়ে হতবাক হয়ে বসে রইলাম৷
\v 4 তখন বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা লোকেদের সত্য অমান্য করার বিষয়ে যারা ইস্রায়েলের ঈশ্বরের বাক্যে ভয় পেল, তারা আমার কাছে জড়ো হল এবং আমি সন্ধ্যাকালীন বলিদানের সময় পর্যন্ত চুপচাপ বসে থাকলাম৷
\s5
\v 5 পরে সন্ধাকালীন বলিদানের সময়ে আমি মনের দুঃখ থেকে উঠলাম এবং ছেঁড়া পোশাক ও কাপড় না খুলে হাঁটু পেতে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে হাত বাড়ালাম৷
\v 6 আর বললাম, “হে আমার ঈশ্বর, আমি তোমার দিকে মুখ তুলতে লজ্জিত এবং মন মরা হয়ে থাকি, কারণ হে আমার ঈশ্বর, আমাদের অপরাধ আমাদের মাথার ওপর পর্যন্ত উঠে গেছে ও আমাদের দোষ বেড়ে গিয়ে আকাশ স্পর্শ করেছে৷
\s5
\v 7 আমাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকে আজ পর্যন্ত আমরা মহাদোষী; আমাদের অপরাধের জন্য আমরা, আমাদের রাজারা ও আমাদের যাজকরা নানা দেশের রাজাদের হাতে, তরোয়ালে, বন্দীদশায়, লুটে ও লজ্জিত মুখে বিবর্ণতায় সমর্পিত হয়েছি, সেটা আজ দেখা যাচ্ছে৷
\s5
\v 8 আর এখন আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে কিছুক্ষণের জন্য আমরা দয়া পেলাম, যেন তিনি আমাদের কতগুলি অবশিষ্ট লোককে রক্ষা করেন, নিজের পবিত্র স্থানে আমাদের দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠা করেন, আমাদের ঈশ্বর যেন আমাদের চোখ উজ্জ্বল করেন এবং দাসত্বের অবস্থায় আমাদের প্রাণে একটু আরাম দেন৷
\v 9 কারণ আমরা দাস, তাই আমাদের ঈশ্বর আমাদের দাসত্বে আমাদেরকে ত্যাগ করেন নি, কিন্তু আমাদের প্রাণের আরামের জন্য, আমাদের ঈশ্বরের বাড়ি স্থাপন ও তার ভাঙ্গা জায়গা মেরামত করার এবং যিহূদায় ও যিরূশালেমে আমাদেরকে একটি দেওয়াল গাঁথার জন্য তিনি পারস্যের রাজাদের চোখে আমাদেরকে দয়াবান করলেন৷
\s5
\v 10 এখন, হে আমাদের ঈশ্বর, এর পরে আমরা কি বলব? কারণ তোমার আদেশগুলি ত্যাগ করেছি,
\v 11 যা তুমি নিজের দাস ভাববাদীদের মাধ্যমে দিয়েছিলে, বলেছিলে, ‘তোমরা যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, তা দেশবাসীদের খারাপ কাজের জন্য অশুচি হয়েছে; তাদের নোংরা কাজের জন্য দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পর্যন্ত তাদের নোংরামিতে পরিপূর্ণ হয়েছে৷
\v 12 অতএব তোমরা তাদের ছেলেদের সঙ্গে তোমাদের মেয়েদের বিয়ে দিও না ও তোমাদের ছেলেদের জন্য তাদের মেয়েদেরকে গ্রহণ কর না এবং তাদের শান্তি ও ভালো করতে কখনো চেষ্টা কর না; যেন তোমরা বলবান হও, যেন দেশের ভালো দ্রব্য ভোগ করতে ও চিরকালের জন্য নিজের সন্তানদের জন্য অধিকার হিসাবে তা রাখতে পার৷’
\s5
\v 13 কিন্তু আমাদের সকল খারাপ কাজ ও মহাদোষের জন্য এই সব ঘটেছে; তবুও, হে আমাদের ঈশ্বর, তুমি আমাদের অপরাধের শাস্তি কম করেছ, তাছাড়াও আমাদের কিছু লোককে রক্ষা করেছ৷
\v 14 এই সব কিছুর পরেও আমরা কি পুনরায় তোমার আদেশ অমান্য করে খারাপ কাজে লিপ্ত এই জাতিদের সঙ্গে সম্পর্ক করব? করলে তুমি কি আমাদের প্রতি এমন রাগ করবে না যে, আমরা লুপ্ত হব, আর আমাদের মধ্যে অবশিষ্ট কি রক্ষিত কেউ থাকবে না?
\s5
\v 15 হে সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বর, তুমি ধার্মিক, কারণ আমরা রক্ষা পেয়ে আজ পর্যন্ত কিছু লোক অবশিষ্ট রয়েছি, দেখ, আমরা তোমার সামনে দোষী, তাই তোমার সামনে আমাদের কেউই দাঁড়াতে পারে না৷”
\s5
\c 10
\s যিহূদীদের পাপস্বীকার
\p
\v 1 ঈশ্বরের বাড়ির সামনে ইষ্রার এইরকম প্রার্থনা, পাপস্বীকার, কান্না ও প্রণাম করার সময়ে ইস্রায়েল থেকে পুরুষ, মহিলা এবং ছেলে মেয়েরা খুব বড় একটি সমাবেশ তাঁর কাছে জড়ো হয়েছিল, কারণ লোকেরা খুব কাঁদছিল৷
\v 2 তখন এলম-সন্তানদের মধ্যে যিহীয়েলের ছেলে শখনিয় ইষ্রাকে উত্তরে বলল, “আমরা নিজেদের ঈশ্বরের আদেশ অমান্য করেছি ও দেশে বসবাসকারী লোকেদের মধ্যে থেকে অযিহূদী মেয়েদেরকে বিয়ে করেছি; তবুও এ বিষয়ে ইস্রায়েলের জন্য এখনও আশা আছে৷
\s5
\v 3 অতএব আসুন, আমার প্রভুর পরিকল্পনা অনুসারে ও আমাদের ঈশ্বরের আদেশে ভীত লোকেদের পরিকল্পনা অনুসারে সেই সমস্ত স্ত্রী ও তাদের জন্ম দেওয়া সন্তানদেরকে ত্যাগ করে আমরা এখন আমাদের ঈশ্বরের সঙ্গে নিয়ম করি; আর তা ব্যবস্থা অনুসারে করা হোক৷
\v 4 আপনি উঠুন, কারণ এই কাজের ভার আপনারই উপরে আছে এবং আমরাও আপনার সাহায্যকারী, আপনি সাহসের সঙ্গে কাজ করুন৷”
\s5
\v 5 তখন ইষ্রা উঠে ঐ বাক্য অনুসারে কাজ করতে যাজকদের, লেবীয়দের ও সমস্ত ইস্রায়েলের প্রধানদেরকে শপথ করালেন, তাতে তারা শপথ করল৷
\v 6 পরে ইষ্রা ঈশ্বরের বাড়ির সামনে থেকে উঠে ইলিয়াশীবের ছেলে যিহোহাননের ঘরে ঢুকলেন, কিন্তু সেখানে যাবার আগে কোনো কিছু রুটি খাননি বা জল পান করেন নি৷ কারণ বন্দীদশা থেকে আসা লোকেদের সত্য অমান্য করাতে তিনি শোক করছিলেন৷
\s5
\v 7 পরে যিহূদা ও যিরূশালেমের সব জায়গায় বন্দীদশা থেকে আসা লোকেদের কাছে ঘোষণা করা হল যে, “তারা যেন যিরূশালেমে জড়ো হয়,
\v 8 আর যে কেউ শাসনকর্তাদের ও প্রাচীনদের পরিকল্পনা অনুসারে তিন দিনের মধ্যে না আসবে, তার বিষয়সম্পত্তি বাজোয়াপ্ত হবে ও বন্দীদশা থেকে আসা লোকেদের সমাজ থেকে তাকে আলাদা করে দেওয়া হবে৷”
\s5
\v 9 পরে যিহূদার ও বিন্যামীনের সমস্ত পুরুষ তিন দিনের মধ্যে যিরূশালেমে জড়ো হল; সেই নবম মাসের কুড়ি দিনের দিন৷
\v 10 আর সকলে ঈশ্বরের বাড়ির সামনের রাস্তায় বসে সেই বিষয়ের জন্য ও ভারী বৃষ্টির জন্য কাঁপছিল৷ পরে ইষ্রা যাজক উঠে তাদেরকে বললেন, “তোমরা সত্যকে অমান্য করেছ, পরজাতি মেয়েদেরকে বিয়ে করে ইস্রায়েলের দোষ বাড়িয়েছ৷
\s5
\v 11 অতএব এখন তোমাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে দোষ স্বীকার কর ও তাঁর ইচ্ছা অনুসারে কাজ কর এবং দেশের বসবাসকারী লোকেদের থেকে ও অযিহূদী স্ত্রীদের থেকে নিজেদেরকে আলাদা কর৷”
\s5
\v 12 তখন সমস্ত সমাজ জোরে চিত্কার করে উত্তর দিল, “হ্যাঁ; আপনি যেমন বললেন, আমরা তেমনি করব৷
\v 13 কিন্তু লোক অনেক এবং ভারী বর্ষার সময়, বাইরে দাঁড়িয়ে থাকার আমাদের শক্তি নেই এবং এটা এক দিনের কিংবা দুই দিনের কাজ নয়, যেহেতু আমরা এ বিষয়ে মহা অপরাধ করেছি৷
\s5
\v 14 অতএব সমস্ত সমাজের পক্ষে আমাদের শাসনকর্তা নিযুক্ত হোক এবং আমাদের নগরে নগরে যারা অযিহূদী মেয়েদেরকে বিয়ে করেছে, তারা এবং তাদের সঙ্গে প্রত্যেক নগরের প্রাচীনেরা ও বিচারকর্তারা নিজেদের নির্ধারিত সময়ে আসুক; তাতে এ বিষয়ে আমাদের ঈশ্বরের প্রচণ্ড রাগ আমাদের থেকে দূর হবে৷”
\v 15 এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে শুধু অসাহেলের ছেলে যোনাথন ও তিকবের ছেলে যহসিয় উঠল এবং মশুল্লম ও লেবীয় শব্বথয় তাদের সাহায্য করল৷
\s5
\v 16 আর বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা লোকেরা ঐ রকম করল৷ আর ইষ্রা যাজক এবং নিজেদের বাবার বংশ অনুসারে ও প্রত্যেকের নাম অনুসারে নির্দ্দিষ্ট কতগুলি বংশের প্রধানেরা আলাদা আলাদা করে দশম মাসের প্রথম দিনে সেই বিষয়ে অনুসন্ধান করতে বসলেন৷
\v 17 প্রথম মাসের প্রথম দিনে তাঁরা অযিহূদী মেয়েদেরকে যে পুরুষরা গ্রহণ করেছিল তাদের বিচার শেষ করলেন৷
\s5
\v 18 যাজক সন্তানদের মধ্যে অযিহূদী মেয়েদেরকে যে পুরুষরা গ্রহণ করেছিল তারা ছিল; যিহোষাদকের ছেলে যে যেশূয়, তাঁর সন্তানদের ও ভাইদের মধ্যে মাসেয়, ইলীয়েষর, যারিব ও গদলিয়৷
\v 19 এরা নিজেদের স্ত্রী ত্যাগ করবে বলে হাত বাড়াল এবং দোষী হওয়ার জন্য পালের এক একটি ভেড়া উত্সর্গ করল৷
\s5
\v 20 আর ইম্মেরের সন্তানদের মধ্যে হনানি ও সবদিয়৷
\v 21 হারীমের সন্তানদের মধ্যে মাসেয়, এলিয়, শময়িয়, যিহীয়েল ও উষিয়৷
\v 22 পশহূরের সন্তানদের মধ্যে ইলিয়ৈনয়, মাসেয় ইশ্মায়েল, নথনেল, যোষাবদ ও ইলিয়াসা৷
\s5
\v 23 আর লেবীয়দের মধ্যে যোষাবদ, শিমিয়ি, কলায় অর্থাৎ কলীট, পথাহিয়, যিহূদা ও ইলিয়েষর৷
\v 24 আর গায়কদের মধ্যে ইলিয়াশীব; দারোয়ানদের মধ্যে শল্লুম, টেলম ও ঊরি৷
\v 25 আর ইস্রায়েলের মধ্যে, পরিয়োশের সন্তানদের মধ্যে রমিয়, যিষিয়, মল্কিয়, মিয়ামীন, ইলিয়াসর, মল্কিয় ও বনায়৷
\s5
\v 26 এলমের সন্তানদের মধ্যে মত্তনিয়, সখরিয়, যিহীয়েল, অব্দি, যিরেমোৎ ও এলিয়৷
\v 27 সত্তূর সন্তানদের মধ্যে ইলিয়ৈনয়, ইলিয়াশীব, মত্তনিয়, যিরেমোৎ, সাবদ ও অসীসা৷
\v 28 বেবয়ের সন্তানদের মধ্যে যিহোহানন, হনানিয়, সববয়, অৎলয়৷
\v 29 বানির সন্তানদের মধ্যে মশুল্লম, মল্লূক ও অদায়া, যাশূব, শাল ও যিরমোৎ৷
\s5
\v 30 পহৎ-মোয়াবের সন্তানদের মধ্যে অদন, কলাল, বনায়, মাসেয় মত্তনিয়, বৎসলেল, বিন্নূয়ী ও মনঃশি৷
\v 31 হারীমের সন্তানদের মধ্যে ইলিয়েষর, যিশিয়, মল্কিয়, শময়িয়, শিমিয়োন,
\v 32 বিন্যামীন, মল্লূক, শমরিয়৷
\s5
\v 33 হশূমের সন্তানদের মধ্যে মত্তনয়, মত্তত্ত, সাবদ, ইলীফেলট, যিরেময়, মনঃশি, শিমিয়ি৷
\v 34 বানির সন্তানদের মধ্যে মাদয়, অম্রাম ও ঊয়েল,
\v 35 বনায়, বেদিয়া, কলূহূ,
\v 36 বনিয়, মরেমোৎ, ইলিয়াশীব,
\s5
\v 37 মত্তনিয়, মত্তনয়, যাসয়,
\v 38 বানি, বিন্নূয়ী, শিমিয়ি,
\v 39 শেলিমিয়, নাথন, অদায়া,
\v 40 মক্নদবয়, শাশয়, শারয়,
\s5
\v 41 অসরেল, শেলিমিয়, শময়ির,
\v 42 শল্লুম, অমরিয়, যোষেফ৷
\v 43 নবোর সন্তানদের মধ্যে যিয়ীয়েল, মত্তিথিয়, সাবদ, সবীনঃ, যাদয় ও যোয়েল, বনায়৷
\v 44 এরা অযিহূদী স্ত্রী গ্রহণ করেছিল এবং কারও কারও স্ত্রীর গর্ভে সন্তান হয়েছিল৷

637
16-NEH.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,637 @@
\id NEH
\ide UTF-8
\sts - Nehemiah
\h নহিমিয়ের বই।
\toc1 নহিমিয়ের বই।
\toc2 নহিমিয়ের বই।
\toc3 neh
\mt1 নহিমিয়ের বই।
\s5
\c 1
\ms নহিমিয়ের বই।
\s নহিমিয়ের মনের কষ্ট ও প্রার্থনা।
\s হখলিয়ের ছেলে নহিমিয়ের কথা।
\m
\p
\v 1 কুড়ি বছরের কিশ্‌লেব মাসে আমি শূশন রাজধানীতে ছিলাম।
\v 2 তখন হনানি নামে আমার ভাইদের মধ্যে একজন যিহূদা থেকে কিছু লোকের সঙ্গে আসলে আমি তাদেরকে বন্দী অবস্থা থেকে বেঁচে যাওয়া, রক্ষা পাওয়া যিহূদীদের ও যিরুশালেমের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলাম।
\s5
\v 3 তখন তারা আমাকে বলল, “সেই বেঁচে থাকা লোকেরা অর্থাৎ যারা বন্দী অবস্থা থেকে বেঁচে গিয়ে সেই প্রদেশে আছে, তারা খুব খারাপ ও মর্যাদাহীন অবস্থায় আছে এবং যিরুশালেমের দেওয়াল ভাঙ্গা ও তার দরজা সব আগুনে পুড়ে আছে।”
\s5
\v 4 এই কথা শুনে আমি কিছুদিন বসে কাঁদলাম ও শোক করলাম এবং স্বর্গের ঈশ্বরের সামনে উপবাস ও প্রার্থনা করলাম।
\v 5 আমি বললাম, “অনুরোধ করি, হে সদাপ্রভু, স্বর্গের ঈশ্বর, তুমি মহান ও ভয়ঙ্কর ঈশ্বর; যারা তোমাকে ভালোবাসে ও তোমার আদেশ পালন করে, তাদের জন্য তুমি নিয়ম ও দয়া পালন করে থাক।
\s5
\v 6 এখন তোমার দাসের প্রার্থনা শোনার জন্য তোমার কান সজাগ ও চোখ খোলা থাকুক। এখন আমি তোমার দাস ইস্রায়েলীয়দের জন্য দিনরাত তোমার কাছে প্রার্থনা করছি এবং ইস্রায়েলীয়দের পাপ সব স্বীকার করছি; বাস্তবে আমরা তোমার বিরুদ্ধে পাপ করেছি; আমি ও আমার বাবার বংশও পাপ করেছি।
\v 7 আমরা তোমার বিরুদ্ধে খুব অন্যায় কাজ করেছি; তুমি নিজের দাস মোশিকে যে সব আজ্ঞা, নিয়ম ও শাসন আদেশ করেছিলে, তা আমরা পালন করিনি।
\s5
\v 8 অনুরোধ করি, তুমি নিজের দাস মোশির প্রতি আদেশ দেওয়া এই কথা মনে কর, যেমন, ‘তোমরা আমার সত্য অমান্য করলে আমি তোমাদেরকে জাতিদের মধ্যে ছিন্নভিন্ন করব।
\v 9 কিন্তু যদি তোমরা আমার কাছে ফিরে আস এবং আমার আদেশ পালন ও সেই অনুযায়ী কাজ কর, যদি তোমাদের বন্দীদশায় থাকা লোকেরা আকাশের শেষভাগে ছড়িয়ে পড়লেও আমি সেখান থেকে তাদেরকে জড়ো করব এবং নিজের নামের বসবাসের জন্য যে জায়গা বেছেছি, সেই জায়গায় তাদেরকে আনব।’
\s5
\v 10 এরা তোমার দাস এবং তোমার প্রজা, যাদেরকে তুমি তোমার ক্ষমতায় ও শক্তিশালী হাতে মুক্ত করেছ।
\v 11 হে প্রভু, মিনতি করি, আজ তোমার এই দাসের প্রার্থনাতে কান দাও; আর অনুরোধ করি, আজ তোমার এই দাসকে সফল কর ও এই ব্যক্তির সামনে দয়া কর।” আমি রাজার পানপাত্রবাহক ছিলাম।
\s5
\c 2
\ms নহিমিয়ের যিরূশালেম যাত্রা।
\p
\v 1 অর্তক্ষস্ত রাজার কুড়ি বছরের নীসন মাসে রাজার সামনে আঙ্গুর রস থাকাতে আমি সেই আঙ্গুর রস নিয়ে রাজাকে দিলাম। তার আগে আমি তাঁর সামনে কখনও দুঃখিত হইনি।
\v 2 রাজা আমাকে বললেন, “তোমার তো অসুখ হয় নি, তবে মুখ কেন দুঃখিত দেখাচ্ছে? এ তো মনের কষ্ট ছাড়া আর কিছু নয়।” তখন আমি খুব ভয় পেলাম।
\s5
\v 3 আর আমি রাজাকে বললাম, “মহারাজ দীর্ঘজীবী হোন। আমি কেন দুঃখিত হব না? যে শহর আমার পূর্বপুরুষদের কবরস্থান, তা ধ্বংস হয়ে গেছে ও তার দরজা সব আগুনে পুড়ে গেছে।”
\s5
\v 4 তখন রাজা আমাকে বললেন, “তুমি কি চাও?” তখন আমি স্বর্গের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম।
\v 5 আর রাজাকে বললাম, “মহারাজ যদি খুশী হয়ে থাকেন এবং আপনার দাস যদি আপনার চোখে দয়া পেয়ে থাকে, তবে আপনি আমাকে যিহূদায়, আমার পূর্বপুরুষদের কবরের শহরে, যেতে অনুমতি দিন, যেন আমি তা তৈরী করি।”
\v 6 তখন রাজা-রাণীও তাঁর পাশে বসে ছিলেন-আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমার যেতে কতদিন লাগবে? আর কবে ফিরে আসবে?” এই ভাবে রাজা খুশি হয়ে আমাকে বিদায় দিলেন, আর আমি তার কাছে সময় জানালাম।
\s5
\v 7 আর আমি রাজাকে বললাম, “যদি মহারাজ খুশী হয়, তবে নদীর পারের শাসনকর্তারা যেন যিহূদায় আমার না আসা পর্যন্ত আমার যাওয়ায় সাহায্য করেন, এই জন্য তাঁদের নামে আমাকে চিঠি দিতে আদেশ দিক।
\v 8 আর মন্দিরের পাশে অবস্থিত দুর্গের দরজার ও শহরের দেওয়ালের ও আমার ঘরে ঢোকার দরজার কড়িকাঠের জন্য রাজার বন রক্ষক আসফ যেন আমাকে কাঠ দেন, এই জন্য তাঁর নামেও একটি চিঠি দিতে আদেশ দিক।” তাতে আমার উপরে আমার ঈশ্বরের মঙ্গলময় হাত থাকায় রাজা আমাকে সে সমস্ত দিলেন।
\s5
\v 9 পরে আমি নদীর পারে অবস্থিত শাসনকর্তাদের কাছে এসে রাজার চিঠি তাঁদেরকে দিলাম। রাজা সেনাপতিদেরকে ও ঘোড়াচালকদেরকে আমার সঙ্গে পাঠিয়েছিলেন।
\v 10 আর হোরোণীয় সন্‌বল্লট ও অম্মোনীয় দাস টোবিয় যখন খবর পেল, তখন ইস্রায়েলীয়দের সাহায্যের জন্য একজন যে লোক এসেছে, এটা বুঝতে পেরে তারা খুব অসন্তুষ্ট হল।
\s5
\v 11 আর আমি যিরূশালেমে এসে সেই জায়গায় তিন দিন থাকলাম।
\v 12 পরে আমি ও আমার সঙ্গী কিছু লোক, আমরা রাতে উঠলাম; কিন্তু যিরূশালেমের জন্য যা করতে ঈশ্বর আমার মনে ইচ্ছা দিয়েছিলেন, তা কাউকেও বলিনি এবং আমি যে পশুর ওপরে চড়েছিলাম, সেটা ছাড়া আর কোনো পশু আমার সঙ্গে ছিল না।
\s5
\v 13 আমি রাতে উপত্যকার দরজা দিয়ে বের হয়ে নাগকুয়ো ও সার দরজা পর্যন্ত গেলাম এবং যিরূশালেমের ভাঙ্গা দেওয়াল ও আগুনে পুড়ে যাওয়া দরজা সব দেখলাম।
\v 14 আর উনুই দরজা ও রাজার পুকুর পর্যন্ত গেলাম, কিন্তু সেই জায়গায় আমার বাহন পশুর যাবার জায়গা ছিল না।
\s5
\v 15 তখন আমি রাতে স্রোতের ধার দিয়ে উপরে উঠে দেওয়াল দেখলাম, আর ফিরে উপত্যকার দরজা দিয়ে ঢুকলাম, পরে ফিরে আসলাম।
\v 16 কিন্তু আমি কোন জায়গায় গেলাম, কি করলাম, তা শাসনকর্তারা জানত না এবং সেই সময় পর্যন্ত আমি যিহূদীদের কি যাজকদেরকে কি প্রধান লোকদেরকে শাসনকর্তাদেরকে কি অন্য কর্মচারীদেরকে কাউকেও তা বলি নি।
\s5
\v 17 পরে আমি তাদেরকে বললাম, “আমরা কেমন খারাপ অবস্থায় আছি, তা তোমরা দেখছ; যিরূশালেম ধ্বংস হয়ে গেছে ও তার দরজা সব আগুনে পুড়ে আছে; এস, আমরা যিরূশালেমের দেওয়াল তৈরী করি, যেন আর মর্যাদাহীন না থাকি।”
\v 18 পরে আমার উপরে বিস্তারিত ঈশ্বরের মঙ্গলময় হাতের কথা এবং আমার প্রতি বলা রাজার কথা তাদেরকে জানালাম। তাতে তারা বলল, “চল, আমরা উঠে গিয়ে গাঁথি।” এইভাবে তারা সেই ভাল কাজের জন্য নিজের নিজের হাত শক্তিশালী করল।
\s5
\v 19 কিন্তু হোরোণীয় সন্‌বল্লট, অম্মোনীয় দাস টোবিয় ও আরবীয় গেশম্‌ এই কথা শুনে আমাদের বিদ্রূপ ও উপহাস করে বলল, “তোমরা এ কি কাজ করছ? তোমরা কি রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে?”
\v 20 তখন আমি উত্তরে তাদেরকে বললাম, “যিনি স্বর্গের ঈশ্বর, তিনিই আমাদেরকে সফল করবেন; অতএব তাঁর দাস আমরা উঠে গাঁথব; কিন্তু যিরূশালেমে তোমাদের কোনো অংশ কি অধিকার কি স্মৃতিচিহ্ন নেই।”
\s5
\c 3
\ms যিরূশালেম শহর পুনর্নির্মাণ।
\p
\v 1 পরে ইলীয়াশীব মহাযাজক ও তাঁর যাজক ভাইরা উঠে মেষ দরজা গাঁথলেন; তাঁরা তা পবিত্র করলেন ও তার দরজা স্থাপন করলেন; আর হম্মেয়া দুর্গ থেকে হননেলের দুর্গ পর্যন্ত তা পবিত্র করলেন।
\v 2 তাঁর কাছে যিরীহোর লোকেরা গাঁথল আর তার কাছে ইম্রির ছেলে সক্কূর গাঁথল।
\s5
\v 3 হস্‌সনায়ার ছেলেরা মাছ দরজা গাঁথল; তারা তার কড়িকাঠ তুলল এবং তার দরজা স্থাপন করল, আর খিল ও হুড়কা দিল।
\v 4 তাদের কাছে হক্কোসের নাতি উরিয়ের ছেলে মরেমোৎ সারাই করল। তাদের কাছে মশেষবেলের নাতি বেরিখিয়ের ছেলে মশুল্লম সারাই করল। তাদের কাছে বানার ছেলে সাদোক সারাই করল।
\v 5 তাদের কাছে তকোয়ীয়েরা সারাই করল, কিন্তু তাদের প্রধানেরা নিজেদের প্রভুর কাজে ঘাড় নত করল না।
\s5
\v 6 আর পাসেহের ছেলে যিহোয়াদা ও বসোদিয়ার ছেলে মশুল্লম পুরানো দরজা সারাই করল; তারা তার কড়িকাঠ তুলল এবং তার দরজা বসালো, আর খিল ও হুড়কো দিল।
\v 7 তাদের কাছে গিবিয়োনীয় মলাটিয় ও মেরোণোথীয় যাদোন এবং গিবিয়োন ও মিসপার লোকেরা সারাই করল, এরা নদীর পারে অবস্থিত শাসনকর্তার সিংহাসনের অধীন।
\s5
\v 8 তার কাছে স্বর্ণকারদের মধ্যে হর্হয়ের ছেলে উষীয়েল সারাই করল। আর তার কাছে হনানিয় নামে এক জন সুগন্ধি প্রস্তুতকারী সারাই করল, তারা চওড়া দেওয়াল পর্যন্ত যিরূশালেম পুনরায় তৈরী করল।
\v 9 তাদের কাছে যিরূশালেম প্রদেশের অর্ধেক অংশের শাসনকর্তা হূরের ছেলে রফায় সারাই করল।
\v 10 তাদের কাছে হরূমফের ছেলে যিদায় নিজের বাড়ির সামনে সারাই করল। তার কাছে হশব্‌নিয়ের ছেলে হটুশ সারাই করল।
\s5
\v 11 হারীমের ছেলে মল্কিয় ও পহৎ মোয়াবের ছেলে হশূব অন্য এক অংশ ও তুন্দুরের দুর্গ সারাই করল।
\v 12 তার কাছে যিরূশালেম প্রদেশের অর্ধেক অংশের শাসনকর্তা হলোহেশের ছেলে শল্লুম ও তার মেয়েরা সারাই করল।
\s5
\v 13 হানূন ও সানোহের বাসিন্দারা উপত্যকার দরজা সারাই করল; তারা তা গাঁথল এবং তার দরজা স্থাপন করল, আর খিল ও হুড়কো দিল এবং সার দরজা পর্যন্ত দেওয়ালের এক হাজার হাত সারাই করল।
\s5
\v 14 আর বৈৎ হক্কেরম প্রদেশের শাসনকর্তা রেখবের ছেলে মল্কিয় সার দরজা সারাই করল; সে তা গাঁথল এবং তার দরজা স্থাপন করল, খিল ও হুড়কা দিল।
\v 15 আর মিসপা প্রদেশের শাসনকর্তা কল্‌হোষির ছেলে শল্লুম উনুই ফটক সারাই করল; সে তা গাঁথল, তার আবরণ তৈরী করল এবং তার দরজা স্থাপন করল, আর খিল ও হুড়কা দিল এবং যে সিঁড়ি দিয়ে দায়ূদ শহর থেকে নামে, সেই পর্যন্ত রাজার বাগানের সামনে অবস্থিত শীলোহ পুকুরের দেওয়াল সারাই করল।
\s5
\v 16 তার কাছে বৈৎসূর প্রদেশের অর্ধেক অংশের শাসনকর্তা অস্‌বূকের ছেলে নহিমিয় দায়ূদের কবরের সামনে পর্যন্ত, খোঁড়া পুকুর পর্যন্ত ও শক্তিশালীদের ঘর পর্যন্ত সারাই করল।
\v 17 তার কাছে লেবীয়েরা, বিশেষভাবে বানির ছেলে রহূম সারাই করল। তার কাছে কিয়ীলা প্রদেশের অর্ধেক অংশের শাসনকর্তা হশবিয় নিজের অংশ সারাই করল।
\s5
\v 18 তার পরে তাদের ভাইয়েরা, অর্থাৎ কিয়ীলা প্রদেশের অর্ধেক অংশের শাসনকর্তা হেনাদদের ছেলে ববয় সারাই করল।
\v 19 তার কাছে মিসপার শাসনকর্তা যেশূয়ের ছেলে এসর দেওয়ালের বাঁকে অবস্থিত অস্ত্রাগারে উঠবার পথের সামনে আর এক অংশ সারাই করল।
\s5
\v 20 তারপরে সব্বয়ের ছেলে বারূক যত্ন করে বাঁক থেকে মহাযাজক ইলিয়াশীবের ঘরের দরজা পর্যন্ত আর এক অংশ সারাই করল।
\v 21 তারপরে হক্কোসের ছেলে ঊরিয়ের ছেলে মরেমোৎ ইলিয়াশীবের বাড়ির দরজা থেকে শুরু করে ইলিয়াশীবের বাড়ীর শেষ পর্যন্ত আর এক অংশ সারাই করল।
\s5
\v 22 তারপরে যর্দনের চারপাশের এলাকার যাজকেরা সারাই করল।
\v 23 তারপরে বিন্যামীন ও হশূব নিজের নিজের বাড়ির সামনে সারাই করল। তারপরে অননিয়ের ছেলে মাসেয়ের ছেলে অসরিয় নিজের বাড়ির পাশে সারাই করল।
\v 24 তারপরে হেনাদদের ছেলে বিন্নূয়ী অসরিয়ের ঘর থেকে শুরু করে বাঁক ও কোণা পর্যন্ত আর এক অংশ সারাই করল।
\s5
\v 25 উষয়ের ছেলে পালল বাঁকের সামনে; পাহারাদারদের উঠানের কাছে অবস্থিত রাজার উঁচু বাড়ির কাছে বেরিয়ে আসা দুর্গের সামনে এবং তার পরে পরোশের ছেলে পদায় সারাই করল।
\v 26 আর নথীনীয়েরা পূর্ব দিকে জল দরজার সামনে পর্যন্ত ও বেরিয়ে আসা দুর্গ পর্যন্ত ওফলে বাস করত।
\v 27 তারপরে তকোয়ীয়েরা বেরিয়ে আসা বিরাট দুর্গ থেকে ওফলের দেওয়াল পর্যন্ত আর এক অংশ সারাই করল।
\s5
\v 28 যাজকেরা ঘোড়া দরজার উপরের দিকে, প্রত্যেকজন নিজের নিজের বাড়ির সামনে, সারাই করল।
\v 29 তারপরে ইম্মেরের ছেলে সাদোক নিজের বাড়ির সামনে সারাই করল এবং তারপরে পূর্ব দরজার পাহারাদার শখনিয়ের ছেলে শময়িয় সারাই করল।
\v 30 তারপরে শেলিমিয়ের ছেলে হনানিয় ও সালফের ষষ্ঠ ছেলে হানূন আর এক অংশ সারাই করল; তারপরে বেরিখিয়ের ছেলে মশুল্লম নিজের ঘরের সামনে সারাই করল।
\s5
\v 31 তারপরে মল্কিয় নামে একজন স্বর্ণকার নথীনীয় ও ব্যবসায়ীদের বাড়ি পর্যন্ত এবং কোণে ওঠার রাস্তা পর্যন্ত হম্মিপকদ দরজা সামনে সারাই করল।
\v 32 আর কোণে উঠবার রাস্তা ও মেষ দরজার মধ্যে স্বর্ণকারেরা ও ব্যবসায়ীরা সারাই করল।
\s5
\c 4
\ms শত্রুদের বিরোধ ও তার প্রতিকার।
\p
\v 1 সন্‌বল্লট যখন শুনতে পেল যে, আমরা দেওয়াল গাঁথছি, তখন সে রেগে গেল ও খুব বিরক্ত হল, আর যিহূদীদের বিদ্রূপ করল।
\v 2 আর সে নিজের ভাইদের ও শমরীয় সৈন্যদলের সামনে বলল, “এই দুর্বল যিহূদীরা করছে কি? তারা কি নিজেদেরকে শক্তিশালী করবে? এরা কি বলিদান উত্সর্গ করবে? এক দিনেই কি শেষ করবে? টুকরো কাঁকড়ের ঢিবি থেকে পাথর সব তুলে কি জীবিত করবে?” এসব যে পুড়ে গেছে!
\v 3 তখন অম্মোনীয় টোবিয় তার পাশে ছিল; সে বলল, “ওরা যা গাঁথছে, তার উপরে যদি শিয়াল ওঠে, তবে তাদের সেই পাথরের দেওয়াল ভেঙ্গে পড়বে।”
\s5
\v 4 “হে আমাদের ঈশ্বর, শোন, কারণ আমরা অবহেলিত হলাম; ওদের টিটকারি ওদের মাথায় ফিরিয়ে দাও এবং ওদেরকে বন্দী করে লুট করা জিনিসের মত বিদেশে থাকতে দাও;
\v 5 ওদের অন্যায় ঢেকে রেখো না ও ওদের পাপ তোমার সামনে থেকে মুছে যেতে দিও না; কারণ ওরা গাঁথকদের সামনে তোমাকে অসন্তুষ্ট করেছে।”
\v 6 এই ভাবে আমরা দেওয়াল গাঁথলাম, তাতে উচ্চতার অর্ধেক পর্যন্ত সমস্ত দেওয়াল একসাথে যুক্ত হল, কারণ লোকদের কাজ করার ইচ্ছা ছিল।
\s5
\v 7 আর সন্‌বল্লট ও টোবিয় এবং আরবীয়েরা, অম্মোনীয়েরা ও অস্‌দোদীয়েরা যখন শুনতে পেল, যিরূশালেমের দেওয়ালের সারাই সম্পূর্ণ হচ্ছে ও তার ছিদ্র সব বন্ধ করতে শুরু করা হয়েছে, তখন তারা খুব রেগে গেল;
\v 8 আর তারা সবাই যিরূশালেমের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্য ও গোলমাল শুরু করার জন্য ষড়যন্ত্র করল।
\v 9 কিন্তু তাদের ভয়ে আমরা আমাদের ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করলাম ও তাদের বিরুদ্ধে দিনরাত পাহারাদার নিযুক্ত করলাম।
\s5
\v 10 আর যিহূদার লোকেরা বলল, “মজুরেরা দুর্বল হয়ে পড়েছে এবং পড়ে থাকা কাঁকড় অনেক আছে, দেওয়াল গাঁথা আমাদের অসম্ভব!”
\v 11 আবার আমাদের শত্রুরা বলল, “ওরা জানবে না, দেখবে না, অমনি আমরা ওদের মধ্যে গিয়ে ওদেরকে হত্যা করে কাজ বন্ধ করব।”
\s5
\v 12 আর তাদের কাছাকাছি বাস করা যিহূদীরা সব জায়গা থেকে এসে দশ বার আমাদেরকে বলল, “তোমাদেরকে আমাদের কাছে ফিরে আসতে হবে।”
\v 13 অতএব আমি দেওয়ালের পিছনে নীচের খোলা জায়গায় লোক নিযুক্ত করলাম, নিজের নিজের বংশ অনুসারে তরোয়াল, বর্শা ও ধনুক সমেত লোক নিযুক্ত করলাম।
\v 14 পরে আমি চেয়ে দেখলাম এবং উঠে প্রধান লোকদেরকে, শাসনকর্তাদেরকে ও অন্য সব লোকদেরকে বললাম, “তোমরা ওদেরকে ভয় পেয় না; মহান ও ভয়ঙ্কর প্রভুকে মনে কর এবং নিজের নিজের ভাইদের, ছেলেমেয়েদের, স্ত্রীদের ও ঘরের জন্য যুদ্ধ কর।”
\s5
\v 15 আর যখন আমাদের শত্রুরা শুনতে পেল যে, আমরা জানতে পেরেছি, আর ঈশ্বর তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করেছেন, তখন আমরা সবাই দেওয়াল আবার নিজের নিজের কাজ করতে গেলাম।
\v 16 আর সেই দিন থেকে আমার যুবকদের অর্ধেক লোক কাজ করত, অন্য অর্ধেক লোক বর্শা, ঢাল, ধনুক ও বর্ম ধরে থাকত এবং সমস্ত যিহূদা বংশের পিছনে শাসনকর্তারা থাকতেন।
\s5
\v 17 যারা দেওয়াল গাঁথত, আর যারা ভার বহন করত, আর যারা ভার তুলে দিত, সবাই এক হাতে কাজ করত, অন্য হাতে অস্ত্র ধরত;
\v 18 আর গাঁথকেরা প্রত্যেকজন কোমরে তরোয়াল বেঁধে গাঁথত এবং তূরীবাদক আমার পাশে থাকত।
\s5
\v 19 আর আমি প্রধান লোকদেরকে, শাসনকর্তাদেরকে ও অন্য সব লোককে বললাম, “এই কাজ বড় ও ব্যাপক এবং আমরা দেওয়ালের উপরে আলাদা আলাদা হয়ে একজন থেকে অন্য জন দুরে আছি;
\v 20 তোমরা যে কোনো জায়গায় তূরীর শব্দ শুনবে, সেই জায়গায় আমাদের কাছে জড়ো হবে; আমাদের ঈশ্বর আমাদের জন্য যুদ্ধ করবেন।”
\s5
\v 21 এইভাবে আমরা কাজ করতাম এবং ভোর থেকে শুরু করে তারা দেখা পর্যন্ত আমাদের অর্ধেক লোক বর্শা ধরে থাকত।
\v 22 সেই সময় আমি লোকদেরকে আরও বললাম, “প্রত্যেক পুরুষ নিজের নিজের চাকরের সাথে রাতে যিরূশালেমের মধ্যে থাকুক; তারা রাতে আমাদের পাহারাদার হবে ও দিনে কাজ করবে।”
\v 23 অতএব আমি, আমার ভাইয়েরা, যুবকেরা ও আমার অনুসরণকারী রক্ষীরা কেউ পোশাক খুলতাম না, প্রত্যেকে নিজের নিজের অস্ত্র সঙ্গে নিয়ে জলের কাছে যেতাম।
\s5
\c 5
\ms গরিবদের উপরে অত্যাচার বন্ধ করা।
\p
\v 1 পরে নিজের ভাই যিহূদীদের বিরুদ্ধে লোকদের ও তাদের স্ত্রীদের মহাকোলাহল শোনা গেল।
\v 2 কেউ কেউ বলল, “আমরা ছেলেমেয়ে সমেত অনেক জন, খাবার খেয়ে বেঁচে থাকার জন্য শস্য নেব।”
\v 3 আর কেউ কেউ বলল, “আমরা নিজের জমি, আঙ্গুর ক্ষেত ও বাড়ি বন্ধক দিচ্ছি দুর্ভিক্ষের সময়ে শস্য নেব।”
\s5
\v 4 আর কেউ কেউ বলল, “রাজকরের জন্য আমরা নিজের নিজের জমি ও আঙ্গুর ক্ষেত বন্ধক রেখে রুপো নিয়েছি।
\v 5 কিন্তু আমাদের মাংস আমাদের ভাইদের মাংসের সমান, আমাদের ছেলেমেয়েরা তাদের ছেলেমেয়েদের সমান; তবুও সত্ত্বেও দেখুন, আমরা নিজের নিজের ছেলেমেয়েদেরকে দাসত্বে আনছি, আমাদের মেয়েদের মধ্যে কেউ কেউ তো দাসী হয়ে গেছে; আমাদের কিছু ক্ষমতা নেই এবং আমাদের জমি ও আঙ্গুর ক্ষেত সব অন্য লোকদের হয়েছে।”
\s5
\v 6 তখন আমি তাদের মহাকোলাহল ও এই সব কথা শুনে ভীষণ রেগে গেলাম।
\v 7 আর আমি মনে মনে ভেবে দেখলাম এবং প্রধান লোকদেরকে শাসনকর্তাদেরকে তিরস্কার করে বললাম, “তোমরা প্রত্যেকজন নিজের নিজের ভাইয়ের কাছে সুদ আদায় করে থাক।” পরে তাদের বিরুদ্ধে মহা সমাজ জড়ো করলাম।
\v 8 আর আমি তাদেরকে বললাম, “জাতিদের কাছে আমাদের যে যিহূদী ভাইয়েরা বিক্রি হয়েছিল, তাদেরকে আমরা ক্ষমতা অনুসারে মুক্ত করেছি; এখন তোমাদের ভাইদেরকে তোমরাই কি বিক্রি করবে? আমাদের কাছে কি তাদেরকে বিক্রি করা হবে?” তাতে তারা চুপ হল, কিছু উত্তর দিতে পারল না।
\s5
\v 9 আমি আরও বললাম, “তোমাদের এই কাজ ভালো না; আমাদের শত্রু জাতিদের টিটকারির জন্য তোমরা আমাদের ঈশ্বরের ভয়ে চলবে না?
\v 10 আমি, আমার ভাই ও যুবকেরা, আমরাও সুদের জন্য ওদেরকে রুপো ও শস্য ঋণ দিই; এস, আমরা এই সুদ ছেড়ে দিই।
\v 11 তোমরা ওদের শস্য ক্ষেত, আঙ্গুর ক্ষেত, জিতবৃক্ষের বাগান ও ঘর বাড়ী সব এবং রূপোর, শস্যের, আঙ্গুর রসের ও তেলের শতকরা যে বাড়িয়ে নিয়ে তাদেরকে ঋণ দিয়েছ, তা আজই তাদেরকে ফিরিয়ে দাও।”
\s5
\v 12 তখন তারা বলল, “আমরা তা ফিরিয়ে দেব। তাদের কাছে কিছুই চাইব না; আপনি যা বলবেন, সেই অনুযায়ী করব।” তখন আমি যাজকদেরকে ডেকে এই প্রতিজ্ঞা অনুসারে কাজ করতে ওদেরকে শপথ করালাম।
\v 13 আবার আমি আমার পোশাকের সামনের দিকটা ঝেড়ে বললাম, “যারা এই প্রতিজ্ঞা পালন না করে, ঈশ্বর তাদের ঘর বাড়ী ও পরিশ্রমের ফল থেকে তাকে এই ভাবে ঝেড়ে ফেলুন, এই ভাবে সে ঝাড়া ও শূন্য হোক।” তাতে সমস্ত সমাজ বলল, “আমেন,” এবং সদাপ্রভুর ধন্যবাদ করল। পরে লোকেরা সেই প্রতিজ্ঞা অনুসারে কাজ করলেন।
\s5
\v 14 সুতরাং আমি যে সময়ে যিহূদা দেশে তাদের শাসনকর্তা পদে নিযুক্ত হয়েছিলাম, সেই থেকে অর্থাৎ অর্তক্ষস্ত রাজার কুড়ি বছর থেকে বত্রিশ বছর পর্যন্ত, বারো বছর আমি ও আমার ভাইরা রাজ্যপালের খাবার গ্রহণ করিনি।
\v 15 আমার আগে যে সব রাজ্যপাল ছিলেন, তারা লোকদের ভারী বোঝা চাপিয়ে দিতেন এবং তাদের থেকে নগদ চল্লিশ শেকল রুপো ছাড়াও খাবার ও আঙ্গুর রস নিতেন, এমনকি, তাঁদের চাকরেরাও লোকদের উপরে নিপীড়ন করত; কিন্তু আমি ঈশ্বর ভয়ের জন্য তা করতাম না।
\s5
\v 16 আবার আমি এই দেওয়ালের কাজেও নিযুক্ত ছিলাম; আমরা জমি কিনতাম না এবং আমার সমস্ত যুবক সেই জায়গায় কাজে জড়ো হত।
\v 17 আর আমাদের চারদিকে অবস্থিত জাতিদের মধ্যে থেকে যারা আমাদের কাছে আসত, তাদের ছাড়া যিহূদী ও শাসনকর্তা দেড়শো জন আমার সঙ্গে টেবিলে বসতো।
\s5
\v 18 সেই সময় প্রত্যেক দিন এই সব খাবার তৈরী হত, একটা ষাঁড়, ছয়টা বাছাই করা ভেড়া ও কতগুলো পাখী আমার জন্য রান্না করা হত, আর প্রতি দশ দিন পর সব রকমের আঙ্গুর রস, এই সমস্ত সত্ত্বেও লোকদের দাসত্বের ভার বেশি হওয়াতে আমি রাজ্যপালের খাবার চাইতাম না।
\v 19 হে আমার ঈশ্বর, আমি এই লোকদের জন্য যে সব কাজ করেছি, মঙ্গলের জন্য আমার পক্ষে তা মনে কর।
\s5
\c 6
\ms শত্রুদের ষড়যন্ত্র; নহিমিয়ের ধৈর্য্য।
\p
\v 1 পরে সন্‌বল্লট, টোবিয়, আরবীয় গেশম ও আমাদের বাকী শত্রুরা শুনতে পেল যে, আমি দেওয়াল গেঁথে ফেলেছি, তার মধ্যে আর ভাঙ্গা জায়গা নেই; তা সত্ত্বেও তখনও শহরের দরজাগুলির দরজা স্থাপন করিনি।
\v 2 তখন সন্‌বল্লট আর গেশম লোকের মাধ্যমে আমাকে এই কথা বলে পাঠাল, “এস, আমরা ওনো সমভূমির কোনো গ্রামে মিলিত হই।” কিন্তু তারা আমার ক্ষতি করবার ষড়যন্ত্র করেছিল।
\s5
\v 3 তখন আমি দূতের মাধ্যমে তাদেরকে বলে পাঠালাম, “আমি এক বিশেষ কাজ করছি, নেমে যেতে পারিনা; আমি যতক্ষণ কাজ ছেড়ে তোমাদের কাছে নেমে যাব, ততক্ষণ কাজ কেন বন্ধ থাকবে?”
\v 4 এইভাবে তারা চার বার আমার কাছে লোক পাঠাল, আর আমি তাদেরকে সেইমত উত্তর দিলাম।
\s5
\v 5 পরে পঞ্চম বারে সন্‌বল্লট ঐভাবে তার চাকরকে আমার কাছে পাঠিয়ে দিল। তার হাতে একটা খোলা চিঠি ছিল;
\v 6 তাতে এই কথা লেখা ছিল, “জাতিদের মধ্যে এই কথা শোনা যাচ্ছে এবং গেশমও বলছে যে, তুমি ও যিহূদীরা বিদ্রোহের ষড়যন্ত্র করছ, এই জন্য তুমি দেওয়াল গাঁথছ; আর এই লোকজনের কথা অর্থ এই যে, তুমি তাদের রাজা হতে যাচ্ছ।
\s5
\v 7 আর যিহূদা দেশে একজন রাজা আছেন, আপনার বিষয়ে যিরূশালেমে এটা প্রচার করার জন্য তুমি ভাববাদীদেরকেও নিযুক্ত করেছ। এখন এই লোকের কথা রাজার কাছে পৌঁছাবে। অতএব এস, আমরা জড়ো হয়ে পরামর্শ করি।”
\s5
\v 8 তখন আমি তাকে বলে পাঠিয়ে দিলাম, “তুমি যেসব কথা বলছ, সেরকম কোনো কাজ হয়নি; কিন্তু তুমি মনগড়া কথা বলছ।”
\v 9 কারণ তারা সবাই আমাদেরকে ভয় দেখাতে চাইত, এই কাজে ওদের হাত দুর্বল হোক, তাতে তা শেষ হবে না। কিন্তু এখন হে ঈশ্বর, তুমি আমার হাত শক্ত কর।
\s5
\v 10 একদিন আমি দলায়ের ছেলে শময়িয়ের ঘরে গেলাম। দলায় মহেটবেলের ছেলে। শময়িয় তার ঘরে আটকে ছিল। আর সে বলল, “এস, আমরা ঈশ্বরের গৃহে, মন্দিরের ভিতরে, জড়ো হই ও মন্দিরের দরজা সব বন্ধ করি, কারণ লোকে তোমাকে হত্যা করতে আসবে, রাতেই তোমাকে হত্যা করতে আসবে।”
\v 11 তখন আমি বললাম, “আমার মত লোক কি পালাবে? আমার মত কোন লোকটি প্রাণ বাঁচবার জন্য মন্দিরে আশ্রয় নেবে? আমি সেখানে যাব না।”
\s5
\v 12 আর আমি বুঝতে পারলাম যে, ঈশ্বর তাকে পাঠান নি; বলে সে আমার বিরুদ্ধে ভাববাণী বলেছে এবং টোবিয় আর সন্‌বল্লট তাকে ঘুষ দিয়েছে।
\v 13 তাকে এই জন্য ঘুষ দেওয়া হয়েছিল, যেন আমি ভয় পেয়ে সেই কাজ করি ও পাপ করি, আর তাতে যেন তারা আমার দুর্নাম করবার সংকেত পেয়ে আমাকে টিটকারি দিতে পারে।
\v 14 হে আমার ঈশ্বর, টোবিয় আর সন্‌বল্লটের এই কাজ অনুসারে তাদের এবং নোয়দিয়া ভাববাদিনীকে ও অন্য যে সব ভাববাদীরা আমাকে ভয় দেখাবার চেষ্টা করছিল তাদের কথাও মনে রেখো।
\s5
\v 15 ইলূল মাসের পঁচিশ দিনে, বাহান্ন দিনের দিন দেওয়াল গাঁথা শেষ হল।
\v 16 পরে আমাদের সব শত্রুরা যখন তা শুনল, তখন আমাদের আশেপাশের জাতিরা সবাই ভয় পেল এবং নিজেদের চোখে খুব নীচু হল, কারণ এই কাজ যে আমাদের ঈশ্বর থেকেই হল, এরা তা বুঝল।
\s5
\v 17 আবার ঐ সময়ে যিহূদার প্রধান লোকেরা টোবিয়ের কাছে অনেক চিঠি পাঠাত এবং টোবিয়ের চিঠিও তাদের কাছে আসত।
\v 18 কারণ যিহূদার মধ্যে অনেকে তার পক্ষে শপথ করেছিল, কারণ সে ছিল আরহের ছেলে শখনিয়ের জামাই এবং তার ছেলে যিহোহানন বেরিখিয়ের ছেলে মশুল্লমের মেয়েকে বিয়ে করেছিল।
\v 19 আর তারা আমার সামনে তার ভালো কাজের কথা বলত এবং আমার কথাও তাকে জানাত। আমাকে ভয় দেখাবার জন্য টোবিয় চিঠি পাঠাত।
\s5
\c 7
\p
\v 1 দেওয়াল গাঁথা শেষ হবার পর আমি ফটকগুলিতে দরজা লাগালাম এবং দারোয়ানরা, গায়কেরা ও লেবীয়েরা নিযুক্ত হল।
\v 2 আর আমি নিজের ভাই হনানি ও দুর্গের সেনাপতি হনানিয়কে যিরূশালেমের ভার দিলাম, কারণ হনানিয় বিশ্বস্ত লোক ছিলেন এবং ঈশ্বরকে অনেকের চেয়ে বেশী ভয় করতেন।
\s5
\v 3 আর আমি তাঁদেরকে বললাম, “যতক্ষণ রোদ বেশী না হয়, ততক্ষণ যিরূশালেমের দরজাগুলো যেন খোলা না হয় এবং রক্ষীরা কাছে দাড়িয়ে থাকতে দরজাগুলো সব বন্ধ করা ও হুড়কা দেওয়া হয় এবং তোমরা যিরূশালেমের বাসিন্দাদের মধ্য থেকে যেন পাহারাদার নিযুক্ত কর, তারা প্রত্যেকে নিজের নিজের পাহারা দেবার জায়গায়, নিজের নিজের ঘরের সামনে থাকুক।”
\s যিরূশালেমে প্রথম ফিরে আসা লোকদের তালিকা।
\m
\v 4 শহর বড় ও বিস্তৃত, কিন্তু তার মধ্যে লোক অল্প ছিল, বাড়িগুলোও তৈরী করা যায়নি
\s5
\v 5 পরে আমার ঈশ্বর আমার মনে ইচ্ছা দিলে আমি গণ্যমান্য লোকদের, নেতাদের ও লোকদের জড়ো করলাম, যেন তাদের বংশ তালিকা লেখা হয়। আমি প্রথমে আসা লোকদের বংশ তালিকা পেলাম, তার মধ্যে এই কথা লেখা পেলাম
\s5
\v 6 যারা বন্দী অবস্থায় আনা হয়েছিল, বাবিলের রাজা নবূখদনিত্সর যাদেরকে বন্দী করে নিয়ে গিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে প্রদেশের এই লোকেরা বন্দী অবস্থা থেকে গিয়ে যিরূশালেম ও যিহূদাতে নিজের নিজের শহরে ফিরে আসল;
\v 7 তারা সরুব্বাবিল, যেশূয়, নহিমিয়, অসরিয়, রয়মিয়া, নহমানি, মর্দখয়, বিল্‌শন, মিস্পরৎ, বিগ্‌বয়, নহূম ও বানা এদের সঙ্গে ফিরে আসল। সেই ইস্রায়েলীয়দের পুরুষ সংখ্যা;
\s5
\v 8 পরোশের বংশধর দুই হাজার একশো বাহাত্তর জন;
\v 9 শফটিয়ের বংশধর তিনশো বাহাত্তর জন;
\v 10 আরহের বংশধর ছশো বাহান্ন জন;
\s5
\v 11 যেশূয় ও যোয়াবের বংশধরদের মধ্যে পহৎ মোয়াবের বংশধর দুই হাজার আটশো আঠারো জন;
\v 12 এলমের বংশধর এক হাজার দুশো চুয়ান্ন জন;
\v 13 সত্তূর বংশধর আটশো পঁয়তাল্লিশ জন;
\v 14 সক্কয়ের বংশধর সাতশো ষাট জন;
\s5
\v 15 বিন্নূয়ির বংশধর ছশো আটচল্লিশ জন;
\v 16 বেবয়ের বংশধর ছশো আটাশ জন;
\v 17 আস্‌গদের বংশধর দুই হাজার তিনশো বাইশ জন;
\v 18 অদোনীকামের বংশধর ছশো সাতষট্টি জন;
\s5
\v 19 বিগ্‌বয়ের বংশধর দুই হাজার সাতষট্টি জন;
\v 20 আদীনের বংশধর ছশো পঞ্চান্ন জন;
\v 21 যিহিষ্কিয়ের বংশধর আটেরের বংশধর আটানব্বইজন।
\v 22 হশুমের বংশধর তিনশো আটাশ জন;
\s5
\v 23 বেৎসয়ের বংশধর তিনশো চব্বিশ জন;
\v 24 হারীফের বংশধর একশো বারো জন;
\v 25 গিবিয়োনের বংশধর পঁচানব্বইজন।
\v 26 বৈৎলেহম ও নটোফার লোক একশো অষ্টাশি জন;
\s5
\v 27 অনাথোতের লোক একশো আটাশ জন;
\v 28 বৈৎ অস্মাবতের লোক বিয়াল্লিশ জন;
\v 29 কিরিয়ৎ যিয়ারীম, কফীরা ও বেরোতের লোক সাতশো তেতাল্লিশ জন;
\v 30 রামা ও গেবার লোক ছশো একুশ জন;
\s5
\v 31 মিক্‌মসের লোক একশো বাইশ জন;
\v 32 বৈথেল ও অয়ের লোক একশো তেইশ জন;
\v 33 অন্য নবোর লোক বাহান্নজন;
\v 34 অন্য এলমের লোক এক হাজার দুশো চুয়ান্ন জন;
\s5
\v 35 হারীমের লোক তিনশো বিশ জন;
\v 36 যিরীহোর লোক তিনশো পয়ঁতাল্লিশ জন;
\v 37 লোদ, হাদীদ এবং ওনোর বংশধর সাতশো একুশ জন;
\v 38 সনায়ার লোক তিন হাজার নশো ত্রিশ জন।
\s5
\v 39 যাজকদের সংখ্যা এই: যেশূয়ের বংশের মধ্যে যিদয়িয়ের বংশের নশো তিয়াত্তর জন;
\v 40 ইম্মেরের বংশধর এক হাজার বাহান্ন জন;
\v 41 পশ্‌হূরের বংশধর এক হাজার দুশো সাতচল্লিশ জন;
\v 42 হারীমের বংশধর এক হাজার সতেরো জন।
\s5
\v 43 লেবীয়দের সংখ্যা এই: যেশূয়ের বংশের কদ্‌মীয়েল ও হোদবিয়ের বংশধর চুয়াত্তরজন।
\v 44 গায়কদের সংখ্যা এই: আসফের বংশধর একশো আটচল্লিশ জন।
\v 45 রক্ষীরা: শল্লুমের, আটেরের, টল্‌মোনের, অক্কূবের, হটীটার ও শোবয়ের বংশধর একশো আটত্রিশ জন।
\s5
\v 46 নথীনীয়রা: সীহ, হসূফা ও টব্বায়োতের বংশধরেরা;
\v 47 কেরোস, সীয় ও পাদোনের বংশধরেরা;
\v 48 লবানা, হগাব ও শল্‌ময়ের বংশধরেরা;
\v 49 হানন, গিদ্দেল ও গহরের বংশধরেরা;
\s5
\v 50 রায়া, রৎসীন ও নকোদের বংশধরেরা;
\v 51 গসম, ঊষ ও পাসেহের বংশধরেরা;
\v 52 বেষয়, মিয়ূনীম ও নফুষযীমের বংশধরেরা;
\s5
\v 53 বকবূক, হকূফা ও হর্হূরের বংশধরেরা;
\v 54 বসলীত, মহীদা ও হর্শার বংশধরেরা;
\v 55 বর্কোস, সীষরা ও তেমহের বংশধরেরা;
\v 56 নৎসীহ ও হটীফার বংশধরেরা।
\s5
\v 57 শলোমনের চাকরদের বংশধরেরা: সোটয়, সোফেরত, পরীদা,
\v 58 যালা, দর্কোন, গিদ্দেল,
\v 59 শফটিয়, হটীল, পোখেরৎ হৎসবায়ীম ও আমোনের বংশধরেরা।
\v 60 নথীনীয়েরা ও শলোমনের চাকরদের বংশধরেরা মোট তিনশো বিরানব্বই জন।
\s5
\v 61 তেল্‌ মেলহ, তেল্‌হর্শা, করূব, অদ্দন ও ইম্মেরের এই এলাকা থেকে নিম্নলিখিত লোকেরা এল আসল; কিন্তু তারা ইস্রায়েলীয় লোক কি না, এ বিষয়ে নিজের নিজের বাবার বংশ কি গোষ্ঠীর প্রমাণ করতে পারল না;
\v 62 দলায়, টোবিয়, ও নকোদের বংশের ছশো বিয়াল্লিশ জন।
\v 63 আর যাজকদের মধ্য থেকে হবায়, হক্কোস, ও বর্সিল্লয়ের বংশধরেরা; এই গিলিয়দীয় বর্সিল্লয়ের এক মেয়েকে বিয়ে করে তাদের নামে আখ্যাত হয়েছিল।
\s5
\v 64 বংশ তালিকাতে বলা লোকদের মধ্যে এরা নিজের নিজের বংশ তালিকা খোঁজ করে পেল না, এই জন্য এরা অশুচি গণ্য হয়ে যাজকত্ব থেকে বাদ হয়ে গেল।
\v 65 আর শাসনকর্তা তাদেরকে আদেশ দিলেন, যতদিন ঊরীম ও তুম্মীম ব্যবহার করবার অধিকারী কোন যাজক উত্পন্ন না হয়, ততদিন পর্যন্ত তোমরা পবিত্র খাবারের কিছু খেয় না।”
\s5
\v 66 জড়ো করা গোটা দলটার লোকসংখ্যা ছিল বিয়াল্লিশ হাজার তিনশো ষাট জন।
\v 67 এছাড়া সাত হাজার তিনশো সাঁইত্রিশ জন চাকর চাকরানী এবং তাঁদের দুশো পঁয়তাল্লিশ জন গায়ক গায়িকাও ছিল।
\s5
\v 68 তাদের সাতশো ছত্রিশটা ঘোড়া, দুশো পঁয়তাল্লিশটি খচ্চর,
\v 69 চারশো পঁয়ত্রিশটি উট ও ছয় হাজার সাতশো কুড়িটা গাধা ছিল।
\s5
\v 70 বংশের প্রধান লোকদের মধ্যে কেউ কেউ কাজের জন্য দান করলেন। শাসনকর্তা ধনভাণ্ডারে দিলেন এক হাজার সোনার অর্দকোন, পঞ্চাশটা বাটি ও যাজকদের জন্য পাঁচশো ত্রিশটা পোশাক দিলেন।
\v 71 বংশের প্রধান লোকদের মধ্যে কেউ কেউ এই কাজের জন্য সোনার কুড়ি হাজার অর্দকোন ও দুই হাজার দুশো মানি রুপো ধনভাণ্ডারে দিলেন।
\v 72 বাকী লোকেরা দিল মোট সোনার কুড়ি হাজার অর্দকোন, দুই হাজার মানি রুপো ও যাজকদের জন্য সাতষট্টিটা পোশাক।
\s5
\v 73 পরে যাজকেরা, লেবীয়েরা, রক্ষীরা, গায়কেরা, কোনো লোক ও নথীনীয়েরা এবং সমস্ত ইস্রায়েলীয়েরা নিজের নিজের শহরে বাস করতে লাগল।
\s5
\c 8
\ms নিয়মের প্রকাশ্য পাঠ। কুটীর পর্ব পালন।
\p
\v 1 সপ্তম মাস আসলে ইস্রায়েলীয়রা নিজের নিজের শহরে ছিল। আর সমস্ত লোক একসঙ্গে এক মানুষের মত মিলে জল দরজার সামনের চকে জড়ো হল এবং তারা লিপিকার ইষ্রাকে ইস্রায়েলীয়দের জন্য সদাপ্রভুর দেওয়া আদেশ, অর্থাৎ মোশির ব্যবস্থার বইটি নিয়ে আসতে বলল।
\v 2 তাতে সপ্তম মাসের প্রথম দিনে যাজক ইষ্রা স্ত্রী পুরুষ এবং যারা শুনে বুঝতে পারে তাদের সামনে সেই ব্যবস্থার বইটি নিয়ে আসলেন।
\v 3 জল দরজার সামনের চকের স্ত্রী পুরুষ ও অন্যান্য যারা বুঝতে পারে তাদের কাছে তিনি সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তা পড়ে শোনালেন, আর সমস্ত লোক মন দিয়ে ব্যবস্থার বইটির কথা শুনল।
\s5
\v 4 ফলে অধ্যাপক ইষ্রা এই কাজের জন্য তৈরী এক কাঠের মঞ্চের উপরে দাঁড়ালেন এবং তাঁর ডান পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন মত্তিথিয়, শেমা, অনায়, ঊরিয়, হিল্কিয় ও মাসেয়; এবং তাঁর বাঁ পাশে ছিলেন পদায়, মীশায়েল, মল্কিয়, হশুম, হশবদ্দানা, সখরিয় ও মশুল্লম।
\v 5 ইষ্রা সব লোকের সামনে বইটি খুললেন; কারণ তিনি তাদের থেকে উঁচুতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি বইটি খুললে পর সব লোক উঠে দাঁড়াল।
\s5
\v 6 পরে ইষ্রা মহান ঈশ্বর সদাপ্রভুর ধন্যবাদ করলেন। আর সব লোক তাদের হাত তুলে বলল, “আমেন, আমেন।” তারপর তারা মাটিতে মাথা ঠেকিয়ে সদাপ্রভুর আরাধনা করলো।
\v 7 যেশূয়, বানি, শেরেবিয়, যামীন, অক্কুব, শব্বথয়, হোদিয়, মাসেয়, কলীট, অসরীয়, যোষাবদ, হানন ও পলায় এই সব লেবীয়েরা সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা লোকদের কাছে ব্যবস্থা বইয়ের বিষয় বুঝিয়ে দিলেন।
\v 8 যা পড়া হচ্ছে তা যাতে লোকেরা বুঝতে পারে সেইজন্য তাঁরা ঈশ্বরের ব্যবস্থার বই থেকে পড়ে অনুবাদ করে মানে বুঝিয়ে দিলেন।
\s5
\v 9 তারপর শাসনকর্তা নহিমিয়, যাজক ও অধ্যাপক ইষ্রা এবং যে লেবীয়েরা লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন তাঁরা সমস্ত লোকদের বললেন, “আজকের এই দিনটা তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র। আপনারা শোক বা কান্নাকাটি করবেন না।” তিনি এই কথা বললেন, কারণ লোকেরা সবাই ব্যবস্থার বইয়ের কথা শুনে কাঁদছিল।
\v 10 আর তিনি তাদেরকে বললেন, “তোমরা গিয়ে ভাল ভাল খাবার ও মিষ্টি রস খাও আর যাদের কোনো খাবার নেই তাদের কিছু কিছু পাঠিয়ে দাও। আজকের দিনটা হল আমাদের সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পবিত্র। আপনারা দুঃখ কর না, কারণ সদাপ্রভুর দেওয়া আনন্দই হল তোমাদের শক্তি।”
\s5
\v 11 লেবীয়েরা সমস্ত লোকদের শান্ত করে বললেন, “নীরব হও, কারণ আজকের দিনটা পবিত্র। তোমরা দুঃখিত হয়োনা।”
\v 12 তখন সমস্ত লোক খাওয়া দাওয়া, খাবারের অংশ পাঠানো ও খুব আনন্দ করতে গেল, কারণ যে সব কথা তাদের কাছে বলা গিয়েছিল, তারা সে সব বুঝতে পেরেছিল।
\s5
\v 13 আর দ্বিতীয় দিনে সমস্ত বংশের প্রধান লোকেরা, যাজকেরা ও লেবীয়েরা ব্যবস্থা ভাল করে বুঝবার জন্য অধ্যাপক ইষ্রার কাছে জড়ো হলেন।
\v 14 আর তাঁরা দেখতে পেল, ব্যবস্থায় এই কথা লেখা আছে যে, সদাপ্রভু মোশির মাধ্যমে এই আজ্ঞা দিয়েছিলেন, ইস্রায়েলীয়রা সপ্তম মাসের উত্সবের সময় তাঁবুতে বাস করবে;
\v 15 এবং নিজের সব শহরে ও যিরূশালেমে তারা এই কথা ঘোষণা ও প্রচার করবে, “যেমন লেখা আছে, সেইমত তোমরা পাহাড়ী এলাকায় গিয়ে আশ্রয় স্থান বানাবার জন্য জিত ও বুনো জিত গাছের ডাল আর গুলমেঁদি, খেজুর ও পাতা ভরা গাছের ডাল নিয়ে আসবে।”
\s5
\v 16 তাতে লোকেরা গিয়ে ডাল নিয়ে এসে প্রত্যেক জন নিজের ঘরের ছাদের উপরে কিম্বা উঠানে কিম্বা ঈশ্বরের ঘরের উঠানে কিম্বা জল দরজার কাছের চকে কিম্বা ইফ্রয়িম দরজার কাছের চকে নিজেদের জন্য তাঁবু তৈরী করল।
\v 17 বন্দীদশা থেকে ফিরে আসা সমস্ত সমাজ তাঁবু তৈরী করে তার মধ্যে বাস করল; বস্তুত: নূনের ছেলে যিহোশূয়ের সময় থেকে সেই দিন পর্যন্ত ইস্রায়েলীয়েরা এই রকম আর করে নি। তারা খুব বেশী আনন্দ করল।
\s5
\v 18 আর ইষ্রা প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত প্রতিদিন ঈশ্বরের ব্যবস্থার বই পাঠ করলেন। আর লোকেরা সাত দিনপর্ব পালন করল এবং নিয়ম অনুসারে অষ্টম দিনে উত্সব সভা হল।
\s5
\c 9
\ms যিহূদীদের উপবাস, পাপ স্বীকার ও নিয়মস্থাপন।
\p
\v 1 আর ঐ মাসের চব্বিশতম দিনে ইস্রায়েলীয়েরা জড়ো হয়ে উপবাস করল, চট পরল এবং মাথায় ধুলা দিল।
\v 2 ইস্রায়েল জাতির লোকেরা অন্যান্য জাতির সমস্ত লোকদের কাছ থেকে নিজেদের আলাদা করে নিল। তারা দাঁড়িয়ে নিজেদের পাপ ও নিজেদের পূর্বপুরুষদের অন্যায় স্বীকার করল।
\s5
\v 3 আর তারা নিজের নিজের জায়গায় দাঁড়িয়ে থেকেই দিনের চার ভাগের এক ভাগ সময় তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ব্যবস্থার বই পড়তে থাকল, পরে দিনের আর এক চার ভাগের এক ভাগ সময় পাপ স্বীকার ও তাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে প্রণাম করল।
\v 4 যেশূয়, বানি, কদ্‌মীয়েল, শবনিয়, বুন্নি, শেরেবিয়, বানি ও কনানী নামে লেবীয়েরা তাদের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে নিজেদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে চিত্কার করে ডাকলেন।
\s5
\v 5 পরে যেশূয়, কদ্‌মীয়েল, বানি, হশব্‌নিয়, শেরেবিয়, হোদিয়, শবনিয় ও পথাহিয় এই কয়েকজন লেবীয় এই কথা বলল, “ওঠ; তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ধন্যবাদ কর, যিনি অনাদিকাল থেকে অনন্তকাল পর্যন্ত ধন্য।” তোমার মহিমান্বিত নামের ধন্যবাদ হোক, যা সমস্ত ধন্যবাদ ও প্রশংসার উপরে।
\v 6 কেবল তুমিই সদাপ্রভু। তুমিই স্বর্গ ও স্বর্গের স্বর্গ এবং তার সমস্ত বাহিনী, পৃথিবী ও তার উপরকার সব কিছু এবং সাগর ও তার মধ্যেকার সব কিছু তৈরী করেছ। তুমিই তাদের সকলের প্রাণ দিয়েছ এবং স্বর্গের বাহিনী তোমার কাছে নত হয়।
\s5
\v 7 “তুমিই সদাপ্রভু ঈশ্বর। তুমি অব্রামকে বেছে নিয়ে কল্‌দীয়দের দেশ ঊর থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলে ও তাঁর নাম রেখেছিলে অব্রাহাম
\v 8 এবং নিজের সামনে তাঁর অন্তর বিশ্বস্ত দেখে কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, যিবূষীয় ও গির্গাশীয়দের দেশ তাঁর বংশকে দেবার জন্য তাঁর জন্য একটা ব্যবস্থা স্থাপন করেছিলে। তুমি ন্যায়বান বলে তোমার প্রতিজ্ঞা তুমি অটল রেখেছিলে।
\s5
\v 9 “মিসর দেশে আমাদের পূর্বপুরুষদের কষ্টভোগ তুমি দেখেছিলে; লোহিত সাগরের পারে তাদের কান্না তুমি শুনেছিলে;
\v 10 ফরৌণ, তাঁর সমস্ত কর্মচারী ও তাঁর দেশের সমস্ত লোকদের তুমি অনেক চিহ্ন ও আশ্চর্য কাজ দেখিয়েছিলে; কারণ তুমি জানতে যে, তাদের বিরুদ্ধে মিসরীয়দের ব্যবহার ছিল অহংকারে পূর্ণ। এই সমস্ত কাজ করে তুমি তোমার নাম প্রতিষ্ঠা করলে, যা এখনও রয়েছে।
\s5
\v 11 আর তুমি তাদের সামনে সমুদ্রকে দুই ভাগে করলে, তাতে তারা সমুদ্রের মাঝখানে শুকনো রাস্তা দিয়ে এগিয়ে গেল; কিন্তু প্রচুর জলে যেমন পাথর, তেমনি তুমি তাদের পিছনে তাড়া করে আসা লোকদেরকে প্রচুর জলে ফেলে দিলে।
\s5
\v 12 আর তুমি দিনে মেঘের থামের মাধ্যমে ও রাতে তাদের গন্তব্য পথে এল দেবার আগুনের থামের মাধ্যমে তাদেরকে নিয়ে যেতে।
\v 13 “তুমি সীনয় পাহাড়ের উপরে নেমে এসেছিলে এবং স্বর্গ থেকে তাদের সঙ্গে কথা বলেছিলে। তুমি ন্যায্য নির্দেশ, সঠিক ব্যবস্থা এবং ভাল নিয়ম ও আদেশ তাদের দিয়েছিলে।
\s5
\v 14 তোমার পবিত্র বিশ্রামবার সম্বন্ধে তুমি তাদের জানিয়েছিলে এবং তোমার দাস মোশির মধ্য দিয়ে তুমি তাদের আদেশ, নিয়ম ও ব্যবস্থা দিয়েছিলে।
\v 15 খিদে মিটাবার জন্য তুমি স্বর্গ থেকে তাদের খাবার দিয়েছিলে ও তাদের পিপাসা মিটাবার জন্য পাথর থেকে জল বের করে দিয়েছিলে। যে দেশ তাদের দেবার জন্য তুমি শপথ করেছিলে সেখানে গিয়ে তা অধিকার করবার জন্য তুমি তাদের আদেশ দিয়েছিলে।
\s5
\v 16 তবুও তারা আমাদের পূর্বপুরুষরা গর্ব করল; নিজের নিজের ঘাড় শক্ত করল আর তোমার আদেশ পালন করল না।
\v 17 তারা বাধ্য থাকতে অস্বীকার করেছিল, আর যে সব আশ্চর্য কাজ তুমি তাদের মধ্যে করেছিলে তাও তারা মনে রাখে নি, কিন্তু নিজের নিজের ঘাড় শক্ত করে আবার দাসত্ব করতে মিসরে ফিরে যাবার জন্য বিদ্রোহভাবে একজন সেনাপতিকে নিযুক্ত করেছিল। কিন্তু তুমি ক্ষমাশীল ঈশ্বর, দয়াময় ও করুণায় পূর্ণ; তাই তাদেরকে ত্যাগ করনি।
\s5
\v 18 এমন কি, তারা নিজেদের জন্য ছাঁচে ফেলে একটা বাছুরের মূর্তি তৈরী করে বলেছিল, ‘এই তোমার দেবতা; মিসর দেশ থেকে যিনি তোমাদের বের করে এনেছেন, এইভাবে যখন তারা তোমাকে ভীষণ অপমান করেছিল
\v 19 তখনও তুমি প্রচুর করুণার জন্য মরু এলাকায় তাদের ত্যাগ করনি; দিনের বেলায় তাদের চালিয়ে নেবার জন্য মেঘের থাম এবং রাতে তাদের যাওয়ার পথে আলো দেবার জন্য আগুনের থাম তাদের কাছ থেকে সরে যায় নি।
\s5
\v 20 তুমি তাদের শিক্ষা দেবার জন্য নিজের মঙ্গলময় আত্মাকে দান করেছিলে। তাদের খাওয়ার জন্য তুমি যে মান্না দিয়েছিলে তা বন্ধ করে দাওনি; তুমি তাদের পিপাসা মিটাবার জন্য জল দিয়েছিলে।
\v 21 আর মরু এলাকায় চল্লিশ বছর ধরে তুমি তাদের পালন করেছিলে। তাদের অভাব হয় নি; তাদের পোশাকও পুরানো হয় নি এবং তাদের পা ফোলে নি।
\s5
\v 22 “পরে তুমি অনেক রাজ্য ও জাতি তাদের হাতে দিয়েছিলে, এমন কি, তাদের সমস্ত জায়গাও তাদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছিলে। তারা হিষ্‌বোণের রাজা সীহোনের দেশ ও বাশনের রাজা ওগের দেশ অধিকার করেছিল।
\s5
\v 23 আর তুমি তাদের সন্তানদেরকে আকাশের তারার মত প্রচুর সংখ্যক করলে এবং সেই দেশে তাদেরকে আনলে, যে দেশের বিষয়ে তুমি তাদের পূর্বপুরুষদের কাছে বলেছিলে যে, তারা তা অধিকার করবার জন্য সেখানে ঢুকবে।
\v 24 পরে সেই সন্তানেরা সেই দেশে গিয়ে তা দখল করে নিয়েছিল এবং সেই দেশে বাসকারী কনানীয়দের তুমি তাদের সামনে নত করেছিলে এবং কনানীয়দের, তাদের রাজাদের ও দেশের অন্যান্য জাতিদের তুমি তাদের হাতে তুলে দিয়েছিলে, ওদের প্রতি যা ইচ্ছা তা করতে দিলে।
\s5
\v 25 তারা দেওয়াল ঘেরা অনেক শহর ও উর্বর জমি অধিকার করেছিল; তারা সব রকম ভাল ভাল জিনিষে ভরা বাড়ী ও আগেই খোঁড়া হয়েছে এমন অনেক কূয়া, আঙ্গুর ক্ষেত, জিতবৃক্ষের বাগান এবং অনেক ফলের গাছ অধিকার করেছিল। তারা খেয়ে সন্তুষ্ট হয়ে স্বাস্থ্যবান হয়েছিল এবং তোমার দেওয়া প্রচুর মঙ্গল ভোগ করেছিল।
\s5
\v 26 “তবুও তারা অবাধ্য হয়ে তোমার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, তোমার ব্যবস্থা তারা ত্যাগ করেছিল। তোমার যে ভাববাদীরা তাদের সাক্ষ্য দিতেন যাতে তারা তোমার দিকে ফিরে আসে, সেই ভাববাদীদের তারা মেরে ফেলেছিল; তারা তোমাকে ভীষণ অসন্তুষ্ট করল।
\v 27 পরে তুমি শত্রুদের হাতে তাদের তুলে দিয়েছিলে আর তারা তাদের উপর অত্যাচার করত। কিন্তু তাদের কষ্টের সময় তারা তোমার কাছে কান্নাকাটি করত আর তুমি স্বর্গ থেকে তা শুনেছিলে। তুমি প্রচুর করুণায় তাদের কাছে উদ্ধারকারীদের পাঠিয়ে দিতে। যারা শত্রুদের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করতে।
\s5
\v 28 “তবুও যেই তারা বিশ্রাম পেত অমনি আবার তারা তোমার চোখে যা খারাপ ব্যবহার করত, তাতে তুমি শত্রুদের হাতে তাদের ছেড়ে দিতে এবং সেই শত্রুরা তাদের কর্তৃত্ব করত। কিন্তু আবার যখন তারা তোমার কাছে কাঁদত তখন স্বর্গ থেকে তা শুনে তোমার করুণায় তুমি বারে বারে তাদের উদ্ধার করতে।
\v 29 “তোমার ব্যবস্থার দিকে ফিরে আনার জন্য তুমি তাদের সাক্ষ্য দিতে, তবুও তাদের ব্যবহার ছিল অহংকারে পূর্ণ; তারা তোমার সব আদেশ অমান্য করত। কিন্তু তোমার যে সব নির্দেশ পালন করলে মানুষ বাঁচে, তোমার সেই সব শাসনের বিরুদ্ধে তারা পাপ করত। তারা কাঁধ সরিয়ে এবং ঘাড় শক্ত করে তোমার কথা শুনত না।
\s5
\v 30 তবুও অনেক বছর ধরে তুমি তাদের উপর ধৈর্য্য ধরলে। তোমার ভাববাদীদের মধ্য দিয়ে তোমার আত্মার মাধ্যমে তুমি তাদের সাক্ষ্য দিলে, কিন্তু তাতে তারা কান দিল না। তার জন্য বিভিন্ন জাতির হাতে তুমি তাদের তুলে দিলে।
\v 31 তবুও তোমার প্রচুর করুণার জন্য তুমি তাদের শেষ করে দাওনি ও ত্যাগ করনি, কারণ তুমি দয়াময় ও করুণায় পূর্ণ ঈশ্বর।
\s5
\v 32 “অতএব, হে আমাদের ঈশ্বর, মহান, শক্তিশালী ও ভয়ঙ্কর ঈশ্বর। তুমি নিয়ম ও ব্যবস্থা পালন কর। অশূর রাজাদের সময় থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত এই যে সব কষ্ট আমাদের উপরে এবং আমাদের রাজাদের, নেতাদের, যাজকদের ও ভাববাদীদের, আমাদের পূর্বপুরুষদের ও তোমার সমস্ত লোকদের উপরে চলছে তা তোমার চোখে যেন সামান্য মনে না হোক।
\v 33 আমাদের উপর যা কিছু ঘটতে দিয়েছ তাতে তুমি ধর্মময়; তুমি বিশ্বস্ত ভাবে কাজ করেছ আর আমরা অন্যায় করেছি।
\v 34 আমাদের রাজারা, নেতারা, যাজকেরা ও আমাদের পূর্বপুরুষেরা তোমার ব্যবস্থা মেনে চলেন নি এবং তোমার আজ্ঞায় ও যার মাধ্যমে তুমি তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে, তোমার সেই আদেশে কান দেননি।
\s5
\v 35 তাঁদের রাজত্বকালে তাঁরা তোমার দেওয়া বড় ও উর্বর দেশে প্রচুর মঙ্গল ভোগ করছিলেন, তবুও তাঁরা তোমার সেবা করেন নি কিম্বা তাঁদের খারাপ কাজ থেকে ফেরেন নি।
\s5
\v 36 “দেখ, আজ আমরা দাস; যে দেশটা তুমি আমাদের পূর্বপুরুষদের দিয়েছিলে যাতে তারা তার ফল আর সব রকমের ভাল জিনিসের অধিকারী করেছিলে, দেখ, আমরা এই দেশের মধ্যে দাস হয়ে রয়েছি।
\v 37 আর আমাদের পাপের দরুন যে রাজাদের তুমি আমাদের উপরে রাজত্ব করতে দিয়েছ দেশে উত্পন্ন প্রচুর জিনিস তাঁদের কাছেই যায়। তাঁরা তাঁদের খুশী মতই আমাদের শরীরের উপরে ও আমাদের পশুপালের উপরে কর্তৃত্ব করেন। আমরা খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছি।”
\s5
\v 38 “এই সব কারণে আমরা এখন নিজেদের মধ্যে লিখিত ভাবে চুক্তি করছি, আর তার উপর আমাদের নেতারা, লেবীয়েরা ও যাজকেরা তাঁদের সীলমোহর দিচ্ছেন।”
\s5
\c 10
\p
\v 1 যাঁরা তার উপর সীলমোহর দিয়েছিলেন তাঁরা হলেন হখলিয়ের ছেলে শাসনকর্তা নহিমিয় ও সিদিকিয়,
\v 2 সরায়, অসরিয়, যিরমিয়,
\v 3 পশহূর, অমরিয়, মল্কিয়,
\s5
\v 4 হটূশ, শবনিয়,
\v 5 মল্লূক, হারীম, মরেমোৎ,
\v 6 ওবদিয়, দানিয়েল, গিন্নথোন, বারূক,
\v 7 মশুল্লম, অবিয়, মিয়ামীন,
\v 8 মাসিয়, বিল্‌গয় ও শময়িয়। এঁরা সবাই যাজক ছিলেন।
\s5
\v 9 লেবীয়দের মধ্য থেকে যাঁরা সীলমোহর দিয়েছিলেন তাঁরা হলেন অসনিয়ের ছেলে যেশূয়,
\v 10 হেনাদদের বংশধর বিন্নুয়ী ও কদ্‌মীয়েল এবং তাঁদের সহকর্মী শবনিয়, হোদিয়, কলীট, পলায়, হানন,
\v 11 মীখা, রহোব, হশবিয়,
\v 12 সক্কূর, শেরেবিয়, শবনিয়,
\v 13 হোদীয়, বানি ও বনীনু।
\v 14 লোকদের নেতাদের মধ্য থেকে যাঁরা সীলমোহর দিয়েছিলেন তাঁরা হলেন পরোশ, পহৎ মোয়াব, এলম, সত্তূ, বানি,
\s5
\v 15 বুন্নি, অস্‌গদ, বেবয়,
\v 16 অদোনিয়, বিগ্‌বয়, আদীন,
\v 17 আটের, হিষ্কিয়,
\v 18 অসূর, হোদিয়, হশুম,
\v 19 বেৎসয়, হারীফ, অনাথোৎ, নবয়,
\v 20 মগ্‌পীয়শ, মশুল্লম,
\v 21 হেষীর, মশেষবেল,
\s5
\v 22 সাদোক, যদ্দুয়, পলটিয়, হানন, অনায়,
\v 23 হোশেয়, হনানিয়,
\v 24 হশূব, হলোহেশ, পিল্‌হ,
\v 25 শোবেক, রহূম, হশব্‌না, মাসেয়,
\v 26 অহিয়, হানন, অনান,
\v 27 মল্লূক, হারীম ও বানা।
\s5
\v 28 প্রজাদের বাকী লোকেরা, অর্থাৎ যাজকেরা, লেবীয়েরা, রক্ষীরা, গায়কেরা, নথীনীয়েরা এবং ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করবার জন্য যারা আশেপাশের জাতিদের মধ্য থেকে নিজেদের আলাদা করে নিয়েছে, তাদের স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে, জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান সবাই
\v 29 নিজেদের ভাইদের, নিজেদের প্রধান লোকদের পক্ষে আসক্ত থাকল এবং শপথের মাধ্যমে এই প্রতিজ্ঞা করল, আমরা ঈশ্বরের দাস মোশির দেওয়া ঈশ্বরের ব্যবস্থা পালন করব। আমরা ঈশ্বরের দাস মোশির মধ্য দিয়ে দেওয়া ঈশ্বরের আইন কানুন অনুসারে চলব এবং আমাদের প্রভু সদাপ্রভুর সমস্ত আদেশ, নির্দেশ ও নিয়ম যত্নের সঙ্গে পালন করব।
\s5
\v 30 এবং আমরা আমাদের আশেপাশের জাতিদের সঙ্গে আমাদের মেয়েদের বিয়ে দেব না কিম্বা আমাদের ছেলেদের জন্য তাদের মেয়েদের নেব না।
\v 31 আর বিশ্রামবারে কিম্বা অন্য কোন পবিত্র দিনে যদি আশেপাশের জাতির লোকেরা কোনো জিনিসপত্র কিম্বা শস্য বিক্রি করবার জন্য নিয়ে আসে তবে তাদের কাছ থেকে আমরা তা কিনব না এবং সপ্তম বছরে আমরা জমি চাষ করব না এবং সমস্ত ঋণ ক্ষমা করে দেব।
\s5
\v 32 আমরা ঈশ্বরের গৃহের সেবা কাজের জন্য প্রতি বছর এক শেকলের তিন ভাগের এক ভাগ দেবার দায়িত্ব আমরা গ্রহণ করলাম।
\v 33 দর্শন রুটির, নিয়মিত ভক্ষ্য নৈবেদ্যের, নিয়মিত হোমের, বিশ্রামবারের, অমাবস্যার, পর্ব সব কিছুর, পবিত্র জিনিসের ও ইস্রায়েলের প্রায়শ্চিত্তের পাপবলির জন্য তা করলাম।
\s5
\v 34 আমাদের ব্যবস্থায় যেমন লেখা আছে সেইমত আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর যজ্ঞবেদীর উপরে পোড়াবার জন্য প্রত্যেক বছর নির্দিষ্ট সময়ে আমাদের ঈশ্বরের ঘরে আমাদের প্রত্যেক বংশকে কখন কাঠ আনতে হবে তা স্থির করবার জন্য আমরা, যাজকেরা, লেবীয়েরা ও লোকেরা গুলিবাঁট করলাম।
\v 35 আমরা জমি থেকে উত্পন্ন প্রতি বছর প্রথমে কাটা ফসল ও প্রত্যেকটি গাছের প্রথম ফল সদাপ্রভুর গৃহে আনবার
\v 36 এবং ব্যবস্থার যেমন লেখা আছে সেইমত আমরা আমাদের প্রথম জন্মানো ছেলে ও পশুর পালের গরু ও ভেড়ার প্রথম বাচ্চা আমাদের ঈশ্বরের ঘরের সেবাকারী যাজকদের কাছে নিয়ে আনবার
\s5
\v 37 এবং আমাদের ময়দার ও শস্য উৎসর্গের প্রথম অংশ, সমস্ত গাছের প্রথম ফল ও নতুন আঙ্গুর রস ও তেলের প্রথম অংশ আমরা আমাদের ঈশ্বরের ঘরের ভাণ্ডার ঘরে যাজকদের কাছে আনবার এবং আমাদের ফসলের দশ ভাগের এক ভাগ লেবীয়দের কাছে নিয়ে আনবার বিষয় স্থির করলাম, কারণ আমাদের সব শহরে লেবীয়েরাই দশমাংশ গ্রহণ করেন।
\v 38 লেবীয়েরা যখন দশমাংশ নেবেন তখন তাঁদের সঙ্গে থাকবেন হারোণের বংশের একজন যাজক। পরে লেবীয়েরা সেই সব দশমাংশের দশ ভাগের এক ভাগ আমাদের ঈশ্বরের ঘরের ধনভাণ্ডারের ঘরেতে নিয়ে যাবেন।
\s5
\v 39 কারণ ধনভাণ্ডারের যে সব কামরায় পবিত্র স্থানের জিনিসপত্র রাখা হয় এবং সেবাকারী যাজকেরা, রক্ষীরা ও গায়কেরা যেখানে থাকেন সেখানে ইস্রায়েলীয়েরা ও লেবীয়েরা তাদের শস্য, নতুন আঙ্গুর রস ও তেল নিয়ে আসবে এবং আমরা নিজেদের ঈশ্বরের গৃহ ত্যাগ করব না।
\s5
\c 11
\ms যিরূশালেমের প্রভৃতি শহরবাসী ও যিহূদীদের তালিকা।
\p
\v 1 লোকদের নেতারা যিরূশালেমে বাস করতেন। বাকী লোকেরা গুলিবাঁট করল যাতে তাদের মধ্যে প্রতি দশজনের একজন পবিত্র শহর যিরূশালেমে বাস করতে পারে, আর বাকী নয়জন অন্য শহরে বাস করাবার জন্য গুলিবাঁট করল।
\v 2 যে সব লোক ইচ্ছা করে যিরূশালেমে বাস করতে চাইল লোকেরা তাদের প্রশংসা করল।
\s5
\v 3 প্রদেশের এই সব প্রধান লোক যিরূশালেমে বাস করল। কিন্তু যিহূদার শহরে শহরে ইস্রায়েলীয়, যাজক, লেবীয়, নথীনীয়েরা ও শলোমনের চাকরদের বংশধরেরা প্রত্যেকে নিজের নিজের অধিকারে নিজের নিজের শহরে বাস করল
\v 4 আর যিহূদা ও বিন্যামীন গোষ্ঠীর কিছু লোক যিরূশালেমে বাস করল। যিহূদার বংশধরদের মধ্য থেকে উষিয়ের ছেলে অথায় সেই উষিয় সখরিয়ের ছেলে, সখরিয় অমরিয়ের ছেলে, অমরিয় শফটিয়ের ছেলে, শফটিয় মহললেলের ছেলে, সে পেরসের ছেলেদের মধ্যে একজন।
\s5
\v 5 আর বারূকের ছেলে মাসেয়; সেই বারূক কল্‌হোষির ছেলে, কল্‌হোষি হসায়ের ছেলে, হসায় অদায়ার ছেলে, অদায়া যোয়ারীবের ছেলে, যোয়ারীব সখরিয়ের ছেলে ও সখরিয় শীলোনীয়ের ছেলে।
\v 6 পেরসের বংশের মোট চারশো আটষট্টিজন শক্তিশালী লোক যিরূশালেমে বাস করত।
\s5
\v 7 বিন্যামীনের বংশের মধ্য থেকে মশুল্লমের ছেলে সল্লু। মশুল্লম যোয়েদের ছেলে, যোয়েদ পদায়ের ছেলে, পদায় কোলায়ার ছেলে, কোলায়া মাসেয়ের ছেলে, মাসেয় ঈথীয়েলের ছেলে ও ঈথীয়েল যিশায়াহের ছেলে।
\v 8 এর পরে গব্বয় ও সল্লয় প্রভৃতি নশো আটাশ জন।
\v 9 শিখ্রির ছেলে যোয়েল ছিলেন তাদের প্রধান কর্মচারী আর হস্‌সনূয়ার ছেলে যিহূদা ছিলেন শহরের দ্বিতীয় কর্তা।
\s5
\v 10 যাজকদের মধ্য থেকে যোয়ারীবের ছেলে যিদয়িয়, যাখীন এবং হিল্কিয়ের ছেলে সরায়;
\v 11 হিল্কিয় মশুল্লমের ছেলে, মশুল্লম সাদোকের ছেলে, সাদোক মরায়োতের ছেলে, মরায়োৎ অহীটুবের ছেলে। অহীটুব ঈশ্বরের গৃহের তদারকের কাজ করতেন।
\v 12 আর ঘরের কর্মচারী তাদের ভাইরা আটশো বাইশজন এবং যিরোহমের ছেলে অদায়া; সেই যিরোহম পললিয়ের ছেলে, পললিয় অমসির ছেলে, অমসি সখরিয়ের ছেলে, সখরিয় পশ্‌হূরের ছেলে, পশ্‌হূর মল্কিয়ের ছেলে।
\s5
\v 13 অদায়ার ভাইরা দুশো বিয়াল্লিশ জন বংশের প্রধান ছিল এবং অসরেলের ছেলে অমশয়; সেই অসরেল অহসয়ের ছেলে, অহসয় মশিল্লেমোতের ছেলে, মশিল্লেমোৎ ইম্মেরের ছেলে।
\v 14 আর তাদের ভাইরা একশো আটাশজন বীরপুরুষ ছিল এবং তাদের কাজের পরিচালক ছিল সব্দীয়েল, সে হগ্‌গদোলীমের ছেলে।
\s5
\v 15 আর লেবীয়দের মধ্য থেকে হশূবের ছেলে শিময়িয়; সেই হশূব অস্রীকামের ছেলে, অস্রীকাম হশবিয়ের ছেলে, হশবিয় বুন্নির ছেলে।
\v 16 এছাড়া ছিলেন শব্বথয় আর যোষাবাদ নামে লেবীয়দের মধ্যে দুজন প্রধান লোক, যাঁদের হাতে ঈশ্বরের ঘরের বাইরের কাজকর্ম দেখাশোনা করবার ভার ছিল।
\s5
\v 17 আসফের ছেলে, সব্দির ছেলে, মীখার ছেলে মত্তনিয় প্রার্থনা চলাকালীন ধন্যবাদের গান শুরু করার প্রধান ছিল এবং তাদের ভাই বক্‌বুকিয় দ্বিতীয় ছিল এবং যিদূথূনের ছেলে, গাললের ছেলে, শম্মুয়ের ছেলে অব্দ।
\v 18 পবিত্র শহরের লেবীয়দের মোট সংখ্যা ছিল দুশো চুরাশী।
\s5
\v 19 দরজা রক্ষীরা হল অক্কুব, টল্‌মোন ও দরজাগুলির রক্ষী তাদের ভাইয়েরা একশো বাহাত্তর জন ছিল।
\v 20 ইস্রায়েলীয়দের বাকী লোকেরা, যাজকেরা ও লেবীয়েরা যিহূদার সমস্ত শহরের মধ্যে প্রত্যেকে নিজের নিজের অধিকারে বাস করত।
\v 21 কিন্তু নথীনীয়েরা ওফলে বাস করত। তাদের দেখাশোনার ভার ছিল সীহ ও গীষ্পের উপর।
\s5
\v 22 যিরূশালেমে লেবীয়দের প্রধান কর্মচারী ছিলেন বানির ছেলে উষি। বানির হশবিয়ের ছেলে, হশবিয় মত্তনীয়ের ছেলে, মত্তনীয় মীখার ছেলে ও মীখা আসফের বংশের গায়ক হিসাবে ঈশ্বরের ঘরে সেবা কাজ করতেন।
\v 23 কারণ তাদের বিষয়ে রাজার এক আদেশ ছিল এবং গায়কদের জন্য প্রতিদিন নির্ধারিত অংশ দেওয়া হত।
\v 24 আর যিহূদার ছেলে সেরহের বংশধর মশেষবেলের ছেলে পথাহিয়, সে লোকদের সমস্ত বিষয়ে রাজার অধীনে নিযুক্ত ছিল।
\s5
\v 25 যিহূদা গোষ্ঠীর লোকেরা যে সব গ্রাম ও সেগুলোর ক্ষেত খামারগুলোতে বাস করত তা হল কিরিয়ৎ অর্ব্বে ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো, দীবোন ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো, যিকব্‌ সেল ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো,
\v 26 আর যেশূয়তে, মোলাদাতে, বৈৎ পেলটে,
\v 27 হৎসর শুয়ালে, বের্‌ শেবাতে ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো,
\s5
\v 28 সিক্লগে, মকোনাতে ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো,
\v 29 ঐন্‌ রিম্মোনে, সরায়, যর্ম্মুতে,
\v 30 সানোহতে, অদুল্লমে ও সেগুলোর আশেপাশের গ্রামগুলো, লাখীশে ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো এবং অসেকাতে ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো। বস্তুত: তারা বের্‌ শেবা থেকে শুরু করে হিন্নোম উপত্যকা পর্যন্ত সমস্ত জায়গায় বাস করত।
\v 31 বিন্যামীন গোষ্ঠীর লোকেরা যে সব গ্রামে বাস করত সেগুলো হল গেবা থেকে মিক্‌মসে, অয়াতে, বৈথেলে ও তার আশেপাশের গ্রামগুলো,
\v 32 অনাথোতে, নোবে, অননিয়াতে,
\v 33 হাৎসারে, রামাতে, গিত্তয়িমে,
\v 34 হাদীদে, সবোয়িমে,
\v 35 নবল্লাটে, লোদে, ওনোতে এবং কারিগরদের উপত্যকাতে বাস করত।
\v 36 আর যিহূদার সম্পর্কীয় কোনো কোনো পালাভুক্ত কিছু লেবীয় বিন্যামীনের সঙ্গে সংযুক্ত হল।
\s5
\c 12
\ms যাজক ও লেবীয়দের তালিকা।
\p
\v 1 যে সব যাজক ও লেবীয়েরা শল্টীয়েলের ছেলে সরুব্বাবিল ও যেশূয়ের সঙ্গে এসেছিলেন তাঁরা হলেন: যাজকদের মধ্যে সরায়, যিরমিয়, ইষ্রা,
\v 2 অমরিয়, মল্লুক, হটুশ,
\v 3 শখনিয়, রহূম, মরেমোৎ,
\s5
\v 4 ইদ্দো, গিন্নথোয়, অবিয়,
\v 5 মিয়ামীন, মোয়াদিয়, বিল্‌গা,
\v 6 শময়িয়, যোয়ারীব, যিদয়িয়,
\v 7 সল্লূ, আমোক, হিল্কিয় ও যিদয়িয়। যেশূয়ের সময়ে এঁরা ছিলেন যাজকদের ও তাঁদের বংশের লোকদের মধ্যে প্রধান।
\s5
\v 8 আবার লেবীয়দের মধ্যে যেশূয়, বিন্নূয়ী, কদ্‌মীয়েল, শেরেবিয়, যিহূদা, ও মত্তনিয়। ধন্যবাদ গানের তদারকির ভার ছিল এই মত্তনিয় ও ভাইদের উপর।
\v 9 সেবা কাজের সময় তাদের মুখোমুখি দাঁড়াতেন তাদেরই বংশের বক্‌বুকিয় ও উন্নো।
\s5
\v 10 যেশূয়ের ছেলে যোয়াকীম, যোয়াকীমের ছেলে ইলিয়াশীব, ইলিয়াশীবের ছেলে যোয়াদা;
\v 11 যোয়াদার ছেলে যোনাথন আর যোনাথনের ছেলে যদ্দূয়।
\s5
\v 12 যোয়াকীমের সময়ে যাজক বংশগুলোর মধ্যে যাঁরা প্রধান ছিলেন তাঁরা হলেন সরায়ের বংশের মরায়, যিরমিয়ের বংশের হনানিয়,
\v 13 ইষ্রার বংশের মশুল্লম, অমরিয়ের বংশের যিহোহানন,
\v 14 মল্লূকীর বংশের যোনাথন, শবনিয়ের বংশের যোষেফ,
\s5
\v 15 হারীমের বংশের অদ্‌ন, মরায়োতের বংশের হিল্কয়
\v 16 ইদ্দোর বংশের সখরিয়, গিন্নথোনের বংশের মশুল্লম,
\v 17 অবিয়ের বংশের সিখ্রি, মিনিয়ামীনের বংশের একজন, মোয়দিয়ের বংশের পিল্টয়,
\v 18 বিল্‌গার বংশের সম্মুয়, শময়িয়ের বংশের যিহোনাথন,
\v 19 যোয়ারীবের বংশের মত্তনয়, যিদয়িয়ের বংশের উষি,
\v 20 সল্লয়ের বংশের কল্লয়, আমোকের বংশের এবর,
\v 21 হিল্কিয়ের বংশের হশবিয়, যিদয়িয়ের বংশের নথনেল।
\s5
\v 22 ইলিয়াশীব, যোয়াদা, যোহানন, ও যদ্দূয়ের জীবনকালে লেবীয়দের এবং যাজকদের বংশের প্রধানদের নাম তালিকায় লেখা হল, আর তা শেষ হয়েছিল পারস্যের রাজা দারিয়াবসের রাজত্বকালে।
\v 23 লেবির বংশের প্রধানদের নাম ইলিয়াশীবের ছেলে যোহাননের সময় পর্যন্ত বংশাবলি নামে বইয়ের মধ্যে লেখা হয়েছিল।
\s5
\v 24 লেবীয়দের নেতা হশবিয়, শেরেবিয়, কদ্‌মীয়েলের ছেলে যেশূয় ও তাঁদের বংশের লোকেরা ঈশ্বরের লোক দায়ূদের কথামতই অন্য দলের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে দলের পর দল ঈশ্বরের প্রশংসা করতেন ও ধন্যবাদ দিতেন।
\v 25 মত্তনিয়, বক্‌বুকিয়, ওবদিয়, মশূল্লম, টল্‌মোন ও অক্কুব ছিল রক্ষী। এরা দরজার কাছের ভাণ্ডার ঘরগুলো পাহারা দিত।
\v 26 এরা যোষাদকের ছেলে যেশূয়ের ছেলে যোয়াকীমের সময়ে এবং শাসনকর্তা নহিমিয়ের ও যাজক ইষ্রার সময়ে ছিল।
\s যিরূশালেমের দেওয়াল প্রতিষ্ঠা।
\m
\s5
\v 27 যিরূশালেমের দেওয়াল প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে লেবীয়েরা যেখানে বাস করত সেখান থেকে তাদের যিরূশালেমে আনা হল যাতে তারা করতাল, বীণা, ও সুরবাহার বাজিয়ে ও ধন্যবাদের গান গেয়ে আনন্দের সঙ্গে সেই অনুষ্ঠান পালন করতে পারে।
\v 28 যিরূশালেমের আশেপাশের জায়গা থেকে নটোফাতীয়দের গ্রামগুলো থেকে,
\s5
\v 29 বৈৎ গিল্‌গল থেকে এবং গেবা ও অস্মাবত এলাকা থেকে গায়কদেরও এনে জড়ো করা হল। কারণ লেবীয় গায়কেরা যিরূশালেমের চারপাশের এই সব জায়গায় নিজেদের জন্য গ্রাম স্থাপন করেছিল।
\v 30 যাজক ও লেবীয়েরা নিজেদের শুচি করলেন এবং লোকদেরও শুচি করলেন; পরে দরজাগুলো ও দেওয়াল শুচি করলেন।
\s5
\v 31 পরে আমি যিহূদার নেতাদেরকে দেওয়ালের উপরে নিয়ে গেলাম এবং ধন্যবাদ দেবার জন্য দুটি বড় গানের দল নিযুক্ত করলাম। একটা দল দেওয়ালের উপর দিয়ে ডান দিকে সার দরজার দিকে গেল।
\s5
\v 32 তাদের পিছনে গেল হোশয়িয় ও যিহূদার নেতাদের অর্ধেক লোক।
\v 33 তাঁদের সঙ্গে গেলেন অসরিয়, ইষ্রা, মশুল্লম,
\v 34 যিহূদা, বিন্যামীন, শময়িয় ও যিরমিয়।
\v 35 এছাড়া তূরী হাতে কয়েকজন যাজকও গেলেন। এঁরা হলেন সখরিয় এবং
\s5
\v 36 এর ভাই শময়িয় ও অসরেল, মিললয়, গিললয়, মায়য়, নথনেল, যিহূদা ও হনানি এরা ঈশ্বরের লোক দায়ূদের নির্ধারিত নানা বাদ্যযন্ত্র হাতে নিয়ে চলল এবং অধ্যাপক ইষ্রা তাদের আগে আগে চললেন।
\v 37 উনুই দরজার কাছে যেখানে দেওয়াল উপরের দিকে উঠে গেছে সেখানে তাঁরা সোজা দায়ূদ শহরে উঠবার সিঁড়ি দিয়ে উঠে দায়ূদের বাড়ীর পাশ দিয়ে পূর্ব দিকে জল দরজায় গেলেন।
\s5
\v 38 দ্বিতীয় গানের দলটা দেয়ালের উপর দিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা গেল এবং আমি বাকী অর্ধেক লোক নিয়ে তাদের পিছনে পিছনে গেলাম। তারা তুন্দুর দুর্গ পার হয়ে চওড়া দেওয়াল পর্যন্ত গেল।
\v 39 তারপর ইফ্রয়িম দরজা, যিশানা দরজা, মাছ দরজা, হননেলের দুর্গ ও হম্মেয়ার দুর্গের পাশ দিয়ে মেষ দরজা পর্যন্ত গেল। তারপর পাহারাদার দরজার কাছে গিয়ে তারা থামল।
\s5
\v 40 এইভাবে ঈশ্বরের গৃহে ধন্যবাদের গান করা লোকদের ঐ দুই দল এবং আমি ও আমার সঙ্গে অধ্যক্ষদের অর্ধেক লোক;
\v 41 আর ইলীয়াকীম, মাসেয়, মিনিয়ামীন, মীখায়, ইলিয়ৈনয়, সখরিয় ও হনানিয় এই যাজকেরা তূরী নিয়ে
\v 42 এবং মাসেয়, শময়িয়, ইলিয়াসর, উষি, যিহোহানন, মল্কিয়, এলম ও এষর আমরা সবাই দাঁড়িয়ে থাকলাম; তখন গায়কেরা গান করল ও যিষ্রহিয় তাদের পরিচালক ছিল।
\s5
\v 43 ঈশ্বর তাদের প্রচুর আনন্দ দান করেছেন বলে সেই দিন লোকেরা বড় একটা উৎসর্গের অনুষ্ঠান করল ও খুব আনন্দ করল। তাদের স্ত্রীলোকেরা ও ছেলেমেয়েরাও আনন্দ করল। যিরূশালেমের লোকদের এই আনন্দের আওয়াজ অনেক দূর পর্যন্ত শোনা গেল।
\s5
\v 44 আর সেই দিন কেউ কেউ তোলা উপহারের, প্রথম অংশের ও দশমাংশের জন্য ভাণ্ডার ঘরে ঘরে, ব্যবস্থার যাজকদের ও লেবীয়দের জন্য সমস্ত শহরের মাঠ থেকে পাওয়া অংশ সব তার মধ্যে সংগ্রহ করার জন্য নিযুক্ত হল; কারণ কার্য্যকারী যাজকদের ও লেবীয়দের জন্য যিহূদার আনন্দ সৃষ্টি হয়েছিল।
\v 45 দায়ূদ ও তাঁর ছেলে শলোমনের আদেশ অনুসারে যাজক ও লেবীয়েরা তাঁদের ঈশ্বরের সেবা কাজ ও শুচি করবার কাজ করতেন আর গায়ক ও রক্ষীরাও তাদের নির্দিষ্ট কাজ করত।
\s5
\v 46 অনেক কাল আগে দায়ূদ ও আসফের সময়ে ঈশ্বরের উদ্দেশ্যে গৌরব ও ধন্যবাদের গান গাইবার জন্য গায়কদের ও পরিচালকদের নিযুক্ত করা হয়েছিল।
\v 47 সরুব্বাবিল ও নহিমিয়ের সময়েও ইস্রায়েলীয়েরা সকলেই গায়ক ও রক্ষীদের প্রতিদিনের পাওনা অংশ দিত। এছাড়া তারা অন্যান্য লেবীয়দের অংশও পবিত্র করে রাখত আর লেবীয়েরা পবিত্র করে রাখত হারোণের বংশধরদের অংশ।
\s5
\c 13
\p
\v 1 সেই দিন লোকদের কাছে মোশির বইটি পড়া হল, তখন সেখানে দেখা গেল লেখা আছে, কোনো অম্মোনীয় বা মোয়াবীয় ঈশ্বরের লোকদের সমাজে কখনও যোগ দিতে পারবে না।
\v 2 এর কারণ হল, মোশির সময়ে তারা খাবার ও জল নিয়ে ইস্রায়েলীয়দের কাছে যায় নি, বরং তারা তাদের অভিশাপ দেবার জন্য বিলিয়মকে ঘুষ দিয়েছিল। কিন্তু আমাদের ঈশ্বর সেই অভিশাপের বদলে আশীর্বাদ করলেন।
\v 3 লোকেরা ব্যবস্থার এই কথা শুনে বিদেশীদের সবাইকে ইস্রায়েলীয়দের সমাজ থেকে বাদ দিয়ে দিল।
\s নহিমিয়ের দ্বিতীয় আগমন।
\m
\s5
\v 4 এর আগে যাজক ইলিয়াশীব, যাঁকে আমাদের ঈশ্বরের গৃহের ভাণ্ডার ঘরের ভার দেওয়া হয়েছিল, তিনি টোবিয়কে একটা বড় কামরা দিয়েছিলেন, কারণ টোবিয় ছিল তাঁর আত্মীয়;
\v 5 সেই কামরায় আগে শস্য উৎসর্গের জিনিস, কুন্দুরু এবং উপাসনা ঘরের জিনিসপত্র রাখা হত। এছাড়া সেখানে লেবীয়, গায়ক ও রক্ষীদের জন্য নির্দেশ করা শস্যের, নতুন আঙ্গুর রসের ও তেলের দশমাংশ রাখা হত এবং যাজকদের যা দেওয়া হত তাও রাখা হত।
\s5
\v 6 কিন্তু এই সব যখন হচ্ছিল তখন আমি যিরূশালেমে ছিলাম না, কারণ বাবিলের রাজা অর্তক্ষস্তের বত্রিশ বছরে আমি রাজার কাছে ফিরে গিয়েছিলাম। এর কিছুদিন পরে আমি রাজার অনুমতি নিয়ে যিরূশালেমে ফিরে আসলাম।
\v 7 ঈশ্বরের গৃহে টোবিয়কে একটা কামরা দিয়ে ইলিয়াশীব যে খারাপ কাজ করেছেন আমি যিরূশালেমে ফিরে এসে সেই বিষয় শুনলাম।
\s5
\v 8 এতে আমি ভীষণ বিরক্ত হয়ে টোবিয়ের সব জিনিসপত্র সেই কামরা থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম।
\v 9 তারপর আমার আদেশে সেই ঘরগুলো শুচি করা হল আর আমি ঈশ্বরের ঘরের জিনিসপত্র, শস্য উৎসর্গের জিনিস আর কুন্দুরু আবার সেখানে এনে রাখলাম।
\s5
\v 10 আমি এও জানতে পারলাম যে, গায়কদের ও অন্যান্য লেবীয়দের অংশ দেওয়া হয়নি বলে তারা তাদের সেবা কাজ ছেড়ে নিজের নিজের ভূমিতে ফিরে গেছে।
\v 11 এতে আমি উঁচু পদের কর্মচারীদের তিরস্কার করে বললাম, “ঈশ্বরের গৃহকে কেন অবহেলা করা হয়েছে?” তারপর আমি সেই সব লেবীয়দের ডেকে একত্র করে তাদের নিজের নিজের পদে বহাল করলাম।
\s5
\v 12 তারপর যিহূদার সব লোক তাদের শস্যের, নতুন আঙ্গুর রসের ও তেলের দশমাংশ ভাণ্ডার ঘরে নিয়ে আসল।
\v 13 যাজক শেলিমিয়, অধ্যাপক সাদোক ও পদায় নামে একজন লেবীয়কে আমি ভাণ্ডার ঘরের ভার দিলাম এবং সক্কুরের ছেলে, অর্থাৎ মত্তনিয়ের নাতি হাননকে তাঁদের সাহায্যকারী হিসাবে নিযুক্ত করলাম। কারণ সবাই এই লোকদের বিশ্বাসযোগ্য মনে করত। তাঁদের উপর তাঁদের গোষ্ঠী ভাইদের অংশ ভাগ করে দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হল।
\v 14 হে আমার ঈশ্বর, এই সব কাজের জন্য আমাকে মনে রেখো। আমার ঈশ্বরের গৃহ ও সেই গৃহের সেবা কাজের জন্য আমি বিশ্বস্তভাবে যা করেছি তা মুছে ফেলে দিয়ো না।
\s5
\v 15 ঐ সময় আমি দেখলাম যিহূদার লোকেরা বিশ্রামবারে আঙ্গুর মাড়াইয়ের কাজ করছে ও ফসল আনছে এবং সেই ফসল, আঙ্গুর রস, আঙ্গুর ফল, ডুমুর এবং অন্য সব রকমের বোঝা তারা গাধার উপর চাপাচ্ছে। এছাড়া তারা বিশ্রামবারে ঐ সব যিরূশালেমে নিয়ে আসছে। তারা বিশ্রামবারে খাবার জিনিস বিক্রি করবার বিষয়ে আমি তাদের সাবধান করলাম।
\s5
\v 16 যিরূশালেমে বাসকারী সোরের লোকেরা মাছ আর বিক্রি করবার অন্যান্য সব জিনিস এনে বিশ্রামবারে যিরূশালেমে যিহূদার লোকদের কাছে বিক্রি করছিল।
\v 17 আমি তখন যিহূদার গণ্যমান্য লোকদের তিরস্কার করে বললাম, “তোমার বিশ্রামবার অপবিত্র করছ, এ কি খারাপ কাজ করছ?।
\v 18 তোমাদের পূর্বপুরুষেরা কি সেই একই কাজ করত না? যার দরুন আমাদের ঈশ্বর আমাদের উপর ও এই শহরের উপর এই সব সর্বনাশ করেননি? আর এখন তোমরা বিশ্রামবারের পবিত্রতা নষ্ট করে ইস্রায়েলীয়দের উপর ঈশ্বরের আরও অসন্তোষ বাড়িয়ে তুলছ।”
\s5
\v 19 আমি এই আদেশ দিলাম যে, বিশ্রামবারের আরম্ভে যখন যিরূশালেমের দরজাগুলোর উপর সন্ধ্যার ছায়া নেমে আসবে তখন যেন দরজাগুলো বন্ধ করা হয় এবং বিশ্রামবার শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা বন্ধ রাখা হয়। বিশ্রামবারে যাতে কোন বোঝা ভিতরে আনা না হয় তা দেখবার জন্য আমি আমার নিজের কয়েকজন কর্মচারীকে দরজাগুলোতে নিযুক্ত করলাম।
\v 20 এতে ব্যবসায়ীরা ও যারা সব রকম জিনিস বিক্রি করে তারা দুই একবার যিরূশালেমের বাইরে রাত কাটাল।
\s5
\v 21 কিন্তু আমি তাদের সাক্ষ্য দিয়ে বললাম, “তোমরা দেওয়ালের কাছে কেন রাত কাটাচ্ছ? তোমরা যদি আবার এই কাজ কর তবে আমি তোমাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”
\v 22 সেই থেকে তারা আর বিশ্রামবারে আসত না। তারপর আমি লেবীয়দের আদেশ দিলাম যেন তারা নিজেদের শুচি করে এবং বিশ্রামবার পবিত্র রাখবার জন্য গিয়ে দরজাগুলো পাহারা দেয়। হে আমার ঈশ্বর, এর জন্যও তুমি আমাকে মনে রেখো এবং তোমার ব্যবস্থা অনুসারে আমাকে দয়া কর।
\s5
\v 23 সেই সময় আমি এও দেখলাম যে, যিহূদার কোনো কোনো লোক অস্‌দোদীয়া, অম্মোনীয়া ও মোয়াবীয়া মেয়েদের বিয়ে করেছে।
\v 24 তাদের মধ্যে অনেক ছেলেমেয়ে অর্ধেক অস্‌দোদীয় কিম্বা অন্যান্য জাতির ভাষায় কথা বলে। তারা যিহূদার ভাষায় কথা বলতে জানে না। নিজেদের জাতির ভাষা অনুসারে কথা বলে
\s5
\v 25 আমি তাদেরসঙ্গে বিবাদ করলাম, তাদের তিরস্কার করলাম। তাদের কয়েকজন লোককে আমি মারলাম এবং চুল উপড়ে ফেললাম। ঈশ্বরের নামে আমি তাদের দিয়ে এই শপথ করালাম যে, তারা বিদেশী ছেলেদের সঙ্গে তাদের মেয়েদের বিয়ে দেবে না এবং নিজেরা বা তাদের ছেলেরা বিদেশী মেয়েদের বিয়ে করবে না।
\v 26 “ইস্রায়েলের রাজা শলোমন এই রকম কাজ করে কি পাপ করেননি? অন্য কোনো জাতির মধ্যে তাঁর মত রাজা কেউই ছিলেন না এবং ঈশ্বর তাঁকে ভালবাসতেন আর তাঁকে সমস্ত ইস্রায়েলীয়দের উপর রাজা করেছিলেন, তবুও তিনি বিদেশী স্ত্রীলোকদের দরুন পাপ করেছিলেন।
\v 27 অতএব আমরা কি তোমাদের এই কথায় কান দেব যে, তোমরা বিদেশী মেয়েদেরকে বিয়ে করে আমাদের ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অমান্য করবার জন্য এই সব মহাপাপ করবে?”
\s5
\v 28 প্রধান মহাযাজক ইলিয়াশীবের ছেলে যিহোয়াদার এক ছেলে হোরোণীয় সন্‌বল্লটের জামাই ছিল। সেইজন্য আমি সেই ছেলেকে আমার কাছ থেকে তাড়িয়ে দিলাম।
\v 29 হে আমার ঈশ্বর, এদের কথা মনে রেখো, কারণ এরা যাজকের পদএবং যাজক ও লেবীয়দের নিয়ম অপবিত্র করেছে।
\s5
\v 30 এইভাবে আমি সকলের মধ্য থেকে বিদেশীয় সব কিছু দূর করে দিলাম। পরে যাজক ও লেবীয়দের কাজ অনুসারে তাদের প্রত্যেকের কাজ ভাগ করে দিলাম।
\v 31 এছাড়া সময় মত কাঠ ও প্রথমে তোলা ফসল আনবার জন্যও লোক নিযুক্ত করলাম। হে আমার ঈশ্বর, আমার মঙ্গল করবার জন্য আমাকে স্মরণ কোরো।

294
17-EST.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,294 @@
\id EST
\ide UTF-8
\sts Esther
\h ইষ্টের বিবরণ।
\toc1 ইষ্টের বিবরণ।
\toc2 ইষ্টের বিবরণ।
\toc3 est
\mt1 ইষ্টের বিবরণ।
\s5
\c 1
\ms ইষ্টের বিবরণ।
\s অহশ্বেরশের মহাভোজ। বষ্টী রাণীর পদচ্যুতি।
\p
\v 1 অহশ্বেরশের সময়ে এই ঘটনা ঘটল। ঐ অহশ্বেরশ ভারত থেকে কূশ দেশ পর্যন্ত একশো সাতাশ দেশের ওপরে রাজত্ব করতেন।
\v 2 সেই সময়ে অহশ্বেরশ রাজা শূশন রাজধানীতে রাজসিংহাসনে বসেছিলেন৷
\s5
\v 3 তাঁর রাজত্বের তৃতীয় বছরে নিজের সমস্ত শাসনকর্তা ও দাসদের জন্য এক ভোজ তৈরী করলেন। পারস্য ও মাদিয়া দেশের সেনাপতিরা, রাজপুত্রেরা ও প্রদেশের শাসনকর্তারা তাঁর সামনে উপস্থিত হলেন।
\v 4 তিনি অনেক দিন অর্থাৎ একশো আশি দিন ধরে তাঁর মহিমান্বিত রাজ্যের ঐশ্বর্য্য ও নিজের মহানতার গৌরব দেখালেন।
\s5
\v 5 সেই সব দিন সম্পূর্ণ হলে পর রাজা শূশন রাজধানীতে থাকা ছোট কি বড় সমস্ত লোকের জন্য রাজবাড়ির বাগানের উঠানে সারা সপ্তাহ ধরে ভোজের আয়োজন করলেন।
\v 6 সেখানে কার্পাসের তৈরী সাদা ও নীল রঙের পর্দা ছিল, তা সূক্ষ সুতোর বেগুনী দড়ির মাধ্যমে রুপালি রঙের কড়াতে পাথরের থামে আটকে ছিল এবং লাল, সাদা, সবুজ ও কালো মার্বেল পাথরে কারুকার্য্য করা মেঝেতে সোনার ও রুপোর আসনের সারি রাখা ছিল।
\s5
\v 7 আর রাজার উদারতা অনুসারে সোনার পাত্রে পানীয় ও প্রচুর রাজকীয় আঙ্গুরের রস দেওয়া হল, সেই সব পাত্র নানা ধরনের ছিল।
\v 8 তাতে ব্যবস্থা অনুযায়ী পান করা হল, কেউ জোর করল না; কারণ যার যেমন ইচ্ছা, সেই অনুযায়ী তাকে করতে দাও, এই আদেশ রাজা নিজের বাড়ির সমস্ত কর্মচারীকে দিয়েছিলেন।
\s5
\v 9 আর বষ্টী রাণীও অহশ্বেরশের রাজবাড়ীতে মহিলাদের জন্য ভোজ তৈরী করলেন।
\v 10 সপ্তম দিনে যখন রাজা আঙ্গুরের রস পান করে আনন্দিত ছিলেন, তখন তিনি মহূমন, বিস্থা, হর্বোণা, বিগ্‌থা, অবগথ, সেথর ও কর্ক্কস নামে যারা, অহশ্বেরশ রাজার সামনে সেবা করতেন এই সাত জন নপুংসককে আদেশ দিলেন,
\v 11 যেন তারা প্রজাদের ও শাসনকর্তাদেরকে বষ্টী রাণীর সৌন্দর্য্য দেখাবার জন্য তাঁকে রাজমুকুট পরিয়ে রাজার সামনে আনে; কারণ তিনি দেখতে সুন্দরী ছিলেন।
\s5
\v 12 কিন্তু বষ্টী রাণী নপুংসকদের মাধ্যমে পাঠানো রাজার আদেশ মত আসতে রাজি হলেন না; তাতে রাজা খুব রেগে গেলেন, তাঁর মধ্যে রাগের আগুন জ্বলে উঠল।
\s5
\v 13 পরে রাজা সময় সম্পর্কে জ্ঞানী লোকদেরকে এই বিষয় বললেন; কারণ আইন ও বিচার সম্মন্ধে জ্ঞানী লোক সবার কাছে রাজার এই রকম বলবার রীতি ছিল।
\v 14 আর কর্শনা, শেথর, অদ্‌মাথা, তর্শীশ, মেরস, মর্সনা ও মমূখন, এরা তাঁর কাছে ছিলেন; এই সাত জন পারস্য ও মাদিয়া দেশের শাসনকর্তা রাজার সামনে যেতেন এবং রাজ্যের শ্রেষ্ঠ জায়গার অধিকারী ছিলেন।
\v 15 [রাজা বললেন,] “বষ্টী রাণী নপুংসকদের মাধ্যমে পাঠানো অহশ্বেরশ রাজার আদেশ মানে নি, অতএব আইন অনুসারে তার প্রতি কি করা উচিত?”
\s5
\v 16 তখন মমূখন রাজার ও শাসনকর্তাদের সামনে উত্তর করলেন, “রাণী বষ্টী যে কেবল মহারাজের কাছে অন্যায় করেছেন, তা নয়, কিন্তু রাজা অহশ্বেরশের অধীন সমস্ত দেশের সমস্ত শাসনকর্তার ও সমস্ত লোকের কাছে অপরাধ করেছেন।
\v 17 কারণ রাণীর এই কাজের কথা সমস্ত স্ত্রীলোকদের মধ্যে জানাজানি হয়ে যাবে; সুতরাং রাজা অহশ্বেরশ বষ্টী রাণীকে নিজের সামনে আনতে আদেশ দিলেও তিনি আসলেন না, এই কথা শুনলে তারা নিজের চোখে তাদের স্বামীকে তুচ্ছজ্ঞান করবে।
\v 18 আর পারস্য ও মাদিয়ার সম্মানিতা স্ত্রীলোকেরা রাণীর এই কাজের খবর শুনলেন, তাঁরা আজই রাজার সব শাসনকর্তাকে ঐরকম বলবেন, তাতে খুব অসম্মান ও রাগ জন্মাবে।
\s5
\v 19 যদি মহারাজের ইচ্ছা হয়, তবে বষ্টী অহশ্বেরশ রাজার সামনে আর আসতে পারবেন না, এই রাজ আদেশ আপনার মুখ থেকে বেরিয়ে আসুক এবং যা অমান্য করা যাবে না, এই জন্য এটা পারসীকদের আদেশ ও মাদীয়দের আইনের মধ্যে লেখা হোক; পরে মহারাজ তাঁর রাণীর পদ নিয়ে তাঁর থেকে ভালো আর এক রাণীকে দিন।
\v 20 মহারাজ যে আদেশ দেবেন, তা যখন তাঁর বিরাট রাজ্যের সব জায়গায় প্রচারিত হবে, তখন সমস্ত স্ত্রীলোক ছোট কি বড় নিজের নিজের স্বামীকে সম্মান করবে।”
\s5
\v 21 এই কথা রাজার ও অধ্যক্ষদের ভালো লাগলে রাজা মমূখনের কথানুযায়ী কাজ করলেন।
\v 22 তিনি এক এক দেশের অক্ষর অনুসারে ও এক এক জাতির ভাষা অনুসারে রাজার অধীন সমস্ত দেশে এই রকম চিঠি পাঠালেন, প্রত্যেক পুরুষ নিজের নিজের বাড়িতে কর্তৃত্ব করুক ও নিজের ভাষায় এটা প্রচার করুক।
\s5
\c 2
\ms ইষ্টের রাণীর পদ লাভ।
\p
\v 1 এই সব ঘটনার পরে অহশ্বেরশ রাজার রাগ কমে গেলে তিনি বষ্টীকে, তাঁর কাজ ও তাঁর বিপরীতে যে আদেশ দেওয়া হয়েছিল, তা মনে করলেন।
\v 2 তখন রাজার নপুংসক দাসেরা তাঁকে বলল মহারাজের জন্য সুন্দরী যুবতী কুমারীদের খোঁজ করা যাক।
\s5
\v 3 মহারাজ নিজের রাজ্যের সমস্ত প্রদেশে কর্মচারীদেরকে নিযুক্ত করুন; তারা সেই সব সুন্দরী যুবতী কুমারীদেরকে শূশন রাজধানীতে জড়ো করে অন্দরমহলে স্ত্রীলোকদের রক্ষক রাজ নপুংসক যে হেগয়, তাঁর কাছে দেওয়া হোক এবং তাদের সাজসরঞ্জামের জিনিস দেওয়া হোক।
\v 4 পরে মহারাজের চোখে যে মেয়ে ভালো হবেন, তিনি বষ্টীর পদে রাণী হোন। তখন এই কথা রাজার ভালো মনে হওয়াতে তিনি সেরকমই করলেন।
\s5
\v 5 সেই সময়ে যায়ীরের ছেলে মর্দখয় নামে একজন যিহূদী শূশন রাজধানীতে ছিলেন। সেই যায়ীরের বাবা শিমিয়ি, শিমিয়ির বাবা বিন্যামীনীয় কীশ।
\v 6 বাবিলের রাজা নবূখদ্‌নিৎসরের মাধ্যমে বন্দী অবস্থায় আনা যিহূদার রাজা যিকনিয়ের সঙ্গে যে সব লোক বন্দী হয়েছিল, [কীশ] তাদের সঙ্গে যিরুশালেম থেকে বন্দী অবস্থায় নিয়ে আসা হয়েছিল।
\s5
\v 7 মর্দখয় নিজের কাকার মেয়ে হদসাকে অর্থাৎ ইষ্টেরকে লালন পালন করতেন; কারণ তাঁর বাবা কি মা ছিল না। সেই মেয়ে সুন্দরী ও রূপবতী ছিলেন; তাঁর বাবা মা মারা গেলে মর্দখয় তাঁকে নিজের মেয়ে করেছিলেন।
\s5
\v 8 পরে রাজার ঐ কথা ও আদেশ প্রচারিত হলে যখন শূশন রাজধানীতে হেগয়ের কাছে অনেক মেয়েকে আনা হল, তখন ইষ্টের কেও রাজবাড়িতে স্ত্রীরক্ষক হেগয়ের কাছে আনা হল।
\v 9 আর সেই মেয়েটি হেগয়ের চোখে ভালো হলেন ও তাঁর কাছে দয়া পেলেন এবং তিনি তাড়াতাড়ি সাজ সরঞ্জামের জিনিসগুলি এবং আরো যে যে জিনিসগুলো তাঁকে দিতে হয়, তা এবং রাজবাড়ি থেকে মনোনীত সাতটা দাসী তাঁকে দিলেন এবং সেই দাসীদের সঙ্গে তাঁকে অন্দরমহলের ভালো জায়গায় নিয়ে রাখলেন।
\s5
\v 10 ইষ্টের নিজের জাতির কি বংশের পরিচয় দিলেন না; কারণ মর্দখয় তা না জানাতে তাঁকে আদেশ করেছিলেন।
\v 11 পরে ইষ্টের কেমন আছেন ও তাঁর প্রতি কেমন ব্যবহার করা হয়, তা জানবার জন্য মর্দখয় প্রতিদিন অন্দরমহলের উঠানের সামনে বেড়াতে লাগলেন।
\s5
\v 12 আর বারো মাস স্ত্রীলোকদের জন্য নিয়মিত সেবা পাওয়ার পর রাজা অহশ্বেরশের কাছে এক এক মেয়ের যাওয়ার পালা আসত; কারণ তাদের রূপচর্চায় এত দিন লাগত, অর্থাৎ ছয় মাস গন্ধরসের তেল, ছয় মাস সুগন্ধি ও স্ত্রীলোকের রূপচর্চার জন্য জিনিস ব্যবহার করা হত;
\v 13 আর রাজার কাছে যেতে হলে প্রত্যেক যুবতীর জন্য এই নিয়ম ছিল; সে যে কোনো জিনিস চাইত, তা অন্দরমহল থেকে রাজবাড়িতে যাবার সময়ে সঙ্গে নিয়ে যাবার জন্য তাকে দেওয়া হত।
\s5
\v 14 সে সন্ধ্যাবেলায় যেত ও সকালে উপপত্নীদের রক্ষক রাজ নপুংসক শাশ্‌গসের কাছে দ্বিতীয় অন্দরমহলে ফিরে আসত; রাজা তার ওপরে খুশি হয়ে তার নাম ধরে না ডাকলে সে রাজার কাছে আর যেত না।
\s5
\v 15 পরে মর্দখয় নিজের কাকা অবীহয়িলের যে মেয়েটিকে নিজের মেয়ে করেছিলেন, যখন রাজার কাছে সেই ইষ্টেরের যাবার পালা হল, তখন তিনি কিছুই চাইলেন না, শুধু স্ত্রীলোকদের রক্ষক রাজ নপুংসক হেগয় যা যা ঠিক করলেন, তাই মাত্র [সঙ্গে নিলেন]; আর যে কেউ ইষ্টেরের প্রতি দেখত, সে তাঁকে অনুগ্রহ করত।
\v 16 রাজার রাজত্বের সাত বছরের দশ মাসে অর্থাৎ টেবেৎ মাসে ইষ্টেরকে অহশ্বেরশ রাজার কাছে রাজবাড়িতে আনা হল।
\s5
\v 17 আর রাজা অন্য সব স্ত্রীলোকের চেয়ে ইষ্টেরকে বেশি ভালবাসলেন এবং অন্য সব কুমারীর থেকে তিনিই রাজার চোখে অনুগ্রহ ও দয়া পেলেন; অতএব রাজা তাঁরই মাথায় রাজমুকুট দিয়ে বষ্টীর পদে তাঁকে রাণী করলেন।
\v 18 পরে রাজা নিজের সমস্ত শাসনকর্তা ও দাসদের জন্য ইষ্টেরের ভোজ বলে মহাভোজ তৈরী করলেন এবং সব দেশের কর ছাড় ও নিজের রাজকীয় উদারতা অনুসারে দান করলেন।
\s5
\v 19 দ্বিতীয় বার কুমারী জড়ো করার সময়ে মর্দখয় রাজবাড়ীর দরজায় বসতেন।
\v 20 তখনও ইষ্টের মর্দখয়ের আদেশ অনুসারে নিজের বংশের কি জাতির পরিচয় দেননি; কারণ ইষ্টের মর্দখয়ের কাছে লালিত পালিত হবার সময় যেমন করতেন, তখনও তেমনি তাঁর আদেশ পালন করতেন।
\v 21 সেই সময়ে অর্থাৎ যখন মর্দখয় রাজবাড়ীর দরজায় বসতেন, তখন দরজার পাহারাদারদের মধ্যে বিগ্‌থন ও তেরশ নামে রাজবাড়ির দুইজন নপুংসক রেগে গিয়ে অহশ্বেরশ রাজার ক্ষতি করার চেষ্টা করল।
\s5
\v 22 কিন্তু সেই বিষয় অর্থাৎ মর্দখয় জানতে পেরে তিনি ইষ্টের রাণীকে তা জানালেন এবং ইষ্টের মর্দখয়ের নাম করে তা রাজাকে বললেন।
\v 23 তাতে খোঁজ খবর নিয়ে সেই কথা প্রমাণ হলে ঐ দুজনকে গাছে ফাঁসি দেওয়া হল এবং সেই কথা রাজার সামনে ইতিহাস বইতে লেখা হল।
\s5
\c 3
\ms হামনের চেষ্টায় যিহূদীদের বিনাশের জন্য রাজার আদেশ।
\p
\v 1 ঐ সব ঘটনার পরে অহশ্বেরশ রাজা অগাগীয় হম্মদাথার ছেলে হামনকে উন্নত করলেন, উঁচু পদে উন্নত করলেন এবং তার সঙ্গী সমস্ত শাসনকর্তার থেকে শ্রেষ্ঠ আসন দিলেন।
\v 2 তাতে রাজার যে দাসেরা রাজবাড়ীর দরজায় থাকত, তারা সবাই হামনের কাছে হাঁটু পেতে উপুড় হতে লাগল, কারণ রাজা তার সম্মন্ধে সেইরকম আদেশ করেছিলেন; কিন্তু মর্দখয় হাঁটুও পাততেন না, উপুড়ও হতেন না।
\s5
\v 3 তাতে রাজার যে দাসেরা রাজবাড়ীর দরজায় থাকত, তারা মর্দখয়কে বলল, “তুমি রাজার আদেশ কেন অমান্য করছ?”
\v 4 তারা দিনের পর দিন তাকে বলত, তা সত্ত্বেও তিনি তাদের কথা শুনতেন না। তাতে মর্দখয়ের কথা ঠিক থাকে কি না, তা জানবার ইচ্ছায় তারা হামনকে তা জানালো; কারণ মর্দখয় যে যিহূদী, এটা তিনি তাদেরকে বলেছিলেন।
\s5
\v 5 আর হামন যখন দেখল যে, মর্দখয় তার কাছে হাঁটু পেতে প্রণাম করে না, তখন সে খুব রেগে গেল।
\v 6 কিন্তু সে শুধু মর্দখয়কে মেরে ফেলা একটা সামান্য বিষয় বলে মনে করল, পরিবর্তে সে একটা উপায় খুঁজতে লাগল যাতে অহশ্বেরশের গোটা রাজ্যের মধ্য থেকে মর্দখয়ের লোকদের, অর্থাৎ যিহূদীদের ধ্বংস করে ফেলতে পারে।
\s5
\v 7 আর সেই বিষয়ে অহশ্বেরশ রাজার বারো বছরের প্রথম মাসে অর্থাৎ নীষণ মাসে হামনের সামনে সবসময় প্রত্যেক দিনে ও প্রত্যেক মাসে অদর নামের দ্বাদশ মাস পর্যন্ত পূর অর্থাৎ গুলিবাঁট করা হল।
\s5
\v 8 পরে হামন অহশ্বেরশ রাজাকে বলল, “আপনার রাজ্যের সমস্ত দেশে অবস্থিত জাতিদের মধ্যে ছড়ানো অথচ আলাদা এক জাতি আছে; অন্য সব জাতির আইন থেকে তাদের আইন অন্যরকম এবং তারা মহারাজের নিয়ম পালন করে না; অতএব তাদেরকে থাকতে দেওয়া মহারাজের উচিত না।
\v 9 যদি মহারাজের ইচ্ছে হয়, তবে তাদেরকে ধ্বংস করতে লেখা হোক; তাতে আমি রাজ কোষাগারে রাখবার জন্য সঠিক লোকদের হাতে দশ হাজার তালন্ত রুপো দেব।”
\s5
\v 10 তখন রাজা নিজের আংটি খুলে যিহূদীদের শত্রু অগাগীয় হম্মদাথার ছেলে হামনকে দিলেন।
\v 11 আর রাজা হামনকে বললেন, “সেই রুপো ও সেই জাতি তোমাকে দেওয়া হল, তুমি তাদের প্রতি যা ভালো বোঝ, তাই কর।”
\s5
\v 12 পরে প্রথম মাসের তেরো দিনে রাজার লেখকদের ডাকা হল; সেই দিন হামনের সমস্ত আদেশ অনুসারে রাজার নিযুক্ত রাজ্যপাল সবার ও প্রত্যেক দেশের শাসনকর্তাদের এবং প্রত্যেক জাতির প্রধানদের কাছে, প্রত্যেক দেশের অক্ষর ও প্রত্যেক জাতির ভাষা অনুসারে চিঠি লেখা হল, তা অহশ্বেরশ রাজার নামে লেখা ও রাজার আংটি দিয়ে সীলমোহর করা হল।
\v 13 আর এই চিঠি বাহকদের মাধ্যমে সমস্ত দেশে পাঠানো হল যে, এক দিনে অর্থাৎ অদর নামের দ্বাদশ মাসের তেরো দিনে অল্পবয়সী ও বুড়ো, শিশু স্ত্রী শুদ্ধ সমস্ত যিহূদী লোককে বিনাশ, হত্যা ও ধ্বংস এবং তাদের জিনিস লুট করতে হবে।
\s5
\v 14 সেই আদেশ যেন প্রত্যেক দেশে দেওয়া হয়, এই জন্য সেই চিঠির এক নকল সব জাতির কাছে প্রচারিত হল, যাতে সেই দিনের জন্য সবাই তৈরী হয়।
\v 15 বাহকেরা রাজার আদেশ পেয়ে তাড়াতাড়ি বেরিয়ে গেল এবং সেই আদেশ শূশন রাজধানীতে প্রচার করা হল; পরে রাজা ও হামন পান করতে বসলেন, কিন্তু শূশন শহরের সব লোক অবাক হয়ে গেল।
\s5
\c 4
\ms রাজার কাছে ইষ্টের প্রার্থনা।
\p
\v 1 পরে মর্দখয় এই সব ব্যাপার জানতে পেরে নিজের কাপড় ছিঁড়লেন এবং চট পরলেন ও ছাই মেখে শহরের মধ্যে গিয়ে জোরে চিত্কার করে কাঁদতে লাগলেন।
\v 2 পরে তিনি রাজবাড়ীর দরজা পর্যন্ত গেলেন, কিন্তু চট পরে রাজবাড়ীর দরজায় প্রবেশ করার অনুমতি ছিল না।
\v 3 আর প্রত্যেক দেশের যে কোনো জায়গায় রাজার কথা ও আদেশ পৌঁছাল, সেই জায়গায় যিহূদীদের মধ্যে মহাশোক, উপবাস, কান্নাকাটি ও দুঃখিত হতে লাগল এবং অনেকে চটে ও ছাইয়ের মধ্যে শুয়ে পড়ল।
\s5
\v 4 পরে ইষ্টের দাসীরা ও সেবাকারীরা এসে ঐ কথা তাঁকে জানালো; তাতে রাণী খুব দুঃখিত হয়ে মর্দখয়কে চটের বদলে পরবার জন্য তিনি মর্দখয়কে কাপড় পাঠিয়ে দিলেন কিন্তু তিনি তা নিলেন না।
\v 5 তখন ইষ্টের নিজের সেবায় নিযুক্ত রাজ নপুংসক হথককে ডেকে, কি হয়েছে ও কেন হয়েছে, তা জানবার জন্য মর্দখয়ের কাছে যেতে আদেশ দিলেন।
\s5
\v 6 পরে হথক রাজবাড়ীর দরজার সামনে নগরের চকে মর্দখয়ের কাছে গেলেন।
\v 7 তাতে মর্দখয় নিজের প্রতি যা যা ঘটেছে এবং যিহূদীদের ধ্বংস করবার জন্য হামন যে পরিমাণ রুপো রাজ ভাণ্ডারে দেবার প্রতিজ্ঞা করেছে, তা তাকে জানালেন।
\v 8 আর তাদের ধ্বংস করার জন্য যে আদেশ শূশনে দেওয়া হয়েছে, তার একটা নকল তাঁকে দিয়ে ইষ্টেরকে তা দেখাতে ও আদেশ করতে বললেন এবং তিনি যেন রাজার কাছে প্রবেশ করে তাঁর কাছে নিজের জাতির জন্য অনুরোধ করেন, এমন আদেশ করতে বললেন।
\s5
\v 9 পরে হথক এসে মর্দখয়ের কথা ইষ্টেরকে জানালেন।
\v 10 তখন ইষ্টের হথককে এই কথা বলে মর্দখয়ের কাছে যেতে আদেশ দিলেন,
\v 11 “রাজার দাসেরা ও রাজার অধীন দেশসমূহের লোকেরা সবাই জানে, পুরুষ কি স্ত্রী, যে কেউ নিমন্ত্রিত না হয়ে ভিতরের উঠানে রাজার কাছে যায়, তার জন্য একমাত্র আইন যে, তার মৃত্যু হবে; শুধু যে ব্যক্তির প্রতি রাজা সোনার রাজদণ্ড বাড়িয়ে দেন, সেই শুধু বাঁচে; আর ত্রিশ দিন পর্যন্ত আমি রাজার কাছে যাবার জন্য নিমন্ত্রিত হইনি।”
\v 12 ইষ্টের এই কথা মর্দখয়কে জানানো হল।
\s5
\v 13 তখন মর্দখয় ইষ্টেরকে এই উত্তর দিতে বললেন, “সমস্ত যিহূদীর মধ্যে শুধু তুমি রাজবাড়িতে থাকাতে রক্ষা পাবে, তা মনে কর না।
\v 14 ফলে যদি তুমি এ সময়ে চুপ করে থাক, তবে অন্য কোনো জায়গা থেকে যিহূদীদের সাহায্য ও উদ্ধার ঘটবে, কিন্তু তুমি নিজের বাবার বংশের সঙ্গে ধ্বংস হয়ে যাবে; আর কে জানে যে, তুমি এই রকম সময়ের জন্যই রাণীর পদ পেয়ছ?”
\s5
\v 15 তখন ইষ্টের মর্দখয়কে এই উত্তর দিতে আদেশ দিলেন,
\v 16 “তুমি যাও, শূশনে থাকা সমস্ত যিহূদীদের জড়ো কর এবং আমার জন্য সকলে উপবাস কর। তিন দিন, রাতে কি দিনে কোনো কিছু খেও না ও পান কোরো না, আর আমিও আমার দাসীরাও সেই রকম উপবাস করব; এই ভাবে রাজার কাছে যাব, তা আইনের বিরুদ্ধে হলেও যাব এবং যদি ধ্বংস হতে হয়, হব।”
\v 17 পরে মর্দখয় গিয়ে ইষ্টেরের সব নির্দেশ মত কাজ করলেন।
\s5
\c 5
\p
\v 1 তিন দিন পর, ইষ্টের রাজকীয় পোশাক পরে রাজার ঘরের সামনে রাজবাড়ীর ভিতরের উঠানে গিয়ে দাঁড়ালেন; সেই সময় রাজা রাজবাড়ীর ঘরের দরজার সামনে রাজসিংহাসনে বসে ছিলেন।
\v 2 আর রাজা যখন দেখলেন যে ইষ্টের রাণী উঠানে দাঁড়িয়ে আছেন, তখন রাজার চোখে ইষ্টের অনুগ্রহ পেলেন, রাজা ইষ্টের প্রতি নিজের হাতে অবস্থিত সোনার রাজদণ্ড বাড়িয়ে দিলেন; তাতে ইষ্টের কাছে এসে রাজদণ্ডের মাথা স্পর্শ করলেন।
\s5
\v 3 পরে রাজা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “ইষ্টের রাণী, তুমি কি চাও? তোমার অনুরোধ কি? রাজ্যের অর্ধেক পর্যন্ত হলেও তা তোমাকে দেওয়া যাবে।”
\v 4 ইষ্টের উত্তর দিলেন, “যদি মহারাজ ভাল মনে হয়, তবে আপনার জন্য আজ আমি যে ভোজ তৈরী করেছি তাতে মহারাজ ও হামন যেন উপস্থিত হন।”
\s5
\v 5 তখন রাজা বললেন, “ইষ্টেরের কথামত যেন কাজ হয়, সেইজন্য হামনকে তাড়াতাড়ি করতে বল।” পরে রাজা ও হামন ইষ্টেরের তৈরি ভোজে গেলেন।
\v 6 পরে আঙ্গুর রসের সঙ্গে ভোজের সময়ে রাজা ইষ্টেরকে বললেন, “তোমার নিবেদন কি? তা তোমাকে দেওয়া হবে; তোমার অনুরোধ কি? রাজ্যের অর্ধেক পর্যন্ত হলেও তা সম্পূর্ণ হবে।”
\s5
\v 7 তাতে ইষ্টের উত্তর করে বললেন, “আমার নিবেদন ও অনুরোধ এই,
\v 8 আমি যদি মহারাজের চোখে অনুগ্রহ পেয়ে থাকি এবং আমার নিবেদন গ্রহণ করতে ও আমার অনুরোধ সম্পূর্ণ করতে যদি মহারাজের ভালো মনে হয়, তবে আমি আপনাদের জন্য যা তৈরী করব, মহারাজ ও হামন সেই ভোজে আসুন; এবং আমি কাল মহারাজের আদেশ অনুসারে [উত্তর] দেব।”
\s মর্দখয়ের সম্মান পাওয়া।
\m
\s5
\v 9 সেই দিন হামন খুশী হয়ে আনন্দিত মনে বাইরে গেল। কিন্তু সে যখন রাজবাড়ীর দরজায় মর্দখয়কে দেখতে পেল এবং তিনি তার সামনে উঠে দাঁড়ালেন না ও সরলেন না, তখন হামন মর্দখয়ের ওপর রেগে গেলেন।
\v 10 তা সত্ত্বেও হামন রাগ সংযত করল এবং নিজে বাড়ি এসে নিজের বন্ধুদেরকে ও নিজের স্ত্রী সেরশকে ডেকে আনাল।
\v 11 আর হামন তাদের কাছে নিজের ধনসম্পদের জাঁকজমক ও তার ছেলেদের সংখ্যার কথা এবং রাজা কিভাবে তাকে শাসনকর্তাদের ও রাজার দাসদের থেকে শ্রেষ্ঠ আসন দিয়েছেন, এই সমস্ত তাদের কাছে বিবরণ দিল।
\s5
\v 12 হামন আরও বলল, “ইষ্টের রাণী নিজের তৈরী ভোজে রাজার সঙ্গে আর কাউকেও নিমন্ত্রণ করেন নি, শুধু আমাকেই করেছেন; কালও আমি রাজার সঙ্গে তাঁর কাছে নিমন্ত্রিত আছি।
\v 13 কিন্তু যে পর্যন্ত আমি রাজবাড়ির দরজায় বসে থাকা যিহূদী মর্দখয়কে দেখতে পাই, সে পর্যন্ত এই সবকিছুতে আমার শান্তি হয় না।”
\s5
\v 14 তখন তার স্ত্রী সেরশ ও তার সব বন্ধু তাকে বলল, “তুমি পঞ্চাশ হাত উঁচু একটা ফাঁসিকাঠ তৈরী করাও; আর মর্দখয়কে তার উপরে ফাঁসি দেবার জন্য কাল সকালে রাজার কাছে জানাও; পরে খুশি হয়ে রাজার সঙ্গে ভোজে যাও।” তখন হামন এই কথায় আনন্দিত হয়ে সেই ফাঁসিকাঠ তৈরী করাল।
\s5
\c 6
\p
\v 1 সেই রাতে রাজার ঘুম ভেঙ্গে গেল, আর তিনি ইতিহাস বই আনতে আদেশ দিলেন; পরে রাজার সামনে সেই বই পড়ে শোনানো হল।
\v 2 আর তার মধ্যে লেখা এই কথা পাওয়া গেল, রাজার নপুংসক বিগ্‌থন ও তেরশ নামে রাজার দুইজন দরজার পাহারাদার অহশ্বেরশ রাজার উপরে ক্ষতি করতে চাইলে মর্দখয় তার খবর দিয়েছিলেন।
\v 3 রাজা বললেন, “এর জন্য মর্দখয়কে কি রকম সম্মান ও মর্যাদা দেওয়া হয়েছে?” রাজার নপুংসক দাসেরা বলল, “তার জন্যে কিছুই করা যায় নি।”
\s5
\v 4 পরে রাজা বললেন, “উঠানে কে আছে?” তখন হামন নিজের তৈরী ফাঁসিকাঠে মর্দখয়কে ফাঁসি দেবার জন্য রাজার কাছে নিবেদন করতে রাজবাড়ির বাইরের উঠানে এসেছিল।
\v 5 রাজার দাসেরা বলল, “দেখুন, হামন উঠানে দাঁড়িয়ে আছেন।” রাজা বললেন, “সে ভিতরে আসুক।”
\v 6 তখন হামন ভিতরে আসলে রাজা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “রাজা যাকে সম্মান দেখাতে চান তার প্রতি কি করা উচিত?” তখন হামন মনে মনে ভাবল, রাজা আমাকে ছাড়া আর কার সম্মান করতে চাইবেন?
\s5
\v 7 অতএব হামন রাজাকে বলল, “মহারাজ যাঁকে সম্মান দেখাতে চান,
\v 8 তাঁর জন্য মহারাজের একটা রাজপোশাক, আর মহারাজ যার উপরে চড়ে থাকেন এবং যার মাথায় একটা রাজমুকুট স্থাপিত হয়ে থাকে, সেই ঘোড়া আনা হোক;
\v 9 আর সেই পোশাক ও ঘোড়া মজারাজের একজন বড় প্রধান শাসনকর্তার হাতে সমর্পণ করা হোক এবং মহারাজ যার সম্মান করতে চান, সে সেই রাজকীয় পোশাক পরুক; পরে তাকে সেই ঘোড়ায় চড়িয়ে শহরের রাস্তায় নিয়ে যাওয়া হোক এবং তার আগে এই কথা বলা হোক রাজা যাঁর সম্মান করতে চান, তাঁর প্রতি এইরকম ব্যবহার করা যাবে।”
\s5
\v 10 রাজা হামনকে বললেন, “তুমি তাড়াতাড়ি যাও, সেই পোশাক ও ঘোড়া নিয়ে যেমন বললে, তেমনি রাজবাড়ির দরজায় বসে থাকা যিহূদী মর্দখয়ের প্রতি কর; তুমি যে সব কথা বললে, তার কিছু ভুল কর না।”
\v 11 তখন হামন সেই পোশাক ও ঘোড়া নিল, মর্দখয়কে পোশাক পরিয়ে দিল এবং ঘোড়ায় চড়িয়ে শহরের রাস্তায় ঘোরাল, আর তাঁর সামনে সে এই কথা ঘোষণা করল, “রাজা যাঁর সম্মান করতে চান, তাঁর প্রতি এইরকম ব্যবহার করা যাবে।”
\s5
\v 12 পরে মর্দখয় রাজবাড়ীর দরজায় ফিরে গেলেন, কিন্তু হামন দুঃখে কাপড় দিয়ে মাথা ঢেকে তাড়াতাড়ি করে নিজের ঘরে চলে গেল।
\v 13 আর হামন নিজের স্ত্রী সেরশকে ও সমস্ত বন্ধুকে নিজের সম্মন্ধে সব ঘটনার কথা বলল; তাতে তার জ্ঞানীলোকেরা ও তার স্ত্রী সেরশ তাকে বলল, “যার সামনে তোমার এই পতনের শুরু হল, সেই মর্দখয় যদি যিহূদী বংশীয় লোক হয়, তবে তুমি তাকে জয় করতে পারবে না, বরং তোমার সামনে তার নিশ্চয়ই পতন হবে।”
\v 14 তারা তার সঙ্গে কথাবার্তা বলছে, এরমধ্যে রাজ নপুংসকেরা এসে ইষ্টেরের তৈরী ভোজে হামনকে নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠল।
\s5
\c 7
\ms হামনের বিনাশ, মর্দখয়ের পদোন্নতি।
\p
\v 1 পরে রাজা ও হামন দ্বিতীয় বার রাণী ইষ্টেরের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করবার জন্য আসলেন।
\v 2 আর রাজা সেই দ্বিতীয় দিনে আঙ্গুর রসের সঙ্গে ভোজের সময়ে ইষ্টেরকে আবার বললেন, “ইষ্টের রাণী, তোমার প্রার্থনা কি? তা তোমাকে দেওয়া যাবে এবং তোমার অনুরোধ কি? রাজ্যের অর্ধেক পর্যন্ত হলেও তা সম্পূর্ণ করা যাবে।”
\s5
\v 3 তখন উত্তরে রাণী ইষ্টের বললেন, “মহারাজ, আমি যদি আপনার চোখে দয়া পেয়ে থাকি এবং মহারাজের যদি ভালো মনে হয়, তবে আমার অনুরোধ হল আমার ও আমার জাতির লোকদের প্রাণ রক্ষা করুন,
\v 4 কারণ ধ্বংস, হত্যা করবার ও বিনষ্ট করবার জন্যই আমাকে ও আমার জাতির লোকদের বিক্রি করা হয়েছে। যদি আমাদের শুধু দাস ও দাসী হবার জন্য বিক্রিত হতাম, তবে আমি চুপ করেই থাকতাম; কিন্তু তা হলেও মহারাজের ক্ষতিপূরণ করা শত্রুদের সহজ হত না।”
\v 5 তখন রাজা অহশ্বেরশ রাণী ইষ্টেরকে জিজ্ঞাসা করলেন, “কে সে? সেই লোকটি কোথায়? এমন কাজ করার মানসিকতা কার মনে জন্মিয়েছে?”
\s5
\v 6 ইষ্টের বললেন, “একজন বিপক্ষ ও শত্রু, সেই এই দুষ্ট হামন।” তখন হামন রাজা ও রাণীর সামনে ভীষণ ভয় পেল।
\v 7 পরে রাজা রেগে গিয়ে আঙ্গুর রস পান করা থেকে উঠে গিয়ে রাজবাড়ীর বাগানে গেলেন। হামন রাণী ইষ্টেরের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চাইবার জন্য দাঁড়ালো, কারণ সে দেখল, রাজা থেকে তার অমঙ্গল অবশ্যই।
\s5
\v 8 পরে রাজবাড়ীর বাগান থেকে রাজা আঙ্গুর রস সহযোগে ভোজের জায়গায় ফিরে আসলেন; তখন ইষ্টের যে আসনে বসে ছিলেন তার উপর হামন পড়ে ছিল; তাতে রাজা বললেন, “এই লোকটা কি ঘরের মধ্যে আমার সামনে রাণীর শ্লীলতাহানি করবে?” এই কথা রাজার মুখ থেকে বের হওয়া মাত্র লোকেরা হামনের মুখ ঢেকে ফেলল।
\s5
\v 9 পরে হর্বোণা নামে একজন নপুংসক রাজার সামনে এসে বলল, “হামনের বাড়িতে পঞ্চাশ হাত উঁচু একটা ফাঁসিকাঠ রাখা আছে। মর্দখয়, যিনি রাজার প্রাণ রক্ষার জন্য খবর দিয়েছিলেন তাঁর জন্যই হামন ওটা তৈরী করেছিল।” রাজা বললেন, “ওটার উপরে ওকেই ফাঁসি দাও।”
\v 10 তাতে হামন যে ফাঁসিকাঠ মর্দখয়ের জন্য তৈরী করেছিল লোকেরা তার উপরে তাকেই ফাঁসি দিল। তখন রাজার রাগ কমল।
\s5
\c 8
\p
\v 1 সেই দিন রাজা অহশ্বেরশ যিহূদীদের শত্রু হামনের বাড়ি রাণী ইষ্টেরকে দিলেন। আর মর্দখয় রাজার সামনে উপস্থিত হলেন, কারণ মর্দখয় ইষ্টেরের কে, তা ইষ্টের জানিয়েছিলেন।
\v 2 পরে রাজা তাঁর যে আংটিটা হামনের কাছ থেকে নিয়ে নিয়েছিলেন সেটা নিজের হাত থেকে খুলে নিয়ে মর্দখয়কে দিলেন এবং ইষ্টের হামনের বাড়ির উপরে মর্দখয়কে নিযুক্ত করলেন।
\s যিহূদীদের জন্যে ইষ্টের নিবেদন
\m
\s5
\v 3 পরে ইষ্টের রাজার পায়ে পড়ে কাঁদতে কাঁদতে আবার তাঁর কাছে মিনতি জানালেন। যিহূদীদের বিরুদ্ধে অগাগীয় হামন যে দুষ্ট পরিকল্পনা করেছিল তা বন্ধ করে দেবার জন্য তিনি রাজাকে অনুরোধ করলেন।
\v 4 তখন রাজা তাঁর সোনার রাজদণ্ডটা ইষ্টেরের দিকে বাড়িয়ে দিলেন আর ইষ্টের উঠে রাজার সামনে দাঁড়ালেন।
\s5
\v 5 ইষ্টের বললেন, “মহারাজের যদি ভাল মনে হয়, তিনি যদি আমাকে দয়ার চোখে দেখেন এবং যদি ভাবেন যে, কাজটা করা ভালো আর যদি তিনি আমার উপর খুশী হয়ে থাকেন, তবে মহারাজের সমস্ত দেশের যিহূদীদের ধ্বংস করবার জন্য ফন্দী এঁটে অগাগীয় হম্মাদাথার ছেলে হামন যে চিঠি লিখেছিল, সে সব বাতিল করবার জন্য লেখা হোক।
\v 6 কারণ আমার জাতি ও আমার নিজের লোকদের উপর সর্বনাশ নেমে আসবে তা দেখে আমি কেমন করে সহ্য করব?”
\s5
\v 7 তখন রাজা অহশ্বেরশ রাণী ইষ্টের ও যিহূদী মর্দখয়কে বললেন, “দেখ, হামন যিহূদীদের বিরুদ্ধে কাজ করেছিল বলে আমি তার বাড়ি ইষ্টেরকে দিয়েছি আর লোকেরা তাকে ফাঁসি দিয়েছে।
\v 8 কিন্তু রাজার নাম করে লেখা এবং রাজার আংটি দিয়ে সীলমোহর করা কোনো আদেশ বাতিল করা যায় না। কাজেই এখন যেভাবে তোমাদের ভাল মনে হয় সেই যিহূদীদের পক্ষে রাজার নাম করে আর একটা আদেশ লিখে রাজার স্বাক্ষরের আংটি দিয়ে সীলমোহর কর।”
\s5
\v 9 তখন তৃতীয় মাসে, অর্থাৎ সীবন মাসের তেইশ দিনের দিন রাজার লেখকদের ডাকা হল। আর মর্দখয়ের সমস্ত আদেশ অনুসারে ইন্ডিয়া থেকে কূশ পর্যন্ত একশো সাতাশটা বিভাগের যিহূদীদের, দেশের ও বিভাগের শাসনকর্তাদের এবং উঁচু পদের কর্মচারীদের কাছে চিঠি লেখা হল। এই চিঠিগুলো প্রত্যেকটি বিভাগের অক্ষর ও প্রত্যেকটি জাতির ভাষা অনুসারে এবং যিহূদীদের অক্ষর ও ভাষা অনুসারে লেখা হল।
\s5
\v 10 মর্দখয় তখন রাজা অহশ্বেরশের নামে চিঠিগুলো লিখে রাজার স্বাক্ষরের আংটি দিয়ে সীলমোহর করলেন। তারপর তিনি রাজার দ্রুতগামী বিশেষ ঘোড়ায় করে সংবাদ বাহকদের দিয়ে চিঠিগুলো পাঠিয়ে দিলেন।
\v 11 কোনো জাতির বা বিভাগের লোকেরা যিহূদীদের ও তাদের ছেলেমেয়েদের ও স্ত্রীদের আক্রমণ করলে তারা সেই দলকে ধ্বংস করবার, অর্থাৎ মেরে ফেলবার, অর্থাৎ একেবারে শেষ করে দেবার অধিকার পেল, আর সেই শত্রুদের সম্পত্তি লুট করবারও অধিকার পেল।
\v 12 তা দিয়ে রাজা অহশ্বেরশ সেই চিঠিতে অদর মাসের, অর্থাৎ বারো মাসের তেরো দিনের দিন যাতে তাঁর রাজ্যের প্রত্যেক শহরের যিহূদীরা জড়ো হয়ে নিজেদের রক্ষা করতে পারে সেই অধিকার দিলেন।
\s5
\v 13 রাজার আদেশ প্রত্যেকটি বিভাগে আইন হিসাবে প্রকাশ করা হল এবং প্রত্যেক জাতিকে তা জানানো হল যাতে যিহূদীরা সেই দিনে তাদের শত্রুদের উপর শোধ নেবার জন্য প্রস্তুত থাকতে পারে।
\v 14 পরে দ্রুতগামী রাজকীয় ঘোড়ায় চড়ে সংবাদ বাহকেরা রাজার আদেশে তাড়াতাড়ি বের হয়ে গেল। শূশনের দুর্গেও সেই আদেশ জানানো হল।
\s5
\v 15 মর্দখয় মসীনা সুতার বেগুনে পোশাকের উপরে নীল ও সাদা রংয়ের রাজপোশাক পরে এবং সোনার একটা বড় মুকুট মাথায় দিয়ে রাজার সামনে থেকে বের হয়ে গেলেন। শূশন শহরের লোকেরা চিৎকার করে আনন্দ করল।
\v 16 যিহূদীদের জন্য সময়টা হল খুব আনন্দের, আমোদের ও সম্মানের।
\v 17 প্রত্যেকটি বিভাগে ও শহরে যেখানে যেখানে রাজার আদেশ গেল সেখানকার যিহূদীদের মধ্যে আনন্দপূর্ণ উৎসব হল। অন্যান্য জাতির অনেক লোক যিহূদী হয়ে গেল, কারণ যিহূদীদের কাছ থেকে তাদের ত্রাস উত্পন্ন হয়েছিল।
\s5
\c 9
\ms যিহূদীদের রক্ষা।
\p
\v 1 পরে বারো মাসের, অর্থাৎ অদর মাসের তেরো দিনের দিন রাজার আদেশ কাজে লাগাবার সময় এলো। এই দিনে যিহূদীদের শত্রুরা তাদের উপরে কর্তৃত্ব করবার আশা করেছিল, কিন্তু বিপরীত ঘটনা ঘটল। যিহূদীদের যারা ঘৃণা করত যিহূদীরাই তাদের কর্তৃত্ব করল।
\v 2 যারা তাদের ধ্বংস করতে চেয়েছিল তাদের আক্রমণ করবার জন্য যিহূদীরা রাজা অহশ্বেরশের সমস্ত প্রদেশে তাদের নিজের নিজের শহরগুলোতে জড়ো হল। তাদের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়াতে পারল না, কারণ অন্য সব জাতির লোকেরা তাদের ভয় করতে লাগলো।
\s5
\v 3 আর বিভাগগুলোর সমস্ত উঁচু পদের কর্মচারীরা, দেশের ও প্রদেশের শাসনকর্তারা এবং রাজার অন্যান্য কর্মচারীরা যিহূদীদের সাহায্য করতে লাগলেন, কারণ তাঁরা মর্দখয়ের জন্য ত্রাসযুক্ত হয়েছিলেন।
\v 4 কারণ মর্দখয় রাজবাড়ীর মধ্যে প্রধান হয়ে উঠেছিলেন; তাঁর সুনাম বিভাগগুলোর সমস্ত জায়গায় ছড়িয়ে পড়ল এবং মর্দখয় দিনে দিনে শক্তিশালী হয়ে উঠলেন।
\v 5 আর যিহূদীরা তাদের সব শত্রুদের তরোয়াল দিয়ে আঘাত করে, মেরে ফেলতে ও একেবারে শেষ করে দিতে লাগল এবং যারা তাদের ঘৃণা করত তাদের উপর যা খুশী তাই করতে লাগল।
\s5
\v 6 শূশনের রাজধানীতে তারা পাঁচশো লোককে হত্যা ও ধ্বংস করল।
\v 7 আর পর্শন্দাথঃ, দল্‌ফোন, অসপাথঃ,
\v 8 পোরাথঃ, অদলিয়ঃ, অরীদাথঃ,
\v 9 পর্মস্ত, অরীষয়, অরীদয় ও বয়িষাথঃ।
\v 10 যিহূদীদের শত্রু হম্মদাথার ছেলে হামনের এই দশ ছেলেকে তারা হত্যা করল, কিন্তু লুটের জিনিষে হাত দিল না।
\s5
\v 11 শূশনের রাজধানীতে যাদের মেরে ফেলা হয়েছিল তাদের সংখ্যা সেই দিনই রাজার কাছে আনা হল।
\v 12 রাজা ইষ্টের রাণীকে বললেন, “শূশনের রাজধানীতে যিহূদীরা পাঁচশো লোক ও হামনের দশজন ছেলেকে মেরে ফেলেছে। রাজার অধীন অন্য সমস্ত প্রদেশে তারা না জানি কি করেছে। এখন তোমার অনুরোধ কি? তা তোমাকে দেওয়া হবে। তুমি কি চাও? তাও করা হবে।”
\s5
\v 13 উত্তরে ইষ্টের বললেন, “মহারাজের যদি ভাল মনে হয় তবে আজকের মত কালকেও একই কাজ করবার জন্য শূশনের যিহূদীদের অনুমতি দেওয়া হোক; আর হামনের দশটি ছেলেকে ফাঁসিকাঠে ঝুলানো হোক।”
\v 14 পরে রাজা তাই করবার জন্য আদেশ দিলেন। শূশনে রাজার সেই আদেশ ঘোষণা করা হল আর লোকেরা হামনের দশটি ছেলেকে ফাঁসিকাঠে ঝুলিয়ে দিল।
\s5
\v 15 আর শূশনের যিহূদীরা অদর মাসের চৌদ্দ দিনের দিন একসঙ্গে জড়ো হয়ে সেখানে তিনশো লোককে মেরে ফেলল, কিন্তু তারা কোনো লুটের জিনিষে হাত দিল না।
\v 16 এর মধ্যে রাজার অন্যান্য প্রদেশের যিহূদীরাও নিজেদের জীবন রক্ষা করবার জন্য ও তাদের শত্রুদের হাত থেকে রেহাই পাবার জন্য একসঙ্গে জড়ো হল। তারা তাদের পঁচাত্তর হাজার শত্রুকে মেরে ফেলল কিন্তু কোনো লুটের জিনিষে হাত দিল না।
\s5
\v 17 তারা অদর মাসের তেরো দিনের দিন এই কাজ করল এবং চৌদ্দ দিনের দিন তারা বিশ্রাম নিল। দিনটা তারা ভোজের ও আনন্দের দিন হিসাবে পালন করল।
\v 18 কিন্তু শূশনের যিহূদীরা তেরো ও চৌদ্দ দিনের দিন একসঙ্গে জড়ো হয়েছিল। তারপর পনেরো দিনের দিন তারা বিশ্রাম নিল এবং দিনটা ভোজের ও আনন্দের দিন হিসাবে পালন করল।
\v 19 এইজন্যই গ্রামের যিহূদীরা, অর্থাৎ যারা দেয়াল ছাড়া শহরে বাস করে তারা অদর মাসের চৌদ্দ দিনের দিনটাকে আনন্দ ও ভোজের দিন এবং একে অন্যকে খাবার পাঠাবার দিন হিসাবে পালন করে।
\s পূরীম পর্ব পালন। মর্দখয়ের মহত্ত্ব।
\p
\s5
\v 20 পরে মর্দখয় এই সব ঘটনা লিখে রাখলেন এবং রাজা অহশ্বেরশের রাজ্যের দূরের কি কাছের সমস্ত বিভাগের যিহূদীদের কাছে চিঠি লিখে পাঠালেন।
\v 21 তিনি তাদের আদেশ দিলেন যেন তারা প্রতি বছর অদর মাসের চৌদ্দ ও পনেরো দিন দুইটি পালন করে।
\v 22 এর কারণ হল, এই দুই দিনে যিহূদীরা তাদের শত্রুদের হাত থেকে রেহাই পেয়েছিল এবং সেই মাসে তাদের দুঃখ সুখে ও শোক মঙ্গলে পরিণত হয়েছিল। সেই মাসের সেই দুই দিন যেন তারা ভোজনপান ও আনন্দের দিন এবং একে অন্যের কাছে খাবার পাঠাবার ও গরীবদের কাছে উপহার দেবার দিন বলে পালন করে।
\s5
\v 23 তাতে যিহূদীরা যেমন আরম্ভ করেছিল এবং মর্দখয় তাদের যেমন লিখেছিলেন সেইভাবে দিন দুটি পালন করতে তারা রাজী হল।
\v 24 এর কারণ হল, সমস্ত যিহূদীদের শত্রু অগাগীয় হম্মাদাথার ছেলে হামন যিহূদীদের বিনষ্ট করার সংকল্প করেছিল তাদের লুপ্ত ও ধ্বংস করবার জন্য পূর অর্থাৎ গুলিবাঁট করেছিল।
\v 25 কিন্তু রাজার সামনে সেই বিষয় উপস্থিত হলে তখন তিনি লিখিত আদেশ দিয়েছিলেন যেন যিহূদীদের বিরুদ্ধে হামন যে মন্দ ফন্দি এঁটেছে তা তার নিজের মাথাতেই পড়ে এবং তাকে এবং তার ছেলেদের ফাঁসিকাঠে ঝুলানো হয়।
\s5
\v 26 সেইজন্যই “পূর” [গুলিবাঁট] কথাটা থেকে সেই দুই দিনের নাম পূরীম হল সেই চিঠিতে যা কিছু লেখা ছিল এবং তাদের প্রতি যা ঘটেছিল সেইজন্য যিহূদীরা ঠিক করেছিল যে, তারা একটা নিয়ম প্রতিষ্ঠা করবে।
\v 27 তার জন্য যিহূদীরা নিজেদের ও নিজের নিজের বংশের ও যিহূদী মতাবলম্বী সবার কর্তব্য বলে এটা স্থির করল যে, সেই সম্মন্ধে লেখা আদেশ ও সঠিক সময় অনুসারে তারা বছর বছর দুই দিন পালন করবে, কোনোভাবে ভুল হবে না।
\v 28 প্রত্যেক গোষ্ঠীতে, প্রত্যেক প্রদেশে, প্রত্যেকটি শহরের প্রত্যেকটি পরিবার বংশের পর বংশ ধরে সেই দুই দিন স্মরণ করবে এবং পালন করবে। এতে যিহূদীদের মধ্য থেকে পূরীমের সেই দুই দিন পালন করা কখনও বন্ধ হবে না এবং তাদের বংশধরদের মধ্য থেকে তার স্মৃতি মুছে যাবে না।
\s5
\v 29 পরে অবীহয়িলের মেয়ে রাণী ইষ্টের ও যিহূদী মর্দখয় পূরীমের এই নিয়ম স্থায়ী করবার জন্য এই দ্বিতীয় চিঠিটা সম্পূর্ণ ক্ষমতা নিয়ে লিখলেন।
\s5
\v 30 আর অহশ্বেরশ রাজার রাজ্যের একশো সাতাশটা প্রদেশের সমস্ত যিহূদীদের কাছে মর্দখয় শান্তি ও সত্যের কথা লেখা চিঠি পাঠিয়ে দিলেন।
\v 31 সেই চিঠি পাঠানো হয়েছিল যাতে তারা নির্দিষ্ট সময়ে যিহূদী মর্দখয় ও রাণী ইষ্টেরের নির্দেশমত পূরীমের এই দিন দুটি পালন করবার জন্য স্থির করতে পারে, যেমন ভাবে তারা নিজেদের ও তাদের বংশধরদের জন্য অন্যান্য উপবাস ও বিলাপের সময় স্থির করেছিল।
\v 32 ইষ্টের আদেশে পূরীমের এই নিয়মগুলো স্থির করা হল এবং তা বইয়ে লিখে রাখা হল।
\s5
\c 10
\p
\v 1 রাজা অহশ্বেরশ তাঁর গোটা রাজ্যে ও সমুদ্রের দ্বীপগুলিতে কর বসালেন।
\v 2 তাঁর ক্ষমতা ও শক্তির সব কথা এবং মর্দখয়কে রাজা যেভাবে উঁচু পদ দিয়ে মহান করেছিলেন তার সম্পূর্ণ বিবরণ কি মাদিয়া ও পারস্যের রাজাদের ইতিহাস বইতে লেখা নেই?
\s5
\v 3 ফলে এই যিহূদী মর্দখয় অহশ্বেরশ রাজার পরে দ্বিতীয় এবং যিহূদীদের মধ্যে মহান, নিজের ভাইদের মধ্যে প্রিয়পাত্র ও নিজের জাতির লোকদের মঙ্গলকারী এবং নিজের সমস্ত বংশের সঙ্গে শান্তিবাদী ছিলেন।

251
25-LAM.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,251 @@
\id LAM
\ide UTF-8
\sts - Lamentations
\h যিরমিয়ের বিলাপ।
\toc1 যিরমিয়ের বিলাপ।
\toc2 যিরমিয়ের বিলাপ।
\toc3 lam
\mt1 যিরমিয়ের বিলাপ।
\s5
\c 1
\ms যিরমিয়ের বিলাপ।
\s যিরূশালেমের অপমান। যিহূদীদের পাপ ও শাস্তি।
\p
\v 1 হায়! সেই শহর কেমন একাকী বসে আছে, যে একসময় লোকে পরিপূর্ণ ছিল। সে বিধবার মতো হয়েছে, যে জাতিদের মধ্যে মুখ্য ছিল। প্রদেশগুলির মধ্যে সে রাণী ছিল, সে এখন ক্রীতদাসী হয়েছে।
\v 2 সে রাতে খুব কাঁদে; তার গালে চোখের জল পড়ছে; তার সমস্ত প্রেমিকের মধ্যে এমন একজনও নেই যে, তাকে সান্ত্বনা দেবে; তার সব বন্ধুরা তাকে ঠকিয়েছে, তারা তার শত্রু হয়ে উঠেছে।
\s5
\v 3 পরে দুঃখে ও মহাদাসত্বে যিহূদা বন্দীদশায় গেছে; সে জাতিদের মধ্যে বাস করছে এবং বিশ্রাম পায় না; তার তাড়নাকারীরা সবাই দুঃখের মধ্যে তাকে ধরেছিল।
\s5
\v 4 সিয়োনের রাস্তাগুলো শোক করছে, কারণ কেউ নির্দিষ্ট পর্বে আসে না; তার সব ফটক ফাঁকা; তার যাজকরা গভীর আর্তনাদ করে; তার কুমারীরা দুঃখিত, সে নিজের মনে কষ্ট পাচ্ছে।
\v 5 তার বিপক্ষেরা তার মনিব হয়েছে; তার শত্রুদের উন্নতি হয়েছে; কারণ তার অনেক পাপের জন্য সদাপ্রভু তাকে দুঃখ দিয়েছেন; তার ছোটো ছেলেরা তার বিপক্ষের আগে আগে বন্দী হয়ে গিয়েছে
\s5
\v 6 এবং সিয়োনের মেয়ের সব সৌন্দর্য্য তাকে ছেড়ে গিয়েছে। তার নেতারা এমন হরিণের মত হয়েছে, যারা চরবার জায়গা পায় না; তারা শক্তিহীন হয়ে তাড়নাকারীদের আগে গিয়েছে।
\s5
\v 7 যিরূশালেম তার দুঃখের ও দুর্দশার সময়ে, নিজের অতীতের সব মূল্যবান জিনিসপত্রের কথা মনে করছে; যখন তার লোকেরা শত্রুদের হাতে পড়েছিল, কেউ তাকে সাহায্য করেনি, তার শত্রুরা তাকে দেখল, তার ধ্বংস দেখে তার শত্রুরা উপহাস করল।
\s5
\v 8 যিরূশালেম অনেক পাপ করেছে, তাই সে অশুচি হয়েছে। যারা তাকে সম্মান করত, তারা তাকে তুচ্ছ করছে, কারণ তারা তার উলঙ্গতা দেখতে পেয়েছে; সে গভীর আর্তনাদ করছে এবং পিছনে ফিরেছে।
\v 9 তার অপবিত্রতা তার পোশাকে ছিল; সে তার ভবিষ্যতের শাস্তির কথা ভাবেনি। তার আশ্চর্য্যভাবে অধঃপতন হল; তাকে সান্ত্বনা দেবার কেউ ছিল না; আমার দুঃখ দেখ, হে সদাপ্রভু কারণ আমার শত্রু অহঙ্কার করেছে।
\s5
\v 10 বিপক্ষরা তার সব মূল্যবান জিনিসে হাত দিয়েছে; সে দেখেছে জাতিরা তার পবিত্র জায়গায় প্রবেশ করেছে, যাদেরকে তুমি আদেশ করেছিলে যে তারা তোমার সমাজে প্রবেশ করবে না।
\s5
\v 11 তার সব লোকেরা আর্তনাদ করছে, তারা খাদ্যের খোঁজ করছে, তারা প্রাণ ফিরিয়ে আনার জন্য খাবারের পরিবর্তে তাদের মূল্যবান জিনিস দিয়েছে। দেখ, হে সদাপ্রভু, আমাকে বিবেচনা কর, কারণ আমি অযোগ্য হয়েছি।
\v 12 তোমরা যারা পাশ দিয়ে যাও, এতে কি তোমাদের কিছু যায় আসে না? তাকিয়ে দেখ, আমায় যে ব্যথা দেওয়া হয়েছে তার মতো ব্যথা আর কোথাও আছে? তাই সদাপ্রভু তার প্রচণ্ড ক্রোধের দিনে আমাকে দুঃখ দিয়েছেন।
\s5
\v 13 তিনি উপর থেকে আমার হাড়ের মধ্যে আগুন পাঠিয়েছেন এবং তাদের ওপরে সে জয়লাভ করেছে। তিনি আমার পায়ের জন্য জাল পেতেছেন এবং আমাকে পিছনে ফিরিয়েছেন, আমাকে সর্বদা নিঃসঙ্গ ও দুর্বল করেছে।
\v 14 আমার পাপের যোঁয়ালি তাঁর হাতের দ্বারা একসঙ্গে বাঁধা হয়েছে; তা জড়ানো হল, আমার ঘাড়ে উঠল; তিনি আমাকে শক্তিহীন করেছেন; যাদের বিরুদ্ধে আমি উঠতে পারি না, তাদেরই হাতে প্রভু আমাকে সমর্পণ করেছেন।
\s5
\v 15 প্রভু আমার মাঝে থাকা আমার সব বীরকে পরাজিত করেছেন যারা আমাকে রক্ষা করেছেন, তিনি আমার শক্তিশালী যুবকদেরকে ধ্বংস করার জন্য আমার বিরুদ্ধে সভা ডেকেছেন, প্রভু যিহূদার কুমারীকে আঙ্গুর পেষণ যন্ত্রে পায়ে দলিত করেছেন।
\s5
\v 16 এই জন্যে আমি কাঁদছি; আমার চোখ দিয়ে, আমার চোখ দিয়ে জল ঝরে পড়েছে; কারণ সান্ত্বনাকারী, যিনি আমার প্রাণ ফিরিয়ে আনবেন, তিনি আমার জীবন থেকে দূরে সরে গিয়েছেন, আমার ছেলেরা অনাথ, কারণ শত্রুরা জয়লাভ করেছে।”
\v 17 সিয়োন তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে; তার সান্ত্বনাকারী কেউ নেই; সদাপ্রভু যাকোবের বিষয়ে আদেশ করেছেন যে, তার চারিদিকের লোক তার বিপক্ষ হোক; যিরূশালেম তাদের মধ্যে অশুচি হয়েছে।
\s5
\v 18 সদাপ্রভু ন্যায়পরায়ণ, তবুও আমি তাঁর আদেশের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছি; সমস্ত লোকেরা, অনুরোধ করি, শোন, আমার কষ্ট দেখ; আমার কুমারীরা ও যুবকেরা বন্দী হয়ে গেছে।
\v 19 আমি আমার প্রেমিকদের ডাকলাম, কিন্তু তারা আমাকে ঠকালো; আমার যাজকরা এবং আমার প্রাচীনরা শহরের মধ্যে মারা গেল, তারা নিজেদের প্রাণ ফিরে পাওয়ার জন্য খাবারের খোঁজ করছিল।
\s5
\v 20 দেখ, হে সদাপ্রভু, কারণ আমি খুব বিপদে পড়েছি; আমার অন্ত্রে যন্ত্রণা হচ্ছে; আমার যন্ত্রণাগ্রস্ত হচ্ছে, কারণ আমি ভীষণ বিরোধিতা করেছি; বাইরে তরোয়াল আমাদের সন্তানহীন করছে, ভিতরে যেন মৃত্যু আছে।
\s5
\v 21 লোকে আমার আর্তনাদ শুনতে পায়; আমার সান্ত্বনাকারী কেউ নেই; আমার শত্রুরা সবাই আমার দুর্দশার কথা শুনেছে; তারা আনন্দ করছে, কারণ তুমিই এটা করেছ; তুমি তোমার প্রচারের দিন উপস্থিত করবে এবং তারা আমার সমান হবে।
\v 22 তাদের সব দুষ্টতা তোমার চোখে পড়ুক; তুমি আমার সব পাপের জন্য আমার সাথে যেমন করেছ, তাদের সাথেও সেরকম কর, কারণ আমার অনেক আর্তনাদ অনেক বেশি এবং আমার হৃদয় দুর্বল।
\s5
\c 2
\ms যিরূশালেমের অবরোধ, কষ্ট ও ধ্বংস।
\p
\v 1 প্রভু তাঁর ক্রোধে সিয়োনের মেয়েকে কেমন মেঘে ঢেকেছেন! তিনি ইস্রায়েলের সৌন্দর্য্য স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে ফেলেছেন; তিনি তাঁর ক্রোধের দিনে নিজের পা রাখার জায়গাকে মনে করেননি।
\v 2 প্রভু যাকোবের সমস্ত বাসস্থান গ্রাস করেছেন এবং কোনো দয়া করেননি; তিনি ক্রোধে যিহূদার মেয়ের দৃঢ় দুর্গগুলি সব উপড়ে ফেলে দিয়েছেন, তিনি সে সব জায়গা থেকে তাদের তাড়িয়ে দিয়েছেন; রাজ্য ও তার নেতাদেরকে অশুচি করেছেন।
\s5
\v 3 তিনি প্রচণ্ড রাগে ইস্রায়েলের সব শিং উচ্ছেদ করেছেন, তিনি শত্রুর সামনে থেকে নিজের ডান হাত টেনে নিয়েছেন, চারদিকে আগুনের শিখার মতো তিনি যাকোবকে জ্বালিয়েছেন।
\v 4 তিনি শত্রুর মতো নিজের ধনুকে টান দিয়েছেন। বিপক্ষের মতো ডান হাত তুলে দাড়িয়েছেন, আর যারা চোখে মূল্যবান তাদের সবাইকে হত্যা করেছেন; তিনি সিয়োনের মেয়ের তাঁবুর মধ্যে আগুনের মতো রাগ ঢেলে দিয়েছেন।
\s5
\v 5 প্রভু শত্রুর মত হয়েছেন, তিনি ইস্রায়েলকে গ্রাস করেছেন, তিনি তার সমস্ত প্রাসাদগুলি গ্রাস করেছেন, তার সমস্ত দুর্গগুলি ধ্বংস করেছেন, তিনি যিহূদার মেয়ের শোক ও বিলাপ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
\v 6 তিনি বাগানবাড়ির মত নিজের সমাগম তাঁবুতে আঘাত করেছেন। তিনি মিলন স্থানকে ধ্বংস করেছেন; সদাপ্রভু সিয়োনে পর্ব ও বিশ্রামবারকে ভুলিয়ে দিয়েছেন, প্রচণ্ড রাগে রাজাকে ও যাজককে অগ্রাহ্য করেছেন।
\s5
\v 7 প্রভু তাঁর যজ্ঞবেদি দূর করেছেন; নিজের পবিত্র জায়গা ত্যাগ করেছেন; তিনি তার প্রাসাদের ভিত শত্রুদের হাতে দিয়েছেন; তারা সদাপ্রভুর গৃহের মধ্যে নির্দিষ্ট পর্বের দিনের উল্লাস করেছে।
\s5
\v 8 সদাপ্রভু সিয়োনের মেয়ের শহরের দেওয়াল ধ্বংস করার জন্য সংকল্প করেছেন; তিনি পরিমাপের রেখাকে প্রসারিত করেছেন এবং ধ্বংস করার থেকে নিজের হাতকে সরিয়ে নেননি; তিনি পরিখা ও দেওয়ালকে বিলাপ করিয়েছেন এবং সেগুলি একসঙ্গে দুর্বল করেছেন।
\v 9 তার সব ফটকগুলো মাটিতে ঢুকে গিয়েছে, তিনি তার খিল নষ্ট করেছেন এবং ভেঙ্গে দিয়েছেন; তার রাজা ও নেতারা জাতিদের মধ্যে থাকে, যেখানে মোশির কোনো ব্যবস্থা নেই; এমনকি তার ভাববাদীরা সদাপ্রভুর থেকে কোনো দর্শন পায় না।
\s5
\v 10 সিয়োনের মেয়ের প্রাচীনেরা মাটিতে বসে আছে, নীরবে দুঃখিত হয়ে আছে; তারা নিজের নিজের মাথায় ধূলো ছড়িয়েছে, তারা কোমরে চট পরেছে, যিরূশালেমের কুমারীরা মাটিতে তাদের মাথা নীচু করছে।
\s5
\v 11 আমার চোখ দুটির জল শেষ হয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে, আমার অন্ত্রে যন্ত্রণা হচ্ছে; আমার হৃদয় মাটিতে ঢেলে দেওয়া হচ্ছে, কারণ আমার লোকের মেয়ে ধ্বংস হচ্ছে, কারণ শহরের রাস্তায় রাস্তায় ছেলেমেয়েরা ও স্তন্যপায়ী শিশুরা দুর্বল হচ্ছে।
\v 12 তারা তাদের মায়েদের বলে, “গম আর আঙ্গুর রস কোথায়?” কারণ শহরের রাস্তায় রাস্তায় আহত লোকদের মতো দুর্বল হয়ে যায়, তাদের মায়ের বুকে তাদের নিজেদের জীবন ত্যাগ করে।
\s5
\v 13 হে যিরূশালেমের মেয়েরা, তোমার বিষয়ে কি বলে সাক্ষ্য দেব? কিসের সঙ্গে তোমার উপমা দেব? সিয়োন কুমারী, সান্ত্বনার জন্য কিসের সঙ্গে তোমার তুলনা করব? কারণ তোমার ধ্বংস সমুদ্রের মতো বিশাল, তোমায় কে সুস্থ করবে?
\v 14 তোমার ভাববাদীরা তোমার জন্য মিথ্যা ও বোকামির দর্শন পেয়েছে, তারা তোমার বন্দীদশা ফেরাবার জন্য তোমার অপরাধ প্রকাশ করেনি, কিন্তু তোমার জন্য মিথ্যা ভাববাণী সব এবং নির্বাসনের বিষয়গুলি দেখেছে।
\s5
\v 15 যারাই রাস্তা দিয়ে যায়, তারা তোমার উদ্দেশ্যে হাততালি দেয়; তারা শিস দিয়ে যিরূশালেমের মেয়ের দিকে মাথা নেড়ে বলে, “এ কি সেই শহর যা ‘নিখুঁত সৌন্দর্য্যের জায়গা’, ‘সমস্ত পৃথিবীর আনন্দের জায়গা’ নাম পরিচিত ছিল?”
\v 16 তোমার সব শত্রুরা তোমার বিরুদ্ধে মুখ বড় করে খুলেছে। তারা শিস দেয় এবং দাঁতে দাঁত ঘষে, তারা বলে, “আমরা তাঁকে গ্রাস করলাম, এটা সেই দিন যার জন্য আমরা অপেক্ষা করছিলাম; আমরা খুঁজে পেলাম, দেখলাম।”
\s5
\v 17 সদাপ্রভু যা ঠিক করেছেন সেটাই করেছেন; অতীতে তিনি যা আদেশ করেছিলেন সেই কথা পূর্ণ করেছেন, তিনি ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছেন এবং দয়া করেননি; তিনি শত্রুকে তোমার ওপরে আনন্দ করতে দিয়েছেন, তোমার বিপক্ষদের শিং উঁচু করেছেন।
\s5
\v 18 তাদের হৃদয় প্রভুর কাছে কেঁদেছে; “সিয়োনের মেয়ের দেওয়াল! দিন রাত চোখের জল নদীর স্রোতের মতো বয়ে যাক, নিজেকে কোনো বিশ্রাম দিও না, তোমার চোখকে থামতে দিও না।
\v 19 দাঁড়াও এবং রাতের প্রত্যেক প্রহরের শুরুতে কাঁদ, প্রভুর সামনে তোমার হৃদয় জলের মতো ঢেলে দাও, তার দিকে হাত তোমার হাত তোলো, তোমার ছেলেমেয়েদের প্রাণের জন্য, যারা সব রাস্তার মাথায় খিদেতে দুর্বল আছে।”
\s5
\v 20 দেখ, হে সদাপ্রভু, বিবেচনা কর তুমি কার প্রতি এমন ব্যবহার করছে? নারীরা কি তার ছেলেমেয়েদেরকে খাবে, যাদেরকে তারা যত্ন করেছে? প্রভুর পবিত্র জায়গায় কি যাজক ও ভাববাদী মারা যাবে?
\s5
\v 21 অল্প বয়সী যুবকরা ও বুড়োরা রাস্তায় রাস্তায় মাটিতে পড়ে আছে, আমার কুমারীরা ও যুবকেরা তরোয়ালের আঘাতে পড়ে গেছে; তুমি নিজের রাগের দিনে তাদেরকে হত্যা করেছ; তুমি নির্মমভাবে হত্যা করেছ এবং দয়া দেখাও নি।
\v 22 তুমি চারিদিক থেকে আমার আতঙ্ককে পর্বের দিনের মতো নিমন্ত্রণ করেছ; সদাপ্রভুর রাগের দিনে ছাড়া পাওয়া এবং রক্ষা পাওয়া কেউই থাকল না; যাদের আমি দেখাশোনা ও লালন পালন করতাম, আমার শত্রুরা তাদেরকে ধ্বংস করেছে।
\s5
\c 3
\ms ভক্তের দুঃখ ও বিশ্বাস।
\p
\v 1 আমি সেই লোক, যে সদাপ্রভুর ক্রোধের দণ্ডের মাধ্যমে দুঃখ দেখেছে।
\v 2 তিনি আমাকে চালিয়েছেন এবং আমাকে আলোর বদলে অন্ধকারে হাঁটিয়েছেন।
\v 3 অবশ্যই তিনি আমার বিরুদ্ধে ফিরে গেছেন; তিনি তাঁর হাত আমার বিরুদ্ধে সারা দিন ধরে ফিরিয়ে নেন।
\v 4 তিনি আমার মাংস ও আমার চামড়া ক্ষয়প্রাপ্ত করেছেন; তিনি আমার হাড়গুলি ভেঙ্গে দিয়েছেন।
\s5
\v 5 তিনি আমাকে অবরোধ করেছেন এবং আমাকে তিক্ততা ও কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে ঘিরে রেখেছেন;
\v 6 তিনি আমাকে অন্ধকার জায়গায় বাস করিয়েছেন, দীর্ঘ দিনের মৃতদের মতো করেছেন।
\v 7 তিনি আমার চারিদিকে দেওয়াল তুলে দিয়েছেন, যাতে আমি পালাতে না পারি; তিনি আমার শিকল ভারী করে দিয়েছেন।
\v 8 যখন আমি কাঁদি এবং সাহায্যের জন্যে চিত্কার করি, তিনি আমার প্রার্থনা শোনেন না।
\s5
\v 9 তিনি ক্ষোদিত পাথরের দেওয়াল তুলে আমার রাস্তা আঁটকে দিয়েছেন, তিনি সব পথ বাঁকা করেছেন।
\v 10 তিনি আমার কাছে ওৎ পেতে থাকা ভাল্লুকের মতো, একটা লুকিয়ে থাকা সিংহের মতো।
\v 11 তিনি আমার পথকে অন্য দিকে ঘুরিয়েছেন, তিনি আমাকে টুকরো টুকরো করেছেন এবং আমাকে নিঃসঙ্গ করেছেন।
\s5
\v 12 তিনি তাঁর ধনুকে টান দিয়েছেন এবং আমাকে তীরের লক্ষ্য হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
\v 13 তিনি তাঁর তূণের তীর আমার হৃদয়ে বিদ্ধ করিয়েছেন।
\v 14 আমি আমার সব লোকদের কাছে হাস্যকর ও দিনের পর দিন তাদের উপহারের গানের বিষয় হয়েছি।
\v 15 তিনি তিক্ততায় আমাকে ভরে দিয়েছেন এবং তেতো রস পান করতে বাধ্য করেছেন।
\s5
\v 16 তিনি কাঁকর দিয়ে আমার দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছেন, তিনি আমাকে ছাইয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন।
\v 17 তুমি আমার জীবন থেকে শান্তি সরিয়ে নিয়েছ; আনন্দ আমি ভুলে গিয়েছি।
\v 18 তাই আমি বললাম, “আমার শক্তি ও সদাপ্রভুতে আমার আশা নষ্ট হয়েছে।”
\s5
\v 19 মনে কর আমার দুঃখ ও আমার বিপথে যাওয়া, তেতো রস এবং বিষ।
\v 20 আমি অবশ্যই তা মনে রাখছি এবং আমি নিজের কাছে নত হচ্ছি।
\v 21 কিন্তু আমি আবার মনে করি; তাই আমার আশা আছে।
\s5
\v 22 সদাপ্রভুর দয়ার জন্য আমরা নষ্ট হয়নি; কারণ তাঁর দয়া শেষ হয়নি।
\v 23 প্রতি সকালে সেগুলি নতুন! তোমার বিশ্বস্ততা মহান।
\v 24 আমার প্রাণ বলে, “সদাপ্রভুই আমার অধিকার,” তাই আমি তাঁর উপর আশা করব।
\s5
\v 25 সদাপ্রভু তার জন্যই ভালো যে তার অপেক্ষা করে, সেই জীবনের পক্ষে যা তাকে খোঁজে।
\v 26 সদাপ্রভুর পরিত্রাণের জন্য নীরবে অপেক্ষা করাই ভালো।
\v 27 একজন মানুষের পক্ষে যৌবন কালে যোঁয়ালি বহন করা ভালো।
\v 28 তাকে একা ও নীরবে বসতে দাও, কারণ সদাপ্রভু তার ওপরে যোঁয়ালি চাপিয়েছেন।
\v 29 সে ধূলোতে মুখ দিক, তবে হয়তো আশা হলেও হতে পারে।
\s5
\v 30 যে তাকে মারছে তার কাছে গাল পেতে দিক। তাকে অপমানে পরিপূর্ণ হতে দাও।
\v 31 কারণ প্রভু চিরকালের জন্য তাকে ত্যাগ করবেন না!
\v 32 যদিও দুঃখ দেন, তবুও নিজের মহান দয়া অনুসারে করুণা করবেন।
\v 33 কারণ তিনি হৃদয়ের সঙ্গে দুঃখ দেন না, মানুষের সন্তানদের শোকার্ত করেন না।
\s5
\v 34 লোকে যে পৃথিবীর বন্দীদের সবাইকে পায়ের তলায় পিষে দেয়,
\v 35 সর্বশক্তিমানের সামনে মানুষের প্রতি অন্যায় করে,
\v 36 একজন লোক তার অন্যায় চেপে রাখে, তা সদাপ্রভু কি দেখতে পান না?
\s5
\v 37 প্রভু আদেশ না করলে কার কথা সফল হতে পারে?
\v 38 সর্বশক্তিমানের মুখ থেকে কি বিপদ ও ভালো বিষয় দুইই বের হয় না?
\v 39 যে কোনো জীবিত লোক তার পাপের শাস্তির জন্য কেমন করে অভিযোগ করতে পারে?
\s5
\v 40 এস, আমরা নিজের নিজের রাস্তা বিচার করি ও পরীক্ষা করি এবং সদাপ্রভুর কাছে ফিরে যাই।
\v 41 এস, হাতের সঙ্গে হৃদয়কে ও স্বর্গের নিবাসী ঈশ্বরের দিকে হাত উঠাই এবং প্রার্থনা করি:
\v 42 “আমরা তোমার বিরুদ্ধে পাপ ও বিদ্রোহ করেছি; তাই তুমি ক্ষমা করনি।
\v 43 তুমি নিজেকে রাগে ঢেকে আমাদেরকে তাড়না করেছ, হত্যা করেছ, দয়া করনি।
\s5
\v 44 তুমি নিজেকে মেঘে ঢেকে রেখেছ, তাই কোনো প্রার্থনা তা ভেদ করতে পারেনা।
\v 45 তুমি জাতিদের মধ্যে আমাদেরকে জঞ্জাল ও আবর্জনা করেছ।
\v 46 আমাদের সব শত্রু আমাদের বিরুদ্ধে উপহাসের সঙ্গে মুখ খুলেছে।
\v 47 ভয় ও ফাঁদ, নির্জনতা ও ধ্বংস আমাদের ওপরে এসেছে।”
\s5
\v 48 আমার লোকের মেয়ের ধ্বংসের জন্য আমার চোখে জলের ধারা বয়ে যাচ্ছে।
\v 49 আমার চোখে সবসময় জলে বয়ে যাচ্ছে, থামে না,
\v 50 যে পর্যন্ত সদাপ্রভু স্বর্গ থেকে নীচু হয়ে না তাকান।
\s5
\v 51 আমার শহরের সমস্ত মেয়ের জন্য আমার চোখ আমার জীবনে কঠিন ব্যথা আনে।
\v 52 বিনা কারণে যারা আমার শত্রু, তারা আমাকে পাখির মতো শিকার করেছে।
\v 53 তারা আমার জীবন কুয়োতে ধ্বংস করেছে এবং আমার ওপরে পাথর ছুড়েছে।
\v 54 আমার মাথার ওপর দিয়ে জল বয়ে গেল; আমি বললাম, “আমি ধ্বংস হয়েছি।”
\s5
\v 55 হে সদাপ্রভু, আমি নীচের গর্তের ভিতর থেকে তোমার নাম ডেকেছি।
\v 56 তুমি আমার কন্ঠস্বর শুনেছ; যখন আমি বললাম, “আমার সাহায্যের জন্য তোমার কান লুকিয়ে রেখো না।”
\v 57 যে দিন আমি তোমাকে ডেকেছি, সেই দিন তুমি আমার কাছে এসেছ এবং আমাকে বলেছ, “ভয় কোরো না।”
\s5
\v 58 হে প্রভু, তুমি আমার জীবনের সমস্ত বিবাদগুলি সমাধান করেছ; আমার জীবন মুক্ত করেছ।
\v 59 হে সদাপ্রভু, তুমি আমার প্রতি করা অত্যাচার দেখেছ, আমার বিচার ন্যায্যভাবে কর।
\v 60 ওদের সব প্রতিশোধ ও আমার বিরুদ্ধে করা সমস্ত পরিকল্পনা তুমি দেখেছ।
\v 61 হে সদাপ্রভু, তুমি ওদের অবজ্ঞা ও আমার বিরুদ্ধে করা ওদের সকল পরিকল্পনা শুনেছ;
\s5
\v 62 যারা আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে বলে এবং তারা আমার বিরুদ্ধে তাদের কথাবার্তা শুনেছ।
\v 63 তাদের বসা ও ওঠা দেখ, হে সদাপ্রভু! আমি তাদের বিদ্রুপের গানের বিষয়।
\s5
\v 64 হে সদাপ্রভু, তুমি তাদের হাতের কাজ অনুসারে প্রতিদান তাদেরকে দেবে।
\v 65 তুমি তাদের হৃদয়ে ভয় দেবে, তোমার অভিশাপ তাদের ওপর পড়বে।
\v 66 তুমি তাদেরকে রাগে তাড়া করবে এবং সদাপ্রভু স্বর্গের নীচে থেকে তাদেরকে ধ্বংস করবে।
\s5
\c 4
\ms সব শ্রেণীর যিহূদীদের দুঃখ।
\p
\v 1 হায়! সোনা কেমনভাবে উজ্জ্বলতা হারিয়েছে, খাঁটি সোনা পরিবর্তিত হয়েছে। পবিত্র পাথরগুলি প্রতিটি রাস্তার মাথায় ছড়িয়ে আছে।
\v 2 সিয়োনের মূল্যবান ছেলেগুলো, যারা খাঁটি সোনার থেকে দামী, কিন্তু এখন তারা কুমোরের হাতে তৈরী মাটির পাত্রের মতো গণ্য হয়েছে, তা ছাড়া আর কিছুই নয়।
\s5
\v 3 এমন কি শিয়ালেরাও তাদের বাচ্চাদেরকে দুধ পান করায়; আমার লোকের মেয়েরা মরুভূমির উটপাখির মত নিষ্ঠুর হয়েছে।
\s5
\v 4 স্তন্যপায়ী শিশুর জিভ পিপাসায় মুখের তালুতে লেগে আছে; ছেলেমেয়েরা রুটি চাইছে, কিন্তু তাদের জন্য কিছুই নেই।
\v 5 যারা সুস্বাদু খাবার খেত, তারা পরিত্যক্ত অন্নহীন অবস্থায় রাস্তায় রয়েছে; যাদেরকে টকটকে লাল রঙের পোশাক পরিয়ে প্রতিপালিত করা যেত, তারা আবর্জনার স্তূপ আলিঙ্গন করছে।
\s5
\v 6 প্রকৃতপক্ষে আমার লোকের মেয়ের অপরাধ সেই সদোমের পাপের থেকেও বেশি, যা এক মুহূর্তে উপড়ে ফেলেছিল, অথচ তার ওপরে মানুষের হাত পড়েনি।
\s5
\v 7 তাদের নেতারা তুষারের থেকেও উজ্জ্বল, দুধের থেকেও সাদা ছিলেন; প্রবালের থেকেও লালবর্ণ অঙ্গ তাঁদের ছিল; নীলকান্তমণির মতো তাঁদের চেহারা ছিল।
\v 8 এখন তাঁদের মুখ কালির থেকেও কালো হয়েছে; রাস্তায় তাঁদেরকে চেনা যায় না; তাঁদের চামড়া হাড়ে লেগে গিয়েছে; তা কাঠের মতো শুকনো হয়েছে।
\s5
\v 9 ক্ষিদেতে মরে যাওয়া লোকের থেকে তরোয়ালের মাধ্যমে মরে যাওয়া লোক ভালো, কারণ এরা মাঠের শস্যের অভাবে যেন আহত হয়ে ক্ষয় পাচ্ছে।
\v 10 দয়াবতী স্ত্রীদের হাত নিজের নিজের শিশু রান্না করেছে; আমার লোকের মেয়েদের ধ্বংসের জন্য এরা তাদের খাবার হয়েছে।
\s5
\v 11 সদাপ্রভু নিজের রাগ সম্পূর্ণ করেছেন, নিজের প্রচণ্ড রাগ ঢেলে দিয়েছেন; তিনি সিয়োনে আগুন জ্বালিয়েছেন, তা তার ভিত্তিমূল গ্রাস করেছে।
\s5
\v 12 পৃথিবীর রাজারা, বিশ্বের সব লোক, বিশ্বাস করত না যে, যিরূশালেমের দরজায় কোনো বিপক্ষ ও শত্রু প্রবেশ করতে পারবে।
\v 13 এর কারণ তার ভাববাদীদের পাপ ও যাজকদের অপরাধ; যারা তার মধ্যে ধার্মিকদের রক্তপাত করত।
\s5
\v 14 তারা অন্ধদের মতো রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়িয়েছে, তাদের রক্ত দূষিত হয়েছে, লোকেরা তাদের কাপড় স্পর্শ করতে পারে না।
\v 15 লোকে তাদেরকে চেঁচিয়ে বলেছে, “চলে যাও; অশুচি, চলে যাও, চলে যাও, আমাকে স্পর্শ কর না,” তারা পালিয়ে গিয়েছে, ঘুরে বেড়িয়েছে; জাতিদের মধ্যে লোকে বলেছে, “ওরা এই জায়গায় আর কখনো বিদেশী হিসেবে বাস করতে পারবে না।”
\s5
\v 16 সদাপ্রভুর মুখ তাদেরকে তার সামনে থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন, তিনি তাদেরকে আর দেখেন না; লোকে যাজকদের সম্মান করে না, প্রাচীনদের প্রতি দয়া দেখান না।
\s5
\v 17 এখনও আমাদের চোখ সর্বদা ব্যর্থ হয়ে যাচ্ছে, মূল্যহীন সাহায্যের আশায়; যদিও আমরা অধীর আগ্রহে এমন এক জাতির অপেক্ষায় আছি, যে রক্ষা করতে পারে না।
\v 18 শত্রুরা আমাদের পদক্ষেপ অনুসরণ করে, আমরা আমাদের নিজের রাস্তায় হাঁটতে পারি না; আমাদের শেষকাল কাছাকাছি, আমাদের দিন শেষ কারণ আমাদের শেষকাল উপস্থিত।
\s5
\v 19 আমাদের তাড়নাকারীরা আকাশের ঈগল পাখির চেয়ে দ্রুতগামী ছিল; তারা পর্বতের ওপরে আমাদের পিছনে পিছনে দৌড়াত, মরুভূমিতে আমাদের জন্য ঘাঁটি বসাত।
\v 20 যিনি আমাদের নাকের নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস, সদাপ্রভুর অভিষিক্ত, তিনি তাদের ফাঁদে ধরা পড়লেন, যাঁর বিষয়ে বলেছিলাম, আমরা তাঁর সুরক্ষায় জাতিদের মধ্যে বাস করব।
\s5
\v 21 হে ঊষদেশ নিবাসিনী ইদোমের মেয়ে, তুমি আনন্দ কর ও খুশি হও! তোমার কাছেও সেই পানপাত্র আসবে, তুমি মাতাল হবে এবং উলঙ্গিনী হবে।
\v 22 সিয়োনের মেয়ে, তোমার অপরাধ শেষ হল; তিনি তোমাকে আর কখনো নির্বাসিত করবেন না; হে ইদোমের মেয়ে, তিনি তোমার অপরাধের শাস্তি দেবেন, তোমার পাপ প্রকাশ করবে।
\s5
\c 5
\ms পাপের জন্য শাস্তি ও ক্ষমার জন্য প্রার্থনা।
\p
\v 1 হে সদাপ্রভু, আমাদের প্রতি যা ঘটেছে, তা মনে কর, তাকাও, আমাদের অপমান দেখ।
\v 2 আমাদের অধিকার অপরিচিত লোকদের হাতে, আমাদের সব বাড়িগুলি বিদেশীদের হাতে গিয়েছে।
\v 3 আমরা অনাথ কারণ আমাদের কোনো বাবা নেই এবং আমাদের মায়েরা বিধবাদের মতো হয়েছেন।
\v 4 আমাদের জল আমরা রুপো খরচ করে পান করেছি, নিজেদের কাঠ দাম দিয়ে কিনতে হয়।
\s5
\v 5 লোকে আমাদেরকে তাড়না করে, আমরা ক্লান্ত এবং আমাদের জন্য বিশ্রাম নেই।
\v 6 আমরা মিশরীয়দের ও অশূরীয়দের কাছে হাতজোড় করেছি, খাবারে সন্তুষ্ট হবার জন্য।
\v 7 আমাদের পূর্বপুরুষেরা পাপ করেছেন, এখন তারা নেই এবং আমরাই তাঁদের পাপ বহন করেছি।
\s5
\v 8 আমাদের ওপরে দাসেরা শাসন করে এবং তাদের হাত থেকে আমাদেরকে উদ্ধার করে, এমন কেউ নেই।
\v 9 জীবনের ঝুঁকিতে আমরা খাবার সংগ্রহ করি, মরুভূমিতে অবস্থিত তরোয়াল থাকা সত্ত্বেও।
\v 10 আমাদের চামড়া উনুনের মতো গরম, দুর্ভিক্ষের জ্বরে জ্বলছে।
\s5
\v 11 সিয়োনে স্ত্রীলোকেরা ধর্ষিত হল, যিহূদার শহরগুলিতে কুমারীরা ধর্ষিত হল।
\v 12 তারা নেতাদেরকে নিজেদের হাতের মাধ্যমে ফাঁসি দিয়েছে এবং তারা প্রাচীনদের সম্মান করেনি।
\s5
\v 13 যুবকদেরকে যাঁতায় পরিশ্রম করতে হল, শিশুরা কাঠের গুড়ির ভারে টলমল করছে।
\v 14 প্রাচীনেরা শহরের দরজা থেকে সরে গিয়েছেন এবং যুবকেরা তাদের বাজনাকে থামিয়েছে।
\s5
\v 15 আমাদের হৃদয়ের আনন্দ চলে গিয়েছে, আমাদের নাচ শোকে পরিবর্তিত হয়েছে।
\v 16 আমাদের মাথা থেকে মুকুট পড়ে গেছে, ধিক আমাদেরকে! কারণ আমরা পাপ করেছি।
\s5
\v 17 এইজন্য আমাদের হৃদয় দুর্বল হয়েছে এবং আমাদের চোখ অস্পষ্ট হয়েছে।
\v 18 কারণ সিয়োন পর্বত মানবহীন জায়গা হয়েছে, শিয়ালেরা তার ওপর ঘুরে বেড়ায়।
\s5
\v 19 কিন্তু হে সদাপ্রভু, তুমি চিরকাল রাজত্ব কর এবং তোমার সিংহাসন বংশের পর বংশ স্থায়ী।
\v 20 কেন তুমি চিরকাল আমাদেরকে ভুলে যাবে? কেন এত দিন আমাদেরকে ত্যাগ করে থাকবে?
\v 21 হে সদাপ্রভু, তোমার প্রতি আমাদেরকে ফেরাও এবং আমরা অনুতাপ করব; পুরানো দিনের মতো নতুন দিন আমাদেরকে দাও।
\v 22 তুমি আমাদেরকে একেবারে ত্যাগ করেছে এবং আমাদের প্রতি প্রচণ্ড রেগে গিয়েছিলে।

92
32-JON.usfm Normal file
View File

@ -0,0 +1,92 @@
\id JON
\ide UTF-8
\h যোনা ভাববাদীর বই।
\toc1 যোনা ভাববাদীর বই।
\toc2 যোনা ভাববাদীর বই।
\toc3 jon
\mt1 যোনা ভাববাদীর বই।
\is যোনার পলায়ন।
\s5
\c 1
\p
\v 1 সদাপ্রভুর এই বাক্য অমিত্তয়ের ছেলে যোনার কাছে উপস্থিত হল,
\v 2 “তুমি ওঠ, নীনবীতে, সেই মহানগরে যাও, আর নগরের বিরুদ্ধে ঘোষণা কর, কারণ তাদের দুষ্টতা আমার সামনে প্রকাশিত হয়েছে।”
\v 3 কিন্তু যোনা সদাপ্রভুর সামনে থেকে তর্শীশে পালাবার জন্য উঠলেন; তিনি যাফোতে নেমে গিয়ে, তর্শীশে যাবে এমন এক জাহাজ পেলেন; তখন জাহাজের ভাড়া দিয়ে সদাপ্রভুর সামনে থেকে নাবিকদের সঙ্গে তর্শীশে যাবার জন্য সেই জাহাজে প্রবেশ করলেন।
\s5
\v 4 কিন্তু সদাপ্রভু সমুদ্রে প্রচন্ড ঝড়ো বায়ু পাঠিয়ে দিলেন, সমুদ্রে ভীষণ ঝড় উঠল, এমন কি, জাহাজ ভেঙ্গে যাবার মত হল।
\v 5 তখন নাবিকেরা ভয় পেল, প্রত্যেকে নিজের নিজের দেবতার কাছে কাঁদতে লাগল, আর ওজন কমানোর জন্য জাহাজের মাল সমুদ্রে ফেলে দিল। কিন্তু যোনা জাহাজের তলায় নেমেছিলেন এবং এমন ঘুমিয়ে ছিলেন যে গভীর ঘুমে মগ্ন ছিলেন।
\s5
\v 6 তখন জাহাজের মালিক তাঁর কাছে এসে বললেন, “ওহে, তুমি যে ঘুমাচ্ছ তোমার কী হল? ওঠ, তোমার ঈশ্বরকে ডাক; হয় তো ঈশ্বর আমাদের বিষয়ে চিন্তা করবেন ও আমরা বিনষ্ট হব না।”
\v 7 পরে নাবিকেরা একে অপরকে বলল, “এস, আমরা গুলিবাঁট করি, তাহলে জানতে পারবে কার দোষে আমাদের প্রতি এই অমঙ্গল ঘটছে? পরে তারা গুলিবাঁট করল, আর যোনার নামে গুলি উঠল।”
\s5
\v 8 তখন তারা তাকে বলল, “বল দেখি, কার দোষে আমাদের প্রতি এই অমঙ্গল ঘটছে? তোমার পেশা কি? কোন জায়গা থেকে এসেছ? তুমি কোন দেশের লোক? কোন জাতি?”
\v 9 তিনি তাদেরকে বললেন, “আমি ইব্রীয়; আমি সদাপ্রভুকে ভয় করি, তিনি স্বর্গের ঈশ্বর, তিনি সমুদ্র ও শুকনো ভূমি সৃষ্টি করেছেন।”
\v 10 তখন সেই লোকেরা খুব ভয় পেয়ে তাঁকে বলল, “তুমি এ কি কাজ করেছ?” কারণ তিনি যে সদাপ্রভুর সামনে থেকে পালিয়ে যাচ্ছেন, এটা তারা জানত, কারণ তিনি তাদেরকে বলেছিলেন।
\s5
\v 11 পরে তারা তাঁকে বলল, “আমরা তোমাকে কি করলে সমুদ্র আমাদের প্রতি শান্ত হতে পারে?” কারণ সমুদ্র তখন আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছিল।
\v 12 তিনি তাদেরকে বললেন, “আমাকে ধরে সমুদ্রে ফেলে দাও, তাতে সমুদ্র তোমাদের জন্য শান্ত হবে; কারণ আমি জানি, আমারই দোষে তোমাদের উপরে এই ভীষণ ঝড় এসেছে।”
\v 13 তবুও সেই লোকেরা জাহাজ ফিরিয়ে ডাঙায় নিয়ে যাবার জন্য ঢেউ কাটতে চেষ্টা করল; কিন্তু পারল না, কারণ সমুদ্র তাদের বিপরীতে আরো ভয়াবহ হয়ে উঠছিল।
\s5
\v 14 এই জন্য তারা সদাপ্রভুকে ডাকতে লাগল আর বলল, “অনুরোধ করি, হে সদাপ্রভু, অনুরোধ করি, এই ব্যক্তির প্রাণের জন্য আমাদের বিনাশ না হোক এবং আমাদের উপরে নির্দোষের রক্তের ভাগীদার কর না; কারণ, হে সদাপ্রভু, তুমি নিজের ইচ্ছামতো কাজ করেছ।”
\v 15 পরে তারা যোনাকে ধরে সমুদ্রে ফেলে দিল, তাতে সমুদ্র থামল, আর ভয়াবহ হল না।
\v 16 তখন সেই লোকেরা সদাপ্রভুর থেকে খুব ভয় পেল; আর তারা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে বলিদান করল এবং নানা মানত করল।
\s5
\v 17 আর সদাপ্রভু যোনাকে গিলে ফেলার জন্য একটা বড় মাছ ঠিক করে রেখেছিলেন; সেই মাছের পেটে যোনা তিন দিন ও তিন রাত কাটালেন।
\s5
\c 2
\p
\v 1 তখন যোনা ঐ মাছের পেট থেকে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করলেন।
\v 2 তিনি বললেন, “আমি বিপদের জন্য সদাপ্রভুকে ডাকলাম, আর তিনি আমাকে উত্তর দিলেন; আমি পাতালের পেট থেকে চিত্কার করলাম, তুমি আমার রব শুনলে।
\s5
\v 3 তুমি আমাকে গভীর জলে, সমুদ্রে নিক্ষেপ করলে, আর স্রোত আমাকে বেষ্টন করল, তোমার সব ঢেউ, তোমার সব তরঙ্গ, আমার ওপর দিয়ে গেল।”
\v 4 আমি বললাম, “আমি তোমার দৃষ্টি থেকে দূরে চলে গেছি, তবুও আবার তোমার পবিত্র মন্দিরের দিকে দেখব।
\s5
\v 5 জলরাশি আমাকে ঘিরে ফেলল, প্রাণ পর্যন্ত উঠল, জলরাশি আমাকে ঘিরে ফেলল, সমুদ্রের উদ্ভিদ আমার মাথায় জড়াল।
\v 6 আমি পর্বতের গোড়া পর্যন্ত নেমে গেলাম; আমার পিছনে পৃথিবীর সমস্ত দরজা একেবারে বন্ধ হল; তবুও, হে আমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তুমি আমার প্রাণকে গভীর গর্ত থেকে উঠালে।
\s5
\v 7 আমার মধ্যে প্রাণ অচেতন হলে আমি সদাপ্রভুকে স্মরণ করলাম, আর আমার প্রার্থনা তোমার কাছে, তোমার পবিত্র মন্দিরে, উপস্থিত হল।
\v 8 যারা মিথ্যা জড় বস্তু মানে, তারা নিজের অনুগ্রহকে পরিত্যাগ করে;
\s5
\v 9 কিন্তু আমি তোমার উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ সহ বলিদান করব; আমি যে মানত করেছি, তা পূর্ণ করব; পরিত্রাণ সদাপ্রভুরই কাছে।”
\v 10 পরে সদাপ্রভু সেই মাছকে বললেন, আর সে যোনাকে শুকনো ভূমির ওপরে উগরে দিল।
\s5
\c 3
\ms নীনবীতে যোনার ঘোষণা ও তার ফল।
\m
\v 1 পরে দ্বিতীয়বার সদাপ্রভুর বাক্য যোনার কাছে এল;
\v 2 তিনি বললেন, “তুমি ওঠ, নীনবীতে, সেই মহানগরে যাও, আর আমি তোমাকে যা ঘোষণা করতে বলি, তা সেই নগরের উদ্দেশ্যে ঘোষণা কর।”
\v 3 তখন যোনা উঠে সদাপ্রভুর বাক্য অনুসারে নীনবীতে গেলেন। নীনবী ঈশ্বরের দৃষ্টিতে মহানগর, সেখানে যেতে তিন দিন লাগত।
\s5
\v 4 পরে যোনা নগরে প্রবেশ করতে আরম্ভ করে এক দিনের পথ গেলেন এবং ঘোষণা করলেন, বললেন, “আর চল্লিশ দিন পরে নীনবী ধ্বংস হবে।”
\v 5 তখন নীনবীর লোকেরা ঈশ্বরে বিশ্বাস করলো; তারা উপবাস ঘোষণা করল এবং মহান থেকে ক্ষুদ্র পর্যন্ত সবাই চট পরল।
\s5
\v 6 আর সেই খবর নীনবী রাজের কাছে পৌঁছালে তিনি নিজের সিংহাসন থেকে উঠলেন, গায়ের শাল রেখে দিলেন এবং চট পরে ছাইয়ের মধ্যে বসলেন।
\v 7 আর তিনি নীনবীতে রাজার ও তার অধ্যক্ষদের উদ্দেশ্যে এই কথা উঁচু স্বরে প্রচার করলেন, “মানুষ ও গোমেষাদি পশু কেউ কিছু চেখে না দেখুক, খাওয়া-দাওয়া ও জলপান না করুক;
\s5
\v 8 কিন্তু মানুষ ও পশু চট পরে চিত্কার করে ঈশ্বরকে ডাকুক, আর প্রত্যেকে নিজের নিজের কুপথ ও নিজের নিজের হাতের মন্দ কাজকর্ম থেকে ফিরুক।
\v 9 হয় তো, ঈশ্বর শান্ত হবেন, অনুশোচনা করবেন ও নিজের ভীষণ রাগ থেকে শান্ত হবেন, তাতে আমরা বিনষ্ট হব না।”
\s5
\v 10 তখন ঈশ্বর তাদের কাজ, তারা যে নিজের নিজের কুপথ থেকে ফিরল, তা দেখলেন, আর তাদের যে অমঙ্গল করবেন বলেছিলেন, সেই বিষয়ে অনুশোচনা করলেন; তা করলেন না।
\s5
\c 4
\p
\v 1 কিন্তু এতে যোনা খুব বিরক্ত ও রেগে গেলেন।
\v 2 তিনি সদাপ্রভুর কাছে প্রার্থনা করে বললেন, “হে সদাপ্রভু, অনুরোধ করি, আমি নিজের দেশে যখন ছিলাম এই কথা কি বলিনি? সেই জন্য তাড়াতাড়ি করে তর্শীশে পালাতে গিয়েছিলাম; কারণ আমি জানতাম, তুমি কৃপাময় ও স্নেহশীল ঈশ্বর, রাগে ধীর ও দয়াতে মহান এবং অমঙ্গলের বিষয়ে অনুশোচনকারী।
\v 3 অতএব এখন, হে সদাপ্রভু, অনুরোধ করি, আমার থেকে আমার প্রাণ নিয়ে যাও, কারণ আমার জীবনের থেকে মৃত্যু ভালো।”
\s5
\v 4 সদাপ্রভু বললেন, “তুমি রাগ করে কি ভালো করছ?”
\v 5 তখন যোনা নগরের বাইরে গিয়ে নগরের পূর্ব দিকে বসে থাকলেন; সেখানে তিনি নিজের জন্য একটি ঘর তৈরী করে তার নীচে ছায়াতে বসলেন, নগরের কি অবস্থা হয় দেখবার জন্য অপেক্ষা করতে লাগলেন।
\s5
\v 6 তখন সদাপ্রভু ঈশ্বর এক এরণ্ড গাছ তৈরী করলেন; আর সেই গাছটি বৃদ্ধি করে যোনার উপরে আনলেন, যেন তার মাথার ওপরে ছায়া হয়, যেন তার মন্দ চিন্তা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। আর যোনা সেই এরণ্ড গাছটির জন্য বড় আনন্দিত হলেন।
\v 7 কিন্তু পরদিন সূর্য ওঠার সময়ে ঈশ্বর এক পোকা তৈরী করলেন, সে ঐ এরণ্ড গাছটিকে দংশন করলে তা শুষ্ক হয়ে পড়ল।
\s5
\v 8 পরে যখন সূর্য উঠল, ঈশ্বর পূর্ব দিক থেকে গরম হাওয়া পাঠালেন, তাতে যোনার মাথায় এমন রোদ লাগল যে, তিনি ক্লান্ত হয়ে নিজের মৃত্যুর প্রার্থনা করে বললেন, “আমার জীবন অপেক্ষা মৃত্যু ভালো।”
\v 9 তখন ঈশ্বর যোনাকে বললেন, “তুমি এরণ্ড গাছটির জন্য রাগ করে কি ভালো করছ?” তিনি বললেন, “মৃত্যু পর্যন্ত আমার রাগ করাই ভালো।”
\s5
\v 10 সদাপ্রভু বললেন, “তুমি এরণ্ড গাছের জন্য কোনো পরিশ্রম করনি এবং এটা বড়ও করনি; এটা এক রাতে সৃষ্টি ও এক রাতে বিনষ্ট হল, তবুও তুমি এর প্রতি দয়াশীল হয়েছ।
\v 11 তবে আমি কি নীনবীর প্রতি, ঐ মহানগরের প্রতি, দয়াশীল হব না? সেখানে এমন এক লক্ষ কুড়ি হাজারের বেশি মানুষ আছে, যারা ডান হাত থেকে বাম হাতের প্রভেদ জানে না; আর অনেক পশুও আছে।”

3
README.md Normal file
View File

@ -0,0 +1,3 @@
# bn_ulb
Bengali ULB resource container. From https://git.door43.org/BCS-BIBLE/BENGALI-ULB-OT.BCS/src/master/STAGE%203

View File

@ -1,37 +1,188 @@
---
dublin_core:
type: bundle
conformsto: rc0.2
comment: ""
format: text/usfm
identifier: ulb
title: 'Unlocked Literal Bible - Bengali'
subject: Bible
conformsto: 'rc0.2'
contributor:
- 'Antoney Raj'
- 'Cdr. Thomas Mathew'
- 'Dr. Bobby Chellappan'
- 'Hinal Prakash'
- 'Jobby Prasannan'
- 'Merlyn Easa'
- 'Pastor Ayan Ghosh'
- 'Sanjay Chakraborty'
- 'Shojo John'
- 'BIDHAN CHANDRA BAULIA'
- 'PRODIP PALIT SNIGDHA BISWAS'
- 'Door43 World Missions Community'
creator: 'Door43 World Missions Community'
description: 'An unrestricted literal Bible'
format: 'text/usfm'
identifier: 'ulb'
issued: '2017-08-17'
language:
identifier: bn
direction: 'ltr'
identifier: 'bn'
title: বাংলা
direction: ltr
modified: '2017-08-17'
publisher: 'unfoldingWord'
relation:
- 'bn/tn'
- 'bn/tq'
- 'bn/tw'
rights: 'CC BY-SA 4.0'
source:
-
identifier: ulb
language: 'Holy Bible in Bengali: 1905'
version: '1'
rights: 'CC BY-SA 4.0'
creator: 'Distant Shores Media'
contributor:
- 'BIDHAN CHANDRA BAULIA'
- 'SANJAY CHAKROBORTY'
- 'PRODIP PALIT SNIGDHA BISWAS'
relation: []
publisher: unfoldingWord
issued: '2016-10-19'
modified: '2016-10-19T00:00:00.000Z'
version: '1'
identifier: 'Holy Bible in Bengali'
language: 'bn'
version: '1905'
subject: 'Bible'
title: 'Bengali Unlocked Literal Bible'
type: 'bundle'
version: '2'
checking:
checking_entity:
- 'AYAN KUMAR GHOSH'
checking_level: '3'
projects:
-
title: 'আদিপুস্তক '
versification: 'ufw'
identifier: 'gen'
sort: 01
path: './01-GEN.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'যাত্রাপুস্তক '
versification: 'ufw'
identifier: 'exo'
sort: 02
path: './02-EXO.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'দ্বিতীয় বিবরণ '
versification: 'ufw'
identifier: 'deu'
sort: 05
path: './05-DEU.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'যিহোশূয়ের বই '
versification: 'ufw'
identifier: 'jos'
sort: 06
path: './06-JOS.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'বিচারকর্ত্তৃগণের বিবরণ '
versification: 'ufw'
identifier: 'jdg'
sort: 07
path: './07-JDG.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'রূতের বিবরণ '
versification: 'ufw'
identifier: 'rut'
sort: 08
path: './08-RUT.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'শমূয়েলের প্রথম বই '
versification: 'ufw'
identifier: '1sa'
sort: 09
path: './09-1SA.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'শমূয়েলের দ্বিতীয় বই৷ '
versification: 'ufw'
identifier: '2sa'
sort: 10
path: './10-2SA.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'প্রথম রাজাবলি। '
versification: 'ufw'
identifier: '1ki'
sort: 11
path: './11-1KI.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'দ্বিতীয় রাজাবলি। '
versification: 'ufw'
identifier: '2ki'
sort: 12
path: './12-2KI.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'বংশাবলির প্রথম খণ্ড। '
versification: 'ufw'
identifier: '1ch'
sort: 13
path: './13-1CH.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'বংশাবলির দ্বিতীয় খণ্ড৷ '
versification: 'ufw'
identifier: '2ch'
sort: 14
path: './14-2CH.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'ইষ্রা '
versification: 'ufw'
identifier: 'ezr'
sort: 15
path: './15-EZR.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'নহিমিয়ের বই। '
versification: 'ufw'
identifier: 'neh'
sort: 16
path: './16-NEH.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'ইষ্টের বিবরণ। '
versification: 'ufw'
identifier: 'est'
sort: 17
path: './17-EST.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'যিরমিয়ের বিলাপ। '
versification: 'ufw'
identifier: 'lam'
sort: 25
path: './25-LAM.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
title: 'যোনা ভাববাদীর বই। '
versification: 'ufw'
identifier: 'jon'
sort: 32
path: './32-JON.usfm'
categories: [ 'bible-ot' ]
-
categories:
- bible-nt